করোনার সংখ্যা এখনো ক্রমবর্ধমান এবং মৃত্যুর সংখ্যাও গুনতে হচ্ছে প্রতিদিন। মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের ঝুঁকি কমাতে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে লকডাউনের। করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আয়ারল্যান্ড সরকার লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে অটল। আগামী মে পর্যন্ত মানুষের চলাচলে সীমাবদ্ধতা রাখার সম্ভাবনার কথা ব্যাক্ত করে সরকার।
লকডাউন মানে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ, ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ মানে চাকুরী বন্ধ। করোনাকালীন সময়ে চাকুরী হারানোদেরকে সরকার গত মার্চ মাস থেকেই সহায়তা দিয়ে আসতেছিল। এই সহায়তার সময় বিভিন্ন সময়ে বর্ধিত করা হয়েছিল। বর্তমান নিয়মানুযায়ী আগামী মার্চ এর ৩১ তারিখে ছিল কোভিড পেমেন্টের শেষ দিন।
কিন্তু অনিশ্চিত লকডাউনের কারণে সোশ্যাল প্রটেকশনের মন্ত্রী PUP পেমেন্টের সময়সীমা বাড়িয়ে আগামী সামার পর্যন্ত বর্ধনের আশ্বাস প্রদান করেন। যা বাস্তবিক অর্থেই চাকুরিচ্যুতদের মাঝে স্বস্তি প্রদান করতে সমর্থ হবে। মিনিস্টার জানান, বাস্তবিক অর্থে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে আগামী কিছু সময় পর্যন্ত রেস্ট্রিকশন বজায় থাকবে।
এ পর্যন্ত সরকার মোট ৬ বিলিয়ন ইউরো পেন্ডেমিক পেমেন্ট এবং প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন ইউরো ওয়েজ সাবসিডি স্কিমে খরচ করেছে।
এই মুহূর্তের হিসেবে ৪৮০ হাজারেরও উপরে মানুষ পেন্ডেমিক পেমেন্ট গ্রহণ করতেছে। ৭০০০ এরও উপর মানুষ বর্ধিত বেনিফিট পাচ্ছে অসুস্থতার কারণে, যারা কোভিড আক্রান্ত হয়েছে এবং সেলফ আইসোলেট রয়েছে।
আয়ারল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ড থেকে ULSTER BANK বন্ধ হয়ে যাচ্ছে
প্রায় এক যুগ থেকে ULSTER BANK আয়ারল্যান্ডে বেশি একটা সুবিধা করে আসতে পারছিলো না। বিশেষ করে বিশ্ব মন্দার পর থেকে এই ব্যাংকটি ভালোভাবে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে নি। গতকাল তারা অফিসিয়ালি আয়ারল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ডে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা করে।
প্রায় ১৬০ বছর যাবৎ ব্যাংকটি এই ভূখণ্ডে তাদের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো। বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে তাদের ২৮০০ জন কর্মকর্তা ও নর্দান আয়ারল্যান্ডে ১০০ জন কর্মকর্তা নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো। আয়ারল্যান্ডে ৩য় বৃহৎ ব্যাংক হিসেবে এটি পরিচিত। দেশব্যাপী তাদের ৮৮টি শাখা বিদ্যমান। তাদের বর্তমান গ্রাহকের সংখ্যা ১১ লক্ষের কিছু উপরে। এই ব্যাংকটি NATWEST Bank এর একটি Child Organisation.
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা তাদের চলমান হিসাবগুলো অন্য কোনো ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করবে এবং মর্টগেজ বা লোন গ্রহীতাদের হিসেবগুলো একই টার্মস এন্ড কন্ডিশন অনুসরণ করে অন্য ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করবে, এতে গ্রাহকদের চিন্তার কিছু নেই বলে জানিয়েছে তারা।
এই ব্যাংক বন্ধ হওয়ার ফলে আয়ারল্যান্ডের অর্থনীতিতে বড় ধরণের ধাক্কা লাগার আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে অন্যান্য ব্যাংক লাগামহীন ভাবে মার্কেটে বিচরণ করবে এক চেটিয়া ব্যবসা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্যাংকটির ২২ বিলিয়ন ইউরো ডিপোজিট বিদ্যমান এবং ২১ বিলিয়ন ইউরোর তাদের লোন এর অঙ্ক। ব্যাংকটি ১৫% মর্টগেজ বাজার ধরে রেখেছে এবং ২০% ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ের সাথে জড়িত।
এখনো বেশ কিছু সময় লাগবে পুরোপুরি তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে। এক বছরের উপরে লাগতে পারে বলে তারা প্রকাশ করেছে । যাদের মর্টগেজ আছে এই ব্যাংকের সাথে তাদেরকে অন্য কোনো ব্যাংকে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
হাঁ রক্ত দিয়েই ছিনিয়ে আনা এই বাংলা ভাষা। কেড়ে নিতে চেয়েছিল ওরা আমার মায়ের মুখের বুলি, কিন্তু রক্ত দিয়ে তা রক্ষা করেছে বীর সন্তানেরা।
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল ও বিক্ষোভ মিছিলের সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তান সরকার সেদিন ১৪৪ ধারা জারি করে সমাবেশ-শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ঐতিহাসিক আমতলায় জড়ো হতে শুরু করেন। তাঁরা ১৪৪ ধারা জারির বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ অস্ত্র হাতে সভাস্থলের চারদিক ঘিরে রাখে। বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সেখানে এসে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার জন্য ছাত্রদের অনুরোধ করেন। কিন্তু ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। ছাত্ররা ছোট ছোট দলে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নামলে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশ মিছিলের ওপর গুলি চালালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রফিক, শফিক, সালাম জব্বার, বরক্তসহ আরো অনেকেই নিহত হন। যাদের কল্যাণেই রক্ষিত হয় বাংলা ভাষা।
যেভাবে আন্দোলনের সূত্রপাত
প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দুটি ভূখণ্ডের দুটি ভিন্ন ভাষার জাতিসত্তাকে মিলিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকেই মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করে সূচনা হয়েছিল আন্দোলনের। আর এই ভাষা আন্দোলনকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হয়।
১৯৪৭ সালে যখন দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হয়েছিল তার আগেই আসলে শুরু হয়েছিল ভাষা নিয়ে বিতর্ক। ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন ও আহমদ রফিক তাদের ভাষা আন্দোলন-ইতিহাস ও তাৎপর্য বইয়ে লিখেছেন, “প্রথম লড়াইটা প্রধানত ছিল সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনেই সীমাবদ্ধ”। সেসময় বাঙালী মুসলমান সাহিত্যিক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদদের মধ্যে বাংলা, উর্দু, আরবি ও ইংরেজি এই চারটি ভাষার পক্ষ-বিপক্ষে নানান মত ছিল।
পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন নিশ্চিত হওয়ার পর উর্দু-বাংলা বিতর্ক আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেসময়কার গুরুত্বপূর্ন ‘মিল্লাত’ পত্রিকায় এক সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছিল, “মাতৃভাষার পরিবর্তে অন্য কোন ভাষাকে রাষ্ট্রভাষারূপে বরণ করার চাইতে বড় দাসত্ব আর কিছু থাকিতে পারে না।”
১৯৪৭ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর জিয়াউদ্দিন আহমেদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করেছিলেন। তখন ভাষা নিয়ে বিতর্ক আবারো জেগে উঠেছিলো।
তৎকালীন পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাংলাভাষীরা উর্দুভাষীদের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। তারপরও ১৯৪৮ সালের ২১শে মার্চ পূর্ব পাকিস্তান সফরে এসে রেসকোর্স ময়দানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এক সমাবেশে স্পষ্ট ঘোষণা করেছিলেন যে ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা’।
সেই সমাবেশেই উপস্থিত অনেকেই সাথে সাথে প্রতিবাদ করে ওঠেন। এই ঘোষণাকে বলা যেতে পারে নতুন রাষ্ট্র সম্পর্কে বাঙালীর স্বপ্নভঙ্গের সূচনা। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার পেছনে বাঙালীদের উপর রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভুত্ব কায়েম করা ও শোষণের অভিসন্ধি বলে মনে করা হয়েছিল।
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন
সেসময় বুদ্ধিজীবীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে মাতৃভাষার পরিবর্তে উর্দু চাপিয়ে দিলে বাংলাভাষী পরবর্তী প্রজন্ম অশিক্ষিত হয়ে পড়বে, বাংলা ভাষার সত্ত্বা ঝুঁকিতে পরবে। স্বাধীনভাবে মাতৃভাষার চর্চার ক্ষেত্রে এটিকে বড় আঘাত বলে মনে করা হয়েছে।এসব বিষয়ে বাঙালির মনে ক্ষোভের অনুভূতি তখন থেকেই দানা বাঁধতে থাকে। সেই সালেই শেষের দিকে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করা হয়।
ইসলামি সাংস্কৃতিক সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের নূরুল হক ভূঁইয়া, তৎকালীন সংসদ সদস্য সামসুল হক, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগের প্রতিষ্ঠাতা অলি আহাদ, পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ তোয়াহা সহ অনেকেই এর সদস্য ছিলেন যারা শুরুতে গোপনে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।
অবশেষে বায়ান্ন
জিন্নাহ’র মৃত্যুর পরও রাষ্ট্রভাষা নিয়ে নানা রকম প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব চলতে থাকে। প্রতিক্রিয়া হিসেবে থেমে থেমে আন্দোলন চলেছে। তবে এই আন্দোলনে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অগ্নি স্ফুলিঙ্গের জন্ম হয় যখন বায়ান্নর ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের অ্যাসেম্বলিতে উর্দুকেই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।
পূর্ব-বঙ্গের অধিবাসী হওয়া সত্ত্বেও ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় সফরে এসে খাজা নাজিমুদ্দিন পল্টনে এক সমাবেশে জিন্নাহ’র কথাই পুনরাবৃত্তি করেন। সেসময়ও একইভাবে জোরালো প্রতিবাদে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান ওঠে। খাজা নাজিমুদ্দিনের অবস্থান ও তার বক্তব্য ভাষা আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।
ভাসানীর নেতৃত্বে সম্মেলনে অংশ নেন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক, সংস্কৃতিকর্মী এবং পেশাজীবী সম্প্রদায়ের মানুষজন। ২১শে ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছিল। ধর্মঘট প্রতিহত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিলো।
আমতলা ও গৌরবের একুশ
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এক রক্তিম সকাল। সূর্য কেবল কিরণ দিতে শুরু করেছে। ঢাকা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজমান। কারণ পাকিস্তান সরকারের ১৪৪ ধারা চলমান। ছাত্রজনতা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিলেন ১৪৪ ধারা ভাঙার। পুলিশ অস্ত্র হাতে সভাস্থলের চারদিক ঘিরে রাখে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নামলে পুলিশ তাঁদের ওপর গুলি চালালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রফিক, শফিক, সালাম জব্বার, বরক্তসহ আরো অনেকেই নিহত হন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি
কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙালি রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেস্কোর ৩০তম অধিবেশন বসে। ইউনেসকোর সেই সভায় একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব পাস হয়। ফলে পৃথিবীর সব ভাষাভাষীর কাছে একটি উল্লেখযোগ্য দিন হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি স্বীকৃতি পায়। বিশ্বের দরবারে বাংলা ভাষা লাভ করে বিশেষ মর্যাদা। ঠিক পরের বছর ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে পৃথিবীর ১৮৮টি দেশে এ দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়।
কানাডায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তাঁরা ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবায় পড়াশোনা করতেন। স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৬টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রদেশটির উইনিপেগ শহর থেকে ১১৫ কিলোমিটার দূরে আরবর্গ শহরের উত্তরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- আদিত্য নোমান,আরানুর আজাদ চৌধুরী এবং রিসুল বাঁধন। তাদের বয়স আনুমানিক ২৩ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। প্রত্যেকেই ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
আরবর্গ শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে হাইওয়ে ৭ সড়কে গতকাল স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টার কিছু আগে বিপরীতমুখী দুই গাড়ির মধ্যে ওই সংঘর্ষ ঘটে। এর একটি গাড়িতে তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ছিলেন। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন তাঁরা।
ওই তিন ছাত্র ম্যানিটোবা শহরে নর্দার্ন লাইফের অরোরার আলোকচ্ছটা দেখতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তারা এ দুর্ঘটনায় পড়েন। কমিউনিটিতে তারা জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন।
তিন ছাত্র নিহতের ঘটনায় ম্যানিটোবা সহ সারা কানাডায় বাঙালি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাংলাদেশি গৃহপরিচারিকা আবিরন বেগম হত্যার দায়ে সৌদি আরবের এক গৃহকর্ত্রীর মৃত্যুদণ্ডদেশ ঘোষণা করেছে রিয়াদের অপরাধ আদালত৷
রায়ে বলা হয় ‘মামলার প্রধান আসামি গৃহকত্রী আয়েশা আল জিজানির বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত এবং সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটনের দায়ে আদালত ‘কেসাস’ (জীবনের পরিবর্তে জীবন) এর রায় প্রদান করেছে৷’’
হত্যাকাণ্ডের আলামত ধ্বংস, গৃহকর্মীকে নিজ বাসার বাইরে অবৈধভাবে কাজে পাঠানো এবং গৃহকর্মীর চিকিৎসার ব্যবস্থা না করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অপর এক আসামি গৃহস্বামী বাসেম সালেমকে তিন বছর দুই মাস কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হয়েছে৷
খুলনার পাইকগাছার আবিরন ঢাকার একটি রিক্রুটিংএজেন্সির মাধ্যমে ২০১৭ সালে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ আবিরনকে হত্যা করা হয়৷
আজ রাত প্রায় আনুমানিক ০৯:০০ (GMT) তে নাসার ঐতিহাসিক মহাকাশযান পারসিভেয়ারেন্স সফলভাবে অবতরণ করে।
ছয় চাকার এই স্বয়ংচালিত যানটি পৃথিবী থেকে তার ৪৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার (৪৭ কোটি মাইল) পথের যাত্রা শুরু করেছিল সাত মাস আগে।
মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে নাসা অনেক আগে থেকেই ১৯৭০ সাল থেকেই চেষ্টা চালিয়ে আসতেছিল।
পারসিভেয়ারেন্স যদি সফল হয়, তাহলে মঙ্গলগ্রহে অতীতে কোন প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা জানার অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এর আগে এত উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে কোন গ্রহে বৈজ্ঞানিক মিশন পাঠানো হয়নি এবং এত সম্ভাবনাময় একটা স্থানকে টার্গেট করে কোন রোবটও এর আগে কখনও নামানো হয়নি।
যেখানে এই মহাকাশ রোবটের মঙ্গলপৃষ্ঠ স্পর্শ করার কথা সেই স্থানটি হল জেযেরো ক্রেটার। একসময় এই গহ্বরের স্থানটিতে বিশাল একটি হ্রদ থাকার লক্ষণ উপগ্রহে পাওয়া ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন।
তাদের ধারণা এই হ্রদটিতে প্রচুর পানি ছিল এবং সম্ভবত সেখানে জীবনও ছিল।
আয়ারল্যান্ডের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার বলেছেন সামনের মাসগুলোতে লকডাউন কিছুটা শিথিল করলেও তা থাকবে কঠোর সীমাবদ্ধতার মাঝে।
প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন বলেছেন লেভেল–৫রেস্ট্রিকশন আগামী ইস্টার পর্যন্ত বজায় থাকতে পারে।এরপর খুললেও শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কন্সট্রাকশন কাজ খোলার অনুমতি থাকতে পারে।
বুধবার পার্লামেন্টরি পার্টির মিটিং এ জনাব ভারাদকার বলেন এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি, তবে আগামী মাসে যে আহামরি রকম শিথিলতা থাকবে তা কিন্তু নয়।
মার্চের এক তারিখ থেকে লিভিং সার্টিফিকেট এবং পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী রাএবং সাথে জুনিয়র ও সিনিয়র ইনফ্যান্ট এর শিক্ষার্থীরা স্কিলে ফিরতে পারে।
স্যালাইন ও পানি দিয়ে বানানো নকল টিকা লাখ লাখ ডলারে বিক্রির ঘটনার হোতাকে চীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্যালাইন ও পানি দিয়ে বানানো নকল টিকা লাখ লাখ ডলারে বিক্রির ঘটনার হোতাকে চীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: রয়টার্স
স্যালাইন ও পানি দিয়ে বানানো নকল টিকা লাখ লাখ ডলারে বিক্রির ঘটনার হোতাকে চীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম কং।
বিবিসির আজ মঙ্গলবারের খবরে জানা যায়, কং স্যালাইন ও মিনারেল ওয়াটার দিয়ে ৫৮ হাজার ডোজ নকল টিকা বানান। এর আগে তিনি আসল টিকার মোড়কের নকশা নিয়ে গবেষণা করেন। এরপর সেই আদলে নকল টিকা বানান।
এই নকল টিকাগুলো বিদেশেও পাচার করা হয়। তবে কোথায় সেগুলো পাঠানো হয়েছে, তা জানা যায়নি।
করোনার টিকাসংক্রান্ত জালিয়াতি নিয়ে দেশটিতে ৭০ জনকে আটক করা হলো। ২০টির বেশি জালিয়াতির মামলায় তাঁদের আটক করা হয়। বেইজিং নকল টিকা কেলেঙ্কারির ঘটনা বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
টিকা নিয়ে জালিয়াতির ঘটনাগুলোর বেশির ভাগ সামনে আসে গত বছরের শেষ দিকে। তবে চলতি সপ্তাহে ঘটনাগুলো জানা গেছে বিস্তারিতভাবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কং ও তাঁর দল গত বছরের আগস্টের দিকে সিরিঞ্জ বোতলের ভেতরে স্যালাইন ও মিনারেল পানি ভরে টিকা হিসেবে বাজারজাত করেন। এভাবে তাঁরা ২৭ লাখের বেশি ডলার হাতিয়ে নেন। গত বছরের নভেম্বর মাসে নকল টিকার ৬০০ ডোজ হংকংয়ে পাঠানো হয়। আসল প্রস্তুতকারকদের অভ্যন্তরীণ চ্যানেলগুলো ব্যবহার করে নকল এই টিকাগুলো বিক্রি করা হয়েছিল।
নকল টিকাগুলো বেশি দামে বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্রি করা হয়। আরও কিছু অপরাধী গ্রামাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নকল টিকা সরবরাহ করে।
চীনের সুপ্রিম পিপলস প্রসিকিউরেটোরেট নকল টিকার ঘটনায় পুলিশকে সহযোগিতা করতে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে চীনে নতুন চান্দ্রবর্ষ উদ্যাপনের আগেই ১০ কোটি টিকার ডোজ আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন কর্মকর্তারা। যদিও ওই সময় পর্যন্ত মাত্র চার কোটি মানুষকে টিকা দিতে পেরেছে চীন। তবে কঠোর লকডাউন, করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে চীনে মহামারি পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এই বছরও লিভিং সার্টের ভাগ্য অনিশ্চিত – তবে এটি স্পষ্ট যে 6th year এর শিক্ষার্থীরা এবছর ভালটাই আশা করে।
করোনা লকাউনের কারনে 6th year এর বহু শিক্ষার্থী এখন তাদের ঘরে আটকা পড়ে আছে, অনলাইনে তাদের পাঠ্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অনেকের মতোই তাদের স্কুলের দৈনিক পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিনের মত তারা আর ক্লাস থেকে ক্লাসে যাচ্ছে না তার পরিবর্তে তারা অপেক্ষা করছে,অপেক্ষা করছে তারা অনেক কিছুর জন্য এবং বিভিন্ন কারণে তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
তারা ভার্চুয়াল লবিতে প্রতিদিন অপেক্ষা করছে, অপেক্ষায় রয়েছে কপি করতে তাদের প্রতিদিনের Lesson গুলো আর দুর্বল ওয়াইফাইয়ের সংযোগগুলির সাথে তাদের লড়াই করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তারা অপেক্ষা করছে পরবর্তি পরীক্ষার নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর সাময়িকি হাতে পাওয়ার জন্য । তবে তার চেয়ে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো “লিভিং সার্টিফিকেট” পরিক্ষার ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তারা “ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনে”র দিকে তাকিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে যা অনেকটা দুঃস্বপ্নের মত।
শিক্ষার্থীদের জীবন এখন অনেকটা আমাদের অনেকের মতোই একরকম অদ্ভুত নেভিগেশনাল ডিভাইসের মতো যার কোন বাস্তব ধারনাই নাই কোথায় এই নির্দিষ্ট গন্তব্য, কখন শেষ হবে এই যাত্রা।
এই শিক্ষার্থীরা শুনছে, তবে একই সময়ে এড়াতে চাইছে, মিডিয়ার সকল জল্পনা কল্পনা। তারা সহানুভূতিশীল সিদ্ধান্তের জন্য সুন্দর আলোচনার প্রত্যাশায় রয়েছেন। তারা আশা করছেন যে এই সিদ্ধান্তগুলি গ্রহণকারীরা শিক্ষার্থিদের জায়গায় দাড়িয়ে শিক্ষার্থিদের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে।
সকলের আশা, দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বিবেচনায় নিবেন যে, গ্রেড নির্ধারনের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করা এবং পরিক্ষার জন্য পড়ালেখার মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে।
তাছারা সকলেই মনে করেন শিক্ষার্থী এবং তাদের শিক্ষকদের জন্য এই তথাকথিত “লিভিং সার্টিফিকেট ২-ট্র্যাক পদ্ধতির’ সম্পর্কে কিছু পরিষ্কার তথ্য থাকা দরকার।
এই সিদ্ধান্তগুলি নেওয়ার জন্য শিক্ষার মূল স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা গ্রুপ তৈরী গঠন করা হয়েছে, তাদের সাথে আরো আছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, উচ্চশিক্ষা কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞানসেবা প্রতিনিধিরাও।
এই গ্রুপটি শিক্ষা অধিদফতর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শুধু মাত্র ২০২১ সালের পরীক্ষার বিষয়ে উত্থাপিত বিভিন্ন বিষয় গুলো বিবেচনার জন্য। শিক্ষার্থীদের আশা এই উপদেষ্টা দল যেন ২০২১ সালের জুনিয়র সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীদেরও বিবেচনায় নিয়ে তাদের মতামত দেন এবং কার্যকরভাবে মূল্যায়নের মাধ্যমে এমন একটি ব্যবস্থা পরিকল্পনা প্রনয়ন করেন যা সম্মিলিত ভাবে কাজ করবে এবং সকলে যাতে কোভিডের সাথে জীবনযাত্রা মানিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
আরো বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন:
https://www.thejournal.ie/readme/leaving-cert-students-5351863-Feb2021/?utm_source=shortlink
ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর চেয়ে চারগুণ বেশি অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে হবে ব্রিটেনকে, এমন পূর্বাভাস দিয়েছে ইউরোপীয়ান কমিশন।
ব্রিটেনের সাথে নতুন সম্পর্কের এক মাসের মাথায় ইউরোপীয় সংস্থাটি বলেছে, বরিস জনসনের সরকার যেসব শর্তের ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেড়িয়ে গেছে, সেগুলোর কারণে দেশটি ২০২২ সাল শেষে বর্তমানের তুলনায় ২.২৫ শতাংশ জিডিপি ঘাটতিতে পড়বে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য একই সময়ে এই ক্ষতির হার হবে ০.৫ শতাংশ।
সংস্থাটি বলছে, গত ডিসেম্বরে ১১ ঘণ্টায় সম্পাদিত শেষ মুহূর্তের বাণিজ্য চুক্তির ফলে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হলেও দুই বছরে অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে অন্তত ৪০ বিলিয়ন ইউরোর সমপরিমাণ এবং এই চুক্তির বিষয়ে এখনো কিছু বাধা রয়েছে, যা ব্রিটেনের জন্য আরো বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে সংস্থাটি মনে করছে।
শীত মৌসুম নিয়ে এক অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে ইউরোপীয়ান কমিশন বলেছে, ব্রিটেন ও ইইউ’র মধ্যে চুক্তিহীন বিচ্ছেদের চেয়ে মুক্তি বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) অপেক্ষাকৃত ভালো হলেও, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে যতটা সুবিধা পায় সেটি পাবে না ব্রিটেন।
শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদদের বেশির ভাগই ইতোমধ্যে পূর্বাভাস দিয়েছেন যে, ব্রেক্সিটের ফলে ইইউ’র চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্রিটেন। তবে ইউরোপীয়ান কমিশন এবার যে হিসাব দিয়েছে সেটি ব্রেক্সিট কার্যকরের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম আনুষ্ঠানিক হিসাব।
নতুন আইন চালু হওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ওপর যে চাপ অব্যাহত রয়েছে সেটির কথা মাথায় রেখেই ব্রিটেনের ক্ষতির এই হিসাব দেয়া হয়েছে। তার ওপর ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো সতর্ক করে দিয়েছে যে, চলতি বসন্তের শেষে সীমান্তে বাড়তি তল্লাশি চালু হলে আরো বেশি সমস্যার মুখোমুখী হবে বাণিজ্য খাত।
লন্ডন ও ব্রাসেলসের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তাতে দুই পক্ষের মাঝে শুল্কবিহীন পণ্য বেচাকেনার কথাও রয়েছে। তবে নতুন কাগজপত্র, কাস্টমস তল্লাশি ও নতুন আইন নিয়ে দ্বিধার কারণে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত খরচ ও বিলম্বের শিকার হচ্ছেন। যে কারণে ইউরোপীয়ান কমিশন বলছে, তথাকথিত এই শুল্কহীন বাণিজ্যের প্রভাবে কখনো কখনো আমদানির ওপর ট্যাক্স বেড়ে দাড়ায় ইইউ’র জন্য ১০.৯ শতাংশ এবং ব্রিটেনের জন্য ৮.৫ শতাংশ। সংস্থাটি আরো বলছে, আয়ারল্যান্ডের মতো যেসব দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে পণ্যের বিশাল বাজার রয়েছে, তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আবার সেবাখাত বিষয়ে কোন চুক্তি না হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ব্রিটেন, কারণ দেশটির অর্থনীতির ৮০ শতাংশই সেবাখাত নির্ভর। ইউরোপের যেসব দেশের অর্থনীতিতে সেবাখাতের বড় অবদান রয়েছে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তবে সব কিছুর পরেও শেষ মুহূর্তে একটি ব্রেক্সিট চুক্তি উভয় পক্ষকেই বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়েছে বলে ইউরোপীয়ান কমিশন মনে করছে। তাদের ২০২১ সালের শীতকালীন অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে দেখানো হয়েছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতিতে যথাক্রমে ৩.৭ ও ৩.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটবে। চলতি বছরের শুরুর দিকে লকডাউনের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কারণে সেটি হয়তো পুষিয়ে যাবে বছরের শেষ দিকে। আর ২০২২ সালে অর্থনীতি আবার মহামারী পূর্ব অবস্থার মতো জায়গায় ফিরে আসবে। এবং সেটি যতটা ভাবা হয়েছিল তার চেয়েও দ্রুত ঘটবে।
ইউরোপীয়ান কমিশন বলছে, কিছু দেশ যেমন ইতালি ও স্পেনের অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরতে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত লেগে যাবে, বিশেষ করে দক্ষিণ ইউরোপে যাদের অর্থনীতি পর্যটন খাত নির্ভর।
ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০২১ সালে আয়ারল্যান্ডের প্রবৃদ্ধি ৩.৪ শতাংশ ও ২০২২ সালে ৩.৫ শতাংশে গিয়ে দাড়াবে। তবে গত মাসে প্রকাশিত দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বাভাসে চলতি সালে ৩.৮ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৪.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ভবিষ্যতবাণী করেছে যে, চলতি বছরের শেষ দিকেই জিডিপি মহামারী পূর্ব অবস্থার মতো জায়গায় ফিরলে ২০২১ সালে ব্রিটেনের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ শতাংশ আর ২০২২ সালে সেটি গিয়ে দাড়াবে ৭.২৫ শতাংশে। কোভিড ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনায় ব্রিটেন দক্ষতার পরিচয় দেয়ার কারণে এমনটি ঘটবে বলে ধারণা ব্যাংকটির।
আয়ারল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থায় Transition Year (TY) এবং এর ভালো-মন্দ
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী পিতামাতাদের নিকট Transition Year বা TY একটি সম্পুর্ন নতুন বিষয়। যার ফলে এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেকের ভালো ধারণা না থাকাটাই স্বাভাবিক। Transition Year কোনো কোনো ছেলেমেয়ের জন্য খুব ভালো। আর কোনো কোনো ছেলেমেয়ের জন্য এর ফল আবার মন্দ। এখানে আমি TY কি এবং এর ভালো বা মন্দ দিকগুলোই বা কি তা নিয়ে একটু আলোচনার চেষ্টা করবো। আশা করি এই লেখাটি বাংলাদেশী পিতামাতাদের তাদের সন্তানদের TY দেবার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।
TY কি?
TY বা Transition Year হলো আয়ারল্যান্ডের মাধ্যমিক স্কুলের ফোর্থ ইয়ার। অর্থাৎ জুনিয়র সার্ট পরীক্ষার পরবর্তী এক বছর। কোনো কোনো স্কুলে এটা বাধ্যতামূলক। আবার কোথাও কোথাও এটা ঐচ্ছিক।
TY এর উদ্দেশ্য কি?
১। ভবিষ্যতের উন্নত শিক্ষা জীবন গঠনে মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত হওয়া।
২। বাস্তব জীবন গঠন উপযোগী বিভিন্ন কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা অর্জন করা।
৩। জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আরও জ্ঞান অর্জন।
৪। সর্বোপরি নিজের যোগ্যতাকে বুঝতে পারা।
TY তে কি করানো হয়?
এক্ষেত্রে প্রত্যেক স্কুলের নিজস্ব কর্মসূচী থাকে। তবে সাধারনভাবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি উল্লেখ করা যায়।
• স্বাভাবিক নিয়মে নিয়মিত স্কুলে যেতে হয়।
• কেবলমাত্র কিছু মৌলিক বিষয় পড়ানো হয়। যেমন, আইরিশ, ইংলিশ, ফ্রেঞ্চ, গনিত, বিজ্ঞান। তবে তা মূলত রিভিশনেই সীমাবদ্ধ থাকে।
• বিভিন্ন রকম প্রোজেক্ট করানো হয়।
• বিভিন্ন আইন ও অধিকার, সুরক্ষা, মানসিক স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিষয়ে ওয়ার্কশপ আদলে তথ্যদান করা হয়।
• নিজের পছন্দ অনুযায়ী জব ইন্টার্নশীপ করতে হয়।
• বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন এবং ইনফরমেশন সেশনে অংশগ্রহণ।
• দেশের ভিতরে বা বিদেশে কয়েকদিনের ভ্রমণ থাকতে পারে।
• বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে আনন্দ ভ্রমণ।
• ড্রাইভিং শেখা, ইভেন্ট আয়োজন করা। ইত্যাদি, ইত্যাদি।
কোন ছেলেমেয়েদের জন্য TY ভালো হতে পারে?
১। যারা লেখাপড়ায় একটু দুর্বল, বিশেষত ইংলিশ বা গনিতে, তারা TY সময়টাকে ব্যবহার করে পড়াশোনার ভিত্তি মজবুত করতে পারে।
২। যাদের বয়স কিছুটা কম কিংবা বয়সের তুলনায় ম্যাচুরিটি আসে নাই।
৩। যারা পড়াশোনার বাইরে কোনো প্রজেক্ট করতে চায়।
৪। যারা মনস্থির করতে পারে নাই ভবিষ্যতে কোন বিষয়ে পড়বে। এসব ছেলেমেয়েরা জব ইন্টার্নশীপ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে বুঝতে পারে তাদের আগ্রহের বিষয় সম্পর্কে।
৫। যাদের স্কুলে TY এর ভালো পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা আছে।
কোন ছেলেমেয়েদের জন্য TY মন্দ হতে পারে?
১। যাদের পড়াশোনার বাইরে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষ আগ্রহ নাই।
২। যাদের কোনো প্রজেক্ট আইডিয়া বা অন্য কোনো ভালো কর্ম পরিকল্পনা নাই।
৩। যারা পড়াশোনায় একবার গতি কমে গেলে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
৪। যারা খণ্ডকালীন চাকরি করতে গিয়ে পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
৫। যাদের স্কুলে TY এর ভালো পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা নাই।
আমার দুই সন্তানের জন্ম ও বেড়ে উঠা এই দেশে। সুতরাং এই লেখাটি মূলত আমার অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা। অন্য সবার সাথে আমার মতামতের ভিন্নতা থাকতেই পারে। সবশেষে আয়ারল্যান্ডের পরবর্তী প্রজন্মের বাংলাদেশী সন্তানেরা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখুক, আমি সেই শুভকামনা ও সাফল্য প্রত্যাশা করি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা/অক্সফোর্ডের COVID19 ভ্যাকসিন শিশুদের শরীরে কতটা সুরক্ষা দিতে পারে তা জানতে প্রথমবারেরমতোগবেষণাশুরুকরেছেঅক্সফোর্ডবিশ্ববিদ্যালয়। এরঅংশহিসেবে৬থেকে১৭বয়সীশিশুদেরশরীরেএভ্যাকসিনেরট্রায়ালচালাবেতারা।
৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৩০০ স্বেচ্ছাসেবীর দেহে এবার ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাবে তারা। এ মাসেই পরীক্ষা শুরুর পরিকল্পনা আছে তাদের। এটি হবে মাঝামাঝি পর্যায়ের ট্রায়াল।
আল জাজিরার চিত্রনাট্য এবং কিছু কথা
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
এক অগ্রজ বন্ধু বেশ আক্ষেপ করে বললেন, এককালে শকুনরা মরা গরু খোঁজে বেড়াতো। আজকাল তারা কবিতা লিখা শুরু করেছে। সম্প্রতি আল জাজিরা একটি ড্রামাটিক / সিনেমাটিক রিপোর্ট প্রকাশ করলে তা’ জনমনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। তোলপাড় সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কারো কারো কাছে এটি এখন বিনোদনও বটে! কেউ কেউ আবার এতে খুঁজে পেতে চান কবিতার রসদ। না জেনে না বুঝে, যাচাই বাছাই না করে খুশিতে গদগদ হয়ে ওঠা ওই রসদ ওয়ালারাই আজকের কাব্য রসিক শকুনসমেত।
শকুনদের নিয়ে কথা বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। আল জাজিরায় প্রচারিত ‘নিউজ’ সিনেমাটিই আমার আজকের প্রতিপাদ্য বিষয়। তবে এ বিষয়ে কথা বলার আগে আল জাজিরার চরিত্র নিয়ে একটু আলোকপাত করতে চাই।
একটি বিশেষ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আল জাজিরার আত্মপ্রকাশ ঘটলেও চ্যানেলটি কালক্রমে সখ্য গড়ে তোলে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও টেররিজমের মতো অন্ধকার দুনিয়ার লোকদের সাথে। এমনকি, এখন এ স্যাটেলাইট চ্যনেলটি বিভিন্ন বিতর্কিত, স্পর্শকাতর ও মিথ্যে খবর পরিবেশনে লিপ্ত হয়ে পড়েছে! ফলশ্রুতিতে খোদ আরববিশ্বসহ পাশ্চাত্যের অনেক দেশও চ্যানেলটির প্রতি ক্ষেপে যায় এবং বিভিন্ন সময়ে তা বয়কট করতে বাধ্য হয়।
এ মিডিয়াটির পেছনের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, মিথ্যে ও ভিত্তিহিন সাংবাদিকতার কারণে আলজেরিয়ান সরকার দু’হাজার চারে (২০০৪) আল জাজিরার এক সংবাদকর্মীকে প্রতিহত করেন। বাহরাইন একই দোষে দু’ হাজার দুই (২০০২) থেকে চার সাল পর্যন্ত আল জাজিরার সংবাদ পরিবেশন বা তার দেশে অফিসিয়াল কার্যক্রম চালু রাখার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেন। শুধু তাই নয়, উগ্রপন্থি সংবাদ পরিবেশনের জন্য আরব নিজেও অসন্তোষ প্রকাশ করে।
আল জাজিরার বিরুদ্ধে ভুয়া ও উস্কানিমূলক সংবাদ প্রচারের এরকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে এবং সময়ে অসময়ে বিভিন্ন দেশে এর সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।
ভুয়া সংবাদ প্রচারের অভিযোগে মিশরে আটক হন এ টেলিভিশন নেটওয়ার্কটির বেশ কয়েকজন সংবাদিক। ইরাক যুদ্ধের সময় বিতর্কিত সংবাদ প্রচারের অভিযোগে সাংবাদিকদের বহিষ্কার ও সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়দাকে সমর্থনের অভিযোগে ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে স্পেনে আটক হন চ্যানেলটির এক সাংবাদিক। প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতায় বাধ্য করা, জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ এবং অনৈতিকভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা ইত্যাদি অভিযোগ এনে আল জাজিরার ব্যুরো প্রধান মোহাম্মদ ফাহমিসহ মিশরে ২২ জন সাংবাদিক পদত্যাগ করেন। একই অভিযোগ এনে এবং জাজিরাকে অপপ্রচারের মেশিন হিসেবে অভিহিত করে পদত্যাগ করেন লিবিয়া প্রতিনিধি আলী হাশেম, বার্লিন প্রতিনিধি আখতাম সোলায়মান।
২০১২ সালে আল জাজিরা বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারকে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলার জন্য গোলাম আজমকে নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তখনো এ চ্যানেলটির বিরুদ্ধে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। আমি নিজেও এর প্রতিবাদ জানিয়ে একটি কলাম লিখি। পাঠকের উদ্দেশ্যে লিংটি দিয়ে রাখলাম। https://blog.bdnews24.com/frubel/68229
এই যদি হয় আল জাজিরার আসল চরিত্র তবে এটি যা’ প্রকাশ করবে তাই কি আমাদের গিলতে হবে? অনেক সময় চোখে যা দেখা যায় তাও সত্য হয় না। তুর্কি সিরিয়াল ইউনুস এমরের একটু অংশ পাঠকের সাথে শেয়ার করতে চাই। কর্মস্থলে যাওয়ার পথে একজন বিচারক এক দরবেশের দেখা পান। নামাজ আদায়ের সময় হলে তাঁরা দু’জন এক জায়গায় থেমে অজু করছিলেন। ঠিক ওই মুহূর্তে বিচারক সাহেব একটু দূরে গোংগানির শব্দ শুনতে পান। ঘাড় ফিরিয়ে দেখেন একজন লোক একটি মৃতদেহ সরাতে চেষ্টা করছে। তিনি চিৎকার দিয়ে ধাওয়া করতেই ঐ লোক দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখলেন একটি নয়, দু’টো লাশ। তাকে ধরতে না পেরে দরবেশের কাছে ফিরে এলেন এবং পালিয়ে যাওয়া লোকটিকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করলেন। দরবেশ বললেন, এই লোকটিই যে খুনী তা আপনি নিশ্চিত হলেন কি করে? এ কথা শুনে বিচারক বেশ উত্তেজিত হয়ে যান। একটু রাগান্বিত হয়েই তিনি বললেন, নিজের চোখে যা’ দেখেছি তাকে আপনি মিথ্যে বলছেন! এর চেয়ে বড়ো উপহাস আর কি হতে পারে! দরবেশ নিজের পরিচয় গোপন রেখে শুধু বললেন, চোখে যা দেখা যায় তা সব সময় সত্য হয় না, বিশ্বাসও করা যায় না। আবার না দেখেও অনেক কিছু বিশ্বাস করতে হয়।
যা হোক, বেশ কিছু দিন পর বিচারক ওই পালিয়ে যাওয়া লোকটিকে ধরতে পারেন এবং তাকে ফাঁসির রায় দেন। কিন্তু লোকটি এতোই ভালো ও ফরহেজগার ছিলন, যে কারণে কেউ এ রায় মেনে নিতে পারছিলেন না। স্থানীয় জনগণের আপত্তি বিচারককে ভাবিয়ে তোলে। তিনি বিচারটি পূনঃতদন্ত করতে বাধ্য হন। যেখানে মৃতদেহগুলো দেখেছিলেন তাঁর সহকারীকে নিয়ে আবারো সেখানে যান। নতুন ক্লু পান। ওই ক্লু অনুযায়ী এগিয়ে গিয়ে আসল খুনীকে ধরতে সক্ষম হন। যাকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছিলো তাকে বেকসুর খালাস দেন। অর্থাৎ, বিচারক স্বচক্ষে যাকে খুনী হিসেবে দেখেছিলেন তিনি আসলে খুনী ছিলেন না। ছিলেন সবার প্রিয় একজন ভালো মানুষ। সুতরাং চোখের দেখাতেও অনেক সময় ভুল থাকে। তাই নিজের দেখা জিনিসকেও কখনো কখনো বিশ্বাস করতে নেই।
আল জাজিরা প্রদর্শিত চিত্রনাট্যটিও অনেকটা এরকম। এতে যা দেখানো হয়েছে তা ছায়াছবির মতো আকর্ষণীয় মনে হলেও প্রকৃত সত্য কতটুকু- তাই বিচার্য বিষয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে যে কারণে প্রতিবেদনটির সত্যতা নিয়ে সন্দিহান তা নিম্নে তুলে ধরলাম-
১) আল জাজিরা যে ভুয়া, ভিত্তিহীন, অসত্য, উস্কানিমূলক ও উদ্দেশ্য-প্রণোদিত সংবাদ প্রচার করে তা’ ইতোমধ্যে বহুবার প্রমাণিত হয়েছে।
২) “অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন” নামের চিত্রনাট্যটি যার নেতৃত্বে তৈরী করে প্রচার করা হয়েছে তিনি একজন দণ্ডিত অপরাধী ( Convicted criminal) ও বিতর্কিত ব্যক্তি। তার মতো একজন ক্রিমিনালের কাছ থেকে আমরা সত্য ও স্বচ্ছ কিছু আশা করতে পারিনা।
৩) সেনাপ্রধানের দু’ ভাই পলাতক আসামি হওয়া সত্বেও মহামান্য রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে সেনাপ্রধানের ছেলের বিয়েতে যোগদান করে বলে চিত্রনাট্যটিতে বলা হয়েছে। তাদের উপস্থিতির প্রমাণ হিসেবে একটি ছবিকে দাঁড় করানো হয়েছে। কোনো ভিডিও ফুটেজ নেই। আজকের এ ডিজিটাল যুগে যে কোনো জায়গায় যে কোনো ছবির সংযোজন বিয়োজন ঘটানো কোনো বিষয়ই না। এ ছবিটিও যে নীলনক্সাকারীদের কুটিল কারসাজি নয় তা ভাবি কী করে?
৪) বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন নজরদারি করার প্রযুক্তি ইসরায়েল থেকে ক্রয় করেছে বলে যে তথ্য আল জাজিরা প্রচার করেছে তা মোটেও সত্য নয়। কারণ এর প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বলেছে, শান্তিরক্ষা মিশনে ব্যবহারের জন্য হাঙ্গেরি থেকে সিগন্যাল সরঞ্জাম কেনা হয়েছিল। কোন নজরদারি সরঞ্জাম নয়। আর এ কথার সত্যতা মেলে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের বক্তব্যে। তিনি বলেন, আল জাজিরার তথ্যচিত্রে যেসব ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের বর্ণনা দেয়া হয়েছে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের বাংলাদেশের সৈন্যদলে সে রকম কোনো সরঞ্জাম নেই। এ থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, ইসরায়েল থেকে সরঞ্জামাদি ক্রয় করার বরাত দিয়ে যে সংবাদটি চিত্রনাট্যে তুলে ধরা হয়েছে তা মিথ্যে। কোনো প্রতিবেদনের অংশ বিশেষ যদি মিথ্যে প্রমাণিত হয় তবে সে ক্ষেত্রে পুরো প্রতিবেদনটিই যে মিথ্যে নয় তার কি প্রমাণ আছে?
৫) যে হারিছ আহমেদ বা হাসানের কথাবার্তা কিংবা সংলাপকে হাইলাইটস করে তথ্যচিত্র বানানো হয়েছে সেই হারিছ আহমেদকে এক জায়গায় “সাইকো প্যাথ” বলে অভিহিত করা হয়েছে। সুতরাং একজন সাইকোর কথায় কি যায় আসে? এমন হাজারটা সাইকো রাস্তাঘাটে ঘুরছে ও প্রলাপ বকছে। তাই বলে কি তাদের কথা আমাদের কানে নিতে হবে? গুরুত্ব দিতে হবে? বিশ্বাস করতে হবে? তাছাড়া নিজেদের স্বার্থে এ সাইকোকে কিনে ফেলাও কঠিন কিছু নয়। আল জাজিরা বা চিত্রনাট্যের কুশীলবরা নিজেদের প্রয়োজনে এ কাজটি যে করেননি তা হলফ করে বলি কি করে?
৬) চিত্রনাট্যে কথিত সামি পেশাগতভাবে একজন ব্যবসায়ী। তিনি হুট করে কিভাবে আল জাজিরার ইনভেস্টিগেট টিমের সদস্য হয়ে ওঠেন? ” ডাল মে কুছ কালা হ্যায়” নয়কি?
৭) সামিকে সেনা প্রধানের ইমেইল প্রেরণের বিষয়টিও ধোয়াশামুক্ত নয়। কারণ প্রেরিত ইমেইলটি যে সেনাপ্রধানই পাঠিয়েছেন তার কোনো তথ্য, নমুনা বা প্রমাণ সুস্পষ্টভাবে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয়নি।
৮) প্রতিবেদনে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এসেছে, নিয়মানুযায়ী তাদের সাথে আল জাজিরার কোনো সাংবাদিক বা কর্তৃৃৃৃপক্ষ যোগাযোগ করেনি। প্রদর্শিত বা প্রচারিত বিষয়ের ওপর তাদের কোনো মতামত, বক্তব্য বা বিবৃতি আমলে নিয়ে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। যার ফলে প্রতিবেদনটি একপেশে হয়ে গেছে। আর একপেশে সংবাদ সাংবাদিকতার ফর্মুলায় পড়ে না। সুতরাং এটাকে সংবাদ না বলে গীবত বলাই শ্রেয়। গীবত শোনা ও বিশ্বাস করা আদৌ কি সমীচীন?
সুতরাং, আল জাজিরার এ চিত্রনাট্যকে রসগোল্লা ভেবে আনন্দে উল্লসিত হয়ে লম্ফযম্ফ করার কোনো কারণ আছে বলে আমার মনে হয় না। তা ছাড়া এমন একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের ফলে দেশের ইজ্জত নষ্ট হয়ে গেছে কিংবা মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়ে গেছে বলে যারা চিৎকার করছেন তাদেরকে বলবো, ইজ্জত কোনো ঠুনকো ব্যাপার নয়। নিছক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত কারো অভিযোগে কোনো দেশের মর্যাদাহানি ঘটতে পারে না। যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারে, সত্য উন্মোচিত না হওয়া পর্যন্ত সে অভিযোগ মূল্যহীন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটেও এ কথা প্রযোজ্য। তবে আল জাজিরার চাকচিক্যময় প্রামাণ্যচিত্রটির কারণে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে সাময়িক নিন্দিত হতে পারে বটে, তবে প্রকৃত সত্য প্রকাশ পেলে দশগুণ নন্দিত হবে। এ জন্য সরকার ও সেনাপ্রধানকে কেবলমাত্র বিবৃতি বা প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আল জাজিরায় প্রচারিত সংবাদ প্রত্যাখ্যান নয়, বরং এর মোকাবিলা করতে হবে। স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত করতে হবে। এ তদন্তের মধ্য দিয়ে প্রতিবেদনে আনীত অভিযোগ যদি সরকার মিথ্যে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়, তবে দেশের মর্যাদা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি দেশের মানুষসহ পুরো বিশ্ব আল জাজিরার মুখে থুথু ছেটাবে।
লেখক- কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট
shajed70@yahoo.com
[[ উপ-সম্পাদকীয়তে প্রকাশিত কোন আর্টকেলের দ্বায়বদ্ধতা সম্পাদক বহন করে না। এটি লেখকের একান্ত বিশ্লেষণ ]]
আগামী ১১ মার্চ দিবাগত রাতে পবিত্র শব-ই-মেরাজ বা লাইলাতুল পালিত হবে। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সে হিসেবে আয়ারল্যান্ডে শব-ই-মেরাজ এর দিন পড়ে ১০ মার্চ।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশে শুক্রবার কোথাও ১৪৪২ হিজরি সালের পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামীকাল ১৩ ফেব্রুয়ারি পবিত্র জমাদিউস সানি মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার থেকে পবিত্র রজব মাস গণনা করা হবে। ফলে ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শব-ই-মেরাজ পালিত হবে।
আরবি শব্দ ‘লাইলাতুল’ অর্থ রাত, আর ‘মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিবাগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) আল্লাহ তায়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। এ বছর সেই রাতটি পড়েছে আগামী ১১ মার্চ (আয়ারল্যান্ড ১০ মার্চ)।
লাইলাতুল মেরাজ মুসলমানদের কাছে বিশেষ মর্যাদার। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে এই মূল্যবান রাত কাটান। অনেকে নফল রোজাও রাখেন এই দিনে।
রাশিয়ার সরকারের বিরোধী নেতা আলেক্সাই নাভালনির গ্রেফতার ও কারাদণ্ড ঘিরে রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলির সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হতে দেখা গিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আজ শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘’রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে মস্কো প্রস্তুত’’।
লাভরভ আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্ব থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করতে চাই না। কিন্তু আমরা এটি করতে প্রস্তুত। আপনি যদি শান্তি না চান, তবে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিন।’
এদিকে লাভরভের বক্তব্যকে ‘বিব্রতকর’ বলে মন্তব্য করেছে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বার্লিনে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, এই বিবৃতি ‘উদ্বেগজনক ও অবোধগম্য’।
পাল্টাপাল্টি বাক বিতণ্ডার মাঝে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্কে এক বৈরিতা সৃষ্টি হয়েছে।
ট্যাক্স বিষয়টাই সুবিশাল একটা ব্যাপার। ট্যাক্সের জগতটা মহাসমুদ্রের মত। এই মহাসমুদ্রে সন্তোরন করা আপাতদৃষ্টিতে সবার পক্ষে সম্ভবও না, দরকারও নেই। কিন্তু যার যার ব্যক্তিগত স্বার্থে পার্সোনাল ট্যাক্সের কিছু খুঁটিনাটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন। ট্যাক্সের অনেকগুলা ক্যাটাগরির মধ্যে পার্সোনাল বা ব্যক্তিগত ট্যাক্স একটা।
পার্সোনাল ট্যাক্সেরও নানাবিধ নিয়ম রয়েছে, খুব জটিল না হলেও সহজও না এমন কিছু হিসেব আছে। যা সাধারণত না জানলেও হবে। যার যার আয়, ট্যাক্স ক্রেডিট ও ট্যাক্স রিলিফের উপর ভিত্তি করে রেভিনিউই ট্যাক্স এর হিসেব করে নিবে। তবে মনে রাখতে হবে রেভিনিউ কখনো কম ট্যাক্স নিবে না, বেশি ট্যাক্সও কাটবে না। রেভিনিউতে যার যার তথ্যের ভিত্তিতেই তার তার ট্যাক্সের হিসবে হবে।
এখন প্রশ্ন হল, তাহলে আমাদের কাজ কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে এই লেখাটা মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণটা পড়তে হবে। লেখাটা একটু বড় হতে পারে, কিন্তু এর থেকে সংক্ষিপ্ত করতে গেলে সম্পূর্ণ বিষয়টা তুলে ধরা সম্ভব হতনা।
ব্যক্তিগত ট্যাক্সের বিষয়ে আমাদের করনীয় কি?
ধরুন আপনার কোম্পানি যখন আপনাকে বেতন দেয় তার আগে কোম্পানি তার পে-রোল এ পে-স্লিপ ইস্যু করে, যেখানে কোম্পানি আপনার PAYE, USC, PRSI বাদ দিয়ে বাকিটা আপনাকে পে করে। যা পরবর্তীতে কোম্পানি রেভিনিউকে ফেরত দিয়ে দেয়। তার মানে কি কোম্পানিই ঠিক করে, যে আপনার কত ট্যাক্স তারা কাটবে? উত্তর হল, না। কোম্পানি প্রত্যেকবার পে-রোল রান করার আগে RPN আপডেট করে নেয়। RPN হল ‘রেভিনিউ পে-রোল নোটিফিকেশন’, যার মাধ্যমে রেভিনিউর সাথে সংযুক্ত প্রত্যেক কর্মচারীর তথ্য কোম্পানির পে-রোল সফটওয়্যারে আপডেট হয়ে যায়। এখন আপনার যদি কোন তথ্যই রেভিনিউতে না থাকলে পে-রোল সফটওয়্যার সে RPN রিট্রিভ করতে পারবেনা, সুতরাং আপনার উপর ইমারজেন্সি ট্যাক্স ধার্য হবে। সাধারণত নতুন চাকুরীতে কেউ ঢুকলে এটা হয়, এজন্য কেউ নতুন চাকুরী শুরু করলে রেভিনিউ কে জানানো লাগে।
ওই রেভিনিউর তথ্যের উপর ভিত্তি করেই পে-রোল সফটওয়্যার নির্ধারণ করে আপনার কাট-অফ পয়েন্ট কি, ট্যাক্স ক্রেডিট কত, হায়ার রেটে ট্যাক্স কত আর লোয়ার রেটে কত ট্যাক্স আসে ইত্যাদি ইত্যাদি।
রেভিনিউ সাধারণত বছরের শুরুতে একটা স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স ক্রেডিট সার্টিফিকেট ইস্যু করে যার উপর ভিত্তি করেই সারা বছরের ট্যাক্স নির্ধারণ করে। কিন্তু আপনি চাইলে সে ট্যাক্স ক্রেডিট এর পরিবর্তন আনতে পারেন। যার উপর ভিত্তি করে আপনার ট্যাক্সেরও উঠানামা নির্ভর করবে। তা করতে হলে আপনার অবস্থান সম্পর্কে রেভিনিউকে অবগত করতে হবে। যদি না করেন তাহলে রেভিনিউ জানবেনা যে আপনার অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। সুতরাং রেভিনিউও তার স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স ক্রেডিট সার্টিফিকেটের উপর ভিত্তি করে ট্যাক্স কেটে যাবে।
সুতরাং আমাদের করনীয় হল, রেভিনিউকে সবসময় আপডেট প্রদান করা।
ট্যাক্স ক্রেডিট হল এমন একটা ক্রেডিট যা আপনার ট্যাক্সকে কমাতে সাহায্য করে। বাই ডিফল্ট প্রত্যেক কর্মজীবী একটা স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স ক্রেডিট পেয়ে থাকে। তা হল পার্সোনাল ট্যাক্স ক্রেডিট €১৬৫০ এবং এমপ্লয়ী ট্যাক্স ক্রেডিট €১৬৫০, মোট €৩৩০০ এর ট্যাক্স ক্রেডিট চোখ বন্ধ করে সবাই পেয়ে থাকে (সিঙ্গেল অ্যাসেসমেন্টের ক্ষেত্রে)।
যদি এই €৩৩০০ ট্যাক্স ক্রেডিট না থাকত তাহলে কি হত? ধরুন আপনার বাৎসরিক আয়ের উপর ট্যাক্স আসে €৫০০০, কিন্তু ট্যাক্স ক্রেডিট €৩৩০০ থাকার কারণে আপনাকে আর €৫০০০ টাকা ট্যাক্স দেয়া লাগতেছেনা। আপনি €৫০০০ থেকে €৩৩০০ বাদ দিয়ে কেবলমাত্র বাকি €১৭০০ টাকাই ট্যাক্স দিচ্ছেন।
আগেই বললাম €৩৩০০ ট্যাক্স ক্রেডিট বাই ডিফল্ট সবাই পেয়ে থাকে। এখন চাইলে এই ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানো যায়। ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়া মানে কম ট্যাক্স প্রদান। ধরুন ট্যাক্স ক্রেডিট বেড়ে যদি €৪০০০ হয়, সেখানে যদি কারো €৫০০০ টাকাই বাৎসরিক ট্যাক্স আসে তাহলে তাকে ট্যাক্স দিতে হবে মাত্র €১০০০ টাকা, যেখানে উপরোক্ত হিসেব অনুযায়ী €৩৩০০ থাকার কারণে একই আয়ের ব্যাক্তিকে দিতে হচ্ছে €১৭০০ ট্যাক্স।
এটা মনে রাখতে হবে যত বেশি ট্যাক্স ক্রেডিট তত কম ট্যাক্স লাইবিলিটি (বকেয়া)।
ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানোর উপায় কি?
ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানোর অনেকগুলো নিয়ম, পদ্ধতি ও উপায় রয়েছে। যার যে ক্রেডিট প্রাপ্য সে তার প্রয়োগ করতে পারে।
ধরুন আপনি আয়ারল্যান্ডে এসে বেশ কিছু বছর চাকুরী করেছেন। কিছুদিন আগে দেশে গিয়ে সদ্য বিবাহ করে আপনার বউকে নিয়ে এসেছেন, এসে আবার যথারীতি কাজে ফিরেছেন। কিন্তু আপনার স্পাউস আপাতত কোন চাকুরীতে প্রবেশ করে নাই। কিন্তু এই কথাটা রেভিনিউকে জানান নাই, যার কারণে আপনার ট্যাক্স আগের মতই কেটে নিচ্ছে রেভিনিউ। কারণ রেভিনিউ তখনো জানে আপনি সিঙ্গেল এবং সিঙ্গেল ব্যাক্তি হিসেবে আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট €৩৩০০ ই আছে।
কিন্তু যদি আপনি রেভিনিউকে জানাতেন যে আপনি এখন বিবাহিত, আপনার স্পাউস চাকুরী করতেছেনা, তারা যেন আপনার জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট করে। যা করলে আপনার পার্সোনাল ট্যাক্স ক্রেডিট সরাসরি €১৬৫০ দ্বারা বৃদ্ধি হয়ে যাবে। তার মানে হল আপনি বছরে €১৬৫০ ট্যাক্স অতিরিক্ত কম দেয়া লাগতেছে যা সিঙ্গেল অ্যাসেসমেন্টে সম্ভব ছিলনা।
জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে একটা উল্লেখযোগ্য উপায় ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানোর। জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট করলে আরেকটা সুবিধা আপনার কাট-অফ পয়েন্টও বেড়ে যায়। কাট-অফ পয়েন্ট বৃদ্ধি মানে হচ্ছে আপনার লোয়ার রেটে ট্যাক্স হিসেবের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া।
এছাড়াও অন্যান্য ট্যাক্স ক্রেডিটও বিদ্যমান। যেমন আপনি যদি কারো দায়িত্ব বহন করেন। যেমন দেশে আপনার বাবা মায়ের দেখাশুনার জন্য টাকা পাঠান, অথবা কোন আত্মীয়ের দেখাশুনা করেন, আয়ারল্যান্ডে অথবা আয়ারল্যান্ডের বাহিরে, তার জন্য ব্যাক্তি অনুযায়ী কিছু ডিপেন্ডেন্ট রিলেটিভ ট্যাক্স ক্রেডিট খুব সহজেই ক্লেইম করতে পারেন।
আপনার বৎসরব্যাপী ডাক্তার খরচ, টিউশন ফি বাবদ খরচ গুলা ক্লেইম করতে পারেন। কিছু হিসেব আছে যা আপনার করার দরকার নেই, আপনি শুধু খরচের পরিমাণটা দিয়ে দেন, বাকি হিসেব রেভিনিউই করে নিবে।
আপনার যদি সন্তান থাকে এবং আপনার স্ত্রী চাকুরী করেনা কিন্তু আপনার সন্তানের দেখাশুনা করে, সেক্ষেত্রে হোম কেয়ারার হিসেবে ক্রেডিট ক্লেইম করতে পারেন। অনেকের ডিভোর্স হয়ে যায় গেলে এবং বাচ্চা থাকলে সিঙ্গেল প্যারেন্ট হিসেবে ট্যাক্স ক্রেডিট এবং স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে এবং সন্তান থাকলে উইডোড প্যারেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট রয়েছে।
এছাড়াও চাইল্ডকেয়ার ট্যাক্স ক্রেডিট, ইনক্যাপাসিটেড চাইল্ড ক্রেডিট, ব্লাইন্ড পার্সন ট্যাক্স ক্রেডিট, গাইড ডগ ট্যাক্স ক্রেডিট, বয়স্কদের জন্য ট্যাক্স ক্রেডিট, নতুন সংযোগিত ‘Stay & Save’ ট্যাক্স ক্রেডিটস ইত্যাদি অনেক ধরনের ট্যাক্স ক্রেডিট রয়েছে। যা যার যার অবস্থা অনুযায়ী এবং যিনি যে ট্যাক্স ক্রেডিট এর জন্য কোয়ালিফাইড তিনি কেবল সেই ট্যাক্স ক্রেডিটই ক্লেইম করতে পারবেন।
ট্যাক্স রিলিফ কি?
ট্যাক্স ক্রেডিটের মত ট্যাক্স রিলিফও ট্যাক্স কমাতে সাহায্য করে। তবে একটু ভিন্নভাবে।
ট্যাক্স ক্রেডিট মূলত সরাসরি ট্যাক্সকে কমিয়ে দেয়, আর ট্যাক্স রিলিফ সরাসরি ট্যাক্সের সাথে প্রয়োগ হয়না। ট্যাক্স রিলিফ টা মূলত আপনার মোট আয়কে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে যার উপরই কেবলমাত্র আপনার ট্যাক্স এর হিসেব হবে। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা পানির মত পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ধরুন পূর্বের মত আপনার বাৎসরিক আয় €৩০০০০ ইউরোই আছে। ধরুন আপনার একই বৎসরে ট্যাক্স রিলিফ পেলেন €১০০০। তাহলে আপনার ট্যাক্স টা তখন আর €৩০০০০ এর উপর হিসেব হবেনা, হবে €১০০০ বাদ দিয়ে বাকি €২৯০০০ এর উপর। তার মানে আপনি €১০০০ এর উপর ২০% ট্যাক্স আর দিচ্ছেন না, এতে আপনি €২০০ ট্যাক্স কম দিচ্ছেন।
ট্যাক্স ক্রেডিটের মত ট্যাক্স রিলিফ পাওয়ারও অনেকগুলা উপায় রয়েছে। যেমন অনেকে PRSA বা পার্সোনাল রিটায়ার্মেন্ট সেভিংস অ্যাকাউন্টে কন্ট্রিবিউট করে, যেটা পেনশন স্কিম এর মত। সুতরাং একজন ব্যাক্তি যে পরিমাণ PRSA স্কিমে দিয়ে থাকে তার একটি নিদৃস্ট % বয়সভেদে রিলিফ পেয়ে থাকে। ওই রিলিফ তার বাৎসরিক আয় থেকে বাদ দিয়ে তাকে ট্যাক্স প্রদান করতে হয়।
আবার ধরুন করোনাকালীন সময়ে অনেকে বাসা থেকে কাজ করতে হয়েছে। সরকার এর উপর ই-ওয়ার্কিং রিলিফের সংযোজন করে। বাসা থেকে কাজ করার ফলে অনেকের অতিরিক্ত ইলেক্ট্রিসিটি বা গ্যাস বিল, ইন্টারনেট ও টেলিফোন বিল দিতে হয়েছে, তার উপর হিসেব করে একটা রিলিফ ক্লেইম করা যাবে।
এছাড়াও রেন্ট এ রুম ট্যাক্স রিলিফ, ফ্ল্যাট রেইট এক্সপেন্স ট্যাক্স রিলিফ, বাইক টু ওয়ার্ক ট্যাক্স রিলিফ, মেডিকেল এক্সপেন্স ট্যাক্স রিলিফ ইত্যাদি। ট্যাক্স ক্রেডিটের মতই যার যার অবস্থা অনুযায়ী এবং যিনি যে রিলিফের জন্য কোয়ালিফাইড তিনি সে রিলিফ এর জন্য উপযুক্ত।
সারমর্ম হল উভয়ই ট্যাক্স ক্রেডিট এবং ট্যাক্স রিলিফ আপনার ট্যাক্স কমাতে সাহায্য করবে। প্রথমত হল আপনি আপনার অবস্থা বিবেচনা করবেন, এর পর দেখবেন আপনি কোন ক্রেডিটটি অথবা কোন রিলিফটি পাবার জন্য উপযুক্ত, সে অনুযায়ী আপনার প্রাপ্য ক্রেডিট বা রিলিফের জন্য সরাসরি ক্লেইম করতে পারবেন।
প্রোপার্টি/ব্যাক্তিগত বাড়ি সম্পর্কিত ইনসেন্টিভ ও ক্রেডিট
যারা নতুন বাড়ি কিনতে বা তৈরি করতে চান তারা কিছু ট্যাক্স ক্রেডিট ক্লেইম করতে পারবেন। সেটা নগদ খরচের ক্ষেত্রে ও মর্টগেজ নেয়ার ক্ষেত্রেও হতে পারে। নতুন নিয়মে সর্বোচ্চ €৩০০০০ পর্যন্ত পেতে পারেন। কেউ নতুন বাড়ি কিনতে চাইলে অতবা মর্টগেজ নিতে চাইলে আগে রেভিনিউতে ‘’হেল্প টু বাই’’ স্কিমে আবেদন করে নিতে হবে। তবে এর আগে নিয়মগুলো ভালো করে দেখে নিবেন।
কারো যদি বাড়ি থেকে থাকে তারাও কিছু ক্ষেত্রে ট্যাক্স রিলিফ ও ক্রেডিট পেতে পারেন। যেমন হোম রিনোভেশন ইনসেন্টিভ, মর্টগেজ ইন্টারেস্ট রিলিফ, রেন্ট এ রুম রিলিফ, সিটি কাউন্সিলের অধীনে যাদের বাড়ি তাদের জন্য LCI রিলিফ ইত্যাদি। তবে সর্বক্ষেত্রেই কিছু নিয়ম এবং শর্ত রয়েছে, ক্লেইম করার আগে দেখে নিতে হবে আপনি সেই শর্তগুলো পূরণ করেন কিনা।
কিভাবে ক্লেইম করবেন?
আপনার অবস্থান যখনই পরিবর্তন হবে তখনি আপনি আপনার অবস্থান রেভিনিউতে হালনাগাদ করে নিতে পারেন। যেমন ধরুন বছরের মাঝামাঝিতে আপনার বিবাহ হল, তখনি আপনি রেভিনিউতে জয়েন্ট অ্যাাসেসমেন্ট এর ফর্ম পূরণ করে দিয়ে দিতে পারেন, তাহলে সে অনুযায়ী রেভিনিউ আপনার ট্যাক্স ক্রেডিট হালনাগাদ করে নিবে। অনেকে করোনার কারণে বা অন্য কারণে যদি চাকুরী হারিয়ে থাকে তাহলে তাড়া ফর্ম P50 পূরণ করে দিতে পারেন, কোন রিটার্ন পাওয়ার থাকলে তাতে পেয়ে যাবেন। এভাবে যে কোন পরিবর্তনই রেভিনিউতে জানাতে পারেন।
রেভিনিউ অনলাইন সার্ভিস এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র যেখানে খুব সহজেই আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য, অবস্থান ও ক্লেইম করতে পারেন। যার জন্য রেভিনিউতে অ্যাকাউন্ট থাকা খুবই জরুরি। যাদের অ্যাকাউন্ট নাই অতবা অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবগত না তারা দেরি না করে আজই করে ফেলুন।
যাদের আপাতত অ্যাকাউন্ট নাই অথবা থাকলেও কিভাবে তা পরিচালনা করতে পারেন না অথবা কোন বিষয় বুঝতে কষ্ট হচ্ছে সেক্ষেত্রে রেভিনিউর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। সেটা ফোন করে হতে পারে অথবা সরাসরি গিয়েও করতে পারেন। আবার কিছু কিছু জিনিস আছে তা চাইলেও অনলাইন থেকে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে রেভিনিউর সাথে যোগাযোগ করাই শ্রেয়।
আপনি সবগুলো ট্যাক্স ক্রেডিট এবং রিলিফ একসাথে বার্ষিক রিটার্নে ক্লেইম করে নিতে পারেন। এতে আপনার অব্যবহৃত ট্যাক্স ক্রেডিট এবং রিলিফ, যেগুলা বৎসরব্যাপী ক্লেইম করা হয় নাই এবং যার ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত ট্যাক্স দিয়ে আসছিলেন, সে অতিরিক্ত ট্যাক্স আপনি ফেরত পাবেন বাৎসরিক রিটার্ন এর মাধ্যমে।
বাৎসরিক রিটার্ন মূলত একটা ফর্ম, যেটা P21 নামে পরিচিত। যেখানে আপনার বছরের সব আয় হালনাগাদ করবেন। আপনার সকল PAYE সংক্রান্ত আয় ওইখানে হালনাগাদই থাকে, PAYE ছাড়া যদি অন্য আয় থেকে থাকে তাহলে তা ওইখানে দিয়ে দিতে পারেন। আপনার সমস্থ ক্রেডিট এবং রিলিফ ওখানেই প্রয়োগ করতে পারেন।
সেখানে আপনার কিছু তথ্য এবং জয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট হলে স্পাউসের তথ্যও দেখতে পাবেন। ব্যাক্তিগত তথ্যের পরিবর্তন হলে সেখানে তার আপডেট করে নিতে পারবেন। ব্যাংক ডিটেইলস ঠিক আছে কিনা দেখে নিবেন, যেখানে আপনার রিফান্ড ফেরত যাবে।
সব রিভিউ করে ঠিক থাকলে জমা দিয়ে দিতে পারেন। এরপর রেভিনিউ রিটার্ন ভ্যারিফাই করে দেখে সর্বশেষ স্টেটমেন্ট অব লাইবিলিটি ইস্যু করবে। যেটা হবে আপনার বৎসরব্যাপী আয়ের এবং ট্যাক্সের হিসেবনামা। আগে কোম্পানি তার কর্মচারীদেরকে বছর শেষে P60 ইস্যু করে দিত, এখন তা আর করেনা। সুতরাং স্টেটমেন্ট অব লাইবিলিটিই আপনার বর্তমান P60, যা বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
মনে রাখতে হবে রেভিনিউ ট্যাক্স ক্রেডিট এবং রিলিফের প্রমাণস্বরূপ ডকুমেন্ট চাইতে পারে। সুতরাং সে ক্রেডিটই ক্লেইম করবেন যেটা আপনার প্রাপ্য, যাতে রেভিনিউ অথরিটি থেকে চাইবামাত্র দিতে পারেন।
অনেকে বিগত অনেক বছরই রিটার্ন জমা দেন নাই। চাইলে সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারেন। যারা বিগত বছরগুলোতে ট্যাক্স ক্রেডিট জমা দেন নাই উনাদের জন্য জন্য পরামর্শ যে রিটার্ন জমা দেয়ার। এতে কিছু অতিরিক্ত ট্যাক্স ফেরত পেলেও পেতে পারেন, যদি আপনার কোন অব্যবহৃত ক্রেডিট থেকে থাকে।
সর্বশেষ
শুরুতেই বলেছি ট্যাক্স ব্যপারটা একটু জটিল। বহু শর্ত, নিয়ম, রেট, সময়ের বেড়াজালে ভরপুর। এই আর্টিকেলও সব বিষয় তুলে আনা হয় নাই। তবে সবার জন্য সব নিয়ম প্রযোজ্য নয়, সবার জন্য সব ট্যাক্সের রিলিফ ও ক্রেডিট নয়, সবাই সব রিলিফ ও ক্রেডিট এর জন্য প্রাপ্যও নয়। আপনি শুধু আপনার অবস্থা বিবেচনা করে শুধু মাত্র সে অনুযায়ী আপনার রেভিনিউ অ্যাকাউন্টটা হালনাগাদ রাখেন।
সবসময় দুইটা বিষয় মাথায় রাখবেন।
১। বছরের মধ্যে বা বছর শেষে আপনার ব্যাক্তিগত অবস্থান রেভিনিউতে হালনাগাদ/আপডেট রাখবেন
আশা করি আর্টিকেলটি ট্যাক্স সম্বন্দীয় সাধারণ ধারণা পেতে সাহায্য করবে। এরপরেও কারো কোন তথ্য জানতে বা কোন বিষয়ে বুঝতে অসুবিধা হলে আমাদের ফ্রি হেল্পলাইনের দ্বার খোলা রয়েছে। বরাবরের মত ট্যাক্স সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানার থাকলে আমাদের সাথে নিঃসংকোচে যোগাযোগ করতে পারেন।
দাবাজগতে ছোটো বা বড় প্রত্যেক খেলোয়াড়ই স্বপ্ন দেখে কোনো একদিন আন্তর্জাতিক খেতাবপ্রাপ্ত একজন খেলোয়াড়ের সাথে দাবার বোর্ডে মুখোমুখি হবে। আর যদি সে একজন গ্র্যান্ডমাস্টারের সাথে খেলার সুযোগ পায়, তাহলে তো কথাই নেই। নিঃসন্দেহে তার জীবনে সেটা হয়ে থাকে একটি স্মরনীয় ঘটনা। মুহতারিমের সেই স্বপ্ন পূরণ হয় ২০২০ সালের ২৪শে জানুয়ারি। শুধুই যে স্বপ্নপূরণ, তাই নয়। কোনো গ্র্যান্ডমাস্টারের বিপরীতে প্রথম খেলাতেই সে পায় বিস্ময়কর জয়লাভ। সুতরাং এই দিনটি অবশ্যই তার দাবা জীবনের অন্যতম স্মৃতি হয়ে থাকবে চিরকাল।
সেদিন ডাবলিনের Gonzaga Classic 2020 Masters টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ডেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ক্রোয়েশিয়ার উপরের সারির দাবা খেলোয়াড় গ্র্যান্ডমাস্টার Ante Saric, যার ফিডে রেটিং তখন ২৫৬৯। আর মুহতারিমের রেটিং ছিলো ২১৫৯। রীতিমতো ৪০০ রেটিং পয়েন্টের পার্থক্য। খেলার আগেই ফলাফল নিশ্চিত পরাজয়। কিন্তু সদ্যোজাত হরিণ শাবক যেমন হিংস্র ব্যাঘ্রকে ভয় পায় না, ঠিক তেমনি ১৫ বছর বয়সী নবীন মুহতারিমও বোধ হয় ভয় পায়নি একজন গ্র্যান্ডমাস্টারের সাথে অসম লড়াই করতে।
যাহোক, শীতের রাতে আমি অপেক্ষায় আছি। ইতোমধ্যে তিন ঘন্টা সময় অতিবাহিত হয়েছে। তবে আমি মহা খুশী এই ভেবে যে, ছেলে অন্তত খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। এরপর আরও ঘণ্টাখানেক বাদে সে যখন খেলার হলরুম থেকে বের হয়ে হাসিমুখে আমাকে বললো, আমি জিতেছি। আমি ভাবলাম সে আমার সাথে নিছক দুষ্টামি করছে। আজ আমি নিজেকে ধিক্কার দিই এই ভেবে যে, ছেলের যোগ্যতাকে সেদিন অবমূল্যায়ন করেছি।
এই খেলায় মুহতারিমের পারফরম্যান্স ছিলো অসাধারন, দুর্দান্ত। তার এই খেলাটি আয়ারল্যান্ডের দাবা জগতের সকলের দৃষ্টি কাড়ে। আয়ারল্যান্ডের মূল দাবা সংস্থা আইরিশ চেস ইউনিয়ন মুহতারিমের একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ইন্টারভিউ প্রচার করেছে। আইরিশ ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকায় আয়ারল্যান্ডের একমাত্র গ্র্যান্ডমাস্টার Alex Baburin তাঁর দাবা বিষয়ক কলামে খেলাটি উদ্ধৃত করে বিশ্লেষন করেছেন। আইরিশ ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার Mark Quinn মুহতারিমের খেলাটিকে উপজীব্য করে ৩৪ মিনিটের একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরী করেছেন যেখানে তার মন্তব্য ছিলো,
“Muhtarim-Ul Haque, one of the young rising stars of Irish chess, caused a major upset when he beat Croatian Grandmaster Ante Saric in the first round of the Gonzaga Classic International Weekender this January.”
