গত ২ এপ্রিল থেকে ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে UK তে ভ্রমণের জন্য নতুন ট্র্যাভেল নিয়ম চালু হয়েছে। তবে এ নিয়মে কমন ট্র্যাভেল এরিয়া হিসেবে আয়ারল্যান্ড এ নিয়মের বাহিরে থাকবে শুধুমাত্র প্রুপ অফ রেসিডেন্স আইডি দেখানো ব্যতীত।
UK-র নতুন ট্র্যাভেল নিয়মে আয়ারল্যান্ডের উপর তেমন প্রভাব পড়বে না। এপ্রিল থেকে ইউরোপীয় নাগরিকদের UK তে ভ্রমণের জন্য ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথারাইজেশন (ETA) লাগতেছে। শুধুমাত্র আইরিশ সিটিজেন ও UK ভ্রমণের যোগ্য আইরিশ বাসিন্দাদের জন্য ETA লাগবে না। তবে 16 বছরের অধিক বয়স্ক আইরিশ সিটিজেনদেরকে ভ্রমণের সময় পাসপোর্টের পাশাপাশি নিম্নোক্ত যে কোনো একটি ডকুমেন্ট এর অরিজিনাল কপি সাথে রাখার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়:
– আইরিশ ড্রাইভার লাইসেন্স অথবা লার্নার পারমিট
– মেডিকেল অথবা জিপি ভিজিট কার্ড
– ইউরোপীয় রেসিডেন্ট পারমিট
– আইরিশ রেসিডেন্ট পারমিট
– পার্মানেন্ট রেসিডেন্স সার্টিফিকেট
– জাতীয় এইজ কার্ড
– ডিপ্লোমেটিক আইডি কার্ড
এয়ারপোর্টের র্যানডম চেকে উপরোক্ত ডকুমেন্ট চাইতে পারে। তবে আইরিশ নাগরিক এবং রেসিডেন্ট ব্যতীত অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ থেকে UK তে ভ্রমণ করতে বাধ্যতামূলক ETA থাকতে হবে।
তবে নন-আইরিশ যারা বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা (বিশেষ করে EU এবং US সিটিজেনের জন্য) এবং UK তে ভ্রমণের জন্য ভিসা লাগবে না তাদের ETA লাগবেনা, তবে উপরোক্ত প্রুপ অফ রেসিডেন্সের যেকোনো একটি ডকুমেন্ট থাকলেই হবে।
যদিও নর্দান আয়ারল্যান্ডে বর্ডার অতিক্রমে সিকিউরিটি চেক নেই, তবুও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে নর্দান আয়ারল্যান্ড গমনে পরামর্শ প্রদান করা হয়।
ঝামেলা এড়াতে ভ্রমণের প্রারম্ভে সবাইকে নতুন নিয়মের ব্যাপারে অবগত থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
যাদের ETA দরকার হবে তারা UK বর্ডার এজেন্সির অ্যাপের মাধ্যমে করতে পারেন। এছাড়াও এই অনলাইন লিংকের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেনঃ ETA আবেদন লিংক
বিগত কয়েক বছর আয়ারল্যান্ডে অ্যাসাইলাম আবেদনকারীর সংখ্যা প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০২৩ এপ্রিল থেকে ২০২৪ এর এপ্রিল পর্যন্ত সময়েই প্রায় ১৫০ হাজার অ্যাসাইলাম এর জন্য আবেদন করে। ক্রমবর্ধমান আবেদনের সংখ্যা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে এবং দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই মূলত মন্ত্রীসভা প্রস্তাবগুলো রাখেন।
২৯ এপ্রিল ২০২৫ মঙ্গলবার জাস্টিস মিনিস্টার জিম ও’ক্যালাহান নতুন নিয়মগুলো প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবিত আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হবে, যা আবেদন প্রক্রিয়াকে আরো কঠিন করে তুলবে এবং থাকবে অনেক সীমাবদ্ধতাও যেগুলো পূর্বে ছিল না।
প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো হল:
আয়ারল্যান্ডে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের জন্য একটি নতুন স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া চালু করা হবে। যাতে বোঝা যায় তারা জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি কিনা।
বর্ডার প্রোসিডিউর চালু করা হবে, যারা মিথ্যা তথ্য দেন বা নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে বিবেচিত হন তাদেরকে যেন দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো যায়।
আবেদন প্রক্রিয়া শুরু থেকে সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হবে। তার মানে সব আবেদন তিন মাসের মধ্যেই শেষ হবে। এর মাঝে যারা আবেদনে সফল হবে তারা অ্যাসাইলাম পাবে, আর যাদের আবেদন সফল হবে না তারা অ্যাসাইলাম পাবে না।
শুনানির ব্যবহার সীমিত করে হবে। যা বর্তমানে এক বছর পর্যন্ত সময় নিতে পারে এবং আইনি অনুবাদক প্রয়োজন হয়।
আপিল পরিক্রিয়ার দায়িত্বে থাকবে নতুন রাষ্ট্রীয় সংস্থা। যারা কেইসের উপর নির্ভর করে আপিলের অনুমতি প্রদান করবে।
অ্যাসাইলাম অফিসারদেরকে আশ্রয়প্রার্থীদেরকে যে কোনো মুহূর্তে জাস্টিস মিনিস্টারের অনুমতি ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা থাকবে।
এই প্রস্তাবিত নিয়মগুলো কার্যকর হলে, যেসব অ্যাসাইলাম আবেদনকারীর আবেদন প্রত্যাখ্যান হবে, তাদের পক্ষে সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে।
আশ্রয় প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, নিয়ন্ত্রিত এবং কার্যকর করাই হচ্ছে নতুন এই আইনের লক্ষ্য।
মন্ত্রিসভা থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর, এই প্রস্তাবগুলো সংসদে ভোটাভুটির মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে। সরকার চাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাইগ্রেশন চুক্তি কার্যকর হওয়ার আগেই এই আইনটি পাস করাতে।
আয়ারল্যান্ডে অ্যান্টি ইমিগ্র্যান্টের সংখ্যা বেড়েই চলছে। কিন্তু অ্যান্টি ইমিগ্র্যান্টরা কি জানেনা প্রচুর সংখ্যক আইরিশ যে অন্যান্য দেশে বৃহদাকারে অভিবাসী এবং অতীতে অভিবাসন সুবিধা পেয়েছিল?
আপনি কী জানেন, ১৮০০ শতক থেকে ৬ মিলিয়নেরও অধিক আইরিশ আমেরিকাতে অভিবাসী হিসেবে গমন করে, যা আয়ারল্যান্ডে বর্তমান জনসংখ্যা থেকেও অধিক। বর্তমানে সেই ৬ মিলিয়ন অভিবাসীর বংশবৃদ্ধি হয়ে ৩৬ মিলিয়ন হয়েছে। যদি সেই ৬ মিলিয়ন মানুষ আয়ারল্যান্ডে থাকতো তাহলে বর্তমান ৫ মিলিয়ন এবং ৩৬ মিলিয়ন মিলে আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যা ৪০ মিলিয়ন হওয়ার কথা ছিল।
এ তো গেল শুধু আমেরিকাতে অভিবাসন করা জনসংখ্যা, এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও আইরিশরা গমন করে থাকে। সমগ্র পৃথিবীর আইরিশ অভিবাসী বংশধরসহ হিসেব করলে 80 মিলিয়নের অধিক হবে বর্তমানে। বর্তমান প্রজন্মের মাঝেও অভিবাসন করার জোঁক অত্যন্ত প্রবল। শিক্ষা জীবন শেষ করার সাথে সাথে বহু তরুণ তরুণী অন্যান্য দেশে চাকুরি ও স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে আয়ারল্যান্ড ত্যাগ করে।
বিপুল সংখ্যক মানুষ বিভিন্ন দেশে স্থায়ী হওয়া ও অভিবাসনের সুবিধা নেয়া আইরিশগণ, বিশেষ করে যারা অ্যান্টি ইমিগ্র্যান্ট ধারণা নিয়ে আছেন তারা কেন অভিবাসীদের প্রতি ঘৃণামূলক মনোভাব নিয়ে আছেন তা বোধগম্য নয়।
১৮৪৫ সাল থেকে ১০ বছর আয়ারল্যান্ডে বড়ো ধরণের মহামারী হয়েছিল, যা ‘দ্য গ্রেট ফেমিন’ নামে পরিচিত। সে সময় জীবন রক্ষার্থে বিপুল সংখ্যক আইরিশ (প্রায় ২ মিলিয়ন) আমেরিকাতে অভিবাসী হয়ে চলে যায়। যার ফলে বহু আইরিশের জীবন রক্ষা পায়। সে সময় প্রায় ১ মিলিয়ন আইরিশ মৃত্যুবরণ করে। ধারণা করা হয় দেশত্যাগ না করলে আরো বহু মানুষের প্রাণহানি হতো।
ঠিক উপরের ঘটনার মতোই জীবন রক্ষার্থে ও বিপদে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ আয়ারল্যান্ডে গমন করে। বিশেষ করে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে, রাজনৈতিক অস্থির অঞ্চল থেকে ইত্যাদি।
উচ্চশিক্ষা, চাকুরি ও উন্নত জীবনমানের জন্য বর্তমানেও আইরিশরা যেমন অন্যান্য দেশে গমন করে থাকে। ঠিক তেমনি অন্যান্য দেশ থেকেও একই উদ্দেশ্যে মানুষ আয়ারল্যান্ডে গমন করে।
আয়ারল্যান্ড কি অভিবাসনবান্ধব দেশ?
হ্যাঁ আয়ারল্যান্ড নিঃসন্দেহে একটি অভিবাসনবান্ধব দেশ। আয়ারল্যান্ড তাদের অতীত স্মৃতি এখনো স্মরণ করে থাকে, যে তারাও একসময় প্রয়োজনে অভিবাসী হয়ে দেশান্তর হতে হয়েছে। যার সুফল লক্ষ লক্ষ আইরিশ ভোগ করেছে। বর্তমানেও করে থাকে।
সেসব বিবেচনায় ও মানবিক দিক থেকে আয়ারল্যান্ড অভিবাসনের দিক দিয়ে যথেষ্ট পজিটিভ মনোভাব পোষণ করে। আমরা দেখেছি ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্থান যুদ্ধে অনেক যুদ্ধবিধ্বস্তদেরকে সাদরে বরণ করে নিতে। সম্প্রতি দেখেছি ইউক্রেনের অধিবাসীদেরকে কীভাবে সাহায্য করেছে আয়ারল্যান্ড। এছাড়াও দেখেছি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক ও অন্যান্য কারণে বিপদগ্রস্থদেরকে কীভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আয়ারল্যান্ডের জনগণও অভিবাসীদের প্রতি যথেষ্ট উদার। তাঁরা উদার ও সহযোগিতামূলক মনোভাবের না হলে অভিবাসীগণ নির্বিগ্নে এখানে চাকুরি, ব্যবসা, বাচ্চাদেরকে সুশিক্ষা ও সুন্দরভাবে বসবাস করতে কষ্টসাধ্য হয়ে যেতো।
তাহলে সমস্যা কোথায়?
আয়ারল্যান্ডের ক্ষুদ্র একটি অংশ, যারা হয়তো কখনোই অন্য দেশের মানুষকে তাদের নিজের ভূখণ্ডে বিচরণ করতে দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তারা হয়তো মনে করে অন্য দেশের জনগণ এসে তাদের ভূখণ্ডে ঝঞ্জাট তৈরি করতেছে। কিন্তু এমন মনভাবাপন্ন মানুষ নিতান্তই নগণ্য।
এ কাতারে হয়তো আরো কিছু যোগ হচ্ছে সম্প্রতি আবাসান সংকটের কারণে। আয়ারল্যান্ডে বর্তমানে আবাসন সংকট চরম আকারে ধারণ করতেছে। তাদের ধারণা অন্যান্য দেশ থেকে আগত অভিবাসীদের কারণেই এমন সংকট তৈরি হচ্ছে। যার কারণে অরিজিনাল আইরিশ যারা তাদেরই বাসা পেতে সমস্যা হচ্ছে এবং উচ্চমূল্যে বাসা ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। এ সংকটের কারণেও অ্যান্টি ইমিগ্রেন্টের সংখ্যা বাড়তেছে।
বাসা ছাড়াও স্কুল ও হাসপাতালগুলোতে সীমিত ব্যবস্থা, অভিবাসীদের সোশ্যাল বেনিফিটের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়াও অ্যান্টি ইমিগ্র্যান্ট সেন্টিমেন্টের আরো কিছু কারণ।
তারপরেও অ্যান্টি ইমিগ্র্যান্টদের বোঝা উচিত এ সমস্যাগুলো হয়তো ক্ষণস্থায়ী। আইরিশ সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করতেছে সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণের। এবং তা সবাইকে নিয়েই। আইরিশ সরকার অভিবাসীদেরকে যেমন গুরুত্বসহকারে দেখতেছে, যারা অ্যান্টি ইমিগ্রেন্ট তাদেরও একই মানসিকতা থাকা উচিত, যে সুবিধা আয়ারল্যান্ড অতীতে পেয়ে এসেছে।
কোভিড, ব্রেক্সিট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে একটার পর একটা লেগেই ছিল। সুতরাং এ অবস্থা উত্তরণে একটু সময় তো লাগবেই। আশা করি সে সমস্যা দ্রুতই কেটে উঠবে।
অভিবাসীদের যেমন আয়ারল্যান্ডে থাকা প্রয়োজন তেমনি আয়ারল্যান্ডেরও অভিবাসীদেরকে প্রয়োজন। আশা করি অ্যান্টি ইমিগ্র্যান্ট আইরিশরা তাদের অতীত স্মৃতি রোমন্থন করে হলেও অভিবাসীদের প্রতি সদয় হয়, এ বিনীত অনুরোধ থাকবে আমাদের সকল অভিবাসীর।
আপনাকে ভাবাতে ও জাগাতে ‘অণু-প্রেরণা’ নিয়ে আসছেন ওমর এফ নিউটন
‘অণু-প্রেরণা’ – যে নামটিই বহন করে গভীর তাৎপর্য। প্রেরণা এবং অনুপ্রেরণার মাঝে সূক্ষ্ম পার্থক্য বিদ্যমান থাকলেও বহুলাংশে একই অর্থ বহন করে। লেখক এখানে প্রেরণা এবং অনুপ্রেরণার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বইয়ের নামকরণ করেছেন ‘অণু-প্রেরণা’। নামটি মূলত বইয়ের বিষয়বস্তু এবং ধরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বইয়ের নাম যেমন ব্যতিক্রমী, বইয়ের বিষয়বস্তু ও উপস্থাপনও ব্যতিক্রমধর্মী। পাঠক হয়তো আত্নউন্ময়ন, মোটিভেশনাল বই পড়েছেন; কিন্তু ‘অণু-প্রেরণা’ বইয়ের পাঠাভিজ্ঞতা পাঠকদের কাছে হবে সম্পূর্ণ নতুন ও ভিন্নধর্মী।
বইয়ের লেখক ওমর এফ নিউটন জানান, “পাঠক বইটির প্রথম পাতা উল্টানো থেকে শুরু করে বইটির শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পাবে নতুনত্বের স্বাদ। বইটির শব্দচয়ন, অলংকরণ এবং বিষয়বস্তু; সবকিছুতেই পাবেন ইউনিক অভিজ্ঞতা। যেগুলো পাঠক হয়তো পূর্বে অভিজ্ঞতা লাভ করেন নি।’’
বইয়ের নামকরণ কেন ‘অণু-প্রেরণা’?
বইটির লেখক ওমর এফ নিউটন ‘অণু-প্রেরণা’ নামকরণের ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
‘অণু’ মানে হচ্ছে ক্ষুদ্র বা অত্যন্ত ছোট বস্তু, আর ‘প্রেরণা’ মানে হচ্ছে মোটিভেশন বা উৎসাহ। বইটিতে রয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মোটিভেশনাল ও উৎসাহমূলক লেখার সম্ভার। ক্ষুদ্র প্রেরণার অণুসম এই বার্তাগুলো মানুষের জীবনের গভীরতম তাৎপর্যকে উপলব্ধি করতে সহায়ক হবে। দিশা দেখাবে আত্মশক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে জীবনের সম্ভাবনাকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার।
লেখক আরো জানান যে , ‘’আমাদের জীবনের অতি ক্ষুদ্র বিষয়গুলো, যেগুলো আমরা প্রায়শই উপেক্ষা করি, সেগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জীবনের সৌন্দর্য ও সাফল্যের চাবিকাঠি। আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য সম্ভাবনা, যা আমাদের নজর এড়িয়ে যায়, সেগুলোই জীবনের মোড় পরিবর্তনের পথ তৈরি করে। সে বিষয়গুলোই ‘অণু-প্রেরণা’ বইয়ে তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।’’
অণুসম ক্ষুদ্র বার্তা প্রদান করে প্রেরণার ভাণ্ডার নিয়ে বইটি লিখিত। আর সেজন্যই বইয়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘অণু-প্রেরণা’।
তিন অংশে বিভক্ত এই গ্রন্থ পাঠকের সম্মুখে উন্মোচন করবে পাঠের নতুন দিগন্ত। “অণু-প্রেরণা” গতানুগতিক ধারার বাহিরে ভিন্নধর্মী একটি গ্রন্থ, যা পাঠককে প্রদান করবে পাঠের নতুন অভিজ্ঞতা।
বইটি প্রকাশিত হচ্ছে স্বনামধন্য প্রকাশনা জ্ঞানকোষ প্রকাশনী থেকে। জ্ঞানকোষ প্রকাশনীর ২৪ নং প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাবে বইটি।
লেখক ওমর এফ নিউটনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘’এবার তোরা মানুষ হ’’ যথেষ্ট পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে। বইটির প্রকাশনা সংস্থা অনন্যা কবিতার বই ক্যাটাগরিতে ২০২৪ সালের বইমেলার বেস্ট সেলার বই হিসেবে গণ্য করে। এছাড়াও লিডিং অনলাইন বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান রকমারি ও বইফেরিতে গল্প ও কবিতার বইয়ে বেস্ট সেলিং প্রথম দশটি বইয়ের একটি ছিল ’’এবার তোরা মানুষ হ’’।
লেখকের বর্তমান আবাস আয়ারল্যান্ডেও ’’এবার তোরা মানুষ হ’’ বইয়ের প্রায় শত বই পাঠকেরা সংগ্রহ করেন।
নতুন বইয়ের বিষয়েও লেখক ওমর এফ নিউটন আশাবাদী। বইয়ের সফলতায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
রক্তাভ আগুনের লেলিহান শিখা অগ্নিমূর্তি ধারণ করে তীব্র বেগে ছড়িয়ে পড়ে বন বনাঞ্চলে। পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় যা কিছু পড়ে সম্মুখে। পাতা থেকে পাতায়, বৃক্ষ থেকে বৃক্ষে, বনাঞ্চল থেকে বনাঞ্চলে হাত ধরাধরি করে অগ্রসর হতে থাকে আগুনের লেলিহান জিহ্বা প্রসারিত করে। পশুপাখি, মানুষ, বাসস্থান যা কিছু আগুনের রুদ্রমূর্তির সামনে পড়ে সবই হয় ভস্মীভূত। আগুনের এই অগ্নিমূর্তিই হচ্ছে দাবানল, যেথায় আগুনের চোখে থাকে আগুন। যেখানে আগুন নিজেই খেলে।
সাধারণত বন বনাঞ্চল ও গভীর জঙ্গলে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকেই দাবানল বলে থাকে। এ ধরণের অগ্নিকান্ড বহুলাংশে অনিয়ন্ত্রিতই থাকে। দাবানলের তীব্রতা এতোই তীব্র থাকে যে, একে নিয়ন্ত্রণ কিংবা নেভানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও বেশীরভাগক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব।
দাবানল যখন ছড়ায়, তা দ্রুতবেগে ছড়ায়। দাবানলের আগুনের তাপদাহ এতোই তীব্র থাকে যে বহুদূর থেকেও প্রচণ্ড তাপ অনুভূত হয়, যার ফলে এর নিকটবর্তী হওয়াও সম্ভব হয় না।
দাবানলের আগুন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম। এমনকি নদীর উপর দিয়েও দাবানল ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। দাবানলের আগুন থেকে অগ্নিঝড়, টর্নেডো তৈরি হতে পারে এবং ছাই ৩ হাজার মাইল দূর পর্যন্ত চলে যেতে পারে। দাবানলে পোড়া সাইবেরিয়ার তাইগা বনের ধোঁয়া ৩ হাজার মাইল দূরে জাপানের ওসাকা শহরকে অন্ধকার করে দিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ব্ল্যাক ফ্রাইডে বুশ-ফায়ারের ছাই উড়ে গিয়ে পড়েছে ২ হাজার মাইল দূরের নিউজিল্যান্ডে।
দীর্ঘদিনের ক্ষুধার্তের মতোই দাবানলের আগুন। পশুপাখি, গাছপালা এমনকি মাটিতে অবস্থিত ছত্রাক সবই হচ্ছে আগুনের খাবার। যে পর্যন্ত না পুড়তে পুড়তে সব নিঃশেষ না হয়ে যায়, সে পর্যন্তই জ্বলতে থাকে আগুন।
দাবানলের উৎপত্তি হয় কীভাবে?
দাবানল সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে উৎপত্তি হয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বিস্তৃতি লাভ করে। সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে দাবানলের আবির্ভাব হয় বেশি। অতিরিক্ত খরার ফলে বনাঞ্চল ও পাহাড়ি অঞ্চলে পানি বাষ্পীভূত হয়ে তৈরি হয় পানির ঘাটতি। বাতাসে বিদ্যমান জলীয় বাষ্প শোষণ করে পূরণ করা হয় কিছু ঘাটতি। কিন্তু ক্রমাগত খরার ফলে মাটি ও বাতাস আদ্রতার পরিমাণ এতোই কমে আসে যে, বৃক্ষতরু সে সমতা রক্ষা না করতে পেরে অতিমাত্রায় দাহ্য হয়ে ওঠে।
দাহ্য অবস্থায় পাতায় পাতায় অথবা বৃক্ষে বৃক্ষে ঘর্ষণের ফলে আগুনের সৃষ্টি করে। আর আগুন একবার জ্বলে গেলে আর বনাঞ্চলে থাকি প্রচুর অক্সিজেন; এ দুইয়ের মিলিত প্রভাবে আগুন জ্বলে উঠে দাউ দাউ করে এবং মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যায় দিগ্বিদিক।
আর শুষ্ক দাহ্য অঞ্চলে একবার আগুন ছড়িয়ে পড়লে আগুনের লেলিহান শিখা তার হাত যতদূর বাড়াতে সক্ষম ততদূর ছড়িয়ে পড়ে।
দাবানলের সাথে যদি বাতাস এসে যোগ দেয় তাহলে তো আগুনের পোয়াবারো। বাতাসের সহায়তায় আগুন লাভ করে দ্বিগুণ শক্তি। উঁচু গাছের ক্যানপির আগুন অনায়াসে ছড়াতে পারে, উষ্ণ তাপক-শিখা ক্রমশ ওপরের দিকে উঠতে থাকে আর পোড়াতে থাকে ক্রমাগত।
এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে দাবানল সৃষ্টির আরেকটি অন্যতম কারণ বজ্রপাত। বজ্রপাতের ফলে বিভিন্ন স্থানে শুরুতে ছোট ছোট দাবানলের সৃষ্টি হয় এবং পরে তা বায়ুর ইন্ধনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অনেকক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবেও আগুন লাগতে পারে। যেমন কেউ ইচ্ছে করে লাগানো, ক্যাম্পফায়ারের আগুন বা সিগারেটের আগুন অথবা অসতর্কতাবশত আগুন লাগতে পারে। কিন্তু আগুন যেভাবেই লাগুক, কিন্তু বনাঞ্চলের আগুন ছড়ানোর জন্য দরকার হয় শুষ্ক ও দাহ্য পরিবেশ।
দাবানলের আধিক্য কোথায় বেশি?
সাধারণত বনাঞ্চল সমৃদ্ধ অঞ্চলেই দাবানলের আধিক্য দেখা যায় বেশি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বনাঞ্চল আমাজনে দাবানল নিত্য নৈমত্তিক ব্যপার। অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চল আফ্রিকার সাহারা মরু অঞ্চল, আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে দাবানলের আধিক্য রয়েছে। আমেরিকার বনাঞ্চলে বিভিন্ন উপায়ে আগুন লাগে বছরে প্রায় এক লক্ষ বার। যে কারণে পুড়ে যায় ২০ লক্ষ হেক্টর জমি।
প্রাকৃতিক দাবানলের পাশাপাশি অনেক কৃত্রিম দাবানলেরও সৃষ্টি করা হয়। গত তিরিশ বছরে দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন অরণ্য, আফ্রিকার কঙ্গো এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মিলিয়ন মিলিয়ন একর এলাকার বৃক্ষ ধ্বংস করা হয় কৃত্রিম অগ্নিকান্ড ঘটিয়ে। বনাঞ্চল ধ্বংস করে জায়গা অধিগ্রহণ, ফসল চাষাবাদের জমি বের করা ও মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এসব অগ্নিকান্ড ঘটানো হয়।
বাংলাদেশের বনাঞ্চলে বড় গাছের ঘনত্ব কম থাকায় প্রাকৃতিক দাবানল ঠিক তেমন একটা হয় না। তারপরেও কিছু অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার বেশিরভাগই মনুষ্যসৃষ্টি। তবে ভারতের বনাঞ্চলের কিছু অংশ দাবানল তৈরি করে গাছের ঘনত্ব ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে।
শেষ কথা
প্রাকৃতিক সৃষ্ট দাবানলের উপর হয়তো কারো হাত নেই, কিন্তু মনুষ্য সৃষ্ট দাবানলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। দাবানলে ক্ষতি সাধিত হয় মানুষের এবং অসহায় পশুপাখির।
রাজা নীরোর আমলে রোমের ৭০% ই পুড়ে খাক হয়েছিল, সেসময় নীরো বাঁশি বাজাচ্ছিল। কথিত আছে নীরো নিজেই আগুন লাগিয়েছিল।
নিজে আগুন লাগাই বা না লাগাই, আমরা যেনো নীরো না হয়ে যাই। প্রয়োজনে এগিয়ে যাই।
প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক। কোনো কমিটি ব্যতীত বাংলাদেশি কমিউনিটি লিমেরিক তার কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করে আসছিল। লিমেরিকের বাংলাদেশি কমিউনিটি ক্রমবর্ধমান যার পরিচালনার জন্য একটি টিম প্রয়োজন যারা কমিউনিটিকে সেবা দেয়া ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার ব্যপারে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন। তারই লক্ষ্যে গত ২৭ নভেম্বর ২০২৪ (বুধবার) নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ও তফসিল ঘোষণা করা হয়।
কমিটি গঠনের লক্ষ্যে লিমেরিকে গত ৮ অক্টোবর ২০২৪ এবং ৫ নভেম্বর ২০২৪ দুটি সভায় কমিটি গঠনের জন্য কমিউনিটির কাছ থেকে সর্বসম্মতি পাওয়া যায়। এবং ৫ নভেম্বরের মিটিং-এ ৯ সদস্য বিশিষ্ট সার্স কমিটি গঠন করে তাঁদের উপর কমিটি গঠন করার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। উক্ত সার্স কমিটি বিগত মিটিং-এর জরিফ ও পরবর্তীতে কমিউনিটির জরিপের উপর ভিত্তি করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, যদি কমিটির পদ পূরণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে তাহলে তা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে। সার্স কমিটিটিকে নির্বাচন কমিশনে রূপান্তর করা হয়।
সে বিবেচনায়, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে যাতে সাংগঠনিক কাঠামও প্রদান করে। ১১ টি পদের কোনো পদে যদি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থেকে থাকে তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়া ছাড়াই আগ্রহী প্রার্থীদের নিয়ে কমিটি গঠিত হবে। আগামী ২ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে শুরু হয়ে নমিনেশন সংগ্রহ, জমা, যাচাই বাছাই এবং প্রত্যাহারের পর বোঝা যাবে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া নির্বাচনের দিকে যাবে নাকি যাবে না।
আগামী ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখে নির্বাচনের দিন ধার্য করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এগুবে নির্বাচন কমিশন।
উক্ত সিদ্ধান্তগুলো সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
নিম্নে ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল প্রদান করা হলঃ
নির্বাচনী তফসিল
বাংলাদেশ কমিউনিটি লিমেরিক
সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ, লিমেরিকে বাংলাদেশি কমিউনিটির অধিকাংশ নাগরিকের মতামতের প্রেক্ষিতে ও কমিটি গঠনে লিমেরিকে বাংলাদেশি কমিউনিটির সকল প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক যাহাতে কমিটির নেতৃত্ব নির্ধারণ করিতে পারেন তাহার জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় রাখিবার লক্ষ্যে আমরা একটি নির্বাচন আয়োজন করিতে যাইতেছি। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং জনগণের মতামত প্রকাশের সুযোগ করিয়া দেওয়ার জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আজ আমরা বাংলাদেশি কমিউনিটি লিমেরিকের নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করিতে যাইতেছি। নির্বাচন কমিশন এই প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করিতে সম্ভাব্য সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
নির্বাচনের প্রতিটি ধাপ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করিবার জন্য আমরা প্রার্থী, ভোটার এবং সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করিতেছি। এই নির্বাচনী তফসিল আপনাদের সকলের জন্য একটি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করিবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করিবে।
আমরা আশা করি, সকল পক্ষ নির্বাচনী আচরণবিধি মানিয়া চলিবে এবং কমিউনিটিকে আরও সুদৃঢ় করিতে ভূমিকা রাখিবে। এই তফসিলের মাধ্যমে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল এবং সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করিতেছি।
সবাইকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আমি এই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করিতেছি।
সংগঠন: বাংলাদেশ কমিউনিটি লিমেরিক
নির্বাচন বর্ষ: ২০২৫
নির্বাচনের তারিখ: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (রবিবার)
ভোটগ্রহণের সময়: সকাল ৯:০০ টা থেকে বিকেল ৫:০০ টা পর্যন্ত
নির্বাচন প্রক্রিয়ার সময়সূচি
১. তফসিল ঘোষণা: নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ও নির্দেশিকা প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪।
২. ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ:
বৈধ ভোটারদের তালিকা প্রস্তুত ও সংশোধন: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ হইতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪।
৬. প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ:
সময়সীমা: ৯ জানুয়ারি ২০২৫ যাচাই-বাছাই শেষে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ।
৭. মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ:
তারিখ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, প্রত্যাহার ফি ২৫ ইউরো। যাহা নমিনেশন ফি থেকে কর্তন করা হইবে।
৮. চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ:
তারিখ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, প্রত্যাহার পরবর্তী চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ।
৯. ভোটগ্রহণের দিন:
তারিখ: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (রবিবার) সকাল ৯:০০ টা থেকে বিকাল ৫:০০ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ।
১০. ফলাফল ঘোষণা:
তারিখ: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ভোট গণনা শেষে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা।
কার্যকরী কমিটির সময়সীমাঃ সর্বোচ্চ ২ বছর।
নির্বাচনী অঞ্চলঃ লিমেরিক কাউন্টি এবং শ্যানন, নিনাহসহ লিমেরিকের ঘেঁষা পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চল।
বিঃ দ্রঃঅনাকাঙ্ক্ষিত কারণে উপরোক্ত সময়সীমায় পরিবর্তন আসিতে পারে। যে কোনো ধরনের পরিবর্তন নাগরিকদের অবহিত করা হইবে।
ধন্যবাদ, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আনোয়ারুল হক আনোয়ার ২৭-১১-২০২৪
প্রস্তাবিত সাংগঠনিক কাঠামো
লিমেরিক আয়ারল্যান্ডের ভূখণ্ডের মধ্যবর্তী একটি অঞ্চল। এ অঞ্চলে অন্যান্য অভিবাসীর সাথে বাংলাদেশি অভিবাসীদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশি কমিউনিটিকে সুন্দর ও সৌহার্দপূর্ণভাবে পরিচালিত করতে আশা করবো একটি যোগ্য কমিটি গঠিত হবে।
আয়ারল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচন সন্নিকটে। প্রত্যেক প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলো যার যার নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে হাজির হচ্ছে জনগণের সামনে। ইশতেহারের একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান হচ্ছে বাসস্থান। বাসস্থান সংকটে আইরিশ জনগোষ্ঠীর একাংশ অভিবাসীদের আগমন রোধের জন্য অত্যন্ত সক্রিয়। এদিকে অভিবাসীরা আয়ারল্যান্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আইরিশ ইকোনমির উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার। যার জন্য সামঞ্জস্য রক্ষায় অভিবাসী ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হচ্ছে কৌশলী পদক্ষেপ।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, এই নির্বাচনে ভোটারদের প্রধান সমস্যাগুলোর একটি হল অভিবাসন। মানুষ মূলত অভিবাসনের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে এটি বাসস্থান এবং চিকিৎসকের (GPs) মতো সেবাগুলোতে তাদের প্রবেশাধিকারকে প্রভাবিত করছে।
তাহলে, অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের বাস্তব চিত্র কী এবং রাজনৈতিক দলগুলো এ নিয়ে কী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে? তা নিয়েই আজকের বিস্তারিত এই রিপোর্ট।
সর্বশেষ সিএসও (CSO) ডেটা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিলের আগের ১২ মাসে প্রায় ৮০,০০০ অভিবাসী আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যায় যুক্ত হয়েছে। এই সময়ে ১,৪৯,০০০ জন আয়ারল্যান্ডে অভিবাসন করেছেন এবং প্রায় ৭০,০০০ জন দেশ ছেড়েছেন। এটি টানা তৃতীয় বছর যেখানে ১,০০,০০০ এর বেশি মানুষ আয়ারল্যান্ডে এসেছে।
২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে আয়ারল্যান্ডে অভিবাসনের এত বড় ঢল দেখা গিয়েছিল। তবে বর্তমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আবাসন সংকট এবং এ বৃদ্ধি সীমিত জনসেবা ব্যবস্থার সময়ে ঘটছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যারা প্রতি বছর আয়ারল্যান্ডে আসে তাদের বেশিরভাগই কাজ করতে এবং পড়াশোনা করতে আসে, এবং তাদের অনেকেই নিয়োগকর্তা (employer) এবং সরকারী নীতির মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে আনা হয়।
এ বছর এখন পর্যন্ত ৩৩,০০০ নতুন কর্মসংস্থান (work) পারমিট, ১৯,০০০ নতুন শিক্ষার্থী ভিসা (পার্ট টাইম কাজের অধিকারসহ) এবং ১৬,০০০ জন আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন।
এছাড়াও, ২০২২ সাল থেকে প্রতি বছর গড়ে ৪০,০০০ ইউক্রেনীয় আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করেছে।
এ বছর এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট ডিপার্টমেন্ট (DETE) দ্বারা ইস্যু করা ৩৩,০০০ কর্মসংস্থান পারমিট গত দুই বছরে ইস্যু করা ৭০,০০০ পারমিটের ওপর যুক্ত হয়েছে।
সিএসও-র তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে ৯০,০০০ এর বেশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের অভিবাসী, যারা কর্মসংস্থান পারমিটের প্রয়োজন নেই, আয়ারল্যান্ডে এসেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে এ বছর পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যায় ৫,০০০ নেট ক্ষতি হয়েছে। ৩৫,০০০ জন দেশ ছেড়েছেন, যখন ৩০,০০০ জন ফিরে এসেছেন। গত দুই বছরে প্রায় একই সংখ্যক লোক দেশ ছেড়েছেন এবং ফিরেছেন।
২০২২ এবং ২০২৩ এ বিগত যে কোন বছরের তুলনায় ওয়ার্ক পারমিটের পরিমাণ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ
অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের প্রধান চালিকা শক্তি কী?
অভিবাসনের সবচেয়ে বড় কারণ হলো কর্মসংস্থান এবং পড়াশোনা ও কাজের জন্য আগমন। নির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে আয়ারল্যান্ডের কর্মীদের অভাবে, অর্থনীতির ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার অভিবাসী কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করেছে।
এ বছর এখন পর্যন্ত ১১,০০০ এর বেশি মানুষ ভারত থেকে কর্মসংস্থান পারমিটে আয়ারল্যান্ডে এসেছেন, প্রায় ৪,০০০ জন ব্রাজিল থেকে, প্রায় ৩,০০০ জন ফিলিপাইন থেকে এবং প্রায় ১,৫০০ জন চীন থেকে।
ঠিক এক বছর আগে, সেই সময়ের ব্যবসা, কর্মসংস্থান এবং রিটেইল বিষয়ক মন্ত্রী Neale Richmond কর্মসংস্থান পারমিটের সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণ করেছিলেন, ওয়ার্ক পারমিট তালিকায় আরও ৪৩টি পেশা যোগ করেছিলেন।
এই পরিবর্তনগুলি কোম্পানির মালিক এবং শিল্প প্রতিনিধিদের অনুরোধে “ক্রিটিকাল স্কিলস” পেশা এবং সাধারণ দক্ষতার ক্ষেত্রে ঘাটতি পূরণের জন্য করা হয়েছিল। ক্রিটিকাল স্কিলস তালিকায় যোগ করা পেশাগুলির মধ্যে ছিল রাসায়নিক এবং প্রকল্প প্রকৌশলী, চক্ষু বিশেষজ্ঞ, আবহাওয়াবিদ এবং কমার্শিয়াল ম্যানেজার।
জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট তালিকায় ডিজেবিলিটি ও কেয়ার সেক্টরের ভূমিকা যেমন আবাসিক ব্যবস্থাপক, প্রজেক্ট অফিসার, এবং থেরাপিস্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া পরিবারের সহায়তা এবং সোশ্যাল কেয়ার ওয়ার্কার, ইলেকট্রিশিয়ান, কসাই/বুচার এবং শূকর খামারের সহকারী এবং ম্যানেজার যোগ করা হয়েছিল।
DETE-র তথ্য দেখায় যে এ বছর আগত সমস্ত অভিবাসী কর্মীর এক-তৃতীয়াংশ স্বাস্থ্যসেবা খাতে কাজ করতে এসেছে, মূলত আমাদের হাসপাতাল এবং নার্সিং হোমে। প্রধান হাসপাতালগুলি গুরুত্বপূর্ণ পদ পূরণে অভিবাসীদের ওপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, এ বছর এখন পর্যন্ত সেন্ট জেমস হাসপাতাল ২৮১ জন, কর্ক ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল ২৭১ জন, টালা হাসপাতাল ২৪৭ জন এবং ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল লিমেরিক ২১৪ জন অভিবাসী কর্মী চেয়েছিল। নার্সিং হোমগুলোও বড় সংখ্যায় কর্মী নিয়ে আসে। উদাহরণস্বরূপ, মওলাম হেলথকেয়ার, একটি নার্সিং হোম প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, এ বছর ৩৫৫ জন বিদেশি কর্মীর জন্য পারমিট পেয়েছে।
xr:d:DAFXL6gEX2o:42,j:1687426727,t:23011012
আইটি এবং আর্থিক পরিষেবাগুলি আগত অভিবাসী কর্মীদের আরও ২২%, খাদ্য/আবাসন পরিষেবা ৮% এবং নির্মাণ/পরিবহন ৬% অভিবাসী কর্মী নিয়োগ দেয়।
বড় কোম্পানিগুলো একসাথে শত শত অভিবাসী কর্মীর জন্য পারমিট চান। DETE-র তথ্য দেখায় যে এ বছর এখন পর্যন্ত মাংস উৎপাদন কোম্পানি ডন মিটসের জন্য ৬৮০টি কর্মসংস্থান পারমিট ইস্যু করা হয়েছে, অ্যামাজনের জন্য ৫০৮টি, গুগলের জন্য ৩২৩টি এবং আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং (EY)-এর জন্য ২৭৮টি।
পড়াশোনা এবং কাজ:
ভিসা নিয়ম অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের (non-EU) শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা (এবং ছুটির সময় পূর্ণকালীন) কাজ করার অনুমতি পায়। যারা আয়ারল্যান্ডের সেবা খাতের জনবলের একটি বড় অংশ গঠন করে।
এ বছর এখন পর্যন্ত বিচার বিভাগ (Department of Justice) ১৯,০০০ নতুন শিক্ষার্থী ভিসা ইস্যু করেছে।
মোট মিলিয়ে বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে ৬২,০০০ নন-ইউরোপীয় ইকোনমিক এরিয়া (EEA) এবং যুক্তরাজ্যের অভিবাসী শিক্ষার্থী অভিবাসন পারমিটে রয়েছে। (ইউরোপীয় ইকোনমিক এরিয়া বলতে ২৭টি ইইউ সদস্য রাষ্ট্র, নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং লিশটেনস্টাইন অন্তর্ভুক্ত।)
উচ্চশিক্ষা কর্তৃপক্ষ (Higher Education Authority) জানিয়েছে, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২৫,০০০ নন-ইইউ শিক্ষার্থী ছিল, যা শিক্ষার্থী গোষ্ঠীর ১১%। (ইইউ শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করলে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫% হয়।).
বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উৎস হিসেবে বিদেশি শিক্ষার্থী:
বিশ্ববিদ্যালয় নেতারা, যারা দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত সরকারি তহবিল না পাওয়া নিয়ে সমালোচনা করেছেন, এখন এই শিক্ষার্থীদের ওপর আয়ের জন্য ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
ইউসিডি-তে (UCD) এই বছর নন-ইইউ স্নাতক শিক্ষার্থীদের ফি ছিল €২১,৫০০ থেকে €২৭,৭২০, যেখানে আইরিশ সিটিজেনদের জন্য এটি ছিল মাত্র €২,২৪৫। রয়্যাল কলেজ অফ সার্জনস (Royal College of Surgeons)-এর নন-ইইউ মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের জন্য ফি ছিল বছরে €৬০,০০০।
প্রবাসী শিক্ষার্থীরা প্রায়শই ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসে থাকার চেষ্টা করে, যা আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আরেকটি আয়ের উৎস।
অস্থায়ী সুরক্ষা প্রাপ্তরা (টেম্পোরারি প্রটেকশন) এবং আশ্রয়প্রার্থীরা:
আয়ারল্যান্ডে অভিবাসীদের আসার আরেকটি প্রধান কারণ হলো অস্থায়ী সুরক্ষা ও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করা।
সিএসও (CSO) তথ্য অনুসারে, আয়ারল্যান্ডে প্রায় ৮২,০০০ ইউক্রেনীয় বাস করছে। ২০২২ সালের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ১,০৯,৫৬৬ ইউক্রেনীয়কে অস্থায়ী সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ইন্টারন্যাশনাল প্রোটেকশন অফিস (International Protection Office) জানিয়েছে, অক্টোবর পর্যন্ত এক বছরে ১৬,৬৪১ জন আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে। এটি ২০২১ সালের প্রায় ২,৬০০ এবং ২০২২-২৩ সালের প্রায় ১৩,০০০ আবেদনকারীর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
বিদায়ী সরকার যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ সরকারের ‘রুয়ান্ডা নীতি’-কে এর একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এই নীতির অধীনে, যুক্তরাজ্যে নির্দিষ্ট কিছু আশ্রয় আবেদনকারীদের রুয়ান্ডায় পাঠানো হতো তাদের দাবি প্রক্রিয়াকরণের সময়।
এই বছর যুক্তরাজ্যের নতুন লেবার সরকার নীতিটি বাতিল করেছে, তাই এটি বলা খুব তাড়াতাড়ি যে এই প্রবণতা উল্টে যাবে কিনা।
কেন এটি একটি নির্বাচনী ইস্যু?
জনগণের জন্য অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ এটি এমন সময় ঘটছে যখন আবাসন এবং জনসেবা নিয়ে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিবাসীরা অর্থনীতি ও সমাজে অবদান রাখে, তবে তাদেরও আয়ারল্যান্ডের জন্মগ্রহণকারীদের মতো একই পরিষেবা প্রয়োজন।
তবে, আশ্রয়প্রার্থীদের বা ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য আবাসন খরচ এবং স্থানীয় পরিষেবার উপর প্রভাব নির্বাচনী এলাকায় অনেক প্রার্থীর জন্য একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত তিন বছরে, কর্মসংস্থানের অনুমতিপ্রাপ্ত অভিবাসীদের প্রায় ৬০% ডাবলিন এবং আশপাশের কাউন্টি মীথ ও কিল্ডেয়ার-এ গিয়েছে, যেখানে ১৫-২০% অন্যান্য শহরে গিয়েছে।
শহরের কেন্দ্র এবং আশেপাশের এলাকাগুলো কাজ এবং শিক্ষার প্রধান গন্তব্য হলেও, এগুলোতেই আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং স্কুলের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা দেখা যায়।
জরুরি আশ্রয় এবং আবাসন সংকট:
আয়ারল্যান্ডে জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে আইরিশ নাগরিক ৫৩% এবং ইউকে বা ইইএ দেশ থেকে ২২%। বাকি ২৫% ইইএ বা যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে এসেছে।
জরুরি আশ্রয় প্রধানত শহরগুলোর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা সরবরাহ করা হয়। তবে, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য আলাদাভাবে আবাসন প্রদান করা হয়। এটি কিছু এলাকায় প্রতিবাদ এবং স্থানীয় পরিষেবার সংকট তৈরি করেছে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
বর্তমানে প্রায় ৩২,৬০০ আশ্রয়প্রার্থী রাজ্য-সরবরাহিত আবাসনে বাস করছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৯,০০০ শিশু। তাদের মধ্যে অনেকেই কেন্দ্র বা বিশেষভাবে ভাড়াকৃত হোটেলে অবস্থান করছে।
দলগুলোর প্রতিশ্রুতি:
কোনো প্রধান দল অভিবাসীর সংখ্যা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তবে তারা আশ্রয় আবেদন দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ এবং আবেদন ব্যর্থ হলে দ্রুত বহিষ্কারের পরিকল্পনা করছে।
এছাড়া, আইনি নথি ছাড়া যাত্রী বহনকারী এয়ারলাইন্স এবং পরিবহন সংস্থার জন্য জরিমানা বাড়ানোরও প্রস্তাব করছে।
প্রতিটি দল আন্তর্জাতিক সুরক্ষা আবাসন পরিষেবার (IPAS) কেন্দ্রগুলোর উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ব্যক্তিগত সরবরাহকারীদের ওপর নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনা করছে।
সরকারি দলগুলোর প্রতিশ্রুতি:
ফাইন গেইল একটি “দ্রুত-প্রক্রিয়ার ভিসা” চালু করবে, যাতে দক্ষতার ভিত্তিতে অভিবাসন বাড়ানো যায়। তারা শিক্ষা এবং অভিবাসন নীতির মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করবে এবং বৈষম্যবিরোধী কর্মসূচি চালু করবে।
বিরোধী দলগুলোর প্রস্তাব:
সিন ফেইন এবং অন্যান্য কেন্দ্র-বাম দলগুলো অভিবাসীদের অধিকারের উন্নয়ন এবং একটি নতুন অভিবাসন সংস্থা গঠনের পরিকল্পনা করেছে।
এই প্রস্তাবনাগুলোর লক্ষ্য একটি দক্ষ এবং সমতাপূর্ণ অভিবাসন প্রক্রিয়া তৈরি করা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে অভিবাসীদের আরও ভালোভাবে সংযুক্ত করা।
অভিবাসীদের জন্য অভিবাসী নীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার দ্বারা প্রত্যেক অভিবাসী প্রভাবিত হবে। সামনে যে সরকার গঠন করবে, তাদের প্রণীত নীতি অভিবাসীদের উপর প্রভাব পড়বে।
পর্তুগাল সরকার ৩৫ বছরের নিচে ব্যক্তিদের জন্য ট্যাক্স 0% করার পরিকল্পনা নিয়েছে, যা মূলত তরুণদের অভিবাসন প্রতিরোধ করতে এবং পর্তুগালে বিদেশিদের বসবাসের জন্য উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
পর্তুগালের যুব অভিবাসন সংকট
পর্তুগালের যুবসমস্যা গুরুতর রূপ নিয়েছে, পর্তুগালের তরুণরা বিপুল সংখ্যায় দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে সংখ্যাটি ভিন্ন হতে পারে, তবে অনুমান করা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কয়েক লক্ষ তরুণ দেশ ছেড়েছে।
একটি হিসাবে দেখা যায়, ২০০৮ সাল থেকে ১৫-৩৫ বছর বয়সী প্রায় ৩৬০,০০০ মানুষ পর্তুগাল ছেড়ে গেছে। ১০.৬ মিলিয়নের একটি ছোট দেশের জন্য এটি এক বিপর্যয়কর মেধাপাচার।
এই অভিবাসনের মূল কারণ অর্থনৈতিক। যুব বেকারত্ব প্রায় ২০%, এবং যারা কাজ করছেন তাদের অনেকেই নিম্নমানের বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
লিসবনে গড় মাসিক বেতন প্রায় €১,৫০০। এর মধ্যে একটি ছোট স্টুডিও ভাড়া করতেই প্রায় €৮০০ খরচ হয়। অর্থাৎ, এই আয়ের সাথে জীবন চালানো কঠিন।
পর্তুগালের সরকার এই সংকটের সমাধানে একটি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। ৩৫ বছরের নিচে আয়ের উপর থেকে আয়কর পুরোপুরি মওকুফ করা হচ্ছে।
আয়ারল্যান্ডের অবস্থা
আয়ারল্যান্ডের তরুণরা আবাসন সমস্যায় ভুগছেন, যা পর্তুগালের মতো অভিবাসনের মাত্রায় পৌঁছাতে বাধ্য করতেছে।
১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী প্রায় ১০ জনের মধ্যে ১ জন আয়ারল্যান্ড ছেড়ে যাওয়ার জন্য সক্রিয়ভাবে পরিকল্পনা করছেন। আর ১৬% যেতে চান, কিন্তু যেতে পারছেন না, যা আয়ারল্যান্ড থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে এমন একটি বড় অংশের জনগণের দিকে ইঙ্গিত করে।
২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১২ মাসে ৬৯,০০০ মানুষ আয়ারল্যান্ড ছেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ৬৪,০০০ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এটি ২০১৫ সাল থেকে সবচেয়ে বেশি অভিবাসন সংখ্যা ছিল।
তরুণরা এই অভিবাসনের একটি বড় অংশ – মোট অভিবাসীদের ৪৮%, বা ৩৩,৫০০ জন, যার মধ্যে ২৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ছিল।
১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী গ্রুপেও একই ধরনের বৃদ্ধি হয়েছে – ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরে এই গ্রুপের ২৪,৬০০ মানুষ আয়ারল্যান্ড ছেড়ে গেছে, যা ২০১৯ সালের ১৭,২০০ জনের তুলনায় অনেক বেশি।
আয়ারল্যান্ডেও তরুণদের অনেকে উচ্চ বাসা ভাড়া এবং সঞ্চয় করতে না পারার সমস্যার মুখোমুখি। যদিও আয়ারল্যান্ডে গড় বাৎসরিক আয় প্রায় €৪৫,০০০ এবং এটি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু বাসা ভাড়ার খরচ অনেক বেশি। গড় ভাড়া €১,৬০০-এর ওপরে, যা তরুণদের আর্থিক সাশ্রয়ে বাধা দেয়।
যুব অভিবাসন বৃদ্ধি পেলেও, আয়ারল্যান্ডে এখনও পর্তুগালের মতো মেধাপাচারের মাত্রা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু সমস্যা বাড়তে থাকলে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।
সম্ভাব্য সমাধান
পর্তুগালের মতো উদ্যোগ, যেমন আয়কর মওকুফ, আয়ারল্যান্ডেও বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এটি বাস্তবায়নের ব্যয় অনেক বেশি হবে। আয়ারল্যান্ডের জন্য, আরও ছোট স্কেলের পরিকিল্পনা বেশি বাস্তবসম্মত হটি পারে, অন্তত পর্তুগালের পরিকল্পনার ফলাফল দেখার আগে দেখা যেতে পারে।
গত ১২ই নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি (ডাবলিন) বাংলাদেশের জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন লক্ষ্যে ডাবলিনের রেড কেউ হোটেলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
উক্ত সভা পরিচালনা করেন মীর হাবিবুর রহমান এবং ইমরান শুভ। সভা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জাকারিয়া প্রধান ও প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রদলের সাবেক ছাত্রদলের আহবায়ক ফাহিমা আক্তার চৌধরী মুকুল এবং প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আয়ারল্যান্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি হামিদুল নাসির।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আয়ারল্যান্ড বিএনপির সাবেক আহবায়ক মনিরুল ইসলাম মনির। এছাড়া জসিম উদ্দিন, আব্দুর রশিদ, সবুজ মিয়া,মনিরুজ্জামান মনির, আরিফুল ইসলাম আরিফ, আনিস সুলতান বাচ্ছু, আব্দুর রহিম ভূঁইয়া, সাকিল চৌধরী, শাহ আজমল হোসেন, আব্দুস সহিদ, হারুন ইমরান, ইমরান শুভ, আরিফুল হক, জেনন ভূঁইয়া, মিষ্টার নাসির, রুশন আলী, জসিম উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, এমাদ আহমেদ, রায়হান উদ্দিন রাসেল, আলামিন রিতু, জাফর উদ্দিন, শেফায়েত অনয়, পাপলু সহ অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি জনাবা ফাহিমা আক্তার মুকুল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব এবং পরবর্তী বাংলাদেশের শহীদ জিয়ার জাতীয়তাবাদ এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা সফলতা নিয়ে স্মৃতিচারন করেন। জনাব হামিদুল নাসির বলেন, আমরা ৭ই নভেম্বর ১৯৭৫ সালে যদি বিপ্লবকে সত্যিকারের সফল করতে পারতাম তাহলে ২০২৪ সালে আবার রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের প্রয়োজন হতোনা। শেখ পরিবারের বিরুদ্ধে আমাদের বারবার বিপ্লব করতে হচ্ছে আর প্রতিবার জিয়া পরিবার সেই বিপ্লবে সক্রিয়ভাবে ভুমিকা রাখতে হচ্ছে। আগামীতে যদি আমরা ২৪শের বিপ্লবকে সফল করতে না পারি তাহলে ফ্যসিবাদ আবার সক্রিয় হবে। দেশনায়ক তারেক রহমানকে আমরা সকলে সহযোগিতা করলে হয়তো সফল গনতান্ত্রিক একটি বাংলাদেশ বিনির্মানে কার্যকরী হবো।
সভায় নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহনের মাধ্যমে ডাবলিন বিএনপিকে ধন্যবাদ এবং জিয়া পরিবারের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থনে এক হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
সভার সভাপতি জনাব জাকারি প্রধান উপস্থিত সকল নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশি বংশদ্ভুত তরুণ প্রজন্ম শিক্ষা ও খেলাধুলায় সফলতার জ্যোতি ছড়িয়ে এসছে। তাঁদের অবদানকে সন্মান জানিয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটি লিমেরিক প্রদান করলো সম্মাননা সনদ ও পদক।
আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রথম মেয়র জন মোরান সনদ ও পদক তুলে দেন পদক গ্রহণকারীদের হাতে। এছাড়াও লিমেরিক চেম্বার ও কমার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ডি রায়ান এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান ও দায়িত্বরত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের হাত থেকেও সনদ ও পদক সংগ্রহ করেন পদক গ্রহীতারা।
অনুষ্ঠান আয়োজনে লিমেরিক বাংলাদেশি কমিউনিট সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করে। বাংলাদেশি কমিউনিটি লিমেরিকের পক্ষ হতে ব্যতিক্রমধর্মী এ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ ও সার্বিক পরিকল্পনা করেন ABAI এর বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং BSAI এর সাবেক প্রেসিডেন্ট জনাব মনিরুল ইসলাম মনির। এর পূর্বে জনাব মনির কমিউনিটি WhatsApp গ্রুপ এবং ৮ অক্টোবর সাউথ কোর্ট হোটেলে একটি কমিউনিটি মিটিং-এ এই অনুষ্ঠানের সম্মতি গ্রহণ করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ৭৭ টি পদক ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। তিনটি ক্যাটাগরি হচ্ছে, BSAI এর টানা তিনটি ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়নশিপসহ ফুটবলে অবদানের স্বাক্ষরস্বরূপ লিমেরিক ফুটবল টিম, BSAI এর ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ২০২৪ সালের চ্যাম্পিয়ন সহ তিনবারের চ্যাম্পিয়ন লিমেরিক ক্রিকেট টিম এবং ২০১৯ সাল থেকে লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তিন্ন সকল শিক্ষার্থীকে সন্মাননা প্রদান।
সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় লিমেরিক সিটি এন্ড কাউন্টি কাউন্সিল থেকে যেখানে মেয়র জন মোরান ও কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের সাক্ষর রয়েছে। যে সার্টিফিকেটটি সারাজীবনের একটি স্মৃতি ও সুভিনিয়র হয়ে থাকবে। এছাড়াও সবাইকে নাম খোদাইকৃত সুদৃশ্য ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
মেয়র জন মোরান ও ডি রায়ান ছাড়া অন্য যে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা হচ্ছেন, কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার, ABAI এর প্রেসিডেন্ট ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিরদার, BSAI এর প্রেসেডেন্ট জনাব চুন্নু মাতব্বর ও ABAI এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ারসহ সন্মাননা গ্রহণকারীদের পিতামাতা ও লিমেরিকের সম্মানিত অধিবাসীগণ।
ABAI এর ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জনাব মোজাম্মেল হকের কুরআন থেকে তিলয়াত দিয়ে অনুষ্ঠানটি র সূচনা হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জনাব মনিরুল ইসলাম মনির ও সহযোগী হিসেবে থাকেন জনাব আজমল হোসাইন ও জনাব ওমর ফারুক নিউটন। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের ছবি তুলে সহায়তা করেছেন জনাব মিজানুর রহমান নাসিম ও অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন জনাব তৌহিদ খান। অনুষ্ঠানটিতে খাবার ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন লিমেরিকের বাংলাদেশি কমিউনিটি।
সম্মাননা পেয়ে সবাই খুবই উচ্ছ্বসিত হন। এই সম্মাননা তাঁদেরকে ভবিষ্যতে সফল হতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
গত ২৭সে অক্টোবর রোজ রবিবার আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চল থেকে আগত সকলকে নিয়ে এক বিশাল মিলনমেলা উদযাপিত হয়। প্রথম বারের মত এতো লোক নিয়ে নোয়াখালী অঞ্চলের কোন একটি মিলনোৎসবের আয়োজন ছিল এটি। অনুষ্ঠাননটি কাউন্টি ওফালির তুলামরের মুকোলাহ কমিউনিটি সেন্টারের গ্রান্ড হলে আয়োজিত হয়েছে এই অনুষ্ঠানটি।
সকাল এগারোটা থেকে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়ে বিকেল ৫ টা ত্রিশ মিনিটে পরিসমাপ্তি ঘটে। আয়ারল্যান্ডের সকল প্রান্তের জনসাধারণের দূরত্বের কথা মাথায় রেখে দ্বীপ রাষ্ট্রটির মধ্যবর্তী এলাকার এই ভ্যান্যুটি নির্বাচন করেন আয়োজকবৃন্দ।
লক্ষীপুর জেলার কমলনগর উপজিলার জনাব হারুন ইমরানের কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ও সঞ্চালনায় ছিলেন জনাব ডঃ ফরহাদ আহমেদ, জনাব ওমর এফ নিউট ও জনাব আব্দুর রাহিম ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানটিকে সফলভাবে আয়োজন করতে জনাব জহিরুল ইসলাম জহির, জনাব সাইফুল ইসলাম, জনাব শাহ রিয়ার, জনাব মীর মামুন, জনাব সারোয়ার মোর্শেদ, জনাব কাজী শাহ আলম, জনাব হারুন ইমরান, জনাব জসিম উদ্দিন, জনাব ফরহাদ আহমেদ, জনাব ওমর এফ নিউটন, জনাব আব্দুর রাহিম ভূঁইয়া ও অনেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন।
আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টি থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩২৫ জন এই অনুষ্ঠানে আসার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল। আয়োজকদের মত অনুযায়ী অনুষ্ঠানটিতে সাড়ে তিনশ জন অতিথী যোগদান করেন।
মিলনোৎসবে খাবার দাবারের আয়োজনে ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এক রাজকীয়তার ছাপ পরিলক্ষিত হয়। আগত অতিথিবৃন্দের জন্য দুপুরের খাবারের জন্য বুফেট সার্ভিস আয়োজন করা হয়েছিল।অনুষ্ঠানের ক্যাটারিং সার্ভিসের দায়িত্ব দেয়া হয় স্থানীয় শিশির রেস্টুরেন্টকে। খাবার শেষে দই ও মিষ্টি বিতরণ করা হয় সকলের মাঝে।
বৃহত্তর নোয়াখালীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর প্রজেক্টরে দেখানো হয় একটি ডকুমেন্টারি। ডকুমেন্টারিতে বৃহত্তর নোয়াখালীর ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদেরকে তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হয়। এছাড়াও ছিল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর এক্সিবিশন। মিস সুজানার নেতৃত্বে পরিবেশিত হয় নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় একটি কোরাস। কোরাসটিতে অংশ নেন আগত অতিথিবৃন্দ। এছাড়া নারী পুরুষ ও বাচ্চাদের জন্য অনেক মজার মজার খেলার আয়োজন ছিল। ছিল নোয়াখালীর হাসির কৌতুক ও তরুণ কবি ওমর এফ নিউটনের লেখা ও তাঁর নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় রচিত কবিতার আবৃত্তি
রয়েল ডিস্ট্রিক্ট খ্যাত বাংলাদেশের দক্ষিণের অঞ্চল নোয়াখালী জেলা। এই জেলাটি বাংলাদেশের অন্যতম নদী মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত। ফেনী, লক্ষীপুর ও নোয়াখালী একত্রে বৃহত্তর নোয়াখালী নামে পরিচিত। অতীতে এই তিনটি জেলা মিলে নোয়াখালী জেলা ছিল, এরপর তিনটি জেলা আলাদা জেলা গঠন করে। বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলার মানুষজন এই অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন করেন। অনুষ্ঠানে আগত নারী পুরুষ, শিশু কিশোর সকল অতিথিই অনুষ্ঠানটিকে প্রানভরে উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে পরিচালিত খেলায় বিজয়ী সকল অংশগ্রহণকারীকে পুরস্কার প্রদান করেন আগত অতিথিবৃন্দ থেকে বিশেষ অতিথিবৃন্দ।
বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি ইন আয়ারল্যান্ডের এই মিলন মেলায় আগত সকল অতিথিকে অনুষ্ঠানে এসে সফল করায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান জনাব সাইফুল ইসলাম ও আয়োজক বৃন্দ।
যুক্তরাজ্যে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে পরবর্তী হাইকমিশনার হিসেবে আবিদা ইসলামকে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি বর্তমান হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের স্থলাভিসিক্ত হচ্ছেন। আবিদা ইসলাম বর্তমানে মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। এর আগে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব এবং লন্ডন, ব্রাসেলস, কলকাতা ও কলম্বোর বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে নিযুক্ত ছিলেন। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগেও কাজ করেছেন তিনি।
আবিদা ইসলাম বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
আগস্ট ২০২১ থেকে তিনি ইউনাইটেড মেক্সিকান স্টেটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মেক্সিকোয় দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে ২০১৭ সাল থেকে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফাস্ট সেক্রেটারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ২০০৪ থেকে ২০০৬ কলম্বো, ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্রাসেলসে কূটনৈতিক মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। উক্ত সময়গুলোতে তিনি দূরপ্রাচ্য, দক্ষিণ—পূর্ব এশিয়া, আমেরিকা—প্রশান্ত মহাসাগরীয়, আন্তর্জাতিক সংস্থা, ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং প্রশাসন সহ ঢাকার পররাষ্ট্র বিষয়ক বিদেশী কূটনৈতিক মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে এবং ২০১৪ – ২০১৫ সালে তিনি ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পূর্বে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমেরিকাস উইং এর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্রিটেনে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের ঘোষণায় বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকা ইনকিলাবের একটি রিপোর্টে আবিদা ইসলামকে হাসিনাপন্থি বলে খবর প্রকাশ করে। খবরে বলা হয় তিনি ছিলেন উগ্র ও বদ মেজাজি ছিলেন। সংবাদে আরো উল্লেখ করা হয় তিনি কট্টর আওয়ামী ইন্টারেস্টে বেশি মনোযোগী ছিলেন। খবরের লিংকটি এখানে দেখুনঃ দৈনিক ইনকিলাব
এখন দেখার বিষয় লন্ডনস্থ হাই কমিশনে আবিদা ইসলামের ভূমিকা কী অন্য সময়ের মতো ও অন্যান্যদের মতো রাজনৈতিকই থাকবে নাকি অরাজনৈতিক কালচার গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। আমরা অতীতে দেখেছি, প্রশাসন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আজ্ঞাবহ থাকে। যা সম্পূর্ণরূপে অপেশাদারিত্বের লক্ষণ।
আবিদা ইসলামের পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পারি, তিনি অভিজ্ঞতায় ভরপুর একজন ব্যক্তি। তাঁর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আশা করবো বাংলাদেশের সাথে ইউকে এবং আয়ারল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং প্রবাসীরা উপযুক্ত সেবা পেতে সক্ষম হবেন।
কে এই আবিদা ইসলাম?
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম আবিদা ইসলামের। বাবা প্রয়াত নজরুল ইসলাম প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মা সেলিনা ইসলাম ছিলেন উন্নয়নকর্মী। ঢাকার শহীদ আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি, হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন আবিদা। এরপর অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচ থেকে ১৯৯৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন আবিদা।
ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তান; আরশাদ আহমেদ, আয়েশা আহমেদের জননী আবিদা।
রেকর্ড সংখ্যক ই-পাসপোর্ট এবং নো ভিসার আবেদন গ্রহণের মধ্য দিয়ে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন আয়ারল্যান্ডের অন্যতম শহর লিমেরিকে কনস্যুলার প্রদান করে গত ১১ এবং ১২-ই অক্টোবর। দীর্ঘদিন কনস্যুলার সেবা না পাওয়ায় এবং ভৌগলিকভাবে মাঝামাঝি শহর হওয়ায় লিমেরিকের কনস্যুলার সেবা নিতে সেবা গ্রহণকারীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়।
প্রবাসীদের কাছে পাসপোর্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি। পাসপোর্টের মেয়াদ ভ্যালিড থাকা অত্যন্ত অপরিহার্য বিষয়। পাসপোর্টের মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বা হওয়ার পথে থাকলে বিদেশে অবস্থিত দূতাবাসের শরণাপন্ন হতে হয়। তবে অনেক দেশে দূতাবাস না থাকার কারণে পার্শ্ববর্তী নিকটতম যে দেশে দূতাবাস আছে, সে দেশের দূতাবাস ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলার সেবা প্রদান করে থাকে। আয়ারল্যান্ডও তেমনি একটি দ্বীপরাষ্ট্র যেখানে দূতাবাসের অনুপস্থিতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ ইউকে কনস্যুলার সেবা প্রদান করে থাকে।
লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন দীর্ঘ ২৫ বছর আয়ারল্যান্ডে কনস্যুলার সেবা দিয়ে আসতেছে। তন্মদ্ধে অনেক বছর কনস্যুলার সেবাটি রাজনৈতিক প্রভাবযুক্ত ছিল। তবে বহু বছর পর বাংলাদেশ হাই কমিশন ইউকে আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় সংঘটন অল বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (ABAI) এর মাধ্যমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কনস্যুলার সেবা সফলভাবে সম্পন্ন করে।
যেসব সেবা প্রদান করা হয়ঃ
ক)ই-পাসপোর্টঃ ২১৪ টি ই-পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা হয়।
খ)নো-ভিসা রিকোয়ার্ডঃ ১৯৭ টি NVR এর জন্য পাসপোর্ট গ্রহণ করা হয়।
গ)বার্থ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটঃ ২৪ টি BRC বা বার্থ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট এর আবেদন গ্রহণ করা হয়।
ঘ)পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি (POA): ৬ টি
ঙ)অ্যাটেস্টেশনঃ ১০ টি
চ)ভিসাঃ ২ টি
ABAI কতৃক যে সহায়তা করা হয়
লিমেরিক বাংলাদেশি কমিউনিটির সহায়তায় অল বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড কনস্যুলার সেবা প্রদান করতে আসা অফিসারদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। স্থান প্রদান করে ABAI কে সহযোগিতা করে Student Campus College. কলেজের কার্যক্রম সাজানো, যাবতীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ, সাহায্যকারী লোকবল, সেবা পরিচালনা এবং অফিসার, ভলান্টিয়ার ও সেবা গ্রহণকারীদেরকে আপ্যায়ন করার যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করে আবাই।
ABAI এর যে সেবাটি প্রদান সবার নজর কাড়ে তা হচ্ছে IT, অ্যাডভাইজরি, প্রিন্টিং এবং ফটোকপি সেবা। দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই অনলাইন ফর্ম পূরণ কিংবা প্রিন্ট/ফটোকপি করে না আসার কারণে যাতে কেউ সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সে জন্যই এ উদ্যোগটি গ্রহণ করে। অন্তত ১৫০ জনকে IT সেবা, সহস্রাধিক প্রিন্ট এবং ফটোকপি প্রদান করা হয় সেবা গ্রহণকারীদের। সেই সাথে বিভিন্ন উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান করে IT সেবাদানকারী টিমটি। আবাই এবং লিমেরিকের ভলান্টিয়ার দ্বারা গঠিত টিমটি দুই দিন প্রচণ্ড ব্যস্ত সময় পার করে। Student Campus College এ বিষয়ে যথেষ্ট সহায়তা করে।
হাই কমিশনের অফিসারদের উপর চাপ কমাতে পূর্বে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কাগজপত্র যাচাই করে নেয়ার জন্য আবাই কতৃক অভিজ্ঞ টিম প্রদান করা হয়।
হাই কমিশনারের উপস্থিতি ও আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস স্থাপনের আপডেট
বাংলাদেশ হাই কমিশন ইউকেতে দীর্ঘ ছয় বছর দায়িত্ব পালন করা হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম সেবা প্রদানের দুই দিনই উপস্থিত ছিলেন। তিনি কনস্যুলার সেবার খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করেন ও বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাত করেন। সাইদা মুনা তাসনিম খুব শিগ্রই বাংলাদেশে বদলি হয়ে যাবেন। তিনি জানান, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নতুন হাই কমিশনারকে প্রদান করবেন। তিনি আরো জানান, আয়ারল্যান্ডে চলমান দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্তও নতুন হাই কমিশনারকে অবহিত করবেন।
তিনি আয়ারল্যান্ডের বিজনেস ও কমার্স ডিপার্টমেন্টের সাথে সাক্ষাত করতে চাইলে লিমেরিকের কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার বিজনেস ও কমার্স এর চিপ এক্সিকিউটিভ অফিসার ডি রায়ানের সাথে সাক্ষাত করিয়ে দেন। জনাব তালুকদারের অনুরোধে ডি রায়ান কনস্যুলার সেবাস্থল পরিদর্শন ও মুনা তাসনিমের সাথে মিটিং করেন।
সাইদা মুনা তাসনিম অন্তর্বর্তী সরকার থাকাবস্থায়ই আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।
বিজনেস & কমার্স CEO Dee Ryan
কনস্যুলার সেবায় যারা প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন
ABAI সার্বিক তত্ত্বাবধানে কনস্যুলার সেবাটি পরিচালিত হয়। যেহেতু সেবাস্থল লিমেরিকে ছিল, সেহেতু লিমেরিকের নির্বাচিত ছয়জন ABAI এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং ABAI এর অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতায় কনস্যুলার সেবাটি সমাপ্ত হয়। এছাড়াও লিমেরিক ও অন্যান্য কাউন্টির অভিজ্ঞ ভলান্টিয়ারগণ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
লিমেরিকের আবাই সদস্যরা হলেন জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার, জনাব মনিরুল ইসলাম মনির, জনাব শাহিন রেজা, জনাব মোজাম্মেল হক, জনাবা মোসাম্মৎ শম্পা লিলি ও জনাবা শিরিন আক্তার।
এছাড়াও আবাইয়ের অন্য যারা প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন তন্মদ্ধে জনাব আজিজুল হক মাসুদ, জনাব কাজী শাহ আলম, জনাব সারোয়ার মোরশেদ, জনাব এস এম হাসান, জনাব রাব্বি খান অন্যতম। আবাইয়ের সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার সেবা কার্যক্রমের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করেন। আবাইয়ের সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের সাথে দূতাবাস সংক্রান্ত বিষয়াবলী নিয়ে আলোচনা করেন।
লিমেরিকের বাহিরে থেকে জনাব ইকবাল মাহমুদ ও জনাব হা সরকার ঝিনুক তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে উভয় দিনেই যথেষ্ট সহযোগিতা করেন।
ABAI এর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন
কনস্যুলার সেবাকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য আবাই কতৃপক্ষ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। যারা সেবা নিতে এসে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়েছে এবং অনেকে সেবা নিতে পারেন নি ডকুমেন্টের ঘাটতির কারণে সবার প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে সেবার মান আরো বৃদ্ধি করতে আবাই বদ্ধ পরিকর।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশ হাই কমিশনকে সহায়তা করে পালাক্রমে ABAI আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় সেবা দেয়ার জন্য আশাবাদী।
প্রকাশিত হল আয়ারল্যান্ডের ২০২৫ সালের বাজেট। নতুন এনার্জি ক্রেডিট, বর্ধিত মিনিমাম বেতন ও রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিটসহ রয়েছে চমকপ্রদ কিছু পরিবর্তন এই বাজেটে।
ফাইনান্স মিনিস্টার জ্যাক চ্যাম্বার এবং পাবলিক এক্সপেন্ডিসার মিনিস্টার পাসকাল ডনহু আজ ১ অক্টোবর ২০২৪ বার্ষিক বাজেট প্রকাশ করেন।
২০২৫ বাজেটে জনসাধারণের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে এমন কিছু বাজেটের অংশ তুলে ধরা হলঃ
১) মিনিমাম ওয়েজ ঘণ্টায় €১৩.৫০ এ উন্নীত করা হয়েছে। যা বর্তমান রেট €€১২.৭০ থেকে ৮০ সেন্ট বাড়ানো হয়েছে।
২) €১২৫ ইউরোর দুটি এনার্জি ক্রেডিট প্রদান করা হবে আগামী শীত মৌসুমে।
৩) রেন্ট রিলিফ গত বছরের ন্যায় এ বছরেও প্রদান করা হবে। তবে রেন্ট রিলিফ €৭৫০ থেকে উন্নীত করে €১০০০ করা হয়েছে। জয়েন্ট অ্যাসেসড এর জন্য €২০০০।
৪) ২০% ট্যাক্স রেট ব্যান্ড €৪৪,০০০ পর্যন্ত করা হয়েছে। ২০২৪ বাজেটে ছিল €৪২,০০০ পর্যন্ত।
৫) সাপ্তাহিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার, জব সিকার অ্যালাউন্স এবং পেনশন €১২ করে বাড়ানো হয়েছে।
৬) গ্যাস ও ইলেক্ট্রিসিটি এর ভ্যাট রেট আগামী ১২ মাস ৯% ই বলবৎ থাকবে।
৭) নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে ডাবল চাইল্ড বেনিফিট এবং ফস্টার কেয়ার অ্যালাউন্স প্রদান করা হবে।
৮) বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর থার্ড লেভেল ফিস €১০০০ করে কমানো হবে।
৯) ২০ টি সিগারেট যুক্ত প্যাকেটের দাম €১ করে বাড়ানো হবে এবং ই-সিগারেটের উপর কর সংযোজিত হবে।
১০) USC রেটের পরিবর্তন হবে। কোম্পানি থেকে €১,৫০০ ইউরো পর্যন্ত ট্যাক্স ফ্রি বোনাস/ভাউসার।
১১) পার্সোনাল ট্যাক্স ক্রেডিট €১২৫ ইউরো বৃদ্ধি পাবে। নতুন ইনকাম ট্যাক্স ক্রেডিট হবে €২,০০০।
১২) হোম কেয়ারার অ্যালাউন্স সিঙ্গেল পার্সন €৬২৫ এবং দম্পতির জন্য €১,২৫০ করা হবে জুলাই ২০২৫ থেকে ।
১৩) ছোট বাসা মালিক/ব্যবসায়ীদের জন্য থাকবে স্বল্প মেয়াদি ট্যাক্স রিলিফ। হেল্প টু বাই স্কিম ২০২৫ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
১৪) নবজাত শিশুদের জন্য একটি €৪৫০ ইউরো প্রদান করা হবে জানুয়ারি থেকে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে সাধারণ আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশে সংঘটিত যুগান্তকারী পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণের শুরুতেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্ব চেয়েছিল। আমাদের জনগণ একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যার জন্য আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন উৎসর্গ করেছিল।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গ
এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ আমি বিশ্বসম্প্রদায়ের এ মহান সংসদে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাদের গণমানুষের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের অফুরান শক্তি আমাদের বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজের আন্দোলন প্রথমদিকে মূলত ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে তা গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। এরপর সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখেছে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ একনায়কতন্ত্র, নিপীড়ন, বৈষম্য, অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজপথ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল।
ছাত্র-জনতা তাদের অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্তি এনে দিয়েছে। তাদের এই সম্মিলিত সংকল্পের মধ্যেই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নিহিত, যা এ দেশটিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাঝে একটি দায়িত্বশীল জাতির মর্যাদায় উন্নীত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এই গণ-আন্দোলন রাজনৈতিক অধিকার ও উন্নয়নের সুবিধাবঞ্চিত বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করেছে বলে উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারত্ব চেয়েছিল। আমাদের জনগণ একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যার জন্য আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন উৎসর্গ করেছিল।
আন্দোলনকারীদের প্রজ্ঞা, সাহস ও প্রত্যয়ে ভূয়সী প্রশংসা করে ড. ইউনূস বলেন, বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করে বুক পেতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল আমাদের এই তরুণরা। অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রবলভাবে সোচ্চার হয়েছিল আমাদের তরুণীরা। স্কুলপড়ুয়া কিশোর-কিশোরীরা নিঃশঙ্কচিত্তে উৎসর্গ করেছিল তাঁদের জীবন। শত শত মানুষ চিরতরে হারিয়েছে তাঁদের দৃষ্টিশক্তি। আমাদের মায়েরা, দিনমজুরেরা ও শহরের অগণিত মানুষ তাঁদের সন্তানদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছিল রাজপথে। তপ্ত রোদ, বৃষ্টি, মৃত্যুভয়কে তোয়াক্কা না করে তারা সত্য ও ন্যায়সংগত আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দীর্ঘকালব্যাপী রাষ্ট্রযন্ত্রকে পরিচালনা করার অশুভ ষড়যন্ত্রকে পরাভূত করেছিল।
আন্দোলনে হতাহতের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণের এই আন্দোলনে আমাদের জানা মতে প্রায় আটশ’রও বেশি জীবন আমরা হারিয়েছি স্বৈরাচারী শক্তির হাতে।
উদারনীতি, বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর মানুষের গভীর বিশ্বাস থেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয় বলে উল্লেখ করেন প্রফেসর ইউনূস। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যে মূল্যবোধকে বুকে ধারণ করে আমাদের গণমানুষ যুদ্ধ করেছিল, সেই মূল্যবোধকে বহু বছর পরে আমাদের ‘জেনারেশন জি’ (প্রজন্ম জি) নতুনভাবে দেখতে শিখিয়েছে। এরকমটি আমরা দেখেছিলাম ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সময়েও।
বাংলাদেশের এই ‘মুনসুন অভ্যুত্থান’ আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষকে মুক্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে প্রেরণা যুগিয়ে যাবে। আমাদের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে আমি তাই বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সাথে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
জাতিসংবের অ্যাসেম্বলি হলে প্রবেশ করতেছেন ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য’
রাষ্ট্রকাঠামো দুঃসহ হয়ে গেছে, তার পুনর্গঠনের জন্য আমাদের তরুণেরা এবং দেশের আপামর জনসাধারণ একমত হয়ে আমার এবং আমার উপদেষ্টা পরিষদের ওপর আস্থা রেখে সরকার পরিচালনার এক মহান দায়িত্ব অর্পণ করেছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা গভীর বিস্ময় ও হতাশার সঙ্গে মুখোমুখিভাবে দেখতে পাচ্ছি কীভাবে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে, কীভাবে রাষ্ট্রের মূল প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্মম দলীয়করণের আবর্তে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, কীভাবে জনগণের অর্থসম্পদকে নিদারুণভাবে লুটপাট করা হয়েছিল, কীভাবে একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্যকে অন্যায়ভাবে নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করে দেশের সম্পদ অবাধে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। এককথায়, কীভাবে প্রত্যেকটি পর্যায়ে ন্যায়, নীতি ও নৈতিকতা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল।
এরকমই এক অবস্থায় দেশকে পুনর্গঠন এবং জনগণের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্রব্যবস্থা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের ওপর দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। অতীতের ভুলগুলোকে সংশোধন করে একটি প্রতিযোগিতামূলক ও শক্তিশালী অর্থনীতি এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলাই এই মুহূর্তে আমাদের মূল লক্ষ্য।
বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, সব রাজনৈতিক দল এখন স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারছে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় কাজ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত, তাদের প্রত্যেকের জবাবদিহি নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার।
আমরা মানুষের মৌলিক অধিকারকে সমুন্নত ও সুরক্ষিত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ মুক্তভাবে কথা বলবে, ভয়ভীতি ছাড়া সমাবেশ করবে, তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংরক্ষণ এবং সাইবার ডোমেইনসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুসংহতকরণেও আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বাংলাদেশের একজন কৃষক বা শ্রমিকের সন্তানও যেন সমাজের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছতে পারে, সেই লক্ষ্যে বিশালাকার অবকাঠামো নির্মাণের বদলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ওপর সরকার গুরুত্ব আরোপ করছে। রাষ্ট্রব্যবস্থার সব পর্যায়ে সুশাসন ফিরিয়ে আনাই আমাদের অভীষ্ট। বাংলাদেশ যেসব আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পক্ষভুক্ত, সেগুলো প্রতিপালনে আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর। জাতিসংঘসহ বহুপাক্ষিক বিশ্ব কাঠামোতে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও অবদান অব্যাহত থাকবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, মর্যাদা ও স্বার্থ সংরক্ষণের ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
নতুন সরকার যা যা করছে
মাত্র সাত সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বাংলাদেশের গণআন্দোলনকালে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বিস্তৃত অনুসন্ধান এবং এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গঠন এবং তার কাজ শুরু করার জন্য দ্রুত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আমি তাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
দায়িত্বভার গ্রহণের দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা গুম প্রতিরোধে যে আন্তর্জাতিক কনভেনশন রয়েছে, তাতে যোগদান করেছি। এর আশু বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় দেশীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাংলাদেশে বিগত দেড় দশকে যেসব গুমের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো তদন্ত করার জন্য একটি তদন্ত কমিশন এ মুহূর্তে কাজ করছে।
মানুষের আস্থা ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে এবং নির্মম অতীত যেন আর ফিরে না আসে, সেজন্য আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট খাতে সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। সেই লক্ষ্যে আমরা বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থা, সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সংস্কারে স্বাধীন কমিশন গঠন করেছি। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের সংস্কারের জন্যও পৃথক কমিশনসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, কোনও বিদেশি ব্যবসা বা বিনিয়োগ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতেও আমরা বদ্ধপরিকর। এসব সংস্কার যেন টেকসই হয়, তা দীর্ঘমেয়াদে নিশ্চিত করতে এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদান রাখার অঙ্গীকার
অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদানের ধারাবাহিকতা রক্ষা সমুন্নত ও প্রসারিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশ মনে করে যে শান্তি রক্ষা এবং সংঘাত মোকাবিলা জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার মূল চালিকাশক্তি। সাম্প্রতিক বিপ্লবকে আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিনতম সময়ে জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণে তাদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আমাদের সাহসী সশস্ত্র বাহিনীগুলো আরও একবার শান্তির প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রমাণ করেছে।
এটা সম্ভব হয়েছে শান্তিরক্ষায় আমাদের অঙ্গীকারের কেন্দ্রবিন্দুতে মানবাধিকারকে স্থান দেওয়ার ফলে। জাতিসংঘের শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিস বিল্ডিং কমিটি) সূচনালগ্ন থেকেই শান্তিরক্ষার মতো শান্তি বিনির্মাণেও বাংলাদেশ সমান অঙ্গীকার ব্যক্ত করে এসেছে। সামনের দিনগুলোতেও আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের মূল্যবোধভিত্তিক অবদানের ধারাবাহিকতা রক্ষা সমুন্নত ও প্রসারিত করতে বদ্ধপরিকর।
জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদানকারী চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশনে শান্তিরক্ষী প্রেরণ করেছে। বসনিয়া থেকে শুরু করে কঙ্গো পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এসব মিশনে দায়িত্ব পালনকালে ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আমরা আশা করি, যেকোনও অবস্থায় নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ শান্তিরক্ষী কার্যক্রমগুলোতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা একইভাবে অবদান রাখার সুযোগ পাবেন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার আহ্বান
পৃথিবীতে বৈশ্বিক অগ্রাধিকারগুলোকে সবাইকে সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন সবার অস্তিত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ। এই গ্রীষ্মে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গকারী তাপপ্রবাহ আমাদের জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের কথা স্পষ্টভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। আমাদের যা প্রয়োজন, তা হলো জলবায়ু সম্পর্কিত ন্যায়বিচার, যাতে করে দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত, উদাসীন আচরণ কিংবা এর মাধ্যমে সাধিত ক্ষতির বিষয়ে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের দায়বদ্ধ করা যায়।
জলবায়ু-পরিবর্তনজনিত দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলো অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছি, প্যাথোজেনের পরিবর্তনের ফলে নতুন রোগ বাড়ছে, কৃষি ক্ষেত্রে চাপ বাড়ছে, ক্রমহ্রাসমান পানিসম্পদ ঝুঁকিতে ফেলছে আমাদের বাসযোগ্যতাকে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা আমাদের বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে প্রতিনিয়ত। ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও মাত্রা বৃদ্ধির কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে, তাকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
ষুদ্র কৃষক এবং প্রান্তিক পর্যায়ে জীবিকা অন্বেষণকারীরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। আমি আজ যখন এই বিশ্বসভায় কথা বলছি, তখন বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে ৫০ লাখেরও অধিক মানুষ তাদের জীবদ্দশায় হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করছেন।
এসময় জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস দেওয়া তথ্য প্রকাশ করে। মহাসচিব গুতেরেস আমাদের দেখিয়েছেন যে বিদ্যমান পরিক্রমা অব্যাহত থাকলে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হবে। তাই বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে অভিযোজনের জন্য ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও, উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োগ ও অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’-কে কার্যকর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জাতিসংঘে ড. ইউনূসের ‘তিন-শূন্য’ ধারণা
নির্দিষ্ট করে বললে, আমাদের দরকার জীবনরক্ষাকারী প্রযুক্তি, বিশেষত কৃষি, পানি এবং জনস্বাস্থ্য খাতে, যেখানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভাবন এবং সমাধান ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে পারে। জলবায়ু সংকটের মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি সুসংহতকরণে আমাদের যুগপৎভাবে কাজ করতে হবে। বিশ্ব সম্প্রদায় এখন কার্বনমুক্ত পৃথিবী গড়ে তুলতে মনোযোগী হচ্ছে। বিশ্বের অধিকাংশ মানুষকে এ ধরনের পরিবর্তনের সুফলভোগী করতে হলে, নেট-জিরো পৃথিবীর লক্ষ্য সমানভাবে পূরণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে সঙ্গে নিতে হবে। তা না হলে, ‘পারস্পরিক দায়িত্ববোধের’ মাধ্যমে ‘পারস্পরিক সমৃদ্ধি’ অর্জনে আমাদের সর্বজনীন অঙ্গীকার পূরণে আমরা পিছিয়ে পড়বো।
এক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করি যে সমগ্র বিশ্ব একসঙ্গে ‘তিন শূন্য’-এর ধারণা বিবেচনা করতে পারে, যার মাধ্যমে আমরা শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ অর্জন করতে পারি। যেখানে পৃথিবীর প্রতিটি তরুণ-তরুণী চাকরি প্রার্থী না হয়ে বরং উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পাবে। তারা যেন সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নিজ নিজ সৃজনশীলতার বিকাশ করতে পারে, যেখানে একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ সামাজিক সুফল, অর্থনৈতিক মুনাফা এবং প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীলতার মধ্যে একটি চমৎকার ভারসাম্য আনতে মনোযোগী হতে পারে, যেখানে সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে যেকোনও ব্যক্তি ভোগবাদী জীবনধারা থেকে উত্তরণ করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সৃজনশীল শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
এই সময়ে উন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশ ও বিভিন্ন অংশীদারদের মধ্যে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, নতুন মূল্যবোধ এবং নতুন একতা প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে, এই লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ ব্যবস্থা, জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সরকারগুলো, সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি অংশীজন (এনজিওগুলো) এবং দাতব্য সংস্থাগুলোকে কাজ করতে হবে একসঙ্গে। আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে সামাজিক ব্যবসাকে স্থান দিলেই নিচের অর্ধেকাংশ মানুষের জীবনে বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে। এই পদক্ষেপ একই সঙ্গে জলবায়ুর ধ্বংসাত্মক গতিকে সফলভাবে রোধ করতে পারে প্রচলিত বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে।
যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আহ্বান
বহুমুখী সংকটে জর্জরিত বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ এবং সংঘাতের ফলে ব্যাপকভিত্তিতে মানুষের অধিকার খর্ব হচ্ছে। বিশ্ববাসীর উদ্বেগ এবং নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় গণহত্যা থামছে না। ফিলিস্তিনের বিদ্যমান বাস্তবতা কেবল আরব কিংবা মুসলমানদের জন্যই উদ্বেগজনক নয়, বরং তা সমগ্র মানবজাতির জন্যই উদ্বেগের। একজন মানুষ হিসেবে প্রত্যেক ফিলিস্তিনির জীবন অমূল্য। ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়বদ্ধ করতে হবে।
ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর চলমান নৃশংসতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশেষত নারী এবং শিশুদের সাথে প্রতিনিয়ত যে নিষ্ঠুরতা বিশ্ব দেখছে, তা থেকে নিস্তারের জন্য বাংলাদেশ অনতিবিলম্বে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির (ইমিডিয়েট অ্যান্ড কমপ্লিট সিসফায়ার) আহ্বান জানাচ্ছে। দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই (টু স্টেট সল্যুশন) মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি আনতে পারবে, তাই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সকলকে এর বাস্তবায়নের জন্য এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, গত আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই যুদ্ধের প্রভাব সর্বব্যাপী। এমনকি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব অনুভূত হচ্ছে। আমরা তাই উভয়পক্ষকেই সংলাপে বসে বিরোধ নিরসনের মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পর্যাপ্ত সহায়তার আহ্বান
বাংলাদেশ গত সাত বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে আগত ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ফলে আমরা বিশাল সামাজিক-অর্থনৈতিক-পরিবেশগত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে সৃষ্ট এই সংকট বাংলাদেশ ও আমাদের অঞ্চলের জন্য প্রথাগত ও অপ্রথাগত উভয় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তা করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালু রাখা এবং তাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পর্যাপ্ত সহায়তা অব্যাহত চাই।
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংঘটিত হওয়া ব্যাপকভিত্তিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
রোহিঙ্গারা যাতে করে নিজ দেশে স্বাধীন এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবনধারণ করতে পারে, সে লক্ষ্যে অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবিদার। এ লক্ষ্যে রোহিঙ্গারা যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করে তাদের নিজ ভূমি রাখাইনে ফিরে যেতে পারে, তার পথ সুগম করা দরকার। মিয়ানমারে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল অবস্থা বিবেচনায় রেখে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে একযোগে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টিতে কাজ করতে প্রস্তুত।
পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা
রাজনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাগরণ ব্যতীত শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। প্রায় এক দশক আগে বিশ্বসম্প্রদায় সর্বসম্মতভাবে ‘অ্যাজেন্ডা ২০৩০’ প্রণয়ন করে। আমরা সবাই এই সর্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমাদের সামষ্টিক আকাঙ্ক্ষা ও বিশ্বাস অর্পণ করেছি। তদুপরি মাত্র ১৫ শতাংশের কম লক্ষ্যসমূহ অর্জিত হয়েছে। স্পষ্টতই এক্ষেত্রে অনেক উন্নয়নশীল রাষ্ট্র আরও পিছিয়ে আছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এসডিজি অর্থায়নে বছরে প্রায় দুই দশমিক পাঁচ থেকে চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। উন্নয়নশীল বিশ্বের ঋণের বোঝা, ক্ষয়িষ্ণু আর্থিক সক্ষমতা (স্রিংকিং ফিসকাল স্পেস) এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা আশা করি উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন সংক্রান্ত চতুর্থ (চতুর্থ) আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ধরনের জটিল এবং কাঠামোগত সমস্যাগুলোর (কমপ্লেক্স অ্যান্ড সিস্টেমিক চ্যালেঞ্জেস) দিকে নজর দেওয়া হবে।
বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে, যাতে সব রাষ্ট্র সমানভাবে সম্পদ ও সুযোগের ব্যবহার করতে পারে; তারা নিজেদের কর্মসূচিতে সামাজিক ব্যবসাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দিতে পারে; যাতে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর বাস্তবতা বিশেষভাবে মোকাবিলা করা যায়; যা ব্যবসায়ী উদ্যোগ ও ব্যক্তির সৃজনশীলতাকে উদ্বুদ্ধ করে এবং যা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
এ ক্ষেত্রে অবৈধ অর্থের প্রবাহ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদের পাচার বন্ধ করা দরকার। উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে পাচার হয়ে যাওয়া সম্পদ ফেরত আনার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। আমরা আশা করি যে কর ফাঁকি রোধে আন্তর্জাতিক কর কনভেনশন (ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্স কনভেনশন) শিগগিরই গ্রহণ করা হবে।
অভিবাসন এবং মানুষের অবাধপ্রবাহ এক অলঙ্ঘনীয় বাস্তবতা
সারা বিশ্বের মানুষ এখন নিবিড়ভাবে সংযুক্ত বিশ্বে বসবাস করছেন। সেখানে অভিবাসন এবং মানুষের অবাধ প্রবাহ এক অলঙ্ঘনীয় বাস্তবতা। বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হিসেবে যাচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এ মুহূর্তে প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন। সবার জন্য অভিবাসনের উপযোগিতা নিশ্চিত করতে বিশ্বসমাজকে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল, নিয়মিত এবং মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসনের পথ সুগম করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অভিবাসীদের মানবাধিকার ও তাদের প্রতি মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে হবে, অভিবাসনের ওপর ২০১৮ সালে যে গ্লোবাল কম্প্যাক্ট অন মাইগ্রেশন নেওয়া হয়েছে, তার পূর্ণ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একইসঙ্গে অনিরাপদ অভিবাসন রোধেও আমরা বদ্ধপরিকর।
প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ তরুণ-তরুণী বাংলাদেশের শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের বিপুল জনশক্তির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই তরুণ। এই জনশক্তিকে বর্তমান ও আগামীর জন্য গড়ে তোলা বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। ক্রমপরিবর্তনশীল কর্মজগতে (ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক) একজন তরুণকে প্রতিনিয়ত নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হয়; এবং কর্মপরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া শিখতে হয়। এজন্য বাংলাদেশ যখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হচ্ছে, তখন আমরা শিক্ষা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা লাভের ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছি।
‘অটোনমাস ইন্টেলিজেন্সের ব্যাপারে শঙ্কা’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় বিকাশ এবং এর বহুমাত্রিক প্রয়োগে বাংলাদেশ বিশেষভাবে আগ্রহী। আমাদের তরুণ সমাজ জেনারেটিভ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সম্ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। একজন বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তারাও চায় নতুন পৃথিবীতে নিয়োজিত হতে, কর্মক্ষম হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে। বাংলাদেশের মতো বৃহৎ তরুণ জনগোষ্ঠীর দেশ যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগজনিত অর্জিত সুফল থেকে পিছিয়ে না পড়ে, বিশ্ব সম্প্রদায়কে তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে, নিশ্চিত করতে হবে যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে কর্মক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা সংকুচিত হয়ে না যায়।
আমরা অটোনমাস ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সম্প্রসারিত করতে পারে, মানুষের কোনও হস্তক্ষেপ ব্যতিরেকে, তার ব্যাপারে আমরা বৈজ্ঞানিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, তারা যেন এক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার আগে মানুষের ওপর এর প্রভাব সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে অগ্রসর হন। আমাদের ধারণা, অটোনমাস ইন্টেলিজেন্স মানুষের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলতে পারে।
নতুন ধরনের সহযোগিতা কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান
বৈশ্বিক ব্যবসা ও জ্ঞানের অধিকারী-গোষ্ঠী মানুষের চাহিদাগুলোকে যথাযথভাবে অনুধাবন করে নতুন ধরনের সহযোগিতা কাঠামো দরকার। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এমন একটি রূপান্তরকারী ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যা কর্মসংস্থান, আর্থসামাজিক প্রতিকূলতা বা জীবিকার জন্য জুতসই সমাধান নিশ্চিত করবে।
আমাদের প্রচেষ্টা, সক্ষমতা ও সম্পদ একত্রীকরণের মাধ্যমে সবার সামর্থ্য, উদ্ভাবনী শক্তি এবং সমৃদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে। আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীলতা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছি, সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে তার মোকাবিলা করতে হবে।
বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলের দেশগুলোর অনন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিভুজীয় সহযোগিতা এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে বলে আমি মনে করি’। বৈশ্বিক দক্ষিণের আওয়াজকে বিশ্বব্যাপী জোরালোভাবে তুলে ধরার জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ। সেজন্য বৈশ্বিক অ্যাজেন্ডা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলোর মতামতকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
জনস্বাস্থ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ
করোনার সময় আমরা দেখেছি, জনস্বাস্থ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) বৈশ্বিক অতিমারি চুক্তির চলমান আলোচনায় বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা চাই কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অর্থায়ন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, গবেষণা ও উন্নয়ন, চিকিৎসা, পরীক্ষা, ভ্যাকসিন, থেরাপিউটিক্সের উৎপাদন বহুমুখীকরণে এবং সব ভ্যাকসিনকে মেধাস্বত্ব-অধিকার (ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস) মুক্ত ঘোষণা করার ব্যাপারে ঐকমত্য।
জাতিসংঘের সঙ্গে ৫০ বছরের পথচলা
এ বছর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সঙ্গে অংশীদারত্বের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। ‘গত ৫০ বছর ছিল আমাদের জন্য একটি পারস্পরিক শিক্ষণীয়, সম্মিলিত যাত্রা। সীমিত উপায়ে বাংলাদেশ বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা, ন্যায়, সমতা, মানবাধিকার, সামাজিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে ধারাবাহিকভাবে অবদান রেখে আসছে। আমাদের সমন্বিত প্রয়াস সত্যিকার অর্থে একটি নিয়মভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা।’
‘আমি স্মরণ করছি ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ক্ষুদ্র ঋণের ওপর গৃহীত রেজ্যুলেশনের কথা। সেই সময় জাতিসংঘ ২০০৫ সালকে ইয়ার অব মাইক্রো-ক্রেডিট ঘোষণা করেছিল। যার ফলে ক্ষুদ্রঋণ বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। একই সময়ে বাংলাদেশের উদ্যোগে গঠিত হয়েছিল ফ্রেইন্ডস অব মাইক্রো-ক্রেডিট। ২০০১ সাল থেকে সাধারণ পরিষদের ‘কালচার অব পিচ’ সংক্রান্ত বাৎসরিক যে রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়ে আসছে বা নিরাপত্তা পরিষদে ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ (ডব্লিউপিএস) সংক্রান্ত যে ১৩২৫ নম্বর রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছিল, তা বাংলাদেশের বিশ্বজনীন উদ্যোগগুলোর প্রতিফলন ও অবদান।
সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে সবার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান
বিশ্বসভার এই মঞ্চে বিশ্ব নেতাদের উপস্থিতিতে ড. ইউনূস নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে সবার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের প্রত্যেককে আজকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে কীভাবে আমরা নারী, পুরুষ, সকলের জন্য আজ ও আগামীর দিনগুলোতে উদ্যোক্তা হওয়ার সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারি।
সব বৈশ্বিক সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের সবার হাতে যথেষ্ট সক্ষমতা, সম্পদ এবং উপায় রয়েছে। ‘আসুন, আমরা জাতীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা বাস্তবায়ন করি এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সামাজিক ব্যবসার ধারণা প্রতিষ্ঠিত করে সকল প্রকার বৈষম্য ও অসমতার অবসানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি।’
বাংলাদেশের তরুণরা প্রমাণ করেছে যে মানুষের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখার অভিপ্রায় কোনও উচ্চাভিলাষ নয়। বরং, এটা সকলের নিশ্চিত প্রাপ্য। আজ এই মহান সমাবেশে আপনাদের উপস্থিতিতে শান্তি, সমৃদ্ধি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ তার ভূমিকাকে ক্রমাগতভাবে জোরদার করার নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
একটি উদাহরণ দিয়ে শুরু করি। কিছুদিন আগে বিশ্বের প্রভাবশালী ও উন্নত একটি রাষ্ট্র ইউকে’র ক্ষমতার পরিবর্তন হয়। দীর্ঘ ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে কন্সার্ভেটিভ পার্টি লেবার পার্টির কাছে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়। ১৪ বছর কন্সার্ভেটিভ পার্টি গণতান্ত্রিকভাবেই ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু ক্ষমতার পরিবর্তনে না ঘটেছে কোনো মৃত্যু, না করেছে কেউ কারো ক্ষয়ক্ষতি, না করেছে কোনো নেতা পলায়ন। ক্ষমতায় এসে লেবার পার্টির প্রধান ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীকে এবং বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে এবং নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিদায় নিয়েছেন।
একটি দেশ যদি ভালো থাকে, দেশে যদি সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা থাকে, তাহলে দেশের মানুষ দল মত নির্বিশেষে সবাই কীভাবে ভালো থাকা সম্ভব তারই ব্যাখ্যা দিয়ে এই লেখাটি।
প্রথম পর্ব – সুস্থ রাজনীতি
ক্ষমতাসীন দল মনে করে ক্ষমতা ছাড়ার পর তাদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। কারো কারো দেশছাড়া হতে হতে পারে, কেউ চাকুরীচ্যুত হতে হবে, কারো ব্যবসায় সমস্যা হতে পারে, কারো আবার প্রতিপক্ষের হাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণনাশেরও শংকা থাকে। সেজন্য ক্ষমতা যে কোনো মূল্যে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করে।
যারা আবার বিরোধী দলে আছে। তারা মনে করে, কোনরকম ক্ষমতাটা বাগিয়ে নিতে পারলেই হয়। সব সুদে আসলে উসুল করে নেবে। ক্ষমতা হাতে পেয়ে দীর্ঘদিনের প্রতিশোধ পরায়ণ মন প্রতিশোধচিত্তে মত্ত হবে, ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মত সব গ্রাস করতে আগ্রাসী হবে। ক্ষমতাই যেহেতু তাকে সবকিছু করতে বা পেতে সহায়তা করবে, সুতরাং ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার সবরকম ফন্দি ফিকির খুঁজে বের করবে।
কিন্তু এমন ধারাবাহিক পরিক্রমায় দেশ যাচ্ছে রসাতলে, দেশের মানুষ পড়ে থাকে ভোগান্তির মধ্যে এবং মানুষে মানুষে বিভাজন বৃদ্ধি পায় গাণিতিক হারে।
ক্ষমতাসীন দল ও দলের অনুসারীরা ভোগ করে সব সুযোগ সুবিধা, বিরোধীরা থাকে নিগৃহীত, নিপীড়িত। আবার ক্ষমতার পরিবর্তনে দৃশ্যপট যায় বদলে। মাঝখানে সাধারণ জনগণ, যারা এ পক্ষেও নেই ঐ পক্ষেও নেই তারা সর্বকালেই থাকে নিগৃহীত নিপীড়িত।
কিন্তু এমন করে কেন চলবে? সাধারণ জনগণই হোক, বিরোধী দল হোক, কিংবা সরকারী দল হোক; সবাই একই দেশের নাগরিক। দেশের সবার সবকিছুতে সমান অধিকার আছে। ক্ষমতার ছায়াতলে কেউ কেউ সব সুবিধা পাবে, কিন্তু ঐ ছায়ার বেষ্টনীর বাহিরে সবাই থাকবে উপেক্ষিত; তা কেন হবে?
সুস্থ রাজনীতির চর্চা থাকলে উপরোক্ত বিষয়গুলো খুব সহজেই সমাধান করা সম্ভব। ক্ষমতা অর্জন যদি ব্যক্তি স্বার্থ না চিন্তা করে দেশের স্বার্থের জন্য হয় তাহলে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে ও ক্ষমতায় যেতে কেউ অতিমাত্রায় আগ্রাসী হবে না।
দ্বিতীয় পর্ব – আইন
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইন সবার ঊর্ধ্বে। আইন সবার ঊর্ধ্বে মানে আইনের প্রহরায় সবাই সমভাবে বিদ্যমান। আইনের চোখে রাজা প্রজার মাঝে তপাৎ নেই, ধনী গরীবের মাঝে তপাৎ নেই, এমনকি নেই ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাহীনের মাঝে তপাৎ। যদি ধনী কোন গরীবের সাথে অন্যায় করে তাহলে আইন তার বিচার করবে, যদি রাজা প্রজার প্রতি জুলুম করে আইন দেখবে, যদি ক্ষমতাসীন তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাও আইন তার বিচার করবে।
এখন আইন যদি হয় পক্ষপাতদুষ্ট তাহলে মানুষ প্রকৃতপক্ষেই অসহায়। আর আইন যদি হয় ক্ষমতাশালীদের অধিনস্ত তাহলে তা হয় বিপদজনক। যার ক্ষমতা নেই এবং আইনও তার সহায়ক নয়, তাহলে তাকে সর্বদা আত্মসমর্পিতভাবেই থাকতে হয়, সে অন্যায় করলেও এবং না করলেও।
এখন পূর্বের কথায় আসা যাক। আইন যদি নিরপেক্ষ হয় তাহলে একটা দল ক্ষমতা হারালেও তার ভয়ের কোন কারণই থাকার কথা নয়, কারণ আইন তাকে সুরক্ষা দিবে। আর ক্ষমতায় থাকাবস্থায় কেউ বা কোন দল যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে তাকে বা সেই দলকে ক্ষমতা ছাড়া পর্যন্ত আইন আর অপেক্ষা করবে না। আইন যদি স্বতন্ত্রই হয় তাহলে ক্ষমতাসীন হোক আর ক্ষমতাহীন হোক, আইন তাকে তার কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেই।
তাহলে ক্ষমতায় থাকলেই যে, কেউ অন্যায় করে পার পেয়ে যেতে পারবে না। একমাত্র আইনের নিরপেক্ষতাই পারে বহু সমস্যার সমাধান করে দিতে।
তৃতীয় পর্ব – জনগণই ক্ষমতার মালিক
গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র হচ্ছে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস এবং মালিক। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কে ক্ষমতায় থাকবে, আর কে থাকবে না। জনগণই কাউকে ক্ষমতায় বসাবে, কাউকে নামাবে, জনগণই ক্ষমতার পরিবর্তন আনবে। যেহেতু জনগণের হাতেই ক্ষমতার চাবিকাঠি, সেহেতু সব দলই জনগণকে খুশি রাখার চেষ্টা করবে। কিন্তু ভুলক্রমে কেউ যদি মনে করে, না জনগণ নয়, আমরাই ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু তাহলে জনগণকে খুশি রাখা না রাখা নিয়ে তাদের কিছু যায় আসে না। তাহলে জনগণের সে নেতা বা দল জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করবে এবং অনৈতিক কাজ সম্পাদন করতে সচেষ্ট হবে।
ক্ষমতার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা কেন অনস্বীকার্য? কারণ, যখন ভিন্ন দল ক্ষমতায় আসবে, তখন পূর্ববর্তী সরকারে যারা দায়িত্বে ছিল তাদের অন্যায়, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়গুলো দৃষ্টিগোচর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে। একটা দল যখন জানতে পারবে ৫ বছর পর তারা ক্ষমতায় থাকবে কি থাকবেনা এবং অন্য দল ক্ষমতায় আসলে তাদের কুকীর্তিগুলা প্রাকাশ্যে চলে আসার সম্ভাবনা থাকবে, সেজন্য কিছুটা হলেও অন্যায় কর্ম ও দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে সচেষ্ট হবে। সেক্ষেত্রে দুর্নীতির লাগাম কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
কিন্তু কেউ যদি মনে করে তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী, তাহলে তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনে এমন কেউ আর থাকবেনা, সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের কুকর্ম করার পরিমাণ প্রবল থাকে।
ফলাফল
উপরের তিন পর্বের সারমর্ম হল ক্ষমতায় থাকলে সব মধু ভোগ করবে এবং না থাকলে কিছুই না। যার জন্য যে কোনো মূল্যে সবাই ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে ও ক্ষমতা লাভ করতে মরিয়া থাকে।
এখন যদি ধরেন যদি আইন সঠিক ও ন্যায্যভাবে কাজ করে, সরকার জনগণেকে গুরুত্ব দিয়ে ক্ষমতা পরিচালনা করে ও ক্ষমতায় থেকে বিরোধীদেরকে যাথাযথ সন্মান ও গুরুত্ব দিয়ে ক্ষমতাসীনরা চলে তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
যেমন ধরুন আইন যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন থাকে তাহলে কেউ’ই বেআইনিভাবে কিছু করার সাহস পাবে না, বরং করলেও আইন তার বিচার করবে। এতে ক্ষমতা ব্যবহার করে কেউ দুর্নীতি, অন্যায় কাজ করতে সাহস পাবে না ও অন্যকে বিনা বিচারে শাস্থি দিতে পারবে না।
জনগণকে গুরুত্ব দিয়ে দেশ পরিচালনা করলে, দেশের মঙ্গল হয় এমনভাবেই রাষ্ট্রচালকরা দেশ পরিচালনা করবেন, যাতে করে জনগণ খুশি থাকে। আর জনগণ খুশি থাকলে পরবর্তী নির্বাচনে আবার জয়ী হয়ে আসার সম্ভাবনা থাকবে। এতে দেশের সুখ ও সমৃদ্ধি বর্ধনে সহায়ক হবে। বর্তমান রাষ্ট্রচালকরা জনগনের থেকে ব্যক্তি স্বার্থটা বেশি চিন্তা করেন বিধায় দেশে আশানুরূপ সুখ ও সমৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ক্ষমতায় থাকাবস্থায় বিরোধীদেরকে যথাযথ সন্মান ও মর্যাদা দিয়ে চললে ক্ষমতা হারালেও বিরোধীরা যখন ক্ষমতাসীন হবে তখন একই কাজটা করতে অনুপ্রাণিত হবে। সুতরাং ক্ষমতা হারানোর যে ভয় তা অনেকাংশেই লাঘব হবে।
দেশ ভালো থাকলে ভালো থাকবে সবাই
উপরোক্ত বিষয়গুলা যদি অনুসরণ করে চলা যায় তাহলে দেশ এমনিতেই উন্নত হবে সর্বদিক দিয়ে। যেমন হয়েছে আজকের উন্নত দেশগুলো। তাহলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকবে, চাকুরীর বাজার বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে ভালো থাকলে বেকার, প্রতিবন্ধী, অসুস্থরা সরকারী সহায়তা পাবে।
তাহলে কেউই রাজনীতির উপর নির্ভর করে থাকতে হবে না। রাজনৈতিক অবলম্বন করে চাকুরী নেয়া, ব্যবসা করা ও কোনো কাজ করিয়ে নেয়ারও দরকার পড়বে না। এখন সবাই রাজনীতির অবলম্বন করে থাকতে চায় কারণ এর মাধ্যমে তার কিছু রুটি রুজির জোগাড় হয়। কিন্তু দেশ ভালো থাকলে রুটি রুজির জোগাড় এমনিতেই হয়ে যাবে কোনো রাজনৈতিক অবলম্বন ছাড়াই।
দেশ যদি ভালো থাকে তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবাই ভালো থাকবে।
বিমানবন্দরে ভিআইপি সেবা প্রদান, হয়রানি বন্ধ, শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, বন্দি ৮৭ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া সহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচিত হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ মঙ্গলবার এ কথা বলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল।
কেউ প্রবাসী কল্যাণে সেবামূলক কাজ না করলে বদলি করা হবে।
বিমানবন্দরে কোনো অবস্থায় প্রবাসী হয়রানি বরদাশত করা হবে না। আগামী এক মাসের মধ্যে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য ভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) সেবা চালু হবে। প্রথম ধাপে মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে আসা প্রবাসীরা এটা পাবেন। লাউঞ্জ ও বিশেষ ইমিগ্রেশন ডেস্ক ছাড়া ভিআইপিদের বাকি সব সুবিধা পাবেন প্রবাসীরা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ করে প্রবাসীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, কারাবাস করে দেশে ফিরেছেন তাঁরা। এমন ৮৭ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে আরব আমিরাত থেকে ৫৭ জন বিশেষ ক্ষমা পেয়ে দেশে ফিরেছেন। তাঁদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের টাকা ফেরতের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ১৭ হাজার কর্মীর মধ্যে ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত পেয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। শতভাগ কর্মীর টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে চক্র গঠন নিয়ে তিনি বলেন, চক্র যেন ভেঙে যায়, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। দুর্নীতির তদন্ত করা হবে।
প্রবাসী আয় বাড়াতে উদ্যোগ
প্রবাসীরা এখন থেকে সরাসরি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) পাঠিয়ে তাঁদের ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারবেন।এতে প্রবাসী আয় বাড়বে। প্রবাসীদের ঋণসহায়তা দিতে ১২টি বাণিজ্যিক ব্যাংক রাজি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট গ্যারান্টি দিলেই এটি চালু হবে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শাখা নেই, সেখানে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের শাখায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের বুথ চালু করা হবে। এক কোটি টাকা পর্যন্ত ওয়েজ আর্নার্স বন্ড কেনার সীমাবদ্ধতা তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসীরা যেকোনো পরিমাণ বন্ড কিনতে পারবেন। এতেও প্রবাসী আয় বাড়বে।
লাগবে না প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ অনুমতি
বিদেশে কর্মী পাঠাতে তিনটি সংস্থার অনুমতি লাগে, এখন থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আর নিয়োগ অনুমতি লাগবে না। এতে কর্মীদের ভোগান্তি ও সময় কমবে। এ ছাড়া অভিবাসন খরচ বাড়াতে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ভূমিকা রাখে। তাই দালালদের নিবন্ধন করা হবে। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রিক্রুটিং এজেন্সিকে ক্যাটাগরি সনদ দেওয়া হবে। এতে এজেন্সির মান সম্পর্কে সবাই জানতে পারবে।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, একজন প্রবাসী যেন কোনো অবস্থাতে হয়রানির শিকার না হন। অপরাধ বোধ মনে না করেন, এ ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স থাকবে।
ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে মালেয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের রয়েছে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক। সে সম্পর্কে কাজে লাগিয়ে শ্রমবাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, মালয়েশিয়ায় আবারও কর্মী পাঠানোর বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলারের বেশি উন্নয়ন সহযোগিতা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) চুক্তি সই হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই চুক্তি সই হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য, সুশাসন, মানবিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি ও মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই অর্থ কাজে লাগানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার হলো বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে সহযোগিতা করা।
চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম সাহাবউদ্দিন এবং ইউএসএআইডির পক্ষ থেকে সই করেন রিড জে অ্যাসচলিম্যান। অনুষ্ঠানে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে ঢাকা সফররত ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন— অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য সচিব, শ্রম সচিব, স্বরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক অর্থ বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যান
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আর্থিক খাত ও রাজস্ব খাতের সংস্কার এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্র, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শ্রম পরিবেশ, মানবাধিকার সুরক্ষা, রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে খাই খাই রাজনীতি। বাংলাদেশে রাজনীতি নিয়ে দেখবেন অনেক মাতামাতি, কারণ এখানে খাই খাই সংস্কৃতিটা প্রকট। যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকা চাই ও যাওয়া চাই, কারণ ক্ষমতার আশীর্বাদেই লুটেপুটে খাওয়া সম্ভব। দেখবেন যে দল ক্ষমতায় থাকে তার সমর্থিত লোকজনের জিহ্বা মাইলসম লম্বা হয়ে যায় এবং তা দিয়ে যা পারে লেহন করে যায়, আর ক্ষমতার বাহিরের তারা তীর্থের কাকের মতো বসে বসে লালা ফেলে আর দিন গুনে যায় কবে ক্ষমতা হাতে পাবে এবং একই কাজটা করবে।
২০০৯ সালের আগের টার্মগুলোতে ক্ষমতার পালাবদল একটু দ্রুতই ছিল যার কারণে কেউ ধীর্ঘ সময় ভোগ করতে ও ভোগের বাহিরে থাকতে হয়নি। কিন্তু আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ১৫ বছর থাকায় একটু অতিরিক্তই ভোগ করে ফেলেছে এবং বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপি একটু বেশী সময়ই উপেক্ষিত থেকেছে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতাচ্যুত হবার সাথে সাথে দীর্ঘদিনের ক্ষুধা মেটাতে ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়া থেকে বোঝা যায় তারা কতটাই না ক্ষুধার্ত ছিল।
দীর্ঘদিন ক্ষমতায় গেঁড়ে থাকা আওয়ামীলীগের ক্ষমতাচ্যুতি কিভাবে ঘটেছে তা বিএনপির একশ্রেণীর নেতাকর্মীরা মুহূর্তেই ভুলে গেল শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করেই। একই কাজ করতে মত্ত হয়ে পড়লো যে কর্মের কারণে জনগণ সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলীগের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। মুহূর্তেই ভুলে গেল কী কারণে এত বড় ঐতিহাসিক একটা গনঅভ্যুত্থান ঘটে গেল! জনগণ যে বিএনপি কিংবা যারা একই কাজ করবে বা করতে উৎসাহী হবে তাদেরকেও আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলতে দ্বিধা করবে না তা বেমালুম ভুলে বসে আছে। বিএনপির সিনিয়র অবস্থান থেকে যদিও কিছু পজিটিভ পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু এরপরেও যেসব কর্মকাণ্ড ঘটতেছে এমন চলতে থাকলে বিএনপি যে স্বপ্ন দেখতেছে তা আর বাস্তবের দেখা পাবে না।
আওয়ামীলীগ ও বিএনপি উভয়ের দ্বারাই হিরো আলম নির্যাতনের শিকার। এ যেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।
সময় পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন প্রজন্মই এখন নতুন জনগণ হয়ে উঠতেছে। এ প্রজন্মকে যে কথায় ভুলিয়ে রাখা যাবে না, এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। সময়ের সাথে নিজেদের পরিবর্তন না করলে, যত বড় রাজনৈতিক দলই হোক না কেনো তা হালে টিকবে না। শূন্যস্থান কখনোই খালি থাকে না। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নেয়ার আগ পর্যন্ত বিএনপি নামের কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্বই ছিল না। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে বিএনপি বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল হয়ে উঠেছিল। সময়ের প্রয়োজনে যে আর কোনো রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটবে না তার সম্ভাবনাকে কোনো দলেরই উড়িয়ে দেয়া উচিত হবে না।
খাই খাই রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে সব দলকেই বেরিয়ে আসতে হবে। জনগণের পালস বুঝে কাজ করতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে, জনগণ সত্যিকার অর্থে কি চায় সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে সব রাজনৈতিক দল ও নেতার অবস্থা একই হবে যেমনটি হয়েছে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলীগ ও তাদের নেতাদের। ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই ক্ষমতার দাপট দেশের জন্য মারাত্মক অশনিসংকেত। এর লাগাম টেনে না ধরলে জনগণ বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হবে, কারণ বর্তমানে এক্সিস্ট করে এমন দলকে ক্ষমতায় দেখতে জনগণ বাধ্য নয়। জনগণ চায় জনগণ বান্ধব দল।
জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস তা বাংলাদেশের জনগণ আবারও তা প্রমাণ করেছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে বহুবার করেই যাবে, যে পর্যন্ত না সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
এ প্রজন্ম কেন এত সংগ্রামী, বিপ্লবী, প্রতিবাদী? কী এমন অনুপ্রেরণা তাদের মধ্যে যা তাদেরকে অধিকার আদায়ের জন্য মৃত্যুকেও সাদরে আলিঙ্গন করতে দ্বিধা করে না? তাদের এ বীরত্ব কি একদিনেই তৈরি হয়েছে?
আপনাদের যাদের সন্তান বা ছোট ভাইবোন রয়েছে এবং ভালো কোনো স্কুলে লেখাপড়া করে তারা বুঝবেন যে, বাংলাদেশে একজন ছাত্র/ছাত্রী ৩-৪ বছর থেকেই সংগ্রামে নেমে পড়ে। তার প্রথম সংগ্রাম প্রথম শ্রেণীতে ভালো কোনো স্কুলে ভর্তি হওয়ার সংগ্রাম। কারণ ভালো স্কুলে ভর্তি হতে পারলে মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত একটু নিশ্চিন্ত থাকা যায় পড়ালেখা নিয়ে। এই ভালো স্কুলে ভর্তি হতে তাকে তখনই শুরু করতে হয় কোচিং, প্রাইভেট টিউশন এবং সাথে নিজের পরিশ্রম তো রয়েছেই। মনে রাখতে হবে তখন কিন্তু তার বয়স ৩-৫ এর মধ্যে।
এরপর ভালো স্কুলে চান্স পেলে ভালো স্কুলের ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী পড়ালেখা। সেই সাথে প্রাইভেট কোচিং ও টিউশন তো আছেই। কারণ তাকে প্রত্যেকটা পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। টার্গেট মাধ্যমিকে ভালো নাম্বার সহ গোল্ডেন এ প্লাস পেতে হবে। তা না হলে ভালো কলেজে ভর্তির দৌড়ে পিছিয়ে যাবে।
মাধ্যমিক শেষ হলে কলেজে ভর্তির যুদ্ধ। কলেজে ভর্তি হলে উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্টের যুদ্ধ। ভালো রেজাল্ট না হলে বুয়েট, মেডিকেল কিংবা ভালো বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভালো সাবজেক্টে ভর্তি হতে পারবে না। আর তা না ক্যারিয়ার অন্ধকার।
এভাবে ছাত্রজীবন শেষ হওয়া পর্যন্ত তার এ যুদ্ধ চলতেই থাকে। এরপর ভালো চাকুরী পাওয়ার যুদ্ধ। তারপর জীবনযুদ্ধ।
এ যুদ্ধ করতে করতে সে কিন্তু যথেষ্ট মেধাবী ও সাস্টেইনেবল হয়ে বেড়ে উঠে। ডারউইনের একটি তত্ত্ব আছে, survival of the fittest, ছেলেবেলা থেকে সে শিখে আসতেছে যে, সার্ভাইব সে-ই করবে যে ফিট। প্রতিযোগিতা করে তার বড় হয়ে উঠা।
এভাবে ৩ বছর থেকে একটা ছেলে/মেয়ে যুদ্ধ করতে করতেই বড় হয়। সে বেড়ে ওঠে যোদ্ধা হয়ে। সাথে যখন দেখে তারা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে, তাদের চারপাশে অন্যায়ের জালে আবদ্ধ, দুর্নীতি ছাড়া নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখতেছেনা তখন তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে পুঞ্জিভূত হয় প্রতিবাদের বীজ। যখন তাদের মাঝে দৃশ্যমান হয় তাদের থেকে অযোগ্যরা রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভালো জায়গায় স্থান পাচ্ছে, আর তারা থাকে নিগৃহীত তখন ক্ষোভ দানা বাঁধে তাদের মাঝে।
মেধা ও শ্রম দিয়ে যুদ্ধ করা প্রতিযোগীর সাথে যুদ্ধ করে জিতে আসতে হলে সম-পর্যায়ের প্রতিযোগী লাগবে। আর যদি সবাই এক পাশে তাহলে তাদের সাথে সন্ধি না করে যুদ্ধ ঘোষণা করা নিতান্তই বোকামি।
এরা এমনই প্রতিযোগী যাদের সামনে খোঁড়া যুক্তি-তর্ক, অজুহাত, আবদার, মিথ্যে সব বুমেরাং হয়ে ফিরে যায়। সাহস তাদের হাতিয়ার, মেধা তাদের অস্র, আর দেশপ্রেম তাদের গোলাবারুদ। মনে রাখা প্রয়োজন অসি অপেক্ষা মসি অধিকতর শক্তিশালী।
বিশ্বের মোট সর্বোচ্চ রেমিটেন্স উপার্জনে সর্বোচ্চ দশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যে কয়েকটি নিয়ামক সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে তন্মেদ্ধে অন্যতম হচ্ছে বৈদেশিক রেমিটেন্স।
আপনার গ্রাম ও আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন, দেখবেন সব ইট পাথরের দালানে ছেয়ে গিয়েছে। এর ৯০ ভাগ মালিকই দেখবেন দেশের বাহিরে থাকে। প্রবাসের কস্টার্জিত অর্থ দিয়েই বাড়িগুলো তৈরি। এমনকি শহরাঞ্চলে বহুতল ভবন তৈরি তারও বেশীরভাগ ক্রেতা প্রবাসীরা।
বহু মানুষ দেখবেন ২০-২৫ বছর আগে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করতো। আজ তাদের ভাগ্যেও আমূল পরিবর্তন। তার ৯০ ভাগই প্রবাসে কর্মের সুবাধে।
এই ৯০ ভাগ মানুষের যে ভাগ্য উন্নয়ন তার শতভাগই প্রবাসে থাকার ফলশ্রুতিতে। দেশ তাদের ভাগ্য উন্নয়নে এতটুকু অবদান রাখতে পারেনি।
হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে প্রবাসীরা সচল রেখেছে দেশের অর্থনীতি
এই প্রবাসীদের বৈদাশিক আয় কি শুধুই তাদের নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নই ঘটিয়েছে? না, তাদের বৈদাশিক আয় উন্নয়ন ঘটিয়েছে সামগ্রিকভাবে দেশ ও দেশের মানুষেরও।
সে বিষয়েই নিম্নে আলোকপাত করা হল।
একটা দেশের অর্থনীতি কীভাবে সচল থাকে? ট্রানজেকশন বা বিনিময়ের মাধ্যমেই অর্থনীতি সচল থাকে। যত বেশি বিনিময় তত বেশি অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। তা না হলে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হয়।
ধরুন আপনি আপনার পরিবারকে টাকা পাঠালেন মাসিক খরচের জন্য। আপনার টাকাটা যে মাত্র দেশের কোনো ব্যাংকে জমা হল, তৎক্ষণাৎ দেশের মোট রিজার্ভকেও বর্ধিত করল। তারপর আপনার পরিবার সে টাকায় চাল, ডাল, লবণ, মাছ, প্রসাধন, ঔষধ ইত্যাদি কিনলো। তার মানে টাকাটা বাজারে চলতে শুরু করলো। ধরুন আপনি A কোম্পানির সাবান ও B কোম্পানির ঔষধ কিনলেন। তাহলে আপনি সে কোম্পানির প্রোফিট বা লাভে ভূমিকা রাখলেন। কোম্পানিগুলো তা দিয়ে কাঁচামাল কিনবে, কর্মচারীর বেতন দিবে এবং সরকারকে লাভের উপর ট্যাক্সও দিবে। তাহলে দেখেন আপনি আরো অনেকের উপার্জনে ভূমিকা রাখতেছেন ও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতেছেন। আপনি যে পণ্য ও সেবা নিচ্ছেন তার উপর আপনি ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স বা ভ্যাটও দিচ্ছেন, যা সরাসরি রাষ্ট্রীয় আয়ে যোগ হচ্ছে।
তাহলে চিন্তা করে দেখুন আপনার প্রেরিত অর্থের রাষ্ট্রের জন্য কি অপরিসীম অবদান রাখতেছে। বিপরীতভাবে যদি চিন্তা করেন, আপনার সে টাকাটা বিদেশ থেকে আসলো না। তাহলে ঠিক উল্টোটা ঘটবে।
বৈদাশিক মুদ্রা দেশে যাচ্ছে। সে টাকা থাকাতে খরচ করতে পারতেছেন। সে টাকা খরচ হয় বলে আরেকজনের ব্যবসা চলতেছে, আরেকজনের ব্যবসা চলতেছে বিধায় অনেকের কর্মসংস্থান হচ্ছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে বলে তাদের পরিবার চলতেছে, তাদের খরচ আবার অর্থনীতিতে সার্কুলেট হচ্ছে। এভাবে একটি দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে।
আমাদের দেশের জনসংখ্যা অধিক বলে ট্রান্সেকশন বা বিনিময়ও অধিক। অধিক ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে এবং তা অর্থনীতির চাকাকে বহুগুণ বাড়াতে সক্ষম। জনসংখ্যা আমাদের জন্য অভিশাপ নয়, বরঞ্চ আশীর্বাদও বটে।
বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে রেমিটেন্স আসে। যেমন ব্যবসায়ে রপ্তানি অন্যতম। কিন্তু প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্সের তুল্য তা নয়। ব্যবসার উদ্দেশ্যে যা রপ্তানি হয়, তার কাঁচামাল আমদানিতে রেমিটেন্স দেশ থেকে বেরও হয়ে যায়, সুতরাং ব্যবসায়ে আমদানিকৃত রেমিটেন্স খুব ফায়দা বহন করে না। কিন্তু প্রবাসীদের রেমিটেন্সের বিনিময়ে কিছুই দেশ থেকে বের হচ্ছে না। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের সম্পূর্ণটাই দেশের কাজে লাগে। বরঞ্চ আমদানি বাবদ অনেক দেনা প্রবাসীদের রেমিটেন্স থেকেই শোধ করা হয়।
বিশ্বের বহু দেশ আছে যাদের দেশের বাহিরে থেকে আমাদের মতো রেমিটেন্স আসে না বললেই চলে। সুতরাং ঐসব দেশ তাদের অভ্যন্তরীণ আয় (টাক্স/ভ্যাট) ইত্যাদি দিয়ে বাৎসরিক বাজেট পূরণ করে। তারপরেও তারা উন্নত রাষ্ট্রের একটি। আমি যেদেশে থাকি, আয়ারল্যান্ড তার অন্যতম উদাহরণ।
এছাড়াও সরকার যদি অন্য দেশ থেকে লোণ বা ঋণ প্রত্যাশা করে তাহলে যদি বৈদাশিক মুদ্রার ফ্লো যদি ভালো থাকে তাহলে অন্য দেশ ঋণ দিতেও কার্পণ্য করে না। কারণ তারা জানে দেশের প্রচুর রেমিটেন্স আমদানি হয়, সুতরাং সে ঋণ পরিশোধ করে দিতে পারবে। বৈদাশিক মুদ্রার ফ্লো কমে গেলে অন্য দেশও লোণ দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে, যদি দেয়ও তাহলে ছড়া সুদ অথবা কঠিন শর্ত মানতে হতে পারে।
দেখুন একজন পিওন, ড্রাইভার বা তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের বেতন আহামরি বেশি নয়। কিন্তু দুর্নীতির আশীর্বাদে তাদেরকে ধরলে ১-২ কোটি নয় কয়েকশ কোটি টাকার নিচে পাওয়া যায় না। তাহলে রাগব বোয়ালদের কথা চিন্তা করুন। একথা একারণেই বলা যে, দেশে সীমা ছাড়া দুর্নীতির পরেও একটি দেশ কীভাবে টিকে আছে?
বাংলাদেশ টিকে আছে কারণ, বাংলাদেশে জনসংখ্যা অনেক এবং বহু বাংলাদেশি প্রবাসে আছে এবং প্রচুর পরিমাণ বৈদাশিক মুদ্রা বাংলাদেশে প্রেরিত হয়। এই প্রেরিত অর্থই বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকার মূল শক্তি।
যে পরিমাণ বৈদাশিক মুদ্রা বাংলাদেশে আসে, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্রের দায়িত্বরত ব্যক্তিবর্গ একটু বিচক্ষণ হলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল নয়, উন্নত রাষ্ট্রই থাকতো। মালেয়শিয়া সিঙ্গাপুর হওয়ার স্বপ্ন নয়, ঐসব দেশগুলো থেকে আরো ভালো অবস্থায় থাকা সম্ভব হতো।
দেশে প্রতিনিয়ত প্রচুর অর্থ বিনিময় ছাড়াই ঢুকতেছে। দেশে অর্থ আছে বলেই দুর্নীতিবাজরা হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে বিদেশে পাচার করতেছে। অর্থ আছে বলেই আছে ক্ষমতার কামড়া কামড়ি। অর্থ আছে বলেই জনগণকে উপহাস করা নেতাদের বেতন ভাতা জোটে।
প্রবাসীরা আছে বলেই আজ দেশের রক্তনালী প্রবাহিত। প্রবাসীরাই দেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড।
গত ২৩ ই জুলাই মঙ্গলবার আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের টয়মন পার্কে বাংলাদেশ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (BSAI) এর উদ্যোগে ৭ জনের টিমের (সেভেন-এ-সাইড) ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেন্টে লিমেরিক বিডি টাইগারস ক্রিকেট টিম চ্যাম্পিয়ন ও আইরিশ বাংলা টাইমস ক্রিকেট টিম রানার্স আপ হয়।
উক্ত টুর্নামেন্টে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টি থেকে মোট ১২ টি দল অংশগ্রহণ করে। টুর্নামেন্টটি চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয় (Group A, B,C & D) এবং গ্রুপ পর্বে প্রত্যেক দল দুটি করে ম্যাচ খেলে। খেলায় চারটি দল সেমিফাইনালে উন্নীত হয়। ফাইনালে লিমেরিক বিডি টাইগারস ১৩ রানে আইরিশ বাংলা টাইমসকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।
খেলায় অসাধারণ নৈপুণ্যের জন্য লিমেরিকের সলিম মিয়া ফাইনালের ম্যান অব দ্যা ম্যাচ এবং সেই সাথে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ও সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার জিতে নেন।
খেলার সার্বিক তত্ত্বাবধান, আম্পায়ারিং ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন BSAI এর সদস্য ও নেতৃবৃন্দগণ; তন্মদ্ধে জনাব মোহাম্মদ মোস্তফা, জনাব এ কে আজাদ, জনাব চুন্নু মাতবার, জনাব নাজমুল ইসলাম মানিক, জনাব মো: মনিরুউজ্জামান মানিক, জনাব গোলাম মোর্শেদ কামরুল, জনাব শহিদুল ইসলাম রনি, জনাব আলমগীর হোসেন, জনাব শিহাবুদ্দৌলা বিজয়, জনাব মবিন, জনাব মনিরুল ইসলাম মনির, জনাব ফিরোজ আহমেদ অন্যতম।
এইতো দুদিন আগের খবর, আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হঠাৎ ঘোষণা দিলেন তিনি আগামী নির্বাচনে লড়বেন না। অথচ তিনি নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেছিলেন। তিনি কারণ হিসেবে জানান, ”আমি আমার দল ও দেশের ভালোর কথা চিন্তা করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি’’।
আরেকটু পেছনের ইতিহাসের দিকে তাকানো যাক। মহাত্মা করমচাঁদ গান্ধি ব্রিটিশদেরকে ভারতবর্ষ ত্যাগে বাধ্য করানোর জন্য অন্যতম একজন নেতা। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা যখন ভারতবর্ষ ত্যাগ করে তখন মহাত্মা গান্ধিই ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যেনি চাইলেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারতেন। তিনি তা না করে তা জহুরলাল নেহেরুর হাতে পদার্পণ করেন।
আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন মেন্ডেলা, যিনি আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও গন্তান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। দীর্ঘ ২৭ বছর কারাভোগের পর ১৯৯০ সালে কারামুক্তির পর ১৯৯৪ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। ১৯৯৯ সালে তার প্রথম টার্ম শেষ হওয়ার পর চাইলেই তিনি ২য় টার্ম প্রেসিডেন্ট থাকতে পারতেন, কারণ সবাই তাঁকে পছন্দ করতো। কিন্তু তিনি তা না করে প্রথম টার্ম শেষেই অবসর নেন।
মহাত্মা গান্ধি ও নেলসন মেন্ডেলা উভয়ই ছিলেন যথেষ্ট জনপ্রিয় ও সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। গান্ধি চাইলেই প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন, কিংবা মেন্ডেলা চাইলেই আরেক টার্ম প্রেসিডেন্ট থাকতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা তা করেন নি, মনে করেছেন অন্যরা ভালো করবেন ও সুযোগ দিয়ে দিয়েছেন। যার ফলে দুজনকেই দলমত নির্বিশেষে সবাই পছন্দ করে ও আজও শ্রদ্ধা জানিয়ে আসতেছে।
আরো উদাহরণ যদি দেই। ২০০৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন মনমোহন সিং। সে সময় কংগ্রেসের সভানেত্রী ছিলেন সোনিয়া গান্ধি। স্বাভাবিকভাবেই সোনিয়া গান্ধিই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিবেন এমনই সবার ধারণা ছিল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে নিজে প্রধানমন্ত্রী না হয়ে করলেন মনমোহন সিং কে। তিনি মনে করেছেন মনমোহন সিংই প্রধানমন্ত্রী হবার যোগ্য।
চাইলেই যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন, এমন সুবর্ণ সুযোগ অন্যকে হস্তান্তর করে এক অনন্য নজীর স্থাপন করেন সোনিয়া গান্ধি।
২০১৬ থেকে ২০২৪, এ ৮ বছরে UK তে ৬ বার ৬ জন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ব্রেক্সিটের কারণে ২০১৬ সালে ডেভিড ক্যামেরুন পদত্যাগ করেন। ব্রেক্সিটে তিনি জিতেছেন, কিন্তু চাইলেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকতে পারতেন। এরপর আসেন টেরেসা মে, প্রায় প্রায় তিন বছর ক্ষমতায় থাকার পর UK-EU ব্রেক্সিট ডিল-এর ইস্যুতে তিনিও পদত্যাগ করেন। এরপর বরিস জনসন তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন এবং পার্লামেন্টারি সদস্যদের চাপে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন দেন এবং বিপুল আসনে জয়লাভ করলেও, শুধুমাত্র করোনার সময় বাড়িতে পার্টি দেবার কারণে সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন। এরপর বরিসের ক্ষণস্থায়ী রিপ্লেসমেন্ট এলিজাবেথ ট্রুস এবং এর পরে বিগত নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ঋষি সুনাক থাকেন প্রধানমন্ত্রী। ইনফ্লেশন, মাইগ্রেশনসহ কিছু ইস্যু নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে ঋষি সুনাক অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন দেন মেয়াদ উত্তিন্নের আগেই। এরপর নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিত আছেন কিয়ের স্টারমার।
এইতো কিছুদিন আগেই আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকারও পদত্যাগ করেছিলেন। পদত্যাগ করার আগে তিনি বলেন নতুন প্রধানমন্ত্রী তাঁর থেকে অধিক ভালভাবে দেশ চালনা করতে পারবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। জাস্ট এটাই। মনে করেন অন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর থেকে ভালো হবেন।
দেখুন, উপরে ইংল্যান্ড আয়ারল্যান্ড মিলিয়ে যে কয়জন পদত্যাগ করেছেন ও অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন দিয়েছন এবং জো বাইডেন আগামী নির্বাচন যে করবেন না, তার কারণগুলা খুবই নগণ্য। এসব কারণে তাঁরা পদত্যাগ করতে, কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন দিতে বাধ্য ছিলেন না। মনে করতে পারতেন ধুর একটু সমালোচনা হলে হইছে আরকি। মানুষ কিছু বিষয়ে অখুশি থাকলেই বা কি!
আমাদের চোখে মনে হবে এরা বোকার হর্দ। কেউ কী এভাবে ক্ষমতার রসের হাড়ি নিজ হাতে জলাঞ্জলি দেয়? কিন্তু তাঁরাই রিয়েল লিডার। তাঁরা মানুষের চাওয়াকে গুরুত্ব সহকারে দেখেন, জনগণের পালস বুঝেন, নিজের সদস্যদের চাওয়ার প্রতি সন্মান প্রদর্শন করেন। নিজের যোগ্যতা ও সক্ষমতাকেও পর্যালোচনা করে চলেন; যদি দেখেন অন্য কেউ তাঁর থেকে বেশী যোগ্য তাঁকে জায়গা ছেড়ে দেন, বয়স বেশী মনে হলে অবসরে যান।
তাঁদের কাছে দেশ এবং জনগণই মুখ্য। তাঁকেই নেতা হয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকতে হবে এমন তাঁরা নন। তাঁরা যদি মনে করেন তাঁর দ্বারা দেশের যথোপযুক্ত কল্যাণ সাধিত হচ্ছেনা, কিংবা দেশের মানুষ তাঁর উপর অসন্তুষ্ট, অথবা তাঁর থেকে অন্য কেউ যোগ্য তাহলে দেশের প্রয়োজনে নিজ হতে সে পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ক্ষমতা তো আদতে দেশের কল্যাণেই। কারণ সে দেশের কর্মচারী হয়ে সে শপথই তো নিচ্ছেন তাঁরা।
আর আমাদের দেশে দেখুন। বিগত কিছুদিন যা হচ্ছে, একটা দেশের আর কত মানুষ চাইলে অথবা কত মানুষ মরলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নিমিত্তে রাস্ট্রপ্রদানের পদত্যাগ করার জন্য যথেষ্ট হবে? উপরের উদাহরণের চেয়ে আর কত বেশী উদাহরণ দরকার আছে বোঝার জন্য? রাষ্ট্রপ্রধান তো নয়ই, একজন দায়িত্বরত একজন খুব ছোট পদের ব্যক্তিকেও তো পদত্যাগ করতে দেখিনি।
কবে যে আমাদের রাজনীতিবিদের ক্ষমতায় আরোহণের পাশাপাশি ক্ষমতাকে উৎসর্গ করারও মানসিকতা জন্মাবে?
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের খাতিরে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তো প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যেতো? তাহলে হয়তো এতো রক্তপাত হতো না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে আবার তা নিয়ে নেয়া যেতো। একজন মন্ত্রী কিংবা একজন আমলা শ্রেণির কেউও পদত্যাগ করে বা বহিষ্কার করে দেখানো যেতো যে তারা যে কিছু একটা পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু না, ক্ষমতা থাকতেই হবে যে কোনো মূল্যে। ১০০ কেন, ১০০ হাজার মানুষেরও যদি মৃত্যু ঘটে।
অনেক দেশে এমনো দেখেছি মাত্র ৫০-১০০ জনের আন্দোলনেই বড়ো বড়ো দাবি মেনে নিতে। শুধু ১ জনের মৃত্যুতে বড়ো বড়ো নেতাদের পদত্যাগ করতে। আর প্রত্যেকটা ঘটনার দায়ভার স্বীকার করা তো আছেই।
শেষ কথা ক্ষমতাটাই আসল, দেশ ও দেশের মানুষ হচ্ছে তাঁদের ব্যবহার্য বস্তু। প্রয়োজনে ব্যবহার করলাম, আর প্রয়োজনে ছুড়ে ফেললাম।
কবে যে আমাদের রাজনীতিবিদের ক্ষমতায় আরোহণের পাশাপাশি ক্ষমতাকে উৎসর্গ করারও মানসিকতা জন্মাবে? কবে যে ক্ষমতা নিজের স্বার্থের চেয়ে দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে ব্যবহারের দিকে বেশি মনোযোগী হবে? কবে যে ঘৃণার থেকে ভালবাসার ক্ষমতাটা বৃদ্ধি পাবে? কবে যে দেশ পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ফল ভোগ করবে?
এক বাচ্চা আরেক বাচ্চার খেলনা পেলে আর দিতে চায় না। আপনারা কি বাচ্চা, আর ক্ষমতা কি বাচ্চাদের খেলনা? স্বাধীন দেশের জনগণ আর কত উপহাসের স্বীকার হবে?
ক্ষমতার স্বাদ কি এতই অমিয় যে এর স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে মন নাহি চায়। ক্ষমতার স্বাদ কি এমনি স্বাদ যে, এর উপর কখনো তিক্ততা আসে না?
ঈদ গত হয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই, কিন্তু ঈদের আনন্দকে ধীর্ঘায়িত করেছে বৃহত্তর কুমিল্লা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান। গতকাল ৭ই জুলাই রবিবার ২০২৪ আয়ারল্যান্ডের কিলকেনি শহরে অবস্থিত The Watershed এ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জমকালো ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠান।
বৃহত্তর কুমিল্লার এই ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর ও কুমিল্লার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাউন্টি কিলকেনির সন্মানিত মেয়র জনাব Andrew McGuinness এবং পুনর্বার নির্বাচিত দুই বাংলাদেশি কাউন্সিলর জনাব কাজী মোশতাক আহমেদ ইমন ও জনাব আজাদ তালুকদার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অল বাংলাদেশি এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের সভাপতি জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ার এবং বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানসহ কমিউন্টির সন্মানিত ব্যক্তিবর্গ।
প্রায় পাঁচশত আমন্ত্রিত অতিথিদের পদচারণায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত হয়।
দুপুর সাড়ে বারোটায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। দুপুরে খাবার পরিবেশনার পর এবং যোহরের নামাজের শেষে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব।
সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা জনাব আক্তার হোসেনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা হয়। এরপর আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিবৃন্দ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন ও অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জনাব আখতার হোসেন তাঁর বক্তব্যে আগত আমন্ত্রিত অতিথিদের ধন্যবাদ জানান। এবং একই সাথে তিনি সংগঠনের বিগত ২২ মাসের কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন। বৃহত্তর কুমিল্লা এসোসিয়েশন পাশে থাকার জন্য সকলের কাছে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জনাব আবদুল মান্নান (মান), জনাব কবির আহমেদ ও জনাব রবিউল আলম । অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় সহযোগিতা করেন সংগঠনের উপদেস্টামন্ডলী ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ।
পুরো অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছিল ভাই ও ভাবীদের জন্য মজার মজার ইভেন্ট দিয়ে। এছাড়াও ছিল বাচ্চা এবং বড়দের জন্য বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন। বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য ছিল বাউন্সি ক্যাসল।
বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে ছিল বাচ্চাদের জন্য দৌড় প্রতিযোগিতা, মেমোরি গেইমস, ইন-আউট প্রতিযোগিতা। আর বড়দের জন্য ছিল মেমরি গেইমস/কুইজ প্রতিযোগিতা ও মিউজিকাল চেয়ার, দড়ি টানা টানি (বৃহত্তর কুমিল্লা বনাম সমগ্র বাংলাদেশ), বেলুন সেভ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন ইভেন্ট।
অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এই ঈদ পুনর্মিলনী ২০২৪ অনুষ্ঠানে বৃহত্তর কুমিল্লা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
সন্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় বাংলাদেশের গর্ব পরপর দুই বার নির্বাচিত কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার ও জনাব কাজী মোশতাক আহমেদ ইমনকে। জনাব কাজী ইমন বর্তমান সন্মানিত ডেপুটি মেয়র এবং জনাব তালুকদার সাবেক ডেপুটি ছিলেন।
এছাড়াও সাহিত্য সন্মাননা পুরস্কার হিসেবে ২০২৪ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত ৬ জন লেখককে ক্রেস্ট ও সন্মানীয় উত্তরীয় প্রদান করা হয়। লেখকবৃন্দ হলেন পর্যায়ক্রমেঃ
সন্মাননা ক্রেস্ট ও অন্যান্য পুরস্কার গ্রহণে যারা অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদের পরিবর্তে উপস্থিত তৎসম্বন্ধিয় ব্যক্তি পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে মেগা র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। র্যাফেল ড্র তে ছিল তিনটি মেগা পুরস্কার। প্রথম পুরস্কার ছিল উমরার উদ্দেশ্যে ডাবলিন থেকে জেদ্দা রিটার্ন বিমান টিকেট, দ্বিতীয় পুরস্কার ছিল ডাবলিন থেকে ইজিপ্ট রিটার্ন টিকেট, তৃতীয় পুরস্কার ছিল ডাবলিন থেকে সুইজারল্যান্ড বিমান টিকেট।
অনুষ্ঠানটিতে বাংলার ঐতিহ্য পিঠা, মিষ্টান্ন ও দেশীয় খাবারের ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও ছিল বস্র কর্নার ও বই প্রদর্শনী।
ঈদ পরবর্তী এই আয়োজনে আসতে পেরে আগত প্রবাসী বাংলাদেশিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন বহুদিন পর এমন একটি সুন্দর ঈদ অনুষ্ঠানে পরিবার পরিজন নিয়েই বাংলাদেশি কৃষ্টি কালচারকে উপভোগ করতে পেরে তার আনন্দিত। আয়োজকদের প্রবাসীরা ধন্যবাদ জানান।
যুক্তরাজ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টিসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়নে ও স্বতন্ত্রভাবে ৩৪ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন জয়ী হয়েছেন। সবাই জিতেছেন লেবার পার্টির হয়ে।
রুশনারা আলী
রুশনারা আলী বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো থেকে ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। লেবার পার্টির সদস্য রুশনারা আলী ২০১০ সাল থেকে তার আসনে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
রুশনারা আলী পেয়েছেন ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আজমল মাসরুর পেয়েছেন ১৪ হাজার ২০৭ ভোট।
রূপা হক
ইলিং সেন্ট্রাল ও অ্যাকটনের প্রতিনিধি রূপা হক পেয়েছেন ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট।
২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন রূপা হক। তিনি কনজারভেটিভ প্রার্থী জেমস উইন্ডসর-ক্লাইভকে হারিয়ে ২২ হাজার ৩৪০ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন।
লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে দাঁড়ানো অ্যালিস্টার মিটন ৬ হাজার ৫৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেড এন্ড হাইগেট আসনে ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ অ্যান্ড ইউনিয়নিস্ট পার্টির ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ৪৬২ ভোট। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন গ্রিন পার্টির লর্না জেন রাসেল। তিনি পেয়েছেন ৬ হাজার ৬৩০ ভোট।
সিদ্দিক ২০১৫ সাল থেকে সংসদ সদস্য।
আপসানা বেগম
আপসানা বেগম পপলার অ্যান্ড লাইমহাউজ আসনে ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য হন আপসানা বেগম।
আপসানা বেগম পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৩৫ ভোট।
এবারের সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী ছিলেন ৩৪ জন।
এবারের যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী হাউস অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, ৪ হাজার ৫১৫ জন। যুক্তরাজ্যের চলমান নির্বাচনে মোট ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুরের হাড় ভেঙে ফেলবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। মুঠোফোনে আবদুল গফুরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠেছে। মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে গালিগালাজ করা হয় বলে আবদুল গফুর প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেছেন। মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আবদুল গফুরের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডটি আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণের নামে সাবেক সংসদ সদস্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছেন, গফুরের এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে মোস্তাফিজুর এভাবে গালিগালাজ করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ২৯ জুন উপজেলা সদরে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বক্তব্যে আবদুল গফুর কার্যালয় নির্মাণে সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে চাঁদা নেন বলে অভিযোগ করেন।
আয়ারল্যান্ডের সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা খুবই উন্নত ও দুর্নীতিমুক্ত। তবে কচ্ছপ গতির বলে ইন্ডিয়ার চেন্নাইতে আসি তড়িৎ চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্যে। এখানে এসে বুঝতে পারি, যেনো বাংলাদেশিরাই চেন্নাইটাকে বাঁচিয়ে রেখেছে! এখানকার লোকজন ও এ্যাপেলো হসপিটালের কর্মচারীদের দুরাচার ও বৈষম্যমূলক আচরণ আমাকে বেশ হতাশ করেছে। এমন হতাশাজনক পরিস্থিতিতে খিটখিটে মেজাজ নিয়ে যখন হোটেলে ফিরলাম তখনই আয়ারল্যান্ড থেকে এক বন্ধুর ফোন পেলাম। তিনি যেনো ‘কাটা গায়ে নুনের ছিটা’ দিলেন। বললেন, “কি মিয়া, খুব তো বড়ো করে বলেছিলেন আবার যখনই আয়ারল্যান্ডে কনস্যুলার সার্ভিস হবে, তা’ হবে লিমরিকে। কিন্তু কই! লিমরিকে তো হচ্ছে না, হচ্ছে কিলার্নিতে।” বিগড়ে থাকা মেজাজ নিয়ে তাঁর সাথে এ বিষয়ে আর কথা বলার মন চাইলো না। ফেসবুকে চোখ বুলিয়ে দেখলাম, বড়ো বড়ো ছবির বাহারে কিলার্নিতে কনস্যুলার সার্ভিসের মহোৎসব চলছে। এ মহোৎসবের আনন্দে আমিও আনন্দিত, বিমোহিত।
তবে আমাকে পীড়া দিয়েছে, বেদনাহত করেছে অন্য কারণে। কেনো? একটু অতীতে ফিরে যাই। যদিও ভেবেছিলাম, অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটি করে আর লিখবো না। তা’ছাড়া, আমাদের ওখানে লেখালেখিতে যে খুব বেশি কাজ হয় তাও নয়। কয়েক বছর আগে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগ নিয়ে একটি কলাম লিখতে গিয়ে লিখেছিলাম, ‘লেখালেখিটা অনেকটা প্রেমের মতো। পঁচানব্বই পার্সেন্ট প্রেম যেমন ব্যর্থ হয়ে যায় ঠিক তেমনি পঁচানব্বই পার্সেন্ট লেখাও কোনো কাজে আসে না। তবুও সমাজের অন্যায়, অবিচার, অনৈতিকতা, অসংগতি দেখলে লেখকসত্বা নীরব থাকতে পারে না। এঁদের বিবেক জেগে ওঠে, কেঁদে ওঠে, চিৎকার দিয়ে ওঠে। সুতরাং কাজ হোক আর না হোক তবু লেখক তাঁর কথা অকপটে বলে যায়, লিখে যায় মানুষ ও সমাজের স্বার্থে। এমন নিষ্ঠুর-নিরাশা হৃদয়ে ধারণ করেই আমি আমার আজকের লেখাটা উপস্থাপন করছি।
২০১৯ সাল। মাসের নামটি মনে নেই। লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে একটি টিম আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে এসেছিলো দেশটিতে বসবাসরত বাঙালিদেরকে কনস্যুলার সেবা দান করার জন্যে। লিমরিক যেহেতু ভৌগোলিকভাবে দেশটির মাঝখানে অবস্থিত সেহেতু পরবর্তীতে লিমরিকে কনস্যুলার সার্ভিস প্রদানের জন্যে টিমকে অনুরোধ করি। যৌক্তিক প্রস্তাব বিবেচনায় তারা রাজি হোন এবং আগামী তিন মাস পরে যে সার্ভিসটি হবে তা’ লিমরিকেই হবে বলে টিমপ্রধান জনাব মোসাদ্দেক সাহেব জোরালোভাবে বলে নিশ্চিত করে যান। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তাঁর কথা নড়চড় হয়ে গেলো। লিমরিকে হলো না, সেবার হলো কর্কে। ফলে লিমরিকস্থ বাঙালিদের কাছে আমাকে বেশ বিব্রত হতে হলো। ব্যক্তিগতভাবে যেহেতু আমি অসৎ প্রকৃতির নই, আমার কথায় যেহেতু ধারভার থাকে তাই বিষয়টিকে আমি সহজভাবে নিতে পারিনি। এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরির পেছনে কার হাত আছে, কি অদৃশ্য কারণে লিমরিকে হলো না তা’ জানা বা বোঝার জন্যে মাননীয় হাইকমিশনার মহোদয়ার শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন অনুভব করি। সেখানেও টালবাহানা। দায়িত্বরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের অতি দায়িত্বশীলতা কিংবা অতি দায়িত্বহীনতার জন্যে প্রায় দু’ সপ্তাহ লেগেছে কেবলমাত্র তাঁর সাথে একটিবার টেলিফোনে কথা বলতে।
অবশেষে, মাননীয় হাইকমিশনার মহোদয়া আমার কথা বেশ মনোযোগ সহকারে শুনলেন। যদিও আমার কথায় রাগ-ক্ষোভ, আবেগ, অভিযোগ-অনুযোগ ছিলো। সবকিছু শুনে ও বুঝে পরিশেষে তিনি যে কথাটি আমাকে বলেছিলেন তা’ এখনো আমার কানে বাজে। তা হলো- “Trust me, I am promising to you that the next consular service will be in Limerick first.”কিন্তু তাঁর “promise” রক্ষা হওয়ার আগেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোভিড আমাদেরকে হানা দেয়। ফলে সবকিছুই স্থবির হয়ে পড়ে। কনস্যুলার সার্ভিসও বন্ধ থাকে।
দুনিয়া স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথে কনস্যুলার সার্ভিসও স্বাভাবিকভাবে চলতে শুরু করে। আবারো তারা ডাবলিন, কর্ক, কিলার্নি ও গলওয়েতে তাদের সার্ভিস প্রদান করে। লিমরিক অসহায় কাতর দৃষ্টিতে তা’ কেবল তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে। কিন্তু আর কতো অসহায়ত্ব নিয়ে বেঁচে থাকা যায়! তাই লিমরিক আবারো আড়মোড়া দিয়ে ওঠলো। “মাননীয়া”কে তাঁর পুরনো প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে লিমরিকের পক্ষ থেকে আমি কনস্যুলার সার্ভিসে আবেদন জানিয়ে ই-মেইল করি। পর পর দু’টো ইমেইল করা সত্বেও কোনো সাড়া পাচ্ছিলাম না। সবার অজান্তে নিজে যখন কষ্ট পাচ্ছিলাম ঠিক তখন একদিন অপ্রত্যাশিতভাবে কনস্যুলার মিনিষ্টার জনাব রকিব উদ্দিন আহমদের ফোন পেলাম। তিনি ম্যাডামের বরাত দিয়ে আমাকে জানালেন, ‘ডাবলিনে কনস্যুলার সার্ভিস হবে বলে ইতোমধ্যে তারিখ নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে তাই এবার সেখানেই হচ্ছে। পরবর্তীতে অর্থাৎ জুনে যখন টিম আসবে তখন তারা একদিন গলওয়ে কিংবা কিলার্নি, অন্যদিন লিমরিকে (যেহেতু টিম দু’দিন অবস্থান করে) এ সেবা প্রদান করবেন। আমি আর বাড়াবাড়িতে না গিয়ে তাঁর এ প্রস্তাবেই রাজি হই।
পরবর্তীতে কিছুদিন পর মান্যবর রাষ্ট্রদূত মহোদয়া এক সরকারি সফরে ডাবলিনে এলে সেখানেও তাঁর সঙ্গে দেখা করে সদ্য প্রকাশিত আমার একটি বই উপহার দিই এবং লিমরিকের বিষয়টি উত্থাপন করি। প্রথমে তিনি কিলার্নির কথা বললেও পরে তাকে ২০১৯ সালের প্রমিজের কথা মনে করিয়ে দিলে তিনি লিমরিকের ব্যাপারে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এর দু’দিন পর কনস্যুলার কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে কনস্যুলার টিমের সাথে মি. রকিব উদ্দিনও ডাবলিনে আসেন। দুই-আড়াই ঘন্টা ড্রাইভ করে আমি আবারো সেখানে যাই। তাঁর সাথে দেখা করি। খোলামেলা কথা বলি এবং পরবর্তী সার্ভিসটি লিমরিকে হবে বলে বেশ নিশ্চিতভাবেই তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেন। বাংলাদেশ কমিউনিটি অফ ডাবলিন (বিসিডি)-এর সভাপতি জনাব মোহাম্মাদ মোস্তফা, ডাবলিন আওয়ামী লীগ-এর সভাপতি অনুজপ্রতিম ফিরোজ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অলক সরকারসহ অনেকেই বিষয়টি অবগত হোন। এমনকি, প্রয়োজনে তারা লিমরিকে গিয়ে সহযোগিতা করার উদার মনোভাবও পোষণ করেন। তাদের এমন উদার মনোভাব ও মিনিস্টার সাহেবের ইতিবাচক আশ্বাস আমাকে বেশ আশ্বস্ত করে। মনে আসে প্রশান্তি। এ প্রশান্তির ঢেঁকুর গিলতে গিলতে খোশমেজাজে বাড়ি ফিরে আসি।
লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমকে নিজের লেখা বই উপহার দিচ্ছেন সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
এটা সম্ভবত গত ফেব্রুয়ারি বা মার্চের কথা। সময় গড়িয়ে জুন চলে এলো। হাইকমিশন থেকে কোনো সাড়াশব্দ নেই। অগত্যা আমাকেই আবারো তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হলো। লিমরিকে কখন, কিভাবে আসবেন জানতে চাওয়া হলে জনাব রকিব উদ্দীন আমাকে নিরাশ করলেন। এবার নাকি কিলার্নির পালা তাই তারা ওখানেই যাবেন এবং পরের বার একদিনের জন্য লিমরিকে আসবেন বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আমি তাকে পুরনো সব কথা মনে করিয়ে দিয়ে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাই। কিন্তু, দুঃখজনকভাবে তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। আমাদের দাবি, আবেগ, অনুভূতি, অনুরোধ, ন্যায্যতাকে পায়ে পিষে লিমরিকের বুকের ওপর দিয়ে কিলার্নিতে গিয়ে কনস্যুলার মহোৎসব সম্পন্ন করেছেন। ধন্যবাদ তাদেরকে।
আমার বক্তব্য হচ্ছে, মি. রকির উদ্দিন যে “পালা”র দোহাই দিয়ে কিলার্নি গেলেন সেই “পালা”র কথা টানলে তো সবার আগে লিমরিকের “পালা” চলে আসে। কারণ, ২০১৯ সালেই হাইকমিশনের হেড অফ দ্য সুপ্রিম কর্তৃক নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছিলো এ মর্মে যে, ‘পরবর্তীতে যদি কোথাও কনস্যুলার সেবা দেয়া হয় তা’ হবে সর্বপ্রথম লিমরিকে’। অথচ, “সর্বপ্রথম” তো দূরের কথা, দ্বিতীয়-তৃতীয় দফায় ডাবলিন, কিলার্নিসহ বিভিন্ন কাউন্টিতে কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া সত্বেও লিমরিকের “টার্ম” এখনো আসেনি! এ থেকে আমরা কি বুঝতে বাধ্য হতে পারি? হয়তো মান্যবর রাষ্ট্রদূত আমাকে কথার কথা ‘আশ্বাসবাণী’ শুনিয়েছিলেন? ওয়াদার ‘মর্যাদা রক্ষা করা’ মানবজীবনের নীতি-নৈতিকতার জন্যে যে কতো বড়ো অর্জন, তা’ তিনি বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। নতুবা, ভুক্তভোগী লোকজন যে বলে, ‘ডাল মে কুঁচ কালা হে’!
লিমরিকবাসীর প্রতি বাংলাদেশ হাইকমিশনের কেনো এতো অনীহা, উদাসীনতা, বৈষম্য ও বিমাতাসুলভ আচরণ তা’ আমার বোধগম্য নয়। লিমরিকস্থ বাঙালিরা কি বাংলাদেশ সরকারকে সঠিকভাবে ট্যাক্স দিচ্ছে না, কনস্যুলার সার্ভিসের ফি পরিশোধ করে না? নাকি, দেশের ‘হৃদপিণ্ড’ রেমিট্যান্সে কোন অবদান রাখছে না? যদি তা’ না হবে তবে কেনো লিমরিকের প্রতি এমন বৈষম্য? লিমরিকে হাইকমিশনের কেনো বারবার অনাস্থা মনোভাব? কিসে এতো জড়তা?
লিমরিকে কনস্যুলার সার্ভিস পরিচালনার জন্যে আমি আর বাংলাদেশ হাইকমিশনকে বলবো না। ভবিষ্যতে তারা আসবে কি আসবে না সেটা তাদের একান্তই নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে তারা কিসের ভিত্তিতে বা কোন মাপকাঠিতে একেকটি কাউন্টিতে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে তা’ আমার বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে। ন্যূনতম ভদ্রতার প্রশ্নে কি একথা বলা যায় না, কমিশন অন্তত; একবার হলেও বঞ্চিত লিমরিকবাসীর পক্ষে আমাকে ‘হ্যালো’ করে তাদের যুক্তিসংগত কারণ সম্পর্কে জানাতে পারতো?
মাপকাঠি যদি আওয়ামী লীগ অনুসারী বা আওয়ামী লীগার হওয়া দরকার হয়ে থাকে তবে বলতে হয়, ছাত্রজীবন থেকে এখন পর্যন্ত আমি কে? কোন ঘরানার আমি? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক চেতনা ও তাঁর যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের ন্যায্যতার পক্ষে কি আমার মেধা, নিরলস শ্রম দেয়ার পরও আজো আমার কলমটি সচল রাখিনি?
তবে হাতেগোনা দলবাজ, দলকানা, তেলবাজ, স্বার্থান্বেষী ধান্দবাজ আওয়ামী লীগারদের মতো আমি নই। আমি শুদ্ধসত্বার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমি মেধা-মননে আওয়ামী লীগ ও দেশের প্রকৃত হিতাকাঙ্খী, শুভাকাঙ্খী ও সেবক।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুসংবাদ শুনে আমার বাবার হাত থেকে সিগারেট পড়ে গিয়েছিলো। আমি সেই বাবার সন্তান। আমি নিজেও স্ত্রীর ঘুম নষ্ট করে বলতে গেলে প্রতি রাতেই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি শুনি মনোযোগে। তবে কোনো কমিটিতে, উপ-কমিটিতে আমার নাম থাকা বা রাখার চিন্তা করিনি কোনোদিন। পদ বা কমিটিবাজিতে আমার কোনো বিশ্বাস নেই। আমার মতো এমন আওয়ামীভক্ত লিমরিক কাউন্টিতে আরো অনেকেই আছেন, যাঁদের আশা-আকাংখা, আবেগ-অনুভূতিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সিদ্ধান্তে আঘাত লেগেছে বেশ জোরেশোরে! তাঁরাও কষ্ট পেয়েছেন ভীষণ।
সত্যি কথা বলতে কি, কমিশনের অপ্রত্যাশিত এমন সিদ্ধান্তে লিমরিকের বাঙালিরা বঞ্চিত হয়েছেন আবারো, যা’ কাম্য ছিলো না কারো। আশা করি, লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিশ্চয়ই শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং লিমরিকের বঞ্চিত বাঙালিরা তাদের ন্যায্য দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যক্ষ করবে।
আমরা এও আশা করি, লন্ডনস্থ হাইকমিশনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার বারবার ‘আশ্বস্তকৃত’ কনস্যুলার সার্ভিস প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তাঁর উদারতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় পেয়ে লিমরিকের বাঙালিরা গর্বিত ও কৃতার্থ হবে।
লেখক- কবি ও প্রাবন্ধিক উপদেষ্টা, (এন, টি, এ) আইরিশ পরিবহন মন্ত্রনালয়। প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ। চেন্নাই, ইন্ডিয়া ২৯ জুন ২০২৪
গত ৭ই জুন ২০২৪ সম্পন্ন হল আয়ারল্যান্ডের স্থানীয় নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে লোকাল ইলেকশন বা স্থানীয় নির্বাচন। উক্ত নির্বাচনে মোট ৯৪৯ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন, তন্মদ্ধে দুজন বাংলাদেশি কাউন্সিলর বিজয়ের গৌরব অর্জন করেন। দুজনই গত টার্মেও কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন।
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ তালুকদার ও কাউন্সিলর কাজী মোশতাক আহমেদ ইমন উভয়ই দ্বিতীয়বারের মত কাউন্সিলরের চেয়ার অক্ষুণ্ণ রাখেন। দুই সহস্রাধিক কাউন্সিলর পদে প্রতিযোগির মধ্যে দুই বাংলাদেশি বিজয় ছিনিয়ে এনে দ্বিতীয়বারের মতো সমগ্র বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।
অপরদিকে কাউন্টি কর্কের ক্লনাকিল্টি থেকে মেয়োরাল কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন জনাব ইউসুফ জানাব আলি। মেয়োরাল কাউন্সিলর গতানুগতিক স্থানীয় নির্বাচনের বাহিরে উক্ত অঞ্চলের জন্য স্পেশাল অ্যারেঞ্জমেন্টে একটি স্থানীয় নির্বাচন। সাধারণত স্থানীয়ভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে মোট ৫ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। প্রত্যেক মেয়োরাল কাউন্সিলর এক বছর করে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। জনাব ইউসুফ জানাবালি তন্মদ্ধে একজন।
ইউসুফ জানাব আলি – ক্লনাকিল্টি থেকে নির্বাচিত ৫ মেয়োরাল কাউন্সিলরের সাথে
জনাব আজাদ তালুকদার, জনাব কাজী আহমেদ ও জনাব ইউসুফ জানাবালিকে আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার ও কাউন্সিলর কাজী আহমেদ সফলতার সাক্ষর রেখে প্রথম টার্ম সম্পন্ন করেন।
কাউন্সিলর কাজী আহমেদ তাঁর মেয়াদকালের প্রথম বছরেই তাঁর নির্বাচনী এলাকা ডানলরি-রাথডাউনের ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। যা কমিউনিটির জন্য আরেকটি বড় সুখবর। গতবছর তিনি কাউন্সিলর পদের পাশাপাশি তাঁর অঞ্চলের শিক্ষা বোর্ডের ইন্টারভিউ বোর্ডের প্রধান ও পুলিশিং কমিটির এসোসিয়েট মেম্বার ছিলেন।
ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় সদস্যদের সাথে কাজী ইমন
কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারও তাঁর প্রথম টার্মে ডেপুটি মেয়র ও মেট্রোপলিটন সিটি মেয়র (কাহার্লক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি সন্মানজনক পিস কমিশনারের দায়িত্ব পান এবং তিনি পুলিশিং কমিটির এসোসিয়েট মেম্বার ছিলেন। তাঁর পল পার্টনারশিপের ডাইরেক্টরশিপ, লিমেরিক মিল্ক মার্কেটের ট্রাস্টি, লিমেরিক মাইগ্রেন্ট ইন্টিগ্রেশন ফোরামের মেম্বারশিপ এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
ফলাফল ঘোষণার পর উচ্ছ্বসিত কমিউনিটির সাথে আজাদ তালুকদার
দ্বিতীয় মেয়াদের দুজনের এ বিজয় তাঁদেরকে আরো অর্জন ও সেবা প্রদানে সহায়তা করবে নিঃসন্দেহে। প্রথম মেয়াদ তাঁদের জন্য ছিল শিক্ষানবিশ। ভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের কাউন্সিলর হিসেবে প্রথম মেয়াদ ছিল কঠিনও বটে। দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হয়ে তাঁরা অবশ্যই প্রথমবারের তুলনায় অভিজ্ঞ ও আত্মবিশ্বাসী। দুজনই কমিউনিটিকে আরো ভালো কিছু প্রদানের প্রত্যয়ে প্রত্যয়ী।
আয়ারল্যান্ডে ২৬ টি কাউন্টির মধ্যে রয়েছে ৩১ টি কন্সটিটিউন্সি বা লোকাল গভর্মেন্ট অথারিটি, যাকে আমরা কাউন্সিল বলে জানি। এই ৩১ টি কাউন্সিলে রয়েছে ১৩৭ টি ইলেক্টোরাল এরিয়া বা নির্বাচনী এলাকা। প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচিত হয় একাধিক কাউন্সিলর। যেমন লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল কন্সটিটিউন্সিতে রয়েছে ৬ টি নির্বাচনী এলাকা, তন্মদ্ধে কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের নির্বাচনী এলাকায় ৭ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তদ্রূপ ডাবলিনের ডানলারি-রাথডাউন কন্সটিটিউন্সিতে রয়েছে ৬ টি নির্বাচনী এলাকা, তন্মদ্ধে কাউন্সিলর কাজী আহমেদের নির্বাচনী এলাকা গ্লেনকুলেন-স্যান্ডিফোর্ডে নির্বাচনে ৭ জন কাউন্সিলরের মধ্যে তিনি একজন। এভাবে মোট ৯৪৯ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সমগ্র আয়ারল্যান্ড থেকে।
পরিবারের সাথে আজাদ তালুকদার
২০২৪ কাউন্সিল নির্বাচনে সর্বমোট ২,১৭১ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন, তন্মদ্ধে ১০০ এর উপরে মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির প্রার্থী ছিলেন। এবারের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশি, মোট ৯ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। সমগ্র আয়ারল্যান্ডে মোট নির্বাচিত কাউন্সিলর হচ্ছেন ৯৪৯ জন।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের উপস্থিতি ২০১৯ সালের তুলনায় কিঞ্চিৎ কম ছিল। নিবন্ধিত ভোটারের ৪৯.৪% ভোট প্রদান করে, ২০১৯ সালে যার পরিমাণ ছিল ৫০.২%।
প্রতি ৫ বছর পর পর স্থানীয় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলরের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মেম্বার নির্বাচনও একই সময় অনুষ্ঠিত হয়। শুধুমাত্র লিমেরিকে এবার প্রথমবারের মতো জনগণের সরাসরি ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন। জনাব জন মোরান হচ্ছেন আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রথম মেয়র।
পরিবারের সাথে কাজী আহমেদ
এবারের নির্বাচনে বড় দুইটি দল Fine Fail এবং Fine Gael সবচেয়ে বেশি কাউন্সিলর পেয়েছে। Fine Fail সর্বোচ্চ ২৪৮ সিট এবং Fine Gael পেয়েছে ২৪৫ সিট। কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার ও কাউন্সিলর কাজী আহমেদ উভয়ই বড় এ দুটি দল থেকে মনোনীত ছিলেন।
আয়ারল্যান্ডের মূল ধারার রাজনীতিতে এ দুই সূর্য সন্তানের পথচলা শুভ হোক। আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিতে বাংলাদেশি তথা মাইগ্রেন্টরা শক্ত ভূমিকা পালন করুক ও অবদান রাখুক এ প্রত্যাশা আমাদের।
আইরিশ বাংলা টাইমসের ম্যাগাজিন মোড়ক উন্মোচনে কাজী আহমেদ
জান্তে-অজান্তে, প্রাকাশ্যে-নিভৃতে সমাজের জন্য অবদান রেখে চলেছেন অনেকেই। তন্মদ্ধে ভিনদেশ থেকে এসে বসত গড়া অভিবাসীরাও রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের অবদানের স্বীকৃতি মেলে খুব কমই। স্বীকৃতির তালিকা থেকে অভিবাসীরা উপেক্ষিতই থাকে বলা চলে।
সমাজের জন্য অবদান রাখা এসব নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তিবর্গের কথা চিন্তা করে কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার একটি মহতি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তিনি কমিউনিটিতে অবদান রাখা কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম কাউন্সিল কতৃপক্ষের নিকট করতে আবেদন জানান। কাউন্সিল তাঁর আবেদনকে মঞ্জুর করেন। কারণ বিগত বছরগুলোতে কাউন্সিল কর্মের স্বীকৃতিসরূপ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করে আসছে। কিন্তু অভিবাসীদেরকে পুরস্কৃত করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করল লোকাল সরকার। আর এর পেছনে বর্তমান কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের ভূমিকা অপরিসীম।
গতকাল ২৮ ই মে লিমেরিকের ডুরাডয়েল কাউন্সিলের অ্যাসেম্বলি কক্ষে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি সূচনা করেন কাউন্সিলর Kieran O’Hanlon ও কাউন্সিল অফিশিয়ালগণ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরস্কৃত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং সাথে তাঁদের পরিবারবর্গ। মিডিয়ার মধ্যে উপস্থিত ছিল আইরিশ বাংলা টাইমস ও বিভিন্ন কমিউনিটি থেকে আগত সাংবাদিকবৃন্দ। অনুপস্থিত পুরুস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষ হতে পুরুস্কার গ্রহণ করেন তাঁদের পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীগন।
কাউন্সিলর তালুকদার জানান, ”আমি দেখে আসতেছি লোকাল কমিউনিটির অনেকেই তাঁদের অবদানের জন্য পুরস্কৃত হয়ে আসতেছে, সেজন্য আমিও চিন্তা করলাম আমাদের অভিবাসীদের থেকে অনেকেই কমিউনিটিতে অবদান রেখে চলেছে, তাঁদেরকেই স্বীকৃতি জানানো যায় কিনা। সে জন্য আমি আমার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই চেয়েছি অভিবাসীদেরকে সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত করতে। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের অ্যাওয়ার্ড প্রদান করলে অভিবাসীরাও বিবেচনায় থাকে’’।
তিনি আরো জানান, ”আমি চারজন ইমামকে পুরস্কৃত করতে পেরে অনেক আনন্দিত, তাঁরা শুধু ধর্মীয় কাজই নয়, নানা ধরণের নৈতিক কাজের সাথে জড়িত। সমাজকে ভালো রাখতে তাঁরা সবসময় উপদেশ ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তরুণ প্রজন্মকে সঠিক পথ দেখিয়ে থাকেন। আমাদের বাংলাদেশি ফুটবল দল দীর্ঘদিন আমাদেরকে ভালো খেলা উপহার দিয়ে আসতেছে। একদিন তাঁরা হয়তো আইরিশ ফুটবলেও অবদান রাখবে, তাঁদেরকে পুরস্কৃত করতে পেরে আমি সত্যিই পুলকিত’’।
জনাব তালুকদার স্বহস্তে পুরস্কারপ্রাপ্তদেরকে পুরস্কার তুলে দেন।
সর্বমোট ১০ জন ব্যক্তি ও সংগঠন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। নিম্নে তাঁদের নাম ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হল।
Abdullah Jaribu
In recognition of his role as Imam in the Al Furqan Muslim Community Centre in Limerick and contribution to a build better society.
আবদুল্লাহ জারিবুর অনুপস্থিতিতে পুরস্কার নিচ্ছেন তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী
Issa Timan
In recognition of his role as Imam in the Mosque Al-Noor and contribution to build a better society.
Khalid Ghafour
In recognition of his role as Imam in the Islamic Cultural Centre, Limerick and contribution to build a better society.
খালিদ গফুরের অনুপস্থিতিতে পুরস্কার নিচ্ছেন একজন শুভাকাঙ্ক্ষী
Faisal Azimi
In recognition of his achievement of winning national title in kickboxing.
Fasih Khan
In recognition and appreciation of his contribution to the health sector in Limerick over the past 30 years.
Perpetua Balberona
In recognition and appreciation of her long standing nursing service and contribution to the health sector in Limerick.
Soumen Pahari
In recognition of his contribution in promoting diverse Indian culture and multicultural faith in Limerick.
Bangladeshi Youth Football Team Limerick
In recognition of the team’s achievements over the past few continuous years and promoting football in Ireland.
Limerick Cricket Club
In recognition of the clubs contribution to the cricket in Limerick and promoting cricket in Ireland.
Limerick Blasters Cricket Club
In recognition of the clubs contribution to the cricket in Limerick and promoting cricket in Ireland.
গত ১৯মে ২০২৪ আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মাল্টিকালচারাল ফেস্টিভাল ২০২৪। হাজার মানুষের উপস্থিতিতে ক্লনগ্রিফিনের ফাদার কলিনস পার্কে ষস্ট বারের মত এই ইভেন্টটির আয়োজনে ছিল ডাবলিন সিটি কাউন্সিল, তাসনুভা শামীম ফাউন্ডেশন আয়ারল্যান্ড, বেলামাইন কমিউনিটি গ্রুপ ও ক্লনগ্রিফিন কমিউনটি এসোসিয়েশন।
তাসনুভা শামীম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগতা বাংলাদেশী বংশদ্ভোব জনাব সাগর আহমেদ শামীম, আইরিশ বাংলা টাইমস এর প্রতিনিধি কবির আহমদ এর কাছে ফেস্টিভাল নিয়ে উনার এক মন্তব্যে বলেন – ‘’ আয়ারল্যান্ড এ অভিবাসীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।এখানে এখন বিশ্বের প্রায় সকল দেশেরই মানুষ কম বেশী বসবাস করে । এই আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে – বিভিন্ন দেশের মানুষ একটি জায়গায় একত্রিত হয়ে বিভিন্ন সংস্কৃতি আদান-প্রদানের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ সম্পর্ক তৈরী করা ।”
তিনি আরোও বলেন -আইরিশ সরকার মনে করে এ দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করা অভিবাসীদের সঙ্গে , মূল ধারার আইরিশ নাগরিকদের সাস্কৃতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে একদিকে যেমন আইরিশ সস্কৃতি সমৃদ্ধ হবে , তেমনি অন্যভাবে আয়ারল্যান্ড একটি মাল্টিকালচারাল রাষ্ট্রে পরিনত হবে । তাসনুভা ফাউন্ডেশন এ কাজটি ছয় বছর ধরে করে যাচ্ছে এ জন্যে তিনি ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
আয়োজকদের তথ্য অনুযায়ী আয়ারল্যান্ডের বসবাসরত ৫০ টিরও বেশী দেশের মানুষের অংশগ্রহন ছিল এই ফেস্টিভালে। ১৯ মে রবিবার দুপুর ১ টা থেকে সন্ধা ৬ টা পর্যন্ত চলা এ ফেস্টিভালে নানা ধরনের স্টল নিয়ে বসেছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ।
মাল্টিকালচারাল ফেস্টিভালে এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, স্থানীয় কাউন্সিলর, মেয়র এবং এমপি সহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ফেস্টিভাল নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর এবং মেয়র এক সংক্ষিপ্ত বক্তিতায় এ ধরনের মাল্টিকালচারাল ফেস্টিভাল আয়ারল্যান্ড সরকার উৎসাহিত করে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য সরকার সব সময় প্রস্তুত ।
এই ফেস্টিভালে উল্লেখযোগ্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের অংশগ্রহন লক্ষ্যনীয় ছিল । বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক – সাস্কৃতিক সংগঠনের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিও লক্ষ্যনীয় ছিল ।
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের প্রবাসীরা গতকাল ১৫ই মে নিজেদের মধ্যে পরিচিত হওয়া ও বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের আয়ারল্যান্ড প্রবাসীদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে ডাবলিনের রেড কাউ হোটেলে প্রথম বারের মতো একত্রিত হয়।
দীর্ঘদিন যাবৎ বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের প্রবাসীদের নিয়ে একটি সংগঠন তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। এর লক্ষ্যে গতকাল ফেনী, লক্ষীপুর ও নোয়াখালীর আয়ারল্যান্ড প্রবাসীদের নিয়ে বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে একটি গোলটেবিল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
এই সভায় আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টি থেকে নোয়াখালী অনুরাগী ৫০ এর অধিক লোক সমাগম হয়। সভায় সমগ্র আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত শুধুমাত্র এই অঞ্চলের লোকজন নিয়ে একটি পিকনিক অথবা গেট- টুগেদার করার সিদ্ধান্ত হয়, এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন জেলার বন্ধু বান্ধব ও স্বজনদের নিয়ে বড় করে আরেকটি অনুষ্ঠান করার ব্যাপারে আলোচনা হয়।
এই সভায় কোনো কার্যকরী পরিষদ অথবা কমিটি গঠন করা হয় নি। শুধুমাত্র আসন্ন গেট- টুগেদার সুচারুরূপে সম্পন্ন করার নিমিত্তে বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগ্রহী ব্যক্তিবর্গদের অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করা পর্যন্ত অনুষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ার পর পুনরায় বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এই বৈঠকে পূর্ব সৃষ্ট WhatsApp Group ও Facebook Group এর নাম নির্ধারণ করা হয় ও গ্রুপগুলোর নাম Greater Noakhali Society in Ireland.
মনোরম পরিবেশে অনুষ্ঠানটি সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হয়ে রাত দশটায় সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে চা-পানি ও অনুষ্ঠান শেষে প্যাকেট খাবার প্রদান করা হয়।
গতকালের সভার সুচনা করেন জনাব জহিরুল ইসলাম জহির এবং সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব সাইফুল ইসলাম। আসন্ন গেট-টুগেদার অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য সকলকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আগামী জুলাই অথবা আগস্টের দিকে গেট টুগেদার অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য চেষ্টা করা হবে।
গতকাল রবিবার ১২ / ০৫ / ২০২৪ ডাবলিনে বাংলাদেশ থেকে আগত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং লন্ডন বাংলাদেশ দূতাবাসের রাস্ট্রদ্যূত মান্যবর সাইদা মুনা তাসনিম এক সরকারি সফরে আয়ারল্যান্ড এসেছেন।
আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহবায়ক বেলাল হোসেন সহ আহবায়ক কমিটির সদস্যরা তাদের সাথে ডাবলিনের ক্যাসল নক হোটেলে সৌজন্য স্বাক্ষাৎ করেন। এসময় আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপন সহ, প্রবাসীদের কল্যাণ ও আয়ারল্যান্ডে আওয়ামী লীগের অগ্রগতির বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয় এবং তাঁরা অতি দ্রুত এ সকল বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪০ বাস্তবায়নে আরো প্রত্যয়ী হয়ে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপশি প্রবাসীদের মাঝে বঙ্গবন্ধু কণ্যার ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রচারণা ও সরকার বিরোধী গুজব রুখে দেয়ার আলোচনা হয়।
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বেলাল হোসেন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জালাল আহমেদ ভূঁইয়া, কামরুজ্জামন নান্না, রফিকুল ইসলাম, আফসার উদ্দিন, আজিমুল হোসেন, মিনহাজুল আমিন শাকিল ও জনাব মিজানুর রহমান মিজান।
আয়ারল্যান্ডে হার্লিং, রাগবির মতো ক্রিকেট অতটা জনপ্রিয় না হলেও ধীরে ধীরে ক্রিকেটার প্রসার হচ্ছে আয়ারল্যান্ডে। ২০০৭, ২০১১ এবং ২০১৫ সালে তারা ৫০ ওভারের বিশ্বকাপও খেলে। ২০০৭ সালের প্রথম বিশ্বকাপে সুপার ৮ এও খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এরপর ২০১৯ এবং ২০২৩ সালে কোয়ালিফাই হয়নি। কিন্তু T20 তে ২০০৯ সাল থেকে ২০০২ সাল প্রত্যেকটা বিশ্বকাপ খেলে এবং ২০২৪ সালের T20 বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই হয়।
এতে বোঝা যায় আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটে অগ্রসর হচ্ছে সফলতা ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে। সফলতার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে যদি ক্রিকেটের প্রসারতাকে বৃদ্ধি করা যায়। সেজন্য দরকার সমগ্র আয়ারল্যান্ডে ক্রিকেটের বিস্তার এবং তার জন্য দরকার ক্রিকেট মাঠ ও প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড।
আয়ারল্যান্ডে হাতে গোনা কয়েকটি ক্রিকেট গ্রাউন্ড ও প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড ছাড়া খুব বেশি সংখ্যক মাঠ নেই। তন্মদ্ধে দুটি মাত্র আন্তর্জাতিক মানের মাঠ রয়েছে এবং তাও শুধুমাত্র ডাবলিনে।
অন্যান্য শহর বা কাউন্টিতে ক্রিকেট মাঠের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। যে কয়েকটি শহরভিত্তিক ক্লাব রয়েছে তাঁদের ক্রিকেটের উপযোগী পুর্নাঙ্গ পিচ বিশিষ্ট মাঠ নেই। ক্লাবগুলো স্পোর্টস ক্লাবের স্থান ভাড়া করে অথবা মাঠে কার্পেট বিছিয়ে অনুশীলন করতে হচ্ছে। একই চিত্র লিমেরিকেও।
এ বছরের প্রারম্ভে লিমেরিক ক্রিকেট ক্লাব ও লিমেরিক ব্লাস্টার ক্রিকেট ক্লাবকে নিয়ে কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদারকাউন্সিল হলে শুরুতে একটি প্রি-মিটিং এবং পরে স্পোর্টস মিনিস্টারের সাথে একটি ফলফ্রসু মিটিং সম্পন্ন করেন। উক্ত মিটিংগুলোতে লিমেরিকে ক্রিকেটের উন্নয়ন বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন ও দাবিগুলো তুলে ধরেন। উক্ত দাবির মধ্যে একটি ছিল ক্রিকেট মাঠ ও প্রাকটিস মাঠ তৈরি। তারই ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত গত ১ মে ২০২৪তে লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল ক্রিকেট অনুশীলনের জন্য একটি জায়গা নির্ধারণ করে, যেখানে প্রাকটিস পিচ এবং নেট স্থাপন করা হবে।
স্পোর্টস মিনিস্টারের সাথে মিটিং শেষেক্রিকেট ক্লাব সদস্য ও কাউন্সিল অফিসারদের সাথে মিটিং এর প্রাক্বালে
জায়গাটি হচ্ছে লিমেরিকের মুনগ্রেট পার্কে Limerick City East Educate Togetherপ্রতিষ্ঠানের পাশে। নিচে ম্যাপে হলুদ চিহ্নিত স্থানে।
হলুদ চিহ্নিত জায়গাটিতে হবে প্রাকটিস পিচ
এই প্রাকটিস গ্রাউন্ড সম্পন্ন হলে এটাই হবে লিমেরিকে সরকারীভাবে প্রথম কোনো জায়গা। যেখানে লিমেরিকের ক্রিকেট ক্লাবগুলোর খেলোয়াড়রা অনুশীলন করতে পারবেন।
কাউন্সিলর তালুকদার জানান, এই ক্ষুদ্র পদক্ষেপ দিয়ে শুরু, ”আমি আবার নির্বাচিত হলে এ অনুশীলনের জায়গাকে আরো পরিবর্ধন করার চেষ্টা করব এবং একটি পূর্নাঙ্গ ক্রিকেটের মাঠে পরিণত করার। আমার স্বপ্ন ২০৩০ সালের ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড আয়োজিত T20 বিশ্বকাপের একটা ম্যাচ হলেও লিমেরিকে অনুষ্ঠিত করা’’। তিনি এ বিষয়ে তৎকালীন ক্রীড়া মন্ত্রীর কাছেও এ দাবী উত্থাপন করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি যদি নির্বাচিত নাও হই তারপরেও এই প্রাকটিস গ্রাউন্ডের প্রসারতায় অন্যরা এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আমি আশাবাদী’’।
স্থান নির্ধারিত হবার পর, জনাব আজাদ তালুকদার লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের অফিসারবর্গ এবং লিমেরিক ক্রিকেট ক্লাব ও লিমেরিক ব্লাস্টার ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যদের সাথে মাঠ পরিদর্শনে যান ও স্থানটি স্বরজমিনে দেখে আসেন।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যদের সাথে কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার
লিমেরিক ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যরা অনুশীলন স্থানের এ খবরে অনেক উচ্ছ্বসিত। তাঁদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার প্রহর গোছার অপেক্ষায়। এজন্য তাঁরা কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন এতে লিমেরিকের ক্রিকেটের আরো উন্নতি হবে।
লিমেরিকের মুনগ্রেটে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত মুনগ্রেট পার্ক
আগামী ৭ জুন ২০২৪ আয়ারল্যান্ডে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। স্থানীয় নির্বাচন কে নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ বছর একটু বেশী আগ্রহ এবং উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে ২০২৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে বেশ সংখ্যক বাংলাদেশীদের অংশগ্রহন প্রবাসীদের মধ্যে ইতিবাচক আলোড়ন তৈরী করেছে। সেই প্রেক্ষাপটেআয়ারল্যান্ডের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার কাঠামো , কার্যাবলী এবং নির্বাচন পদ্ধতির মৌলিক কিছু বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।
কাঠামো:
আয়ারল্যান্ডে ৩১টিস্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ রয়েছে । এর মধ্যে ২৬টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কাউন্টি কাউন্সিল। এছাড়াও ৩টিসিটি কাউন্সিল (ডাবলিন, গালওয়ে এবং কর্ক) এবং ২টি কাউন্সিল রয়েছে যারা একটি শহর এবং একটি কাউন্টি (লিমেরিক এবং ওয়াটারফোর্ড)
প্রতিটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সদস্য সংখ্যা আইন দ্বারা নির্ধারিত হয়। এর মানে হল স্থানীয় সরকার আইন ২০০১ এর তফসিল ৭, স্থানীয় সরকার সংস্কার আইন ২০১৪ এর ধারা ১৫ দ্বারা সংশোধিত, সারা দেশে প্রতিটি কাউন্টি কাউন্সিল, সিটি কাউন্সিল এবং শহর ও কাউন্টি কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করেছে।
আয়ারল্যান্ডে মোট ১৩৭টিনির্বাচনী এলাকা রয়েছে এবং তাদের প্রত্যেকে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর নির্বাচন করে। নির্বাচিত কাউন্টি এবং সিটি কাউন্সিলর সংখ্যা ৯৪৯ ।
প্রতিটি কাউন্সিলর ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন, মে ২০১৯ এ নির্বাচিত কাউন্সিলররা ২০২৪ সালের ভোটের দিন থেকে ৭ দিন পর পর্যন্ত অফিসে থাকবেন।
স্থানীয় সরকারের কার্যাবলী:
স্থানীয় কাউন্টি বা সিটি কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ নিম্ন লিখিত কাজের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে সেবা দিয়ে থাকেন –
1) হাউজিং এবং বিল্ডিং
• স্থানীয় কর্তৃপক্ষের আবাসনের ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবস্থা ।
• ব্যক্তি মালিকাধীন বাসস্থান বা তাদের ঘর উন্নত করতে সহায়তা ।
• ভ্রমণকারীদের থাকার ব্যবস্থা ।
• নির্দিষ্ট আবাসনের প্রয়োগ মান এবং নিয়ন্ত্রণ।
2) সড়ক পরিবহন/নিরাপত্তা
• রাস্তা, ফুটপাথ এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নতি (মোটরওয়ে বাদে) ।
• কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন, মৎস্য ও পোতাশ্রয় কর্তৃপক্ষের জন্য স্থানীয় কমিটি ।
• পরামর্শ এবং প্রস্তাব বিকাশ
নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং কাউন্সিল কর্মকর্তাদের সুপারিশ ।
7) বিবিধ
• আর্থিক ব্যবস্থাপনা ।
• রেট চার্জ সংগ্রহ ।
• নির্বাচন ।
• বাজার, মেলা এবং কবরখানা ।
• ড্র ইত্যাদি লাইসেন্সিং ।
• সমাধিক্ষেত্র ।
• গণশৌচাগার ।
• স্থানীয় উদ্যোগ এবং সমর্থন ।
স্থানীয় পরিষদে কাউন্সিলাদের ভূমিকা:
> থানীয় কর্তৃপক্ষের সমস্ত ব্যয়ের জন্য গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতার সাথে বার্ষিক বাজেট গ্রহণ করা ।
> সিইও-এর নিয়োগ, বরখাস্ত বা অপসারণ – সিইও-এর কাজের তদারকি এবং পর্যবেক্ষণ ।
> সমন্বিত স্থানীয় অর্থনৈতিক ও সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং সেবা প্রদান পরিকল্পনা গ্রহণ ।
> স্থানীয় উদ্যোগ এবং স্থানীয় ও সম্প্রদায় উন্নয়ন কর্মকান্ডে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বৃহত্তর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভূমিকা ।
> সম্পূর্ণরূপে বিকশিত ভিত্তিতে জেলা পর্যায়ে ফাংশনের যথেষ্ট পরিসর যার মধ্যে রয়েছে: পরিকল্পনা, রাস্তা, ট্রাফিক, আবাসন, পরিবেশগত পরিষেবা, বিনোদন এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে নীতি/নিয়ন্ত্রক ভূমিকা ।
> আনুষ্ঠানিক নাগরিক ফাংশন; একটি সাধারণ প্রতিনিধিত্বমূলক এবং তদারকি ভূমিকা ।
> স্থানীয় সরকার এবং স্থানীয় উন্নয়ন খাতের সারিবদ্ধকরণের উপর একটি স্টিয়ারিং গ্রুপের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানীয় ও সম্প্রদায় উন্নয়ন কর্মসূচির তত্ত্বাবধান এবং পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও স্থানীয় সরকারের একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা থাকবে।
নির্বাচন পদ্ধতি:
প্রতিটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সদস্যদের কে ‘কাউন্সিলর’ বলা হয়। স্থানীয় নির্বাচনে কাউন্সিলররা সরাসরি নির্বাচিত হন। প্রতিটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্বাচিত কাউন্সিলর সংখ্যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এলাকার জনসংখ্যার উপর নির্ভর করে।
নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতা এবং অযোগ্যতা:
১৮ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি যারা নিবন্ধিত ভোটার তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য যোগ্য প্রার্থী । কিন্তু যারা সরকারি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, পুলিশ এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য এবং সরকারী কর্মচারীদের নির্দিষ্ট গ্রুপ তারা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না । অযোগ্যতার কারণগুলির মধ্যে আরোও রয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কোন কারণে অর্থ প্রদানে ব্যর্থতা এবং কিছু আদালতের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ।
কে ভোট দিতে পারেন?
১৮ বছরের বেশি বয়সী প্রত্যেক ব্যক্তি যার নাম নির্বাচনী রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেই স্থানীয় এলাকায় ভোট দেওয়ার অধিকারী যেখানে তিনি থাকেন। স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য আইরিশ নাগরিক হওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই অনেক অভিবাসী এবং নতুন সম্প্রদায়ের লোকেরা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারে।
প্রার্থীদের মনোনয়ন:
ভোটগ্রহণের এক মাস আগে প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে হবে।
সিলিকন ভ্যালি তো আমরা চিনি, কে না চিনে? প্রযুক্তির তীর্থস্থান হচ্ছে নর্দান ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রাঞ্চিস্কোকে যা সিলিকন ভ্যালি নামে পরিচিত। তথ্য প্রযুক্তি, গবেষণা, আবিষ্কার, উদ্ভাবনে সিলিকন ভ্যালি বিশ্বসেরা। বিশ্বের সব নামীদামী মেধাবী সব বিজ্ঞানী, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীর স্বপ্নের স্থান এই ভ্যালি। সেখানেই গমন করার সৌভাগ্য হয়েছে আয়ারল্যান্ডের কর্কে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশদ্ভুত লিওনা ইসলামের। শুধু গমনই নয় জিতে এসেছেন প্রতিযোগিতার ২য় পুরস্কার।
লিওনা এবং তাঁর টিম অংশগ্রহণ করে টেকনোভিশন ২০২৩ (Technovation 2023) প্রতিযোগিতায়। তাঁদের প্রজেক্ট ছিল মেন্টাল হেলথ অ্যাপ ”Bongo Buddies’’, যা বিশ্বের ৮৪ টি দেশের ২,১০০ টিমের মধ্যে প্রতিযোগিতায় প্রথম ৫ টি দলের একটি হয়ে সিলিকন ভ্যালিতে ফাইনাল কমিটিশনে যোগদানের সুযোগ অর্জন করেন এবং সেখানে তাঁরা দ্বিতীয় স্থান লাভের গৌরব অর্জন করেন।
৮৪ টি দেশের ২১০০ টিমকে টপকে বিজয়ী হয় তাঁরা
প্রজেক্টের প্রথম প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ডাবলিনের মাইক্রোসফট হেডকোয়ার্টারে এপ্রিল ২০২৩ সালে। সে প্রতিযোগিতায় লিওনার টিম দ্বিতীয় হয়ে San Francisco তে ফাইনাল কম্পিটিশনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। একই বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায়ও তাঁরা দ্বিতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
Representing Ireland
Technovation প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ৮-১৯ বছরের শিক্ষার্থীদের কোডিং এর মাধ্যমে মোবাইল অ্যাপ তৈরি করাতে উৎসাহ প্রদান করা যা রিয়েল লাইফ সমস্যা সমাধান করতে পারে।
Technovation 2023 প্রতিযোগিতায় লিওনা ইসলামের টিমের অন্য যে সদস্যরা ছিলেন, তাঁরা হচ্ছেন যথাক্রমে licja Skulimowska, Layla O’Driscoll ও Roisin Buckley। চার সদস্যের এ টিম ইউরোপকে নেতৃত্ব দিয়েছিল।
With Cathy Kearney, Apple VP of European Operations, at the Apple campus in Hollyhill, Cork.
Bongo Buddies App কি?
‘’Bongo Buddies’’ হচ্ছে স্বাস্থ্য বিষয়ক মোবাইল অ্যাপ, যা মূলত টিনেইজদেরকে টার্গেট করে করা। মেন্টাল হেলথ নিয়ে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য সহায়ক এই অ্যাপ রোগীদেরকে সহায়ক বা সঙ্গী হিসেবে কাজ করবে। যেমন মানসিক সমস্যায় ভোগা রোগীরা অ্যাপটির সাথে কথা বলতে পারবে, প্রশ্ন করতে পারবে, ডায়রি করতে পারবে যা রোগীদেরকে মানসিক শান্তি প্রদান করতে ও সহচর্য হিসেবে বিশেষভাবে সহায়তা করবে। এছাড়াও অ্যাাপে লিওনাদের টিম কতৃক লিখিত গল্প থাকবে যা মানসিক সমস্যায় ভোগা রোগীরা পড়ে ও শুনে সময় কাটাতে পারবে।
অ্যাপের প্রধান ফিচার হচ্ছে ChatBot, যেখানে কথা বললে ব্যবহারকারীরা সার্টিফাইড কাউন্সিলরদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবে।
অন্য আরো যে ফিচার অ্যাপটিতে আছে তা হচ্ছে, Mood Tracker, ডিসলেক্সিয়া (dyslexia-friendly function) ও চোখে ঝাপসা দেখাদের জন্য উপকারী ফিচার।
তাঁরা জানায়, The Bongo Buddies app is aimed at teenagers, “if they are feeling down. You can colour, track your feelings and you can ask him questions.”
অ্যাপটি সম্পূর্নরূপে বিনামূল্যে থাকবি। লিওনা জানান খুব শীঘ্রই ‘’Bongo Buddies’’ অ্যাপটি অ্যাপ স্টোর ও আন্নড্রয়েডে পাওয়া যাবে।
লিওনা ইসলামের পরিচয়
লিওনা ইসলাম হচ্ছেন দীর্ঘদিনের কর্ক নিবাসী জনাব নুরুল ইসলাম কন্যা। লিওনা ইসলামের রত্নগর্ভা মাতা হচ্ছেন জনাবা সানজিদা ইয়াসমিন। জনাব নুরুল ইসলাম ২০০০ সালে আয়ারল্যান্ডে পদার্পণ করেন এবং তাঁর স্ত্রী যোগ দেন ২০০৮ সালে। লিওনা ইসলামের একটিই আদরের ভাই হচ্ছেন জনাব নাফিউর ইসলাম।
পরিবারের সাথে লিওনা ইসলাম
লিওনা কর্কের সেন্ট ভিনসেন্ট স্কুলের 3rd Year এর ছাত্রী। মানুষকে সেবা দেয়ার প্রত্যয়ে লিওনার স্বপ্ন মেডিকেল বিষয়ে পড়াশোনা করার।
লিওনার এ কৃতিত্বে তাঁর বাবা মা যারপরনাই গর্বিত। সন্তানের এ অগ্রযাত্রা যেনো অব্যাহত থাকে সে স্বপ্নই দেখেন তাঁরা। সন্তানদিগকে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে চান। লিওনার বাবা মা তাঁর সন্তানদের মঙ্গল কামনায় সকলের দোয়া প্রত্যাশা করেন।
সকল জল্পনা-কল্পনা ও কানাঘুসার অবসান ঘটিয়ে কিছুদিন আগে আবারো চমক দেখালেন কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার। বাঙ্গালিসহ অভিবাসন কমিউনিটি বেশ ক’বার তাঁর চমক দেখেছে। ডেপুটি মেয়র পদমর্যাদায় অভিষিক্ত হয়ে প্রথম চমক দেখান। পরবর্তীতে মুসলিমদের জন্য স্থানীয় ও স্বাতন্ত্রিক ভাবে কবরস্থান স্থাপনের জন্য কাউন্সিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করা, বাঙ্গালিদের বিশেষ বিশেষ জাতীয় দিবস গুলোতে লিমরিক কাউন্সিল হলকে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা শোভিত আলোকে দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জার মাধ্যমে স্থানীয়দের দৃষ্টি কাড়ার অভূতপূর্ব নজির স্থাপন, পিস কমিশনারের সম্মানে ভুষিত হওয়া এবং লিমরিক সিটি মেয়র বা কাহার্লক হয়ে সর্বশেষ চমকটি দেখান।
উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশি কমিউনিটির সাথে সিটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার দিনডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রাক্বালেইউরোপীয় ইউনিয়নে আয়ারল্যান্ডকে রিপ্রেজেন্ট
অনেকে ভেবেছিলেন, এবার হয়তো আজাদ তালুকদার তাঁর দল ফিনাফল (Fina Fáil) থেকে টিকিট পাবেননা। কিছুদিন আগে জনাব তালুকদার কাউন্সিলের সভায় একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। বক্তব্যের কিয়দাংশ স্থানীয় এক সাংবাদিক পরিকল্পিত ভাবে টুইস্ট করে প্রকাশ করে যাতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয় এবং জাতীয় ভাবে সিটি মেয়রকে হেয় প্রতিপন্ন করা যায়। কিছু লোক সাময়িক ভুল বুঝেছিলো বটে কিন্তু পরবর্তীতে তারা সত্যটা জানতে পারে। তাঁর দলও প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। কথায় আছে, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে!’ সম্মানি ব্যক্তির সম্মান আল্লাহ নিজে রক্ষা করেন। তাইতো আমরা দেখতে পাই মিথ্যে অপবাদের রোষানল থেকে আজাদ তালুকদার বেরিয়ে এসে অতি সহজেই দল থেকে সম্মানের সহিত আবারো নমিনেশন পান। এ নমিনেশনের মধ্যে একদিক দিয়ে যেমন সত্য জয়যুক্ত হয়েছে অন্যদিক দিয়ে তাঁর চমক ফোটে উঠেছে। এই যে ধারাবাহিক চমক, এগুলোই তাঁর অর্জন। বস্তুত এ অর্জন তাঁর একার নয়, সকল বাঙ্গালির।
তাই এ অর্জনকে ধরে রেখে আমাদেরকে আরও গৌরবময় পথে সামনের দিকে হেঁটে যেতে হবে। মহান আল্লাহতায়ালা সবাইকে সমান যোগ্যতা দিয়ে পাঠাননা। একেকজনকে একেক কাজ বা দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। একজন লোকের মাধ্যমে একটি পরিবার, একটি গোত্র, একটি কমিউনিটি, একটি সমাজ বা একটি দেশ আলোকিত হয়ে ওঠে। ওই ব্যক্তির উসিলায় তাঁর জাতি, জ্ঞাতি-গোষ্ঠি সমাদৃত হয়। লিমরিকস্থ বাঙ্গালি কমিউনিটিতে আল্লাহতায়ালা আজাদ তালুকদারকে ওইরকম একজন আলোকবর্তিকা হিসেবে পাঠিয়েছেন কি-না জানিনা তবে তিনি তাঁর কর্ম, শিষ্টাচার, রাজনৈতিক দক্ষতা ও কৌশল এবং সহযোগী মনোভাবের মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেভাবে কমিউনিটির সুনাম কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন তাতে তাকে বাঙ্গালি কমিউনিটির “নাম রোশনকারী” হিসেবে অভিহিত করলে খুব বেশি একটা অত্যুক্তি হবেনা। এমন একজন ব্যক্তি যখন নির্বাচনের নৌকায় পা রাখেন তখন তাঁর গন্তব্যে পৌঁছা নিয়ে খুব বেশি একটা দুঃশ্চিন্তা করার কি আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে?
মসজিদের ইমাম ও মুসুল্লিদেরকে নিয়ে সিটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের এই কর্মকাণ্ডটি তখনকার সময়ে স্থানীয় আইরিশ পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশ হয় এবং খবরটি সে বছরের পত্রিকার সর্বাধিক পঠিত একটি খবর ছিল।
বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আজাদ ভায়ের কিছু শুভাকাঙ্কী বন্ধু আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছেন তিনি দল থেকে নমিনেশন পেয়েছেন কি-না, ভোটের মাঠে তাঁর অবস্থান কেমন, আমাদের আরেক ভাই জনাব শাহীন রেজা একই এলাকা থেকে নির্বাচন করছেন বলে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব তাঁর উপর পড়বে কি-না ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি তাদেরকে উত্তরে বলেছি, আজাদ ভাই বিগত দিনে স্বীয় ব্যক্তিত্ব ও কাজকর্মের মাধ্যমে স্থানীয় আইরিশ ও অভিভাসন কমিউনিটির মধ্যে যে শক্ত ভিত রচনা করতে সক্ষম হয়েছেন তাতে নির্বাচনে তাঁর ফলাফল নিয়ে ভাববার খুব বেশি একটা অবকাশ নেই। একই এলাকা থেকে যেহেতু দুজন বাঙ্গালি নির্বাচন করছেন সে প্রেক্ষাপটে ভুলেভালে হলেও কিছুটা ক্ষতির প্রভাব তো আজাদ তালুকদারের উপর পড়তেই পারে। কিন্তু যেহেতু জনাব তালুকদার একজন পরীক্ষিত সফল ব্যক্তিত্ব, সফল রাজনীতিক সেহেতু এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠা তাঁর জন্য একেবারেই নস্যি। আমি তাঁর পাস-ফেল নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই। আমার অভিজ্ঞতা বলে- গতবারের তুলনায় এবার অনেক বেশি ভোট পেয়ে পাস করবেন তিনি। আমি ভাবছি তাঁর প্লেস নিয়ে। এবার কি তিনি ফার্স্ট হবেন, সেকেন্ড হবেন নাকি থার্ড? এ ভাবনাটাই আমাকে এবার বেশি করে শিহরিত ও রোমাঞ্চিত করে তুলছে।
স্থানীয় সব মসজিদের ইমামগণ কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেনপ্রথম নির্বাচনের ক্যাম্পেইন। বিভিন্ন কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গ, তৎকালীন মেয়র, কাউন্সিলর তাঁর সাথে ক্যাম্পেইনে কাজ করেন।
নির্বাচনে ভোট দেয়া বা অংশ নেয়া দুটোই গনতান্ত্রিক অধিকার। সে অধিকার বলে জনাব শাহীন রেজা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনে অংশ নেয়া একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছে অনিচ্ছার বিষয়। এ ব্যপারে তাকে বারণ বা নিষেধ করার এখতিয়ার আমাদের কারো নেই। তবে বাঙ্গালী বা শুভাকাঙ্খী হিসেবে শুধু এতোটুকু বলতে চাই, নির্বাচনে কেউ যেনো প্রতিপক্ষ বা প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে না ওঠেন। মাথায় রাখতে হবে, দুজনই বাঙ্গালি। উপর দিকে থুথু ছেটালে নিজের উপরই পড়বে। তা’ছাড়া নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যেহেতু পদ্ধতিগত ভাবেই একটি সুবিধা রয়েছে, আমরা আশা করবো দুজনই ওই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আরও ম্যচুরিটির পরিচয় দেবেন।
সালাম প্রজেক্টে কাউন্সিলরফিলিস্থিনেদের প্রটেস্টে ও সহযোগিতায় তিনি সবসময় অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেন।
লিমরিকের এ দুজন ছাড়াও গোটা আয়ারল্যান্ডে এবার বাঙ্গালি প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক। গত টার্মে আমরা দুজন কাউন্সিলর পেয়েছিলাম। এবার যদি এ সংখ্যাটা বেড়ে যায় তবে আমাদের গর্ব ও অহংকারের মাত্রাও আরও বেড়ে যাবে। তাই মূলধারার রাজনীতিতে বাঙ্গালির অবস্থান পাকাপোক্তকরণ ও বাঙ্গালি প্রতিনিধিত্ব সম্প্রসারণের প্রচেষ্টায় তাদের এ আগমনকে আমি জানাই সাদর সম্ভাষণ, সাধুবাদ, লালগোলাপ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের একটি
গত নির্বাচনে দেশটিতে তিনজন বাঙ্গালি নির্বাচন করে দুজনই বিজয় লাভ করেছিলেন। সে হিসেবে পাসের হার অর্ধেকের চেয়েও বেশি। আমরা চাই পার্সেন্টিজের এ হার শতভাগে উর্ত্তীর্ণ হোক। প্রবাসের মাটিতে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠুক বাংলা মায়ের মুখটি। কাউন্টিতে কাউন্টিতে ছড়িয়ে পড়ুক আনন্দের ঢেউ। দেশব্যাপি উড়ুক বাঙ্গালির নির্বাচনী বিজয়কেতন।
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
লেখক- কবি ও প্রাবন্ধিক
লিমরিক
০৭ মে ২০২৪
আইরিশ রোয়িং ক্লাবের প্রধান অথিতি হিসেবে, উপস্থিত চলেন সাবেক অলিম্পিয়ান মেডেল অর্জনকারীহাউজিং ক্রাইসিস সমাধানে হাউজিং মিনিস্টারের সাথে লিমেরিকের সাইট পরিদর্শননতুন হাউজিং প্রকল্পেলিমেরিক পিপলস পার্কের প্লে গ্রাউন্ডের আধুনিকায়নের পর কাউন্সিলরের সাথে শিশু কিশোরদের উচ্ছ্বাস।অ্যাসাইলম ক্যাম্পে ক্রাফট প্রস্তুতকারীদেরকে উৎসাহ প্রদান করেন ও সহযোগিতা করেন
গতকাল ১৬ই এপ্রিল, রোজ মঙ্গলবার BSAI কর্তৃক দাবা, ক্যারম ও টেবলটেনিস টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি গলওয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত হয়।
প্রতিযোগীতায় ক্যারমে ৮টি দল দৈতভাবে, ৬জন একক ভাবে, ৬ জন টেবল টেনিসে, ও ৪ টি দল যৌথভাবে দাবায় প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। সকল খেলায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিজয়ীরা হলেন;
ক্যারম দ্বৈত প্রতিদ্বন্দ্বীতায়
চ্যাম্পিয়ন হন যৌথভাবে আব্দুল মান্নান মান ও কামাল হোসেন
রানারআপ হন যৌথভাবে লিমন ও হিমেল
ক্যারম একক প্রতিদ্বন্দ্বীতায়
চ্যাম্পিয়ন হন ওয়াহিদুল মাসুদ
রানারআপ হন আব্দুল মান্নান মান
দাবা প্রতিদ্বন্দ্বীতায়
চ্যাম্পিয়ন হন BSAI সভাপতি চুন্নু মাতবর
রানারআপ হন BSAI ট্রেজারার মোঃ আলমগীর হোসেন
টেবল টেনিস প্রতিদ্বন্দ্বীতায়
চ্যাম্পিয়ন হন মোঃ জহির উদ্দীন
রানারআপ হন জস উদ্দিন তমাল
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন BSAI এর সভাপতি জনাব চুন্নু মাতবর,সাধারণ সম্পাদক জনাব কামাল হোসেন, ট্রেজারার জনাব আলমগীর হোসেন ও ওয়েলফেয়ার সম্পাদক জনাব আবু তালেব। গণ্যমান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গলওয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব জসীম উদ্দীন দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক জনাব তামীম মজুমদার, খেলাধুলা বিষয়ক সম্পাদক জনাব সোহরাব, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী জনাব মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, জনাব জামাল বাসীর, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী জনাব কবির আহমদ সহ আরো অনেকে।
গলওয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে খাবার দাবারের আয়োজন করা হয়েছিল।
আয়োজকবৃন্দ আগত সকলকে ধন্যবাদ জানান ও বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ে কে ভ্যান্যু দিয়ে সহায়তা করায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গত ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ডাবলিন এর গ্রিনহিলস কমিউনিটি সেন্টারে বেঙ্গলী কালচারাল সোসাইটি, আয়ারল্যান্ড এর উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ উৎযাপন উপলক্ষ্যে একটি বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয় । মেলার উদ্দেশ্য ছিল প্রবাসে আবহমান বাংলার কৃষ্টি , সস্কৃতি এবং ঐতিহ্য বিদেশের মাটিতে চর্চা অব্যাহত রাখা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা ।
আয়োজকদের তথ্য অনুযায়ী কমিউনিটি সেন্টারে তিনশত মানুষের ধারণ ক্ষমতা ছিল , কিন্তু প্রবাসীদের অংশগ্রহন ছিল তার চেয়ে বেশী । আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টি থেকে মেলায় প্রবাসীদের উপস্থিতি নজরে এসেছে । বাঙ্গালীর ঐতিহ্যকে ধারণ করে নারী-পুরুষ বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে মেলায় অংশগ্রহন করেন । নতুন প্রজন্মের শিশু এবং কিশোরদের উপস্থিতি বৈশাখী মেলাকে আরোও প্রানবন্ত করেছে । ছোট ছোট সোনা মনিদের প্রাণোচ্ছল উপস্থিতি এবং ছুটা-ছুটি মেলার পরিবেশকে আনন্দমূখর করেছে । আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মেলায় উপস্থিত ছিলেন ।
মেলায় বিভিন্ন স্টলের মধ্যে ছিল , খাবারের স্টল , তন্মধ্যে বাঙ্গালীর প্রিয় পান্তা ইলিশ ছিল অন্যতম । তাছাড়া কাপড়ের স্টল , ফেইস পেইন্টিং সহ অনেক কিছু ।
মেলার বিশেষ আকর্ষণ ছিল সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান । সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ছিলেন সাজিলা চৌধুরী এবং দিলীপ বড়ুয়া । অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজকদের পক্ষে মেলার সমন্বয়ক এবং পরিকল্পনাকারী রন্টি চৌধুরী আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা ব্যক্তব্যে বৈশাখী মেলা আয়োজনের উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন । স্থানীয় শিল্পীদের মধ্যে সঙ্গীত পরিবেশন করেন আভি অজিতাভ , মিল্টন হক , মাহমুদুল হাসান সবুজ , রুনা জলীল এবং দিদারুল আলম । কবিতা আবৃত্তি করেন শ্যামল হোসেইন । র্যাফেল ড্র পরিচালনা করেন ফিরোজ হোসেন ।
আয়োজকবৃন্দ মেলায় অংশগ্রহন করার জন্য অতিথিদের কে ধন্যবাদ জানান এবং মেলা প্রতিবছর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ।
ইসলামী জীবন বিধান অনুযায়ী পুরুষ মানুষের খাতনা (Circumcision) করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত এবং এটি ইসলামের মৌলিক নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত।
খতনা (Circumcision) করার জন্য উত্তম সময়ের ব্যাপারে ফকিহগণ বলেন, শিশুর শারীরিক উপযুক্ততা ও তার বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে পৌঁছার আগেই বা এর মাঝামাঝি সময়ে যেমন-৭-১০ বছর বা অনূর্ধ্ব ১২ বছরের মধ্যে করে নেওয়া উত্তম।
আর তাই একজন ছেলে বাচ্চা শারীরিকভাবে সুস্থ হলে সুবিধা জনক সময়ে তার খাতনা করিয়ে দেয়া অভিভাবকের নৈতিক দায়িত্ব।
♦♦♦
মুসলিম হিসেবে একজন ছেলে বাচ্চাদের “খতনা” করাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এদেশের বিধি বিধানের কারণে অভিভাবকদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
একজন ডাক্তার হিসাবে, এদেশে “খতনা” করার নিয়ম সম্পর্কে অনেকে আমাকেও জিজ্ঞাসা করে থাকেন।
তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সবার অবগতির জন্য, এই দেশে “খতনা” করার নিয়ম সম্পর্কে আজ আলোচনা করবো।
প্রথমে আমি আমার আগের হাসপাতালে, পোর্টিনকুলায়-এর অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি, ওখানে একজন মুসলিম সার্জন ছিলেন এবং এখনও কর্মরত আছেন। এতে করে অনেক বাংলাদেশী বাচ্চার অভিভাবক ওনার সাথে যোগাযোগ করে সহজে ওনাদের বাচ্চাদের খতনা করিয়েছিলেন এবং এখনও ওনার সাথে যোগাযোগ করে আপনাদের বাচ্চার খতনা করাতে পারেন।
আজ আমি আপনাদের সাথে এ বিষয়ে পোর্টিনকুলা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, কো. গালওয়ে – এর খতনা করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করছি৷ এ জন্য করণীয় পদক্ষেপ সমূহ হলোঃ
১. এ জন্য প্রথমে আপনাকে আপনার জিপির সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং ওনার কাছ থেকে এই মর্মে একটি রেফারাল বা চিঠি নিতে হবে, যাতে উল্লেখ করতে হবে যে, “সামাজিক/সাংস্কৃতিক কারণে আপনার ছেলের খৎনা প্রক্রিয়া করা দরকার।”
২. এবার উক্ত রেফারাল লেটার বা চিঠিটি নীচের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিনঃ
মেরি মারফি
(মিঃ ওসামা এল. সাদিগ-এর
সেক্রেটারি)
পোর্টিউনকুলা হাসপাতাল
ব্যালিনাস্লো কো. গালওয়ে।
Mary Murphy
(Secretary of Mr. Osama El-Sadig)
Portiuncula Hospital
Ballinasloe Co. GalwayGalway.
৩) কয়েকদিন পর, আপনি চিঠির প্রাপ্তি বা আরও প্রশ্ন নিশ্চিত করতে 0909648210 নম্বরে (পোর্টিউনকুলা হাসপাতালে মিঃ ওসামার সেক্রেটারীকে) ফোন কল করতে পারেন।
তবে রেফারেল পাওয়ার পর, এপয়েন্টমেন্ট পেতে তিন (৩) মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
♦♦♦
এবার সাউথ আয়ারল্যান্ডের একটি হাসপাতাল সম্পর্কে জানাচ্ছি।
সাউথ টিপারারি জেনারেল হাসপাতাল, ক্লোনমেল।
কর্ক সহ যারা দক্ষিণ আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছেন, তারা এই হাসপাতালে একজন মুসলিম ডাক্তারের মাধ্যমে খতনা করানোর সুযোগ গ্রহন করতে পারেন।
এ ক্ষেত্রেও আপনাকে পূর্বে উল্লেখিত স্টেপস্ সমূহ অনুসরণ করতে হবে।
সার্জনের নাম:
ডাঃ ওয়াসিম স্বাতী
এবং
ডাঃ আতহার শেখ
[ডাঃ স্বাতীর সেক্রটারী হলেন,
মিসেস ব্রেদা এবং
সচিবের নম্বর 0526187525]
[ ডাঃ শেখের সেক্রেটারী হলেন,
মিসেস ব্রিগেট
ওনার নম্বর ০৫২৬১৮৭৫২৬ ]
Name of surgeon:
♦Dr.Wasim Swati.
Name of secretary of
Dr. Swati:
Ms.Breda
0526187525
Name of surgeon:
♦ Dr Athar Sheikh
Name of the secretary of Dr. Sheikh:
Ms.Bridget
0526187526
❇❇❇❇❇
এবার আমি কর্কসহ আয়ারল্যান্ডের দক্ষিণের আরো কয়েকটি হাসপাতাল সম্পর্কে জানাচ্ছি।
১) সাউথ ইনফার্মারী ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল,
এটি কর্ক শহরের অভ্যন্তরে অবস্থিত।
এখানে সার্জন হিসেবে কর্মরত আছেন, ডক্টর এড্রিয়ান আয়ারল্যান্ড।
শর্তঃ এখানে খতনা করতে হলে, বাচ্চার বয়স অবশ্যই ৫ (পাঁচ) বছরের উপর হতে হবে।
২) কর্ক হতে দক্ষিণে অবস্থিত কেরী শহরে রয়েছে, “ইউনিভার্সিটি হসপিটাল কেরী, এখানে ডক্টর হামদি আসাম নামে একজন মুসলিম সার্জন (ডক্টর) আছেন, উনিও খতনা করান।
৩) এছাড়া ডাবলিন শহরের অভ্যন্তরে রয়েছে,
সেন্ট মাইকেলস্ হসপিটাল, ডাবলিন।
সার্জন হিসেবে রয়েছেন, ডক্টর কিরান ব্রিন।
৪) ডাবলিনের কাছাকাছি আর একটি হসপিটাল রয়েছে। নাম –
পোর্ট লুইস হসপিটাল।
শর্তঃ বাচ্চার বয়স অবশ্যই ২ (দুই) বছরের উপর হতে হবে।
৫) আয়াল্যান্ডের অভ্যন্তরে অবস্থিত আর একটি জেনারেল হসপিটাল হলো~ “ক্যাভান জেনারেল হসপিটাল”। এই হসপিটালে দুই জন সার্জন আছেন। (ক) ডক্টর জিউই (খ) ডক্টর মাসকারেনহ্যাস।
৬) টুলেমর জেনারেল হসপিটাল।
সার্জন হিসেবে রয়েছেন, ডক্টর শীন জনটন্।
৭) এছাড়াও “জেন্টল প্রসিডিউর” নামে একটি প্রাইভেট হসপিটাল রয়েছে। তবে শর্ত হলোঃ এখানে কেবল মাত্র ১৬ বছরের উপরের বয়সের ছেলেদের খতনা (Circumcision) করা হয়ে থাকে।
1) South infirmary Victoria University Hospital, Cork
⚛Dr. Adrian Ireland
Sec. Ann Marie behan
0214926194.
2) University Hospital kerry
❇Dr. Hamdy Asam
Sec. Miss Keren
0667184343
3) St. Michael’s hospital, Dublin
⚛Dr. Kieran Breen
Sec: Miss Kelly(Outpatient department)
016639864
4) Portlaoise hospital
❇Dr. Amir Siddiqui
Sec. Miss Mary 0578696197
5) Cavan General Hospital
⚛Dr. NZEWI
Sec. Miss Sonya
0494376491
⚛Dr.Mascarenhas
Sec.Miss Grainne
0494376138
6) Tullamore General Hospital
❇Dr. Sean Johnston
Sec. Miss Johanna
0579358261
7) Gentle Procedure (Private)
016950228
আজ আয়ারল্যান্ডে সহজে খতনা করার বিষয়ে আলোচনা এ পর্যন্তই।
অদূর ভবিষ্যতে অন্যান্য হাসপাতাল সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহ করে জানানোর প্রত্যাশা রইলো।
সবার জন্য শুভ কামনা রইলো।।
ধন্যবাদ
ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন
বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, কর্ক।
আয়ারল্যান্ড।
৫/৪/২০২৪
[দৃষ্টি আকর্ষণ করছিঃ খতনা উপলক্ষে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া বর্তমানে যে জাঁকজমক পূর্ণ অনুষ্ঠানের রেওয়াজ শুরু হয়েছে তা অবশ্যই বর্জনীয়।
ঈদের মানে যে বুঝেছে, সে বুঝেছে রমজানে, সে থেকেছে অনাহারে, ইবাদতে মশগুলে। ঈদের মানে যে বুঝেছে, সে থেকেছে সংযমে, কটু কথা সে বলেনি, মুখ বেঁধেছে লাগামে। ঈদের মানে যে বুঝেছে, ভেসেছে সে দয়ার সাগরে, দান খয়রাত সে করেছে , আহার যুগিয়েছে অনাহারে। ঈদের মানে যে বুঝেছে, পরেছে সে সততার চাদর, পণ্যে সে দেয়নি ভেজাল, দামেও সাজেনি চতুর।
ঈদ তো তারই, যার পাপ হয়েছে সব শূন্য, ঈদ তো তারই, যার কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে পুণ্য। ঈদের খুশিতে সে-ই তো খাবে যত খাবার অমৃত, তারই তো ঈদ, আনন্দে আনন্দে সে-ই তো হবে উল্লসিত।
কেমন হবে, যদি আপনি কোনো নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ছাড়াই বার্তা প্রেরণ করতে পারেন একজন অন্যজনকে? এমনই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশি বংশদ্ভুত ক্ষুদে বিজ্ঞানী আবুতালহা আলম। তার উদ্ভাবিত আবিষ্কারে একে অপরকে বার্তা প্রেরণ করতে পারবে কোনো ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্কের সাহায্য ছাড়াই।
আবুতালহা আলমের প্রজেক্টের নাম ব্রিজএইড (BrigaidNet). BrigaidNet হচ্ছে এমন একটি ডিভাইস যার মাধ্যমে এক ফোন থেকে আরেক ফোনে মেসেজ আদান প্রদান করতে পারবে কোনো ইন্টারনেট কিংবা মোবাইল নেটওয়ার্কের সহযোগিতা ছাড়াই। শুধুমাত্র ডাউনলোড করে নিতে হবে তাদেরই উদ্ভাবিত অ্যাপের সহায়তায়।
আবুতালহা আলমের এই প্রযুক্তির টার্গেট হচ্ছে বাংলাদেশ ও অন্যান্য অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলার জন্য, যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া প্রান্তিক শ্রেণীর দরিদ্র জনগোষ্ঠী যারা মোবাইলের খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে।
এ প্রযুক্তির দুটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় দিক হচ্ছে। ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক অপ্রতুল অঞ্চলে সেবা প্রদান ও বিনামূল্যের এ সেবা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ছড়িয়ে দেয়া।
নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে পদার্পণ করে বলেছিলেন, “That’s one small step for man, one giant leap for mankind.” মানে হচ্ছে “এটি মানুষের জন্য অতি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ; কিন্তু মানবজাতির জন্য এক বিরাট অগ্রযাত্রা”। তেমনি আবুতালহার এই ক্ষুদ্র পদক্ষেপ হতেও পারে মানবজাতির জন্য এক বিরাট অগ্রযাত্রা।
এ প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করবে?
আবুতালহা ও তাঁর দল একটি ডিভাইস তৈরি করবে যেটি হবে যেকোনো ইন্টারনেট মডেমের মত। যা হবে সৌরশক্তি সম্পন্ন। ডিভাইসটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। ধরুন দুজন ব্যক্তি একে অন্যকে মেসেজ পাঠাবে। তাহলে ১ম ও ২য় উভয় ব্যক্তির ফোনে BrigaidNet অ্যাপটি ডাউনলোড থাকতে হবে। তাহলে ওই অ্যাপটি ব্যবহার করে ১ম ব্যক্তি ২য় ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠাতে পারবে, যদিনা তারা ওই ডিভাইসের আওতায় থাকে। ডিভাইসটি একটি নিদৃস্ট অঞ্চল কভার করতে পারবে।
এমন একটি ডিভাইস থাকবে, যার মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান হবে
তবে প্রত্যেক অ্যাপ সম্বলিত ফোনও মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ধরুন ১ম ব্যক্তিটি ৩য় আরেকজনকে মেসেজ পাঠাবে এবং ৩য় ব্যক্তিটি ২য় ব্যক্তি থেকে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত, সেক্ষেত্রে ২য় ব্যক্তির মোবাইল মাধ্যম হয়ে ৩য় ব্যক্তির নিকট মেসেজ পৌঁছাতে সক্ষম। দূরবর্তী স্থানে মেসেজ প্রদান করতে মডেম বা ডিভাইসটি অথবা অন্য একটি বা একাধিক মোবাইল মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে; যে মাধ্যমটি শক্তিশালী সিগনাল প্রদান করবে সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সে সিস্টেমই গ্রহণ করবে।
আবুতালহা আলমদের এ প্রযুক্তিটি ইতোমধ্যে পরিক্ষিত হয়েছে।
Project overview
প্রজেক্টের ইতিহাস ও অর্জন
আবুতালহা আলম প্রজেক্টটি শুরু করে তাঁর কো-ফাউন্ডার বাস্তিয়েন সাইদির সাথে। এরপর প্রজেক্টটি Irish Student Entrepreneurship Forum (ISEF) এ প্রদর্শিত হয় এবং প্রজেক্টটি তীব্র প্রতিযোগিতা কাটিয়ে সেমিফাইনালে উন্নীত হয়। তারা সেমিফাইনালেও চমক দেখিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। আগামী ১১ই এপ্রিল ২০২৪ তারিখে ডাবলিনে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। ফাইনালে উন্নীত হতে পারলে এ প্রজেক্ট এগিয়ে যাবে অনেকদূর।
তবে ISEF এর ফাইনালে যদি তারা নাও উন্নীত হয় তারপরেও তারা এ প্রজেক্টটির কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। কারণ উদ্ভাবনীটি ইতিমধ্যে পরিক্ষিত ও গৃহীত হয়েছে।
কো-ফাউন্ডারের সাথে আবুতালহা আলম
শুধু তাই নয়, তাঁরা এই এপ্রিলের ৮ তারিখে আরেকটি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করবে। Enactus আয়োজিত এ প্রদর্শনীটি অনুষ্ঠিত হবে গ্রেট ব্রিটিনের লন্ডনে। Enactus হচ্ছে “Entrepreneurial, Action, Us.”, Enactus”এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসরুমের শিক্ষা ও উদ্ভাবনীকে বাস্তুবে রূপ দেয়া, লিডারশিপ, টিমওয়ার্ক ও সামাজিক কার্যক্রমে ভূমিকা রাখতে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান।
Enactus এর প্রদর্শনীতে জিততে পারলে তাঁরা তাঁদের প্রজেক্টের জন্য ফান্ডিং, NGO নেটওয়ার্কসহ নানামুখী সমর্থন পাবে।
এরপর তাঁরা NovaUCD Student Enterprise Programme এ অংশ নিবে। এতে জিততে পারলে তাঁরা ৩০০০ ইউরো পুরস্কার পাবে।
উপরোক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা কম্পিটিশনের ফলে তাঁদের কমিউনিকেশন ও নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি পাচ্ছে ও পাবে। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় জিততে পারলে তাঁদের BrigaidNet প্রজেক্ট নিয়ে স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছার রাস্তা অনেক মসৃণ হয়ে যাবে।
BrigaidNet এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ও প্রতিযোগিতায় জিততে সহায়তা করতে তাঁরা একটি পোর্টাল চালু করেছে। যেখানে সবাই সাইন আপ করতে পারেন। যত বেশি সাইন আপ হবে তাঁরা তা প্রতিযোগিতায় দেখাতে পারবেন। সবাই দয়া করে নিম্নোক্ত লিংকে গিয়ে সাইন আপ করে আবুতালহা আলমকে প্রতিযোগিতায় জিততে সহায়তা করুন। শুধুমাত্র ইমেইল অ্যাড্রেস দিলেই হবে।
ISEF এবং Enactus প্রজেক্টের শেষে তাঁরা কাজ শুরু করবে ডিভাইসের হার্ডওয়ার প্রস্তুতি ও অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে। হার্ডওয়ার ও অ্যাপ এর কাজ শেষ হলে তাঁরা ফান্ডের সংগ্রহের চেষ্টা করবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি NGO ও কোম্পানি তাঁদেরকে ফান্ড প্রদানের আশ্বাস প্রদান করে।
সর্বশেষ তাঁরা বাংলাদেশে ক্রমান্বয়ে ডিভাইস প্রতিস্থাপন ও কার্যক্রম শুরুর জন্য কাজ শুরু করবে। বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে তাঁরা সরকারি অথবা প্রাইভেটভাবে চেষ্টা করবে, যেভাবে সম্ভব ও সহজসাধ্য হয়। তাঁরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলা শুরু করেছেন।
আবুতালহার স্বপ্ন অনেক বড়। বাংলাদেশের পাশাপাশি এশিয়ার অন্যান্য দেশেরও তাঁর প্রযুক্তি পৌঁছে দেয়ার একান্ত ইচ্ছা তাঁর।
সেকেন্ডারি স্কুলে থাকাবস্থায় জিতে নেন TECS নামক সন্মানজনক প্রথম স্থানের পুরস্কার।
আবুতালহা আলমের অর্জনসমূহ
কথায় আছে উঠতি মূলা পত্তনেই চেনা যায়। আবুতালহা আলম তেমনি একজন। তাঁর এই প্রজেক্টের আগেও তাঁর ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জন ও পদচারনা। স্কুলে থাকা অবস্থায়ই আবুতালহার ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর আগ্রহ। তাঁর সেকেন্ডারি স্কুলে থাকাবস্থায় জিতে নেন TECS নামক সন্মানজনক প্রথম স্থানের পুরস্কার। TECS প্রোগ্রাম হচ্ছে সমগ্র আয়ারল্যান্ডের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ক্রিয়েটিভিটি বিষয়ক প্রোগ্রাম। ২০২১ সালের এই প্রতিযোগিতায় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের বিষয়ে অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে আবুতালহা ২০০০ ইউরোর সন্মাননা বুঝে নেয় ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরিকে।
এই লিংকে ক্লিক করলে সরাসরি এ্যাওয়ার্ডের তথ্য ও আবুতালহার অর্জন দেখতে পাবেন (ছবি ও ভিডিও) TECH Award
এ প্রতিযোগিতায় জিতে তাঁর সামনে খুলে যায় সম্ভাবনার দুয়ার। যার ফলে তাঁর তৈরি হয় নেটওয়ার্কিং, সে অর্জন করে বিভিন্ন মেন্টরশিপ এবং সমমনা অন্যান্যদের সাথে তৈরি হয় যোগাযোগ।
Abutalha Alam
এছাড়াও তিনি প্রযুক্তির উপর অনেক ভলান্টারি কাজ করেন, পাইথনের উপর শিক্ষা প্রদান করেন এবং কাজ করেন স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও। তবে তাঁর কোনো অবদানই বৃথা যায়নি। যার ফলে তিনি অর্জন করেন বেশ কিছু স্বীকৃতি ও অ্যাওয়ার্ড। তন্মদ্ধে সামজিক অবদানের জন্য UCD Social Sciences Student Award, the UCD Advantage Award, এবং “Future CTO of the Year” Undergraduate of the Year Awards ক্যাটাগরিতে ফাইনালিস্ট হন।
UCD Social Sciences Student Award AbuTalha
এছাড়া বর্তমানে International Student Entrepreneurship Forum (ISEF) এর ফাইনালে অংশ নিতে যাচ্ছেন ১১ই এপ্রিল। এবং ৮ই এপ্রিল যাচ্ছেন Enactus এর প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে লন্ডনে। কয়দিন পর হয়তো আবুতালহার ঝুলিতে আমরা দেখতে পাবো আরো কিছু অর্জন।
কে এই ক্ষুদে বিজ্ঞানী?
লিমেরিক নিবাসী জনাব জাহাঙ্গীর আলম হচ্ছেন আবুতালহা আলমের গর্বিত পিতা এবং জনাবা তমিনা আক্তার হচ্ছেন এই বিস্ময় বালকের রত্নগর্ভা মাতা। জনাব জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘদিন লিমেরিকে বসবাস করে আসতেছেন। তিন ভাই বোনের মধ্যে আবুতালহা আলম হচ্ছেন সর্বজ্যেষ্ঠ। তাঁর ছোট ভাই হচ্ছেন আবুজোবায়ের আলম ও সর্বকনিষ্ঠ হচ্ছেন একমাত্র বোন সোফিয়া আলম। লিমেরিকে বসবাসরত জনাব নজরুল ইসলামের ভাতিজা হচ্ছেন আবুতালহা আলম।
পরিবারের সাথে আবুতালহা আলম
আবুতালহা আলম লিমেরিকের ক্যাসলট্রয় কলেজ থেকে লিভিং চার্ট সম্পন্ন করে বর্তমানে ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন (UCD) তে অধ্যয়নরত। তিনি Computational Social Science নামক একটি ইউনিক সাবজেক্টে পড়ালেখা করতেছেন, যে বিষয়টি কম্পিউটার সাইন্স, সোশিয়লজি ও ইকোনমিক্স এর সমন্বয়ে ঘটিত।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। এর মাধ্যমে তিনি জনকল্যাণ সাধন করতে চান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানোর প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন তিনি।
পড়ালেখা ও উদ্ভাবনী কাজ এর পাশাপাশে ভ্রমণ হচ্ছে আবুতালহার অন্যতম শখ। ইতিমধ্যে ঘুরে ফেলেছেন অনেকগুলো দেশ। কখনো একা, কখনো বন্ধুবান্ধব, কখনো পরিবারকে সাথে নিয়ে ঘুরে আসেন অজানা কোনো জায়গা।
আবুতালহা আলমের বাবা মা ছেলেকে নিয়ে অনেক গর্বিত। তাঁদের ছেলের বুদ্ধিমত্তা ও পরিবারের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা অকপটে ব্যাক্ত করেন। খুব অল্প বয়সেই আবুতালহা অনেক গুরুদায়িত্ব বহন করে চলেছেন। ছেলের এ কৃতিত্বে বাবা মা ও চাচা সবাই অনেক খুশি। আবুতালহার জন্য সবার কাছে তাঁর পরিবার দোয়া কামনা করেন।
সাইন আপ করুন
আবু তালহার প্রজেক্টে সহযোগিতার জন্য সাইন আপ করুন। এতে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ আরো সুগম হবে। হয়তো আবুতালহার মাধ্যমেই আমরা দেখতে পাব আরেকজন জগদীশচন্দ্র বসু, আরেকজন কুদারত-এ-খুদা।
আচ্ছা এমন একজন মানুষ দেখান তো, যাকে আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারবেন; যিনি কখনো মিথ্যে বলেননি, যার চরিত্রে বিন্দুমাত্র কালিমা নেই, যিনি কাউকে কখনো কষ্ট দেননি, যিনি সর্বদা কথা দিয়ে কথা রেখেছেন, যিনি অন্যের কাছ থেকে কষ্ট পেয়েও সর্বদা ক্ষমাশীল ছিলেন, ঘোর শত্রুর প্রতিও মনে কষ্ট না নিয়ে চলেননি, যিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সৎ থেকেছেন; মোট কথা হচ্ছে যার দ্বারা কোনো পাপাকার্য সম্পন্ন হয়নি। হয়তো পারবেন না, শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি ছাড়া। আর তিনিই হচ্ছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, শেষ এবং শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), মানুষ মুহাম্মদ (সাঃ)।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন এমনই একজন মানুষ, যাকে তাঁর ঘোরতর শত্রুরাও খারাপ মানুষ হিসেবে প্রতিপন্ন করতে পারেননি। মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি যেটুকু বিদ্বেষ ছিল, তা শুধুমাত্র তাঁর ধর্ম প্রচারের কারণেই, কিন্তু তাও শেষ পর্যন্ত দূরীভূত হয়ে যায়। ব্যক্তি মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি কোনরূপ বিদ্বেষ তাঁর নবুয়তের আগ পর্যন্ত কখনোই তৈরি হয়নি।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নবুয়তপ্রাপ্ত হন ৪০ বছর বয়সে। আল্লাহ এবং ধর্ম সম্পর্কে জানতে শুরু করেন মূলত নবুয়ত লাভের পর থেকেই। কিন্তু ৪০ বছর পর্যন্তও ছিলেন একজন আদর্শ মানুষ। তাঁর জীবনী পড়ে আমরা জানতে পারি তিনি কেমন মানুষ ছিলেন। ৪০ বছর বয়েসের আগে তিনি তো জানতেন না যে, মিথ্যে বললে পাপ হবে, কারো ক্ষতি করলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন; তাহলে কেন তিনি সেগুলো অনুসরণ করে চলতেন? কারণ তিনি ছিলেন প্রকৃত মানুষ। আর মানুষের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে সৎগুন, ভালো গুণগুলো অনুসরণ করে চলা।
নবুয়তপ্রাপ্ত হবার পূর্বে তিনি যে মানবিক বৈশিষ্ট্যগুলো অনুসরণ করতেন, নবুয়তপ্রাপ্তির পর জানতে পারলেন এগুলো পালন করা আসলে ঐচ্ছিক বা অপশনাল কোনো বিষয় নয়, এগুলো হচ্ছে বাধ্যতামূলক। স্বয়ং আল্লাহ প্রিয় নবীর চারিত্রিক বর্ণনা দিতে আল কুরআনের সূরা কলমে বলেন, ‘অবশ্যই আপনি মহান চরিত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত’। মানে হল, এমন শিষ্টাচার, ক্ষমাশীল, ভদ্রতা, নম্রতা, দয়া, বিশ্বস্ততা, সততা, সহিষ্ণুতা এবং দানশীলতা ইত্যাদি সহ অন্য যাবতীয় চারিত্রিক ও নৈতিক গুণাবলীর অধিকারী নবুয়তের পূর্বেও ছিলেন এবং নবুয়তের পরে তা আরো উন্নত হয় ও সৌন্দর্য-সমৃদ্ধ হয়।
এবার চিন্তা করুন ৪০ বছরের আগে পর্যন্তও তিনি জানতেন না, তিনি যে ভালো মানুষের গুনগুলো অনুসরণ করতেন তা যে ধর্মীয় দৃষ্টিতে বাধ্যতামূলক, কিন্তু তারপরেও তিনি সেগুলো অনুসরণ করেছেন পুংখানুপুঙ্খভাবে। আর আমরা সেগুলো বাধ্যতামূলক জেনেও প্রতিনিয়ত অমান্য করে যাচ্ছি।
তাহলে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কত উঁচুমানের আদর্শ মানুষ ছিলেন! তাঁর নৈতিক অবস্থান কত উচ্চ পর্যায়ের ছিল! মুহাম্মদ (সাঃ) ই ছিলেন আদর্শ মানুষ, আমাদেরকে মানুষের মতো মানুষ হতে হলে যাকে অনুসরণ করা যায় চোখ বন্ধ করে। তিনি ছিলেন নৈতিকতার সুউচ্চ শিরোমণি। পৃথিবীর সব নৈতিক শাস্র মহানবীকে অনুসরণ করে লিখলেই আর দ্বিতীয় কোনো চিন্তা পণ্ডিতদের করতে হয়না। যত নৈতিক প্রিন্সিপ্যাল বা মূলনীতি আছে, সেগুলোর থেকেও অধিক আদর্শিক নৈতিক মূলনীতি অনুসরণ করে চলেছিলেন এ মহান মানব।
আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে মানুষের দলে দলে ইসলামের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার একটি অন্যতম প্রধান কারণ ছিল মহানবীর মানবিক গুণাবলি। মানুষজন তাঁকে কখনো মিথ্যে কথা বলতে ও প্রতারণা করতে দেখেননি। নিখুঁত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্বলিত মুহাম্মদ (সাঃ) যখন ইসলামের দাওয়াত দিতে শুরু করেন তখন তাঁর কথাকে বিশ্বাস করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে থাকেন অমুসলিমরা। আর যারা সাথে সাথে ইসলাম গ্রহণ করেনি, তারা করেনি কেবলমাত্র তাদের মান মর্যাদা, আত্ম অহমিকার কারণে, কিন্তু মনে মনে ঠিকই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে বিশ্বাস করতো।
মানুষ হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন, তা শুধু গল্পই নয়। তিনি সহস্র উদাহরণ রেখে গিয়েছেন, যা আজও পাথেয় হিসেবে জাজ্বল্যমান হয়ে রয়েছে। যা অনুসরণ করলে আজকের সময়ের বহু সমস্যা এক নিমিষে দূরীভূত করা সম্ভব। একজন বিচারক, একজন ব্যবসায়ী, একজন নেতা, একজন পিতা, একজন স্বামী, একজন বন্ধু, একজন প্রতিবেশী, একজন শিক্ষক, একজন ধর্মভীরু; সব অবস্থায়ই তিনি ছিলেন একজন আদর্শ মানুষ।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), যিনি জন্ম থেকে মৃত্যুদিন পর্যন্ত রেখে গিয়েছেন একজন আদর্শ মানুষের পদচিহ্ন। যে পদচিহ্ন অনুসরণ করে যে কেউ হাঁটতে পারে মানুষ হওয়ার গন্তব্যে। একজন আদর্শ মানুষ হয়ে কীভাবে জীবন নির্বাহ করা যায়, যার অন্য কোনো বিকল্প গাইডলাইন দেয়া সম্ভব নয়, একমাত্র মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে অনুসরণ করা ছাড়া।
প্রকৃত মানুষ যদি হতে হয়, মুহাম্মদ (সাঃ) এর মতোই হতে হবে, যার মধ্যে সবগুলো মনুষ্য গুণাবলী উপস্থিত ছিল।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর গুনের মহাসমুদ্র থেকে কিছু গুনের বর্ণনা নিয়ে ‘’এবার তোরা মানুষ হ’’ কাব্যগ্রন্থ থেকে একটি কবিতা ‘’মহান মানব’’ নিম্নে প্রদান করা হল। মহান এ মানবের বহু মনুষ্য গুনের মহাসমুদ্র থেকে কিছু গুনের উপর আলোকপাত করা হয়েছে কবিতাটিতে।
মহান মানব
মরুভূমির বুকে জন্ম নেয়া আমার নবি মুহাম্মদ, ইসলাম প্রচারে ছিল যার অসীম সাহসী হিম্মত। এক আল্লাহ ছাড়া করেননি কাউকে সিজদাহ, সাহায্য চেয়েছেন যাঁর কাছে, সে এক আল্লাহ। যিনি ছিলেন মানবতার সুউচ্চ শিরোমণি, অশান্তির জামানায় বিলিয়েছেন শান্তির বাণী। আল আমিন ছিলেন সত্যের আধার, যাঁর অন্তর ছিল ক্ষমার সমাহার। কষ্ট দেননি কখনো গরীব দুঃখীকে, আপন করে বুকে টেনে নিতেন আপন শত্রুকে। মাথা নিচু করে বলতেন কথা মৃদু স্বরে, ছিড়ে যাওয়া জামা পরতেন নিজে সেলাই করে। শিশুদের প্রিয় ছিলেন আমাদের হজরত, বৃদ্ধের সেবায় নিযুক্ত সর্বদা ছিল যাঁর হাত। প্রাণের ধর্মকে রক্ষা করেছেন যতই আসতো আঘাত, জীবন বাজি রেখে নিজ রক্ত ঝরিয়ে করেছেন জিহাদ। বলে শেষ করা যাবে না এমন পরিপূর্ণ জীবন বিধান, রেখে গেছেন সাক্ষ্য সরূপ পবিত্র আল কুরআন।
হস্তপদ সম্পন্ন দোপেয় মানুষটিকে প্রকৃত মানুষ তখনই মানুষ বলা যাবে যখন তার মধ্যে মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলো বিদ্যমান। একজন আদর্শ মানুষের বৈশিষ্ট্য কী হতে পারে তা জানতে বা বুঝতে মহান মানব মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে অনুসরণ করার বিকল্প আর কিছু হতে পারেনা।
To Belittle is to Be Little – বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক কাহলিল জিবরানের The Prophet বইয়ের একটি বাণী। To Belittle is to Be Little স্লোগান নিয়েই তামিমা আবেদিন ও তার টিম কাজ শুরু করে BT Young Scientist and Technology Exhibition এর জন্য প্রজেক্ট Cyber Bullying App. এবং এই অ্যাপের সুবাধেই জিতে নেয় টেকনোলোজি সিনিয়র ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার।
হ্যাঁ আমি বলতেছি লিমেরিকে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তামিমা আবেদিনের কথা। লিমেরিক নিবাসী জনাব জয়নাল আবেদিন হচ্ছেন তামিমার গর্বিত পিতা এবং সাদিয়া বেগম হচ্ছেন তাঁর রত্নগর্ভা মাতা। তামিমার জন্ম বাংলাদেশে হলেও, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আইরিশ শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে মানিয়ে নিয়ে নিজের মেধার সাক্ষর রেখেছেন ভালোভাবেই। ২০২৪ সালের BT Young Scientist and Technology Exhibition Award এর প্রথম স্থান অর্জন করে নেয়া হচ্ছে তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।
তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে তথ্য প্রযুক্তির বহু আশীর্বাদ যেমন আছে, তেমনি রয়েছে কিছু অভিশাপও। সাইবার বুলিং তন্মদ্ধে অন্যতম। সাইবার বুলিং এর অন্যতম প্রধান শিকার হয় তরুণ প্রজন্ম। সাইবার বুলিং এর কারণে আমরা অনেক তরুণ তরুণীর মধ্যে হতাশা, হীনমন্যতা, দুশ্চিন্তা তৈরি হতে দেখি। এমনকি সাইবার বুলিং এর ফলে অনেক আত্মহত্যার মত ঘটনাও আমরা ঘটতে দেখি। যা আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক অ্যালার্মিং বিষয়।
সাইবার বুলিং এর মত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যুকে মাথায় রেখে, কীভাবে সাইবার বুলিংকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করা যায় তার চিন্তা থেকেই তামিমা আবেদিনের Cyber Bullying App প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করা। এই অ্যাপটি সকল অনলাইন অ্যাক্টিভিটি ডিটেক্ট করতে সক্ষম হবে। অ্যাপটি অনলাইনে উত্থিত সকল সাইবার বুলিং সম্পর্কিত কমেন্ট ডিটেক্ট ও ট্র্যাক করতে সাহায্য করবে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর সাথেও কানেক্ট করতে পারবে। সুতরাং এর মাধ্যমে কারা কাদেরকে বুলিং করলো তা সহজে ট্র্যাক করা সম্ভব হবে।
তামিমা আবেদিন প্রজেক্টের নাম দিয়েছেন To Belittle is to Be Little. এখানে BELITTLE অর্থ হচ্ছে কাউকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা, অবমূল্যায়ন করা, ছোট করে দেখা, অবজ্ঞা করা। কাউকে হেয় করে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, খাটো করে কথা বলা বুলিং এর অন্তর্ভুক্ত। বুলিং করাকে আমরা বাংলায় সাধারণত গালি বলে থাকি। কাউকে খাটো করে কিছু বলাও গালির অন্তর্ভুক্ত। তরুণ প্রজন্ম অনেকটাই সেন্সিটিভ। তাই কেউ তাদেরকে একটু তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কিছু বললেই তাদের মন খারাপ হয়, হতাশ হয়ে থাকে, যার পরিণতিতে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে। তাই বুলিং হচ্ছে এখানে খুবই সিরিয়াস বিষয়।
তাইতো Cyber Bullying App টি এতো গুরুত্ব পায় এবং জিতে নেয় প্রথম পুরস্কারের মর্যাদা। তামিমা জানান ভবিষ্যতেও তিনি এ বিষয়ে কাজ করবেন। To Belittle is to Be Little এর BELITTLE আসলেই যাতে আর না গণ্য হয় সে উদ্দেশ্যেই তামিমার এগিয়ে চলা।
তামিমা আবেদিন
কে এই তামিমা আবেদিনঃ
জয়নাল আবেদিন ও সাদিয়া বেগম দম্পতির গর্বিত সন্তান হচ্ছেন তামিমা আবেদিন। দুই ভাই বোনের মধ্যে তামিমা হচ্ছেন বড়ো। তার ৯ বছর বয়স্ক ভাই কাশিফ আবেদিন।
লিমেরিকের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল মুমিত এবং আবদুল ওয়াদুদের আদরের ভাগ্নি হচ্ছেন তামিমা। তামিমা আবেদিনের আরেক গর্বিত মামা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব শাহ্ আজমল হোসেন তামিমার এ কৃতিত্বে অনেক উচ্ছ্বসিত ও গর্বিত।
তামিমা বর্তমানে Coláiste Nano Nagle স্কুলের 5th ক্লাসের ছাত্রী। ভবিষ্যতে বিজ্ঞান বিষয়ক বিষয় নিয়ে পড়াশোনার আগ্রহ তার। তামিমার পছন্দের সাবজেক্ট হচ্ছে কেমিস্ট্রি এবং বায়োলজি।
২০২৩ সালেও তামিমা BT Young Scientist and Technology Exhibition এর স্পেশাল ক্যাটাগরিতে Hit The Books নামে Study App প্রজেক্টের জন্য পুরস্কৃত হন।
তামিমার এই অর্জনে ফুলের তোড়া দিয়ে লিমেরিক ইয়ুথ ফোরামের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান আমিনুল ইসলাম রনি ওঁ ওমর ফারুক নিউটন। সাথে আছেন তামিমার বাবা জয়নাল আবেদিন ও মামা শাহ্ আজমল হোসেন।
BT Young Scientist and Technology Exhibition কী?
