Chat GPT – আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?

0
869

আপনার কি দরকার? বা কি জানতে চান? সব প্রশ্নের উত্তর এবং সব সফট কাজ করে দেয়ার সংকল্প নিয়ে আপনার দুয়ারে Chat GPT. ভিসা আবেদন করবেন, কভার লেটার দরকার? চাকুরীর আবেদনে কভার লেটার চাই? সোশ্যাল কিংবা ইমিগ্রেশন অফিস থেকে লেটার এসেছে, উত্তর কি দিবেন ভাবছেন? জানতে চান পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা কি? জানতে চান মানুষের মস্তিষ্কের নিউরনের দৈর্ঘ্য কত? জানতে চান ভরবেগ, ত্বরণ কিংবা গতির সূত্র কি, আলোর গতি কত কিংবা কত তাপমাত্রা নর্থ পোলে? সব প্রশ্নের উত্তর আপনাকে নিমিষেই দিয়ে দিবে এই যুগান্তকারী আবিষ্কার Chat GPT.

বিশ্বের নামকরা প্রযুক্তি কোম্পানি মাক্রসফট ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে Chat GPT খরিদ করার পরিকিল্পনা তো আর এমনিতেই নেয় নি।

প্রযুক্তি দুনিয়ার এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় Open AI তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) চ্যাটবট ‘Chat GPT’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর চ্যাটবটটি যেকোনো বার্তার উত্তরে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে দিতে পারে। নির্ভুল শব্দচয়ন এবং ভাষা ব্যবহার করায় চ্যাটবটের লেখা পড়ে বোঝার উপায় নেই সেগুলো মানুষ না যন্ত্র লিখেছে। চ্যাটবটটি বাংলায়ও সমানভাবে পারদর্শী।

গুগলে একটা তথ্য আপনাকে ঘেঁটে সময় নিয়ে বহু তথ্যের মাঝ থেকে খুঁজে নিতে হয়, কিন্তু এই চ্যাটবটটি নিমিষেই আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করে আপনার সামনে এনে হাজির করবে। Chat GPT এর বিশেষত্ব হচ্ছে এইটা অনলাইনে যত সোর্স রয়েছে (গুগল, উইকিপিডিয়া, অনাইলিন ভিত্তিক বই ইত্যাদি) থেকে সার্স করে প্রয়োজনীয় তথ্য উত্থাপন করে থাকে।

২০১৯ সালের জুনে, GPT-3 (Generative Pre-trained Transformer- 3) মডেলটি প্রথম ঘোষণা করা হয় এবং নভেম্বরে OpenAI API-এর মাধ্যমে সীমিত সংখ্যক পরীক্ষকে কাছে এটিকে উন্মুক্ত করা হয়। এটি বিশেষ করে ২০২১ সালের পরের কোন তথ্য, ঘটনা সরবরাহ করতে পারে না, কারণ বর্তমান ভার্সন এর আপডেট ২০২১ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান।

২০২১ সালের ভার্সনেই এই অবস্থা, যা ছিল মূলত পরিক্ষামূলক ভার্সন। যদি সম্পূর্ণ এবং আপডেটেড ভার্সন পাবলিশ হয়, তাহলে কল্পনা করা যায়!

ধরনা করা হচ্ছে Chat GPT সব প্রযুক্তিকে ছাড়িয়ে যাবে। এর যেমন সুফল পাওয়া যাবে তেমনি থাকতে পারে ভয়ানক কুফল। যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স যদি সব কাজ করতে সক্ষম হয়, তাহলে মানুষের প্রয়োজন পুরিয়ে যাবে। যার ফলে চাকুরী থাকবেনা অসংখ্য মানুষের।

Chat GPT যদি রোগের প্রেসক্রিপশন দিতে পারে তাহলে কমে যাবে ডাক্তারের চাহিদা, যদি তৈরি করতে পারে ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট তাহলে কমে যাবে অ্যাকাউন্টেন্টের চাহিদা, যদি কোডিং লিখতে পারে তাহলে থাকবেনা প্রোগ্রামারদের চাহিদা, যদি ড্র করতে পারে ডিজাইন তাহলে থাকবেনা ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা। এমন শত কাজ Chat GPT করে দিতে পারবে, যার ফলে বেকার হয়ে পড়ব হাজারো প্রফেশনাল।

Chat GPT – আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?

Chat GPT এখনো তার লাইফ সাইকেলের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এখনো অনেক তথ্য Chat GPT দিতে অক্ষম, কিন্তু সময়ের সাথে এই AI যে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে হাজির হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বৃহৎ টেকনোলজি জায়ান্ট মাক্রোসফট Chat GPT কেনার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যে। গুগলের মত প্লাটফর্মও হয়ত একদিন এমন প্রযুক্তির কাছে সালাম ঠুকে বিদায় নেয়া লাগতে পারে।

গুগলের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলতেছে Chat GPT

একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তির পরিবর্তন নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মতই ছড়িয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মানব সভ্যতাকে একটি ভিন্ন রূপে দেখতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবেনা। সব কিছু এত দ্রুতই হচ্ছে যে, কোন কিছুকেই এখন আর আকাশ কুসুম ভাবার জো নেই।

Facebook Comments Box