সবকিছুই চলছিলো ঠিকমতো, পরিকল্পনামাফিক। একটা সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে। মুহতারিমও খুব ভালো একটা ফর্মে ছিলো। কিন্তু করোনা মহামারী এসে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিলো। তা না হলে ছেলেটা হয়তো এতোদিনে ফিদে মাস্টার হয়ে যেতে পারতো। জানি না, আমাদের সেই স্বপ্ন কবে পূরণ হবে! বাবা হিসেবে আমি সকলের শুভ কামনা ও আশীর্বাদ কামনা করি।
উলুবনে মুক্তা ছড়ানো, জানি! তারপরও আলতো করে একটু সুড়সুড়ি।
উন্নত ও অনুন্নত দেশের মধ্যকার ফারাক বা ব্যবধান অতি সহজে অনুমেয়। অবকাঠামো ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার দাড়িপাল্লাই প্রকৃত উন্নয়নের সূচক। হরদম যত্রতত্র অপরিকল্পিত প্রাসাদ অট্টালিকা বা যান চলাচলের রাস্তাঘাট তরতর গড়ে উঠাই উন্নয়নের উপমা নয়। নাগরিকের প্রাপ্য অধিকার নূন্যতম লঙ্ঘিত হলে উন্নয়নের সূচক প্রশ্নবিদ্ধ ও ভঙ্গুর হয়। তবে, যথাযথ উন্নয়নের পাশাপাশি মানবাধিকার সংরক্ষিত হলে সোনায় সোহাগা। বিশ্বে ইউরোপ আমেরিকা সহ অনেক সভ্য জাতি উন্নত দেশের নজির।
আয়ারল্যান্ডের একটি উপমা উত্থাপন করা যাক-গণতান্ত্রিক এই দেশে কোয়ালিশন সরকারের ধারা অব্যাহত। সর্বশেষ নির্বাচনের প্রাক্কালে দ্বিতীয় বৃহত্তর সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ঘোষনা দেয় যে, তারা প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশী আসন পেলে পানির বিল আদায় করা হবে না। বিলিয়ন মুদ্রা ব্যয়ে গড়ে উঠা পানির বিল তৈরীর অবকাঠামো প্রস্তুত অথচ নির্বাচনের পর আচমকা স্তব্ধ হয়ে গেল। যেমন প্রতিশ্রুতি ঠিক তেমনই বাস্তবায়ন। জন্ম থেকে এই দেশে পানির বিল পরিশোধের রেওয়াজ ছিল না। এরই ধারাবাহিকতা এই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অব্যাহত রয়ে গেল।
বাংলাদেশে অনেক নির্বাচন হয়েছে, অনেক প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছে। নির্বাচন শেষে হলফকৃত ওয়াদা কে কতটুকুন পূরন করেছেন? মনুষ্যত্বের আমূল পরিবর্তন ছাড়া সত্যিকারের উন্নয়ন অসম্ভব, কল্পনা করা বিলাসিতা মাত্র।
নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা মোকাবিলায় অকার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা দেওয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী রোববার এক বিবৃতিতে সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর সিএনএনের।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় এ নিয়ে একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এতে নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা মোকাবিলায় অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সীমাবদ্ধতা ধরা পড়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন ধরনের যে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে, অক্সফোর্ডের উদ্ভাবিত টিকা তা আটকাতে পারছে না বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। মূলত এর পরই এটি দেওয়া স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
সাধারণ করোনাভাইরাস থেকে এই জীবাণুটি অনেক বেশি সংক্রমক। সাধারণ জীবাণুটি থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি ছড়াতে পারে এই ভাইরাস।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এর জেরেই গত এক মাসে করোনা সংক্রমণের হার লাফিয়ে বেড়েছে। এর মধ্যেই দেশটিতে পৌঁছায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। ১০ লাখ মানুষকে দ্রুত ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় কর্তৃপক্ষ।
এই প্রস্তুতির মধ্যেই দুই হাজার মানুষকে নিয়ে সেখানকার গবেষকরা একটি পরীক্ষা চালান। তাতে দেখা যায়, কোভিডের নতুন ধরনের ভাইরাসটি মোকাবিলা করতে পারছে না অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি। তার পরই সেটি আপাতত ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত গার্ডা সর্বমোট ৩,৫২৩ জনকে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণের জন্য ফাইন করেছে, এর মধ্যে ৩৭৫ জনকে করেছে ডাবলিন এয়ারপোর্টে।
আগামী ৮ ই ফেব্রুয়ারি থেকে নন-রেসিডেন্ট, যেমন যারা বর্ডার অতিক্রম করে এসেছে তাদেরকে €১০০ ফাইনের আওতায় আনতে গার্ডাকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
শুধু গাড়ির ড্রাইভারকেই নয়, একই গাড়ির সব যাত্রিকেই €১০০ করে ফাইন করবে গার্ডা।
এছাড়াও গার্ডা গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৩০১ জনকে ফাইন করেছে হাউজ পার্টি এবং জড়ো হওয়ার জন্য। যারা হাউজ পার্টির আয়োজন করবে তারা €৫০০ এবং যারা হাউজ পার্টিতে যাবে তারা €১৫০ করে ফাইন পাবে।
শুধু হাউজ পার্টি নয়, যেই জনস্বাস্থ্য নিয়ম ভঙ্গ করবে তাকেই €৫০০ করে জরিমানা করা হবে।
ছয় জন ইতিমধ্যে সময়মত জরিমানা দিতে ব্যার্থ হওয়ায় কোর্ট স্যামন ইস্যু করেছে। যার ফলে সবাই €১০০০ করে জরিমানা অথবা এক মাসের জেল খাটার শাস্তি ভোগ করতে হবে।
সর্বপরি সমস্ত ক্ষেত্রে ফাইলগুলি পাবলিক প্রসিকিউশনের পরিচালককে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
দেশে কোনো মানুষ নেই। ন্যায্য কথা বলার লোক নেই। প্রতিবাদ করার সাহস নেই। জবাব দিহীতা নেই। জবাব আদায় করার লোক নেই। আছে শুধু চৌর্যবৃত্তি, তেলবৃত্তি, দলবৃত্তি ও দালালবৃত্তি। দেশে সংগঠন আছে, সাংগঠনিক কাঠামো নেই। আইন আছে, আইনের প্রয়োগ নেই। কোর্ট আদালত আছে, স্বাধীনতা নেই। সংবিধান আছে কিন্তু এর বিধান নেই। স্বাধীনতা আছে কিন্তু এর মর্মবাণী নেই। রাজনীতি আছে, রাজনৈতিক দল আছে কিন্তু রাজনৈতিক নেতা নেই। আছে রাজনৈতিক মস্তান। সোসাল মিডিয়ার কল্যাণে এমন এক মস্তানের ডিজিটাল সাক্ষাত মেললো আজ।
সম্ভবত দু চারদিন আগে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল একটি টক শোর আয়োজন করে। সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় এ টক শোতে অতিথি হিসেবে অংশ নেন জনাব সালমান এফ রহমান ও জনাব ফরহাদ মজহার। জনাব মজহারের প্রশ্নের উদ্বৃতি টেনে জনাব খালেদ মি রহমানকে হুবুহু সেই প্রশ্নটি করলে তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। যেনো আঁতে ঘা লেগে যায়। খালেদ সাহেবের প্রশ্নকে “স্টুপিড প্রশ্ন” আখ্যায়িত করে তাঁকে সাংবাদিকতার সবক শেখানোর চেষ্টা করছেন। তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন। বিষোদগার করেছেন। মোট কথা, তার কথা বলার বাচনভঙ্গি ও ধরণ দেখে মনে হচ্ছিল তিনি সম্ভবত ভুলেই গিয়েছিলেন যে জনগণ তার অসভ্যতা ও অসৌজান্যতা দেখছে।
অবশ্য জনগণ দেখলেই বা তার কি! তিনি তো আর এসবের কেয়ার করেননা। তার গরম মেজাজ জনগণকেই উল্টো ভীত সন্ত্রস্ত করে। কারণ তিনি যে কেবোল রাজনৈতিক মস্তান তা তো নয়, অনেকের মতে দরবেশ বাবাও বটে। দরবেশ সাহেবের অঙ্গুলি হেলনে অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। অলৌকিক ক্ষমতা বলে দিনকে রাত, রাতকে দিন কিংবা কালোকে সাদা বানিয়ে দিতে পারেন। এরকম একজন দরবেশের সমালোচনা বা বিরুদ্ধাচরণ করে নিজের বিপদ ডেকে আনবে এমন বুকের পাটা কয়জনের আছে! নেই বলেই তিনি বা তার মতো ব্যাক্তিবৃন্দ নিজেদেরকে রাজনৈতিক সন্ত্রাসীতে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা এতোই বেপরোয়া ও এতোই শক্তির অধিকারী যে তাদের পকেটে সরকার বন্দী ও তাদের কাছে দেশ জিম্মি। অন্যথায় সালমান এফ রহমানের মতো ব্যাক্তিরা এতোটা লাগামহীন হতে পারতো না।
মি রহমান একজন বয়োজ্যেষ্ঠ প্রবীণ ব্যাক্তি। তিনি একজন রাজনীতিবিদ। তিনি একজন ব্যবসায়ী। সরকারি দলকেও তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন। তার কর্মকাণ্ড, আচরণ ও বাচনভঙ্গি হবে অনুকরণশীল। ব্যাবসা ও রাজনীতির আইকন ভেবে নতুন প্রজন্ম তাকে স্যালুট দেবে। তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। অথচ অপ্রিয় হলেও সত্য এই যে, তিনি তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে বিতর্কিত করছেন। চরম দোষে দুষ্ট করে তুলেছেন। যা কিনা কেবল তার নিজের জন্যই লজ্জার নয়, এ লজ্জা পুরো দেশ ও জাতির। এ লজ্জার প্রতিবাদ না জানানোটা আরও বেশি লজ্জার। তাই দেশে যেসব রথী মহারথীরা আছেন তারা কিছু বলুন আর না বলুন আমি বলবোই। আমার কাছে যা সত্য বলে মনে হয়, আমার বিবেককে যা নাড়া দেয় তা নিয়ে আমি লিখি, কথা বলি। বন্ধু হলেও বলি। স্বজন হলেও বলি। শত্রু হলেও বলি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা আমার রক্তের ধর্ম। এতে কে কি বলবে বা কে কি ভাববে সে ধার আমি ধারিনা। আগাছা সমেত প্রাণীদের সস্তা গুণকীর্তনে গুনী হয়ে ওঠার নিম্ন বাসনা আমার নেই।
সালমান এফ রহমান সাহেবকে বলতে চাই, আপনি একজন রাজনীতিক। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকদের একজন। আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী হিসেবে রয়েছে আপনার খ্যাতি। যেহেতু আপনি একজন পাবলিক ফিগার সেহেতু শুধু খালেদ নয়, যে কোনো সাংবাদিক আপনাকে যে কোনো ধরনের প্রশ্ন করতে পারে। সেটা স্টুপিড কোশ্চান হতে পারে। ওয়াইজ কোশ্চান হতে পারে। আপনার ফেবারেট হতে পারে আবার নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ক্ষেপে গেলে চলবেনা।
ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার সাথে তা মোকাবিলা করতে হবে। গরু রাখালের মতো রূঢ়তা বা উগ্রতা দেখিয়ে নয়। এর নেতিবাচক প্রভাব শুধু আপনাকেই খাট করেনা, সরকারের ভাবমূর্তিকেও নষ্ট করে। সরকারের অনেক সাফল্য ও অর্জনকেও মলিন করে দেয়।
একটু বিনয়, আদর্শ বা বয়সের ভারসাম্যবোধ বজায় রাখা কি খুব কঠিন? সম্পদের অহম থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা কি খুব দুঃসাধ্য? আর সে অহম আপনি সমাজে প্রকাশই করবেন কেনো? আপনার ব্যাংক ভর্তি টাকা আছে, সম্পদের পাহাড় আছে তাতে আমার কি? আমি বা আমরা আপনার খাই না পড়ি? তাহলে আমাদেরকে আপনার অগ্নিমেজাজ দেখাবেন কেনো? আপনি যতোই সম্পদশালী হোন না কেনো আপনার আর আমার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আপনি যে বাজারের ভাত খান, যে বাজারের মাছ খান আমিও সেই বাজারের মাছ ভাত খাই। আপনি খেতে বসলে রুই মাছের একটি বা দুটো টুকরোই খেতে পারেন। এর বেশি পারেন না। আমিও ঠিক তেমনি। আপনি মারা গেলে যতোটুকু কাপনের কাপড় পড়ানো হবে আমাকেও ঠিক ততোটুকু। সাড়ে তিন হাত জায়গার মধ্যে আপনাকে যেভাবে শুইয়ে দেয়া হবে আমাকেও ঠিক তেমনি। তাই মানুষকে মানুষ ভাবতে শিখুন। পেশাগত মর্যাদাকে মূল্যায়ন করুন। এতে আপনার যেমন মঙ্গল নিহিত তেমনি দেশ ও জাতিরও।
সুন্দরবন সহ ভূমণ্ডলের অসংখ্য জঙ্গলে বহু ইতর প্রাণীর বসবাস। যেখানে বাঘ, সিংহ সহ অজস্র হিংস্র জন্তুর পাশাপাশি বহু নিরীহ জীবজন্তুর সহাবস্থান।
নিরাপত্তা বিষয়ক জন্তু জানোয়ারের আজ অব্দি কোন অভিযোগ শোনা যায় নাই। Seleucus, বিধাতার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ, যাদের জ্ঞান ও বুদ্ধি আছে। এই মানুষের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য প্রয়োজন পড়ে প্রহরীর, নিরাপত্তা বাহিনীর!
শ্রেষ্ঠ জীব হলেও মানুষের অন্তরে লুকায়িত পশুত্বের প্রায়শই বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আর, হিংস্র হয়ে পড়ে ইতর প্রাণীর মত। এই ইতরামি দমনে প্রয়োজন পড়ে সামাজিক নিরাপত্তার।
বাংলাদেশের অবকাঠামোগত চলমান উন্নয়ন নিঃসন্দেহে প্রশংসার। তবে ‘মানসিকতা’ প্রসঙ্গ প্রচন্ড রকম প্রশ্নবিদ্ধ। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার পাশাপাশি যথাযথ মানসিকতার উন্নয়ন অপরিহার্য।
এই মানসিকতার পরিবর্তন ও উন্নয়ন ব্যতিরেকে বিশ্বের উন্নত দেশগোলোর সাথে বাংলাদেশের তুলনা করা অসম্ভব। বাস্তবতা অনুধাবন করে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে, আমাদের প্রত্যাশা।
এম এ বুলবুল ইসলাম।
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।
০৩৷০২৷২০২১
ডাবলিনে একের পর এক সহিংস ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। বেশ কিছুদিনের মাথায়ই ঘটেছে বেশ কিছু ছুরিকাঘাতের ঘটনা এবং এতে বেশ কিছু জীবনও ঝরে গিয়েছে অকালে।ডাবলিনের রাস্তায় রক্তের দাগ মুছতে না মুছতেই আবার রক্তে রঞ্জিত হল নর্থ সার্কুলার রোড।
গতকাল রাতেই দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন ৩০ বছর বয়স্ক এক যুবক। উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে যুবকের কয়েকটি স্থান জখম হয়ে যায়। জরুরি ভিত্তিতে তাকে ডাবলিনের মাটের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে ডাক্তাররা আশ্বস্ত করেছেন যে তার অবস্থা খুব বেশি জীবননাশক নয়।
এ ঘটনায় গার্ডা ঘটনাস্থল থেকেই চল্লিশঊর্ধ্ব এক যুবকে গ্রেফতার করেছে। তাকে বর্তমানে গার্ডার হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি এখন পর্যন্ত তদন্তাধীন রয়েছে।
করোনাভাইরাস লকডাউনের ভিতর আয়ারল্যান্ড ডাবলিন বিমানবন্দরে ৩৭৫ জনকে অপ্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক ভ্রমণের (Non-essential international travel) কারনে প্রত্যেককে ৫০০ ইউরো করে জরিমানা করা হয়েছে।
ডাবলিন বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সহ অপ্রয়োজনীয় সকল ধরনের ভ্রমণের জন্য এই পর্যন্ত ৩৫০০ জনের বেশি লোককে জরিমানা করা হয়।
অপ্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক ভ্রমন ঠেকাতে গত ২৯ শে জানুয়ারীতে নতুন ধার্যকৃত € ৫০০ ইউরো জরিমানা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৭৫ জন অ-প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য জরিমানা গ্রহন করতে বাধ্য হয়।
এদিকে সোমবার থেকে বর্ডার পার হয়ে নর্দান আয়ারল্যান্ডে প্রবেশের কারনে €১০০ জরিমানা গুনতে হতে পারে এবং যাতায়াতের নিয়ম ভঙ্গকারী প্রতিটি যানবাহনের মালিককে জরিমানা দিতে হবে।
এই পর্যন্ত সারা আয়ারল্যান্ডে ৩০০ জনকে বাসায় হাউস পার্টি আয়োজন করার কারনে বা পার্টিতে উপস্থিত হওয়ার কারনে জরিমানা করা হয়েছে। এদিকে, জরিমানা জারি ২৮ দিনের মধ্যে তা না দেওয়ার কারনে ৬ জনকে আদালতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
খবরে আরো বলা হয়, পুলিশ তাদের চেকপয়েন্ট গুলির মাধ্যমে এ সপ্তাহেও আরো সক্রিয় ভাবে তাদের কাজ অব্যাহত রাখবে যাতে লোকজন তাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে ৫ কিলোমিটারের বেশি আতিক্রম করে আইন ভঙ্গ না করে।
ছয় বছর ধরে চলিত ইয়েমেন যুদ্ধের এবার ইতি টানতে চান আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধকে আমেরিকা আর সমর্থন না করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে বাইডেনের আহ্বান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেয়ার পর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রথম ভাষণে বলেন, “ইয়েমেনের যুদ্ধ বন্ধ হতে হবে।” ইয়েমেনে চলমান যু্দ্ধে সৌদি সহ মিত্রদের সমর্থন দেয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইয়েমেন সরকার এবং হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে এই সংঘাতের শুরু ২০১৪ সালে। ক্রমশ হুতিরা ইয়েমেনের দখল নিতে শুরু করে। সে সময় সৌদি সহ একাধিক মুসলিম দেশ তার বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তাদের সাহায্য করে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা বিশ্ব।
দীর্ঘ ছয় বছরে ইয়েমেনে এক লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যুদ্ধের ফলে দেশে শুরু হয় তীব্র দুর্ভিক্ষ। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে ইয়েমেন।
এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ আলোচনাই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনো ভাবেই আর সৌদি আরবকে যুদ্ধে মদত দেওয়া হবে না। বরং ইয়েমেনে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের রাস্তা খোঁজা হবে।
বাংলাদেশের স্বনামধন্য পত্রিকা ডেইলি স্টার এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম আজ আল জাজিরার প্রতিবেদন ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ এর উপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনের সারমর্ম ছিল আলজাজিরার প্রতিবেদনটি যথেষ্ট অনুসন্ধানী ছিলনা এবং ওনারা চাইলে আল জাজিরা থেকে আরও তথ্যবহুল ও মানসম্পন্ন প্রতিবেদন তৈরি করতে পারতেন। কিন্তু কেন ওনারা তা করতে পারেন না, তারই ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন।
মাহফুজ আনামের লেখা থেকে হুবহু কপি নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে দেয়া হলঃ
গণমাধ্যম হিসেবে আজ আমরা মুক্ত হলে প্রতিবেদনটি নিয়ে আরও গভীর আলোচনা করতে পারতাম এবং এটি নিয়ে পর্যায়ক্রমে বিশ্লেষণ করে এর পেছনের সত্যটা বের করতে পারতাম। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা হিসেবে আল জাজিরার এই প্রতিবেদনকে সর্বোচ্চ মানের বলা যায় না। প্রতিবেদনটির শক্তিশালী কিছু দিক থাকলেও দুর্বলতা রয়েছে বিস্তর। আমি মনে করি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অনুমান ও কটাক্ষ করে দাবি করার চেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ তুলে ধরাটা বেশি জরুরি। প্রতিবেদনটিতে যত জোর দিয়ে দাবি করা হয়েছে, তত তথ্য দিয়ে সব বিষয়ের প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। তবে, এই প্রতিবেদনের শক্তিশালী দিক হলো— এটি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ দিয়েছে। এ ছাড়াও কিছু শক্তিশালী ও সুনির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্য-প্রমাণও প্রতিবেদনে রয়েছে।
কিন্তু, সে কথা কে বলবে? আমরা যদি আরও ভালো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে পারতাম, তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারতাম এই প্রতিবেদনের দুর্বল দিকগুলো। আমরা কি সেটা করতে পারি? আমরা কি জনগণের কাছে নীতি নির্ধারকদের জবাবদিহি করাতে পারি? আমরা কি এটা প্রকাশ করতে পারি যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করতে কেন এত দেরি হয় এবং সেগুলোর খরচ কেন প্রাক্কলিক বাজেটের চেয়ে তিন-চার গুণ বেড়ে যায়? আমরা কি খুঁজে বের করতে পেরেছি যে কারা বিদেশে অর্থ পাচার করে? এমনকি পানামা পেপারসে যখন আমাদের দেশের কিছু মানুষের নাম প্রকাশ পেল তখনো কি আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করেছি? বছরের পর বছর যাদের কোনো প্রকার প্রশ্ন না করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের কি আমরা খুঁজে বের করতে পেরেছি? আমরা কি খুঁজে বের করতে পেরেছি যে কেন ঋণখেলাপিদের টাকা পরিশোধের সময় বৃদ্ধি করা হচ্ছে, সুদ মওকুফ হচ্ছে? টরন্টোর ‘বেগম পাড়া’য় যাদের বাড়ি আছে বা মালয়েশিয়ায় অবৈধ সেকেন্ড হোম যারা করেছেন, তাদের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? না, তাদের কারও বিরুদ্ধে আমরা কিছুই করিনি। কারণ, তারা সবাই আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালী। আমরা তাদের নাড়ানোর সাহস পাইনি। কখনো কখনো আমরা আমাদের নিজস্ব অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করি। সেটা করতে পারি তখনই, যখন ঘটনার মূল হোতাকে সামনে না আনা হয়, কিংবা আসল অপরাধীর কোনো রাজনৈতিক বা প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় না থাকে কিংবা আমাদের প্রতিবেদন তাদের জন্য সুবিধাজনক হয়।
তাহলে আমরা কেন ‘শুনব না, দেখব না, বলব না’ নীতি নিয়েছি?
কারণ একটাই।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি মিডিয়া ওয়াচডগ বডি আর্টিকেল ১৯-এর সর্বশেষ অনুসন্ধান (২০২০) অনুযায়ী তিনটি ক্ষেত্রের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। প্রথমটি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, দ্বিতীয়টি ডিজিটাল জগতের অধিকার এবং তৃতীয়টি ভিন্নমত পোষণের অধিকার।
তাদের প্রতিবেদন বলছে, গত বছর দুজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, ৭৮ জনকে গুরুতরভাবে আহত করা হয়েছে এবং ১৬৬ জনকে হত্যা, অপহরণ, পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করা বা তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ৫৮ জন সাংবাদিকের নামে মোট ৩৫টি মামলা করা হয়েছে। ২০ জন সাংবাদিকের নামে ১২টি ফৌজদারি মানহানির মামলা করা হয়েছে। ৩১ জন সাংবাদিকের ক্যামেরাসহ খবর সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের কতটা অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকতে হয়, এই উদাহরণগুলো তা বোঝার জন্য মোটেই যথেষ্ট না। সাংবাদিকদের নামে ‘গুজব ছড়ানো’, ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা’, ‘দেশের ভাবমূর্তি’ নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়। এমনকি কোনো ব্যক্তিকে ‘সামাজিক’ভাবে হেয় করা বা ‘সম্মানহানি’ করার অভিযোগগুলো ‘বিচারযোগ্য অপরাধ’ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যদিও তারা সামাজিকভাবে হেয় করা বা সম্মানহানি বলতে কী বোঝাতে চায়, তার কোনো পরিষ্কার সংজ্ঞা দেওয়া হয় না বা এটাও বলা হয় না যে ওই সাংবাদিক আইনের কোন ধারাটি লঙ্ঘন করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে শুধু পুলিশ না, ক্ষমতাসীনদের সবাইকে কতটা স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ দেওয়া হয় তা কল্পনাও করতে পারবেন না। যখন জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের একজন সাংবাদিককে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দেখা করতে বলেন, কিংবা স্থানীয় পুলিশ খোঁজ নিতে থাকেন যে ‘আপনি এবং আপনার পরিবার কখন, কোথায়, কী করছে’, কিংবা বলা হয় ‘সাবধানে থাকবেন, আপনার ওপর আমাদের নজর আছে’, কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা কোনো স্থানীয় সন্ত্রাসী সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়ে বলে ‘আপনার দিন ঘনিয়ে এসেছে’, তখন আমাদের সাংবাদিকরা কোন পরিস্থিতির মধ্যে থেকে কাজ করেন তা হয়তো খানিকটা ধারণা করতে পারবেন। এভাবেই আমাদের সাংবাদিকদের কাটাতে হয় দিন, মাস এমনি বছর। (এমনই এক পরিস্থিতিতে আমাদের একজন সংবাদদাতাকে উচ্চপর্যায়ের ক্ষমতাধরদের কাছ থেকে বাঁচাতে অন্যত্র সরিয়ে রাখতে হয়েছিল।)
যখন ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) মান নিয়ে প্রশ্ন তুললে বলা হয় গুজব ছড়ানো হচ্ছে; যখন সরকার পুরোপুরি লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ার পরও বাস মালিক রাস্তায় বাস নামিয়েছে, এমন প্রতিবেদন করা হলে বলা হয় বাস মালিকের ‘মানহানি’ হয়েছে। এর ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মানহানির মামলা হয়েছে, পুলিশ সেই মামলা গ্রহণ করেছে। প্রতিবেদককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যখন করোনা মহামারিতে দরিদ্রদের জন্য সরকারের দেওয়া চাল চুরির প্রতিবেদন করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে একটি বৃহত্তর অনলাইন নিউজ পোর্টালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও একটি জাতীয় সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হতে পারে; যখন কোনো মৃত্যুর ঘটনায় কেবলমাত্র পুলিশের ভাষ্য প্রকাশ না করে ভিন্ন মত প্রকাশ করলে কোনো অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজ এডিটর ও স্টাফ রিপোর্টারের নামে মামলা ও তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে; তখন দেশের গণমাধ্যমগুলোর বাস্তব চিত্র সকলের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর্টিকেল ১৯-এর প্রতিবেদনের মতোই এমন বাস্তব উদাহরণের শেষ নেই।
সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে— ভয়ংকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মানহানির বিধানের সুস্পষ্ট অপব্যবহার। যাকে বর্তমানে প্রচলিত ‘গণমাধ্যম দমনকারী সব আইনের মূল’ হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। পুলিশ এই আইনের আওতায় আক্ষরিক অর্থেই যে কাউকে, যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে তুলে নিয়ে যেতে পারে। কারণ এই আইনের ব্যাখ্যা অস্পষ্ট এবং যে কারো নামে মামলা করার ও গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২০টি ধারার মধ্যে ১৪টি জামিন অযোগ্য। জামিন অযোগ্য কোনো মামলার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের হাত অনেকটাই বাঁধা থাকে। ফলে, অভিযুক্তকে নিশ্চিতভাবেই কারাগারে পাঠানো হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তি চাইলে অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে পারেন। তবে, তার জন্য লেগে যেতে পারে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত। (ফটো সাংবাদিক কাজলের জামিন পাওয়ার ঘটনাটি এক্ষেত্রে উত্তম উদাহরণ হতে পারে।)
কাজেই বাস্তবতা হলো— অভিযুক্ত হলেই গ্রেপ্তার হতে হবে এবং অপরাধী হোক বা নির্দোষ তাকে জেল খাটতে হবে। একটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মামলা দিয়েও একজনকে দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস জেল খাটানো সম্ভব।
মানহানির মামলায় আইনে স্পষ্টভাবে দুটি জিনিস বলা হয়েছে। একটি হচ্ছে— কেবলমাত্র ভুক্তভোগী, অর্থাৎ যার মানহানি হয়েছে তিনিই মামলা করতে পারবেন। এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে— একটি মানহানির ঘটনার জন্য কেবলমাত্র একটি মামলা দায়ের করা যাবে। বাস্তবে যে কেউ অপমানিত ‘অনুভব’ করলেই মানহানির মামলা করতে পারছেন। এমনকি যদি সেই ব্যক্তির ঘটনার সঙ্গে বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকে, তবুও তিনি মানহানির মামলা করছেন। আমরা যদি কোনো দুর্নীতিপরায়ণ ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে লিখি, তাহলে তার অনুসারীদের মধ্যেও কেউ ‘অপমানিত’ বোধ করে মানহানির মামলা করতে পারছেন। আমরা যদি কোনো রাজনীতিবিদ, স্থানীয় নেতা বা কোনো জনপ্রতিনিধির অপকর্ম সম্পর্কে লিখি, তাহলে তার অনুসারীদের মধ্যে যে কেউ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারছেন।
আমরা প্রায়শই অবাক হই এটা ভেবে যে, বিচারকরা কেন এ ধরনের মামলা গ্রহণ করেন? কেননা আইনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র তিনিই মামলা করতে পারবেন যার মানহানি হয়েছে। এ ছাড়াও আইনে আছে, একই অপরাধে একাধিক মামলা করা যাবে না। ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচারকরা এমন সংগত কারণ দেখিয়ে এই জাতীয় সব মামলা খারিজ করে দিতে পারেন। তারা বলতে পারেন, যে ব্যক্তি অপমানিত হয়েছে তিনি মামলা দায়ের করেননি এবং ইতোমধ্যে অন্য আদালতে এই ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগকে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ‘আইনের বাধ্যবাধকতা যথাযথভাবে পূরণ করতে হয়’। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ মানহানির মামলায় তা পূরণ করা হয় না। তবুও মামলাগুলো নেওয়া হয়, মামলার শুনানি হয় এবং বিচার কার্যক্রম চলতে থাকে। (এই লেখকের বিরুদ্ধে একই ঘটনায় ৮৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি বাদে ৮৩টি মামলা গ্রহণ করা হয়েছিল।)
সবচেয়ে কঠিন বাস্তবতা হলো— বাংলাদেশ যখন পুরোপুরি অজানা এক মহামারির হুমকিতে, যখন পুরো বিশ্ব এই বিধ্বংসী নতুন রোগের অপ্রত্যাশিত পরিণতি থেকে মুক্তি পাওয়ার লড়াইয়ে এবং যখন সাধারণ মানুষ তথ্যের জন্য গণমাধ্যমের দিকে তাকিয়ে, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় সবচেয়ে বেশি মামলা করা হয়েছে। আর্টিকেল ১৯-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৪৫৭ জনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৯৮টি মামলা করা হয়েছে। যেখানে ২০১৯ সালে ৬৩ জনের নামে করা হয়েছিল ৫৫টি মামলা। এর পাশাপাশি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করে যে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলা নিষিদ্ধ। তথ্যের অবাধ প্রবাহ বন্ধের জন্য এত প্রচেষ্টা।
এর সবগুলোকে এক সুতোয় গেঁথে যদি বলি তাহলে আইনের ব্যাপক পরিধি, ধারাগুলোর অস্পষ্টতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২০টির মধ্যে ১৪টি জামিন অযোগ্য ধারা, পুলিশকে স্বেচ্ছাচারিতার ক্ষমতা দেওয়া, ‘আইনের বাধ্যবাধকতা যথাযথভাবে পূরণ না হওয়ার পরও’ মামলা গ্রহণ করা, যার মানহানি করা হয়নি তাকেও মামলা দায়ের করার সুযোগ দেওয়া, একই ঘটনায় একাধিক মামলা গ্রহণ করা, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়ার কারণে নিরপরাধ হলেও একজন ব্যক্তিকে বেশ কয়েক দিন (সর্বনিম্ন) জেল খাটতে বাধ্য হওয়া, গুম, খুন, মারধোরের হুমকি, ভয় দেখানো এবং রাজনীতিবিদ ও আমলাদের মুক্ত গণমাধ্যম বিরোধী মনোভাব (অন্যথায় এমন আইন কেন তৈরি হয় যা ব্যবহার করে তারা সহজেই সাংবাদিকদের হয়রানি করতে পারেন) বাংলাদেশে সাংবাদিকতার জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
আইন, আইনের ধারার অস্পষ্টতা এবং সেগুলোর ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়নের স্বেচ্ছাচারিতা সম্মিলিতভাবে সাংবাদিকতার একটি ‘ব্ল্যাকহোল’ তৈরি করেছে। যে ‘ব্ল্যাকহোলে’র মধ্যে পরিচালিত হতে আমরা বাধ্য হই।
বাংলাদেশের সাংবাদিকরা যে পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করেন এটা তার কিছু নমুনা মাত্র। এটা আমাদের যেসব দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো ঢাকার অজুহাত নয়, বরং আমরা যে দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করতে চাই তার সাক্ষ্য। আমরা যেসব প্রতিবেদন প্রকাশ করি, তার পেছনে থাকে আমাদের প্রতিবেদকদের জীবনের ঝুঁকি। প্রতিটি প্রকাশিত সম্পাদকীয়র কী ব্যাখ্যা দাঁড় করানো হবে, তা নিয়ে এক ধরনের সুপ্ত ভয় কাজ করে। এমনকি প্রতিটি শব্দ ব্যবহার করতেই আমাদের ভাবতে হয় যে, এটা নিয়ে আবার কার ক্রোধের মুখোমুখি হবো। (দ্য ডেইলি স্টারকে একটি শব্দ নিয়ে ভুগতে হয়েছে এবং ভুগতে হচ্ছে। কারণ, শব্দটি একটি সংস্থার পছন্দ নয়।)
আল জাজিরার প্রতিবেদনটি আমাদের গণমাধ্যমের মাঝে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে ভাবার বোধ তৈরি করুক, আমাদের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করুক, আমাদেরকে আমাদের ভুলগুলো মোকাবিলা করতে বাধ্য করুক এবং আমাদের এই মহৎ পেশার মূল্যবোধগুলো সঙ্গে নিয়ে সংশোধনের পথে যাত্রা শুরু করার ক্ষেত্রে আলোর দিশারি হোক।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহীর (সিইও) দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জেফ বেজোস। প্রায় ৩০ বছর আগে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেজোস।
বেজোসের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন অ্যান্ডি জ্যাসি, যিনি অ্যামাজন ক্লাউড কম্পিউটিং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে ৫৭ বছর বয়সী বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন। এ সম্পর্কে বেজোস জানান, এতে তার অন্য উদ্যোগগুলোতে মনোনিবেশ করার জন্য তাকে ‘সময় ও শক্তি’ দেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে আমি অ্যামাজনের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে নিয়োজিত থাকব। তবে নতুন দায়িত্বের প্রথম দিন থেকেই বেজোস আর্থ ফান্ড, ব্লু অরিজিন, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এবং আমার অন্য উদ্যোগগুলোতে আরও মনোনিবেশ করতে চাই।’
বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী বেজোস ১৯৯৪ সালে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময়ে সাধারণ অনলাইন বই বিক্রেতা হিসেবে গ্যারেজে যাত্রা শুরু করা অ্যামাজন এখন অনলাইন রিটেইল জায়ান্ট খ্যাত প্রতিষ্ঠান। গোটা বিশ্বে অ্যামাজনের কর্মী সংখ্যা ১৩ লাখ।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময়টিতে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে অ্যামাজনের ব্যবসাও। গত বছর ৩৮ হাজার ছয়শ’ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বিক্রির খবর জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। হিসেবে ২০১৯ সালের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। গত বছর অ্যামাজনের মুনাফাও প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দুই হাজার একশ’ ৩০ কোটি ডলারের ঘরে দাঁড়িয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে (NYPD) প্রথম একজন দক্ষিণ এশিয়ান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি হলেন বাংলাদেশি-আমেরিকান শামসুল হক।
তিনি হলেন প্রথম বাংলাদেশি এবং দক্ষিণ এশিয়ান যিনি এনওয়াইপিডিতে লেফটেন্যান্ট কমান্ডারের পদ অর্জন করেছেন।
শামসুল হক যুক্তরাষ্ট্রে যান ১৯৯১ সালে। ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে শামসুল হক এনওয়াইপিডিতে যোগদান করেন। ২০১০ সালে তাকে সার্জেন্ট পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। ২০১৪ সালে লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পাবার পর তিনি এনওয়াইপিডির অভ্যন্তরীণ বিষয়ক তদন্ত গ্রুপের দায়িত্ব নেন।
লেফটেন্যান্ট শামসুল হক সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জের বাঘার গ্রামে মরহুম আবদুল মুসাব্বির এবং মরহুম নুরুন নেছা দম্পতির সন্তান।
গত ২০ জানুয়ারিতে একজন মধ্যবয়স্কা নারী কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাতে ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন। এতদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আজ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
৪৮ বৎসর বয়স্কা ছিলেন নিহত ইউরানসেটসেগ সেরেংগোশ, মঙ্গলিয়ান বংশদূত। যিনি ডাবলিনেই থাকতেন এবং কাজ করতেন। ডাবলিনে একটি অফিসে ক্লিনার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
সেরেংগোশ ২০ জানুয়ারি বুধবারে কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন। আনুমানিক ০৯:১৫ এর দিকে IFSC বিল্ডিংয়ের কাছে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতদিন তিনি ডাবলিনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেও অবশেষে বাঁচাতে পারলেননা।
এ ঘটনায় ১৪ বছরের এক বালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাকে এখন ডাবলিনের ইয়ুথ ডিটেনশন সেন্টারে কাস্টডিতে রাখা হয়েছে।
করোনার শুরুর দিকে আমরা এক লিকলিকে ধরনের লম্বা বয়স্ক ভদ্রলোককে তার বাগানের এপাশ থেকে ওপাশে হেঁটে বেড়াতে দেখেছি। ওই হাঁটা তাঁর এমনিতেই ছিলনা। সে সময় NHS এর জন্য চ্যারিটি তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ১০০ পাক হেঁটে বেড়িয়েছিলেন। যা সে সময় সমগ্র ইংল্যান্ড তো বটেই, বিশ্বব্যাপী সাড়া পেলেছিল। সে সময় তিনি ৩২ মিলিয়ন পাউন্ড সংগ্রহ করতে সমর্থ হন।
ক্যাপ্টেন টম মুর
ক্যাপ্টেন টম মুর, বৃদ্ধ বয়সেও এরকম অভিনব উপায়ে অর্থ সংগ্রহে উদ্যোগী হওয়ায় শুধু ব্রিটেনে নয় সারা বিশ্বের চোখেই তিনি একজন নায়কে পরিণত হন।
স্বীকৃতিস্বরূপ রানী এলিজাবেথ এবছরের জুলাই মাসে তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ভগ্ন শরীরেও হাঁটাহাঁটি করে প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন টম মুর মারা গেছেন করোনাভাইরাসেই।
গত সপ্তাহে তার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে রোববার তাকে বেডফোর্ডের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
ক্যাপ্টেন স্যার টম মুর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পরে তিনি ভারত ও মিয়ানমারে যুদ্ধ করেছেন।
[মশিউর রহমান। অনলাইন নিউজ ডেস্ক। আইরিশ বাংলা টাইমস।]
১৭ কারণে ৫ কিলোমিটারের বাইরে যাওয়া যাবে নতুবা €100 জরিমানা গুনতে হবে।
এইমুহুর্তে কোভিড-১৯ এর লকডাউনের কারনে ৫ কিলোমিটারের বাইরে যাতায়ত নিষিদ্ধ রয়েছে। আইরিশ পুলিশ যে কোনও গাড়িচালককে জরিমানা করতে পারে যদি তারা তাদের নির্ধারিত এলাকা ছেড়ে গাড়ীতে করে ড্রাইভিং বা ভ্রমন করতে দেখা যায়।
দুই সপ্তাহ আগে on-the-spot জরিমানা কার্যকর করা হয়েছে তবে জানুয়ারীর ১১ তারিখ থেকে €১০০ ইউরো জরিমানা ধার্য করার পর তেকে এখন পর্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া ৫ কিলোমিটারে বাইরে গাড়ী চালানোর কারনে ২,৪০০ জনের বেশি মানুষকে জরিমানা করা হয়েছে।
শুধু মাত্র গত রবিবার পুলিশ ৯০৯ জনকে জরিমানা করা হয় এবং আরো প্রায় ৬৪৫ টি জরিমানা বর্তমানে প্রক্রিয়াগত আছে।
সারা আয়ারল্যান্ডে আইরিশ পুলিশ জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিবিধানগুলি কার্যকর করন নিশ্চিত করেতে ও পর্যবেক্ষন করতে টহলরত আছে এবং দেশজুড়ে সড়ক মহাসড়কের উপর তাদের দৃশ্যমান চেকপয়েন্ট গুলি বাড়তি শতর্কতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত সার আয়ারল্যান্ডে কোভিড-১৯ এর লেভেল ৫ লকডাউন জারি আছে। এই বিধিনিষেধের ভিতর লোকজনকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে বলা হচ্ছে এর বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তবে, নাগরিক তথ্যে ভান্ডারের একটি ওয়েবসাইটে নীচের তালিকাটি দেওয়া হয়েছে, যদি কাউকে কোন কারনে ৫ কিলোমিটারের বাইরে যেতেই হয় তখন এই তালিকার অর্ন্তভুক্ত যুক্তিসঙ্গত কারনগুলি কোন একটির সাথে গ্রহন যোগ্য হতে হবে:
১.বাড়ি থেকে কাজ করতে না পারলে কাজের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ।
২.কোনও দুর্বল ব্যক্তিকে যত্ন প্রদান করা বা পারিবারিক অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে অংশ নেওয়া।
৩.কৃষিকাজ এবং অন্যান্য কৃষি কার্যক্রম।
৪.স্কুলে যাওয়া বা আপনার বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে আসা।
৫.এমন কলেজে যাওয়া যেখানে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়া প্রয়োজন।
৬.শিশুর যত্ন চিকিৎশা বা পরিষেবা দিতে।
৭.বাচ্চাদের কোন সুবিধা বা সুব্যবস্থার অংশ হিসাবে আপনার বাচ্চাদের দেখার জন্য ভ্রমণ।
৮.কোনও চিকিত্সা বা ডেন্টাল অ্যাপয়েন্টমেন্টে যোগদান করা, বা কোনও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি বা আপনার সাথে বাস করা কারও সাথে চিকিত্সা বা ডেন্টাল অ্যাপয়েন্টমেন্টে যেতে।
৯.আপনি যখন কাউকে কোনও সহযোগীতা করতে অন্য ব্যক্তির বাড়িতে যান।
১০.নিজের জন্য বা আপনার পক্ষে দূর্বল ব্যক্তির বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা নিতে যাচ্ছেন।
১১.রক্ত দান করা।
১২.পশুচিকিত্সা করাতে যাচ্ছেন।
১৩.বিয়ে বা জানাজায় যাচ্ছেন।
১৪.আদালতে যেতে, আপনার জামিনের নির্দেশ মেনে চলা, জরুরি আইনী কার্যক্রম শুরু করতে আদালত অফিসগুলিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য যান।
১৫.যেখানে প্রয়োজন সেখানে আবাসন সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
১৬.আপনি সাধারণত অন্য কোনও দেশে বাস করলে আয়ারল্যান্ড ছেড়ে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দর বা বন্দরে ভ্রমণ করেন।
১৭.নির্যাতন থেকে বাঁচা বা বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যদি আপনি ৫ কিলোমিটারের বাইরে নিরাপদ যায়গায় যেতে চান।
আফগানিস্তানে আইএস নির্মূলের নামে মার্কিন বাহিনী দ্বিচারিতা করছে বলে অভিযোগ করেছে তালেবান।
মার্কিন সামরিক বাহিনী হেলিকপ্টারে করে আইএস জঙ্গিদের আফগানিস্তানের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন তারা। খবর তাসনিম নিউজের।
ইরানের রাজধানী তেহরানে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের একটি প্রতিনিধিদল এই তথ্য দিয়েছে।
আফগান শান্তি প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রতিনিধিদলটি ইরান সফর করছে।
সংবাদ সম্মেলনে তালেবান নেতারা বলেছেন, আফগানিস্তানের যেসব অঞ্চল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেসব জায়গা থেকে আইএস সন্ত্রাসীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
তালেবান প্রতিনিধিদলের সদস্য সুহাইল শাহিন সাংবাদিকদের বলেন, নানগারহার এবং কুনার প্রদেশে আইএসের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযান চালায় তালেবান।
এ অভিযানের সময় আইএস সন্ত্রাসীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে সেখানে মার্কিন হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে।
এর আগে সিরিয়া ও ইরাকেও সামরিক অভিযানের সময় দায়েশ সন্ত্রাসীদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছে মার্কিন সামরিক হেলিকপ্টার।
তিনটি বাচ্চার জন্যে জরুরি ভিত্তিতে ফস্টার কেয়ারার আবশ্যক (TUSLA)
TUSLA: চিলড্রেন এন্ড ফ্যামিলি সার্ভিস থেকে বিশেষ আপিল: আস্সালামুআলাইকুম সম্মানিত কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, আমাদের বাংলাদেশী বংশধর তিনটি বাচ্চার (৪ , ৭, ১০ বছর বয়সী তিন ভাই) এর জন্যে জরুরি ভিত্তিতে ফস্টার কেয়ারার (পালক পিতামাতার/কেয়ারার) এর প্রয়োজন। Tusla রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো আগ্রহী বা প্লেসমেন্ট খুঁজে পেতে এখন পর্যন্ত অক্ষম বলে জানান।
তারা অনোরুধ করেছেন আমাদের কমিউনিটি থেকে যদি কেউ সত্যিকারের আগ্রহী (স্থায়ী/অস্থায়ী) থেকে থাকেন তাহলে তাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। বাচ্চাদের সবাই বাংলায় কথা বলতে পারে এবং TUSLA এর রিপোর্ট মোতাবেক তারা মনোরম শিশু, একজন অন্যজনকে অনেক ভালোবাসেন, তাদের স্কুল থেকেও ভালো রিপোর্ট রয়েছে।
আদর্শগতভাবে তাদেরকে ডাবলিন এবং এর আশেপাশের কাউন্টিতে রাখার চেষ্টা করা হবে । পরিস্থিতির জরুরী বিবেচনায় বাচ্চাদের আলাদা/পৃথক স্থান নির্ধারণের বিষয়টিও বিবেচনা করা হতে পারে।
আপনার আগ্রহ প্রকাশ করার জন্যে বা প্রাথমিক কন্টাক্ট এর জন্যে ইমেইল করতে পারেন alkhidmahireland@gmail.com
Tusla এর অনুরোধক্রমে- বার্তাপ্রেরক: সাইফুজ্জামান খান
সামরিক বাহিনীর মালিকানাধীন টেলিভিশনে ঘোষণা করা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাং-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।
মিয়ানমারের ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) দলের পক্ষ থেকে সোমবার সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের নেতা অং সান সু চি জনগণকে এই সেনা অভ্যুত্থান মেনে না নিয়ে জনগণকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশেরজন্যখারাপসংবাদ
বিশ্ববাসীর মতোই বাংলাদেশের জন্য মিয়ানমারের সর্বশেষ ঘটনাবলি অত্যন্ত খারাপ এক বার্তা। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আলোচনা এই ঘটনায় বিলম্বিত হবে। আরাকানে যুদ্ধ পরিস্থিতিরও অবনতি হতে পারে একই কারণে। এমনকি আরাকান আর্মির সঙ্গে টাটমা-ডর সংঘাত বাড়তে থাকলে আরাকান থেকে আরও শরণার্থী বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে চাইবে আসন্ন দিনগুলোতে।
ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিলের (এমসিবি) প্রথম নারী প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জারা মোহাম্মদ।
রোববার এমসিবি জারা মোহাম্মদকে সংস্থাটির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত করেছে। খবর আনাদোলুর।
এ সপ্তাহে মহাসচিব নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে জনপ্রিয় ইমাম ও বক্তা আজমল মসরুরকে হারিয়ে মহাসচিব নির্বাচিত হলেন জারা।
মহাসচিব নির্বাচিত হয়ে জারা মোহাম্মদ বলেন, ব্রিটেনের মুসলমানের কল্যাণে কাজ করাই হবে আমার একমাত্র লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, আমাকে দেখে অনেক তরুণী এগিয়ে আসবে, নেতৃত্বের প্রতি অনুপ্রাণিত হবে। তারা আমাদের সংগঠন ও সমাজের ভরিষ্যৎ।
মানবাধিকার বিষয়ে পড়াশোনা করা গ্লাসগোর বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সী তরুণী জারা মোহাম্মদ হারুন খানের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। এর আগে এমসিবির মহাসচিব হিসেবে সাড়ে চার বছর দায়িত্ব পালন করেন হারুন খান।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে নিন্দা বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ওয়াশিংটন নির্বাচনের ফল কিংবা মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের বিকল্প যে কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন সব সরকারি কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, শান্তি এবং উন্নয়নের প্রতি মিয়ানমারের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। সামরিক বাহিনীর তাদের পদক্ষেপ থেকে এখনই সরে আসা উচিত।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী মারিজ পেইনি বলেন, আমরা আইনের শাসন মেনে চলতে, আইনি প্রক্রিয়ায় চলমান দ্বন্দ্বের নিষ্পত্তিতে এবং বেসামরিক সব নেতা ও অন্য যাদের বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে, তাদের সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে সামরিক বাহিনীকে আহ্বান জানাচ্ছি।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জন সিফটন বলেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তারা কয়েক দশক ধরে দেশটিকে শাসন করেছে, তারা কখনই আসলে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায়নি।
অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতারের পর মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় বেশ জোরালোভাবেই নিন্দা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনি গুতেরেস।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে যা ঘটছে তা আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি।
তবে সেনা অভ্যুত্থানকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি কম্বোডিয়া।
বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের এক নেতা বলেছেন, তারা মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে অপসারণের নিন্দা জানান।
রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা রোহিঙ্গা সম্প্রদায় মিয়ানমারে গণতন্ত্রকে হত্যার এই ঘৃণ্য চেষ্টার নিন্দা জানাই।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যাতে এগিয়ে আসে এবং যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
আজকে আপনাদের সাথে এমন একজনকে পরিচয় করিয়ে দিবো যার সফলতার গল্প শুনে অন্তরে প্রশান্তির হাওয়া বইবে এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য সাহসের বাতিঘর বা প্রেরণা হয়ে লাইট হাউজের মতো হাতছানি দিবে। সে আর কেউ নও, তার নাম ফারিদ ইফতিদা তসবিহ।
Farid Ibtida Tashbeef
কঠোর অধ্যাবসায়, নিয়মানুবর্তীতা ও সাহসীকতার উদাহরণ হচ্ছে তরুণ এই শিক্ষার্থী । ছোটবেলা ২০০২ সালে মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সে মায়ের হাত ধরে আয়ারল্যান্ড আসে এই মিষ্টি মেয়েটি। মায়ের নাম শাহানাজ বেগম, পলিটিকাল সাইন্সে অনার্স মাস্টার্স এবং তার বাবাও পলিটিকাল সাইন্সে অনার্স মাস্টার্স করা। তার মা ১৩ বছর আয়ারল্যান্ড চাকুরীর পর এখন গৃহিনী, বাবা ফরিদ আহমেদ। হেল্থ এন্ড সেইফটি অফিসার এবং টিম লিডার, সুইসপোর্ট শানন এয়ারপোর্ট। বর্তমানে এনিস, কাউন্টি ক্লিয়ারের বাসিন্দা তাঁরা।
তসবিহ প্রথম জুনিয়র ইনফেন্ট এ ভর্তি হয় এথলোন, কাউনটি মিথের একটি স্কুলে। চাকুরীর সুবাদে তার বাবা ২০০১ সালে এথলোন কাটিয়েছে। পরবর্তীতে ২০০২ সাল হতে এনিস, কাউন্টি ক্লেয়ারে স্থানান্তরিত হন। ১ম দিন স্কুলে আইরিশ সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলো where are you from ? সে কোন উত্তর দিতে পারে নাই। সদ্য বাংলাদেশ থেকে আসা তসবিহের নতুন দেশে বেড়ে উঠার গল্পটি পানির মতো একেবারেই সহজ ছিলোনা। পরবর্তিতে সাংবাদিকরা তার একক ছবি প্রকাশ করে একটি নিউজ করে, A shy girl from Pakistan. যদিও সে সাংবাদিক ভুল করে Bangladesh এর পরিবর্তে Pakistan লিখে ফেলে।
আজ তার কঠোর পরিশ্রমে সে ইলিং, ইউকের ওয়েস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে একজন এসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে নিজের স্থান তৈরী করে নিতে পেরেছে। মাঝে তার সফলতার ও সাহসীকতার ইতিহাস। ২০১৫ সালে লিভিং সার্টিফিকেট পরিক্ষায় সফলতার সাথে ভাল রেজাল্ট করার কারনে সুযোগ পায় ইংল্যান্ডের কলচেস্টারে একটি নামকরা এসেক্স ইউনিভার্সিটিতে, কম্পিউটার সাইন্স ও ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং এর উপর। তাঁকে ইনটেল আয়ারল্যান্ড থেকে লিভিং সার্টিফিকেট উত্তীর্ণ হওয়ার পরে স্কলারশীপও অফার করা হয় কিন্তু ইংল্যান্ড পড়তে যাবার কারনে সে এই স্কলারশীপ গ্রহণ করে নি।
স্কুল জীবনে সে ছিলো সকল শিক্ষকের অনেক আদরের। স্কুল বন্ধুদের এবং তাদের পরিবারের মানুষগুলোরও আদরের ছিলো সে। তসবিহ, পরিচিত সবাই এমনকি গ্রানিদেরও (সহপাঠীদের দাদা দাদী, নানা নানী) পছন্দের এক নম্বরে ছিলো সে।
Farid Ibtida Tashbeeh
সাহসী ছিলো বলে ইংল্যান্ড গিয়েই ইউনিভার্সিটিতে পড়ার পরিকল্পনা করতে পারে এবং সেখানে সে সততা ও নিষ্ঠার কারনে স্টুডেন্ট এম্বাসেডর হয়। সে তার প্রতিভা এবং বুদ্ধিমত্তার কারনে টীম লিডারশীপ অর্জন করে। প্রতি প্রজেক্টে লিডার হয়ে সুনাম অর্জন করে এবং ভালো রেজাল্ট করে বিএসসি গ্রাজুয়েট হয়। এবং সে মাস্টার্সে কঠোর পরিশ্রম করে ঐ ইউনিভার্সিটি হতে সর্বচ্চ রেজাল্ট, ফার্স্ট ক্লাস ডিস্টিংশনের সাথে পাশ করে।
তার সমাপ্ত প্রজেক্টের মধ্যে নিচের দুইটি প্রজেক্ট জনপ্রিয় ছিল।
১: Humanoid (paper) in the newly opened smart home (I space) to develop a cognitive impairment (like dementia) human aware Motion planing was implemented using python 3 and Matlab.
২: 3D web design
তার দুটি প্রজেক্টই ভুয়সী প্রশংসা পায় ও সবার নজর কাড়ে। একমাত্র ছাত্র হিসেবে এমন কঠিন বিষয় নিয়ে কাজ করে ও সাফল্য পায়। পরবর্তীতে একই ইউনিভার্সিটি হতে একই বিষয়ে ২০২০ সালে মাস্টার্স শেষ করে। নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, কম্পিউটার সিকিউরিটি, মোবাইল, সোশাল এপপ্লিকেশন প্রোগ্রমিং, রিসার্চ মেথোডোলজির উপর পারদর্শীতা অর্জন করে সে। করোনার কারনে আয়ারল্যান্ড এসে ৩ মাস আটকে পড়ার পরও তার পেপার রোবট প্রজেক্ট (যে রোবট বয়স্ক মানুষের চিকিৎসায় নার্স হিসাবে কাজ করবে) সেই রোবটটির থিসিসে ৮৯ নম্বর পায়।
মাস্টার্স পরিক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের অপেক্ষায় ও ফাইনাল মাস্টার্স থিসিস করার সময় সে ৬ টি জব ইন্টারভিউ দেয়। প্রতিটি জবেই অফার পায় এবং তার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করে। ৪ সপ্তাহ চাকুরীরত থাকা কালীন সময়ে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ইন্টারভিউতে একমাত্র প্রার্থী হিসাবে এসোসিয়েট প্রফেসর হিসাবে ওয়েস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে নিয়োগের অফার পায়। তখনও তার মাস্টার্স রেজাল্ট প্রকাশিত হয়নি। ইউনিভার্সিটির সহায়তায় স্কলারশীপ নিয়ে এ বছর পিএইচডি করার পরিকল্পনা করছেন সে। চাকরিরত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে “বিগ এসেক্স এওয়ার্ড” পায় মেনটরিং ও স্টুডেন্ট এম্বাসেডর এক্টিভিটিজের জন্য।
সে সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলা পছন্দ করে। ২০১০/ ১১/১২ সালে সে তার মা ও বাবার সাথে ইংরেজি রাপ গান গেয়ে, আয়ারল্যান্ডের, লন্ডনের ও বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি উৎসবে সবার মন কেড়ে নিয়েছিলো।
সদা হাস্যোজ্জ্বল, বিনয়ী ও সুন্দর আচার ব্যবহারের জন্য আইরিশ ও বাংলাদেশিদের কাছে সে খুবই জনপ্রিয়। এখনো জুনিয়র স্কুল, হাইস্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে ফারিদ ইফতিদা তসবিহ’র কথা বললে সকলে তাকে চিনে ফেলে।
আমরা তাসবিহের সফলতা কামনা করি। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার অনুজেরা উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
করোনা মহামারী আসার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়া নতুন কিছু আইটেম চোখে পড়ার মতন। যত্রতত্র মাস্ক, গ্লাভস পাশাপাশি অন্যান্য আবর্জনা তো আছেই আমি লিখছি আয়ারল্যান্ড এর পরিবেশ পরিস্থিতির উপর।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে আয়ারল্যান্ড অনেক উন্নত অন্যান্য দেশের তুলনায়, আয়ারল্যান্ডে প্রতিটা পরিবারেই সাধারণ ময়লা-আবর্জনা, রিসাইকেল এবং কম্পোস্ট করার ব্যবস্থা রাখা হয় ।
স্থানীয় প্রশাসন দ্বারা এলাকাভিত্তিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা করা হয় অন্যদিকে পাড়া-প্রতিবেশী ভিত্তিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম ও পরিচালিত হয়।
কিন্তু কিছু কিছু এলাকায় ময়লা আবর্জনার খারাপ পরিবেশ ও লক্ষ্য করার মতো যা কিনা সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কঠোর আইন থাকার পরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে যায় ।
করোনার সংক্রমণ রোধে মাস্ক এবং গ্লাভস এর ব্যবহার অনস্বীকার্য কিন্তু এগুলি ব্যবহারের পরে আমরা যদি সঠিকভাবে ডাস্টবিনে ফেলে না দিয়ে যত্রতত্র ফেলে রাখি তাতে করে সংক্রমণ রোধের চেয়ে সংক্রামক ছড়াবে বেশি।
একটু সচেভতনতাই পারে সবুজ পরিবেশের এবং সংক্রামক রোধের উত্তম পন্থা!
ইউরোপ সহ গোটা উন্নত দেশগুলোতে সড়ক পথে যান চলাচল নির্ঝঞ্ঝাট, দুর্ঘটনামুক্ত। নির্ধারিত ‘স্টপেজ’ ছাড়া যত্রতত্র বাস দাড়ায় না বা থামেনা। সড়কের সর্ব বামে ‘বাস লেনে’ বাস চলে। আর, ছোট বড় অন্যান্য যান চলে বাসের ডানদিকের লেন সমূহে। অন্যান্য গাড়ি চালক গাড়ির গতি অনুযায়ী লেন পরিবর্তন করে থাকে। উল্লেখ্য, উন্নত দেশের নাগরিকের মানসিকতাও উন্নত। বাস চালককে Thank you, Thanks a Million, Cheers ইত্যাদি Greetings বা সম্মান সূচক সম্বোধন জানিয়ে প্রত্যেক যাত্রী যার যার গন্তব্যে নেমে যায়। বাসচালকরাও প্রতিউত্তরে Thanks, Welcome , Best of luck এসব সম্মানসূচক কথা বলে বিদায় জানায়।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে বাস চালকদের সাথে এইরকম আচরণ আশা করা নেহায়েতই কল্পনা মাত্র। বাংলাদেশের বাসচালক, সহকারী ও সমন্বয়কারীর আচরণও অসহনীয়। সে কারনেই যাত্রীদের প্রতিক্রিয়াও ঠিক তেমনি উন্নত বিশ্বের বিপরীত!
বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে উন্নয়নের দিকে ধাবিত, বাঙ্গালী জাতি কি তাদের স্বভাবের উন্নয়ন করতে পারবে?
নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে এবার বিদেশিদের নাগরিকত্ব দিতে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বিশেষ করে যারা উপসাগরীয় অঞ্চলের মান উন্নয়নে কাজ করবে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম শনিবার এক ঘোষণায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বলেছেন, যোগ্যদের মধ্যে বিনিয়োগকারী, মেধাবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী এবং শিল্পীরা অন্তর্ভুক্ত হবেন। তবে নিম্ন-আয়ের শ্রমিকদের এই কঠোর মানদণ্ড পূরণের সম্ভাবনা কম।
নাগরিকত্ব প্রাপ্ত ও তাদের পরিবার দ্বৈত জাতীয়তা রাখতে পারবে।
উপসাগরীয় দেশগুলো সাধারণত অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয় না। নতুন ব্যবস্থায় বিশেষজ্ঞ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সুযোগ দেওয়ার পথ উন্মোচন করছে আরব আমিরাত।
করোনাভাইরাস মহামারি এবং তেলের দাম পড়ে যাওয়ার মধ্যে দেশটির পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা এলো। করোনা মহামারিতে উপসাগরীয় কোনো দেশে এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপই মনে করা হচ্ছে। এর ফলে আমিরাতে আরো বেশি মেধাবী ও দক্ষ মানুষকে আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।
আসিফ হোসেইন আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী পরিবার থেকে বেরিয়ে আসা এক উদীয়মান সূর্যোদয়। সফলতার আভা ঠিকরে পড়ছে যার কপালে। তিনি একজন উচ্চাভিলাষী মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে ত্বর ত্বর করে বেয়ে চলেছেন সফলতার সিঁড়ি বেয়ে।
Asif Haossain
আসিফের পিত আমাদের সবার পরিচিত আক্তার হোসেন আয়ারল্যান্ডে ২০০১ সালে আসেন এবং মাতা হেনা আক্তার। তাঁরা দুই ভাই ও এক বোন, ছোট ভাই অমিত হোসাইন এবং বোন অনিক আক্তার নেহা। আসিফ আয়ারল্যান্ডে আসে ২০০২ সালে এবং সেকেন্ডারি স্কুলে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়। তারা ডাবলিনের সেন্ট্রিতে বসবাস করছে।
আসিফের প্রফেশনাল ক্যারিয়ারের আগে একাডেমিক দিকে আলোকপাত করা যাক। ২০০৮ সালে সফলতার সাথে সম্পন্ন করে লিভিং সার্টিফিকেট। ছাত্রাবস্থায়ই নিজে ডিজাইন ও তৈরি করেন রিমোর্ট কন্ট্রোল ডিভাইস। হোয়াইটহল এর প্লাঙ্কেট কলেজ থেকে লিভিং সার্টিফিকেট শেষ করেন। এর পর সুযোগ মেলে ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি তে বায়োমেডিকেল/মেকানিক্যাল-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এ। ২০১২ সালে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে ডিজাইন করেন অটোনমাস ইনটেলিজেন্ট ক্যামেরা প্লাটফর্ম যা মেরিন এবং পরিবেশগত পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
এরপর কোন স্টাডি ব্রেক ছাড়াই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘কম্পিউটার ইডেড মেকানিক্যাল & মানুফ্যাকচুরিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর MSc শেষ করেন। ডাটা এনালাইটিক্স বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য বিষয়। এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসিফ ডাটা এনালাইটিক্স এর উপরও নিয়েছে হায়ার ডিপ্লোমা। তাঁর এই সদ্য সমাপ্ত ডিগ্রিটি অর্জন করেন NCIRL থেকে।
ছাত্রাবস্থায় আসিফ অনেক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। ২০১১ সালে Oxfam Ireland এ ইভেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এবং একই বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডাবলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেবিল টেনিস ক্লাবের ভাইস-চেয়ার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ২০১২ সালে কয়েক মাস ডাবলিন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাইভেট টিউটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যেখানে তিনি ফার্স্ট ইয়ারের শিক্ষার্থীদের স্টাটিক্স মডিউলে সহায়তা করেছেন।
Asif Hossain & His Family
২০১৩ তে MSc শেষ করেই ২০১৪ থেকে শুরু করেন কর্মজীবন। RIVVAL Ltd নামক একটিভি কোম্পানিতে জুনিয়র ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে শুরু করেন। বছর না ঘুরতেই নিজের ক্যারিয়ারকে ত্বরান্বিত করতে যোগ দেন নতুন কোম্পানিতে। কাভানের Mastek Ltd নামক কম্পানিতে জুনিয়র ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে টানা তিন বছর চাকুরী করেন।
দীর্ঘ অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে সুযোগ মেলে ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ডাবলিন সোর্ডস এর স্বনামধন্য কোম্পানি Geith International এ। নিজের যোগ্যতা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আসিফ অবদান রাখতে চান সামাজিক কর্মকাণ্ডেও। মেলে ধরতে চান নিজের অভিজ্ঞতাকে ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে। একাডেমিক ও প্রফেশনাল যে কোন ধরনের সহায়তা ও পরামর্শের জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখতে চান বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে।
আমরা আসিফের সফলতা কামনা করি এবং দোয়া করি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য।
সাউথ ওয়েলসের একটি সমুদ্র সৈকতে ডাইনোসর পায়ের ছাপ আবিষ্কার করেছে চার বছর বয়সী এক মেয়ে।
এই মাসের শুরুর দিকে লিলি তার পিতা রিচার্ডের সাথে সাউথ ওয়েলসের একটি সমুদ্র সৈকতে হেঁটে যাওয়ার সময় এটি আবিষ্কার করে।
পায়ের ছাপটি যা ২২০ মিলিয়ন বছরের পুরাতন, বেনড্রিক্স বে(Bendricks Bay)-তে পাওয়া এটি ডাইসরের পায়ের ছাপের “সর্বকালের সেরা নমুনা” হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই বেনড্রিক্স বে(Bendricks Bay) এখন ডাইনোসর পায়ের ছাপের জন্য বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচি লাভ করবে।
”লিলির মা, “সেলি ওয়াইল্ডার” বলছিলেন, “লিলি তার বাবা’র সাথে সৈকতে হাটছিল তখন লিলি এটি দেখেছিল এবং সে তখনই বলছিল “বাবা দেখো এটা কি”।
“যখন রিচার্ড বাড়িতে এসে আমাকে ছবিটি দেখিয়েছিল আমি ভাবছিলাম এটি আশ্চর্যজনক মনেহচ্ছিল। ” ”
লিলির বাবা রিচার্ড খুবই আনন্দিত পায়ের ছাপের ছবি তুলতে পেরে। পরে তাকে সেখান থেকে বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করতে হয়েছিল।
রিচার্ড বলেন “আমরা সত্যিই এই ডাইনোসরে পায়ের ছাপ খুঁজে পেয়ে শিহরিত এবং আমি আনন্দিত এই জন্য যেএটি জাতীয় জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হবে যেখানে মানুষ দেখবে এবং প্রজন্ম ধরে এটি নিয়ে গবেষনা এবং অধ্যয়ন করা হবে।”
কোন ধরনের ডাইনোসর পায়ের ছাপ এটি তা বলা এখন অসম্ভব তবে পায়ের ছাপটি ১০ সেঃমিঃ দীর্ঘ বলে মনে করা হযচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে এটি এমন এক ধরণের ডাইনোসর যা ৭৫ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২.৫ মিটার দীর্ঘ ছিল এবং এটি পাতলা দুটি পায়ের উপর ভর দিয়ে ছোট ছোট প্রাণী এবং পোকামাকড় শিকার করত।
বৈজ্ঞানিক গবেষনার আগ্রহের কারনে সৈকতের জায়গাটি থেকে থেকে জীবাশ্মটি অপসারণের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগ ওয়েলসের কাছ থেকে আইনীভাবে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
এটি আসছে সপ্তাহের শুরুতে সরানো হবে এবং কার্ডিফের জাতীয় জাদুঘরে রেখে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা এটি নিয়ে গবেষণা করা হবে।
“ন্যাশনাল মিউজিয়াম ওয়েলস” থেকে জানানো হয় পায়ের ছাপটি বিজ্ঞানীদের ডায়নোসরদের পদচারণা সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা দেবে। জাদুঘর থেকে লিলি এবং তার পরিবারকে ধন্যবাদ জানানো হয় কারন তারা এটি প্রথম খুঁজে পেয়েছে।
হতে পারে কোভিড মহামারীর কারনে মানুষকে প্রকৃতি তার কাছে টেনে নিয়ে নিচ্ছে বা প্রকৃতি মানুষের দোরগোড়ায় নিজেকে তুলে ধরেছেন হতে পারে এটি এর নিখুঁত উদাহরণ।
স্পষ্টতই, আমাদের সকলের দোরগোড়ায় ডাইনোসর পায়ের ছাপ নেই তবে আমরা যদি প্রকৃতিকে দেখতে যথেষ্ট সময় দেই তবে প্রকৃতির কাছে পাওয়ার অনেক কিছু আছে।
তথ্যসুত্র:
Four-year-old girl discovers dinosaur footprint on beach in Wales https://jrnl.ie/5340387
ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশনে থামতে না থামতেই লোকজন হূর হূর করে নামতে শুরু করলো। কারো কারো হয়তো অন্য কোনো ট্রেন ধরার তাড়া আছে, কেউ বা নিজ গন্তব্যে পৌঁছার জন্য উদ্গ্রীব। আবার অধিক দূর বা শেষ গন্তব্যে ভ্রমণকারী যাত্রীদের কেউ কেউ যাত্রাবিরতীর সুযোগে ট্রেনের অদূরে পায়চারি করবে, বিড়ি সিগারেট ফুকবে, চা সিঙ্গারা খাবে। ট্রেন ছেড়ে যাবার সময় হলে তারা আবার হূর হূর করে ট্রেনে উঠে গিয়ে যথাস্থানে বসে পড়বে।
ট্রেন থেকে অধিকাংশ যাত্রীরা নেমে পড়ায় ট্রেনটি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত অতি সহজেই সবকিছু দেখা যাচ্ছে। জানালার পাশে বসে থাকা একজন যাত্রী আব্দুল আলী সাহেব বাইরের দিকে চেয়ে থেকে আখাউড়া জংশনের রূপ বৈচিত্র্য দেখছিলেন। জাতবেজাতের লোক হেঁটে চলছে। হকাররা ডেকে ডেকে সুর তোলে চা পান বিড়ি সিগারেট সহ হরেক রকমের জিনিস বিক্রি করছে। একটু পর পরই ট্রেন আসছে, ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে। ভিক্ষুকরা সমস্বরে গান গেয়ে ভিক্ষা করছে। একজন সাপুড়ে সাপের খেলা দেখাচ্ছে। এসব দেখতে তার বেশ ভালোই লাগছিলো। কিন্তু যখন একজনকে অজগর কাঁধে নিয়ে ছবি তুলতে দেখলো তখনই তিনি দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন। এ ধরনের দৃশ্য দেখতে তিনি মোটেও অভ্যস্ত নন। তাই ট্রেনের ভেতরে নজর দিলেন। চোখ পড়লো তার সামনের কম্পার্টমেন্টে আড়াআড়ি ভাবে বসা এক ভদ্রলোকের উপর। তাকে দেখেই তিনি চোখ নামিয়ে নিলেন। অজগরের চেয়েও ভয়ংকর মনে হলো ওই লোকটাকে। কমলাপুর স্টেশনে বসে তারা যখন ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তখনই তিনি ওই লোকটিকে দেখেছিলেন।
তাকে ঘিরে ছিলো সহজ সরল জাতের কিছু ধর্মান্ধ ব্যাক্তিবর্গ। স্টেশনের বেঞ্চে মখমল কাপড় বিছিয়ে তাকে শুইয়ে দিয়ে কেউ কেউ তার পা টিপে দিচ্ছে, কেউ মাথায় আরাম দিচ্ছে, কেউ তাকে বাতাস করছে, কেউ বা আবার “বাবা” “বাবা” চিৎকার দিয়ে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে তুলছে। এসব আলী সাহেবের কাছে অসহ্য ঠেকছিলো। তখন থেকেই লোকটার প্রতি তার অরুচি ধরে আছে।
আলী সাহেব যে ঘৃণায় চোখ নামিয়ে নিয়েছেন তা ভদ্রলোকের বুঝতে মোটেও কষ্ট হয়নি। চোখের ভাষা বুঝতে না পারলে কি এতো সহজেই তিনি অগণিত মানুষকে ধোঁকা দিয়ে দিব্যি ভালো মানুষের খোলস পড়ে বেঁচে থাকতে পারতেন! জায়গায় বসে থেকেই ভদ্রলোক তাই আলী সাহেবকে ইশারায় ডাকলেন। আলী সাহেব উঠলেননা। এমন একটা ভান করলেন যেনো তিনি কিছুই বুঝেননি। এবার নাম ধরে ডাকলেন, আলী আলী….