ব্রিটিশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি BT গত ২০ বছর যাবৎ আয়ারল্যান্ডে তরুণ বিজ্ঞানী তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকায় নিজেদের স্পন্সর হিসেবে যুক্ত রেখেছে। এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার বয়স সীমা ১২ থেকে ১৯ বছর।
BT Young Scientist and Technology Exhibition সাধারণত পাঁচটি মূল বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর ৮০ টিরো বেশি উপ বিভাগে এগুলোকে বিভক্ত করা হয়। আমাদের পাঠকদের সুবিধার্থে ক্যাটাগরিগুলো উপ ক্যাটাগরি সহ তুলে ধরা হলো। আমরা আশা করি প্রতি বছর আমাদের অনেক অনেক শিক্ষার্থী এই রকম বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করবে এবং আমাদের দেশের নাম ও তাঁর পরিবারের নাম উজ্জ্বল করবে।
Chemistry, physics, mathematics, applied mathematics, engineering, computer programming and language or electronics. meteorology, geophysics, geology and astronomy.
Social and Behavioural sciences
Social and behavioural sciences, economic, geographical, psychological or sociological studies of human behaviour, attitudes and experience, social analysis of environmental factors, demography, learning and perception as well as the study of attitudes and behaviour in relation to health, nutrition, work, leisure and living habits are all included here. Also eligible are projects on consumer affairs, effects on society, social anthropology and political science provided they involve the use of scientific methods.
Technology
The use of technology in new or improved applications, enhanced efficiencies, new innovations or better ways to do things. The category could include things related to the Internet, communications, electronic systems, robotics, control technology, applications of technology, biotechnology innovative developments to existing problems, computing and automation.
Health and Wellbeing
Attitudes and behaviour in relation to health, mental health, nutrition, work, leisure, sport and exercise, living habits and wellbeing. The study of culture, civil engagement, community, economic development, environmental quality, housing, skills, social connections, and quality of life and work.
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর ভাইস চ্যান্সেলর জনাব সত্য প্রসাদ মজুমদার বর্তমানে আয়ারল্যান্ড সফরে আছেন ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরিকের সাথে নতুন একটি চুক্তি সাক্ষরের উদ্দেশ্যে। তিনি গতকাল ১৪ই মার্চ লিমেরকিকের কাউন্সিলর ও মেট্রোপলিটন মেয়র জনাব আজাদ তালুকদারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
ভাইস চ্যান্সেলর গতকাল মেয়রাল অফিসে গমন করেন ও জনাব আজাদ তালুকদারের সাথে সাক্ষাতে তাঁর ভ্রমণের উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন ও ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরিকের সাথে বুয়েটের গ্লোবাল পার্টনারশিপের মাস্টার্স প্রোগ্রামের একটি চুক্তি সাক্ষরের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।
সত্য প্রসাদ মজুমদারের সাথে আলোচনার মুহূর্ত
ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরিকের সাথে বুয়েটের মধ্যে অ্যাপ্লাইড পিজিক্স ডিপার্টমেন্টের মাস্টার্স প্রোগ্রামের ছাত্রদের উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এতে বুয়েটে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার নতুন দ্বার উন্মুক্ত হবে।
চুক্তিটা এমন যে, বুয়েটে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ৩ বছর পর ক্রেডিট ট্রান্সফার করে শেষ বছর ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরকে অধ্যয়ন করতে পারবে। যারা মাস্টার্স প্রোগ্রামে আসবে তারা মাস্টার্স করতে পারবে একইভাবে। এতে করে ওই শিক্ষার্থীগন উভয় BUET এবং UL থেকে সার্টিফিকেট অর্জন করবে। একই সাথে দু’টি প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফাই হওয়া অবশ্যই শিক্ষার্থীদের জন্য একটা স্বপ্নিল ব্যাপার।
চুক্তির প্রাক্বালে জনাব সত্য প্রসাদ মজুমদারের সাথে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের আরেক প্রফেসর জনাবা ফাহমিদা গুলশান।
গতকাল LinkedIn এর এক পোস্টে ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরকের ইন্টারন্যাশনাল হায়ার এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের ফুল প্রফেসর এবং গ্লোবাল ও কমিউনিটি এংগেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট Nigel Healey চুক্তির বিষয়টি অফিশিয়ালি প্রকাশ করেন।
Satya Prasad Majumder_BUET_University of Limerick
জনাব আজাদ তালুকদার উক্ত চুক্তির ভূয়সী প্রশংশা করেন এবং ভাইস চ্যান্সেলরকে যে কোনো ধরণের সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন। জনাব তালুকদার বাংলাদেশ থেকে আরো ছাত্রছাত্রীদেরকে আয়ারল্যান্ডে অধ্যয়নের দ্বার উন্মোক্ত করার জন্য জনাব সত্য প্রসাদ মজুমদারকে অনুরোধ জানান।
এছাড়াও জনাব সত্য প্রসাদ মজুমদারের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে উপস্থিতভাবে উপস্থিত ছিলেন অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব মনিরুল ইসলাম মনির, বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক জনাব সাজেদুল চৌধুরী রুবেল, জনাব চঞ্চল দেলোয়ার, জনাব নজরুল ইসলাম ও মিডিয়ার পক্ষ থেকে আইরিশ বাংলা টাইমসের বার্তা সম্পাদক জনাব ওমর এফ নিউটন।
ভাইস চ্যান্সেলরকে শিশির ঝরা কবিতা ও এবার তোরা মানুষ হ বইগুলো উপহার দেন দুই লেখক
জনাব সাজেদুল চৌধুরী রুবেল তাঁর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ”শিশির ঝরা কবিতা” এবং জনাব ওমর এফ নিউটন তাঁর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘’এবার তোরা মানুষ হ’’ বইটি ভাইস চ্যান্সেলর জনাব সত্য প্রসাদ মজুমদারকে উপহার হিসেবে প্রদান করেন। উপহার গ্রহণ করে তিনি উচ্ছ্বসিত হন।
সত্য প্রসাদ মজুমদার বুয়েট থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল (ইইই) বিভাগে ১৯৮১ সালে স্নাতক ও ১৯৮৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮১ সালে তিনি এই বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৯১ সালে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি), খাড়্গপুর থেকে ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
ছাত্র হিসেবে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ৪ বছরের স্নাতককালীন তিনি মেধাবৃত্তি লাভ করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে বুয়েট থেকে স্নাতকোত্তরে তার গবেষণার বিষয় ছিল মূলত মাইক্রোপ্রসেসর-নিয়ন্ত্রিত টেলিফোন শাখা এক্সচেঞ্জ। ১৯৮৭ সালে ভারত সরকার তাকে খড়গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (আইআইটি) পিএইচডি শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হওয়ার জন্য বৃত্তি প্রদান করে এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইন রাডার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস-এ ফাইবার অপটিক্স নিয়ে তার গবেষণা কাজ তিনি চালিয়ে যান। তিনি পারমা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইতালির জাতীয় গবেষণা পরিষদ (সিএনআর) থেকে টেলিযোগাযোগ প্রকল্পে পিএইচডি করার জন্য গবেষণা সহায়তা পেয়েছিলেন।
উপাচার্যের দায়িত্ব পালনের পূর্বে তিনি প্রশাসনিক বিভিন্ন দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও ইইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বপালন করেছেন। (সূত্রঃ উইকিওয়ান্ড)
গতকাল ৪ঠা মার্চ রোজ সোমবার বিসিডি কর্তৃক বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে পুরুষদের এক দৈত ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়।
আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মোট ২৬টি দল নিয়ে তিনটি ক্যাটাগরিতে আয়োজিত হয় এই টুর্নামেন্টটি। দিনব্যাপী এই আয়োজন দর্শনার্থীদের ও খেলোয়াড়দের জন্য বেশ উপভোগ্য ছিল। উত্তর আয়ারল্যান্ড থেকে উল্ল্যেখযোগ্য সংখ্যক খেলোয়াড় এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়।
তিনটি ক্যাটাগরি যথাক্রমে, সাধারণ, অগ্রগণ্য ক্যাটাগরি ও অভিজ্ঞ। প্রতিটি ক্যাটাগরি থেকে তিনটি করে দলকে পুরস্কৃত করা হয়। ক্যাটাগরি সোহো বিজয়ীদের নাম নিন্মে দেওয়া হলো।
অভিজ্ঞ ক্যাটাগরি
চ্যাম্পিয়ন: আহমেদ ও জুয়েল,
প্রথম রানারআপ: মুন্না ও কিরণ,
দ্বিতীয় রানারআপ: জহিরুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম।
অগ্রগণ্য ক্যাটাগরি
চ্যাম্পিয়ন: সুমন ও ইমন,
প্রথম রানারআপ: মুহিদ ও ফরহাদ,
দ্বিতীয় রানারআপ: বাসিত ও সাইফুল।
সাধারণ ক্যাটাগরি
চ্যাম্পিয়ন: হাবিব ও মাসুদ,
প্রথম রানারআপ: মোস্তফা ও সাইফুল,
দ্বিতীয় রানারআপ: রাসেল ও রিপন।
বিজয়ীদেরকে মেডেল, ক্রেস্ট ও অর্থ দিয়ে সম্মানিত করা হয়। অনুষ্ঠানে আগত মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের ক্রেস্ট দেয়া হয়।
BSAI এর প্রতিনিধি হিসেবে জনাব চুন্নু মাতবর, জনাব কামাল হোসেন ও জনাব আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন ABAI এর প্রতিনিধি হিসেবে জনাব মাসুদুর ইসলাম।
বিসিডি এর সভাপতি জনাব মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক জনাব শাহাদাৎ হোসেন ও উপদেষ্টা, কাউন্সিলর অনেকে উপস্থিত ছিলেন এবং পুরস্কার বিতরণী পর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
পুরস্কার বিতরণী পর্ব পরিচালনা করেন জনাব কাজী কবির ও জনাব লিঙ্কন।
দীর্ঘ সময় ধরে বিসিডির খেলাধুলা বিষয়ক সম্পাদক জনাব মুরাদ হোসেন ও জনাব মুবিন সহ আরো অনেকের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে একটি সুন্দর আয়োজন করতে সফল হয়েছেন।
গত (২২/০২/২০২৪) বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন (বিসিডি) এর সহযোগিতায় এবং আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর উদ্যোগে আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশী নেতৃবৃন্দের সাথে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম এর সাথেমতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন (বিসিডি) এর নেতৃবৃন্দ , আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ , যুবলীগ , ছাত্রলীগ এর নেতৃবৃন্দ সহ প্রবাসী বাংলাদেশী বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন ।উল্লেখযোগ্য নারীদের উপস্থিতিও মত- বিনিময় সভায় লক্ষ্য করা গেছে ।
মত বিনিময় সভায় হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম উনার বক্তিৃতায় মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি কি ভাবে একটি জাতীয় দিবস থেকে একটি আন্তর্জাতিক দিবসে পরিণত হলো তার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন । তিনি বলেন আজ আমরা গর্বের সাথে ২১শে ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছি । তিনি আরোও বলেন এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং আন্তরিক সহযোগিতার কারনে । হাই কমিশনার বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি যে আওয়ামীলীগ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে হয়েছে তা তিনি উল্লেখ করেন ।
আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে হাই কমিশন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে তিনি দৃঢ় কন্ঠে উচ্চারণ করেন ।
মান্যবর হাই কমিশনার প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে মত বিনিময় কালে CENSUS Ireland এ বাংলাদেশী প্রবাসীদের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য অনুরোধ করেন । কারন CENSUS Ireland এ এখন পর্যন্ত মাত্র ১৫০০০ প্রবাসী রেজিস্ট্রেশন করেছেন বলে উল্লেখ করেন ।
তিনি প্রতিবন্ধিদের Consular Service সহজ করার জন্য লন্ডন হাই কমিশন আয়ারল্যান্ডে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন ।
তিনি E-Passport যেন সকল প্রবসীরা করে নেন সেদিকেও গুরুত্ব আরূপ করেন এবং বাংলাদেশীদের আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিসা অনুমোদনের মাত্রা ৭৮% উন্নীত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ।
অনুষ্ঠানে ইউকে, আয়ারল্যান্ড এবং লাইবেরিয়ার মান্যবর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম কে বিসিডির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট উপহার তুলে দেন বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন “বিসিডির” সম্মানিত সভাপতি জনাব মোস্তফা l ডাবলিন আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতি মোঃ ফিরোজ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অলক সরকারএবং আয়ারল্যান্ডে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রব্বি ইসলাম ও যুবলীগ নেতা দিলদার আলী ।
প্রবাসী কবি , লেখক এবং প্রাবন্ধিক সাজেদুল চৌধুরী রুবেল উনার প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘ফেরাবো না তোমাকে’ মান্যবর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম কে প্রদান করেন ।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ কিমিউনিটি ডাবলিন (বিসিডি) আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন সিটি সেন্টারে একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করে এবং পাশাপাশি একটি অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য পুষ্পস্তবকঅর্পন করেন।
শোভাযাত্রায় বিসিডির কার্যকরী কমিটির সভাপতি জনাব মোঃ মোস্তফা , সাধারণ সম্পাদক জনাব শাহাদাত হোসেন , কার্যকরী কমিটির অন্যান্য সদস্যদের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ অংশগ্রহন করেন । শোভাযাত্রায় অনেক নারী এবং নতুন প্রজন্মের উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মতো ।
শোভাযাত্রা শেষে অমর একুশের তাৎপর্য তুলে ধরে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনার আয়োজন করা হয় । আলোচনায় বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় এ ধরনের আয়োজন প্রবাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আলোচকগণ মনে করেন । নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সংস্কৃতিতুলে ধরতে এ ধরনের আয়োজন জরুরী বলে উক্ত আলোচনায় উল্লেখ করা হয় । সভাপতি জনাব মোঃ মোস্তফা শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহন করার জন্য সবাই কে ধন্যবাদ দেন ।
কাজী নামের সার্থকতা বজায় রেখেছেন তিনি। নামেও যেমন কাজী তেমনি কাজেও কাজী। বলছি কাজী মাহফুজ রানার কথা – একে একে লিখে ফেলেছেন ৮ টি কাব্যগ্রন্থ। তন্মদ্ধে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে চলমান অমর একুশে বইমেলায়। তিনি একাধারে চ্যানেল প্রবাহ ও জনপ্রিয় সাহিত্য সংগঠন সাহিত্য প্রবাহেরও কর্ণধার।
কবি কাজী মাহফুজ রানা’র অষ্টম কাব্য গ্রন্থ “আমার নাম বাংলাদেশ” ঢাকা অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ এ হরিৎপত্র প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
বইটি দ্রোহ, সাম্য, ভালোবাসা ও প্রতিবাদী কবিতায় অলংকৃত করা হয়েছে। আরো রয়েছে করোনাসহ বৈশ্বিক বিপর্যয় ও দেশপ্রেম নিয়ে নানা কবিতা। তাছাড়াও রয়েছে দুটি অনুকাব্য নাটিকাও।
এ বইয়ের অনেক কবিতা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের বরেণ্য ও বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পীদের কণ্ঠে আবৃত্তি হয়েছে।
“আমার নাম বাংলাদেশ” বইটির আগেও তিনি আরো সাতটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। সাতটি কাব্যগ্রন্থ যথাক্রমে হলঃ মাটির ধূমকেতু, বাংলার আয়না, বেদনার অঞ্জলি, অগ্নিদগ্ধ গণতন্ত্র, লাঞ্ছিতা স্বাধীনতা, শনির ছায়া ও দাঁড়াতে শেখ।
কবি কাজী মাহফুজ রানা একাধারে একজন প্রকাশক, সম্পাদক, সংগঠক ও সাংবাদিক।তাঁর জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। দীর্ঘ বাইশ বছর ধরে তিনি ইতালিতে অতিক্রান্ত করে বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে স্বপরিবারে বসবাস করছেন। আয়ারল্যান্ডে তিনি প্রায় দেড় বছর থেকে বসবাস করতেছেন। বর্তমানে তিনি কর্কের নিবাসী। স্ত্রী মাজেদা আক্তার এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখী পরিবার কাজী মাহফুজ রানা’র।
কাজী মাহফুজ রানা’র প্রতি রইল শুভকামনা। গুনি এই কবির বই সংগ্রহ করতে পারবেন ঢাকা অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ এ হরিৎপত্র প্রকাশনী ৩১ নাম্বার স্টল থেকে।
বই জ্ঞানের প্রতীক, আর পিঠা হচ্ছে ঐতিহ্যের। পিঠা হচ্ছে পেটের খোরাক, আর বই হচ্ছে জ্ঞানের খোরাক। পেটের ও জ্ঞানের খোরাক মেটাতে এবং জ্ঞানকে সমৃদ্ধি করতে ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সমগ্র আয়ারল্যান্ডবাসী জড় হলো বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ডাবলিন (BD-AD) আয়োজিত বইমেলা ও পিঠা উৎসবে। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছ গত ১১ ই ফেব্রুয়ারি রবিবার ডাবলিনের টালাতে অবস্থিত কিলনামানাহ ফ্যামিলি রিক্রিয়েশন সেন্টারে।
ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার মাস। এই ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে বীর বাঙালিরা। ভাষাকে বহনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে বই। আর এ বইকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ফেব্রুয়ারি মাসেই আয়োজন করা হয় বইমেলার। বাংলাদেশেও সবচেয়ে বড় এবং জাতীয় বইমেলা আয়োজিত হয় ফেব্রুয়ারি মাসেই। তারই অংশ হিসেবে BD-AD ফেব্রুয়ারি মাসেই আয়োজন করে বইমেলার।
বাংলাদেশে শীতকাল হচ্ছে উৎসবের মাস। উৎসবের আতিশয্যে, রঙে বৈচিত্র্যে আড়মোড়া দিয়ে জাগে কুয়াশার চাদর মুড়ে থাকা শীতকাল। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে যখন নতুন ধান ঘরে উঠে তখন নতুন চালের পিঠা পায়েশ দিয়ে উদযাপন করা হয় নবান্ন উৎসব। বাংলার চিরাচরিত এই ধারা চলে আসছে হাজার বছর ধরে। পৌষ মাঘের এই সময়টায় বাংলার আনাচে কানাচে ভেসে আসে খেজুর রসের পায়েশ আর পিঠা পুলির সুমিষ্ট ঘ্রাণ।তাই বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ও তুলে ধরতে একই সময় তারা বইমেলার সাথে সংযুক্ত রাখে পিঠাকেও। হরেক রকম পিঠা, মিস্টানেরআয়োজনেঅনুষ্ঠানটিপরিণতহয়পিঠাউৎসবে।
শুধু পিঠা ও বই উৎসবই নয় – এছাড়া যে উদ্যোগগুলো স্থান পায় অনুষ্ঠানেঃ
> উক্ত অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় এবারের মহান একুশে বইমেলায় প্রকাশিত লেখক এবং তাদের বইয়ের সাথেও। লেখকদের মধ্যে যাদেরকে সন্মানিত করা হয়, তাঁরা হলেন যথাক্রমে– ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিরদার, ডঃ ইসমেত জাকিয়া রহমান, মেহেদী হাসান,সাজেদুল চৌধুরী রুবেল সৈয়দ জুয়েল ও ওমর ফারুক নিউটন।
> গ্রামবাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা, সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে BD-AD’র পক্ষ থেকে আয়ারল্যান্ডে অধ্যয়নরত স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও PhD কোর্সে উত্তীর্ণ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
> বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (BSAI) এর নবনির্বাচিত কমিটিকে ফুলের তোড়া ও সম্মাননা ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
> আয়ারল্যান্ডেরসাংবাদিক আইরিশ বাংলা টাইমস এর পক্ষ থেকে জনাব আবদুর রহিম ভুঁইয়া, জনাব মাইদুল ইসলাম সবুজ, জনাব এ, কে আজাদ এবং জনাব মনিরুজ্জামান মানিককে সম্মাননা ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
জনাব জহিরুল ইসলাম জহিরের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়।জনাব আবদুল্লাহ আল কাফি এবং জনাব জাকারিয়া প্রধান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন। অনুষ্ঠানটির নেপথ্যে ছিলেন জনাব জাকারিয়া প্রধান, জনাব হারুন ইমরান, জনাব রফিকুল ইসলাম, জনাব শাহীন মিয়া, জনাব তপু শাহাদাত, জনাব মনির হোসেন এবং জনাব জনাব মাহবুব হোসেন খান, জনাব মহিউদ্দিন পাটোয়ারী লিংকন, জনাব জালাল আহমেদ ভূঁইয়া, জনাব ইকবাল আহমেদ লিটন প্রমুখ।
দেশাত্ববোধক এবং মনমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন কর্ক থেকে আগত জনাব আভি আজিতাভ রয় ও ওয়াটারফোর্ড থেকে আগত জনাব মামুন মোহাম্মদ খান।
জনাব ওমর ফারুক নিউটন তাঁর নিজস্ব কাব্যগ্রন্থ ”এবার তোরা মানুষ হ’’ থেকে বহুরূপী কবিতাটি আবৃত্তি করেন। এছাড়াও কবিতা আবৃত্তি করেন। জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার, জনাব শরিফুল আলম জেনন এবং জনাব আরিফুল ইসলাম আরিফ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্টজনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিরদার।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর ও লিমেরিক সিটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার, কাউন্সিলর জনাব কাজী মোশতাক আহমেদ ইমন, জনাব জসিম উদ্দিন দেওয়ান, জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার, জনাব ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন, জনাব মনিরুল ইসলাম মনির,জনাব সাইফুল ইসলাম, জনাব চুন্নু মাতবর, জনাব ইকবাল আহমেদ লিটন, মুক্তিযোদ্ধা জনাব সাইদুর রহমান, জনাব ডঃ নাসিম, হামিদুর নাসির, জনাব ডাঃ পারভেজ প্রমূখ ।
আইরিশ বাংলা টাইমস ও আইরিশ বাংলাপোষ্ট সম্পূর্ণঅনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে। এছাড়াও ডাবলিন ডায়েরি এবং ডাবলিন বাংলা বার্তার প্রতিনিধিগণ অনুষ্ঠানটি ধারণ করেন।
কানায় কানায় পূর্ণ অনুষ্ঠান কেন্দ্রটি যেন হয়ে উঠেছিল এক টুকরো বাংলাদেশ।
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল সাহিত্য অঙ্গনে এক সুপরিচত নাম। একাধারে তিনি একজন কবি, কলামিস্ট ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। লেখালেখি করেন প্রায় নব্বইয়ের দশক থেকে। তিনি দেশি বিদেশি বিভিন্ন বাংলা পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ব্লগ ও সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত লেখালেখি করে আসতেছেন। কিন্তু তাঁর প্রথম বই ”ফেরাবো না তোমাকে’’ প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায়।
কবিতাই তাঁর লেখার উপজীব্য বিষয়। তবে তিনি গল্প ও প্রবন্ধও লিখে থাকেন নিয়মিত।
সবার জন্য সুখবরের বার্তা নিয়ে তিনি এবারও নিয়ে আসতেছেন তাঁর আরেকটি কাব্যগ্রন্থ, ”শিশির ঝরা কবিতা’’। কাব্যগ্রন্থটি ২০২৪ সালের অমর একুশে বইমেলায় চৈতন্য প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায়। বইটি চৈতন্য প্রকাশনীর ১০৫ ও ১০৬ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে।
বইটিতে প্রাধান্য পেয়েছে রোমান্টিকধর্মী কবিতায়। প্রেম, ভালোবাসা, দ্রোহ, অনুরাগ, অনুভূতি নিয়ে অলংকৃত এই গ্রন্থটি। এছাড়াও বইটিতে স্থান পাচ্ছে দেশ, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্বলিত কবিতার সংমিশ্রণ।
লেখক জানান, বইটি মূলত তাঁর শৈশব ও কৈশোরের আবেগ, অনুভূতি ও উপলব্ধি নিয়ে লিখিত। যার কবিতাগুলোও লেখা হয়েছিল কিশোর বয়সে, যৌবনে পদার্পণের মুহূর্তে। কবিতার লেখায় তাই ফুটে উঠেছে সে সময়কার আবেগ, অনুভূতি ও উপলব্দি।
তিনি আরও জানান, তাঁর বহু লেখা সে সময়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল। সে লেখাগুলাই ক্রমান্বয়ে বই আকারে লিপিবদ্ধ করার প্রয়াস থেকেই বই প্রকাশের অন্যতম উদ্দেশ্য। তাই তিনি জীবনের প্রারম্ভের লেখাগুলিকে আগে এবং পরে ধাপে ধাপে অন্যান্য লেখাগুলোও প্রকাশ করবেন।
জনাব সাজেদুল চৌধুরী রুবেলের বহু লেখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাঁর বইগুলোর মাধ্যমে পাঠকের সৌভাগ্য হবে লেখাগুলোকে সুবিন্যাস্তভাবে একসাথে হাতে পাবার।
সাজেদুল চৌধুরী রুবেলের প্রথম বই ফেরাবো না তোমাকে
দেশপ্রেমিক ও কবি সাজেদুল চৌধুরী রুবেল নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মেধা, প্রজ্ঞা, নিষ্ঠা ও মানবিক গুনে অনন্য এ কবি পড়ালেখার পাট সম্পন্ন করে আজ থেকে প্রায় ২২ বছর আগে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে।
দুই কন্যা সন্তানের জনক জনাব রুবেল পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ”দি মিনিস্টার ফর ট্রান্সপোর্টে (এন টি এ)” এর উপদেষ্টা মণ্ডলীর একজন সন্মানিত সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁর সহধর্মিণী নদী চৌধুরী তাঁর অনুপ্রেরণার অংশ হিসেবে রয়েছেন।
দুই কন্যা ও স্ত্রীর সাথে লেখক
নব্বই দশক থেকেই পাঠকগণ তাঁকে দেখে আসছেন কখনো কবিতায়, কখনো গল্পে আবার কখনোবা প্রবন্ধে। নিশ্চিতভাবেই তিনি তাঁর লেখনীতে প্রমাণ করেছেন যে, তিনি হাজারো লেখকের ভিড়ে একজন খাঁটি বাঙালি এবং সত্য সন্ধানী, স্বর্ণালি দিনের মশালবাহক জাত লেখক।
জনাব সাজেদুল চৌধুরী রুবেলের জন্য রইল শুভকামনা। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা জনাব রুবেলের প্রতিটি লেখা পাঠকগণ উপভোগ করবেন। গুনি এ লেখককে উৎসাহ দিতে বইটি সংগ্রহ করুন বইটি চৈতন্য প্রকাশনীর ১০৫ ও ১০৬ নম্বর স্টল থেকে।
ওমর এফ নিউটন-এর ব্যতিক্রমধর্মী কাব্যগ্রন্থ ”এবার তোরা মানুষ হ’’ এর মোড়ক উন্মোচিত হল আয়ারল্যান্ডের লিমেরিকে। লিমেরিকবাসীর সৌজন্যে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গ্রন্থটি উন্মোচিত হল।
অনুষ্ঠানে লিমেরিকসহ আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দূর দূরান্ত থেকে আগত অতিথিবৃন্দ ও স্থানীয় অধিবাসীগণ বইটির লেখক ওমর এফ নিউটনকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন ও ”এবার তোরা মানুষ হ’’ বইয়ের সাফল্য কামনা করেন।
স্থানীয় অতিথিদের মধ্যে অনেকেই সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন ও বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত অতিথিগণও তাঁদের বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে বক্তারা বইটির ভিন্নতা ও ব্যতিক্রমতার বিষয়ে ভূয়সী প্রশংশা করেন। বইটি যে গতানুগতিকের ছেয়ে আলাদা তা বক্তাগণ তাঁদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
বক্তব্যের মাঝে মাঝে ছিল ”এবার তোরা মানুষ হ’’ কাব্যগ্রন্থ থেকে কবিতা আবৃত্তি। কবিতাগুলি উপস্থিত দর্শকদেরকে বিমোহিত করে।
জনাব ওমর এফ নিউটন তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এরপর আয়ারল্যান্ডে অন্য যেসব লেখকের যে বইগুলো প্রকাশিত হয়েছে অথবা হবে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন। বক্তব্যের শেষাংশে তিনি ”এবার তোরা মানুষ হ’’ বইয়ের নামের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন ও বই পরিচিতি তুলে ধরেন।
অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর প্রেসিডেন্ট ও কবি জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিদার, লিমেরিকের কাউন্সিলর, মেট্রোপলিটন মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার, আবাইয়ের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ার এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক মুস্তাফিজুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠান অলংকৃত করেন। জনাব মুস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশে অবস্থান করায় অনলাইনে যোগদান করে তাঁর শুভেচ্ছা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের শেষার্ধে ”এবার তোরা মানুষ হ’’ বইয়ের লেখক ওমর এফ নিউটন কিছু কবিতা আবৃত্তি করে উপস্থিত দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন। তিনি কিছু কবিতার ব্যাখ্যাও বিশ্লেষণ করেন। এছাড়াও লেখকের সহধর্মিণী মুক্তা মতিন, শাহানা আক্তার স্নিগ্ধা, তাইবা শোভনী, কিশোরী ফারজানা আক্তার প্রাচী, রোকসানা আক্তার, মান্নান সরকার ও মিজানুর রহমান নাসিম কবিতা আবৃত্তি করেন।
জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার ‘এবার তোরা মানুষ হ’ বইয়র লেখক ও বই সম্বন্ধীয় স্বরচিত এক অতিদীর্ঘ কবিতা আবৃত্তি করেন।
সর্বশেষে সবাই সম্মিলিতভাবে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং লেখক অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
লিমেরিকবাসীর পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানটির উদ্যোগ গ্রহণ ও সার্বিক আয়োজনে ভূমিকা রাখেন জনাব মনিরুল ইসলাম মনির ও কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জনাব মনিরুল ইসলাম মনির ও মোসাম্মৎ শম্পা লিলি।
২০২৪ সালের অমর একুশে বইমেলায় আয়ারল্যান্ড প্রবাসী অন্য লেখকদের বইয়ের সাথেও পরিচয় করে দেয়া হয় উক্ত অনুষ্ঠানে। এবারের বইমেলায় জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারের ৫ টি বই, ইমিরিটাস প্রফেসর ডঃ ইসমেত জাকিয়া রহমানের ২ টি বই, জনাব মেহেদী হাসানের ১ টি এবং জনাব সৈয়দ জুয়েলের ১ টি বইয়ের পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এছাড়াও বিশিষ্ট কবি ও কলামিস্ট সাজেদুল চৌধুরী রুবেলের আসন্ন কাব্যগ্রন্থের বিষয়েও উপস্থিত দর্শকদেরকে অবহিত করা হয়।
দুর্ঘটনার কবলে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, চালকসহ আহত অর্ধশতাধিক। চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে ট্রেনের দুটি ইঞ্জিনের সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে লাইনচ্যুত হয়েছে একটি মেইল ট্রেনের ইঞ্জিন। এ ঘটনায় চট্টগ্রামগামী ট্রেনটির চালক ও সহকারীসহ অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ফৌজদারহাট স্টেশনের কাছে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। হতরা হলেন- কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের লোকোমাস্টার মোহাম্মদ আলী, সহকারী লোকোমাস্টার নজরুল ইসলাম ও ইঞ্জিনের থাকা লোকোমাস্টার সবুজ চৌধুরী।
পূর্ব রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে ফৌজদারহাট স্টেশনের কাছে আসা কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের সঙ্গে একটি সান্টিং ইঞ্জিনের ধাক্কা লাগে। এতে কর্ণফুলীর ইঞ্জিনের দুটি চাকা পড়ে যায়।
রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, দুটি ট্রেন একই লাইনে যাচ্ছিল। ইঞ্জিনটি ধীরে ধীরে যাচ্ছিল। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে কিছু যাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
এবারের একুশে বই মেলায় থাকছে আয়ারল্যান্ড প্রবাসী লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরিটাস অধ্যাপক জাকিয়া রহমানের দুটি একক গ্রন্থ
১) জাগতিক প্রকাশনি থেকে প্রকাশিত হওয়া প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘স্বপ্নের আঙিনা’ এর মূল বক্তব্য:
আশাই মানব জীবনের চালক আর সেটা স্বপ্ন থেকে উদ্বুদ্ধ, স্বপ্ন ভেঙে যায় তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখে। এমনি হাজার হাজার স্বপ্ন মানুষের মানস-আঙিনায় জন্মায় আর উধাও হয়ে যায়। কোন কোন স্বপ্ন আশার সীবন মনে গভীরভাবে খচিত করে দেয় অনুভব। সে অনুভূতি মনের মাঝে অনুবিদ্ধ হয়ে রয় চিরকাল। স্বপ্ন আশার বৃক্ষ অনেকের জীবনে শাখার পল্লবে ভরে ওঠে তবুও মানুষের জীবনে কিছু না পাওয়ার বা হারানোর
ব্যথা পূর্ণ প্রাপ্তি ফল কখনোই ফলায় না।
এই সব দর্শনকে কেন্দ্র করে কিছু অনুভবের কবিতার আলাপন এই কাব্য গ্রন্থে সমাবেশিত হয়েছে।
২) জাগতিক প্রকাশনি থেকে প্রকাশিত হওয়া জাকিয়া রহমানের আরেকটি ছড়া ও কবিতার বই ‘নীলাম্বরীর ছায়ে’।
এই ছড়া ও কবিতার বই ‘নীলাম্বরীর ছায়ে’ কিশোর ও নবীন তরুণদের জন্য রচিত হলেও আমরাও এদলে যোগদান করতে পারি। বইটি কিশোর ও তরুণদের জন্যে শিক্ষামূলক। বইটিতে ছড়া /কবিতাগুলি পাঁচটি পর্বে বিভক্তঃ
১) মজার ছড়া ২) সামাজিক চেতনা ৩) মানবাধিকার ৪) পরিবেশ সচেতনতা ও ৫) বিজ্ঞান
লেখিকার প্রয়াশ হলো, কিশোর কিশোরী ও কম বয়স্ক তরুনদের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সচেতন করা। জীবনে শুধু কিভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে সেটাই বড় নয়। একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন যাপন করতে হলে নিজস্ব পারিপার্শ্বিকতা, প্রকৃতি, সমাজ এবং মানুষের দুঃখ সুখের কথা জানতে হবে। এর থেকে ভালো উত্তর আর কিছু নেই।
একজন জিন্নুরাইন জায়গীরদার। বিশেষণের পর বিশেষণ যার আগে পিছে। একজন কবি, একজন চিকিৎসক, একজন নেতা কত নামেই আমরা চিনি তাঁকে। কর্মব্যস্ত একজন পুরোদন্তুর চিকিৎসক এবং একজন কমিউনিটির দায়িত্বভার কাঁধে নিয়েও লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন সমান তালে। বিরতি না নিয়েই প্রকাশ করে চলেছেন বইয়ের পর বই। এবারের বইমেলায় তো তিনি চমক দেখিয়ে নিয়ে আসতেছেন একটা নয় দুইটা নয়, পাঁচ পাঁচটি বই।
তিনি নিজেই জানান চিকিৎসা হচ্ছে তাঁর পেশা, আর বাকি যা কিছু করেন তা হচ্ছে তাঁর নেশা। সেই নেশার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লেখালেখি। সে নেশার আধিক্য যে কতটুকু, সে নেশায় কতটুকু বুঁদ হয়ে থাকলে এক বইমেলায় একাধিক বই প্রকাশ করা সম্ভবপর হওয়া সম্ভব! তিনি কোনও পেশাদার লেখক নন তারপরেও অন্য পেশার পাশাপাশি এতগুলা বই লেখা বিস্ময়কর বটেই।
ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার
অমর একুশে বইমেলায় জনাব জায়গীরদারের সর্বমোট ৫ টি বই প্রকাশ হচ্ছে। তন্মদ্ধে হরিৎপত্র প্রকাশনী থেকে তিনটি এবং বর্ষা দুপুর প্রকাশনী থেকে দুইটি বই।
কবিতাগুলো হচ্ছে যথাক্রমেঃ
জন্মভূমি স্বদেশ আমার (১ম খন্ড)
জন্মভূমি স্বদেশ আমার (২য় খন্ড)
বিরল তিরস্কার
কবিতায় কথা
সীমান্ত সংসার
“জন্মভূমি স্বদেশ আমার” কাব্যগ্রন্থদ্বয়ে কবি তাঁর জন্মভূমি বাংলাদেশের প্রাত্যহিক জীবনের একটি কাব্যিক তৈলচিত্র অংকনের প্রয়াস গ্রহণ করেছেন। “জন্মভূমি স্বদেশ আমার” নিছক সাহিত্যিক প্রচেষ্টা নয়; বরং এটি বাংলাদেশের বহুমুখী বাস্তবতার উন্মোচনে অঙ্গীকারের প্রমাণ। এ গ্রন্থে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশ, পরিস্থিতি ও অবস্থা। কবি বলেন, ‘’আমার ঐকান্তিক ইচ্ছা যে, এই কবিতাগুলো পাঠকের হৃদয়ে অনুরণিত হোক। আমার কবিতাগুলি, প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সকল নাগরিকের দায়িত্ববোধকে জাগ্রত করুক, মূল্যবোধের উন্নতি ঘটুক, বিবেক আর যুক্তির জগতে বৈপ্লবিক কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে, এই কাব্যগ্রন্থ একটি নতুন আশা জাগিয়ে তুলুক, এটাই আমার ঐকান্তিক প্রার্থনা’’।
“বিরল তিরস্কার”কাব্যগ্রন্থটি এমন একটি সংকলন, যা বিভিন্ন দেশ জুড়ে ভ্রমণ এবং কয়েকটি দেশে বসবাসের অভিজ্ঞতার উজ্জ্বল রঙগুলিকে একত্রিত করে, একটি কাব্যিক রূপ প্রদান করেছে। এই কাব্যগ্রন্থের বিভিন্ন কবিতার মাধ্যমে বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন সীমানায় বিভক্ত দেশ থেকে দেশের বহুমুখী দিকগুলি অবলোকন করা সম্ভব। বহির্বিশ্বকে অবলোকন করে আমাদের চিন্তা-ভাবনার সাথে, জাতিগত এবং ভৌগলিক সীমানায়, প্রকৃতি আর মানবের মিথোষ্ক্রিয়া এই কবিতাগুলোর মূল ধারনা, যা লিখিত কথার মাধ্যমে প্রতিবিম্বিত হয়েছে। কবির বর্তমান আবাসস্থল আয়ারল্যান্ড, এই দেশের ইতিহাস, রাজনীতি, জলবায়ূ, ধর্ম, দ্বন্দ্ব, অর্থনীতি, ভাষা, বিবর্তন সবই উঠে এসেছে পনেরটি কবিতায়।
“কবিতায় কথা”কাব্যগ্রন্থে কবি এমন একটি সংকলন উপস্থাপন করেছেন যা কবিতার মহাবিশ্বকে প্রদক্ষিণ করে। এই সংকলন প্রকাশ করে “কবি” হিসাবে নিজেকে দাবী না করেও তিনি “কবিতার” স্পন্দন খুঁজতে চেষ্টা করেছেন। তাই তিনি, লিখেছেন কবিতা কি? নিজের রচনা আদৌ কবিতা হয় কি না তাঁর অজানা, কেউ দাবী করলেই কবি হওয়া যায় কি না? কবিতা কিভাবে লিখতে হয়? ইত্যাদি প্রসঙ্গ তিনি উত্থাপন করেছেন আপন মহিমায়। এই সংকলনে তিনি যেমন ছন্দোবদ্ধ কবিতা লিখার চেষ্টা করেছেন একইভাবে আধুনিক গদ্য কবিতাকেও দিয়েছেন স্থান, আধুনিকতাকে ছাপিয়ে উত্তরাধুনিকতা ঘুরে তিনি অত্যাধুনিক হওয়ার কথাও প্রকাশ করেছেন এই বিশ্বের বর্তমান সময়ের প্রকট সমস্যার বেড়াজালে।
”সীমান্ত সংসার’’ কাব্যগ্রন্থে কবি তুলে এনেছেন তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতা, আবেগ, অনুভূতি ও স্মৃতি। জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি এই সংসারে তার নিজের অনুভুতির প্রতিফলন এই বইতে প্রকাশিত হয়েছে। জন্ম, মা-বাবার অনুভুতি, জীবন যাত্রায় অসুস্থতা, বেদনা, আনন্দ হতাশা সকল অনুভুতির প্রতিফলন দেখা যাবে তার এই কবিতা সংকলনে।
এছাড়াও অতীতে জনাব জায়গীরদারের আরও ছয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো হচ্ছে যথাক্রমেঃ
বিশ্বাসের মৃত্যু স্বাধীনতা আমার সমাজ সংকটে বর্ণমিছিল হীরক নামান্তর বন্ধু তোমার জন্য
গুনি এই লেখক এ পর্যন্ত প্রায় ডজনখানেক বই উপহার দিয়েছেন পাঠকদেরকে। তাঁর বইগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে, একেকটি বই একেকটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে লিখিত। বিষয়ভিত্তিক বইয়ে তিনি চেয়েছেন একেকটি বিষয়কে পাঠকের সামনে তুলে ধরতে।
জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার পেশায় একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে অ্যানেসথেশিয়া এবং ইন্টেনসিভ কেয়ারে কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও যুক্ত আছেন সামাজিক কার্যক্রমে। তিনি আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় সংঘটন, অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের নির্বাচিত সভাপতি। লেখালেখিতেও জনাব জায়গীরদার পারদর্শী। নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন এবং উপহার দিচ্ছেন অসাধারণ সব গ্রন্থ।
গুনি এই কবির জন্য রইল শুভেচ্ছা। আরও বই উপহার দিন এই প্রত্যাশা করি। ডানা মেলে আরও দূরে উড়ে বেড়ান, এই শুভকামনা রইল।
অ্যাকাউন্ট্যান্ট মানেই মাথায় খেলা করবে নানা রকম জটিল সংখ্যার হিসেব। যার জীবন আবদ্ধ থাকবে ডেবিট ক্রেডিটের বেড়াজালে। লাভ ক্ষতির হিসেবেই যার জীবনের হিসেব বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু সব অ্যাকাউন্ট্যান্টই কি সমান? যদি বলি সংখ্যা, ডেবিট ক্রেডিট, বাজেট, ফোরকাস্টিং ছাড়াও কোনো অ্যাকাউন্ট্যান্টের মাথায় ঘুরপাক খায় বর্ণমালা, শব্দগুচ্ছ, কবিতার চরণ, প্রেম-বিরহগাঁথা রোমান্টিক ভাবনাসম্পন্নও কিছু অ্যাকাউন্ট্যান্ট থাকে। জনাব মেহেদী হাসান তন্মদ্ধে একজন।
লেখক মেহেদী হাসান তেমনি একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট যে কিনা হিসেব নিকেশের গ্যাঁড়াকলের মাঝেও লিখে ফেলেছেন বেশ কয়েকটি বই। শুধু লিখেই শেষ নয়, বইগুলো ছিল সাড়াজাগানোও বটে। পেয়েছেন পাঠকের সমাদরও। একজন প্রফেশনাল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হয়েও প্রতিবছর অন্তত একটি বই প্রকাশ করে তিনি সাধুবাদ পাবার যোগ্যই বটে।
দিনে দিনে তাঁর লেখার হাত যেন ধারালো হয়েই চলছে। অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ সালে তিনি নিয়ে আসতেছেন প্রায় ছয়শত পৃষ্ঠা সম্বলিত অতিধীর্ঘ একটি বই। রোমান্টিকতা, মাতৃত্ব, বন্ধুত্ব, দেশপ্রেমের মিশ্রণে মিশ্রিত এই বইয়ের নাম হচ্ছে ‘’প্রনায়ন’’। প্রেম, জীবন, বন্ধুত্ব ও মাতৃত্ব নিয়ে লেখা বইটি জনাব মেহেদী হাসানের বহুমাত্রিক লিখনির প্রতিচ্ছবি।
বাংলাদেশের বইমেলায় প্রকাশক মনিরুল হক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুলের সাথে মেহেদী হাসান
এর আগেও মেহেদী হাসান বেশ কিছু বই লিখেছেন। তন্মদ্ধে রয়েছে উপন্যাস সুরাইয়া, মনফড়িং, ভালোবাসার ভেজা চিঠি ও হন্যে মনে এবং শিশু কিশোরদের জন্য লেখা ইস্কুবেটর, উড়োজাহাজ ও জাদুর বেলুন অন্যতম। তাঁর জীবনমুখী ও প্যারেন্টিংয়ের উপর ভিত্তি করে বই সন্তানত্ব এবং বইটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে।
কবি ও লেখক মেহেদী হাসান ময়মনসিংহ শহরের একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি তাঁর নিজস্ব বিষয়বস্তু, শৈলী ও নিজের জীবনবোধ নিয়ে সাহিত্য চর্চা করেন বাবার সাথে ছোটবেলা থেকেই।
তিনি তাঁর দীক্ষার প্রমাণ রেখেছেন তাঁর সাহিত্যচর্চা ও যাপিত জীবনবোধে। তাঁর লেখায় খুঁজে পাওয়া যায় প্রতিবাদী কণ্ঠ, সুখ-দুঃখ, বিরহ-বেদনা এবং নতুন প্রজন্মের শুদ্ধ জীবনবোধ ও জীবিকার দর্শন।
নিজের রচিত গ্রন্থাবলী ও স্ত্রী রেবেকা সুলতানা (দীপা) ‘র সাথে একুশে বইমেলায় আয়ারল্যান্ডে
জনাব মেহেদী হাসান স্ত্রী রেবেকা সুলতানা (দীপা) ও একমাত্র কন্যা রাহমা হাসান (অড্রী) কে নিয়ে নর্দান আয়ারল্যান্ডে বসবাস করেন। তাঁর কন্যা কন্যা রাহমা হাসান (অড্রী) বর্তমানে খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যয়নরত রয়েছেন।
জনাব মেহেদী হাসান বিশ্বাস করেন অন্যান্য বইয়ের মতো এই বইটিও পাঠক সমাদৃত হবে।
গতকাল ২৪শে জানুয়ারী ২০২৪ তারিখ “বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড” BSAI এক দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের নতুন কমিটি নির্বাচিত করে।
জনাব চুন্নু মাতবর এই নতুন কমিটির সভাপতি ও জনাব কামাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৭টি পদের বিপরীতে ১৫ জন নিয়ে কমিটিটি গঠিত হয়। সভাপতির নমিনেশন পত্র ক্রয় করেন জনাব কাজী শাহ আলম ও জনাব চুন্নু মাতবর। পরবর্তীতে জনাব কাজী শাহ আলম, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জনাব চুন্নু মাতবরের প্রতি সম্মান দেখিয়ে মনোনয়ন ইঠিয়ে নেন।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে দুইটি নিমিনেশন ক্রয় করেন যথাক্রমে জনাব হাবিবুর রহমান ও জনাব কামাল হোসেন। একমাত্র এই পদটিতেই আগত কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন পরিচালনা করা হয়। জনাব কামাল হোসেন বিজয়ী হয়ে সাধারণ সম্পাদক পদ নিরাপদ করেন।
জনাব এ.কে আজাদের পবিত্র কুরআনে পাক থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সূচীর শুরু করেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জনাব কামাল হোসেন, সভাপতিত্ব করেন জনাব চুন্নু মাতবর। অনুষ্ঠানে বি.এস এ.এই এর বিগত দুই বছরের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়, অর্থনৈতিক হিসেবে নিকেশ তুলে ধরা হয়, সংগঠনের কার্যক্রমের ভিডিও দেখানো হয়, খেলাধুলায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য সম্মাননা ও ক্রেস্ট দেওয়া হয় এবং মিডিয়ায় অবদানের জন্য বিভিন্ন মিডিয়াকে সনদ প্রদান করা হয়।
বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত বি. এস. এ. এই এর শুভানুধ্যায়ীগণ ও উপদেষ্টা পরিষদের ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
তিন জন নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এরং জনাব হামিদুল নাসির ও জনাব জাকারিয়া প্রধান সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নবনির্বাচিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিন্মে দেওয়া হলো
সভাপতি – জনাব চুন্নু মাতবর
সহ সভাপতি – জনাব রাব্বি খাঁন
সহ সভাপতি – জনাব মোজাম্মেল হক
সহ সভাপতি – জনাব নজরুল ইসলাম মানিক
সহ সভাপতি – জনাব এ. এস. এম. শাহাব উদ্দৌলা (বিজয়)
সাধারণ সম্পাদক – জনাব কামাল হোসেন
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক – জনাব এ. কে. আজাদ
সাংগঠনিক সম্পাদক – জনাব আওলাদ হোসেন (সোহেল)
কোষাধ্যক্ষ – জনাব এম. ডি. আলমগীর হোসেন
সদস্য – গোলাম মোর্শেদ
সদস্য – কামরুল ফিরোজ আহমেদ
সদস্য – বদরুজ্জামান মাসুম
সদস্য – বজরুল আলম হাবিব
সদস্য – এম. এ. জলিল
সদস্য – হাবিবুর রহমান
এছাড়া নির্বাচনের প্রাক্কালে আগত অতিথিবৃন্দের সমন্বয়ে বিভিন্ন কাউন্টি থেকে কোটা অনুযায়ী কাউন্সিলর সংগ্রহ করা হয়।
কাউন্সিলরদের নাম কাউন্টি ভিত্তিক উল্ল্যেখ করা হলো
ডাবলিন
জনাব বদরুজ্জামান মাসুম
জনাব এম এ জলিল
জনাব চুন্নু মাতবর
জনাব ওয়াহিদুল আলম মুরাদ
জনাব কামাল হোসাইন
জনাব মোঃ আলমগীর হোসাইন
জনাব বজলুল আলম হাবিব
জনাব আজিজুর রহমান মাসুদ
জনাব নজরুল ইসলাম মানিক
জনাব মোঃ শাহিদুল ইসলাম রনি
মেয়ো
জনাব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক
জনাব আব্দুল মান্নান মান
সৈয়দ জুয়েল, আয়ারল্যান্ড প্রবাসী এবং সবার পরিচিত মুখ। বাংলাদেশের সুপরিচিত টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির একজন সফল রিপোর্টার। টিভি রিপোর্টে তিনি মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়ে আসছেন। তাঁর সুমধুর কণ্ঠের পাশাপাশি যে কলমও কম যায় না, তারই সাক্ষ্যস্বরূপ নিয়ে আসতেছেন তাঁর রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘’নিঃশ্বাসে শুষে নেয়া ঘ্রাণ’’। বইটি আসন্ন অমর একুশে বইমেলায় সপ্তর্ষি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হবে।
জনাব সৈয়দ জুয়েল অনেক আগে থেকেই রিপোর্টিং ও সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত। লেখালেখিও করেন অনেকদিন থেকে। তিনি ডেইলি নাগরিক সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লিখে আসছেন। জনাব সৈয়দ জুয়েলের অনেক কবিতা পাঠকগণ সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে প্রত্যক্ষে করে আসছেন।
’নিঃশ্বাসে শুষে নেয়া ঘ্রাণ’’ বইটি মিশ্র কবিতা দ্বারা সমৃদ্ধ। সর্বমোট ৯৫ টি কবিতায় অলংকৃত হয়েছে বইটি। লেখক জানান, সব ধরনের পাঠকের কথা ভেবে বইটি লেখা। বইটিতে যেমন রয়েছে ছন্দময় কবিতা, তেমনি রয়েছে ছন্দহীন কবিতাও।
বইটি স্বাধীনতা, মুক্তিযোদ্ধা, পরিবার, সমাজ, সুখ, দু:খ, প্রাপ্তি, প্রকৃতি, প্রেম, বিরহ থেকে শুরু করে সমাজের নানা প্রাপ্তি ও অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়েছে- নিশ্বাসে শুষে নেয়া ঘ্রাণ বইটিতে। সব ধরনের পাঠকের কথা ভেবে লেখা এ বইটি। কবিতার মাঝে হারিয়ে যাওয়া শৈশবকে যেমন খুঁজে পাবে পাঠক,তেমনি বৃদ্ধ কালের রঙহীন জীবনকেও দেখাবে কবিতার মাঝে। মৃত্যু নিয়ে মর্মস্পর্শী কয়েকটি কবিতাও রয়েছে বইটিতে। সমাজের অবহেলিত মানুষের অনেক কথাও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এ বইয়ে।
অরণ্য খান জাকারিয়া, ২০২১ সালে BT Young Scientist Award এর প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে Special Category তে বিজয়ী হন। তারই ধারাবাহিকতায় বিজয়ীদের Self Help Africa ‘র তত্ত্বাবধানে এবং Irish Aid এর স্পন্সরশীপে আফ্রিকার জাম্বিয়াতে শিক্ষামূলক ও অভিজ্ঞতামূলক ভ্রমণের আয়োজন করে। সে ভ্রমণে অন্যান্য বিজয়ীদের সাথে অরণ্য খান জাকারিয়া স্মরণীয় ও মর্যাদাপূর্ন এই ভ্রমণের সৌভাগ্য অর্জন করেন।
BT Young Scientist and Technology Exhibition এর 2021 সালে অরণ্য অংশগ্রহণ করে Social and Behavioural Sciences বিভাগে বিশেষ অংশগ্রহণ করে এবং “The Development Of Racial Prejudice In Children’’এর উপর প্রজেক্ট জমা দিয়ে Special Category তে বিজয়ী হন। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ক্যাটাগরির পর সবচেয়ে ভালো প্রজেক্টগুলো স্পেশাল ক্যাটাগরি হিসেবে স্বীকৃত হয়।
প্রজেক্টে তত্ব উপাত্তের মাধ্যমে অরণ্য তুলে ধরে সামাজিক প্রভাব কিভাবে একজন শিশুর চিন্তাধারা ও আচরণে বর্ণ বৈষম্যের দিকে প্রভাবিত করে। সাথে সাথে তিনি তুলে ধরেন কিভাবে এটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সবাইকে তিনি জানাতে চেয়েছে আসলে বর্ণ বৈষম্য কি? তিনি মনে করেন কোন শিশুই জন্মগতভাবে তাঁর ত্বকের বর্ণ বা সৌন্দর্য অন্য শিশুর চেয়ে অধিক বা কম নিয়ে পৃথিবীতে আসে না। এটি ধীরে ধীরে সমাজে আমাদের আচার আচরণের মাধ্যমে মনের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে। তিনি এই প্রজেক্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন কিভাবে একজন শিশু কিশোর আমাদের সমাজে চলে আসা মানুষের মনের মধ্যে ভুল দৃষ্টিকোণকে মোকাবেলা করবে।
আফ্রিকা সফর
প্রতিবছরের বিজয়ীদেরকে সাধারণত প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশে অভিজ্ঞতার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কোভিডের কারণে বিগত কয়েক বছর ভ্রমণ স্থগিত ছিল। যার কারণে ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের বিজয়ীদেরকে একসাথে ২০২৩ সালে আফ্রিকার জাম্বিয়াতে ভ্রমণ করানো হয়।
ভ্রমণ থেকে ফিরে অরণ্য খান জাকারিয়া অনেক উচ্ছ্বসিত ওঁ আনন্দিত। তিনি জানান, ‘’এ ভ্রমণ তাঁর জন্য ছিল অনেক আনন্দদায়ক ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। এ ভ্রমণের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন সে দেশের সংস্কৃতি, জীবনধারা, পরিবেশ, প্রকৃতি, শিক্ষা ব্যবস্থা ও ইতিহাস’’। আরও পরিচিত হয়েছেন, সেখানকার আবহাওয়া, জলবায়ু ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের বিষয়ে। শিক্ষার্থীরা নিজ হাতে অভিজ্ঞতা নিয়েছে কীভাবে সেখানে কৃষিকাজ করা হয়। আরণ্য সেখানকার প্রকৃতি ও বন্য প্রাণীদের দেখে অভিভূত হন।
অরণ্য আরও জানান, ভ্রমণে যে শুধু আফ্রিকা বিষয়ক অভিজ্ঞতাই অর্জন করেছেন তা নয়, তাঁর সুযোগ হয়েছে অন্যান্য বিজয়ীদের সাথে পরিচিত হওয়ার। শেয়ার করেছেন একে অন্যের অভিজ্ঞতা। শিখতে পেরেছেন অন্যদের প্রজেক্ট সম্পর্কে, যা অরণ্যকে সুযোগ করে দিয়েছে নতুন কিছু জানার ও শেখার।
অরণ্য সুযোগ পেয়েছেন সেখানকার শিশু ও শিক্ষার্থীদের সাথে মেশার। জানতে পারেন সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা। যা অরণ্যকে দিয়েছে ভিন্নরকম এক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ।
কে এই অরণ্য খান জাকারিয়া?
লিমেরিক নিবাসী জনাব জাকারিয়া খান ও মাতা শিউলি খানের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে অরণ্য হচ্ছে বড় মেয়ে। অরণ্য ২০০৬ সালে ৩ মাস বয়সে আয়ারল্যান্ড আসেন। লিমেরিকের Castletroy College, থেকে সাফল্যের সাথে লিভিং চার্ট পরীক্ষা সম্পন্ন করে University College Dublin (UCD) তে Computer Science, Sociology & Economics এ অধ্যয়নরত।
অরণ্য ভবিষ্যতেও ক্রিয়েটিভ কিছু করার ইচ্ছাপোষণ করেন। কমিউনিটির অন্য কোন ছাত্রছাত্রী যদি এমন কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চায় তাহলে অরণ্য তাঁর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি চান সুযোগ পেলে সবাইকে এই সুযোগ নেয়া উচিত।
অরণ্যের বাবা জনাব জাকারিয়া খান মেয়ের এই সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি মেয়ের এই সাফল্যে গর্বিত। তিনি জানান, ”ছেলেমেয়েদের কথা বাবা মায়ের শোনা উচিত। ছেলেমেয়ের যেকোনো কাজে বাবা মায়ের এগিয়ে আসা ও সহায়তা করা উচিত’’।
মেয়ের ভ্রমণের ব্যপারে তিনি জানান, ”আমার মেয়ে কোন একদিন এমনিতেই প্রয়োজনের তাগিদে দূরে অবস্থান করবে। সুতরাং কয়েকদিনের জন্য অন্য দেশে ভ্রমণ করতে তাকে উৎসাহিত করা আমাদের কর্তব্য। এতে সে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তা হয়ত আমরা বাসায় বসিয়ে রাখলে সম্ভব হত না’’। তিনি আরও জানান, সব বাবা মায়েরই উচিত ছেলেমেদেরকে শোনা ও তাদেরকে সাহায্য করা।
অরণ্যর মা, শিউলি খানও মেয়ের এ সাফল্যে গর্বিত। যেকোনো ছেলেমেয়ের সাফল্যের পেছনে মায়ের অবদান অপরিসীম।
অরণ্য খান জাকারিয়ার বাবা মা মেয়ের ভবিষ্যৎ সাফল্যের জন্য সবার নিকট দোয়া কামনা করেন।
ব্রিটিশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি BT গত ২০ বছর যাবৎ আয়ারল্যান্ডে তরুণ বিজ্ঞানী তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকায় নিজেদের স্পন্সর হিসেবে যুক্ত রেখেছে। এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার বয়স সীমা ১২ থেকে ১৯ বছর।
আইরিশ বাংলা টাইমস পাঠকদের জন্য সুখবর। আইরিশ বাংলা টাইমসের বার্তা সম্পাদক ওমর এফ নিউটনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘’এবার তোরা মানুষ হ’’ আসন্ন অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ হবার অপেক্ষায়।
ওমর ফারুক (নিউটন) দীর্ঘদিন থেকে লেখালেখির সাথে জড়িত। সামাজিক মাধ্যম, ব্লগ, পত্রপত্রিকায় বহুদিন থেকেই তাঁর লেখালেখির কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। আইরিশ বাংলা টাইমসের মোটামুটি প্রারম্ভ থেকেই আপনাদেরকে উপহার দিয়ে এসেছেন তাঁর লেখনী। যদিও জনাব ওমর ফারুক (নিউটন) এর প্রবন্ধ, খবর ও বিভিন্ন ধরণের আর্টিক্যালে আপনার অভ্যস্ত, কিন্তু এই বই হচ্ছে তার ব্যতিক্রম। তিনি আপনাদেরকে চমক দেখিয়ে নিয়ে আসতেছেন কবিতার বই। তাঁর অল্পসংখ্যক কবিতা হয়ত আপনারা সামাজিক মাধ্যম ও আইরিশ বাংলা টাইমসের পোর্টালে পড়েছেন, কিন্তু তাঁর লিখিত বহুলাংশ কবিতাই থাকবে তাঁর এই বইতে।
ওমর ফারুক (নিউটন) জানান তাঁর এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি একটু ভিন্ন ও ব্যতিক্রমধর্মী। বেশীরভাগ কবিতাই বাস্তবতার উপর নির্ভর করে সৃষ্টি হয়েছে। কবিতার নামই তার ইঙ্গিত বহন করে। বইয়ের নামকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘’পৃথিবীতে ৮ বিলিয়নের উপরে মানুষের বসবাস, জনাকীর্ণ এই পৃথিবীতে মনুষ্যত্ব নিয়ে আছে এমন মানুষ বিরল। শুধু হস্তপদসম্পন্ন দোপেয় প্রাণীটিকে সত্যিকারের মানুষ তখনই বলা যাবে, যখন তার মধ্যে হুঁশ, বিবেক, মনুষ্যত্ব, মানবতা, নৈতিকতা ইত্যাদি বিদ্যমান থাকবে। বর্তমান সময়ে সত্যিকারের মানুষের খুবই অভাব। তাই আমাদেরকে সবকিছুর আগে মানুষ হতে হবে। মানুষ যখন মানুষ হবে তখনই একটি আদর্শ পৃথিবীর দেখা মিলবে। সবাইকে মানুষ হবার প্রত্যয়ে আমার এই আহ্বান’’।
তিনি আরও বলেন, ‘’মানুষ মাত্রই ভুল থাকবে। দোষ গুন নিয়েই মানুষের জীবন। পৃথিবীতে কেউই পারফেক্ট না। তারপরেও আমাদেরকে কিছু মৌলিক নৈতিক মূলনীতি অনুসরণ করে চলা উচিত। মানুষ কেনো অন্য প্রাণী থেকে ভিন্ন ও উচ্চতর তা আমাদের ভেবে দেখা উচিত, তাহলেই সব উত্তর পেয়ে যাব’’।
লেখকের ভাষ্যমতে, বইটি যেমন অন্যায়, অবিচার ও বিদ্রোহী কবিতায় অলংকৃত; তেমনি রয়েছে বাস্তবতা, ধর্ম, জীবনমুখী, রোমান্টিকতাসম্পন্ন কবিতায় সমৃদ্ধ। বইয়ের প্রতিটি কবিতা আপনাকে হাসাবে, কাঁদাবে, ভাবাবে ও জাগাবে। আপনাকে করবে পুলকিত, শিহরিত ও অনুপ্রাণিত।
বইটি প্রকাশিত হবে বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য ও প্রথম সারির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনন্যা প্রকাশনী থেকে। অনন্যা প্রকাশনী বাংলাদেশের প্রথম সারির কবি সাহিত্যিকদের বই প্রকাশ করে আসছে ধীর্ঘদিন থেকে।
অমর একুশে বইমেলায় অনন্যা প্রকাশনীর স্টল থেকে যে কেউ বইটি সংগ্রহ করতে পারবেন। আশা করি সবাই নিজে বইটি সংগ্রহ করবেন, প্রিয়জনকে উপহার দিবেন ও সবার সাথে শেয়ার করবেন। বইটি পড়ে কেমন লাগলে তার মতামত প্রদান করবেন।
বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা মূলত “ওয়েস্টমিনিস্টার” পদ্ধতির সরকার বা গণতান্ত্রিক সরকার। এটাকে মূলতঃ প্রজাতান্ত্রিক সরকার বলে অভিহিত করা হয়।
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংবিধান অনুযায়ী, জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে সরকার গঠিত হবে, এটাই নিয়ম। সরকার গঠন বা পরিবর্তনের মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচন মানেই প্রতিযোগিতা আর প্রতিযোগিতার অর্থ হচ্ছে অংশগ্রহন। যেখানে, প্রধান রাজনৈতিক দল সহ দেশের প্রায় ৬৬ টি রাজনীতিক দল এই নির্বাচন বয়কট করেছে, সেটাকে কোন অবস্থায় বৈধ বা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা যায়না। আর অংশগ্রহণ না থাকার কারণে কোথাও কোন প্রতিযোগীতার লক্ষণ চোখে পড়ছেনা।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বেই ১৫৩ জন বিনা প্রতিধ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হন এবং নির্বাচনের পূর্বেই সরকার গঠন নিশ্চিত হয়ে যায়।সেই নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়নি। তেমনি কোন প্রতিযোগিতা ও ছিলনা।ভোটাররা তাদের পছন্দের পার্থী নির্বাচন থেঁকে বঞ্চিত হয়।
২০১৮ সালের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও রাতের বেলায় ভোট সম্পন্ন করায়, সরকারের বিজয় নিশ্চিত হয়ে যায়। সেখানেও ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি। বিশ্বজুড়ে নিশিরাতের ভোট ডাকাতির তকমা উড়ে।
আসন্ন ৭ জানুয়ারীর নির্বাচন মূলত আওয়ামী প্যানেলের একটি সাজানো নির্বাচনের আয়োজন করেছে সরকার। আমরা দেখেছি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলসমূহ তাদের বিজয় নিশ্চিত করতে নৌকার মাঝি হতে কিভাবে দৌড়ঝাঁপ করেছেন। কেউ সরাসরি, কেউ কৌশলে।এখানে ফলাফল যাচাই করার কোন সুযোগ নেই।
আগের দুই নির্বাচন থেকে বর্তমান নির্বাচনের চরিত্র ভিন্ন হলে ও কৌশল এবং লক্ষ্য এক। প্রার্থীদের ছড়াছড়ি থাকলেও জোর প্রতিধ্বন্ধিতা নেই, নেই কোন উৎসবমুখর পরিবেশ বা নির্বাচনী আমেজ।নির্বাচনের ম্যাকানিজম শাসকদলের হাতে। সুতরাং ফলাফল নির্ধারিত।
আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একজন ছাত্র হিসাবে বিশ্বের কোথাও দেখিনি, একটি নির্বাচনে, দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরোদ্ধে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ প্রদান করা। যেখানে বহিষ্কার করার কথা সেখানে ঘোষণা দিয়ে সমর্থন প্রধান করা ইতিহাসে এরখম আরেকটি দল খুঁজে পাওয়া বিরল।
জনগণ ইতিমধ্যে এই নির্বাচনকে “ডামি” নির্বাচন হিসাবে আখ্যাইতো করেছে। পুরো নির্বাচনটাই নিঃসন্দেহে সমঝোতা, পাতানো এবং আতাতের নির্বাচন বলা যায়।
পৃথিবীর সকল গণত্রান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভোটারগন ভোট দেয়ার পর অর্থাৎ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর ফলাফল জানতে পারে, কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো, বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল এখনই সবার জানা। প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন, সরকারে কারা যাচ্ছে , বিরোধী দলের আসনে কারা বসছে তা এখনই পরিষ্কার হয়ে গেছে। সুতরাং এই নির্বাচন ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য নয়, ক্ষমতা নবায়নের নির্বাচন এবং পুনরায় সরকারে শপথ গ্রহণের নির্বাচন বলা যেতে পারে।এই তামাশার নির্বাচন না করলে রাষ্ট্রের ১৬ শত কোটি টাকা রক্ষা করা যেতো।
সরকার একাই এই নির্বাচনের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করছে বিধায় বহির্বিশ্বকে দেখাতে গিয়ে নিজ দলের নৌকাকে পরাজিত করে ডামি বা স্বতন্ত্র ২/৩ জনকে পাশ করে নিয়ে আসবে। যাতে বলতে পারে অমরাওত পরাজিত হয়েছি। কিন্তু যারা পাশ করবে তারাও কিন্তু আওয়ামীলীগের সমর্থক। অর্থাৎ আওয়ামীলীগকে আওয়ামীলীগ পরাজিত করবে। তাহলে নির্বাচন হচ্ছে আওয়ামীলীগ ভার্সাস আওয়ামীলীগ। কি আজব নির্বাচন। এর পরও ১৭৪ টি আসনে কোন প্রতিধ্বন্ধিতা নেই। এইসব আসনে প্রার্থীরা নির্ভার। খুব একটা প্রচারণায় নেই তারা। নির্বাচনের আগেই তারা নির্বাচিত ! নির্বাচনের আগেই যেনসরকার !! শুধু আনুষ্ঠানিকতা হবে। যেমন ; ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ হবে, ২ দিন পর অনুগত নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করবে তার ২ দিন পর শপথ হবে। সরকার শপথ নিবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে। কেননা বর্তমান সংসদের মেয়াদ থাকতেই আরেকটি সংসদ। ৩০০+৩০০ সংসদ একই সময়ে যাহা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
মনে হচ্ছে সংবিধান যেন সরকারের বাধা নয়। বরং মনে হচ্ছে সংবিধান সরকারের ইচ্ছাধীন।
অসাংবিধানিক নির্বাচনের বৈধতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা , গুম, খুন, জেল, সর্বোপরি
নির্বাচনকালীন সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করে যারা ক্ষমতার মোহে প্রজাতন্ত্রকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাদেরকে একদিন অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এর দায় বর্তমান শাসক দল কখনো এড়াতে পারবেনা।
আয়ারল্যান্ড একটি শান্তি প্রিয় দেশ। আয়ারল্যান্ডের মানুষের মধ্যে রয়েছে সম্প্রীতির মেলবন্ধন। এখানে ইমিগ্রান্ট, ইমিগ্রান্ট আইরিশ ও স্থানীয় আইরিশদের মাঝে কোন ভেদাভেদ করা হয় না। সবাইকে সমান চোখে দেখা হয়। সবাই সমঅধিকার নিয়ে শান্তিতে জীবনযাপনের দেশ এই আয়ারল্যান্ড।
কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সব পাল্টে গেল। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হল আরেকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। মুহূর্তের মধ্যে যেন স্তব্ধ হয়ে গেল আয়ারল্যান্ডবাসী। কারণ, এমন ঘটনা দেখে অভ্যস্ত নয় এখানকার জনগণ। আয়ারল্যান্ডের হঠাৎ এমন রুদ্রমূর্তি দেখে সবার মনে তৈরি হল শঙ্কা, চোখে মুখে আতংকের চাপ ও জাগ্রত হল ভীতি।
সবচেয়ে বেশি ভীতি তৈরি হচ্ছে ইমিগ্রান্টদের মাঝে। অভিবাসীরা এতদিন আয়ারল্যান্ডে বসবাস করে আসছে নির্বিঘ্নে, নিঃঝঞ্ঝাটে। নিজ দেশের মতই এমনকি বেশি নিরাপদ মনে করত নিজেদেরকে। সেখানে ইমিগ্রান্টরা চায় না এই সৌহার্দ্যপূর্ণতা হারাতে। কারণ এখানে ইমিগ্রান্টদের দ্বিতীয়, তৃতীয় এমনকি চতুর্থ প্রজন্ম গড়ে উঠেছে। আয়ারল্যান্ডই এখন তাদের দেশে, তাদের আবাস ও তাদের ভবিষ্যৎ। সেখানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক, যাতে ইমিগ্রান্টদের জীবন যাত্রা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে ও ভীতির মধ্যে কাটাতে হয় তা তারা চায় না।
আয়ারল্যান্ডে অভিবাসীদের সংখ্যা ক্রম বর্ধমান। বিগত বছরে তার পরিমাণ বেড়েছে বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় স্টাটিস্টিক্স অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত ১২ মাসে আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যা বেড়েছে ৯৭,৬০০ যা ২০০৮ সালের পরে সর্বোচ্ছ জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
বিগত ১২ মাসে ১৪১,৬০০ অভিবাসীর আগমন ছিল ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং দ্বিতীয় টানা ১২ মাসের সময়কাল যেখানে ১০০,০০০ এরও বেশি লোক আয়ারল্যান্ডে অভিবাসী হয়েছিল।
তন্মদ্ধে ২৯,৬০০ ছিল ফেরত আসা আইরিশ সিটিজেন, ২৬,১০০ EU সিটিজেন, ৪,৮০০ UK সিটিজেন এবং ৮১,১০০ আসছে অন্যান্য দেশ থেকে। এর মাঝে ৪২,০০০ ইউক্রেনিয়ানও আছে।
বিপুল পরিমাণ অভিবাসী আসার কারণে আয়ারল্যান্ডে শুরু হয় আবাসন সংকট। হাউজিং ক্রাইসিস নিয়ে বেশ কিছু প্রটেস্ট আগেও হয়েছিল। তন্মদ্ধে অ্যান্টি ইমিগ্রান্ট গ্রুপও তৎপর ছিল।
গত বৃহস্পতিবার ডাবলিনে তিন শিশুসহ পাঁচজনের ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে দুপুর ০১:৩০ এ এবং এর ঠিক ৫ ঘণ্টা পরেই সন্ধ্যা ০৬:০০ টার দিকে শুরু হোয় এন্টি ইমিগ্রান্ট প্রোটেস্ট। শুরু হয় ভয়াবহ তাণ্ডব। ছুরিকাঘাতের মত নিশংস ঘটনাই বা কেন ঘটল এবং এর পরপরই প্রটেস্টরদের এমন ভয়াভহ তাণ্ডব এর সাথে সামঞ্জস্য আছে কিনা তাও সঠিকভাবে নির্ণয় করা কঠিন।
এমন দৃশ্য আয়ারল্যান্ডে খুবই বিরল
আবার একজন ইমিগ্রান্ট অপরাধ করলেই তার দায়ভার যে সমগ্র ইমিগ্রান্টদের উপর বর্তাবে তাও কিন্তু নয়। যে ব্যাক্তি নিরপরাধ কোমল বাচ্চাদের গায়ে চুরি চালিয়ে জখম করতে পারে। সে কতটুকু মানুষের পর্যায়ে পড়ে তা সন্দেহাতীত এবং সে মানসিক বিকারগ্রস্থ কিনা তাও বলা যায় না। যে কারণেই সে ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক না কেন, তার নিজের অপরাধের দায়ভার একান্তই তার।
কিন্তু এক ব্যাক্তির অপরাধের জেরে এখন সমগ্র অভিবাসী গোষ্ঠী এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। কিছু অ্যান্টি ইমিগ্রান্ট অবশ্যই আছে। কিন্তু তার পরিমাণ নিতান্তই সামান্য। ইমিগ্রান্টদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে এমন উছিলাই হয়ত এতদিন তারা খুজতেছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবারের এই ঘটনা তাদের এই সুযোগ তৈরি করে দেয়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বৃহস্পতিবারের সেই ঘটনা অ্যান্টি ইমিগ্রান্টদেরকে সুযোগ করে দেয় নাকি ওই ঘটনা দ্বারা তারা সুযোগ তৈরি করে নেয়?
অ্যান্টি ইমিগ্রান্ট প্রটেস্টের একটি দৃশ্য
যে কারণেই ঘটনা ঘটে থাকুক না কেন, এ ঘটনা ইমিগ্রান্টদের জন্য একটি রেড এলার্ট। এমতাবস্থায় সবাই যার যার অবস্থায় সতর্কতা অবলম্বন করুন। আশা করি আয়ারল্যান্ড তার পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। শান্ত আয়ারল্যান্ড একদিন আবার শান্ত রূপ ধারণ করবে।
মানুষের মন ও মনন কে সজীব ও সুন্দর করে তুলতে সাহিত্যের ভূমিকা অপরিসীম। সাহিত্য মানুষের জৈবিক ও আত্মিক উৎকর্ষ সাধন করে থাকে। মানুষের চিন্তা, চেতনা, আবেগ, অনুভূতি হচ্ছে সাহিত্যের উপজীব্য বিষয়। আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের একঘেয়ে জীবনকে সৃজনশীল ও ক্রিয়াশীল করার লক্ষ্যে গত ১২ই নভেম্বর রোজ রবিবার প্রথম বারের অনুষ্ঠিত হল সাহিত্যে সভা নামে সাহিত্যের আসর।
উক্ত আসরে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহিত্য প্রেমী ও সাহিত্যের সান্নিধ্যে থাকা ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল। গল্প, কবিতা, আবৃতি, আড্ডায় মুখরিত সাহিত্য সভাটি ছিল প্রাণবন্ত। নানা রকম আলাপে, কত রকম হাস্যে, খুনসুটিতে, আনন্দে মিলেমিশে একাকার হয়ে ছিল সভার পরিবেশ।
কেউ কথা বলেছে প্রেমের ভাষায়, কেউ বলেছে আবেগের ভাষায়, কেউ কথা বলেছে রাজনীতির ভাষায়, কেউ বা আবার ইতিহাসের। কারো কথায় ঝরে পড়েছে স্বপ্ন, কারো কথায় ছিল বাস্তবতার শিক্ষা। কারো বানীতে উঠেছে হাসির রোল, কারো বানীতে ঝরেছে অশ্রু জল। এটাই হচ্ছে সাহিত্য, যা মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করে, জাগিয়ে তোলে অন্তর সত্ত্বাকে।
কমিউনিটির ও উদার সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিত্ব জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের দিক নির্দেশনায় এবং কবি ও লেখক জনাব সাজেদুল চৌধুরী রুবেলের উদ্যোগে এ সভাটি লিমরিকের স্টুডেন্ট ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন জনাব ডঃ আরমান ও তাঁর স্ত্রী মিসেস রহমান, ডঃ শ্যামল হোসাইন, ডঃ লুবনা হোসাইন ও তাদের দুই মিষ্টি তনয়া লিলি এবং রোজ, সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, আজাদ তালুকদার, সৈয়দ জুয়েল, শাহাদাত হোসাইন, আখতার হোসেন আব্দুর রহিম ভুঞা, কবির আহমেদ, মাহিদুল ইসলাম সবুজ, মোহাম্মদ মোস্তফা, আমিনুল ইসলাম রনি, ওমর ফারুক রাহাত, ওমর ফারুক নিউটন, আনোয়ারুল হক আনোয়ার, সাজেদুল চৌধুরী রুবেল ও প্রমুখ।
যেহেতু প্রথম সভা সেহেতু সুনির্দিষ্ট কোন এজেন্ডা ছিলোনা। উপস্থিত সবাই খোলামেলা আলোচনা করেছেন। সাহিত্য-সংস্কৃতিকে কন্ঠকহীন ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা উঠে এসেছে। আয়ারল্যান্ডে বাংলাভাষা ও সাহিত্যচর্চা এবং কবি সাহিত্যিকদের অভিন্ন প্ল্যাটফর্মের কথা বিবেচনা করে একটি “সাহিত্য আসর” বা “সাহিত্য ভাবনা” কিংবা “সাহিত্য সভা” এর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। তারই প্রেক্ষাপটে উপস্থিত সবার সম্মতিক্রমে “সাহিত্য সভা” নামটিকে নির্বাচন করা হয়। “সাহিত্য সভা” এর প্রথম সভায় নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত সমুহ গৃহীত হয়-
১) প্রতি মাসে “সাহিত্য সভা” এর ব্যানারে একটি করে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
২) প্রত্যেক সভায় কোন একক ব্যক্তির সভাপতিত্ব করার গতানুগতিক পদ্ধতি বা রেওয়াজকে বাদ দেয়া হয়েছে। সভায় সবাই সদস্য, কোন সভাপতি থাকবেনা। তবে যে কোন একজনকে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সভা পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হবে।
৩) প্রতিটি সভা সুনির্দিষ্ট এজেন্ডার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।
৪) কবি/সাহিত্যিকদের উৎসাহ উদ্দীপনা দেয়ার জন্য একেকটি সভায় একেকজন কবি বা সাহিত্যিকের লেখা নিয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে আলোকপাত করা হবে।
৫) নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যপ্রেমী করে তোলার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।
৬) নতুনদের ভেতরে ঘুমন্ত সাহিত্যকে জাগিয়ে তোলার জন্য তাদেরক সাহিত্য সভামুখী করে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
৭) সাহিত্য সভার আত্মপ্রকাশ, এর কার্যক্রম ও ধারাবিবরণী জনসমক্ষে তোলে ধরা যাতে করে আগ্রহী সাহিত্যমনা ব্যক্তিরা অতি সহজেই তারা তাদের নিজেদের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারেন।
এ সিদ্ধান্তসমুহ গ্রহণের পর শুরু হয় গদ্য পাঠ ও কবিতা আবৃত্তির পর্ব। প্রথমেই নিজের লেখা মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই “একজন মুক্তিযোদ্ধার ডায়েরি” থেকে গদ্য পাঠ করেন কথা সাহিত্যিক ডঃ আরমান রহমান। মুক্তিযুদ্ধের উপর ব্যতিক্রমী এক গদ্য পাঠ মন্রমুগ্ধের মতো সবাই শুনছিলেন। একে একে সবাই কবিতা পাঠ করেন। তবে সবার দৃষ্টি কেড়ে নেয় ডঃ শ্যামল ও মিসেস শ্যামল-এর দুই কন্যা যথাক্রমে লিলি ও রোজের আবৃত্তি। এরপর স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি ড শ্যামল, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক ও কবি সৈয়দ জুয়েল, সাংবাদিক মাহিদুল ইসলাম সবুজ, কলামিস্ট ও রিপোর্টার ওমর ফারুক নিউটন, কবি ও লেখক সাজেদুল চৌধুরী রুবেল। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক আব্দুর রহিম ভূঞা, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার কয়েকটি চরণ আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট কমিউনিটি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ মোস্তফা। ওমর ফারুক রাহাত আবৃত্তি করেন দুটো কবিতা। সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন কমিউনিটি ও সাহিত্যমনা ব্যক্তিত্ব জনাব শাহাদাত হোসাইন। তিনি এবার কবিতা পাঠ করেননি তবে পরপর্তী সভায় স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করবেন বলে প্রত্যয় প্রকাশ করেন। গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন আবাই এর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ার, লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কবির আহমেদ, সাহিত্যপ্রেমী আখতার হোসেন সহ অনেকেই।
যদিও সাহিত্যের আড্ডা তবুও সভাটিতে ভিন্ন মাত্রার স্বাদ এনে দিয়েছিলেন লিমরিক সিটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার একটি গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। মোট কথা, গোটা আড্ডা জুড়ে ছিলো নতুনত্ব, হাসিখুশি ও প্রাণবন্তের ছাপ।
পরিশেষে জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান দ্বিতীয়বারের মতো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের “কেউ কথা রাখেনি” কবিতাটি আবৃত্তি করেন ও সাহিত্য সভা বিষয়ক কিছু দিকনির্দেশনা মৃলক কথা বলেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সভাটির পরিচালনায় ছিলেন জনাব সাজেদুল চৌধুরী রুবেল। তিনি সভার সমাপ্তি ঘোষণার মধ্য দিয়ে দূর দুরান্ত থেকে আগত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং অনিচ্ছা সত্বেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও সময় সংকীর্ণতার জন্য যাদের কাছে এবার তিনি পৌঁছাতে পারেননি তাদের কাছে বিনীত ভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং পরবর্তী সভায় তাদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সাহিত্যের মাধ্যমে যোগাযোগ ঘটে হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের, মিলিত হয় আত্মার সাথে আত্মা। আত্মার সাথে আত্মার এই যোগাযোগ বজায় রাখতে প্রতি মাসে এমন একটি সাহিত্য সভা বা সাহিত্য আড্ডা করার কথা জানান উপস্থিতগন। এবং এই আড্ডা একেক মাসে একেক শহরে মিলিত হবার কথা জানানো হয়। জনাব মুস্তাফিজুর রহমান আগামী সভা ডাবলিনে করার কথা ব্যাক্ত করেন।
সাহিত্যপ্রেমী যে কেউ এই আসরে যোগ দিতে পারেন। দেখা হবে অন্য কোন আসরে, অন্য কোন শহরে।
আজ ৮ই নভেম্বর ২০২৩ বুধবার, অল বাংলাদেশি এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (আবাই) এবং আয়ারল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস মিনিস্টার Helen McEntee এর মধ্যকার ফলপ্রসূ বৈঠকের সফল সম্পন্ন হয়েছে। উক্ত বৈঠকে আয়ারল্যান্ডে বর্তমান বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ও বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগরির জটিলতা নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
এটি ছিল ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস এর সাথে ABAI এর দ্বিতীয় মিটিং এবং প্রথম মিটিং এর ফলো আপ মিটিং। গত ২৬ এপ্রিল আবাই এর প্রথম মিটিং হয় জাস্টিস মিনিস্টার জেমস ব্রাউনের সাথে। জেমস ব্রাউন বর্তমান জাস্টিস মিনিস্টার হেলেন ম্যাকেনটির স্থলাভিষিক্ত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আবাইয়ের সভাপতি জনাব জিন্নরাইন জায়গীরদার, সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার, সহ সভাপতি জনাব আজিজুর রহমান মাসুদ ও জনাব মনিরুল ইসলাম মনির এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব ইনজামামুল হক জুয়েল। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর জনাব কাজী মোশতাক আহমেদ ইমন ও সময় টিভির সাংবাদিক সৈয়দ জুয়েল।
জাস্টিস মিনিস্টার হেলেন ম্যাকেনটির সাথে আবাই নেতৃবৃন্দ
আজকের বৈঠকে যে যে বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়ঃ
ক) অনথিভুক্ত ইমিগ্রান্টঃ গত মিটিং এ উত্থাপিত বিষয়াবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বাংলাদেশে আইরিশ দূতাবাস স্থাপন অথবা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে কন্স্যুলার অফিস অথবা এজেন্ট স্থাপন, ভিসা বিষয়ক জটিলতা দূরীকরণ। আজকের মিটিং এ Helen McEntee আশ্বস্ত করেন যে, খুব শিগ্রই বাংলাদেশে কন্স্যুলার অফিস স্থাপন করবে। এ বিষয়ে জাস্টিস মিনিস্টার দৃয়ভাবে ব্যাক্ত করেন যে, ইতিমধ্যে তারা কন্স্যুলার অফিসের জন্য কার্যক্রম শুরু করেন যা আগামী বছরের শুরুর দিকেই একটি অফিস স্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে।
যেহেতু বাংলাদেশে আইরিশ কোন এম্বেসি বা দূতাবাস নেই সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন অন্তত কন্স্যুলার অফিস স্থাপন অথবা VFS এর মত ইমিগ্রেশন এজেন্ট স্থাপন করা হয়। যাতে করে ভিসার আবেদন জমা দেয়া ও ভিসা সংগ্রহ করতে ভোগান্তির শিকার না হতে হয়। ভারত গিয়ে ভিসা জমা ও সংগ্রহ করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়না এবং হলেও সময়সাপেক্ষ ও ভোগান্তির বিষয়। অনেকে সময়মত পাসপোর্ট হাতে পায় না এবং পাসপোর্ট হারানোরও নজির রয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশে কন্স্যুলার অফিস হলে বাংলাদেশিরা অনেক ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।
খ) অনথিভুক্তদের বৈধতাঃ আয়ারল্যান্ডে প্রায় ১৭ হাজার অনথিভুক্তদের বৈধতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে অনেকে বৈধতা পেলেও অনেকের আবেদন এখনো ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। আবাই এর প্রতিনিধিগণ গত সভায় কিছু আবেদনের প্রমাণসহ জাস্টিস মিনিস্টার এবং চিপ ইমিগ্রেশন অফিসার এর নিকট প্রদান করেন এবং কথা দিয়েছিলেন যে তার ব্যাপারে তারা দেখবেন। তন্মদ্ধে কিছু আবেদনের সুফল পাওয়া গেলেও অনেকগুলো এখন ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। এই বৈঠকেও তারা কিছু আবেদন মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন এবং মন্ত্রী প্রদানকৃত আবেদন ও অন্যান্য ঝুলন্ত আবেদনের ফলাফল তরান্বিত করার আশ্বাস দেন।
গ) ভিসা সহজীকরনঃ আবাই এর প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসার কোটা বর্ধনের জন্য অনুরোধ জানান, অন্যান্য দেশের তুলনায় জনসংখ্যার বিবেচনায় বাংলাদেশে এইসব ভিসা দেয়ার হার অত্যন্ত নগণ্য। ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন অফিসারদের অবহেলার কথাও উল্লেখ্য করেন প্রতিনিধিগন এবং কিছু ভিসা রিফিউজের প্রমাণও উত্থাপন করেন। বিগত সময়ে ওয়ার্ক ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসা অনেক রিফিউজ হয়েছে শুধুমাত্র অবহেলার কারণে। এ বিষয়েও জাস্টিস মিনিস্টার গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
ঙ) পারিবারিক রিইউনিয়নঃ সেই সাথে বাবা মা এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসার ব্যবস্থা যেন করে সে অনুরোধও জানানো হয়। এর পর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম এর জন্য অনুরোধ জানান। বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে ২৪ টি দেশে ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য নেই। যেমন পার্শ্ববর্তি দেশ ইংল্যান্ডে কেউ ভিসা পেলে আয়ারল্যান্ডে এবং আয়ারল্যান্ডে ভিসা পেলে ইংল্যান্ডে ভ্রমণ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এই সুবিধা নেই। Helen McEntee এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন বলে জানিয়েছেন।
চ) ভিসা নবায়ন অনলাইনকরনঃ এরপর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইমিগ্রেশণ সার্ভিস অনলাইনকরণ। এ বিষয় সমাধানের জন্য ও প্রয়োজনে অনলাইনে এই সেবা দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করা হয়।
Helen McEntee, ABAI এর প্রতিনিধিদের উত্থাপিত সব বিষয় মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং বিষয়গুলো তাঁর দৃষ্টিগোচর করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উপরোক্ত সব বিষয়কেই যৌক্তিক ও ভ্যালিড বলে জানান জাস্টিস মিনিস্টার Helen McEntee। তিনি বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন এবং খুব শীগ্রই বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবেন বলে আশ্বাস দেন।
এছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্ত্রীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন আবাই এর নেতৃবৃন্দ।
আবাই এর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ার জানান, ”ইমিগ্রেশন বিষয়ক সমস্যাগুলো নিয়ে তারা নিরলস কাজ করে যাবেন। সে পর্যন্ত ক্ষান্ত হবেন না, যে পর্যন্ত না সমস্যাগুলো সমাধানের মুখ দেখে”।
আয়ারল্যান্ডের কর্ক শহরের আমাদের সকলের প্রিয় মুখ মিঠু সরকার সম্প্রতি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি (ACCA) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ACCA এর পূর্ণাঙ্গ মেম্বারশিপ অর্জন করেছেন।
তার এ অর্জনকে আমরা অভিনন্দন জানাই। এর পূর্বে তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক (UCC) থেকে কর্পোরেট ফাইন্যান্স এর উপর মাস্টার্স করেন। বর্তমানে তিনি স্বনামধন্য মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি গ্র্যান্ড থর্টন এ সিনিয়র ফিনান্সিয়াল একাউন্টেন্ট এন্ড এডভাইসর হিসেবে কর্মরত আছেন।
আমরা তার সুস্বাস্থ্য এবং সর্বাত্মক সফলতা কামনা করি
প্রথমেই উল্লেখ করি কোন জীবন হানি সমর্থন যোগ্য নয়, সেটা বাংলাদেশের বিএনপির নেতা হউক অথবা পুলিশ কর্মকতা হউক।
ফিলিস্তানি গাজা বাসীর উপর ইজরাইলির গনহত্যা তেমন কোন প্রতিবাদ নাই শুধু কাগজে কলমে কারন,
ইজরাইলির আছে অস্ত্র- আছে অর্থ, আছে মিডিয়া যা বিভিন্ন নাটক মঞ্চস্থ করার পর তা বিশ্ববাসীকে বুঝানোর চেষ্টা হামাস রা হচ্ছে সন্ত্রাসী। হামাস এর প্রতিবাদী মানুষের হাতে আছে পাথর আর তার বিপরতী আছে লাইসেন্স ধারী মারনাস্ত্র। হামাস চায় তাদের অধীকার যা তাদের নায্য প্রাপ্ত।
ঠিক একই ঘটনা ঘটছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে, সকল বিরোধীদল চাইছে তাদের ভোটের অধীকার যা প্রতিটি বাংলাদেশীর নায্য অধীকার।
বাংলাদেশের ৫২ বছর পরো দেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে নিজের একটি ভোট দেওয়ার অধীকার হারিয়েছে । ভোটের অধীকার ফিরে পাওয়ার দাবীতে গত ২৮ সে অক্টোবর রাজধানিতে মহাসমাবেশের আয়োজন করে সব বিরোধী দল, কিন্তু সবার নজর ছিল বিএনপির মিটিং এর দিকে, জামাত অনুমতি ছাড়া মিটিং করার ঘোষন দেওয়া সবাই জানতো সেখানে গোলমাল হবেই, করন পুলিশ বলেছিল তাদেরকে দাড়াতেই দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশের আন্দোলন মানে হরতাল, লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা, অফিস গামী মানুষদের দিগম্বর (ল্যাংটা করা) বাসে আগুন দেওয়া। চিরাচরিত এইরুপ আন্দোলন থেকে বাহির হয়ে বিএনপি অহিংস আন্দোলন দেশে বিদেশে অনেক প্রসংসা পেয়েছে, অহিংস আন্দোলনের রুপকার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর।
অহিংস আন্দোলন যে এতো শক্তিশালী হয় তার প্রমান দেশবাসী দেখেছে, আমরা দেখেছি টংগী বিশ্ব ইশতেমায় মানুষ ২/৩ দিন আগে আসে, বিএনপির মিটিং ২/৩ দিন আগে আসার জন্য পদে পদে পুলিশি হয়রানি, আঃলিগের হয়রানী, বাস-ট্রেন-লঞ্চ বন্ধ করে বাংদেশের সাধারন মানুষকে আঃ লিগ আটকাতে পারে নাই। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে মানুষ বিএনপির মিটিং আসার কারন নিজের একটি ভোট দেওয়ার অধীকার প্রতিষ্ঠা করা। মনে হয় এক নতুন মুক্তি যুদ্ধ।
আমার জানা নাই পুলিশ আইনে আছে কি না সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে, যদি তাই লাগে কবে থেকে ? আমি ৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ঢাকার রাজপথে আন্দোলন করেছি কোন দিন শুনি নাই সমাবেশ করতে পুলিশের পারমিশন নিতে হবে, যদি লাগতোই সেই সমইয় আঃলিগ – বিএনপি সচিবালয় ঘেড়াও করে সচিবালয় ওয়াল ভেঙ্গে ছিল, সেই দিনও এরশাদ সরকার রষ্ট্রবিরোধী কেস দেয় নাই।
আঃলিগ বিনা ভোটের নির্বাচন- দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতা চালিয়ে যাওয়ার লোভে এবার ২০২৪ একই ভাবে ক্ষমতায় যেতে চায়। আঃলিগ বহিঃবিশ্ব বিশেষ করে আমেরিকা-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর চাপে বেশ বেকায়দায় আছে, এ থেকে উত্তরনের জন্য ২৮ সে অক্টোবর এক হীন চক্রান্ত আয়োজন করে। এখন পর্যন্ত যার ফলাফল আঃলীগের পক্ষে গেছে।
কিন্তু দুঃর্ভাগ্য আঃলীগের আস্তে আস্তে আঃলীগ নীল নকশা বের হতে হচ্ছে, আঃলীগ চেয়েছিল ২৮ অক্টোবরে মন্দির -চার্চ এর উপর হামলা করে ভারত- আমেরিকা-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর সার্পোট বিএনপির উপর থেকে প্রত্যাহার করে নিবে। যেমন ১৮ নির্বাচনে জামাতকে ইসু করে ভারত পশ্চিমা বিশ্বকে তাদের পক্ষে নিয়েছিল। (সুত্র- পুলিশের ওয়ালেস এর কথাবাত্রা)
বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন এর তকমা দেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, পুলিশ হত্যা, বাসে আগুন দিয়ে আঃলিগ ব্যর্থ প্রমান করার চেষ্টা চালিয়েছে । আসুন এই প্রশ্নের উত্তর খোজার চেষ্টা করি-
১। গাজীপুর থেকে আঃলীগ বাস নিয়ে তাদের জনসভায় যাবে ভাল কথা কিন্তু কেন তারা বিএনপির জনসভার কাছ দিয়ে (কাকরাইল )দিয়ে যাবে ?? গোলমালের সুন্ত্র এখান থেকেই-
এই বাস গুলিকে তো মগবাজার থেকে বাংলামটর বা মিনটু রোড দিয়ে সাহাবাগ হয়ে নিরাপদ ভাবে যাওয়া সম্ভব ছিল।
তাদের নীল নকশাই ছিল পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া লাগানো, যা চেয়েছিল আঃলিগ সেই ফাদে বিএনপি পড়ে গেছে।
মেয়র তাপস বলেছিল হেফাজত এর মত হবে হয়েছে ও তাই। হেফাজতকে মিটিং করতে দেয় নাই বিএনপিকে মিটং করতে দেয় নাই।
২। প্রধান বিচার পতির বাসভবন , বঙ্গভবন গেটে পুলিশ পাহাড়া থাকে অস্ত্র সহ, যখন বিক্ষোপ কারীরা গেট ভেংগে ফেলে, কোথায় ছিল পুলিশ ?? কেন গুলিকরে নাই তাদের ??পাহাড়াদার পুলিশ কি লুডু খেলছিল ??কার নির্দেশে গুলি করে নাই তা তদন্তের দাবী রাখে। পুলিশ যদি ৫/১০ জন কে গুলি করতো তা হলে কারো কিছু বলার ছিল না। কিন্তু এখন প্রশ্ন করার দাবী রাখে প্রধান বিচার পতির ঘাড়ে বন্দুক রাখে আঃলিগ রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়।
এই জন্যই কি পুলিশ গুলি করে নাই তদের পরিচয় প্রকাশ হলে ,থলের বিড়াল বাহির হয়ে যাবে।
৩। বাস ড্রাইভার এর ব্যক্তব্য ডিবি পুলিশ বাসে আগুন দিয়েছে, ড্রাইভার সে মরট সাইকেল চালকে ধরতে গিয়েছিল যে দুই জন আগুন দিয়েছিল, কে পিছন থেকে ড্রাইভারকে টেনে ধরেছিল ?? যেন তাদের কে না ধরতে পারে।
এই আগুন দেওয়া বাস প্রথমে আঃলীগের মিটিং থেকে পুলিশ নিয়ে বিএনপির মিটিংএ আসে তার মানে কি বাসে আগুন দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছিল চক্রান্তকারীরা।
৪। আঃলিগ সব প্লান সফল হয়েছে একটি ছাড়া, তারা চেয়েছিল ভারতের বিজেপির মত হিন্দু -মুসলিম- ক্ষৃষ্টান দাংগা করে, নির্বাচনে ফায়াদা নিতে, যা ব্যর্থ্য হয়েছে।
৫। আঃলিগ আগামী নির্বাচন করতে চায় বিএনপি কে বাদ দিয়ে, এই চক্রান্তের মধ্য দিয়ে বিএনপির মহাসচিব সহ সকল বিএনপির নেতাদের জেলে রাখে অন্যন্য দল দিয়ে নির্বাচন করতে।
বিএনপি ১৫ বছরে এতোই সংগঠিত হয়েছে যে বিএনপি এখন দেশবাসীর একমাত্র আলোর বাতি ঘর।
এই বিশাল জনসভায় যারা এক সাথে থাকে তখম মনে হয় তারা সবাই একপক্ষের এবং একান্ত আপন, এই সুযোগ নেয় আর আর একটি চক্র,কেউ কেউ যায় আবার পকেট মারতে, কে কোন পক্ষ চেনা যায় না। এই দূর্বল দিকটি বেছে নিয়ে প্লান করেছে আঃলিগ।
বিএনপি যে ১৫ বছরে অহিংস আন্দোলনের প্র্যক্টিস করে এসেছে তাতে মনে হয় না এটি বিএনপির নেতা কর্মীর দারা হয়েছে। ডিবি হারুন, বিপ্লব এদের প্রত্যক্ষ পরিচালনায় ঘটেছে । প্রধান বিচারপতির বাসভবেনের কাছেই ছিল তারা। পুলিশের ওয়ারল্যেস এর কথায় তাই বুজা যায়।
আঃলিগ বা হাসিনা নিজের স্বার্থের জন্য যে কোন পদক্ষেপ নিতে পারে তা মতিউর রহমান রিন্টুর বই আমার ফাসি চাই পড়লেই বুঝা যায়।
আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকেই গুঞ্জন জোরালোভাবে চোখে পড়তেছে। ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বিভিন্ন মতামত আসতেছে। যা অনেককেই দ্বিধা ও চিন্তার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।
অনেক মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বিষয়ে যেভাবে রং ছড়াচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট নতুন কিছু। এবং অনেক মিডিয়া ওয়ার্ক পারমিট বিষয়ে মিসলিডিং তথ্য প্রকাশ করতেছে যা অনেকাংশে সত্য নয়। এর বিপরীতে অনেকে আবার ওয়ার্ক পারমিট এর সত্যতাকে অস্বীকার করে অন্য পক্ষকে ঢালাওভাবে দোষারপ করতেছে, তাও সর্বাগ্রে সঠিক নয়। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাউকে যদি কর্মক্ষম করা যায় তাতে তো ক্ষতির কারণ নেই। সবাই যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার অপব্যহার করতেছে তাও কিন্তু নয়।
মূল কথা হচ্ছে, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যাবস্থা অনেক আগে থেকেই ছিল। কিন্তু এই ভিসায় আসার সংখ্যা বাংলাদেশ থেকে নিতান্তই সামান্য। এর অনেক কারণই থাকতে পারে, যেমন, উপযুক্ত তথ্যের অভাব, ভিসা ক্যাটাগরি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে না পারার ব্যার্থতা, ভিসা ইলিজিবিটির জন্য সঠিক দক্ষতা বা কোয়ালিফিকেশনের অভাব, আইরিশ কোম্পানি থেকে জব এর অফার না পাওয়া ও সর্বশেষ জব এর অফার পাওয়ার পরও ভিসা রিফিউজ হওয়া।
এমন অনেক দেখেছি যে, আইরিশ কোম্পানি থেকে জব এর অফার পাওয়া এবং ডিপার্টমেন্ট অফ এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ড থেকে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু হবার পরেও এম্বেসি থেকে রিফিউজ হতে। এই রিফিউজ হওয়ার পরিমাণ বাংলাদেশ থেকে অধিক। হয়ত আইরিশ সরকার এই ভিসা রিফিউজের পরিমাণ কমিয়ে আনার অঙ্গীকার করারকেই আইরিশ সরকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার কর্মী আসার বিষয়টি চাউর হয়ে যায়।
আয়ারল্যান্ডে ২০২৩ সালে আজ পর্যন্ত ২৩,০০০ ভিসা ইস্যু হয় এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভিসা পেয়েছে মাত্র ১০২ জন, যা মোট ভিসার ০.০০৪%। আর ২০২২ সালে ৪০,০০০ ভিসা ইস্যুর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভিসা পেয়েচ্ছে মাত্র ১৫৭ জন, তাও ছিল মোট ভিসার ০.০০৪%। ০.০০৪% ভিসা হিসেবে কিছুই না।
কিন্তু আমরা যদি ভিসা ইস্যুর স্ট্যাটিসটিক্স দেখি তাহলে দেখতে পাব ২০২২ (40,000 visa issued) এর তুলনায় ২০২৩ (23,00 visa issued till today) এর ওয়ার্ক পারমিট ইস্যুর পরিমাণ অনেক কমে গেছে। এর অন্যতম কারণ, কোভিড পরবর্তী সময়ে আয়ারল্যান্ডে বড় ধরনের এমপ্লয়মেন্ট ক্রাইসিস দেখা দেয় ও ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে আয়ারল্যান্ডে জব মার্কেট বৃদ্ধি পায়। এখন জব মার্কেট অনেকটা স্ট্যাবল হওয়াতে বাহির থেকে কাজের ভিসায় কর্মী আসা কমে গিয়েছে।
এই রিপোর্টে ওয়ার্ক পারমিট বিষয়ক আদ্যোপান্ত গাইডলাইন দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যা হয়ত ওয়ার্ক পারমিট এর বিষয়ে একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরি করতে সহায়তা করবে। এই রিপোর্টে ওয়ার্ক পারমিটের ধরন এবং সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এবং বিশদ তত্ত্বের জন্য তত্ত্বসম্বন্ধীয় লিংক প্রদান করা হয়েছে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ধাপ সমূহঃ
প্রথম ধাপঃ আবেদনকারীর আবেদন করা কোম্পানি থেকে জব অফার পাওয়া দ্বিতীয় ধাপঃ সম্ভাব্য কোম্পানি কতৃক ডিপার্টমেন্ট অফ এন্টারপ্রাইজ এ ওয়ার্ক পারমিট ইস্যুর জন্য আবেদন তৃতীয় ধাপঃ ডিপার্টমেন্ট অফ এন্টারপ্রাইজ কতৃক ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু চতুর্থ ধাপঃ ভিসা আবেদন এবং এম্বেসি কতৃক ভিসা ইস্যু
ওয়ার্ক পারমিট/ভিসার ক্যাটাগরি বা ধরনঃ
আইরিশ কর্মসংস্থান ডিপার্টমেন্ট Department of Enterprise, Trade and Employment (DETE) ৯ ধরন বা ক্যাটাগরির ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করে থাকে। আপনাদের স্বচ্ছ ধারনার জন্য এই ৯ ধরনের ওয়ার্ক পারমিট এর বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং বিস্তারিত তথ্যের জন্য লিংক প্রদান করা হয়েছে, যাতে ক্লিক করলে ওই সম্বন্ধীয় পূর্নাঙ্গ তথ্য পেতে পারেন।
নিম্নোক্ত ওয়ার্ক বা এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ক্যাটাগরির মধ্যে প্রথম ৭ টি ক্যাটাগরি হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের বাহিরে এবং শেষ ২ টি ক্যাটাগরি হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের ভেতর থেকে আবেদনের জন্য। ক্রিটিক্যাল স্কিল ও জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটে কোম্পানি স্পন্সর অনুযায়ী স্ট্যাম্প ওয়ার্ক পারমিটে পরিবর্তন করা যায়। যেমন স্টুডেন্ট ভিসা থেকে ওয়ার্ক পারমিট।
#১) ক্রিটিক্যাল স্কিল ওয়ার্ক পারমিট
ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা পাওয়ার জন্য ক্রিটিক্যাল স্কিল হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কমন মাধ্যম। যাদের ক্রিটিক্যাল স্কিল রয়েছে তাদের জন্য জবের অফার পাওয়া থেকে শুরু করে ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়না। যেহেতু আয়ারল্যান্ডে ক্রিটিক্যাল স্কিল এর কর্মীর ঘাটতি রয়েছে এবং এ স্কিল অন্যান্য পেশার থেকে স্পেশালাইজড সুতরাং এই স্কিমে ভিসা পাওয়াটা অনেকটা সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অন্য যে কয় ধরনের ওয়ার্ক পারমিট স্কিম রয়েছে তন্মদ্ধে ক্রিটিক্যাল স্কিলেই ভিসা পাওয়ার পরিমাণ বেশি থাকে।
তারপরেও ক্রিটিক্যাল স্কিল এর ক্রাইটেরিয়া পূরণ করার পরেও কেন যেন বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ও জব অফার পাওয়া খুব সহজসাধ্য হয়না। যেমন আইটি ও চার্টার্ড অ্যাাকাউন্ট্যান্ট ক্রিটিক্যাল স্কিল এর মধ্যে পড়লেও আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এসব সেক্টরে যে পরিমাণ কর্মী আসে, বাংলাদেশ থেকে তার তুলনায় অনেক কম আসতে দেখা যায়।
Irish Expert
যারা ক্রিটিক্যাল স্কিল এর ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে পড়েন এবং আয়ারল্যান্ডে চাকুরী নিয়ে আসতে চান তারা পুর্নাঙ্গ তথ্য পেতে এখানে ক্লিক করুন ক্রিটিক্যাল স্কিল নির্দেশিকা
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইসিটি প্রফেশনাল, চার্টার্ড অ্যাাকাউন্ট্যান্ট, রিসার্সার ইত্যাদি পেশা ক্রিটিক্যাল স্কিল এর মধ্যে পড়ে। ক্রিটিক্যাল স্কিলের ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে পড়ে তার পূর্নাঙ্গ লিস্ট পেতে এখানে ক্লিক করুন ক্রিটিক্যাল স্কিল ইলিজিবল লিস্ট
এই লিস্টের বাহিরের কোন কোয়ালিফিকেশন বা যোগ্যতা ক্রিটিক্যাল স্কিলের মধ্যে পড়ে না। সেক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অন্য ক্যাটাগরি দেখতে পারেন।
#২) জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট
ক্রিটিক্যাল স্কিল ওয়ার্ক পারমিটের জব ক্যাটাগরি ছাড়া বাকি যে স্কিমে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করে তার মধ্যে আরেকটি কমন মাধ্যম হচ্ছে জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট। জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটের যোগ্য নয় এমন পেশা বা যোগ্যতার তালিকা DETE প্রদান করে। ক্রিটিক্যাল স্কিল ওয়ার্ক পারমিটের জব ক্যাটাগরি ছাড়া এবং জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটের অযোগ্য তালিকার বাহিরের পেশাই কেবলমাত্র জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন যোগ্য। সে কারণে জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য যোগ্য পেশা সনাক্ত করা খুব একটা সহজ নয়।
জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটে ভিসা পাওয়াটা একটু কষ্টসাধ্য। কারণ এতে জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটের জন্য যোগ্য এমন পজিশন খুব কমই আছে যাতে সহজে ভিসা পাওয়া যায়। আবার জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ক্রিটিক্যাল স্কিলের মত অতটা অপ্রতুল নয়, তাই কোম্পানি চাইলেই লোকাল অথবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মী সহজেই নিয়োগ দিতে পারে। তাই জেনারেল স্কিমের কর্মী নিয়োগে কোম্পানিগুলো ওয়ার্ক পারমিটের ঝামেলায় যেতে চায় না। এরপর লেবার মার্কেট নিডস টেস্টেও (Labour Market Needs Test) এই ক্যাটাগরি দুর্বল ভূমিকা পালন করে বিধায় এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করতে অনেকটা অপারগ।
Labour Market Needs Test মানে হচ্ছে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করার আগে যাচাই করে দেখা যে, নিদৃস্ট পদের জন্য আইরিশ অথবা EEA ন্যাশনাল কর্মী যথেষ্ট রয়েছে কিনা। তা না হলে, আয়ারল্যান্ড ও EEA এর বাহিরের রাষ্ট্রগুলো থেকে ভিসা ইস্যু করবে না।
জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট এর যোগ্য পেশাগুলো কি কি তা খুজেই এ পদে ভিসার আবেদন করতে হবে। Department of Enterprise জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট এর অযোগ্য বা ইনিলিজিবল পেশার একটি তালিকা প্রদান করে। তালিকাটি এই লিংকে গেলে দেখতে পাবেন জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ইনিলিজিবল জবের লিস্ট
এই লিংকে সম্পূর্ণ তালিকা দেয়া আছে। সুতরাং এর বাহিরের পেশাগুলোতেই কেবলমাত্র জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটে ভিসার জন্য যোগ্য।
তবে তালিকাটি ভালোভাবে বুঝতে হবে। কিছু কিছু পেশা আপনাদেরকে হয়ত দ্বিধান্বিত করতে পারে। যেমন রেস্টুরেন্টের শেফ জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ক্যাটাগরিতে পড়েনা। কিন্তু আবার ৫ বছরের হেড শেফ এর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে আবার আবেদন করার জন্য ইলিজিবল হবে। এভাবে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে যা আবেদনকারীকে খুঁজে বের করতে হবে যে, জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট পেতে সে যোগ্য কিনা।
জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটের জন্য এমপ্লয়ার এবং এমপ্লয়ী উভয়ের কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়।
এমপ্লয়ারকে অবশ্যই জেনুইন এবং লিগ্যাল হতে হবে। কোম্পানি ও রেভিনিউ রেজিস্টার্ড হতে হবে। কোম্পানিকে অবশ্যই ৫০:৫০ নিয়ম মানতে হবে। যেমন, কোম্পানিতে অবশ্যই ৫০% ইউরোপীয় কর্মচারী থাকতে হবে। তা না হলে নন-ইউরোপীয়দের জন্য ওয়ার্ক পারমিট নিতে পারবে না। কোম্পানিকে অবশ্যই স্থানীয় পত্রিকায় কর্মী চেয়ে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। Labour Market Needs Test ও যাচাই করে নিতে হবে।
এমপ্লয়ীর বাৎসরিক বেতন নূন্যতম ৩০,০০০ ইউরো হতে হবে। তবে পেশাভেদে কিছুক্ষেত্রে নূন্যতম বেতন ২৭,০০০ ও ২৭,৫০০ ও হতে পারে। তবে ২০২৪ বাজেটে মিনিমাম সেলারি রেট বর্ধনের ফলে নূন্যতম বেতনের পরিবর্তন ভবিষ্যতে হয়ত হতে পারে। এবং এমপ্লয়ীর পেশা বিষয়ক কোয়ালিফিকেশন থাকতে হবে।
ইন্ট্রা-কোম্পানি ট্রান্সফার হচ্ছে একই কোম্পানির এক অফিস বা ব্রাঞ্চ থেকে অন্য অফিস বা ব্রাঞ্চে কর্মী স্থানান্তর। এই স্থানান্তর দেশের মধ্যে ও দেশের বাহিরেও হতে পারে। সাধারণত মাল্টিন্যাশনাল বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে এমন এমপ্লয়মেন্ট ট্রান্সফার হয়ে থাকে। ধরুন বাংলাদেশের কোকাকোলা কোম্পানিতে কেউ চাকুরী করে এমন কেউ আয়ারল্যান্ডের কোকাকোলা কোম্পানিতে ট্রান্সফার হবে, এমন ট্রান্সফারই হচ্ছে ইন্ট্রা-কোম্পানি ট্রান্সফার।
ইন্ট্রা-কোম্পানি ট্রান্সফার জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট এর ইনিলিজিবল লিস্ট অনুসরণ করে না, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্মচারিটি যে কোম্পানিতে কাজ করে সে কোম্পানির উপর নির্ভর করে তাকে দেশের বাহিরের ব্রাঞ্চে ট্রান্সফার করবে কিনা। যদি উক্ত কোম্পানি উক্ত কর্মচারীকে ট্রান্সফারের অনুমোদন দেয়, এর পর Department of Enterprise, Trade and Employment সে আবেদন যাচাই বাছাই করে সব ক্রাইটেরিয়া পূরণ করলে ভিসার জন্য পারমিট প্রদান করবে।
এটা খুবই অপ্রতুল একটি স্কিম। এই স্কিমে পারমিট পাওয়ার সংখ্যা একেবারেই নগণ্য।
ইন্টার্নশিপ এমপ্লয়মেন্ট পারমিট কি তা সহজে বোঝার জন্য একটা উদাহরণ দিয়ে শুরু করি। যেমন, আয়ারল্যান্ডে কোন ছাত্রছাত্রী যদি কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয়ে থার্ড লেভেল পড়াশুনা করে তাহলে ছাত্রাবস্থায় বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ রয়েছে। আয়ারল্যান্ডের ছাত্রছাত্রীরা যেহেতু আইরিশ কিংবা ইউরোপীয় নাগরিক তাই তাদের ভিসার প্রয়োজন পড়েনা।
ঠিক তদ্রূপ, ইউরোপের বাহিরে থেকেও ছাত্রছাত্রীদের আয়ারল্যান্ডে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আইরিশ বা ইউরোপীয় ছাত্রছাত্রী থেকে তাদের তপাৎ হচ্ছে, তাদের ভিসা লাগবে। সে ভিসা বা পারমিটই হচ্ছে ইন্টার্নশিপ এমপ্লয়মেন্ট পারমিট।
এই পারমিট পেতে হলে ক্রিটিক্যাল স্কিলের ইলিজিবল তালিকা অনুসরণ করতে হবে। ক্রিটিক্যাল স্কিলের পেশার অন্তর্ভুক্ত এমন বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই মূলত এই স্কিমে আবেদন করতে যোগ্যতা রাখে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এই ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম বাধা হচ্ছে আইরিশ কোম্পানি থেকে ইন্টার্নশিপ এর অফার পাওয়া। খুব কম সংখ্যক কোম্পানিই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এই অফার দিয়ে থাকে। কারণ তারা লোকাল শিক্ষার্থী দ্বারাই ইন্টার্নশিপ করিয়ে নেয়। তবে কিছু কোম্পানির আন্তর্জাতিক কোটা বা কোম্পানি পলিছি থাকে, যা বিশ্বের নিদৃস্ট কোন দেশ থেকে নিদৃস্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদেরকে ইন্টার্নশিপ হিসেবে নিয়োগ দেয়।
তারপরেও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদেরকে আমরা অনুপ্রাণিত করি এই স্কিমটি দেখা এবং চেষ্টা করে দেখা।
ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ১২ মাসের ভিসা দেয়া হয়, যা অনবায়নযোগ্য। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে দেশে ফেরত যেতে হবে।
এই পারমিট সম্পর্কে জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে ”কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস’’ এবং ”কন্ট্রাক্ট অফ সার্ভিস’’ এর মধ্যে পার্থক্য। এই দুই বাক্য একই মনে হলেও সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে।
‘বিজনেস ল’ অনুযায়ী ”কন্ট্রাক্ট অফ সার্ভিস’’ হচ্ছে মালিক এবং কর্মচারীর মধ্যে এমপ্লয়মেন্ট কন্ট্রাক্ট। আর ”কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস’’ হচ্ছে কোন একটা সার্ভিস এর জন্য থার্ড পার্টির সাথে কন্ট্রাক্ট। সহজ ভাষায় যদি বলি ”কন্ট্রাক্ট অফ সার্ভিস’’ হচ্ছে আমি যদি কোন কোম্পানিতে জব নেই তাহলে মালিকের সাথে আমার যে চুক্তি। আর ”কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস’’ হচ্ছে আমি সেলফ এমপ্লয়েড এবং আমার নিজস্ব কোম্পানি আছে এবং আমি অন্য কোম্পানিতে সার্ভিস বা কাজ করে দেয়ার জন্য চুক্তি করেছি।
”কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস’’ এমপ্লয়মেন্ট পারমিট হচ্ছে আমি বা আমার কোম্পানি আইরিশ কোন কোম্পানির কাজ করে দিতে চুক্তিবদ্ধ। সে কারণে আমার আয়ারল্যান্ড ভ্রমণ করতে হবে এবং ভ্রমণ করতে ভিসার প্রয়োজন, সুতরাং সে ভিসাই হচ্ছে কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট পারমিট।
কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ব্যাতিরেকে এই আর্টিকেল এর বাকি সব স্কিমই হচ্ছে ”কন্ট্রাক্ট অফ সার্ভিস’’। কারণ বাকি স্কিম গুলাতে কোন না কোন কোম্পানির সাথে চুক্তিতে যেতে হয়।
কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট পারমিট প্রথমে ২৪ মাসের প্রদান করা হয়। পরে ৫ বছর পর্যন্ত নবায়ন করা যায়।
তবে যে কোন কোম্পানি হলেই কন্ট্রাক্ট ফর সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট পারমিট পাওয়া যাবে না। জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ইনিলিজিবল জবের লিস্ট এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, ইনিলিজিবল লিস্টের সাথে সম্পর্কিত কাজের জন্য এই স্কিমেও পারমিট পাওয়া যাবেনা।
খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মসংস্থানভিত্তিক পারমিট হচ্ছে খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের বিকাশ, পরিচালনার জন্য প্রাসঙ্গিক যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে বিদেশী নাগরিকদের কর্মসংস্থানের জন্য এই স্কিম।
উদাহরণস্বরূপ মেসি বা রোনালদো স্পেনের নাগরিক না, কিন্তু তাদের ক্লাব বার্সেলোনা কিংবা রিয়েল মাদ্রিদ তাদেরকে তাদের দেশের ভিসা দিয়ে এমপ্লয় করে নেয়। তদ্রূপ বাংলাদেশি কেউ যদি খেলাধুলায় ভালো দক্ষতা থাকে কিংবা সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকর্মে দক্ষ, তেমন কাউকে এমপ্লয় করতে যদি আইরিশ সরকার কিংবা ক্রিয়া সংঘটনের আগ্রহ জন্মে তাহলে তারা উক্ত ব্যাকটিকে এই স্কিমে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করবে।
এ ভিসার ক্ষেত্রে সাধারণত এমপ্লয়মেন্ট ডিপার্টমেন্ট অফ এন্টারপ্রাইজ আবেদনকারী ব্যাক্তি কিংবা তার গভর্নিং বডির সাথে যোগাযোগ করে এবং অন্যান্য বিষয় যাচাই বাছাই করে নেয় যে, আবেদনকারীর প্রাসঙ্গিক যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা কতটুকু।
ডিপার্টমেন্ট অফ এন্টারপ্রাইজ এমপ্লয়ার বা কোম্পানিকেও যাচাই বাছাই করে এই স্কিমে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যুর আগে। জেনারেল স্কিমের মতই কোম্পানির ট্রেড রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে এবং ৫০:৫০ নিয়ম বজায় থাকতে হবে।
এটা একটু ব্যতিক্রমি ওয়ার্ক পারমিট। এই পারমিট নিদৃস্ট ব্যাক্তি ছাড়া সবার জন্য প্রযোজ্য নয় এবং সবাই ইলিজিবলও হবে না। আয়ারল্যান্ডে কিছু চ্যারেটি টাইপ নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন আছে এবং যাদের শাখা বিশ্বব্যাপী রয়েছে। ঐসব অর্গানাইজেশনের সাথে চুক্তি আছে যে, ওই অর্গানাইজেশনগুলোতে কর্মরত, অধ্যয়নরত অথবা রিসার্স কাজে জড়িতরা যদি আয়ারল্যান্ডে অধ্যয়ন কিংবা রিসার্সের কাজে ও অর্গানাইজেশনগুলোর কাজ সম্বন্ধীয় কারণে ভ্রমণ করে তাহলে এক্সচেঞ্জ এগ্রিমেন্ট এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ইস্যু করা হবে।
যে অর্গানাইজেশনগুলোর সাথে বর্তমান চুক্তি বা এগ্রিমেন্ট আছে তার তালিকা এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ডে প্রদান করা হয়েছে। তবে সময় সময় এই তালিকার হালনাগাদ হতে পারে।
তালিকাটি নিম্নরূপঃ
– AIESEC
– The International Association for the Exchange of Students for Technical Experience (IAESTE)
– The Fulbright Programme
– Exchange between St Joseph’s University, Philadelphia and University College Cork in conjunction with Bord Bia
– Vulcanus In Europe Programme (Ireland)
এক্সচেঞ্জ এগ্রিমেন্ট এমপ্লয়মেন্ট পারমিটের আওতাধীন অর্গানাইজেশনগুলোর তালিকা ও আবেদনের নিয়ম ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন এক্সচেঞ্জ এগ্রিমেন্ট এমপ্লয়মেন্ট পারমিট নির্দেশিকা
ডিপেন্ডেন্ট/পার্টনার/স্পাউস এমপ্লয়মেন্ট পারমিট হচ্ছে স্বামী বা স্ত্রীর জন্য ওয়ার্ক পারমিট। বিষয়টি একটু ব্যাখ্যা করা যাক।
প্রথমত হচ্ছে যার স্বামী বা স্ত্রীর জন্য ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা হবে তাকে অবশ্যই প্রথমে ক্রিটিকেল স্কিলে চাকুরী নিয়ে অথবা রিসার্সার হিসেবে আয়ারল্যান্ডের অধিবাসী হতে হবে। তাহলেই সে তার স্বামী বা স্ত্রীর জন্য ডিপেন্ডেন্ট/পার্টনার/স্পাউস এমপ্লয়মেন্ট পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবে।
ধরুন আপনি ক্রিটিকেল স্কিল ওয়ার্ক পারমিটে আয়ারল্যান্ড আছেন এবং আপনি আপনার স্বামী বা স্ত্রীকে আপনার স্পাউস হিসেবে আয়ারল্যান্ডে নিয়ে এসেছেন। আপনার স্পাউস হিসেবে তিনি STAMP-3 ভিসায় এসেছেন। কিন্তু STAMP-3 ভিসা আয়ারল্যান্ডে আপনার স্পাউসকে সরাসরি কাজ করার অনুমতি প্রদান করেনা। কিন্তু আপনি চান আপনার স্বামী বা স্ত্রী জব করুক। সেক্ষেত্রে আপনাকে ডিপেন্ডেন্ট/পার্টনার/স্পাউস এমপ্লয়মেন্ট পারমিটের নিয়মানুযায়ী STAMP-1 এর জন্য আবেদন করতে হবে।
STAMP-1 এর জন্য আবেদন করতে হলে স্পাউসকে আগে কোন একটি কোম্পানি থেকে জব অফার নিতে হবে। আবেদন করার পর যদি ওয়ার্ক পারমিট গ্রান্ট হয় তাহলে, ইমিগ্রেশন সার্ভিস স্পাউসের STAMP-3 ভিসা STAMP-1 এ ট্রান্সফার করে দিবে। এরপর ওয়ার্ক পারমিটের একটি সার্টিফাইড কপি আবেদনকারীকে এবং আরেকটি কপি কোম্পানিকে প্রেরণ করবে ইমিগ্রেশন অফিস।
ডিপেন্ডেন্ট/পার্টনার/স্পাউস এমপ্লয়মেন্ট পারমিটের জন্য আবেদন করতে স্বামী বা স্ত্রীকে অবশ্যই আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত থাকতে হবে এবং স্পাউসের সাথে থাকতে হবে। এই স্কিমে কেবলমাত্র আয়ারল্যান্ডে আসার পরেই আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই ফুল টাইম এডুকেশনে থাকা যাবেনা এবং অন্য কোন ওয়ার্ক ভিসা ক্যাটাগরিতে থাকা যাবেনা।
এ নিয়ম শুধুমাত্র ক্রিটিকাল স্কিল এবং রিসার্সারদের জন্য প্রযোজ্য। কোন আইরিশ এবং ইউরোপীয় সিটিজেনদের স্পাউসদের জন্য এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়। এক্ষেত্রেও কোম্পানি থেকে জব অফার থাকতে হবে।
এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যারা যেকোন এমপ্লয়মেন্ট পারমিটে আছেন অথবা ভবিষ্যতে আসবেন। এ বিষয়টা জানা অতীব জরুরি।
এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ভিসায় আয়ারল্যান্ড এসে অনেকে কোম্পানি দ্বারা নাজেহাল ও আনফেয়ার ডিসমিসাল এর শিকার হয়ে ভিসা বাতিল হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ভিসা পুনর্বহাল করতে এই ভিসা স্কিম সম্পর্কে জরুরি।
রিঅ্যাক্টিভ্যাশন এমপ্লয়মেন্ট পারমিট হচ্ছে, পূর্বে যে কোন ধরনের এমপ্লয়মেন্ট ভিসা ছিল কিন্তু পরে কোন কারণে বাতিল হয়ে যায়, কিংবা এমপ্লয়ার পরিবর্তন করতে, কিংবা স্পন্সরড কোম্পানি থেকে রিডানডেন্ট হয়ে গেছে, কিংবা ডিপেন্ডেন্ট/পার্টনার/স্পাউস এমপ্লয়মেন্ট পারমিট হোল্ডার নতুন স্কিমে নতুন এমপ্লয়মেন্ট পারমিটে ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিবর্তন করা যায়।
তবে রিঅ্যাক্টিভ্যাশন এমপ্লয়মেন্ট পারমিট পেতে উভয় এমপ্লয়ার এবং এমপ্লয়ী উভয়কেই কিছু শর্ত ও ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হবে। যা পূরণ করলেই কেবল এই স্কিমে ওয়ার্ক পারমিট পেতে পারে।
ডিপেন্ডেন্ট/পার্টনার/স্পাউস এমপ্লয়মেন্ট পারমিট এর মত একমাত্র আয়ারল্যান্ডে অবস্থান করতে হবে এবং এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ভিসায় আয়ারল্যান্ডে ঢুকতে হবে এই স্কিমে ইলিজিবল হতে হলে। রিঅ্যাক্টিভ্যাশন এমপ্লয়মেন্ট পারমিট পেতে হলে আবেদনকারীর টেম্পোরারি STAMP-1 থাকতে হবে এবং জেনুইন এমপ্লয়মেন্ট অফার থাকতে হবে।
নোটঃ সবগুলো ধরনের ওয়ার্ক পারমিট বেতনভুক্ত হতে হবে এবং বেতন আবেদনের সময়ের ঘণ্টায় মিনিমায় ওয়েজ এবং তা বছরে হিসেব করে মিনিমাম বেতনে হতে হবে। প্রত্যেক কোম্পানিকে অবশ্যই Labour Market Needs Test এর প্রমাণ দেখাতে হবে যে তারা যে কর্মী চায় তা EEA ন্যাশনাল কর্মী দিয়ে পূরণ হচ্ছে না। এরপর একটি নিদৃস্ট সময় পর্যন্ত লোকালি জব বিজ্ঞাপন দিতে হবে। প্রত্যেক কোম্পানিকে অবশ্যই কোম্পানি ও রেভিনিউ রেজিস্টার্ড হতে হবে এবং বাৎসরিক রিটার্ন ও ট্যাক্স রিটার্ন ক্লিয়ার থাকতে হবে।
প্রত্যেক ক্যাটাগরির জন্য আলাদা কিছু নিয়ম আছে, তা উপরোক্ত লিংকে গিয়ে দেখে নিতে পারেন।
মাথায় রাখুনঃ
ক) উপরোক্ত নয়টি ওয়ার্ক পারমিট স্কিমের প্রথম ৭ টি হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের বাহিরে থেকে আয়ারল্যান্ডে আসার জন্য এবং শেষের দুটি হচ্ছে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরতদের জন্য যারা। ক্রিটিক্যাল স্কিল ও জেনারেল ওয়ার্ক পারমিটে কোম্পানি স্পন্সর অনুযায়ী স্ট্যাম্প ওয়ার্ক পারমিটে পরিবর্তন করা যায়। যেমন স্টুডেন্ট ভিসা থেকে ওয়ার্ক পারমিট।
খ) উপরোক্ত ৯ টি স্কিমের বাহিরে কোন স্কিমে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা হয় না এবং এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ডের ক্রিটিক্যাল স্কিমের তালিকার বাহিরে এবং জেনারেল স্কিমের ‘’ইনিলিজিবল’’ তালিকার মধ্যে পড়ে এমন কেউ ওয়ার্ক পারমিটের জন্য যোগ্য হবে না।
গ) আবেদনের আগে সবগুলো স্কিমের শর্ত, নিয়মকানুন ভালো করে দেখে আবেদন করতে হবে। তা না হলে ভিসা ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করবেনা এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ড।
ঘ)যেহেতু ভিসা ক্যাটাগরি হচ্ছে ওয়ার্ক পারমিট, সেহেতু উপরোক্ত ৯ টি স্কিমেই পারমিট পেতে হলে কোন কোম্পানি থেকে জব অফার লাগবেই। জব অফার ব্যাতিরেকে কোন স্কিমেই আবেদন করার জো নেই। আর জব অফার সম্পূর্ণ নির্ভর করে কোম্পানির উপর।
ঙ)আবার সব কোম্পানি চাইলেও জব অফার যে কাউকে করতে পারবেনা, যদিনা কোম্পানি এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ডের শর্ত ও নিয়মের বাহিরে পড়ে ও প্রদত্ত অফারের জবটি এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ডের তালিকার বাহিরে থেকে হয়।
চ) কোম্পানি জব অফার করলেও এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ড তা রিফিউজ করে দিতে পারে, যদিনা আবেদনকারীর যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের না হয়।
ছ)এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করলেও এম্বেসি কতৃক ভিসা রিফিউজ হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। যার প্রমাণ প্রতিনিয়ত পাওয়া যাচ্ছে।
সতর্কতা অবলম্বন
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে অনেকেই অসাধু পন্থা অবলম্বন করে থাকে। ভিসা পাইয়ে দেয়ার নাম করে অনেক অসাধু ব্যাক্তি বাংলাদেশের অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। অনেকে ভিসা হওয়ার আগেই টাকা হাতিয়ে নিয়ে নেন এবং পরে ভিসা না হলে সে টাকা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আর ফেরত দেয় না।
ভিসা ফি এবং আনুসাঙ্গিক খরচের বর্ণনা এই রিপোর্টের লিংকগুলোতে দেয়া আছে। এর বাহিরে হয়ত অল্প কিছু অন্যান্য খরচ হতে পারে, তবে তাও হিসেবযোগ্য। একান্তই দালাল ব্যাতিরিকে অথবা ভিসা ইস্যুই যাদের ব্যবসা, তারা ছাড়া ওয়ার্ক ভিসা পেতে মোটা অংকের টাকা কখনোই লাগেনা, যেমনটি মানুষ দিয়ে প্রতারিত হচ্ছে।
ওয়ার্ক পারমিট থেকে শুরু করে ভিসা পাওয়া পর্যন্ত খরচ খুব বেশি হবার কথা নয়। এ ভিসায় কেউ আসতে পারবেনা কয়েকটি কারণে হয় কোম্পানি জব অফার করবেনা অথবা এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করবেনা অতবা এম্বেসি ভিসা গ্রান্ট করবে না। এর বাহিরে সবারই সমান খরচ।
সুতরাং আপনি ও আপনার পরিচিত কেউ কারো সাথে ভিসা বিষয়ক লেনদেনে যাবার আগে ভালো করে যাচাই বাছাই করে নিন। মনে রাখবেন কোন দালাল যদি ভিসার নিশ্চয়তা দিয়ে টাকা নেয় তাহলে তা হবে সম্পূর্ণ বানোয়াট। কারণ ভিসা পাওয়া কোন ব্যাক্তির হাতে থাকে না। যদি তাই হত তাহলে ১৭ কোঠি মানুষের দেশে ভিসা পাওয়ার পরিমাণ মাত্র ০.০০৪% হত না। কেউ হয়ত ওয়ার্ক পারমিট পেতে সহায়তা করতে পারে যদি কারো নিজস্ব কোম্পানি ও পরিচিত কোম্পানি থাকে, কিন্তু ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা পাওয়া সম্পূর্ণ নির্ভর করে এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ড ও এম্বেসির উপর।
পরিশিষ্ট
আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক ভিসা ছিল, আছে এবং থাকবে। উপরের ৯ ক্যাটাগরিতেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়। বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকে আসেও। কিন্তু এত ধরনের ভিসা ক্যাটাগরি থাকলেও বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিটে আসার পরিমাণ নিতান্তই নগণ্য। একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভের সময় ছাড়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় আয়ারল্যান্ডে আসার পরিমাণ নিতান্তই নগণ্য।
ভিসা পাওয়া তো প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ। কিন্তু কোন কোম্পানি থেকে জব অফার পাওয়াটাই হচ্ছে দূরুহ ব্যাপার। ক্রিটিক্যাল স্কিলের আওয়তায় পড়ে এমন অনেক যোগ্য, কোয়ালিফাইড এবং অভিজ্ঞদের দেখছি চাকুরীতে আবেদনের পর আবেদন করেও চাকুরীর অফার পাচ্ছে না। অফার তো দূরের কথা ইন্টারভিউ পর্যন্ত নিচ্ছে না।
এরপর কোনরকমে কেউ যদি একটি অফার পেয়েও যায়, তাকে আবার মুখোমুখি হতে হয় এম্বেসির সামনে। ভিসা আবেদনের বেশিরভাগই মুখ দেখে রিফিউজালের। বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা রিফিউজ নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার।
কিন্তু একই অথবা এর থেকে নিম্ন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্নরা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে পানির স্রোতের মত আসতেছে। এর অভিজ্ঞতা আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত কারুরই অজানা থাকার মত নয়।
হ্যাঁ বাংলাদেশ থেকে কিছু আসতেছে, কিন্তু তার পরিমাণ এতই নগণ্য যে তাদের খুঁজে বের করতে চিরুনি চালানো লাগে।
Source: European Migration Network EMN
উপরের চার্টে যদি দেখেন তাহলে দেখবেন ভারত থেকে ওয়ার্ক ভিসায় আসার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
আয়ারল্যান্ডে এত সুযোগ থাকতেও বাংলাদেশিরা কেন বঞ্চিত তা খুঁজে বের করা দরকার। এটা কি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা দায়ী, যে শিক্ষা বিদেশী কোম্পানির কাছে আস্থা অর্জনে ব্যার্থ? নাকি বাংলাদেশিদের ব্যার্থতা, যে কারণে আমাদেরকে ভিসা দিতে এমব্যাসি এতটাই অপারগ? নাকি কূটনৈতিক ব্যার্থতা, আইরিশ সরকারের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করতে ব্যার্থ প্রশাসন?
খুঁজে বের করা দরকার, মূলত সমস্যাটা কোথায়?
ওমর এফ নিউটন বার্তা সম্পাদক আইরিশ বাংলা টাইমস ফ্রি হেল্পলাইনঃ newton.acca@gmail.com
২৩ শে অক্টোবর সোমবার, জনাব তৌহিদ খানের পরিবারে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের উচ্ছ্বাস। কারণ জনাব তৌহিদ খানের বড় ছেলে জনাব তারেক খান সেদিন একটি ইমেইল পেয়েছে। ইমেইলটি এসেছে আইরিশ ডিফেন্স ফোর্স (Irish Defence Force) থেকে। ইমেইলে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জনাব তারেক খান কে আইরিশ ডিফেন্স ফোর্সের এয়ার কর্পস (Air Corps) ডিপার্টমেন্টে প্রাইভেট ৩ স্টার র্যাঙ্কে এয়ারক্রাফট টেকনিশিয়ান হিসেবে যোগদান করার জন্য।
জনাব তারেক খান প্রথম কোন বাংলাদেশি হিসেবে আইরিশ সরকারের ডিফেন্স ফোর্সের মত সন্মানজনক একটি পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। এটা শুধু জনাব তৌহিদ খানের পরিবারই নয়, সমগ্র বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য আনন্দের ও গর্বের বিষয়।
Tarek Khan, Aircraft Technician (Private 3 Stars), Air Corps, Irish Defence Force
Tarek Khan, Aircraft Technician (Private 3 Stars), Air Corps, Irish Defence Force
জনাব তারেক বর্তমানে ইউনিভারসিটি অফ লিমেরিকে Aeronautical Engendering এ চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। কিন্তু এরই মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন একটি স্বনামধন্য এভিয়েশন কোম্পানি Atlantic Aviation Group এ, কর্মরত আছেন এয়ারক্রাফট টেকনিশিয়ান হিসেবে।
Atlantic Aviation Group এ থেকেই গড়তে পারতেন স্বপ্নিল ক্যারিয়ার। কিন্তু জনাব তারেকের স্বপ্ন যে আকাশ ছোঁয়া। সূক্ষ্ম মেধার অধিকারী এই টগবগে যুবক ধরতে চেয়েছেন স্বপ্নকে। তাইতো আবেদন করলেন আইরিশ ডিফেন্স ফোর্সে। কিন্তু শঙ্কিত ছিলেন এখানে চাকুরী হয় কি না হয়। কারণ এখানে চান্স পেতে পার হতে হবে বেশ কিছু কঠিন ধাপ। শুরুতে ছিল Aptitude Test, এরপর দেখাতে হয় শারীরিক সক্ষমতা (Physical Strength) এবং রয়েছে মুখোমুখি ইন্টারভিউ। সবশেষে আবার দিতে হয় হেলথ টেস্ট। কিন্তু সবগুলো ধাপ সফলতার সাথে পার করে সফল হলেন জনাব তারেক।
উক্ত পদে তাঁর মোট সার্ভিস পিরিয়ড বা সেবাকাল হচ্ছে ১২ বছর। তন্মদ্ধে ৯ বছর থাকবে অ্যাকটিভ সার্ভিস এবং ৩ বছর রিসার্ভ সার্ভিস। কিন্তু স্বপ্ন যার আকাশ ছোঁয়া এত অল্পতে কি আর তার তৃপ্তি মিটে? জনাব তারেকের ইচ্ছা পাইলট হয়ে পাখির মত দেশ বিদেশ উড়ে বেড়ানোর। তাইতো ১২ বছর মেয়াদকালের মধ্যে অর্জন করতে চান পাইলটের খেতাব। তাঁর জন্য থাকবে ফ্রি তে ডিফেন্স ফোর্স এর ট্রেইনিং নেয়ার সুযোগ। যদি এখানে জনাব তারেক চান্স না পেতেন তাহলেও তাঁর ইচ্ছা ছিল প্রাইভেটলি ট্রেইনিং নিয়ে পাইলট হওয়ার। কিন্তু তাতে গুনতে হত কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।
ফ্রি পাইলট ট্রেইনিং ছাড়াও প্রাথমিক ট্রেইনিং এর পর আইরিশ ডিফেন্স ফোর্স থেকে অর্জন করতে পারবে Aircraft Military System এর উপর Level 8 ডিগ্রি। যেটা হবে ডাবলিন ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে এবং সার্টিফাই করবে European Union Aviation Safety Agency (EASA).
আগামী ১৩ ই নভেম্বর তিনি শুরু করবেন আইরিশ ডিফেন্স ফোর্সের কাজ। শুরু হবে Gormanston Army Camp এর ট্রেইনিং দিয়ে। এরপর থাকবে ২৯ সপ্তাহের বেসিক ট্রেইনিং। ২৮ মডিউলের এই ট্রেইনিং হবে Casement Aerodrome (Baldonnel) মিলিটারি এয়ারবেইজে।
তারেক খানের পরিচিতি
জনাব তারেক খান হচ্ছেন লিমেরিকে দীর্ঘদিন বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসী জনাব তৌহিদ খানের সুযোগ্য সন্তান। তাঁর রত্নগর্ভা মা হচ্ছেন নাজমুন নাহার। জনাব তৌহিদ খানের ত্রিরত্ন, তিন পুত্রের মধ্যে তারেক খান হচ্ছেন সবার বড়। বাকি দুই ভাই এর মধ্যে মেঝো তাইফ খান এবং সর্ব কনিস্ট সন্তান তাবির খান।
তারেক খানের মেঝো ভাই তাইফ খানও পিতার একজন সুযোগ্য সন্তান। বর্তমানে অধ্যয়নরত আছেন স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ট্রিনিটি কলেজে। অধ্যয়ন করতেছেন Engineering with Management এ। সর্ব কনিস্ট ভাই তাবির খান অধ্যয়ন রত আছেন লিমেরিকের St. Nessan’s National School এর 5th Class এ।
পরিবারের সাথে তারেক খান (মাঝখানে)
পরিবারের অভিব্যক্তি
সন্তানের এমন অর্জনে পরিবারে আনন্দের আর সীমা নেই। গর্বে বুক ভরে উঠেছে পিতামাতার।
জনাব তৌহিদ খান লিমেরিকের একটি হোটেলে ধীর্ঘদিন যাবত কর্মরত। তিনি জানান তাঁর রুজি হয়ত আহামরি কিছু ছিল না। কিন্তু তাঁর সন্তানদের দেখভাল ও পড়ালেখার জন্য কখনো কোন কার্পন্য করেননি। স্বল্প আয় থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজ অর্থ খরচ করে ছেলেকে পড়িয়েছেন প্রাইভেট টিউটরিয়ালে। তিনি জানান, ”কষ্ট হয়েছে কিন্তু ছেলের ভবিষ্যৎ ছিল সব কিছুর উর্ধে, আমার এই কষ্টই আজকে সুখকর মুহূর্ত এনে দিয়েছে’’।
জনাব তারেক খানের মা জানান, ছেলেমেয়ের পড়ালেখা ও সংসারের খরচ বহন করতে তাঁর স্বামী হিমশিম খাচ্ছিলেন। তার কারণে তাকেও হাতে নিতে হয়েছিল আয়ের উৎস। সংসার ঠিক রেখে নিজেও চাকুরী করেছেন সময়ে সময়ে। তিনি জানান, তার সন্তানরাও ছিল অনেক সহযোগী। বাবা মায়ের সাধ্যের বাহিরে যায়, কখনো করেনি এমন আবদার। বাবা মা চাপের মুখে পড়ে এমন কিছু করা থেকে তারা সবসময় বিরত ছিল। আমি শুধু তাদের সফলতা নয়, তাদের সরলতা, নৈতিকতা ও বাবা মায়ের প্রতি তাদের সন্মান প্রদর্শন করার জন্যও তাদেরকে নিয়ে আমি গর্ববোধ করি।
জনাব তৌহিদ খান জানান, তারকে পড়ালেখার পাশাপাশি পার্ট টাইম আয় করা শুরু করে বেশ কিছুদিন থেকে। তারেকের কিছু গুন আছে, সে গাড়ি মেরামত ও অন্যান্য হাতের কাজ ভালো জানে। যা দিয়ে সে কিছু আয় করতে পারে এবং তা আমাদের সাথে শেয়ার করে।
তারেকের বাবা মা আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশি কমিউনিটি, বিশেষ করে লিমেরিকের কমিউনিটির প্রতি কৃতজ্ঞ। বিভিন্ন সময় তাঁর পাশে থেকে শক্তি, সহায়তা প্রদান করার জন্য। উনাদের সন্তানদের মঙ্গল কামনায় সবার নিকট দোয়া প্রার্থনা করেন। যেন সন্তানরা মানুষের মত মানুষ হয়ে কমিউনিটির সেবা করতে পারে।
গলওয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য সুসংবাদ বয়ে নিয়ে আসলেন সবার সুপরিচিত প্রিয় মুখ ও বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জনাব আশরাফ চৌধুরী শিবলি। ২০২৪ কাউন্সিল নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আয়ারল্যান্ডের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল Fine Gael থেকে মনোনয়ন পেলেন জনাব শিবলি।
জনাব আশরাফ চৌধুরী শিবলি গলওয়ে সিটি ওয়েস্ট থেকে মনোনয়ন পান। Fine Gael থেকে তাঁর সাথে যৌথভাবে মনোনয়ন পেলেন গতবারের কাউন্সিলর Cllr Clodagh Higgins.
Connacht ডিভিশনের পত্রিকা Connacht Tribune জনাব শিবলির মনোনয়নকে ঠিক এইভাবে উপস্থাপন করে, ”This is a historic first as he is the first member of the Bangladeshi community to stand for Fine Gael in Galway City’’.
জনাব আশারাফ চৌধুরী বলেন, ”আমি মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে আমার নাম দেখে যতটা না পুলকিত হয়েছি, তার থেকে বেশি আনন্দিত হয়েছে বাংলাদেশি হিসেবে আমাকে উত্থাপন করাতে’’।
তিনি বলেন, ”মনোনয়ন পেয়ে তিনি সত্যিই আনন্দিত, তবে এ কৃতিত্ব আমার একার নয় সবার এবং আগামী নির্বাচনের লড়াইও আমার একার নয়। এ লড়াই বাংলাদেশি কমিউনিটির সবার, সবার সহযোগিতা ছাড়া আমার এ পথ সফলতার আলো দেখবে না। আমি এ সফলতা কখনো কখনো আমার একার মনে করিনা, আমি মনে করি এ সফলতার আমার বাংলাদেশি কমিউনিটির’’।
আগামী নির্বাচনে তিনি গলওয়ে কমিউনিটি এবং আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত সকল বাংলাদেশিদের কাছ থেকে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
গলওয়ের অন্যান্য মনোনীত প্রার্থীদের মাঝে জনাব শিবলি
রাজনীতিতে আসার অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পান, এ প্রশ্নের জবাবে জনাব শিবলি জানান, ‘‘২০১৬ সালে তিনি একবার আয়ারল্যান্ডের বাহিরে চলে যান এবং প্রায় ৩ মাস পর আবার ফিরে আসেন, এয়ারপোর্টে অবতরণ করার পর তাঁর মেয়ে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলে উঠে আমার দেশে ফিরে আসলাম। তখন আমার মনে হল আমি হয়ত এদেশে অভিবাসী কিন্তু আমার সন্তানরা তো নয়। এটা তাদের দেশ, সুতরাং তাদের জন্য একটি সুন্দর পথ তৈরি করে দেয়া আমাদেরই দায়িত্ব। তখন থেকে আয়ারল্যান্ডে কিছু করার বাসনা জাগ্রত হয় এবং কমিউনিটিতে সক্রিয় হওয়া শুরু করি”।
তিনি আরও জানান, ”এরপর আমি চিন্তা করলাম, কমিউনিটির মধ্যে ছোট পরিসরে থেকে বৃহৎ কিছু করা সম্ভব নয়। বৃহৎ কিছু করতে হলে লোকাল পলিটিক্সের বিকল্প নেই। এরপর ২০১৯ সালে Fine Gael এর একজন কাউন্সিলর এর সাথে পরিচয় এবং সে ই আমাকে পথ দেখিয়ে এখান পর্যন্ত নিয়ে আসে’’।
অনুপ্রেরণা হিসেবে লিমেরিকের সাবেক ডেপুটি মেয়র ও বর্তমান কাউন্সিলর ও সিটি মেয়র আজাদ তালুকদারেরনাম উল্লেখ্ করেন। তিনি বলেন, ”জনাব আজাদ তালুকদার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ও পথপ্রদর্শক। উনার কর্ম ও সফলতা আমাকে অনুপ্রেরণা ও শিক্ষা প্রদান করে। বিভিন্ন বিষয়ে আমি আজাদ ভাই এর সাথে পরামর্শ করি এবং তিনি আমাকে সবসময় সঠিক পরামর্শ প্রদান করতে চেষ্টা করেন’’।
জনাব শিবলিও নির্বাচিত হয়ে পথ প্রদর্শক হয়ে থাকতে চান। তিনি চান ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তিনি ও তাঁর মতদের পথ অনুসরণ করে আরও দূরে এগিয়ে যেতে পারে। যাদের কল্যাণে সমৃদ্ধ হবে কমিউনিটি এবং সুনাম ছড়িয়ে যাবে বাংলাদেশি কমিউনিটির ও বাংলাদেশের।
কে এই আশরাফ চৌধুরী শিবলি
চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার মিঠানালা গ্রামের মিয়া বাড়িতে জন্ম ও বেড়ে উঠা। মিঠানলা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করে, উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন নিজামপুর কলেজ থেকে। এরপর দেশের নামকরা বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে স্ট্যাটিসটিক্স থেকে বি এস সি অনার্স ও এম এস সি সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন। এরপর ২০০৩ সালে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে।
আয়ারল্যান্ডের মাটিতে পা রাখার পর থেকেই অবস্থান করেন গলওয়েতে। পরিবার পরিজন নিয়ে এই গলওয়েতেই বাকি জীবনের পথচলা। দুই সন্তানের গর্বিত বাবা তিনি। তাঁর ১৩ বছর বয়স্ক কন্যা সন্তান ও ৮ বছর বয়স্ক পুত্র সন্তান নিয়ে সুখী পরিবার। স্ত্রী কন্যা সন্তান এর বাহিরে সম্পূর্ণ গলওয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটিকে তিনি নিজ পরিবারই মনে করেন।
পরিশিষ্ট
জনাব আশরাফ চৌধুরী শিবলি তো মনোনয়ন পেলেন। তিনি তাঁর যোগ্যতার সাক্ষর প্রমাণ করেই এবং তাঁর দলের কাছে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেই ছিনিয়ে এনেছেন মনোনয়ন। এবার বাকি কাজ তাঁর একার নয়। জনাব আশরাফ চৌধুরী শিবলি এখন শুধু একজন ব্যক্তি নন। সম্পূর্ন বাংলাদেশি কমিউনিটিই জনাব আশরাফ চৌধুরী শিবলি।
আগামী নির্বাচনে জনাব শিবলির জয় মানে সম্পূর্ণ কমিউনিটির জয়, পরাজয় মানে কমিউনিটির পরাজয়। জনাব শিবলি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন, এবার আসুন আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করি।
জয়ের আরেকটি বরমাল্য পরিধান করুক বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়ারল্যান্ড।
আজ ১৮ ই অক্টোবর, গত বছরের এই দিনে অল বাংলাদেশি এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (ABAI) এর ২য় কার্য নির্বাহী পরিষদ শপথ গ্রহণ করে, তার এক বছর পূর্ণ হল। গত ২০২২ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর একটি সফল নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয় আবাই এর নতুন কমিটি। ২৬ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির টানা ২য় বারের মত সভাপতি নির্বাচিত হন জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার।
বিগত এক বছরের সফলতা ও ব্যর্থতার হিসেবের খেরোখাতা নিয়ে বসার সময় এসেছে। তিন বছর মেয়াদি নির্বাচিত কমিটির জন্য এক বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাকি দুই বছরের শেষার্ধ চলে যাবে পরবর্তী নির্বাচন প্রদান ও ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাস্ততা নিয়ে। সুতরাং নির্বাচনের এক বছর পর আবাইকে জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য খুব স্বল্প সময় বলে মনে হয় না।
১৮ই অক্টোবর ২০২২ – শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার
নির্বাচনের আগে আবাই এর সদস্যগণ বহু প্রতিশ্রুতির ফুলঝরি ছড়িয়েছেন। নির্বাচনের পরে তার কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন নেতাগণ?
আবাই হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের একমাত্র কেন্দ্রীয় সংঘটন এবং এই সংঘটনের কমিটি জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত। সুতরাং আবাই এর প্রতি মানুষের প্রত্যাশা একটু বেশিই। আবাই এর নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই নিজেদের যোগ্য মনে করেই করেছেন এবং কমিউনিটিকে নিজের মেধা, শ্রম, সময়, অর্থ উৎসর্গ করার প্রত্যয়েই কমিউনিটির নেতা হতে এসেছেন এবং যারা নির্বাচিত হয়েছেন জনগণ তাদের উপর আস্থা এবং বিশ্বাস রেখেই নির্বাচিত তাদেরকে নির্বাচিত করেছেন। সুতরাং দায়িত্বের জায়গাকে কখনো ছোট করে দেখার অবকাশ নেই।
আবাই এর সদস্য সংখ্যা ২৬ এবং প্রত্যেকের রয়েছে আলাদা পদ। প্রত্যেক পদের রয়েছে পদ সম্পর্কিত দায়িত্ব। ২৬ জন সদস্য যে যার দায়িত্ব যদি সঠিকভাবে পালন করে, তাহলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই কি যার যার পদ অনুযায়ী দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতেছে?
হ্যাঁ, এটা ঠিক যে আবাই এর বর্তমান কমিটি বেশ কিছু সফল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারির মত দিবসে আবাই এর কার্যক্রম ও অনুষ্ঠান আয়োজন ছিল প্রশংশা পাবার দাবিদার। ২১শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ তে লিমেরিকে বিশাল র্যালির আয়োজন করে তাক লাগিয়েছিল।
১০ই সেপ্টেম্বর আবাই আয়োজন করেছে বৃহৎ পরিসরে ঝাঁকালো অভিষেক অনুষ্ঠান। গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ এবং সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে, স্বনামধন্য শিল্পীদের উপস্থিতিতে এমন জমকালো অনুষ্ঠান আয়ারল্যান্ডে আয়োজন করে আবাই সত্যিই চমক দেখিয়েছে। যার জন্য আবাই সাধুবাদ পাবার যোগ্য।
অভিষেক অনুষ্ঠানে আবাই উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতেও সমর্থ হয়। যা বিগত টার্মে অনেক বিলম্বে গঠিত হয়েছিল। এদিক দিয়ে বর্তমান কমিটি সফলই বলা চলে।
অভিষেক অনুষ্ঠানের একাংশ
তাই বলে কি শুধু উৎসব আয়োজনই আবাই এর কাজ? না অবশ্যই না, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ইত্যাদি তুলে ধরতে ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব তৈরি করতে উৎসব আয়োজন, মিলনমেলার জুড়ি নেই এবং প্রয়োজনও রয়েছে। কিন্তু এটাই কেন্দ্রীয় একটি সংগঠনের মূল কাজ শুধু উৎসব আয়োজনই হতে পারে না।
উৎসব আয়োজনের বাহিরে আবাই যে বৃহৎ কাজটি করেছিল এবং যা ছিল সবার আকাঙ্ক্ষা এবং চাওয়া, তা হচ্ছে গত ২৬ শে এপ্রিল ২০২৩ তে আয়ারল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এর মিনিস্টার জনাব জেমস ব্রাউন এবং চিপ ইমিগ্রেশন অফিসার জনাব কণর মারফি এর এর সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফলফ্রসু মিটিং করেন।
বাংলাদেশে আইরিশ দূতাবাস স্থাপন অথবা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে কন্স্যুলার অফিস অথবা এজেন্ট স্থাপন, ভিসা বিষয়ক জটিলতা দূরীকরণ, এম্বেসির বিকল্প হিসেবে VFS এর মত ইমিগ্রেশন এজেন্ট স্থাপন করা ও ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম চালু করার জন্য জোরালো অনুরোধ জানান। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসার কোটা বর্ধনের জন্য অনুরোধ ও ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন অফিসারদের অবহেলার কথাও বর্ণনা করা হয়।
এছাড়াও ইমিগ্রান্টদের বাবা মায়ের দীর্ঘমেয়াদি ভিসা, অনথিভুক্তদের বৈধতা পাবার প্রক্রিয়া তরান্বিত করা এবং ইমিগ্রেশন সার্ভিস অনলাইনকরণের ব্যপারেও জোর দেয়া হয় উক্ত মিটিংয়ে।
উত্থাপিত সব বিষয়ই যৌক্তিক এবং গুরুত্বপূর্ণ, এজন্য আবাই অবশ্যই বাহবা পেতেই পারে। উক্ত মিটিংয়ের পর আবাই কি তার কোন ফলো আপ করছে কিনা, বা মিটিংয়ের পর কোন আপডেট আছে কিনা, তা আবাই এর পক্ষ থেকে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
আবাই এর গঠনতন্ত্রে পাসপোর্ট সার্জারিসহ অন্যান্য কূটনৈতিক বিষয়ে হাই কমিশনের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখার কথা বর্ণিত আছে। কিন্তু এ বিষয়ে আবাই এখন পর্যন্ত অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। আয়ারল্যান্ডে কনস্যুলার সার্ভিস এখনো একটি স্থায়ী প্ল্যাটফর্মে দাড়াতে পারেনি, এবং সে লক্ষ্যে কোন কার্যক্রমও চোখে পড়তেছেনা। একটি কেন্দ্রীয় সংঘটন হিসেবে আবাই এ বিষয়ের সুরাহা এখনো করতে পারেনি। যা আয়ারল্যান্ডে বসবাসরতদের দীর্ঘদিনের দাবি।
আবাই এর নির্বাচিত বেশ কিছু সদস্য খুবই একটিভ সামাজিক কার্যক্রমে। কমিউনিটির যে কোন কাজে কর্মে, উৎসবে আয়োজনে, সাহায্য সহযোগিতায়, সবার সুখে দুঃখে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। আয়ারল্যান্ডের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াতে দেখি তাদেরকে। তাদের এই আত্মত্যাগ অবশ্যই মানুষ মনে রাখবে।
কিন্তু কয়েকজনকে একটিভ থাকতে দেখা গেলেও আবাই এর বেশিরভাগ সদস্যকেই নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। তাঁদের নির্লিপ্ততা দেখে মনেই হয়না যে তাঁরা কোন একটা দায়িত্ব বহন করে চলতেছেন এবং মানুষ তাঁদেরকে ভোট দিয়েছেন অনেক আশা ও আস্থা রেখে। কিন্তু মানুষের সেই আস্থার জায়গা তাঁরা কতটুকু পূর্ণ করতে পেরেছেন তা কেবলমাত্র তাঁরাই জানেন।
এরপর অনেক সদস্য আছেন যিনি নিজেই জানেন না তার পদের কাজ কি, যে পদের জন্য উনি দাঁড়িয়েছেন সে পদের উপযুক্ত কাজ যে উনাকে করতে হবে সে বিষয়ে তিনি মোটেও ওয়াকিবহাল নন। উদ্দেশ্যবিহীনভাবে শুধু একটি পদ দখল করে রাখার প্রত্যয়ে আর নেতা হবার খায়েশে যোগ্যদের বঞ্চিত রেখে একটি পদ আঁকড়ে পড়ে আছেন। অথচ ঐ পদে যদি একজন যোগ্য ব্যক্তি আসতেন তাহলে সে পদটি অলংকৃত হয়ে থাকত। ধীর্ঘ তিন বছর একটি পদের সেবা থেকে কমিউনিটি বঞ্চিত হয়েই থাকবে।
আবাই হচ্ছে কমিউনিটির সবার জন্য একটি কমিটি। এখানে সবার চাওয়াকে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে আঞ্চলিকতা, রাজনৈতিক মতপার্থক্য, পেশা, শ্রেণি, ধর্ম ইত্যাদি ভেদাভেদ করে চলা সমীচীন নয়। অথচ অনেক ক্ষেত্রে এসবের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে আবাই ব্যার্থ হয়েছে। এখানে বাংলাদেশি মুসলিম আছে, হিন্দু আছে, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান ধর্মালম্বী মানুষও রয়েছে। আবাই কি সবাইকে সমান চোখে দেখতে সক্ষম হচ্ছে অথবা সবার চাওয়াকে সমানভাবে পূরণ করতে সমর্থ হচ্ছে? আবাই এর গঠনতন্ত্রে বলা আছে আবাই সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, মাহফিল, পূজা ইত্যাদি আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে কিংবা উদ্যোগ গ্রহণকারীকে সার্বিক সহযোগীতা করবে। আবাই তা আধৌ কি পালন করতেছে বা করার চেষ্টা করতেছে?
আবাই একটি নির্বাচন কমিশনারদের ভোটার রেজিস্ট্রেশনের জন্য করা ওয়েবসাইটটিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী করা এবং ভোটার লিস্ট এর ডাটাবেজের কাজ চালিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি জানান। আজকে এক বছর পরেও সে কাজের কোন অগ্রগতি নেই। চলমান ভোটারদের ডাটাবেজ চলমান থাকার বদলৌতে এক বছর বন্ধই রয়েছে। মনে রাখতে হবে এই ডাটাবেজ কিন্তু শুধু নির্বাচনের জন্যই না, আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষের একটি পূর্নাঙ্গ ডাটাবেজ যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার ও কমিউনিটির জনসংখ্যা হিসেবের একটি সহজ মাধ্যমও বটে। এবং আশা করব বানান ভুলে ভরা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গঠনতন্ত্রের বানান শুধরিয়ে নিবে।
আবাই এর একটি পূর্নাঙ্গ তথ্যবহুল ওয়েবসাইট এখনো তৈরি করা হয়নি। বিগত এক বছরে এর কোন অগ্রগতিও লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। লোগো নিয়ে বিভ্রাট দীর্ঘদিনের। একটি অফিসিয়াল লোগো এখন পর্যন্ত আবাই তৈরি করতে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ এসব কর্মাদি পরিচালনার জন্য দায়িত্বরত সদস্য রয়েছেন।
নির্বাচনের পরে আবাই এর একটি স্থায়ী কার্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু অদ্যাবধি স্থায়ী কার্যালয় স্থাপন তো দূরের কথা, এ নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য কমিটির কারো কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
আবাই এর বর্তমান সভাপতি নির্বাচনের আগে গঠনতন্ত্রকেই তাঁর নির্বাচনী ইশতিহার হিসেবে গণ্য করেছিলেন। উপরে বর্ণিত দুই একটি উদাহরণ ছাড়াও গঠনতন্ত্র এর অনেক বিষয়ই অধরাই রয়ে গিয়েছে। সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য সদস্যগণ নির্বাচনের আগে ইশতিহার ও অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার কিছু সম্পন্ন হলেও বহুলাংশই অসম্পন্ন রয়ে গিয়েছে এখন পর্যন্ত।
শেষ কথাঃ
হ্যাঁ এটা সর্বাগ্রে সঠিক যে, আবাই একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানে আগত নেতা নেত্রীদের কেউই এখানে পেশাদার না। সবারই নিজস্ব আলাদা পেশা রয়েছে, পরিবার পরিজন রয়েছে। কমিউনিটির সেবা দিতে অবশ্যই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পাশাপাশি কমিউনিটির অন্যদের কাছে আশানুরূপ সহযোগিতাও অনেকসময় পাওয়া যায় না। এর মাঝেই আত্মবিসর্জন করে কাজ করতে হচ্ছে।
তারপরেও বিষয় হচ্ছে সব কিছু বিবেচনা করেই সদস্যগণ নির্বাচনে লড়েছেন, কমিউনিটি সেবার শপথ নিয়েছেন। কেন নিয়েছেন? নিজের কিছু মেধা, শ্রম, সময়, অর্থ স্যাক্রিফাইস বা বিসর্জন করবেন বলেই তো এ পথে এসেছেন? কেউ হয়ত কম কেউ বেশি। যার যার নিজস্ব যোগ্যতা অনুযায়ী সে সে কাজ করবেন। নির্বাচনের আগে অথবা কমিটিতে নাম লেখানোর আগে সবাইই ঘোষণা দিয়েছেন যে আমিই এ পদের জন্য যোগ্য। তাহলে সে যোগ্যতার সাক্ষর রাখতে সমস্যা কোথায়? দায়িত্বের জায়গা থেকে যদি আবাই এর সদস্যগণ দায়িত্ব পালন না করে থাকে তাহলে একজন কমিটির বাহিরের সাধারণ ব্যক্তি থেকে আপনার পার্থক্য কোথায়? তাহলে তো আয়ারল্যান্ডের কমিউনিটির সবাইকে একটা একটা কাগুজে পদ উপহার হিসেবে দিয়ে দেয়া যায়।
এখনো দুই বছর সময় আছে। যারা দায়িত্বে আছেন আশা করব তারা দায়িত্বের সদ্ব্যবহার করবেন। আগামী নির্বাচনে আপনারা হয়ত নির্বাচনে নাও আসতে পারেন অথবা আসলেও জয়ী নাও হতে পারেন। সুতরাং আপনাদের সামনে এখনো সুযোগ অপেক্ষা করতেছে, যে ব্রত কমিউনিটির সেবা করতে এসেছেন, তা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যান। কমিউনিটি আপনাদেরকে মনে রাখবে। মনে রাখবে আপনার কর্মের জন্য, পদের জন্য নয়।
প্রকাশিত হল আয়ারল্যান্ডের ২০২৪ সালের বাজেট। নতুন এনার্জি ক্রেডিট, মর্টগেজ রিলিফ, বর্ধিত মিনিমাম বেতন ও রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিটসহ রয়েছে চমকপ্রদ কিছু পরিবর্তন এই বাজেটে।
ফাইনান্স মিনিস্টার Michael McGrath €১৪ বিলিয়নের বাজেট ঘোষণা করেন আজ ১০ অক্টোবর ২০২৩ এ।
২০২৪ বাজেটে জনসাধারণের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে এমন কিছু বাজেটের অংশ তুলে ধরা হলঃ
১) মিনিমাম ওয়েজ ঘণ্টায় €১২.৭০ এ উন্নীত করা হয়েছে। যা বর্তমান রেট €১১.৩০ থেকে ১২% বাড়ানো হয়েছে।
২) €১৫০ ইউরোর তিনটি এনার্জি ক্রেডিট প্রদান করা হবে আগামী শীত মৌসুমে।
৩) রেন্ট রিলিফ গত বছরের ন্যায় এ বছরেও প্রদান করা হবে। তবে রেন্ট রিলিফ €৫০০ থেকে উন্নীত করে €৭৫০ করা হয়েছে।
৪) ২০% ট্যাক্স রেট ব্যান্ড €৪২,০০০ পর্যন্ত করা হয়েছে। ২০২৩ বাজেটে ছিল €৪০,০০০ পর্যন্ত।
৫) সাপ্তাহিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এবং পেনশন €১২ করে বাড়ানো হয়েছে।
৬) গ্যাস ও ইলেক্ট্রিসিটি এর ভ্যাট রেট আগামী ১২ মাস ৯% ই বলবৎ থাকবে।
৭) ক্রিসমাসের আগে ডাবল চাইল্ড বেনিফিট প্রদান করা হবে।
8) বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর থার্ড লেভেল ফিস €১০০০ করে কমানো হবে।
৯) ২০ টি সিগারেট যুক্ত প্যাকেটের দাম ৭৫ সেন্ট করে বাড়ানো হবে এবং ই-সিগারেটের উপর কর সংযোজিত হবে।
১০) USC রেটের পরিবর্তন হবে।
১১) পার্সোনাল ট্যাক্স ক্রেডিট €১০০ ইউরো বৃদ্ধি পাবে। নতুন ইনকাম ট্যাক্স ক্রেডিট হবে €১,৮৭৫।
১২) হোম কেয়ারার এবং সিঙ্গেল পার্সন চাইল্ড কেয়ার ক্রেডিট €১০০ ইউরো বৃদ্ধি পাবে। এবং ইনক্যাপাসিটেড চাইল্ড ক্রেডিট বৃদ্ধি পাবে €২০০।
১৩) মেডিকেল কার্ডের জন্য আয় €৬০,০০০ ইউরো পর্যন্ত রাখা হয়েছে ২০২৫ পর্যন্ত।
১৪) ছোট বাসা মালিক/ব্যবসায়ীদের জন্য থাকবে স্বল্প মেয়াদি ট্যাক্স রিলিফ। হেল্প টু বাই স্কিম ২০২৫ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
১৫) মর্টগেজ হোল্ডারদের জন্য রয়েছে ট্যাক্স রিলিফ। ২০% ট্যাক্স রিলিফ পাবে মর্টগেজ হোল্ডাররা, সর্বোচ্চ €১,২৫০ পর্যন্ত।
Minister for Finance Michael McGrath and Minister for Public Expenditure Paschal Donohoe
আপনারা ইতোমধ্যে আইরিশ বাংলা টাইমসের পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন যে, ওয়াটারফোর্ডের বাসিন্দা জনাব মিজানুর রহমান এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন।
তিনি দীর্ঘদিন হাসপাতালে মুমূর্ষ অবস্থায় দিনযাপন করছেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ অক্টোবর আইরিশ বাংলা টাইমস টিম জনাব মিজানুর রহমান এর স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থান জানতে এবং আইরিশ বাংলা টাইমস এর সম্পাদক মন্ডলীর বার্ষিক সাধারণ সভা সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যরা ওয়াটারফোর্ডে সমবেত হন। সাধারণ সভা শেষে জনাব মিজান কে দেখতে আইরিশ বাংলা টাইমস পরিবারের জনাব আব্দুর রাহিম ভূঁইয়া, জনাব ওমর এফ নিউট, জনাব কবির আহমদ, জনাব শওকত অলি খান মাসুম ও নাসির খান সাকি ওয়াটারফোর্ড ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং পরিদর্শনকালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের নিকট তার শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান।
স্থানীয় সূত্র মতে জনাব মিজানুর রহমান গত ৮ই সেপ্টেম্বরে ওয়াটারফোর্ডের বেলিব্ৰিজ্ঞান সাউন্ড স্টোর এর সামনে পেডেস্ট্রিয়ানাইজড জেব্রা ক্রসিং পার হওয়ার সময় একটি দ্রুতগামী গাড়ি তার উপর দিয়ে সজোরে চালিয়ে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক জনাব মিজানুর রহমান মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এই ঘটনায় তার ডান পায়ের হাড় ভেঙ্গে যায় ও মস্তিষ্কে প্রচন্ড পরিমানে আঘাত প্রাপ্ত হন।
এই দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পথচারীরা তাকে সাথে সাথে ওয়াটারফোর্ড হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করান। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিতসা দিয়ে মস্তিষ্কের সার্জারির জন্য কর্ক ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ট্রান্সফার করে দেন। মস্তিষ্কে অস্ত্রপচারের পর সেখানে তাকে ICU তে দীর্ঘদিন প্রায় তিন সপ্তাহের মত নিবিড় পরিচর্যা ও ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া হয়। গত ২৮ই সেপ্টেম্বর তার কিছুটা চেতনা ফিরে আসলে ভেন্টিলেটর খুলে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এখনো তিনি রেসপন্স করার মতো অবস্থায় ফিরে আসেন নি। ভীষণ শারীরিক যন্ত্রনায় ভুগছেন তিনি। চিকিৎসকগণ তাঁকে এখনো নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ওয়াটারফোর্ডের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিচিত মুখ ও বিশিষ্ট সমাজ কর্মী জনাব শামীম কবির ঐদিন আইরিশ বাংলা টাইমস টিম কে সার্বিক সহযোগিতা করেন এবং উনার সঙ্গে আলাপ চারিতায় আমরা জানতে পারি, তিনি অসুস্থ মিজানুর রহমানের নিয়মিত খবর রাখছেন এবং তার পরিবারকে আন্তরিক ভাবে সান্তনা ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আরও যারা তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।
জনাব মিজানুর রহমান তিন সন্তানের জনক। তার বয়স অনুমানিক ৪৫ বছর, তার বড় কন্যার বয়স ১৯ বছর ও বাকি দুই সন্তানের বয়স ৫ এবং ৮ বছর। তার স্ত্রী সকলের নিকট তার স্বামীর সুস্থতার জন্য দোয়ার আহ্বান করেছেন।
তিনি দীর্ঘদিন ডাবলিনে বসবাস করেছেন। ডাবলিনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আব্দুল আউয়াল এর ভায়রা হন এবং কর্কের জনাব কামাল চোধুরীর ছোট ভগ্নিপতি হন।
আল্লাহর নিকট তাঁর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার জন্য দোয়া করি। বাংলাদেশী সবাইকে পথ পারাপার হওয়ার সময় দুই দিক থেকে আগত গাড়ির গতির দিকে লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করছি। এমনকি জেব্রা ক্রসিং ও পেডেস্ট্রাইনাইজড ক্রসিং পার হওয়ার সময়ও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন আহ্বান করি।
এক বছরেরও কম সময় রয়েছে কাউন্সিলর নির্বাচন ২০২৪ এর। লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল এর বর্তমান কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার আগামী কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা অনেক আগেই দিয়েছিলেন। তারই প্রস্তুতি হিসেবে তিনি সবাইকে ভোটার নিবন্ধন করার আহ্বান জানিয়েছেন। যারা ইতিমধ্যে নিবন্ধন করেছেন তাঁদেরকেও অনুরোধ জানিয়েছেন রেজিস্ট্রেশন চেক করে নেয়ার জন্য।
ভোট দেয়া প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। কেউ যেন সে অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, সে লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু লিমেরিকই না সমগ্র আয়ারল্যান্ডে সবাই যেন ভোটার নিবন্ধন এবং নিবন্ধন হয়েছে কিনা তা চেক করে নেন সে অনুরোধ জানান।
কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেনঃ
অনলাইন এবং অফলাইন দুইভাবেই ভোটার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। অফলাইনে করতে হলে লোকাল কাউন্সিল থেকে ফর্ম সংগ্রহ করে ফ্রি পোস্ট করতে পারেন। লিমেরিকবাসীরা কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদারের কাছ থেকেও ফর্ম সংগ্রহ করে তাঁর কাছেই জমা দিয়ে আসতে পারেন।
অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে হলে Check the Register নামক ওয়েবসাইটে গিয়ে এই লিংকে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন। https://www.checktheregister.ie/en-IE/
ওয়েবসাইটে দুইটি অপশন দেখতে পাবেন যারা ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাঁরা Check your details এ গিয়ে আপনার বাসার পোষ্টকোড দিয়ে চেক করে নিতে পারেন। উক্ত পোষ্ট কোডটিতে যে কয়জনের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে তাঁদের তথ্য দেখতে পাবেন। আপনি চাইলে আপনার তথ্য আপডেট করে নিতে পারেন। বাসা পরিবর্তন করলে নতুন বাসায় রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।
যারা রেজিস্ট্রেশন করেন নাই, তাঁরা Apply online register অপশনে ক্লিক করলে ফর্মটি দেখতে পাবেন। শুরুতে আপনি যে অঞ্চলের ভোটার সে অঞ্চল বাছাই করবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে আপনার PPS নাম্বার, জন্ম তারিখ, নাম, জাতীয়তা, ইমেইল অ্যাড্রেস, ফোন নাম্বার ও ঠিকানা প্রদান করতে হবে। PPS নাম্বার, জন্ম তারিখ, নাম যেন সঠিক থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
আপনার সঠিক পোষ্টকোড দিলেই আপনার পরিপূর্ণ ঠিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূর্ণ হয়ে যাবে। সুতরাং আলাদাভাবে সম্পূর্ণ ঠিকানা না দিলেও হবে।
ডাবলিনের বাহিরে রেজিস্ট্রেশন পোর্টাল
তবে ডাবলিন অঞ্চলের জন্য ভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে। https://www.voter.ie/ ওয়েবসাইট থেকে একই ভাবে রেজিস্ট্রেশন চেক এবং নতুন রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন। যাদের MyGovID আছে তাঁরা MyGovID তে লগইন করে সহজেই রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন। উক্ত ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম ডাউনলোড করেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন।
জনাব আজাদ তালুকদার ভোট রেজিস্ট্রেশন করে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ জানান।
কাউন্টি মিথ এর বয়েন ভ্যালি (Boyne Valley) কে নতুন ন্যাশনাল পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটা হবে আয়ারল্যান্ডের সপ্তম ন্যাশানাল পার্ক।
কাউন্টি মিথ এর Dowth Hall এবং Demesne এর ৫০০ একর জমি রাষ্ট্র কর্তৃক খরিদ করা হয়। যার এক তৃতীয়াংশ হচ্ছে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ব্রু না বইন (Brú na Bóinn) এর অংশ।
Boyne Valley এবং Brú na Bóinn ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ৫০০০ বছরের ইতিহাস এর সাথে জড়িত রয়েছে।
খরিদকালে ৫০০ একর জমির বাজার মূল্য ছিল ১০ মিলিয়ন ইউরো।
ন্যাশনাল পার্ক ও জমি খরিদের ঘোষণা গতকাল শুক্রবার হেরিটেজ মিনিস্টার Darragh O’Brien ও হেরিটেজ বিষয়ক স্টেট মিনিস্টার Malcolm Noonan করেন।
ন্যাশনাল পার্কটি দুই বছরের মাস্টার প্লান হাতে নিয়েছে সম্পন্ন করতে। এর পর মানুষ বিনামূল্যে সেখানে ভ্রমণ করতে পারবে।
ন্যাশনাল পার্কটির কাজ সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন ঐ অঞ্চলের রূপ পরিবর্তন হয়ে যাবে। বহু পর্যটক আকর্ষণের এক অন্যতম অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হবে।
গত ২৪শে সেপ্টেম্বর রোজ রবিবার, বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ে এর আয়োজনে গলওয়েতে বসবাস করা বাংলাদেশী কমিউনিটির সকলের জন্য একটি কমিউনিটি সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়।
গলওয়ের সর্বস্তরের জনগনের উপস্থিতিতে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে ও বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত অতিথীবৃন্দের সরব উপস্থিতিতে ফিতা কাটার মধ্য দিয়ে গলওয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটি সেন্টারটি উদ্বোধন হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গলওয়ে সিটি মেয়র Cllr. Mr. Eddie Hoare. লিমেরিকের সিটি মেয়র বাংলাদেশের গর্ব কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার, গলওয়ে কাউন্টি Mayor Councillor. Mr. Liam Carroll এবং Cllr. Mr. Alan Cheevers (Doughiska area). বিশেষ অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত বিশেষ অতিথীবৃন্দের মধ্যে ABAI এর মহাসচিব জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার, জনাব সাইফুল ইসলাম, জনাব হামিদুল নাসির, জনাব মাসুদুল ইসলাম, BDAD এর সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জনাব জাকারিয়া প্রধাণ, BSAI এর প্রেসিডেন্ট জনাব চুন্নু মাতবর, জনাব আব্দুল মুহিত, জনাব আব্দুল জলিল, জনাব কবির আহমদ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ উল্ল্যেখ্যযোগ্য। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন গলওয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটির সাবেক সভাপতি জনাব আজিমুল হোসেন আজিম এবং জনাব জামাল বাসির যিনি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ এবং জনাব জহিরুল ইসলাম রাজু ও সাবেক সহ সভাপতি জনাব শিবলী চৌধুরী। এছাড়াও এথলোন থেকে জনাব মাকসুদুর রহমান, কিলডেয়ার থেকে জনাব সামীর জসিম।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন জনাব সোহরাব হোসেন হিমন। পবিত্র কোরআনে পাক থেকে সুললিত কণ্ঠে তেলাওয়াত করেন গলওয়ে রিভারসাইড মসজিদের ঈমাম শেখ শাকিল। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ের সভাপতি জনাব জসিম উদ্দিন দেওয়ান। বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ে এর সভাপতি জনাব জসিম উদ্দিন দেওয়ান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জনাব তামিম মজুমদার সবাইকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। জনাবা রোজিনা পারভিন (স্বপ্না) মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও জনাবা লুৎফুন্নাহার হোসাইন (আফরোজা) শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ফুলের তোড়া দিয়ে অতিথি বৃন্দকে সাদরে আমন্ত্রণ করেন। তারপর আগত অতিথিবৃন্দ ও আয়োজকবৃন্দরা বক্তব্য প্রদান করেন। আয়োজনে দুপুরের সুস্বাদু খাবার দাবারের আয়োজন অতিথিবৃন্দকে মুগ্ধ করে।
সদ্যপ্রয়াত বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ের সাধারণ সম্পাদক জনাব নবীর হোসেন মনিরের স্মরণে ৩০ সেকেন্ড নীরবতা পালন করা হয় এবং তার স্মৃতিচারণ করা হয়।
প্রবাসে যে কোন কমিউনিটির বিকাশের জন্য একটি কমিউনিটি সেন্টারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখানে যেমন আমাদের সংস্কৃতি চর্চা হতে পারে, পারে শরীর চর্চা ও নেটওয়ার্কিং এর মত নানা গুরুত্বপূর্ণ কর্মকান্ড। আমাদের নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতি ও ভাষা শিক্ষা, ধর্মীয় কর্মশালা বা সামাজিক নানা অনুষ্ঠান আয়োজনে হয়ে উঠতে পারে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাব। সু-সংগঠিত করে কাজ করে অনেক ফল নিয়ে আসতে হলে এরকম কমিউনিটি সেন্টারের কোনো বিকল্প নেই। এই সেন্টারের বিশেষ কোন অংশ বা সম্পূর্ণ সেন্টার বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজকদের নিকট ঘন্টা আকারে ভাড়া দিয়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে এর ব্যয় মিটানোয় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করা যায়। বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্যোগে প্রথম বাংলাদেশী কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে গলওয়ের এই কমিউনিটি সেন্টারটি বিশেষ মর্যাদা ও গুরুত্ব বহন করবে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে।
একটি কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনা ব্যয়বহুল হওয়ায় সমাজের সবাইকে তাদের সাথে থাকার জন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছে এবং এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে এটিকে সাফল্যমন্ডিত করায় আগত সকলের প্রতি আয়োজকদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ে এর কমিটি ৩০ই মে, ২০২২ খ্রীষ্টাব্দ তারিখে নির্বাচনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে। আইরিশ বাংলা টাইমসের পাঠক কূলের জন্য বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ে এর পূর্ণাঙ্গ কমিটিটি নিন্মরূপ দেওয়া হলো।
কার্যকরী কমিটি ২০২২-২৩
জনাব জসিম উদ্দিন দেওয়ান (সভাপতি)
জনাব জসিম রানা সহ-সভাপতি (১)
জনাব মোক্তার আলী সহ-সভাপতি সহ-সভাপতি (২)
জনাব আব্দুল বারী সহ-সভাপতি (৩)
সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত জনাব নাবির হাসান (মনির),
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জনাব তামিম মজুমদার,
সহ-সাধারণ সম্পাদক জনাব ফজল করিম (সুমন),
সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব সোহরাব হোসেন (হিমন)
সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব লাভলু খাঁন
কোষাধ্যক্ষ জনাব মাহমুদ হোসেন চৌধুরী (অপু)
জনাবা লুৎফুন্নাহার হোসাইন (আফরোজা) শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক
জনাব আবু তালেব (মামুন) ক্রীড়া সম্পাদক
জনাব আব্দুর রহিম সহ ক্রীড়া সম্পাদক
জনাব রুবেল রহমান প্রচার সম্পাদক
ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জনাব মোঃ ওবায়দুর রহমান (ফারুক)
জনাব কে. এম. আলম দফতর সম্পাদক
জনাবা রোজিনা পারভিন (স্বপ্না) মহিলা বিষয়ক সম্পাদক
লিমেরিকে বসবাসরত বাংলাদেশি আইনজীবী জনাব আফজাল হোসাইন। যিনি উনিভার্সিটি অফ লিমেরিক এবং ল সোসাইটি অফ আয়ারল্যান্ড থেকে এল.এল.বি সম্পন্ন করে সুপরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত ল ফার্ম Joyce Solicitor & Company তে সলিসিটর হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। ফার্মটি দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে সুনামের সাথে লিগ্যাল সেক্টরে কাজ করে যাচ্ছে। ল-ফার্মটি ইমিগ্রেশন, পার্সোনাল ইনজুরি, প্রোপার্টি, এবং ফ্যামিলি ল স্পেশালিষ্ট।
জনাব আফজাল হোসাইন জানান, তিনি যেহেতু এই ফার্মটির সাথে যুক্ত, যে কোন বাংলাদেশিদেরকে ইমিগ্রেশন বিষয়ক (যেমনঃ Asylum, Changing Status, Section 3, Family Reunification, Passport Application, Judicial Review), পার্সোনাল ইনজুরি (Car Accident, Work Related Injury or Stress), প্রোপার্টি (Buying & Selling House) এবং ফ্যামিলি ল এর বিষয়ে বিশেষভাবে সহায়তা করতে সক্ষম। আইন বিষয়ে সহায়তা, উপদেশ, পরামর্শ এবং তড়িৎ সেবা পেতে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।
নিজ কর্মস্থলে জনাব আফজাল হোসাইন
জনাব আফজাল জানান, আমরা জ্ঞাত আছি যে, ইমিগ্রেশন, দুর্ঘটনা, পার্সোনাল ইনজুরি, সম্পদ ও পারিবারিক বিষয়ে আমাদের কমিউনিটির মানুষদের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু সঠিক ধরনা না থাকায় এবং সঠিক পরামর্শ ও আইনি সহযোগিতার অভাবে অনেকেই ভুল বিচারের সম্মুখীন এবং বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
তিনি জানান আইনি বিষয়গুলো অনেক সূক্ষ্ম এবং জটিল। সঠিক আইনি প্রয়োগ না হলে অনেক ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হতে পারে। যেমন, কোন কেইস কারো ফেভারে হওয়া সত্ত্বেও তার বিপরীতে চলে যাচ্ছে কিংবা সহজ বিষয় জটিল আকার ধারণ করতেছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আইনের সঠিক ধরনা না থাকা এবং পেশাদার আইনজীবীর উপদেশ না নেয়া।
আমি নিজেও আমার পারিপার্শ্বিক পরিচিত ও বন্ধু বান্ধবকে দেখেছি অনেক বিষয়ে ভুগতে। সে অভিজ্ঞতার আলোকে আমি জানি সমাজের অনেকেরই সঠিক আইনি পরামর্শ দরকার। আমি যেহেতু আইন বিষয়ে পড়াশুনা এবং আইনি প্রতিষ্ঠানের সাথে পেশাদার হিসেবে আছি, সুতরাং আমি চাই আমার কমিউনিটির মানুষকে সঠিক আইনি সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা। জানান জনাব আফজাল হোসাইন।
জনাব আফজাল হোসাইন এবং তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে আইনি সহায়তা নিতে যোগাযোগ করতে যোগাযোগ করতে পারেন তাঁর ব্যাক্তিগত নাম্বারে ও নিম্নোক্ত অফিসের ঠিকানায়ঃ
Joyce & Co
Bedford Row, Limerick
&
Washington Street West, Cork
Phone: 0894020987
একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। পাশাপাশি দু গ্রাম। নদীর এ পার আর ওই পার। দু গ্রামেই দুজন বাঘা চেয়ারম্যানের বসবাস। উভয়েই উভয়কে শত্রু ভাবতেন। একজন আরেকজনের নাম শুনতে পারতেন না। কেউ কারো চেহারা দেখতেন না। দা-কুমড়া সম্পর্ক।
একদিন এক চেয়ারম্যানের কাজের লোক নদীর ঘাটে গোসল করতে যায়। সেখানে গিয়ে শুনতে পায়, ওপারের চেয়ারম্যান সাহেবকে গ্রেফতার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যাচ্ছে। খবরটা শুনে গোসল শেষ না করেই কাজের লোকটি খুশিতে লাফাতে লাফাতে তার চেয়ারম্যানের কাছে আসে। গ্রেফতারকৃত চেয়ারম্যানকে একটি জঘন্য গালি দিয়ে গ্রেফতারের খবরটি তার মালিককে (চেয়ারম্যান) জানায়। কাজের লোকটি ভেবেছিলো যদি গালি দিয়ে গ্রেফতারের খবরটি জানানো হয় তবে তার মালিক তার উপর আরও বেশি খুশি হবে। কিন্ত বাস্তবে চেয়ারম্যান সাহেব খুশি না হয়ে বিব্রত হলেন। কাজের লোকটির উপর চড়াও হলেন। যে লোকটি তার সাথে খেলা খেলে অর্থাৎ তারই সমমানের একজনকে তার ঘরের চাকর যখন অসম্মান করে, গালিগালাজ করে তখন ওই চাকর সুযোগ পেলে তাকেও হেয় বা ছোট করতে দ্বিধাবোধ করবেনা। এ ভাবনাটা চেয়ারম্যান সাহেবকে বেশ তাড়িত করে। তাই তিনি কাজের লোকটিকে আর কোনো সুযোগ না দিয়ে কাছে ডেকে এনে দুই গালে দুটো থাপ্পড় দিয়ে বিদায় করে দেন।
বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবের মনে ধরে। তাই তিনি দেরী না করে থানায় গিয়ে গ্রেফতারকৃত চেয়ারম্যানকে ছাড়িয়ে আনেন। তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ তুলে নেন ও বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে তার অনুসারীদের কটুক্তির জন্য প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব হয়। যা পরবর্তিতে সাধারণ জনগণ ও সমাজে ব্যাপক ভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
দুই
বছর দশেক আগে বন্ধু শরীফ ভাই সহ ডিঙ্গেল গিয়েছিলাম। দেখলাম, সমুদ্রতীরে দাঁড়িয়ে দুই আইরিশ ভদ্রলোক বড়শি দিয়ে মাছ ধরছে। ছোট মাছ। ধরে ধরে ছেড়ে দিচ্ছিলো। আমার হিউমার সেন্সকে প্রকাশ করার সুযোগ পেলাম। তাই দুষ্টোমি মাখিয়ে বললাম, “তোমরা এগুলো ছেড়ে দিচ্ছো কেনো! আমরা তো এসব খাই।” বিস্ময়ভরা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, এ প্রজাতির ছোট মাছ খাওয়া বা ধরা দুটোই আইন বিরোধী। “কোনো গার্ডা বা পুলিশ তো আর দেখছেনা, গাড়ির বুটে করে নিয়ে যাও। ” উত্তরে বললো, দেখুক বা না দেখুক বে-আইনী কাজ আমরা করতে যাবো কেনো!
এ দুই লোককে জোর করে বা ভয়ডীতি দেখিয়ে আইন মানার জন্য বাধ্য করা হয়নি। তাদের নৈতিক শিক্ষাই তাদেরকে আইনের প্রতি বিশ্বস্ত করে তুলেছে। অর্থাৎ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বে-আইনী কাজে লিপ্ত হয়নি। এই যে লিপ্ত না হওয়া, এর জন্য যে স্বচ্ছ মন-মানসিকতা ও নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজন তাই আমাদের মাঝে চর্চা করতে হবে। একটি সুন্দর, সৎ ও সভ্য সমাজ গঠনকল্পে তা খুবই জরুরী।
তিন
গল্পটা কোথায় পড়েছিলাম ঠিক মনে নেই। তবে গল্পটি মনে আছে।
এক শিক্ষক ক্লাসে এসে ব্ল্যাকবোর্ডে একটি রেখা টেনে দেন। রেখাটিকে না মুছে ছোট করার জন্য বলেন সবাইকে। কিন্ত না মুছে রেখাটিকে ছোট করার উপায় কি! কারো মাথাতেই কোনো বুদ্ধি এলোনা। ফলে শিক্ষক এ রেখাটির নীচে আরেকটি রেখা টানলেন যা আগেরটির চেয়ে একটু বড়। ব্যাস আগের রেখাটি মুছা ছাড়াই ছোট হয়ে গেলো।
বস্তুত কাউকে ছোট করতে বা হারাতে হলে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা বা কুৎসা রটানোর প্রয়োজন হয়না। তাকে স্পর্শ না করেও তা পারা যায়! নিজেকে বড় করে বা মহৎ হিসেব গড়ে তুলতে পারলে এমনিতেই অন্যজন ছোট হয়ে পড়ে।
চার
আমি সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলাম একজন সাধারণ কন্স্ট্রাকসন কর্মী হিসেবে। ছেলেবেলা থেকেই হোষ্টেলে হোষ্টেলে সময় কেটেছে। জীবনে কোনোদিন কাজ করার সময় হয়ে উঠেনি। তাই সিঙ্গাপুরে কন্স্ট্রাকসনের মতো জায়গায় কাজ করা ছিলো আমার জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অনিচ্ছা সত্বেও কাজে ভুলভ্রান্তি হয়ে যেতো। বার্মিজ সুপারভাইজার ধৈর্যচ্যুত হয়ে বিগবসকে কম্লেইন করলো। আমাকে “বাঙ্গালা” “বাঙ্গালা” বলে কাছে ডেকে নিয়ে বস খুব তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ভরে দেশে পাঠিয়ে দেয়ার কঠিন হুমকি দিলেন। নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছিলো। অনেক কষ্টে সামলে নিয়ে একটু সাহস করে বসকে বললাম, “জীবনে কোনোদিন কাজ করিনি। পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। মাস্টার্স শেষ করেই তোমার এখানে চলে এলাম। দয়া করে আমাকে একটু সময় দাও। আর ভুলভ্রান্তি হবেনা।”
– তুমি মাস্টার্স পাস! আর এখানে এসে লেবারের কাজ করছো! কম্পিউটার জানো? তাহলে তোমাকে অফিসে জব দিয়ে দিতাম।
কম্পিউটার জানা ছিলোনা। নিজেই নিজেকে ধিক্কার দিলাম। খুব আফসোস হলো। বসের প্রস্তাবটিকে আমার হাত থেকে স্বর্গের ছাবি গড়িয়ে যাওয়ার মতো মনে হচ্ছিলো।
যা হোক, এর পর থেকে কম্পিউটার শেখার ভূত মাথায় চাপলো। বন্ধুবর যায়েদ আহমদের (বর্তমানে সপরিবারে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী) আপ্রাণ প্রচেষ্টায় শিখেও ফেললাম। দু মাসের মাথায় বসকে জানালে তিনি অফিসে যোগদান করতে বলেন। সেখানে আমি চার থেকে সাড়ে বছর চাকরি করি। এক পর্যায়ে বসের সাথে আমার নখ আর গোশত সম্পর্ক হয়ে উঠে। যে কোন কাজে কর্মে আমাকে ছাড়া ভরসা পেতেননা। বলতে গেলে এডমিন জাতীয় সকল দায়িত্বই আমার উপর ছিলো। এমনকি যে সুপারভাইজার আমার উপর অভিযোগ এনছিলো তার বেতনটাও আমার সিগনেচারে ড্র হতো।
সুতরাং ভুল যে মানুষকে সবসময় ভুল পথে পরিচালিত করে তা নয়, মাঝেমধ্যে ভুল ফুল হয়েও ফোটে। ব্যক্তি জীবনে যেমন তা সত্য তেমনি সাংগঠনিক, রাজনৈতিক বা সামাজিক জীবনেও তা সমান ভাবে প্রযোজ্য।
পাঁচ
শেষ গল্পটি বলেই লেখার ইতি টানবো। এক বিবাহিত যুবক মানসিক অশান্তিতে ভূগছে। এ অশান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক দরবেশ বাবার শরণাপন্ন হয়। তাকে তার অশান্তির কারণ ব্যাখ্যা করে। ব্যখ্যা করতে গিয়ে বললো, কয়েক বছরের দাম্পত্য জীবন তাদের। তার স্ত্রী তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। তবু সে তার এক সহকর্মীনীর প্রেমে পড়ে যায়। ওই মেয়েও তাকে প্রচন্ড ভালোবাসে। যুবক স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে সহকর্মীকে বিয়ে করতে চায়। সে ক্ষেত্রে স্ত্রী যদি আকস্মিক ভাবে তাকে ঘৃণা করতে শুরু করে তবে তার কাজটি করতে সহজ হয়। স্ত্রীর মনে অলৌকিক কেরামতিতে তার উপর ঘৃণার উদ্ভব ঘটনোর জন্যই সাধক বাবার কাছে যুবকের আগমন।
সব শুনে সাধক বললেন, উপরওয়ালার ঈশারায় সবই সম্ভব। তবে তার আগে তোমাকে দুটো কথা বলি। প্রথমত- ঐশ্বরিক ক্ষমতাবলে যদি তোমার স্ত্রীকে তোমার উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা করা হয় তবে সে ভবিষ্যতে আর কোনোদিন তোমাকে ভালোবাসবেনা। তার চোখে তুমি হবে পৃথিবীর জঘন্যতম ব্যক্তিত্ব। দ্বিতীয়ত- যে সুন্দরী মেয়ের ভালোবাসায় মজে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করতে চাচ্ছো সেই মেয়ে বিয়ের পর ভবিষ্যতে তোমাকে একই ভাবে ভালোবাসবে তার কি নিশ্চয়তা আছে! এমনওতো হতে পারে ওই মেয়ে উল্টো তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য কাউকে ভালোবেসে আবারও বিয়ে করছে। বস্তুত ভবিষ্যতে কি হবে, কি ঘটবে তুমি কিছুই জানোনা। তবে এতোটুকু নিশ্চিত ভাবে জানো যে তোমার স্ত্রী তোমাকে আগের মতো এখনো অনেক ভালোবাসে।
সাধকের কথা শুনে যুবকের চোখ খুলে গেলো। আবেগের মোহ কাটিয়ে বিপথগামীতা থেকে ফিরে এলো। ভবিষ্যত যেহেতু জানা নেই তাই বর্তমানকেই প্রাধান্য দিলো।
মুল কথা- পারিবারিক বন্ধন, এর সম্পর্কোন্নয় ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য আবেগকে ঠাঁই না দিয়ে বর্তমানের আলোকে যেমন ভেবেচিন্তে বাস্তব সিদ্ধান্তে পৌঁছা উচিত ঠিক তেমনি সামাজিক, সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও তা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
গল্পে গল্পে, ঘটনায় ঘটনায় ব্যক্তি চিত্রের মধ্য দিয়ে প্রকৃত অর্থে এখানে একটি সুন্দর সমাজের আকুতি প্রকাশ পেয়েছে। এ আকুতিতে সাড়া দিয়ে মানুষ যদি হিংসা-বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, কুৎসা-সমালোচনা তথা সকল অসূরতা বাদ দিয়ে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ, নীতি-নৈতিকতা, আদর্শ, উদারতা, মহত্ত্ব, ঐক্য ও বন্ধন, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রভৃতি সুকুমার প্রবৃত্তির মাধ্যমে একটি সুন্দর, শ্বাশত, সম্প্রীতি ও সৌহার্দপূর্ণ এবং শীতল সমাজ রচনা করতে সক্ষম হয় তবে তা হবে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এক বিরাট আশীর্বাদ।
একটা প্রবাদ আছে, ”বি আ রোমান হোয়েন ইউ আর ইন রোম”, মানে হচ্ছে তুমি যখন রোমে অবস্থান কর, তোমারও উচিত একজন রোমান হয়ে ওঠা। অর্থাৎ যে দেশে আমার অবস্থান ও বাসস্থান, সেই দেশের আইনকানুন, জাতীয় চেতনা, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত এমনকি রাজনীতি, সমাজের রীতিনীতি, প্রথা, মূল্যবোধ ধারণ করা দরকার, কিন্তু অবশ্যই স্বদেশ-চেতনা ও জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা বিসর্জন দিয়ে নয়। কারণ স্বদেশ আমাকে জন্ম দিয়েছে লালন করেছে, কিন্তু প্রবাস আমাকে দিয়েছে জীবন ও জীবীকার সন্ধান।
যে দেশে আমার বসবাস, আমি যদি সেই দেশেরই একজন হয়ে উঠি, তাহলে আমাদের অনেক উচ্চতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। সে জন্য অদক্ষ শ্রমিক থেকে শুরু করে ছাত্র, শিক্ষিত সবাইকেই গন্তব্য দেশের ও সমাজের আইনকানুন, রীতিনীতি, প্রথা, মূল্যবোধ ইত্যাদি সম্পর্কে ধরনা নিয়ে সে মোতাবেক মেনে চলা বাঞ্ছনীয়। যেখানে-সেখানে ময়লা না ফেলা, প্রকাশ্যে থুতু না ফেলা, নিচু স্বরে কথা বলা, বয়স্কদের আসন ছেড়ে দেয়া, অন্যকে পথ ছেড়ে দরজা টেনে ধরা, আড়ালে গিয়ে নাক পরিষ্কার করা, পেপার ন্যাপকিনে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেওয়া ইত্যাদি সব ধরনের সৌজন্যবোধের শিক্ষা অর্জন ও পালন করা অবশ্য কর্তব্য। প্রত্যেক প্রবাসী তার নিজ দেশের জন্য এক একজন মুখপাত্র। তার কৃতকর্মই প্রতিফলিত হবে গন্তব্য দেশ ও মানুষের মনে, ভালো হলে ভালো আর খারাপ হলে খারাপ। সুতরাং প্রবাস রাষ্ট্রে নিজ দেশ ও জাতির সুনাম বর্ধনে ও তুলে ধরতে সবারই দায়বদ্ধতা থাকা দরকার। তাহলে বিদেশে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি পাবে, যার সুফল হবে সুদূরপ্রসারী।
ব্যবহার শুধু বংশেরই নয় দেশের পরিচয়ও বহন করে
পরিবার পরিজন, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী ও অজস্র স্মৃতি পেছনে ফেলে কেন আমরা মাতৃভূমি ছেড়ে কেন প্রবাসভূমে পড়ে আছি? কারণ তো অবশ্যই আছে, কারণ আমি যা চাই অথবা যে জিনিস আমার প্রয়োজন, যা আমার নিজ মাতৃভূমি আমাকে প্রদান করতে অপারগ বা অসমর্থ সে চাওয়া এবং জিনিসগুলো প্রবাস দেশটি আমাকে দিচ্ছে বা দিতে সক্ষম। সে কারণেই শত কিছু বিসর্জন দিয়ে হলে প্রবাসে পাড়ি জমিয়ে পড়ে থাকা। নিক্তির পাল্লায় মাপলে প্রবাস দেশটি মাতৃভূমি থেকে একটু হলেও বেশি ভারি বিধায়ই আমরা প্রবাসে থাকতে আগ্রহী।
সুতরাং যে প্রবাস আমাকে আমার মাতৃভূমির থেকে বেশি সুবিধা প্রদান করতেছে, যে প্রবাসের কল্যাণে শুধু একক প্রবাসী ব্যক্তিটিই নন তার সাথে জড়িত অনেকেই সুবিধা পাচ্ছেন, তাহলে সে দেশকে নিজের দেশ মনে করে থাকাটাও আমার জন্য অবশ্য কর্তব্য। প্রবাস দেশটিকেও আমার দেয়ার অনেক কিছু রয়েছে। সে দেশের নিয়ম কানুন মানা, দেশের জনগণকে শ্রদ্ধার চোখে দেখা, কোন অপ্রীতিকর কিছু না করা, সঠিক ট্যাক্স প্রদান করা, অনৈতিকভাবে সরকারি সুবিধা ভোগ না করা, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সুবিধা আদায় না করা, সে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে হেয় প্রতিপন্ন না করা ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন থাকা হচ্ছে একজন সুনাগরিকের বৈশিষ্ট্য। দেশ ও দেশের নাগরিক একে অন্যের পরিপূরক। দেশ যেমন আমাকে সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে, তেমনি দেশের জন্যও আমাদের অবদান থাকা উচিত। অন্যথায় সেদেশের সুবিধাভোগী স্বার্থপরের নামান্তর বলে নিজেকে গণ্য করা হবে।
প্রবাসে আমরা যেখানেই যাই, যা কিছুই করি, সর্বত্র আমরা আমাদের পদচিহ্ন রেখে আসেই। আমি আমার কর্মস্থলে আমি যদি ভালো কাজ করি, সততার সাথে দায়িত্ব পালন করি তাহলে সে কোম্পানিতে আমি আমার দেশের সুনাম রেখে আসতেছি। পরবর্তীতে ঐ কোম্পানি আমার দেশের কোন কর্মী নিয়োগ করতে দ্বিধা করবে না। আমরা প্রতিনিয়ত দোকানপাট, হাসপাতাল, স্কুল, খেলার মাঠ ইত্যাদি স্থানে গমন করি। সর্বত্র আমরা যেন আমাদের ভালো দিকটা রেখে আসি। রাস্তায় চলার পথে, পদব্রজে কিংবা গাড়িতে, পাবলিক যানে কিংবা পাবলিক স্থানে আমাদের কথায়, চলনে, কর্মে কেউ যেন বিরক্ত, মনঃক্ষুণ্ণ কিংবা কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ম্যাজিক শব্দ স্মরণ রাখুন
প্রয়োজনে বিদেশগামী সকল দক্ষ-অদক্ষ, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ছাত্র-কর্মজীবী, পর্যটক সবাইকেই গন্তব্য দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সৌজন্যতাবোধ, নৈতিকতা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যারা প্রবাসে অবস্থানরত, স্থানীয় কমিউনিটি দ্বারা কিংবা স্থানীয় হাই কমিশনের উদ্যোগে প্রশিক্ষনশালা ঘটন করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি কমিউনিটি বর্ধিত হচ্ছে। জনশক্তিকে রপ্তানি করার পথ যাতে আরও বিস্তৃত হয় সে জন্য আগে দেশের সুনাম বর্ধন জরুরি।
প্রবাসে ক্ষণিকের জন্য থাকি আর স্থায়ীভাবে থাকি, সর্বাবস্থায় আমাদেরকে সেদেশে সুনাগরিকের মত থাকা বাঞ্ছনীয়।
সংস্কৃতে একটি কথা আছে ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী’, অর্থাৎ ”জননী ও জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ”। জন্মভূমি অবশ্যই আমাদের প্রিয়। কিন্তু যে দেশ আমাদেরকে জীবন ও জীবিকা প্রদান করে, প্রদান করে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা সে দেশের প্রতিও আমাদের ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা কোন অংশেই কম থাকা উচিত নয়।
”আমি দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে ভালোবাসি’’। রবীন্দ্রনাথের সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও বলতে পারি, ”বিশ্বের দরবারে দাঁড়িয়ে আমি দেশকে ভালবাসি’’। তারমানে নিজ দেশকে যেমন ভালোবাসি, আমি বিশ্বকেও তেমনি ভালোবাসব।
কিছুদিন আগে আবাই আয়োজিত বৃহৎ পরিসরে সফলভাবে সম্পন্ন অভিষেক অনুষ্ঠানকে ঘিরে বেশ কিছু আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম নেয়। সে সব আলোচনা ও সমালোচনা মানুষের মনে বিভ্রান্তির উদ্রেক ঘটাতে এবং আবাইকে ভুল যেন কেউ না বোঝে তার প্রেক্ষিতে আবাই এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার তাঁর নিজস্ব ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে বিবৃতি প্রদান করেন।
জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে বিবৃতিটি হুবহু তুলে ধরা হল।
লিমেরিক, আয়ারল্যান্ড থেকে ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৩
শ্রদ্ধেয় আয়ারল্যান্ড প্রবাসী ভাই ও বোনেরা,
বিনম্র চিত্তে আমাদের সালাম গ্রহণ করুন। গত ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ রবিবার অল বাংলাদেশি এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সকল কাউন্টি থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে সফলতা প্রদান করার জন্য আপনাদের জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন এবং কৃতজ্ঞতা। এই অনুষ্ঠানকে সফলতা প্রদানের জন্য যারা আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন, তাদের এই অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তাদের প্রতিও আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। বাংলাদেশের মূল ধারা এবং স্থানীয় মিডিয়া কর্মীদের প্রতিও রইলো অভিবাদন ও কৃতজ্ঞতা। অনুষ্ঠানের সফল প্রচারে তাদের অংশগ্রহণ ও অনুষ্ঠানকে উচ্চতা দিয়েছে। যারা এই অনুষ্ঠান স্থলে বিভিন্ন স্টল দিয়েছিলেন, তাদের প্রতিও রইলো ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। আবাই কার্যকারী কমিটির সকল সদস্যবৃন্দ, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে একটি সফল অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে এবং কমিটির বাইরে থেকেও যারা আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আশা করি আগামী দিনগুলোতে আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং আবাই একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে আয়ারল্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত হবে।
প্রথমেই আমি এই অনুষ্ঠানের সফলতার দিকগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই।
প্রথমত: এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আয়ারল্যান্ড সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একজন সিনেটর, এরা দুজনই বাংলাদেশ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারনা নিয়ে গিয়েছেন এবং উনারা দুইজনই প্রবাসে আমাদের সমস্যাগুলো জেনেছেন এবং সার্বিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন। মন্ত্রী তার বক্তৃতায় এক পর্য্যায়ে প্রতিবছর এক হাজার ওয়ার্ক পারমিট প্রদানের ঘোষণা দেন এবং এদের ভিসা প্রাপ্তিকে সহজ করার অঙ্গীকার করেন।
দ্বিতীয় যে ইতিবাচক দিক ছিল তা হচ্ছে আমাদের কমিউনিটি সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, এই অংশগ্রহণ ছিল ইতিবাচক, যা দেখে মন্ত্রী এবং সিনেটর উভয়েই আমাদের কমিউনিটি সম্পর্কে ইতিবাচক ধারনা নিয়ে গিয়েছেন। তৃতীয় সফলতা হিসেবে যা ছিল তা হচ্ছে সেই অনুষ্ঠানে আমরা একটি উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণা করতে পেরেছি। আমরা আশা করি এই উপদেষ্টা পরিষদ আগামী দিনে আমাদের পথ চলায় পথ প্রদর্শক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারবেন। চতুর্থ যে সফলতা ছিল সেটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা বলেই আমরা মনে করি। আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ কমিউনিটির কোন অনুষ্ঠানে এই প্রথমবারের মত বাংলাদেশের দুজন স্বনামধন্য শিল্পী সংগীত পরিবেশন করেছেন, আমরা মনে করি দর্শক এবং শ্রোতা হিসেবে আমাদের স্থানীয় শিল্পীসহ বাংলাদেশী শিল্পীদের মনোজ্ঞ পরিবেশন সকলেই প্রাণভরে উপভোগ করেছেন। আরেকটি বিষয় বলা প্রয়োজন মনে করছি, সেটা হচ্ছে র্যাফল ড্র। র্যাফল ড্র’র পুরষ্কার প্রদানে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা যে এই ড্র’র মাধ্যমে আবাইয়ের কিছুটা অর্থনৈতিক সহায়তা অর্জিত হয়েছে।
আমি আরও কিছু কথা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন মনে করছি। উক্ত অনুষ্ঠানকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু মন্তব্য কিছু বিভ্রান্তির উদ্রেক করতে পারে। সে জন্য আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী ভাই ও বোনদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কিছু মন্তব্যের ভিত্তিতে আবাইয়ের পক্ষ থেকে আপনাদের জ্ঞাতার্থে কিছু ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হলঃ
১। লোগো বিভ্রাটঃ২০১১ সাল থেকে যে লোগো আবাই কর্তৃক ব্যাবহৃত হয়ে আসছিলো, আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছি সেই লোগোতে কোন ভুল ছিল বলে আমরা পাইনি। এমতাবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং কখনো কখনো কারো অজান্তেই একটি ভুল লোগোকে আমাদের অফিসিয়াল লোগো হিসাবে বিবেচনা করে কেউ কেউ ব্যাবহার করেছেন। কিন্তু আমরা কখনোই অফিসিয়াল লোগো হিসেবে ভুল লোগোটিকে ব্যবহার করিনি। সম্প্রতি আবাই এর অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবাই কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দ প্রত্যুষে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন এবং ভুলটি দৃষ্টিতে আসে এবং তৎক্ষণাৎ আমাদের প্রেরিত লোগো সম্বলিত ডিজাইনটি সাইনটোলজি কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হয় এবং ভুলের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তারা দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভুলের কারণ এবং অধিকতর তদন্তের জন্য তারা আমাদের কাছে সময় চান। সময় স্বল্পতার জন্য ঐ মহুর্তে লোগোটি সংশোধন করা সম্ভবপর হয়নি। ভুলটি অনিচ্ছাকৃত সত্ত্বেও আবাই এর দায় এড়াতে পারে না। ইতিমধ্যে আবাই এর সম্মানিত সভাপতি ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার এব্যাপারে সামাজিক মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। দ্বিতীয়বারের মতো আবাই এর পক্ষ থেকে সকলের কাছে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।
২। বাংলাদেশ হাই কমিশনকে আমন্ত্রণ জানানো প্রেক্ষিতেঃগত ৫ই জুন আবাই এর পক্ষ থেকে মান্যবর বাংলাদেশ হাই কমিশনার মহোদয়কে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয় এবং হাইকমিশন থেকে ৭ দিনের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে আমাদেরকে জানানো হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুই মাস বিগত হওয়ার পরেও আমরা কোন উত্তর না পেয়ে পুনরায় গত ২৫ শে আগস্ট দ্বিতীয় বারের মত নিমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয় এবং টেলিফোনে কথা বলার সময় প্রার্থনা করা হয়। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, আমরা তাদের থেকে কোন ইতিবাচক উত্তর শেষ মুহুর্ত পর্য্যন্ত পাইনি। সুতরাং হাইকমিশনারের উপস্থিতি প্রত্যাশিত ছিল কিন্তু তা প্রতিফলিত হয় নাই। বাংলাদেশ হাই কমিশনারকে বিশেষ অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে আবাই তার দায়িত্ব ঠিকই ই পালন করেছে।
৩। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বঃ আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী রাজনৈতিক দলের, অর্থাৎ আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি থেকে দুইজন করে (আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও সদস্য সচিব এবং বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) আনুষ্ঠানিকভাবে পত্রের মাধ্যমে নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল এবং তাদের দলীয় সকল নেতাকর্মীদের দাওয়াত নিশ্চিত করা হয়েছিল উক্ত নিমন্ত্রণ পত্রের মাধ্যমে। আবাই একটি অরাজনৈতিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং আবাইকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।
৪। নিমন্ত্রণঃ আয়ারল্যান্ডের প্রতিটি কাউন্টি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আনুষ্ঠানিকভাবে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছে এবং উক্ত পত্রের মাধ্যমে তাদের কমিটির সকল সদস্যকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত অন্যান্য সকল বাংলাদেশি অর্গানাইজেশনকে অফিসিয়ালি নিমন্ত্রণপত্র দেয়া হয়েছে। আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত সকল বাংলাদেশিদেরকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিমন্ত্রণ অব্যাহত ছিল। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্য্যায়ের অতিথিদের জন্য সুনির্দিষ্ট বসার আসনের ব্যাবস্থ্যাও রাখা হয়েছিলো।
৫। উপস্থাপক, উপস্থাপিকা ও শিল্পীঃঅনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় উপস্থাপক এবং উপস্থাপিকা সংযুক্ত থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। শেষ মুহূর্তে বিশেষ কারণ বশত: নির্ধারিত উপস্থাপিকা উপস্থিত হতে পারেন নাই। এছাড়া অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিও একজন নারী ছিলেন। অনুষ্ঠানে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ ও ক্রেস্ট বিতরণে আবাই এর দুই নারী নেত্রী দায়িত্বে ছিলেন। অনুষ্ঠানে চারজন শিল্পীর মধ্যে অনুষ্ঠানে দুইজন গায়ক এবং দুইজন গায়িকা গান পরিবেশন করেন। “আবাইকে” যদি কেউ পুরুষতান্ত্রিক হিসেবে উপস্থাপন করতে চান সেটা কোনভাবেই সঠিক হবে বলে আমরা মনে করিনা। ভবিষ্যতে আমরা “আবাই” এর সকল কর্মকান্ডে মহিলাদের অধিকতর অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে চাই। এমতাবস্থায় আমাদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের সাথে আগ্রহীদের যোগাযোগের অনুরোধ রইলো।
৬| খাবার আয়োজনঃ আবাই এর পক্ষ থেকে একটি গুণগত এ মানসম্মত অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য যে প্রেস্টিজিয়াস স্থানটি নির্ধারিত করা হয়েছিল সেখানে বাহির থেকে কোন খাবার পরিবেশন করার কোন অনুমতি ছিল না। অনুষ্ঠানের স্থলে উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো এবং অগণিত জনগোষ্ঠীর খাবার পরিবেশন ছিল একটি দুরহ ব্যাপার, তবে সাইনটোলজি কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার অভাব ছিল না। দুপুর ১ টা থেকে সন্ধ্যা ৮ টা পর্যন্ত খাবার সরবরাহ ছিল নিরবিচ্ছিন্ন, মাঝে মধ্যে খাবারের ঘাটতি দেখা দিলেও পরক্ষনেই তা পূর্ণ করা হয়েছে। সহস্র মানুষেরও বেশি অনুষ্ঠানে লম্বা লাইন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বিষয়টি যে কারুরই না বোঝার কিছু নয়। তারপরেও যে কোন ধরণের ত্রুটি ও সাময়িক অসুবিধার জন্য আবাই ক্ষমাপ্রার্থী।
৭। উপদেষ্টা কমিটিঃ আবাই কার্যকরী কমিটির সকল সদস্যের স্বাধীন প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে সমগ্র আয়ারল্যান্ড থেকে ১২৬ জন উপদেষ্টার একটি প্রাথমিক তালিকা গ্রহণ করা হয়। সমগ্র আয়ারল্যান্ড থেকে একটি সর্বজন গ্রহনযোগ্য উপদেষ্টা কমিটি গঠন ছিল একটি অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। আমরা আশা করি আপনারা একমত হবেন যে ১২৬ জন সদস্য নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত হতোনা। তাই এই তালিকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ জন সদস্যকে নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয় কার্য্যকরি পরিষদের সদস্যদের মধ্য থেকে গঠিত একটি উপকমিটিকে। এই উপকমিটি কয়েকটি মানদন্ডের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সংখ্যা নির্ধারনে সচেষ্ট ছিলেন, কিন্তু ২৫জনে এই সংখ্যা সীমিত করতে উপকমিটিকে হিমসিম খেতে হয়েছে। আরও কয়েকজন সদস্যকে যুক্ত রাখতে পারলে কার্য্যকরি কমিটির সদস্যরা নিজেদের পরিতৃপ্ত করতে পারতেন। আমরা মনে করি এই সমাজে আরও অনেকেই যোগ্যতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ন। আবাই সমগ্র আয়ারল্যান্ডের একটি সংগঠন হিসাবে এই সংখ্যা পঁচিশের উর্ধে হওয়া উচিৎ বলে অনেকেই মনে করেছেন। এব্যাপারে পুনরায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার দাবী উঠলে সেটা অবশ্যই পুনর্মূল্যায়ন করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। উপদেষ্টা পরিষদের নামের তালিকা প্রকাশে কোন ক্রম ব্যাবহার করা হয়নি, তালিকাটি র্যান্ডম (Random) হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকায় কোন নাম যুক্ত করার জন্য কোন ধরনের সামাজিক চাপ ছিলনা, কেউ কোন লবি করার কোন সুযোগ ছিলনা কিংবা বিত্তের কোন মানদণ্ডও ছিলনা। আমরা দৃঢ়ভাবে আশা করি সামাজিক মাধ্যমে দায়িত্ব জ্ঞানসম্পন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করে নিজেদের সামাজিক মর্য্যাদাকে প্রত্যেকেই অক্ষুণ্ণ রাখতে সচেষ্ট হবেন।
পরিশেষে বলতে চাই অল বাংলাদেশী অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (আবাই) আপনার আমার সকলের সংগঠন। আজ এই সংগঠন পরিচালনায় আমাদের আপনারা নিয়োজিত করেছেন। কোন এক ব্যাক্তির ইচ্ছা আর অনিচ্ছায় এই সংগঠন পরিচালিত হোক সেটা মোটেও কাম্য নয়। আপনাদের সমালোচনা আমাদের জন্য চলার পথে, আলো হিসাবে থাকবে। মনে রাখতে হবে শুধুমাত্র একপেশে সমালোচনা কোনভাবেই আলোকিত পথ দেখাবে না। আমরা যেন কেউ নিজেকে অপরিহার্য্য বলে মনে না করি। ভুল ভ্রান্তিকে সঠিক করে দিয়ে একসাথে আগামী দিনের পথ চলায় আসবে সাফল্য। এই সংগঠন একটি প্রতিনিধিত্ত্বশীল, অরাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন। এই সংগঠন সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য যেভাবে সমান ঠিক একইভাবে সকলের মতামতকে গুরুত্ব প্রদান করা প্রতিনিধিদের দায়িত্ব। আমাদের অনিচ্ছাকৃত ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে, আসুন আমরা আবাইকে একটি কার্যকারী সংগঠন হিসেবে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে প্রতিষ্ঠা করি।
ধন্যবাদান্তে:
আনোয়ারুল হক আনোয়ার
সাধারণ সম্পাদক
অল বাংলাদেশী অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড
আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় সামাজিক সংগঠন অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (আবাই) নতুন উপদেষ্টা কমিটির নাম ঘোষণা করেছে। গত ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ তে ডাবলিনের সাইন্টোলজি সেন্টারে অনুষ্ঠিত আড়ম্বরপূর্ণ অভিষেক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা প্রদান করা হয়।
২৫ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠনের পেছনের যৌক্তিকতা ও কিসের প্রেক্ষিতে অথবা ভিত্তিতে উপদেষ্টাদের বাছাই করা হয় তা জানার জন্য আইরিশ বাংলা টাইমস প্রতিনিধি আবাই এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলে।
সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের ভাষ্যমতে, তাঁরা বেশ কিছু বিষয় মাথায় রেখে উপদেষ্টামণ্ডলী বাছাইয়ের উপর গুরুত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তাঁরা আবাই এর এক্সিকিউটিভ কমিটিকে সমগ্র আয়ারল্যান্ড থেকে নাম প্রস্তাব করার আহ্বান জানান। তন্মদ্ধ থেকে কমন নাম বাদ দিয়ে ১২৬ জনের একটি তালিকা পাওয়া যায়। আবাই এর সভাপতি জানান, ‘’১২৬ জনই সমাজের গুরুত্বপূর্ণ এবং সন্মানিত ব্যক্তিত্ব, এবং কমিউনিটির বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে জড়িত। কিন্তু ১২৬ জনের সবাইকে নিয়ে তো কমিটি গঠন করা সম্ভব নয়। শুরুতে ২০ জনের কমিটি মাথায় নিয়ে ফিল্টারিং এর কাজ শুরু করি, শেষ পর্যন্ত তা ২৫ জনে উন্নীত হয়’’।
কমিটি গঠনে যে বিষয়গুলাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল, সেগুলো হচ্ছেঃ
– আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি হিসেবে বিভিন্ন কমিউনিটির কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের গর্ব সুনাম যাদের কল্যাণে অটুট থাকে তাঁদেরকে রাখা হয়েছে। যেমন কাউন্সিলর, মেয়র ইত্যাদি। – এমন ব্যক্তি যে সমাজে প্রবীণ, পরিচিত মুখ, সামাজিক কর্মকাণ্ডে অগ্রগণ্য, আবাই এর কর্মকাণ্ডে সর্বদা সহযোগী। – আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন কাউন্টি কমিটির থেকে অন্তত একজন (এক্ষেত্রে সভাপতি)। যেসব কাউন্টিতে একাধিক কমিটি রয়েছে, তন্মদ্ধে পরিচিতি, সিনিয়রিটি, পেশা ইত্যাদি বিবেচনা করে অতিদীর্ঘ কমিটি এড়াতে একজনকেই বাছাই করা হয়েছে। যারা স্বেচ্ছায় কমিটিতে আসতে চান নাই, তাঁদের চাওয়াকে সন্মান প্রদর্শনপূর্বক মর্যাদা দেয়া হয়েছে। ডুপ্লিকেশন এড়াতে একটি কমিটি থেকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও একাধিক ব্যক্তিকে নেয়া সম্ভব হয়নি। – কাউন্টি কমিটি ছাড়াও কাউন্টি ভিত্তিক ব্যক্তিবর্গকে বিবেচনায় আনা হয়েছে। – পেশা, শ্রেণি, লিঙ্গ ইত্যাদির মিশ্রণ রাখা হয়েছে, যেমন কমিটিতে মহিলা রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। বিভিন্ন পেশা যেমনঃ ডাক্তার, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ক্রীড়া সংগঠন (যেমন BSAI) ইত্যাদি পেশার উপদেষ্টা রাখা হয়েছে। – বাংলাদেশি রাজনৈতিক ইনফ্লুয়েন্স আবাইতে রাখা হয়নি এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতেও উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়নি। – উপদেষ্টা কমিটি গঠনে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি কমিউনিটি ও আবাই এর স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কারো ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ কিংবা মতাদর্শের ভিত্তিতে উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়নি।
আবাই এর সাধারণ সম্পাদক জানান, ‘’১২৬ জন এর তালিকা থেকে ১০০ জনকে বাদ দেয়া সহজসাধ্য বিষয় ছিলনা। আমরা জানি অনেকেই উপদেষ্টা কমিটিতে থাকার সব রকম যোগ্যতাই রাখেন কিন্তু আমরা মনে করি কমিটির মান বজায় রাখার স্বার্থে এর থেকে বড় কমিটি করা ঠিক হবেনা’’।
সভাপতি বলেন, ‘’আমি জানি আমাদের অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হবে, আরও অনেকেই কমিটিতে রাখা হয় নাই কেন, এই প্রশ্ন অবশ্যই যৌক্তিক, কিন্তু ২৫ জনের এই ফিল্টারিং করতে আমাদের অনেক চাপের মধ্যে থাকতে হয়েছে। তারপরেও আমি মনে করি এটা একটা ব্যালেন্সিং কমিটি হয়েছে’’।
আবাই এ ও জানিয়েছে যে, বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা হবার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের সিদ্ধান্তকে আবাই সন্মান জানায়, তবে তাঁরা উপদেষ্টা কমিটিতে আসলে আবাই সমৃদ্ধ হত বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে অনেকে হয়ত না জেনেই আবাই এর সমালোচনা করতেছেন যে কেন উক্ত ব্যক্তিদের নাম নেই। সমাজের যে কোন ভালো কাজে, যে কারো সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে আবাই দণ্ডায়মান, জানিয়েছেন উভয় আবাই এর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক।
কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা বলে কিছু নেই। কমিটিতে সবার অবস্থান সমান রাখা হয়েছে। ঘোষিত কমিটির তালিকা নিম্নে দেয়া হলঃ
(১) তারেক সালাহ উদ্দিন
(২) আজাদ তালুকদার
(৩) কাজি মোশ্তাক আহমেদ ইমন
(৪) সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
(৫) জহির উদ্দিন
(৬) জসিম উদ্দিন দেওয়ান
(৭) ইকবাল মাহমুদ
(৮) রবিউল আলম
(৯) ডাঃ মুসাব্বির হুসেইন
(১০) মামুন হাসান
(১১) ঝিনুক আলী
(১২) শামিম কবির
(১৩) আবদুল মুহিত
(১৪) ডাঃ মুহাম্মদ রফিক উল্লাহ
(১৫) শামসুল হক
(১৬) জহিরুল ইসলাম জহির
(১৭) সাইফুল ইসলাম
(১৮) হামিদুল নাসির
(১৯) ইকবাল আহমেদ লিটন
(২০) হাজী শাহ তাজুল ইসলাম
(২১) মিজানুর রহমান জাকির
(২২) চুন্নু মাতব্বর
(২৩) আক্তার হুসেইন
(২৪) সাইদুর রহমান (বীর মুক্তিযোদ্ধা)
(২৫) ডঃ ইসমেত জাকিয়া রহমান
আলোর আভায় উচ্ছরিত, সুরের মূর্ছনায় মুখরিত, বাংলাদেশিদের পদধূলিতে পূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের একমাত্র কেন্দ্রীয় সংগঠন অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (আবাই)। গত ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ তে ডাবলিনের ১০০০ মানুষের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন চার্চ অফ সাইন্টলজি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
ঘড়ির কাঁটা যখন ১ ঘটিকা তখন থেকেই মানুষের পদচারনায় মুখর হতে শুরু করে মনোরম পরিবেশের অত্যাধুনিক চার্চ অফ সাইন্টলজি মিলনায়তনটি। শুধু অনুষ্ঠানই নয়, মিলনায়তনের বাহিরের পরিবেশ, ভেতরে খাবারের সুব্যবস্থা, বাচ্চাদের বিচরণের জন্য অপুরন্ত খোলা জায়গা কিছুরই কমতি ছিল না। দুপুর ১ ঘটিকা থেকে সন্ধ্যা ৮ ঘটিকা পর্যন্ত খাবার সংগ্রহ অব্যাহত ছিল। অডিটোরিয়ামটি ছিল অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ও বিলাস বহুল আসনব্যবস্থায় সজ্জিত।
অনুষ্ঠানটি তিনটি পর্বে বিভক্ত ছিল। আমন্ত্রিত প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ পদার্পণের পর পরই শুরু হয় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জনাব আরিফ ভুঁইয়া আমন্ত্রিত অতিথদেরকে আসন গ্রহণ করার আহ্বান জানান ও আবাই এর দুই মহিলা সম্পাদিকা ও সহ সম্পাদিকা মোসাম্মৎ শম্পা লিলি ও শিরিন আক্তার অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এরপর বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান উপভোগে মত্ত আগত অথিতিগন
আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ছিলেন বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বিষয়ক স্টেট মিনিস্টার Neale Richmond, সিনেটর Catherine Ardagh, লিমেরিকের সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলর এবং বর্তমান সিটি মেয়র আজাদ তালুকদার ও ডাবলিন স্যান্ডিফোর্ড ও গ্লেনকুলেন এর কাউন্সিলর কাজী মোশ্তাক আহমেদ ইমন।
শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন আবাই এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার। তিনি আবাইকে সহযোগিতা ও সাথে থাকার জন্য সকল স্তরের কমিউনিটির ব্যাক্তিবর্গ, মিডিয়া, ব্যবসায়ীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ারের শুভেচ্ছা বক্তব্যসভাপতির বক্তব্য
এরপর আবাই এর সকল সদস্যদের ক্রেস্ট প্রদান করে সন্মানিত করা হয়। ক্রেস্ট প্রদান করেন মিনিস্টার Neale Richmond.
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি মিডিয়ার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ টি মিডিয়াকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। মিডিয়াকে ক্রেস্ট প্রদান করেন সিনেটর Catherine Ardagh.
ক্রেস্ট সংগ্রহ করেন আইরিশ বাংলা টাইমস টিম
আবাই এর সদস্যদের ক্রেস্ট বিতরণ শেষে বক্তব্য রাখেন আবাই এর প্রেসিডেন্ট ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার। বক্তব্যকালে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও আবাই এর বিভিন্ন বিষয় সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন। তাঁর বক্তব্য শেষে তিনি উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেন। তিনি আরও ক্রেস্ট প্রদান করে সন্মানিত করেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শামসুল হক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ কে।
আবাই এর সদস্যগন একসাথে
এরপর শুরু হয় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব। দ্বিতীয় পর্বের প্রারম্ভে আবাই এর সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার আবাই এর নতুন ২৫ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টামণ্ডলীর নাম ঘোষণা করেন (তালিকা রিপোর্টের শেষে দেয়া হল)। নতুন উপদেষ্টামণ্ডলীর পক্ষ থেকে জনাব তারেক সালাউদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
নবগঠিত উপদেষ্টা মণ্ডলী
এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন কাজী মোশ্তাক আহমেদ ইমন, আজাদ তালুকদার, Catherine Ardagh ও Neale Richmond. মিনিস্টার ও সিনেটর উভয়ই বাংলাদেশের সাথে আয়ারল্যান্ডের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বর্ধনে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সহায়তার কথা ব্যাক্ত করেন। উভয় অতিথিই অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংশা করেন। Neale Richmond এর বক্তব্যের পরপরই অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের সমাপ্তি ঘটে।
দর্শক সারির একাংশ
অনুষ্ঠানের ৩য় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র। তৃতীয় পর্ব শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বিরতি দেয়া হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে উপস্থিত দর্শকদের বিমোহিত করে রাখেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী বেবি নাজনীন, বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় তরুণ কণ্ঠশিল্পী কামরুজ্জামান রাব্বি। এছাড়াও সংগীত পরিবেশন করেন আয়ারল্যান্ডের অধিবাসী সবার প্রিয় আভি আজিতাভ রয় এবং চিত্র ও কণ্ঠশিল্পী জেবুন নাহার। ৩ ঘণ্টাব্যাপী চলতে থাকা এই সঙ্গীতানুষ্ঠান দর্শকগণ মন্ত্রমুগ্ধের মত উপভোগ করেন।
সংক্ষিপ্ত নামাজের বিরতির পর র্যাফেল ড্র এর মাধ্যমে শেষ হয় জমকালো এই অনুষ্ঠান। F&F ট্রাভেলের সৌজন্যে র্যাফেল ড্র থাকে তিনটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ টিকেট।
অনুষ্ঠানটি সাফল্যমণ্ডিত করতে সভাপতি ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারের নির্দেশনায় সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল কঠোর পরিশ্রম করেন। উনাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে আবাই এর সকল সদস্য যার যার অবস্থা থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করেন।
নবগঠিত উপদেষ্টা পরিষদ
1. Tariq Salahuddin
2. Azad Talukder
3. Kazi Mostaque Ahmed
4. Shajedul Choudhury Rubel
5. Jahir Uddin
6. Jashim Uddin Dewan
7. Iqbal Mahmud
8. Rabiul Alam
9. Dr. Mushabbir Hussein
10. Mamun Hasan
11. Jhinuk Ali
12. Shamim Kabir
13. Abdul Muhit
14. Dr. Muhammed Rafiq Ullah
15. Shamsul Haque
16. Johirul Islam
17. Saiful Islam
18. Hamidul Nasir
19. Iqbal Ahmed Liton
20. Haji Shah Tajul Islam
21. Mizanur Rahman Jakir
22. Chunnu Matber
23. Akter Hussein
24. Saidur Rahman
25. Dr. Ismet Jakia Rahman
অনুষ্ঠানটিতে স্পন্সর করে যেসব প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলঃ
– F&F Travel
– RN Group – BD Seafood, Chaul Supper Rice
– JR Group: The West Wing Restaurant & Plate Restaurant
– Seda College, Student campus, eBasket, Amharc Tech
– Indie Spice Grill
– Bambo Thai & Indian Reaurant
– Inver
– Istanbul Kebab Limerick
– Recruit World
– Cafe Goa
– Peppers Indian dining & Planet Spice
– Lily’s Fashion
– MM accountants & businesses consultants ltd/ World of spice
– Akber Group
– Shapla Indian restaurant Carlow
– Needs
– Subway Kilkenny & carlow
– Vujon cafe
– Ali Baba
– Sarkar & O’Sullivans
– Naas Kebab & Cafe
– Eastern balti house
– Apna Indian kebab restaurant
– New Moon restaurant and takeaway
– Fusion restaurant
– Londis
অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর অভিষেক অনুষ্ঠান শেষে অনেক রাতে বাড়ি ফিরলাম। অবশ্রান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে উঠে দেখি একি কাণ্ড! লোগো নিয়ে ঘটে গেল এলাহি কাণ্ড। চোখ কচলে ভালো করে দেখলাম, নাহ! এই ভুল হবার তো কথা নয়। আবাই তো তাদের সঠিক লোগোটাই ব্যবহার করে আসতেছিল। এমন কি করে হল?
পরে দেখলাম যে আবাই এর প্রিন্ট করা ব্যানারটির লোগো আইভরি কোস্ট এর পতাকার আদলে তৈরি। তবে তার মানে এই না যে এই লোগোই আবাই সর্বস্থলে ব্যবহার করেছে। লক্ষ্য করে দেখবেন যে, আবাই এর অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত যত ব্যানার/পোস্টার করা হয়েছে তাতে সঠিক লোগোটিই ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি অনুষ্ঠান চলাকালে ডিজিটাল স্ক্রিনে যে প্রেজেন্টেশনগুলা ছিল সবগুলোতেই সঠিক লোগোটিই ব্যবহৃত ছিল। এছাড়াও আবাই এর আরেকটি লাল সবুজের লোগোতে যে আইরিশ পতাকা ব্যবহৃত তাতেও সঠিক পতাকাটিই বলবৎ রয়েছে।
আবাই এর অনুষ্ঠানের একটি প্রচারনামূলক পোস্টার। লোগোটিতে সঠিক পতাকা ব্যবহৃত হয়েছে।অনুষ্ঠান চলাকালে যে প্রেজেন্টেশন স্লাইড ছিল তাতেও সঠিক লোগোটিই ছিল।
সমস্যা হয়েছে আবাই একাধিক ডিজাইনার ব্যবহার করেছে এবং কারো কাছে হয়ত পুরনো লোগোটিই রয়েছে অথবা উভয় ভুল এবং সঠিক লোগোটিই রয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে লোগো স্থানান্তরের মত মারাত্মক ভুলের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ভুল লোগো দ্বারা প্রকাশিত কোন খবর/ব্যানার/পোস্টার এর দায়ভার আবাই এর উপর বর্তায় না।
শুধুমাত্র এই প্রিন্টেড পোস্টারের লোগোটিই ভুল ছিল
তবে এটা ঠিক যে ভুল ডিজাইনার দ্বারা হোক কিংবা আবাই এর ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃত ভুল, যেভাবেই হোক না কেন এর দায়ভার আবাই এর উপরই বর্তায়। আবাইকে ভুল লোগো সম্বলিত ব্যানারটি যাচাই করে নেয়া উচিত ছিল। হয়ত তা তারা করেনি অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে সময় স্বল্পতা অথবা অনুষ্ঠান নিয়ে প্রচণ্ড চাপের কারণে। আবার এমনও হতে পারে সময় স্বল্পতার কারণে আরেকটি ব্যানার প্রিন্ট করার সময় তাদের হাতে ছিলনা। অগত্যা ভুল লোগো সম্বলিত ব্যানারটিই অনুষ্ঠানে ব্যবহার করেছে। কারণ যা ই হোক না কেন। ভুল তো ভুলই।
এই লোগোটির পতাকাও সঠিক
আপাতদৃষ্টিতে ভুলটি নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনিচ্ছাকৃত। অবশ্যই কেউ ইচ্ছাকৃত এমন ভুল করবে না, যার ফলশ্রুতিতে তাদের নিজেদেরই মানহানি ঘটে। ভবিষ্যতে আবাই হয়ত এমন সূক্ষ্ম বিষয়ে সতর্ক থাকবে।
আবাই এর উচিত ভালো ডিজাইনার দ্বারা একটি অফিশিয়াল লোগো তৈরি করে এবং রেজিস্ট্রেশন করে নেয়া। একটি অফিশিয়াল লোগো না থাকাতে অনেকেই অনলাইন সার্স করে যে যেমন লোগো পাচ্ছে ব্যবহার করে নিচ্ছে। আবাই এর বর্তমান লোগোগুলি মোটেও পরিপূর্ণ নয় এবং ডিজাইনারদের জন্য ব্যবহার উন্মুক্ত নয়।
অনুষ্ঠান চলাকালে ডিজিটাল ব্যানারের ছবিটি লক্ষ্য করুন, তাতেও সঠিক পতাকা সম্বলিত লোগো। ছবিটি প্রতীকী এবং উদাহরণস্বরূপ ব্যবহার করা হয়েছে এখানে।
পতাকা বিভ্রাট
পতাকা নিয়ে বিভ্রাট ও বিভ্রান্তি নতুন কিছু নয়। পৃথিবীর বহু দেশের পতাকাই দেখতে একই। এমনও কিছু পতাকা আছে যে দুইটা পতাকা পাশাপাশি আপনার চোখের সামনে মেলে ধরলেও বুঝতে পারবেন না যে দুইটা দুই দেশের পতাকা। এমতাবস্থায় পতাকা ব্যবহারে এমন সূক্ষ্ম ভুল হওয়াটা খুবই সম্ভব। নিচে এমন কিছু উদাহরণ দেখানো হল যা দেখে অবাক হবেনঃ
ইন্দোনেশিয়া এবং মোনাকো পতাকাচাদ এবং রোমানিয়া পতাকালুক্সেমবার্গ এবং নেদারল্যান্ডের পতাকাসেনেগাল ও মালি
ভুল শিকার এবং ক্ষমা প্রার্থনা
ভুল হতেই পারে। ভুল শিকার করে ক্ষমা প্রার্থনা মহৎ গুন। সেই মহৎ গুনের পরিচয় দিয়েছেন, আবাই প্রেসিডেন্ট জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক পেইজ থেকে ভুল শিকার ও ক্ষমা চেয়ে এইটই বিবৃতি প্রদান করেন।
ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারের বিবৃতি
শেষ কথাঃ
যাই হোক, কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। অনেক ভুল হয়ত অনেকের চক্ষুগোচর হয় না। তবে ভুল কারো দৃষ্টিগোচর হলে তা ধরিয়ে দেয়াই শ্রেয়। এতে করে ভুল শোধরানোর সুযোগ থাকে। তা না হলে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।
আবাই যেহেতু একটি দায়িত্বশীল জায়গায় আছে, সেক্ষেত্রে তাদেরেকে সমালোচনা করার অধিকারও মানুষের রয়েছে। সমালোচনা মানে বিরোধিতা নয়। সমালোচনা হচ্ছে দায়িত্বরতদের সঠিক পথে পরিচালিত করার হাতিয়ার। অবশ্যই সমালোচকদের সমালোচনা করা প্রয়োজন, তবে তা হতে হবে ঘটনমূলক।
তবে সমালোচনা হতে হবে ভালোর উদ্দেশ্যে। কাউকে হেনস্থা বা অপমানের উদ্দেশ্যে নয়। এমন নয় যে একটা ইস্যু পেলাম আর চেপে বসলাম। কিছু ভুল খুব জল ঘোলা না করে সমাধান যোগ্য। ভুলকারীকে যদি সরাসরি তার ভুলের ব্যপারে অবহিত করা হয় তাহলে খুব সহজেই হয়ত বিষয়টা সমাধান হয়ে যায় এবং ভবিষ্যতের জন্য সাবধান হয়ে যায়।
কিছুদিন আগে আমার একটি পোস্টে কিছু বানান ভুল ছিল, একজন আমাকে ব্যক্তিগত মেসেজ দিয়ে অবহিত করেছেন। আমাকে হেনস্তা করার উদ্দেশ্য থাকলে, তিনি তা আমার পোস্টের কমেন্টে গিয়ে করতেন।
এরপর একটা অনুষ্ঠানের ব্যপারে এক ভাই বললেন আপনাদের অনুষ্ঠানে এই সংযোজনটা না করলে ভালো দেখাবে না। পরে আমি দেখলাম ঠিকই তো, এটা তো আমাদের মাথায়ই ছিলনা। কিন্তু উনার হেনস্থার উদ্দেশ্য থাকলে উনি আগে বিষয়টি অবহিত না করে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে ওই বিষয় নিয়ে সমালোচনায় মত্ত হতে পারতেন। উদাহরণগুলো ছোট উদাহরণ হলেও সর্বক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য বলে মনে করি।
যা হবার হয়েছে, আবাই এর অনুষ্ঠানও সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। পেছনে গিয়ে তা আর পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে শুধরানোর পথ খোলা অবশ্যই রয়েছে।
পুনশ্চঃ এই রিপোর্টটি একান্তই রিপোর্টারের নিজস্ব মতামত। আবাই এর কোন অফিশিয়াল স্টেটমেন্ট নয়।
উদীয়মান অর্থনীতির পাঁচ দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিন আফ্রিকা নিয়ে গঠিত হয় ব্রিকস (BRICS)।
২০০৯ সালে প্রাথমিকভাবে চারটি দেশ নিয়ে ব্রিক নামে এর যাত্রা শুরু হলেও পরের বছরই দঃ আফ্রিকাকে অন্তরভূক্ত করে উদ্বোক্তাকারী পাঁচটি দেশের নাম অনুসারে ব্রিকসের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও সহযোগিতা নিয়ে কাজ করার মহান ব্রত নিয়ে এই সংস্থাটি গঠিত হয়। বিশ্ব অর্থনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় নবগঠিত ব্রিকস নামক এই সংস্থাটি।
জাতিসংঘ কিংবা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আদলে গঠিত নুতন জোট BRICS অর্থনৈতিক শক্তি অর্জন করে ২০৫০ সাল নাগাদ অনুন্নত কিংবা স্বল্পউন্নত দেশগুলোকে বেশী করে আর্থিক সাহায্য করতে চায় সংস্থাটি। এই লক্ষে NDB নামে একটি ব্যাংক তৈরী করেছে নুতন এই জোট। অতি সম্প্রতি দঃ আফ্রিকার রাজধানীতে সংস্থাটির প্রথম সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।বাংলাদেশ সহ ৫০টি দেশের রাস্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন এই সম্মেলনে।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিকসে সদস্যপদ লাভের জন্য বাংলাদেশ সহ ৪০ টি রাস্ট্র আবেদন করে এর মধ্য থেকে ১৯ টি রাস্ট্রকে বিবেচনায় নিলে ও শেষ পর্যন্ত, ইথ্যুপিয়া সহ ৬ টি রাস্ট্রকে নুতন সদস্য হিসাবে সর্বসম্মতিক্রমে অন্তর্ভূক্ত করে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাক ঢোল পিঠিয়ে রাস্ট্র্রের টাকা খরচ করে সফর সংগীদের নিয়ে ব্রিকসের সম্মেলনে যোগদান করেন।প্রত্যাশা ছিল সদস্য পদ লাভ করবে বাংলাদেশ। সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়টি গেল দুই মাস পূর্বে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মুমিন ব্রিকসের সদস্য পদ লাভের বিষয়ে নিশ্চিত করে আগাম বলেছিলেন যে, আমরা আগস্ট মাসে ব্রিকসের সদস্য পদ লাভ করতে যাচ্ছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলে ও সত্য যে, ভারতের আপত্তির কারনে বাংলাদেশ সদস্য পদ লাভ করতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষের অবশ্য প্রত্যাশা ছিল দেশটি ব্রিকসের সদস্যপদ লাভ করবে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল আমাদের দেশের চেয়ে কম উন্নত দেশ এবং GDP বাংলাদেশের অর্ধেকের কম থাকা দেশ ইথ্যুপিয়ার মতন স্বল্পউন্নত দেশ ব্রিকসের সদস্যপদ লাভ করতে সক্ষম হলেও বাংলাদেশ পারেনি। চীন সদস্য বাড়াতে আগ্রহী হলেও বিশ্লেষকদের ধারনা, ভারতের দাদাগিরীর কারনে বাংলাদেশ চিটকে পড়তে হয়েছে।
বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক এটা ভারত কৌশলগত কারনে চাইবেনা। এটাই স্বাভাবিক। যদিও স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারত আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে তার চির শত্রু পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দুর্বল করা এবং ভারত তার নিজ স্বার্থে যাতে করে বাংলাদেশকে শোষন করতে পারে। ভারত তাই করেছে। এখন পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশ থেকে কেবল সুবিধা নিয়েছে, বিনিময়ে বাংলাদেশ ন্যায্য হিস্যা পাওয়াত দুরের কথা, নুন্যতম সহযোগিতা পায়নি কোনদিন ভারতের কাছ থেকে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে স্বীকার করেছেন যে, বাংলাদেশ ভারতকে যা দিয়েছে তা ভারত সারাজীবন মনে রাখবে। এর মানে ক্ষমতায় থাকার জন্য ভারতকে দু হাত উজাড করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। প্রধানমন্ত্রীর উল্লেখিত বক্তব্যই প্রমান বহন করে।
তাছাডা এই সম্মেলনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাইলেটারল (দ্বিপক্ষীয়) বৈঠক করেননি। দঃ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রনে নৈশভোজে নরেন্দ্র মোদী শেখ হাসিনার সঙ্গে কোশল বিনিময় করেছেন মাত্র।
ব্রিকসের সদস্য পদ না পেয়ে রাস্ট্রের টাকা খরচ করে ওখানে গিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নাগরিক সম্বর্ধনায় বিএনপির বিরুদ্ধে তার স্বভাবজাত বিষোদগার করতে ভূল করেননি তিনি।
শেষ কথা সদ্য সমাপ্ত ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য হলেও আমাদের প্রত্যাশা গনতন্ত্র পূনঃপ্রতিস্টা এবং জনগনের সরকার প্রতিস্টিত হলে বাংলাদেশ একদিন অবশ্যই ব্রিকসের সদস্যপদ লাভ করতে সক্ষম হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
”তরুণ নামের জয়মুকুট শুধু তাহার – যার শক্তি অপরিমান, গতিবেগ ঝঞ্ঝার ন্যায়, তেজ নির্মেঘ আষাঢ় মধ্যাহ্নে মাতর্ন্ড প্রায়, বিপুল যাহার আশা, ক্লান্তিহীন যাহার উৎসাহ, বিরাট যাহার সাধ, মৃত্যু যাহার মুস্টিতলে’’। – কাজী নজরুল ইসলাম।
তরুণের শক্তিকে জাগ্রত করতে, তরুণের মেধাকে শানিত করতে, তরুণের সম্ভাবনাকে সম্ভব করতে, তরুণের পথের পাথেয় হতে, তরুণের এগিয়ে চলার সাথি হতে, তরুণকে আগামীর কর্ণধার হিসেবে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ কমিউনিটি লিমেরিক পদক্ষেপ নিয়েছে নেক্সট জেনারেশন প্রজেক্ট। তারই অংশ হিসেবে গতকাল ২৭শে আগস্ট রবিবার অনুষ্ঠিত হল লিমেরিক ইয়ুথ ফোরাম অনুষ্ঠান।
নতুন প্রজন্মের একাংশ
স্ব স্ব অবস্থানে সফল ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তরুণদের প্রতি দিক নির্দেশনামূলক অনুষ্ঠানের সফল সম্পন্ন হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে তরুণদেরকে শিক্ষা, ক্যারিয়ার, ধর্ম, রাজনীতি, স্বাস্থ্য, নৈতিকতা ও জীবনমুখী বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ, পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির তরুণ প্রজন্ম দুইটি সত্ত্বা বহন করে চলে, একটি হচ্ছে তার অরিজিনিটি আরেকটি হচ্ছে যে দেশে তার বসবাস। দুই সত্ত্বাকে সমন্বয় করে নতুন প্রজন্মকে নির্দেশনা দেয়া খুব সহজ বিষয় নয়। প্রত্যেক মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির অভিবাবককেই হিমশিম খেতে হয়ে সন্তানদেরকে সঠিক নির্দেশনা প্রদান করতে। এটাও ছিল অনুষ্ঠানের একটা মূল বিষয় কিভাবে তার অরিজিনিটি ও বর্তমান স্থানের সাথে সমন্বয় করতে পারে।
আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও ইনফ্লুয়েন্সার
লিমেরিকে তরুণদের জন্য ”ইয়ুথ ফোরাম” নামে একটি ফোরাম গঠন করে তুলে দেয়া হয় তরুণদের হাতে। কমিউনিটির বিভিন্ন উদ্যোগে, কাজে ও প্রয়োজনে নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করা ও তাদের মধ্যে লিডারশিপ স্কিল গড়ে তোলাই হচ্ছে এই ফোরামের উদ্দেশ্য। উক্ত বাংলাদেশ কমিউনিটি লিমেরিক এর ওয়েবসাইট www.bdlimerick.com এর উন্মোচন করা হয়। ওয়েবসাইটের ডেভলপমেন্টের দায়িত্বও ইয়ুথ ফোরামের সদস্যদের প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে লিভিং চার্টিফিকেট পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তিন্ন ১০ জন লিমেরিকের ছাত্রছাত্রীদেরকে পরিচয় ও শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানটিতে শুধুমাত্র লিমেরিকের ১৫ বছরের উর্ধে তরুণ, একজন করে অভিভাবক এবং সনাম্নিত স্পিকারগন শুধুমাত্র লিমেরিকের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য সফল করতে ১৪ বছরের নিছে বাচ্চাদেরকে না নিয়ে যেতে এবং অবিভাবকদের মধ্যে একজন অবিভাবককে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে আগত তরুণ তরুণী, অবিভাবক ও অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানের ব্যাপারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরণের অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা করেন। শিক্ষণীয় এমন অনুষ্ঠান আগামী প্রজন্মকে সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করতে পারেবে বলে অনেকেই মনে করেন।
উপস্থিত অতিথি
আমন্ত্রিত অতিথি, প্রধান স্পিকার ও গেস্ট স্পিকারদের মধ্যে যারা ছিলেনঃ
প্রফেসর সৈয়দ আনসার তোফায়েল
হেড অফ ডিপার্টমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অফ পিজিক্স, ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরিক
রিসার্সারঃ ম্যাটারিয়ালস এন্ড সার্ফেস পিজিক্স অফ ম্যাগনেটিক, এলেক্ট্রনিক এন্ড বায়োম্যাটারিয়ালস ইন ইন্টারফেস অফ বায়োলজি, মেডিসিন এবং কেমেস্ট্রি।
শিক্ষাগত ইতিহাসঃ BSc & MSc in BUET, PhD in University of Limerick
ডঃ ইসমেত জাকিয়া রহমান
প্রাক্তন অধ্যাপক ও গবেষক, ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরিক
এমিরেটাস প্রফেসর, ইউনিভার্সিটি অফ লিমেরিক
শিক্ষাগত ইতিহাসঃ MSc Dhaka University,
রিসার্সারঃ পদার্থ বিজ্ঞান ও মহাশূন্য গবেষণা, সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটি
ফয়সাল ইসলাম
ধর্মীয় স্পিকার
Former researcher of University of Limerick
ব্যাবসায়ীঃ Owner of Jada Perfume.
