কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের ২০২৪ এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা

0
601

কাউন্সিলর জনাব আবুল কালাম আজাদ তালুকদার, যিনি গত মে ২০১৯ এর কাউন্সিল নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। সে থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কাউন্সলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন দক্ষতা ও সফলতার সাথে। তাঁর কাজের স্বীকৃতস্বরূপ তিনি এক টার্ম লিমরিক সিটি ডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাছাড়াও তিনি পিস কমিশনার হিসেবে সন্মানজনক কাজের দায়িত্বে রয়েছেন। জনাব আজাদ তালুকদার আভাস দেন যে, এই বছরের মেট্রোপলিটন মেয়র হিসেবেও নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এক কথায় বলা চলে কাউন্সিলর হিসেবে জনাব তালুকদার সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তারই প্রেক্ষিতে এবং কাউন্সিলর হিসেবে সেবার পরিধিকে আরও বৃদ্ধি করতে আবারও কাউন্সিলর পদে লড়ার আভাস প্রদান করেন।

গত ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে লিমরিকে অনুষ্ঠিত আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় কমিউনিটি সংগঠন ‘’অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’’ এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের বক্তব্যে জনাব আজাদ তালুকদার ২০২৪ সালের কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের কথা ব্যাক্ত করেন। তারও আগে লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের মেয়র জনাব ফ্রান্সিস ফলে জনাব তালুকদারকে আগামীর কাউন্সিলর হিসেবে সহায়তা প্রদানের কথা জানান। উক্ত অনুষ্ঠানে মেয়র বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

জনাব আজাদ তালুকদার বিগত নির্বাচনে জয়ের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বাংলাদেশিদেরকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘’নির্বাচনে সবার ভোটই তাঁর দরকার, কিন্তু বাংলাদেশিদের প্রত্যক্ষ সমর্থন ব্যাতিত উনি আজকের অবস্থানে থাকতে পারতেন না, বাংলাদেশীরাই হচ্ছে তাঁর মূল শক্তি’’। বিগত নির্বাচনে বাংলাদেশীগন যে তাঁর নির্বাচনে জেতার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন, তার উল্লেখ করেন।

কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় তিনি মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র কবরস্থানের স্থান নিশ্চিত করেন। ভবিষ্যতে সে কবরস্থানকে উন্নত করার পরিকল্পনার কথা জানান কাউন্সিলর। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে যখন যার সমস্যা তাঁর সাথে যোগাযোগ করলে তা সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। যার বদৌলতে অনেকেরই উপকার হয়েছে। অনেক সহায়তা তাঁর সাধ্যের বাহিরে থাকলেও বিভিন্নভাবে চেষ্টার ত্রুটি করেন নি।

অনেকেই প্রত্যক্ষ করেছেন, বিগত নির্বাচনের আগে জনাব তালুকদার তৎকালীন মেয়র এবং বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের নিয়ে আন্ডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্ট নিয়ে একটি সভার আয়োজন করেছিলেন। ঐ সভাটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করেছিল সে সময়ে। ইমিগ্রান্টদের সমস্যা প্রথমবারের মত সেসময় সংসদে উত্থাপন করেছিলেন একজন সংসদ সদস্য। জনাব তালুকদার চেষ্টা করেছিলেন ইমিগ্রান্টদের বিষয় উপর পর্যন্ত পৌঁছাতে। কারণ ইমিগ্রান্টদের সমস্যা কেবলমাত্র ইমিগ্রেশন অফিসেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু পরে যখন বিভিন্ন মহলে এ বিষয় নিয়ে নাড়া ছাড়া হল তখনই কেবলমাত্র নড়েছড়ে উঠে প্রশাসন। ১৭,০০০ আন্ডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদেরকে বৈধতা প্রদানে ঐ বিষয়গুলা যে কাজে দিয়েছে তা বললে অত্যুক্তি হবে না।

জনাব আজাদ তালুকদার বলেন, তিনি সবসময় চেষ্টা করেন কাউন্সিলর হিসেবে প্রাপ্ত সুযোগটা কাজে লাগিয়ে যতদূর সম্ভব ইমিগ্রান্ট কমিউনিটিকে সহায়তা করা। বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশি কমিউনিটিকে উপরে তুলে ধরতে ব্রিজ বা সেতু হিসেবে নিজেকে কাজে লাগানো।