ডাক শুনে তো আলী সাহেবের আক্কেল গুড়ুম । এ কি করে সম্ভব! চেনা নাই, জানা নাই একটি লোক কি করে তার নাম ধরে ডাকতে পারে! আলী সাহেব ভড়কে গেলেন। ভেতরে ভেতরে কাঁপতে শুরু করলেন। এমন কামেল ব্যাক্তিকে তিনি মনে মনে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন! ছি ছি এ হেন গর্হিত কাজ তিনি করতে পারলেন! না না মোটেও ঠিক হয়নি। এখনি গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। বুজূর্গ ব্যাক্তি, আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি ক্ষমা করে দেবেন।
কাছে যেতেই আবারো শকড খেলেন তিনি। “কিরে তোর মাস্টারি কেমন চলছে?” এ কথা শুনেই তিনি চমকে গেলেন। হা করে তাকিয়ে রইলেন ভদ্রলোকের দিকে। কি করবেন, কি বলবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন। আলী সাহেব যে একজন শিক্ষক এটা তো তার জানার কথা নয়। অথচ এ না জানা কথাটাই অবলীলাক্রমে তিনি বলে ফেললেন। বিরাট আওলিয়া। অন্তর্যামী। অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন। চোখ বন্ধ করলে সারা দুনিয়া তিনি নিমেষেই দেখে ফেলেন। আজকালকার ভন্ড পীরদের মতো তিনি কোনো সাধারণ ‘বাবা” নন। অসাধারণ বাবা। এ অসাধারণ বাবার পায়ে আলী সাহেব লুটিয়ে পড়তে চাইলেন।
বাবা তাকে থামিয়ে দিলেন। “তোর জায়গা ওখানে নয়, এখানে” বলেই বূকে বুক মিশিয়ে আলিঙ্গন করলেন। আলী সাহেব এবার ঘেমে উঠলেন। পঁচিশ বছরের শিক্ষকতা জীবনে কতো অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। অথচ আজকের ঘটনার কোনো কূলকিনারাই খুঁজে পাচ্ছেন না। যে লোকটি তাকে চেনে না, জানে না, এর আগে তার সাথে এক মূহুর্তের জন্যও দেখা সাক্ষাত হয়নি সেই লোকটি কী করে তাকে কল্বে স্থান দেয়! তিনি অবাক হন। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকেন। এবার বাবা মুখ খুলেন। ভ্যাবাচ্যাকার মতো তাকিয়ে আছিস কেনো? আয়, কাছে আয়। বলেই বুকে মিশিয়ে জোরে চাপ দেন। থতমত খেয়ে যায় মাষ্টার সাহেব। যেনো এক আজব লোকের পাল্লায় পড়েছেন তিনি। ভাগ্যিস কম্পার্টমেন্টে আপাতত কেউ নেই। পুরোটাই ফাঁকা। ভক্তবৃন্দদের সবাই ট্রেন থেকে নেমে গিয়ে কেউ পায়চারি করছে, বাবার সামনে ধূমপান করা যায়না বলে কেউ কেউ বিরামহীন সিগারেট টানছে, কেউ ফু দিয়ে ফু দিয়ে চা খাচ্ছে, কেউবা আবার দয়াল বাবার জন্য খাদ্য সামগ্রী কিনতে ব্যাস্ত। মাষ্টার সাহেব আমতা আমতা করে কি যেনো বলতে চাচ্ছিলেন কিন্তু পীর সাহেব তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, “তুই এখনো বোকাই রয়ে গেছিস। আমাকে চিনতে পারিসনি! বিশ্বনাথ হাই স্কুলের সেই দুষ্টু ছেলেটি আবু জুবায়ের। তার কথা কি তোর মনে আছে? সেই ছেলেটি হলাম আমি, আজকের শাহসূপী হযরত জমসেদ আলী হক্কানী। সবার প্রিয় “হক্কানী বাবা”। জানিস, আমার ভেতরে অলিত্বের কোনো ছিটেফোঁটাও নেই। তবু আমি ওলি। কারণ মানুষ আমার কাছে আসে। আমার পায়ে আনুগত্যের চুমু খায়। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করে দেয়ার জন্য তারা আমার দরবারে আসে। আমাকে নজরানা দেয়।”
মাষ্টার সাহেব যখন এসব শুনছিলেন তখন তার প্রচন্ড রাগ হচ্ছিলো। কিছুক্ষণ আগে “সুফীবাবা” ভেবে যার পায়ে লুটিয়ে পড়তে চেয়েছিল তাকেই এখন ইচ্ছে করছে ওর দাড়ি ভর্তি গালে খুব জোরে একটি থাপ্পড় বসিয়ে দিতে। কিন্তু নিজেকে খুব কষ্টে নিয়ন্ত্রণ করলেন। ভালো ভাবে পরখ করে চিনতে চেষ্টা করলেন। সত্যিতো ও জুবায়ের! ছেলেবেলার স্কুলবন্ধু জুবায়ের। এবার মাষ্টার সাহেব মুখ খুললেন। ছি ছি একি তোর বেশ! তুইতো মেডিকেলে স্যান্স পেয়েছিলি। তোর তো ডাক্তারি পড়ার কথা ছিলো….
– হ্যাঁ পড়েছি, ডাক্তার হয়েছি। মানুষকে বছরের পর বছর সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তুই আমার কোনো খবর না রাখলেও আমি তোর সব খবর রাখি। তোর স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমার একান্তই অনুগত সাগরেদ।
জুবায়ের ওরফে জমসেদ আলী হক্কানীর দিকে বক্র দৃষ্টিতে তাকালেন মাষ্টার সাহেব। যে তাকানোর অর্থ, তুই যদি ডাক্তার হয়ে থাকিস তবে এখন যা করছিস তা কি!
মাষ্টার সাহেবের বক্র দৃষ্টির মর্মার্থ হক্কানী সাহেব বুঝতে পারেন। তাই তিনি বেশ দৃঢ় ভাবে বলেন, শুন, তুই কি ভাবছিস তা আমি সব আন্দাজ করতে পারি। ভাবছিস, ডাক্তারই যদি হবো তাহলে এসব কি! এ কেমন ধান্দা!
– ঠিকই তো।
ডাক্তারের মতো একটি সেবামূলক পেশা বাদ দিয়ে কি করে তুই এমন জঘন্য কাজে জড়ালি? তাছাড়া তুই কি সত্যি অলৌকিক ক্ষমতা বলে মানুষের জন্য কিছু করার ক্ষমতা রাখিস?
– আরে ব্যাটা আমার ভেতরে কোন অলৌকিক ক্ষমতা বলতে কিছুই নেই। না আমি ওলি, না কোনো গাউস কুতুব। আমি হলাম আক্কলে আওলিয়া। হা হা হা!
– ছি ছি তুই হাসছিস! ডাক্তারি বাদ দিয়ে একজন ডাক্তার তার পেশাগত মর্যাদার কথা ভুলে গিয়ে এতো নীচে নামতে পারে তা ভাবতেও আমার লজ্জা হচ্ছে।
– তুই ভুল বলছিস। ডাক্তারি পেশা আমার এখনো আছে। তবে তা জনসেবা, সমাজ সেবা করার জন্য যথেষ্ট নয়। সেবার পরিধিকে বিস্তৃত করার মানসেই এই লাইনে আসা।
– তাই বুঝি! তুই যা’ না তা’ জাহির করার মধ্য দিয়ে “সেবা” খুঁজে বেড়াচ্ছিস!
– তাতে কি! আমি আমার যোগ্যতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে আমার কর্ম পরিধি বাড়িয়ে চলছি। কতো ডাক্তার দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কে কাকে চেনে? আমাকেই বা ডাক্তার হিসেবে কতোজন চিনতো! এখন আমার হাজার হাজার মুরীদ, সাগরেদ। “হক্কানী বাবা” হিসেবে এক ডাকে সবাই আমাকে চেনে। আমি যদি ফেসবুকে কোনো স্ট্যাটাস দেই কিংবা ইউটুবে কোনো বয়ান ডাউনলোড করি হাজার হাজার লাইক পড়ে। হাজার হাজার ভিউয়ার্স দেখে। ডাক্তারের পাশাপাশি নিজেকে “হক্কানী বাবা” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি বলেই আজ আমার এ সাফল্য।
-সাফল্য না ছাই। তুই যা করছিস, এটাকে কোনো সাফল্য বলা চলেনা। তুই মানুষকে ভুল তথ্য ও ভুল শিক্ষা দিচ্ছিস। অর্ধেক সত্য ও অর্ধেক মিথ্যের মাঝামাঝিতে দাড়িয়ে তুই মানুষকে চরম ধোঁকা দিচ্ছিস। ধোঁকাবাজি করছিস। প্রবঞ্চনা করছিস, আত্মপ্রবঞ্চনা। যে প্রবঞ্চনার ফল একদিন তোকে ভোগ করতেই হবে।
-তুই শিক্ষক মানুষ, নীতি বাক্যই তোর উপজীব্য।
– ভুল বলেছিস, নীতি বাক্য আমার কেবল উপজীব্যই নয়, তপস্যাও বটে। জানি তোদের মতো খোলস পড়া হক্কানী বাবাদের কাছে এ নীতি বাক্যের অর্থ একেবারেই অর্থহীন। তোর এমন অবস্থা দেখে আমার বেশ করুণা হচ্ছে। একটি কবিতা শুনাতে ইচ্ছে করছে তোকে –
হক্কানী বাবা কি যেনো বলতে যাবেন, এরি মধ্যে ট্রেন ছেড়ে যাবার হর্ণ বেজে উঠল। যাত্রীরা সব লাফালাফি করে ট্রেনে উঠতে শুরু করলো। মাষ্টার সাহেব দ্রুত তার সিটে এসে বসে পড়লো। ট্রেন চলতে লাগলো সা সা সা…….।
হেলিকপ্টার রুবেল নামে পরিচিত। হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করে তৈরি করেন ইমপ্রেশন। সাদাসিধে মানুষকে নিজের জাঁকজমকতা দেখিয়ে ও ক্যানাডিয়ান এনজিওতে চাকরি করেন বলে গরিব মানুষকে বাড়ি করে দেয়া, এলাকায় বাঁধ তৈরি করে দেয়াসহ অনেক রকমের আশ্বাস দিয়ে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা।
রুবেল আহম্মেদ নিজেকে সিসিআইসি নামক একটি বিদেশি এনজিও সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে পরিচয় দিতেন।
গত অক্টোবরে রুবেল হেলিকপ্টারে করে খোকসায় যান ৷ নামেন স্থানীয় স্কুল মাঠে৷ তাকে রিসিভ করেন বেতবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার৷সে এখানে এসে ২০০ ঘর, স্কুল ও জলবায়ু প্রকল্পের কাজের কথা বলে৷ গরিব মানুষের ঘর নিয়ে জরিপ করে৷ প্রজেক্ট করার জন্য জমি বায়না করে৷ ঘর তুলে দেয়ার জন্য কাজও শুরু করে৷ ইট, বালু, সিমেন্ট আনে৷ অবিশ্বাসের মতো কিছু ছিল না৷
খোকসায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কনসার্ট। ঢাকা থেকে উড়ে যাওয়া জনপ্রিয় শিল্পী, জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ খোকসার নামকরা প্রায় সবাই সামনের সারিতে বসে সেই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
ওই অনুষ্ঠানে ঘোষণা দিয়ে জানানো হলো রুবেল আহমেদ কানাডিয়ান কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশনের প্রধান নির্বাহী, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ১৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকার তহবিল পাওয়া গেছে। এ তহবিল ছাড় করানোর জন্য ২.৫%হারে কর দিতে হবে জানিয়ে কয়েকজনের কাছ থেকে ৪৩ লাখ টাকা আদায় করেন। ঘর নির্মাণের কথা বলে তিনজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা।
প্রতারণা ফাঁস হয়ে গেলে রাজধানীর উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানেই তিনি আম্তগোপনে ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে। বিমানবন্দর থানায় হওয়া একটি মামলার সূত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ শনিবার পরীক্ষা ছাড়াই এসএসসি ও জেএসসির গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসির মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করা হয়। করোনা মহামারির কারণে গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। পরে সিদ্ধান্ত হয় এসএসসি ও জেএসসির পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।
২০২০ সালের এপ্রিলের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন পরীক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে রেজিস্ট্রেশন করা সবাই পাস করেছেন। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফল এবং অনলাইন ক্লাসের মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই ফল প্রকাশিত হলো।
এবার পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন পরীক্ষার্থী। জিপিও ৫ এর শতকরা হার ১১. ৮৩ শতাংশ । ৯ হাজার ৬৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেন।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৯ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৬১৪ জন। জিপিএ ৫ এর শতকরা হার ১৩.১৪ শতাংশ। ৪ হাজার ৫৩৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে তারা পরীক্ষায় অংশ নেন।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এক লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৬ জন। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ১৪৫ জন। জিপিএ ৫ পাওয়ার হার ৩.১০ শতাংশ। এক হাজার ৮৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তারা পরীক্ষায় অংশ নেন।
পরীক্ষায় পাশ করাই শেষ নয়। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা পাশের পর শুরু হয় ভর্তি যুদ্ধ। ভালো প্রতিষ্ঠানে জায়গা করে নিতে সে যুদ্ধ পরীক্ষা থেকেও অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। কিছুদিন পরেই সে যুদ্ধ শুরু হবে।
শুভ কামনা রইল সকল আগামীর সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদেরকে।
জার্মানি আয়ারল্যান্ড সহ কোভিড -১৯ এর নতুন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত দেশগুলির যাত্রীদের নিষিদ্ধ করছে।
এই নিষেধাজ্ঞা, ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে, শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশটির সরকার থেকে এই ঘোষণা আসে।
জার্মানি বলেছে, “জার্মানির মানুষদের সুরক্ষা দেওয়ার এবং নতুন ভাইরাসটি যাতে দেশটিতে প্রবেশ ও দ্রুত ছড়াতে না পারে এবং সংক্রামনকে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া জরুরি ছিল” বলে একটি সরকারি আদেশে একথা বলা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার ফলে আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার লেসোথো এবং ইসওয়াতিনি রাজ্যের যাত্রীরা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পরবেন।
বিধিনিষেধ গুলি বিমান, বাস, রেল ও সমুদ্রে পথকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তবে এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম থাকবে বলে বলা হয়েছে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন: Germany to ban passengers from Ireland and other countries affected by Covid-19 variants from tomorrow https://jrnl.ie/5339969
Dublin এ উদ্বেগ জনক ভাবে সামাজিক অপরাদ ও সহিংস ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিক অপরাদ ও সহিংস ঘটনা বৃদ্ধিতে গার্ডার উদ্বেগ জানিয়েছে।
ডাবলিন পুলিশ জানিয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় ডাবলিনে ছয়টি ধারালো ছুরিকাঘাতের সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে।
গার্ডা অফিসাররা বলছেন, বিশেষত নর্থ ডাবলিনের অভ্যন্তরীণ শহরে অবস্থিত বিশেষ কিছু এলাকা গুলোতে সামাজিক অস্থিরতা ও সামাজিক অপরাদ মুলক কার্যকলাপ খুবই আতঙ্ক জনক ভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে, East Wall এলাকার একটি হামলায় ১৬ বছর বয়সী “যশ ডুন” নামের একজন কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
তাঁর মৃত্যুর পরে,ডাবলিন গার্ডা আরো ছয়টি পৃথক ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে। এগুলির একটির সাথে অন্যটির কোন সম্পর্ক আছে বলে গার্ডা মনে করে না।
গতকাল “সেভিল প্লেস” এলাকায় একজন ডাক্তার তার ই-স্কুটার চালিয়ে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন, ছিনতাইকারী তার স্কুটার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করার সময় ঐ ডাক্তারের গলায় ছিনতাইকারী ছুরিকাঘাত করে, ছিনতাইয়ের ঘটনা যেখানে ঘটে সেই এলাকাটি “যশ ডান’কে যেখানে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়েছিল তার থেকে এক কিলোমিটার দূরে।
ঐ একই দিন “টালবট স্ট্রিট”এ একটি পৃথক ঘটনায়, চল্লিশ বছর বয়সের একজনকে কে বা কারা তার মাথায় কপালে জখম করে রক্তাত অবস্থায় রেখে চলে যায় ।
গার্ডা অন্য চারটি ছুরিকাঘাতে ঘটনার প্রতিক্রিয়াতে জানায় যে, তিনটি ছিল নিজেদের মধ্যে বিরোধের কারন আর একটি ছরিকাঘাতের ঘটনায় বোঝা যে ঘটনার সাথে মানসিক ভারসাম্যহীন একজন জড়িত।এতে শহর জুড়ে বিভিন্ন স্থানে এই সংহিস ঘটনা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ডাবলিন পুলিশেয়ের একাধিক তথ্যসূত্র থেকে সংবাদ পত্রকে জানিয়েছে যে, তারা দেখতে পাচ্ছে যে এখন এই ডাবলিন শহরে প্রতিনিয়ত বহু কিশোর-অপরাধী চক্র দেশী অস্ত্র বহন করে চলছে এবং এই চক্রটি খুবই সহিংস, যা উদ্বেগ জনক।
তারা আরো বলেন যে, একবার যখন কোনও ব্যক্তি কোনও বিরোধের সময় ছুরি ব্যবহার করে, অন্য পক্ষ নিজেদের কোনও প্রকার সুরক্ষা না দিয়ে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যায় না। অনেক ক্ষেত্রে, কিশোর অপরাধীরা স্ক্রু ড্রাইভার এবং অন্যান্য সরঞ্জামগুলি অস্ত্র হিসেবে বহন করতে পছন্দ করে।
তথ্যসুত্র: Gardaí dealt with six stabbing incidents in Dublin over 24-hour period https://jrnl.ie/5339200
অ্যামাজন ডাবলিনের মাউন্টপার্ক লজিস্টিক সেন্টার (Baldonnel) এ প্রায় ৬৫০,০০০ স্কয়ার ফিটের ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার খোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে, যেখান থেকে আইরিশ কাস্টমারদেরকে অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই ডেলিভারি প্রদান করতে পারবে।
ব্রেক্সিটের কারণে অ্যামাজনের অর্ডারে অতিরিক্ত ফি সংযোজন করা হয় যা কাস্টমারদেরকেই বহন করতে হচ্ছে। অ্যামাজন অর্ডার €২২ এর বেশি হলে তাতে ২১% ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে এবং €১৫০ এর বেশি অর্ডারে আমদানিকৃত ভ্যাট এবং কাস্টম ফিও যোগ হচ্ছে। আয়ারল্যান্ডে ডিস্ট্রবিউশন সেন্টার হলে কাস্টমারদেরকে এই অতিরিক্ত খরচ আর বহন করতে হবেনা।
এই মুহূর্তে আইরিশ কাস্টমারদের অর্ডার আয়ারল্যান্ডে পাঠানোর আগে ইউকের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে প্রসেস হচ্ছে, যার ফলে অর্ডারে ভ্যাট এবং কাস্টম খরচ যুক্ত হচ্ছে। নতুন লজিস্টিক সেন্টার হলে অর্ডারগুলো এইখানে থেকেই প্রসেস হবে যার ফলে কাস্টমারদেরকে আর অতিরিক্ত খরচ বহনের ঝক্কি পোহাতে হবে না।
এছাড়াও কাস্টমারের অর্ডার আন পোষ্ট এর মাধ্যমে দ্রুত কাস্টমারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেতে সক্ষম হবে। নতুন লজিস্টিক সেন্টার অনেক নতুন চাকুরীর ক্ষেত্র তৈরিতেও সহায়তা করতে সক্ষম হবে। যা আয়ারল্যান্ডের জন্য সত্যই একটি সুখবর।
অ্যামাজন প্রাইম কাস্টমারদের ডেলিভারির জন্য আগে থেকেই রাথকোলে আগে থেকেই একটি ডেলিভারি গুদাম ছিল।
গভীর রাত। ফাঁকা সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দুই মাতাল। হাঁটতে হাঁটতে তারা গিয়ে দাঁড়ায় একটি ৫ তলা বিল্ডিংয়ের কাছে। একজনের নজরে পড়ে বিল্ডিংটি। সঙ্গে সঙ্গে অপর মাতালকে বলে ওঠে, এই চল এই বিল্ডিংডা আমাদের মহল্লায় নিয়ে যাই। আমাদের মহল্লায়তাে কোন বিল্ডিং নাই , এইডা নিলেতাে ভালই হয়।
দু’জনে শলা- পরামর্শ করে এবার ওঠে দাঁড়ায়। বিল্ডিং – এর পাশে গিয়ে একসঙ্গে ধাক্কাতে থাকে। ধাক্কাতে ধাক্কাতে হয়রান। একজন বলে ওঠে ওই আমরা যে ধাক্কাইতাছি, দেখতো কতদূর আগাইছি? অপরজন বলে অনেকদূর। ওই মাতাল বলে তুই কেমনে বুঝলি? আরে বােকা , আমরা যখন ধাক্কানাে শুরু করি, তখন চাঁদটা ছিল ওই খানে। এখন দেখ চাঁদটা কই? নিশ্চয়ই আমরা অনেক দূর এগুয়ছি। এই রাইতের মধ্যেই ঠেইল্লা লইয়া যাইতে হইব। তাড়াতাড়ি ঠেল বলে আবার শুরু হলাে ঠেলা। এভাবে ঠেলতে ঠেলতে দু’ মাতালই ঘেমে অস্থির। আবারও দু’জন দাঁড়াল। এবার শরীরের কাপড় খুলে পেছনে রেখে শুরু করল ঠেলা। ঠেলতে ঠেলতে অনেকক্ষণ পার। এবার একজন অপরজনকে জিজ্ঞেস করছে, ওই দেখতো আমরা কতদূর আইছি।
অপরজন পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখে তাদের রাখা কোন কাপড়ই নেই। ভাবছে কাপড় যেখানে রেখেছিলাম সেখানেই রয়েছে। আমরাতাে অনেক দূর এগিয়েছি। আসলে দুই মাতাল যখন বিল্ডিং ধাক্কাচ্ছে, তখন পাশ দিয়ে যাচ্ছিল এক চোর। সে তখন তাদের রাখা কাপড় নিয়ে পালিয়ে যায়। ওদিকে মাতালরা ভাবছে , কাপড় যেখানে রেখেছিল সেখানেই রয়ে গেছে। তারা বিল্ডিং নিয়ে এগিয়ে গেছে অনেক দূর। রাত প্রায় শেষ । এর মধ্যেই বিল্ডিং ঠেলে নিতে হবে মহল্লায় । কাজেই বসে থাকার সময় নেই। তাই তারা আবার ধাক্কাতে শুরু করে। ধাক্কাতে ধাক্কাতে ভাের হলো। তখন একে অপরকে বলে একি! আমরা যেখানে আছি , সেখানেই রয়েছি। একটুও এগােয়নি। হায়! মাঝখান থেকে হুদা কাপড়ডা হারাইলাম।
এই গল্পের বাস্তবতা যেন আমি খুঁজে পাই বাংলাদেশের সামগ্রিক চালচিত্রে। সর্বত্র চলছে উন্নয়ন ও সুশাসনের মুখরোচক গল্প। সাথে চর্চা হচ্ছে সামাজিক ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনে অর্জিত সফলতার ফুলঝুরি নিয়ে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা যেখানে ছিলাম সেখানেই রয়ে গেছি বলে আমার মনে হয়। শুধূ মাঝখানে জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ৫০ টি বছর। আমাদের অর্জনের সাথে রয়েছে প্রচুর বিসর্জন। উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে রাষ্ট্রে বেড়েছে দুর্নীতি ও দুঃশাসন । নাগরিক জীবনে উন্নতি হলেও রাজনীতিতে সততা, আদর্শ, ও নীতিবোধের কোনো উন্নতি হয়নি। সর্বক্ষেত্রে এর পদস্খলন হয়েছে। উন্নতি হচ্ছে তোষামোদের। গণতন্ত্রের জায়গা ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হচ্ছে পক্ষান্তরে ফ্যাসিস্টবাদের উখান হচ্ছে। দলগুলোর মধ্যে সম্প্রীতির বিপরীতে বহুগুণে বেড়েছে হিংসা, বিদ্বেষ ও ঘৃণা। আর এই মূহর্তে বাক স্বাধীনতা চর্চার জায়গায় দৈত্যের মত হুমকি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডিজিটাল নামের কালো নিরাপত্তা আইন। ৫০ বছর আগে একটি রাষ্ট্র ও পতাকা অর্জন করলেও বিভেদ, বৈষম্য ও অপরাজনীতির কারণে আমরা আজও একটি “জাতি” হয়ে উঠতে পারিনি। এটি একটি জাতীয় লজ্জা!
তবে দেশিব্যাপি গগনচুম্বি ইমারত, ব্রীজ ও কালবাট মার্কা উন্নয়নের ভিড়ে বিল্ডিং ঠেলতে গিয়ে না হয় আমরা পড়নের কাপড়ডা হারাচ্ছি!, কিন্তু দেশ যে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ধাক্কা_ধাক্কি করে সেটি ভাবতে খুব ভালো লাগছে।
লন্ডন ও আয়ারল্যান্ডসহ ইউরোপের দেশগুলোতে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ছয়জনের কাছ থেকে টাকা ও পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছে একটি মানবপাচারকারি প্রতারক চক্র। অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নেমে চক্রটির তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেপ্তারকৃত তিন মানবপাচারকারী হলেন শাহীন হাসান (৪৯), তারেক মাহমুদ গালিব (২৮) ও বকুল হোসেন ওরফে রতন হাওলাদার (৪৮)। তবে এ ঘটনায় পলাতক রয়েছে আরেক মানবপাচারকারী মিজান ওরফে শাহেদ ছিদ্দিকী।তাঁদের কাছ থেকে অভিযোগকারী ৬ জনেরসহ মোট ১৩টি পাসপোর্ট, ২ ল্যাপটপ, ১টি ব্যাংকের চেকবই, ২টি প্লাস্টিকের ভুয়া সিল ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতারকচক্র নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রতারণা করতো। তারা পাসপোর্টের নম্বর তাদের তৈরি করা ওয়েবসাইটে দিয়ে কনফার্ম করেন যে তাদের ভিসা সঠিক আছে এবং তাদের ওই দেশে চাকরি ঠিক আছে।তিনি বলেন, চক্রটি আয়ারল্যান্ডের ভিসা দেওয়ার পর ভুক্তভোগীদের চেক করতে বলার পরই চক্রটি ভুয়া তা প্রমাণ পান। আয়ারল্যান্ডের ভিসা চেক করার জন্য ওয়েবসাইট ডেভেলপ করতে তারা ভুলে যায়।
ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, কয়েক দিন আগে মোহাম্মদ আলী চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি সম্প্রতি পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন তিনিসহ তাঁর আরও পাঁচ আত্মীয়কে আয়ারল্যান্ড নেওয়ার কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে ৬টি পাসপোর্ট ও ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নেয় তাঁর পূর্বপরিচিত শাহীন হাসান। টাকা নেওয়ার পর ভুয়া ভিসা ভুক্তভোগীদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে আরও টাকা দাবি করেছিলেন তাঁরা।
কিন্তু মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর বিষয়টিতে খটকা লাগে। বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের দূতাবাস না থাকায় তিনি ভারতের নয়াদিল্লির আয়ারল্যান্ড দূতাবাসে ই–মেইল করে ভিসাগুলো পাঠান। সেখান থেকে জানানো হয় ভিসাগুলো সঠিক নয়। এ সময় মোহাম্মদ আলী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপরও প্রতারকেরা তাঁদের কাছ থেকে ভিসা পাসপোর্টের বিনিময়ে আরও টাকা দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ আলী পিবিআইকে পুরো ঘটনাটি জানান। কিছুদিন আগে এ ঘটনায় তিনি হাতিরঝিল থানায় একটি প্রতারণার মামলাও করেন। এরপর পিবিআই ওই মামলার তদন্তভার নেয়।
পিবিআই প্রধান বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের মাধ্যমে একজন ভুক্তভোগী লন্ডন যেতে চেয়েছিলেন ১২ লাখ টাকায়। ওই ভুক্তভোগী যাতে প্রতারিত না হয় সেজন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু সে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। কারণ ইতিমধ্যে সে ৮ লাখ টাকা দিয়েছে বাকি ৪ লাখ টাকা না দিলে লন্ডন যেতে পারবে না। প্রতারিত ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে উল্টো আমাদের থেকে সে পালিয়ে বেড়ায়।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, যারা প্রতারিত হন তারা পুলিশের কাছে আসেন না। কারণ তারা মনে করেন পুলিশের কাছে গেলে তারা লন্ডন যেতে পারবে না। তারা যতক্ষণ পর্যন্ত সবকিছু না খোয়াচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত তারা পুলিশের কাছে আসেন না।
শুধু জর্দা খাইয়ে পান প্রেমীদের নয়, কর দিয়েও দেশপ্রেমীদের মন জয় করে চলেছেন দেশসেরা করদাতা জনাব কাউছ মিয়া।
জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া আবারও দেশসেরা করদাতা হয়েছেন। তিনি সুপরিচিত হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী। ২০১৯-২০ করবর্ষে ব্যবসায়ী শ্রেণিতে ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে এই ব্যবসায়ী সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি ব্যবসায়ী শ্রেণিতে সর্বোচ্চ করদাতার একজন।
এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তাঅন্য শ্রেণির সর্বোচ্চ করদাতারা প্রতিবছর কর হিসেবে যত টাকা দেন, তারা কাউছ মিয়ার ধারেকাছেও নেই। বড় শিল্পপতি বলে যাঁরা দাপিয়ে বেড়ান, সরকারি নানা আনুকূল্য নেন, নানা ধরনের পদ নিয়ে বসে থাকেন, সভা-সমিতি ও সেমিনারে বড় বড় বক্তৃতা দেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই কর দেয়ার সময় খুঁজে পাওয়া যায় না, কিন্তু কাউছ মিয়া তার ব্যাতিক্রম।
কাউছ মিয়া ৬১ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন তিনি। ২০১৯ সালে এনবিআরের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আগে টাকাপয়সা এখানে-সেখানে রাখতাম। এতে নানা ঝামেলা ও ঝুঁকি থাকত। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দিয়ে “ফ্রি” হয়ে গেলাম। এরপর সব টাকাপয়সা ব্যাংকে রাখতে শুরু করলাম। হিসাবনিকাশ পরিষ্কার করে রাখলাম। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১ নম্বর করদাতা হয়েছিলেন কাউছ মিয়া।
১৯৪৫ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামায় আর পড়াশোনা এগোয়নি। বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১৯৫০ সালে চাঁদপুরের পুরান বাজারে মুদিদোকান দেন।
এরপর ধীরে ধীরে ১৮টি ব্র্যান্ডের সিগারেট, বিস্কুট ও সাবানের এজেন্ট ছিলেন। ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন এবং তামাকের ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে ৪০-৪৫ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি।
তবুও অনেক বাঘা বাঘা ব্যাবসায়িদের তুলনায় কাউছ মিয়ার ব্যাবসার মুনাফা উল্লেখযোগ্য না হলেও, হিসেবমত কর সময়মত পরিশোধ করার ক্ষেত্রে কাউছ মিয়া অনেক এগিয়ে।
কত শত বার আমি চেয়েছি তোমায়
রেখে দিতে হৃদয়ের গোপন কুঠিতে।
হাজার বছর পর তবুও তোমাতে
না পাই আমার ছায়া, না পাই অগ্নিয়
সবুজ শিখার হিম শীতল তাপীয়।
ধূয়ার কুণ্ডলী উড়ে চুঙ্গীর বর্তিতে,
কথা ছিল কোন এক অমাবস্যা রাতে
হারিয়ে যাবো জোনাকি হয়ে অজানায়।
অসীম মহাশূন্যের ধূলো কণা হয়ে
মহাকালের অচেনা অন্ধ চোরাপথে,
ভালবাসা হারিয়েছে আদি অন্ধকূপে।
শত আলোক বর্ষের পথ পাড়ি দিয়ে
এই ধরায় পরেছি ঐ উল্কার সাথে
কোন এক কাল রাতে প্রেমো মালা জপে।
প্রথম পর্ব:পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। এও সত্য যে, ব্যক্তির নৈতিকতার উন্নয়ন ব্যতিরেকে কোন জাতির উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব। ইউরোপে, বিশেষ করে আয়ারল্যান্ডে ডাক্তার, নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মীদের ডিউটি লম্বা সময়ের, ১২ ঘন্টার। ডাক্তারদের সর্বোচ্চ পদবি কনসালটেন্ট যার অধীনে কয়েকজন ডাক্তার থাকেন। পূর্ব নির্ধারিত appintment অনুসারে উপস্থিত রোগীদের সাক্ষাৎকার নেন, কনসালটেন্ট এবং অধীনস্থ অন্য ডাক্তারগন।
ডাক্তার প্রথমে রোগীর medical history, নথি পড়েন এবং মনোযোগ সহকারে রোগীর বিস্তারিত সমস্যাগুলো শুনেন এবং প্রাসঙ্গিক বিবিধ প্রশ্ন করে prescription, পরামর্শ দেন। অধীনস্থ ডাক্তারগন রোগীকে prescription, পরামর্শ দেয়ার আগে কনসালটেন্টের consent, সম্মতি নিয়ে থাকেন।
ডাক্তারগন ডিউটি শেষে হাসপাতাল ত্যাগ করে যার যার মত চলে যান- কিন্তু কনসালটেন্ট? তিনি শিফ্ট শেষে হাসপাতাল ত্যাগ করেন বটে তবে দায়ীত্ব থেকেই যায়। পরবর্তী শিফ্টে তাঁর অধীনস্থ ডাক্তারগন তাঁকে ফোন করে prescription, পরামর্শ প্রদানের consent, সম্মতি নেন। এছাড়া, ইমার্জেন্সি হলে তাঁকে যখনতখন হাসপাতালে যেতেও হয়।
মোদ্দাকথা কনসালটেন্ট, ২৪ ঘন্টাই দায়ীত্ব পালন করেন অত্যন্ত নিষ্ঠা, সততা ও বিনয়ের সাথে। কনসালটেন্ট বিভাগীয় প্রধান, অনেক বড় পদ, মাইনেও অনেক। পাশাপাশি দায়ীত্ব বা বিড়ম্বনাও অনেক, মানতেই হবে।
এমন উদাহরণ উন্নত দেশের প্রতিটি সেক্টরে, সর্বত্র। অনুন্নত, বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ উল্টো বা বিপরীত। বড় কর্মকর্তারা চেয়ারে বসে খোশগল্প বা অহেতুক কর্ম সময় কাটান। আর নীচের কর্মচারীরা কাজ করে ফুরসত পায় না।
উন্নত দেশের মানুষের মানসিকতা উন্নত তাই তাদের মাইনে বা উপার্জন শতভাগ পরিশুদ্ধ করে নেন। আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
আপনার কি এই মুহূর্তে কফি খেতে ইচ্ছে করতেছে? কিংবা জরুরি কিছু দরকার পড়ে গিয়েছে। অর্ডার করার আধা ঘণ্টার মধ্যেই দেখবেন আপনার বাসার সামনে এক যান্ত্রিক পাখি মারফত আপনার কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি পৌঁছে গেছে।
এটা কোন রূপকথার গল্প নয়। আয়ারল্যান্ডেই শুরু হল ড্রোন ডেলিভারির স্বপ্নিল যাত্রা। আজকে আয়ারল্যান্ডে প্রথম ড্রোনএর মাধ্যমে ডেলিভারির শুভ সূচনা হয়েছে। গলওয়ের অরনামোরে আজ পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোন এর মাধ্যমে ডেলিভারি সেবা শুরু করে।
মাননা নামক কোম্পানিটি ড্রোনএর মাধ্যমে ডেলিভারির উদ্যেগ গ্রহণ করে। টেসকোসহ কয়েকটি কোম্পানি ব্যাতিক্রমি এই ডেলিভারি সেবার সাথে যুক্ত হয়।
গ্রাহকরা জুতার বক্সের সমমান যে কোন জিনিস অর্ডার করতে পারবে। তবে ওজন অবশ্যই দুই কেজির বেশি হতে পারবে না।
ড্রোন৬০ মিটার উচ্চতায় উড়ে গিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌছবে এবং গন্তব্যস্থলের কাছে গিয়ে ১৫ মিটার উপড়ে অবস্থান করবে। গ্রাহক অর্ডার কালেকশনের জন্য উপস্থিত থাকলে তা আরো নিম্নয়মান হয়ে গ্রাহকের কাছাকাছি অবস্থান করবে এবং গ্রাহক তার অর্ডার সংগ্রহ করবে।
বর্তমান সেবা অরনামোর টেসকোর ২-৩ কিলোমিটার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, যা ওইখানকার ৮০০০ বসতিতে সেবা দিতে সক্ষম। মোট ১০ টি ড্রোন আপাতত ছয় মাসের জন্য পরীক্ষাধীন সেবা প্রদান করবে।
তবে দেরি কেন? আপনি অরনামোর এর বাসিন্দা হলে আজই অর্ডার করে ফেলুন। খুব শিগ্রই হয়ত আয়ারল্যান্ডের সব বাসিন্দা এই সেবার আওতায় আসবে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিসেপে কন্তে পদত্যাগ করেছেন। করোনাকালে সময়ে ব্যার্থতা এবং ইউরোপীয় ফান্ডের বণ্টন নিয়ে অন্য জোট এর সাথে দ্বন্দ্বেরজের ধরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন তিনি। ২০১৮ সালে ইতালিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন আইনের এই সাবেক অধ্যাপক।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর করোনা রিকভারির জন্য ২০৯ মিলিয়ন ইউরোর ফান্ড এর ভাগাভাগি নিয়ে দলের মধ্যে বিভাজন তৈরী হয়। কন্তে ইতালিকে দেওয়া ২০০ বিলিয়ন ইউরোর পুরোটাই একবারে খরচের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু জোট এর অন্য নেতারা চাচ্চিলেন ফান্ড ডিজিটাল এবং গ্রীন টেকনোলজিতেও ব্যাবহৃত হোক এবং এ নিয়েই বিরোধীতা তুমুলে উঠে।
জোটের অন্য দল সরকার থেকে সরে যাওয়ার ফলে সরকার দুর্বল হয়ে পড়ে। এমতাবস্থা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন জিসেপে কন্তে।
এর আগে ২০১৬ এর ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি। সংবিধান সংস্কারের পরিকল্পনা করেছিলেন রেনজি। ওই পরিকল্পনার ওপর গণভোটে শোচনীয় পরাজয় দেখে আকস্মিক পদত্যাগ করেন তিনি। মাত্র আড়াই বছর ক্ষমতায় থাকার পর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন রেনজি।
করোনা মহামারির কারণে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে কন্তে হয়তো নতুন সরকার গঠনের পরামর্শ চাইতে পারেন।
করোনার বড় ধাক্কা লেগেছে ইউরোপের বড় অর্থনীতির দেশ ইতালিতে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫৬। এর মধ্যে মারা গেছে ৮৬ হাজার ৪২২ জন।
ওয়াটারফোর্ড নিবাসী জনাব মাওলানা “আসাদ উদ্দিন” গত ২৪ শে জানুয়ারি রোজ রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওয়াটারফোর্ড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৫ এর উপরে। তিনি পূর্ব থেকে একাধিক ব্যাধিতে যেমন উচ্চ ডায়াবেটিস, ফুসফুসের কার্য ক্ষমতা হ্রাস সহ নানা রকম জটিলতায় ভুগছিলেন। অসুস্থতা অনুভব করায় তাকে ক্সক্সক্স তারিখে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারা সেখানে তার করোনা টেস্ট করানো হলে করোনা পজিটিভ আসে। হাসপাতালে চিকিতসা নেওয়ার পরে তার অবস্থার উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই তিনি আবার দুর্বল হয়ে পড়েন।
তিনি স্বপরিবারে ওয়াটারফোর্ডে বসবাস করতেন। ২০১৪ সালের দিকে তিনি আয়ারল্যান্ডে আসেন। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করেন। এক ছেলে কোরানে হাফেজ।
গত ২৫ শে জানুয়ারি রোজ সোমবার তাকে দাফন করা হয়।
আমরা তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করি এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করি।
দুর্দান্ত খেলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইট ওয়াশ করে বাংলাদেশ জিতে নিয়েছে সিরিজ। ১২০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে বাংলাদেশ এই সিরিজ জিতে নেয়। করোনার কারণে ধীর্ঘ ১০ মাস পর এটাই প্রথম বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সিরিজ।
প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ যথাক্রমে ৬ উইকেট এবং ৭ উইকেটে জয়লাভ করে সিরিজ নিশ্চিত করে। আজকের ম্যাচে জয়লাভের সুবাধে বাংলাদেশ অপরাজিত সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করে।
প্রথম ম্যাচে সাকিব আল হাসান, দ্বিতীয় ম্যাচে মেহেদি হাসান মিরাজ এবং তৃতীয় ম্যাচে মুশফিকুর রহিম ম্যান অব দা ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
ধীর্ঘ এক বছর নিষিদ্ধ থাকার পর মাঠে নেমেই চমক দেখান সাকিব আল হাসান। স্বরূপে ফিরেই জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সফররত অবস্থায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের সাথে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। খেলা দুটি আগামী ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
শুধুমাত্র করোনাকালীন সময়ের জন্য সরকার নতুন ধরনের ট্যাক্স রিলিফ এবং ট্যাক্স ক্রেডিট এর সংযোজন করে। যেগুলা হল eWorking Tax Relief এবং Stay & Spend ট্যাক্স ক্রেডিট। সবাই যার যার প্রাপ্য রিলিফ এবং ক্রেডিট বাৎসরিক রিটার্নের সাথে ক্লেইম করতে পারে।
E-Working Tax Relief
করনাকালীন লকডাউনে অনেকেই বাসা থেকে কাজ করতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে কর্মজীবীদের গ্যাস, ইলেক্ট্রিসিটি, টেলিফোন ও ইন্টারনেট বাবদ অতিরিক্ত খরচ গুনতে হয়েছে। সে কথা বিবেচনায় এনে নতুন ট্যাক্স অ্যালাউন্স এর সূচনা করে।
এই অ্যালাউন্স দুইভাবে কর্মজীবীরা পেতে পারে। কোম্পানি তার কর্মচারীদেরকে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করে দিতে পারে অথবা কোম্পানি না দিলে কর্মচারীরা রেভিনিউতে ট্যাক্স রিলিফ ক্লেইম করতে পারে।
যদি কোম্পানি পরিশোধ করে
কোম্পানি তার কর্মচারীদের বাসা থেকে কাজের খরচবাবদ টাকা পরিশোধ চাইলে করে দিতে পারে। যদি অ্যালাউন্স দিনপ্রতি €৩.২ এর নিচে প্রদান করে সেক্ষেত্রে ওই টাকার উপর কোন ট্যাক্স, PRSI অথবা USC আরোপ হবেনা। আর যদি কোম্পানি €৩.২ এর বেশি প্রদান করে থাকে তাহলে €৩.২ এর উপর যত দিবে তার উপর ট্যাক্স আরোপ হবে।
যদি কোম্পানি অ্যালাউন্স প্রদান না করে
আর যদি কোম্পানি অ্যালাউন্স প্রদান না করে তাহলে কর্মজীবীরা বছর শেষে তা রেভিনিউ থেকে ক্লেইম করে নিতে পারবে।
রেভিনিউ এর myAccount সেকশনে নতুন অপশন যোগ করা হয়েছে, যেখানে গিয়ে ক্লেইম করতে পারবে। গত বছরের ট্যাক্স রিটার্নের সময় এই ট্যাক্স রিলিফ প্রয়োগ করা যাবে।
অ্যালাউন্স কিভাবে এবং কত হিসেব করা হবে?
একজন কর্মজীবী COVID19 এর যে সময় ধরে বাসা থেকে কাজ করেছে সে সময় থেকে বছরের শেষ দিন পর্যন্ত যতদিন কাজ করেছে তার খরচের উপর ভিত্তি করে ক্লেইম করতে পারবে। তবে সম্পূর্ণ খরচ নয়, বরঞ্চ খরচের একটা % হিসেব করে ক্লেইম করতে পারবে।
মোট খরচের ১০% হবে ইলেক্ট্রিসিটি এবং হিটিং এর জন্য এবং ৩০% হবে ব্রডব্যান্ডের জন্য।
উদাহরণঃ
ধরুন আপনি মোট ১০০ দিন বাসা থেকে কাজ করেছেন। আপনার ইলেক্ট্রিসিটি বিল আসছে €১০০০ এবং ব্রডব্যান্ড বিল আসছে €৩০০। তাহলে হিসেব নিম্নরূপঃ
স্টে এন্ড স্পেন্ড স্কিম নতুন ধরনের ট্যাক্স ক্রেডিট যা ২০২০ এবং ২০২১ পিরিয়ডের জন্য ব্যবহার করা যাবে। যা ইনকাম ট্যাক্স অথবা USC কে কমাতে সাহায্য করবে।
করনাকালিন সময়ে ট্যুরিজম সেক্টরে প্রচন্ড ধস নামে। ট্যুরিজম সেক্টরকে চাঙ্গা করতে মূলত এই ট্যাক্স ক্রেডিটের সংযুক্তি করা হয়। যাতে করে জনসাধারণ এই খাতে ব্যায় করতে অনুপ্রাণিত হয়।
১ম অক্টোবর ২০২০ থেকে ৩০এ এপ্রিল ২০২১ এর মধ্যে কেউ যদি হলিডেতে গিয়ে বাসস্থান যেমন, হোটেল, বিএনবি তে থাকে অথবা খাবার ও পানিয়ের বাবদ খরচ করে থাকে তাহলে তারা ঐ খরচটুকু ট্যাক্স ক্রেডিট হিসেবে ক্লেইম করতে পারবে। তবে খরচগুলো কোয়ালিফায়িং খরচ হতে হবে এবং প্রতি খরচের বিল কমপক্ষে €২৫ হতে হবে। ক্লেইম করার সময় €২৫ অথবা তার ঊর্ধ্বে রিসিপ্টগুলোও জমা দিতে হবে।
সর্বোচ্চ ট্যাক্স ক্রেডিট প্রতিজনে €১২৫ ক্লেইম করতে পারবে এবং জয়েন্ট এসেসমেন্টের জন্য €২৫০ পর্যন্ত ক্লেইম করা যাবে।
এই ট্যাক্স ক্রেডিট ইনকাম ট্যাক্স বকেয়া কমাতে সাহায্য করবে, অথবা বকেয়া না থাকলে ক্লেইম করলে রেভিনিউ তা ফেরত দিবে। শুধু রিসিপ্ট/ইনভয়েছ গুলো সংগ্রহে রাখুন।
ফ্রি হেল্পলাইন
এই ব্যাপারে কারো বাড়তি তথ্য দরকার হলে অথবা ক্রেডিট ক্লেইমের ব্যাপারে কারো সহযোগিতা দরকার হলে আমাদের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন।
কথায় আছে উঠতি মূলা পত্তনেই চেনা যায়। সফওয়াত ইসলাম নিতুল তেমনি একজন ব্যাক্তিত্ব। অসামান্য প্রতিভার অধিকারি নিতুল আইরিশ বাংলাদেশী কমিউনিটির এক তরুণ মুখ, ছেলেবেলা থেকেই প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে যার এগিয়ে চলা। বাংলাদেশের গভর্নমেন্ট লেবোরেটরি হাই স্কুল, ঢাকা থেকে আয়ারল্যান্ডের ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মক্ষেত্র; সর্বত্রই রয়েছে যার সফলতার পদচিহ্ন।
নিতুলের জন্ম বাংলাদেশে। ২০০৬ সালে মা নাজমা ইসলাম নাজুর সাথে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে, বাবা আমিনুল ইসলাম বুলবুল ২০০২ সাল থেকেই আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা। দুই ভাই ও এক বোনের সুখী পরিবার। একমাত্র বড়ো বোন নিউরো ক্যামিস্ট্রির উপর PhD করছেন এবং ভাই ফার্স্ট ইয়ারে অধ্যয়নরত। বেড়ে উঠা ডাবলিনের ক্লোনডালকিনে। ক্লোনডালকিনের ময়েল পার্ক কলেজ থেকে অসাধারণ কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন জুনিয়র এবং লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষা। জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ন হন। এই অনবদ্য ফলাফল তখন লোকাল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি ২০০৮ থেকে ২০১০ সালে টানা তিনবার সেরা শিক্ষার্থীর পুরষ্কার জিতে নেন। ট্রাঞ্জিশন ইয়ারে ডিস্টিংশন এবং লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ৫৬৫ পয়েন্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হন। যেটা ছিল ২০১৩ সালের লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ঐ স্কুল এর ফলাফলের শীর্ষ স্থান এবং স্কুলের একমাত্র ছাত্র হিসেবে স্বনামধন্য ট্রিনিটি কলেজ থেকে অফার পান। ঐ সময় তিনি ময়েল পার্ক স্টুডেন্ট সোসাইটির নির্বাচিত মেম্বার ও ট্রেজারার নির্বাচিত হন।
এরপর ট্রিনিটি কলেজ থেকে অসামান্য কৃতিত্বের সাথে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে শেষ করেন কম্পিউটার সাইন্স & বিজনেস এর উপর গ্রাজুয়েশন। কলেজে অসামান্য অবদানের ফলে স্কলারশিপ গ্রহণ করেন Google, IBM, Web Summit, Salesforce এবং Nissan Ireland এর মত নামজাদা প্রতিষ্ঠান থেকে। Bridge2College প্রোগ্রাম এর এম্বাসেডর নিযুক্ত হওয়া, নবাগত শিক্ষার্থীদের মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া, ক্লাস রিপ্রেজেন্টিটিভ হিসেবে কাজ করা সহ অনেক কিছুতেই জড়িত ছিলেন এই প্রতিভাবান।
Family of Sofwat Islam
সবশেষে একই কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্ট অব ইনফরমেশন সিস্টেমের উপর মাস্টার্স শেষ করেন। মাস্টার্সে তিনি ডিস্টিংশন পান। ঐ সময় কলেজ থেকে মাত্র চার জন ডিস্টিংশন পান, তাঁর মধ্যে নিতুল একজন। যার শিক্ষাগত জীবন এত বৈচিত্র্যময় তাঁর কর্মজীবনও যে বৈচিত্রময়তায় ভরপুর থাকবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। মাস্টার্স করা অবস্থাতেই সুযোগ মেলে বিখ্যাত কর্পোরেশন Citi Group Inc এ ইঞ্জিনিয়ারিং এনালিস্ট হিসেবে। এরই মধ্যে মাস্টার্স সম্পন্ন হয়। এর পর শুরু হয় তাঁর ক্যারিয়ারের মই বেয়ে উপরে উঠা। Citi Group থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন Dataship Ltd এ, বছর না ঘুরতেই পদোন্নতি হয় সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে, তারও এক বছর এর মাথায় আবার পদোন্নতি হয়ে এখন তিনি একই কোম্পানির প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।
খেলাধুলায়ও নিতুল কম যায় নি। তিনি ছিলেন অসাধারণ ক্রীড়াশীল ব্যক্তি। স্কুল জীবনেই অর্জন করেন খেলাধুলায় অসামান্য সাফল্য। ২০০৮ সালে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ফার্স্ট এবং বর্ষসেরা বাস্কেটবল খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে ডাবলিন লায়ন্স ক্লাবের পক্ষ হতে অনূর্ধ্ব-১৬ বাস্কেটবল ডিভিশনে-২ এর হয়ে চ্যাম্পিয়ন এবং একই বছর একই ক্লাব থেকে টীম ক্যাপ্টেন এর দায়িত্ব পান। ২০১২ সালে আবারও চ্যাম্পিয়ন হন অনূর্ধ্ব-১৭ বাস্কেটবল ডিভিশন-১ এর হয়ে। এরপর ২০১১-২০১২ তে ময়েল পার্ক কলেজ বাস্কেট বল টিম ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করেন।
অনন্য প্রতিভাধর নিতুল তাঁর প্রতিভার আভা ছড়িয়ে দিতে চান সমাজে। তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে ছড়িয়ে দিতে চান বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে। যে কোন ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চান সকলের মাঝে। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করেন। এমন সাফল্যমণ্ডিত শিক্ষাজীবন ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন যার, তিনি যেমন তাঁর পরবিবারের জন্য গর্বের, তেমনি গর্ব আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটির। নিতুলরাই তুলে ধরতে সচেষ্ট হবে আমাদের স্বত্বাকে, বাঙ্গালি জাতির অস্তিত্বকে। নিতুলের মত মেধাবীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যাক আমাদের আজকের ও আগামীর প্রজন্ম।
আমরা আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকা পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি এবং তাঁর পিছনে শ্রম দেওয়া গর্বিত পিতামাতা ও মেন্টরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে আগামী ছয় মাসের জন্য কোভিড-১৯ লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা গুলি সারা দেশে জারি থাকবে এবং স্কুল গুলি মার্চ মাসের আগে পুনরায় চালু হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই।
স্কুলগুলি পুনরায় খোলার ক্ষেত্রে মিহল মার্টিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, ” স্কুল গুলি মার্চের সেন্ট প্যাট্রিক্স-ডে” এর দিন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই তারিখের মধ্যে অবশ্যই কোন ছাত্র-ছাত্রী ক্লাশে ফিরতে পারবে না”
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন আরো বলেছেন, যে তিনি উদ্বিগ্ন কারন আয়ারল্যান্ডে করোনার UK ভাইরাস ছড়িয়ে (স্ট্রেইনের) পরেছে, এবং এদিকে কোরনা ভ্যাকসিন সরবরাহের বিলম্ব হওয়ার কারনেও তিনি ভীষন উদ্বিগ্ন।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন বলেছেন যে কোভিড -১৯ লকডাউন নিষেধাজ্ঞা বছরের কমপক্ষে প্রথম ছয় মাসের জন্য কার্যকর থাকবে।
RTE”র ব্রেন্ডন ও’কনার এর প্রোগ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে, প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন বলেছিলেন যে সরকার “এই বছরের প্রথমার্ধে” নিষেধাজ্ঞাগুলি অপসারণের জন্য একটি “সতর্ক ও রক্ষণশীল” দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছে, কারণ আয়ারল্যান্ড মহামারীটির তৃতীয় ধাপ-কে অতিক্রম করছে এবংং তা মোকাবিলা করছে।
তবে তিনি এটিও বলেছেন যে এর অর্থ এই নয় যে ছয় মাসের জন্যই “লকডাউন” থাকতে হবে।
“গ্রীষ্মের মধ্যেই আমরা পরিবর্তিত অবস্থান ও পরিবেশে থাকব কারণ ততক্ষণে জনগনকে ব্যাপক আকারের টিকা প্রদান সম্ভব হবে।”
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন: Taoiseach says there will be restrictions for six months, schools may not reopen until March https://jrnl.ie/5333549
মশিউর রহমান। নিউজ ডেস্ক। আইরিশ বাংলা টাইমস।
শনিবার,২৩ জানুয়ারী ২০২১।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে ছয় মাসের জন্য দেশে কোভিড-১৯ এর লকডাউন নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে এবং স্কুল গুলি মার্চ মাস আগে পুনরায় চালু হওয়ার সম্ভাবনা নাই।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন বলেছেন, যে তিনি উদ্বিগ্ন কারন করোনার UK ভাইরাস আয়ারল্যান্ডে ছড়িয়ে (স্ট্রেইনের)পরেছে, এবং তিনি আরো বেশি উদ্বিগ্ন কারন ভ্যাকসিন সরবরাহের বিলম্বিত হওয়ার কারনে।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টি বলেছেন যে কোভিড -১৯ লকাউন নিষেধাজ্ঞা বছরের কমপক্ষে প্রথম ছয় মাসের জন্য কার্যকর থাকবে।
RTE”র ব্রেন্ডন ও’কনার এর প্রোগ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন বলেছেন যে,”সরকার “এই বছরের প্রথমার্ধে”লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা গুলি অপসারণের জন্য একটি “সতর্ক ও রক্ষণশীল” দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছে,কারণ আয়ারল্যান্ড করোনা মহামারীটির তৃতীয় ধাপ-কে মোকাবিলা করছে।
তবে তিনি এটিও বলেছিলেন যে “এর অর্থ এই নয় যে ছয় মাসের জন্যই “লকডাউন” হতেই হবে।”
“গ্রীষ্মের মধ্যেই আমরা পরিবর্তিত অবস্থান ও পরিবেশে থাকব কারণ ততক্ষণে জনগনকে ব্যাপক আকারের টিকা প্রদান সম্ভব হবে।”
স্কুলগুলি পুনরায় খোলার ক্ষেত্রে মার্টিন হুঁশিয়ারি তিনি বলে দিয়েছেন যে, ” স্কুল গুলি সেন্ট প্যাট্রিকের দিন অবধি বন্ধ থাকবে। এই তারিখের মধ্যে অবশ্যই ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাশে ফিরে আসবে না”
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন: Taoiseach says there will be restrictions for six months, schools may not reopen until March https://jrnl.ie/5333549
প্রবাসী টিভি আয়ারল্যান্ডের উদ্যোগে গুণীজনদের নিয়ে ধারাবাহিক কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম পর্বে উপস্থিত ছিলেন টিভি ব্যক্তিত্ত্ব ডাক্তার মুসাব্বির হোসেন।
আগামীকাল অনুষ্ঠানটির ২য় পর্ব সন্ধ্যা ৬টায় প্রবাসী টিভির ফেইসবুক পেইজে সরাসরি প্রচারিত হবে। অনুষ্ঠানটির অতিথি জনাব আরিফ ভূঁইয়া। তিনি ব্যাংক অব আয়ারল্যান্ডে ফাইনান্সিয়াল একাউন্টেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি সমসাময়িক বিষয়াবলির উপর আলোচনা করবেন।
আগামী ২৪শে জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬ টায় প্রবাসী টিভির সংগীতানুষ্ঠান “হৃদয়ের মেলডি” নামক অনুষ্ঠানের ২য় পর্ব সম্প্রচারিত হবে। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ফ্রান্সের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী “বরণ বড়ুয়া”। অনুষ্ঠানটি প্রবাসী টিভির ফেইসবুক থেকে সরাসরি দেখতে পাবেন।
আগামী ৩০শে জানুয়ারি গুণীজন অনুষ্ঠানের ৩য় পর্ব শনিবার সন্ধ্যা ৫ টায় প্রচারিত হবে। অনুষ্ঠানটির অতিথি হিসেবে থাকবেন সময় টিভি আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধি এবং ডেইলি নাকরিকের নির্বাহী ব্যবস্থাপক সৈয়দ জুয়েল।
অনুষ্ঠানগুলো প্রবাসিটিভির ফেইসবুক পেইজে সম্প্রচারিত হবে এবং সকলকে দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশী গবেষক “জনাব ডেভিড বড়ুয়ার” PhD ডিগ্রি অর্জনের মধ্যে দিয়ে অসামান্য কৃতিত্ব অর্জনে “আইরিশ বাংলা টাইমস” পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনন্দন।
তিনি বাংলাদেশ থেকে ২০১৬ সালে PhD গবেষণার উদ্দেশ্যে আয়ারল্যান্ডে আসেন। National University of Ireland – Galway এর অধীনে Discipline of Pathology এর School of Medicine এ গবেষক হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল Breast Cancer.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৫ তিনি Biochemistry এবং Molecular Biology এর উপর স্নাতকোত্তর পাশ করেন। স্নাতকোত্তরে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেছিলেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে Biochemistry Dept. এর EuGEF Lab এ সহকারী গবেষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তার পর তিনি উচ্চতর গবেষণার উদ্দেশ্যে আয়ারল্যান্ড যাত্রা করেন।
আগামী সপ্তাহে, ফেব্রুয়ারি থেকে Waterford এর “Eurofins BioPharma” তে Molecular Scientist হিসেবে যোগদান করার ব্যাপারে তিনি একটি নিয়োগচুক্তি স্বাক্ষর করেন।
জনাব Dr David Barua র এই অর্জনে আমরা বাংলাদেশী কমিউনিটি গর্বিত এবং আমরা তাঁর উত্তরোত্তর উন্নতি ও সাফল্য কামনা করি।
গার্ডা এ পর্যন্ত মোট ৭১১ জনকে জরিমানা করেছে এবং আরো ২০০ জনের জরিমানা পরীক্ষাধীন অবস্থায় রেখেছে।
গত ১১ই জানুয়ারি থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য গার্ডাকে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করা হয়। গার্ডা আইন ভঙ্গকারীকে €১০০ জরিমানা করতে পারবে।
করোনার প্রকোপ বাড়া সত্ত্বেও অনেকেই আইন ভঙ্গ করে ৫ কিঃ মিঃ এর বাহিরে ভ্রমণ অব্যাহত রেখেছিল। যার ফলে সরকার পাহারা চৌকি জোরদার করার জন্য গার্ডাকে নির্দেশ প্রদান করে এবং সাথে জরিমানার ব্যবস্থা করে।
আয়ারল্যান্ডে স্কুলের ছেলেমেয়েদের কি স্কুলের বাইরে কোচিং এর প্রয়োজন আছে?
(প্রথম অংশ): আমি গত ২১ বছর ধরে ডাবলিনে পরিবার নিয়ে বাস করি। আমার দুই সন্তানের জন্ম ও বেড়ে উঠাও এই দেশে। ফলে অনেকেই আমাকে একটা প্রশ্ন করেন। “আয়ারল্যান্ডে স্কুলের ছেলেমেয়েদের কি স্কুলের বাইরে কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে?” কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তরে এক কথায় ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলা যাবে না। কেননা, উত্তরটা নির্ভর করবে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর। যেমন,
১। আপনার ছেলে বা মেয়ে কোন ক্লাসে পড়াশোনা করছে?
২। আপনার ছেলে বা মেয়ে পড়াশোনায় দুর্বল কিনা?
৩। আপনার ছেলে বা মেয়ের পড়াশোনা ব্যাপারে টার্গেট বা লক্ষ্য কি? অর্থাৎ সে বড় হয়ে কি হতে চায় বা ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে সে কোন বিষয়ে পড়াশোনা করতে চায়।
আমি এক এক করে এখানে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবো। প্রথমেই আসি প্রাথমিক স্কুল প্রসঙ্গে। এদেশের প্রাথমিক স্কুলের সামগ্রিক পরিবেশ এবং পড়াশোনার মান অনেক উন্নত। ছেলেমেয়েরাও আনন্দের সাথে এখানে পড়াশোনা করে। আর স্কুল প্রিন্সিপাল, ক্লাস টিচার সকলেই দায়িত্বের সাথে ছেলেমেয়েদের অনেক যত্ন নিয়ে থাকেন। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, খেলাধূলা, নিয়ম-শৃংখলা সকল ক্ষেত্রেই তাঁরা সাধ্যমতো লক্ষ্য রাখেন এবং চেষ্টা করেন সর্বোচ্চ শিক্ষা ও সেবাটা দেবার। তাই আপনার ছেলে বা মেয়ে যদি প্রাথমিক স্কুলে পড়ে তাহলে এক কথায় বলা যায়, ছেলে বা মেয়ের স্কুলের বাইরে কোনো কোচিংয়ের দরকার নেই। তাদেরকে শুধু বাসায় যত্ন নিলেই চলবে। কিন্তু এখানে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের উপর। স্কুলেও এই দুটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এবং ক্লাস টিচারও একটা রেকর্ড রাখেন তাঁর ক্লাসে কোন ছেলে বা মেয়ে কে কেমন করছে। অনেক সময় যে সব ছেলে বা মেয়ে এই বিষয় দুটিতে দূর্বল তাদেরকে এক্সট্রা টিচার দিয়ে আলাদা ক্লাসও নেয়া হয়। কিন্তু তারপরও যদি আপনার ছেলে বা মেয়ে এই বিষয় দুটিতে দুর্বল থাকে, তাহলে তাকে স্কুলের বাইরে কোচিংয়ে দেয়া যেতে পারে। হয়তো দেয়া উচিৎও হবে। কেননা, ভবিষ্যৎ পড়াশোনার ক্ষেত্রে এই বিষয় দুটির গুরুত্ব অপরিসীম। (চলবে……প্রথম অংশ)
এস, এম, মাহফুজুল হক
Lucan, ডাবলিন
২১শে জানুয়ারী, ২০২১
এক বছর নিষেধাজ্ঞার পর আজই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন সাকিব আল হাসান। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে ক্রিকেটে ফিরেই চমক দেখালেন সাকিব।
ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ, অ্যান্ড্রু ম্যাকার্থি, নিক্রুমা বন্নের ও আলজারি জোসেফ এর উইকেট দিয়েই শুরু হয় সাকিবের ফিরে আসার শুভ সূচনা। সাকিব আর মুস্তাফিজের বোলিং তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ক্যারিবীয় ব্যাটিং শিবির। ১২২ রানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বেঁধে ফেলে টাইগাররা।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করে বাংলাদেশ দল ৩৩.৫ ওভারেই ৬ উইকেট বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেমে বাংলাদেশের এই জয় সত্যই আনন্দের। সাকিব আল হাসানের চেনা রূপে ফিরে আসাও টাইগারদের জন্য অনুপ্রেরণার।
আপনার আয় থাকা মানেই এর সাথে রয়েছে ট্যাক্সের সম্পৃক্ততা। আপনার রেজিস্টার্ড কোম্পানির ব্যবসায়িক আয় ছাড়া বাকি সব আয়ই পার্সোনাল ট্যাক্সের অন্তর্ভুক্ত। কোম্পানির ট্যাক্স বিষয়ক বিষয়গুলো সাধারণত যার যার অ্যাকাউনট্যান্টই দেখভাল করে,সুতরাং যাদের আয় ব্যাবসায়িক তাদেরকে ট্যাক্সের সব খুঁটিনাটি না জানলেও চলবে।
কিন্তু আপনার ব্যক্তিগত ট্যাক্সের জন্য অ্যাকাউনট্যান্ট এর প্রয়োজন নেই। সুতরাং সেক্ষেত্রে আপনাকেই আপনার ট্যাক্সের দেখভাল করতে হবে। তাই পার্সোনাল ট্যাক্সের কিছু সাধারণ ধারণা থাকা দরকার।
উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি কিংবা পরিবারের মৃত ব্যক্তির মৃত্যু পরবর্তী কার্যাবলীর মত ক্রিটিক্যাল বিষয় থেকে শুরু করে বাৎসরিক রিটার্ন জমা দেয়ার মত সাধারণ বিষয়ও পার্সোনাল ট্যাক্সের অন্তর্ভুক্ত। তবে ট্যাক্সের সব নিয়ম জানা সম্ভব না হলেও অন্তত জরুরি কিছু বিষয় জানা থাকা অত্যন্ত দরকার।
তবে আশার বিষয় যে, অনেকেরই মোটামুটি ব্যাক্তিগত ট্যাক্সের সম্যক ধারণা রয়েছে। তবে অনেকেই আছেন যাদের মোটেও ধারণা নেই।
ট্যাক্সের বিষয়ে ধারণা থাকার লাভ কি?
১। এখন কোম্পানি আর আগের মত P60 এবং P45 ইস্যু করেনা। তার পরিবর্তে রেভিনিউ সবার ব্যাকিগত অ্যাকাউন্টে স্টেটমেন্ট অফ লাইবিলিটি ও পূর্ববর্তী মালিকের বিস্তারিত বর্ণনা থাকে। তা না জানার ফলে অনেকে দরকারে ওইসব ডকুমেন্ট এ এক্সেস করতে পারেনা।
২। ট্যাক্স ক্রেডিট ও ট্যাক্স রিলিফের সুবিধাগুলো সময়মত ক্লেইম না করার ফলে সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যেমন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একজনেই শুধু চাকুরী করে কিন্তু শুধুমাত্র জয়েন্ট অ্যাসেস না করার ফলে বছরে সর্বনিম্ন €১৬৫০ গচ্চা দিচ্ছে।
৩। বিভিন্ন রকম অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে ট্যাক্স কমিয়ে আনা সম্ভব। না জানা থাকার ফলে প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।
৪। এছাড়াও সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে থাকে, যেমন হেল্প টু বাই স্কিম, PRSI এর মাধ্যমে চোখ এবং দাঁতের চিকিৎসা নেয়া। ইদানীং COVID19 উপলক্ষে eWorking এবং Stay & Spend ট্যাক্স রিলিফ এর সুবিধা ইত্যাদি। ধারণা না থাকার ফলে সময়মত অনেকেই তা ব্যবহার করতে পারতেছেনা।
৫। সোশাল বেনিফিট গ্রহণের ক্ষেত্রে, ছেলেমেয়েদের গ্রান্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কিংবা অনেক দাপ্তরিক কাজে রেভিনিউ ইনফরমেশনে এক্সেস থাকা জরুরি। যা না থাকার ফলে দরকারের সময় অনেকেকেই আকাশ থেকে পড়া লাগে। আগে থেকে যদি রেভিনিউ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নখদর্পণে থাকে তাহলে প্রয়োজনে তা সহজেই কাজে লাগাতে পারে।
ফ্রি হেল্পলাইন
পার্সোনাল ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট মূলত জটিল কোন বিষয় না। প্রাথমিক ধারণা না থাকার কারণে অনেকে তা জটিল বলে মনে করেন। অনেকে আবার বিষয়টার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন না। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে সবাই যাতে সবাইকে পার্সোনাল ট্যাক্সের প্রাথমিক ধারণাটুকু দেয়া এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করা। একবার ধারণা হয়ে গেলে সবাই যার যার মত করে তার তার ট্যাক্স ম্যানেজ করতে পারবে।
ট্যাক্স বিষয়ে যে কোন পরামর্শের জন্য নিঃসংকোচে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা আপনাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
নতুন দুটি ধরনের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ফাইজার-বায়োন্টেকের ভ্যাকসিন কার্যকর বলে প্রমাণ পেয়েছে গভেষকরা।
অনেক বেশি সংক্রামক নতুন ধরন দুটি পাওয়া গেছে যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। এ কারণেই এদের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কেমন হবে তা নিয়ে সন্দেহ ছিল।
ফাইজারের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য গবেষকরা ভাইরাসটির দুটি ধরন তৈরি করেন। একটি ধরনে নতুন মিউটেশনটি ছিল, অপরটিতে ছিল না। এরপর সেগুলোকে ২০ জন রোগীর রক্ত নমুনার সঙ্গে মিশ্রিত করা হয় যাদেরকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সময় ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল।
ফলাফলে দেখা যায়, ভ্যাকসিন নেয়া ব্যক্তিরা নতুন ধরনটির বিরুদ্ধেও রোগ প্রতিরোধে সক্ষম।
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের এই গবেষণায় যে মিউটেশন নিয়ে কাজ করা হয়েছে তার নাম এন৫০১ওয়াই, যা করোনাভাইরাসের দুটি ধরনেই পাওয়া গেছে। ভ্যাকসিন এই ধরন দুটির বিরুদ্ধেও কার্যকর হবে এমন ধারণাই করা হচ্ছিল, যদিও গবেষকরা প্রমাণ খুঁজছিলেন।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর যে অনেকগুলো ধরন তৈরি হয়েছে, এই ধরন দুটি তাদের মধ্যে অন্যতম। তাই ফাইজারের কার্যকারিতা যেমন খুশির খবর, তেমনি ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করবে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
নতুন ধরনটিতে একাধিক মিউটেশন রয়েছে তাই এদের সম্মিলিত প্রভাব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভেঙ্গে দিতেও পারে। এ প্রসঙ্গে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রাভি গুপ্তা বলেন, ‘ব্রিটেনের আটটি ধরনের একটি হল এই মিউটেশন এবং এককভাবে এটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখবে এমনটা আশাও করা হচ্ছিল না।’
আয়ারল্যান্ডের একমাত্র বাংলাদেশী শিক্ষক কর্তৃক অনলাইন কোচিং
মাহফুজুল হক ডাবলিনের বাংলাদেশী কমিউনিটির একজন পরিচিত মুখ। তিনি গত ২১ বছর ধরে এখানে সপরিবারে সুনামের সাথে বসবাস করেন। তার দুই সন্তানের জন্ম ও বেড়ে উঠা এই দেশে। তাদের লেখাপড়ার ব্যাপারে সাহায্য করার এক পর্যায়ে তিনি অনুধাবন করেন এদেশের প্রাথমিক স্কুলের ছেলেমেয়েদের স্কুলের বাইরে কোচিং এর খুব একটা প্রয়োজন নেই। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ছেলেমেয়েদের স্কুলের বাইরে কোচিং এর খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে গনিত বিষয়ে।এর পিছনে অবশ্য নানাবিধ কারন আছে। যাহোক, তখন থেকেই তিনি পরিকল্পনা করেন একটি কোচিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার। অতঃপর নিজ বাসাতেই ২০১৭ সাল থেকে তিনি স্বল্প পরিসরে ছেলেমেয়েদের কোচিং করানো শুরু করেন। করোনাকালীন দূর্যোগের কারনে এই কোচিং কার্যক্রম এখন অনলাইনে চলছে। বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টির স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা গনিত ও কম্পিউটার প্রোগ্রামিং বিষয়ে তার কাছে কোচিং করছে এবং উপকৃত হচ্ছে।
মাহফুজুল হক ১৯৯৯ সালে ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির বৃত্তি নিয়ে আয়ারল্যান্ডে আসেন রিসার্চ মাস্টার্স প্রোগ্রামে। মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি ডাবলিনের বিভিন্ন কলেজে ইনফরমেশন টেকনোলজি (IT) বিষয়ে শিক্ষকতা করেন। আয়ারল্যান্ডে আসার পূর্বে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে চীন সরকারের বৃত্তি নিয়ে বেইজিং গমন করেন স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা করার জন্য। তিনি চীনা ভাষায় পারদর্শী। ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে তিনি ঢাকায় অবস্থিত ইনষ্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (IST) তে কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
মাহফুজুল হক অধুনালুপ্ত বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েসন অফ আয়ারল্যান্ড (BAI) এর প্রতিষ্ঠাকালীন আহবায়ক ছিলেন। তিনি ছিলেন আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রিন্ট সংস্করন পত্রিকা “আইরিশ বাংলা বার্তা”র প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক।
ভালোবাসা কি ক্যালকুলেসন করে হয়? হয়না।
ভিখিরির দরোজায় রাজার কড়া নাড়ানোর নাম ভালোবাসা।
বাদশাহর পদযুগলে গরিবের আর্তনাদ আর আস্ফালনের নাম ভালোবাসা।
এ ভালোবাসা নাকি স্বর্গীয়, স্বর্গেই এর জন্ম। ওখান থেকেই ডানা মেলে উড়ে উড়ে আসে মর্তের পৃথিবীতে।
লাইলি মজনু, শিরি ফরহাদ, ইউসুফ জুলেখা এমোন অনেক নাম না জানা প্রেম উপাখ্যান
এ স্বর্গীয় ভালোবাসারই বিমূর্ত প্রতীক। সম্পর্কের
নিছক ফ্রেমেও যেনো আটকে থাকেনা এ ভালোবাসা।
পুতুল পুতুল মায়াবী সন্তানের সম্পর্ক ছিন্ন করে
মা কখনো কখনো হয়ে ওঠেন প্রেম বুভুক্ষা,
মনের ভেতরে ছায়া হয়ে থাকা রাজপুত্তুরের মাঝেই
খুঁজে পান আত্মতৃপ্তি আর শান্তির প্রসাধ।
মাঝবয়সী বেরসিক প্রেমিক বাবা
বিয়েযোগ্য পুত্রকন্যার চোখে ধুলো দিয়ে
ডুব দেন প্রেমের অথৈ জলে। স্ত্রীর বুকে মাথা রেখেও
চুলের গন্ধ নেন ওই বিধবা যুবতীর কিংবা
প্রবাসী স্ত্রীর বিরহী হৃদয়ে ঢু মেরে জাগিয়ে তোলেন বসন্ত। হয়ে ওঠেন কান্ডারি হিয়া।
ভালোবাসা কোনো জাতপাত বুঝে না, আটকে থাকেনা সুচি অসুচির কোনো নিয়ম বলয়ের মাঝে
ধর্মের কঠিন প্রাচীর ভেদ করে তাই
মধ্য গগনে উড়ে বেড়ায় পাগল প্রেমিকমন। এ ভালোবাসার শস্যদানা খুঁজতে গিয়েই কবি একদিন ধূমকেতু হয়ে উঠেছিলেন। বাজিয়েছিলেন অগ্নিবীণা আশালতার উষ্ণ বুকে।
ভালোবাসা যখন এভাবে ভালোবাসারই হয় কটাক্ষ শিল্পী
ভালোবাসা যখন ভালোবাসাকেই হানে আঘাত
ভালোবাসা যখন হয়ে উঠে বিদ্রোহী ভালোবাসারই
কী দাম সে ভালোবাসার? যে ভালোবাসা স্ত্রীর হৃদয়ে পীড়ন ঘটায়, স্বামী হারায় তার স্বাভাবিকত্ব
যে ভালোবাসা মাতাপিতার রাতের ঘুম কেড়ে নেয়
সে কি ভালোবাসা? সে কি প্রেম? এ কেমন স্বর্গীয়?