ডঃ সাইফুল ইসলাম
Researcher: Dairy Processing Technology and Dept of Chemical Science at University of Limerick.
ডঃ শাহিন সরকার
Teacher/Lecturer: Department of Applied Science at Technological University of Shannon (TUS)
ইয়ং ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে ছিলেনঃ
বিয়ানা খান
Product Quality Specialist (Medicine)
Regeneron
আলি শাহরিয়ার তন্ময়
Software Engineer, Technical Consultant
CSG International
রাজনৈতিক ইনফ্লুয়েন্সরদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেনঃ
আনোয়ারুল হক আনোয়ার
ব্যাবসায়ীঃ সত্ত্বাধিকারী ইস্তানবুল কেবাব
সাধারণ সম্পাদকঃ অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (ABAI)
সমাপনি বক্তব্য ও নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেনঃ
কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার
সাবেক ডেপুটি মেয়র, কাউন্সিলর ও কাহারলক
লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল
অনুষ্ঠানটির ধারণা ও সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন জনাব আমিনুল ইসলাম রনি। সহযোগিতায় ছিলেন জনাব শাহ্ আজমল হোসেন, জনাব এ কে আজাদ, জনাব ওমর ফারুক নিউটনসহ কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গ।
ভেন্যু সম্বন্ধীয় সহযোগিতা করেন জনাব মনিরুল ইসলাম মনির ও সজীব হোসাইন। অনুষ্ঠানটি ডেকোরেট করতে সহযোগিতা করেন লিমেরিক ইয়ুথ ফোরাম। অনুষ্ঠান ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেম শম্পা লিলি ও সঞ্চালনা করেন ওমর ফারুক নিউটন।
অতিথিদের একাংশ
অনুষ্ঠানটি স্পন্সর করে লিমেরিকের নিম্নোক্ত ১২ টি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানঃ
বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগাল’র গ্রীষ্মকালীন শিক্ষা সফর ২০২৩ অনুষ্ঠিত
বৈচিত্র্যের সন্ধানী মানুষ কখনাে স্থির হয়ে বসে থাকতে পারে না। নতুন আকর্ষণে মানুষ প্রতিনিয়ত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে।নতুন নতুন দর্শনীয় স্থান কিংবা জাদুঘর ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সঞ্চয় হয় ও এটি অবকাশ যাপনের একটি উৎকৃষ্ট পন্থা হিসেবে পরিগনিত হয়। এতে করে অভিজ্ঞতা বাড়ে এবং হৃদয়ের প্রসার ঘটে। এই উদ্দেশ্যগুলােকে সামনে রেখে বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগাল’র সভাপতি জনাব ফখরুল ইসলাম শামিমের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো কমিউনিটির পক্ষ থেকে এক গ্রীষ্মকালীন শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়। কাউন্টি ডোনেগালে বসবাসকারী প্রায় ২৫ টি পরিবারের ৫৭ সদস্য উক্ত শিক্ষা সফরে অংশগ্রহণ করেন।গ্রীষ্মের ছুটিতে আয়ারল্যান্ডে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার দরুন ছোট বড় সবার জন্য এই শিক্ষা সফর ছিল এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। সারাদিন হৈ হুল্লোড়, রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার দাবার আর উত্তর আয়ারল্যান্ডের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট Giant’s Causway. Co Antrim ও Titanic Museum Attraction ঘুরে বেড়ানোর মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখেন কাউন্টি ডোনেগালে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা।
১৯ জুন ২০২৩ আয়ারল্যান্ডস্থ বাংলাদেশিদের জন্য একটি গৌরবময় দিন। এক যুগান্তকারী ইতিহাস সৃষ্টির দিন। এ দিনে বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার কৃতি সন্তান জনাব আজাদ তালুকদার লিমরিক সিটি কাউন্সিলের কাহার্লক (লিডার অফ দ্যা সিটি, যাকে আগে সিটি মেয়র বলা হতো) পদে নির্বাচিত হয়ে কেবোল নিজের নন গোটা বাঙ্গালি জাতির মুখ উজ্জ্বল করেন।
–
তাঁর এমন বিজয় কৃতিত্বে সুকান্তের সেই “দুর্মর” কবিতাটির কথা আবারও মনে পড়লো-
” সাবাস, বাংলা দেশ, এ পৃথিবী
অবাক তাকিয়ে রয়:
জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।”
–
সত্যি, আজাদ তালুকদারকে সেদিন মাথা নোয়াতে হয়নি। বরং বীরের বেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল চেম্বার হলে। সাবাস আজাদ তালুকদার। সাবাস বাংলাদেশ।
.
আজাদ তালুকদার আজ কেবোল একটি নাম নয়, ইতিহাসও বটে। আইরিশ স্থানীয় সরকারের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আজ থেকে ২০/২২ বছর আগে এ দেশে এসেছিলেন নিতান্তই জীবিকার তাগিদে। ভালো জীবনের প্রত্যাশায়। বছর বছর ওয়ার্কপার্মিট নবায়ন করে থাকতে হয়েছে বেশ ক’বছর। সে সময়টা ছিলো বেশ কঠিন। কোম্পানি ওয়ার্ক পার্মিট নবায়নে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলেই দেশে ফিরে যাবার ভয়। অর্থাৎ সে আমলে বলতে গেলে পায়ের নীচে মাটি ছিলোনা। এ দেশে আদৌ কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা হবে কি-না, স্থায়ী ভাবে বসবাস করা যাবে কি-না তার কোন নিশ্চিত গ্যারান্টি ছিলোনা। তাই যে লোকটি একদিন এ দেশে তার স্থায়ীত্ব নিয়ে চিন্তিত থাকতেন, আগামিকালের সূর্যোদয়টা কেমন হবে সেটা নিয়ে যাকে প্রতিনিয়ত ভয়ে ভয়ে থাকতে হতো সেই তিনি আজ ওই দেশে একটি বৃহৎ নগরীর কাহার্লক। ফলে তিনি আজ নিজের কথা ভাবতে পারেন না। তাকে এখন ভাবতে হয় গোটা শহরের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন নিয়ে। ভাবতে হয় ওই শহরে বসবাসরত সকল মানুষের সুস্থ, নিরাপদ ও প্রাঞ্জল জীবনযাপন নিয়ে।
.
সাধারণত ওই জাতীয় নির্বাচনে বহিরাগতদের উপস্থিত থাকার রেওয়াজ খুব বেশি একটা নেই। কিন্ত ওইদিন জনাব আজাদ তালুকদারের বিশেষ আমন্ত্রনে গোটা আয়ারল্যান্ড থেকে প্রায় ৬০/৭০ জন বাঙ্গালি লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল চেম্বার হলে জড়ো হন। তন্মধ্যে আমিও ছিলাম একজন। নিজেকে ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে সংযুক্ত করার সৌভাগ্য হলো। সে এক আবেগঘন পরিবেশ। ফিনাফল কাউন্সিলর (সাবেক মেয়র) মি জেমস কলিন্স তার অন্যতম সহকর্মী মিস ক্যাটরিন স্লাটারির সমর্থনে জনাব তালুকদারকে কাহার্লক পদে আসীনের প্রস্তাব ঘোষণা করলে এর বিপরীতে কাউন্সিলর মি শন হার্টিগানের প্রস্তাবনায় এবং এলিনা সিকাসের সমর্থনে মিস শাসা নোভাকের নাম চলে আসে। অর্থাৎ একই পদের জন্য দুজন প্রার্থীর মনোনয়ন ঘোষিত হলে নির্বাচনের আশ্রয় নিতে হয়। ফলে চেম্বার হলে উপস্থিত একুশজন কাউন্সিলরের চাক্ষুষ ও প্রত্যক্ষ ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
.
অভূতপূর্ব এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ। কর্মকর্তাদের একজন নির্বাচন পরিচালনা করছিলেন। তিনি মাইক্রোফোনে প্রত্যেক কাউন্সিলরকে সরাসরি ভোট দেয়ার আহ্বান জানালে তাদের অধিকাংশই জবাব তালুকদারকে ভোট দিচ্ছিলেন। ভোট দিতে গিয়ে তাদের কেউ কেউ যখন “টালূকদার” “অ্যাজাদ” কিংবা “তালুকদার” উচ্চারণ করছিলেন তখন আমার রক্তধমনীতে একটি ছন্দিত আবেগ প্রবাহিত হচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো এ যেনো কেবোল আজাদের নামটি নয়, বরং গোটা বাংলাদেশের নামটি তাদের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। সত্যি বলতে, বাংলাদেশের ক্রিকেট দল বিদেশ বিভূইয়ে অন্য কোনো দলের সঙ্গে খেললে বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে হৃদয়ে জাতীয়তাবাদের যে বোধ বা অনুভূতি জেগে ওঠে, আমার বিশ্বাস ওইদিন উপস্থিত প্রতিটি বাঙ্গালি হৃদয়েই তেমন একটি বোধ বা অনুভূতি জেগে উঠেছিলো।
.
নির্বাচন শেষে যখন জানা গেলো তেরো ভোট পেয়ে ছয় ভোটের ব্যবধানে আজাদ তালুকদার জয় লাভ করলেন তখন লিমরিক কাউন্টি কাউন্সিল হলটি যেমন উল্লাসে ফেটে পড়ছিলো তেমনি আমাদের অনেকেরই আবেগাশ্রুকে দমিয়ে রাখতে বেশ কষ্ট হচ্ছিলো।
ও স্বাগত জানিয়ে তাঁর চেয়ারে নিয়ে বসান। চেয়ারে বসে তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিক্রিয়ামূলক স্বাগতিক বক্তব্য প্রদান করেন। উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে এ অনুষ্ঠানের মূল পর্ব।
এরপর শুরু হয় ছবি ও সেলফি তোলার পর্ব। বিজয় আনন্দে উদ্বেলিত বাঙ্গালি নবনির্বাচিত কাহার্লকের সাথে যখন একের পর এক ছবি তুলছিলো তখন দুই ভদ্রলোক কানাকানি করে ন্যাক্কারজনক কিছু কথা বলে। পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন এক ভদ্রমহিলা, আমাদেরই ভাবী। তাদের ওই ইঙ্গিতসূচক কথাবার্তা তার কানে বাজে। তিনিও ছবি তুলে সেখানে গিয়ে দাঁড়ান মাত্র। অদূরে আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভাবী আমার কাছে এলেন এবং ওই দুই ‘কানামাছি” খেলার খেলোয়াড়ের কথোপকথন বেশ অভিযোগের স্বরেই আমাকে জানালেন। পরিবেশের সৌন্দর্য হানি ঘটতে পারে ভেবে আমি তাকে বিনয়ের সাথে নীরব থাকার অনুরোধ জানাই।
বস্তুত ওইখানে উপস্থিত প্রতিটি বাঙ্গালিই ছিলো আজাদ সাহেবের আমন্ত্রিত অতিথি। তাদের কাউকে বাঁকা কথা বলা বা হেয় প্রতিপন্ন করা পরোক্ষ ভাবে জনাব আজাদকেই ছোট করার সামিল। তা ছাড়া তাদের হেন আপত্তিজনক কথাবার্তায় ক্ষেপে গিয়ে কেউ কেউ যদি ওদের মুখের উপর জুতো ছুঁড়ে মারতো কিংবা তাদের কালার চেপে ধরতো তাহলে উদ্ভূত পরিস্থিতি কি আদৌ সামাল দেয়া যেতো! আর সামাল দিতে না পারলে সাদা আইরিশদের কাছে কি বার্তা পৌঁছাতো! আজাদ তালুকদার বা গোটা বাঙ্গালির গায়ে যে কলঙ্ক তিলকের দাগ লাগতো তা-কি আমাদেরকে অকুন্ঠ ভাষায় তীব্র ভাবে তিরস্কৃত করার জন্য আরও সহায়ক হয়ে উঠতোনা!
কথায় আছে “চোরে চোরে মাসতুতো ভাই”। অর্থাৎ উল্লেখিত দুই ব্যক্তি একই পথের পথিক। বন্ধুর পোশাক পরে কৌটিল্যের কূটচাল আঁটতে ওরা দুজনেই বেশ পারদর্শী। এর আগেও এদের মাঝে এমন প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ২০১৯ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর আজাদ তালুকদার বিজয়তৃপ্তির আনন্দ প্রকাশ ঘটাতে গিয়ে গোটা আয়ারল্যান্ডের অভিবাসন কমিউনিটি নিয়ে এক ভুরিভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পানাহার শেষে ওই দুই মহারথীর একজন ইনজামুল হক জুয়েল (বর্তমানে কর্ক নিবাসী) ও আমার সামনে একটি বিশেষ দলের সাফাই গাইতে গিয়ে বলে বসলো, “আজাদ ভাইতো আমাদের দলের লোক, তার বিজয় মানে আমাদের বিজয়।” তার এমন কান্ডজ্ঞানহীন বেসামাল মন্তব্য শুনামাত্রই আমি ও জুয়েল দুজনই তাকে থামিয়ে দিয়ে বলি, “এসব হিংসাত্মক, বিভাজন ও উস্কানিমূলক কথা বলে দয়া করে আজাদ ভাইয়ের কোনো ক্ষতি করবেন না। কারণ, বিশেষ দলের ব্যক্তি হিসেবে কেউ আজাদ ভাইকে ভোট দেয়নি। দলমত নির্বিশেষে সবাই তাকে ভোট দিয়েছে বা তার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে কেবোল তিনি একজন বাঙ্গালি, একজন বাংলাদেশি।”
দ্বিতীয় মহারথী ঠিক একই ভাবে একদিন শ’খানেক মুসুল্লির সামনে বেশ তাচ্ছিল্যভরে বললেন, ” অ্যারে সে কিসের কাউন্সিলর! এখনোতো সে ওই কাজটিই করে।” তার পেশাগত কর্মের প্রতি এমন অসম্মানসূচক অঙ্গলি হেলন সত্যি দুঃখজনক। ওদের কুচিন্তার কাছে সকল ভালো কাজই যেনো হার মানে। পরের মন্দ খোঁজা ও ক্ষতি করে বেড়ানোর এদের এই কুৎসিত স্বভাব একদিন যে এদেরকেই কামড় দেবে তা তারা কখনও বুঝে উঠতে চায়না। ফলে এরা আরও কৌশলী হয়ে উঠে। তাইতো দেখা যায় আজাদ সাহেবের সামনে এরা শুদ্ধ মানুষ(!), তার পা চাঁটে, প্রশংসায় মুখে ফেনা তোলে। অগোচরে ছিদ্র খোঁজে বেড়ায়। সুতারাং জনাব আজাদকে বলবো, তিনি যেনো বন্ধু বেশধারি এসব দুমুখা বিষধর সাপের ব্যপারে আরও বেশি সতর্ক হোন।
আজাদ তালুকদার ২০১৯ সালে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০২১ সালে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। এবার একই ভাবে সিটি মেয়র বা কাহার্লক নির্বাচিত হয়েছেন। এই যে তার অর্জন ও সফলতা তা মোটেও ছেলের হাতে মোয়া নয়। আলাদিনের চেরাগ বা কারো দয়া দাক্ষিন্য কিংবা করুণার উপর ভর তিনি এতো দূর এগিয়ে আসেননি। এ জন্য তাকে রাতদিন যন্ত্রের মতো কাজ করতে হয়েছে। অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা সাধন করতে হয়েছে। আয়ারল্যান্ডে আজাদ তালুকদারের বসবাস শুরু মাত্র ২০/২২ বছর আগে। এর মধ্যে নিজের জীবন ও সংসার গোছানো তথা পায়ের নীচে মাটি ঠেকাতেই চলে গেছে ১০/১৫ বছর। বাকি যে কয়েক বছর তা নিজেকে নায়কোচিত সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য মোটেও যথেষ্ট সময় নয়। কিন্ত তিনি তার বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা, চৌকষ গুণাবলী, সহযোগি ও বন্ধুবাৎসল্য মনোভাব, পরিচ্ছন্ন ও পরীশীলীত জীবন যাপনের মাধ্যমে অবিশ্বাস্য ভাবে এ অল্প সময়ের মধ্যেই আইরিশ রাজনীতিতে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এ অবস্থান যে কেবোল তার নিজের দলেই সীমাবদ্ধ তা নয়, অন্য দলের নেতাকর্মীদের সাথেও রয়েছে তার বেশ সখ্যতা ও ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক। কাহার্লক নির্বাচনে স্বীয় দল ফিনাফল ছাড়াও অন্যান্য দলের কাউন্সিলরদের একচেটিয়া ভাবে ভোট প্রাপ্তিই এর বড়ো প্রমাণ।
প্রতিটি গোত্রে, প্রতিটি সমাজে, প্রতিটি দেশে বা জাতিতে রেসিজমের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। কোথাও একটু বেশি, কোথাও একটু কম। কোথাও স্থূল, কোথাও সূক্ষ্ম। আজাদ সাহেব যে প্ল্যাটফর্মে আছেন সেখানেও যে রেসিজমের কোনো অস্তিত্ব নেই তা হলফ করে বলা যাবেনা। ভিন্ন ধর্মী, ভিনদেশি ও ভিন্ন সংস্কৃতিমনা একজন মামুলি আজাদ তালুকদার লাফিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠবে আর স্থানীয় আইরিশরা চেয়ে চেয়ে দেখবে ও আনন্দভরে তাকে মাথায় নিয়ে নাচবে, বিষয়টা মোটেও সে রকম নয়। এখানেও হীনমন্যতা আছে, হিংসা-প্রতিহিংসা আছে। বিদ্বেষ আছে। আছে সূক্ষ্ম রেসিজমও। এতো সব প্রতিকুলতা, প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উপরে উঠার জন্য যে প্রজ্ঞা, অঙ্গীকার বা যোগ্যতা থাকার প্রয়োজন তার সবই আজাদ তালুকদারের রয়েছে। সত্যি বলতে, আইরিশ রাজনীতিতে যোগ দিয়ে এতো অল্প সময়ে সফলতার যে জাদু আজাদ তালুকদার দেখিয়েছেন তাতে তাকে রাজনীতির রাজপুত্তুর বললেও অত্যুক্তি হবেনা। তবে এ রাজপুত্তুরের পথ মোটেও মসৃণ নয়। তাকে টেনেহিঁছড়ে নিচে নামানোর লোকের অভাব নেই। নিজ দলে ও অভিবাসন কমিউনিটিতে যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে ওই বন্ধুবেশদারি ধূর্তদের মাঝেও। সুতরাং আইরিশ রাজনীতিতে ওই বাঙ্গালি রাজপুত্তুরের ধারাবাহিক জাদুকরী সফলতাকে ধরে রাখতে হলে প্রতিটি বাঙ্গালিকে যেমন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে স্বচ্ছ হৃদয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে তেমনি একজন সচেতন কাণ্ডারির মতো আজাদ তালুকদারকেও পা ফেলতে হবে বেশ মেপে মেপে।
আয়ারল্যান্ডে লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের ক্ষেত্রে উচ্চতর গণিতের ভূমিকা কতো গুরুত্বপূর্ণ, তার একটা সহজ ও পরিস্কার ধারনা পাওয়া যেতে পারে নিম্নের তুলনামূলক চিত্র থেকে।
উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনার ক্ষেত্রে উচ্চতর গণিতের গুরুত্বের কারনগুলো হলো,
(১) উচ্চতর গণিতের জন্য রয়েছে ২৫ নম্বরের বোনাস পয়েন্ট যা কি-না লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ৫০০ এর অধিক নম্বর পেতে খুব সাহায্য করে। উল্লেখ্য যে, একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিষয়ে পড়ার জন্য বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ৫০০ এর অধিক নম্বর পাওয়া জরুরী।
(২) বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনেক বিষয়ে ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে ন্যুনতম নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক। ফলে উচ্চতর গণিত শুধু থাকলেই চলবে না, ভালো নম্বর পাওয়াটাও আবশ্যক।
অতএব, কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে কিংবা পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হলে গণিতের উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এর বিকল্প নেই।
আয়ারল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আমার কিছু লেখার লিঙ্কঃ
আয়ারল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থায় Transition Year (TY) এবং এর ভালো-মন্দ
https://irishbanglatimes.com/আয়ারল্যান্ডের-শিক্ষা-ব্য/
আয়ারল্যান্ডের একমাত্র বাংলাদেশী শিক্ষক কর্তৃক অনলাইন কোচিং
খুব হরহামেশাই দেখি অনেকের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাাকাউন্ট হ্যাক হতে। এমনকি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েও অনেকে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে দেখা যায়। আমার নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে এই লেখাটি। আমি কিভাবে আমার ফেইসবুকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল ও ফাইনান্সিয়াল অ্যাকাউন্টগুলা আমি রক্ষণাবেক্ষণ করি তার কিছু বর্ণনা আমি দিব যাতে করে অন্যরা হ্যাকিং থেকে রক্ষা পায়। লেখাটা সম্পূর্ণ পড়ুন।
নিয়ম মেনেই যে আমি উপকৃত হয়েছি বা হচ্ছি তা শুধুই নয়, আমি যেহেতু ফাইনান্সিয়াল অর্গানাইজেশনে কাজ করি তাই আমাদেরকে স্পেশালই ট্রেইন করা হয় সিকিউরিটি থ্রেট হতে কিভাবে রক্ষা পেতে হয়ে। আমার উভয় অভিজ্ঞতার আলোকেই এই লেখা।
অ্যাকাউন্ট হ্যাকের হ্যাকারদের একটি অতি সহজ মাধ্যম হচ্ছে পাসওয়ার্ড। আমরা এত সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করি যা হ্যাকারদের সেকেন্ডের ব্যাপার আকাউন্ট হ্যাক করতে। অনেকে ফোন নাম্বার, নিজের নাম, জামাই কিংবা বউ এর নাম, বাচ্চার নাম, জন্ম তারিখ নিজ এলাকার নাম, প্রিয় দলের নাম ইত্যাদি নামে পাসওয়ার্ড দিয়ে থাকেন। যেটা কারো অ্যাকাউন্টে ঢুকতে হ্যাকার হওয়া লাগেনা। আন্দাজ করে কয়েকবার চেষ্টা করলেই যে কেউ যে কারো অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারে।
পাসওয়ার্ড কিভাবে সেট করবেন?
একজন হ্যাকারের এভারেজ দুই সেকেন্ড লাগে একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে যদি পাসওয়ার্ড শুধু নাম্বার অথবা শুধু অক্ষর দিয়ে সেট করা হয়। যদি পাসওয়ার্ডে আপার এবং লোয়ার কেইস অক্ষর (বড় ও ছোট হাতের অক্ষর) দিয়ে সাত ক্যারেক্টার এর পাসওয়ার্ড দেন তাহলে হ্যাকারের লাগবে ১ মিনিট তা ব্রেক করতে আর যদি তা ১১ ক্যারেক্টার এর হয় তাহলে ৫ মাস লাগবে, কিন্তু এর সাথে যদি জাস্ট মিক্স নাম্বার ও অক্ষর দিয়ে সেট করেন তাহলে হ্যাকারের তিন বছর লাগবে তা ব্রেক করতে এবং সাথে যদি একটি স্পেশাল ক্যারেক্টার (@#.$) যোগ করেন তাহলে হ্যাকারের ৩৪ বছর লাগবে সে পাসওয়ার্ড ব্রেক করতে। এরপর যত বড় পাসওয়ার্ড হবে তত বেশি সময় লাগবে হ্যাকারের হ্যাক করতে।
মোট কথা হচ্ছে আপনার পাসওয়ার্ড অন্তত ৭ থেকে ১১ ক্যারেক্টারের রাখবেন এবং পাসওয়ার্ডটি হবে লেটার, নাম্বার ও স্পেশাল ক্যারেক্টারের সংমিশ্রণে। অন্তত একটি লেটার আপার কেইস বা বড় হাতের রাখবেন। তাহলে অন্তত পাসওয়ার্ড দিয়ে হ্যাকারের হ্যাক করার সম্ভাবনা কমবে।
অন্য যেভাবে হ্যাক হয়
অপ্রয়োজনীয় লিঙ্কে ক্লিক করাঃ আমরা বিভিন্ন সময় ফেইসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে, ইমোতে বিভিন্ন লিঙ্কে হরহামেশা ক্লিক করে থাকি। জেনে, না জেনে ও কৌতহলে আমরা তা করে থাকি। বিভিন্ন অফার, বিজ্ঞাপণ, নর কিংবা নারীর ছবি সম্বলিত লিঙ্কে ক্লিক করতে আমাদের হাত নিশপিশ করে। কিন্তু আমরা জানিনা ওইসব লিঙ্ককেই থাকে হ্যাকারের ফাঁদ। আপনি ঐ লিঙ্ক গুলাতে ক্লিক করা মাত্রই আপনি হ্যাকারকে আপনার ডিভাইসের প্রিভিলিজ দিয়ে দিচ্ছেন। আপনার সার্ভারে ঢুকে প্রয়োজনীয় তত্ত্ব নিমিষেই নিজের করে নিতে সক্ষম। সুতরাং ওইসব লিঙ্কে ক্লিক করা ও শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
অনেক সময় বিভিন্ন গেম, প্রশ্ন, রাশি, আপনি মানুষ কেমন, আপনার চরিত্র কেমন এসব বিষয়ক লিঙ্ক আমরা দেখতে পাই। আমি অনেক বুঝ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষকেও ওইসবে আসক্ত হতে দেখি। বিষয়গুলা মজার হলেও এসবেই লুকায়িত থাকে হ্যাকিং এর ফাঁদ।
অনেকসময় রেভিনিউ, ব্যাংক, ডেলিভার, ফোন কোম্পানি ইত্যাদির নাম করে ইমেইল কিংবা মেসেঞ্জারে লিঙ্ক পাঠানো হয়। ভালো করে ভ্যারিফাই না করে লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। করলেও কোন তথ্য দেয়া থেকে বিরত থাকবেন। সন্দেহ হলে ঐ নিদৃস্ট কোম্পানিতে কল দিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিবেন। আমরা অনেকেই লিঙ্কে তো ক্লিক করিই সাথে সাথে যদি কোন ডিটেইলস চায় তাহলে নাম, জন্ম তারিখ, পাসওয়ার্ডসহ দিয়ে দেই; তার মানে হচ্ছে আমরা হ্যাকারকে স্বইচ্ছায় তথ্য প্রদান করে বলতেছি যাও যা ইনফরমেশন লাগে নাও আর যা টাকাপয়সা লাগে আমার ব্যাংক থেকে নিয়ে নাও।
আপনি যদি এই সিম্পল বিষয়গুলো অনুসরণ না করেন তাহলে আপনাকে হ্যাক করা কোন হ্যাকারের পক্ষেই অসম্ভব হবে না।
আরো কিছু পরামর্শ
– কারো সাথে পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন না, পাবলিক প্লেসে পাসওয়ার্ড দেয়ার সময় সতর্ক থাকবেন
– পাসওয়ার্ড কোথাও লিখে না রাখাই উত্তম, আর রাখলেও খুব গোপনীয়তা অবলম্বন করবেন
– ভিন্ন অ্যাকাউন্ট এর জন্য ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা
– সহজে অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করা
– Two factor authentication সেট আপ করা, যেমন অ্যাকাউন্ট এ ফোন নাম্বার ও ইমেইল লিঙ্ক করা যাতে লগইনের সময় ভ্যারিফাই করা যায়
– পাবলিক কম্পিউটার বা অন্য কারো মোবাইল কিংবা কম্পিউটার থেকে কোন অ্যাাকাউন্টে লগইন করলে লগ আউট করতে ভুলবেন না। কোন অবস্থাতেই ব্রাউজারে যেন পাসওয়ার্ড সেইভ না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন।
– পাবলিক কম্পিউটার (লাইব্রেরি, ইন্টারনেট ক্যাফে, অন্য কারো) ব্যবহার করলে ব্রাউজার হিস্টরি ডিলেট করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
– সব সময় রুল অব থাম্ব অনুসরণ করবেন। রুল অব থাম্ব হচ্ছে স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করা, অপ্রয়োজনীয় লিঙ্কে ক্লিক না করা।
আমার ফেইসবুক অ্যাাকাউন্ট ইমেইল কিংবা অন্যান্য অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয় নাই সত্য, কিন্তু যে কখনো হবেনা তা কিন্তু নয়। কথায় আছে risks are not avoidable, but minimiable. তারপরেও সতর্কতা অবলম্বন করতে তো ক্ষতি নেই। আপনি রিস্কের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিতে পারেন না, কিন্তু রিস্কের সম্ভাবনাকে কমিয়ে আনতে পারেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান হলে হ্যাকাররা বিভিন্নভাবেই চেষ্টা করে, কিন্তু আপনার আমার ক্ষেত্রে হ্যাকাররা বেশি খুব সময় ব্যায় করবে না হ্যাক করতে। জাস্ট নিয়মগুলো মেনে চলুন, তাহলেই হবে।
মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবাদির মধ্যে ইদুল আযহা বা কুরবানির ঈদ অন্যতম। বাংলাদেশে এ মাসের ২৯ তারিখে অর্থাৎ আগামীকাল উৎসবটি পালিত হলেও আমরা যারা মধ্যপ্রাচ্য সহ ইউরোপ বা সমসাময়িক ভৌগলিক দেশ গুলোতে বসবাস করছি তারা একদিন আগেই অর্থাৎ আজ ২৮ তারিখেই দিনটি পালন করছি। এখানে সরকারী ভাবে দিনটি ছুটির আওতায় নেই বলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে যারা আছি তারা আগে থেকেই স্বীয় কর্মস্থলের ডিপার্টমেন্ট প্রধানকে বলে ওইদিন অফ ডে বা হলিডের ব্যবস্থা করেছি। যারা একা আছেন তাদের বেলায় একটু ব্যতিক্রম। ঈদ বা কুরবানি নিয়ে খুব বেশি একটা মাতামাতি করতে তাদের দেখা যায়না।
প্রবাসে কোরবানির স্টাইল একটু ভিন্ন রকমের। এখানে দেশের মতো হাটে গিয়ে দশটা পশু দেখে যাচাই বাচাই করে পছন্দমতো কোন গরু বা ছাগল কেনার বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেই। আমি যেখানে বসবাস করি অর্থাৎ আয়ারল্যান্ডের কথাই ধরা যাক। এ দেশে অবস্থানরত মুসলিমরা সাধারনত দু তিনটি উপায়ে কোরবানি সম্পন্ন করে থাকেন। প্রথমত যারা ঝামেলা বিহীন ভাবে কোরবানি দিতে চান তারা স্থানীয় মুসলিম গ্রোসারি শপের সহায়তায় কাজটি সেরে ফেলেন। আমি যে এলাকায় আছি সেখানে বাঙালি ছাড়াও রয়েছে আফগানি ও পাকিস্তানি মালিকানা ভিত্তিক দোকান। এসব দোকানে প্রতি নামের জন্য একেকটি ভেড়ার দাম হিসেবে ১৮০ থেকে ২০০ ইউরো ও গরুর জন্য ভাগ প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ ইউরো পর্যন্ত দেয়া হয়ে থাকে। দোকানের মালিক ফার্মে গিয়ে ভেড়া জবাই করে নিয়ে আসবেন যা পরদিন বিলি করা হয়।
যারা একটু সৌখিন বা যাদের হাতে সময় থাকে তারা বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখেশুনে একটি গরু কোরবানি দিতে পারেন। তবে ওইসব খামারে গরু কেবল জবাই করা যায় কিন্তু আধুনিক পদ্ধতিতে ছোট করে কাটার কোন সরঞ্জমাদি নেই। ফলে কোরবানিকৃত গরুকে কেবল কয়েক টুকরো করে যে কোন একজনের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বউবাচ্ছা সহ সবাই অবস্থান করে। ফলে গরু কাটার পাশাপাশি সারাদিন চলে খোশগল্প ও সুস্বাদু খাবারের রসালো আয়োজন। এ পদ্ধতিতে কোরবানি সম্পন্ন করতে বেশ কায়িক পরিশ্রম হয় বটে, তবে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে নিঃসন্দেহে।
কেউ কেউ আছেন যারা শারিরিক পরিশ্রমে রাজি নন। তারা যান ওইসব ফার্মে যেখানে গরু জবাই সহ মাংশ কাটাকাটি ও ভাগাভাগিরও ব্যবস্থা করা যায়। এ পদ্ধতিতে নিজ হাতে মাংশ কাটার আনন্দ থেকে যেমন বঞ্চিত হতে হয় তেমনি খরচও একটু বেশি পড়ে। তবে কোরবানিকে প্রাণবন্ত করে তোলার জন্য মাংশ ভাগাভাগি করার আগেই যে কোন একজনের বাড়িতে কিছু মাংশ পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে অবস্থানরত মহিলারা মিলেমিশে ধুমছে রাবান্না করতে থাকে। যা কিনা উৎসবকে আরও প্রস্ফুটিত করে তোলে।
একটি জিনিস না বললেই নয়। কোরবানির মাংশকে তিন ভাগ করে এক ভাগ গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার যে রেওয়াজ তা বাস্তবায়নের সুযোগ এ দেশে নেই। কারণ মাংশ দেবার বা নেবার মতো কোন গরিব এখানে নেই। তবে পরিচিতদের মাঝে যদি কেউ কোন কারনে কোরবানি দেয়া থেকে বিরত থাকে তাদেরকে ব্যক্তিগত ভাবে কিছু মাংশ দেয়া হয়ে থাকে। ঘুরে ঘুরে মাংশ বিতরনের সময় বা পরিবেশ কোনটাই এখানে নেই। তাই গরিব মানুষের ভাগের মাংশের টাকাটা হিসেব করে দেশে পাঠিয়ে দিয়ে অনেকেই কোরবানিকে সহি করার চেষ্টা করে।
কোরবানির পশুর চামড়া বা এর টাকা বিলিয়ে দেয়ারও কোন সুযোগ এখানে নেই। কারণ চামড়ার কোন টাকাই আমাদের হাতে আসেনা। চামড়া বিষয়ক টাকা নিয়ে খামার মালিককে এ পর্যন্ত কোন প্রশ্নও আমরা করিনি কিংবা তার কাছ থেকেও এ ব্যপারে কোন পরিস্কার ধারণা পাওয়া যায়নি। বস্তুত মুসলিম নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিত তেমন কোন খামার আয়ারল্যান্ডে গড়ে না উঠায় এসব ছোটখাট সমস্যা সহ কোরবানি সম্পন্ন করতেও মাঝে মধ্যে বেশ বেকায়দায় পড়তে হয়। এ প্রসঙ্গে বছর কয়েক আগের একটি ঘটনার স্মৃতিচারণ করা যায়।
সম্ভবত ২০১৯ সাল। সাপ্তাহিক ছুটির দিন রবিবারে ইদুল আযহা উদযাপিত হয়েছিল। ছুটির দিন থাকায় শত চেষ্টা করেও ওইদিন কোরবানি দিতে পারিনি। কারণ অফিস আদালতের মতো ওখানকার পশুর খামার গুলোও সাপ্তাহিক ছুটির আওতাধীন। আমরা যারা নিজ হাতে কোরবানির গরু জবাই করতে উৎসাহী ছিলাম তারা খামার মালিককে প্রতি গরু হিসেবে বেশ কিছু উপরি দেয়ার লোভ দেখানোর পরো রবিবারে খামার খুলতে রাজি হয়নি। হেলথ ইন্সপেক্টরের অনুপস্থিতি ও হাইজিন গত বিবিধ সমস্যার কথা বলে আমাদের প্রস্তাবকে নাকোচ করে দেয়। বাংলাদেশের মতো এখানে যত্র তত্র গরু, মেষ, ছাগল এমনকি মুরগি পর্যন্ত জবাই করা যায়না। কিছু দিন আগে আমার এক প্রতিবেশি বন্ধুকেই মুরগি জবাইয়ের খেসারত হিসেবে ১৫০ ইউরো জরিমান দিতে হয়েছিল। অগত্যা কি আর করা! ঈদের সারাটা দিন গোমড়া মুখ করে কাটাতে হয়েছিল। অবশ্যি পরদিন সবাই বউবাচ্চা নিয়ে ৪০/৫০ মাইল দূরের খামারে গিয়ে গরু কোরবানি দিয়ে নিজেরাই মাংশ কেটে ভাগাভাগি করে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু ঈদের দিন কোরবানি দিতে না পারা কিংবা দেশীয় স্টাইলে কোরবানির মাংশ না খেতে পারার বেদনা এখনো আমাকে পুড়ায়।
প্রবাসে আমাদের ধর্মীয় উৎসবাদি পালনে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে বটে তবে এ উৎসবকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশু বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আচমকা বেড়ে যাবার কোন শঙ্কা নেই। সপ্তাহ খানেক আগে কথা হয়েছিল আমার বড় ভাইয়ের সাথে। তিনি কোরবানির গরু কেনা ও দ্রব্য মুল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বেশ শঙ্কায় আছেন। বস্তুত এ শঙ্কা যে কেবল আমার ভাইয়ের একার তা নয়, দেশের অনেক সাধারন মানুষের। সাধারণত এসব দেশে ধর্মীয় বা যে কোন উৎসবাদির ক্ষেত্রে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়া হয়। দোকানপাটে চলে বিশেষ মুল্যহ্রাস। অথচ আমাদের দেশে ঠিক উল্টো, যা খুবই দুঃখজনক।
কোরবানি আমাদের জন্য ত্যগের বার্তা নিয়ে আসে। এ ত্যগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক আমাদের সমাজ, আমাদের দেশ তথা গোটা বিশ্ব।
ঈদের শুভেচ্ছে সবাইকে। ঈদ মুবারক।
আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিতে বাংলাদেশি ইমিগ্রান্টদের ইতিহাস নিয়ে যদি কোন বই লিখিত হয় তাহলে সে বইয়ের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়ে লিখিত হবে জনাব আবুল কালাম আজাদ তালুকদারের নাম। প্রথম অধ্যায়ে থাকবেন কাউন্সিলর হিসেবে, দ্বিতীয় অধ্যায়ে থাকবেন ডেপুটি মেয়র হিসেবে এবং তৃতীয় অধ্যায়ে থাকবেন কাহারলক হিসেবে। ইতিহাসের বইয়ে তাঁর নামে হয়ত আরো অধ্যায় রচিত হতে থাকবে।
গত ১৯ শে জুন লিমরিক সিটির কাউন্সিল অ্যাসেম্বলি হলে তৈরি হল নতুন ইতিহাস। আর সে ইতিহাসের রচয়িতা হলেন বর্তমান কাউন্সিলর, সাবেক ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার। যার নামের সাথে যুক্ত হল নতুন পদবি Cathaoirleach বা মেট্রোপলিটন শহর লিমরিকের মেয়র।
নতুন Cathaoirleach
Cathaoirleach পদটি মেট্রোপলিটন ডিসট্রিক্ট মেয়রের নতুন স্থলাভিষিক্ত হয়। এই পদটি ছিল লর্ড মেয়র অফ মেট্রোপলিটন সিটি। সিটি এবং কাউন্টি কাউন্সিল মেয়রের সাথে মেট্রোপলিটন মেয়রের মধ্যে তপাত বোঝাতে Cathaoirleach পদটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিগত কয়েক টার্ম থেকে। Cathaoirleach সরাসরি আভিধানিক অর্থ চেয়ারপার্সন। কিন্তু পদটি মেয়র কিংবা চেয়ারপার্সন হিসেবে না ব্যবহৃত হয়ে শুধুমাত্র অফিশিয়ালি Cathaoirleach হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। যাকে লিডার অফ দা সিটি হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।
কাউন্সিল অ্যাসেম্বলি হল, যেখানে রচিত হয় ইতিহাস
জনাব আজাদ তালুকদারই এখন লিডার অফ দা সিটি। ২০১৯ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইতিহাসের অংশ হন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের Cathaoirleach তিনি। Cathaoirleach প্রার্থীর জন্য মনোনীত হন তাঁর বিগত কয়েক বছরে কাউন্সিলর হিসেবে সাফল্যের জন্য। এর পর অন্যান্য কাউন্সিলরগন মনোনীত প্রার্থীদের মধ্য থেকে নির্বাচন করেন আগামীর Cathaoirleach. মোট ২০ জন কাউন্সিলর তাঁদের ভোট প্রদান করেন তন্মদ্ধে ১৩ জনই ভোট প্রদান করেন জনাব আজাদ তালুকদারকে এবং বাকি ৭ ভোট পান গ্রিন পার্টির সাসা নোভাক। প্রায় দ্বিগুণ ভোটে জয়ী হয়ে Cathaoirleach নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসের খাতায় নাম লেখালেন জাতি, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে প্রথম ইমিগ্রান্ট হিসেবে।
বিজয়ের পর পরিবারের সাথে। সহধর্মিণী শাহানা আক্তার, বড় মেয়ে তাসফিয়া তালুকদার এবং ছোট মেয়ে আমিরা তালুকদার
জনাব আজাদ তালুকদারের এই অর্জন শুধু তাঁর একার নয়। এ অর্জন সবার। আমরা ইমিগ্রান্ট, সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে ভিনদেশে বসবাস। আমাদের হয়ে কথা বলতে এবং আমাদেরকে রিপ্রেজেন্ট করতে বা তুলে ধরতে একটা মাধ্যম দরকার। জনাব তালুকদার আমাদের সে মাধ্যম, যার মাধ্যমে আমাদের চাওয়াগুলোকে আমাদের সুবিধা অসুবিধার কথাগুলোকে পৌঁছে দিতে সক্ষম হব দেশ নেতাদের নিকট।
লিমরিকবাসির সাথে বিজয় উদযাপন
একই দিনে জনাব তালুকদার আইরিশ বাংলা টাইমসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি এমন কিছু করে যেতে চান যা আগামীর জন্য নিদর্শন হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ও প্রবাসীদের দুর্নাম হোক এমন নিদর্শন তিনি রেখে যেতে চান না। আমরাও চাই জনাব তালুকদার এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাবেন যাতে করে বহু আজাদ তালুকদার এর আইরিশ রাজনীতিতে আসার পথ যেন সুগম হয়ে উঠে।
জনাব আজাদ তালুকদারের এই পথচলা এগিয়ে যাক। মির্জা গালিবের সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, ‘’এই ছুটন্ত আয়ুর অশ্ব, এবার কোথায় থামে! না আছে পায়ে রেকাব, না আছে হাতে লাগাম’’।
খেলাধুলা আমাদেরকে শারীরিক এবং মানসিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খেলাধুলা আমাদের মাঝে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে
★পারস্পরিক সহমর্মিতা,
★ভ্ৰাতৃত্ববােধ,
★ঐক্যবদ্ধতা,
★সততা,
★ উপস্থিত বুদ্ধি,
★ সহনশীলতা,
★ আত্মসম্মানবােধ,
★ জাতীয়তাবােধ,
★ উদারতা,
★ ক্ষমাশীলতা,
★ যে কোন পরাজয়ে ভেংগে না পড়ে বরং আগামী দিনের জন্য নিজেকে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
মানব চরিত্র প্রতিভা-নির্ভর নয়, নিতান্তই অনুশীলন-সাপেক্ষ।
চরিত্র গঠনের ব্যাপারে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। মানবজীবনের শুরু পারিবারিক গণ্ডীর মধ্যে। কথায় বলে, “Home is the first school”। পরিবারের মধ্যেই শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা লাভ ঘটে।
আবার, চরিত্র গঠনেরও প্রাথমিক ক্ষেত্র হল পরিবার।
পারিবারিক গণ্ডীর মধ্য থেকে চরিত্র গঠনের তত্ত্বগত দিকগুলি সম্বন্ধে সুনির্দিষ্ট ধারণা লাভ করা যায়, তবে
পরিবারের বাইরে রয়েছে বিশাল বিস্তৃত জগৎ। সেখানে পরিবেশ ও পরিস্থতি ভিন্ন প্রকৃতির। পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে একজন শিশু মানব চরিত্র সম্পর্কে যে প্রাথমিক ধারণাটুকু লাভ করে, বাড়ির বাইরে সেগুলি প্রয়োগ করার সুযোগ থাকে।
বলা বাহুল্য, একথা এখন প্রমাণিত যে, চরিত্রগঠন এবং তার বিকাশ ও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়ােগ করার ব্যাপারে খেলাধুলা খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
★ খেলাধুলা একজন স্পোর্টস ম্যানের মনে আনন্দ দান করে, আত্মতুষ্টি পাওয়া যায়। আর আনন্দময় পরিবেশ একজন মানুষের সৎ গুণগুলি বিকাশের পক্ষে সহায়ক।
★ খেলাধুলা একটি সমষ্টিগত বিষয় বা টীম ওয়ার্ক। এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ফল হিসেবে একজন মানুষের আত্মকেন্দ্রিকতা দূর হয় এবং সম্মিলিত ভাবে যে কোন কঠিন কাজ একসাথে সম্পন্ন করার মানসিকতা গড়ে তুলে।
★ খেলায় জয়লাভের জন্য সহখেলােয়াড়দের সক্রিয় সহযােগিতা প্রয়ােজন হয়। এভাবে পারস্পরিক সহমর্মিতার জন্ম হয়। আর সহমর্মিতার সূত্র ধরে অন্তরে প্রবেশ করতে থাকে মমত্ববােধ, ভ্রাতৃত্ব ও উদারতা।
★ জীবন পথে সততার মূল্য অপরিসীম। খেলাধুলা আমাদেরকে সৎ পথে থাকতে উৎসাহ যোগায় এবং সাহায্য করে। খেলাধুলার ক্ষেত্রে অসত্য, অসদাচরণের কোনাে স্থান নেই।
★ বলাবাহুল্য, মানসিক কাঠামােকে সুন্দর করার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলা যে দৈহিক শ্রীবৃদ্ধিও সাধন করে সেকথা তাে সর্বজনবিদিত।
সেই সাথে উদ্যমী, সাহসী ও পরমসহিষ্ণু হওয়ার জন্যও খেলাধূলা আদর্শ মাধ্যম।
অতএব, সামাজিক অবক্ষয় রােধের জন্যও খেলাধুলার প্রচার ও প্রসার ঘটানাে যেকোনাে জাতির প্রাথমিক ও আবশ্যিক কর্তব্য হওয়া উচিত।
গত ৫ই জুন আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের আওয়ার লেডিস হলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো সিলেট বিভাগের উদ্যোগে ‘ বৃহত্তর সিলেটের ঈদপূর্ণমিলনী এবং পারিবারিক মিলন মেলা ২০২৩ ‘
অনুষ্ঠানটি বৃহত্তর সিলেটের ব্যানারে হলেও আয়োজকবৃন্দ আয়ারল্যান্ড প্রবাসী সকল বাংলাদেশীদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করার জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন । সে পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ড প্রবাসী সকল জেলার , আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় সংগঠন থেকে শুরু করে সকল সংগঠনের সদস্যবৃন্দ , অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহন ছিল লক্ষ্যণীয় ।
আয়োজকবৃন্দের তথ্য অনুযায়ী এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় উক্ত ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রায় ছয়শত অতিথি উপস্থিত হয়েছিলেন । আগত অতিথিদের প্রতিক্রিয়ায় জানা যায় , অনুস্ঠানে এসে তারা অত্যন্তখুশী , এ ধরনের আয়োজন প্রবাসে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরী করবে যা কমিউনিটিতে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে বলে মনে করেন । বিশেষ করে এ ধরনের আয়োজন প্রবাসে এতোগুলো পরিবারের একসঙ্গে মিলিত হওয়ার মাধ্যমে পারিবারিক বন্ধুত্ব তৈরী করার সুযোগ তৈরী করবে বলেও মনে করেন ।
মেলায় আগত অতিথিদের পাশাপাশি বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারের স্টল সহ কাপড়ের স্টল ছিল । স্টল গুলোতে ভোজনবিলাসী মানুষের ভীর ছিল চোখে পরার মতো । স্টল মালিকগন প্রতিক্রিয়ায় সন্তুস্টি প্রকাশ করেন । কিন্তু ক্রেতাগণ খাবারের দাম নিয়ে একটু অসন্তোষ প্রকাশ করেন ।
অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে ছিল উন্মুক্ত আলোচনা , আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন জসিম উদ্দিন আহমেদ এবং মাসুম জামান । উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর সিলেটের প্রবীন মুরব্বি শাহ তাজুল ইসলাম , বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড এর সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান , অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড ( আবাই ) এর সভাপতি ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিরদার , বিসিডি সভাপতি মোহাম্মদ মুস্তফা , মৌলভীবাজার এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড এর সভাপতি গোলাম নবী , আবাই এর সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জলিল , আবাই এর অর্থ সম্পাদক তাউসমিয়া তালুকদার , মৌলভীবাজার এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড এর সাধারণ সম্পাদক এমডি আব্দুল মুহিত , আজমল হোসেন , আবাই এর ক্রীড়া সম্পাদক রাব্বি খান এবং জামাল বাশির ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবির আহমদ বাবুল এবং মমতাজ কবির কলি ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গান পরিবেশন করেন স্থানীয় সুকন্ঠি এবং সুপরিচিত শিল্পী রুনা জলিল , উদীয়মান শিল্পী দিদারুল আলম , জনপ্রিয় শিল্পী জামাল বাশির ।
পরবর্তী অংশে গান পরিবেশন করেন আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশীদের উজ্জল নক্ষত্র , ইতিমধ্যে যিনি গান গেয়ে প্রবাসীদের মন জয় করে নিয়েছেন আভি অজিতাভ । আভি সিলেটের জনপ্রিয় অনেক গুলো লোকগীতি গান পরিবেশন করেন ।
শেষ পর্বে আকর্ষণ ছিল ইউরোপ সহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে গান গেয়ে যিনি দর্শকদের মন জয় করেছেন , ইংল্যান্ড থেকে আগত মিষ্টি কন্ঠের অধিকারী শতাব্দী রায় এবং তার দল । শতাব্দী রায় তার মিষ্টি কন্ঠদিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন । এখানে উল্লেখ্য যে ইংল্যান্ড থেকে আগত এডভোকেট মোস্তফা উক্ত অনুস্ঠানে ছন্দময় গান পরিবেশন করেন ।
আগত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন , আবাই এর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ার , সাবেক সাঃ সঃ ইকবাল মাহমুদ , বিসিডি উপদেষ্টা মাসুক শিকদার , বিডিএডি সভাপতি জহিরুল ইসলাম জহির , বিসিডি সহ সভাপতি আক্তার হোসেন , আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি ফিরোজ হোসেন , বিডিএডি সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া প্রধান ,, বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ , বিএসআই সভাপতি চুন্নু মাতাব্বর ,আবাই এর সহকারী অর্থ সম্পাদক মুজিবুল হক , আবাই এর সহ সভাপতি আজিজুর রহমান মাসুদ , বিসিডি উপদেষ্টা সাইফুল ইসলাম , বিসিডি উপদেষ্টা ফারুক সারোয়ার , বিসিডি সদস্য কাজী কবির , মামুন আলম , আমিনুল ইসলাম বুলবুল (কলামিস্ট ) মাহফুজুল হক , কামরুল হাসান , দিপু ভাই ,সাগর আহমেদ শামীম , আবাই এর সহকারী প্রকাশনা সম্পাদক সোহাগ আহমেদ , বিসিডি সাংস্কৃতিক সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া , বিসিডি সদস্য মিল্টন , মামুন , লেটারকিনি থেকে শামীম আহমেদ , সাইদ আহমেদ , জামাল মর্তুজা , লাভলী সারোয়ার , সায়লা শারমিন , লাভলী নাসরিন , মিম আলম , শান্তা ফাহামিদা , শিউলি আক্তার , কাউন্টি মিথ থেকে মোশাররফ হোসেন , সাজিদ সাজু , আব্দুল হাই , সেলিম আহমেদ প্রমূখ ।
এই অনুষ্ঠান কে কাভার করতে স্থানীয় অনেক সাংবাদিক উপস্থিত হয়েছিলেন , সেক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড প্রতিনিধি সময় টিভি থেকে জুয়েল সাঈদ , আইরিশ বাংলা টাইমস থেকে আব্দুর রহিম ভূঁইয়া ও কবির আহমদ বাবুল, আয়ারল্যান্ড ডিবিসি প্রতিনিধি ও আইরিশ নোটিশ বোর্ড থেকে মশিউর রহমান , প্রবাসী টিভি আয়ারল্যান্ড থেকে দিলীপ বড়ুয়া ,ডাবলিন ডাইরী থেকে মাহিদুল ইসলাম সবুজ , ভয়েজ অব আয়ারল্যান্ড বাংলা থেকে দিদারুল আলম প্রমূখ । আয়োজকদের পক্ষ থেকে সকল সাংবাদিকবৃন্দ কে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে এই অনুষ্ঠান কে সফল এবং সুন্দর করতে সক্রিয় ভূমিকায় আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন – মোহাম্মদ খালিদ , সালেহ আহমেদ মুবিন , ওয়াহিদুল আলম মোরাদ , এম এ জলিল , রন্টি চৌধুরী , জসিম উদ্দিন আহমেদ , মাসুম জামান , কবির আহমদ বাবুল , দিদার আহমেদ ,এমডি আব্দুল মুহিত , রাব্বি খান , আজমল হোসেন , হারুন খান , সাইফুল ইসলাম বাবলু , মোঃ টিটু , ইমরান হোসেইন ,নজির আহমেদ , বাচ্চু মিয়া প্রমুখ ।
সূত্রমতে অনুষ্ঠান কে সফল এবং সুন্দর করার জন্য অনেকে আর্থিক এবং মানসিক ভাবে সহযোগিতা করেছেন । তালিকাটি দীর্ঘ হওয়ায় নাম গুলো প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না ।
আয়োজকদের তথ্য অনুযায়ী অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী বৃহত্তর সিলেটের না হওয়া সত্ত্বেও ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য আয়োজকগন তাদের প্রতি ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ।
পরিশেষে ছিল আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য র্যাফেল ড্র পরিচালনা করেন দিদার আহমেদ এবং প্রথম পুরস্কার একটি স্মার্ট টিভি জিতে নেন জাকারিয়া প্রধান । একই সময়ে কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার ও বিতরণ করা হয় ।
কর্ক ক্রিকেট টিমের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন, মোঃ আলম রেজা, রিয়াজ চৌধুরী, রিগান, মোস্তাক আহমেদ আজ মঙ্গলবার ৬ই জুন কর্ক ক্রিকেট টিমের অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করেন। আসন্ন বিএসএআই ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে আজ কর্কের হার্লি কুইন্সের ক্রিকেট গ্রাউন্ডে কৰক ক্রিকেট টীম অনুশীলন করে।
আইরিশ বাংলা টাইমসের প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে তিনি আসন্ন টুর্নামেন্টের সফলতা কমনা করেন এবং বিএসএআই কে এ রকম একটি টুর্নামেন্টের আয়োজন করায় বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেই সাথে শরীর চর্চায় খেলাধুলার গুরুত্ব সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন।
কর্ক ক্রিকেট “A” টিমের অধিনায়ক আল ফয়সাল হুদা ও “B” টিমের অধিনায়ক মিঠু সরকার আসন্ন টুর্নামেন্টে তাদের সফলতার ব্যাপারে আশা ব্যক্ত করেন। এবং কমিউনিটির অন্যান্ন ব্যক্তিবর্গ ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন মতো খেলাধুলা ও শরীর চর্চার মতো কর্মকান্ডে সবাইকে উৎসাহিত করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের DCU তে তৃতীয় বারের মতো অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ ।
বেলা ১টার দিকে আয়ারল্যান্ডে বই মেলার উদ্যোক্তা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন ।
মেলাতে প্রায় ১৪/১৫ টি বুক স্টল , ১৫/১৬ টি খাবারের স্টল , দুটি কাপড়ের স্টল এবং একটি চায়ের স্টল ছিল ।
মেলার মূল আকর্ষণ ছিল লেখক , কবি , সাহিত্যিক এবং পাঠকদের সরব উপস্থিতি । আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড প্রবাসী অনেক গুণী লেখক , কবি , সাহিত্যিক তাদের প্রকাশিত বই নিয়ে মেলায় উপস্থিত হয়ে পাঠক এবং মেলায় আগত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা এবং কুশল বিনিময় করেন । বই মেলায় আয়ারল্যান্ড প্রবাসী কবি এবং লেখকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন : ডা. আরমান রহমান, ড. জাকিয়া রহমান, আয়শা আহমেদ ( ইংল্যান্ড প্রবাসী ) , সাজেদুল চৌধুরী রুবেল , মেহদী হাসান, কামরুন নাহার রুনু, লতা উসমানী, ইশরাত আরা লাইজু, রেজিনা মনি প্রমুখ।
এছাড়া মেলায় উপস্থিত ছিলেন আইরিশ সরকারের মন্ত্রী জ্যাক চেম্বার এবং ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন প্রফেসর সেলিম হাসমী ।
মেলাতে ছোট বাচ্চাদের নির্মিত আর্ট এবং ক্রাপ্টের প্রদর্শনীর একটি গ্যালারি ছিল । আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেক বাচ্চারা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহন করে । তাছাড়া বই মেলাতে আমাদের শিশুরা বাংলায় কবিতা আবৃত্তি , সঙ্গীত এবং নৃত্য পরিবেশন করে ।
মেলায় আগত কবি , সাহিত্যিকবৃন্দ তাদের স্বরোচিত কবিতা আবৃত্তি এবং গল্প পড়ে শুনান । পাশাপাশি অনেক স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ কবিতা আবৃত্তি এবং সঙ্গীত পরিবেশন করেন ।
এবারের মেলাতে প্রথমবারের মতো একজন আইরিশ সঙ্গীত শিল্পী , ‘ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ‘ গানটি আইরিশ ভাষায় পরিবেশন করেন ।
লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে মাননীয় হাই কমিশনার অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে মেলায় আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন এবং বই মেলা আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ভূয়সী প্রশংসা করেন ।
বাংলাদেশ থেকেও অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনেক কবি , সাহিত্যিক মেলায় আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ।
মেলায় পুরুষদের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য নারী এবং শিশু কিশোরদের ঊপস্থিতি মেলার আকর্ষণকে বৃদ্ধি করেছে ।
মেলায় লেখক ,পাঠক এবং দর্শকদের সরব উপস্থিতি মেলার প্রাণকে বৃদ্ধি করেছে এবং বইমেলা যেন একটি মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে ।
মেলায় আগত অতিথিবৃন্দ মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অনেকে মেলার জন্য আরোও বড় স্থান প্রয়োজন বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন । আয়োজকগণ ভবিষ্যতে বইমেলা আয়োজনে এ বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় রাখবেন বলে উল্লেখ করেন । আয়োজক কমিটির পক্ষথেকে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান এবং মুহাম্মদ মোস্তফা মেলায় আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান ।
আপনারা ইতিমধ্যে অবগত আছেন যে , আয়ারল্যান্ডে সিলেট বিভাগের প্রবাসীদের উদ্যোগে আগামী ৫জুন ২০২৩ একটি ঈদ পুণর্মিলনী এবং পারিবারিক মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে । আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে , উক্ত অনুষ্ঠানে থাকছে মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , রেফ্যাল ড্র , সুস্বাদু খাবারের স্টলসহ হরেক রকম স্টল ।
বৃহত্তর প্রবাসী সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে আয়ারল্যান্ডে সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের উক্ত মিলন মেলায় অংশগ্রহন করার জন্য আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে । পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডে প্রবাসীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন আবাই এর নির্বাহী কিমিটির সদস্যবৃন্দ , বিসিডি কমিটির সদস্যবৃন্দ , বিডিএডি কমিটির সদ্স্যবৃন্দ , সকল কাউন্টি ভিত্তিক , জেলা ভিত্তিত , বিভাগ ভিত্তিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক , মিডিয়া এবং খেলাধুলাসহ সকল সংগঠন কে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে ।
গত ১৮ ই মে ২০২৩ আইরিশ পার্লামেন্ট ভবনে মিনিস্টার অব স্টেট ফর স্পোর্টস এন্ড পিজিক্যাল এডুকেশন এর জনাব থমাস বায়ার্ন এর সাথে লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার লিমরিক এর দুইটি ক্রিকেট ক্লাবকে সাথে নিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রীর সাথে এই গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর আয়োজন করেন।
উক্ত মিটিংয়ে উপস্থিত থাকেন লিমরিক ক্রিকেট ক্লাবের চেয়ারম্যান জনাব ক্রিস থমাস, লিমরিক ব্লাস্টারস ক্রিকেট ক্লাবের চেয়ারম্যান জনাব জেফরি জেমস, মিনিস্টার অব স্কিলস এন্ড ফারদার এডুকেশন এর জনাব নায়াল কলিন্স এবং বিশেষ ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ব বাংলাদেশ স্পোর্টস এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (BSAI) এর সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং আবাই এর বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব মনিরুল ইসলাম মনির উপস্থিত ছিলেন।
স্পোর্টস মিনিস্টার জনাব থমাস বায়ার্ন এর সাথে মিটিং এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল লিমরিকের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাথে অবিচ্ছেদ্য যোগাযোগ বজায় রাখা, ক্রিকেট বিষয়ক যে কোন বিষয়ে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা এবং লিমরিকের ক্রিকেটের উন্নয়নে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করা। জনাব থমাস লিমরিকের ক্রিকেটের উন্নয়নে এবং ভবিষ্যতে ক্রিকেটের অগ্রগতির ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি রাখার কথা জানান।
এছাড়াও ক্রিকেট ক্লাবের ফান্ডিং এর বিষয়েও মন্ত্রীর সাথে কথা হলে, মন্ত্রী এ বিষয়েও সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আশ্বাস দেন।
লিমরিক ক্রিকেটে শুধুমাত্র পুরুষরাই জড়িত রয়েছে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরকেও অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়। পাশাপাশি তরুণদেরকে ক্রিকেটে উৎসাহিত ও সহযোগিতা করার কথাও মন্ত্রীকে অবহিত করা হয়।
আগামী ২০২৩ সালে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হবে T20 ক্রিকেট বিশ্বকাপ। উক্ত বিশ্বকাপের দুই একটি ম্যাচ যাতে লিমরিকে ব্যবস্থা করা হয় এবং সে অনুযায়ী মাঠের ব্যবস্থা করা হয় সে বিষয়েও আলোকপাত করা হয়। জনাব আজাদ তালুকদার বিষয়টি নিয়ে আগেও উচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাব তুলেছিলেন।
মিনিস্টার নায়াল কলিন্সও এই মিটিং এর ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত। তিনি জানান ক্রিকেট এখন বিশ্বব্যাপী বড় এবং বর্ধমান স্পোর্টস এবং ক্রিকেটের উন্নয়নে সরকারের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি জেন্ডার ব্যাল্যান্সে এবং ফান্ডিং ব্যাপারেও কথা বলেন। তিনি লিমরিক ক্রিকেট ক্লাবের ভূয়সী প্রশংসা করেন তাদের বিগত ক্রিকেটের প্রতি অবদান রাখার জন্য।
জনাব আজাদ তালুকদারও আশাবাদী লিমরিকের ক্রিকেটের উন্নয়নের ব্যপারে। তিনি এ ব্যাপারে ক্রমাগত কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
সাবেক BSAI এর সভাপতি জনাব মনিরুল ইসলাম মনিরও জানান একটি সফল মিটিং সম্পন্ন হয়েছে বলে।
আয়ারল্যান্ডে সিলেট বিভাগের প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগে আগামী ৫ই জুন ২০২৩ ঈদ পূর্ণমিলনী এবং পারিবারিক মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে ।
Venue :
Our Lay’s Hall
Drimngh
D12 DW68
ঈদ পূণমিলনী অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়েছিল জুমের মাধ্যমে ১৮মে ২০২৩ । জুমে বিভিন্ন কাউন্টিতে বসাবাসরত সিলেট বিভাগের প্রবাসীরা অংশগ্রহন করেন এবং সবাই উক্ত অনুষ্ঠান কে সুন্দর এবং সফল করার জন্য বিভিন্ন মতামত উপস্থাপন করেন । এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ কমিউনিটির দুইজন বিশেষ ব্যক্তিত্ব সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান এবং ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিরদার উক্ত জুম আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ।
জুম আলোচনায় আরোও অংশগ্রহন করেন এম এ জলিল , জসিম আহমেদ , কবির আহমদ বাবুল , মাসুম জামান , রন্টি চৌধুরী , আফজাল হোসেন , শাহ টুটন , শফিকুল হক রকিব , শফিউল আলম মাছুম , আব্দুল হান্নান জুনন , মুবিন আহমেদ , সৈয়দ আহমেদ , রাব্বি খান , ওয়াহিদুর রহমান মোরাদ , খালেদ মোহাম্মদ , শাকিল আহমেদ , আব্দুল হাই রুভেজ ,ফরাজী রহমান সুমন , সোয়েব হোসেন , মতিউর রহমান , শাহীন জামান এবং আরোও অনেকে ।
আলোচনায় বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও , সবার উদ্দেশ্য ছিল একটি সুন্দর , সফল এবং স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহনমূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা ।
প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী প্রানবন্ত আলোচনার সমাপনী বক্তিতায় জিন্নুরাইন জায়গিরদার এবং সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান সিলেট বিভাগের সকল প্রবাসীদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহনের মধ্যদিয়ে একটি সফল অনুষ্ঠান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন । একই সঙ্গে সবার সহযোগিতা কামনা করেন এবং সিলেট বিভাগের সকল প্রবাসীসহ আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশী কমিউনিটির সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ করেন ।
গত ১৪ই মে ২০২৩ রোজ রবিবার আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বৃহত্তর কুমিল্লাবাসীর আয়োজনে কাউন্টি গলওয়ের ট্যুম শহরের ওয়েস্ট উইং রেস্তোরায় ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল।
আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক বাঙালি তাঁদের পরিবার নিয়ে ওয়েস্ট উইং রেস্তোরায় সমবেত হয়েছিলেন এবারের ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। দুপুর গড়ার সাথে সাথে সকলে দূর দূরান্ত থেকে ঈদ মিলনীতে পৌঁছাতে শুরু করেন। ছোট বড়ো, নারী পুরুষ, সকলের অংশগ্রহণে ঈদ মিলনমেলা হয়ে উঠেছিল সমগ্র বাংলাদেশিদের সার্বজনীন মিলন একটি মেলা।
অনুষ্ঠান সার্বিক পরিচালনা করেন কবির আহমেদ ও আব্দুল মান্নান মান। পবিত্র কুরআনে পাক থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয় দুপুর একটায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুমিল্লা এর উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় ও এর উপর কুইজ প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর বিশেষ অতিথিবৃন্দকে পরিচয় করে দেওয়া হয় এবং এর পর এক এক করে সকলে বক্তব্য প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে আইরিশ সরকারের ৪ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সহ বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেক প্রিয়মুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে জনাব ডাক্তার জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও জনাব সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন। সরকারের চার জন ব্যক্তি হচ্ছেন সিনেটর শন কীন (ফিনিগোইল সদস্য) তিনি সংসদের সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিষয়ক প্যানেলের সদস্য। দ্বিতীয়জন ফাইন গেইলের ডেপুটি নেতা সংসদ সদস্য কিরণ ক্যানন। তিনি মিডিয়া, আর্ট ও কালচারাল মুখপাত্র। কাউন্টি গলওয়ের কাউন্সিলর, মেয়র মিকাইল মোগি মাহির। অপর জন কাউন্টি ডাবলিনের ডানলহরী, রাথডাউন এলাকার কাউন্সিলর বাংলাদেশের গর্ব জনাব কাজী মোস্তাক আহমেদ ইমন।
এই সমস্ত অতিথিবৃন্দ বাংলাদেশিদের নানা ভাবে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন। আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী এমব্যাসি স্থাপনের ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। অতিথিদের সাথে আলাপের এক কালে গলওয়ের ৫টি কবরস্থানে নির্দিষ্ট করে ১৫টি করে কবরের স্থান মুসলমানদের জন্য বরাদ্ধ রাখার ব্যাপারে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন বলেছেন। ধীরে ধীরে সারা আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টিতে অনুরূপ সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
ঈদ পুনর্মিলনীতে গলওয়ের স্থানীয় অনেক বাংলাদেশী উপস্থিত হন। এদের মধ্যে জসিম দেওয়ান, আজিমুল হোসেন আজিম, জহির উদ্দিন, লিটন খান, জামাল বাশির, বেলাল হোসেন, তামিম মজুমদার প্রমুখ।
এছাড়া সমগ্র আয়ারল্যান্ড থেকে নেতৃস্থানীয় পর্যায়ের লোকজনও চোখে পড়ার মতো ছিল। যাদের মধ্যে ডাক্তার মুসাব্বির হোসাইন, ডাক্তার সালেহীন, ডাক্তার শামীম, সাইফুল ইসলাম, মিজানুর রহমান জাকির, আশিকুর রহমান আরিফ, জালাল আহমেদ ভূঁইয়া, জাকারিয়া প্রধাণ, আরিফ ভূঁইয়া, ইকবাল মাহমুদ, আনোয়ারুল হোক আনোয়ার, সাজেদুল চৌধুরী রুবেল, আজিজুর রহমান মাসুদ, মুজিবুর রহমান রহমান, আয়ুব আলী, আব্দুর আলমগীর, রনি, রিজভী, টুলু মিয়া, লোকমান হোসেন, মাকসুদ, গালিব হক, আবুল কাশেম, আলাউদ্দিন, মোজাম্মেল হক, তারেক ইকবাল, রবিউল আলম, শম্পা লিলি, রোকসানা ও অনেকে। আগত অতিথিবৃন্দরা অনুষ্ঠানে নেচে গেয়ে অনুষ্ঠানটিকে সারাক্ষন মাতিয়ে রেখেছিলেন।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদেরকে আপ্যায়নের জন্য বুফেট সার্ভিসের মাধ্যমে খাবারের আয়োজন এবং সাথে মিষ্টি হিসেবে কুমিল্লার রসমালাইয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
অনুষ্ঠান সূচিতে বাচ্চাদের জন্য ও বড়োদের জন্য নানা রকম আয়োজনের ব্যবস্থা রাখা ছিল। শিশু কিশোরদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা, বাচ্চাদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বয়স্ক নারী, পুরুষদের চিত্ত বিনোদনের জন্য ছিল যথাক্রমে বালিশ খেলা ও বল খেলা।
কুমিল্লা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা জনাব আক্তার হোসেন উক্ত ঈদ পুনর্মিলনীতে আসা সকলকে আন্তরিক ধ্যন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং এই অনুষ্ঠান সফল করতে যারা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন ও ভ্যানু দিয়ে সহযোগিতা করেন তাদের সকলকেও তিনি ধ্যন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
কুমিল্লা কমিউনিটির উপদেষ্টা কমিটির ১৫ জন সদস্য জনাব আক্তার হোসেন, জনাব আব্দুল মান্নান, জনাব মনিরুল ইসলাম, জনাব আব্দুল মান্নান মান, জনাব আনোয়ারুল আজিম, জনাব সাইফুজ্জামান খান, জনাব ইনজামামুল হক জুয়েল, জনাব মুজিবুল হক, জনাব সালাহ উদ্দিন, জনাব মশিউর রহমান, জনাব শফিকুর রহমান গিয়াস, জনাব লোকমান হোসেন, জনাব মাসুদ আলম, জনাব আলাউদ্দিন, জনাব সোহরাব হোসেন।
এই ঈদ পুনর্মিলনী এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে পেরে আয়োজক বৃন্দ অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন। ঈদ আনন্দ উপভোগের মাধ্যমে বৃহত্তর কুমিল্লার ভাই-বোনদের সাথে অন্যান্য জেলার মানুষের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে তারা প্রত্যাশা করেছেন
গত পহেলা মে প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী চিকিৎসকদের একটি মিলন মেলার আয়োজন করা হয়। আয়োজনটি কাউন্টি ডাবলিনের কর্নেলসকোর্ট এর “সানাই রেটুরেন্টে” সংগঠিত হয়। ৫৪ জন চিকিৎসকের এরকম সমাবেশ আয়ারল্যান্ডে এটাই প্রথম।
প্রবাসে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে কিভাবে বিকশিত এবং সচেতন করা যায়, বাংলাদেশ থেকে এই দেশে আসতে ইচ্ছুক চিকিতসকদের কিভাবে সহযোগিতা করা যায় ও সর্বোপরি নিজেদের মধ্যে কিভাবে সুসম্পর্ক তৈরী করা যায়, সেটাই ছিল এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য।
এই প্রথম ডাক্তারদের এমন মিলনমেলার আয়োজন হওয়ায় আগত ডাক্তারগন ও তাদের পরিবারের সদস্যগণ আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এই অনুষ্ঠানটি অল বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের সভাপতি ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও কমিউনিটি বিশেষ ব্যক্তিত্ব ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন এর উদ্দ্যোগে এবং ডাঃ মোঃ পারভেজ ইকবাল এর সার্বিক সহযোগিতায় আয়োজিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে চিকিত্সকগন আয়ারল্যান্ডে তাদের আগমন, বসবাসের অভিজ্ঞতা এবং স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করেন। আগামীতে এই দেশে কিভাবে আরো বাংলাদেশী চিকিৎসক আসতে পারেন সেই ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে কিভাবে সহযোগিতা করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার আয়ারল্যান্ডের সকল ডাক্তারদের নিয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একটি ফোরাম গঠন করার ব্যাপারে আগত সকল ডাক্তারদের নিকট প্রস্তাব রাখেন এবং এই ব্যাপারে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই আহবায়ক কমিটি শীঘ্রই এই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশী কমিউনিটিকে সেবাদানে আগ্রহী চিকিৎসকদের নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপহার দিবেন বলে অবহিত করা হয়।
৬ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ
আহ্বায়ক
ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন, কর্ক ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল
সদস্য সচিব
ডাঃ পারভেজ ইকবাল, সেইন্ট কলমকিলস হাসপাতাল এবং
সদস্যবৃন্দঃ
ডাঃ সাইদ মাহমুদ আলী রেজা মিলন, কেরি ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল
ডাঃ শিরিন আক্তার, চিলড্রেন্স হাসপাতাল, ডাবলিন
ডাঃ মোঃ সেকুল ইসলাম, টুলামোর হাসপাতাল ও
ডাঃ আফরিনা চৌধুরী
আয়োজকগণ স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে নিয়মিত টকশো করার কথা ব্যাক্ত করেন। উদ্যোক্তাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয় কমিউনিটির সদস্যবৃন্দকে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে আবাই এর মাধ্যমে একটি যোগাযোগ ব্যাবস্থা তৈরী করা হবে।
ডাক্তারদের এই ফোরামটি গঠিত হলে আগামীতে নিয়মিতভাবে সকলে মিলিত হওয়ার ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এইভাবে কমিউনিটির সবাইকে সেবাপ্রদানে নিজেদের নিয়োজিত করতে পারলে বাংলাদেশি এই চিকিৎসকবৃন্দ নিজেদেরকে ধন্য মনে করবেন এবং বাংলাদেশী চিকিৎসক হিসেবে গর্ববোধ করবেন।
ডাক্তারদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ বিনিময়, আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যসেবার পরামর্শ দেওয়া, কিভাবে বংলাদেশ থেকে আরো চিকিৎসক আসতে পারেন সেই ব্যাপারে আলোচনা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়াই এই গেটটুগেদারের উদ্দেশ্য ছিল।
অনুষ্ঠানে খোলা কন্ঠে রবিন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন ডা: অনামিকা ও ডা: আফরিনা, কবিতা আবৃত্তি করেন ডা: রেজা ও কৌতুক পরিবেশন করেন ডা: মতিন।
সানাই রেস্টুরেন্টে সুস্বাদু দুপুরের খাবারের আপ্যায়ন সকলেই প্রশংসা করেন।
আজ ২৬ শে এপ্রিল রোজ বুধবার আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশি কমিউনিটির কেন্দ্রীয় সংগঠন অল বাংলাদেশি এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) আয়ারল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এর মিনিস্টার জনাব জেমস ব্রাউন এবং চিপ ইমিগ্রেশন অফিসার জনাব কণর মারফি এর এর সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফলফ্রসু মিটিং সম্পন্ন করেন। আবাই এর পক্ষ থেকে আইরিশ মন্ত্রণালয়ের এটাই প্রথম মিটিং।
লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদের উক্ত মিটিং এ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন।
আবাই এর প্রতিনিধিগণ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা নিয়ে জাস্টিস মিনিস্টার জেমস ব্রাউনের সাথে সাক্ষাত করেন। আলোচনার বিষয়বস্তু নিম্নে বর্ণনা করা হল।
বাংলাদেশে আইরিশ দূতাবাস স্থাপন অথবা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে কন্স্যুলার অফিস অথবা এজেন্ট স্থাপন, ভিসা বিষয়ক জটিলতা দূরীকরণ এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জোরালোভাবে অনুরোধ জানান। যেহেতু বাংলাদেশে আইরিশ কোন এম্বেসি বা দূতাবাস নেই সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন অন্তত কন্স্যুলার অফিস স্থাপন অথবা VFS এর মত ইমিগ্রেশন এজেন্ট স্থাপন করা হয়। যাতে করে ভিসার আবেদন জমা দেয়া ও ভিসা সংগ্রহ করতে ভোগান্তির শিকার না হতে হয়। ভারত গিয়ে ভিসা জমা ও সংগ্রহ করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়না এবং হলেও সময়সাপেক্ষ ও ভোগান্তির বিষয়। অনেকে সময়মত পাসপোর্ট হাতে পায় না এবং পাসপোর্ট হারানোরও নজির রয়েছে। এ বিষয়ে আবাই এর প্রতিনিধিগণ গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় রাখার জন্য মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
আবাই এর প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসার কোটা বর্ধনের জন্য অনুরোধ জানান, অন্যান্য দেশের তুলনায় জনসংখ্যার বিবেচনায় বাংলাদেশে এইসব ভিসা দেয়ার হাড় অত্যন্ত নগণ্য। ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন অফিসারদের অবহেলার কথাও উল্লেখ্য করেন প্রতিনিধিগন এবং কিছু ভিসা রিফিউজের প্রমাণও উত্থাপন করেন। বিগত সময়ে ওয়ার্ক ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসা অনেক রিফিউজ হয়েছে শুধুমাত্র অবহেলার কারণে।
সেই সাথে বাবা মা এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসার ব্যবস্থা যেন করে সে অনুরোধও জানানো হয়।
এর পর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম এর জন্য অনুরোধ জানান। বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে ২৪ টি দেশে ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য নেই। যেমন পার্শ্ববর্তি দেশ ইংল্যান্ডে কেউ ভিসা পেলে আয়ারল্যান্ডে এবং আয়ারল্যান্ডে ভিসা পেলে ইংল্যান্ডে ভ্রমণ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এই সুবিধা নেই।
আয়ারল্যান্ডে প্রায় ১৭ হাজার অনথিভুক্তদের বৈধতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে অনেকে বৈধতা পেলেও অনেকের আবেদন এখনো ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। আবাই এর প্রতিনিধিগণ কিছু আবেদনের প্রমাণসহ জাস্টিস মিনিস্টার এবং চিপ ইমিগ্রেশন অফিসার এর নিকট প্রদান করেন এবং উনারা বিষয়টাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
এরপর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইমিগ্রেশণ সার্ভিস অনলাইনকরণ। বর্তমানে ভিসা নবায়ন, স্ট্যাম্প গ্রহণের জন্য গার্ডা অথবা ইমিগ্রেশনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ভিসা নবায়ন কিংবা স্ট্যাম্প গ্রহণ করতে হয়। যা সময় সাপেক্ষ এবং অনেকের জন্য সহজসাধ্য নয়। দেরিতে স্ট্যাম্প পাওয়ার কারণে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, চাকুরী ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন মিস করে থাকে। এ বিষয় সমাধানের জন্য ও প্রয়োজনে অনলাইনে এই সেবা দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করা হয়।
উপরোক্ত সব বিষয়কেই যৌক্তিক ও ভ্যালিড বলে জানান জাস্টিস মিনিস্টার এবং চিপ ইমিগ্রেশন অফিসার এবং বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন এবং খুব শিগ্রই বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবেন বলে জানান।
এছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্ত্রীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন আবাই এর নেতৃবৃন্দ।
উক্ত মিটিং এ আবাই এর পক্ষ থেকে উপস্থিত থাকেন সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার, সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইনজামামুল হক জুয়েল। মিডিয়ার পক্ষ থেকে উপস্থিত থাকেন সময় টেলিভিশনের সৈয়দ জুয়েল। জনাব আজাদ তালুকদার উপস্থিত থাকেন মিটিং এ অতিথি হিসেবে।
উপরোক্ত তিনটি এজেন্ডাই গুরুত্বপূর্ণ এবং আশু প্রয়োজন। বিষয়গুলা যদি ধাপে ধাপে সমাধান সম্ভব হয় তাহলে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে। বিশেষ করে ইমিগ্রেশন বিষয়ে।
বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের মাঝে অনেকগুলি সংগঠন বিদ্বমান আছে। কোনো কোনোটি সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সংস্কৃতিক এবং ক্রিড়া সংক্রান্ত ইত্যাদি। প্রতিটি সংগঠনের দায়িত্বশীল এবং সদস্যবৃন্দের ৯৫% এর বেশি মুসলিম। মুসলিম সংস্কৃতি বা অনুশাসন কেউ কম বা বেশি মেনে চলি। কিন্তু সুস্পষ্ট ভাবেই বলা যায় দুনিয়ায় বেচে থাকতে এবং চির বিদায় নেওয়ার সময় মুসলমান পরিচয় নিয়েই বিদায় হতে চাই। এব্যপারে কেউই দিমত পোষণ করবেননা বলে আমার বিশ্বাষ।
বিগত দিনে দুইজন ভাইকে শেষ বিদায় দিতে গিয়ে মনটা ভারাক্রান্ত হয়েগেল।
একজন মুসলমান হিসেবে শেষ বিদায় দেওয়ার কিছু ঋতি নিতী আছে যা বিশ্ব নবী স: শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। যেসব ভাইয়েরা আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন তাদের শেষ গোছল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের ভাইদের মধ্য থেকেই হয়েছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে তাদেরকে কবরে রাখা নিয়ে।
একজন মৃত মুসলমানকে কবরে রাখতে হবে কফিন ছাড়া কিবলামুখি করে এবং তার মাহাররাম আত্মীয়-স্বজনদের দারা। প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য আছে বিশ্ব নবী স: এর শিখানো দোয়া এবং নিয়ম কানন। কিছু কিছু ভাইদের ক্ষেত্রে তা পালন করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।
আমরা বরাত দিয়ে থাকি কাউন্টি কাউন্সিল অনুমতি দেয়নি। আয়ারল্যান্ডে যার যার ধর্ম পালন, জাতীয় রসম রেওয়াজ বা সাংস্কৃতি পালনে সরকার কতৃক কোনো বাধা নেই। যে বা যারা তার অধিকার আদায়ের জন্য আবেদন করেছেন সে বা তারা তা আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন ইতপূর্বে এর একাধিক দৃষ্টান্ত আছে। নিজস্ব ধর্ম পালনের জন্য যারা স্থানীয় কাউন্টি কাউন্সিলে আবেদন করেছেন তারা সবাই সেসংক্রান্ত বিষয়ে অনুমতিও পেয়েছেন।
যার যার সংগঠনের আকৃতি বৃদ্ধি করন নিজস্ব ব্যক্তি ইমেইজকে উপরে রাখা নিয়ে যতটা মেহনত করছি তার চেয়েও বহুগুনে বেশি মেহেনত করা দরকার হচ্ছে আমাদের চিরবিদায়ের রসম রেওয়াজগুলি মেনে চলা নিয়ে। কথায় আছে শেষ ভাল যার সব ভাল তার।
এজন্য সকল কাউন্টি বা শহরগুলিতে বাংলাদেশীদের যত সংগঠন বা কতৃত্বশীল ব্যক্তিবর্গ আছেন সকলে চেষ্টা করুন যাতে আমাদের ভাই/বোনদের চিরবিদায় আল্লাহ্তায়ালা ও বিশ্ব নবী স: শিখানো পদ্ধতির মাধ্যমে ও সর্বাধিক সম্মানজন ভাবে দেওয়া যায়।
যারা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন এ দায়িত্বতো আর তাদের নয়। এখনও যারা বেচে আছি এ দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে।
কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য লিখিনি, ভাইয়ের অধিকারবলেই লিখেছি। তাই ত্রুটি বিচ্চুতির জন্য এভাইটিকে মাফ করে দিবেন।
খন্দকার মুঈনউদ্দিন অপু
তালা, ডাবলিন।
বাংলাদেশ কমিউনিটি Galway উদ্যোগে আরেকটি মাইল ফলক অর্জন করতে যাচ্ছে। কমিউনিটির সভাপতি জনাব জসিম দেওয়ান এর নেতৃত্বে একটি স্থায়ী কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নেওয়া হয়েছে। কমিউনিটি সেন্টারটির দৈর্ঘ্য প্রায় তিন হাজার বর্গফুট। উক্ত সেন্টারে পুরুষ এবং নারীদের আলাদাভাবে বসার ব্যবস্থা রয়েছে। কমিউনিটি সেন্টারে বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়াও এই কমিউনিটি সেন্টার যে কোন ধরনের পারিবারিক অনুষ্ঠান করার ব্যবস্থা থাকবে বলে সভাপতি জনাব জসিম দোয়ান জানিয়েছেন। উক্ত সেন্টারে আলাদা রান্নাঘর এবং পুরুষ এবং নারীদের টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে।
কমিউনিটি সেন্টারটি খুবই শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সভাপতি জনাব জসীম দেওয়ান
BDAD এর আয়োজনে গত ১০ই এপ্রিল ক্লোনডালকিনের IMCC মসজিদে দ্বিতীয় বারের মত ইফতারের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশ অব ডাবলিন BDAD গত ১০ই এপ্রিল ক্লোনডালকিনের IMCC মসজিদে দ্বিতীয়বারের মত ইফতার ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করে। এর পূর্বে সংগঠনটি গত ৫ই এপ্রিল ২০২৩ বুধবার ১৪ই রমজান, ডাবলিনের ক্লোনোনোডালকিনে অবস্থিত আল খিদমা কমিউনিটি সেন্টারে তাদের প্রথম ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল।
দ্বিতীয় দফায় এই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ডাঃ পারভেজ, জালাল আহমেদ ভূঁইয়া, রুহুল আমিন তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, ইয়াসিন মামুন, খায়রুল্লাহ, আরিফুল হক, আবদুর আলমগির, মাহবুব হোসেন খান, শাহীন মিয়া, মাজহারুল ইসলাম ঝিনুক, ডঃ নাসিম মাহমুদ, আবু বকর সিদ্দিক, ডাঃ আতিকুর রহমান, ডঃ ফারজানা ফেরদৌস, শাহদাত তপু, মিনহাজুল শাকিল, মিজানুর রহমান, মনিকা হোসাইন, শামিমা রহমান দিপা, রুহুল আমিন তালুকদার, তানভির শফিক, রেফায়েত উল্লাহ, মোঃ ইবরাহীম, সহ কমিউনিটির অনেক ব্যাক্তি বর্গ।
ডাবলিন থেকে বহু বাংলাদেশী এই ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়েছিলেন। উক্ত ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের সভাপতি ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার, সেক্রেটারী আনোয়ারুল হক আনোয়ার, সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান মাসুদ এবং সহ-সভাপতি কাজী শাহ আলম, সহ ধর্মিয় সম্পাদক লোকমান হোসেনসহ A B A I কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দ ।
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের BSAI এর প্রেসিডেন্ট চুন্নু মাতবর ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন এবং কোষাধ্যক্ষ আলমগির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সামির জসিম, তপু শাহাদাত, জালাল আহমেদ ভূ্ঁইয়া, ডঃ নাসিম মাহমুদ, সালাহউদ্দিন সোয়েব সহ ডাবলিনের আরো অনেক কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গ ।
BDAD এর সভাপতি জনাব জহিরুল ইসলাম জহির ও সাধারন সম্পাদক জাকারিকায়া প্রধান ইফতার মাহফিলে আগত মেহমানদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
গতকাল ১১ই এপ্রিল ২০ই রমজান বৃহত্তর সিলেটবাসীর আয়োজনে রিভারভ্যালী কমিউনিটি সেন্টারে এক ইফতার ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। তরুণ ও প্রবীণ ব্যাক্তিবর্গের সমন্বয়ে আয়োজকবৃন্দ এই ইফতার পার্টির পরিকল্পনা করেন।
বৃহত্তর সিলেটবাসীর এই ইফতার পার্টিতে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন শহর থেকে বহু বাংলাদেশী যোগ দান করেন। আগত অতিথিবৃন্দদের মনোরম ও উষ্ণ পরিবেশে আপ্যায়ন করা হয় আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে। ইফতারের পর একে অপরের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন ও ছবি ধারণ করেন। এরকম সুন্দর একটি আয়োজন করায় অতিথিবৃন্দ আয়োজকদের ধ্যন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
ইফতার পার্টিতে আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের গন্যমান্য সদস্যদের এক মিলিনমেলায় রূপান্তরিত হয়েছিল। ABAI, BCD, BDAD, BSAI এর সক্রিয় সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোঁখে পড়ার মতো।
আইরিশ বাংলা টাইমসের ক্যামেরায় ধারণকৃত স্থিরচিত্র গুলো সকলের জন্য শেয়ার করা হলো।
প্রত্যেক বছর এরকম আয়োজন করার ইচ্ছা পেষণ করেন আয়োজকবৃন্দ এবং এবার যারা আসতে পারেন নাই তাদেরকে পরিবর্তীতে আসার জন্য আহবান করা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।
মেনুথের ফিউশন রেস্টুরেন্টে আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ইফতারে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজকের এই ইফাতার অয়োজনে মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দোয়া করা হয়। দেশে ও প্রবাসে অবস্থিত সকল বাংলাদেশিদের জন্য দোয়া করা হয়।ইফতারের পূর্বে সংক্ষিপ্ত এক আলোচনায় আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আসন্ন সন্মেলন ও সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করা হয়।
আগামী ১লা ও ২রা এপ্রিল বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনের একটি টিম ডাবলিনে আসছেন কনসুলার সেবা প্রদানের লক্ষে । আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের পক্ষ্য থেকে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদের সতস্ফুর্তভাবে এই কনসুলার সেবা গ্রহন করার জন্য আহ্ববান জানানো হয়।ডাবলিন আওয়ামী লীগের সভাপতি জালাল আহমেদ ভুইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইকবাল আহমেদ লিটন। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান, র ফিকুল ইসলাম, মিনহাজুল আমিন শাকিল, মিজানুর রহমান, তপু শাহাদাত, রাজিবুল হক গালিব, নজরুল ইসলাম, আফসার উদ্দিন, মনির হোসেন, কাউসার জামান শিপলু, সোহেল সরকার, সাদ্দাম, রাহাত, আহমেদ, টনি মামুন, মাসুদ, নিক্সন, জামান, নিবিড়, জিহান সহ আরোও অনেকে।
আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস ও ইফতারের আয়োজন এর ফটো গ্যালারী
বাংলাদেশ হাই কমিশন (ইউকে) আয়ারল্যান্ডে বছরের কিছু সময় কনস্যুলার সেবা দিয়ে থাকে। অনেকে দূর দূরান্ত থেকে কনস্যুলার সেবা নিতে আসেন, অনেক সময় প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও পূর্বপ্রস্তুতি না নিয়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। কনস্যুলার সেবা মসৃণভাবে নিতে এই আর্টিকেলটি কিছুটা হলেও সহায়তা করবে। এ তথ্য আয়ারল্যান্ডে কনস্যুলার সেবা ছাড়াও লন্ডনে হাই কমিশনের অফিসের সেবার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
যে যে বিষয়ে কনস্যুলার সেবা দিয়ে থাকে তা হচ্ছেঃ
১। নতুন ই-পাসপোর্ট তৈরি ২। নো ভিসা রিকোয়ার্ড (NVR) ৩। পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি অ্যাটেস্টেশন ৪। জন্ম নিবন্ধন ও বার্থ সার্টিফিকেট ৫। অ্যাটেস্টেশন বা প্রত্যয়ন
কনস্যুলার সার্ভিস গ্রহণের পূর্বে যে বিষয়গুলো অবশ্যই প্রস্তুত রাখতে হবে ও জেনে রাখা আবশ্যকঃ
১। ই-পাসপোর্ট এর আবেদন
কনস্যুলার সার্ভিস ভ্রমণের আগে অবশ্যই ই-পাসপোর্ট এর অনলাইন ফর্ম পূরণ করে সাবমিট করে বারকোডসহ প্রিন্ট করে নিতে হবে। অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন ই-পাসপোর্ট আবেদন
বাধ্যতামূলকভাবে ১৯ ডিজিটের NID (ন্যাশনাল আইডি) অথবা জন্ম সনদ থাকতে হবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বাবা মায়ের NID অথবা জন্ম সনদ থাকতে হবে।
ই-পাসপোর্ট এর জন্য আগের MRP অথবা হাতে লেখা পুরনো পাসপোর্ট অবশ্যই লাগবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বাবা মায়ের পূর্বের পাসপোর্ট লাগবে।
স্টুডেন্ট ভিসার ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ID হলে ডিসকাউন্ট প্রযোজ্য হবে।
আবেদনকারীর ছবি দরকার হবে। নবজাতক ও শিশুদের ক্ষেত্রে বাবা মায়ের ছবিও লাগবে।
বায়োমেট্রিকের জন্য আবেদনকারীকে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে।
বাধ্যতামূলকভাবে প্রুফ অফ এড্রেস আনতে হবে।
৫ বছরের ই-পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি £96 এবং স্টুডেন্ট ফি £30
১০ বছরের ই-পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি £118 এবং স্টুডেন্ট ফি £50
আবেদন পাসপোর্ট সার্জারির দিন নেয়া হবে এবং পোষ্ট এর মাধ্যমে পাঠানো হবে। সার্ভিস নিতে আসার সময় সবগুলো সাপোটিং ডকুমেন্টের ফটোকপি নিয়ে আসবেন।
২। নো ভিসা রিকোয়ার্ড (NVR) প্রথম আবেদন
অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে প্রিন্টেড কপি নিয়ে আসতে হবে। অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন NVR আবেদনের লিংক
এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
আইরিশ পাসপোর্টের ফটোকপিসহ অরিজিনাল পাসপোর্ট।
ফটোকপিসহ অরিজিনাল বাংলাদেশি পাসপোর্ট অথবা বার্থ সার্টিফিকেট অথবা বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ফটোকপিসহ বার্থ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে যেখানে বাবা মায়ের নাম প্রদর্শন করে এবং বাবা মায়ের বাংলাদেশি বাংলাদেশি পাসপোর্ট অথবা বার্থ সার্টিফিকেট অথবা বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নিয়ে আসতে হবে।
ফী £46
আবেদন জমা নিয়ার ২১ দিন পর পোস্টের মাধ্যমে NVR-সহ পাসপোর্ট প্রেরণ করা হবে।
৩। নো ভিসা রিকোয়ার্ড (NVR) (যাদের আগে NVR ছিল)
অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে প্রিন্টেড কপি নিয়ে আসতে হবে।
এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
আগের NVR পেইজের ফটোকপিসহ পাসপোর্টের ফটোকপি এবং অরিজিনাল আইরিশ পাসপোর্ট।
আগের NVR সম্বলিত পাসপোর্ট সাথে করে নিয়ে আসতে হবে।
ফী £46
নো ভিসা রিকোয়ার্ড (NVR) পূরণ করতে ধাপে ধাপে সহজবোধ্য নির্দেশিকা পেতে এখানে ক্লিক করুনঃNVR ধাপে ধাপে নির্দেশিকা
ভ্যালিড বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাধ্যতামূলকভাবে থাকতে হবে।
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি যে দিবে এবং যে গ্রহণ করবে উভয়ের এক কপি করে ছবি থাকতে হবে।
যারা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিবে তাদের সবাইকে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে এবং হাই কমিশনের অফিসারের সামনে সাক্ষর করতে হবে।
সকল জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দলিল খতিয়ান ইত্যাদি থাকতে হবে।
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি ফী £40 (দুই কপি) এবং অ্যাটেস্টেশন ফি £7
৫। জন্ম নিবন্ধন ও বার্থ সার্টিফিকেট
অনলাইনে ফর্ম পূরণ ও সাবমিট করে করে প্রিন্টেড কপি নিয়ে আসতে হবে। জন্ম নিবন্ধনের আবেদনের জন্য অবশ্যই অনলাইনে এপ্লিকেশন পূরণ করে নিয়ে আসতে হবে। অনলাইন আবেদন এখানে করতে হবে বার্থ সার্টিফিকেট আবদনের লিংক
বাংলাদেশি পাসপোর্টের কপি আবশ্যক।
বাংলাদেশি আইরিশ শিশুদের ক্ষেত্রে বাবা মায়ের বাংলাদেশি পাসপোর্ট লাগবে।
ফি £4
৬। অ্যাটেস্টেশন
বাংলাদেশ থেকে ইস্যু ডকুমেন্ট অবশ্যই মিনিস্ট্রি অফ ফরেইন অ্যাফেয়ার্স বাংলাদেশ থেকে অ্যাটেস্টেশন করা ডকুমেন্ট হতে হবে।
অরিজিনাল ডকুমেন্টের ফটোকপি অ্যাটেস্টেশন করতে হলে আবেদনকারীকে উভয় ফটোকপি ও অরিজিনাল ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে।
সিগনেসার অ্যাটেস্টেশন করতে আবেদনকারীকে এক কপি ছবি ও পাসপোর্টসহ স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। আবেদনকারীকে প্রমাণস্বরূপ কনস্যুলার অফিসারের সামনে সাইন করতে হবে।
অ্যাটেস্টেশন ফি £7
যা জেনে রাখা প্রয়োজনঃ
নো ভিসা রিকোয়ার্ড (NVR), ই-পাসপোর্ট রিইস্যু, এবং বার্থ সার্টিফিকেট আবেদনকারীগণকে আবেদনের সময় অবশ্যই রিটার্ন ঠিকানাসহ ইনভেলপ নিয়ে আসতে হবে।
সকল সেবার খরচ কার্ডের মাধ্যমে দিতে হবে। পোস্টে রিটার্ন সম্বলিত সেবার জন্য রিটার্ন ইনভেলপ অবশ্যই নিয়ে যেতে হবে এবং পোস্টাল খরচ ১৫ ইউরোক্যাশ নেয়া হবে। পোস্টাল খরচ ব্যতীত অন্য কোন সেবার খরচ ক্যাশে গ্রহণ করা হবে না।
ফি পাউন্ডে হলেও কার্ড পেমেন্টে ইউরো রেট অনুযায়ী কার্ড থেকে কেটে নিবে।
ই-পাসপোর্ট ও NVR (নো ভিসা রিকয়ার্ড) রেজিস্টার্ড পোস্টের মাধ্যমে হাই কমিশন প্রেরণ করবে।
কনস্যুলার সেবা নেয়ার আগে অবশ্যই ই-পাসপোর্ট ও NVR অনলাইন ফর্ম পূরণ করে প্রিন্টেড কপি সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। মনে করে সব সাপোর্টিং ডকুমেন্টের ফটোকপি নিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশে চলমান আমলা বনাম রাজনীতিবিদ দ্বন্দ্বের ছোঁয়া লেগেছে আয়ারল্যান্ডেও। সরকারী দল আওয়ামী লীগের আয়ারল্যান্ড শাখার নেতা কর্মীদের পাশ কাটিয়ে নিজেদের পছন্দের লোকদের সাথে সমন্বয় করে আয়ারল্যান্ডে কার্যক্রম চালাচ্ছে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশণের কর্মকর্তারা। বিগত কিছু ঘটনা সহ সামনের পাসপোর্ট সার্জারি সেবার দ্বাযিত্ব ডাবলিনের একটি সংগঠনকে দেয়ায় বিব্রত আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিবসহ অন্যান্য সদস্যরা ।
বাংলাদেশী রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাসগুলো সরকারী দলের অনুগত আমলাদের দ্বারা পরিচালিত হয়। সরকারী দলের প্রবাসী নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর থাকে দূতাবাসগুলো; অন্যদিকে সরকার বিরোধী প্রচারণাকারীদের সেবা দেয়ার বদলে হেনস্থা করার খবর অহরহই দেখা যায়। আয়ারল্যান্ডে এই ঐতিহ্যের ঠিক উল্টো নিদর্শন স্থাপন করলো বাংলাদেশ হাইকমিশণ ।
গত ৬ মার্চ ২০২৩ ডাবলিনের হারকোর্ট স্ট্রিটে একটি হোটেলে ডাবলিন ভিত্তিক সংগঠন বিসিডির একটি সভায় উপস্থিত হন ও পরবর্তীতে তাদের সাথে নৈশভোজ সম্পন্ন করেন হাইকমিশণার ও কর্মকর্তারা । এই সভার সরাসরি সম্প্রচারে আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সদস্য সচিব সহ শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতি ও সরকার বিরোধী দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ, উপস্থাপনা কমিউনিটির সকলকে বিষ্মিত করেছে । সভায় “জয় বাংলা” না ব্যবহার করে “বাংলাদেশ জিন্দবাদ” স্লোগানের ব্যবহারে মিথষ্ক্রিয়া চলছে আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মাঝে।
এব্যাপারে আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বেলাল হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, সভার আয়োজন সম্পর্কে তাকে কয়েকদিন আগেই অবগত করেছিলো আয়োজকরা,কিন্তু আহ্বায়ক কমিটির অন্য কাউকে না জানানোয় তিনি উপস্থিত হননি। সেই সভায় তাকে না জানিয়েই বিসিডির মাধ্যমে পাসপোর্ট সার্জারির প্রতিশ্রুতি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের প্রতি এমন অবহেলাকে “ অপমানজনক ও অগ্রহণযোগ্য “ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রফিকুল ইসলাম । দূতাবাস কর্মকর্তাদের এধরণের কর্মকান্ড রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার ঘোষণা দেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এই বর্ষীয়ান নেতা। সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারকদের কাছে এই ঘটনা পৌছানোর কার্যক্রম চলছে ।
আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব ইকবাল আহমেদ লিটন বলেন, “ আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সামাজিক সংগঠনকে বাদ দিয়ে একটা বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতি হঠাৎ দূর্বলতার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। আর্থিক দূর্ণীতি অনুসন্ধানে দূদকের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষ, সামনে নির্বাচন। দেশের অভ্যন্তরে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতির অব্যবস্থাপনাসহ পশ্চিমের চাপ সামলাতে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ। এমন অবস্থায় সবসময়ই সেফ এক্সিট খোঁজে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী। বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তাদের এধরনের আচরণ কিসের আভাস তা এখন ভাবনার বিষয়।
আইটি কার্ড, লাগেজ ট্যাগিং, আইটি সার্ভিস ইত্যাদি ৮০০ টাকা
হজযাত্রীদের কল্যাণ তহবিল ২০০ টাকা
প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা
খাওয়া খরচ ৩৫০০০ টাকা
হজ গাইড ১৫১৭৮.১০ টাকা
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছরে ডলারের দাম বৃদ্ধি, বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়া, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় হজ প্যাকেজে বাড়িয়ে ধরতে হয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭শে জুন হজ হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে এই বছর হজে যেতে পারবেন এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। তবে এই বছরে হজে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের যে কোটা রয়েছে, এখনো তার অর্ধেকও পূরণ হয়নি। তার অন্যতম কারণ এবছর হজের মূল্য বৃদ্ধি। দেখা যাক কোন দেশ থেকে হজে যেতে কত খরচ হবে।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে এ বছর সরকারি ও বেসরকারি হজ প্যাকেজ প্রায় ৭ লাখ টাকা। কোরবানি ও অন্যান্য খরচ মিলে ৮ লাখ টাকা খরচ হবে একজন হজযাত্রীর। হজ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হজের এমন খরচ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বিমান ভাড়া, ডলারের দাম বৃদ্ধি, মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি। ২০২৩ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।
গত বছরেও সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ ধরা হয়েছিল ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। গত বছর কোরবানি ছাড়া প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৪৯ টাকা। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এই বছরে হজের খরচ দেড় লাখ থেকে প্রায় ২ লাখ ২১ হাজার পর্যন্ত বেড়েছে।
তারও আগে এর আগে ২০২০ সালে এই প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছিল জনপ্রতি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকা। ৩ বছরের ব্যবধানে হজ খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
ভারত
এ বছর হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত খরচের হিসাব জানানো হয়নি। ২০১৮ সালে ভারতে হজ ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২২ সালে ভারতের হজ কমিটির ওয়েবসাইটে তথ্য দেখা যায় ভারতের বিভিন্নস্থান থেকে হজের খরচ (৩ লাখ ৭৮ থেকে ৪ লাখ ১৯ হাজার রুপি) ভিন্ন হয়। কলকাতা থেকে হজের খরচ ছিল চার লাখ ১৯ হাজার ৫৭০ রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৬২ টাকা ।
মালয়েশিয়া
দেশটির সংবাদপত্র মালয় মেইলের বরাতে জানা যায়, মালয়েশিয়া তাবুং হাজি (টিএইচ) হজের নির্বাহী পরিচালক দাতুক সেরি সৈয়দ সালেহ সৈয়দ আবদুল রহমানকে উদ্ধৃত করে বলেছেন যে এবার হজ প্যাকেজ জনপ্রতি ৩১০০০ রিঙ্গিত পড়বে। সে হিসেব বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ লাখ ৪১ হাজার ২৫৫ টাকা । তিনি আরও জানান মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ বিশ্ব অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি, কর, মুদ্রা বিনিময় হার এবং মক্কা ও মদিনায় বাড়িভাড়া বৃদ্ধি।
ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার অনলাইন ইংরেজি দৈনিক জাকার্তা গ্লোবের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকার হজের খরচ দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করায় হজযাত্রীরা আশা হারান। ৩১ জানুয়ারির ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে যেতে একজনকে ৪ হাজার ৬০৫ ডলার বা চার লাখ ৯২ হাজার ৮৮৬ বাংলাদেশি টাকা দিতে হবে ।
বাংলাদেশ থেকে এই বছর হজে যেতে পারবেন এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এদের মধ্যে সরকারিভাবে ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবেন ১৫ হাজার ব্যক্তি, বাকিদের যেতে হবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। তবে এই বছরে হজে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের যে কোটা রয়েছে, এখনো তার অর্ধেকও পূরণ হয়নি। যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, শেষ সপ্তাহে অনেক আগ্রহী নিবন্ধন করবেন।
অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড ( আবাই ) গত ১লা মার্চ ২০২৩ ডাবলিনের রেড কাউ হোটেলে চতুর্থ নির্বাহী কমিটির সভা সম্পন্ন হয় । উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার , সভা পরিচালনা করেন মহা সচিব জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার । সহ ধর্ম সম্পাদক জনাব লোকমান হোসেন এর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এর মধ্য দিয়ে সভার কাজ শুরু হয় ।
সভায় অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে ছিল –
( ১ ) ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস কাউন্টি কর্কে উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয় । সে লক্ষ্যে একটি উপ কমিটি গঠন করা হয় । পবিত্র রামাদানের জন্য অনুষ্ঠানের পরিধি সীমিত রাখা হয়েছে । সে জন্য সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা এবং ইফতার মাহফিলের কর্মসূচী গ্রহন করা হয় ।
( ২ ) আবাই এর বর্তমান সংবিধান পরিবর্তন , সংযোজন এবং বিয়োজন করে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য সিদ্ধান্ত হয় এবং সে লক্ষ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হয় ।
( ৩ ) আবাই এর কার্য নির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয় এবং সে লক্ষ্যে উপকমিটি গঠন করা হয় ।
( ৪ ) লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন এর কন্সোলেট সার্ভিস আয়ারল্যান্ডে আরোও বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হয় ।
( ৫ ) উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় , সে লক্ষ্যে সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট উপ কমিটি গঠন করা হয় । কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যদের কাছ থেকে উপদেষ্টাদের নাম প্রস্তাব করার আহবান করা হয় ।
( ৬ ) ক্রিড়া সম্পাদক জনাব রাব্বি খানের একটি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে খুব শিঘ্রই একটি স্পোর্টস ইভেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয় ।
( ৭ ) ধর্ম সম্পাদক জনাব মোজাম্মেল হকের অন লাইন কোরআন শিক্ষার প্রস্তাব সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয় ।
( ৮ ) আবাই এর পরবর্তী কার্যনির্বাহী কমিটির সভা কাউন্টি গলওয়েতে অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় |
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি লিমিরিক উদযাপন নিয়ে কমিউনিটিতে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি উক্ত সভায় উঠে আসে । এ প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি প্রদান করা হয় । বিবৃতিতে বলা হয় –
‘ অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড ( আবাই ) আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী সকল বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিত্ব করে । সে জন্য আবাই সকল কাউন্টিতে ধারাবাহিক ভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের পরিকল্পনা গ্রহন করে । লিমিরিকে মহান একুশে উদযাপন পরিকল্পনারই একটি অংশ । যেহেতু রাজধানী ডাবলিনে বাংলাদেশীদের একটি বৃহৎ অংশ বসবাস করেন , সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে আবাই অধিকাংশ কর্মসূচী ডাবলিনে করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ ‘ ।
গত ২৬ শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ডাবলিনের টালা তে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (BDAD) এর আয়োজনে বই মেলা ও পিঠা প্রদর্শনীতে শামিল হয়েছে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বিভিন্ন অঞ্চলের বঙ্গ সন্তানেরা। বইয়ের ঘ্রাণে ও পিঠা পুলির রসনায় তৃপ্ত হয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে প্রবাসে অনুভব করেছে স্বদেশের অনুভূতিকে।
ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার মাস। সাহিত্য হচ্ছে ভাষাকে অলংকৃত করার মাধ্যম, আর বই হচ্ছে সাহিত্যের ধারক ও বাহক। যে বই বুকে ধারণ করে নিয়ে বেড়ায় ভাষাকে। ফেব্রুয়ারি মাস এবং বইমেলা যেন একে অন্যের পরিপূরক। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে বাংলা বইমেলা যেন ভাষার মাসকে অন্যরকম আবরণে আবৃত করে রাখে।
ভাষা যেমন বাংলার ঐতিহ্যকে বহন করে নিয়ে বেড়ায়, তেমনি দেশিয় অনেক খাবার, খেলাধুলা, সংস্কৃতি, কৃষ্টিও বহন করে দেশীয় ঐতিহ্যকে। পিঠা তেমনি একটি বিষয় যা বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। বাংলাদেশে শীতকাল হচ্ছে উৎসবের মাস। উৎসবের আতিশয্যে, নবান্নে, রঙে বৈচিত্র্যে আড়মোড়া দিয়ে জাগে কুয়াশার চাদর মুড়ে থাকা শীতকাল। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে যখন নতুন ধান ঘরে উঠে তখন নতুন চালের পিঠা পায়েশ দিয়ে উদযাপন করা হয় নবান্ন উৎসব। বাংলার চিরাচরিত এই ধারা চলে আসছে হাজার বছর ধরে। পৌষ মাঘের এই সময়টায় বাংলার আনাচে কানাচে ভেসে আসে খেজুর রসের পায়েশ আর পিঠা পুলির সুমিষ্ট ঘ্রাণ।
নতুন বইয়ের মলাট এবং বাহারি সব পিঠা পুলির ঘ্রাণ সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে সুদূর আটলান্টিকের তীরবর্তী কোন শহরে পাওয়া যাবে তা সত্যটিই কল্পনাতীত। সাত সমুদ্র তের নদী পার করে হয়ত বাংলাকে তুলে আনা সম্ভব না, কিন্তু বাংলা থেকে ছুটে আসা বঙ্গ সন্তানেরা তো রয়েছে। বাংলার ঐতিহ্য কে ধরে রাখতে ও তুলে ধরতে আয়োজন করেছে বই মেলা ও পিঠা প্রদর্শনী।
বাংলার রমণীকূলের হাতের স্পর্শে তৈরি হয়েছে হরেক রকম পিঠা মিষ্টান্ন, যা খেয়ে রসনা তৃপ্ত হয়েছে ও বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যকে চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে সাত সমুদ্র তের নদীর অপারে বসেও। শুধু পিঠা পায়েশই নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাচ্চি বিরিয়ানি, কাঁচা আম ভর্তা, পান, ফুসকা, চটপটি, হালিম, ঝালমুড়িসহ হরেক রকম সুস্বাদু খাবারে রসনা তৃপ্ত করেছে আগত দর্শনার্থীদের।
শুধু জিভই নয়, বাংলার শিল্পীদের কণ্ঠে সুমধুর দেশীয় সব গানে, কবিতা আবৃতিতে ভিজিয়ে দিয়েছে সবার মনও। সৌভাগ্যবানরা র্যাফেল ড্রর পুরস্কার জিতে অনুষ্ঠানের ষোলকলাই আদায় করে নেন। দেশীয় সব পোশাকে অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় একটুকরো বাংলাদেশে।
সমগ্র আয়ারল্যান্ড থেকে অংশগ্রহণকারীদের সাথে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার, বিশেষ অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর শেন মনিহান। অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন জনাব জহিরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন ( বিসিডি ) মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে শোভা যাত্রা এবং অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের আয়োজন করে ।
কর্মসূচী অনুযায়ী দুপুর ১২ টায় Garden of Remembrance থেকে শোভা যাত্রা শুরু হয় এবং General Post Office ( GPO ) গিয়ে শেষ হয় । শোভা যাত্রায় বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ , উপদেষ্টা বৃন্দ , বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত অতিথি বৃন্দ এবং মিডিয়া কর্মীবৃন্দ অংশগ্রহন করেন । প্রসঙ্গত শোভা যাত্রায় নারী এবং নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহন ছিল উল্লেখযোগ্য ।
শোভাযাত্রা শেষে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তৃতাপর্বের আয়োজন করা হয় । বক্তৃতাপর্বটি পরিচালনা করেন বিসিডি’র কাউন্সিলর কাজী কবির । বক্তৃতায় অংশ নেন বিসিডি’র সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন , বিসিডি’র নেতৃবৃন্দ , উপদেষ্টাবৃন্দ , আগত অতিথিবৃন্দ , আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহন করা নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি প্রমুখ । সমাপণী বক্তৃতায় কমিউনিটির বিশিষ্ট নেতা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন একুশের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে এবং সার্বিক সহযোগিতার জন্য ডাবলিন পুলিশ প্রশাসনকে বিশেষ ধণ্যবাদ জ্ঞাপন করেন ।
বক্তৃতাপর্ব শেষে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে বিসিডি’র নেতৃবৃন্দ , উপদেষ্টাবৃন্দ , আগত অতিথিবৃন্দ , নতুন প্রজন্ম কে সাথে নিয়ে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান ভাষা শহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ।
বাংলাদেশের ইতিহাস , সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে জাতীয় দিবস গুলোতে এ ধরণের আয়োজন একদিকে যেমন বিদেশের মাটিতে নিজের দেশ কে তুলে ধরার পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্ম নিজের দেশ কে জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আয়োজক এবং সচেতন মহল মনে করেন ।
আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড ( আবাই ) মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করে । কর্মসূচীর মধ্যে ছিল শোভা যাত্রা , ২১শে ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং লিমিরিক বাংলাদেশ কমিউনিটির সৌজন্যে শিশু-কিশোরদের মাঝে বাংলা বর্ণমালা বই বিতরণ ।
শোভা যাত্রা বিকাল ৫ ঘটিকায় লিমরিক Peoples Park শুরু হয়ে Arthur’s Quary গিয়ে সমাপ্ত হয় । শোভা যাত্রায় অংশগ্রহন করেন আবাই এর কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ, লিমিরিক বাংলাদেশ কমিউনিটি, ডাবলিন সহ আযারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত অতিথিবৃন্দ , আরো উপস্থিত ছিলেন ইলেকট্রনিক্স এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সদস্যবৃন্দ। প্রসঙ্গত উক্ত শোভা যাত্রায় উল্লেখযোগ্য নারী এবং এদেশে জন্মগ্রহণ করা নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয় ।
শোভা যাত্রা শেষে ছোট একটি বক্তৃতা পর্ব অনুষ্ঠিত হয় । বক্তব্য রাখেন আবাই এর সভাপতি জিন্নুরাইন জায়গিরদার , লিমিরিক সিটি কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার এবং আবাই এর মহাসচিব আনোয়ারুল হক আনোয়ার । বক্তরা উপস্থিত সবাইকে শোভা যাত্রায় অংশগ্রহন করার জন্য ধণ্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং বিশেষ করে লিমিরিক পুলিশ প্রশাসন কে বিশেষ ভাবে ধণ্যবাদ জানানো হয় তাদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য । পরবর্তিতে সন্ধ্যায় লিমিরিক গ্রীণহিল হোটেলে অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড এর আয়োজনে এবং লিমিরিক বাংলাদেশ কমিউনিটির সৌজন্যে নতুন প্রজন্মের কাছে মহান ২১শে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস এবং তাৎপর্য নিয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন আবাই এর সভাপতি জিন্নুরাইন জায়গিরদার , প্রধান অতিথি ছিলেন লিমিরিক সিটি মেয়র Francis Foley , বিশেষ অতিথি ছিলেন লিমিরিক সিটি কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার এবং অনুষ্ঠান টি পরিচালনা করেন আবাই এর মহাসচিব আনোয়ারুল হক আনোয়ার , ওমর ফারুক নিউটন এবং আবাই এর সহ সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহেল ।
মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় আবাই এর সহ সভাপতি শাহীন রেজার কোরআন তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে । প্রধান অতিথি , বিশেষ অতিথি এবং সভাপতি ভাষা দিবস নিয়ে পর্যায়ক্রমে বক্তব্য রাখেন । এখানে উল্লেখ্য যে বিশেষ অতিথি আজাদ তালুকদার , মেয়র এর নিকট বাংলা বর্ণমালা বই যেন লিমিরিক পাবলিক লাইব্রেরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সে জন্য অনুরোধ করেন এবং মেয়র উনার বক্তিতায় অন্তর্ভুক্তি করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন ।
অনুষ্ঠানে আরোও বক্তব্য রাখেন লেখক , কবি এবং প্রাবন্ধিক সাজেদুল চৌধুরী রুবেল , আবাই এর সহ সভাপতি মনিরুল ইসলাম , আবাই এর সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জলিল , আবাই এর কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য স্বম্পা লিলি , ডাবলিন থেকে আগত অতিথি জাকারিয়া প্রধান প্রমুখ ।
ছোট পরিসরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন আব্দুল মান্নান মান এবং গান পরিবেশন করেন শাহীন রহমান এবং হাদী সাহেব ।
অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ন অংশ ছিল শিশু-কিশোরদের মধ্যে বাংলা বর্ণমালা বই বিতরণ । বাংলা বর্ণমালা বই বাচ্চাদের হাতে তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি , প্রধান অতিথি , বিশেষ অতিথি , আবাই এর নির্বাহী সদস্যবৃন্দ , সুধীবৃন্দ এবং মিডিয়া কর্মীবৃন্দ । বই বিতরণের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় ।
বিভিন্ন বক্তার বক্তব্যে এবং আগত অতিথিদের প্রতিক্রিয়ায় জানা যায় নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশর ইতিহাস , সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশ কে বিদেশের মাটিতে তুলে ধরার জন্য এ ধরনের আয়োজন কমিউনিটির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
কাউন্সিলর জনাব আবুল কালাম আজাদ তালুকদার, যিনি গত মে ২০১৯ এর কাউন্সিল নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। সে থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কাউন্সলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন দক্ষতা ও সফলতার সাথে। তাঁর কাজের স্বীকৃতস্বরূপ তিনি এক টার্ম লিমরিক সিটি ডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাছাড়াও তিনি পিস কমিশনার হিসেবে সন্মানজনক কাজের দায়িত্বে রয়েছেন। জনাব আজাদ তালুকদার আভাস দেন যে, এই বছরের মেট্রোপলিটন মেয়র হিসেবেও নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক কথায় বলা চলে কাউন্সিলর হিসেবে জনাব তালুকদার সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তারই প্রেক্ষিতে এবং কাউন্সিলর হিসেবে সেবার পরিধিকে আরও বৃদ্ধি করতে আবারও কাউন্সিলর পদে লড়ার আভাস প্রদান করেন।
গত ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে লিমরিকে অনুষ্ঠিত আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় কমিউনিটি সংগঠন ‘’অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’’ এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের বক্তব্যে জনাব আজাদ তালুকদার ২০২৪ সালের কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের কথা ব্যাক্ত করেন। তারও আগে লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের মেয়র জনাব ফ্রান্সিস ফলে জনাব তালুকদারকে আগামীর কাউন্সিলর হিসেবে সহায়তা প্রদানের কথা জানান। উক্ত অনুষ্ঠানে মেয়র বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
জনাব আজাদ তালুকদার বিগত নির্বাচনে জয়ের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বাংলাদেশিদেরকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘’নির্বাচনে সবার ভোটই তাঁর দরকার, কিন্তু বাংলাদেশিদের প্রত্যক্ষ সমর্থন ব্যাতিত উনি আজকের অবস্থানে থাকতে পারতেন না, বাংলাদেশীরাই হচ্ছে তাঁর মূল শক্তি’’। বিগত নির্বাচনে বাংলাদেশীগন যে তাঁর নির্বাচনে জেতার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন, তার উল্লেখ করেন।
কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় তিনি মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র কবরস্থানের স্থান নিশ্চিত করেন। ভবিষ্যতে সে কবরস্থানকে উন্নত করার পরিকল্পনার কথা জানান কাউন্সিলর। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে যখন যার সমস্যা তাঁর সাথে যোগাযোগ করলে তা সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। যার বদৌলতে অনেকেরই উপকার হয়েছে। অনেক সহায়তা তাঁর সাধ্যের বাহিরে থাকলেও বিভিন্নভাবে চেষ্টার ত্রুটি করেন নি।
অনেকেই প্রত্যক্ষ করেছেন, বিগত নির্বাচনের আগে জনাব তালুকদার তৎকালীন মেয়র এবং বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের নিয়ে আন্ডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্ট নিয়ে একটি সভার আয়োজন করেছিলেন। ঐ সভাটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করেছিল সে সময়ে। ইমিগ্রান্টদের সমস্যা প্রথমবারের মত সেসময় সংসদে উত্থাপন করেছিলেন একজন সংসদ সদস্য। জনাব তালুকদার চেষ্টা করেছিলেন ইমিগ্রান্টদের বিষয় উপর পর্যন্ত পৌঁছাতে। কারণ ইমিগ্রান্টদের সমস্যা কেবলমাত্র ইমিগ্রেশন অফিসেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু পরে যখন বিভিন্ন মহলে এ বিষয় নিয়ে নাড়া ছাড়া হল তখনই কেবলমাত্র নড়েছড়ে উঠে প্রশাসন। ১৭,০০০ আন্ডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদেরকে বৈধতা প্রদানে ঐ বিষয়গুলা যে কাজে দিয়েছে তা বললে অত্যুক্তি হবে না।
জনাব আজাদ তালুকদার বলেন, তিনি সবসময় চেষ্টা করেন কাউন্সিলর হিসেবে প্রাপ্ত সুযোগটা কাজে লাগিয়ে যতদূর সম্ভব ইমিগ্রান্ট কমিউনিটিকে সহায়তা করা। বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশি কমিউনিটিকে উপরে তুলে ধরতে ব্রিজ বা সেতু হিসেবে নিজেকে কাজে লাগানো।
তিনি জানান, কাউন্সিলর হিসেবে কোন অভিজ্ঞতা পূর্বে ছিলনা। এবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামনে তিনি আরো ভালো কিছু ভালোভাবে করতে পারবেন বলে জানান। তবুই তিনি জানান, প্রথম কাউন্সলর হিসেবে তিনি সফল, কাউন্সিলে সবাই তাঁর কাজের প্রতি একাগ্রতার ভূয়সী প্রশংশা করেন। ডেপুটি মেয়র, পিস কমিশনার, পুলিশিং কমিটির (গার্ডা) সদস্য এবং আগামীতে মেট্রোপলিটন মেয়র হিসেবে মনোনয়ন সবই তার প্রমাণ।
ডেপুটি মেয়র হিসেবে আজাদ তালুকদার
একজন কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার শুধু বাংলাদেশিদেরই কাউন্সিলর নন। তিনি আইরিশসহ লিমরিকে যত অন্যান্য কমিউনিটি আছে সবার কাউন্সিলর। সুতরাং সবার জন্যই তিনি সমানভাবে কাজ করেন। সে সাথে সিটির অন্যান্য কাজের দায়ভারও তাঁর উপর ন্যাস্ত থাকে। সুতরাং শুধু বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য তিনি কি করেছেন শুধু তা ই বিবেচ্য বিষয় না, মূল বিষয় হচ্ছে একজন বাংলাদেশি কাউন্সিলর দক্ষতা ও একাগ্রচিত্তে যে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তাতে সামগ্রিকভবে সুনাম বৃদ্ধি হচ্ছে বাংলাদেশি কমিউনিটির। এতে করে উপকৃত হবে সমগ্র বাংলাদেশি কমিউনিটি। সে উপকার হয়ত একদিনে চোখে পড়বে না, কিন্তু বিশাল উপকার একদিন চাক্ষুষ প্রমাণ মিলবে। ভবিষ্যতে হয়ত আরো বাংলাদেশীদের আইরিশ রাজনীতিতে আসার দ্বার প্রশস্থ হবে এবং ভোটাররাও আত্মবিশ্বাসের সাথে ভোট দিতে দ্বিধা করবেনা একজন বাংলাদেশীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে।
নির্বাচনী প্রচারণায় তিন মসজিদের ইমামের সাথে জনাব আজাদ তালুকদার
জনাব আজাদ তালুকদার হয়ত আগামীতে নির্বাচনের আশা ব্যাক্ত করেছেন, তিনি হয়ত নির্বাচনে লড়বেন, কিন্তু তাঁকে সয়াহতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে আমাদেরকেই। আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করে বাংলাদেশি কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করতে। তাঁকে সহায়তা আমাদের নিজেদের স্বার্থেই করতে হবে কিংবা করা উচিত। কারণ একজন আজাদ তালুকদার একজন বাংলাদেশি, যিনি নেতৃত্ব দিবেন বাংলাদেশি হিসেবে। জনাব তালুকদারের সুনাম মানে বাংলাদেশিদের সুনাম। বাংলাদেশি কমিউনিটি এখনো অনেক পিছিয়ে, একে যদি আমরা এগিয়ে নিতে চাই তাহলে জনাব আজাদ তালুকদারদেরকে আমাদেরকে সহায়তায় এগিয়ে আস্তে হবে। এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, সন্মানের প্রশ্ন।
জনাব আজাদ তালুকদার ঘোষণা দিয়েছেন, অন্য কোথাও থেকে অন্য কেউও হয়ত ধীরে ধীরে ঘোষণা দিবে আগামীর নির্বাচনের জন্য, যোগ্যতার বিচারে দেয়া উচিত বলেও মনে করি। যে ই যেখান থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক না কেন, বাংলাদেশি কমিউনিটি যেন এক হয়ে এগিয়ে আসে। এগিয়ে আসি নিজেদের জন্য, এগিয়ে আসি কমিউনিটির স্বার্থে। শুধু প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতিদ্বন্দ্বী যেন না হয়ে যাই।
বৃহত্তর ময়মনসিংহবাসীর (ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা) উদ্যোগে গতকাল ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ডাবলিনের লুকান বেলিওয়েন ক্যাসল কমিউনিটি সেন্টারে (Ballyowen Castle Community Centre) একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টিতে বসবাসরত বৃহত্তর ময়মনসিংহের সম্মানিত ব্যক্তিবৃন্দ সতঃস্ফুর্ত ভাবে এ মহতী সভায় যোগদান করেন। কাউন্টি মেও (Mayo) নিবাসী জনাব জোবায়দুল হকের পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে জনাকীর্ণ এ সভাটি শুরু হয়। অত্যন্ত সুন্দর, সাবলীল, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সৌহার্দপূর্ণ ও অনাড়ম্বর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সভার কার্যক্রম শেষ হয় এবং উক্ত সভায় উপস্থিত সদস্যবৃন্দের সম্মতিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহবাসীর সংগঠন “গ্রেটার মাইমেনসিংহ কমিউনিটি অফ আয়ারল্যান্ড” (Greater Mymenshingh Community of Ireland) এর আত্মপ্রকাশ ঘটে।
সংগঠনের আদর্শ, উদ্দেশ্য, কার্যক্রম ও কাঠামো এর বিস্তারিত আমাদের পরবর্তি সভায় আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।
পরবর্তী সভার তারিখ, স্থান ও ভেন্যু যথাসময়ে সকলকে অবগত করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পরিশেষে যাদের নিরলস ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটলো তাদেরকে সভায় ধন্যবাদ জানিয়ে এ সংগঠনের সার্বিক সাফল্যের জন্য দোয়া কামনা করা হয়।
সরকার চাকরীচ্যুত কিংবা চাকুরী হারিয়েছে যারা তাদের জন্য নতুন বেনিফিট স্কিম ঘোষণা করেছে। প্রস্তাবিত এই স্কিমে চাকরীচ্যুতরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ €৪৫০ পর্যন্ত পাবে।
সদ্য বেকারের খাতায় নাম লিখিয়েছে কিন্তু বিগত ৫ বছর বা তারও বেশি চাকুরীতে ছিল এমন ব্যক্তি তার বেতনের ৬০% এবং সর্বোচ্চ €৪৫০ পাবে। আর যারা চাকুরী হারানোর আগে ২ থেকে ৫ বছর চাকুরীতে ছিল তারা পাবে বেতনের ৫০%, কিন্তু €৩০০ এর অধিক হবে না। সর্বশেষ বেতনের উপর নির্ধারণ করে এই পেমেন্ট দেয়া হবে।
পে সম্পর্কিত এই পেমেন্ট ৬ মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
সোশ্যাল প্রটেকশন বা সামাজিক সুরক্ষা মন্ত্রী হিদার হামফ্রেসের মতে, একজন ব্যক্তির পূর্ববর্তী PRSI অবদানের জন্য এই সহায়তা তাদের জন্য সহায়ক হবে।
মিনিস্টার হিদার হামফ্রেসের এর প্রস্তাবিত এই স্কিমের উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ
১। আয়ারল্যান্ড একমাত্র EU দেশগুলির মধ্যে একটি যেখানে বেতন-সম্পর্কিত সুবিধার ব্যবস্থা নেই।
২। বেতন-সম্পর্কিত সুবিধা এমন ব্যক্তিদের রক্ষা করার জন্য নেয়া হয়েছে যারা সারা জীবন কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং তাদের PRSI প্রদান করেছেন। যে শ্রমিকরা, যারা সিস্টেমে অর্থ প্রদান করেছে, তারা চাকুরী হারিয়ে যাতে সমস্যায় না পতিত হয়।
৩। বেতন-সম্পর্কিত বেনিফিট পুরো ইউরোপ জুড়ে ভাল কাজ করে এবং এটি আয়ারল্যান্ডেও কাজ করতে পারে – আমরা স্পষ্টভাবে দেখেছি যে মহামারী চলাকালীন যখন একজন ব্যক্তির বেকারত্বের অর্থ প্রদান তাদের পূর্বের উপার্জনের সাথে যুক্ত ছিল।
৪। মিনিস্টার বলেন, ”আমি বিশ্বাস করি একটি বেতন সম্পর্কিত সুবিধা ব্যবস্থার প্রবর্তন মহামারীর অন্যতম প্রধান উত্তরাধিকার হতে পারে তবে এটি আমাদের সঠিক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই আমি আজকে এই খসড়া প্রস্তাবগুলির উপর তাদের মতামত দেওয়ার জন্য জনগণকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এই পরামর্শ প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রাপ্ত প্রতিক্রিয়া চূড়ান্ত নকশার চারপাশে পছন্দগুলিকে রূপ দিতে সাহায্য করবে”।
খুব শিগ্রই এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।
ট্যাক্স বিষয়ক বিষয়ে যাদের সাথেই কথা হয়েছে বেশিরভাগই ইমারজেন্সি ট্যাক্স এর বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। অনেকে তো রীতিমত খুবই চিন্তিত যে অনেক বেশি ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছেন। যদিও ইমারজেন্সি ট্যাক্স জটিল কোন বিষয় না, তারপরেও অনেকের কথা মাথায় রেখে এই আর্টিকেলটি লেখা।
আপনি আয়ারল্যান্ডে এসে প্রথম জবে ঢুকেছেন? আপনি নতুন জব শুরু করেছেন? আপনি বর্তমান জবের পাশাপাশি আরেকটি জব শুরু করেছেন? তাহলে আপনার ইমারজেন্সি ট্যাক্সের ব্যাপারে ধারনা থাকা প্রয়োজন।
ইমারজেন্সি ট্যাক্স কি?
আয়ারল্যান্ডে প্রথম জব, নতুন জব কিংবা ডাবল জব করার কারণে আপনি হয়ত লক্ষ্য করবেন আপনার ট্যাক্স অতিরিক্ত পরিমাণ বেশি কাটতেছে। এই অতিরিক্ত ট্যাক্স আর কিছুই নয়, তা হচ্ছে ইমারজেন্সি ট্যাক্স। ইমারজেন্সি ট্যাক্স মানে হচ্ছে আপনি হায়ার বা অতিরিক্ত রেটে ট্যাক্স এবং USC দিচ্ছেন। যা যুগপৎভাবে আপনার ট্যাক্সের পরিমাণকে বাড়িয়ে আয়কে কমিয়ে দিচ্ছে।
কেন ইমারজেন্সি ট্যাক্স কাটে?
ইমারজেন্সি ট্যাক্স কেন কাটে, তার আগে বুঝতে হবে আপনার আয়ের সাথে রেভিনিউ কিভাবে যুক্ত হবে। ধরুন আপনি আয়ারল্যান্ডে প্রথম এসেছেন, নতুন জব শুরু করেছেন বা করবেন। প্রথম আপনার যে জিনিসটা দরকার হবে তা হচ্ছে PPS নাম্বার। সেই PPS নাম্বার দিয়ে আপনাকে রেভিনিউতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, সেই সাথে নতুন এমপ্লয়ার (নিয়োগকর্তা) কে রেভভিনিউতে যুক্ত করতে হবে অথবা এমপ্লয়ার কে PPS নাম্বার দিতে হবে এবং এমপ্লয়ারকে তা রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। কিন্তু একবারে প্রথম জবে রেভিনিউকে অবহিত করা অবশ্যই বাঞ্ছনীয় কারণ আপনি আগে কখনো আয়ারল্যান্ডে জব করে নাই, সুতরাং আপনার কোন রেকর্ড রেভিনিউতে নাই, যে কোন রেটে আপনার ট্যাক্স ধার্য হবে কিংবা আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট ধার্য হবে।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে, প্রত্যেক এমপ্লয়ার তার পে-রোল রান করার জন্য যে সিস্টেম বা সফটওয়ার ব্যবহার করে তা রেভিনিউর সাথে সরাসরি সংযুক্ত। কোম্পানি প্রত্যেকবার পে-রোল রান করার আগে RPN আপডেট করে নেয়। RPN হল ‘রেভিনিউ পে-রোল নোটিফিকেশন’, যার মাধ্যমে রেভিনিউর সাথে সংযুক্ত প্রত্যেক কর্মচারীর তথ্য কোম্পানির পে-রোল সফটওয়্যারে আপডেট হয়ে যায়। এখন আপনার যদি কোন তথ্যই রেভিনিউতে না থাকলে পে-রোল সফটওয়্যার সে RPN রিট্রিভ করতে পারবেনা, সুতরাং আপনার উপর ইমারজেন্সি ট্যাক্স ধার্য হবে।
সুতরাং রেভিনিউতে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করেই কি রেটে ট্যাক্স কাটবে অথবা কি পরিমাণ ট্যাক্স ক্রেডিট প্রয়োগ হবে তা নির্ধারিত হয়। কোম্পানির RPN যদি রেভিনিউ থেকে কত রেটে ট্যাক্স কাটবে অথবা ট্যাক্স ক্রেডিট কত হবে তা নির্ধারণ করতে না পারে তাহলে বেশি রেটের ট্যাক্সই ধার্য হবে।
আপনাকে কোন ইমারজেন্সি ট্যাক্সের কবলে পড়তে হবেনা যদি কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করেন। যেমনঃ আপনি যদি আয়ারল্যান্ডে নতুন হন এবং নতুন জব শুরু করতে যাবেন, সে ক্ষেত্রে PPS নাম্বার পাওয়ার সাথে সাথেই রেভিনিউতে রেজিস্ট্রেশন করে নিবেন। দ্বিতীয়ত, নতুন জবে ঢুকার সাথে সাথে রেভিনিউকে অবহিত করবেন এবং www.revenue.ie এ ঢুকে myAccount এ গিয়ে দেখবেন আপনার নতুন কোম্পানি রেভিনিউতে যুক্ত হয়েছে কিনা, সাথে দেখবেন আপনার নামে ট্যাক্স ক্রেডিট সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে কিনা, তাহলেই বুঝবেন আপনার রেজিস্ট্রেশন ঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং আপনার আর ইমারজেন্সি ট্যাক্স কাটবে না। ট্যাক্স ক্রেডিট সার্টিফিকেটেই দেখতে পারবেন আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট কত এবং এই তথ্যই কোম্পানির পে-রোলে দেখাবে।
বর্তমানে একটা জব পরিবর্তন করে আরেকটা জবে ঢুকলে, কিংবা একই সাথে একাধিক জব করলে রেভিনিউকে অবহিত না করলেও চলে। কারণ নতুন কোম্পানি যখন আপনার তথ্য তার পেরোলে আপডেট করবে তখন তা রেভিনিউতেও আপডেট হয়ে যাবে। তারপরেও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনি রেভিনিউর myAccount এ ঢুকে চেক করে নিতে পারেন। যদি আপনার নতুন কোম্পানির তথ্য না দেখতে পান তাহলে, রেভিনিউকে অবহিত করুন, অন্যথায় ইমারজেন্সি ট্যাক্স এর খড়ায় পড়া লাগবে।
মনে রাখবেন, একটি কোম্পানিতে জব করলে যে ট্যাক্স ক্রেডিট একাধিক কোম্পানিতে হলেও একই ট্যাক্স ক্রেডিট থাকবে। তবে আপনি চাইলে কোন কোম্পানিতে কত ট্যাক্স ক্রেডিট রাখতে চান তা নিজে করে নিতে পারবেন।
ইমারজেন্সি ট্যাক্স ইতিমধ্যে দিয়ে থাকলে করণীয় কি?
নতুন জবে ঢুকলে উপরোক্ত সব পদক্ষেপ অনুসরণ করলেও অনেক সময় তথ্য রেভিনিউতে আপডেট হতে একটু সময় লাগতে পারে। কিন্তু ততদিনে হয়ত আপনি কাজ শুরু করে দিয়েছেন এবং প্রথম সপ্তাহ বা মাসের বেতন পেয়ে গিয়েছেন। অথবা উপরোক্ত কোন পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি বিধায় ইমারজেন্সি ট্যাক্স কেটে নিয়েছে। অনেকে তো কয়েক মাস এমন কি বছরও ইমারজেন্সি ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে ঘাবড়ানোর কারণ নেই।
আপনি যদি ইমারজেন্সি ট্যাক্স এর মাধ্যমে আপনার যতটুকু ট্যাক্স দেয়ার কথা তার থেকে বেশি দিয়ে থাকেন তাহলে রেভিনিউ তা ফেরত দিয়ে দিবে। সাধারণত রেভিনিউকে জানানোর পরে রেভিনিউতে যখন আপডেটেড তথ্য আপডেট হবে তখন থেকে আর ইমারজেন্সি ট্যাক্স কাটবেনা এবং অতিরিক্ত ট্যাক্স পরবর্তী পে-স্লিপ এ আপডেট করে দিবে এবং আসন্ন বেতনের সাথে ওভারপেমেন্ট ট্যাক্স ফেরত দিয়ে দিবে। এবং তা একবারে না হলেও কয়েক সপ্তাহ অথবা মাসে তা ফেরত দিতে পারে।
তারপরেও যদি ইমারজেন্সি ট্যাক্স বছরের মধ্যে ফেরত না পাওয়া যায় অথবা যদি মনে করেন কিছু ট্যাক্স এখনো ফেরত বাকি আছে, তবে তা বাৎসরিক রিটার্নের সাথে পেয়ে যাবেন। বাৎসরিক রিটার্নেই সব হিসেব ক্যালকুলেট করে যদি ট্যাক্স পাওনা থাকেন তা ফেরত পাবেন, যদি ট্যাক্স কম দিয়ে থাকেন তাহলে তা পরবর্তী বছরে ট্যাক্স ক্রেডিটের সাথে এডজাস্ট হয়ে যাবে।
শেষকথা
মনে রাখবেন রেভিনিউ যতটুকু ট্যাক্স কাটার তাই কাটবে। যদি বেশি কেটে থাকে তাহলে তা ফেরতযোগ্য। এখন রেভিনিউ অনেকটা অটোমেটেড। তারপরেও নিয়মিত অ্যাকাউন্ট চেক করা, ট্যাক্স ক্রেডিট দেখা, মাঝে মধ্যে হিসেব করে দেখা ট্যাক্স বেশি দিচ্ছেন না তো, বাৎসরিক রিটার্ন জমা দেয়া ইত্যাদি চেক করে নেয়া ভালো। বাৎসরিক রিটার্ন জমা দিতে সবাইকে উৎসাহিত করি। কারণ বাৎসরিক রিটার্নেই সম্ভব আয়ের এবং ট্যাক্সের নিখুঁত হিসেব পাওয়া। ফেরতযোগ্য সব ট্যাক্সই বাৎসরিক রিটার্ন জমা দেয়ার মাধ্যমে সম্ভব।
ফ্রি হেল্পলাইন
আশা করি ইমারজেন্সি ট্যাক্স এর ব্যাপারে আর দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। তারপরেও কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে অথবা জানার থাকলে, আমাদের ফ্রি হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন।
Email: newton.acca@gmail.com
Mobile: 0838732429 (please text first)
Facebook: www.facebook.com/TheIrishBanglaTimes
বাংলাদেশে প্রকৃত অর্থে শিক্ষা কমিশন এবং শিক্ষা নীতি বলতে যাহা কিছু রয়েছে, সব কিছু দলীয় কমিশন এবং দলীয় শিক্ষা নীতি বললে ভুল হবেনা। তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের হাতে শিক্ষা ব্যবস্থা তুলে দিলে যাহা হয়,সেটাই বর্তমানে ঘটছে দেশে। কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্টার জন্য শাসকগোষ্টি সেখানে তাদের পছন্দমত লোকদের বসায়। এই ধরণের শাসন ব্যবস্থা শাসকরা যেহেতু জনগণকে জবাবদীহিতার তেমন প্রয়োজন মনে করেনা, তাই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসা ব্যক্তিদের যোগ্যতা ও তাদের দক্ষতা নিয়ে সরকারকে প্রশ্ন করার সুযোগ থাকেনা জনগণের।
অতীতে পাঠ্য পুস্তকে ভুল-ভ্রান্তি ছিল,কোনো সরকারই জাতীয় আকাঙ্খার শিক্ষানীতি স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আজও দিতে পারেনি। এই পচনের যাত্রা শুরু হয়েছিল কুদরত – ই- খোদা নামের গজবী খোদা শিক্ষা কমিশন দিয়ে। তারপর থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে টালমাতাল অবস্হা। কিন্তুু এই বারের ভূল-ভ্রান্তির রেকর্ড অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে । পাঠ্য বইয়ে তথ্যগত ভূল, বিতর্কিত ইতিহাস, ধর্মীয় উস্কানি এবং বিবর্তনবাদ বিতর্কের মাত্রার সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে এবার চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ। যে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে এই চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে, তিনি একজন পিএইচডি ডিগ্রীধারী ব্যক্তি এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ওনার তো চৌর্যবৃত্তির সংজ্ঞা ভালো করে জানার কথা।
তবে দুর্নীতি এবং চুরি যেখানে একটি দেশের জাতীয় অগ্রগতি ও উন্নতির বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, সেই দেশে পাঠ্যপুস্তকে ছোটো খাটো চৌর্যবৃত্তির ঘটনা এমন বড় কোনো বিষয় নয়। বিদেশী সিনেমার গল্পের কাহিনী চুরি করে শিশুদের কাছে পরিচিত পাওয়া বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ডঃ জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে উক্ত ফিল্ডের অন্যান্য লেখকদের অভিযোগ থাকা সত্বেও যখন ওনাকে দিয়ে সম্পাদনার কাজ করানো হয়, এবং তারই অধীনে থাকা একজন অধ্যাপকের চৌর্যবৃত্তির ঘটনা ধরা পরে, তখন পাঠ্য বইয়ের বিতর্ক অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে তুঙ্গে থাকাটা স্বাভাবিক। এরফলে ডঃ জাফর ইকবালের শিক্ষা, জ্ঞান -গবেষণার পান্ডিত্য যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, তেমনি তার ব্যক্তিগত ইমেজ এখন খাদের কেনারায় উপনীত।
উড়াল কন্যা হিসেবে খ্যাত শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে প্রচুর সমালোচনা রয়েছে। দীপু মনির ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদপুরে তার ভাইয়ের জমি দখলের ঘটনার ভাইরাল হওয়া ভিডিও পুরো দেশবাসি শুনেছে। ভিডিও ভাইরালের এক মাসের ভেতর ডা. দীপু মনির রোষানলে পড়ে চাঁদপুরের সেই ডিসি বেচারার অন্যত্র বদলি হতে হয়েছে। সততার প্রশ্নে সদা হাস্যোজ্জ্বল শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি যে দরবেশ নন, সেটা জাতির কাছে পানির মত স্বচ্ছ। এই উড়াল কন্যা ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্হায় ১৮৭টি সফরের মাধ্যমে ৪০০ দিনের বিদেশ সফরের এক অনন্য রের্কড গড়েছিলেন। সরকারি সফরের অন্তরালে বিদেশে থাকা তার সন্তানদের দেখা শুনার দায়িত্বটা বেশ ভালো ভাবে তিনি পালন করতে পেরেছেন।
ইউরোপ-আমেরিকার প্রভাবশালী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দীপু মনির মত এত সফর করেন নাই। এই উড়াল কূটনীতি নিয়ে তার অনুপস্থিতিতে সংসদে তুমুল আলোচনা চলাকালে বলা হয়েছিল,- ঢাকায় ব্রেকফাস্ট, দিল্লিতে লাঞ্চ আর নিউ ইয়র্কে ডিনার করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অহেতুক বিদেশ সফর করে জনগণের অর্থের অপচয় করছেন। কিন্তুু কে শুনে কার কথা! বিড়ালের গলায় কে বাঁধবে ঘন্টা ?
পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন তার অর্জন কি ছিলো? সেটি নিশ্চিত করে বলতে না পারা গেলেও, পশ্চিমাদের কাছ থেকে সমকামিতা আমদানি করে প্রিয় বাংলাদেশকে জাহান্নামের টুকরো বানাতে আজ তিনি যে তৎপর হয়ে উঠেছেন সেটি বলা যায় অনেকটা নিশ্চিত করে।
২০১৩ সালে ডা. দীপু মনি জেনেভাতে এক সম্মেলনে বাংলাদেশে LGBT স্বাভাবিককরণের ব্যাপারে তিনি পশ্চিমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। সেই দিন দীপু মনি বলেছিলেন, তার সরকার এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। সেই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে কি তাহলে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শিক্ষামন্ত্রীতে রুপান্তর হতে দেখা গিয়েছে পরবর্তীতে ?
২০২১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশকে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ৪২৮ কোটি টাকা প্রদান করা হয় । সাদা চোখে উন্নয়ন দেখা গেলেও ইউরোপীয়দের এত বড় অনুদানের পিছনে অন্তর্নিহিত তাৎপর্য কি ? সেটি মনে হয় জাতির বুঝতে এখন আর অসুবিধা হবার হবার কথা নয়। সমকামিতার বীজ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে বপন হয়ে গেছে।এখন অঙ্কুরোদগম হয়ে চারপাশে ডাল- পালা গজাবার পালা। সুতরাং সময় থাকতে যদি দল-মত নির্বিশেষে এর প্রতিরোধে কার্যত ভূমিকা পালন না করা হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম একটি ভয়াবহ পাপাচারের সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়ে উঠবে। এই গর্হিত পাপের জন্য হযরত লূত ( আঃ ) এর পুরো জাতি যে ধ্বংস হয়েছিল, সেটি ভুলে গেলে চলবে না।
এক সময় সামাজিক স্বীকৃতির জন্য তাদেরকে বিবাহের বৈধতা দেবার প্রশ্ন উঠবে।এই বৈধতার প্রশ্নে দেশের তথাকতিথ নারীবাদিদের সবার পূর্বে রাজপথে দেখা যাবে। এক্ষেত্রে মানবাধিকার সংগঠনগুলো জোড়ালো ভূমিকা রাখবে। তাই রাজনৈতিক বিভেদ রাজনীতির জায়গায় রেখে ধর্মীয় মুল্যাবোধ ধ্বংসের এই ষড়ষন্ত্র রুখতে এক কাতারে সকল মুসলমানদের স্বোচ্ছার হতে হবে ।
স্বামী-স্ত্রীর পবিত্র সর্ম্পকের বিপরীতে পশ্চিমা সভ্যতায় বিকশিত এই অসুস্হ মানসিকতার বিকৃতি নিয়ে এখন খোদ পশ্চিমারাই উদ্বিগ্ন। কয়েক দিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সংক্রান্ত একটি খবরে দেখলাম যে, হাই স্কুল পড়ুয়া সন্তানদের স্কুলে দিয়ে আসছেন এবং স্কুল ছুটির পর বাসায় নিয়ে আসছেন তাদের পিতা- মাতারা। স্কুল থেকে বাসার দূরত্বও বেশি নয়। কিন্তুু সন্তানদের যতটা সম্ভব মস্তিস্ক বিকৃত এই অসুস্হদের সঙ্গ থেকে দূরে রাখতে তাদের এই প্রচেষ্টা। আর্দশ সন্তান তৈরী করতে চাইলে বৈরী পরিবেশে সন্তানদের সুরক্ষার ব্যবস্হাটা পিতা মাতাকে করতে হবে সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়।
নতুন পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ -এ অজস্র যুক্তিযুক্ত বিতর্ক রয়েছে। এর মধ্যে পাঠপুস্তকে প্রধানমন্ত্রীর অহরহ ছবি নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে কোনো সিটিং প্রধানমন্ত্রীর ছবি সহ তার পরিবারের সদস্যদের ছবি পাঠ্য পুস্তকে এভাবে থাকে বলে অন্তত আমার জানা নেই। এই নিয়ে বিগত কয়েকদিনে অনলাইনে প্রচুর ঘাটাঘাটি করেও এর কোনো উত্তর পাইনি।
সপ্তম শ্রেণীর বইয়ে women in government নামের একটি অধ্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পীকার শিরিন শারমিন এবং শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ছবি সহ তাদের কথা বলা হয়েছে। পড়লে মনে হবে পুরোটাই যেনো ক্ষমতাসীন আওয়ামি ব্যাটালিয়ানের আদ্যেপান্ত। অথচ এই অধ্যায়ে স্বাধীনতার পর থেকে যে সকল মহিয়ান নারীরা সরকারের হয়ে কাজ করেছেন, তাদের নাম থাকার কথা ছিল। এটা হতে পারতো ইতিহাসের সঠিক অনুধাবন।
কিন্তুু পক্ষপাততুষ্ট লেখকরা দলীয়ভাবে কতটা অন্ধ হলে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে এই ধরণের অধ্যায় লিখতে পারেন ? এটি তার নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক ভাবে শেখ হাসিনার প্রতিপক্ষ ঠিক, কিন্তুু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়নে বেগম খালেদা জিয়ার নাম বাদ দিয়ে কি প্রকৃত ইতিহাস লেখা সম্ভব ?
ষষ্ট শ্রেণীর নতুন পাঠ্য বইয়ে “নৌকা” নিয়ে একটি প্রবন্ধ রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের গ্রামীন বাহন হিসেবে নৌকার গুনগান করা হয়েছে। আচ্ছা গ্রামীন বাহন কি নৌকাই ছিলো? রিক্সা, গরুর গাড়ি এগুলো কি ছিলোনা ? তবে কেবল নৌকাই কেনো হবে? তাছাড়া নৌকার মাহাত্ম্য পড়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের কি লাভ হবে? সরাসরি যেহেতু বলা সম্ভব নয় তাই একটু ঘুরিয়ে পেছিয়ে কোমলমতি শিশুদের মস্তিস্কে ঢুকানো হচ্ছে নৌকা আওয়ামিলীগের দলীয় প্রতিক। নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রতিক যদি নৌকা হয় তাহলে কৃষিমাতৃক বাংলাদেশের প্রতিক ধানের শীষ ও লাঙলের গল্প ছাপা হলে দোষটা কি ছিলো?
বাংলাদেশের মেইন স্ট্রিম সেক্যুলার বুদ্ধিজীবিরা প্রায়ই পিছিয়ে পড়া আফগানিস্তানের উদহারণ ঠেনে দেশের ইসলামপন্হীদের হেয় প্রতিপন্ন করেন। অথচ যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানরা আজ স্পোর্টস কার তৈরী করে সারা বিশ্বে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। কিন্তুু বাংলাদেশ গত ৫০ বছরে সকল পরিবেশ অনুবূলে থাকা সত্বেও এই ধরণের একটি কার বানাতে কি সক্ষম হয়েছে ? শিক্ষার্থীদের যেখানে ড্রোন- রাফেল যুদ্ধ বিমান তৈরীর গল্প শুনানোর কথা, শিক্ষার্থীদের ভেতর যেখানে মহাকাশ জয়ের অদম্য স্বপ্ন জাগানোর কথা, যেখানে সাগরের তল দেশ জয়ের গল্প পাঠ্যপুস্তকে থাকার কথা, সেখানে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরীর স্বপ্নদ্রষ্টারা এই যুগে এসে নৌকা তৈরীর গল্প পড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীদের। এটা কি সৃজনশীল শিক্ষা?
প্রায় ৭৬৬ বছর মুসলিমরা ভারত বর্ষ শাসন করেছে।এই ৭৬৬ বছরে মুসলিম শাসকদের উল্লেখযোগ্য সুশাসনের এমন কোনো ঘটনা পাঠ্য বইয়ের ইতিহাসে স্হান পাবার মতো কি ছিলোনা ? তাহলে নেই কেনো? কতিথ বোরকার গল্পের বিপরীতে পর্দা করা মা-বোনদের জীবন বদলে দেবার মত হাজার-লাখো গল্প রয়েছে আমাদের সমাজে, সেখান থেকে কি অন্তত একটি গল্প দেওয়া যেতে পারতো না পাঠ্য বইয়ে? তাহলে কেনো দেওয়া হয়নি ? যে মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমরা এতো গর্ব করি, এতো চোখের জল ফেলি, সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের ছবিগুলো পাঠ্যপুস্তকের প্রচ্ছদে দিতে কি লজ্জা হতো আমাদের ?
মৃসলিম শাসকদের চরিত্র হনন, শরীফ থেকে শরীফা নামের সমকামিতার উদ্ভট চিন্তা, বিবর্তনবাদ নামের অপ্রমাণিত বৈজ্ঞানিক বিতর্কিত তথ্য, নারীদের পবিত্র পর্দার বিকৃত উপস্হাপন, নবী করিম (সাঃ) এর সুন্নত দাড়ির অবমাননা, এই সবগুলো বাঙালি মুসলিম সত্বা ধংসের একটি পরিকল্পিত পরিকল্পনা।পাঠ্যপুস্তকে এত ভুলের ছড়াছড়ি অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়নি। এইগুলোর সাথে একটি ঐতিহাসিক যোগসূত্র আছে, রয়েছে তৃতীয় পক্ষের উদ্দেশ্য প্রণোদিত সূক্ষ্ম পরিকল্পনা। খুব গভীর ভাবে খেয়াল করলে দেখা যাবে,বইয়ের ভেতর ইতিহাসে হিন্দুু শাসকদের দেশপ্রেমিক হিসেবে মহিমান্বিত করা হয়েছে, পক্ষান্তরে মুসলিম শাসকদের বহিরাগত দুস্য হিসেবে চিত্রায়ন করা হয়েছে।অপরদিকে ঔপনিবেশিক আন্দোলনে হাযী শরীয়ত উল্লাহ, তিতুমীরের ভূমিকা সহ ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে মুসলিম জাতীয়তাবাদী বরণ্য ব্যক্তিদের উপেক্ষা করা হয়েছে, যারা আন্দোলনের মাধ্যমে ভারত বর্ষে বাঙালি জাতীয়তাবোধের দৃঢ় ভিত্তি রচনা করেছিলেন। বইয়ের প্রচ্ছদে তদ্রুপ মুসলিম সংস্কৃতির স্হাপনাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। ভেতর ও বাহির সবখানে মুসলিমরা অগ্রাহ্য। ইতিহাস চর্চা যদি এই ভাবে চলতে থাকে, তবে নিশ্চিত বাঙালি মুসলিমরা নিজেদের আইডেন্টি ক্রাইসেসে ভোগবে নিকট ভবিষ্যৎে।
আপনার কি দরকার? বা কি জানতে চান? সব প্রশ্নের উত্তর এবং সব সফট কাজ করে দেয়ার সংকল্প নিয়ে আপনার দুয়ারে Chat GPT. ভিসা আবেদন করবেন, কভার লেটার দরকার? চাকুরীর আবেদনে কভার লেটার চাই? সোশ্যাল কিংবা ইমিগ্রেশন অফিস থেকে লেটার এসেছে, উত্তর কি দিবেন ভাবছেন? জানতে চান পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা কি? জানতে চান মানুষের মস্তিষ্কের নিউরনের দৈর্ঘ্য কত? জানতে চান ভরবেগ, ত্বরণ কিংবা গতির সূত্র কি, আলোর গতি কত কিংবা কত তাপমাত্রা নর্থ পোলে? সব প্রশ্নের উত্তর আপনাকে নিমিষেই দিয়ে দিবে এই যুগান্তকারী আবিষ্কার Chat GPT.
বিশ্বের নামকরা প্রযুক্তি কোম্পানি মাক্রসফট ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে Chat GPT খরিদ করার পরিকিল্পনা তো আর এমনিতেই নেয় নি।
প্রযুক্তি দুনিয়ার এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় Open AI তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) চ্যাটবট ‘Chat GPT’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর চ্যাটবটটি যেকোনো বার্তার উত্তরে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে দিতে পারে। নির্ভুল শব্দচয়ন এবং ভাষা ব্যবহার করায় চ্যাটবটের লেখা পড়ে বোঝার উপায় নেই সেগুলো মানুষ না যন্ত্র লিখেছে। চ্যাটবটটি বাংলায়ও সমানভাবে পারদর্শী।
গুগলে একটা তথ্য আপনাকে ঘেঁটে সময় নিয়ে বহু তথ্যের মাঝ থেকে খুঁজে নিতে হয়, কিন্তু এই চ্যাটবটটি নিমিষেই আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করে আপনার সামনে এনে হাজির করবে। Chat GPT এর বিশেষত্ব হচ্ছে এইটা অনলাইনে যত সোর্স রয়েছে (গুগল, উইকিপিডিয়া, অনাইলিন ভিত্তিক বই ইত্যাদি) থেকে সার্স করে প্রয়োজনীয় তথ্য উত্থাপন করে থাকে।
২০১৯ সালের জুনে, GPT-3 (Generative Pre-trained Transformer- 3) মডেলটি প্রথম ঘোষণা করা হয় এবং নভেম্বরে OpenAI API-এর মাধ্যমে সীমিত সংখ্যক পরীক্ষকে কাছে এটিকে উন্মুক্ত করা হয়। এটি বিশেষ করে ২০২১ সালের পরের কোন তথ্য, ঘটনা সরবরাহ করতে পারে না, কারণ বর্তমান ভার্সন এর আপডেট ২০২১ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান।
২০২১ সালের ভার্সনেই এই অবস্থা, যা ছিল মূলত পরিক্ষামূলক ভার্সন। যদি সম্পূর্ণ এবং আপডেটেড ভার্সন পাবলিশ হয়, তাহলে কল্পনা করা যায়!
ধরনা করা হচ্ছে Chat GPT সব প্রযুক্তিকে ছাড়িয়ে যাবে। এর যেমন সুফল পাওয়া যাবে তেমনি থাকতে পারে ভয়ানক কুফল। যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স যদি সব কাজ করতে সক্ষম হয়, তাহলে মানুষের প্রয়োজন পুরিয়ে যাবে। যার ফলে চাকুরী থাকবেনা অসংখ্য মানুষের।
Chat GPT যদি রোগের প্রেসক্রিপশন দিতে পারে তাহলে কমে যাবে ডাক্তারের চাহিদা, যদি তৈরি করতে পারে ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট তাহলে কমে যাবে অ্যাকাউন্টেন্টের চাহিদা, যদি কোডিং লিখতে পারে তাহলে থাকবেনা প্রোগ্রামারদের চাহিদা, যদি ড্র করতে পারে ডিজাইন তাহলে থাকবেনা ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা। এমন শত কাজ Chat GPT করে দিতে পারবে, যার ফলে বেকার হয়ে পড়ব হাজারো প্রফেশনাল।
Chat GPT – আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?
Chat GPT এখনো তার লাইফ সাইকেলের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এখনো অনেক তথ্য Chat GPT দিতে অক্ষম, কিন্তু সময়ের সাথে এই AI যে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে হাজির হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বৃহৎ টেকনোলজি জায়ান্ট মাক্রোসফট Chat GPT কেনার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যে। গুগলের মত প্লাটফর্মও হয়ত একদিন এমন প্রযুক্তির কাছে সালাম ঠুকে বিদায় নেয়া লাগতে পারে।
গুগলের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলতেছে Chat GPT
একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তির পরিবর্তন নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মতই ছড়িয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মানব সভ্যতাকে একটি ভিন্ন রূপে দেখতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবেনা। সব কিছু এত দ্রুতই হচ্ছে যে, কোন কিছুকেই এখন আর আকাশ কুসুম ভাবার জো নেই।
পদ্ম পাতার মত টলমল করে টলতে থাকা এ জীবন। পদ্ম পাতার পানি যেমন, একটু ঝাঁকুনিতেই টলে উঠে, আর একটু জোরে ঝাকুনি লাগলেই নিঃশেষ; পদ্ম পাতা থেকে বিচ্ছুরিত হয়ে ঝরে পড়ে চিরকালের জন্য।
আমাদের জীবনটাও ঠিক পদ্ম পাতার মতই, বড়ই টলমলে, অতি মাত্রায় ভঙ্গুর, অসম্ভব রকমের ভালনারেবল। দুর্ঘটনা, রোগ, শোক, মৃত্যু; খুবই হাতের নাগালে, আশেপাশেই ঘুরঘুর করে সর্বদা।
দুর্ঘটনা, রোগ, শোক যেন পদ্ম পাতার পানির মতোই, একটু এদিক ওদিক হলেই যেন নড়েচড়ে উঠে। স্থির হয়ে থাকা যেন খুবই কষ্টসাধ্য। পদ্মপাতার যেমন বাতাসের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নাই, নিউটনের গতির প্রথম সূত্রের মতোই নাই বাহ্যিক চাপ থেকে বাঁচার নিয়ন্ত্রণ। তেমনি মানুষের হাতেও দুর্ঘটনা, রোগ, শোক থেকে বাঁচার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। শুধু টলমল করে যুদ্ধ করে যাওয়া যতক্ষণ মৃত্যু থেকে বেঁচে থাকা যায়, ঠিক যেমনি পদ্ম পাতার পানি চেষ্টা করে যতক্ষণ টিকে থাকা যায়।
গত বেশ কিছুদিন আমরা লক্ষ্য করেছি কয়েকটি ঘটনা। এইতো কিছুদিন আগেও আমাদের মাসুদ ভাই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন, এর কিছুদিন যেতে না যেতেই দুর্যটনার কবলে পড়েন পড়েন শাহীন ভাই। দেখেন শাহীন ভাই মসজিদ থেকে পায়ে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন, কিন্তু রেহাই পাননি অনিশ্চিত দুর্ঘটনা থেকে।
জনাব শাহীন, টালাতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেনজনাব আজিজুর রহমান মাসুদ, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন
এরপর দেখেন আসাদ ভূঁইয়া ভাই, দেশ থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে রওনা হন। পথিমধ্যে বিমানের মধ্যেই হয়ে পড়েন গুরুতর অসুস্থ। কে জানত বিমানেই হয়ে পড়বেন অসুস্থ, তা জানলে তো ভ্রমণে বের হতেন না।
জনাব আসাদ ভুঁইয়া, বর্তমানে গলওয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন
এরপর সবচেয়ে ট্র্যাজিক, গতকালই শুনলাম কর্কের শামসুল ইসলাম ভাই আমাদের মাঝে আর নাই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন)। উনি ছুটি কাটাতে দেশেই ছিলেন। আয়ারল্যান্ড ছাড়ার আগেও কি উনি জানতেন যে উনি আর আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন না! পদ্ম পাতার পানির মতোই জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে ঝরে পড়বেন অকালে, কে ই বা জানত!
জনাব শামসুল ইসলাম, বাংলাদেশে অবস্থানরত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)
জানা অজানা এমন বহু ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। আমাদের কারো জীবনই এর ব্যাতিক্রম নয়। দোদুল্যমান ঝুলে আছি, পদ্মপাতার মতোই টলমল সবার জীবন। যে কোন সময় টলে উঠতে পারি রোগ শোক দুর্ঘটনা দ্বারা অথবা ঝরে পড়তে পারি মহাপ্রয়ানের মধ্যে দিয়ে।
নাস্তিক্যদের নাকি উপাসনা করার কেউ নেই, নেই কোন উপাসনার গ্রন্থ। কিন্তু জীববিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের মতবাদের পর ডারউইনই হয়ে যায় নাস্তিক্যদের দেবতা এবং বিবর্তনবাদ তত্ত্ব সম্বলিত বই অরিজিন অব স্পিসিস হয়ে যায় তাদের নাস্তিক্যবাদ গ্রন্থ।
ধর্মের প্রতি অবিশ্বাস থেকেই নাস্তিক্যবাদের উৎপত্তি। নাস্তিক সে ই যার কোন ধর্ম নেই, সুতরাং ধর্মের প্রতি মূল্যবোধ, ধর্মকর্ম মানার কোন বাধ্যবাধকতাও তার থাকে না।।
সে তখন থাকে পাপ পুণ্যের ঊর্ধ্বে, যার মনে কোন পাপবোধ নেই, যে কোন ধরনের পাপ কাজ করতে তার বিবেকে বাধে না, কারণ তার বিশ্বাস পাপ বলে কিছু নাই; আবার ভালো কাজ করে পুণ্য অর্জন করবে তার ধার ও সে ধারে না।।
নাস্তিকরা যে ধর্ম কর্ম পালন না করে খুব বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছে, ধর্ম যে আসলেই মিথ্যা বানোয়াট একটা বিষয়, তা প্রমান করার জন্য তারা সদা তৎপর থাকে।।
তাদের নাস্তিক্যবাদ তত্ত্বকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে ধর্মগুলোকে নানাভাবে দোষারোপ করে, বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে, বিকৃত করে সমালোচনার তীর দিয়ে জর্জরিত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তেমনি নিজেরদের যুক্তিকে বাস্তব ও সত্য প্রমাণের লক্ষ্যে তাদের পক্ষের ও মতের সব তত্ত্ব উপাত্ত সংগ্রহ করে তার পক্ষে জোর মতবাদ উত্থাপন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নাস্তিক্যদের কোন যুক্তি, তর্ক, তত্ত্ব উপাত্তই হালে পানি পাচ্ছিল না। খুব শক্তিশালী কোন যুক্তি দাঁড় করাবে ধর্মের বিরুদ্ধে তা খুঁজে পাচ্ছিল না। কিন্তু ডারউইনের মতবাদ তারা আশীর্বাদ আকারে পেয়ে যায়।
অনেকগুলো তত্ত্বের মাঝে চার্লস ডারউনের মতবাদ নাস্তিক্যবাদের একটা দ্বার সুপ্রশস্থ হয়ে যায়। ডারউইন হয়ে যায় তাদের দেবতা, আর বিবর্তনবাদ তত্ত্ব টা হয়ে যায় তাদের নাস্তিক্যবাদ গ্রন্থ।
ডারউইন তার অরিজিন অব স্পিসিস বইতে বিবর্তনবাদ তত্ত্বের বর্ণনা করেন। বিবর্তনবাদ তত্ত্বে বলা হয় মানুষ বানরের বংশধর, বিবর্তনের ফলে বানর ধীরে ধীরে মানুষে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু ইসলাম ধর্মানুযায়ী মানুষের আবির্ভাব হয় আদিপিতা হযরত আদম (আঃ) থেকে।
ডারউইন নিজেও এর কোন প্রমাণ দিয়ে যেতে পারে নাই, এর পরবর্তী বিজ্ঞানীরাও উল্লেখযোগ্য কোন প্রমাণ এখনো দিতে পারে নাই, পারবে বলেও মনে হয়না। এই তত্ত্বটি কেবলমাত্র ধারণার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
বিজ্ঞানীরা বলেন বিবর্তনবাদ একটি ধীর প্রক্রিয়া। কোন একটি জীবের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র পরিবর্তন আসতে লক্ষ লক্ষ বছর লেগে যায়। হযরত আদম (আঃ) এর আগমন প্রায় ৬০০০ বছর আগে। মাত্র ৬০০০ বছর আগে আসা হযরত আদম (আঃ) এর ঠিক আগের ব্যক্তিটি কে ছিল তাই কেউ জানেনা তাহলে লক্ষ লক্ষ বছর পূর্বে বানর যে মানুষের বংশধর ছিল, তা কিভাবে বিজ্ঞানীরা জানল?
হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবী জুড়ে মানুষের বিচরণ, ধরে নিলাম বানরের প্রজাতি এর আগে থেকেই আছে কিন্তু প্রশ্ন হল হাজার হাজার বছর একটা বানর কে কেউ মানুষে রূপ নিতে দেখেছে? অতবা যে বানর প্রজাতি বর্তমানে বিদ্যমান তারাও তো এতদিনে মানুষের রূপ নেয়ার কথা ছিল।
বিবর্তনবাদের নিয়ম হল বিবতনের ধারাটা অব্যাহত থাকবে, বানর থেকে যেমন মানুষ তেমনি মানুষ থেকে গরু, ছাগল না হোক সমজাতির কিছু তো তৈরি হত। কিন্তু তা যে হয়েছে এমন কেউ তো তা চাক্ষুষ দেখে নি।।
তারপর যে বানর গুলা আছে তাদের কেও আজকে গাছে গাছে ঝুলতে হত না, মানুষের জাত ভাই হয়ে একইসাথে বসবাস করত।
তাহলে বিজ্ঞানীদের প্রদানকৃত প্রমাণের কি হবে?
এইটা ঠিক যে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তত্ত্ব উপাত্ত হাজির করেছে। বিভিন্ন জীবাশ্ম ফসিল দিয়ে প্রমাণ করানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে মিলিয়ন বছর পূর্বেও মনুষ্য প্রজাতির বিচরণ ছিল।
যারা ইউভাল নোয়াহ হারারির সেপিয়েন্স বইটি পড়েছেন তারা লক্ষ্য করবেন যে সেখানে ‘নিয়ানডার্থাল’ এর কথা বলা হয়েছে। ‘নিয়ানডার্থাল’ কে বলা হচ্ছে মানুষের আদি আকৃতির প্রজাতি যারা হোমো গন বা স্পেসিস এর অন্তর্ভুক্ত। যাদের বৈজ্ঞানিক নাম Homo neanderthalensis। বিজ্ঞানীদের ধরনামতে প্রায় ৬০০ হাজার বছর আগে এদের উৎপত্তি এবং প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার বছর আগে এদের বিলুপ্তি ঘটে। বিধিবাম, এত শ বছর ছিল আর ৩০-৪০ হাজার বছর থাকতে পারল না? তাহলেই তো দেখা যেত, আসলে ‘নিয়ানডার্থাল’ কি আসলেই মানুষ ছিল নাকি বানর শিম্পাঞ্জির মত কিছু।
নিয়ানডার্থালসের নাকি মাথার খুলি টুলি পাওয়া গিয়েছে যা দেখতে মানুষের খুলির মতই। হ্যাঁ হতেই পারে। বানর কিংবা শিম্পাঞ্জির খুলিও তো মানুষের মত, কিন্তু মানুষ তো আর না। বিজ্ঞানীরা আদি মানুষের চিত্র দেখাতে গিয়ে কিছুটা বানরের মিল পেয়েছেন। কিন্তু যেসব চিত্র আমরা দেখি তা কেবল মাত্র ধারনাকৃত চিত্র। আগে না ছিল ফটো তোলার যন্ত্র, না ছিল চিত্রাঙ্কন করার দোয়াত কালি কাগজ। শুধু ধারনা করেই আমাদেরকে বলা হচ্ছে এই যে দেখ তোমাদের পূর্ব পুরুষ দেখতেও বানরের মত ছিল।
হ্যাঁ, অতীতের মানুষের চেহারা আজকের মানুষের মত এত মসৃণ, মোলায়েম, কোমল ও সৌন্দর্যমণ্ডিত ছিলনা। কারণ তখন না ছিল পরিধেয় বস্র, না ছিল পশম চুল কাটার যন্ত্র, না ছিল সাবান শ্যাম্পু লোশন। নখ বড় হয়ে কোদালের মত হয়ে যেত। তাদেরকে বাস করতে হয়েছে গাছের নিছে, কাদামাটি মিশ্রিত স্থান ছিল বিছানার জায়গা। তাইতো তাদের দেখে হয়ত বুনো বা বন্য লাগতে পারে, কিন্তু তারা মানুষ ছিল।
আজকের মানুষ তখনকার মানুষ ছিল বলেই তাদের হুশ ছিল, বুদ্ধি ছিল, ছিল বিবেক। তাইতো তারা ধীরে ধীরে নিজেদের পরিবর্তন ও উন্নয়ন ঘটিয়েছে, তাইতো সেই মানুষ আজকের মানুষ। কিন্তু সে উন্নতি ঘটাতে না পেরেছে মানুষের কথিত সম্প্রদায় বানর, কিংবা অন্য কোন প্রাণী।
মানুষের বিবর্তনকে বোঝানো হচ্ছে এভাবে। একবারে শুরুতে ছিল বানর সাদৃশ্য। মাঝে বুনো মানুষের মত, আর শেষে আজকের মানুষ।
মানুষ মানুষই। মানুষ একমাত্র মানুষ হয়েই জন্মেছে। বানর, শিম্পাঞ্জি কিংবা নিয়ানডার্থালকে আল্লাহ মানুষের কিছু আকার দিয়ে পাঠিয়েছে, কিন্তু তারা মানুষ না। বিড়াল ও বাঘের মধ্যে সাদৃশ্য থাকলেও বিড়াল বিড়ালই আর বাঘ বাঘই। আল্লাহ হয়ত ইচ্ছা করেই এই সাদৃশ্যটুকু রেখেছেন এই সময়ের জন্য। মানুষকে হয়ত আরও গভীরে ভাবার জন্য, হয়ত বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাঝখানের থিন লাইনকে বোঝার জন্য।
শেষ কথা
বিজ্ঞান মানুষকে অনেকদূর নিয়ে এসেছে, নিয়ে যাবে আরো অনেকদূর। ডারউইনের কৃতিত্বও অস্বীকার করার জো নেই। প্রত্যেক বিজ্ঞানী তার ধারণা ও গবেষণার প্রেক্ষিতে তত্ত্ব কিংবা সূত্র দিয়ে গেছেন। যার অনেক প্রমাণিত অনেক অপ্রমাণিত কিংবা পরীক্ষাধীন। তাদের অনেক আবিষ্কারের সুফল আজ ভোগ করতেছে মানুষ।
কিন্তু কোন বড় মাপের বিজ্ঞানী তার বিজ্ঞানের সাথে ধর্মকে টেনে আনে নাই। ডারউইন বিবর্তনবাদের তত্ত্বের বর্ণনা দিয়েছেন মাত্র, কিন্তু এইটা বলেন নি যে হযরত আদম (আঃ) মিথ্যা। কিন্তু ডারউইনের সেই তত্ত্বেকে পুঁজি করে নাস্তিক্যবাদী সম্প্রদায় ধর্মকে মিথ্যা বানানোর চেষ্টায় লিপ্ত। যারা আদতে কোন বিজ্ঞানীও না, অনেকক্ষেত্রে বহুলাংশে শিক্ষিতও না। কিন্তু তাদের মতে তারাই বড় বড় পণ্ডিত ও বিজ্ঞানী। অথচ বহু বিজ্ঞানে অভিজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত রয়েছেন যারা আদম (আঃ) কেই আদি পিতা মানেন।
যারা ধর্মে বিশ্বাসী না, তাদেরকে তো কেউ কিছু বলতেছেনা বা উসকানিও দিচ্ছে না। কিন্তু প্রায়সময় দেখা যাচ্ছে তারাই ধর্মে বিশ্বাসীদেরকে নানাভাবে উসকানি দিয়ে, খোঁচা দিয়ে উত্যক্ত করার নগ্ন খেলায় মত্ত। বাংলাদেশে ৯০ ভাগেরও বেশি মুসলমান এবং তন্মদ্ধে ৯০ ভাগেরও বেশি ধর্মে বিশ্বাসী। কি দরকার এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া।
কেউ ধর্মে বিশ্বাসী কি বিশ্বাসী না তা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু কেন যে একটা গোষ্ঠী কাঠি নেড়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টায় মত্ত। বাংলাদেশে অনেক অমুসলিম আছে, বেশ নাস্তিকও রয়েছে। কিন্তু তারা কি কখনো অনিরাপদ ছিল? মাঝখানে দুই একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে ঠিকই, কিন্তু দেখতে হবে কোন সময়ে তা ঘটেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো ঘটেছেই রাজনৈতিক অস্থির সময়গুলাতে। এছাড়া সাধারণ মুসলমানদের দ্বারা কোন অমুসলিম কিংবা নাস্তিকদের ক্ষতিসাধন কখনোই হয় নাই।
বিজ্ঞানের জয়যাত্রা চলতে থাকুক, কিন্তু ধর্মকে পাশ কাটিয়ে কিংবা পদদলিত করে নয়।
সদ্য ল্যান্ড করা কড়কড়ে টাটকা, গরম গরম ধোঁয়া ওঠা রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট; যা সত্যিই আপনি মিস করতে চাইবেন না। একেবারেই আনকোরা এই ট্যাক্স ক্রেডিট সম্বন্ধে এখনো অনেকেরই কর্ণকুহরে প্রবেশ করে নাই অথবা চাক্ষুষ দৃষ্টিগোচর হয় নাই। সে কথা বিবেচনা করেই রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট নিয়ে আলাদা করে এই আর্টিকেলটি লেখার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করা, যাতে করে কোনো ট্যাক্স প্রদানকারীই এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।
রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট কি?
রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট হচ্ছে ট্যাক্স প্রদানকারী যদি ভাড়া বাসায় থাকে তাহলে সেই বাসা ভাড়ার উপর ২০% ট্যাক্স ক্রেডিট পাবে, যে ট্যাক্স ক্রেডিট সেই ট্যাক্স প্রদানকারী ব্যক্তির ট্যাক্স কমাতে সহায়তা করবে। ডিসেম্বর ২০২২ ঘোষিত বাজেট ২০২৩ তে এই রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট এর ঘোষণা করা হয়। এই ট্যাক্স ক্রেডিট ২০২২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিটের জন্য কারা যোগ্য?
যে কোন ট্যাক্স প্রদানকারী যারা ভাড়া বাসায় থাকে তারাই রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট পাবার যোগ্য হবে। কারো যদি নিজের বাসা থাকে কিন্তু কর্মসূত্রে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে তারা ট্যাক্স ক্রেডিট পাবার যোগ্য। ট্যাক্স প্রদানকারীর সন্তান যদি পড়ালেখার উদ্দেশ্যে ভাড়া থাকে তাহলে তাও রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট পাওয়ার ক্ষেত্রে যুক্ত করতে পারবে, তবে কিছু শর্ত পূরণীয় হতে হবে।
রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট পেতে হলে ভাড়াকৃত বাসাটি অবশ্যই Residential Tenancy Board (RTB) এর রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে। সাধারণত ভাড়াকৃত বাসা RTB এর রেজিস্ট্রেশন করা থাকে। কনফার্ম হওয়ার জন্য যার যার ল্যান্ডলর্ড অথবা এজেন্সির সাথে কথা বলে নেয়া যেতে পারে।
কারা রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট এর জন্য যোগ্য হবে না?
অনেকে হয়ত ট্যাক্স প্রদান করেন কিন্তু পাশাপাশি HAP বা হাউজিং অ্যাসিস্ট্যানস পেমেন্ট অথবা রেন্ট সাপ্লিমেন্ট পেয়ে থাকেন। সেসব ক্ষেত্রে রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিটের জন্য আবেদন করা যাবে না।
সন্তানদের পড়ালেখার উদ্দেশ্যে ভাড়ার জন্য কোর্সটি অবশ্যই আপ্রুভড হতে হবে এবং সন্তানের বয়স ২৩ বছরের নিচে হতে হবে প্রথম বছর আবেদন করার ক্ষেত্রে, অন্যথায় সেক্ষেত্রে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।
রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট পাবার নিয়ম
ট্যাক্স ক্রেডিট হবে মোট ট্যাক্সের উপর ২০%। তবে লিমিট হচ্ছে সর্বোচ্চ বছরে €৫,০০০ ভাড়ার উপর ট্যাক্স ক্রেডিট পাওয়া যাবে। তাহলে €৫,০০০x২০% = €১,০০০ সর্বোচ্চ ক্রেডিট পাওয়া যাবে। কিন্তু এখানেও কথা আছে। €১,০০০ হবে শুধুমাত্র জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট হলে। যদি সিঙ্গেল অ্যাসেসমেন্ট হয় তাহলে সর্বোচ্চ €৫০০ ট্যাক্স ক্রেডিট পাওয়া যাবে। সন্তানদের জন্য €৫০০ ট্যাক্স ক্রেডিট পাওয়া যাবে। তবে কোন অবস্থাতেই €১,০০০ এর বেশি ক্রেডিট পাওয়া যাবেনা।
ট্যাক্স ক্রেডিট যেহেতু ২০২২ এর ডিসেম্বরে সংযোজন হয়েছে, সেক্ষেত্রে বছরের মধ্যে কেউইই তা ট্যাক্স ক্রেডিট হিসেবে ব্যবহার করতে পারে নাই। সুতরাং ২০২২ এর ট্যাক্স ক্রেডিটের ট্যাক্স ফেরত পেতে হলে তা ২০২২ এর বাৎসরিক রিটার্নের মাধ্যমে পেতে হবে। যারা ২০২৩ সালে ২০২২ এর বাৎসরিক রিটার্ন জমা দিবেন, সাথে রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট ক্লেইম করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
অনলাইন রিটার্নে রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিটের জন্য অপশন যুক্ত করা হয়েছে, সে অপশনে গেলেই ধাপে ধাপে নির্দেশিকা অনুসরণ করে রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট যুক্ত করে নিতে পারবেন। যাতে ভাড়াকৃত বাসার ঠিকানা, বাড়িওয়ালার PPS নাম্বার, RTB রেজিস্টার্ড কিনা তার কনফার্মেশন ইত্যাদি। মোট বাসা ভাড়া ও ইলিজিবল অ্যামাউন্ট আলাদাভাবে দিতে হবে। মোট ভাড়া বাৎসরিক হিসেব করে যা আসে তাই দিবেন, আর ইলিজিবল অ্যামাউন্ট যদি ৫,০০০ এর বেশি হয় তাহলে সর্বোচ্চ €৫,০০০ ই দিতে হবে আর কম হলে কম।
ইতিমধ্যে কেউ যদি রিটার্ন জমা দিয়ে থাকেন কিন্তু রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট ক্লেইম করেন নাই, তারা রিটার্নের অ্যামেন্ড অপশনে গিয়ে রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট যুক্ত করে নিতে পারেন।
ক্লেইম করতে অবশ্যই ভুলবেন না
সর্বোচ্চ €১,০০০ পর্যন্ত ট্যাক্স ক্রেডিট মিস করবেন যদি ক্লেইম না করেন। যা অনেকক্ষেত্রে অনেকের জন্য ১ মাস অতবা কারো জন্য ২ মাসের বাসা ভাড়ার সমান। বর্ধিত বাসা ভাড়ার কারণে সরকারের এই উদ্যোগ। আপনি যদি যোগ্য হন, অবশ্যই এই ক্রেডিট ক্লেইম করবেন।
আপনার ভাড়াকৃত বাসাটি ক্রেডিট ক্লেইম করতে ইলিজিবল কিনা তা জানতে অতবা তথ্যের জন্য আপনার এজেন্সি অতবা বাড়িওয়ালার সাথে কথা বলতে পারেন। এজেন্সি এবং বাড়িওয়ালা প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে বাধ্য। তা না হলে আপনি আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন।
কোন ব্যপারে নিশ্চিত না থাকলে রেভিনিউর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে নিশ্চিত হতে পারেন।
ফ্রি হেল্পলাইন
আশা করি এই আর্টিকেলটি রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট সম্পর্কে বুঝতে ও ক্লেইম করতে সহায়তা করবে। তারপরেও কোন বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে আমাদের ফ্রি হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।
ট্যাক্স বিষয়টাই সুবিশাল একটা ব্যাপার। ট্যাক্সের জগতটা মহাসমুদ্রের মত। এই মহাসমুদ্রে সন্তোরন করা আপাতদৃষ্টিতে সবার পক্ষে সম্ভবও না, দরকারও নেই। কিন্তু যার যার ব্যক্তিগত স্বার্থে পার্সোনাল ট্যাক্সের কিছু খুঁটিনাটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন। ট্যাক্সের অনেকগুলা ক্যাটাগরির মধ্যে পার্সোনাল বা ব্যক্তিগত ট্যাক্স একটা।
পার্সোনাল ট্যাক্সেরও নানাবিধ নিয়ম রয়েছে, খুব জটিল না হলেও সহজও না এমন কিছু হিসেব আছে। যা সাধারণত না জানলেও হবে। যার যার আয়, ট্যাক্স ক্রেডিট ও ট্যাক্স রিলিফের উপর ভিত্তি করে রেভিনিউই ট্যাক্স এর হিসেব করে নিবে। তবে মনে রাখতে হবে রেভিনিউ কখনো কম ট্যাক্স নিবে না, বেশি ট্যাক্সও কাটবে না। রেভিনিউতে যার যার তথ্যের ভিত্তিতেই তার তার ট্যাক্সের হিসবে হবে।
আয়ারল্যান্ডে এখনো বিশাল সংখ্যক মানুষ রয়েছেন, যারা ব্যক্তিগত বাৎসরিক ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়ার ক্ষেত্রে ওয়াকিবহাল নন। যার ফলে প্রতি বছর অনেকেই অতিরিক্ত ট্যাক্স দিয়ে থাকলে তা ফেরত পেতে এবং অন্যান্য ট্যাক্স বেনিফিট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এখন প্রশ্ন হল, তাহলে আমাদের কাজ কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে এই লেখাটা মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণটা পড়তে হবে। লেখাটা একটু বড় হতে পারে, কিন্তু এর থেকে সংক্ষিপ্ত করতে গেলে সম্পূর্ণ বিষয়টা তুলে ধরা সম্ভব হতনা। এই আরটিক্যালটি ২০২৫ সালের হালনাগাদ তথ্যসম্বলিত। আইরিশ বাংলা টাইমসের পুরনো আর্টিক্যাল পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
ব্যক্তিগত ট্যাক্সের বিষয়ে আমাদের করনীয় কি?
ধরুন আপনার কোম্পানি যখন আপনাকে বেতন দেয় তার আগে কোম্পানি তার পে-রোল এ পে-স্লিপ ইস্যু করে, যেখানে কোম্পানি আপনার PAYE, USC, PRSI বাদ দিয়ে বাকিটা আপনাকে পে করে। যা পরবর্তীতে কোম্পানি রেভিনিউকে ফেরত দিয়ে দেয়। তার মানে কি কোম্পানিই ঠিক করে, যে আপনার কত ট্যাক্স তারা কাটবে? উত্তর হল, না। কোম্পানি প্রত্যেকবার পে-রোল রান করার আগে RPN আপডেট করে নেয়। RPN হল ‘রেভিনিউ পে-রোল নোটিফিকেশন’, যার মাধ্যমে রেভিনিউর সাথে সংযুক্ত প্রত্যেক কর্মচারীর তথ্য কোম্পানির পে-রোল সফটওয়্যারে আপডেট হয়ে যায়। এখন আপনার যদি কোন তথ্যই রেভিনিউতে না থাকলে পে-রোল সফটওয়্যার সে RPN রিট্রিভ করতে পারবেনা, সুতরাং আপনার উপর ইমারজেন্সি ট্যাক্স ধার্য হবে। সাধারণত নতুন চাকুরীতে কেউ ঢুকলে এটা হয়, এজন্য কেউ নতুন চাকুরী শুরু করলে রেভিনিউ কে জানানো লাগে।
ওই রেভিনিউর তথ্যের উপর ভিত্তি করেই পে-রোল সফটওয়্যার নির্ধারণ করে আপনার কাট-অফ পয়েন্ট কি, ট্যাক্স ক্রেডিট কত, হায়ার রেটে ট্যাক্স কত আর লোয়ার রেটে কত ট্যাক্স আসে ইত্যাদি ইত্যাদি।
রেভিনিউ সাধারণত বছরের শুরুতে একটা স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স ক্রেডিট সার্টিফিকেট ইস্যু করে যার উপর ভিত্তি করেই সারা বছরের ট্যাক্স নির্ধারণ করে। কিন্তু আপনি চাইলে সে ট্যাক্স ক্রেডিট এর পরিবর্তন আনতে পারেন। যার উপর ভিত্তি করে আপনার ট্যাক্সেরও উঠানামা নির্ভর করবে। তা করতে হলে আপনার অবস্থান সম্পর্কে রেভিনিউকে অবগত করতে হবে। যদি না করেন তাহলে রেভিনিউ জানবেনা যে আপনার অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। সুতরাং রেভিনিউও তার স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স ক্রেডিট সার্টিফিকেটের উপর ভিত্তি করে ট্যাক্স কেটে যাবে।
সুতরাং আমাদের করনীয় হল, রেভিনিউকে সবসময় আপডেট প্রদান করা।
পার্সোনাল ট্যাক্সের সাধারণ ধারণা
ট্যাক্স ক্রেডিট কি?
ট্যাক্স ক্রেডিট হল এমন একটা ক্রেডিট যা আপনার ট্যাক্সকে কমাতে সাহায্য করে। বাই ডিফল্ট প্রত্যেক কর্মজীবী একটা স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স ক্রেডিট পেয়ে থাকে। তা হল পার্সোনাল ট্যাক্স ক্রেডিট €২,০০০ এবং এমপ্লয়ী ট্যাক্স ক্রেডিট €২,০০০, মোট €৪,০০০ এর ট্যাক্স ক্রেডিট চোখ বন্ধ করে সবাই পেয়ে থাকে (সিঙ্গেল অ্যাসেসমেন্টের ক্ষেত্রে)।
যদি এই €৪,০০০ ট্যাক্স ক্রেডিট না থাকত তাহলে কি হত? ধরুন আপনার বাৎসরিক আয়ের উপর ট্যাক্স আসে €৫০০০, কিন্তু ট্যাক্স ক্রেডিট €৪,০০০ থাকার কারণে আপনাকে আর €৫০০০ টাকা ট্যাক্স দেয়া লাগতেছেনা। আপনি €৫০০০ থেকে €৪,০০০ বাদ দিয়ে কেবলমাত্র বাকি €১,০০০ ট্যাক্স দিলেই হবে। যদি €৪,০০০ ক্রেডিট না থাকত তাহলে আপনাকে €৫,০০০ টাকাই ট্যাক্স দেয়া লাগত।
আগেই বললাম €৪,০০০ ট্যাক্স ক্রেডিট বাই ডিফল্ট সবাই পেয়ে থাকে। এখন চাইলে এই ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানো যায়। ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়া মানে কম ট্যাক্স প্রদান। ধরুন ট্যাক্স ক্রেডিট বেড়ে যদি €৪,৫০০ হয়, সেখানে যদি কারো €৫০০০ টাকাই বাৎসরিক ট্যাক্স আসে তাহলে তাকে ট্যাক্স দিতে হবে মাত্র €৫০০। যদি €৫০০ ক্রেডিট কারো না বেড়ে থাকে তাহলে উপরোক্ত হিসেব অনুযায়ী €৪,০০০ বেসিক ক্রেডিট থাকার কারণে একই আয়ের ব্যাক্তিকে দিতে হচ্ছে মাত্র €১,০০০ ট্যাক্স। যার যার ব্যক্তিগত অবস্থার উপর নির্ভর করে ট্যাক্স ক্রেডিট বর্ধিত হতে পারে।
এটা মনে রাখতে হবে যত বেশি ট্যাক্স ক্রেডিট তত কম ট্যাক্স লাইবিলিটি (বকেয়া)।
ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানোর উপায় কি?
ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানোর অনেকগুলো নিয়ম, পদ্ধতি ও উপায় রয়েছে। যার যে ক্রেডিট প্রাপ্য সে তার প্রয়োগ করতে পারে।
ধরুন আপনি আয়ারল্যান্ডে এসে বেশ কিছু বছর চাকুরি করেছেন। কিছুদিন আগে দেশে গিয়ে সদ্য বিবাহ করে আপনার বউকে নিয়ে এসেছেন, এসে আবার যথারীতি কাজে ফিরেছেন। কিন্তু আপনার স্পাউস আপাতত কোন চাকুরীতে প্রবেশ করে নাই। কিন্তু এই কথাটা রেভিনিউকে জানান নাই, যার কারণে আপনার ট্যাক্স আগের মতোই কেটে নিচ্ছে রেভিনিউ। কারণ রেভিনিউ তখনো জানে আপনি সিঙ্গেল এবং সিঙ্গেল ব্যাক্তি হিসেবে আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট €৪,০০০ ই আছে।
কিন্তু যদি আপনি রেভিনিউকে জানাতেন যে আপনি এখন বিবাহিত, আপনার স্পাউস চাকুরী করতেছেনা, তারা যেনো আপনার জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট করে। যা করলে আপনার পার্সোনাল ট্যাক্স ক্রেডিট সরাসরি €২,০০০ দ্বারা বৃদ্ধি হয়ে যাবে। তার মানে হল আপনি বছরে €২,০০০ ট্যাক্স অতিরিক্ত কম দেয়া লাগতেছে যা সিঙ্গেল অ্যাসেসমেন্টে সম্ভব ছিলনা।
তাহলে আপনার নিজের ট্যাক্স ক্রেডিট €৪,০০০ এবং আপনার স্পাউসের ট্যাক্স ক্রেডিট €২,০০০ যোগ হয়ে মোট ক্রেডিট হবে €৬,০০০। এখন যদি আপনার বাৎসরিক ট্যাক্স €৬,০০০-ও আসে তাহলে ট্যাক্স ক্রেডিট €৬,০০০ থাকার কারণে আপনার কোন ট্যাক্সই দেয়া লাগবে না।
জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে একটা উল্লেখযোগ্য উপায় ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানোর। জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট করলে আরেকটা সুবিধা আপনার কাট-অফ পয়েন্টও বেড়ে যায়। কাট-অফ পয়েন্ট বৃদ্ধি মানে হচ্ছে আপনার লোয়ার রেটে ট্যাক্স হিসেবের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া। যেমন ২০২৫ এর রেট অনুযায়ী কারো যদি €৪৪,০০০ এর নিচে ইনকাম হয় তাহলে তাকে ট্যাক্স দিতে হবে ২০% এবং এর উপরে গেলে ৪০%। কিন্তু যদি স্বামী স্ত্রী কিংবা সিভিল পার্টনারের শুধু একজন ইনকাম করলে কাট অফ পয়েন্ট €৫৩,০০০ পর্যন্ত হবে, তারমানে €৫৩,০০০ পর্যন্ত ২০% ট্যাক্স রেটে ট্যাক্স কাটবে। স্পাউসের দুইজনেই চাকুরী করলে কাট অফ পয়েন্ট €৮৮,০০০ পর্যন্তও হতে পারে। তার মানে লোয়ার ট্যাক্স রেটে ট্যাক্স কাটবে এবং কম ট্যাক্স দিতে হবে।
এছাড়াও অন্যান্য ট্যাক্স ক্রেডিটও বিদ্যমান। যেমন আপনি যদি কারো দায়িত্ব বহন করেন। যেমন দেশে আপনার বাবা মায়ের দেখাশুনার জন্য টাকা পাঠান, অথবা কোন আত্মীয়ের দেখাশুনা করেন, আয়ারল্যান্ডে অথবা আয়ারল্যান্ডের বাহিরে, তার জন্য ব্যাক্তি অনুযায়ী কিছু ডিপেন্ডেন্ট রিলেটিভ ট্যাক্স ক্রেডিট খুব সহজেই ক্লেইম করতে পারেন।
রেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট একটি আকর্ষণীয় ক্রেডিট। যার মাধ্যমে জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্টের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ €২,০০০ এবং সিঙ্গেল অ্যাসেসমেন্টের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ €১,০০০ ট্যাক্স ব্যাক পাওয়া সম্ভব। এখন কেউ বাৎসরিক রিটার্ন জমা না দিলে এবং রিটার্নে উক্ত ক্রেডিট ক্লেইম না করলে তিনি বড় একটি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবন।
আপনার বৎসরব্যাপী ডাক্তার খরচ, টিউশন ফি বাবদ খরচ গুলা ক্লেইম করতে পারেন। কিছু হিসেব আছে যা আপনার করার দরকার নেই, আপনি শুধু খরচের পরিমাণটা দিয়ে দেন, বাকি হিসেব রেভিনিউই করে নিবে।
আপনার যদি সন্তান থাকে এবং আপনার স্ত্রী চাকুরী করেনা কিন্তু আপনার সন্তানের দেখাশুনা করে, সেক্ষেত্রে হোম কেয়ারার হিসেবে ক্রেডিট ক্লেইম করতে পারেন। অনেকের ডিভোর্স হয়ে যায় গেলে এবং বাচ্চা থাকলে সিঙ্গেল প্যারেন্ট হিসেবে ট্যাক্স ক্রেডিট এবং স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে এবং সন্তান থাকলে উইডোড প্যারেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট রয়েছে।
এছাড়াও চাইল্ডকেয়ার ট্যাক্স ক্রেডিট, ইনক্যাপাসিটেড চাইল্ড ক্রেডিট, ব্লাইন্ড পার্সন ট্যাক্স ক্রেডিট, গাইড ডগ ট্যাক্স ক্রেডিট, বয়স্কদের জন্য ট্যাক্স ক্রেডিট, নতুন সংযোগিত ‘Stay & Save’ ট্যাক্স ক্রেডিটস ইত্যাদি অনেক ধরনের ট্যাক্স ক্রেডিট রয়েছে। যা যার যার অবস্থা অনুযায়ী এবং যিনি যে ট্যাক্স ক্রেডিট এর জন্য কোয়ালিফাইড তিনি কেবল সেই ট্যাক্স ক্রেডিটই ক্লেইম করতে পারবেন।
বোনাস টিপসঃ কারো স্পাউস যদি আয়ারল্যান্ডে PPS নাম্বার করার পর দেশে চলে যায়, স্পাউস অন্য দেশে থাকা সত্ত্বেও জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট করা সম্ভব।
ট্যাক্স রিলিফ কি?
ট্যাক্স ক্রেডিটের মত ট্যাক্স রিলিফও ট্যাক্স কমাতে সাহায্য করে। তবে একটু ভিন্নভাবে।
ট্যাক্স ক্রেডিট মূলত সরাসরি ট্যাক্সকে কমিয়ে দেয়, আর ট্যাক্স রিলিফ সরাসরি ট্যাক্সের সাথে প্রয়োগ হয়না। ট্যাক্স রিলিফ টা মূলত আপনার মোট আয়কে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে যার উপরই কেবলমাত্র আপনার ট্যাক্স এর হিসেব হবে। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা পানির মত পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ধরুন আপনার বাৎসরিক আয় €৫০,০০০। ধরুন আপনার একই বৎসরে ট্যাক্স রিলিফ পেলেন €১,০০০। তাহলে আপনার ট্যাক্স তখন আর €৫০,০০০ এর উপর হিসেব হবেনা, হবে €১,০০০ বাদ দিয়ে বাকি €৪৯,০০০ এর উপর। তার মানে আপনি €১,০০০ এর উপর ট্যাক্স আর দিচ্ছেন না, তার মানে আপনি ট্যাক্স কম দিচ্ছেন।
ট্যাক্স ক্রেডিটের মত ট্যাক্স রিলিফ পাওয়ারও অনেকগুলা উপায় রয়েছে। যেমন অনেকে PRSA বা পার্সোনাল রিটায়ার্মেন্ট সেভিংস অ্যাকাউন্টে কন্ট্রিবিউট করে, যেটা পেনশন স্কিম এর মতো। সুতরাং একজন ব্যাক্তি যে পরিমাণ PRSA স্কিমে দিয়ে থাকে তার একটি নিদৃস্ট % বয়সভেদে রিলিফ পেয়ে থাকে। ওই রিলিফ তার বাৎসরিক আয় থেকে বাদ দিয়ে তাকে ট্যাক্স প্রদান করতে হয়।
আবার ধরুন করোনাকালীন থেকে এখন পর্যন্ত অনেকে বাসা থেকে কাজ করতে হচ্ছে। সরকার এর উপর ই-ওয়ার্কিং রিলিফের সংযোজন করে। বাসা থেকে কাজ করার ফলে অনেকের অতিরিক্ত ইলেক্ট্রিসিটি বা গ্যাস বিল, ইন্টারনেট ও টেলিফোন বিল দিতে হয়েছে, তার উপর হিসেব করে একটা রিলিফ ক্লেইম করা যাবে।
এছাড়াও রেন্ট এ রুম ট্যাক্স রিলিফ, ফ্ল্যাট রেইট এক্সপেন্স ট্যাক্স রিলিফ, বাইক টু ওয়ার্ক ট্যাক্স রিলিফ, মেডিকেল এক্সপেন্স ট্যাক্স রিলিফ, মেডিকেল ইনস্যুরেন্স ট্যাক্স রিলিফ ইত্যাদি। ট্যাক্স ক্রেডিটের মতই যার যার অবস্থা অনুযায়ী এবং যিনি যে রিলিফের জন্য কোয়ালিফাইড তিনি সে রিলিফ এর জন্য উপযুক্ত।
সারমর্ম হল উভয়ই ট্যাক্স ক্রেডিট এবং ট্যাক্স রিলিফ আপনার ট্যাক্স কমাতে সাহায্য করবে। প্রথমত হল আপনি আপনার অবস্থা বিবেচনা করবেন, এর পর দেখবেন আপনি কোন ক্রেডিটটি অথবা কোন রিলিফটি পাবার জন্য উপযুক্ত, সে অনুযায়ী আপনার প্রাপ্য ক্রেডিট বা রিলিফের জন্য সরাসরি ক্লেইম করতে পারবেন।
প্রোপার্টি/ব্যক্তিগত বাড়ি সম্পর্কিত ইনসেন্টিভ ও ক্রেডিট (Help to Buy)
যারা নতুন বাড়ি কিনতে বা তৈরি করতে চান তারা কিছু ট্যাক্স ক্রেডিট ক্লেইম করতে পারবেন। সেটা নগদ খরচের ক্ষেত্রে ও মর্টগেজ নেয়ার ক্ষেত্রেও হতে পারে। নতুন নিয়মে সর্বোচ্চ €৩০,০০০ পর্যন্ত পেতে পারেন। কেউ নতুন বাড়ি কিনতে চাইলে অতবা মর্টগেজ নিতে চাইলে আগে রেভিনিউতে ‘’হেল্প টু বাই’’ স্কিমে আবেদন করে নিতে হবে। তবে এর আগে নিয়মগুলো ভালো করে দেখে নিবেন।
কারো যদি বাড়ি থেকে থাকে তারাও কিছু ক্ষেত্রে ট্যাক্স রিলিফ ও ক্রেডিট পেতে পারেন। যেমন হোম রিনোভেশন ইনসেন্টিভ, মর্টগেজ ইন্টারেস্ট রিলিফ, রেন্ট এ রুম রিলিফ, সিটি কাউন্সিলের অধীনে যাদের বাড়ি তাদের জন্য LCI রিলিফ ইত্যাদি। তবে সর্বক্ষেত্রেই কিছু নিয়ম এবং শর্ত রয়েছে, ক্লেইম করার আগে দেখে নিতে হবে আপনি সেই শর্তগুলো পূরণ করেন কিনা।
কিভাবে ক্লেইম করবেন?
আপনার অবস্থান যখনই পরিবর্তন হবে তখনি আপনি আপনার অবস্থান রেভিনিউতে হালনাগাদ করে নিতে পারেন। যেমন ধরুন বছরের মাঝামাঝিতে আপনার বিবাহ হল, তখনি আপনি রেভিনিউতে জয়েন্ট অ্যাাসেসমেন্ট এর ফর্ম পূরণ করে দিয়ে দিতে পারেন, তাহলে সে অনুযায়ী রেভিনিউ আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট হালনাগাদ করে নিবে। এভাবে যে কোন পরিবর্তনই রেভিনিউতে জানাতে পারেন।
রেভিনিউ অনলাইন সার্ভিস এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র যেখানে খুব সহজেই আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য, অবস্থান ও ক্লেইম করতে পারেন। যার জন্য রেভিনিউতে অ্যাকাউন্ট থাকা খুবই জরুরি। যাদের অ্যাকাউন্ট নাই অতবা অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবগত না তারা দেরি না করে আজই করে ফেলুন।
যাদের আপাতত অ্যাকাউন্ট নাই অথবা থাকলেও কিভাবে তা পরিচালনা করতে পারেন না অথবা কোন বিষয় বুঝতে কষ্ট হচ্ছে সেক্ষেত্রে রেভিনিউর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। সেটা ফোন করে হতে পারে অথবা সরাসরি গিয়েও করতে পারেন। আবার কিছু কিছু জিনিস আছে তা চাইলেও অনলাইন থেকে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে রেভিনিউর সাথে যোগাযোগ করাই শ্রেয়।
নতুন সংযোজিত ট্যাক্স ক্রেডিট এবং ট্যাক্স রিলিফ – ক্লেইম করতে ভুলবেন না
বার্ষিক রিটার্ন
আপনি সবগুলো ট্যাক্স ক্রেডিট এবং রিলিফ একসাথে বার্ষিক রিটার্নে ক্লেইম করে নিতে পারেন। এতে আপনার অব্যবহৃত ট্যাক্স ক্রেডিট এবং রিলিফ, যেগুলা বৎসরব্যাপী ক্লেইম করা হয় নাই এবং যার ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত ট্যাক্স দিয়ে আসছিলেন, সে অতিরিক্ত ট্যাক্স আপনি ফেরত পাবেন বাৎসরিক রিটার্ন এর মাধ্যমে।
বাৎসরিক রিটার্ন মূলত একটা ফর্ম, যেটা P21 নামে পরিচিত। যেখানে আপনার বছরের সব আয় হালনাগাদ করবেন। আপনার সকল PAYE সংক্রান্ত আয় ওইখানে হালনাগাদই থাকে, PAYE ছাড়া যদি অন্য আয় থেকে থাকে তাহলে তা ওইখানে দিয়ে দিতে পারেন। আপনার সমস্থ ক্রেডিট এবং রিলিফ ওখানেই প্রয়োগ করতে পারেন।
সেখানে আপনার কিছু তথ্য এবং জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট হলে স্পাউসের তথ্যও দেখতে পাবেন। ব্যাক্তিগত তথ্যের পরিবর্তন হলে সেখানে তার আপডেট করে নিতে পারবেন। ব্যাংক ডিটেইলস ঠিক আছে কিনা দেখে নিবেন, যেখানে আপনার রিফান্ড ফেরত যাবে।
সব রিভিউ করে ঠিক থাকলে জমা দিয়ে দিতে পারেন। এরপর রেভিনিউ রিটার্ন ভ্যারিফাই করে দেখে সর্বশেষ স্টেটমেন্ট অব লাইবিলিটি ইস্যু করবে। যেটা হবে আপনার বৎসরব্যাপী আয়ের এবং ট্যাক্সের হিসেবনামা। আগে কোম্পানি তার কর্মচারীদেরকে বছর শেষে P60 ইস্যু করে দিত, এখন তা আর করেনা। সুতরাং স্টেটমেন্ট অব লাইবিলিটিই আপনার বর্তমান P60, যা বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
মনে রাখতে হবে রেভিনিউ ট্যাক্স ক্রেডিট এবং রিলিফের প্রমাণস্বরূপ ডকুমেন্ট চাইতে পারে। সুতরাং সে ক্রেডিটই ক্লেইম করবেন যেটা আপনার প্রাপ্য, যাতে রেভিনিউ অথরিটি থেকে চাইবামাত্র দিতে পারেন।
অনেকে বিগত অনেক বছরই রিটার্ন জমা দেন নাই। চাইলে সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারেন। যারা বিগত বছরগুলোতে ট্যাক্স ক্রেডিট জমা দেন নাই উনাদের জন্য জন্য পরামর্শ যে রিটার্ন জমা দেয়ার। এতে কিছু অতিরিক্ত ট্যাক্স ফেরত পেলেও পেতে পারেন, যদি আপনার কোন অব্যবহৃত ক্রেডিট থেকে থাকে।
সর্বশেষ
শুরুতেই বলেছি ট্যাক্স ব্যপারটা একটু জটিল। বহু শর্ত, নিয়ম, রেট, সময়ের বেড়াজালে ভরপুর। এই আর্টিকেলও সব বিষয় তুলে আনা হয় নাই। তবে সবার জন্য সব নিয়ম প্রযোজ্য নয়, সবার জন্য সব ট্যাক্সের রিলিফ ও ক্রেডিট নয়, সবাই সব রিলিফ ও ক্রেডিট এর জন্য প্রাপ্যও নয়। আপনি শুধু আপনার অবস্থা বিবেচনা করে শুধু মাত্র সে অনুযায়ী আপনার রেভিনিউ অ্যাকাউন্টটা হালনাগাদ রাখেন।
সবসময় দুইটা বিষয় মাথায় রাখবেনঃ
১। বছরের মধ্যে বা বছর শেষে আপনার ব্যাক্তিগত অবস্থান রেভিনিউতে হালনাগাদ/আপডেট রাখবেন
২। বছর শেষে বার্ষিক রিটার্ন জমা দিবেন।
ফ্রি হেল্পলাইন
ব্যক্তিগত ট্যাক্সের সব কিছু আপনি নিজেই করতে পারেন। এই আর্টিকেলে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই ধারনা দেয়া হয়েছে। তারপরেও যদি কারো কোন বিষয়ে কিছু জানার থাকে অথবা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন তাহলে Irish Bangla Times হেল্পলাইনে নিঃসঙ্কোচে যোগাযোগ করতে পারেন। আমাদের এই সেবা দ্বারা অতীতে অনেকেই উপকৃত হয়েছে, আপনিও উপকার পেতে পারেন। মনে রাখবেন সেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
সেবা পেতে নিম্নোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেনঃ
Email: newton.acca@gmail.com & info@irishbanglatimes.com Facebook message: www.facebook.com/theirishbanglatimes Phone: 0838732429 (Please text only. Type your name and TAX & we will call you back)
প্রায় ৫০০ বছর যে মসজিদ থেকে ভেসে আসত সুললিত আজানের ধ্বনি সেখানে এখন বাজে গির্জার ঘণ্টা। কালের ঘূর্ণাবতে ইউরোপে মুসলমানদের সেই গৌরবাজ্জল সময় হারিয়ে গেলেও কোর্ডোভার সেই মর্মর শ্বেত পাথরের নিষ্প্রভ চাহনি আজও বহন করে চলেছে সে ইতিহাস।
‘’মস্ক দ্য ক্যাথেড্রাল’’ – মসজিদ ও গির্জা; নামটা কেমন আজিব না? হাজার বছরের মসজিদ হিসেবেই যে স্থাপনা পরিচিত ছিল তার নাম সরকার পরিবর্তন করে শুধু গির্জা রাখতে চেয়েছিল। এমনকি গুগল ম্যাপ থেকেও মুছে দেয়া হয়েছিল মসজিদের নাম। এরপর ২০১৪ সালে মুসলমানরা একটা পিটিশন করে এবং মুহূর্তের মধ্যে ২০,০০০ সাইনও হয়ে যায় পিটিশনে। এরপর আবার বাধ্য হয় নাম পরিবর্তন করতে ও গুগল সার্চে নাম ফিরিয়ে আনতে। এরপর মস্ক বা মসজিদ নামটাই যুক্ত করা হয়। আমরা দেখেছি ওইখানের লোকাল মানুষজন এখনো মসজিদ নামেই চিনে।
লাল ডোরাকাটা এই খিলানগুলা দেখলে যে কেউ বুঝে যাবে এটা কোথাকার জায়গা। মসজিদের ভেতরে এমন ৮৫৬ টি খিলান, যার উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল আয়তনের মসজিদটি।
মস্ক দ্যা ক্যাথেড্রাল বর্তমান স্পেনের আন্দালুসিয়ার অঞ্চল কর্ডোভায় অবস্থিত। মুসলমানরা আন্দালুসিয়ায় শাসন প্রতিষ্ঠার পর উমায়েদ খেলাফতের খলিফা প্রথম আব্দুর রাহমান ৭৮৪ খ্রিস্টাব্ধে (প্রায় ১২০০ বছর পূর্বে) প্রথম মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন, প্রায় দুই বছরে মসজিদের প্রাথমিক নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়। এর পর অন্যান্য খলিফারা পর্যায়ক্রমে মসজিদের পরিবর্ধন করেন। নির্মাণের পর ১২৩৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর এই মসজিদে নামাজ আদায় হয়েছে। শুধু নামাজ নয় ইসলামিক শিক্ষা, শরিয়া আইন, সালিশ ঘর, ব্যাবস্থাপনা কার্যাবলী ঐ মসজিদ থেকে সম্পাদন হত।
দৃষ্টিনন্দন প্রধান মিহরাব বা মিম্বর। আধুনিক সময়ের মসজিদেও এমন কারুকার্য খচিত মিম্বর পাওয়া ভার। দেখে বোঝাই যায় না যে হাজার বছর আগের নির্মিত এই মিম্বর।
১ লাখ ১০ হাজার ৪০০ বর্গফুটের মসজিদের রয়েছে ৯ টি বাহির এবং ১১ টি অভ্যন্তরীণ দরজা। মসজিদের মোট থাম রয়েছে ৮৫৬ টি। থামগুলো নির্মিত হয়েছে মার্বেল, গ্রানাইট, জেসপার, অনিক্স পাথরের সমন্বয়ে এবং পরে স্বর্ণ, রৌপ্য ও তামাসহ সব মূল্যবান ধাতু ব্যবহার করা হয় সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য। মসজিদের অশ্বখুরাকৃতির লাল দাগ কাটা আর্চ বা খিলানগুলো প্রমাণ করে মুসলিম স্থাপত্যশৈলী এবং স্থাপত্য পাণ্ডিত্যের বহরকে। মসজিদের ইউনিক আর্চগুলো দেখলেই যে কেউ বুঝে যাবে মসজিদটি যে কর্ডোভার বিখ্যাত মসজিদ।
অভ্যন্তরীণ দেয়াল মাঝখানে উঠোন
মসজিদের মিহরাব বা মিম্বরটি আজও সংরক্ষিত রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন মেহরাব তৈরি করা হয়েছে সূক্ষ্ম কারুকাজ সম্বলিত দক্ষ হাতের সুনিপুণ চোঁয়ায়। মিম্বরে আজও সেঁটে আছে আরবি ক্যালিগ্রাফির হরফগুলো। অনিন্দ্য সুন্দর ও আকর্ষণীয় মিহরাবগুলো স্থাপিত ছিল পাথরের নির্মিত এক হাজার ৪১৭টি স্তম্ভের ওপর। মিহরাবের কাছে একটি উঁচু মিম্বর ছিল হাতির দাঁত ও ৩৬ হাজার বিভিন্ন রং ও বিভিন্ন কাষ্ঠ নির্মিত। সেগুলোর ওপর ছিল হরেক ধরনের হীরা-জহরতের কারুকাজ। দীর্ঘ সাত বছরের পরিশ্রমে মিম্বরটি নির্মাণ করা হয়।এই মিম্বরে দাঁড়িয়েই একসময়ে অনলবর্ষী খুতবা প্রদান করতেন মুনযির ইবনে সাঈদ, ইমাম কুরতুবি (রহ.) এর মত স্কলারগন।
সমগ্র মসজিদে ছোট বড় প্রায় ১০ হাজার জাড়বাতির মধ্যে ৩ টি জাড়বাতি ছিল রৌপ্য নির্মিত। বড় আকারের ঝাড়বাতিগুলোতে প্রায় ৫০০ এর মত বাতি প্রজ্বলন করা যেত এবং বড় তিনটি ঝাড়বাতিতে একাই লাগত প্রায় ৩৬ সের তেল।
৯ টি বাহির দরজার মধ্যে একটি। প্রত্যেকটা দরজা এমন অশ্বখুরাকৃতির প্রবেশপথ এবং অনন্য শৈল্পিক স্থাপত্যশৈলী দ্বারা নির্মিত।
মসজিদটি এতই বিশাল, এতই বিশাল যে না দেখা পর্যন্ত বিশ্বাস হবেনা। হাজার বছর পূর্বে এত বড় আয়তনের এত সৌন্দর্যে ভরপুর, অনন্য সাধারণ স্থাপত্য ও শিল্পকর্মে নির্মিত আড়ম্বরে ভরপুর একটি মসজিদ কল্পনা করা যায়? এতে খুব সহজে অনুমান করা যায় তৎকালীন মুসলিম স্থাপত্যের মুনশিয়ানার ব্যাপারে।
‘লা মেজিকেতা’ বা ‘দ্য গ্রেট মস্ক অব কর্ডোভা’ শুধু নামাজ পড়ার স্থান হিসেবেই ব্যবহৃত হত না। এটি ছিল শিক্ষা, গবেষণা, আইন প্রণয়ন, রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হত। এখানে বসে শিক্ষার আলো ছড়াতেন ইমাম ইবনে আরাবি (রহ.), ইমাম বাকি ইবনে মাখলাদ (রহ.), ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহিয়া আন্দালুসি (রহ.), ইবনে হাজাম জাহেরিসহ (রহ.) অসংখ্য জগদ্বিখ্যাত আলেম ও সুফিরা। তাইতো কর্ডোভা হয়ে উঠেছিল তৎকালীন ইউরোপের বাতিঘর।
মসজিদের বাহিরে উঁচু দেয়াল। প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার বর্গফুটের মসজিদটিকে বেষ্টন করে আছে এমন দেয়াল।
যাই হোক কোন সাম্রাজ্য বা কারো ক্ষমতাই চিরস্থায়ী নয়। মুসলমানরা ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করল ইউরোপ থেকে। একটা একটা শহর করে চলে যেতে লাগল খ্রিঠানদের দখলে। কর্ডোভাও এর ব্যাতিক্রম ছিলনা। ১২৩৬ সালে রাজা ফার্দিনান্দ ও রানী ইসাবেলা কর্ডোভা দখলে নিয়ে এই মসজিদকেও গির্জায় পরিণত করে। এরপর মসজিদের অনেক অবকাঠামো পরিবর্তন করা হয়। কিছু অংশ ভেঙ্গে গির্জায় পরিণত করা হয়। যে মিনারটি ব্যবহৃত হত আজানের জন্য সে মিনারে এখন ঝুলছে গির্জার ঘণ্টা।
মসজিদের ঠিক পাশেই রয়েছে কর্ডোভার আরেক ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন মসজদিএর সমসাময়িক সময়ে করা ব্রিজটি
বর্তমানে মসজিদে নামাজ সম্পূর্নরূপে নিষিদ্ধ, মসজিদ দখলের ৭০০ বছরে মসজিদে আর কোন নামাজ হয়নি। এমনকি কেউ হাঁটু গেড়েও বসতে পারবেনা। শুধুমাত্র ১৯৩৩ সালে বিখ্যাত লেখক আল্লামা ইকবাল কর্ডোভা মসজিদ সফরে গেলে উনাকে বিশেষ অনুমতি দেয়া হয় নামাজ আদায়ের জন্য। কড়া নিরাপত্তায় তিনি মসজিদের ভেতর ঢুকে আজান দিয়ে নামাজে দাঁড়ান। নামাজরত অবস্থায় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে উনি যে মোনাজাত করেন তা একটি কবিতায় পরিণত হয়। ‘’বালে জিবরীল’ নামক কবিতাটিই ছিল সেই মোনাজাত।
সর্বশেষ ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ১৯৭৪ সালে নামাজের অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল।
মসজিদটির একাংশ এখন ক্যাথেড্রাল বা গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং দর্শনার্থীদের জন্য দর্শন উন্মুক্ত রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মসজিদটি দেখতে ভিড় জমায়। সময় পেলে আপনিও ঘুরে আসুন। নিজের চোখে না দেখলে কখনো অনুভবই করতে পারবেন না যে এই লেখা দ্বারা কি বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
লেখা ও ছবিঃ ওমর এফ নিউটন প্রধান বার্তা সম্পাদক আইরিশ বাংলা টাইমস
মহাকাশ নিয়ে গবেষণা সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) গবেষক যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের নরসিংদীর কৃতি সন্তান আল ইমরান। চলতি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইমরান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেপিএলে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনায় জেপিএল অবস্থিত। নাসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মর্যাদাসম্পন্ন গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোর একটি জেপিএল।
জেপিএলের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক)। জেপিএলের অর্থায়নে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার। নাসার জন্য মনুষ্যবিহীন নভোযান তৈরি, পরিচালনা ও গবেষণার কাজ করে জেপিএল।
জেপিএলে ইমরানের কাজের ক্ষেত্র হলো মঙ্গলগ্রহ। মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সম্ভাব্য বসবাসযোগ্য পরিবেশ অনুসন্ধানে (ডিসকভারি) কাজ করবেন তিনি। এই গবেষণাকাজে তাঁর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আছেন জেপিএলের গবেষণা বিজ্ঞানী ক্যাথরিন স্ট্যাক মরগান।
ইমরানের (৩৩) বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার পশ্চিম রামপুর। তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম। মা মাহমুদা খাতুন গৃহিণী।
আল ইমরান
নিজ এলাকায় স্কুল-কলেজের পাঠ শেষে ইমরান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ইমরান এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলাম। তাই বিজ্ঞানের মৌলিক কোনো বিষয়ে পড়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয় পাই। তাই এই বিভাগেই ভর্তি হই।’
স্কুল-কলেজের পরীক্ষাগুলোতে খুব ভালো ফল কখনো করেননি ইমরান। এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বলতে দ্বিধা নেই, আমি অনেকবার ফেলও করেছি।’
এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে চতুর্থ বিষয় ছাড়া ইমরানের জিপিএ ৩.৫৭। এইচএসসিতে ৪.৪। তবে অনার্সে এসে বদলে যান ইমরান। তিনি অনার্স ও মাস্টার্স উভয় পরীক্ষায় প্রথম হন। অনার্সে তাঁর সিজিপিএ ৩.৬৯। মাস্টার্সে ৩.৯৭।
ঢাবিতে মাস্টার্সে ইমরানের সহপাঠী ছিলেন আলী হাসান সরকার। তিনি বলেন, ‘ইমরান গতানুগতিক মেধাবী ছিলেন না। তিনি কঠোর পরিশ্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেরা ফলাফল করেছেন।’
অনার্স-মাস্টার্স শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ইমরানের। এ জন্য তিনি একাধিকবার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোনোবারই তিনি নিয়োগের জন্য বিবেচিত হননি।
ইমরান বলেন, ‘আমাকে কেন নেওয়া হয়নি, তা জানি না। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি না হওয়াটা আমার জন্য ভালোই হয়েছে। একটা দরজা বন্ধ হয়ে গেলে অনেকগুলো দরজা খুলে যায়। ঢাবিতে শিক্ষক হিসেবে চাকরি না হওয়াটা আমার জন্য সম্ভাবনার বড় দুয়ার খুলে দিয়েছে।’
উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার ভাবনা আগে থেকেই ছিল ইমরানের। ২০১৭ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্ল্যানেটারি জিওসায়েন্সে মাস্টার্স করেন তিনি। অর্জন করেন পূর্ণ সিজিপিএ ৪।
২০২২ সালে ইমরান ইউনিভার্সিটি অব আরকানসাসে স্পেস অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সাইন্সে পিএইচডি করেন। পিএইচডির উৎসর্গ অংশে তিনি লেখেন, ‘মাতৃভূমি বাংলাদেশের সম্মানে।’
পিএইচডির শেষ দিকে জেপিএলে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোর বিজ্ঞপ্তি দেখেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘জেপিএলে গবেষক হিসেবে কাজ করতে পারাটা অনেক বড় সম্মানের বিষয়। আমি উৎসাহ নিয়ে আবেদন করি। কয়েক ধাপের যাচাই-বাছাই, পরীক্ষা, সাক্ষাৎকার শেষে জেপিএলে গবেষক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাই।’
৩ জানুয়ারি জেপিএলে যোগ দেন ইমরান। এ নিয়ে তিনি তাঁর ফেসবুকে পোস্ট দেন। তাঁর ছবি ও পোস্ট সংযুক্ত করে নরসিংদীর মনোহরদী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান মাসুদ পারভেজ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গেরামের ছাওয়াল (ছেলে) আল ইমরান এখন নাসায়…হৃদয় উৎসারিত অভিনন্দন।’
জেপিএলের ওয়েবসাইটে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোর তালিকায় ইমরানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি ইতিমধ্যে তাঁর কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
ইমরান বলেন, ‘জীবনে কিছু হারালে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। জীবন আরও অনেক সম্ভাবনা নিয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ়তা দিয়ে এই সম্ভাবনাকে লুফে নিতে হয়। আমিও তাই করেছি।’
মহাকাশ নিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক জার্নালে ইমরানের বেশ কয়েকটি গবেষণা নিবন্ধ রয়েছে। গবেষণার কাজটি আরও নিবিষ্টভাবে করতে চান তিনি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে চান তিনি।
নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের মাটিতে প্রথম পা রেখেছিলেন। চাঁদের বুকে পা রেখে তিনি বলেছিলেন, এটি একজন মানুষের জন্য ছোট্ট একটি পদক্ষেপ, কিন্তু মানবজাতির জন্য এক বিরাট এক অগ্রগতি।
নীল আর্মস্ট্রংয়ের এই উদ্ধৃতি ধার করে ইমরান বলেন, ‘পৃথিবীর বাইরের জগৎকে জানতে পারলে, তা পুরো মানবজাতির জন্যই সুফল বয়ে আনবে।’
আপনার গাড়ির NCT কি সন্নিকটে? তাহলে লম্বা সময় অপেক্ষা সত্যিই ভাবার বিষয়। আজকের আইরিশ এক্সামিনারের এক রিপোর্ট এ বলা হয় আয়ারল্যান্ডের কিছু জায়গায় NCT টেস্টের বুকিং এর জন্য ৬ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে গাড়ির মালিকদের। গত নভেম্বরে আইরিশ টাইমস পত্রিকায় একই রিপোর্ট করা হয়।
রিপোর্টে বলা হয় কিছু ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছে যে তারা NCT টেস্টের বুকিং ডেট পেতে প্রায় ৬ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগতেছে। NCT বুকিং NCTS সাইট দেখাচ্ছে Blarney সেন্টারে ২৬ জুন, Little Island এ ৩০ জুন, Charleville এ ২৮ জুন, Macroom এ ৭ জুলাই, Skibberren এ ১৯ জুন এবং youghal এ ১৮ জুলাই এর আগে কোন বুকিং তারিখ নেই।
কিন্তু ঐ তারিখ পেতে পেতে অনেকের NCT মেয়াদ উত্তিন্ন হয়ে যাবে, এবং অনেকে ভয়ে আছে যে তারা হয়ত গারদা দ্বারা জরিমানার সম্মুখীন হতে পারে। তবে গারদা আশ্বস্ত করেছে যে বুকিং এর প্রমাণ দেখালে তা বিবেচনায় আনবে।
গত সামারেও একই অবস্থার অবতারণ ঘটেছিল। কিন্তু সে সময় কোভিড ১৯ কেই অজুহাত হিসেবে দেখানো হয়েছিল।
NCTS জানিয়েছে কর্মী সংকটের কারণে এমন অবস্থার তৈরি হয়েছে। তবে তারা নতুন কর্মী নিয়োগের জন্য কাজ করতেছে। ইতিমধ্যে ২০২২ এ ৭০ জন ইন্সপেক্টর নিয়োগ দিয়েছে।
আপনার গাড়ির NCT টেস্টের মেয়াদ কখন উত্তিন্ন তা দেখে নিন। মেয়াদ সন্নিকটে আসার জন্য অপেক্ষা না করে পর্যাপ্ত সময় হাতে রেখে বুকিং দিন।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল ৪ জানুয়ারি (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কেমব্রিজে। পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক তরুণ নিহত হয়েছেন।
নিহতের নাম সাঈদ ফয়সাল, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ফয়সাল এখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজও করতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা এলাকায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রেই ফয়সালের জন্ম হয়েছে।
পুলিশ জানায় ফয়সালের হাতে ধারালো অস্র ছিল এবং পুলিশ দেখে পালানোর সময় তাকে গুলি করা হয়। ঘটনার পর ফয়সালকে উদ্ধার করে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে ফয়সালের চাচা সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার ভাতিজা শান্তশিষ্ট, ভালো ছেলে। তাকে পুলিশ কেন গুলি করল বুঝতে পারছি না।’
ফয়সালের মৃত্যুর এই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ডে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এবং কেমব্রিজের মেয়র সুমবুল সিদ্দিকীর সঙ্গে দেখা করে প্রতিবাদ জানানোর কর্মসূচি নিয়েছে।
বাংলাদেশে শীতকাল হচ্ছে উৎসবের মাস। উৎসবের আতিশয্যে, নবান্নে, রঙে বৈচিত্র্যে আড়মোড়া দিয়ে জাগে কুয়াশার চাদর মুড়ে থাকা শীতকাল। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে যখন নতুন ধান ঘরে উঠে তখন নতুন চালের পিঠা পায়েশ দিয়ে উদযাপন করা হয় নবান্ন উৎসব। বাংলার চিরাচরিত এই ধারা চলে আসছে হাজার বছর ধরে। পৌষ মাঘের এই সময়টায় বাংলার আনাচে কানাচে ভেসে আসে খেজুর রসের পায়েশ আর পিঠা পুলির সুমিষ্ট ঘ্রাণ।
পান
বাংলার সেই চিরচেনা ঘ্রাণ সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে সুদূর আটলান্টিকের তীরবর্তী কোন শহরে পাওয়া যাবে তা সত্যটিই কল্পনাতীত। সাত সমুদ্র তের নদী পার করে হয়ত বাংলাকে তুলে আনা সম্ভব না, কিন্তু বাংলা থেকে ছুটে আসা বঙ্গ সন্তানেরা তো রয়েছে। বাংলার ঐতিহ্য কে ধরে রাখতে ও তুলে ধরতে আয়োজন করেছে বাংলাদেশরই একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল বরিশালের আয়োজনে আয়োজিত হয়েছিল পিঠা উৎসব।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের একাংশ
বাংলার রমণীকূলের হাতের স্পর্শে তৈরি হয়েছে হরেক রকম পিঠা মিষ্টান্ন, যা খেয়ে রসনা তৃপ্ত হয়েছে ও বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যকে চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে সাত সমুদ্র তের নদীর অপারে বসেও। শুধু পিঠা পায়েশই নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী পান, ফুসকা, চটপটি, ঝালমুড়িসহ হরেক রকম সুস্বাদু খাবারে রসনা তৃপ্ত করেছে আগত দর্শনার্থীদের।
শুধু জিভই নয়, বাংলার শিল্পীদের কণ্ঠে সুমধুর দেশীয় সব গানে আবৃতিতে ভিজিয়ে দিয়েছে সবার মনও। সৌভাগ্যবানরা র্যাফেল ড্রর পুরস্কার জিতে অনুষ্ঠানের ষোলকলাই আদায় করে নেন। দেশীয় সব পোশাকে অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় একটুকরো বাংলাদেশে।
অতিথিদের একাংশ
অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় গতকাল ৩রা জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ডাবলিনের কিলনামানাগ ফ্যামিলি রিক্রিয়েশন সেন্টারে। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বৃহত্তর বরিশাল পরিবার আয়ারল্যান্ড। উল্লেখ্য বৃহত্তর বরিশাল পরিবার আগেও এমন উৎসব ও বনভোজনের আয়োজন করে।
বৃহত্তর বরিশাল পরিবার আয়ারল্যান্ড অনুষ্ঠানটির আয়োজন করলেও অনুষ্ঠানটি ছিল সবার জন্যই উন্মুক্ত। সমগ্র জেলার মানুষই অনুষ্ঠানটিকে অলংকৃত করেন। শিশু কিশুর, আবাল বৃদ্ধ বনিতা, নরনারীসহ আয়ারল্যান্ডের গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের ছিল সরব উপস্থিতি।
বিগত ২০২২ সালে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটি ছিল উৎসাহে উৎসবে অনেক সরব। নতুন বছরের প্রারম্ভেই এমন একটি অনুষ্ঠান চলতি বছরেও ভালো কিছুর জানান দেয়। আয়ারল্যান্ড মুখর থাকুক বাংলাদেশীদের মিলনমেলায়।
আয়ারল্যান্ডে সরব হয়ে উঠেছে বাংলাদেশি কমিউনিটি। অনুষ্ঠান-আমেজে, মেলায়-মেলবন্ধনে, খেলায়-নির্বাচনে; বাংলাদেশি কমিউনিটি যেন জানান দিচ্ছে, আমরা আছি। ২০২২ সাল যেন হয়ে উঠেছে মিলনমেলার বছর।
দীর্ঘ করনাকালিন সময়ে সবাই ছিল ঘরবন্ধি। ছিলনা কারো সাথে কারো শারীরিক সাক্ষাত। করনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পরপরই সবাই সবার সাথে সাক্ষাতের নিমিত্তে ব্যাকুল হয়ে উঠে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান উৎসবের মাধ্যমে একই সাথে অনেকের সাথে মিলিত হবার সুযোগ করে দেয়।
২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বেশ কিছু কমিউনিটি ভিত্তিক অনুষ্ঠান। এতে বাংলাদেশি কমিউনিটির অস্তিত্বকে জানান দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।
তারিখ ক্রমানুসারে নিম্নোল্লোখিত উল্লেখযোগ্য আয়োজন আয়োজিত হয়েছিল বাংলাদেশী বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠনের উদ্যোগেঃ
> ১ম ফেব্রুয়ারি ২০২২ তে অনুষ্ঠিত হয় আয়ারল্যান্ডের সমগ্র নারীদের নিয়ে অনুষ্ঠান। শুধুমাত্র মহিলাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই নারীদের মিলনমেলায় মিলিত হয় আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত নারীরা। নারীদের নিয়ে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ সবার প্রশংশা কুড়াতে সক্ষম হয়।
> আইরিশ বাংলা টাইমসের প্রথম মুদ্রিত ম্যাগাজিনের প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় মার্চে। আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় আড়ম্বরপূর্ণ এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় মার্চ এর ১৫ তারিখে।
> ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়ারল্যান্ডে প্রথমবারের মত প্রদর্শন করা হয় বাংলাদেশী জাতীয় পতাকার আদলে আলোকসজ্জা। লিমেরিক সিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এই আলোকসজ্জা প্রদর্শন করা হয় ২৬শে মার্চ সন্ধ্যায়। আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশীরা ঐ আলোকসজ্জায় অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন।
> ২৭শে এপ্রিল ২০২২, ২৬ রমজানের দিন সোর্ডস মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য আইরিশ বাংলা টাইমস এক তহবিল সংগ্রহের আয়োজন করে। ৬২,০০০ ইউরো উক্ত দিনে সংগ্রহীত হয়েছিল। রমজানে আইরিশ বাংলা টাইমসের নিয়মিত অনুষ্ঠান বরকতময় মাহে রমজান অনুষ্ঠানে তহবিল সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়।
> ২রা মে তে ছিল ২০২২ এর ঈদুল ফিতর। উক্ত দিনে লিমেরিক এবং গলওয়ে আয়োজন করে ঈদ মিলনমেলায়। ঈদের দিন সকলে মিলে পালন করেন ঈদুল ফিতরের অনুষ্ঠান। এতে সবাই একসাথে মিলিত ও ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করার সৌভাগ্য অর্জন করেন।
> তারই ঠিক দুই সপ্তাহ পরে ১৫ই মে তে অনুষ্ঠিত হল প্রাণের মেলা বই মেলা। আয়ারল্যান্ডে ২য় বারের মত অনুষ্ঠিত এই মেলা ছিল প্রাণ চঞ্চল এবং উৎসবমুখর। লেখক, পাঠক, কবি সাহিত্যকের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠেছিল বইমেলার স্থান ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির প্রাঙ্গণ।
> বইমেলার আমেজ কাটতে না কাটতেই অনুষ্ঠিত হল সমগ্র আয়ারল্যান্ডবাসীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশী মিলনমেলা এবং ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। ডাবলিনের টালা তে অনুষ্ঠিত এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয় ২১শে মে এবং সাড়াজাগানো ঐ মিলনমেলায় সাড়া দিয়েছিল সমগ্র আয়ারল্যান্ডবাসী।
> ২১শে জুন ডাবলিনের রেড কাউ হোটেলে বাংলাদেশ স্পোর্টস এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (BSAI) এর এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে এর ফাউন্ডার মেম্বারদের সন্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে BSAI এর সকল কাউন্সিলরদের বিশেষ ধন্যবাদ জানানো হয় এবং নব নির্বাচিত উপদেষ্টা মণ্ডলীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।
> ২৭ জুন ২০২২ তে সংবর্ধনা দেয়া হয় ‘’গলওয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটি’র নব নির্বাচিত সদস্যদের। আড়ম্বরপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। ২৯শে মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
> ১৯শে জুলাই অনুষ্ঠিত হয় BSAI আয়োজিত অনূর্ধ্ব ১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট। উক্ত টুর্নামেন্টে লিমেরিক চ্যাম্পিয়ন হয়। টুর্নামেন্টটি গলওয়েতে অনুষ্ঠিত হয়।
> ২৩শে আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় BSAI আয়োজিত ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। ডাবলিনের টয়ম্ন পার্কে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে ডাবলিন চ্যাম্পিয়ন হয়।
> ৬ই সেপ্টেম্বর ‘’কিলডেয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন আয়ারল্যান্ড’’ এর নব কমিটি কমিটি গঠনের প্রাথমিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
> ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২২ তে অনুষ্ঠিত হয় বহুল প্রতীক্ষিত ABAI নির্বাচন। একই মাসে ২৭শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিনের নবগঠিত কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করে।
> ১৫ই সেপ্টেম্বর এক সভার মাধ্যমে নতুন উপদেষ্টা পরিষদের কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করে ‘’বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগাল’’।
> ২৭শে সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় BSAI আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হয় ডাবলিনের ব্যালিমুন ফুটবল ক্লাবে।
> ১৬ই অক্টোবর বাংলাদেশ কমিউনিটি অফ ডাবলিনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় সিরাত মাহফিল ও ফান্ড রেইজ অনুষ্ঠানের।
> ১৮ই অক্টোবর শপথ প্রদান ও সংবর্ধনা প্রদান করা হয় অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের নবনির্বাচিত সদস্যদেরকে। নির্বাচন কমিশন কতৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গগন।
> ৩রা নভেম্বর কর্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে পুরুষ ডাবল ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট।
> ৯ই নভেম্বর ডাবলিনবাসীর পক্ষ থেকে আবাই এর নব নির্বাচিত কমিটিকে সংবর্ধনা প্রদান করেন ডাবলিন বাংলাদেশী কমিউনিটির কমিটি।
> ১৩ই নভেম্বর লিমেরিকে অনুষ্ঠিত হয় নতুন প্রজন্মের রান্নামেলা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রদর্শনী অনুষ্ঠান। এতে টিনএইজ শিশুকিশোররা তাদের হাতে তৈরি খাবার প্রদর্শন করে ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগণ তাদের ব্যবসা প্রদর্শন করতে সক্ষম হন।
> ১৯শে নভেম্বর ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন (UCD) এর একটি সংস্থা POI এর সৌজন্যে বাংলাদেশী জনগণকে নিয়ে ডঃ আরমান রহমানের উদ্যোগে ক্যান্সার বিষয়ক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
> আত্মপ্রকাশ করে ‘’আইরিশ বাংলা এ্যাসোসিয়েশন অব ডোনেগাল’’ এর। ২২ নভেম্বর এক জরুরি সভার মাধ্যমে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
> ‘’হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনায় নজরুল’’ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ২৭শে নভেম্বর ডাবলিনের আলসা স্পোর্টস সেন্টারে। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন ‘’আমরা ক জন’’।
> ২৯শে নভেম্বর ডাবলিনের তেরেনিউর ব্যাডমিন্টন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশী ভাইদের জন্য ওপেন ডাবলস ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট ২০২২। টুর্নামেন্টটির আয়োজন করে পিস মিশন আয়ারল্যান্ড।
> ১১ই ডিসেম্বর লিমেরিকে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক শীতকালীন কালচারাল অনুষ্ঠান। লিমেরিক সিটি এবং কাউন্টি কাউন্সিল এর উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশও অংশগ্রহণ করে। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ তার দেশীয় ঐতিহ্য তুলে ধরে প্রেজেন্টেশন ও দেশীয় ঐতিহ্যগত খাবার ও কুটির শিল্প প্রদর্শন করে বিদেশিদের কাছে।
> ১১ই ডিসেম্বর ডাবলিনের নবগঠিত কমিটি ‘’বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন’’ এর অভিষেক ও বিজয় দিবস অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনে।
> বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৯শে ডিসেম্বর অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর উদ্যোগে ডাবলিনের আলসা স্পোর্টস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ডকুমেন্টারি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা উঠে আসে উক্ত অনুষ্ঠানটিতে।
> এছাড়াও ২৫শে ডিসেম্বর বিভিন্ন জায়গায় আয়োজন করা হয় ইসলামিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। তন্মদ্ধে প্রতিবারের মত ক্লোনডালকিন মসজিদ (IMCC) আয়োজন করে ১৯ তম তাফসিরুল কুরআন মাহফিল, বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ে আয়োজন করে ইসলামিক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল, আইরিশ বাংলা এসোসিয়েশন অব ডোনেগাল আয়োজন করে ১ম বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল, বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগাল আয়োজন করে বার্ষিক চতুর্থ মিলন মেলা ও বিজয় দিবস উদাপন।
> সর্বশেষ ২৬শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলের।
উপরোক্ত অনুষ্ঠান ও আয়োজন ব্যাতিত আরও অনুষ্ঠান হয়ত হয়েছে ব্যাক্তিগত ও কমিউনিটির উদ্যোগে। এভাবে বাংলাদেশী কমিউনিটি এগিয়ে যাক হাতে হাত রেখে। তৈরি হোক পারস্পরিক মেলবন্ধন। সরব থাকুক বাংলাদেশী কমিউনিটি উৎসাহে, উৎসবে ও উদ্যমে।
আনিসুল হক
এবারের বিশ্বকাপের পাণ্ডুলিপিটা ছিল নিখুঁত। ২০ ডিসেম্বর ২০২২ বিবিসি যখন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ বিজয়ী বীরদের দেশে ফেরা দেখাচ্ছিল সরাসরি, তখন ভাষ্যকার বলছিলেন, এবারের চিত্রনাট্যটা সস্তা কমিকসকেও হার মানায়, এটা যদি কোনো কমিকসের লেখক লিখতেন, তবে সম্পাদকেরা সেটাকে অতি সস্তা, অতি অনুমিত বলে বাদ দিয়ে দিতেন। কোন অংশটা? বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম খেলায় আর্জেন্টিনা হেরে যাবে সৌদি আরবের কাছে। তারপর তারা একটার পর একটা ম্যাচে জিতবে, আর শেষ পর্যন্ত হবে চ্যাম্পিয়ন।
চিত্রনাট্যটা ছিল উত্থান-পতন, হাসি-কান্না, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, ক্লাইমেক্সে ঠাসা। অক্সফোর্ড বলবে, এবার চ্যাম্পিয়ন হবে ব্রাজিল। ফাইনাল হবে বেলজিয়ামের সঙ্গে। আর ফিফার গেমসাইট বলবে, এবার চ্যাম্পিয়ন হবে আর্জেন্টিনা। এর আগের দুবারও ফিফা গেম যা বলেছিল, তা-ই হয়েছে। জার্মানি এবং ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হবে, এই ছিল তাদের ভবিষ্যদ্বাণী। এবার তাদের পূর্বাভাস ছিল, চ্যাম্পিয়ন হবে আর্জেন্টিনা। ফিফা গেমের ভবিষ্যদ্বাণী কি আর বৃথা যায়?
এবারের বিশ্বকাপে শুধু যে স্ক্রিপ্ট ভালো লেখা হয়েছিল, তা নয়, এর বাস্তবায়নও হয়েছে ভালো। অ্যাক্টিং ভালো হয়েছে। অ্যাকশন হয়েছে অনবদ্য, তুলনারহিত। ক্যামেরুনের কাছে হারল ব্রাজিল, আর পরের ম্যাচেই কীভাবে তুলাধোনা করল দক্ষিণ কোরিয়াকে। দাঁড়ান। দাঁড়ান। এসবই তো পূর্বপরিকল্পিত, পূর্বনির্ধারিত। ক্লাইমেক্স থেকে আসবে অ্যান্টিক্লাইমেক্স। পরের ম্যাচেই হেরে যাবে ব্রাজিল, ক্রোয়েশিয়ার কাছে। তার আগে নেইমার এমন একটা গোল দেবেন, যা মনে হবে টুর্নামেন্টের সেরা গোল।
কিন্তু তাতে কী? আগে থেকেই তো ঠিক করা আছে, ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হবে না। কাজেই ডিফেন্স ছেড়ে ব্রাজিলিয়ানরা সবাই চলে যাবে খেলা শেষের তিন মিনিট আগে আক্রমণ করতে আর উল্টো গোল খেয়ে বসে থাকবে। তারপর টাইব্রেকার। ব্রাজিল পাঠাবে তরুণতম খেলোয়াড়কে। সে কোন দিকে মারবে, তা-ও পূর্বনির্ধারিত আর ক্রোয়েশিয়ান গোলকিপার কোন দিকে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, তা আগে থেকেই জানেন। ব্যস। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মুখোমুখি সংঘাত এড়ানো গেল। বাংলাদেশে শতাধিক প্রাণ বেঁচে গেল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রয়ে গেল শান্তিপূর্ণ।
মরক্কোকে এগিয়ে নাও। কাতারে খেলা হচ্ছে। সৌদি আরব হারিয়ে রাখল চ্যাম্পিয়নদের। মরক্কো চলে গেল সেমিতে। কী উত্তেজনার ব্যাপার! পুরো আফ্রিকা জেগে উঠল, পুরো আরব দেশ জেগে উঠল। মরক্কোর খেলোয়াড়দের মায়েরা যাচ্ছেন গ্যালারিতে, খেলা শেষ করার পর তাঁরা ঢুকছেন মাঠে, খেলোয়াড়দের চুমু খাচ্ছেন। আহা, এ তো কাজী জহিরের সিনেমা অবুঝ মন–কেও হার মানায়।
আর আপস অ্যান্ড ডাউনস দেখুন। স্পেন দিচ্ছে সাত–সাতটা গোল, তারপর আউট। পর্তুগাল গর্জে উঠছে, তারপর বিদায়। কার বিদায়? না, রোনালদোর। তারপর সেকি কান্না! বীরের চোখের জল প্লাবন ডেকে আনল কোটি ভক্তের চোখে। ওদিকে নেইমারের কান্না কে দেখবে? কে মুছে দেবে তাঁর চোখের জল। স্ক্রিপ্টরাইটার এবার আনলেন একটা অনবদ্য চরিত্র। শিশু। ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়ের শিশুপুত্র ঢুকে গেল মাঠে। নেইমারের ভক্ত সে। নিরাপত্তাবলয় পেরিয়ে আলিঙ্গন করল সে নেইমারকে।
এত সুন্দরও একটা নাটক হয়! এত সুন্দর লেখা। এত সুন্দর তা চিত্রায়ণ। আমরা মুগ্ধ। বিস্মিত। মেসি নামের একজন আছেন। তিনি এই গ্রহের নন। তাঁর পা তো মাটিতে পড়ে না। তিনি ছোট ছোট পদক্ষেপে দৌড়ান। কিক করতে জায়গা লাগে কম। পাস দেন নির্ভুল। এই পৃথিবী একবারই পেয়েছিল তাঁকে, কোনো দিন পায়নি আবার। এত অসম্ভব সুন্দর খেলোয়াড় কি আর আসবে এই ধূলির ধরায়? বয়স হয়ে যাচ্ছে। তিনি বুড়ো হয়ে যাচ্ছেন। এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। কাজেই বিশ্বকাপ উঠবে তাঁরই হাতে। এটাও আগে থেকে নির্ধারিতই ছিল। বীরের হাতেই উঠতে হবে সোনার কাপ। সবাই এটা জানত। কিন্তু কাপটা তো আর না খেলে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া যায় না।
কাজেই দাও পেনাল্টি। কী? আর্জেন্টিনা পেনাল্টি পেয়ে জিতেছে? মেসির গোলগুলো বেশির ভাগ পেনাল্টির গোল? দাঁড়াও, সমালোচকদের মুখ বন্ধ করছি। আর্জেন্টিনা একটা পেনাল্টি পেল, তো ফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্রান্স, মেসির প্রতিদ্বন্দ্বী এমবাপ্পে পেলেন দুটো পেনাল্টি। নিন। এবার সমালোচনা করুন। আর ফাইনাল মানে সেইরাম! ৭০ মিনিট আর্জেন্টিনা খেলল একা। মেসি দেখালেন তাঁর সেই খেলা, যা কেবল তিনিই দেখাতে পারেন। বল নিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণব্যূহ ভেঙে মাথা নিচু করে কারও দিকে না তাকিয়ে তিনি বলটা দিলেন একেবারে সঠিক খেলোয়াড়টিকে। গোল!