তিনি জানান, কাউন্সিলর হিসেবে কোন অভিজ্ঞতা পূর্বে ছিলনা। এবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামনে তিনি আরো ভালো কিছু ভালোভাবে করতে পারবেন বলে জানান। তবুই তিনি জানান, প্রথম কাউন্সলর হিসেবে তিনি সফল, কাউন্সিলে সবাই তাঁর কাজের প্রতি একাগ্রতার ভূয়সী প্রশংশা করেন। ডেপুটি মেয়র, পিস কমিশনার, পুলিশিং কমিটির (গার্ডা) সদস্য এবং আগামীতে মেট্রোপলিটন মেয়র হিসেবে মনোনয়ন সবই তার প্রমাণ।

ডেপুটি মেয়র হিসেবে আজাদ তালুকদার

একজন কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার শুধু বাংলাদেশিদেরই কাউন্সিলর নন। তিনি আইরিশসহ লিমরিকে যত অন্যান্য কমিউনিটি আছে সবার কাউন্সিলর। সুতরাং সবার জন্যই তিনি সমানভাবে কাজ করেন। সে সাথে সিটির অন্যান্য কাজের দায়ভারও তাঁর উপর ন্যাস্ত থাকে। সুতরাং শুধু বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য তিনি কি করেছেন শুধু তা ই বিবেচ্য বিষয় না, মূল বিষয় হচ্ছে একজন বাংলাদেশি কাউন্সিলর দক্ষতা ও একাগ্রচিত্তে যে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তাতে সামগ্রিকভবে সুনাম বৃদ্ধি হচ্ছে বাংলাদেশি কমিউনিটির। এতে করে উপকৃত হবে সমগ্র বাংলাদেশি কমিউনিটি। সে উপকার হয়ত একদিনে চোখে পড়বে না, কিন্তু বিশাল উপকার একদিন চাক্ষুষ প্রমাণ মিলবে। ভবিষ্যতে হয়ত আরো বাংলাদেশীদের আইরিশ রাজনীতিতে আসার দ্বার প্রশস্থ হবে এবং ভোটাররাও আত্মবিশ্বাসের সাথে ভোট দিতে দ্বিধা করবেনা একজন বাংলাদেশীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে।

নির্বাচনী প্রচারণায় তিন মসজিদের ইমামের সাথে জনাব আজাদ তালুকদার

জনাব আজাদ তালুকদার হয়ত আগামীতে নির্বাচনের আশা ব্যাক্ত করেছেন, তিনি হয়ত নির্বাচনে লড়বেন, কিন্তু তাঁকে সয়াহতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে আমাদেরকেই। আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করে বাংলাদেশি কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করতে। তাঁকে সহায়তা আমাদের নিজেদের স্বার্থেই করতে হবে কিংবা করা উচিত। কারণ একজন আজাদ তালুকদার একজন বাংলাদেশি, যিনি নেতৃত্ব দিবেন বাংলাদেশি হিসেবে। জনাব তালুকদারের সুনাম মানে বাংলাদেশিদের সুনাম। বাংলাদেশি কমিউনিটি এখনো অনেক পিছিয়ে, একে যদি আমরা এগিয়ে নিতে চাই তাহলে জনাব আজাদ তালুকদারদেরকে আমাদেরকে সহায়তায় এগিয়ে আস্তে হবে। এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, সন্মানের প্রশ্ন।

জনাব আজাদ তালুকদার ঘোষণা দিয়েছেন, অন্য কোথাও থেকে অন্য কেউও হয়ত ধীরে ধীরে ঘোষণা দিবে আগামীর নির্বাচনের জন্য, যোগ্যতার বিচারে দেয়া উচিত বলেও মনে করি। যে ই যেখান থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক না কেন, বাংলাদেশি কমিউনিটি যেন এক হয়ে এগিয়ে আসে। এগিয়ে আসি নিজেদের জন্য, এগিয়ে আসি কমিউনিটির স্বার্থে। শুধু প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতিদ্বন্দ্বী যেন না হয়ে যাই।

Facebook Comments Box