সব প্রেম প্রেম নয়, সব নয় স্বর্গীয়
কিছু কিছু আছে বটে, কিছু পরিত্যাজ্য।
ইন্টারনেট বদলে দিয়েছে মানুষের জীবনযাত্রার নানা দিক। দিয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া। অবাক করা অনেক কিছু। সামনের দিনগুলো আমরা আরো নতুন কিছু দেখার অপেক্ষায় আছি। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্যানডেমিক শুরু হওয়ার পর থেকে পুরো বিশ্বে ইন্টারনেটের চাহিদা বেড়েছে অনেকগুন। উন্নত দেশে অনেক আগে থেকেই অনলাইন ভিত্তিক পড়াশোনা, মিটিং চাকুরী, কেনাকাটা ইত্যাদি প্রচলিত ছিল। অনুন্নত দেশে এই সেবাগুলো সীমিত পর্যায়ে থাকলেও বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই উল্লেখিত সেবাগুলো দিয়েই চলছে কার্যক্রম।
আধুনিক প্রযুক্তি:✅
বিজ্ঞানের বদৌলতে আমরা পেয়েছি নতুন নতুন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব।
পর্দার উপর স্পর্শ (Touch screen) আবার এক ধরনের যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা পরিবেশ শব্দ, তাপ, আলো ইত্যাদির উপর সাড়া দিতে পারে, যেটা কিনা এক ধরনের পরিবর্তন করে সিগনাল দিয়ে থাকে যাকে আমরা ইংরেজিতে Sensor বলি। যা দূর হতে আমরা স্পর্শ না করে অনেক কাজ চালিয়ে যাওয়া যায়। মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, স্মার্ট ওয়াচ, টাচস্ক্রিন পেমেন্ট, অনলাইন ব্যাংকিং, চালকবিহীন গাড়ি, আরো কত কিছু বিজ্ঞানে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। শরীরের ভেতরে স্মার্ট ক্যাপসুল দিয়ে স্ক্যান করার কথা বিজ্ঞানীরা ভাবছেন এবং অনেক দেশেই পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছেন।
আধুনিক প্রযুক্তির বেশি ব্যবহারের আসক্তি:✅
প্রত্যেক কিছুই অতিরিক্ত সেবনে যেমন পার্শ প্রতিক্রিয়া আছে। প্রযুক্তির বেলায়ও আমরা অনুরূপ দেখছি ফেইসবুক, ইউটিউব, টিক টক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার আরো অনেক কিছু। অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে বিশেষজ্ঞদের মতে অনেকেই আসক্তি হয়ে যাচ্ছে শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক এবং মেধা বিকাশের অন্তরায়। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ফেইসবুক প্রতিদিন মানুষ গড়ে ১৫ থেকে ২০ বার পর্যন্ত প্রবেশ করে। অন্য পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে কোন কিছু আপলোড করার পর লাইক এবং কমেন্টের জন্য মনস্তাত্ত্বিকভাবে বিষণ্ণতায় ভোগে।
অনুসরণকরণ (চেক ইন):✅
সাধারণত ফেইসবুক ব্যবহারকারী এবং গুগল ব্যবহারকারী অথবা অন্যান্য মানচিত্র সহায়তাকারী যন্ত্র অতি সহজেই আপনি কোথায় আছেন প্রবেশের সাথে সাথেই আপনা আপনি ট্রাকিং হয়ে যায়। যদি এর নোটিফিকেশন খোলা থাকে তাহলে অতি সহজেই আপনার ডিভাইসে সংযুক্ত হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। অন্যদিকে ফেসবুক ব্যবহারকারী সাধারণত কোন জায়গায় ভ্রমণের সময় চেক ইন করার ফলে অতি সহজেই ফেইসবুক আপনার তথ্য সংরক্ষণাগারের জমা করে রাখে। যাতে করে আপনি কোথায় গেছেন এটার গোপনীয়তা হারাচ্ছেন আমাদেরকে এই ব্যাপারগুলোতে অনেক সতর্ক থাকতে হবে।
ফেইসবুক ট্যাগ (একত্র গাঁথা):✅
ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এই শব্দটার সাথে অতি পরিচিত। সাধারণত কোন কিছু আপলোড করার সময় কোন ফেইসবুক বন্ধুকে অনুমতি নিয়ে অথবা না নিয়ে আমরা সাধারণত ট্যাগ করে থাকি। আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি যার পরিণাম অনেক ভয়াবহ পর্যায়ে গিয়েছে। বিভিন্ন দেশের ঘটনায় তার প্রমান স্পর্শকাতর কোন বিষয়ে ট্যাগ করার আগে আমাদের সবার উচিত জানিয়ে করা।
প্রযুক্তি মাধ্যমে অপরাধ এবং হুমকি (cyberbullying):✅
নতুন প্রযুক্তির ধাপে ধাপে প্রযুক্তির ক্রাইম অথবা অপরাধের ধরনও পাল্টে গেছে। সমাজে অনেকের কাছে এটা সাইবারক্রাইম অথবা সাইবার বুলিং নামে পরিচিত। এই অপরাধগুলোর জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে তারপরও দমন করা যাচ্ছে না। প্রযুক্তির মাধ্যমে করা অপরাধ প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না করা বা না জানার জন্যই অনেকেই এই অপরাধগুলোর সাথে মিশে যাচ্ছে।
তথ্য এবং সুরক্ষা:✅
আমরা প্রতিনিয়ত অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটা বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ডাউনলোড ছেলেমেয়েদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্টুনের ডাউনলোড ,বিভিন্ন অ্যাপসএর মাধ্যমে ভিডিও কল, মেসেজিং সার্ভিস করে তথ্য আদান প্রদান করে থাকি। এই অ্যাপ গুলো ডাউনলোড করার শর্ত অনুযায়ী আমরা তাদের সাথে একমত পোষণ করি, যার অর্থ দাঁড়ায় আমরা অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে থাকি। এখন প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে এই ব্যক্তি গত তথ্য আমাদেরকে কতটুকু সুরক্ষা রাখছে।
তথ্য প্রযুক্তি সুরক্ষা আইন (Data protection law):✅
প্রযুক্তির বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করছে। তারপরও জনসাধারণ কতটুকু সুরক্ষিত এই প্রশ্ন আমার, আপনার এবং সমাজের। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির সুফল চাই, কুফল নয় বিজ্ঞান হোক আশীর্বাদের অভিশাপের নয়। মানবকল্যাণে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অবদান অনস্বীকার্য। সুরক্ষিত হোক প্রযুক্তির তথ্যসেবা।
কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসে আগ্রহী করে তোলার জন্য দেশটির ফেডারেল সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের নতুন করে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
মাল্টিকালচারালিজমের দেশ কানাডা বরাবরই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ক্ষেত্রে নমনীয়। কানাডার ইমিগ্রেশন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় আড়াই লাখ অভিবাসীপ্রত্যাশী কানাডায় পাড়ি দেন।
এ ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য রয়েছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা।
বর্তমানে কানাডায় যে ওয়ার্ক পারমিট কর্মসূচি চালু আছে তার আওতায় আন্তর্জাতিক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা শিক্ষা শেষে তিন বছর পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পান।
স্থায়ী নাগরিকত্বের পথ হিসেবে কর্মসূচিটিকে দেখা হয়। কানাডার অভিবাসন বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর যে ৬১ হাজার শিক্ষার্থীর ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের অর্ধেক এই পথ বেছে নিয়েছেন।
ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অথবা শেষ হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে এমন ৫২ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী নতুন নীতিমালার কারণে উপকৃত হবেন।
অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মার্কো মেন্ডিসিনো বলেন, যেসব সাবেক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীর ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে অথবা শেষ হওয়ার পথে রয়েছে, তারা নতুন করে ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করতে পারবেন। ফলে চাকরি খুঁজে পেতে আরও ১৮ মাস তারা কানাডায় থাকার অনুমতি পাবেন।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্থায়ীভাবে কানাডায় রেখে দেওয়া সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। কারণ শ্রমিক স্বল্পতা অভিবাসীদের দিয়েই পূরণ করে থাকে কানাডা।
কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে কানাডায় শিক্ষার্থীর আগমন অস্বাভাবিক কমে গেছে। এ স্বল্পতা কাটিয়ে উঠতে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নীতির কথা ঘোষণা করেছেন মেন্ডিসিনো।
তিনি বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের বার্তাটা পরিষ্কার। আপনারা শুধু এ দেশে পড়াশোনা করুন তা নয়, আমরা চাই আপনারা এ দেশে থেকেও যান।
নতুন ওয়ার্ক পারমিট কর্মসূচির আওতায় ২৭ জানুয়ারি থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে।
এইতো কিছুদিন আগেও আয়ারল্যান্ড এর করোনা সংখ্যা ছিল বিশ্বের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থানে। কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যপট এর পরিবর্তন ঘটল। করোনা সংখ্যা বর্ধনের হার এর দিক দিয়ে আয়ারল্যান্ড এখন বিশ্বের মধ্যে প্রথম। এখন প্রতিদিন গড়ে প্রতি ১০০,০০০ জনে ১৩০ জন সংক্রমিত হচ্ছে, যা বিশ্ব পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে প্রথম।
ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ড ”মিনিংফুল ক্রিসমাস” করার লক্ষে ক্রিসমাস সময়ে লকডাউন কিছুটা শিথিল করে। এই সুযোগে মানুষ একে অন্যের সাথে মেশার সুযোগ পায়। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। যদিও ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সী থেকে বার বার এই অশনি সংকেতই দিয়ে আসছিল।
৮০,০০০ করোনা সংখ্যা ছাড়াতে নয় মাস লেগেছিল প্রথমদিকে, কিন্তু বিগত তিন মাসেই তা দ্বিগুন হয়ে ১৬০,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই থেকে সহজে প্রতীয়মান হয় যে, করোনা বৃদ্ধির হার কতটা উর্ধমুখী।
ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল লিমেরিকের ICU ডাক্তার ক্যাথরিন মাদারওয়ে বলেন, ” ক্রিসমাস এর সময়ে মানুষ ভুলেই গিয়েছিল যে প্যান্ডেমিক বলে কিছু ছিল”। তিনি আরো বলেন, ”ইমিউন না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই সোশ্যালাইজ করতে পারি না। আশা করি সবাই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে ইমিউন হবে, করোনা সংক্রমণের মাধ্যমে নয়। সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে আমাদের সবাইকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে”।
করোনাকালিন সময়ে যারা ‘টেম্পোরারি ওয়েজ সাবসিডি স্কিম’ (TWSS) এবং ‘পেন্ডামিক আনএমপ্লয়মেন্ট পেমেন্ট’ (PUP) গ্রহণ করেছেন সবাই রেভিনিউ থেকে ট্যাক্স বিল পাওয়া শুরু করবে। প্রায় ৪২০,০০০ মানুষকে এই ট্যাক্স বিল ইস্যু করবে রেভিনিউ।
গত ২০২০ এর মার্চ থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত যারা পে-স্লিপে টাক্সমুক্ত পেমেন্ট দেখছেন এবং যারা চাকুরী হারানোর কারণে কোভিড পেমেন্ট নিয়েছেন তারা সবাই এই বিল প্রত্যাশা করতে পারেন।
ট্যাক্স বিল ইস্যুর কারণ কি?
কোম্পানি যাদেরকে TWSS স্কিমে বেতন দিয়েছে তা ছিল ট্যাক্স এবং USC মুক্ত। তার মানে কর্মজীবীরা যে বেতন পেয়েছে তা পেয়েছে ইনকাম ট্যাক্স এবং USC না দিয়েই।
আর যারা PUP স্কিমে কোভিড পেমেন্ট পেয়েছে তাও হিসেব করা হবে ট্যাক্সেবল ইনকাম হিসেবে। যেমন কেউ মাতৃকালীন ছুটিতে থাকলে যেভাবে বেতন পেয়ে থাকে ঠিক সেরূপ। তবে তাও ছিল ট্যাক্স বর্জিত। তবে PUP এর ক্ষেত্রে USC বিবেচনায় আনা হবেনা।
সুতরাং একজন ব্যাক্তি সর্বমোট যা PUP গ্রহণ করেছে তা থেকে যতটুকু ট্যাক্স আসার কথা ছিল এবং TWSS এর মাধ্যমে যতটুকু ট্যাক্স এবং USC কম দিয়েছে তা হিসেব করে রেভিনিউকে ফেরত দিতে হবে।
এই বিল কত হতে পারে?
কার ট্যাক্স বিল কত হবে তা নির্ভর করবে কিছু ফ্যাক্টর, যার যার ব্যাক্তিগত অবস্থা এবং কত সপ্তাহ TWSS এবং PUP গ্রহণ করেছে তার উপর।
রেভিনিউর ভাষ্যমতে, ট্যাক্সপেয়াররা ২০২০ সালে এক এবং একাধিকবার ওয়েজ সাপোর্ট গ্রহণ করেছে, এর মধ্যে প্রায় ৪৭% এর কোন ট্যাক্স বকেয়া থাকবেনা অথবা ফেরত পাবে।
বাকি ২৩% এর বকেয়া €৫০০ এর নিচে এবং বাকি ১৫% এর ট্যাক্স বকেয়া €৫০০ থেকে €১০০০ পর্যন্ত হতে পারে।
এই বিল কখন দিতে হবে?
তবে বিল পেয়ে আপাতত ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ২০২২ এর আগে এই বিল দিতে হবে না। ২০২২ এর জানুয়ারি থেকে চার বৎসরব্যাপী সম্পূর্ণ বিল আস্তে আস্তে পরিশোধ করা যাবে। রেভিনিউ ট্যাক্স ক্রেডিট কমিয়ে তা ধীরে ধীরে নিয়ে নিবে যাতে করে কারো উপর চাপ না পড়ে। তবে কেউ চাইলে একবারেই তা রেভিনিউকে যখনই চায় পরিশোধ করে দিতে পারবে, তবে তা ঐচ্ছিক।
এই বিল কোথায় দেখা যাবে?
রেভিনিউ ওয়েবসাইটে যার যার মাই অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে বকেয়া ট্যাক্স বিল দেখতে পারবে। তবে এর আগে ট্যাক্সপেয়ারদেরকে তাদের ২০২০ সালের বাৎসরিক ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট করতে হবে। তখন ট্যাক্সপেয়াররা তাদের অব্যবহৃত ট্যাক্স ক্রেডিট ক্লেইম করে ট্যাক্স রিলিফ নিতে পারবে যা TWSS অথবা PUP এর বকেয়াকে কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে।
ফ্রি হেল্পলাইন
বিস্তারিত তথ্য জানতে অথবা ব্যক্তিগত ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়া এবং ট্যাক্স ক্রেডিট ক্লেইম এর ব্যাপারে কারো সহায়তা দরকার হলে আইরিশ বাংলা টাইমস এর অভিজ্ঞ অ্যাকাউন্টস টিম এর সাথে নিম্নোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন।
আয়ারল্যান্ডে আগামীকাল থেকে GP( General practitioners) দের নিয়ে ৩টি গণ কোভিট-১৯ টিকা প্রদান কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে।
সরকারের উচ্চ-পর্যায়ের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সের অফিস থেকে বলা হয়েছে যে কর্মকর্তারা এই সাপ্তাহিক ছুটির জায়গায় তিনটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে টিকা কেন্দ্র থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে কাজ করতে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিফেন ডোনেলি এর আগে নিশ্চিত করেছেন যে GP দের টিম গুলিকে নিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য আগামীকাল ডাবলিন সিটিওয়েস্ট, গালওয়ে এবং পোর্টলুইসে তিনটি গণ টিকা প্রদান কেন্দ্রের ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে।
এই কেন্দ্রগুলিতে প্রায় ১,৮০০ মর্ডেনা কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হবে।
কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনেশন আয়ারল্যান্ডের উচ্চ-পর্যায়ের টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ব্রায়ান ম্যাকার্থি বলেছেন: “আমি মনে করি আমরা সেখান থেকে অনেক কিছু শিখব এবং তিনি আরো বলেন HSC এর এস্টেট দল গুলো গত বহু সপ্তাহ যাবত সম্ভবত কয়েক মাস ধরে এই ইস্যুটি নিয়ে উন্নত পর্যাায়ে কাজ করার জন্য পরিকল্পনার করে করে যাচ্ছে। তারা কীভাবে কাজ করবে তা বোঝার জন্য সম্ভবত সপ্তাহের শেষের দিকে আমরা পরির্দশনে যাব।”
RTÉ radio’s News at One এ একটি সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন এই পাইলট প্রকল্প থেকে অভিজ্ঞতা নিলে জেনারেল প্রেক্টিশনার (GP) গন যারা এই টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে তাদের কাজকে সহজ হবে”।
আরও গণ টিকা কেন্দ্র আঞ্চলিক ভাবে স্থাপন করা হবে এবং জনসংখ্যার দিক বিবেচনায় নিয়ে বন্টন ও প্রতিনিধিত্ব এবং প্রতিফলিত করাা হবে বলে টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ব্রায়ান ম্যাকার্থি জানান।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন:
Three mass vaccination centres for GPs to run tomorrow https://jrnl.ie/5326172
stay-at-home
“আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন”
সবাইকে ঘরে থাকার জন্য
প্রধান মেডিকেল অফিসারদের
সতর্কতা জারি।
উত্তর আয়ারল্যান্ড চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাইকেল ম্যাকব্রাইড এবং রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হোলোহানযৌথ ভাবে জনগনের কাাছে আবেদন করছেেন এবং বলেছেন যে তারা সারা আয়ারল্যান্ড জুড়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণের উচ্চমাত্রার স্তরের” সম্পর্কে “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন”।
চিফ মেডিকেল অফিসারগন এক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন এটি জনগণের স্বাস্থ্যের উপর হুমকি স্বরূপ এক বিড়াট প্রভাব ফেলেছে পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাগুলির উপর নিরাপত্তা কার্যকর করাও হুমকি হয়ে দাড়াতে পাড়ে।
তথ্য ভাগাভাগি নিয়ে স্টর্মন্ট এক্সিকিউটিভ এবং আইরিশ সরকারের মধ্যে এক উদ্বেগের মধ্যে আজ যৌথ বিবৃতি এসেছে।
বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন:
‘We are gravely concerned’: Chief medical officers issue joint stay-at-home warning https://jrnl.ie/5326119
HSC আজ বৃহঃপতিবার নিশ্চিত করেছে যে গতকাল অবধি আয়ারল্যান্ডে মোট ৭৭,৩০৩ জনকে কোভিড-১৯ টি টিকা দেওয়া হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডে এখন পর্যন্ত করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছে ৭৭,৩০৩ জন যা মোট জনসংখ্যার ১.৫৮%
সরাসরি রোগীর সংস্পর্শে থাকা স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের পাশাপাশি নার্সিংহোমের বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটি পেয়েছেন। আশা করা হচ্ছে ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ ১৩০,০০০ মানুষ পুরোপুরি করোনা ভ্যাকনি দেওয়া সম্পন্ন হবে, যদিও সরবরাহের উপর নির্ভর করে এই সংখ্যা বাড়তে পারে।
খবরে আরো জানা গেছে এই সপ্তাহে এটিও নিশ্চিত হয়েছে যে অক্সফোর্ড / অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ডেবেলপাররা শর্তাধীন অনুমোদনের জন্য ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সিতে একটি আবেদন করেছে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তৃতীয় ভ্যাকসিনের অনুমোদনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে যথেষ্ট গতি দেওয়া উচিত বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করছে, বিশেষত অ্যাস্ট্রাজেনিকা (AstraZeneca) টিকা যার জন্য অতি-ঠান্ডা তাপমাত্রার প্রয়োজন হয় না সে ক্ষেত্রে।
গতকাল পর্যন্ত, আয়ারল্যান্ড ফাইজার / বায়োএনটেক ভ্যাকসিনের ১৫২,১০০ ডোজ এবং ৩৬০০ মর্ডেনা ভ্যাকসিন হাতে পেয়েছে।
বুধবার রাত দেড়টার দিকে টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-ব্লকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হলেও নিহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও ক্যাম্পের লোকজন প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগেই ক্যাম্পের ৫ শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে ই-ব্লকের সবকটি ঘর পুড়ে গেছে। এখানে প্রায় সাড়ে ৫০০ ঘর ছিল।
রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে কেউ বলছেন গ্যাসের চুলা থেকে, আবার কেউ বলছেন লাকড়ির চুলা থেকে, আবার কারও মতে সিগারেটের আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা শিবিরে দুই পক্ষের গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়। প্রতিহিংসার জের ধরে কেউ আগুন লাগিয়েছে কিনা তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।
বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু সত্ত্বেও চলতি বছর ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জিত হবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গতকাল সোমবার এই সতর্কতার কথা বলেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
কোনো অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী যখন একটি সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়, তখনকার পরিস্থিতি বোঝাতে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ পরিভাষা ব্যবহার হয়। সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়া ও টিকাদানের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছানো যায়।
জেনেভায় ডব্লিউএইচওর সদর দপ্তরে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, করোনার বিস্তার থামাতে যথেষ্টসংখ্যক টিকা উৎপাদন ও প্রদান করতে সময় লাগবে।
সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, ‘আমরা ২০২১ সালে কোনো পর্যায়ের জনসংখ্যা ইমিউনিটি বা হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে যাচ্ছি না।’
করোনার লাগাম টানতে সামাজিক দূরত্ব, হাত ধোয়া, মাস্ক পরার মতো ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন ডব্লিউএইচওর প্রধান বিজ্ঞানী।
এক বছরের মধ্যে করোনার একাধিক নিরাপদ ও কার্যকর টিকা আবিষ্কারের বিষয়টিকে ‘অচিন্তনীয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন সৌম্য স্বামীনাথন। এই সাফল্যের জন্য তিনি বিজ্ঞানীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এই আবিষ্কারকে ‘অবিশ্বাস্য অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেন।
তবে ডব্লিউএইচওর প্রধান বিজ্ঞানী উল্লেখ করেন, প্রয়োজনীয়সংখ্যক টিকা উৎপাদন ও তা প্রদানে সময় লাগবে। এ জন্য তিনি মানুষকে একটু ধৈর্য ধরা আহ্বান জানান।
সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না যে করোনার বিরুদ্ধে কাজ দেয়, তেমন ব্যবস্থা আছে।’
এ প্রসঙ্গে করোনার বিস্তার ঠেকাতে যেসব জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক বিধি বর্তমানে অনুসরণ করা হচ্ছে, তা অন্তত চলতি বছরের বাকি সময় পর্যন্ত মেনে চলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন ডব্লিউএইচওর প্রধান বিজ্ঞানী।
ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন যুদ্ধ শুরু করেছে ইসরাইল। তারা করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার কর্মসূচি থেকে ফিলিস্তিনকে বাদ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। ইসরাইলে নাজুক মানবাধিকার মানদ- থাকা সত্ত্বেও তারা ফিলিস্তিনিদের জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে চরমমাত্রায় নিষ্ঠুরতা বলেই মনে করা হয়। বৃটেন থেকে প্রকাশিত অনলাইন মর্নিং স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ভ্যাক্সিন পাওয়া থেকে ফিলিস্তিনিদের বাদ রাখার ইসরাইলি সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন। এসব গ্রুপ ইসরাইলের এমন আচরণকে প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ইসরাইল সরকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি এমনই নীতি অনুসরণ করে বলে এতে বর্ণনা করা হয়।
ইসরাইল ফেব্রুয়ারি নাগাদ অক্সফোর্ড এস্ট্রাজেনেকার টিকার ২০ লাখ ডোজ পাওয়ার আশা করছে। কিন্তু ইসরাইলের কাছ থেকে এই টিকার কোনো ডোজ পাওয়ার আশা করতে পারছে না ফিলিস্তিন। তবে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ক ফিলিস্তিনি সমন্বয়কারী হোসেন আল শেখ ইসরাইলের কাছে ফিলিস্তিনের ফ্রন্ট লাইনের কর্মীদের সুরক্ষার জন্য ১০ হাজার ডোজ টিকা চেয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা’র মতে, করোনা ভাইরাসে সেখানে ৪ঠা জানুয়ারি পর্যন্ত কমপক্ষে ১৬২৯ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে এক লাখ ৬০ হাজার ৪৩ জন। বিশ্বের অনেক স্থানেই এমন আক্রান্তের সংখ্যা পাওয়া যায়। কিন্তু ইসরাইলের সামরিক দখলদার, বর্ণবাদী রাষ্ট্র দ্বারা গাজা অবরুদ্ধ হয়ে থাকার কারণে সেখানে এই সঙ্কট জটিল আকার ধারণ করেছে। আরো ভয়াবহ খবর হলো, গত বছরের শুরু থেকে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় দখলদারিত্ব বিষয়ক অভিযান শুরু করেছে ইসরাইল। সেসব এলাকায় তারা অব্যাহতভাবে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার নামে দমন পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি অধিকার বিষয়ক গ্রুপ আল হক-এর মতে, ২০২০ সালের মার্চ নাগাদ বেশ কিছু ফিল্ড ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। জর্ডান উপত্যকায় খিরবেত ইবজিক থেকে মেডিকেল পরীক্ষার সরঞ্জাম কেড়ে নিয়েছে। পশ্চিম তীরে এমনটা করা হলেও একই ধারা চলে পূর্ব জেরুজালেম, হেব্রন এবং অন্য এলাকাগুলোতেও। তাদের এমন কর্মকান্ডের কোনো আইনি অথবা নৈতিক যথার্থতা নেই। ১৯৪৯ সালের দ্য ফোর্থ জেনেভা কনভেনশনে বলা হয়েছে, দখলদার বাহিনীর দায়িত্ব রয়েছে মেডিকেল ও হাসপাতালগুলোতে সেবা নিশ্চিত করা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা। এমনকি অসলো একর্ডে উভয় পক্ষকে মহামারি মোকাবিলায় একে অন্যকে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। জরুরি অবস্থার সময়ে এক দেশকে অন্যদেশের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
ইসরাইলের সাবেক রাষ্ট্রদূত অ্যালান বেকার নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ইসরাইলের ওপর ফিলিস্তিনিদের টিকা সরবরাহে সহায়তা করার বিধান আছে। কিন্তু তার আগে ২০১৪ সালের যুদ্ধের সময় ও পরে গাজা এলাকা থেকে যেসব ইসরাইলি সেনাকে আটক করেছে ফিলিস্তিন তাদেরকে আগে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু তার এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ইসরাইলের কাছে নারী, পুরুষ, শিশু সহ কমপক্ষে ৫ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি আছেন। এর মধ্যে কয়েক শত আছেন, যাদেরকে বিচার বা যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই আটকে রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে গাজায় যেসব সেনাকে আটক করা হয়েছে তাদেরকে দর কষাকষির একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ফিলিস্তিন। তারা দাবি করছে গাজা উপত্যকা থেকে কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নিতে হবে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো হয়ে গেলো তরুণ বিজ্ঞানী মেলা BT Young Scientist and Technology Exhibition 2021. এবারই প্রথমবারের মতো এটি অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলায় লিমেরিকের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী অরণ্যা বিশেষ বিভাগে তাঁর প্রজেক্টের জন্য পুরস্কার প্রাপ্ত হয়।
সে Castletroy College, Limerick এ ২০২১ শিক্ষাবর্ষে জুনিয়র শাখার তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যায়ন করছে। প্রতিযোগীতায় তাঁর প্রজেক্ট নাম্বার ছিলো ৩৬৯৭। এই বছরে বিজ্ঞান মেলার ৫৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়। ব্রিটিশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি BT গত ২০ বছর যাবৎ আয়ারল্যান্ডে তরুণ বিজ্ঞানী তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকায় নিজেদের স্পন্সর হিসেবে যুক্ত রেখেছে। এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার বয়স সীমা ১২ থেকে ১৯ বছর।
পুরো আয়ারল্যান্ড থেকে বাছাই করে দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এই বারের তরুণ বিজ্ঞানী মেলায় তাদের প্রজেক্ট জমা দেয়। সেখান থেকে ৫৫০টি প্রজেক্ট চুড়ান্ত পর্বে আসার টিকিট প্রাপ্ত হয়। আমাদের ছোট্ট সোনামনি লিমেরিকের বাসিন্দা, বাংলাদেশিদের অহংকার “অরণ্যা জাকারিয়া খাঁন” Social and Behavioural Sciences বিভাগে বিশেষ পুরস্কার প্রাপ্ত হয়। সে “The development of racial prejudice in children” বিষয়ের উপর ৫০ পৃষ্ঠার একটি প্রজেক্ট জমা করে। এই প্রজেক্টে তত্ব উপাত্তের মাধ্যমে সে তুলে ধরে সামাজিক প্রভাব কিভাবে একজন শিশুর চিন্তাধারা ও আচরণে বর্ণ বৈষম্যের দিকে প্রভাবিত করে। সাথে সাথে সে তুলে ধরে কিভাবে এটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তার মতে প্রায় ৯০% কালো বর্ণের শিশু কিশোর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে এই বৈষম্যের স্বীকার হয়ে থাকে।
সবাইকে সে জানাতে চেয়েছে আসলে বর্ণ বৈষম্য কি? সে মনে করে কোন শিশুই জন্মগতভাবে তাঁর ত্বকের বর্ণ বা সৌন্দর্য অন্য শিশুর চেয়ে অধিক বা কম নিয়ে পৃথিবীতে আসে না। এটি ধীরে ধীরে সমাজে আমাদের আচার আচরণের মাধ্যমে মনের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে। সে এই প্রজেক্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছে কিভাবে একজন শিশু কিশোর আমাদের সমাজে চলে আসা মানুষের মনের মধ্যে ভুল দৃষ্টিকোণকে মোকাবেলা করবে।
সে উদাহরণের মাধ্যমে দেখিয়েছে কাপড়ের বিজ্ঞাপন, মেক-আপের বিজ্ঞাপন সহ নানা বিজ্ঞাপনে একটি নির্দিষ্ট রঙকে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তাছাড়া পিতামাতা শিশুদের সাথে রেসিজমের বিষয়টি খোলামেলা আলোচনা না করাকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে। বিভিন্ন বইতে, কার্টুনে, সিনেমাতে, টিভি শোতে প্রধান চরিত্রকে ফর্সা বর্ণের মডেল এবং ভিলেনকে কালো বর্ণের মডেল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ থেকে একটি শিশু ধরেই নেয় তার বর্ণ ফর্সা না হলে সমাজে বা জীবনে কিছু করা সম্ভব হবে না। তাছাড়া সে মনে করে শিক্ষার অভাবও বিশেষভাবে বর্ণ বৈষম্যের একটি কারণ। সে তার বিশ্লেষণে দেখায় পর্যাপ্ত পরিমানে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার না করতে পারা বা জ্ঞানের অভাবেও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে বর্ণ বৈষম্যের সৃষ্টি করছে যা প্রকৃত পক্ষে দারিদ্রতা বা দুর্নীতির কারণে ঘটে থাকে।
অরণ্যার পিতা “জাকারিয়া খাঁন” ও “মাতা শিউলি খাঁন”। তাঁর পিত ২০০০ সালে আয়ারল্যান্ডে আসেন এবং সে ২০০৬ সালে ৩ মাস বয়সে আয়ারল্যান্ডে তাঁর মাতার সাথে আসে। তাঁর বয়স এখন ১৫ বছর। সে পড়াশুনার পাশাপাশি অতিরিক্ত কারিকুলাম একটিভিটি হিসেবে স্কুলে বাস্কেট বল খেলতে পছন্দ করে।
এবারের বিজ্ঞান মেলায় কর্কের Bandon Grammar School থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীর একজন ছাত্র যার বয়স ১৭ বছর, নাম Gregory Tarr, প্রথম পুরস্কার জিতে নেওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। তাঁর প্রজেক্টের নাম ছিল “Towards detecting state-of-the-art deepfakes”. Deepfake হচ্ছে কোন ব্যক্তির ছবিতে বা ভিডিওতে অন্যের চেহারা লাগিয়ে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। এ রকম ছবি বা ভিডিও দেখলে বুঝার উপায় থাকে না যে আসলে এই ছবি বা ভিডিওটি ফেইক করে বানানো হয়েছে। Gregory এমন একটি সফটওয়ার বানায় যার মাধ্যমে এরকম ফেইক ভিডিও বা ফেইক স্থির ছবি নির্ণয় করা সম্ভব।
১৯৬৩ সালে UCD এর দুইজন পদার্থ বিদ্যার গবেষক ডঃ টম বুর্কি ও ডঃ টনি স্কট নিউ ম্যাক্সিকোতে গবেষণায় থাকাকালীন “বিজ্ঞান মেলার” ধারণা নিয়ে আসেন। তাঁরা সেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, এমন একটি বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করলে আয়ারল্যান্ডের তরুণ যুবকদের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব হবে এবং এর থেকে আয়ারল্যান্ড উপকৃত হবে। সে থেকে “Young Scientist Exhibition” এর জন্ম নেয়া।
এই প্রতিযোগিতাটি আয়ারল্যান্ডে সর্বপ্রথম ডাবলিনের মেনশন হাউজে সংগঠিত হয়। সেই প্রতিযোগিতায় ২৩০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। প্রথমবারের মতো তখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো “John Monaghan”. সে সম্প্রতি একটি আমেরিকান বায়োটেক কোম্পানির Chief Executive Officer of Avigen হিসেবে চাকরি থেকে অবসরে যায়। প্রথম বছরের সফলতা ও বিশাল জনপ্রিয়তা দেখে পরবর্তী বছর এটিকে ডাবলিনের RDS এ স্থানান্তরিত করা হয়। সেই থেকে এই প্রতিযোগিতা প্রতি বছর RDS এ-ই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
খুব সম্প্রতি অংশগ্রহণ কারীর সংখ্যা বহুগুনে বেড়ে গিয়েছে এই প্রতিযোগীতায়। এই বছর ২০০০ এর বেশি প্রজেক্ট জমা পড়ে সেখানে। এই দুই হাজার থেকে বাছাই কৃত সর্বমোট ৫৫০ টি প্রজেক্ট চুড়ান্ত প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে।
এই ইভেন্ট ৪০,০০০ হাজারেরও বেশি দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করে যা ইয়োরোপে এই ধরণের অনুষ্ঠানে সর্ববৃহৎ বলে পরিচিত। অনেকের মতামত এরকম শিশু কিশোরদের নিয়ে আয়োজিত বিজ্ঞান মেলার মধ্যে এটি বিশ্বে সর্ববৃহৎ।
এই পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের ১৪ জন তরুণ বিজ্ঞানী ইয়োরোপীয়ান পর্যায়ের বিজ্ঞান মেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আইরিশ ২০ জন তরুণ বিজ্ঞানী তুলনামূলকভাবে বয়সে ছোট অবস্থাতেই আমেরিকার বিভিন্ন বিজ্ঞান মেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে।
BT Young Scientist and Technology Exhibition সাধারণত চারটি মূল বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর ৮০ টিরো বেশি উপ বিভাগে এগুলোকে বিভক্ত করা হয়। আমাদের পাঠকদের সুবিধার্থে ক্যাটাগরিগুলো উপ ক্যাটাগরি সহ তুলে ধরা হলো। আমরা আশা করি প্রতি বছর আমাদের অনেক অনেক শিক্ষার্থী এই রকম বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করবে এবং আমাদের দেশের নাম ও তাঁর পরিবারের নাম উজ্জ্বল করবে।
Chemical, Physical and mathematical sciences
chemistry, physics, mathematics, applied mathematics, engineering, computer programming and language or electronics. meteorology, geophysics, geology and astronomy.
Social and Behavioral sciences
social and behavioral sciences, economic, geographical, psychological or sociological studies of human behaviour, attitudes and experience, social analysis of environmental factors, demography, learning and perception as well as the study of attitudes and behaviour in relation to health, nutrition, work, leisure and living habits are all included here. Also eligible are projects on consumer affairs, effects on society, social anthropology and political science provided they involve the use of scientific methods.
Technology
The use of technology in new or improved applications, enhanced efficiencies, new innovations or better ways to do things. The category could include things related to the Internet, communications, electronic systems, robotics, control technology, applications of technology, biotechnology innovative developments to existing problems, computing and automation.
কোভিড -১৯ প্রয়োগকারী পদক্ষেপগুলি Garda দ্বারা বৃদ্ধি করা হচ্ছে , যারা অনুশীলনের জন্য তাদের বাড়ি থেকে পাঁচ কিলোমিটারের ওপরে ভ্রমণ করেন এবং ফিরে যাওয়ার দিক নির্দেশনা মানতে অস্বীকার করেন তাদের সাথে সাথে ১০০ ইউরো জরিমানা জারি করা হবে।
গত কয়েকদিন ধরে তুরস্কের অন্যতম বিদ্যাপীঠ বোয়াযইচি বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল। নবনিযুক্ত রেক্টর প্রফেসর ড. মেলিহ বুলুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনের কারণে সরকারের ভেতরের বাইরে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এরদোগানকে কোনঠাসা করার জন্যই এ আন্দোলন হচ্ছে। বিশেষ করে বিরোধীদলগুলো এ আন্দোলনের ফসল নিজেদের ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি। সাধারণ একটি ছাত্র বিক্ষোভ হিসেবে শুরু হলেও এটি রূপ নিতে পারে এরদোগান পতনের আন্দোলনে। অন্তত বিরোধী দলগুলোর এমনই আশা। এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সির চিফ রিপোর্টার সরোয়ার আলম। তার সঙ্গে কথা বলে সাজানো হয়েছে এ বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদন-
কেন এই বিক্ষোভ?
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত সপ্তাহে নিয়োগ প্রাপ্ত নতুন রেক্টরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। কিন্তু কেন? তার নিয়োগে কি দুর্নীতি হয়েছে? তার বিরুদ্ধে কি টাকা আত্মসাৎ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ধর্ষণ, যৌন হয়রানির মতো গুরুতর একটি অভিযোগও নেই। তাহলে কেন এই বিক্ষোভ? এ বিষয়ে ই-মেইল বার্তায় তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সির চিফ রিপোর্টার সরোয়ার আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, তার দোষ মাত্র একটি। তিনি বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ছিলেন। এক সময় এরদোয়ানের একে পার্টি থেকে সংসদ নির্বাচনে নমিনেশন পাওয়ার জন্য প্রার্থিতা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। যদিও পরে নমিনেশন পাননি। কিন্তু এই রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তিনি এখন ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের দাবি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে পরিচালনা করবেন। সরকার সমর্থিত শিক্ষকদের নিয়োগ দিবেন। সরকারি ঘরনার শিক্ষকরা বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেন, ইত্যাদি। অর্থাৎ তিনি শিক্ষাদানের চেয়ে রাজনৈতিক মূল্যবোধকে বেশি মূল্যায়ন করবেন।
সরোয়ার আলম বলেন, তিনি (বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর) আসনে বসার পর কী করবেন তা এখনই বলা মুশকিল। হয়তো উপরের বিষয়গুলোর সবকটিই করবেন, হয়ত ওইগুলোর মধ্য থেকে কয়েকটি করবেন। কিন্তু ওইগুলোর কোনোটিই না করে একেবারে ফেরেশতা হয়ে থাকবেন, তা বলা যাবে না। তার কার্যক্রম দেখার জন্য হয়ত আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে, যদি ততদিনে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য না হন। কিন্তু বিক্ষোভ এখনও চলছে। বিরোধী দল ছাড়াও এই আন্দোলনের সমর্থনে অন্য অনেক শহরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল করছে। তাদের দাবি, বিদ্যাপীঠগুলোকে রাজনীতিমুক্ত রাখার। খুবই যুক্তিযুক্ত একটি দাবি। কিন্তু আসলে তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি কখনও রাজনীতিমুক্ত ছিল?
আনাদলু এজেন্সির চিফ রিপোর্টার সরোয়ার আলম আরও বলেন, তুরস্কের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যখন হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসা হয়েছিল। মেডিকেল, আইন, প্রকৌশলী বিভাগসহ বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি থেকে হাজার হাজার মেয়েকে শুধু হিজাব পরার কারণে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাদের ভবিষ্যতকে অন্ধকার করে দেয়া হয়েছিল। তখন কি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, এর রেক্টর ও শিক্ষকরা রাজনীতি-নিরপেক্ষ হয়ে ওই ছাত্রীদের পক্ষে কথা বলেছিলেন? না, বলেননি। বরং ছাত্রীদের বিপক্ষে গিয়ে তখনকার রাজনৈতিক শক্তি এবং ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে একই বুলি আওরিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ক্ষমতায় আসার পরে কত শিক্ষক যে ক্লাসে তাকে সরাসরি গালি দিয়েছে তার কি ইয়াত্তা আছে? ২০০৭ সালে যখন ইস্তান্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় পড়ছিলাম তখন সব চেয়ে বড় বড় প্রফেসররা ক্লাস শুরু করতেন এরদোয়ানকে গালি দেওয়ার মাধ্যমে আর শেষ করতেন তার দলের গোষ্ঠী উদ্ধার করে। কত রেক্টর এবং শিক্ষক যে চাকরি ছেড়ে প্রধান বিরোধী দলের সংসদ সদস্য, দলীয় প্রধানের উপদেষ্টা হয়েছেন তার কি হিসেব আছে? তাদের মধ্য থেকে কতজন আবার চাকরিতে ফিরে এসেছেন তার খবর কে রাখে?
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তুর্কি সাংবাদিক সরোয়ার আলম আরও বলেন, আমি ২০০৭ সালে আঙ্কারায় এসেছিলাম কয়েকদিনের জন্য। এখানে বিখ্যাত তানদোয়ান মাঠের পাশেই একটা ছাত্রদের বাসায় উঠেছিলাম। একদিন রোববার বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে দেখি বিশাল মিছিল যাচ্ছে। মিছিলটি ছিল আব্দুল্লাহ গুলকে একে পার্টির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসাবে ঘোষণার বিরুদ্ধে। প্রধান বিরোধী দলের মিছিল। বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিল যাচ্ছিল “ডেমোক্রেসি মিটিং”-এ যোগ দিতে। একটি স্লোগান ছিল এমন-‘তুরস্ক সেক্যুলার রাষ্ট্র, সেক্যুলারই থাকবে’।
তিনি বলেন, আঙ্কারায় অবস্থিত মিডল ইস্ট টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টরের পক্ষ থেকে সব শিক্ষার্থীকে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় যে এই রাজনৈতিক জনসভায় যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক।
নিজের দেখা তিক্ত অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিক সরোয়ার আলম বলেন, ২০০৮ সালে তুরস্কের সব রাজনৈতিক দল মিলে সংবিধানে পরিবর্তন নিয়ে আসে। আর সেই সঙ্গে হিজাব পরার ওপরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও উঠে যায়। উচ্চশিক্ষা কাউন্সিল থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব পরা ছাত্রীদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। আমাদের ক্লাসে দুটি মেয়ে ছিল যারা বাইরে হিজাব পরত কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার সময়ে হিজাব খুলে মাথায় পরচুল পরে প্রবেশ করত। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার খবর পেয়ে পরের দিন ওরা হিজাব পরে ক্লাসে আসে। গার্ডরা কেউ বাধাও দেয়নি। ক্লাসেও ঢুকেছে। একজন ম্যাডাম ক্লাসে ঢুকলেন। ওদের দুইজনকে হিজাব পরা দেখে তো রেগে আগুন! জানতে চাইলেন ওরা কারা? কেন তার ক্লাসে এসেছে? মেয়ে দুটি বুঝানোর চেষ্টা করল যে ওরা এই ক্লাসেরই ছাত্রী। হিজাবের উপরে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ওরা হিজাব পরে এসেছে।
“তিনি বললেন, আমি মানি না ওই নিয়ম। তোমাদের সরকার করছে। আমার কী? এটা আমার ক্লাস, এখানে আমার আইন চলবে। তোমরা বেরিয়ে যাও। হিজাব পরে কোনদিন আমার ক্লাসে আসবে না। ”
কয়েকজন ছাত্র তাদের পক্ষ নিয়ে শিক্ষিকাকে বোঝানোর চেষ্টা করল। তিনি আরও ক্ষেপে গেলেন। বের করে দিলেন ওদের ক্লাস থেকে। দুটি মেয়ের জীবনের প্রথম স্কার্ফ পড়ে ক্লাস করার আনন্দ এভাবেই কান্নায় পরিণত হয়েছিল সেদিন।
তুর্কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মনোভাব কেমন?
এ প্রসঙ্গে সরোয়ার আলম বলেন, ২০১৩ সাল মাস্টার্সের ক্লাসে আমরা ৫-৬ ছাত্র এক শিক্ষকের সঙ্গে গোলটেবিলে বসে চা খাচ্ছি আর তুরস্কের রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করছিলাম। সবাই সরকারের সমালোচনা করছে তো করছেই।
স্যার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মন্তব্য কী?
আমি বললাম, স্যার আমি বিদেশি আপনাদের রাজনীতিতে আমার মন্তব্য করার কিছু নেই।
তিনি জোরাজুরি করলেন। বললেন, তুমি আমাদের সমাজটাকে বাইরে থেকে দেখছ তোমার মন্তব্য আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বললাম, বর্তমান সরকারের অনেক দোষ থাকা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার উন্নয়ন, রাস্তাঘাট এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রশংসার দাবিদার।
স্যারের তো চোখ কপালে! বললেন, ‘সরোয়ার, তুমি এই ফ্যাকাল্টিতে অনার্স করেছ, এখন মাস্টার্স করছো; কিন্তু তুমি যে এত বড় এরদোগানপন্থী এতদিন তা ধরতেই পারিনি’! এমন ভাব করলেন যেন আমি বিশাল এক পাপ করে ফেলেছি! আর আমি বুঝলাম না আমার ওইটুকু কথায় এরদোগানপন্থী কী ছিল?
তুরস্কে ধর্মীয় ভাবাপন্ন ব্যক্তিদের সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক নানা বিপত্তিতে পড়তে হয় জানিয়ে সরোয়ার আলম বলেন, এরদোগানের বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য হলে আপনার জন্য সব ধরনের সাংবিধানিক পদ বৈধ। কিন্তু আপনার গায়ে যদি একটু ধর্মীয় মূল্যবোধের আঁচর লাগে, যদি একটু সরকারি দলের পক্ষে কথা বলেন, তাদের মত ভাবেন তাহলে আপনি যত যোগ্যই হোন না কেন আপনাকে বিতর্কিত করে পানি ঘোলা করবেই।
ছাত্র বিক্ষোভে কি এরদোগান সরকার পতন হবে?
তুর্কি সাংবাদিক সরোয়ার আলম বলেন, এই বিক্ষোভ বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং কিছু বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সমর্থন আছে। বিভিন্ন মহল থেকে এটিকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপান্তর করার জোর প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু এই আন্দোলন এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার আশংকা নেই।
তিনি বলেন, এরদোয়ান সরকার এরকম বহু বিক্ষোভ, আন্দোলন মোকাবেলা করেছে। ২০১৩ সালের গেজি পার্ক আন্দোলন, ২০১৫-১৬ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ত্রাস, ২০১৬ সালের রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা এসব কিছুই ব্যার্থ হয়েছে সরকারের বিচক্ষণতা এবং জনগণের সমর্থনের কারণে। এসব দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কাছে মনে হচ্ছে, এবারের বিক্ষোভও হলে পানি পাবে না। কারণ এই বিক্ষোভে জনগণের চাহিদার প্রষ্ফুলন নেই। এই বিক্ষোভের পিছনে শক্তিশালী কোনো যুক্তিও নেই যা বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সমর্থন যোগাতে সক্ষম। আর এখন করোনাভাইরাসের কারণে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কারফিউ চলছে। অন্য দিনগুলোতেও কারফিউ চলছে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত। তাই এই আন্দোলন লাগাতরভাবে করা সম্ভব না। আর বিচ্ছিন্নভাবে করা আন্দোলন হলে পানি পায় না।
সরোয়ার আলম আরও বলেন, তুর্কিদের সামনে এখনও এরদোয়ানের বিকল্প কোনো রাজনৈতিক নেতা নেই, যিনি আরও চমৎকারভাবে দেশ চালাতে সক্ষম। এছাড়াও সরকারের সমর্থন এমন তলানিতে নামেনি যে মানুষ রাস্তায় নামবে। এসব কিছুর বিচারে এই শিক্ষার্থী বিক্ষোভ বড় আন্দোলনে রূপ নেওয়ার আশংকা নেই।
গত মঙ্গলবার হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকা প্রকাশ করেছে। জাতীয়তার অন্যতম সনদপাসপোর্ট শক্তি বা মূল্যায়নের উপর ভিত্তিতে প্রতিবছর সারণী তালিকা প্রকাশ করে হেনেলি পাসপোর্ট ইনডেক্স।
এই সারণীতে আয়ারল্যান্ড অন্য চারটি দেশের সাথে যুগপৎভাবে ৬ নাম্বারে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থান ২০২০ সালের চাইতেও তিন ধাপ অবনতি হয়েছে। ফলে সবুজরঙা পরিচয়পত্রের ঠাঁই হয়েছে ১০১তম স্থানে। এর ফলে কোন ভিসা ছাড়াই আইরিশ পাসপোর্ট দিয়ে গমন করা যাবে ১৮৬ টি দেশে, আর বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ৪১ টি দেশে গমন করা যাবে।
এবছরও, টানা চতুর্থ বছরের মতো পাসপোর্টের এই সূচকে জাপান ধরে রেখেছে শীর্ষস্থান। দেশটির পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারে ১৯১টি দেশে। অন্যদিকে গতবারের মত সবচেয়ে দুর্বল পাসপোর্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আফগানিস্থানের পাসপোর্টকে।
পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তিনটি দেশ এশিয়া মহাদেশের।
পাসপোর্ট মূল্যায়নে অন্যতম মানদণ্ড হিসাবে আগে থেকেই ভিসা ছাড়াই সরাসরি কোন দেশ ভ্রমণের ক্ষমতাকে গুরুত্ব দেয় হেনেলি।পৃথিবীর ১৯৯টি পাসপোর্ট ও ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্য নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) বিশেষ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের পরপরই ৬২ জন যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ হয় শ্রীবিজয়া এয়ার কোম্পানির বোয়িং ৭৩৭ ফ্লাইটটি। জাকার্তা থেকে পশ্চিম কালিমান্তান প্রদেশের রাজধানী পনতিয়ানাক যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে।
ফ্লাইট ট্র্যাকার ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানায়, উড়োজাহাজটি ১০ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় অবস্থান করছিল। সেখানে এক মিনিটের কম সময় অবস্থানের পর হঠাৎ করেই সেটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
কোন এক প্রত্যক্ষদর্শী নাকি অন্তত একটি বিষ্পোরণ এর শব্দ শোনা যায়। এরই মধ্যে টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ধ্বংসস্তূপের ছবি দেখতে পাওয়া গেছে।
পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিখোঁজ উড়োজাহাজটির সন্ধানে চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাকার্তা থেকে লায়ন এয়ার বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স জেট উড্ডয়নের ১২ মিনিট পর সাগরে গিয়ে পড়ে এবং উড়োজাহাজের ১৮৯ জন আরোহী নিহত হন।
সময় যত গড়াচ্ছে ততই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। একদিন যে চোখে দুনিয়া দেখতেন, সে চোখেই এখন সবকিছু ঝাপসা দেখছেন। ক্ষমতার দম্ভে ছিলেন অন্ধ। যা ইচ্ছা তাই করেছেন। কাউকে সম্মান করেননি। এমনকি কাছের লোকদেরকেও। মিডিয়া ছিল তার শত্রু। সামান্যতম সমালোচনাও পছন্দ করতেন না।
কিন্তু মার্কিন মিডিয়া তার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেনি। ট্রাম্প কারও পরামর্শ শুনতেন না। তার কাছে ‘কূটনীতি’ বলে কিছু ছিল না। মুখে যা আসতো তাই বলে দিতেন। এ কারণে শুরু থেকেই ছিলেন বিতর্কিত। নিজের স্বার্থে কথা বলতেন। পরিবারকেন্দ্রিক সিদ্ধান্ত নিতেও ভুল করতেন না। দেশের জনগণের ওপর তার আস্থা ছিল না। জনরায় মানতে চাইতেন না। অথচ ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েও হিলারি ক্লিনটন পরাজয় মেনে নেন হাসতে হাসতে। এর আগে আল গোরও একই নজির স্থাপন করেন। কিন্তু ডনাল্ড ট্রাম্প এর ব্যতিক্রম। নির্বাচনের আগেই বলে দেন- জনরায় মানবেন না। কাল্পনিক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ আনতে
থাকেন। তাকে থামায় কে! তার কাছে ক্ষমতাই সব। তার দাপটে সহকর্মীরাও ছিলেন অসহায়। ভোটে হেরে গেলেন কিন্তু অযৌক্তিকভাবে বলতে থাকলেন, ভোট চুরি হয়ে গেছে। কে, কীভাবে চুরি করলো তার কোনো প্রমাণ নেই। গেলেন আদালতে। কেউ তার কথা আমলে নিলো না। এমনকি তার পছন্দের বিচারকরাও একই রায় দিলেন। তাতেও তিনি দমলেন না। ভেতরে ভেতরে ছক কষতে থাকলেন। ষড়যন্ত্রের জাল বুনলেন ঘরে বসে। কোনো অবস্থাতেই তিনি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না। পরিকল্পনা অনুযায়ী সারা দেশ থেকে তার উগ্র সমর্থকদের জড়ো করলেন। এর আগে তিনি মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করলেন সমর্থকদের কাছ থেকে। ক্যাপিটল হিলে যখন আইন প্রণেতারা অধিবেশনে বসছেন, ঠিক তখনই হোয়াইট হাউসের সামনে নিয়ম-বহির্ভূত এক সমাবেশ করলেন। সমর্থকদের বললেন, এই ভোট আমরা মানি না, তাই এটাকে সমর্থন দেয়া যায় না। তোমরা ক্যাপিটল হিলের দিকে যাও। আমিও আসছি। সিনেটররা যখন ভোটের চূড়ান্ত সিলমোহর দেবেন তখনি কমান্ডো ঢুকে পড়লো ক্যাপিটল হিলে। আইন প্রণেতারা তখন ভয়ে কাঁপছেন। এক পর্যায়ে সুড়ঙ্গ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করলেন। শতাধিক বন্দুকধারী কমান্ডো হামলায় যখন অংশ নিচ্ছে তখনি হাজার হাজার ট্রাম্প সমর্থক ক্যাপিটল হিল ঘেরাও করে রাখলো। দিনটি ছিল বুধবার। মার্কিন ইতিহাসে কালোদিন হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। কি ছিল ট্রাম্পের পরিকল্পনা? নানা সূত্রে যেসব খবরাখবর চাউর হয়েছে তাতে জানা যায়, এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে ঘুঁটি সাজিয়েছিলেন ট্রাম্প। তারই ভাইস প্রেডিডেন্ট মাইক পেন্সকে জিম্মি করে ভোটের ফলাফল অনুমোদন প্রক্রিয়া থামাতে চেয়েছিলেন। এতে সফল হলে তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হতো। কিন্তু মাইক পেন্স তার পরিকল্পনায় সায় দেননি কখনো। ট্রাম্প টুইট করেও বলেছেন, ওর সাহস নেই। ক্যাপিটল হিল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় হিংসা আর রক্তপাতে শেষ হয় ট্রাম্প অধ্যায়। বেঁচে যায় গণতন্ত্র। মৃত্যু হয় পপুলিজমের। ট্রাম্পের উত্থানে দেশে দেশে পপুলিজমের হাওয়া বইছিল। দুনিয়াব্যাপী এই ধারণাই জন্মেছিল পপুলিজমের পথই বোধকরি জনগণ বেছে নেবে। কিন্তু ক্যাপিটল হিল শেষ পেরেকটা মেরে দিয়েছে। বুঝিয়ে দিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা রোধ করা যায় না। কায়েম করা যায় না পপুলিজম। জনরায়কেও হত্যা করা যায় না।
প্রশ্ন ওঠে, ট্রাম্প কি নিজে নিজে এই ছক তৈরি করেছিলেন? নাকি কেউ এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছিল। এখন তাকে ২০শে জানুয়ারির আগেই অভিশংসনের দাবি উঠেছে। ডেমোক্রেটরা তাই চাইছেন। রিপাবলিকানরা কি করবেন? তারাও যে বিরক্ত তার ওপর। ট্রাম্প তাদেরকেও যে স্বস্তি দেননি। ট্রাম্প এখন শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছেন। কেউ তাকে বিশ্বাস করে না। এমনকি ফেসবুকের কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গও ট্রাম্পকে ফেসবুক মঞ্চে নিষিদ্ধ করেছেন। বলেছেন, বুধবার যা ঘটেছে এটা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা তুলে দেয়ার কোনো বার্তা দেয় না। বরং সমর্থকদের সমালোচনা না করে সাহসের প্রশংসা করেছেন। জাকারবার্গ বলেন, নিয়ম মেনেই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এই মঞ্চ ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছে। যদিও বেশ কয়েকবার তার দেয়া পোস্ট সরানো হয়েছে। কখনো পোস্টের নিচে লেখা হয়েছে, এতে নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে। জাকারবার্গ বলেন, তখন আমরা মনে করতাম, প্রত্যেক ব্যক্তিরই কথা বলার অধিকার রয়েছে। কিন্তু বুধবার যা ঘটে গেল তাতে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে আমাদের স্বাধীন মঞ্চকে ব্যবহার করতে দিতে পারি না। ক্ষমতা ছাড়ার ১২দিন আগেই ট্রাম্প প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। ক্ষমতা ছেড়ে যাবেন কোথায়? ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন স্কটল্যান্ড যাবেন। সেখানে তার বাড়ি রয়েছে। কিন্তু স্কটল্যান্ড কর্তৃপক্ষ বলে দিয়েছেন, সেখানে তাকে স্বাগত জানানো হবে না। নিউ ইয়র্কেও যাবেন না। বাকি থাকলো ফ্লোরিডা। সেখানেই হয়তো তার ঠাঁই হবে।
গতকাল আবাই এর ফেইসবুক পেইজ থেকে আবাই নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন উপদেষ্টা জনাব মোঃ মোস্তফা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব আজাদ তালুকদার এর পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তা সহ ভোটার তালিকায় নাম নিবন্ধনের আহবান জানান। নিচে বার্তাটি সম্পূর্ণ প্রকাশ করা হলো।
আসসালামু আলাইকুম,
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত
সম্মানিত বাংলাদেশী ভাই ও বোনেরা,
ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা নিবেন। আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন।
আমরা সকলেই এক বৈশ্বিক মহামারীতে পতিত আছি দীর্ঘ এক বছর যাবৎ। অনেক আশা প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছিলাম এই ভেবে যে, করোনার ভ্যাকসিন এসেছে, সহসাই হয়তো আমরা ঘর থেকে বের হবো আবার হাসি মুখে স্বজনদের সাথে বন্ধু, পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে অবাধে সময় কাটাবো,কিন্তু হঠাৎ ই এই ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন এসে আমাদেকে ঘর থেকে বের হওয়ার রাস্তা কিছুটা কঠিন করে দিয়েছে।
তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আশাকরি শীঘ্রই আমরা এই সংকট থেকে উত্তরিত হতে পারবো। শুধুমাত্র আমাদেরকে সরকারের নিয়ম নীতিকে অনুসরণ করতে হবে।
আয়ারল্যান্ডের সকল শহরে অনেক বাংলাদেশী ভাই বন্ধু করোনায় আক্রান্ত আছেন। আমরা আপনাদের সকলের আশু রোগমুক্তির জন্য দোয়া করছি। আপনারা অবশ্যই কোভিড সংক্রান্ত গাইডলাইন অনুসরণ করবেন। সাথে সাথে পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন।
সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়মকানুন সঠিক ভাবে মেনে ফ্যামিলি গেট টুগেদার এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ থেকে আপাতত বিরত থাকুন। আমরা নিজেদের নিরাপদ রাখতে চাইলে আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন।
আপনারা জানেন, করোনার কারণে আমরা আবাই এর নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত রেখেছি। তবে আশাকরি লকডাউন উঠে গেলে যথাশীঘ্রই আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো।
আমাদের নির্বাচন সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা আছে। আপনাদের পরিচিত কেউ এখনো নিবন্ধিত হওয়ার বাকি থাকলে অবশ্যই তাদেরকে নিবন্ধিত হতে উৎসাহিত করুন।
https://abai.ie/ এই ওয়েবসাইটে সবাইকে নিবন্ধিত হতে অনুরোধ করা গেলো।
আপনাদের সুস্বাস্থ কামনায়,
মোঃ মোস্তফা
প্রধান উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা পরিষদ, আবাই।
আজাদ তালুকদার (ডেপুটীমেয়র ও কাউন্সিলর, লিমেরিক)
প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
আবাই নির্বাচন কমিশন।
মডার্নার( Moderna) কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য অনুমোদনে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইরিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এদিকে ইইউর মেডিসিন রেগুলেটর EMA মডার্নার কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে।
গত ডিসেম্বরে ফাইজার বায়োএনটেক ভ্যাকসিনের অনুমোদনের পরে ইউরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি (EMA) গ্রিন লাইট প্রদানের মাধ্যমে Moderna কে দ্বিতীয় করোনভাইরাস ভ্যাকসিন হিসেবে অনুমোদন দিল।
আইরিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রী স্টিফেন ডোনেলি গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন যে, আয়ারল্যান্ড মডার্না ভ্যাকসিনের ৮৭৫০০০ ডোজ অর্ডার করেছে এবং তা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
স্বর্ণালী অতীত তুমি চলে গিয়েছ,
অনেক, অনেক দূর দূরান্তে।
এই চলে যাওয়া স্মৃতিময় দিনগুলো
আজো মনের ভাবনায় স্মরণ করি।
হে অতীত তোমার হারানো স্মৃতি
আজো মনের ভাবনায় কথা বলে।
হে আমার ভোরের পাখি ডাকা
হারিয়ে যাওয়া সুন্দর প্রভাত, সোনালী বিকেল।
আজো স্মৃতিময় প্রভাতে প্রকৃতির
দৃশ্যের মধ্যে খুজেজে পাই তোমাকে।
হে আমার চাঁদনি রাতের তারা ভরা সেই সে নীল আকাশ।
আজো সেই হারানো চাঁদনি রাতে
মুক্ত মাঠে বসে গল্প করার স্মৃতিময় দিনগুলো
আমাকে পিছু ডাকে।
হে আমার হারানো দিনের খেলার প্রিয় সাথী।
কালের বির্বতনে তোমরা কোথায়
যেন হারিয়ে গেলে জীবন পথের অজানা সুদূর দেশে।
আমি আজো দূর প্রবাসে থেকে
ভাবনার অজান্তে স্মরণ করি,
সেই হারানো প্রিয় সাথীকে।
হে আমার প্রিয় ক্যারাম খেলার সাথী
তোমরা আমাকে ছেড়ে কোথায় যেন
হারিয়ে গেলে জিবনের অজানা পথে।
আজো তোমাদের সাথে থাকা বাল্য স্মৃতি।
দৃশ্যগুলো প্রবাসের নিরব মুহূর্তে
মনের ভাবনায় স্মরণ করি।
আমার গোবিন্গঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের প্রাণের ক্লাসমেট।
তোমাদের ছেড়ে ইংল্যান্ডের প্রবাস জীবনে আমি,
কতদিন পাইনা তোমাদের, পাইনা সেই হারানো ভালবাসা।
প্রবাসের কর্ম ব্যাস্ত মুহূর্তেও
মনের আকুল ভাবনায় ভাবি
তোমাদের স্মৃতি কথা।
হে আমার আদর্শ গুরুজন,
শিক্ষা অর্জনে চির কৃতজ্ঞতায় আজো স্মরণ করি
আপনাদের অনেক স্মৃতিকথা।
হে আমার হারানো যুগের শত শত
প্রানের সাথী, বন্ধু ও প্রাণের কৃতিত্ত্বভাজন,
আমি আজো তোমাদের সু পরিচিত
মুখের দৃশ্য স্মরণ করি দিবসও রজনী।
হে আমার অগণিত প্রিয় চেনা মুখ
তোমরা সবাই বহমান নদীর স্রোতধারার মতোই
চলে গেলে চোখের আড়ালে।
তোমাদের হারিয়ে শূন্য মনের সমবেদনায়
ভাবি জীবন থেকে চিরতরে চলে যাবার দৃশ্য ভাবনা।
জীবন চলার পথে,অবশ্যই জিবনের
কোন এক মুহূর্তে আমি ও চলে যাবো অজানায় ।
জীবন চলার বহমান ধারায় কেহ স্মরণ করবে কি ?
আমার ভাবনার কথাগুলো ?
হে আমার প্রিয় মাতৃভূমির পথ,
ও প্রান্তরে ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতিদৃশ্য।
আমি আজো প্রবাসের নিরব রজনীত
ভাবি সেই সোনালী দৃশ্য, প্রকৃতির স্মৃতি।
কালের চিরন্তন ধারায় যুগে যুগে
প্রবাহিত হয়ে থাকবে জীবন পথের গতি।
জীবন স্রোতের সাথে মিশে শেষ হয়ে যাবে
মহামানবের প্রাণের গতি।
আজকে প্রথম বাংলাদেশী কেউ আয়ারল্যান্ডে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নেয়ার সৌভাগ্য অর্জন করলেন। দুই জনই ডাক্তার। ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কার হিসেবে উনারা এই ফাইজার/বায়োনটেক এর ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। উনাদের মধ্যে একজন হলেন, ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন – মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং অন্যজন হলেন ডাঃ মাহফুজুর রহমান – যিনি এনিস হসপিটালে হেলথ সার্ভিস এক্সিকিউটিভ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।
দুইজনই আইরিশ বাংলা টাইমস এর সাথে ভ্যাকসিন নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। ভ্যাকসিন নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যে নানা ধরনের ভ্রম ও ভীতি তৈরি হয়েছে এবং ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক উদ্ভট গুজব উঠেছে। উনাদের ভাষ্যমতে, ভ্যাকসিন নিয়ে অহেতুক ভীতি আসলেই ভিত্তিহীন। উনারা বলেন, আমরা ডাক্তার হয়ে যদি ভ্যাকসিন নির্ভয়ে গ্রহণ করতে পারি, তাহলে সবাই তা গ্রহণ করতে সমস্যা থাকার কথা না।
ডাঃ মুসাব্বির বলেন, ‘’এই ভ্যাকসিন অন্য সব ভ্যাকসিন এর মতই, সব ভ্যাকসিনেই কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। ভ্যাকসিন গ্রহণে বড়জোর জ্বর জ্বর ভাব, ইনজেকশনের জায়গায় অল্পত্বর ব্যাথা, অবসাদ ও হালকা মাথাব্যাথা হতে পারে। যদিও হয় বড়জোর ১%-৩% এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, আর ২৪ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হবে না’’। তিনি বলেন, ‘’আমি ভ্যাকসিন নিয়েছি বেশ কয়েক ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে, কিন্তু খারাপ কিছুই বোধ করছি না, এমনকি ভ্যাকসিন নেয়ার সময়ও সামান্য ব্যাথাটুকুও অনুভব করি নাই’’।
ভ্যাকসিন এর কারণে অ্যালার্জিজনিত জটিলতা নিয়ে ডাঃ মুসাব্বির আরো বলেন, ‘’এখন পর্যন্ত ২ মিলিয়নেরও বেশি ফাইজারের ভ্যাকসিন পৃথিবীতে রোলআউট হয়েছে যার মধ্যে কেবল ৮ জনের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা পাওয়া গিয়েছে। যাদের পাওয়া গিয়েছে পূর্বে থেকেই তাদের গুরুতর অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ছিল, যারা অ্যালার্জির কারণে পূর্বে হাসপাতালে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল’’।
ডাঃ মুসাব্বির গত সপ্তাহে ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’ এ একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান, যেখানে উল্লেখ করা হয়, ভ্যাকসিনে পলি ইথিলিন গ্লিসারল নামে একটি উপাদান রয়েছে (যেটা সাধারণত টুথপেস্ট এবং শ্যাম্পুতেও থাকে), যেটিই মূলত অ্যালার্জির কারণ। যাদের পলি ইথিলিন গ্লিসারলে অ্যালার্জি আছে তাদেরকে ভ্যাকসিন গ্রহণ না করার ব্যাপারে উপদেশ প্রদান করা হয়েছে। যাদের মাইনর অ্যালার্জি থাকে তাদের ভ্যাকসিন গ্রহণে বাধা নেই।
ভ্যাকসিনের সাইড ইফেক্ট কি করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা থেকে বেশি? আয়ারল্যান্ডের মত ক্ষুদ্র জনসংখ্যা সম্বলিত দেশেই প্রতি ৪০ জনে একজন মানুষ মারা যাচ্ছে এবং ৮% মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে এখন পর্যন্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য মানুষের অবস্থা কারুরই অজানা নয়। মানুষের জীবন রক্ষার্থে এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন এর বিকল্প নেই।
ডাঃ মাহফুজুর রহমানেরও একই মত। উনার মতে, ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে কারো মৃত্যুর সম্ভাবনা তো নাইই, আর কারো সমস্যা হলেও তা মিলিয়নে এক জন হতে পারে। তিনি বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানুষের জীবন। জীবন রক্ষার্থে ভ্যাকসিন গ্রহণ করায় কারো ভীতি থাকার কোন কারণ আছে বলে মনে করি না।
অতীতে বহু ভ্যাকসিন মানুষের জীবন বাঁচিয়ে এসেছে। বিজ্ঞানীরা এবং দেশের কর্ণধার যারা তারা নিশ্চয়ই চাইবেনা মানুষের ক্ষতি হোক এমন কিছু মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিক। তাদের নিরলস চেষ্টার ফলে ধীর্ঘ প্রতীক্ষিত ভ্যাকসিন আজ আমাদের দ্বার গোড়ায়। জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন আশা করি খুব শিগ্রই সবার জন্য সহজলভ্য হবে।
”সবার জ্ঞাতার্থে জেনে রাখা প্রয়োজন যে, ভ্যাকসিন প্রদান করার আগে কর্তৃপক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে। তা হতে পারে ফোন করে,চিঠি দিয়ে অথবা ইমেইল করে। তারা একটি কনসেন্ট ফর্ম পাঠাবে, যা পূরণ করে স্বাক্ষর করতে হবে। স্বাক্ষরকৃত ফর্ম ভ্যাকসিন গ্রহণের দিন সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।”
গত দুই মাস ধরে আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা। গত অক্টোবরের শেষ দিক থেকেই জ্যাক মা নিখোঁজ রয়েছেন।
জ্যাক মার টানা দুই মাস প্রাকাশ্যে না আসার বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। যদিও চীনা সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হচ্ছেনা। এ ব্যাপারে বেইজিংভিত্তিক প্রযুক্তি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিডিএ চায়নার চেয়ারম্যান ডানকান ক্লার্ক বলেন, ‘আমার ধারণা, তাঁকে (জ্যাক মা) দৃশ্যপটের বাইরে থাকতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতি একেবারের ভিন্ন রকম একটি পরিস্থিতি।’
জ্যাক মা ‘’আফ্রিকা’স বিজনেস হিরোস’’ নামের টেলিভিশন শো তে বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। সেখানেও তার উপস্থিতি না থাকায় তার নিখোঁজ হওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
তাকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল অক্টোবরের শেষে সাংহাইয়ের একটা সম্মেলনে। ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি চীনা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমালোচনা করেন। এর পরপরই আলিবাবার সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যান্ট গ্রুপের ৩ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের আইপিও স্থগিত করে চীনা কর্তৃপক্ষ। অ্যান্ট গ্রুপ আর্থিক সেবাদাতা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
অনেকেরই আশঙ্কা, চিনের জিনপিং সরকারের সমালোচনা করাতেই রাষ্ট্রের কোপে পড়েছেন তিনি।
ফাইজার ও মডার্নার করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন যে পদ্ধতিতে উৎপাদিত, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন সে পদ্ধতিতে উৎপাদিত নয়। জিকা, মার্স, ফ্লু প্রভৃতি রোগের ভ্যাকসিন যে পদ্ধতিতে তৈরি হয়, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন তৈরিতে সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন হয় অত্যন্ত নিু তাপমাত্রা। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে সে সমস্যা নেই। এটি অন্য দুটি ভ্যাকসিনের চেয়ে দামেও তুলনামূলক অনেক কম।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের আরেকটি সুবিধা হলো এটি মৃত্যু ও অনেক গুরুতর জটিলতা থেকে মানুষকে রক্ষা করবে। ফাইজার ও মর্ডানার উদ্ভাবকরা বলছেন, এ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও মানুষকে মাস্ক পরে থাকতে হবে, যাতে একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত হতে না পারে। অন্যদিকে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের উদ্ভাবকরা দাবি করছেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ৫৯ শতাংশ ক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমিত হবে না।
যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হয়েছে। শিগগির ভারত ও আর্জেন্টিনায় শুরু হতে যাচ্ছে। অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। তবে যুক্তরাজ্য সরকার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখছে ১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যায় কি না। কারণ, এর ফলে অনেক বেশি মানুষকে এ ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এতে ইমিউনিটি বাড়বে।
ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন : মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র রেজিস্ট্রার, পোর্টিউনকুলা ইউনিভার্সিটি হসপিটাল, আয়ারল্যান্ড
গত ৩রা জানুয়ারি, ২০২১ রোজ রবিবার PMI এর উদ্যোগে জুনিয়র ও লিভিং সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীদের সম্মাননায় ভার্চুয়াল জমায়েতের মাধ্যমে একটি জুম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। PMI আয়ারল্যান্ডে একটি বাংলাদেশী চ্যারিটেবল ও দাওয়াতী সংগঠন যার সম্পূর্ণ নাম Peace Mission, Ireland.