আপনারা ভাবছেন দুর্বল চিত্রনাট্য! ফ্রান্স কী করে খেলা ছেড়ে দিয়ে বসে আছে? দাঁড়ান। দাঁড়ান। এ যে রোমহর্ষ নাটক! থ্রিলার! পেনাল্টি থেকে গোল শোধ। তারপর এমবাপ্পে নামের পৃথিবীর আরেক সেরা খেলোয়াড়ের সেই রকম দৌড়, সেই রকম কিক। ৯০ মিনিটে ২-২।
আর্জেন্টিনার ৫০০ কোটি সমর্থক তখন নখ কামড়াচ্ছেন। তারপর আর্জেন্টিনার গোল। কে দেবেন? না। মেসি। সেই গোলেও নাটকীয়তা আছে। ফ্রান্সের একজন জালের ভেতর তিন গজ পেছনে দাঁড়িয়ে সেটা ফিরিয়েও দিলেন। ৩-২। ফ্রান্স পেল আবার পেনাল্টি। এমবাপ্পে সোনার বুট পাবেন। কাজেই তিনি আরেকটা গোল করে বসলেন।
এবার টাইব্রেকার। কী নিখুঁত গল্প! এমবাপ্পে গোল করবেন, মেসি গোল করবেন। ফ্রান্সের কিক ঠেকিয়ে দেবে পৃথিবীসেরা গোলকিপার মার্টিনেজ। কোন দিকে মারতে হবে, কোন দিকে ঝাঁপাতে হবে, সবই তো আগে থেকে ঠিক করা। এত সুন্দর বিশ্বকাপ আমরা এর আগে দেখিনি!
এত উত্তেজনাকর ফাইনালও কি পৃথিবী এর আগে কখনো দেখেছে? কে লিখলেন এই চিত্রনাট্য? প্রযোজক ফিফা। ক্যামেরা চালিয়েছেন দক্ষ পেশাদার ক্যামেরাম্যানরা। কিন্তু লিখলেন কে? নির্দেশনা কার? যা ভাবছেন, তা-ই। এই চিত্রনাট্য লিখেছেন বিধাতা।
কেবল জগৎবিধাতার পক্ষেই এ রকম একটা চিত্রনাট্য লেখা সম্ভব এবং তা পরিচালনা করা সম্ভব। তবে ফরচুন ফেভারস দ্য ব্রেভস। বিধাতা অযোগ্যকে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরান না। ৩২টা দলের মধ্যে একটা টিম চ্যাম্পিয়ন হয়। তারা যোগ্য বলেই হয়। মেসির হাতে এত নাটকীয়তা শেষে কাপটা ওঠায় বলতে হয়, সোনার ছেলের হাতে সোনার কাপ, কে কার অলংকার?
মেসি বিশ্বকাপকে মর্যাদাবান করে তুললেন।
আনিসুল হক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও সাহিত্যিক
গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডে ( আবাই ) এর উদ্যোগে ডাবলিনের আলসা স্পোর্ট সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে সন্ধ্যা ৫টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয় । সভাপতিত্ব করেন আবাই এর সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার , বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাবলিন দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলর জনাব মোস্তাক আহমেদ ইমন এবং অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আবাই এর মহা সচিব জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার ।
অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয় । ১৯৪৭ সাল থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ঐতিহাসিক ঘটনাবলী প্রামান্য চিত্রে তুলে ধরা হয় ।
আলোচনা সভায় আবাই প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনাব মনিরুল ইসলাম, জনাব ইনজামামুল হক জুয়েল, জনাব আব্দুন জলিল , জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ, জনাব কবির আহমদ বাবুল , জনাব মাহমুদুল হাসান সোহেল , জনাব এস এম হাসান ।
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আলেচনায় অংশ নেন জনাব জাকারিয়া প্রধান, জনাব শামসুল হক , জনাব হামিদুল নাসির, জনাব মনিরুল ইসলাম, বি এস এ আই এর প্রেসিডেন্ট জনাব চুন্নু মাতবর প্রমূখ।
আলোচক বৃন্দ মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মুক্তিযাদ্ধাদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করেন , নতুন প্রজন্মনের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার আহবান জানান এবং বাংলাদেশ কে কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সবার সম্মিলিত ভাবে কাজ করার আহবান জানান ।
বিশেষ অতিথি জনাব কাজী মোস্তাক আহমেদ ইমন উনার বক্তব্য বলেন আজ আমরা যে বাংলাদেশী হিসেবে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছি , এটি সম্ভব হয়েছে আমরা ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামে একটি দেশ পেয়ে ছিলাম ।
সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার তিনি নতুন প্রজন্মকে উদ্দেশ্যে আমাদের মূল শেকড় যে বাংলাদেশ আমরা সবাই যে সেখান থেকে এসেছি তা সহজ এবং সুন্দর ভাবে তুলে ধরেন । সভাপতির বক্তব্যের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শেষ হয় ।
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য অতিথির উপস্থিতি , বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহন এবং নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানের আকর্ষণ কে বৃদ্ধি করেছে ।
অনুষ্ঠানে প্রিন্ট মিডিয়ার উপস্থিতি সবার নজরে এসেছে , আইরিশ বাংলা টাইমস এবং আইরিশ নোটিস বোর্ড অনুষ্ঠান টি লাইভ সম্প্রচার করেছে । তাসনুবা শামীম ফাউন্ডেশন ও উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে ।
অনুষ্ঠানের ২য় অংশে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জনাব তারেক মাহমুদ ইকবাল ও জনাব শরিফুল আলম ভুইয়া জেনন। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃতি করেন শরিফুল আলম ভুইয়া জেনন, আবদুল মান্নান মান, কামরুল হাসান, দীলিপ বড়ুয়া, রুনা জলি্ল।গান পরিবেশন করেন জাহিদ রাজ্জাক, আফরিন জাহান, রুনা জলিল, জেবুন্নাহার, মরতুজা মুন্না এবং অভি রায়।
গত ১১ই ডিসেম্বর ২০২২ এ অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক ক্রিসমাস ও শীতকালীন কালচারাল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয় লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের উদ্যোগে। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় লিমেরিকের নামকরা জাদুঘর হান্ট মিউজিয়ামে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকেন মেয়র ফ্রান্সিস ফলেই।
মেয়রের সাথে বাংলাদেশী কমিউনিটি। বাংলাদেশী প্যাভিলিয়নে
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের দেশীয় কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য তুলে ধরে। তন্মদ্ধে বাংলাদেশও তাদের শীতকালীন কালচার তুলে ধরার সুযোগ অর্জন করে। এতে করে বাংলাদেশ সুযোগ পেয়েছে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ভিনদেশীয়দের সামনে তুলে ধরতে।
হরেক রকম সুস্বাদু ও কারুকার্যখচিত পিঠা, চিত্রাঙ্কন ও দেশীয় কারুশিল্প দিয়ে ছিল বাংলাদেশী প্রদর্শনী
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশ বিভিন্নভাবে তাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছে। অনুষ্ঠানে নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে ছিল প্রেজেন্টেশন, ডিসপ্লে। অনেক দেশ প্রদর্শন করে যার যার ঐতিহ্যগত নৃত্য, গান, বাঁশিসহ অন্যান্য প্রদর্শনী। সমগ্রদিনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী প্রদর্শন করা হয়। তবে ডিসপ্লে সারাদিনব্যাপী ছিল, যেখানে বাংলাদেশী ডিসপ্লেও ছিল। হরেক রকম সুস্বাদু ও কারুকার্যখচিত পিঠা, চিত্রাঙ্কন ও দেশীয় কারুশিল্প দিয়ে ছিল বাংলাদেশী ডিসপ্লে। বিদেশিরা পিঠা খেয়ে ও বাংলাদেশী ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পেরে খুবই অভিভূত হয়েছে।
যাদের হাতের নিপুণ চোঁয়ায় তৈরি হয়েছে সুস্বাদু দর্শনীয় সব পিঠা
বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত পোশাক লুঙ্গি, ফতুয়া ও গামছা পরিধান করে মেয়র, বিদেশি দর্শনার্থী ও বাংলাদেশী অতিথিদের সামনে প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন ওমর এফ নিউটন। প্রেজেন্টেশনে বাংলাদেশী শীতকালীন ঐতিহ্য ও জীবনপ্রণালি তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
ওমর এফ নিউটন প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন বাংলার চিরাচরিত রূপশীতকালে বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরতে প্রেজেন্টেশন
বাংলাদেশী নারীরা ঐতিহ্যবাহি পোশাক পরিধান করে আসেন এবং দেশীয় ঐতিহ্যগত ডিসপ্লে সবাইকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। শিশু কিশোরেরা বাংলাদেশি প্রকৃতি, পরিবেশ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর চিত্রাঙ্কন করে আনে এবং তা সবার সামনে প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশী কিশোরী অরণ্য ও প্রাচী অনুষ্ঠানে আগত দর্শনার্থীদেরকে মেহেদি লাগিয়ে দেয়, এতে দর্শনার্থীরা অনেক অভিভূত ও আনন্দিত প্রকাশ করেন।
হেনা/মেহেদি লাগিয়ে দিচ্ছে অরণ্য এবং প্রাচীশিশু কিশোরদের হাতের চিত্রাঙ্কন
আলজেরিয়া, পোল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়াসহ অনেক দেশ তাদের প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন, এতে করে সবাই সেসব দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারনা পান। এছাড়াও ম্যাক্সিকো, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, ইন্ডিয়াসহ অনেকে তাদের ঐতিহ্যগত নৃত্য, গান, বাঁশি ও অভিনয় প্রদর্শন করে।
ভারতের ঐতিহ্যবাহি নৃত্য ভারতনট্যম প্রদর্শন করেন একজন ভারতীয় প্রফেশনাল শিল্পী
মেয়র ফ্রান্সিস ফলেই সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান গুড়ে দেখেন। বাংলাদেশী প্যাভিলিয়নে এসে তিনি পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন ও বাংলাদেশী ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় হন। সবার সাথে কুশল বিনিময় ও স্বাচ্ছন্দ্যে ছবি তোলেন।
মেয়র থেকে শুরু করে দেশি ও বিদেশি দর্শনার্থীরা বাংলাদেশী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় হতে পেরে আনন্দিত। তারা বাংলাদেশীদের আয়োজনের প্রশংশা করেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ আশা করেন।
দেশীয় ঐতিহ্য বর্ণনা করতেছেন জনাব সাজেদুল চৌধুরী রুবেলদেশীয় ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশীদের অন্তর্ভুক্তির জন্য কাউন্সিল থেকে আমন্ত্রণ পান লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র ও বর্তমান কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার। জনাব আজাদ তালুকদার বাংলাদেশে অবস্থানের কারণে লিমেরিক বাংলাদেশী কমিউনিটিবর্গ দ্বারা অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। অনুষ্ঠানটি সমগ্র বাংলাদেশীদের জন্য উন্মক্ত ছিল যা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে।
কালচারাল মিশ্রণ
জনাব আজাদ তালুকদার অনুষ্ঠানে বাংলাদেশীদের অন্তর্ভুক্তিকে সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি ভবিষ্যতে এমন আরো কালচারাল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশীদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশা করেন এবং যে কারো উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানাবেন ও যথাসাধ্য সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে এমন পদক্ষেপের জুড়ি নেই। আশা করি ভবিষ্যতে এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশীগণ বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারবেন সর্বোচ্চ উচ্চতায়।
বিভিন্ন দেশের রিপ্রেজেন্টেটিভকালচারাল সেক্রেটারি পিপাআলজেরিয়ার প্রদর্শনীক্রোয়েশিয়ার প্রেজেন্টেশনমেয়র এখানেই উচ্ছ্বসিত ছিলম্যাক্সিকান গিটার মিউজিকম্যাক্সিকান প্রদর্শনীভারতীয় নৃত্যশিল্পীদের প্রদর্শনীম্যাক্সিকান শিল্পীদের সাথে এক বাংলাদেশী
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। বাঙ্গালী জাতির জন্য এক গৌরবময় দিন। আনন্দের দিন। কিন্ত এ গৌরব ও আনন্দের দিনটি কোনো আলাদিনের চেরাগের ছোঁয়ায় হঠাৎ করে বাঙ্গালীর হাতের মুঠোয় চলে আসেনি। এ জন্য অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, সাধনা ও সংগ্রাম করতে হয়েছে। রক্ত দিতে হয়েছে। তাই বিজয়ের অনুভূতি যেমন আনন্দের তেমনি বেদনারও। বিশেষ করে যারা স্বজন হারিয়েছেন, যাদের মা-বোনেরা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তাদের কাছে এই দিনটি যতোটুকু আনন্দের ঠিক ততোটুকুই বেদনার। তাই এ লেখার শুরুতেই আমি ওইসব স্বজন হারানোদের সহমর্মিতা ও সহানুভূতি জানিয়ে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে চাই মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের এবং সম্ভ্রম হারানো বীরাঙ্গনাদের ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের।
তা ছাড়া এ দেশের মানুষের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার তথা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সফল নেতৃত্ব দেন যে মহান পুরুষ তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কোটি কোটি মানুষকে তিনি স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তুলেছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন একই লক্ষ্যে অবিচল জাতীয় চার নেতা সহ একদল রাজনৈতিক নেতা। তাদের সবাইকেই আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে। ৫১ বছরের এ পথপরিক্রমায় সে স্বপ্নের কতটা পূরণ হয়েছে, সেটাই আজ ভাববার বিষয়। স্বাধীনতার আগে যেমন এদেশের মানুষকে অনেক বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে তেমনি স্বাধীনতার পরও তাদেরকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবেলা করতে হয়েছে। অমসৃণ রাজনৈতিক পথে হাঁটতে হয়েছে তাদেরক বার বার। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায়। জনবহুল ও সীমিত সম্পদের এ দেশকে স্বয়ম্ভর করে তোলার কাজটি মোটেও সহজ ছিল না। বস্তুত যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্র চালু করা সহ আজকের বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা, এ সবই স্বাধীনতার সাফল্য, বিজয়ের আনন্দ।
দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। রাস্তা-ঘাট হচ্ছে। কালবার্ট হচ্ছে। পদ্মাসেতুর মতো মেগা প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়েছে। এছাড়াও অনেক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রফতানিমুখী শিল্পায়ন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, পোশাকশিল্প, ওষুধশিল্প, রফতানি আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচকে দেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের এমন উন্নয়নে খোদ পাকিস্তানে পর্যন্ত সোরগোল উঠেছে। এই যে সোরগোল,যদি বাংলাদেশ স্বাধীন না হতো তবে তা উঠতোনা। ক্রিকেটে যখন বাঙ্গালী ছক্কা মারে তখন “সাবাস বাংলাদেশ” ‘সাবাস বাংলাদেশ” বলে যে জয়ধ্বনি উচ্চারিত হয়, তা কোনদিনই হতোনা। বিশ্বখ্যাত এক নাম্বার অলরাউন্ডার সাকিবের জন্ম হতোনা। অভাগা বাঙ্গালী অভাগাই থেকে যেতো। বস্তুত এ সবই স্বাধীনতার সফলতা, স্বাধীনতার প্রাপ্তি ও স্বাধীনতার অর্জন। এ অর্জনের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিজয়ের আনন্দ।
কিন্ত বলতে দ্বিধা নেই, এ আনন্দ ম্লান হয়ে যায় যখন দেখি এতো উন্নয়নের পরও নৈতিকতার বা মানবিকতার কোনো উন্নয়ন সাধিত হয়নি। সু শিক্ষায় জাতি শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারেনি। ফলে দেশের প্রতিটি স্তর দুর্নীতির রামরাজ্যে পরিণত হয়েছে। লুটেরা বাহিনী দেশের অর্থসম্পদ লুটপাট করে খাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকা বিদেশে পাচার করছে। প্রবাসীদের ঘামের রোজগার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চুরি হচ্ছে। এ ছাড়া যে গনতন্ত্রের জন্য বঙ্গবন্ধু সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন, যে গণতন্ত্রের জন্য দেশ স্বাধীন হলো সেই গণতন্ত্র আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সংসদ সদস্যের মতো জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই আজ অটোপাস করে সংসদে নির্লজ্জ ভাবে আসন গ্রহণ করেন। গণতন্ত্রের মানসকন্যা বলে খ্যাত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আমলে এমন নড়বরে নির্বাচন সত্যি পীড়াদায়ক। এ কথা বলতেই হয়, আক্ষরিক অর্থে গণতন্ত্র, বাক্স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা পেলেও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যে এখনো শক্তিশালী করা যায়নি সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সত্যিকারার্থে গণতন্ত্রকে সর্বস্তরে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকারের অভাব খুবই দুঃখজনক। রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর বিভক্তি; এর পাশাপাশি জাতীয় প্রশ্নে অনৈক্য আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় বাধা হয়ে রয়েছে। এসব বাধা দূর করে দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এখন সময়ের দাবি।
যে কোনো জাতির শক্তির প্রধান উৎস ঐক্য। প্রায় সব ক্ষেত্রেই অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন এটি। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের পেছনে কাজ করেছিল মত-পথ-জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবার এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ। এ জন্যই সম্ভব হয়েছিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত শক্তিশালী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে মাত্র নয় মাসে পরাজিত করা।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতার পর আমরা সেই ঐক্য ধরে রাখতে পারিনি। গুরুত্বহীন বিষয়েও রাজনৈতিক বিভক্তি দেশে গণতন্ত্রের ভিত সুদৃঢ় করার পথে বড় অন্তরায় হয়ে রয়েছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের নেতৃত্বকে। সেই সঙ্গে জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোয় অভিন্ন নীতি অনুসরণ অপরিহার্য। আমাদের সামনে অসীম সম্ভাবনা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সব সমস্যা মোকাবেলায় সচেষ্ট হলে আমাদের অগ্রগতি ঘটবে দ্রুত।
আরেকটি কথা টানতেই হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ” সবাই পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চুরের খনি”। আজ সে চুরের খনি এক ধাপ এগিয়ে ডাকাতের খনিতে পরিনত হয়েছে। এ খনিকে নির্মূল করতে হবে এবং তা করতে হবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে। শুধু ক্ষমতায় যাওয়া বা চিরস্থায়ী ভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার যুদ্ধে লিপ্ত না থেকে সকল বিভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে “ডাকাতের খনিকে” ঝেটিয়ে বিদায় করার স্লোগান তুলতে হবে। আর এ স্লোগানই হোক এবারের বিজয় দিবসের প্রদীপ্ত অঙ্গীকার।
গত ১১ ডিসেম্বর DCU তে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন এর অভিষেক এবং বিজয় দিবস অনুষ্ঠান ।
অনুষ্ঠানটি মূলত দুটি অংশে বিভক্ত ছিল , প্রথম অংশে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান , কার্যকরী কমিটি এবং উপদেষ্ঠা কমিটির পরিচিতি । দ্বিতীয় অংশে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
কোরআন তেলাওয়াত সহ অন্যান্য ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পাঠ এবং তারপর আয়ারল্যান্ড এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেষনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নতুন প্রজন্মের দুই তরুণী সোহানা সারোয়ার এবং মিম চৌধুর।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে মন্চে উপস্থিত ছিলেন ,
প্রফেসর সেলিম হাশমি
মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল
ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি
ড্যারিল ব্যারন*
কাউন্সিলর, ডাবলিন সিটি কাউন্সিল
রিচার্ড ব্রুটন
ফাইন গেল পার্লামেন্টারি পার্টির চেয়ারম্যান
জ্যাক চেম্বার*
গভঃ চিফ হুইপ এবং পর্যটন, সংস্কৃতি, কলা, গেল্টাচ্ট, খেলাধুলা ও মিডিয়া বিভাগের প্রতিমন্ত্রী
আমিনুল ইসলাম বুলবুল
উপদেষ্টা কমিটির প্রতিনিধিত্ব; বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন (BCD)
আলোচনায় বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস , আয়ারল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ভাবে অনেক মিল রয়েছে বলে আমন্ত্রিত অতিথিরা উল্লেখ করেন ।
অনুষ্ঠানে প্রথমে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রামান্য চিত্রটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস, বাংলাদেশের পর্যটনের আকর্ষণীয় স্থান প্রদর্শন এবং বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরা হয়।
এর পর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জনাব শাহাদাত হোসেন শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু করেন। জনাব শাহাদাত হোসেন মনমুগ্ধকর স্লাইড সো এর মাধ্যমে নবগঠিত বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন (বি সি ডি) এর সকল সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডের মাননীয় হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বাংলাদেশ কমিউনিটি ডবলিনের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানান। উনি আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান এবং আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রতিষ্ঠার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কেও বাংলাদেশ কমিউনিটিকে অবহিত করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথিদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য । বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম এবং নারীদের বিশেষ উপস্থিতি অনুষ্ঠানের আকর্ষণ বৃদ্ধি করেছে । অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন এর মহা সচিব আনোয়ারুল হক আনোয়ার সহ আবাই এর নির্বাহী কমিটির অনেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠানে জনাব আনোয়ার উনার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন কে অভিনন্দন জানান । তাছাড়া আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি কমিটির অনেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন । আইরিশ বাংলা টাইমস , আইরিশ নোটিস বোর্ড এবং এনটিভির প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নজরে এসেছে ।
সবশেষে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথিদের বক্তব্য এবং সর্বোপরি সভাপতি মোঃ মোস্তফার বক্তব্য এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন এর মাধ্যমে প্রথম অংশটির সমাপ্তি ঘটে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠনটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া এবং প্রচার সম্পাদক রন্টি চৌধুরী।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কমিউনিটি নেতা সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান কবিতা আবৃত্তি করেন । এরপর সংগীত পরিবেশন করেন আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পীবৃন্দ এবং ইংল্যান্ড থেকে আগত শিল্পী লাবনী বড়ুয়া ও তার দল। আয়ারল্যান্ডের শিল্পীদের মধ্যে গান পরিবেশন করেন জেবুন নাহার, দিদারুল আলম, রুনা জলিল, মিলটন হক, সজীব হক, মুর্তজা মুন্না এবং আজিতাভ অভি।
( তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন – মিডিয়া বুলেটিন এবং নিজস্ব প্রতিনিধি )
নকআউট পর্বের কোন দলকেই ছোট বলা যায় না। সব দলই ভালো খেলে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই রাউন্ড ১৬ তে এসেছে। তারপরেও কিছু দলকে হট ফেভোরিট হিসেবে গণ্য করা হয়। যারা অতীতে বিশ্বকাপ নেয়ার রেকর্ড রয়েছে অথবা তাদের দলে বিশ্বমানের খেলোয়াড় রয়েছে। এমন কয়েকটি দল নিয়েই আজকের চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ।
ইতিমধ্যে রাউন্ড ১৬ তে ১৬ দলের মধ্যে গত দুই দিনে ৮ দলের খেলা সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৪ দল কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট কাটতে সমর্থ হয়েছে। ৪ দলই কিন্তু সবার হিসেবে রাখার দল।
হট ফেভোরিটের মধ্যে আর্জেন্টিনা, নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স পুঁছেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হবে নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্স মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ডের। আর্জেন্টিনা বনাম নেদারল্যান্ডসের খেলার একটু ভবিষ্যৎ বর্ণনা করা গেলেও ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের খেলায় উভয় দলেরই রয়েছে ৫০/৫০ সম্ভাবনা। তবে বিগত খেলার পারফরমেন্স বিশ্লেষণ করলে ও ৫ গোল করা ব্যাপের ফর্ম বিবেচনা করলে ফ্রান্সকেই প্রতিযোগিতার দৌড়ে হয়ত একটু এগিয়ে রাখা যায়।
অপরদিকে নকআউট পর্বের আরো ৮ টি দলের ৪ টি খেলা বাকি। তন্মদ্ধে হট ফেভোরিটদের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, স্পেন এবং পর্তুগাল। আজকের খেলায় ব্রাজিল যদি জিতে তাহলে তারা কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে জাপান ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে যে দল জিতবে তাদের সাথে। অন্যদিকে পর্তুগাল ও স্পেন যদি জিততে পারে তাহলে দুই দল মুখোমুখি হবে কোয়ার্টার ফাইনালে। কোয়ার্টার ফাইনালে যোগ্যতার বিচারে বিবেচনা সাপেক্ষে ব্রাজিলের সম্ভাবনা বেশি সেমিফাইনালে যাওয়ার। অন্যদিকে স্পেন ও পর্তুগাল দুই দলই হট ফেভরিট হলেও স্পেনের সম্ভাবনাই বেশি সেমিফাইনালে খেলার।
সেমিফাইনালঃ
উপরোক্ত টেবিলের বাম পাশে যদি তাকাই তাহলে একদিকে আর্জেন্টিনা এবং অন্যদিকে ব্রাজিলের সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আর এই দুই দলের মধ্যকার খেলায় কে ফাইনালে যাবে তার পুর্ভাভাস দেয়া খুবই দূরহ ব্যাপার। দুই দলের মধ্যে যে কেউই ফাইনালে খেলতে পারে।
এবং টেবিলের ডানে যদি তাকাই তাহলে ফ্রান্স আর ইংল্যান্ডের মধ্যে কে সেমিতে যাবে তাও নিশ্চিতভাবে বলা যায়না। তবে ধরে নেই ফ্রান্সের সম্ভাবনাই এখানে বেশি। অন্যদিকে পর্তুগাল এবং স্পেন কোয়ার্টার ফাইনাল খেললে স্পেনের সম্ভাবনা বেশি বলে ধরা যেতে পারে। সে হিসবে স্পেন এবং ফ্রান্স এর সেমিফাইনাল হয়তবা প্রত্যাশিত।
স্পেন এবং ফ্রান্স যদি সেমিতে লড়ে তাহলে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মতই এখানেও ফলাফলের আগাম সংকেত পাওয়ার নিশ্চয়তা একবারে শূন্যের কোটায় বলা চলে। কারণ দুই দলেরই বিশ্বকাপ নেবার জন্য সব রকম যোগ্যতাই রয়েছে।
তাহলে কি বলতে পারি আমরা ইউরোপ এবং সাউথ আমেরিকার ফাইনাল? হা বলাই যায়। কারণ, একদিকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মধ্যে যে কোন এক সাউথ আমেরিকান দল এবং ফ্রান্স ও স্পেনের মধ্যে যে কোন ইউরোপীয় দল ফাইনালে খেলবে। যদি পর্তুগাল ও ইংল্যান্ডকেও বিবেচনায় আনি তারপরেও আমরা ইউরোপ ও ল্যাটিন ফাইনাল আমাদের চোখে দৃশ্যমান।
সম্ভাবনাঃ
উপরোক্ত সম্ভাবনা কেবলমাত্র পূর্বের পরিসংখ্যান ও নিদৃস্ট দলের খেলোয়াড়দের যোগ্যতার বিবেচনায় করা। কিন্তু তার মানে এই না যে, অন্যদলগুলা কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনালে খেলার যোগ্যতা রাখে না। তন্মদ্ধে ক্রোয়েশিয়া গতবারের ফাইনালে খেলা দল। তারাও জাপানকে হারিয়ে সেমিফাইনাল এবং ব্রাজিলেকে হারিয়ে ফাইনালে আসার যোগ্যতা রাখে। তাহলেও ইউরোপ এবং ল্যাটিন ফাইনালের দেখা মিলবে।
অন্যদিকে জাপান ও নেদারল্যান্ড তুখোড় খেলেছে গ্রুপ পর্যায়ে। সুইজারল্যান্ডও আরও দুই এক ধাপ এগুনোর সম্ভাবনা রাখে। দক্ষিণ কোরিয়া ও মরক্কোও ঘটাতে পারে যেকোন অগঠন।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বিশ্বকাপ কি এবারও ইউরোপে থাকতেছে নাকি আবার ফিরে যাবে ফুটবলের তীর্থস্থান ল্যাটিন আমেরিকায়? সব সময়ের চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার কে জয়ী হবে মর্যাদার লড়াইয়ে, তা দেখার অপেক্ষায় এখন বিশ্ববাসী।
প্রেস বিক্ষপ্তি
——————
গত ২২ নভেম্বর রোজ মঙ্গলবার বেলা ১ঃ৩০ মিনিটের সময় লেটারকেনী Small King রেস্টুরেন্টে, ডোনেগাল বাংলাদেশীদের নিয়ে গঠিত “ Irish Bangla Association Of Donegal” এর উদ্যোগে এক জরুরী সভা এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মুহিব আজাদের সভাপতিত্বে এবং সহ সভাপতি সাংবাদিক বেলাল আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
ক্বারী হোসাইন আহমেদের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় গুরুত্নপূর্ন কিছু সিদ্ধান্তবলী গৃহিত হয়।
প্রথম সিদ্ধান্ত ঃ-
——————-
ছোট বাচ্চাদের ইসলামী শিক্ষা শুরু করার বিষয়ে সকলে ঐক্যমত পোষন করেন।
দ্বিতীয় সিদ্ধান্তঃ-
———————
আগামী ২০ ডিসেম্বর এসোসিয়েশনের প্রধান কার্যালয়ে ডোনেগালে স্থায়ীভাবে বসবাসরত সকল বাংলাদেশীদের উপস্হিতিতে, এবং সকলের মতামতের ভিত্তিতে (প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে) “আইরিশ বাংলা এসোসিয়েশন অফ ডোনেগাল” এর পূর্ণাঙ্গ কার্য নির্বাহী কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হবে।
তৃতীয় সিদ্ধান্তঃ-
——————-
আগামী ২৫ ডিসেম্বর লেটারকেনী Small King রেস্টুরেন্টে কাউন্টি ডোনেগালে বসবাসরত সকল বাংলাদেশীদের নিয়ে একটি পরিচিতি সভা ও ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
২৫ তারিখের ওয়াজ মাহফিলকে বাস্থবায়ন নিয়ে আগামী ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পুনরায় একটি সভা স্থানীয় small king রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হইবে বলে সকলে ঐক্যমত পোষণ করেন।
সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে আলোচ্যসূচী অনুযায়ী উপরোক্ত সিদ্ধান্তবলী গৃহীত হয়।
সভাশেষে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
আলোচনায় সুন্দর মতামত ও ভবিষ্যৎ প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিতিত ছিলেন উপদ্রষ্টা মন্ডলীর সদস্য বৃন্দ,কার্যকারী কমিটির সদস্য বৃন্দ, ও সাধারণ পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
এর সভায় উপস্থিত থেকে আলোচনা সভাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছেন সম্মানিত
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব লুৎফুর রহমান সাহেব
জনাব প্রভাষক আব্দুস শহীদ সাহেব
মৌলানা তাজুল ইসলাম সাহেব
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আব্দুস শহীদ সাহেব
কমিউনিটির বিশিষ্ট মুরব্বি আব্দুল মনাফ সাহেব
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমিনুল হক সাহেব
শাহিন আহমদ
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন
জিয়াউল হক জিয়া
আব্দুল্লাহ পাটোয়ারী
আসাদ আহমদ
জাকারিয়া আহমদ তানিম
নাসিম আহমেদ
শাহজাহান আহমেদ
শাহিন মিয়া
মাজহারুল ইসলাম মিয়া ফারুক
ইফতেখার হাসান সামি
পারভেজ আহমদ
সাহান আহমদ বাবুল সাহেব প্রমুখ
“বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগালের” নতুন উপদেষ্টা পরিষদ ও কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি;গত ১৫ই সেপ্টেম্বর রোজ মঙ্গলবার রাত ৮.৩০ মিনিট স্থানীয় অলিভার প্লাংকেট রোড, লেটারকিনি ইন্টারকালচারাল হাবে আহব্বায়ক কমিটির এক মিটিং অনুষ্ঠিত হয় উক্ত মিটিংয়ে ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য যে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগাল ২০১৮ সালে ডোনেগালে বসবাসরত প্রগতিশীল, সৃজনশীল নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু করে।প্রথম সভাপতি ডাঃ মুহাম্মদ রফিক উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ সোহাগের নেতৃত্বে কমিউনিটি বান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সুসংগঠিত ডোনেগাল কমিউনিটির শক্ত ভিত্তি রচনা করেন।কমিউনিটির কর্মকান্ডকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে ও গঠণতন্ত্রের ধারাকে সমুন্নত রাখতে গত ২৭ শে সেপ্টেম্বর এক সাধারণ সভার মাধ্যমে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে ডোনেগালের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে নতুন আহব্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহব্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ ছিলেন জনাব নুরুল ইসলাম সরদার, জনাব রানা মিয়া, জনাব মনীর হোসেন, জনাব শামীম আহমদ, মিসেস মহসীনা কচি, মিসেস মিনা খাঁন।পরবর্তীতে জনাব শামীম আহমদ ব্যক্তিগত কারণে আহব্বায়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করলে প্রধান আহব্বায়কের ভূমিকা পালন করেন জনাব মনীর হোসেন। আহব্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ সংগঠনের ফরম পূরণ করার জন্য ডোনেগালবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান করেন। স্থানীয় ইস্ট অশেন চাইনিজ টেইকওয়ে থেকে ফরম সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস ডোনেগালে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা সংগঠনের নির্ধারিত ফরম পূরণ করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবার পর আহব্বায়ক কমিটির উদ্যোগে গত ১৫ সেপ্টেম্বরে একটি পূর্ণাঙ্গ নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয় ।ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির সকল নিবন্ধিত সদস্যদরা নতুন কমিটিকে সাদরে গ্রহণ করে।উল্লেখ্য বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ডোনেগালের তুমুল জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব জনাব ডাঃ মুহাম্মদ রফিক উল্লাহ চেয়েছেন গণতান্ত্রিক প্রকৃয়ায় উনার স্থানে নতুন নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটুক।
নব নির্বাচিত ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ
উপদেষ্টা পরিষদ(১১সদস্য বিশিষ্ট)
প্রধান উপদেষ্টা ডাঃমুহাম্মদ রফিক উল্লাহ।উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যবৃন্দ জনাব, ডাঃআজিজুর রহমান,জনাব মনীর হোসেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জনাব রানা মিয়া বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জনাব লুৎফুর রহমান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জনাব নুরুল ইসলাম সরদার বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার, জনাব সাজন আহমদ সাজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জনাব রবিন হায়দার টিপু বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জনাব ডাঃ ফারুক আহমেদ, মিসেস জেসমিন আরা,ডাঃআফরিনা চৌধুরী।
২৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী পরিষদ নিম্নরূপ
সভাপতি
জনাব শামীম আহমদ
সিনিয়র সহ সভাপতি
মিসেস ইসমাত আরা চৌধুরী
সহ সভাপতি জনাব
জুবায়ের আহমদ (সোহাগ)
সাধারণ সম্পাদক
জনাব ওবায়দুর রহমান রুহেল
সহ সাধারণ সম্পাদক
শাকিল আহমেদ
সাংগঠনিক সম্পাদক
জনাব ফারুক হোসেন সুমন
সহ সাংগঠনিক সম্পাদক
জনাব তানভীর আহমেদ জনি
কোষাধ্যক্ষ
জনাব আব্দুল্লাহ আল মামুন
প্রচার ও প্রকাশনা
সম্পাদক মিসেস তাসলিমা আক্তার
সহ প্রচার সম্পাদক জনাব রমিজ মিয়া
ক্রীড়া সম্পাদক জনাব সামাল মিয়া
সহ ক্রীড়া সম্পাদ
জনাব খাঁন সুমন (রশিদ)
দপ্তর সম্পাদক
জনাব মামুন শাহ
ধর্ম বিষয় সম্পাদক
জনাব শাহিনুর রহমান
সহ ধর্ম বিষয় সম্পাদক
জনাব ক্বারী হোসাইন আহমদ
সমাজ সেবা সম্পাদক
এস আহমেদ আল করিম
সহ সমাজ সেবা সম্পাদক
জনাব নোমান আহমেদ
শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক
জনাব আশরাফ হোসেন মাষ্টার
সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক
জনাব শাহীন মিয়া
দূর্যোগে ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
জনাব লোকমান দেওয়ান
উন্নয়ন সম্পাদিকা
মিসেস ইসরাত মুন
সহ উন্নয়ন সম্পাদক
জনাব সুমন খাঁন রশিদ
সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা
মিসেস জেরিন খাঁন
আপ্যায়ন সম্পাদিকা
মিসেস মীনা খাঁন
মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা
মিসেস মহসীনা কচি
দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ক্রীড়া আসর ফুটবল বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে অনেক টপ ফেভোরিট দলই রয়েছে যারা বিশ্বকাপ জয় করার যোগ্য। কিন্তু মাত্র একটি দলই পরতে সক্ষম হবে সেই আকাঙ্ক্ষিত মুকুটটি। ঠিক তেমনি গত আবাই নির্বাচনে দুইজন সভাপতি পদপ্রার্থীর দুইজনেই ছিলেন যার যার দিক থেকে যোগ্য, কিন্তু ফুটবল চ্যাম্পিয়নের মত জয়ের বরমাল্য একজনকেই বরণ করে নিতে হবে। সে দিক থেকে সৌভাগ্যবান ছিলেন জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার। কিন্তু খুব অল্প ভোটের ব্যাবধান প্রমাণ করে যে জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের যোগ্যতার বহরও কম ছিল না। ভোটে হেরেছেন ঠিকই কিনতি একজন অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে মানুষের মনে ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন।
নেতৃত্ব একটি বড় গুন, এ গুন সবার থাকে না। জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান এমনই একজন গুনি ব্যাক্তি যার মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলি কানায় কানায় বিদ্যমান। জনাব মোস্তাফিজ হয়ত নির্বাচিত কোন নেতা কিংবা কোন সংগঠনের অধীনস্থ নেতা ছিলেন না, কিন্তু নেতৃত্বের আলোকে আলোকিত করেছেন সমাজ ও সমাজের মানুষদের।
স্বাধীনতা দিবসে কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গের সাথে
নেতৃত্ব যার রক্তে মিশে আছে, যার প্রতিটি ধমনি, শিরা, উপশিরায় প্রবাহিত হচ্ছে নেতৃত্বের গুণাবলি। ছাত্রাবস্থা থেকেই যার হাতেখড়ি নেতা হিসেবে। একজন প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ হিসেবে যার সর্বদা ছিল বিপ্লবী কণ্ঠস্বর। ব্যাক্তি জীবনে জড়িত ছিলেন স্বনামধন্য রাজনৈতিক দলের সাথে, সান্নিধ্যে এসেছেন বহু প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও ব্যাক্তিদের সাথে।
কথায় আছে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে, জনাব মোস্তাফিজুরের ক্ষেত্রেও হয়েছে তাই। ১৯৮৯ সালে প্রথম পা রাখেন তিনি। তারপর থেকেই জড়িয়ে পড়েন আয়ারল্যান্ডের সামাজিক কর্মকাণ্ডে। বিভিন্ন ধরণের সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তিনি ছিলেন অগ্রগামী। সবার আনন্দে, বিপদে আপদে এগিয়ে আসতে কখনো কার্পন্য করেন নি। সেই ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৩০ ঊর্ধ্ব বছরের প্রবাস জীবনে সমাজ সেবায় যার কখনো ক্লান্তি আসে নি। আয়ারল্যান্ডের মাটিতে বইমেলা, বৈশাখী মেলার মত বড় বড় সব অনুষ্ঠানের একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে জনাব মোস্তাফিজুর রহমানের নাম সবার আগে উচ্চারিত হয়।
BSAI এর ফুটবল টুর্নামেন্টেরোহিঙ্গাদের উপর মায়ানমারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মানব বন্ধনে জনাব মোস্তাফিজ
জনাব মোস্তাফিজ আইরিশ কমিউনিটির সাথেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন সমান তালে, জড়িত আছেন আইরিশ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে। বাংলাদেশীদের আইরিশ রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্তি এবং সক্রিয়তার ব্যাপারেও যথেষ্ট ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।
জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান যা করে আসছেন তা একান্তই নিজস্ব প্রেরণা ও ইচ্ছা থেকেই করেছেন। কখনো কারো জন্য কিংবা কোন পদবি পেয়ে কাজ করবেন তার জন্য বসে থাকেন নি। তারপরেও আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশীদের সৌভাগ্য হয়েছিল একজন নির্বাচিত নেতা হিসেবে জনাব মোস্তাফিজুরকে সান্নিধ্যে পাবার। যদিও গত আবাই নির্বাচনে জনাব মোস্তাফিজ অল্প কিছু ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হয়েছিলেন কিন্তু তাঁর প্রতি যে মানুষের অগাধ ভালোবাসা ছিল তা প্রমাণিত হয়েছে।
আবাই নির্বাচনি প্রচারণায়
গত আবাই নির্বাচনে জনাব মোস্তাফিজ যে বৃহৎ উদ্দেশ্য ও মহৎ লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলেন তা উনার প্রচারিত ঈশতিহার পর্যালোচনা করলেই তা সহজে অনুমেয়। হয়ত নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর সেই ইশতিহার খুব সহজেই বাস্তবায়ন করার এখতিয়ার রাখতেন, কিন্তু তারপরেও তাঁর ঐকান্তিক স্বদিচ্ছা হয়ত আবাই এর বাহিরে থেকে এককভাবে কিংবা আবাই এর বর্তমান সদস্যদের সাথে তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন বলে আয়ারল্যান্ডবাসীদের বিশ্বাস।
আয়ারল্যান্ডবাসীর প্রত্যাশা এই যে, জনাব মোস্তাফিজ উনার স্বাভাবিক সমাজসেবার দ্বারা অব্যাহত রাখবেন। আবাই যেহেতু আয়ারল্যান্ডের একমাত্র কেন্দ্রীয় সংগঠন, সে হিসেবে আবাই কে উনার অভিজ্ঞতার আলোকে সুচিন্তিত পরামর্শ ও সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করবেন এবং আবাই এর বর্তমান কমিটির কাছে সবার অনুরোধ থাকবে যেন জনাব মোস্তাফিজের মত একজন অভিজ্ঞ, বুদ্ধিদীপ্ত ও সাংগঠনিক ব্যক্তিকে যাথাযথ সন্মান প্রদর্শনপূর্বক সহায়তা কামনা করে আবাইকে সমৃদ্ধ করবে। এতে সামগ্রিকভাবে উপকৃত হবে সমগ্র আয়ারল্যান্ডবাসী।
নির্বাচনী সংবাদ সম্মেলনেকমিউনিটি ব্যাক্তিবর্গের সাথে জনাব মোস্তাফিজ
জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান হয়ত নির্বাচিত নেতা নন, কিন্তু একজন অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন মানুষের মনের মণিকোঠায়।
প্রবাসের মাটিতে যে কটি প্রফেশনে সম্পৃক্ত থেকেও নিজস্ব কমিউনিটিতে সেবা করা যায় তাদের মধ্যে ডাক্তারি পেশাটি অন্যতম একটি মহৎ পেশা। আমরা আয়ারল্যান্ডবাসীরা এমন কিছু এই পেশার নিবেদিতপ্রাণ পেয়েছি যার কারণে আমরা আমাদেরকে অত্যন্ত ভাগ্যবান মনে করি। প্রত্যেক প্রবাসী ডাক্তারই তার পেশাগত বা চাকরির পাশাপাশি তার নিজস্ব গন্ডির ভিতরে তার বন্ধু মহলকে নানা রকম পরামর্শ দিয়ে উপকার করে আসছেন। আজকে আমি এমন দুইজন ডাক্তারের কথা বলবো ও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবো যারা পেশাগত দায়বদ্ধতার পরেও এই সমাজের আপামর জনসাধারণকে অন্তর নিংড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তারা দুজন শুধু আয়ারল্যান্ডেই সুপরিচিত নন, পেশাগত কারণে ও সাংগঠনিক কারণে বাংলাদেশ, ইউরোপ ও বিশ্বের অনেক দেশেই তাঁরা বেশ সফলতার জ্যোতি ছড়াচ্ছেন।
আপনারা হয়তো এতক্ষনে বুঝে নিতে পেরেছেন আমি কাদের কথা বলতে চাচ্ছি। তাঁরা ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন ছাড়া আর কেউ নন। তাঁরা দুইজনই তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টায় এবং যোগ্যতায় অনন্য উচ্চতায় আসীন হয়েছেন। তাঁরা তাঁদের পেশাগত দায়বদ্ধতার পরেও এই কমিউনিটিকে আগলে ধরে রাখার মতো মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের এই পরোপকারী মনোভাবের কারণে বহুদিন আমাদের মণিকোঠায় অবস্থান করবেন।
একটু বিস্তারিত বলতে চাই খুব সম্প্রতি কর্ক নিবাসী সামসুল ইসলাম ভাইয়কে দেখতে যাওয়া নিয়ে। সেদিন হঠাৎ করে আমার এক স্বজনের কাছ থেকে খবর পাই আমাদেরএক প্রিয় ভাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে কর্ক ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। খবর নিয়ে জানতে পারলাম তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা ICU তে আছেন। তাঁর পরিবারের সাথে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করতে না পেরে আমার একাধিক বন্ধুমহলে যোগাযোগ করি। বন্ধুদের নিকট ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়ায় কিছুটা ঘাবড়ে যাই। সাথে সাথে মনে হয় ডাক্তার মুসাব্বির হোসাইনের কথা। জানামতে তিনি সেই হাসপাতালে কর্তব্যরত আছেন। তার সাথে কথা বলে আমি বিস্তারিত জানতে পারি। পরের দিন সকালে আমি শামসুল ইসলাম ভাইকে দেখতে যেতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি ICU তে থাকায় দেখতে পারবো কিনা সন্দেহেছিলাম। কিন্তু ডাঃ মুসাব্বির আমাকে ব্যবস্থা করে দিতে চেষ্টা করবেন বলায় আমি কিছুটা প্রশান্তি পেলাম।
অপরপক্ষে আমি জানি ডাক্তার জিন্নুরাইন জায়গীরদার আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্তে কোন বাংলাদেশী অসুস্থ হলে নানা রকম সহযোগিতা করেথেকেন এবং পাশে দাঁড়ান। তাঁকে ফোন দিয়ে আরেকটু বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলে তিনিও পরের দিন সকালেই শামসুল ইসলাম ভাইকে দেখার জন্য কর্ক যাবেন। এতে মনের মধ্যে আমি আরও কিছুটা শান্তি পেলাম।
পরের দিন আমরা সেখানে পৌঁছানোর পর ডাঃ মুসাব্বির ভাই আমাদের নিয়ে শামসুল ইসলাম ভাইকে দেখার সুযোগ করে দেন। আমরা তার সাথে কিছুটা সময় অতিবাহিত করতে পারি। ভাইয়ের সাথে হালকা বাক্য বিনিময় করতে পারি। আলহামদুলিল্লাহ, ভাইকে সজ্ঞানে দেখতে পেয়ে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করার সুযোগ পেয়েছি। এ সময় ডাক্তার জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও ডাক্তার মুসাব্বির হোসাইন সে সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে কিছুটা আলাপ সেরে নেন, রোগীর ব্যাপারে খুঁটিনাটি জেনে নেন। সেদিন সারাদিন উভয় ডাক্তারই তাদের মূল্যবান সময় দিয়েছিলেন শামসুল ইসলাম ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যাপারে খবরাখবর নেওয়ার জন্য।
পরবর্তীতে আমরা স্থানীয় কিছু ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে শামসুল ইসলাম ভাইয়ের বাসায় গিয়েছিলাম। তার পরিবার ও সন্তানদের বিস্তারিত আপডেট জানানো হয়। তাদের সকল ধরণের সাহায্যের জন্য পাশে পাবেন বলে দুজন ডাক্তার তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেন।
আমাদের কেউ যখন অসুস্থ হয় তখন আমরা মাঝেমাঝে খুব একাকী হয়ে যাই, আমাদের হাতে অনেকসময় কোনো কিছুই করার থাকেনা। আল্লাহর উপর ভরসাই আমাদের এক মাত্র সম্বল হয়ে দাঁড়ায়। সেই সময় কোন ডাক্তার কিছুটা সান্তনা প্রদান করলে, পাশে এসে দাঁড়ালে ভিনদেশী ভাষার মাঝে বাংলা ভাষাভাষী বিশেষজ্ঞের যে কোন শব্দই যেন অমিয় বাণী হিসেবে প্রকাশ পায়।
আমি এই দুই জন চিকিৎসক সহ বিশ্বের যে কোন প্রান্তে অবস্থানরত সকল চিকিৎসকের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি।
কর্ক যাত্রায় আমার সাথে ডাক্তার জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও আক্তার হোসাইন সহযাত্রী হিসেবে ছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর কাজী শাহ আলম, ইনজামামুল হক জুয়েল, আওলাদ হোসেন সোহেল, মেসবাহুল আলম, কামাল উদ্দিন, জালাল আহমেদ, সুমন ফয়সাল, ফরহাদ, আশরাফুল আলম, ঝিনুক আলী, ফয়জুল্লাহ শিকদার, মাসুদ আহমেদ ও অনেকের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। কাজী শাহ আলম ভাইকে তার “ফেলাস” রেস্তোরায় স্থানীয়দের সাথে কুশল বিনিময় করার সুযোগ করে দেওয়ায় এবং আপ্যায়ন করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে।
আলোচোনায় উঠে আসে জীবন রক্ষাকারী প্রশিক্ষণ CPR এর প্রয়োজনীয়তার কথা। ডাক্তার জিন্নুরাইনের প্রতি উপস্থিত জনগণের আকুল আবেদন থাকে যেন তিনি ABAI এর মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডের সমস্ত কাউন্টিতে এই জীবন রক্ষাকারী প্রশিক্ষণটি ফ্রিতে করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এই জন্য ডাক্তার কমিউনিটি থেকে আগ্রহী ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে যদি একটি নিবেদিত প্রশিক্ষক টীম তৈরী করা যায় তাহলে আমরা বিশাল এই পেশা বা প্রফেশন থেকে উপকার পাবো। এই ব্যাপারে ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
দেশে কিংবা প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশী চিকিৎসকদের সংখ্যা অপ্রতুল নয়। আয়ারল্যান্ডে কর্মরত চিকিৎসকের সংখ্যা ৩০-৩৫ জন বলে জানতে পেরেছি। এই সকল চিকিৎসক ভাইরা সকলেই যদি এই কমিউনিটিতে পাশে এসে দাড়ান, চিকিতসা সেবার পাশাপাশি আমাদের সমাজকে স্বাস্থ্য সচেতন এবং স্বাস্থ্য শিক্ষাদানে এগিয়ে আসেন তাহলে সেটা আমাদের সমাজের জন্য হবে এক বিশাল সেবা। একই সাথে তারা যদি আমাদের সমাজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আগামিদিনের চিকিৎসক হতে উদ্বুদ্ধ করার কাজে এগিয়ে আসেন তাহলেও সমাজ উপকৃত হবে। আমাদের সম্মানিত চিকিৎসকগন এগিয়ে আসলে আমাদের সকলের দায়িত্ব হবে তাদের কাজে সর্বাত্নক সহায়তা প্রদান করা। আমি আশা করি সংশ্লিষ্ট সকলেই এই ব্যাপার নিয়ে ভাববেন।
আমাদের সমাজে চিকিৎসক ছাড়াও বিভিন্ন পেশাজীবির সংখ্যা অপ্রতুল নয়। এখানে ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, শিক্ষক, আই টি বিশেষজ্ঞ, একাউন্টেন্ট এবং অন্যান্য পেশায় অনেকেই আছেন যারা সমাজে অনন্য অবদান রাখতে পারেন। আমি অন্যান্য সকল পেশাজীবীদেরকেও আমাদের এই সমাজে অবদান রাখার জন্য এগিয়ে আসতে আহবান জানাবো।
আমি আবারো ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন সহ বিশ্বের যে কোন প্রান্তে অবস্থানরত সকল চিকিৎসকের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি।
আলহাম্বরার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবিরা একে আখ্যায়িত করেন ‘’একগুচ্ছ পান্নার মাঝে একটি মুক্তা’’ বলে। একে ইউরোপের তাজমহল বললেও অত্যুক্তি হবেনা।
প্রায় ৭০০ বছর ইউরোপের আইবেরিয়ান পেনিসুলায় (বর্তমান স্পেন ও পর্তুগাল) মুসলমানরা দোর্দন্ড
প্রতাপের সাথে শাসন করেছিল। কিন্তু কালের আবর্তে মুসলিম অনেক নিদর্শনই হারিয়ে যায়। তারপরেও কিছু কিছু নিদর্শন আজও স্মরণ করিয়ে দেয় মুসলিম শাসনের স্বর্ণ যুগকে। আলহাম্বরা তেমনি একটি নিদর্শন, যা আজও দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।
স্পেনে তখন ইসলামের স্বর্ণযুগ। সুলতান মুহাম্মদ ইবনে নাসরের (আল আহমার নামেও পরিচিত) নেতৃত্বে গ্রানাডাও চলে আসে মুসলমানদের কব্জায়। ইবনে নাসর ছিলেন নাসরিদ বংশের প্রতিষ্ঠাতা। আলহাম্বরা তখনো আজকের আলহাম্বরায় পরিণত হয়নি। গ্রানাডার সাবিক পাহাড়ের উপর অবস্থিত একটি দুর্গের এলভিয়ার নামক দরজা দিয়ে প্রবেশ করেই প্রাসাদের নামকরণ করেন ‘’আল হামার’’ অর্থাৎ ‘’লাল’’। দুর্গের দেয়ালের লাল রঙ্গের কারণেই সম্ভবত ওই নামকরণ করেন। আল হামার থেকেই নামকরণ করা হয় কালাত আলহাম্বরা, যা মূলত আরবি শব্দ, যা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় লাল কেল্লা।
কারুকার্য খচিত শ্বেত পাথরের খিলানগুলা আজও বহন করে চলেছে হাজার বছরের ইতিহাস
আমরা যখন দূর থেকে আলহাম্বরাকে দেখেছিলাম মনে হচ্ছিল সমগ্র সাবিক পাহাড় জুড়েই আলহাম্বরার বিস্তৃতি। যখন ভেতরে প্রবেশ করলাম মনে হচ্ছে ছোট একটি গ্রামে প্রবেশ করেছি। এতে বোঝা গেল আলহাম্বরা একদিনে তৈরি হয়নি। ইবনে নাসর গ্রানাডা অধিগ্রহণের পরেই গ্রানাডার জৌলস বাড়তে থাকে। আলহাম্বরাকেও বর্ধন করতে থাকেন আড়ম্বরপূর্ণভাবে। বর্তমান যে আলহাম্বরা আমরা দেখি এই আলহাম্বরাকে পূর্নাঙ্গ রূপ দেন সুলতান ১ম ইউসুফ ও পরে সুলতান মাহমুদ (৫ম)। মূলত ১২৩৮ সালে ইবনে নাসর গ্রানাডা অধিগ্রহণের পর থেকে ১৪৯২ সালে খ্রিস্টানদের অধিগ্রহণের সময় পর্যন্ত আলহাম্বরার উন্নয়নকাজ চলেছিল। এরপর সময়ে সময়ে আরো পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়। কিছু পুরনো স্থাপনা ধ্বংস করে ফেলা হয় এবং কিছু নতুন অংশ সংযোজিত হয়। যুদ্ধ ও অপরিচর্যায় আলহাম্বরার জৌলস অনেকটা ম্লান হয়ে যায়। তারপরেও বর্তমান আলহাম্বরাকে দেখলে সে সময়ের আড়ম্বরপূর্ণ জ্বলজ্বলে মুহূর্তকে দৃশ্যমান করে তোলে।
দৈর্ঘ্যে প্রায় ২,৪৩০ ফুট ও প্রস্থে ৬০০ ফুট সম্বলিত ১৫,৩০,০০০ বর্গফুটের ১৭৩০ মিটার দেয়াল ঘেরা ত্রিশটি টাওয়ার অ চারটি সদর দরজা সম্বলিত বিশাল প্রাসাদ শুধু আয়তনেই বড় নয়, এর নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীও ছিল নজরকাড়া। এর স্থাপত্য নকশা, জটিল জ্যামেতিক ও অ্যারোবিক্সের কাজ দেখলে মাথা ঘুরে যাবে যে কারোই। প্রতিটা দেয়াল, কলাম, ছাদ; কোনটার সাথে কোনটার মিল নেই। সবগুলোই ইউনিক। দেয়াল এবং ছাদের নকশা অ্যারাবিক ক্যলিগ্রাফিতে ভরপুর। কোথাও পবিত্র কুরআন থেকে আয়াত, কোথাও বিখ্যাত সব কবিদের সাহিত্যিক উক্তি দিয়ে সাজানো প্রতিটি দেয়াল, ছাদ এবং পিলারগুলো। ৯০০০ বার শুধু ‘’ওয়া লা গালিব ইল্লা আল্লাহ’’ অর্থাৎ ‘’অন্য কেউ বিজয়ী না, যদি না আল্লাহ” লেখা আছে দেয়ালে দেয়ালে।
এমন নৈপুণ্যশৈলীর অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফি চোখে পড়বে সর্বত্র
আলহাম্বরা শুধু চারদেয়ালের মাঝে একটি দালানই নয় বরঞ্চ অনেকগুলো প্রাসাদ, উদ্যান, ব্যারাক, উঠোন, ঝর্না, সলিল স্বচ্ছ পানির নহর, পরিষ্কার পানিসম্বলিত পুকুর অসংখ্য কলাম ও তোরণের সমন্বয়ে গঠিত এক স্বর্গসম প্রাসাদ। এর একেকটা প্রাসাদ/কক্ষ একেক কাজে ব্যবহৃত হত।
সরোবর সম্বলিত উদ্যান ও বৈঠকখানা
বসবাসের জন্য ছিল তিনটি ছোটবড় আকারের প্রাসাদ। সবচেয়ে বড় প্রাসাদটির নাম হচ্ছে কোমারেস প্রাসাদ। প্রাসাদের পেছনে রয়েছে ঝর্না ও সামনে রয়েছে বৃক্ষরাজি পাড় সম্বলিত পুকুর, যা কোর্ট অফ মার্থেল নামে পরিচিত, এখানে সুলতানরা প্রশাসনিক কাজ চালাতেন। কোমারেস প্রাসাদের পাশেই রয়েছে কোর্ট অব লায়ন। সুলতান পঞ্চম মুহাম্মদ এই কোর্ট অব লায়ন নির্মাণ করেছিলেন। ১২ টি সিংহের উপর শ্বেত পাথরে তৈরি পানির পোয়ারার কারণেই হয়ত নাম হয়েছে কোর্ট অব লায়ন।
কোমারেস প্যালেস – কোর্ট অব মার্থেল
প্রাসাদে অবস্থিত উদ্যানগুলোকে বলা হত জেনারালাইফ। জেনারালাইফ শব্দটি এসেছে আরবি ‘’জান্নাত আল আরিফ’’ থেকে। জান্নাতে বর্ণিত উদ্যানের আদলেই শুভ্র শ্বেত পাথর, পানির নহর ও ঝর্না সম্বলিত জেনারালাইফ তৈরি করে তৎকালীন আমিরগণ।
১২ টি সিংহের ভাস্কর্যের উপর অবস্থিত পানির পোয়ারা সম্বলিত কোর্ট অব লায়ন
আলহাম্বরা শুধু প্রাসাদই নয়, এটা দুর্গ হিসেবেও ব্যবহৃত হত। প্রাসাদের সবচেয়ে পুরনো স্থাপনা হচ্ছে আল কাজাবা। আল কাজাবা মূলত সৈন্যদের ব্যারাক হিসেবে ব্যবহৃত হত। ত্রিকোণাকৃতির আল কাজাবার চতুর্দিকে উঁচু ওয়াচ টাওয়ার আছে। সবচেয়ে উঁচু (প্রায় ৮৫ ফুট) ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণ ও শহরে পানির সরবারাহ নিয়ন্ত্রণ হত। গ্রানাডার সমতলভূমিতে সেচের পানি ছেড়ে দেয়া ও বন্ধ করতে এই পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের ঘণ্টা থেকে সঙ্কেত দেয়া হতো। দ্বিতীয়টিতে নামাজ কক্ষ ও তৃতীয়টি গিরিপথের প্রবেশ দ্বার হিসেবে ব্যবহৃত হত।
আল কাজাবা – সৈন্যদের ব্যারাক ছিল যেখানে
বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত, পরিবর্ধিত, যুদ্ধ, ঝড়-জঞ্চা অতিক্রম করে আলহাম্বরার যেটুকুই টিকে আছে তাতে সহজেই অনুমেয় যে মুসলিম সাম্রাজ্য কত শৌর্য বীর্য নিয়ে টিকে ছিল। কালের পরিক্রমায় সেই শৌর্য বীর্য হারিয়ে গেলেও ইতিহাস থেকে মুছে যায় নি। আলহাম্বরা শুধু একটি প্রাসাদই নয়, এটি বহন করে চলেছে এক জলজ্যান্ত ইতিহাস।
আলহাম্বরার ভেতরে অনেকাংশই টিকেট ছাড়া ঘোরা যায়। টিকেট লাগবে শুধু নাসরিদ প্রাসাদে এবং আল কাজাবা তে ঢুকতে। নাসরিদ প্রাসাদ হচ্ছে যেখানে সুলতানদের আবাস্থল ও উদ্যান ছিল এবং আল কাজাবা ছিল সৈন্যদের ব্যারাক।
বারান্দা – অনন্য স্থাপত্যশৈলী ও শিল্পের ছোঁয়া কোথাও বাদ যায়নি
ক্রিস্টোফার কলম্বাস যখন আমেরিকা আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তখন রাজা ফার্দিনান্ড ও রানি ইসাবেলা এই আলহাম্বরা থেকেই কলম্বাসকে কমিশন প্রদান করেন। যে কক্ষ থেকে কলম্বাসকে কমিশন প্রদান করেন তা হচ্ছে নাসরিদ প্রাসাদেরই একটা কক্ষ থেকে, যা এখনো আছে।
মুহাম্মদ ইবনে নাসর যখন গ্রানাডায় বিজয়ীর বেশে প্রবেশ করেন মানুষ ‘’তাকে মারহাবান লি-ল-নাসির’’ বলে সম্বোধন করতেন। তখন ইবনে নাসর জবাবে বলেন ‘’ওয়া লা গালিব ইল্লা আল্লাহ’’ অর্থাৎ ‘’অন্য কেউ বিজয়ী না, যদি না আল্লাহ”। এর পর এই বাক্যটি গ্রানাডার নীতিবাক্যে পরিণত হয়। আলহাম্বরার দেয়ালে ৯০০০ বার শোভা পাচ্ছে ‘’ওয়া লা গালিব ইল্লা আল্লাহ’’।
অপূর্ব নকশা সম্বলিত ছাদ। কোন ছাদের নকশা কোন ছাদের সাথে মিল নেই। প্রত্যেকটিই আলাদাভাবে সুন্দর।আলহাম্বরার রাতের দৃশ্য। মনে হচ্ছে পাহাড়ের চূড়ায় আগুনেরা খেলায় মেতেছে।
লেখা, অভিজ্ঞতা ও ছবিস্বত্বঃ ওমর এফ নিউটন
আইরিশ বাংলা টাইমস
আগামী ১৭ই ডিসেম্বর লিও ভারাদকার প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন থেকে প্রধানমন্ত্রীত্ব বুঝে নিচ্ছেন।
২০২০ সালে কোয়ালিশন সরকার গঠনের সময় পালাক্রমে প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন এর এই চুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় লিও ভারাদকার আবারো বসতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে।
প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনে মন্ত্রিসভায়ও কিছু রদবদল হবে। তবে কিছু কিছু স্থানে কোন পরিবর্তন হবে না, যেমন হাউজিং মিনিস্টার এর স্থান।
করণাকালীন সময়ে লিও ভারাদকার একজন সফল প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সে সময় তিনি প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তবে তিন বছর আগে সরকারের একটি গোপন নথি তার এক বন্ধুর নিকট শেয়ার করার জন্য এখনো পাবলিক অফিস এক্ট এর তদন্ত চলতেছে।
বিগত দুই বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিহল মার্টিনও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আগামী ১৫ই ডিসেম্বর হবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিহল মার্টিনের শেষ দিন।
গত ১লা নভেম্বর ২০২২ লিমেরিক ম্যালড্রন হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড ( আবাই ) এর কার্যকরী পরিষদের দ্বিতীয় সভা ।
সভার শুরুতে সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার সভায় অংশগ্রহনের জন্য কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের ধণ্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে সভার কাজ শুরু করেন ।
সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার সভা পরিচালনা করেন এবং সহ ধর্ম সম্পাদক জনাব লোকমান হোসেন এর কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হয় ।
কোরআন তেলাওয়াতের পর সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুল হক বিগত সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন এবং উপস্থিত সদস্যগণের সম্মতিক্রমে প্রস্তাব গুলো সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয় ।
আলোচ্য সূচীর মধ্যে ছিল প্রত্যেক সম্পাদক তাদের বার্ষিক পরিকল্পনা পেশ করবেন । সে পরিপ্রেক্ষিতে সাধারন সম্পাদক জনাব আনোয়ারুল হক প্রত্যেক সম্পাদক কে তাদের নিজ নিজ পরিকল্পনা উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করেন । তার ধারাবাহিকতায় সাংস্কৃতিক সম্পাদক , ধর্ম সম্পাদক , ক্রীড়া সম্পাদক , প্রকাশনা সম্পাদক , আই টি সম্পাদক , অর্থ সম্পাদক , সাংগঠনিক সম্পাদক , শিক্ষা সম্পাদক , দপ্তর সম্পাদক , সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এবং মহিলা বিষয়ক সম্পাদক তাদের পরিকল্পনা কার্যকরী পরিষদে উপস্থাপন করেন । বিভিন্ন সম্পাদকের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা গুলো নিয়ে কার্যকরী পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ উন্মুক্ত আলোচনা করেন , আলোচনায় সদস্যবৃন্দ তাদের পরিকল্পনা কে স্বাগত জানান এবং আবাই কার্যকরী পরিষদ তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলে উল্লেখ করেন । জনাব সভাপতি সম্পাদক মন্ডলির প্রস্তাব গুলো নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত হিসেবে গ্রহন করেন ।
মহাসচিব তার পরিকল্পনায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেন । একটি হচ্ছে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন এবং অন্যটি হলো আবাই এর নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান । কার্যকরী পরিষদে বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর উদযাপন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সে লক্ষ্যে সহ সভাপতি আজিজুর রহমান মাসুদ এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক বৃন্দের সমন্বয়ে একটি উপ কমিটি গঠন করা হয় । অভিষেক অনুষ্ঠান করার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব ইনজামামুল হক জুয়েল কে নিয়ে একটি উপকমিটি গঠন করা হয় । পরবর্তি কার্যকরী পরিষদের সভায় অভিষেক অনুস্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হবে ।
সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার আবাই এর গঠনতন্ত্র সংযোজন , বিয়োজন এবং সংশোধনের উপর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন । তিনি গঠনতন্ত্রের কিছু কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের নিজস্ব প্রস্তাব বা মতামত তৈরী করার জন্য অনুরোধ করেন এবং আগামী সভায় উপস্থাপনের জন্য অবহিত করেন ।
সভার আলোচ্য সূচীর মধ্যে ছিল আবাই এর উপদেষ্ঠা মন্ডলী গঠনের লক্ষ্যে একটি উপ কমিটি গঠন । এ বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তে হয় যে , সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার নিকট কার্যকরী কমিটির সকল সদস্যবৃন্দ উপদেষ্ঠামন্ডলীর নাম প্রস্তাব আকারে পেশ করবেন ।
গত কালকের সভার বিশেষ আকর্ষণ ছিল আবাই এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং লিমেরিক কাউন্টি কাউন্সিল এর কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার সভার শেষের দিকে কার্যকরী পরিষদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ম্যালড্রন হোটেলে আসেন । শুভেচ্ছা বক্তব্যে জনাব আজাদ তালুকদার কার্যকরী পরিষদ কে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন – আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ কমিউনিটি আবাই এর নিকট অনেক প্রত্যাশা , সেই প্রত্যাশা পূরনে আবাই সক্ষম হবে বলে তিনি দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন এবং আবাই এর যে কোন প্রয়োজনে তিনি সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন ।
আবাই এর কার্যকরী পরিষদের পরবর্তি সভা আগামী ৮ জানুয়ারী ২০২৩ রোজ রবিবার কাউন্টি কর্কে অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ।
উল্লেখ্য যে গত সভার দুপুরের খাবার , নৈশভোজ এবং ম্যালড্রন হোটেলের যাবতীয় খরচ আবাই এর কার্যকরী পরিষদের লিমেরিক এর প্রতিনিধিবৃন্দ বহন করেন । সেজন্য সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার আবাই এর পক্ষ থেকে তাদের কে ধণ্যবাদ জানান ।
পরিশেষে সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গিরদার দীর্ঘ আলোচনা সভায় প্রায় নয় ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠানে সবার সরব উপস্থিতি , মতামত উপস্থাপন এবং বিভিন্ন বিষয়ে সদস্যবৃন্দের সুস্থ বিতর্কের কারণে আলোচনা সভা অত্যন্ত প্রানবন্ত ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন । পাশাপাশি তিনি আরোও বলেন এ ধরনের সুস্থ পরিবেশ অব্যাহত থাকলে আবাই তার লক্ষ্যে সফল হবে বলে উল্লেখ করেন । সভাপতি সবাই কে ধণ্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন এবং শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য জনাব আজাদ তালুকদারের প্রতি ধণ্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ।
সভায় উপস্থিত কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দঃ
ডা: জিন্নুরাইন জায়গীরদার ( সভাপতি )
আজিজুর রহমান মাসুদ ( সহ সভাপতি )
শাহীন রেজা ( সহ সভাপতি )
মনিরুল ইসলাম ( সহ সভাপতি )
কাজী শাহ আলম ( সহ সভাপতি )
আনোয়ারুল হক আনোয়ার ( সাধারণ সম্পাদক )
মাহমুদুল হাসান চৌধুরী ( যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক )
এস এম হাসান ( যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক )
ইনজামামুল হক জুয়েল ( সাংগঠনিক সম্পাদক )
আব্দুল জলিল ( সহ সাংগঠনিক )
মোঃ তাউছমিয়া তালুকদার ( কোষাধক্ষ্য )
মুজিবুল হক ( সহ কোষাধক্ষ্য )
মো: সরোয়ার মোরশেদ ( দপ্তর সম্পাদক )
কবির আহমদ বাবুল ( প্রকাশনা সম্পাদক )
তারেক মাহমুদ ইকবাল ( সাংস্কৃতিক সম্পাদক )
মো: শরিফুল আলম ভূই্য়া ( সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক
রাব্বি খান ( ক্রিয়া সম্পাদক )
মোজাম্মেল হক ( ধর্মীয় সম্পাদক )
লোকমান হোসেন ( সহ ধর্মীয় সম্পাদক )
মোসাম্মৎ শম্পা লিলি ( মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা )
শিরিন আক্তার ( সহ মহিলা সম্পাদিকা )
মো: ইউসুফ ( আই টি সম্পাদক )
মজিবুর রহমান ( সমাজ কল্যাণ সম্পাদক )
মোঃ রুহুল আমিন ( শিক্ষা সম্পাদক )
প্রচারেঃ প্রকাশনা সম্পাদক
কবির আহমদ বাবুল
অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড
গত ৩১ ই অক্টবর রোজ সোমবার “কিলডেয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন আয়ারল্যান্ড” এর নবগঠিত কমিটি এর উদ্যোগে একটি ফ্যামিলি গেট-টুগেদার অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছিল। গেট-টুগেদার অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন শিবলী সাদী ও সাইফুল ইসলাম সুমন এবং সভাপতিত্ত্ব করেন জনাব আলাউদ্দিন। অনুষ্ঠানটি দুপুর বারোটা ত্রিশ মিনিটে জনাব আব্দুর রশিদ শেখের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয়।
গত ৬ই সেপ্টেম্বর রোজ মঙ্গলবার মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া এর পরিচালনায় NAAS Cafe Kildare এ বাংলাদেশী কমিউনিটি গঠনের লক্ষ্যে একটি প্রাথমিক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কিলডেয়ারে একটি বাংলাদেশী কমিউনিটি প্রতিনিধিত্বকারী কমিটি গঠন করার ব্যাপারটি। তদানুসারে উপদেষ্টা কমিটিকে একটি কার্যকরি পরিষদ গঠন করে দেয়ার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।
“কিলডেয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন আয়ারল্যান্ড” এর ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি, ১৫ জন সদস্য সচিব ও ৫ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি প্রকাশ করা হয়। নবগঠিত কমিটির এটি প্রথম যাত্রা। উক্ত অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক শুভাকাঙ্খী ও স্বজনদের আগমন ঘটে।
এই অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল ছোট্ট সোনামনিদের কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগীতা ও শিশু কিশোরদের চিত্রঙ্কন প্রতিযোগীতা। মোট ৩৫ জন কিশোর কিশোরী সুললিত কণ্ঠে পবিত্র কোরানে পাক থেকে তেলাওয়াত করে। ও ক্সক্সক্স জন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে।
পরবর্তী ধাপে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিশেষ ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জনাব ফারুক রশিদ, আব্দুর রশিদ শেখ, আবুল কাশেম। ডাবলিন থেকে আগত আরও বক্তব্য রাখেন জনাব আক্তার হোসাইন, হামিদুল নাসির, জাকারিয়া প্রধাণ, জহিরুল ইসলাম, জালাল আহমেদ ভূঁইয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাস পুলিশ (Naas Garda ) স্টেশনের কমিউনিটি পুলিশ মিঃ শন ও তার সাথে আরো কয়েকজন সহকর্মী পুলিশ অফিসার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন “আবাই”য়ের সভাপতি ডাক্তার জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার। তিনি তার মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেন।
এর পর লিভিং সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি “আবাই”য়ের সভাপতি ডাক্তার জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার “কিলডেয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন আয়ারল্যান্ড” এর কমিটি ঘোষণা করেন। নতুন কমিটিটি আইরিশ বাংলা টাইমসের পাঠকদের জন্য এখানে তুলে ধরা হল।
কার্যকরী কমিটিঃ
১. সভাপতিঃ মোঃ আবুল কাশেম
২. সহ-সভাপতিঃ মহিউদ্দিন আলী আকাশ
৩. সহ-সভাপতিঃ আজিজ আহমেদ
৪. সাধারণ সম্পাদকঃ জসিম উদ্দিন
৫. যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকঃ জহিরুল ইসলাম
৬. যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকঃ এনামুল হক
৭. সাংগঠনিক সম্পাদকঃ আব্দুর রশিদ শেখ
৮. সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকঃ নাজমুল ইসলাম
৯. কোষাধক্ষ্য : মজিবুর রহমান
১০. সহ-কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মিজান
১১. দপ্তর সম্পাদকঃ জাফর বিন আব্দুল মালেক
১২. সাংস্কৃতিক সম্পাদকঃ এরশাদুল ইসলাম বাদল
১. মোহাম্মদ সাকের
২. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন
৩. ফিরোজ আহমেদ
৪. জাহিদ হোসেন
৫. মজিবুর রহমান
সদস্য সচিবঃ
১. হাসান ভূঁইয়া আরজু
২. রফিকুল ইসলাম
৩. মাসুদ রানা
৪. কামরুল ইসলাম
৫. বিল্লাল মিয়া
৬. সাখাওযাত হোসাইন
৭. নিয়াজ মোরশেদ রাজু
৮. ফিরোজ খান সাগর
৯. জাকির হোসাইন
১০. সিরাজুল হোসেন
১১. নুরুল ইসলাম
১২. সাদিকুল ইসলাম
১৩. সোহরাব হোসেন
১৪. হাসান বাপ্পি
১৫. আমজাদ হোসেন
আমরা আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানাই।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই করতালি দিয়ে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানান এবং সভাপতির বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সুষ্ঠ পরিসমাপ্তি ঘটে। আয়োজকবৃন্দ আগামীতে আরও ভালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে কিলডেয়ার বাসীদের প্রতি তাদের সেবা চালু রাখার প্রত্যয় জ্ঞাপন করেন।
হ্যালোইন হল একটি ছুটির দিন যা প্রতি বছর 31 অক্টোবর পালিত হয়, এবং হ্যালোইন 2022 31 অক্টোবর সোমবার ঘটবে৷
ঐতিহ্যটি স্যামহাইনের প্রাচীন সেল্টিক উত্সব থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, যখন লোকেরা ভুত তাড়ানোর জন্য আগুন জ্বালাবে এবং পোশাক পরিধান করবে৷ অষ্টম শতাব্দীতে, পোপ গ্রেগরি III 1 নভেম্বরকে সমস্ত সাধুদের সম্মান করার সময় হিসাবে মনোনীত করেছিলেন। শীঘ্রই, অল সেন্টস ডে সামহেনের কিছু ঐতিহ্যকে অন্তর্ভুক্ত করে। আগের সন্ধ্যাটি অল হ্যালোস ইভ এবং পরে হ্যালোইন নামে পরিচিত ছিল। সময়ের সাথে সাথে, হ্যালোইন ট্রিক-অর-ট্রিটিং, জ্যাক-ও-লণ্ঠন খোদাই করা, উত্সব সমাবেশ, পোশাক পরিধান করা এবং খাবার খাওয়ার মতো কার্যকলাপের দিনে বিকশিত হয়েছে।
হ্যালোইনের প্রাচীন উত্স
হ্যালোউইনের উৎপত্তি প্রাচীন সেল্টিক উৎসব সামহেন (উচ্চারিত সো-ইন) থেকে। সেল্টস, যারা 2,000 বছর আগে বসবাস করত, বেশিরভাগ এলাকা যা বর্তমানে আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং উত্তর ফ্রান্স, তাদের নতুন বছর 1 নভেম্বর উদযাপন করেছিল।
এই দিনটি গ্রীষ্মের সমাপ্তি এবং ফসল কাটা এবং অন্ধকার, ঠান্ডা শীতের সূচনাকে চিহ্নিত করে, বছরের একটি সময় যা প্রায়শই মানুষের মৃত্যুর সাথে যুক্ত ছিল। সেল্টস বিশ্বাস করতেন যে নতুন বছরের আগের রাতে, জীবিত এবং মৃতের জগতের মধ্যে সীমানা ঝাপসা হয়ে যায়। 31 অক্টোবর রাতে তারা সামহেন উদযাপন করেছিল, যখন এটি বিশ্বাস করা হয়েছিল যে মৃতদের ভূত পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। সমস্যা সৃষ্টি করা এবং ফসলের ক্ষতি করার পাশাপাশি, সেল্টস মনে করেছিলেন যে অন্য জাগতিক আত্মার উপস্থিতি ড্রুইড বা সেল্টিক যাজকদের জন্য ভবিষ্যতের ভবিষ্যদ্বাণী করা সহজ করে তুলেছে। অস্থির প্রাকৃতিক বিশ্বের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল মানুষের জন্য, এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলি দীর্ঘ, অন্ধকার শীতের সময় আরামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস ছিল।
ইভেন্টটিকে স্মরণ করার জন্য, ড্রুইডরা বিশাল পবিত্র বনফায়ার তৈরি করেছিল, যেখানে লোকেরা সেল্টিক দেবতাদের বলি হিসাবে ফসল এবং পশু পোড়ানোর জন্য জড়ো হয়েছিল। উদযাপনের সময়, সেল্টরা পোষাক পরিধান করত, সাধারণত পশুর মাথা এবং চামড়া সমন্বিত, এবং একে অপরের ভাগ্য বলার চেষ্টা করত।
উদযাপন শেষ হয়ে গেলে, তারা তাদের চুলার আগুনকে পুনরায় জ্বালিয়ে দেয়, যা তারা সেই সন্ধ্যার আগে নিভিয়ে দিয়েছিল, আসন্ন শীতের সময় তাদের রক্ষা করার জন্য পবিত্র বনফায়ার থেকে।
তুমি কি জানতে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বার্ষিক বিক্রি হওয়া সমস্ত ক্যান্ডির এক চতুর্থাংশ হ্যালোইনের জন্য কেনা হয়।
43 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে, রোমান সাম্রাজ্য বেশিরভাগ কেল্টিক অঞ্চল জয় করেছিল। 400 বছর ধরে যে তারা সেল্টিক ভূমি শাসন করেছিল, রোমান উত্সের দুটি উত্সব সামহেনের ঐতিহ্যবাহী সেল্টিক উদযাপনের সাথে মিলিত হয়েছিল।
প্রথমটি ছিল ফেরালিয়া, অক্টোবরের শেষের একটি দিন যখন রোমানরা ঐতিহ্যগতভাবে মৃতদের মৃত্যুকে স্মরণ করত। দ্বিতীয়টি ছিল ফল ও গাছের রোমান দেবী পোমোনাকে সম্মান জানানোর দিন। পোমোনার প্রতীক হল আপেল, এবং সামহেনে এই উদযাপনের অন্তর্ভুক্তি সম্ভবত আপেলের জন্য ববিং করার ঐতিহ্যকে ব্যাখ্যা করে যা আজ হ্যালোইনে অনুশীলন করা হয়।
হ্যালোয়েন ভূতের রাত বা আত্মার রাত নামেও পরিচিত ছিল এবং মৃতদের আত্মা পরিবারের বাড়িতে ফিরে আসবে বলে আশা করা হয়েছিল। মন্দ আত্মাগুলিও সক্রিয় বলে মনে করা হয়েছিল এবং লোকেরা এই রাতে একা ভ্রমণ এড়িয়ে চলত।
হ্যালোয়েনে প্রতিবেশীদের ভয় দেখানোর জন্য ভৌতিক মুখোশ তৈরি করা হয়েছিল এবং তাদের ছদ্মবেশে মুক্তিপ্রাপ্ত পুরুষ বা শিশুদের দল, প্রায়শই দেখা করতে এবং বিনোদন করতে যেত।
আসন্ন বছরের জন্য দুর্ভাগ্য থেকে বাড়িকে রক্ষা করার জন্য বিশেষ ক্রস তৈরি করা হয়েছিল এবং দরজার উপরে স্থাপন করা হয়েছিল।
জমকালো এবং আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হলো অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ গ্রহন ।
গত ১৮অক্টোবর ২০২২ বহু প্রতিক্ষিত ডাবলিনের রেড কাউ হোটেলে অনুষ্ঠিত হল আবাই এর নব নির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহন। শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান শুরু হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রধান এবং ওমর ফারুক নিউটন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজাদ তালুকদার আবাই এর নব নির্বাচিত সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথের সময় নির্বাচন কমিশনের সদস্যবৃন্দ, উপদেষ্টাবৃন্দ , আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনসহ বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আসা অতিথিবৃন্দ, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য যে রেড কাউ হোটেলের মিটিং কক্ষে আগত অতিথিদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে শপথ অনুষ্ঠানে নারী দর্শকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। মহিলাদের জন্য আলাদা ভাবে বসার সুব্যবস্থা রাখা ছিল।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দল মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ , লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলেই আমন্ত্রিত ছিলেন। তন্মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী পরাজিত প্রার্থীদের কিছু অংশ উপস্থিত ছিলেন , কিন্তু অধিকাংশ প্রার্থীদের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে । লক্ষ্যনীয় বিষয় ছিল আবাই নির্বাচনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম , হাতে গুনা কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন । উপদেষ্টাদের অনুপস্থিত নিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে ।নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে একজন বাংলাদেশে অবস্থান করার কারণে ভার্চুয়ালি শপথ গ্রহণে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজাদ তালুকদার আগত অতিথি এবং নব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি সুষ্ঠু এবং সুন্দর নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য উনার নির্বাচন কমিশনের সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি নির্বাচনে সফলতার পিছনে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকল বাংলাদেশী এবং মিডিয়ার আন্তরিক সহযোগিতা ছিল বলে দৃঢ় কন্ঠে উচ্চারণ করেন। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন আয়ারল্যান্ডের প্রবাসী বাংলাদেশীরা আপনাদের কে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন এবং আপনাদের উপর অনেক বড় দায়িত্ব কমিউনিটির সেবায় নিজেদের আত্মনিবেদন করা।
নির্বাচন কমিশনের সদস্য মিজানুর রহমান জাকির নির্বাচন পরিচালনার আয় ব্যয়ের হিসাব সবার উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করেন । তিনি বিভিন্ন আয়ের উৎস এবং কি ভাবে ব্যয় করা হয়েছে তার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন । অবশিষ্ট অর্থ তিনি আবাই এর নব নির্বচিত অর্থ সচিব এর কাছে হস্তান্তর করেন ।
শপথ অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মধ্যে থেকে এবং উপস্থিত উপদেষ্টাদের মধ্যে থেকেও বক্তব্য রাখেন । আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে গত আবাই নির্বাচনের সাধারন সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ এবং সহ সভাপতি মোঃ শামসুল হক বক্তব্য রাখেন । বক্তারা আবাই এর দায়িত্ব প্রাপ্ত নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানান এবং আবাই এর প্রতি তাদের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন ।
নির্বাচন কমিশন আবাই নির্বাচন ২০২২ এ গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি , প্রতিষ্ঠান এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া কে সম্মান সূচক ক্রেষ্ট প্রদান করেন । সেক্ষেত্রে নির্বাচন পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং এবং পুলিং এর দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের কে ক্রেষ্ট প্রদান করা হয় । টপ প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য আইরিশ বাংলা টাইমস কে ক্রেষ্ট প্রদান করা হয় । বিশেষ অবদানের জন্য আবাই এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজাদ তালুকদার এবং প্রধান উপদেষ্টা মোঃ মোস্তফা কে সম্মান সূচক ক্রেষ্ট প্রদান করা হয় ।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে আবাই এর নব নির্বাচিত সভাপতি জিন্নুরাইন জায়গিরদার তাঁর শুভেচছা বক্তব্যে আবাই এর কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকল বাংলাদেশীদের কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেন এবং সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক আনোয়ার শুভেচ্ছা বক্তব্যে আবাই এর কার্যক্রম কে বেগবান করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের সহযোগিতা কামনা করেন ।
পরিশেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজাদ তালুকদার আগত অতিথিদের ধণ্যবাদ জানিয়ে এবং এ মুহুর্ত থেকে নির্বাচন কমিশন বিলুপ্ত ঘোষণা করে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করেন ।
দায়িত্বপ্রাপ্ত নব নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটিঃ
ডা: জিন্নুরাইন জায়গীরদার (সভাপতি)
আজিজুর রহমান মাসুদ (সহ সভাপতি)
শাহীন রেজা (সহ সভাপতি)
মনিরুল ইসলাম (সহ সভাপতি)
কাজী শাহ আলম (সহ সভাপতি)
আনোয়ারুল হক আনোয়ার (সাধারণ সম্পাদক)
মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সোহেল (যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক)
চার হাজার ভোটারের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে আবাই এর কার্যকরি কমিটি নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে একটি অধ্যায় শেষ হলো।
অভিনন্দন রইল আবাই এর কার্যকরি কমিটির সকল প্রতিনিধীদের প্রতি। চার হাজার ভোটার আপনাদের নির্বাচিত করেছে, কে আপনাদের ভোট দিয়েছে আর কে ভোট দেয় নাই এটা এখন আর ভাবার সুযোগ নাই। আপনারা সবাই আয়ারল্যান্ড বসবাসরত বাংলাদেশীদের প্রতিনিধী। আপনাদের শপথ গ্রহনের পর ভোটার দের কাজ শেষ। এখন আপনাদের কাজ আরম্ভ। আশা করি কমিউনিটি আপনাদের কাছ থেকে ভাল কিছু পাবে।
আমি মনে করি এবার আবাই এর কাজ করা বেশ দুরুহ হবে, গত আবাই নির্বাচনের পর গোপনে একটি শক্তি কাজ করেছিল, আবাইকে ব্যর্থ করার জন্য, এবার আমরা সবাই লক্ষ্য করছি আবাইকে ব্যর্থ করার জন্য প্রকাশ্যে কিছু গোষ্ঠি কাজ করবে বা করছে। শপথ গ্রহনের অনুষ্ঠানে কিছু কিছু দিক সবার নজর কেড়েছে। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত উপদেষ্টা কমিটির খুব ভূমিকা দেখা যায়। কিন্তু শপথ গ্রহনের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার এবং সভাপতি পদের প্রার্থীর অনুপস্থিতি (যিনি মাত্র ৪৯ ভোটে পরাজিত হয়েছেন ), অনেকের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা তার ফেইসবুকের এক বিবৃতির মাধ্যমে জানান সেদিন তিনি কেন আসতে পারেন নি এমন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে।
আরো কিছু ব্যক্তিবর্গের অনুষ্ঠানে না এসে সোসাল মিডিয়াতে নেতিবাচক মন্তব্য দেখে বলা যায় এই আবাই কমিটির চলার পথ হবে দূর্গম। যেমন আবাই এর দুই জন নারী নেত্রী, মহিলা কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদিকা এবং সহকারী মহিলা কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদিকাকে ভিন্ন এক টেবিলে একা বসানোর কারনে নাকি নারীদের প্রতি এ ধরণের বৈষম্যমুলক আচরন করা হয়েছে। এজন্য নিন্দ জানিয়েছেন। যদি পুরুষ প্রতিনিধীদের সাথে বসতে দেওয়া হতো তা হলে হয়তো বলতেন মাত্র দুই জন নারী নেত্রীর জন্য আলাদা বসার জায়গা করে দিতে পারলেন না আয়াজোক কমিটি। নারীদের সাথে এই বৈষম্যমুলক আচরনের জন্য নিন্দা প্রকাশ করতেন। নারীরা কাছে বসলেও নিন্দা দুরে বসলেও নিন্দা।
প্রথম বারের মত আয়ারল্যান্ডে আবাই শপথ অনুষ্ঠানে কোরআন তেলোয়ার করেন একজন নারী, শুধু কোরান তেলোয়াত নয় ইংরেজীতে অনুবাদ করে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশীদের কাছে এক ইতিহাস সৃষ্টি করে। ধন্যবাদ আয়োজক কমিটিকে নতুন কিছু করার জন্য।
আবাই নির্বাচন আমদের অনেক কিছুর মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে। যেমন আয়ারল্যান্ডে যারা বাংলাদেশী রাজনীতির সাথে জড়িত, সভাপতির পার্থীর পক্ষে নির্বাচন প্রচারনা করার জন্য, আঃলিগ- বিএনপির ভাঙ্গন বেশ পরিষ্কার। কিছু কিছু সাংবাদিক এর ভুমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনের দিন কোন কোন সাংবাদকি এর আচরন সাংঘাতিকের মত ছিল। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বাংলাদেশের টিভি মিডিয়াতে তেমন কোন নিউজ হয় নাই বল্লেই চলে।
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত গ্রেটার কুমিল্লা বাসিদের একটি নতুন সংগঠন প্রকাশিত হল। অভিনন্দন রইল কুমিল্লা বাসী কমিউনিটির প্রতি। সামনে হয়তো আসছে নোয়াখালি ও চট্টগ্রাম বাসীর কমিটি। ইতিপূর্বে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার কমিটি গঠন হয়েছে।
ডাবলিন এ একটি সিলেকশন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় যারা করেছেন তারা বেশ সমালোচনার মধ্যে আছেন, এখন এমন অবস্থা তাদের না পারে বিলুপ্ত করতে না পারে গ্রহন যোগ্য একটি কমিটি প্রদান করতে। কেউ কেউ বলছে এটা নাকি জামাই-বউ এর কমিটি। বেশ কয়েক পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে এই কমিটিতে দেখা গেছে। অনেকেই প্রশ্ন করেন ডাবলিনে কি যোগ্য মানুষের অভাব পড়ে গেছে ? যেখানে প্রায় দুই হাজার বা আরো বেশি হবে বাংলাদেশীদের বসবাস।
উল্লেখ্য সিলেকশন কমিটিতে যারা সক্রিয় তারাই আবাই নির্বাচনে প্রত্যাক্ষ ভুমিকা রেখেছে, হয়তো তাদের কাংক্ষিত প্রার্থীর পরজয়ের কারনে তারা সিলেকশন পদ্ধতি বেছে নেয়, তারা হয়তো আয়ারল্যান্ডের ভোটের হিসাব নিকাশ করে ফেলেছে, নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের কাংক্ষিত বিজয় সম্ভব না। ডাবলিনের আর একটি কমিটি প্রক্রিয়াধীন যারা গনতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ডাবলিন কমিউনিটি গঠন করতে চায়, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে ডাবলিন বাসীর সর্মথন বেশী। বিনা ভোটের সিলেকশন কমিটি বাংলাদেশের টিভি মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে কিন্তু দূর্ভাগ্য হলুদ সাংবাদিকতার কারনে আবাই নির্বাচনে নিউজ বাংলাদেশের টিভি নিউজে তেমন প্রাচার পায় নাই।
ডাবলিনে সিলেকশন বা ইলেকশন এই দুই কমিটির গঠন প্রাক্রিয়া কারনে ডাবলিনের বাহিরে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে বেশ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। কারন এই দুই কমিটিই আয়ারল্যান্ড বাসীকে বিভক্তির দিকেই ঠেলে দিবে। দুই কমিটির কোন অনুষ্ঠান হলে সবাই লক্ষ রাখবে কোন দর্শক কোন অনুষ্ঠানে গেল ইত্যাদি। যার কারনে দর্শক বা সাধারন বাংলাদেশীরা কোন পক্ষের অনুষ্টানেই যোগদান করবে না।
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের মধ্যে এতো বিভক্তির মধ্যে আবাই কিভাবে কাজ করবে ? এমন যেন না হয় আবাই প্রতিটি সংগঠনকে তুষ্ট করতে গিয়ে শুধু সংগঠনের দাওয়াত খেয়ে বেড়াবে।
আসসালামু আলাইকুম,
গত ১৮ই অক্টোবর ২০২২ এ অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো। গত প্রায় তিন বছর যাবত আমরা তথা উপদেষ্টা পরিষদ এবং নির্বাচন কমিশন সকলেই বিভিন্ন সমালোচনা শুনেও একটা সুন্দর ইলেকশন উপহার দিতে পেরেছিলাম। যার ফলশ্রুতিতে আমরা একটি নতুন কমিটি পেয়েছি। নবনির্বাচিত কমিটির সকলকেই রইল আমার আন্তরিক অভিনন্দন এবং মোবারকবাদ। যদিও আমার দুর্ভাগ্য যে দেশের বাইরে থাকার কারণে এই সুন্দর শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। আমি জনাব আজদ তালুকদার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য সকল কমিশনার, উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্য এবং নির্বাচন চলাকালীন সময়ে যে সকল ভাই এবং বোনেরা আমাদের নির্বাচন সুষ্ঠ পরিচালনার জন্য সাহায্য করেছেন তাদের সকলকেই জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ, আমি বলব আমরা সকলে মিলেই এ কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছি।
নবগঠিত কমিটির কাছে আমাদের অনেক চাওয়া পাওয়া থাকবেই। আমি আশা করব এই কমিটি আযারল্যান্ডে বসবাস রত প্রবাসী বাংলাদেশীদের একত্রিত করে সামনের দিনগুলোতে তাদের নির্বাচিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন। আমরা সকল বাংলাদেশী যার যার অবস্থান থেকে এই কমিটিকে সাহায্য সহযোগিতা করবে ইনশাল্লাহ।
আপনারা সকলে জানেন যে নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচনকালীন সময়ের উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচিত হয়েছিল, আজ নির্বাচন কমিশন শপথ পাঠের মাধ্যমে নতুন কমিটিকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়েছেন আর সেই সময় থেকেই আমাদের উপদেষ্টা পরিষদও নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় অর্থাৎ শপথ গ্রহণের পর থেকেই উপদেষ্টা পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
আমি উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যদি আমাদের কোন ভুল ত্রুটি অথবা ইলেকশন পরিচালনার ক্ষেত্রে মনের অজান্তে কারও কোন রকমের কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে দয়া করে আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
পরিশেষে উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্যদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই যে আপনারা এই দীর্ঘ সময় আমার সাথে থেকে এই ইলেকশনটা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছেন। আপনাদের সহযোগিতায় সত্যিই প্রশংসনীয়।
সবাই ভালো থাকবেন, আমাদের সকলের জন্য দোয়া করবেন।
ধন্যবাদান্তে
মোহাম্মদ মোস্তফা
প্রধান উপদেষ্টা, আবাই নির্বাচনী উপদেষ্টা পরিষদ
একটি প্রগতিশীল এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গত ১০ অক্টোবর ২০২২ ডাবলিনের Harcourt Street এ সিলেকশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কমিউনিটি অব ডাবলিন এর পূর্নাঙ্গ কার্যকরী কমিটি ঘোষণার লক্ষ্যে উদ্যোক্তা কমিটি একটি সভার আয়োজন করেন ।
কোরআন তেলাওয়াত , গীতা পাঠ এবং জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সভার কাজ শুরু হয় । উদ্যোক্তা কমিটির সদস্য মোঃ ফিরোজ হোসেইন অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন । অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্যোক্তাদের মধ্যে মেহেদী হাসান , জসিম উদ্দিন আহমেদ এবং মাসুম জামান বক্তব্য রাখেন ।
নব গঠিত ডাবলিন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাহাদাত হোসেন , সভাপতি মোঃ মোস্তফা কে কার্যকরী কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করার জন্য অনুরোধ করেন । নাম ঘোষণার পূর্বে সভাপতি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন , যেহেতু সিলেকশনের মাধ্যমে পূর্নাঙ্গ কমিটি তৈরী করা হয়েছে , তাই কাজের মাধ্যমেই কেবল সদস্যগণ স্বপদে বহাল থাকবেন । দায়িত্বে অবহেলার জন্য সদস্যগণ পদ হারাতে পারেন বলে তিনি উল্লেখ করেন । পাশাপাশি তিনি আরোও বলেন ব্যক্তিগত সমস্যার কারনে কেউ সময় দিতে না পারলে কমিটি থেকে স্বইচ্ছায় অব্যাহতি নিতে পারবেন । উল্লেখ্য নাম ঘোষণায় সাধারণ সম্পাদক সাহাদাত হোসেন সভাপতি কে সহযোগিতা করেন ।
নাম ঘোষণার পর সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন কার্যকরী কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন – আজ থেকে আপনাদের কাজ শুরু এবং প্রতিটি কার্যকরী কমিটির মিটিং এ সবাই কে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেন ।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে সভাপতি মোঃ মোস্তফা এখনও যারা দ্বিধা বিভক্তির মধ্যে আছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন – ‘ আসুন আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশ কমিউনিটি অব ডাবলিন গঠন করি , প্রয়োজনে রিসিডিউল করে আমরা আবার পূনরায় কমিটি তৈরী করতে পারি ‘।
বাংলাদেশ কমিউনিটি অব ডাবলিন এর পূর্নাঙ্গ কার্যকরী কমিটির তালিকা আইরিশ বাংলা টাইমস এর পরবর্তি প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে ।
পরিশেষে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মোঃ ফিরোজ হোসেইন নব গঠিত কমিটিকে অভিনন্দন এবং সবাইকে ধণ্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করেন ।
আপনি যতই ভালো কথা বলেন না কেন লাভ নেই। আপনার বিপক্ষ লোকের কাছে সব ভালো কথা ই খারাপ বলে গণ্য হবে। আবার আপনি খারাপ কথা বললেও যে তা আদতে খারাপ তা কিন্তু নয়, আপনার যারা সমর্থক আপনার সমস্ত খারাপ কথাই তাদের কাছে ভালো বলেই গণ্য হবে।
আপনি ভালো খারাপ যা ই বলেন না কেন, তা কারো কাছে ভালো আবার কারো কাছে মন্দ বলেই উপস্থাপিত হবে। আপনি আপনার সমর্থকগোষ্ঠীর বিবেচনার প্রেক্ষিতেই কথা বলেন। আপনি যেমন বুঝতে পারেন না আপাতদৃষ্টিতে কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ, তেমনি আপনার সমর্থকগোষ্ঠীও আপনাকেই শুধু বিবেচনা করে এবং আপনার মুখ থেকে নিঃসৃত বাণীকেই আদর্শ বলে ধরে নিচ্ছে।
এতে ব্যাক্তি হিসেবে প্রত্যেক ব্যাক্তিই হারাচ্ছে চিন্তা করার স্বকীয়তা। আপনি যে ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর সমর্থক আপনি ওই ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর মাঝেই ঘুরপাক খাচ্ছেন। ওই ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর ভালোকে ভালো, এমনকি খারাপকেও ভালো বলে গণ্য করতেছেন। অন্য দিকে বিপক্ষ ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর খারাপকে তো খারাপ বলবেনই, এমনকি ভালোকেও খারাপ বলতে আপনার দ্বিধা হয় না। কারণ আপনি স্বাধীন চিন্তা করার স্বকীয়তা হারিয়ে পেলেছেন।
আমরা নৈতিক মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে এসে ব্যাক্তিগত পছন্দ অপছন্দের ভিত্তিতে সবকিছু বিচার করি। আমাদের একচোখা দৃষ্টি ও একপেশে নীতি আজকের সামাজিক অবক্ষয়ের মূল কারণ।
সমাজ কিভাবে ধীরে ধীরে সভ্যতার শিখরে আরোহন করেছে সে বিষয়ে জানতে আমাদের অনীহা। কিন্তু আমরা যে নিজের অজান্তেই সভ্যতার শিখর থেকে শিকড়ে নেমে যাচ্ছি তা কি অনুধাবন করতে পারতেছি?
আমরা খুব কমই ভাবি। সম্মুখে যা আসে তা নিয়েই হইছই করি। খুব কমই পড়ি বা চিন্তা করি। ভাসা ভাসা যা দেখি বা শুনি তাকেই নিজের লব্দ জ্ঞানভান্ডার মনে করে নিরুদ্দেশ সাঁতরানোর চেষ্টা করি। এবং তা নিয়েই একচোখা দৃষ্টিতে মনে করে নেই কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ।
নিজেকে প্রশ্ন করি কোনটা সঠিক কোনটা নয়
আপনি যখন ভবিষ্যত নিয়ে কাজ করবেন সেই সাথে অতীতকেও গন্য করতে হবে। যখন একটা কথা বলবেন তা যেন শুধু নিজ সমর্থকগোষ্ঠী নয় সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কথা হয় তা ভেবে কথা বলা উচিত। যখন একটি কথা শুনবেন তখন নিজ ভাবনার সাথে নয় বরঞ্চ সামগ্রিক অর্থে গ্রহণযোগ্য কিনা তা বিবেচনায় আনা বাঞ্ছনীয়। একজন ব্যাক্তি, কে কথা বলল তা বিবেচ্য বিষয় না ভেবে কি কথা বলল তাকে গুরুত্ত্ব দিলে অনেক কিছুই বোধগম্য হয়। নিজের ভাবনাকে কাজে লাগান, চিন্তার প্রসারতা বৃদ্ধি করুন।
অন্যকে যেমন খুব সহজে প্রশ্ন করতে পারেন, ঠিক সেইভাবে নিজেকে প্রশ্ন করতে শিখুন। অনেক উত্তর নিজেই পেয়ে যাবেন।
মাঝে মধ্যে প্রতিযোগিতার দৌড় থেকে পিছিয়ে আসুন। সবসময় প্রতিযোগিতার ময়দানে থাকতে হবে এমন নয়। আপনাকে বিবেচনা করে ময়দানই একদিন আপনাকে ডেকে নিবে। মনে রাখবেন সহিষ্ণু মনোভাব কখনো ক্ষয়িঞ্চু নয়। বরঞ্চ অসহিঞ্ছুতাই অবক্ষয়ের বীজ বপন করে।
সহিষ্ণু মনোভাব কখনো ক্ষয়িঞ্চু নয়
সমাজ হয়ত মাঝে মধ্যে খারাপের কবলে পড়ে কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভালোটাই গ্রহণ করে চলে এবং খারাপটাই বর্জন করে। যত কিছু ভালো তা ই শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত এবং খারাপ নিক্ষিপ্ত হয় আস্তাকুড়ে। খারাপটা খারাপ এবং ভালোটা ভালোভাবেই ইতিহাসে লিখিত হয়।
ইতিহাস রচনা করবে ভবিষ্যৎ, যখন আপনি থাকবেন না হস্তক্ষেপ করার জন্য। ইতিহাসে আপনি কিভাবে লিখিত হতে চান তা ভেবে কাজ করুন। স্বলিখিত ইতিহাস কেউ গ্রহণ করেনা। কিন্তু ইতিহাস যখন আপনার ইতিহাস লিখবে তখন তা ই হবে প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস এবং লিখিত থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।
অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই ) এর নব নির্বাচিত কার্যকরী কমিটির প্রথম সভা ডাবলিনস্থ, ইসলামিক কালচারাল সেন্টার অব আয়ারল্যান্ডের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় গত ৫ই অক্টোবর ২০২২।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আবাই এর নব নির্বাচিত সভাপতি ডা: জিন্নুরাইন জায়গীরদার । নব নির্বাচিত মহাসচিব আনোয়ারুল হক আনোয়ার সভা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। ধর্ম সম্পাদক মোজাম্মেল হক এর কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভার কাজ শুরু হয় ।
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি উপস্থিত কার্যকরী কমিটির সবাইকে নিজেদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মূলক বক্তব্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন । পাশাপাশি তিনি আজকের সভার আলোচ্য সূচী এবং সাংগঠনিক কার্য্যক্রমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমরা কার্যকরী কমিটির প্রত্যেকে যদি নিজেদের কাজ আন্তরিক ভাবে এবং ঐক্যবদ্ধ ভাবে করতে পারি তাহলে আবাই অবশ্যই আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে” । তিনি সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে আবাই যেন একটি পরিবার হয়ে কাজ করতে পারে সে আশা ব্যক্ত করেন ।
উপস্থিত সদস্যদের পরিচিতি পর্ব শেষে, সভার আলোচ্য বিষয় গুলি নিয়ে সদস্য বৃন্দ নিজেদের মতামত উপস্থাপন করেন । প্রায় চার ঘন্টা ব্যাপী অত্যন্ত প্রানবন্ত, আন্তরিক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কমিটির সদস্য বৃন্দ বক্তব্য তুলে ধরেন ।
সভায় অনেক গুলো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় –
১ ) আগামী ১৮ই অক্টোবর ২০২২ নব নির্বাচিত কার্যকরী কমিটির শপথ অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সভা চলাকালীন সময় সভাপতি জিন্নুরাইন জায়গীরদার , প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজাদ তালুকদার কে শপথের তারিখ নির্ধারনের ব্যাপারে ফোন করেন এবং উভয় পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হয় ।
২ ) কার্যকরী কমিটির দ্বিতীয় সভা ১লা নভেম্বর ২০২২ লিমেরিক শহরে করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ।
৩ ) কার্যকরী কমিটির সকল সদস্য প্রতি মাসে ২০ ইউরো করে আবাই এর একাউন্টে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ।
প্রথম সভায় অংশগ্রহনকারী কার্যকরী কমিটির সদস্য বৃন্দ –
ডা: জিন্নুরাইন জায়গীরদার ( সভাপতি )
আজিজুর রহমান মাসুদ ( সহ সভাপতি )
শাহীন রেজা ( সহ সভাপতি )
মনিরুল ইসলাম ( সহ সভাপতি )
কাজী শাহ আলম ( সহ সভাপতি )
আনোয়ারুল হক আনোয়ার ( সাধারণ সম্পাদক )
মাহমুদুল হাসান চৌধুরী ( যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক )
ইজামামুল হক জুয়েল ( সাংগঠনিক সম্পাদক )
আব্দুল জলিল ( সহ সাংগঠনিক )
মুজিবুল হক ( সহ কোষাধক্ষ্য )
মো: সরোয়ার মোরশেদ ( দপ্তর সম্পাদক )
কবির আহমদ বাবুল ( প্রকাশনা সম্পাদক )
তারেক মাহমুদ ইকবাল ( সাংস্কৃতিক সম্পাদক )
মো: শরিফুল আলম ভূই্য়া ( সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক
রাব্বি খান ( ক্রিয়া সম্পাদক )
মোজাম্মেল হক ( ধর্মীয় সম্পাদক )
লোকমান হোসেন ( সহ ধর্মীয় সম্পাদক )
মোসাম্মৎ শম্পা লিলি ( মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা )
শিরিন আলম ( সহ মহিলা সম্পাদিকা )
মো: ইউসুফ ( আই টি সম্পাদক )
মজিবুর রহমান ( সমাজ কল্যাণ সম্পাদক )
শারিরীক অসুস্থতার কারনে অর্থ সচিব জনাব মোহাম্মদ তাউছমিয়া তালুকদার সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন নি, তিনি সকলের দোয়া প্রার্থনা করেন। আয়ারল্যান্ডের বাহিরে থাকার কারনে জনাব মতিউর রহমান এবং রুহুল আমিন সম্মতিক্রমে অনুপস্থিত ছিলেন।
পরিশেষে সভাপতি সবাইকে ধণ্যবাদ জানিয়ে সভার কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করেন ।
১৯২৫ সাল, টোকিওর শিবুয়া স্টেশনের কাছে থাকতেন প্রফেসর হিদেসাবুরো উএনো। তিনি একদিন একটা কুকুর রাস্তায় কুড়িয়ে পান যার গলার বেল্টে একটা নাম্বার লেখা ছিলো হাচি(০৮). তাই তিনি কুকুরটির নাম রাখেন হাচিকো। প্রফেসর এবং হাচিকোর সম্পর্ক এক অদ্ভুত বন্ধনে পরিনত হয় ।
পরবর্তীতে হাচিকো আর প্রফেসর এর উপর সত্যি ঘটনা অবলম্বনে
২০০৯ সালে আমেরিকা একটা ছবি তৈরি করে। ছবির নাম Hachi a dogs tale. অভিনয় করেছেন রিচার্ড জিয়ার।
আমাদের ইয়ন
ঘটনা হলো রিচার্ড জিয়ার রোজ সকাল বেলা ট্রেনে চেপে তার কাজের জায়গায় যান এবং সন্ধ্যায় ফেরেন।
তার পোষা কুকুর হাচিকো রোজ তাকে সকালে স্টেশনে ছেড়ে যায় এবং রোজ সন্ধ্যায় স্টেশনে এসে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। প্রফেসর ফিরলে তবেই তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরে।
হঠাৎ একদিন প্রফেসর হার্ট এটাকে তার কাজের জায়গাতেই মারা গেলেন। তিনি আর বাড়ি ফিরলেন না। তার জন্য ঐ রেল স্টেশনে একই জায়গায় হাচিকো অপেক্ষা করেছিলো তার জীবনের বাকি ৯ বছর ৯ মাস ১৫ দিন। কেউ তাকে সেখান থেকে নড়াতে পারেনি। নয় বছর হাচিকোও সেই ট্রেন স্টেশনেই মনিবের জন্য অপেক্ষা করতে করতে মারা যায়।
হাচিকোর একটা মূর্তি রয়েছে শিবুয়া স্টেশনে। ষ্টেশনের একটি এক্জিট এর নাম হাচিকো এক্জিট। হাচিকোর ৮০ তম মৃত্যুবাষিকীতে হাচিকো আর প্রফেসর এর একটি মূর্তি গত ৮ই মার্চ ২০১৫ তে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্হাপন করা হয়।
হাচিকো এবং প্রফেসর
এখন বলি আমাদের ইয়ন এর কথা । ইয়ন কে আমরা আনি একমাস বয়সে । মাইমুনা বড়ো হয় যাওয়াতে আমাদের বাসাটা ছিল ঠান্ডা চুপচাপ একটা বাসা । ইয়ন বাসায় প্রাণ নিয়ে আসে । ইয়ন চিৎকার , খেলা ধুলায় বাসা মাতিয়ে রাখতো । আমরাও সারাক্ষন ইয়ন কই? ইয়ন কি করে ? ইয়ন খাইছে নাকি , ইয়নকে হাটতে নিতে হবে ,ভ্যাকসিন দিতে হবে , গ্রুমিং করতে নিতে হবে , এই চলত। আমার সাথে ইয়ন বেশি ঘনিষ্ট ছিল । আমি যতক্ষন বাসায় থাকতাম আমার পিছে পিছে হাটত, আমর সাথে ঘুমাইতো । আমি কাজ থেকে ফিরলে ইয়ন এর সে কি আনন্দের প্রকাশ! অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ইয়ন কে দিয়ে দেই। আজকে তিন বছর ইয়ন আমাদের সাথে নাই। কিন্তু এমন কোন দিন নাই আমি আর মাইমুনা
ইয়ন কে মনে না করি , কষ্ট না পাই!
কুকুর অবুঝ প্রানী। কুকুরের এই ভালোবাসা বন্ধুর মতো , পরিবারের সদস্যের মতো। এই ভালোবাসা আনুগত্যের , শ্রদ্ধার।
আমরা মানুষ , সৃষ্টির সেরা জীব।কোথায় আমাদের বন্ধুত্ব ! কোথায় শ্রদ্ধা , ভালোবাসা !
সমাজে আমরা বছরের পর বছৰ একসাথে বাস করেও সামান্য কারণে একে অন্যকে ছোট করে কথা বলি । মানীজনের মান রাখছি না বরং ছোট করে কথা বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করি না।
প্রাণী হিসাবে আমরা আসলেইকি সেরা ? কেন আমাদের মন হিংসা বিদ্বেষে ভরা ? কোথায় আমাদের মনুষ্যত্ব ? আমরা কি হাচিকো, ইয়ন এর কাছ থেকে ভালোবাসা, বন্ধুত্ব নতুন করে শিখব!
সমাজ ও রাষ্ট্রের দর্পণ সংবাদপত্র। সংবাদপত্র কিংবা টেলিভিশন, অনলাইন কিংবা মুদ্রিত; সবই হচ্ছে একটা মাধ্যম বা মিডিয়া। যার কারণে আমরা বলি সংবাদ মাধ্যম কিংবা সংবাদ মিডিয়া। এই মাধ্যমই হচ্ছে একটা সেতু বা ব্রিজ, যা ঘটে যাওয়া সংবাদ বা খবরাখবর পরিবাহক হিসেবে কাজ করে। সংবাদ মাধ্যমের কাজ হচ্ছে ঘটে যাওয়া খবরকে তার মাধ্যম (সংবাদপত্র বা টেলিভিশন) ব্যবহার করে মানুষের নিকট পৌঁছে দেয়া এবং মানুষ সে খবর বা সংবাদ পেয়ে একটা তথ্য সম্বন্ধে অবগত হয়।
সমকালীন বিশ্ব চরাচরের চলমান গতি-প্রকৃতি, ঘটনাপ্রবাহ, জীবনচিত্র ও দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় সংবাদপত্রে। মানুষের অধিকার হচ্ছে যা কিছুই ঘটে থাকুক না কেন তা সম্বন্ধে জানা এবং তা ই জানার অধিকার মানুষ রাখে যা প্রকৃতপক্ষে ঘটেছে। এখানে জনসম্মুখে কোন কিছু লুকিয়ে কিংবা আংশিক প্রকাশের অধিকার একটা মাধ্যম রাখেনা। কারণ তার উপর মানুষ আস্থা নিয়ে বসে আছে যে, সঠিক খবরটিই জনগণ পাবে।
সংবাদপত্র সমাজ ও রাষ্ট্রের দর্পণস্বরূপ। দর্পণের মতই সমাজের চেয়ারা সংবাদপত্রের মাধ্যমে ফুটে উঠে।
সংবাদ মাধ্যমের অস্তিত্ব টিকে থাকে মানুষের মনন ও মস্তিষ্কে। একটা মাধ্যমের উপর মানুষের আস্থাও তৈরি হয় ধীরে ধীরে। সে আস্থা কখনো একদিনে যেমন অর্জন করা সম্ভব হয়না, তেমনি সেই আস্থাকে কেউ একদিন বিনাশও করতে পারেনা। একটা সংবাদ মাধ্যম তখনই সে আস্থা তৈরি করতে পারবে যখন সঠিক তথ্য, সত্য তথ্য, নিরপেক্ষভাবে, সঠিক সময়ে মানুষের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হবে। মানুষ তখনই সে সংবাদ মাধ্যমকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করবে যখন মানুষ মনে করবে ঐ সংবাদমাধ্যমটি তাঁদের অধিকারের জন্য কাজ করতেছে।
সংবাদমাধ্যম বহুলাংশে অনেক ক্ষেত্রে কর্তৃত্ববাদী, ক্ষমতাশালী, বিত্তশালীদের আপস করে চলে থাকে। অনেকক্ষেত্রে চলতে বাধ্য হয়। সেক্ষেত্রে তাদের সুবিধা দিতে গিয়ে গনমানুষের অধিকারকে খর্ব করা হয়। নিদৃস্ট কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার্থে সমাজের বৃহদাংশকে অধিকার বঞ্চিত করা কি গণমাধ্যমের সাজে? গণমাধ্যমের কাজই ত্ব হচ্ছে বার্তা পৌঁছিয়ে দেয়া, বাকি ভালো মন্দের সিদ্ধান্ত নিবে জনগণ।
গণমাধ্যম যদি তথ্যনির্ভর বা বস্তুনিষ্ঠ না হয়, তাহলে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রতিপত্তি বা শক্তির অনুগত হলে সাময়িক সুবিধা মেলে বটে; কিন্তু সাংবাদিকতা হেরে যায়, মৃত্যু হয় যুগলব্ধ প্রতিজ্ঞার।
সংবাদপত্র তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে সবচেয়ে বেশি লাভ হয় ক্ষমতার। পুঁজি হারায় সংবাদপত্র; যার আনুগত্য থাকে জনগণের কাছে। ক্ষমতা, পেশি, অর্থ বা রাষ্ট্র যাই হোক না কেন-স্বভাবতই তা প্রতিস্পর্ধাকে সহ্য করে না। কিন্তু সংবাদপ্রবাহকে হতে হবে সরল, নিরপেক্ষ ও নির্মোহ। চমক না, নির্ভেজাল এবং প্রকৃত, সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্যই হচ্ছে সংবাদমাধ্যমের হৃদপিণ্ড।
কর্তৃত্ব ও শক্তির বিপরীতে সংবাদপত্রই হলো আমজনতার কণ্ঠ। বহুত্ববাদী সমাজকে এক সুতোয় বেঁধে রাখার ক্ষমতাও এ মাধ্যমের। সুস্থ জাতিগঠনের দায়ও তাই এ মাধ্যমের। গুজব, অসত্য তথ্য বা বিকল্প সত্য-যাই বলি না কেন, আধুনিক যুগে এসব নানা বিপত্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিরপেক্ষ ও আদর্শিক গণমাধ্যমই শেষ ভরসা। যে মাধ্যমের উপর মানুষ আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারে।
কর্তৃত্ব ও শক্তির বিপরীতে সংবাদপত্রই হলো আমজনতার কণ্ঠ
গণমাধ্যম যদি সত্য ও নিরপেক্ষ প্রচার করে তাহলে যারা সত্য, ন্যায় ও মানুষের কল্যাণের পথে কাজ করে তাদের ভয়ের কোন কারণ থাকার কথা না।
সংবাদ মাধ্যমের সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশের মূল কেন্দ্রবিন্দু থাকবে জনগণ। জনগণ যা জানার অধিকার রাখে, তা জানানোই হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমের মূল উদ্দেশ্য। এখানে স্বার্থগত চিন্তা করে, কিংবা কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পক্ষপাত কিংবা বিপক্ষপাতের প্রেক্ষিতে কোন খবর প্রচার করা কিংবা প্রচার না করা একটি আদর্শিক গণমাধ্যমের ভূমিকা হতে পারে না। পক্ষপাতদুষ্ট গণমাধ্যম কখনো গনধিকার আদায়ে কিংবা গন মানুষের স্বার্থে কাজ করতে পারে না।
একজন নিরাপত্তাকর্মীর ব্যক্তিগত পছন্দ ও অপছন্দ থাকতে পারে, কিন্তু দায়িত্বের ক্ষেত্রে এসে সে সবাইকে সমান নিরাপত্তা দিবে। একজন রাজনীতিবিদ হয়ত একটি দলের সমর্থক হয়ে থাকে, কিন্তু তার সেবা হবে দলমত নির্বিশেষে। তেমনি একজন ডাক্তার, একজন শিক্ষক, একজন আমলা, একজন খেলোয়াড়, যে কোন পেশা শ্রেণীর মানুষের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তি, দল, মত কিংবা ধর্মীয় পছন্দ ও পছন্দ থাকতে পারে, কিন্তু দায়িত্বের ক্ষেত্রে এসে তাকে হতে হবে নিরপেক্ষ; তার সেবা থাকবে সবার জন্য সমান। ঠিক তেমনি একজন সংবাদকর্মীও এর ব্যতিক্রম নয়।
সংবাদপত্রকে বলা হয়ে থাকে গণতন্ত্রের সদাজাগ্রত পাহারাদার। সংবাদপত্র হচ্ছে সভ্যতার অগ্রগতির প্রমাণপত্র এবং নির্যাতিতের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের অধিকার। জনগণের অধিকার রক্ষা করাই যেন হয় একটি সংবাদ মাধ্যমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য; কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার্থে নয়।
গণমাধ্যম হওয়া উচিত গনমানুষের, হাতে গোনা মানুষের জন্য নয়
আমি যখন ছোট তখন আত্মীয়দের বাসায় গেলেই অন্য কাজিনদের সাথে আমার উচ্চতা মাপা হতো । একসময় দেখা গেলো আমার সব কাজিনরা আমার থেকে লম্বা, আর আমি খাটো। তখন আত্মীয় স্বজনদের আলোচনার বিষয় হলো আমি খাটো হলাম, এখন অবশ্যই আমাকে লম্বা ছেলের সাথে বিয়ে দিতে হবে । আর তা না হলে আমার ছেলে মেয়েও খাটো হবে! সুতরাং আমার ভবিষ্যতই শেষ!
লম্বা-খাটো, কালো-ফর্সা, শুকনা-মোটা এসব নিয়ে কথা বলা সেই নব্বইর দশকে যেমন ছিল এখনো এই দ্বাবিংশ শতাব্দীতে এর কোনো পরিবর্তন হয় নাই।
আসলে কারো ধর্ম, বর্ণ, গায়ের রঙ, শারীরিক নানা গড়ন নিয়ে কথা বলা যে সভ্যতা নয়, সেই সচেতনতা আমাদের সমাজের নাই। কালো এবং ফর্সা নিয়ে তফাৎ তৈরি করা অনেক দামী বিষয় । তেমনি বেশি শুকনা অথবা বেশি মোটা নিয়ে কথা বলাটাও আমাদের অভ্যাস।
যাই হোক বডি শেইমিং এবং বৈষম্য পরিবার থেকেই করা হতো এবং পুরো সমাজ তাতে নানাভাবে ইন্ধন যোগাতো। সবাই বলে সময় বদলেছে, আসলেই বদলেছে কি?
আমি হয়তো উচ্চতার মতো এত ছোটখাটো বিষয়ে মাথা ঘামানোর সময় পাইনি অথবা আমার হয়তো মনের জোর অনেক বেশি ছিলো। কিম্বা সে সময় নারীরা অনেক বেশি mentally tough ছিলেন বলেই হয়তো অসংখ্য নারীরা কোন কারণে উৎরে গেছেন বা বলা চলে সারভাইভ করে গেছেন।
এখনকার ছেলেমেয়েরা mentally tough না। এই বডি শেইমিং এর হীনমন্যতা থেকে কত ছেলেমেয়ে যে ভয়াবহ ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। ডিপ্রেশনের কারণে তাদের পড়ালেখা হয়নি, ক্যারিয়ার হয়নি, বয়ফ্রেণ্ড-গার্লফ্রেন্ড হয়নি, বিয়ের বাজারে তাদের রয়েছে সীমাহীন নিগ্রহ। কত ছেলেমেয়ে যে এই হীনমন্যতায় নানা ধরণের জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তার হিসাব এই সমাজ রেখেছে কি কোন দিন?
২০২২ এ এসে মাঝে মধ্যে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মনে হয় এই সামাজিক ব্যবস্থার মুখে যদি সপাটে চড় মারতে পারতাম! পরিবর্তন আনতে পারতাম!
মাস কয়েক আগে অস্কার বিজয়ী অভিনেতা উইল স্মিথ তার এলোপেশিয়া রোগে আক্রান্ত স্ত্রীর ন্যাড়া মাথা নিয়ে কমেডিয়ান ক্রিস রক মস্করা করায় সেই চড়টাই মেরেছেন। যদিও তিনি বডি শেইমিং এর জন্য চড়টা মারেননি। তিনি চড় মেরেছিলেন তার অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে রসিকতা করায়।
অনেক আত্মীয়-স্বজন এবং আপনজন মজা করেই পরিবারের অন্য সদস্যের গায়ের রঙ, শারীরিক গড়ন এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করেন। এটা করা ঠিক না।
উইল স্মিথ গোটা বিশ্বজুড়ে এই বৈষম্যের ক্ষেত্রে একটা পার্থক্য এবং উদাহরণ তৈরি করলেন। তিনি নারীর প্রতি বা একজন মানুষের প্রতি কী ধরণের আচরণ হওয়া উচিৎ সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন। যদিও অস্কার বিজয়ী উইল স্মিথ ঘটনাটির জন্য পরে দুঃখিত হয়েছেন।
আমি যা আমি তেমনই। আমার flaw গুলোকে নিয়েই আমার প্রিয়জনেরা আমাকে ভালোবাসবে। আমার flaw গুলো জেনেই মানুষ আমাকে ভালোবাসবে সেই দিন দ্রুতই এ সমাজে আসুক।
যে বিষয়ে মানুষের নিজের কোন ভূমিকা নেই সেই শারীরিক গঠন, ত্রুটি না দেখে মানুষ মানুষের গুণ দেখতে শিখুক। মানুষ সংবেদনশীল হতে শিখুক।
সপ্তাহ তিনেক আগেও টি–টোয়েন্টি অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে দুইয়ে ছিলেন সাকিব আল হাসান। শীর্ষে থাকা আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী এশিয়া কাপে ব্যর্থ হওয়ায় এক নম্বরে উঠে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দুই সপ্তাহ পর নবীর কাছেই জায়গা হারালেন সাকিব। টি–টোয়েন্টিতে দুইয়ে নেমে গেলেও ওয়ানডেতে এখনো শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছেন তিনি।
আইসিসির হালনাগাদ করা র্যাঙ্কিংয়ে টি–টোয়েন্টিতে সাকিবের রেটিং ২৪৮ থেকে কমে ২৪৩–এ নেমেছে। এক নম্বরে থাকা নবীর রেটিং ২৪৬। এশিয়া কাপের পর দুজনের কেউই অবশ্য জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি। দুজনই ব্যস্ত ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল)। যেখানে টানা দুই ম্যাচে ফিফটি পেয়েছেন সাকিব, নবী পেয়েছেন টানা দুই ম্যাচে ৩ উইকেট।
অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ চারে উঠে এসেছে ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচে ৯ ও অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংস খেলা পান্ডিয়ার রেটিং পয়েন্ট ১৮৪। সমান রেটিং শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারও। দুজনই যৌথভাবে চতুর্থ স্থানে আছেন। ২১১ রেটিং নিয়ে তিন নম্বরে ইংল্যান্ডের মঈন আলী।
এদিকে ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর স্থান ধরে রেখেছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচে অপরাজিত ৮৮, ৮ ও ৮৮ রানের ইনিংস খেলে ৮৬১ রেটিং তাঁর। ৮০১ রেটিং নিয়ে দুইয়ে ভারতের সূর্যকুমার যাদব।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় টি–টোয়েন্টিতে ৩৬ বলে ৬৯ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন তিনি। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম আছেন সূর্যকুমারের ঠিক পরেই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করে রেটিং নিয়ে গেছেন ৭৯৯–এ।
বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ তিনে পরিবর্তন হয়নি। আগের মতোই এক নম্বরে অস্ট্রেলিয়ার জশ হ্যাজলউড, দুই এবং তিনে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার তাব্রেইজ শামসি ও ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ। বোলিংয়ে সবচেয়ে বড় উন্নতি হয়েছে পাকিস্তানের হারিস রউফের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়া ফাস্ট বোলার সাত ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছেন ১৪ নম্বরে।
একাধিক কর্ক সিটি ফায়ার ইউনিট প্রাক্তন মা এবং শিশুর বাড়িতে বড় অগ্নিকাণ্ডের মোকাবেলা করে৷
প্রাক্তন ম্যাগডালিন লন্ড্রি এবং মা ও বেবি হোমে একটি বড় অগ্নিকাণ্ডের পরে গতকাল গভীর রাতে অ্যাঙ্গেলেসিয়া স্ট্রিট এবং ব্যালিভোলেন থেকে একাধিক ফায়ার ইউনিটকে রবিবারের ওয়েলে ডাকা হয়েছিল।
ঘটনার পর আজ সকালে গুড শেপার্ড কনভেন্টের ঘটনাস্থলে দমকল কর্মীরা রয়েছেন এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন
আমাদের লক্ষ্য হওয়া চাই শুভকর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকা। একমাএ শুভকর্মের মৃত্যু নেই। একটা একটা করে দিন আসছে, রাত্রি ফুরোচ্ছে। স্পষ্টতই পৃথিবী তার আপন কক্ষপথে বাধাহীন আবর্তে আছে। আমরা মানুষেরাও ছুটছি। যে ভাবে পারছি গতিতে আছি। হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়লে কেউ উঠে দাঁড়িয়ে সামনে এগোই, কেউ পিছিয়ে যাই। কিন্তু স্থবির থাকি না কেউ। বলার মতো কিছু না করলেও দু এক বেলা খেয়ে পড়ে বয়স বাড়াই, মৃত্যুর দিকে এগোই। গতকালের গততে কেউ আটকে নেই। থাকার মধ্যে গতদিনের স্মৃতির আনন্দ বা কষ্ট গুলো সঙ্গে থাকে। মানুষের মস্তিস্ক উন্নততর। আমরা বিগতদিনের ঘটনা উপেক্ষা করতে পারি, অস্বীকার করতে পারি, কিন্তু ঘটনার স্মৃতি ভুলতে পারি না। এগুলোর তাড়না কখনো আমাদের মনকে ভাল রাখে, কখনো বিষন্ন রাখে, কখনো চলার প্রেরণা যোগায় আবার কখনো কোন অনুভূতিরই উদ্রেক করে না। যা কিছুই হোক জীবন থেমে থাকে না। জন্মের পর থেকে যাদেরকে দেখে দেখে আমরা বড় হই তাঁরা চোখের সামনে বৃদ্ধ হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। কেউ কেউ বৃদ্ধ হবারও সুযোগ পান না। যারা চলে যায়, তাদের চলা থেমে যায়। আমরা স্বজন হারাই। ব্যথিত হই। এই ব্যথা অনিবার্য,চিরন্তন। বেঁচে থাকার কোন এক পর্যায়ে সবাইকেই এই বিয়োগ অনুভূতির মুখোমুখি হতে হয়। একদিন পৃথিবীর পরে থাকবোনা বলেই আমরা আমাদের সন্তানদের পৃথিবীতে আনি। তাদের কাছে পৃথিবী রেখে যাই। প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা ঘোঁচে।
মৃত্যু আছে বলে গতি চিরন্তন নয়, সব গতির শেষ আছে। যদি কর্মের মধ্য দিয়ে মৃত্যুর পরে বেঁচে থাকা না যায়, তবে সে জীবন প্রাণীর জীবন, মানবজীবন নয়
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী এম্বেসী চালু করার জন্য সুপারিশ করতে ডাবলিন আওয়ামীলীগের একটি প্রতিনিধি দল গত ১৭ই সেপ্টেম্বর লন্ডন সফর করেন।
তাঁরা গ্রোসভেনর স্ট্রিটের ম্যারিয়ট হোটেলে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন চৌধুরী সাহেবের সাথে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এম্বাসি সংকান্ত বিষয়ে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় দ্রুত সহযোগিতা করবেন বলে আয়ারল্যান্ডবাসীকে আবারও আশ্বস্ত করেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পিএস ওয়ানের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্ব-বিশেষ অনুরোধ করা হয়।
ডাবলিন আওয়ামী লীগ ও আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ সর্বদাই বাংলাদেশ এম্বাসি স্থাপন প্রসঙ্গে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে জানিয়েছেন আইরিশ বাংলা টাইমসকে।
প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারক লিপি হস্তান্তর করে যার অনুলিপি আইরিশ বাংলা টাইমসের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো নিন্মের লিংককে।
আনোয়ারুল হক আনোয়ার, যাকে ভোট দিতে কৃপণতা করেনি প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ভোটার। মুক্ত হস্তে উদার মনে ভোটারগণ ঐ নামটির পাশে টিক দিয়ে গিয়েছেণ। একজন প্রার্থী যার ভোটের জোয়ার বাঁধ ভেঙ্গে পার হয়ে গিয়েছে বিজয়ের সীমানা প্রাচীর।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটির কেন্দ্রীয় সংগঠন আবাই এর ২০২২ নির্বাচনে জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার জয়ী হয়েছেন বিপুল ভোটে। উনার প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে তিনগুন ভোট বেশি পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন জনাব আনোয়ার। আনোয়ারুল হক আনোয়ার পেয়েছেন ১,৭১২ ভোট এবং উনার প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন ৬০৬ ভোট।
জনাব আনোয়ার শুধুমাত্র তিনগুন ভোটেই বিজয়ী হন নাই, তিনি সব প্রার্থী থেকে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন এবং মোট কাস্ট হওয়া ভোটের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ভোটার তাঁকেই ভোট দিয়েছেন।
লিমরিকে স্বাধীনতা দিবসে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে জনাব আনোয়ার
জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার এর এই বিপুল পরিমাণ জনসমর্থনের পেছনে রহস্য কি? এর পেছনে অবশ্যই কোন কারণ রয়েছে। নির্বাচনের মাঠে অবশ্য জনাব আনোয়ার নতুন নন। ২০১১ সালের আবাই নির্বাচনেও তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। পরিচিতিটা সেখান থেকেই শুরু। এরপর থেকে যতদিন আবাই এর অধীনে দায়িত্বরট ছিলেন এবং আবাই এর নির্ধারিত সময়ের পরে, উভয় সময়েই তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন কমিউনিটির সেবায়। ছুটে বেড়িয়েছেন আয়ারল্যান্ডের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, চষে বেড়িয়েছেন সমগ্র আয়ারল্যান্ড। মানুষের সুখে, দুখে, বিপদে-আপদে, অনুষ্ঠান-সম্মেলনে সর্বত্র দেখা যেত সদা হাস্যজ্বল ঐ মুখটি। সে মুখটিই যখন ব্যালট প্যাপারে কেউ দেখবে, তাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ কি কারো ছিল? না, অবশ্যই ছিল না, তার প্রমাণই আমরা দেখেছি নির্বাচনের ফলাফলে।
আইরিশ বাংলা দাবা ক্লাবের টুর্নামেন্টে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও খেলোয়াড়দের সাথে
আনোয়ারুল হক আনোয়ার একজন সফল ব্যবসায়ী। লিমরিকের বাসিন্দা এবং লিমরিকেই রয়েছে তাঁর সুপরিচিত, সবার প্রিয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ২০০২ সালে তিনে ছাত্রাবস্থায় পড়ালেখার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে। লিমরিকের গ্রিফিথ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেই নেমে পরেন ব্যবসার উদ্দেশ্যে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নানা চড়াই উৎরাই পার হয়ে তিনি এখন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। উনার রেস্তোরা ইস্তানবুল কেবাব লিমরিকের জনগণের রসনা চাহিদা মিটিয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে।
ব্যবসার ব্যস্ততার মাঝেও নিজেকে জড়িত রেখেছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (BSAI) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। ক্রিড়াঙ্গন, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সবসময় নিজেকে জড়িত রেখে আসছেন। হাত বাড়িয়ে দেন সাহায্যের যেখানে প্রয়োজন। কমিউনিটির প্রতি তাঁর একাধারে সময়, শ্রম ও অর্থ দিয়ে অবদানের কথা স্বীকার না করলেই নয়। সমগ্র অবদানের কথা এক কথায় লিখে প্রকাশ করার মত নয়।
লিমেরিক ফুটবল দলের সাথে তখনো ছিলেনলিমেরিক ফুটবল দলের সাথে এখনো আছেন
এই লেখা পড়ে মনে হতে পারে একজনকে নিয়ে অতিরঞ্জিত বলা হচ্ছে না তো! কিন্তু তাঁর প্রতি মানুষ যে ভালোবাসা প্রদর্শন করেছে, সে তুলনায় এই লেখা অনেক ম্লান মনে হবে। অনেক কিছু শুধু বলে বা লিখে প্রকাশ করা যায় না, কেবল অনুধাবনই করা যায়। জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার এমনই একজন।
কমিউনিটি হয়ত এমন একজনকেই চেয়েছে যার হাত ধরে কমিউনিটি এগিয়ে যাবে বহুদূর।
Once a leader always a leaderবিজয়ীদের সাথে লিমেরিক ফুটবল দলের ম্যানেজার হিসেবেলিমেরিক কমিউনিটির সাথেসবার সাথে রয়েছে যার সুসম্পর্ক
গত ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার অনুষ্ঠিত হলো অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড সংক্ষেপে আবাই এর দ্বিতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছেন জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার।
নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারকে জানাই আমার প্রানঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তিনি আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে একজন জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব, অন্তত এই নির্বাচনের পরে একথা বলা যেতেই পারে।
নির্বাচনের কয়েকদিন পর আমি জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারকে ফোন করি তাকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য তবে আমার মনে একটা সংশয় ছিল কিন্তু তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে দুটি রিং হওয়ার পরই আমার ফোন answer করেন। আমরা সালাম বিনিময় করি এবং অত্যন্ত সাবলিল ভাবে তিনি আমার শুভেচ্ছা গ্রহন করে আমাকে ধন্যবাদ দেন এবং বেশ কিছুক্ষন আমার সাথে তিনি কিছু বিষয়ে কথা বলেন । তার এই সৌহার্দপূর্ণ ব্যাবহারে আমি খুশি। প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একজন নেতার আচরণ এমনটাই হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি ।
এখানে একটা কথা উল্ল্যেখ না করলেই নয়, তা হলো আমি জনাব ডাঃ সাহেবকে তার একটা নির্বাচনী সভায় তাকে কিছু প্রশ্ন করার সুযোগ পাই। তিনি যেহেতু প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রথম প্রাক্তন সভাপতি তাই জবাবদিহিতার দিক থেকে তার কাছে জনগনের কিছু প্রশ্ন ছিলো, আমি সেই প্রশ্ন গুলো তাকে করি এবং তিনি তার মতো করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দেন। আমি মনে করি অনেক ভোটার সেইদিন তার উত্তরে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে ১১তারিখ ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে আমি কেন সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের নির্বাচনী সভায় তাকে সমান সংখ্যক প্রশ্ন করি নাই এই জন্য নাকি সমালোচকগন আমার সমালোচনা করেছেন। কিন্তু সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সভাপতির পদে কখনই ছিলেন না, তাহলে জবাবদিহিতার দিক থেকে তার কাছে কি প্রশ্ন থাকবে? কোন প্রশ্ন না থাকাটাই স্বাভাবিক এই কথাটা আমাদের বুঝা উচিত।
নির্বাচন প্রসঙ্গে আসি, গত ১১ই সেপ্টেম্বরের গভীর রাতে Redcow Moran হোটেলে যখন নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করা হয় তখন জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে পরাজয় বরণ করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে সকলের হৃদয় জয় করে নেন। তবে এই বছর ২০২২ এর নির্বাচনে ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার জয় পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু এই জয় তার জন্য খুব সহজ ছিলনা। বিরোধী পক্ষ থেকে নিক্ষেপ করা আক্রমনের স্পর্শকাতর ইস্যু গুলো মোকাবেলা করতে তাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তবে তিনি ও তার নির্বাচনী পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এই স্পর্শকাতর ইস্যু গুলো মোকাবেলা করে সাধারন জনগনকে বুঝিয়ে জনগনের সমর্থন তাদের পক্ষে নিতে পেরেছেন। জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার অত্যন্ত সৌভাগ্যবান কারন তার নির্বাচনী পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মী বাহিনী অত্যন্ত সুসংগঠিত, পরিশ্রমী ও দৃঢ়চেতা। তাদের সকলের সম্মিলিত অক্লান্ত পরিশ্রমে ও ঘামে আজকের এই বিজয়।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও বলতে হয়, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেও ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারের কিছু সমর্থক মিডিয়ার বিরুদ্ধে রং লেপন করেছেন এবং বিভেদকে জিইয়ে রাখতে চেয়েছেন, কিন্তু কেন? তারা কি জনাব ডাঃ সাহেবের পক্ষে কমিউনিটিতে ঐক্য গড়তে চান না? ডাঃ জিন্নুরাইনের নির্বাচন পরবর্তি পথকে মসৃণ না রেখে ঐক্যের পথকে তারা বাধাগ্রস্থ করছেন, কেন?
সত্যি কথা হলো নির্বাচনের সময় সবার আসল চেহারা বেরিয়ে পড়ে, কারও বেশি কারও কম। মানুষের আগে পরের কার্যকলাপে, লেখায় ও কথায় বোঝা যায় কে কার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কেউই নিরপেক্ষ ছিল না। নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই, কারন আমরা মানুষ। আমরা ছোট্ট একটা কমিউনিটিতে বাস করি সবাই সবাইকে চিনি। দিন শেষে আমাদের নীতি নৈতিকতা ঠিক আছে কি না এটাই হচ্ছে আসল কথা।
যাই হোক, এবছর ২০২২ সালের ABAI এর ২য় নির্বাচনে জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার দ্বিতীয়বার জয় লাভ করে প্রমান করেছেন তিনিই যোগ্যতর। যোগ্যতর না হলে জনগন আবার তাকে ভোট দিত না এটাই স্বাভাবিক তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে তার প্রতিদ্বন্দ্বি জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান তিনি মাত্র ৪৯ ভোটে হেরেছেন অর্থাৎ তিনি প্রায় সমান সংখ্যক ভোট পেয়েছেন। দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়ে তার দায়িত্ব এখন আরও অনেক গুন বেড়ে গেলো এবং নির্বাচন কালীন দ্বন্দ্ব বিভেদ থেকে কমিউনিকে তুলে এনে একতাবদ্ধ করাই হবে তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই কাজটা করতে পারলে আগামী তিন বছরে কিছু কাজ তিনি করতে পারবেন।
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা যারা কমিউনিটিতে বাস করেন তারা যদি সবার সাথে ডাঃ জিন্নুরাইনের দিকে এগিয়ে আসেন তবেই কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ করা সহজ হবে এবং অনেক কঠিন কাজ সহজ হয়ে যাবে কারন আমাদের মূল সমস্যা গুলোর সমাধান করতে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সহযোগীতা আমাদের দরকার । অন্যদিকে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান অবশ্যই এগিয়ে আসবেন বলে আমি বিশ্বাস করি কারন গত ১১সালের নির্বাচনের পরও তিনি ডাঃ সাহেবের সাথে অনেক কাজ করেছেন।
প্রত্যক্ষ ভোটে যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তাদের সহযোগীতা করা কমিউনিটির সকলের নৈতিক দায়িত্ব, তা না হলে ৬৩% ভোটার যারা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি অবিচার করা হবে, হবে অন্যায়। মানুষ কিছু পাওয়ার আশায় ভোট দিয়েছেন আর নব-নির্বাচিত কার্যকরী কমিটি যদি সকলের সহযোগীতা না পায় তাহলে তাদের দ্বারা কোন কাজ সফল ভাবে করা সম্ভব নয় এটা আমরা সকলেই জানি। একটা কথা আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, নব-নির্বাচিত কমিটিকে আমরা সহযোগীতা করবো আমাদেরই স্বার্থে, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে। আর আমাদের যাদের সহযোগীতা করার সুযোগ আছে তারা যদি সহযোগীতা না করি তাহলে মানুষ আমাদের একদিন কাঠগড়ায় দাড় করাবে। একে অন্যের গায়ে ট্যাগ লাগানোর কালচার থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে, আমরা অনেক পিছিয়ে পরেছি, এখন আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়। ১১ই সেপ্টেম্বর আমরা পেছনে ফেলে এসেছি, সেইদিনই আমাদের সকল দ্বন্দ্ব শেষ। নির্বাচন নিয়ে আর কোন দ্বন্দ্ব আমরা দেখতে চাই না শুনতেও চাই না।
নির্বাচিত হয়ে জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার বলেছেন, “যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন এবং যারা আমাকে ভোট দেন নাই, আমি আপনাদের সকলের সভাপতি, আমি আপনাদের সকলের সহযোগীতা চাই এবং সকলকে নিয়ে কাজ করতে চাই। ” তিনি সুন্দর কথা বলেছেন। এখন আমরা যদি তাদের সহযোগীতা না করি তাহলে মেয়াদ শেষে তাকে জবাবদিহিমূলক প্রশ্ন করার অধিকার আমাদের থাকবে না।
সব শেষে নির্বাচন কমিশনকে একটা ধন্যবাদ দিতে চাই কারন সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তারা একটা চমৎকার, স্বচ্ছ, সুন্দর নির্বাচন আমাদের উপহার দিয়েছেন। এবারের নির্বাচনের একটা উল্ল্যেখযোগ্য দিক ছিল সকলের সম্পৃক্ততা। প্রত্যেক কাউন্টিতে মানুষ নিজেরাই ভোট দিয়েছেন, আবার নিজেরাই ভোট গুনেছেন। এবং নির্বাচন কমিশন একই দিনে নির্বাচনী ফল ঘোষণা করেছেন, এটা ছিল এক অসাধারন কাজ। আশা রাখি আগামী তিন বছর পর ২০২৫ সালে পরবর্তি নির্বাচন আরও সুন্দর ও উৎসবমুখর হবে ইনশা’আল্লাহ।
আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় এবং কেন্দ্রীয় সংগঠন হচ্ছে আবাই (অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড)। আবাই এর সর্বসাকুল্যে নির্বাচন হয়েছে দুইবার এবং দুইবারই জয়ের বরমাল্য বরণ করার একমাত্র সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হচ্ছে জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার।
সম্প্রতি হয়ে যাওয়া আবাই নির্বাচন ২০২২ এর জয়ের স্বাধ গ্রহণ করা জনাব জিন্নুরাইনের জন্য সহজসাধ্য ছিলনা। অনেক কণ্টকাকীর্ণ পথ মাড়িয়েই তাঁকে বিজয়ের সীমারেখা অতিক্রম করতে হয়েছে।
নির্বাচনের আগে পরিণত হয়েছেলিনে বুলস আইয়ে। ডার্টের ফলার মত চতুর্দিক হতে সমালোচার তীর ক্রমাগত নিক্ষিপ্ত হতে থাকল তাঁকে লক্ষ্য করে। কিন্তু তিনি নিক্ষিপ ফলা বিপক্ষের দিকে উৎক্ষেপণ না করে বরঞ্চ নির্লিপ্তই ছিলেন। কিন্তু জবাব ঠিকই দিয়েছেন, তবে তা নিজের মুখে নয়, জনগণের মুখ দিয়ে। এটাই মনে হয় একজন আদর্শ নেতার বৈশিষ্ট্য।
বহু প্রতীক্ষিত জয়ের বার্তা পেয়েই ঘোষণা করলেন নিজেকে গুটিয়ে নেবার। জানিয়েছেন আর এই পথ বাড়াবেন না, এটাই তাঁর শেষ নির্বাচন। জয়ের স্বাধ নিয়েই হয়ত বিদায় নিতে চেয়েছেন অথবা আর চাইছেন না বিতর্কের কাদা নিজের গায়ে মাখাতে।
অবশ্য আর কত! জীবনে কম পথ তো আর পাড়ি দিলেন না। এক জীবনে কত কি ই বা আর করা সম্ভব, এক জীবনে কত খ্যাতিই বা দরকার! চিকিৎসা বিদ্যা শেষ করে ডাক্তার হলেন। এতেই থেমে থাকেন নি, উত্তিন্ন হন বিসিএস পরীক্ষায়। কিছু সময় লেকচারার হিসেবেও ছিলেন। অর্জন করেন ডক্টর অব এনেস্থেসিয়া, এফসিপিএস ও এমডি ডিগ্রি। একই সাথে এত অর্জন খুব কম মানুষই ঝুলিতে ভরতে পারেন।
নিজের অভিজ্ঞতার ঝুড়িকে আরো সমৃদ্ধ করতে পাড়ি জমান দেশ থেকে বিদেশের মাটিতে। ১৯৯৭ সালে প্রথম পাড়ি জমান সৌদি আরবে আল রাস জেনারেল হাসপাতালে কনসালটেন্ট হিসেবে। সৌদি আরব থেকে ২০০৩ সালে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে এবং শেষ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডেই থিতু হন। আয়ারল্যান্ডে এসেও কলেজ এন্ড এনেস্থেসিওলজিস্ট আয়ারল্যান্ড থেকে এফ. সি. এ. এবং সি & এস ডিগ্রি অর্জন করে নিজের যোগ্যতাকে সমৃদ্ধ করেন। শুধু তাই নয়, হেপাটোবিলিয়ারি এবং লিভার ট্রান্সপ্যান্ট এর উপর ফেলোশিপ অর্জন করেন।
ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি উনার আরেক পরিচয়ও রয়েছে। তিনি একজন সুযোগ্য লেখকও বটে। কবি বললেও ভুল হবে না। উনার লেখা বেশ কিছু কবিতার বই রয়েছে। যিনি কথা বলেন কবিতার ভাষায়, ভাব প্রকাশ করেন ছন্দে ছন্দে।
একুশে মেলা ২০২২ এ প্রকাশিত হয় জিন্নুরাইন জায়গীরদারের দুটি বই
এত প্রাপ্তি যার, তিনি কেন রাজনীতিতে? এ প্রশ্ন হয়ত অনেকের। যেসব প্রাপ্তি আলোচনা করা হল, তা হয়ত নিজেকে সমৃদ্ধ করতে, কিন্তু কমিউনিটিকে ও কমিউনিটির মানুষকে সমৃদ্ধ করতে এবং নিজের সেবাকে বৃহদাকারে ছড়িয়ে দিতেই হয়ত জনাব জিন্নুরাইনের এই পথে গমন। কমিউনিটির সেবাকে ঠিক রাজনীতি বলা যায়না। কমিউনিটির মানুষের ম্যান্ডেট নিয়ে কমিউনিটিকে নেতৃত্ব দিতেই তাঁর আগমন এবং মানুষ হয়ত আপাদমস্তক সমৃদ্ধ একজনকেই নেতৃত্বে চেয়েছে বিধায় হয়ত তিনি আবারও দ্বিতীয়বারের মত নেতৃত্বে।
নিজের উপর যথেষ্ট পরিমাণ আত্মবিশ্বাস না থাকলে অনেক প্রতিকূল অবস্থায়ও দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচনের পথ মাড়াতেন না। ডাক্তার সাহেব বাগ্নিতায় এবং লেখায় যথেষ্ট পারদর্শী। চাইলে সব সমালোচনার উত্তর জিভ দিয়ে অথবা কলমের মাধ্যমে দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে দিয়েছেন ব্যালটের মাধ্যমে। এতেই একজন নেতার বিজ্ঞতার পরিচয় মিলে।
স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথে ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার
আয়ারল্যান্ডবাসী এখন আশা করে একজন বিজ্ঞ নেতা থেকে যোগ্য নেতৃত্ব। মানুষ যে বিশ্বাস ও আস্থা রেখে জনাব জিন্নুরাইনকে সভাপতি পদে অলংকৃত করেছে, সে বিশ্বাস ও আস্থা যাতে ফিরিয়ে আনতে পারেন সে আশাই আয়ারল্যান্ডবাসী করে।
সব সমালোচনার জবাব যেমন ব্যলটের মাধ্যমে দিয়েছেন, নিজের কাজের মাধ্যমেও তা ফুটিয়ে তুলবেন।
অভিনন্দন হে নন্দিত নেতা। শুভ কামনা রইল নতুন পথচলার। নতুন সূর্য উদিত হোক আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে। তৈরি হোক সম্প্রীতির মেলবন্ধন।
আইরিশ বাংলা টাইমস ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে জিন্নুরাইন জাইগীরদার
প্রতীক্ষার প্রহর গুছল। উদিত হল নতুন সূর্য। সম্পন্ন হল বহুল প্রতীক্ষিত আবাই নির্বাচন। আবাই এর কাণ্ডারি নির্বাচিত হলেন জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার। তিনি দ্বিতীয় বারের মত জয়ের বরমাল্য বরণ করলেন।
গতকাল ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২২ অনেক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হল আয়ারল্যান্ডের সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধিক আকাঙ্ক্ষিত অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের নির্বাচন। নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মত সভাপতি নির্বাচিত হন জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার। তিনি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আরেক জনপ্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বী জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে জয়ী হন ৪৯ ভোটে। জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার পান ১,২৬১ ভোট এবং উনার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর পান ১,২১২ ভোট।
সহ সভাপতি পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে জয়ী হন ৪ জন। তন্মদ্ধে জনাব আজিজুর রহমান (মাসুদ) পান সর্বোচ্চ ১,২১৯ ভোট, জনাব শাহীন রেজা পান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১,১৩১ ভোট, জনাব মনিরুল ইসলাম (মনির) ১,১১৪ ভোট এবং কাজী শাহ্ আলম ১,০৪৯ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন।
এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়ার রেকর্ড যার থলেতে, তিনি হচ্ছে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জনাব আনোয়ারুল হক (আনোয়ার)। তিনি পান ১,৭১২ ভোট এবং উনার প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ সোলায়মান মিয়া রনি পান ৬০৬ ভোট।
নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দিন রাত্রে ডাবলিনের রেড কাউ হোটেল থেকে সর্বশেষ ফলাফল ঘোষণা করে। আবাই সাধারণ নির্বাচন ২০২২ এর সম্পূর্ণ ফলাফল নিম্নে দেয়া হলঃ
দরজায় কড়া নাড়ছে অল বাংলাদেশী এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর সাধারণ নির্বাচন ২০২২। আগামী ১১ই সেপ্টেম্বর সমগ্র আয়ারল্যান্ডব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে। আইরিশ বাংলা টাইমস নির্বাচন কমিশনের সাথে যোগাযোগ করে ভোটকেন্দ্রের স্থান ও ঠিকানাসমূহ সংগ্রহ করে।
সর্বমোট ১৯ টি ভোটকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন আবাই এর নির্বাচন। তন্মদ্ধে ৩ টি ভ্রাম্যমাণ ভোটকেন্দ্র থাকবে, যেগুলা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ভোট সংগ্রহ করবে। কিছু ক্ষেত্রে কয়েকটি কাউন্টি মিলিয়ে থাকবে একটি কেন্দ্র, কিন্তু ডাবলিনেই থাকবে ৪ টি কেন্দ্র। ভোটার সংখ্যা বিবেচনা করে এরূপ কেন্দ্র বণ্টন করা হয়।
ভোটকেন্দ্রসমূহ হচ্ছেঃ
Dublin City Centre
68/73 Caple Street
Dublin 1, D01AR29
Dublin City Centre Area covers: Dublin 1, Dublin 3, Dublin5, Dublin 7, Dublin 9, Dublin 11, Dublin 13 and Dublin 17
Dublin 14
Islamic Cultural Centre
Clonskeagh Masjid
Dublin 14
Dublin 14 Area covers: Dublin 2, Dublin 4, Dublin 8, Dublin 10, Dublin 12, Dublin 14, Dublin 16, Dublin 18, Blackrock, Dun Laoghaire, Bray and Wicklow.
Adamstown
Adamstown community centre
Station Road
Dublin 22, K78 E7F8
Swords Area Covers: County Dublin, Louth, Meath, Balbriggan, Drogheda, Ashbourne, Rush, Lusk, Skerrys, Meath, Malahide, Dundalk and Louth.
Naas
Shapna Indian Restaurant
Abbey Street
Naas Area Covers: Kildare, Laois, Offaly, Newbridge, Maynooth, Celbridge, Lexlip, Clane, Kilkullen, Kill, kells and Loise. Mobile Centre: Portlaise (10:00am – 11:00am), Tullamore (12:00pm – 14:00pm) Contact: Ahmed Nazir – 0860329030
Carlow
ICCC Carlow Shopping Centre
Carlow Area Covers: Carlow, Wexford, Enniscorthy, Gory Mobile Centre:Enniscorthy (12:00pm – 13:00pm) Contact: Titu Miah – 062341144
Kilkenny
St Canices Neighbourhood Hall
Butt’s, Kilkenny
R95 VK7X
Kilkenny Area Covers:Entire county Kilkenny
Waterford
Café Goa Indian Restaurant
36 Merchants Quay,
X91 HN36
Waterford Area Covers: Entire county Waterford
Clonmel Planet Spice
8 Mary St, Oldbridge,
Clonmel, E91 P6X7
Clonmel Area Covers: Entire county Tipperary
Limerick
Student Campus
17-19 Patrick Street
V94 PX46
Limerick Area Covers: Entire county Limerick
Cork
ICOT College
11 Drinan St
Ballintemple
T12 VK28
Cork Area Covers: Entire county Cork
Cork Mobile Centre: Kamruzzaman: 0892322663
Ennis
Partnership NetworkPPN, Clon Road Business Park
(Besides the old mosque)
Clon Road
Cappahard, Ennis
Ennis Area Covers: Entire county Clare, Shannon
Killarney
The Gleneagle Hotel
Muckross Road
Killarney, V93 V6WF
Killarney Area Covers: Kerry, Dingle and Tralee (ট্রালির কিছু ভোটার নিবন্ধন কিলারনিতে হয়েছে)
Tralee
Manor West Hotel
V94 2YC59
Tralee Area Covers:Tralee
Galway
Knocknacarra Community Centre
104 Liosmor Gaillimh
H91 R6PW
Galway Area Covers: Galway and Westmeath Mobile Centre: Roscommon, Athlone & Westmeath
Castlebar
Castlebar Area Covers: Mayo, Roscommon, Leitrim and Sligo Mobile Centre:Carrick on Shannon (11:00am – 12:00pm), Sligo (13:00pm – 14:00pm), Mayo (15:00 – 16:00)
Monaghan
St Josephs Pastoral Centre
Broad Road
H18 VK77
Area Covers: Monaghan, Cavan & Navan
ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত কোন আপডেট পেলে কিংবা পরিবর্তন হলে তা তৎক্ষণাৎ আইরিশ বাংলা টাইমসের ফেইসবুক পেজ থেকে জানিয়ে দেয়া হবে। ভোটকেন্দ্র খুঁজে পেতে সমস্যা সমস্যা হলে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীদের সাথে যোগাযোগ করে নিতে পারেন।
আইরিশ বাংলা টাইমস হেল্প ডেস্কঃভোট কেন্দ্র সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পেতে ”আইরিশ বাংলা টাইমস” টিম সহযোগিতার চেষ্টা করবে। যার জন্য আইরিশ বাংলা টাইমসের ফেইসবুক পেইজে ইনবক্স করুন।https://www.facebook.com/TheIrishBanglaTimes
আপনার যদি ভোটাধিকার থাকে, এই আলোচনাটা পড়া জরুরী। সামনে ইলেকশন, দেশে ও আমাদের দ্বিতীয় দেশে। সাধারণ ভাবে যদি বলি, কখনও ভেবে দেখেছেন, ভোট এলে কাকে ভোট দিবেন, ভোটই বা কেন দিবেন? আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, সীমাহীন প্রোপাগান্ডার চাপে অনেকে, এমন কি তথাকথিত শিক্ষিতরাও ভুলেই গেছি, ভোট কেন দিতে হয়। ভোট দেয়া কেন জরুরী। আপনি জানেন কি, ভোট দেয়ার সাথে আপনার স্বাধীনতার সম্পর্ক আছে? অল্প কথায় বলি, স্বাধীনতা হল আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার। আপনি কিভাবে চলবেন, কি করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার মৌলিক অধিকার। কিন্তু একটা সমাজ বা রাষ্ট্র ব্যবস্থায়, সকলে মিলেমিশে একত্রে ভালভাবে থাকতে চাইলে কিছু আইন, কানুন ও রেওয়াজ মেনে চলতে হয়। সেটা নির্দিষ্ট করার জন্য আলোচনা দরকার, বিতর্ক দরকার। তাই না? কিন্তু সবাই যদি সেটা করতে যাই তাহলে তো কারও কথাই শোনা হবে না। তাই আমরা জনপ্রতিনিধি পাঠাই। অর্থাৎ, সমাজের সকলে মিলে সমাজের আকাঙ্ক্ষা, সাধারণের মেধা ও মননশীলতার সাথে মিলে এমন একজন প্রতিনিধি পাঠায়, যে সকলের পক্ষ হয়ে আলোচনা করে, বিতর্ক করে সকলের জন্য আইন, কানুন ও রেওয়াজ নির্ধারণ করে। এটা হল ওয়েস্ট মিনিস্টার আদলের গণতন্ত্র। (এরচেয়ে সংক্ষেপে ও পরিষ্কার ভাবে কেউ যদি ব্যাখ্যা করতে পারেন, জানাবেন আপডেট করে দিব।)। অর্থাৎ আপনি স্বাধীন ও জন্মগত সার্বভৌম উপভোগ করেন তখনই যখন সমষ্টিগত ভাবে আপনার আকাঙ্ক্ষা, মেধা ও মননশীলতার কেউ আপনার প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমরা প্রকৃত গণতন্ত্রের প্রয়োগ কমই দেখতে পাই। এর প্রথম প্রধান কারণ, অশিক্ষা, দুর্বল শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষায় নৈতিকতার অভাব।
কিন্তু সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, আমরা একটা উন্নত বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশে থাকার সুযোগ পাচ্ছি। উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছি, কেউ পড়ছি, কেউ পড়াচ্ছি। তাই গণতন্ত্র চর্চার অবাধ সুযোগ আমাদের হাতে। আমরা স্বাধীনতার প্রকৃত মানে উপভোগ করতে পারছি। আর তাই ভোট প্রদানের পক্ষে সকলে আহবান জানাচ্ছি। এখন আসি আবাই নির্বাচন নিয়ে দুটি কথা নিয়ে। আমার দেশের কেউ কেউ ভোট প্রদানে অনীহা দেখাচ্ছেন। অনেকে ভোটার হওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেন নি। যদিও আবাই শতভাগ সমাজ সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান, কিন্তু ভোট প্রদান করে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করাটাই হবে সকলের জন্য শোভন।
ভোট কাকে দিবেন?
অনেক প্রার্থীই ভোট চেয়েছেন। সুন্দর ভাবে, নানা ভাষায় বা ভঙ্গীতে। প্রায় সবাই দোয়া ও ভোট চেয়েছেন। আমি সকলকেই বিনয়ের সাথে জানতে চেয়েছি, আপনাকে কেন ভোট দেব? অনেকেই সুন্দর উত্তর দিয়েছেন। সকলের জন্য শুভকামনা রইলো।
আবাই কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয়। এটা সামাজিক সংগঠন, আপনার আমার সকলের সংগঠন। যেহেতু এটি রাজনৈতিক সংগঠন নয়, তাই ভোট প্রদানে আমাদের ভিন্ন ভাবে ভাবতে হবে। কারণ নির্বাচিতরা এখানে আইন করবে না, বিতর্কও করবে না। তাহলে করবে কি? অনেকের মাঝে ভুল একটা ধারনা রয়েছে যে, আবাইএর কাজ বোধহয় অনুষ্ঠান আয়োজন করা। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি, যখন আবাই সুপ্ত অবস্থায় ছিল, এখানে বিশাল বৈশাখী মেলা হয়েছে, বই মেলা হয়েছে, ঈদ পুনর্মিলনী হয়েছে। বাংলাদেশে জাতিয় অনুষ্ঠান হয়েছে। তারমানে এসব আবাই ছাড়াই হয়। তাহলে আবাই এর প্রয়োজন কেন। আসলে, যেহেতু আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই, অনেক কাজই সামাজিক ঐক্যের মাধ্যমে করা সহজ। যেমন, এখানে চেম্বার অব কমার্স করা, দূতাবাস স্থাপনে সকলে মিলে আবেদন করা, দেন দরবার করা। কোন বিপদে সহজে ঐক্য বধ্য হওয়ার একটা পূর্বনির্ধারিত জায়গা। তাই সেই যায়গায় যারা জনসেবা প্রদান করতে পারবেন, তেমন যোগ্য মানুষ দরকার।
অনেকেই বলছেন, এমন মানুষ তারা চান, যেন তাদেরকে সবসময় পাওয়া যায়। এই বলা নির্দেশ করে, আমাদের সচেতনতার অভাব কত তীব্র। আপনি, আপনার প্রতিনিধিত্ব করতে সংগঠনে পাঠাতে চাচ্ছেন কর্মহীন ব্যক্তিদের কে। অথচ হওয়া উচিৎ, আপনি আপনার ওকালতি করতে পাঠাবেন এমন সকল উকিল যারা আপনার ওকালতি করতে পারবে।
একটা উদাহরণ দিয়ে বলি, একজন এসে বললেন তিনি আই-টি বিষয়ে কাজ করতে চান। কিন্তু আবাই এ আই-টি ‘র কি কাজ আছে? তারা ভেবেছেনে ওয়েব সাইট ঠিক করবেন, ইত্যাদি। সেটা খুব ভাল উদ্যোগ। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন এমন এক আই-টি প্রতিনিধি যিনি আইরিশ শিক্ষামন্ত্রী ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বলতে পারবেন, দেখ আমি বাংলাদেশে এইচ-ই-এ-নেট এর আদলে একটা প্রতিষ্ঠান গড়তে চাই, তুমি কি সহায়তা করতে পারো? কিন্তু এই আই-টি প্রতিনিধির সারাদিন সময় আছে কি না, ডাক দিলেই আসেন কি না, সেটা হয়ে গেছে আমাদের কিছু মানুষের কাছে মুখ্য।
আই-টি একটি উদাহরণ মাত্র। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের প্রতিনিধির হওয়া চাই এমন চৌকস, যিনি এই দেশে আমার প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন, আপনার প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। তাই যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিন। ভোট প্রদান আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার, আর না প্রদান আপনার আমানতের খিয়ানত। আপনার ভোট আপনি দিবেন, দেখে, শুনে, বুঝে কেবল মাত্র আপনার প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে এমন যোগ্য লোককেই দিবেন।
লেখক পরিচিতি:
ড. নাসিম মাহমুদ বর্তমানে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ফরচুন-ফাইভ হান্ড্রেড পাঁচটি কোম্পানির একটি ইউনাইটেডহেল্থ গ্রুপের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শাখার প্রিন্সিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং ডাবলিনের ন্যাশনাল কলেজ অব অ্যায়ারল্যান্ড (এনসিআই) এর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাডজাঙ্কট ফ্যাকাল্টি মেম্বার।
ডেস্ক রিপোর্ট: আয়ারল্যান্ডের জ্বালানি কোম্পানী BORD GÁIS বলেছে শিগ্রই দেশের গড় বিদ্যুৎ বিল ৩৪% বাড়বে এবং গ্যাসের দাম বাড়বে ৩৯%। ফলে গড় আবাসিক বিদ্যুৎ বিল প্রতি মাসে €৪৮.২৫ বৃদ্ধি পাবে এবং গড় আবাসিক গ্যাস বিল প্রতি মাসে €৪৩.৮০ বৃদ্ধি পাবে।
আইরিশ জালানি কোম্পানী BORD GÁIS গতকাল ঘোষণা করেছে যে এটি আগামী ২রা অক্টোবর ২০২২ থেকে তার বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৪% এবং গ্যাসের দাম ৩৯% বৃদ্ধি করবে৷
এর মানে এখন থেকে গড় আবাসিক বিদ্যুৎ বিল প্রতি মাসে €৪৮.২৫ বৃদ্ধি পাবে এবং গড় আবাসিক গ্যাস বিল প্রতি মাসে €৪৩.৮০ বৃদ্ধি পাবে।
জ্বালানি সংস্থাটি দাম বৃদ্ধির জন্য রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনকে দায়ী করছে এছাড়া জ্বালানি মজুদের স্তর উল্লেখযোগ্য হারে নিচে নেমে যাওয়াও এবং পাইকারি বাজারে অস্থিরতা বৃদ্ধিকে দায়ী করেছে।
এর আগে এই বছর এপ্রিল মাসে Bord Gáis-এর গড় বিদ্যুৎ বিল ২৭% বেড়েছে এবং গড় গ্যাস বিল বেড়েছে ৩৯%।
তবে Bord Gáis এই জ্বালানি সংকটের সময় তাদের অপারেটিং মুনাফার ১০% জ্বালানি সহায়তা তহবিলে অনুদান দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এদিকে জুলাইয়ের শেষের দিকে Bord Gáis-এর মূল কোম্পানী Centrica একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এবং এতে বলা হয়েছে যে এই বছরের প্রথমার্ধে Bord Gáis-এর পরিচালন মুনাফা ছিল ৩৮ মিলিয়ন, যা ৭৪% বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোম্পানিটি বলেছে যে কোম্পানীর পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধির কারণ হল কাউন্টি কর্কের হোয়াইটগেটে অবস্থিত একটি ৪৪৫ মেগাওয়াট গ্যাস চালিত পাওয়ার স্টেশনটি এখন স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে, এটি গতবছর ২০২১ সালের বেশিরভাগ সময় উৎপাদন বন্ধ ছিল।
বোর্ড গাইস এনার্জির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভ কিরওয়ান বলেছেন:
“যদিও বর্তমানে জ্বালানি সংকটের কোনো নজির নেই তবে সারা বিশ্বে ভোক্তা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো জীবনযাত্রার ব্যয়ে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দাম বাড়ানোর জন্য আমরা গভীরভাবে অনুতপ্ত কিন্তু পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারনে আমাদের কোন বিকল্প নেই।”
“গ্রাহকদের উপর চাপ কমাতে আমাদের জ্বালানির দাম যতটা সম্ভব বাজারে সাথে প্রতিযোগিতামূলক কম রাখতে আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
আইরিশ বাংলা টাইমস- ওয়েব ডেস্ক রিপোর্টঃ
Bangladesh Sports Association Of Ireland কতৃক আয়োজিত “7 a side cricket tournament 2022 অনুষ্ঠিত হয়েগেল গত ২৩ আগষ্ট মঙ্গলবার। ফাইনাল ম্যাচটি ছিলো তুমুল উত্তেজনাপুর্ণ। দুটি দলের মধ্যে হাড্ডাহড্ডি লড়াই হয়। কাউন্টি ডাবলিনের ক্রিকেটাররা কাউন্টি কিল্ডার’কে ৯ রানে হারিয়ে “BSAI ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২২” এর চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি জয় করে নেয়।
গত ২৩ আগষ্ট মঙ্গলবার ২০২২ আয়ারল্যান্ডের রাজধানীডাবলিন শহরের টয়মন পার্ক লিমিকন রোড়ে (12 Limekiln Rd, Tymon Park, Dublin 12) ক্লোনডালকিন ক্রিকেট ক্লাবের মাঠে বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড BSAI এর উদ্যোগ এই “7 a side cricket tournament 2022” অনুষ্ঠিত হয়।
টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাউথ ডাবলিনের সিটি মেয়র Emma Murphy, উপস্থিত ছিলেন লোকাল কাউন্সিলর Charlie O’Connor.
প্রতিবছর প্রবাসে বসবাসকারী খেলাধুলা প্রিয় ক্রীড়াবিদরা BSAI এর আয়োজনে বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নিতে অপেক্ষায় থাকেন তারই ধারাবাহিকতায় এবছর অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো “BSAI এর ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২২”।
এই 7a side ক্রিকেট টুর্নামেন্টে প্রত্যেকে দলে সাতজন খেলোয়াড় খেলায় অংশগ্রহন করে এবং সারা আয়ারল্যান্ড থেকে সর্বমোট ৮টি টীম অংশগ্রহন করে। অংশগ্রহনকারী ৮টি টীম হচ্ছে :
১. ডাবলিন-১,
২. কাউন্টি ডাবলিন-২
৩. কাউন্টি কিল্ডার,
৪. কাউন্টি ওয়েক্সফোর্ড,
৫. কাউন্টি লিমেরিক,
৬. কাউন্টি গালওয়ে,
৭. কর্ক-১
৮. কাউন্টি কর্ক-২
এই ৮ টি টীম প্রথমে রাউন্ড রবিনলীগ পদ্ধতিতে নকআউট খেলায় অংশগ্রহন করে। পরবর্তীতে সেমিফাইনাল খেলা শেষে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনালে ডাবলিন এবং কিল্ডার মুখামুখি হয়। ফাইনাল খেলায় ডাবলিন প্রথমে ব্যাটিং নেমে নির্ধারিত ৫ ওভারে ৯২ রান সংগ্রহ করে। জয়ের জন্য রানের ৯৩ টার্গেট তাড়া করতে নেমে কাউন্টি কিল্ডার ৫ উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান সংগ্রহ করে।
“BSAI এর ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২২”: আম্পায়ার ছিলেন:১. আব্দুল মান্নান মান ২. মনিরুজ্জামান মানিক
৩. মোঃ সলিম মিয়া।
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হয়েছেন : আজহার (ডাবলিন টিম)
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ : রুবেল (কিল্ডার টিম)। সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন কিল্ডার টিম থেকে তারেক জশ।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হলেন ডাবলিন টিম থেকে আজহার। প্লেয়ার অব দ্যা টুর্নামেন্ট হয়েছেন কিল্ডার টিম থেকে তারেক জশ। টুর্নমেন্টে রানার্সআপ হয়েছেকিল্ডার টিম এবং চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা ২০২২ জয় করেছে ডাবলিন টিম।
BSAI কতৃক আয়োজিত এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টি স্পন্সর করেন “আলী-বাবা” গ্রুপ এন্ড কোম্পানীর স্বত্বাধিকারী জনাব ইনজামামুল হক জুয়েল। জনাব ইনজামামুল হক জুয়েল এবছর ১১ই সেপ্টেম্বর ABAI এর নির্বাচনে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
ক্রিকেট টুর্নামেন্টটি উপভোগ করার জন্য আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী ক্রীড়ামোদী সহ বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত গন্যমান্য ব্যাক্তি বর্গ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। যেহেতু এবছর ABAI এর নির্বাচনী বছর এবং আগামী ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তাই টুর্নামেন্টের মাঠে নির্বাচনী প্রার্থীদের ভোট প্রচারনায় দেখা গেছে।
ফাইনাল খেলা শেষে বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (বি, এস, এ, আই) এর সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবীবের উপস্থাপনায় পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানটি হয়। এই জাকজমকপূর্ণ পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে টুর্নামেন্টের আম্পায়ার, বেস্ট বোলার, বেস্ট ব্যাটসম্যান, চ্যাম্পিয়ন ও রার্নাস আপ দলকে ট্রফি প্রদান করা হয়।
টুর্নামেন্টে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড BSAI এর সভাপতি জনাব চুন্নু মাতবার এবং BSAI এর Chief Advisor জনাব মুহম্মদ মোস্তফা।
BSAI এর প্রেসিডেন্ট জনাব চুন্নু মাতবর সকল টিম ও খেলোয়ারদের উদ্দ্যেশে বলেন, আজকের এই সুন্দর ও সফল বন্ধুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট দেখে আমরা BSAI অত্যন্ত আনন্দিত এবং এইরকম ভাবে সকলের সহযোগীতা থাকলে ভবিষ্যতে আমরা প্রতিবছর আরও বেশী টুর্নামেন্টের আয়োজন অব্যাহত রাখবো।
টুর্নামেন্টে আরও উপস্থিত ছিলেন BSAI এর সহ- সভাপতি জনাব আবু বিজয়, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব কামাল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ জনাব আলমগীর হোসেন, কার্যকরী সদস্য জনাব আবদুল মান্নান (মান), আইটি সম্পাদক সদস্য জনাব মশিউর রহমান, কার্যকরী সদস্য জনাব আওলাদ হোসেন সোহেল। যুগ্ন সাধারন সম্পাদক জনাব এ, কে, আজাদ এবং টুনামেন্টের স্পন্সের্ ইমজামামুল হক জুয়েল সহ আয়রল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টির বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।
ভোটার রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা করেচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত বিজ্ঞপ্তি নিম্নরূপঃ
ভোটার নিবন্ধনের সময়সীমা ১৫ই আগস্ট ২০২২ থেকে বর্ধিত করে ২০শে আগস্ট ২০২২ করা হল। সম্মানিত প্রার্থীদের অনুরোধের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টা এবং নির্বাচন কমিশনারের যৌথ সিদ্ধান্তে সময়সীমা বর্ধন ও নতুন সময়সীমার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
ভোটার নিবন্ধনের বর্ধিত শেষ তারিখ ২০শে আগস্ট রাত ১২:০০।
– www.abai.ie ভোটার নিবন্ধনের ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইট এর প্রথম পাতার ফর্মটিই রেজিস্ট্রেশন এর পাতা।
– যারা একবার রেজিস্ট্রেশন করেছেন দ্বিতীয়বার করার প্রয়োজন নেই। ইমেইল কনফার্মেশন ইনবক্সে না পেলে Junk ইমেইলে দেখুন।
– প্রার্থীগণ যার যার এলাকার ভোটারদের সাথে যোগাযোগ করে অনিবন্ধিতদের নিবন্ধনের আওতায় আনার অনুরোধ জানানো হল। কোন ভোটারকে রেজিস্ট্রেশন করার আগে জিজ্ঞেস করে নিন উক্ত ভোটার পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করেছে কিনা। কোন ভোটারের সম্মতি ছাড়া কাউকে রেজিস্ট্রেশন করবেন না।
– ভোট রেজিস্ট্রেশনে সঠিক তথ্য ব্যাবহার করুন। রেজিস্ট্রেশনে প্রথম এবং শেষ নাম, পোস্ট কোড, কাউন্টির তথ্য সঠিক ভাবে যেন দেয়া হয়। অন্যথায় উক্ত ভোটার যাচাই বাছাইয়ে বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকবে।
– ভোটার নিবন্ধন ২০শে আগস্ট এর মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। সময়সীমা আর বর্ধন করা হবে না।
দরজায় কড়া নাড়ছে অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর সাধারণ নির্বাচন। ইতিমধ্যে অনেকেই ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। আপনারা হয়ত ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন কাকে আপনার মূল্যবান ভোটটি প্রদান করবেন, আবার অনেকেই হয়ত সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন যে কাকে ভোট প্রদান করবেন। এই লেখাটি হয়তবা আপনাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সহায়তা করবে।
মনে রাখবেন, একটা সংগঠন একটা উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়, আর সংগঠনের উদ্দেশ্য পূরণে যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন তাঁকেই আপনার মূল্যবান ভোট প্রদান করতে সমীচীন বলে মনে করি। সগঠনের উদ্দেশ্য কি এবং তা পূরণে কে বেশি যোগ্য তাঁকেই নেতৃত্বের দায়ভার তুলে দেয়াই হচ্ছে ভোটার হিসেবে আপনার দায়িত্ব।
এই নির্বাচন সমগ্র আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশীদের নির্বাচন। যে প্রার্থী সমগ্র আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটির দেখভাল করতে পারবে এবং সকলের কল্যাণে কাজ করতে পারবে তাঁকেই নির্বাচন করুন। আপনি যে অঞ্চলের ভোটারই হউন না কেন, যোগ্য প্রার্থী যদি আপনার অঞ্চলের নাও হয় তাহলে তাঁকেই ভোট দিন। মনে রাখবেন, যে যোগ্য সে সবার কল্যাণেই কাজ করতে সচেষ্ট থাকবে।
ভোট দেয়ার সময় এটা ভাববেন না যে, প্রার্থী বাংলাদেশে কোন অঞ্চল থেকে এসেছে, আয়ারল্যান্ডে সে কোন অঞ্চলে থাকে, সে কোন ধর্মের, কোন বর্ণের বা কোন জাতের। শুধু দেখবেন কোন প্রার্থী নেতা হবার জন্য বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন। এমনকি কোন প্রার্থী আপনার ভাই, বন্ধু, আত্মীয় কিংবা প্রতিবেশী হলেও যদি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে কম যোগ্যতাসম্পন্ন মনে করেন তাহলে তাঁকে ভোট প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন।
কমিউনিটির সেবার জন্যই এই সংগঠন এবং যারা এই সংগঠনের নেতৃত্বে আসবেন তাঁরা ব্রত হবেন কমিউনিটির সেবায়। যদি যোগ্য নেতৃত্ব আসে তাহলে, কমিউনিটি উপকৃত হবে, তা না হলে সংগঠনের উদ্দেশ্যই হবে বৃথা। সুতরাং একটি যোগ্য নেতৃত্ব গঠনে সহায়তা করার মাধ্যমে আপনিও পরোক্ষভাবে কমিউনিটির সেবার অংশীদার হবেন।
কোন প্রার্থী ভোট দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসলে আপনি আগে জেনে নিন ওই প্রার্থীর নির্বাচনী ইশতিহার কি! নির্বাচিত হয়ে ওই প্রার্থী সমাজকল্যাণে কি কি করতে ব্রত থাকবেন তা জেনে নিন। আপনার নিজের কোন দাবি, প্রশ্ন কিংবা পরামর্শ থাকলে তাও করতে পারেন। প্রয়োজনে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত প্রোফাইল যাচাই বাছাই করে দেখুন।
ডিঙ্গেলে যাত্রা শুরু। এর পর থেকে ২০ বছরেরও অধিক সময় ধরে মিটিয়ে যাচ্ছে আইসক্রিম প্রেমীদের তৃষ্ণা। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে হাতে তৈরি আইসক্রিমটি বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের বিখ্যাত আইসক্রিম ব্র্যান্ডের একটা।
মর্ফি’স আইসক্রিমের বিশেষত্ব হচ্ছে, তারা কোন কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করে না। মর্ফি’স কোন কৃতিম রং, ফ্লেভার অথবা গুঁড়া দুধ ব্যবহার করেনা। তারা ফ্রেশ দুধ, ফ্রেশ ক্রিম, ফ্রি রেঞ্জ ডিম ও অর্গানিক চিনি ব্যবহার করে। এমনকি তারা সামদ্রিক লবণ ও পানিও ব্যবহার করে আইসক্রিম তৈরিতে।
ডিঙ্গেল এ মর্ফি’স এর উৎপত্তি হলেও তারা এখন আয়ারল্যান্ডের অনেক জায়গায়ই ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে ডিঙ্গেল ছাড়াও ডাবলিন, কিলারনি, গলওয়ে, কিলডেয়ার ভিলেজ এবং অস্থায়ী পপ আপ লোকেশনে সিজন অনুযায়ী থাকে।
তাদের বিভিন্ন ফ্লেভারের আইসক্রিম রয়েছে। উত্তপ্ত গরমে কোন ফ্লেভারটি আপনার তৃষ্ণা মেটায়?
লোকেশনঃ
Dingle: Strand Street, Dingle, Kerry
Dublin: 27 Wicklow St, Dublin 2
Killarney: 37 Main Street, Killarney
Galway: 12 High Street, Galway
Kildare: Kildare Village Shopping Outlet
Pop Up Locations: Various locations in Summer time
আসন্ন ‘’অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’’ এর সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের মধ্যকার ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ভোটার নিবন্ধনের শেষ দিন ১৫ই আগস্ট ২০২২ ধার্য করা হয়েছে।
নির্বাচনের আগে নিবন্ধিত ভোটার তালিকা যাচাই বাছাই, অঞ্চলভেদে তালিকা পৃথকীকরণ ও ভোটের দিনের জন্য তালিকা প্রস্তুতিকরণের সময় বিবেচনা করে ১৫ ই আগস্ট ভোটার রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন ধার্য করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের বার্তাঃ
– ভোট প্রদানে ইচ্ছুক সবাইকে ভোটার নিবন্ধনের আওতায় আসতে হবে। একই ব্যক্তির একাধিক ভোট দেয়া থেকে বিরত রাখতে শুধুমাত্র নিবন্ধিত ব্যাক্তির ভোটই গ্রহণ করা হবে।
– ভোটার তালিকা থেকে যাতে করে কারো নাম বাদ না পড়ে সেজন্য নির্ধারিত সময়ের আগেই সকল অনিবন্ধিত ভোটারদেরকে নিবন্ধনের আওতায় আনার অনুরোধ জানানো হল।
– কোন ভোটার যদি কখনো নিবন্ধন করে থাকেন তাহলে তাঁকে আর নিবন্ধন করতে হবে না। ভোট রেজিস্ট্রেশন কনফার্মেশন ইমেইল ইনবক্সে না পেয়ে থাকলে, JUNK ইমেইলে দেখতে পারেন।
– যেসব ভোটার নিবন্ধনের সময়কার ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন, তাঁদেরকে নির্বাচন কমিশনের সাথে যোগাযোগ করে বর্তমান ঠিকানা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা গেল। অন্যথায় প্রদত্ত ঠিকানা অনুযায়ী ভোটার তালিকায় নাম আসবে।
– প্রার্থীদের কাছে অনুরোধ যে সবাই যেন তাঁদের নিকট প্রেরিত ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ করেন। উনাদের জানামতে তালিকায় যদি কোন ভোটার নিবন্ধিত না হয়ে থাকেন, তাহলে উক্ত ভোটারদের নিকট ভোটার নিবন্ধনের জন্য অনুরোধ জানান। প্রদত্ত তালিকায় যদি একই ব্যক্তির একাধিক রেজিস্ট্রেশন, ভিন্ন কাউন্টি বা দেশ থেকে কেউ রেজিস্ট্রেশন করছে কিনা ইত্যাদি অসামঞ্জস্যতার বিষয়ে যেন নির্বাচন কমিশনকে তৎক্ষণাৎ অবগত করেন।
– প্রার্থীগণের যে কোন অভিযোগ, উপদেশ, পরামর্শ এবং কৌতূহল নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি জানানোর অনুরোধ জানানো হল।
নির্বাচন কমিশন ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা, ভোটকেন্দ্রের স্থান নির্ধারণ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সাথে বৈঠক, প্রার্থী ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সাথে বৈঠকের বিষয়ে কাজ করতেছে। ধাপে ধাপে নির্বাচন কমিশন সেসব বার্তা প্রদান করবে।
একটি সুষ্ঠু, সফল ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
BSAI অনুর্ধ্ব ১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২২ শিরোপা জয় লিমেরিকের এবং ডাবলিন রানার্সআপ।
গত ১৯শে জুলাই মঙ্গলবার ২০২২ Bangladesh Sports Association of Ireland এর বাৎসরিক অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয় গলওয়েতে। গতকাল গলওয়ের Astroturf Pitch Oranmore, Co. Galway এই টুর্নামেন্ট শুরু হয়বেলা ১২টায় এবং দিনভর খেলা চলে।
টুর্নামেন্টে মোট ৮টি টিম অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত County Carlow team টুর্নামেন্টে অংশ নেয় নাই। বাকি ৭টি টিমের মধ্যে Dublin-1, Dublin-2, County Galway, County Mayo, County Kerry, County Limerick এবং County Cork.
সেমিফাইনালে Galway কে হারিয়ে Dublin-1 এবং Kerry কে হারিয়ে Limerick ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।
ফাইনাল ম্যাচে শুরু হয় শেষ বিকেলে সন্ধ্যা ৬টায় এবং গত বছরের রানার-আপ Dublin-1 বনাম Limerick তুমুল প্রতিদন্ধিতাপূর্ণ খেলা খেলে, এইসময় মাঠের দুপাশে দর্শকদের সমর্থনে ফাইনাল ম্যাচটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ ও উপভোগ্য হয়ে উঠে।ফাইনাল খেলাটি গোল শূন্য হওয়ায় খেলাটি টাইব্রেকারে গড়ায় এবং Limerick শিরোপা জিতে নেয়। মাঠে খেলার ধারাভাষ্য বর্ণনা করেন গলওয়ের বুলবুল ও ডাবলিনের কাজী কবির।
এবারের ২০২২এর টুর্ণামেন্টে যারা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান তারা হলেন:
১. সর্বোচ্চ গোলদাতা: আরমান রহমান।
২. সেরা গোলকিপার: ফাহিম।
৩. সেরা মিডফিল্ডার: আহনাফ আহমেদ।
৪. সেরা ডিফেন্ডার: রায়হান।
৫. Best young performer: সাজিদ হক।
টুর্নামেন্টে উপস্থিত ছিলেন গলওয়ের লোকাল কাউন্সিলর Liam Carroll এবং উপস্থিত ছিলেন Minister of State is Hildegarde Naughton, TD. এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিটির ব্যাক্তিবর্গ সহ বিপুল সংখ্যক ফুটবলপ্রেমী মানুষ।
BSAI এর আয়োজনে ও ব্যবস্থাপনায় অনুর্ধ্ব -১৮ ফুটবল টুর্নামেন্টের সার্বিক সহযোগীতায় ছিল গলওয়ের বাংলাদেশী কমিউনিটি। এবছর আয়োজকগন টুর্ণামেন্টের পাশাপাশি সুস্বাধু খাবারের স্টলের আয়োজন করেন, এতে আগত মানুষজন তাদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে মজার মজার খাবার কিনে খান আর আড্ডায় মেতে উঠেন। আড্ডার মুল আলোচনা ছিল ABAI এর নির্বাচন। আসছে ১১ই সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের আগে এই টুর্নামেন্ট হওয়ায় নির্বাচনের প্রায় সকল প্রার্থী টুর্নামেন্টে উপস্থিত ছিলেন। টুর্নামেন্টের মধ্যে বেশ নির্বাচনী আমেজ লক্ষ্য করা গেছে এবং সকল প্রার্থীদের আগত জনগনের নিকট ভোট চাইতে দেখা গেছে।
সন্ধ্যা ৮টায় পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের শিরোপা কাপ এবং রানার্সআপদের কাপ প্রদানের মধ্যদিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ হয়। শিরোপা কাপ প্রদান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন আব্দুল মান্নান মান এবং BSAI এর সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবীব। BSAI এর প্রেসিডেন্ট চুন্নু মাতবর তার সমাপনী বক্তব্যে সকল টিম ও খেলোয়ার সহ আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
১৫ই জুলাই ২০২২ ছিল অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। মোট ৪৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেন। তিনজন প্রার্থী ব্যতিরেকে নির্বাচন কমিশন বাকি ৪২ জন প্রার্থীর নতুন তালিকা প্রকাশ করে।
৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ৭ টি পদে মোট ৮ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। যার ফলে ওই ৭ টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচনী ব্যালটে থাকবেন না। সুতরাং বাকি ১৪ টি পদে ৩৪ জন প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচনের ব্যালট তৈরি হবে।
যে তিনজন প্রার্থী প্রত্যাহার করেন, উনারা হলেন; রাজিবুল হক গালিব (সহ সাধারণ সম্পাদক), সৈয়দ রাসেল এস. রব (সাংগঠনিক সম্পাদক), মোঃ মতিন ব্যাপারী (সহ প্রকাশনা সম্পাদক)।
যে ৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন, উনারা হচ্ছেন যথাক্রমেঃ মোঃ মতিউর রহমান (সহ সাংগঠনিক সম্পাদক), আবদুল জলিল (সহ সাংগঠনিক সম্পাদক), মোঃ সারোয়ার মোরশেদ (দপ্তর সম্পাদক), কবির আহমদ (প্রকাশনা সম্পাদক), জুবায়ের আহমেদ (সহ প্রকাশনা সম্পাদক), মোসাম্মৎ শম্পা লিলি (মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা), শিরিন আক্তার (সহ মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা) ও মোঃ রুহুল আমিন (শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক)।
বাকি প্রার্থীরা যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, উনাদের তালিকা নিম্নরূপঃ
পদের নাম
পদের সংখ্যা
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী
সভাপতি
১
ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার
সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান
সহ-সভাপতি
৪
মনিরুল ইসলাম (মনির)
শাহীন রেজা
আজিজুর রহমান (মাসুদ)
কাজী শাহ আলম
মোঃ বদরুল ইসলাম
জালাল আহমেদ ভুঁইয়া
মোঃ গোলাম নবী বাবুল
সাধারণ সম্পাদক
১
আনোয়ারুল হক (আনোয়ার)
মোঃ সোলায়মান মিয়া (রনি)
সহ-সাধারণ সম্পাদক
২
শাহ্ আজমল হোসেন
মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সোহেল
এস এম হাসান
সাংগঠনিক সম্পাদক
১
ইনজামামুল হক জুয়েল
আলমগীর রাহিম
সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক
২
মোঃ মতিউর রহমান
আবদুল জলিল
কোষাদক্ষ
১
মোহাম্মদ তাউছমিয়া তালুকদার
মোঃ আব্দুর রশিদ (সবুজ)
সহ-কোষাদক্ষ
১
মজিবুল হক
মোহাম্মদ সিদ্দিক
দপ্তর সম্পাদক
১
মোঃ সারোয়ার মোরশেদ
প্রকাশনা সম্পাদক
১
কবির আহমদ
সহ-প্রকাশনা সম্পাদক
১
জুবায়ের আহমেদ
সাংস্কৃতিক সম্পাদক
১
দিলীপ কুমার বড়ুয়া
তারেক মাহমুদ ইকবাল
সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক
১
আভি অজিতাভ রয়
মোঃ শরিফুল আলম ভূঞা (জেনন)
ক্রীড়া সম্পাদক
১
মোতালেব হোসেন
রাব্বি খান
ধর্মীয় সম্পাদক
১
মোজাম্মেল হক
আল আমিন হোসেইন
সহ-ধর্মীয় সম্পাদক
১
মোঃ লোকমান হোসেন
ফিরোজ আহমেদ (হিরণ)
মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা
১
মোসাম্মৎ শম্পা লিলি
সহ-মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা
২
শিরিন আক্তার
আইটি সম্পাদক
১
মোঃ ইউসুফ
মোঃ নজরুল ইসলাম
সমাজকল্যাণ সম্পাদক
১
মোঃ দুলাল আহমেদ
মজিবুর রহমান
শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক
১
মোঃ রুহুল আমিন
নির্বাচন কমিশন সকল প্রার্থীকে শুভেচ্ছা এবং শুভ কামনা জ্ঞাপন করেন। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও সফল নির্বাচন উপহার দেয়ার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সকল প্রার্থী ও ভোটারদের সহযোগিতা কামনা করে।
যে কোন ধরণের উপদেশ, পরামর্শ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যেকোন ধরণের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনকে লিখিত আকারে প্রদান করতে হবে। উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন অভিযোগসমূহের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে। যেকোন ধরণের প্রশ্ন যেকোন নির্বাচন কমিশনার এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে যে কোন সময় রাখা যাবে।
নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। খুশির খবর এই যে, ভোটার রেজিস্ট্রেশনও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। যারা এখনো ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেন নাই, দয়া করে http://www.abai.ie এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিন।
কোরবানি মনে হচ্ছে স্যাক্রিফাইস বা উৎসর্গ করা। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের প্রিয় জিনিস উৎসর্গই হচ্ছে কোরবানি। হযরত ইব্রাহিম (আ) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পুত্র ইসমাইল (আ) কে কোরবানি দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। ইব্রাহিম (আ) তো আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তিন্ন হয়েছিলেন, কিন্তু আপনি কি হতে পারবেন?
পারবেন কি মনের পশুকে কোরবানি দিতে?
পারবেন কি হিংসা, লোভ, অহংকারকে কোরবানি দিতে?
পারবেন কি ঝগড়া, ফ্যাসাদ, হানাহানি, মারামারি, দ্বন্দ্ব–সংঘাতকে কোরবানি দিতে?
পারবেন কি নিজের মাঝে লুকিয়ে থাকা কুপ্রবৃত্তি, কু–অভ্যাস, কু–চিন্তা কে কোরবানি দিতে?
পারবেন কি নিজের মধ্যে জমে থাকা ঘৃণা, দম্ভ, আত্মঅহমিকা, বড়াই এসবকে চিরতরে কোরবানি দিতে?
পিতা ইব্রাহিম (আ) পুত্র ইসমাইল (আ) কে কোরবানি তো ছিল পরীক্ষা মাত্র, যে আপনার প্রিয় জিনসকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করতে আপনার বিন্দুমাত্র সংশয় থাকবে না। আজকে অন্যের সমালোচনা আপনার প্রিয়, নিজেকে নিয়ে বড়াই করে মজা পান, অন্যের বিপদ দেখলে তৃপ্ততা পান, অন্যকে বিপদে ফেলতে পারলে আনন্দ পান, নিজেকে বড় এবং অন্যকে ছোট করতে পারলে স্বর্গসুখ অনুভব করেন। এ সবকিছুই আপনার প্রিয়। এবার এসব প্রিয় জিনিসকে কোরবানি করে দেখান তো, বড় বড় পশু তো অনেকই কোরবানি করলেন।
কোরবানির ঈদ মুসলমানদের জন্য এক অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। মুসলমানমাত্রই এর গুরুত্ত্ব অপরিসীম। সামর্থবানদের জন্যকোরবান অত্যাবশ্যকীয়। কিন্তু কোরবানি হচ্ছে একটা প্রতীক মাত্র, আল্লাহ মানুষের যেসব কর্মে অসুন্তুষ্ট হয় সেসব কর্মকে নিজের প্রিয় হলেও পরিত্যাগ করাটাই হচ্ছে কোরবানির বাস্তব রূপ।
অবশেষে প্রতীক্ষার প্রহর গুছল। নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করল বহু প্রতীক্ষিত আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমাদানকারীর তালিকা।
অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড ‘’আবাই’’ এর সাধারণ নিরবাচন-২০২২ এর অংশগ্রহণকারী প্রার্থীগণ এবং ভোটারগণ অধীর আগ্রহে বসে ছিলেন শেষ পর্যন্ত কারা নির্বাচনের লড়াইয়ে মাঠে নামবেন। প্রার্থীরা মুখিয়ে ছিলেন কারা হবেন তাঁদের নির্বাচনী খেলার মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বী আর ভোটাররা কৌতহলী ছিলেন কারা হবেন আসন্ন আবাই এর নতুন প্রতিনিধি।
আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশী কমিউনিটির কেন্দ্রীয় সংগঠন ‘’আবাই’’ এর এটি হবে দ্বিতীয় নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে রয়েছে অনেক আলোচনা, সমালোচনা, কৌতূহল, উৎসাহ, উদ্দীপনা, আশা এবং প্রত্যাশা। ধীর্ঘদিন পর এই নির্বাচন হচ্ছে এখন আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশী কমিউনিটির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
আবাই সাধারণ নির্বাচন ২০২২ তে থাকতেছে মোট ২১ টি পদ। এই ২১ টি পদে প্রতিনিধি থাকবেন ২৭ জন। নির্বাচন কমিশনের তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে প্রার্থী হিসেবে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা হচ্ছে ৪৫ জন। সর্বমোট ৫৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও ৯ জন জমাদান থেকে বিরত থাকেন।
সময় স্বল্পতার কারণে ও বিভিন্ন কাউন্টি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে সময় লাগতে পারে বিধায় জমাদানকারী মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাইয়ের পরিবর্তিত তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছে ১১-০৭-২০২২ খ্রিঃ এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের তারিখ ১৫-০৭-২০২২ খ্রিঃ। যাচাই বাছাই পর্বে বাদ পড়া এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের উপর নির্ভর করবে সর্বশেষ কারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে থাকবেন।
পদের তালিকাসমূহ নিম্নরূপঃ
পদের নাম
পদের সংখ্যা
মোট জমাদানকারী প্রার্থী
সভাপতি
১
ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার
সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান
সহ-সভাপতি
৪
মনিরুল ইসলাম (মনির)
শাহীন রেজা
আজিজুর রহমান (মাসুদ)
কাজী শাহ আলম
মোঃ বদরুল ইসলাম
জালাল আহমেদ ভুঁইয়া
মোঃ গোলাম নবী বাবুল
সাধারণ সম্পাদক
১
আনোয়ারুল হক (আনোয়ার)
মোঃ সোলায়মান মিয়া (রনি)
সহ-সাধারণ সম্পাদক
২
শাহ্ আজমল হোসেন
রাজিবুল হক গালিব
মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সোহেল
এস এম হাসান
সাংগঠনিক সম্পাদক
১
ইনজামামুল হক জুয়েল
সৈয়দ রাসেল (এস. রব)
আলমগীর রাহিম
সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক
২
মোঃ মতিউর রহমান
আবদুল জলিল
কোষাদক্ষ
১
মোহাম্মদ তাউছমিয়া তালুকদার
মোঃ আব্দুর রশিদ (সবুজ)
সহ-কোষাদক্ষ
১
মজিবুল হক
মোহাম্মদ সিদ্দিক
দপ্তর সম্পাদক
১
মোঃ সারোয়ার মোরশেদ
প্রকাশনা সম্পাদক
১
কবির আহমদ
সহ-প্রকাশনা সম্পাদক
১
জুবায়ের আহমেদ
মোঃ মতিন ব্যাপারী
সাংস্কৃতিক সম্পাদক
১
দিলীপ কুমার বড়ুয়া
তারেক মাহমুদ ইকবাল
সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক
১
আভি অজিতাভ রয়
শরিফুল আলম ভূঞা (জেনন)
ক্রীড়া সম্পাদক
১
মোতালেব হোসেন
রাব্বি খান
ধর্মীয় সম্পাদক
১
মোজাম্মেল হক
আল আমিন হোসেইন
সহ-ধর্মীয় সম্পাদক
১
মোঃ লোকমান হোসেন
ফিরোজ আহমেদ (হিরণ)
মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা
১
মোসাম্মৎ শম্পা লিলি
সহ-মহিলা কল্যাণ সম্পাদিকা
২
শিরিন আক্তার
আইটি সম্পাদক
১
মোঃ ইউসুফ
মোঃ নজরুল ইসলাম
সমাজকল্যাণ সম্পাদক
১
মোঃ দুলাল আহমেদ
মজিবুর রহমান
শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক
১
মোঃ রুহুল আমিন
বিঃ দ্রঃ যেহেতু বাংলায় নাম লিখা হয়েছে, সেহেতু প্রার্থীর নিজের নামের বানানের সাথে বানান নাও মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে ভুল মার্জনা সহকারে দেখবেন। প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে সঠিক নাম প্রদান করলে, অবশ্যই ঠিক করে দেয়া হবে। ধন্যবাদ।
কেউ নেতৃত্বের গুন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, কেউ জন্ম নিয়ে নেতৃত্বের গুন অর্জন করে। যেভাবেই হোক না কেন নেতা হতে হলে নেতৃত্বের গুন থাকা অবশ্যই বাঞ্ছনীয়। নেতৃত্ব হচ্ছে এমনি এক গুরু দায়িত্ব যার ভার সবাই বহন করতে পারে না।
নেতা হচ্ছেন তিনি, যিনি ক্ষুদ্র দল থেকে শুরু করে জাতি, গোষ্ঠী, সমাজ, দেশের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী বা দল ছোট হোক আর বড়ই হোক, যখনি আপনি এক বা একাধিক ব্যক্তির দায়ভার গ্রহণ করবেন তখনই আপনার উপর এসে পড়বে নেতৃত্বের গুরু দায়িত্ব। আপনি যদি সুযোগ্য নেতা হন তাহলে আপনি ওই দায়িত্ব গুরুত্ব দিয়ে পালন করবেন এবং যার দ্বারা অন্যরা উপকৃত হবে।
নেতৃত্বের দায়িত্ব সবাই নেয় না, সবাই নেবার প্রয়োজনও নেই। কিন্তু আবার কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতেই হয়। আপনি দায়িত্ব তখনই নিবেন, যখন মনে করবেন আপনার দ্বারা একটি জাতি, গোষ্ঠী কিংবা ওই সমাজ উপকৃত হবে। সমাজকে আপনার দেয়ার মত কিছু রয়েছে এবং সমাজের মানুষজন আপনার কাছে যে প্রত্যাশা করে আপনাকে নেতা বানাবেন সেই প্রত্যাশা পূরণে যদি আপনি নিজেকে যোগ্য মনে করেন, তাহলেই কেবল নেতৃত্বের ভার গ্রহণ করুন।
শুধুমাত্র একটা পদ অধিগ্রহণ করার জন্য কিংবা দশজনের কাছে পরিচিত হবার প্রত্যাশায় অথবা প্রতিহিংসাবশত কারো সাথে টক্কর দেবার বাসনায় নেতা হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভালো। কিন্তু তাই বলে কি অকালকুষ্মাণ্ড টাইপের নেতা দেশকে, জাতীকে কিংবা গোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দিচ্ছে না? অবশ্যই দিচ্ছে। কিন্তু তা দেশ, জাতি ও মানুষের জন্য নিঃসন্দেহে অকল্যাণকর।
নেতৃত্বের দায়ভার সহজ বিষয় নয়। এতে নেতারা চাইলেই উনাদের মর্জিমত কিছু করতে পারেন না। সুযোগ্য নেতারা যাই করেন তা দশের কথা মাথায় রেখেই করেন। যারা নেতৃত্বের দায়ভার নিতে চান, উনারা নেতৃত্বের গুরুদায়িত্ব মাথায় রেখেই নিতে হবে। আর তা না হলে এই পথ না মাড়ানোই শ্রেয়। এতে অযোগ্য নেতৃত্ব থেকে জনগণ রক্ষা পাবে এবং নিজের মাথার বোঝাও হালকা থাকবে।
আয়ারল্যান্ডে আবার হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংগঠন ‘’অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’’ এর সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষে ইতিমধ্যে সরগরম হয়ে উঠেছে বাংলাদেশী কমিউনিটির অঙ্গন। এরই মধ্যে ৫৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করে নিয়েছেন। যা নিঃসন্দেহে শুভ লক্ষণ। ভোটারদের মাঝেও পরিলক্ষিত হচ্ছে উত্তেজনা।
আশা করব যে ৫৪ জন প্রার্থী নেতৃত্বে আসতে চান, উনারা ভেবে চিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মাঝে অনেকেই হয়ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মনোনয়নপত্র জমাদান থেকে বিরত থাকবেন। যারাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এবং বিজয়ী হয়ে কমিউনিটির হাল ধরবেন, আশা করব কমিউনিটি শুধু পদ আঁকড়ে থাকা নেতা নয়, সত্যিকার অর্থে কাজের নেতা পাবে।
এই কমিউনিটি সংগঠন মূলত স্বেচ্ছাসেবী (ভলেন্টিয়ার) সংগঠন। কাজ করার জন্য এতে থাকবেনা বাজেট, নির্বাচিত সদস্যগণ পাবেন না কোন বেতন ভাতা। সুতরাং এই সংগঠনের কাজে অবশ্যই থাকবে সীমাবদ্ধতা। কিন্তু তাই বলে এই অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না যে, স্বেচ্ছাসেবী কাজ বলে একে অবহেলা করার কোন অবকাশ রয়েছে। যদি নেতাগণ মনে করেন, বেতন ভাতাবিহীন সংগঠন এর কোন কাজ নেই, তাহলে তো এই সংগঠনেরই কোন প্রয়োজন নেই। তাই নয় কি?
হ্যাঁ এইটা একটি অলাভজনক এবং ভলেন্টিয়ার সংগঠন এবং এটা মাথায় রেখেই আপনারা শপথবাক্য পাঠ করবেন। শপথবাক্য পাঠের পর যদি এই অজুহাত দাঁড় করান যে, নিজের খেয়ে বনের মোষ কেন তাড়াব, তাহলে এই সংগঠনের নেতৃত্বের দায়ভার নেয়া থেকে এখনই বিরত থাকুন।
যেহেতু এটা বেতনবিহীন নেতৃত্ব, সেহেতু সবাইকেই যার যার কর্ম করতে হবে, যার যার ব্যবসা, পরিবার দেখাশুনা করে চলতে হবে। এ নিয়ে কারো কোন দ্বিধা নেই। কিন্তু এরই মাঝে যারা নেতৃত্বের দায়ভার গ্রহণ করবেন, নিজেদের কর্মব্যস্ততার মাঝে কিছু সময় সমাজসেবার জন্য উৎসর্গ করতে হবে। যদি তা না পারেন তাহলে একজন কমিউনিটির নেতা এবং কমিউনিটির সাধারণ ব্যক্তির মাঝে কি তপাত থাকল?
যারা নেতা হবার প্রত্যয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, উনারা অবশ্যই সবদিক বিবেচনা করেই করবেন বলে কমিউনিটির মানুষের বিশ্বাস। একটা কমিউনিটির জন্য একটা কেন্দ্রীয় সংগঠন কেন প্রয়োজন, তা কমিউনিটির সামনে প্রমাণ করার দায়িত্ব আপনার, যিনি হবেন আগামীর কোন একটি পদের কোন একটি নেতা। নির্বাচনে যতগুলো পদ ততগুলোর আলাদা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে বিধায় পদ গুলো তৈরি। সুতরাং যিনি যেই পদের নেতৃত্বে থাকবেন, তিনি যেন ওই পদের সদ্ব্যবহার করেন। যে পদের জন্য নিজেকে যোগ্য মনে করেন, কেবলমাত্র ওই পদের জন্যই নির্বাচন করুন।
একটা কমিউনিটির জন্য একটা কেন্দ্রীয় সংগঠন কেন প্রয়োজন, তা কমিউনিটির সামনে প্রমাণ করার দায়িত্ব আগামীর নেতার
আপনি যদি সমাজসেবার জন্য তৃষ্ণার্ত থাকেন, মানুষের উপকারের জন্য যদি আপনার কিছু সময় ও অর্থ উৎসর্গ করতে ব্রত থাকেন, আপনার কোন দক্ষতা, জ্ঞান যদি কমিউনিটির কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকেন, আপনার যদি সৎ, উদার, অহিংসাপরায়ন মনমানসিকতা থেকে থাকে তাহলে কমিউনিটির নেতা হিসেবে আপনাকে স্বাগতম।
শুধু পদের নেতা নয় রে ভাই, কাজের নেতা চাই।
ওমর এফ নিউটন
প্রধান বার্তা সম্পাদক
আইরিশ বাংলা টাইমস
আসন্ন অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডে (আবাই) এর আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ২০২২ এর মনোনয়নপত্র দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রার্থীগণ মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন আনন্দমুখর পরিবেশে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৯শে জুন ২০২২ লিমরিকের সম্ভাব্য প্রার্থীগণ তাঁদের মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
লিমরিকের চার তারকা হোটেল গ্রীনহিলসে প্রার্থীগণ কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব আজাদ তালুকদার ও স্থানীয় নির্বাচন কমিশনার জনাব ওমর এফ নিউটন। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন আবাই নির্বাচনের দুইজন সভাপতি প্রার্থী জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার ও জনাব মুস্তাফিজুর রহমান। এছাড়াও বিভিন্ন কাউন্টী থেকে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রার্থীগন উপস্থিত ছিলেন।
সর্বমোট ৯ জন প্রার্থী গতকাল মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। তন্মদ্ধে সবার পরিচিত মুখ জনাব আনোয়ারুল হক সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন পত্র জমাদান করেন। সহ সভাপতি পদে জমা দেন লিমরিক থেকে দুই জন, তাঁরা হলেন যথাক্রমে বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের সাবেক সভাপতি জনাব মনিরুল ইসলাম (মনির) ও জনাব শাহীন রেজা।
সকল প্রার্থী, অতিথিবৃন্দ এবং নির্বাচন কমিশনারগণ সফল নির্বাচন প্রত্যাশা করেন এবং ভোটারদেরকে ভোটার হওয়ার আহ্বান জানান।
এই বছর ২০২২ এর ২৯শে মে রবিবার আয়ারল্যান্ডের আদর্শ কাউন্টি হিসেবে আবির্ভূত গলওয়ে কাউন্টিতে বাংলাদেশীদের সামাজিক সংগঠন, “গলওয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটি”র কার্য্যকরী পরিষদের নির্বাচন ২০২২ অনুষ্টিত হয়।
গতকাল ২৭শে জুন এই নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহন ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েগেল গলওয়ের Old Dublin Road অবস্থিত The Connacht হোটেলে।
উল্লেখ্য, এই বছর ১১ই সেপ্টেম্বর All Bangladeshi Association of Ireland (ABAI) এর নির্বাচন হবে আর তার ঠিক আগে একই বছরে অনুষ্ঠিত গলওয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটির নির্বাচন এবং এই নির্বাচনটি সারা আয়ারল্যান্ডে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এর প্রধান কারন ছিল গলওয়ের এই নির্বাচনটি ছিল একটি সঠিক ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ সুন্দর এবং সকলের অংশ গ্রহনে অনুষ্ঠিত একটি অনুকরনীয় নির্বাচন।
নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জনাব দেওয়ান জসীম উদ্দিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হোন। সাধারন সম্পাদক পদে আর কোন প্রতিদন্ধি না থাকায় নাবির হাসান মনির বিনা প্রতিদন্ধিতায় সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমিউনিটির জনগন স্বতঃস্ফুর্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে নির্বাচনকে সফল করেন ।
এই বছর এপ্রিলের ২৭ তারিখ ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ারশেষ দিন। সর্বমোট ১৬টি পদের জন্য মোট ১৫ জন সদস্য মনোনয়ন জমা দেন। ১২টি পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলনা তাই এই ১২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন। যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তারা হচ্ছেন:
১. সভাপতি: জনাব জসীম উদ্দিন দেওয়ান
২. সহ-সভাপতি: জনাব জসীম রানা।
৩. সহ-সভাপতি: জনাব মূকতার আলি।
৪. সহ-সভাপতি:
৫. সাধারণ সম্পাদক: জনাব নাবির হাসান মনির।
৬. সহ সাধারণ সম্পাদক: জনাব তামিম মজুমদার।
৭. সহ সাধারণ সম্পাদক: জনাব ফজল করিম সুমন। ৮.কোষাধ্যক্ষ: জনাব মাহমুদ হোসেন চৌধুরী অপু।
৯. সাংগঠনিক সম্পাদক: জনাব সোহরাব হোসেন
হিমন।
১০. ক্রীড়া সম্পাদক: জনাব আবু তালেব মামুন
১১. ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক: জনাব ওবায়েদুর রহমান ফারুক
১২. শিক্ষা সাহিত্য ও
সাংস্কৃতিক সম্পাদক: লুতফুন্নাহার হোসেন আফরোজা।
১৩. প্রচার সম্পাদক: জনাব রুবেল মোহাম্মদ
১৪. দপ্তর সম্পাদক: জনান কে এম আলম।
১৫. মহিলা সম্পাদক: রুজিনা পারভিন স্বপ্না।
১৬. মহিলা সম্পাদিকা: মিসেস জিন্নাত আরা হানিফ বেলী
সহ-সভাপতির ৩টি পদের মধ্যে ২জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন এবং মহিলা সম্পাদিকা পদে ২জনের মধ্যে ১জন মনোনয়ন জমা দিলে, ২টি পদ শূন্য থাকে।
তবে সভাপতি পদে, ক্রীড়া সম্পাদক পদে এবং ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে ৩টি পদে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ায় এই ৩টি পদে ব্যালটের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এই বছর ২০২২ সালের ২৯শে মে রবিবার।
২৯শে এপ্রিল রবিবার সকাল থেকে সারাদিনব্যাপি কাউন্টি গলওয়ের প্রবাসী বাংলাদেশীরা নকনাকারা কমিউনিটি সেন্টারে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সর্বমোট নিবন্ধিত ভোটার ছিলেন ৪৪৫ জন তার মধ্যে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট প্রদান করেন সর্বমোট ৩০০জন। সেই হিসাবে সর্বমোট ভোটারের
৬৫% ভোট প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা ছিলেন,
জনাব জামাল বাসির ,
জনাব আসাদুজ্জামান ভুইয়া,
জনাব মনিরুল ইসলাম বাবু,
জনাব মুহিবুর রহমান এবং
জনাব আরিফুজ্জামান চৌধুরী টুকু।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন জনাব জামাল বাশির। একটি সফল এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালনার জন্য গলওয়ে বাসী সহ সকলেই নির্বাচন কমিশনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
২৯শে এপ্রিলের নির্বাচনে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে ১৬২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন উবায়েদুর রহমান ফারুক, তার প্রতিদ্বন্দ্বী হাজি জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন ১৩৪ ভোট। ক্রীড়া সম্পাদক পদে সর্বমোট ১৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আবু তালেব মামুন, প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুর রহিম পেয়েছেন ১৩৬ ভোট। প্রেসিডেন্ট পদে ১৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন দেওয়ান জসীম উদ্দিন , প্রতিদ্বন্দ্বী আজিমুল হুসেন পেয়েছেন ৯৬।
গতকাল ২৭শে জুন এই নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহন ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল বাশির নব-নির্বাচিত কার্যকরী কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান। অনুষ্ঠ্সনে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আজিমুল হুসেন আজিম, তিনি তার বক্তব্যে নব নির্বাচিত প্রেসিটেন্ড সহ নির্বাচিত সকল সদস্যদের অভিন্দন জানান এবং ভবিষ্যাতে তাদের সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্যদের সন্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয় এবং নব নির্বাচিত কর্যকরী কমিটির সকল সদস্যদের ফুল ও সার্টিফিকেট দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলে সারা আয়ারল্যান্ড থেকে আগত বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ। বিশিষ্ঠ ব্যাক্তিবর্গে মধ্যে যারা বক্তব্য রাখেন তারা হলেন জনাব ডা জিন্নুরাইন জায়গীরদার, জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার, জনাব চুন্নু মাতবর,জনাব তাউছমিয়া তালুকদার, জনাব আজিজুর রহমান মাসুদ, জনাব জাকারিয়া প্রধান, জনাব আব্দুল জলিল সহ আরও আনেকে। বক্তাগন নব নির্বাচিত কার্যকরী কমিটিকে অভিনন্দন জানান এবং ভবিষ্যত সাফল্য কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় জনাব জহির উদ্দিন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের প্যাকেট বিরিয়ানী দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
১৯শে জুলাই BSAI এর অনুর্ধ ১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২২
আসছে আগামী মাসে জুলাই মাসের ১৯ তারিখ মঙ্গলবার ২০২২ অনুষ্ঠিত হবে Bangladesh Sports Association of Ireland এর বাৎসরিক অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট।
BSAI এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জনাব চুন্নু মাতবর জানান, অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য এই বছর ভেন্যু ঠিক করা হয়েছে গলওয়েতে। গলওয়ের Astroturf Pitch Oranmore, Co. Galway অনুষ্ঠিতব্য এই টুর্নামেন্ট শুরু হবে জুলাই মাসের ১৯ তারিখ মঙ্গলবার সকাল বেলা ১১টায় এবং খেলা চলবে দিনভর। প্রতি টিমের জন্য এন্ট্রি ফি রাখা হয়েছে €১০০ ইউরো। শুক্রবার ১৫ই জুলাইয়ের মধ্যে টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ইচ্ছুক টিমের নাম রেজিষ্ট্রশন করতে হবে বলে তিনি জানান।
BSAI এর সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব কামাল হোসেনের সাথে আইরিশ বাংলা টাইমসের কথা হয়, জনাব কামাল হোসেন বলেন, “টুর্নামেন্টে প্রতিটি টিমের প্রত্যেক খেলোয়ারকে অবশ্যই বাংলাদেশী বংশদ্ভুত হতে হবে। তিনি আরো বলেন, এক কাউন্টির খেলোয়ার অন্য কাউন্টিতে খেলতে পারবে না, যদি কোন খেলোয়ারের বিরুদ্ধে অন্য কাউন্টির টিমে খেলার অভিযোগ আসে সে ক্ষেত্রে Proof of Address ডকুমেন্ট দেখাতে হবে এছাড়াও প্রত্যেক খেলোয়ারকে অবশ্যই খেলার মাঠে তার বয়স প্রমানের জন্য পাসপোর্ট দেখাতে হবে।
এইবছর গলওয়ের Astroturf Pitch মাঠে অনুর্ধ ১৮ ফুটবল টুর্নামেন্টের পাশাপাশি বিভিন্ন পন্যের স্টল থাকবে বলে জানান সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব কামাল হোসেন । কমিউনিটির লোকজন যাতে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে একটি সুন্দর দিন উপভোগ করতে পারেন এবং দুপুরের খাবার কিনে খেতে পারেন সেই জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে খাবারের স্টল এবং চা-কফির স্টল থাকবে।
টুর্নামেন্টের মাঠে যদি কেউ খাবারের স্টল কিংবা মিষ্টি, চটপটি বা চা-কফি স্টল অথবা পোশাকের স্টল দিতে চায় তাদের কে আয়োজক কমিটির সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আয়োজক কমিটির ফোন নাম্বার :
(কামাল হোসেন -087 238 1904) এবং
(মামুন উর রশিদ -089 413 6556)
গত শুক্রবার ২৪শে জুন ২০২২ ছিলো All Bangladeshi Association of Ireland তথা ABAI এর ১১সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতার জন্য প্রার্থিদের মনোনয়ন পত্র কেনার শেষ দিন। ABAI নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে সারা আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন পদে প্রতিদন্ধিতার জন্য সর্বমোট ৫৪টি মনোনয়ন পত্র বিক্রয় করা হয়েছে।
আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকার সংবাদ কর্মী মশিউর রহমানের সাথে ABAI এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার টেলিফোনে কথা হয় এবং জনাব আজাদ তালুকদার জানান সারা আয়ারল্যান্ডে তাদের নিযুক্ত নির্বাচন কমিশনারদের কাছ থেকে নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতায় অংশ গ্রহনে ইচ্ছুক বাংলাদেশী কমিউনিটির মানুষ জন স্বতস্ফূর্ত ভাবে নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করার জন্য মনোনয়ন পত্র কিনেছেন এবং এই মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয় ২৪ জুন মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, এই ৫৪ টি মনোনয়ন পত্রের মধ্যে কোন পদের জন্য কয়টি মনোনয়ন বিক্রয় হয়েছে এবং কোন কাউন্টিতে কতটি মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ পর্যন্ত। জনাব আজাদ তালুকদার আশা প্রকাশ করে বলেন, “এবার প্রার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে, প্রার্থীরা যারা মনোনয়ন পত্র কিনেছেন তারা সোস্যাল মিডিয়া সহ সকল মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালাবেন এবং প্রার্থীদের সহযোগীতায় এখন ভোটার তালিকার কাজ আরও বেগবান হবে এবং সবার অংশগ্রহনে ১১ই সেপ্টেম্বর একটি স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ”
তবে সোস্যাল মিডিয়ার কল্যনে জানা গেছে প্রেসিডেন্ট পদে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান কিলকেনীর নির্বাচন কমিশনার শিপন দেওয়ানের কাছ থেকে তিনি মনোনয়ন পত্র কিনেছেন এব তিনি নিজেও ফেইসবুকে ABAI এর প্রেসিডেন্ট পদে তার পদপ্রার্থী হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। অন্য দিকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য আরেকজন সম্ভাব্য প্রার্থী জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারের পক্ষে জনাব আক্তার হোসেন ও জনাব জহিরুল ইসলাম জহির মনোনয়ন কিনেছেন গতকাল ২৪শে জুন ডাবলিনের নির্বাচন কমিশনার জনাব জাকারিয়া প্রধানের কাছ থেকে।
সাধারন সম্পাদকের পদে কে মনোনয়ন নিয়েছেন সেই বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সোস্যাল মিডিয়ায় এই পর্যন্ত সহ-সাধারন সম্পাদক পদে দুজন তাদের নাম নিশ্চিত করেছে তাদের মধ্যে একজন গালিব হক Carlow থেকে আর অন্যজন জনাব মাহমুদুল হাসান চৌধুরী Dublin থেকে।
কোষাধ্যক্ষ পদে প্রার্থীতা নিশ্চিত করেছেন Monaghan থেকে জনাব তাউছমিয়া তালুকদার। সোস্যাল মিডিয়ার কল্যানে আরো যারা তাদের প্রার্থীতা নিশিচত করেছেন তারা হলেন সহ-সভাপতি পদে Dublin থেকে জনাব আজিজুর রহমান মাসুদ। সহ-সভাপতি পদে Cork থেকে কাজী শাহ আলম।
দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আগামীকাল (রোববার) থেকেই পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলবে, সেজন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।রোববার সকাল ৬টা থেকেই সব ধরনের যানবাহন সেতুতে উঠতে পারবে।
শনিবার সেতু উদ্বোধনের পর বিকালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন,‘আজ সেখানে কোনো যানবাহন চলাচল করবে না। রোববার সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।’
দুর্নীতির অপবাদ দিয়ে অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়া, সেটিকে ঘিরে দেশে-বিদেশে সমালোচনা, আর নানা মহলের সংশয় আর বিরূপ মন্তব্য পেরিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে শেখ হাসিনার সরকার। আজ (শনিবার) দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যদিয়ে স্বপ্নের পূর্ণতা পেল।
অনেক প্রতিকূলতা ও বাধা ডিঙিয়ে, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক ও দুঃসাহসিক সিদ্ধান্তে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে পদ্মা সেতুর মতো এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সত্যি অবিশ্বাস্য।সরকারের ধারাবাহিকতা, সদিচ্ছা— সর্বোপরি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকার কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
দেশের দীর্ঘতম এই সেতু উদ্বোধন করে গাড়িতে করে তা পাড়ি দিয়ে জাজিরা প্রান্তে গিয়ে পূর্ব নির্ধারিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা বাধা দিয়েছিল, তাদের একটা জবাব আমরা দিয়েছি। তাদেরকে একটা উপযুক্ত জবাব আমরা পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে দিতে পারলাম যে, বাংলাদেশও পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট, স্টিল-লোহা-কংক্রিটের একটা অবকাঠামো নয়; এই সেতু আমাদের সাহস। এই সেতু আমাদের গর্ব, এই সেতু আমাদের সক্ষমতা এবং আমাদের মর্যাদার শক্তি।’
সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে দুর্নীতি করেছে? এই সেতু আমাদের প্রাণের সেতু। যে সেতুর সাথে আমার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য জড়িত, সেই সেতু করতে যেয়ে কেন দুর্নীতি হবে?’
বিশ্ব ব্যাংককে বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভবপর নয় বলে যারা নিরুৎসাহিত করেছিলেন, তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে কীভাবে করতে পারলাম? আপনারা এই দেশের জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়েছেন, পাশে থেকেছেন। জনগণের শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি সেটাই বিশ্বাস করেছি।’
পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুবিধার দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আর আপনাদের কষ্ট করতে হবে না। এই খরস্রোতা পদ্মা নদী পার হতে যেয়ে আর কাউকে সন্তান হারাতে হবে না, বাবা-মাকে, ভাই-বোনকে হারাতে হবে না। আজকে সেখানে আপনারা নির্বিঘ্নে চলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি।আমাদের প্রত্যেকটা এলাকা এত দুর্গম ছিল, আজকে সেখানে রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজ করেছি বলেই সব জায়গায় যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে। এই এলাকার লোক যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, সেজন্য পায়রা পর্যন্ত আমরা সেতু বানিয়ে দিয়েছি। এখন নিশ্চিন্তে মানুষ চলাফেরা করতে পারে।’
পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসার সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা দেশে আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে। এখানেও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে, শিল্পাঞ্চল হবে, কর্মসংস্থান হবে, কল-কারখানা হবে, আমাদের ফসল উৎপাদন হবে। সেই ফসল আমরা প্রক্রিয়াজাত করতে পারব। দেশে-বিদেশে রপ্তানি করতে পারব। এখানে যে মাছ হবে, তা আমরা প্রক্রিয়াজাত করে দেশে-বিদেশে পাঠাতে পারব। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ ঘুচে যাবে। ভাগ্য পরিবর্তন হবে।’
গত মঙ্গলবার ২১শে জুন২০২২, Red Cow Moran হোটেলের Banquet হলে অনুষ্ঠিত হয় Bangladesh Sports Association of Ireland (BSAI) এর এক যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে ফাউন্ডার মেম্বারদের সন্মাননা স্মারক প্রদান অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সারা আয়ারল্যান্ড থেকে আগত BSAI এর সকল কাউন্সিলরদের বিশেষ ধন্যবাদ জানানো হয় এবং নব নির্বাচিত উপদেষ্টা মন্ডলীদের সংর্বধনা দেওয়া হয়।
বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন জবাব মশিউর রহমান। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলওয়াত করেন সংগঠনটির লিমরিক কাউন্টির অন্যতম সদস্য জনাব মনিরুল ইসলাম মনির। এরপর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন কালে উপস্থিত সকলে দাড়িয়ে সন্মান প্রদর্শনের পর শুরু হয় মুল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন BSAI এর প্রেসিডেন্ট জনাব চুন্নু মাতবর।
আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশীদের অন্যতম সপোর্টস সংগঠন Bangladesh Sports Association of Ireland (BSAI) একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪৫ জন ফাউন্ডার মেম্বার নিয়ে স্পোর্টস অনুরাগী জনাব চুন্নু মাতবরের নেতৃত্বে এই সংগঠনটি ২০২১ সালে ১২ বছর পূর্ণ করে। করোনা মহামারির কারনে গতবছর BSAI একযুগ পূর্তি পালন করতে পারেনি তবে এই বছর ২০২২ সালের গত ২১শে জুন মঙ্গলবার Red Cow Moran হোটেলের Banquet হলে Bangladesh Sports Association of Ireland (BSAI) এর উপদেষ্টাদের সংর্বধনা দেওয়া হয় এবং একই অনুষ্ঠানে BSAI এর এক যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে ফাউন্ডার মেম্বারদের সন্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
ফাউন্ডার মেম্বারদের সন্মামনা সার্টিফিকেট প্রদান কালে BSAI এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জনাব চুন্নু মাতবর বলেন, ফাউন্ডার মেম্বারগন হচ্ছেন এই সংগঠনের প্রান, তিনি আশা প্রকাশ করেন BSAI এর প্রতিটি অনুষ্ঠানে প্রতিটি ইভেন্টে ফাউন্ডার মেম্বারদের পদচারণায় মুখরিত থাকবে BSAI এর প্রাঙ্গন। তিনি আরো বলেন, আজকে ফাউন্ডার মেম্বারদের সন্মাননা স্মারক প্রদান করে আমরাও সন্মানীত বোধ করছি।
ফাউন্ডার মেম্বারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন :
জনাব চুন্নু মাতবর।
জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান।
জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার।
জনাব আব্দুল মান্নান মান।
জনাব মনিরুল ইসলাম মনির।
জনাব ইনজামামুল হক জুয়েল।
জনাব শামিম ফেরদৌস।
জনাব চুন্নু মাতবর তার বক্তব্যে আরও বলেন, তিনি উপদেষ্টাদের কাছ থেকে সার্বিক সহযোগীতা চান। তিনি বলেন বর্তমানে কার্যকরী কমিটি সক্রিয় ভাবে কাজ করছে, যদি উপদেষ্টা পরিষদ ও কাউন্সিলরগন সর্বাত্মক সহযোগীতা করেন তাহলে বর্তমান কার্যকরী কমিটি শতভাগ সফল খেলাধুলা কমিউনিটিকে উপহার দিতে পারবে।
BSAI এর বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব কামাল হোসেন তার বক্তব্যে সংগঠনের আর্থিক অবস্থার কিছু চিত্র তুলে ধরেন এবং এই বছর ২০২২ সালের সকল খেলাধুলার ও বিনোদনের তারিখ ঘোষণা করেন এবং তিনিও উপদেষ্টাদের নিকট সার্বিক সহযোগীতার আহবান জানান।
বর্তমান কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দুইজন সদস্য জনাব আব্দুল মান্নান মান ও মনিরুল ইসলাম মনির বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্য রাখেন BSAI এর প্রধান উপদেষ্টা জনাব মুহম্মদ মোস্তফা , তিনি তার বক্তব্যে বলেন BSAI এর প্রতি তার সার্বিক সহযোগীতার হাত সবসময়ই থাকবে এবং তিনি আরও বলেন যে সংগঠনের প্রাপ্ত অনুদান ও আয়-ব্যায়ের মধ্যে যেন স্বচ্ছতা বজায় থাকে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, জনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার, জনাব ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন, জনাব সাহাদাত হোসাইন, জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার, জনাব জাকারিয়া প্রধান, জনাব তাউস মিয়া তালুকদার,শাহীন মিয়া আরও অনেকে।
উল্ল্যেখ এই বছর ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ লিমেরিক শহরের Greenhills Hotel Conference & Leisure Center এর জা্ঁকজমকপূর্ণ হলরুমে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিকী সম্মেলনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট চুন্নু মাতবরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের BSAI এর নতুন কার্যকরী কমিটি নির্বাচিত হয়।
আসন্ন অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র বিতরণ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় লিমরিক কাউন্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে লিমেরিকের নির্বাচন কমিশনারদের কাছ থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। সর্বমোট ৮ জন প্রার্থী বিভিন্ন পদ থেকে মনোনয়ন পত্রগুলো সংগ্রহ করেন।
মনোনয়ন পত্র বিতরণ করেন লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের কাউন্সির আজাদ তালুকদার ও স্থানীয় নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে ওমর এফ নিউটন। আজাদ তালুকদার আসন্ন আবাই এর নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের আগে লিমরিকের সম্ভাব্য প্রার্থীগণ লিমরিকবাসীদের সাথে মত বিনিময় করেন। তাঁরা লিমরিকবাসীদের কাছ থেকে পরামর্শ, অনুরোধ ও আশ্বাসের ভিত্তিতে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রার্থীগণ লিমরিকবাসী সহ সমস্ত আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশীদের কাছ থেকে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
লিমরিকের গ্রীনহিল চার তারকা হোটেলে মনোনয়ন পত্র বিতরণের ব্যবস্থা করেন মনিরুল ইসলাম এবং খাবার পানীয়ের ব্যবস্থা করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ারুল হক।
উচ্ছ্বসিত প্রার্থীগণ এবং লিমেরিকবাসী
যে ৮ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন তাঁরা হলেন যথাক্রমে, আনোয়ারুল হক (আনোয়ার), মনিরুল ইসলাম (মনির), আবদুল মুহিত, মোসাম্মৎ শম্পা লিলি, মোতালেব হোসেন, মোজাম্মেল হক, হিরণ আহমেদ ও আজমল হুসেইন। তন্মদ্ধে আনোয়ারুল হক সাধারণ সম্পাদক, শম্পা লিলি মহিলা কল্যাণ সম্পাদক ও মোতালেব হোসেন ক্রীড়া সম্পাদক পদের জন্য মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। বাকি সম্ভাব্য প্রার্থীগণ তাঁদের পদের বিষয় এখনো নিশ্চিত করেন নি।
মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন আনোয়ার হোসেনমনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন মনিরুল ইসলামমনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন আবদুল মুহিতমনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন মোসাম্মৎ শম্পা লিলিমনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন আজমল হোসেইনমনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন মোতালেব হোসেনমনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন মোজাম্মেল হকমনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতেছেন হিরণ আহমেদ
ধর্ম অবমাননা রোধে ওআইসি রাখতে পারে কার্যকরী ভূমিকা ।
পশ্চিমা সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল ফরাসি বিপ্লব। আধুনিক ইউরোপের উদ্ভব ইউরোপীয় রেনেসাঁর পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের মধ্যে ফরাসি বিপ্লব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্রান্সে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয় এবং প্রজাতান্ত্রিক আদর্শের যাত্রা শুরু হয়। অভিজাততন্ত্র থেকে নাগরিকত্বের যুগে পদার্পণ করে ফরাসিরা। শ্রেণী সমাজের পতন ঘটে। ঐতিহাসিকরা এই বিপ্লবকে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে বিবেচনা করেন। (১৭৮৯ ~১৭৯৯)
তৎকালীন রোমান ক্যাথলিক চার্চগুলো তাদের সকল গোঁড়ামী ত্যাগ করে নিজেদেরকে পুনর্গঠিত করে ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে । যার কারণে ফরাসি বিপ্লবকে পশ্চিমা গণতন্ত্রের ইতিহাসে নতুন সূর্যদয় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতার অগ্রযাত্রা ফরাসি বিপ্লবের পর থেকে শুরু হয়।
ভলতেয়ার ছিলেন ফ্রান্সের বিখ্যাত দার্শনিক এবং
লেখক। ফরাসি বিপ্লবের ভিত তৈরীতে তার কিছু লেখা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভলতেয়ার ১৭৩৬ সালে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা:)কে নিয়ে একটি নাটক রচনা করেন, যেখানে কিছু ধৃষ্টতামূলক বাক্য ছিল। নবী করিম (সাঃ) বিদ্বেষী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ভলতেয়ারের সেই নাটকে।
অপর এক ফরাসি চিন্তাবিদ ও সাহিত্যিক হেনরি ডি বৌলেনভিলিয়ার্সের লেখা বই পড়ে ভলতেয়ারের চিন্তাধারার পরিবর্তন হয়। এরপর ভলতেয়ার তার পরবর্তী একটি লেখায় রাসূলে করিম (সাঃ) এর ধর্মীয় উদারতা, মহানুভবতা স্বীকার করেন এবং প্রকাশ্যে তাঁর প্রশংসা করেন তিনি। নবী করিম (সাঃ) সম্পর্কে ভলতেয়ারের চিন্তাদর্শন দ্বারা জার্মানির বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক গ্যেটেও বেশ প্রভাবিত হন। পরবর্তীতে গ্যোটের প্রভাব পড়ে উপমহাদেশের বিখ্যাত কবি ও দার্শনিক আল্লামা ইকবালের উপর। তথ্যসূত্র: হামিদ মীর, সাংবাদিক, পাকিস্তান।
বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মক্কা বিজয় ছিল ফরাসি বিপ্লবের মত একটি বিপ্লব, যাহা পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) শুধু আরবে বহুদেববাদ সমাজের মুলৎপাটন করেন নি, বরং এই বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি প্রাচীন আরবে এক আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্টার মাধ্যমে ইনসাফপূর্ণ সমাজ ও কল্যাণকামী রাষ্ট্র ব্যবস্হা গঠন করেছিলেন। বিশ্বের প্রতিটি সংগ্রাম ও বিপ্লবের পিছনে যেখানে থাকে অজস্র মানুষের আত্মাহুতি আর রক্তের প্লাবন। সেখানে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মক্কা বিজয় ছিল রক্তপাতহীন এক নিরব বিপ্লব।
নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কেবল মাত্র কোরআন এবং হাদিসে বর্ণিত একজন মহানায়ক ছিলেন না। তিনি বাস্তব জীবনেও এক মহাপ্রাণ পুরুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন নিয়ম ও নীতির এক মুর্ত প্রতীক। তিনি ছিলেন সকল দার্শনিকের শ্রেষ্ট দার্শনিক। রাসূলে করিম (সাঃ) র চিন্তা ও দর্শন শুধু কোনো গোত্র, বর্ণ বা ধর্মের মধ্যে বিদ্ধমান ছিলনা। বরং তাঁর সকল কর্মকান্ডের মুলে ছিল সকল মানুষের ইহুলিক ও জাগতিক জীবনের কল্যাণ।তিনি ছিলেন সকলের নবী। তিনি ছিলেন সকলের জন্য সৎ পথের পদর্শক।
তিনি কালের উর্ধ্বে জগত -সংসার, পাহাড়-জঙ্গল, নদী-সাগর, পশু-পাখি সকল কিছুর নেয়ামত ছিলেন। রাসূলে করিম (সাঃ)কে নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষীরা যে আজ লাগামহীন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, এটি হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ, তার রেখে যাওয়া দর্শন আজ গোটা বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জ। তিনি চলে গেছেন কিন্তুু তাঁর অসীম প্রভাব রেখে গেছেন উম্মতি মুহাম্মদীদের নিকট। নবী করিম (সাঃ) ১৪০০ বছর পূর্বে যে ঐতিহাসিক ধর্মের সূচনা করে গেছেন, সেটি আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মের মর্যাদা লাভ বরেছে। তাই ইসলামের জাগরণে ইসলাম বিদ্বেষীরা চরম শংকিত ও ভীত- সম্ভ্রন্ত। তথাকতিথ মতবাদগুলো যখন একের পর এক আঁধারে ডুবে যাচ্ছে, ইসলাম তখন সূর্যের কিরণ ছড়িয়ে পৃথিবীতে আঁগমনের নতুন বার্তার জানান দিচ্ছে।
আদর্শগত ভাবে ব্যর্থ হয়ে তৎকালীন মক্কাতে আবু লাহাবরা রাসূল করিম (সাঃ) এর চরিত্রে বহুবার কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছিল, আজকের যুগেও তাদের উত্তরসূরীরা এই কাজটি করছে সূকৌশলে,
এতো অপপ্রচার,এতো বিদ্বেষ, এতো নির্যাতন, এতো নিপীড়ন তারপরও ইসলামের দিকে মানুষ ঝুঁকছে দলে দলে। হাজারো বাঁধার প্রাচীর ডিঙিয়ে প্রতিদিন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শত শত অমুসলিম শাহাদা পাঠ করে মুসলিম হচ্ছেন। প্রভুর সান্নিধ্যে লাভের আকাঙ্খায় প্রতিনিয়ত তাদের হৃদয় ব্যকুল।
আপনি কি মনে করেন না, ইসলামের দিকে ছুটে চলা এই জনস্রোত ইসলাম বিদ্বেষীদের কাছে গায়ে জ্বালা পোড়ার কারণ নয় ? হেইট ক্রাইমের কারণে প্রকাশ্যে তারা কিছু বলতে পারছে না ঠিক কিন্তুু ইসলামের এই জাগরণকে কোনোভাবে ওরা মন-মস্তিস্কে মেনে নিতে পারছেনা। এরজন্যই কার্টুন কান্ড, হিজাব কান্ড, তালাক কান্ড, নবীর চরিত্র হনন কান্ড ইত্যাদি ঘটনা দেখা যায় অহরহ। এই বিষাক্ত হিংসে-বিদ্বেষ ছড়ানো কাজগুলো বন্ধের জন্য নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ।
দেশে দেশে ইসলাম ভীতি ছড়িয়ে মানুষকে কিভাবে ইসলাম থেকে দুরে রাখা যায়, সেটি এখন ইসলাম বিদ্বেষীদের মুল এজেন্ডা। সুতরাং ইসলাম বিদ্বেষীরা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে ঘৃণা করবে, তারা তাকে বিভিন্নভাবে অপবাদ দিবে, নবী করিম (সাঃ)এর চরিত্র নিয়ে কুৎসা রটাবে,তাকে গালি দিবে। এইগুলো আসলে মুসলিমদের জন্য তৈরী তাদের এক ধরণের ফাঁদ। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে কিছু মুসলিম সেই ফাঁদে আটকে পড়ে জ্বালাও- পোড়াও করছেন। এটি ইসলামে কতঠুকু বৈধ? সে ব্যাপারটি আলোচনার দাবী রাখে।
মুসলিম বিদ্বেষীরা ভালো করে জানে- আল্লাহ, তার নবী- রাসূল এবং তাদের সম্মানিত স্ত্রীদের ইজ্জত সমগ্র মুসলমানদের কাছে তাদের সবচাইতে দুর্বল আবেগের স্হান। অত্যন্ত কৌশলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে মুসলিমদের ক্ষুব্ধ করে তুলছে ইসলাম বিদ্বেষী ওই গোষ্টি। মুসলিমদের প্রতিবাদের কর্মসূচিকে তারা উগ্র জাতীয়তাবাদের সহিংসতার রুপ দেবার চেষ্টা করছে বিশ্ব মিডিয়ায়।
অবাধ বাক-স্বাধীনতা চর্চার ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে দিনের পর দিন আঘাত করে যাচ্ছে মানবতার লেবাসধারী ফেরিওয়ালারা। কিন্তুু তারা কখনো হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)এর জীবনের ভালো কাজগুলোর প্রশংসা করেনাা। নবী করিম ( সাঃ) এর চরিত্রের উত্তম দিকগুলো তাদের মুক্ত স্বাধীনতার চর্চায় কখনো ফুটে উঠেনা। তাদের এহেন পক্ষপাতদুষ্ট মুক্ত বাক- স্বাধীনতা চর্চা নামের বিকৃত মনস্তাত্ত্বিকতাকে ধীক্কার জানাই।
২০০৫ সালে ডেনমার্কের একটি সংবাদপত্র নবী করিম (সাঃ)কে নিয়ে ধৃষ্টতামূলক কার্টুন ছাপালে বহু মুসলিম দেশ উক্ত ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পবিত্র নবীকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক সেই কার্টুন প্রকাশকে উক্ত পত্রিকাটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে আখ্যায়িত করে। ২০০৬ সালে সুইডিশ কতিপয় ওয়েবসাইট ওই কার্টুনগুলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলে প্রচার করতে শুরু করে।
পরিস্হিতি কঠিন হলে সু্ইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে উক্ত ওয়েবসাইটগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয় কার্টুনগুলো সরিয়ে ফেলতে।শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে সুইডেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লায়লা ফ্রেইভাল্ডসকে পদত্যাগ করতে হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ওয়েবসাইটগুলো থেকে কার্টুন সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা দেশটির মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী ছিল। ইউরোপের বেশির ভাগ সরকার চাইলেও তারা তাদের মিডিয়াকে নবীদের নিয়ে ধৃষ্টতামূলক কার্টুন প্রকাশে বাধা দিতে পারবে না। অবাধ বাক-স্বাধীনতা প্রকাশ নামক চরিত্র হননের মেশিন দিয়ে ওরা মুসলিমদের হৃদয়ে রক্ত ঝরানোর কাজটি করেই যাবে ।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ইউরোপীয় দেশে নবী করিম (সা:) সম্পর্কে ধৃষ্টতা অবলম্বনে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। যেটি গোটা মানবতার জন্য কল্যাণকর। মানুষের মধ্যে যতক্ষণ না পর্যন্ত বিবেক জাগ্রত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইন দিয়ে তেমন কোনো ফল পাওয়া যাবেনা।
আজ ইসলাম ধর্ম ও নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)র উপর যে অভিযোগের পাহাড় দাঁড় করানো হচ্ছে,খালি চোখে খোঁজলে এর চেয়ে হাজারগুণ দোষ ও ব্যত্যয় অন্যান্য ধর্মগুলোতে পাওয়া যাবে। মানবতা ও সভ্যতার যে, জ্ঞান আজ মুসলিমদের দেওয়া হচ্ছে, সেই সভ্যতা ও মানবতার বীজ পৃথিবীতে সর্ব প্রথম রোপন করে গেছেন বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ)। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণায় পাশ্চত্যরা যখন ভিখারি ছিল,দুর্বল ছিল, মুসলিমরা তখন কতটা ধনী ও শক্তিশালী ছিল, সেটি বুজার জন্য জন্য ইসলামের স্বর্ণযুগকে সাদা চোখে দেখতে হবে। প্রাচীন মুসলিম দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের অবদানের উপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের আধূনিক বিজ্ঞান ও সভ্যতা।
জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে রাসূল (সাঃ)এর অবমাননা রোধে কার্যকরী উদ্যোগ নেবার ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান সংস্হা ওআইসি কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। ১৯৯৮ থেকে নিয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত বহুবার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয় ওআইসি। ইউরোপীয় দেশগুলোর অসহযোগিতার কারণে কার্যত এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
অস্ট্রিয়ার একটি আদালত ২০১১ সালে নবী করিম (সাঃ) কে অবমাননার কারণে জৈনক মহিলাকে যখন ৪৮০ ক্রোনা জরিমানা করা হয়। উক্ত মহিলা তখন পরে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসে আপিল করে বলেন যে, তাকে দেয়া শাস্তির রায়টি ছিল মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। অবশ্যি ইউরোপীয় কোর্ট শাস্তির পক্ষে রায় বহাল রেখে বলে, মুসলমানদের নবী সম্পর্কে ধৃষ্টতামূলক আচরণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। সাত সদস্যবিশিষ্ট উক্ত ইউরোপীয় কোর্ট ২০১৮ সালে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গের এই রায়ে আরো বলে, এর দ্বারা সমগ্র বিশ্বে জাতিগত বিদ্বেষ ও চরম হিংসা ছড়ানো হচ্ছে।
নবী করিম (সাঃ)কে নিয়ে অবমাননার বিরুদ্ধে কোনো আর্ন্তজাতিক আদালতের সর্বশেষ দৃশ্যমান রায় ছিল সেটি। এর পরে আর কোনো রায় এসেছে কি না আমার জানা নেই।
ওআইসি যেহেতু মুসলিম বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এখন বেশ সরব,ভারতে মুসলিম নির্যাতনে তারা এখন আগের চেয়ে অনেক সোচ্চার, সেহেতু এই রায়ের উপর ভিত্তি করে জাতিসঙ্ঘ সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বিশ্বের সকল ধর্ম ও সব নবীর অবমাননা রোধে আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়নের জন্য জোড়ালো দাবী তুলতে পারে ওআইসি।
বাক স্বাধীনতা চর্চার নামে ধর্ম অবমাননা বন্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনের ক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারে ওআইসি।এখনি এর মুখ্য সময়। আর যদি এই ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সংস্হাগুলো একমত হতে পারে, তাহলে পৃথিবীজুড়ে বিদ্বেষের প্রসার কমে আসবে।
হানাহানি কমবে। রক্তপাত বন্ধ হবে। ধর্মগুলোর মধ্যে সহবস্হানের ভিত্তি শক্তিশালী ও মজবুত হবে।
কিন্তুু আন্তর্জাতিক বিড়াল সংস্হাগুলোর গলায় আদৌ কি ঘন্টা বাঁধা যাবে???
নবী পাক (সাঃ) এর সম্মান রক্ষা করা সব মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। এই লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে আমাদের অবশ্যই সোচ্চার হওয়া উচিত।
প্রত্যেকের অবস্হান থেকে জোড়ালোভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যথার্থভাবে বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। এর পাশাপাশি প্রিয় নবী করিম (সা:) এর চারিত্রিক শিক্ষাগুলোর ওপরও মুসলিমদের অধিক মনোযোগ দেয়া উচিত। নবীজির জীবনি বেশি বেশি অধ্যায়ন করা উচিত। রাসূলে পাক (সাঃ)এর জীবন- দর্শন মনের গভীরে পোততে হবে। আমাদের প্রতিটি কর্মে রাসূল পাক (সাঃ)এর প্রতিফলন হওয়া দরকার।
আত্মসমালোচনা করা উচিত সব মুসলিমদের – আমরা যখন মিথ্যা বলি, ঘুষ নিই, মুনাফেকি করি, শাসক হয়ে জনগণকে কষ্ট দেই, মানুষের হক নষ্ট করি, জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করি, প্রতিবেশীর সাথে খারাপ আচরণ করি, প্রশাসনের ক্ষমতা খাটিয়ে মজলুমদের উপর অত্যাচার করি,সম্পদ আত্মসাৎ করি,জলুম করি, সাম্প্রদায়িকতা-অশ্লিলতা ছড়াই, বোমা মেরে মানুষ মারি এবং অন্যায়-অবিচার করি, তখন কি আমরা স্বয়ং আমাদের নবী (সাঃ)এর শিক্ষার বিরোধিতা করছি না ?? আমাদের এই চরিত্রগুলো কি নবীর চরিত্রের সাথে সাংঘর্ষিক না এইগুলো মুসলিমদের ভেবে দেখা উচিত ?
আমরা নবী করিম (সাঃ)কে যদি সত্যিকার অর্থে ভালোবাসি এবং যদি আমরা নবীর শিক্ষার ওপর আমল শুরু করি, তাহলে বিশ্বে কারো সাহস নাই নবীকে অপমান করার। প্রিয় নবীর অবমাননা রোধে প্রথমে আমাদের নিজেদের চরিত্র ঠিক করতে হবে।
নবী করিম পাক (সাঃ)এর জীবন শুধু মসজিদ, খানকা, মাজার, জায়নামায ইত্যাদির মধ্যে আবদ্ধ না রেখে আসুন আমরা ব্যাক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গে অনুসরণ করি। মক্কা বিপ্লবের তাৎপর্য আসুন সঠিকভাবে অনুধাবন করি। সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করি নবীর জীবন আদর্শ। শুধু মুখে নয়, কাজেও মদিনা সনদে দেশ চালানোর প্রমাণ রাখি।
আগামী ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২২ নির্বাচন উপলক্ষে অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড ”আবাই” এর নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করেন গত ১০ই জুন ২০২২ তারিখের তফসিল ঘোষণার পর থেকে। নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনারদের নিকট থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের আহ্বান জানায়। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সুবিধার্থে নির্বাচন কমিশন নিম্নোক্ত উল্লেখিত নির্বাচন কমিশনারদের যোগাযোগের ঠিকানা প্রকাশ করেছে।
নির্বাচন কমিশন উল্লেখ করেছে যে, শুধুমাত্র মনোনয়ন পত্রই নয়, যে কারো যে কোন ধরণের প্রশ্ন, তথ্য, অভিযোগ ও উপদেশ কিংবা পরামর্শ নির্বাচন কমিশনারদের কাছে নির্দ্বিধায় উত্থাপন করতে পারবেন।
Leinster Province
(Carlow, Dublin, Kildare, Kilkenny, Laois, Longford, Louth, Meath, Offaly, Westmeath, Wexford and Wicklow)
Monirul Islam (Babu)
0892265300
babuthander@hotmail.com
Ulster Province (Cavan, Donegal and Monaghan)
Syed Mujibul Hasan
0894534210
smhasan00@yahoo.com
দয়া করে যার যার নিকটবর্তী নির্বাচন কমিশনারের নিকট যোগাযোগ করুন। তারপরেও কোন কারণে কোন নির্বাচন কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যার্থ হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব আজাদ তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করুন।
আজ ১০ই জুন ২০২২ রোজ শুক্রবার অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন আয়ারল্যান্ড ”আবাই” এর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রদান নির্বাচন কমিশনার কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এই তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিলে আগামী ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।
জনাব আজাদ তালুকদার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে ও তফসিল পাঠ করে শোনান। আজকের সভায় নির্বাচনী বিধিমালা পেশ করায় হয়েছে এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্ন উত্তর প্রদান করেন নির্বাচন কমিশনারগণ।
আজকের সভায় নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার, জাকারিয়া প্রধান, মিজানুর রহমান জাকির, আশরাফ চৌধুরী শিবলি, মনিরুল ইসলাম বাবু, মোহাম্মদ শামিম কবির, মাজহারুল হক ঝিনুক, ফয়জুল্লাহ শিকদার এবং ওমর ফারুক নিউটন।
এছাড়া মিডিয়া থেকে উপস্থিত ছিলেন আইরিশ বাংলা টাইমস থেকে মশিউর রহমান ও নাসির খান এবং সময় টিভি থেকে সৈয়দ জুয়েল। আইরিশ বাংলা টাইমস সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে।
আজকের সভায় উত্থাপিত নির্বাচনী তফসিল ও পদসমূহ, বিজ্ঞপ্তি ও নির্বাচনী বিধিমালা নিম্নোক্ত প্রকাশ করা হল। এটাই নির্বাচন কমিশনের আবাই ২০২২ সাধারণ নির্বাচনের অফিশিয়াল তফসিল।
নির্বাচনী তফসিল-২০২২
এতদ্বারা বাংলাদেশী কমিউনিটি আয়ারল্যান্ডের সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বিগত ২৩-০৫-২০২২ খ্রিঃ তারিখে অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন আয়ারল্যান্ড এর সম্মানিত উপদেষ্টা পরিষদ ও নির্বাচন কমিশনারদের সমন্বয়ে এক যৌথ আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ১১-০৯-২০২২ খ্রিঃ তারিখ রোজ রবিবার সকাল ০৯:০০ ঘটিকা হতে বিকাল ০৪:০০ ঘটিকা পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য ‘’অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন আয়ারল্যান্ড’’ এর সাধারণ নির্বাচন-২০২২ উপলক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত সভায় অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের জন্য নিম্নোক্ত তফসিল ঘোষণা করা হয়।
১। ১০-০৬-২০২২ খ্রিঃ তফসিল ঘোষণা করার পর থেকে ২৪-০৬-২০২২ খ্রিঃ, ১২:০০ (মধ্যরাত) পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হবে।
২। ২৬-০৬-২০২২ খ্রিঃ থেকে ০২-০৭-২০২২ খ্রিঃ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হবে।
৩। ০৩-০৭-২০২২ খ্রিঃ থেকে ০৬-০৭-২০২২ খ্রিঃ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে।
৪। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ধার্য করা হয়েছে ১১-০৭-২০২২ খ্রিঃ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার ক্ষেত্রে, ২৫.০০ ইউরো অফেরতযোগ্য।
তফসিলে স্বাক্ষর প্রদান করেন
নির্বাচন কমিশনের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব আজাদ তালুকদার
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকল বাংলাদেশী বংশদ্ভুত ভাই ও বোনেরা, বিনম্র চিত্তে আমার সালাম গ্রহণ করুন। আপনারা অবগত আছেন যে, আয়ারল্যান্ড ভিত্তিক বাংলাদেশী কমিনিটির কেন্দ্রীয় সংগঠন হচ্ছে ‘’অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’’। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচন কমিশন আগামী ১১ই সেপ্টেম্বর রোজ রবিবার ‘’অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’’ এর সাধারণ নির্বাচন-২০২২ এর দিন ধার্য করেছে। আমি আজাদ তালুকদার, উক্ত নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রদান করতেছি।
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ কমিউনিটিকে আরো সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করতেই ‘’অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’’ এর সূচনা এবং আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকলের মনোনীত প্রার্থী দ্বারাই পরিচালিত হবে এই সংঘঠন। তারই ধারাবাহিকতায় আসছে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যেখানে আপনারাই (ভোটার) নির্বাচিত করবেন যোগ্য নেতা, যাদের নেতৃত্বে সুফল বয়ে আনবে কমিউনিটির। সুতরাং সবার কাছে অনুরোধ আপনারা নির্বাচনের আগে নিদৃস্ট সময়ের মধ্যে ভোটার নিবন্ধন করে স্বতঃস্পূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আপনার মূল্যবান ভোট প্রদান করে যোগ্য নেতা নির্বাচন করুন।
তার সাথে আপনারা যারা পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে চান, এগিয়ে আসতে চান কমিউনিটির কল্যাণে এবং যদি মনে করেন আপনার উপস্থিতি কমিউনিটির জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে তাহলে আপনাদের কাছেও বিনীত অনুরোধ যে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে দশের সেবায় এগিয়ে আসার জন্য। কারণ সংগঠনের মাধ্যমে আপনি পারবেন বৃহৎ কল্যাণে ভূমিকা রাখতে।
সেই সাথে আমি সহায়তা কামনা করি আপনাদের সকলের, যাতে করে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও সফল নির্বাচন উপহার দিতে পারি। আপনাদের সহায়তাই আমাদের শক্তি।
আমি ধন্যবাদ জানাই সবাইকে, যারা এতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। সবার অব্যাহত সহযোগিতায় একটি সফল নির্বাচন উপহার দেয়া সম্ভবপর হবে বলে আমার বিশ্বাস।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর প্রদান করেন
কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার
নির্বাচনী বিধিমালা-২০২২
প্রদত্ত ক্ষমতাবলের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন নিম্নরূপ বিধিমালা প্রণয়ন করিল, যথাঃ-
মনোনীত প্রার্থীর জন্য বিধিমালা
১। প্রত্যেক প্রার্থীকে অবশ্যই ২৪-০৬-২০২২ খ্রিঃ তারিখের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন কমিশনারের নিকট হইতে নির্ধারিত ফী পরিশোধের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করিতে হইবে। প্রার্থী অথবা প্রার্থীর মনোনীত ব্যক্তি দ্বারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাইবে।
২। যেই সব পদে কোন প্রার্থী থাকিবে না, সেই সব পদ পরবর্তী কমিটি দ্বারা পূর্ণ হইবে। যেই সব পদে কোন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী থাকিবে না, সেই পদের প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হইবে।
৩। নির্বাচনে কোন প্যানেলভিত্তিক প্রচারণা চালানো যাইবেনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা সরাসরি, সর্বাবস্থায়ই প্যানেলভিত্তিক প্রচারণা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
৪। নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের আগেরদিন কোন প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাইবেনা। ভোটকেন্দ্রে প্রার্থী অথবা প্রার্থীর অনুসারীদের প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা জারি থাকিবে।
৫। ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট, নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তিবর্গ এবং ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গদিগেরই প্রবেশাধিকার থাকিবে। কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীগণ ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ অথবা ভোটকেন্দ্রে অভ্যন্তরে ঘোরাফেরা করিতে পারিবেন না। পোলিং এজেন্টগণ তাহাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে উপবিষ্ট থাকিয়া তাহাদের নিদৃস্ট দায়িত্ব পালন করিবেন।
৬। নির্বাচনী প্রচারণায় কাহারো ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করিয়া কোন ধরণের তিক্ত, উসকানিমূলক, মানহানিকর কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কোন বক্তব্য প্রদান করা যাইবে না।
৭। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সবাই একে অন্যের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখিবেন। একে অন্যেকে আক্রমণাত্মক কথা এবং শারীরিক আক্রমণ থেকে বিরত থাকিতে হইবে, অন্যথায় উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন অভিযুক্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করিতে বাধ্য থাকিবে।
৮। নির্বাচনী প্রচারণায় এবং নির্বাচনকে ঘিরে যে কেহ যে কোন ধরণের আর্থিক লেনদেনে জড়িত হইতে পারিবেন না।
৯। প্রত্যেক প্রার্থীকে তাহার মনোনীত পোলিং এজেন্টের নাম নির্বাচনের আগে প্রদান করিতে হইবে। একই কেন্দ্রে একাধিক পোলিং এজেন্ট কিংবা মনোনীত পোলিং এজেন্ট ছাড়া অন্য কাউকে পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব দেওয়া যাইবে না।
১০। কোন প্রার্থী নির্বাচনী বিধিমালা অমান্য বা লঙ্ঘন করিলে অথবা কোন কমিশনারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হইলে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে উক্ত প্রার্থীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বিরত রাখিতে পারিবে।
ভোটারদের জন্য বিধিমালা
১। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকল বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ভোটার হইতে পারিবেন। বাংলাদেশী নাগরিক নহে কিন্তু পরিবারবর্গের কেহ বাংলাদেশী নাগরিক হইলে তাহারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হইবে।
২। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবাইকে ভোটার হওয়া আবশ্যকীয়। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবশ্যই ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করিতে হইবে, অন্যথায় ভোট দেয়ার অনুমতি প্রদান করা হইবে না।
৩। ভোটার নিবন্ধনে পরিচয়পত্র অনুযায়ী সম্পূর্ণ নাম ব্যবহার করিতে হবে। ভোটার তালিকার সাথে পরিচয় পত্রের নাম না মিলিলে ভোটারকে ভোট প্রদানে বিরত রাখিতে বাধ্য থাকিবে।
৪। নির্বাচনের দিন প্রত্যেক ভোটারকে তাহাদের নিজ নিজ দায়িত্বে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হইতে হইবে। ভোটকেন্দ্রের ঠিকানা নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে জানাইয়া দেওয়া হইবে।
৫। ভোটারদেরকে অবশ্যই ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা বজায় রাখিয়া চলিতে হইবে। যে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা কর্তব্যরত ব্যক্তিবর্গের দ্বারা রহিত করা হইবে। অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে ভোট প্রদান শেষে প্রত্যেক ভোটারকে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করিতে হইবে।
নির্বাচন কমিশনারদের জন্য বিধিমালা
১। কোন নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচন বহির্ভূত আচরণ অথবা অন্য কোন ব্যক্তিগত কাজের দায়ভার নির্বাচন কমিশন বহন করিবে না। তবে কোন নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনী আইন বিধি লঙ্ঘন করিলে প্রার্থী তাহার উপযুক্ত প্রমাণ সহ লিখিতভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিকট অভিযোগ পত্র পেশ করিতে পারিবেন। উক্ত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত হইলে উপদেষ্টা পরিষদ এবং নির্বাচন কমিশনের সমন্বয়ে তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।
২। নির্বাচনী মনোনয়ন পত্রের ফী নির্বাচনের ব্যয়ের পর অতিরিক্ত অর্থ (যদি থাকে) এসোসিয়েশনের তহবিলে জমা দেওয়া হইবে।
আজকের সভায় উত্থাপিত বিবিধ বিষয়াবলীঃ
– সবাইকে ভোটার হওয়ার আহ্বান। ভোটারদের www.abai.ie ওয়েবসাইট থেকে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
– ভোটার রেজিস্ট্রেশনসহ যে কোন ধরণের সমস্যার ব্যাপারে ভোটারদেরকে প্রত্যেক কাউন্টির লোকাল নির্বাচন কমিশনারদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য জানানো হয়।
– নির্বাচন কমিশন সবার স্বতঃস্পূর্ত সহযোগিতা কামনা করেন।
– নির্বাচন কমিশন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার ইতি টানেন।
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করাই মানুষের বৈশিষ্ট্য। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছিলেন ”স্বভাবের দিক থেকে সব মানুষই হল সামাজিক প্রাণী’’। তাঁর মতে, যে কোন ব্যক্তির অস্তিত্বের পরিপ্রেক্ষিতে আগে আসে সমাজের গুরুত্ব। অর্থাৎ, এই পৃথিবীর কোন মানুষই সমাজের ঊর্ধ্বে নয়। মানুষকে বসবাস করতে হলে কোনো না কোনো সমাজেরই আশ্রয়েই জীবনধারণ করতে হয়।
সংগঠন কি এবং কেন প্রয়োজন?
সংগঠন হচ্ছে একটি সামাজিক ব্যবস্থা যা কতিপয় বিশেষ উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সমাজবিজ্ঞানীরা কেউ কেউ সংগঠনকে সোশ্যাল ইউনিট আবার কেউ সামাজিক ব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। মূল কথা হল, সংগঠন হলো একটি লক্ষ্য অভিমুখী, পরিকল্পিত ও ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা সত্ত্বা যা একক বা দলীয় উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়তা করে থাকে।
একটি সমাজের আকার যখন বড় হয়, তখন তার মধ্যে দরকার পড়ে আইন, নিয়ম-নীতি ও সঠিক দিক নির্দেশনা। স্বার্থগত কারণেই একে ওপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠা লাগে, দরকার হয় একে অন্যের সাহায্য সহায়তার। একই সমাজে বাস করতে গেলে যেমন একে অন্যের সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যায়, তেমনি তৈরি হয় দ্বন্দ্ব, সংঘাত, মতানৈক্যের। সুতরাং একটি সমাজ সঠিক ভাবে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন পড়ে সংগঠনের। একটি উপযুক্ত সংগঠনের নেতৃত্বে একটি সমাজ পরিচালিত হতে পারে মসৃণভাবে।
সংগঠনের নেতৃত্ব কে দিবে, তা মূলত নির্ধারণ করে সমাজের ব্যক্তিবর্গরাই। আবারো অ্যারিস্টটলের কথায় ফিরে যাই; তিনি সংগঠন বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন, ”সংগঠন মানুষের নেতিবাচকটা থেকে বেরিয়ে আসতে সহযোগিতা করে। সামাজিক সংগঠন হতাশা ও দুঃখবোধ থেকে বেরিয়ে আসতেও মানুষকে সাহায্য করে। চলার পথে একে অন্যকে সহযোগিতা করার মানসিকতা তৈরী করে। জীবনের প্রতি মুহূর্তকে উপভোগ করার পরিস্থিতি ও তৈরী করে দেয় সংগঠন’’।
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি সংগঠন কেন দরকার?
এখন হয়ত প্রশ্ন আসবে, আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের জন্য আলাদা করে কেন সংগঠন প্রয়োজন? এখানে তো সরকার থেকে শুরু করে স্থানীয় কাউন্সিলর সবই রয়েছে। হ্যাঁ, এটা শতভাগ ঠিক যে, আয়ারল্যান্ডের প্রশাসনই এখানকার সমাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু তারপরেও কেন বাংলাদেশীদের জন্য একটি গোষ্ঠীয় সংগঠন দরকার তার উপর আলোকপাত করা যাক।
আমরা যারা বাংলাদেশি বংশদ্ভুত এখানে রয়েছি, আমাদের ভাষা ভিন্ন, আমাদের সংস্কৃতি ভিন্ন, আমাদের ধর্ম ভিন্ন, আমাদের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। তারপরে আমাদের আড্ডা দেয়ার আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, আমাদের কথা বলার ঢং আলাদা, আমাদের উদযাপনের রীতি আমাদের মতই; যার কারণে আমাদের আনন্দ-বেদনার অনুভূতিও অন্যরকম। এই বাঙ্গালিয়ানার জাল আমি চাইলেও ছিন্ন করতে পারব না। আমার চারপাশে পরিবেষ্টিত থাকতে হবে বাংলাদেশীদের দ্বারা, আমার কানে আসতে হবে বাংলায় উচ্চারিত ধ্বনি, আমার জিহ্বায় লাগতে হবে বঙ্গীয় রসনা স্বাদ। এবং এসব কারণেই আমাকে বাস করতে হবে বাঙালি পরিবেষ্টিত সমাজে।
সুতরাং আমরা নিজেরাই গড়ে তুলি সমাজের মাঝে সমাজ। যে সমাজ পরিচালিত হয়না জাতীয় সংবিধান অনুযায়ী, কিন্তু একটি আবেগতাড়িত সংবিধান এখানে গড়ে উঠে ধীরে ধীরে।
যেহেতু এখানে গড়ে উঠেছে একটি জাতিগত সমাজ, সুতরাং উপরোক্ত উদাহরণ অনুযায়ী এর পরিচালনার জন্য স্বভাবজাতভাবেই প্রয়োজন পড়ে একটি সংগঠনের। এবং সংগঠনটির একটি নেতৃত্ব থাকবে, যেখানে নেতৃত্ব দিবে সমাজের জনগণ দ্বারাই নির্বাচিত কেউ।
আয়ারল্যান্ডে আমরা যারা বসবাস করে আসতেছি, আমরা অবশ্যই অনেক ক্ষেত্রেই অনুভব করে থাকি একটি কেন্দ্রীয় সংগঠনের। যেমনঃ আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী হাই কমিশন স্থাপন, বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের হাই কমিশন স্থাপন, বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে হলে কমিউনিটিকে নেতৃত্ব দেয় এমন নেতার প্রয়োজন। কারণ প্রশাসন অথবা কতৃপক্ষ চাইলেই যে কারো সাথে যে কোন বিষয়ে কথা বলবে না। সে জন্য প্রয়োজন কমিউনিটি কতৃক নির্বাচিত নেতৃবর্গ, যারাই নেতৃত্ব দিবে কমিউনিটিকে।
এছাড়াও অনেক বাংলাদেশি প্রবাসে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন, যারা সাহায্যের জন্য কোথায় যাবেন তা অনেকেই জানেন না, সেক্ষেত্রে কমিউনিটিকে নেতৃত্ব দেয় এমন সংগঠন এগিয়ে আসতে পারে তাঁদের সহায়তায়। দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, দেশ থেকে আগত টুরিস্ট, ছাত্র ও চাকুরীজীবীদের সুবিধা অসুবিধা দেখভাল করা। কেউ মারা গেলে মুসলমান কবরস্থানের ব্যবস্থা করা কিংবা লাশ দেশে পাঠানোর জন্য সহযোগিতা করা, আয়ারল্যান্ডে কেউ চিকিৎসা করতে না পারলে আর্থিক সহায়তা প্রদান করাসহ এমন অসংখ্য কার্যাবলী রয়েছে যা একটি সংগঠন পালন করতে সক্ষম।
সমাজের মধ্যে একে অন্যের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি যখন তৈরী হয়, সেই ক্ষেত্রে ব্যক্তির সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক মধুর করার পেছনে একটি আদর্শ সামজিক সংগঠনের ভূমিকা অগ্রগণ্য। একটি আদর্শ সংগঠনই পারে একে অন্যের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করতে।
বাংলাদেশি সংগঠন ”আবাই”
সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে এবং আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটির কল্যাণে ভূমিকা রাখার নিমিত্তে গঠিত হয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটি ভিত্তিক কেন্দ্রীয় সংগঠন ”অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন আয়ারল্যান্ড’’, যা সবার কাছে আবাই বা ABAI নামে পরিচিত। ”আবাই” আমরা আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটির মুখপাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। একটা সামাজিক সংগঠন কখনো টিকে থাকতে পারবে না সমাজের সবার গ্রহণযোগ্যতা ছাড়া। একটা সমাজের জন্য যেহেতু একটা সংগঠন প্রয়োজন, সেহেতু ”আবাই” কে গ্রহণযোগ্য করে তোলা সমাজের সবারই দায়িত্ব। অপরপক্ষে ”আবাই” যদি সমাজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে ব্যার্থতার পরিচয় দেয় তাহলে তা আপনা আপনিই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
আবাই এর নির্বাচন খুব শিগ্রই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আসুন আমরা সবাই নির্বাচনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সয়াহতা করি। যথাসময়ে ভোটার হয়ে সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে পারে এমন যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নেতৃত্ব তুলে দেই এবং যারা সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তাঁরা যেন নেতৃত্বের দায়ভার গ্রহণ করে কমিউনিটির কল্যাণে নিয়োজিত হতে পারি।
শেষকথা
আর. এম. ম্যাকাইভার বলেন, ‘’আমাদের সামাজিক সম্পর্কের জটিল জালই হচ্ছে সমাজ’’। আমরা কেউই এই জটিল জাল থেকে বের হতে পারব না। কিন্তু এই জটিল জালে থেকে কিভাবে সুখকর সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে পারে সে লক্ষ্যে আমাদের কাজ করা উচিত এবং তা একমাত্র সম্ভব হবে সংঘবদ্ধ থেকে, আর সংঘবদ্ধ থাকার প্রধান উপকরণ হচ্ছে সংগঠন।
সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ৭, আহত তিন শতাধিক
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিষ্ফোরণের পরই ডিপোতে থাকা আমদানি ও রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনারে আগুন ধরে যায়। এই বিষ্ফোরণে কম্পনের আওয়াজ এতটাই তীব্র ছিলো যে, আশেপাশের এলাকার অধিকাংশ বিল্ডিয়ের কাঁচের গ্লাস ভেঙে যায়। এই ঘটনায় ৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত তিন শতাধিক।
সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। শনিবার রাত ১০ টার দিকে এই ভয়াবহ বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিষ্ফোরণের সাথে সাথে কনটেইনারে আগুন ধরে যায়। ডিপোতে থাকা রাসায়নিক পদার্থবাহী কনটেইনার থেকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
জানা যায়, আগুন একটা কনটেইনার থেকে আরেকটাতে ছড়িয়ে পড়ছে।আর এতে মালবোঝাই এইসব কনটেইনারে একের পর এক বিষ্ফোরণ ঘটছে। বিষ্ফোরণে কেঁপে উঠছে আশেপাশের এলাকা। এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৬ টা ইউনিট কাজ করছে।
অগুন নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮ টি ইউনিট । রাত ২ টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
এদিকে আহতদের মধ্যে শতাধিক লোককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালে তিলধারণের জায়গা নেই। একটু পরপর সাইরেন বাজিয়ে আসছে এম্বুলেন্স । আহতদের পাশাপাশি তাদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের চারপাশ।
জানা যায়, এই ঘটনায় চট্টগ্রামের সকল চিকিৎসকসহ চিকিৎসা সেবায় জড়িততে স্ব স্ব কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী। তিনি নিজেও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছেন।
চমেক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক নুরুল আলম আশেক মানবজমিনকে বলেন, সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
এদিকে ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডা জানিয়েছে, ওই ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের একটি চালান ছিল।সেখান থেকেই রাত ১০ টার দিকে প্রথম বিষ্ফোরণ ঘটে। পরে সেখানে আগুন ধরে যায়।এই আগুন বাকি কন্টেইনারেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএম ডিপোটি চট্টগ্রামের স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন। এটি দেশের ৫ম বৃহত্তম বেসরকারি কনটেইনার ডিপো। প্রতিষ্ঠানটির এমডি মুজিবুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, কি কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কনটেইনার থেকেই আগুন ধরেছে বলে ধারণা করছি। নৈতিকতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হতাহতদের পাশে থাকবো।
গতকাল ১জুন ২০২২ বুধবার লিমেরিক সিটি কাউন্সিল হল অফিসে অনুষ্ঠিত হলো ABAI এর নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদের এক ঐতিহাসিক যৌথ জরুরী সভা। এই সভাকে এই জন্য ঐতিহাসিক বলছি কারন নির্বাচন কমিশন তাদের ১২ জন কমিশনার নিয়ে গত ২৩মে সোমবার ২০২২ ডাবলিনের Red Cow Moran হোটেলে দিনব্যাপী যেই সাধারন সভায় তারা নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন সহ আরও যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তার সব গুলো সিদ্ধান্তকে গতকাল উপদেষ্ঠা পরিষদ স্বাগত জানায় এর ফলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় কাটিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সবার অংশগ্রহনে আগামী ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২২ আবাই নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এটি ছিল নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে সমন্বয়ের ও ঐক্যের এক উজ্জল দৃষ্টান্ত।
নির্বাচন ১১ই সেপ্টেম্বর রবিবার ২০২২
গতকাল লিমেরিক সিটি কাউন্সিল হল অফিসে দীর্ঘ সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার পর বহুল প্রতিক্ষীত ABAI এর সাধারন নির্বাচন ২০২২ এর সমস্ত চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের পর প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
সভাটি উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান জনাব মোহাম্মদ মোস্তফা ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান জনাব আজাদ তালুকদারের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় সকলের সম্মতিক্রমে নিম্মোক্ত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়:
১. সভায় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ২৩মে সোমবার ২০২২ এ গৃহীত প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত সমূহ গভীরভাবে পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে গ্ৰহন করা হয়।
২.নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে আগামী ১০ই জুন শুক্রবার ২০২২।
৩. উপদেষ্টা পরিষদের যে সকল সদস্য নির্বাচন করবেন অথবা কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাবেন, তারা ১০ই জুন’ ২০২২ এর মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে পদত্যাগপত্র দাখিল করবেন।
৪. তফসিল ঘোষণা ১০ই জুন শুক্রবার ২০২২ এবং তফসিল ঘোষণা করার পর থেকে ১৭ই জুন শুক্রবার ২০২২ রাত ১২টা মধ্যরাত পর্যন্ত মনোনয়ন-ফর্ম বিক্রি করা হবে। প্রতিটি পদের জন্য প্রার্থীগন €২৫ ইউরো দিয়ে মনোনয়ন-ফর্ম ক্রয় করতে পারবেন।
৫. ১৯শে জুন রবিবার ২০২২ থেকে ২৫শে জুন শনিবার ২০২২ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হবে। প্রার্থীগন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তাদের পদের জন্য নির্ধারিত মনোনয়ন-ফি জমা দিতে হবে।
৬. ২৬শে জুন রবিবার ২০২২ থেকে ৩০শে জুন বৃহস্পতিবার ২০২২ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে।
৭. প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ধার্য করা হয়েছে ৫ই জুলাই মঙ্গলবার ২০২২. মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার ক্ষেত্রে মনোনয়ন-ফর্মের মূল্য অফেরতযোগ্য।
৮. মোট ২৭টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
৯. সভায় ভোটার নিবন্ধিকরনের প্রতি অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
১০. উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ আর্থিক সহযোগিতা সহ সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
১১. নির্বাচন কমিশনের কোন সদস্য নির্বাচন করতে পারবেন না এবং কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা বা নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে পারবেন না।
১২. প্রার্থীগন শুধুমাত্র একক ভাবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে পারবেন,কোন প্যানেলে নির্বাচন করতে পারবেন না।
১৩. ভোটারদেরকে ভোট প্রদানের সময় অবশ্যই তার নিজের ছবি সহ গ্রহণযোগ্য পরিচয়পত্র (Valid Photo ID ) দেখাতে হবে।
১৪. নিজেকে বাংলাদেশী প্রমান করতে পারলে যে কেউ ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।
১৫. উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান , উপদেষ্টা পরিষদের সংশোধিত তালিকা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিকট প্রদান করিবেন ১০ই জুন শুক্রবার ২০২২ এর মধ্যে।
১৬. তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ভাবে তাদের নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবে তবে যে কোন প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
মহান আল্লাহর কৃপা কামনা করে এবং পরস্পরের সহযোগিতার ভিত্তিতে একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে সভাটি সমাপ্ত করা হয়। সভা শেষে নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগন এক নৈশভোজে যোগদেন।
উপদেষ্টা পরিষদ ও নির্বাচন কমিশনের যে সকল সদস্যগন গতকাল লিমেরিক সিটি কাউন্সিল হলে সধারন সভায় উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন:
১. জনাব মুহাম্মদ মোস্তফা (প্রধান উপদেষ্টা)
২. জনাব আজাদ তালুকদার ( প্রধান নির্বাচন কমিশনার)
৩. শামসুল হক (হক ভাই)
৪. মিজানুর রহমান জাকির
৫. শাহাদাৎ হোসেন
৬. সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
৭. আব্দুল জলিল
৮. সৈয়দ মুজিবুল হাসান
৯. চুন্নু মাতবর
১০. মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রধান
১১. সাইফুল ইসলাম
১২. আব্দুর রহমান
১৩. গোলাম নবী
১৪. মোহাম্মদ তাউস মিয়া তালুকদার
১৫. মনিরুল ইসলাম
আশা করা যায়, নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে গতকালকের সাধারন সভায় গঠনমূলক আলোচনার মধ্যদিয়ে তাদের মধ্যে যে শক্তিশালী সমন্বয় ও ঐক্য লক্ষ্য করা গেছে এতে করে ভোটার এবং প্রার্থীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বাড়বে এবং একটা বিশাল সংখ্যার ভোটার তালিকা প্রনয়নের করার কাজ তরান্বিত হবে এবং সকল মানুষের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে ১১ই সেপ্টেম্বর রবিবার ২০২২ আমরা আয়ারল্যান্ড প্রবাসীরা দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর একটা সুন্দর নির্বাচন দেখতে পাবো।
আলোচনায় নির্বাচন কমিশনারগণ আহবান করে, এখনো যারা নিবন্ধন করার সুযোগ পাননি তাঁরা যেন জলদি www.abai.ie তে নিবন্ধন করে নেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা নদীর ওপরে নির্মিত এ সেতুর নামকরণ করা হয়েছে ‘পদ্মা সেতু’। রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক নামকরণের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
আগামী ২৫ জুন চালু হচ্ছে পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ ও সেতুর নামকরণ অনুমোদনের জন্য ২৪ মে সারসংক্ষেপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পদ্মা সেতুর নাম পদ্মা সেতুর নামেই হবে।
আজ ২৯ই মে রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ কমিনিটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী পদগুলোর ফলাফল ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে। আজকে শুধুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী পদগুলোর জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী পদগুলোর মধ্যে রয়েছে সভাপতি ও ক্রীড়া সম্পাদক। উক্ত পদগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকার ফলে নির্বাচনের মাধ্যমে পদ নির্ধারণ করা হবে।
সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেছেন জনাব জসিম উদ্দিন দেওয়ান ও জনাব আজিমুল হোসাইন এবং ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জনাব আব্দুর রহিম ও জনাব আবু তালেব মামুন।
গলওয়ের নকনাকারা কমিউনিটি সেন্টারে নির্বাচন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
আর্থ–সামাজিকপ্রেক্ষাপটে, গাফ্ফারচৌধুরীসর্বদাবস্তুনিষ্ঠকলামলিখতেনযাতেজাতিকেঅন্ধকারথেকেআলোরদিকেনিয়ে যাওয়ার জন্যপ্রয়োজনীয়দিকনির্দেশনাথাকতো।আমরাএখনএইকলামগুলোথেকেবঞ্চিতহব।
গতকাল ১৫ই মে রবিবার ২০২২,আয়ারল্যান্ডের DCU ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির Stokes Building এ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রবাসী বাঙ্গালীদের বহুল প্রতিক্ষীত প্রানের মেলা “২১শে বই মেলা২০২২”।
আয়ারল্যান্ডের প্রথম বইমেলা ২০২০ সালের পর ২০২১ সালে করোনার কারনে কোন বই মেলা হয়নি তাই এবছর বই মেলা নিয়ে উপস্থিত মানুষের মাঝে বেশ উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে আয়োজনের চেষ্টায় কোন কমতি ছিলনা। বই মেলার পাশাপাশি আগত মানুষদের জন্য প্রায় সকল বিনোদনের আয়োজন রাখা হয় আর তাই সকল প্রবাসী বাঙ্গালীরা তাদের বাঙ্গালীয়ানা প্রকাশের মধ্য দিয়ে একটা সুন্দর দিন অতিবাহিত করেন।
আয়োজনের মধ্যে ছিলো:
বই মেলার মূল আকর্ষণ বইয়ের স্টল সাজানো বড় পরিসরে মেলা প্রাঙ্গন। এবারের মেলায় একটি বাচ্চাদের বইয়ের স্টল ছিল এবং ছিল ইসলামী বইয়ের একটি বেশ বড় স্টল।
বইয়ের স্টলের পাশে প্রদর্শিত হয় আয়ারল্যান্ড প্রবাসী চিত্রশিল্পী জেবুন নাহার অনুর মনোমুগ্ধকর চিত্রকর্মের প্রদশর্নী।
বাচ্চাদের জন্য ছিলো চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা। বিপুল সংখ্যক বাচ্চাদের এই প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে দেখা যায়।
আয়োজনের মধ্যে ছিলো বাংলাদেশ নিয়ে বিষয় ভিত্তিক রচনা প্রতিযোগীতা। এই রচনা প্রতিযোগীতায়ও উল্ল্যেখযোগ্য কিশোর কিশোরী অংশ নেয়।
বই মেলার মূল ভেন্যূতে সুন্দর করে তৈরী করা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বই মেলাকে আলোকিত করা আগত চারজন কবি ও কথাসাহিত্যিকদের নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মেহেদী হাসান।
এবারের মেলায় কবি ও কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কবি ইশরাত আরা লাইজু, কবি ও কথাসাহিত্যিক মেহেদী হাসান, কবি ও লেখিকা লতা ওসমানী এবং কবি ও লেখক ডাঃ জিন্নুরাইন জাইগীরদার।
এবারের বই মেলায় একটি ছোট্ট পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। সাথে ছিল রসগোল্লা চমচম আর নানান সাধের মিষ্টির দোকান। ছিল পান্তা ইলিশ ও চটপটির স্টল। ছিল প্যাকেট করা বিরিয়ানী। তাসনুভা শামীম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বাচ্চাদের দেওয়া হয় গুডিব্যাগ।
এবারের বই মেলায় একটু ভিন্নতা আনার জন্য দর্শকদের জন্য রাখা হয় পোশাকের স্টল।
দুপুর ২টার মধ্যে মেলা প্রাঙ্গন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
আগত মানুষদের নিয়ে বই মেলার মূল ভেন্যূর বিল্ডিংয়ের নিচতলায় জোহরের নামাজের একটি বড় জামাতের পর সকলকে বইমেলার আড্ডায় মেতে উঠতে দেখা যায়।
বেলা ২:৩০মিনিটে বই মেলা প্রাঙ্গনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন এবং বইয়ের স্টল ঘুরে দেখেন বাংলাদেশী কমিউনিটির গর্ব আমাদের সবার প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় এমিরিটাস প্রফেসর জনাব এম এস জে হাসমি।
বেলা ৩টায় ডাবলিন শহরের মাননীয় মেয়র Alison Gilliland এর আগমনের পর শুরু হয় মেলার মূল আনুষ্ঠানিক পর্ব। Stokes Building এর অডিটরিয়ামে তিল ধারনের ঠা্ঁই ছিলনা। বিপুল পরিমান আগত অতিথিদের সামনে স্বাগত বক্তব্য দেন মেলার প্রধান আয়োজক ও সংগঠক জনাব সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান, তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং লর্ড মেয়রকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বক্তব্য রাখেন প্রফেসর জনাব এম এস জে হাসমি, তিনি তার বক্তব্যে ভাষা শহীদদের স্বরণ করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন বই মেলার প্রধান অতিথি ডাবলিন শহরের মাননীয় মেয়র Alison Gilliland. মেয়র বলেন, বাংলাদেশীদের দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, পোশাক ও মজাদার খাবার নিয়ে আয়োজিত এই মেলা খুবই প্রশংসনিয় এবং তাকে আমন্ত্রন জানানোর কারনে তিনি বাংলাদেশী কমিউনিটিকে ধন্যবাদ জানান। এর পর মেয়র বইয়ের স্টল ও মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখেন ও আগত অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
২১শে বই মেলায় আরও উপস্থিত ছিলেন লিমরিক সিটির ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার এবং ডাবলিন সাউথ Sandyford এলাকার কাউন্সিলর জনাব কাজী মোস্তাক আহমেদ ইমন। আয়োজক কমিটি এই দুইজন অতিথিকে মাননীয় মেয়রের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তারা দুজন মঞ্চের প্রথম সারিতে মেয়রের পাশের আসনে বসে পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
সারা দিনই প্রতিটি বইয়ের স্টলে ছিল বইপ্রেমীদের ভিড়। এবারের মেলায় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দর্শকসমাগমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন আয়োজকেরা।
বিকেল ৪:৩০মিনিটে Stokes Building এর অডিটরিয়ামে শুরু হয় সংস্কৃতীক অনুষ্ঠান এবং আগত অতিথিদের একটা বিড়াট অংশ এই সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।
এবার ২১শে বই মেলা ২০২২ এর মূল আয়োজকদের মধ্যে যারা ছিলেন তারা হলেন, সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান, মুহাম্মদ মুস্তফা, চুন্নু মাতবর, আরিফ ভূ্ঁইয়া, মেহেদী হাসান, আব্দুল জলিল, বেলাল হোসেন শ্যামল, শায়লা শারমীন, সাজিলা চৌধুরী, আক্তার হোসেন, সৈয়দ জুয়েল, গোলাম মোর্শেদ কামরুল, সাহাদাৎ হোসেন, মাসুদ শিকদার, মামুন মীর, শামীম আহমেদ সাগর, কাজী অপু, আসিফ হোসেন হিরন, কবির আহমদ, সালাহউদ্দিন সোয়েব, রুনা জলিল এবং মশিউর রহমান।
বইয়ের মেলা মানে জ্ঞানের মেলা, বই মেলাই একমাত্র স্থান যেখানে দল মত নির্বিশেষে সকল মানুষ এক ছাতার নিচে আসে। এবারের বইমেলায় পাঠক- পাঠিকা, লেখক সহ আগত সকল মানুষ একসঙ্গে স্থানীয় বাংলাদেশিদের গল্প আড্ডায় সময় পার করতে দেখা যায়। সব মিলিয়ে প্রাণবন্ত এই মেলায় সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বইমেলাকে সফল করে তোলে বলে জানান আয়োজক জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান এবং আগামী বছর ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে এ বইমেলা আয়োজন করার প্রত্যয় নিয়ে সমাপ্ত হয় এবারের আয়ারল্যান্ডের একুশে বইমেলা।
পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত ক্ষুদ্র জনসংখ্যার দ্বীপ রাষ্ট্র আমাদের এই আয়ারল্যান্ড। এখানে ১০/১২ হাজার বাংলাদেশী মানুষের বসবাস। আগামী কাল ১৫ই মে রবিবার বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষীত প্রানের মেলা “২১শে বই মেলা ২০২২”। বই মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে Dublin City University তে, সকাল ১১টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলা চলবে। বইমেলা হলো মানুষের মিলনমেলা।
২১শে বই মেলার বিশেষ আকর্ষনের মধ্যে থাকছে কবি ও লেখকদের জন্য বিশেষ সেমিনার। আয়ারল্যান্ডে ও ইংল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী কবি, কথাসাহিত্যিক ও লেখক- লেখিকাগন মেলাকে আলোকিত করবেন।এবারের বই মেলায় থাকছে কবি ও কথাসাহিত্যিক আয়শা আহমেদের “কবিতার কথা ” নামে একটি বইয়ের ষ্টল।
কবি ও কথাসাহিত্যিক আয়শা আহমেদ প্রধানত একজন কবি। সমাজ চিন্তক। মানবতাবাদী মহীয়সী নারী। জন্ম হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায়। মামার বাড়ী জলজোছনার শহর সুনামগঞ্জ। বৃন্দাবন কলেজে পড়াশোনা। ‘৭২ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে। নিরন্তর লিখে চলেছেন। কবিতা, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকা নিয়ে তার লেখা , গল্প, প্রবন্ধ ও ফিচার নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। তিনিই প্রথম বাঙালি যিনি ইংল্যান্ডের চেস্টার সিটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেন। তার সুবৃহত উপন্যাস সায়ান্তের গোধূলি চৈতন্য থেকে ফেব্রুয়ারী ২০২২ এ প্রকাশিত হয়।
আয়শা আহমেদের এই পর্যন্ত ৭টি বই প্রকাশিত হয়েছে এর মধ্যে চারটি কবিতার তিনটি উপন্যাস।
প্রকাশিত গ্রন্থসমুহ:
তৃষিত অরুনিমা(কবিতা)
শেষ বিকেলের কবিতা (কবিতা)
জোৎস্নায় বাজে সুর (কবিতা)
এ টাচ অব ডাস্ক( ইংরেজি কবিতা)
পায়ে পায়ে প্রহর(উপন্যাস)
পৃথিবীর রং বদলায়(উপন্যাস)
সায়হ্নের গোধূলি (উপন্যাস)
আয়শা আহমেদ ব্যাক্তিগত কারনে এবার বই মেলায় উপস্থিত হতে পারছেন না তবে পাঠাক- পাঠিকাদের জন্য তিনি ২১শে বই মেলায় বই পাঠিয়ে দিয়েছেন। “কবিতার কথা” নামক বইয়ের ষ্টলে তার বইগুলো পাওয়া যাবে।
বই মানুষের পরম বন্ধু, মানব সভ্যতার অন্যতম প্রাণসভা। বই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের মাঝে তৈরি করে সেতুবন্ধন। বই সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে পরিচালিত করে মানুষকে বিশুদ্ধ করে তোলে। ম্যাক্সিম গোর্কি বলেছেন- “আমার মধ্যে উত্তম বলে যদি কিছু থাকে তার জন্যে আমি বইয়ের কাছে ঋণী।” মানুষ জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণের জন্য বইমেলায় ছুটে যায়। বইমেলায় প্রতিদিনের ব্যস্ততা ভুলে মানুষ আনন্দস্রোতে অবগাহন করে। বইমেলার আসল উদ্দেশ্য হলো বইকেনায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলা।
আয়োজকগন আশা করছেন এবারের মেলায় সারা আয়ারল্যান্ড থেকে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটবে। সবাইকে মেলায় আমন্ত্রন জানিয়ে মেলাকে সফল করতে সকলের প্রতি সহযোগীতার আহবান জানিয়েছেন আয়োজকগন।
পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত ক্ষুদ্র জনসংখ্যার দ্বীপ রাষ্ট্র আমাদের এই আয়ারল্যান্ড। এখানে ১০/১২ হাজার বাংলাদেশী মানুষের বসবাস। আগামী কাল ১৫ই মে রবিবার বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষীত প্রানের মেলা “২১শে বই মেলা ২০২২”। বই মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে Dublin City University তে, সকাল ১১টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলা চলবে। বইমেলা হলো মানুষের মিলনমেলা।
২১শে বই মেলার বিশেষ আকর্ষনের মধ্যে থাকছে কবি ও লেখকদের জন্য বিশেষ সেমিনার। আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী কবি সাহিত্যিক ও লেখকগন মেলাতে উপস্থিত হয়ে মেলাকে আলোকিত করবেন। উপস্থিত থাকবেন কবি ও লেখক ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার। এই পর্যন্ত তার চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে।
জিন্নুরাইন জায়গীরদার পেশায় একজন চিকিৎসক। সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে থেকে এম বি বি এস পাশ করে, আই পি জি এম এন্ড আর এ কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। এনেসথেশিয়া (অবেদন ও অচেতনতা) বিষয়ে ডিপ্লোমা, এফ সি পি এস, এম ডি ডিগ্রি অর্জন করে ১৯৯৭ সালে চলে যান সৌদি আরব, এরপর ২০০৩ সালে আসেন প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ডে। উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এফ সি এ ডিগ্রী করেন, বিশেষ ফেলোশিপ করেন হেপাটোবিলিয়ারি এবং লিভার ট্রান্সপ্লান্ট এনেসথেশিয়া বিষয়ে। বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের কনোলি হাসপাতালে কাজ করছেন, এনেসথেশিয়া (অবেদন ও অচেতনতা) এবং ইনটেনসিভ কেয়ারের (নিবিড় পরিচর্য্যা) কনসালটেন্ট হিসাবে।
২০২২ সালে একুশে বইমেলা প্রকাশিত হয় ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারের দুটি বই “বর্ণমিছিল” ও “সমাজ সংকটে”। প্রকাশনা করেছে বর্ষাদুপুর প্রকাশনী। ভাষা আন্দোলনের সাক্ষী “বর্ণমিছিল” বইটি। আর আমাদের সমাজের নানা অনিয়ম, অবিচার, দুর্নীতি, অন্যায় নিয়ে “সমাজ সংকটে” বইটি সাজানো হয়েছে।
সমাজসেবা ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারের বিশেষ ভালোবাসার অঙ্গন। দেশে তিনি স্কাউট, রোভার স্কাউট, লিও ক্লাব, লায়ন্স ক্লাবের সাথে যুক্ত ছিলেন। প্রবাসে এম এস সি ডিগ্রি নেন লিডারশীপ উন্নয়ন বিষয়ে। অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, ইউরোপের ৩০টি দেশের বাংলাদেশীদের শীর্ষ কমিউনিটি সংগঠন অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ এসোসিয়েশন (আয়েবা)’র ভাইস প্রেসিডেন্ট। ইউরো বাংলা প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা। আইরিশ বাংলাপোষ্ট নামে ওয়েব ভিত্তিক পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি।
শৈশব থেকেই লেখালেখি করেন তিনি। ব্যস্ত পেশাগত জীবনের ফাকে ফাকে সমাজের নানান দিক নিয়ে কবিতা, কলাম, প্রবন্ধ, ব্লগে ও ফেসবুকে লিখে চলেছেন। অমর একুশে বইমেলা, ২০২১ সালে তার প্রকাশিত কবিতার দুটি বই হচ্ছে “বিশ্বাসের মৃত্যু” এবং “স্বাধীনতা আমার”।
লেখক ও চিকিৎসক জিন্নুরাইন জায়গীরদারের লেখা প্রথম কবিতার বই প্রকাশিত হয় ২০২১ সালে। বইটির নাম “বিশ্বাসের মৃত্যু”। বইটি প্রকাশ করছে বর্ষাদুপুর প্রকাশনী। বইটির প্রচ্ছদ একেছেন এ,কে,আজাদ।
আশপাশের মানুষের জীবন, সমাজ ব্যবস্থা, দুর্নীতি, জুলুম-অত্যাচার, অনিয়ম, অসমতা তাকে ভীষণ ভাবায়। তাই পরিবার, সমাজ, দেশ ও মানুষকে ভালোবেসে কখনো গদ্যে কিংবা কখনো ছন্দে লিখে চলেছেন জীবনের কথা, চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা।
নিজের অনুভূতির কথা দেশ ও দশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চিন্তা থেকেই “বিশ্বাসের মৃত্যু” কবিতার বইটি লেখা। বইটিতে অন্তর্ভুক্ত কবিতাগুলো লিখতে গিয়ে কখনো বিদ্রোহী হয়েছেন, কখনোবা হতাশা ঝরেছে আবার কখনো প্রকাশ পেয়েছে মনের আনন্দ। প্রবাসী বাংলাদেশীদের মনের কথা গুলোই কবির কবিতার বই বিশ্বাসের মৃত্যুতে ফুটে উঠেছে।
“বিশ্বাসের মৃত্যু” বইটি গ্রন্থমেলার পাশাপাশি রকমারিতেও পাওয়া যাবে। অনলাইনে অর্ডার করার লিংক- https://www.rokomari.com/book/211430/bishasher-mrittu
আগামী কাল ১৫ই মে রবিবার বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষীত প্রানের মেলা “২১শে বই মেলা ২০২২”। বই মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে Dublin City University তে, সকাল ১১টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলা চলবে। বইমেলা হলো মানুষের মিলনমেলা।
২১শে বই মেলার বিশেষ আকর্ষনের মধ্যে থাকছে কবি ও লেখকদের মেলাতে আগমন। আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী কবি সাহিত্যিক ও লেখকগন মেলাতে উপস্থিত হয়ে মেলাকে আলোকিত করবেন। নর্দান আয়ারল্যান্ড প্রবাসী লেখক ও কবি মেহেদী হাসান থাকছেন তার বই নিয়ে ” মনফড়িং” নামে নিজের বুক ষ্টলে।
কবি ও লেখক মেহেদী হাসান তার নিজস্ব বিষয়বস্তু, শৈলী ও নিজের জীবনবোধ নিয়ে সাহিত্য চর্চা করেন। তিনি ময়মনসিংহ শহরের একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহন করেন এবং বাবার আগ্রহ ও ভালোবাসায় তার জীবনে লেখালেখী করার অনুপ্রেরণার উদ্ভব হয়।
মেহেদী হাসান সবসময়ই স্কুল কলেজের গতানুগতিক লেখাপড়ার চেয়ে, দৈনন্দিন প্রগতিশীল জীবনবোধ থেকে নিত্য নৈমিত্তিক শিক্ষা নিতেই বেশি আগ্রহী।
বর্তমানে তিনি একজন (চাটার্ড একাউন্ট্যান্ট) সার্টিফাইড হিসাব রক্ষক হিসেবে চাকুরিরত আছেন। তিনি বর্তমানে তাঁর স্ত্রী ও এক কন্যাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যের বেলফাস্টে বসবাস করেন।
মেহেদী হাসানের লেখা বিভিন্ন বইয়ের মধ্যে “হন্যেমনে”, “মনফড়িং”, সুরাইয়া ও ভালোবাসার ভেজা চিঠি এবং ছোটদের জন্য লেখা বই “জাদুর বেলুন” এবং “ইনকুবটের” বইগুলো পাঠকের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। লেখক তাঁর দীক্ষার প্রমান রেখেছেন তার সাহিত্য চর্চা ও যাপিত জীবনবোধে। তার লেখায় সবসময়ই খু্ঁজে পাওয়া যায় একটি প্রতিবাদী কন্ঠ, যা আগত নতুন প্রজন্মের জন্য শুদ্ধ জীবনবোধ ও জীবিকার দর্শন।
বই মানুষের পরম বন্ধু, মানব সভ্যতার অন্যতম প্রাণসভা। বই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের মাঝে তৈরি করে সেতুবন্ধন। বই সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে পরিচালিত করে মানুষকে বিশুদ্ধ করে তোলে। ম্যাক্সিম গোর্কি বলেছেন- “আমার মধ্যে উত্তম বলে যদি কিছু থাকে তার জন্যে আমি বইয়ের কাছে ঋণী।” মানুষ জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণের জন্য বইমেলায় ছুটে যায়। বইমেলায় প্রতিদিনের ব্যস্ততা ভুলে মানুষ আনন্দস্রোতে অবগাহন করে। বইমেলার আসল উদ্দেশ্য হলো বইকেনায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলা।
আয়োজকগন আশা করছেন এবারের মেলায় সারা আয়ারল্যান্ড থেকে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটবে। সবাইকে মেলায় আমন্ত্রন জানিয়ে মেলাকে সফল করতে সকলের প্রতি সহযোগীতার আহবান জানিয়েছেন আয়োজকগন।
পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত ক্ষুদ্র জনসংখ্যার দ্বীপ রাষ্ট্র আমাদের এই আয়ারল্যান্ড। এখানে ১০/১২ হাজার বাংলাদেশী মানুষের বসবাস। আগামী কাল ১৫ই মে রবিবার এই বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষীত প্রানের মেলা “২১শে বই মেলা ২০২২”। বই মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে Dublin City University তে, সকাল ১১টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলা চলবে।
আনন্দের কথা হচ্ছে এবার বই মেলায় আমাদের আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী বেশ কিছু কবি ও লেখক লেখিকাগন উপস্থিত থাকবেন। আশা করা যায় এটা আগত পাঠক পাঠিকা ও অতিথিদের জন্য হবে বাড়তি পাওয়া।
আয়ারল্যান্ডের প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে তেমনি একজন প্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় ও পছন্দের কবি ও লেখিকা হলেন লতা ওসমানী, আমাদের লতা আপু।
লতা ওসমানী অর্থনীতিতে (PHD) উচ্চ শিক্ষা লাভ করে বহুবছর ধরে বিলেতের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যপনার কাজ করছেন। এ’ছাড়া তিনি কিছুদিন ঢাকাতেও ব্রাক-বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে অধ্যাপনা করেন।
অর্থনীতির উপর তার বেশ কিছু লেখা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হলেও সাহিত্যের জগত তা্ঁকে বরাবরই আকর্ষণ করেছে বেশী।
ছোটবেলা থেকেই তাঁর লেখার সখ-সে ছড়া, কবিতা বা প্রবন্ধ যা কিছুই হোক না কেন। লেখার ভাষাটি বাংলা হোক কিংবা ইংরেজী।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে অধ্যাপনার কাজ করলেও সাহিত্যের জগত “পরানের গহিনে” বাস করা তাঁর একান্ত আপন ভুবন। তার প্রথম বই “এলোমেলো পাপড়িগুলো” প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৭ সালে(ইংরেজী), স্থান পেয়েছিল বাংলা একাডেমির ২১শের বই মেলায়, অনন্যা প্রকাশনীর বই এর দোকানে। সেই সাফল্যই তাঁকে আন্তরিতভাবে আরও লিখতে উৎসাহিত এবং উদ্ধুদ্ধ করেছে।
বিগত কয়েক বছরে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর আরও কিছু কবিতার বই। ২০১৮ সালের বাংলা একাডেমির ২১শের বই মেলায় তাঁর আরও দুটি কবিতার বই, একটি ইংরেজী, “সেন্স এ্যান্ড সিন্স” ও অপরটি বাংলা, “অকাব্যের ঝুলি” স্থান পেয়েছে। এরপর ২০২০এ ছাপা হলো “হেমন্তের বর্ণচ্ছটা” আর ২০২১ সালে প্রকাশিত হলো ইংরেজী কবিতার বই, “লোনলি বার্ড”।
কবিতা লেখার সময় বন্ধু-বান্ধবের কাছে লেখা চিঠি এবং এক-আধটু গদ্য রচনা থেকে প্রচুর প্রশংসা ও উৎসাহ পেয়েছেন তিনি; তাঁর লেখায় নাকি সাহিত্যের ছো্ঁয়া আছে- এমন মন্তব্য পেয়েছেন বেশ। সেখান থেকেই তাঁর যাত্রা শুরু হলো গদ্য রচনার পথে। তিনি আশা করেন তাঁর লেখা “ত্রিবেণী” (শিগ্রই প্রকাশিত হবে) আকৃষ্ট করবে গদ্যপ্রিয় পাঠক-পাঠিকা বৃন্দকে। এ’ছাড়া, খুব শিগগীরই ইউ পি এল থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে অর্থনীতির উপর লেখিকার আরও একটি বই, “ওমেন্স এনহ্যান্সড ক্যাপাবিলিটিস: ডাস মাইক্রোফাইনান্স ম্যাটার? “। সেই বইটিও পড়ার আমন্ত্রন জানিয়েছেন তিনি।
১৫ মে রবিবার Dublin City University তে ২১ শে বই মেলা ২০২২এর বিশেষ আকর্ষন থাকবে চিত্রশিল্পী জেবুন নাহারের চিত্রকর্মের প্রদশর্নী।
জেবুন নাহার ছোট বেলায় হতে চেয়ে ছিলেন একজন সঙ্গীত শিল্পি এবং তার গানের গলাও ছিল খুব ভালো। জেবুন নাহারের বয়স যখন ৯ কিংবা ১০ বছর তখন তার বাবা তাকে হারমোনিয়াম কিনে দেন। বাবারও ইচ্ছে মেয়ে গান শিখুক। জেবুন নাহারের বাবার গানের গলাও ছিলো বেশ। খালি গলায় তার বাবা যখন গান করতেন তখন জেবুন নাহারের কাছে মনে হতো হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গান করছেন।
বড় বোন কামরুন নাহারের ইচ্ছেও ছিলো তার ছোট বোনটি যেন ভালো কন্ঠ শিল্পী হয়। একদিন তার বড় বোন জেবুন নাহারের হাত ধরে তাকে নিয়ে যান উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী বসির উদ্দিন আহমেদের কাছে সঙ্গীতের তালিম নিতে। সঙ্গীতের দিক্ষা নিতে গিয়ে বসির আহমেদ ও তার স্ত্রী মিনা বসিরের প্রিয় ছাত্রী হিসেবে সঙ্গীতের তালিম ও স্নেহ পেয়ে ধন্য হোন জেবুন নাহার।
জেবুন নাহার আয়ারল্যান্ডে আসার আগ পর্যন্ত ঢাকায় অক্সফোর্ড স্কুলে বাচ্চাদের গান শেখাতেন এবং নিজেও গানের রেওয়াজ করেন।
কিন্তু সৃষ্ঠিকর্তা জেবুন নাহারকে দিয়েছেন ছবি আকা্ঁর আরেক প্রতিভা। এই ছবি আকা্ঁর প্রতিভা যে তার রক্তের মধ্যে মিশে আছে। আর তার সঙ্গীতের প্রতিভাকে ছাপিয়ে তিনি এখন চিত্রশিল্পী।
তার পুরো নাম জেবুন নাহার অনু। তিনি একজন বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী, আয়ারল্যান্ডে থাকেন, ছবি আকে্ঁন। সম্প্রতি National Art Gallery of Ireland এ একটি ছবি আকা্ঁতে অংশ নিলেন ইউরোপের বহু চিত্র শিল্পিদের সাথে এবং খুব শিগ্রই ছবিটির প্রদর্শনী হবে।
দুই ভাই তিন বোন, এই পা্ঁচ ভাই বোনের মধ্যে চতুর্থ জেবুন নাহার অনু। তিনি এক পুত্র সন্তানের জননী আর স্বামী পরাগ কে নিয়ে ২০০৭ সাল থেকে Dundalk এ বসবাস করছেন। পারাগের দাদী বাংলাদেশের বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী সিদ্দিকা কবীরের নাত’বৌ চিত্রশিল্পী জেবুন নাহার অনু । সিদ্দিকা কবীর তার চিত্রকর্ম ভিষন পছন্দ করতেন এবং ছবি আকাঁয় প্রেরণা দিতেন।
জেবুন নাহার অনু বাংলাদেশ ঢাকা ইউনিভার্সিটির চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে এমএফএ মাস্টার্স সম্পন্ন করেন ২০০৭ সালে ( Bachelor of fine arts BFA Masters of fine arts MFA from Dhaka University fine arts department) এরপর চলে আসেন আয়ারল্যান্ডে।
জেবুন নাহারের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ঢাকায়। মতিঝিলের পোষ্ট অফিস হাই স্কুলে তার শৈশবের পড়া শুনা। বাবা মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ভূই্ঁয়া ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার আর তার মা সামসুন নাহার ছিলেন গৃহিনী। বাবার চাকুরী সুত্রে পাওয়া ঢাকার শাহজাহানপুরে সরকারী বাংলো বাড়িতে জেবুন নাহার ও তার পরিবার থাকতেন। খুব ছোট বেলা থেকেই ছবি আকা্ঁর নেশা পেয়ে বসে তাকে। তার বাবাও খুব ভাল ছবি আক্ঁতেন। জেবুন নাহার মনে করেন বাবার কাছ থেকে জন্মসুত্রে পাওয়া তার এই ছবি আকা্ঁর নেশা। বাবা অফিস থেকে ফেরার পথে তার আদরের মেয়ের জন্য নিয়ে আসতেন রং পেন্সিল আর রং তুলি। সেই রং পেন্সিল আর রং তুলি পেয়ে জেবুন নাহার আনন্দে হারিয়ে যেতেন ছবিতে রং তুলির আচড়ে।
শৈশবে স্কুল জীবনে বড় ভাই বোনদের উৎসাহ আর সহযোগীতায় ছবি আকা্ঁকে ভালোবেসে ফেলেন তিনি এখন ছবি আকাঁ তার আত্মার খোরাকের মত।
আয়ারল্যান্ডে তিনি মেম্বার অফ প্রফেশনাল
আর্টিস্ট এক্সচেঞ্জ আর্টিস্ট মেম্বার (Member of Dundalk art exchange AAEX group).
এবং তিনি মেম্বার অফ ক্রিয়েটিভ স্পার্ক (Member of creative spark Dundalk) এছাড়াও তিনি Member of visual art of Ireland এবং Member of Irish artist.
বর্তমানে জেবুন নাহার এদেশে বাচ্চাদের নিয়েও নিয়মিত বিভিন্ন এক্সিবিশনে প্রফেশনালি ছবি আকে্ঁন।
জেবুন নাহার বলেন, ” খুব ছোটবেলা থেকে ছবি আঁকার প্রতি আমার অনেক ঝোঁক ছিল। আমার বাবা ছিলেন একজন আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার বাবা ছোটবেলা থেকেই অফিস থেকে ফেরার পথে আমার জন্য সবসময় রং কাগজ পেন্সিল তুলি এগুলো কিনে আনতেন। বাবা খুবই ভালো ছবি আঁকতেন। আমি বাবার কাছ থেকে জেনেটিক ভাবে এটা পেয়েছি। কচি-কাঁচার মেলা তে দাদা ভাই রোকনুজ্জামান খান আমার শিক্ষা গুরু। “
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনিষ্টিটিউট থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করার পর জেবুন নাহার বাংলাদেশে ধানমন্ডির “ম্যাপেল লিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ” আর্ট টিচার ছিলেন।
বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে তিনি বাচ্চাদের একটি আর্ট শেখার স্কুল সি বি এস অফ প্রাইমারি স্কুলে তিনি আর্ট টিচার হিসেবে নিযুক্ত আছেন। তিনি আর্ট এক্সচেঞ্জ এর মেম্বার এবং তার গ্যালারিতে নিজের ছবি বিক্রি করা হয় এবং এই গ্যালারিটি (Longwalk shopping centre Dandalk) লং ওয়াক শপিং সেন্টারে।
জেবুন নাহার বলেন,আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন চেয়েছেন বলে আজ আমি এদেশের বুকে শিল্পী হতে পেরেছি এবং অনেক কৃতজ্ঞ আল্লাহতালার দরবারে এবং আপনাদের সকলের দোয়া আর ভালবাসা চাই যেন বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশী শিল্পী হিসেবে নিজের দেশ নিজের দেশের ভাষা এবং শিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তাই আপনাদের সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা আমার কামনা করি।
জেবুন নাহার Irish Monaghan art and Monaghan music and singer group এর সাথে কাজ করেন ছবি আকে্ঁন তার ছবি দেখে অনুপ্রানিত হয়ে আইরিশ কবি Ciran Redmond কবিতা লিখেছেন,একজন প্রবাসী চিত্রশিল্পী হিসেবে এটা জেবুন নাহারের কাছে অনেক বড় পাওয়া।
২০০৯ সালে তিনি Student of the year & Graphic Design Award এ ভূষিত হোন
From oficiah Institute.
২০১৯ সালে প্রায় ৪০জন চিত্রশিল্পীর মধ্যে Print Work প্রতিযোগীতায় County Louth থেকে জেবুন নাহারের print work নির্বাচিত হয় Drogheda arts centre এ print exhibition এর জন্য। এটা একজন বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী হিসেবে অনেক গৌরবের।
আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটিতে এমন অনেক মুখ আছে যারা আমাদের কমিউনিটিতে নিরবে নিভৃতে তারা তাদের কর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুখকে উজ্জল করছেন প্রতিনিয়ত। তাদের কাছে নিজের পরিচিতির চাইতে প্রবাসে দেশের জন্য কাজ করাটাই গৌরবের।
পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত ক্ষুদ্র জনসংখ্যার দ্বীপ রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড। এখানে ১০/১২ হাজার বাংলাদেশী মানুষের বসবাস। এই ছোট্ট বাংলাদেশী কমিউনিটিতে আগামী কাল ১৫ই মে রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষিত প্রানের মেলা “২১শে বই মেলা ২০২২” ।
বই মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে Dublin City University তে।
আনন্দের কথা হচ্ছে এবার বই মেলায় আমাদের আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী বেশ কিছু কবি ও লেখক লেখিকাগন উপস্থিত থাকবেন। আশা করা যায় এটা আগত পাঠক পাঠিকা ও অতিথিদের জন্য হবে বাড়তি পাওয়া।
আয়ারল্যান্ডের প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে তেমনি একজন জনপ্রিয় ও পছন্দের হলেন কবি কামরুন নাহার রুনু।
কবি কামরুন নাহার রুনুর জন্ম এবং বেড়ে উঠা সিলেটের হবিগঞ্জ জেলায়। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার এবং মাতা মেহেরুন্নেসা। মা-বাবার ছয় কন্যা সন্তানের মাঝে তিনি সর্ব কনিষ্ঠ।
ছোটবেলা থেকেই কবি রুনু ভীষণ ডানপিটে ছিলেন বিধায় প্রকৃতির খুব কাছাকাছি থাকতে ভালবাসতেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তিনি খুব সামাজিক হয়ে উঠেন, মূলত মানুষের প্রতি ভালবাসাই তাঁকে সমাজ-সংস্কৃতি এবং মানুষের খুব কাছে টেনে নিয়ে যায়।
ছোটবেলা থেকেই কবি কামরুন নাহার রুনু লেখালেখির সাথে জড়িত। যখন তিনি দেশের বাহিরে চলে আসেন, তখন কলম আর কাগজ কে নিত্য সঙ্গী করে নেন।
তাঁর হবিগঞ্জ জেলার বি,কে,জি,সি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস, এস, সি পাস করেন এবং বৃন্দাবন সরকারী কলেজ (হবিগঞ্জ) থেকে বি,এ পাস করেন, বিবাহসুত্রে এর পর পরই তাঁকে পাড়ি জমাতে হয় দেশের বাহিরে আয়ারল্যান্ডে।
কবি কামরুন নাহার রুনুর প্রথম কবিতার বই প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালে। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হয় একক কবিতা গ্রন্থ মোট ৮টি। তাছাড়া তাঁর বেশকিছু যৌথ কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমানে বসবাসরত দেশের বাহিরে (আয়ারল্যান্ড) । শিকড়ের টানে লিখে যান কবিতা, লিখেছেন বেশ কিছু গান, লিখেছেন ছোটগল্প।
কবি কামরুন নাহার রুনু পছন্দ করেন জলরঙে ছবি আঁকতে, তাছাড়া পছন্দ করেন আবৃত্তি করতে।
বাংলা কবিতায় সার্বিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি কামরুন নাহার রুনু পেয়েছেন বেগম রোকেয়া সাহিত্য সম্মাননা, পেয়েছেন লন্ডনের প্রাইড অব হবিগঞ্জ অ্যাওয়াড, পেয়েছেন আয়ারল্যান্ড বাঙালি কমিনিউটির পক্ষ থেকে কবি সম্মাননা, পেয়েছেন সাহিত্য দিগন্ত লেখক পুরস্কার ২০২১ , পেয়েছেন দৈনিক মুন্সীগঞ্জের খবর’ পত্রিকার পক্ষ থেকে সাহিত্য সম্মাননা।
এবারের বই মেলায় কবি কামরুন নাহার রুনু পারিবারিক কারনে উপস্থিত থাকতে পারছেন না তবে কবির কবিতার বই নিয়ে “অষ্টম গ্রন্থ ” নামে বই মেলায় একটি ষ্টল থাকবে।
প্রবাসী আয় প্রাপ্তিতে ২০২১ সালে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সপ্তম অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর প্রবাসী আয় নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ‘অভিবাসন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রবাসী আয় প্রাপ্তিতে শীর্ষ ছয়ে থাকা দেশগুলো হলো-ভারত, মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইন, মিশর ও পাকিস্তান।
তবে দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ে মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ (২২ বিলিয়ন ডলার) প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধির হার ২ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
এতে আরও বলা হয়, মূলত সরকারি প্রণোদনা এবং দেশে পরিবারের কাছে অর্থ পাঠানোর কারণে এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
গত রোজার শুরুতে (মার্চ মাসে) ২৪ শতাংশ উল্লম্ফন ছাড়া গত ৮ মাসে দেশে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, এ বছরের শেষ নাগাদ প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধির হার কমে ২ শতাংশে নামবে।
২০২০ সালে করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ার পর ২০২১ সালে ভারতের রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ বেড়ে ৮৯ বিলিয়ন ডলার হয়, অন্যদিকে পাকিস্তানে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন হয়েছে।
প্রতিবেদনে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অনিশ্চিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারতে ২০২২ সালে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। অন্যদিকে পাকিস্তানে এ বছর রেমিট্যান্স ৮ শতাংশ বেড়ে ৩৪ বিলিয়ন ডলার হতে পারে।
প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হারকে ‘অনিশ্চিত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার হামলার শিকার ইউক্রেনে হঠাৎ প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বেড়ে গেছে। চলতি বছর ইউক্রেনে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ২০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সম্প্রতি ম্যাগাজিন আকারে প্রকাশিত আইরিশ বাংলা টাইমসের একটি মুদ্রণ কপি এক ভদ্রলোককে নেয়ার জন্য অনুরোধ জানালে তিনি বেশ বিনয়ের সাথে তা প্রত্যাখ্যান করেন। অধিকার বলে জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। ভদ্রলোক মূর্খ নন। অশিক্ষিত নন। অর্ধ শিক্ষিত নন। শিক্ষিত নন। ভদ্রলোক উচ্চ শিক্ষিত। তার যুক্তি, যেহেতু অনলাইনের যুগ, সব কিছুই এখন হাতের মুঠোয় পাওয়া যায় তাহলে কেনো তিনি কাগজের বই বা ম্যাগাজিন পড়ে সময় নষ্ট করবেন! মোবাইলের মতো একটি ছোট্ট ডিভাইস থেকে সারা পৃথিবীর সব তথ্য উপাত্ত চোখের পলকেই খুঁজে বের করে নেয়া যায়। যখন তখন যা ইচ্ছে তাই সেখান থেকে পড়া যায়। সময় কাটানো বা বিনোদনের জন্য এর চেয়ে বড়ো মাধ্যম আর কি হতে পারে! বস্তুত ভদ্রলোকের কথার সারমর্ম হচ্ছে এই যে, মানুষ যেহেতু এখন সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইনের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে সুতরাং গাদা গাদা বই পুস্তক বা ম্যাগাজিন ট্যাগাজিন পড়ার এতো সময় কোথায়!
একজন উচ্চ শিক্ষিত ভদ্রলোকের যখন এই মন মানসিকতা, তার মতো মানুষকে যখন দেখি সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে এভাবে কাবু হয়ে যেতে তখন সাধারণ মানুষের কথা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া শুধু ওই ভদ্রলোকই বা কেনো, বলতে গেলে সমাজের সিংহভাগ মানুষই আজ সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্ত। আমরা যাকে বলি এডিকটেড (Edicted)। আমি নিজেও এ এডিকসানের বাইরে নই। আমাদের ছেলেবেলায় সমবয়সীরা এক সঙ্গে মিলিত হলে হৈ হুল্লোর বা খেলাধুলা করে সময় কাটিয়েছি। আজকালকার ছেলেমেয়েরা পাশাপাশি বসে কেউ কারো সঙ্গে কথা বলেনা। সবাই ট্যাবলেট বা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এককালে দূরে কোথাও ভ্রমণ করতে গেলে মানুষ ট্রেন, বাস, লঞ্চ বা বিমানে বসে পত্র পত্রিকা, ম্যাগাজিন বা গল্পের বই পড়ে সময় কাটাতো। এখন আর সে কালচার নেই। হাতে মোবাইল আছে মানে পৃথিবীর সব আছে। সময়ের একটি বিশাল অংশ মানুষ ব্যয় করে ফেসবুকিং বা ইউটুবিং- এ। কেউ কেউ কিছু পড়তে চাইলেও অনলাইন থেকে পড়ে নেয়। কিন্তু অনলাইনে পড়া আর হাতে একটি বই বা ম্যাগাজিন নিয়ে পড়া কি এক? স্বাদ কি এক? একটি বই হাতে নিয়ে পড়লে তা হৃদয়কে যেভাবে নাড়া দেয়, যেভাবে ঝাঁকুনি দেয় অনলাইনের কোনো কিছু কি হৃদয়কে সেভাবে রেখাপাত করতে পারে?
আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন জীবনের প্রথম আকবর হোসেনের “অবাঞ্ছিত” উপন্যাসটি বাংলা ঘরে পালিয়ে পালিয়ে একদমে পড়ে ফেলেছিলাম। সেই যে কিশোর ধমনীতে বইয়ের ছোঁয়া লাগলো তা আজও প্রবাহমান। বই যে এতো রোমাঞ্চকর হতে পারে তা বই না পড়লে কেউ বুঝবেনা। “অবাঞ্ছিত” দিয়ে শুরু করেছিলাম। এরপর অদ্যাবধি কতো বই পড়েছি তার কোনো ইয়ত্তা নেই। শরৎ চন্দ্রের “গৃহ দাহ”, “পথের দাবী”, আকবর হোসেনের “কি পাইনি” সেই কবে পড়েছিলাম। অথচ এখনো মনের ভেতরে এগুলো বিঁধে আছে। উঠতি বয়সের প্রাক্কালে ওই বই গুলো যখন পড়তাম তখন এগুলো হৃদয়কে এমন ভাবে আন্দোলিত করতো যেনো সারাক্ষণ তা মাথায় ঘুরপাক খেতো। কয়েকদিন পর্যন্ত ভুলে থাকতে পারতামনা। শয়নে-স্বপনে, কাজে-কর্মে, খাওয়া-পড়ায় এমনকি বাথরুমে পর্যন্ত এগুলো আমার হৃদয়ে চেপে বসতো। বুকটা চিন্ চিন্ করতো। মানুষ প্রেমে পড়লে যেমন প্রেমিকের সামনে প্রেমিকার চেহারা কিংবা প্রেমিকার সামনে প্রেমিকের চেহারা সারাক্ষণ ভাসতে থাকে তেমনি আমার সামনেও বইয়ের কালো বর্ণমালা শোভিত শব্দ ও বাক্যমালা ভাসতে থাকতো।
প্রেমে পড়লে নাকি মানুষ সুন্দর হয়ে উঠে। আর কেউ বইয়ের প্রেমে পড়লে তার অন্তর সুন্দর হয়ে উঠে। বস্তুত প্রতিটি মানুষের ভেতর দুটো মানুষ বসবাস করে। একটি ভালো মানুষ। আরেকটি মন্দ মানুষ। মন্দ মানুষটিকে গলা টিপে হত্যা করার জন্য বইয়ের চেয়ে বড়ো অস্ত্র আর কোনোটাই হতে পারেনা। বই মানুষকে সুশীল করে। বিনয়ী করে তোলে। সভ্যতা ও অসভ্যতার পার্থক্য নিরুপণ করতে শেখায়। মানব সভ্যতা বিকাশ ও সুস্থ সমাজ গঠনে বইয়ের বিকল্প নেই। তাইতো টলস্টয় বলেছেন, “জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজন বই, বই এবং বই।”
বইয়ের প্রতি বর্তমান প্রজন্মের যে বিদ্বেষ ও বই পড়ার প্রতি যে অনীহা তা দূর করতে না পারলে সমাজ যে অচিরেই রসাতলে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ডিজিটাল আগ্রাসনের হাত থেকে এ সমাজকে বাঁচাতে হলে মানুষকে বই পড়ার প্রতি আরও বেশি উৎসাহী ও মনোযোগী করে তুলতে হবে। আর এ কাজটি করার জন্য যে কয়টি গৌরবজ্বল পন্থা রয়েছে তার মধ্যে বইমেলা অন্যতম একটি। কারণ, বইমেলা পাঠকদেরকে বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। মানুষের চিন্তাভাবনা ও জ্ঞানধারণাকে বিস্তৃত করে তোলে, মানুষকে সুখী ও তৃপ্ত করে। বইমেলার মাধ্যমে একটি দেশের সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়া যায়। মূলত এটি জ্ঞানান্বেষী অগণিত মানুষের জ্ঞান-তীর্থ।
বইমেলার ধারণা বেশ পুরনো। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই বইমেলার বীজ রোপিত হলেও এর আনুষ্ঠানিক আবির্ভাব ঘটে ১৯৭২ সালে। এরও আরও পরে ১৯৮৪ সালে “অমর একুশে গ্রন্থমালা”নাম ধারণ করে মেলাটি সাড়ম্ভরে অনুষ্ঠিত হয় যা ক্রমান্বয়ে বিশাল থেকে বিশালতর আকার ধারণ করে আজকের শক্তিশালী অবস্থানে পৌছেছে। আয়ারল্যান্ডে ২০২০ সালে প্রথম বারের মতো যখন বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় তখন ওই বিষয়ের উপর আলোকপাত করে একটি মৌলিক নিবন্ধ লিখেছিলাম। তাই এর পুনরাবৃত্তি করে আজকের লেখাটির আর কলেবর ঘটাতে চাইনা।
বইমেলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনুধাবন করে আয়ারল্যান্ডে একদল অগ্রগামী মানুষ তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালান। এরই ফলশ্রুতিতে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অনাড়ম্বর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ডাবলিনের ডি সি ইউ তে “মহান একুশে বইমেলা” অনুষ্ঠিত হয়। সকল শ্রেণীর মানুষের স্বতস্ফূর্ত আগমনে মেলাটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। সারাদিন ধরে চলে আড্ডা, কবিতা আবৃত্তি, গান-বাজনা ও শিশু কিশোরদের জন্য চিত্রাংকন সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কর্মসূচি। ডি সি ইউ পরিনত হয়েছিলো বাঙ্গালির এক মহা মিলন মেলায়। বিল্ডিংটির প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে মেলার হলরুম পর্যন্ত দু পাশ যে রংবেরঙের ছবি, প্রচ্ছদ, ব্যানার ও ফেস্টুনে সাজানো হয়েছিলো তা ছিলো সত্যি হৃদয়গ্রাহী। দিনটা যে কিভাবে ফুরিয়ে গিয়েছিলো তা আড্ডা ও বইপ্রেমিক আগন্তুকরা ঠেরই পাননি। দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অসংখ্য মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যেমন মেলার সার্থকতা ফুটে উঠেছিলো তেমনি ওই দিনটিও এক গৌরবজ্বল ঐতিহাসিক দিনে রূপ নিয়েছিলো।
মেলায় কয়েকটি আকর্ষণীয় বইয়ের স্টলও দেয়া হয়েছিলো। স্টলগুলো দিয়ে যারা এর শ্রী বাড়িয়ে মেলাটিকে সমৃদ্ধ ও আলোকিত করে তুলেছিলেন তাঁরা হলেন যথাক্রমে সর্ব জনাব/জনাবা শায়লা শারমিন নিপা, কামরুন নাহার রুনু, হাফিজুর রহমান লিনকন, রন্টি চৌধুরী, বিশ্বজিৎ কুমার সাহা, মিজানুর রহমান জাকির, শাহ শামিম আহমেদ, আরিফ ভুঁইঞা, সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান ও সাজেদুল চৌধুরী রুবেল।
গত মেলার ধারাবাহিকতায় এবার আবারো দ্বিতীয় বারের মতো আগামী ১৫ মে ২০২২ একই জায়গায় আয়ারল্যান্ডস্থ বাঙ্গালিদের প্রাণের মেলা “অমর একুশে বইমেলা” অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারনে পৃথিবী স্থবির হয়ে পড়লে আমাদের মেলা সম্পন্নের কার্যক্রম ও সাময়িক ভাবে বাধাগ্রস্থ হয়। যার ফলে ২০২১ সালে ইচ্ছে থাকা সত্বেও মেলা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। টানা প্রায় দুবছর পর করোনার অস্বাভাবিক তাণ্ডব থেকে পৃথিবী মুক্তি পায়। ফিরে পায় তার স্বাভাবিক চেহারা । মেলাবান্ধব আয়োজক বৃন্দ আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেন। ১৫ মে ২০২২ মেলার তারিখ নির্ধারণ করে এক ঝটিকা প্রস্তুতি সভার আশ্রয় নেন তারা। মেলাটিকে সুন্দর, সুশৃঙ্খল, সার্থক ও সাফল্য মন্ডিত করে তোলার জন্য ওই সভায় উপস্থিত সুধী ও আয়োজকবৃন্দ বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক ও চমকপ্রদ কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন।
এবারের মেলাটি যে আরও বেশি ব্যাপক পরিসরে জাঁকজমক হয়ে উঠবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রধান উদ্যোক্তা সহ অন্যান্য আয়োজক বৃন্দের স্বতঃস্ফূর্ত কর্ম স্পৃহা, উৎসাহ উদ্দীপনা ও সোশ্যাল মিডিয়ার সরব প্রচার ও প্রচারণা থেকে সহজেই অনুমেয় যে এবারের মেলাটি অন্য যে কোনো সময়ের অনুষ্ঠানের তুলনায় বাঙ্গালি হৃদয়ে অনেক বেশি তৃপ্তির স্বাদ এনে দেবে।
এ মেলার কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিবাদন। তবে পেছন থেকে যিনি এ মেলার শুভ কামনা করে যাচ্ছেন অহর্নিশ, এ মেলা উৎসবকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে ডি সি ইউ এর ভবন বিনা পয়সায় ব্যবহারে সহায়তার উদার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন শুরু থেকে তাঁকে প্রণতি জানাতেই হয়। তাঁর নামটি শ্রদ্ধাভরে এ লেখায় তুলে না ধরলে লেখাটি অসম্পূর্ণতার দোষে দুষ্ট বলে বিবেচিত হবে। তিনি আর কেউ নন। আমাদের সবার প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় এমিরিটাস প্রফেসর জনাব এম এস জে হাসমি। তাঁর মতো এমন গুণী মানুষকে ধন্যবাদ জানানোর সুযোগ থেকে নিজেদেরকে বঞ্চিত করতে চাইনা। কারণ তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর মধ্য দিয়ে আমরা নিজেরাই বরং সম্মানিত বোধ করতে সচেষ্ট হবো। তাই এ লেখার মাধ্যমে আমার পক্ষ থেকে, মেলার প্রধান উদ্যোক্তা ও আয়োজক বৃন্দের পক্ষ থেকে সর্বোপরি বাঙ্গালি কমিউনিটির পক্ষ থেকে তাঁকে জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
বই কেনো কিংবা বইমেলার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা কি এ সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জ্ঞান বা ধারণা রাখি। তাই এ বিষয়ে আমি আর নতুন করে বস্তাপচা সস্তা কথা লিখে পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চাইনা। শুধু এতোটুকু বলবো, ডিজিটাল আগ্রাসনের এ যুগে নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করে তোলা ও দেশীয় শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করে তোলা এবং মহান ভাষা আন্দোলনের গর্বিত ইতিহাসকে এদের সামনে তোলে ধরার জন্য আয়ারল্যান্ডে বইমেলা খুবই জরুরি। তাই “অমর একুশে বইমেলা” কে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সার্থক ও সাফল্য মন্ডিত করে তুলতে হবে নিজেদের স্বার্থে। বিশ্বখ্যাত লেখক ওমর খৈয়াম শত শত বছর আগে লিখে গেছেন, “রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত-যৌবনা-যদি তেমন বই হয়।” তাই আসুন, আমরাও দলে দলে, সপরিবারে মেলায় অংশগ্রহণ করে আমাদের প্রাণের মেলাটিকে এমন ভাবে সাফল্য মন্ডিত করে তুলি যাতে সময়ের দাবির সাথে তাল মিলিয়ে এটি হয়ে উঠে অনন্ত যৌবনা।
যে কোন ভাল কাজ করতে গেলেই কতিপয় পরশ্রীকাতর লোকজনের গাত্রদাহ শুরু হয়, তারা নিজেরা গঠনমূলক কিছু করতে না পারলেও অন্যের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে অন্যের সম্মানহানি করতে তারা ওৎপেতে থাকেন। সুতরাং সুযোগ সন্ধানী ঐ সব অপপ্রচারকারীদের অপপ্রচারে আয়ারল্যান্ডের সচেতন সমাজ বিভ্রান্ত হবেন না এমনটা প্রত্যাশা করছি।
যেকোন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে আর্থিক সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। আর সেই অর্থের উৎস অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের স্বতঃস্ফূর্ত কন্ট্রিবিউশন হতে সংগৃহীত হলে সেটাকে কখনো ভিন্নভাবে অভিহিত করা একটি মহলের অপতৎপরতা ছাড়া আর কিছু নয়। সুতরাং যারা বিভিন্ন রকম কথা ছড়িয়ে জল ঘোলা করার তৎপরতা চালাচ্ছে তাদের থেকে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।
যে কোন কাজের স্বচ্ছতার বিষয়ে আমরা সব সময় আপনাদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। উক্ত অনুষ্ঠানের স্বচ্ছতার জন্য অনুষ্ঠান শেষে অনুষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব আপনাদের সামনে তুলে ধরা হবে।
আপনাদের সবার সার্বিক সহযোগিতায় মহল বিশেষের অপতৎপরতা একদিন বিনাশ হবে এবং তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে, এমনটাই প্রত্যাশা কাছি।
আশা করি অতীতে আপনারা যারা আমাদের প্রতি যেরূপ আস্থাশীল ছিলেন, ভবিষ্যতেও আপনারা অনুরূপ সাহায্য ও সহযোগিতা বজায় রেখে আপনাদের আস্থা অব্যাহত রাখবেন এবং আগামী দিনগুলোতে আপনাদেরকে সাথে নিয়ে আয়ারল্যান্ড বাসী প্রবাসীদের জন্য আরো ভালো কিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।
প্রচারেঃ
ঈদ পুনর্মিলনী ও মিলন মেলা আয়োজক কমিটি, আয়ারল্যান্ড।
স্টাফ রিপোর্ট : করোনার বিধি নিষেধের কারনে আয়ারল্যান্ডে বিগত দু বছর ঈদ উদযাপন মূলত পারিবারিক পরিবেশেই সীমাবদ্ধ ছিল । কিন্তু এ বছর কোন বিধি নিষেধ না থাকায় সমগ্র আয়ারল্যান্ডে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর অত্যন্ত আনন্দ মুখর এবং উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে ।
আয়ারল্যান্ডে অধিকাংশ কাউন্টিতে আলাদা আলাদা ভাবে মুসলমানেরা একত্রিত হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন । আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে একের অধিক স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় । তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য জামাত ছিল Islamic Cultural Centre of Ireland ( ICCI ) , Islamic Cultural Centre Swords , Dublin City Masjid , South Dublin Maqtab Lucan এবং Tallaght Mosque ।
ঈদ কে নিয়ে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটিতে ঈদের আনন্দকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন কাউন্টিতে ঈদ পূর্ণমিলনীঅনুস্ঠান অনুষ্ঠিত হয় । যেখানে প্রবাসে থেকেও বাংলাদেশীরা একত্রিত হয়ে একে অন্যের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন , ঈদের আনন্দ কে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন । প্রত্যেক টি অনুষ্ঠানে মজার মজার সুস্বাদু রকমারি খাবারের পাশাপাশি বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য বিভিন্ন মজার মজার ইভেন্টের আয়েজন ছিল । এমন কি বড়দেরজন্য বিভিন্ন আনন্দ আয়োজনের ব্যবস্থা ছিল ।
আয়ারল্যান্ডবাংলাদেশ কমিউনিটিতে ঈদুল ফিতর কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কাউন্টিতে ঈদ পূর্ণমিলনীঅনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল –
লিমরিকের ফোর স্টার গ্রীনহিল হোটেলে উদযাপিত হয় মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।স্থানীয় সুত্রে জানা যায় – লিমরিকবাসীর সহায়তায় অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন জনাব মনিরুল ইসলাম। এছাড়াও অনুষ্ঠানটিতে সার্বিকভাবে সহায়তা প্রদান করেন যথাক্রমে আজাদ তালুকদার, আনোয়ারুল হক, মোজাম্মেল হক, সাজেদুল চৌধুরী রুবেল, আমিরুল ইসলাম তপন, শামীম আহমেদ, ওমর এফ নিউটন প্রমুখ। এছাড়াও সার্বিক সযোগিতায় ছিলেন অনুষ্ঠানে আগত ভদ্রমহিলাগণ। অনুষ্ঠানে লিমরিকের স্থানীয় বাংলাদেশীরাস্বপরিবারে অংশগ্রহন করেন এবং বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হয় । শিশু/কিশোরদের পাশাপাশি অভিবাবকগণও বিভিন্ন আনন্দ আয়োজনে অংশগ্রহন করেন ।
অন্যদিকে ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির ঈদ পূর্ণমিলনী ৩রা মে রোজ মঙ্গলবার , ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্যোগে স্থানীয় লেটারকিনি কমিউনিটি সেন্টারে সন্ধ্যা ৯.৩০ মিনিটে বর্ণিল ও জমজমাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঈদ পুন;মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।স্থানীয় সুত্রে বলা হয় – ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কমিঊনিটি সদস্য ওবায়দুর রহমান রুহেল , কমিউনিটির চেয়ারপার্সন ডা;মুহাম্মাদ রফিক উল্লাহর সভাপতিত্বে ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
লেটারকিনি মেয়র জিমি কাভানা তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং কমিউনিটি সদস্যদেরযেকারো প্রয়োজনে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে ছিল মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।স্থানীয় কমিউনিটি শিল্পী বৃন্দ গান পরিবেশন করেন ।,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল কাউন্টি কর্ক থেকে আগত উদীয়মান তরুণ শিল্পী আভি আজিতাভ রয়।
ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানকে সাফল্যমণ্ডিতকরার জন্য যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জনাব শাকিল আহমেদ, জনাব ফারুক হোসেন সুমন, জনাব তানভীর আহমেদ জনি, মিসেস মীনা, মিসেস মহসীনা কচি, মিসেস ইসরাত মুন ও জনাব সামাল আহমেদ।
কাউন্টি গলওয়েতেল ঈদ উৎসব ছিল অনেক জাক জমকপূর্ণএবং উৎসব মুখর । স্থানীয় সংবাদদাতার মাধ্যমে জানা যায় – ২০০৬ থেকে এখন পর্যন্ত যতগুলো বাংলাদেশি কমিউনিটি গলওয়েতে হয়েছিলো ,তারা কখনো সবাইকে একত্রে এভাবে মিলিত করতে পারেনি। যেটি পেরেছে অল্প কিছু নারী। একটি স্বদিচ্ছা যে সবাইকে একত্রিত করতে পারে, সেটিরই প্রমান করলেন ঐ সব আলোকিত নারীরা। গলওয়ের সল্টহিল জি,এ,এ ক্লাবে ঈদের দিনটি বাংলাদেশিরা যেভাবে পালন করেছেন, সেটি একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে ।
এর আগে এত বাংলাদেশি জড়ো হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি এই প্রথম। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী দিনে একে অপরের মাঝে বন্ধনগুলো আরো মজবুত হবে বলে ধারনা এখানের বাংলাদেশিদের। এখানে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েরা ঈদের দিনটি যেভাবে ছোটাছুটি, গান, নাচ, খুনসুটি দিয়ে শেষ করেছে, তাতে আগামী দিনে এ উৎসবের মাত্রা যে আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষন ছিলেন তরুন উদিয়মান শিল্পী আভির মন মাতানো গান । তাছাড়া স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহন করেন ।
কাউন্টি ওয়াটারফোর্ডেও প্রবাসী বাংলাদেশীরা ঈদ উদযাপন করেছেন । স্থানীয়বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব শামীম কবির স্থানীয় বাংলাদেশীদের নিয়ে ঈদ উৎসব পালন করেন ।
কাউন্টি মীথ ( Meath ) এ্যাশবর্ণেও ( Ashbourne) স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটি একত্রিত হয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করেন ।
ক্লনডালকিন বাংলাদেশ কমিউনিটিও জাক জমকপূর্ণ এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ঈদ উৎসব পালন করেন । অনুষ্ঠানে সবাই স্বপরিবারে অংশগ্রহন করে একে-অন্যের সঙ্গে ঈদের খুশীকে ভাগাভাগি করেন । বাচ্চাদের জন্যও বিশেষ আয়োজন ছিল ।
ডাবলিনে গত ৮ই মে Multicultural Festival , Clongriffin এ অনুষ্ঠিত হয় । ডাবলিন সিটি কাউন্সিল এবং তাসনুবা শামীম ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে Multicultural Festival সফল ভাবে সম্পন্ন হয় । সেখানে আইরিশদের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের মানুষ স্বপরিবারে উৎসবে অংশগ্রহন করেন । বিশেষ করে বাংলাদেশীদের উপস্থিতি ছিল উৎসাহব্যঞ্জক । Festival এ বাচ্চাদের জন্য বিশেষ ইভেন্টের ব্যবস্থা ছিল । শিশু/কিশোর দের নৃত্যানুষ্ঠান উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে । উৎসবে বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টলের ব্যবস্থা ছিল । Festival এ ডাবলিন লর্ড মেয়র Alison Gilliland উপস্থিতি ছিল বাড়তি আকর্ষণ । তিনি Multicultural Festival কে কমিউনিটি integration হিসেবে উল্লেখ করেন এবং উপস্থিত সবাইকে ধণ্যবাদ জানানোর পাশাপাশি তাসনুবা শামীম ফাউন্ডেশন কে ধণ্যবাদ জানান ।
আনন্দের খবর হচ্ছে আগামী ১৫মে ডাবলিনে দ্বিতীয় বারের মতো অমর একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে । ধারনা করা হচ্ছে ঐদিন প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি বৃহৎ মিলন মেলায় পরিণত হবে । আয়োজক কমিটি , স্বপরিবারে মেলায় অংশগ্রহন করার জন্য সবাইকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছেন ।
আয়ারল্যান্ডে একুশে বই মেলার উদ্যোক্তা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রাণপুরুষ সৈয়দ মোস্তাফিজুররহমান বই মেলাকে আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ঈদ বোনাস হিসেবে দেখছেন ।
সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগেরাজধানী ডাবলিনে , আগামী ২১শে মে রোজ শনিবার , করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে “ঈদ পূর্ণমিলন ও মিলনমেলা-২০২২” অনুষ্ঠান জাঁকজমকের সাথে উদযাপিত হতে যাচ্ছে । উক্ত অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটি আয়ারল্যান্ডের সকল বাংলাদেশীদের অংশগ্রহন করার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ করেছেন । মেলায় শিশু / কিশোরদের জন্য বিভিন্ন ইভেন্টের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকবে ।
আর মাত্র দুই দিন পর ১৫ই মে রবিবার ২০২২ ইং আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটিতে (DCU) তে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষীত প্রানের মেলা “২১ শে বই মেলা ২০২২”। বইমেলা হলো মানুষের মিলনমেলা। ব্যস্ত নাগরিক জীবনের একঘেঁয়েমি দূর করে বইমেলা এনে দেয় প্রশান্তি। বড়দের সাথে সাথে ছোটরাও বইমেলাকে দারুণভাবে উপভোগ করে।
উল্লেখ্য ২০২০ সালে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অবস্থিত (DCU) ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটিতে সর্বপ্রথম “২১শে বই মেলা” অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তি বছর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর জন্য মেলাটি আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
এই বছর ডাবলিন শহরের মাননীয় মেয়র Alison Gilliland, আগামী ১৫ই মে রবিবার ২১শে বই মেলা ২০২২ এর আমন্ত্রন গ্রহন করেছেন এবং মেলার প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করার সম্মতি প্রদান করেছেন। ২১শে বই মেলার আয়োজক কমিটি মেয়রের আগমন উপলক্ষে আনন্দিত।
২১শে বই মেলা আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্ভোধন করবেন বাংলাদেশী কমিউনিটির গর্ব আমাদের সবার প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় এমিরিটাস প্রফেসর জনাব এম এস জে হাসমি। DCU তে মনোরম পরিবেশে বই মেলা আয়োজনে প্রফেসর হাসমী সহযোগীতা করে আসছেন এবং তিনি বই মেলার আয়োজক কমিটির একজন একনিষ্ঠ অভিভাবক।
আয়োজক কমিটি মনে করে এখন বাংলাদেশী কমিউনিটির দায়িত্ব এই বই মেলাকে সার্থক ও সাফল্যমন্ডিত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
এরই মধ্যে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশী কমিউনিটির সবাইকে ১৫ই মে রবিবার ২১শে বই মেলা ২০২২ এর আমন্ত্রন হয়েছে।
এবারের মেলায় মূল অনুষ্ঠানের সাথে বেশ কিছু নতুন ইভেন্ট থাকবে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়,
২১শে বই মেলার বিশেষ আকর্ষনের মধ্যে থাকছে কবি ও লেখকদের জন্য বিশেষ সেমিনার। আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী কবি সাহিত্যিক ও লেখকগন মেলাতে উপস্থিত হয়ে মেলাকে আলোকিত করবেন। নর্দান আয়ারল্যান্ড প্রবাসী লেখক ও কবি মেহেদী হাসান থাকছেন তার বই নিয়ে নিজের বুক ষ্টলে। আরও থাকছে আয়ারল্যান্ড প্রবাসী কবি কামরুন নাহার রুনু’ র কবিতার বই নিয়ে “অষ্টম গ্রন্থ ” নামে একটি বুক ষ্টল।
এইবছর মেলায় বিশেষ আকর্ষন হিসেবে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী চিত্র শিল্পীদের আকা্ঁ চিত্রকর্মের চিত্র-প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এই চিত্র প্রদর্শনীতে গুনী চিত্রশিল্পী জেবুন নাহার অনুর চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হবে।
এছাড়াও মেলার মূল আকর্ষন বইয়ের ষ্টল সাজিয়ে আমন্ত্রিত অতিথীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে “২১শে বই মেলা ২০২২” শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং দিনভর মেলা চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
থাকছে শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযগিতা।
ছোট্ট সোনামণিরা যারা বইমেলায় চিত্রাঙ্কন এবং লিখা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য সুন্দর মেডেল এবং সার্টিফিকেট পুরস্কার হিসেবে থাকবে।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতার সময়ঃ দুপুর ১টা থেকে ২টা। দুপুর ১২ঃ৩০ এর মধ্যে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে রেজিস্ট্রেশন এর জন্য। দুপুর ১ টার পর রেজিষ্ট্রেশন নেয়া হবেনা।
কিশোর কিশরীদের জন্য থাকছে বিষয় ভিত্তিক প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগীতা। এই বছর প্রতিযোগিতার বিষয় রাখা হয়েছেঃ “বাংলাদেশ” (বাংলাদেশের প্রকৃতি, ইতিহাস, নদী, দর্শনীয় স্থান সহ যেকোন কিছুই হতে পারে) আমরা চাই ওরা আনন্দ নিয়ে, ভালোবেসে বাংলাদেশ নিয়ে লিখুক।
রচনা প্রতিযোগীতার সময়ঃ দুপুর ২ টা থেকে ৩ টা। দুপুর ১ঃ৩০ এর মধ্যে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। দুপুর ২ টার পর রেজিষ্ট্রেশন নেয়া হবেনা।
আয়োজকন আশা করছেন সকল অভিভাবকগন তাদেরদের ছোট্ট সোনামণিদের কে রেজিষ্ট্রেশন শুরুর আগেই অনুষ্ঠানে নিয়ে আসবেন এবং তারা সুন্দর একটি সময় উপহার দিতে পারবেন ইন শা আল্লাহ।
বিকেল ৪টায় শুরু হবে ২১শে বই মেলার বিশেষ আকর্ষন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকছে কবিতা আবৃত্তি এবং বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত শিল্পীদের গাওয়া দেশের গান, আরও থাকছে ছোট্ট বন্ধুদের পরিবেশনায় নৃত্য অনুষ্ঠান।
মেলায় পর্যাপ্ত খাবারের ষ্টল থাকবে বলে আয়োজকগন জানিয়েছেন। থাকছে পিঠার ষ্টল, মিষ্টির দোকান, প্যাকেট খাবার, চটপটির ষ্টল, চা-কফির আয়োজন, ঐতিহ্যবাহী পান্তা-ইলিশের দোকান এবং আরও থাকছে দেশীয় রকমারী কাপর ও পোশাকের বিপণি।
বই মানুষের পরম বন্ধু, মানব সভ্যতার অন্যতম প্রাণসভা। বই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের মাঝে তৈরি করে সেতুবন্ধন। বই সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে পরিচালিত করে মানুষকে বিশুদ্ধ করে তোলে। ম্যাক্সিম গোর্কি বলেছেন- “আমার মধ্যে উত্তম বলে যদি কিছু থাকে তার জন্যে আমি বইয়ের কাছে ঋণী।” মানুষ জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণের জন্য বইমেলায় ছুটে যায়। বইমেলায় প্রতিদিনের ব্যস্ততা ভুলে মানুষ আনন্দ স্রোতে অবগাহন করে। একই সাথে বইমেলার আরও একটি উদ্দেশ্য হলো বইকেনায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলা। আয়োজকগন আশা করছেন এবারের বই মেলায় সারা আয়ারল্যান্ড থেকে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটবে। সবাইকে মেলায় আমন্ত্রন জানিয়ে মেলাকে সফল করতে সকলের প্রতি সহযোগীতার আহবান জানিয়েছেন আয়োজকগন।
উত্তর পশ্চিম ইউরোপের দ্বীপ রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড।
কয়েকশ বছর বৃটিশ উপনিবেশের অধীনে থাকা দেশটি,এক পর্যায়ে যুদ্ধ ও সংগ্রামের ভিতর দিয়ে
স্বাধীন হয় বৃটিশ শাসন থেকে। বৃটিশ উপনিবেশের
শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে আইরিশরা ধীরে ধীরে গড়ে
তুলে নিজস্ব সমাজ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য।
একশত বছর আগেও যে দেশটি ছিল কৃষি নির্ভর,
সেই দেশটি আজ বিশ্বের ধনী দেশগুলোর একটি। পাহড়ি ভূ-খন্ড ,পোতাশ্রয় ও সবুজের সমারোহে মিশ্রিত আয়ারল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বিশ্বের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত সমাদৃত। সামাজিক এবং অর্থনৈতিক স্হিতিশীলতার জন্য বিদেশীদের কাছে এই ছোট্ট দ্বীপ দেশটির রয়েছে বেশ সুপরিচিতি।
আয়ারল্যান্ডে রয়েছে আধূনিকতা ও বিলাসিতার
নানা উপকরণ। অন্যান্য কমিউনিটির মত বাংলাদেশী কমিউনিটিও সময়ের ব্যবধানে শক্ত অবস্হান গড়ে তুলেছে আয়ারল্যান্ডে।পেশাগত কাজের পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বাংলাদেশীরা নিজেদের অক্লান্ত সাধনার মাধ্যমে দেশের মর্যাদাকে নিয়ে গেছেন অসীম এক উচ্চতায়।
বিশেষ করে নিজ ভূ-খন্ডে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মত কাজগুলো যতটা সহজ, ততটা সহজ নয় প্রবাসের মাঠিতে। পরবাসে নানা প্রতিবন্ধকতা পার করে ভিন্ন পরিবেশে এই কাজগুলো করতে হয় প্রবাসীদের। শত বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে কিছু আলোকিত মানুষ তবুও এই কাজগুলো করেন। সুস্হ সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মানের চেষ্টায় কিছু মানুষ সব সময় নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করেন ।
আয়ারল্যান্ড প্রবাসী কিছু আলোকিত মানুষ গত কয়েক বছর ধরে কমিউনিটির জন্য এমন কিছু সৃষ্টিশীল কাজ করছেন, যেগুলো কমিউনিটির মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি করেছে অনেকাংশে। তাঁরা সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার আলোক রশ্মি দিয়ে কমিউনিটিকে আলোকিত করছেন, কমিউনিটিকে দেখাচ্ছেন সুপথ।
দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকলে, হৃদয়ে মা-মাঠির প্রতি ভক্তি থাকলে, লক্ষ-কোটি মাইল দূরে থেকেও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সামাজিক কর্মকান্ডের দ্বারা প্রবাসের বুকে যে, এক টুকরো বাংলাদেশের নির্মল প্রতিচ্ছবি আঁকা যায়, তার কিছু দৃষ্টান্ত স্হাপন করে দেখিয়েছেন কমিউনিটির শ্রদ্ধেয় অগ্রজরা। তাদের বহুল নন্দিত কাজের মধ্যে একটি হলো “বইমেলা”। আগামী ১৫ই মে ২০২২ ডাবলিনে অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় “বইমেলা আয়ারল্যান্ড ২০২২”। প্রথম বইমেলা অনুষ্টিত হয়েছিল ২০২০ সালের ১৬ই ফ্রেব্রুয়ারি।
“বইমেলা” বা “গ্রন্হমেলা” শব্দ দুটি বাঙালির প্রাণের স্পন্দে স্পন্দে রন্ধিত রয়েছে। শব্দ দুটি বাঙালি জাতির প্রতিধ্বনি। ফেব্রুয়ারী মাস আসলে অমর বইমেলার আনন্দে মুখরিত হয় পুরো দেশ। সমস্ত দেশজুড়ে গড়ে উঠে বইমেলার স্টল। সেই অমর একুশে বইমেলা উৎসব আজ ৬৮ হাজারের ভৌগলিক সীমানা পেরিয়ে বিদেশে উৎযাপন হচ্ছে নানা কলরবে। শত ব্যস্ততাও সত্বেও নিজেদের ইতিহাস,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে লালনের জন্য প্রাণের বইমেলায় উপস্হিত হচ্ছেন প্রবাসীরা।
উৎসবকে কেন্দ্র করে বিশ্বে যতরকম মেলা হয়, এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো বইমেলা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক বইমেলা হয়। লাখ লাখ জ্ঞান পিপাসু মানুষের পদাচরণে সেই বইমেলাগুলো পরিনত হয় আলোর মেলায় ।
পৃথিবীতে এই বই সংগ্রহের রীতি বেশ পুরনো। ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, প্রাচীন চীনারা বইকে খুবই গুরুত্ব দিত। তাই নিজেদের সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে ধরে রাখার জন্যই চীনারা খ্রিষ্টীয় ৯৬০ সাল থেকে বই সংগ্রহ শুরু করে।
খ্রিষ্টীয় পনেরো শতকে জার্মান নাগরিক জোহানস গুটেনবার্গ Johansnes Gutenberg মুদ্রণযন্ত্র বা ছাপাখানা আবিষ্কার করার পর অনেকে মনে করেন সেই সময় থেকেই বইমেলার সূচনা হয় ইউরোপের জার্মানি থেকে। জার্মানির লিপজিগ শহরে বিশ্বের প্রথম বইমেলা অনুষ্টিত হয়েছিল বলে অনেকের দাবী।
কিন্তু কিছু সূত্রমতে প্রথমে বইমেলা শুরু হয়েছিল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে। তবে লিপজিগ খুব বড় করে মেলার আয়োজন করায় ওটার নামই বেশি প্রচার পায় লোকজনের মুখে। সে সময় বইমেলাগুলো তেমন জনপ্রিয়তা না পেলেও ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এর প্রভাব। সতের শতকের পর ইউরোপসহ বিশ্বের অন্যান্য কিছু দেশে বইমেলা শুরু হয়।
আর লাল সবুজের বাংলাদেশে অমর একুশে “গ্রন্থমেলা” নামে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে যে “বইমেলা” চলে, সেটির
ইতিহাস খুবই কৌতূহলোদ্দীপক।
বইমেলার চিন্তাটি প্রথমে মাথায় আসে ষাটের দশকের প্রয়াত কথাসাহিত্যিক এবং ন্যাশনাল বুক সেন্টার (বর্তমানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র) সাবেক পরিচালক সরদার জয়েনউদদীনের কাছ থেকে। তিনি এক সময় বাংলা একাডেমিতে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক পদে নিয়োগ পান। সরদার জয়েনউদ্দীন (১৯১৮ – ২২ ডিসেম্বর, ১৯৮৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশী লেখক, ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও সম্পাদক।
তিনি ছিলেন বাংলাদেশে বইমেলার প্রবর্তক। সরদার জয়েনউদ্দীন বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৬৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও আদমজী সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৯৪ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক-এ ভূষিত হন।
জয়েনউদ্দীন ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমিতে কর্মরত থাকা অবস্হায় তাঁর তত্ববাধানে বাংলা একাডেমি প্রচুর বিদেশি বই সংগ্রহ করে। এর মধ্যে একটি বই ছিল Wonderful World of Books. এই বইটি পড়তে গিয়ে তিনি হঠাৎ দুটি শব্দ দেখে পুলকিত বোধ করেন। শব্দ দুটি হলো : ‘Book’ এবং ‘Fair, (বই+মেলা)। অন্যান্য মেলার ন্যায় বইয়েরও যে মেলা হতে পারে এবং বইয়ের প্রচার-প্রসারের কাজে বইমেলার গুরুত্ব, এই বই পড়েই তিনি উপলব্ধি করেন।
সেই সময় তিনি ইউনেস্কোর শিশু-কিশোর গ্রন্থমালা উন্নয়নের একটি প্রকল্পে কাজ করছিলেন। কাজটি শেষ হওয়ার পর তিনি ভাবলেন বিষয়গুলো নিয়ে একটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করবেন। তখন প্রদর্শনীর পরিবর্তে মেলার চিন্তাটি জয়েনউদ্দীনের মাথায় আসে।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ। অবশেষে ১৯৬৫ সালে
তিনি একটি শিশু গ্রন্থমেলার আয়োজন করেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির (বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি) নিচতলায়। যত দূর জানা যায়, এটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম বইমেলা।
জাতির মেধা, মনন, সৃজনশীলতা নিয়ে সবচেয়ে বড় এই আয়োজন সাধারণ মানুষের কাছে এখন প্রাণের মেলা হিসেবেও সমাদৃত।
আয়ারল্যান্ডে বইমেলা একবারে নতুন ।এটির বিকাশ হয়েছে বেশি দিন হয়নি। কমিউনিটি বান্ধব বিশিষ্ট সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের চিন্তা থেকে এবং পরবর্তীতে কমিউনিটির অন্যান্য বিছু সৃষ্টিশীল ব্যক্তিবর্গ যথা, মোহাম্মদ মোস্তফা, শাহাদাত হোসেন,আখতার হোসেন, লুবনা হোসেন,কাজী কবির, শামীম আহমেদ সহ আরো কিছু বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে ২০২০ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি ডাবলিনে আনুষ্টানিকভাবে প্রথম বইমেলা অনুষ্টিত হয়।
আয়ারল্যান্ডব্যাপী বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল উক্ত বইমেলা। প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের পাশাপাশি সেই মেলায় উপস্হিত হয়েছিল প্রচুর তরুণ-তরুণী এবং ছোট্ট শিশুরা। আনন্দে উদ্ভাসিত ছিল পুরো কমিউনিটি। ২০২০ এর বইমেলাকে কেন্দ্র করে কমিউনিটির মধ্যে বাঁধভাঙা উল্লাস লক্ষ্য করা গেছে। সময়ের স্বল্পতা থাকা সত্বেও উদযাপন কমিঠির নিরলস প্রচেষ্টার কারণে “বইমেলা আয়ারল্যান্ড ২০২০” অত্যন্ত সফল হয়েছিল বলে কমিউনিটি মনে করে।
আধুনিকতা আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া অসম্ভব। প্রত্যেক মানুষই আনন্দপ্রিয়, বইও আনন্দের একটি বড় মাধ্যম ।তাই যে কোনো বই মানুষের সুকুমারবৃত্তির জন্য খুব সহায়ক।
করোনার কারণে গত বছর এ বইমেলা আয়োজন করা যায়নি। বলতে দ্বিধা নেই যে, বাংলাদেশী কমিউনিটি অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিল পরবর্তী বইমেলার। অবশেষে আসল সেই মহেন্দ্রক্ষণ। কমিউনিটির ব্যাপক আগ্রহ এবং উদ্দীপনার কথা চিন্তা করে ” বইমেলা আয়ারল্যান্ড ২০২২” এর উদযাপন কমিঠি এর ব্যাপক প্রস্তুুতি নিয়ে এবার কিছুটা বড় পরিসরে দ্বিতীয় বইমেলা অনুষ্টানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ১৫ই মে ২০২২ ইং রোজ রবিবার । স্হান : স্ট্রোক বিল্ডিং, ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি।
সংঘত কারণে এবারের বহুল প্রতীক্ষিত বইমেলায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করা যাচ্ছে।
জনাব মোহাম্মদ মোস্তফা, শাহাদাত হোসেন, আক্তার হোসেন,আরিফ ভূঁইয়া,নিপা,সাজীলা চৌধুরী, মেহেদী হাসান, মাসুদ সিকদার,ডঃ বিলাল হোসেন প্রমুখ সহ অন্যান্যদের সমন্বয়ে “বইমেলা আয়ারল্যান্ড ২০২২” উদযাপন কমিঠি এই বইমেলাকে সার্বিকভাবে সফল করে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। কমিউনিটিকে নতুন কিছু দেবার তাদের এই প্রত্যয় কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ রাখবে কমিউনিটি দীর্ঘদিন।
আলো যেমন জাগতিক নিয়মে অন্ধকার দূর করে সব কিছু মূর্ত করে, তেমনি বই মানুষের মনের ভেতরে জ্ঞানের আলো এনে যাবতীয় অন্ধকারকে দূর করে চেতনার আলোকে উদ্ভাসিত করে। আলো অনেক সময় পৃথিবীর অনেক জায়গায় পৌঁছতে পারে না প্রাকৃতিক জঠিলতার কারণে। কিন্তুু বই অতীত থেকে ভবিষ্যৎ , নিকট থেকে দূরে , প্রান্ত থেকে অন্তে এমনকি যুগ থেকে যুগান্তরে জ্ঞানের আলো পৌঁছে দিতে পারে । তাই দেশ -কালের সীমানা অতিক্রম করে জ্ঞানের আলো মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে একমাত্র বই।
পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা হল আত্মশিখন । আর বই সেই আত্মশিখনের শ্রেষ্ঠ সহায়ক । বই এমন এক পরম বন্ধু, যার সাথে কখনো ঝগড়া হয়না। ঘরের চার দেয়ালে বিনোদন থেকে শিক্ষা ,আত্ম উপলব্ধি, অবসর যাপন থেকে নিঃসঙ্গতা দূর — সব কিছুর শ্রেষ্ঠ অবলম্বন হতে পারে একমাত্র বই। তাই বই পড়া এবং বই সংগ্রহ করে রাখার জন্য বইমেলার বিকল্প নাই।
পরিশেষে আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির “বইমেলা আয়ারল্যান্ড ২০২২ “এর উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি। এই ধরণের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক মূলক অনুষ্টান চর্চার মাধ্যমে বাংলাদেশী কমিউনিটি আলোয় আলোকিত হউক, এই প্রত্যাশা নিরন্তর।
বিগত দুই বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদের দিনগুলো কেটেছে মলিনভাবে। সেই আক্ষেপ গোছাতে লিমরিকবাসী উদ্যোগ নেয় সকলে মিলে উৎসবমুখরভাবে ঈদ উদাপনের। তারই ধারাবাহিকতায় ঈদের দিন বিকেলে লিমরিকের ফোর স্টার গ্রীনহিল হোটেলে উদযাপিত হয় মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।
সূর্য যখন মাথার উপর থেকে পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে ঠিক তখন থেকেই ধীরে ধীরে জমায়েত হতে থাকে লোকজন। সবাই সাথে করে নিয়ে এসেছে নিজেদের হাতে তৈরি প্রিয় সব খাবারগুলো। হলের চেয়ারগুলোর পাশাপাশি খাবারের টেবিলও পূর্ণ হতে থাকল সমান তালে। বাহারি সব মিঠা, পায়েস, মিষ্টান্নের আয়োজন ছিল মনমুগ্ধকর।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখছেন কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার
যখনই অনুষ্ঠান হলটি কানায় কানায় পূর্ণ, তখনই কুরআন তিলোয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। ঈদ শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন পুরুষদের পক্ষ থেকে লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার, এবং মহিলাদের পক্ষ থেকে লিমরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর জাকিয়া রহমান।
লিমরিকবাসী এবং কিছু অতিথি
অনুষ্ঠানটিতে লিমরিক বাংলাদেশি কমিউনিটির কিছু ইতিহাসের খণ্ডাংশ তুলে ধরা হয়। এছাড়াও তুলে ধরা হয়, লিমরিক এর কৃতি ছাত্রছাত্রীদেরকে।
এছাড়াও শিশুকিশোর, পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানকে করে তোলে আরো প্রাণবন্ত। র্য্যফেল ড্র এর মাধ্যমে শেষ হয় অনুষ্ঠানটি।
সবাই একসাথে মিলিত হওয়া, সবার সাথে সবার মোলাকাত ও কুশল বিনিময় এবং একসাথে বসে সবার বানানো খাবার সবাই খেতে পারাটাই ছিল অনুষ্ঠানের প্রধান স্বার্থকতা।
লিমেরিকের বাহিরে থেকে যেসব অতিথিরা অনুষ্ঠানকে অলংকিত করেছেন তাদেরকেও লিমেরিকবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে।
কোভিড এর দুই বছরে পালন করা লেগেছে কোভ-ঈদ। ঘরে বসে ঈদের নামাজ, এই জীবদ্দশায় এও দেখতে হল। ভয়ভীতি ও নিষেদাজ্ঞার ভেতর দিয়ে গিয়েছে বিগত চার চারটি ঈদ।
ঈদ মানে সকলে মিলে একসাথে নামাজ আদায়, কিন্তু তা করা হয়নি স্বাভাবিকভাবে।
ঈদ মানে নামাজ শেষে উষ্ণ মোলাকাত, কিন্তু করা হয়নি তা ভয়ে।
ঈদ মানে একে অন্যের সাথে দেখা, মিলিত হওয়া; কিন্তু করা হয়নি তা নিয়মের কারণে।
ঈদ মানে আনন্দ, কিন্তু লক্ষ্য মৃত্যু আর রোগে কাতরানোদের ভিড়ে তা ছিল নিরানন্দ।
দীর্ঘদিন পরে অবশেষে মনে হচ্ছে আবার ফিরে এসেছে স্বাভাবিক জীবন, হাতছানি দিচ্ছে সেই চিরচেনা ঈদের আমেজ।
২০২০ সালে ডাবলিনের ক্রুক পার্কে দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের নামাজ আদায়ের দৃশ্য
করোনার বিভীষিকাময় অধ্যায় পার করে আলোর দেখা পাবার অপেক্ষা। করোনাকালীন সময়ে আমরা অনেকেই হারিয়েছি অনেক প্রিয়জন, অনেকেই ফিরে এসেছি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে। রমজানের উছিলায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন পরলোকগতদের আত্মার মাঘফেরাত দান করেন এবং যারা আল্লাহর অশেষ কৃপায় এখনো নিঃশ্বাস নিচ্ছি এই ধরায়, সবাইকে যেন ক্ষমা করে শুদ্ধ জীবন দান করেন।
এবারের ঈদ বয়ে নিয়ে আসুক সবার জীবনে অনাবিল আনন্দ। সবকিছু ভুলে আবার শুরু হোক নতুন পথচলা। এই শুভকামনায় সবাইকে ঈদ মোবারক।
গত বুধবার ২৬ রমজান ১৪৪৩ হিজরী, ২৭শে এপ্রিল ২০২২ আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকার উদ্দোগে আয়োজিত Dublin Swords মসজিদ নির্মান কাজের তহবিল সংগ্রহের জন্য অনলাইনে পত্রিকাটির ফেইসবুক পেইজে একটি ফান্ড রাইজিং প্রোগামের আয়োজন করা হয়।
আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী সারা আয়ারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের বাইরে থেকেও বহু মানুষের সহযোগীতায় মসজিদটির জন্য প্রায় ৬২ হাজার ইউরোর তহবিল সংগ্রহীত হয়, আলহামদুলিল্লাহ। এটা ছিল এক অভূতপূর্ব মুহুর্ত।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন swords মসজিদের প্রধান খতিব ডঃ আহমেদ আল হাব্বাশ, মসজিদের ঈমাম মুহাম্মদ যাবের হায়দার, মসজিদের সিইও জনাব তারেক সালাহ উদ্দিন, সেক্রেটারী জনাব শাহদাৎ হোসেন, আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক জনাব আব্দুর রহিম ভূ্ঁইয়া, ফান্ড কালেকশনে ছিলেন শওকত আলী খান মাসুম, মাসুদ শিকদার ও মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সোহেল এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মশিউর রহমান।
ফান্ড রাইজিং অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যাক্তি বর্গের মধ্যে অনেকেই Zoom লিঙ্কের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
Kilkenny, Limerick, County meath, Clonmel, Cork সহ বিভিন্ন কউন্টি থেকে মানুষ স্বতস্ফূর্ত ভাবে দান করেন, কেউ নগদে দান করেন, কেউ টেলিফোনে, কেউ অনলাইনে zoom লিঙ্কে যুক্ত হয়ে Dublin Swords মসজিদের জন্য দান করেন। অনেক মা-বোনেরাও রমজান মাসে অধিক সোয়াবের আশায় অনুষ্ঠানে মসজিদের জন্য দানে অংশগ্রহন করেন। আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে এই প্রথম কোন মসজিদের জন্য ফান্ড গঠনে ফেইজবুক পেইজে Live অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং সারা আয়ারল্যান্ড থেকে বিভিন্ন কাউন্টির বাংলাদেশীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে মসজিদের জন্য দান করেন।
Kilkenny ও Limerick এই দুই বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে জানানো হয় তারা তাদের কমিউনিটির সকলের কাছ থেকে Dublin Swords মসজিদের জন্য ফান্ড সংগ্রহ করে এই ফান্ড তারা শিগ্রই swords মসজিদ কমিটির নিকট পাঠাবেন।
এখানে উল্ল্যেখ যে সংগ্রহীত ৬২,০০০/-হাজার ইউরোর প্রায় পুরোটাই আসে বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে এবং সামান্য কিছু অর্থ আসে ননবাঙ্গালী কমিউনিটি থেকে।
খুব অল্প সময়ের আয়োজনে ৬২,০০০/- হাজার ইউরোর মত এতো বিশাল তহবিল সংগ্রহে Swords মুসলিম কমিউনিটি খুবই আনন্দিত এবং আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ, সাথে সাথে তারা সারা আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটিকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে পাখির বাসা পরিমাণ কিংবা তারচেয়েও ছোট মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন।’
আলিমগণ বলেছেন, ‘যারাই মসজিদ নির্মাণে অংশগ্রহণ করবে, প্রত্যেকেই প্রত্যেকের অংশগ্রহণের পরিমাণ অনুযায়ী প্রতিদান পাবে।’
Swords মসজিদের নির্মান কাজ শেষ করতে ২,৫০,০০০/- ইউরো প্রয়োজন। মসজিদটি সম্পূর্ন রূপে ব্যাহার উপযোগী করে নির্মান কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহ চলমান থাকবে। মসজিদের নির্মান কাজের জন্য আপনি দান করতে চাইলে নিচে ব্যাংক একাউন্টের তথ্য দেওয়া আছে অনুগ্রহ করে আজই দান করুন। মসজিদের বিষয়ে কোন তথ্য জানতে আপনি ই’মেইল করতে পারেন অথবা নিচে নাম ও মোবাইল নাম্বার দেওয়া আছে যোগাযোগ করতে পারেন।
Email : iccs.ireland@gmail.com
Registered Charity Number (RCN) is 20206091
Bank Details:
AIB Bank,
A/C Name: Islamic Cultural Centre Swords.
A/C Number: 15224009,
Sort Code 93-10-71 (AIB Bank),
IBAN: IĘ62AIBK93107115224009,
BIC-AIBKIE2D
এই বছর Dublin-এ অনুষ্ঠিত হবে ঈদ পরবর্তী বিশেষ আয়োজন “ঈদ পূনর্মিলনী ২০২২”।
আমরা পরিবার পরিজন ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে বছরের পর বছর ঈদ উৎযাপন করি ঠিকই কিন্তু আমাদের ঈদ শুধুই রঙহীন বিবর্ন। নেই কোন প্রিয়জনদের ছো্ঁয়া, থাকেনা মায়ের হাতের রকমারী রান্না। আমাদের বাচ্চারা যারা এদেশে বড় হচ্ছে তারাও জানেনা রমজানের রোজার ঈদের কি আনন্দ আমরা ছোট সময় করতাম। স্মৃতির মনিকোঠায় জমে থাকে সেই অতীত দিনের ঈদ আনন্দ।
তাই এবছর দেশীয় আমেজে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে “বাংলাদেশী মিলন মেলা আয়ারল্যান্ড” পরিবারের পক্ষ থেকে আসছে মে’ মাসের ২১তারিখ শনিবার Treepark রোড, Tallaght, Dublin-24 এ অবস্থিত Kilnamanagh Family Recreation Centre এ অনুষ্ঠিত হবে “ঈদ পূনর্মিলনী ২০২২”।
যেহেতু করোনা মহামারীর কারনে দীর্ঘ দুই বছর মানুষ ঘরে বন্ধী ছিল তাই ধারনা করা হচ্ছে এই ঈদ অনুষ্ঠানে বহু লোকের আগমন হবে আর এই জন্য আয়োজকগন ঈদ আনন্দের সকল আয়োজন তারা করে রাখছেন যাতে পরিবার পরিজন নিয়ে সকলে একটি সুন্দর সময় কাটাতে পারেন। শুধু তাই নয়, ভোজন প্রিয় বাঙ্গালীদের রসনা নিবৃত্ত করার জন্য দুপুরে থাকবে আকর্ষণীয় লাঞ্চ পার্টি আর খাবারের মেন্যুতে থাকছে মজাদার সব বাংলাদেশী খাবার। বাচ্চাদের জন্যও খাবারের বিশেষ মেন্যু থাকবে বলে আয়োজকগন জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আরও থাকছে:
১. বাচ্চাদের জন্য নাচ, গান ও কবিতা আবৃত্তি।
২. আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত ভাই এবং ভাবীদের অংশগ্রহণে থাকবে সংগীত পরিবেশনা।
৩. বাচ্চাদের জন্য চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা।
৪. বাচ্চাদের জন্য হস্তলেখা (Writing) প্রতিযোগিতা।
৫. Creating Competition.
৬. খেলাধূলাঃ সবার জন্য উন্মুক্ত। বিশেষ করে তরুণদের জন্য আকর্ষণীয় আইটেম।
৭. ফেইস পেইন্টিং(Face Painting
৮. ম্যাজিক শো (Magic show)
৯. বিকালে টী-পার্টির ব্যবস্থা থাকবে।
অনুষ্ঠানটি দুপুর ২টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনায় থাকবেন ড. নাসিম মাহমুদ, রুকসানা হক, মাহিম মান্নান ও গালিব হক। এছাড়াও অতিথিদের সহযোগীতা করতে এবং অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করতে থাকবে একঝা্ঁক প্রাণোচ্ছল সেচ্ছাসেবক।
“ঈদ পূনর্মিলনী ২০২২” এর অনুষ্ঠানে আগতদের জন্য প্রবেশ মুল্য নির্ধরন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় নির্দিষ্ট সংখ্যক অতিথিদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হবে তাই কোন রকম বিব্রতকর অবস্থা এড়াতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে অতিথিদের অগ্রিম টিকেট ক্রয় করার জন্য বিশেষ অনুরোধ করা হয়েছে।
টিকেটের মুল্য নিন্মরূপ:
১ জন প্রাপ্ত বয়স্ক €১৫ ইউরো
২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক €২৫ ইউরো
২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ১জন বাচ্চা €৩৫ ইউরো
২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ১এর অধিক বাচ্চা €৪৫ ইউরো।
৩ বছরের নিচে বাচ্চাদের জন্য টিকেট লাগবে না।
টিকেট ক্রয় করা যাবে ১০ই মে পর্যন্ত।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঈদ পূর্ণমিলন অনুষ্ঠানে সকল বাংলাদেশীদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছে এবং তারা জানিয়েছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আয়োজকদের আশা সর্ব স্তরের বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি জাকজমকপূর্ণ ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে এবছর।
Payment details:
Bank name: Bank Of Ireland
Account holder name: Sharmin Ahmed
A/C NO: 28743412
IBAN: IE87BOFI90062328743412
BIC: BOFIIE2D
Revolut number : 0877684868
If anyone wants to pay by credit card please contact us . We will send you the link.In the payment reference please put name or phone number please. Registration is open until 30th April.
আজ শনিবার ২২তম রমজান ১৪৪৩ হিজরী ,আয়ারল্যান্ডে আজ সন্ধ্যার মাগরীবের আজানের মধ্যদিয়ে আমরা ২৩তম রমজান শুরু করবো এবং এটি আরও একটি বিজোড় রাত। হাদিস শরিফে শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবেকদর অন্বেষণ করতে বলা হয়েছে।
রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। এ মাসের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ দিন হলো শেষ ১০ দিন। কেননা এ দশকেই রয়েছে পবিত্র শবেকদর। বিশেষ হেকমতের কারণে শবেকদরের দিনক্ষণ ঠিক করে দেওয়া হয়নি। এর মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ইবাদতের প্রতি মনোনিবেশ করতে বলা হয়েছে। শবেকদর সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। তুমি কি জান, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা : কদর, আয়াত : ১-৩)।
হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় শবেকদরে ইবাদত করবে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৬০; বুখারি, হাদিস : ২০১৪)
যারা এ রাতের রহমত ও বরকত থেকে বঞ্চিত, তারা সবচেয়ে হতভাগা। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা এমন একটি মাস পেয়েছ, যার মধ্যে এমন একটি রজনী রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। যে ব্যক্তি এই পুণ্যময় রাতে বঞ্চিত থাকে, সে সমূহ কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত থাকে। সে খুবই হতভাগা, যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকে। (মিশকাত, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা-১৭৩; ইবনে মাজাহ : দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১২০)
সুতরাং এই রাতের ফজিলত লাভে সচেষ্ট হওয়া আমাদের সবার কর্তব্য। অন্তত এশা ও ফজরের নামাজ যদি জামাতের সঙ্গে আদায় করা যায়, তবু সারা রাত নামাজ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। এক হাদিসে এসেছে : ‘যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৬)
শবেকদর কবে? হাদিস শরিফে এসেছে : ‘তোমরা শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবেকদর তালাশ কর।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)
শেষ দশকের সব রাতেই যথাসম্ভব বেশি বেশি ইবাদত করা চাই। বিশেষত শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে রমজানের অন্যান্য রাতের তুলনায় বেশি বেশি ইবাদত, নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল ও কোরআন তেলাওয়াত করা চাই। শবেকদরের একটি বিশেষ আমল হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, “আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছি, ‘হে আল্লাহর রাসুল! যদি আমি শবেকদর পেয়ে যাই, তবে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব?’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘এই দোয়া পড়বে—আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।” অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাকারী এবং আপনি ক্ষমা করা পছন্দ করেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
করোনার কারণে বিগত দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সামারের অন্যতম আকর্ষণ ‘’রিভারফিস্ট’’। মে ব্যাংক হলিডে উইকেন্ডে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জমজমাট, রঙ্গিন ও উৎসবমুখর আয়োজন ‘’রিভারফিস্ট লিমেরিক ২০২২’’।
এবারের রিভারফিস্টে থাকতেছে বেশ কিছু আকর্ষণ। তন্মদ্ধে বিনামূল্যে আইরিশ নৌ জাহাজ ‘’লা জেমস জয়েস’’ দর্শনের অভিজ্ঞতা সুযোগ ও ”জীপলাইন’’ এ ভ্রমণের সুযোগ এবং তাও বিনামূল্যে।
‘’লা জেমস জয়েস’’ হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের নৌ জাহাজ, যেটা ২০১৫ থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই জাহাজটি ম্যারিটাইম বা সামদ্রিক নিরাপত্তা ও সামদ্রিক প্রতিরক্ষা টহলের কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ‘’লা জেমস জয়েস’’ লিমেরিকের স্টিমবোট কীর ডকে এসে পৌঁছবে ২৯ এপ্রিল বিকাল ৬ টার দিকে, যা স্টিমবোট কি, শ্যানন ব্রিজ ও বারিংটন পিয়ার থেকে দেখা যাবে। আগামী ৩০শে এপ্রিল শনিবার ও ১ই মে রবিবারে সকাল ৯:৩০ থেকে বিকাল ০৫:০০ তা পর্যন্ত ১০ জনের গ্রুপ করে করে জাহাজটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
Irish Naval Vasel Le James Joyce
এছাড়াও রয়েছে বিনামূল্যে ‘’জিপলাইন’’ ছড়ার সুযোগ। এডভ্যাঞ্জারস রা সমান্তরাল তার ঝুলে একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে যাওয়ার পুলক জাগানিয়া অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন।
বিশেষ আকর্ষণ থাকবে ১ম মে রবিবার সন্ধ্যা ১০ টায় ফায়ারওয়ার্ক। নানা রঙ্গের আতশবাজির মূর্ছনায় মুখরিত হবে শ্যানন নদীর পাড়।
এইতো গেলো বিনামূল্যে কি কি থাকবে। এছাড়াও রয়েছে নানারকম পেইড কর্মকাণ্ড। তন্মদ্ধে থাকবে কায়াকিং, পেডাল বোট রাইডিং, বিগ হুইলসহ নানা রকম বাচ্চাদের রাইড।
সব চেষ্টা ব্যর্থ করে, সব ভালোবাসাকে ছিন্ন করে চলে গেলেন ক্রিকেটার মোশাররফ রুবেল। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় তিনি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
দেশের হয়ে পাঁচটি ওয়ানডে খেলা মোশাররফ রুবেলের মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে ২০১৯ সালের মার্চে। এরপর সিঙ্গাপুরে গিয়ে অস্ত্রোপচার করিয়ে সেই টিউমার অপসারণও করা হয়েছিল। মোটামুটি সুস্থই হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার হুট করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রুবেলকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
২০১৯ সালে রুবেলের মস্তিষ্কে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর সিঙ্গাপুরে অস্ত্রোপচার করে টিউমার অপসারণ করা হয়। ২৪টি কেমোথেরাপি লেগেছিল তাঁর। এরপর মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিছুদিন আগে নতুন করে টিউমার ধরা পড়ে তাঁর মস্তিষ্কে। অবশ হয়ে যায় শরীরের একদিক। গত মাসে তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। তবে প্রায় এক মাস পর ১৫ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন রুবেল।
আজ আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকেরা রুবেলকে মৃত ঘোষণা করেন।
রুবেলের বাঁচার লড়াইটা লম্বাই। সিঙ্গাপুরে অস্ত্রোপচার ও সফল কেমোথেরাপির পর মনে হয়েছিল, তিনি সুস্থই হয়ে উঠেছেন। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে তাঁর মস্তিষ্কে নতুন করে টিউমার ধরা পড়ে। আবারও শুরু হয় কেমোথেরাপি। নিতে হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো–মন্দের মধ্য দিয়েই যাচ্ছিল। চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিল তাঁর পরিবার। তবে দেশের ক্রিকেটমহল তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। আগামী সপ্তাহেই তাঁর আবার কেমোথেরাপি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
৪০ বছর বয়সী মোশাররফ রুবেল দেশের হয়ে ৫ ওয়ানডেতে পেয়েছেন ৪ উইকেটে। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁর অভিষেক। খুব নিয়মিত কখনোই হতে পারেননি। সর্বশেষ জাতীয় দলে খেলেছেন ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
মোশাররফ রুবেল প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন ১১২টি, লিস্ট ‘এ’ ১০৪টি। ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি খেলেছেন ৫৬টি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩৯২ উইকেট তাঁর। সেরা বোলিং ৯/১০৫। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তিনি উইকেট নিয়েছেন ১২০টি। টি–টোয়েন্টিতে ৬০ উইকেট তাঁর।
ঘরোয়া ক্রিকেটে বরিশাল বিভাগ, মধ্যাঞ্চলের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। বিপিএলে খেলেছেন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স, খুলনা টাইটানস প্রভৃতি দলে।
সোসাল মিডিয়ার যুগ বলে কথা! মানুষ এখন আর কুনো ব্যাঙের মতো নিজেকে কুনোয় বন্দী করে রাখতে বাধ্য নয়। সোসাল মিডিয়া একটি উদার রঙ্গমঞ্চ। এ রঙ্গমঞ্চের সদস্য হতে কার না মন চায়! তার উপর যদি না থাকে কোনো খড়কুটো পোহানোর ঝামেলা। বড্ড সহজ এ পথ। তাছাড়া এ রঙ্গমঞ্চে মডারেটিংএর কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় “যেমন খুশী তেমন সাজ” এর মতো যে যার ইচ্ছে মাফিক নিজেকে সাজাতে পারে। স্বীয় অস্তিত্বের ঢাকঢোল যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে পেটাতে পারে। কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন রাখতে যেমন কোনো বাধানিষেধ নেই তেমনি সোসাল মিডিয়া বা ফেসবুকে কাক ময়ুর সেজে পেখম মেলালেও কোনো বাধা বিপত্তি, বিধি নিষেধ বা সমস্যার সম্মুখীন হয়না।
সমস্যার সম্মুখীন হয়না সে কথা ঠিক। তবে সমস্যা যে নেই তা ঠিক নয়। সমস্যা আছে, যা কিনা বিবেকবোধের সমস্যা। গাণিতিক সমীকরণের সমস্যা। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে স্বাধীন স্বত্বা দিয়ে এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাই বলে কি স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করার অনুমতি সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে দিয়েছেন? নিশ্চয়ই না। বরং তিনি তাদেরকে জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেক দান করেছেন যাতে ভালো ও মন্দের পার্থক্য নিরূপণে সক্ষম হয়। অবারিত স্বাধীনতায় যেনো কেউ বেসামাল না হয়ে উঠে সে জন্য আল্লাহ প্রত্যেককে বুদ্ধি ও ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন। এ বুদ্ধিশক্তি দিয়ে মানুষ নিজেকে ও নিজের চিন্তা-চেতনা ও কর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে ইচ্ছে মাফিক কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়। এ বুদ্ধি ও ইচ্ছাশক্তির পারস্পরিক ভারসাম্য ও সাম্যতা বজায় রেখে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার যে ক্ষমতা তাই বস্তুত স্বাধীনতা। যেখানে যতো বেশি স্বাধীনতা সেখানে ততোবেশি দায়বদ্ধতা। এ দায়বদ্ধতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মানুষ যখন অতিমাত্রায় স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে, ভালো মন্দের ভেদাভেদ ভুলে যায় তখন স্বাধীনতা মলিন হয়। কলুষিত হয়। এর গায়ে চুনকালি লাগে। সোসাল মিডিয়ার সুযোগে একদল মানুষ আজকাল পাল্লা দিয়ে চুনকালি লাগানোর কাজটি বেশ দাপটের সাথে করে যাচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।
বস্তুত মানুষ যোগ্যতার চেয়েও যখন আরও বেশি নিজেকে জাহির করতে চায় তখন সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পাগলা কুকুরের মতো গলায় ঘন্টি বেঁধে সামনে দৌড়াতে থাকে। অতীত আমিত্বকে নির্দ্বিধায় ভুলে যায়। এর পরিণতি কি ভালো, কি মন্দ সে বিবেচনার ধার তারা ধারে না। বরং তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে। ছোটবেলার গল্পটির কথা কি পাঠকের মনে আছে?
এক সন্ন্যাসী বিপদগ্রস্থ একটা ইদুরকে বাঘে পরিনত করেছিল।কিন্তু বাঘ হওয়ার পর সেই ইদুর সব ভুলে সন্ন্যাসীকেই খেতে গিয়েছিল।
পরিনতি কি হয়েছিল?
সন্ন্যাসী পুনরায় তাকে ইদুরে পরিনত করেছিল।
সুতরাং অবাধ স্বাধীনতায় যারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে, অতীত আমিত্বকে ভুলে যায় তাদের অবশ্যই পরিণতির কথাটা মাথায় রাখা উচিত। আরেকটি কথা বলতেই হয়। কবির ওই বাণী আমরা কে না জানি!
” অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা তারে তৃণ সম দহে “।
অর্থাৎ যারা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কেবল ব্যক্তিগত হিংসে বিদ্বেষই চরিতার্থ করছেনা বরং বিভিন্ন দল বা গ্রুপের পতাকাতলে থেকে কখনো কখনো কারো কারো চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করছে, কখনো মিথ্যে প্রপাগান্ডায় সমাজে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে তারা যতোটুকু দায়ী তার চেয়েও বেশি দায়ী যারা এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। প্রতিবাদের বদলে মুখে কুলুপ এঁটে থাকে। সমাজের পশ্চাদপদতা বা ধ্বংসের পেছনে এরাও কম দায়ী নয়।
বৈদিক যুগের কুরু বংশ ধ্বংস হয়েছিল কেন?
অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রর থেকেও বেশী দায়ী ছিলেন তারই স্ত্রী গান্ধারী যিনি চোখ থাকতেও চোখে ঠুলি বেঁধে রাখতেন সবসময়। তিনি শুধু সন্তান স্নেহে অন্ধ হয়ে সন্তানের অন্যায়, অনাচার বা অপকর্মকেই প্রশ্রয় দিতেন না, বরং সমাজের কিংবা রাজ্যের অনেক অসঙ্গতি দেখেও তিনি নীরব ভূমিকা পালন করতেন যা ক্রমান্বয়ে কুরু বংশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
আজকের এ আধুনিক সমাজেও বহু গান্ধারী আছে যারা অন্যায়, অবিচার-অনাচারকে লালণ করছে। প্রশ্রয় দিচ্ছে। গা বাঁচিয়ে চলছে। এরা অন্যায়কারী অপরাধীর চেয়েও ভয়ঙ্কর। এরা সমাজের কীট। ভন্ড। সাধু সাজার চেষ্টা করে বটে, সত্যিকারের সাধু নয়।
এক শ্রেণীর মানুষ অন্যায় করছে। আরেক শ্রেণীর মানুষ বসে বসে কেবল তা দেখছে। এই দুই শ্রেণীর যাতাকলে প্রকৃত সৎ ও সত্য কথা বলা মানুষ গুলোর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ অবস্থার পরিত্রাণ ঘটাতে হলে এখনি মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে। কারন অপমানিত হওয়ার,ঠকবার আর মিথ্যাকথা শুনে হজম করারও একটা সীমা থাকা দরকার।
অবস্থা এমন হয়েছে যে, এখন আমরা সবাই রাজা। কেউ কাউকে মানতে বা সম্মান দিতে রাজি নয়। সন্তানের কাছে পিতা মাতা অসহায়। স্ত্রীর কাছে স্বামী তুচ্ছ। বন্ধুর কাছে বন্ধু অপমানিত। ভাইয়ের কাছে ভাই লজ্জিত। সমাজপতিদের কাছে সমাজ লাঞ্ছিত, অবমানিত।
অবাধ স্বাধীনতায় মাতোয়ারা হয়ে নিজেদেরকে আমরা যাই ভাবিনা কেনো, একটি জিনিস ভুলে গেলে চলবে না যে; এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষকে সৃষ্টিকর্তা স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করার জন্য পাঠিয়েছেন। যাকে যে কাজটি করার জন্য পাঠিয়েছেন সেই কাজটি তার হৃদয়ে গ্রন্থিত থাকে এবং ভেতর থেকে ঠিক সেই কাজটি করার জন্যই সে তাড়না অনুভব করে। এ তাড়নাকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে আমাদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা এক অদৃশ্য শক্তি। এ শক্তি দুভাগে বিভক্ত। একটি সরল শক্তি, অন্যটি গরল শক্তি। গরল শক্তির মানুষ গুলোর কাজ হয় উগ্র গারোদের মতো। সুতরাং এদের কোনো কাজে শোক বা দুঃখ প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই। কারণ প্রকৃতি মিথ্যের জয়গান করেনা এবং কাউকে কখনো কাউকে ছাড়ও দেয়না। তাই এদের কর্মই এদেরকে একদিন প্রতিরূপ ফিরিয়ে দেবে। সুতরাং সাধু সাবধান।
রাত্রিকালে যারা ট্যাক্সি চালান এবং খাবার ডেলিভারি প্রদান করেন উনারা বিভিন্ন সময়ে নানা রকম বিপদের সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যার কারণে এই পেশাগুলোয় জড়িত অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থাকেন। এই নিশি পেশাগুলোতে প্রতিনিয়ত ওৎ পেতে থাকে বিপদ।
সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে উভয় ট্যাক্সি এবং খাবার ডেলিভারির ব্যাস্ততা বেড়ে যায়। যার কারণে এই পেশায় জড়িতদের বেশিরভাগই সন্ধ্যার পরেই কর্মে নিয়োজিত হন। বিশেষ করে উইকেন্ড, সরকারি ছুটিগুলোতে ও বিভন্ন অনুষ্ঠানে এই ব্যাস্ততা আরো বৃদ্ধি পায়।
রাত্রিকালীন সময়ে খরিদ্দার বা কাস্টমাররা মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। যার ফলশ্রুতিতে তারা ট্যাক্সি ড্রাইভারদের সাথে বিরূপ আচরণ করেন। ট্যাক্সি ড্রাইভারদের মারধর ও টাকা না দিয়ে চলে যাবারও নজির রয়েছে।
অনেকে আবার মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে থাকেন, যা অন্য ড্রাইভারদের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মদ্যপ গাড়ি চালক দ্বারা অন্য ট্যাক্সি আঘাতপ্রাপ্ত হবারও নজির রয়েছে।
এছাড়াও অনেক শহরের কিছু কিছু জায়গা রয়েছে যেগুলোকে বিপদজনক জায়গা হিসেবে ধরা হয়। ঐসব জায়গাগুলোতে রাতে খাবার ডেলিভারি দেয়া কিংবা ট্যাক্সিতে কাস্টমার বহন করা খুবই রিস্কি বলে মনে করা হয়। ঐসব এলাকায় গাড়ি ভাংচুর এবং মারধরেরও ঘটনা ঘটে থাকে। অনেকসময় ড্রাইভারদের নিকট থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেয়া হয়।
এছাড়াও রাত্রিকালে একধরণের প্রতিযোগিতায় তৈরী হয়। যেহেতু রাতে এই ব্যবসাগুলা জমজমাট, সেহেতু এই পেশায় জড়িত সবাই চেষ্টা করেন রাতেই ডিউটি করার জন্য। যার কারণে রাস্তায় গাড়ির পরিমান বৃদ্ধি পায় এবং অনেক ড্রাইভার বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে থাকেন, যা অন্য ড্রাইভারদের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং ঘটে দুর্ঘটনার মত ঘটনাও।
রাতে অন্ধকারে গাড়ি চালানোও কষ্ট সাধ্য। রাস্তার ভিজিভিলিটি কম থাকায় অনেক ড্রাইভারের গাড়ি চালাতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়, বিশেষ করে শহরের বাহিরের অপ্রশস্থ রাস্তাগুলোতে। শীতের সময়ে ব্ল্যাক আইস পড়ে রাস্তা পিচ্ছিলাকার ধারণ করে, যার ফলে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখাও কষ্টসাধ্য। এসব কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটার ঘঠনা ঘটেছে।
পরিশেষে এটাই বলা চলে যে, জীবন জীবিকার জন্য সবাইকেই যার যার জীবিকানির্ভর কর্ম করতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। তারপরেও সবাই যেন আমরা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে পথ চলি। যারা এই পেশায় নতুন, প্রয়োজনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করি। সবসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা জরুরি যোগাযোগের নাম্বার সংগ্রহে রাখি। ডিউটির সময় অন্য সহকারী কলিগদের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে চলি। এটা ঠিক যে, বিপদ মাথায় নিয়েই কাজ করতে হবে, কিন্তু বাড়তি সতর্কতা বিপদ থেকে অনেকটাই রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
এবছর ১৫ই মে ২০২২ ইং আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে DCU তে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে “২১ শে বই মেলা ২০২২”
<
গতকাল শনিবার ১৬ই এপ্রিল ২০২২ ইং ডাবলিন swords এ অবস্থিত Chilli Shaker রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয় "২১শে বই মেলা"র আয়োজকদের এক প্রস্তুতি সভা।
উল্লেখ্য ২০২০ সালে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অবস্থিত (DCU) ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটিতে সর্বপ্রথম “২১শে বই মেলা” অনুষ্ঠিত হয়। সেই বছর বই মেলা সর্বস্তরের বাংলাদেশীদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলে এবং সকলেই আয়োজকদের অনুরোধ করেন মেলাটি প্রতিবছর আয়োজন করার জন্য।
পরবর্তি বছর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর জন্য মেলাটি আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তবে এবছর ২০২২ সালে আয়োজকগন বেশ উৎসাহ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে এবছর ১৫ই মে ২০২২ ইং আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে DCU তে অনুষ্ঠিত হবে “২১ শে বই মেলা ২০২২”
আয়োজকদের পক্ষ থেকে আইরিশ প্রেসিডেন্ট Michael D. Higgins কে আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল যদিও পরবর্তিতে প্রেসিডেন্ট ব্যাক্তিগত কারনে আমন্ত্রন রক্ষা করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। তবে আয়োজকগন আশা করছেন তাদের আমন্ত্রনে আইরিশ কবি, লেখক সহ লোকাল পার্লামেন্ট মেম্বার,কাউন্সিলর, মেয়র এছাড়া আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী কবি সাহিত্যিক ও লেখকগন মেলাতে উপস্থিত হয়ে মেলাকে আলোকিত করবেন।
এবারের মেলায় মূল অনুষ্ঠানের সাথে বেশ কিছু নতুন ইভেন্ট থাকবে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর মধ্যে থাকছে :
১. কবি ও লেখকদের জন্য বিশেষ সেমিনার,
২. কিশোর কিশরীদের জন্য থাকছে বিষয় ভিত্তিক প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগীতা,
৩.আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী চিত্র শিল্পীদের আকা্ঁ চিত্র-পদর্শনী,
৪. থাকছে পিঠা মেলা,
৫. পোশাক বিপণি,
৬. পান্তা ইলিশ ষ্টল,
এছাড়াও থাকছে শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযগিতা এবং বিকেলে থাকছে বিশেষ আকর্ষন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মেলার মূল আকর্ষন বইয়ের ষ্টল সাজিয়ে আমন্ত্রিত অতিথীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে “২১শে বই মেলা ২০২২” শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং দিনভর মেলা চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
মেলায় পর্যাপ্ত খাবারের ষ্টল থাকবে বলে আয়োজকগন জানিয়েছেন। আয়োজকগন আশা করছেন এবারের মেলায় সারা আয়ারল্যান্ড থেকে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটবে।
সবাইকে মেলায় আমন্ত্রন জানিয়ে মেলাকে সফল করতে সকলের প্রতি সহযোগীতার আহবান জানিয়েছেন আয়োজকগন।
মুঘল সম্রাট জালালউদ্দিন মোহাম্মদ আকবর খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য তার সভার জ্যোতির্বিদ আমির ফতুল্লা শিরাজীর সহযোগিতায় ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘তারিখ-এ-এলাহি’ নামে নতুন একটি বছর গণনা পদ্ধতি চালু করেন। এটি কৃষকদের কাছে ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত হয়, যা পরে ‘বাংলা সন’ বা ‘বঙ্গাব্দ’ নামে প্রচলিত হয়ে ওঠে।
বাংলা সন শূন্য থেকে শুরু হয়নি, যে বছর বাংলা সন প্রবর্তন করা হয়, সে বছর হিজরি সন ছিল ৯২৩ হিজরি। সে অনুযায়ী সম্রাটের নির্দেশে প্রবর্তনের বছরই ৯২৩ বছর বয়স নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বাংলা সনের।
কবি আব্দুল হাই শিকদার এর লেখায় নিম্নোক্ত বাংলা সনের ইতিহাস বর্ণনা করেছেনঃ
১) বাংলা সনের স্রষ্টা মুঘল ভারতের শ্রেষ্ঠ গনিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী আমির ফতেহ উল্লাহ খান সিরাজী
২) যাঁর নির্দেশে এই সনের জন্ম তিনি হলেন সম্রাট জালালউদ্দীন মোহাম্মদ আকবর
৩) পরবর্তী সংস্কারক সম্রাট শাহজাহান ও ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
৪) বাংলা সন প্রবর্তিত হয় ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে
৫) বাংলা সনের প্রথম নাম: তারিখ – ই – ইলাহী
৬) বঙ্গাব্দ নামকরণ হয়: ১৫৮৪ সালের ১১ মার্চ
৭) বাংলা সনের গণনা শুরু: ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর থেকে। ২য় পানিপথ যুদ্ধে হিমুর বিরুদ্ধে আকবরের বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য
৮) বাংলা সন প্রবর্তনের কারণ: মুঘল শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হতো হিজরী সন অনুসারে। আর সুবেহ বাংলায় ফসল তোলা ও খাজনা আদায় হতো সৌরবর্ষ অনুযায়ী ।এতে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা দূর করার দায়িত্ব দেয়া হ্য় আমির ফতেহউল্লাহ সিরাজীকে। তিনি একটি নতুন বর্ষপন্জি প্রণয়নের তাগিদ অনুভব করে যে প্রস্তাবনা পাঠান, তার ভিত্তিতেই সম্রাটের আদেশের প্রেক্ষিতে তিনিই জন্ম দেন বাংলা সনের
৯) সিরাজী হিজরী সনকে মডেল হিসাবে নিয়ে কাজ শুরু করেন। সেই হিসাবকে সামনে রেখে ৯৬৩ হিজরীর মোহররম মাস থেকে বাংলা বর্ষের ৯৬৩ অব্দের সূত্রপাত করা হয়
১০) হিজরী মোহররম মাসের সাথে বৈশাখের মিল থাকাতে, ভারতের প্রচলিত শকাব্দের চৈত্র মাসকে বাতিল করে বৈশাখকে করা হলো বঙ্গাব্দের প্রথম মাস
১১) ৪৪৫ বছর পরে হিজরীর সাথে বঙ্গাব্দের পার্থক্য দাঁড়ালো ১৪ বছর
১২) প্রবর্তনের সময় বঙ্গাব্দের সাথে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের (খ্রিস্টাব্দ) পার্থক্য ছিল ৫৯৩ বছর। অর্থাৎ বাংলা সনের সঙ্গে ৫৯৩ যোগ করলেই পাওয়া যাবে খ্রিস্টাব্দ। সাধারণের ইংরাজী সাল।
১৩) যাত্রা শুরুর লগ্নে বাংলা মাসের ৩০ দিনের ৩০টা নাম ছিল। নামগুলো মনে রাখাও ছিল কষ্টসাধ্য ।
১৪) প্রথম সংস্কার: বাংলা সনের প্রথম সংস্কারক সম্রাট শাহজাহান এক পর্তুগিজের সাথে দীর্ঘ আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে প্রতিটি মাসকে ৪ টি ভাগে ভাগ করে সূচনা করেন সপ্তাহের।প্রতিটি সপ্তাহ ৭ দিন। গ্রেগরিয়ান পদ্ধতিতে দিনের নাম ঠিক করা হয়, sun থেকে রবিবার, moon থেকে সোমবার ইত্যাদি।
১৫) সূচনার সময় বাংলা মাসগুলোর নাম ছিল খোরদাদ, মেহের, শাহরিয়ার, ইসফান্দ ইত্যাদি
পরে বিভিন্ন তারকা ও গ্রহের নাম থেকে নাম রাখা হয় বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ইত্যাদি।
১৬) দ্বিতীয় সংস্কার: বিশ্ব চলে খ্রিস্টাব্দের পথ ধরে। বাংলা সনকে তার সাথে সঙ্গত রাখা দরকার ।বিশেষ করে লিপইয়ারের ঝামেলা দূর করা এবং বাংলা সনকে যুগোপযোগী করার ভাবনা থেকেই, ১৯৬৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে গঠন করে পন্জিকা সংস্কার কমিটি।
বাংলা সনের বর্তমান রূপটি এই কমিটিরই অবদান।
১৭) পয়লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সূচনা করেছিলেন সম্রাট আকবর। তিনিই এই উৎসবের প্রতিয্ঠাতা, স্থপতি ও সত্যিকারের জনক।
১৮) সম্রাট আকবরই নির্ধারণ করেন শেষ চৈত্র হবে খাজনা পরিশোধের। ১ বৈশাখ দেশের মানুষ উৎসব করবে, মিস্টিমুখ করবে। হবে হালখাতা। মেতে উঠবে মেলা, খেলা, হস্তশিল্প প্রদর্শনীতে ।
১৯) সম্রাট আকবর দি গ্রেট শুয়ে আছেন ফতেহপুর সিক্রিতে। সম্রাট শাহ জাহানের কবর আগ্রার তাজমহলে,
আমির ফতেহ উল্লাহ খান সিরাজীর কবর নারায়ণগন্জের ফতুল্লায়। বাংলাদেশকে ভালোবেসে এ দেশকেই শেষ শয্যার জন্য বেছে নিয়েছিলেন এই কীর্তিমান। পরে তাঁর সম্মানে স্থানটির নাম রাখা হয় ফতেহ উল্লাহ । যা আজ “ ফতুল্লা”য় নিমজ্জিত হয়েছে।
ড. শহাদুল্লাহর মাজারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলে, বার ভূঁইয়া নেতা বীর ঈশা খানের পুত্র মুসা খানের কবর ও মসজিদের পাশে।
২০) ছায়ানটের রমনা-বৈশাখ উদযাপন, চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা, সভা সেমিনার, রেডিও ,টিভি- মিডিয়া, পত্রপত্রিকা, সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় , বাংলা একাডেমি , শিল্পকলা একাডেমি… মোট কথা কোথাও আকবর , সিরাজী, শাহজাহান ও শহীদুল্লাহকে স্মরণ করা হয় না। জানানো হয় না সামান্য শ্রদ্ধা।
২১) ড মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সংস্কারকৃত আধুনিক বাংলা ক্যালেন্ডার বিশ্ব জুড়ে গৃহিত হলেও ভারতীয় বাঙ্গালীরা এটা মানে না। তারা আঁকড়ে আছে সম্রাট শাহজাহানের জমানা । আর বঙ্গাব্দ নয় তাদের মাথায় বাস করে শকাব্দ।
২২) তবে এ কথা ঠিক, দৈনন্দিন জীবনে বাংলাদেশী বাঙ্গালী ও ভারতীয় বাঙ্গালী কেউই বাংলা সন অনুসরণ করে না।সেখান একচ্ছত্র আধিপত্য খ্রিস্টাব্দের।
সম্রাট আকবর ও ফতেহ উল্লাহ খান সিরাজী (মুঘল পেইন্টিং)
আয়ারল্যান্ড ছোট ভূখণ্ডের স্বল্প জনসংখ্যার একটি দেশ। এখানে বিদেশি কমিউনিটিগুলাও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র। তন্মদ্ধে বাংলাদেশি কমিউনিটিও এর অন্তর্ভুক্ত। আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি কমিউনিটির গোড়াপত্তন খুব বেশি দিনের নয়। কিন্তু ধীরে ধীরে হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশি কমিউনিটির উত্থান। এখানে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্ম। ধীরে ধীরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বর্ধিত হবে বাংলাদেশি কমিউনিটি।
সাত সমুদ্র তের নদীর ওপ্রান্তে বঙ্গভূমি। এই ধীর্ঘ পথ অতিক্রম করে বঙ্গ সন্তানেরা বসতি গেঁড়েছে ভিনদেশে এবং প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছে নিজেদের নতুন ঠিকানা। ক্রমান্বয়ে গড়ে তুলে চলেছে প্রবাসের বুকে একখণ্ড বাংলাদেশ।
আজ থেকে কিছু বছর আগেও যা ছিল কল্পনাতীত, আজকে এসে তারই বাস্তব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে বঙ্গ সন্তানেরা। বিভিন্ন সন্মানজনক পেশায় অন্তর্ভুক্তি, সফল উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে পদার্পণ করেছে আইরিশ রাজনৈতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে প্রথমবারের মত আমরা পেয়েছি দুজন নির্বাচিত কাউন্সিলর, কেউ আবার লড়েছেন জাতীয় নির্বাচনেও। যা বাংলাদেশিদের জন্য সত্যিই গর্বের ও প্রশংসার।
আয়ারল্যান্ডে গড়ে উঠে চলেছে বাংলায় প্রকাশিত অনলাইনভিত্তিক সংবাদপত্র, বাংলায় মুদ্রিত ম্যাগাজিন, বাংলা ভাষায় প্রচারিত টেলিভিশন অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্পোর্টস ক্লাবসহ আরো অনেক ক্রিয়াকর্ম। এখানে হয়ে থাকে বইমেলার মত মর্যাদাপূর্ণ আয়োজন। এখানে নানাবিধ ধর্মীয় উৎসব, দেশজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জমে মিলনমেলা।
আয়ারল্যান্ডের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতেচলেছে একখণ্ড বাংলাদেশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশি কমিউনিটি পা রেখেছে অন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশি জাতীয় দিবসগুলা পালনের ক্ষেত্রেও পদার্পণ করতেছে ধীরে ধীরে। অস্থায়ী শহীদ মিনার পালন করে পালন করা হয়েছে ২১শে ফেব্রুয়ারি। স্বাধীনতা দিবসে ঝাঁকঝমকপূর্ণভাবে পালন করা হয়েছে স্বাধীনতা দিবস ও পতাকা উত্তোলন, যেখানে বাংলাদেশি কমিউনিটিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে আইরিশ প্রশাসন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলকে সাজানো হয় লাল সবুজের আলোকসজ্জায় এবং ডাবলিনের ডানলোরী রথডাউন কাউন্টি কাউন্সিলে হয় পতাকা উত্তোলন। আয়ারল্যান্ডের মাটিতে শহীদ মিনার তৈরির জন্যও কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশি কমিউনিটি। সেদিন হয়ত খুব বেশি দূরে নয়, যেখানে থাকবে স্থায়ী শহীদ মিনার কিংবা স্মৃতিসৌধ।
২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলে কাউন্সিলের উদ্যেগে লাল সবুজের আলোকসজ্জা। যা নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।
বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মও রেখে চলেছে সফলতার সাক্ষর। শিক্ষাক্ষেত্রে ভালো ফলাফল করে অনেকেই আছেন আজ স্বনামধন্য কর্মক্ষেত্রে জড়িত। অনেকেই তরুণ বয়সে হয়ে যাচ্ছেন কুরআনে হাফেজ। অনেকে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও রাখতেছেন সাফল্যের সাক্ষর।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশি কমিউনিটি শুধু সংখ্যায়ই নয় মানেও বেড়ে চলেছে সমানুপাতিক হারে। এখানে দেশিয় সংস্কৃতিকে মূল্যায়ন করা হয়, এখানে স্ব স্ব ধর্মকে সমীহ করা হয়ে, এখানে দেশের ইতিহাস ও মূল্যবোধকে সন্মান জানানো হয়। আশা করি এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং সঠিক পথে বাংলাদেশি কমিউনিটি ধাবিত হবে।
বাংলাদেশি কমিউনিটি ছোট হতে পারে কিন্তু একতাবদ্ধতাই হচ্ছে শক্তি সঞ্চারের চাবিকাঠি। বাঙ্গালি জাতি যখনই একতাবদ্ধ হয়েছিল সফলতা তখনই এসেছিল, ইতিহাস তাই বলে। একতাবদ্ধভাবে এগিয়ে গেলে বাংলাদেশি কমিউনিটি এগিয়ে যাবে অনেক দ্রুত, অনেক দূর।
খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ফসফরাস, বিটা-ক্যারোটিন সহ নানারকম স্বাস্থ্যকর উপাদান। আসুন দেখে নেই খেজুরের প্রধান কিছু উপকারিতা-
১। গ্লুকোজ এর ঘাটতি পূরণ: রোজায় দীর্ঘসময়য়ের জন্য না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে গ্লুকোজ এর ঘাটতি অনুভূত হয়। খেজুরে থাকা প্রচুর পরিমাণ গ্লুকোজ পূরণ করতে পারে সে ঘাটতি।
২। কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি: খেজুরে আছে ডায়েটারি ফাইবার, যা আপনাকে দেবে কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি। ৩। রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট: খেজুরে আছে ৩ রকমের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা ডায়াবেটিস এবং হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায়, এমনকি বৃদ্ধি করে দৃষ্টিশক্তি।
৪। শুষ্ক কাশি দূর করে: খেজুর পেটের গ্যাস এবং শুষ্ক কাশি দূর করে। এজমার সুরক্ষায়ও খেজুর ভালো কাজ করে থাকে।
৫। শক্তির যোগানদাতা: খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা যা শারীরিক দূর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।
৬। ক্যালসিয়ামের উৎস: খেজুরে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আপনার হাড়, দাঁত, নখ ইত্যাদি ভালো রাখতে সহায়তা করবে।
৭। পটাশিয়াম: খেজুরে বিদ্যমান প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম আমাদের শরীরের নার্ভ সিস্টেম কে সচল রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৮। ডাইরিয়া প্রতিরোধে সহায়ক: খেজুরে থাকা ডায়েটারি ফাইবার ডাইরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা যায়, ডাইরিয়ায় শরীর থেকে বের হয়ে যায় ইলেক্ট্রোলাইট, যার অভাব দূর করতে পারে খেজুর ৯। এলার্জি থেকে মুক্তি: খেজুরে থাকা অর্গানিক সালফার আপনাকে বিভিন্ন রকম এলার্জির হাত থেকে মুক্তি দেবে।
১০। ওজন কমাতে সহায়ক: ওজন কমানোর জন্যেও খেজুর একটি ভালো সমাধান। নিয়মিত খেজুর খেয়ে ওজনকে আয়ত্তে রাখা সম্ভব।
খেজুর এমন একটি ফল, যার মধ্যে আছে প্রায় সব রকমের পুষ্টি উপাদান। একের ভেতর সব কথাটির সার্থক সমার্থক হতে পারে খেজুর। তাই এই রমজানে ইফতার আইটেম এ খেজুর রেখে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করুন।
তথ্য সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
তিনি বলেছেন ৩১শে জানুয়ারি ২০২২ থেকে চালু হওয়া এই প্রকল্পের অধীনে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার আবেদন অনলাইনে জমা পড়েছে। যাঁর মধ্যে তাঁর মন্ত্রণালয় যাচাই-বাচাই পূর্বক এখন পর্যন্ত ২৫০ জনকে নিয়মিতকরণ করেছে। একটি মানবিক প্রকল্পের অধীনে ০৫ হাজার আবেদনের বিপরীতে এই সংখ্যা খুবই অল্প নিঃসন্দেহে। কিন্তু এর কারণ বের করা অনেক দূর্ভেদ্য।
কথা হচ্ছে, যেখানে সরকার প্রায় ১৭ হাজার অনথিভুক্ত অভিবাসীদের রাষ্ট্রের মূল কাঠামোতে অর্ন্তভুক্তির মাধ্যমে তাদের সামগ্রিক জীবন ধারায় পরিবর্তনের জন্য বিশেষ এই প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে জাস্টিস মিনিস্টারের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে ৫ হাজার আবেদনের বিপরীতে মাত্র ২৫০ জনকে নিয়মিত করার খবরটি আমার কাছে মোঠেও আশাব্যঞ্জক মনে হয়নি।
মনে হচ্ছে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই প্রকল্পের গতি কমিয়ে দিয়েছে অন্য কোনো কারণে।
যাচাই-বাচাই প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ আবেদন বাতিল হবার কারণ খুঁজতে গিয়ে একটি অসমর্থিত সূত্র থেকে জানতে পারলাম যে, আবেদনকারীর অনেকে সরকারের দেওয়া শর্তসমূহ পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। শর্তসূমহ বলতে এখানে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্রের (নথি) বিষয়টি আমার কাছে মনে হচ্ছে। এই খবরের সত্যতা কতটুকু জানি না, তবে এই ধরণের অভিযোগ উড়িয়ে দেবার মত নয়।
কিন্তু এই ধরণের একটি মানবিক প্রকল্পের ক্ষেত্রে যৎসামান্য কাগজ-পত্রের জঠিলতার কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবেদন বাতিল হবে সেটা কতটুকু যৌক্তিক? সাধারণত অনলাইনে যে কোনো আবেদনে কিছুটা জঠিলতা থাকে। আর এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকবেই। অবশ্যি যদি কারো বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।
এই বিশাল জনগোষ্ঠী এমনি তো রাষ্ট্রে নানা কারণে অবহেলিত। কাজের অনুমতি না থাকার কারণে তাঁরা একটা দীর্ঘ সময় ধরে মানবিকতার জীবন-যাপন করছেন। সংঘতভাবে তাদের সবার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র না থাকা খুবই স্বাভাবিক। সংগ্রহ করাও দুস্কর। সরকারের কাছে যেহেতু অনথিভুক্ত অভিবাসীদের একটা পরিসংখ্যান রয়েছে এবং সেখানে নিশ্চয় তাদের এ-দেশে বসবাসের তারিখ সহ প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে। সরকার চাইলে সেখান থেকে প্রয়োজরীয় তথ্য ব্যবহার করতে পারে। এরফলে অহেতুক শর্তের কেড়াজাল থেকে অনেকের মুক্তির অবসান ঘটবে। সেটি না করে সরকার যদি শর্তসমূহ নিয়ে পড়ে থাকে, তাহলে এই প্রকল্প সত্যিকার অর্থে আলোর মুখ দেখবে কি না , সেটা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
আবার সেই খবরে দেখলাম উক্ত প্রকল্প নিয়ে হেলেন মেকেন্টি খুব আশাবাদী। তিনি মনে করেন,সরকারের গৃহীত এই পদক্ষেপের ফলে
এই বিশাল জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বার উম্মুক্ত হবে। এবং তাদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্টিত হবে। এর জন্য তিনি অনুরোধ করে বলেছেন, যাঁরা এখনো আবেদন করেননি, তাঁরা যেন ৩১শে জুলাই এর ভিতর আবেদন করেন।
হেলেন ম্যাকেন্টি’র বক্তব্য এবং তাঁর কাজের ফলাফলের মধ্যে বেশ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছে আমার নিকট। ০৩ মাসের ব্যবধানে ০৫ হাজার আবেদনের বিপরীতে ফলাফল যদি ২৫০ হয়, তাহলে অবশিষ্ট ০৩ মাসের আবেদনের ফল কি হবে? সেটা এখান থেকে সহজে অনুমেয়। প্রকল্পের বর্তমান পরিস্হিতি পর্যালোচনা করে আমার কাছে নিচের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যেমন:
১) শর্ত সমূহের জঠিলতার কারণে যে সকল অভিবাসী নিয়মিতকরণের প্রকল্প থেকে বাদ পড়ছেন বা বাদ পড়বেন তাদের নিয়ে সরকারের কি সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তীতে।
২) এই প্রকল্পের প্রারম্ভিকে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ি প্রায় ১৭ হাজার অনথিভুক্তদেরকে নিয়মিতকরণের কথা ছিল, এর ফলশ্রুতিতে সরকারের দেওয়া শর্তসমূহ পূরণ না হবার কারণে এই প্রকল্প যদি তাঁর কাঙ্কিত লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয় তাহলে এই প্রকল্পের ভবিষৎ কি হবে?
৩) কোটা পূরণের জন্য আবেদনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পর সরকার নতুন করে কি এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াবে ?
প্রকল্পের মন্থর গতি দেখে আমার কাছে কেন জানি মনে হচ্ছে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধে দেশচ্যুত ইউক্রেনিয়ান শরণার্থীদের প্রভাব পড়েছে এই প্রকল্পে। আমার এই মতের সাথে অনেকে দ্বিমত করতে পারেন, কিন্তু আমার কাছে সেই ধরণের মনে হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রায় ৪০ হাজার শরণার্থী নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইরিশ সরকার।
এরই ধারাবাহিকতায় আয়ারল্যান্ড ইতিমধ্যে কয়েক হাজার ইউক্রেনিয়ান শরণার্থীরা এসে পৌঁছেছেন। এই বিশাল শরণার্থীদের জন্য বাসস্হান সহ তাদের অর্থনৈতিক সহযোগীতার দিকে আইরিশ সরকার এখন সবচেয়ে বেশি মনযোগ দিচ্ছে। তাই এই মূহর্তে অন্য কিছুর চেয়ে ইউক্রেনিয়ানদের মানবিক মর্যাদা রক্ষায় আইরিশ সরকার বদ্ধ পরিকর।
আয়ারল্যান্ডে আবাসিক সমস্য একটি অন্যতম সমস্যা। যদিও এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে, তারপরও এই সংকট থেকে বের হতে পারছে না। এর মধ্যে দেশে নতুন করে এই বিশাল ইউক্রেনিয়ান শরণার্থীদের জন্য আবাসিক বাসস্হানের ব্যবস্হা করা সরকারের সামনে এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। শরণার্থীদের জায়গার সংকলুন না হওয়ায় বিভিন্ন পরিত্যক্ত ভবন রাতারাতি বসবাসযোগ্য করে তুলার উদ্যেগ নিয়েছে সরকার। ইউক্রেনিয়ান নাগরিকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাদেন পাশে দাঁড়াবার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে আইরিশ সরকার।
আয়ারল্যান্ড সাংবিধানিকভাবে একটি নিরপেক্ষ দেশ ছিল। বিগত দিনগুলোতে দেশটি কোনো ভূ-রাজনৈতিক গ্রুপে ছিল না। বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতার পর থেকে রাষ্ট্রিয়ভাবে দেশটি সব সময় নিরপেক্ষ থাকার সিদ্ধান্তে অঙ্গিকারবদ্ধ ছিল। যার ফলশ্রুতিতে আয়ারল্যান্ড যে কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা ইস্যুতে সব সময় নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করেছে।
কিন্তু অতি সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের এই নিরপেক্ষ দৃষ্টির পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে সুস্পষ্টভাবে। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আগ্রাসনের পর সাবেক কিছু সামরিক কর্মকর্তারা ন্যাটোতে যোগদানের ব্যাপারে আইরিশ সরকারের উপর চাপ বাড়াতে থাকেন। আয়ারল্যান্ডকে সামরিকীকরণের বিপক্ষে এবং নিরপেক্ষ থাকার পক্ষে গত ৩০ শে মার্চ সংসদে People before profit দলের সাংসদ রিচার্ড বয়েড ব্যানট কর্তৃক উখাপিত একটি বিলের উপর দীর্ঘ আলোচনা হয়। প্রস্তাবের উদ্দেশ্য ছিল, এই ধরণের একটি জাতীয় সিদ্ধান্তে উপনীত হবার পূর্বে দেশের সকল নাগরিকের মতামত নেবার জন্য গণভোটের আয়োজন করা জরুরী।
আলোচিত সেই প্রস্তাবের পক্ষে এবং বিপক্ষে আইরিশ সাংসদরা নিজেদের ভোটদান প্রধান করেন। ৫৩ জন সাংসদ নিরপেক্ষ থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং ৬৭ জন সাংসদ ন্যাটোতে যোগদানের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অপ্রত্যাশিত ভাবে সেই প্রস্তাব ৫৩- ৬৭ ভোটে হেরে যাবার পর এই বিষয়টি ইতিমধ্যে পরিস্কার হয়ে গেছে যে, ন্যাটোতে যোগদান এখন আয়ারল্যান্ডের সময়ের ব্যাপার মাত্র। গণভোটের প্রয়োজন পড়বে না। সুতরাং ঐতিহাসিকভাবে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা আয়ারল্যান্ডকে দেখা যাবে অদূর ভবিষ্যত ন্যাটোর পক্ষ হয়ে কোনো দূর্বল ভূ- জনগোষ্টির উপর বোমা মারতে! সবচেয়ে অবাক করার বিষয় ছিল, যে গ্রীন পার্টি সব সময় সামরিকীকরণের বিপক্ষে কথা বলেছে, যাদের অবস্হান ছিল সব সময় বারুতের বিপক্ষে এবং সবুজের পক্ষে। সেই গ্রীন পার্টি সেই দিন সংসদে ন্যাক্কারজনকভাবে
ন্যাটোর সামরিক জোটে যাবার পক্ষে ভোট দিয়েছে।
নিরপেক্ষতা মানে উদাসীনতা নয়। নিরপেক্ষতা মানে যুদ্ধাবাজ ও সাম্রাজ্যবদিীদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। নিরপেক্ষতা মানে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানো। নিরপেক্ষতা মানে সবলের বিপক্ষে দাঁড়ানো এবং দূর্বলের পক্ষে অবস্হান নেওয়া। কিন্তুু নিরপেক্ষতার এই নীতি বিশ্বব্যাপী এক নয়। রাষ্ট্রভেদে ভিন্নও হয়। ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের কাছে কিছু রাষ্ট্র তাদের শতবছরের গৌরবময় নীতিও হারায়।
আয়ারল্যান্ড সরকারের আমন্ত্রণে তিন দিনের এক সরকারি সফরে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী জনাব ইমরান আহমেদ , প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনীররুছ সালেহীন এবং বাংলাদেশ সরকারের ইউকে এবং আয়ারল্যান্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত মান্যবর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম আয়ারল্যান্ডে আসেন ।
মাননীয় মন্ত্রী গতকাল এক গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন যে শীঘ্রই আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশন স্থাপন করা হবে । বিশ্বব্যাপী কভিড সংক্রমনের কারনে হাই কমিশন স্থাপনে বিলম্ব হচ্ছে বলে তিনি তার বক্তিতায় উল্লেখ করেন । তিনি আরো বলেন হাই কমিশন স্থাপনের কাজ টি যাহাতে তাড়াতাড়ি হয় সে জন্য তিনি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী এবং অর্থ মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবেন ।
মান্যবর ইউকে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন আয়ারল্যান্ডে কনস্যুলেট সার্ভিস অব্যাহত থাকবে এবং প্রয়োজনে আরোও সার্ভিস বৃদ্ধি করা হবে ।
ডারবানে শেষ বিকেলে উইকেট ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। অন্তত প্রথম চার দিনে আলোকস্বল্পতার বাধা পেরিয়ে যতক্ষণ খেলা হয়েছে, তাতে এই চিত্রই দেখা গেছে। সেই তুলনায় প্রথম দুই সেশনে ব্যাটিং করা তুলনামূলক সহজ বলেই মনে হয়েছে। আজ বাংলাদেশ যখন মনের গহিনে জয়ের স্বপ্ন নিয়ে নেমেছিল, তখন প্রথম দুই সেশনকে কাজে লাগানোই ছিল মূল চিন্তা।
তা উবে যেতে খুব একটা সময় লাগেনি। কেশব মহারাজের বাঁহাতি স্পিনে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। পঞ্চম দিনের খেলার এক ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশ অলআউট হয়ে গেছে ৫৩ রানে।
৩ উইকেটে ১১ রান নিয়ে দিন শুরু করে দিনের প্রথম ৫ ওভারেই আরও ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। ৩৩ রানে পড়েছে সপ্তম উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের সর্বনিম্ন (৪৩, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা, ২০১৮) স্কোরে অলআউট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তখন চোখ রাঙাতে শুরু করেছে বাংলাদেশকে। তা অবশ্য হয়নি শেষ পর্যন্ত।
নাজমুল ও তাসকিন মিলে সেই স্কোরটা পেরিয়ে গেছেন, তবে খুব বেশি দূর নয়। বাংলাদেশকে ৫০ রানে রেখে আউট হয়ে গেছেন টপ অর্ডারে একটু প্রতিরোধ গড়া নাজমুল। আর ১ রান যোগ হতেই ফিরেছেন খালেদও। ৫১ রানে পড়েছে ৯ উইকেট। তাসকিনের বিদায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ অলআউট ৫৩ রানে। যে টেস্টে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ, সেটিই কিনা পরিণত হলো ২২০ রানের বিশাল এক পরাজয়ের গল্পে!
আয়ারল্যান্ডে প্রথমবারের মত জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হল স্বাধীনতা দিবস। গত ২৬শে মার্চ লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল হল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হল স্বাধীনতা দিবস।
২৬শে মার্চ সন্ধ্যা থেকে লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল হলকে সজ্জিত করা হয় বাংলাদেশের পতাকা লাল সবুজের আলোকসজ্জায়। লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়। কাউন্সিলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ও উদ্যেগে গৃহীত ওই আয়োজনকে সফল করতে ও সমর্থন জানাতেকাউন্সিল হল প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয় সমগ্র আয়ারল্যান্ডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশিগণ।
লাল সবুজের রঙে ছেয়ে যায় লিমেরিক সিটি এবং কাউন্টি কাউনিল ভবন
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সরব উপস্থিতি লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিল হল প্রাঙ্গণকে পরিণত করে একখন্ড বাংলাদেশে। লাল সবুজে চেয়ে যায় শ্যানন নদীর উপকূল। বাংলাদেশি পুরুষ রমণীরা হাজির হয় লাল সবুজের সাজে ও দেশীয় সব পোশাকে। মুহূর্তের জন্য সবাই ভুলে ছিল যে তাঁরা প্রবাসের কোন মাটিতে রয়েছেন।
লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদারের অনুরোধে কাউন্সিল এই মহিমান্বিত আলোকসজ্জার ব্যাবস্থা করতে রাজি হন। কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার জানান, “এই আয়োজনের মাদ্ধমে নতুন দিগন্তের সূচনা হল। আগামী দিনগুলোতে এমন আয়োজন ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র আয়ারল্যান্ডব্যাপী। আমাদের নতুন প্রজন্মও জানতে বুঝতে সক্ষম হবে দেশীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে“। তিনি ধন্যবাদ জানান, অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রতি ও দূর দুরান্ত থেকে উপস্থিত ব্যাক্তিবর্গের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দেশীয় পোশাকে বাংলাদেশীরা
অনুষ্ঠান সফল করার ব্যাপারে আরো সহায়তা করেন জনাব মনিরুল ইসলাম, যিনি সর্বদা দায়িত্বরতদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। দূরের অতিথিদের জন্য খাবারের ব্যাবস্থা করে স্পনসর করেন লিমেরিকের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী জনাব আনোয়ারুল হক। আলোকসজ্জার অনুষ্ঠানকে সফল ও প্রচার করতে সাহায্য করে “আইরিশ বাংলা টাইমস“, তারা অনুষ্ঠানের দিন লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে যুক্ত থাকে আয়ারল্যান্ডবাসীদের সাথে।
স্বাধীনতা অনুষ্ঠান পরবর্তী অনুষ্ঠান সম্প্রচারে ভূমিকা রাখে সময় টিভি, বাংলা টিভি, আইরিশ নোটিশ বোর্ড, আইরিশ বাংলা পোস্ট, নিউজ ২৪, ডাবলিন ডাইরি ও আইরিশ বাংলা টাইমস।
এছাড়াও আপামর বাংলাদেশিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় আয়ারল্যান্ডে প্রথমবারের মোট সরকারি উদ্যেগে গৃহীত স্বাধীনতা দিবসকে সাফল্যমন্ডিত করতে সক্ষম হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের মাটিতে এমন অনুষ্ঠান বাংলাদেশিদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বাঙ্গালি জাতি ও বাংলাদেশকে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে তুলে ধরতে ও পরিচয় করিয়ে দিতে এমন অনুষ্ঠানের জুড়ি নেই। এমন অনুষ্ঠানের ফলে বাংলাদেশিদের অন্তত সুযোগ সৃষ্টি হয় দেশের গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোকে স্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে ও ভালোবাসা প্রদর্শন করতে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মও দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে জানার সুযোগ লাভ করে। শুধু লিমেরিক নয়, অদূর ভবিষ্যতে সমগ্র আয়ারল্যান্ডব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে ২১শে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মত দিবসগুলি।
আজ কাতার ২০২২ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। অংশগ্রহণ করা ৩২ দলের মধ্যে স্বাগতিক কাতারসহ ২৯ দল নিশ্চিত আগেই হয়েছে। যে তিনটি দল বাকি রয়েছে সেগুলো নির্ধারিত হবে দুটি আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের জয়ী এবং ইউরোপিয়ান প্লে-অফের জয়ী দল দিয়ে।
নিচে দেখে নিন ড্রয়ে কোন দেশ কোন গ্রুপে পড়ল
গ্রুপ এ
কাতার, নেদারল্যান্ডস, সেনেগাল, ইকুয়েডর।
গ্রুপ বি
ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, ওয়েলস/স্কটল্যান্ড/ইউক্রেন। (বাছাইপর্বে যে উত্তিন্ন হয়)
গ্রুপ সি
আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, পোল্যান্ড, সৌদি আরব।
গ্রুপ ডি
ফ্রান্স, ডেনমার্ক, তিউনিসিয়া, পেরু/অস্ট্রেলিয়া/সংযুক্ত আরব আমির। (বাছাইপর্বে যে উত্তিন্ন হয়)
গ্রুপ ই
স্পেন, জার্মানি, জাপান, কোস্টারিকা/নিউজিল্যান্ড। (বাছাইপর্বে যে উত্তিন্ন হয়)
আয়ারল্যান্ডে এবারও রমজান মাসব্যাপী ফেইসবুক পেইজে (Live) সরাসরি সম্প্রচারিত হবে “বরকতময় মাহে রমজান ” অনুষ্ঠানটি।
আয়ারল্যান্ডের অনলাইন পত্রিকা “আইরিশ বাংলা টাইমস” কতৃক আয়োজিত রমজান মাসব্যাপী “বরকতময় মাহে রমজান ” অনুষ্ঠানটি গত বছর ২০২১ সালের রমজানে প্রথম প্রচারিত হয়। সারা আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মানুষ এই অনুষ্ঠানটি দেখেন এবং অনেকের অবেদনের কারনে আমরা এই অনুষ্ঠানটি এবারও নিয়িমিত সম্প্রচার করবো ইনশা’আল্লহ।
এক ঘন্টার এই “বরকতময় মাহে রমজান ” অনুষ্ঠানটি মুলত ইফতারের আগে প্রচারিত হয়। এবারও দুটি পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানটিতে প্রথম পর্বে থাকবে কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আলোচনা। ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলিসিঙ্কী থেকে ইউরোপের বাংলা ভাষী ইসলামী চিন্তাবিদ মুহতারাম মাওলানা মোহম্মদ আব্দুল কুদ্দুস খান প্রতিদিন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তার মুল্যবান বক্তব্য রাখবেন। মুহতারাম মোহম্মদ আব্দুল কুদ্দুস খান হেলিসিঙ্কীতে অবস্থিত দারুল আমান মসজিদের খতিব।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে থাকবে শিশু কিশোরদের অংশ গ্রহনে ইসলামী জলসা। এই পর্বে শিশু কিশোররা ছোট ছোট নসিহা ও দোয়া পেশ করবে , অনেকে কুরআন থেকে তিলওয়া এবং নাশিদ ও ইসলামী সংঙ্গীত পরিবেশন করেন। পরিবার পরিজন নিয়ে অংশ গ্রহনে এই পর্বটি সকলের কাছে বেশ প্রিয়।
অনুষ্ঠানের মাঝে জানিয়ে দেওয়া হবে আয়ারল্যান্ডের প্রধান প্রধান শহর গুলোর ইফতারে সময় ও সেহেরীর শেষ সময়। ডাবলিনের স্থানীয় সময়কে অনুসরন করে মাগরিবের আজানের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হবে।
আপনাদের সন্তানেরা এই “বরকতময় মাহে রমজান ” অনুষ্ঠানে কুরআন তেলাওয়াত, ইসলামী নাশিদ বা সংক্ষিপ্ত নিসিহা পেশ করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
এবারের রমজানে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের সকলকে যেন তার রহমত, বরকত সহ তাওয়া অর্জনের তৌফিক দেন এবং এই এক মাস সিয়াম পালন যেন নাজাতের কারন হয় সেই দোয়া ও প্রত্যাশা করি।
অনুষ্ঠানটি আইরিশ নোটিশ বোর্ডের সার্বিক সহযোগিতায় পরিবেশিত হবে।
ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রমজান মাসের রোজা অন্যতম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় হিজরিতে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা উম্মতের উপর রোজা ফরজ করেছেন।
রমজানের রোজা কেউ যদি অস্বীকার করলে— সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। এছাড়াও শরিয়ত সমর্থিত ওজর (অপারগতা) ছাড়া ইচ্ছাকৃত রোজা ভঙ্গকারী— মৌলিক ফরজ লংঘনকারী ও ইসলামের ভিত্তি বিনষ্টকারীরূপে গণ্য।
নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওজর বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা পরিত্যাগ করবে— সে যদি ওই রোজার পরিবর্তে আজীবন রোজা রাখে তবু ওই এক রোজার ক্ষতিপূরণ হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭২৩)
রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘…সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস (রমজান) পাবে, সে যেন অবশ্যই রোজা রাখে। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে, তবে অন্য সময় সে সমান সংখ্যা পূরণ করবে।
(সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
রমজান মাস সারা বছরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ
নবীজি (সা.) বলেন, ‘
আল্লাহর কসম! মুসলমানদের জন্য রমজানের চেয়ে উত্তম কোনো মাস আসেনি এবং মুনাফিকদের জন্য রমজান মাসের চেয়ে অধিক ক্ষতির মাসও আর আসেনি। কেননা মুমিনরা এ মাসে (সারা বছরের জন্য) ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সংগ্রহ করে। আর মুনাফিকরা তাতে মানুষের উদাসীনতা ও দোষত্রুটি অন্বেষণ করে। এ মাস মুমিনের জন্য গনিমত আর মুনাফিকের জন্য ক্ষতির কারণ।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৩৬৮)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহুতাআলা আরও বলেন,
‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বনকারী হতে পারো।’
(সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন রমজান মাসের প্রথম রাতের আগমন ঘটে, তখন দুষ্ট জিন ও শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, তার একটি দরজাও খোলা হয় না এবং জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, তার একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষক ঘোষণা করতে থাকে— হে কল্যাণের প্রত্যাশী! অগ্রসর হও। হে অকল্যাণের প্রার্থী! থেমে যাও। আল্লাহ তাআলা এ মাসের প্রতি রাতে অসংখ্য জাহান্নামিকে মুক্তি দান করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৮২)
রমজান বরকতময় মাস
আবু হুরায়রা (রা) বলেন, যখন রমজান মাসের আগমন ঘটল, তখন নবীজি (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘তোমাদের কাছে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। আল্লাহ তাআলা তোমাদের ওপর এ মাসের রোজা ফরজ করেছেন…।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৭১৪৮)
রমজানের রোজা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আবার রোজার বিনিময়ে অনেক বড় পুরস্কারেরও ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন,
“আল্লাহ্ তাআলা বলেন- ‘রোজা আমারই জন্য। আমি নিজে এর প্রতিদান দেব। আমার বান্দা আমার জন্য পানাহার ছেড়ে দেয়, কামনা-বাসনা ছেড়ে দেয়। রোজাদারের জন্য দু’টি খুশি। একটি খুশি ইফতারের সময়। আরেকটি খুশি আমার সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময়। রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের সুগন্ধের চেয়েও উত্তম।”
(বুখারি, হাদিস : ৭৪৯২)
এ মাসে মানুষের প্রত্যেকটি আমল বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। একটি নেকি ১০ গুণ থেকে (ক্ষেত্র বিশেষে) ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, কিন্তু রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। কারণ, রোজা আমার জন্য। সুতরাং তার প্রতিদান আমি নিজেই প্রদান করব।’ (বুখারি, হাদিস : ১৮৯৪)
রোজাদারদের জন্য বিশেষ দরজা
জান্নাতে একটি ফটক আছে। তার নাম রাইয়্যান। কেয়ামতের দিন রোজাদারগণ সেই ফটক দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। অন্য কেউ সেই ফটক দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে- ‘রোজাদারগণ কোথায়? তখন তারা উঠবে। তারা ছাড়া অন্য কেউ যাবে না। যখন তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তখন রাইয়্যান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হবে। সুতরাং আর কেউ এ ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ১৮৯৬; মুসলিম, হাদিস: ১১৫২)
আর যে ব্যক্তি সে রাইয়ান গেট দিয়ে প্রবেশ করবে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রমজান মাস লাভকারী ব্যক্তি, যিনি উত্তমরূপে সিয়াম ও কিয়াম পালন করে, তার প্রথম পুরস্কার— রমজান শেষে গুনাহ থেকে ওই দিনের মতো পবিত্র হয়— যেদিন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ৮৯৬৬)
দোয়া কবুল ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি
এ মাসে অসংখ্য মানুষের দোয়া কবুল করা হয়। আবেদন মঞ্জুর করা হয়। জাহান্নামির নাম জাহান্নামের তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয়, দোখজ থেকে মুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। তাই এ মাসে বেশি বেশি নেক আমল করতে হবে। তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইতে হবে। যাবতীয় দরখাস্ত দয়াময় আল্লাহর দরবারে পেশ করতে হবে।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ তাআলা রমজান মাসের প্রত্যেক দিন ও রাতে অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। এবং প্রত্যেক মুমিন বান্দার একটি করে দোয়া কবুল করেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৭৪৫০)
রমজান পাপ মোচন ও গুনাহ থেকে ক্ষমা লাভের মাস। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহগুলো মুছে দেয় যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
রমজানে দান-খায়রাত বেশি করা
নবী কারিম (সা.) এমনিতেই প্রচুর দান করতেন। আর এ মাসে দানের পরিমাণ আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলে আকরাম (সা.) ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। তার দানশীলতা অধিকতর বৃদ্ধি পেত রমজান মাসে; যখন জিবরাঈল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। জিবরাঈল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে আগমন করতেন এবং তারা পরস্পর কোরআন শোনাতেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) তখন কল্যাণবাহী বায়ুর চেয়েও অধিক দানশীল। (মুসলিম, হাদিস : ২৩০৮)
রাসুল (সা.) বলেন,
‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে তার (রোজাদারের) অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। তবে রোজাদারের প্রতিদান থেকে বিন্দুমাত্রও হ্রাস করা হবে না।’
(তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭)
আল্লাহ তাআলা আমাদের রমজানে বেশি থেকে বেশি নেক আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন
কিলার’নি কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জনাব ইকবাল মাহমুদ আজ উনার ফেইস বুক স্টেটাসে জানিয়েছেন যে , কিলার’নি মাদ্রাসার চারজন হাফেজিয়া ক্লাসের ছাত্র এবছর পবিত্র রমজান মাসে তাদের মসজিদে খতম তারাবীহ’র নামাজ পরিচালনা করবেন ।
যে চার জন হাফেজ নামাজ পরিচালনা করবেন , তারা হলেন –
১ ) হাসিব আহমেদ ( HASIB AHMED )
২ ) শেখ রেহান ( SHEIKH RAYHAN )
৩ ) শাফওয়ান রহমান ( SAFWAN RAHMAN )
৪ ) মিরাজ মাহমুদ ( MIRAJ MAHMUD )
কিলারনি কমিউনিটির জন্য এটি একটি গৌরবের বিষয় , পাশাপাশি আয়ারল্যন্ড বাংলাদেশ কমিউনিটির জন্যও সমান গৌরবের এবং অনুপ্রেরনার ।
তিনি আরো জানিয়েছেন যে , ভবিষ্যতে আয়ারল্যান্ডের প্রতিটি মসজিদে কিলারনির মাদ্রাসার হাফেজগণ তারাবীহ’র নামাজ পড়াবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন । এ ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে কিলার’নি মসজিদ কমিটি কাজ করে যাচ্ছেন । সে জন্য ইকবাল মাহমুদ সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন ।
প্রকাশিত হল ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-এর অফিসিয়াল বল। বলটির নাম রাখা হয়েছে ‘আল রিলহা’। একটি আরবি শব্দ, বাংলায় যার অর্থ সফর। কাতারের ভাস্কর্য, জাতীয় পতাকা এবং ইউনিক বোটের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এর ডিজাইন করা হয়েছে।
বিশ্ববিখ্যাত ক্রিয়াসামগ্রি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এডিডাস ফুটবলটি তৈরি করেছে। এডিডাসের দাবি, বাতাসে খুব দ্রুততার সঙ্গে এই বল দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম। এর আগে বিশ্বকাপের ইতিহাসে এত দ্রুত কোনও বল বাতাসে দূরত্ব অতিক্রম করতে পারত না। এর ফলে লং বল বা এরিয়াল বল খেলার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে ফুটবলারদের। বিশ্বের সেরা খেলাকে আরও বেশি নিখুঁত করার জন্য এবং ফুটবলারদের সুবিধার্থে এই রকম বল তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বলটি আপনার হাতে চলে আসতে পারে। বল প্রস্তুতকারী সংস্থাটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে ৩০ মার্চ থেকে এই বল বিক্রি করা শুরু করবে তারা। তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং রিটেল স্টোর থেকে ওই বল সংগ্রহ করতে পারবেন ফুটবলপ্রেমীরা।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) অতিসংক্রামক ধরন অমিক্রনের একটি উপধরন (সাবভেরিয়েন্ট) বিএ.২। বর্তমানে বিশ্বে করোনার এই ধরনই দাপট দেখাচ্ছে। শনাক্ত নমুনার মধ্যে ৮৬ শতাংশই এই উপধরন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
জানুয়ারির শুরু দিকে এই উপধরন প্রথম শনাক্ত হয়। অমিক্রনের অতিসংক্রামক সহোদর বিএ.১ ও বিএ.১.১-এর চেয়ে বেশি সংক্রামক উপধরনটি।
বিএ.২ উপধরনটি শনাক্ত করা কিছুটা কঠিন হওয়ায় এটিকে ‘স্টিলথ ভেরিয়েন্ট’ বলা হয়। সাধারণ পিসিআর পরীক্ষায় বিএ.১-এর একটি অনুপস্থিত জিনই স্বাভাবিকভাবে এই উপধরন শনাক্ত করে দেয়।
গবেষণা অনুযায়ী, যদিও অমিক্রনের অন্যান্য উপধরনের চেয়ে বিএ.২ বেশি সংক্রামক, তবে এটি মারাত্মক অসুস্থতা তৈরি করে না বলে এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রমাণাদিতে জানা গেছে।
অন্যান্য অমিক্রন ধরনের মতো বিএ.২- ধরনের বিরুদ্ধেও টিকা কম কার্যকর। সময় গড়ালে সুরক্ষাও কমতে থাকে। অবশ্য ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, বুস্টার ডোজ নিলে সুরক্ষা অটুট থাকে। বিশেষ করে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায়।
কেউ অমিক্রনের বিএ.১ ধরনে আক্রান্ত হলে পরবর্তী সময়ে তিনি বিএ.২-তেও আক্রান্ত হতে পারেন কি না, এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে কিছু দেশে সংক্রমণ ‘ডাবল পিক’-
এ পৌঁছানোয় এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে যুক্তরাজ্য ও ডেনমার্ক থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, যেখানে ডেলটার মতো করোনার অন্য ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অমিক্রনে পুনরায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানে বিএ.১-এ আক্রান্ত লাখো মানুষের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন বিএ.২ উপধরনে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে বিএ.১ সংক্রমণের উল্লম্ফনের জন্য জনসমাগমে স্বাস্থ্যবিধি তুলে নেওয়াকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। জন হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের ভাইরোলজিস্ট অ্যান্ড্রু পিকোস বলেন, ‘বিএ.২ উপধরনের ক্ষেত্রেই কেবল এটি হতে পারে যে তখনই এটি ছড়াচ্ছে, যখন এই সব মানুষ মাস্ক পরা বন্ধ করে দিয়েছে।’
সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে আবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ইতিমধ্যে চীনের সবচেয়ে বড় শহর সাংহাইয়ে দুই দফায় ৯ দিনের বেশি লকডাউন জারি করা হয়েছে। এতে কোভিড-১৯ মহামারি থেকে শিগগিরই মুক্তির আশা ফিকে হচ্ছে।
সূত্র : প্রথম আলো
২০২১ সালে আমরা মহান স্বাধীনতা দিবসের গৌরবের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেছি । এমন কি ২০২২ সালে এসেও সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনের রেশ এখনও চলমান । পাশাপাশি গত একান্ন বছরে বাংলাদেশের উন্নতি , অগ্রগতি , অর্জন , সাফল্য , ব্যর্থতা , প্রাপ্তি , অপ্রাপ্তি নিয়েও এর পক্ষে , বিপক্ষে আলোচনার শেষ নেই ।
গত একান্ন বছরে বাংলাদেশ অনেক প্রতিকূলতা , প্রতিবন্ধকতা , রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা করে , দক্ষিণ এশিয়ার দেশ গুলোর মধ্যে নিজেদের কে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে ।
প্রাপ্তির বিচারে দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি , জাতীয় আয় বৃদ্ধি , অবকাঠামো উন্নয়ন , কর্মসংস্থান , শিক্ষার হার বৃদ্ধি , মানব উন্নয়ন সহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ যে অনেক খানি উন্নতি করেছে এতে কোন সন্দেহ নেই । মোটাদাগে আমরা বলতে পারি , পদ্মা সেতুর মতো মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন , মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট , মেট্রো রেল , শতভাগ বিদ্যুতায়ন সহ বিভিন্ন দৃশ্যমান প্রকল্প আমাদের উন্নতি বা অগ্রগতির পরিচয় বহন করে ।
কিন্তু প্রাপ্তির পাশাপাশি আমাদের অপ্রাপ্তির তালিকাও কোন অংশে কম নয় । পরিসংখ্যানিক ভাবে মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি পেলেও , প্রকৃত চিত্র হচ্ছে দেশে ধনী এবং দরিদ্রের মধ্যে আয়ের বিরাট বৈষম্য রয়েছে । যা দেশের সমগ্র জনসাধারণের মাথা পিছু আয়ের পরিচয় বহন করে না । মূল কথা হচ্ছে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি অতি ক্ষুদ্রতম অংশ বিশাল সম্পদের মালিক । অর্থাৎ একটি জনকল্যাণ মূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অর্থনীতির যে সুষম বন্টন দরকার , তা আমাদের দেশে অনুপস্থিত ।
একান্ন বছর একটি দেশের জন্য কম সময় নয় । বয়সের বিবেচনায় বড়ো মনে হলেও , রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আমরা এখনও পরিনত হতে পারিনি । গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ , মত প্রকাশের স্বাধীনতা , রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ , বিরোধী মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীলের বিষয় গুলো আমরা এখনও দেখতে পাই না ।
একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের কাজ হচ্ছে দেশের সাধারণ নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সেবা গুলো সহজ লভ্য করা । কিন্তু আমি মনে করি আমাদের অন্যতম একটি হতাশার জায়গা হচ্ছে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে অধিকাংশ সময় সেবা পায় না । সেবার জন্য জনগণকে অনেক সময় দূর্নীতির আশ্রয় , রাজনৈতিক তদবির বা উপর মহলের সুপারিশের প্রয়োজন হয় । দূর্নীতি আমাদের দেশে এখনও ক্যন্সারের মতো । আমি মনে করি সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে দূর্নীতি । স্বাধীনতার একান্ন বছর পরেও আমরা একটি দূর্নীতি মুক্ত দেশ গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছি ।
জনগণের ভোটাধিকার বা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা আজও পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয় নি । জাতির জন্য এটি সবচেয়ে অপ্রাপ্তির জায়গা । বিগত দুটি নির্বাচন অনেকটা ভোটার বিহীন ছিল । ফলে দীর্ঘদিন একই দল রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছে । যে কারনে দেশে রাজনৈতিক ভারসাম্যহীনতা তৈরী হয়েছে । বিরোধী দল গুলো দিন দিন দূর্বল বা কোনঠাসা হয়ে পড়ছে । এমতাবস্থায় সরকারী দল তাদের কাজের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহিতারও প্রয়োজন মনে করে না ।
২০২২ সালে এসেও আমরা একটি রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি , এই সংকট উত্তরণের উপায় কি হতে পারে তা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ ভালো বলতে পারবেন । তবে সাময়িক ভাবে সংকট সমাধানে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন , নির্বাচন কমিশন যদি সকল দলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে অবাধ , সুষ্ঠু এবং জনগণের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি সফল নির্বাচন উপহার দিতে পারে তাহলে হয়তো বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসবে ।
মহান স্বাধীনতার একান্নতম দিবসে এসেও প্রত্যাশা , প্রাপ্তি এবং অপ্রাপ্তি নিয়ে আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে । কিন্তু আমরা সবাই দেশ কে ভালোবাসি , আমাদের সবার লক্ষ্য এক , তা হলো দেশের কল্যাণ । প্রত্যাশা রাখি হয়তো একদিন প্রিয় বাংলাদেশ , সোনার বাংলা হবে ।
মুক্তিযুদ্ধের প্রান্তিক ইতিহাস: আরও জোরালো প্রচার প্রয়োজন
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
স্বাধীনতা দিবস এলে আমরা কেবল স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়েই টানাহ্যচরা করিনা বরং ২৫ মার্চ কালো রাতের কথা বলাবলি করি, আওয়াজ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনি, ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দু লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। এ সবই ঠিক আছে। কারণ এগুলো সবই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। স্বাধীনতার ইতিহাস। স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতার ইতিহাস স্মৃতিচারিত হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গল্পের ভেতরে যেমন অনেক গল্প লুকিয়ে থাকে তেমনি ইতিহাসের ভেতরেও অনেক ইতিহাস মানুষের অজানা থাকে। মুক্তিযুদ্ধের এমন অনেক ইতিহাস রয়েছে যা সাধারণ মানুষ এখনো জানেনা। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জের প্রান্তিক মানুষের ইতিহাস। এ ইতিহাস ইতিহাসবেত্তাদের কলমে সচরাচর সেভাবে উঠে আসেনা। এরকম অনেক উঠে না আসা ইতিহাসের একটি আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
আমার মা’র বয়স প্রায় আশি বছর। প্রতিদিন তাঁর সাথে কথা বলি। ঘন্টা ছাড়িয়ে যায়, তবু কথা চলে। মা ছেলের কথা, ভালো মন্দ জিজেস করলেই যথেষ্ট। বড়জোর কি খেয়েছেন বা কি রান্না করা হয়েছে, ওষুধ গুলো খেয়েছেন কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি দু মিনিটের মধ্যেই কথা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের কথা শেষ হয়না। মা’র কন্ঠটাকে আরও কিছুক্ষণ শোনার জন্য ইচ্ছে করেই আমি কথা লম্বা করি। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এ কথা, ও কথা জিজ্ঞেস করি। আবার কোনো কোনো দিন মা নিজেও অতীত স্মৃতিতে ফিরে যান। তাঁর স্মৃতি ও শ্রবণশক্তি দুটোই ভালো। স্মরণ শক্তিও বেশ প্রখর। তিনি যখন ক্লাস টু তে পড়তেন তখন তাঁর চাচাতো বোনের বিয়ে হয়। সে সময় তাঁর চাচা (আমার শ্রদ্ধেয় নানা) বিয়ের আসরে পাঠ করার জন্য একটি কবিতা লিখে দেন। বিশ/বাইশ লাইনের কবিতাটি এখনো তাঁর ঠোটস্থ। সেদিন আমাকে এক নিশ্বাসে শোনালেন যা আমি রেকর্ড করে রেখেছি। আমার মা খুব সম্ভবত ফাইভ/ সিক্স পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। কিন্তু বই পড়ার প্রতি ছিলো তাঁর প্রবল আগ্রহ। কথায় কথায় একদিন বললেন, “আজকালকার ছেলেমেয়েদের তো বই পড়ার প্রতি তেমন বেশি আগ্রহ নেই। ওরা ফেসবুক নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কিন্তু আমাদের সময়ে ছিলো ভিন্ন প্রেক্ষাপট। আমরা বই পুস্তক পড়তেই বেশি পছন্দ করতাম। তোমার বাবার সংগ্রহে প্রায় দেড় দুইশ বই ছিলো। তার সব গুলোই আমি পড়েছি।” অর্থাৎ সংসারের সব কাজকাম সেরে আমাদেরকে খাইয়ে দাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে কুপিবাতি জ্বালিয়ে মাঝরাত পর্যন্ত বই পড়তেন। স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে মা আমাকে এখনো ওইসব বইয়ের গল্প শোনান।
বই পড়ার কথা বলতে গিয়েই একটু আবেগপ্রবণ হয়ে গেলেন তিনি। বাবার কথা মনে পড়ে গেলো তার। আমার বাবা মারা গেছেন প্রায় বিশ বছর আগে। আমরা ভায়েরা যখন বড়ো হলাম, কামাই রুজি করতে শিখলাম তখনই তিনি চিরতরে চলে গেলেন। সুখভোগ করার সৌভাগ্য তাঁর হয়নি। সারাজীবন শত্রুদের সাথে পাঞ্জা লড়ে টিকে থাকতে হয়েছে। একজন স্কুল শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন ন্যায় ও আদর্শের প্রতীক। অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ানো ছিলো তাঁর স্বভাবের বাইরে। সততা, আদর্শ, পরহিতৈসী মনোভাব, গরিব ও সংখ্যালগুদের পক্ষে কথা বলাই ছিল তাঁর চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। আর এ বৈশিষ্ট্যই তাঁর জন্য কাল ছিলো। এ বৈশিষ্ট্যের জন্যই তিনি ধান্দাবাজ সমাজপতিদের কাছে শত্রুতে পরিণত হয়েছিলেন। আর এ শত্রুতার জের হিসেবে তারা মরণ কামড় দেয়ার চেষ্টা করেছিলো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে। কয়েকদিন আগে মা আমাকে ওই গল্পটি শোনালেন।
১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধনু নদীতে চলন্ত লঞ্চ থেকে সহসা গোলাগুলির আওয়াজ ভেসে এলো। মিলিটারি এসে গেছে ভেবে গ্রামবাসী তটস্থ হয়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর লঞ্চ যখন গ্রামের বাজারে এসে থামে তখন বুঝতে পারলো, ওরা মিলিটারি নয়, মুক্তিবাহিনীর একটি দল। গ্রামবাসী হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। কিন্তু ওই হাঁফ ছেড়ে বাঁচাটা বেশিক্ষণ টিকলো না। কমান্ডার সাহেব গ্রামের মাথা শ্রেণীর লোকদের ডেকে পাঠালেন। চেয়ারম্যান মেম্বার সহ অনেকেই জড়ো হলেন। আমার বাবাও এলেন। আলাদা আলাদা ভাবে প্রত্যেককে এ গ্রামে কালপ্রিট কে, রাজাকার কে তা লিখে দেয়ার জন্য বলা হলো। আমার বাবা কে কালপ্রিট, কে রাজাকার কিছুই বললেন না কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধি ও তার ভাই আমার বাবাকে তাদের শত্রু ও কালপ্রিট বলে উল্লেখ করলো। এবং আমাদের পাড়াতেই ঐতিহ্যবাহী এক হিন্দু বাড়িতে দু একদিন আগে যে ডাকাতি হয়েছিলো তার দায়ভার তাঁর উপর চাপানোর চেষ্টা করলো। আমার বাবার হুকুমেই ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে বলে কমান্ডারকে জানানো হলো। যারা ডাকাতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো তাদেরকে সামনে হাজির করা হলো। ওরাও আমার বাবাকে “হুকুমদাতা” বলে সাক্ষী দিলো। বস্তুত ওরা ছিলো ওই জনপ্রতিনিধি গোষ্ঠীর পা চাটা গোলাম। তাদের শেখানো বুলিই ওরা অনবরত বলে যাচ্ছিলো। সত্য কথা স্বীকার করানোর জন্য যতোই ওদেরকে প্রহার করা হচ্ছিলো ততোই তারা আমার বাবার নাম বলছিলো। কিন্তু কমান্ডার সাহেব ছিলেন বেশ বিচক্ষণ লোক। তিনি কোনো অবস্থাতেই তাদের কথা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। বুঝতে পারছিলেন এটা ষড়যন্ত্র। তাই তিনি বাবার কাছে গেলেন, বললেন, ” আপনার চেহারা এতো মলিন কেনো, অভয় দিচ্ছি আপনাকে গুলি করা হবেনা।”
এর একটু পরই একটি গুলির শব্দ শোনা গেলো। ফাঁকা গুলি। ডাকাতদেরকে ভয় দেখানোর জন্যই মূলত এ গুলি করা হয়েছিলো। কিন্তু মানুষ বলাবলি করতে লাগলো এই বুঝি মাষ্টার সাহেবকে গুলি করে হত্যা করা হলো। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাবাকে গুলি করা হয়নি। বরং কমান্ডার সাহেব তাঁকে বাড়ি যেতে বললেন। কথিত ওইসব জনপ্রতিনিধিদের অপকর্ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সারাজীবন যে তিনি কলমযূদ্ধ করেছেন তার প্রমাণপত্র হাজির করার জন্য অনুরোধ করা হলো। বাড়িতে এসে আলমারি থেকে পুরনো ফাইল ভর্তি পিটিশন নিয়ে কমান্ডার সাহেবকে দেখালেন। কমান্ডার সাহেব যা বোঝার তা বুঝে ফেললেন। আমার বাবাকে সসম্মানে ছেড়ে দিলেন। ডাকাত গুলো কে গুলি করে মারতে চাইলেন। কিন্তু বাবার অনুরোধে তারা বেঁচে গেলেন।
আমি আমার পরিবারের, গ্রামের এ করুণ ইতিহাসটি গাল্পিক আকারে টানলাম। কিন্তু এমন করুণ ইতিহাস শুধু আমার গ্রামেই সীমাবদ্ধ নয়। বাংলার প্রতিটি গ্রামে এমন হাজারো ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে। আমার বাবা হয়তোবা সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু এমন অনেকে আছেন যারা নিজেদেরকে বাঁচাতে পারেননি। তাই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন শুধু পাকবাহিনী কর্তৃকই এ দেশের মানুষ নির্যাতিত হয়নি, মারা যায়নি, নিজেদের মুক্তিযোদ্ধাদের ভুল সিদ্ধান্তের শিকারেও পরিণত হতে হয়েছে অনেককে।
“মুক্তিযুদ্ধ” একটি অহংকারের নাম। আর “মুক্তিযোদ্ধা” ত্যাগ ও মহিমার নাম। গর্ব ও গৌরবের নাম। একটি শ্রদ্ধার প্রতীকের নাম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, রাজাকার সেজে যেমন কিছু কিছু লোক মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সহযোগিতা করেছিলো, জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য কাজ করেছিলো ঠিক তেমনি মুক্তিযোদ্ধার পোশাক পরেও কিছু কিছু লোক দেশবিরোধী কাজ করেছে। গ্রামে গঞ্জে ডাকাতি করেছে, লুটপাট করেছে। বর্ডারমুখী শরণার্থীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এ সবই কঠিন বাস্তবতা, রূঢ় ইতিহাস। কিন্তু এসব ইতিহাস খুব বেশি একটা চোখে পড়ে না। পত্রপত্রিকায় লেখা হয়না। ইতিহাসবিদরা এসব নিয়ে খুব বেশি একটা মাথা ঘামাননা, গবেষণাও করেন না। তবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিখুঁত ভাবে তুলে ধরা ও একে সমৃদ্ধ করে তোলার স্বার্থে গ্রামবাংলার প্রান্তিক ইতিহাসকে মোটেও হেলা করা উচিত নয়। আশা করি ইতিহাস বেত্তাগন বিষয়টি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করবেন।
শেষ কথা বলে শেষ করবো। প্রত্যক্ষ ভাবে যারা স্টেনগান, রাইফেল নিয়ে যুদ্ধ করেছেন তাঁরা যে মুক্তিযোদ্ধা তা নতুন করে বলে বোঝাবার দরকার নেই। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান তাঁরা। তবে সাধারণ মানুষ যারা পাকিদের নির্যাতন, নিপীড়ন ও অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, যারা যুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাহস জুগিয়েছে, বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছে তারাও মুক্তিযোদ্ধা। তাই আমি বলতে চাই, শুধুমাত্র রাজাকার, আল বদর, আলসামস তথা মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী ছাড়া বাংলার প্রতিটি মানুষই তখনকার স্ব স্ব অবস্থানে ছিলেন একেকজন মুক্তিযোদ্ধা।
বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন (BSAI) এবছর মে’ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে London Sportif Club এর আমন্ত্রনে বাংলাদেশী প্রাপ্তবয়স্ক খেলোয়ারদের নিয়ে তিনদিনের লন্ডন সফরে যাচ্ছে কিছু প্রীতি ম্যাচ ও খেলাধুলায় অংশ নিতে। BSAI মনে করে এই সফরে যেতে বাংলাদেশী কমিউনিটির খেলোয়ারদের মধ্যে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাবে।
BSAI এর প্রেসিডেন্ট জনাব চুন্নু মাতবর জনান, মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহের Weekdays গুলোতে এই সফর আয়োজন করা হবে যাতে খেলোয়ারগন সফরে যেতে পারেন। সোমবার থেকে বুধবার এই তিনদিনে সফরটি সম্পূর্ণ হবে। তিনি আরও বলেন, খেলোয়ারগন মাত্র €150 ইউরো Entry fee দিয়ে সফরে যোগ দিতে পারবেন এবং বাকী আনুসাঙ্গিক ব্যায় বহন করবে BSAI.
এই তিন দিনে সম্ভাব্য খেলার মধ্যে থাকবে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, T20 ক্রিকেট ম্যাচ এবং ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য BSAI এর প্রেসিডেন্ট চুন্নু মাতবর(0831693003), সাধারন সম্পাদক হাবীবুর রহমান ( 0894190636) ও সাংগঠকি সম্পাদক কামাল হোসেনের(0872381904) সাথে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
ম্যাগাজিন মোড়ক উম্মোচন, পুরুষবাদ ও নারীবাদ। সৈয়দ আতিকুর রব (শাহী)
গত ১৫ মার্চ ডাবলিনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্টিত হয়ে গেল অনলাইন পোর্টাল আইরিশ বাংলা টাইমসের ১ম ম্যাগাজিনের মোড়ক উম্মোচন উৎসব। ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আইরিশ বাংলা টাইমসের নানাবিধ কার্যক্রম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তথ্য আকারে সংগৃহীত করে রাখার উদ্দেশ্যে তাদের এই মহতী উদ্যেগ অবর্ণনীয় প্রশংসার দাবীদার। উৎসব অনুষ্টানের সবকিছু ছিল সাজানো, গোছানো ও পরিপাটি। বিশেষ করে আইরিশ বাংলা টাইমসের একদল উদ্যমী, মেধাবী এবং সৃষ্টিশীল তারুণ্যে উদ্দীপ্ত সম্পাদক মন্ডলীর অসধারণ আয়োজনে মোড়ক উন্মোচনের সন্ধ্যাটি অনেকের স্মৃতির মিনারে অম্লান হয়ে থাকবে দীর্ঘদিন। এই ধরণের অনুষ্টান করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে অন্যদের।
আয়োজকদের জন্য এই ধরনের অনুষ্ঠান প্রথম হলেও তাদের সার্বিক প্রস্তুতিতে পেশাদারিত্বের ছাপ ছিল সেটি বলতেই হবে। অতিথি আপ্যায়ন সহ অনুষ্ঠান পরিচালনা ছিল অসাধারণ। মশিউর ভাইয়ের স্মার্ট উপস্থাপনা অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে। দূর থেকে ম্যাগাজিন বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে আমি ভেবেছিলাম আমেরিকার বিখ্যাত সেই “টাইম” ম্যাগাজিনের কপি এখানে কি করে এলো ?
ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে যে কারণে এই অনুষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটি হলো কমিউনিটির গুণীজনদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং তাদের সাথে কুশলাদি বিনিময়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকের সাথে পরিচয় থাকলেও কমিউনিটির অনেকের সাথে আমার সরাসরি দেখা হয়নি। বলতে পারি,আমার পরিচয়ের জগত অত্যন্ত ছোটো। এই দেশে অনেকদিন ধরে থাকি অথচ দুই একজন ছাড়া কমিউনিটির অনেকের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয়ও নেই। সংগত কারনেই এই অনুষ্ঠানকে কোনোভাবে মিস করতে চাইনি।
সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যরা ছাড়াও উপদেষ্টা কমিটির সদস্যবৃন্দ সহ সুধীজনদের কাছে থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল কথা শুনেছি।আমন্ত্রিত জ্ঞান ঋদ্ধ আলোচনায় সমসাময়িক প্রসঙ্গের পাশাপাশি উঠে এসেছে সংঘবদ্ধতা সুস্থ সংস্কৃতি- সাহিত্য চর্চা ও মানবিক কল্যাণে কর্মব্যস্ততার সর্বজনীন গুরুত্ব। ব্যক্তির উন্নয়ন ও সামষ্টিক জাগরণে যার সুদুরপ্রসারী ভূমিকা সর্ব স্বীকার্য সর্ব।
আইরিশ বাংলা টাইমসের পাঠকের উপলদ্ধি জগতকে আলোড়িত ও সংহত করার পাশাপাশি এ ধরনের অনুষ্ঠান কমিউনিটির চিন্তা রাজ্যে সৃষ্টি কল্যাণ তরঙ্গ যোগাবে আত্মবিকাশের পথে অক্লান্ত হেঁটে চলার সাহস ও শক্তি।
কেননা মু্ক্ত চিন্তা মনের জানালা খুলে দেয়। নতুন প্রেরণা যোগায়। মানুষকে আশাবাদী করে তোলে ভবিষ্যতের জন্য। একতা সততা দিয়ে বহু দূর যাওয়া যায। একসাথে থাকলে অনেক কঠিন কাজ সহজে জয় করা যায়। তারই প্রতিফলন ঘটেছে গুণীজনদের পরামর্শে। সবার বক্তব্যের ভেতর দিয়ে কমিউনিটির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার মর্মতা তীব্র আকারে আমি অনুভব করেছি। এই ধরণের সুন্দর সুন্দর কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের কমিউনিটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবার সামগ্রিক প্রচেষ্টার জয়গান হয়েছে পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে।
পূর্ব কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া এই ধরনের একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে হাত দিয়ে সফলতার সাথে শেষ করা কতটা কঠিন কাজ,সেটি হয়তো আয়োজক ছাড়া অন্য কারও পক্ষে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। উপলব্ধি করার কথাও নয়। ম্যাগজিন বইয়ের দিকে তাকালে বোঝা যাবে এর পেছনে কত শ্রম ও সময় ব্যয় হয়েছে।পৃথিবীতে কোন কিছুই পারফেক্ট হয় না। নিজের মত করে নিতে হয়। উদারতা দিয়ে ছোটখাটো ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো দেখলে তবেই সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব,নতুন কিছু পাওয়া সম্ভব।
বন্দনা, প্রশংসা,সমালোচনা ইত্যাদি বিষয়গুলো মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। আমাদের সমাজে একশ্রেণীর মানুষ রয়েছেন, যারা এই প্রবৃত্তিগুলো নিজের মধ্যে লালন করে অন্যের পথে কাঁটা হয়ে থাকতে পছন্দ করেন। আবার একশ্রেণীর মানুষ রয়েছেন যারা এগুলো কখনো গায়ে মাখেন না,পছন্দও করেন না। তারা সব সময় মানুষের ইতিবাচক কাজগুলোকে শ্রদ্ধার সাথে বরণ করেন।প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগীতা অকুন্ঠিত হতে বিলিয়ে দেন। তারা তিরস্কারের বিপরীতে দুই বাহুবলে সৃষ্টিশীল মানুষকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। তাই কোনো সমালোচনা এই শ্রেণীর মানুষের চলার পথে কোনো প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। রুদ্ধ করে রাখতে পারে না তাদের অগ্রযাত্রা। তারা দূর্বার, তারা দূর্জয়।
আমাদের সমাজে ভালো কাজের স্পৃহার চেয়ে সমালোচনার তীরটা অনেক বেশি তীক্ষ্ণ ও তীব্র । এক শ্রেণীর মানুষ সব সময় প্রস্তুুত থাকেন কখন এবং কাকে খরধার তীরের আঘাতে বিদ্ধ করবেন। গঠনমূলক সমালোচনা সুস্হ সমাজ গঠনের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য। কিন্তুু সমালোচনা যদি শুধু হয় মানুষকে মনোরঞ্জন দেবার জন্য, ঢাক-ঢোল পিঠানোর জন্য, তাহলে সেই সমালোচনা সমাজে বিভাজন ছাড়া ভালো কিছু বয়ে নিয়ে আসবে না ।
আইরিশ বাংলা টাইমসের মোড়ক উম্মেচনের অনুষ্টানকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সমালোচনামূলক পোস্ট প্রত্যক্ষ করলাম। যেখানে আইরিশ বাংলা টাইমস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদের একটি ক্ষুদ্র মূদ্রণ ভূলকে হাইলাইট করেছেন জৈনক ভদ্রলোক। কমিউনিটির সামাজিক কার্যক্রমে নারীদের সম্পৃক্তার বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
সেখানে দেখলাম কিছু নেতিবাচক মন্তব্যও এসেছে। আবার কিছু অসত্য তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। বলা হয়েছে, অনুষ্টানে নারীদেরকে বক্তব্য দেবার সুযোগ দেওয়া হয়নি। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, চিরাচরিত পথ ধরে নারীদেরকে নাকি অবজ্ঞা করা হয়েছে। অশ্রদ্ধা করা হয়েছে। একটি অনুষ্টানে না গিয়ে শুধু একজন মানুষের মন্তব্যের উপর ভিত্তি করে এই ধরণের নেতিবাচক মন্তব্য কোনো শিক্ষিত সমাজের কাছ থেকে শুনা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
পুরুষবাদ ও নারীবাদের মত ন্যাক্ষারজনক বিষয় সেখানে ঠেনে এনে একটি সফল অনুষ্টানের সার্বিক কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। কমিউনিটির জন্য ভালো কাজের পরিণাম শেষ পর্যন্ত পুরুষবাদ ও নারীবাদের বিতর্কে জড়িয়ে পড়বে, সেটি ভেবে ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব খারাপ লাগছে।
অথচ অনুষ্টানের শেষের দিকে দুইজন ভদ্রমহিলা বক্তব্য রেখেছেন। আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন শহর ছাড়াও সূদর বেলফাস্ট থেকে নারী অতিথি এসেছেন।অনেকের দাওয়াত ছিল, ব্যস্ততার কারণে আসতে পারেন নি। এই মোড়ক উম্মেচন অনুষ্টানের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে একজন নারী ছিলেন। ম্যাগাজিন বইয়ের ভেতর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী লেখকদের লেখা গল্প ,কবিতা ও উপন্যাস থাকার পরও নারীদের প্রতি অবিচারের প্রশ্ন তুলা কতটা যৌক্তিক? নারীদের অশ্রদ্ধা করার বিষয়টি কতটা সঠিক? সেটি আমি বুঝতে পারছি না।
যাক, তবে আমি মনে করি যে কোনো কাজের আলোচনা- সমালোচনা থাকবে। সমালোচনার উর্ধ্বে কিছুই নয়। কিন্তুু আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়। যেহেতু আয়োজক কর্তৃপক্ষ অনুষ্টানের শুরুতে বার বার বলেছেন, এই ধরণের অনুষ্টান তাদের জন্য প্রথম এবং সেখানে অনেক ভূল-ত্রুটি রয়েছে। যেটি তারা অনুষ্টানের প্রারম্ভিকে স্বীকার করেছেন। সে- গুলোকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য সবার প্রতি তাদের সবিনয় নিবেদন ছিল। সহযোগীতা ও পরামর্শ দিয়ে তাদের কাজকে এগিয়ে নেবার জন্য কমিউনিটির প্রতি তাদের আকুল আবেদন ছিল।
এরপর এই বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাইলাইট করার কী প্রয়োজন ছিল? তাছাড়া এই ভদ্রলোক নিজেও উক্ত অনুষ্টানে উপস্হিত ছিলেন। এই ধরণের গঠনমূলক সমালোচনা অনুষ্টানের মঞ্চে হলে আয়োজক সহ উপস্হিত সুধীজনদের জন্য আরো ভালো হতো। যেহেতু সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। সমালোচনার অধিকার রয়েছে। সেহেতু ওনার মতের সাথে আমার মতের অমিল থাকলেও ওনার মতকে আমি শ্রদ্ধা করি। ওনার পরামর্শ গুলোকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করতে আমার অসুবিধা নেই।
কমিউনিটির সামাজিক কর্মকান্ডে নারীদের সম্পৃক্তার অবশ্যি প্রয়োজন রয়েছে। এর কোনো বিকল্প নেই। ধর্ম বলেন, কিংবা সমাজ বিজ্ঞানের কথা বলেন, সকল ক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের সমমর্যদার স্বীকৃতি রয়েছে।
নারী এবং পুরুষ উভয়ে একে অপরের পরিপূরক ও সম্পূরক। কেউ কারো প্রতিযোগী নয়, এক অপরের সহযোগী। বিরোধি অবস্হান নয়,উভয়ের ক্ষেত্রে সহবাস্হন হচ্ছে মানবিক মর্যাদার শ্রেষ্টতম স্হান। আজ অনেক নারীরা পৃথিবীর জয়গানে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিচ্ছেন। জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং গবেষণা দিয়ে মানবতার কল্যাণে মহিয়সী নারীরা যুগান্তকারী অবদান রাখছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। খেলাধূলায় পুরুষের পাশাপাশি দেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে আনছেন নারীরাও। তাহলে কে বলছে নারীরা পিছিয়ে?
সবার অভিজ্ঞতা যেমন সমান হয় না, তেমনি প্রত্যেক কাজে সব মানুষের আগ্রহ,উৎসাহ ও উদ্দীপনা সমান থাকে না। তাই কমিউনিটির সামাজিক কর্মকান্ডে অভিজ্ব নারীদের আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত। তাদের সুযোগ তৈরীর জন্য কমিউনিটির অগ্রজ পুরুষদের ভূমিকা রাখতে হবে। নারী-পুরুষের সম্মিলিত চিন্তা- ভাবনার মধ্য দিয়ে হাজার-লক্ষ-কোটি ভাবনা সৃষ্টি হউক। পৃথিবীর প্রতিটি নগর ও জনপদ নারী-পুরুষের সমান কর্মব্যস্ততায় ভরে উঠুক। আমাদের সবুজ এই বিশ্ব নারী-পুরুষের আবিস্কারে আলোকিত হউক। নারী কিংবা পুরুষের পরিচয়ে নয়, মানুষ তার স্বীয় কর্মের গুণে পৃথিবীতে প্রতিষ্টিত হউক। নারীবাদ ও পুরুষবাদের মত ঘৃণিত মনস্তাত্ত্বিক
ধারণার অবসান হউক।
পরিশেষে আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক মন্ডলীর সকল সদস্যবৃন্দ, যথাক্রমে;
প্রধান সম্পাদক: আব্দুর রহিম ভূ্ঁইয়া, বার্তা সম্পাদক: ওমর ফারুক নিউটন, নির্বাহী সম্পাদক: মশিউর রহমান, সহকারী সম্পাদক: কবীর আহমেদ, সোশ্যাল মিডিয়া সম্পাদক: শওকত আলী খান মাসুমকে প্রানঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এমন একটি মনোরম সন্ধ্যা কমিউনিটিকে উপহার দেবার জন্য।
এর সাথে সাথে আইরিশ বাংলা টাইমসের উপদেষ্টা মন্ডলীর সকল সদস্যবৃন্দ সহ এর পাঠক, লেখক এবং শুভানুধ্যায়ীগনকে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি , যাদের মহতী মিলনে অনুষ্টনাটি অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা সম্মানিত ভদ্রমহিলার প্রতি, যিনি নিজের কর্ম ব্যস্ততা থাকা সত্বেও সময় দিয়ে মোড়ক উম্মেচনের
অনুষ্টানকে সফল করতে সহযোগিতা করেছেন।
আসুন অনলাইনে এভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে বস্তুনির্ভর তথ্য-উপাথ্য, গঠনমূলক সমালোচনা, পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আমরা কমিউনিটির ভালো কাজগুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। ধন্যবাদ
গতকাল ১৫ই মার্চ ২০২২ ডাবলিনে ALSAA sports centre এর Banquet হলরুমে অনুষ্ঠিত হলো আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকার ১ম বাৎসরিক ম্যাগাজিন প্রকাশনা উৎসব। উৎসবে উপস্থিত ছিলেন সারা আয়ারল্যান্ড থেকে আগত বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলওয়াত করে হাফেজ মোহম্মদ মুজদবা আলী ও হাফেজ রুহান রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই আইরিশ বাংলা টাইমস এর প্রধান সম্পাদক জনাব আব্দুর রহিম ভূই্ঁয়া পত্রিকাটির সম্পাদক মন্ডলীর সকল সদস্যদের এক এক করে মঞ্চে ডেকে আনেন এবং উপস্থিত অতিথিগন করতালি দিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান।
আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক মন্ডলীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন:
প্রধান সম্পাদক: আব্দুর রহিম ভূ্ঁইয়া,
বার্তা সম্পাদক: ওমর ফারুক নিউটন,
নির্ভাহী সম্পাদক: মশিউর রহমান,
সহকারী সম্পাদক: কবীর আহমেদ,
সোশ্যাল মিডিয়া সম্পাদক: শওকত আলী খান মাসুম।
উল্ল্যেখ IT সম্পাদক নাসির খান বাংলাদেশে অবস্থান করায় তিনি ম্যাগাজীন প্রকাশনা উৎসবে থাকরে পারেননি।
এর পর জনাব আব্দুর রহিম ভূ্ঁইয়া পত্রিকাটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যদের মঞ্চে ডেকে তাদের হতে একটি করে ম্যাগাজীন দিয়ে বরন করে নেন। উপদেষ্টা মন্ডলীর মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন:
জনাব মুহম্মদ মোস্তফা,
জনাব কাজী মোস্তাক আহমেদ ইমন,
জবাব শাহাদাত হোসেন,
জনাব মেহদী হাসান,
জনাব চুন্নু মাতবর,
জনাব মনিরুল ইসলাম মনির।
অনুষ্ঠানে প্রধান সম্পাদকের স্বাগত বক্তব্যের পর বাকি সম্পাদক গন বক্তব্য রাখেন। সম্পাদকগন তাদের বক্তব্যে বলেন আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকাকে ম্যাগাজিন প্রকাশনার মধ্য দিয়ে প্রিন্ট মিডিয়া নিয়ে আসতে পেরে তারা অনেক আনন্দিত। সম্পাদকগন আইরিশ বাংলা টাইমসের বিগত দুই বছরের কর্মকান্ড তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন এবং ম্যাগাজিন সর্ম্পকে তারা বলেন, এই ম্যাগাজিনে কমিউনিটির গত ২০২০ ও ২০২১ সালের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ গুলো সংযুক্ত করা হয়েছে এবং ছাপানো হয়েছে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত স্থানীয় কবি লেখকদের ছোটগল্প, কবিতা। এছাড়া ম্যাগাজিনে কমিউনিটি নির্ভর বিশেষ কলাম ও বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশেষ ব্যাক্তিদের শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে আর রয়েছে আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন নিয়ে তাদের সাফল্য গা্ঁথা। ২০২০ সালের লীভিং সার্ট শিক্ষার্থী ও জুনিয়র সার্ট শিক্ষার্থী নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছে এই ম্যাগাজিনে।
সম্পাদকগন বলেন এই ম্যাগাজিন কমিনিটির সম্পদ, কমিউনিটির ম্যাগাজিন এবং এই ম্যাগাজিন প্রতিবছর প্রকাশ করা হবে।
যেহেতু আগামিতে প্রতিবছর এই ম্যাগাজিন ছাপানো হবে তাই লিভিং সার্ট পরিক্ষার্থী বা তাদের পক্ষ থেকে গার্জিয়ানদের আইরিশ বাংলা টাইমসের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করার অনুরোধ করা হয়েছে।
আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক মন্ডলীর পর উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যগন এক এক করে বক্তব্য রাখেন। উপদেষ্টাগন তাদের বক্তব্যে বলেন এটাই প্রথম কোন পত্রিকা আয়ারল্যান্ডে প্রিন্ট মিডিয়ায় তাদের ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছে এই জন্য তারা আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদকদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যগন আইরিশ বাংলা টাইমসের ভবিষ্য উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন এবং সম্পাদকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন এবং তারা সব সময় সার্বিক সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
এর পর অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও শুভানুধ্যায়ীগন বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন:
সৈয়দ মোস্তাফিজুর রাহমান, ডাক্তার জিন্নুরাইন জাইগিরদার, ডাক্তার আরমান রহমান,তারেক সালাহউদ্দিন, আজিমুল হোসাইন আজিম, জামাল বাশির, আনোয়ারুল হক আনোয়ার,সৈয়দ আতিকুর রব, দিলিপ বরুয়া, হামিদুর নাসির, আব্দুল জলিল, জাকারিয়া প্রধান, নুরুল ইসলাম, কাজী শাহ আলম, জহিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আমির আলী, ফারুক সারোয়ার, সৈয়দ রেদোয়ান আহমেদ বাবু, মাসুদ শিকদার, আক্তার হোসাইন, মেসবাহুল আলম, আজম যুবাইদুল হক, হুমায়ুন কবীর, কাজী কবীর, কাজী সুমন রহমান সাজিলা চৌধুরী, শায়লা শারমীন ও আরো বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত অনেকেই।
বক্তারা প্রত্যেকেই ম্যাগাজিন নিয়ে ভূয়সী প্রসংশা করেন এবং তারা এই ম্যাগাজিন প্রতিবছর প্রকাশ করার জন্য আইরিশ বাংলা টাইমসের প্রতি আহবান রাখেন তারা আরও বলেন আয়ারল্যান্ডে এই ম্যাগাজিন বাংলাদেশীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে এবং আমাদের কমিউনিটি আরো সমৃদ্ধশালী হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিগন প্রত্যেকে অনুষ্ঠান শেষে ম্যাগাজিন হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরেন।ম্যাগাজিনটি সংগ্রহ করতে আইরিশ বাংলা টাইমসের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্ট : ডাবলিনের নির্বাচিত কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ ইমন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে ,গতরাতে কাউন্সিল মিটিং এ ডাবলিনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মিনার নির্মানে আমার দেওয়া প্রস্তাব সকল কাউন্সিলর দের ভোটে পাশ হয়েছে । প্রস্তাবের বিপক্ষে কেউ বিরোধীতা করেনি । এখন শুধু মেমোরিয়াল কমিটি থেকে অনুমোদন হলেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত ‘ শহীদ মিনার ‘ আমরা পাবো ।
তিনি আরো বলেন অনুমোদন হয়ে গেলে ডাবলিনে শহীদ মিনার বা এর আদলে কিছু একটা নির্মান করতো আর কোন বাঁধা থাকবে না । খুব তাড়াতাড়িই সুখবর আসবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন ।তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন ।
ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে শরণার্থী গ্রহণে পশ্চিমাদের চরম বৈষম্য ও দ্বৈতনীতির চরম বহিঃপ্রকাশ ঘঠেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের সময় যতই গড়াচ্ছে বিশ্ব মিডিয়ায় এর চিত্র ততই প্রকট হয়ে উঠছে।
পশ্চিমা মিডিয়াগুলো ইউক্রেনের শরণার্থীদের যেভাবে দেখছে, তাদের সাথে যে ভাষায় কথা বলছে, সেটির মাধমে ইউরোপিয়দের ভেতরকার কদর্য বর্ণবাদী চেহারা বেরিয়ে এসেছে। সিরিয়ান মুসলিম ও ইউক্রেনিয়ান খ্রীষ্টান শরণার্থীদের পশ্চিমারা কখনো এক চোখে দেখে না এটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে এখন। কারণ সিরিয়ান শরণার্থীরা বাদামী চামড়ার, অ-ইউরোপীয় ও মুসলিম। এর জনই মুসলিম শরণার্থীরা ইউরোপীয়ানদের কাছে অবহেলিত।
পক্ষান্তরে ইউক্রেনের শরণার্থীরা আরব শরণার্থীদের চেয়ে আলাদা। কারণ, তারা সাদা চামড়ার মানুষ। তাদের চোখ নীল ও চুল সোনালি রঙের। ইইক্রেনের শরণার্থীরা সেক্যুলার । তাই ইউক্রেনের শরণার্থীদের জন্য ইউরোপের দরজা খুলে দিতে হবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ইউক্রেনের শরণার্থীদের দুই বাহ বলে ফুল দিয়ে সাদরে গ্রহণ করছে কিন্তু সিরিয়া,ইরাক,লিবিয়া, আফগানিস্তানের শরণার্থীদের গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা যে আচরণ করেছে তাহা মানুষ পশুর সাথেও করে না।
ইউক্রেনের শরণার্থীদের গ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যত ইউরোপ ও পশ্চিমা বিশ্ব প্রাধান্য দিচ্ছে ধর্ম, সাদা চামড়া,ভাষা তথা বর্ণবাদ সহ অনেক কিছুকে। মানুষ যেখানে প্রধান পরিচয় নয় তাদের কাছে। সিরিয়া ও ইরাক সহ মুসলিম দেশের লাখ লাখ মানুষ দিনের পর দিন, মাসের পর মাস শত শত মাইল পথ হেটে, সমুদ্র পথ পাড়ি দিয়ে তারা ইউরোপের করুণা পায়নি। তাদের অনেককে দূর দূর করে তাড়িয়ে দ্য়ো হয়েছে। ছোট ছোটো ডিঙি নৌকা দিয়ে যখনা এই সব শরণার্থীরা বড় জাহাজে উঠার চেষ্টা করেছেন , তখন তাদের উঠতে দেওয়া হয়নি। পানিতে পড়ে, বরফে ডুবে তাদের অনেকে মারা গেছেন।ছোটো শিশুর লাশ সাগরে পানিতে ভেসে থাকতে দেখা গেছে।
কিন্তুু ইউক্রেনের শরণার্থীদের পোলান্ড সহ বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষ সীমান্তে অপেক্ষা করছে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। সীমান্ত পারি দেবার সাথে সাথে তাদের জন্য খাদ্য ও উষ্ণ আশ্রয়রে ব্যবস্হা করছে ইইরোপের বিভিন্ন দেশ। কারণ, তাদের চামড়া সাদা ও ধর্ম খ্রীষ্টান। তাদের জন্য সীমান্তে প্রস্তুুত রাখা হয়েছে যানবাহন । খোলা হয়েছে বিভিন্ন তথ্য কেন্দ্র। এরপর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিরাপদ স্হানে।
ব্রিটেন ইউক্রেন শরণার্থীদের জন্য চালু করেছে ভিসা স্কীম কার্যক্রম। আয়ারল্যান্ড সরকার কয়েক হাজার ইউক্রেন শরণার্থীদের গ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েল ইহুদী শরণার্থীদের বিমানে করে ইসরায়েলে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের নাগরিকত্ব দিয়ে স্হায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্হা করা হচ্ছে। অথচ লাখ লাখ আরব শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলেনি ইউরোপ।
যারা বিভিন্ন উপায়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন তাদের চড়তে দ্য়ো হয়নি যানবাহনে। অনেককে গ্রেফতার নির্যাতন সহ করা হয়েছে নিষ্টুর নির্যাতন। পোলান্ড থেকে সিএনএন এর একজন সাংবাদিক লিখেছেন, ইউক্রেনের শরণার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পাশ্ববর্তী সব দেশের সীমান্ত। সীমান্ত পার হলে তাদের কাছে বিনয়ের সাথে জানতে চাওয়া হচ্ছে, তোমাদের জন্য কি করতে পারি? উল্লেখ্য যে ২০১৫ সালে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের রেল স্টেশনের কাছে কোনো রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি আরব শরণার্থীদের। তখন পশ্চিমা বিশ্বের অনেক মানুষ শরণার্থী বিরোধি স্লোগান দিয়েছিল।
পশ্চিমা সভ্যতার দাবীদার কিছু মানুষের কাছে যুদ্ধ এবং তার বহুমাত্রিক বর্বরতা কোনো সমস্যা নয় যদি সেটা হয় মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া বা আফ্রিকার মত অন্ধকারছন্ন জায়গায়। কিন্তুু যুদ্ধের শিকারী যদি হয় সাদা চামড়ার মানুষ, যাদের চোখ নীল, চুল সোনলি এবং আপাদমস্তক ইউরোপিয় হয়,তখন যুদ্ধ তাদের কাছে ভয়াবহ বর্বরতার প্রতিক হয়ে উঠে। আর তাদের সাহায্যে সবাই তখন এগিয়ে আসে। কিন্তুু উইঘুরের মুসলিম কিংবা কাশ্মিরে ভারতীয় আগ্রাসন নিয়ে কাউকে কথা বলতে দেখা যায় না। ১১ বছরের যুদ্ধে সিরিয়া ধ্বংস হয়ে গেছে। ৭০ বছর ধরে নিরীহ ফিলিস্তিনির উপর দখলদার ইসরায়েলির বর্বরতা নিয়ে পশ্চিমারা নিরব। সেখানে গণহত্যা হয়েছে, ফিলিস্তিনিরা ভূমি হারাচ্ছে কিন্তুু তাদের উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, এই সব বিষয়ে পশ্চিমা বিশ্বের মনযোগ এত কম কেন? ইরাক ধ্বংসের কারিগরদের উপর কি কোনো নিষেধাজ্ঞা এসেছিল?
আসলে পশ্চিমারা সব সময় নিজেদেরকে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচয় দেবার চেষ্টা করে। তাদের কাজ হল, ভ্লাদিমির পুতিন ও তার মিত্রদের অমানবিক এজেন্ডার বিরোধিতা করা। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত তৈরী করতে সব কিছু করা। এই কাজ করতে গিয়ে তারা হয়তো ভাবেন পারেন যে, ইতিহাসের সঠিক পক্ষে তারা অবস্হান করছেন।
কিন্তুু বাস্তবতা হলো বৈশ্বিক আদিপত্যবাদের কাঠামোর যে ধ্যান-ধারণা গড়ে উঠেছে, সেটা তাদের মত বর্ণবাদী অনুধাবনের মানুষেরা তৈরী করেছেন। আর এই কাঠামোর ভিতর দিয়ে শক্তিশালী হয়েছেন পুতিনের মত নেতারা।তাই আদিপত্যবাদের এই কঠিামো যতদিন না পর্যন্ত ভেঙে ফেলা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত কখনো রাশিয়া, কখনো ন্যাটো বা কখনো আমেরিকা ছোটো ছোটো দূর্বল দেশগুলোর উপর নানা অজুহাতে তাদের আগ্রাসন অব্যাহত রাখবে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দ্য হেনলি অ্যান্ড পার্টনারস সম্প্রতি শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকা প্রকাশ করে। এতে আয়ারল্যান্ড পর্তুগালের সাথে যৌথভাবে রয়েছে ৫ নাম্বারে এবং বাংলাদেশ ৫ ধাপ এগিয়ে লিবিয়া ও কসভোর সাথে রয়েছে ১০৩ নাম্বারে।
বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরা আগাম ভিসা ছাড়া ৪০টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন এবং আইরিশ পাসপোর্টধারী অগ্রিম ভিসা ছাড়া যেতে পারবেন ১৮৭ টি দেশে।
বর্তমানে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট হচ্ছে জাপানের। জাপানের সঙ্গে শীর্ষে রয়েছে সিঙ্গাপুরও। দেশ দুটির নাগরিকেরা আগাম ভিসা ছাড়াই ১৯২টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। এরপর যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়া। এই দুই দেশের পাসপোর্ট দিয়ে ভিসা ছাড়া ১৯০টি দেশে যাওয়া যায়। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই যুগপৎভাবে রয়েছে ৬ নাম্বারে।
পাসপোর্ট সূচকের সবচেয়ে শেষে রয়েছে আফগানিস্থান যার অবস্থান ১১১।
২৬ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে এক অনন্যসাধারণ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে শুরু হয় স্বাধীনতার সংগ্রাম। যার প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতি বছরই এই দিবসটি মর্যাদার সহিত স্মরণ করা হয় ও তাৎপর্যপূর্নভাবে পালন করা হয়।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বাহিরেও অনেক দেশে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও ভাষা দিবসকে পালন করা হয়ে থাকে ঘটা করে। আয়ারল্যান্ড উঠতি বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি দেশ। এখানে ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে বাংলাদেশিদের সংখ্যা। সে সুবাধে এখানেও ধীরে ধীরে পালিত হচ্ছে বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক ও জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো। তবে সবই ছিল সবাধারনত সবার ব্যাক্তিগত উদ্যেগে, স্বল্প পরিসরে।
এবারই প্রথম আয়ারল্যান্ডে উদযাপিত হবে সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান। তারই প্রেক্ষিতে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে প্রশাসনিক ভবন। লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের উদ্যেগে এবং প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় করা হবে এই মহিমান্বিত আয়োজন।
লিমেরিক শহরের প্রাণকেন্দ্রে, শ্যানন নদীর তীর ঘেঁষে লিমেরিক কাউন্সিল অফিসকে সাজানো হবে বাংলাদেশের পতাকা লাল সবুজের রঙে। ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে সজ্জিত করা হবে লাল সবুজের আলোকসজ্জায়। যা দেখে যে কোন বাঙ্গালি হৃদয়ে পুলক তৈরি করবে।
লিমেরিক সিটি কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার বলেন, ”এখন হয়ত শুধু লিমেরিক দিয়ে শুরু কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে আয়ারল্যান্ডের প্রাণকেন্দ্রগুলাতেও এমন আয়োজন সম্ভব হবে”। বলা বাহুল্য, জনাব আজাদ তালুকদারের অনুরোধক্রমে লিমেরিক সিটি এবং কাউন্টি কাউন্সিল এই উদ্যেগ গ্রহণ করতে সম্মতি প্রকাশ করে, যা বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের বিষয়। এরই মাঝে উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্তের।
আশা করি এমন দিনকে উদযাপন করতে ও প্রাণবন্ত করতে সবাই ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় লিমেরিক উপস্থিত থাকবেন।
হা রে রে রে আসছে তেড়ে উগ্র বালক পুতিন রে পায়রার খোঁপে ঢুকল দেখো রাক্ষুসে ওই শকুন যে, সেই কবে যে উধাও হল মঙ্গোলিয়ান, বার্বারিয়ান প্রেতাত্মা বেশে উঠল ভেসে বর্বরিও রাশিয়ান, চুপটি করে ঘুপটি মেরে বসে আছে আম্রিকান রক্তের দাগ যে তারও হাতে বলি হল ইরাক, আফগান; ভারত চায়না, চায়নাও চায়না, দিতে চায়না মৌচাকে ঢিল ইউরোপও ভাবছে বসে এ যেন এক মস্ত ডিল, চুনোপুঁটি দেশগুলো সব ভেবে ভেবে দিশেহারা কার পক্ষে গিয়ে শেষে কার যে লাগে আঁতে ঘা।
কেউ কারো নয় এই ধরাতে বুঝল এবার ইউক্রেন না থাকলে গায়ের জোর স্বাধীনতাও যে মূল্যহীন, আঁতকে উঠে বোমার আঘাতে অবুঝ শিশু মাঝ রাতে ভুল কি সে করল শেষে জন্ম নিয়ে এ ধরাতে।
বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের নব নির্বাচিত কার্যকরী কমিটির প্রথম সাধারন সভা সম্পন্ন।
গতকাল ৮ মার্চ মঙ্গলবার বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের ২০২২ ও ২০২৩ সালের জন্য নব নির্বাচিত কার্যকরী কমিটির প্রথম সাধারন সভা ডাবলিন ক্লোনডালকিনের IBIS হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। জনাব মশিউর রহমানের কোরআন তিলোয়াতের মধ্য দিয়ে দুপুর দুটায় সভা শুরু হয়।
সভাটি সভাপতিত্ব করেন BSAI এর সভাপতি জনাব চুন্নু মাতবর। সভা পরিচালনা করেন সাধারন সম্পাদক জনাব হাবিবুর রহমান।
সভার শুরুতে সভাপতির স্বাগত বক্তব্যের পর নতুন কার্যকরী কমিটি তাদের ২০২২ সালের একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়ন করে। তাদের কর্ম পরিকল্পনা নিন্মরূপ:
১. সংগঠনের IT সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ এই দুইটি পদ শূন্য থাকায় কমিটির সভার শুরুতেই সর্বসম্মতি ক্রমে IT পদে জনাব মশিউর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ পদে জনাব আলমগীর হোসেনকে নিযুক্ত করা হয়।
২. কর্ক, কেরী ও গলওয়ে এই তিনটি কাউন্টিতে BSAI এর কাজের গতি বাড়াতে কার্যকরী সদস্য নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩. উপদেষ্টা পরিষদের পরামর্শ নিয়ে BSAI এর গঠনতন্ত্রে কিছু পরিবর্তন পরিবর্ধন করা যায় কিনা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বিষয়ে সর্ব সম্মতি ক্রমে কার্যকরী কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, পরামর্শ নেয়া যাবে তবে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে কার্যকরী কমিটি।
৪. উপদেষ্টা পরিষদের প্যানেল চুড়ান্ত করতে কমিটি আরও কিছু সময় নিতে চাচ্ছে তবে প্রতিটি কাউন্টি থেকে ২ থেকে ৩ জন উপদেষ্টা এর বেশী নয় এবং ডাবলিন যেহেতু বড় কাউন্টি তাই ডাবলিন থেকে তিনের অধিক উপদেষ্টা নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
৫. ওয়েবসাইট সহ IT পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় সভাপতি, সাধারন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকে।
৬. যত দ্রুত সম্ভব একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে তাগাদা দেওয়া হয়।
৭. আগামী মে মাসের মাঝামাঝি সময় ফুটবল,ক্রিকেট ও ব্যাডমিন্টন টিম নিয়ে ৩ দিনের ট্যুরে ইংল্যান্ড যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
৮. চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সাপ্তাহে BSAI এর উদ্যেগে সর্ব সাধারনের জন্য বনভোজনের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
৯. জুলাই মাসের মধ্যভাগে বড়দের ফুটবল টুর্ণামেন্ট হবে এ ব্যাপারে সকলে মতামত দেন।
১০. আগষ্ট মাসের মধ্যে অনূর্ধ ১৮ ফুটবল টুর্ণামেন্ট হবে।
১১.জুন মাসে বড়দের ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট করার সিদ্ধান্ত হয়।
১২. ২০২২ সালের শেষের দিকে নভেম্বরে ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্টের দিন নির্ধারিত করতে সিদ্ধান্ত হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব কামাল হোসেনের প্রস্থাবনায় ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে BSAI এর পরিবারের সকল সদস্য, কাউন্সিলর, উপদেষ্টা মন্ডলী ও কার্যকরী কমিটিকে নিয়ে একটি (Fundraising) তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি Gala dinner আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সব শেষে সামনের দিন গুলিতে BSAI কে আরও কার্যকরী আরও শক্তিশালী করে কমিউনিটিতে খেলাধুলার চর্চাকে প্রসারিত করার প্রত্যয় নিয়ে নতুন কার্যকরী কমিটির প্রথম সভাটি শেষ হয়।
আজ রবিবার ৬ মার্চ ২০২২ থেকে আর দরকার হবেনা আয়ারল্যান্ডে অবতরণকারী যাত্রীদের প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফর্ম। বিগত অনেকদিন থেকে প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফর্ম একটি অত্যাবশ্যকীয় আইন ছিল ভ্রমণে।
আয়ারল্যান্ডে ধীরে ধীরে সব কোভিড সংক্রান্ত নিয়ম তুলে দেয়া হচ্ছে, এর মাঝে যোগ হল প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফর্ম এর উত্তোলন। প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফর্ম নিয়ম তোলার পেছনে আরেকটা কারণ হচ্ছে, যুদ্ধ কবলিত দেশ ইউক্রেন থেকে আগত যাত্রীরা যাতে কোন ধরনের জটিলতায় না পড়ে।
নেগেটিভ পিসিআর কিংবা ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট এর নিষেধাজ্ঞা আগেই তুলে নেয়া হয়েছিল। প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফর্ম তোলার পর আর কোন নিষেধাজ্ঞাই অবশিষ্ট রইলনা।
তবে এখনো বহির্গামী যাত্রীদের গন্তব্যস্থল এর উপর নির্ভর করে পিসিআর টেস্ট কিংবা কোভিড সার্টিফিকেট দরকার হতে পারে। অনেক দেশে এখনো ভ্রমণে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আজ শুক্রবার শাবান মাসের ১ তারিখ ১৪৪৩ হিজরি। মাসটি পেরুলেই শুরু হবে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। রমজানের আগে শাবান মাসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামগণ কী আমল ও ইবাদত করতেন?