গতবছর ২০২০ সালে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত যে সকল শিক্ষার্থী জুনিয়র ও লিভিং সার্টিফিকেট সমাপ্ত করেছে তাদের সম্মাননায় PMI এ উদ্যোগ নেয়। অনুষ্ঠানটি গতবছর করার কথা ছিল বলে উদ্যোক্তাগণ জানান। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেটি আয়োজনে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। এবারের সম্মাননায় ২৭ জন লিভিং সার্টিফিকেট শিক্ষার্থী ও ২৬ জন জুনিয়র সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি দুপুর ২:৩০ মিনিটে জনাব সাইফুল ইসলাম সুমনের সঞ্চালনায় ও পরিচালনায় শুরু হয়। শুরুতে ২০২০ সালের জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষার্থী লুকানের ছোট্ট বন্ধু আব্দুর রহমানের সমধুর কণ্ঠে কোরআনে পাক তেলাওয়াতের মাধ্যমে হয়। পরবর্তীতে ট্র্যালি থেকে আরেক ছোট্ট বন্ধু আবায়াদ রহমান আরিক যে এ বছর কোরআনে হাফেজ হয়, তার কাছ থেকে কোরানে পাক তেলাওয়াত শুনা হয়।
অনুষ্ঠানে মোটিভেশনাল বক্তা হিসেবে কানাডার রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ কে তার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য পেশ করার জন্য আরজ করা হয়। তিনি রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আছেন। তিনি সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়্যান্টলেন পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ক্রিমিনোলজির উপর সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার PhD সম্পাদন করেন। মাস্টার্স পাস করেন কনফ্লিক্ট ট্রান্সফর্মেশনের উপর আমেরিকার Eastern Mennonite University থেকে। তিনি বাংলাদেশ, কানাডা,চীন, ইতালি, মালয়েশিয়া, নরওয়ে, স্পেইন, সুইডেন, থাইল্যান্ড, তুর্কী, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কনফারেন্স অংশ গ্রহণ করেন ও বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন।
এ বছর জুনিয়র সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীদের যারা সম্মাননা পেয়েছে তারা হচ্ছে সারা হক, পূজা গ্লোরী, আব্দুল রহমান, সাদিয়া হোসাইন, আল মাহি তাজনিম, এস এম সাদাফ হক, গাজী আল মাহি, স্বাধীন খান, কামিল খান, ইফ্ফাত ইমরান, সিনথিয়া উদ্দিন, ঐশী বিজয়, মাহিন মাতবর, স্বপ্না মাতবর, আঁখি উল্লাহ, জাহাঙ্গীর আলম, ইরফাজ ভূঁইয়া, মফিজ হোসাইন, ফাহাদ আজিম, আব্দুর রহমান, সাইদুর রহমান, মোঃ মোস্তবা আলি, শারিখ জামান, আলিফ মোস্তফা, মুশফিকুর রিজভী রহমান এবং মাতম মোমিন চৌধুরী।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পিতা ফ্রান্সের নাগরিক হতে চান
মাহিদুল ইসলাম সবুজ: বৃটেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ করলেও অনেক বৃটিশ নাগরিক চাচ্ছেন না ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করতে। তাই অন্য অনেক বৃটিশ নাগরিকের মত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পিতা স্ট্যানলি জনসন ফ্রেন্চ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন। স্ট্যানলি জনসনের মা এবং মাতামহ ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। মায়ের সূত্র ধরে স্ট্যানলি জনসন ফ্রেন্চ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন বলে জানান।
৩১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ফ্রান্স ভিত্তিক রেডিও স্টেশন ‘আর টি এল‘ এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে নিজে এ তথ্য জানান স্ট্যানলি জনসন। আশি বছর বয়সী স্ট্যানলি জনসনের রয়েছে এক বর্ন্যাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। আজীবন কনজারভেটিভ রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত এ রাজনৈতিক ১৯৭৯ সালে হয়েছিলেন মেম্বার অব ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট ( এম ই পি)। এছাড়া ১৯৭৩ হতে ১৯৭৯ পর্যন্ত কাজ করেছেন ইউরোপীয়ান কমিশনে। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ব্রেক্সিট গনভোটে স্ট্যানলি জনসন বৃটেনের ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। অপরদিকে তাঁর পুত্র বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ছিলেন বৃটেনের ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ করার পক্ষের বড় সমর্থক। গনভোটে ৫২% -৪৮% ব্যাবধানে বৃটিশ জনগণ ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ করার পক্ষে রায় প্রদান করে।এরই প্রেক্ষিতে বৃটেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সাথে ৪৮ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে।
ব্রেক্সিট বিচ্ছদের ব্যাথা মনে হয় সইতে পারছেন না স্ট্যানলি জনসন। ‘আর টি এল‘ রেডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এটা নিশ্চিত যে আমি সব সময় ইউরোপীয়ান। কেউ বৃটিশ নাগরিকদের বলতে পারবে না যে তারা ইউরোপীয়ান নয়। ইউরোপ একটি একক বাজার থেকেও বড় কিছু। তাই ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সাথে যুক্ত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এর আগে তিনি বলেন, আমি যদি সঠিক ভাবে বুঝে থাকি, আমি একজন ফ্রেন্চ। আমার মা ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। আমার মায়ের মা একজন পরিপূর্ণ ফ্রেন্চ নাগরিক ছিলেন এমনকি তার দাদাও। সুতরাং আমি এমন একটি জিনিস পুনরায় দাবি করছি যা আমার ছিল এবং এটি আমাকে আনন্দিত করবে।
উল্লেখ্য, স্ট্যানলি জনসনের ফ্রান্সের নাগরিকত্বের আবেদন প্রক্রিয়াধীন এবং শীঘ্রই তিনি ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পাবেন বলে আশাবাদী।
ওবায়দুর রহমান রুহেল: গত ২০২০ সাল ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য ছিল এক বিরাট ট্রাজেডির সাল। কমিউনিটির চেয়ারপার্সন ডাঃ মুহাম্মাদ রফিক উল্লাহঽর মাতৃবিয়োগের মধ্য দিয়ে শোকাহত ২০২০ সালের যাত্রা শুরু হয়, কমিউনিটির ভাইস চেয়ারপার্সন ফরিদ খাঁনের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ও মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তাঁর সহধর্মিণীর হাসপাতালের দিনগুলো ছিল বিভীষিকাময়।
করোনায় নাকাল সমস্ত আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটির মতো ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটিও তাদের কার্যক্রম ও অনুষ্ঠানাদী সীমিত পরিসরে নানাবিধ বিধিনিষেধ মেনেই পালন করেছে।উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে ছিল জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে স্থানীয় ডোনেগাল ইন্টারকালচারাল প্লাটফর্মের সাথে একাত্ম হয়ে “ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটার ” এ অংশগ্রহণ।
কমিউনিটির চেয়ারপার্সন ডাঃমুহাম্মদ রফিক উল্লাহঽর নেতৃত্বে স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির মালিকানাধীন রেস্তোরাঁ যেমন চিলি শেখর, শাপলা ও সাবওয়েঽর পক্ষ থেকে লেটারকিনি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মরত সম্মুখ সারির করোনা মহামারীর চিকিৎসক সৈনিক ডাক্তার, নার্স ও মিডওয়াইভদের সম্মানার্থে বিশেষ খাবার বিতরণ, স্থানীয় ডোনেগাল ভলেন্টিয়ার সেন্টারের সাথে যৌথভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য উপহার সামগ্রী বিতরণ, ডোনেগাল ট্রাভেলার প্রজেক্টের সাথে যৌথভাবে ইনডিজিনাস ল্যাংগুয়েজধারীদের নিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ভিডিও ক্লীপ নির্মাণ, ভার্চুয়াল ঈদ পুনর্মিলনী আয়োজন ও মিলাদ মাহফিল উল্লেখযোগ্য।
সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন জনাব শামীম আহমেদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব সাজন মিয়া ও জনাব মাজহারুল ঝিনুকের খাদ্য উপহার সামগ্রী বিতরণ ছিল প্রশংসনীয় উদ্যোগ এছাড়া কমিউনিটির সেক্রেটারি জনাব জুবায়ের আহমেদ সোহাগের স্বেচ্ছাশ্রমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ঔষধপত্র মানুষের বাসায় ডেলিভারি করার মতো কার্যক্রমগুলো ছিল বাহবা পাবার মতো।
IMO এপ ব্যাবহার কারীরা সাবধান। আজ সকাল থেকে ইমো ব্যাবহার কারিদের নিকট তার ফোন বুকের বিভিন্ন ব্যাক্তির নামে মেসেজ এবং কল আসছে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে ঐ কলগুলো বা মেসেজ গুলো আপনার ফোনবুকে থাকা ব্যাক্তির না। এ মেসেজ গুলোতে বিকাশের রেট কত জানতে চাওয়া হচ্ছে। পরক্ষনেই আবার একটি কোড আপনার নাম্বারে পাঠিয়ে সেটি জানতে চাওয়া হচ্ছে। এই রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি জনগনের নিকট থেকে। অনেকের মোবাইল হ্যাক হয়েছে বলে দাবি করেছে। আপনার সাথে এরকম হলে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। অবশ্যই সেই নাম্বারে থাকা ব্যাক্তিকে সরাসরি ফোন করে জেনে নিতে পারেন। আগত নাম্বারকে ব্লক করতে পারেন বা অভিজ্ঞ ব্যাক্তির পরামর্শ নিতে পারেন।
প্রথম লকডাউনের পর থেকে আয়ারল্যান্ডে করোনার গতি শ্লথ থাকলেও ইদানীং এসে করোনায় আক্রান্তের হার রকেট গতিতে বাড়তেছে। বিগত কয়েকদিনের ঊর্ধ্বমুখী সংখ্যা খুব দ্রুতই ১০০ হাজারের ঘরে নিয়ে এসেছে। অবশ্য আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ আশংকাই করে আসছিল। তাদের ভাষ্যমতে ক্রিসমাস সময়ে লকডাউন খোলাটা শাপে বর হতে পারে। তাদের সেই আশংকাই সত্য বলে প্রতীয়মান হয়ে উঠতেছে ধীরে ধীরে।
আজকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪,৯৬২ এবং মৃত্যুসংখ্যা ৭ জন। এ নিয়ে সর্বমোট করোনারোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১,৮৮৭ এ। নতুন সংখ্যার মধ্যে ২,৪০৮ পুরুষ এবং ২,৫৩৯ মহিলা। মোট আক্রান্তের মধ্যে ডাবলিনে সর্বোচ্চ ১২৬০, লিমেরিকে ৬৫২, কর্কে ৩৫০, লাউথে ৩২১, মিথে ২৩৮ এবং বাকিগুলা অন্যান্য অঞ্চলে।
NPHT এর ভাষ্যমতে আজ দুপুর দুইটা পর্যন্ত আজকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬৮৫ জন, এর মধ্যে ৬২ জনকেই ইন্টেন্সিভ কেয়ারে নেয়া হয়েছে। NPHT সতর্ক করে জানিয়েছেন, এই সংখ্যা প্রতিদিন ৬০০০ পর্যন্তও হতে পারে।
চিপ মেডিকেল অফিসার টনি হলোহান এই সময়কে ”ক্রিটিকেল টাইম” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এখনকার মত অবস্থা মার্চ মাসেও ছিলনা। তাঁর ভাষ্যমতে, ”কভিড-১৯ আসলেই খুব চিন্তার বিষয়, যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে একযোগে কাজ করে এর মোকাবেলা ও প্রতিরোধ করতে হবে”।
ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির চেয়ার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন দেয়া হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে৷ ১০ ধরনের অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়েছে৷ প্রথমে এই তালিকা থেকে কারা কতজন পাবেন তাও নির্ধারণ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে৷ আমরা অচিরেই এই অগ্রাধিকার তালিকা প্রকাশ করব৷”
যে ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে তমদ্ধে আছেন: মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষা কর্মী,গণপরিবহন কর্মী৷ বয়োজ্যেষ্ঠ বলতে ষাটোর্ধ বয়সের ব্যক্তিদের বোঝানো হচ্ছে৷
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার, সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তিন লাখ, বেসরকারি কর্মী রয়েছেন সাত লাখ, স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন এনজিও কর্মী রয়েছেন দেড় লাখ৷ গণমাধ্যম কর্মী রয়েছেন ৫০ হাজার৷ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পাঁচ হাজার৷ পুলিশ বাহিনীর সদস্য দু’লাখের ওপরে৷ ক্যানসার, যক্ষ্মা আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী ধরা হয়েছে এক লাখ দুই হাজারের মতো৷ সেনাবাহিনী জন্য ধরা হয়েছে তিন লাখ৷ সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধি ধরা হয়েছে ৭০ হাজার৷
জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য বিএসএমএমইউ-এর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছি৷ তবে তার মধ্যে জনপ্রতিনিধি ছিলো বলে আমার মনে হয় না৷ আর আমরা ওই ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা করেনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে তাদের জন্য বলেছি৷ যেমন চিকিৎসক অগ্রাধিকার পাবেন৷ কিন্তু যে চিকিৎসক সরাসরি চিকিৎসা কাজে যুক্ত নন তিনি পাবেন না৷ পুলিশের কথা বলেছি৷ কিন্তু যে পুলিশ সদস্য সরাসরি ফিল্ডে কাজ করেন না তিনি পাবেন না৷”
বাংলাদেশের বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে যে চুক্তি করেছে তাতে পর্যায়ক্রমে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনপাওয়া যাবে৷ আর এরজন্য ভ্যাকসিন কেনা ও বিতরণ খরচ মিলে খরচ হবে এক হাজার ৫৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা৷ প্রথম ডোজের ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজের হিসেবে প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ দেয়া যাবে ২৫ লাখ মানুষকে৷
আজ ২০২১ জানুয়ারির প্রথম দিন, ইইউ থেকে ইউকের বেরিয়ে যাবার দিন। আজ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর সাথে ইংল্যান্ডের মধ্যকার সম্পর্ক আর আগের মত থাকতেছে না। ইউরোপীয় দেশ হলেও আয়ারল্যান্ডের সাথে ইংল্যান্ডের মধ্যে চুক্তির কিছুটা ভিন্নতা থাকবে, যা অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশগুলোর সাথে থাকবেনা।
১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড একই সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর সদস্য হিসেবে যোগদান করে। কিন্তু ইংল্যান্ডের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার ঘোষণায় ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের সম্পর্কের ব্যাপারে যে প্রশ্নগুলোর উদ্রেক করে সেগুলো হলঃ
– নর্দান আয়ারল্যান্ডে শান্তি চুক্তি, যা গুড ফ্রাইডে বা বেলফাস্ট চুক্তি নামে পরিচিত; তার কি হবে?
– কিভাবে নর্দান আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক আয়ারল্যান্ডের সীমানা পরিচালিত হবে? উভয় পণ্য আমদানি রপ্তানি ও মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে।
– কিভাবে নর্দান আয়ারল্যান্ড এবং রিপাবলিক আয়ারল্যান্ড, এবং রিপাবলিক আয়ারল্যান্ড ও ইউকে এর মধ্যে সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড বজায় থাকবে?
তবে এরই মধ্যে কিছু ইস্যু ইতিমধ্যে সমাধান হয়েছে আয়ারল্যান্ড এবং নর্দান আয়ারল্যান্ডে ব্রেক্সিট প্রোটকোলের মাধ্যমে। যেটা রিপাবলিক আয়ারল্যান্ড এবং নর্দান আয়ারল্যান্ডের মাঝে হার্ড বর্ডার হওয়া থেকে বিরত রেখেছে।
গুড ফ্রাইডে/বেলফাস্ট চুক্তি এবং ব্রেক্সিট পরবর্তী প্রোটকোল
সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের অবসান ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের শক্তি ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে গুড ফ্রাইডে/বেলফাস্ট চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নর্দান আয়ারল্যান্ডের জনগণের আইরিশ নাগরিকত্ব নেয়ার এবং ইইউ জনগণের অবাধ প্রবেশের অনুমতি প্রদান করে। এতে করে উভয় দেশের জনগণের অবাধ চলাচল, শুল্কমুক্ত দ্রব্য আমদানি রপ্তানি ও সীমানায় কোন শারীরিক চেক ও হার্ড বর্ডার বা প্রহরী চৌকি না থাকার প্রতিশ্রুতি চুক্তিতে লিপিবদ্ধ করা হয়।
গুড ফ্রাইডে চুক্তির কারণেই মূলত রিপাবলিক আয়ারল্যান্ড এবং নর্দান আয়ারল্যান্ডের মাঝে কোন হার্ড বর্ডার থাকবে না এবং কমন ট্রাভেল এরিয়া হিসেবে ফ্রি মুভমেন্ট আগের মতই বজায় থাকবে। যেমন, ব্রেক্সিট পূর্ববর্তীতে এক জন আইরিশ নাগরিক ইউকে তে এবং একজন ব্রিটিশ নাগরিক আয়ারল্যান্ডে যেভাবে চলাচল করে আসছিল, ব্রেক্সিট পরবর্তীতেও ঠিক একইভাবে চলাচল করতে পারবে। সরকারী সুযোগ সুবিধা এবং চাকুরী করার ক্ষেত্রেও নিয়ম একই থাকবে। যা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের জন্য প্রযোজ্য হবেনা।
ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তি/ট্রেড-ডিল
অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ব্রেক্সিট ডিল সম্পন্ন হয়। ব্রেক্সিট ডিলের প্রধান উপকরণ হচ্ছে শুল্কমুক্ত ও কাস্টম মুক্ত আমদানি রপ্তানি। যার ফলে আমদানি রপ্তানিতে অতিরিক্ত খরচ ও সময় দুইই সাশ্রয় হবে। এতে উভয়ই ইউরোপীয় দেশগুলা ও ইউকে উপকৃত হবে। তবুও কিছু কাস্টম নিয়ম মেনেই দ্রব্য আমদানি রপ্তানি করতে হবে এবং তা হবে গ্রেট ব্রিটেন ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বর্ডারে।
নো-ডিল ব্রেক্সিট হলে আমদানি ও রপ্তানিতে গুড ফ্রাইডে চুক্তির আওতায় পড়ত না। যার ফলে আয়ারল্যান্ডকেও শুল্ক দিয়েই দ্রব্য আমদানি রপ্তানি করা লাগত। যা আয়ারল্যান্ড এর উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারত। ব্রেক্সিট ডিল আয়ারল্যান্ডের জন্য সুখবরই বটে।
যদি নো-ডিল ব্রেক্সিট হত!
আয়ারল্যান্ডের অর্থনীতি ইংল্যান্ডের বাণিজ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আয়ারল্যান্ড বর্তমানে প্রায় ৮০% পণ্য ইংল্যান্ডে কিংবা ইংল্যান্ডের মাধ্যমে রপ্তানি করে থাকে। মোট খাদ্যদ্রব্য আমদানির ৪১% এবং ৫৫% জ্বালানি ইংল্যান্ড থেকেই আমদানি করে থাকে। দ্রব্যের উপর শুল্ক আরোপ মানে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আয়ারল্যান্ডের সুপারমার্কেটগুলোতে বহু ব্রিটিশ পণ্য রয়েছে, মোটামুটি নিশ্চিতভাবে ধারণা করা হচ্ছিল যে, নো-ডিল ব্রেক্সিট হলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেতে পারত। ইংল্যান্ডকে বলা হত আয়ারল্যান্ড এবং ইইউ এর মধ্যকার ল্যান্ডব্রিজ বা জমিন সেতু, যার মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় দেড় লক্ষাধিক ট্রাক আসা যাওয়া করত। ব্রেক্সিটের পরে ওসব ট্রাকগুলোর ফ্রি মুভমেন্ট আর থাকতনা, যার ফলশ্রুতিতে ইউরোপ এর অন্য দেশ থেকেও পণ্য আমদানি করতে গুনতে হত বাড়তি খরচ। যার প্রভাব গিয়ে পড়ত মূলত ভোক্তাদের উপর।
একইভাবে রপ্তানিকৃত পণ্যের উপরও পড়তে পারে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারত। সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ হবে খাদ্য সেক্টরে। যা আয়ারল্যান্ডের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারত। খাদ্য রপ্তানিতে আইরিশ বিফ এবং ডেইরি পণ্য অন্যতম। উৎপাদনের প্রায় ৯০% বিফ রপ্তানি করা হয়, এর মধ্যে অর্ধেকই যায় ইউকে তে। নো-ডিল ব্রেক্সিট হলে ইংল্যান্ডের মার্কেট সম্পূর্ণই হাতছাড়া হয়ে যায় কিনা আইরিশ বিফ সেক্টর এ নিয়ে ছিল সংশয় এবং যার উপর নির্ভর ছিল করে ৮০ হাজার কৃষকের ভাগ্য।
আইরিশ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, নো-ডিল ব্রেক্সিট হলে আয়ারল্যান্ডের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন সংশয় প্রকাশ করে বলতেছেন, ‘’এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, ইউকে এবং ইইউ নো-ডিল ব্রেক্সিট এড়ানোর চেষ্টা করবে, তা না হলে এটা আমাদের সবার জন্যই খারাপ হবে’’। নো-ডিল ব্রেক্সিট এর ফলে ইকোনমিক গ্রোথ এর ৩% হ্রাস হবার সম্ভাবনা রয়েছে। Irish Fiscal Advisory Council অবশ্য এর দুইগুণ মানে ৬% GDP হ্রাস এর সংশয় প্রকাশ করতেছিল। যার প্রস্তুতিস্বরূপ আইরিশ সরকার আইরিশ ব্যবসায়ীদেরকে ব্রেক্সিটের জন্য তৈরি থাকতে জাতীয় প্রচারণা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসাকে গ্রান্ট প্রদান করার উদ্যেগ নিয়ে রেখেছিল।
সাম্প্রতিক ব্রেক্সিট ডিলের ফলে অনেকগুলা সংশয় থেকে ইতিমধ্যে মুক্তি ঘটেছে। তারপরেও কিছু প্রভাব তো আর এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সময়ই বলে দিবে কোথাকার পানি আসলে কোথায় গিয়ে গড়ায়। ব্রেক্সিটের সুবিধা অসুবিধাগুলো ধীরে ধীরে সময়ের সাথে স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
পরিশেষে বলা যায়, গুড ফ্রাইডে চুক্তির ফলে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের থেকে একটু বাড়তি সুবিধা পাবে আয়ারল্যান্ড। তা কেবলমাত্র সাধারণ জনগণের ফ্রি মুভমেন্টের ক্ষেত্রে। অপরদিকে নো-ডিল ব্রেক্সিট হলে বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে আয়ারল্যান্ডই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। কারণ, আয়ারল্যান্ডই কেবলমাত্র অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের থেকে এখন বিচ্ছিন্ন দেশ, যেখানে ইংল্যান্ডই ছিল একমাত্র সংযোগ মাধ্যম। গুড ফ্রাইডে চুক্তি এবং ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তির কারণে আয়ারল্যান্ড কিছুটা হলেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। তারপরেও সব শেষই শেষ না। অদূর ভবিষ্যতে হয়ত আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমন কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যা হবে সবার জন্যই মঙ্গল।
“নবীন প্রভাতের নতুন আলোকে, স্বাগত জানাই এই ধরণী লোকে।”
আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকার পক্ষ থেকে আমাদের সকল পাঠক পাঠিকা ও সকল শুভানুধ্যায়ীদের জানাই ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা। মহামারী করোনার মধ্য দিয়েই 2020 পেরিয়ে 2021 চলে এলো। 2020 সালে আমাদেরকে অনেক কিছু শিখিয়ে গিয়েছে। সময় এসেছে এবার নতুন করে পেছনের সকল দুঃখ বেদনা ভুলে 2021 কে সাজিয়ে তোলার। সবার জীবন হোক সুন্দর, ছন্দময়,নিরাপদ এবং সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। সবাই ভাল থাকুন আর থাকুন “আইরিশ বাংলা টাইমস” পত্রিকার সাথে
এসেছিলো বিশ, নিয়েছে বিদায় ছড়িয়ে বিষ এলো একুশ, জানিনা এসেছে নিয়ে কি আশীষ হবে একদিন গল্প, হবে ইতিহাস প্রজন্ম করবে থিসিস খুঁজে পেতে চাইবে তারা কেমন ছিলো ওই দুহাজার বিশ।
হাতে সেনিটাইজার মুখে মাস্ক বিশের শিক্ষা এই করোনা ছাড়েনি ফকির বাদশা হয়ে থাকুক সে যেই একুশ এসেছে আমাদের মাঝে বার্তা জানা নেই ধোঁয়াসার চাদরে ঢাকা সব, রবে কি পুরনো নিয়ম সেই!
বিশে মানুষ হারিয়েছে হিম্মত, হৃদয় পুড়ে ছারখার স্বজনের ব্যাথায় আকাশে বাতাসে হাহুতাশ আর হাহাকার পৃথিবী যেনো পৃথিবী নেই শঙ্কিত এক কারাগার পারবে কি একুশ হতে কান্ডারি নতুন এক বিশ্ব আঁকার?
আপনাদের সকলের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে, গত ২৮সে ডিসেম্বর রোজ সোমবার আইরিশ বাংলা টাইমসের উদ্যোগে পূর্ব নির্ধারিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দের উপস্থিতিতে একটি ভার্চুয়াল মতবিনিময় ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনা সভায় আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকেই অংশ গ্রহণ করেন। এই আলোচনা সভার মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থী ও অভিভাকবৃন্দের মতামত শুনা এবং উদ্যোক্তাদের সাথে পরিচিত এবং উক্ত বিষয় সম্মন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা।
আলোচনা সভাটি সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় উদ্যোক্তাদের সূচনা বক্তব্য ও প্যানেল পরিচিতির মাধ্যমে শুরু হয়। আলোচনায় শিক্ষার্থীগণ জানায়, তারা এমন একটি ব্যবস্থাপনা পেলে খুশি হতো যার মাধ্যমে তারা আয়ারল্যান্ডের ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সমবয়সী সকল শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচিত হতে পারবে এবং তাদের সহযোগিতার পরিধি প্রসস্থ করতে পারবে। তাদের সাথে পড়াশুনা ও চাকরির বা উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে নানা তথ্য বিনিময় করতে পারবে। তাছাড়া সিনিয়র শিক্ষার্থীবৃন্দ বা বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে কেউ কখনো কোন বিষয়ে টিশন দিতে চাইলে জুনিয়রদেরকে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তা সহজেই প্রদান করতে পারবে। তারা আইরিশ বাংলা টাইমসের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এ রকম একটি মহৎ কাজে তাদেরকে যুক্ত করায়।
অভিভাবকবৃন্দ জানান, দিন দিন আয়ারল্যান্ডে আমাদের শিক্ষার্থীগণ বড় হচ্ছে। এদেরকে নিয়ে আইরিশ বাংলা টাইমসের প্রস্তাবিত পরিকল্পনাকে তাঁরা স্বাগত জানান। তাঁরা বলেন, এ রকম একটা উদ্যোগ নিঃসন্দেহে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে একে অপরের কাছে নিয়ে আসবে। তাদের মধ্যে একটি বন্ধন তৈরিতে সহায়তা করবে। এতে তারা পড়াশুনার প্রতি বেশি আগ্রহী হবে এবং প্রতিযোগী মনোভাব নিয়ে ভালো রেজাল্টের প্রতি আরো অধিক পরিমানে মনোনিবেশ করবে। আমাদের ছেলে মেয়েরা যদি বাৎসরিক একটি ম্যাগাজিনে নিজের স্মৃতিকে ধরে রাখতে পারে তাদের কাছে এটি একটি গর্বের ও আনন্দদায়ক বিষয় হবে। মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকরি সকল অভিভাবক আইরিশ বাংলা টাইমসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও সকল ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
ভার্চুয়াল আলোচনা সভাটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে আনন্দমূখরভাবে রাত সাড়ে এগারোটায় শেষ হয়।
উক্ত সভায় শিক্ষার্থীবৃন্দ ও অভিভাবকবৃন্দের সাথে আইরিশ বাংলা টাইমসের কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে নিন্মের সিদ্ধান্তে উপনীত হয় :-
১: প্রতি বছর পাশকৃত সকল শিক্ষার্থীর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে ২: পাশকৃত সকল শিক্ষার্থীর ছবি সম্বলিত ও পিতামাতার নাম ও কাউন্টি উল্লেখ করত একটি ম্যাগাজিন পাবলিশ করা হবে ৩: করোনার লকডাউন শেষে বাৎসরিক একটি নবীনবরন বা গেট টুগেদার বা সম্মাননা প্রদান করার চেষ্টা করা হবে ৪: সময় সময় সম্ভব হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয় ভিত্তিক বিতর্ক প্রতিযোগিতার বা জুনিয়র ও লিভিং সার্টিফিকেট বা তৎসম শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভার্চুয়াল পরিচিতিমূলক আলোচনার আয়োজন করার প্রস্তাব করা হবে ৫: আইরিশ টিভি ও রেডিওতে মাইগ্রান্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন টকশোতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে সহযোগিতা করা যেতে পারে ৬: আইরিশ যে কোনো পত্রিকায় তাদের লেখা কবিতা, গল্প, ক্রিয়েটিভ রাইটিং বা তাদের স্কুলের যেকোন প্রজেক্ট পাবলিশ করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা যেতে পারে
প্রয়োজনীয়তার তাগিদে আইরিশ বাংলা টাইমস কর্তৃপক্ষ অভিভাবক বৃন্দের সাথে মতবিনিময় ও পরামর্শক্রমে সকল কর্ম সম্পাদন করবে বলে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদকমণ্ডলী থেকে – আব্দুর রাহিম ভূঁইয়া, মশিউর রহমান, ওমর ফারুক নিউটন, নাসির খান সাকি
আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী গার্জিয়ানদের মধ্যে NI থেকে – মেহেদী হাসান, আব্দুল রব; ডাবলিন থেকে – সাহাদাত হোসাইন, তারেক সালাউদ্দিন, শওকত মাসুম, দিলীপ বড়ুয়া, জালাল আহমেদ ভূঁইয়া, মাহফুজুল হক; লিমেরিক থেকে -ডেপুটি মেয়র আজাদ তালুকদার, মনিরুল ইসলাম, আনোয়ারুল হক, সাজেদুল চৌধুরী রুবেল; কর্ক- ফয়জুল্লাহ শিকদার, আশরাফুল ইসলাম; ওয়েক্সফোর্ড থেকে – অপু কাজী; কিলকিনী থেকে – সৈয়দ আহমদ রেদোয়ান বাবু; নাভান/কাভান থেকে – মোশাররফ হোসাইন; গলওয়ে থেকে – ডাক্তার মুসাব্বির হোসাইন; কেরী/ট্র্যালি/কিলারনী থেকে – মশিউর রহমান; ওয়াটারফোর্ড থেকে – শিবলী ইসলাম, রনদীপ বড়ুয়া; ম্যায়ো থেকে – আজীম জুবায়দুল হক।
নতুন প্রজন্মের শির্থীরা কমিউনিটির কাছ থেকে তাদের প্রত্যাশার কথা জানায়। এদের মধ্যে থেকে উপস্থিত ছিল – তাউসিফাতুল জান্নাত, মাদিয়াতুল জান্নাত, ঐশী, মুস্তাকিমুল হক, সাজিদ, জান্নাত।
আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে সবাইকে নিন্মের লিঙ্কে ২০২০ সালে যারা উক্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে সকলকে রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত নাগরিকদের জন্য সুখবর এখন থেকে আপনার যে কোন জন্মদিনের অনুষ্ঠান, বিয়ের অনুষ্ঠান, গায়ে হলুদ, সুন্নতে খাৎনা ও সহ যেকোন অনুষ্ঠানের ইভেন্ট মেনেজমেন্ট সার্ভিসের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন সারমিন’স ইভেন্টসের সাথে। যোগাযোগের নাম্বার: 0863725339 ইমেইল: shaylasharmin1975@gmail.com মাত্র ১০০ ইউরো থেকে শুরু করে আপনার বাজেটের মধ্যে কোটেশন পেতে আজই যোগাযোগ করুন।
আয়ারল্যান্ড জুড়ে লেভেল-৫ সতর্কতা জারি,চলবে জানুয়ারির ৩১ তারিখ পর্যন্ত – তিশখ মিহল মার্টিন।
সিলেট টু আয়ারল্যান্ড রিপোর্টঃ-নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা ভাইরাস যুক্তরাজ্যে আঘাত হানার পর থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আয়ারল্যান্ড খুব সতর্ক অবস্থানে ছিল, কিন্তু বড় দিনের ছুটি উপলক্ষে লকডাউন চলছিল ঢিলেঢালা ভাবে।প্রতিদিনই জ্যামিতিক হারে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে, আজ বুধবার স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭১৮ জন। করোনার উপসর্গ নিয়ে আজ মৃত্যু বরণ করেছেন ১৩ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাবার পূর্বেই আইরিশ প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমারজেন্সী টিমের পরামর্শে জরুরী ভিত্তিতে লেভেল -৫ লকডাউন ঘোষণা দিয়েছেন।পূর্ণমাত্রার লেভেল-৫ চলমান থাকবে জানুয়ারীর ৩১ তারিখ পর্যন্ত।প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী জানুয়ারীর ১১তারিখ পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, অত্যাবশকীয় জীবন রক্ষাকারী পণ্য বা সেবা ব্যতীত সকল বিপনী বিতানগুলো ও শরীর চর্চা কেন্দ্র আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হচ্ছে।সর্বোচ্চ ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আজ মধ্যরাত থেকে আবারও কার্যকর করা হচ্ছে, পারিবারিক ভ্রমণে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তবে বয়স্কদের দেখাশোনা কিংবা সেবা সুশ্রুষার কাজে ভ্রমণ এ নিষেধাজ্ঞার বাহিরে রাখা হয়েছে।
বিবাহ অনুষ্ঠানে একসাথে ৬ জন পারিবারিক সদস্য ও বন্ধু-বান্ধব মিলিত হতে পারবেন তবে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ১০ জন একত্রিত হবার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।ডিপার্টমেন্ট অব হাউজিং এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামী ফেব্রুয়ারী ১০ তারিখ পর্যন্ত সব ধরণের বাড়াটিয়া চুক্তি কিংবা বাড়াটিয়া উচ্ছেদ নোটিশ স্থগিত রাখা হয়েছে।যুক্তরাজ্য থেকে আসা সবধরনের বিমান ফ্লাইট ও ফেরী চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জানুয়ারীর ৬ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আয়ারল্যান্ডে সব ধরণের ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা ভাইরাস সাউথ ইস্ট ইংল্যান্ডে ধরা পড়ার পর দ্রুত সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাজ্য থেকে আয়ারল্যান্ডে ফেরী ও বিমান ফ্লাইট ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার কবলে ছিল।ধারণা করা হচ্ছে নতুন বৈশিষ্ট্যের এই করোনা ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে এবং আয়ারল্যান্ডে ইতোমধ্যে এর অস্থিত্ব ধরা পড়েছে।
যুবকের বয়স ছিল ২০ এর শেষার্ধে। ব্ল্যান্সারডসটাউনের কনোলি হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ডাবলিন ১৫ এর ম্যানরফিল্ড ড্রাইভে রিপোর্টের ভিত্তিতে গার্ডই সেখানে পৌঁছে। যুবকটি তখন অস্রসজ্জিত ছিল এবং গার্ডাকে হুমকি প্রদর্শন করতেছিল। গার্ডই তখন অপ্রাণঘাতী অস্র ব্যবহার করে, কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। দুপুর আনুমানিক ২:৩০ ঘটিকায় এই ঘটনা ঘটে।
এরপর অস্রটি গার্ডার কব্জায় নিয়ে নেয়। যুবকটিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।
টিকা নেওয়ার ৮ দিন পরই যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগোতে এক নার্সের শরীরে করোনা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফাইজারের টিকা গ্রহণের ছয় দিন পর ওই নার্সের শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা দেয়। এর দুদিন পর তার করোনা পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ আসে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ ৪৫ বছর বয়সী নার্স ম্যাথু ফাইজারের তৈরি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। এর ছয় দিন পর তার শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা দেওয়া শুরু করে। এরপর ২৬ তারিখ স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে করোনার পরীক্ষা করালে ধরা পড়ে ভাইরাস।
সান দিয়াগোর ফ্যামিলি হেলথ সেন্টারের ডা. ক্রিস্টিয়ান রামার্স বলেছেন, এটি মোটেই অপ্রত্যাশিত নয়। আপনি যদি কাজ করেন আর কারো মুখোমুখি হন তাহলে আমরা হুবহু এমনটিই প্রত্যাশা করি। তিনি জানান, ম্যাথু টিকা গ্রহণের আগেই হয়তো সংক্রমিত হয়েছিল।
ডা. রামার্স আরও বলেন, টিকা ট্রায়ালের সময়ও দেখা গেছে টিকা দেওয়ার পর ১০ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে সুরক্ষা বলয় তৈরি হতে। এর পরেও রোগীর ১০ থেকে ১৪ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ দরকার হয় পুরো নিরাপত্তার জন্য। প্রথম ডোজে ৫০ শতাংশ নিরাপত্তা দিলেও দ্বিতীয় ডোজের পরে এটি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে।
চারদিকে যখন করোনার আতঙ্ক বিরাজমান, তখন একমাত্র আশার বানী শুনিয়েছিলেন অক্সফোর্ডের প্রফেসর ডঃ সারাহ গিলবার্ট। এপ্রিলেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি ৮০% আত্মবিশ্বাসী যে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন এর একটা সুখবর পাওয়া যেতে পারে। সে আশায় সবাই বুক বেঁধে ছিলাম।
অবশেষে ইউকে ড্রাগ ওয়াচডগ বহু প্রতীক্ষিত অক্সফোর্ড এবং আস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন প্রদান করে। যা জানুয়ারি থেকেই ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হবে। যা অন্যান্য ভ্যাকসিন এর সাথে যুগপৎভাবে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির সম্ভাবনাকে আরো সহজলভ্য ও দ্রুততর করতে সহায়তা করবে।
এই ভ্যাকসিনের সবচেয়ে সুবিধা জনক দিক হল, তা সাধারণ ফ্রিজ তাপমাত্রায় রাখা যাবে। যা হবে সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহনও হবে সহজসাধ্য।
অক্সফোর্ড এবং আস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি অক্ষতিকর চিম্প কোল্ড ভাইরাস দিয়ে গঠিত যা মানবকোষের অভ্যন্তরে বাড়তে পারেনা। এটি করোনাভাইরাসের প্রোটিনের নির্দেশনাবলীযুক্ত জিনগত উপাদান বহন করে। সুতরাং ভ্যাকসিনটি প্রদান করা হলে মনুষ্যদেহ করোনাভাইরাস প্রোটিন তৈরি করে। সুতরাং করোনাভাইরাস আক্রান্ত হবার সাথে সাথে মনুষ্যদেহ করোনাভাইরাস প্রোটিন তৈরি করে ইমিউন সিস্টেমকে প্রতিক্রিয়া করতে সচল করে দেয়।
ইউকে ১০০ মিলিয়ন ডোজ এর অর্ডার করে, যা ৫০ মিলিয়ন মানুষের জন্য। প্রত্যেকে দুই ডোজ করে ভ্যাকসিন নিতে হবে। প্রথম ডোজ গ্রহণের ১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে। ইউকে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে প্রথম ডোজ দিতে চেষ্টা করবে। ভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ সর্বপ্রথম হাই-রিস্ক সম্পন্ন গ্রুপের মধ্যে প্রদান করা হবে।
অক্সফোর্ড এবং আস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনকে গেম চেঞ্জার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
গত বছর ডিসেম্বরে চীনে প্রথম যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছিল- সেটা এখন পর্যন্ত অন্তত ১৭ বার পরিবর্তিত হয়েছে। অনেক পরিবর্তনই ভাইরাসের আচরণে কোনও প্রভাব ফেলে না। কিন্তু দু-একটি ক্ষেত্রে ভাইরাসটি এমন কিছু মিউটেশন ঘটিয়ে ফেলে- যা তাদের টিকে থাকা এবং বংশবৃদ্ধির ক্ষমতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এরকম মিউটেশন বহনকারী ভাইরাস তখন প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটাতে থাকে- যদি মহামারী ছড়ানোর পূর্বশর্তগুলো অনুকুল থাকে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ড. লুসি ভ্যান ডর্প এ তথ্য জানান।
যুক্তরাজ্য থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাসের যে মিউটেশনটি নিয়ে এখন সারা দুনিয়ায় হৈচৈ চলছে তার নাম B.1.1.7 অথবা VUI-202012/01 – এবং এটির সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অন্য প্রজাতিগুলোর চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি। ব্রিটেনে এটি এখন ছড়াচ্ছে অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে। করোনাভাইরাসের গায়ে যে কাঁটার মত স্পাইকগুলো থাকে- এ মিউটেশনের ফলে সেগুলোর প্রোটিনে এমন কিছু পরিবর্তন হচ্ছে যার ফলে এটা আরও সহজে মানুষের দেহকোষে ঢুকে পড়তে পারছে। এটিই বিজ্ঞানীদের বিশেষ দুশ্চিন্তার কারণ। এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে ১৪টি মিউটেশন চিহ্নিত করা হয়েছে। ভাইরাসের মধ্যে প্রোটিন তৈরির উপাদান হচ্ছে এ্যামিনো এসিড এবং তাতে একটা পরিবর্তন নিয়ে আসছে এই মিউটেশন।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, হয়তো এর কোনও কোনওটি ভাইরাসকে দ্রুত ছড়াতে পারার ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলছে। এসব মিউটেশনের কথা বৈজ্ঞানিকদের আগেও জানা ছিল, কিন্তু এত বিশদভাবে জানা ছিল না।
স্পাইক প্রোটিনে এনফাইভ জিরো ওয়ান নামে একটি মিউটেশনের কথা আগে জানা গিয়েছিল কিন্তু এখন এটির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিবর্তন হয়ে থাকতে পারে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পি সিক্সএইট ওয়ান এইচ নামে আরেকটি মিউটেশন জীববৈজ্ঞানিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। কিছু জেনেটিক সংকেত এ মিউটেশনের সময় বাদ পড়েছে- যা এর আগে নেদারল্যান্ডে মিংক নামে এক ধরণের লোমশ প্রাণীর মধ্যে দেখা গিয়েছিল। এই প্রাণীর লোমশ চামড়া দিয়ে দামি কোট তৈরি হয় এবং এজন্য কিছু দেশে ফার্মে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয় এই মিংক।
আয়ারল্যান্ডে কর্মজীবীদের জন্য সুখবর হাতছানি দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন লিভিং ওয়েজ/বেতন ঘন্টাপ্রতি €২.২ বৃদ্ধির আশা প্রকাশ করেন। বর্তমানে মিনিমাম লিভিং ওয়েজ হচ্ছে ঘণ্টাপ্রতি €১০.১০ যা বৃদ্ধি হয়ে হবে €১২.৩০ প্রতি ঘণ্টায়। লিভিং ওয়েজ বর্তমান টার্ম মিনিমাম ওয়েজের স্থলাভিষিক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেন, ”বর্ধিত লিভিং ওয়েজ সমাজের মধ্যে অসম আয়ের বণ্টনে সামঞ্জস্যতা আনবে। যাতে করে সবাই মোটামুটি ভালো মানের জীবনযাত্রা উপভোগ করতে পারে”।
তিনি আরো বলেন, ”আমরা কোভিড থেকে অনেক কিছু শিখেছি, যারা নিম্ন আয়ের আছে আইরিশ ইকোনোমিতে তাদের অবদান অনেক যা আমরা করনাকালিন সময়ে দেখেছি, এবং আমি মনে করি আমাদের তাদের দিকে নজর দেওয়া দরকার এবং সরকার জীবিকা নির্বাহের পুরো ব্যপারটি দেখবে’’। কর্মজীবীদের আরো ভালো মানের কাজের পরিবেশ সৃষ্টির ব্যাপারেও দৃষ্টিপাত করতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, ”আয়ের অসমতার দিক থেকে আয়ারল্যান্ড অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো অবস্থায়ই আছে। ২০০০ সালের পর থেকে আয়ারল্যান্ডে আয়ের অসমতা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। তারপরেও আমাদেরকে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে এবং কোভিড পরবর্তী সময়েও এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে চলতে হবে’’।
নতুন রেটে বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি পরীক্ষাধীন রয়েছে, তা হয়ত নতুন বছরে কার্যকর হতে পারে।
৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ইতালির প্রাচীন শহর পম্পেইয়ের ভিসুভিয়াস পর্বতের আগ্নেয়গিরির উত্তপ্ত লাভার নিচে চাপা পড়ে পম্পেই নগরী। এতে ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার মানুষ মারা যায়। সেখানে ছাইয়ের স্তূপ থেকে দুই হাজার বছরের পুরোনো ফাস্ট ফুডের দোকানের সন্ধান পায় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এই দোকান থেকে প্রাচীন রোমানদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।দোকানের স্ন্যাক্সের কাউন্টারটি পলিক্রম নকশায় সজ্জিত। আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে ঢাকা ছিল এ দোকান।
ফাস্ট ফুডের ওই দোকানগুলোকে বলা হতো ‘থার্মোপোলিয়াম’। গ্রিক শব্দ ‘থার্মোর’ অর্থ গরম আর ‘পোলেও’ শব্দের অর্থ বিক্রি। অর্থাৎ গরম জিনিস বিক্রির জায়গা থার্মোপোলিয়াম। পম্পেই নগরের ওয়েডিং স্ট্রিট ও অ্যালে অব ব্যালকোনিজের নামের দুই এলাকার মাঝামাঝি জায়গায় ছিল এই গরম খাবারের দোকানের অবস্থান।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের দল ফাস্ট ফুডের ওই দোকানে হাঁস, শূকর, ছাগলের হাড়ের টুকরো খুঁজে পেয়েছেন। মাটির পাত্রে পেয়েছেন মাছ ও শামুক। এগুলোর মধ্যে কিছু উপাদান রোমান যুগের খাবার ‘পেলার’ মতো একসঙ্গে রান্না করা হয়েছিল।
ফাস্ট ফুডের দোকানটির কাছে একটি ঝরনা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৫০ বছরের এক ব্যক্তির দেহাবশেষ ও শিশুর বিছানা পাওয়া গেছে। সম্ভবত দোকানের পেছনে বয়স্ক কোনো ব্যক্তি বসবাস করতেন এবং আরেকজন মানুষেরও দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। অগ্ন্যুৎপাত শুরুর পর তারা মারা যান।
পম্পেই ইতালির দ্বিতীয় পর্যটন এলাকা। গত বছর ৪০ লাখ পর্যটক সেখানে যান। এটি রোমান সাম্রাজ্যের অন্যতম ধনী এলাকা ছিল। অগ্ন্যুৎপাতের ছাইয়ের স্তূপের নিচে চাপা পড়ে অনেক ভবন ও জিনিস।
ফজরের নামাজ পড়ে গাজী সাহেব মসজিদ থেকে বেরুলেন। পূবাকাশে তখনো সূর্যের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েনি। আলো আঁধারি ভাবটা কেটে যায়নি। তবে সাদা সাজের ভাঁজে ভাঁজে ঈষৎ রক্ত বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে। একটু একটু বাতাস বইছে। সকাল বেলার হিমশীতল এ বাতাস হৃদয়কে বেশ সতেজ ও প্রফুল্ল করে তোলে। হৃদয়ের এ প্রফুল্লতা নিয়ে প্রতিদিন সকালে তিনি হাঁটেন। মর্নিং ওয়াক করেন।
আজও হাঁটছেন। এ সময়ে হাঁটতে খুবই ভালো লাগে। রাস্তাঘাট নীরব নিস্তব্ধ থাকে। দু একটি রিক্সার টুং টাং শব্দ ছাড়া তেমন কোনো শব্দ ও বায়ু দূষণের মতো ভারী যানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়না। গাজী সাহেবের হাঁটার এ অভ্যেস আজকের নতুন নয়। তিরিশ বছর আগে থেকে তিনি হাঁটা শুরু করেছন। এ জন্যই মাশাল্লাহ তার শরীর স্বাস্থ্য ভালো। ডায়াবেটিস, কলেস্টরল বা প্রেসারের মতো বজ্জাত রোগ সমুহ তাকে কাবু করতে পারেনি। এ বয়সে এসেও ঘোড়ার মতো দৌড়ে বেড়ান। ছেলেবেলায় সাইকেল রেসে ফার্স্ট হতেন। এখনো যে কোনো তেজোদীপ্ত তরুণকে হারিয়ে দেবেন অবলীলায়। শারীরিক ভাবে যেমন তিনি শক্তি সামর্থ্যের অধিকারী তেমনি মানসিক ভাবেও বেশ দৃঢ় প্রত্যয়ী। এমন একজন দৃঢ় প্রত্যয়ী লোকের মনই সেদিন হু হু করে কেঁদে উঠলো যখন দেখতে পেলো তার মতো বয়সী এক বুড়ো চটের বস্তা পরিহিত অবস্থায় কনকনে শীতের সকালে খোলা আকাশের রাস্তায় কাতরাচ্ছে।
গাজী সাহেব যে শহরে বসবাস করেন সেখানে এমন চিত্র নতুন নয়। শুধু ওই শহরে কেনো, পুরো দেশেই এমোন চিত্রের অভাব নেই। সবাই এসবের সাথে কমবেশি পরিচিত। তবু গাজী সাহেবের আবেগসিক্ত অন্তরাত্না কেনো জানি কেঁপে উঠলো। পঞ্চাশ বছরের আগের ইতিহাস মনে পড়ে গেলো। প্রৌঢ়া দেশটার প্রতি তাকিয়ে তার বেশ কষ্ট হলো। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পরেও এমন চিত্র দেখার জন্যই কি তাঁরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন? জীবন বাজি রেখে পাকিদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন?
গাজী সাহেব তখন কলেজের ছাত্র। ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে যে কজন তুখোড় ছাত্র নেতা ছিলেন তার মধ্যে তিনি অন্যতম। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ শুনার পর তার ইন্দ্রিয়ে বিদ্যুত তরঙ্গ খেলে গেলো। “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” কথা গুলো তার কানে অমর কাব্য হয়ে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো। গ্রামে ফিরে গেলেন। যুদ্ধ আসন্ন বুঝতে পেরে গ্রামের মানুষকে জাগিয়ে তুললেন। প্রস্তুতি নিতে বললেন। পঁচিশে মার্চের কালো রাতের খবর ছড়িয়ে পরার পর গাজী সাহেব নিজেকে হারিয়ে ফেললেন। বঙ্গবন্ধুকে পাকি সেনারা বন্দী করে নিয়ে গেছে শুনে ভেঙ্গে পড়েন। কিন্তু ভেঙ্গে পড়লে তো চলবেনা। মহান নেতা যে মন্ত্র দীক্ষা দিয়ে গেছেন সে দীক্ষায় উজ্জীবিত হয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। যুদ্ধ করতে হবে। দেশকে স্বাধীন করতে হবে।
গাজী সাহেব আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। নিজের প্রতিচ্ছবি দেখলেন। মানুষ সম্ভবত নিজের চেহারাটাই সবচেয়ে বেশি কম দেখে। অথচ নিজেকেই সে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। গাজী সাহেবও কি তাই? তিনি কাকে বেশি ভালোবাসেন? নিজেকে? দেশকে? মাকে? নাকি ওই জয়াকে? নাহ, তিনিও নিজেকেই বেশি ভালোবাসেন। নিজেকে ভালোবাসেন বলেই তিনি মা, জয়া ও দেশকে ভালোবাসতে পেরেছেন। নিজেকে ভালোবাসেন বলেই মায়ের আদর ও জয়ার ভালোবাসাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে যুদ্ধে যাবার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন।
গাজী সাহেবের বাবা নেই। মারা গেছেন অনেক আগেই। মা’র একমাত্র কলিজার ধন তিনি। তাই মা তাকে যুদ্ধে যেতে দিবেন কিনা দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছেন। যেভাবেই হোক মাকে রাজি করাতে হবে। তাই পঁচিশে মার্চের কালো রাতের ভয়াবহতার কথা মাকে বিশদ ভাবে বর্ণনা করলেন তিনি। শ্রমজীবী মানুষরা যে যেখানে যে অবস্থায় ছিলো সেভাবেই সেখানে মারা গেছে। শহীদ মিনারকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইউনিভার্সিটি চত্বরে শুধু রক্ত আর রক্ত। মৃত মানুষ গুলোকে দেয়া হয়েছে গনকবর যেগুলো দেখতে অনেকটা ঢিবির মতো। ওখানে কারো হাত, কারো পা, কারো মাথার অংশ পুঁতে রাখা হয়েছে। মাকে এসব বলতে বলতে গাজী সাহেবের কন্ঠ ভারী হয়ে এল। এবার মা’র দিকে তাকিয়ে বললো, “বলতো মা, এ অবস্থায় আমার কি করা উচিত?”
ছেলের মনের অবস্থা মা আঁচ করতে পারেন। কিন্তু ছেলে যে তাঁর সাত রাজার ধন। চোখের মনি। বাবার একমাত্র আমানত। এ ছেলেকে যুদ্ধে পাঠিয়ে তিনি বাঁচবেন কি করে? তবু ছেলেকে তা বুঝতে দিলেন না। দৃঢ় অথচ স্বাভাবিক কন্ঠে বললেন, “তাহলে তুমি কি চাও?” গাজী সাহেব কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো, জানি মা তুমি খুব কষ্ট পাবে। তবু আমি যুদ্ধে যেতে চাই। প্রতিশোধ নিতে চাই। দেশকে শত্রু মুক্ত করতে চাই” মা’র চোখ ছলছল করছিলো। কান্না চাপিয়ে তিনি বললেন, “প্রত্যেক মা স্বার্থপর, আমিও স্বার্থপর। তবু আমার একমাত্র ছেলেকে দেশের জন্য উৎসর্গ করতে বিন্দু মাত্র কুণ্ঠিত নই। যাও, বীরের মতো যাও। যদি মরতে হয় বীরের মতো মরো, আর যদি ফিরে আসতে পারো তবে বীরের মতোই ফির।”
এবার জয়ার পালা। ওকে কি করে রাজি করা যায়! পাগলের মতো ভালোবাসে গাজীকে। স্কুল জীবনের প্রেম। গাজী যখন ম্যাট্রিকে পড়ে তখন জয়া ক্লাস সেভেনের ছাত্রী। তখন থেকেই তাদের প্রেম। টুকটাক অংক শেখাত গিয়ে গাজী সাহেব প্রেমের জটিল অংকে জড়িয়ে পড়েন। একই নদীর অভিন্ন স্রোতে মিশে যায় দুটো সত্তা। জয়ার কতো আশা, পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে রচনা করবে তারা ভালবাসার ময়ূর সিংহাসন। এ আশা ও স্বপ্নকে তিরোহিত করার কোনো অধিকার গাজী সাহেবের নেই। কিন্তু তাকে যে যুদ্ধে যেতেই হবে। জয়া কি তা মেনে নেবে? মোটেও না। কিছুতেই জয়া তাকে যুদ্ধে যেতে দেবে না। তাই গাজী সাহেব মনস্থির করলেন, আপাতত জয়াকে যুদ্ধ যাবার কথাটি শুনাবেননা। সকল প্রস্তুতি শেষে যাবার দিন কেবোল তার সাথে দেখা করে বিদায় নিয়ে চলে যাবেন। বিদায় মূহুর্তে জয়া বাধা দেয়ার খুব বেশি একটা সময় ও সুযোগ কোনোটাই পাবে না।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে গাজী সাহেব যুদ্ধে যোগদানের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন। মা ও জয়াকে এভাবে রেখে যেতে বড্ড কষ্ট হচ্ছিলো তার। মা বার বার আঁচলে চোখ মুছছিলেন। আর জয়ার কি কান্না! তার আহাজারি ও আর্তনাদে যেনো আকাশ ভারী হয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু এসবের কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারেনি। দেশ বাঁচাতে না পারলে শুধু নিজেরা বেঁচে থেকে কি লাভ? পরাধীন দেশে এ ভালোবাসারই বা কি মূল্য?
যুদ্ধের মাঠে গাজী সাহেব কতো সহযোদ্ধাকে হারিয়েছেন, কতোজনের প্রাণ যেতে দেখেছেন তার কোনো ইয়ত্বা নেই। নিজেও কতোবার সাক্ষাত আজরাঈলের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন তা হিসেব করা মুস্কিল। সবসময় তার মা’র ওই কথাটা মনে করতেন, “যদি মরতে হয় বীরের মতো মরো” তাই তিনি কখনো ভয় পেতেন না। পিছ পা হতেন না। তার প্রখর আত্মবিশ্বাস ছিলো, আজ না হয় কাল দেশ একদিন স্বাধীন হবেই।
সত্যি দেশ একদিন স্বাধীন হলো। ষোল ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে পাকিদের আত্মসমর্পণের খবর ইতারে ভেসে এলো। চারিদিকে আনন্দের জয়ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হলো। বিজয়ের গৌরব নিয়ে গাজী সাহেব বাড়ি ফিরলেন। মাকে জড়িয়ে ধরলেন। ছেলেকে এতোদিন পরে ফিরে পেয়েও মা তেমন আনন্দ প্রকাশ করলেন না। গাজী সাহেবের ভেতরে কামড় দেয়। জয়া কেমন আছে জানতে চায়। মা কোনো উত্তর দেননা। হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। গাজী সাহেব আরও বেশি অস্থির ও উত্তেজিত হয়ে উঠেন। প্লিজ মা, বলো জয়ার কি হয়েছে?
মা কি উত্তর দেবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। কিন্তু সত্যকে তো মিথ্যে দিয়ে চাপা রাখা যায়না। তাই কোনো রকমের ভনিতা ছাড়াই মা বেশ দৃঢ় কন্ঠে বললেন, দেখো বাবা জীবনে যা ঘটার নয় তাই অনেক সময় ঘটে যায়। ভাগ্যবিধাতার উপর কারো হাত নেই। জানি, তোমার খুব কষ্ট হবে। তারপরও আমাকে সত্য কথাটাই বলতে হচ্ছে। কুতুব বেপারীর সহযোগিতায় জয়াকে মিলিটারিরা বাজারের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সে ফিরে আসেনি। জানিনা সে বেঁচে আছে না মরে গেছে। কথাটা শুনে গাজী সাহেব হাজার ভোল্টের বিদ্যুত শক্ড খেলেন। তার মাথায় যেনো আসমান ভেঙ্গে পড়লো। জয়া ছাড়া তার বেঁচে থেকে লাভ কি!
দিন শেষে সবাইকে সবকিছু মেনে নিতে হয়। কারো জন্য জীবন থেমে থাকে না। গাজী সাহেবের জীবনও থেমে থাকেনি। তাকেও সামনের দিকে অগ্রসর হতে হয়েছে। নতুন ভাবে বাঁচতে হয়েছে। কিন্তু এ বাঁচা যে তাকে এভাবে পীড়া দেবে কে জানতো! যুদ্ধে যদি তিনি শহীদ হয়ে যেতেন তবু ভালো ছিলো। আজ দেশে যা দেখতে পাচ্ছেন তা তার দেখতে হতোনা।
গাজী সাহেবের জীবনের গল্পের মতো লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার জীবনে এমন করুন গল্প লুকিয়ে রয়েছে। দেশের জন্য তারা যে ত্যাগ তিতিক্ষা করেছেন তাকি এমন দেশ গড়ার জন্য? এমন সোনার বাংলা দেখার জন্য?