সুন্নাহর আলোকে শাবান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো জেনে নেয়া খুবই জরুরি। এ মাসে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ৪টি আমল বা কাজ। যা আমলে নববি বা সুন্নাতি আমল হিসেবে বিবেচিত।
রমজান মাসের আমলগুলো ঠিকভাবে উদযাপন করতে শাবান মাসে ৪টি আমল বেশি বেশি করা খুবই জরুরি। শাবান মাসে এ আমলগুলো যথাযথভাবে আদায় করতে পারলেই রমজানের ইবাদতগুলো করা সহজ হবে। পরিপূর্ণ ফজিলত ও বরকত লাভ সম্ভব হবে। তাহলো-
>
বেশি বেশি রোজা রাখা।
হজরত উসামা বিন যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! শাবান মাসে আপনাকে যত রোজা রাখতে দেখি, অন্য মাসে এতো পরিমাণ রোজা রাখতে দেখিনি। অর্থাৎ আপনি কেন এ মাসে এতবেশি রোজা রাখেন?রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটি এমন একটি মাস। যা রজব এবং রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুইটি মাসের মধ্যে পড়ে। আর অধিকাংশ মানুষ এ মাসটি সম্পর্কে গাফেল থাকে। অর্থাৎ এ মাসটি সম্পর্কে তারা বেখবর থাকে, উদাসিন থাকে। যার ফলে তারা ভালো আমল করে না। তারা ভাবে যে, রমজান তো আছেই।’ (নাসাঈ)
মানুষ যে সময়টিতে আল্লাহকে স্মরণ করে না, সে সময়টিতে আল্লাহকে স্মরণ করায় রয়েছে অনেক ফজিলত ও মর্যাদা। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা পালন করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করতেন। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ আমলটি উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য অন্যতম শিক্ষা ও অনুপ্রেরণা।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘শাবান মাসে বেশি রোজা রাখার অন্য একটি কারণ হলো- এ মাসে আল্লাহর কাছে মানুষের আমলনামাগুলো উপস্থাপন করা হয়। আর আমি চাই রোজা থাকা অবস্থায় আমার আমলনামা আল্লাহর কাছে উপস্থাপন করা হোক।’
এখন প্রশ্ন থাকতে পারে যে, কখন, কিসের ভিত্তিতে মানুষের আমলনামা আল্লাহর কাছে পৌছানো হয়?হ্যাঁ, ৩ অবস্থায় মানুষের আমলনামা আল্লাহর কাছে পৌছানো হয়। আর তাহলো– দৈনন্দিন ভিত্তিতে।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ফেরেশতারা প্রতিদিন এবং রাতে পালাবদল করে তোমাদের (মানুষের ) কাছে আসে। আসরের সময় এবং ফজরের সময় তারা একত্রিত হয়। অর্থাৎ আসরে একদল আসে আরেকদল চলে যায়। আবার ফজরের সময় একদল আসে আর আরেকদল চলে যায়। এভাবে ফেরেশতারা দৈনন্দিন ভিত্তিমে মানুষের আমল সকাল-বিকাল আল্লাহর কাছে উপস্থাপন করে থাকে।
আল্লাহ তাআলা তো বান্দার সব অবস্থাই জানেন। তারপরও তিনি সকাল-সন্ধ্যার এসব ফেরেশতাকে তিনি প্রশ্ন করেন- তোমরা আমার বান্দাদের কী অবস্থায় রেখে এসেছ? তখন ফেরেশতারা বলেন, আমরা সকাল-সন্ধ্যায় গিয়ে দেখেছি বা দেখে এসেছি, তারা নামাজ পড়ে।
– সাপ্তাহিক ভিত্তিতে।আর সাপ্তাহিক ভিত্তিতে মানুষের আমলনামাগুলো প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে আল্লাহর কাছে পৌছানো হয়।
– বছরের ভিত্তিতে।আর বাৎসরিক ভিত্তিতে শাবান মাসে মহান আল্লাহর কাছে মানুষের আমলনামাগুলো পৌছানো হয়।
এ কারণেই মানুষের উচিত, শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা পালন করা। বিশেষ করে যদি কেউ সাপ্তাহিক ও মাসিক নির্ধারিত রোজাগুলোও পালন করে তাতেও সহজে ১০-১১টি রোজা পালন করা হয়। তাই শাবান মাসে এ রোজাগুলো গুরুত্বসহকারে পালন করা জরুরি।
তছাড়া রমজন একটি ফজিলত ও মর্যাদার মাস। এ মাসজুড়ে রোজা পালন ফরজ ইবাদত। রমজানজুড়ে ফরজ রোজা পালনে যাতে কারো মাঝে অলসতা কাজ না করে, রোজা যেন সবার জন্য সহজ হয়ে যায়; সে জন্য রোজার প্রশিক্ষণ হিসেবে শাবান মাসে রোজা পালন করাও উত্তম কাজ। আর তাতেই মুমিনের ভাগ্যে রমজানের পরিপূর্ণ রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত মিলবে।
তাছাড়া রোজা একটি অসাধারণ ইবাদত। কেননা রোজা রাখা অবস্থায় কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে সে জান্নাতে যাবে। হজরত হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, কেউ যদি রোজা রাখা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তবে সে জান্নাতে যাবেন।
এ ছাড়ার রোজার ফজিলত বর্ণনায় আরো অনেক হাদিসে রয়েছে। যার বর্ণনা অনেক চমৎকার। তাহলো– রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রোজা রাখবেন। কোনো ব্যক্তি ৭০ বসন্তজুড়ে যত পথ অতিক্রম করতে পারবে; ঠিক ওই বান্দাকে জাহান্নাম থেকে আল্লাহ তাআলা ততটুকু পথের দূরত্বে হেফাজতে রাখবেন। অর্থাৎ রোজার ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু দূরত্বে রাখবেন।
– হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ মর্মে জিজ্ঞাসা করলাম। হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলুন; যে আমল করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের অনেক কল্যাণ দান করবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি রোজা রাখ। অন্য কোনো আমল রোজার মতো হতেই পারে না।’
>
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা
।সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন এবং প্রসিদ্ধ ইমামগণ শাবান মাস আসলেই বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করতেন। কুরআন নাজিলের মাসের বরকত লাভে এ মাসে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করায়ও রয়েছে ফজিলত ও মর্যাদা।
>
বেশি বেশি সাদাকাহ করা।
অনুরূপভাবে সালফে সালেহিনগণ এ মাসজুড়ে বেশি বেশি দান-সাদকাহ করে রমজানের দান-সাদকার অভ্যাস নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলতেন। যাতে রমজান জুড়ে দান-সাদকায় অতিবাহিত করা যায়। আবার গরিব অসহায়দের রমজানের কষ্ট দূর করা যায়।
>
বেশি বেশি ইসতেগফার করা।
রমজানে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের জন্য শাবান মাস থেকেই সালফে সালেহিনগণ বেশি বেশি ইসতেগফার করতেন। যা মানুষকে রমজানজুড়ে আমলে উদ্যোগী করে তোলে।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শাবান মাস জুড়ে নিজেদের ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রাখা। রমজানের প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাবান মাসজুড়ে উল্লেখিত আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
(ABAI) All Bangladeshi 🇧🇩Association of Ireland 🇮🇪 এর নির্বাচন ২৬শে জুন ২০২২
বহুল প্রতীক্ষিত ABAI এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবছর ২৬শে জুন২০২২।
আজ ১মার্চ ডাবলিনের Red Cow হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো ABAI এর নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরী যৌথসভা। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার লিমেরীক শহরের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার এবং উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা জনাব মুহম্মদ মোস্তফা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জনাব সাইফুল ইসলাম, জনাব চুন্নু মাতবর, জনাব মনিরুল ইসলাম, জনাব শাহাদাত হোসেন, জনাব আব্দুল জলিল, জনাব মুহাম্মদ তাউস মিয়া তালুকদার, জনাব আক্তার হোসেন, জনাব মুহাম্মদ জাকারিয়া প্রধান, জনাব আব্দুল মান্নান মান, জনাব কামাল হোসেন এবং আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা ও নির্বাচন কমিশনের বেশ কয়েকজন ব্যাক্তিবর্গ।
আজকের সভায় নির্বাচন কমিশন থেকে যে সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেই গুলি নিন্মে তুলে ধরা হলো:
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৬ শে জুন ২০২২
মোট ২৭ টি পদে প্রতিদন্ধিতার জন্য নমিনেশন দেওয়া হবে বলে কমিশন ঘোষনা দেন এবং এবারের নির্বাচন একটু ভিন্ন আঙ্গিকে অনুষ্ঠিত হবে বলে কমিশন থেকে বলা হয়। এবারের নির্বাচনে কোন প্যানেল নয় বরং যে কেউ সরাসরি যে কোন পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন বলে কমিশনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এই সিদ্ধান্তটি কমিশনের গত সভাতেই নেয়া হয়েছিল বলে জানানো হয়।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হবে।
নমিনেশন ফরম বিক্রয় শুরু হবে ঈদের পর ১৫ই মে ২০২২ এবং নমিনেশন ফরম দাখিলের শেষ তারিখ ২২শে মে ২০২২।
প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থিদের জন্য নির্বাচনী কার্যপ্রনালী বিধি শিগ্রই প্রনয়ন করে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে আজকের সভায় জানানো হয়।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য এবং ভোটার তালিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশন ২৬শে জুন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কাজ করে যাবেন বলে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্য ভোটার তালিকায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটারের নাম অর্ন্তভুক্ত করা।
আপাতত সারা আয়ারল্যান্ডে ১০টি কেন্দ্রে একই দিনে একই সময়ের মধ্যে ভোট গ্রহন করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয় তবে প্রয়োজন হলে ভোটারের আনুপাতিক হারে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই দশটি কেন্দের মধ্যে রয়েছে ডাবলিন, কর্ক, গলওয়ে, লিমেরীক, কার্লো, লেটারকেনী, মোনাহান, কাউন্টি কেরী।
প্রতিটি কেন্দ্রে ৪জন করে মোট ৪০ জন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাগন কাজ করবেন। সাথে রাখা হবে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গকে এবং থাকবেন প্রতিদন্ধি প্রার্থীদের এজেন্টবৃন্দ। নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রগুলিতে প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবেন বলে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়।
এবারের নির্বাচনের বাজেট ধরা হয়েছে আনুমানিক ১০, ০০০/- ইউরো। নির্বাচন কমিশন আশা করছেন সকলের সহযোগীতায় এই বাজেটের মধ্যেই তারা নির্বাচন সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।
আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকার প্রতিনিধির সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার লিমেরীক শহরের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদারের সাথে টেলিফোনে কথা হয়, তিনি বলেন এই নির্বাচনে সকল বাংলাদেশীরা যেন ভোটার তালিকায় তাদের নাম রেজিষ্ট্রি করেন, তাহলেই একটি সুষ্ঠ সুন্দর সতস্ফুর্ত নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, “কমিউনিটির প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিটি মানুষকে তাদের নিজ দায়িত্বে ভোটার হওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে এবং আমাদের সকলকে দায়িত্ব নিতে হবে নিজেদের পছন্দ মত নেতার হাতে ভোটের মাধ্যমে ABAI এর নেতৃত্ব তুলে দেওয়া।’
তবে এটা ঠিক আমরা যদি নিজেরাই ভোটার না হই আর যদি মুষ্টিমেয় ভোটারের ভোটে অযোগ্য ব্যক্তির হাতে ABAI এর নেতৃত্ব চলে যায় তখন আমাদের আফসোস করা ছাড়া কিছুই বলার থাকবে না। বহু বছর পর আবারও ABAI এর নির্বাচন হচ্ছে তাই আসুন সবাই ভোটার হই।
তিনি মনে করেন এই বোমার বিস্ফোরণে ৮০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত এলাকায় এর প্রভাব পড়বে। এর আঘাতে প্রায় ৩৩৭,৭০০ জনের মত মানুষের জীবন যাবে এবং ৪৮২,২৫০ জনের মত মানুষ আহত হবেন যদি এটি ডাবলিনে আঘাত হানে।
এই বিশাল জার বোমা – এখন পর্যন্ত ডিজাইন করা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্র । এর প্রভাবে আয়ারল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। বিস্ফোরণের ধ্বংসযজ্ঞে অনুমানিক ১,০৯৬,৯৭০ জন প্রাণ হারাবে, এবং ৬১১,৭৯০ জন আহত হবে।
উত্তরে কাউন্ট্রি ডাউন,কাউন্ট্রি ওয়েক্সফোর্ড,দক্ষিণে কাউন্টি অফালি এবং কাউন্ট্রি লংফোর্ডের মতো অঞ্চলগুলোতে বিস্ফোরণের শক্তিশালী প্রভাব পড়বে।
উক্ত তথ্যে বলা হয়েছে ৬ কিলোমিটারের মধ্যে সবকিছু
ভস্মীভূত হয়ে যাবে।
এর বিধ্বংসী ক্ষমতা কতঠুকু হতে পারে,জেনে নেওয়া যাকঃ
#বিস্ফোরণের ৩২ কিলোমিটারের মধ্যের অঞ্চলগুলো যেমন– বালব্রিগগান, নাস এবং গ্রেস্টোনস সহ – বেশিরভাগ আবাসিক এলাকার ভবন ধসে পড়বে। এবং এর আঘাতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটবে।
#বিস্ফোরণের ৭৩ কিমি দূরের অঞ্চলগুলো – যেমন কিংসকোর্ট, পোর্ট আর্লিংটন এবং গোরি – তৃতীয় ডিগ্রি ক্ষয়ক্ষতি হবে।
#বিস্ফোরণের ৯১ কিলোমটিারের মধ্যে অঞ্চলগুলো যেমন – নিউরি, টুলামোর এবং ফার্নের মতো এলাকার মানুষেরা আহত হবেন। তথ্যে বলা হয়েছে যে, উক্ত অঞ্চলগুলোতে শক্তিশালী বিস্ফোরণের আঘাতে কাঁচের জানালাগুলো ভেঙে যাওয়ার ফলে আশেপাশের মানুষের জন্য মারাত্মক আঘাতের কারণ হতে পারে।
এই অঞ্চলগুলো বাহিরে যাঁরা আছেন, তাঁরা অনেকটা
নিরাপদ।
বর্তমানে আমেরিকার কাছে ৪,০১৮টি , যুক্তরাজ্যের ২২৫টি টি এবং রাশিয়ার কাছে ৬,২৫৭টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। ।ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ পারমাণবিক অস্ত্রের তথ্য (ICANW) অনুসারে, যদি বিশ্বের মওজুত পারমাণু অস্ত্রের ১% বব্যহার করা হয়, তাহলে এই বিশ্ব বিরাণ ভূমিতে পরিনত হবে। এবং প্রায় দুই বিলিয়ন মানুষ পারমাণবিক দুর্ভিক্ষের অনাহারে পড়তে পারে। পরমাণু হামলার ক্ষয়ক্ষতি!
তিনি মনে করেন এই বোমার বিস্ফোরণে ৮০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত এলাকায় এর প্রভাব পড়বে। এর আঘাতে প্রায় ৩৩৭,৭০০ জনের মত মানুষের জীবন যাবে এবং ৪৮২,২৫০ জনের মত মানুষ আহত হবেন যদি এটি ডাবলিনে আঘাত হানে।
এই বিশাল জার বোমা – এখন পর্যন্ত ডিজাইন করা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্র । এর প্রভাবে আয়ারল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। বিস্ফোরণের ধ্বংসযজ্ঞে অনুমানিক ১,০৯৬,৯৭০ জন প্রাণ হারাবে, এবং ৬১১,৭৯০ জন আহত হবে।
উত্তরে কাউন্ট্রি ডাউন,কাউন্ট্রি ওয়েক্সফোর্ড,দক্ষিণে কাউন্টি অফালি এবং কাউন্ট্রি লংফোর্ডের মতো অঞ্চলগুলোতে বিস্ফোরণের শক্তিশালী প্রভাব পড়বে।
উক্ত তথ্যে বলা হয়েছে ৬ কিলোমিটারের মধ্যে সবকিছু
ভস্মীভূত হয়ে যাবে।
এর বিধ্বংসী ক্ষমতা কতঠুকু হতে পারে,জেনে নেওয়া যাকঃ
#বিস্ফোরণের ৩২ কিলোমিটারের মধ্যের অঞ্চলগুলো যেমন– বালব্রিগগান, নাস এবং গ্রেস্টোনস সহ – বেশিরভাগ আবাসিক এলাকার ভবন ধসে পড়বে। এবং এর আঘাতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটবে।
#বিস্ফোরণের ৭৩ কিমি দূরের অঞ্চলগুলো – যেমন কিংসকোর্ট, পোর্ট আর্লিংটন এবং গোরি – তৃতীয় ডিগ্রি ক্ষয়ক্ষতি হবে।
#বিস্ফোরণের ৯১ কিলোমটিারের মধ্যে অঞ্চলগুলো যেমন – নিউরি, টুলামোর এবং ফার্নের মতো এলাকার মানুষেরা আহত হবেন। তথ্যে বলা হয়েছে যে, উক্ত অঞ্চলগুলোতে শক্তিশালী বিস্ফোরণের আঘাতে কাঁচের জানালাগুলো ভেঙে যাওয়ার ফলে আশেপাশের মানুষের জন্য মারাত্মক আঘাতের কারণ হতে পারে।
এই অঞ্চলগুলো বাহিরে যাঁরা আছেন, তাঁরা অনেকটা
নিরাপদ।
বর্তমানে আমেরিকার কাছে ৪,০১৮টি , যুক্তরাজ্যের ২২৫টি টি এবং রাশিয়ার কাছে ৬,২৫৭টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। ।ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ পারমাণবিক অস্ত্রের তথ্য (ICANW) অনুসারে, যদি বিশ্বের মওজুত পারমাণু অস্ত্রের ১% বব্যহার করা হয়, তাহলে এই বিশ্ব বিরাণ ভূমিতে পরিনত হবে। এবং প্রায় দুই বিলিয়ন মানুষ পারমাণবিক দুর্ভিক্ষের অনাহারে পড়তে পারে।
প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জিতলেও তৃতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে বড় ব্যবধানের পরাজয় বরণ করেছে বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ম্যাচে আফগানরা জিতেছে ৭ উইকেটে।
প্রতিরোধহীন পরাজয়ে সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ
সাগরিকায় টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪৬.৫ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯২।
যদিও আগের ম্যাচের মত এই ম্যাচেও উজ্জ্বল ছিলেন লিটন দাস। যদিও সতীর্থদের যোগ্য সমর্থন পাননি। ১১৩ বলে ৭টি চারে গড়া তার ৮৬ রানের ইনিংস থামলে খেই হারিয়ে ফেলে দল। অন্যান্যদের মধ্যে সাকিব আল হাসান ৩৬ বলে ৩০ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৫৩ বলে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন।
আফগানদের পক্ষে রশিদ খান তিনটি ও মোহাম্মদ নবী দুটি উইকেট শিকার করেন। বাংলাদেশের ইনিংসে তিনটি উইকেট ছিল রান আউট।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই আফগানরা পায় ৭৯ রান। ৪৯ বলে ৩৫ রান করে রিয়াজ হাসান বিদায় নিলেও আরেক ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজকে নিয়ে ১০০ রানের জুটি গড়েন রহমত শাহ। তাদের জুটিতে ‘অবদান’ আছে বাংলাদেশের ক্যাচ হাতছাড়া আর মিস ফিল্ডিংয়ের মহড়ার।
প্রতিরোধহীন পরাজয়ে সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ
৪৭ রান করে রহমত বিদায় নেন ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে। তবে গুঁরবাজ আক্ষেপের আগুনে পুড়েননি, ঠিকই তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। ইতিহাসের পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম তিন পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংসকেই রূপ দেন শতকে।
শেষপর্যন্ত ৪০.১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তান লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। ১১০ বলে ১০৬ রান করে অপরাজিত থাকেন গুরবাজ। বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ দুটি ও সাকিব আল হাসান একটি উইকেট শিকার করেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি নিরাপদে ইউক্রেন সীমান্ত অতিক্রম করে পোল্যান্ড, অস্ট্রিয়া ও রোমানিয়াতে পৌঁছেছেন।
আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪৬ জন বাংলাদেশি ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ব্যবস্থা করা অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন। বাকিদের দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের আশ্রয় দেওয়া হলেও তারা নিজস্ব ব্যবস্থায় অবস্থান করছেন।
দূতাবাস আইসিআরসি, ইউক্রেনের মাধ্যমে ২৮ বাংলাদেশি নাগরিককে এখন পর্যন্ত উদ্ধার ও স্থানান্তর করেছে।
দূতাবাস আইওএম, ইউক্রেনের মাধ্যমে ইউক্রেন কারাগারে/আটক বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার জন্যও কাজ করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রায় ১৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হাঙ্গেরিতে পৌঁছেছেন, যাদের এখন ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাস দেখাশোনা করছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তারাও বাংলাদেশে ফিরতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন।
এ পর্যন্ত ৩ জন বাংলাদেশি রোমানিয়ায় প্রবেশ করেছে যাদের এখন বুখারেস্টে বাংলাদেশ দূতাবাস দেখাশোনা করছে। শিগগিরই আরও ৭ বাংলাদেশি রোমানিয়ায় প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারাও অবিলম্বে বাংলাদেশে ফিরতে ইচ্ছুক।
রবিবার বিকেলে পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস ইউক্রেনপ্রবাসী বাংলাদেশিদের বলেছে, ইউক্রেনে আটকে পড়া আইসিআরসির মাধ্যমে উদ্ধার করা হবে। যে যেখানে আটকা পড়ে আছেন তাদের নাম, মোবাইল নম্বর এবং পূর্ন ঠিকানা +৪৯১৫৭৭৮৬৩৭৬ এই নম্বরে ওয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত পাঠাতে দূতাবাস অনুরোধ জানিয়েছে।
ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে যাওয়া বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস এক বার্তায় বলেছে, বাংলাদেশ দূতাবাস পোল্যান্ডে তাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করেছে। এই সেবা নিতে আগ্রহীদের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন লেনিনগ্রাদে জন্মগ্রহণকারী রুশ প্রজাতন্ত্র বা রাশিয়ার অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। খুবই সাধারণ পরিবার থেকে বেড়ে উঠা পুতিন আজ বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধরদের মধ্যে একজন। একজন কারখানা শ্রমিকের সন্তান ও সাধারণ বাবুর্চির নাতি রাশিয়াকে আবার পরাশক্তি তুলে ধরতে দৃয় প্রতিজ্ঞ।
শৈশবে পুতিন
শৈশব থেকেই পুতিন চিলেন ডানপিটে স্বভাবের, ছিলেন যথেষ্ট পরিমাণ দুষ্ট ও পড়ালেখায় অমনোযোগী। “ক্লাসের দুষ্টু ছেলে” হিসেবেই স্কুলে পরিচিত ছিলেন। তখন থেকেই পাড়ার ছেলেদের সাথে মারামারিতে রপ্ত থাকতেন। সে কারণে তখনই রপ্ত করে নেন জুডোর কলা কৌশল। জুডোতে তিনি ব্ল্যাক বেল্টও বাগিয়ে নেন।
স্কুলের পড়াশুনা শেষ করার আগেই পুতিনের স্বপ্ন ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে কাজ করার। তখন থেকে পড়ালেখায় একটু একটু করে মনোযোগী হতে শুরু করেন। পড়ালেখায় মনোযোগী হবার পাশাপাশি, খেলাধুলা ও স্কাউটসের সাথে যুক্ত হয়ে নিজেকে সবদিক দিয়ে পারদর্শী হতে শুরু করলেন।
হাইস্কুলে পড়ার সময়ে তিনি কেজিবির একটি শাখার পাবলিক রিসিপশনে গিয়ে জেনে আসেন কিভাবে একজন স্পাই বা গুপ্তচর হওয়া যায়। তিনি জানতে পারেন হয় তাকে সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হবে, অথবা তাঁর একটি কলেজ ডিগ্রি থাকতে হবে, সবথেকে ভাল হয় যদি সেই ডিগ্রিটি হয় আইনের ওপর। ১৯৭০ সালে ভ্লাদিমির লেলিনগ্রাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন।
গোয়েন্দা পুতিন
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পরপরই পুতিন যোগ দেন রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থায়। পরবর্তীতে তিনি কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স এ বদলী হয়ে পাঁচ মাসের মত কাজ করেন। ইন্টেলিজেন্সে কাজ করার প্রায় ছয় মাসের মাথায় তাঁকে বেশ কয়েকটি অপারেশন এবং পুঃন প্রশিক্ষণ কোর্স করতে পাঠানো হয়। তারপর তিনি আবার কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সে ফিরে আসেন এবং আরও ছয় মাস সেই বিভাগে কাজ করেন।
কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স এ দ্বিতীয় মেয়াদে কাজ করার সময়ে তিনি ফরেন ইন্টেলিজেন্স কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁকে বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য মস্কোতে পাঠানো হয়। সেখানে এক বছর কাটানোর পর তিনি লেলিনগ্রাদে ফিরে যান, সেখানকার প্রধান কেজিবি শাখায় তিনি প্রায় সাড়ে চার বছর কাজ করেন। এরপর তিনি আবার মস্কোতে ফিরে যান এবং “Andropov Red Banner Institute (যা “কেজিবি স্কুল নম্বর ওয়ান” নামেও পরিচিত)” এ তাঁর জার্মানি অভিযানের জন্য প্রশিক্ষণ নেন।
স্নায়ু যুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে কেজিবির গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করেন।
১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ – এই পাঁচ বছর পুতিন রাশিয়ান এজেন্ট হিসেবে পূর্ব জার্মানিতে কাজ করেন। জার্মানিতে কাজ করাকালীন তিনি পদন্নোতি পেয়ে প্রথমে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এবং পরি আবারও পদন্নোতি পেয়ে বিভাগীয় প্রধানের প্রধান সহকারী হন। ১৯৯০ সালে পুতিন জার্মানিতে তাঁর কাজ শেষ করে লেলিনগ্রাদে ফিরে আসেন। সেখানে তিনি লেলিনগ্রাদ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পরিচালকের সহকারী হিসেবে কাজে যোগ দেন। ১৯৯১ সালের জুনে সেইন্ট পিটার্সবার্গ সিটি হল এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন; এবং ১৯৯৪ সাল থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ সিটি গভর্মেন্টের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
প্রধানমন্ত্রী পুতিন
কেজিবি থেকে পদত্যাগ করে ১৯৯৬ সালে জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের সহকারী প্রধান হন। ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে একই সাথে রাষ্ট্রপতির বরিস ইয়েলেৎসিনের তাঁকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সার্ভিসের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা করা হয়। এরই ভেতর তিনি অর্থনীতিতে তাঁর ডক্টরেট থিসিস করতে থাকেন। ১৯৯৮ সালের মে মাসে তিনি রাষ্ট্রপতির প্রশাসনিক দপ্তরের প্রধান চিফ অব স্টাফ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং সেই বছরের জুলাইয়েই তিনি ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৯৯ সালের মার্চ থেকে তিনি রাশিয়ান ফেডারেশানের নিরাপত্তা বিষয়ক কাউন্সিলের সচিব হিসেবে আসীন হন। সেই বছরেরই আগস্ট মাসে তিনি রাশিয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।
প্রেসিডেন্ট পুতিন
১৯৯৯ সালে নতুন বছরের প্রাক্কালে মি: ইয়েলেৎসিন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৯৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পুতিন রাশিয়ার আপৎকালীন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আপৎকালীন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেয়ার অল্প পরেই পুতিন ২০০০ সালের ২৬শে মার্চ নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। সেই বছরের ৭ই মে তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
প্রথম মেয়াদে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দারুন সফলতা ও সাধারন রাশিয়ানদের মাঝে দারুন জনপ্রিয়তা অর্জন করার পর ২০০৪ সালের ৪ মার্চ পুতিন আবারও রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
কিন্তু রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী কোন ব্যক্তি পরপর তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তখন মি: পুতিন প্রেসিডেন্ট পদে অংশগ্রহণ না করে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচন করেন। ২০০৮ সালের ৮ মে পুতিন দ্বিতীয়বারের মত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।
২০১১ সালের নভেম্বরে পুতিন আবারও রাশিয়ার টুয়েলভথ্ পার্টি কনগ্রেস থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণের মনোনয়ন পান। ২০১২ সালের মার্চে তিনি তৃতীয়বারের মত রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সাল থেকে পুতিন চতুর্থবারের মত রাষ্ট্রপতি হিসেবে বহাল রয়েছেন।
সেই পুতিন এই পুতিন
পুতিনের বয়স এখন ৬৯ বছর। প্রায় ৬০ বছর আগে থেকেই মারামারি আর সংঘাতের নেশা ছিল লেলিনগ্রাদের (বর্তমান সেন্ট পিসবার্গ) কিশোর পুতিনের। সে নেশাই যেন এখন তার ফিরে এসেছে। আগে সে কিশোর সহপাঠীদের সাথে মারামারিতে সীমাবদ্ধ থাকলেও তার সেই মারামারি আজ ছাড়িয়ে গিয়েছে বহুদূর। আগে সে হাতাহাতিতে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা গিয়ে ঠেকেছে কামান গোলা আর অত্যাধুনিক অস্রসস্রে। আজ প্রাণ হরণের খেলায় মত্ত সেই পুতিন। নিজ পার্শ্ববর্তী স্বাধীন দেশ ইউক্রেনে বাজিয়ে যাচ্ছে যুদ্ধের দামামা। স্বাধীন দেশের শান্তিপূর্ণ মানুষের ঘুম নিমেষেই হরণ করে নেয়ার এক নাম এখন পুতিন।
২০১৫ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘কোনো লড়াই যদি অবশ্যম্ভাবী হয়, তাহলে প্রথম আঘাতটা আপনাকেই করতে হবে।’ পঞ্চাশ বছর আগে লেলিনগ্রাদের রাস্তা থেকেই এমন শিক্ষা পেয়েছেন বলে উলে¬খ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনে সেটাই হয়ত প্রয়োগ করতেছেন পুতিন।
জানিনা পুতিনের এই রাক্ষুসে নেশা থেকে বের হয়ে আসার মানসিকতা আধো জন্মাবে কিনা। এই সভ্য যুগে অসভ্য বর্বরতা এখন আর কারুরই কাম্য নয়।
ভাষার মাস উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ।।
সৈয়দ জুয়েল। গলওয়ে।
আগামী রোববার লিমরিকের ইউনিভার্সিটি অফ লিমরিকের নর্থ ক্যাম্পাস মাঠে ভাষার মাস উপলক্ষে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করতে যাচ্ছে গলওয়ে টাইগার্স ফুটবল ক্লাব। কাউন্টি কেরি ও কাউন্টি গলওয়ের এক ঝাঁক বাংলাদেশি তরুন এ খেলায় অংশগ্রহন করবে। উক্ত খেলা উপভোগ করতে সকল বাংলাদেশিদেরকে মাঠে উপস্থিত হয়ে উৎসাহ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে গলওয়ে ও কেরির খেলোয়ারা। আয়ারল্যান্ডে এই প্রথম ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে প্রীতি এ ম্যাচটি।
বাংলাদেশ,আয়ারল্যান্ডে জন্ম ও বেড়ে ওঠা এ সকল তরুনদের মাঝে সেতুবন্ধনে এরকম আয়োজন নিঃসন্দেহে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আর এই পুরো আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে গলওয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটি। আগামী রোববার বিকাল তিনটায় শুরু হবে এ ম্যাচটি।
জুমার দিনে সুরা কাহাফ তিলাওয়াতের ফজিলত। সুরা আল কাহাফ পবিত্র কোরআনের ১৮তম সুরা। কাহাফ মানে গুহা। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১১০।
জুমাবারে সুরা আল কাহাফ পড়তে বলা হয়েছে। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) রাসুল (সা.)–এর পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত নূর বর্ষিত হবে।’ এ সুরায় চারটি ঘটনা, চারটি বক্তব্য ও উপদেশ রয়েছে।
সুরার ১ থেকে ৮ আয়াতে রয়েছে বক্তব্য। ৯ থেকে ২৬ আয়াতে আছে আসহাবে কাহাফের ঘটনা। ২৭ থেকে ৩১ আয়াতে আবার বক্তব্য এসেছে। ৩২ থেকে ৪৪ আয়াতে দুটি বাগানের মালিকের ঘটনা রয়েছে। এরপর আবার লম্বা বক্তব্য ও উপদেশ এসেছে ৪৫ থেকে ৫৯ আয়াতে।
এ সুরায় দুটি কাহিনি এসেছে ৬০ থেকে ১০১ আয়াতে। সে দুটি হলো মুসা (আ.) এবং খিজির (আ.) জ্ঞানীর ঘটনা ও জুলকারনাইন–সম্পর্কিত ঘটনা। আবার সুরা শেষ হয়েছে বক্তব্য ও উপদেশ দিয়ে।
গুহাবাসীর বিশ্বাসের ঘটনা
আসহাবে কাহাফের ঘটনা আমরা সবাই কমবেশি শুনেছি। কয়েকজন যুবক আল্লাহ তাআলার প্রতি পূর্ণ ইমান আনার পর তাঁরা একটি গুহার ভেতরে পৌঁছালেন। আল্লাহ তাঁদের সবাইকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঘুম পাড়িয়ে দিলেন। ঘুম ভাঙার পর তাঁদের একজনকে যখন খাবার কেনার জন্য শহরে পাঠানো হলো, তখন তিনি ভেবেছিলেন লোকজন হয়তো তাঁকে চিনে ফেলবে এবং তাঁর ক্ষতি করবে। কিন্তু দেখা গেল কেউ তাঁকে চেনে না। শহরের লোকেরা তাঁকে এবং তাঁর ব্যবহৃত পুরোনো মুদ্রা দেখে বিস্মিত হলো।
মূলত এ ঘটনায় আল্লাহ তাঁর ওপর ভরসাকারী বান্দাদের কী করে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করেন, তা দেখানো হয়েছে।
বাগানের মালিকের সম্পদের ঘটনা
এক ব্যক্তির সুন্দর বাগান ছিল। তিনি ছিলেন অহংকারী, তাঁর বন্ধুকে বলেছিলেন, ‘আমি তোমার থেকে উত্তম। কেননা, তোমার থেকে আমার বেশি সম্পদ, কর্মচারী ও সন্তান রয়েছে।’ (আয়াত ৩৪)।
অহংকারী হয়ে আল্লাহর নিয়ামতের কথা ভুলে যাওয়ায় আল্লাহ তাঁর বাগানগুলো ধ্বংস করে দিলেন। ঘটনাটি তাদের জন্য, যারা দুনিয়ার মোহে আল্লাহর নিয়ামতের কথা ভুলে যায়। তারা ভুলে যায় আল্লাহ ইচ্ছা করলেই তাদের কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নিতে পারেন।
হজরত মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)–এর ঘটনা
হজরত মুসা (আ.) খিজির (আ.)–এর সঙ্গে সফর করার সময় তিনটি ঘটনা সংঘটিত হয়। প্রথম ঘটনায় খিজির (আ.) একটি নৌকা ছিদ্র করে ফেলেন অথচ নৌকার মালিক বিনা ভাড়ায় তাঁকে নৌকায় উঠিয়ে ছিলেন। দ্বিতীয় ঘটনায় তিনি একটি নিষ্পাপ শিশুকে হত্যা করে ফেলেন। তৃতীয় ঘটনায় তিনি একটি দেয়াল উঠিয়ে দেন। হজরত মুসা (আ.) তিনটি ঘটনায় চুপ থাকতে পারেননি। খিজির (আ.) তিনটি ঘটনার ব্যাখ্যা করেন।
হজরত মুসা (আ.) বুঝতে পারলেন আল্লাহ যাকে খুশি তাকেই জ্ঞান দান করেন। যেহেতু সকল জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ, তাই কারও জ্ঞান নিয়ে অহংকার করা উচিত নয়। খিজির (আ.) নিজেও বলেছেন, আমি আমার ইচ্ছায় কিছুই করিনি। (আয়াত ৮২)
জুলকারনাইনের ঘটনা
জুলকারনাইন ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ণ ও সৎ বাদশাহ, তিনি পশ্চিম থেকে পূর্ব পর্যন্ত সফর করেছিলেন। দুই পর্বতের মাঝে তিনি এক জনগোষ্ঠীকে খুঁজে পেলেন। তারা তাঁর কাছে ইয়াজুজ ও মাজুজের হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি দেয়াল নির্মাণের আবেদন জানাল। জুলকারনাইন কাজটি করে দিতে সম্মত হলেন। তিনি তাঁর কাজ নিয়ে গর্ব করেননি। দেয়াল নির্মাণের পর তাঁর দেওয়া ভাষণ কোরআনে এসেছে। ‘সে (জুলকারনাইন) বলল, এগুলো আমার মালিকের অনুগ্রহ, কিন্তু যখন আমার মালিকের নির্ধারিত সময় আসবে, তিনি এগুলো চূর্ণবিচূর্ণ করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবেন, আর আমার প্রভুর ওয়াদাই চূড়ান্ত সত্য।’ (আয়াত ৯৮)
চারটি ঘটনা থেকে চার রকম পরীক্ষার কথা জানা যায়। আসহাবে কাহাফের ঘটনা থেকে ধর্মবিশ্বাসের ওপর পরীক্ষা, দুটি বাগানের মালিকের ঘটনা থেকে সম্পদের ওপর পরীক্ষা, হজরত মুসা (আ.) ও খিজির (আ.) জ্ঞানী ব্যক্তির ঘটনা থেকে, জ্ঞানের পরীক্ষা ও জুলকারনাইনের ঘটনা থেকে ক্ষমতার পরীক্ষার বিষয়ে জানা যায়।
দাওয়াত: চারটি ঘটনায় দাওয়াতের কথা রয়েছে। আর আল্লাহ তো সব সময়ই আমাদের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন। ১৪ নম্বর আয়াতে যুবকেরা বাদশাহকে দাওয়াত দিয়েছে (আসহাবে কাহাফের ঘটনা)। ৩৭ নম্বর আয়াতে একজন সঙ্গী আরেক সঙ্গীকে দাওয়াত দিয়েছে (দুটি বাগানের মালিকের ঘটনা)। ৭০ নম্বর আয়াতে একজন শিক্ষক তার ছাত্রকে দাওয়াত দিয়েছে (হজরত মুসা (আ.) এবং জ্ঞানী ব্যক্তির ঘটনা)। ৮৭-৮৮ আয়াতে একজন শাসক তার প্রজাদের দাওয়াত দিয়েছে (জুলকারনাইনের ঘটনা)।
আল্লাহ আমাদের প্রতি জুমাবারে এই অসাধারণ সুরাটি পড়ার ও বোঝার তৌফিক দিন।
প্রবন্ধটি লিখেছেন ফেরদৌস ফয়সাল প্রথম আলোর হজ প্রতিবেদক।
এক ম্যাচ হাতে রেখেই আফগানদের তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে হারের স্বাদ দিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ পেয়েছে ৮৮ রানের রাজসিক জয়।
তৃতীয় ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
সাগরিকায় প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রান জড়ো করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে শতক হাঁকান লিটন দাস।
১২৬ বলের মোকাবেলায় ১৬টি চার ও ২টি চারের সহায়তায় ১৩৬ রান করেন লিটন। মুশফিকুর রহিমও পৌঁছে গিয়েছিলেন তিন অঙ্কের কাছাকাছি। সাজঘরে ফেরার আগে ৯৩ বলে ৮৬ রান করেন তিনি, হাঁকান ৯টি চার। দ্বিতীয় উইকেটে লিটন ও মুশফিক গড়েন ২০২ রানের পার্টনারশিপ।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারী দল। চতুর্থ উইকেটে ৯০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন রহমত শাহ ও নাজিবউল্লাহ জাদরান। অর্ধশতক হাঁকিয়ে দুজনই ফেরেন সাজঘরে। রহমত ৭১ বলে ৫২ ও জাদরান ৬১ বলে ৫৪ রান করেন।
এরপর মোহাম্মদ নবী (৩২) ও রশিদ খান চেষ্টা চালালেও দলের হার ঠেকাতে পারেননি। ৪৫.১ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২১৮ রান। বাংলাদেশের পক্ষে তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
এই জয়ে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে উঠেছে বাংলাদেশ দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : বাংলাদেশ
বাংলাদেশ : ৩০৬/৪ (৫০ ওভার)
লিটন ১৩৬, মুশফিক ৮৬, সাকিব ২০
ফরিদ ৫৬/২, রশিদ ৫৪/১
আফিফ-মিরাজের বিশ্বরেকর্ড, বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় জয়
স্বাগতিক বাংলাদেশ ও সফরকারী আফগানিস্তানের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডেতে ৪ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা। জয়ে মূল অবদান আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদী হাসান মিরাজের বিশ্বরেকর্ড গড়া পার্টনারশিপের।
সাগরিকায় টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান জড়ো করে ২১৫ রান। ৪৯.১ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে দৃঢ়তা প্রদর্শন করেন নাজিবউল্লাহ জাদরান। ৮৪ বলের মোকাবেলায় ৪টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৬৭ রান করেন তিনি। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে রহমত শাহ ৩৪, অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি ২৮ ও মোহাম্মদ নবী ২০ রান করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজুর রহমান তিনটি এবং সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে দলীয় ১৩ রানে লিটন দাসকে হারানোর পর ধ্বস নামে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। এতে ভয়ানক বিপর্যয়ে পড়ে যায় স্বাগতিক দল। দলীয় রান ৫০ পেরোনোর আগে লিটন-তামিম ছাড়াও একে একে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম, ইয়াসির আলী, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এর মধ্যে বাঁহাতি পেসার ফজলহক ফারুকি একাই শিকার করেন তামিম, লিটন, মুশফিক ও ইয়াসিরকে। বল হাতে আফগানিস্তানের দুর্দান্ত শুরুর পর বাংলাদেশের পরাজয়কে মনে হচ্ছিল নিছক সময়ের ব্যাপার। তবে তখন অবিশ্বাস্য প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
সপ্তম উইকেটে দুজনে গড়েন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি, যা ৫০ রানের মধ্যে ৬ উইকেটের পতনের পর যেকোনো উইকেটে ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা পার্টনারশিপ। রান তাড়ায় ৭ম উইকেট জুটিতে এটাই বিশ্বের সেরা ইনিংস। ব্যাটিং অর্ডারের সপ্তম ব্যাটার হিসেবে আফিফ ও অষ্টম ব্যাটার হিসেবে মিরাজ খেলেন বাংলাদেশের সেরা ইনিংস। তাদের ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিং বাংলাদেশকে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচে ফিরিয়ে জয়ের বন্দরে ভেড়ায়।
রশিদ-নবী-মুজিবদের দেখে শুনে খেলে, ১৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে আফিফ-মিরাজ জয় নিশ্চিত করেন ৪ উইকেট ও ৭ বল হাতে রেখে। মিরাজ ১১৫ বলে ৯৩ ও আফিফ ১২০ বলে ৮১ রান করে অপরাজিত থাকেন। আফিফ হাঁকান ১১টি চার ও ১টি ছক্কা, মিরাজের ইনিংসে ছিল ৯টি চার।
আফগানদের পক্ষে ফজলহক ফারুকি চারটি এবং রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান একটি করে উইকেট শিকার করেন।
১মার্চ ২০২২ থেকে পাবলিক রাস্তায় যানবাহন অবৈধ পার্কিং ফি বৃদ্ধি পাবে €৮০থেকে €১২৫ ইউরো।
গত ২৪ বছরেরও বেশি সময়ের পর এই প্রথমবারের মতো আয়ারল্যান্ডের পাবলিক রাস্তায় ক্ল্যাম্পিং(Clamping) চার্জ বাড়তে চলেছে৷
ডাবলিন সিটি কাউন্সিলের অনুরোধের পর ১লা মার্চ ২০২২ থেকে রিলিজ ফি (Clamping release fee ) ৮০ ইউরো থেকে ১২৫ ইউরোতে বৃদ্ধি পাবে।
এটি ব্যক্তিগত গাড়ি পার্ক এবং আবাসিক এলাকা এই একই চার্জের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করে একই আওতায় আনাহবে।
পরিবহণ বিভাগ আইরিশ ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছে যে রিলিজ ফি মূল্যবৃদ্ধিকে জাতীয় পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত প্রাইভেট ক্ল্যাম্পারদের জন্য সর্বাধিকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রেখে ফি আনবে এবং এটি এই জন্যে করা হয়েছে যাতে কেউ মনে না করে যে অন্য কোন এলাকার তুলনায় পাবলিক রাস্তায় ক্ল্যাম্পিং জোনে অবৈধ পার্কিং কম গুরুতর অপরাদ।
গ্রিন পার্টির কাউন্সিলর মাইকেল পিজেন বলেছেন যে ফি বহু বছর ধরে বাড়েনি। ২৪ বছরের আগে ক্ল্যাম্প অপসারণের জন্য প্রথম ফি বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
নতুন চার্জের প্রভাব সম্ভবত ডাবলিন শহরের গাড়িচালকরা আগামী মার্চ মাস থেকে বুঝতে পারবেন যেখানে গত বছর ২০২১ সালে ৩৭,০০০ টিরও বেশি যানবাহনকে ক্লাম্পিং ফি চার্জ করা হয়েছিল এবং এটা ২০২০ সালের পরিসংখ্যানের তুলনায় প্রায় ১৪,০০০ বেশি যানবাহন।
আগামী সোমবার থেকে মুখে মাস্ক পরা ঐচ্ছিক হয়ে যাবে।
NPHET-এর পরামর্শ অনুসরণ করে মুখ মাস্ক পরার বিধিনিষেধ উঠিয়ে নিতে মন্ত্রীসভা এক প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছে।
এর অর্থ হল ফেস মাস্ক আর আইনত স্কুল, দোকান বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে প্রয়োজন হবে না, যেখানে সেগুলি পরা এখন থেকে ঐচ্ছিক হবে।
তবে এখনও আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্যসেবাকে সঠিক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক কাজের প্রয়োজন বলে স্বাস্ব্যমন্ত্রী জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, মাস্ক তুলে নেওয়ার বিষয়ে কিছু মানুষের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ ও আতঙ্ক রয়েছে তা তিনি বুঝতে পারেন।
স্টিফেন ডনেলি বলেছেন যে মাস্ক পরা এখন থেকে ঐচ্ছিক করার কারনে কোভিডের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের উদ্বেগ তিনি বুঝতে পারেন, তিনি আরও বলেছিলেন “অবশ্যই মানুষ নার্ভাস,”আমাদের আরও মনোযোগ সহকারে যাদের কথা শুনতে হবে তারাই এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে , তাই তাদের গণপরিবহনে মাস্ক পরা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
“তবুও মাস্ক না পরার পরামর্শটি খুব স্পষ্ট, কোভিডের বর্তমান সময়ে গতিপথের উপর ভিত্তি করে এবং কতজন লোককে টিকা দেওয়া হয়েছে এবং বাড়ানো হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে, মাস্ক না পরার পরামর্শটি সিদ্ধান্তে এখনই নেয়ার উপযুক্ত সময় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনে করেন।
PCR টেস্টিংও এখন থেকে কম করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে – ৫৫ বছরের কম বয়সীদের এখন থেকে PCR টেষ্ট আর করা লাগবে না।
কাউন্টি লিমেরিকের বালিহাহিল নামক স্থানে আজ সন্ধ্যায় বজ্রপাতের আঘাতে একটু ঘরে আগুন লেগে যায়। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে কয়েকটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিস ছুটে যায়। লিমেরিক, নিউ ক্যাসল ওয়েস্ট, ফয়েন্স, রাথকেলসহ নয়টি ইউনিট সেবা প্রদান করতে এগিয়ে যায়।
ওই ঘরটিতে জনমানব পূর্ণ থাকলেও কারো কোন ক্ষতি হয়নি।
স্ট্রম ফ্রাঙ্কলিনের তীব্র বাতাসের ফলে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তানজিদ ইসলাম সুমন ২০০৪ সালে জীবন জীবিকার সন্ধানে আয়ারল্যান্ড আসেন মাত্র ২১ বছর বয়সে। টগবগে এক তরুন, দু’চোখ্ঁ ভরা ছিল তার স্বপ্ন। কাজ করতেন ডাবলিনে, থাকতেন বন্দ্ধুদের সাথে ডাবলিনেই। সদা হাস্যোজ্জ্বল ভদ্র ও ধার্মীক একজন মানুষ ছিলেন এই তরুন।
নারায়নগঞ্জের গোগনগর উত্তর মসিনাবন্দ নিবাসী মৃত বাদশা মেম্বার বেপারী সাহেবের ছেলে এই তানজিদ ইসলাম সুমন। চার ভাই ও দুই বোন। ভাইদের মধ্যে সুমন ছিলেন তৃতীয়। আয়ারল্যান্ডে ১৭ বছর তার প্রবাস জীবন। বাংলাদেশে বিয়ে করেছিলেন বছর দু’এক আগে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন, ঢাকায় ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার তাকে জানান তিনি Stomach cancer এ আক্রান্ত।
সুমন দেরি না করে আয়ারল্যান্ডে চলে আসেন, দীর্ঘ একবছর যাবত ডাবলিন মেটার হাসপাতালে চলে তার চিকিৎসা। অবশেষে ক্যানসারের কাছে হার মানেন এই তরুন।
তার দীর্ঘ ১৭ বছরে এই আয়ারল্যান্ডে রয়েছে আনেক বন্ধু বান্ধব। সুমন মারা যাওয়ার পর তার বন্ধু মহলে নেমে আসে শোকের ছা্ঁয়া। তাদেরই একজন জনাব ফুয়াদ হাসান টিপু ছিলেন সুমনের খুবই কাছের বন্ধু এবং বহু দিনের Housemate । ফুয়াদ হাসানের সাথে কথা বলে জানা যায়, তানজিদ ইসলাম সুমন ছিলেন একজন ভদ্র ও বিনয়ী একজন মানুষ। ফুয়াদ হাসান আরো জানান সুমনের বৃদ্ধ মা বাংলাদেশে খুবই অসুস্থ অবস্থায় আছেন, তার ছেলের চলে যাওয়া হবে তার জন্য এক বড় শোক।
তানজিদ ইসলাম সুমন এদেশে এসে এক পোলিশ রমনীকে বিয়ে করেছিলেন, তাদের আছে ৭ বছরের এক পুত্র সন্তান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার এই ছেলের সাথে সবসময় সুসর্ম্পক ছিল। ছেলেকে তিনি খুবই ভালোবাসতেন।
সুমনের ইচ্ছে মোতাবেক তাকে আয়ারল্যান্ডেই দাফন করা হবে। সব কিছু ঠিক ঠাক মত থাকলে আগামী কাল বাদ জুমা ক্লনস্কি মসজিদে Clonskeagh Mosque এ হবে তার নামাজে জানাযা। এর পর Newcastle Burial Ground এ হবে তার দাফন।
প্রবাসে একাকি ক্যান্সারের মত ব্যাধিকে মোকাবেলা করে মৃত্যু বরণ করা অত্যন্ত করুন। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা যেন তানজিদ ইসলাম সুমন কে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউসে দাখিল করেন এই দোয়া করি।
গত মঙ্গলবার ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ লিমেরিক শহরের Greenhills Hotel Conference & Leisure Center এর জা্ঁকজমকপূর্ণ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশ স্পাের্টস এসােসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের (BSAI) দ্বিবার্ষিকী সম্মেলন। এই সম্মেলে জড়ো হয়েছিলেন আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত BSAI এর ৩৮ জন কাউন্সিলর, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগন, বিদায়ী কার্যকরী কমিটির সদস্যগন সহ বেশকিছু শুভানুধ্যায়ী।
নির্ধরিত সময় থেকে কিছু বিলম্বে পবিত্র কুরআন থেকে তিলওয়াত এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সম্মেলন আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় বিকেল ৪টায়। কোরআন তেলাওয়াত করেন জনাব আজম জোবায়দুল হক।
সম্মেলনটি দুটি অধিবেশনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনের শুরুতে BSAI এর বিদায়ী কমিটির সভাপতি জনাব মনিরুল ইসলাম তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা হয়। অনুষ্ঠানটি সংগঠনের সহ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সঞ্চালনা করেন। প্রথমেই সকল দর্শকদের সামনে BSAI এর গত দুই বছরের কার্যক্রমের উপর নির্মিত একটি ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করা হয় এর পর সংগঠনের ফাউন্ডার চুন্নু মাতবর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন ।
বক্তব্য রাখেন বিদায়ী কমিটির সাধার সম্পাদক জনাব আব্দুল মান্নান মান, তিনি তার বক্তব্যে BSAI এর গত দুই বছরের কাজের বিবরণ তুলেধরেন। তিনি বলেন, কোভিড মহামারীর কারনে এবং আরও কিছু প্রতিবন্ধকতার কারনে পরিকল্পনা ও ইচ্ছে থাকা সত্যেও তারা অনেক কাজ করতে পারেননি তারপরও তারা ২০২১ সালে তারা অনেক গুলো ইভেন্টর আয়োজন করেছেন এবং গত দুইবছরে তারা বাংলাদেশী কমিউনিটিকে বেশ কিছু সফল ইভেন্ট উপহার দিয়েছেন।
সম্মেলনে বিদায়ী কার্যকরী কমিটির কোষাদক্ষ জনাব কামাল হোসেন BSAI এর ২০২০ ও ২০২১ সালের আয়-ব্যয় হিসাব বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপন করেন। এরপর BSAI এর বিদায়ী কার্যকরী প্রেসিডেন্ট জনাব মনিরুল ইসলাম তার বিদায়ী বক্তব্য দেন। জনাব মনির তার বক্তব্যে বিগত দিন গুলোতে তাকে সহযোগীতার জন্য তিনি কার্যকরী কমিটিসহ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি মেয়াদ উত্তীর্ণ কার্যকরী কমিটির বিলুপ্ত ঘোষনা করেন এবং নবনির্বাচিত কমিটিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নতুন কমিটির সাথে কাজের মাধ্যমে পূর্ণ সহযোীতার আশ্বাস দেন।
সম্মেলনে আগত উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যদের মধ্যথেকে বক্তব্য রাখেন জনাব মুহম্মাদ মোস্তফা, লিমেরিকের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার, জনাব ইকবাল মাহমুদ, জনাব হামিদুর নাসির, জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার। বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে BSAI এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এর পথচলা, সফলতা ও ব্যার্থতা। ২০০৯ সালে জনাব চুন্নু মাতাব্বরে ঐকান্তি প্রচেষ্টায় কিছু নিবেদিতপ্রান কমিউনিটি ব্যাক্তিবর্গের হাতধরে এই BSAI প্রতিষ্ঠানটির জন্ম। ফাউন্ডার মেম্বারগন BSAI কে আরও সুশৃঙ্খল ও সফলাতার সাথে সামনে এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন এবং এর সাথে সাথে বিগত দিনের কিছু ইভেন্টের অপ্রিতিকর ঘটনার কথা উল্ল্যেখ করে তারা সকলের উদ্দ্যেশে বলেন এই ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা যেন আর না ঘটে তার জন্য সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে।
BASI এর এবারের সম্মেলনে চার জন নতুন প্রজন্মের খেলোয়ারদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা এরা হলো: Best player of the year youth :
Kazi emon
Mahfuj Anik
Wasi Nasir
Seyam Haque
Fair Play of the year কেটাগরিতে County Mayo টিমকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। County Mayo এর টিম ম্যানেজার জনাব হুমায়ুন কবীর ক্রেস্টটি গ্রহন করেন।
BASI এর পক্ষ থেকে এই সম্মেলনে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জানাব মনিরুল ইসলাম’কে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের গর্ব এবং আয়ারল্যান্ডে স্থানীয় পর্যায়ে আইরিশ মূলধারার রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের পথপদর্শক, লিমেরিক সিটি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদা’কে BASI এর পক্ষ থেকে সম্মাননা স্বারক প্রদান করা হয়।
মাগরিবের নামাজ ও খাওয়া দাওয়ার পর্বের পর সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে শুরু হয় কার্যকরী কমিটির নির্বাচনী কার্যক্রম। এবারও নির্বাচন পক্রিয়া পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান এবং তার সাথে আরও যারা নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালন করেন তারা হলেন, জনাব মুহাম্মদ মোস্তফা, ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার, জনাব রফিক খান ও জনাব হামীদুর নাসির।
এবারের নির্বাচনে কার্যকরী কমিটির প্যানেলের প্রতিটি পদে দ্বিতীয় কোন প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন কমিশন খুব অল্প সময়ের মধ্যে মনোনয়ন প্রাপ্ত সকল প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করেন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজয়ীদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
নতুন নির্বাচিত কমিটির নাম নিম্নে দেয়া হলোঃ
সভাপতিঃ জনাব চুন্নু মাতবর।
সহ সভাপতিঃ জনাব আবু বিজয়।
সহ সভাপতিঃ জনাব মোজাম্মেল হক।
সহ সভাপতিঃ জনাব মোহাম্মদ মাসুদ শিকদার।
Treasure ও IT Sector এই দুটি পদে কেউ মনোনয়ন পত্র জমা না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশন কাউকে নির্বাচিত ঘোষনা করতে পারেনি তবে কার্যকরী কমিটি তাদের ক্ষমতা বলে কমিটির সকল সদস্যের সর্বসম্মতি ক্রমে পরবর্তিতে এই দুটি পদে সদস্য নিয়োগ দিতে পারবেন বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে BSAI এর এবারের সম্মেলনটি শেষ হয়।
আইরিশ কিংবা ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী বাংলাদেশিদের দেশে গমনের জন্য নো-ভিসার প্রয়োজন পড়ে। নো-ভিসা স্ট্যাম্প পাসপোর্টে থাকলে বিদেশি পাসপোর্টধারী বাংলাদেশিদের বাংলাদেশ গমনের ক্ষেত্রে আলাদা করে ভিসা নেয়ার প্রয়োজন পড়েনা। একবার নো-ভিসা নেয়া হলে পাসপোর্টের মেয়াদ পর্যন্ত নো-ভিসার মেয়াদ থাকে।
নতুন বিদেশি পাসপোর্টধারী কিংবা পুরনো বিদেশি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নো-ভিসা নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে নো-ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক সময় অনেকেই সমস্যার সম্মুখীন হন এবং পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকার কারণে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। এই ধাপে ধাপে আবেদনের নির্দেশনাবলি আশা করি অনেকের উপকারে আসবে।
এই আর্টিকেলটিতে অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ, কি কি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লাগবে এবং কি কি পদ্দতিতে কি উপায়ে স্বশরীরে কিংবা পোস্টের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে সবকিছুর উপর স্টেপ বাই স্টেপ নির্দেশনা দেয়া হবে।
প্রথম পর্যায়ঃ অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ
প্রক্রিয়ার শুরুতেই অনলাইন আবেদনপত্রের ফর্মটি পূরণ করে নিতে হবে। যার জন্য আপনি সরাসরি www.visa.gov.bd ওয়েব লিঙ্কটিতে গেলেই হবে অথবা এখানে ক্লিক করুন।
ক্লিক করার পর নিম্নোক্ত পেজটি দেখতে পাবেন, সেখানে গিয়ে নিচে বাম পাশের বক্সটি টিক দিয়ে পরবর্তী পেজে যান। সেখানে আপনার ইমেইল এড্রেসটি দুইবার দিয়ে ক্যাপচা শব্দগুলো হুবহু টাইপ করে লগঅন করুন।
১ম ধাপঃ লগঅন করার পর এক নাম্বার পেজটি দেখতে পাবেন, এটা হচ্ছে ফর্মের প্রথম ধাপ। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত অংশ। যা সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং এখানে যে তথ্য দিবেন সেটাই আপনার ভিসা পেজে প্রদর্শন করবে। এখানে আপনার নিজ নাম দুইবার টাইপ করতে হবে এবং দুই নামই একই নাম এবং বানান সম্বলিত হবে। এর পর আপনার বিদেশের ঠিকানা (ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ইত্যাদি) এবং এর পরে বাংলাদেশের ঠিকানা এবং একটি বাংলাদেশের ফোন নাম্বার দিতে হবে। জন্মতারিখ সঠিকভাবে প্রদান করুন। এরপর নিচের তথ্যগুলো ধাপে ধাপে পূরণ করুন।
ছবি এখানে না দিলেও চলে, তবে দিলে ভালো। আপলোড করার জন্য কি সাইজের ছবি দিতে হবে তা ছবির নিচে দেয়া আছে। সাধারণত পাসপোর্ট সাইজের ছবি হলেই চলবে। মনে রাখবেন ছবি আপলোড করার পর এখানে নাও দেখাতে পারে তবে ফর্মটি ডাউনলোড করার পর দেখতে পাবেন। যদিও পাসপোর্ট সাইজের এক কপি প্রিন্টেড ছবি নিয়ে যেতে হবে অথবা পোস্টের সাথে পাঠাতে হবে।
২য় ধাপঃপেজ ১ এর সব পূরণ করার ফর কর্নারে Save&Next এ ক্লিক করে পরের পেজে যান। সেখানে Type & Visa Requirement এ No Visa Required সিলেক্ট করে পরবর্তী পেজে যান।
৩য় ধাপঃ তিন নাম্বার পেজে যাবার পর নিচের মত একটি পপ আপ স্ক্রিন দেখতে পাবেন যা অ্যাপ্লিকেশন রেফারেন্স নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দেখতে পাবেন। এ অংশটুকু সেভ করে রাখুন। যা আপনাকে পরে আপনার কাজে লাগতে পারে। যেমন আপনি আবেদন ফর্মটি আংশিক পূর্ণ রেখে চাইলে পরে আবার লগইন করে আবার শুরু করতে পারেন এবং এই রেফারেন্স নাম্বারটিই আপনার প্রিন্ট করা ফর্মে দেখতে পাবেন এবং এই নাম্বারই এম্বেসিতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং দিতে দরকার হবে।
এবং একই পেজে আপনার বর্তমান বিদেশি পাসপোর্টের নাম্বার, ইস্যুর জায়গা, ইস্যু তারিখ এবং মেয়াদ উত্তিন্নের তারিখ প্রদান করতে হবে। এর পর নিচে আরেকটা সেকশন আছে যেখানে শেষ কবে বাংলাদেশ গিয়েছেন সে তথ্য দিতে হবে। দেশে গিয়ে থাকলে YES, না গিয়ে থাকলে NO, আর তথ্য হাতে না থাকলে Yes, but don’t have information to hand অপশনে ক্লিক করতে হবে। গিয়ে থাকলে আগের পাসপোর্ট এর নো-ভিসা পাতা থেকে তথ্য নিচের অংশে প্রদান করতে হবে।
তিন নাম্বার পেজটি এরূপ হবে এবং, নির্দেশিকা অনুযায়ী পূরণ করুন
৪র্থ ধাপঃচার নাম্বার পেজটি মূলত পেমেন্টের তথ্য। এই অংশে কোন তথ্য দেবার দরকার নেই, শুধুমাত্র Save&Next এ ক্লিক করে সরাসরি পরের পেজে চলে যান।
৫ম ধাপঃ এই পাতায় আরো কিছু তথ্য পূরণ করতে হবে। এই পাতার প্রথম অংশে আবেদনকারীর বাবা, মা ও স্পাউস (যদি থাকে) এর পূর্ণ নাম এবং তাদের জাতীয়তার তথ্য প্রদান করতে হবে। দেশে যাবার সম্ভাব্য তারিখ যেকোন একটি ভবিষ্যতের তারিখ দিলেই হবে, আর দেশে যাবার কারণ যেকোন একটা উল্লেখ করলেই হবে, যেমন Family Visit। নিচের স্ক্রিনশট মোতাবেক কিছু অংশ পূরণ না করলেও চলবে। এ অংশ পূরণ হলে পরের পাতায় চলে যান।
এই অংশটুকু পঞ্চম পেজের পঞ্চম ধাপের তথ্য
৬ষ্ঠ ধাপঃএই পাতা খুবই সংক্ষিপ্ত। নিচের হুবহু নিচের স্ক্রিনশট এর মত দেখতে পাবেন। Group/Order by অংশ FM সিলেক্ট করুন। এরপর ভিসা অফিস হবে আবেদনকারীর লোকেশান অনুযায়ী। যেমন ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের আবেদনকারীরা London, স্পেনের আবেদনকারীর জন্য Madrid ইত্যাদি।
পেজ বা ধাপ ৬
৭ম ধাপঃএখানে ফর্ম জমা দেবার মুহূর্তে কি কি ডকুমেন্ট সাথে দিবেন তার স্থলে টিক প্রদান করতে হবে (সাপোটিং ডকুমেন্ট এর তথ্য প্রবর্তিতে উল্লখে করা আছে)।
৮ম ধাপঃ এটাই মূলত শেষ পাতা। এখানে এ পর্যন্ত যে যে তথ্য দিয়েছেন তার সব এখানে দেখতে পারবেন। দেখে নিবেন সব তথ্য ঠিক আছে কিনা। যদি কিছু ভুল বা বাদ পড়ে থাকে তাহলে পেছনে গিয়ে এডিট করে নিতে পারবেন। সব ঠিক থাকলে পাতার একবারে শেষ বাম কোনায় ডিক্লারেশন বক্সে টিক দিয়ে Save&Next এ ক্লিক করে সাবমিট করুন। এর পরে ডাউনলোড অপশন থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন।
দ্বিতীয় পর্যায়ঃ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (নথি)
অনলাইনে পূরণ করা ফর্মটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে
এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
অরজিনাল বিদেশি (আইরিশ/ব্রিটিশ) পাসপোর্ট
বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং আগের পাসপোর্টের নো-ভিসা পেজের ফটোকপি। প্রথমবার নো-ভিসা হলে বার্থ সার্টিফিকেট এর ফটোকপি দিয়ে দেয়া ভালো।
বিদেশে জন্মগ্রহণ করা বাচ্চাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বাবা মায়ের বার্থ সার্টিফিকেট এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টের কপি দিতে হবে।
নো-ভিসা ফি £৪৬ পাউন্ড
তৃতীয় পর্যায়ঃ আবেদন জমা দেয়ার পক্রিয়া
আবেদনকারীরা দুইভাবে আবেদন জমা দিতে পারেন। স্বশরীরে এম্বেসিতে উপস্থিত হয়ে অথবা পোস্টের মাধ্যমে পাঠিয়ে আবেদন জমা দেয়া যায়।
স্বশরীরে জমা দেয়ার পক্রিয়া
স্বশরীরে দুইভাবে জমা দেয়া যায়। কনস্যুলার সেবা দিতে যখন পাসপোর্ট সার্জারি আসে অথবা বাংলাদেশি এম্বেসিতে উপস্থিত হয়ে। উভয় ক্ষেত্রেই ফর্ম পূরণ করে নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক।
তবে স্বশরীরে জমা দিতে বাংলাদেশি এম্বেসিতে যাওয়ার আগে শুধুমাত্র অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে যেতে হবে। এই লিঙ্ক এ ক্লিক করলেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর ফর্ম দেখতে পাবেন যেখানে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পূরণ করে আপনার পছন্দমত তারিখে বুকিং দিয়ে নিতে পারেন। তবে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং দেয়া ভালো, অনেকসময় ২-৩ সপ্তাহ পর্যন্ত বুকিং স্লট বুক হয়ে গিয়ে থাকে।
বুকিং ফর্মে আবেদনকারীর নাম, জন্ম তারিখ, বুকিং এর তারিখ, কান্ট্রিকোডসহ ফোন নাম্বার, ইমেইল এড্রেস এবং অনলাইন অ্যাপলিকেশন নাম্বার দিতে হবে। অনলাইন অ্যাপলিকেশন নাম্বার ডাউনলোডকৃত ফর্মেই পাওয়া যাবে।
গুরুত্বপূর্ণঃ যদি কোন কারণে আপনার পছন্দমত তারিখে অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর স্লট না পাওয়া যায়, কিন্তু নো-ভিসা জরুরি ভিত্তিতে দরকার পড়ে, তাহলে এম্বেসিতে কল দিয়ে আপনার অবস্থান বর্ণনা করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিতে পারেন।
পোস্টের মাধ্যমে আবেদন পাঠানোর প্রক্রিয়া
অনেকক্ষেত্রে স্বশরীরে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হয়না, আবার কিছু ক্ষেত্রে এম্বেসি কতৃক স্বশরীরে আবেদন নেয়া বন্ধ থাকে, সেসবক্ষেত্রে পোস্টের মাধ্যমে আবেদন পাঠিয়েও নো-ভিসার আবেদন প্রেরণ করা যায়।
স্বশরীরে আবেদন জমা দিতে যে ডকুমেন্ট দরকার পড়ে একই ডকুমেন্টস গুলোই পাঠাতে হবে, কিন্তু শুধুমাত্র নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বাড়তি অনুসরণ করতে হবেঃ
১। আবেদন ফি £৪৬ ব্যাংক ড্রাফট করে পোস্টের সাথে পাঠাতে হবে। ড্রাফট করতে হবে ”Bangladesh High Commission, London” এর নামে। যারা আয়ারল্যান্ড থেকে পোষ্ট পাঠাবেন তাঁদেরকে বাড়তি £১০ পোস্টের খরচ বাবদ ড্রাফট করতে হবে।
২। পোস্টের সাথে আবেদনকারীর ঠিকিনাসহ একটি খালি ইনভেলপ দিয়ে দিতে হবে।
৩। লন্ডন হাই কমিশনের এই ঠিকানায় আবেদন পাঠাতে হবেঃ Consular Wing, Bangladesh High Commission, 28 Queen’s Gate London SW7 5JA, UK. Phone:+447438429939, Email: bdhighcomlondon@gmail.com
বাংলাদেশ হাই কমিশন ইউকের তথ্যমতে পোস্ট এর মাধ্যমে প্রেরিত নো-ভিসা সংযুক্ত পাসপোর্ট ফেরত পেতে ২১ কর্মদিবসের বেশি সময় লাগতে পারে। যাদের জরুরি ভিত্তিতে নো-ভিসা এবং পাসপোর্ট প্রয়োজন উনারা স্বশরীরে গিয়ে আবেদন করাই শ্রেয়।
জেনে রাখা প্রয়োজনঃ আয়ারল্যান্ডে এখন Permanent TSB ব্যাংক ছাড়া অন্য কোন ব্যাংক – ব্যাংক ড্রাফট করে না। ব্যাংক ড্রাফট করতে ঐ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকা বাঞ্ছনীয়। কারো অ্যাকাউন্ট না থাকলে যার আছে তাঁকে দিয়ে করিয়ে নিতে পারেন।
অ্যাডহক নির্দেশিকাঃ
– অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডোজ কম্পিউটারে করাই ভালো। ম্যাক ব্যবহারকারীরাও করতে পারেন, তবে ম্যাক ব্যবহারকারীদের মাঝে মাঝে সমস্যা হতে পারে।
– ইন্টারনেট ব্রাউজারের আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করুন। গুগল ক্রোম, মজিলা ফায়ারফক্স ও ইন্টারনেট এক্সফ্লোরার ব্রাউজার ব্যাবহার করা শ্রেয়।
– আবেদন পূরণের সময় কোন স্পেশাল অক্ষর যেমন (, ; ‘ : – _@) ব্যবহার করবেন না। তাহলে আবেদন সাবমিট করতে সমস্যা হবে।
আশা করি উপরোক্ত নির্দেশিকা ধাপে ধাপে অনুসরণ করে খুব সহজেই আপনার নো-ভিসার আবেদন নিজেই করে নিতে সক্ষম হবেন।
জাতীয় নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্টতা না পাওয়ার কারণে সরকার গঠন নিয়ে আইরিশ রাজনীতিতে বিরাজ করছিল চরম অস্হিরতা। অপরদিকে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে আইরিশ কট্টরপন্থী জাতিয়তাবাদী দল সিন্ ফেইনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন লাভের মধ্য দিয়ে দলটির উত্থান নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছিল দেশের বড় দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। কে করবে সরকার গঠন? সেই হিসেব কষছিলেন সবাই।
প্রাপ্ত আসনের দৌঁড়ে সিন্ ফেইন বড় দুটি দল থেকে এগিয়ে থাকলেও একক সরকার গঠনের জন্য তাদের পর্যাপ্ত আসন ছিল না। আবার তাদের সাথে জোট গঠনে ছিল সমস্যা। রাজনীতির এই কঠিন সমিকরণের কাছে শেষ পর্যন্ত হেরে গিয়ে আশানুরুপ ফল পেয়েও সরকার গঠনে ব্যর্থ হয় দলটি।
সিন্ ফেইনের উখান রুখতে তখন আইরিশ বিপরীতধর্মী বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল ফিনে গেইল, ফিনে ফেইল এবং জলবায়ু নিয়ে কাজ
করা গ্রীন পার্টির মথ্যে জোট সরকার গঠন নিয়ে এক নাটকীয় সমঝোতা হয়। সেই সূত্র ধরে এই তিনটি দলের সমন্বয়ে ২০২০ শালের ২৯শে জুন সকল জল্পনা ও কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জোট সরকার গঠিত হয়। এটি ছিল দেশটির ৩২তম সরকার এবং ৩৩তম সংসদ।
উক্ত দলগুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ি ৫ বছর মেয়াদি জোট সরকারের প্রথম আড়াই বছর ফিনে ফেইল দলীয় নেতা মিহল মার্টিন প্রধানমন্ত্রী এবং ফিনে গেইল দলীয় নেতা লিও ভারদাকার উপ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। সরকারের শেষ আড়াই বছর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন উপ প্রধানমন্ত্রী এবং ফিনে গেইল দলীয় নেতা লিও ভারদাকার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন, যদি জোট সরকার তাদের পূর্ণ মেয়াদ অতিবাহিত করতে সক্ষম হয়।
তিন দলের চুক্তি অনুসারে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিনের দায়িত্ব শেষ হবে। এবং সব কিছু ঠিক থাকলে লিও ভারদাকার জোট সরকারের শেষ আড়াই বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের জন্য বড় দিনের আগে শপথ নিবেন। কিন্তুু রাজনীতিতে সব কিছু সব সময় সরল পথে চলে না। শেষ বলতেও কিছু নেই। পরিস্হিতি কখন যে কোন দিকে মোড় নেয়, সেটি অগ্রিম বলা যায় না।
২০১৯ সালের ভারদাকারের একটি স্ক্যান্ডাল নিয়ে তেমন একটি আশংকা তৈরী হয়েছে দেশটির রাজনীতিবিদদের মাঝে। প্রশ্ন উঠেছে,সব চাপ সামাল দিয়ে লিও ভারদাকার কী পারবেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিতে?
এর কারণ হচ্ছে, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্হায় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি ফাঁস করার অভিযোগে বর্তমানে লিও ভারদাকারের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্হার তদন্ত চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডিসেম্বরের পূর্বে সেই তদন্তের কাজ শেষ হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোনো কারণে যদি উক্ত তদন্তে তাঁর নৈতিক পদস্খলনের প্রমাণ পাওয়া যায়,তবে কী তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন? কিংবা তার অনুপস্হিতিতে ফিনে গেইল থেকে কে হতে পারেন পরববর্তী প্রধানমন্ত্রী?
ঘটনার বিবরণে জানা যায় লিও ভারদাকার, প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্হায় ২০১৯ সালে আইরিশ মেডিকেল অর্গানাইজেশনের (IMO)র সাথে সম্পাদিত সরকারর ২৭০ মিলিয়ন ইউরোর একটি চুক্তির খসড়ার কপি তিনি তাঁর ঘনিষ্ট বন্ধুর কাছে গোপনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। Dr maitiu o tuathail নামের সেই ব্যক্তি তখন ন্যাশনাল এসোসিয়েসন অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স (NAGP) এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
এই ঘটনাটি খোদ dr maitiu o tuathail এর মাধ্যমে ফাঁস হবার পর আইরিশ মেডিকেল অর্গানাইজেশনের (IMO) সাথে ন্যাশনাল এসোসিয়েসন অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স (NAGP)র মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী হয়। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নথি চুড়ান্তভাবে অনুমোদনের পূর্বে এইভাবে গোপনে ফাঁস করাকে কেন্দ্র করে লিও ভারদাকার সংসদে বিরোধী দলের প্রচন্ড তোপের মুখে পড়েন। অপরদিকে কড়া সমালোচনার মুখে এপ্রিল মাসে NAGP এর প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন dr maitiu o tuathail ।
ভিলেজ ম্যাগাজিনে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি খবর প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে লিও ভারদাকার সংসদে এই বিষয় তার বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি সংসদে স্বীকার করেন, যে, যথাযথ পন্হা অবলম্বন না করে এইভাবে নথির কপি তার বন্ধুর কাছে পাঠানো সঠিক হয়নি। তিনি এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সংসদে সবার কাছে ক্ষমা চান এবং তিনি এটাও বলেন যে, উক্ত ঘটনার সাথে তার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য জড়িত ছিল না।
শুধুমাত্র সরকারের এই প্যাকেজটি প্রমোটের স্বার্থে তিনি এই কাজ করেছিলেন। যার ফলে লিও ভারদাকার সেই যাত্রা সংসদে সমূহ অনাস্হা প্রস্তাবের হাত থেকে রক্ষা পান। তবে তার বিরুদ্ধে গার্দার তদন্ত এখনো চলছে। প্রকৃত অর্থে এই নথি ফাঁস করার স্বার্থে কী উদ্দেশ্যে জড়িত ছিল? সেটি গার্দার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বুজা যাচ্ছে না।
অবশ্যি প্রধানমন্ত্রীর শপথের পূর্বে লিও ভারদার যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলের কঠিন চাপের মুখে পড়বেন, সেটি অনেকটা নিশ্চিত। তবে তিনি সেই চাপ কীভাবে মোকাবেলা করবেন,আগামি দিন সেটি হবে দেখার বিষয়।
ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জন্য করোনা টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করছে ফাইজার ও বায়োএনটেক। চলতি ফেব্রুয়ারির শেষে যত দ্রুত সম্ভব পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের করোনার টিকা আসবে। এর ফলে আসছে সপ্তাহগুলোয় দুই ডোজের এই টিকা শিশুদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে
জানুয়ারিতে ফাইজারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওপর চালানো টিকার ট্রায়ালের ফলাফল এপ্রিলের মধ্যে পাওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
প্রাসঙ্গিক ভাবনা !
———————-
সবুজ শ্যামল আয়ারল্যান্ড দিন দিন অশান্ত হয়ে উঠছে। এ দেশে অপরাধের খবর এক সময় খুব কম শুনা যেত। কিন্তুু সময় ও পরিস্হিতির সাথে সবকিছু পাল্টে যাচ্ছে। সবুজ এ-অরণ্যে অপরাধ বাড়ছে ক্রমাগত। যার ফলে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বাড়ছে এই সবুজ শ্যামল ছায়াতলের মানুষের মনে। তাই আশংকা হচ্ছে, যে হারে আয়ারল্যান্ডে অপরাধ বাড়ছে এবং মানবিক মুল্যবোধ বিপর্যস্ত হচ্ছে,এই ধারা চলতে থাকলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকা আয়ারল্যান্ড কী তার সুনাম অদুর ভবিষ্যতে ধরে রাখতে পারবে?
চুরি,হাইজ্যাক ও মাদকের খবর আগে প্রায়ই শুনা গেলেও বিগত বছরগুলোতে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে আয়ারল্যান্ডে। এই সবের সাথে এখন যোগ হয়েছে মানুষের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা।
দিন-দুপুরে রাস্তায় মানুষ খুন হচ্ছে। আবার কখনো শুনা যায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপদজনক আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা বিপুল পরিমাণ মাদক আটক করছে গার্দা। নবীন স্কুল শিক্ষক আইশলিং মারফির চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ছিল সাম্প্রতিক সময়ের সবচাইতে আলোচিত ঘটনা।
মর্মান্তিক এই ঘটনা পুরো জাতিকে শোকাহত করেছে। নরপিচাসের যৌন লালসার স্বীকার হয়ে মেয়েটি অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
সংঘঠিত নানা অপরাধের তথ্য ঘাটতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, আইরিশদের পাশাপাশি বিদেশীরাও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। বিশেষ করে আইশলিং মারুফির খুনের সাথে স্লোভাকিয়ান নাগরিকের জড়িত হবার ঘটনা আইরিশদের মনে বিদেশীদের নিয়ে যথেষ্ট নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকলে সামগ্রিকভাবে এর প্রভাব পড়বে বিদেশী নাগরিকদের উপর।
জাতীয় ভাবে অপরাধ সংগঠিত হবার পাশাপাশি আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি’র ( IRA ) অপ- তৎপরাতাও ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু এলাকাতে । গত বছর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাভানের টুলিহ এলকায় মাঠির নিচে পোতে রাখা AK47 উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল গার্দার গোয়েন্দা সংস্হার একটি দল। এর মধ্যে গত ২৯শে জানুয়ারি ২০২২ শনিবারে নতুন করে আরো একটি অস্ত্র উদ্ধারের খবর গণমাধ্যমের হেড লাইন হয়েছে। আর,টি,ই’ র বরাত দিয়ে জানা গেছে, ডাবলিনের তালাতে অভিযান চালিয়ে সাইলেন্সার, গোলাবারুদ, চারটি আগ্নেয়াস্ত্র সহ প্রায় ৭০ হাজার ইউরোর মাদক জব্দ করেছে গার্দা। ঘটনাস্থল থেকে ২০ বছর বয়সী দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মাদক ব্যবসা সহ আন্তর্জাতিক মাদক নেটওয়ার্কের সাথে তাদের সম্পৃক্তা রয়েছে, তবে এই সব গ্যাংদের সাথে স্হানীয় আই,আর,এ’র সদস্যদের একটা যোগসূত্র সব সময় থাকে সেটি অস্বীকার করার উপায় নেই।
আয়ারল্যান্ডের সামাজিক পরিস্হিতি যেভাবে ভয়াবহ হচ্ছে, নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সকল নাগরিকের সেই ভাবে চলা উচিত। রাস্তা পার হতেও দূর্ঘটনার আশংকা থাকে। কিংবা দূর্ঘটনার আশংকা নিয়ে রাস্তা পার না হবার সিদ্ধান্তও বোকামি। তাই সর্বক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন সহ চলা-ফেরার ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাই হবে একজন নাগরিকের যথার্থ কাজ। মানুষ লক্ষ-কোটি মাইল পথ অতিক্রান্ত করে মহাকাশ অভিযান শেষে পৃথিবীতে ফেরত আসছে, আবার পৃথিবীতে কেউ এক মাইল পথ পারি দিতে গিয়ে না ফেরার দেশে চলে যাচ্ছে।
এটাই হচ্ছে সৃষ্টি জগতের বাস্তবতা। বিশ্বাসীদের এটি উপেক্ষা করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের যে কোনো কাজের সফলতা- ব্যর্থতা, ঘটনা-দূর্ঘটনা’র পিছনে মহান স্রষ্টার সিদ্ধান্তকে একক ভাবে মেনে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, মুসলমানদের হাসি-কান্নাগুলো আকাশ থেকে আসে, আবার আকাশে ফেরত চলে যায়। তাই অভিযোগের কোনো প্রশ্নবোধক চিহৃ ছাড়াই মহান রবের প্রত্যেকটি কাজের উপর আমাদের পূর্ণ আস্হা এবং বিস্বাস রাখতে হবে। এমন কী, বুলেটে বুক ছিদ্র হবার মূহর্তেও তাঁর সিদ্ধান্তের প্রতি অ-কৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না।
বিশ্বাসের এই জায়গাটির মর্যাদা শেষ নিঃস্বাসের
আগ পর্যন্ত বুকে আঁকড়ে ধরে রাখতে হবে শক্ত করে।
ধন্যবাদ
এস,এ,রব
৩১/১/২০২২
সিনহা হত্যায় ওসি প্রদীপসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
৩১ জানুয়ারি ২০২২
ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও এসআই লিয়াকত আলী।ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও এসআই লিয়াকত আলী।
কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ সড়কের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে ৪টার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে তারা হলেন- টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব, পুলিশের সোর্স কক্সবাজারের মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এপিবিএনের তিন সদস্যসহ ৭ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সিনহা হত্যা: সেদিন যা ঘটেছিল
দেড় বছর আগে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সেদিন যা ঘটেছিল, তা উঠে আসে।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে সিনহাকে (৩৬) গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বোন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১৫ আসামি রয়েছেন। আজ সোমবার এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে।
সিনহা হত্যার ঘটনার এক মাসের মাথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেয়। তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের তৎকালীন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেন।
প্রতিবেদনে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে পুলিশের হঠকারী (অবিমৃশ্যকারী), প্রস্তুতিহীন ও অপেশাদারি আচরণ বলে উল্লেখ করে তদন্ত কমিটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যথাযথ তদারকি ও জবাবদিহির অভাবে গুলিবর্ষণের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মনে অসংবেদনশীলতা তৈরি হয়েছে। আত্মরক্ষার আইনি সুবিধার অপপ্রয়োগ হচ্ছে। এসব বন্ধে কমিটি ১৩ দফা সুপারিশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনহা তাঁর সঙ্গী সিফাতকে সঙ্গে নিয়ে মারিশবুনিয়ার টুইন্যার পাহাড়ে ‘টাইম ল্যাপস’ ভিডিও করতে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যার পর পাহাড়ে আলো দেখে স্থানীয় কয়েকজন তাঁদের ডাকাত বলে সন্দেহ করেন।
লিয়াকত কাউকে জানাননি
তদন্ত কমিটির কাছে লিয়াকত বলেছেন, মারিশবুনিয়া গ্রামের কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সেক্রেটারি নুরুল আমিন তাঁকে ফোন করে বলেছিলেন যে পাহাড়ে ডাকাতেরা ছোট ছোট আলো ফেলে ঘোরাঘুরি করছে। লিয়াকত তখন মাদক উদ্ধার অভিযান থেকে ফিরছিলেন। নুরুল আমিন আবার ফোন করে বলেন, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা সেই লোকেরা গ্রামবাসীকে গুলি করেছেন। তাঁরা সিলভার রঙের গাড়িতে করে কক্সবাজারের দিকে যাচ্ছেন। নুরুল আমিনও কমিটির কাছে একই কথা বলেছেন। কমিটি বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের ৩৫ জন পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, যাঁরা কেউই এ কথা জানতেন না। কথা হয়েছে শুধু লিয়াকত ও নুরুল আমিনের মধ্যে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লিয়াকত সে খবর কাউকে জানাননি। এমনকি ওসি বা ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকেও না। তিনি খবর যাচাই করার জন্য ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান বা স্থানীয় কাউকে ফোন করেননি। কোনো সহকর্মীকেও সেটা বলেননি। লিয়াকত কমিটিকে বলেছেন, খবর যাচাই করার সময় তিনি পাননি। মারিশবুনিয়ার মসজিদ থেকে যখন ‘ডাকাত’ বলে মাইকিং করা হচ্ছিল, তখন নিষেধ করেছিলেন ইমাম জহির আলম। তিনি বলেছিলেন, তাঁরা সেনাবাহিনীর লোক। পাহাড়ে যাওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়েছিল।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এভাবে লিয়াকতকে বারবার ফোন করা শুধু ডাকাতের ভয়, নাকি অন্য কোনো কারণে, তা জানতে অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন।
সিদ্ধান্ত লিয়াকতের একার
পাহাড় থেকে নেমে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে আসার আগে সিনহা বিজিবির একটি চৌকিতে থেমেছিলেন। বিজিবির সদস্যরা সিনহার পরিচয় জানার পর তাঁকে স্যালুট করেছিলেন। সেখান থেকে ছয় কিলোমিটার আসার পর শামলাপুর তল্লাশিচৌকি, যেখানে সিনহাকে গুলি করা হয়। এর এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে সেনাবাহিনীর তল্লাশিচৌকি। এপিবিএনের সদস্যরা কমিটিকে বলেছেন, লিয়াকত চৌকিতে এসে কিছু বলেননি। তিনি শুধু তল্লাশিচৌকির এসআই শাজাহানকে ফোন করেছিলেন। তা ছাড়া তিনি যখন ফোনে ডাকাতের খবর পেয়েছিলেন, তখনো তাঁর সঙ্গে পুলিশের একটি দল ছিল। কিন্তু তিনি কাউকে না জানিয়ে একাই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন।
কমিটি বলেছে, লিয়াকতের এমন কর্মকাণ্ড অপেশাদারি, খামখেয়ালি, রহস্যজনক ও প্রশ্নসাপেক্ষ।
সিনহার কোন হাত কোথায় ছিল
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনহার গাড়ি তল্লাশিচৌকিতে এলে কনস্টেবল রাজীব সংকেত দেন। গাড়ি থেমে যায়। বাঁ দিকের কাচ নামিয়ে সিনহা পরিচয় দিলে এসআই শাজাহান পেছনে সরে যান। গাড়ি আবার চলতে শুরু করে। এরপর লিয়াকত এসে ব্যারিকেড দিয়ে পিস্তল তাক করেন। সিনহাকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন।
সিনহার সঙ্গী সিফাত কমিটিকে বলেছেন, সিনহার নির্দেশে তিনি গাড়ি থেকে নেমে যান। গাড়ির দুই সিটের মাঝখানে রাখা পিস্তলে সিনহাকে হাত দিতে দেখেন সিফাত। কিন্তু নামার সময় কী হয়েছিল, তা তিনি আর দেখেননি।
সিনহার গাড়ি থেকে নামা নিয়ে পুলিশের একেক সদস্য কমিটির কাছে একেক রকম তথ্য দিয়েছেন।
এসআই শাজাহান বলেছেন, সিনহাকে তিনি নামার সময় দেখেননি, দাঁড়ানোর সময় দেখেছেন। তিনি পিস্তল তাক করেননি।
কনস্টেবল রাজীব বলেছেন, সিনহার এক হাত ওপরে, আরেক হাত নিচে ছিল।
কনস্টেবল আবদুল্লাহ বলেছেন, তিনি সিনহাকে অস্ত্র তাক করতে দেখেননি। তাঁর পিস্তল খাপের মধ্যে ছিল। সেটা বের করতে গেলেই লিয়াকত গুলি করেন।
এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত কমিটিকে বলেন, লিয়াকত ব্যারিকেড দিয়ে অস্ত্র তাক করে গাড়ির সামনে দাঁড়ান। এরপর…শুট শুট বলেই গুলি করেন লিয়াকত।
গুলিবর্ষণকারী লিয়াকত কমিটিকে বলেছেন, ‘সিনহা গাড়ি থেকে নেমে উত্তেজিত হয়ে আমার দিকে গুলি করেন।’ তবে কমিটির জেরায় লিয়াকত বলেছেন, গাড়ি থেকে নামার সময় সিনহা ডান হাত কোমরে রাখেন, এরপর পিস্তল তাক করে গুলি করেন।
কমিটি প্রতিবেদনে বলেছে, সবাই বলেছেন, সিনহার বাঁ হাত ওপরে ছিল। কিন্তু ডান হাত কোথায় ছিল, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। একেকজন একেক কথা বলেছেন।
লিয়াকতের জীবনের শঙ্কা ছিল কি
তদন্ত কমিটির কাছে লিয়াকত বলেছেন, তিনি জানমালের নিরাপত্তার জন্য গুলি করেছিলেন।
কিন্তু এসআই শাজাহান বলেন, ওই সময় লিয়াকতের স্থলে তিনি হলে গুলি করতেন না। গুলি করার কারণ হিসেবে তিনি লিয়াকতের অনভিজ্ঞতা ও সোর্সের ওপর অতিনির্ভরশীলতাকে দায়ী করেছেন।
কনস্টেবল রাজীব বলেছেন, লিয়াকত গুলি না করলে সিনহা গুলি করতেন কি না, তা তিনি বুঝতে পারেননি।
আবার নন্দদুলালের কাছে কমিটি জানতে চেয়েছিল, ওই সময় লিয়াকতের জীবনের কোনো শঙ্কা ছিল কি না? জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমি এ রকম চিন্তা করিনি।’
সিনহাকে মেরে ফেলার জন্য গুলি
অন্য সব সাক্ষী কমিটির কাছে যেসব কথা বলেছেন, তাতে কমিটি মনে করে, সিনহাকে মেরে ফেলার জন্য গুলি করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক কমিটিকে বলেছেন, একটি গুলি দূর থেকে করা হলেও পরের সব গুলি খুব কাছ থেকে করা হয়েছিল।
কমিটি লিয়াকতের কাছে জানতে চেয়েছিল, আত্মরক্ষার জন্য কটি গুলির প্রয়োজন? জবাবে লিয়াকত বলেছেন, তখন সেটা গোনার সময় ছিল না।
কমিটি মনে করে, সঠিক তথ্য যাচাই করলে, অভিযানের আগে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিলে গুলিবর্ষণ এড়ানো যেত। দরকার হলে লিয়াকত বিজিবি ও সেনাবাহিনীরও সহযোগিতা নিতে পারতেন। একে ‘অপেশাদারি, চরম সমন্বয়হীনতা ও ক্রেডিট হাইজ্যাকের কুফল’ বলে মনে করে কমিটি।
বিনা চিকিৎসায় মারা যান সিনহা
সিনহাকে গুলি করার ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর প্রদীপ ঘটনাস্থলে আসেন। এর আগে সিনহাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রদীপ আসার ২২ মিনিট পর সিনহাকে ট্রাকে তোলা হয়।
কমিটি বলেছে, হাসপাতালে যেতে অস্বাভাবিক দেরি হওয়ায় বিনা চিকিৎসায় সিনহা মারা যান।
কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষী ও উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। তাই আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে বলে আশা করে রাষ্ট্রপক্ষ।
যাদের ভ্যাকসিনের বয়স ৯ মাসের বেশি এবং যারা এর পর বুস্টার ডোজ নেয় নাই তাদের বিদেশ ভ্রমণ বাধাগ্রস্থ হবে। ইউরোপিয় নতুন নিয়মানুসারে নয় মাস আগের দেয়া ভ্যাকসিনের কোভিড সার্টিফিকেট আর গ্রহণযোগ্য হবেনা, যদিনা তারা বুস্টার ডোজ গ্রহণ করে থাকে।
ফেব্রুয়ারি ১ তারিখ থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবার কথা। ১ম ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মাস পেছনের গণনা করে ভ্রমণের অনুমতি পাওয়া যাবে। তার মানে কেউ যদি ১ মে ২০২১ এর আগে ভ্যাকসিন নিয়ে থাকে তাহলে তাকে ভ্রমণের জন্য অনুমতি পেতে অবশ্যই বুস্টার ডোজ নিতে হবে। অন্যথায় ভ্রমণের জন্য কোবিড রিকভারির প্রমান অথবা নেগেটিভ পিসিআর লাগবে।
জুমার দিন যেসব আদব ও আমল করা আবশ্যক
সপ্তাহের সেরা দিন জুমা। এ দিনের রয়েছে বেশ কিছু আদব ও আমল। কোরআন-সুন্নাহর বর্ণনায় এসব আদব ও আমলের কথা ওঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা এ দিন আজানের সঙ্গে সঙ্গে নামাজে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবেবে-
হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)
জুমার দিনের অন্যতম আদব ও আমলগুলো হলো-
১. মেসওয়াক করা
মেসওয়াক করা ফজিলতপূর্ণ কাজ। আর জুমার দিন অজু ও গোসলে মেসওয়াক করা অন্যতম আদবের অন্তর্ভূক্ত। (ইবনে মাজাহ, বুখারি)
২. গোসল করা
পবিত্রতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য গোসল করা জুমার দিনের অন্যতম আদব। যাদের উপর জুমার নামাজ পড়া ফরজ; তাদের জন্য এ দিন গোসল করাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবশ্যক করেছেন।’ (বুখারি)
৩. সুগন্ধি ব্যবহার করা
জুমার দিনের অন্যতম আদবসমূহের মধ্যে একটি হলো সুগন্ধি লাগানো। এতে ইবাদত-বন্দেগিতে মন প্রফুল্ল থাকে। (বুখারি)
৪. শরীরে তেল ব্যবহার করা
জুমার দিন গোসলের পর সুগন্ধি ব্যবহারের সময় শরীরে তেল ব্যবহার কথাও এসেছে হাদিসে। সে কারণে শরীরের ত্বকের যত্নে তেল ব্যবহার করাও জুমার দিনের অন্যতম আদব।’ (বুখারি)
৫. সুন্দর পোশাক পরা
ইবাদতের শ্রেষ্ঠ দিনে উত্তম পোশাক পরা জুমার দিনের অন্যতম আদব। এদিন সম্ভব হলে নতুন কাপড় পড়া। অন্যথা যেসব কাপড় আছে সেগুলো ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন করে তা পরে জুমার নামাজ পড়তে আসা উত্তম। (ইবনে মাজাহ)
৬. হেঁটে মসজিদে আসা
জুমার দিন মসজিদে হেঁটে আসা এ দিনের অন্যতম আদব। কারণ এদিন মুসল্লির প্রতিটি কদমে কদমে আল্লাহ তাআলা এক বছরের নামাজ ও রোজা সাওয়াব দান করেন।’ (আবু দাউদ)
৭. সবার আগে মসজিদে আসা
জুমার দিন আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিংবা তারও আগে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা। নামাজের আহ্বান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে আগে আগে মসজিদে এসে উপস্থিত হওয়া জুমার দিনের অন্যতম আদব।’ (বুখারি ও মুসলিম)
৮. মনোযোগের সঙ্গে খুতবাহ শোনা
জুমার দিনের অন্যতম আদব হলো চুপ থেকে মনোযোগের সঙ্গে খুতবাহ শোনা। এ দিন মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শোনা আবশ্যক ও অনেক ফজিলতপূর্ণ কাজ। ফেরেশতারাও খুতবাহ শুরু হলে মনোযোগের সঙ্গে খুতবাহ শুনতে তাতে অংশগ্রহণ করেন। (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
৯. জুমার নামাজ পড়া
জুমার দিনের মূল কাজ হলো- জুমার নামাজ পড়া। জুমার নামাজ পড়ার বরকতপূর্ণ মর্যাদা হলো- এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা এবং আরও তিন দিন মোট দশ দিনের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। জুমার নামাজ মুসলিম উম্মাহর প্রধান ইবাদত। আর দিনটি ইবাদতের দিন হিসেবে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
১১. সুরা কাহফ পড়া
সুরা কাহফ পড়া জুমার দিনের অন্যতম আদব ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এ ইবাদতে এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সময়ের দিনগুলোকে আলোকিত করে দেয়। জুমার দিন সুরা কাহফের অনেক ফজিলত আছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো, দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তি ও আসমান থেকে সাকিনাহ বা প্রশান্তি নাজিল হয়।’ (মুসতাদরাকে হাকেম, বায়হাকি)
১২. বেশি বেশি দরূদ পড়া
জুমার দিনের অন্যতম আদব ও আমল হলো- এ দিন বেশি বেশি দরূদ শরিফ পড়া। দিনটিতে দরূদ শরিফ পড়লে মহান আল্লাহ বান্দার ৮০ বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দেন।’ (আবু দাউদ)
১৩.দোয়া করা
জুমার দিন দোয়া কবুলের বিশেষ কিছু মুহূর্ত আছে।এ সময়গুলোতে দোয়া করলে মহান আল্লাহ বান্দার সব দোয়া কবুল করে নেন। যদি পরের হক বা অধিকার সংক্রান্ত ও হারাম কোনো বিষয় না থাকে। এ কারণেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জুমার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দোয়া ও নামাজে রত থাকাই এ দিনের অন্যতম আমল ও আদব।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দিনটি যথাযথ মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে আদব রক্ষা করে ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া। জুমার দিনের ফজিলত, বরকত ও মর্যাদাসমূহ অর্জন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের আবদ ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের দিকনির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন।
আয়ারল্যান্ডে আইনে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, ৫৫ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত আয়
লেখা:সৈয়দ আতিকুর রব, ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড
অনন্য সুন্দর দেশ আয়ারল্যান্ড। ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত দেশটি মহাদেশটির উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে। আয়ারল্যান্ড দ্বীপের বড় অংশজুড়ে আয়ারল্যান্ড রিপাবলিক দেশটি (দ্বীপের বাকি অংশের নাম নর্দান আয়ারল্যান্ড, যেটি ব্রিটেনের অংশ)। প্রায় ৪৬ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে ছোট পাহাড়, সবুজ সমতলভূমি, আছে সবই। ইউরোপের একটি বড় অর্থনৈতিক শক্তিও দেশটি। বর্ণিল সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আধুনিক জীবনযাত্রা সবাই আছে এখানে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও দেশটির প্রচুর সুনাম। বিশেষ করে আয়ারল্যান্ডে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ক্যারিয়ার গঠনের ভালো সুযোগ। দেশটির সরকারি ভাষা আইরিশ, ইংরেজি। বিদেশি শিক্ষার্থীদের সব সময়ই স্বাগত জানাতে প্রস্তুত দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
আইন বিষয়ে ডিগ্রিধারী সবাইকে যে আইনজীবী বা আদালত পাড়ার কর্মকর্তা হতে হবে তেমন কোনো কথা নেই। এই বিষয়ে পড়াশোনা করে ক্যারিয়ার গড়ার রয়েছে বিশাল সুযোগ। আইনের শিক্ষার্থীরা বিশ্লেষণ, গবেষণা ও যুক্তির ওপর দক্ষ হয়ে থাকেন। যেকোনো সমস্যার সৃষ্টিশীল সমাধান খুঁজে পান তাঁরা।
পশ্চিমা টিভির অনুষ্ঠানমালাসহ বলিউড ছবি দেখলে মনে হয় আইন শিক্ষা শুধু অপরাধীদের বিচার কিংবা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ের জন্য; কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অপরাধ আইন এই বিভাগের একটি শাখা মাত্র। বেশির ভাগ আইনই এর চেয়ে অনেক বেশি বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বেশির ভাগ আইন কর্মকর্তা ও ব্যারিস্টাররা সম্পত্তি আইন, পারিবারিক আইন, কোম্পানি আইন, ব্যাংকিং আইন, মেধাসম্পত্তি আইন, ট্যাক্স, শ্রম কিংবা বাণিজ্য আইন নিয়ে কাজ করেন। বর্তমান বিশ্বে আইন পেশার রয়েছে বিশাল ক্ষেত্র।
কোথায় পড়বেন
আয়ারল্যান্ডে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, যারা আইন বিষয়ে ডিগ্রি দিয়ে থাকে (গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন)। তাদের মধ্যে ট্রিনিটি কলেজ, ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন, গ্যালওয়ের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আয়ারল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক, ময়নুথ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিমেরিক উল্লেখযোগ্য।
বেসরকারি গ্রিফিত কলেজের আইন ডিগ্রিরও সুনাম রয়েছে। এর বাইরে ডাবলিন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ওয়াটারফোর্ড ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, লেটারকেনি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ডাবলিন বিজনেস স্কুলসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আইন বিষয়ে ডিগ্রি দিয়ে থাকে। দেশটির তৃতীয় স্তরের কলেজগুলোতে আবার আইনের পাশাপাশি দ্বিতীয় একটি বিষয় বা ভাষার ওপর পড়াশোনারও সুযোগ রয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব লিমেরিকের ল’ প্লাস ডিগ্রি এ ক্ষেত্রে খুব জনপ্রিয়। এখানকার শিক্ষার্থীদের আইনের পাশাপাশি মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান কিংবা আইরিশ বা অন্য কোনো ইউরোপীয় ভাষাকে পাঠ্য হিসেবে বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আবার ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনে ল’ অ্যান্ড বিজনেস ডিগ্রিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি থাকলেও এখানে ল’ অ্যান্ড চায়নিজ স্টাডিজ, ল’ উইথ ফ্রেঞ্চ ল’, ল’ অ্যান্ড ফিলোসফি ইত্যাদি বিষয়েও পড়ার সুযোগ রয়েছে।
লেখক:সৈয়দ আতিকুর রব, ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড
ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটিতে আইন শিক্ষার ওপর অনেকগুলো উদ্ভাবনী ও আকর্ষণীয় কোর্স রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যাচেলর অব সিভিল ল’—যাতে শেখানো হয় কীভাবে আইনি প্রক্রিয়াগুলো কাজ করে এবং আইন কীভাবে সমাজ দ্বারা প্রভাবিত হয়। সাংবিধানিক আইন, চুক্তি আইন, অপরাধ আইনের মতো মৌলিক বিষয়গুলো যুক্ত রয়েছে এই কোর্সে। এ ছাড়া এই প্রতিষ্ঠানে আইন, অর্থনীতি ও রাজনীতির ওপর সমন্বিত ডিগ্রি নেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে, যাতে একজন শিক্ষার্থী আইনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও সরকার ব্যবস্থার ওপর জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।
ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ
আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিলেই যে আইনজীবী হওয়া যায় তেমনটি নয়। এরপর আইনজীবী হতে হলে অবতীর্ণ হতে হয় পরবর্তী পরীক্ষায়। কাজেই নতুনদের জন্য আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরুর জন্য পার হতে হয় আরও একটি ধাপ। তবে সেটি খুব কঠিন কোনো পদক্ষেপ নয়। তা ছাড়া আয়ারল্যান্ডের আইন ডিগ্রি নিয়ে এ দেশে যেমন ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে তেমনি উন্নত বিশ্বের যেকোনো দেশে গ্রহণযোগ্য এসব ডিগ্রি। প্রাথমিক অবস্থায় আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করা তরুণদের কিছুটা কঠিন সময় পার করতে হয়। তবে পরিচিতি ও সুনাম ছড়াতে শুরু করলে দ্রুত ওপরে ওঠা যায়।
এখানে ওকালাতি পেশার সঙ্গে জড়িত হতে হলে কী করতে হবে, সেগুলোর বিস্তারিত তথ্য ‘দ্য ল সোসাইটি অব আয়ারল্যান্ড’–এর ওয়েবসাইট থেকে যে কেউ জেনে নিতে পারবেন খুব সহজে। (The law society of ireland)
আইন পেশার বাইরে অনেক প্রতিষ্ঠান আইন বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়া তরুণদের চাকরির সুযোগ দিয়ে থাকে, তাঁদের দক্ষতা আর বুদ্ধিদীপ্ততার কথা মাথায় রেখেই। তাঁদের বেশির ভাগই প্রতিষ্ঠানের আইন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। আইন কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের যেকোনো আইনি জটিলতায় আদালতের মুখোমুখি হওয়ার আগে কাগজপত্র প্রস্তুত করাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন।
এ ছাড়া অনেকে অবশ্য ব্যাংকিং, ট্যাক্সসহ অন্যান্য খাতেও চাকরি খুঁজে নেন। আইন পেশায় ডিগ্রি নেওয়াদের সরকারি চাকরি বা বেসরকারি কোম্পানিতে ভালো বেতনে চাকরি নিতেও দেখা যায়। এ ছাড়া নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির সুযোগ রয়েছে এসব পেশার ডিগ্রিধারী তরুণদের।
আয়রোজগার কেমন
আইন পেশায় উপার্জনের কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। আইনজীবীরা যত খ্যাতি অর্জন করবেন, তাঁদের ফি তত বাড়বে। তবে অন্যান্য দেশের মতো আয়ারর্যান্ডেও তরুণ অবস্থায় উপার্জনের হার কম থাকে। তবে পুরোনো হয়ে গেলে উপার্জনও বাড়ে।
আয়ারল্যান্ডের ক্যারিয়ারবিষয়ক ওয়েবসাইট গ্রাডআয়ারল্যান্ডের (gradireland) তথ্যমতে, দেশটিতে অভিজ্ঞ ব্যারিস্টাররা বছরে ৫৫ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত আয় করতে পারেন। তবে কোনো কোনো আইনজীবীর উপার্জন তিন লাখ ইউরো পর্যন্ত রয়েছে।
মাঝারি মানের কোম্পানিগুলোতে এক বা দুই বছরের অভিজ্ঞ আইন কর্মকর্তারা গড়ে ৪০ হাজার ইউরো উপার্জন করেন। ডাবলিন কিংবা আশপাশের এলাকাগুলোতে অবশ্য উপার্জনের হার কিছুটা কম। আর বড় প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ আইন কর্মকর্তা বছরে এক থেকে দেড় লাখ ইউরো পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন।
নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৭ বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় জমে গিয়ে তারা মারা যান।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার ইতালির কোস্টগার্ড লাম্পেদুসা উপকূল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার গভীরে সাগরে নৌকাটি ভাসতে দেখে উদ্ধার অভিযান চালায়। নৌকাটিতে তারা তিনজনকে মৃত অবস্থায় পায় এবং বাকি চারজন নৌকাটি কূলে ভেড়ানোর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান।
লাম্পেদুসার মেয়র সালভাতোরে মারতেল্লো এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। নৌকাটিতে ২৮০ জন আরোহীর অধিকাংশই বাংলাদেশ ও মিসরের নাগরিক।
ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রধান গন্তব্য ইতালি। চলতি বছরের প্রথম ২৪ দিনেই ১ হাজার ৭৫১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালির বিভিন্ন বন্দরে নেমেছেন।
ইউক্রেন ঘিরে পশ্চিমাদের সাথে রাশিয়ার চলমান বিবাদ যখন চরম উত্তেজনায় রুপ নিয়েছে তখন বিশাল এক নৌ মহড়ার আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। প্রশান্ত মহাসগর থেকে শুরু করে আটলান্টিক মহাসগার জুড়ে আয়োজিত বিশাল এই মহড়ায় অংশ নিবে রাশিয়ান নেভির সকল নৌবহর। মহড়ায় অংশ নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৪০টির বেশি রাশিয়ান রনতরী, ৪০টি যুদ্ধ বিমান, ১০,০০০ হাজার সেনা ও মিলিটারি হার্ডওয়ারের ১০০টি ইউনিটকে ।
জানা গেছে চলতি মাস থেকে শুরু হওয়া এই মহড়া চলবে আগামী মাস পর্যন্ত। এই দিকে আটলান্টিক মহাসাগরে আয়ারল্যান্ডের সমুদ্র সীমানায় রাশিয়ান নেভির এই নৌ মহড়া নিয়ে আইরিশদের মধ্যে তৈরী হয়েছে বেশ উদ্বেগ । আগামী ৩ই ফেব্রুয়ারী থেকে ৮ই ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরবর্তী আটলান্টিক মহাসাগরের আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমায় চলবে রাশিয়ার এই নৌ-মহড়া। আন্তর্জাতিক আইন মেনে মহড়া পরিচালনার কথা উল্লেখ করে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে নোটিশ পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO) । কিন্তুু আয়ারল্যান্ডের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে রাশিয়ার এই ধরণের নৌ মহড়া নিয়ে ইতিমধ্যে দেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। জনমনে সৃষ্টি হয়েছে সংশয়। এই মহড়াকে ঘিরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনীতিবিদরা। এ-ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকার অভিমত ব্যক্ত করেছেন সিন ফেইন দলের সাংসদরা সহ স্বতন্ত্র সাংসদ ক্যাথল বেরি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আইরিশ এভিয়েশন অথরিটি ইতিমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে এ-ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছে যে – দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরবর্তী আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় অনুষ্টিত এই নৌ মহড়ায় মিসাইল পরীক্ষা চালাবে রাশিয়া। যার ফলে মহড়াকালীন সময় বেসামরিক বিমানগুলোকে নিদ্রীষ্ট এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্ব স্হান বজায় রাখতে বলা হয়েছে আইরিশ এভিয়েশন অথরিটির পক্ষ থেকে । ৩রা ফেব্রয়ারী থেকে ৮ই ফেব্রুয়ারি স্হানীয় সময় সকাল ৫টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলবে এই মহড়া। এই বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী সাইমন কভেনির কাছ থেকে সরাসরি কোনো মন্তব্য পাওয় না গেলেও, তাঁর একজন মুখপাত্র রবিবার গণমাধ্যমকে বলেছেন ,আইরিশ পররাষ্ট্র বিভাগ রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন পর্যায়ের কাছে এই বিষয়টি উত্থাপন করেছে এবং আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার সাথে তাঁরা আবারো আলোচনায় বসছেন বলে ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন ।
অপরদিকে গত শুক্রবার রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত ইউরি ফিলাটডের সাথে আইরিশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল সেন ক্ল্যান্সির মধ্যে ডাবলিনের ওরওয়েল রোডে অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে । রাশিয়ান দুতাবাস তাদের এক টুইটার বার্তায় বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছে, ” রাশিয়া-আয়ারল্যান্ড সম্পর্ক উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক এজেন্ডা সহ দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে”।অবশ্যি আইরিশ প্রতিরক্ষা বিভাগ এই বৈঠককে একটি “রুটিন সৌজন্য সাক্ষাৎ” বলে অভিহিত করেছে। সম্প্রতি চিফ অফ স্টাফ হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন জেনারেল সেন ক্ল্যান্সি। এবং বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সাথে তাঁর সাক্ষাৎকে রুটিন সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে মনে করছে আইরিশ প্রতিরক্ষা বিভাগ। সাধারণত এই ধরনের বৈঠক মন্ত্রীর সাথে নয়, স্টাফ প্রধানের সাথে হয় বলে প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে বলা হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে আরো বলা হয়েছে, রাশিয়ার সাথে আয়ারল্যান্ডের কোনো চলমান সামরিক কার্যক্রম নেই এবং তাদের সাথে এই ধরণের কার্যক্রমের কোনো ইচ্ছাও তাদের নেই। কিন্তুু স্বতন্ত্র সাংসদ ক্যাথাল বেরি বলছেন ভিন্ন কথা।তিনি মনে করেন, অনুষ্টিতব্য নৌ মহড়ার সাথে এই বৈঠকের একটি সম্পর্ক রয়েছে, যা আগামী ফেব্রুয়ারিতে করতে চায় রাশিয়ান নৌ বাহিনী। সিন ফেইন দলীয় সাংসদরা বলেছেন একই কথা।
সাবেক সেনা রেঞ্জার ডক্টর বেরি মনে করেন, “গুলি চালানোর মহড়া বৈধ হলেও,এটি আয়ারল্যান্ডের জন্য একটি সতর্কবার্তা”। সামরিক প্রযুক্তিতে আয়ারল্যান্ডের দুর্বলতার দিক উল্লেখ করে বেরি বলেন, এই ধরণের মহড়াকে দেশের সমুদ্র সীমানার জন্য তিনি হুমকি হিসেবে দেখছেন। তিনি এই মহড়াকে রাশিয়ার উস্কানি মনে করেন।
সিন ফেইন নেতা মেরি লু ম্যাকডোনাল্ড রাশিয়ার এই সামরিক মহড়াকে একটি পরিকল্পিত ঘটনা বলেছেন। আয়ারল্যান্ডের প্রতিরক্ষা খাতের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে মেরি লু বলেন, ২০১৫ সালে এই সংক্রান্ত একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রতিরক্ষা খাতকে প্রযুক্তি নির্ভর উন্নয়নের মাধ্যমে সময়পোযোগী করার লক্ষ্যে কিছু সুপারিশ করা হয়েছিল তাদের পক্ষ থেকে। কিন্তুু নিশ্চিত সমস্যা জানা সত্বেও সরকার এখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। মেরি লু বলেন – “আমি বুঝতে পারছি অনুশীলনের মাধ্যমে তাঁরা কোনও আইন ভঙ্গ করছে না, তবে উদ্বিগ্ন হবার বিষয় যে, এই সকল কার্যক্রম নজরদারি করার মত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবস্হা আয়ারল্যান্ডের কী আছে” ? উল্লেখ্য যে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে আয়ারল্যান্ড একমাত্র দেশ, যাদের সমুদ্রে নজরদারি ব্যবস্হা অত্যন্ত নাজুক। প্রকৃত অর্থে গভীরে সাগরের তলদেশ এবং উপরিভাগে কী হচ্ছে ? সে গুলো পর্যবেক্ষণ সহ সতর্কমুলক ব্যবস্হা গ্রহণের প্রযুক্তি আয়ারল্যান্ডের নেই বলে তিনি মনে করেন।
রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্টিত হয় আইরিশ নৌবাহিনী। বর্তমানে আইরিশ নৌবাহিনীর মোঠ সদস্য সংখ্যা ১০৪৯ জন, সংরক্ষিত সংখ্যা ১১৫ জন। আইরিশ মোঠ রনতরীর সংখ্যা ৯টি, তার মধ্যে ৫টি অপারেশন চালাতে সক্ষম। আয়ারল্যান্ডের সাথে ইউরোপের সমুদ্রসীমা প্রায় ১৩১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশাল বিস্তৃত এই সমুত্রসীমা নিরাপদ রাখতে আইরিশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা অপর্যাপ্ত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মাদক পাচার,মানব পাচার, অবৈধ মাছ ধরা সহ আইরিশ সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করা বিদেশী সামরিক যুদ্ধজাহাজ থেকে আইরিশ উপকূলরেখা রক্ষায় কার্যকরী ভুমিকা রাখার জন্য আইরিশ নৌবাহিনীকে নতুন করে ঢেলে সাজানো সহ কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া অতি জরুরী প্রয়োজন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক এবং সামরিক বিশ্লেষকরা।
উপমহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামী সঙ্গীতশিল্পী জুনাইদ জামশেদ। বৈচিত্রময় জীবনের অধিকারী জুনাইদ জামশেদ জীবনের শুরুভাগে ছিলেন পাকিস্তানের পপ সম্রাট। ইসলামের ছোঁয়ায় জীবনের দিক পরিবর্তন করে হয়ে ছিলেন নাত সম্রাট। হামদ, নাতে কোটি মুসলিমের হৃদয়ে সত্যের আলোকে ছড়িয়ে দিতে গেয়েছিলেন আমৃত্যু।
১৯৬৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের করাচিতে জন্ম৷ বাবা জামশেদ আকবর খান ও মা নাফিসা আকবরের ৩ ছেলে ১ মেয়ের মাঝে তিনি ছিলেন প্রথম৷ বাবা ছিলেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ক্যাপ্টেন। সৌদি আরবে মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে তিনিও যোগ দিতে চেয়েছিলেন বাবার কর্মক্ষেত্রেই। পাইলট হবার স্বপ্ন ছিলো তার, কিন্তু দুর্বল দৃষ্টিশক্তি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো তাতে। পদার্থ ও গণিতে ব্যাচেলর করবার পর জুনাইদ ঠিকই যোগ দিয়েছিলেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে, বেসামরিক ঠিকাদার হিসেবে।
রকস্টারের জীবন
চাকুরিকালে শিক্ষাকালীন অবকাশে তিনি শুরু করেন রক গানের কনসার্ট।এরপর শখের বশেই রাহেল হায়াত ও শাহজাদ হাসানের সঙ্গে ১৯৮৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশাত্মবোধক গান ‘দিল দিল পাকিস্তান’ গাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন দেশটির প্রথম পপ ব্যান্ড ‘ভাইটাল সাইন’৷ তাদের প্রথম হিট এ্যালবাম ‘দিল দিল পাকিস্তান’ এনে দেয় আকাশচুম্বী খ্যাতি। এই গানটিই ঘুরিয়ে দেয় তার জীবনের মোড়। পরিণত করে একজন শৌখিন সঙ্গীতশিল্পী থেকে পেশাদার শিল্পীতে। পেশওয়ার ও লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন বিভিন্ন শো করছিলেন, তখনো তিনি লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্র-প্রকৌশলে অধ্যয়নরত। সময়টা ১৯৮৬ এর মাঝামাঝি। পরের বছরেই একই নামে বাজারে আসে তাদের অ্যালবাম। সেখান থেকে ‘দিল দিল পাকিস্তান’, ‘তুম মিল গায়ে’ দিয়ে দেশজোড়া খ্যাতি পান জুনাইদ ও তার ব্যান্ড। তারপর তো পড়া ছেড়ে পুরোদস্তুর গানেই মজে গেলেন জুনাইদ।
পরবর্তী দুই অ্যালবাম ‘ভাইটাল সাইন্স টু’ আর ‘অ্যাতবার’ এর জনপ্রিয়তা জুনাইদকে দেয় নতুন এক পরিচয়ের দিশা। ১৯৯৪ সালে পিটিভির ‘ঢুন্ডলে রাস্তে’ সিরিজটির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে জুনাইদ এবার নাম লেখালেন অভিনেতার খাতায়! অভিনেতা হিসেবে ছোট একটি ইনিংস খেলে জুনাইদ এবার মন দিলেন সলো গানের ক্যারিয়ারে। ১৯৯৮ সালে ব্যান্ড ছেড়ে এসে বের করলেন সলো অ্যালবাম ‘উস রাহ পার’ (১৯৯৯)। এই অ্যালবাম থেকে টাইটেল ট্র্যাকটি সহ ‘না তু আয়েগি’, ‘আঁখোঁ কো আঁখোঁ নে’, ‘ও সানাম’ বাজারে তুমুল জনপ্রিয় হয়। ২০০১ সালে বের হয় তার সর্বশেষ অ্যালবাম ‘দিল কি বাত’। ২০০৩ সালে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের এক জরিপে ‘সেরা ১০ সুর’-এর তালিকায় ৭,০০০ গানকে পিছে ফেলে জায়গা করে নেয় জুনাইদের ‘দিল পাকিস্তান’।
ভাগ্য সবসময় সুপ্রসন্ন থাকে না। জুনাইদের ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটলো। এমনিতেই ব্যান্ড ছেড়ে দেবার পর কাছের অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো তার থেকে। উপরন্তু শেষ দুইমটি অ্যালবাম বাজারে তেমন কাটতিও পায়নি। কেবল ইউরোপ, আমেরিকায় কিছু শো করে দিন কাটছিলো জুনাইদের। কিন্তু ৯/১১ এর পর নিরাপত্তা আশঙ্কা ও ইসলামবিদ্বেষের কারণে জুনাইদ জামশেদের সব কনসার্ট বাতিল হতে থাকে পাশ্চাত্যে। জনপ্রিয়তার শিখর থেকে হুট করে এমন খাদেই পড়লেন জুনাইদ যে কোর্ট কর্তৃক তিনি দেউলিয়া পর্যন্ত ঘোষিত হলেন ২০০৪ সালে!
ধর্মীয় জীবনে পদার্পণ
২০০৩ সালের ১৪ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্গীতজগতকে বিদায় জানান তিনি৷ আসলে বিদায় জানানো বলা ঠিক হবে না, মেধাবী এই শিল্পী তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ শিখরে অবস্থান করে খ্যাতি ও ভবিষ্যতের বদলে ইমানকে বেছে নেন।
এই নাটকীয় পরিবর্তনের পর এই বদলের সিদ্ধান্তগ্রহণে তার কোনো আফসোস হয়নি৷ তিনি বলতেন, ”আমার আগের জীবনযাপনের কোনো দৃষ্টিভঙ্গি এখন আর অবশিষ্ট নেই। আমার নতুন জীবন খুব সরল, পবিত্র এবং সুন্দর। আমি অনুভব করি, আপনি আপনার জীবনে আল্লাহর হুকুম ও রাসুলের তরিকার ওপর আমল করেন৷ তাহলে দুনিয়াতেই আপনার জীবন জান্নাতে পরিণত হবে”।
এরপরই মিডিয়ার লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান জুনাইদ। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিগ্রিটা শেষ করে তিনি কাজ করলেন কিছু কোম্পানিতে। সেখানে মন টিকাতে পারলেন না তিনি। কাছের এক বন্ধুকে নিয়ে তিনি এরপর খুলে বসলেন ফ্যাশন হাউজ ‘জে ডট’। শোনা যাচ্ছিলো তখন থেকেই তিনি বেশ করে ঝুঁকে পড়ছিলেন ধর্মকর্মের দিকে।
ব্যবসায় উন্নতির সাথে সাথে তিনি জড়িয়ে পড়েন তাবলিগ জামাতের সাথেও। রক গায়ক, খণ্ডকালীন অভিনেতা থেকে তিনি বনে গেলেন ইঞ্জিনিয়ার, ফ্যাশন ডিজাইনার এবং সর্বোপরি ধর্মপ্রচারক। তাবলিগের হয়ে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেবার পাশাপাশি তিনি শুরু করলেন নাত গাওয়া। এই নাত দিয়ে পুনরায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠলেন জুনাইদ জামশেদ। তবে পুনর্জীবনের এ অধ্যায়ে অবধারিতভাবেই শ্রোতা-ভক্তের ধরনটা বদলে যায়। কিন্তু কণ্ঠ তো রয়েছে আগের ন্যায় মধুময়ই, এ কারণে জুনাইদের গাওয়া ‘ইয়ে সুভা মদিনা’, ‘তুনে পুঁছি ইমামত’, ‘মুলতাজিম পার দুয়া’, ‘মেরে মাদাদ আল্লাহ’র মতো অসংখ্য নাত পায় মানুষের ভালোবাসা। বাংলায় গাওয়া ‘হে রাসূল’ ও ‘নবী মোর পরশমনি’-র কাভারও ইউটিউবের কল্যাণে পেয়েছে বেশ বাঙালি-শ্রোতাপ্রিয়তা। বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের জন্য প্রচুর দাতব্য কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন জুনাইদ। পূর্বের গ্ল্যামারের সাথে ধর্মের মিশেলে তার এই নতুন কারিশমাটিক ভূমিকা তাকে পরিণত করে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে। মাত্র বছর দশেকের ব্যবধানে একজন রকস্টারকে এভাবেই পৃথিবী চিনলো সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে।
জুনাইদ জামশেদ রকস্টার হিসেবে আগের ও ইসলামের সেবক হিসেবে পরের জীবন
বিতর্কিত জুনাইদ জামশেদ
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তার এক ভিডিও প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি বলেছিলেন, “মুহাম্মদ (স) এর স্ত্রী আয়েশা স্বামীর বাড়তি মনোযোগ কামনা করতেন, তাই তিনি একবার অসুস্থতার ভান করেছিলেন”। ব্যস, ব্ল্যাসফেমি আইনে নবীর (সা) স্ত্রীকে অবমাননার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয় সুন্নি তেহরিক নামক একটি সংগঠন। পরবর্তীতে বক্তব্য প্রত্যাহার ও ‘তওবা’ করে সে যাত্রায় মামলা থেকে পার পান জুনাইদ। তবে ভাগ হয়ে যায় আলেম সমাজ। জুনাইদের দীক্ষাগুরু হিসেবে পরিচিত তাবলিগের প্রধান মাওলানা তারিক জামিল ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন জুনাইদের জন্য। সবাইকে বোঝাতে লাগলেন, “এ ভুল অনিচ্ছাকৃত। আর রাসুলের আদর্শ হলো ক্ষমার আদর্শ, তাই জুনাইদকেও ক্ষমা করে দেওয়া উচিত।”
করুণ জীবনাবসান
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় স্ত্রী নাহিয়া জুনাইদকে নিয়ে তাবলিগের কাজে তিনি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের চিত্রালে গিয়েছিলেন (উল্লেখ্য, জুনাইদের তিন পুত্র ও এক কন্যার জন্ম তার প্রথম স্ত্রী আয়েশা জুনাইদের গর্ভে)। ৭ ডিসেম্বর সেখান থেকে ইসলামাবাদ ফেরার পথে তাকে বহনকারী পিআইএ ৬৬১ বিমানটি একই প্রদেশের হাভেলিয়ানে বিধ্বস্ত হয়। সস্ত্রীক নিহত জুনাইদের দেহকে স্বাভাবিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এক্সরে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল দ্বারা সনাক্ত করতে হয়েছিলো তাকে। তার মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান হয়েছিলো তার অগণিত ভক্ত, যারা কেউ ভালোবেসেছিলো রকস্টার জুনাইদকে, কেউবা বেসেছিলো নিবেদিতপ্রাণ মুসলিম গায়েন জুনাইদকে। এভাবেই ইতি ঘটেছিলো একটি বর্ণবহুল জীবনের, একটি বর্ণাঢ্য গল্পের।
মৃত্যু অবধি জুনায়েদ উর্দু গজল, হামদ-নাতের বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের মনের স্থান লাভ করে আছেন৷ তিনি সঙ্গীতচর্চার পাশাপাশি নিয়মিত তাবলিগের কাজ করতেন। সঙ্গীত পরিবেশন ও বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্য তিনি অনেকবার বাংলাদেশ সফর করেছেন। সমাজসেবার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার সঙ্গে। আমরা দোআ করি মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন।
হোটেল,রেস্তোরা এবং পাবগুলোতে স্টাফদের বখশিস/Tips পাবার আইনগত অধিকার নিশ্চিত করেছে আইরিশ সরকার।
গত ১৯শে জানুয়ারি বুধবার আইরিশ মন্ত্রিসভায় একটি নতুন আইন অনুমোদিত হয়েছে।
এই আইনটি অনেকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ না হলেও আতিথেয়তালয় (hospitality ) সেক্টরের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আইনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেননা, এই আইন পাশ হবার মধ্য দিয়ে আয়ারল্যান্ডে বাধ্যতামুলক ভাবে রেস্তোরা এবং পাবগুলোতে কর্মরত স্টাফদের বখশিস (gratuities/tips ) পাবার আইনগত অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সেক্টরগুলোতে কাস্টমার দ্বারা প্রদত্ত বখশিস আত্মসাৎ এর যে- অভিযোগ নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে ছিল, এই আইন প্রণয়ের মাধ্যমে সেই পথ বন্ধ হল। কোনো নিয়োগকর্তা এখন থেকে স্টাফদের বখশিসের টাকা নিজের পকেটে ঢুকাতে পারবেন না। এটি আইনগত নিষিদ্ধ। নতুন এই আইন হবার মাধ্যমে স্টাফরা বখশিসের টাকা পূর্ণ ভোগের আইনগত অধিকার লাভ করল। এই ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
বুধবার সংসদে প্রস্তাুবিত নতুন মজুরি প্রদান সংক্রান্ত একটি সংশোধিত বিলে পাব ও রেস্তোরায় কর্মরত স্টাফদের জন্য বখশিস প্রদানের এই বিধানটি আইনে সংযোজন করা হয়। যার ফলে পাব এবং রোস্তোরায় কাস্টমার কর্তৃক প্রদত্ত বখশিসের টাকা সরাসরি স্টাফদের নিকট যাবার বিধান নিশ্চিত হল ।
এই আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কাস্টমার কর্তৃক ব্যাংক কার্ড কিংবা ক্যাশের মাধ্যমে পরিশোধিত বিলের সাথে প্রদত্ত বখশিসের টাকা আলাদাভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্হা রাখতে হবে নিয়োগকর্তাকে। এবং সেগুলো সুষমভাবে ভাবে স্টাফদের মধ্যে বন্টন করতে হবে। বখশিসের টাকা অন্য কিছুর সাথে সম্পৃক্ত করা যাবে না। তবে এ-ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ আওতাভুক্ত নয়। ওয়ার্কপ্লেস রিলেশন কমিশন (WRC) এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্টান পরিদর্শন কালে নিয়োগকর্তা তাদের কাছে সেই তথ্য প্রদর্শনের জন্য আইনগত বাধ্য থাকবেন।
অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের জাহিদ মোমিন চৌধুরী সভাপতি, বকুল খান সম্পাদক নির্বাচিত।
ইউরোপে মূল ধারার সাংবাদিকদের পরিবার খ্যাত অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে এক উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) স্পেনের নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ বর্ণাঢ্য এই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি প্রবাসী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছে সমাজের দর্পণ, তাদের অনেক দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে যদি আপনারা সত্য এবং বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পরিবেশন করতে পারেন তাহলেই দেশ, সমাজ এবং রাষ্ট্র উপকৃত হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ডয়েচে ভেলের বাংলার প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, এই প্রবাসে যারা সাংবাদিকতা করেন তাদের এই পেশাকে ভালোবাসা উচিত। অর্ধেক কাজ করবেন, অর্ধেক সাংবাদিকতা করবেন এরকম উদ্দেশ্য নিয়ে সফলতা অর্জন করা যাবে না। কমিউনিটিকে এগিয়ে আসতে হবে সাংবাদিক তৈরিতে অনুপ্রেরণা যোগাতে আর সাংবাদিকদের কাজটা হচ্ছে ওয়াচডগ।
আয়েবাপিসির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সেলিম আলমের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব লাবণ্য চৌধুরীর পরিচালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে আরো বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক বকুল খান, ফেরদৌস করিম আখঞ্জী, জাহিদ মোমিন চৌধুরী, সোহেল চৌধুরী, শাওন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নয়ন মামুন, এএমনসি রোমেলসহ আরো অনেকে।
মাদ্রিদে একটি পাঁচ তারকা হোটেলের বলরুমে আয়োজিত এই দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি স্পেনের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও ডয়েচে ভেলে’র বাংলার প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন এসে পৌঁছালে সাংবাদিক নেতারা তাদেরকে স্বাগত জানানো। এ সময় শিশুরা তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিক নেতারা বক্তব্য রাখেন। পরে সাংবাদিক সংগঠক ও সাংবাদিকতায় সম্মানোনা ছাড়াও এই কমিউনিটির জন্য যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদেরকে সম্মাননা প্রদান করেন অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেস ক্লাব।
শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
সংগঠনের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এনটিভির আয়ারল্যান্ড প্রতিনিধি জাহিদ মোমিন চৌধুরী সভাপতি এবং ডিবিসি ও আইঅন টিভির স্পেন প্রতিনিধি বকুল খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি একাত্তর টেলিভিশনের ইতালি প্রতিনিধি লাবণ্য চৌধুরী, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনটিভি ফ্রান্স প্রতিনিধি নয়ন মামুন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অস্ট্রিয়ার সোহেল চৌধুরী নির্বাচিত হন।
আজ মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে ক্লোজ কন্টাক্ট টেস্ট ও আইসোলেশনের এর নতুন নিয়ম।
আইসোলেশন ও ক্লোজ কন্টাক্ট বিষয়ে সরকারের জারি করা আগের নির্দেশনায় যে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেই নতুন নিয়ম আজ মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে৷
হাজার হাজার মানুষের মধ্যে যারা বুস্টার নিয়েছেন এবং যাদের করোনার কোন উপসর্গ নেই তাদের আর আলাদা আইসোলেশনে যাওয়ার দরকার নেই এর পরিবর্তে তাদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে হবে এবং ভালো মানের মাস্ক পরতে হবে।
আরো পরিবর্তন আনা হছে PCR এর উপর, এখন থেকে ৪০ বছরের কম বয়সী যে কেউ অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় পজেটিভ রেজাল্ট আসবে তাদের আর পূনরায় PCR টেষ্ট করতে হবে না।
আয়ারল্যান্ডে যাদের বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি নেই তাদের জন্য সুখবর :
আয়ারল্যান্ডে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের নিয়মিতকরণ প্রকল্পের দাপ্তরিত কার্যক্রম ৩১শে জানুয়ারী ২০২২ থেকে শুরু হচ্ছে বলে justice minister helen mcentee’র বরাত দিয়ে জানা গেছে। আর এই বহুল প্রতিক্ষিত প্রকল্পের ভেতর দিয়ে আয়ারল্যান্ডের প্রায় ১৭ হাজার কাগজহীন অভিবাসীরা পর্যায়ক্রমিক রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত হবার সুযোগ পাবেন। অনথিভুক্ত অভিবাসীদের জন্য নতুন এক দিগন্তের উম্মেচন হতে যাচ্ছে অচিরেই।
৩১ জানুয়ারী ২০২২ থেকে আইরিশ সরকারের পূর্ব গৃহীত অনথিভুক্ত প্রকল্পের আনুষ্টানিক কার্যক্রমের কাজ শুরু হবে। সরকারের ঘোষিত দীর্ঘমেয়াদী এই অনথিভুক্ত প্রকল্পের ( undocumented scheme) অধীনে যারা নিয়মিতকরণের জন্য আবেদন করবেন এবং কীভাবে আবেদন করবেন, তার প্রয়োজনীয় তথ্য নিচে দেওয়া হলো।
যাদের বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি নেই তাদের জন্য ৩১ জানুয়ারি থেকে অনলাইনে আবেদনের জন্য এই স্কিম খোলা হবে।
· আবেদন ৩১ শে জুলাই ২০২২ অর্থাৎ ছয় মাস পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে।
· আবেদনকারীকে অবশ্যই আয়ারল্যান্ডে কমপক্ষে চার বছরের অনথিভুক্ত বসবাসের মেয়াদ থাকতে হবে, অথবা যাদের সন্তান আছে তাদের ক্ষেত্রে তিন বছর বসবাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
– যারা দুই বছর ধরে ডাইরেক্ট প্রভিসনে আছেন তারাও এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
– স্টুডেন্ট ভিসায় এসে তার মেয়াদ ফুরাবার পরেও যারা দেশে ফিরে না যাওয়ায় অনথিভুক্ত হয়ে পড়েছেন এই প্রকল্পেও তারাও আবেদন করতে পারবেন।
· সফল আবেদনকারীরা অভিবাসনের অনুমতি পাবেন। তারা সবাই বৈধভাবে কাজ করতে পারবেন এবং নথি ঠিক থাকলে অভিবাসীদের স্হায়ী বসবাসের অনুমতি সহ তাদের নাগরিকত্ব লাভের পথ উম্মুক্ত হবে।
তবে আবেদনকারীদের সুচরিত্রের প্রমাণের জন্য গার্দার কাছ থেকে Garda vetting সংগ্রহ করতে হবে, যেখানে বলা থাকবে আবেদনকারীর কোনো অপরাধে যুক্ত না থাকার কথা।
আয়ারল্যান্ড ও ইউরোপে ওমিক্রনকে বাগে আনতে Covid-19 পিলের বিষয়ে EMA এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত জারি করবে।
ওমিক্রন বাগে আনতে ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি EMA এক সপ্তাহের মধ্যে Pfizer Covid-19 পিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জারি করতে পারে।
মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানী কোভিড -১৯ পিল প্যাক্সলোভিড এর অনুমোদন চেয়ে আবেদন জমা দেওয়ার পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক বলেছে যে, ফাইজারের কোভিড -১৯ পিল প্যাক্সলোভিড ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে তারা সিদ্ধান্ত জারি করতে পারে।
ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি EMA জানিয়েছে, ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী,যাদের ওজন কমপক্ষে ৪০ কেজি এবং যারা অসুস্থতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সেই সকল রোগীদের মধ্যে হালকা থেকে মাঝারি কোভিড -১৯ এর চিকিৎসার জন্য এই পিল ব্যবহারের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
যদিও এখন পর্যন্ত কোভিড ভ্যাকসিন মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রধান রক্ষাকবচ তারপরও ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি EMA নিয়ন্ত্রকরা এই পিলকে থেরাপি হিসেবে দ্রুত-সক্রামিত ওমিক্রন ছড়ানোর বিরুদ্ধে বিকল্প একটি নতুন হাতিয়ার হিসাবে দেখছেন, ওমিক্রন এখন বিশ্বের ১২৮ টিরও বেশি দেশে সনাক্ত করা হয়েছে।
EMA ইতিমধ্যেই নভেম্বরে শুরু হওয়া ফাইজারের পিলের রোলিং পর্যালোচনার সময় ডেটার একটি অংশ মূল্যায়ন করেছে।
প্যাক্সলোভিড নামক Pfizer-এর দুই ধরনের এই ঔষধের নিয়ম হচ্ছে Covid-19 উপসর্গ শুরু হওয়ার পরপরই পাঁচ দিনের জন্য বাড়িতে বসে এটি সেবন করা যাবে। ডিসেম্বরে US Food & Drug Administration দ্বারা ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের জন্য এই দুটি ঔষুধ অনুমোদিত হয়েছিল।
একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে, এটি গুরুতর অসুস্থতার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং মৃত্যু প্রতিরোধে প্রায় ৯০% কার্যকর ছিল।
নিউইয়র্কে মুসলিম আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ ১৯ জন নিহত।
নিউইয়র্কের একটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে নয়টি শিশুসহ অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানিয়েছেন, আরও ৩২ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দমকল বিভাগের কমিশনার ড্যানিয়েল নিগ্রো বলেছেন, তারা ১৯ তলা ভবনের প্রতিটি তলায় হতাহতদের খুঁজে পেয়েছেন এবং ধোঁয়া “অভূতপূর্ব” ছিল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ফিলাডেলফিয়ায় একটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে ৮টি শিশুসহ ১২ জন নিহত হওয়ার কয়েকদিন পরেই এ ঘটনা ঘটলো।
কর্মকর্তারা জানায়, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে ব্রঙ্কস অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলায় আগুন লেগেছিল।
প্রায় ২০০ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মীকে আগুন নিয়ন্ত্রণে পাঠানো হয়েছিল। কর্মকর্তারা মনে করেন, একটি ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক হিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।
মি. নিগ্রো জানান, দুটি তলায় আগুন লাগলেও ধোঁয়া সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
মি. নিগ্রো সাংবাদিকদের বলেছেন, যে অ্যাপার্টমেন্টে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল তার দরজা খোলা রেখে দেওয়া হয়েছিল এবং এ কারণেই ধোঁয়া প্রতিটি তলায় ছড়িয়ে পড়ে।
“সদস্যরা সিঁড়ির প্রতিটি তলায় হতাহতদের খুঁজে পেয়েছেন এবং এরা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। পরে তাদের বাইরে বের করে আনা হয়।
ভবনটির পাশের বাসিন্দা জর্জ কিং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আগুন ধরে যাওয়ার সাথে সাথে লোকেরা জানালা দিয়ে হাত নাড়ছিল।
“আমি ধোঁয়া দেখেছি, অনেক লোক আতঙ্কিত ছিল,” তিনি বলেছিলেন। “আপনি যেমনটা দেখতে পাচ্ছেন যে কেউ ভবন থেকে লাফ দিতে চায়নি।”
মেয়রের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা স্টেফান রিঙ্গেল এপি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন যে, সব মিলিয়ে ৬৩ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৩২ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৩ জনের অবস্থা গুরুতর।
মি. অ্যাডামস সাংবাদিকদের বলেন, “এই আগুনের প্রভাব আমাদের শহরে বেদনা ও হতাশা নিয়ে আসতে চলেছে।” “হতাহতদের সংখ্যা ভয়ঙ্কর।”
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হকুল রবিবারের ঘটনাকে “শোকাবহ রাত” বলে অভিহিত। যারা জীবিত আছেন তাদের সহায়তার জন্য ক্ষতিপূরণ তহবিল তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
মিজ হকুল বলেছেন, “নতুন আবাসন, সৎকারের খরচ এবং আমাদের যা যা প্রয়োজন তা জোগাড় করার অর্থ থাকবে কারণ আমরা এখানে নিউইয়র্কে এটিই করি।”
ব্রঙ্কসের যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে একটি বিশাল মুসলিম অভিবাসী জনসংখ্যার বাসস্থান এবং আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই গাম্বিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
মি. অ্যাডামস আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে অভিবাসন অবস্থা নির্বিশেষে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তা চাইতে অনুরোধ করেছেন। তিনি বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তাদের সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য অভিবাসন সার্ভিসে পাঠানো হবে না।
কোভিড-১৯ পুরো বিশ্বজুড়ে ২০২২ সালেও বিরাজ করবে। পৃথিবী থেকে করোনা নির্মূল করার কোন উপায় নেই। ঠান্ডা, সর্দি-কাশির মতো সিজনাল ফ্লু হিসেবে এর অস্তিত্ব থাকবে। সাম্প্রতিক অনেক গবেষণার ফলে বিশেষজ্ঞরা এটিই নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশ্বজুড়ে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ওমিক্রনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর উচ্চ সংক্রমণশীলতা। পুরো বিশ্বে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উচ্চ সংক্রমণশীলতার কারণে সর্বোচ্চ শনাক্তের হার রেকর্ড-ব্রেক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। কোভিড-১৯ এর তৃতীয় বর্ষে বিশ্বে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে ২৯ কোটি যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ ৫০ হাজার। আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে ৮ লক্ষেরও বেশি কেস রেকর্ড করা হয়েছে যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার।
অন্যদিকে, এই উচ্চ সংক্রমণশীলতা আশার আলো দেখাচ্ছে বিশ্ববাসীকে। ইউসিডি ভাইরোলজিস্ট ডাঃ জেরাল্ড ব্যারিডেল্টা জানিয়েছেন, বর্তমানে ওমিক্রনের উচ্চ সংক্রমণশীলতার ফলে কম সংখ্যক মানুষকে হাসপাতালে শরনাপন্ন হতে হচ্ছে এবং এটি মানুষের মাঝে শক্তিশালী এন্টিবডি গঠন করবে। উল্লেখ্য যে, ওমিক্রন ফুসফুসকে তুলনামূলক কম সংক্রমিত করে। ওমিক্রন মহামারী বিনাশের চাবিকাঠি হলেও হতে পারে।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ওমিক্রনের চেয়েও সংক্রমনশীল আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট এর দ্রুত বিস্তার ঘটবে কি না সেই ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। কারণ, ভাইরাসের বংশবিস্তারের প্রক্রিয়া আসলেই একটি রহস্যজনক ব্যাপার।
“ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এর দ্রুত বিস্তার লাভ ও ওমিক্রনের এন্টিবডি তৈরির ক্ষমতার বিষয়টি লোকচুরির ফলে অত্যন্ত খারাপ একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে। তাই সরকারকে অবশ্যই প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
ডা.ব্যারি আশা করছেন, এন্টিভাইরাল ঔষধ, উন্নত পরিকল্পনা ওমিক্রনের এর বিরুপ প্রভাব হ্রাস করতে পারে। এক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট – মার্কের মলনুপিরাভির এবং ফাইজারের প্যাক্সলোভিড যা মৃদু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতাল হতে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
অধ্যাপক মিলসও ওমিক্রন নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। কারণ ওমিক্রন ভাইরাসের পরিবর্তনগুলো তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলোতে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। এই মুহুর্তে ভ্যাক্সিন মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
“এটি বলা প্রায় অসম্ভব যে ওমিক্রনের চেয়ে সংক্রামক ও বিপদজনক ভাইরাসের আগমন ঘটবে কি না। তবে এরকম একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এক্ষেত্রে আমি আশাহত এর চেয়ে বরং আশাবাদী। ”
এছাড়াও, সংক্রামক রোগের চিকিৎসক ডাঃ ক্লিওনা নি চেল্লাই বিবৃতি দিয়েছেন যে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভ্যাকসিন বিতরণ করা না হলে ভাইরাসের বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাবে যা মূল SARS-এর মতো মারাত্মক হতে পারে।
আয়ারল্যান্ডে বিমান বন্দর দিয়ে প্রবেশের জন্য বিমান যাত্রীদের আর নেগেটিভ কোভিড পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না।
গতকাল মন্ত্রিসভা এক প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করার পর আকাশ পথে ভ্রমণের পর আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করতে বিমানের যাত্রীদের নেগেটিব টেষ্টের বাধ্যবাদকতা আর থাকছে না।
এতে বুঝা যাচ্ছে যে, সরকার নেগেটিভ অ্যান্টিজেন বা PCR পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও এই ব্যবস্থাটি করা হয়েছিল ওমিক্রন ভাইরাস ছড়ানো নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য।
অতএব, সরকারী বিভিন্ন সূত্রগুলি ইঙ্গিত করেছে যে এটির আর প্রয়োজনীয় নয় কারণ ওমিক্রন এখন সংক্রামনের সমস্ত ক্ষেত্রে ৯৫% এরও বেশি দায়ী।
তবে পূর্ববর্তী নিয়ম অনুসারে সমুদ্র বা আকাশপথে দেশে ভ্রমণকারী যাত্রীদের তাদের ইইউ ডিজিটাল কোভিড সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হোলোহানের পরামর্শে গতকাল সকালে মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রীদের কাছে এই নিয়ম পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
তথ্সুত্র:
https://www.independent.ie/irish-news/politics/passengers-will-no-longer-need-a-negative-covid-test-to-enter-the-country-41210723.html
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আপিলের আবেদন করার সময় বাংলাদেশি বোলার তাসকিন আহমেদ
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে আট উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্টে প্রথমবারের মতো দেশটির বিপক্ষে জয় পেলো বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ক্রিকেটের কোন সংস্করণেও এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়।
এই জয়ের মাধ্যমে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। নয়ই জানুয়ারি হ্যাগলি ওভালে হবে সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্ট।
পাঁচ উইকেটে ১৪৭ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল নিউজিল্যান্ড।
শেষ দিনে ১০.৪ ওভারের মধ্যেই ২২ রান যোগ করার পর অল আউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৯ রান।
ফলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল মাত্র ৪০ রান। দুই উইকেট হারালেও সহজেই জয় তুলে নেয় মুমিনুল হকের দল।
এই জয়ের মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টুয়েন্টি- সব সংস্করণ মিলিয়ে ৩২-ম্যাচের জয় খরার অবসান ঘটলো বাংলাদেশের। সেই সঙ্গে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের টানা ১৭ টেস্টের অপরাজেয় যাত্রাও থামল এই পরাজয় দিয়ে।
প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রানে নিউজিল্যান্ডকে গুড়িয়ে দেয়ার পর ব্যাট হাতে বাংলাদেশ ৪৫৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল।
দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে এসে মাত্র ৪০ রানের লক্ষ্য দিয়ে ১৬৯ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। দুই উইকেট জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
পঞ্চম দিনে সাদমান ইসলামের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন নাজমুল হোসেন। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ায় সাদমানকে তুলে নেন টিম সাউদি।
এরপর নাজমুলকে নিয়ে ৭৫ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েছিলেন মুমিনুল।। কিন্তু কাইল জেমিসনের বলে স্লিপে রস টেলরের হাতে ক্যাচ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় নাজমুলকে। এরপর মুশফিকের বাউন্ডারি দিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
নিউজিল্যান্ডকে অল আউটের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন এবাদত হোসেন। আগের দিন তিনি নিয়েছেন চার উইকেট। শেষ দিনে তিনি নিয়েছেন রস টেলর আর কাইল জেমিসনকে। তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র আর টিম সাউদির উইকেট। ট্রেন্ট বোল্টের পঞ্চম উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে গুড়িয়ে দেন হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশ: তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে অমিক্রন- বলছেন বিজ্ঞানী
অমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী সাতদিনের মধ্যেই বিধিনিষেধ জারি করার জন্য সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞানী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশে আগামী তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসের অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিরাময় ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এখনও মানুষ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, কিন্তু অমিক্রনের সংক্রমণ শক্তি বেশি হওয়ায় আরও বেশি সংখ্যক লোক আক্রান্ত হবে বলে তিনি ধারণা করছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী সাতদিনের মধ্যেই বিধিনিষেধ জারি করার জন্য সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকারের এসব ঘোষণা এলো। সাতদিনের মধ্যে বিধিনিষেধ
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অমিক্রন সংক্রমণের হার বিবেচনা করে তারা জরুরি কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করার জন্য সুপারিশ করেছেন। সেটা সাতদিনের মধ্যেই জারি করার তাগিদ দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ আসবে। তবে মঙ্গলবার তিনি সচিবালয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, ”গতকালের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মিটিংয়ে ১৫ দিনের মধ্যে বিধিনিষেধ কার্যকর করার কথা হয়েছিল। কিন্তু ১৫ দিন আসলে অনেক বেশি। এই সময়ের মধ্যে রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই আমরা আজ বলেছি, সাত দিনের মধ্যে বিধিনিষেধ প্রয়োগ করতে হবে।”
অমিক্রন সংক্রমণ বাড়লেও তাদের সবাইকে হয়তো হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না বলে এই বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিরাময় ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেনও আশঙ্কা করছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে ব্যাপকহারে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তিনি বলছেন, ”বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে বাংলাদেশ বা আমাদের সাউথ এশিয়ান অঞ্চলে এখন পর্যন্ত অমিক্রন সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু যেহেতু আমাদের দেশে ট্রাভেল আছে অনেক (অনেক মানুষ যাতায়াত করেন), তাই বন্দরে স্ত্রিনিং করে এটা আটকানো কঠিন।”
ভাইরাসটির পরিবর্তন হচ্ছে জানিয়ে মি. হোসেন জানান, বাংলাদেশে এর মধ্যেই ১০টি সংক্রমণ পাওয়া গেছে। যেকোনো সময় এটা বেড়ে যেতে পারে।
বিশ্বব্যাপী তথ্য উপাত্ত এবং অমিক্রণ ভাইরাসের দ্রুত বিস্তার ক্ষমতা, দুটি মিলিয়ে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, আগামী তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে হয়তো অমিক্রন সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আলমগীর হোসেন বলছেন, ”এখন আমরা পাচ্ছি একটা দুইটা করে। কিন্তু আলটিমেটলি হয়তো আমরা আগামী তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেখবো যে, ব্যাপক করোনা পেশেন্ট অমিক্রনে আক্রান্ত।”
আশরাফুলকে ‘দেশদ্রোহী’ বলায় নান্নুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিসিবি
হুট করেই ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল আর জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর মাঝে বিবাদ লেগে গেল! পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে আজ বিসিবি সরগরম। দুজনই জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ছিলেন। নান্নু এখন নির্বাচক, আর আশরাফুল ফিক্সিং করে শাস্তি ভোগ শেষে ঘরোয়া ক্রিকেটে টেনেটুনে খেলছেন। আশরাফুলের এই দুর্বল জায়গাতেই আঘাত করলেন নান্নু। এর আগে অবশ্য নান্নুকে খোঁচা মেরেছেন আশরাফুল।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের নির্বাচকমণ্ডলীকে উদ্দেশ করে আশরাফুল বলেন, ‘একই ব্যক্তি একটি কাজ ১১ বছর ধরে করতে থাকলে আপনি একটা জায়গায় আটকে থাকবেন। নির্বাচক প্যানেল এমন হওয়া উচিত, যাঁরাই হবেন তাঁরা তিন-চার বছরের জন্য দায়িত্ব পাবেন, একটা বিশ্বকাপ থেকে আরেকটা বিশ্বকাপ পর্যন্ত। এভাবে হলে আপনি ভিন্ন কিছু পাবেন, ভিন্ন কিছু ভাবনায় আসবে।’
পরে ওই চ্যানেলেই গিয়ে মিনহাজুল আবেদনি আশরাফুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক কত বছর ধরে কাজ করেছেন, সে ধারণা আশরাফুলের নেই। অস্ট্রেলিয়া কি ক্রিকেটে পিছিয়ে গেছে? আমাদের সকলের জানা উচিত, প্রায় ৯ থেকে ১২ বছর ধরে কাজ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক। সেখানে ও বলছে বিশ্বকাপ থেকে বিশ্বকাপ! কোন বিশ্বকাপ? বাংলাদেশ কি শুধু ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলবে, শুধু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে, শুধু টেস্ট ক্রিকেট খেলবে? তাহলে কি ওয়ানডের জন্য একটা, টেস্টের জন্য একটা, টি-টোয়েন্টির জন্য একটা নির্বাচক কমিটি লাগবে? যে সমস্ত ক্রিকেটার দেশদ্রোহী হয়ে, ম্যাচ ফিক্সিং করে নিষিদ্ধ হয়, তাদের থেকে তো ভালো কোনো পরামর্শ আশা করা যায় না।’
নান্নুর এই বক্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়। আশরাফুলও কষ্ট পেয়েছেন বলে ফেসবুক লাইভে জানান। গত সোমবার এ ব্যাপারে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘আশরাফুল যেহেতু বর্তমান খেলোয়াড় আর সাবেক একজন অধিনায়ক, আমি মনে করি সরাসরি এভাবে আক্রমণ করা ঠিক হয়নি। কাউকেই এভাবে আক্রমণ করা ঠিক নয়। আপনি একটা পদে আছেন বোর্ডে, ওই জায়গা থেকে এমন মন্তব্য না করাই ভালো ছিল। যেহেতু নির্বাচক কমিটি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের অধীনে, আমি এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি।’
ফেসবুক লাইভে আশরাফুলের অভিযোগ ছিল, তিনি নান্নুর বিরাগভাজন হওয়ার কারণেই এবারের বিসিএলে দল পাননি। মিনহাজুল-আশরাফুলের এমন মুখোমুখি অবস্থানে বিব্রত বিসিবি। পরিস্থিতি এমন হলে জাতীয় দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হবে কি না—এমন প্রশ্ন জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমার মনে হয় না এমন কিছু হবে। আমার মনে হয় না ব্যক্তিগতভাবে কেউ এর শিকার হবে। যারা আসবে পারফরম্যান্সের জোরেই দলে আসবে।’
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নাগরিকত্বের আবেদনের ক্ষেত্রে স্কোরকার্ড পদ্ধতি চালু হচ্ছে আয়ারল্যান্ডে। 🇮🇪
নাগরিকত্ব আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে আবেদনকারীর পরিচয় এবং বসবাসের প্রয়োজনীয় প্রমাণের সংখ্যা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে নতুন স্কোরকার্ড এই পদ্ধতিতে।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া নতুন নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার এই স্কোরকার্ড পদ্ধতির মাধ্যমে আবেদনকারীকে তার পরিচয় এবং আয়ারল্যান্ডে বসবাসের সকল তথ্য ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস বরাবর যথাযথভাবে প্রদান করতে হবে ।
বসবাসের প্রমাণের জন্য আবেদনকারীকে প্রতি বছর ১৫০ পয়েন্টের স্কোর করতে হবে এবং সেই পয়েন্ট সংগ্রহ করতে হবে প্রতিবছর বাসস্হানের উপযুক্ত প্রমাণপত্র জমা দেবার মাধ্যমে। এ-ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে আবেদন অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
তাছাড়া একজন আবেদনকারীকে অবশ্যি তার পরিচয় প্রতিষ্টার জন্য মোঠ ১৫০ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে হবে ।
Health service executive বা স্বেচ্ছাসেবী হাসপাতালে নিযুক্ত ডাক্তারদের “মেডিকেল প্র্যাকটিশনার এমপ্লয়মেন্ট হিস্ট্রির সারাংশ”এ-ক্ষেত্রে বসবাসের জন্য প্রমাণ হিসাবে গণ্য হবে।
নাগরিকত্বের আবেদনে উল্লেখিত সময়কালের জন্য গণনাযোগ্য বসবাসের পর্যাপ্ত প্রমাণ যেহেতু নিশ্চিত করার দায়িত্ব হচ্ছে আবেদনকারীর,
সেহেতু আবেদন জমা হবার পর প্রাথমিক পর্যায়ে আর কোনো তথ্যের ঘাটতি রয়েছে কি না, সেটি নিশ্চিত করবে এই স্কোরকার্ড পদ্ধতি।
নতুন এই পদ্ধতি চালু হবার ফলে ইতিপূর্বে বসবাসের সকল প্রমাণপত্র একসাথে পাঠানো থেকে ঝামেলামুক্ত সহ আবেদন দ্রুত সম্পন্ন হবার মাধ্যমে দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষামান থাকা সময়ের পরিসমাপ্তি ঘটবে।
নতুন এই পদ্ধতির মাধ্যমে জাস্টিস মিনিস্টার অতি সহজে নিশ্চিত হবেন যে, আইরিশ নাগরিকত্ব লাভের জন্য আবেদনকারী আয়ারল্যান্ডে তার নির্ধারিত পূর্ণ মেয়াদ পর্যন্ত বৈধভাবে বসবাস করেছেন কি না ? যদি এ-ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় থাকে তাহলে জাস্টিস মিনিস্টার কর্তৃক তিনি পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অবগত হবেন।
এ-সংক্রান্ত এতঠুকু তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের পরবর্তী তথ্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
পবিত্র কাবা ঘরের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপাসনা করতে হচ্ছে।
সৌদি আরবের সরকার সে দেশে করোনাভাইরাসের অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে মক্কা ও মদিনায় আবার সামাজিক দূরত্বের বিধান আরোপ করেছে।
একজন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানাচ্ছে, এই দুটি জায়গায় নামাজি এবং উমরাহ্ পালনকারী সবার জন্য এসব বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে।
সব দর্শনার্থীকে মাস্ক পরতে হবে বলেও ঐ কর্মকর্তা জানাচ্ছেন।
সৌদি সরকার ঘরের ভেতরে এবং বাইরে সব জায়গায় মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করেছে।
এর সাথে মিলিয়ে মক্কা ও মদিনাতেও একই বিধান চালু করা হয়েছে।
সৌদি আরবে গত মাসে কোভিড-১৯ কেসের সংখ্যা এক লাফে অনেক বেড়ে গেছে।
গত বুধবার সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৭৪৪টি নতুন কেস শনাক্ত করেছে।
গত বছর অগাস্টের পর এটি ছিল সবচেয়ে বেশি করোনার কেস।
মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সৌদি আরবে এপর্যন্ত পাঁচ লক্ষ ৫৪ হাজার রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৮,৮৭৪ জন।
গত রোববার সরকার ঘোষণা করেছে, ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে দোকানপাট, শপিং সেন্টার এবং রেস্তোরাঁয় যেতে চাইলে সব সৌদি নাগরিক কিংবা সে দেশে বসবাসকারী ও দর্শনার্থীকে কোভিড বুস্টারের প্রমাণ দেখাতে হবে।
করোনাভাইরাসে আয়ারল্যান্ডে ১৬৪২৮ জন আক্রান্ত: গত সপ্তাহে ২২ জনের মৃত্যু।
পাবলিক হেলথ কর্মকর্তারা আয়ারল্যান্ডে কোভিড-১৯ এর অতিরিক্ত ১৬,৪২৮ কেস নিশ্চিত করেছেন।
আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত, ৫৬৮ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন, যাদের মধ্যে ৯৩ জন (ICU) নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন।
ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি টিম বলেছে যে গত সপ্তাহে ২২জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে, যা আয়ারল্যান্ডে করোনায় মৃত্যু মোট ৫৯১২ জনে পৌঁছেছে। গত সপ্তাহে, সেখানে ৫৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল ৯০০৬ জন নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার ভাইরাসে আক্রান্ত ৯২১জন হাসপাতালে ছিলেন, যাদের মধ্যে ৯২ জন নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার ফ্রান্সে ১ লাখ ৭৯ হাজার নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ে, যেটি ইউরোপের কোন দেশে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের সংখ্যা।
করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর হতে এপর্যন্ত এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় কোভিড সংক্রমণ শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে।
বিশ্ব জুড়ে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের অব্যাহত বিস্তার নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে ৪ লাখ ৪০ হাজার নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। অন্যদিকে ফ্রান্স, ইতালি, গ্রীস, পর্তুগাল এবং ইংল্যান্ডেও সোমবার রেকর্ড সংখ্যায় নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়।
কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, ক্রিসমাসের ছুটির কারণে কোভিড সংক্রমণের তথ্য আসতে দেরি হচ্ছে, সোমবার রেকর্ড সংখ্যায় নতুন সংক্রমণের তথ্য এসে পৌঁছানোর কারণ হয়তো সেটি।
বিভিন্ন গবেষণায় অবশ্য বলা হচ্ছ, এর আগের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় অমিক্রন অনেক দুর্বল। কিন্তু তারপরও আশংকা থেকে যাচ্ছে, যেরকম হারে অমিক্রন সংক্রমণ ঘটছে, তাতে হাসপাতালগুলো রোগীর চাপে হিমসিম খেতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, অমিক্রন এখনো এক মারাত্মক ঝুঁকি।
পোল্যান্ডে বুধবারের হিসেবে একদিনে কোভিড সংক্রান্ত কারণে ৭৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোভিডের চতুর্থ ঢেউয়ে সেদেশে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। যারা মারা গেছে, তাদের তিন চতুর্থাংশেরও বেশি কোন টিকা নেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, ২৭ ডিসেম্বর সেদেশে পরীক্ষায় কোভিডে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা আরও ৪ লাখ ৪১ হাজার ২৭৮ জন বেড়েছে। এটি সিডিসির হিসেবে এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা।
সিডিসির একটি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, মার্কিন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত সাতদিনের গড় হিসেব করলে, প্রতিদিন যত মানুষের কোভিড ধরা পড়েছে, এত বেশি এ বছরের জানুয়ারীর পর আর দেখা যায়নি।
তবে সিডিসির একজন মুখপাত্র বলছেন, সংক্রমনের যে সর্বশেষ সংখ্যা অনুমান করা হচ্ছে, তা হয়তো আসল সংক্রমণের চেয়ে বেশি, কারণ ক্রিসমাসের সময় অনেক পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ ছিল। আর ছুটির কারণে অনেক তথ্য দেরিতে এসে পৌঁছাচ্ছে। নতুন বছরে হয়তো এই সংখ্যা স্থিতিশীল হয়ে আসবে।
যুক্তরাষ্ট্র এখন ইউরোপের আরও কিছু দেশের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মল্টা, মোলডোভা এবং সুইডেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মঙ্গলবার এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যাতে বলা হয়েছে ইউরোপে ২৬ ডিসেম্বরের আগের সপ্তাহে কোভিডের সব ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ৫৭ শতাংশ বেড়েছে, আর আমেরিকায় বেড়েছে ৩০ শতাংশ।
মঙ্গলবার ফ্রান্স জানিয়েছে সেদেশে একদিনে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮০৭টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, জানুয়ারীর শুরুর দিকে ফ্রান্সে দৈনিক সংক্রমণ আড়াই লাখে পৌঁছাতে পারে।
ফ্রান্সের হাসপাতালগুলের ফেডারেশন বলেছে, সবচেয়ে খারাপ সময়টা হয়তো এখনো আসার বাকী আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিস শহরে কোভিড পরীক্ষার অপেক্ষায় এক নারী।
আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশও রেকর্ড সংখ্যায় দৈনিক সংক্রমণের খবর দিয়েছে;
ইতালিতে দৈনিক সংক্রমণ এখন ৭৮ হাজারে পৌঁছেছে। মহামারি শুরুর পর হতে এটি ইতালিতে নতুন রেকর্ড। সেখানে গতকাল মারা গেছে ২০২ জন। এ নিয়ে ইতালিতে এপর্যন্ত মারা গেল ১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫৩ জন।পর্তুগালে গতকাল রেকর্ড করা হয় ১৭ হাজার ১৭২টি নতুন সংক্রমণ।গ্রীসে দৈনিক সংক্রমণ ২১ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রী সবাইকে শান্তভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছেন।ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ গতকাল একদিনে ১ লাখ ১৭ হাজার নতুন সংক্রমণের হিসেব দিয়েছে, যা এক নতুন রেকর্ড। ক্রিসমাসের কারণে পুরো যুক্তরাজ্যের সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাস মহামারির ডামাডোলে বছর দুয়েক চাপা পড়ে ছিল শরণার্থী সমস্যার ইস্যু। তবে আলোচনায় না থাকলেও সংকট থেমে থাকেনি। লকডাউন আর কঠোর বিধিনিষেধে গত বছর বিভিন্ন দেশে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও ২০২১ সালে তা আবার বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি মানুষ ছুটেছে ইউরোপ অভিমুখে। এ বছর প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইতালি, মাল্টা, গ্রিসের মতো দেশগুলোতে পা রাখার চেষ্টা করেছেন লাখো মানুষ। এদের বড় অংশই আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত বা মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দা। তবে অবাক করা বিষয়, চলতি বছর বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আশ্রয়প্রার্থী বের হওয়া দেশের নাম বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসাবে, ২০২১ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত আনুমানিক ১ লাখ ৯ হাজার ৭২৬ শরণার্থী ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছেন। একই সময়ে পূর্ব আটলান্টিক বা কুখ্যাত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৫৪৩ জন। সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৪২২ শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে ইতালি বা মাল্টা যাওয়ার পথে। এর বাইরে আরও ৯৫৯ জন মারা গেছে পশ্চিম আফ্রিকা থেকে স্প্যানিশ ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের মধ্যকার বিপজ্জনক রুট পাড়ি দিতে গিয়ে।
সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের খবর অনুসারে, এ বছর শরণার্থী সংকটে সবচেয়ে বড় অবদান তিউনিসিয়ার। ২০২১ সালে উদ্ধার হওয়া শরণার্থীদের প্রায় ২৫ শতাংশই উত্তর-আফ্রিকার দরিদ্র দেশটি থেকে যাওয়া। এরপরেই সবচেয়ে বেশিবার নাম এসেছে বাংলাদেশের। এ বছর ১১ শতাংশের বেশি শরণার্থী বাংলাদেশ থেকে রওয়ানা দিয়েছিল।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শরণার্থী বেরোনো দেশের তালিকায় বরাবরই আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নাম শীর্ষে দেখা গেছে। তবে গত বছর এ তালিকার শীর্ষ দশে বাংলাদেশ নাম লেখানোর পর অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। এ বছর দেশটি চলে এসেছে তালিকায় আরও ওপরে।
আরব নিউজের খবরানুসারে, ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাসের শেষ পর্যন্ত ইউরোপ অভিমুখে রওয়ানা দেওয়া অন্তত ৬ হাজার ৪৫৫ জন শরণার্থীর যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে। এদের মধ্যে অজ্ঞাত সংখ্যক লোক মারা গেছেন।
গত মে মাসে তিউনিসিয়া উপকূলে ৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে একটি নৌকা ডুবে যায়। একটি তেল প্ল্যাটফর্ম আঁকড়ে ধরে তখন কোনোমতে প্রাণে বাঁচেন ৩৩ জন। পরে উদ্ধারকারীরা খুবই অবাক হন, যখন জানতে পারেন, বেঁচে যাওয়া সবাই বাংলাদেশ থেকে গেছেন। তবে ওই লোকগুলো আসলেই বাংলাদেশি নাগরিক কিনা তা পরিষ্কার নয়।
শরণার্থী উৎস দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম আসার অন্যতম প্রধান কারণ ধরা হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকটকে। সংখ্যালঘুদের ওপর মিয়ানমার সরকারের চরম দমন-পীড়নের মুখে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জনবহুল রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া অনেকেই বঙ্গোপসাগরের ভেতর ভাসানচরের পুনর্বাসনকেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
গত আগস্টে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছিল, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত অন্তত ৩ হাজার ৪৬ রোহিঙ্গা আন্দামান ও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করে, যাদের দুই-তৃতীয়াংশই ছিল নারী ও শিশু। এদের মধ্যে ২০০ জনের বেশি সাগরেই মারা যান।
শরণার্থীদের পুনর্বাসনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে এইএনএইচসিআর। তারা জানিয়েছে, গত বছর বিশ্বজুড়ে ২ কোটি ৭ লাখ শরণার্থীর মধ্যে মাত্র ৩৫ হাজার জনের পুনর্বাসন সম্ভব হয়েছে। জাতিসংঘের এ সংস্থাটির ধারণা, ২০২২ সালে অন্তত ১৪ লাখ শরণার্থীর পুনর্বাসনের প্রয়োজন পড়বে।
ঝালকাঠির নদীতে লঞ্চে ভয়াবহ আগুন, অন্তত ৩৭ জনের মৃত্যু – বলছে স্থানীয় প্রশাসন
২৪ ডিসেম্বর ২০২১,
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন লেগে অন্তত ৩৭ জন মারা গেছে।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মইনুল হক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন লঞ্চের ভেতরে এবং বাইরে ৩৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, লঞ্চে আগুন লাগার পরে অনেক নদীতে লাফিয়ে পড়ে। ফলে নদী থেকে এখনো মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে।
কর্মকর্তারা আশংকা করছেন, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বিবিসি বাংলাকে জানান, ‘এমভি অভিযান’ নামে একটি লঞ্চ ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে গতরাতে ছেড়ে যায়। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ভোরে লঞ্চে আগুন ধরে যায়।
আহতদের বরিশাল সদর হাসপাতাল এবং স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বিভাগীয় কমিশনার।
লঞ্চটিতে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে – সেটি এখনো বলতে পারছেন না কর্মকর্তারা।
ঝালকাঠি থেকে স্থানীয় সাংবাদিক আক্কাস শিকদার বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ভোর সাড়ে তিনটার দিকে লঞ্চে আগুনের সূত্রপাত হবার খবর পান তিনি।
এসময় লঞ্চ থেকে অনেক যাত্রী জীবন বাঁচানোর জন্য নদীতে লাফ দেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
এই লঞ্চটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছিল বলে জানা গেছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইঞ্জিন রুম থেকে আগুণের সূত্রপাত হয়েছে।
যাত্রীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক আক্কাস শিকদার জানিয়েছেন, লঞ্চটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবার সময় দোতলার ডেক বেশ গরম ছিল। এনিয়ে যাত্রীরা অভিযোগ করলে লঞ্চের স্টাফরা তখন কার্পেট বিছিয়ে দেন। কিন্তু এই গরম ক্রমাগত বাড়তেই থাকে।
একপর্যায়ে ইঞ্জিন রুমে আগুন ধরে যায় বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
আহতদের মধ্যে অন্তত ৮০ জনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আনা হয়েছিল এর মধ্যে ২০জনকে সেখানে রেখে বাকিদের বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান সাংবাদিক আক্কাস শিকদার
আবারও বিধিনিষেধে ফিরছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ
বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
আবারও বিধিনিষেধে ফিরছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করায় ইউরোপীয় নেতারা আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন। এরই মধ্যে জার্মানি এবং পর্তুগাল ক্রিসমাসের পরে বিভিন্ন বিধিনিষেধ এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ঘোষণা দিয়েছে। খবর বিবিসির।
ইউরোপের অনেক দেশেই ওমিক্রন ইতোমধ্যেই বেশ প্রভাব ফেলেছে। করোনার নতুন এই ধরনের কারণে অনেক দেশেই সংক্রমণ রেকর্ড করেছে। সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
হ্যান্স ক্লাগ নামের ওই কর্মকর্তা বলেন, করোনার আরও একটি ঝড় আসতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জার্মানি ঘোষণা করেছে যে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে আবারও কিছু বিধিনিষেধে ফিরছে তারা। ১০ জনের বেশি মানুষ একত্রে সমবেত হতে পারবেন না এবং নাইটক্লাব বন্ধ থাকবে। এই সময় থেকে ফুটবল ম্যাচও আবদ্ধ স্থানে অনুষ্ঠিত হবে।
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, ক্রিসমাসে করোনাভাইরাস কোনো বিরতি নিচ্ছে না। আমরা চোখ বন্ধ রাখতে পারি না এবং এটা উচিতও হবে না।
এদিকে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে বার এবং নাইটক্লাব বন্ধ রাখছে পর্তুগাল। ওই একই সময় থেকে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়ার্ক ফ্রম হোম বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ১০ জনের বেশি মানুষ কোনো স্থানে সমবেত হতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে ক্রিসমাসের আগে ইংল্যান্ডে নতুন কোনো বিধিনিষেধ জারি করার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে সামাজিক মেলামেশায় বিধিনিষেধ জারি করেছে স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং নর্থ আয়ারল্যান্ড।
সুইডেনে বুধবার থেকে সীমিত সংখ্যক লোকজনকে সেবা দিতে পারবে বিভিন্ন বার, ক্যাফে এবং রেস্টুরেন্ট। যেখানে সম্ভব সেসব ক্ষেত্রে লোকজনকে বাড়িতেই কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিনা হ্যালেনগ্রেন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে এবং এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চাপ বাড়বে।
এরই মধ্যে নেদারল্যান্ডস কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। সোমবার থেকেই সেখানে কঠোর লকডাউন চলছে। তবে ইউরোপের অনেক দেশের নেতারাই চাচ্ছেন ক্রিসমাসের আমেজ শেষ হওয়ার পর বিধিনিষেধে ফিরতে।
ইউরোপের দেশগুলোতে ৮ কোটি ৯০ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১৫ লাখের মতো মানুষ।
গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ওমিক্রন শনাক্ত হয়। তারপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
ওমিক্রনে দিশেহারা যুক্তরাজ্য, বাতিল নববর্ষের উৎসব
বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
ওমিক্রনে দিশেহারা যুক্তরাজ্য, বাতিল নববর্ষের উৎসব
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে দিশেহারা যুক্তরাজ্য। এতে দেশটিতে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়েছে ৯০ হাজারের ঘর। এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন জারি করা নিয়ে দোটানায় রয়েছে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা। তবে বাতিল করা হয়েছে নববর্ষের উৎসব।
বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে লকডাউন বা কঠোর বিধিনিষেধের দাবি উঠলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ক্রিসমাসের আগে নতুন কোনো বিধিনিষেধ জারি হবে না বলে জানিয়েছেন। ফলে লন্ডনের পরিস্থিতি দিন দিন অনুকূলের বাইরে চলে যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৭২ জনের যা সোমবার ছিল ৪৫ জন। এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ১২১ জনে।
এদিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৬২৯ জন যা সোমবারের তুলনায় কিছুটা কম। সোমবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার ৭৪৩ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৫ লাখ ৪২ হাজার ১২১ জন।
যুক্তরাজ্যে করোনার এমন পরিস্থিতিতে বাতিল করা হয়েছে ট্রাফালগার স্কয়ারের নববর্ষ উৎসব। এর আগে গত অক্টোবরে বাতিল করা হয় লন্ডন আইয়ের নববর্ষ উৎসব।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন, জননিরাপত্তার স্বার্থে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে। তবে লাইভে উদযাপন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে, বাড়িতে বসে সবাইকে এটি দেখা যাবে। বিষয়টি লন্ডনবাসীর জন্য খুবই হতাশাজনক হবে, তবে ভাইরাসের বিস্তাররোধে আমাদের সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর নববর্ষ উৎসবের জন্য ৩১ ডিসেম্বর রাতে শহরের টেমস নদীর তীরে লন্ডন আইয়ের আতশবাজি দেখতে জড়ো হন লাখ লাখ মানুষ। প্রায় সোয়া কোটি মানুষ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন টিভিতে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সৃষ্ট অনিশ্চয়তার কারণে টেমস নদীর তীরে নববর্ষ উৎসব বাতিল করা হয়।
শাহজালালে তিক্ত অভিজ্ঞতা: ইমিগ্রেশন অফিসারদের আরও শিক্ষিত হওয়া চাই
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
আড়াই বছর পর গত ৭ ডিসেম্বর দেশে এলাম। দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে বলে হরহামেশাই বিদেশ থেকে খবর পেতাম। ভাবতাম, দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে সম্ভবত মানুষের মননের ও নৈতিকতাও উন্নয়ন ঘটেছে। কিন্তু না। দেশে পা রেখেই তা উপলব্ধি করলাম। মানুষের মনমানসিকতা, শিষ্টাচারবোধ ও আচরণিক পরিবর্তন বা উন্নয়ন মোটেও পরিলক্ষিত হয়নি। এয়ারপোর্টে নেমে যখন ইমিগ্রেশন স্পটে এলাম, দেখা গেলো পুরো এলাকার কোথাও শৃঙ্খলার লেস মাত্র নেই। বরাবরের মতো আমরা সরাসরি ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়াতে চাইলে বাধাপ্রাপ্ত হলাম। বলা হলো বাম পাশের লাইনে দাঁড়িয়ে হেলথ কার্ডে ক্লিয়ালেন্স স্ট্যাম্প নিয়ে ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়াতে। কথা মতো তাই করলাম। লোকাল ট্রেনের মতো কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে চলছিলো তাদের কার্যক্রম। প্রায় এক ঘন্টা পর ইমিগ্রেশন অফিসারের কাউন্টারের ধারেকাছে পৌছাতে সক্ষম হই। আমার সন্তানাদি সহ আমরা চারজন প্যাসেঞ্জার ছিলাম। কাউন্টারের সামনে আমরা চারজনই দাঁড়িয়ে থেকে প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করতে পারবো কি-না জানতে চাইলে ভদ্রলোক বেশ নিরস কন্ঠে “না” সূচক উত্তর দিলেন। অগত্যা তাদেরকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। অভিবাসনিক কাজ শেষ করে পাসপোর্টটি হাতে হাতে না দিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসার আমার দিকে ঢিল ছুঁড়ে দিলেন। এর পর আমার চৌদ্দ বছরের মেয়ে সাইয়েরাহর পালা। তার ক্ষেত্রেও ঠিক একই আচরণ করা হলো। আমার মেয়ে বেশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “বাবা, ভদ্রলোক কি বেশ ক্লান্ত? মুখে কোনো হাসির রেখা নেই, গ্রিটিংস নেই। পাসপোর্টটিও ঢিল ছুঁড়ে দিলো। এ কেমন আচরণ? কেমন শিষ্টাচারবোধ?”
আমার মেয়ে কিছুটা বাংলা ও কিছুটা ইংরেজি মিশিয়ে কথাগুলো বললো। তার দিকে তাকিয়ে মনে হলো যেনো চোখে মুখে বিস্ময় স্ফুরিত হচ্ছে। সত্যি তো এ কেমন আচরণ? কেমন শিষ্টাচারবোধ? কিন্তু আমি তাকে তা বুঝতে দেইনি। এমনিতেই তারা দেশে আসতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। তার উপর যদি এসব দুরাচারকে বড়ো করে তুলে ধরি তাহলে তারা আর দেশেই আসতে চাইবে না। তাই বেশ কৌশলী ভঙ্গিতে বললাম, “না মা, ভদ্রলোক সত্যি ক্লান্ত। দেখো না কতো লোকের ভীড়! তাছাড়া তুমি যে দেশটিতে বসবাস করো সে দেশের মতো আমাদের দেশটা এতো উন্নত বা ধনী নয়। ওদেরকে আট ঘন্টার পরিবর্তে বারো চৌদ্দ ঘন্টা কাজ করতে হয়। কাজের চাপ অনেক বেশি। তাই ওদের মন মেজাজ সবসময় এক রকম থাকেনা।” বাবা হয়ে মেয়ের সাথে এভাবে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে তাকে বুঝাবার বা শান্তনা দেবার চেষ্টা করলাম। আমার কথা শুনে মেয়ে শুধু বললো- “still….” ।
সবার কাজ যখন শেষ হলো বিদায় বেলায় আমি ইমিগ্রেশন অফিসারকে জিজ্ঞেস করলাম, ” ভাই আপনি কি খুব ক্লান্ত? কোনো কারণে কি আমাদের উপর বেশ রাগান্বিত?” কোনো কথা বললেননা। বললাম, ভালো থাকুন, have a nice evening. এবারও কোনো কার্টিসি দেখালেন না। বললাম, thank you. না এবারও নীরব। ( ভাবটা এরকম যে ব্যাটা তর কাম কইরা দেওনের দরকার কাম কইরা দিছি, এহনও প্যাচাল পারতাছস ক্যান? তাড়াতাড়ি বিদায় ও)। আমি আর কিছুই বললাম না। নেম ব্যজের উপর নজর পড়লো। বড়ো হাতের অক্ষরে লেখা “SHABJI” (সাবজী)। ঐতিহাসিক (?) নামটি নজরস্থ করে দ্রুত প্রস্থান ঘটালাম।
ল্যাগেজ নিতে এসে আরেক সমস্যার সম্মুখীন হলাম। কোথাও ট্রলি নেই। “ট্রলি কোথায় পাওয়া যাবে?” একজন কর্তব্যরত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর প্রান্তের শেষের দিক দেখিয়ে দিলেন। সেখানে গিয়ে দেখি এক তুঘলকি কান্ড। প্রায় দুই আড়াইশ মানুষ গোলাকার হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। বাহির থেকে একটি একটি করে ট্রলি আসছে আর একেকজনকে বিদায় করছে। কারো কারো একের অধিক ট্রলি প্রয়োজন হলেও তাকে একটির বেশি দেয়া হচ্ছেনা। এমনাবস্থা দেখে আমি লাইনে না দাঁড়িয়ে গেটের সামনে যাই। যে লোকটি ট্রলি দিচ্ছে তার কাছে ট্রলির এমন সংকটের কারণ বা হেতু জানতে চাই। তিনি বললেন, যথেষ্ট পরিমাণ ট্রলি নেই। আমাদের ফ্লাইট রাত ১১টায় অবতরণ করলেও তখন বাজে প্রায় ১টা। তারা যেভাবে ট্রলি বিতরণ শুরু করেছে এভাবে চলতে থাকলে ভোর ৪টাতেও বাড়ি পৌছা যাবে কি-না সন্দেহ। তাই তাকে পর্যাপ্ত ট্রলি সরবরাহের অনুরোধ জানালাম। তার কিছুই করার নেই, প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার উপদেশ দান করলেন।
আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোথায় যোগাযোগ করবো! তার লেজ ধরতে পারলেতো! তাই কোনো কথা না বলে মোবাইল দিয়ে ছবি তুলা শুরু করলাম। উপদেশদাতাওয়ালা দৌড়ে এসে ছবি তুলতে নিষেধাজ্ঞা জানালো। আমি বললাম, এখনি ভাইরাল হবে। সাংবাদিকরা আসবে। পত্রিকায় ও টিভিতে নিউজ হবে। এ কথা বলে আমি অদূরে এসে দাঁড়ালাম।
বাস্তবিক পক্ষে আমার মোবাইলে কোনো নেট ছিলোনা। ব্যাটারির চার্জও ছিলো প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই আমার পক্ষে লাইভে যাওয়া বা কোনো সাংবাদিককে ফোন দেয়া কোনোটাই সম্ভব ছিলোনা। কিন্তু ঝড়ে বক মরার মতো আমার হুমকি কাজে লেগে গেলো। কয়েক মিনিট পরই দেখতে পেলাম, যে গেটে দাঁড়িয়ে ভদ্রলোক ট্রলি বিতরণ করছিলেন ঠিক এর ডান পাশের একটি ষ্টোর থেকে অনেক ট্রলি সরবরাহের চিত্র ভেসে ওঠলো। কাছে গিয়ে দেখি, ষ্টোরটি ভেতর থেকে দোতলা বিশিষ্ট। উপরে অসংখ্য ট্রলি। এক্সসেলেটর জাতীয় লিফ্ট রয়েছে। উপর থেকে ট্রলি গুলোকে এক এক করে লিফ্টে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে আর তা গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে। কার আগে কে ধরবে সে জন্য লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়ছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে কারো হাত পা ভাংতে পারতো। আহত হতে পারতো। যাহোক, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অর্থাৎ প্রায় সবার হাতেই ট্রলি পৌছে গেলে আমি ও আমার সহযাত্রী বন্ধু জাবেদ দুটো করে ট্রলি সংগ্রহ করতে সক্ষম হই।
আমার প্রশ্ন- কেনো ট্রলি নিয়ে এমন নোংরামি করা হলো? কেনো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আগন্তুক যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ানো হলো? কেনো দেশে নেমেই প্রবাসী সহ সকল যাত্রীদেরকে এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার স্বাদ গ্রহণ করতে হলো?
বিশ্বের কোথাও এক ধাক্কায় সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ১০০% বাড়িয়ে দেয়ার নজির নেই। অথচ বাংলাদেশ সরকার তাই করেছে। তবু কেনো ইমিগ্রেশন অফিসারদের মতো সরাসরি চাকরিজীবীরা মুখ গোমড়া করে রাখেন? কেনো তাদের মুখে হাসির ছিটেফোঁটা থাকেনা? কেনো তারা ন্যুনতম কার্টিসি, ম্যানার বা গ্রিটিংসে অভ্যস্ত নন? তবে কি মনে করবো ওদের আরও শিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে?
এয়ারপোর্ট হচ্ছে একটি দেশের প্রতিবিম্ব। কোনো বাড়িতে পা রেখে যেমন ওই বাড়ির নাড়িনক্ষত্র জেনে নেয়া যায় তেমনি এয়ারপোর্টে পা রাখতেই গোটা দেশটা সম্পর্কে মানুষের মনে একটা ধারণা জন্ম নেয়। তাই আমরা আশা করবো, অন্তত দেশের মান রক্ষার্থে এয়ারপোর্ট কতৃপক্ষ আলোচ্য বিষয় সমূহের উপর কঠোর নজরদারি সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ঢাকা, বাংলাদেশ
১৩ ডিসেম্বর ২০২১
লেখক: আয়ারল্যান্ড প্রবাসী কবি ও প্রাবন্ধিক
গতকাল মঙ্গলবার ১৪ ডিসেম্বর ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করাকে বুঝায়। ১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এই পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়াও যায়নি বহু লাশ। ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহর থেকে বিজয়ের আগমুহূর্ত পর্যন্ত যেসব বরেণ্য বুদ্ধিজীবীকে আমরা হারিয়েছি, তাঁদের মধ্যে আছেন অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, ড. মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, রাশীদুল হাসান, ড. আবুল খায়ের, ড. আনোয়ার পাশা, সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, আলতাফ মাহমুদ, নিজামুদ্দীন আহমদ, গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. আলীম চৌধুরী, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, সেলিনা পারভীন প্রমুখ।
পাকিস্তানি দুঃশাসনের দিনগুলোয় আমাদের লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা বিবেকের কণ্ঠস্বর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। নিজেদের জ্ঞান-মনীষা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন, আলোকিত করেছেন। এসব কারণেই তাঁরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের জিঘাংসার শিকার হয়েছেন। এত কম সময়ে এত বেশিসংখ্যক বুদ্ধিজীবী নিধনের উদাহরণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছাড়া আর কখনো ঘটেনি।
১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ছিল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত কয়েকজন শীর্ষ অপরাধীর বিচার ও শাস্তি কার্যকর হয়েছে। এটি জাতির জন্য স্বস্তিকর। কিন্তু দুটি কারণে এই বিচার অসমাপ্ত রয়ে গেছে। প্রথমত, সব বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার হয়নি। আবার যেসব হত্যার বিচার হয়েছে, দণ্ডিত সব অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করা যায়নি।
আজকের এই দিনে আমরা জাতির এই মহান সন্তানদের শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করি। কিন্তু যাঁরা নিজেদের জ্ঞান-মনীষা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন, তাঁদের বছরের একটি দিন স্মরণ করাই যথেষ্ট নয়। আমাদের অনুধাবন করতে হবে, কেন এই মহৎপ্রাণ মানুষগুলো জীবন দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও গণমাধ্যমে যখন কোনো শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের দুর্দশার খবর আসে, তখন এ কথা বলা অত্যুক্তি হবে না যে রাষ্ট্র তাঁদের যথাযথ সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায় জাতি আর কতকাল বহন করবে?
বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আজ যে দিবস পালিত হচ্ছে, তা সার্থক হবে, যদি আমরা তাঁদের উদার মানবিক চিন্তা ও আদর্শকে ধারণ করতে পারি। তাঁরা যে উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই পথ ধরেই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তাঁদের আদর্শ হোক আমাদের পাথেয়।
করোনাভাইরাস: অমিক্রন অবিশ্বাস্য গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা দিয়েছে, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট অমিক্রন অবিশ্বাস্য হারে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বের ৭৭টি দেশে এ পর্যন্ত নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানোম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, হয়তো আরো অনেক দেশেই ছড়িয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট যা এখনো শনাক্ত হয়নি।
ড. টেড্রোস বলেছেন, এই ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হচ্ছে না, যা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, “আমরা এখন নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারছি যে এই ভাইরাসকে শুরুতে একেবারেই গুরুত্ব দেইনি আমরা। এখন অমিক্রন যদি অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর রোগও হয়ে থাকে, আক্রান্তের হারে যে ঊর্ধ্বগতি তার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রস্তুত নয়, ফলে আবারো পুরো পৃথিবীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি বেকায়দায় পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে অতি সংক্রমণশীল এবং সারা বিশ্বে এই ভ্যারিয়েন্ট প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে, কিন্তু এর লক্ষণগুলো খুবই মৃদু।
করোনার অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট কতটা বিপজ্জনক।
অমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অমিক্রন ঢেউএর জন্য সব দেশকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে ডাব্লিউএইচও। অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে আন্তর্জাতিক ভ্রমণে কঠোর হচ্ছে বিধিনিষেধ। সীমান্ত বন্ধ হচ্ছে না, যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা কি যথেষ্ট? অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে বলা হচ্ছে অতি সংক্রমণশীল। নভেম্বরে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাতে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়, এবং দেশটিতে এখনো পর্যন্ত নতুন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সেরিল রামাফোসা কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন, এবং তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এবং এখন তার শরীরে মৃদু উপসর্গ রয়েছে। অমিক্রনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ফলে চাপে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি।
কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অমিক্রনের ছড়িয়ে পড়া আটকানো যায়নি।
মঙ্গলবারের ওই সংবাদ সম্মেলনে ড. টেড্রোস ভ্যাকসিন পাবার ক্ষেত্রে দেশে দেশে বৈষম্যের বিষয়টি আবারো তুলে ধরেন। অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে অনেক দেশই এখন বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করছে।
ফাইজার/বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন নিয়ে করা এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মূল স্ট্রেনের তুলনায় অমিক্রনের বিরুদ্ধে অনেক কম নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি তৈরি করে। কিন্তু এই ঘাটতি তৃতীয় একটি ডোজ বা বুস্টার ডোজের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব।
ড. টেড্রোস বলেছেন, করোনাভাইরাস-১৯ ঠেকাতে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে’, কিন্তু ‘গুরুত্বের বিচারে কাদের দেয়া হবে তা নির্ধারণ’ সেটাই মূল প্রশ্ন।
বিশ্বের বহু দেশ বিমানযাত্রীদের উপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তিনি বলেন, “অসুখবিসুখ বা মৃত্যু ঝুঁকি কম রয়েছে এমন মানুষকে বুস্টার দেয়া হলে, যারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন কিন্তু টিকার সরবারহ পাচ্ছেন না বলে এখনো প্রথম ডোজ টিকাই দিতে পারেননি, তারা মারাত্মক বিপদে পড়বেন।”
টিকা শেয়ার করার বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভ্যাকসিনের যোগান বাড়িয়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তাদের আশংকা অচিরেই আবারো টিকার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। চলতি বছরের মাঝামাঝি ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর দেশটি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বিশ্বে টিকার যোগানে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছিল।বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশে এখনো অনেক মানুষ এক ডোজ টিকাও পাননি।
বাংলাদেশের ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দিনে ১০ ঘণ্টা করে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তির মুখে পড়েছেন যাত্রীরা।
তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজের অংশ হিসাবে ডিসেম্বরের ১০ তারিখ থেকে আগামী তিনমাস রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত রানওয়ে বন্ধ থাকছে।
সেই সঙ্গে বিজয় দিবসের ফ্লাইং পাস্টের প্রস্তুতির জন্য ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচদিন বিমানবন্দরের রানওয়ে সোয়া দুই ঘণ্টা করে বন্ধ থাকছে। অর্থাৎ প্রতিদিন এখন ১০ ঘণ্টা করে বিমান ওঠা-নামা বন্ধ থাকছে।
এর ফলে বাংলাদেশের প্রধান এই বিমানবন্দর ব্যবহারকারী এয়ারলাইন্সগুলোকে তাদের সময়সূচি পুনর্বিন্যাস করতে হয়েছে। কিন্তু যাত্রীরা অভিযোগ করছেন, স্বল্প সময়ে বেশি ফ্লাইটের চাপ থাকায় তারা ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সব মিলিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি যাত্রী আসা যাওয়া করে।
উম্মে কুলসুম আক্তারের ভাই গতকাল মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে গিয়েছেন।
তিনি বলছিলেন, ”তিনবার আমার ভাইয়ের ফ্লাইট চেঞ্জ হয়েছে। শেষবার আট ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে ঢুকতে বলে। বিকালের ফ্লাইট, আমার ভাই ভোর রাতে ঢুকেছে। সেখানে নাকি খাবার খেতেও লম্বা লাইন দিতে হয়েছে।”
প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলম শনিবার তার ফেসবুক পাতায় বিমানবন্দরের ভেতরের কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সময়সূচি বলতে কিছু নেই, পর্যাপ্ত খাবার নেই, অনেকের কোভিড টেস্টের মেয়াদ ফুরাতে বসেছে। খাবারের জন্যও লম্বা সারিতে তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বিমানবন্দরে হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ের নির্মাণকাজের জন্য ১০ই ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে আট ঘণ্টা শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ট্রাভেল এজেন্সির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে তাদের সবগুলো ফ্লাইটের সময়সূচি পরিবর্তন করতে হয়েছে। আবার দিনের বেলায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার ফলেও এতে বড় পরিবর্তন হয়েছে।
”আমরা সবাইকে ফোন করে জানাচ্ছি। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যারা যান, তারা তো সবাই ইমেইল বা ফোন নিয়মিত ব্যবহার করেন না। যাদের ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না, তারা হয়তো ফ্লাইট মিস করছেন। এরকম বেশ কয়েকজনের ক্ষেত্রেই ঘটেছে,” তিনি বলছিলেন।
ব্রিটেনে বসবাস করেন এরকম এক প্রবাসী বাংলাদেশি, যিনি তার নাম প্রকাশ করতে চাননি, তিনি বলছেন ডিসেম্বর মাসেই তার বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। তিনি বলছিলেন, ”ডিসেম্বর মাসে স্কুলে লম্বা ছুটি পাওয়া যায় বলে প্রবাসীরা এসময় বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে। অনেক আগে থেকে এসব টিকেট কিনে রাখা হয়।
”কিন্তু এয়ারলাইন্স থেকে আমাকে জানানো হয়েছে, ঢাকার বিমানবন্দরে নির্মাণ কাজ চলার কারণে আমার সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যে সময় তারা ফ্লাইট দিতে চায়, সেই সময় আমার ছুটি নেই, অথবা বাচ্চাদের স্কুল রয়েছে। আমার পরিচিত আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গেই এরকম হয়েছে।”
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গড়ে প্রতিদিন ২৭টি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে। আসা-যাওয়া মিলিয়ে প্রতিদিন ১০০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে এবং সব মিলিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি যাত্রী আসা যাওয়া করে।
ট্রাভেল এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে দূরপাল্লার বড় বড় এয়ারলাইন্সগুলো সাধারণত মধ্যরাতে বা ভোর রাতে তাদের বিমান পরিচালনা করে। কিন্তু সেই সময়েই শাহজালাল বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় তাদের ফ্লাইটগুলো দিনের বেলায় নিয়ে আসতে হয়েছে।
ফলে একই সময়ে অনেক যাত্রীর চাপ পড়েছে বিমানবন্দরে। এছাড়াও কিছু কিছু দেশে যাওয়ার আগে কোভিড-১৯ টেস্টের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেখানেও তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ বিড়ম্বনার। পিসিআর টেস্টের কাগজ পরীক্ষা, চেকিং, স্বাস্থ্য, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন বা বোর্ডিং পাস সংগ্রহের ক্ষেত্রেও লম্বা লাইনের তৈরি হয়েছে। এমনকি ট্রলি সংকটেও পড়ছেন যাত্রীরা।
তবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ”অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলানোর জন্য আমরা ইমিগ্রেশনের সবগুলো কাউন্টার চালু আছে। কাস্টমসকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন তারা তাড়াতাড়ি করে কাজ করতে পারে। বিমান বন্দরের অন্যান্য ফ্যাসিলিটি বাড়ানোর জন্য জনবল বাড়ানোর বিশেষ ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।”
ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি এবং ফ্লাইট বিলম্ব কমে আসছে বলে তিনি জানান।
আইরিশ বাংলা টাইমস: আন্তর্জাতিক
সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১
এবার রাজনাথের দাবি, একাত্তরের যুদ্ধে ভারত জিতেছে
১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ আর দোর্দণ্ড প্রতাপে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাংলাদেশের এই বিজয়ে সহযোগিতা করেছিল প্রতিবেশী ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে তাদেরও অনেক সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু, তাই বলে এটিকে শুধু ভারতীয়দের লড়াই বা একমাত্র তাদের কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, এমনটা বলার উপায় নেই। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতীয় নেতারা যেন সেটি প্রতিষ্ঠা করতেই উঠেপড়ে লেগেছেন। এ তালিকায় সবশেষ যোগ হলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) নয়া দিল্লির ঐতিহাসিক ইন্ডিয়া গেটে একাত্তর সালের যুদ্ধ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিং বলেছেন, আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিটি সৈনিকের সাহসিকতা, বীরত্ব ও আত্মত্যাগের সামনে মাথানত করি; যাদের কারণে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারত জয়লাভ করেছিল। এই দেশ সেই সাহসীদের আত্মত্যাগের জন্য সদা ঋণী থাকবে।
এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা ভারতীয় সৈন্যদের পাশাপাশি মুক্তিবাহিনীর বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এছাড়া, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ‘ভারতের অবদান’-এর কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারত বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছে এবং গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি।
এসময় পাকিস্তানকে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করে ভারতীয় নেতা বলেন, পাকিস্তান ভারতে সন্ত্রাস ছড়াতে চায়। ১৯৭১ সালে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছিল এবং এখন আমরা সন্ত্রাসবাদকে শেকড়সহ উপড়ে ফেলতে কাজ করছি।
উপস্থিত জনতার সামনে রাখা ভাষণে রাজনাথ সিং বলেন, মাঝে মধ্যে ভাবি, আমাদের বাঙালি ভাই-বোনদের কী দোষ ছিল? নিজেদের অধিকার চাওয়া? শিল্প, সংস্কৃতি ও ভাষা রক্ষা করতে চাওয়া? রাজনীতি ও সরকারে যথাযথ প্রতিনিধিত্বের জন্য কথা বলা?
তিনি বলেন, আমাদের বাঙালি ভাই-বোনদের ওপর অন্যায়-অত্যাচার কোনো না কোনোভাবে সারা মানবজাতির জন্য হুমকি ছিল। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের রাজধর্ম, রাষ্ট্রধর্ম ও সামরিক ধর্মই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে মুক্ত করতে সাহায্য করেছিল।
তার মতে, ১৯৭১ সালের যুদ্ধ ভারতের নৈতিকতা, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও ন্যায়বিচারের একটি ‘আদর্শ উদাহরণ’। রাজনাথ বলেন, যুদ্ধে অন্য দেশকে হারানোর পর আমাদের মতো একটি দেশ তার ওপর আধিপত্য খাটায়নি, বরং তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে, ইতিহাসে এমনটি খুব কমই দেখা যায়।
ইন্ডিয়া গেটে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ‘স্বর্ণিম বিজয় পর্ব’ অনুষ্ঠানের প্রথমদিনে রোববার মুক্তিযুদ্ধের বীরদের স্মরণে ‘ওয়াল অব ফেম’ উদ্বোধন করেছেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী। একাত্তরের যুদ্ধে ব্যবহৃত নানা অস্ত্র ও সরঞ্জাম প্রদর্শন করা হচ্ছে সেখানে।
টরন্টোর পাশে লেক অন্টারিওর তীরে শহর মিসিসাগা। এই মিসিসাগাই বেগমপুরা বা বেগম পাড়া নামে খ্যাত। ২০০৬ সাল হতে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় বিপুল হারে অভিবাসন শুরু হয়। পরিসংখ্যান কানাডা (২০২০) অনুসারে, কানাডায় ১,০০,০০০ বাংলাদেশী বসবাস করেন। মিসিসাগা কথিত বেগমপাড়া হলেও সারা কানাডায় এ রকম অনেকগুলো ‘বেগম পাড়া’ আছে।
বেগম পাড়ার বেগমদের সাহেবরা তাঁদের সঙ্গে থাকেন না। তারা বাংলাদেশে থেকে কষ্ট করে টাকা বানান; টাকা বানাতে ক্লান্তি লাগলে পরে এসে সেখানে পরিবারের সঙ্গে ‘আরামের’ সময় কাটান। তাদের অ্যাপার্টমেন্টগুলো বিলাসসামগ্রীতে ভরা। তাদের সন্তানেরা সে দেশের ভালো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে। ‘বেগম’দের একমাত্র কাজ হলো ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করা আর ‘আরাম’ করা।
বাংলাদেশের বেগমদের সাহেবরা দেশে চাকরি, ব্যবস্যা-বাণিজ্য, রাজনীতি করে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে তাদের অর্জিত অবৈধ আয় কানাডায় পাচার করে তাদের বেগমদের কাছে পাঠায়। আর তাদের বেগমরা-সন্তানরা এখানে অভিজাত এলাকার দামি বাসা-বাড়ি-গাড়িতে বিলাসবহুল আয়েশি জীবনযাপন করেন।
বেগমদের সাহেবরা কানাডাকে ‘সেকেন্ড হোম’ বানিয়েছেন বিনিয়োগকারী কোটায়। মাত্র দেড় লাখ কানাডীয় ডলার অর্থাৎ এক কোটি ১০ লাখ টাকা জমা দিলেই কানাডা নাগরিকত্ব দিচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্থ সাহেবদের এই অর্থ তো কোন ব্যাপারই না।
বাংলাদেশি সাহেবরা কত শত-হাজার কোটি টাকা কানাডায় পাচার করছেন, তার হিসেব নেই। বাংলাদেশিদের ‘রেমিট্যান্স’ কারণেই নাকি ইউরোপ আমেরিকার মত মতো অর্থনৈতিক ধসের স্বীকার হয়নি কানাডা।
ঠিক কতজন বাংলাদেশি কত শত-হাজার কোটি টাকায় এভাবে নাগরিকত্ব কিনছেন, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান জানা যায়নি। অবৈধ পথে ব্যয়িত অর্থও অবৈধভাবেই অর্জিত বলেই টাকাটা তাঁরা দেশে রাখা নিরাপদ মনে করেননি। রাজনীতিবিদেরা হরহামেশাই পরস্পরের বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির অভিযোগ করেন। দেশের অর্থনীতিকে লুট করে বিদেশের নাগরিকত্ব কেনার এই ব্যবসাই হলো ‘দেশ বিক্রির’ আসল ব্যবসা। সম্প্রতি একজন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ৪০ বছরের আদমশুমারির গোপনীয় ‘র-ডাটা’ বিদেশিদের কাছে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর মতো অনেকেই আছেন। শেয়ার মার্কেট, হল-মার্ক, ডেসটিনি, সোনালী ব্যাংকের টাকা আর কোথায় যাবে? এভাবে স্বদেশে ঘুষ-দুর্নীতি-দখলবাজি করে অনেকেই বনে যাচ্ছেন বিদেশের ‘সম্মানিত’ নাগরিক।
আজও দুর্নীতিবাজ সাহেবরা দেশকে বিক্রি করে যাচ্ছেন। দেশের প্রতি ভালোবাসা শুধুই মুখেই। দেশের রুটি রুজির পথ বন্ধ হলে কিংবা সময় পুরলে সাহেবরা ঠিকই পাড়ি জমান বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা বেগম পাড়ায় বেগমদের সান্নিধ্যে।
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লন্ডনস্থ বাংলাদেশী হাইকমিশনের কর্মকর্তাগন আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশী জনগনকে পাসপোর্ট সংক্রান্ত সকল সেবা প্রদানের জন্য আগামী ১১ ও ১২ ডিসেম্বর রোজ শনিবার ও রবিবার আয়ারল্যান্ডে পাসপোর্ট সেবা প্রদান করবেন। উক্ত সময়ে সকল বাংলাদেশী জনগনকে উপস্থিত থেকে সকল পাসপোর্ট বিষয়ক সমস্যার সেবা গ্রহন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তারিখ : ১১ ও ১২ ই ডিসেম্বর – ২০২১
শনিবার সময়:- সকাল ১০ টা – বিকাল ৫ টা
রবিবার সময়:- সকাল ১০ টা – বিকাল ৩ টা
স্থান: 81 Lower Gardiner Street,
Dublin-1, Ireland
আয়োজকদের পক্ষ থেকে সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে :
২. পাসপোর্ট সংক্রান্ত সকল ফর্ম বাড়ি থেকে পূরণ করে নিয়ে আসতে হবে।
৩. অনুষ্ঠানস্থলের সামনে অযথা ভিড় করা যাবে না।
৪. প্রতিবার সর্বোচ্চ দশ জনকে অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে।
৫.No Mask No Service
আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী জনগনের পাসপোর্ট সমস্যার সমাধানের জন্য ডাবলিন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সহযোগীতায় লন্ডনস্থ বাংলাদেশী হাইকমিশন আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর তারিখ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে পাসপোর্ট সেবা প্রদান করবেন।
Requirements:
For No Visa Required (NVR)Requirement:
1. Filled in ‘No Visa Required’ form.
2. One photograph.
3. Photocopy of Irish Passport
(name page).
4. Bangladeshi passport with
photocopy (page 1-3)
or
Old Irish/Foreign passport with ‘NVR’ seal along
with a photocopy of the name and NVR page.
For First NVR for Child:
1. Filled in ‘No Visa Required’ form.
2. One photograph.
3. Child’s Birth Certificate with
parents’ name appearing
on the certificate along
with photocopy.
4. Parents’ Bangladeshi passport or
Irish passport with ‘NVR’ along with photocopy.
For Spouse of Bangladeshi National:
1. Filled in ‘No Visa Required’ form.
2. One photograph.
3. Marriage certificate.
4. Bangladeshi Passport or Irish
passport of the spouse with
‘NVR’ along with a photocopy.
For Power of AttorneyRequirement:
1. Valid Bangladeshi passport/valid
Irish Passport with NVR seal.
2. One photograph of each person
(those who are giving and those
who are receiving the power).
3. Physically presence of all
persons(those who are giving
power-of-attorney)for signing
in front of the High Commission
officials.
For Attestation Requirement:
1. Documents originated in Bangladesh
must be attested by the
Ministry of Foreign Affairs,
Dhaka.
2. For the attestation of a
photocopy of an original
the document, the applicant should
submit the photocopy along
with the original document.
3. For attestation of signature,
the applicant must come in person
with a valid passport and a passport
size photograph. The applicant
needs to sign in a prescribed
form in front of the consular
officer.
Work-Type & Price
MRP-সাধারণ £92
MRP-ছাত্র £30
NVR £46
Power of Attorney £40
Attestation £7
Birth-Registration £4
Travel Permit £25
Return Postal Charge Cash €15
নিয়মাবলী (২৬/১১/২০২১):
১) যারা নতুন মেশিন রিডেবেল পাসপোর্ট করতে ইচ্ছুক তাদেরকে MRP Application ও Birth Registration ফর্ম দুইটি পূরণ করে ও আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র নিয়ে ১১ অথবা ১২ তারিখ পাসপোর্ট সার্জারীস্থলে আসতে হবে।
২) গাইড-লাইন মোতাবেক অবশ্যই আপনাকে এই দুইটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। যাদের আগের ১৭ ডিজিটের Birth Certificate আছে তাদের ক্ষেত্রে নতুন করে Birth Registration পূরণ করে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। শুধু MRP Application Form পূরণ করে পাঠালেই চলবে। অন্যথায় Birth Registration লাগবে
৩)যারা এই মুহুর্তে ফর্ম গুলো পূরণ করতে পারছেন না। তারা ফর্ম গুলো Download করে, কালো কালি দ্বারা হাতে লিখে (অল ক্যাপিটাল লেটার) পূরণ করে ও আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র নিয়ে পাসপোর্ট সার্জারীস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে ।
৪) যারা এই ফর্ম পূরণে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবেন তারা অবশ্যই বাংলাদেশ হাইকমিশন অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
৫) নিন্ম লিখিত লিঙ্কে আপনারা গাইডলাইন সহ মোট ৯টি ফাইল পাবেন। অনুগ্রহপূর্বক ৯টি ফাইল Download করে নেবেন।
৬) পাসপোর্ট সংক্রান্ত যাবতীয় ফিস শুধুমাত্র ক্রেডিট /ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে প্রদান করা যাবে। কোনো ধরণের ব্যাংক ড্রাফট অথবা পোস্টাল অর্ডার গ্রহণ করা হবে না।
৭) শুধুমাত্র রিটার্ন পোস্টের জন্য এনভেলপ ও ১৫ ইউরো ক্যাশ সঙ্গে নিয়ে আসবেন।
তারিখ : ১১ ও ১২ ই ডিসেম্বর – ২০২১
শনিবার সময়:- সকাল ১০ টা – বিকাল ৫ টা
রবিবার সময়:- সকাল ১০ টা – বিকাল ৩ টা
স্থান: 81 Lower Gardiner Street,
Dublin-1, Ireland
দয়া করে পাসপোর্ট সার্জারীস্থলে কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। আপনাদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত সকল ফর্ম বাড়ি থেকে পূরণ করে নিয়ে আসুন। অনুষ্ঠানস্থলের সামনে অযথা ভিড় করা যাবে না। প্রতিবার সর্বোচ্চ দশ জনকে অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে-No Mask No Service
আরও বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে চাপুন:
https://dublinawamileague.org/index.php/news/136-passport-surgery-dec-2021
কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের সময় রানওয়েতে দুটি গরুর সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গরু দুটি মারা গেলেও ৯৪ যাত্রীর সবাই অক্ষত আছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটের দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (ইএ-৪৩৮) ৯৪ জন যাত্রী নিয়ে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়নের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। উড়োজাহাজের একটি ডানায় গরু দুটির আঘাত লাগে।
এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৩টি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা: রাজধানী জোহানেসবার্গ নিয়ে গঠিত দক্ষিণ আফ্রিকার একটি প্রদেশে পিসিআর পরীক্ষায় পাওয়া নমুনায় দেখা গেছে যে এ সপ্তাহের মাঝামাঝি দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট করোনা শনাক্ত ১ হাজার ১০০ রোগীর মধ্যে ৯০ শতাংশ ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত। বতসোয়ানা: দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া দেশ বতসোয়ানায় কমপক্ষে ১৯ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্য: দেশটিতে তিনজন ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের সবাই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। জার্মানি: দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মিউনিখ বিমানবন্দরে যাওয়া দুজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে এএফপি।
নেদারল্যান্ডস: দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নেদারল্যান্ডসে যাওয়া কয়েক শ যাত্রীর ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত। ডেনমার্ক: দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যাওয়া দুজনের শরীরে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। বেলজিয়াম: একজনের ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে। ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে বেলজিয়ামে ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়। ইসরায়েল: ২৭ নভেম্বর ইসরায়েলে একজন নতুন এই ধরনে আক্রান্ত হন। আরও একজন ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে ধারণা করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ইতালি: ইতালিতে একজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। ওই ব্যক্তি আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার আগে গোটা দেশ ঘুরে বেরিয়েছেন। চেক প্রজাতন্ত্র: স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশটিতে একজনের ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
হংকং: সন্দেহভাজন আক্রান্ত হিসেবে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকা দুজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া: দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত দুজন শনাক্ত হয়েছেন। তাঁরা উভয়ই সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন। কানাডা: সম্প্রতি নাইজেরিয়া সফর করা দুই ব্যক্তির দেহে ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তথ্যসূত্র: লাইভ মিন্ট
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে সহিসংতায় ৩৪ জন নিহত হওয়ার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনে একটাও সহিংসতা হবে না, এমন নিশ্চয়তা তাঁরা দিতে পারেন না।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সকাল ১১টা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে চলা আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, প্রায় সবগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এসবের অধিকাংশই বংশানুক্রমিক অথবা আধিপত্য অথবা এলাকাভিত্তিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে। বিশেষ করে মেম্বার পদ প্রার্থীদের মধ্যে এমন ঘটেছে। এসব ঘটনার আগাম গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে জোর দিয়েছি। আগামী নির্বাচনে সহিংসতা রোধ করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব। তবে একটাও মারামারি হবে না, একটাও সহিংসতা হবে না, এমন নিশ্চয়তা আমরা কেউ দিতে পারি না।’
চলতি বছরের মার্চে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেও করোনা সংক্রমণের কারণে প্রথম দফায় গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় ভোট হয়। ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ও ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ রয়েছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ আর খেলার মাঠে সীমাবদ্ধ নেই। ভদ্রলোকদের এই খেলা এখন ২২ গজের পিচ পেরিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতির শীর্ষ বিন্দুতে অবস্হান করছে । শুভ্র- সুন্দর এই খেলার আনন্দের ভিতর ঢুকে গেছে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যুদ্ধ। এই যুদ্ধকে নিজেদের স্বার্থে ব্যাবহারের জন্য কেউ বলছেন, খেলার সঙ্গে রাজনীতি যায় না। খেলার জায়গা খেলা, আর রাজনীতির জায়গায় রাজনীতি। আবার কেউ বলছেন, ইতিহাসের পরাজিত শত্রুরা, চিরকালই শত্রু—তাদের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই । কিন্তুু রাজনীতির গতি ঠিক রাখতে গিয়ে ঠিকই তারা গোপনে শক্র দেশে রসালো আম পাঠান তিক্ত সম্পর্ক মিষ্টির জন্য। তাদের ভাষায় এটি তীক্ষ্ণ “কূটনীতি” ।
সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার টি- টুয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচের প্রথম খেলায় কতিপয় বাংলাদেশি দর্শক মাঠের গ্যালারিতে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়েছেন। এই পতাকা উড়ানোকে কেন্দ্র করে যখন সমালোচনার ঝড় বইছে সারা দেশে তখন সমালোচকদের জবাব দিতে গিয়ে যারা পতাকা ওড়িয়েছেন তারা এটিকে অরাজনৈতিক বলছেন। তাদের দাবী, টিম এবং ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোেভের প্রতিবাদ হিসেবে তারা এই কাজটি করেছেন।এখানে দেশদ্রোহীতা বলতে কিছু নেই বলে তারা মনে করেন। পাকিস্তানের জায়গায় অন্য কোনো দল হলে ঠিক একই কাজ করতেন বলে তাদের বিশ্বাস।
অন্য পক্ষ যারা ক্রিকেটের মাঠ ও গ্যালারিকে জাতীয়তাবাদী শক্তির বীরত্ব দেখানোর ময়দান হিসেবে বিবেচনা করেন ,তারা পাকিস্তানের এই পতাকা উড়ানোর ঘটনাকে দেশ প্রেম বহির্ভূত জগন্যতম অপরাধ বলে মনে করছেন। তাদের দাবী, যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া এই যুবকরা পাকিস্তানের দোসর। এই ঘটনায় নীতিনির্ধারকরা বেজায় ক্ষেপেছেন। দেশের মাঠে বাংলাদেশিদের হাতে পাকিস্তানের পতাকা ! কি ভয়ঙ্কর ব্যাপার ! অপবিত্র! সর্বনাশ ! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই তাদের ভাব। কোনো যুক্তিতে তারা এটিকে মেনে নিতে পারছেন না। রক্তক্ষরন হচ্ছে তাদের হৃদয়ে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শাসক দলের রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বৈরতান্ত্রিক প্রতিপত্তি অজয় রাখাতে গিয়ে যদি দেশের রাজনীতি সঠিক জায়গায় না থাকে, এবং রাজনীতির ময়দানে অন্য শক্তি দাঁড়িয়ে যায়, তখন দর্শকদের দোষ দেওয়াটা কি সমীচিন হবে ? এই বিষয় নিয়ে কি নিজেদের আত্মাসমালোচনার দরকার নেই ?
তাছাড়া খেলার সঙ্গে ব্যবসা, ধর্ম, যৌনতা, এমনকি এমপি হওয়াও যখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তখন রাজনীতি কেন বাদ পড়বে? খেলার রক্তের সাথে রাজনীতি যেখানে মিশে গেছে সেখানে কিভাবে আলাদা করবেন খেলাকে ! বরং এর চেয়ে ভালো হবে, এ-ক্ষেত্রে কি ধরণের উত্তম রাজনীতি চর্চা করা যায় সেটা নিয়ে তর্ক করা । বাকিগুলো বাদ!
ব্রিটিশ আমলে ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলায় ব্রিটিশদের পরাজিত করার জন্য পরাধীন মানুষগুলো মুখিয়ে থাকতো। ক্রিকেট নিয়ে নির্মিত বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত ও সফল সিনেমা ছিল “লগান”(Lagaan)। আশুতোষ গোয়ারিকরের ২০০১ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবির কাহিনি ছিল ইংলিশদের বিরুদ্ধে খেলায় জয়ের ভিতর দিয়ে খাজনা মওকুফের। আমি যে দেশে বাস করছি এই আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল ক্রিকেট।
বৃটিশ উপনিবেশের শৃঙ্খল ভাঙতে এই ক্রিকেট আইরিশদের সাহস ও প্রেরণা যুগিয়েছিল। ক্ষমতাবান সেতাঙ্গদের অধীনে থাকা কৃষ্ণাঙ্গরা যদি সাদাদের খেলায় হারাতে পারে, তাহলে বাস্তবেও তাদের হারানো সম্ভব — মানুষের মনে এমন আত্মবিশ্বাস জাগিয়েছিল এই ক্রিকেট।
পাকিস্তান ও ভারত বিরোধিতা অনেক দিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির নদীতে পাল্টাপাল্টি স্রোত হিসেবে বহমান।গ্যালারিও এই স্রোতের বাহিরে নয়। খেলা এবং রাজনীতি এক হয়ে গেলে এর প্রভাব সব জায়গায় পড়বে। এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। এখন যদি সরকারের ওপর নানা কারণে ক্ষুব্ধ মানুষগুলো জাতীয় দলকে সরকারপক্ষীয় মনে করে সমর্থন না করে, তাহলে এখানে এই মানুষগুলোর কী করার আছে ? সরকার বিরোধী দানা বাঁধা এই ক্ষোভের দায় কার? এর পর্যালোচনা দরকার।
গায়ে পাকিস্তানি জার্সি কিংবা পতাকা উড়ানোর জন্য হয়তো আপনি তাদেরকে রাজাকার,গাদ্দার, দেশদ্রোহী ইত্যাদি বলতে পারেন। রাষ্ট্র শক্তি ব্যবহার করে তাদেরকে জেলেও ঢুকাতে পারেন। কিন্তুু এই কাজগুলো করে রাষ্ট্রের উপর থেকে তাদের ক্ষোভ সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করতে পারবেন?
জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র ও গণমাধ্যম দুটি দেশের ২২ জনের খেলাকে যখন কোটি কোটি মানুষের প্রতিযোগিতা বলে শরীরের শিহরণ জাগিয়ে তুলছে।গায়ে তাদের দিয়েছে জাতীয় পতাকার রং ও জাতীয় প্রাণীর সৌন্দর্য। জাতীয় সংগীতের পবিত্রতার প্রলেপে মুড়িয়েছে তাদে মন-মস্তিস্ক। সেখানে চাইলে কি ১১ জন ব্যক্তিকে নিছক খেলোয়াড় হিসেবে ভাবা যায় ?