এক কালে দেশ সামরিক শাসকরা শাসন করেছে। স্বৈর শাসকরা শাসন করেছে। তাদের কথা আলাদা। শেখের ব্যাটির কাছ থেকে তো এমনটি আশা করা যায়না। হ্যাঁ এ কথা সত্য তিনি মুক্তিযুদ্ধাদেরকে দান অনুদান দিচ্ছেন। ভাতা বাড়িয়ে দিচ্ছেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও তিনি অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সহ অগণিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ছিলো সে সোনার বাংলা গড়ার মূল মন্ত্র থেকে তিনি অনেক দূরে। নৈতিক শিক্ষার উন্নয়ন দেশে ঘটেনি। যদি এ ক্ষেত্রে সফল হতে পারতেন তাহলে দেশে ভুখা নাংগা থাকতোনা। দেশ স্বাধীনের এতোদিন পরেও ওই বৃদ্ধের মতো কাউকে চটের বস্তা পরে খোলা আকাশের নিচে প্রচন্ড শীতে কাতরাতে হতোনা। খোদ বঙ্গবন্ধুর মেয়ে ক্ষমতায় থাকা সত্বেও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে ভাঙ্গার দুঃসাহস দেখাতে পারতো না। কিংবা ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে যে এতো চেঁচামেচি তাও করতে পারতো না। তাছাড়া যে দেশটি স্বাধীনতার ঊনপঞ্চাশ বছর পরও অর্থনৈতিক মুক্তি পায়নি, সয়ংসমপূর্ন হতে পারেনি, যার দিকে তাকালে এখনো বড্ড মায়া হয় সে দেশে ভাস্কর্য নির্মাণ কি খুব জরুরী? ভাস্কর্য বানিয়ে কি বঙ্গবন্ধুকে সম্মান দেখাতে হবে? হৃদয়ে ধারণ করতে হবে? বঙ্গবন্ধুকে মনে রাখার জন্য এসবের কিছুই দরকার নেই। তিনি থাকবেন চিরদিন মানুষের হৃদয়ে। ইতিহাসের পাতায়।
বিশেষ কোনো দিবস টিবস এলেই গাজী সাহেবের মন ভারী হয়ে ওঠে। জয়ার কথা মনে পড়ে। সহযোদ্ধাদের কথা মনে পড়ে। শহীদদের কথা মনে পড়ে। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার চেহারা ভেসে ওঠে। এখন আর সভাসমাবেশে যাননা। স্মৃতি সৌধে যাননা। একা একা ঘরে বসে থাকেন। হালকা আওয়াজ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই অমর ভাষণটি শুনেন। আবেগাপ্লুত হন। কিছুক্ষণ কান্না করেন। উল্টো পথে দেশ হেঁটে চলার জন্য তিনি ক্ষমা ভিক্ষা চান। ক্ষমা করো হে প্রিয় জনক, ক্ষমা করো হে মহান চতুষ্টয়, ক্ষমা করো হে বীর শহীদান।
ভারী বর্ষণ ও ঝড় আঘাত হেনেছে আয়ারল্যান্ডে, যার নামকরণ করা হয়েছে স্ট্র্রম বেল্লা। যার বাতাসের বেগ ঘন্টায় ১১০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত হতে পারে। আগামীকাল ভোর চারটা পর্যন্ত সমগ্র এয়ারল্যান্ডব্যাপী হলুদ সংকেত ঘোষণা করা হয়েছে। একত্রিতভাবে ঝড়ো ধমকা বাতাস, দানবাকার ঢেউ এবং ভারী বর্ষণের কারণে দেশের উপকূলবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সমগ্র আয়ারল্যান্ডব্যাপী আজ সারারাত জড় এবং ভারি বর্ষণ হতে পারে, যা ভোর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
প্রতি বছরের ন্যায় গতকাল ২৫সে ডিসেম্বর আইরিশ মুসলিম কালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে আয়ারল্যান্ডে আয়োজিত হয় ১৭ তম তাফসিরুল কোরআনের মাহফিল। প্রতি বছর এডামস টাউনের কমিউনিটি সেন্টারের হল ভাড়া করে এই মাহফিলটি অনুষ্ঠিত হতো। এবার করোনার কারণে শারীরিকভাবে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয় নি তাই জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয় এবং ফেইসবুকের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
মাহফিলের প্রধান বক্তা ছিলেন বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন আব্দুল্লাহ জাফরী। এছাড়া যুক্তরাজ্য থেকে শায়খ ড. আব্দুস সালাম আজাদী, পরিচালক, কিউ এন এস একাডেমি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড মুসলিম হেরিটেজ রিসার্চ সেন্টারের গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রুহুল আমিন অনুষ্ঠানে তাফসীর পেশ করেন। মাহফিলটি সভাপতিত্ব করেন ক্লোনডালকিন মসজিদের খতিব ও সভাপতি মুহতারাম আব্দুল মান্নান ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্লোনডালকিন মসজিদের সেক্রেটারি মুহতারাম শামসুল হক। এই জুম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জনাব মিজানুর রহমান জাকির।
পবিত্র জুমার নামাজের পরপরি অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। শুরুতে পবিত্র কোরআনে পাক থেকে তেলাওয়াত করেন জনাব এনামুল হক। তারপর সুললিত কণ্ঠে ইসলামী গান পরিবেশন করেন সুরের জাদুকর বাংলাদেশ থেকে, বিশিষ্ট ইসলামী শিল্পী জনাব মশিউর রহমান। সাথে সাথে আয়ারল্যান্ড থেকে ইসলামী সংগীত পরিবেশনে যেগদান করেন জনাব আইয়ুব আলী ও শিশু শিল্পী জারিফ।
মাহফিলটি দুপুর দুইটা বাজে শুরু হয়ে রাত সাড়ে সতটায় সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন আব্দুল্লাহ জাফরীর মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সম্মানিত আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই ও বোনেরা, আমাদের জানা তথ্য অনুযায়ী আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের গোড়াপত্তন হয় ১৯৭০ এর দশকে। সেই তথ্য অনুযায়ী মরহুম জনাব ইউনুস প্রথম বাংলাদেশী যিনি আয়ারল্যান্ডে এসেছিলেন জীবন জীবিকার অন্বেষনে। তার পরিবার এখনো কেভান শহরে বসবাস করছেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বহু বাংলাদেশি আয়ারল্যান্ডে এসেছেন এবং এখনো এই ধারা অব্যাহত।
অনেকেই দেশ থেকে অধ্যয়ন ভিসা নিয়ে অথবা মালয়েশিয়া কিংবা বাংলাদেশ থেকে চাকরি ভিসা, ভ্রমণ ভিসা, স্বল্পকালীন অবকাশ ভিসা নিয়ে এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন। আবার অনেকেই স্পাউস বা নির্ভরশীল ভিসায় আসেন। আর কিছু নানা উপায়ে অনিবন্ধিত অবস্থায় আয়ারল্যান্ডে আসেন। আয়ারল্যান্ডে এই মুহূর্তে কতজন প্রবাসী বাংলাদেশী আছেন সেই ব্যাপারে আমাদের হাতে সঠিক কোন তথ্য নেই।
বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে আমাদের তৃতীয় জেনারেশন চলছে। যদিও তৃতীয় জেনারেশনের বংশধর এখনো তাদের বাল্যকালে অবস্থান করছে। কিন্তু দ্বিতীয় জেনারেশনেরই কেউ কেউ স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে চাকরি জীবনে প্রবেশ করা শুরু করেছে। এদেরকে খুঁজে বের করা হয়তো সময় সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য। কিন্তু যারা এখনো স্কুলে আছে তাদের সাথে যদি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা যায় তাহলে আমরা জানতে পারবো তাঁরা কত সংখ্যক প্রতি বছর স্কুল শেষ করে কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছে।
আজকে যারা কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছে আগামী ৪/৫ বছরের মধ্যে তারাই আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিতে বা প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হবে। তারাই বাংলাদেশকে এই দেশে রিপ্রেজেন্ট করবে। তারাই আমাদের কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য সরাসরি কাজ করবে। আমরা যদি জানতে পারি আমাদের সন্তানেরা কে কোথায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছে, গর্ব করে আমরাই বলতে পারবো এই দেশে আমাদের অবদান কি আছে? এরকম একটা ডাটার উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সর্বপরি আমরা এই নতুন প্রজন্মের সন্তানদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরী করে দিতে পারলে তারা নিজেরা নিজেরদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একে অপরকে সহযোগিতা করে আমাদের কমিউনিটিতে গঠনমূলক ও গুণগত অবদান রাখতে পারবে। তারা বর্তমানের সাথে পূর্ব কিংবা পরবর্তী জেনারেশনের সুষম একটি সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। সমগ্র অয়ার্ল্যান্ডব্যাপী বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্য থেকেই তারা সমবয়সী বন্ধু গড়ে তুলতে পারবে। তাদের মেধা, সামাজিক ও মানসিক বিকাশে জন্য একজন ভালো বন্ধুর বিকল্প নাই, সেটা আমরা সকলেই বুঝতে পারি। এদের মধ্যে দেশপ্রেম ও দেশের প্রতি টান, ভালোবাসা বা দ্বায়বদ্ধতা বৃদ্ধি করতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমরা মনেকরি প্রত্যেক পিতামাতা তাদের সন্তানের মানসিক ও সামাজিক বিকাশের জন্য নিজ তাগিদেই এদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে উতসাহিত করবেন।
আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য এই কাজটি করে দিতে চাই। প্রতি বছর যারা লিভিং সার্টিফিকেট ও জুনিয়র সার্টিফিকেট দিবে তাদের একটি ডাটা সংরক্ষণ ও প্রচারের কাজ করতে চাই। সাথে সাথে প্রতি বছর এই সকল শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন করতে চাই। তাদেরকে উপহার দিতে চাই অপার বন্ধুত্বের ও মানসিক বিকাশের সম্ভাবনা, সাথে সাথে সমৃদ্ধ করতে চাই আয়ারল্যান্ডে আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটিকে।
এই লক্ষ্যে আমরা নিন্মোক্ত রেজিস্ট্রেশন ফরম টি সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আপনাদের সকলের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা পেলে এই কাজটি সহজেই সর্বোচ্চ্য সংখ্যক তথ্য সম্বলিত একটি তথ্য ভান্ডার হিসেবে গড়তে পারবো। আশা করি আপনারা নিজেরা এই ফরমটি পূরণ করে আপনাদের পরিচিত সকলের সাথে শেয়ার করবেন যারা উক্ত দুইটি পরীক্ষা এই বছর দিয়েছে বলে জানেন অথবা আপনার কাউন্টির একজন রিপ্রেজেন্টেটিভের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন যাদের যোগাযোগ নাম্বার নিন্মে দেওয়া হয়েছে। এই কাজের সুবিধার্থে আমরা আয়ারল্যান্ডকে ১১টি অঞ্চলে ভাগ করেছি। সাথে সাথে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডকে যুক্ত করার চেষ্টাও করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে যোগাযোগ করলে তাঁরা আপনাকে সহায়তা করে কৃতজ্ঞ হবেন।
সংগৃহিত সকল তথ্য শুধুমাত্র আইরিশ বাংলা টাইমস পত্রিকার কর্তৃপক্ষের নিকট সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সাথে সংরক্ষিত থাকবে। এ ক্ষেত্রে GDPR এর গাইডলাইন অনুসরণ করা হবে।
১ – ডাবলিন: ডাঃ জিন্নুরাইন জাইগিরদার (0860852649) – শাহাদাৎ হোসাইন (0863477325) – দিলীপ কুমার বড়ুয়া (0863570339) – জালাল আহমেদ ভূঁইয়া (0861709221) ২ – কর্ক: কাজী আলম (0877148908) – ফয়জুল্লাহ শিকদার (0867878776) – নাসির খান (0892436519) ৩ – গোলওয়ে : ডাক্তার মুসাব্বির হোসাইন (0894424685) – আজিমুল হোসাইন (0879261137) – আশরাফ চৌধুরী শিবলী (0892117869) – মনিরুল ইসলাম বাবু (0892265300) ৪ – মেয়ো: আব্দুল মান্নান মান (0858757073) ৫ – লিমেরিক: সাজেদুল চোধুরী (0857398056) – আনোয়ারুল হক (0894388406) – ওমর ফারুক নিউটন (0838732429) – মনিরুল ইসলাম (0863475931) ৬ – ওয়াটারফোর্ড: রনদীপ বড়ুয়া (0876905155) – রেজোয়ান লতিফ মুন্না (0894552225) – শিবলী ইসলাম (0894529540) ৭ – নাভান / কাভান / মুলিঙ্গার: ডাঃ মিলন (0879251073) – ডাঃ পারভেজ ইকবাল (0873402713) ৮ – কেরি / ট্রলি / কিলারনী: ইকবাল ভমাহমুদ (0863521483) – মশিউর রহমান (0863820725) – আরিফ ইসলাম (0894165953) – মুজিবুর রহমান (0872760485) ৯ – স্লাইগো / লেটারকেনী: আবু হেনা মোস্তফা কামাল (0894836921) – রহমান রুহেল (0834816695) ১০ – ওয়েক্সফোর্ড: অপু কাজী (0863474557) -সৈয়দ নজরুল ইসলাম (0894222095) ১১ – কিলকেননি: সৈয়দ মুস্তাফিজ (0894394570) – সৈয়দ রেদোয়ান (0862284622) ১২ – নর্থার্ন আয়ারল্যান্ড: মেহেদি হাসান (07751154767) – আব্দুর রব (07405893067)
Please fill up the form below. নিচের ফরমটি পূরণ করুন।
ইংল্যান্ডে করোনা ভাইরাসের নতুন এক ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে। যার ফলে ইংল্যান্ডে ভাইরাস সংক্রমণের হার দ্রুত হারে বেড়ে চলছে। ফলশ্রুতিতে ইংল্যান্ড সরকার জরুরি ভিত্তিতে লকডাউনে পরিবর্তন আনছে। ক্রিসমাস উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করলেও নতুন ধরনের এই ভাইরাসের কারণে আবার কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। লন্ডনসহ অনেক শহরে গতকাল থেকে এই লকডাউন কার্যকর হয়।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের ফলে বিভিন্ন দেশ জরুরি ভিত্তিতে ইংল্যান্ডের সাথে ফ্লাইট স্থগিত রাখে। ইউরোপ ইংল্যান্ডের সাথে বর্ডার আপাতত বন্ধ রেখেছে, শুধুমাত্র জরুরি মালামাল আমদানি রপ্তানি ব্যতীত। আয়ারল্যান্ডও ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইংল্যান্ডের সব ফ্লাইট বাতিল করে। ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমারজেন্সি টাইমর ডাঃ ডি গ্যাসকুন বলেন, ‘’নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর ভাইরাস যে বর্তমান ভাইরাস থেকে বেশি ক্ষতিকর তার কোন প্রমাণ নেই, তারপরেও আমরা কোন চান্স নিতে চাই না’’। আয়ারল্যান্ড হেলথ অথরিটি কাছ থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতেছে। প্রয়োজন হলে ইংল্যান্ডের সাথে আরো ধীর্ঘ সময় ফ্লাইট বাতিল রাখতে পারে।
ওইদিকে অস্ট্রেলিয়াতে নতুন ধরনের ভাইরাসের দুইজন রোগী ধরা পড়েছে। দুইজনই ইংল্যান্ড থেকে ভ্রমণ করেছিল। তাদেরকে আপাতত কোয়ারেইন্টাইনে রাখা হয়েছে।
নতুন ধরনের এই ভাইরাস যেন মরার উপর খড়ার ঘা। নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সবার মাঝে আশার সঞ্চার করলেও নতুন ধরনের ভাইরাসের জন্য আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন কার্যকর নাও হতে পারে। নতুন ধরনের ভাইরাসের ক্ষতির মাত্রা কতটুকু বেশি বা কম তা সময়ের সাথেই বোঝা যাবে।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস দীর্ঘ এক বছর যাবৎ আমাদের মাঝে এক তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এর থেকে পরিত্রান মিলতে এখনো আমাদের কতটুকু কাঠখোড় পোড়াতে হবে তার কোন সঠিক দিনকাল জানা নাই।
গত এক বছরে সাড়ে সাত কোটির উপর মানুষ আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা গেছে এই করোনা ভাইরাসে। এর মধ্যে প্রায় ষোল লাখের উপরে মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এখনো গড়ে প্রতিদিন বিশ্ব্যব্যাপী প্রায় সাত লাখ লোক আক্রান্তের বা এই ভাইরাস পজিটিভের রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা দিন প্রতি দশ থেকে তেরো হাজারের মধ্যে বিরাজ করছে। করোনার প্রথম ছোবলে বিশ্বব্যাপী বহুদেশ প্রতিদিন এক হাজার, দুই হাজার বা প্রায় তিন হাজার করে প্রাণ হারিয়েছিল। আর দ্বিতীয় ছোবলে প্রথম ছোবলের দৈনিক সর্বোচ্চ সংখ্যাকে অতিক্রম করছে। স্বয়ং আমেরিকায় বর্তমানে দিন প্রতি তিন হাজার দুইশত কিংবা তিনশত লোক প্রাণ হারাচ্ছে।
২০১৯ সালের শেষের দিকে সর্ব প্রথম যখন এই ভাইরাস পৃথিবীতে হানা দেয়, তখন থেকে বিশ্বের ছোট বড় ওষুধ কম্পানি ও ল্যাবোরেটরিজগুলো গবেষণায় লেগে যায়। এই ভাইরাসেকে নিরুপন করার জন্য নানা রকম টেস্টিং কীটের আবিষ্কার, প্রস্তুত ও ব্যবহার সফলতার সাথে শুরু হয়। কিন্তু এর প্রতিরোধের জন্য সহসাই কোন ব্যবস্থার দ্বার প্রান্তে পৌঁছাতে পারেনি কিছুদিন পূর্ব পর্যন্ত। কারণ যে কোনো ভ্যাকসিন জনসাধারণের দ্বার গোড়ায় আসতে হলে সেটিকে কমপক্ষে ৬ টি ধাপ পার করে আসতে হয়। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সাধারণত দশ থেকে পনেরো বছর সময় লেগে যায়।
যেহেতু এই ভাইরাস অতীতের অনেক ইনফ্লুয়েঞ্জা ও করোনা ভাইরাসের সাথে প্যাটার্নের দিক থেকে সমপর্যায়ের বা কিছুটা ভিন্ন তাই বিজ্ঞানীগণ অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন তড়িৎ উন্নয়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন এবং এখনো করে যাচ্ছেন।
আয়ারল্যান্ডের টিভি ব্যক্তিত্ব, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র রেজিষ্ট্রার, প্রোটিনকুল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন সম্প্রতি চ্যানেল ২৪ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই ভ্যাকসিনের উন্নয়ন ও ব্যবহারের উপর নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন। তিনি জানান নানা জরিপে ও ট্রায়ালে ফাইজার ও বায়োনটেকের ভ্যাকসিন ৯৫% সফল হয়েছে। UK রেগুলেটরি বডি (MHRA), FDA (USA) ও European Medicine Agency (EU) এক যোগে কাজ করে যাচ্ছে এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন ও মান নিয়ন্ত্রনের জন্য। গত ১২ই ডিসেম্বরে ফাইজারের ভ্যাকসিন FDA থেকে অনুমতি পায় এবং কানাডিয়ান রেগুলেটরি বডি থেকে অনুমোদন পায় ১০ই ডিসেম্বর। ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি ফাইজারের ভ্যাকসিন অনুমোদনের জন্য জরুরি বৈঠক ডেকেছে ২১শে ডিসেম্বর।
তিনি জানান গত জুন মাস থেকে MHRA ফাইজারের এই ভ্যাকসিনের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে। সেপ্টেম্বরে তারা ফাইজারের ল্যাবরেটরি ভ্রমণ করে আসেন। তাদের ভ্যাকসিনের স্যাম্পলিং নিয়ে নিজস্ব গবেষণাগারে National Laboratory Standerad এ যাচাই বাছাই করেন তারা। এ সময় ৪৮ জন বিজ্ঞানী এই গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন এবং ২৩শে নভেম্বরে তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে এই ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে ৯৫% সফল। ৬৫ বছর বয়সের উর্দ্ধে যারা তাদের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন ৯৪% সফল। উল্ল্যেখ্য এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যত মৃত্যু হয়েছে তার ৭৫% মৃত্যু ৭০ বছর বয়সের উর্দ্ধের মানুষের। অতএব এই ভ্যাকসিন নিঃসন্দেহে আমরা বয়োবৃদ্ধদের রক্ষার্থে ব্যবহার করতে পারবো।
তিনি জানান এখনো পর্যন্ত আমরা গর্ভবতী নারী ও শিশুর ব্যাপারে কোন তথ্য পাইনি কারণ এদের উপর এখনো কোন ট্র্যায়াল চালানো হয় নি।
এই ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন দুই জন স্বাস্থ্য কর্মীকে দেখা গিয়েছে সামান্য এলার্জিক রিএকশন হতে। সাধারণত কোনো ভ্যাকসিনে প্রতি সাত লাখে এক জনের এলার্জি জনিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায়, তবে ফাইজারের এই ভ্যাকসিন ০.৬% এলার্জি জনিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে তাদের ডাটাতে উল্ল্যেখ করা হয়েছে। ফাইজার নিশ্চিত করেছে যাদের ডিম অথবা বাদাম জনিত এলার্জি আছে তাদের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন নিরাপদ। তবে যাদের উচ্চমাত্রার এলার্জির সমস্যা আছে তাদেরকে এই ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে (MHRA)
তিনি বলেন এই ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে অনাগ্রহ এশীয় অঞ্চলে হয়তো কম তবে ইউরোপ ও আমেরিকায় কিছুটা বেশি। কুইন মেরী বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন ১০০০ লোকের উপর একটি জরিপ করে দেখেছে যে মাত্র ৫৮% লোক এই ভ্যাকসিন নিতে চায়। অনুরূপ ফ্রান্সের একটি জরিপে দেখা যায় ৫৪%, আয়ারল্যান্ডের একটি জরিপে দেখা যায় ৫৭% জনসাধারণ এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করার পক্ষে। লন্ডনে কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয় অঞ্চলের বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের ৩৯% লোক এই ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী যেখানে ব্রিটিশ সাদা সাদা নাগরিকদের ৭০% এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিতে চায়। আমরা দেখতে পাই কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয়দের মাঝে মৃত্যুর হার বেশি ছিল তাই তাদের প্রয়োজন হবে সকলেরই এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা।
তিনি পশ্চিমা বিশ্বের এই ভ্যাকসিন গ্রহণে অনীহা জটিলতা থেকে উত্তরণের জন্য কিছু দিক নির্দেশনা দেন। ডাক্তার মুসাব্বির সকলকে এই ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হতে আহবান করেন।
ডাক্তার মুসাব্বির হোসাইন ২০১৭ সালের জুলাই থেকে আয়ারল্যান্ডের জনগণকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দেশে সার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে MBBS পাশ করেন। তার জন্ম এবং বেড়ে উঠা ঢাকাতে। তিনি ঢাকা গভর্নমেন্ট লেবোরেটরি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা রেসিডেন্টশিয়াল মডেল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আয়ারল্যান্ডে আসার পূর্বে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখমুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
[এই লেখাটি আবেগতাড়িত। সন্দেহ নেই। স্পর্শকাতরও বটে। কিন্তু তা একান্তই আমার নিজস্ব ভাবনা। চিন্তা ও চেতনা। তবে সত্যের কাছাকাছি থাকতে সর্বদা সচেষ্ট থেকেছি। ৩০ থেকে ৪০ বছর পূর্বের স্মৃতিকথা লিখতে গিয়ে আমাকে চিন্তার অনেক গভীরে যেতে হয়েছে। লেখাটির উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয়। কিংবা কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নয়। বহু বছর ধরে হ্রদয়ের গহীনে সুপ্ত থাকা কিছু কথা অবমুক্ত করলাম মাত্র। কেননা, আমি মনে করি, ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য পূর্বসূরীদের “কিছু কথা থাক”।]
ইদানিং আমার দাদীর কথা খুব মনে পড়ে। অনেক কারনেই। হয়তোবা বয়স বাড়ছে। তাই শেঁকড়ের কথা বেশী মনে পড়ছে। তাঁর কোনো ছবি আমার কাছে নেই। অন্তরের দৃস্টি দিয়ে আজ তাঁর কথা ভাবছি।
বুদ্ধি হওয়ার পর দাদীকে আমি দশ বছর ধরে দেখেছি। সাদা শাড়িতে লম্বা ঘোমটা টানা। ফর্সা, খর্বাকৃতি। বয়সের ভারে ন্যুব্জ। সত্তরোর্ধ একজন বৃদ্ধা।
ছোটবেলায় স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে প্রতি শীতে আমরা ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ যেতাম। শহরের কাঞ্চননগরে আমার নানাবাড়ী। দাদাবাড়ী ঠিক তার পাশেই। আমরা পৌঁছামাত্রই দাদী খবর পেয়ে যেতেন। তারপর দেখতাম তিনি টুকটুক করে পায়ে হেঁটে হাজির। কখনো অবশ্য আমরা দুই ভাই প্রথমেই তাঁর বাড়ীতে গিয়ে তাঁকে সালাম করে আসতাম। এখনো খুব স্পষ্ট মনে পড়ে। প্রতিবারই তাঁর প্রথম বাক্য ছিলো, “ও পরদীপ, ও পরতাপ। আব্বা ভালো আছে? আব্বা ভালো আছে?” আমাদের দুই ভাইয়ের নাম প্রদীপ্ ও প্রতাপ। কিন্তু আমার দাদীর উচ্চারণে তা হয়ে যেতো ‘পরদীপ’ ও ‘পরতাপ’। আর আব্বা মানে আমার বাবা। দাদীর মেজো ছেলে।
শৈশবে বা কৈশোরে আমরা অনেক সময় পারিবারিক আবহে এমন কিছু ঘটনা প্রত্যক্ষ করি। যার মর্মার্থ তখন আমরা বুঝিনা বা বুঝতে পারিও না। স্বভাবতই বয়সের কারনে। কিন্তু ঘটনাগুলোর ছাপ বা ছায়া থাকে মনে। কখনো বা অবচেতন মনে সৃষ্টি হয় কিছু দুঃখ বা ক্ষোভ।
আমার দাদীর একটি মাত্র ঘর ছিলো। দাদী সেই ঘরে একাই থাকতেন। অবশ্য তাঁর খাওয়া-দাওয়া ছিলো ছোটো চাচার বাড়ীতে। দাদীর এই ঘরটির অবস্থান ছিল উল্লেখ করার মতো। আমার বড় চাচার দোতলা বাড়ীর প্রাচীরের ঠিক শেষ সীমানায়। সেখানে যেতে হতো ছোট চাচার বাড়ীর ভিতর দিয়ে। কলতলা পেরিয়ে। কয়েক কদম কাঁচা হাঁটাপথ হেঁটে।
জরাজীর্ন, আলো বাতাসহীন পুরানো একটি পাকা ঘর। মাটি থেকে একটু উপরে। কিন্তু সামনে কোনো বাঁধানো সিঁড়ি ছিলো না। ছিলো এক খন্ড ইট বা পাথর। সেখানে পা দিয়েই তাঁকে ঘরে ঢুকতে হতো। যতোদূর মনে পড়ে, আসবাবপত্র বলতে সেই ঘরে ছিলো একটি মাত্র খাট বা চৌকি। বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা ছিলো কিনা আজ তা মনে পড়ছে না। দাদীর ঘর পেরিয়ে একটু কাঁচা উঠান। তার এক কোণে একটি কাঁচা শৌচাগার।
১৯৯২ সালের ২৭শে এপ্রিল প্রায় ৮৭ বছর বয়সে আমার দাদীর মৃত্যু হয়। আমি তখন বেইজিংয়ে পড়াশোনা করছি। ফলে তাঁর বিদায়বেলায় আমি সামিল থাকতে পারিনি। শুনেছি মাত্র কিছুদিনের অসুস্থতায় একাকী একটি ঘরে ঘুমের মধ্যেই তাঁর শান্তিময় মৃত্যু হয়। শহরের পৌর কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়। তাঁর শেষ ঠিকানার কোনো নামফলক বা স্মৃতিচিহ্ন নেই। উল্লেখ্য, আমার দাদার কবরেরও কোনো নিশানা বা অস্তিত্ত্ব নেই।
বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশে আজও দেখা যায়, বড় গৃহস্থ পরিবারের নিজস্ব পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে। তার পাশেই হয়তো আছে মসজিদ, মাদ্রাসা, এমনকি এতিমখানা। কিন্তু আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্যে এসবের কিছুই নেই।
আমাদের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারমথুরাপুর গ্রামে। কিন্তু আমার দাদার ভিটে বাড়ী ছিলো ষড়াবাড়িয়া গ্রামে। সেখানে আমি কোনোদিন যাইনি। যাবার সুযোগ হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা। কেউ আমাকে হাত ধরে নিয়ে যায়নি। বলেনি…,
“এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে তিরিশ বছর ভিজিয়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।”
আমেরিকা এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পর বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসাবে চীন সফলভাবে চাঁদে চন্দযান নামাতে পেরেছে। এই চন্দযানের নাম চ্যাং’ই-৫। চন্দ্রযানটি চাঁদের ‘মাটি ও পাথরের’ নমুনা সংগ্রহ করে আজ বৃহস্পতিবার চীনের স্থানীয় সময় ভোররাতে মঙ্গোলিয়ায় সফলভাবে অবতরণ করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
১৯৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো অ্যাপোলো এবং সোভিয়েত লুনা মিশনগুলো তাদের নমুনাগুলো ঘরে আনার ৪০ বছরেরও বেশি সময় পরে, এই প্রথম কোনো দেশের পাঠানো চন্দ্রযান এবার চাঁদের নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারলো। এই সংগ্রহ করা নমুনাগুলো ভূতত্ত্ব এবং পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের প্রাথমিক ইতিহাস সম্পর্কে নতুন নতুন সব তথ্য দিতে পারবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। চীনের প্রেরিত এই চ্যাং’ই-৫ চন্দ্রযানটির অভিযান সফলভাবে সমাপ্তি ঘটার ফলে দেশটির মহাকাশ গবেষণায় ক্রমবর্ধমান সক্ষমতার হিসাবে দেখা হচ্ছে।
‘চ্যাং’ই-৫’-এর ক্যাপসুলটি অবতরণের পর দ্রুত সেখানে পোঁছার পর সেখানে উপস্থিত হয় উদ্ধারকারী দল। এর আগে ইনফ্রারেড ক্যামেরার সাহায্যে ক্যাপসুলটির অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। এই মিশনের কর্মীরা চাঁদের তুষার ঢাকা তৃণভূমিতে একটি চীনা পতাকা উত্তোলন করেছে। গত ২৪ নভেম্বর চ্যাং’ই-৫ মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করে চীন।
এই মহাকাশযানে চাঁদের কক্ষপথে যাওয়ার জন্য নকশা করা একটি অর্বিটার, একটি চন্দ্রযান ও চন্দ্রযানকে চাঁদের পিঠে নামানোর ও ফিরিয়ে আনার সক্ষমতা সম্পন্ন আরও দুটি যান সহায়তা করে।
এই চন্দ্রযানটি চাঁদের থেকে নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি পৃষ্ঠ খুঁড়ে ভিতর থেকেও নমুনা সংগ্রহ করেছে। চীন তাদের এই অভিযানে চাঁদ থেকে দুই বা চার কেজি নমুনা সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ঠিক কতোটা নমুনা আনা সম্ভব হয়েছে সে তথ্য পরবর্তীতে জানা যাবে।
খোলস পালটানো মানুষগুলো অনবরত বিচিত্র সব স্বপ্ন দেখছে নিজেকে পরিপাটি রেখে নিরাভরণ করছে অনাগত পঞ্জিকার পাতা, কার পাটিতে কতগুলো দাঁত; তার হিসাব কষতে ভাঙছে একের পর এক ক্যাল্কোলেটার।
যখন কুয়াশার নেকাবে ঢাকা পড়ে চাঁপারঙ শাড়ি বিষধর সাপের ছোবলে; ঝরে যায় কিশোরীর সাবলীল পাপড়ি! তখন আমি জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড দেখি আগত স্বর্গের দ্বারে।
হাজারো পথিকের ভীড়ে কাঁদছে মেয়ে শিশুটি যে পেরোয়নি এখন ও কৈশোরের আঙ্গিনা! সেদিন কান্না দেখে হাসলো লালায়িত মানুষ দুর্বোধ্য জল এসে ভাসালো আমাদের সমস্ত বোধের জমিন।
মহাকালের আয়নায় হেঁটে যায় ছারপোকা; লেপ্টে থাকে কিছু শুকনা ফড়িঙের ডানা, অরণ্যচারী মন খুঁজে পায় হাজার বছরের মৃত ফসিলের পায়ের গোড়ালি আজও মানুষ খুঁজে পায়নি মৃত্যুর রহস্য।
পদাতিক আমি ভেতরে ভেতরে পুড়ি আত্বস্থ করি মানুষ নামের সূত্র! যদিও জানি, যেদিন প্রতিবিম্বে উঠে আসবে পূর্ণাঙ্গ মানুষের অবয়ব সেদিন ঘৃণায় আমার মৃত্যু অনিবার্য।
( সদ্য প্রয়াত কিলার্নী নিবাসী জনাব সেলিম হোসেনের শ্রদ্ধার্ঘ্যে) হে প্রিয় বন্ধু আমার হে প্রিয় সহকর্মী আমার তোমার চিরবিদায়ের খবর শুনে চিন চিন করে উঠলো বুক । ভাবিনি কোনোদিন তোমার শবদেহ কাঁধে নিয়ে হেঁটে চলতে হবে আমার, ওই গোরস্থানের পথে কে জানে কোনদিন কোনসময় আবার আমার শবদেহের ডার বইতে হয় আমারই কোনো বন্ধু বা প্রিয় সহকর্মীকে….. নিয়তির এ চিরন্তন সত্যের কাছে হাত পা সবার বাঁধা। কী অসহায় আমরা মানবকূল! কি ভিখিরি, কি সুলতান, কি বাদশা অভিন্ন পথে ফিরে যেতে হবে সবাইকে আজ না হয় কাল। ঘড়ির এলার্ম যখন বেজে উঠবে কাঁচের চূড়ির মতো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে এ সাজানো পৃথিবী। বয়ে চলা বাতাস এ চলার পথ, প্রবাহিত পানি, আকাশ ছোঁয়া পর্বত জ্বলে ওঠা আগুন, প্রিয়ার ভালোবাসা সংসারের মোহ সবই স্বপ্ন। সবই নশ্বর। এ নশ্বর পৃথিবীতে নশ্বর জীবনের পেছনেই আমরা ছুটে চলি অহর্নিশ। ভুলে যাই এ পৃথিবী চির গন্তব্যে পৌঁছার একটি স্টপেজ মাত্র। দিব্যি ভুলে যাই ওই নতুন গন্তব্যে রয়েছে আরেকটি জীবন, রয়েছে সেখানে হিসেব নিকেশের জমাখরচের একটি খাতাও বটে। যে খাতা হবে পুলসিরাত পাড়ি দেয়ার একমাত্র টিকিট। মানুষ মাটির দেহ নিয়ে শূন্য হাতে আসে এ ধরায় আবার শূন্য হাতেই যায় মাটিতে ফিরে রচিত সিংহাসন, মাথার মুকুট সাম্রাজ্য, ফুলের সৌরভ, হিমালয়সমেত উঁচু স্বপ্ন সব তুচ্ছ,, কিছুই যায়না সাথে, যায় কেবোল মানবপ্রীতি, ভালোবাসা, ঈমান, আকিদা আর আমল। যা- অনন্ত জীবনের হিসেবের কড়চায় হবে একমাত্র নিট প্রফিট। লিমরিক ১২ডিসেম্বর ২০২০ পুনশ্চ: কবিতাটা লেখার পেছনে অনুজ প্রতিম বন্ধু রিপনের অনুপ্রেরণা রয়েছে। সেলিম হোসেনের মৃত্যুর খবর জেনে একজন বন্ধু ও সহকর্মী হিসেবে রিপন সাহেব বেশ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মৃত্যু বিষয়ক একটি কবিতা লেখার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। তার এ অনুরোধের ফসলই এ কবিতা। আমি এ গুনী ইয়াংম্যানের কাছে কৃতজ্ঞ।
১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১, দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এই দিনে বাংলার আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার নতুন সূর্য। বাংলার আকাশ বাতাস মুক্ত হয় পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে। ৪৯ বছর আগে ১৬ ই ডিসেম্বর এই দিনে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অর্জিত হয় গৌরবময় স্বাধীনতা। ৩০ লক্ষ্য শহীদ এবং ২ লক্ষ্য মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এই সার্বভৌম বাংলাদেশ।
বিজয়ের ফলে বাংলাদেশ পেল এক স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড ও লাল সবুজে ঘেরা একটি গৌরবোজ্জ্বল পতাকা। এ যেন তীর্থের কাকের মত আজন্মকাল অপেক্ষা করা স্বাধীনতা পিপাসু বাঙ্গালির স্বপ্নপূরণ। মুক্তির স্বপ্নে বিভোর একটি জাতির বিজয় গৌরবোজ্জ্বল ভাবেই অর্জিত হয়েছে, যার জন্য বাঙ্গালি জাতি গর্ব করতেই পারে।
যে কোন জাতির প্রধান শক্তি হচ্ছে ঐক্য। ঐক্যবদ্ধ হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করেই অর্জিত হয় স্বাধীনতা। সর্ব শ্রেণি, বর্ণ, ধর্মের মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে ছিল বলেই ছিনিয়ে আনতে পেরেছে স্বাধীনতা। সব ক্ষেত্রেই দরকার ঐক্য, একতাবদ্ধতা। ‘’স্বাধীনতা অর্জনের থেকে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন’’, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের পক্ষে কাজ না করলে স্বাধীনতার প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হবেনা। সবারই উচিত যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে এনেছিল, ঠিক সেইভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করা।
স্বাধীনতা হোক শক্তি, স্বাধীনতা হোক অনুপ্রেরণা, স্বাধীনতা হোক স্বাধীনতার মত। সবাইকে বিজয়ের দিনে, বিজয়ের শুভেচ্ছা।
আইরিশ বাংলা টাইমসের সকল পাঠক বৃন্দের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, এক বছর সফলতার সাথে এই পত্রিকাটির সাথে সম্পৃক্ত থাকার ফলে সকল কলামিস্ট ও প্রতিবেদকদের নিয়ে সম্পাদক মন্ডলীর প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। আইরিশ বাংলা টাইমস পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরে এই প্যানেলের সকলেই আনন্দ প্রকাশ করেছেন। সম্পাদকবৃন্দ আয়ারল্যান্ড প্রবাসী সকল বাংলাদেশির কাছে অতীতের ন্যায় আরো গঠনমূলক ও প্রয়োজনীয় সকল খবরাখবর এবং নানা প্রতিবেদন তুলে ধরার দৃঢ় প্রত্যয় জ্ঞাপন করেন। প্রতিকার সম্পাদক জনাব আব্দুর রহিম ভূঁইয়ার পাশাপাশি লিমেরিক থেকে জনাব ওমর ফারুক নিউটন কে বার্তা সম্পাদক, ডাবলিন থেকে জনাব মশিউর রহমান কে বিশেষ কলামিস্ট ও কর্ক থেকে নাসির খান সাকিকে আইটি এডমিনিস্ট্রেটর করে এই প্যানেলের আত্মপ্রকাশ করা হয়।
এর সাথে “আইরিশ নোটিস বোর্ড” ও “আইরিশ বাংলা টাইমস” একযোগে কাজ করার ব্যাপারে একাত্মতা প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে আইরিশ নোটিস বোর্ডের সম্পাদক জনাব “মশিউর রহমান” বলেন, আয়ারল্যান্ডে গড়ে উঠা সকল কমিউনিটি সংবাদপত্র বিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ না করে একযোগে কাজ করতে পারলে কমিউনিটিকে আরো সুশৃঙ্খল ভাবে অনেক সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। উল্ল্যেখ্য আইরিশ নোটিস বোর্ড ২০১৫ সাল থেকে আয়ারল্যান্ডে নিয়মিত ভাবে সংবাদ প্রচার করে আসছে। “আইরিশ নোটিশ বোর্ড” কে সাথে পেয়ে “আইরিশ বাংলা টাইমস” পরিবার আনন্দ প্রকাশ করেছে।
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের জন্য জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ নিয়ে একটি বিবৃতি প্রদান করেছে ক্রেমলিন। এতে জানানো হয়েছে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে মতপার্থক্য রয়েছে তা দূরে সরিয়ে বৈশ্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে এক হয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পুতিন। এ খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।
খবরে বলা হয়, বাইডেনের জন্য পাঠানো অভিনন্দন বার্তায় পুতিন তার সফলতা কামনা করেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার দিক থেকে আমি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমরা আপনার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবো। এখনো বাইডেন শিবির থেকে ওই বার্তার কোনো জবাব বা প্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়নি।
এর আগে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের প্রধানসহ একাধিক রুশ কর্মকর্তা মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থার সমালোচনা করেছিলেন। তারা বলেন, মার্কিন নির্বাচনের পদ্ধতি সেকেলে ও জনগণের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করে না। বাইডেনকে পাঠানো অভিনন্দন বার্তা নিয়ে ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন বলেছেন- বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশ বিশেষ দায়িত্ব বহন করে। কাজেই মতভিন্নতা থাকলেও একসঙ্গে কাজ করা গেলে বর্তমানে বিশ্ব যেসব প্রতিকূলতার মুখে আছে, সেগুলো এবং বহু সমস্যার সুরাহা করতে সত্যিকারের অবদান রাখতে পারবো।
উল্লেখ্য, গত ৩রা নভেম্বরের নির্বাচনের এক সপ্তাহের মধ্যেই বাইডেনের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। ভোট গণনা চলাকালীনই গণমাধ্যমগুলি তাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে। সেসময় তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের নেতারাই। তবে গুটি যে কয়েকটি দেশ শুভেচ্ছা জানানো থেকে বিরত ছিল তারমধ্যে অন্যতম ছিল রাশিয়া। এর আগে চীনও দেরি করে হলেও বাইডেনকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া অপেক্ষা করছিল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাইডেন কঠিন অবস্থান নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আয়ারল্যান্ডের অর্থনীতিতে বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে ব্রেক্সিট
আইএফএসি’র সতর্কতা
ব্রেক্সিট যথাযথভাবে কার্যকর না হলে সেটি আয়ারল্যান্ডের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য ৬ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আইরিশ ফিসক্যাল অ্যাডভাইসারি কাউন্সিল(আইএফএসি)। অর্থের হিসেবে যেটি ২১ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত গিয়ে ঠেকতে পারে। আয়ারল্যান্ড সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকা-ের ওপর গবেষণা ও মূল্যায়নকারী সংস্থাটি বলেছে, এই ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে কোভিড-১৯ মহামারীর চেয়েও বড়। আর এর সবচেয়ে বড় শিকার হতে পারেকৃষি-খাদ্য ও এসএমই সেক্টর- যেগুলো প্রধানত ব্রিটিশ মার্কেট নির্ভর।
আইরিশ পার্লামেন্টের বাজেট পর্যবেক্ষণ কমিটিকে আইএফএসি’র সদস্য মার্টিনা ললেস বলেছেন, আলোচনার ক্ষেত্রে সময় যেভাবে কমে আসছে, খামারগুলোর জন্য প্রস্তুতির সময় আরো কম। ললেস আরো সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অগোছালো কিংবা চুক্তিহীন ব্রেক্সিট যতটা ভাবা হচ্ছে তাহারো বেশি খারাপ প্রভাব নিয়ে আসতে পারে, কারণ খামারগুলোকে নতুন করে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত হতে হবে। তিনি বলেন,কঠোর ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া প্রথম কয়েক মাসের জন্য খারাপ প্রভাব নিয়ে আসবে সেই ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। কারণ খামারগুলোকে নতুন অনেকগুলো বিষয়ের সাথে মানিয়ে নিতে হবে এই সময়ের ভীতর। এই পর্যবেক্ষক আরো বলেন, এমনকি ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হলে এবং সেটি যদি শুল্কমুক্ত সুবিধাও দেয়- তবু আয়ারল্যান্ডের অর্থনীতি অনেক ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হবে এবং খরচ বেড়ে যাবে, যার কারণে প্রবৃদ্ধি অন্তত ৩ শতাংশ ব্যহত হবে। এবং সেটি হতে পারে দীর্ঘ মেয়াদে।
২০২১ সালের বাজেট নিয়ে নিজেদের বিশ্লেষণ তুলে ধরতে পার্লামেন্টারি কমিটির সাথে বৈঠকে বসেছিল আইরিশ ফিসক্যাল অ্যাডভাইসারি কাউন্সিল(আইএফএসি) সদস্যরা। কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সেবাস্তিয়ান বার্নেস বলেছেন, ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার বিষয়টি এমন একটি ঘটনা যার অর্থনৈতিক প্রভাব পূর্বানুমান করা ছিল কঠিন।
Syed Atikur R Shahi- Irish Bangla Times
বার্নেস ও আইএফএসির প্রধান অর্থনীতিবিদ এডি কেসি মনে করেন, কোভিড-১৯ ও সরকারি অর্থায়নের ক্ষেত্রে এ বছর সরকারের বাজেট ঘাটতি প্রকৃত ধারণার চেয়ে কম হতে পারে। সেটি হতে পারে ১৮ বিলিয়ন ইউরোর আশপাশে। যদিও বছরের শুরুতে, করোনা মহামারীর আগে ধারণা করা হয়েছিল এই ঘাটতি ৩০ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। তথাপি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কর আদায় হওয়ার কারণে সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
এডি কেসি বলেন, ২০২০ সালের শেষ কোয়র্টারে করোনাভাইরাস মহামারী সংক্রান্ত খরচ সম্ভবত ধারণা চেয়ে অনেক কম হবে। যে কারণে ঘাটতি ১৮ বিলিয়ন বা তার নিচে থাকবে। তবুও আইএফএসি সতর্ক করে দিয়েছে যে, ২০২১ সাল নাগাদ আয়ারল্যান্ডের ঋণ সংশোধীত মোট জাতীয় আয়ের ১০৯ থেকে ১২৭ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। করোনা মোকাবেলা তহবিলে অতিরিক্ত অর্থের জোগান দিতেই বাড়বে ঋণের বোঝা।
আইএফএসি’র চেয়ারম্যান সেবাস্তিয়ান বার্নেস বলেন, ধরে নিচ্ছি এসব ঋণের সুদের হার অনুকূলেই থাকবে, তাই করোনার সেকেন্ড ওয়েভ না এলে ঋণের হারও কমে আসা উচিত।
পার্লামেন্টারি কমিটির সাথে বৈঠকে দেয়া উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন যে, ২০২১ সালের বাজেটে কোভিড-১৯ ব্যয় বাদেও অন্তত ৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউরোর বেশি সরকারের বর্ধিত ব্যয় ধরা হয়েছে। অতীতের বাজেটগুলোর তুলনায় এবার ব্যয় বৃদ্ধি ‘আশ্চর্যজনক ভাবে বেড়েছে’ উল্লেখ করে বার্নেস বলেন, অস্থায়ী ও বিশেষ উদ্দেশ্যে নয়, বরং মহামারীর পরেও বলবৎ থাকবে এই অতিরিক্ত ব্যয়। ২০১৫ সাল থেকেই এই বৃদ্ধি গড়ে প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন ইউরো ছিল।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, স্থায়ী ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ সাড়ে ৮ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত হতে পারে, কারণ অনেক ক্ষেত্রে এটি আগে থেকে ধারণা করা সম্ভব হয় না। এ প্রসঙ্গে তিনি স্থানীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে দেয়া তহবিলকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির বিরোধীতা করছে না আইএফএসি। তবে এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এই বৃদ্ধির অর্থ কিভাবে যোগান দেয়া হবে।
[এই রিপোর্টটি দৈনিক নয়াদিগন্তে ২১/০৭/২০১৭ তারিখে প্রকাশিত হয়েছিল]
তারা এখন বহুজাতিক। মা চাইনিজ। বাবা বাংলাদেশী। আর নিজেরা আইরিশ। তবে ১৫ বছর বয়সী মুস্তাকিম-উল-হক এবং ১৩ বছর বয়সী মুহতারিম-উল-হকের বাংলাদেশে আসা আয়ারল্যান্ডের দাবাড়ু হিসেবে। বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন আয়োজিত সাইফ গ্লোবাল স্পোর্টস আন্তর্জাতিক রেটিং দাবায় অংশ নেয়া ছয় বিদেশীর দু’জন তারা।
অল্প স্বল্প বাংলা বলতে পারেন। মুস্তাকিম এবং মুহতারিম নিজ দেশে এলেন বিদেশী পরিচয়ে। অবশ্য দাবা খেলতে এই প্রথম আসা। অতীতে আসা হয়েছে বেড়াতে। বাবা মাহফুজুল হক ও মা প্যাং চিং। বৃত্তি নিয়ে ১৯৯৩ সালে চীনের হুবেই প্রদেশে পড়তে চান মাহফুজুল হক। সেখানেই পরিচয়, প্রেম ও বিয়ে প্যাং চিয়ের সাথে। বিয়েটা অবশ্য ’৯৬ সালে। এই দম্পতি তিন বছর বাংলাদেশে ছিলেন। মাহফুজুল শিক্ষকতা করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে। এরপর আয়ারল্যান্ডে চলে যান তারা। সেখানে ওয়েভ ডেভেলপারের কাজ করেন। সেখানেই জন্ম এই দুই ছেলের। প্যাং চিং অবশ্য মুসলমান হয়েছেন। ধর্মকর্মের প্রতি বেশ সিরিয়াস। গতকালও দাবা ফেডারেশনে দেখা গেল আসরের নামাজের আযান কানে আসা মাত্রই মাথাটা ওড়না দিয়ে ঢেকে দিলেন। জানান, ’আমি রোজাও রাখি’।
আয়ারল্যান্ডে ফুটবল খুবই জনপ্রিয়। এর পরেই আছে ক্রিকেট। মুস্তাকিম ও মুহতারিম ক্রিকেট ও ফুটবল দুটোই খেলেন। তবে দু’জনের দুষ্টামি কমাতে তাদের দাবায় অভ্যস্থ করেন বাবা-মা। বাবা মাহফুজুল হকের মতে, দাবা বিচক্ষণতা বাড়ায়। তা ছাড়া লেখাপড়ার পর অবসর সময়ে মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাতেই দাবা খেলার প্রতি আগ্রহী করা হয় তাদের। এ খেলা মানুষকে চুপচাপ থাকতে সহায়তা করে। এ ছাড়া একদিন স্কুল থেকে দাবা শিখে আসে বড় ছেলে মুস্তাকিম। সাথে নিয়ে আসে দাবা বোর্ড। এরপর তার সাথে ছোট ছেলে মুহতারিমও দাবায় জড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে মুস্তাকিমের রেটিং ১৯০০। মুহতারিমের ১৭৯৭। দু’জনই আয়ারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে খেলেছেন২০১৩ সাল থেকে। প্রথমে এক ভাই খেলতেন। অন্যজন থাকতেন রিজার্ভ হিসেবে। তবে গত বছর থেকে দু’জনই আইরিশ জার্সিধারী। খেলে যাচ্ছেন চার জাতি টুর্নামেন্টসহ বিভিন্ন আসরে। গত মে মাসে মালাহাইড টুর্নামেন্টে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হন মুহতারিম। ২০১৬তে কর্ক টুর্নামেন্টেও চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। আর ২০১৫তে আইরিশ জুনিয়র দাবায় রানার্সআপ হন মুস্তাকিম। মুহতারিমের জোটে তৃতীয় স্থান।
ইতোমধ্যে দুই ছেলে আয়ারল্যান্ডে দাবা প্রশিক্ষণ দেয়াও শুরু করেছেন। টাকাও মিলছে এতে। বড় ছেলে আবার ডাবলিনের স্কুলের মসজিদে জোহরের নামাজে ইমামতি করেন। এবার ছুটিতে বাংলাদেশে আসবেন এমন পরিকল্পনা থেকে ছয় মাস ধরে ফেসবুকে বাংলাদেশের দাবা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন মাহফুজুল। ফেডারেশন সেক্রেটারি সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীমের ফোন নাম্বার পেয়ে বাংলাদেশের টুর্নামেন্টে দুই ছেলেকে খেলার সুযোগের কথা জানান। শামীমের আশ্বাসেই ঢাকায় আসা ও রেটিং দাবায় দুই ছেলের অংশগ্রহণ। সাথে তারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন মেহেদী হাসান পরাগ ও জিয়াউর রহমানের কাছে। রাজীবও তাদের ট্রেনিং দেবেন জানালেন মাহফুজ। ক’দিন পরেই চলে যাবেন আয়ারল্যান্ডে। আবারো আসবেন ছুটি ও বাংলাদেশের আসরকে সামনে রেখে।
গত কয়েক দিনে পিতৃভূমিকে বেশ ভালোবেসে ফেলেছেন মুস্তাকিম ও মুহতারিম। ঢাকার ফুচকা তাদের পছন্দের খাদ্য তালিকায়। বাবা মাহফুজ জানান, ওরা এখন দাবা নিয়ে এত ব্যস্ত যে গরম ও মশা এসব নিয়ে কথা বলার সময় নেই।
মুস্তাকিম ধাপে ধাপে ফিদেমাস্টার থেকে গ্র্যান্ডমাস্টার পর্যন্ত হতে চান। মুহতারিম এখনই লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছেন। আমি বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে চাই। দুই ভাইয়ের মন্তব্য, ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতে প্রচুর শক্তিক্ষয় হয়। সে তুলনায় দাবা অনেক রিলাক্সের খেলা। তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দাবা দলের সদস্য হবেন কি না সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারলেন না। তাদের বাবাও দিতে পারলেন না তেমন কোনো আশ্বাস। এরপরও এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আগ্রহ আরো বৃদ্ধি করবে। এটা যে তাদের শেকড়। আশাবাদ বাবার।
আসসালামু আলাইকুম, অত্যন্ত বেদনার সাথে জানানো যাচ্ছে যে, কিলারনী নিবাসী আমাদের ভাই সেলিম হোসেন ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমার মরহুমের মাগফেরাতের জন্য দোয়া করি।
জানা গিয়েছে তিনি আজ বুধবার দুপুর ২:৩০ মিনিটে (০৯/১২/২০২০ ইং তারিখে) ট্র্যালি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। গত বছর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের অক্টবরে রেক্টাল ক্যান্সার ক্যান্সার ধরা পড়ে। ডাক্তারদের আপ্রাণ চেষ্টার পরেও তাকে রক্ষা করা যায় নি। অবশেষে তিনি আজ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।
সর্বশেষ তিনি কিলারনি টাউনে কোম্পানির বাসায় তাঁর এক বন্ধু জনাব আব্দুল হালিম এর সাথে বসবাস করতেন। কিলারনিতে তিন দীর্ঘ ২০ বছর বসবাস করেন। তার পূর্বে তিনি মালয়েশিয়াতে চাকরি করতেন। ১৭/০৩/২০০১ সালে তিনি আরো তিন বন্ধুর সাথে একই বিমানে ছোড়ে আয়ারল্যান্ড আসেন।
তিনি চাকরি করতেন বেলিডেসমন্ড, Co – Cork “মানসটার জয়নারী কনস্ট্রাকশন” কোম্পানিতে।
তার মা, দুই ভাই, এক বোন বাংলাদেশেই বসবাস করেন। আয়ারল্যান্ডে তার নিকটটম কোন পরিবার নাই।
দেশে তার ভাই আলমগীর হোসেনের সাথে ও তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা তার লাশ দেশে পাঠানোর ব্যাপারে আকুল আবেদন করেন। আমরা আশাকরি আয়ারল্যান্ডে সকল সুহৃদ ব্যক্তি এগিয়ে আসলে তার লাশ দেশে পাঠানো সম্ভব হতে পারে।
অবশেষে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারকে শোক সাইবার জন্য দোয়া করি।
গত ৬ই ডিসেম্বর আয়ারল্যান্ডে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশ কমিউনিটির মধ্যে একটি ভার্চুয়াল দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এক আনন্দঘন পরিবেশে আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়।
বিশিষ্টদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার জিন্নুরাইন জায়গীরদার, মোস্তাফিজুর রহমান, জাহিদ মোমিন, মোশাররফ হোসেন, কামাল উদ্দিন, হামিদুল নাসির, কবির আহমেদ, জাকারিয়া প্রধান, মাহফুজুল হক, আব্দুল মান্নান, আইয়ুব আলী, সৌয়দ রেদোয়ান আহাম্মেদ বাবু, মোহাম্মদ মাসুদ শিকদার, কাজী আহমেদুল কবির।
এই খেলায় উত্তর আয়ারল্যান্ড ও মূল আয়ারল্যান্ড থেকে মোট ২০ জন অংশগ্রহণ করেন। এমন একটি আয়োজন আয়ারল্যান্ডে এই প্রথমবারের হওয়ায় খেলোয়াড়গণ পুরো অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ভাবে সকল খেলোয়াড় নিজেদের মধ্যে পরিচিত হন ও সম্পর্ক উন্নয়নে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখার দৃঢ় প্রত্যয় করেন।
অনুষ্ঠানটি আইরিশ বাংলা টাইমসের সম্পাদক আব্দুর রাহিম ভূঁইয়া ও তাঁর সহযোগী মশিউর রহমান, বদরুল জুয়েল, রিজোয়ান আরফিন, শওকত আলী খান মাসুম, নাসির খান সাকি এবং শাদাত হোসেন এর উপস্থাপনায় ও সার্বিক সহযোগিতায় আয়োজিত হয়। এমন একটি সফল অনুষ্ঠানের অংশীদার হতে পেরে আয়োজকবৃন্দ আনন্দ প্রকাশ করেন। আয়োজকবৃন্দ বলেন প্রায় চল্লিশ জন খেলোয়াড় এই খেলায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন কিন্তু খেলাটি রিমোট ও কম্পিউটারে পরিচালিত হবে বিধায় প্রায় অর্ধেক আগ্রহী খেলোয়াড়কে সুযোগ দিতে অপারগ হন। তবে ভবিষ্যতে এমন আয়োজন হলে সকলকে নিয়ে সুন্দর একটি দিন কাটানো যাবে বলে সকলেই আশা ব্যক্ত করেন।
এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন মুস্তাকিম উল হক, প্রথম রানার আপ মোহাম্মদ শাহীন মাহবুব পারওয়ার, ২য় রানার আপ বেলফাস্ট থেকে ডাঃ নাশিদ নূর আলম ও ৩য় রানার আপ ওয়াহিদ ফরহাদ।
প্রথম পুরষ্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে দুই জনের জন্য হেলিকপ্টার ভ্রমণের টিকেট, দ্বিতীয় পুরষ্কার হিসেবে বিজয়ীকে ৩ জনকে সাথে নিয়ে পেইন্ট বোলিং খেলার পাস, ৩য় পুরষ্কার ১টি কার্টিং খেলার পাস ও ৪র্থ পুরষ্কার বিজয়ী একজনকে সাথে নিয়ে পেইন্ট বোলিং খেলার পাস। এবং খেলায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে দেওয়া হবে ২০২১ সালের বর্ষপঞ্জিকা।
আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে সকল দর্শক, খেলোয়াড় ও কলাকৌশলীতে সহযোগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে খেলা শেষ করা হয়।
আইরিশ ইতিহাসে র্সবোচ্চ সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীদের আইরিশ রেসিডেন্সি পারমিট দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে আয়ারল্যান্ড সরকার । বলা হয়েেছে সতের হাজার অবৈধ অবাসীদের আইরিশ রেসিডেন্সি পারমিট দেওয়া হবে।
এরই মধ্যে তিন হাজার শিশু সহ ১৭,০০০ বৈধ কাগজপত্র বিহীন অভিবাসিদের দীর্ঘমেয়াদী রেসিডেন্সি পারমিট দেয়ার জন্য আইরিশ আইন মন্ত্রনালয় থেকে দৃঢ় সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
আইরিশ আইন ও বিচারমন্ত্রী “হেলেন ম্যাকেন্তি” বলেছেন তিনি প্রায় ১৭০০০ অনিবন্ধিত অভিবাসীদের রেসিডেন্সির পার্মিট বা অনুমতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
সরকার সম্প্রতি প্রায় ২,২০০ জন প্রাক্তন ইংরাজী ভাষা শিখতে আসা স্কুল ছাত্রদের ভিসা শেষ হওয়ার পরেও আয়ারল্যান্ডে চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য থাকার অনুমতি দিয়েছে।
আইরিশ আইন ও বিচারমন্ত্রী “হেলেন ম্যাকেন্তি” এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন বর্তমান সরকার আইরিশ ইতিহাসের সবচাইতে বেশি সংখ্যক যা কিনা ১৭,০০০ অনিবন্ধিত অভিবাসীদের রেসিডেন্সি পারমিট দেওয়ার এক “নিয়মিতকরণ” প্রকল্পের প্রস্তুতি নিয়েছে।
ক্রিসমাস উপলক্ষে ডিসেম্বর মাসে এসব দেশে বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন ছায়াছবি (মুভি) মুক্তি দেয়া হয়। উৎসবের আমেজ দেখানোর পাশাপাশি সেই প্রতিটি ছায়াছবিতেই খুব সুন্দরভাবে খ্রিস্ট ধর্ম, সামাজিক বন্ধন, চ্যারেটি সহ একে অন্যের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়গুলো দেখানো হয়। এদেশের বাচ্চারা যেভাবে বিনোদনের ছলে তাদের ধর্ম সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছে, সেই সহজ উপায়ে আমাদের দেশের বাচ্চারা ইসলাম সম্পর্কে ধারণা পায়না।
ইউটিউবে গোপালভাড় সিরিজ দেখানো হয়। একটু খেয়াল করে দেখবেন যে এই এনিমেটেড সিরিজের প্রায় প্রতিটি পর্বেই হিন্দুধর্মাবলম্বীদের পূজা বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান দেখানো হয়। বাচ্চারা একদিকে যেমন আনন্দ পাচ্ছে তেমনি অন্যদিকে হিন্দুধর্মের বিভিন্ন রীতিকালচারের সাথে পরিচিত হচ্ছে। বাচ্চারা যে এই অনুষ্ঠান দেখেই পাড় ধার্মিক হয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটি সেরকম নয় কিন্তু গোপালভাড়ের মতন একটি মজার প্লটের ছলেও অনুষ্ঠানের আয়োজকরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন।
গবেষণা বলে যে ব্যবহারিক জীবনের উদাহরণ দিয়ে পড়ানো হলে সেটি ছাত্র-ছাত্রীরা খুব সহজে তাদের মনে ধারণ করতে পারে এবং পড়া তখন তার কাছে বাধ্যবাধকতা নয় বরং একটি আনন্দের উপলক্ষে পরিনত হয়। অন্যান্য ধর্মের বাচ্চারা যেভাবে আনন্দ নিয়ে তাদের ধর্মকে দেখছে এবং শিখছে, আমরা কি আমাদের বাচ্চাদের ইসলাম সম্পর্কে সেই শেখার আনন্দটুকু দিতে পেরেছি?
আমাদের দেশের বেশিরভাগ অভিভাবকদেরই ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান সীমিত। দূর্ভাগ্য জনক হলেও নামায, রোজা এবং কিছু হাতে গোনা হাদিসের মধ্যেই তাদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ। কয়েকজন ভালো ইসলামিক বক্তা ছাড়া বেশিরভাগই ইউটিউবে বা ওয়াজ মাহফিলে কি বলছে এবং প্রচার করছে সেটি নতুন করে বলার কিছুই নেই। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে বাচ্চারা ইসলাম সম্পর্কে সঠিকভাবে শিখবে কার কাছে?
সংস্লিষ্টদের বলবো, দেশে প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ হচ্ছে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু এই দিকটি নিয়ে কেউই ভাবছেনা। দেশে মারাত্মক হযবরল অবস্থা চলছে। ভবিষ্যৎ ভালো দেখতে চাইলে বাচ্চারা যে ধরনের বিনোদনে আগ্রহী সেরকম নৈতিকতা এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান বানান। বিনোদনের ছলেই ধর্ম এবং নৈতিকতা সম্পর্কে তাদের সঠিক ধারণা দিন। তারা যদি মনের আনন্দ নিয়ে ধর্মকে জানে তাহলে সেই ধর্মীয় শিক্ষার জ্ঞানকে তারা সমাজেও প্রতিফলন করতে পারবে।
[লকডাউনের ফসল। জীবনের প্রথম ছোটগল্প। আয়ারল্যান্ডে আছি একুশ বছর। তাই এদেশের প্রকৃতি ও প্রবাসী মানুষকেই বেছে নিলাম গল্পের পটভূমি হিসেবে।পুনশ্চঃ এটি একটি মৌলিক গল্প। বাস্তবের কোনো ঘটনার হুবহু বর্ণনা নয়। গল্পের প্রধান চরিত্র দুটি স্বভাবতই কাল্পনিক। কারো জীবনের সাথে মিলে যাওয়া নিতান্তই দৈব-দূর্ঘটনা।]
ক্লাস থেকে ফিরেই কামরুননাহার লতা হাত-মুখ ধুতে গেলো। আলেয়া টিচার্স রুমে ঢুকে একবার মোটা গলায় আওয়াজ দিলো, দুপুরের খাবার টেবিলে সাজানো হয়ে গেছে। এই মহিলার গলা সুমধুর নয়। কিন্তু তার হাতের রান্না চমৎকার। লতা ম্যাডাম ওয়াশরুম থেকেই উত্তর দিলো, এক্ষুনি আসছি। ঠিক তখনই মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল। শাড়ীর আঁচলে হাত মুছতে মুছতে সে দ্রুত বেরিয়ে এলো। ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে দেখলো, একটি অপরিচিত নাম্বার। শুধু তাই নয়। মনে হচ্ছে, বিদেশ থেকে কেউ ফোন করছে। সে ইতস্তত করছে। একে তো এখন অসময়। লাঞ্চের পর আরও একটি ক্লাস নিতে হবে। তার উপর আবার না জানি কোন উটকো ঝামেলার ফোন। ভাবছে, ফোনটা সে ধরবে না। খেতে যাবে। কিন্তু ফোনটা একবার কেটে গিয়ে আবারও বাজতে লাগলো। একটু বিরক্তি নিয়েই সে বললো, হ্যালো,
হ্যালো, লতা? আমি আনিস। আমি আয়ারল্যান্ড থেকে বলছি। লতা, আমি অনেক কষ্টে তোমার নাম্বারটা জোগাড় করতে পেরেছি। প্লিজ, আমার কথা একটু শোনো। আজ বারোটি বছর। একটি যুগ। বিশ্বাস করো। সত্যি বলছি। আমি তোমার কথা কখনোই ভুলতে পারি নি। কিন্তু আমার পিছনে ফিরে যাবার কোনো উপায় ছিলো না। একটি উন্নত দেশে উন্নত জীবনযাপনের জন্য। বড় ক্যারিয়ার গড়ার জন্য। পরিবারের ভালোর জন্য। আমাকে সেদিন একরকম পালিয়ে আসতে হয়েছিলো। আমি জানি। আমি তোমার প্রতি অন্যায় করেছি। তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। আমাকে ক্ষমা করো, প্লিজ। বিশ্বাস করো, লতা। এক বুক যাতনা আমাকে আজও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আমি সবসময় ভেবেছি। একদিন তোমার সামনে যাবো। দু’হাত তুলে ক্ষমা চাইবো। যে শাস্তি দেবে, মাথা পেতে নেবো। প্লিজ লতা, আমাকে তুমি ভুল বুঝো না। আমাকে ক্ষমা করো। কথাগুলো আনিস একনাগাড়ে হরহর করে বলে চলেছে। ফোনের অপরপ্রান্তে কোনো সাড়া নেই। তবে বরফ গলার শব্দ ভেসে আসছে। মাঝে মাঝে। আনিস একটু থামলো,
লতা, শুনছো?
তুমি কেমন আছো, আনিস?
ভালো…না…হ্যাঁ…মানে…। আনিস অর্থহীন গলায় কিছু শব্দ বলে।
তুমি এখন কোথায়, আনিস?
আয়ারল্যান্ডে। আসলে আমি ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটিতে একটি স্কলারশিপ পেয়েছিলাম। মাস্টার্স করার জন্য। তোমাকে বলা হয়নি।
তুমি বিয়ে করেছো?
হ্যাঁ। ও আইরিশ। সত্যি বলতে কি, এদেশে থাকার জন্য এছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না।
দেশে কবে আসবে?
হ্যাঁ। দেশে আসার প্লান করছি। সামনের গ্রীষ্মের ছুটিতেই হয়তো আসবো।
তোমার বউকে নিয়ে আসবে? এই প্রশ্নের জন্য আনিস একেবারেই প্রস্তুত ছিল না। সে থতোমতো খেয়ে গেলো। একটু থেমে সে বললো,
না। আমি একাই আসবো। কিছুদিনের জন্য। লতার নারীমন দ্রুত বুঝে নেয় কিছু। সে শান্ত স্বরে বললো,
আনিস, যে দিন চলে যায় সে কি আর ফিরে আসে? না-কি তাকে আবার ফিরিয়ে আনা যায়? আনিস বুঝতে পারে না সে কি বলবে। লতাই বা তাকে কি বোঝাতে চাচ্ছে।
আনিস, তুমি তো জানতে আমি তোমাকে কতো ভালোবাসতাম। আমার কতো স্বপ্ন ছিলো। তোমাকে নিয়ে। আমাকে নিয়ে। তুমি চলে যাবার পর একটি বছর আমি কতো কষ্ট করেছি। তোমাকে ভুলে যাবার কতো চেষ্টা করেছি। পড়াশোনায় মন দিয়েছি। নতুন জীবন গড়তে চেয়েছি। আর বাসার কথা কি বলবো? কতো যে ঝামেলা গেছে। কতো যে কথা শুনতে হয়েছে পরিবারের সকলের কাছ থেকে। তা আমি তোমাকে কিছুতেই বোঝাতে পারবো না ।
লতা, তুমি কি বলতে চাইছো?
আনিস, তোমরা ছেলেরা সময়ের দাবীকে সময় থাকতে নিদারূনভাবে উপেক্ষা করো। তারপর সেই সময় যখন একদিন হারিয়ে যায়। পৃথিবীও বদলে যায়। তোমরা তখন তাকে আবার নতুন করে খোঁজো। কেনো, আনিস? ডাবলিনের আবহাওয়া আজ প্রচন্ড রকম সুন্দর। চমৎকার রোদ। সারা আকাশ জুড়ে নীল চাদর। আনিসের অফিস শহরের ঠিক কেন্দ্রস্থলে। সারি সারি দৃষ্টি কাড়া সুরম্য অট্টালিকা। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নিঃশব্দ, অপ্রশস্ত জলধারা – গ্র্যান্ড ক্যানাল। একটু দূরে সেটি মিশে গেছে আইরিশ সাগরের মোহনায়। ক্যানালের দুই ধারে দীর্ঘ হাঁটা পথ। কিছুদূর পর পর রয়েছে বসার জন্য কিছু বেঞ্চ। সাগরের কাছাকাছি হওয়াতে গাংচিলের আনাগোনা এখানে খুব বেশি। বেশ কিছু রাজহাঁসও আছে জায়গায় জায়গায়। বাচ্চাশিশুকে নিয়ে অল্পবয়সী এক মা এসেছে। টুকরো টুকরো পাউরুটি ছুঁড়ে দিচ্ছে পাখিগুলোর দিকে। একটু দূরে একজোড়া রাজহাঁস ঠোঁট দিয়ে একে অপরকে মৃদু আঘাত করছে। ভালোবাসা শুধু মানুষকে নয়, প্রাণীকূলকেও আন্দোলিত করে। সেই আন্দোলনের ঢেউ কাউকে করে সংসারী। আর কেউ বা হয় বৈরাগী। তাহলে আনিস? সে কি সংসারী? না বৈরাগী? আনিস পাশের একটি কর্নার শপে ঢুকলো। একটি লম্বা পাউরুটি কিনে এনে বেঞ্চে এসে বসলো। একটি-দুটি গাংচিল তার দিকে এগিয়ে আসছে। সে পাউরুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে দিচ্ছে। কিন্তু তার দৃষ্টি ঐ রাজহাঁস যুগলের দিকে। কী অপূর্ব জাদু মায়ায় তারা একে-অপরকে ভালোবাসছে।
ডাবলিন ৫ই মে, ২০২০
এস, এম, মাহফুজুল হক অঙ্কনশিল্পীঃ Raiyaan Ul Islam (তন্ময়)
পূজার জন্য না হলেও যে কোনো ভাস্কর্য নির্মাণ ও স্থাপন ইসলাম সম্মত নয় বলে দাবি করেছেন আলেমরা।
বৃহস্পতিবার ‘দেশের শীর্ষ আলেম ও মুফতিদের’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা। এসময় তারা ভাস্কর্য হারাম হওয়ার হওয়ার বিষয়ে ফতোয়া জারি করেন।
শীর্ষ আলেমদের পক্ষে এ ফতোয়া প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও জমিয়তের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরার প্রিন্সিপাল মুফতি আরশাদ ও মাওলানা মাহফুজুল হক।
জার্মানি শহরের পথচারী জোনে দ্রুত গতিতে গাড়ি উঠিয়ে দেওয়ার পরে পাঁচজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জার্মান শহর ট্রিয়ারে আজ এক ড্রাইভার দ্রুতগতিতে তার গাড়ি পথচারী জোনে মানুষের উপর উঠিয়ে দেয় এতে একটি নয় মাস বয়সী শিশু সহ পাঁচ জন নিহত এবং অনেক মানুষ গুরুতর আহত হয়েেছেন।
ট্রিয়ারে জন্ম নেওয়া ৫১ বছর বয়সী জার্মান চালককে ঘটনাস্থলে গ্রেপ্তার করা হয় এবং গাড়িটি আটক করা হয় বলে ট্রায়ার পুলিশ জানিয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যাক্তির নাম জার্মান গোপনীয়তা আইন অনুসারে প্রকাশ করা হয়নি তবে তার কোনও নির্দিষ্ট আবাস বা ঠিকানা নাই এবং সাম্প্রতিক কিছুদিন যাবৎ সে তার ল্যান্ড রোভার গাড়ীটিতে সে বাস করছিল যেটি তার বন্ধু তাকে ব্যবহার করতে দিয়ে ছিল এবং এই গাড়ী দিয়েই সে পথচারী হত্যায় ব্যবহৃত করেছিল বলে জার্মান প্রসিকিউটর পিটার ফ্রেটজেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং তাকে মানসিক রোগের পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তবে চিকিৎসকরা প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছেন যে লোকটি মানসিক অসুস্থতায় ভুগতে পারে।
প্রায়ই বাসায় কিংবা অফিসে যেকোন স্থানে যেকোন অবস্থাতে হার্ট অ্যাটাকে মানুষের মৃত্যুর খবর শোনা যায় । মর্মান্তিক এ বিষয়টি ভাবিয়ে তুলে সবাইকে। কেননা, হঠাৎ করে একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে গেলে কিংবা হার্ট অ্যাটাক করলে তার জন্য তৎক্ষণাৎ যে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া উচিত তার প্রশিক্ষণও আমাদের জানা নেই।
অথচ অন্যান্য শারীরিক সমস্যার মতো এই সমস্যাটির প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান থাকলে অনেক মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে আপনি বাঁচাতে পারেন একজন মানুষকে।
হার্ট অ্যাটাকের পর প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে প্রয়োগ করা হয় কার্ডিয়াক পালমোনারি রিসাসসিটেশন। সংক্ষেপে একে সিপিআর বলা হয়। কেবল স্বাস্থ্যকর্মী নয়, সাধারণ মানুষেরও এই পদ্ধতিটি জেনে রাখা উচিত। তাতে অন্তত অনেকের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।
সিপিআর দেয়ার নিয়ম-
ধাপ ১- প্রথমে সমতল স্থানে রোগীকে চিৎ করে শোয়াতে হবে। রোগীর পালস ও শ্বাস আছে কি না তা সবার আগে দেখতে হবে।
ধাপ ২- এবার যিনি চিকিৎসা দেবেন তার একটি হাত প্রসারিত করে অন্য হাতের আঙ্গুল দিয়ে আটকে দিতে হবে। হাতের তালুর উঁচু অংশকে বুকের পাজরের নিচের অংশে ঠিক মাঝামাঝি স্থানে স্থাপন করতে হবে।
ধাপ ৩- প্রতি সেকেন্ডে ২ বার করে জোরে জোরে চাপ দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে দুই হাত যেন কোনোভাবেই ভাঁজ না হয়। এমনভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন দেড় থেকে দুই ইঞ্চি দেবে যায়।
ধাপ ৪- এভাবে ১৫ বার চাপ প্রয়োগের পর রোগীর কপালে ও থুতনিতে হাত দিয়ে মুখ খুলতে হবে। এরপর মুখের সাহায্যে মুখে জোরে জোরে দুবার শ্বাস দিতে হবে।
ধাপ ৫- একই পদ্ধতি আবার অনুসরণ করে ১৫ বার বুকে চাপ ও দুবার মুখে শ্বাস দিতে হবে।
এই পদ্ধতি কাজ করলেও যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। আর তাই, বাসা, অফিস, গাড়ি সব জায়গাতেই জরুরি ফোন নাম্বারগুলো চোখে পড়ে এমন জায়গায় রাখা উচিত।
আয়ারল্যান্ডে লকডাউনের পর আগামীকাল আবারও খুলছে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান।
আয়ারল্যান্ডে দীর্ঘ দিন লকডাউন এর পর আগামীকাল খুলবে অধিকাংশ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। আয়ারল্যান্ড সকল খুচরা ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় এলাকা ভিত্তিক ব্যাবসায়ীরা আগামীকাল তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। হেয়ারড্রেসার, বিউটি সেলুন, জিম এবং সিনেমাহল গুলি আগামীকাল থেকে আবার খুলতে পারে। এদিকে রেষ্টুরেন্টের মালিকগন আগামি শুক্রবার থেকে তাদের রেস্তোঁরা ও পানশালার মালিকরা তারে পানশালা (BAR) খোলার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছে।
এদিকে আইরিশ উপ- প্রধানমন্ত্রী লিওভারাতকার বলেছেন যে সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব দেশটি লকডাউ লেভেল-থ্রী এর বিধিনিষেধ আরোপ করে রাখতে চায়। তবে লিও ভারাতকার আরো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে ভবিষ্যতে লকডাউন এর সিদ্ধান্তগুলি কীভাবে আসবে তা আসছে সপ্তাহগুলিতে আইরিশ জনগন কি ভাবে বিধিনিষেধ গুলো মেনে চলে তার উপর নির্ভর করবে ।
জাপানে অক্টোবরেই আত্মহত্যা করে মারা গেছেন কোভিডে মোট মৃতের চেয়ে বেশি মানুষ। আত্মহত্যাকারীদের বেশির ভাগই নারী।
শুক্রবার জাপানের ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সি জানায়, অক্টোবরে সেখানে ২১৫৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। পুরো বছরে দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ২০৮৭ জন। সিএনএন
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, করোনা মহামারীর কারণে অসংখ্য মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সংকটে ভুগবে। গণহারে কর্মচ্যুতি, সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকা এর উদ্বেগ- এসবই এখন বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনকে ঘিরে আছে। জাপান সরকারের প্রকাশিত তথ্য বলছে, করোনাভাইরাস ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে মানুষের জীবনে।
আত্মহত্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও টোকিওর ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মিশিকো উয়েদা বলেছেন, জাপান এখন আর লকডাউনে নেই।
অন্য দেশের তুলনায় জাপানে কোভিডের ফলে ক্ষতির পরিমাণ সামান্যই। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানে বড় আকারে আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোতে একই রকম প্রবণতা অথবা এর চেয়ে বেশি মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যেতে পারে। দ্য গার্ডিয়ান
বিবিসি জানায়, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার হার জাপানে। ২০১৬ সালে সেখানে প্রতি এক লাখ মানুষে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার ছিল ১৮.৫ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। সেখানে প্রতি লাখ মানুষের বিপরীতে আত্মহত্যার হার ১০.৬ জন।
তোফাজ্জল সাহেব আজ আগে আগেই বাড়ি ফিরে এলেন। বিষয়টি তার স্ত্রীর কাছে বেশ খটকা লাগলো। এর আগে তিনি কতোবার তাকে আগে আগে বাড়ি ফেরার জন্য বলেছেন, কিন্তু কাজ হয়নি। এখন আর বলেননা। অভ্যেস হয়ে গেছে। তার কতো শখ ছিলো স্বামী বাড়ি ফিরে এলে বিকেলে এক সঙ্গে বসে চা খাবে, গল্প করবে, টিভি দেখবে, ছেলেকে নিয়ে হৈ হুল্লোর করবে। কিন্তু তোফাজ্জলের কাছে এ আবদারের কোনো দাম নেই। নিছক আবেগ ছাড়া আর কিছুইনা। এ আবেগের ধার তিনি ধারেন না। তাইতো কলেজ থেকে বেরিয়েই প্রতিদিন চলে যান চাস্টলে। সেখানে চেয়ারম্যান মেম্বার সহ স্থানীয় গন্য মান্য লোকেরা একে একে এসে ভিড় জমান। জমে ওঠে আড্ডা। রাজনৈতিক ও সামাজিক কথাবার্তার পাশাপাশি বিচার’শালিসীর কাজকামও সম্পন্ন হয় এসব আড্ডার মধ্য দিয়ে। সেই বিকেল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত চলতে থাকে তাদের চায়ের পেয়ালায় ঝড়। আজ নিয়মের অনিয়ম ঘটলো। চেয়ারম্যান সাহেব কানে কানে কি বলতেই তিনি উঠে দাঁড়ালেন।
তোফাজ্জল সাহেব একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। বাংলার অধ্যাপক। জীবন যাপনে বেশ সাদামাটা। পাজামা পাঞ্জাবীই তার প্রধান পোশাক। কখনো স্ত্রী ইস্ত্রি করে দেন আবার কখনো ইস্ত্রি ছাড়াই পড়েন। পোশাকআশাকে ইদানিং তার কোনো বাতিক নেই। এককালে ছিলো। ইউনিভার্সিটিতে যখন পড়াশুনা করতেন তখন কড়া ইস্ত্রি ছাড়া কোনো জামাকাপড় গায়ে তুলতেন না। চোখে দামী সানগ্লাস। আর এখন বুড়ো নিকেলের চশমা। ছাত্ররাজনীতি করতো। একটি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলো। খুব ভালো বক্তৃতা করতে পারতো। তন্ময় হয়ে মানুষ শুনতো তাঁর বক্তব্য। কখনো কখনো ঘন্টা দেড় পার হয়ে যেতো তবু মানুষ টেরই পেতোনা। ঢাকার বাইরে যে কয়জন ছাত্রনেতাকে বক্তব্য দানের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করে নেয়া হতো তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। প্রখ্যাত এ রাজনৈতিক বাগ্মির এক পর্যায়ে এসে রাজনীতি ছেড়ে দেন। যখন বুঝতে পারলেন, রাজনীতি আর নীতির রাজা নয়, রাজনীতি আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই কিংবা রাজনীতি কেবল আখের গোছানোর একটা জমজমাট ব্যাবসা মাত্র তখন তিনি তা ত্যাগ করলেন।
কর্ম জীবনে শিক্ষকতার মতো মহান পেশাকে বেছে নিয়ে তিনি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করলেন। রাজনীতি ছেড়ে না আসলে হয়তো এমপি মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারতেন। কিন্তু যে রাজনীতি মানুষের ভাষা বুঝেনা, মানুষ বা মানবতার কথা বলেনা সে রাজনীতি তার জন্য নয়। এমন দীন, কর্দমাক্ত রাজনীতি তাকে মোটেও কাছে টানে না। তার মনের ভেতরে দোল খাওয়া রাজনীতি আর সমাজে চলমান রাজনীতি এক নয়। বরং তা রেললাইনের মতো সমান্তরাল। কোনো দিনই অভিন্ন আদর্শের কেন্দ্রবিন্দুতে মিলিত হবার নয়। আদর্শের ভিন্নতার জন্য রাজনীতি ছেড়েছেন ঠিকই কিন্তু বক্তব্য ছাড়তে পারেননি। তবে তা মাঠ গরম করার মতো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। অন্য রকম বক্তব্য। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কোন্নয়নের বক্তব্য। ছাত্রদের মনোন্নয়নের বক্তব্য। বস্তুত একজন ছাত্র যেনো উগ্রবাদী হয়ে না উঠে, ধর্ষকের কালিমা নিয়ে যেনো কোনো ছাত্রকে এ সমাজে বেঁচে থাকতে না হয় কিংবা একজন ছাত্র যেনো হতে পারে মানবতার আইকন তথা মানুষ ও মানবতার পুজারী তাই ফুটে ওঠে তাঁর বক্তব্যে।
প্রথম বর্ষের নবীন ছাত্রদের উদ্যশ্যে প্রায়ই তিনি একটি বক্তব্য দেন। আজও তার পুনরাবৃত্তি করলেন। প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ, তোমরা সমাজের সূর সৈনিক। সূর্য সৈনিক। কোনো অদৃশ্য হাতের পুতুল বনে রাজনীতির নামে হত্যা, মারামারিতে লিপ্ত হওয়া তোমাদের কাজ নয়। সকাল হিংসা দ্বেষ ভুলে একই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে একটি প্লাটফর্মে দাঁড়ানোই তোমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। তোমাদের রয়েছে এক মহিমান্বিত অতীত। ছাত্ররা যুগ যুগ ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়েছে, ফাঁসির মঞ্চে গেয়েছে জীবনের জয়গান, দেশ মাতৃকার জন আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে করেছে অগ্নি উদ্গীরণ, বিষের পেয়ালা কন্ঠে করে করেছে অমৃত বর্ষণ, মৃত্যুর মন্দির সোপান তলে দিয়েছে প্রান। সক্রেটিস থেকে সাত্র এবং ফল এলোয়ার থেকে নজরুল পর্যন্ত এ দৃষ্টান্তের অভাব নেই। তাই তোমাদের পূর্বসূরিদের এ গৌরবময় ইতিহাস ভুলে গেলে চলবেনা। বরং তাঁরা যে মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে জাতির কল্যাণে নিজেদেরকে নিবেদন করেছে তোমাদেরকেও সে পথে হাঁটা বেশ জরুরি।
পিনপতন নীরবতার মধ্য দিয়ে ছাত্ররা তাঁর বক্তব্য শুনছিলো। বস্তুত একজন শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদেরকে জ্ঞান সমৃদ্ধ করে তোলার জন্য তাঁর কোনো কৃপণতা নেই। তিনি বিশ্বাস করেন, উঠতি বয়সের এসব ছেলে মেয়েরাই জাতির একমাত্র ভবিষ্যত। এদেরকে নৈতিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ করতে না পারলে, এদের মানষ পরিমণ্ডলের উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা আমরা যতোই বলিনা কেনো সত্যিকারার্থে জাতির উন্নয়ন আদৌ সম্ভব নয়। সে আদর্শিক চিন্তা ভাবনা থেকেই তিনি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পুঁথিগত জ্ঞান ছাড়াও নৈতিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে তার এ চেষ্টা যে পুরোপুরি সফল হচ্ছে তা নয়। না হলেই বা কি? পুরোপুরি সফল হচ্ছে না বলেতো আর হাত পা গুটিয়ে বসে থাকা যাবেনা! চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তবে তার মতে, এ চেষ্টাটা যদি বাল্যকালে পারিবারিক ভাবে কিংবা প্রাইমারি লেভেলে স্বতস্ফূর্ত ভাবে করা যায় তবে তা নৈতিক শিক্ষার ভিতকে শক্তিশালী করতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে।
কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করুয়া ছেলেমেয়েদের অনেকের মধ্যে গুরুভক্তি ভাবটা তেমন বেশি কাজ করেনা। ছোট বেলায় শিক্ষকের কথা শিক্ষার্থীদের মনে যেভাবে দাগ কাটে বড়ো হলে তা আর সেভাবে কাটেনা। এটা বুঝাতে খুব বেশি দূর থেকে উদাহরণ টানার দরকার নেই। তাঁর হাতেই রয়েছে এর ভূরি ভূরি প্রমাণ। তাঁরই কিছু ছাত্র যাদেরকে তিনি মানবতার মন্ত্র শেখাতে সবসময় চেষ্টা করে গেছেন তারাই বিভিন্ন অনৈতিক কাজে কর্মে নিজেদেরকে জড়িয়ে ফেলছে। তার বিরুদ্ধাচরণ করছে। তাঁকে অপমান অপদস্থ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। চেয়ারম্যান সাহেবতো কানে কানে ওই কথাটিই তাকে বলেছিলেন। অধ্যাপক সাহেবকে এ কথাটি জানিয়ে নিজের আসল চেহারাটা গোপন রাখার চেষ্টা করলেন তিনি। কিন্তু অধ্যাপক সাহেব তো আর বোকা নন। তিনি সবই বুঝেন। সকল অপকর্মের হোতা ও আস্কারাদাতা যে ওই চেয়ারম্যান তা বুঝতে তার বাকি নেই। তিনিই প্রকৃত নাটেরগুরু।
অধ্যাপক সাহেব রাজনীতি ছেড়ে দিলেও রাজনীতি তাকে ছাড়তে চায়না। তবে সে রাাজনীতি নষ্ট রাজনীতি। অপরাজনীতি। এ অপরাজনীতির দাপটে পুরো দেশ অতিষ্ঠ। এক কালে এর মাত্রা ছিলো কেবল শহর নগর বা থানা উপজেলা পর্যন্ত। কিন্তু ইদানিং তা গ্রামে গন্জেও পৌছে গেছে। সেখানেও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কমিটি। আর এসব কমিটিতে অক্ষর জ্ঞানহীন অনেক ব্যক্তিবর্গই সভাপতি সেক্রেটারি হিসেবে স্থান পাচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, ইউনিভার্সিটি থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়েও অনেক ছেলেমেয়েকে সরকারি চাকরি বাকরি নিতে গেলে ওদের সনাক্তকরনের মুখাপেক্ষী হতে হয় আজকাল। জাতি কতোটা দুর্ভাগা হলে একটি দেশের শিক্ষিত শ্রেণীকে জীবনের মানোন্নয়নের জন্য রাখাল সমেত কোনো রাজনৈতিক টাউট বাটপারের ছাড়পত্রের উপর নির্ভর করতে হয়। লজ্জা! বড়ো লজ্জা! এ লজ্জা মাথায় নিয়েই তোফাজ্জল সাহেবদের মতো ভদ্র ও সুশীল মানুষদেরকে এ সমাজে বেঁচে থাকতে হচ্ছে অসহায় ভাবে। শুধু তাই নয়, সময়ে অসময়ে তাঁদেরকে অন্যায় ক্রোধেরও শিকার হতে হয়।
কিছু দিন আগের কথা। গ্রামের একদল দরিদ্র লোক তোফাজ্জল সাহেবের বাড়িতে হাজির। খেটে খাওয়া জেলে শ্রেণীর মানুষ তারা। সারাদিন জাল বেয়ে যে মাছ ধরে তা বিক্রি করে কোনো রকমে তাদের সংসার চালায়। কিন্তু বিধি বাম। যেখানে তারা মাছ ধরে সেখানে আরোপিত হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। হাজার বছর ধরে জেলেরা বর্ষার হাওরে ইচ্ছে মতো মাছ ধরে আসছে। এটাই রেওয়াজ। এ রেওয়াজের বিঘ্নতা ঘটাচ্ছে গ্রামেরই কিছু নব্য রাজনৈতিক রাখাল। তারা সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছে। তাই তাদের অনুমতি ছাড়া কেউ জাল বাইতে পারবেনা। এ যেনো গরিবের পেটে লাথি মারা ছাড়া আর কিছুই নয়। উপস্থিত জনগণ তাই তোফাজ্জল সাহেবকে সমস্বরে বলতে লাগলো, “স্যার আমনে আমরারে বাঁচাইন। এইঢার একঢা বিহিত করুইন।” তোফাজ্জল সাহেবের দরদী হৃদয় কেঁপে উঠলো। কিন্তু তাঁর কিছুই করার নেই। তাই তিনি অক্ষম কন্ঠে বললেন,, “আমি কোনো সরকারি অফিসার বা জনপ্রতিনিধি নই যে তোমাদের জন্য কিছু করতে পারবো। তার চেয়ে বরং তোমরা চেয়ারম্যানের কাছে যাও। তার হাতে অনেক ক্ষমতা।”
ঠিকই কইছেন, হের অনেক ক্ষমতা। কিন্তু হেই ক্ষমতা আমরারে কিছতুয়া দেওনের লাগ্যা না বরং আমরারে চুষ্যা খাওনের লাগ্যা। আমনের বাড়াত আওনের আগেই আমরা বেহেই চেয়ারম্যান, উপজেলার চেয়ারম্যান, ইউএনও সহ সরকারি দলের নেতারার আতে পাওয়ে ধরছি। কাম ওইছেনা। হেরা বেহেই এক চাউলের ভাত খায়। এমপি নিজেও ব্যাপারঢা জানে। হেই ব্যাডিও কিছতুয়া কয়না। ওহন আমনেই আমরার শেষ ভরসা। দয়া কইরা কিছু একঢা করুইন।
এমপি সহ চেয়ারম্যান ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা যেখানে একজোট সেখানে তার মতো একজন সাধারণ কলেজ শিক্ষক কি-ইবা করতে পারে! তাই তিনি বেশ বিনয়ের সঙ্গে তাঁর অপারগতার কথা বলে তাদেরকে চলে যেতে বললেন।
কিন্তু তারা নাছোড়বান্দা। এতো সহজে হাল ছাড়ার লোক তারা নয়। তাই আবারো তাঁকে তারা অনুনয় বিনয় করলো। অবশেষে তিনি রাজি হলেন। তবে তাদেরকে তিনি একটি শর্ত দিলেন। কোনো অবস্থাতেই তারা যেনো কারো কানপড়া আমলে না নেয় এবং তাঁর কথার বাইরে গিয়ে এক কদমও যেনো অগ্রসর না হয়। স্ত্রী চাননা তোফাজ্জল সাহেব কোনো ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ুক। অযথা মানুষের সাথে শত্রুতা বাড়িয়ে লাভ কি! তাছাড়া যাদের জন্য তিনি কোমর ভেজাবেন তারা কি শেষপর্যন্ত তার সাথে থাকবে? থাকবে কি থাকবেনা তোফাজ্জল সাহেব তা জানেন না। এ নিয়ে তিনি মাথাও ঘামাননা। একজন মানুষ হিসেবে যা করনীয় তাই তিনি করবেন। শাকিল চৌধুরী। তোফাজ্জল সাহেবের স্কুল জীবনের বন্ধু। বেশ নামীদামি সাংবাদিক। এক ডাকে সবাই চেনে। সচিবালয়, মন্ত্রনালয় কেঁপে ওঠে তার রিপোর্টে। সেই সাংবাদিক বন্ধুকে পুরো ব্যাপারটা তিনি খুলে বললেন। এমপি, চেয়ারম্যান, মেম্বার, স্থানীয় নেতা, পাতি নেতা, গ্রামের ছিচকে নেতা ও ইউএনও সহ একটি সিন্ডিকেট যা কিনা সরকারি বিধি বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গরিবের পেটে লাথি মারার মতো নিকৃষ্টতম কাজে লিপ্ত। সাংবাদিক সাহেব যা বুঝার তিনি বুঝে ফেলেন।অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কলম ধরাই তাঁর কাজ। বানালেন ফিচার ধর্মী এক রিপোর্ট। প্রকাশ পেলো তার পত্রিকায়। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত খবর হয়ে গেলো। সংশ্লিষ্ট সচিবরা নড়েচড়ে বসলো। ইউএনও কে ধমকালো। দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তি করার আদেশ দিলো।
কথায় আছে, “ঠ্যালার নাম বাবাজি”। ইউএনওর শুভ বুদ্ধির উদয় হলো। কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে গ্রামে গেলো। মাইকিং করালো। হাওর উন্মুক্তকরনের কথা ঘোষণা করা হলো। এলাকায় জনগনের মুখে মুখে খবরটি ছড়িয়ে পড়লো। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মুখে ফুটে উঠলো আনন্দের হাসি। বিজয় হলো সত্যের। বিজয় হলো মানবতার। কিন্তু হাওর খেকোরা এ বিজয় সহজে মেনে নিতে পারলোনা। তাদের মাথায় বাজ পড়লো। বুকে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠলো। কূটপরায়ন হয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে টাকা দিয়ে কিনে ফেললো। তাদের মধ্যে অন্তরদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা হলো। এক পক্ষ অন্য পক্ষের একজনকে মারামারি করে মাথা ফাটিয়ে ফেললো। এ সবকিছুর দায়ভার চাপানো হলো অধ্যাপকের ঘাড়ে। তরুণ ছাত্রসমাজের কয়েকজন যাদেরকে তিনি মানবতার শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন তারাও নির্লজ্জ ভাবে তাকে দোষারোপ করছে। এ সব কিছুর মূল হোতা একজন। চেয়ারম্যান সাহেব। তিনি তলে তলে সবাইকে প্ররোচিত করে অধ্যাপক সাহেবের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছেন। অথচ ভালো মানুষের প্রতিরূপে তিনিই অধ্যাপক সাহেবকে আগে আগে বাড়ি চলে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। যেনো রাতের আঁধারের সুযোগে ক্ষেপে যাওয়া মানুষেরা তার কোনো ক্ষতি করতে না পারে। অধ্যাপক সাহেব বুঝতে পারলেন, এ কোনো পরামর্শ নয়, এ ছিলো এক চপেটাঘাত।
তোফাজ্জল সাহেব বেশ মর্মাহত হন। কষ্ট পান। এরা কেমন মানুষ! যাদেরকে মানুষ বানানোর জন্য তিনি নিজে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে শপথ নিয়েছেন তাদেরই কেউ কেউ তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করছে! যাদের অধিকার আদায়ে ধনিক শ্রেণীর রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে লড়েছেন তাদের অনেকেই গোপনে কুচক্রীদের সাথে হাত মিলিয়েছে। এ কেমন মানসিকতা! কেমন মনুষ্যত্ববোধ! চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও নেতৃস্থানীয় লোকদের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। সবার সাথেই তিনি মার্জিত ও বন্ধুসুলভ আচরণ করেন। অথচ তারাও তাকে সহ্য করতে পারেনা। প্রতিদ্বনদ্বী ভাবে। অধ্যাপক সাহেবকে হেস্তনেস্ত করতেই যেনো তারা বেশি তৎপর। এ তৎপরতা যে কোনো ভালো মানুষের কাজ হতে পারেনা তা তোফাজ্জল সাহেব অতি সহজেই বুঝতে পারেন। তবু তিনি নীরব থাকেন। কারণ তাঁর মতো সত্যিকার মানুষেরা এসব অমানুষদের ভীরে বড্ড অসহায়।
অসহায়ত্বের জ্বালা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন তোফাজ্জল সাহেব। অনেক দিন ছেলের পড়াশুনার খোঁজ খবর নেয়া হয়নি। সুযোগও হয়ে ওঠে না। আজ আগে আগে বাড়ি ফেরায় সে সুযোগটা হয়ে ওঠলো। আর তিনি তা হাতছাড়া করতে চাইলেন না। এগিয়ে গেলেন ছেলের কাছে। বললেন, ” বাংলা ভাষায় তোমার দখলদারিত্বের পরীক্ষাটা হয়ে যাক আজ। লিখতো বাবা “আমার জীবনের লক্ষ্য” রচনাটা।”
আব্বুকে পেয়ে ছেলে বেশ উৎফুল্ল। খুশি। আর ওই খুশি খুশি মন নিয়ে সে লিখতে শুরু করলো। বড়ো হয়ে দেশে লেখাপড়া শেষ করে বিলেতে ব্যরিষ্টারি পড়তে যাবে। ব্যরিষ্টারি পড়া শেষে এক বিদেশী ম্যামকে বিয়ে করে সাথে নিয়ে দেশে ফিরবে। বাবা পড়ছিলেন আর মুচকি মুচকি হাসছিলেন। সহসা তিনি গম্ভীর হয়ে যান। রক্তচাপ বেড়ে যায়। উত্তেজিত হয়ে পড়েন। “এসব কি লিখেছো” বলেই খুব জোরে গালে একটি চড় কষে দেন। ছেলে অবাক হয়ে যায়। বাবাকে কোনোদিন এভাবে রাগতে দেখেনি। কখনো তার গায়ে হাত তোলেনি। অথচ আজ বাবার ভিন্ন রূপ দেখে চমকে যায়। সে কি তবে ভুল কিছু লিখেছে? মায়াভরা চোখ নিয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো বাবার দিকে। বললো, ‘বাবা, আমাকে নিয়ে আপনার যে কল্পিত রূপরেখা, তা আঁকতে কি আমি ব্যর্থ হয়েছি? আপনার মনে চিত্রায়িত ছবি কার কথা বলে? ডারউইন, বারটান্ড রাসেল কিংবা সক্রেটিস এমন কিছু?”
বাবা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন। ছেলেকে বুকে টেনে নিলেন। কপোলে চুমু খেয়ে বললেন, “না বাবা এমন কিছুই চাইনা। সারা জীবন মানুষকে মানুষ বানাবার যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছি। তাই তোমার জজ, ব্যরিষ্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র কিংবা দার্শনিক বিজ্ঞানী কিছুই হওয়ার দরকার নেই। আমি চাই তুমি একজন ভালো মানুষ হয়ে গড়ে ওঠ। মানুষের মতো মানুষ।”
করোনা ভাইরাস পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল যখন চূড়ান্তভাবে শুরু হবে তখন বিমান জেটসেটিং অসিজ’কে কঠোর নিয়ম বাধ্যতামূলকভাবে পালন করতে হবে। এ সতর্কতা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কোয়ান্টাস বিমান সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালান জয়সে। তিনি বলেছেন, ফ্লাইট শুরু হলে পায়ের গোঁড়ালিতে ব্রেসলেট পরা থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে। বিমানের স্যুয়ারেজ পরীক্ষা করা হবে। বাধ্যতামূলক টিকা নিতে হবে। ফলে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল কখনোই আগের মতো হবে না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। আগামী বছরের শুরুর দিকে করোনা ভাইরাস টিকা সবার জন্য চালু হতে পারে। ওই সময়ে বিদেশগামী কোনো যাত্রীকে অবশ্যই বিমানে উঠতে হলে তাকে কিছু বাধ্যতামূলক শর্তের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
এর মধ্যে রয়েছে, অবশ্যই একজন যাত্রীকে করোনার টিকা নিতে হবে। এ ছাড়া আরো সব নিয়মকানুন কড়াকড়ি করছে তার বিমান সংস্থা কোয়ান্টাস। ‘এ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স’কে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সফরকারীদের জন্য বিমানে উঠার আগে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। তার ভাষায় যেসব পর্যটক অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন অথবা যেসব মানুষ অস্ট্রেলিয়া থেকে বাইরের দেশে যাবেন, তাদের জন্য এই টিকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই টিকা সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক সব ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা উচিত হবে। এ নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য বিমান সংস্থার সহকর্মীদের সঙ্গে আমি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ফলে আমরা যে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছি তা হবে সারাবিশ্বের জন্য একটি অভিন্ন বিষয়। এক্ষেত্রে আপনি টিকা নিয়েছেন এমন একটি পাসপোর্ট, এর ইলেকট্রনিক সংস্কারণ কিভাবে পাওয়া যায় সে বিষয়টি দেখছি আমরা। এটা নিশ্চিত করতে প্রচুর লজিস্টিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন হবে। আমরা যেমনটা বলছি, তা নিয়ে কিন্তু এরই মধ্যে বিমান সংস্থাগুলো এবং সরকারগুলো কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে ১২ বছরের ওপরে বয়সী কোনো ভ্রমণকারী সিঙ্গাপুরে গেলে তাকে অবশ্যই একটি নজরদারিকারী ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরতে হয়, যদি সে বা তারা কোনো কোয়ারেন্টিন ফ্যাসিলিটিতে অবস্থান না করেন। হংকংয়ের ক্ষেত্রেও একই রকম নীতি রয়েছে। ওদিকে সুনির্দিষ্ট ভাড়া করা বিমানে করে আন্তর্জাতিক কোনো কর্মী যদি পাপুয়া নিউ গিনিতে যান তাহলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে পায়ের গোঁড়ালির কাছে একটি ব্রেসলেট পরতে হয়। সেখানে তারা দু’সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকেন। এ সময় তাদেরকে এই ব্রেসলেট পরতেই হয়।
অ্যালান জয়সে ইঙ্গিত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য একই রকম নীতি গ্রহণ করতে পারে অস্ট্রেলিয়া। এটা করা হতে পারে নিরাপত্তার জন্য। এর আওতায় থাকবে ডিএনএ পরীক্ষা, যেটা পিসিআর পরীক্ষা নামে পরিচিত। ইউরোপ থেকে আসা প্রত্যাবর্তন বিষয়ক ফ্লাইট, যেগুলো ডারউইনে আসছে, সেখানে আমরা জনগণের পরীক্ষা করছি। পিসিআর পরীক্ষা করছি। ডারউইনে এই পরীক্ষা করার মাধ্যমে আমরা আশাবাদী কাউকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা ঠিক হবে কিনা। এ ছাড়া বিমানে পরিত্যক্ত পানিও আমরা পরীক্ষা করছি। এটা করে আমরা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি যে, বিমানের কোনো যাত্রীর করোনা সংক্রমণ আছে কিনা। এতে আমাদেরকে বেশ কিছু আশাপ্রদ ফল দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিমান ফ্লাইট সীমিত রয়েছে। তবে কোয়ান্টাস বর্তমানে আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাড়ানোর কথা চিন্তা করছে। গত ২০ শে মার্চ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর অর্থ হলো, শুধু অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক এবং সেখানে স্থায়ী আবাসিক অনুমোদন পেয়েছেন যারা, শুধু তারাই ফিরতে পারছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তবে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার পরই এসব মানুষকে দু’সপ্তাহ হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে বাধ্যতামূলকভাবে। এ সময়ে হোটেলের খরচ বহন করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই। তারা যাতে বিদেশ থেকে করোনা ভাইরাস বহন করে নিয়ে তা অন্যদের মাঝে সংক্রমিত করতে না পারেন সে জন্য এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে সোমবার ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে সীমান্ত খুলে দিয়েছে এনএসডব্লিউ। এদিন সিডনি এবং মেলবোর্ন বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রী ও তাদের প্রিয়জনদের আবেগঘন পুনর্মিলন দেখা গেছে।
তথ্যসুত্র: মানবজমিন (বিশ্বজমিন) ২৮ নভেম্বর ২০২০, শনিবার।
আগামীকাল ২৮ এ নভেম্বর চ্যানেল ১৯ এ কমিউনিটি লাইভ আড্ডায় থাকবেন বাংলাদেশ কমিউনিটির তিন উদীয়মান উজ্জ্বল নক্ষত্র বিয়ানা খান, মেশকাত হক ও সাজিদ হোসাইন। তিন জনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন লিনা সেন গুপ্তা
বিয়ানা খান সুইডেনের স্টকহোমে জন্ম ও বেড়ে উঠা। ১১ বছর বয়সে পরিবারের সাথে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে পা রাখেন। লিমেরিকে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তখন থেকেই। Monaleen National School এবং পরে Castletroy College থেকে জুনিয়র ও লিভিং চার্ট শেষ করেন সফলতার সাথে। পরবর্তীতে লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Pharmaceutical and Industrial Chemistry তে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। বিয়ানা বর্তমানে Associate QA Specialist হিসেবে স্বনামধন্য ফার্মাসিউটিকেল কোম্পানি Regeneron Pharmaceuticals এ কর্মরত। বিয়ানা বলেন, ‘’আমি ছেলেবেলা থেকেই বিজ্ঞান বিষয়ে, বিশেষ করে কেমিস্ট্রিতে অধ্যয়ন করার স্বপ্ন ছিল। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমার বাবা আমাকে যথেষ্ট সমর্থন ও সহযোগিতা করেছেন, পাশাপাশি আমার মা আমাকে আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে যথেষ্ট পরিশ্রম ও ত্যাগ শিকার করেছেন। দুর্ভাগ্যবশত বিগত ৪ বছর আগে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। যার ফলে আমরা খুব ভেঙ্গে পড়ি। আমার মা সংসারের দায়ভার মাথায় নেন। উনি সহকারী শেফ হিসেবে চাকুরী করে আমার পড়ালেখা চালিয়ে নিতে সহায়তা করেছেন। আমি এই ভেবে গর্বিত যে, আমি বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।‘’ বিয়ানা তাঁর কাজকে অনেক ভালোবাসেন। তিনি বলেন, ‘’আমি মানুষকে সাহায্য করতে ভালোবাসি। আমার কাজ মানুষের জীবন বাঁচাতে ও পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে, এই ভেবেই আমি আমার কাজকে ভালোবাসি।‘’ বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ, সংস্কৃতিকে অনেক ভালোবাসেন বিয়ানা। তিনি প্রত্যেক ২ বছর অন্তর বাংলাদেশ ভ্রমণের চেষ্টা করেন। পছন্দ করেন দেখতে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশী কৃষ্টি ও সংস্কৃতির পরিব্যপ্তি দেখতে। আরো চান বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে মেলবন্ধন। যাতে করে একে অন্যের সুখ, দুঃখ, ধারণাগুলো শেয়ার করতে পারা যায়। ছোটবেলা থেকেই বিয়ানা ছিলেন অনেক কর্মমুখর ও ক্রিয়াশীল। ফুটবল, ব্যাডমিন্টন ও পিংপং খেলেই কাটিয়েছেন শৈশব, এখনো সুযোগ পেলে হাতছাড়া করতে চান না।
মেশকাত হক জন্ম বরিশাল, বাংলাদেশে। ২ বছর বয়সেই পরিবারের সাথে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে। বর্তমানে ডাবলিনেই স্থায়ী নিবাস। সম্পূর্ণ শিক্ষাজীবনই সম্পন্ন করেন আয়ারল্যান্ডে। তিনি Presentation Primary School Terenure ও Alexandra College Miltown থেকে যথাক্রমে জুনিয়র ও লিভিং চার্ট সম্পন্ন করেন। এরপর University College Dublin থেকে Medicine এর উপর গ্রাজুয়েশন করেন। মেশকাত বর্তমানে St Vincent’s University Hospital Dublin এ ডাক্তার হিসেবে কর্তব্যরত। তিনি হাসপাতালের Senior House Officer (HSO) হিসেবে দায়িত্বরত। সেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পেরে তিনি নিজেকে গর্বিত মনে করেন। পেশাগত জীবনের বাহিরেও মেশকাত ব্যাস্ত সময় পার করেন। অবসর সময়ে ছুটে বেড়ান শহর থেকে শহরে। বাহির উনাকে প্রচণ্ড রকম টানে, পছন্দ করেন পর্বতারোহণ। বৃষ্টির দিনে ছবি আঁকতে এবং ফটোগ্রাফীতেও রয়েছে প্রচণ্ড শখ।
সাজিদ হোসাইন সাজিদ হোসাইন Dublin Institute of Technology (DIT) থেকে Automobile Engineering & Transport Engineering এর উপর গ্রাজুয়েট হন। তিনি বর্তমানে EUV Engineer হিসেবে ASML এ কর্মরত আছেন। তার কাজের পরিধি Photolightography নিয়ে। সাজিদ ২০১৫ সালে লিভিং সার্টিফিকেট ও ২০১৩ সালে জুনিওর সার্টিফিকেট পাস করেন COLAISTE CHOLIM স্কুল সোর্ডস থেকে।।
তিনি ফুটবল খেলা ও ভ্রমণ পছন্দ করেন। সোর্ডস রোভার্সের হয়ে তিনি সাত বছর ফুটবল খেলেছেন। তিনি কোম্পানি থেকে ট্রিনিং এর জন্য তাইওয়ান ও নেদারল্যান্ডস ভ্রমণে গিয়েছেন এবং আগামী বছর কোরিয়া ও আমেরিকা যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করছেন।
তাঁর পিতা সাহাদাত হোসেন আয়ারল্যান্ডে আসেন ২০০১ সালে এবং পরবর্তী বছর ২০০২ সালে তারা স্বপরিবারে আয়ারল্যান্ডে আসেন। প্রায় প্রতি বছরই দেশ সফরে যাওয়া হয়।
বিস্তারিত জানার জন্য সবাইকে আগামীকাল চ্যানেল ১৯ এ চোখ রাখার জন্য আহবান করা হলো।
গত ২৪শে নভেম্বর আইরিশ পার্লামেন্টে অবৈধ ব্যক্তিবর্গের বৈধতা দেওয়ার ব্যাপারে আপডেট জানতে চাওয়া হয় যা নিন্মে দেওয়া হলো।
প্রশ্ন: Niall Collins TD জাস্টিস মিনিস্টার Helen McEntee TD কে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করা অবৈধ ব্যক্তিবর্গের বৈধতা দেওয়ার ব্যাপারে আপডেট জানতে চান।
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত অবৈধদেরকে বৈধতা দেওয়ার স্কিমের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জাস্টিস মিনিস্টারের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে যে, যে সমস্ত অবৈধ ব্যক্তিবর্গ আয়ারল্যান্ডে অবস্থান করছে এবং চাকরি করছে তাদের এপ্লিকেশনের বৈধতা দেওয়ার ব্যাপারে বর্তমান পরিস্থিতি কি?
জবাবে জাস্টিস মিনিস্টার:
আইরিশ সরকার অবৈধ নাগরিকদের বৈধতা দেওয়ার ব্যাপারে অবস্থান এই যে, যে সমস্ত অবৈধ নাগরিকগণ আয়ারল্যান্ডে দীর্ঘদিন অবস্থান করছে তারা এবং তাদের অধীনস্তদের সুনির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে বৈধতা দেওয়া নিমিত্তে নতুন সরকার গঠনের ১৮ মাসের মধ্যে একটি পন্থা তৈরী করা হবে। এ ক্ষেত্রে European Union এবং Common Travel Area commitments এর নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে।
জবাবে তিনি বলেছেন, এটার দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে আমার ডিপার্টমেন্ট দ্রুততার সাথে কাজ করছে
তিনি বলেন আমি সকলকে উতসাহিত করতে চাই এই ব্যাপারে যে, আপনারা যারা এখনো অবৈধ আছেন আপনাদের স্বার্থে এবং আপনাদের পরিবারের স্বার্থে দ্রুততার সাথে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে অথবা আপনাদের লোকাল ইমিগ্রেশনের সাথে যোগাযোগ করুন।
আমরা ফিয়ানা ফেইল ও Niall Collins TD কে মাইগ্রান্টদের পক্ষে কাজ করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আর্জেন্টাইন ‘ফুটবল ঈশ্বর’ ডিয়েগো ম্যারাডোনা আর নেই। মাত্র কয়েকদিন আগেই রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার পর ডাক্তাররা তাকে পূনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই বুধবার (২৫ নভেম্বর) হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। যেখান থেকে আর ফিরলেন না তিনি। তিগ্রে-তে নিজ বাসায় মারা যান ম্যারাডোনা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
বিশ্বে কোটি কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
গত মাসে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা। বুয়েনস এইরেসের হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। মস্তিষ্কে জমাট বেঁধে থাকা রক্ত (ক্লট) অপসারণ করা হয়েছিল। তখন মাদকাসক্তি নিয়ে ভীষণ সমস্যায় ভুগেছেন ম্যারাডোনা। তাঁকে পুনর্বাসনের জন্য তাঁকে নেওয়া হয়েছিল তিগ্রে-র একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’ জানিয়েছে, আজ স্থানীয় সময় বিকেলে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন। এই অসুস্থতা থেকে আর বেঁচে ফিরতে পারেননি কিংবদন্তি। এ ছাড়া সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ও নিশ্চিত করেছে ম্যারাডোনার মৃত্যুর খবর। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে প্রায় একাই শিরোপা জেতানো ছাড়াও ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলির হয়ে স্মরণীয় মৌসুম উপহার দিয়েছেন ম্যারাডোনা। নাপোলিকে দুবার সিরি ‘আ’ ও উয়েফা কাপ জিতিয়েছেন ম্যারাডোনা।
সামরিক আমলে প্রণীত মাদ্রাসা শিক্ষা অধ্যাদশকে নতুন করে আইন করতে ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বিল-২০২০’ সংসদে পাস হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বিল-২০২০’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন বিরোধী দলীয় সদস্যরা। তাদের ওই প্রস্তাব ও সংশোধনী গৃহীত হয়নি।
গত ৮ নভেম্বর বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।
পাস হওয়া বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়, এবতেদায়ি, দাখিল এবং আলিম পর্যায়ের সব শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রমের অগ্রগতিকল্পে এবং এ বোর্ড হতে প্রাপ্ত ইসলামি সনদধারী শিক্ষার্থীরা দেশ ও বিদেশে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিতক্রমে বিলটি অনুমোদন করা অতীব জরুরি ও যুক্তিযুক্ত।
সংসদে উত্থাপিত বিলে অধ্যাদেশে উল্লিখিত ‘বোর্ড’ শব্দের পরিবর্তে ‘পরিচালনা পর্ষদ’ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বোর্ডের সদস্য সংখ্যা ১৩ জনের পরিবর্তে ১৫ জন করা হয়েছে। আর রেজিস্ট্রারকে সদস্য সচিব হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের মতো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমাও ৬০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে বিলে।
প্রসঙ্গত, এতদিন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চলে আসছিল ১৯৭৮ সালের অধ্যাদেশ অনুসারে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সামরিক শাসন আমলে প্রণীত যেসব আইন বা অধ্যাদেশের এখনও প্রয়োজন রয়েছে, সেগুলোকে পরিমার্জন করে বাংলায় রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যে কারণে এই বিলটি আনা হয়েছে।
কাতার পৌঁছেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বের ফিরতি ম্যাচ খেলতে দেশটিতে গিয়েছে জামাল ভূঁইয়ারা। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছে বাংলাদেশ দল। আগামী ৪ ডিসেম্বর কাতারের বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা।
কাতারের উদ্দেশে সকাল সাড়ে ১০টায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস দল নিয়ে ঢাকা ছাড়েন। বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে ৫টায় দোহায় পৌঁছায় তারা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরেই পুরো দলের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
কাতারে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে তিন দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এ সময়ে বাংলাদেশ মাঠে অনুশীলন করতে না পারলেও হোটেলে জিম ও সুইমিংপুল ব্যবহার করতে পারবে।
কাতার সফরের জন্য ২৭ জন ফুটবলার নির্বাচন করা হলেও শেষ পর্যন্ত গেছেন ২৫ জন। মিডফিল্ডার মনজুরুর রহমান মানিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় এবং স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন হাঁটুতে চোট পাওয়ায় তাদের রেখে যাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ দল আগামী ৪ ডিসেম্বর কাতারের বিপক্ষে দোহায় বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ফিরতি ম্যাচ খেলবে। গত বছর অক্টোবরে ঢাকায় প্রথম ম্যাচে কাতার জিতেছিল ২-০ গোলে।
কাতার ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দুই ম্যাচের সিরিজ খেলেছে নেপালের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচ ২-০ গোলে জিতে দ্বিতীয় ম্যাচ গোলশূন্য ড্র করেছে। অন্য দিকে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার গত এক মাসে তিনটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছে। তবে তারা এক ম্যাচও জিততে পারেনি।
কাতার গত ১২ অক্টোবর তুরস্ক গিয়ে ম্যাচ খেলেছে ঘানার বিরুদ্ধে। আফ্রিকার দেশটির কাছে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। কাতার ১৩ ও ১৭ নভেম্বর অস্ট্রিয়ায় দুটি ম্যাচ খেলেছে কোস্টারিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে। কোস্টারিকার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করলেও ২-১ গোলে হেরেছে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে।
সুপারমার্কেটে হালাল খাবার রাখার জন্য দাবি জানিয়ে আয়ারল্যান্ডের নিবেদিত প্রাণ কিছু মুসলিম তরুণের উদ্যেগে একটা পিটিশনের ব্যবস্থা করা হয়। এতে বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের পক্ষ থেকে যথেষ্ট সাড়া মিলে। তবে এ নিয়ে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি করে যে, সুপারমার্কেটে হালাল দ্রব্য রাখা হলে হালাল ব্যবসায়ে এর প্রভাব পড়বে। কিন্তু পিটিশনের উদ্যোক্তাদের বক্তব্য যে, তারা হালাল ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখেই এ পিটিশনের ব্যবস্থা করে। এতে করে ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় কোন প্রভাব পড়বেনা, বরঞ্চ মুসলমান কমিউনিটি এর থেকে বিশদভাবে উপকৃত হবে।
উদ্যোক্তাদের বর্ণনানুযায়ী কেন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা, তা নিম্নোক্ত পেশ করা হল
মুসলমান এবং হালাল খাবার একে অপরের পরিপূরক। হালাল খাবার গ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক। হালাল খাবার বলতে একটা খাবার তৈরি হওয়া থেকে খাবারের থালায় আসা পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটা হালালভাবে সম্পন্ন হতে হয়। কিন্তু যারা আমরা অমুসলিম অধ্যুষিত দেশে থাকি তাদের জন্য হালাল খাবার পাওয়াটা একটু দুষ্কর। ধন্যবাদ অনেক মুসলমান ব্যবসায়ীদের যাদের কল্যাণে কিছুটা হলেও হালাল খাবারের চাহিদা পূরণ করা সম্ভবপর হচ্ছে, কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়।
আয়ারল্যান্ডে বর্তমানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সব জায়গায় বহু মুসলমান রয়েছে, কিন্তু সে তুলনায় হালাল দ্রব্যের চাহিদা মোতাবেক দ্রব্য সরবরাহ এখনো পরিব্যপ্ত নয়। বিশেষ করে যারা বড় শহরগুলা ব্যাতিরেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকে, সেসব অঞ্চলে হালাল পণ্য সহজলভ্য নয়। তাদেরকে তাই দূর দূরান্তে ভ্রমণ করে হালাল খাবার সংগ্রহ করতে হয়। যা সত্যিই কষ্টসাধ্য। আবার অনেক অঞ্চলে হালাল দোকান থাকলেও অনেকক্ষেত্রে ভোক্তাদের জন্য খুব সহনীয় হয়না হালাল খাবার সংগ্রহ করতে। যেমন দ্রব্যের অপ্রতুলতা, সময়, গাড়ি পার্কিং, অস্বাভাবিক দূরত্ব তার অন্যতম কারণ।
যার কারণে আয়ারল্যান্ডের মুসলমানদের ধীর্ঘদিনের চাওয়া যে এখানকার সুপারমার্কেটগুলোতে হালাল পণ্য রাখার ব্যবস্থা করা। কারণ সুপারমার্কেটগুলা মোটামুটি আয়ারল্যান্ডের সব জায়গায়ই থাকে। যার কারণে মুসলমানরা যে জায়গায়ই থাকুকনা কেন, হালাল খাবারের ব্যবস্থা অন্তত থাকবে। সুপারমার্কেটে হালাল পণ্য থাকলে সর্বত্র দাম এবং মান এর ব্যপারেও সকলে সচেষ্ট থাকবে এবং সমগ্র আয়ারল্যান্ডের মুসলমানরা এর থেকে উপকৃত হবে। পিটিশন করার কারণ হল, সুপারমার্কেট কোম্পানি এবং অথরিটিকে অবগত করানো যে, কি পরিমাণ মুসলমান আয়ারল্যান্ডে আছে এবং কি পরিমাণ মুসলমান সুপারমার্কেটে হালাল খাবার চায় এবং কেন চায়?
আয়ারল্যান্ডে জন্ম ও বেড়ে উঠা প্রজন্মের কথা পর্যালোচনা করলে সুপারমার্কেটে হালাল খাবার প্রয়োজনীয়তা আরো বেশি প্রাধান্য পায়। বর্তমান প্রজন্মের কাছে সহজলভ্যতা একটা বড় ব্যাপার। অনেক ক্ষেত্রে হাতের নাগালে হালাল খাবার না পেয়ে তারা আর কষ্ট করে হালাল দোকান খুঁজে বের না করেই যে কোন খাবার গ্রহণ করে থাকে। এ অভিজ্ঞতার সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। সুপারমার্কেট গুলোতে যদি অন্তত কিছু হালাল আইটেম থাকে তাহলে আমাদের বেড়ে উঠা প্রজন্মকে হালাল ব্যাতিরেকে অন্য খাবার থেকে দূরে রাখা সম্ভবপর হবে। পরবর্তী প্রজন্মের কথা চিন্তা করে হলেও আমাদেরকে এই ব্যাপারে এখনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
হালাল ব্যাবসায়ীদেরকে এই দেশে আরো বেশি প্রয়োজন। কারণ আমাদেরকে সর্ব পরিস্থিতিতে তাদের উপরই নির্ভর করতে হবে। তাঁরা শুধু হালাল ব্যবসায়ীই নন, দেশীয় প্রচলিত পণ্যের যোগানদাতাও তাঁরা। সুপারমার্কেটে হালাল খাবার রাখলেও হয়ত মাত্র গুটি কয়েক প্রয়োজনীয় আইটেম রাখবে, যা শুধুমাত্র জরুরি চাহিদা মেটাবে, কিন্তু পরিপূর্ণ হালাল গ্রোসারি তারা অবশ্যই রাখবেনা এবং তা সম্ভবও না। আর হালাল রেস্তোরা কিংবা ফাস্ট ফুড এর ব্যবসায় প্রভাব ফেলার তো প্রশ্নই আসে না। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীবৃন্দের সংশয় প্রকাশের কোন কারণ নেই।
অন্যান্য দেশের মুসলমানদের মত আয়ারল্যান্ডেরও মুসলমান জনসংখ্যা এবং হালাল খাবারের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এতে করে বর্তমান হালাল ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় কোন ধরনের প্রভাব পড়ার কারণ নেই, বরঞ্চ ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরো ত্বরান্বিত করবে। যেমন পার্শ্ববর্তী দেশ ইংল্যান্ডে অনেক সুপারমার্কেটে হালাল পণ্য রেখে আসতেছে দীর্ঘদিন থেকে, কিন্তু সেই সাথে লোকাল হালাল ব্যবসায়ীরাও সমানতালে তাদের ব্যবসা সফলতার সাথে পরিচালনা করে যাচ্ছে। আয়ারল্যান্ডেও এর ব্যতিক্রম হবেনা।
সর্বশেষ কথা হল, বেশীরভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর মতের প্রেক্ষিতেই আর সুপারমার্কেট গুলোর স্বইচ্ছার উপরই কেবলমাত্র নির্ভর করবে হালাল খাবার রাখবে কি রাখবে না। পিটিশন এই জন্যই যে, এতে করে মানুষের মতামত পাওয়া যাবে এবং প্রাপ্ত মতামত সুনিদৃস্ট কতৃপক্ষের নিকট পৌঁছাতে সচেস্ট হবে।
সবার মতামতই সাদরে গ্রহণ করা হবে এবং সবার চাওয়ার প্রতি যথাযত সন্মান প্রদর্শন করা হবে। ধন্যবাদ।
আইরিশ রেসিডেন্স পারমিটধারীদের কি Re-entry ভিসা নিতে হবে? এই প্রশ্নটি প্রায়ই অনেকে করে থাকেন।
Re-entry ভিসার বিলুপ্তি হয়েছে গত বছর ২০১৯ সারে ১৩মে। তখন থেকে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত Stamp-4 বা আইরিশ রেসিডেন্স পারমিটধারীদের যাদের প্রয়োজনীয় বৈধ আইআরপি / জিএনআইবি কার্ড (valid IRP/GNIB card) আছে সেই সকল নাগরিকদের আয়ারল্যান্ড থেকে ভ্রমণের জন্য এবং পুনরায় আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ জন্য Re-entry ভিসার প্রয়োজন হবে না। তাদের জন্য valid IRP/GNIB card (আইআরপি / জিএনআইবি কার্ড) এবং পাসপোর্ট যথেষ্ট হবে। অন্যান্য EU সদস্য দেশগুলির সাথে মিল রেখে সমপর্যয়ে নিয়ে আসার জন্য আয়ারল্যান্ডকে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হয়েছিল।
ধারনা করা যায় এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পর বছরে প্রায় চল্লিশ হাজারের বেশি লোক এর থেকে উপকৃত হবেন।
আয়ারল্যান্ডের বিশেষ তিনজন গৃহিনী ও কর্মজীবী নারীর অংশগ্রহণে ইউএস ভিত্তিক অনলাইন টিভি “চ্যানেল-১৯” এর উদ্যোগে ১৭ই অক্টবর একটি লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেছেন ডাঃ সানজিদা আক্তার। আমন্ত্রিত অতিথীবৃন্দরা হচ্ছেন আয়ারল্যান্ডে বসবাসকারী তিনজন আলোকিত নারী। তাঁরা হচ্ছেন ফেরদৌসী বেগম, ইসমত চৌধুরী সীমা এবং লিনা সেন গুপ্তা।
আয়ারল্যান্ড স্টুডিও থেকে বিষয় ভিত্তিক আলাপচারিতা মুলক লাইভ অনুষ্ঠানটি “কমিউনিটি লাইভ আড্ডা” নামে সম্প্রচারিত হয়। অতিথীবৃন্দ নিজেদের পারিবারিক জীবন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সমস্যা, করোনাকালীন বিভিন্ন সমস্যা, পেশাগত অভিজ্ঞতা দর্শকদের সাথে শেয়ার করেন। এই অনুষ্ঠানটি “আমরা আয়ারল্যান্ড প্রবাসী” নামক ফেইসবুক গ্রূপের আয়োজনে নির্মিত হয়।
ফেরদৌসী বেগম একজন প্রাক্তন ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি বাংলাদেশে একটি ব্যাংকে চাকরি করেছিলেন। এখন তিনি ডাবলিনে স্বপরিবারে বসবাস করেন। তিনি মনে করেন করোনার প্রাথমিক দিকে লকডাউন থাকায় এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং লকডাউন শিথিল করায় এর সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে অনেকে মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতা দেখায়, হঠাৎ করে স্কুল খুলে যাওয়া, দোকানপাটে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার কারণে প্রথম লকডাউন পরবর্তী সময়ে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছিল।
ফেরদৌসী বেগমের কন্যা চিকিসক হিসেবে আয়ারল্যান্ডে আছেন। কোভিড চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে তাঁর মেয়ের যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তা শেয়ার করেন। করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য বাসায় করণীয় হিসেবে বাসাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে মতামত জ্ঞাপন করেন। এ সময় তিনি সুষম খাদ্যের উপর নজর দেওয়ার ব্যাপারে জোরালো ভাবে উৎসাহিত করেন। সুস্বাস্থ্যের জন্য শারীরিক কৰ্ষতকে প্রাধান্য দেন।
করোনার এই প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশে আমাদের কি করণীয় সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিজস্ব উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে আমাদের সকলের হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিৎ। সরকারের একার পক্ষে এই সংকট মোকাবেলা অসম্ভব। তিনি নিজেও স্বউদ্যোগে দেশে খাদ্য ও নগদ অর্থ সহযোগিতা করেছেন।
দেশে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান দেশে সামাজিক অবক্ষয়, ছেলে ও মেয়েদের মাঝে সামাজিক ও পারিবারিক বৈষম্য, পরিবারে ছেলেকে প্রাধান্য দেওয়া, পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থা, সামাজিক বৈষম্য, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়, আইনের শাসনের অভাব, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, পর্নোগ্রাফি আসক্তি, রাজনৈতিক ছত্রছায়াই প্রধান। এর প্রতিরোধে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। পরিবারে ছেলেদের বুঝাতে হবে একটি মেয়ে মানে তাঁর মা, বোন, স্ত্রী সবচেয়ে বড়ো কথা সে একজন মানুষ। জরিপে দেখা যায় পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি ৭৮% লোকের মধ্যে ধর্ষণের স্পৃহা জাগিয়ে তোলে। পরিবার থেকে নারীদের প্রতি সম্মানের চোখে দেখা, স্কুল থেকে শিক্ষা দিলে সমাজের পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। শুধুমাত্র সাস্তি দিয়ে একক ভাবে মানুষের মন মানসিকতা, নৈতিককতা তৈরী করা যাবে না। প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে, বিচারের সংস্কৃতি চালু করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
ইসমত চৌধুরী সীমা, আয়ারল্যান্ডে বিগত ২০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন। কোভিডে আমাদের জীবনাচারণে কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন যেন আমরা আরেকটা পৃথিবীতে বাস করছি, ছুটির দিনে এখন আর আগের মতো পরিকল্পনা করা হয়না বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে। আগে যেমন বন্ধুদের নিয়ে বাসায় আয়োজন করা হতো এখন স্বাস্থ্য বিধিনিষেধের কারণে বাসায় কাউকে দাওয়াত দেওয়া যায়না বা কারো বাসায় যাওয়া যায় না। ইসমত চৌধুরীর স্বামী আয়ারল্যান্ডে একজন সুপরিচিত চিকিৎসক। তিনি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। যদিও তাঁকে কোবিভি রোগী দেখতে হয় না তার পরেও মাঝে মাঝে কিছু রোগী এসে পড়ে যাদের কোভিড সিম্পটম থাকে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে এবং তাঁর পুরো পরিবারকে এর থেকে সুরক্ষার জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনা করার প্রয়োজন পড়ে। তিনি বলেন জুনিয়র ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে মাস্ক পড়ার বিধান রাখা হয় নি, যার কারণে অভিভাবকবৃন্দকে ভীতিকর পরিস্থিতিতে থাকতে হয়। কোভিডে ইতিবাচক না নেতিবাচক পরিবর্তন এসেছে প্রশ্নে তিনি বলেন ইতিবাচক পরিবর্তনের চাইতে নেতিবাচক পরিবর্তন বেশি হয়েছে মনে হচ্ছে। আর ইতিবাচক পরিবর্তন গুলোর মধ্যে পরিবারের সাথে সময় বেশি দেওয়া, যানবাহন কম চলায় দূষণ কম হওয়া, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় দ্রব্যমূল্য কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা সন্তানদের আমাদের সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করার জন্য কি করণীয় প্রশ্নে তিনি বলেন সন্তানদেরকে ঘনঘন দেশে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। ঈদে দেশে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে, এতে দেশের সাথে তাঁদের সম্পর্ক স্থাপিত হবে। পারিবারিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যাতায়াত করতে হবে। কমিউনিটিতে বিভিন্ন উৎসবে অংশগ্রহন করতে হবে।
লিনা সেন গুপ্তা একজন ব্যাংকার যিনি বর্তমানে এআইবি ব্যাংকে কর্মরত আছেন। তিনি বলেন এই করোনা ভাইরাসে কর্মস্থলে জীবন প্রবাহে পরিবর্তন এসেছে। এখন কোম্পানিগুলো ৮০% কাজ বাসা থেকে করছে। কাস্টমার সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি পুরোটা বাড়ি থেকে নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে। এতে এই সেবার গুণগত মানের দিক থেকে অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। বিশেষ করে তাঁর নিজের ব্যাংকের সকল শাখা খোলা আছে এই সময়টা জুড়ে। কেউ চাইলে নিকটবর্তী শাখায় গিয়ে সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। তাছাড়া এই কোম্পানিতে ফোনে ও অনলাইনে স্বাভাবিক সেবাগুলো বিদ্যমান।
আয়ারল্যান্ডের অর্থনীতিতে কভিডে পরিবর্তন এসেছে, এ সময় হাজার হাজার লোক চাকরি হারিয়েছে, অনেকে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই সংকট থেকে উঠে দাঁড়াতে আমাদের কয়েক বছর লাগবে বলে তিনি মনে করেন। এই সংকট উত্তরণে আমরা কিভাবে অবদান রাখতে পারি প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদেরকে লোকাল কেনাকাটা করতে হবে। লকডাউন শেষে দেশের বাহিরে ছুটি কাটাতে না গিয়ে এই দেশেই ছুটি কাটানো উচিত, এতে আমাদের অর্থনীতি লাভবান হবে।
লিনা সেন গুপ্তা একটি নাচের স্কুল চালান। লকডাউনে তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ভার্চুয়াল শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেন। কর্মস্থলে নারী বৈষম্য প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানেও এটি আছে কিন্তু তা আমাদের দেশের তুলনায় কম। এখানে বেতন বৈষম্য আছে যা এখন পরিবর্তন হচ্ছে ধীরেধীরে। নারীকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে তিনি কিছু কাজ করছেন নৃত্য নাটিকার মাধ্যমে। তিনি ক্লাসিকাল নৃত্য কে ধরে রাখতে চান যা বর্তমানে আধুনিক নৃত্যের মাঝে হারিয়ে যেতে বসেছে।
আমরা “আইরিশ বাংলা টাইমস” পরিবারের পক্ষথেকে চ্যানেল-১৯ এর সকল কলা কৌশলীকে এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে স্বাগত জানাই।
বিদেশফেরত যাত্রীরা করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে না আনলে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মন্ত্রী বলেন, বিদেশ ফেরত যাত্রীদের অবশ্যই নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে করে আনতে হবে। তা না হলে দেশে এলেই বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
রোববার দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নতুন একশ ভেন্টিলেটর মেশিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে ১০০টি ভেন্টিলেটর হস্তান্তর করেন।
জাহিদ মালেক বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আমেরিকা বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র। দেশের উন্নয়নমূলক কাজে আমেরিকা সরকার সবসময় বন্ধুর মতোই এগিয়ে এসেছে।এই করোনা দুর্যোগে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর দেশ আমেরিকা।নিজ দেশের এতো বড় বিপর্যয়ের পরেও আমেরিকা বাংলাদেশকে ১০০টি অত্যাধুনিক ভেন্টিলেটর উপহার দিচ্ছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
তিনি বলেন, এই ভেন্টিলেটরগুলো অত্যন্ত আধুনিক ও সহজে ব্যবহার উপযোগী। এমনকি পর্যাপ্ত ট্রেনিং ছাড়াও এই ভেন্টিলেটরগুলো ব্যাবহার করা যায়। এ কারণে দেশের উপজেলা পর্যায়ে যেখানে এখনও আইসিইউ সেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি সেসব এলাকায় এই একশসহ আরও নতুন ৩শ ভেন্টিলেটর কিনে খুব দ্রুতই পাঠানো হবে।
অনুষ্ঠানে করোনাকালীন দুঃসময়ে বাংলাদেশ আমেরিকায় প্রচুর পরিমাণে পিপিই সরবরাহ করেছে বলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার। তিনি ভবিষ্যতে দুদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- ইউএসএইডের ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর জন এলিও, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির মহাসচিব প্রফেসর আহমেদুল কবীর।
তথ্য সুত্র: যুগান্তর রিপোর্ট ১৫ নভেম্বর ২০২০, ০৭:২৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আগামী গ্রীষ্ম শেষে করোনার নতুন টিকার প্রভাব সুস্পষ্ট হতে শুরু করবে। সেই হিসেবে আগামী শীতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে বিশ্ব।
করোনার টিকা গ্রীষ্মে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রভাব ফেলতে শুরু করবে এবং আগামী শীত নাগাদ বিশ্বে জনজীবন আবার স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জার্মানির বায়োএনটেকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর উগুর শাহিন।
গত সপ্তাহে ফাইজার ও বায়োএনটেক তাদের টিকার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দাবি করা হয়েছে তাদের টিকা পাওয়া ৯০ শতাংশ মানুষ করোনা প্রতিরোধ করতে সক্ষম। তাদের এই গবেষণায় প্রায় ৪৩ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিল।
বিবিসির এক বিশেষ অনুষ্ঠানে উগুর শাহীন বলেন, ভ্যাকসিনটি নিলে তা একজনের থেকে অন্যজনে সংক্রমণের হার কমানো ছাড়াও একজনের শরীরে করোনার উপসর্গ তৈরি হওয়া থামিয়ে দেবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। সব ঠিক থাকলে এ বছরের শেষ নাগাদ ও আগামী বছরের শুরুতে ভ্যাকসিনের সরবরাহ শুরু হবে।
‘আমাদের লক্ষ্য আগামী এপ্রিলের মধ্যে সারা বিশ্বে ৩০ কোটি ডোজের বেশি টিকা ডেলিভারি দেওয়া। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই হয়ত মহামারী নির্মূলে কাজ শুরুর মত পরিস্থিতি তৈরি হবে।’
‘তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে আগামী বছর শরৎ বা শীতের আগে অনেক বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া। শরতের আগেই সব টিকাদান প্রকল্পের কাজ শেষ করা।‘
শাহিন জানান, করোনার টিকা সংক্রমণের হার কমাবে বলে তিনি শতভাগ আস্থাশীল। টিকার একটি বড় প্রভাব হচ্ছে সংক্রমণের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনা।
তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান এই বিজ্ঞানী আরও বলেছেন, এ পর্যন্ত ভ্যাকসিনের বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলতে যা দেখা গেছে, তা হলো টিকা দেয়ার স্থানে হালকা ও মাঝারি মাত্রার ব্যথা। কিছু মানুষের সামান্য সময়ের জন্য হালকা ও মাঝারি মাত্রার জ্বর হতে দেখা গেছে। এর বাইরে আর কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
নাম জেসমিন প্রধান, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বয়স ২৩ কিন্তু পাসপোর্টের বয়স ২৫। যার কোনো আয়ের উৎস নেই কিন্তু বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে ৪৪ টি অ্যাকাউন্ট। NRB কমার্শিয়াল ব্যাংকেই রয়েছে মোট ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার ৩৪ টি এফডিআর।
দিনমজুর বাবার সংসারে তিন বেলা ঠিকমতো খাবার জুটত না। অর্থের অভাবে লেখাপড়াও হয়নি। সেই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান জেসমিন প্রধান এখন বিত্তশালী। বাড়ি, গাড়ি, আলিশান ফ্ল্যাট—কী নেই তাঁর। সাত বছরের ব্যবধানে তিনি ৫০০ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। শুধু তাঁর পাঁচটি ব্যাংক হিসাবেই ১৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অথচ ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজস্ব কোনো আয়ের উৎস নেই।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের মানবপাচারের টাকায় শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এখন সম্পদশালী। কুয়েতে মানবপাচারের হোতা পাপুল অর্থ ও মানবপাচারের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ আড়াল করতে শ্যালিকার অ্যাকাউন্টে রাখেন। শুধু তা-ই নয়, অবৈধ পথে অর্জিত বিপুল অর্থ বৈধ হিসাবে দেখাতে শ্যালিকা জেসমিনের মালিকানায় ‘লিলাবালি’ নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলেন এমপি পাপুল। ওই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের পাঁচটি ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাচার করা হয় ১৪৮ কোটি টাকা। এই পরিমাণ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে এমপি পাপুল, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান এবং শ্যালিকার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
দুদকের তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান জেসমিন প্রধান। বড় বোন সেলিনা ইসলামের বিয়ে হয় কুয়েতপ্রবাসী কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে। পাপুল মানবপাচারের মাধ্যমে অর্জিত টাকা শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের অ্যাকাউন্টে এবং নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলেন। পাঁচটি অ্যাকাউন্টে ১৪৮ কোটি টাকার এফডিআরসহ জেসমিন এখন প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মালিক।
সূত্র জানায়, অবৈধ উপায়ে অর্জিত জেসমিন প্রধানের নিজ নামে ২০টি এফডিআরে এক কোটি টাকা, বোন সেলিনা ইসলামের নামে ২৯৫টি এফডিআরে ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, বোনজামাই শহিদ ইসলাম পাপুলের নামে ২৩টি এফডিআরে দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা পায় দুদক। এ ছাড়া পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলামের নামে ৪১টি এফডিআরে দুই কোটি ২৯ লাখ টাকাসহ মোট ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা জেসমিন প্রধানের একটি ব্যাংকের হিসাবে লগ্নি করে ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার ওভার ড্রাফট সুবিধা গ্রহণের প্রমাণ মেলে। সব মিলে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে পাচার হয়েছে ১৪৮ কোটি টাকা।
এদিকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল, তাঁর স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করবেন।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে অভিনেতা আজিজুল হাকিমকে। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার ভোরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
বিষয়টি ইত্তেফাককে নিশ্চিত করেন উপস্থাপক ও নির্মাতা আনজাম মাসুদ। তিনি বলেন, ‘হাকিম ভাইয়ের অবস্থা খুব একটা ভালো না। জিনতা হাকিম ভাবী ও তাদের সন্তানও করোনা আক্রান্ত ছিল। হাকিম ভাইয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে আনা হয় এবং মাঝ রাতে আইসিইউতে নেওয়া হয়। অবস্থা উন্নতির দিকে কবে যাবে তা চিকিত্সকরা এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।’
জ্বর আসার পর আজিজুল হাকিম, তার স্ত্রী জিনাত হাকিম ও ছেলে মুহাইমিন রেদোয়ান হাকিম গত মঙ্গলবার করোনা পরীক্ষা করান। তাদের তিনজনেরই করোনা রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তারা।
তবে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এর কয়েক ঘণ্টা পর তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার ভোরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
অভিনেতা আজিজুল হাকিমের স্ত্রী জিনাত হাকিম ও ছেলে মুহাইমিন রেদোয়ান হাকিম এখনো সা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই দেশের সেনাদের গোলাবর্ষণে অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে পাকিস্তানের ৮ সৈন্য এবং ভারতের চার সৈন্যসহ সাতজন রয়েছেন বলে জানা যায়। এ ঘটনায় আরও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার দুই দেশের সামরিক বাহিনী পরস্পরের অবস্থান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র, মর্টার শেল নিক্ষেপ করলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, কাশ্মীরে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে পাক বাহিনীর গোলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অন্তত চার সদস্য ও তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এতে বেশ কয়েকজন ভারতীয় সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাকিস্তানের গোলাবর্ষণের কড়া জবাব দিয়েছে। ভারতীয় সৈন্যদের গোলায় পাকিস্তানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বে পাকিস্তান বলছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ছোড়া গোলায় চারজন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন। এছাড়া শিশুসহ আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।
এদিকে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দফতর এক টুইট বার্তায় ভারতীয় সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ড্রাগস এজেন্সি, যা ইউরোপীয় মনিটরিং সেন্টার ফর ড্রাগস অ্যান্ড ড্রাগএ্যাডিক্টস (ইএমসিডিডিএ) হিসাবে পরিচিত এবং তাদের প্রকাশিত একটি নতুন প্রতিবেদনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ গুলোতে অ্যালকোহল এবং অন্যান্য মাদক/ড্রাগ ব্যবহার সম্পর্কে গবেষনা চালায়, তাতে দেখা গেছে আইরিশ কিশোর-কিশোরীসহ পুরো ইউরোপ জুড়ে ১৫ থেকে ১৬ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে ধূমপান ও মদ্যপানের মাত্রা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে কিন্তু মাদক ব্যবহার ভয়াবহ ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউরোপীয় ৩৫টি দেশের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মাদক সেবনের অভ্যাস নিয়ে এই গবেষনা করা হয়। প্রতিবেদনে স্পষ্ট ভাবে উঠে আসে যে ইউরোপ উপমহাদেশীয় অন্য যে কোন দেশের তুলনায় আইরিশ কিশোর-কিশোরীরা মাদক সেবনে অনেক বেশী অভ্যস্ত। প্রতিবেদনে আরো উঠে আসে, ইউরোপীয় গড়ে ১৭% এর তুলনায় ২০% আইরিশ কিশোর কিশোরী অবৈধ মাদক সেবনে জড়িয়ে পরছে।
তারেদর গবেষণায় সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ মদক গুলোর মধ্যে গাঁজার ব্যবহার উদ্বেগ জনক। প্রকাশিত প্রতিবেদনে মোতাবেক ১৯% আইরিশ কিশোর কিশোরী গ্রহণ করেছে এই গা্ঁজা। প্রতিবেদনে আরো একটি বিষয় প্রকাশিত হয়েছে যে আইরিশ কিশোরদের মধ্যে ৩৭% ইতিমধ্যে ই-সিগারেট ব্যবহারে আসক্ত। আয়ারল্যান্ডের ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ই-সিগারেট ব্যবহার করছে।
অ্যালকোহল এবং অন্যান্য ড্রাগের উপর ইউরোপীয় স্কুল জরিপ প্রকল্পের সর্বশেষ সংস্করণে ইউরোপের প্রায় ১০০,০০০ শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহনে এই গবেষনা চালানো হয় যার মধ্যে আইরিশ শিক্ষার্থী ছিল ১,৯৪০ জন ।
এই প্রতিবেদনে আরো উঠে আসে আয়ারল্যান্ডের ৩০% ছেলে এবং ১৯% মেয়েদের মধ্য অর্থের জন্য জুয়া খেলা জনপ্রিয়, যা আৎকে উঠার মত। আরো ভয়ঙ্কর হলো প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ইউরোপ জুড়ে অন্য যে কোন দেশের তুলনায় ৭২% আইরিশ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মাদক ছারাও অ্যালকোহলের ব্যবহারের মাত্রা বেশি। প্রায় এক চতুর্থাংশ (২৫%) আইরিশ কিশোররা জানায় যে তারা ১৩ বছর বয়সে অ্যালকোহল গ্রহণ শুরু করে তবে এদের মধ্যে ৫% কিশোররা দাবি করে যে তাদের আরো কম বয়সে মদ্যপানে মাতাল হওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। মদ্যপ পানীয়র মধ্যে স্পিরিটস আইরিশ কিশোরদের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় এর পরই জনপ্রিয় বিয়ার এবং সাইডার উভয়ই। গবেষণায় দেখা যায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপীয় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মদ্যপানীয়ের পানের সর্বনিম্ন মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল – ২০০৭ সালে ৪৩%। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইইউ সদস্য রাষ্ট্রসমূহে মদ্যপানের নিয়মনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারলে অল্প বয়সীদের মধ্যে অ্যালকোহলের ব্যবহার এবং মাদক ব্যবহার হ্রাস করা সম্ভব। তথ্য সুত্র: TheJournal.ie: Irish teens more likely to take illegal drugs but smoking and drinking levels falling, EU report shows. https://jrnl.ie/5264369
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার কোম্পানির কাছ থেকে ৩০ কোটি ডোজ করোনা-ভ্যাকসিন কিনতে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে। এই কোম্পানির ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত শতকরা ৯০ ভাগ কার্যকর বলে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এ ঘোষণা দিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনের প্রধান স্টালা ক্রাকিডিস বলেছেন, ফাইজারের সঙ্গে এরিমধ্যে ইইউ সমঝোতায় পৌঁছেছে এবং এই কোম্পানিকে ভ্যাকসিনের অর্থ অগ্রিম পরিশোধ করা হবে। তবে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিন কত টাকায় কেনা হচ্ছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রেরই বায়োএনটেক কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করেছে ফাইজার। এই কোম্পানির ভ্যাকসিনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী সাড়া পড়ে গেছে এবং এখন পর্যন্ত স্বেচ্ছায় ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষ পরীক্ষামূলকভাবে এই ভ্যাকসিন করেছেন এবং তাতে এর ৯০ ভাগ কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ কোম্পানি ঘোষণা করেছে, তারা চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে করোনা-ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করতে পারবে।ফাইজার ও বায়োএনটেক চলতি নভেম্বর মাসের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক সংস্থা- এফডিআই’র কাছে এই ভ্যাকসিন বিক্রির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবে।
স্বপ্নের দেশ আমেরিকা। বিশ্বজুড়ে অগনিত মানুষ প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন আমেরিকায় পাড়ি জমাতে। আর, আমেরিকা তার দরজা খোলা রেখে সব সময়ই স্বাগত জানিয়েছে অভিবাসন প্রত্যাশীদের। এছাড়া, আপনার বাবা মা যে দেশেরই হোক, আপনার জন্ম যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয় তবে আপনি জন্ম সূত্রে আমেরিকার নাগরিক। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন কে কঠোর থেকে কঠোরতর করেছেন, মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আচরন করেছেন, এমনকি অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল পর্যন্ত তুলেছেন। তবুও আজকের আমেরিকা আমেরিকা হয়ে উঠার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান এসব অভিবাসী বা অভিবাসীর সন্তানদের। এমনকি খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও একজন অভিবাসীর বংশধর। চলুন দেখে নেই বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আলোচিত তিনজন ব্যাক্তির পূর্ব-পুরুষদের অভিবাসন ইতিহাস।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প: ফ্রেডরিক ট্রাম্প ১৮৮৫ সালে বর্তমান জার্মানি হতে আমেরিকায় পাড়ি জমান। তার সন্তান ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়র। আর ফ্রেড ট্রাম্পের সন্তান বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মা ম্যারি এন একজন স্কটিশ। তিনি ১৯১২ স্কটল্যান্ডে জন্ম নিয়েছেন এবং ১৯৩০ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান। এছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের তিনজন স্ত্রী‘র দুজনে অভিবাসী আমেরিকান। তার প্রথম স্ত্রী ইভানা জেলনিকোভা একজন চেক রিপাবলিকান যিনি ১৯৭০ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান। আর বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প একজন স্লোভেনিয়ান। তিনি ১৯৯৬ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান। ভাবা যায়, যে ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন অভিবাসীর সন্তান এবং বর্তমান স্ত্রী একজন দ্বৈত নাগরিক ( স্লোভেনিয়া/ আমেরিকা) তিনি কিনা কট্টর অভিবাসন বিরোধী!
জো বাইডেন: নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার আইরিশ পূর্ব-পুরুষদের নিয়ে গর্বিত। শেকড়ের সন্ধান করতে তাই ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকা কালীন ২০১৬ সালে তিনি পূর্ব-পুরুষের দেশ আয়ারল্যান্ড সফরে আসেন। সে সময় এক আবেগঘন লেখায় তিনি বলেন, ‘আমি আয়ারল্যান্ড এ ফিরে যাচ্ছি, এটা সে দেশ যেখান হতে আমার পূর্ব-পুরুষরা এসেছেন। এবং এ সফরে আমি আমার সন্তান ও নাতি নাতনী দের সাথে করে আয়ারল্যান্ড নিয়ে যেতে পেরে গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ। জো বাইডেন এর প্রপিতামহ জেমস্ ফিনেগান ১৮৫০ সালে কাউন্টি লাউথ হতে আমেরিকায় পাড়ি জমান।
কমলা হ্যারিস: প্রথম মহিলা আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন কমলা হ্যারিস। এছাড়া প্রথম আমেরিকান মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট যিনি মিশ্র বর্নের। জ্যামাইকান বাবা এবং ভারতীয় মা‘র সন্তান কমলা হ্যারিস। বাবা ডোনাল্ড জেসপার হ্যারিস ১৯৩৮ সালে ক্যারিবীয় দ্বীপ দেশ জ্যামাইকাতে জন্মগহন করেন। আর মা শিমলা গোপলান একই বছর ভারতের তামিল নাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন। কমলা হ্যারিসের বাবা মা দুজনেই পড়াশুনা করার উদ্দেশ্যে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে পরিচয় দুই ভিন্ন বর্নের দুজনের। ১৯৬৩ সালে শিমলা গোপলান এবং ডোনাল্ড জেসপার হ্যারিস বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।তাদের সন্তান ইতিহাস সৃষ্টিকারী প্রথম আমেরিকান নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট, গর্বিত অভিবাসীর সন্তান কমলা হ্যারিস।
সৌদি আরবের জেদ্দায় অমুসলিমদের একটি কবরস্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈন্যদের স্মরণে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে এ হামলা হয়। অনুষ্ঠানে ইউরোপীয়ানসহ বিদেশি কূটনীতিকরা অংশগ্রহণ করেছিল বলে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, এ হামলায় চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে এখনও কিছু না বলা হলেও জেদ্দায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
বিবিবি জানিয়েছে, সৌদি আরবে কর্মরত একজন ফরাসি সাংবাদিক হামলার পর ঘটনাস্থলের কিছু ছবি বলে দাবি করে অনলাইনে পোস্ট করেছেন।
তাতে পুষ্পস্তবকের আশেপাশে রক্তের ছোপ দেখা যাচ্ছে। তবে এই ছবি ঘটনাস্থলের কিনা তা যাচাই করা যায়নি।
সৌদি আরবে কর্মরত আরেকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, বোমা হামলার সময় সেখানে ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডের কনসাল জেনারেল এবং সেদেশে বসবাসরত অন্যান্য বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। তার টুইটে একজন আহতকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে দেখা গেছে।
বিবিসির আরব ঘটনাবলীর সম্পাদক সেবাস্টিয়ান আশার জানিয়েছেন, ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জেদ্দার এই ঘটনাকে কাপুরুষোচিত হামলা বলে বর্ণনা করে এর নিন্দা জানানো হয়েছে।
এছাড়া দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে খুঁজে বের করার জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
আজ ১০ ই নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস। বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নূর হোসেন এর বুকে লেখা ”স্বৈরাচার নিপাত যাক” আর পিঠে লেখা ”গণতন্ত্র মুক্তি পাক”- গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে পুলিশ এর গুলিতে নিহত হন।
নূর হোসেনের জন্ম বরিশালে ১৯৬১ সালে। জীবিকার সন্ধানে তাঁর গোটা পরিবার এসেছিল ঢাকায়। ১৯৮৭ এর ১০ নভেম্বর ছিল ঢাকায় সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি। নূর হোসেন ছিলেন প্রতিবাদী যুবক। পরিবারের দিক থেকে বারণ ছিল যাতে নূর হোসেন মিছিলে না যান। তবুও নূর হোসেন মিছিলে গেলেন। আগের দিনই ইকরাম নামে এক সাইনবোর্ড লেখকের কাছে গিয়ে নিজের শরীরকে পোস্টারে পরিণত করেছিলেন। লেখার সময়ই নূর হোসেনকে ইকরাম সতর্ক করে বলেছিলেন যে – “এ কাজের অর্থ হলো নিশ্চিত কারাগারে যাওয়া। সেই সঙ্গে তাঁর নিজেরও বিপদে পড়া”।
নূর হোসেনের গোটা শরীরটাই যেন একটা ত্রিমাত্রিক পোস্টার। ১০ তারিখ ভোরে শহরের প্রথম আলোয় ঝলসে উঠেন নূর হোসেন। সূর্যের সব আলো প্রতিফলিত হয়েছিল তাঁর বুকে পিঠে। তাই নির্মম বুলেটও ছুটে আসে নূর হোসেনেরই দিকে। পুলিশের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায় নূর হোসেনের দেহ, মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কবি শামসুর রাহমান যেমনটি লিখেছেন তাঁর কবিতায়, “ঝাঁক ঝাঁক বন্দুকের সীসা, নূর হোসেনের বুক নয়, বাংলাদেশের হৃদয় ফুটো করে দেয়”।
মরণ যন্ত্রণায় যখন নূর হোসেন ছটফট করছিলেন তখন এক যুবক তাঁকে একটি রিকশায় করে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। নূর হোসেনকে বহনকারী রিকশাটিকে পুলিশ চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে। গুলিবিদ্ধ নূর হোসেনকে টেনে হিঁচড়ে রিকশা থেকে নামিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নেয় তারা। তিনি যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন, তখন একজন নিষ্ঠুর পুলিশ সদস্য পায়ের বুট দিয়ে তার বুক চেপে ধরে। স্বৈরাচারের পুলিশেরা এতটাই নিষ্ঠুর ছিল।
১৯৯৬ সালে এরশাদ নূর হোসেনের মৃত্যুর জন্য জাতীয় সংসদে অফিসিয়ালভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।তার দল জাতীয় পার্টি ১০ ই নভেম্বরকে “গণতন্ত্র দিবস” হিসেবে পালন করে।
নূর হোসেন এর আত্মহুতি কি আজো এনে দিয়েছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র। যে গণতন্ত্র রক্ষার বলি নূর হোসেন হয়েছেন, সে গণতন্ত্র কি আজো স্বাধীন বাংলায় স্থাপিত হয়েছে? নূর হোসেনের আত্মত্যাগ এর ফল কি আজো পাচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশ? যদি তাই না হয়, তাহলে বৃথাই যাবে নূর হোসেনের রক্ত, বৃথা এই স্বাধীন বাংলাদেশ।
রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে ‘হত্যাকাণ্ডের’ শিকার হয়েছেন পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম।
পুলিশ বলছে, হাসপাতালের কর্মচারীদের এলোপাতাড়ি পিটুনিতে তিনি মারা গেছেন। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আনিসুলের পরিবারও একই অভিযোগ করেছে। তারা জানিয়েছেন, ভর্তির পর পর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় তারা পুলিশ কর্মকর্তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন মাত্র। পরে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুলকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এর পর আরও দুজন কর্মচারী তার পা চেপে ধরেন।
এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারীকে হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করতে দেখা যায়। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়।
কিছুক্ষণ পর আনিসুলকে উপুড় করা হয়। তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ায় একজন কর্মচারী তখন তার মুখে পানি ছিটান। পরে কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পানি দিয়ে পরিষ্কার করেন।
সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তার বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী।
হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের খাতায় লেখা রয়েছে ‘ব্রট ডেড’ অর্থাৎ সেখানে নিয়ে আসার আগেই আনিসুলের মৃত্যু হয়েছিল।
আনিসুলের ভাই রেজাউল করিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে তার ভাই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার সকালে তারা তাকে নিয়ে মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান।
তিনি জানান, কাউন্টারে ভর্তির ফরম পূরণের সময় হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী আনিসুলকে দোতলায় নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর তাদের জানানো হয় আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এর পর দ্রুত হৃদ্রোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেজাউল করিম আরও জানান, তার ভাইয়ের রক্তচাপজনিত সমস্যা ছিল। কিছুটা হৃদরোগও ছিল। কিন্তু এ দুটির কোনোটিই প্রকট ছিল না। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পিটুনিতেই সে নিহত হয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, ‘এএসপি আনিসুল করিমকে কয়েকজন মিলে চিকিৎসার নামে এলোপাতাড়ি মারধর করে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।’
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘প্রশিক্ষিত নয়, হাসপাতালের এমন কিছু ব্যক্তি তাকে চিকিৎসার নামে মারধর করে। এতে তিনি প্রাণ হারান।’
আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) ফারুক মোল্লা জানান, ঘটনার পর হাসপাতালের আটজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মাইন্ড এইড হাসপাতালের সমন্বয়ক মো. ইমরান খান জানিয়েছেন, আনিসুল হককে জাতীয় মানসিক ইন্সটিটিউট থেকে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। ভর্তির সঙ্গে সঙ্গেই তিনি খুব উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন। একে–ওকে মারধর করছিলেন। তাকে শান্ত করার জন্য ওই কক্ষটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
নিহত আনিসুল করিম বরিশাল মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনারের পদে ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরে। আনিসুল ৩১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি বরিশাল থেকে সোমবারই গাজীপুরের বাসায় গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ২ নং রাইখালী ইউনিয়ন এর জগনাছড়ি এলাকা হতে সেনাবাহিনী এবং চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশের অভিযানে ১ টি দেশীয় তৈরি এলজি ও ১ টি কার্তুজ সহ একজনকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃত ব্যক্তি রাইখালী মৈদং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চিংসাজাই মারমা।
সোমবার (৯ নভেম্বর) রাত ১১.৪৫ মিনিটে সেনাবাহিনী এবং চন্দ্রঘোনা থানার এস আই জাহাঙ্গীর আলম ও সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স সহ চিংসাজাই মারমাকে তাঁর জগনাছড়ি বাড়ি হতে অস্ত্রসহ আটক করে।
চন্দ্রঘোনা থানার ওসি (তদন্ত) শফিউল আজম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে চন্দ্রঘোনা থানায় মামলা দায়ের করেন এবং তাঁকে মঙ্গলবার রাঙ্গামাটি কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।
গবেষণায় কৃতিত্বপূর্ণ সফলতার জন্য অষ্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (ইউএনএসডব্লিউ) থেকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থী। তারা তিনজনই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী। স্নাতক শেষে এই তিনজন শিক্ষার্থীই অষ্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে।
অস্ট্রেলিয়ার স্বনামধন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিনস অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত হওয়া তিনজন হলেন- ড. সাইয়েদুল মুরসালিন, ড. আহসানুল হাবীব এবং ড. সুমনা বিশ্বাস।
ড. সায়েদুল মুরসালিন ইউএনএসডব্লিউ, সিডনি এবং বাকি দুজন ইউএনএসডব্লিউ, ক্যানবেরা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিষয়টিতে ড. মুরসালিন দৈনিক অধিকারকে জানান, গত ২৪ আগস্ট ইউএনএসডব্লিউ এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এবং মেইলযোগে শিক্ষার্থীদের এসব নাম প্রকাশ করা হয়। তবে করোনার ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোনো সমাবর্তনের আয়োজন করেনি।
জানা গেছে, পাওয়ার সিস্টেমে অথবা পাওয়ার গ্রিডে এর যেসব যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ যেমন (ট্রান্সফর্মার,ক্যাবল সংযুক্ত তার) ব্যবহার করা হয় সেগুলার কোনো একটি নষ্ট হয়ে গেলে সেটি পুরো সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। যেমন লোডশেডিং, ব্লাক আউট ইত্যাদি। এসব নষ্ট যন্ত্রপাতি খুলে ঠিক করে নতুন করে লাগানো যেমন কষ্টসাধ্য তেমনি ব্যয়বহুলও আর সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু কম মানের কম্পাংক প্রয়োগ করে পাওয়ার সিস্টেমে সংযুক্ত এসব যন্ত্রপাতি পরীক্ষামূলক চেক করা যায়, এতে খরচ কমার সাথে সাথে সিস্টেমে পাওয়ার লসও কম হয়। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই কম মানের কম্পাংক প্রয়োগের মাধ্যমে সিস্টেমের যন্ত্রপাতিগুলো কতদিন টিকসই হবে তাও জানা যায়। এমন কম ফ্রিকুয়েন্সি কিভাবে একটি পাওয়ার সিস্টেমে কাজ করে তার পুরো বিষয়টি গবেষণা করেছেন ড. মুরসালিন।
ড. সাইয়েদুল মুরসালিন চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার থিসিসের শিরোনাম ছিল ‘Diagnostic measurement and modelling of Electrical insulation Based on very low frequency high voltage Excitation.’