পৃথিবীতে জাতীয়তাবাদের যুগ বলতে তেমন কিছু অবশিষ্ট নেই এখন। যা চলছে সবকিছু বাণিজ্যিক আধিপত্যের লড়াই। খেলা, সিনেমা, ধর্ম, ভ্যাকসিন, সবই সেই লড়াইয়ে বিনিয়োগের উপাদান মাত্র। যেখানে জাতীয়তাবোধ একটি জাতির অধিকাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যর্থ, সেই বহুরূপী বর্ণচোরা ক্রিকেটের জার্সি গায়ে করছে দেশের প্রতিনিধিত্ব।
খেলার মাঠের বাহিরেও ভারত এবং পাকিস্তানের পক্ষে-বিপক্ষে শক্তিশালী রাজনৈতিক জনমত রয়েছে বাংলাদেশে। তাই বলে ভিনদেশি দুই-একটি পতাকা উড়লেই লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটি কেউ নিতে পারবে না, তেমনি মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি গণহত্যার পর এদেশের মানুষের হৃদয়ে পাকিস্তানের শুদ্ধ-সুন্দর ছবি আঁকাও সম্ভব নয়। তবে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে একটি বন্ধুপ্রতিম সহাবস্হান গড়ে তুলার জন্য কাজ করা যেতে পারে।
অন্যদিকে পাশ্ববর্তীদের বিরুদ্ধে রয়েছে অনেক অভিযোগ। পানিবঞ্চনা, সীমান্ত হত্যাসহ অজস্র রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে বাংলাদেশের বড় একটি অংশ ভারতের ব্যাপারে চরম অসন্তুষ্ট। দেশটির দাদাগিরি নিয়ে তারা ভীত। কিন্তুু বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুটি পক্ষই প্রবল সক্রিয়। চলমান নানা ইস্যু নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষকে ভারতের বা পাকিস্তানের ‘তল্পিবাহক’ বলে প্রায় খোটা দেয়। কোন দল কোন দেশের মিত্র, কার সাথে কে কতঠুকু ঘনিষ্ট, তা–ই দিয়ে দলের চরিত্র বিচার হচ্ছে। এবং সেই সূত্র ধরে বাংলাদেশ চলছে।
দুই দেশের অন্ধসুলভ সমর্থন করতে গিয়ে এক পক্ষ স্বদেশির মঙ্গলের চেয়ে ভিনদেশির মঙ্গলে বেশি সুখ খোঁজে পান। অন্য পক্ষ নিজেদের সহায় সম্বল নিয়ে স্বদেশির মঙ্গলে খুশি থাকতে চান। এভাবে সময়ের পরিক্রমায় দুই পক্ষের ভিতর জাতীয়তাবাদ হয়ে উঠছে চেতনানাশক। হারিয়ে যাচ্ছে আত্মসম্মানবোধ। ঘৃণা-বিদ্বেষ যখন রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রধান মসলা হয়, তখন বন্ধু হয় শক্র, আর শক্র হয় বন্ধু—যুগ ভেদে এই নিয়মই জয়ী হয়।
কবি জীবনানন্দ দাশ যথার্থই বলেছিলেন, ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট না হলে, এ জীবন হতো একতিল অধিক বিভোর।’ সত্যি জীবনানন্দ দাসের কথাগুলোই যেনো বর্তমান বাংলাদেশের চিত্র। হয়তো রক্তপাত, শোষণ-বঞ্চনা আর আধিপত্যে বিস্তারের খারাপ অভিজ্ঞতা না থাকলে আমরা খেলাকে খেলা হিসেবে নিতে পারতাম। কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য যে, অযৌক্তিকভাবে হলেও খেলার সঙ্গে রাজনীতি মিশে গেছে। এখান থেকে বের হবার রাস্তা এখন রাজনীতিবিদদের খোঁজে বের করতে হবে। এ দায় কেবল তাদেরই।
যদি আমরা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ভালোবাসি, তাহলে ভুল ব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিকীকরণের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। দেশের ক্রিকেট অবকাঠামোরক গতিশীল করা, ক্লাব এবং খেলার মাঠগুলোকে মাফিয়াদের হাত থেকে বাঁচানোর আওয়াজ তুলতে হবে। জ্বী হুজুর! জ্বী হুজুর না করে কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহির ব্যবস্হা নিশ্চিত করতে হবে ।
হ্যাঁ একটি দেশের জাতীয় ক্রিকেট দল যখন সে দেশের পতাকা, জাতীয় সংগীত বহন করে, তখন সেই দলের জয়-পরাজয় সেই রাষ্ট্রেরই জয়-পরাজয় হিসেবে গণ্য হয়। দেশ হারলে জনগণ ব্যতিথ হয়। এই সুযোগ নিয়েই খেলা আমাদের অনুভূতির সাথে ছলনা করে।
পাকিস্তান দলকে যারা সমর্থন করেছেন, তারা নৈতিক ভুল করেছেন। তাদের ভুল ভাঙানোর দায়িত্ব প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের। তাদের ভিতর আত্মাসম্মানবোধের শিক্ষা দেশপ্রেমিকদের জাগাতে হবে। মনে রাখতে হবে, একধরনের ভাইরাস মানুষের মধ্যে আছে, যা আঘাত পেলে আরো শক্তিশালী হয়। যারা নিজ দেশের হালচালে ত্যক্ত–বিরক্ত, যারা নিজ রাষ্ট্রের দ্বারা অবাঞ্ছিত বোধ করে, কঠিন আঘাতে তারা কিন্তুু আরো দূরে চলে যেতে পারে এবং শক্তিশালী হয়ে আরো বেশি এই কাজটি করবে । তাই জোড় করে নয়, ভালোবাসা দিয়ে তাদের মন জয় করতে হবে।
ভারত না পাকিস্তান ! কে কোন দেশের “তল্পিবাহক”
সে তর্কে যাচ্ছিনা। আমি বাংলাদেশি এবং সেটি আমার একমাত্র পরিচয়। লেখার শেষে এসে শুধু একটি কথাই বলব ”দেশপ্রেম সবার আগে, এর কোনো বিকল্প নেই”। তবে অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা বিদ্বেষ ছড়িয়ে নিজের দেশপ্রেম জাহির করার পক্ষেও আমি নই। ক্রিকেট ক্রিকেটের জায়গায় আর রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় রেখে আসুন সামনের দিনগুলোতে আমরা এগিয়ে যাই ।
এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়জয়কার। তাদের মধ্যে একজন হলেন জনাব মোঃ ভাষানী খান। দীর্ঘ ৩০ বছর প্রবাসে থেকেও যে মানুষের মনে জায়গা করে নেয়া যায় তার জলজ্যান্ত উদাহরণ হচ্ছেন জনাব ভাষানী।
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জনাব মোঃ ভাষানী খান শরীয়তপুর সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়ন থেকে নির্বাচন করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস মার্কায় নির্বাচন করে তিনি জয়লাভ করেন। আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে জনাব মোঃ ভাষানী খান আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেন। বলা বাহুল্য তিনি দেশে এবং বিদেশে দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
জনাব মোঃ ভাষানী খান বলেন, ‘’এলাকায় আমার অবদান ও মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং আমার প্রতি মানুষের ভালোবাসাই আমাকে এই জয় এনে দিয়েছে’’।
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তিনি শৌলপাড়া ইউনিয়নের উন্নয়নে অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শৌলপাড়া ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে রূপান্তরিত করতে চান। উনার উল্লেখযোগ্য নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিল; স্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নয়ন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জনগণের হয়ে নিজ অর্থায়নে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান অন্যতম। এছাড়াও ব্যবসা বাণিজ্যের অগ্রগতি, ইউনিয়নের অবকাঠামগত উন্নয়ন ও দুর্নীতি দূরীকরণে কাজ করতে চান।
সহধর্মিণীর সাথে মোঃ ভাষানী খান
জনাব ভাষানী ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের গর্বিত পিতা। তন্মদ্ধে বড় ও মেঝ ছেলে বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত, যাদের মধ্যে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং ব্যবসায়ী এবং অন্যজন মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। জনাব ভাষানী বর্তমানে সহধর্মিণী ও ১৩ বছর বয়সী তৃতীয় ছেলে এবং ৪ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে নিয়ে দেশেই রয়েছেন।
ধীর্ঘদিন আয়ারল্যান্ডে প্রবাস জীবন অতিবাহিত করেছেন। এখন দেশের মানুষকে নিজের সেবা বিলিয়ে দিতে নাড়ির টানে দেশে ফিরে গিয়েছেন। একজন প্রবাসীর দেশের মানুষের টানে দেশে ফিরে যাওয়া এবং দেশের মানুষের তাঁর প্রতি ভালোবাসা সত্যিই অসাধারণ।
শৌলপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মোঃ ভাষানী খান দেশে ও বিদেশে সর্বস্তরের মানুষের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন, যাতে করে যে উদ্দেশ্য নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন সে উদ্দেশ্য পূরণ করতে সক্ষম হন।
সৌদি গণমাধ্যমে সৌদি গেজেটের খবরে বলা হয়েছে, আইন, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও প্রযুক্তিবিদ্যায় বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ও মেধাবীদের নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সৌদি আরবের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। তবে তার জন্য প্রবাসীদের কিছু নিয়ম ও শর্ত পূরণ করতে হবে।
নিয়ম ও শর্তাবলী
আবেদন করার আগে যে তথ্যগুলো অবশ্যই দিতে হবে।
আবেদনকারীকে অবশ্যই বৈধ উপায়ে দেশটিতে প্রবেশ করতে হবে এবং একটি বৈধ পাসপোর্ট ধারণ করতে হবে যার মাধ্যমে তিনি কোন বিধিনিষেধ বা শর্ত ছাড়াই তার নিজ দেশে ফিরতে পারবেন।
নিজ খরচে দেশটির বসবাসের অনুমতি বা রেসিডেন্সি পারমিটের আওতায় অন্তত ১০ বছর সৌদি আরবে থাকতে হবে।
দেশের প্রয়োজনীয় একটি পেশায় কাজ করতে হবে।
আবেদনকারীর তথ্য দেয়ার পর কমিটি তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আবেদনটি মূল্যায়ন করবেন। এখানে মোট ৩৩ পয়েন্ট ভাগ করা আছে।
আবেদনকারী অন্তত দশ বছর সৌদিতে অবস্থান করলে ১০ পয়েন্ট স্কোর হবে।
আবেদনকারী যদি দেশটির প্রয়োজন সাপেক্ষে বিজ্ঞানের কোন শাখায় পারদর্শী হন তাহলে তিনি এখান থেকে সবোর্চ্চ ১৩ পয়েন্ট পেতে পারেন। (শুধুমাত্র একটা বেছে নিতে হবে।)
মেডিসিন বা ইঞ্জিনিয়ারিং পেশায় ডক্টরেট ডিগ্রি থাকলে স্কোর হবে ১৩ পয়েন্ট।
বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় ডক্টরেট ডিগ্রি- দশ পয়েন্ট।
মাস্টার্স ডিগ্রি- আট পয়েন্ট।
ব্যাচেলর ডিগ্রি- পাঁচ পয়েন্ট।
পারিবারিক বন্ধন, অর্থাৎ আবেদনকারীর সৌদিতে কোন আত্মীয় রয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট পাওয়া যাবে।
বাবা সৌদি নাগরিক হলে তিন পয়েন্ট।
বাবা মা দুজনেই সৌদি নাগরিক হলে তিন পয়েন্ট।
শুধু মা সৌদি নাগরিক হলে দুই পয়েন্ট।
যদি স্ত্রী এবং শ্বশুর সৌদি নাগরিক হয়, তাহলে তিন পয়েন্ট।
যদি শুধু স্ত্রী সৌদি নাগরিক হন তাহলে এক পয়েন্ট।
আবেদনকারী যদি দুইজনের বেশি সৌদি সন্তান ও ভাই থাকলে তাহলে দুই পয়েন্ট বরাদ্দ হয়। তবে দুইয়ের বেশি না থাকলে এক পয়েন্ট বরাদ্দ হয়।
যদি আবেদনকারী ন্যূনতম স্কোর হিসাবে ২৩ পয়েন্ট পান, কমিটি আবেদনটি আরও পর্যালোচনার সুপারিশ করে।
এর মধ্যে আবেদন জমা দেয়ার বাকি প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করা হয় এবং চূড়ান্ত সুপারিশ জারি করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া হয়।
এরপর প্রয়োজনীয় সনদ, স্বাস্থ্য রিপোর্ট, সম্পদের হিসাব, ধর্ম/রাজনৈতিক মতাদর্শের ব্যাখ্যাসহ এই আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজ খেলতে টি-২০ বিশ্বকাপ মিশন শেষে দুবাই থেকে সরাসরি ঢাকায় পৌঁছেছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল।
তিন টি-টোয়েন্টি ও দুই টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে এসেছে পাকিস্তান। আজ সকাল ৮ টার একটু পর ঢাকায় নেমেছে পাকিস্তান দল। ১৯ নভেম্বর শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ২৬ নভেম্বর।
সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের ৬ দিন আগেই ঢাকায় পৌঁছে তারা। তবে ছুটি নেয়ায় পাকিস্তান দলের সঙ্গে আসেননি ক্যাপ্টেন বাবর আজম ও অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। তারা ছুটি কাটিয়ে ১৬ই নভেম্বর দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।
বিভিন্ন পেশার দক্ষ বিদেশি নাগরিকদের সৌদি আরবে নাগরিকত্ব দেওয়ার এক রাজকীয় ঘোষণার পর প্রথম দিনেই নাগরিকত্ব লাভ করেছেন বাংলাদেশের মুখতার আলম শিকদার। তিনি প্রধান ক্যালিগ্রাফার হিসেবে মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের গিলাফ (কিসওয়াহ) প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ২০ বছর কাজ করছেন।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন-২০৩০’ বাস্তবায়নে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, ইতিহাসবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক, বিনিয়োগকারী, প্রযুক্তিবিদ, ক্রীড়াবিদদের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত ঘোষণার প্রথম দিনে ৫ জন বিদেশি নাগরিকের নাম প্রকাশ করা হয়। তারা হলেন- পবিত্র কাবা ঘরের গিলাফের প্রধান ক্যালিগ্রাফার মুখতার আলিম, ইতিহাসবিদ ড. আমিন সিদো, ড. আবদুল করিম আল সাম্মাক, প্রখ্যাত গবেষক ড. মুহাম্মদ আল-বাকাই ও প্রখ্যাত নাট্যশিল্পী সামান আল-আনি। তাদের মধ্যে মক্কার কিসওয়া কারখানার প্রধান ক্যালিগ্রাফার হচ্ছেন মুখতার আলম।
মুখতার আলম মক্কার বিখ্যাত উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বর্তমানে পিএইচডি গবেষণারত। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের সার্টিফিকেটের ক্যালিগ্রাফার হিসেবেও কাজ করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা থেকে বহু পুরস্কার ও প্রশংসামূলক সনদ লাভ করেছেন।
মুখতার আলমের বাড়ি চট্টগ্রামে। লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নে। তিনি রশীদের ঘোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম জনাব মুফিজুর রহমান বিন ইসমাঈল শিকদার। মায়ের নাম শিরিন বেগম। কর্মজীবনের শুরুতে তার বাবা কিছুদিন ঐতিহ্যবাহী চুনতি হাকীমিয়া আলিয়া মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি দীর্ঘ সময় সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফার্মাসিস্ট হিসেবে বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। মূলত বাবার কর্মসূত্রে পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ সময় সৌদিতে কাটিয়েছেন। বর্তমানে মুখতার তার মা, স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে মক্কায় বসবাস করছেন।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের দাপুটে জয় পেল নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। এই জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল কেন উইলিয়ামসনরা। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল বিরোট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করার জন্য ভারতের সামনে সমীকরণ ছিল- আফগানিস্তানের কাছে নিউজিল্যান্ডকে হারতে হবে। কিন্তু আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আফগানদের ৮ উইকেটে হারিয়েছে কিউইরা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো কেন উইলিয়ামসনের দল।
সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১২৪ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় তারা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১১ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কিউইরা।
এই জয়ের ফলে গ্রুপ-বি থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে গেলো নিউজিল্যান্ড। ৫ ম্যাচ খেলে +১.১৬২ রানরেটে তাদের পয়েন্ট ৮। অন্যদিকে, আগেই শেষ চার নিশ্চিত করে রাখা পাকিস্তানের +১.০৬৫ রানরেটে পয়েন্ট ৮। অবশ্য তারা ৪ ম্যাচ খেলেছে। ফলে গ্রুপে তৃতীয় হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ভারতকে।
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১২৪/৮ (নজিবুল্লাহ জাদরান ৭৩, গুলবাদিন নাইব ১৫, মোহাম্মদ নবী ১৪; ট্রেন্ট বোল্ট ৩/১৭)।
হাঙ্গেরি ইউরোপের সমৃদ্ধ একটি দেশ। ২০১৩ সাল থেকে হাঙ্গেরি সরকার ২০১৩ সাল থেকে ‘স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ’ দিয়ে আসছে। ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশে চালু হয়েছে এই স্কলারশিপটি। বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপের আওতায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট, ওয়ান টায়ার মাস্টার্স ও ডক্টরাল নিয়ে পড়তে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে আন্ডারগ্র্যজুয়েট ও মাস্টার্স পর্যায়ে এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
যে বিষয়গুলতে স্কলারশিপ পাওয়া যাবে
ব্যাচেলর, মাস্টার’স এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে স্কলারশিপ নেয়া যাবে। তন্মদ্ধে উল্লেখযোগ্য বিষয় যেমনঃ মেডিসিন, ফার্মেসী, ডেন্টিস্ট্রি, আর্কিটেকচার, আইন, ভেটেরিনারি সার্জারি, ফরেস্ট্রি ইঞ্জিন্যারিং ইত্যাদি বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে।
১। টিউশন ফি সম্পূর্ণ ফ্রি,
২।ব্যাচেলর ও মাস্টার্স প্রোগ্রামে ১২০ ইউরো ।আর, পিএইচডি প্রোগ্রামে প্রথম ৪ সেমিস্টার ৩৯০ ইউরো ও পরবর্তী চার সেমিস্টার ৫০০ ইউরো),
৩। ক্যাম্পাসের ডরমিটিরিতে বিনা ভাতায় থাকার ব্যবস্থা। উল্লেখ্য, ডরমিটরিতে না থাকতে চাইলে মাসে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১২ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বাড়ি ভাড়া ভাতা বাবদ,
৪। মেডিকেল ইনস্যুরেন্স (স্বাস্থ্যবিমা) – প্রতি বছর সর্বোচ্চ ২৭৫ ইউরো,
৫। সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ।
এছাড়াও ইচ্ছে করলে হাঙ্গেরির কাছের দেশ ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগালে গিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খুব সহজেই বসবাস করার সুযোগ পাওয়া যায়।
আবেদনের নিয়মাবলী ও যোগ্যতা
১। বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে
২। অবশ্যই ১৮ বছর বয়স হতে হবে
৩। ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক পাস
৪। আইইএলটিএস স্কোর ন্যূনতম ব্যান্ড স্কোর ৫ থাকতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে আইইএলটিএসের প্রয়োজন হয় না।
৫। আবেদনকৃত প্রোগ্রামের Entry Qualification পূরণ করতে হবে।
৬। স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকামের ওয়েবসাইট হতে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে আবেদন করা যাবে।
৭। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনলাইন আবেদনের পাশাপাশি ও যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মার্কশিট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজপত্রের হার্ডকপিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
৮। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট ও ডক্টরাল—তিনটির যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। একাধিক আবেদন করলে আবেদনপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
আবেদন করতে এখানে একাউন্ট খুলে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রদত্ত এই লিংকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করার পর আবেদনের কপি সহ প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট নিচের ঠিকানায় জমা দিতে হবে।
প্রাপকের ঠিকানাঃ
যুগ্নসচিব (বৃত্তি)
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়,
বাংলাদেশ সচিবালয় , ঢাকা।
হাঙ্গেরির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতো প্রতি বছর ২ বা ৩ বার ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। এগুলো হলো এপ্রিল থেকে জুলাই, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর।
হাঙ্গেরিতে প্রথমবারের মতো ‘এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন ৩ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তারা হলেন- স্নাতক শিক্ষার্থী সাদন মোহাম্মাদ ও সামীন ইয়াসির এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম সাদি।
গত ২৬ অক্টোবর হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে দেশটির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেওয়া হয়।
পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক পরিবেশ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে তাদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ৩ শিক্ষার্থীই ‘স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম’ বৃত্তি নিয়ে দেশটিতে অধ্যয়ন করছেন।
ঢাকার রাজউক উত্তর মডেল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ২০২০ সনে হাঙ্গেরি সরকারের বৃত্তি পেয়ে বুদাপেস্ট আসেন সাদন মোহাম্মাদ। শহরের নিকটে হাঙ্গেরিয়ান ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচারাল এং লাইফ সায়েন্সে স্নাতক শুরু করেন। মিশুক সাদন এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে মেন্টর হিসেবে কাজ শুরু করেছেন।
সামীন ইয়াসির স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন দানিউবের তীরে বুদাপেস্ট ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ইকোনোমিকসে।
আমিনুল ইসলাম সাদি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ২০২০ সালে স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম বৃত্তি পেয়ে হাঙ্গেরিতে পাড়ি জমান। হাঙ্গেরির ডেব্রেসেন শহরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বছর স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন খাদ্য নিরাপত্তা ও গুনগত মান বিষয়ে।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত স্থপতি রফিক আজমকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন টাইম।
গত ২৮ অক্টোবর নিউইয়র্কভিত্তিক এই ম্যাগাজিন রফিক আজম ও তার জলবায়ু সহনশীলতার (ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স) সমাধান বিষয়ক একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, বর্ষা মৌসুমে অত্যন্ত ঝুঁকিতে থাকা ঢাকা শহরের নিষ্কাশন নালাগুলো উপচে পথঘাট ভাসিয়ে দেয়। বেশিরভাগ নগর পরিকল্পনাবিদ ঢাকাকে জলবায়ু সহনশীল করে তোলার সম্ভাবনার ব্যাপারে হতাশ হলেও রফিক আজম হননি।
টাইমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রফিক আজমকে উদ্ধৃত করে আরও বলা হয়, চ্যালেঞ্জ যদি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে সেটা দুঃখজনক। কিন্তু যদি আপনি একটি চ্যালেঞ্জকে উদ্ভাবনের সুযোগ হিসেবে ধরেন, তাহলে তা উদযাপনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।’
আজম ঢাকার অবহেলিত পার্কগুলোকে নতুন নকশায় সাজিয়ে সেগুলোকে ছোট ছোট সবুজ মরুদ্যানে পরিণত করতে শুরু করেছেন। যে পার্কগুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা এখন দ্বিগুণ। এর চারপাশে খনন করা গভীর পরিখাগুলোতে বৃষ্টির পানি জমা হয়। যা পরে ফিল্টার করে ট্যাপের মাধ্যমে খাবার পানি হিসেবে কমিউনিটির মানুষের কাছে পাঠানো হয়। এই পরিখাগুলো শহরের রাস্তা থেকে খাওয়ার অযোগ্য পানি ধারণ করে নেয়। ফলে সড়কে পানি জমে থাকে না।
টাইমের প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত রফিক আজম ও তার দল এভাবে ঢাকার ৩১টি পার্ক ও খেলার মাঠ বদলে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে রফিক আজম বলেন, ‘এসব এলাকায় বৃষ্টি আর কোনো বিড়ম্বনার কারণ নয়। বরং তা উদযাপনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রযুক্তি আমাদেরকে কি দেয় নি? বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভ্রমণ থেকে শুরু করে ভ্রমণ ছাড়াই ধরণীর যে কোন প্রান্ত থেকে যে কারো সাথে চাক্ষুষ যোগাযোগ সবই এখন নিত্যকার ব্যাপার। কিন্তু এরপরেও থেমে নেই প্রযুক্তি। আপনি হয়ত ভাবতে পারেন প্রযুক্তি এর থেকে আর কি দিতে পারে যা ভাবনারও বাহিরে। কিন্তু মানুষের গন্তব্য যে ইনেভিটেবল।
একসময় আপনার কাছে পত্রবাহকের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছাত আপনার কাছে, যা ছিল সময় সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য। এরপর কোন বাহক ছাড়াই বার্তা পৌঁছত বেতার টেলিফোনের মাধ্যমে, যেটাও সবার নাগালের মধ্যে ছিলনা। এর পর মোবাইল প্রযুক্তি সবকিছু বদলে দিল নিমিষে। মুহূর্তের মধ্যে বার্তা পৌঁছে যেতে লাগল পৃথিবীর প্রতিটি কোনায়। এরপরের পরিবর্তন যা কিছু, তা হয়ে গেল চোখের নিমিষেই। আপনার হস্তচালিত যন্ত্রটিতে কোন তার সংযোগ ছাড়াই উঠে এল ইন্টারনেট। এরপর থেকে প্রিয়জনের কথা শুধু আপনার কর্ণকুহূরেই প্রবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, প্রিয়জনের ছবিও ভেসে উঠল আপনার হাতের ছোট সেই যন্ত্রটিতে। শুধু প্রিয়জনই না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলার মাধ্যমে আপনাকে যুক্ত করল বিশ্ব পরিবারের সাথে।
আগেই বলেছি, প্রযুক্তি তার সীমাকে ছাড়িয়ে যেতে প্রস্তুত। প্রযুক্তি আপনাকে শুধু কথা বলা আর চাক্ষুষ দেখার মাঝে সীমাবদ্ধ রাখতে চাচ্ছে না এখন আর। প্রযুক্তি আপনাকে দিতে চাচ্ছে বাস্তব অনুভূতিও। আপনার ফোনে কথা বলাটাই মনে হবে আপনার লিভিং রুমে বসে আপনার প্রিয়জনের সাথে একসাথে চা খাচ্ছেন আর কথা বলতেছেন। যা আপনার প্রিয়জনের উপস্থিতির অনুভূতি অনুভব করবেন। ধরুন আপনার কোন এক বন্ধু এন্টার্কটিকায় কনকনে ঠাণ্ডায় বসে পেঙ্গুইন দেখতেছে আর সেই ছবি বা ভিডিও আপনি বাংলাদেশে বসে দেখে থরথর করে কাঁপতেছেন অথবা সাহারায় মরুর উঠের পৃষ্ঠদেশে বসে সাহারা পাড়ি জমাচ্ছেন, কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট করা সে ছবি রাশিয়ায় হিমাংকের নিচের তাপমাত্রায় বসে থেকে দেখে দরদর করে ঘামতেছেন।
বহুমাত্রিক এই অনুভূতি দিতেই কাজ করছে মেটাভার্স প্রযুক্তি। মেটাভার্স এমন মূর্ত ও শরীরী ইন্টারনেট, যেখানে আপনি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবেন না, নিজেও ঢুকে পড়বেন যাবতীয় অভিজ্ঞতার কেন্দ্রবিন্দুতে। যা হবে কল্পনার এক পৃথিবী, নতুন এক ভবিষ্যৎ।
মেটাভার্স প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখেই ফেসবুক কর্পোরেশনের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘মেটা’।
এই মেটাভার্স প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখেই ফেসবুক কর্পোরেশনের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘মেটা’। ‘মেটা’ শব্দটি এসেছে একটি গ্রিক শব্দ থেকে যার ইংরেজি অর্থ ‘বিয়ন্ড’, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ‘’আপাত দৃশ্যমান নির্দিষ্ট সমাপ্তির পরও যার আরো অস্তিত্ব রয়ে যায়’’।
এই নতুন কল্পনার ভবিষ্যতে কোন যানবাহন ব্যবহার না করেই আপনি হলোগ্রাম হিসেবে একটি টেলিপোর্ট করতে পারবেন যা আপনাকে ভার্চুয়ালি পৌঁছে দিবে আপনার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। যা ফলে শারীরিকভাবে উপস্থিত না হয়েও আপনি অংশগ্রহণ করতে পারবেন যেকোন মিটিং, সম্মেলন, কনসার্ট কিংবা দূরদেশে আপনার পরিবারের খাবার টেবিলে। শারীরিকভাবে উপস্থিত না থেকে উপস্থিতির আরকেটি সুবিধাজনক দিক হচ্ছে আপনাকে ট্রাফিকে আটকে থাকতে হচ্ছেনা, কিংবা আপনার কারণে ট্রাফিক তৈরি হচ্ছেনা। সেই সঙ্গে হ্রাস ঘটাতে পারবেন আপনার কার্বন ফুটপ্রিন্টেও।
আজকে আপনার কাছে মূর্তমান অবস্থায় রয়েছে এমন কত জিনিসই ভবিষ্যতে পরিণত হবে নিছক হলোগ্রামে। আপনার টিভি, একাধিক মনিটর সহযোগে আপনার পারফেক্ট ওয়ার্ক সেটআপ, আপনার বোর্ড গেম এবং আরো কত কিছু- কারখানায় সেসব জিনিসের প্রতিটি অংশ জোড়া লাগানোর বদলে, সেগুলো কেবল হলোগ্রাম হয়েই থাকবে, আর সেগুলো তৈরি করবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নির্মাতারা।
আপনি বিভিন্ন ডিভাইস ঘুরে ঘুরে এসব অভিজ্ঞতা লাভ করবেন- অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাসের মাধ্যমে শারীরিক পৃথিবীতে উপস্থিত থাকবেন, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দিয়ে নিমজ্জিত হবেন অন্য আরেক পৃথিবীতে, এবং ফোন ও কম্পিউটার দিয়ে প্রবেশ করবেন ইতোমধ্যেই বিদ্যমান প্ল্যাটফর্মগুলোতে। তবে এর মানে কিন্তু আরো বেশি সময় স্ক্রিনে কাটানো নয়; এটি হলো আমরা ইতোমধ্যেই যেসব সময় কাজে ব্যয় করি, সেগুলোর আরো ভালোভাবে ব্যবহার। বলেছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ।
মার্ক জুকারবার্গ আরো বলেন, মেটাভার্সটি কেবল একটি কোম্পানিই তৈরি করবে না। এটি তৈরি হবে সেসব নির্মাতা ও ডেভেলপারদের হাত ধরে, যারা ইন্টারঅপারেবল (আন্তঃব্যবহারযোগ্য) নতুন নতুন অভিজ্ঞতা ও ডিজিটাল আইটেম তৈরি করছে।
মার্ক জুকারবার্গ – ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা
এই মুহূর্তে আমাদের ভূমিকা হবে মৌলিক প্রযুক্তি, সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এবং সৃজনশীল উপকরণসমূহের উন্নতিকে আরো ত্বরান্বিত করা, যেন প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয় মেটাভার্সে, এবং আমাদের সামাজিক মাধ্যম অ্যাপগুলোর মাধ্যমে এসব প্রযুক্তি যেন ছড়িয়ে পড়ে। মার্ক জুকারবার্গ বিশ্বাস করেন যে, মেটাভার্স এখনকার চেয়ে শ্রেয়তর সামাজিক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে পারবে।
প্রথম দিন থেকেই মেটাভার্সে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আরো প্রতিষ্ঠা করা হবে ওপেন স্ট্যান্ডার্ড ও ইন্টারঅপারেবিলিটি।
আগামী দশকের মধ্যে মেটাভার্স এক বিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মার্ক জুকারবার্গ। মেটাভার্সের ডিভাইসগুলো অলাভজনক মূল্যে বা ভর্তুকির মাধ্যমে প্রদান করা হবে যাতে করে বেশি সংখ্যক মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে আসা যায়। সাথে সাথে পিসি থেকে সাইড-লোডিং এবং স্ট্রিমিং সমর্থনও অব্যাহত থাকবে, যাতে মানুষের কাছে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ থাকে এবং তাদের যেন কোয়েস্ট স্টোরে গিয়ে অ্যাপ খুঁজতে বা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে বাধ্য হতে না হতে হয়। পাশাপাশি ডেভেলপার ও ক্রিয়েটর সার্ভিসও খুবই স্বল্প ফিতে প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে, যেন সামগ্রিকভাবে আমরা সৃজনশীল অর্থনীতির প্রসারণ ঘটাতে সক্ষম হয়। তবে সবই করা হবে কোম্পানিকে লাভজনক অবস্থায় রেখে, যাতে সামগ্রিক কোম্পানির লোকসান না ঘটে।
মার্ক জুকারবার্গ বলেন, ‘’আজ আমাদের দেখা হয় একটি সামাজিক মাধ্যম কোম্পানি হিসেবে। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্রযুক্তি পণ্যের একটি হলো ফেসবুক। এটি একটি আইকনিক সামাজিক মাধ্যম ব্র্যান্ড। সামাজিক অ্যাপ তৈরি করা সবসময়ই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ থাকবে, এবং এমন আরো অনেক অ্যাপ বানাতে হবে। তবে বলাই বাহুল্য, আসন্ন ভবিষ্যতে আমরা শুধু এই কাজই করব না। আমরা মানুষকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য প্রযুক্তি তৈরি করি। মেটাভার্স হবে মানুষের মধ্যকার আন্তঃযোগাযোগের পরবর্তী অধ্যায়, ঠিক যেমনটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ছিল আমাদের প্রথম যাত্রা শুরুর সময়ে’’।
”এখন থেকে আমরা আর ফেসবুক-ফার্স্ট নই, আমরা হবো মেটাভার্স-ফার্স্ট”
জুকারবার্গ আরো বলেন, ‘’এখন থেকে আমরা আর ফেসবুক-ফার্স্ট নই, আমরা হবো মেটাভার্স-ফার্স্ট। এর অর্থ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের আর আমাদের অন্যান্য পরিষেবা গ্রহণ করতে হলে আগে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকার প্রয়োজন হবে না। যেহেতু আমাদের সকল পণ্যে আমাদের নতুন ব্র্যান্ডটি দেখা দিতে শুরু করেছে, আমি আশা করছি বিশ্বব্যাপী মানুষ খুব শীঘ্রই জেনে যাবে মেটা ব্র্যান্ড কী, আর ভবিষ্যতেই বা কী অপেক্ষা করছে’’।
ফেইসবুকের নতুন কর্পোরেট নাম ঠিক করা হয়েছে ‘মেটা’। খুব শিগগিরই ‘মেটা’ নামে এটি রিব্র্যান্ডিং হবে। বিশ্বের এক নম্বর সোশ্যাল নেটওয়ার্ক facebook.com হচ্ছে এর মূল প্রতিষ্ঠান ফেইসবুক ইনকরপোরেশনের (নতুন নাম মেটা) অধীনে থাকা একটি সেবা। ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপও ফেইসবুক ইনকরপোরেশনের আওতাধীন সেবা। মূল এই প্রতিষ্ঠানটির আওতাধীন সব প্রযুক্তি সেবাই মেটার অধীনে পরিচালিত হবে।
মূল প্রতিষ্ঠান ফেইসবুকের নাম বদলালেও ফেইসবুক অ্যাপের নাম এখনই পরিবর্তন হবে না বলে জানা গেছ। নতুন নামে আত্মপ্রকাশ হতে যাওয়া মেটার অধীনে ফেইসবুক নামে অ্যাপটি আগের নামেই বহাল থাকবে।
মেটার নতুন লোগো হিসেবে পেচানো সার্কেলের ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন একাধিক গণমাধ্যম। ছবিটিতে ফেইসবুকের (মেটা) অফিসের পথ নির্দেশিকার সঙ্গে নতুন নাম ও লোগো ব্যবহার হয়েছে। এই ছবির স্থান নিশ্চিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের মেনলো পার্বের ১ হ্যাকার ওয়ে সড়কে। এই এলাকাতেই ফেইসবুকের অফিস।
এদিকে, বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এক ইভেন্টে নতুন নামের ঘোষণা দেন ফেইসবুতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহ-প্রতিষ্ঠান মার্ক জাকারবার্গ। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যারা প্রযুক্তির মাধ্যমে (মানুষের মধ্যকার) সংযোগ প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরাই পারি চূড়ান্তভাবে মানুষকে প্রযুক্তির কেন্দ্রে নিয়ে আসতে।”
তিনি আরো বলে, “আমি আশা করছি, একসময় প্রতিষ্ঠানটিকে আমরা মেটাভার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে পাবো।” মেটা’র অধীনে নতুন অ্যাপ ও প্রযুক্তি পণ্য বাজারে আনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
ফেইসবুকের মূল ওয়েবসাইটের ডোমেইন, লোগো ও ফিচার পরিবর্তন হয়নি। তবে নতুন নামের প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে বিস্তারিত একটি পেজ ( https://about.facebook.com/meta ) খোলা হয়েছে । এছাড়া meta.com সাইটে ব্রাউজ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেটা সম্পর্কিত পেজে রিডাইরেক্ট হচ্ছে।
ড. রেজা কিবরিয়াকে আহ্বায়ক এবং নুরুল হক নূরকে সদস্য সচিব করে নতুন একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। আজ ঢাকার পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলন করে ‘বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ’ নামে এই দলটির ঘোষণা দেয়া হয় যেটির আহ্বায়ক কমিটিতে রয়েছেন ১০১জন সদস্য।
নুরুল হক নূর কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে খ্যাতি পান। পরে তিনি ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন। আর রেজা কিবরিয়া প্রয়াত শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে। একটি বোমা হামলায় নিহত শাহ এএমএস কিবরিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
নতুন দল ঘোষণা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, বাংলাদেশে বড় দুটি দলের রাজনীতি পরিবারকেন্দ্রিক। কারও বাবার পরে মেয়ে, কারও স্বামীর পরে স্ত্রী। আমাদের দল কখনো রেজা কিবরিয়া ও নুরুলের দল হবে না। এখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে পরবর্তী নেতৃত্ব ঠিক হবে। আমরা গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের কথা বলছি।
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি এসেছি একটা বিশ্বাস নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে। রেজা কিবরিয়া অক্সফোর্ডে পড়ুয়া, উচ্চশিক্ষিত। আর নুরুলরা স্বপ্ন দেখাতে জানে এবং স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে। এই তরুণদের সংগ্রামের ঐতিহ্য আছে। তোমরা সততার প্রতীক, তোমরাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারো। নতুন উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।’
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রেখে গদা কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাওয়া যুবকের নাম ইকবাল হোসেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ আজ বুধবার জানান, ৩০ বছর বয়সী ইকবাল কুমিল্লা নগরীর মুরাদপুর-লস্করপুকুর এলাকার নূর আহম্মদ আলমের ছেলে। তাকে খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা অকল্পনীয়ভাবে ভিডিওটি পেয়েছি। ভিডিও দেখে যে কোরআন শরীফ রেখেছেন তাকে শনাক্ত করা গেছে। শনাক্তকারীকে ধরার জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে।
তিনি জানান, গত ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিনে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার কথা জানিয়ে ৯৯৯ কল করেন স্থানীয় একরাম হোসেন। ফোন প্রাপ্তির কয়েক মিনিটের মধ্যে সিভিল পোশাকে সিএনজি অটোরিকশায় করে উপস্থিত হন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল আজীম। ওই ঘটনায় সরাসরি লাইভ করেন স্থানীয় ফয়েজ আহমেদ। তিনি প্রবাসে ছিলেন এখন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী। লাইভ প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওই সময় ওসি ফোনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাতে থাকলে ফয়েজ ওসির পরিচয় দেন এবং কোরআন শরীফ অবমাননার কথা বলে প্রতিবাদ জানানোর কথা বলেন। এই ভিডিও বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘৯৯৯ এ ফোন করা একরাম সারারাত পূজামণ্ডপের আশেপাশে অবস্থান করেছে এবং ইকবালকে পূর্ব নানুয়ার পাড়ে গদা নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।’
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান Antonov An-225 ল্যান্ড করল আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় এয়ারপোর্ট রানওয়ে সম্পন্ন শ্যানন এয়ারপোর্টে। চায়নার কার্গো কনসাইনমেন্ট নিয়ে আজই বিমানটি অবতরণ করল।
৩,১৯৯ মিটার দৈর্ঘ্যের আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় রানওয়ে একমাত্র শ্যানন এয়ারপোর্টেই অবস্থিত। Antonov AN-225 এর মত বিশালাকার বিমান কেবল মাত্র বড় রানওয়েতেই অবতরণ করতে সক্ষম।
এ নিয়ে মোট পঞ্চম বারের মত Antonov AN-225 শ্যাননে অবতরণ করল। সর্বশেষ অবতরণ করেছিল ২০২০ এর জুন মাসে, যখন চলছিল করোনার ক্লান্তিকাল। PPE সমৃদ্ধ বিশাল কনসাইনমেন্ট নিয়ে হাজির হয়েছিল দানবাকার এই উড়োজাহাজটি।
বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ দেহ, দীর্ঘ পাখা এবং সবচেয়ে ভারী উড়োজাহাজ হচ্ছে প্রায় ছয় তলার সমমান Antonov AN-225।
টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের তৃতীয় বোলার হিসেবে টানা ৪ বলে ৪ উইকেট নিলেন আয়ারল্যান্ড পেসার কার্টিস ক্যাম্ফার। আজ আবুধাবিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এ কীর্তি গড়লেন তিনি। ব্রেট লির পর প্রথম বোলার হিসেবেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক হলো ক্যাম্ফারের। প্রথম আইরিশ বোলার হিসেবেও টি-টোয়েন্টিতে তো বটেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই হ্যাটট্রিক করলেন তিনি।
টি-টোয়েন্টিতে এর আগে ৪ বলে ৪ উইকেটের কীর্তি ছিল রশিদ খান ও লাসিথ মালিঙ্গার। ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেই ৪ উইকেট নিয়েছিলেন রশিদ। সে বছরই মালিঙ্গা ‘ডাবল হ্যাটট্রিক’ করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। মালিঙ্গার এ কীর্তি আছে ওয়ানডেতেও। ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪ বলে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন সাবেক শ্রীলঙ্কান পেসার।
সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পেয়ে পৈশাচিকতার জন্য কিছু উম্মাদ গর্দবরা সব সময় প্রস্তুুত থাকে। কিন্তুু মূল নাশকতা চালানোর জন্য পরিকল্পনাকারীরা পিছনে নিয়োজিত থাকে। তারপর সুযোগ বুঝে তাঁরা ধর্মীয় উপাসনালয়/বাড়ি-ঘর ভাঙতে গুন্ডাদের লেলিয়ে দেয়।
এই সব ঘটনার আলামত দেখে এধর্ম -ওধর্মের লোকদের মধ্যে নানান রকম নীতিবাক্য বর্ষণ শুরু হয়। এরপর এদিক-ওদিক থেকে ছুড়া হয় অভিযোগের তীড়। কিন্তুু কেউই জানেনা যে, এগুলোর সঙ্গে ধর্ম ও ধার্মিকতার কোনো সর্ম্পক নেই। সাম্প্রদায়িক উম্মাদদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই। নিজেদের লাভ-ক্ষতির জন্য এই উম্মাদগুলো পৈশাচিকতায় মেতে উঠে।
তবে সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের দেশে যখন সংখ্যালুঘুদের উপর এই ধরণের ঘটনা ঘটে তখন সংখ্যগরিষ্টদের উপর সব দোষ বর্তায়। যার ফলে পুরো মুসলমান সম্প্রদায়কে জঙ্গিবাদের গালি শুনতে হয়।
বিষয়টি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। মুসলমানরা কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক এবং উগ্র নয়। এইটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম কোনো উগ্রবাদের ধর্ম নয়। ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধের শিক্ষা দেয় ইসলাম। এ- ক্ষেত্রে নবী করিম (সা:) এর একটি হাদিস এখানে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য
হজরত সুফিয়ান ইবনে সালিম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জেনে রেখ! কোনো মুসলমান যদি অমুসলিম নাগরিকের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করে, কোনো অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করে, তার কোনো জিনিস বা সহায়-সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয়; তবে কেয়ামতের দিন আল্লাহর বিচারের কাঠগড়ায় আমি তাদের বিপক্ষে অমুসলিমদের পক্ষে অবস্থান করবো।’ (আবু দাউদ) অন্য কোনো ধর্ম গ্রন্হে এই ধরণের কঠোরতা রয়েছে বলে আমার জানা নেই।
সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধের পরিবেশ নিশ্চিত রাখতে সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে সবাইকে। প্রত্যেক ধর্মে কিছু উগ্রবাদি উম্মাদ থাকে যারা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় উম্মাদনায় শুরু করে নিজেদের ফায়দা নিতে চায়।
বাংলাদেশে বা পৃথিবীর যে-প্রান্তেই এমন ঘটনা ঘটুক, সেটা খুবই সুপরিকল্পিত এবং এর প্রতিটির পেছনে থাকে রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য ও নষ্ট রাজনীতির কালো হাত। আর তাহা না হলে কোনো এক জায়গার ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেশের অন্য জায়গায় এত দ্রুত ছড়ায় কি করে? এগুলো সংগঠিত করতে সময় লাগে, উদ্যোগ নিতে হয়।
রামু,নাসিরনগর ,শাল্লা ও কুমিল্লা সবগুলোই একইসূত্রে গাঁথা। নাসিরনগরের ঘটনায় চার্জশীর্টভুক্ত আসামীরা ক্ষমতাসীনদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নমিনেশন পর্যন্ত পেয়েছেন (ডেইলি স্টার)। শাল্লার ঘটনার প্রধান অভিযুক্তকারী ক্ষমতাসীনদের স্হানীয় একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন বলে জাতীয় পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। রামুতে একই অবস্হা। সামনে কতিপয় লেবাসধারী ধার্মিকরা থাকলেও পেছন থেকে ইন্ধন যুগিয়েছে সেই নষ্টা রাজনীতির কালো হাত।
কুমিল্লার ইসকন মন্দির ও পূজোমন্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সেখানকার সরকার দলীয় এমপি ও মেয়রের ব্যক্তিগত কোন্দলকে দায়ী করেছেন স্হানীয় সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা। হিন্দু মহাজোটের নেতা গোবিন্দ চন্দ্র প্রামনিক সম্প্রতি ফেস দ্যা পিপল টকশোতে এই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন তাঁর দলের পক্ষ থেকে সরজমিনে ঘটনা তদন্তের জন্য যখন কিছু লোকদের সেখানে পাঠানো হয়েছিলো তখন তাঁরা সেখানকার বিভিন্ন লোকদের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানতে পেরেছেন।
দুর্গা পূজাকে উপলক্ষ্য করে কুমিল্লার এক পূজো মন্ডপে স্পর্শকাতর একটা উস্কানিমূলক দৃশ্য তৈরি করার মাধ্যমে দেশের নানান জায়গায় যেসব প্রাণহানি, বলাৎকার, ধংসলীলা ও জঘণ্য যে সব সব ঘটনা ঘটেছে তার পেছনে রয়েছে সেই অপরাজনীতির নোংরা হাত ও পরিকল্পনা। এটি বুঝার জন্য রকেট সাইন্স জানার প্রয়োজন নেই। কুমিল্লাতে কোরআন অবমাননার ঘটনা ঘটেছিল অষ্টমিতে। তাৎক্ষণিক দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্হা জোড়দার করলে নবম ও দশমিতে মন্দির ও পূজোমন্ডপে এই হামলা এবং ক্ষয়ক্ষতি হতোনা।
তাহলে পূজোমন্ডপ গুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্হা কেন জোড়দার করা হলোনা ? প্রশ্নটি উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বুকে যখন রক্তক্ষরন হচ্ছিল তখন চাঁদপুরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিলেন স্হানীয় মুসল্লিরা। কিন্তুু হঠাৎ করে মিছিলের পেছন থেকে একদল লোক হামলা চালায়। এই হামলাকে কেন্দ্র করে পরিস্হিতি উত্তপ্ত হওয়ায় পরবর্তীতে সেখানকার পূজোমন্ডপে হামলা হয়। তারপর পুলিশের গুলিতে সেখানে কয়েকজন মৃত্যবরণ করেন।
চাঁদপুরের সেই মিছিলের পেছনে হামলাকারীরা কারা ছিল ? কেন উস্কানি দেওয়া হয়েছিলো সে দিন ?এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ধর্মীয় চশমা ছাড়া খোঁজতে হবে। তাহলে পাওয়া যাবে এর সঠিক উত্তর।
যাক ঘটনা তো ঘটে গিয়েছে কিন্তু কী উদ্দেশ্যে বা ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এগুলো ঘটানো হলো তা এখনো পরিস্কার নয়। সামনে নির্বাচন। জঠিল সমীকরণ। পরিকল্পনা দেশী নাকি বিদেশী সেটা ঠান্ডা মাথায় পর্যােলোচনার দাবী রাখে। এই পর্যালোচনা থেকে হয়তো জানা-বুঝা যাবে কিংবা যাবে না, কিন্তু যে ক্ষত ও ক্ষতি হয়ে গেলো তা তো সহজে মুছবে না। দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘটে যাওয়া সকল জগণ্য কাজের জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তবে ভবিষ্যতের জন্য চোখ-কান খোলা রাখা দরকার সবার।
পরিশেষে এতঠুকু বলবো, ধর্ম -বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশ হউক সবার। ধর্ম যার যার, মানবতা হউক সবার। এই প্রত্যাশা নিরন্তর।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িকতা ধর্মীয় নয়, সেটি রাজনৈতিক। এস,এ,রব
সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পেয়ে পৈশাচিকতার জন্য কিছু উম্মাদ গর্দবরা সব সময় প্রস্তুুত থাকে। কিন্তুু মূল নাশকতা চালানোর জন্য পরিকল্পনাকারীরা পিছনে নিয়োজিত থাকে। তারপর সুযোগ বুঝে তাঁরা ধর্মীয় উপাসনালয়/বাড়ি-ঘর ভাঙতে গুন্ডাদের লেলিয়ে দেয়।
এই সব ঘটনার আলামত দেখে এধর্ম -ওধর্মের লোকদের মধ্যে নানান রকম নীতিবাক্য বর্ষণ শুরু হয়। এরপর এদিক-ওদিক থেকে ছুড়া হয় অভিযোগের তীড়। কিন্তুু কেউই জানেনা যে, এগুলোর সঙ্গে ধর্ম ও ধার্মিকতার কোনো সর্ম্পক নেই। সাম্প্রদায়িক উম্মাদদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই। নিজেদের লাভ-ক্ষতির জন্য এই উম্মাদগুলো পৈশাচিকতায় মেতে উঠে।
তবে সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের দেশে যখন সংখ্যালুঘুদের উপর এই ধরণের ঘটনা ঘটে তখন সংখ্যগরিষ্টদের উপর সব দোষ বর্তায়। যার ফলে পুরো মুসলমান সম্প্রদায়কে জঙ্গিবাদের গালি শুনতে হয়।
বিষয়টি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। মুসলমানরা কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক এবং উগ্র নয়। এইটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম কোনো উগ্রবাদের ধর্ম নয়। ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধের শিক্ষা দেয় ইসলাম। এ- ক্ষেত্রে নবী করিম (সা:) এর একটি হাদিস এখানে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য
হজরত সুফিয়ান ইবনে সালিম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জেনে রেখ! কোনো মুসলমান যদি অমুসলিম নাগরিকের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করে, কোনো অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করে, তার কোনো জিনিস বা সহায়-সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয়; তবে কেয়ামতের দিন আল্লাহর বিচারের কাঠগড়ায় আমি তাদের বিপক্ষে অমুসলিমদের পক্ষে অবস্থান করবো।’ (আবু দাউদ) অন্য কোনো ধর্ম গ্রন্হে এই ধরণের কঠোরতা রয়েছে বলে আমার জানা নেই।
সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধের পরিবেশ নিশ্চিত রাখতে সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে সবাইকে। প্রত্যেক ধর্মে কিছু উগ্রবাদি উম্মাদ থাকে যারা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় উম্মাদনায় শুরু করে নিজেদের ফায়দা নিতে চায়।
বাংলাদেশে বা পৃথিবীর যে-প্রান্তেই এমন ঘটনা ঘটুক, সেটা খুবই সুপরিকল্পিত এবং এর প্রতিটির পেছনে থাকে রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য ও নষ্ট রাজনীতির কালো হাত। আর তাহা না হলে কোনো এক জায়গার ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেশের অন্য জায়গায় এত দ্রুত ছড়ায় কি করে? এগুলো সংগঠিত করতে সময় লাগে, উদ্যোগ নিতে হয়।
রামু,নাসিরনগর ,শাল্লা ও কুমিল্লা সবগুলোই একইসূত্রে গাঁথা। নাসিরনগরের ঘটনায় চার্জশীর্টভুক্ত আসামীরা ক্ষমতাসীনদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নমিনেশন পর্যন্ত পেয়েছেন (ডেইলি স্টার)। শাল্লার ঘটনার প্রধান অভিযুক্তকারী ক্ষমতাসীনদের স্হানীয় একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন বলে জাতীয় পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। রামুতে একই অবস্হা। সামনে কতিপয় লেবাসধারী ধার্মিকরা থাকলেও পেছন থেকে ইন্ধন যুগিয়েছে সেই নষ্টা রাজনীতির কালো হাত।
কুমিল্লার ইসকন মন্দির ও পূজোমন্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সেখানকার সরকার দলীয় এমপি ও মেয়রের ব্যক্তিগত কোন্দলকে দায়ী করেছেন স্হানীয় সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা। হিন্দু মহাজোটের নেতা গোবিন্দ চন্দ্র প্রামনিক সম্প্রতি ফেস দ্যা পিপল টকশোতে এই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন তাঁর দলের পক্ষ থেকে সরজমিনে ঘটনা তদন্তের জন্য যখন কিছু লোকদের সেখানে পাঠানো হয়েছিলো তখন তাঁরা সেখানকার বিভিন্ন লোকদের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানতে পেরেছেন।
দুর্গা পূজাকে উপলক্ষ্য করে কুমিল্লার এক পূজো মন্ডপে স্পর্শকাতর একটা উস্কানিমূলক দৃশ্য তৈরি করার মাধ্যমে দেশের নানান জায়গায় যেসব প্রাণহানি, বলাৎকার, ধংসলীলা ও জঘণ্য যে সব সব ঘটনা ঘটেছে তার পেছনে রয়েছে সেই অপরাজনীতির নোংরা হাত ও পরিকল্পনা। এটি বুঝার জন্য রকেট সাইন্স জানার প্রয়োজন নেই। কুমিল্লাতে কোরআন অবমাননার ঘটনা ঘটেছিল অষ্টমিতে। তাৎক্ষণিক দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্হা জোড়দার করলে নবম ও দশমিতে মন্দির ও পূজোমন্ডপে এই হামলা এবং ক্ষয়ক্ষতি হতোনা।
তাহলে পূজোমন্ডপ গুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্হা কেন জোড়দার করা হলোনা ? প্রশ্নটি উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বুকে যখন রক্তক্ষরন হচ্ছিল তখন চাঁদপুরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিলেন স্হানীয় মুসল্লিরা। কিন্তুু হঠাৎ করে মিছিলের পেছন থেকে একদল লোক হামলা চালায়। এই হামলাকে কেন্দ্র করে পরিস্হিতি উত্তপ্ত হওয়ায় পরবর্তীতে সেখানকার পূজোমন্ডপে হামলা হয়। তারপর পুলিশের গুলিতে সেখানে কয়েকজন মৃত্যবরণ করেন।
চাঁদপুরের সেই মিছিলের পেছনে হামলাকারীরা কারা ছিল ? কেন উস্কানি দেওয়া হয়েছিলো সে দিন ?এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ধর্মীয় চশমা ছাড়া খোঁজতে হবে। তাহলে পাওয়া যাবে এর সঠিক উত্তর।
যাক ঘটনা তো ঘটে গিয়েছে কিন্তু কী উদ্দেশ্যে বা ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এগুলো ঘটানো হলো তা এখনো পরিস্কার নয়। সামনে নির্বাচন। জঠিল সমীকরণ। পরিকল্পনা দেশী নাকি বিদেশী সেটা ঠান্ডা মাথায় পর্যােলোচনার দাবী রাখে। এই পর্যালোচনা থেকে হয়তো জানা-বুঝা যাবে কিংবা যাবে না, কিন্তু যে ক্ষত ও ক্ষতি হয়ে গেলো তা তো সহজে মুছবে না। দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘটে যাওয়া সকল জগণ্য কাজের জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তবে ভবিষ্যতের জন্য চোখ-কান খোলা রাখা দরকার সবার।
পরিশেষে এতঠুকু বলবো, ধর্ম -বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশ হউক সবার। ধর্ম যার যার, মানবতা হউক সবার। এই প্রত্যাশা নিরন্তর।
পর্দা উঠল ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। ওমানের মাসকাটের আল-আমেরাত স্টেডিয়ামে পাপুয়া নিউগিনি ও ওমানের বিপক্ষে ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুরু হল বিশ্বকাপ। প্রথম দিনের খেলায় দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে স্কটল্যান্ডের।
২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের পর এবারই সবচেয়ে দীর্ঘ বিরতি দিয়ে হচ্ছে এ সংস্করণের বিশ্ব আসর। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ভারতে হয়েছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারও খাতা-কলমে আয়োজক তারাই। তবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ভারত থেকে বিশ্বকাপ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
২০২০ সালেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ায়। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সেটা পিছিয়ে গেছে ২০২২ সাল পর্যন্ত। অস্ট্রেলিয়ার পর ভারতে হওয়ার কথা ছিল এ টুর্নামেন্ট, সেটাই হচ্ছে এখন।
আজ শুরু হলো ১৬ দলের টুর্নামেন্টের প্রথম পর্ব। দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে এ পর্বে খেলছে বাংলাদেশসহ আটটি দল। দুই গ্রুপ থেকে দুটি করে দল যাবে সুপার টুয়েলভে, সেখানে আগে থেকেই আছে আটটি দল।
আয়ারল্যান্ডে ২০২২ অর্থবছরের জন্য €৪.৭ বিলিয়ন বাজেট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই বাজেটে অর্থমন্ত্রী আগামী বছর প্রায় ৪০০,০০০ চাকুরীর ক্ষেত্র তৈরি হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। এছাড়াও কি কি বিষয় আপনার দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে তা দেখা যাক।
আপনার গাড়িতে তেল ভর্তি করে রেখেছেন তো? কারণ তেলের দাম ২ সেন্ট পেট্রোলে এবং ২.৫ সেন্ট ডিজেলে বেড়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তার মানে একটা ট্যাঙ্ক পূর্ণ করতে আপনাকে প্রায় €১.৫ অতিরিক্ত গচ্ছা দিতে হচ্ছে। বিনিময়ে আপনি পাচ্ছেন €৫০ ইউরো এক্সট্রা ট্যাক্স ক্রেডিট যা সপ্তাহে আসে প্রায় €১, যা আপনার দিয়ে আপনার এক ট্যাঙ্ক তেলের অতিরিক্ত খরচ মেটাতে যথেষ্ট নয়। তবে যারা সোশ্যাল সাহায্য গ্রহণ করতেছেন, তারা একটু বাড়তি লাভবান। সপ্তাহে €৫ ইউরো সোশ্যাল পেমেন্ট বর্ধিত করা হচ্ছে। ও হ্যাঁ সাথে আবার €৫ ফুয়েল অ্যালাউন্স বাড়ানো হচ্ছে।
চাকুরীজীবীদের জন্য আরেকটি সুখবর হল ন্যূন্যতম বেতন মানে মিনিমাম ওয়েজ বেড়ে €১০.৫০ হচ্ছে এবং উচ্চ আয়ের চাকুরীজীবীদের জন্য মিনিমাম রেট ব্যান্ড €১৫০০ বাড়তেছে, তার মানে হচ্ছে উচ্চ আয়ের চাকুরীজীবীদেরকে বাড়তি €১৫০০ এর উপর ৪০% এর বদলে ২০% ট্যাক্স দিতে হবে।
সুখবর আছে, যারা ওয়েজ সাবসিডি গ্রহণ করতেছে। কোভিড এমপ্লয়মেন্ট সাপোর্ট এপ্রিল ২০২২ এর শেষ অব্দি বজায় থাকতেছে।
বয়স ৬ এবং ৭ বছর বাচ্চাদের জন্য জিপি চিকিৎসা সম্পূর্ণরূপে ফ্রি। ছাত্রছাত্রীদের এবং ইয়ং দের জন্য SUSI এবং লিভিং সার্টিফিকেট এর পর এক্সট্রা বেনিফিট চালু হচ্ছে। ব্যাক টু স্কুলের জামাকাপড় কেনার জন্য অ্যালাউন্স ১০ ইউরো বাড়ানো হয়েছে। বয়স যাদের ১৯-২৩ তাদের জন্য চালু হচ্ছে ইয়ুথ ট্রাভেল কার্ড।
হাউজিং এর সংকট সমগ্র আয়ারল্যান্ডব্যাপী। তবে যারা সোশ্যাল হাউজিং এর আওতায় পড়বেন তাদের জন্য সুখবর। ১২,৮২০ টি নতুন সোশ্যাল বাড়ি প্রদান করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যার কিছু সরকার তৈরি করবে, কিছু কিনে নিবে এবং কিছু লিজ নিয়ে বিতরণ করবে, যার মধ্যে ৯,০০০ বাড়িই হবে সম্পূর্ণ নতুন। এই বাজেটে ৪,০০০ সাশ্রয়ী বাজেটের বাড়ির পরিকিল্পনা করা হচ্ছে, যা বাজার মূল্য থেকে কম দামে কিনে নিতে পারবে। বাড়তি ১৪,০০০ হাউজিং HAP এর জন্য এবং ৮০০ RAS এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
হাসপাতালে ইমারজেন্সিতে অপেক্ষায় থাকতে থাকতে অনেকেরই পায়ে শিকড় গজাবার অবস্থা। এই অভিজ্ঞতা নতুন নয়। ওয়েটিং সময় মোকাবেলায় এবারের বাজেটে ঘোষণা হয়েছে €২৫০ মিলিয়ন, দেখা যাক এর উপকারিতা কতটুকু পাওয়া যায়।
গার্ডা সমস্যা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সে সমস্যা লাঘবের কিছুটা চেষ্টা করা হবে নতুন ৮০০ গার্ডা নিয়োগের মাধ্যমে।
ধূমপায়ীদের জন্য দুঃসংবাদ। প্রতি প্যাকেট সিগারেটের দাম ৫০ সেন্ট করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপি স্যার ডেভিড অ্যামিসকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার এসেক্সে নিজের নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় তাঁর ওপর এই হামলা হয়।
স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে এসেক্সের লেহ–অন–সি শহরের একটি চার্চে ডেভিড অ্যামিস হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাসেক্স পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আর কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে না।
কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলেনি ব্রিটিশ পুলিশ।
৬৯ বছর বয়সী স্যার ডেভিড অ্যামিস প্রায় ৪০ বছর ধরে পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৩ সাল থেকে বাসিলডন নামের একটি এলাকা থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৭ সাল থেকে কাছের সাউথএন্ড ওয়েস্ট আসনটি ধরে রেখেছেন তিনি।
মৃত্যুকালে পাঁচ ছেলেমেয়ে রেখে গিয়েছেন স্যার ডেভিড অ্যামিস।
চীনে কর্মকর্তাদের অনুরোধের পর অ্যাপল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় কুরআন মাজিদ অ্যাপ সরিয়ে নিয়েছে।
সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই ‘কুরআন মাজিদ’ অ্যাপ। অ্যাপ স্টোরে এটি পাওয়া যায় এবং এর রিভিউর সংখ্যা দেড় লাখের মতো। সারা বিশ্বে লাখ লাখ মুসলিম এই অ্যাপটি ব্যবহার করে। চীনে প্রায় ১০ লাখের মতো ব্যবহারকারী রয়েছে।
সারা বিশ্বে অ্যাপ স্টোরের অ্যাপগুলোর ওপর নজর রাখে এরকম একটি ওয়েবসাইট ‘অ্যাপল সেন্সরশিপে’ এই খবরটি প্রথম প্রকাশিত হয়।
অ্যাপটির নির্মাতা পিডিএমএস কোম্পানি এক বিবৃতিতে বলেছে, “অ্যাপলের মতে, আমাদের অ্যাপ ‘কুরআন মাজিদ’ চীনা অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কারণ তাতে কিছু বিষয় ছিল যা অবৈধ”। তবে চীনা এই অ্যাপটি কোন আইন ভঙ্গ করেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ইসলামকে একটি ধর্ম বলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে থাকে। তবে চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার লঙ্ঘন, এমনকি গণহত্যার জন্যেও চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
‘কুরআন মাজিদ’ অ্যাপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বের সাড়ে তিন কোটিরও বেশি মুসলিমের এই অ্যাপটির ওপর আস্থা রয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল সাইটের উপর চীন নিষেদাজ্ঞা আরোপ করে আসছে। কিনতি এই মুসলিম অ্যাাপ কি কারণে বন্ধের অনুরোধ জানাল তা এখনো পরিষ্কার নয়।
আবাসিক ভবনে ভয়াবহ আগুন! মৃত্যু ৪৬ জনের, বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা
জানা গিয়েছে, ৪০ বছরের পুরনো এই ভবনটি। কী ভাবে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটল তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড তাইওয়ানের কাওসিউং শহরে। ছবি টুইটার।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড (Fire) তাইওয়ানের (Taiwan) কাওসিউং শহরে। এখনও অবধি যা খবর, জীবন্ত দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৬ জন। আহত বহু। তাইওয়ানের দক্ষিণের শহর কাওসিউং। সেখানকারই একটি বহুতলে বৃহস্পতিবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ আগুনে এক লহমায় শেষ হয়ে যায় এতগুলো প্রাণ!
কাওসিউংয়ের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, ১৩ তলা ওই ভবনে এদিন ভোর তিনটে নাগাদ আগুন লাগে। ৫৫ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন মৃত। এর পরেও মৃতের সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। তবে সেই মৃত্যু মিছিল কততে গিয়ে থামবে, তা এখনই স্পষ্ট করে বলতে পারছে না তাইওয়ান সরকার।
প্রাণহানির পাশাপাশি ওই বহুতলেরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। আগুন মুহূর্তে ধ্বংসাত্মক রূপ নেয়। একের পর এক তলে আগুন ছড়াতে শুরু করে। ঘরগুলি একেবারে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ৪০ বছরের পুরনো এই ভবনটি। কী ভাবে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটল তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ। তাইওয়ানের একটি সংবাদসংস্থার তরফে যে ভিডিয়ো ফুটেজ সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ওই বহুতল থেকে অনর্গল কালো ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে বাইরের দিকে বেরিয়ে আসছে।
সঙ্গে সঙ্গে দমকলে খবর দেওয়া হয়। সর্বতভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে লড়াই চালিয়ে যান দমকল কর্মীরা। ৭০টির বেশি দমকলের গাড়ি এসে পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। দমকল কর্মীরা জানান, সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সপ্তম তল থেকে এগারো তল। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুও হয়েছে এই পাঁচ তলের বাসিন্দাদের। কাওসিউং পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই আবাসনে মূলত বেশির ভাগ পরিবারই নিম্ন মধ্যবিত্ত। প্রায় ১০০ জন থাকতেন এখানে। শুধু পরিবারই নয়, একাধিক তল ব্যবসায়ীক কাজেও ব্যবহার করা হতো।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎই এলাকায় বিকট শব্দ শোনা যায়। মনে হচ্ছিল, কোনও বিস্ফোরণ হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা ভয় পেয়ে যান। কিন্তু পরে বেরিয়ে আসতেই ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন তাঁরা। চোখের সামনে দাউ দাউ করে জ্বলছে ভবনটি।
কাওসিউংয়ের মেয়র চেন চি-মাই বলেন, এই ভবনের একটা অংশ পরিত্য়ক্ত ছিল। এক সময় এখানে রেস্তোরাঁ, সিনেমা হলও ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সে সব বন্ধ হয়ে যায় বহুদিন। এর পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল সেটি। কী ভাবে এই আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ডাবলিন বিমানবন্দর থেকে ভ্রমণকারী যাত্রী থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দায় করার কারনে ট্যাক্সি ড্রাইভারকে জরিমানা।
ডাবলিন বিমানবন্দর থেকে যাত্রী সংগ্রহ করার পর তার থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের জন্য একজন ট্যাক্সিচালককে ৩০০ ইউরো জরিমানা করা হয়েছে।
ডাবলিনের বার্নওয়াল এভিনিউয়ের ট্যাক্সি ড্রাইভার “লি হেনেসি”কে মামলার খরচ এবং সাক্ষী ব্যয় বাবদ আরও ৩৫০ ইউরো জরিমানা দিতে হয়েছে । ডাবলিন জেলা আদালতে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (NTA) তার বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করে।
HSE কর্মী ডোনা মারফি(Donna Murphy) বিচারক অ্যান্থনি হালপিনকে ( Anthony Halpin)বলেন যে তিনি ঐদিন সবেমাত্র লন্ডন থেকে ফিরে এসে এয়ারপোর্ট নেমে টার্মিনাল এক থেকে বাইরে এসে টেক্সির অপেক্ষা করেছিলেন এবং ১০ মিনিট পরে একটি ট্যাক্সি আসে এবং তিনি ড্রাইভারকে Ashtown, Dublin 15 ডাবলিন ১৫-এর অ্যাশটাউনে নিয়ে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, যখন তিনি বাড়ি থেকে মাত্র ৫০০ গজের কম দূরুত্বে ছিলেন তখন মিটারে €27.40 দেখা যাচ্ছিল। তিনি আরএক মিনিটেরও কম সময় পরে তার বাড়ির সামনে পৌঁছেছিলন। তার আগেই ড্রাইভার কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই মিটার বন্ধ করে দেয় এবং তাকে বলে যে ট্যাক্সি ভাড়া € 44 ইউরো দিতে।
যাত্রি আরও বলেন যে তিনি ভেবেছিলেন যে ড্রাইভার তাকে 24 ইউরো দিতে বলেছেন, কিন্তু ড্রাইভার বললেন না, € 44, চার-চার, আমি তর্ক করিনি”।
যাত্রি দাবি করেন যে চালক তাকে তিনটি সাদা কাগজের রসিদ দিয়েছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন “আমি যা চাই তা লিখে পূরণ করতে”। তিনি অভিযোগ করেন, মিটারটি তখনও ফাঁকা ছিল।
তারপর তিনি তার বাড়িতে গিয়ে তিনি অনলাইনে একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
NTA ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি কমপ্লায়েন্স অফিসার মার্টিন বেটস আদালতকে বলেন যে, তিনি একই পথে একটি পরীক্ষা মূলক ট্যাক্সি ভ্রমন করেন এবং এখানে সর্বোচ্চ ভাড়া €20.80 ইউরোর এর কাছাকাছি হওয়া উচিত ছিল।
হেনেসির ট্যাক্সিটির নিজে মালিক এবং সেই তারিখে গাড়িটি ব্যবহার করার জন্য অন্য কোন ড্রাইভারকে সে ট্যাক্সিটি ভাড়ায় চালাতে দেয়নি, আদালতকে হেনেসি একথা জানায়।
মিটার না চালানো এবং ভাড়ার রসিদের মধ্যে গাড়ি ও লাইস্যান্সের সকল তথ্য বিবরণ যুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ট্যাক্সি নিয়ন্ত্রণের অপরাধ ব্যুরো হেনেসিকে দুটি অপরাধে অভিযোগ আনেন।
NTA এর সলিসিটর জেসন টিহান বলেন, হেনেসি এর আগে নিয়মিত আদালতে যোগাযোগ রেখেছিলেন কিন্তু গত সোমবার শুনানির জন্য তিনি আর আদালতে আসেননি।বিচারক হালপিন, হেনেসিকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ৩০০ ইউরো জরিমানা করেন, যা হেনেসিকে এক বছরের মধ্যে দিতে হবে। তাকে এই প্রসিকিউশন খরচ এবং অভিযোগকারীকে আরো ৫০ ইউরো দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অপরাধের শাস্তি কম হোক বা বেশি হোক তার চেয়ে বড় কথা , যেকোন অপরাধী যেন কোন অপরাধ করে পার না পায় আর এটাই হলো আইনের শাসন।
জার্মানির বৃহত্তম মসজিদে প্রতি শুক্রবার লাউডস্পিকারে আজান সম্প্রচারের অনুমতি দেওয়া হবে। জার্মানির কোলন শহরের ৩৫টি মসজিদকে প্রতি শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে পাঁচ মিনিট সময় পর্যন্ত আজান সম্প্রচারের অনুমতি দেওয়া হবে। এর মধ্যে আছে- ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কোলন কেন্দ্রীয় মসজিদ।
কোলন কেন্দ্রীয় মসজিদ হচ্ছে জার্মানির বৃহত্তম মসজিদ।
কোলন শহরের মেয়র হেনরিয়েট রেকার জানিয়েছেন, মুয়াজ্জিনের আজানের অনুমতি দেওয়া আমার কাছে একটি সম্মানের বিষয়।
জার্মানির কোলন শহর ও সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের একটি চুক্তির পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। তবে শহর কর্তৃপক্ষ বলেছে, শুক্রবার আজান সম্প্রচার করতে চাওয়া মসজিদগুলোকে লাউডস্পিকারের শব্দসীমা মেনে চলতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিবেশীদের বিষয়টি আগাম অবহিত করতে হবে।
জার্মানিতে প্রায় ৪.৫ মিলিয়ন মুসলিমের বসবাস এবং তারা সেদেশের অন্যতম বৃহত্তম একটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী।
জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে এখন থেকে ইহুদিরাও ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ প্রার্থনা করার অনুমতি পাবে বলে চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের একজন বিচারক রায় দিয়েছেন। এ রায়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে মুসলিম বিশ্বেও।
গত মঙ্গলবার জেরুজালেমের ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টের বিচারক বিলহা ইয়াহালোম এক আদেশে ওই মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা করার অনুমতি দেন। এ আদেশকে অবৈধ উসকানি বলে আখ্যায়িত করেছে মসজিদটির তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত ওয়াকফ ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল। আর ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতেয়াহ এই মসজিদে জোর করে প্রবেশের যেকোনো পদক্ষেপের ব্যাপারে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।
ইসরায়েলি আদালতের রায়কে সর্বসম্মতভাবে নিন্দা জানিয়েছেন মুসলিম নেতারা। আল-আকসার পরিচালক শেখ ওমর আল-কিসওয়ানি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘ইহুদিদের প্রার্থনার অনুমতি একধরনের উসকানি ও এতে আল-আকসার পবিত্রতা বিনষ্ট হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের কোনো বৈধতা নেই। কেননা, আমরা আল-আকসা নিয়ে ইসরায়েলি আইনকে স্বীকৃতি দিই না।’
১৯৯৪ সালে আম্মান ও তেল আবিবের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুযায়ী আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা পালন করে জর্ডান। ইসরায়েলি আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আম্মান বলেছে, এটি ‘আল-আকসা মসজিদের ঐতিহাসিক এবং আইনি মর্যাদার মারাত্মক লঙ্ঘন।’
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শীর্ষ সম্মাননা নোবেল পুরস্কারের সাহিত্য বিভাগে চলতি বছর পুরস্কার পেয়েছেন তানজানিয়ার ঔপন্যাসিক আবদুর রাজ্জাক গুরনাহ। বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়।
আব্দুর রাজ্জাক গুরনাহ ১৯৪৮ সালে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জাঞ্জিবার দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে তিনি শরণার্থী হিসেবে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। এখন পর্যন্ত তানজানিয়ার এই সাহিত্যিক ১০টি উপন্যাস এবং কয়েকটি ছোট গল্প লিখেছেন। শরণার্থীদের জীবনের পরতে পরতে যে ঘাত-প্রতিঘাত, তা তার লেখনিতে ফুটে ওঠে।
বর্তমানে কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গুরনাহ মূলত ইংরেজি ভাষাতেই সাহিত্য চর্চা করেন। মোট ১০টি উপন্যাস ও একটি ছোট গল্পের সংকলন রয়েছে তার। এর আগে ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত প্যারাডাইস উপন্যাসের জন্য সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার জেতেন আবদুর রাজ্জাক গুরনাহ।
নোবেল পুরস্কারের টুইটার একাউন্টে বলা হয়, ‘ঔপনিবেশিকতার প্রভাব এবং সংস্কৃতি ও মহাদেশের মধ্যবর্তী উপসাগরে শরণার্থীর ভাগ্যে তার অবিচল ও সহানুভূতিপূর্ণ অনুপ্রবেশের জন্য’ আবদুর রাজ্জাক গুরনাহকে ২০২১ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার দেয়া হচ্ছে।
তানজানিয়ার নাগরিক আবদুলরাজাক গুরনাহ যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। তিনি মূলত ইংরেজিতে লেখেন। তার বিখ্যাত কয়েকটি উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে প্যারাডাইস (১৯৯৪), বাই দ্য সি (২০০১), এবং ডেজারশন (২০০৫)।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপত্তি! আয়ারল্যান্ড সহ বিশ্বজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিকল হয়ে পড়ে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম।
গতকাল ৪ অক্টোবর আয়ারল্যান্ড সময় বিকাল ৪টা থেকে ফেসবুক, হোয়াটঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম- এই তিনটি সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম সমস্যার কারণে ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। বিশ্বব্যাপী এই প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহারে সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
সার্ভারে দীর্ঘ সময় ধরে সমস্যার কারণে এই মাধ্যমগুলো অচল হয়ে পড়ে। বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে প্ল্যাটফর্মগুলো কাজ করছিল না। এত দীর্ঘ সময় এই তিনটি সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ থাকা বেশ বিরল ঘটনা বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। সার্ভার ডাউন হবার ফলে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষ তাদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বন্ধু, পরিবার এবং অন্যান্যদের সাথে সংযোগ করতে পারছিলেন না।
তিনটি প্ল্যাটফর্মই ফেসুবকের মালিকানাধীন। ওয়েবসাইট বা স্মার্টফোন কোন ডিভাইস দিয়েই এই মাধ্যমগুলোতে ঢোকা যাচ্ছিল না।
ডাউনডিটেক্টার নামে যে প্রযুক্তি দিয়ে এই মাধ্যমগুলোর ব্যবহার ট্র্যাক করা যায়, সেটি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারে মুহুর্তের মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার সমস্যার রিপোর্ট হয় এবং ফেসুবকের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।
ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে ফেসবুক ব্যবহারে পৃথিবীর সব দেশে সমস্যার রিপোর্ট পাওয়া যায়।
এই সমস্যার কারণ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
ফেসবুক এক টুইটার বার্তায় বলেছে : “কিছু মানুষ আমাদের অ্যাপ এবং প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারছেন না এ বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি। আমরা যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। মানুষের অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি।”
সমস্যার কারণে এসব জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়ার লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী সমস্যায় পড়েছেন। আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ১১:৪৫ এর দিকে এই বিভ্রাট শুরু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বে প্রতিদিন ২০০ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন বলে বলা হয়।
সম্প্রতি, দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ নথিতে দেখা গেছে যে কোম্পানিটি তার পণ্যের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, কিন্তু সম্ভাব্য ক্ষতির মোকাবেলায় তেমন কিছুই তারা করে না। সিবিএসের “সিক্সটি মিনিটস” অনুষ্ঠান রবিবার ফ্রান্সেস হাউজেন নামের এক সতর্ককারীর সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করে, যিনি ওই শো-তে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট সম্পর্কে তার অভিযোগগুলি তুলে ধরেন।
[ এই প্রতিবেদনে কিছু তথ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস থেকে নেয়া ]।
মোটেও উদ্দেশ্য ছিলনা কিলকেনীর সেই অনভিপ্রেত ঘটনা নিয়ে আবারো দুই কলম লিখবো। কিন্তুু ভাগ্যের লিখন কি আর খন্ডানো যায় ? কমিউনিটির অত্যন্ত চেনা মুখ এবং অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী একজন লেখকের লেখা “গল্পে গল্পে নৈতিকতা ” নামক প্রবন্ধটি হঠাৎ করে চোখে পড়লো ! সাঝানো-গুছানো লিখার মধ্যে প্রাকৃতিক ছবিগুলো প্রবন্ধের সুন্দরতা বর্ধন করেছে।
গল্পটি মনযোগ দিয়ে পড়লাম এবং জানার চেষ্টা করলাম । লেখক, কেলকেনীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত উদহারণ ও যুক্তি গল্পে প্রয়োগ করেছেন প্রবন্ধকে অর্থবহ করতে, সেটি প্রশংসার দাবী রাখে। কিন্তুু এই ধরণের উদ্বুত পরিস্হিতি মোকাবেলা সহ কমিউনিটির উত্তরণের পথ খোঁজে পাইনি প্রবন্ধে। সেই প্রথাগত ভালোবাস,ক্ষমা, উদারতা এই সব স্হান পেয়েছে প্রবন্ধে।
নৈতিকতার পদস্খলন কিভাবে ঘটে ? এবং নৈকিতকতা শেখার উপায়গুলো লেখক তাঁর প্রবন্ধে ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পের অন্তরালে । কিন্তুু গল্প আসলে গল্পই ! গল্প থেকে মানুষ তেমন কিছু শিখে না। গল্প থেকে মানুষ যদি কিছু শিখতো তাহলে পৃথিবীর চেহারাটা আজ অন্যরকম হতো। এমনকি অনেক সময় গল্পের লেখকদের চরিত্রের মধ্যে সেই উপাদানগুলো খোঁজে পাওয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে, কোনো কিছু শেখাটা নির্ভর করে মানুষের ইচ্ছের উপর, গল্পের উপর নয়। লেখক সহ প্রবন্ধের লিংক এখানে দিলাম। আপনারা দেখে নিতে পারেন। https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10223396204345655&id=1003260649
তবে প্রবন্ধটি যেহেতু আমার নয় এবং উনারমত একজন গুণী প্রাবন্ধিক,কবি ও বিশ্লেষকধর্মী ব্যক্তির প্রবন্ধের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য কলম ধরার মত সাহস ও যোগ্যতা এই অধমের নেই। সংঘত কারণে পাঠকরা বুঝতেই পারছেন এই ধরণের অসমতা নিয়ে একজন অভিজ্ঞ লেখকের বিরুদ্ধে কলম ধরা রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণার সামিল। আর এই ধরণের যুদ্ধে যখন ঢাল- তলোয়ার না থাকে তখন ব্যাপারটা আরো যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে তাহা কি ভেবে দেখেছেন ?আবার নিজের প্রতিক্রিয়া জানানোর লোভ সামলাতে পারছিনা বিধায় ইত্যপরিসরে একজন আনাড়ি যুদ্ধা হিসেবে নিধিরাম সর্দারের ভুমিকায় অবতীর্ণ হলাম। দেখা যাক সামনের দিনে কি হয়।
লেখক প্রবন্ধের শুরুতেই দাদা নামক এক অসীম বুজুর্গ ব্যাক্তির সাথে আলোচনার সুত্র দিয়ে তাঁর প্রবন্ধ শুরু করেছেন, এবং দাদার বর্ণনা মোতাবেক বোধিস্বত্ত্ব নামক এক সোনার হরিণের গল্প দিয়ে প্রবন্ধ শেষ করেছেন। গল্পের সেই সোনার হরিণের কাছ থেকে এক কতিথ রাজ্যের রাজা_প্রজারা যে, বোধশক্তি শিখেছেন সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে লেখকের গল্পে। বিজ্ঞানের এই যুগে মানুষ যেখানে মহাকাশ জয় করছে সেখানে জঙ্গলে থাকা জীবের কাছ থেকে আমাদের শিখতে হচ্ছে বোধশক্তি ! ব্যাপারটি বেশ চমকপদ ।
অবশ্যি লেখক উক্ত প্রবন্ধে দাদা নামক সেই ভদ্রলোকের নাম প্রকাশ করেননি। তাই দাদাকে আমি একটি কাল্পনিক চরিত্র হিসেবে ধরে নিয়েছি। এবং সেই ভাবে এগুতে চাই।
আমাদের সমাজে দাদারা কেমন হয়ে থাকেন তাঁর একটি বৈশিষ্টের কথা অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় লেখক তুলে ধরেছেন তাঁর এই প্রবন্ধে। দাদার জ্ঞানের কথা বলতে ভুলেননি লেখক। শুধু একাডেমিক শিক্ষার মধ্যে জ্ঞান থাকেনা কিংবা বিএ/এম এ ডিগ্রি থাকলে একজন জ্ঞানী হয়না সেটা একটু ভিন্ন আঙ্গিকে লেখক বুঝাবার চেষ্টা করেছেন। সুপ্রিয় পাঠক, আপনাদের দাদাদের চরিত্র কেমন সেটা আমি বলতে পারবো না তবে আমার দাদার চরিত্র বেশ জঠিল ছিলো সেটি বলতে পারি। ঠিক মত পড়া-লেখা না করার কারণে ছোট বেলায় দাদার হাতের লাঠির কত যে গুতা খেয়েছি তাঁর ইয়াত্তা নেই।
আলাপচারিতার প্রারম্ভিকে দাদা নামক সেই ভদ্রলোক টুর্নামেন্টে ঘটে যাওয়া গলযোগের নিন্দা করেছেন লেখকের কাছে। যথারীতি সবার মত উদ্যেগের প্রশংসা করলেও পরবর্তীতে দাদা কর্তৃক উত্থাপিত — গোল্ড কাপ কে দিলো? “বিডি-সি ফুড” কি স্বার্থে এত মূল্যবান গোল্ড কাপ প্রদান করলো ? আসলেও কি এটা গোল্ডের কাপ?” এই প্রশ্ন সম্বলিত বিষয়গুলো আমার মনে বিরক্তির জন্ম দিয়েছে। দাদার অনুসন্ধানি মন জানতে চেয়েছে এই সব সামাজিক কার্যক্রম থেকে স্পনসরের কি লাভ ? দাদার এই প্রশ্নগুলোর বহিঃপ্রকাশের ভিতর দিয়ে তাঁর ভিতর বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় “ইয়াস”এর কিছুটা আলামত আমি অনুভব করেছি।
দাদার এহেন মন্তব্যের উপর এতঠুকু বলতে চাই, প্রকৃত অর্থে আমরা কেউই উদ্দেশ্যবিহীন নই। যিনি এই প্রবন্ধ লিখেছেন তাঁরও একটি উদ্দেশ্য আছে। দাদার মন্তব্যের পিছনেও একটা উদ্দেশ্য আছে।আমি যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে রামায়ণের গীত গাইছি তাঁর পিছনেও একটা উদ্দেশ্য আছে। সে অর্থে আমরা সবাই উদ্দেশ্যের পূজারী।
লেখক যখন এই প্রবন্ধের শুরুতে দাদা নামক উক্ত বুজুর্গ ব্যক্তির কিছু গুনগান চর্চা করছিলেন তখন আমি দাদা’কে একটু অন্যরকম ভেবেছিলাম। অন্য আরো দশজনের মত মনে করিনি। ভেবেছিলাম তিনি একজন সাধাসিধে মানুষ। কিন্তু কমিউনিটির জন্য একটু নির্মল আনন্দের ব্যবস্হা করতে গিয়ে বিডিসি ফুড সহ আয়োজকরা তাঁর কি এবং কিসের প্রশ্নবানে জর্জরিত হবার মানসিকতা দেখে আমি হতবাক এবং খুবই কষ্ট পেয়েছি। তাঁর প্রশ্নগুলোর ধরণ দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে,তিনি বিডিসি ফুডের কাপের ভিতর কোনো ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়েছেন !!
গোল্ড কাপের ব্যাখা দিতে গিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসকে টেনে আনা হয়েছে গল্পে। ফিফা কর্তৃক প্রদত্ত “ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি”র ১৮ ক্যারেট সোনার কথা বলেছেন তিনি। বিশ্বকাপের মত শ্রেষ্টতম একটি মর্যাদাশীল লড়াইয়ের সাথে বিশ্বের মহাক্ষুদ্র আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের তুলণা করাকে আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে। তবে এই প্রবন্ধের ভিতর দিয়ে বিশ্বকাপের যে জ্ঞানগর্ভ ইতিহাস চর্চা করা হয়েছে সেটির জন্য দাদা ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। আমার বিশ্বাস আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশীরা কৃতার্থের সাথে তাঁর এই শিক্ষনীয় অবদানকে দীর্ঘ দিন মনে রাখবেন।
এখানকার ছোট্ট কমিউনিটি এমনিতেই নানা ভাগে বিভক্ত। রাজনৈতিক কাদাঁ ছুড়াছুরি কারণে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টানের মত নির্দলীয় অনুষ্টানগুলো দলীয় ঘরনায় পালিত হয়। সেই বিভক্তি ভুলার জন্য সবাই যদি একটি উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে কিছুক্ষণ এক সাথে আনন্দ-উল্লাস করতে পারেন তাহলে সেটি কোনোভাবে কমিউনিটির জন্য অমঙ্গল নয় ? গোল্ড কাপ নাম দিয়ে সেখানে গোল্ড না দেওয়া কোনো প্রতারণাও নয়। কিন্তুু সেই আনন্দ-উৎসবের মাঝেও যখন বিছু মানুষ আঙুল দেই তখন তাদের জন্য সত্যি করুণা হয়।
গোল্ড কাপে কেন গোল্ড নেই ? গোল্ড বিহীন কাপ লোলা ? এই সব নিয়ম-নীতির সবক দিতে গিয়ে তাঁরা যখন আশে পাশের পরিবেশকে অশান্ত করে তুলেন তখন তাদের জন্য কষ্ট হয়। একটি বিষয়কে প্যাচিয়ে প্যাচিয়ে তাঁর ভিতর থেকে রস বের করা ছাড়া পর্যন্ত তাদের শান্তি নেই। অথচ তাদের কাছে সুন্দর সমাধানও নেই।
কিলকেনীর ঘটনায় সমালোচনাকারীদের কথা-বার্তা শুনে মনে হচ্ছে,– গোল্ড কাপ নাম ব্যবহার করে সেখানে গোল্ড না দিয়ে এই ধরণের ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আয়োজকরা মহা বড় অপরাধ করে ফেলেছেন ! আর এর মাধ্যমে কমিউনিটির সকল নৈতিকতার আত্মাহুতি ঘটেছে।
অথচ কাপে গোল্ড ছিলো কি ছিলোনা সেটি নিয়ে সে দিন মাঠে গলযোগ সৃষ্টি হয়নি। সে দিন মাঠে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণকে কেন্দ্র করে অনভিপ্রেত ঘটনার জন্ম হয়। তাহলে এই প্রকৃত বিষয়ের উপর যথাযথ আলোকপাত এবং ভবিষ্যতে এই ধরণের উদ্বুত পরিস্হিতি কিভাবে মোকাবেলা করা যায় সে পথ না খোঁজে অহেতুক গোল্ডের বিষয়কে কেন এত হাইলাইট করা হচ্ছে ? কমিউনিটিতে এই বদ অভ্যাসের ধারা অব্যাহত থাকলে নৈতিকতা শেখার পরিবর্তে নিজেদের মধ্যে অনৈক্য বাড়া ছাড়া কমবে না।
ঠিক আছে যুক্তির খাতিরে ধরে নিচ্ছি, নৈতিকতার মানদন্ডে সোনার কাপে সোনা না থাকাটা অশোভনীয় দেখায় কিন্তুু এই ধরণের কাজের সুন্দন জবাব দেবার জন্য কি বিকল্প রাস্তা নেই । গঠনমুলকভাবে কি এর জবাব দেওয়া যেতে পারেনা ? এই প্রশ্নগুলো খুবই প্রাসঙ্গিক ।
উত্তরে বলবো হ্যাঁ ছিলো। অনলাইন কিংবা অফলাইনে এইভাবে অহেতুক কাদাঁ ছুড়াছুরি না করে সোনা খচিত কাপের নতুন একটি টুর্নামেন্টের ব্যবস্হা করেই তো সমালোচনাকারীরা এর পাল্টা জবাব দিতে পারেন। এই সুযোগটি সবার সামনে রয়েছে। এবং ভবিষ্যতের জন্য কমিউনিটির সামনে সেটি হতে পারে একটি সুস্হ প্রতিযোগিতার উৎকৃষ্ট উদহারণ। কিন্তুু সেটি না করে কাগজ-কলমে যেগুলো করা হচ্ছে সেগুলো মুলত এক ধরণের অসুস্হ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ।
সবার মনে রাখা উচিত অসুস্হ প্রতিযোগিতা দিয়ে আর যাই হউক একটি সুন্দর সমাজের ভালো ভিত্তি গড়ে ওঠেনা। নির্মল হাসি, আনন্দ ও উচ্ছাস যে সমাজ নেই, সময়ের পরিক্রমায় সেই সমাজ অসহিষ্ণুতার বাতাসে বিষাক্ত হয়ে উঠে। মনে রাখবেন, কারো ভালো কাজে যদি আপনি হাততালি না দিতে পারেন,অহেতুক বিতর্ক তুলে অন্তত তাহাকে নিরুৎসাহিত করবেন না !
কয়েকদিন আগে পত্রিকায় একটি ঘটনা পড়েছিলাম। বিয়ের অনুষ্টানে খাবারের মাংস কম পাবার কারণে বর এবং কনে পক্ষের মধ্যে তুমুল ঝগড়ার ফলে শেষ পর্যন্ত বিয়েটাই পন্ড হয়ে যায়। অতি উৎসাহি কিছু পেটুকদের কারণে দুটি পরিবারের মিলনটা আর হলোনা। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে দুটি পরিবার প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হলো আর মাঝখান থেকে লাভবান হলো দুষ্টরা। এই সব মাথা মোঠা পেটুকরা দেশ-বিদেশের সব জায়গায় রয়েছে। তাদের অতি রঞ্জিতার ফলে সমাজের অনেক সুন্দর কাজগুলো যে নষ্ট হয়ে যায় সেটা তাঁরা কখনো বুঝে না এবং বুঝার চেষ্টাও করেনা।
ইচ্ছে ছিলো দুটি কথা বলার, কিন্তুু লেখার মগ্নতায় ডুবে থাকার কারণে লেখাটি অনেক লম্বা হয়ে গেলো। যাক, আপনাদের আর ধৈর্যচ্যুতির ব্যত্যয় ঘটাবো না। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের একটি গল্প দিয়ে আজকের লেখাটি শেষ করছি। যেহেতু গল্প দিয়ে শুরু সেহেতু গল্প দিয়ে শেষ হউক ।
স্পেনের রানী ইসাবেলা ইটালির নাগরিক কলম্বাসকে খুব পছন্দ করতেন। রানীর কাছ থেকে অর্থ-কড়ি নিয়ে কোনো নতুন দেশ খোঁজার জন্য জাহাজ ভাসাতেন কলম্বাস। রানীর আমলাবর্গরা কলম্বাসকে পছন্দ করতেন না। এক রাতে পার্টি হচ্ছে। দু-তিনজন আমলা কলম্বাসের বুদ্ধিকে যাচাই করার জন্য তাঁকে বললেন, ‘তোমার বুদ্ধি ও সাহস অনেক, তুমি অজানার উদ্দেশে যাও, ভালো কথা, কিন্তুু তোমি কি ডিমকে দাঁড় করাতে পারবে “?
কলম্বাস বললো হ্যাঁ পারবো, কাজটি কঠিন নয়। ব্যাস্ পরের দিন ঘোষণা হলো- কলম্বাস ডিমকে দাঁড় করাবেন। আমলারা দাঁড়ালেন টেবিলের চারদিকে। সেখানে রানী ইসাবেলাও ছিলেন। কলম্বাস প্রথমে আমলাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছো যে ডিমকে দাঁড় করাতে পারবে ? কিন্তুু উপস্হিত সবাই বললো না।
তারপর কলম্বাস বললেন, আমি তোমাদের ডিম দাঁড় করে দেখাচ্ছি ? আমলারা ভাবতো তাদের বুদ্ধি বেশি। তাই সবার চোখ অপলক দৃষ্টিতে দেখছে কলম্বাস ডিমকে কীভাবে দাঁড় করান। সাবলীলভাবে কলম্বাস ডিমের মোটা অংশের দিক টেবিলের উপর ঠুকে দিলেন। খোসা ভেতরের দিকে দেবে গেল। তারপর ডিমটাকে কলম্বাস ভাঙা দিকটার উপর দাঁড় করিয়ে দিলেন।
তারপর তাঁকে ঘিরে ধরা আমলারা একসঙ্গে বললেন, ‘ডিম ভেঙে দাঁড় করাতে সবাই পারে।’এইভাবে আমরাও পারতাম। ‘সবাই পারে কিন্তু এখানে কেউ পারেনি’- শান্ত স্বরে উপস্হিত সবাইকে জবাব দিলেন কলম্বাস।
এই রকম অনেকে রয়েছেন আমাদের চারপাশে যারা কলম্বাসের গল্পের মত বলেন, “আমরাও পারি” ! কিন্তুু কার্য ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পারেনা। ইনিয়ে-বানিয়ে অন্যের কাজের সমালোচনা শুধু করতে জানে।
ঢাকার পল্লবীর একটি বাসা থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষক রোকনুদ্দিন আহমেদের (৮০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিজের বাড়িতে মারা গেলেও মরদেহ পচে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পরে ছেলে জানতে পারেন তারা বাবা মারা গেছেন।
গতকাল সোমবার বিকেলে রোকনুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে, পাশের ঘরে থেকেও বাবার মৃত্যুর খবর ছেলের না জানা ও পচা লাশ উদ্ধার হওয়ার পর ওই পরিবারটি সম্পর্কেও অনেক অদ্ভুত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে, রোকনুদ্দিনের মরদেহের পাশেই অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় তার স্ত্রীকে। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার পল্লবীর কালসি কবরস্থানে রোকনুদ্দিন আহমেদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
বাড়ির দারোয়ান জানান, ‘বাড়িটিতে প্রতি তলায় একটি করে মোট আটটি ফ্ল্যাট আছে। এর মধ্যে পাঁচটি ফ্ল্যাটের মালিক রোকনুদ্দিন আহমেদ। তিনি স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন ও ছেলে রূপমকে নিয়ে ওই বাড়িটিতে বসবাস করতেন। তিনি সপ্তাহে এক থেকে দুদিন ইন্টারকমে আমাকে তার দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটের দরজায় ডাকতেন। বেশিরভাগ সময় তিনি পাউরুটি, দই, মিষ্টি, ফ্রাইড চিকেন, চানাচুর ও বিস্কুটের মতো খাবার কিনে আনতে বলতেন। এক থেকে দুই সপ্তাহ পর পর তিনি বাড়ি থেকে বের হতেন।’
দারোয়ান আরও বলেন, ‘তবে, রূপম বাড়ি থেকে বের হতেন খুবই কম। দেড় বছরে তাকে চার-পাঁচবারের বেশি দেখা পাইনি। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রোকনুদ্দিন আহমেদ শরীরে জ্বর অনুভব করার কথা বলেছিলেন। এরপরই ১০ দিনের ছুটিতে আমি গ্রামের বাড়িতে চলে যাই।’
তিনি জানান, গতকাল ঢাকায় ফিরে দারোয়ান রোকনুদ্দিন আহমেদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার কথা জানতে পারেন। এর পরই প্রথমবারের মতো তিনি ওই ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢোকেন। ভেতরে দেখেন, সবগুলো ঘর ধুলো আর আবর্জনায় পূর্ণ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রূপম জানান, বাবার নির্দেশ অনুযায়ী তিনি ঘর থেকে বের হতেন না। গত কয়েক দিন তিনি চানাচুর আর বিস্কুট খেয়ে ছিলেন।
জানা গেছে, রোকনুদ্দিন আহমেদের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। ১৯৯৫ সালে তার এক ছেলে মারা যান। এ ছাড়া তার তিন মেয়ের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে খুব একটা যোগাযোগ ছিল না।
পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার শাহ কামাল বলেন, ‘চল্লিশোর্ধ্ব রূপম একসময় মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। তবে, এমবিবিএস পাস করতে পারেননি। এরমধ্যে বিয়েও করেছিলেন কিন্তু সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি।’
ওই ভবনের আরেক ফ্ল্যাটের গাড়িচালক নূরুল মিয়া বলেন, ‘গত সাত বছর ধরে আমি এই ভবনের একটি পরিবারের গাড়ি চালাই। আমি কোনোদিন রোকনুদ্দিন আহমেদের স্ত্রীকে বাসা থেকে বের হতে দেখিনি। আশপাশের লোকজনের কাছে শুনেছি তিনি বাসা থেকে বের হন না।’
শাহ কামাল বলেন, ‘আমরা সন্দেহ করছি রোকনুদ্দিন আহমেদ দুএকদিন আগেই মারা গেছেন। তার স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিনকে মরদেহের পাশেই অচেতন অবস্থা পাওয়া যায়।’
এই দম্পতির ছেলে রূপম গতকাল পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি দুদিন আগে তার বাবা-মায়ের ঘরে গিয়েছিলেন। দুর্গন্ধ ছড়ালে গতকাল বিকেলে তিনি বাবা-মায়ের ঘরে যান। সেখানে দেখতে পান, তার বাবার মরদেহ পচতে শুরু করেছে। এরপর থানায় জানালে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
মশিউর রহমান, আইরিশ বাংলা টাইমস, ডেস্ক রিপোর্ট:
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের পরিচালনায় একটি দাবা ক্লাব গঠনের উদ্দেশ্যে নর্দান আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটর দাবা খেলোয়ার ও দাবা খেলা অনুরাগীদের নিয়ে এ বছর ২২শে মার্চ ২০২১ সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল মিডিয়াতে অনুষ্ঠিত হয় একটি আলোচনা সভা।
উল্লেখ্য করোনা মহামারীর সময় কালে গত বছর ২০২০ সালের ৬ই ডিসেম্বর “আইরিশ বাংলা টাইমস” পত্রিকার একবছর পূর্তি উপলক্ষে পত্রিকাটির পক্ষ থেকে একটি ভার্চুয়াল দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল। ঐ দাবা প্রতিযোগিতাটি দাবা প্রেমীদের মধ্যে বেশ সারা ফেলে, তখন থেকে দাবা খেলানুরাগী ও দাবা খেলোয়াড়দের মধ্যে ভার্চুয়াল মিডিয়ায় গড়ে উঠে দাবা খেলার নিয়মিত আসর। পরবর্তীতে এই খেলার প্রতি ভালোবাসা ও আগ্রহের কারণে “আইরিশ বাংলা টাইমস” পত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ একটি দাবা ক্লাব গঠনের ব্যাপারে সকলের সাথে আলোচনা করে করে।
অবশেষে আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক দাবা-খেলানুরাগী জনাব আব্দুর রহিম ভূই্ঁয়া ও দাবা-খেলোয়ার ও দাবা-প্রশিক্ষক জনাব মাহফুজুল হকের ঐকান্তিক যৌথ প্রচেষ্ঠায় গত ২২শে মার্চ ২০২১ আত্মপ্রকাশ করে Irish Bangla Chess Club ( IBCC)।
Irish Bangla Chess Club (IBCC) এর ২য় সভা সোমবার ২৯/০৩/২০২১ তারিখ ভার্চুয়ালী অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিন্মোক্ত সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। ১১ সদস্য বিশিষ্ট প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি সভায় উপস্থিত সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও মতামতের ভিত্তিতে গঠন করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন:
Mahfuzul Haque, Mahadi Hassan, Abdur Rahim Bhuiyan, Shahadat Hossain, Mohammad Mahbub Parouare, Sowkat Ali Khan, Md Russel Opu, Azad Khandoker, Omar F Newton, Muhammed Zaman and Mohammed Moshiur Rahaman
নিম্নে নবনির্বাচিত কার্যকরী কমিটির নাম ও পদ উল্লেখ করা হলো :
সভায় নবনির্বাচিত সদস্যগণ তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের উদ্যোগে শুরু করা প্রথম দাবা ক্লাবটি সফলতার শিখরে পৌঁছে নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ক্লাবটির উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে ক্লাবটির পক্ষ থেকে নিন্মোক্ত তথ্য গুলো জানোন হয়:
১. প্রতি বৃহস্পতিবারকে রাখা হছে ” ক্লাব নাইট” হিসেবে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভার্চুয়াল মিডিয়াতে (আপাতত) ক্লাবের কার্যক্রম ও খেলা পরিচালনা করা হবে। এই “ক্লাব নাইটে” সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাও করা হবে বলে জানানো হয়।
২. বয়স ভিত্তিক গ্রুপ গঠনের মাধ্যমে বাচ্চাদের ও বড়দের দাবা প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা একটি বড় উদ্দেশ্য।
৩. করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে Irish Bangla Chess Club ( IBCC) তাদের নিজস্ব ক্লাব ভবনের ব্যবস্থা করবে যেখানে সকল সদস্য সরাসরি উপস্থিত হয়ে খেলায় অংশ নিবে।
৪. প্রতি বছর একটি বিশাল দাবা প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হবে যেখানে নর্দান আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটর দাবা খেলোয়ারদের অংশগ্রহনে দাবা প্রতিযোগীতার পাশাপাশি পরিবারের সকলের অংশগ্রহনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও একটি মেলার আয়োজন করা হবে।
৫. এছাড়াও থাকবে নিয়মিত দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন।
যেকোন খেলাধুলা মানুষের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তুলে। খেলাধুলা হিংসা-হানাহানি থেকে মানুষকে দূড়ে রাখে, মজবুত করে ভাতৃত্বের বন্ধন। আমরা Irish Bangla Chess Club ( IBCC) এর সফলতা কামনা করি এবং সকল সদস্যদের প্রতি জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
“বিডি সি’ফুড গোল্ড কাপ” -২০২১ শিরোপা জয় করে নিয়েছে কিলকেনী ফুটবল দল।
গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২১ রবিবার ছিল বাংলাদেশী কমিউনিটির ফুটবল প্রেমীদের জন্য এক বড় উৎসবের দিন। এইদিন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল “বিডি সি’ফুড গোল্ড কাপ” -২০২১ আর এই শিরোপাটি জয় করে নিয়েছে কিলকেনী ফুটবল দল।
শিরোপা জয়ী কিলকেনী ফুটবল দল
বিশিষ্ট সমাজ সেবক, কমিউনিটি ব্যাক্তিত্ব ও ব্যবসায়ী বিডি সি’ফুড কোম্পানীর সত্বাধীকারী সৈয়দ রেদোয়ান আহমেদ বাবু ভাইয়ের এর বিডি সি’ফুড কোম্পানীর স্পন্সরে আয়ারল্যান্ডে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রবিবার ২০২১ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এযাবৎকালের বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট “বিডি সি’ফুড গোল্ড কাপ” -২০২১।
সম্পূর্ণ টুর্নামেন্টের আয়োজনে ছিলনে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান। টুর্নামেন্টি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড BSAI এবং টুর্নামেন্টের সমন্বয়েকের কঠিন দায়িত্বটি পালন করেন বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ডের ফাউন্ডার মেম্বার জনাব চুন্নু মাতাব্বর।
বেলা একটার সময় বেলুন উড়িয়ে এবং শান্তির প্রতিক কবুতর অব মুক্ত করার মাধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিডি সি’ফুড গোল্ড কাপ” -২০২১ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন কিলকেনির স্থানীয় টি ডি জন মেকগিনিস (TD John James McGuinness) এবং কাউন্টি লিমেরিকের মেয়র এন্ড্রু মেকগিনিস (Mayor Andrew McGuinness) অনুষ্ঠানে এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লিমেরিকের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার, সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, ডা: জিন্নুরাইন জায়গীরদার, বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড BSAI এর সকল কর্মকর্তা বৃন্দ এবং টুর্নামেন্টের স্পন্সর বিডি সি ফুডের সত্ত্বাধিকারী জনাব সৈয়দ রেদোয়ান আহমেদ বাবু।
লীমেরিক ফুটবল টিম
ডাবলিন শেমরক ফুটবল টিম
ডাবলিন রয়েল ফুটবল টিম
ডাবলিন ওল্ড গোল্ড ফুটবল টিম
টুর্নামেন্টে মোট পাচ্ঁটি ফুটবল দল অংশ গ্রহন করে এর মধ্যে Dublin থেকে তিনটি দল অংশ নেয়, এই টিম গুলো ছিল ১. ডাবলিন ওল্ড গোল্ড, ২. ডাবলিন শেমড়ক, ৩. ডাবলিন রয়েল। এছাড়া একটি লীমেরিক টিম অন্যটি কিলকেনী টিম টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহন করে।
অসঙ্গতিপূর্ণ ব্যবস্থ্যাপনা আর চরম অস্বস্তিপূর্ণ ঘটনা র্দুঘটনা আর নাটকীয়তার মধ্যদিয়ে দিন ভর চলে টুর্নমেন্টের খেলা। অবশেষে ডাবলিন রয়েল বনাম কিলকেনী ফুটবল দলের মধ্যে ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে টান টান উত্তেজনার পর কিলকেনী ফুটবল দল (২-০) দুই
গোলে শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিডি সি’ফুড গোল্ড কাপ” -২০২১ টুর্নামেন্ট আয়োজন।
পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লিমেরিকের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার, সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্দ মুস্তফা, ডা: জিন্নুরাইন জায়গীরদার, বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড BSAI এর সকল কর্মকর্তা বৃন্দ এবং টুর্নামেন্টের স্পন্সর বিডি সি ফুডের সত্ত্বাধিকারী জনাব সৈয়দ রেদোয়ান আহমেদ বাবু, জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার এবং চুন্নু মাতব্বর।
কিলকেনী দলের পক্ষ থেকে দলের ক্যাপ্টেন এবং ম্যানেজার চ্যাম্পিয়ন ট্রফি গ্রহণ করেন। খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় কিলকেনী দলকে নগদ ৫০০ ইউরো পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হয়। রানার আপ দলের জন্য ছিল নগদ ৩০০ ইউরো। এছাড়াও সর্বাধিক গোলদাতা, সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড় এবং বেস্ট কেপ্টেইনকেও ট্রফি প্রদান করা হয়।
এটি ছিল “বিডি সি’ফুড গোল্ড কাপ” এর প্রথম টুর্নামেন্ট আয়োজন এবং আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন তারা এই টুর্নামেন্ট প্রতিবছর আয়োজন করবেন।
ক্লনডালকিন ক্রিকেট ক্লাবের Leinster ক্রিকেট লীগ ২০২১ চ্যাম্পিয়নশীপ শিরোপা জয়।
বাংলাদেশীদের গর্ব Clondalkin Cricket Club এর Team 2 (CCC-2) Leinster Cricket League Division 15 এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এটি ক্লাবটির দ্বিতীয় Leinster Cricket League শিরোপা জয়। এর আগে ক্লাবটি 2018 এ Division 9 এ শিরোপা জয় করে। এছাড়াও ক্লাবটির ঝুলিতে আরো দুটি কাপ শিরোপা জয় সহ এ পর্যন্ত মোট চারটি শিরোপা জয়ের গৌরব অর্জন করেছে।
এ বছর 2021 তে Leinster Cricket League Division 15 এ মোট ৮টি ক্লাববের মধ্যে লড়াইয়ে ফাইনালে CCC-2 North Kildare Cricket Club কে ৫৬ রানে হারিয়ে Clondalkin Cricket Club এর Team 2 এই শিরোপা অর্জন করে ।
Team 2 এর captain আবুল স্বপন এর সাথে “আইরিশ বাংলা টাইমস” এর কথা হয়, তিনি তার টিম ও ক্লাব নিয়ে খুবই গর্ব করেন এবং আশা প্রকাশ করেন Clondalkin Cricket Club অদূর ভবিষ্যতে আরো বিভিন্ন ডিভিশনে শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে সুনামের সাথে এগিয়ে যাবে।
এরই মধ্যে ক্লাবটি তাদের কাজের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে যার ফলশ্রুতিতে ক্লাবের উন্নয়নের জন্য এবং ক্রিকেট নেট অনুশিলনের জন্য আইরিশ ক্রীড়া মন্ত্রনালয় থেকে একটি বড় অর্থ বাজেট বরাদ্দ পাশ হয়েছে।
২০১৫ সালে এই Clondalkin Cricket Club এর পথ চলা শুরু এরই মধ্যে প্রায় ৯০ জনের উপরে বিভিন্ন টিমে খেলোয়ার এই ক্লাবে খেলছেন। যদিও এই ক্লাবটি বাঙ্গালীদের হাতে গড়া তারপরও ক্লাবটির মেন্যাজিং বোর্ড সকল মানুষ ,ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য ক্লাবটি উন্মুক্ত রাখতে দৃঢ় ভাবে সংকল্পবদ্ধ। বর্তমানে ক্লাবটিতে বাঙ্গালীদের সাথে আছেন আইরিশ, ইংলিশ, অষ্ট্রেলীয়ান, ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানী সহ বিভিন্ন দেশের বংশদ্ভুত খেলোয়াড় এবং তারা এই ক্লাবে নিয়মিত খেলা অনুশিলন করে থাকেন।।
Clondalkin Cricket Club টি Leinster Cricket Association এর আওতায় Register কৃত এবং ক্লাবটির বোর্ড অব মেন্যাজমেন্ট, আয়ারল্যন্ড ক্রিকেট বোর্ডের অধীনস্ত কাজ পরিচালনা করে থাকে।
Clondalkin Cricket Club এর Team 2 (CCC-2) Leinster Cricket League Division 15 এ চ্যাম্পিয়নশীপ শিরোপা অর্জনে আমরা তাদের সকল খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবক এবং সাপোর্টারদেরকে “আইরিশ বাংলা টাইমস” পত্রিকার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছ ও অভিনন্দন জানাই।
মহামারির কারণে গত দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল থেকে।করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে গত বছরের ১৭ মার্চ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থদের এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়৷ তার ভিত্তিতেই তাদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে৷ স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও আগের রোলে পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হয়৷
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পালন করতে হবে বিশেষ কিছু শর্ত। আবার খোলার পর এসব শর্ত ঠিক মতো পালিত হচ্ছে কিনা বা স্কুল খোলার পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে কর্তৃপক্ষ।
সরকারিভাবে স্কুলগুলোতে ইউনিসেফের সহায়তায় তৈরি করা একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানের সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাইকে সবসময় মাস্ক পরতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে রাখা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রেণি কক্ষে ৫ ফুটের চেয়ে ছোট আকারের বেঞ্চিতে একজন ও এর চেয়ে বড় আকারের বেঞ্চিতে দুজন শিক্ষার্থী বসানো যাবে।
কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম দিকে পাবলিক পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরাই বেশি আসবে। বাকিদের স্কুলে আসার জন্য রোটেশন সিস্টেম অর্থাৎ আজ যারা আসবে তারা কাল আসবে না-এই নীতি অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ১২ সেপ্টেম্বরের আগেই স্কুলগুলোকে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত করা ছাড়াও স্কুলে কোভিড সংক্রান্ত ব্যবস্থা অর্থাৎ হাত ধোয়া, তাপমাত্রা পরীক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এইদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর স্কুলের পোশাক ছোট হয়ে গেছে বা না পরতে পরতে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের জুতাও কেনা লাগছে। এসব কিনতে তারা ভিড় জমিয়েছেন বিপণিবিতানে। কেউ কেউ ব্যাগও কিনছেন। হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় বিক্রেতারা পোশাকের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।
দীর্ঘদিনের পাঠবিরতির পর কিভাবে কিভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় শিক্ষার্থীদেরকে ফিরিয়ে আনা যায় তাই দেখার বিষয়।
বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দর্জির দোকানের চেয়ে রেডিমেড পোশাকের দোকানে ভিড় বেশি। দর্জিরা বলছেন, এক সেট স্কুল ড্রেস বানাতে ক্ষেত্রবিশেষে চার থেকে সাতদিন সময় লাগে। কিন্তু এবার অভিভাবকরা চাইছেন চটজলদি ডেলিভারি। তাই গত কয়েকদিনে বিপুলসংখ্যক ক্রেতাকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অল-আয়ারল্যান্ড ফুটবলের প্রতীক্ষিত ফাইনাল। ফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে রিপাবলিক আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি মেয়ো (Mayo) এবং নর্দান আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি টাইরন (Tyrone)। অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে এক অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করতেছে কারণ, দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মূলত দুই দেশের অন্তর্ভুক্ত।
এই ফাইনালটি হবে অল-আয়ারল্যান্ড ফুটবল ফাইনালের ১৩৪ তম ফাইনাল। যা অনুষ্ঠিত হবে ডাবলিনের ক্রোক পার্ক স্টেডিয়ামে।
কাউন্টি মেয়ো এবার লড়বে তাদের চতুর্থ টাইটেল নিশ্চিত করার জন্য। সর্বশেষ তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ১৯৫১ সালে। যদিও তারা ১৯৮৯, ১৯৯৬, ১৯৯৭, ২০০৪, ২০০৬, ২০১২, ২০১৩, ২০১৬, ২০১৭ এবং সর্বশেষ ২০২০ সালে ফাইনাল খেলেছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে একটিও জিততে পারে নাই। এবার কি তারা পারবে তাদের এই সুধীর্ঘ সময়ের আক্ষেপ গোছাতে?
অন্যদিকে কাউন্টি টাইরন টাইটেলের দিক থেকে মেয়ো থেকে একটি চ্যাম্পিয়নশিপে এগিয়ে আছে। এবার তারা খেলবে পঞ্চম শিরোপা নিশ্চিত করতে।
অল-আয়ারল্যান্ড ফুটবল মূলত আমেরিকান ধাঁচের ফুটবল, যা যুগপৎভাবে হাত ও পা এর সংমিশ্রণে খেলা হয়। যা গতানুগতিক ধারার ফুটবল থেকে ভিন্ন।
আফগানিস্তান: মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ তালেবানের নতুন প্রধানমন্ত্রী
মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ, আফগানিস্তানের অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী।
আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় পর তালেবান এক নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের নাম ঘোষণা করেছে।
নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। তিনি তালেবান নেতৃত্বের ‘রেহবারি শুরা’র প্রধান।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, মন্ত্রীসভায় উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন আব্দুল গনি বারাদার।
তিনি তালেবানের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। তালেবানের যে ক’জন কর্মকর্তা কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা চালিয়েছে তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।
সংবাদ সম্মেলনে তালেবানর মন্ত্রীসভার ঘোষণা করছেন জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।
মি. মুজাহিদ বলেন, নতুন সরকারের প্রথম কাজগুলোর মধ্যে থাকবে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া এবং দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট মোকাবেলা করা।
তালেবানের নতুন সরকারের রূপরেখা গঠনে অন্তর্বর্তী মন্ত্রীসভা গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
অন্তর্বর্তী সরকারের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন সেরাজুদ্দিন হাক্কানি।
তিনি জঙ্গি-দল হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান।
গত দু’দশকব্যাপী লড়াইয়ে আফগানিস্তানের ভেতরে অনেকগুলো সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী এই হাক্কানি নেটওয়ার্ক।
এটি যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসীদের তালিকাভুক্ত একটি সংগঠন।
অন্যান্যদের মধ্যে তালেবানের মন্ত্রীসভায় ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়েছেন মোল্লাহ ইয়াকুব এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন আমির খান মুত্তাকি। দ্বিতীয় উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মোল্লাহ আব্দুস সালাম হানাফি।
মোল্লাহ ইয়াকুব তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা এবং সর্বোচ্চ নেতা প্রয়াত মোল্লাহ ওমরের ছেলে।
এই মন্ত্রীসভায় কেন কোন নারী প্রতিনিধি নেই, এই প্রশ্নের জবাবে তালেবানের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের প্রধান আমানুল্লাহ ওয়াসিক বিবিসিকে বলেছেন, মন্ত্রীসভার গঠন এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তবে এর আগে তালেবান জানিয়েছিল যে মন্ত্রী পর্যায়ে কোন নারী থাকবেন না।
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যাচই মানা হয় আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ম্যাচকে। পুরো বিশ্ব এ দুই দলের সমর্থক অনেক বেশি থাকায় এর আকর্ষণও বেশি। কিন্তু সেই ম্যাচেই রীতিমতো কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। ম্যাচ শুরুর চার মিনিট পর স্থগিত করে দিয়েছে ব্রাজিলিয়ান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তারা।
রোববার রাতে ব্রাজিলের সাও পাওলোতে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। স্থগিত হওয়ার আগ পর্যন্ত গোলশূন্যভাবে চলছিল ম্যাচটি।
সাত মিনিট যেতে না যেতেই ব্রাজিলের জাতীয় স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধান এজেন্সির একাধিক কর্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সদস্যদের নিয়ে হানা দেন মাঠে। হুট করে মাঠে ঢুকে পড়েন কোয়ারেন্টাইন না মানা খেলোয়াড়দের আটকের জন্য। খেলোয়াড় ও স্বাস্থ্য সংস্থার কর্তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছে। এই অভূতপূর্ব কাণ্ডের জন্য ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাচ স্থগিতের সংবাদ দিয়েছে আর্জেন্টিনার ফুটবল সংস্থা।
মূলত ঝামেলাটা হয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে আসা চার আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়কে নিয়ে। তাদের রাতেই ব্রাজিল ছাড়ার আদেশ দিয়েছিলেন দেশটির কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাদের নির্দেশ উপেক্ষা করে সেই চার খেলোয়াড়কে মাঠে নামিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তাতেই বাঁধে বিপত্তি। স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোকজন এসে বাগড়া দেয়। স্থগিত হয়ে যায় ম্যাচটি।
অথচ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলতে এসেছিলেন সে লিগে খেলা আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড় -অ্যাস্টন ভিলার এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া ও এমিলিয়ানো মার্তিনেজ এবং টটেনহাম হটস্পার্সের জিওভান্নি লো সেলসো ও ক্রিস্তিয়ান রোমেরো। ক্লাবের হয়ে কমপক্ষে দুই ম্যাচ দর্শক হয়ে থাকতে হবে তাদের। ভেনেজুয়েলায় বাঁধাহীন ভাবে খেললেও ব্রাজিলে নিষেধাজ্ঞার খড়গে পড়ে তারা।
ব্রাজিলে যাওয়ার পর সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, করোনাভাইরাসের ব্রাজিলিয়ান নিয়ম অনুযায়ী ব্রিটেন, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত থেকে সরাসরি প্রবেশের অনুমতি নেই ব্রাজিলের বাইরের লোকদের। বিশেষ ক্ষেত্রে বিষয়টিতে ছাড় দেওয়া হয়। তাও ব্রাজিলে প্রবেশের আগে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন করতে হবে।
কিন্তু আর্জেন্টিনার সে চার খেলোয়াড় ইংল্যান্ড থেকে সরাসরি দেশে ফেরার পর গিয়েছিলেন ভেনেজুয়েলায়। সেখানে এক ম্যাচ খেলার পর আসেন ব্রাজিলে। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন না করায় তাদের দেশের ফ্রিতে নির্দেশ দিয়েছিল দাবি সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিভাগ।
কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে বর্তমানে সাত ম্যাচের সবকটিতে জিতে শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। ৭ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরেই আছে আর্জেন্টিনা।
আবাসন সংকট মোকাবেলায় সরকারের পরিকল্পনা ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর চার বিলিয়ন ইউরো ব্যায় করে ৩ লাখ নতুন বাড়ি সরবরাহের লক্ষ্য ঠিক রাখা।
হাউজিং ফর অল প্ল্যান আজ প্রকাশিত হবে এবং আবাসনে চার বিলিয়ন ডলারের এই বাৎসরিক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি থাকবে সোস্যাল হাউজিং(social house), এফোর্ডেবল(Affordable Housing) এবং কষ্ট রেন্টাল হাউজিং (Cost Rental Housing)।
সরকারের লক্ষ্য এই ৩ লাখ বাড়ীর মধ্যে কমপক্ষে ৯০ হাজার Social House, ৩৬ হাজার Affordable House এবং ১৮ হাজার Cost Rental House তৈরী করা এবং বাকী ১৫৬ হাজার বাড়ী বেসরকারী খাতে নির্মানের লক্ষ্য নিয়েছে বর্তমান আইরিশ সরকার।
I have been planning to write about this for a while. The main objective of this article is to collect and combine known information from community for the help of community.
Parents of Muslim boys usually looks for place-to-go information when their son need to be circumcised. Traditionally we do it between the age of 1-7. In Ireland, not all hospitals and clinics do this surgical procedure since it is done for social/cultural reason. Only some hospitals who has some Muslim Surgeons are willing to do it for social reason.
For my eldest son, with the help of Dr. Nafiza Hamid (Hani Apa), my elder son had his surgery done in PortLaoise hospital. It was 3 years back. I remember, some other families were also got similar help from Hani Apa.
When the time came for my younger son, it was difficult to find the contact again since Hani Apa left that hospital. Finally, with the help of Dr. Mushabbir Hossain Rubel bhai, I found another Surgeon in Portiuncula Hospital (Ballinasloe, Galway) and had the circumcision done.
Some other friends also needed the similar contacts for their son, and I have provided them. I am providing the procedure here if any of you need it for your son. I hope it will be helpful. I am sure all going to the same hospital may not be ideal and many of us are doing this surgery in other hospitals.
I will request if any of you have any other contacts or process, please drop here so that we can have a compiled source of information for the community. I am sure I am not the last Bangladeshi who will need this help.
In our community, there are lots of doctors who are working in different hospitals. If you know some surgeons that do this surgical operation, please come forward to provide the information so that the community can be benefited.
The process that helped me described here.
1. First take a letter from you GP stating that “your son needs circumcision procedure done for social/cultural reason.”
2. Send the letter to the below address.
Cora Kelly
Secretary of Mr. Osama El-Sadig
Portiuncula Hospital
Ballinasloe
Co. Galway
3. After few days, you can call to 0909648210 (Secretary of Mr. Osama in Portiuncula hospital) to confirm your reception of letter or further queries.
এক বছর পর আজ থেকে আয়ারল্যান্ডের গন-পরিবহন গুলো সম্পূর্ণ ধারনক্ষমতায় যাত্রী বহন করতে পারবে।
আয়ারল্যান্ডের গন-পরিবহন সার্ভিসগুলিকে কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর ১বছর পর প্রথমবারের মতো আজ তাদের সমস্ত আসন পূরণ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত আসে।
গতকাল সরকার কর্তৃক গৃহীত কোভিড -১৯ বিধিনিষেধ শিথিল করার সর্বশেষ পর্যায়ের অংশ হিসাবে অবশিষ্ট সিদ্ধান্ত মোতাবেক গণপরিবহন গুলো আজ থেকে শত ভাগ ধারণ ক্ষমতায় কাজ করতে পারবে। ।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (NTA) নিশ্চিত করেছে যে বাস, ট্রাম এবং ট্রেনগুলি সম্পূর্ণ ধারন ক্ষমতায় যাত্রী বহনে তারা ফিরে আসবে এবং যাত্রীরা খুব কাছাকাছি বসেতে পারবে এবং এখন থেকে আর কোন আসন বন্ধ থাকবে না।
স্কুল কলেজ সহ সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসপ্তাহে খুলে দেয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি আগামী মাসে অফিস পুনরায় খোলা হবে এর পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো।
নতুন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনুসারে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে non-essential কর্মীদের তাদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয় হবে।
গতকাল সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় পরিবহন মন্ত্রী ইমন রায়ান বলেন যে “আমাদের গণপরিবহন গুলোকে সম্পূর্ণ ধারনক্ষমতায় যাত্রী বহনে ফিরিয়ে আনা দরকার কারণ আমরা মানুষকে অফিস এবং কলেজে ফিরিয়ে আনতে চাই এবং তাদের যায়তের উপায় দরকার”।
গত এপ্রিল মাসেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আশঙ্কা কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছিলেন বাড়িতে। রবিবার আর শেষরক্ষা হল না। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। ২৯ আগস্ট রাত ১১.২৫ নাগাদ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
একাধিক উপন্যাসে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন সাহিত্যিক। ১৯৭৭ সালে আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত হন বুদ্ধদেব গুহ। পুরাতনী গানে স্বনামধন্য় এই সাহিত্যিক ছিলেন চার্টাড অ্যাকাউন্টেটও। পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য, আকাশবাণী কলকাতার অডিশন বোর্ডের সদস্যের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘জঙ্গলমহল’।
বাবলি’, ‘মাধুকরী’, ‘কোজাগর’, ‘হলুদ বসন্ত’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’,’কুমুদিনী’, খেলা যখন এবং ঋজুদা- অরণ্য ও প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা এই মানুষটির রচনা সাহিত্য জগতকে সমৃদ্ধ করেছে।
তিনি তৎকালীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপরিচিত সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশুনা করেন।
বুদ্ধদেব গুহর পেশাগত জীবন শুরু হয়েছিল চাটার্ড অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, তিনি ছিলেন একজন নামী চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। দিল্লির কেন্দ্রীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য নিযুক্ত করেছিল। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের অডিশন বোর্ডের সদস্য হয়েছিলেন তিনি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন তিনি। একদা বামফ্রন্ট আমলে তাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনবিভাগের বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বোর্ড পশ্চিমবঙ্গ বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ড এবং নন্দন উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য করা হয়েছিল। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে পরিচালন সমিতির সদস্যও নিযুক্ত হয়েছিলেন। বুদ্ধদেব গুহ খুব সুন্দর ছবিও আঁকেন। নিজের লেখা একাধিক বইয়ের প্রচ্ছদ তিনি নিজেই এঁকেছেন। গায়ক হিসেবেও তিনি বহুজনের প্রিয়।
ছোটদের জন্য তার প্রথম বই- ‘ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে’। ঋজুদা তার সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় অভিযাত্রিক গোয়েন্দা চরিত্র। আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৭৭ সালে। প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ঋতু গুহ তার স্ত্রী। সুকণ্ঠ বুদ্ধদেব গুহ নিজেও একদা রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন। পুরাতনী টপ্পা গানে তিনি অতি পারঙ্গম। টিভি এবং চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে তার একাধিক গল্প উপন্যাস।
বার্ধক্য জণিত কারণে জটিলতা থাকা সত্ত্বেও কঠিন লড়াই জয় করে বাড়ি ফিরেছিলেন বুদ্ধবাবু। কিন্তু করোনা পরবর্তীতে শরীর ভাঙতে থাকে।
এরপর কেটে যায় বেশ কয়েকমাস। অগাস্ট মাসের শেষে এসেই আবারও শরীর খারাপ, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। তড়িঘড়ি তাঁকে ভর্তি করা হয় এক বেসরকারী হাসপাতালে। সেখানে চার দলের এক চিকিৎসক টিম চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন বুদ্ধদেব গুহর। ডাক্তারের কথায় সংক্রমণ ছড়িয়েছিল মুত্রনালীতে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় আইসিইউতে। তবে শেষ রক্ষা হল না। রবিবার রাত ১১.২৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে শোকের ছায়া।
সোমবার ভোর হতেই খবর ছড়িয়ে পড়তে থাকে, বইমেলায় স্টলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ আবার কারুর স্মৃতিতে নতুন বইয়ের খোঁজে অপেক্ষায় দিনগোনা। সম্পর্কে এক অন্য ছাঁচে বেঁধেছিলেন তিনি। তাঁর কলম সব প্রজন্মের মনকেই ছুঁয়ে যেত। তবে থামল সেই কলমের পথ চলা। ছোটদের জন্য যেমন ছিল ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে ঠিক তেমনই বাবলি, কোয়েলের কাছে, জলছবি, কুমুদিনী পরিণত মনকে আকর্ষণ করেছে বারে বারে।
বহূ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। সাম্মানিক ডি.লিট উপাধিও পেয়েছিলেন ।কিন্তু তার থেকেও তিনি খুশী ছিলেন পাঠক, পাঠিকার গভীর ভালোবাসতে। স্পষ্টভাষী অথচ মনোহর আকর্ষণীয় চরিত্রের মানুষ ছিলেন তিনি। অনায়াসে মাথা নীচু করতে পারতেন না। সেই মাথা উঁচু করেই তিনি প্রয়াত হলেন আজ কিন্তু রয়ে গেলেন বাঙালির সাহিত্য জগতে অমর হয়ে।
দ্বিতীয় পর্ব: আজকাল প্রায় সময়েই প্রস্রাবে রক্ত পড়ে অনিমেষের। কিডনি খারাপ হয়ে গেছে। ভালো চিকিতসার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকার। কাউকে অসুখের কথা বলতে ভালোও লাগে না। নয়ন অবশ্য খানিকটা বুঝতে পারে। তাদের গুরুদেব সুস্থ নেই। নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়ে গেছে। ছেলেরা আলম সাহেবের সঙ্গেও আলোচনা করেছে। টাকার জোগাড় প্রায় হয়ে গেছে। এবার দিনক্ষণ দেখে ভেল্লোরে যাবে সবাই মিলে। অনিমেষকে হারানো চলবে না।
অনিমেষের খুব ইচ্ছে ছিল আমেরিকা ঘুরতে যাওয়ার। কিছু টাকা জমিয়েও রাখা আছে। শরীরের জন্য আর হয়ে উঠবে না। অনিমেষ একদিন ছেলেদের অগোচরে ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলে আনে। তারপর প্রায় প্রতিদিনই ভালোমন্দ খাবারের আয়োজন করতে থাকে। ছেলেগুলো অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে অনিমের বুদ্ধিদৃপ্ত সরল ও প্রতিভাময় মুখের দিকে। কি অবিচল, মুখে কি দারুন নির্মল হাসি।
সকল অসুখ যেন হার মেনে গেছে। অনুপম বেঙ্গালোরে পড়াশোনা করে। অনিমেষের অস্বাভাবিক আচরণের কথা শুনে গতকাল ফিরেছে বাড়িতে। দিব্যেন্দু, আলোক, মতিন সকলেই খুব চিন্তিত। কিন্তু মুখ ফুটে কেউ জিগ্যেস করতে সাহস করে না। পরশু ভেল্লোরে নিয়ে যাওয়া হবে অনিমেষকে। অনিমেষ তা জানে না। টিকিট, হোটেল বুকিং, ডাক্তার এপয়েনমেন্ট সব করে রেখেছে ছেলেরা। আলম সাহেবের পরিবার এবং ছেলেরা মোট ১১ জনের টিম।
আজ সকাল যেন অনিমেষের কাছে বিশেষ দিন। আজ সকলের অগোচরে নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে অনিমেষ। মানব শরীরের বেঁচে থাকার দিনক্ষণ শেষ হয়ে এলেও মানুষ বাঁচার জন্য চেষ্টা করে। অনিমেষের বাঁচার ইচ্ছে নেই। কি হবে বেঁচে থেকে ? জীবন তো একদিন থমকে যাবেই। তা নিয়ে বিচলিত হওয়া ঠিক নয়।আজ অনিমেষ পরিপাটি। সেভ করেছে। স্নান করে সুগন্ধি মেখেছে।
কার্লমাক্সের জীবনী গ্রন্থটি প্রায় দশ মিনিট বুকে জড়িয়ে ধরে সুগন্ধ নিয়েছে। চে গুয়েভারার ছবিতে হাত বুলিয়ে সরিয়ে দিয়েছে ধুলোর আস্তরণ। মলাটের কাগজ খুলে গেছে লালনগীতি বইয়ের। বইটি শেষবারের মতো হাতে তুলে দেখে নিলেন একপলক। তারপর ঝড়ের বেগে পা চালিয়ে বেরিয়ে পড়লেন পৃথিবীর পথে। রাস্তায় কারও সঙ্গে কথা বললেন না। কারো কথার প্রত্যুত্তর করলেন না। স্টেশনে দাঁড়ানো ট্রেনটিতে উঠে পড়লেন উদ্ভ্রান্ত অনিমেষ।
এদিকে রীতিমতো হৈচৈ লেগে গেছে। ছেলেরা এসে দেখছে দরজা খোলা। ভেতরে অনিমেষদা নেই। বাইরেও কোথাও নেই। আলম সাহেব ছেলেদের নিয়ে সারাদিনমান ঘুরাঘুরি করে কোনো হদিস পেলেন না। না খেয়ে, সারাদিন ঘুরে ফিরে ক্লান্ত ছেলেরা অনিমেষের বাড়ি ফিরে এলো। না, অনিমেষ নেই। এখনো ফেরেনি সে। বড়োবাবু সব শুনে বিচলিত হলেন। খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লো সর্বত্র। এমেলে এলেন, এমপি এলেন। মুখ্যমন্ত্রী উদ্বিগ্নতা জানালেন। গঙ্গাজল ঘাঁটি থেকে বাল্যবন্ধু পরিমল এলো।
সংবাদপত্রে নিখোঁজ খবর ছাপা হলো। বাকি থাকলো সিআইডি আর সিবিআই। নিরুদ্দেশ অনিমেষকে সাতদিন, একমাস, বছর কেটে গেলেও কেউ আর খুঁজে পেলো না। ছেলেগুলো মাঝে মাঝে অনিমেষের ঘর খুলে চুপচাপ বসে থাকে। কেউ কোনো কথা বলে না। মাঝে মাঝে ৩ বছরের রঘুনাথ আনিমুচ বলে ডাকে। অনেক্ষন সারা না পেয়ে মায়ের কাছে ফিরে যায়। রঘুনাথের মা আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদে। আলম সাহেব বাড়ি ফেরে। হাতমুখ ধোয়। আর দীর্ঘ্যক্ষন অনিমেষের বাড়ির দিকে মুখ করে নীরবে বসে থাকে।
শতাধিক যাত্রী নিয়ে ওমানের মাস্কাট থেকে ঢাকায় আসার পথে শুক্রবার সকালে মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম।
ফ্লাইটটি ওমানের রাজধানী মাসকাট থেকে ১২২ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসতেছিল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বোয়িং ৭৩৭ বিমানটির হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা ছিল। আকাশ পথে বিমানের পাইলট ক্যাপটেন নওশাদ অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিমানটি নাগপুরে জরুরি অবতরণ করে।
পরবর্তীতে বিমানটি মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। এরপরে তাকে সেখানকার কিংসওয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর জানা যায় পাইলট নওশাদ আতাউল কাইউম আকাশে থাকা অবস্থাতেই ‘হার্ট অ্যাটাক’ করেছিলেন। তিনি এখন ভারতের নাগপুরের হোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার এনজিওগ্রাম করা হয়েছে।
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটিতে ১২৪ জন যাত্রী ছিল। তারা সবাইই নিরাপদে ছিলেন।
প্রথম পর্ব: মানুষের মনে না জানি কত কথা, কত ভাবনা, কত ইচ্ছে অনিচ্ছের পাহাড় জমে থাকে। কত নদী, মাঠঘাট, সবুজ বন, মাটির রাস্তা, গাছের ছায়া, সম্পর্ক, অভ্যাস, অনুরাগ আরো কত কি ! অবসর পেলে আজকাল এইসব নিয়ে ভাবতে বসে যায় অনিমেষ। অনিমেষের বাবা-মা নেই, ভাই-বোন নেই। কেউ নেই। না দূরের, না কাছের। একাকিত্বের যা কিছু উপসর্গ থাকে, তার সবটুকুই অনিমেষ যাপন করে। অসুস্থ শরীরে গায়ে খাটাবার জোর নেই। দুচারটে গ্রামের ছেলেপিলে এসে আড্ডা মারে অনিমেষের ডেরায়। তারাই কখনো চালডাল নিয়ে আসে।
বিনিময়ে অনিমেষের কাছে ওরা দেশ বিদেশের জানা অজানা গল্প শোনে। অনিমেষ বলেছে পৃথিবীর বয়স গোনা যায়। এমিবা থেকে মানুষের জন্ম। এমিবা এঁকে দেখিয়েছে। মহাকাশের সীমা পরিসীমা নিয়ে কথা হয়। বিজ্ঞানের আবিষ্কার নিয়ে কথা হয়। সক্রেটিস নামক একজন বিশেষ ব্যক্তির কথা বলতে বলতে অনিমেষ আনন্দে হেসে ওঠে। চোখে বিদ্যুত ঝলকে ওঠে। অনিমেষের মুখ থেকে ওরা এথেন্সের গল্প শোনে। রোম নগরীর কথা শোনে। ছেলেগুলো এলে অনিমেষের একাকিত্ব কেটে যায়। আনন্দ করে গান করে, সকলে মিলে কোরাস গায়। বেশিরভাগ সময়ই অনিমেষ লালনের গান করে।
অনিমেষ ছাত্র বয়সে বাম রাজনীতি করতো। তখনকার সময়ের একজন বিপ্লবীর একটি ফটো দেয়ালে যত্ন করে টাঙানো। চে গুয়েভারার। বলিভিয়ার জঙ্গলে কষ্টে কাটানো দিনগুলির গল্প করতে করতে অনিমেষ কেঁদে ফেলে। ছেলেগুলো আশেপাশের পাড়া থেকে আসে। মদ খায়, গাঁজা খায়। সারাদিন দার্শনিক চিন্তা করে। রাজনীতি, শোষণ, শিক্ষানীতির কথা বলে। ওদের মধ্যে নয়ন নামের ছেলেটি বেশ মেধাবী। পড়াশোনায় ভালো। ডাক্তারিতে চান্স পেয়েছে এ বছর। নিয়মিত আসে। অনিমেষের খাবারের জোগাড় করে। জল, ওষুধ, দেশলাই, সাবান শ্যাম্পু কিনে দিয়ে যায়। হারিকেনের চিমনি পরিষ্কার করে রেখে যায়। নয়নকে দেখলে অনিমেষের কেন জানি স্বামী বিবেকানন্দের কথা মনে পড়ে যায়। ঠিক তেমন দুটি চোখ, নাক, কান আর গায়ের রং।
আরেকজন প্রিয় মানুষ রয়েছে অনিমেষের। পাশের বাড়ির একটা ৩ বছরের ছেলে। রঘুনাথ। সে সহসা অনিমেষের বাড়ি আসে না। দেওয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে হাঁক দিয়ে অনিমেষকে আনিমুচ বলে ডাকে। আর অনিমেষ তখন এপাশে দাঁড়িয়ে খানিক্ষন গল্প করে নেয়। রঘুনাথের বাবা মা অনিমেষের জন্য মাঝেসাঝে ওটা ওটা দিয়ে পাঠায় ছেলেগুলোর হাতে করে।
রঘুনাথের বাবা মুসলিম, মা হিন্দু। মায়ের ইচ্ছে ছেলে হিন্দুমতে বড়ো হবে। রঘুনাথের বাবা আলম সাহেব সরকারি চাকুরে। ৭ বছর আগে এই পরিত্যক্ত বাড়িটি কিনে বসবাসের উপযুক্ত তৈরী করে আছে। সেইসময় থেকেই অনিমেষের অনুগামী হয়ে পড়েন আলম সাহেব। অনিমেষের থেকে আলমসাহেব প্রায় ১০ বছরের ছোট হবে। অনিমেষ অবশ্য আলম সাহেব বলেই সম্বোধন করেন। রঘুনাথকে অনিমেষ ছোটবেলা থেকেই কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। রঘুনাথের মা, অনিমেষকে দাদা বলে সম্বোধন করেন।
মানুষের বিচিত্র জীবন নিয়ে ছেলেগুলো আজ আলোচনা তুলেছে। সকাল এগারোটার এই আলোচনা সন্ধ্যে পর্যন্ত চলবে। এরই ফাঁকে খাওয়াদাওয়া। আজ মুরগির ডিম আর আলুর ঝোল রান্না করবে মতিন। জগদীশ রান্না করবে মুসোর ডাল। অনিমেষের বাড়ির গন্ডি একবিঘে জমি নিয়ে। চারিদিকে বর্ষার জঙ্গল হয়ে আছে। মাঝখানে ৪ কামরার পুরোনো বাড়ি অনিমেষের মামার দেয়া। দানে পাওয়া। এদিক ওদিকে সাপের আনাগোনা। গাছে গাছে পাখির বাসা। বড়োই রোমাঞ্চকর বসবাসের জায়গা।
অনিমেষের ছাত্র বয়সের বন্ধুরাও আসে মাঝে-মাঝে সময় কাটাতে। তখন ছেলেগুলোর খুব আনন্দ হয়। শহুরে মানুষের টাকায় মদ মাংস চলে হরদম। কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, গল্প নিয়ে আলোচনা। সঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামী, সুবোধ সরকার, নির্মলেন্দু গুণ, হেলাল হাফিজ, তসলিমা নাসরিন আরো কত কত লেখকের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে সারারাত আলোচনা আড্ডা চলে। রাতের টহলে বেরোনো পুলিশের গাড়ি এসে থমকে দাঁড়ায় অনিমেষের বাড়ির গেটের গাছে। বড়োবাবু বিনয়ী হাসি নিয়ে উঠোনে এসে সম্মানের সঙ্গে ডাকেন, অনিমেষবাবু, আড্ডা মারবো। আসব নাকি?
সারারাত আড্ডা মেরে সকালের আলো ফুটে ওঠে। এককাপ গরম চা খেয়ে বড়োবাবু বিদায় নিলে, এবার সবাই ১০ টা ১১ টা পর্যন্ত ঘুমায়। এতকিছুর মধ্যে অনিমেষ শুধু একটা বিষয় গোপন করে যায় সকলের কাছে। আর তা হচ্ছে অসুস্থ শরীরের যন্ত্রনা। ক্রমশ শরীর ভাঙছে অনিমেষের।
আজকাল প্রায় সময়েই প্রস্রাবে রক্ত পরে অনিমেষের। কিডনি খারাপ হয়ে গেছে। ভালো চিকিতসার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকার। কাউকে অসুখের কথা বলতে ভালোও লাগে না। নয়ন অবশ্য খানিকটা বুঝতে পারে। তাদের গুরুদেব সুস্থ নেই। নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়ে গেছে। ছেলেরা আলম সাহেবের সঙ্গেও আলোচনা করেছে। টাকার জোগাড় প্রায় হয়ে গেছে। এবার দিনক্ষণ দেখে ভেল্লোরে যাবে সবাই মিলে। অনিমেষকে হারানো চলবে না।
আয়ারল্যান্ডে স্কুলের ছেলেমেয়েদের কি স্কুলের বাইরে কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে?
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
(তৃতীয় পর্বঃ উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়)
এই লেখার প্রথম দুই পর্বে আয়ারল্যান্ডের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের ছেলেমেয়েদের স্কুলের বাইরে কোচিংযের প্রয়োজন আছে কি-না সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করেছি। তৃতীয় ও শেষ পর্বে এখন আলোচনা করবো উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের ছেলেমেয়েদের প্রসঙ্গে।
আয়ারল্যান্ডে উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা হচ্ছে খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ের দুই বছরের পড়াশোনা শেষে লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত শিক্ষাজীবন এবং কর্মজীবন। কোনো ছেলে বা মেয়ে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে কি পারবে না, কিংবা কোন বিষয়ে পড়তে পারবে তা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে এই লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফলের উপর। যে কারনে প্রতি বছর অনেক ছেলেমেয়েদে্রকে দেখেছি লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষা রিপিট (পুনরায়) করতে। কেননা, সে কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে কিংবা পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুলের ছেলেমেয়েদেরকে প্রায় দশটির মতো বিষয় পড়তে হয়। কিন্তু উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়তে হয় কমপক্ষে ছয়টি বিষয়। সাধারণত পাবলিক বা সরকারী স্কুল সর্বোচ্চ সাতটি বিষয় পড়ার সুযোগ দেয়। তবে কেউ ইচ্ছা করলে স্কুলের বাইরে নিজ উদ্যোগে অতিরিক্ত আরও বিষয় পড়তে ও পরীক্ষা দিতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে ভালো ছয়টি বিষয়ের নম্বর পরীক্ষার ফলাফলের সাথে যোগ হবে। লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষার বিষয়গুলি এবং এর ফলাফলের সাথে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের অঙ্গাংগীন সম্পর্ক রয়েছে। এজন্য অনেক ছেলেমেয়েরাই স্কুলের বাইরে নিজ খরচে অতিরিক্ত আরও কয়েকটি বিষয় পড়ে।
লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষার মোট নম্বর হল ৬২৫ । ছয়টি বিষয়ে সর্বোচ্চ ৬০০ । আর উচ্চতর গণিতের জন্য বোনাস ২৫ নম্বর। সুতরাং এটা সহজেই বোধগম্য যে, লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের ক্ষেত্রে উচ্চতর গণিতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অতএব, গণিতের উপর শিক্ষাজীবনের খুব প্রথম থেকেই অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এর বিকল্প নেই। গণিতের পরেই আসে ইংরেজি। একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো বিষয়ে পড়তে হলে ইংরেজিতেও খুব ভালো নম্বর থাকা চায়। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে একটি বিদেশী ভাষায় দক্ষতাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এবার আমার লেখার মূল প্রশ্নে আসি। উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলের ছেলেমেয়েদের কি স্কুলের বাইরে কোচিংযের প্রয়োজন আছে? এক কথায় এই প্রশ্নের উত্তর হল হ্যাঁ, অবশ্যই। লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হলে প্রতিটি বিষয়েই স্কুলের বাইরে কম-বেশী কোচিং করতে হবে। প্রতি বছর লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষার ঠিক পূর্বে ইস্টার হলিডের সময় অনেক কোচিং (গ্রাইন্ড) স্কুল প্রতিটি বিষয়ে বিশেষ কোচিংযের ব্যবস্থা করে। লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উচ্চ নম্বর অর্জনের জন্য এই কোচিং খুব উপকারী। তাই অন্ততপক্ষে এই সুযোগ গ্রহণ করা উচিত।
সবশেষে আলোচনা করবো গণিতের কোচিং সম্পর্কে। আমার অভিজ্ঞতা বলে আয়ারল্যান্ডের বেশীরভাগ স্কুলের ছেলেমেয়েরাই গণিতে অপেক্ষাকৃত দূর্বল। এর সম্ভাব্য কারনসমূহ আমি এই লেখার দ্বিতীয় পর্বে উল্লেখ করেছি। অতএব আমার উপদেশ হল, উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলের ছেলেমেয়েদেরকে একেবারে প্রথম থেকেই গণিতের কোচিংযের ব্যবস্থা করা। লেখাপড়ার তুলনায় উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুলের সময় খুব সীমিত, অপ্রতুল। তাই হাতে সময় থাকতেই সুন্দর ও সময়োপযোগী প্লান করতে হবে।
এস, এম, মাহফুজুল হক
গণিত, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিক্ষক
ডাবলিন
১২ই আগস্ট, ২০২১
ওয়ানডে এবং টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর স্বাদ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। কিন্তু বিশ্বের অন্যতম সেরা এই দলটার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি জয় এতদিন অধরাই ছিল বাংলাদেশের জন্য। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই অতৃপ্তিও দূর হলো।
পাঁচ টি–টোয়েন্টির সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাত্র ১৩১ রান করেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ২৩ রানে। মাত্র ১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তরুণ বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ম্যাথু ওয়েডের অস্ট্রেলিয়া দলকে।
দু’শোরও বেশি দেশ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সদস্য।
টোকিওতে অনুষ্ঠিত ২০২০ অলিম্পিক গেমসে রেকর্ড সংখ্যক ৩৩টি প্রতিযোগিতা এবং ৩৩৯টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাপানের ৪২টি ভেন্যুতে এসব প্রতিযোগিতা হয়েছে।
টোকিও অলিম্পিকের ষষ্ঠ দিনে গত বৃহস্পতিবার নিষ্পত্তি হয়েছে আটটি খেলার (আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্স, ক্যানু স্ল্যালম, ফেন্সিং, জুডো, রোয়িং, শুটিং, সাঁতার ও টেবিল টেনিস) মোট ১৭টি ইভেন্টের।
আয়ারল্যান্ডের ঝুলিতে মোট তিনটি পদক ১টি সোনা দুটি ব্রোঞ্জ।
তিনে থাকা যুক্তরাষ্ট্র নিঃশ্বাস ফেলছে চীন ও জাপানের ঘাড়ে। ১৪টি করে সোনা ও রুপা এবং দশটি ব্রোঞ্জসহ সর্বোচ্চ ৩৮টি পদক জিতেছে তারা। তাদের মতো স্থান ধরে রেখেছে চারে থাকা আরওসি। আটটি সোনা, ১১টি রুপা ও নয়টি ব্রোঞ্জ নিয়ে তাদের পদকের সংখ্যা ২৮টি। আটটি সোনা, দুটি রুপা ও দশটি ব্রোঞ্জসহ মোট ২০টি পদক নিয়ে অস্ট্রেলিয়া রয়েছে পাঁচে।
এদিন রোয়িংয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ছেলেদের লাইটওয়েট ডাবল স্কালসে সোনা জিতে শেষ হাসি হেসেছে আয়ারল্যান্ড। ৬ মিনিট ০৬.৪৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে তারা হারিয়েছে জার্মানিকে (৬ মিনিট ০৭.২৯ সেকেন্ড)। ১০০০ মিটার পর্যন্ত এগিয়ে ছিল জার্মানরা। কিন্তু পল ও’ডনোভান ও ফিন্ট্যান ম্যাককার্থিকে নিয়ে গঠিত আইরিশ দলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি তারা। অনেকটা পিছিয়ে থেকে ইতালি জিতেছে ব্রোঞ্জ।
এই চলতি সপ্তাহের আগষ্ট ব্যাংক হলিডে উইকেন্ডে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় কোভিড-১৯ টিকা দান কেন্দ্র খোলা হচ্ছে যেখানে ১৬ বছরের উপরে যে কেউ ভেকসিন নিতে চাইলে কোন এ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই টিকাদান কেন্দ্র প্রবেশ করতে পারবেন এবং টিকা নিতে পারবেন।
এই টিকা কেন্দ্র গুলোতে টিকা নিতে অনলাইনে এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে না কিন্তু যারা টিকা নিতে যাবেন তাদের পিপিএস নাম্বার, ফটো আইডি, ইমেইল এড্রেস, ফোন নাম্বার এবং তাদের পোষ্ট এড্রেসের এয়ার কোড প্রদান করতে হবে।
যারা টিকা নিতে আসবেন তারা তাদের প্রথম ডোজ ফাইজার বায়ো- N টেক টিকা পাবেন।
যারা এই এই টিকা কেন্দ্র গুলো থেকে টিকা নিবেন তারা পরবর্তিতে টেক্স মেস্যাজের মাধ্যমে জানতে পারবেন কখন ও কোন টিকা কেন্দ্রে তারা তাদের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারবেন।
যারা টিকা নিতে ইতিমধ্যে অনলাইনে বুকিং দিয়েছেন তারাও তাদের নিকটস্ত টিকা কেন্দ্রে গিয়ে এই সপ্তাহের যে কোন সময় কোভিড-১৯ এর ভেকসিন নিতে পারেন।
আবহাওয়ার পূর্বসংকেতে দেখাচ্ছে আজকের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৯ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। যেটা হবে এই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। শুধু গরমই না রৌদ্র ঝলমল এই দিনে থাকবেনা ছিটেফোঁটা মেঘের লক্ষণ।
শুক্রবারেও ছিল অনেক গরম আবহাওয়া, যা ছিল শুক্রবার পর্যন্ত বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। কিন্তু শনিবারে সেই রেকর্ডও অতিক্রম করার কথা বলা হচ্ছে।
ঠাণ্ডা আর বৃষ্টির গ্যাঁড়াকলে আয়ারল্যান্ডে এমন আবহাওয়া বিরল। তাই সবাই চায় এই দিনগুলোতে ভালভাবে উপভোগ করতে। তাইত সবাই বেরিয়ে পড়ে সূর্যস্নানে। কেউ সমুদ্র বেলাভূমিতে, কেউ পার্কের সবুজ ঘাসের চাদরে, কেউবা আবার নৌকা বা ফেরিতে ছড়ে উপভোগ করে রৌদ্র ঝলমল এই দিনগুলোকে।
তীব্র তাপদাহ আবার অনেকের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। শরীর ডিহাইড্রেশন এর ফলে অনেকের শারীরিক দুর্বলতা ও অসুস্থ বোধ করে। গরমের প্রচণ্ডতায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা খারাপ বোধ করে। এ জন্য সবার শরীরের দিকেও নজর রাখার প্রয়োজন। বেশি বেশি পানি পান ও পানিয় জাতীয় খাবার গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ জনে। নিহতদের বেশিরভাগই নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া ও রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট রাজ্যের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ ছাড়া বন্যায় প্রতিবেশী বেলজিয়ামে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
দেশটির লিগে শহরের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে নেদারল্যান্ডেও। বন্যায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় লিবার্গ প্রদেশে অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এসব দেশে বন্যা দেখা দিয়েছে।
রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট রাজ্যের প্রধান মালু ড্রেয়ার ভয়াবহ এই বন্যাকে ‘বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বন্যায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে, অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন এবং অনেকেই ঝুঁকিতে রয়েছেন। নিজেদের জীবন বাজি রেখে আমাদের সবগুলো জরুরি সেবার কর্মীরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন।’
প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে হতবাক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যাঞ্চেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল।
প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে বুধবার থেকে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে বহু সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সরিয়ে নিতে হয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষকে। বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি সড়ক। বন্যার কারণে রাইনল্যান্ড-পালাটিনেটের ভলকানেফেল জেলায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়ার বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ভারী যন্ত্রপাতিসহ দুই শতাধিক সেনা পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেশী রাইনল্যান্ডে কাজ করছেন অন্তত ৭০ জন সেনা। উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে পুলিশের বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টারও।
বন্যার কারণে পশ্চিম জার্মানির দুই লক্ষাধিক বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিঘ্ন ঘটছে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহেও। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে যানবাহন চলাচলও ব্যাপকভাবে বিঘ্ন ঘটেছে বলে জানা গেছে।
জার্মান আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ঝরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রিমোটের ব্যাটারি গিলে খাদ্যনালীতে ছিদ্র, ২ বছরের শিশুর মৃত্যু।
ব্যাটারি গিলে ফেলে হারপার লি’র মৃত্যু হয়। রিমোটের ব্যাটারি গিলে ফেলায় খাদ্যনালী পুড়ে গিয়ে যুক্তরাজ্যে দুই বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হারপার লি ফানথ্রোপ নামের শিশুটি একটি রিমোট কন্ট্রোল থেকে ব্যাটারি বের করে তা গিলে ফেলে। পরে হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়। ব্যাটারিতে থাকা এসিডে তার গলা এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্যনালী পুড়ে যায়।
শিশুটির মা স্টাসি নিকলিন জানিয়েছেন, একটি রিমোট কন্ট্রোল ব্যাটারি এতোটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে তা কখনওই ভাবেননি তিনি। পরে মেয়ের শোবার ঘরে একটি খালি বাটন ব্যাটারি পাওয়ার পর ঘটনাটি বুঝতে পারেন তিনি। রিমোট কন্ট্রোল ছাড়াও খেলনা থেকে শুরু করে ঘড়ি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পণ্যে বাটন ব্যাটারি ব্যবহার হয়ে থাকে।
স্টাসি নিকলিন পরে চিকিৎসকদের কাছ থেকে জানতে পারেন গত ১৪ জুন শিশুটিকে বাঁচাতে তাদের প্রচেষ্টার কথা। চিকিৎসকেরা শিশুটির খাদ্যনালীতে বড় একটি ছিদ্র দেখতে পান। অপারেশনের সময় চিকিৎসকেরা ব্যাপক চেষ্টা চালালেও শিশুটিকে বাঁচাতে পারেননি তারা।
কনসালটেন্ট আন্না পিগোট জানান হারপার লির মৃত্যু ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়েও তারা ব্যর্থ হন কারণ তার প্রচুর রক্তপাত হয়। এই মৃত্যুকে দুর্ঘটনা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি কালে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটির বেশ কিছু ভাই ও বোন ক্যান্সারের মত বিভিন্ন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগের সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এবছরের প্রথম দিকে ডাবলিনে বসবাসরত বাংলাদেশী এক ভাই নাম তানজিম ইসলাম সুমন Stomach Cancer এ আক্রান্ত হয়ে গত দীর্ঘ দিন যাবত Mater Hospital Dublin মেটার হাসপাতালের চিকিৎসাদিন আছেন।
গতকাল আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকা তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি খুব শান্ত ভাবে তার চিকিৎসার বিস্তারিত অগ্রগতি সম্পর্কে জানান। গত মার্চ মাসে তাকে প্রথম chemotherapy দেওয়া শুরু করে জুন মাসে সবকটি chemotherapy সফল ভাবে তাকে দেওয়া হয় এবং এতে তিনি সত্তর ভাগ সুস্থ হয়েছেন বলে চিকিৎসকগন মনে করছেন এবং তিনিও খুব আত্ববিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন।
এবার দ্বিতীয় ধাপে আবারও chemotherapy দেওয়া শুরু হয়েছে, দ্বিতীয় ধাপের প্রথম chemotherapy তিনি এ সপ্তাহে নিয়েছেন। চিকিৎসকগন আশা করছে এই দ্বিতীয় ধাপ সঠিক ভাবে শেষ করতে পারলেই তিনি আল্লাহর করুনায় রোগ থেকে সেরে উঠবেন ।
সুমন ভাই আপনাদের সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন। সবাই তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে নেক হায়াত দান করেন এবং তিনি যেন তারাতারি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।
ক্রিকেটে ভারত বনাম পাকিস্থান এবং ফুটবলে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা, এমন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী যুগল ক্রিয়া বিশ্বে আর আছে বলে হয়না। এরা যখন একে অন্যের বিপক্ষে খেলতে নামে তখন তা আর খেলা থাকে না, যেন রোমের কোলসিয়ামে দুই গ্ল্যাডিয়েটর নেমেছে জীবন রক্ষার সংগ্রামে আর চারপাশে দর্শক উত্তেজনায় থরথর।
কাল কোপা আমেরিকার ফাইনাল। এ যেন যেনতেন ফাইনাল নয়। মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। এই দুই দলের সাধারণ ফ্রেন্ডলি ম্যাচও ফাইনালের মত উত্তেজনার বারুদ ছড়ায়। আর এখানে ফাইনালে ফুটবলের অন্যতম এক বড় আসরে এই দুই দলের মুখোমুখি হওয়ার মানে তো বুঝতে পারতেছেন। উত্তেজনার পারদ কোথায় পৌঁছতে পারবে তা বলাই বাহুল্য।
ধ্রুপদী লড়াইয়ে কে জিতবে তা নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের থেকে সম্ভবত বাংলাদেশেই সবচেয়ে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে৷ সামাজিক মাধ্যমে সমর্থকগোষ্ঠীর মধ্যে চলছে অবিরাম কথার লড়াই৷ উত্তাপ সীমাবদ্ধ নেই সেখানে৷ অন্য প্রান্তের মহাদেশের দুই দলের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে অনাকাঙ্খিত নানা ঘটনাতেও৷
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এমতাবস্থায় বিরাজ করতেছে থমথমে অবস্থা। ইতিমধ্যে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। ইতিমধ্যে হাজারখানেক পুলিশ নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
কিছু বিতর্ক থাকে যা চিরন্তন, কিছু বৈপরীত্য থাকে যা শাশ্বত, কিছু আবেগ থাকে যা একান্তই আপন- সেখানে সমঝোতা চলে না। উত্তেজনাই খেলার প্রাণ। উত্তেজনা যেন সহিংসতায় না গড়ায়। শুভকামনা রইল উভয় দলের জন্য। উপভোগ্য হোক চিরপ্রত্যাশী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই এক ফাইনাল।
আগামী সোমবার (৫ জুলাই) থেকে আয়ারল্যান্ডের ৭০০ ফার্মেসি জনসন & জনসন এর সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার কার্যক্রম শুরু করবে। ১৮-৩৪ বছর বয়সের সবাই এই সুবিধার আওতায় আসবে। যে কোন আগ্রহী ব্যক্তি তার লোকাল ফার্মেসিতে গিয়ে ভ্যাকসিন এর জন্য রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
জনসন & জনসন এর সিঙ্গেল ডোজ এর ভ্যাকসিন অপশনাল। তবে কেউ এই ভ্যাকসিন নিতে অপারগ থাকলে তাদের জন্য অন্য ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন অপশনও খোলা রয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৩৫ বা তার ঊর্ধ্বের ব্যাক্তিদের ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন খোলা রয়েছে। আগামী শুক্রবার (৯ জুলাই) ১৮-৩৪ বছর বয়স্কদের নিবন্ধন চালু হবে।
৭০০ ফার্মেসিতে মোট ৬০০০০ জেনসেন ভ্যাকসিন ভাগ করে দেয়া হয়েছে। আগ্রহী ব্যাক্তিরা ফার্মেসিতে যোগাযোগ করে তাদের ডোজ নিশ্চিত করে নিতে পারে।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে জ্যানসেন নামের এই ভ্যাকসিনটি ১৮ বা তার বেশি বয়সী মানুষের ব্যবহারের জন্য উপযোগী।
যুক্তরাষ্ট্রে ১২ তলা ভবন ধসে নিহত ১, বহু হতাহতের আশঙ্কা
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ায় অন্তত একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মায়ামি-ডেইড কাউন্টিতে ১২তলা বিশিষ্ট ভবনটি ধসে পড়ে।
উত্তর মায়ামি সৈকতের সার্ফসাইড শহরতলির ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি আবাসিক ভবন থেকে ধসে পড়া অংশের বিশাল অংশ ঝুলে রয়েছে। এ ঘটনায় একজন নারী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও আটজন। আশঙ্কা করা হচ্ছে ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে চাপা পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে ভবনটি ধসে পড়ে। মায়ামি-ডেইড কাউন্টির দমকল বাহিনী জানায়, উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে ৮০টি যান তারা পাঠিয়েছে। পুলিশও উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে।
ধসে পড়া ভবনের পাশের ভবনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘দালানটি কেঁপে উঠেছিল এবং তখন আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই, এরপর আপনি এটা আর দেখতে পেলেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভেবেছি এটা ঝড় বা এই জাতীয় কিছু আসছে। যখন ধুলো সরে যায়, ভবনের দুই তৃতীয়াংশ গায়েব হয়ে গেছে। এটা মাটির সাথে মিশে গেছে।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে ১০ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ভবনটির নাম চ্যামপ্লাইন টাওয়ার্স। এতে ১০০টিরও বেশি সৈকত সংলগ্ন অ্যাপার্টমেন্ট ছিল।
করোনার সবচেয়ে ভয়ংকর ধরন ডেল্টা ও কাপ্পার বিরুদ্ধে মানবদেহে কার্যকর প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম ফাইজার-বায়োএনটেক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।
করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ভয়ংকর ধরন ডেল্টা ও কাপ্পার বিরুদ্ধে মানবদেহে কার্যকর প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম ফাইজার-বায়োএনটেক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। ধরন দুটি ভারতে শনাক্ত হয়। খবর রয়টার্সের।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই তথ্য জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে সম্প্রতি সেই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের ডেল্টা ও কাপ্পা ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজের করোনা টিকা।
এক বিবৃতিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের (পিএইচই) গবেষণা প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার নির্বাহী মেনে প্যাঙ্গালোস। তিনি বলেন, অক্সফোর্ড এবং পিএইচইর ডেটা থেকে প্রকাশিত নন-ক্লিনিক্যাল ফলাফল দেখে আমরা উজ্জীবিত, এর মাধ্যমে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেল—ডেল্টার বিরুদ্ধে আমাদের
টিকা কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।’
গত শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ডেল্টা রূপটি এই রোগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী সংস্করণে পরিণত হচ্ছে।
গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম শনাক্ত হয় করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৮০টি দেশে ডেল্টায় আক্রান্ত রোগী আছে।
একবার করোনা থেকে সেরে ওঠার পর আবারও এ রোগে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের নিয়েও গবেষণা করেছেন অক্সফোর্ডের গবেষকরা। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে শনাক্ত হওয়া ধরন গামায় যাদের আক্রান্তের রেকর্ড আছে, তারাই এই রোগে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
ব্রেক্সিটের ধাক্কা এখন
যুক্তরাজ্য-আয়ারল্যান্ড সীমান্তে
ব্রেক্সিটের প্রতিক্রিয়া পড়তে শুরু করেছে যুক্তরাজ্য-আয়ারল্যান্ড সীমান্তে। ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের যে একটি বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল এক মাস আগে সেটি শেষ হয়ে গেছে। শুরু হয়ে গেছে সীমান্তে কড়াকড়ি। যুক্তরাজ্য থেকে আয়ারল্যান্ডে মালবাহী গাড়িগুলো ঢুকতে পড়ছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়।
এমন জটিলতার মুখোমুখি তারা আগে কখনো হয়নি। বদলে যাচ্ছে বাণিজ্যবহরের রুট। ব্রেক্সিটের আগে ব্রিটেন-আয়ারল্যান্ড যোগাযোগ ব্যবস্থায় এত জটিলতা ছিল না। এখন ঐ সীমান্ত পার হতে প্রায় ৪৩ রকম কাগজপত্র লাগছে। এ কারণে ব্রিটেন থেকে আসা লরির সংখ্যা আগের চেয়ে কমে যেমন অর্ধেক হয়েছে তেমনি ফ্রান্সগামী হওয়ার পরিমাণ হয়েছে দ্বিগুন। ব্রেক্সিটের আগে ইইউর ট্রাকবহর ব্রিটেনের হাইওয়ে ব্যবহার করে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বন্দরগুলো পার হয়ে ফ্রান্স ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেত।
ব্রিটেনকে ব্যবহার করা হতো একটি তথাকথিত ল্যান্ড ব্রিজ হিসেবে। এখন আর ল্যান্ড ব্রিজ নয় সরাসরি সাগর পথে পণ্য যাচ্ছে ইউরোপে। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিনের দপ্তরের সূত্রমতে এ বছর জানুয়ারিতে ১৭ হাজার ৫০০ ট্রাক ব্রিটেন থেকে আয়ারল্যান্ডে গেছে। ৩৯০টি ফেরিতে ট্রাকগুলো যায়। প্রতিটি ফেরি ৪৫টি ট্রাক বহন করে। এই সংখ্যাটি ২০২০ সালের জানুয়ারির তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানায় ব্রেক্সিটের আগে পণ্য মজুতকরণ, কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ, ইউরোপের সঙ্গে নতুন রুট চালু হওয়া-বিবিধ কারণে ব্রিটেন থেকে মালবাহী ট্রাক আসার পরিমাণ কমেছে। সাম্পতিক সপ্তাহগুলোতে ব্রিটেনকে পাশ কাটিয়ে সমুদ্র পথে আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে পণ্য পরিবহন তিন গুন বেড়ে গেছে। পণ্য সরবরাহের এই রুটটি আগে ছিল ব্রিটেন থেকে ডোভার প্রণালি হয়ে অথবা ইউরোটানেলের মধ্য দিয়ে ফ্রান্স পর্যন্ত।
জেরুজালেমকে ‘দখলকৃত ফিলিস্তিনের এলাকা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ইসরায়েলের পত্রিকা হারেৎজ এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে এমন এক নারী সম্প্রতি পাসপোর্ট নবায়ন করেছেন। তাঁর আগের পাসপোর্টে জন্মস্থান লেখা ছিল জেরুজালেম। কিন্তু নতুন পাসপোর্টে জন্মস্থান লেখা হয়েছে, ‘দখলকৃত ফিলিস্তিনের এলাকা’।
ইসরায়েলের ওই নারীর নাম আয়েলেত বালাবান। নতুন এই পাসপোর্ট প্রসঙ্গে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন কান-এর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। আয়েলেত বলেন, জন্মস্থানের নতুন নাম দেখে তিনি হতবাক হয়েছেন।
আয়েলেত বলেন, ‘আমরা ধারণা ছিল, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ হয়তো বিভ্রান্ত হয়ে এটা করেছে। কারণ আমি গাজা উপত্যকার উদ্বাস্তু ইহুদি মোসাব সম্প্রদায়ের সঙ্গে থাকি।’ তবে সেটি তার জন্মস্থান নয় বলেও জানিয়েছেন এই নারী।
আয়েলেতের এই পাসপোর্ট থেকে এটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ব্রিটিশ সরকার সম্ভবত তাদের নীতিতে পরিবর্তন এনেছে। কারণ দু বছর আগে আয়েলেতের ভাই পাসপোর্ট করেছেন। সেই পাসপোর্টে তার জন্মস্থান জেরুজালেম লেখা আছে। এ ছাড়া আয়েলেত এই বিষয়টি জানতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। একই সঙ্গে জেরুজালেমভিত্তিক ইহুদিদের সংগঠন নাফেশ বি’নাফেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তিনি। দুই পক্ষই এখনো কিছু জানায়নি।
জেরুজালেম নিয়ে সম্প্রতি নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে ইসরায়েল। এই কূটনীতির হাতে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে স্বীকৃতিও এসেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য এ নিয়ে এখনো দ্বিধায় রয়েছে। জেরুজালেমে ব্রিটিশ কনস্যুলেট জেনারেলের ওয়েব সাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, জেরুজালেম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে তারা।
জেরুজালেম প্রসঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের অবস্থান হলো, পশ্চিম জেরুজালেম কার্যত ইসরায়েলের এলাকা। তবে পূর্ব জেরুজালেম ইসরায়েলের দখলকৃত এলাকা।
হজে সাধারণ কাপড় বাদ, আসছে অত্যাধুনিক ইহরাম
বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
হজে সাধারণ কাপড় বাদ, আসছে অত্যাধুনিক ইহরাম
হজ ও ওমরাহর সময় মুসলিমরা যে দুই খণ্ড শ্বেতবস্ত্র পরিধান করেন সেটিকে আমরা ইহরাম নামে চিনি। একেবারেই সাধারণ সেলাইবিহীন ওই সুতি কাপড় পরে হজের আনুষ্ঠানিকতা সারেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। এবার সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক হচ্ছে সেই ইহরাম। তবে নকশায় নয়, মূলত ইহরামের কাপড়ের গঠনশৈলীতে আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন।
দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের খবর অনুসারে, ন্যানোটেকনোলজি সংযুক্ত এবং ব্যাকটেরিয়া-প্রতিরোধী কাপড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে এই ইহরাম।
সৌদি উদ্ভাবক হামাদ আল-ইয়ামি আবিষ্কৃত এবং পাকিস্তানে তৈরি এ ধরনের ইহরাম প্রথম ব্যবহৃত হয় ২০২০ সালে হজের সময়। বলা হচ্ছে, ন্যানোটেকনোলজি সংযুক্ত কাপড়টি ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এটি শতভাগ তুলার সুতো দিয়ে তৈরি এবং ৯০ বারের বেশি ধোয়া যাবে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে তৈরি ইহরামে ব্যবহার্য এই কাপড়ের অনুমোদন দিয়েছে সৌদি স্ট্যান্ডার্ডস, মেট্রোলজি অ্যান্ড কোয়ালিটি অর্গানাইজেশন (এসএএসও)।
খালিজ টাইমসের তথ্যমতে, এবারের হজেও অত্যাধুনিক কাপড়ের ইহরাম ব্যবহৃত হবে এবং ২০৩০ সাল থেকে সাধারণ কাপড়ের বদলে বাণিজ্যিকভাবে এর ব্যবহার শুরু হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে টানা দ্বিতীয় বছর শুধু স্থানীয়দেরই হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে সৌদি আরব। ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের মধ্যে যারা টিকা নিয়েছেন এবং যাদের কোনো গুরুতর অসুখ নেই, এ বছর কেবল তারাই হজের অনুমতি পাবেন। এরপরও সর্বোচ্চ ৬০ হাজার জনকে হজের অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
যুদ্ধবিরতির ২৫ দিনের মাথায় ফের ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা করেছে ইসরায়েল। আজ বুধবার সকাল থেকে হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলার কথা জানিয়েছে তেল আবিব। তাৎক্ষণিক হতাহত মানুষের সংখ্যা জানায় যায়নি। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে গাজা থেকে ডিভাইসযুক্ত গ্যাসীয় বেলুন পাঠানো হয় ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে। ইসরায়েলের ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ওই বেলুনের কারণে সেখানকার বেশ কিছু স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০টির মতো বেলুন গাজা সীমান্তবর্তী এলাকায় ভূপাতিত করা হয়।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা নতুন করে যুদ্ধসহ হামাসের পক্ষ থেকে করা সব ধরনের হামলার বিষয়ে আগের থেকেই প্রস্তুত ছিল। গ্যাসীয় বেলুন পাঠানোর জবাবেই তারা গাজায় এ হামলায় শুরু করেছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের সূত্রগুলো বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ইসরায়েল নতুন এ হামলা গাজার দক্ষিণ প্রান্তের খান ইউনুস শহরের একটি বিশেষ অংশকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল। হামাসের একজন মুখপাত্রও ইসরায়েলি বিমান হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেমে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চালিয়ে যা
এর আগে গত ২১ মে ১১ দিনের যুদ্ধ শেষে দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে গিয়েছিল। গাজা কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, সে সময় ইসরায়েলের হামলায় ৬৬ শিশুসহ ২৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও বহু লোক আহত হয়েছিল। অন্যদিকে হামাসের রকেট হামলায় নিজেদের ১২ নাগরিক নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।
নতুন এ লড়াই শুরুর মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনের নাগরিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের শঙ্কাই সত্যি হলো। এক যুগ ধরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর আসনে থাকা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিদায় নিয়েছেন গত রোববার। তবে ফিলিস্তিন প্রশ্নে অবস্থার কোনো পরিবর্তনের আশা দেখা গেল না। ক্ষমতায় আসতে না আসতেই হয়তো নিজের জানানটাই দিতে যাচ্ছেন আরও কট্টর ডানপন্থী ইহুদি নেতা নাফতালি বেনেট।
চ্যাম্পিয়নদের ইউরো মিশন শুরু হচ্ছে আজ (মঙ্গলবার) থেকে। ফেরেঙ্ক পুসকাস স্টেডিয়ামে হাঙ্গেরির মুখোমুখি হচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। আয়ারল্যান্ড সময় বিকেল চারটায় আর বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় শুরু হবে ম্যাচটি।
দুই দলের মধ্যে শক্তিমত্তার ব্যবধান স্পষ্ট। পর্তুগাল যেখানে ফিফা র্যাংকিংয়ে ৬ নম্বরে, হাঙ্গেরির অবস্থান ৫২তম। পর্তুগালের জন্য তাই টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরো জয়ের মিশনটা শুরু হচ্ছে অনেকটাই ভারমুক্ত হয়ে।
স্বভাবতই পর্তুগালের ম্যাচে সবটুকু আলো দলটির তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দিকে। সেই আগ্রহও ইউরোর প্রথম ম্যাচের চেয়ে বেশি জুভেন্টাসে তার থাকা না থাকা নিয়ে।
ইউরোর আবহেও সংবাদ সম্মেলনে ৩৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, জুভেন্টাসে তার ভবিষ্যৎ কী? জবাবে রোনালদোর পরিষ্কার কথা, ইউরো ছাড়া এখন কিছুই ভাবছেন না।
রোনালদো বলেন, ‘ইউরো এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। পাঁচ নম্বর ইউরো খেলতে নামলেও মনে হচ্ছে প্রথমবার নামছি। তাই ভালোভাবে শুরু করতে চাই। প্রথম থেকে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত ভালোভাবে খেলতে চাই।’
এবারের ইউরোতে রোনালদোর সামনে রেকর্ড ছোঁয়ার হাতছানি। আর ৫টা গোল করলেই আন্তর্জাতিক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক হবেন তিনি। যদিও এসব রেকর্ড নিয়ে ভাবছেন না সিআরসেভেন।
রোনালদো বলেন, ‘রেকর্ড নিয়ে খুব একটা ভাবছি না। টানা দু’বার ইউরো জয় বেশি মধুর হবে আমার কাছে। ২০১৬-র দলের থেকে অনেকটাই আলাদা এবারের পর্তুগাল। অনেক যুব ফুটবলার রয়েছে এই দলে। প্রতিযোগিতায় কেমন খেলব, তা প্রমাণ করে দেবে কোন দলটা ভালো।’
নায়িকা পরীমনির মতো ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের পরিবারের সৌভাগ্য হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিলের ওপর সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুমিন বলেন, ‘
কোথায় মামলা করবো? কার কাছে মামলা করবো? কার কাছে অভিযোগ করব? কেউ তো জিডি নিতে রাজি হচ্ছেন না, কথাটি বলছিলেন ত্ব-হার (আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান) স্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন এবং তার সঙ্গে আরও তিন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নাই।
তিনি বলেন, একই সময় একই ধরনের অভিযোগ করতে দেখেছি নায়িকা পরীমনিকে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিনি ভাগ্যবতী। কারণ তার মামলা নেয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি ত্ব-হার পরিবারের।
‘সেই সৌভাগ্য হয়নি বাংলাদেশের আরও ৬০৪টি পরিবারের। যারা দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ। তাদের ব্যাপারে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু বলছে, না লোকাল পুলিশ স্টেশন কিছু বলতে পারছে।’
বিএনপির এই এমপি বলেন, সরকার যখন বলছে তারা পরকীয়ার টানে চলে গেছে, ঋণের বোঝা আছে, পারিবারিক কলহের জেরে চলে গেছে। তখন ২০১৯ সালের এপ্রিলে ফ্রান্সভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এফআইডিএইচ বলছে, গুমের এই ঘটনাগুলো বিক্ষিপ্ত, বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এগুলো যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করে, তাদের সমন্বিত কৌশলের অংশ। এই ঘটনাগুলো নিয়মতান্ত্রিক ও রাষ্ট্রীয় নীতিমালার পরিপন্থি। এফআইডিএইচ বলছে যেহেতু বেশিরভাগ ভুক্তভোগীকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে টার্গেট করা হয়, তাই কাজগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ। অর্থাৎ গুমকে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলছে।
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব অভিযোগগুলো তদন্ত করা। তদন্তের ভিত্তিতে তারা কোথায় হারিয়ে গিয়েছে সেটা বের করা। বারবার বলা হয় বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে এই অর্থে যে, যখন কোনো ব্যক্তিকে গুম করা হয়, তার পরিবার পায় না, তখন বলে আমার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। তার মানে সরকারি দল না করলে সরকারি মতের সঙ্গে না মিললেই সে হাওয়া হয়ে যেতে পারে, নাই হয়ে যেতে পারে, এটাই বিরাজনীতিকরণ।
প্রসঙ্গত রংপুরে ওয়াজ মাহফিল শেষে ঢাকার বাসায় ফেরার পথে আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান নিখোঁজ হয়েছেন বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। এছাড়াও তার সঙ্গে নিখোঁজ হয়েছেন আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দীন। ১৩ জুন থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছেন।
ত্ব-হার নিখোঁজ হবার তথ্য জানিয়ে দারুসসালাম এবং মিরপুর থানায় গেলে কোন থানাই সাধারণ ডায়েরি বা মামলা গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ করছেন তার পরিবার। এ নিয়ে সর্বশেষ রংপুর সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
এ বছরও শুধুমাত্র স্থানীয়দের হজ করার অনুমতি দেবে সৌদি আরব, বিদেশীরা যেতে পারবেন না।
ব্যয়সাপেক্ষ, হজব্রত পালনের জন্য দৈহিকভাবে সক্ষম হতে হয় এবং শক্ত-সামর্থ মুসলমানদের জীবদ্দশায় তা আবশ্যকীয় বলে ধার্য করা হয়েছেI
সৌদি আরব, শনিবার ঘোষণা করেছে এ বছর শুধুমাত্র স্থানীয় লোকজন হজ্জ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং কভিড মহামারীর কারণে তা ৬০,০০০ এ সীমাবদ্ধ রাখা হবেI
সৌদি আরবের হজ্জ ও উমরাহ মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে জুলাই মাসের মাঝামাঝি অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিক হজ্জ পালন অনুষ্ঠানে ১৬ থেকে ৬৫ বছর বয়সীরা অংশ নেবেনI হজ্জ দপ্তর জানায় অংশগ্রহণকারীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের কাগজপত্র দেখাতে হবেI
এক বিবৃতিতে হজ্জ দপ্তর জানায়, প্রতি বছর সৌদি আরব পূর্ণার্থীদের স্বাগত জানিয়ে থাকেI তবে স্বাস্থ্য, পূর্ণার্থীদের নিরাপত্তা এবং তাদের দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে, এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেI
প্রতি বছর, আনুমানিক ২০ লক্ষ মুসলমান হজ্জ পালন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মক্কা সফর করেনI ব্যয়সাপেক্ষ, হজব্রত পালনের জন্য দৈহিকভাবে সক্ষম হতে হয় এবং শক্ত-সামর্থ মুসলমানদের জীবদ্দশায় তা আবশ্যকীয় বলে ধার্য করা হয়েছেI
আগামী ২১ জুন চলমান লকডাউন তুলে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল ইংল্যান্ড সরকারের। কিন্তু দেশটির সিনিয়র মন্ত্রীরা লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেছেন। সরকারের একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, লকডাউনের চলমান বিধিনিষেধ ২১ জুনের পর আরও চার সপ্তাহ বহাল থাকবে।
এই সিদ্ধান্তের অর্থ হলো ইংল্যান্ডে নাইটক্লাবগুলো বন্ধই থাকবে এবং যেখানে যেখানে সম্ভব সেখানে নাগরিকরা বাড়ি থেকে অফিস করবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সংবাদ সম্মেলনে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন। লকডাউন বাড়ানোর ইঙ্গিত তিনি গতকাল রোববারও দিয়েছেন। তিনি গতকাল জানান, সবকিছু খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, লকডাউন বাড়ানো হলে দেশটিতে চলমান টিকাদান কর্মসূচিতে বড় সাফল্য আসবে। সে কারণে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনও লকডাউন বাড়ানোর ব্যাপারে জনস্বাস্থ্যবিদদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।
সাবেক কনসারভেটিভ কেবিনেট মিনিস্টার ডামিয়ান গ্রিন বলেন, ‘আমি মনে করি লকডাউন দেরিতে তুলে নেয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করা যেতে পারে। যদি আরও এক মাস লকডাউন বাড়ানো হয় এবং দুই বা তিন সপ্তাহ পর যদি দেখা যায় লোকজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে না, সেক্ষেত্রে আগে লকডাউন তুলে নেয়া যেতে পারে।’
এর আগে রোববার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, ‘বিধিনিষেধ নিয়ে সরকার ছেলেখেলা করতে চায় না। লকডাউন তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে সংক্রমণ এবং হাসপাতালে রোগী ভর্তির পরিসংখ্যানের ওপর।’
সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত সংক্রমণ হার নতুন করে ভাবাচ্ছে ব্রিটিশ প্রশাসনকে। সে কারণেই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর চিন্তা করছে ব্রিটিশ সরকার।
রংপুর মেডিকেলে মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে মার খেলেন দুই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী তাঁদের অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে কর্মচারীদের হাতে মার খেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জরুরি বিভাগে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার রসিদ চাওয়ায় মারধর করা হয় বলে তাঁদের অভিযোগ। গতকাল শুক্রবার রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারপিটের শিকার দুই শিক্ষার্থী হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল করিম রিয়াদ ও তাঁর ছোট ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদ করিম।
এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী হাসপাতালে যান এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। রাতেই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। সবাই এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল করিমের ভাষ্য, মায়ের চিকিৎসার জন্য ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। জরুরি বিভাগে ভর্তির ৩০ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা নেওয়া হলে সেই অতিরিক্ত টাকার রসিদ চান তাঁরা। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছোট ভাই রাশেদ করিম মুঠোফোন দিয়ে ছবি তুললে তাঁকেও মারধর করা হয়। সেই সঙ্গে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেওয়া হলেও পরবর্তী সময়ে ফেরত দেওয়া হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাতজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। আর বাকি আটজন করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে রাজশাহীর সর্বোচ্চ আটজন মারা গেছেন। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয়জন ও নাটোরের একজন রয়েছেন। আজ শুক্রবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা হাসপাতালের প্রতিদিনের করোনাবিষয়ক তথ্যাবলি প্রতিদিন সকাল ১০টায় প্রেস ব্রিফিং করে জানাবে। আজ শুক্রবার সব মিলিয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৭১ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ২৯৭ জন।
জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এক দিনে প্রথম সর্বোচ্চ ১০ জনের মৃত্যু ঘটে। তবে ৪ জুন হাসপাতালে সর্বোচ্চ ১৬ জনের মৃত্যু ঘটেছিল।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত হাসপাতালে করোনা ও এর উপসর্গে মারা গেছেন মোট ১৫৭ জন। এর মধ্যে করোনায় সংক্রমিত ছিলেন ৮৩ জন। অন্যরা করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ মে ১০ জন, ২৫ মে ৪ জন, ২৬ মে ৪ জন, ২৭ মে ৪ জন, ২৮ মে ৯ জন, ৩০ মে সর্বোচ্চ ১২ জন, ৩১ মে ৪ জন, ১ জুন ৭ জন, ২ জুন ৭ জন, ৩ জুন ৯ জন, ৪ জুন ১৬ জন, ৫ জুন ৮ জন, ৬ জুন ৬ জন, ৭ জুন ৭ জন, ৮ জুন ৮ জন, ৯ জুন ৮ জন, ১০ জুন ১২ জন ও সবশেষ আজ মারা গেলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ জন।
ইতালির তুরিনো শহরে মোহাম্মদ ইব্রাহিম (২৫) নামে এক বাংলাদেশির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাতে তুরিনোর করসো ফ্রান্সিয়া রোডে একটি ভবনের তৃতীয় তলা থেকে ওই বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, ঘটনার দিন ইব্রাহিমের এক রুমমেট কাজ শেষে বাসায় ফিরে এসে মেজেতে পড়ে থাকা লাশটি দেখে থানায় ফোন দিলে পুলিশ এসে তা লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার দিন বাসায় কেউ ছিল না।
রুমমেটরা কাজে চলে যান। ওই দিন ইব্রাহিমের ছুটি ছিল। এই ফাঁকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে পালিয়ে যায়।
পুলিশের ধারণা, ডাকাতির উদ্দেশ্যে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার পর এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘটনে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
ইব্রাহিম তুরিনোর একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি কোথায় জানা যায়নি।
৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিবন্ধকরণ আগামী সপ্তাহ থেকে।
৩০-৩৯ বছর বয়সীদের যারা আগমী সপ্তাহে তাদের কোভিড -১৯ টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে বলে বলা হচ্ছে যদিও টিকা সরবরাহের অভাবের কারনে টিকা দান প্রোগ্রামটি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এবং এটি প্রত্যাশিত বটে।
বুধবারের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে মন্ত্রীরা টিকাদানের অগ্রগতি সম্পর্কে আপডেট দিয়েছেন এবং তারা জানিয়েছেন যে টিকা দান প্রোগ্রামটি এগিয়ে নিতে দেশের ফার্মেসীগুলি শিগগিরই জনসন অ্যান্ড জনসন (জেএন্ডজে) ভ্যাকসিন পরিচালনা শুরু করবে এবং যারা টিকাদান কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে বসবাস করে তাদের ফাইজার টিকা দানের মাধ্যমে এই কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করা হবে।
HSE আশা করছে যে এই সপ্তাহে ২৫০, ০০০-২৮০, ০০০ এর মধ্যে ভ্যাকসিন ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে এ সপ্তাহে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০,০০০ গর্ভবতী মহিলাকে (১৪ থেকে ৩৬ সপ্তহ গর্ভবতী ) ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
ট্র্যাভেলার্স এবং রোমা সম্প্রদায়ের মতো “সামাজিকভাবে দুর্বল” হিসাবে গন্য জনগোষ্ঠীগুলিকেও GP বা ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলির মাধ্যমে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হচ্ছে, আবার কারাগারেও এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
তবে টিকাদান কর্মসূচিটি এখন পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে ৪০০,০০০ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যায় পৌছাতে পারে নি – যা মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা গত মাসে আশা করেছিলেন, যদিও সরকারের একটি সূত্র আশা করে যে জুনের দ্বিতীয়ার্ধে এই স্তরে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সফরের জন্য প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে অসিদের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে আগস্টের শুরুতে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসবে অস্ট্রেলিয়া।
ঢাকা সফরের আগে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে ২৮ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবে অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশ সফরকে ভাবনায় রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য আগেই ঘোষিত ২৩ জনের প্রাথমিক দলে মঙ্গলবার আরও ছয় ক্রিকেটার যোগ করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা ওয়েস অ্যাগার ও নাথান এলিসের সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন বছর পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন ৩৮ বছর বয়সি অলরাউন্ডার ড্যান ক্রিস্টিয়ান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ সফরের জন্য ঘোষিত ২৯ সদস্যের বর্ধিত প্রাথমিক দলে নতুন করে ডাক পাওয়া বাকি তিনজন ক্রিকেটার হলেন ক্যামেরন গ্রিন, বেন ম্যাকডারমট ও অ্যাশটন টানার।
অ্যারন ফিঞ্চ, স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের মতো সব চেনা মুখ দলে থাকলেও ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে ব্যস্ত থাকায় মারনাস লাবুশেনকে বর্ধিত দলেও রাখেনি অস্ট্রেলিয়া।
কানাডায় হেট ক্রাইমের শিকার হলেন মুসলিম পরিবারের চার সদস্য। অন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কানাডায় ইসলামোফোবিয়ার স্থান নেই।
রোববার রাতে পরিবারের সবাই প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। বাবা, মা, মেয়ে, ছেলে এবং নানি। এমন সময় একটি ‘ট্রাক এসে তাদের ধাক্কা মারে। পুলিশ জানিয়েছে, যে ব্যক্তি ট্রাক চালাচ্ছিলেন, তিনি ইচ্ছে করে এবং হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে এই পরিবারকে ধাক্কা মেরেছে।
নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী রয়েছেন। তাদের একজনের বয়স ৭৪ বছর এবং অপরজনের বয়স ৪৬ বছর। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ১৫ বছর বয়সী একটি মেয়ে এবং ৪৬ বছর বয়সী একজন পুরুষ রয়েছেন।
বাম এর শিশুটি ছাড়া সবাই এখন মৃত
পুলিশ বলছে ধারণা করা হচ্ছে, যারা মারা গেছেন তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে এই হামলা করা হয়েছে।
এই হামলায় অভিযুক্ত ২০ বছর বয়সী কানাডিয়ান এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে একটি শপিং সেন্টার থেকে তাকে আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত যুবক কোন মুসলিম বিদ্বেষী গ্রুপের সাথে সম্পৃক্ত কি না সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।
এই ঘটনার পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, এই ঘটনায় তিনি আতঙ্কিত হয়েছেন। যারা এই ঘটনার শিকার হয়েছে তাদের পরিবারের সাথে তিনি আছেন বলে উল্লেখ করেন মি. ট্রুডো।
তিনি আরো বলেন ”আমি লন্ডন এবং দেশের সব ”আমি লন্ডন এবং দেশের সব মুসলিমকে জানাচ্ছি, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমাদের দেশে ইসলামোফোবিয়ার কোনো স্থান নেই। এবং এই ধরনের ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কুইবেক শহরের মসজিদে এক হামলায় ছয়জনকে হত্যা করা হয়েছিল।
গত ২৫ মে আমার বড়ো মেয়ের জন্মদিন গেলো। চৌদ্দ বছরে পদার্পণ করলো। চৌদ্দ বছর আগের এ দিনে রৌদ্রস্নাত সকালে তার জন্ম হয়। প্রথম সন্তানের বাবা হিসেবে একটু বেশিই পুলকিত হয়েছিলাম। “বাবা” কি জিনিস তা আমি প্রথম উপলব্ধি করেছিলাম যেদিন আমার বাবার মৃত্যুসংবাদ শুনি। পুরো পৃথিবী শূন্য মনে হয়েছিলো। অমাবস্যার গাঢ় অন্ধকার নেমে এসেছিলো আমার চোখের পাতায়। ফোটা ফোটা বেদনাশ্রুর মাঝে সেদিন খুঁজে পেয়েছিলাম “বাবা” শব্দটির মর্মার্থ। আবার যেদিন আমার মেয়ের জন্ম হলো সেদিনও “বাবা” শব্দের অর্থ খুঁজে পাই। সন্তানের প্রতি বাবার দায়িত্ব ও মমত্ববোধ টের পাই। একদিন বাবাকে হারিয়ে বেদনাশ্রুর মাঝে, অন্যদিন নিজে বাবা হয়ে পিতৃত্বের গৌরবময় আনন্দাশ্রুর মাঝে বাবার স্বরূপ খুঁজে পাই।
বাবা কে বা বাবার স্বরূপ বলতে কি বুঝায়? বাবা কি কেবল সন্তান জন্ম দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে থাকেন? নিশ্চয়ই না। বরং সন্তানকে লালন পালন করা, ভরণপোষণ করা, সন্তানের নাক মুখ ফুটিয়ে তোলার জন্য যা যা করনীয় তাই করেন বাবা। এমনকি রক্ত বিক্রির প্রয়োজন হলে তাই করেন তিনি নির্দ্বিধায়। নিজে না খেয়ে, না পরে সন্তানকে খেতে ও পরতে দেন। নিজে ছেঁড়া কাপড়ে দিনাতিপাত করলেও সন্তানকে সাহেবী পোশাক কিনে দিতে যতোই কষ্ট হোক কৃপনতা করেননা। নিজে ওষুধ না কিনে সন্তানকে হরলিক্সের পয়সা দেন। মাসের বেতনটা নিজ চোখে দেখার আগেই সন্তানের হাতে তুলে দেন। সংসারের অন্য চাহিদা কিভাবে মেটাবেন সে চিন্তা কখনো বাবা করেননা। সন্তানের আবদার, চাহিদা মেটানোর মাঝেই যেনো বাবা তৃপ্তি বা সার্থকতা খুঁজে পান।
এবার মা’র কথায় আসি। বাবা সংসার চালান, ছেলেমেয়েদের আর্থিক চাহিদা মেটান, জীবন লুটিয়ে দেন সবই ঠিক আছে। এরপরও মা’র ত্যাগ তিতিক্ষার কাছে এসব তুচ্ছ। এ জন্যই আমাদের প্রিয় নবী মা’র কথা তিনবার বলার পর বাবার কথা একবার বলেছেন। মা শুধু দশ মাস দশ দিন গর্ভেই ধারণ করেননা, জীবন বাজি রেখে সন্তানের জন্ম দেন। বুকের দুধ খাইয়ে তাদের রক্তমাংস গড়ে তুলেন। সন্তানের কিছু হলে মা পাগল হয়ে যান। সন্তানের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন বিলিয়ে দিতেও কুন্ঠাবোধ করেননা। কথিত আছে, স্ত্রীর কথায় ছেলে মাকে বনবাস দেয়। মাকে জঙ্গলে ফেলে আসার সময় আকাশের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে। ঝড়তুফানের স্পষ্ট পূর্বাভাস। রাস্তায় ছেলের বিপদ হতে পারে ভেবে মা আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করলেন যেনো তাঁর ছেলে সহিসালামতে বাড়ি পৌঁছতে পারে। নিজে জঙ্গলে একা একা মারা যাবেন সেই ভাবনা তাঁকে তাড়িত করেনি। মা যখন আল্লাহর কাছে এ ফরিয়াদ করেন ছেলের কানে তা বাজে। মা’র এমন মহানুভবতা ও উদারতায় ছেলের ভুল ভাঙ্গে। মায়ের পদতলে এসে ক্ষমা ভিক্ষা চায়। মা তাকে ক্ষমা করে দেন।
মায়েরা এমনই। সহজেই ক্ষমা করে দেন। কখনো সন্তানকে অভিশাপ দেননা। তবে তাদের অভিশাপ দিতে হয়না। তাদের আদেশ উপদেশ অমান্য করাই অভিশাপ। তাদের অন্তরে বিন্দু পরিমাণ আঘাতের আচর লাগানোই অভিশাপ। এই অভিশাপে কেউ পুড়ে মরে, কেউ বা আবার আশীর্বাদে বায়েজিদ বোস্তামি কিংবা ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর হয়।
কিছুদিন আগে মা দিবস গেলো। সামাজিক মাধ্যমে বেশ উচ্ছ্বস পরিলক্ষিত হলো। আবার যখন বাবা দিবস আসবে তখন হয়তো একই চিত্র দেখা যাবে। বিশেষ দিবস গুলোতে বাবা মা”র প্রতি যে দরদ, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের বহিপ্রর্কাশ ঘটে তার এক দশমাংশও যদি বাস্তবে প্রতিফলিত হতো তবে পৃথিবীটা আরও বেশি সুন্দর ও সুখকর হতো। দেশে যে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠছে তারও কোন প্রয়োজন হতোনা।
আমি অবাক হই যখন দেখি আমাদের মধ্যে যারা শিক্ষিত, যারা জ্ঞানগরিমার বড়াই করে বেড়ায় তাদেরই একটা বড় অংশ মা বাবাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অবহেলা, অনাদর ও অশ্রদ্ধা করে থাকে। এ ধরনের অসংখ্য উদাহরণ আমাদের চোখের সামনেই ভেসে বেড়াচ্ছে। কিছুদিন আগেও যে এক বিসিএস কর্মকর্তা তার মাকে কমলাপুর স্টেশনে ফেলে গিয়েছিলো তা বেশ কয়েকটি পত্রিকায় ছাপা হয়। আবার এমন অনেক পন্ডিত ব্যাক্তিবর্গ আছেন যারা মুখে ধর্মের বুলি আওড়ান, সময় সময় কোরআন হাদিসের সবক দান করে সামাজিক মাধ্যমের চিত্ত গরম করে তুলেন তারাও মা বাবাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে কুণ্ঠিত হননা। মা বাবার অবাধ্য হওয়াকে কোনো কঠিন পাপ মনে করেননা। বরং আপাদমস্তক শরিয়তের তকমাধারী হিসেবে নিজেদেরকে তারা বেহেশতের বাদশাহ হিসেবে ভাবেন।
মা বাবাকে অমান্য করে, মা বাবার বুকে বিষতীর ছুঁড়ে বেহেশত তো দূরের কথা, হাবিয়া দোজখে জায়গা মেলবে কিনা সেটাই ভাববার বিষয়। যাদের অছিলাতে এ পৃথিবীতে আসা, এ পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধ উপলব্ধি করা সম্ভব হয়েছে, যারা জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগতিতিক্ষা করে শুধুমাত্র সন্তানের সুখের জন্য, যাদের ‘উফ” উচ্চারণে আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে, নিজের গায়ের চামড়া দিয়ে জুতো বানিয়ে দিলেও যাদের ঋণ শোধ হবার নয় সেই মা বাবার মনে আঘাত দিয়ে, তাদের রাতের ঘুমকে হারাম করে দিয়ে যদি কেউ ইবাদতের ঝান্ডা হাতে নিয়ে দৌড়ে বেড়ায় তবে কি তার সে ইবাদত “ইবাদত” বলে গন্য হবে? আল্লাহর দরবারে কি তা কবুল হবে? মা বাবার আদেশ পালনই যেখানে বড়ো ইবাদত, সে ইবাদতকে বাদ দিয়ে কেউ কি ইহলৌকিক ও পারলৌকিক শান্তি পেতে পারে?
মা বাবার প্রতি আনুগত্যহীন কোনো ব্যাক্তি যতোই ধর্মের গান গাক সে কখনো প্রকৃত ধার্মিক হতে পারেনা। সে হয় বকধার্মিক। এসব বকধার্মিকরা নিজেদের প্রয়োজনে ধর্মকে ইচ্ছে মাফিক ব্যবহার করে থাকে। নিজেদেরকে বেহেশতের ঠিকাদার হিসেবে জাহির করে। জাহিরকৃত এ ঠিকাদারদের উদ্দেশ্যে আমি তাই বলতে চাই, বেহেশত আল্লাহর আসমানে নেই, আরশেও নেই। বেহেশত আছে মা বাবার হাসিমাখা বদনে, আছে তাদের পদতলে।
কোপা আমেরিকা ফুটবল টুর্নামেন্ট হবার কথা ছিল গত বছর, কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে তা রহিত হয়। কিন্তু এই বছরও আর্জেন্টিনায় কোপা আমেরিকা হবার কথা থাকলেও, শেষ মুহূর্তে এসে শিকে ছিঁড়ল। আর্জেন্টিনায় করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে আর্জেন্টিনা শেষ মুহূর্তে এসে তা স্থগিত করে।
গত বছরের টুর্নামেন্ট এ বছরের জুনে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে এটি আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার যৌথ আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু ২০ মে কলম্বিয়াকে তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আয়োজক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আয়োজক হিসেবে বিকল্প দেশ খোঁজা হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হল ব্রাজিল। শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলেই হতে যাচ্ছে ২০২০ এর অমীমাংসিত কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্ট.
বুধবার এক বিবৃতিতে কোপা আমেরিকার পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ করেছে মহাদেশটির সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল।
উদ্বোধনী ম্যাচ হবে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় অনুসারে আগামী ১৪ জুন রাত তিনটায় পরস্পরকে মোকাবিলা করবে ব্রাজিল ও ভেনেজুয়েলা। ১১ জুলাই ফাইনাল হবে বিখ্যাত মারকানা স্টেডিয়ামে। গতবার এই মাঠেই পেরুকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আয়োজক সেলেসাওরা।
যুক্তরাজ্যে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মরত বাংলাদেশি চিকিৎসক তাসনিম জারাকে ‘ভ্যাক্সিন লুমিনারি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। গতকাল বুধবার জি-৭ গ্লোবাল ভ্যাক্সিন কনফিডেন্স সামিটে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। তিনি ইংল্যান্ডে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা খাতে (এনএইচএস) কর্মরত।
জি-৭ প্রেসিডেন্সিতে ব্রিটিশ সরকার প্রথমবারের মতো এ ধরনের ইভেন্ট আহ্বান করে। এতে টিকার বিষয়ে আস্থা গড়ে তোলা এবং তা রক্ষায় সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিশ্বজুড়ে যেসব বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন তাদেরকে একত্রিত করা হয়।
ডা. তাসনিম জারা ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডে একজন পোস্টগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী।
এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘যদিও আমাকে ব্রিটেনের পক্ষ থেকে বিশ্ব মানচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে, তবু আমি বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষদের বেশি সেবা দিয়েছি। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে আমাকে ভ্যাক্সিন লুমিনারি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ফলে এই প্লাটফর্মে বিশ্বের অন্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি গর্বিত।’
‘দ্য লুমিনারিস’ শিরোনামে ব্রিটিশ সরকার এবং পিপলস পিকচারের অংশগ্রহণে সৃষ্ট একটি ফটো মোজাইক অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করে এতে বিশ্বের অন্য ‘ভ্যাক্সিন লুমিনারিস’কে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এসব ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে টিকার পক্ষে আস্থা তৈরিতে কাজ করেছেন।
করোনার মহাপ্রলয়ে ভারতের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে যেমন মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে তেমন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খাদের কিনারায় এনে দাঁড় করিয়েছে। বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমে তার নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। গত সাত বছরে মোদি যেভাবে বুক উচু করে বিশ্ব চষে বেড়িয়েছেন সেই মোদি আজ চরম নাস্তানাবুদ হয়েছেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে । বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার মোদির ভাবমুর্তি পতন ঘটেছে অনেক নিববে, অনেক সুস্পষ্টভাবে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের ভয়াবহ করোনা সংকটের কারণে ভারতের ভাবমূর্তি যে তলানিতে ঠেকেছে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।
সম্প্রতি ব্রিটেনের সানডে টাইমস এমন একটি শিরোনাম করেছে, যার নাম ছিল: ভারতকে লকডাউন থেকে বের করে মোদি কোভিড কেয়ামতের দিকে নিয়ে গেলেন। ভারতের মত বিশ্বের এত বড় একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এই ধরণের শিরোনাম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইতিপূর্বে আর কখনও হয়নি। বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটের সম্পাদকীয়তেও মোদি সরকারের নজিরবিহীন সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘জাতীয় বিপর্যয় ডেকে আনার জন্য মোদির নেতৃত্বই দায়ী। সংকটের সময় তিনি যা করেছেন তাতে মনে হয়েছে, কোভিডের মোকাবিলার চেয়ে টুইটারের সমালোচনা মুছতেই তার ব্যগ্রতা বেশি। তার এই অপরাধ অমার্জনীয়।’
বিবিসি, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস, আল-জাজিরাসহ বিশ্বের অন্যান্য গণমাধ্যমেও এভাবেই মোদিকে তুলোধুনো করা হয়েছে। অথচ এর আগে এসব গণমাধ্যম মোদির চলমান হিন্দুত্ববাদী নীতির সমালোচনা করলেও তার শাসনব্যবস্থা নিয়ে তেমন প্রশ্ন তোলেনি। বরং মোদির নেতৃত্বে ভারতের অগ্রসরমান অর্থনীতির প্রশংসা করা হত এই সব গণমাধ্যমে। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে ভারতের চলমান কোভিড বিপর্যয়ের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে মোদিকেই দায়ী করা হচ্ছে। অথচ এর আগে নরেন্দ্র মোদি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে একজন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে তুলে ধরেছেন। কিন্তু করোনা সংকটে তার এই ভাবমূর্তি ভেঙ্গে পড়েছে।
বৃটিশ ত্যাগের পর স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় এই বিপযর্য় শুধু স্বাস্থ্য খাতেই নয়, দেশটির অর্থনীতিও ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সারি সারি লাশের মাতমে ভারতীয়দের নাগরিক জীবনে বিরাজমান ছিল শোকের ছায়া। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১৯৫২ সালের পর সবচেয়ে বেশি সংকুচিত হয়েছে। দেশটির ২৩ কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র সীমার নীচে নেমে গেছেন। ভারতীয় অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন করোনা সংকটের কারণে দেশটি অনেক বছর পিছিয়ে গেছে।
এর ফলে রাজনৈতিকভাবেও চরম বিপদে পড়েছেন মোদি। বহুমুখি আক্রমনে তিনি অসহায়। মোদি সরকারের প্রতি রাষ্ট্রের আস্থা এতটাই তলানিতে ঠেকেছে যে অক্সিজেন সংকট কাটাতে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করতে বাধ্য হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অনাস্থারই নামান্তর। কভিড সংকট নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি যেভাবে মোদি সরকারকে চোখ রাঙানি দেখিয়েছে তা কিছুদিন আগেও ছিল অচিন্ত্যনীয়। এতে বোঝা যাচ্ছে যে রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর মোদির লাগাম দিনদিনই আলগা হয়ে পড়েছে।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশের বেসামাল হওয়ায় নিয়ে রাগ, ক্ষোভ, হতাশা রয়েছে ৬১ শতাংশ ভারতীয়র। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। এ ছাড়া ৪৫ শতাংশ মনে করেন সংক্রমণ ঠেকাতে দেশ যে কৌশল নিয়েছে তা ভুল। অথচ করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর মোদির জনসমর্থন ৮০ ভাগের ওপরে উঠেছিল।
ফরেন পলিসির এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, মোদি যে আত্মনির্ভর ভারতের স্লোগান কপচাতেন তাও এখন একটা ফাঁকা বুলিতে পরিণত হয়েছে। দেড় দশক পর এই প্রথম ভারত বিদেশি সাহায্যের জন্য হাত পেতেছে। সংকট নিরসনে বাংলাদেশসহ ৪০টি দেশ ভারতকে সহায়তা দিয়েছে।
অচিন্তনীয় এই সংকট মোদিকে নিদারুণ উপহাসের পাত্র করে তুলেছে। মহারাষ্ট্রের শিবসেনাও কটাক্ষ করে বলেছে, ‘মোদির ভারত এতটাই আত্মনির্ভর যে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কাকেও আজ সাহায্যের হাত বাড়াতে হচ্ছে!’ কংগ্রেসের গুণগান করে শিবসেনার মুখপত্র সামনা লিখেছে, ‘৭০ বছর ধরে নেহরু-গান্ধীর দল যে ব্যবস্থা তৈরি করে গেছে, দেশ বেঁচে রয়েছে তারই বদৌলতে।’
এই বিপদের পাশাপাশি মোদি-শাহ জুটির এ যাবৎ নির্মেঘ আকাশে ছেয়েছে রাজনৈতিক হতাশাও। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে জোড়া ধাক্কায় বিজেপি কাত হয়ে পড়েছে উত্তর প্রদেশেও। তার ঠিক আগেই হতাশ করেছে কর্ণাটক পৌরসভার ভোট। স্বশাসিত সেই রাজ্যের ১০টি বড় শহরের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে মাত্র একটি। ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠে ছয়টি দখল করেছে কংগ্রেস।
বিজেপি মুসলিমবিরোধী নেতা যোগী আদিত্যনাথের শাসিত উত্তর প্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটে শীর্ষে উঠে এসেছে সমাজবাদী পার্টি। জেলা পরিষদের মোট ৩ হাজার আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে মাত্র এক–চতুর্থাংশ। মাত্র সাত মাস পরই উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব ও উত্তরাখন্ড বিধানসভার ভোট। কৃষক আন্দোলন ও করোনায় লেজেগোবর হওয়া বিজেপি তিন রাজ্যেই প্রমাদ গুনতে শুরু করেছে।
ভারতীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মিলন বৈষ্ণব বিবিসিকে বলেছেন, মোদির দক্ষতা নিয়ে অনেক মানুষই এখন প্রশ্ন তুলছেন। সমস্যা মোকাবেলায় মোদি সরকার যে কেবল অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে তারা সংকটকে আরও গুরুতর দিকে নিয়ে যেতে ভূমিকা রেখেছে।
স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্লারি বলেন, মোদির জাতীয়তাবাদী ঝোঁকের সঙ্গে একধরণের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনার একটি ছবি সবসময় বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সামনে তুলে ধরা হতো। কিন্তু কোভিড সংকটে এই সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা একেবারেই অনুপস্থিত ছিল। মোদীর জীবনী-লেখক এবং সাংবাদিক নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, গুজরাটে মোদীর দ্যুতি দেখে সবাই মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন। আমি নিজেও এই ভুল করেছি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মোদির বর্মতে যে আসলে অনেক ছিদ্র, সেটা এই সংকটে প্রকাশ পেয়েছে। তারা বলছেন, যে ধরণের এককেন্দ্রিক স্টাইলে তিনি দেশ চালান সেটা বেশ ফাঁপা বলে মনে হচ্ছে। মোদি ভারতকে একটি পরাশক্তিতে পরিণত করার অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু এখন ভারতীয়রা দেখছেন থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশও কোভিডের বিরুদ্ধে অনেক ভালোভাবে লড়াই করছে। পরাশক্তি হবার মেখী স্বপ্ন মোদির রয়েই যাবে।
বিদেশে থাকা ভারতীয়রা এখন খুবই বিব্রত। বন্ধুদের কাছে যে দেশটিকে তারা এক উদীয়মান শক্তি বলে তুলে ধরেছিলেন, সেই দেশটিকে এখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যেভাবে দেখানো হচ্ছে সেটা নিয়ে লজ্জায় তাদের মাথা হেট হয়ে যাচ্ছে।
এই বিপর্যয়ের সময় মোদি যে সবকিছুতে অনুপস্থিত, সেটাও বেশ ভালোভাবেই ধরা পড়ছে। গত ২০ এপ্রিলের পর থেকে মোদি দৃশ্যত লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেছেন। অথচ ভারতের প্রতিদিন করোনায় মারা যাচ্ছে অন্তত হাজার হাজার মানুষ। অনেকে বলছেন, এই সংখ্যা আসলে কয়েকগুণ বেশি।
মোদির ব্যর্থতার সমালোচনা করে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের কভিড -১৯ টাস্কফোর্স কয়েক মাসে বৈঠকে মিলিত হয়নি। মোদি এবং তার মন্ত্রীরা সদম্ভে ঘোষণা করেছিলেন যে ভারতে করোনা শেষ হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর কিছুদিন আগে গত জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ভার্চুয়াল বৈঠকে মোদি ঘোষণা করেছিলেন, তার দেশ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইযে জয়ী হয়েছে। করোনাভাইরাস কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ভারত একটি বড় বিপর্যয় থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করেছে। অথচ ভাগ্যের পরিহাস হচ্ছে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন এখন বিশ্বের ঘুম হারাম করে দিয়েছে।
ভারতের নজিরবিহীন অক্সিজেন সংকট ও শশ্মানে হাজার হাজার লাশের স্তূপ আর নদীতে লাশের সারি ভারতের ভাবমূর্তিকে আফ্রিকার কোনো অতি দরিদ্র দেশের কাতারে নিয়ে গেছে। ভারতের বড় বড় শহরের আকাশ দিনরাত ধূসর হচ্ছে বিরামহীন জ্বলতে থাকা শশ্মানের আগুন আর ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে।
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, মোদির এ ব্যর্থতা একান্তই তার। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে তিনি আনুগত্য দেখে মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। তার সরকার স্বচ্ছতার পরিবর্তে গোপনীয়তার নীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আর এ ধরনের সরকার কাঠামোয় মোদি কোনো বল মিস করলে তার ফল হয় বিপর্যয়কর । কভিড মহামারিতে তাই দেখা গেছে।
ফরেন পলিসি বলছে, মোদি ভারতের কভিড টিকা রফতানি নিয়ে যে কূটনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেছিলেন তা বুমেরাং হয়েছে। বিভিন্ন দেশকে চুক্তিমত টিকা না দিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচিত হয়েছে। অথচ টিকা রফতানির শুরুতে প্রতিটি প্যাকেটের গায়ে মোদির ঢাউস সাইজের ছবি দিয়ে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হতো।
‘মোদির বৈশ্বিক স্বপ্নের মৃত্যু’ শিরোনামে ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভারতের বৈশ্বিক ভাবমূর্তির যে ক্ষতি এই সংকটে তৈরী হয়েছে তা সারাতে বছরের পর বছর লেগে যাবে। আর মোদি যাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন সেই জয়শঙ্করের পক্ষে এটা সারানো সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
সম্প্রতি মোদি সরকারের আরেকটি নিউজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজড় কেড়েছে। সেটি হচ্ছে, মুসলিম ব্যতীত সব ধর্মের নাগরিকত্ব দিবে ভারত। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এই ধরণের একটি নির্দেশিকা জারী করা হয়েছে। পাকিস্তান , আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আগত অমুসলিম উদ্বাস্তুরা ভারতের নাগরিক হওয়ার জন্য সেই আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্ র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানা গেছে নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ এবং ২০০৯ সালের সংশোধনকৃত নাগরিকত্ব আইনের আওতায় শিগগির এই নির্দেশিকা কার্যকর করা হবে । উল্লেখ্য যে এখন পর্যন্ত ২০১৯ সালে সংশোধিত বির্তকিত নাগরিকত্ব আইন চালু করা সম্ভব হয়নি দেশটিতে।
কোভিডের কারণে অক্সিজেন সঙ্কট আর সৎকারের জায়গার ব্যাপক অভাবে নরেন্দ্র মোদির পরাজয়ের সীমানা ধীরে ধীরে প্রকট হয়ে উঠছে ভারতে। হিন্দুত্ব নয়, ব্যবস্থাপনা এবং সুশাসনের নীতি না শিখলে নরেন্দ্র মোদিকে এর চড়া মুল্য দিতে হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
লেখক: সৈয়দ আতিকুর রব,
(জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে কিছু তথ্য সংগৃহীত)
আয়ারল্যান্ড সরকার কোভিড রেস্ট্রিকশনের নতুন রোড ম্যাপ প্রদান করল গতকাল ২৮ মে। যার প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হল।
জুন এর ২ তারিখ থেকে
হোটেল, বিএনবি, গেস্ট হাউজ ইত্যাদি খোলার অনুমতি মিলবে। তবে রেস্টুরেন্ট এবং পাব গেস্টদের জন্যই শুধু খোলা থাকতে পারবে।
জুন এর ৭ তারিখ থেকে
সিনেমা, জিম, সুইমিং (ব্যক্তিগত ট্রেইনিং), পাব-রেস্টুরেন্টের আউট ডোর ডাইনিং এবং আউট ডোর ইভেন্ট (১০০-২০০ জন সর্বোচ্চ) খুলবে।
এক বাসার মানুষই কেবল অন্য বাসায় গমন করতে পারবে। ২৫ জন এর ওয়েডিং এর আয়োজন করা যাবে।
ড্রাইভিং থিওরি টেস্ট চালু হবে।
প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন আশ্বস্ত করেন, পাব-রেস্টুরেন্টের আউট ডোর ডাইনিং খুললেও ব্যবসায়ীরা সাপ্তাহিক কোভিড রেস্ট্রিকশন সাপোর্ট (সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৫০০০ ইউরো) পাবে।
৫ জুলাই থেকে
পাব-রেস্টুরেন্টের ইনডোর ডাইনিং এবং সর্বোচ্চ ৫০ জনের ওয়েডিং এর অনুমতি মিলবে।
সর্বোচ্চ তিন পরিবার একত্রে মিলিত হবার অনুমতি মিলবে।
১৯ জুলাই থেকে
কোভিড সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতে ইউরোপের দেশগুলোতে ভ্রমণ করা যাবে। এবং নন ইউরোপীয় দেশগুলোর ক্ষেত্রেও নিয়ম মেনে ভ্রমণ শিথিল হবে।
তবে হাউজ পার্টির উপর কড়াকড়ি নিষেদাজ্ঞা আরোপ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছে, হাউজ পার্টি সবচেয়ে বেশি সমস্যার কারণ এবং খুব শিগ্রই তার অনুমতি দেবার পরিকল্পনা নেই।
সার্টিফিকেট স্কিমে ভ্রমণ এর নিয়মাবলী
১৯ জুলাই থেকে কোভিড সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতে ইউরোপের ও নন ইউরোপীয় দেশগুলোতে ভ্রমণ করা যাবে। নিয়মগুলো নিম্নরূপঃ
১। যারা সম্পূর্ণ ভ্যাক্সিনেটেড অথবা করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট রয়েছে অথবা করোনা হয়ে ভালো হয়েছে তারা ফ্রি ভাবে ইউরুপের দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবে।
২। যাদের বয়স ৭-১৮ তাদের অ্যারাইভালের সময় কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকলেই চলবে। দেশের বাহিরে গমনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবেনা।
৩। নন ইউরোপীয় দেশ থেকে আগতরাও ফ্রি ভাবে ভ্রমণ করতে পারবে যদি তাদের সম্পূর্ণ ভ্যাক্সিনেটেড সার্টিফিকেট থাকে, যদি না তারা হাই রিস্ক (ইমারজেন্সি ব্রেক) দেশ থেকে এসে থাকে।
৪। নন ইউরোপীয় দেশ থেকে যদি সম্পূর্ণ ভ্যাক্সিনেটেড না হয়ে কেউ ভ্রমণ করলে তাদের অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে এবং পরবর্তী নেগেটিভ রিপোর্ট না আশা পর্যন্ত সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
৫। নন ইউরোপীয় দেশ হিসেবে একই নিয়ম UK এবং USA এর জন্যও প্রযোজ্য হবে।
অক্টোবর থেকে ব্যবসা ও ব্যক্তিদের জন্য কোভিড পেন্ডেমিক পেমেন্ট পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার কথা ব্যক্ত করলেন ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার।
গতরাতে ফাইন গেইল এর বৈঠকে লিও ভারাদকার জানান, আগামী মঙ্গলবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে পেন্ডেমিক পেমেন্ট এর ব্যাপারে কি পরিকল্পনা করবে তার বিস্তারিত ঘোষণা করবে।
আইরিশ ফিসিক্যাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছিল যে তাদের ব্যয়ের পূর্বাভাস ‘বাস্তবসম্মত নয়’ তার একদিন পরে তার এই মন্তব্য এসেছে। এটি এখন পর্যন্ত ৭.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে সাপ্তাহিক প্যান্ডেমিক পেমেন্টে। সুতরাং এর উপর উপর লাগাম লাগানোর জন্য সরকারের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে মিঃ ভারাদকার বলেছেন, তৃতীয় কোয়ার্টারে কোনও “নাটকীয় পরিবর্তন” হবে না, তবুও চতুর্থ কোয়ার্টারের পর থেকে কোভিড পেমেন্টের উপর বাড়তি পরিকল্পনা সরকারকে করতে হবে।
আয়ারল্যান্ডে এখনো ৬০০,০০০ মানুষ কোভিড পেন্ডেমিক পেমেন্টের উপর নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান জোসেতে একটি রেল ইয়ার্ডে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় বন্দুকধারীও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ মে) সকালে সান জোসে শহরের সান্তা ক্লারা কাউন্টি শেরিফ বিভাগের পাশে ভ্যালি ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটির (ভিটিএ) রেল ইয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
সান জোসে শেরিফের ডেপুটি রাসেল ডেভিস বলেন, বন্দুকধারীসহ আটজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রেলকর্মীরাও রয়েছেন। হামলাকারী ভিটিএর কর্মচারী ছিলেন। এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের চিকিৎসা চলছে।
বেশ কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত হামলাকারীর নাম স্যামুয়েল ক্যাসিডি। তার বয়স ৫৭ বছর। তিনি রেল ইয়ার্ডের একজন টেকনিশিয়ান ছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষ এখনো তার পরিচয় এবং হামলার কারণ জানাতে পারেনি।
ঘটনার পর এক টুইট বার্তায় সান জোসের মেয়র স্যাম লিকার্ডো বলেন, ভ্যালি ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটিতে এক বন্দুকধারীর হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি এখনো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
আহতদের মধ্যে একজন হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান জানিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সান জোসে শহরের জন্য এটি একটি ভয়াবহ দিন। এ ধরনের ঘটনা যেন এই শহরে আর না ঘটে সেজন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
স্থানীয় একটি সিবিএস স্টেশন জানিয়েছে, রেল কর্মীদের একটি সভার শুরুর সময় এ ঘটনা ঘটে। বন্দুকধারীর হামলার আগে সান্তা ক্লারা ভ্যালি ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটির (ভিটিএ) কর্মচারীর মালিকানাধীন একটি বাড়িতে আগুন লাগে।
ভিটিএ পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান গ্লেন হেন্ড্রিক্স বলেন, ট্রেন সিস্টেমের অপারেশন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের ভেতরে নয়, রেল রক্ষণাবেক্ষণ ইয়ার্ডে হামলা হয়েছে। সেখানে যানবাহন মেরামত করা হয়।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদে আনা একটি সংসদীয় প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে আইরিশ সরকার। প্রস্তাবটি পাস হলে আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার এবং ইসরায়েলের ওপর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ডই হতে চলেছে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম দেশ, যারা ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে। খবর আল জাজিরার।
গত মঙ্গলবার আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোভেনি বলেছেন, বিরোধী দল সিন ফেইনের আনা প্রস্তাবটি ‘আয়ারল্যান্ড-জুড়ে অনুভূতির গভীরতার সুস্পষ্ট সংকেত’।
ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলিদের বসতি স্থাপন প্রসঙ্গে তার স্পষ্ট মন্তব্য, ‘এটি কার্যত আত্মসাৎ’। ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের মুখে ‘আত্মসাৎ’ শব্দের উচ্চারণ এটিই প্রথম বলে মনে করা হচ্ছে।
মধ্য-ডানপন্থী ফাইন গেইল পার্টির এ নেতা সংসদে আরো বলেন, ‘আমার মতে, এটি এমন কিছু নয় যা আমি বা এই হাউস (সংসদ) হালকাভাবে বলছি। এমনটি করা প্রথম ইইউভুক্ত দেশ আমরা। এটি অবশ্যই ওইসব (ইসরায়েলি) কর্মকাণ্ড ও তার প্রভাব সম্পর্কে আমাদের যে বিশাল উদ্বেগ রয়েছে, তার প্রতিফলন।’ মঙ্গলবার আইরিশ আইনপ্রণেতাদের অনেকেই ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা বা চেকার্ড কেফায়া নকশার মাস্ক পরে সংসদে গিয়েছিলেন।
বর্তমানে দখলদার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। এবারের যুদ্ধ চলাকালে বিশ্বের অনেক শহরের মতো আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।
টানা ১১ দিনের ওই লড়াইয়ে নির্বিচার বোমাবর্ষণ করে অন্তত ২৫৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী, যার মধ্যে ৬৬ শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।
দখলদারদের পাল্টা জবাব দিতে ইসরায়েলে চার হাজারের বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এতে সেখানে বিদেশিসহ অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনাভাইরাসের আক্রান্ত এমন অনেকেই সেরে ওঠার পরও অন্যান্য নানা শারীরিক ও মানসিক জটিলতায় ভুগতে দেখা যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে তেমন কোন জটিলতা দেখা যায় না। আবার কারও কারও ওপর করোনাভাইরাস দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এইসব জটিলতা কাটিয়ে উঠতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
চিকিৎসা বিদ্যার ভাষায় একে বলা হয় ‘পোস্ট কোভিড সিনড্রোম’।
কারণ কি?
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকে। এই প্রতিরোধ ক্ষমতা এক পর্যায়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে সক্রিয় হয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রদাহের সৃষ্টি করে। যার ফলে নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়।
ভাইরাস যতোটা না ক্ষতি করছে তার চাইতে বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে যদি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ করে। যা ফুসফুসসহ শরীরের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গে আঘাত হানে। একে মাল্টি সিস্টেম ডিসঅর্ডার বলে।
সাধারণত দুর্বলতা ও অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠার মতো সমস্যাগুলো থেকে যায়। শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে ব্যথা, অবসাদ এবং ক্লান্তি ভাব হয়।
রোগীর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি, লিঙ্গ ও বয়স ভেদে একেকজনের লক্ষণ একেক মাত্রার হতে পারে। তবে আগে থেকেই যারা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত তাদের বিভিন্ন অঙ্গ ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
ফুসফুস
করোনাভাইরাস সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ফুসফুসে। অনেকে করোনাভাইরাস নেগেটিভ হওয়ার পরও তার কাশি, শ্বাসকষ্ট দীর্ঘদিন ধরে থেকে যেতে পারে। ফুসফুসের এই দুর্বলতার কারণে দেখা যায় রোগীরা অল্পতেই খুব হাঁপিয়ে ওঠেন। ভীষণ দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ কাজ করে। অনেকের শ্বাসকষ্ট ও কাশির সমস্যা দীর্ঘসময় থেকে যায়।
আবার যারা আগে থেকে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসে প্রদাহজনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের করোনাভাইরাস হলে ফুসফুস দ্রুত আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। আবার যেসব রোগীদের আইসিইউ বা জরুরি অক্সিজেন নিতে হয়েছে তাদের অনেকের ফুসফুসে পালমোনারি ফাইব্রোসিস সমস্যা দেখা দেখা দিতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনিয়ন্ত্রিতভাবে সক্রিয় হয়ে উঠলে এটি ফুসফুসের দেয়ালে প্রদাহের সৃষ্টি করে, ফুসফুসে পানি জমে যায়। যার ফলে রোগীর স্বাভাবিকভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে ভীষণ কষ্ট হয়। বুকে চাপ দিয়ে ব্যথা করে। ভারী ভারী লাগে ফাইব্রোসিস একবার হলে সেটা পুরোপুরি ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
হৃদপিণ্ড
কোভিড ১৯ ফুসফুসের রোগ বলা হলেও এটি হৃদপিণ্ডের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে থাকে। অনেকেরই বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা কিংবা হৃদপিণ্ডের প্রদাহজনিত সমস্যা মায়োকার্ডাইটিসে দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে রোগীর রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা থাকায় হার্ট এটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এ কারণে যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন চিকিৎসকরা তাদের ব্লাড থিনার দিয়ে থাকেন যেন রক্ত পাতলা থাকে।
কিডনি
যারা দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছেন এবং নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হয় তারা করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠার পরও বড় ধরণের ঝুঁকিতে থাকেন।
করোনাভাইরাসের কারণে কিডনিতে সমস্যা না হলেও ডায়ালাইসিস ও হাই পাওয়ারফুল ওষুধ সেবনের কারণে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে রক্তে সোডিয়াম পটাশিয়ামের ভারসাম্যহীনতা বা ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স, এসিড-বেসড ডিসঅর্ডার ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে যা জটিলতা আরও বাড়িয়ে দেয়।
তবে যাদের কিডনি জটিলতা নেই তাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
লিভার
ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হলে লিভার স্বাভাবিক সময়ের চাইতে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর পরিস্থিতি যদি জটিল পর্যায়ে পৌঁছায় যায় তাহলে পরবর্তীতে তাদের জন্ডিস, লিভার ফেইলিওর হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।
প্যানক্রিয়াস
অনেক রোগী একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস বা অগ্নাশয় জনিত জটিলতায় আক্রান্ত হয়। এর ফলে রোগীদের পেটে তীব্র ব্যথা হয়। যাদের আগে থেকেই হাই প্রেশার, লো প্রেশার, কোলেস্টোরেল বা ডায়বেটিসজনিত সমস্যা আছে তারা কোভিড পরবর্তী সময়েও ঝুঁকিতে থাকেন।
কোভিড ১৯ থেকে সেরে ওঠার পরেও অনেকের ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়, ওজন খুব দ্রুত কমে যায়। ফলে প্রেশার লো হয়ে আসে আবার যারা হাইপার টেনশনে ভোগেন তাদেরও প্রেশার হঠাৎ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যারা ডায়াবেটিসের ভুগছেন তাদের রক্তে চিনি পরিমাণ খুব দ্রুত ওঠা নামা করে।
যেসব রোগীদের অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ এর নীচে নেমে যায় তাদেরকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে অক্সিজেন দিতে হয়। পরিস্থিতি জটিল হলে চিকিৎসকরা রোগীকে স্টেরয়েড দিয়ে থাকেন। স্টেরয়েড তাৎক্ষণিক জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখলেও এর ফলে ডায়াবেটিস ও প্রেশার অনিয়ন্ত্রিত হতে পারে।
মানসিক সমস্যা
করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার পরও অনেক রোগী দেখা গেছে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক উদ্বেগ, বিষণ্ণতায় ভুগেছেন। অনেকেই কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না। ছোটখাটো বিষয় ভুলে যাচ্ছেন, ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন। বিশেষ করে যারা দীর্ঘসময় হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি রোগে আক্রান্ত হন। হসপিটাল বা আইসিইউতে থাকার ভীতিকর স্মৃতি থেকে অনেকে বের হতে পারেন না।
করনীয় কি?
কোভিড থেকে সেরে ওঠার ৪৮ ঘণ্টা পর, এরপর ১ মাস, ৩ মাস ও ৬ মাস পর চিকিৎসকের পরামর্শে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেয়া জরুরি। সেইসঙ্গে দিনে রাত পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া বেশ জরুরি।
যারা আগে থেকেই হাইপার টেনশন, হার্টের জটিলতা, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, কিডনি জটিলতায় ভুগছেন তাদেরকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন ডাক্তাররা। চিকিৎসকের পরামর্শে ইনসুলিন বা ওষুধের মাত্রা ঠিক করে নেয়া যেতে পারে।
এছাড়া খাবারের দিকে খুব নজর রাখতে হবে। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় সুষম খাবার রাখা জরুরি। শাক, সবজি, ডিম, সেইসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ পানি, ফলের রস খেতে হবে।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত থাকার সময় হাসপাতাল বা বাড়িতে দিন রাত বিছানায় শুয়ে বিশ্রামের কারণে পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। পেশির গঠন ভালো করতে তাই নিয়মিত অল্প অল্প করে ব্যায়াম করতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে ভিটামিন ডি এবং এই ভিটামিন ডি এর উৎস হল সূর্য। সকাল ৯টা থেকে ১১টা এই সময়ে শরীরের চামড়ায় সরাসরি রোদ লাগানো বেশ প্রয়োজন। ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট থাকলেও সূর্য রশ্মি কাজ করে বেশি।
এরপরও যদি মানসিক স্বাস্থ্যে এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ে তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন দেশে এমন অন্তত দুজনের শরীরে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ শনাক্ত হয়েছে। সম্প্রতি ভারতে বিরল ছত্রাকজনিত এই রোগটি ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশে এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে দুজন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেল।
চলতি মাসে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাদের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত করা হয়।
বারডেম হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গত ৮ মে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর গত ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরেক জনের শরীরেও ছাত্রাকজনিত রোগটি শনাক্ত হয়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তাদের মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
এ বিষয়ে বারডেম হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. লাভলি বাড়ৈ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমাদের ল্যাবে দুজনের শরীরে মিউকরমাইকোসিস শনাক্ত হয়েছে। আমরা তাদের চিকিৎসা দিচ্ছি এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি।’
বারডেম হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে কোভিড-১৯ রোগীর শরীরে এবারই প্রথম ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হওয়ার কথা জানান তিনি।
‘আমরা সতর্কভাবে তাদের পর্যবেক্ষণ করছি’ উল্লেখ করে ডা. লাভলি বাড়ৈ বলেন, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে অবস্থা গুরুতর হতে পারে। তাই, তাদের সতর্কভাবে চিকিৎসা দিতে হয়।’
তিনি আরও জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীকে মাত্রা না বুঝে স্টেরয়েড দিলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে, যার ফলে রোগীর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মতে, মিউকরমাইসিটিস ছত্রাক থেকে মিউকরমাইকোসিস হয়ে থাকে। এটি বাতাসের চেয়ে মাটিতে এবং শীত ও বসন্তকালের চেয়ে গ্রীষ্ম ও শরৎকালে বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগ মানুষই প্রতিদিন এই আণুবীক্ষণিক ছত্রাকের স্পোরের সংস্পর্শে আসে। সুতরাং এই মিউকরমাইসিটিসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব।
তবে, বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে এই ছত্রাক ক্ষতিকর নয়। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাদের শরীরে মিউকরমাইসিটিসের স্পোর প্রবেশ করলে ফুসফুস ও সাইনাস আক্রান্ত হতে পারে। যা পরে শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে।
সিডিসি’র মতে, এই বিরল ছত্রাকে আক্রান্তদের মৃত্যুহার ৫০ শতাংশ। তবে, ৯২৯টি ঘটনা নিয়ে করা ২০০৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে মৃত্যুহার ৫৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সব বয়সী মানুষের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি না থাকায় এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই।
তারা আরও জানান, কোভিড-১৯ ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী, যারা স্টেরয়েড নিচ্ছেন, ক্যান্সার আক্রান্ত অথবা যারা অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছেন, তারা সবচেয়ে বেশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাই নয়, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কারণেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
ডা. লাভলি বাড়ৈ বলেন, ‘যখন একজন বয়স্ক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, তখন যথেচ্ছভাবে স্টেরয়েডের ব্যবহারের কারণেও তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে পারেন।’
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ভারতের স্বাস্থ্যখাতে নতুন হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গত রোববার জানান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় তারা খুব শিগগিরই একটি নীতিমালা তৈরি করবেন।
স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজারি কমিটি কিছু সুপারিশ তৈরি করছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের স্বাস্থ্যসেবা উপদেষ্টা কমিটিও এই রোগ প্রতিরোধে কিছু বিধিবিধান তৈরি করছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের চিকিৎসায় এগুলো খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।’
ডা. নাজমুল আরও জানান, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কোনো অস্বাভাবিক সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি।
তবে, ভারতে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ২০০ জনের শরীরে মিউকরমাইকোসিস শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ২১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, যেসব কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অতিরিক্ত স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বাড়ছে।
ভারতের তামিলনাড়ু, গুজরাট, ওডিশা, রাজস্থান ও তেলেঙ্গানা- এই পাঁচ রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা রোগীরা সবচেয়ে বেশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার রোগীরা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হলে তাদের অবস্থা গুরুতর হতে পারে। তাই, তাদের সতর্কভাবে চিকিৎসা দেওয়া উচিত।’
সিডিসি’র গাইডলাইন বলছে, অ্যান্টি ফাঙ্গাল মেডিসিন ব্যবহার করে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসা করা হয়। এসব ওষুধের বেশিরভাগই শিরা পথে দেওয়া হয়। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসায় সবচেয়ে প্রচলিত ওষুধের মধ্যে আছে অ্যাম্ফোটেরিসিন বি। এই ওষুধটি সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে।
সেরে উঠতে রোগীকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত এই ওষুধ দিতে হতে পারে। তবে, কত তাড়াতাড়ি রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা আরম্ভ করা হয়েছে তার ওপরও এটা নির্ভর করে।
সম্প্রতিকালে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রায় ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচার করে রোগীর ছত্রাক আক্রান্ত কোষ ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এতে কিছু রোগী তাদের ওপরের চোয়াল ও চোখ হারিয়ে থাকেন।
নতুন করে সংঘাত ছড়ানোর পর গত ৯ মে থেকে এ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি পুলিশ।
ইসরায়েলে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযোগ, তারা শেখ জাররাহ, আল আকসা ও গাজায় বিভিন্ন সমাবেশ বা প্রতিবাদ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
মিডল ইস্ট আই জানায়, রোববার ইসরায়েলি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদিত ৪৮ ঘণ্টার বিশেষ অভিযানে ইসরায়েলি পুলিশ অন্তত ৫০০ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে।
গতকাল সোমবার ‘আইনশৃঙ্খলা’ নামের ওই অভিযান শুরু হয়। ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমির ওহানা এবং দেশটির পুলিশপ্রধান কোবি সাবতাই ওই অভিযান পরিকল্পনায় স্বাক্ষর করেছেন।
ইসরায়েলি পুলিশের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ইসরায়লি পুলিশ এই গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছেন। গত ৯ মে থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত এক হাজার ৫৫০ জনের মতো ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইরিশ এয়ারলাইন্স রায়ানএয়ারের একটি উড়োজাহাজকে ঘুরিয়ে বেলারুশে অবতরণ করানো হয়। ছবি : সংগৃহীত
একটি ফ্লাইটকে রাষ্ট্রীয়ভাবে হুমকি দিয়ে যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে বাধ্য করা এবং একজন সাংবাদিককে আটক করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ ঘটনার জেরে বেলারুশের বিমানগুলোকে আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
পাশাপাশি বেলারুশের আকাশসীমাও ইউরোপের কোনো দেশকে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো লুকাশেঙ্কোর কট্টর সমালোচক রোমান প্রতাসেভিচ (২৬) গ্রিসের এথেন্স থেকে লিথুয়ানিয়া যাওয়ার পথে, তাঁকে বহনকারী বিমানটি যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে জোরপূর্বক বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে অবতরণ করানো হয়। এরপর রোমান প্রতাসেভিচকে আটকও করা হয়।
বেলারুশের বিরুদ্ধে রায়ান এয়ারের বিমান ‘হাইজ্যাকের’ মতো নজিরবিহীন ঘটনার পর, ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত ২৭ দেশের নেতারা ব্রাসেলসে বৈঠক করে বেলারুশের বিরুদ্ধে এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো লুকাশেঙ্কোর কট্টর সমালোচক সাংবাদিক রোমান প্রতাসেভিচকে গতকাল আটক করা হয়। ছবি : সংগৃহীত
সাংবাদিককে ধরতে ফ্লাইট ‘ছিনতাই’, বেলারুশের কঠোর সমালোচনা পশ্চিমা দেশগুলোর
আইরিশ এয়ারলাইন্স রায়ানএয়ারের একটি উড়োজাহাজকে ঘুরিয়ে বেলারুশে অবতরণ করানো হয়। ছবি : সংগৃহীত
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটকে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে বাধ্য করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। গ্রিসের এথেন্স থেকে লিথুয়ানিয়াগামী আইরিশ এয়ারলাইন্স রায়ানএয়ারের ওই ফ্লাইটে বেলারুশের একজন সাংবাদিক ছিলেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এই ঘটনার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা নির্ধারণ করতে ইইউ নেতারা আজ সোমবার এক বৈঠকে বসছেন। ইইউর নির্বাহী পর্ষদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন ফ্লাইটের যাত্রাপথ পরিবর্তনের এই ঘটনাকে ‘ছিনতাই’ বলে বর্ণনা করছেন। আর, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, এটি একটি ‘ন্যাক্কারজনক ঘটনা’।
গ্রিস থেকে লিথুয়ানিয়াগামী ফ্লাইটটিকে বোমা হামলার হুমকির কথা বলে গতিপথ বদলে রাজধানী মিনস্কের বিমানবন্দরে অবতরণ করতে বাধ্য করে বেলারুশ। এরপর ওই ফ্লাইট থেকে সাংবাদিক ও আন্দোলনকর্মী রোমান প্রোতাসেভিচকে গ্রেপ্তার করে বেলারুশ।
ছাব্বিশ বছর বয়সী সাংবাদিক রোমান প্রোতাসেভিচ এথেন্স থেকে আসা রায়ানএয়ারের ফ্লাইটে উঠেছিলেন। ফ্লাইটটি লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের বিমানবন্দরে অবতরণের কিছু আগে বেলারুশের কর্তৃপক্ষ হস্তক্ষেপ করে। তারা মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে ফ্লাইটটি মিনস্কের বিমানবন্দরে নিয়ে এসে অবতরণ করায়।
বেলারুশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, বোমা হামলার হুমকি ইস্যুতে ব্যবস্থা নিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশ দেন। কিন্তু, হুমকিটি পরে ভুয়া প্রমাণ হয়।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের প্রায় সাত ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফ্লাইটটি লিথুয়ানিয়ার রাজধানীতে অবতরণ করে।
ফ্লাইটের যাত্রীরা জানান, মাঝপথে মিনস্কে উড়োজাহাজ অবতরণ সম্পর্কে তাঁদের আগে থেকে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এক যাত্রী জানান, প্রোতাসেভিচ ‘প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলেন। আমি তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, এটা খুবই দুঃখজনক ছিল।’
বার্তা সংস্থা এএফপিকে মনিকা সিমকিনি নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘তিনি (প্রোতাসেভিচ) যাত্রীদের দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন যে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।’
এরই মধ্যে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে ইইউ ও ন্যাটোকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব সতর্ক বার্তা দিয়েছেন যে, লুকাশেঙ্কোর এ ধরনের অপ্রত্যাশিত আচরণ গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেতা সেভেতলানা তিখানোভস্কায়া সাংবাদিক প্রোতাসেভিচের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। সেভেতলানা গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ আনা হয়েছিল।
বিবিসি বলছে, ১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশের ক্ষমতায় থাকা ৬৬ বছর বয়সী লুকাশেঙ্কো গত আগাস্টের নির্বাচনের পর থেকে ভিন্নমতাবলম্বীদের মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করছেন। অনেক বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিংবা তিখানোভস্কায়ার মতো নির্বাসন নিয়েছেন।
কীভাবে ফ্লাইটের যাত্রাপথ ঘুরে গেল?
এথেন্স থেকে ভিলনিয়াসে যাচ্ছিল রায়ানএয়ারের ফ্লাইট এফআর৪৯৭৮। লিথুয়ানিয়ার সীমান্তের কাছে পৌঁছানোর পরপর ফ্লাইটি পূর্ব দিকে ঘুরে মিনস্কের দিকে যাত্রা করে। গ্রিস ও লিথুয়ানিয়া বলছে, সে সময় ফ্লাইটে ১৭১ জন যাত্রী ছিল।
এক বিবৃতিতে রায়ানএয়ার বলেছে, ফ্লাইটের ক্রুদের বেলারুশ জানিয়েছিল যে, ফ্লাইটে নিরাপত্তা হুমকি রয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী বিমানবন্দর মিনস্কে অবতরণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে উড়োজাহাজ চলাচল সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডারটুয়েন্টিফোর-এ দেখা যায় যে, ফ্লাইটকে যখন ঘুরিয়ে নেওয়া হয়, তখন সেটি মিনস্কের তুলনায় ভিলনিয়াসের বিমানবন্দরের কাছাকাছি ছিল।
রায়ানএয়ার জানায়, মিনস্কে অবতরণের পর তল্লাসি চালিয়ে ফ্লাইটে ‘অপ্রত্যাশিত’ কিছু পাওয়া যায়নি। এরপর স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৫০ মিনিটে সেটি মিনস্ক ত্যাগ করে।
রায়ানএয়ার এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যাত্রীদের কাছে অপ্রত্যাশিত বিলম্বের কারণে ক্ষমা চায়। তবে পরিস্থিতি রায়ানএয়ারে নিয়ন্ত্রণে ছিল না বলে জানান হয়।
তবে, রায়ানএয়ারের বিবৃতিতে সাংবাদিক প্রোতাসেভিচের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
প্রোতাসেভিচের কর্মস্থল নেক্সটা-তে প্রথম তাঁর গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, ফ্লাইট এবং এতে থাকা যাত্রীদের তল্লাশি করার পরই প্রোতাসেভিচকে নিয়ে যাওয়া হয়।
বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বেলটা-তে জানানো হয়, লুকাশেঙ্কো ব্যক্তিগতভাবে বোমা থাকার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফ্লাইট ঘুরিয়ে মিনস্কে অবতরণ করানো এবং মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং তা বেড়েই চলেছে। বেলারুশে থাকা মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলি ফিশার এক টুইটে বলেছেন, সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের জন্য লুকাশেঙ্কো বোমা থাকার মিথ্যা ভয় দেখিয়ে এবং যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে ‘ন্যাক্কারজনক’ কাজ করেছেন।
এর পাশাপাশি ইউরোপজুড়ে এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে। প্রোতেশেভিচের দ্রুত মুক্তি এবং এ ঘটনার পূর্ণ তদন্তের দাবি জানিয়েছে ইউরোপ।
এ ছাড়া লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নসেদা ইইউর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, বেলারুশের ওপর নতুন অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা উচিত।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোসহ দেশটির অনেক কর্মকর্তার ওপর ইউরোপে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ নানা অবরোধ আরোপ করা আছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, ‘এই ন্যাক্কারজনক এবং বেআইনি আচরণের… পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ম্যাথুজ মোরাউইকি এই ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ বলেছেন।
ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, এটা ‘মারাত্মক ও বিপজ্জনক একটি ঘটনা।’
লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া—দুই দেশই বলেছে যে, বেলারুশের আকাশসীমাকে অনিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত। লাটভিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এডগার্স রিনবেভিক্স বলেন, এই আকাশসীমায় সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করা উচিত।
বেসামরিক ফ্লাইট চলাচল সম্পর্কিত জাতিসংঘের সংস্থা আইকাও বলেছে, এ ধরনের ‘জোরপূর্বক অবতরণের’ ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন এবং এটি শিকাগো কনভেনশনের লঙ্ঘন হতে পারে। আকাশসীমা ও ফ্লাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিকাগো কনভেনশন হয়েছিল।
প্রোতাশেভিচ কে এবং নেক্সটা কী?
নেক্সটা একটি গণমাধ্যম। এর একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল রয়েছে। এ ছাড়া টুইটার ও ইউটিউবেও গণমাধ্যমটিকে পাওয়া যায়।
বেলারুশের নির্বাচনের সময় নেক্সটা বিরোধীদলগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এবং পরবর্তীতেও তা অব্যাহত রাখে। বিশেষ করে সরকার সংবাদ সম্প্রচার প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার সময়েও কাজ করে গেছে নেক্সটা।
বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেতা সেভেতলানা তিখানোভস্কায়া বলেন, ২৬ বছর বয়সী প্রোতাসেভিচ ২০১৯ সালে বেলারুশ ছাড়েন এবং নেক্সটার সঙ্গে মিলে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খবর প্রচার করেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বেলারুশে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
সেভেতলানা তিখানোভস্কায়া আরও বলেন, বেলারুশে প্রোতাসেভিচকে মৃত্যুদণ্ড ভোগ করতে হবে, কারণ তাঁকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিখানোভস্কায়া দেশ ছেড়ে লিথুয়ানিয়ায় যেতে বাধ্য হওয়ার আগে নির্বাচনে জয় পাওয়ার দাবি করেছিলেন। পশ্চিমা নেতারা তিখানোভস্কায়াকে সমর্থন দিয়েছেন। তিখানোভস্কায়া তাঁর স্বামীকে কারাগারে পাঠানোর কারণে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার পর নিজেই প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
গত বছর প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর জয় ঘোষণার প্রতিবাদে লাখ লাখ মানুষ রাজধানী মিনস্কে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। পুলিশি নির্যাতনের অসংখ্য অভিযোগ ছাড়াও শুধু চলতি বছরেই দুই হাজার ৭০০টি মামলা করা হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্য সেবা খাতের অপারেটররা তাদের সব আইটি সিস্টেম গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকে বন্ধ রেখেছে। সাইবার হামলা থেকে সুরক্ষার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সব আইটি সিস্টেম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আয়ারল্যান্ড জুড়ে ডায়াগনস্টিক সেবা ব্যাহত হয়েছে এবং হাসপাতালগুলোকে বহু অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করতে হয়েছে।
হামলার আশঙ্কার কারণে আয়ারল্যান্ডের করোনাভাইরাস টিকা কর্মসূচিতে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে দেশটির জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে আইটি সিস্টেমে সাইবার হামলার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আয়ারল্যান্ডের প্রধান স্বাস্থ্য সেবা নির্বাহী এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রধান নির্বাহী পল রেইড জানান, তারা গত সপ্তাহের শুক্রবার সকালের দিকে হামলার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। যতটুকু সম্ভব তথ্য সুরক্ষার জন্য পূর্ব সতর্কতার অংশ হিসেবে পুরো আইটি সিস্টেম বন্ধ রাখা হয়েছে। এ আক্রমণে অন্যান্য সেবা খাতে কেমন প্রভাব পড়তে পারে তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান রক্তক্ষয়ী সহিংসতা বন্ধে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়িয়ে যুদ্ধবিরতি চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বুধবার বাইডেন এক ফোনকলে নেতানিয়াহুকে বলেছেন, “হামাসের সঙ্গে বাড়তে থাকা লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে আজ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পথে হেঁটে সহিংসতার মাত্রা যথেষ্ট কমিয়ে আনুক” সেটিই তিনি আশা করেন।
বাইডেন এর আগে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে কথা বলেছিলেন। এ নিয়ে নিজ দলেই তীব্র সমালোচনার শিকার হন তিনি।
তারপরও গত রোববার ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বন্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আহ্বান সংবলিত বিবৃতি আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তাদের আপত্তির কারণে ওইদিনের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে কোনও ফল আসেনি।
তবে পরদিন সোমবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনকলে বাইডেন প্রথমবারের মতো ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতির পক্ষ সমর্থন করেন। আর বুধবারের ফোনকলে বাইডেন যে যুদ্ধবিরতি চান তা একটু কড়া ভাষাতেই নেতানিয়াহুকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
সিএনএন জানায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের শুরু থেকে বুধবার নিয়ে এ পর্যন্ত মোট চারবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বাইডেন। এদিন বাইডেনের কথার সুরে বোঝা গেছে, তিনি নেতানিয়াহুকে নিয়ে ধৈর্য্য হারাচ্ছেন।
বাইডেন সহিংসতা কমিয়ে আনার একটি সময়সীমাও নির্ধারণ করেছেন বলে এরই মধ্যে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। তবে সহিংসতার মাত্রা কমাতে কী করণীয় তা হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আগেই বলেছেন, ইসরায়েলে শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত যতদিন প্রয়োজন ততদিন গাজায় অভিযান চালানো হবে। বুধবার বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের দিনেও নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতি শুরু করতে প্রস্তুত দেখা যায়নি।
তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য পরিস্থিতি অনুকূল কিনা তা ইসরায়েল খতিয়ে দেখছে। আবার একটি নিউজ ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ইসরায়েল মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে।
খুব শিগগিরিই ইসরায়েলের লক্ষ্য পূরণ হবে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই লড়াই বন্ধ হতে পারে বলে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে নিউজ সাইটটি।
গত নয় দিনে ইসরায়েলি হামলার সবচেয়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছে ফিলিস্তিন। দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ানো এ সংঘাতে ১০০ নারী ও শিশুসহ অন্তত ২১৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজায় নিহতদের মধ্যে ১৫০ জনই সশস্ত্র ‘জঙ্গি’। অবশ্য হামাসের পক্ষে তাদের যোদ্ধাদের হতাহতের বিষয়ে কোনেও কিছু জানানো হয়নি।
ফাইজার ঘোষণা করেছে তারা শিগ্রই আয়ারল্যান্ডে COVID-19 ভেকসিন উৎপাদন শুরু করবে।
ফাইজার ঘোষনা দিয়েছে এই বছরের শেষের দিকে কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিনটি তারা আয়ারল্যান্ডেই উৎপাদন শুরু করবে, এই জন্য ফাইজার ওয়েষ্ট ডাবলিন প্লান্টে বিনিয়োগ করবে।
ফার্মাসিউটিক্যাল বৃহৎ এই কোম্পানিটি আজ এই ঘোষণাটি জানিয়েছে এবং এই লক্ষ্যে তারা তাদের Grange Castle plant (গ্রেঞ্জ ক্যাসেল প্লান্ট) উন্নীত করতে ৪০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
ফাইজার এক বিবৃতিতে বলেছে গত বছর ডিসেম্বরের শেষের দিকে তারা তাদের এমআরএনএ টিকা চালু করতে শুরু করার পর থেকে তারা ভ্যাকসিন সরবরাহের চেইনে একাধিক চেইন বৃদ্ধি করেছে।
এক বিবৃতিতে ফাইজার বলেছে, ফাইজার এখন বিশ্বব্যাপী ফাইজার-বায়োটেক কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ চেইন নেটওয়ার্কের অংশ হতে অতিরিক্ত ইউরোপীয় ভিত্তিক সুবিধা নিয়ে আসছে এবং Grange Castle plant (আয়ারল্যান্ড) বিশ্বব্যাপী এই ভ্যাকসিন সরবরাহে অবদান রাখবে,
.
আইরিশ ফার্মাসিউটিক্যাল হেলথ কেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (IPHA) আজ বলেছে যে ফাইজারের এই পদক্ষেপকে তারা স্বাগত জানায়। আইরিশ সরকারের উচিত হবে কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিন উৎপাদন সর্বোচ্চ ও সর্বাধিক করার জন্য সমস্ত বাস্তব প্রচেষ্টা গ্রহণ করা।
IPHA এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা আমাদের আইরিশ সরকারকে আরো দায়িত্বশীল হয়ে কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনের ডোজের গুণগত মান এবং সুরক্ষার ব্যাপারে কোন প্রকার ছাড় না দিয়ে উৎপাদন সর্বাধিকতর করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
তারা আরো আশা প্রকাশ করে বলেন “সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহে অবদানের জন্য ডাবলিনের Grange Castle plant ফাইজারের এই সাইট আয়ারল্যান্ডকে যেন এই প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখে।”
ক্লন্ডলকিন-রথকুলের (Clondalkin-Rathcoole) স্থানীয় লেবার পার্টির প্রতিনিধি, ক্রিস ওডওয়ায়ার ফাইজারের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে, তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে এটি আয়ারল্যান্ডে ভ্যাকসিনের সরবরাহ বাড়াতে সহায়তা করবে।
তিনি আরো বলেন “এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই কারন ফাইজার আয়ারল্যান্ড এবং প্রকৃতপক্ষে ক্লন্ডালকিনে ভ্যাকসিন তৈরি করতে শুরু করবেন। অনেক আইরিশ লোক এখনও তাদের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করতে পারে তাই আশা করি এটি ফাইজার / বায়োটেক ভ্যাকসিন মজুদ এবং প্রাপ্যতা সহজলভ্যতা বাড়িয়ে তুলবে।
জাতিসংঘে ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনীদের এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদীবাদীদের হাতে ছেড়ে দেয়ার মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে দ্বিখণ্ডিত করার প্রস্তাব পাশের ভেতর দিয়ে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইজরাইল নামের কর্তৃত্ববাদী দেশটির জন্ম হয়।
তৎকালিন আরব ভূ-খন্ডে ইহুদীদের এক সময় জ্ঞাতি ভাই হিসেবে ডাকতো ফিলিস্তিনিরা। ইহুদীরা মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। ১) ইজরাইলী ইহুদী এবং ২) আরব ইহুদী। রাষ্ট্রবিহীন ইহুদীরা তখন ছিলো ছন্নছাড়া ও উদ্বাস্ত। একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের জন্য তাদের ছিল অহরহ সংগ্রাম। সেই ইহুদীদের আজ রাষ্ট্র হয়েছে, বিপরীত দিকে ফিলিস্তিনিরা আজ রাষ্ট্র বিহীন।
যদিও বেলফোর ডিক্লেয়ারেশনকে আমরা ইজরাইল রাষ্ট্র তৈরির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে জানি। তবে এই ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটি গঠনের মূলে ছিলো শেইম ওয়াইজমেন নামে একজন ইহুদীবাদী নেতা।। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অনেক বেশি মাত্রায় ডিনামাইটের ব্যবহার করা হয়েছিল । যার কাছে ডিনামাইট জাতীয় বিস্ফোরক ও বোমা যত বেশি ছিল, সেই যুদ্ধে সর্বাপেক্ষা এগিয়ে থাকত।
একটা সময়ে এসে ব্রিটেনের কাছে ডিনামাইটে ব্যবহৃত কাঁচামাল (Raw material) অ্যাসিটোন (Acetone) কমে যায়। পর্যাপ্ত কাঁচামাল (Raw material) সংকুলনের জন্য বৃটিশরা উদগ্রীব হয়ে উঠে। শেইম ওয়াইজম্যান (Chaim Weizmann) ছিলেন অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করা রাশিয়ায় জন্ম নেয়া একজন ইহুদীবাদী নেতা, যাকে The Father of Industrial Fermentation বলা হয়। তিনি ডিনামাইট তৈরির কাঁচামাল (Raw material) অ্যাসিটোন (Acetone) আবিষ্কার করার জন্য একটা ব্যাকটেরিয়া খুঁজে পান,যেটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। এটি দিয়ে ব্রিটিশরা আরো বেশি ডিনামাইট তৈরীর মাধ্যমে যুদ্ধ যাত্রায় এগিয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে তাঁরা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়ী হয়।
এই মহা বিজয়ের প্রতিদান হিসেবে তাকে পুরস্কার দিতে চাইলে শেইম ওয়াইজম্যান ইহুদীদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবি করেন। সেটি সময়ের পরিক্রমায় হাজারো ফিলিস্তিনির রক্তের উপর দিয়ে প্রতিষ্টিত আজকের ইহুদীবাদী রাষ্ট্র ইজরাইল। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ভাষায় শেইম ওয়াইজম্যান হচ্ছেন ইজরাইলের প্রতিষ্টাতা রাষ্ট্রপতি ।
ফিলিস্তিনি একটি ঐতিহাসিক আন্তর্জাতিক ইস্যু। এর চলমান সঙ্কট মোকাবেলা এবং দেশটির বেসামরিক নাগরিক ও শিশুদের রক্ষা করতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র তুরস্ক ও এর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান পারেন যথাযথ ভূমিকা পালন করতে। ফিলিস্তিনে ক্রমাগত ইসরাইলি হামলা এবং এই ইস্যুর অতীত-বর্তমান ও তার সম্ভাব্য সমাধানে সবার পূর্বে মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ঐক্য সর্বাধিক প্রয়োজন ।
মুসলিম দেশগুলোকে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ফিলিস্তিনি নিয়ে তাদের পরিকল্পনা কি? সেখানে নির্ভর করছে অনেক কিছু। অবিভক্ত মুসলিম বিশ্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে ফিলিস্তিন ইস্যুর প্রকৃত সমাধান আসবে না। কিংবা প্রয়োজনে যুদ্ধের দিকে ধাবিত হলে সেটি হতে পারে একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ;এবং সেটি মাথায় রেখে মুসলিম বিশ্বের মধ্যে একতার কোনো বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি ফিলিস্তিনির বৃহৎ দুটি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস এবং ফাতাহ’র মধ্যে থাকা চলমান বৈরিতা প্রশমন করতে হবে বৃহত্তর স্বার্থে। ইজরায়েলের দখল থেকে ফিলিস্তিনিকে মুক্ত করতে হলে ফিলিস্তিনির আভ্যন্তরীন রাজনৈতিক পরিবেশ স্হিতিশীল রাখতে হবে।
কিন্তুু বিগত কয়েক দশক ধরে মসুলমানদের অন্যতম স্পর্শকাতর ফিলিস্তিনি ইস্যুতে বেশিরভাগ মুসলিম দেশগুলো নিরব এবং শুধু বিবৃতি সর্বস্ব হিসেবে দেখা যাচ্ছে। একমাত্র তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ান ঘটনার দৃশ্যপটে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরব এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য স্হাপনের প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
তাই এই মুহর্তে এরদোয়ানের উপর নির্ভর করছে ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার বিষয়টি । ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিক ও শিশুদের তুরস্ক ও প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সুরক্ষার বলয়ে রাখা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প দেখছি না এই মুহর্তে। ন্যাটো সদস্য দেশ হিসেবে তুরস্কের রয়েছে বিশাল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী। এছাড়া দেশটি ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক শক্তিধর দেশ।
এক সময় শুধু অস্র দিয়ে পাওয়ার বা ক্ষমতাকে সংজ্ঞায়ন করা হতো কিন্তু গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে অর্থনীতি, সমাজনীতি ও অবকাঠামো দিয়েও ক্ষমতাকে সংজ্ঞায়ন করা হচ্ছে।
হয়তো ফিলিস্তিন এখন নিগৃহীত এবং শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র বা ইজরাইলের আগ্রহের জায়গা। তবে যদি ফিলিস্তিনিকে তাদের হারানোর গৌরবের ভূমিতে ফেরানো যায় তাহলে এই ফিলিস্তিনকে নিয়ে রাশিয়া ও চায়না একসময় এগিয়ে আসবে। বিষয়টি যখন গ্লোবাল কন্টেক্সট এর বিষয় হয়ে দাড়াবে তখন পরাশক্তিধর দেশগুলো নিজেদের অবস্থান কখনও ছাড় দিতে চাইবে না।
তাছাড়া ইরানের পর তুরস্ক একমাত্র দেশ যাদেরকে ইজরাইল প্রচন্ড সমীহ করে। তাই যত দ্রুত ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় তুরস্ক হস্তক্ষেপ করবে, তত দ্রুত এই রক্তাক্ত সংঘাত বন্ধ হবে। যে কারণে সবাই চেয়ে আছে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের দিকে।
পারমানবিক সক্ষমতা অর্জনের পূর্ব পর্যন্ত ইরান বড় ধরণের কোনো সংঘাতে ইজরায়েলের সাথে জড়াবে না বলে মনে হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের সাথে সর্ম্পকের অবনতি না ঘটিয়ে ইরান চাইবে তাদের চুড়ান্ত পারমানবিক সক্ষমতা অর্জন করতে। এটি তাদের একমাত্র লক্ষ্য। সুতরাং ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইরান যুদ্ধের মাঠ পর্যন্ত গড়াবে না।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে আরবদের দৃষ্টিভঙ্গি সবারই জানা।‘সিরিয়ার ১০ বছরের যুদ্ধ, ইয়েমেনের উপর সৌদি আগ্রাসন, মিসরের রাজনৈতিক ব্যবস্থার সহিংস পতন, লিবিয়ায় রাজনৈতিক অস্হিরতা এবং লেবাননের তিন বছরের রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে আরবরা ভুলে গেছে ফিলিস্তিনিদের ও তাদের সমস্যার কথা। তারা এখন শুধুই নিজেদের সমস্যা নিয়ে ভাবছে। আরবের অনেকে এখন ইজরায়েলের পরম মিত্র।
সৌদির কর্তৃত্ব থেকে বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত ওআইসি ফিলিস্তিনি ইস্যুতে কার্যকরি ভুমিকা রাখতে পারবে না এটি এক ধরণের প্রতিষ্ঠিত সত্য। ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে পাকিস্তান সর্বোচ্ছ ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর মৌখিক আশ্বাস দেয়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে আর মালয়েশিয়ার ভূমিকা এখনও পরিস্কার নয় ?
ইজরাইলের সম্প্রতি সহিংস হামলার মুখে পশ্চিম তীর ও গাজার শিশুদের যে অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে সেটি নিয়ে ইজরাইলের রাজনৈতিক মিত্ররা কিছুই বলছে না। ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার মাটির সাথে মিশিয়ে দেবার পরও ইহুদী আগ্রাসনকে মার্কিন-বৃটেন-ফ্রান্স ইজরায়েলের আত্মরক্ষা বলে মনে করছে !
বছর ধরে নিরাপরাধ ফিলিস্তিনি সহ পৃথিবীর নানা প্রান্তরে মানুষ হত্যা করে ডেমোক্রেসি, লিবারেলিজম ও ক্যাপিটালিজমের ডিসকোর্স শিখিয়ে আপনার-আমার মতো বলদকে দিনের পর দিন বলদ বানিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমারা। আর বলদ হয়ে আমরাও তাদের আজ্বা মেনে চলছি।
পূর্ব জেরুসালেমের শেখ জারাহ এলাকার বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে ইসরাইলি আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ থেকে এবারের হামলার সূত্রপাত হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের প্রথম কিবলা আল আকসায় তারাবির নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় ইজরাইল। এর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনির প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের প্রতিরোধকে নির্মুলের নামে গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা শুরু করেছে ইজরাইল। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে ১৮০ জনের উপরে ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের প্রায় সবাই বেসামরিক নাগরিক, তার মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে সহস্রাধিক। গাজায় অনেকের বাড়ি ঘর গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে অবস্হিত আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্হা আল-জাজিরা সহ এপি নিউজের বহুতলা অফিস ভবন দখলদারদের বোমার আঘাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
১৯৬৭ সালের আরব ইজরাইল যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুসালেম দখল করে নেয় ইজরাইল। এখানেই অবস্থিত মুসলিমদের প্রথম কেবলা এবং তৃতীয় বৃহত্তম পবিত্র স্হান আল আকসা মসজিদ। ১৯৮০ সালে নগরীর পুরোটা দখলে করে নেয় ইহুদিবাদী দেশটি। আন্তর্জাতিক মহল জেরুসালেমকে ইজরাইলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও তারা জোরপূর্বক পবিত্র নগরীটি দখল করে রেখেছে।
ঈদুল ফিতর মুসলিমদের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব। কিন্তু এ উৎসব এখন আর আগের মতো নেই। এর গায়ে করোনার দাগ লেগেছে। নিষ্ঠুর করোনার তাণ্ডব নৃত্যের কাছে হারিয়ে যাচ্ছে উৎসবের চিরাচরিত গৌরব। শুধু এ উৎসব কেনো, সবল ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয়, জাতীয়, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উৎসবের চেহারাই আজ মলিন।
উৎসব মানেই আনন্দ। কিন্তু শোকে কাতর মনমরা হৃদয়ে এ আনন্দ কতটুকু রেখাপাত করতে পারে! বেঁচে থাকাই যেখানে মানুষের এখন চ্যালেঞ্জ সেখানে উৎসবের আনন্দ বন্যায় হাবুডুবু খেতে কি সত্যিকারার্থে তাদের মন সায় দেয়? আনন্দ একটি অপেক্ষিক বিষয়। এটাকে জোর করে কেউ গ্রহণ বা বর্জন কোনোটাই করতে পারেনা।
প্রতি বছর পবিত্র রমজান শেষে আনন্দের বার্তা নিয়ে আমাদের সামনে ঈদুল ফিতর আসে। কিন্তু গতবছর থেকে তা ভিন্ন ধারায় আসছে। করোনা মহামারীর কবলে পড়ে তামাম দুনিয়ার চিত্র বদলে যাবার সাথে সাথে মুসলিমদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আনন্দও বদলে গেছে। ঈদের জামাতে নামাজ পড়ার যে স্বতস্ফূর্ত আনন্দ ছিলো তাও অনেকটা দমে গেছে। কেনাকাটায় নেই কোনো জৌলুস। নামাজ শেষে কোলাকুলি বা করমর্দনের চিরাচরিত প্রথা আজ অবরুদ্ধ। মোট কথা আগে যেভাবে আমরা হৈচৈ,উত্তাপ ও আড়ম্বরের সাথে ঈদ পালন করতে সক্ষম হতাম তা এখন আর মোটেও সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যবিধির বাইরে গিয়ে উৎসবকে তো আর “আপদে” পরিণত করা যায়না!
উৎসব বা আনন্দকে বেগবান করার জন্য অর্থনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। পূর্ণিমার চাঁদ যেনো ঝলসানো রুটি। কবির এ কথাটিকে ধার নিয়ে আমি বলতে চাই, করোনার রাজ্যে ঈদের চাঁদ ঝলসানো রুটি করোনা মহামারী ঠেকাতে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে লকডাউন চলছে বিশ্ব জুড়ে। ফলে অর্থনীতির চাকা স্থবির হয়ে পড়েছে প্রতিটি দেশে। কর্ম সংস্থান হারিয়ে মানুষ দুবেলা দুমুটো খেয়েপরে বাঁচার জন্য ইয়ানফসি ইয়ানফসি করছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এখানেও একই ভাবে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা। এমন এক মন্দার কবলে পড়ে যখন বৃহত্তর জনগোষ্ঠী হা হুতাশ করছে তখনই এলো আমাদের প্রাণের উৎসব ঈদুল ফিতর। অর্থনীতির চাকা স্থবির হয়ে গেলেও সময়ের চাকা কখনো স্থবির হয়না। নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলে। তাই ভালো সময়, মন্দ সময় বলে কোনো কথা নয়, উৎসবের সময় উৎসব আসবেই। এবারও তাই হলো। ভালো মন্দের তোয়াক্কা না করে আমাদের সামনে এলো ঈদ।
আমরা জানি, ঈদ ঘরে ঘরে, জনে জনে আনন্দ বয়ে আনে। ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলকে এক কাতারে শামিল করার চেতনায় উজ্জীবিত করে। কল্যাণের পথে ত্যাগ ও তিতিক্ষার মন্ত্রে দীক্ষিত করে। ঈদের আগে রোজার একটি মাস সংযম ও আত্মত্যাগের মাস। রোজার কঠোর অনুশীলন ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধি ও গরীব দুঃখী অনাহারীদের কষ্ট অনুভবের প্রেরণা দেয়। এ সময় গরীব দুঃস্থদের ঈদের আনন্দে শরিক করার জন্য রয়েছে ফিতরা ও যাকাতের বিধান, যা বিত্তবান প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ। আমার বিশ্বাস, সমাজের সক্ষম ব্যক্তিরা যদি যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে সঠিক শরীয়া আইন অনুসরণ করেন তবে অভাবীদের কষ্ট লাগবে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।
যতো কঠিন সময়ের মধ্যেই ঈদ আসুক না কেনো, এর মূল তাৎপর্য- বিভেদ মুক্ত জীবনের উপলব্ধি থেকে মোটেও সড়ে যাওয়া যাবেনা। ভুল ভ্রান্তি, পাপ পঙ্কিলতা প্রতিটা মানুষের জীবনেই কমবেশি ইচ্ছে বা অনিচ্ছায় এসে থাকে। কিন্তু পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা চান মানুষ পাপতাপ ও বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে সৎপথে ফিরে আসুক। সম্প্রীতির আনন্দ ধারায় সিক্ত হয়ে উন্নত জীবন লাভ করুক। ঈদুল ফিতর মূলত মানুষকে এ শিক্ষাই দেয়। দিবসটির উৎসব তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠে সমাজের ধনী দরিদ্রের সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে। শ্রেনীবৈষম্য বিসর্জনের মধ্য দিয়েই এ আনন্দ সার্থক হয়ে ওঠে।
করোনার ভোগান্তির কারণে ঈদের চাঁদকে আমরা ঝলসানো রুটির সঙ্গে যতোই তুলনা করিনা কেনো, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, আপন জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার অনুভূতিই আলাদা। ঈদ বিভেদ বৈষম্যহীন ভ্রাতৃত্ব চেতনায় ঋদ্ধ এক আনন্দ উৎসব বিনোদনের দিন। এ দিনে সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়াটাও এক ধরনের ইবাদত।
রমজান আমাদেরকে চিত্ত শুদ্ধির যে শিক্ষা দিয়েছে সে শিক্ষার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তি ও শ্রেয়বোধের চেতনায় স্থিত হতে হবে। ঈদুল ফিতর উদযাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব সকল প্রকার হিংসা হানাহানি মুক্ত হোক। সম্প্রতি আল আকসা মসজিদে মুসুল্লিদের উপর আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করার যে জঘন্যতম ঘটনার উদ্ভব ঘটানো হয়েছে এ ধরনের ঘৃণ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিভীষিকা দূর হোক। সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হোক, আনন্দে ভরে উঠুক তাবৎ পৃথিবী।
করোনার দাপটে পৃথিবী অচল। এ অচলাবস্থার জন্য উৎসবের প্রকৃত স্বাদ থেকে আমরা বঞ্চিত। কিন্তু এ পরিস্থিতি চিরদিন থাকবেনা। এর আগেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহামারী এসেছে। কোনোটাই স্থিরস্থায়ী হতে পারেনি। করোনার আতংকও একদিন শেষ হবে। ইতোমধ্যে এর ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়েছে। জনগণ তা গ্রহণও করছে। বিশ্বের সকল মানুষের উপর এর প্রয়োগ সম্পন্ন হলে পৃথিবী অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। তখন করোনা অর্থাৎ কভিড-১৯কে একটি নিছক ঠান্ডা জ্বর ছাড়া আর কিছুই মনে হবেনা। আমি সেই স্বাভাবিক পৃথিবীর প্রত্যাশা রেখে সবাইকে জানাই পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা- ঈদ মোবারক।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে লিমেরিক এর মুসলমান কমিউনিটির পক্ষ থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পালন করা হয়। স্বেচ্ছাশ্রম এর মাধ্যমে শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির জন্য সবাই ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আজ ১৩ মে ঈদ এর দিন বাদ যোহর এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন কমিউনিটির মুসলমানরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। এতে স্থানীয় সাংবাদিক ও স্থানীয় প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। লিমেরিক সিটি কাউন্সিল থেকে পরিষ্কারক সরঞ্জামাদি প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ, পাকিস্থান, আফগানিস্থান, আফ্রিকাসহ অনেক দেশের মুসলমানগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন।
লিমেরিক শহরের দুই মসজিদ, আল ফুরকান ও আল নূর মসজিদের ইমামগণও অংশগ্রহণ করেন এই কর্মসূচিতে। লিমেরিকের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদারও অংশগ্রহণ করে সহায়তা করেন।
জনাব আজাদ তালুকদার আইরিশ বাংলা টাইমসকে বলেন, ‘’আইরিশ সোসাইটি থেকে আমরা নানাভাবে উপকৃত হয়ে আসছি, আর যেহেতু আমরা এই সমাজেই বসবাস করি, সুতরাং এই সমাজ ও পরিবেশের প্রতি আমাদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে, তারই অংশ হিসেবে আমাদের এই কর্মসূচি’’।
তিনি আরো বলেন, ‘’বর্তমান প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকির মুখে, একে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে, তারই লক্ষ্যে মুসলিম কমিউনিটির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়’’।
ডেপুটি মেয়র এবং মসজিদের ইমামগণ আজকের এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। এবং ভবিষ্যতেও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা জানান। তাঁরা সবাইকে যার যার উদ্যোগে যেন পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখে সে অনুরোধ জানান।
মনেআছে? গতঈদুলফিতরেরনামাজআমরাঘরেঘরেপড়েছিলাম! আমাদেরজীবদ্দশায়এমননজীরআরমেলেনি।যাছিলঅকল্পনীয়।একবছরপরেওযেকরোনারথাবারমুখেবাসকরতেহবেতাওছিলকল্পনাতীত।বছরঘুরেএলআরেকরমজান, আরেকঈদ।কিন্তুমহিমান্বিতএইমাসেঅনেকজায়গায়ইখোলেনিমসজিদেরদ্বার, জামায়াতেঈদেরনামাজহবেকিনা, হবে কিনা নামাজ শেষে উষ্ণ মোলাকাত,তারও নেইনিশ্চয়তা।
উষ্ণ ঈদের মোলাকাত কি সম্ভব হবে?
করোনার এক বছর গত হয়ে গেল, কিন্তু বিদায় হলনা করোনার। মাঝে মধ্যে আশার সঞ্চার হয়, আবার মাঝে মাঝে সেই আশায় প্রদীপ ক্ষীণ হয়ে আসে। করোনার উঠানামা, ক্ষণে ক্ষণে রূপ পরিবর্তনে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে মানব সমাজের। সম্প্রতি ভারতে করোনার আগ্রাসন দেখে মনে হয় এ দানব থামবার নয়। যত ঔষধ ভ্যাকসিন এর প্রতিরক্ষা কবজ সবই যেন তার কাছে তুচ্ছ।
মহাউল্লাসে রাজ করা প্রাণসংহারী এ দানব কেড়ে নেয় বহু মানুষের প্রাণ, হুমকির মুখে ফেলে দেয় বহু মানুষের জীবন, ভূপাতিত করে দেয় বহু মানুষের শরীর, অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে অনেককেই। করোনা ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে তার স্বাদ পাইয়ে দেয় এবং কেড়ে নিয়েছে ৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের প্রাণ। তারপরেও মনে হচ্ছে তৃষ্ণা মেটেনি এই রাক্ষুসে দানবের।
তার পরেও শোকর গুজার করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি, যারা আজও নিচ্ছি পৃথিবীর বুকে নিশ্বাস। সৌভাগ্য হল আরেকটি রমজানের স্বাদ নেয়ার, আরেকটি ঈদের চাঁদ দেখার। সৌভাগ্য হল অতীত কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার, সৌভাগ্য হল মানব জাতির কল্যাণের জন্য দোয়া চাওয়ার। গত রমজানে অনেক প্রিয়জন আমাদের মাঝে ছিলেন, যারা এই রমজানে নেই; সবার জন্য দোয়া চাইতে পারাটাও একটা সৌভাগ্য।
অতীতেও এমন ভয়াল মহামারি বিভিন্ন সময়ে এসেছিল এবং ঘ্রাস করে নিয়েছিল বহু প্রাণ, ধ্বংস করে দিয়েছিল জনপদ থেকে জনপদ। এর পরে আবার ফিরে এসেছে সুস্থ পৃথিবী। এক্ষেত্রেও আমাদের প্রত্যাশা যে, একসময় মানবজাতির মুক্তি ঘটবে এই মহামারির ত্রাস থেকে। ফিরে আসবে সুস্থ, সুন্দর, মুক্ত বিহঙ্গের মত স্বাভাবিক জীবন।
ফিরে আসুক স্বাভাবিক রমজান, স্বাভাবিক ঈদ। নির্ভয়ে, স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণভাবে যেন করতে পারি ঈদের নামাজ শেষে উষ্ণ মোলাকাত।
তবে জানিনা এ জীবন শেষ হবার আগে করোনার শেষ হবে কিনা। এও জানিনা করোনা শেষ হবার আগে কত জীবনের সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু যাদেরই সৌভাগ্য হবে করোনা পরবর্তী জীবন দেখার ও উপভোগ করার, সবার জন্য থাকবে সুখী স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের জন্য শুভকামনা। আর যারা পাড়ি জমিয়েছেন অথবা জমাব অনন্তকালের উদ্দেশে, সবার অনন্তকালের জীবন যেন হয় নিষ্পাপ আল্লাহর মহিমাপূর্ণ।
আসুন একসাথে হাতে হাত রেখে এই দুর্যোগের মোকাবেলা করি। পাশে দাঁড়াই সবাই সবার। এগিয়ে আসি একে ওপরের সাহায্যে। মেনে চলি স্বাস্থ্যবিধি, মেনে চলি সরকার ও বিশেষজ্ঞদের উপদেশ। বিরত থাকি হিংসা, হানাহানি থেকে। দিন শেষে আমরা সবাই মানুষ, সকলের ত্বরে সকলে আমরা। আসুন প্রাণ খুলে দোয়া করি সবাই সবার জন্য।
৮ মে (রোববার) বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী এ দিনটি পালিত হয়। দেশ ও অঞ্চলভেদে কোথাও কোথাও অবশ্য মা দিবসের তারিখ ভিন্ন হয়ে থাকে।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের আনা জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জার্ভিসের উদ্যোগে প্রথম মা দিবস পালিত হয়। আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন অনাথদের সেবায় জীবন ব্যয় করেছেন। ১৯০৫ সালে মারা যান মেরি।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পর্যায়ক্রমেঃ
১.
আধুনিক মা দিবসের প্রচলন হয় যুক্তরাষ্ট্রে। দিবসটির প্রবক্তা আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস। তাঁর মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস ছিলেন একজন শান্তিবাদী সমাজকর্মী। তিনি ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
২.
১৯০৫ সালে অ্যান মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর মেয়ে আনা মায়ের স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেন। সব মাকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি দিবসের প্রচলন করেন ।
৩.
১৯০৮ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার একটি গির্জায় আনা তাঁর মায়ের স্মরণে অনুষ্ঠান করেন। একই বছর মার্কিন কংগ্রেস মা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব নাকচ করে। তবে তাতে দমে যাননি আনা। তিনি তাঁর চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মা দিবস পালিত হতে থাকে।
৪.
অবশেষে আনার প্রচেষ্টা সফল হয়। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবেও ঘোষণা করা হয়।
৫.
যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে। ক্রমেই দিবসটি ঘিরে বাণিজ্য শুরু হয়। এতে লঙ্ঘিত হয় দিবসটির মূল চেতনা। মর্মাহত হন আনা। দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি।
সিলেটের ওসমানীনগরে শ্বশুরবাড়ি থেকে ইফতারি মনমতো না হওয়ায় ও ঈদের কাপড় না দেওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ওই গৃহবধূর নাম শরিফা বেগম (২২)। তিনি ওসমানীনগরের উসমানপুর তাহিরপুর গ্রামের আরজ আলীর (২৮) স্ত্রী। তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আট মাস তাঁদের বিয়ে হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই ইসলাম উদ্দিনের করা মামলায় গৃহবধূর স্বামী আরজ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগমকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও নিহত গৃহবধূর বাবার বাড়ির লোকজনের ভাষ্য, প্রায় আট মাস আগে পারিবারিকভাবে শরিফা বেগমের সঙ্গে আরজ আলীর বিয়ে হয়। শরিফা হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউসকান্দি সাদরবাদ গ্রামের সাকিন উল্লাহর মেয়ে। সম্প্রতি রমজানে শরিফার স্বামী ও শাশুড়ি ইফতারি দেওয়ার দাবি করেন। ১৬ রমজানে শরিফার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে ইফতারি দেওয়া হয়। এই ইফতারি মনমতো না হওয়ায় অসন্তুষ্ট হন শরিফার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এরপর ঈদের নতুন কাপড় দেওয়ার দাবি জানিয়ে শরিফাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছিল বলে তিনি পরিবারকে জানিয়েছেন। গতকাল ঈদের নতুন কাপড় নিয়ে শরিফার স্বজনদের তাঁর শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। তবে সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে শরিফার বড় ভাই ইসলাম উদ্দিনকে ফোন দিয়ে বোনের শারীরিক অসুস্থতার কথা জানানো হয়। দুপুরে গিয়ে তিনি বোনকে খাটের ওপর মৃত অবস্থায় দেখতে পান। শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করেন, শরিফা আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশ বলছে, নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এরপরও ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বোনকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে ইসলাম উদ্দিন বাদী হয়ে স্বামী ও শাশুড়ির নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জুমাতুল বিদার দিনে ও শবে কদরের রাতে ফিলিস্তিনি মুসলমানরা পবিত্র আল আকসা মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য জড়ো হয়েছিল। এমন সময় ইসরায়িলি বাহিনী তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঐদিন প্রায় ১৭০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়। তারই প্রতিবাদে বহু ফিলিস্তিনি নরনারী আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনে জড়ো হলে, তাদের উপর দ্বিতীয়বারের মত হামলা চালায় ইসরাইলি পুলিশ। এতে অন্তত ৮০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গিয়েছে।
ফিলিস্তিনি মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, মুসল্লিদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে ইসরাইলি বাহিনী লাঠিপেটা করেছে, রাবার বুলেট ছুড়েছে। এমনকি স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপও করেছে তারা। মুসল্লিদের ঘিরে রেখে তাদের ওপর অমানবিক আচরণ করেছে দখলদার দেশটির পুলিশ।
আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম শ্রদ্ধার স্থান। এই স্থানটিতে এর আগেও একাধিকবার সহিংসতা হয়েছে। মুসলমানদের পবিত্র মাস মাহে রমজান, এই মাসেরই একটি উল্লেখযোগ্য দিন হচ্ছে জুমাতুল বিদা ও মহিমান্বিত রাত হচ্ছে শবে কদর এর রাত। এমন দিনে মুসলমানদের উপর দখলদারির হামলা সত্যিই ন্যাক্কারজনক।
লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী টাওয়ার ব্রিজে আয়োজিত যুক্তরাজ্যে একটি সর্ব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শুক্রবার ইফতারির আগে আজান দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক কাজি শফিকুর রহমান (৩৫)।
এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মক্কার পবিত্র মসজিদের মুয়াজ্জিন শেখ আলী আহমাদ মোল্লার অবিকল সুরে শফিকুরের আজানের ধ্বনি শোনে সবাই অবাক হয়ে যান।
১৯৭৫ সাল থেকেই পবিত্র মক্কা নগরীর মসজিদে আজান দিচ্ছেন মুয়াজ্জিন শেখ আলী আহমাদ মোল্লা। তার কণ্ঠ সারা বিশ্বে প্রশংসিত। ছোটবেলা থেকেই আজান দেয়ার অভ্যাস কাজি শফিকুর রহমানের।
শুক্রবার টাওয়ার হ্যামলেটস হোমস, ইস্ট লন্ডন মসজিদ, লন্ডন মুসলিম সেন্টার ও টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্টারফেইথ ফোরাম যৌথভাবে ওই ইফতার পার্টির আয়োজন করে।
বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক কাজি শফিকুর রহমান মূলত ব্যবসায়ী। ইফতারির আগে অনুষ্ঠানে হঠাৎ করেই তাকে আজান দিতে বলা হয়। এ সময় তার আজানের সুর অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায়। অনেকেই তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে দিয়েছেন।
টাওয়ার ব্রিজে আজান দিতে পেরে যারপরনাই খুশি শফিকুর রহমানও।
একসাথে নয়টি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিলেন পশ্চিম আফ্রিকার মালির ২৫ বছর বয়সী এক নারী। যার মধ্যে পাঁচজন মেয়ে ও চারজন ছেলে সন্তান। এতগুলো সন্তানের জন্ম হওয়ার পরও মা ও সন্তানরা সুস্থ রয়েছেন।
ডাক্তাররা ধরে নিয়েছিলেন তিনি সাতটি সন্তান প্রসব করতে যাচ্ছেন, কারণ তার স্ক্যান পরীক্ষায় তেমনটিই ধরা পড়েছিল। কিন্তু প্রসবের পর দেখা গেল নয় সন্তান ছিল তার গর্ভে। ওই প্রসূতিকে নিয়ে এমন ঘটনা চিকিৎসকদেরও কল্পনাতীত ছিল।
হালিমার স্বামী বলেন “আমি খুবই খুশি, আমার স্ত্রী এবং বাচ্চারা সবাই ভাল আছে।”
মালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফ্যান্টা সিবি জানান, পাঁচ মেয়ে ও চার ছেলের জন্ম দিয়েছেন হালিমা। সাথে সকল চিকিৎসক, নার্সদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি জানান, মা ও তার সন্তানরা সুস্থ রয়েছেন।
মালির এই নারী একসাথে নয় সন্তান প্রসব করেন
আমেরিকার একজন নারী ২০০৯ সালে একসাথে ৮টি শিশুর জন্ম দিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড-এ নাম উঠিয়েছিলেন। একসাথে সর্বাধিক সংখ্যক জীবিত শিশুর জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে এতদিন এটাই ছিল গিনেসে নথিভুক্ত বিশ্বরেকর্ড।
একসাথে নয় সন্তানের জন্ম দেয়ার ঘটনা প্রথম প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল ১৯৭০-এর দিকে। ঘটনাটি ঘটে সিডনিতে। তবে কোনো সদ্যজাতই বাঁচেনি। তবে, এবার হালিমার নয়টি শিশুই সুস্থ রয়েছে। খুব শিগগিরই বাড়ি ফিরবে তারা।
আয়ারল্যান্ডে স্কুলের ছেলেমেয়েদের কি স্কুলের বাইরে কোচিং এর প্রয়োজন আছে?
এই লেখার প্রথম পর্বে আয়ারল্যান্ডের প্রাথমিক স্কুলের ছেলেমেয়েদের স্কুলের বাইরে কোচিং এর প্রয়োজন আছে কি-না সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন আসা যাক মাধ্যমিক স্কুলের ছেলেমেয়েদের প্রসঙ্গে। এদেশে মাধ্যমিক স্কুলে প্রায় দশটির মতো বিষয় পড়তে হয়। তন্মধ্যে গণিত, ইংরেজি, বিজ্ঞান ও একটি বিদেশী ভাষা (ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ বা জার্মান) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়গুলি উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়েও পড়তে হয়। অতএব, এই বিষয়গুলির উপর খুব ভালো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তবে এই পর্যায়ে আমি সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিই গণিতের উপর। কেননা, আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এদেশের বেশীরভাগ ছেলেমেয়েরা গণিতে বেশ দূর্বল। আমার মতে, নিম্নোক্ত কিছু কারনে ছেলেমেয়েরা গণিতে দূর্বল হতে পারে।
(১) কোনো কারনে প্রাথমিক স্কুলে গণিতের ভিত্তি মজবুত না হওয়া।
(২) গণিতের প্রতি অহেতুক ভীতি কিংবা অনীহা।
(৩) ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা না করে শুধুমাত্র কঠিন বা কষ্টদায়ক ভেবে উচ্চতর গণিত ছেড়ে সাধারন গণিত নির্বাচন।
(৪) স্কুলে শ্রেনীকক্ষের পাঠদান সময় অপর্যাপ্ত।
(৫) ক্যালকুলেটরের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা।
(৬) গণিতের সকল সূত্রাবলী লগ বই আকারে পরীক্ষার সময় বিতরন।
(৭) কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুযোগ্য শিক্ষকের অভাব।
যাহোক, আমার কথা হল মাধ্যমিক স্কুলের ছেলেমেয়েরা কম বয়সী। স্বভাবতই ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করার মতো জ্ঞান তা্দের নেই। সুতরাং অভিভাবকদেরকেই এই ব্যাপারে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। ছেলেমেয়েদের গণিতের প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। যদি কোনো ছেলে বা মেয়ে গণিতে দুর্বল থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই অবশ্যই স্কুলের বাইরে কোচিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষভাবে বলতে হয়, মাধ্যমিক স্কুলের শেষ বর্ষে অর্থাৎ থার্ড ইয়ারে এই কোচিং খুবই উপকারী।
(চলবে……)
এস, এম, মাহফুজুল হক
গণিত, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিক্ষক
Lucan, ডাবলিন
৩রা মে, ২০২১
প্রথমবারের মতো কাবা শরিফে অবস্থিত হাজরে আসওয়াদের (পবিত্র কালো পাথর) স্ফটিক স্বচ্ছ ক্লোজ আপ ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩ মে) সৌদি তথ্য মন্ত্রণালয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ‘জান্নাতি’ পাথর হাজরে আসওয়াদের সবচেয়ে স্বচ্ছ ছবি প্রকাশ করে।
Close Up picture
আল অ্যারাবিয়ার খবরে বলা হয়েছে— কোভিডের সময় হাজরে আসওয়াদের কাছে ভিড় নেই। এ সুযোগে সৌদি সরকারের দুই পবিত্র মসজিদের জেনারেল প্রেসিডেন্সির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ হাজরে আসওয়াদ বা ব্ল্যাক স্টোনের ছবি নিয়েছে। একেকটি ছবি তৈরি করতে ৭ ঘণ্টা সময় লেগেছে। প্রতিটি ছবি ছিল ১৬০ গেগাবাইটের এবং অবিশ্বাস্য ৪৯ হাজার মেগাপিক্সেলের।
তার পর ফোকাস স্ট্যাকিং নামে একটি কৌশল ব্যবহার করে ছবিগুলো শার্প করতে ৫০ ঘণ্টা লেগেছে। বিভিন্ন ফোকাস পয়েন্টের সঙ্গে একাধিক ফটো একত্রিত করে, ডিজিটাল ফটোগ্রাফিতে ফোকাস স্ট্যাকিং করা হয়।
কাবা শরীফ
৪ মে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সৌদি তথ্য মন্ত্রণালয় এই ছবিগুলো প্রকাশ করে। এখন যে কেউ প্রথমবারের মতো একটি বর্ধিত ডিজিটাল ফটোতে পাথরটিকে খুব কাছ থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে দেখতে পাবেন।
‘হাজরে আসওয়াদ’— কাবাঘরের দেয়ালে বিশেষভাবে স্থাপনকৃত একটি পাথরের নাম। আরবি ‘হাজর’ শব্দের অর্থ পাথর আর ‘আসওয়াদ’ শব্দের অর্থ কালো। অর্থাৎ কালো পাথর। ‘হাজরে আসওয়াদ’ বেহেশতের মর্যাদাপূর্ণ একটি পাথর। হজযাত্রীরা হজ করতে গিয়ে এতে সরাসরি বা ইশারার মাধ্যমে চুম্বন দিয়ে থাকেন।
রাসুলের নবুয়তপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ আগের স্থানে কে বসাবেন—এটি নিয়ে কোরাইশদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেধেছিল। তখন মহানবী (সা.) নিজের গায়ের চাদর খুলে তাতে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে চাদর ধরতে বলেন।
গোত্রপ্রধানরা চাদরটি ধরে কাবা চত্বর পর্যন্ত নিয়ে গেলে নবী করিম (সা.) নিজ হাতে তা কাবার দেয়ালে স্থাপন করেন এবং দ্বন্দ্বের পরিসমাপ্তি ঘটান।
আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.)-এর শাসনামলে হাজরে আসওয়াদ ভেঙে তিন টুকরো হয়ে গিয়েছিল। ফলে তিনি তা রূপা দিয়ে বাঁধাই করেছেন। আর তিনিই সর্বপ্রথম হাজরে আসওয়াদকে রূপা দিয়ে বাঁধানোর সৌভাগ্য অর্জনকারী। এই পবিত্র পাথরের দৈর্ঘ্য ৮ ইঞ্চি ও প্রস্থ ৭ ইঞ্চি। বর্তমানে এটি আট টুকরো।
২৭ বছর একসঙ্গে থাকার পর বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস।
বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস উভয়েই টুইটবার্তায় বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ‘দম্পতি হিসেবে একসঙ্গে থাকতে পারি, সেটি আমরা আর বিশ্বাস করি না।’
১৯৮০’র দশকের শেষের দিকে মেলিন্ডা মাইক্রোসফটে যোগদানের পর বিল গেটসের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে।
বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস মিলে দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ গড়ে তোলেন। এ ফাউন্ডেশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। বিল গেটস বলেন, গেটস ফাউন্ডেশন এর কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলবে। শুধু আমাদের জীবনের পরবর্তী অধ্যায় একসাথে থাকা হচ্ছেনা।
বিল গেটস বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ ধনী। তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১২৪ বিলিয়ন ডলার। ১৯৭০ সালে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি অগাধ সম্পদের মালিক হন। মাইক্রোসফট বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়ার প্রতিষ্ঠান।
‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’, একুশের নির্বাচনে এমন রায়ই দিয়েছেন বঙ্গবাসী। বিপুল ভোটে জিতে বাংলার ক্ষমতা থাকছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই হাতে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
‘একপায়ে বাংলা দখল করব আর দু’পায়ে দিল্লি’। ভোট প্রচারের জনসভা থেকে এভাবেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা শহর থেকে ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে জনসভায় রাজ্যের মানুষের কাছে ভোট চাইলেন সরাসরি মমতা ব্যানার্জির প্রতি ইঙ্গিত করে।
“আপনারা তাকে ১০ বছর কাজের সুযোগ দিয়েছেন, এবার আমাদের সুযোগ দিন,” মি. মোদী বললেন।
বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আনার জন্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বার বার এই রাজ্যে এসে সভা করেছেন,
‘একপায়ে বাংলা দখল করব আর দু’পায়ে দিল্লি’। – মমতা
এক দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আছেন দৃপ্ত রাজনীতিক মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে আঞ্চলিক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির আরেক পরিচয় “দিদি” নামে।
তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিজেপির এই হারকে, মমতার সাথে মোদীর হার হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে ইতিহাস গড়েছিলেন মমতা। ২০১৬ সালে সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল বিরোধীরা। সেই মমতা সাম্রাজ্যের পতন ঘটাতে এবার একের পর এক বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এসে বঙ্গে প্রচার করেছেন।
আয়ারল্যান্ডে পরিবহন মন্ত্রনালয়ের কমিটিতে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশদ্ভুত সাজেদুল চৌধুরী রুবেল। আয়ারল্যান্ডের পরিবহন মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা কমিটিতে প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। এর আগে শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্য কোনো দেশের নাগরিকই এ কমিটিতে আসন লাভের সুযোগ পাননি।
মন্ত্রনালয়ের এমন গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে সদস্য পদ প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে বিদেশে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার তালিকায় আরেকটি নতুন দৃষ্টান্ত সংযোজিত হলো। গৌরবময় এ পদটি অলংকৃত করেন নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার বরান্তর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মরহুম ইউনুস আলী চৌধুরী ও বেগম সাজেদা চৌধুরীর সন্তান কবি, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও গল্পকার সাজেদুল চৌধুরী রুবেল।
গাজীপুর তথা বাংলাদেশের আরেক কৃতি সন্তান আয়ারল্যান্ডস্থ লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের মনোনয়নে তিনি এ সম্মানজনক পদটি লাভ করেন। সাজেদুল চৌধুরী রুবেল প্রায় বিশ বছর যাবত আয়ারল্যান্ডের লিমরিক শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তিনি সকলের দোয়া প্রার্থী।
জনাব রুবেলের এই কৃতিত্বে বাংলাদেশি কমিউনিটি অনেক গর্বিত এবং উনার এই প্রাপ্তিকে শুভেচ্ছা সহকারে বরণ করে নিচ্ছেন। উনার নতুন পথচলা শুভ হোক এই প্রত্যাশা বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে।
১৮৮৬ সালে ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা দৈনিক ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ওই দিন অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকজন শ্রমিককে জীবন দিতে হয়। উত্তাল সেই আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে দিতে বাধ্য হয়। এরই পথ ধরে বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের সময় চালু করা হয়। এরপর ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সমাবেশে ১ মে’ কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিনটি পালিত হচ্ছে।
ঠিকা শ্রমিক – খেপের অপেক্ষায়
শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরির দাবি এখনো উপেক্ষিত, এখনো তাঁদের বিরাট অংশ মৌলিক মানবাধিকার থেকেও বঞ্চিত। মে দিবস বিশ্বের শ্রমিকদের সংহতি যেমন বাড়িয়েছে, তেমনি তাদের ওপর শোষণের বিরুদ্ধেও প্রেরণা যোগাচ্ছে। মে দিবসের পথ ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের অধিকার, বিশেষ করে মজুরি, কাজের পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা—এসব ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। কিন্তু গত দুই দশকে বিশ্বায়নের ফলে অর্থনৈতিক গতিশীলতা ও সমৃদ্ধি বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বৈষম্য ও বঞ্চনা।
নারী শ্রমিক
বিশ্বের অনেক দেশে শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও জীবনযাত্রার মানের উপর নির্ভর করে বেতন নির্ধারণ করা হলেও বাংলাদেশের সিংহভাগ শ্রমিকই শ্রমের সঠিক মূল্য পায়না। বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে অবহেলার স্বীকার। সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করে সবচেয়ে কম মজুরি এবং সন্মান তাদের জুটে থাকে।
শিশু শ্রমিক
বাংলাদেশে এখনো নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমিকরা অবহেলিত এবং সমাজে দেখা হয় ছোট করে। বিশ্বের অনেক দেশে, বিশেষ করে উন্নত বিশ্বে সকল পেশাকে সমচোখে দেখলেও, বাংলাদেশসহ অনেক দেশে কিছু পেশাকে দেখা হয় হীন চোখে।
প্রতি বছরই ঘুরে ফিরে আসে মে দিবস। মনে করিয়ে দেয় শ্রমিক অধিকারের কথা। কিন্তু পুঁজিবাদের এই বিশ্বে মে দিবস কতটাই বা গুরত্ব বহন করে?
মে দিবসের এই দিনে সকল শ্রমজীবীদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।
আগামী ১০ মে থেকে কোভিড রেস্ট্রিকশন অনেকটা খুলতে পারে। তারই পরিপূর্ণ গাইডলাইন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন। আগামী দুই মাসব্যাপী কয়েকটি ধাপে লকডাউন খুলতে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ রোডম্যাপ এখানে দেয়া হল।
প্রথম ধাপ – মে
৪ মে থেকেঃ
কিছু কন্সট্রাকশন কার্যক্রম চালু রয়েছে। ৪ মে থেকে বাকিগুলো চালু হবে।
১০ মে থেকেঃ
ভ্রমণঃ আন্তঃকাউন্টি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। সারাদেশে ভ্রমণ করা যাবে।
সামাজিক মেলামেশাঃ সর্বোচ্চ তিন বাসার মানুষ অথবা ছয়জন বাহিরে বা বাসার বাগানে দেখা করতে পারবে। ১২ বছর বা তার নিছের ছেলেমেয়ে বিবেচনায় আসবেনা।
সম্মিলিত গ্যাদারিংঃ বাহিরে সর্বোচ্চ ১৫ জন একসাথে জড়ো হতে পারবে।
ভ্যাকসিন বোনাসঃ সম্পুর্ন ভ্যাক্সিনেটেড ব্যক্তিরা মাস্ক ছাড়াই ইনডোরে অন্য তিন সম্পুর্ন ভ্যাক্সিনেটেড পরিবারের সাথে দেখা করতে পারবে অথবা একজন সম্পুর্ন ভ্যাক্সিনেটেডবিহীন ব্যক্তির সাথে দেখা করতে পারবে যদিনা সে বেশি অসুস্থ না থাকে।
খেলাধুলাঃ খেলাধুলা ও ট্রেইনিং গ্রাউন্ডে সর্বোচ্চ ১৫ জন এর অনুমতি থাকবে।
সার্ভিস ব্যবসাঃ বিউটি পার্লার, সেলুন ইত্যাদি অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর ভিত্তিতে খোলা যাবে।
ভ্রমণ গন্তব্যস্থলঃ মিউজিয়াম, গ্যালারি ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান খোলা হতে পারে।
ধর্মীয় উপাসনালয়ঃ ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো খোলা হতে পারে শুধুমাত্র কমিনিউন ব্যাতিত।
শেষকৃত্যঃ ফিউনারেল সার্ভিসে সর্বোচ্চ ৫০ জন জড়ো হতে পারবে।
বিবাহ অনুষ্ঠানঃ বিবাহ অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৫০ জন জড়ো হতে পারবে। সেক্ষেত্রে সিভিল ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানেই ৫০ জন। কিন্তু ইনডোর রিসেপশনে ৬ এবং আউটডোর অনুষ্ঠানে ১৫ জন থাকতে পারবে।
যানবাহনঃ পাবলিক বাহনে ৫০% বর্ধিত যাত্রী পরিবহন করা যাবে।
দ্বিতীয় ধাপ – জুন
২ জুন থেকে
হোটেল, বিএনবি, গেস্ট হাউজ, সেলফ কেটারিং খোলা হতে পারে। কিন্তু বার এবং রেস্টুরেন্ট কেবলমাত্র রাত্রিযাপিত অতিথিদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে।
৭ জুন থেকে
হসপিটালিটিঃ বার ও রেস্টুরেন্ট সবার জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।
খেলাধুলাঃ সকল ধরনের খেলাধুলা ম্যাচ চালু হতে পারে। সুইমিং, জিম ব্যক্তিগত ট্রেইনিং এর জন্য চালু হতে পারে।
বিবাহ অনুষ্ঠানঃ রিসেপশন গেস্ট ২৫ জনে উন্নীত হতে পারে।
সামাজিক মেলামেশাঃ ইনডোর গ্যাদারিং এর জন্য অন্য বাসায় এক বাসার লোকজনের ভ্রমণ অনুমতি মিলতে পারে।
তৃতীয় ধাপ – জুলাই-আগস্ট
জুলাই এবং আগস্টে বাকি হাই রিস্ক অ্যাাক্টিভিটি অবস্থা সাপেক্ষে খুলতে পারে।
করোনা প্রতিরোধে প্রথম টিকা আনার পর এবার এই রোগের চিকিৎসায় দুটি ‘অ্যান্টি-ভাইরাল’ ওষুধ নিয়ে কাজ করছে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার। তার মধ্যে একটি মুখে গ্রহণের ওষুধ। অপরটি ইনজেকশনের মাধ্যম গ্রহণের ওষুধ। করোনার চিকিৎসায় মুখে গ্রহণের ওষুধটি আগামী বছর নাগাদ আসতে পারে।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলবার্ট বোরলা গতকাল মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন। তিনি মার্কিন গণমাধ্যম সিএনবিসিকে এই সাক্ষাৎকার দেন। বার্তা সংস্থা এএনআই এই তথ্য জানায়।
এখন ফাইজার করোনার চিকিৎসায় ‘অ্যান্টি-ভাইরাল’ ওষুধ নিয়ে কাজ করছে। এ সম্পর্কে ফাইজারের সিইও আলবার্ট বোরলা বলেন, ‘আমরা আসলে দুটি ওষুধ (অ্যান্টি-ভাইরাল) নিয়ে কাজ করছি। একটি ইনজেশনের মাধ্যমে দেওয়ার ওষুধ। অন্যটি মুখে গ্রহণের ওষুধ।’
দুটি অ্যান্টি-ভাইরালের মধ্যে মুখে খাওয়ার ওষুধটির প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান আলবার্ট বোরলা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মুখে খাওয়ার ওষুধের একাধিক সুবিধা রয়েছে। তার মধ্যে একটি সুবিধা হলো—এই ওষুধ গ্রহণের জন্য রোগীকে হাসপাতালে যেতে হবে না। ঘরে বসেই ওষুধটি নেওয়া যাবে।
আলবার্ট বোরলা বলেন, সবকিছু ঠিকঠাকভাবে এগোলে তাঁরা এখন যে গতিতে কাজ করছেন, সেই একই গতিতে তাঁরা ওষুধটি তৈরির প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করবেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি তাঁদের মতো গতিশীলভাবে কাজ করে, তাহলে তাঁর আশা, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ওষুধটি তৈরি হয়ে যাবে।
আলবার্ট বোরলা বলেন, তাঁরা এখন তাঁদের গবেষণার কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। গ্রীষ্ম নাগাদ এ বিষয়ে তাঁদের কাছে আরও তথ্য আসবে বলে জানান তিনি।
‘দ্য এশিয়ান সায়েন্টিস্ট ১০০’ শিরোনামে গত সোমবার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সাময়িকী ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’। এ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশি বিজ্ঞানী।
স্থান পাওয়া বাংলাদেশিরা হলেন সালমা সুলতানা, ফেরদৌসী কাদরী ও সায়মা সাবরিনা। বিজ্ঞান ও গবেষণায় আগেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন এই তিন নারী।
তিন বাংলাদেশির একজন ড. ফেরদৌসী কাদরী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান। ২৫ বছর ধরে কলেরা মহামারি থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের টিকা নিয়ে কাজ করেছেন এমন কয়েকজন মানুষের মধ্যে তিনি অন্যতম। ২০২০ সালে ল’রিয়েল-ইউনেসকো ফর ওমেন ইন সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি।
ফেরদৌসী কাদরী
আরেকজন হলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সায়মা সাবরিনা। ন্যানোম্যাটেরিয়্যালের ব্যবহার নিয়ে গবেষণার জন্য ২০২০ সালে ওডব্লিউএসডি-এলসেভিয়ের ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড ফর আর্লি ক্যারিয়ার ওমেন সায়েন্টিস্ট ইন দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড পেয়েছেন তিনি।
সায়মা সাবরিনা
তালিকায় স্থান পাওয়া অপরজন সালমা সুলতানা হলেন মডেল লাইভস্টক অ্যাডভান্সমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এমএএলএফ) চেয়ারম্যান। বাংলাদেশে পশুচিকিৎসাবিষয়ক শিক্ষাবিস্তারে ভূমিকা রয়েছে তাঁর। তিনি পশুর রোগ নির্ণয়ের জন্য ল্যাবরেটরিসহ একটি ভেটেরিনারি হাসপাতালও গড়ে তুলেছেন, যেটা বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশে প্রথম। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের পশুর চিকিৎসায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্য ২০২০ সালে নরম্যান ই বোরল্যাগ অ্যাওয়ার্ড এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।
সালমা সুলতানা
এবার ষষ্ঠবারের মতো এ তালিকা করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে কোভিড–১৯–এর মতো এ বছরের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মোকাবিলায় ভূমিকা রাখা গবেষক ও উদ্ভাবকদের এবার বেছে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা এ তালিকায় বেশি এসেছেন। এই বিজ্ঞানীরা সংকটময় এই সময়ে মলিকুলার ইমেজিং থেকে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণায় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
ABAI এর উপদেষ্টা পরিষদ ও নির্বাচন পরিষদের আয়োজনে রমজান উপলক্ষে একটি ভার্চুয়াল আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। রবিবার 2nd May 2021 আয়ারল্যান্ড টাইম বেলা 2:15 মিনিটে শুরু হয়ে দেড় ঘন্টা ব্যাপী এই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আলোচনার বিষয়বস্তু রমজানের তাৎপর্য ,যাকাত ও ফিতরার নিয়মাবলী।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মদিনা-মনোয়ারা থেকে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ শেখ সাদী বিন আব্দুর রশিদ আল মাদানী ,PHD Researcher ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ মাদিনা।
এই আলোচনায় আলোচক রমজানের তাৎপর্য ,যাকাত ও ফিতরার নিয়মাবলী বিস্তারিত ধারণা নিয়ে আলোচনা করবেন। আলোচনা শেষে থাকবে একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং আলোচক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিবেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন জনাব মিজানুর রহমান জাকির।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ মোস্তফা প্রধান উপদেষ্টা ABAI এবং আজাদ তালুকদার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ABAI তারা দুজন আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের সকল মুসলমান ভাইবোনদের এই অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আলোচনাটি Zoom লিঙ্কে এবং ABAI-এর ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
জুমের লিংক’টি পরবর্তীতে জানানো হবে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বরিশাল শহরে রোদে পুড়ে অসুস্থ হয়ে এক রিকশা চালকের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর সদর রোডে এ ঘটনা ঘটে।
সদর রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, প্রচণ্ড রোদে রাজা মিয়া নামের ওই রিকশা চালক হাসপাতালের সামনে রিকশা নিয়ে থেমেছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি রাস্তায় পড়ে যান ও খিঁচুনি শুরু হয়। হাসপাতালের নার্সরা সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে ছুটে যান।
স্থানীয়রা জানান, কোতয়ালী মডেল থানার টহলরত এএসআই রিয়াজুল ইসলাম ওই রিকশা চালককে সংকটজনক অবস্থায় বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসক ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই পঞ্চাশোর্ধ্ব রাজা মিয়ার মৃত্যু হয়। প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোকে তিনি মারা যেতে পারেন।
রাজা মিয়ার মেয়ে মাহিনুর ও ছেলে ইমন খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে তাদের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
ফেইস মাস্ক পরিধান না করার অপরাধে ১৯০ ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা কে। তাঁকে ৬ হাজার বাথ (১৯০ মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ফেসবুক পেজে একটি ছবিতে তাঁকে বৈঠক করতে দেখা যায়। কিন্তু তখন তাঁর মুখে মাস্ক ছিল না।
ব্যাংককের গভর্নর অশ্বিন কাওয়ানমুয়াং তাঁর সরকারি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পেজে লিখেছেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি, এটি নিয়মের লঙ্ঘন।’
প্রায়ুথ এ ঘটনায় ব্যাংকক মেট্রোপলিটন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আরোপিত বিধিনিষেধের বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছেন। অশ্বিন বলেন, কারণ সিটি হল (ব্যাংকক মেট্রোপলিটন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান দপ্তর) নিয়ম করেছে বাড়ির বাইরে গেলে সব সময় মাস্ক পরতে হবে। আর সে্ই নিয়ম মেনেই তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) জরিমানা হয়েছে।
রাজধানী ব্যাংককসহ থাইল্যান্ডের ৪৮টি প্রদেশে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতার সময় বাড়ানো হয়েছে এবং নিয়ম আরো কঠোর করা হয়েছে। সেখানে এখন একমাত্র বসতবাড়ির ভেতর ছাড়া সব জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। এমনকি ব্যক্তিগত গাড়িতে একজনের বেশি আরোহী থাকলেও মাস্ক পরতে হবে।
শ্মশানের ধোঁয়ায় ভারি হয়ে আসছে ভারতের আকাশ বাতাস। হাসপাতালে ও হাসপাতালের বাহিরে সারি সারি রোগী। এখানে সেখানে লাশের ছড়াছড়ি, ঘরে ঘরে কান্নার রোল। এই হচ্ছে বর্তমান ভারতের চিত্র।
মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগেও যেখানে ছিল সব স্বাভাবিক, নির্বিঘ্ন-নিশ্চিন্ত। চোখের পলকেই এখন ভিন্ন এক চিত্র। করোনা ঝড়ে লণ্ডভণ্ড গোটা ভারতবর্ষ।
গতকাল ২৫ এপ্রিল মোট করোনা সংক্রমিত হয়েছে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার। ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় যতসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, তা একটি বিশ্ব রেকর্ডও। গত ২২ এপ্রিলই ভারত একদিনে শনাক্তের রেকর্ড অতিক্রম করে ফেলেছে। বিশ্বের কোনো দেশে এখন পর্যন্ত এক দিনে এত রোগী আগে কখনো শনাক্ত হয়নি।
বিশ্বের কোনো দেশে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্তের রেকর্ডটি এত দিন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। দেশটিতে গত জানুয়ারিতে এক দিনে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
গতকাল মৃতের সংখ্যা ছিল ২৮১২ জন, ধারনা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা অফিসিয়াল হিসেব থেকে কয়েক গুন বেশি।
শোকহিব্বল স্বজন
দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখন পিক বা চূড়ায় উপনীত হয়নি। ফলে দেশটিতে করোনার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কবে নাগাদ নিম্নমুখী হতে পারে, সে সম্পর্কে দেশটির বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
করোনার সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করা ভারত তার সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অক্সিজেন, ওষুধ, হাসপাতালে শয্যার সংকটসহ নানা সমস্যায় দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশ ভারতের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে অক্সিজেনসহ নানা ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রেরণ করতেছে। আয়ারল্যান্ডও ৭০০ সিলিন্ডার অক্সিজেন ইতিমধ্যে প্রেরণ করেছে।
রাভি সিংহাল নামক ভারতের এক যুবক করোনা আক্রান্ত হয়ে স্ত্রীর কোলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। স্ত্রী তার মুখ দিয়ে স্বামীকে নিঃশ্বাস প্রদান করে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা ব্যার্থ হয়।
স্ত্রী রেণু সিংহাল এবং স্বামী রাভি সিংহাল ভারতের উত্তর প্রদেশ আগ্রার অধিবাসী। রাভি সিংহাল করোনা আক্রান্ত হলে স্ত্রী তার স্বামীকে নিয়ে সরোজিনী নাইডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালে তাৎক্ষনিক ভর্তি করতে না পেরে, হাসপাতালের বাহিরেই ট্যাক্সিতে স্বামীকে মুখ দিয়ে শ্বাস প্রদান করে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন তিনি।
হৃদয়বিদারক এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। কোভিড রোগীর অস্বাভাবিক চাপে ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছে।
কাঁচা আম আর সামুদ্রিক মাছ দিয়ে দেশীয় পদ্ধতিতে রান্না করে প্রতিযোগিতায় সপ্তমস্থানে জায়গা করে নিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী কিশোয়ার। রান্নাবিষয়ক জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরী।
অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও নিজের বাংলাদেশি সত্ত্বা ও সংস্কৃতির শেকড়কে গভীরভাবে ধারণ করেন কিশোয়ার। অনুষ্ঠানটিতে বাংলাদেশি খাবারের প্রতি তার ভালবাসা ও আবেগের কথা জানান তিনি। ছোটবেলা থেকেই রান্নায় আগ্রহী কিশোয়ার মূলত মা-বাবার সাহায্যেই বাংলাদেশি খাবার রান্না ও এর স্বাদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন।
তিনি জানান, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তিনি বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশি খাবার ও স্বাদকে তুলে ধরতে চান। তিনি বাংলাদেশের স্থানীয় খাবারগুলোকে অস্ট্রেলিয়ার খাবারের মানচিত্রে একটি উল্লেখযোগ্য জায়গায় পৌঁছে দিতে চান। কিশোয়ারের বিশ্বাস, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি খাবারগুলোকে তেমন একটা উপস্থাপন করা হয় না। এগুলো আরও মনোযোগ ও প্রশংসা পাওয়ার দাবি রাখে।
বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ তুলে ধরতে নিজের সৃজনশীলতা ও কৌশল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কিশোয়ার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে আমাদের ঐতিহ্যকে বেশ সফলভাবেই তুলে ধরছেন। ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত বিচারকরা তার রান্নার অসামান্য প্রশংসা করেছেন।
তার রান্না খেয়ে রীতিমত মুগ্ধ বিচারক জক জনফ্রিলো বলেন, এখনও পর্যন্ত এ বছরের অন্যতম সেরা খাবার।
Kishwar Chowdhury
কিশোয়ারের স্বপ্ন, ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার ও এর স্বাদ নিয়ে বই লেখা। এভাবেই তিনি প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের খাবার ও সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে চান।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশে রান্নাবিষয়ক রিয়েলিটি মাস্টারশেফ এর আয়োজন করে থাকে। তবে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, অস্ট্রেলিয়াতেও এটি সর্বাধিক প্রচারিত অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পদগুলো নিয়ে শীঘ্রই আন্তর্জাতিক এই প্লাটফর্মে তুলে ধরবেন কিশোয়ার, এমনটি আশা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত অন্যান্য বাংলাদেশিদের।
মিনিস্টার ফর জাস্টিস হেলেন ম্যাকেনি টিডি আজ আয়ারল্যান্ডে হাজার হাজার অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বৈধ করার বিষয়ে একটি স্কিমে তার খসড়া প্রস্তাবগুলি ঘোষণা করেছেন। বছরের শেষ নাগাদ এই স্কিমটি খোলা হওয়ার কথা, বিষয়টি মন্ত্রী ম্যাকেনিটির জাস্টিস প্ল্যান ২০২১-র একটি মূল অংশ।
প্রাথমিক খসড়া রূপরেখাগুলো হল:
সরকারের অনুমোদন নিয়েসেপ্টেম্বরে অভিবাসীদের অনুমোদন দেয়ার স্কিমের শর্তাদি নিয়ে পরামর্শ শুরু হবে
প্রস্তাবসমূহের রূপরেখা পরামর্শ সাপেক্ষে হবে, স্কিমটি শুরু হবে তাদের জন্য যারা চার বছর বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ছিল
সফল আবেদনকারীরা অভিবাসনের অনুমতি পাবেন, চাকুরীর সুযোগ পাবেন এবং নাগরিকত্বের পথ সুগম হবে
মিনিস্টার হেলেন ম্যাকেনি বলেন, ”আয়ারল্যান্ডে হাজার হাজার মানুষ তাদের জীবন গড়ে নিয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এখনো আইনি ছায়ার নিচে বেঁচে আছে। তারা আমাদের সমাজের সক্রিয় সদস্য; আমাদের সমাজে যাদের অবদান অনেক। যারা আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখেন ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেন।”
সফল অভিবাসীরা কি সুবিধা পাৰেন হেলেন ম্যাকেনি তার একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেন, যদিও তা আলোচনা সাপেক্ষে গৃহীত হবে। প্রস্তাবগুলো হল:
ইমিগ্রেশন অনুমতি ছাড়াই চার বছরের অনুমতি পাবে অভিবাসীরা এবং যাদের বাচ্চা আছে তাদের জন্য তিন বছর।
শ্রম বাজারে বাধাহীন অনুমতি পাবে। মানে চাকুরীতে বাধা থাকবে না।
নাগরিকত্বের উদ্দেশ্যে অনুমতিসহ বছরগুলো অতিবাহিত করলে নাগরিকত্বের পথ সুগম করা যাবে।
ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস আশা করে যে মন্ত্রীর ম্যাকেনিটির বিচার পরিকল্পনা ২০২১-এর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বছরের শেষ নাগাদ এই প্রকল্পের জন্য আবেদনগুলি গ্রহণ করার প্রস্তুতি নিবে।
অনিবন্ধিত অভিবাসী স্কিমটি প্রশাসনিক ভিত্তিতে জাস্টিস মিনিস্টার এর কার্যনির্বাহী ক্ষমতার অধীনে পরিচালিত হবে এবং সময় সীমিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে এটি অ্যাপ্লিকেশনগুলি প্রায় ছয় মাসের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অ্যাপ্লিকেশনগুলি মূল্যায়ন করার সময়, ব্যক্তির চরিত্র এবং আচরণের বিষয় দেখা হবে।
মন্ত্রী ম্যাকেনি এবং আইন সংস্কার প্রতিমন্ত্রী জেমস ব্রাউন টিডি, এনজিও, নাগরিক সমাজ, নিয়োগকারী সংস্থাগুলি, ট্রেড ইউনিয়ন এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের সাথে ২৬ শে এপ্রিল প্রস্তাবিত নিয়মিতকরণ প্রকল্পের জন্য একটি তথ্য অনলাইন ওয়েবিনার এর আয়োজন করবেন।
স্কিমটি বছরের শেষার্ধে, যথাসম্ভব সেপ্টেম্বরে মন্ত্রিসভায় আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের টিকা ‘স্পুটনিক-ভি’ বাংলাদেশে উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। প্রস্তাব অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো টিকা উৎপাদন করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা রাশিয়ার সঙ্গে ভ্যাকসিনের সহ-উৎপাদনে তাদের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছি। যদিও এখনো বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। সবকিছু ঠিক থাকলে- এটা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী হবে এবং আশা করা যায় যে, এটা অপেক্ষাকৃত ভালো হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী রাশিয়া প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে আর বাংলাদেশী ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো ‘স্পুটনিক-ভি’ টিকা উৎপাদন করবে।
সম্প্রতি ভারত রাশিয়ান স্পুটনিক-ভি টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পরায় টিকার অপ্রতুলতার কারণে এই অনুমোদন দেয় দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ভারত থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ টিকা কিনেছে তার চালান না আসায় টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। অক্সফোর্ডের তিন কোটি ডোজ টিকা আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে গত বছরের পাঁচ নভেম্বর যে চুক্তি হয়েছিল তাতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে তিন কোটি ডোজ টিকা রফতানি করবে। সে অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মার্চ ও এপ্রিলে বাংলাদেশ সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা পায়নি।
শ্যানন নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা লিমেরিক শহর। স্টিমবোট কী এবং মাউন্ট কেনেথ আবাসিক অঞ্চল এই শ্যানন নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত। ওই আবাসিক এলাকার লোকজন এবং অন্যান্য জায়গা থেকে সেখানে অনেকে ঘুরতে আসে।
কিন্তু নিরাপত্তার জন্য নদীর তীরবর্তী যে বেড়া রয়েছে তা বহু পুরনো এবং ঝুঁকিপূর্ণ। যার ফলে সেখানে বাচ্ছাসহ অনেকেই পা ফসকে নদীতে পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। যার কারণে লিমেরিকের বর্তমান ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার বিষয়টি লিমেরিক সিটি কাউন্সিলে উত্থাপন করেন, যার রিপোর্ট দৈনিক পত্রিকা ”লিমেরিক লিডার” প্রকাশিত হয়।
জনাব আজাদ তালুকদার লিমেরিক লিডারকে বলেন, ”এখানকার বহু বাসিন্দা অনেকদিন থেকেই উনাকে বিষয়টি নিয়ে অবগত করেন। বিশেষ করে যাদের ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। বাসিন্দারা সম্ভাব্য বিপদের কথা উনাকে জানান”।
জনাব তালুকদার নতুন ক্রস ফেন্স করার আহ্বান জানান, যাতে করে স্টিমবোট কীর বোর্ডওয়ার্ক এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
তিনি আরো বলেন, ”বাসিন্দারা জানান বৃষ্টির সময় জায়গাটি অনেক বিপদজনক হয়ে দাঁড়ায়। এখানে শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধাই না, জায়গাটি অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়”। এছাড়াও পাশেই রয়েছে একটি স্কেটিং পার্ক, যেখানে বিভন্ন বয়সী ছেলেমেয়ে প্রতিদিন স্কেটিং করতে আসে।
বলা বাহুল্য, জনাব আজাদ তালুকদার ইতিমধ্যে অনেক উন্নয়নমূলক কাজের ব্যাপারে সহায়তা করে অনেক সুনাম কুড়িয়েছেন।
উন্নত বিশ্বে বিশেষ বিশেষ মওসুমে বা বিশেষ বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিনিস পত্রের দাম হ্রাস পেয়ে থাকে। সাধারণত বাজারে যে জিনিসটির চাহিদা ষতো বেশি সে জিনিসটি ততো কম দামে বিক্রি হয়। একটা উদাহরণ টানলে বিষয়টা সহজ হবে। আমি যেহেতু আয়ারল্যান্ডে থাকি তাই এ দেশটির কথাই বলি।
আয়ারল্যান্ড একটি শীত প্রধান দেশ। গরম বলতে নেই বললেই চলে। তবু বছরের একটি অংশকে তারা গ্রীষ্মকাল (Summer) হিসেবে বিবেচনা করে। এ সময়ে তাপমাত্রা সাধারণত ১৫/১৬ ডিগ্রি থেকে সর্বোচ্চ ২৫/২৬ ডিগ্রি হয়ে থাকে। ফলে বছরের অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় এ সময়টাতে সফ্টড্রিংসের চাহিদা বেড়ে যায়। ইচ্ছে করলে ব্যবসায়ীরা এ সময় রমরমা ব্যবসা করতে পারেন, কিন্তু তারা তা করেননা। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পানীয়ের দাম বাড়িয়ে দেননা। বরং ক্রেতারা যাতে সহজেই স্বল্প মূল্যে কেনাকাটা করতে পারে সেই সুবিধার কথা বিবেচনায় এনে তারা অর্ধেকের চেয়েও কম দামে বিক্রি করে থাকেন। শুধু তাই নয়, শীতকালে শীতের বস্ত্র , গরম কালে গরম কাপড় চোপড়ের উপর ব্যাপক হারে ছাড় দেয়া হয়। ইস্টার, ক্রিসমাস, হ্যালুইন, সেইন্ট পেট্রিকস ডে, নিউইয়ার প্রভৃতি জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিকে কেন্দ্র করে থাকে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা। নিত্য নৈমিত্তিক জিনিস পত্র সহ ইলেকট্রনিক ও পোশাকাদির উপর বিরাট মূল্যহ্রাস করা হয়। ক্রিসমাসের সময় সব্জি, ফলমূল, পেঁয়াজ, রসুন প্রভৃতি জিনিস গুলো নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে। বস্তুত ওই বিশেষ সময় গুলোতে তারা কোনো লাভের চিন্তা করেনা। যেহেতু সারা বছরই কমবেশি লাভ করে এবং জনগণকে দিয়েই তাদের ব্যবসা তাই ওই জনগণকে বিশেষ ভাবে খুশি করে রাখাটাও তাদের একটা দায়িত্ব বলে তারা মনে করেন। আর এ জন্যই কখনো তারা ভোক্তা ও সাধারণ জনগণের বিষয়টি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দেননা। উপরন্তু সাধারণ জনগণের কথা ভেবে আরও বেশি মানবিক হয়ে ওঠেন। সাধারণ ভোক্তা শ্রেণী বা জনগণ যাতে অতি সহজেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করে বিশেষ দিবস বা অনুষ্ঠানাদি আনন্দের সাথে পালন করতে সক্ষম হয় হয় সে প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ী মহল সহমর্মিতার দরজা খুলে দেন।
অথচ আমাদের দেশের দিকে তাকালে দেখা যায় ঠিক উল্টো চিত্র। ঝোপ বুঝে কোপ মারাই যেনো আমাদের অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের ধর্ম। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার মনোবাসনাই তাদেরকে তাড়া করে ফিরে। সুযোগ পেলেই সিন্ডিকেটের কামড় বসিয়ে দিতে মোটেও দ্বিধাবোধ করেনা। বিশেষ বিশেষ সময়ে তাদের উৎপাত আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে প্রতি বছরই রোজা এলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হয় পাগলা ঘোড়ার মতো। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। গতকাল বড়ো ভাইয়ের সাথে কথা হয়। তিনি আক্ষেপ করে বললেন, রোজা আসার আগেই সব জিনিস পত্রের দাম বেড়ে গেছে। উপরন্তু চলছে লকডাউন। এ লকডাউনের অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা আরও বেসামাল হয়ে পড়ছে। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে মধ্যবিত্ত ভোক্তা শ্রেণীর উপর।
মানুষ এখন আর করোনাকে ভয় করেনা। বরং করোনাকে নিয়তি ভেবেই অধিকাংশ মানুষ বেঁচে থাকতে চায়। কাজেই লকডাউনের নিছক বেড়াজালে তারা আর বন্দী থাকতে চায়না। তাছাড়া যে লকডাউনের ফলে জিনিস পত্রের দাম আকাশচুম্বি হয়ে যায়, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ক্রোর হাসি হাসার সুযোগ পায় একটি অংশ, রুটিরুজির পথ বন্ধ হয়ে যায় সিংহ ভাগ মানুষের, যে লকডাউনের নামে হাজার হাজার ঘরমুখী মানুষ নিরাপদ দূরত্ব অগ্রাহ্য করে গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরে কি দরকার এমন খামখেয়ালিপনা লকডাউনের। এতে কেবল শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। তারা না করতে পারে কাজকর্ম, না পারে উর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্যের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে।
লকডাউনের ঠিক আগের দিন খবর পেলাম, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের হাওরাঞ্চল ঝলসে গেছে এক ‘আশ্চর্য রকমের এক’ তীব্র গরম বাতাসে। এমন “রাক্ষসী” বাতাস এর আগে কেউ কখনো দেখেনি। ইতিপূর্বে প্রচন্ড খরায় ধান নষ্ট হওয়ার অনেক নজির থাকলেও এভাবে গরম হাওয়ায় ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার কোনো বেদনা বিধুর স্মৃতি কারো নেই। কয়েক ঘণ্টার তীব্র গরম হাওয়া ও ঝড়ে ধান গাছের শীষ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার এক স্থানীয় সাংবাদিক বন্ধুর ভাষ্য মতে, কোথাও ধান চিটা হয়েছে। কোথাও পরাগায়ণ হতে পারেনি। কোথাও ধানের শীষের রঙ কালো আবার কোথাও সাদা হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ধানের। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলেই ক্ষতিটা বেশি হয়েছে। সুনামগঞ্জের শাল্লাতেও ক্ষতি হয়েছে বোরো জমিনের। নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির বোরো মওসুমের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে কৃষিবিভাগ। তাই ক্ষতিগ্রন্থ কৃষকদের কান্না ও আহাজারিতে হাওড়াঞ্চলের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় এসব অসহায় দরিদ্র কৃষক সহ শহরের সাধারণ মানুষকে যদি বাজারের আগুন রূপ দেখতে হয় তবে তা হবে মরবে উপর খরার ঘা।
গতকালও পত্রিকাতে দেখলাম জিনিস পত্রের দাম আগুন। বরাবরের মতো রোজা উপলক্ষে এবারও শাকসবজি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সাথে আবার যোগ হয়েছে লকডাউনের অজুহাত। একটি প্রথম শ্রেণীর জাতীয় দৈনিকের তথ্যানুযায়ী, বাজারে সবজির কোনো কমতি নেই। লকডাউনেরও কোনো প্রভাব নেই। সেই হিসেবে পন্যদ্রব্যের দাম স্বাভাবিক থাকার কথা ছিলো। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। কোনো রকম অজুহাত পেলেই হু হু করে দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা।
এই যে বাড়িয়ে দেয়ার প্রবণতা বা কালচার এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যারা সিন্ডিকেট করেন, যেসব ব্যবসায়ীরা অসৎ পথ অবলম্বন করে দ্রুত বড়ো হয়ে যেতে চান তাদেরকে বলবো, দয়া করে উন্নত বিশ্বের দিকে তাকান, উন্নত বিশ্বের ব্যবসায়ীদের মতো নিজেদের চরিত্রকে উন্নত করতে পারোন আর না পারোন, অন্তত পক্ষে উন্নয়নশীল দেশের ব্যবসায়ী হিসেবে চরিত্রের উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হোন। পক্ষান্তরে সরকারকে বলতে চাই, সিন্ডিকেটকারী যেই হোক তার বিষদাঁত ভেঙ্গে দিতে হবে। রোজা চলছে। সামনে আসছে ঈদ। এভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে চলতে থাকলে জনগণের পিত্ত শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবে। তাই এখনি দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে এবং সিন্ডিকেটকারীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১০টার পর বেতনভাতা নিয়ে অসন্তোষ থেকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত বেশ কয়েকজনকে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)।
ঘটনার সূত্রপাত
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘‘শ্রমকিদের বেশকিছু দাবি-দাওয়া ছিল৷ এসব তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিতে চাচ্ছিল৷ শনিবার সকালে অসন্তাষ বাড়তে থাকে এবং পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়৷ সংঘর্ষে স্থানীয় লোকজনও জড়িয়ে পড়ে৷’’
গত দুইদিন ধরে শ্রমিকদের কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে সেখানে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু সমাধান হয়েছিল, কিছু সমাধান হয়নি।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধিতা হচ্ছিলো
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষ হয়৷ সেই ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছিলেন৷ এস আলম গ্রুপের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা করছে চীনের একটি প্রতিষ্ঠান৷
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতেও কেন্দ্রটি নিয়ে মতবিনিময়সভা চলাকালে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
২০১৬ সালে বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ
‘সাওম’ অর্থ বিরত থাকা; এর বহুবচন হলো ‘সিয়াম’। ফারসি, উর্দু, হিন্দি ও বাংলায় সাওমকে ‘রোজা’ বলা হয়। ইসলামি পরিভাষায় সাওম বা রোজা হলো ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইবাদতের উদ্দেশ্যে পানাহার ও যৌনসম্ভোগ থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তাআলা কোরআন কারিমে বলেন, ‘আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা হতে উষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)।
প্রাপ্তবয়স্ক তথা সাবালক, সাধারণ বুদ্ধিমত্তা বা স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, রোজা পালনে সক্ষম সুস্থ সব নারী ও পুরুষের জন্য রমজান মাসে রোজা পালন করা বাধ্যতামূলক বা ফরজ ইবাদত।
আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ”রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।”
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ”জান্নাতে রায়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন শুধু রোজাদারেরাই প্রবেশ করবে। তাদের প্রবেশের পরে এই দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তারা ছাড়া আর কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।” (বুখারি, খণ্ড: ৩, হাদিস: ১,৭৭৫)।
রমজান মাসে একটি ফরজ, পূর্ণ এক মাস রোজা পালন করা। রমজানের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুটি ওয়াজিব, যথা: সদকাতুল ফিতর প্রদান করা এবং ঈদের নামাজ আদায় করা। এছাড়াও রমজানের চাঁদ দেখা, সাহ্রি খাওয়া, তাহাজ্জত নামাজ আদায় করা, ইফতার করা ও করানো, তারাবির নামাজ আদায় করা, কোরআনে কারিম বেশি বেশি তিলাওয়াত করা এবং ইতিকাফ করা, রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোয় শবে কদর সন্ধান করা এবং ঈদের জন্য শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা সওয়াবের অন্তর্ভুক্ত।
করোনাকালে রমজান
লকডাউনের কারণে মসজিদ মক্তব বন্ধ থাকতে পারে। যার কারণে হয়ত মসজিদে বরাবরের মত অন্যান্য ফরজ নামাজের সাথে তারাবির নামাজ ও ইবাদত কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভবপর নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে তা একটি ওজর হিসেবে ধরে নিয়ে যার যার বাসায় ইবাদত পালন করতে পারেন।
তারাবিহ নামাজ রমজানের বিশেষ আমল। পুরুষদের তারাবিহর নামাজ মসজিদে জামাতে আদায় করা সুন্নাত। ওজরের কারণে মসজিদে যাওয়া সম্ভবপর না হলে এবং জামাত করা না গেলে তখন একা পড়লেও পূর্ণ সওয়াব পাওয়া যাবে। অনুরূপ পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজও বিশেষ অবস্থায় একাকী আদায় করা যাবে। এতেও পরিপূর্ণ সওয়াব পাওয়া যাবে।
রমজান মাস ইবাদতের বিশেষ মৌসুম। করোনাকালে যত দূর সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ, রোজাসহ সব ইবাদত সতর্কতার সঙ্গে পালন করবেন। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেসব ইবাদত আমল করা সম্ভব, সেগুলো অধিক পরিমাণে সম্পাদন করবেন। যিনি নিয়মিত যে আমল করেন অথবা কোনো নেক আমলের নিয়ত করেন, বিশেষ কোনো ওজরের কারণে তা করতে না পারলেও তার সওয়াব পাবেন, ইনশা আল্লাহ!
”হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।” (সূরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫ ও ১৮৩)।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই উত্তপ্ত মিয়ানমার। আজও মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো ক্র্যাকডাউনে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। নিহতদের শরীর সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছে, এবং হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়ত কখনোই জানা যাবে না।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৬০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য সামরিক বাহিনী দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়েছে।
মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থান রক্তপাতহীন হলেও এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই দেশটির রাজপথে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভে রক্ত ঝরেছে। শুক্রবার এএপিপি জানিয়েছিল, দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে জান্তা সেনা–পুলিশের গুলিতে শিশুসহ অন্তত ৬১৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বাগোতে নিহতের সংখ্যা যোগ হলে তা ৭০০ ছাড়িয়ে যাবে।
জনবিক্ষোব যেমন উত্তাল হয়ে উঠতেছে, তেমনি বিক্ষোব রোধে সেনাবাহিনী সব রকম বিধ্বংসী পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করতেছেনা। এতে করে ঝরে যাচ্ছে শত শত মানুষের প্রাণ।
বাংলাদেশ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ফ্রান্স বাধ্যতামুলক হোটেল কোয়ারেন্টাইন তালিকায় যুক্ত হচ্ছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে আমেরিকা, কানাডার পাশাপাশি ফ্রান্স, বেলজিয়াম এবং ইতালি সহ ষোলটি ইইউ দেশকে হোটেল কোয়ারেন্টাইন তালিকার মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে।
বৈঠকটি গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অনুষ্ঠিত হয়। অনুমান করা হচ্ছে যে আয়ারল্যান্ডে কোভিড-১৯ এর ভেরিয়েন্ট (variants) আসার বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ার কারণে বৈঠকটির আয়োজন করা হয়েছিল।
তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নতুন দেশগুলির তালিকা হলো: বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, কেনিয়া, লাক্সেমবার্গ, পাকিস্তান, তুরস্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আর্মেনিয়া, বারমুডা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, কুরাসাও, মালদ্বীপ, ইউক্রেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিফেন ডোনেলি বলেছেন, “কোভিড -১৯ variants এর সাথে উদ্বেগের বিভিন্নতা সম্পর্কিত জনস্বাস্থ্যের উপর ঝুকির বিষয়ে পরামর্শ গ্রহন ও অনুসরণ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো যোগ করেন, “এই variants বা রূপগুলি এই মহামারী রোগের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে এবং আমাদের টিকাদান কর্মসূচির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি তৈরি করেছে”।
আগামী বৃহস্পতিবার ১৫ এপ্রিল ভোর ৪ টা থেকে এই পদক্ষেপ কার্যকর হবে।
মন্ত্রিসভায় আলবেনিয়া, ইস্রায়েল এবং সেন্ট লুসিয়াকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন করণের তালিকা থেকে সরিয়ে দিতেও সম্মত হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে তালিকা ভুক্ত দেশ থেকে আগত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে এবং যে কোন ব্যক্তিকে অবশ্যই তাদের কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ করতে হবে।
সরকার আগামী সপ্তাহে কোয়ারেন্টাইনের জন্য হোটেল কক্ষ গুলোর সক্ষমতা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করেছে যা কিনা আগামী সপ্তাহগুলোতে ৬৫৪ টি কক্ষ থেকে ১১০০ টিরও বেশি কক্ষে উন্নিত করা হবে।
বাধ্যতামুলক কোয়ারেন্টাইনের তালিকা ভুক্ত ৫৯ নির্ধারিত দেশ এবং অঞ্চল থেকে আগত লোকেরা ১২ রাত্রি অবধি বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য আয়ারল্যান্ডে আগমনের পূর্বেই প্রাক-বুকিং দেওয়ার ব্যবস্থা করে আসতে বলা হয়েছে এবং থাকার জন্য নিজেদের অর্থ প্রদান করতে হবে।
যদি কোয়ারেন্টাইনে থাকা কোনও ব্যক্তি যদি কোভিড-১৯ ভাইরাসটির টেষ্টে নেগেটিভ হোন তবে তাকে হোটেলে ১২রাত থাকতে হবে না, এক্ষেত্রে তাকে হোটেল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হবে।
তালিকার দেশগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে আলবেনিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, বাহরাইন, ব্রাজিল, চিলি, ইসরায়েল, জর্ডান, মোনাকো, মরিশাস, রুয়ান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জিম্বাবুয়ে
আরো বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন:
https://www.rte.ie/news/coronavirus/2021/0409/1208892-mandatory-hotel-quarantine/
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকার সঙ্গে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার খুব বিরল হলেও স্পষ্ট সম্পর্ক আছে বলে দাবি করেছেন ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সির (ইএমএ) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
তবে কী কারণে রক্ত জমাট বাঁধছে তা এখনো অজানা বলেও জানান ইএমএ-র ভ্যাকসিন ইভাল্যুয়েশন দলের প্রধান মার্কো কাভালেরি।
ইতালির একটি দৈনিককে তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে, আমরা এখন এটা বলতে পারি। টিকার সঙ্গে এর (মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার) একটি সম্পর্ক থাকার বিষয়টি এখন পরিষ্কার। তবে কেন এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে এটা এখনো আমাদের অজানা।”
তবে তিনি তার মন্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।
কিন্তু এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষণায় বলা হয়েছিল, তারা টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার উচ্চ ঝুঁকির কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাননি।
ইএমএ থেকেও বার বার বলা হয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকায় রক্ত জমাট বাঁধার যতটুকু ঝুঁকি রয়েছে তার তুলনায় লাভ অনেক বেশি। তাই এই টিকাদান স্থগিত না করে বরং কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে বলা হয়েছে।
ইউরোপের অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রায় সাড়ে নয় কোটি মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪৪ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার উপসর্গ দেখা গেছে।
গত সপ্তাহে ইএমএ থেকে বলা হয়েছিল, এখন পর্যন্ত তাদের হাতে যে পর্যালোচনা প্রতিবেদন আছে তাতে কোনো নির্দিষ্ট বয়স, লিঙ্গ বা অতীত রোগের কারণে রক্ত জমাট বাঁধার বিরল এ ঘটনা ঘটছে কিনা তা নির্দিষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না। টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার সরাসরি সম্পর্ক থাকার প্রমাণও নেই। তবে সেই সম্ভাবনা আছে এবং এজন্য আরো গবেষণা করা হচ্ছে।
রক্ত জমাট বাঁধার যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাদের বেশিরভাগই বয়সে তরুণ এবং মাঝ বয়সের নারী। কিন্তু ইএমএ এখনই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাইছে না।
বুধবার ইএমএ এ সংক্রান্ত আপডেট দিতে পারে।
এদিকে, ইএমএর তদন্ত চলাকালে জার্মানি, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডস সহ কয়েকটি দেশ তরুণদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার দূরান্বয়ী সম্পর্ক হলেও রয়েছে- বিশেষজ্ঞদের এমন বক্তব্য আসার পর যুক্তরাজ্যে ৩০ বছরের কম বয়সীদের এই টিকা না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রক্ত জমাট বাঁধার বিরল লক্ষণ দেখা দেওয়ার কারণে ৩০ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না নিয়ে অন্য টিকা নিতে বলছে যুক্তরাজ্যের টিকাদান কর্তৃপক্ষ ।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) জানায়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার বিরল লক্ষণের একটি সম্পর্ক রয়েছে।
বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে এই খবরটিও এসেছে গুরুত্বের সঙ্গে।
ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রয়োগ চলছে। শুধু ইউরোপের দেশগুলোতেই আড়াই কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
তথ্য বিশ্লেষণ করে ইএমএ দেখেছে, মার্চ নাগাদ কোভিশিল্ড টিকা নেওয়া ৭৯ জনের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ দেখা গেছে। এর মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আর এই ঘটনা নারীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা গেছে। আর মৃতদের তিনজনের বয়স ৩০ বছরের নিচে।
সংস্থাটি বলছে, টিকাই এই রক্ত জমাট বাঁধার কারণ কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে এই টিকার সঙ্গে যে তার একটি সম্পর্ক রয়েছে, সেই ভাবনাটি আরও দৃঢ় হল।
তবে বিরল এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যেও মহামারীর ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে টিকাটির গুরুত্ব এখনও কম নয় বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ প্যানেলকে উদ্ধৃত করে বিবিসি বলেছে, রক্ত জমাট বাঁধা সম্ভাব্য একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তবে তা এখনও নিশ্চিত হয়। আর যেখানে সারাবিশ্বে ২০ কোটি মানুষ ইতোমধ্যে এই টিকা নিয়েছে, সেখানে নগন্য সংখ্যকের বেলায়ি বিরল এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে একদল বিক্ষোভকারী ছিনতাই করা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের ওপর পাথর ছুড়ে মেরেছে বলে জানিয়েছে সেখানকার পুলিশ।
ব্রেক্সিটের কারণে যুক্তরাজ্যের বাকি অংশের সঙ্গে বাণিজ্যে যেসব নতুন বাধার সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে বাড়তে থাকা হতাশার মধ্যে গত সপ্তাহ থেকে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় রাতে ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের সহিংসতা দেখা যাচ্ছে।
গত কয়েকদিনের সহিংসতায় কয়েক ডজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদেরকে গাড়ি জ্বালিয়ে দিতে এবং পুলিশের দিকে পেট্রল বোমাও ছুড়ে মারতে দেখা গেছে।
নর্দার্ন আয়ারাল্যান্ডের এ সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
“সেখানে সহিংসতার চিত্র দেখে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। মতপার্থক্যের সমাধান হয় আলোচনার মাধ্যমে, সহিংসতা বা অপরাধের মাধ্যমে নয়,” টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এমনটাই লিখেছেন তিনি।
নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ব্রিটিশপন্থি দল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি) বলছে, ব্রেক্সিটের কারণে সৃষ্ট বাণিজ্য বাধার পাশাপাশি গত বছর কোভিড-১৯ এর বিধিনিষেধ অমান্য করে হওয়া বড় একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের জন্য আইরিশ জাতীয়তাবাদী দল শিন ফেইনের বিচার না করার পুলিশি সিদ্ধান্তও জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে শিন ফেনের ভাষ্য, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের অন্য অংশের মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত নতুন নিয়মকানুনের বিরোধিতা এবং আঞ্চলিক পুলিশ প্রধানের পদত্যাগ চেয়ে ডিইউপি-ই উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে।
বুধবার বাসে আগুন ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বেলফাস্টের শেনকিল সড়কের কাছে; এই সড়কের কাছেই তথাকথিত ‘শান্তির দেয়ালের’ অবস্থান, যা যুক্তরাজ্যপন্থিদেরকে ফলস সড়কে থাকা আইরিশ জাতীয়তাবাদীদের ঘাঁটি থেকে আলাদা করেছে। বুধবার ফলস সড়কেও যুবকদের জড়ো হতে দেখা গেছে, তবে সেখানে সহিংসতার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ডিইউপি ও শিন ফেইন- দুটি দলই এদিনের সহিংসতা, বিশেষ করে বাস ছিনতাই ও সংবাদমাধ্যম বেলফাস্ট টেলিগ্রাফের আলোকচিত্র সাংবাদিকের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
“এ ধরনের কর্মকাণ্ড ইউনিয়নবাদ কিংবা আনুগত্য কোনোটিরই প্রতিনিধিত্ব করে না। এরা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডকে বিব্রত করেছে,” বলেছেন ডিইউপি নেতা আরলেন ফস্টার।
আরো বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।
Peace wall violence in Belfast ‘at a scale we have not seen in recent years’ https://jrnl.ie/5403241
যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে কমে ৫ কিলোমিটার প্রস্থের মাত্র আধা কিলোতে
কীর্তনখোলা নদীর পানিতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ গুণ লবণাক্ততা পাওয়া গেছে। হঠাৎ করে গত বেশ কয়েকদিন ধরে কীর্তনখোলার পানি নোনতা লাগছে। এই নদীতে এতদিন গোসল করলেও, অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে স্থানীয়রা এখন আর নদীতে নামছেন না। (খবর-ডেইলি স্টার)।
বিষয়টা এলার্মিং।
সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির চেয়েও এখানে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে স্বাদু পানির চাপ কমে যাওয়া। এই বছর যমুনায় অস্বাভাবিক কম পানি আসছে। ৫ কিলোমিটার প্রস্থের যমুনা মাত্র আধা কিলোতে নেমেছে, নদী গর্ভে ধু ধূ বালুচর জেগে উঠেছে। ফলে মোহনায় স্বাদু পানির চাপ কমে গেছে এবং স্থলে ধীরে ধীরে লবণ পানির আগ্রাসন বাড়ছে।
ঠিক গত সপ্তায় খবর এসেছে যে, ফারাক্কা পয়েন্ট থেকে পানি একেবারেই কম ছাড়ায় গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প বন্ধ করা হয়েছে। গত ৫ বছরে এবছরই সবচেয়ে কম পানি আসছে পদ্মায়। গঙ্গার পানি প্রায় বন্ধ, তিস্তার পানি শতভাগ বন্ধ, যমুনার পানি আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্পের কারনে অস্বাভাবিক কমে যাওয়ার সম্মিলিত প্রভাবে স্বাদু পানি অঞ্চলে লবণ পানির আগ্রাসন তীব্রতর হয়েছে। যমুনা বাংলাদেশের শুষ্ক মৌসুমের পানির চাহিদার ৬০% এর বেশি সরবারহ করে। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা সিএনএ’র হিসেবে যমুনা অববাহিকায় বাংলাদেশের চাহিদার বিপরীতে অন্তত ২৫% পানি কমে আসে। বাংলাদেশের প্রাণ ও প্রকৃতির লাইফ লাইন যমুনায় পানি কমতে থাকলে এতে সুন্দরবনের আরেক দফা ক্ষতি হবে।
পাশপাশি স্বাদু পানির মাছ, কৃষি ফলন, ধান এমনকি গবাদি পশু পালন চরম ভাবে বাঁধাগ্রস্ত হবে। স্যালাইন পানির ওয়াটার ফিন্ট্রেশনের দির্ঘমেয়াদী প্রভাবে ভূগর্ভস্ত পানিতে লবণক্ততা বাড়বে, এতে করে ধীরে ধীরে ধান চাষের সমস্যা ঘনীভূত হবে। পাশাপাশি শুরু হবে স্বাদু পানি ব্যবহারে নির্ভরশীল মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যা, রোগবালাই এবং নিত্যদিনের কাজ কর্মের অসুবিধা।
বাংলাদেশের উচিৎ সারফেইস ওয়াটার নিয়ে ভারতের সাথে কঠিন অবস্থানে যাওয়া। পানি নিরাপত্তা, খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তার জন্য সারফেইসের স্বাদু পানির ন্যায্য হিস্যার বিকল্প নাই।
উল্লেখ্য যে, গত বছর বলেশ্বর নদীতে হঠাৎ লবণাক্ততা বেড়ে গিয়েছিল। পরে দেখা যায়, শাখা নদী দিয়ে উজানের পানি আসায় বাধা তৈরি হওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। ওই বাধা অপসারণ করার পর পানির লবণাক্ততা স্বাভাবিক হয়ে আসে।
১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ( হিন্দু এবং মুসলমান ) ভিত্তিতে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে ভারত এবং পাকিস্তান ( পূর্ব এবং পশ্চিম ) নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয় । কোন প্রকার সহিংসতা এবং রক্তপাত ছাড়া শুধু ধর্মের ভিত্তিতে দুটি রাষ্ট্রের সৃষ্টি প্রমাণ করে ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় উপমহাদেশর রাজনীতিতে ধর্মের প্রভাব অপরিসীম ।
১৯৪৭ – ৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের ( পূর্ব এবং পশ্চিম ) ইতিহাস আমাদের সকলের জানা । সে ইতিহাস ছিল পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের উপর শাসন , দমন , অন্যায় , অত্যাচার , শোষণ এবং নিপীড়নের ইতিহাস । নির্মমতা হলো , যে দেশ ধর্মের ভিত্তিতে সৃষ্টি হলো , সেখানে পশ্চিমাদের কর্তৃক একই ধর্মের পূর্বপাকিস্তানের লোকদের উপর জুলুম নির্যাতনের সময় ধর্মীয় কোন অনুভুতি কাজে আসেনি । যদি কাজে আসতো , তাহলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষের জীবন এবং দুই লক্ষ বীরঙ্গনার সম্ভ্রম হানি হতো না । যে কারণে আমাদের মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম মূলনীতি ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ।
ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের মুসলমান অনেক ধর্মপ্ররায়ন । ধর্মের প্রতি আমাদের আবেগ অনুভূতি অনেক প্রখর । এই অনুভূতিকে পুঁজি করে সামরিক এবং স্বৈরতান্ত্রিক সরকার গুলো ধর্ম কে রাজনীতিতে ব্যবহার করা শুরু করেন । এর বড় প্রমাণ হলো ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূলনীতির পরিবর্তন । সে ধারাবাহিকতায় যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছেন , মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করেছেন । এমন কি বিরোধী দল গুলোও সুযোগ পেলে রাজনৈতিক লাভের আশায় ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগান ।
আমি এ প্রসঙ্গে দুটি ঘটনার অবতারণা করতে চাই , একটি হচ্ছে ২০১৪ সালে ৫ই মে হেফাজতের ডাকে ঢাকা অবরোধ । এ অবরোধটি ছিল মূলত কয়েকজন ব্লগারের ইসলাম বিদ্বেষী কটুক্তির প্রতিবাদে । যে অবরোধে ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশ অচল হয়ে গিয়েছিল । আমি এধরনের কটুক্তিকে তীব্র ঘৃণা ভরে প্রতিবাদ করি এবং নিন্দা জানাই ।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে সাম্প্রতিক কালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কে আমন্ত্রণের প্রতিবাদে ব্রাক্ষণবাড়িয়া এবং চট্রগ্রামে সহিংসতায় অনেক প্রাণহানি ঘটেছে । যাদের অধিকাংশই যুবক এবং তরুণ । যে জীবন গুলো ছিল এক একটি পরিবারের আশার আলো এবং মা বাবার বুকের ধন । দেশের প্রতিটি নাগরিককে সুরক্ষিত রাখা সরকারের পবিত্র দায়িত্ব । সেখানে এত গুলো তাজা প্রাণ ঝড়ে যাওয়ার দায় সরকার এড়াতে পারে না । আমি মনে করি সরকার এখানে রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন । আমি প্রতিটি বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি ।
কিন্তু বাংলাদেশে এমন অনেক ঘটনা আছে , যে গুলো উপরে বর্নিত ঘটনার মতোই স্পর্শকাতর ছিল ।উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে ছিল –
২০১৯ সালের এপ্রিলে ফেনীতে মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক যৌনলালসার শিকার হয়ে নুসরাত জাহান কে আগুনে পুড়ে হ্ত্যার ঘটনা আমাদের সকলের জানা ।
২০২০ সালের অক্টোবরে নোয়াখালিতে ফেইস বুক লাইভে এসে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও আমরা সবাই দেখেছি । ঠিক একই সময়ে সিলেটের এম সি কলেজে গৃহবধুর গণধর্ষণের ঘটনা আমাদের কাহারও অজানা নয় ।
২০২০ সালের আগষ্টে কক্সবাজারে চকরিয়ায় মা ও তরুনী মেয়ে কে গরু চোর সন্দেহে নির্মমভাবে পিটানো হয় এবং পরে কোমরে রশি বেঁধে প্রকাশ্যে সড়কে হেঁটে নিয়ে যাওয়া হয় স্হানীয় ইউনিয়ন অফিসে । মা এবং মেয়ের কোমরে বাঁধা ছবি প্রতিটি দৈনিকে যখন ছাপা হয়েছিল তা দেখে কি আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়নি ?
উপরোল্লিখিত হৃদয় বিদায়ক ঘটনা গুলো তখন দেশ ব্যাপী আলোড়ন তৈরী করেছিল এবং নিন্দার ঝড় বয়ে গিয়েছিল । যে কোন বিবেচনায় উল্লেখিত ঘটনা গুলো কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয় , আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ , সামাজিক দৃষ্টিতে খুবই ঘৃনীত এবং ধর্মীয় দৃষ্টিতে পাপ বা গুনাহের কাজ । রাষ্টীয় ভাবে বা সামাজিক ভাবে এ ধরণের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ হলেও , ইসলামিক কোন সংগঠন কোন প্রতিবাদ বা আন্দোলনের ডাক দেন নি । এ গুলোকি ইসলামী শরিয়তের পরিপন্থী ছিল না ?
হঠাৎ এ ধরনের আন্দোলনে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরী করে এবং সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে । যে কারণে সম্মেলিত প্রতিবাদ বা সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহন দেখা যায় না । এখানে যে অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে , সে সন্দেহ কি জনমনে উঁকি দিতে পারে না ? সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে , রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিপ্রায় যে ছিল না , তা কি আমরা অস্বীকার করতে পারি ?
আমার বিশ্বাস ইসলামের অনুভূতিতে যে কোন ধরনের আঘাত , যে কোন মুসলমান তার জন্য তীব্র প্রতিবাদ করবে । আমাদের খুব সচেতন ভাবে অনুধাবন করতে হবে , ইসলামের দোহাই দিয়ে যেন কোন পক্ষ সহিংসতা তৈরী করে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পারে ।
কবির আহমদ
SUSTIAN
Ashbourne , Ireland
5th April 2021
আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে মদ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের লোগো সম্বলিত জার্সি পরতে অপারগতা প্রকাশ করায় ইংল্যান্ডের মুসলমান ক্রিকেটার মঈন আলীকে ‘জঙ্গি’ হিসেবে সম্বোধন করেন।
টুইটারে তসলিমা নাসরিন বলেন, ‘মঈন আলী ক্রিকেট না খেললে সিরিয়াতে গিয়ে আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগ দিত।’
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা ঝড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বাংলাদেশের আলোচিত এ লেখিকা। ১৯৯৪ সালে দেশত্যাগ করা তসলিমা নাসরিনের বিপক্ষে টুইটারে এ নিয়ে অন্যান্য ক্রিকেটারসহ অনেকেই ক্ষেপেছেন।
ইংলিশ ক্রিকেটেও এ নিয়ে চলছে তোলপাড়। জোফরা আর্চার, বেন ডাকেট, স্যাম বিলিংস থেকে শুরু করে ইংলিশ ক্রিকেটাররা দারুণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন তসলিমার ওপর। তার টুইটারে ক্ষোভ ঢেলে দিচ্ছে তসলিমার এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে।
ইংলিশ ক্রিকেটার বেন ডাকেটও একহাত নিলেন তসলিমা নাসরিনের। সবচেয়ে বেশি ক্ষেপেছেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী পেসার জোফরা আর্চার। সতীর্থের প্রতি এমন অপবাদ মেনে নিতে পারেননি তিনি। ফিরতি টুইটে তসলিমাকে পাগল ইঙ্গিত করে লিখেন, ‘তুমি কি ঠিক আছো? আমার তো মনে হয় না, তুমি ঠিক আছো।’
তোপের মুখে অবশেষে তসলিমা নাসরিন তার টুইটি মুছে ফেলতে বাধ্য হন।
আমেরিকার টেক্সাসে পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যার পর দুই ভাই আত্মহত্যা করেছে। সবাই বাংলাদেশি বংশদূত। মা, বাবা, বোন ও নানিকে হত্যার পর ওই পরিবারের দুই সন্তান আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
দুই ভাই ‘সুইসাইড নোট’ রেখে গেছেন। এই নোট থেকে মনে করা হচ্ছে, তাঁরা হতাশায় ভুগছিলেন। পরিবারকে লজ্জা ও কষ্ট থকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দুই ভাই সবাইকে হত্যা করে নিজেরা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে।
মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ১৯ বছর বয়সী যমজ ভাই-বোন ফারহান তৌহিদ ও ফারবিন তৌহিদ, বড় ভাই তানভীর তৌহিদ (২১), মা আইরিন ইসলাম (৫৬), বাবা তৌহিদুল ইসলাম (৫৪), তানভীর তৌহিদের নানি আলতাফুন্নেসা (৭৭)।
ঘটনার আগে ফারহান তৌহিদ ইনস্টাগ্রামে একটি দীর্ঘ ‘সুইসাইড নোট’ পোস্ট করেছেন। এতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি নিজেকে ও আমার পরিবারকে হত্যা করেছি।’
ফারহান আরও লিখেছেন কীভাবে তিনি নবম শ্রেণি থেকে মানসিক হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তাঁর বড় ভাইও হতাশার সঙ্গে লড়াই করেছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ফারহান লেখেন, তাঁর ভাই বলেছেন, ‘আমরা যদি এক বছরে সবকিছু ঠিক করতে না পারি, তবে আমরা নিজেদের ও পরিবারকে হত্যা করব।’
আয়ারল্যান্ডের Dublin শহরের Drumcondra এলাকার নিবাসী “আকরাম হোসেন” গতকাল রবিবার ৪ঠা এপ্রিল ২০২১ সকাল বেলা উনার কর্মস্থল “ Centra Drumcondra Branch” (Drumcondra Station সংলগ্ন) এ কর্মরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পরলে, এম্বুল্যান্স ডাকা হয় এবং একপর্যায় প্যারামেডিকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেয়। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মৃতের মরদেহ Mountjoy Street Garda Station এর তত্ত্বাবধানে Mater হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ধারনা করা হচ্ছে উনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরন করেছেন। হসপিটাল কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে উনারা জানান মৃত্যু সম্পর্কে বিস্তারিত আগামী মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
আকরাম হোসেন, একদা আয়ারল্যান্ড প্রবাসী অনেকের পরিচিত আব্দুল্লাহ ভাইয়ের ছোট ভাই। দেশে উনার এক ছেলে, বউ , মা এবং এক বোন রয়েছেন। উনারা ঢাকার মিরপুরে বসবাসরত আছেন।
আমরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
মৃত “আকরাম হোসেন” এর পরিবারের অনুরোধে উনার দাফন-কাফন এবং মরদেহ দেশে পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। এই সংক্রান্ত সকল তথ্য অচিরেই সকলকে বিস্তারিত অবহিত করা হবে।
বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইন মানতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে দুবাই ফেরত দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল দুই জনকেই কোর্টের মুখোমুখি করা হবে।
দুইজন মহিলার বয়স ৩০ এর মত এবং দুইজনই ডাবলিনের বাসিন্দা।
আর্মির অফিসার তাদেরকে বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা জানালে তারা তা করতে অস্বীকৃতি জানান। যার ফলে আর্মির অফিসার গার্ডা কে ডাকলে তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
গার্ডা জানান, তারা 4E পদ্দতি গ্রহণ করে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়।
4Es Approach: Engaging, Explaining, Encouraging and Enforcement as last option.
আমাদের আয়্যারল্যান্ড প্রবাসী ড. ফরহাদ আহমেদের একটা রিসার্চ পেপার বিশ্বের নামকরা রিসার্চ কনফারেন্স “একাডেমি অফ ম্যানেজমেন্ট কনফারেন্স” (ব্যবসা ও বানিজ্যের সব বিষয়ের মধ্যে বিশ্বের নাম্বার ওয়ান কনফারেন্স) এ বেস্ট রিসার্চ পেপার হিসেবে সিলেক্ট হয়েছে। পেপারটিতে গ্লোবাল জেন্ডার গেপ কিভাবে ফিমেল অনট্রাপ্রেনিউরশিপকে বা একজন মহিলা উদ্যোক্তাকে প্রভাবিত করে তা দেখানো হয়েছে। এই পেপারটি বিশ্বের ৪৪ টা দেশের প্রায় ১০,০০০ রেসপন্ডেন্টস এর ডাটার ভিত্তিতে লেখা হয়েছে।
পেপারটি আমেরিকার আরিজনা স্টেট ইউনিভারসিটিতে এই বছরের জুলাই মাসে প্রেজেন্ট করা হবে যেখানে বিশ্বর সব নামীদামি স্কলাররা উপস্হিত থাকবেন। পরবর্তীতে হাই ইমপ্যাক্ট রিসার্চ জার্নালে পেপারটি প্রকাশিত হবে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে আগামী ৯ই এপ্রিল থেকে বাংলাদেশিদের ব্রিটেনে ঢোকা নিষিদ্ধ হচ্ছে।করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পটভূমিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, কেনিয়া এবং ফিলিপিন্সের নাগরিকদের ব্রিটেনে প্রবেশ নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (০১ এপ্রিল) যুক্তরাজ্য বাদে পুরো ইউরোপ এবং আরও ১২টি দেশ থেকে যাত্রীদের বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বাংলাদেশের সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানায়, এই নিষেধাজ্ঞা ৩রা এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ৯ই এপ্রিল শুক্রবার ভোর চারটা থেকে ফিলিপিন্স, পাকিস্তান, কেনিয়া ও বাংলাদেশের নাম নিষিদ্ধ দেশের ‘লাল তালিকা’য় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তার আগের ১০ দিনে যেসব যাত্রী এই দেশগুলো থেকে যাত্রা শুরু করেছে কিংবা ট্রানজিট করেছে তাদের ব্রিটেনে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে ব্রিটিশ সরকারের পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
ব্রিটেনে টিকাদান কর্মসূচি পুরো-দমে চলছে। তারই মাঝে কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন ধরণ যাতে এদেশে ঢুকতে না পারে সে জন্যই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে ওয়েবসাইটে জানানো হয়।
ব্রিটিশ কিংবা আইরিশ পাসপোর্টধারী যাত্রী, এবং যাদের ব্রিটেনে বসবাসের অনুমতি রয়েছে, তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছেন না। তবে তাদেরকে সরকার অনুমোদিত কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ১০ দিন থাকতে হবে।
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের পরিচালনায় একটি দাবা ক্লাব গঠনের উদ্দেশ্যে নর্দান আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটর দাবা খেলোয়ার ও দাবা খেলানুরাগীদের নিয়ে গত ২২শে মার্চ ২০২১ সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল মিডিয়াতে অনুষ্ঠিত হয় একটি আলোচনা সভা।
উল্লেখ্য করোনা মহামারীর সময় কালে গত বছর ২০২০ সালের ৬ই ডিসেম্বর “আইরিশ বাংলা টাইমস” পত্রিকার একবছর পূর্তি উপলক্ষে পত্রিকাটির পক্ষ থেকে একটি ভার্চুয়াল দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল। ঐ দাবা প্রতিযোগিতাটি দাবা প্রেমীদের মধ্যে বেশ সারা ফেলে, তখন থেকে দাবা খেলানুরাগী ও দাবা খেলোয়াড়দের মধ্যে ভার্চুয়াল মিডিয়ায় গড়ে উঠে দাবা খেলার নিয়মিত আসর। পরবর্তীতে এই খেলার প্রতি ভালোবাসা ও আগ্রহের কারণে “আইরিশ বাংলা টাইমস” পত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ একটি দাবা ক্লাব গঠনের ব্যাপারে সকলের সাথে আলোচনা করে করে।
অবশেষে আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক দাবা-খেলানুরাগী জনাব আব্দুর রহিম ভূই্ঁয়া ও দাবা-খেলোয়ার ও দাবা-প্রশিক্ষক জনাব মাহফুজুল হকের ঐকান্তিক যৌথ প্রচেষ্ঠায় গত ২২শে মার্চ ২০২১ আত্মপ্রকাশ করে Irish Bangla Chess Club ( IBCC)।
ক্লাবটির উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে ক্লাবটির পক্ষ থেকে নিন্মোক্ত তথ্য গুলো জানোন হয়:
১. প্রতি বৃহস্পতিবারকে রাখা হছে ” ক্লাব নাইট” হিসেবে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভার্চুয়াল মিডিয়াতে (আপাতত) ক্লাবের কার্যক্রম ও খেলা পরিচালনা করা হবে। এই “ক্লাব নাইটে” সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাও করা হবে বলে জানানো হয়।
২. বয়স ভিত্তিক গ্রুপ গঠনের মাধ্যমে বাচ্চাদের ও বড়দের দাবা প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা একটি বড় উদ্দেশ্য।
৩. করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে Irish Bangla Chess Club ( IBCC) তাদের নিজস্ব ক্লাব ভবনের ব্যবস্থা করবে যেখানে সকল সদস্য সরাসরি উপস্থিত হয়ে খেলায় অংশ নিবে।
৪. প্রতি বছর একটি বিশাল দাবা প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হবে যেখানে নর্দান আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটর দাবা খেলোয়ারদের অংশগ্রহনে দাবা প্রতিযোগীতার পাশাপাশি পরিবারের সকলের অংশগ্রহনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও একটি মেলার আয়োজন করা হবে।
৫. এছারাও থাকবে নিয়মিত দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন।
উক্ত সভায় যে সকল দাবানুরাগী ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন তারা হচ্ছেন:
জনাব আবদুর রাহিম ভূইয়াঁ,
জনাব মাহফুজুল হক,
জনাব মোহাম্মদ মাহবুব পরোয়ার,
জনাব শাহাদাত হোসাইন,
জনাব মেহেদী হাসান,
জনাব আজাদ খন্দকার,
জনাব নাসিম মাহমুদ,
জনাব রাসেল অপু,
জনাব মনিরুজ্জামান মানিক,
জনাব ওয়াহিদ ফেরদাউস,
জনাব শওকত আলী মাসুম,
জনাব ওমর ফারুক নিউটন এবং
জানাব মশিউর রহমান।
যেকোন খেলাধুলা মানুষের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তুলে। খেলাধুলা হিংসা-হানাহানি থেকে মানুষকে দূড়ে রাখে, মজবুত করে ভাতৃত্বের বন্ধন। আমরা Irish Bangla Chess Club ( IBCC) এর সফলতা কামনা করি এবং সকল সদস্যদের প্রতি জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
বাংলাদেশ ব্যাংক, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি, অন্যান্য ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানসহ দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানে হ্যাকাররা আক্রমণ করেছে। ‘হাফনিয়াম’ নামের হ্যাকার গ্রুপ এই হামলা করেছে বলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক ও বাংলাদেশ সরকারের ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (বিজিডি ই-গভ সার্ট) প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ জানিয়েছেন।
আক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভারে হাফনিয়াম’র অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। হামলা ই-মেইলের মাধ্যমে হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
হ্যাকাররা বাংলাদেশসহ আরও ২২টি দেশ টার্গেট করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, রাশিয়ার মতো দেশও রয়েছে।
হ্যাকারদের টার্গেটের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য খাত, আইন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রতিরক্ষা, ভারী ও প্রকৌশল শিল্প, বিজ্ঞান ও শিক্ষা খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।
মাত্র এক মাস আগেই, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের বেশ কয়েকটি আর্থিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার শঙ্কায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিলো সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম-সিআইআরটি। সংস্থাটির নজরে এসেছিলো, ক্যাসাব্লাংকা নামের একটি হ্যাকার গ্রুপের অপতৎপরতা।
মাস না পেরেতেই এবার সত্যিই হ্যাকারদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। তবে ক্যাসাব্লাংকা নয় দুইশ’ প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিকেন্দ্রিক নিরাপত্তার জাল ছিন্ন করেছে হংকং-ভিত্তিক হাফনাম হ্যাকারস গ্রুপ।
বলা বাহুল্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি দশ লাখ ডলার চুরি যায়।
আইরিশ স্বাস্থ্য অধিদফতর ৩৩ টি দেশকে কেটাগরি-২’ হিসাবে মনোনীত করেছে এগুলো হলো: অ্যাঙ্গোলা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, বলিভিয়া, বোতসোয়ানা, ব্রাজিল, বুরুন্ডি, কেপ ভার্দে, চিলি, কলম্বিয়া, গণতান্ত্রিক কঙ্গো, ইকুয়েডর, এ্যাসওয়াতিনি, ফরাসী গায়ানা , গিয়ানা, লেসোথো, মালাউই, মরিশাস, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, প্যারাগুয়ে, পানামা, পেরু, রুয়ান্ডা, সেশেলস, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুরিনাম, তানজানিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উরুগুয়ে, ভেনিজুয়েলা, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে।
নির্ধারন করে দেওয়া ৩৩দেশ থেকে আগত যাত্রীদের আয়ারল্যান্ডে পৌঁছানোর পরে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারানটাইন পার করতে হবে। কোভিড-১৯ এর জন্য নেগেটিভ PCR পরীক্ষা ছাড়াই আয়ারল্যান্ডে আগত যে কোনও যাত্রীর ক্ষেত্রেও এই বিধি প্রযোজ্য।
গত শুক্রবার ২৬ শে মার্চ ভোর ৪ টা থেকে নতুন এই পৃথক আইনের বিধিটি কার্যকর হয়েছে এবং যে কেউ এটি না মানলে তাকে € ২০০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে বা এক মাস পর্যন্ত কারাদন্ডের দণ্ড দেওয়া হতে পারে।
এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছে, বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারান্টাইন ব্যবস্থাপনের জন্য আইনগত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো অনুসরন না করা একটি ফৌজদারি অপরাধ। আরো বলা হয়েছে, যে কোন কিছু সন্দেহজনক মনে হলে তা অপরাধ হিসেবে আমলে নিয়ে পুলিশ তদন্ত করবে।
বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এবং উল্লেখযোগ্য জলপথ সুয়েজ খাল। সুয়েজ খালের মাধ্যমে লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগর সংযুক্ত। সুয়েজ খালে আটকে পড়ে জাপানী মালিকানার বিশালদেহী মালবাহী জাহাজ এভার গিভেন।
৪০০ মিটার লম্বা ও ৫৯ মিটার চওড়া মালবাহী জাহাজটির রেজিস্ট্রেশন পানামার। চিন থেকে মালবাহী কন্টেনার নিয়ে নেদারল্যান্ডসের বন্দর রোটারড্যাম যাচ্ছিল জাহাজটি।
গত মঙ্গলবার সকাল ৭ টা ৪০ নাগাদ পানামা খাল দিয়ে উত্তরদিকে ভূমধ্যসাগরের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়েই হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে যেতে শুরু করে। শেষপর্যন্ত জাহাজের দুই মুখ সুয়েজ খালের দুই পাড়ে ঠেকে যায়। আড়াআড়িভাবে সুয়েজ খাল আটকে দাঁড়িয়ে পড়ে জাহাজটি।
এই ঘটনায় বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত এই নৌপথে জাহাজ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। খালের দুই পাশে নজিরবিহীন জাহাজ জট দেখা দেয়। আল-জাজিরা বলছে, ঘটনার পর সুয়েজ খালের দুই পাশে প্রায় ১৫০টি পণ্যবাহী জাহাজ পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিশ্ববাণিজ্যে সুয়েজ খালের গুরুত্ব অনেক। এটি নৌপথে এশিয়া ও ইউরোপের দূরত্ব অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। ফলে সুয়েজ খাল ব্যবহার করে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে তুলনামূলক কম খরচে পণ্য পরিবহন করা যায়। বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্যের ১২ শতাংশ সুয়েজ খাল হয়ে পরিবহন করা হয়।
মিসরের জাতীয় আয়ের বড় একটি উৎস সুয়েজ খাল। এসসিএ বলছে, গত বছর সুয়েজ খাল দিয়ে প্রায় ১৯ হাজার পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করেছে। প্রতিদিন গড়ে ৫১টির বেশি জাহাজ এ জলপথ পাড়ি দিয়েছে। গত বছর ১১৭ কোটি টন পণ্য সুয়েজ খাল দিয়ে গন্তব্যে গেছে।
সুয়েজ খালে মালবাহী জাহাজ ‘এভার গিভেন’ আটকে যাওয়ায় প্রতিদিন ৯৬০ কোটি টাকার পণ্য পরিবহন আটকে আছে। এর ফলে প্রতি ঘণ্টায় ক্ষতি হচ্ছে ৪০ কোটি ডলার।
গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়ারল্যন্ডে ভার্চুয়াল মিডিয়াতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল স্বাধীনতার “সুবর্ণ জয়ন্তী” উৎসব। স্বাধীনতার “সুবর্ণ জয়ন্তী” এই উৎসবটি আয়োজিত হয় আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্দ্যোগে এবং সকলের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানটি সফল ভাবে সম্পন্ন হয়।
স্বাধীনতার “সুবর্ণ জয়ন্তী” উৎসবটি উদযাপনে মূল আহ্বায়ক ছিলেন জনাব মোহাম্মদ মোস্তফা, জনাব মোস্তাফিজুর রহমান ও ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিরদার তারা বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃত্ব দানকারী প্রধান সংগঠনের প্রাক্তন তিনজন সভাপতি এবং অনুষ্ঠানটি আয়োজনে, প্রচারে ও পরিচালনায় কাজ করেন জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার, জনাব কাজী কবীর, জনাব মশিউর রহমান ও জনাব মানিক মনিরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানটির গর্বিত স্পন্সর ছিলেন কমিউনিটির অন্যতম সমাজ সেবক BD Seafood Ltd এর কর্নধার কিলকেনির জনাব সৈয়দ রেদোয়ান আহমেদ (বাবু)।
জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ারের উপস্থাপনায় বেলা ২:৩০ মিনিটে মূল অনুষ্ঠান আরাম্ভ হয়। প্রথমে হাফেজ সামসুল আলম পবিত্র কোরআন থেকে তিলওয়াত করেন এর পর গীতা পাঠ করেন সুপ্তা দাস, ত্রিপিটক পাঠ করেন দিলিপ বরুয়া ও বাইবেল থেকে পাঠ করেন Frank Cody এর পর জাতীয় সংঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিহত শহীদদের স্বরনে তারেক মাহমুদ ইকবালের সঞ্চালনায় “মেসেজ শিল্পী গোষ্ঠীর” অংশগ্রহনে হামদ নাত ও দেশাত্ববোধক গান ও কবিতা পরিবেশনের মাধ্যামে শেষ হয় অনুষ্ঠানের প্রথম অংশ।
মশিউর রহমানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে ছিল বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ছোট্ট সোনামনিদের পরিবেশনায় চমৎকার একটি পর্ব যেখানে বাচ্চারা বাংলা ভাষায় ছড়া, কবিতা ও গান পরিবেশন করে এবং সকলেই এই পর্বটি উপভোগ করেন। অংশগ্রহনকারী ছোট্ট বন্ধুরা হলো: পূর্ণপ্রতিম দাস,প্রজ্ঞপূর্ণ দাস,রোকেয়া তাসনিম,তাহলীল হাসান চৌধুরী, ইহান কবীর ও আবিয়ান আহমেদ।
অনুষ্ঠানের তৃতীয় সেগমেন্টে থাকে শায়লা শারমিন নিপার উপস্থাপনায় আয়ারল্যান্ড প্রবাসী প্রতিভাবান শিল্পীদের অংশগ্রহনে কবিতা আবৃত্তি ও গান দিয়ে সাজানো একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন সাফকাত রেহমান, হেপী ফাহিমা ও তানভির হাসান, সুপ্তা দাস, দিলিপ বরুয়া,আব্দুল মান্নান মান, রুনা জলিল, মমতাজ কবীর কলি, আফরিন ইরে, ফরিদ আহমেদ ও শাহনাজ শিল্পী,আরিফ আজিজ,এবং আরো অংশগ্রহন করেন আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী কবি কামরুন নাহার রুনু, তিনি তার স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইরিশ সরকারের মন্ত্রী Niall Collins TD, Minister of State for Skills and Further Education উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও সংস্কৃতি সিনেটর Malcolm Byrne ,Senator for the Cultural and Educational Panel আরো উপস্থিত ছিলেন জলবায়ু এ্যাকশন সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান Brian Leddin TD , Chair of the Committee on Climate Action আরো উপস্থিত ছিলেন আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটির দুজন অগ্রপথিক আমাদের গর্ব জনাব আজাদ তালুকদার Deputy Mayor, Limeric City & County ও জনাব কাজী আহমেদ ইমন কউন্সিলর Dún Laoghaire-Rathdown County Council
অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে অতিথিদের স্বাগত জানান ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার এর পর তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ইতিহাসের উপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন এবং তিনি অতিথিদের সকলকে একে একে বক্তব্য রাখতে আহবান জানান। অতিথিরা সকলে সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানান এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রসংশা করেন। লিমিরিকের ডেপুটি মেয়র আজাদ তালুকদার ও কাউন্সিলর কাজী আহমেদ ইমন তারা দুজনেই সুবর্ণ জয়ন্তীতে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করেন।
জনাব মোহম্মদ মোস্তফা ও জনাব মোস্তাফিজুর রহমানের সমাপনী বক্তব্যের পর শুরু হয় উৎসবের প্রধান আকর্ষন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী তপন চৌধুরীর সঙ্গীত সন্ধ্যা। তপন চৌধুরী তার সুরের মুর্ছনায় দর্শকদের কিছুক্ষনের জন্য মোহিত করে রাখেন। তার গানের সাথে অনেকে হারিয়ে যান সোনালী অতিতে। কমিউনিটির সকলে পরিবার পরিজন নিয়ে যোগ দেওয়ায় অনুষ্ঠানটি একটি ভার্চুয়াল মিলন মেলায় পরিনত হয়। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটির নির্দেশনার দায়িত্বে ছিলেন জনাব কাজী কবীর।
আসছে ১৬ই ডিসেম্বর ২০২১ আমাদের বিজয়ের ৫০ বছর এবং বিজয়ের “সুবর্ণ জয়ন্তী”। কমিউনিটির সাধারন জনগন আশায় তাকিয়ে থাকবে আবারও সকলে মিলে একটি “বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী” উৎসব উদযাপনের দিকে, এখন দেখার বিষয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ কি পদক্ষেপ নেন। তবে তাদের কাছে আমরা আশা করতেই পারি ডিসেম্বরে তারা বিজয়ের “সুবর্ণ জয়ন্তী” উৎসবের একটি আয়োজন করে আমাদের উপহার দিবেন।
আজকে ২৬ মার্চ আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো হয়। ফিয়ানা ফয়েল এর কালচারাল এবং শিক্ষা প্যানেলের সিনেটর ম্যালকম বায়ার্ন এই শুভেচ্ছা প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
তিনি বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের স্মরণ করে বক্তব্য প্রদান করেন। বাংলাদেশের কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদারকে অনুরোধ জানান বাংলাদেশি কমিউনিটিকে নিয়ে এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য।
বলা বাহুল্য, আজ আয়ারল্যান্ডে, ‘’অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন আয়ারল্যান্ড’’ এর উদ্যেগে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করে। এতে জনাব ম্যালকম বায়ার্ন অথিতি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত থাকেন মিনিস্টার নায়াল কলিন্স, ক্লাইমেট অ্যাকশন কমিটির ব্রায়ান লেডিন, লিমেরিকের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার এবং কাউন্সিল্র জনাব কাজই আহমেদ ইমন উপস্থিত থাকেন। এছাড়াও উপস্থিত থাকেন বাংলাদেশের গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
আগামী ২৬শে মার্চ বাংলাদেশর স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হবে । জাতির জন্য অনেক গর্বের একটি দিন । যে শিশুটি পঞ্চাশ বছর আগে মায়ের গর্ভে ছিল , হাঁটি হাঁটি পা পা করে সে এখন অনেক পরিণত ।চলার পথটা মসৃণ ছিল না , অনেক বাঁধা , উপেক্ষা এবং হোঁচট খেয়ে খেয়ে আজ বিশ্বের বুকে নিজেকে নতুন রূপে পরিচিতি লাভ করাতে সক্ষম হয়েছে ।
গত পঞ্চাশ বছরে আমাদের অনেক আশা জাগানো অর্জন আছে । আমরা মাথা পিছু আয় এবং জাতীয় আয় অনেক গুন বৃদ্ধি করেছি । খাদ্য , বাসস্থান দারিদ্র্য , শিক্ষা , চিকিৎসা বিভিন্ন মৌলিক সূচকে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। যে সূচক গুলো বিবেচনায় ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতি সংঘ বাংলাদেশ কে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রর মর্যাদা দিয়েছে ।
অবকাঠামো উন্নয়নেও আমরা বিশেষ উন্নতি করেছি । নিজেদের অর্থায়নে সর্বশেষ ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী প্রায় ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে পদ্মা বহুমুখী সেতুর বাস্তবে দৃশ্যমান , যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের নিজেদের সাম্যর্থের প্রমাণ দিয়েছি ।
জাতি হিসেবে আমরা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে এখনও এক হতে পারিনি ।এখনও আমাদের কে শুনতে হয় কে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বা কে বিপক্ষে ? বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ যে বাঙ্গালীর মুক্তির সনদ ছিল , তা নিয়েও আমরা দ্বিধাবোধ করি । শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন এবং মেজর জিয়াউর রহমান যে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে ঘোষণা পত্রটি পাঠ করেন এখানেও আমরা এক হতে পারিনি ।জাতির পিতা যে বঙ্গবন্ধু , এমন কি বঙ্গবন্ধু শব্দটিও আমরা স্বগৌরবে বলতে দ্বিধাবোধ করি ।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ছিল একটি ধারাবাহিক আন্দোলন সংগ্রামের ফসল।সে ধারাবাহিকতায় মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী অন্যতম , যিনি মজলুম জননেতার হিসেবে পরিচিত ছিলেন ।শেরে বাংলা এ . কে . ফজলুল হক , যিনি ছিলেন যুক্ত ফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা । হোসেন শহীদ সরোয়ার্দী ছিলেন যুক্ত ফ্রন্ট গঠনের মূল নেতাদের একজন ।জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী , যিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর প্রধান ।মুক্তিযুদ্ধের সকল সেক্টর কমান্ডার , বীর শ্রেষ্ঠদের অবদানের কথা খুব কম উচ্চারিত হয় ।
যে সকল মূলনীতির উপর বাঙ্গালী জাতি মুক্তিযুদ্ধ করেছিল , তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং সমাজতন্ত্র । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম একটি রাষ্ট্র । কিন্তু সম্প্রীতির বিষয়ে এখনও আমরা স্থিতিশীলতা আনতে পারেনি । মাঝে মাঝে সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের উপর অন্যায় এবং অত্যাচারের খবর পাওয়া যায় । সাম্প্রতিককালে সুনামগঞ্জে হিন্দুদের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে ফেলার যে ঘটনা ঘঠেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় । এ ধরনের যে কোন ঘটনার তিব্র নিন্দা জানাই ।
যে সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল , বাস্তবে তা খোঁজে পাওয়া যায় না ।ধনী গরীবের বিরাট বিষম্য দিন দিন বেড়েই চলছে । শোষণহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমরা এখনও কায়েম করতে পারিনি ।
গণতন্ত্র এখনও নিরবে কাঁদে , গণতান্ত্রিক কাঠামো গুলো যেমন , আইন , শাসন , বিচার বিভাগ কে আমরা এখনও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরী করে দিতে পারিনি । গনতন্ত্রের একটি প্রধান শর্ত হলো জনগনের ভোটাধিকার । ভোটাধিকার রক্ষায় যে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশী কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে , তা হলো নির্বাচন কমিশন । আজ পর্যন্ত আমরা একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন তৈরী করতে পারিনি ।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলতে গণমাধ্যম , প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আগের চেয়ে অনেক বেশী সরব । কিন্তু এখানেও তাদের কে অদৃশ্য শক্তির বিধি নিষেধের মধ্যে দিয়ে সংবাদ বা খবর পরিবেশন করতে হয় । আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিছু কিছু ধারা স্বাধীন মত প্রকাশের অনেক বড় অন্তরায় । যে ধারার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মত প্রকাশের কারণেও গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।কিছুদিন পূর্বে লেখক মুশতাক আহমেদ ডিজিটাল আইনে কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন ।
স্বাধীনতার সুবর্ন্তজয়ন্তিতে আমাদের সকল সীমাবদ্ধতা , সংকীর্তনতা , বিভেদ একদিন দূর হবে সেই প্রত্যাশা। জানিনা সে দিন কবে আসবে ?
বিদেশ থেকে আসা মানুষদের জন্য হোটেল কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করেছে আয়ারল্যান্ড। করোনা মহামারী থেকে নাগরিকদের নিরপত্তা দিতে গত শুক্রবার থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ৩৩টি দেশ থেকে আসা যে কাউকে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করার পর এই নিয়ম পালন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এই দেশগুলোর তালিকা যে কোন সময় সংযোজন বিয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে আইরিশ কর্তৃপক্ষ।
আয়ারল্যান্ড সরকার আশা করছে, এই কঠোর বিধি আরোপের ফলে করোনাভাইরাসের নতুন ধরণগুলোর প্রবেশ ঠেকানো যাবে। দেশটির বিরোধী দলগুলোও বলছে, এই নিয়মটি আরো আগেই চালু করার দরকার ছিলো।
নতুন এই নিয়ম অনুযায়ী উচ্চ ঝুকির তালিকায় থাকা ৩৩টি দেশ থেকে আসা লোকদের আয়ারল্যান্ডে প্রবেশের পর নিজ খরচে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে হোটেলে। সরকারি তত্ত্বাবধানে তাদের থাকতে হবে টিফকো হোটেল গ্রুপের যে কোন হোটেলে। প্রাথমিকভাবে ডাবলিন এয়ারপোর্টে গ্রুপটির মালিকানাধীন ক্রাউন প্লাজা হোটেলে চলবে যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন। প্রাথমিকভাবে প্রত্যেককে অন্তত ১৪ রাত হোটেলে থাকার বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছে। তবে হোটেলে ওঠার ১০ দিন পর তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ এলে সময় কমানো হতে পারে।
মালবাহী ট্রাকের ড্রাইভার কিংবা যাত্রীবাহী বিমানের পাইলটরা এই নিয়মের বাইরে থাকবেন। তবে সড়ক বা নৌ পথে কোন সাধারণ যাত্রী আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করলে তাদেরও হোটেল কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।
আইরিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই নিয়মের আওতায় যাত্রীদের হেটেলে পৌছে দেয়া এবং তাদের নিরাপত্তাসহ দেখভালের দায়িত্ব থাকবে টিফকো হোটেল গ্রুপের কর্মীরা। তবে দূর থেকে সব কিছু তত্ত্বাবধান করবে দেশটির সেনাবাহিনী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিফেন ডোনেলি বলেছেন, তাদের কোয়ারেন্টাইন আরামদায়ক করতে হোটেল কর্মীর সর্বোচ্চ সেবা দেবে।
বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইনের জন্য আইরিশ সরকারের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে। উল্লেখিত ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে যারা আসবে, আগেই তাদের ১২ রাতের জন্য নির্দিষ্ট হোটেলে রুম বুকিং করে আসতে হবে। এক্ষেত্রে খরচ পড়বে জনপ্রতি ১৮৭৫ ইউরো। ১০ দিন পর কোভিড-১৯ পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ পাওয়া গেলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। আর ফলাফল করোনা পজেটিভ পাওয়া গেলে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে হোটেলেই কিংবা হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে এজন্য কোন বাড়তি অর্থ নেয়া হবে না। চিকিৎসা বা বাড়তি সময় হোটেল অবস্থান করতে হবে সেসব খরচ আয়ারল্যান্ড সরকার বহন করবে।
কোয়ারেন্টাইন গেস্টরা শর্ত স্বাপেক্ষে এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামতো প্রয়োজনে হোটেলের বাইরে যেতে পারবে। তবে ফ্রি ওয়াইফাই, মুভি দেখা, রুম সার্ভিসসহ হেটেলেই তাদের প্রয়োজনী সব ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রতিটি হোটেলে থাকবে স্বার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও নার্স। তারা নিয়মিত কোয়ারেন্টাইন গেস্টদের স্বাস্থের দিকে নজর রাখবেন।
তবে অনুমতি ছাড়া কেউ কোয়ারেন্টাইন ভঙ্গ করলে ২ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা অথবা এক মাসের কারাদ- কিংবা উভয় দ- হতে পারে।
আইরিশ সরকার জানিয়েছে, এই বাধ্যবাধকতার ফলে অনেকে আয়ারল্যান্ড ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করতে পারেন। তবে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যেতে ইচ্ছুক অনেকে কোয়ারেন্টাইনের জন্য হোটেল বুকিং দিয়েছেন। অবশ্য তাদের সংখ্যা কত সেটি জানানো হয়নি।
যে ৩৩টি দেশকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছে আয়ারল্যান্ড তার মধ্যে বেশির ভাগই লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশের। এছাড়া রয়েছে অস্ট্রিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে এই তালিকায় দেশের সংখ্যা বাড়তে পারে যে কোন সময়। এর বাইরে অন্য কোন দেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে গেলে অবশ্যই করোনা নেগেটিভ টেস্ট রেজাল্টের কাগজপত্র দেখাতে হবে ।
দেশগুলি নিম্মরুপ ;
Brazil,South Africa ,Angola, Austria, Botswana, Burundi, Cape Verde, Democratic Republic of the Congo, Lesotho, Malawi, Eswatini, Mauritius, Mozambique, Namibia, Rwanda, Seychelles, Tanzania, United Arab Emirates, Zambia, and Zimbabwe,Argentina, Bolivia, Chile, Colombia, Ecuador, French Guiana, Guyana, Panama, Paraguay, Peru, Suriname, Uruguay and Venezuela
স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী, ৫০ বছর পর ও জাতি কেন দ্বিধাবিভক্ত ?
বৃটিশরা প্রায় দুই শত বছর ভারত উপমহাদেশে তাদের রাজত্ব কায়েম করে আসে।একটা দেশ যখন বানিজ্যের নামে আরেকটি দেশ দখল করে নেয় তখন তাকে আমরা উপনিবেশবাদ বলে থাকি। বৃটিশ সরকার তাই করেছে। তারা বানিজ্যের অজুহাতে এই উপমহাদেশে নির্বিঘ্নে শোষন চালিয়ে এসেছে।বৃটিশ উপনিবেশ আমলে হিন্দু জমিদার ও মুসলিম চাষিদের মধ্যে বিভিন্ন কারনে সামাজিক বৈষম্য তৈরী হয়। কৃষকদের মুক্তির আন্দোলনই কাল পরিক্রমায় পাকিস্তান আন্দোলনে পরিনত হয়েছিল।
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের (Tow nation theory) ভিত্তিতে মুসলিম অধ্যুষিত অন্চল নিয়ে পাকিস্তান এবং হিন্দু অধ্যুষিত অন্চল নিয়ে ভারত নামক দুটি স্বাধীন রাস্ট্রের সৃস্টি হয়। পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে ১৯৪৭ সালের ১৪ ই আগস্ট। এবং ভারত তাদের স্বাধীনতা দিবস পালন করে আসছে ১৫ ই আগস্ট থেকে। পাকিস্তানের জন্ম ছিল মূলত মুসলিম লীগের রাজনৈতিক আন্দোলনের চুড়ান্ত রুপ।এর বীজ বপন করা হয়েছিল মূলত ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সম্মেলনে। ঐ সম্মেলনে গৃহীত হয় ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্থাব। যা ছিল ভারতের উত্তর পূর্ব এ উত্তর পশ্চিম অংশে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ গুলো নিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম মুসলিম রাস্ট্র এবং মধ্য ও দক্ষিনের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ গুলো নিয়ে হিন্দু রাস্ট্র প্রতিস্টা করা। ১৯৪৬ সালে সাধারন নির্বাচনে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন আরো বৃদ্ধি পায়। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় মুসলিমলীগ এবং হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় কংগ্রেসের প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে স্বতন্ত্র রাস্ট্র প্রতিস্টার দাবী আরো সুস্পস্ট হয়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃটিশ গভর্নর Lord Mount Batten ১৯৪৭ সালে জুন মাসেই দেশ বিভাগের নীতি ঘোষনা দেন। যার ফলশ্রুতিত্ ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি স্বতন্ত্র জাতি সত্তার অভ্যুদ্ধয় ঘটে।
পাকিস্তান রাস্ট্রের সৃস্টির পর থেকেই (পুর্ব ও পশ্চিম) দুটি অংশের মধ্যে শুরু হয় নানাবিধ বৈষম্য। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্যের পাশাপাশি শুরু হয় রাস্ট্রভাষা বাংলা নিয়ে ষড়যন্ত্র।১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন ঢাকার পৃথক দুটি সমাবেশে বলেন “Urdu and only Urdu shall be the state language of Pakistan” একথা বলার পর প্রতিবাদমূখোর হয়ে উটে বাংলার ছাত্রসমাজ। ‘রাস্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে মুখোরিত হয়ে উটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ আশপাশ এলাকা। ২১ শে ফেব্রুয়ারি সাধারন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভংঘ করে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের করলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়, এতে নিহত হন সালাম,বরকত, রফিক, জব্বার, সফিউর সহ নাম না জানা অনেকে। এর পর ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্থানের আইন পরিষদের নির্বাচনেকে সামনে রেখে গঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট। আন্চলিক স্বায়ত্বশাসন ও বাংলাকে রাস্ট্রভাষা করার দাবী সহ ২১ দফা দাবী নিয়ে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে নিরংকুশ সংখ্যাগরিস্টতা পেয়ে সরকার গঠন করে। মূখ্যমন্ত্রী হন শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক। বেশী দিন স্থায়ী না হয়ে অবশেষে ভেংগে যায় যুক্তফ্রন্ট সরকার।
১৯৬২ সালে শুরু হয় শিক্ষা আন্দোলন। ১৯৬৬ সালে পেশ করা হয় ঐতিহাসিক ৬ দফা। ছাত্রদের ১১ দফা দাবী সম্বলিত ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ১৯৬৮ সালে। এর পর শুরু হয় ১৯৬৯ সালে দেশজুড়ে গনঅভ্যুত্থান।ঐ গন অভ্যুত্থানের মুখে অবশেষে আয়ুব খানের পতন ঘটে। ক্ষমতায় আসীন হন নব্য স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান। তীব্র আন্দোলন ও দাবীর মুখে বাধ্য হয়ে ইহাহিয়া খান ১৯৭০ সালে পাকিস্তান গনপরিষদ নির্বাচনের ঘোষনা দেন। এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বিজয়ী হওয়ার পর ও ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাক না দিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেন। ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন পতাকা উত্তোলনের পর ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষনের মাধ্যমে জনগনকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান। ৭ ই মার্চের ভাষন নি:সন্দেহে তাৎপর্যপূর্ন ছিল এবং ঐ ভাষন মুক্তিকামী মানুষকে আরো বেশী অনুপ্রেরনা জুগিয়েছে। ২৩ মার্চ পর্যন্ত আলোচনার নামে সময় ক্ষেপন করার মাধ্যমে হটাৎ করে ২৫ শে মার্চ কালো রাত্রিতে পাক হানাদার বাহিনী ঢাকা আক্রমণ করে।রাজারবাগ পুলিশ লাইন সহ অসহায়, ঘুমন্ত মানুষের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। শুরু করে নিরস্ত্র মানুষের উপর নির্মম হত্যাযক্ষ্য, সেই সাথে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় শেখ মুজিবুর রহমান কে। অসহায়, দিশেহারা জাতি কি করবে, এমন অবস্থার মধ্যে তৎকালীন মেজর জিয়া ‘We Revolt’ বলে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধ যুদ্ধের আহবান জানান। ২৬ শে মার্চ (প্রথম প্রহরে) নিজে ই চট্রগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষনা দেন। পরে অবশ্য পূনরায় সংশোধীত ঘোষনা ২৭ শে মার্চ শেখ মুজিবের পক্ষে প্রদান করেন।তার ভাষনটি ছিল এইরকম “ I major Zia …….. hereby proclaims, on behalf of sheikh Mujibur Rahman, the independence of Bangladesh. তিনি ঐ বক্তৃতায় আরো বলেন- “I also declare, we have already framed a sovereign legal government ……….. I appeal to all government’s to mobilise (sic) public opinion in their respective countries against the brutal genocide in Bangladesh.
তার ঘোষনার পর সামরিক/বেসামরিক মিলে শুরু হয় স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ।দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পাই লাল সবুজের পতাকা বেস্টিত একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাস্ট্র, স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
এখানে বলা আবশ্যক ‘ স্বাধীনতা সংগ্রাম’ এবং ‘ মুক্তিযুদ্ধ’ এক জিনিষ নয়, দুটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট ছিল। অতএব স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি অবশ্যই বড় মাপের নেতা ছিলেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হিসাবে মেজর জিয়াউর রহমানকে অস্বিকার করার উপায় নাই। শেখ মুজিব তার জীবদ্ধশায় কোনদিন জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কোন প্রশ্ন তোলেননি, উপরুন্ত তার মুক্তিযুদ্ধের অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ “বীর উত্তম” খেতাবে ভূষিত করেছেন। অপরদিকে জিয়াউর রহমান ও কোনদিন মরহুম শেখ মুজিব সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেননি। নিজেকে বড় করতে গিয়ে অন্যকে ছোট করা সমিচীন নয়। যার যতটুকু অবদান তা স্বীকার করে সত্য প্রকাশে উদ্যোগী হওয়া দরকার। সুতরাং এই দুই মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান ও মেজর জিয়াউর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম. এ. জি ওসমানী সহ সকল শহীদ মুক্তিযুদ্ধাদের জানাই গভীর শ্রদ্ধান্জলী।
পরিশেষে এটুকু বলতে চাই, বাংলাদেশ সৃস্টির আজ ৫০ বছর। জাতি হিসাবে আমরা উদযাপন করছি স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী।একটি জাতির জন্য ৫০ বছর দীর্ঘ না হলেও একজন ব্যাক্তির জন্য অনেক বছর। আমরা যে সকল মৌলিক ভিত্তির উপর দাঁড়ীয়ে যুদ্ধ করেছিলাম তার মধ্যে অন্যতম ছিল- ১।সাম্য, ২।মানবিক মর্যাদা, ৩।সামাজিক ন্যায় বিচার, ৪।বৈষম্যহীন গনতান্ত্রিক রাস্ট্র প্রতিস্টা ইত্যাদি। কিন্তু প্রশ্ন হল যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা স্বাধীকার আন্দোলনে অংশ নিয়ে পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন হলাম, সেই লক্ষ্য কতটুকু পূরন করতে পেরেছি অথবা স্বাধীনতার মর্যাদা কতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি ? ৫০ বছর পর এখনও এই প্রশ্ন আমাদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। তাছাড়া স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পেতে আর কত বছর আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে ? সুবর্ন জয়ন্তীতে এসে আজো এর উত্তর খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে জাতিকে !
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরঃ স্বপ্ন পূরণে আশাবাদী, তবে…
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
বিশেষ দিবস এলেই আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম নাড়াচাড়া দিয়ে উঠে। সভা সেমিনার করি। বক্তব্য দেই। গল্প কবিতা লিখি। পত্রিকা গুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠান প্রচারের ধুমধাড়াক্কা শুরু হয়ে যায়।
এবারও তাই হবে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি তথা সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এবার একটু বেশিই হবে। আমি এসবের বিরোধী নই। বরং ইতিহাসকে জিইয়ে রাখতে ও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার স্বার্থে এসব করা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু কেবল ওই বিশেষ দিন গুলোর মধ্যেই যদি দেশপ্রেম বন্দী হয়ে থাকে তবে তা দেশের কল্যাণের জন্য যথেষ্ট নয়। খণ্ডিত ভালোবাসা দিয়ে যেমন ভালোবাসার সফল উত্তরণ ঘটানো যায়না তেমনি মওসুমী দেশপ্রেম দিয়ে দেশের কল্যাণ বয়ে আনা যায়না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন স্থায়ী দেশপ্রেম এবং সাচ্চা দেশপ্রেমিক।
আমরা এবার স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছি। একটি মানুষের জন্য পঞ্চাশ বছর অনেক সময় মনে হলেও একটি দেশ বা জাতির জন্য তা খুব বেশি একটা সময় নয়। একটি গল্প বলি। আমি তখন কলেজের ছাত্র। ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি গেলাম। শুনলাম, কয়েক মাইল দূর থেকে এক ভদ্রলোক আমাদের গ্রামে এসেছেন। তার শরীরে পরী ভর করে। গতরাতে তিনি পরী এনেছিলেন। আজ রাতেও নামাবেন। সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে একটু ঘুমাবো ভেবেছিলাম কিন্তু ঘুমটুম বাদ দিয়ে বেশ কৌতুহল নিয়ে পরী দেখার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।
মাঝরাত। ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়া হলো। হুট করে ঘরের ছাঁদ বরাবর একটা মচমচ শব্দ শুনা গেলো। পরী এসে গেছে, পরী এসে গেছে বলে রব উঠলো। কেউ পরীকে দেখলোনা, আমিও দেখতে পাইনি। তবে কোরআন তেলওয়াতের ক্ষীণ স্বর সবাইকে পরীর উপস্থিতির কথা জানিয়ে দিলো। অর্থাৎ পরী এসেই প্রথমে কোনো কথাবার্তা না বলে কোরআন তেলওয়াত করে। তেলওয়াত শেষে সে উপস্থিত লোকজনের সাথে আলাপচারিতায় লিপ্ত হয় এবং বিভিন্ন জন তাকে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন করে। ওইদিনও তাই হলো। শুরু হল প্রোশ্নাত্তর পর্ব। একজন তার বিয়ে হয়েছে কিনা জানতে চাইলো। উত্তরে বললো, তার বয়স মাত্র একশ বিশ বছর। জ্বিন পরীরা সাধারণত হাজার থেকে বারোশো বছর বেঁচে থাকে। তাই সে হিসেবে সে অপ্রাপ্তবয়স্কা। তার বিয়ের বয়স এখনো হয়নি। অর্থাৎ বাচ্চা মেয়ে (পরী)।
সুতরাং পরীর এ উদাহরণটি আমি যদি একটি দেশ বা জাতির ক্ষেত্রে টানি তাহলে খুব বেশি একটা অমূলক হবে বলে মনে হয় না। কারণ
একটি দেশ বা জাতি হাজার হাজার বছর বেঁচে থাকে। সে হিসেবে পঞ্চাশ বছর একটি জাতির জন্য নস্যি মাত্র। শিশুতুল্য। সুতরাং শিশু বয়সে (বিগত পঞ্চাশ বছরে) দেশটি যতোটুকু এগিয়েছে কৈশোরে পদার্পণ করতে করতে (আগামী পঞ্চাশ বছরে) তা আরও পঞ্চাশ গুণ বেশি এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। কারণ দেশটি যখন জন্মলগ্ন থেকে যাত্রা শুরু করে তখন এটি ছিলো একটি মেধাশূন্য ধ্বংসস্তূপ। রাস্তাঘাট কালভার্ট, ব্রিজ, যানবাহন, অফিস আদালত, দালানকোটা বলতে কিছুই ছিলো না। পাকবাহিনীরা যখন বুঝতে পারে তাদের পরাজয় নিশ্চিত তখন তারা ওইসব পারিপার্শ্বিক ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি বেছে বেছে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করে। এমন একটি প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে শূন্য তহবিল, শূন্য মেধা বা শূন্য মানবসম্পদ ও অসংগঠিত প্রশাসন নিয়েই দেশটির পথচলা শুরু হয়।
সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশটির এমন অমসৃণ যাত্রাপথের সাথে আরও যোগ হয় বৈদেশিক মুদ্রার শূন্য ভান্ডার ও ভারসাম্যহীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, ভারত থেকে ফিরে আসা সহায়সম্বলহীন এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন চ্যালেঞ্জ, বিশ্বমন্দা ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, বন্যা, খাদ্যাভাব, সামাজিক অস্থিরতা, অপপ্রচার ও আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধাদের অন্তর্কলহ, দ্বন্দ্ব ও বিভক্তি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, রক্তারক্তি, গুম ও খুন, ব্যাংক ডাকাতি ও কলকারখানায় লুটপাট ও আগুন, অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্বের ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য, আইন শৃঙ্খলার অবনতি এবং সর্বশেষ সপরিবারে বঙ্গবন্ধু ও পরবর্তীতে জাতীয় চার নেতার জেল হত্যা কান্ড দেশকে মারাত্মক ভাবে ঝাঁকুনি দেয়। আর সামনের দিকে এগোতে পারেনা। স্বাধীনতার আশা আকাঙ্খা বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্থ হয়। সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে স্বাধীনতার মূলমন্ত্রকে থমকে দেয়া হয়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যা কান্ডের বিচার রহিত করা হয়।
এর পরের ইতিহাস আমাদের সবারই কম বেশি জানা। “সামরিকবাদ জিন্দাবাদ” শ্লোগানের উপর ভর করে দেশ চলতে থাকে বছরের পর বছর। জন্ম নেয় ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, স্বৈরাচারবাদ। দেশ যখন এমন এক কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিলো তখন প্রায় একুশ বছর পর ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় তারা আর আসতে পারেনি। তাই এতদিনের ঘুণেধরা সমাজব্যবস্থাকে সংস্কার করে দেশকে উন্নয়নের যথোপযুক্ত পথে নিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে আর সম্ভব হয়নি। পক্ষান্তরে বিএনপি জামায়াত পুনরায় ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নকে কেবল কণ্টকাকীর্ণই করেনি বরং দেশকে জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির রামরাজ্যে পরিনত করে।
অনেক চরাই উৎরাইয়ের পর আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে আবারো ক্ষমতায় আসে এবং টানা তিনবারে এখন পর্যন্ত সরকারে রয়েছে। রামরাজ্যকে স্বর্ণরাজ্যে পরিনত করার ব্রত নিয়ে তারা কাজ করে চলছে। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, রূপপুর পারমাণবিক প্লান্টের মতো বিশাল প্রকল্প, উড়াল সেতু, বিদেশি স্টাইলে চার লেইন/ আট লেইনের মহাসড়ক প্রভৃতি দৃশ্যমান উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে তাদের ওই ব্রতচারীতারই প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে।
দেশ এগিয়ে চলছে সন্দেহ নেই। ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে যে দেশের যাত্রা সেই দেশ আজ প্রায় ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে, যা কিনা আকারে আদি বাজেটের ৭২২ গুণ বড়ো। শুধু তাই নয়, আমরা যদি জিডিপি, মাথা পিছু আয়, মানুষের গড় আয়ু, নারীর স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন, শহরায়ন, নগরায়ন, শিল্পায়ন প্রভৃতি বিষয় গুলোর উপর নজর দেই, দেখা যাবে অবিশ্বাস্য হারে এসবের উন্নয়ন ঘটেছে। আর তাই তো ওবামার মতো আমেরিকার একজন প্রেসিডেন্টের মুখে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলতে শোনা যায়।
এ রোল মডেল হওয়ার পেছনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, কৃষক, উদ্যোক্তা ও শ্রমজীবী মানুষের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্ম ও প্রবাসীদের অবদান রয়েছে ব্যাপক। আজকালকার তরুণরা চিন্তাচেতনা ও ধ্যান ধারণায় অনেক বেশি সমৃদ্ধ। সামাজিক ও স্বেচ্চাসেবক কর্মকাণ্ডের বাইরে স্বীয় কর্ম জগতেও তারা বেশ স্বচ্ছ, স্বাধীন, সৎ ও সাহসী। আমার বোন-ভাগ্নে ও ভাই-ভাতিজা সহ প্রায় ২৫/৩০ জন চাকরিজীবি তরুণকে আমি চিনি যাদের উপর মনে মনে একটি জরিপ চালাই। দেখা গেলো ওদের সবাই ঘুষ ও দুর্নীতি বিরোধী। চাকরিতে ঢোকার জন্য সুপারিশের সুযোগ থাকা সত্বেও আমার ভাতিজা সে সুযোগ লুফে নেয়নি। স্বীয় যোগ্যতায় চাকরি নেবে বলে যে পণ ধরেছিলো তাই সে করেছে। আমার ভাগ্নে তার মাকে দোয়া করতে বলে যেনো টাকার খনিতে চাকরি করা সত্বেও সে সৎ থাকতে পারে। তাই আমি বিশ্বাস করি, এমন চিন্তা চেতনা কেবল আমার ভাগ্নে, ভাতিজা বা ওই তিরিশ জন তরুণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং গোটা তরুণ মানসের অধিকাংশেই তা বিরাজ করছে। ঘুণেধরা সমাজের বৃত্ত ভেঙ্গে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। আপাতদৃষ্টিতে তা ধরা না পরলেও ১০ থেকে ১৫ বছর পর ঠিকই তা মানুষের চোখে ভেসে উঠবে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রবাসীরা যেমন তহবিল গঠন, স্বীকৃতি আদায়, বঙ্গবন্ধুর মুক্তি প্রভৃতি বিষয়ে গুলোর ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন তেমনি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার জন্য তাদের কোনো জুড়ি নেই। আজ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের যে খবর শোনা যায় তা বস্তুত প্রবাসীদেরই ঘামের ফসল। তাই দেশকে বা দেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার ক্ষেত্রে তথা হেনরি কিসিঞ্জারের “বটমলেস বাস্কেট”কে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে অন্য অনেকের মতো প্রবাসীদের ভূমিকা মোটেও কম নয়।
এ মধ্যম আয়ের দেশ একদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে বলে আমি দৃঢ় ভাবে আশাবাদী। তবে এ জন্য চলমান উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রেখে বিশেষ কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষ ভাবে মনোযোগী হতে হবে।
প্রথমত- অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নৈতিক উন্নয়নের বিকাশ সাধন ঘটাতে হবে।
দ্বিতীয়ত- দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে হবে।
তৃতীয়ত- ক্ষমতাধর রাজনীতিকদের সংযত ও পরিমার্জিত ভাষায় কথা বলতে হবে।
চতুর্থত- শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত রাজনৈতিক টাউট বাটপারদের আসকারাতো নয়ই, বরং ওদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।
পঞ্চমত- দালাল, চাটুকার ও বকধার্মিক থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে।
ষষ্ঠত- প্রশাসন ও বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
সর্বোপরি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তবেই বাংলা যেমন সোনায় পরিণত হবে তেমনি স্বাধীনতার গর্ব নিয়ে প্রথম বিশ্বের (First World) দেশ গুলোর মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
লেখক- কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিসট
shajed70@yahoo.com
আয়ারল্যান্ডে জন্ম নেয়া বিদেশি নাগরিকদের শিশুসন্তানদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত শিথিল করার উদ্যোগ নিয়েছে আইরিশ সরকার। এ বিষয়ক একটি বিলে মন্ত্রিসভার অনুমোদন চেয়েছেন আইরিশ জাস্টিজ মিনিস্টার।
প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় গৃহীত হলে যেসব বিদেশি নাগরিকের সন্তান আয়ারল্যান্ডে জন্ম নেবে তাদের আইরিশ নাগরিকত্ব পাওয়া আগের চেয়ে সহজ হবে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, আয়ারল্যান্ডে জন্ম নেয়া শিশুদের- যাদের পিতা-মাতা আইরিশ নাগরিক নয়, নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য তাদের ৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়। সেক্ষেত্রে তাদের পূর্ববর্তী ৮ বছরের মধ্যে অন্তত চার বছর এবং আবেদন করার আগে সর্বশেষ এক বছর বিরতিহীন আয়ারল্যান্ডে বসবাস করতে হবে। তবে এবার এই সময়সীমা কমিয়ে নাগরিকত্ব প্রক্রিয়া সহজ করতে চান দেশটির জাস্টিজ মিনিস্টার হেলেন ম্যা কেনি।
নতুন প্রস্তাবনা অনুযায়ী বসবাস করার শর্ত ৫ বছর থেকে কমিয়ে ৩ বছর করা হবে। এর ফলে যেসব বিদেশি নাগরিকের শিশুসন্তানরা জন্মসূত্রে আইরিশ নাগরিকত্ব পেতে চায় তারা আরও সহজে সেটি পাবে।
তবে আইরিশ জাস্টিজ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইনের এই সংশোধনী শুধুমাত্র বৈধ বিদেশিদের সন্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। অবৈধ বিদেশিদের সন্তানরা আয়ারল্যান্ডে জন্ম নিলেও নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে না। সহসা এ সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনাও নেই।
পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে একজন এমপির উত্থাপিত বিলটির বিষয়ে জাস্টিজ মিনিস্টার ও লেবার পার্টির সিনেটর ইভানা বাচিক নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর এই প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে আইরিশ পার্লামেন্টে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া সংক্রান্ত একটি বিল নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছিল। সে সময় সিনেটর ইভানা বাচিক বলেছিলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, যে শিশুরা আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করে, এখানেই বেড়ে ওঠে এবং অন্য কোন দেশের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক নেই- আইরিশ নাগরিকত্ব দেয়া না হলে এমন শিশুরা রাষ্ট্রহীন অবস্থায় বড় হতে থাকবে।
সিনেটর বাচিক মঙ্গলবার জার্নালের সঙ্গে এক সাক্ষাতে বলেছেন, এমন একটি ইতিবাচক উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত হতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত। এর মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডে জন্ম নেয়াদের জন্য আইনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখতে পাবো আমরা।
এর আগে ২০০৪ সালে এক গণভোটের মাধ্যমে জন্মসূত্রে আইরিশ নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল। দেশটির সংবিধানে আনা সংশোধনীতে বলা হয়েছিল- জন্ম নিয়েই কোনো শিশু আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাবে না, যদি না তাদের পিতা-মাতার কোনো একজন আইরিশ নাগরিক হন।
তথ্যসুত্র: দৈনিক যুগান্তর।
https://www.jugantor.com/international/405366/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A1
রমজান মাসে রোজা রেখে ভ্যাকসিন নেয়া যাবে কি না এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যে ইংল্যান্ডে একটি উচ্চ্ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ‘‘স্বাস্থ্যের উপর জাতিগত বৈশিষ্টের প্রভাব”-দেখার এই কমিটির কাছে ইংল্যান্ডে বসবাসরত মুসলমানরা এই বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ‘এন এইচ এস’ এর হেলথ ওবসারভেটোরি’ও বলেছে তারা এই ব্যাপারে বেশ কিছু অনুসন্ধান পেয়েছে। এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে ইংল্যান্ডের বহুল প্রচারিত দৈনিক ”ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ এর শুক্রবার সংখ্যায়।
এই বছর রোজা শুরু হওয়ার কথা ১২ ই এপ্রিল। মুসলমানরা যেই বিষয়টা তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন তাহলো,
রোজা অবস্থায় ভ্যাকসিন নিলে কি রোজা ভেঙে যাবে? ডা. হাবিব নাকভি, ডাইরেক্টর, হেলথ ওবাসারভেটোরি বলেছেন, রোজা রেখে অবশ্যই ভ্যাকসিন নেয়া যাবে। ইসলামিক স্কলাররা ঘোষণা করেছেন ভ্যাকসিনের উপাদান হালাল, এবং ভ্যাকসিন নিলে রোজা ভাঙার কোন সম্ভাবনা নেই’।
উল্লেখ্য যে ইংল্যান্ডের হাসপাতালের একটা উল্ল্যেখ্যযোগ্য অংশ কর্মকর্তা এবং কর্মচারী হচ্ছেন মুসলমান, রোজা রেখে এবং সুস্থ্য থেকে হাসপাতেলর কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্যে এনাদের ভ্যাকসিন নেয়া জরুরি।
কাজেই অজ্ঞতা এবং ভুল তথ্যের কারণে এই মুসলমান কমিউনিটি যদি ভ্যাকসিন গ্রহণ না করে, তার প্রভাব সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রেও পড়তে বাধ্য।
তাই সেখানকার মুসলমান স্বাস্থ্য সেবায় নিয়জিত কর্মচারী এবং কর্মকর্তা সবাই জনগণ কে এ ব্যাপারে সচেতন করতে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। ডা. হিনা শহীদ, মুসলিম ডাক্তারদের চেয়ারপারসন রোজা এবং ঈদের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিকতা রক্ষা করার ব্যাপারে বিশেষ জোর দিয়েছেন।
লেখক: ড: আরমান রহমান, এম বি বি এস, এম পি এইচ, পি এইচ ডি. ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।
গত ১৮ ই মার্চ যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসেন মা ও ছেলে। নিয়মগতভাবে ৮ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কিন্তু সেই ত্বর আর সইলনা যুবকের। বেশ ধুমধাম করেই বিয়ের কাজ সেরে ফেলেন কোয়ারেন্টাইনে থাকা হোটেলেই। ‘লা ভিস্তা হোটেলে’ হোটেলে ৫০ জন অতিথি নিয়ে ঘটা করেই বিয়ে করেন তিনি।
হোটেল সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্য থেকে ১৮ মার্চ সিলেটে আসা যাত্রীদের মধ্যে ১১ জনকে লা ভিস্তা হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। তাঁদের মধ্যে ওই মা–ছেলেও ছিলেন। তাঁরা হোটেলে উঠেই বিয়ের কেনাকাটাও করেন। তাঁরা হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানান যে শুধু তাঁদের মধ্য থেকে এই অনুষ্ঠান হবে। বাইরে থেকে কেউ আসবে না। তবে ২০ মার্চ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার সময় কনেপক্ষসহ আরও ৫০ জন অতিথি যোগ দেন। তবে কনে তাঁর বাড়িতেই ছিলেন। হোটেল থেকে লোক গিয়ে তাঁর স্বাক্ষর নিয়ে আসেন। ঘটনাটি প্রথম জানাজানি হয় বিয়েতে যোগ দেওয়া বাইরের অতিথিদের মাধ্যমে।
ওই তরুণের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার জাঙ্গাইল এলাকায়। কনের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়। হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকার মধ্যেই বিয়ের অনুষ্ঠানের এই খবর গত সোমবার বিকেলে জানাজানি হয়। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার হোটেল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপককে প্রত্যাহার করেছেন। তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসনও।
প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিন নজরদারির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের একটি দল ঘটনাটি তদন্ত করছে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) আ ন ম বদরুদ্দোজা প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘প্রবাসীদের সাত দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা। এর মধ্যে বিয়ের ঘটনাটি জেনে আমরা তদন্ত করছি।’
শাবান মাস অতিক্রম করেছ মুসলিম উম্মাহ। মাসটি পেরুলেই শুরু হবে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। রমজানের আগে শাবান মাসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামগণ কী আমল ও ইবাদত করতেন?
রমজান মাসের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসের দিনের ও তারিখের হিসাব রাখা বিশেষ জরুরি এবং একটি সুন্নাত আমল। হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা রমজানের জন্য শাবানের চাঁদের হিসাব রাখো।’ (সিলসিলাতুস সহিহাহ, আলবানি, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১০৩)।
যেহেতু রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসের আমল, তাই শাবান মাসেও ওই আমলগুলো করতে হবে যে সব আমল রমজানে করতে হয়। যেমন:
বেশি বেশি রোজা রাখা, কোরআন তেলাওয়াত, বেশি বেশি ইসতেগফার করা, তাহাজ্জুদের নামাজে গুরুত্ব দেয়া, দান-সদকা বৃদ্ধি করা, মন্দ চর্চা ও পরনিন্দা পরিহার করা, ইত্যাদি।
রমজানের সঙ্গে শাবান মাসের সম্পর্ক হচ্ছে, ফরজ নামাজের আগে সুন্নত আদায় করার ন্যায়। তাই এ মাস সংক্রান্ত হাদিসে অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (সা.) রমজানের পর এ মাসেই বেশি রোজা রেখেছেন। নিম্নে এ সম্পর্কিত হাদিস তুলে ধরা হলো-
হজরত আয়শা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) রমজান ব্যতীত কোনো সময় পূর্ণ মাস রোজা রাখতেন না, তবে শাবান কিছুটা ভিন্ন। কারণ, এ মাসের প্রায় পূর্ণ সময় তিনি রোজা রাখতেন।’
(সহীহ বুখারী, হাদিস নং-১৯৭০, সহীহ মুসলিম ও আবু দাউদ) একই অর্থের একটি বর্ণনা উম্মুল মুমিনিন হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ সুনানে তিরমিজিতেও এসেছে।
হজরত আয়শা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) শাবান মাসের প্রায় পূর্ণ সময় রোজা রাখতেন। আমি একবার তাকে জিজ্ঞেস করি, আপনার শাবানের রোজা খুব পছন্দ?
রাসূল (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা সারা বছরে যারা মারা যাবে তাদের তালিকা এ মাসে প্রস্তুত করেন। আমার আকাঙ্ক্ষা যে, আমার নাম মৃতদের তালিকায় ওঠানো হোক রোজা থাকা অবস্থায়।’
(ফাতহুল বারী, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৫২)
হজরত আয়শা (রা.) বলেন, আমি রাসূল (সা.) কে প্রশ্ন করি যে, শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোনো মাসে আপনাকে এত বেশি রোজা রাখতে দেখি না কেন?
রাসূল (সা.) বলেন, রমজান ও রজবের মাঝের মাস হচ্ছে শাবান। এ মাসের বরকত সম্পর্কে লোকেরা উদাসীন। এ মাসে আল্লাহ তায়ালার সামনে বান্দার সারা বছরের আমল পেশ করা হয়। আমার আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে, আমার আমলনামা ওই অবস্থায় পেশ করা হোক, যখন আমি রোজাদার।
(নাসায়ী, আবু দাউদ) মুহাদ্দিসগণের বড় একটি সংখ্যা এ হাদিস গ্রহণযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রায় সব রজব মাসে ১০টি নফল রোজা রাখতেন এবং শাবান মাসে ২০টি নফল রোজা রাখতেন। রমজানে পূর্ণ মাস ফরজ রোজা। নবীজি (সা.) রমজান ছাড়া বছরের সবচেয়ে বেশি শাবান মাসেই নফল রোজা রাখতেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব ও শাবান মাসব্যাপী এ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন, ‘
অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান আমাদের নসিব করুন।’ (মুসনাদে আহমাদ, প্রথম খণ্ড: ২৫৯, শুআবুল ইমান, বায়হাকি,৩: ৩৭৫)।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শাবান মাস জুড়ে নিজেদের ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রাখা। রমজানের প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাবান মাসজুড়ে উল্লেখিত আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
৩০০ মিলিয়ন ইউরোরও অধিক ফান্ড ঘোষণা করা হয়েছে লিমেরিকের কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য। এর মধ্যে ‘’অপেরা সাইট’’ প্রকল্প, বিশ্বমানের ওয়াটারফ্রন্ট প্রজেক্ট, ও’কনেল স্ট্রীট এর ডেভেলপমেন্ট ও সিটি সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প অন্যতম।
১০০ মিলিয়ন ইউরোর ওয়াটারফ্রন্ট ও বিউটিফিকেশন প্রকপ্ল
শ্যানন নদী ঘেঁষে লিমেরিক সিটির ওয়াটারফ্রন্ট প্রজেক্টের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মোট ৭৩.৪ মিলিয়ন ইউরো। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ক্লিভেজ রিভার সাইড কোয়ার্টার এর উন্নয়ন এবং এবং পথচারী চলাচলের জন্য নতুন সেতু। এছাড়া আর্থুরস কি এবং হোনান’স কি এর মধ্যে সংযোগ রাস্তাও তৈরি হবে, যেটা আর্থুরস কি রিটেইল এরিয়াতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।
অন্যদিকে আলাদাভাবে ৪২.৬ মিলিয়ন ইউরো ব্যায় হবে লিমিরিক সিটি সেন্টার উন্নয়ন প্রকল্পে।
এই প্রজেক্টের ডিপার্টমেন্ট বলেছে যে, এই প্রজেক্ট সিটি সেন্টারে একটা পজিটিভ, উদ্ভাবনী ও রুপান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
লিমেরিকের জনপ্রিয় ওয়াটারফ্রন্ট
ও’কনেল স্ট্রীট এর রিভাইটালিজেশন প্রজেক্ট
লিমেরিকের ব্যস্ততম সড়ক ও অন্যতম প্রধান সড়ক ও’কনেল স্ট্রীট এর সৌন্দর্য বর্ধন ও আধুনিকায়নের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯.১ মিলিয়ন ইউরো। এতে থাকবে পথচারীর চলাচলের সুবিধার্থে প্রশস্থ ফুটপাত, সাইকেল লেন, থাকবেনা যত্রতত্র পারকিং ও রাস্তার দুধার জুড়ে থাকবে সবুজ বৃক্ষ। এই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার সাথেই করোনার কারণে আবার স্থগিত হয়ে পড়ে।
ও’কনেল স্ট্রীটের উন্নয়নে রিভাইটালাইজেশন প্রজেক্ট এর চিত্র
২০০ মিলিয়ন ইউরোর অপেরা প্রজেক্ট
লিমেরিক সিটির প্রাণকেন্দ্রে ২০০ মিলিয়ন ইউরোর প্রজেক্ট ‘’অপেরা সাইট’’ এর কাজও শুরু হতে যাচ্ছে। লিমেরিক ২০৩০ ভিশন এর লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু। ৩.৭ একরের উপর গড়ে উঠা এই প্রকল্পে থাকবে আবাস্থান, শপিং কমপ্লেক্স, অফিস, লাইব্রেরিসহ অন্যান্য ব্যবস্থা, যেখানে প্রায় ৩০০০ এর মত চাকুরী তৈরি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে লিমেরিক সিটি অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।
ভবিষ্যৎ অপেরা সাইট
লিমেরিকের ডেপুটি মেয়র জনাব আজাদ তালুকদার বলেছেন, ‘’সব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে লিমেরিকের চেহারাই পরিবর্তন হয়ে যাবে। লিমেরিক হয়ে উঠবে আরও আধুনিক, পরিবেশ বান্ধব ও উন্নত বসবাস উপযোগী।।’’
লিমেরিকের ডেপুটি মেয়র আজাদ তালুকদার
জনাব আজাদ তালুকদার লিমেরিকের আশু উন্নয়ন প্রকল্পের স্বাগত জানান। ধন্যবাদ জানান সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ডিপার্টমেন্টকে।
লিমেরিকবাসীরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ নতুন লিমেরিককে স্বাগত জানাতে।
প্রতিবারের মত গতকাল জাতিসংঘের স্পন্সরড ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট’ প্রকাশিত হয়েছে। সেই রিপোর্টে আয়ারল্যান্ড এক ধাপ উন্নীত হয়ে বিশ্বের ১৩ তম সুখী দেশ নির্বাচিত হয়েছে।
ফিনল্যান্ড টানা চতুর্থবারের মত বিশ্বের সবচেয়ে সুখী রাষ্ট্র নির্বাচিত হয়েছে। ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট’ অনুযায়ী আইসল্যান্ড দ্বিতীয়, এর পরে রয়েছে ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড। বাংলাদেশ রয়েছে ৬৮ তম স্থানে।
টপ টেন এর মধ্যে ৯ টি দেশই ইউরোপীয়। নিউজিল্যান্ডই একমাত্র ইউরোপের বাহিরের দেশ, যারা টপ টেনে জায়গা করে নিয়েছে। ইউকে ১৩ নাম্বার থেকে নেমে ১৭ তে এসে পৌঁছেছে। অন্যদিকে আমেরিকা ১৮ থেকে উন্নীত হয়ে ১৪ তে উঠে এসেছে।
সামাজিক সহায়তা, মানুষের ফ্রিডম, জিডিপি এবং দুর্নীতির পরিমাণ হিসেব করে এই রিপোর্ট করা হয়। এর সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে করোনা পরিস্থিতি।
সবচেয়ে অসুখী দেশের তালিকায় রয়েছে জিম্বাবুয়ে, এর উপরেই রয়েছে তানজানিয়া, জর্ডান, ভারত ও কম্বোডিয়া।।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সমাধান নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এটি টেকসই উন্নয়ন নেটওয়ার্কের সুখবিষয়ক নবম বার্ষিক প্রতিবেদন।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক বিশ্লেষক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্যালপ এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান লয়েডস রেজিস্টার ফাউন্ডেশনের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া করোনা মহামারিসংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ব্রিটিশ ইন্টারনেটভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউগভের আইসিএল-ইউগভ বিহেভিয়ার ট্র্যাকার থেকে।
এবারের প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী দলে ছিলেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার অধ্যাপক জন হেলিওয়েল। তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘(করোনা পরিস্থিতি সত্ত্বেও) আশ্চর্যজনকভাবে মানুষের ভালো থাকায় গড় হিসাবের দিক থেকে তেমন কোনো নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যায়নি। এর একটি কারণ হতে পারে, মানুষ করোনা মহামারিকে সবার ক্ষেত্রেই বাহ্যিক হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। ফলে একধরনের সংহতির সৃষ্টি হয়েছে।’
স্বাধীনতার “সুবর্ণ জয়ন্তী” উৎসব আয়ারল্যান্ড ২০২১:
সন্মাানীত সুধীবৃন্দ, আগামী ২৬শে মার্চ ২০২১ শুক্রবার দুপুর ২টা ৩০মিনিটে আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশী কমিউনিটির সকলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে Zoom এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল “সুবর্ণ জয়ন্তী” উৎসব উদযাপিত হতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানটিতে Zoom-এ মাধ্যমে সরাসরি অংশগ্রহণ করার জন্য সকলকে অনুরােধ করা যাচ্ছে। এছাড়াও অনুষ্ঠানটি All Bangladeshi Association of Ireland (Abai ireland) facebook পেইজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
মূল উৎসব:
তারিখ: ২৬শে মার্চ, রােজ শুক্রবার
সময়; বিকেল ২:৩০ মিঃ থেকে
উৎসবে থাকছে:
ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরিচালনায় জনাব সামসুল হক। এছারাও থাকছে শিশু কিশােরদের অংশগ্রহণে ছড়া, কবিতা, গান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠান আরো থাকছে প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পীদের অংশগ্রহণে কবিতা ও দেশের গানের অনুষ্ঠান।
মুল আকর্ষন:
বাংলাদেশী প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী তপন চৌধুরী এবং হৈমন্তী রক্ষিত দাস অংশগ্রহণে সারাসরি সঙ্গিতানুষ্ঠান
(Virtual Live Concert)
আলোচনা অনুষ্ঠান:
প্রবাসী বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণে স্বাধীনতা দিবসের উপর মনােজ্ঞ আলােচনা অনুষ্ঠান।
আরাে থাকছে বিশেষ কুইজ প্রতিযােগিতা:
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উৎসবের অংশ হিসেবে ২১শে মার্চ সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পরিবারের অংশ গ্রহণেবিশেষ কুইজ প্রতিযােগিতা।
আস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন ‘নিরাপদ এবং কার্যকর’, বলেছেন (EMA)ইওরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি এবং এতে আয়ারল্যান্ডে এটি ব্যবহার শুরু করার পথ আবার সুগম হলো।
সরকার এর আগেই বলেছিল যে আস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন সম্পর্কে ধারনা পুরোপুরি পরিষ্কার করে দেওয়া হলে আয়ারল্যান্ড আবার ভ্যকসিনটি ব্যবহার শুরু করবে।
ইওরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি (EMA) বলেছে যে অ্যাস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং কার্যকর এবং এটি রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকির সাথে সম্পর্কিত নয়।
টিকা দেওয়ার পরে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনার সল্প সংখ্যক রিপোর্ট পাওয়া এবং এই বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত করতে সংস্থাটি আজ একটি বিশেষ সভা করেছে।
EMAএর প্রধান, ইমার কুক বলেছেন যে ভ্যাকসিনটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন এবং এই ভ্যাকসিন সকল ঝুঁকি মুক্ত।
তবে, EMA এই ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোর মধ্যে একটি সংযোগ আছে তা নির্দিষ্ট করে দিতে পারে না তবে EMSএর সুরক্ষা কমিটি এর পরিবর্তে ভ্যাকসিনের লিফলেটগুলির মধ্যে বিশদ ব্যাখ্যা অন্তর্ভুক্ত করে সম্ভাব্য বিরল অবস্থার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নরওয়েতে চারজন রোগীর গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঘটনার পর এবং নরওয়েজিয়ান মেডিসিন এজেন্সিয়ের রিপোর্টের পরে সাম্প্রতিক সময়ে আয়ারল্যান্ড সহ ইউরোপ জুড়ে বেশ কয়েকটি দেশ এই ভ্যাকসিনের ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছিল।
আয়ারল্যান্ডের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ভ্যাকসিনের ব্যবহার বিরত থাকার সিদ্ধান্তটি একটি সতর্কতামূলক নীতিমালার ভিত্তিতে করা হয়েছিল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় করোনা ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বুধবার সকাল আটটা ১০ মিনিটের দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
আইসিইউ থেকে স্থানান্তরের সময় তিনজন রোগী মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রোগীদের সেখান থেকে বের করে আনেন। হাসপাতালের অন্য আইসিইউতে তাঁদের স্থানান্তর করা হচ্ছিল। মারা যাওয়া রোগীদের কেউ দগ্ধ হননি বলে তিনি জানিয়েছেন।
মৃতরা হলেন কিশোর রায় (৬৮), আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (৪৮) ও কাজী গোলাম মোস্তফা (৬৩)। তাঁদের মধ্যে কিশোর দিনাজপুরের বীরগঞ্জের বাসিন্দা এবং গোলাম মোস্তফার বাড়ি ঢাকার দক্ষিণখানে।
অক্সিজেনের লাইন থেকে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলেও জানান নাজমুল হক। এতে আইসিইউতে থাকা অনেক যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সির (ইএমএ) প্রধান এমার কুক বলেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনে ঝুঁকির চেয়ে উপকার অনেক বেশি। রক্তে জমাট বাঁধার উদ্বেগে বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ স্থগিত করলেও অঞ্চলটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান একথা বলেছেন।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ইউরোপে কারও কারও শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার মতো ঘটনা ঘটলেও সামগ্রিক টিকা গ্রহীতার অনুপাতে তা খুবই সামান্য। এমন প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকে বসছেন ডব্লিউএইচও’র ভাইরাস নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য (ডব্লিউএইচও)-এর পক্ষ থেকেও অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন প্রয়োগ স্থগিত না করার আহ্বান জানানো হয়।
ইএমএ প্রধান জানান, রক্তে জমাট বাঁধার সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের কোনও সম্পর্ক নেই। এই ঘটনাগুলো নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। তবে ভ্যাকসিনটি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।
কুক বলেন, আমরা ইউরোপে কয়েক হাজার মানুষের রক্ত জমাট বাঁধে। আমরা এখন জানতে চাই এসব জমাট বাঁধার কারণ ভ্যাকসিন নাকি অন্য কিছু।
উল্লেখ্য, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর রক্তে জমাট বাঁধার কয়েকটি ঘটনার খবরের পর সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে নরওয়ে, বুলগেরিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ডসহ ১৬ দেশে এটির প্রয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লোরিডা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তৌফিক রেজা জন্মভূমির কয়েক লাখ মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন আনতে প্রায় দেড় কোটি টাকা সমমূল্যের অনুদান লাভ করেছেন।
তৌফিক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা মিলে তিন বছরের জন্য এ অনুদান লাভ করেন।
তৌফিক ও তাঁর গবেষক দলটি এসব জৈবিক বর্জ্যকে কীভাবে জ্বালানিতে রূপান্তর করা যায় তা নিয়ে অনুসন্ধান করবেন। তাদের পরিকল্পনা, স্বল্পমূল্যে দেশব্যাপী বর্জ্য উৎপন্ন থেকে জ্বালানি বিতরণ করা ।
তৌফিক বলেন, “একদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে যাচ্ছে,আবার বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করার মত খুব বেশি জমিও নেই আমাদের, আমি তাই দেশের এনার্জি সেক্টর নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলাম। আমি বুঝেছি যে মানুষ বেশি মানেই বর্জ্যও বেশি। ফলে আমি সব সময় এই বর্জ্যকে কীভাবে জ্বালানিতে রূপান্তর করা যায় তার উপায় খুঁজছিলাম”।
বুয়েটে পড়ালেখা করা তৌফিক এবং বাংলাদেশি গবেষকেরা ফ্লোরিডা টেকের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন গবেষণা করে দেখছেন কীভাবে বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরি করে সহজে মানুষকে সরবরাহ করা যায়।
নিজেদের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তৌফিক বলেছেন, ‘আমার বেড়ে ওঠা বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর ঢাকায়। অনবরত লোডশেডিংয়ে আমরা অভ্যস্ত ছিলাম। প্রাকৃতিক গ্যাস ক্রমশ শেষ হয়ে যাচ্ছে। গ্যাস পাওয়ার মতো বেশি উৎসও বাকি নেই। বাংলাদেশের এনার্জি সেক্টর নিয়ে আমি চিন্তিত ছিলাম।’
‘কাজ করে বুঝেছি বেশি মানুষ মানেই বেশি বর্জ্য। এই বর্জ্য কীভাবে জ্বালানিতে রূপান্তর করা যায়, সব সময় সেটি ভেবেছি।’
তৌফিকের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলক কর্মকাণ্ড শুরু হবে।
ভবিষ্যতের জ্বালানী চাহিদা পূরণে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত তৌফিক।
চলে গেলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রথম আলোকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে মওদুদ আহমদকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।
এর আগে বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দুই দফায় মওদুদ আহমদকে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান তাঁর ফুসফুসে পানি জমে যায়। পরে এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে তাঁকে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে আছেন স্ত্রী হাসনা মওদুদ আহমদ।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, মওদুদ আহমদের চলে যাওয়া শুধু বিএনপির জন্য নয়, দেশের জন্যই অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। তিনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, তিনি একজন খ্যাতনামা আইনজীবী এবং উঁচু মানের লেখক ছিলেন। মওদুদ আহমদ বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাঁর (মওদুদ আহমদ) এই চলে যাওয়ায় আমরা শোকাহত। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
মওদুদ আহমদ দেশের এক বর্ণাঢ্য রাজনীতিক। তিনি আইনমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন। এরশাদ সরকারের উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তবে এর আগে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। রাষ্ট্রপতি জিয়ার সঙ্গে মতদ্বৈততায় সরকার থেকে ছিটকে পড়েন। আশির দশকে এরশাদের সঙ্গে তাঁর যুক্ত হওয়া ছিল দারুণ রাজনৈতিক চমক।
১৯৮২ সালে এরশাদ সামরিক শাসন জারি করার পর বিশেষ সামরিক আদালতে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন এই রাজনীতিক। ১৯৮৫ সালে সেই দণ্ড মাথায় নিয়েই এরশাদ সরকারের মন্ত্রী হন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতি হন মওদুদ আহমদ। এরশাদের পতনের পর ১৯৯৬ পর্যন্ত তিনি জাতীয় পার্টিতে ছিলেন। এর পরপরই ‘ঘরের ছেলে ঘরে ফেরা’র মতোই বিএনপিতে ফিরে আসেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর তিনি আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মওদুদ আহমদ ধানের শীষ ও লাঙ্গল—দুই প্রতীকেই নির্বাচন করেছেন।
পাঁচবার মওদুদ আহমদ নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ। মওদুদ আহমদকে গত ৩০ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, ৮ থেকে ১০ দিন ধরে তিনি অসুস্থতা বোধ করছিলেন। তবে বাসায় চিকিৎসা চলছিল। একপর্যায়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছে ও রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেছে। পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে সিসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন।
মুসলিম নারীদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ ও সহস্রাধিক ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা বন্ধ করবে শ্রীলঙ্কা। শনিবার দেশটির জন নিরাপত্তামন্ত্রী সরৎ বিরাসেকেরা এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন। এমন পদক্ষেপের ফলে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
লঙ্কানমন্ত্রী জানান, শুক্রবার তিনি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য একটি নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। যাতে জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় মুসলিম নারীদের পুরো মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অতীতে আমাদের দেশে মুসলিম নারী ও মেয়েরা কখনও বোরকা পরেননি। এটি একটি ধর্মীয় চরমপন্থার প্রতীক, যা সম্প্রতি হাজির হয়েছে। আমরা অবশ্যই তা নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছি।
এর আগে ২০১৯ বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে সাময়িকভাবে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করা হয়। গির্জা ও হোটেলে ইসলামি জঙ্গিদের হামলায় আড়াই শতাধিক মানুষ নিহতের পর এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
ওই বছরের শেষ দিকে ধর্মীয় চরমপন্থা মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন গটাবায়া রাজাপক্ষ। এর আগে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তামিল বিদ্রোহ দমনের জন্য পরিচিত ছিলেন। গৃহযুদ্ধের সময় তার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। যদিও তিনি এসব অস্বীকার করেছেন।
বিরাসেকেরা জানান, সরকার সহস্রাধিক মাদ্রাসা বন্ধের পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, কেউ চাইলেই স্কুল খুলে শিশুদের শিক্ষা দিতে পারবে না।
শ্রীলঙ্কা সরকারের এমন সিদ্ধান্তের আগে মহামারির শুরুতে করোনায় মৃত মুসলিমদের দাফন নিষিদ্ধ করে। মুসলিমদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মৃতদের দাফনের বদলে শবদাহ করা হয়। এই বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমালোচনা ও নিন্দার মুখে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
গনতন্ত্র, সুবর্ন জয়ন্তী ও কিছু ভাবনা প্রভাষক আব্দুস সহিদ
শুনেছি আমরা স্বল্পউন্নত (Less developed) দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল (developing) দেশের তালিকায় উন্নীত হচ্ছি, এর পর কবে আমরা স্থান করে নিতে পারব উন্নত (developed) দেশের তালিকায় ? জানিনা। তবে আমার প্রশ্ন হল, আমরা হয়ত উন্নয়নশীল হচ্ছি অর্থনীতিতে কিন্তু গনতন্ত্রে আমরা কতটুকু উন্নয়নশীল হচ্ছি? নাকী অবনতিশীল হচ্ছি? আমরা জানি গনতন্ত্র আর উন্নয়ন এক জিনিষ নয়, তাছাড়া উন্নয়ন প্রক্রিয়া একটি ধারাবাহিক ( চলমান) প্রক্রিয়া মাত্র।
আমাদের রাজধানী ঢাকা শহর বিশ্বের চতুর্থ নিকৃষ্টতম (আবর্জনার) শহর বলা হয়ে থাকে, অথচ এই আবর্জনার শহরে আমাদের সরকার প্রধান বা রাস্ট্রপ্রধানের বসবাস। একটি উন্নয়নশীল দেশের বা উন্নত দেশের শহর দেখলে তা সহজে অনুমান করা যায়। তাহলে আমরা কতটুকু উন্নয়নশীল হচ্ছি ?
সুবর্ন জয়ন্তিতে এসে আমার প্রশ্ন, আমরা যে লক্ষ ও উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি, তার কতটুকু সফলতা অর্জন করতে পেরেছি? স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা গনতন্ত্রকে প্রাতিস্টানিক রুপ দিতে পারিনি, পারিনি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে। তাছাড়া একটি সুস্ট নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি আজো। নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংশ করা হয়েছে। একজন নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যই প্রনিদানযোগ্য।
আমাদের সংবিধানে ক্ষমতা সতন্ত্রীকরন নীতির (separation of power) কথা পরিস্কার বলা হলে ও রাস্ট্রের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ এবং বিচার বিভাগ কত টুকু স্বাধীন ভাবে কাজ করছে তা আজ জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। একটি দেশের বিচার বিভাগ কতটুকু স্বাধীন তা একজন প্রধান বিচারপতির বাধ্য হয়ে বিদেশে প্রস্থান করা থেকেই স্পস্ট অনুমেয়।
রাজনীতি করার অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। অথচ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি কে স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না উপরূন্ত ৩৫ লাখের অধিক মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানী করা হচ্ছে বার বার ক্ষমতায় আসীন হওয়া দলটির নেতা কর্মীদের।
বি.এন.পি একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, এ দল জনগনের সমর্থন নিয়ে ই ক্ষমতায় যেতে চায়, আর এর মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। সংবিধানে বলা আছে “ জনগনই রাস্ট্রের প্রকৃত মালিক” নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগন তার প্রতিনিধি নির্বাচন করে ‘সরকার’ গটন করবে এটাই নিয়ম কিন্তু গত নির্বাচনে মানুষ দিনের ভোট রাতে আদায় করার অবিশ্বাস্য ইতিহাস সৃস্টিকারী দৃষ্টান্ত অবলোকন করেছে, যা গনতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়।
পরিশেষে এটুকু বলতে চাই, সরকার যেহেথু বলতে চাচ্ছে, তারা জনগনের জন্য অনেক কিছু করেছে তাহলে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে অসুবিধা কোথায়, এতই উন্নয়ন আর জনপ্রিয় হলে জনগনের কাছে যেতে এত ভয় কিসের ? দেন না একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন পরক করে দেখুন জনপ্রিয়তা কতটুকু।
বিসিএস ২৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে ২০০৮ সালের নভেম্বরে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন সারোয়ার আলম। ২০১৪ সালের ১ জুন সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। সে অনুযায়ী এ পদে প্রায় সাত বছরসহ মোট ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। নানা সাহসীঅভিযানের কারণে বিভিন্ন সময় প্রশংসা কুড়িয়েছেন সারোয়ার আলম।
সম্প্রতি প্রশাসনে উপসচিব পদে সবচেয়ে বড় পদোন্নতি দিল সরকার। পদোন্নতির ক্ষেত্রে মূল বিবেচ্য ছিল বিসিএসের ২৭তম ব্যাচ। এ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের ২৪০ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু পদোন্নতি মেলেনি তিন শতাধিক সফল অভিযানের ট্যাগ লাগানো র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলমের। তার বিরুদ্ধেকোনো বিভাগীয় অভিযোগ নেই। বরং নানা সাহসী অভিযানের কারণে বিভিন্ন সময় প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই কর্মকর্তা। তবুও তার পদোন্নতি না হওয়ায় হতাশ হয়েছেনঅনেকে। একইসঙ্গে কেন পদোন্নতি পাননি, সে প্রশ্নও উঠেছে।
ফেসবুকে আবেগঘন এক স্ট্যাটাস দেন সারোয়ার আলম। সেখানে তিনি লেখেন,
‘চাকরিজীবনে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়েছেন তাদের বেশিরভাগই চাকরিজীবনে পদে পদে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়েছেন। এ দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটাই অন্যায়!’
আসুন দেখা যাক সারোয়ার আলমের কিছু দুঃসাহসিক অভিযানের ইতিহাস, যার জন্য তিনি মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।
ইরফান সেলিমের বাড়িতে অভিযান
২০২০ সালের অক্টোবরে মদ্যপান ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করায় সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এর নেতৃত্বে ইরফান সেলিমের চকবাজারের বাসায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি, পুলিশ, র্যাব এবং একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, অবৈধ অস্র ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করে।
ইরফান সেলিমের বাসায় অভিযান
ক্যাসিনো অভিযান
২০১৯ সালে সারোয়ার আলম এর নেতৃত্বে রাজধানীর ফকিৱাপুলে ‘ইয়ংমেনস’ নামে একটি অবৈধ ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব। সে অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো থেকে ১৪২ জনকে আটক করেছে র্যাব। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ অর্থ ও জুয়া খেলার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। যা সে সময়ের বহুল আলোচিত অভিযান ছিল। তারই সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় ক্যাসিনো সম্রাট নামে খ্যাত ইসমাইল হোসেন চৌধুরী কে।
ফকিরাপুলের ক্যসিনো
জি কে শামীমের অফিসে অভিযান
একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর নিকেতনে যুবলীগ নেতা কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) এর অফিসে অভিযানে যায় র্যাব। সেখানেও ছিলেন সারোয়ার আলম। অভিযানে জি কে শামীমের কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধভাবে উপার্জিত নগদ এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ২০০ কোটি টাকার এফডিআর, বিদেশি ডলার, মদ ও অস্ত্র উদ্ধার করেন তিনি।
অভিযান চলাকালে জি কে শামীমের অফিস
শাহেদ ও রিজেন্ট হাসপাতাল
ভুয়া করোনার সার্টিফিকেট প্রদানের দায়ে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করা হয় রিজেন্ট হাসপাতালকে এবং মূল হোতা শাহেদকে পরে গ্রেফতার করা হয়। এবং রিজেন্ট হাসপাতাল যে দীর্ঘদিন থেকে লাইসেন্সবিহীনভাবে হাসপাতাল চালিয়ে আসছিল তাও বেরিয়ে আসে সারোয়ার আলমের সেই আলোচিত অভিযানে।
রিজেন্ট হাসাপাতাল
পথচারীদের জরিমানা
২০১৫ সাল থেকে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন করছেন আলম। তবে প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৪ সালে পথচারীদের সচেতন করা ও নিয়ম অমান্যে জরিমানার মধ্যে দিয়ে।ফার্মগেটের ওভারব্রিজ বাদ দিয়ে সরাসরি যারা রাস্তা পার হচ্ছিলেন, তাদের নামমাত্র জরিমানা করে সচেতন করেছিলেন তিনি।
ভেজালবিরোধী ও নকল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান
২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার হাতিরপুলে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য নকল করে বাংলাদেশে উৎপাদনের কারখানায় হানা দেন সারোয়ার আলম। হাতেনাতে ধরে সিলভান ট্রেডিং কোম্পানি ও টোটাল ফার্মাকে ৪০ লাখ টাকা জরিমানা এবং দুজনকে জেল দেন তিনি।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখেছি তিনি ভেজালবিরোধী ও নকল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে সবার নজর কাড়েন।
নামীদামী হাসপাতালে অভিযান
২০১৮ ও ২০১৯ সালজুড়ে বড় বড় হাসপাতালে অভিযান চালান সারোয়ার আলম। অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার ও অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির অভিযোগে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালকে ২০ লাখ টাকা, অ্যাপোলো হাসপাতালকে পাঁচ লাখ ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি।
এছাড়া একই অভিযোগে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতাল, শমরিতা হাসপাতাল ও বাংলাদেশ স্পাইন হাসপাতালকে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করেন সারোয়ার আলম। নানা অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালকেও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি।
২০২০ সালের ২৯ জুলাই উত্তরার ক্রিসেন্ট, আরএমসি ও লুবনা হাসপাতালে অভিযান চালান সারোয়ার আলম। টেস্ট না করেই মাইক্রো বায়োলজিক্যাল ও কালচার টেস্ট দেয়ার কারণে ১৭ লাখ, লুবনা হাসপাতালকে ২০ লাখ এবং আরএমসি হাসপাতালকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি।
২৫ জুলাই ধোলাইপাড়ে কিউর জেনারেল হাসপাতালে অপারেশন করার সময় এইচএসসি পাস দুই ভুয়া ডাক্তারকে আটক করেন তিনি।
কুকুর ও পশুর মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যাকসিন
২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট ফকিরাপুলের একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে ২০১২ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া জলাতঙ্ক, বার্ড ফ্লুর ভ্যাকসিন ২০১৯ সালে কুকুরের দেহে দেওয়ার অভিনব প্রতারণার চিত্র। সব যাচাই-বাছাই করে অ্যাডভান্স অ্যানিম্যাল সায়েন্স কোং লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের ছয়জনকে জেল ও ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি। জব্দ করেন আরও ১০ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ।
ভয়ংকর কিশোর গ্যাং
ঢাকায় যখন বিভিন্ন কিশোর অপরাধী ও গ্যাংয়ের হাতে হত্যাকাণ্ড, চুরি-ছিনতাই বেড়ে যায়, তখন তাদের শনাক্তে অভিযান চালান সারোয়ার আলম। গত বছরের ৩১ জুলাই রাজধানীর শ্যামলী, শিশুমেলা, কলেজ গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৯ কিশোরকে আটক করে ছয় মাসের জন্য কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠান তিনি।
পশুর হাটে হানা
৯ আগস্ট গাবতলীর কোরবানির পশুর হাটে হানা দেন সারোয়ার আলম। হাতেনাতে ধরেন একজন পশু চিকিৎসককে। ওই চিকিৎসক গরু মোটাতাজাকরণ স্টেরয়েড ইনজেকশন দিচ্ছিলেন।
দুধে ভেজাল মিশ্রণ
২০১৯ সালের ৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারে বারো আউলিয়া ডেইরি মিল্ক অ্যান্ড ফুড লিমিটেডে অভিযান চালান সারোয়ার আলম। গিয়ে দেখেন, ১০০ লিটার দুধের সঙ্গে পানি, স্কিম মিল্ক পাউডার ও বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে ২ হাজার ৮০০ লিটার পাস্তুরিত দুধ তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের পরিচালকসহ ১২ জনকে কারাদণ্ড এবং ৫৮ লাখ টাকা জরিমানা করে ফ্যাক্টরি সিলগালা করেন তিনি।
ডেঙ্গু পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি জালিয়াতি
ডেঙ্গু পরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি নেওয়া এবং টেস্ট না করে প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ায় পল্টন ও ফকিরাপুল এলাকার চারটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাঁচজনকে জেল ও ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করে প্রতিষ্ঠান দুটি সিলগালা করেন সারোয়ার আলম।
চাঁদাবাজ হাতি
২০১৯ সালের মে মাসে কাওরান বাজারে একটি অভিযান চালানোর সময় হাতি দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজির চিত্র চোখে পড়ে সারোয়ার আলমের। তখনই দুই হাতি ও মাহুতকে থামার নির্দেশ দেন তিনি। তবে মাহুত না থেমে দৌড়াতে থাকেন, পেছনে দৌড়ান তিনিও। অবশেষে হাতিরঝিলে গিয়ে আটকান তাদের। দুজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন তিনি।
হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি
পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা সরাতে অভিযান
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। ওই ঘটনার পর একের পর এক ক্ষতিকারক কেমিক্যাল কারখানা সরানোয় অভিযান চালান তিনি।
আরও যত উল্লেখযোগ্য অভিযান
২০১৯ সালে সিন্ডিকেট করে সৌদি এয়ারলাইনসের টিকিট কিনে হজযাত্রীদের কাছে বেশি মূল্যে বিক্রির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেন সারোয়ার আলম।
মেয়াদোত্তীর্ণ কসমেটিকস বিক্রি করায় গুলশানের পারসোনা বিউটি পার্লার ও ফারজানা শাকিল বিউটি পার্লারকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি।
একই বছরের ২৭ মে গরুর মাংসে রং ব্যবহার করায় নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে অভিযানে গিয়ে জেল-জরিমানা করেন তিনি।
নকল কসমেটিকসের বিরুদ্ধে চকবাজার, কেরানীগঞ্জ ও ডেমরা এলাকায় কমপক্ষে ১২টি অভিযান চালান সারোয়ার আলম।
বাদামতলী ও কারওয়ান বাজারে একাধিক অভিযান চালান তিনি। এ সময় কেমিক্যাল দিয়ে কাঁচা আম হলুদ করে বিক্রি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর বিক্রির চিত্র উঠে আসে সবার সামনে।
দুষ্টের পালন আর শিষ্টের দমন
বিসিএস ২৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে ২০০৮ সালের নভেম্বরে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন সারোয়ার আলম। ২০১৪ সালের ১ জুন সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। সে অনুযায়ী এ পদে প্রায় সাত বছরসহ মোট ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি, যা পদোন্নতির শর্ত পূরণ করে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ (এপিডি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আনিছুর রহমান মিঞা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমার জানা মতে যারা যোগ্য তারা সকলেই পদোন্নতি পেয়েছেন। বাকিদের বিষয়ে মন্তব্য করার অধিকার আমার নেই। কারণ পদোন্নতি আমরা দেই না। পদোন্নতি দেওয়ার জন্য যে বোর্ড (সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) আছে, তারা সবকিছু বিশ্লেষণ করে যারা যোগ্য তাদের পদোন্নতি দিয়েছে বলেই আমি জানি।’
এছাড়াও এতসব সফল ও সাহসী ভূমিকাও কি পদোন্নতির জন্য যথেষ্ট ছিলনা? নাকি সারোয়ার আলমের এতদিনের ভূমিকাই পদোন্নতির জন্য অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে?
এ যেন বিখ্যাত উক্তি, ”দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন” এর উল্টা। এখন বলতে হয় এ হচ্ছে, ”দুষ্টের পালন আর শিষ্টের দমন”।
২০২০ সালে যারা পেন্ডেমিক পেমেন্ট গ্রহণ করেছেন তা ট্যাক্সেবল এবং তা চার বছরব্যাপী ২০২২ থেকে ২০২৫ এর মধ্যে ফেরত দিতে হবে। অথবা বিকল্প পন্থায় রেভিনিউ তা ট্যাক্স ক্রেডিট এর সাথে সমন্বয় করে তাদের পায়না ট্যাক্স ফেরত নিয়ে নিবে।
তবে ২০২১ সালে নিয়মে পরিবর্তন এসেছে কিছুটা। চলতি বছরেও অনেকে পেন্ডেমিক পেমেন্ট গ্রহণ করতেছেন। কিন্তু এই বছর রেভিনিউ ২০২০ সালের মত তা আর বকেয়া রেখে দিবেনা। তার মানে, রেভিনিউ ২০২১ সালের ট্যাক্স ২০২১ সালেই নিয়ে নিবে অথবা ট্যাক্স ক্রেডিটের সাথে সামঞ্জস্য করে নিবে।
রেভিনিউ ওয়েবসাইটে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে, তবে রেভিনিউতে প্রদত্ত তথ্য বোঝার জন্য পর্যাপ্ত নয়। অনেকের জন্যই তা হয়ত বুঝতে কষ্টসাধ্য হতে পারে। যার জন্য এই আর্টিকেলে একটু ভেঙ্গে বিষয়টা পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়েছে।
কোভিড পেমেন্টের ট্যাক্স কিভাবে কাটবে?
এই বছর যারা কোভিড পেন্ডেমিক পেমেন্ট পাচ্ছেন তা কিন্তু টাক্সেবল। যদিও আপনি সমান পরিমাণ টাকাই ব্যাংকে পাচ্ছেন, কিন্তু কিভাবে ট্যাক্স নিচ্ছে সে বিষয়েই এখানে আলোকপাত করা হবে।
ধরুন আপনি €৩০০ করে পেন্ডেমিক পেমেন্ট পাচ্ছেন। কিন্তু রেভিনিউ যদি এর থেকে ট্যাক্স কাটে তারপরেও কিভাবে আপনি €৩০০ ইউরো করেই পাচ্ছেন? এটা একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে।
রেভেনিউ ট্যাক্স বাদ দিয়ে আপনার সাপ্তাহিক পেমেন্ট দিচ্ছেনা, আপনার পেমেন্ট পুরোটাই পাচ্ছেন। কিন্তু আপনার বাৎসরিক ট্যাক্স ক্রেডিট প্রতি সপ্তাহে কমিয়ে নিচ্ছে। যদি আপনি চাকুরীতে ফিরে যান তাহলে আপনার বাকি ট্যাক্স ক্রেডিট এডজাস্ট হয়ে যাবে। (উদাহরণ নিম্নে দেয়া হল)
ধরুন আপনার বাৎসরিক ট্যাক্স ক্রেডিট €৩৩০০, সপ্তাহে আসে €৬৩। যদি আপনি চাকুরীতে থাকতেন তাহলে ঐ ট্যাক্স ক্রেডিট বাদ দিয়ে বাকি ট্যাক্স আপনাকে দিতে হত। ঠিক তেমনি পেন্ডেমিক পেমেন্টেও সেই ট্যাক্স ক্রেডিট আপনি পাচ্ছেন যা প্রতি সপ্তাহে আপনার ক্রেডিটকে বাৎসরিক ক্রেডিট কমিয়ে দিচ্ছে।
আবার ধরুন আপনি ৬ মাস পেন্ডেমিক পেমেন্ট নেয়ার পর চাকুরীতে ফিরে গিয়েছেন। ধরুন ঐ ৬ মাসে আপনার বছরের অর্ধেক ট্যাক্স ক্রেডিট পেন্ডেমিক পেমেন্টের সাথে এডজাস্ট করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনার €৩৩০০ ট্যাক্স ক্রেডিট থেকে বাকি থাকবে মাত্র €১৬৫০। সুতরাং বাকি ৬ মাস আয়ের যা ট্যাক্স আসবে তা যদি €১৬৫০ এর বেশি হয় তাহলে সব ট্যাক্সই আপনাকে দিতে হবে।
মূল কথা হল রেভিনিউ যদি পেন্ডেমিক পেমেন্টের থেকে ট্যাক্স ক্রেডিট না কমিয়ে নিত তাহলে আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট €৩৩০০ ই থাকত, এবং আপনি চাকুরীতে ফিরে গেলেও €৩৩০০ এর নিচে ট্যাক্স আসলে তা আপনাকে আর নিজের পকেট থেকে দেয়া লাগত না।
উদাহরণ
ধরুন আপনি বর্তমানে €৩০০ করে সপ্তাহে পেন্ডেমিক পেমেন্ট পাচ্ছেন। তাহলে বছরে আসে €৩০০x৫২=€১৫৬০০। সাধারণ হিসেবে €১৫৬০০ এর উপর ২০% হারে ট্যাক্স আসে €৩১২০ এবং সপ্তাহে €৬০। তাহলে এই €৬০ করে ট্যাক্স ক্রেডিট আপনার সপ্তাহে কমে যাবে। আপনি যদি ৬ মাস বা ২৬ সপ্তাহ পেন্ডেমিক পেমেন্ট নেন তাহলে আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট €১৫৬০ দ্বারা কমে যাবে। তাহলে বছর শেষে আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট অবশিষ্ট থাকবে €৩৩০০-€১৫৬০=€১৭৪০।
এখন কেউ যদি পুরা বছরই €৩০০ করে পেন্ডেমিক পেমেন্ট গ্রহণ করে অথবা চাকুরীতে যোগ না দেয় তাহলে তাকে আর কোন ট্যাক্স দেয়া লাগতেছেনা। যা তার ট্যাক্স ক্রেডিট থেকেই কাভার হয়ে যাচ্ছে।
আবার কেউ যদি €৩৫০ করে সম্পূর্ণ বছর কোভিড পেমেন্ট নেয় তাহলে তার বছরে €৩৬৪০ ট্যাক্স আসে যা বাৎসরিক ক্রেডিট €৩৩০০ থেকে বেশি। সুতরাং তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি €৩৪০ ট্যাক্স লাইবিলিটি বা বকেয়া হিসেবে থাকবে। আর যদি চাকুরীতে এর আগেই কেউ ফিরে যায় তাহলে তা তার বেতন থেকে এডজাস্ট হয়ে যাবে।
জয়েন্ট অ্যাসেস্মেন্টের ক্ষেত্রে
যারা জয়েন্ট অ্যাসেস্মেন্টে আছেন আর যদি একজন চাকুরী করেন এবং একজন পেন্ডেমিক পেমেন্ট পাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে যে চাকুরীতে আছেন তার বেতনের সাথে ট্যাক্স ক্রেডিট এডজাস্ট হবে। আবার স্পাউস চাকুরীতে ফিরে গেলে তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মূলকথা
সারকথা হল পেন্ডেমিক পেমেন্ট হল ট্যাক্সেবল। ধরে নিতে পারেন এটাও একটা চাকুরী, কোন কাজ ছাড়া চাকুরী। চাকুরী করলে যেমন ট্যাক্স দিতে হয়, এর উপরও দেয়া লাগবে। একটা নিদৃস্ট পরিমাণের উপর ইনকাম হলেই কেবল ট্যাক্স দিতে হব। তেমনি যারা কম পেন্ডেমিক পেমেন্ট পাচ্ছেন তাদেরকে ট্যাক্স দেয়া লাগতেছেনা। যারা বেশি যেমন €৩৫০ করে পাচ্ছেন তাদের হয়ত বছর শেষে কিছু ট্যাক্স বকেয়া থাকতে পারে, তা নির্ভর করে ট্যাক্স ক্রেডিট কত তার উপর। আর চাকুরীতে ফেরত গেলে তা অটোমেটিক এডজাস্ট হয়ে যাবে।
সুতরাং ঘাবড়ানোর কিছু নেই, খুব বেশি ট্যাক্স এর বোঝা বহন করতে হবেনা কাউকেই। কেউ যদি কোন কারণে অতিরিক্ত ট্যাক্স দিয়েই থাকে তাহলে তা বাৎসরিক রিটার্নের সাথে ফেরত পাওয়া যাবে।
বিঃ দ্রঃ স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ট্যাক্স ক্রেডিট €৩৩০০ ধরা হয়েছে উদাহরণ প্রেক্ষিতে। ব্যক্তি বিশেষে এর ভিন্নতা থাকতে পারে।
ফ্রি হেল্পলাইন
বরাবরের মত ফ্রি হেল্পলাইন চালু রয়েছে। পার্সোনাল ট্যাক্স সম্পর্কিত সাহায্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।
স্কুলছাত্রের বিরুদ্ধে ডাবলিন পার্কে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে চার্জ গঠন।
আদালত থেকে তার নাম প্রকাশ না করার অধিকার প্রাপ্ত ছেলেটি ধর্ষণের অভিযোগে কেন্দ্রীয় ফৌজদারি আদালতের বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে।
মামলাটি শিশু নির্যাতনের অভিযোগ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে এই অভিযোগটি গ্রহন করে বিচারের এখতিয়ার শিশুদের আদালতের রয়েছে।
শিশু আইনের ৭৫ অনুচ্ছেদে দেওয়া আইনে বলা আছে কিশোর কিশোরীরা গুরুতর অপরাধ করলে শিশু আদালতে সকল অভিযোগ এই আইনে বিচার করতে হবে।
মামলার এই অভিযোগটি প্রাথমিক শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রমাণের একটি রূপরেখা জড়িত আছে, অতপরে আসামীদের বয়স বিবেচনায় নিয়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া হবে।
এই বিচারের বিচারক “কেলি” যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে বিচারের রায় ঘোষণার জন্য এবং ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের সকল নথিপত্র তলব করেছেন তাই এপ্রিলের এক তারিখ পর্যন্ত এই মামলাটি স্থগিত করেছেন।
কিশোরীর সাথে তার মা এবং তার সলিসিটার ব্রায়ান কেনেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনী সহায়তা নিতে।
অভিযোগটি বিচারাধীন সময় স্কুলছাত্রটি বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে চলতে সম্মত হয়েছে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ছেলেটি এই বিচারের সাথে সম্পৃক্ত কোন সাক্ষীর সাথে সে কোনও যোগাযোগ করতে পারবে না। স্কুলছাত্রটিকে একটি নির্দিষ্ট নামের এলাকার বাইরে থাকতে হবে এবং আদালতের বাকি সকল শর্ত মেনে চলতে হবে।
তথ্যসুত্র: https://www.thejournal.ie/schoolboy-rape-charge-dublin-park-5378527-Mar2021/?utm_source=shortlink
ইনসুলিন ও স্যালাইনের মতো রোজা রেখে করোনার ভ্যাকসিনও নেওয়া যাবে বলে ফতওয়া দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ ড. আহমাদ বিন আব্দুল আজিজ আল-হাদ্দাদ।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, করোনার টিকা সূঁচের মাধ্যমে (ইন্ট্রামাস্কুলার) মাংসে নেওয়া হয়। সূঁচের মাধ্যমে মাংসে টিকা নিলে রোজা ভাঙবে না বিধায় রোজাদার ব্যক্তি করোনার টিকা গ্রহণ করতে পারবে।
রোববার আরব আমিরাতের ওয়াকফ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ফতওয়া বিভাগ গ্র্যান্ড মুফতির এ ফতওয়া প্রকাশ করে বলে গালফ নিউজ জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, রোজাদার ব্যক্তি মুখ, নাক ও অন্যান্য খোলা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে কোনো খাবার, পানীয় ও ওষুধ জাতীয় কোনকিছু গ্রহণ করতে পারবে না। কিন্তু করোনার টিকা সূঁচের মাধ্যমে (ইন্ট্রামাস্কুলার) মাংসে নেওয়া হয়। এতে রোজা ভাঙবে না।
ফাতওয়ায় আরও বলা হয়, নাকের শ্লেষ্মা বা রক্তের ফোঁটা থেকে করোনা পরীক্ষার নমুনা নেওয়া হলেও রোজা ভাঙবে না। তাই প্রয়োজনে রোজা রেখে করোনাভাইরাসের পরীক্ষাও করা যাবে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতেও করোনার টিকাদান কার্যক্রম চলছে। সম্প্রতি যারা করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাদের অনেকেরই দ্বিতীয় ডোজের নির্ধারিত তারিখ পড়বে রমজানে।
এ নিয়ে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলিম দ্বিধায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গ্র্যান্ড মুফতি এ ফাতওয়া দিলেন।
তোমার আমার গল্প
কোনো রূপকথার গল্প নয়
তোমার আমার জীবন
কোনো রূপকাহিনীর জীবন নয়
আর দশটা সাদামাটা জীবনের মতোই
তোমার আমার জীবন।
তুমি কি জানো-
এ জীবনের নাম কি? দাম্পত্য জীবন।
ষোল বছর আগের এ দিনে
তোমার আর আমার যাত্রা শুরু
অতপর-
মান-অভিমান, রাগ-অনুরাগ, অভিযোগ-অনুযোগ
একটু আধটু খুনসুটি আরও কতো কি…..
কিন্তু তুমি তো জানো-
এ সবই জীবনের অংশ, দাম্পত্যের অলংকার
আচ্ছা, বাদ দাও এসব,
আজ আমি বড্ড রোমান্টিক!
বলতো-
কি নামে ডাকলে তোমাকে আজ
খুশি হবে তুমি?
ফুল? চন্দ্রিমা? ফলবতী বৃক্ষ? নাকি পিপাসার্ত হৃদয়ের এক গ্লাস ঠান্ডা লাচ্ছি?
অনেক আদর আর স্বাগতিক শুভেচ্ছা আজ তোমাকে
তার সাথে জেনো
কপোলে দুটো মিষ্টি চুম্বন। লজ্জা পেলে?
চমকে গেলে কেনো?
পৃথিবীর তাবৎ নরনারীর
অব্যক্ত ভাষার গুঞ্জন এখানেই।
আজ বলি তোমায়
আকাশ বাতাস জেনে রাখুক
ভালোবাসি তোমাকে নিঃসীম নীলিমায়।
কোথায় যেতে চাও আজ তুমি…..?
চাইনিজ? কফিহাউজ? স্পাইস অফ ইন্ডিয়া?
নাকি আনোয়ারের ইস্তান্বুল কাবাব?
একবার বলো শুধু,
লকডাউনের এ কঠোর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতেও আমি কুণ্ঠিত নই।
আমার কি ইচ্ছে হচ্ছে জানো …..?
আজ তোমাকে হলুদ পাখি সাজাতে
আর আমি শ্যাম বনানী কিংবা
ধবল জ্যোৎস্নার রাত্রিতে
বাড়ির ঘাটের নৌকোয় মুখোমুখি বসে
উপচে পড়া বর্ষার মৃদু ঢেউ তোলা পানিতে
দুজন দুজনের প্রতিচ্ছবি দেখি!
কবি যে তোমার অনেক কিছুই চায়,
মনের পুঞ্জীভূত ভাষা
চোখের ভাষায় বলে দিতে চায়,
ঘটাতে চায় ভালোবাসার সাবলীল প্রকাশ
কিন্তু পারেনা ….
তাই কবিতায় বুঝে নিও সব।
রাষ্ট্রপতি মাইকেল ডি’হিগিনস বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন আইনে স্বাক্ষর করেছেন।
রাষ্ট্রপতি মাইকেল ডি’হিগিনস “বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন”একটি আইন স্বাক্ষর করেছেন যার অর্থ নির্দিষ্ট কিছু দেশ থেকে আগত লোকদের এখন ১৪ দিন সময়ের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য (সংশোধন) বিল ২০২১ প্রথমবারের মতো স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিফেন ডোনেলি গত মাসে সংসদে নিয়ে এসেছিলেন, সেখানে এটি পাস হয়।
বিলটি সানাডের (Seanad) মধ্য দিয়েও পাস হয়ে গেছে এবং রাষ্ট্রপতি ডি’হিগিস এখন আনুষ্ঠানিকভাবে আইনটিতে স্বাক্ষর করেছেন।
এর অর্থ হল কোভিড -১৯ মাহামারী সংক্রামনের ক্ষেত্রে “উচ্চ ঝুঁকি” হিসাবে চিহ্নত যে কোনও দেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে ভ্রমণ করতে এসেছে এরকম যে কারও জন্য এখন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। প্রায় মোট ৩৩ টি দেশের নাম সরকারের “উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ” তালিকায় রয়েছে।
তারা হলেন: আর্জেন্টিনা, অ্যাঙ্গোলা, অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, বলিভিয়া, বোতসোয়ানা, বুরুন্ডি, কেপ ভার্দে, চিলি, কলম্বিয়া, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র অফ কঙ্গো, ইকুয়েডর, ফরাসী গায়ানা, গিয়ানা, লেসোথো, মালাভি, ইসওয়াতিনি, মরিশাস, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, পানামা , প্যারাগুয়ে, পেরু, রুয়ান্ডা, সেশেলস, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুরিনাম, তানজানিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উরুগুয়ে, ভেনিজুয়েলা, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে।
কাভানে(Cavan) চাঁদাবাজির চেষ্টার পরে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং গোলাবারুদ সহ তারা গ্রেপ্তার হয়েছে।
পুলিশ বলছে অভিযোগের ভিত্তিতে তারা ব্ল্যাকমেল ও চাঁদাবাজির চক্রান্ত বানচাল করার পরে কাউন্টি কাভেনে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ কর্মকর্তারা গতকাল বিকেলে একটি গোয়েন্দা নেতৃত্বাধীন এই অভিযানের সময় চারটি গাড়ীর তল্লাশি চালায়।
অনুসন্ধান ও তল্লাশির পর বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং গোলাবারুদ এবং বালাক্লাভাস সহ মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র তারা পায় এবং পরে এগুলো জব্দ করা হয়।
অভিযুক্ত সাতজনকেই বর্তমানে বাল্যকোনেল (Ballyconnell) এবং কাভান(Cavan) Garda স্টেশনে “ফৌজদারি বিচার আইন আইন ১৯৮৪” ধারায় আটক করা হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডে প্রকাশ্য স্থানে মুখ পুরো ঢাকতে নিষিদ্ধ করবে কিনা সে বিষয়ে আজ ভোট হবে।
যদিও মুসলিম মহিলাদের নিকাব পড়ে বা পুরো মুখ উড়না দিয়ে ঢেকে সুইস রাস্তায় দিয়ে হাটতে খুব একটা দেখা যায় না তার পরও প্রকাশ্যে স্থানে নিকাব পড়ে পুরো মুখ ঢাকা নিষিদ্ধ করবেন কিনা সে বিষয়ে সুইজারল্যান্ডে আজ ভোট হবে।
খবরে বলা হয় যে বিভিন্ন মতামতের ভিত্তিতে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে সংখ্যাগরিষ্ঠরা এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে আর অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলিতে – এবং কিছু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রগুলিতে বছরের পর বছর এই নিকাব নিয়ে বিতর্কের পরেই তারা ভোটাভুটির এমন একটি সিদ্ধান্ত আসে।
সুইসরা প্রস্তাবটিতে “পুরো মুখের ঢাকনা নিষিদ্ধ করার জন্য হ্যাঁ” ভোট দিতে প্রকাশ্যে প্রচারনা করছে।
যদিও বোরকা বা নেকাবের কথা তারা এখানে উল্যেখ করছে না তবে বিতর্কটি কী তা নিয়ে আর কোন সন্দেহ নেই।
“র্যাডিকেল ইসলাম বন্ধ করুন!” এবং “উগ্রবাদ বন্ধ করুন!”, এই স্লোগান লিখে কালো নিকাব পরা এক মহিলার ছবি যুক্ত পোষ্টার সারা সুইস শহর জুড়ে চারপাশে লাগানো হয়েছে।
ঐ পোষ্টারের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী একটি পোস্টারে লেখা : “এই অযৌক্তিক, অর্থহীন, ইসলাম-ফোবিক‘ অ্যান্টি-বোরকা ’আইনকে “নো” বলুন।”
নিষেধাজ্ঞার অর্থ হলো দোকান বা সপিং মলে এবং উন্মুক্ত স্থানে প্রকাশ্যে সম্পূর্ণরূপে কেউ তাদের মুখ ঢাকতে পারবে না।
খবরে বলা হয় যে কর্কের প্যাট্রিক স্ট্রীটে শত শত লোক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে করে।
র্যালিতে বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ কর্ক সিটি ঘিরে একাধিক চেকপয়েন্টে GARDA অবস্থান নেয়।
গত শনিবার ডাবলিন শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বিশাল লকডাউন বিরোধী প্রতিবাদ হয় যার ফলে বহু লোক গ্রেপ্তার হয়েছিল ঠিক তার একসপ্তাহ পর আজকে কর্কে এই লকডাউন বিরোধী প্রতিবাদ।
আজকেও কর্কের এই র্যালিতে “স্বাস্থ্য আইন আইন-১৯৪৭” লঙ্ঘনের দায়ে কর্কের প্যাট্রিক স্ট্রিট এলাকায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন:
Hundreds turn out to anti-lockdown protest taking place in Cork City https://jrnl.ie/5373876
আজ খুব সুন্দর দিন। সূর্যটা যদি আকাশের মেঘ কে ভেদ করে উকি দিতে সক্ষম হয় তাহলেই দ্বীপ রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড হেসে দিয়ে জ্যোতি ছড়ায়। কন কনে শীতে ১ ডিগ্রি তাপমাত্রার সূর্য রশ্নিতে চিকচিক করা আজকের দুপুর মহুর্তেই মনের গহিনে জমাট বাঁধা দুঃখ ব্যাথা ক্ষণিকের জন্য হারিয়ে যায়।
মনে হচ্ছে জানালার ফাঁক দিয়ে সূর্যের কিরণ আমার গায়ে জড়িয়ে যায়। জমাট বাঁধা দুঃখ বেদনার স্তুপে চাপা পড়া সুখ অনুভূতি জেগে উঠে। সূর্যস্নান করতে ব্যাকুল হয়ে যায় মন।
আমাদের মনটা আসলে কি সেটা আমরা জানিনা। মানুষের এই মনকে নিয়ন্ত্রিত করার ক্ষমতা আমাদের নেই। যারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তারা আসলে সাধু বা মহান ব্যাক্তি। অনিয়ন্ত্রিত মন আমাদের ইচ্ছা শক্তি বাড়িয়ে দেয়। ব্রেন কে নিয়ন্ত্রন করে ফেলে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত অনেক বিজ্ঞ মানুষ মনকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে অনেক পরামর্শ দিয়েছেন। মন যদি সচল না থাকে তাহলে কোন কাজ সফল ভাবে করা সম্ভব নয়। মন নিয়ন্ত্রিত না থাকলে কাজে মনযোগী হওয়া যায় না আর অমনোযোগী কাজ কখনো সফল ভাবে সমাপ্ত করা যায় না। অসমাপ্ত কাজের ফলাফল শূন্য। প্রতিটি কাজের সফল সমাপ্তী হল জীবনের সফলতা। মনকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে কয়েকটি ফর্মুলার কথা বলেছেন বিজ্ঞ জনেরা। যেমন ১. মেডিটেশন করা ২. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা ৩। চিন্তাকে চিহ্নিত করা ৪. মনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়া ৫. সংগীত থেরাপি অর্থাৎ গান শোনা ৬. মোমের আলোতে তাকিয়ে থাকা ৭. আশাবাদী হয়ে উঠা ৮. পর্যাপ্ত ঘুম ৮. মানবিক চিন্তা করা ৯. হাসি-খুশি থাকা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা আমাদের অনেক বার মন বা নফসকে নিয়ন্ত্রন করার তাগিদ দিয়েছেন। নফসের কারনেই মানুষ সকল ভাল এবং মন্দ কাজে লিপ্ত হয়।
নফসের বা মনের তাড়নায় নিজেকে খারাপ অশ্লীল আলোচনা ও কুকাজে নিয়োজিত করলে দুনিয়ায় বিশেষ ৩টি ক্ষতিতে পতিত হয়। তা হলো
১. মানুষের চেহারার সৌন্দর্য ও আকর্ষণ নষ্ট হয়ে যায়।
২. মানুষের উপর অভাব অনটন চেপে বসে।
৩. মানুষের হায়াৎ কমে যায়।
তাই নফসের যাবতীয় কুধারণা থেকে মুক্ত থাকা জরুরী। নফসের কুধারণা ও তাড়না থেকে মুক্ত থাকতে বেশি বেশি তাওবা-ইস্তেগফার করা জরুরী। আল্লাহর কাছে তাওবাহ ও ইস্তেগফারই মানুষকে নফসের কুধারণা ও ক্ষতি থেকে মুক্ত রাখতে পারে। তাই বেশি বেশি এ ইস্তেগফার করা-
হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।ঽ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত সকল ফর্মুলার চেয়ে আমার কাছে নামাজ বা সালাত হল মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে বড় ফর্মুলা। নিয়মিত সালাত আদায়ের মাধ্যমেই নিজেকে নিয়ন্ত্রন রাখা এবং ভাল কাজের প্রতি মনোযোগ দেওয়া সম্ভব।
লকডাউনের ফলে সবার মত আমার মনটাও বিষন্নতার গেরাকলে ঘুরপাক খাচ্ছে। আইরিশ আবহাওয়ার মত এই রোদআর এই বৃষ্টির মত। রৌদ্রের ঝিলিক দেখে বাহির হলেই কাকভেজা হয়ে মহুর্তেই ফিরে আসতে হয়। অলস সময়ের প্রতিটি মহুর্ত ভাল লাগার অন্তিম সুখ অনুভুতির ছোঁয়ার রেশ কাটিয়ে উঠতেই যন্ত্রনার ঢেউ এসে আগমন করে। হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় অন্ধকার কালিমা লেপন করে দেয়। ভাবনার জগত কে ঘূর্নিঝড়ের থাবায় দুমড়ে মুচড়ে এলোমেলো করে দেয়। মনকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা যেত তাহলে এই ঘূর্নিঝড়কে থামিয়ে সুখের ভেলায় ভেসে ভেসে সুখকে আলিংগন করতাম।
কবিতা পড়ি। গান শুনি, গল্প পড়ি কিন্তু এখন আর অন্তরে নাড়া দেয় না। ছোট বেলায় দেশে আমাদের কবিরা যে বৃষ্টি আর শীতের কবিতা আর গান লিখে আমাদের মনে ভালবাসার আল্পনা এঁকে দিয়েছিল, সেই আল্পনা আমার অন্তরে স্থির চিত্র ধারন করেছে।
সময়ের ব্যাবধানে মহাসমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া নাবিকের মত পথ হারিয়ে অজানা এক দ্বীপে চলে আসা আমি। জীবনের যত সুর তাল সব হারিয়ে গেছে। এখন আর কেউ গান গায় না এই বৃষ্টি ভেজা রাতে। বাড়ির ছাদ নেই, উঠান নেই, বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দ পায়না, দল বেধে বৃষ্টির তালে তালে নাচ করে না। টাপুর টুপুর বৃষ্টির শব্দে প্রেমিক প্রেমিকার মনে ভালবাসার আল্পনা আকেনা। শীতের পিঠার উৎসব নেই। শীতের আগমনী সময়ের সাথে সাথে গান লিখে না। গ্রীষ্মের খরতাপ নিয়ে গান হয়। সূর্যের প্রখরতার প্রতিক্ষায় প্রহর গুনে।
সৃষ্টির অপরুপ মিলন মেলায় আমি হারিয়ে গেছি। সময়ের পেছনে আমি দাঁড়িয়ে আছি। আমার অস্তিত্ব মিশে গেছে অজানা এক রহস্যে ঘেরা জীবনের সাথে। মনে হয় সঞ্জিব চট্রোপধ্যায় আমার জন্যই লিখে ছিলেন, বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।
আমি বনের মানুষ। হৈ হুল্লোড় কাদা মাটি আমার জীবন। সেন্ট্রাল হিটিং আরাম গালিচা আমার নয়। তপ্ত গরমে খোলা জানালায় মৃদু দখিনা হাওয়া আমায় পিছু টানে। গোল্লাছুট কানামাছি আমার ভালবাসার খেলা। শুকনো রুটি আলো বাজি আর সড়পুটির ঝুল আমার আয়েশি খাদ্য। মায়ের আচল আমার ভালবাসার সমুদ্র সৈকত। যেখানে অগ্নিদাহ দেহকে নিমিষেই শীতল করে দেয় মন প্রাণ । জোৎস্নার আলো ছড়িয়ে আলোকিত করে, অন্ধকারের ছায়া পথকে জয় করে নেয়।
জানালার সূর্য রশ্নি দীর্ঘকায় গাছগুলোর ভেতর দিয়ে আলোর খেলায় আমাকে কাছে টানে। গাছগুলি শীতের তীব্রতায় সবুজ পাতা গুলিকে হারিয়ে উলংগ হয়ে আমার মতই অসহায়। মনে হয় আলোর সাথে মহা মিলনে লিপ্ত হয়ে ফিরে পাবে তাদের আবরন সবুজ পাতা। বিবস্র দেহের গাছের কান্না আমি যেন শুনতে পাই। গাছ ও মানুষের মধ্যে এক পবিত্র সম্পর্ক। বেচে থাকার জন্য এই পবিত্র সম্পর্ককে আমি কি শ্রদ্ধা করি? মানুষ হিসাবে আমি কি খুব স্বার্থপর? যে গাছ আমাকে বেঁচে থাকার অক্সিজেন দেয়, ফল মুল দেয়, বাড়ি ঘর আসবাবপত্র তৈরি করার জন্য সহায়তা করে, আমরা তাদের জন্য কি করি?
আবেগতাড়িত মানব সভ্যতার অপরিণত বুদ্ধি আমায় গ্রাস করেছে। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর সুর্যের আলোকচিত্র আমার মনকে প্রভাবিত করছে? পাওয়া না পাওয়ার মোহে আমি নিমজ্জমান। ভুলে যাই আমার সত্যের সন্ধান। নিজের মনের শাসন আমিই করতে চাই। প্রভুর প্রতি ভালবাসা আর শ্রদ্ধায় যদি মাথা নত করি তাহলে সূর্যস্নান ও প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া উচিত। সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে আমার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করা উচিত। লোভ লালসা পরিহার করে, দাম্ভিকতার দেয়ালকে ভেংগে চুর্নবিচুর্ন করে নমনীয়তা আর ভালবাসার জলপ্রপাত ছড়িয়ে নিজেকে আলোকিত করা সম্ভব। স্রষ্টার সৃষ্টির অগাধ বিশ্বাস আর আরাধনার মাধ্যমে তা সম্ভব। পবিত্র আল কোরানে আল্লাহ বলেছেন,
হে মানুষ! তোমাদের ওপর আমার নিয়ামতকে তোমরা স্মরণ করো। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো শ্রষ্ঠা আছে কি, যে তোমাদেরকে আসমান ও জমিন থেকে রিজিক দেবে? তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। অতএব তোমাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে? –সূরা ফাতির: ৩
আল কোরানের এই বানীকে অবধাবন করলেই সকল হতাশা আর ক্লান্তি দূর করে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রিত করে সুন্দর জীবন ও আনন্দিত সময়কে গতিশীল করে সকল না পাওয়ার গ্লানি ভুলে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রিত করা উচিত।
কান টানলে যেমন মাথা আসে তেমনি বইমেলার কথা বলতে গেলে একুশের কথা চলে আসে। আমাদের ভাষার কথা চলে আসে। আর এ একুশ ও ভাষার কথা বলতে গেলে আমাদের সামনে অতীত চলে আসে। তাই সবাইকে বিনয় ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এ মহিমান্বিত অতীতের কথা একটু আলোকপাত করতে চাই।
আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালন করার যে গৌরব ও সৌভাগ্য অর্জন করেছি তা কোনো সহজসাধ্য বিষয় নয়। আলাদিনের চেরাগের ছোঁয়ায় তা পেয়ে যাইনি। এ পর্যন্ত আসতে আমাদেরকে অনেক খড়কুটো পোহাতে হয়েছে।
১৯৪০ সালে আমাদের বাঘা নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে যে বাংলাদেশের রূপরেখা বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা’ মি জিন্নাহ ও মি গান্ধীর রাজনৈতিক চাতুর্যের কারনে ভেস্তে যায়। ফলে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ বিভক্ত হলেও আমরা কোনো স্বাতন্ত্রিক রাষ্ট্র পাইনি। বিশাল ভৌগোলিক দূরত্ব থাকা সত্বেও আমাদেরকে পাকিস্তানের অংশীদার হিসেবে যাত্রা শুরু করতে হয়। মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই এ অনুভূতিকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু সেই স্বপ্নে প্রথমেই আঘাত হানেন তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্নর মি জিন্নাহ। তিনি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দেয়ার লক্ষ্যে ভাষার উপর আঘাত হানতে চাইলেন। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ ভাগ লোক বাংলায় কথা বললেও মি জিন্নাহ সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জোর করে উর্দুকে চাপিয়ে দেয়ার জন্য ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দানের নাগরিক সংবর্ধনা সভায় এবং ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে বিশেষ সমাবর্তনের ছাত্র সভায় বেশ জোরালো ভাষায় বললেন, “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।” তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্র না না বলে বিক্ষুভে ফেটে পরে। আর এ বিক্ষুভ আন্দোলনের সর্বশেষ স্ফূরণ ঘটে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্ররা মিছিল মিটিং করেন। শহীদ হন সালাম, শফিক, রফিক ও জব্বার সহ অনেকেই। এ আন্দোলনকে পেছন থেকে বেগবান করতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে অধ্যাপক আবুল কাশেমের প্রতিষ্ঠায় ১৯৪৭ সালে গড়ে ওঠা “তমুদ্দুন মজলিস” নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনও।
পরিশেষে ১৯৫৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। পরবর্তীতে কানাডায় বসবাসরত দুই গর্বিত বাংলাদেশী নাগরিক রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালামের উদ্যোগে আমাদের এ মহান ভাষা জাতিসংঘ কতৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা লাভ করে।
সুতরাং এ ভাষাকে মনে প্রাণে লালন করা, প্রজন্মের কাছে এর গুরুত্ব পৌছে দেয়া, এর সম্প্রসারণ ও এর গৌরবকে টিকিয়ে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সে লক্ষ্যে আমি কিছু কথা তোলে ধরছি।
প্রথমত – “অতি আধুনিক” বা ‘অতি যোগ্য” করে তোলার জন্য নিজেদের স্বকীয়তাকে আমরা যেনো বিসর্জন না দেই।
দ্বিতীয়ত – নিজের ঘর থেকেই মাতৃভাষার চর্চা শুরু করা আবশ্যক। প্রবাসে সন্তান সন্ততির সঙ্গে ইংরেজিতে বাক্য ব্যয় না করে বাংলায় কথা বলাই সমীচীন। বাংলা টিভি চ্যানেল গুলোর প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত।
তৃতীয়ত – আমরা আমাদের অন্য ভাষাভাষী প্রতিবেশী বা সহকর্মীদের কাছে একুশের অহংকার ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার গৌরব বিশ্লষণ করে তুলে ধরতে পারি।
চতুর্থত – বাংলা মিশনারি স্কুল গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। তা ছাড়া যেসব আইরিশ স্কুলে বাঙ্গালি সন্তানের সংখ্যা যথেষ্ট সেসব স্কুল কর্তৃপক্ষকে সপ্তাহে অন্তত একদিন ক্লাস চালু করার অনুরোধ করা যেতে পারে।
পঞ্চমত- “এসো বাংলা শিখি” অনলাইন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলা শিক্ষা দানের ব্যাবস্থা করা যেতে পারে।
ষষ্ঠত – ভাষার সম্প্রসারণ ও প্রচারে শহীদ মিনারের বিকল্প নেই। অন্যান্য দেশের মতো আয়ারল্যান্ডও এটি সবিশেষ প্রয়োজন। কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ সহ বাংলাদেশ সরকারকেও এ ব্যাপারে বিশদ ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসা উচিত।
ভাষা ও বইমেলা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির আত্মোৎসর্গ ও বীরত্বপূর্ণ স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক টুকরো চটের উপর ৩২টি বই সাজিয়ে সর্ব প্রথম বইমেলার সূচনা ঘটান। তারপর আর পিছু তাকাতে হয়নি। সেই বইমেলা আজ দেশের দেয়াল ছেদ করে পাড়ি জমিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তারই অনুসরণক্রমে গতবছর ১৬ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ডে প্রথম বারের মতো এক ঐতিহাসিক “অমর একুশে গ্রন্থমেলা” অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর করোনা জনিত মহামারী ও সীমাবদ্ধতার জন্য আমরা আমাদের এ প্রাণের মেলাকে সেভাবে উদযাপন করতে পারিনি।তাই বাধ্য হয়েই আজ ভার্চুয়াল বইমেলা উদযাপনের আশ্রয় নিতে হয়েছে। এ ভার্চুয়াল বইমেলা উদযাপনে যাদের একনিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে রয়েছে তাদেরকে আমি সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জানাই।
সমাজে কিছু মানুষ থাকেন, যারা নতুন কিছু নিয়ে ভাবেন, নতুন নতুন পথ প্রদর্শন করেন। তাদেরকে বলা হয় পথপ্রদর্শক। আয়ারল্যান্ডের বাঙ্গালি সমাজেও এমন কিছু পথপ্রদর্শক রয়েছেন যাদের বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা, সুনিপুণ পরিকল্পনা ও নিরলস প্রচেষ্টার ফলে এ দেশে বইমেলার যাত্রা ঘটানো সম্ভব হয়েছে। তবে যিনি এ বইমেলার প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা ও পুরোধা ব্যক্তিত্ব তার নামটি না বললেই নয়। তিনি হলেন, আমাদের সবার প্রিয় গুণীজন জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান।
বইমেলাকে আমি জ্ঞানের মেলা বলতে চাই। বইমেলা মানেই কেবল বইয়ের সমাহার নয়। বরং লেখক সাহিত্যিক সহ সমাজের গুনীজনের মিলনস্থলের নাম বইমেলা। এ মেলায় পাঠক-লেখক সবাই মেতে ওঠেন জ্ঞান-গর্ব আড্ডায়। অনুপ্রাণিত হন বই কেনা-বই পড়ায়। সুতরাং বিশ্বায়নের এ যুগে মানুষের পাঠাভ্যাস বৃদ্ধিতে বইমেলার ইতিবাচক প্রভাব ও অবদান যে অনেক বেশি তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আয়ারল্যান্ডস্থ বাঙ্গালি সমাজের জন্যও এ কথা সমানভাবে প্রযোজ্য। তাই নিজেদের ও পরবর্তী প্রজন্মের মেধার উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য আমাদের এ বইমেলাকে নি:স্বার্থ ভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে যাতে তা একদিন বিশাল মহীরুহে পরিনত হয়।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন এই সপ্তাহের মধ্যেই ৫০০,০০০ ভ্যাকসিন প্রদান শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি তাঁর টুইটার ভিডিও বার্তায় এ খবর প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সরকার এবং HSE তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ভ্যাকসিনের সুবন্টনের জন্য, এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সবাইকে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে কাজ করছেন।
তিনি জানান, আসছে সপ্তাহে বাকি সব স্বাস্থ্যকর্মী ও সত্তর ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদেরকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসবেন।
বর্তমানে করোনা সংক্রমণ, মৃত্যু ও ICU রোগীয়ের সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে।
তারপরেও প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সতর্কতার সাথে চলার জন্য অনুরোধ জানান।
আয়ারল্যান্ডে রিটেইল ব্যাংকগুলার ব্রাঞ্চ বন্ধের হিড়িক লেগেছে। একে একে বড় ব্যাংকগুলা তাদের কার্যক্রম ও ব্রাঞ্চ বন্ধের ঘোষণা দেয়।
ব্যাংক এর খরচ কমানো ও ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের যাতায়ত কমার কারণেই মূলত তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়া।
‘ব্যাংক অফ আয়ারল্যান্ড’ জানায় গত ২০১৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ২৫% গ্রাহকদের ব্রাঞ্চে স্বশরীরে গমন কমে যায় এবং করোনা পেন্ডেমিকের ফলে ৫০% এরও বেশি গ্রাহক ব্যাংকের ব্রাঞ্চে গমন করা কমিয়ে দেয়।
কিছুদিন আগে ওলস্টার ব্যাংক তাদের আয়ারল্যান্ডের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার কথা জানায়। অন্যদিকে ‘ব্যাংক অফ আয়ারল্যান্ড’ এবং AIB ব্যাংক দেশের বিভিন্ন স্থানের অনেক ব্রাঞ্চ বন্ধ করে হাই স্ট্রিট ব্রাঞ্চ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়।
তারই ফলশ্রুতিতে ‘ব্যাংক অফ আয়ারল্যান্ড’ তাদের ১০৩ টি ব্রাঞ্চ বন্ধের তালিকা প্রকাশ করে। বিকল্প হিসেবে তারা দেশের ৯০০ টি পোষ্ট অফিস ব্যাবহারের জন্য ‘আন পোষ্ট’ এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। ২০২০ অর্থবছরে ‘ব্যাংক অফ আয়ারল্যান্ড’ €৩৭৪ মিলিয়ন ইয়োরো লস এর স্বীকার হয়।
অন্যদিকে আরেক ব্যাংকিং জায়ান্ট AIB ব্যাংকও দেশজুড়ে ৫০০ টি ব্রাঞ্চ বন্ধের সাথে তাদের ব্রাঞ্চও বন্ধের ঘোষণা জানায় এবং গ্রাহকদেরকে অবগত করে। দুইদিন পরে AIB ব্যাংকের বাৎসরিক ফাইনান্সিয়াল রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। তাদের অর্ধ বাৎসরিক ইন্টেরিম রিপোর্টে প্রোফিট দারুণভাবে কমে যায়। ধারণা করা হচ্ছে ‘ব্যাংক অফ আয়ারল্যান্ড’ এর মত AIB ব্যাংকও লস এর স্বীকার হবে।
COVID এর কারণে অন্যান্য সেক্টরের মত ব্যাংকিং সেক্টরেও মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। ব্যাংক ব্রাঞ্চ বন্ধের ফলে হয়ত কিছু অপারেটিং খরচ কমাতে সক্ষম হবে।
ব্রাঞ্চ বন্ধের ফলে গ্রাহকরা হয়ত সাময়িকভাবে সমস্যায় পড়তে পারেন। কিন্তু বিকল্প হিসেবে পোস্ট অফিসের ব্যবহার এবং ডিজিটাল ব্যাংকিং এর সহায়তায় হয়ত সে সমস্যা ধীর্ঘায়িত হবেনা।
ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে প্রথমবারের মতো সাজা পেলেন কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
সোমবার দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন প্যারিসের একটি আদালত।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ে দুই বছরের সাজা স্থগিত করা হয়েছে। কারাগারে না গিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাড়িতে থেকেই দণ্ড ভোগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে শরীরে একটি ইলেক্ট্রিক ট্যাগ পরতে হবে তাকে।
২০০৭ সালের নির্বাচনী প্রচারের জন্যই লিবিয়া থেকে অর্থ সাহায্য নেয়ার অভিযোগ উঠে সারকোজির বিরুদ্ধে।
সেই তদন্তের সূত্র ধরে ২০১৩ সাল থেকে সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং তার আইনজীবী থিয়েরি হারজগের কথোপকথনে আড়ি পাততে শুরু করেন তদন্তকারীরা। সেই তদন্তে উঠে আসে, ভুয়া পরিচয়ে কেনা মোবাইলে কথা হয় দুজনের।
তদন্তকারীরা জানান, সারকোজির মোবাইলটি রেজিস্ট্রি করা ছিল পল বিসমুথ নামে।
তদন্তে আরও উঠে আসে, বেটেনকোর্টের থেকে অর্থ সংগ্রহের মামলা সম্পর্কিত গোপন তথ্য আজিবার্টের থেকে নেয়ার বিষয়ে বহুবার আলোচনা হয় সারকোজি-হারজগের।
নিজের রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে একটি তদন্তের গোপন তথ্যের বিনিময়ে ম্যাজিস্ট্রেট গিলবার্ট আজিবার্টকে বিদেশে লোভনীয় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সারকোজি।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেট গিলবার্ট আজিবার্ট এবং সারকোজির সাবেক আইনজীবী থিয়েরি হারজগকেও তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিপক্ষের তিনজনই আপিল করবেন বলে জানা গেছে।
সাবেক এ ফরাসি প্রেসিডেন্ট বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে এসেছেন।
গত বছর আজকের দিন পর্যন্ত সব ছিল স্বাভাবিক। মানুষের জীবন যাত্রা ছিল উচ্ছল, চঞ্চল ও আনন্দমূখর। স্বাভাবিকের মতই সবাই উইকেন্ড পালনের জন্য উদগ্রীব ছিল, শীতকে বিদায় জানিয়ে বসন্তকে বরণ করতে উচ্ছ্বসিত ছিল। কিন্তু মুহূর্তেই ভাটা পড়ে গেল সব আনন্দ, পরিকল্পনা ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়।
সেই থেকে এক বছর গত হয়ে গেল। এই এক বছরের ব্যবধানে আয়ারল্যান্ড সাক্ষ্য হল ৪,০০০ এর অধিক জীবনের পরলোকগত হওয়া এবং ২০০,০০০ এরও বেশী করোনা রোগীর।
প্রথম করোনা সনাক্তকরণ
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয় আয়ারল্যান্ডে। এর আগের দিন পর্যন্ত ইতালি ও চায়নার করোনার মহামারির খবরই শুধু শুনে আসছিল আইরিশরা, কিন্তু ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখে তার প্রত্যক্ষদর্শী হল।
প্রথম কোভিড কেইস উত্তর ইতালি থেকে ভ্রমণ করে এসেছে। সেই সময় প্রধান মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হলোহান বলেছিলেন, ‘’চিকিৎসা প্রদান আমাদের জন্য অস্বাভাবিক ছিলনা, আমরা গত কয়েক সপ্তাহ থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম’’।
প্রথম লকডাউন
এক বছর আগেও লকডাউন ছিল বিদেশী ধারণা, আর এখন তা হয়ে দাঁড়িয়েছে দৈনন্দিন জীবনেরই অংশ।
মার্চ এর ১২ তারিখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার প্রথম চলাচলে কঠোরতা আনার নির্দেশ দেন। কিন্তু করোনার ঊর্ধ্বমুখী মনোভাবে ২৭ মার্চে পরিপূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা দেন। সেই যে শুরু, বছর গড়িয়ে গেলেও আজও লকডাউনের খড়গ থেকে মুক্তি মেলেনি।
লিও ভারাদকারের প্রথম ঘোষণা ওয়াশিংটন থেকে
গত বছর এই দিনেও সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছিল সেইন্ট পাট্রিক ডের জন্য। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে মার্চের ৯ তারিখে তা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
প্রায় ৫০,০০০ দর্শক উত্তেজনায় কাঁপতেছিল আয়ারল্যান্ড বনাম ইটালির রাগবি ম্যাচ উপভোগ করবে বলে। এর পর অনেক তর্ক বিতর্কের মাঝে ৭ মার্চের ম্যাচটি ২৬ ফেব্রুয়ারিতে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। এর ঠিক তিনদিন পরেই ধরা পড়ে প্রথম করোনা রোগী।
ইতালি বনাম আয়ারল্যান্ডের রাগবি ম্যাচ বাতিল ঘোষণা
প্রথম কোভিড কেইস ধরা পড়ার পর উত্তর ডাবলিনের স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পর ১২ মার্চে আয়ারল্যান্ডের সব স্কুল ২৯ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এরপর তা বর্ধিত করে সেপ্টেম্বর এর আগ পর্যন্ত না খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ভ্যাকসিনের আগমন
এক বছর আগেও ভ্যাকসিন ছিল অন্য গ্রহের বস্তু। করোনার আগে সবচেয়ে দ্রুততম ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও ব্যবহার যোগ্য হতে সময় নেয় ৫ বছর। কিন্তু এক বছরের ব্যাবধানে অন্যান্য দেশের সাথে আয়ারল্যান্ডও করোনার ভ্যাকসিন পেতে সমর্থ হয়।
ভ্যাকসিন, এক বছর আগেও যা ছিলনা, এক বছর পর অন্তত এই একটা জীবন রক্ষাকারী বস্তু এখন হাতের নাগালে।
৭৯ বছর বয়স্কা অ্যানি, আয়ারল্যান্ডের প্রথম ভ্যাকসিন গ্রহণকারী
এক বছর আগের এই সময়ে সমগ্র জাতির অন্ধকার সুড়ঙ্গে প্রবেশ, যেখানে ছিলনা ছিটেফোঁটা আলোর নাগাল। আজ এক বছর পরে এসেও সেই সুড়ঙ্গের মাঝেই পড়ে থাকা। কিন্তু পার্থক্য হল এখন মিটিমিটি আলোর দেখা পাওয়া যাচ্ছে, যা এক বছর আগের এই দিনেও ছিলনা।
লন্ডন থেকে কিশোর বয়সে পালিয়ে সিরিয়া গিয়ে জঙ্গিদল ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়া শামীমা বেগমকে যুক্তরাজ্য ফিরতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার এ রায় দেওয়া হয় বলে জানায় বিবিসি।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়া ওই রায়ে বলা হয়, শামীমাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি না দেওয়া তার অধিকারের লঙ্ঘন নয়।
আইএসে যোগ দিতে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে পূর্ব লন্ডনের আরো দুই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে সিরিয়া পালিয়ে যান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা। পরে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করে। যার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই লড়তে দেশে ফেরার আবেদন করেছিলেন শামীমা।
২১ বছরের শামীমা এখন উত্তর সিরিয়ায় সশস্ত্র রক্ষীদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি শরণার্থী শিবিরে আছেন। সিরিয়ায় আইএস উৎখাত অভিযানে আশ্রয় হারিয়ে শামীমার এই শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই হয়। ২০১৯ সালে সেখানে প্রথম তার খোঁজ মেলে। সেখানে তার একটি সন্তানও হয়েছিল, যে পরে মারা যায়।
তখন থেকেই শামীমা দেশে ফেরার আবেদন জানিয়ে আসছেন। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে ওই সময়ের যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার দেশে ফেরায় বাধা দেন। শামীমার দেশে ফেরার পথ চিরতরে বন্ধ করতে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্বও কেড়ে নেওয়া হয়।
এরপর শামীমা তার আইনজীবীর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন।
শামীমার আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, ব্রিটিশ সরকার `অবৈধভাবে’ তাকে রাষ্ট্রহীন করেছে এবং তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাছাড়া, যুক্তরাজ্যে ফিরতে না পারলে শামীমার পক্ষে আইনি লড়াইও ঠিকমত চালানো সম্ভব নয়। কারণ, সিরিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে শামীমা তার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে কিংবা ভিডিও কলের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিতে পারছেন না।
গত বছরের জুলাইয়ে আপিল আদালত তাদের রায়ে জানায়, শামীমাকে সুষ্ঠু শুনানি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সিরিয়ার ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় তার পক্ষে আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। এ কারণেই তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া উচিত।
যুক্তরাজ্য সরকার পরে সুপ্রিম কোর্টকে আপিল আদালতের ওই রায় পুনর্বিবেচনা করতে বলে। শুক্রবার তার রায় এলো।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট লর্ড রিড বলেন, সরকারের শামীমা বেগমকে যুক্তরাজ্যে ফিরতে বাধা দেওয়ার পূর্ণ অধিকার আছে।
তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতিক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সব আপিল গ্রহণ করছে এবং শামীমা বেগমের ক্রস-আপিল বাতিল করছে।”
শামীমার বিষয়ে আপিল আদালত ভুল রায় দিয়েছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মামলার বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মত দেন লর্ড রিড।
বলেন, ‘‘আপিল আদালত ভুলবশত বিশ্বাস করেছিল, যখন একজন ব্যক্তির সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকারের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার সুরক্ষায় প্রয়োজনীয়তা সাংঘর্ষিক অবস্থায় থাকে তখন অবশ্যই ব্যক্তির সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
‘‘কিন্তু সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার সব সময় সব পরিস্থিতির উপরে থাকতে পারে না, বিশেষ করে বিষয়টি যখন জনগণের নিরাপত্তার সঙ্গের জড়িত।”
তাই সুষ্ঠু বিচার পেতে শামীমাকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে বাধ্য করা উদ্ভূত পরিস্থিতির যথাযথ সমাধান নয় বলেই মনে করেন লর্ড রিড। তবে শামীমা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ অবস্থায় না পৌঁছানো পর্যন্ত ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে তার আইনি লড়াই বিরত রাখা যেতে পারে।
তবে তিনি বলেন, ‘‘ওটাও সঠিক সমাধান নয়। কারণ, ওটা সম্ভব হতে কত দীর্ঘ সময় লাগবে সেটাও কেউ জানে না। বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে তাতে এই উভয়সঙ্কটের সঠিক কোনো সমাধানই আসলে নেই।”
‘লিবার্টি’ নামে একটি মানবাধিকার গ্রুপ শামীমাকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে। তারা বলেন, শামীমাকে নিয়ে সর্বশেষ রায় ‘মারাত্মক বিপদজনক নজির’ স্থাপন করেছে।
লিবার্টির আইনজীবী রোজি ব্রিগহাউজ বলেন, ‘‘নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সিরিয়া থেকে শত শত মানুষকে নিরাপদে ফেরার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সরকার শুধু শামীমা বেগমকেই লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নিয়েছে। এমন করলে ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে না।”
কর্কে আইরিশ তিন ভাইয়ের মৃত্যুতে মানুষের শোক। তারা স্থানীয়ভাবে প্যাট্রিক (60), উইলিয়াম (66) এবং জন (59) হেনেসি নামে পরিচিত ছিল।
খুন এবং আত্মহত্যার মধ্যে দিয়ে তিন ভাইয়ের লাশ পাওয়া যাওয়ার পরে কাউন্টি কর্কের কমিউনিটির সকলে হতবাক।
পুলিশের এক অপারেশনের পরে তিনজনকেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
এই ভয়াবহ ঘটনাটি গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১.৪০ মিনিটে ঘটে। পুলিশ খবর পেয়ে কর্কের কার্গারোম শহরের একটি বিচ্ছিন্ন এলাকার খামার বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়, এই খামার বাড়িটি – উত্তর কর্ক শহড় ও শমিচেলস্টাউন থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
পুলিশ প্রথমে একজনের মৃতদেহ পায় যার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল যার কারণে মারা গিয়েছিলেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। তারা তত্ক্ষণাত্ জায়গাটি সিল করে সশস্ত্র পুলিশ ইউনিটে ডেকে আনে।
এরপরে সশস্ত্র পুলিশ ইউনিট একটি আউটহাউসে প্রবেশ করে যেখানে তারা দ্বিতীয় ব্যক্তিকে আবিষ্কার করে এবং তার মাথায়ও ভয়াবহ আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে, এই দুই ব্যাক্তিদের প্যাট্রিক এবং জন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
পুলিশ ইউনিট দ্রুততার সাথে তৃতীয় ব্যাক্তি উইলি নামে পরিচিত উইলিয়ামের সন্ধানের জন্য পুলিশ সার্স বাহিনীর মাধ্যমে দেশব্যাপী এক জরুরি সতর্কতা জারি করে – পুলিশ যাকে সন্দেহ করছিল যে তিনি নিখোঁজ আছেন। পুলিশ একটি লাল টয়োটা করলা ভ্যানের সন্ধানও করছিল। তবে তদন্তকারীরা পরে বুঝতে পেরেছিল যে নিখোঁজ ভাই হলেন জন এবং উইলিয়াম ঘটনাস্থলে মারা গিয়েছিলেন।
ভ্যান গাড়িটি সন্ধানের জন্য গণমাধ্যমে একটি আবেদন প্রচারে পর আজ শুক্রবার সকাল দশটার পরে পুলিশ বাড়ি থেকে অল্প দূরে কিল্ল্লুইগের একটি খামার পার্কে ভ্যান গাড়িটি খুজে পায়।
শুক্রবার সকালে খুজে পাওয়া ভ্যান গাড়িটির আশেপাশের এলাকায় পুলিশ একটি বিশাল অনুসন্ধান অভিযান চালায় যার ফলশ্রুতি প্রায় দুপুর ১ টার দিকে পুলিশ ড্রয়ের(Drough) কাছে ফানচাঁই(Funcheon) নদীতে জনের মরদেহটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়।
সূত্র বলেছে যে পুলিশ সন্দেহ করছে প্যাট্রিক এবং উইলিয়ামকে একটি কুড়াল দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল এবং জন পানিতে ডুবে মারা গিয়েছে।
গোয়েন্দারা বিশ্বাস করেন যে এটি একটি হত্যাকাণ্ড এবং একই সাথে আত্মহত্যার ঘটনাও দৃশ্যমান। একটি তত্ত্ব অনুসন্ধান করে ধারণা করা হচ্ছে যে ভাইরা তাদের ৫০ একরের জমির মধ্য থেকে একটি ছয় একর সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে দন্দে জড়িয়ে পরে ছিল।
”ধারণা করা হচ্ছে, জমি বিক্রয় নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয়েছিল এবং গবাদি পশু বিক্রয় বা পরিচালনা নিয়ে পরিবারে এই বিরোধ আরও বেড়ে গিয়েছিল। ”
পুলিশের এই বিশাল অপারেশনটিতে কর্ক শহর থেকে পুলিশের সশস্ত্র ইউনিট এবং ফর্ময় (Fermoy) ভিত্তিক নর্থ জেনারেল কর্ক অঞ্চল থেকে গোয়েন্দাসহ পুড়ো অঞ্চলজুড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অংশ নেয়।
এখানে প্রচুর সংখ্যক ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি Dog ইউনিট এবং পুলিশের warer ইউনিট উপস্থিত ছিল।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বেশ কয়েকটি স্থানে ফরেনসিক পরীক্ষা নিড়িক্ষা চলমান ছিল।
প্রাথমিক ভাবে আবিষ্কার করা হয় যে খামারবাড়িটি যে স্থানে করা হয়েছিল সেটি একটি সরু, বাঁকানো লেনওয়ের শেষে। ঘটনাস্থলের কাছে কয়েকটি বাড়ি রয়েছে।
খামারটি ঘিরে রয়েছে জলাবদ্ধ খামার জমি, ছোট উচু নিচু পাহাড়ের পাশ দিয়ে একটি ছোট স্রোতের ঝরণা দ্বরা নেমে চলছে গেছে।
এটি ধারনা করা হচ্ছে যে আত্মীয়স্বজন সহ বেশ কয়েকজন লোক গত রাতে এই ঘটনার আগেই পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে এবং মৃত এই তিন ব্যক্তির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
প্রতিবেশীরা ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অস্বীকার করে তবে এক জন স্থানীয় ব্যাক্তি জানিয়েছেন যে তাদের ভাইদের মধ্যে একজনের সাথে টায়ারের ব্যবসায় কাজ করার কারনে পরিচিত ছিলেন।
এটা জানা গেছে যে উইলি জমিতে কৃষি কাজ করতেন এবং অন্য দুই ভাইয়ের একই জমিতে প্লট ছিল, জানা গিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে তারা কেবল মুদি দোকানের মালাল সংগ্রহ ও ডেলিভারী করতেন ।
স্থানীয় এক সুত্র থেকে জানা যায় যে প্যাট্রিক বিবাহিত ছিলেন এবং তাদের সন্তান ছিল, যার মধ্যে ২০১২ সালে একটি সন্তান মারা যায়।
“তারা পুরানো ধাঁচের মানুষের মত ছিল এবং নিরিবিলি কৃষিকাজ করত। আসপাশের লোকজন জানতে পারে যে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের মধ্যে জমির বিষয়ে বিরোধ দেখা দেয়।
তথ্যসুত্র:
Shock in rural Cork community as three brothers found dead https://jrnl.ie/5366658
সভ্যতার বিবর্তনে অভিবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, বৈরী আবহাওয়া, দুর্যোগ, যুদ্ধবিগ্রহ নানা কারণে তা অব্যাহত রয়েছে।
বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনের জন্য অভিবাসীরা নিজ দেশ ছেড়ে উন্নত দেশের উদ্দেশে পাড়ি জমান। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অভিবাসীদের অন্যতম পছন্দসই গন্তব্য। প্রতি বছর লাখ লাখ অভিবাসী ইউরোপের উদ্দেশে পাড়ি জমান।
প্রতি বছর বাংলাদেশি নাগরিকরাও ইইউর উদ্দেশে পাড়ি জমান যেমন- গত ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে প্রায় ১১ হাজার ২৬৯ জন বাংলাদেশি অভিবাসী আশ্রয় (এসাইলাম) আবেদন করেন। এর মধ্যে মাত্র ৩৭৪ জনের শরণার্থী হিসেবে আবেদন গ্রহণযোগ্য হয় এবং ৮৭ জনকে সাবসিডিয়ারি প্রটেকশনের আওতায় আবেদন গ্রহণ করেন। সর্বমোট ৯ হাজার ২৩৯ জন বাংলাদেশি আশ্রয় আবেদনকারীকে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়; বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার ৩২টি আবেদন সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ লাখ ৬১ হাজার ৩০০ জন অভিবাসী আশ্রয় আবেদন করেন। যদিও তা গত ২০১৯ সালের তুলনায় ৩১ শতাংশ কম। এদের বেশিরভাগই সিরিয়া, আফগানিস্তান, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া, ইরাক এবং পাকিস্তানের নাগরিক। আমাদের সাবকন্টিনেন্টে বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ভারত এবং নেপালের অবস্থান। উক্ত আবেদনের ৩২ শতাংশ আবেদন মঞ্জুর করা হয়। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলাদেশিদের প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদনই প্রত্যাখ্যান হচ্ছে।
পরবর্তীতে দেখা যায়, এই অভিবাসীরা যে দেশে আশ্রয় আবেদন করেছেন সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ইউরোপের অন্য দেশে পাড়ি জমাতে হয়। সীমান্তে চেকিং না থাকায় খুব সহজেই তারা অন্য দেশে পাড়ি জমায়। এক সময় স্বপ্নের ইউরোপ ছেড়ে দেশে ফেরত যেতে হয়। কেননা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ইউরোপে বসবাস করা সম্ভব হয় না।
বিবাহবিচ্ছেদের এক মামলায় পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনে গৃহকর্মের মজুরী হিসাবে স্ত্রীকে ৫০ হাজার ইউয়ান (৭,৭০০ ডলার) ক্ষতিপূরণ দিতে স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছে চীনের একটি আদালত।
আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, ওই ব্যক্তির ডাক নাম চেন, গত বছর স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য মামলা করেছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ওয়াং নামে ঐ নারী প্রথমে বিবাহবিচ্ছেদে আপত্তি করলেও পরে মেনে নেন, কিন্তু পাঁচ বছরের গৃহকর্ম এবং একমাত্র ছেলের লালন-পালনের জন্য স্বামীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
মিজ ওয়াং আদালতে বলেন, তার স্বামী এসব কাজে তেমন কোনো সাহায্যই করেননি।আদালত ঐ নারীর দাবি মেনে নেন এবং প্রতি মাসে ২০০০ ইউয়ান খোরপোষ ছাড়াও গত পাঁচ বছরের গৃহকর্ম এবং সন্তানের দেখাশোনার মজুরী হিসাবে এককালীন ৫০,০০০ ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য স্বামীকে নির্দেশ দেয়।
ঐ আদালতের বিচারক সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, বিবাহ বিচেছদ হলে স্থাবর সম্পত্তি আধাআধি ভাগ হয়। কিন্তু, তিনি বলেন, “গৃহকর্মেরও একটি মূল্য রয়েছে।“
চীনে এ বছর নতুন এক পারিবারিক আইন জারীর পর আদালত এই রায় দিল। নতুন এই আইনে বলা হয়েছে, দাম্পত্য জীবনে যিনি সন্তান পালন বা বয়স্কদের দেখাশোনার জন্য অধিকতর দায়িত্ব পালন করবেন, বিবাহ বিচ্ছেদের সময় তিনি সেসব কাজের ক্ষতিপূরণ পাবেন। এমনকি বিবাহিত জীবনে স্বামীর ব্যবসা বা অন্য কোনো আয়ে তার ভূমিকা থাকলে তার ক্ষতিপূরণও তিনি পাবেন।
চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই মামলা নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। দেশটির মাইক্রোবগ্লিং প্ল্যাটফর্ম উইবোতে এ বিষয়টি ৫৭ কোটিবার দেখা হয়েছে।
গৃহকর্মের মূল্য নিয়ে বিতর্কের মধ্যে অনেকেই বলেছেন ক্ষতিপূরণে পরিমাণটি খুব কম হয়ে গেছে। কেই কেউ বলছেন, সংসারে পুরুষদের আরও বেশি ঘরের কাজ করা উচিত।
যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি দম্পতি নিহত হয়েছেন। গতকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বার্মিংহাম শহরের সন্নিকটে রেডিচ A441 মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- আবদুর রহমান মুয়িম (৪৮) ও তার স্ত্রী পাপিয়া বেগম (৩৮)। ১৯৯৩ সাল থেকে বার্মিংহামে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন তারা। তারা বার্মিংহামের বচলিথের আম্বাসলি রোডের বাসিন্দা।
নিহত ব্যবসায়ী আবদুর রহমান মুয়িম মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের বিনয়শ্রী গ্রামের বাসিন্দা। তার স্ত্রীর বাবার বাড়ি সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের বাজরাকোনা গ্রামে।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলেন, ওই মহাসড়কে তিনটি প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাপিয়া বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার স্বামী আব্দুর রহমান মুয়িমকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিকটস্থ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আবদুর রহমান ও পাপিয়া বেগমের এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মাঝে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশী দম্পতির এই মৃত্যুর খবরে বার্মিংহাম তথা যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
”নীল নবঘনে আষাঢ় গগণে, তিল ঠাঁই আর নাহিরে, ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে”। কবি গুরুর কথা না শুনে উপায় নেই। গত দুইদিন ধরে সমগ্র আয়ারল্যান্ডব্যাপী হচ্ছে মুশলধারে বৃষ্টি। যার ফলশ্রুতিতে প্লাবিত হয়েছে কিছু কিছু অঞ্চল। তন্মদ্ধে কর্ক অন্যতম।
কর্ক শহরসহ প্লাবনে ভাসছে কর্কের বহু অঞ্চল। প্রায় হাজারখানেক ঘরবাড়ি হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। কর্ক সিটি কাউন্সিল কর্কের লি রোড, ক্লোঘওর রোড ও ইনিসকারা রোড বন্ধ রেখেছে সাময়িকভাবে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্ক সিটি কাউন্সিল এর পক্ষ থেকে মেট এইরেন, ESB, গার্ডা, HSE, ডিফেন্স ফোর্সসহ অনেকেই নিয়োজিত আছে পরিস্থিতি মোকাবেলায়।
গতকাল সন্ধ্যা ৮ টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৯ টা পর্যন্ত কর্ক, কেরি ও ওয়াটারফোর্ড এর অনেক জায়গায় জারি আছে ভারি বর্ষণের ইয়েলো সংকেত।
এছাড়াও কাভান, মোনাহান, ক্লেয়ার, লিমেরিক এবং কোনাক্ট অঞ্চলেও ইয়েলে সংকেত জারি রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ০৮.৩০ তার দিকে ওয়েক্সফোর্ডের এক বাড়িতে ঢুকে অস্রের মুখে টাকা দাবি করে। এরপর ডাকাতরা টাকাপয়সা যা পেয়েছে তা নিয়েই সটকে পড়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে কিছু টাকা এবং জিনিসপত্র ছিল, তবে কেউ শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি।
ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে গার্ডা সাক্ষী কেউ আছে কিনা তার জন্য খোঁজ নিচ্ছে। সবাইকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে যদি কেউ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী থেকে থাকে তারা যেন গার্ডার সাথে যোগাযোগ করেন।
তথ্য প্রদানের জন্য যে কেউ গার্ডার সাথে যোগাযোগ করতে পারে। সে জন্য গার্ডা যোগাযোগ নাম্বার প্রদান করেন। নাম্বার গুলো হচ্ছে 053 94 30690 এবং 1800 666 111 (গোপন নাম্বার)। প্রত্যক্ষদর্শীরা চাইলে যেকোন গার্ডা ষ্টেশনেও যোগাযোগ করতে পারেন।