এ দিকে ড. আহসান হাবিব চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গবেষণা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমার পিএইচডি থিসিসের শিরোনাম ছিল- ‘Efficient Algorithms for Computationally Expensive Optimization Problems.’ আমার থিসিসের এর মূল লক্ষ্য ছিলো- গণনামূলকভাবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল Optimization সমস্যার জন্য এমন দক্ষ এলগরিদম তৈরি করা যারা খুব অল্পসংখ্যক ব্যয়বহুল ডাটা ব্যবহার করেও উচ্চমানসম্পন্ন সমাধান প্রদানে সক্ষম।
ডিনস অ্যাওয়ার্ড অর্জন সম্পর্কে ড. আহসানুল জানান, তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশলের ছাত্র হওয়ায় কম্পিউটার বিজ্ঞান সম্পর্কিত পিএইচডি যাত্রাটি প্রাথমিকভাবে আমার জন্য খুব বেশি সুখকর ছিল না। এলগরিদম ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার প্রাথমিকভাবে অনেক সময় লেগে যায়। যার কারণে নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুদিন পর আমি থিসিস জমা দিতে সক্ষম হই। স্কলারশিপ পরবর্তী ও থিসিস জমাদান পূর্ববর্তী সেই সময়টি আমার জন্য বেশ সংগ্রামমূখর একটি সময় ছিল।
অন্যদিকে ড. সুমনা বিশ্বাস চুয়েটের ২০০০-০১ শিক্ষাবর্ষের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ডিনস পদক অর্জন সম্পর্কে তিনি জানান-আমার পিএইচডি যাত্রাটি খুব বেশি সুখকর ছিল না। একে তো বিদেশ, যেখানে সব কিছু নিজেকে একা হাতে সামলাতে হয় তার উপর আমার দেড় বছরের ছেলে, সব মিলিয়ে খুব কঠিন সময় গেছে। তবে আমার স্বামী, বাবা, বোন, ভগ্নিপতি, সর্বোপরি আমার পরিবারের অসামান্য সমর্থন, আমার চুয়েট, রুয়েটসহ সকল পরিচিতদের সাহায্য এবং আমার ছেলের আত্মত্যাগ – সবকিছু মিলিয়ে যাত্রাটার সফলতা সম্ভব হয়েছে।
ড. সুমনার পিএইচডি থিসিসের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার থিসিসের শিরোনাম ছিল ‘Real-time Path Planning (Mission Planning) for a Swarm of Autonomous Systems.’ থিসিস এর মূল বিষয়বস্তু হলো চালকবিহীন একগুচ্ছ স্বয়ংক্রিয় গাড়ির সফল মিশন পরিচালনা। কিভাবে চালক বিহীন একগুচ্ছ স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, তাদের মধ্যে কোনো রকম সংঘর্ষ ছাড়া এবং পথে কোনো রকম বাধা থাকলে তাকে সংঘর্ষ ছাড়া অতিক্রম করে কম সময়ে গন্তব্য পৌঁছেতে পারে সেটি।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমকে বদলি করা হয়েছে। সোমবার তাকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণায়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়।
সোমবার (০৯ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আলিয়া মেহের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেয়া হয়।
সারোয়ার আলম ২০১৫ সাল থেকে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি খাদ্যপণ্যে ভেজাল বিরোধী আন্দোলন ও দুর্নীতি বিরোধী বিশেষ অভিযানের সময় ব্যাপক সাহসী ভূমিকা রেখে আলোচিত হয়েছেন। যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো ইসমাঈল হোসেন সম্রাটসহ ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন বড় নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে সারা দেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার এ কৃতি সন্তান।
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে প্রবাসী অভিবাসীদের আইনগত সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশি মালিকানাধীন আইনগত সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ‘ল’ ফার্ম দেশটিতে এই প্রথম কার্যক্রম শুরু করেছে।
দেশটির রাজধানী মাদ্রিদের প্রাণকেন্দ্র পুয়ের্তা দে সলে শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এই ‘ল’ ফার্মের উদ্বোধন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অ্যাডভোকেট তারিক হোসেন ও অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্পেনের বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কউন্সিলর মো. রেদোয়ান আহমেদ।
পরে ‘ল’ ফার্মের পরিচালক অ্যাডভোকেট তারিক হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কউন্সিলর মো. রেদোয়ান আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন স্পেনের সভাপতি কাজী এনায়েতুল করিম তারেক, স্পেন আওয়ামী লীগের সভাপতি এসআরআইএস রবিন, সহ-সভাপতি একরামুজ্জামান কিরণ, সাধারণ সম্পাদক রিজভী আলম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কউন্সিলর মো. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আইনিসেবা দেয়া একটি মহৎ কাজ। বিশেষ করে আইনিসেবা বঞ্চিত প্রবাসীদের জন্য এ ফার্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তাছাড়া যারা ভাষাগত সমস্যার মুখোমুখি হন, তারা সহজেই এখানে সেবা নিতে পারবেন। অ্যাডভোকেট তারিক হোসেনের এই ‘ল’ ফার্মের উদ্বোধনের মাধ্যমে স্পেনে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। স্প্যানিশ মূলধারার ‘ল’ ফার্মগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশি কমিউনিটি। তিনি ‘ল’ ফার্মের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করেন। ‘ল’ ফার্ম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্পেন থেকে প্রকাশিত দেশ কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক একেএম জহিরুল ইসলাম, অল ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কবির আল মাহমুদ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন সমিতি স্পেনের সভাপতি চিশতী মেরাজ, চাঁদপুরের তানভীর আহমদ প্রমুখ।
বিশ্বের নামকরা ফার্মাসিউটিকেল কোম্পানি ফাইজার তাদের ডাবলিন, কিলডেয়ার এবং কর্ক ম্যানুফাকচুরিং সাইটের জন্য ৩০০ নতুন জব এর পোষ্ট তৈরি করতে যাচ্ছে। তারা তাদের আইরিশ অপারেশন বর্ধনের জন্য আরও ৩০০ মিলিয়ন ইউরো ইনভেস্ট করতে যাচ্ছে এই তিনটা সাইটের উন্নয়নের জন্য। নতুন ইনভেস্টমেন্ট এবং নিয়োগের কাজ আগামী দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
নতুন রোলে হাইলি স্কিলড কর্মীদের নিয়োগ দেয়া হবে। তন্মদ্ধে রয়েছে এনালিস্ট, ডাটা এনালিস্ট, টেকনিশিয়ান, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, টেকনোলজিস্ট এবং কেমিস্ট।
নতুন ইনভেস্টমেন্টে থাকবে ম্যানুফেকচুরিং এবং ল্যাবরটরির বর্ধন, নতুন টেকনোলজির সমন্বয়ে গঠিত আধুনিক ব্যাবস্থা।
ফাইজার ১৯৬৯ সাল থেকে আয়ারল্যান্ডে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আয়ারল্যান্ডের ৬ টা লোকেশনে ৪০০০ এরও উপর কর্মীর কর্মসংস্থান এর ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
ফাইজার COVID-19 এর ভ্যাকসিন নিয়ে গভেষনা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা আশা করতেছে COVID-19 এর ভ্যাকসিন এর সফল ফলাফল তারাই প্রথম আনয়ন করতে পারবে।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেন, ‘’ফাইজার আইরিশ ইকোনমিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। গত ৫ দশক ধরে তারা হাজার জব তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে’’।
রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রার্থী জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। পেনসিলভানিয়ায় পপুলার ভোটে জয় পেয়েছেন বাইডেন। এই জয়ে তিনি ম্যাজিক ফিগার ২৭০ ছাড়িয়ে গেলেন।
এই জয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ইতিহাস গড়লেন বাইডেন। এর আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পপুলার ভোট পাওয়ার ইতিহাসও সৃষ্টি করেন ৭৭ বছর বয়সী এই ডেমোক্র্যাট।
বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সিকি শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছেন। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ট্রাম্প তৃতীয় কোনো প্রেসিডেন্ট যিনি, ক্ষমতাসীন হিসেবে নির্বাচন করে হেরে গেলেন। যদিও নির্বাচনের ফল চ্যালেঞ্জ করে সোমবারই আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে ওই পদে নির্বাচিত হলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রথম অশ্বেতাঙ্গ ভাইস এবং প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট। ৫৬ বছর বয়সে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার জুড়েই নানা মাইলস্টোন তৈরি করেছেন তিনি।
এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দল থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাশী ছিলেন কমলা। কিন্তু পরে সরে দাঁড়ান। আগস্টে বাইডেন তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করেন। ভারতীয় মা আর জ্যামাইকান বাবার সন্তান কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের এমন স্তরে পৌঁছে গেছেন যেখানে তার আগে কোনও নারী পৌঁছাতে পারেননি।
ঐতিহাসিক এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হল ট্রাম্প সাম্রাজ্যের এবং উত্থান ঘটল বাইডেন সাম্রাজ্যের। এখন দেখার বিষয় কেমন হয় ভবিষ্যৎ যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা।
কমলা হ্যারিস হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার আড়াইশ’ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে গড়লেন নতুন এক ইতিহাস।
কমলা হ্যারিসের জন্ম ১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের ওকল্যান্ডে। পিতা অধ্যাপক ডোনাল্ড জে হ্যারিস জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত আর মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান। তারা দুজনই বিজ্ঞানী। কমলার মা শ্যামলা গোপালন ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ে ব্রেস্ট ক্যানসার গবেষক হিসেবে যোগ দেন। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হলে মা ছিলেন মূলত কমলার ছায়াসঙ্গী।
কমলা প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী এবং দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন (২০১০) এবং দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, আমেরিকার ইতিহাসে এ পর্যন্ত মাত্র দুজন নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে লড়েছেন। ২০০৮ সালে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে সারা পলিন, ১৯৮৪ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টির জেরালডিন ফেরারো। তাদের কেউই নির্বাচিত হতে পারেননি।
কাউন্টি কাউন্সিলর হিসেবে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করা জো বাইডেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। মাত্র ২৯ বছরেই এক সময়ের সর্বকনিষ্ঠ মার্কিন সিনেটর এবার হয়েছেন দেশটির প্রবীণতম প্রেসিডেন্ট।
১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়াতে জন্ম হয় জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র। তবে জো বাইডেন নামেই বেশি পরিচিত তিনি। বাবা জোসেফ রবিনেট বাইডেন সিনিয়র এবং মায়ের নাম ক্যাথরিন ইউজেনিয়া ফিনেগান। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় জো বাইডেন অবশ্য শৈশব থেকে বড় হয়েছেন ডেলোয়ারে।
ডেলোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশুনা করেন জো বাইডেন। পরে সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়েই অনেকটা ছাত্র অবস্থায় ১৯৬৬ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন প্রথম স্ত্রী নিলিয়া হান্টারকে। এই ঘরে আছে তিন সন্তান – দুই ছেলে জোসেফ বিউ বাইডেন ও রবার্ট হান্টার এবং এক মেয়ে নাওমি ক্রিস্টিনা।
এরপর ১৯৭০ সালে নিউ ক্যাসল কাউন্টির কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন জো বাইডেন। ১৯৭২ সালে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম কনিষ্ঠ সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জো বাইডেন।
যদিও এর মধ্যে জীবনে বেশ ঝড় মোকাবিলা করতে হয় বাইডেনকে। যার প্রভাব পড়ে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারেও। ১৯৭২ সালে সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার পরেই এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রিয়তমা স্ত্রী এবং এক বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান অ্যামি নিহত হন।
এরপর সন্তানদের সময় দেওয়ার জন্য সিনেটর পদে আর দায়িত্ব নিতে চাননি বাইডেন। তবে সেই আবেদন খারিজ হলে ১৯৭৩ এ সিনেটরের দায়িত্ব নিতে হয় তাকে।
তারপর অবশ্য ১৯৭৭ সালে জিল ট্রেসি জ্যাকবের সঙ্গে ঘর বাঁধেন বাইডেন। এই সংসারে এক মেয়ে আছে বাইডেনের – অ্যাশলে ব্লেজার বাইডেন।
রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন ছিল বাইডেনের মাঝে। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের হয়ে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বাইডেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেবার আর এগোতে পারেননি জো।
যার নয়তে হয় না তার নব্বইতেও হয় না – বাংলার এমন প্রবাদকে মিথ্যা প্রমাণ করতে ২০০৮ সালে আবারও চেষ্টা করেন প্রেসিডেন্ট পদের মনোনয়ন নিতে। তবে দলীয় সতীর্থ বারাক ওবামার কাছে হেরে গিয়ে দলের পতাকা বঞ্চিত হন। তবে ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ওবামা প্রশাসনে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাইডেন।
বাইডেনের ইচ্ছে ছিল, ২০১৬ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার। সেবার ওবামার উত্তরসূরি হিসেবে বাইডেন এক প্রকার চূড়ান্তও ছিলেন। কিন্তু ২০১৫ তে ছেলে বিউ বাইডেনের মৃত্যুতে বাইডেনের মাঝে আর এত কঠিন যুদ্ধে নামার মানসিক শক্তি ছিল না। চোখের সামনে দিয়ে বিল ক্লিনটন, বারাক ওবামার মতো কনিষ্ঠদের প্রেসিডেন্ট হতে দেখেছেন বাইডেন।
যদিও প্রেসিডেন্ট হওয়ার অদম্য বাসনা যার রক্তে মিশে রয়েছে তাকে ঠেকায় কে! ২০২০ সালে এসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পেয়েছেন দলীয় মনোনয়ন; লড়েছেন নির্বাচন। শেষ পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর এক নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বাধিক পপুলার ভোট পেয়ে ৭৭ বছরে প্রবীণতম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২০ জানুয়ারি নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে অভিষেক হতে যাচ্ছে জো বাইডেনের।
তোতলামির কারণে প্রায়ই কথা আটকে যেত শিশুটির। তারপরও স্কুলে নেতৃত্বের আসন থেকে সরানো যেত না তাকে। সহপাঠীরা এক কথায় অনুসরণ করত তাকে। আর সে কারণে প্রতি বছর ক্লাস ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব থাকত তার কাঁধে। দীর্ঘ কয়েক দশক পেরিয়ে সে দিনের সেই জোসেফ রবিনেট বাইডেন নামের শিশুটি এখন বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর আমেরিকার পেনসিলভানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন বাইডেন। তার বাবা জোসেফ এবং মা ক্যাথরিন ছিলেন আইরিশ বংশোদ্ভূত। বাইডেনদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল খনিজ তেলের। পঞ্চাশের দশকে অবস্থাপন্ন পরিবারটি আচমকাই আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়। সেই ক্ষতি থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি বাইডেনের বাবা সিনিয়র জোসেফ। ফলে জন্মের পরে কয়েক বছর বাইডেন ছিলেন মামাবাড়িতে। সে সময় সপরিবারে শ্বশুরবাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন বাইডেনের বাবা। এরপরও বেশ কয়েক বার ঠিকানা বদল করতে হয়েছে বাইডেন পরিবারকে।
অবশেষে সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ির সেলস ম্যান হিসেবে থিতু হন জোসেফ বাইডেন সিনিয়র। কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি থেকে যায় মধ্যবিত্ত স্তরেই। উচ্চবিত্ত পরিবারের গণ্ডি তারা আর পেরতে পারেননি। দুই ভাই এবং এক বোনের সঙ্গে মধ্যবিত্ত ক্যাথলিক পরিবারেই বড় হন জো বাইডেন। ভাইবোনদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড়।
বাইডেনের প্রাথমিক পড়াশোনা ক্লেমন্টের আর্চমেয়ার অ্যাকাডেমিতে। পড়াশোনায় বিশেষ আগ্রহ না থাকলেও ফুটবল এবং বেসবলে ছিলেন চৌকস। বিশ্ববিদ্যালয়েও ফুটবল খেলা চালিয়ে গেছেন। ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৬৫ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে স্কুলের পরে বিশ্ববিদ্যালয়েও তার রেজাল্ট ছিল পেছনের সারিতেই।
১৯৬৮ সালে তিনি সাইরাকিউজ ইউনিভার্সিটি কলেজ অব ল’ থেকে আইনবিদ্যায় ডিগ্রি পান। ৮৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তার স্থান ছিল ৭৬। মেধাতালিকায় বিশেষ এগোতে না পারলেও বাইডেন এই সময় মুক্তি পেয়েছিলেন স্কুলজীবনের তোতলামির সমস্যা থেকে। পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কবিতাপাঠ করে করে তিনি এই সমস্যা থেকে মুক্ত হন।
বাইডেনের প্রথম চাকরি ছিল উইলমিংটন ল’ ফার্মে। ফার্মের প্রধান ছিলেন রিপাবলিকান উইলিয়াম প্যাট্রিক। বাইডেনের পরবর্তী কর্মস্থল ল’ ফার্মের কর্ণধার ছিলেন ডেমোক্র্যাট। তার সান্নিধ্যে বাইডেনও সক্রিয় ডেমোক্র্যাটপন্থি হয়ে ওঠেন।
এরপর ধীরে ধীরে আইনজীবী বাইডেনকে ছাপিয়ে যায় তার রাজনৈতিক সত্ত্বা। কাউন্টি কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করার পরে তিনি ১৯৭২ সালে প্রথম অংশ নেন সিনেটর হওয়ার লড়াইয়ে। প্রথম চেষ্টাতেই সাফল্য ধরা দেয়। ১৯৭২ সালেই তিনি ডেলাওয়্যার থেকে জুনিয়র সিনেটর হন।
প্রথম স্ত্রী নেইলিয়া হান্টার ও তার তিন সন্তানের সঙ্গে বাইডেন (ছবি : দ্য পলিটিকো)
যদিও প্রথমবার সিনেটর হিসাবে তাকে শপথ নিতে হয়েছিল শোক বিধ্বস্ত অবস্থায়। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল তার দুই শিশুপুত্র বো এবং রবার্ট। দুই ছেলেকে ফিরে পেলেও বাইডেন এই দুর্ঘটনায় হারিয়েছিলেন তার প্রথম স্ত্রী নেইলিয়া এবং শিশুকন্যা নাওমিকে।
শিক্ষাবিদ নেইলিয়া হান্টারকে ১৯৬৬ সালে বিয়ে করেছিলেন বাইডেন। ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ক্রিসমাস ট্রি কিনতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন নেইলিয়া। সঙ্গে ছিল তাদের তিন সন্তান। পথে ট্রাকের সঙ্গে তার গাড়ির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান নেইলিয়া এবং ছোট্ট নাওমি।
নেইলিয়া এবং নাওমির মৃত্যুর পরে জীবন থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলেন বাইডেন। রাজনীতি থেকেও সরে দাঁড়াবেন বলে ভেবেছিলেন। তাকে আবার জীবনের পথে ফিরিয়ে আনেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী জিল ট্রেসি জ্যাকবস।
জিল ছিলেন বাইডেনের ভাইয়ের কলেজের সহপাঠী। ভাইয়ের মাধ্যমেই জিলের সঙ্গে বাইডেনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের ২ বছর পর ১৯৭৭ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র মেয়ে অ্যাশলে ব্লেজার একজন সমাজকর্মী।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ১৯৭৩ থেকে ২০০৯ অবধি বাইডেন ছিলেন ডেলাওয়্যারের ডেমোক্র্যাট সিনেটর। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৭ অবধি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দুই দফার মেয়াদে বাইডেন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে যথাযথ মর্যাদায় জেলহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর মহানগর ডাবলিন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জুম অ্যাপের মাধ্যমে এক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। এর সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগর ডাবলিন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফিরোজ হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, যারা স্বাধীন বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি তারাই জেল হত্যাকাণ্ডের মূল কারিগর।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী, বর্তমানে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এবং ভোলা-১ আসনের এমপি তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু তার জীবনের ১৪টি বছর জেলে কাটিয়েছেন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এই দেশের জন্য। বঙ্গবন্ধু যখনই জেলে ছিলেন তখনই এই জাতীয় চার নেতা আওয়ামী লীগের হাল ধরে দলকে পরিচালিত করেছে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তারাই দল, দেশ ও স্বাধীনতার যুদ্ধ কে পরিচালিত করেছে। কিন্তু কেন এই হত্যাকাণ্ড? তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন ,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেন আর এই দেশের ক্ষমতায় আর না আসতে পারেন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউ যেন আর এই দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ না করতে পারেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল জাতির জন্য ক্রান্তিকাল। এই সকল ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন জিয়াউর রহমান। সম্পূর্ণ নিরপরাধ জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী যারা বিদেশে পালিয়ে আছে তাদের ধরে এনে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানের অন্য বিশেষ অতিথি জার্মানির বাংলাদেশ হাইকমিশনের অনারারি কনস্যুলার ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া বঙ্গবন্ধুসহ জেলহত্যা কাণ্ডে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বর্তমানে যেসব ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা বিদেশেই হচ্ছে। তাই সকলকে এই বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অনেকদিন পরে হলেও জেল হত্যাকাণ্ডের আমরা আংশিক বিচার পেয়েছি কিন্তু এর পূর্ণ বিচার হতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরেও বক্তব্য রাখেন ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি লিঙ্কন মোল্লা, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশিদা হক কণিকা ও বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রশিদ বুলু।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক খান, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুল ইসলাম, ডাবলিন আওয়ামী লীগের সাধাণ সম্পাদক অলক সরকার, সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান লিঙ্কন, টিটু খন্দকার, মো. সুমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ খন্দকার, সাইফুল ইসলাম রবিন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মুন্না সৈকত, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বিষিয়ক সম্পাদক নাসির আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ও প্রচার সম্পাদক খাইরুল ইসলাম পায়েল।ওফেলি আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব মামুনুর রশিদ , সাধাণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান শুভ্র ও সহ-সভাপতি দেবেশ কর্মকার। কর্ক আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন, কর্ক আওয়ামী লীগের সদস্য রুপেশ বড়ুয়া, আবুল খায়ের ভূঁইয়া এবং মাহবুবুর রহমান পল্লব আয়ারল্যান্ড বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফয়জুল্লা সিকদার, আয়ারল্যান্ড ছাত্রলীগের সভাপতি নোমান চৌধুরি এবং সাধারণ সম্পাদক রিব্বি ইসলাম।
আরও উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রিয়া প্রবাসী এবং পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা পাখন, অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রানা বক্তিয়ার, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইউরোপের সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন হায়দার এবং জার্মান আওয়ামীলীগের সদস্য সেলিম ভূঁইয়া।
কিছুদিন আগে জ্বর ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় চিকিত্সকের পরামর্শে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা অপূর্বর করোনা পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তীতে জানা যায়, করোনা পজিটিভ তিনি।
এরপর ৩ নভেম্বর দিবাগত রাতে শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে আইসিইউতে রাখা হয়। পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তাকে কেবিনে নিয়ে আসা হয়।
অপূর্বর জন্য ‘এ পজিটিভ’ প্লাজমার প্রয়োজন ছিল। তা জোগাড় করে রাতেই তার শরীরে প্লাজমা দেয়া হয়। এখন তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, অপূর্বর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি, অবনতিও হয়নি। এর মধ্যে বিভিন্ন টেস্ট করা হয়েছে, আগের মতো স্থিতিশীল।
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নেপালি নাগরিক গোর্খাদের নিয়োগ করার যে বহু পুরনো পরম্পরা আছে, নেপালে তা নিয়ে বিতর্কের পরও সেই রীতি আপাতত বজায় থাকছে বলেই জানা যাচ্ছে।
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে এই মুহূর্তে নেপাল সফল করছেন। তাকে বৃহস্পতিবার নেপাল সেনাবাহিনীর সাম্মানিক ‘জেনারেল’ খেতাবেও ভূষিত করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
সেনাপ্রধান নারাভানের সঙ্গে নেপালে তার কাউন্টারপার্ট জেনারেল পূর্ণচন্দ্র থাপার বৈঠকেই গোর্খাদের নিয়োগের বিষয়টির মীমাংসা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কিন্তু নেপালে বিষয়টি কেন বারবারই বিতর্কের মুখে পড়ছে? এতো বিতর্কের পরও কেন ভারত তাদের সেনাবাহিনীতে গোর্খাদের পেতে এত উৎসুক? ভারতের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীগুলো মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজারের মতো গোর্খা সেনা কর্মরত- যারা সবাই প্রতিবেশী নেপালের নাগরিক। দেশটির সেনাবাহিনীতে নেপালের গোর্খারা যোগ দিয়ে আসছেন সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকে, যে ট্র্যাডিশন সাতচল্লিশের দেশভাগের পরও অব্যাহত থেকেছে।
কিন্তু তিন মাস আগে নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিরোধের পটভূমিতে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গাওয়ালি ঘোষণা করেন, ‘যে চুক্তির আওতায় এই নিয়োগ হয়ে আসছে তা এখন অপ্রাসঙ্গিক।’ এরপরই ভারতীয় বাহিনীতে গোর্খাদের নিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
কাঠমান্ডুতে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও ভাষ্যকার ইন্দ্রা অধিকারী বলেন, ‘এই ইস্যুটা নিয়ে নেপালে আসলে নানা রকমের মত আছে। আল্ট্রা ন্যাশনালিস্ট বা উগ্র জাতীয়তাবাদীরা বলেন, নেপালের মানুষ কেন ভারতের হয়ে লড়তে যাবেন! কোনোদিন যদি নেপালের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ বা সংঘর্ষ হয় তাহলে তাদের ভূমিকাই বা কী হবে? আবার লিবারাল বা উদারপন্থীদের মত হলো, নেপালিরা যদি বিশ্বের নানা দেশে নিরাপত্তাবাহিনীতে কাজ করতে যেতে পারেন তাহলে ভারতই বা নয় কেন? ভারত ঘরের কাছে, সহজেই দেশেও আসা যায়। সেখানে সেনাবাহিনীতে বেতন ও সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেশি। ফলে নেপাল যদি তার তরুণদের অন্য চাকরি না দিতে পারেন তাহলে তারা ভারতে যাবেন না-ই বা কেন?’
বস্তুত স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি দেশের নাগরিকরা কেন অন্য দেশের সেনাবাহিনীর হয়ে লড়বেন, এই মৌলিক প্রশ্নটাই ভারতের বাহিনীতে গোর্খা সেনাদের নিয়োগ নিয়ে নেপালে বারে বারে অস্বস্তি তৈরি করেছে। আট বছর আগেও একবার নেপালে এই প্রথা বন্ধের জোরলো দাবি উঠেছিল।
তবে ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও গোর্খা রাইফেলসের সাবেক কমান্ডার মেজর জেনারেল দীপঙ্কর ব্যানার্জি বলেন, ‘নিয়োগে দুইশো বছরের বেশি পুরনো ঐতিহাসিক পটভূমি আছে। আমার রেজিমেন্ট ছিল ফার্স্ট গোর্খা রাইফেলস, যেটাকে বলা যায় আদি গোর্খা রাইফেলস – আর সেটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৮১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। ওই বাহিনীর দুইশো বছর পূর্তিও আমরা উদযাপন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্বভাবতই ভারতের সেনাবাহিনী বহরে অনেক বৃদ্ধি পায়, প্রায় ২০ লাখ সদস্য ছিল তখন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বাহিনীর আকার কমানো হয়, গোর্খাদের সংখ্যাও কমে আসে। তখনই কিন্তু গোর্খাদের অপশন দেওয়া হয়েছিল, তারা ভারত না ব্রিটেনের বাহিনীতে যোগ দেবে, না-কি বাহিনীর চাকরি ছেড়ে নেপালে ফিরে যাবে। ভারত, নেপাল ও ব্রিটেনের মধ্যে এ নিয়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তিও হয়েছিল তখন। সেই ধারাবাহিকতায় আজও ভারতীয় সেনাবাহিনীতে প্রতি বছর প্রায় তেরোশো গোর্খা রিক্রুট করে থাকে। তাছাড়া ব্রিটিশ আর্মি ও সিঙ্গাপুর পুলিশের জন্যও নেপাল থেকে বাছাই করা হয় শদুয়েক গোর্খাকে।’
দীপঙ্কর ব্যানার্জি বলেন, ‘ভারতের প্রতি আনুগত্যেও এই গোর্খারা ভারতের কোনো সৈন্যের চেয়ে এতটুকু কম নয়। বরং বেশি। ধরুন দক্ষিণ ভারতে বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নানা জাতিগত কারণে বা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন রেজিমেন্টের সেনা মোতায়েন নিয়ে কিছুটা ভাবতে হয়, কিন্তু গোর্খাদের নিয়ে সেই সমস্যাও নেই। তাদের আনুগত্য প্রশ্নাতীত ও সাহসিকতা অতুলনীয়। তারা এটা নিয়েও অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, যে নেপালের বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ভারতের এই সেনাবাহিনীই রুটিরুজির সবচেয়ে বড় ও নির্ভরযোগ্য উৎস।’
ভারতের প্রথম ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ একবার বলেছিলেন, ‘ভারতে যদি কোনো সৈন্য বলে সে জীবন দিতে ভয় পায় না- তাহলে সে হয় মিথ্যে বলছে, নয়তো সে গোর্খা!’
আর গোর্খাদের সেই অপরিসীম অবদানের কারণেই নানা বিতর্ক সত্ত্বেও ভারতীয় সেনাবাহিনীও তাদের নিয়োগ দিতে আজও এতো উদগ্রীব।
ভারত রফতানি বন্ধের পর বিকল্প দেশ থেকে সরকারিভাবে আমদানি করা প্রথম চালানে ৭২৮ টন পেঁয়াজ পৌঁছেছে চট্টগ্রাম বন্দরে।
তুরস্ক থেকে ৪০ ফুট লম্বা ২৮টি রেফার (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত) কনটেইনারে গত ২ নভেম্বর বন্দরের এনসিটি জেটিতে নামিয়ে রাখা হয়েছে।
টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান জামাল উদ্দিন আহমদ জানান, শিগগির এসব পেঁয়াজ ডেলিভারি নিয়ে সারা দেশে পৌঁছে দেওয়া হবে ট্রাক সেলের জন্য।
এর আগে সংকট শুরুর পর বেসরকারি পর্যায়ে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম চালান এসেছিল পেঁয়াজের। ওই দিনই ৫৪ মেট্রিক টন মিয়ানমারের পেঁয়াজের ছাড়পত্র ইস্যু করেছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র।
জামাল উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এমভি কন্টশিপ হাব’ জাহাজে তুরস্কের ২৮ কনটেইনার পেঁয়াজ এসেছে টিসিবির। যত দ্রুত সম্ভব এগুলো ছাড় করে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেব আমরা।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এতদিন আমরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ নিয়ে ট্রাক সেল ও ডিলারদের মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করে আসছি। এখন টিসিবির আমদানি করা চালান আসতে শুরু করেছে। পরের চালানে ২৯, ৩৮, ২০ কনটেইনার পেঁয়াজ আসছে।
পেঁয়াজের চালান দেশে পৌঁছায় এখন থেকে টিসিবির ট্রাকের সংখ্যা ও পেঁয়াজের পরিমাণ বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ বুধবার (৪ নভেম্বর) আমরা ২০টি ট্রাকে পেঁয়াজ দিচ্ছি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রির জন্য। এর মধ্যে নগরে থাকবে ১২টি ট্রাক, বাকি ৮টি আশপাশের জেলা ও উপজেলায় যাবে। সরবরাহ বেশি থাকলে আমরা প্রতি ট্রাকে ১ টন (১ হাজার কেজি) পেঁয়াজ দিচ্ছি।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বুলবুল জানান, চীন, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিনই বন্দরে পেঁয়াজ আসছে। অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া ও বন্দরে পেঁয়াজ আসার পর দ্রুত ছাড়পত্র ইস্যু করছি আমরা। নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির আইপি নিচ্ছেন আমদানিকারকরা।
সূত্র জানায়, দেশে পেঁয়াজের পাইকারি ও খুচরা বাজার স্থিতিশীল ও নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেন নিশ্চিতে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দ্রুত বন্দর থেকে খালাসে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এর ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিচিত্র আকার, রং, ঝাঁজ ও স্বাদের পেঁয়াজের দেখা যেমন মিলছে তেমনি দামও কমছে।
ইউরোপের ট্যুরিজমের সেরা গন্তব্য হিসেবে পর্তুগাল নির্বাচিত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড-২০২০ সংস্করণে গত ২ নভেম্বর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ টানা চতুর্থবারের মতো ইউরোপের সেরা গন্তব্য হিসেবে পর্তুগাল নির্বাচিত হয়।
ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড ট্যুরিজমের অস্কার হিসেবে পরিচিত। ট্যুরিজম সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য এ পুরস্কার প্রদান করা হয় জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে; তবে এবার করোনা মহামারীর কারণে ভার্চুয়াল ফরমেটে এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
চব্বিশটি ক্যাটাগরিতে ২০২০ সালে পর্তুগাল এ পুরস্কার অর্জন করে। রাজধানী লিসবন ইউরোপের প্রধান সেরা প্রমোদতরী (ক্রুজ) গন্তব্য এবং ইউরোপের প্রধান (ক্রুজ) প্রমোদতরী বন্দর, পর্তুগালের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর পর্তু ইউরোপের প্রধান বিরতির শহর (সিটি ব্রেক), পর্যটন নগরী আলগার্ভ আবারও ইউরোপের প্রধান সমুদ্র সৈকত গন্তব্য এবং পর্তুগালের সাগরকন্যা আছোরেস দ্বীপ প্রধান অ্যাডভেঞ্চারমূলক ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। পর্তুগালের ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর শহর মাদেইরা দ্বীপ প্রধান আকর্ষণীয় দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
তাছাড়া পর্তুগালের পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স টাপ এয়ার পর্তুগাল, লাক্সারি, লাইফ স্টাইল ডিজাইন ইত্যাদির দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট, ইকোপার্ক ইত্যাদি বিভিন্ন সর্বমোট ২৪টি মানদণ্ডে ২০২০ সালের সেরা গন্তব্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। পর্তুগালের টুরিজম বোর্ডের স্টেট সেক্রেটারি রিতা মার্কেশ বলেছেন, এই কঠিন বছরে এ ধরনের একটা পুরস্কার সত্যিই আমাদের জন্য গৌরবের। উল্লেখ্য, পর্তুগাল গত ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ (পর্যটন) গন্তব্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছে। এমতাবস্থায় আগামী ২৭ নভেম্বর বিশ্বের চূড়ান্ত পর্বে দেখা যাবে পর্তুগাল তার অবস্থান ধরে রাখতে পারি কিনা। তবে ইতিমধ্যে ইউরোপের শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ (পর্যটন) গন্তব্য হিসেবে পর্তুগাল ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে, যা বিগত কয়েক বছরে পর্তুগালের পর্যটন ব্যবসায় অনেক বেশি উন্নয়ন ঘটেছে এবং বর্তমানে স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে তা অব্যাহত থাকবে।
পর্তুগালে অধিকাংশ প্রবাসী বাংলাদেশি পর্যটন ব্যবসায় বা এ সংক্রান্ত কাজের সাথে জড়িত বলতে গেলে প্রায় ৯০ শতাংশ। সুতরাং এ খবরটি বিশ্বের পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে এবং প্রবাসীরা করোনা মহামারী সৃষ্ট ক্ষতি আগামী বছরে নতুনভাবে নিজেদের তৈরি করে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়াকে অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে বিভাগীয় মামলার পর এবার ওএসডি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওএসডি করা হয়েছে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (আইপিএইচ) পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আব্দুর রহিমকে।
আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (পার-২) শারমিন আক্তার জাহান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে কাউকে নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানটির উপ-পরিচালক ডা. কে এম মামুন মোর্শেদকে সাময়িকভাবে পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. তানভীর আহমেদ চৌধুরীকে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালকের (চলতি দায়িত্ব) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিসিএস প্রশাসন (স্বাস্থ্য) ক্যাডার/স্বাস্থ্য সার্ভিসের পদায়নকৃত ওই কর্মকর্তাদের আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত স্থানে যোগ দিতে বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। অন্যথায় চতুর্থ কর্মদিবসে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি হিসেবে গণ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচনের দিন। যদিও এর মধ্যে প্রায় ১০ কোঠি ভোটার আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছে। তবুও নির্বাচনের সব ভোট গণনা হতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে, সুতরাং আমেরিকার ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছে তা জানা যাবে কয়দিন পর। নির্বাচন আজকে তেসরা নভেম্বর হলেও অনেক অঙ্গরাজ্যে পোস্টাল ব্যালটে ভোট হবে, যার কারণে ভোট জমা হতে বেশ কিছু সময় লেগে যেতে পারে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সাথে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন। দেশজুড়ে জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে জো বাইডেন এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু আমেরিকার নির্বাচন প্রক্রিয়াটা একটু ভিন্ন। জনগণের সরাসরি ভোটেই কেবল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় না। ইলেকটোরাল কলেজ নামে পরিচিত একদল কর্মকর্তার ভোটও এখানে ভূমিকা রাখে।
নানা কারণে এবারের নির্বাচনটা বিতর্কিত ও ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে। শুধু আমেরিকানরাই না, সারা বিশ্ব তাকিয়ে থাকে আমেরিকান নির্বাচনের ফলাফলের দিকে। ঐতিহাসিক এই নির্বাচনের ফলফল কি হয় তাই দেখার অপেক্ষা।
‘’ট্রাম্প – বাইডেন লড়িতেছে বেশ; দেখা যাবে, কে জেতে কে হারে, ভোট হইলে শেষ’’।
আফ্রিকার যে সকল নেতারা সাহস করে উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের সকলকেই বরণ করতে হয়েছিল করুণ মৃত্যু। ফ্রান্স তাদের সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনার জন্য হুমকি তৈরি করা রাষ্ট্রপতিদের নির্মূল করতে কখনও দ্বিধা বোধ করেনি। দেশটি আফ্রিকার রাষ্ট্রপতিদের হত্যার জন্য নিয়মিতভাবে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সঙ্গে একত্রিত হয়েছে।
রাষ্ট্রনেতাদের হত্যাকাণ্ডের মতো এমন নোংরা কাজে খুব সক্রিয় ছিল দ্যা এক্সটার্নাল ডকুমেন্টেশন এন্ড এন্টি এস্পিওনেজ (এসডিইসিই), ডিজিএসই এবং ডিএসটি নামক তিনটি ফরাসি ইন্টিলিজেন্ট পরিষেবা প্রতিষ্ঠান।
ফ্রান্স সর্বদা চেয়েছিল তাদের উপনিবেশগুলো যেন তাদের শাসনে থাকে। তবে থমাস শঙ্করার মতো রাষ্ট্রপতি যারা ফ্রান্সের প্রভাবের অধীনে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন তাদেরই বরণ করতে হয়েছিল সেই করুণ মৃত্যু আর ফ্রান্স সেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে বড় ভূমিকা নিয়েছিল।
১৯৬৩ সাল থেকে যে সকল আফ্রিকান রাষ্ট্রপতিরা ফ্রান্সের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন :
১৯৬৩ সাল : সিলভানাস ওলিম্পিও, রাষ্ট্রপতি টোগো
১৯৬৬ সাল : জন আগুই আইরনসি, রাষ্ট্রপতি নাইজেরিয়া
১৯৬৯ সাল : আবদিরচিড-আলি শর্মেক, রাষ্ট্রপতি সোমালিয়া
১৯৭২ সাল : আবেদ আমানী করিম, রাষ্ট্রপতি জাঞ্জিবার
১৯৭৫ সাল : রিচার্ড রতসিমন্দ্রাভা, রাষ্ট্রপতি মাদাগাস্কার
১৯৭৫ সাল : ফ্রানয়েস এনগার্টা, রাষ্ট্রপতি চাদ
১৯৭৬ সাল : মুরতলা রামাত মোহাম্মদ, রাষ্ট্রপতি নাইজেরিয়া
১৯৭৭ সাল : মেরিন, রষ্ট্রপতি কঙ্গো-ব্রাজাভিলের
১৯৭৭ সাল : তিফেরি বানটে, রাষ্ট্রপতি ইথিওপিয়া
১৯৮১ সাল : আনোয়ার এল সাদাত, রাষ্ট্রপতি মিশর
১৯৮১ সাল : উইলিয়াম রিচার্ড টলবার্ট, রাষ্ট্রপতি লাইবেরিয়া
১৯৮৭ সাল : থমাস শঙ্কর, রাষ্ট্রপতি বুরকিনা-ফ্যাসো
১৯৮৯ সাল : আহমেদ আব্দুল্লাহ, রাষ্ট্রপতি কমোরস
১৯৮৯ সাল : সামুয়েল-ক্যানিয়ন ডু, রাষ্ট্রপতি লাইবেরিয়ার
১৯৯২ সাল : মোহাম্মদ বুদিয়াফ, রাষ্ট্রপতি আলজেরিয়া
১৯৯৩ সাল : মেলচিয়র এনডাডে, রাষ্ট্রপতি বুরুন্ডি
১৯৯৪ সাল : সাইপ্রাইন নটরয়ামিরা, রাষ্ট্রপতি বুরুন্ডি
১৯৯৪ সাল : জুভেনাল হাবিয়ারিমানা, রাষ্ট্রপতি রুয়ান্ডার
১৯৯৯ সাল : ইব্রাহিম বারারি মইনসারা, রাষ্ট্রপতি নাগারের
২০০১ সাল : লরেন্ট-ডিজায়ারড, রাষ্ট্রপতি কঙ্গো-কিনশা
২০০৯ সাল : জো বার্নার্ডো ভায়েরা, রাষ্ট্রপতি গিনি-বিসাউ
এবার ভারত মহাসাগরে টহল চালাবে জার্মানির যুদ্ধজাহাজ। এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যানেগ্রেট ক্রাম্প-ক্যারেনবাওয়ার। আগামী বছর থেকেই টহলদারি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ক্যারেনবাওয়ার। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ওই অঞ্চলে জার্মানির উপস্থিতি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। ওই অঞ্চলে আমাদের অবস্থানটা ঠিক কী, তা জেনে নেওয়াটাও জরুরি।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব কমাতেই কি এই তোড়জোড় শুরু করেছে জার্মানি? যদিও সে প্রসঙ্গ এড়িয়েই গিয়েছেন ক্যারেনবাওয়ার। তবে ওই অঞ্চলে যে নিরাপত্তা নিয়ে একটা উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে সে কথা স্বীকার করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন যে, ওই অঞ্চলে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর জোর দেওয়াই হবে জার্মানির লক্ষ্য। এমনটাই জানিয়েছে ভারতের জনপ্রিয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ক্যারেনবাওয়ার পাশাপাশি এটাও মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গোটা বিশ্বের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তবে সরাসরি না বললেও ওই অঞ্চলে চীন যে বাড়তি প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। সূত্র: আনন্দবাজার।
ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার ছয় স্থানে এলোপাথাড়ি গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। সন্ত্রাসীরা দলবেঁধে রাইফেল নিয়ে হামলাগুলো চালিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্তিযান কার্য এই হামলাকে বিদ্বেষপূর্ণ সন্ত্রাসী হামলা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হামলার পর বন্দুকধারীরা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভয়াবহ এই হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও একজন হামলাকারীকে পুলিশ সদস্যরা এরই মধ্যে খুঁজতে শুরু করেছে। রাজধানী ভিয়েনার কেন্দ্রীয় সিনাগগের কাছে ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
যদিও এটা এখনো নিশ্চিত নয় যে ওই সিনাগগকে লক্ষ্য করেই হামলাটি চালানো হয়েছে কিনা। মেয়র মাইকেল লুডিগ বলেন, গোলাগুলির সময় ঘটনাস্থলেই কয়েকজন নিহত হন। অপর দিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও এক নারীর মৃত্যু হয়।
গোলাগুলির ঘটনায় ১৪ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক বলে জানানো হয়েছে।
বাঙালি জাতির জীবনে এক কলঙ্কময় দিন। আজ তিন নভেম্বর, শোকাবহ জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম. মুনসুর আলী ও এইচ.এম কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাত্রিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর এই জাতীয় চার নেতাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ও চেতনাকে নির্মূল করা। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমগ্র বাঙালি জাতির সঙ্গে সশ্রদ্ধচিত্তে শোকাবহ এ দিবসটিকে স্মরণ ও পালন করবে।
এ লক্ষ্যে দলটি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জেলহত্যা দিবসে সীমিত পরিসরে নানা কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে উপস্থিত থাকবেন।
কর্মসূচি
তিন নভেম্বর মঙ্গলবার সূর্য উদয়ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সকল স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডিস্থ ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল পৌনে নয়টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ই আগস্টের কালো রাতে নিহত সকল শহীদ ও কারাগারে নির্মমভাবে নিহত জাতীয় নেতৃবৃন্দের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। রাজশাহীতে জাতীয় নেতা শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও মোনাজাত।
বিকাল সাড়ে তিনটায় রাজধানীতে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনসহ মহানগরের প্রতিটি শাখার নেতাকর্মীরা যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দলের সব সাংগঠনিক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন শাখা এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সর্বস্তরের জনগণকে যথাযথ মর্যাদা ও শোকাবহ পরিবেশে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলহত্যা দিবস পালনের জন্য বিনীত আহ্বান জানিয়েছেন।
বিগত ৪ বছরে বা এর থেকে কিছুটা বেশী সময়ে প্রবাস থেকে এসেছে ৪৭৩ জন নারীকর্মীর লাশ। এর মাঝে আত্মহত্যা করেছেন ৫১ জন নারী।
বিগত ৩১ অক্টোবর সকালবেলা ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে ১৩ বছর বয়সী কিশোরী নদীর লাশ। যাকে ২৫ বছর বয়স দেখিয়ে বাংলাদেশী দালালচক্র সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজে পাঠিয়েছিল। যদিও অফিশিয়াল হিসেবে এটিকে সৌদি কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করছে কিন্তু নদীর পরিবার বলছে তাকে আত্মহত্যায় বাধ্য করা হয়েছে। সৌদি আরব গমনের পরপরই নানা সমস্যায় ছিল সে। তাকে যেই এজেন্সি বয়স বাড়িয়ে সৌদি পাঠিয়েছিল তারা এ ব্যাপারে কোন প্রকার সহায়তা করেনি।
নদীর মা গণমাধ্যমকে জানান যে সৌদি আরবে যাওয়ার পরপরই তাঁর উপর নানা রকম নির্যাতন চলতে থাকে এবং সে কোন মাসেরই বেতন পায় নাই। কাগজে কলমে আত্মহত্যা লেখা থাকলেও নদীর গলায় কোন দাগ নেই কিন্তু সারা শরীরে প্রচুর আঘাতের দাগ রয়েছে বলে লাশ দেখার পর গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন নদীর মা।
এর মাত্র কয়েকমাস আগে আরেক ১৪ বছর বয়সী কিশোরী কূলসুমের লাশও একই ভাবে বাংলাদেশে ফিরত আসে। তাঁর শরীরের বেশ কয়েকটি হার ভাঙ্গা ছিল। একটি চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। আহত অবস্থায় তাকে রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল তাঁর নিয়োগকর্তা পরিবার। সেখান থেকে সৌদি পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে যাওয়ার পর সে মারা যায়।
শুধু এরা দুইজনই নয় সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছে বহু বাঙ্গালী নারীর লাশ।
পরিসংখ্যানের আলোকে হিসাব করলে দেখা যায় যে ২০১৬ থেকে চলতি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৭৩ নারীর মরদেহ দেশে ফিরেছে। এর মধ্যে ৬৩ জন মারা গেছে চলতি বছর।
গতবছর পর্যন্ত মৃত ৪১০ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি মারা গেছে সৌদি আরবে, ১৫৩ জন। এই বছরের ২২ জন ধরলে এই সংখ্যা ১৭৫ জন। মৃতদের মধ্যে জর্ডান থেকে ৭৫ জন, লেবানন থেকে ৬৬ জন, ওমান থেকে ৪৫ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৭ জন এবং কুয়েতে ২০ জন মারা গেছেন।
এর বাহিরে অন্য দেশ থেকে ৬০ জনের লাশ এসেছে।
বেগম নামের এক নারী সৌদি আরবে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু হয় মিশরে। সৌদি থেকে তিনি মিশরে কিভাবে গেলেন সেই তথ্যও তাঁর রিক্রুটিং এজেন্সি দিতে অপারগ। মিশরের বাংলাদেশী দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে কেবল জানিয়েছে যে বেগম নামের এক বাংলাদেশী নারী মিশরের ৫ তলার এক ভবন থেকে পড়ে মৃত্যু বরণ করেছেন।
কিন্তু তিনি কি করে সৌদি থেকে মিশরে গেলেন তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
আইরিশ ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন চিকিত্সা সঙ্কটের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে যেহেতু দাঁতের চিকিৎসা স্কিম থেকে তাদের সরে যেতে হচ্ছ তাই স্কিম ছাড়ার পরে ২৬০ টিরও বেশি দন্ত চিকিৎসক আর মেডিকেল কার্ডধারীদের চিকিৎসা সেবা সরবরাহ করেন না।
নতুন পরিসংখ্যান দেখায় যে করোনা দুর্যোগ মহামারীর মোকাবেলা করতে গিয়ে সরকার তাদের অর্থায়নে দন্তচিকিৎসা স্কিমটিতে অর্থ বরাদ্দ না দেয়ায় দন্তচিকিৎসকরা এই স্কিমটি ছেড়ে দিচ্ছেন।
চলতি বছরের শুরু থেকে ২৬০টিরও বেশি দন্তচিকিৎসক এই স্কিমটি বাদ দিয়েছেন, যা মেডিকেল কার্ডধারীদের জন্য দাঁতের পরিষেবা তারা আর সরবরাহ করছেনা। অর্থাত প্রায় দুই লাখ মেডিকেল কার্ডধারীরা এখন চিকিত্সার জন্য অনির্দিষ্ট কালের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
ডেন্টাল ট্রিটমেন্ট সার্ভিসেস স্কিমে (ডিটিএসএস) অংশ নেওয়া বেসরকারী দাঁতের চিকিৎসা সেবার সংখ্যা গত ১০ মাসে ১৬% হ্রাস পেয়েছে। এর অর্থ হ’ল ছয়জন দন্তচিকিৎসকের একজন যার কাছে পরিষেবা সরবরাহের চুক্তি ছিল সেখান থেকে তারা সরে এসেছেন ।
আইরিশ ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) প্রধান নির্বাহী ফিন্টান হরিহান বলেছেন, সংস্থাটি সরকারকে আগেই সতর্ক করেছে যে বিষয়টি নিয়ে একটি সঙ্কট দেখা দিবে।
তিনি বলেছিলেন যে কোভিড -১৯ এর কারনে দাঁতের চিকিৎসা সহায়তায় সরকারের তহবিলের অভাবের কারনে দাঁতের চিকিৎসার জন্য শেষ ভরসা মেডিকেল কার্ডধারীদের দন্ত চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকরা অপারগ এবং ফলস্বরূপ তারা এই প্রকল্প থেকে সরে যাচ্ছেন”।
হুরিহান বলেছেন, “ এটা হঠাৎ করে হয়নি বরং এটা গত দশ মাসে এই প্রকল্পে অর্থায়ন না হওয়ায় দাঁতের চিকিৎসা সেবার সংখ্যা খুব দ্রুত হ্রাস পেয়েছে।”
মিশিগানে এক প্রচারণা সভায় জো বাইডেনের সাথে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাকা ওবামা, ৩১শে অক্টোবর, ২০২০
করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা- দুদিক থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তালিকার এক নম্বরে।
এখন পর্যন্ত সেদেশে ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। মারা গেছে দুই লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি।
প্যানডেমিকের ভয়াবহ এই চিত্র এখনও বিন্দুমাত্র মলিন হয়নি। বরঞ্চ নির্বাচনের ঠিক আগে সংক্রমণের সংখ্যা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বাড়ছে। প্রতিদিন এখন প্রায় ৮৯ হাজার আমেরিকান নতুন করে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে।
মার্কিন বিশ্লেষকদের মধ্যে বড় কোনো দ্বিমত নেই যে আমেরিকায় এবারের নির্বাচনে এক নম্বর ইস্যু – করোনাভাইরাস। তাদের অনেকেই বলছেন, এবার রেকর্ড আগাম ভোটের অন্যতম কারণ কোভিড।
বিধিনিষেধের কারণে মঙ্গলবার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পারার উদ্বেগ যেমন এই আগাম ভোটারদের মধ্যে কাজ করেছে তেমনি – অনেক পর্যবেক্ষকের মতে – কোভিড মোকাবেলায় সরকারের পারফরমেন্সে নিয়ে তাদের মনোভাব ব্যালটের মাধ্যমে দেখাতে অনেকেই উন্মুখ।
রেকর্ড ৯ কোটি ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন যা ২০১৬ সালে দেওয়া মোট ভোটার উপস্থিতির ৬০ শতাংশ।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে গত সাত মাস ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই প্যানডেমিক সামাল দিতে যা করছেন বা বলছেন, ভোটের সিদ্ধান্তে তার প্রভাব কী হচ্ছে?
দুদিন আগেও ওয়াশিংটনের রাস্তায় বিবিসির একজন সংবাদদাতা ভোটারদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুনেছেন।
কৃষ্ণাঙ্গ এক তরুণীর কথা ছিল – “যেভাবে তিনি (প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প) পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন তা খুবই দুর্বল।“ অন্যদিকে মাঝবয়েসী শ্বেতাঙ্গ এক নারীর কথা ছিল এরকম -“প্রেসিডেন্ট চাইছেন সবাই যেন আতঙ্কিত না হয়ে পড়ুক। আমি সেটা পছন্দ করছি।“ আরেক শ্বেতাঙ্গ তরুণীর বক্তব্য – “অত্যন্ত ভালো কিছু তিনি করেননি, আবার যে খুব খারাপ কিছু করেছেন তাও আমি বলব না।“
ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং বিশ্লেষক জো গার্সটেনসন বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করোনাভাইরাসের মোকাবেলা যা করছেন অধিকাংশ আমেরিকান তাতে খুশী নন।
বিবিসিকে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট যা করছেন তা হলো প্রতিদিনের পরিস্থিতি আঁচ করার চেষ্টা করে সেই মত তিনি সাড়া দিচ্ছেন।“
সর্বশেষ জনমত জরীপও বলছে যে প্রতি ১০ জন আমেরিকানের সাত জনই মনে করছেন কোভিড-১৯ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ‘ভুল বার্তা‘ দিচ্ছেন। তবে রিপাবলিকান সমর্থকদের সিংহভাগই এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের পেছনেই রয়েছেন।
পেনসিলভানিয়ায় এক প্রচারণা সভায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ৩১শে অক্টোবর, ২০২০
অধ্যাপক গার্সটেনসন বলেন, “শুধু যে দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে মতামতে ভিন্নতা রয়েছে তাই নয়, এলাকা ভিত্তিতেও জনমত ভিন্ন। যে এলাকার মানুষ এই প্যানডেমিকে মানুষ বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা ক্ষিপ্ত।“
সমর্থনের নিক্তিতে ওঠানামা
যেমন, বছরের শুরুর দিকে অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে জনমত জরীপে জো বাইডেন খুব সামান্য এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু গ্রীষ্মে ঐ রাজ্যে কোভিড-১৯ ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ার পর বাইডেনের পক্ষে সমর্থন অনেক বেড়েছে। অ্যারিজোনায় এই প্যানডেমিকে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৫৯২০ জন।
উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ২০১৬ সালের ভোটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামান্য ব্যবধানে জিতেছিলেন। এবারও বছরের অধিকাংশ সময় জুড়ে ট্রাম্পের সমর্থনে তেমন কোনো ভাটা দেখা যায়নি। কিন্তু অক্টোবর মাসে হঠাৎ সংক্রমণ হুহু করে বাড়তে থাকায় জনমত ঘুরে গেছে। সর্বশেষ জনমত জরীপে উইসকনসিনে জো বাইডেন ট্রাম্পের চেয়ে সাত থেকে ১৭ পয়েন্ট এগিয়ে গেছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মার্চের শুরুতে বিদেশি নাগরিকদের জন্য মক্কা ও মদিনায় ওমরাহ পালন বন্ধের বিরল ঘোষণা দিয়েছিল সৌদি আরব। সাত মাস পর প্রথমবারের মতো বিদেশিদের কাবায় প্রবেশের সুযোগ দেয়া হল।
দশ হাজারের মতো বিদেশি মুসলিম রবিবার ওমরাহ পালন করেছেন। এবছর করোনাভাইরাস এসে সব কিছু বদলে দিয়েছে। হজ এবং ওমরা সবই বন্ধ ছিল সাত মাস।
সৌদি আরব পৌঁছানোর পর ওমরা পালনকারীদের ‘সেল্ফ আইসোলেশন’ বা অন্যদের থেকে একদম বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়েছে তিনদিন। এরপরই তাদের কাবায় প্রবেশের অনুমতি মিলেছে তাদের।
সৌদি আরবে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজারের মত। শনাক্ত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই সেরে উঠেছেন। সৌদি আরব এখন ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করছে, মসজিদগুলো খুলে দিচ্ছে।
স্থানীয়দের জন্যেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে অক্টোবর থেকে সৌদি নাগরিকদের ওমরাহ পালন করতে দেয়া হচ্ছে।
এবছর মোটে ১০ হাজারের মতো মুসলিমকে হজ পালন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। যেখানে সাধারণত প্রতি বছর গড়ে ২৫ লাখের মতো মুসলিম হজ পালনের সুযোগ পান। নিচের পুরনো এই ছবিতেই এবছরের সাথে পার্থক্য পরিষ্কার।
গত অক্টোবর মাসে ৮০ হাজারেরও বেশি প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৮ হাজার ৯৪৫ জন ও নারী ১১হাজার ১৮৭ জন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রবাসী কর্মী মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরেছেন।প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের গত সাত মাসে (১ এপ্রিল থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত) বিভিন্ন দেশ থেকে দুই লাখ ৪৫ হাজার ৭৯০ জন প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ১৭ হাজার ৯৬৩ জন ও নারী ২৭ হাজার ৮২৭ জন। বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে দুই লাখ ১০ হাজার ৯১ জন ও আউটপাস নিয়ে ৩৫ হাজার ৬৯৯ জন ফিরে এসেছেন।
আরও জানা যায়, যারা ফিরে এসেছেন তাদের কেউ বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে কাজ না থাকা, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, প্রতারিত হওয়া ও ভিসার মেয়াদ শেষ বা আকামা না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ফিরে এসেছেন। কেউ কেউ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরে যেতে পারবেন বলে জানান।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রবাস ফেরত মোট যাত্রীর মধ্যে সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৬৮ হাজার ৬৪৭ জন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৪ হাজার ২০৯ জন দেশে ফিরে আসেন।
সব ধরনের ক্রিকেট থেকে টাইগারদের ‘সুপারম্যান’ সাকিব আল হাসানের এক বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৮ অক্টোবর। ২৯ অক্টোবর থেকে তিনি মুক্ত।
সাকিবের মুক্তির পর সতীর্থরা তাকে অভিনন্দনে ভাসিয়েছেন।
বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের প্রত্যাবর্তনে সতীর্থদের আবেগী পোস্ট ঢেউ তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে আতশবাজি পুড়িয়ে সাকিবের মুক্তি দিনকে উদযাপন করেছেন তার স্ত্রী শিশির।
এবার ২২ গজের মাঠে সাকিবের ফেরা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের ক্রিকেটভিত্তিক একটি ফেসবুক পেজ- ‘ক্রিকেট পাকিস্তান’।
বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারকে সম্মান জানাতে এতটুকুনও কার্পণ্য করেনি তারা।
রোববার ‘ক্রিকেট পাকিস্তান’ তাদের পেজে একটি কার্টুনচিত্র আপলোড করে। যেখানে দেখা গেছে– বিশ্বের সেরা কয়েকজন ক্রিকেটারের মিলনমেলা। সেখানে সবার মধ্যমনি হয়ে বসে আছেন সাকিব আল হাসান। তার মাথায় মুকুট। রাজসিক ভঙ্গিতে সিংহাসনে বসে থাকা সাকিবের দিকে মুখ করে আছেন ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া ও জাদেজা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডার, অস্ট্রেলিয়ার মার্কাস পিটার স্টইনিস, পাকিস্তানের ইমাদ, আফগানিস্তানের রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবীসহ আরও বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার।
ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- দ্য কিং ইজ ব্যাক (রাজার প্রত্যাবর্তন)।
ক্রিকেট পাকিস্তানের এমন পোস্টের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে ২১ হাজারের বেশি লাইক জমা পড়েছে। শেয়ার হয়েছে ৩১০০-এর বেশি। ছবির নিচে মন্তব্য জমা পড়েছে ১৮০০-এর বেশি।
কমেন্ট বক্সে বাংলাদেশি নেটিজেনরা ক্রিকেট পাকিস্তান পেজকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, কোভিড এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতেও অবগত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই সরকারি সেবা নিতে মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ ভ্যাকসিন এলেও তো সবাইকে রাতারাতি দিতে পারবো না। তাই নিয়ম মানতে হবে।
রবিবার (১ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) সম্পর্কে অংশীজনদের অবহিতকরণ’ সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পাবেন ফ্রন্ট লাইনাররা। করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আগের সব প্রস্তুতি ধরে রেখে কাজ করা হচ্ছে। ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলো যেভাবে করোনার জন্য কাজ করেছে তা অব্যাহত রাখা হবে। চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ চলমান থাকবে। পিপিই দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে তা ভবিষ্যতেও মজুদ থাকবে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোকে প্রচারণা আরো বাড়াতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, শেখ হাসিনা সরকার যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে। অন্যরা কেবল ঘরে বসে থেকে করেছে সমালোচনা। শত সমালোচনার পরও দেশের স্বাস্থ্যখাত তার কাজ ঠিকভাবেই চালিয়ে গেছে।
ভ্যাকসিন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন কিনতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তহবিল আছে। বাড়তি অর্থের জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন এলেও মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে।
ভ্যাকসিন কি বিনামূল্যে দেওয়া হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন বিনামূল্যে কিনা সেটা নির্ধারণ করা হয়নি। জনগণকে সেবা দিতে করোনায় ঠিক কত টাকা ব্যয় হয়েছে, সেটা নির্ধারণ করা হচ্ছে। ভ্যাকসিনের বিষয়ে সব দেশের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ে ফান্ড আছে। প্রয়োজনে অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করবো।
কারা আগে ভ্যাকসিন পাবে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সবাই একবারে ভ্যাকসিন পাবে না। তাই গ্রুপ করে ভাগ করেই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কারা ভ্যাকসিন পাবে, সে নিয়ে ক্যাটাগরি ঠিক করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল মেনেই যারা ফ্রন্টলাইনে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ডাক্তার, সেনাবাহিনী, বয়স্ক মানুষ, সাংবাদিক, স্কুলশিক্ষকরা অগ্রাধিকারের তালিকায়। মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে অন্য স্বাস্থ্যসেবার মতো মিনিমাম চার্জ নির্ধারণ করা হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, এবারের করোনায় সাধারণ মানুষের জন্য সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। পরীক্ষার জন্য নামমাত্র ফি নির্ধারণ করার পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা ফ্রি করা হয়েছে। দেশের মানুষের জন্য এই মহামারিকালীন সরকারিভাবে একজন সাধারণ রোগীর জন্য গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার টাকা ও একজন আইসিইউ ইউনিটে থাকা রোগীর জন্য ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় করেছে। ফলে করোনাকালীন মহামারিতে দেশের সাধারণ মানুষ ভীষণ উপকৃত হয়েছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমামানুয়েল ম্যাক্রোঁন ঘোষণা করেছেন যে Nice শহরের গির্জায় ৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পরে তিনি সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে দ্বিগুণেরও বেশি সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবেন। ম্যাক্রুনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সেনা মোতায়েন ৩ হাজার থেকে ৭ হাজার করা হবে। ফ্রান্সের জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটররা আজ সকালে ফ্রান্সের মধ্য Nice শহরে একটি গীর্জার বাইরে এক ব্যক্তি ছুরি দিয়ে তিন ব্যক্তিকে হত্যা করার পর হত্যার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীকে সকাল ৯ টার দিকে (আইরিশ সময়) সকাল ১০ টার দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণ থেকে আটক করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারের সময় আহত হওয়ার পরে ” আক্রমণকারী আহত থাকা অবস্থায়ও” আল্লাহু আকবর ” ধ্বনি পুনরাবৃত্তি করেছিলেন”, Nice শহরের মেয়র “খ্রিস্টান এস্ট্রোসি” ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র নটর-ড্যামের Basilica এলাকায় দুইজন মারা গিয়েছিল এবং তৃতীয় ব্যক্তি কাছের একটি বারে আশ্রয় নেওয়ার পরে আহত হয়ে মারা যায় বলে একটি পুলিশ সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে। “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে,” পুলিশ মুখপাত্র ফ্লোরেন্স গাভেলো জানিয়েছেন।
এস্ট্রোসি, যিনি বলেছিলেন যে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন শীঘ্রই Nice পৌঁছাবেন এবং তিনি সারা দেশের চার্চগুলিকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়ার এবং সতর্কতা হিসাবে সকল চার্চগুলিকে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী “জেরাল্ড ডারমানিন” এক টুইটারে বলেছেন যে এই হামলার পরে তিনি একটি সঙ্কট কালীন বৈঠক ডেকেছেন।
১৫ জানুয়ারির ব্যঙ্গাত্মক সাপ্তাহিক “চার্লি হেড্ডোতে” গণহত্যার পর থেকে ফ্রান্স সন্ত্রাসবাদী হামলার বিষয়ে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে আসছে এবং প্যারিসে বর্তমানে এই হামলায় সন্দেহভাজন সহযোগীদের বিচার চলছে।
আজ সকালে ফ্রান্সের Nice শহরে একটি গির্জায় এক আক্রমণকারী ছুরি নিয়ে আক্রমন চালায় এবং সে ছুরি দিয়ে এক মহিলার শিরশ্ছেদ করে এবং একই ঘটনায় আরও দু’জন নিহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবরে বলা হয়েছে। এদিকে ফ্রান্স নগরীর মেয়র এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদ হিসাবে বর্ণনা করছেন।
ফ্রান্সের পুলিশ জানিয়েছে, হামলাটি একটি গির্জার বাইরে সংঘঠিত হয়েছিল এবং হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লোকজনকে ঐ অঞ্চলটি এড়িয়ে চলাচল করতে বলা হচ্ছে।
ফরাসী সন্ত্রাস বিরোধী আইনজীবী বিভাগ বলেছে যে, এ ঘটনাটিকে দ্রুত তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রয়টার্সের সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সজ্জিত পুলিশ চার্চের চারপাশে একটি সুরক্ষা বেষ্টনী তৈরি করেছিল, যা শহরের মূল শপিংয়ের পুরো জায়গা এবং( Nice city) নাইসের জিন মেডেকিন অ্যাভিনিউকে ঘিরে রেখেছিল। অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও ঘটনাস্থলে ছিল।
মহানবী সাঃ কে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্বক কার্টুন প্রকাশের কারনে এই মাসের শুরুতে (ফ্রান্স) প্যারিসের ফরাসী মধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক “স্যামুয়েল প্যাটি” কে শিরশ্ছেদ করে চেচেন বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি। এই কারনে উদ্ভত যে উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করছিল ঠিক সেই সময় এই আক্রমণটি সংঘটিত হলো।
আজ সকালে Dublin এর Ballinteer এলাকার এক বাড়ী থেকে এক মুসলিম মা এবং তার দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে তাদের এই মৃত্যু রহস্যজনক।
গতকাল বিকেলে Dublin শহরের southside এলাকার Llewellyn Court এর এক বাড়িতে ৩৭ বছর বয়সের এক মহিলা এবং তার ৬ বছর বয়সী একটি শিশু ছেলে এবং ১১ বছরের মেয়ের মরদেহ পাওয়া যাওয়ার পরে GARDA -র উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলে Forensic পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।
স্থানীয়ভাবে এই পরিবারটি যাদের কাছে পরিচিত ছিল তারা জানিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী মায়ের নাম “সীমা বানু” তার মেয়ে “আফিরা” এবং তার ছেলে “রাজাম”।
জানা গেছে একজন পুরুষ যে কিনা মহিলার স্বামী এবং শিশু দুটির বাবা যিনি স্থানীয় GARDA অফিসে যোগাযোগ করেছেন এবং তদন্তকারী দল তার সাথে কথা বলছে।
প্রতিবেশীদের উদ্বেগ জানানোর পরে গতকাল বিকেলে GARDA ঘটনা স্থলে এসে পৌছে এবং GARDA অফিসাররা দরজা ভেঙ্গে সেই বাড়িতে প্রবেশ করে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করেছিল।
মায়ের মরদেহ তার শোবার ঘরে পাওয়া গেলেও শিশুদের মর দেহ একটি আলাদা ঘরে পাওয়া যায়।
এই বছরের শুরুর দিকে সীমা বানু এক হামলার শিকার হয়েছিল এবং এই হামলার অভিযোগের সাথে জড়িত সন্ধেহে সন্দেহভাজন একজনকে আদালতে হাজির হয়েছিল তবে এখনো বিচার প্রক্রিয় শুরু হয়নি।
আসসালামু আলাইকুম, আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকলকে অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানানো যাচ্ছে যে, কিছু উদ্যোমী ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে অনলাইনের মাধ্যমে একটি আইটি কোর্স চালু হতে যাচ্ছে। এই কোর্সটি সম্পন্ন করলে যে কোনো শিক্ষার্থী Software QA Engineer (Software Testing) হিসেবে চাকরি করতে পারবেন। কোর্সটি ISTQB Syllebus অনুসরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কোর্স পরিচালকদের লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের অধিক গুরুত্ব দিয়ে সর্বাধিক সহায়তার মাধ্যমে যথা সম্ভব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রদান করা যাতে একজন শিক্ষার্থী তার লব্ধ জ্ঞানের আলোকে এই সেক্টরে একজন পারদর্শী QA Engineer হিসেবে প্রবেশ করতে পারে। আগ্রহী প্রার্থীদেরকে নিন্মোক্ত লিংকে রেজিস্ট্রেশন করে কোর্সে আসন সংরক্ষণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এবং তাদের অরিয়েন্টেশনে যোগ দিয়ে কোনো তথ্য জানার থাকলে প্রশ্ন করতে পারবেন।
মা ইলিশ ধরার অপরাধে বরিশালের বিভিন্ন নদীতে নৌ পুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩৬ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। রবিবার পরিচালিত এই অভিযানে ১ লাখ ৬ হাজার মিটার অবৈধ জাল এবং প্রায় ১শ’ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়।
ঐদিন রাতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজার নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমান আদালত এই দণ্ডাদেশ দেন। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজা জানান, মৎস্য অধিদপ্তর ও নৌ পুলিশ গত রবিবার দিনভর মেঘনা, তেতুলিয়া, কালাবদর, সন্ধ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও কীর্তনখোলা নদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার মিটার অবৈধ জাল এবং প্রায় ১শ’ কেজি ইলিশ মাছ সহ ৩৬জন জেলেকে আটক করে।
পরে ভ্রাম্যমান আদালত ২৮ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৮ জেলেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। জব্দকৃত জাল কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী রসুলপুর চরে পুড়িয়ে ধ্বংস এবং ইলিশ মাছ বিভিন্ন এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ে বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশী জেলেদের জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই সময়টাতে বঙ্গোপসাগরে ঢুকে ভারতীয় জেলেরা বড় বড় ইঞ্জিন চালিত জাহাজে করে দিনের পর দিন মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশী জেলেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা বঙ্গোপসাগরে ভিনদেশিদের অভয়ারণ্যে পরিণত করছে। অনেকে বলছে বাংলাদেশী কোস্টগার্ড ও নেভির প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় ভারতীয় জেলেরা এ অঞ্চলে দৌরাত্ব দেখায়। নিজ ঘরকে অভুক্ত রেখে অন্যের ঘরে প্রদীপ জ্বালাচ্ছে বাংলাদেশ।
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে রাশিয়ার ভয়াবহ বিমান হামলায় তুরস্ক সমর্থিত অর্ধশতাধিক মিলিশিয়া যোদ্ধার প্রাণহানি ঘটেছে। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও কিছু লোক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে হামলাটি চালানো হয়েছে।
রাশিয়ার বিমান বাহিনীর রোমহর্ষক সেই আক্রমণের কারণে অঞ্চলটিতে সহিংসতা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ফায়লাক আল-শাম নামের একটি ইসলামিস্ট গ্রুপের প্রশিক্ষণ ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়েছে। এই আক্রমণের ফলে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতা ও পর্যবেক্ষণে ইদলিবে যে যুদ্ধবিরতি চলছিল তা লঙ্ঘন করা হলো।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ভয়াবহ সেই হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, হামলায় আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, গত মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইদলিবের উত্তর-পশ্চিমের হারেম অঞ্চলে এই হামলা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভয়াবহ।
ওই যুদ্ধবিরতির পর ইদলিবে হামলা বন্ধ রাখে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। এর ফলে ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছিল তুরস্ক সমর্থিত মিলিশিয়াদের হাতে। ওই অঞ্চলে যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে।
এ দিকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর তুরস্ক জানায়, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মিত্ররা কোনো হামলা চালালে ‘পুরো শক্তি দিয়ে পাল্টা জবাব’ দেওয়ার অধিকার রাখে আঙ্কারা। বিদ্রোহী ও জিহাদিদের শেষ ঘাঁটি হচ্ছে ইদলিব।
মুনাসিব হোসাইন (রিশাত) এ বছর লিভিং সার্টিফিকেট ২০২০ পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন। তিনি স্কুল মক টেস্টেও প্রথম হয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন যেই ফলাফলের ভিত্তিতে এ বছর লিভিং সার্টিফিকেটের ফলাফল নির্ধারিত হয়। তার বয়স ১৭। তিনি ট্রিনিটি কলেজে ফার্মেসী বিভাগে L-9 এ ভর্তি হয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হতে নূন্যতম ৫৯০ মার্ক এর প্রয়োজন ছিল।
তার পিতা ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন ও মাতা ডাঃ রিতা আওয়াল। ফার্মেসিতে ভর্তি হতে পেরে মুনাসিব হোসাইন ও তার পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। তার এই সফলতায় কমিউনিটির ব্যাক্তিবর্গ তাকে অভিন্দন জানায়।
মুনাসিব হোসাইন তার পরিবার সহ আয়ারল্যান্ডে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে আসেন। এখানে তিনি Le Chéile Secondary School, Tyrrelstown, Dublin এ দশম শ্রেণী (Transition Year) এ ভর্তি হয়েছিলেন।
আয়ারল্যান্ডে আসার পূর্বে তিনি স্বপরিবারে সৌদি আরবে American International School, মদীনাহ মনোয়ারায় পড়াশুনা করেন। সেখানে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যায়ন করেন।
ছোটবেলায় তিনি নানার সান্নিধ্যে কাটান এবং তার নানার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পান। তার নানা মরহুম ডাঃ অধ্যাপক M A Awal যিনি প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, সার্জারী বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তার দাদা ইনায়েত হোসাইন, প্রাক্তন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সাইন্স ল্যাবরেটরি, ঢাকা। তার দাদী মাহমুদা বেগম, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা, ধানমন্ডি সরকারি গার্লস স্কুল, ঢাকা।
তার পিতা ডাঃ মুসাব্বির হোসাইন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, Portiuncula University Hospital, Ballinasloe, Co – Galway এবং মাতা ডাঃ রিতা আওয়াল, গাইনি বিশেষজ্ঞ, গলওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, গলওয়ে।
মুনাসিব হোসাইনের এই সফলতায় আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও তার উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।
৩২ বয়সী রাশিয়ান মুসলিম বক্সার খাবিব নুরমাগোমেদভ ২৫৪ তম ইউএফসি মিক্সড মার্শাল আর্ট (এমএমএ) চ্যাম্পিয়নশিপ লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিন গাথজেকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন। ইউএফসিতে এটা তার ১৩ তম অপরাজিত চ্যাম্পিয়নশিপ। আর মিক্সড মার্শাল আর্ট এ তার ২৯ তম অপরাজিত জয়। ১২ বছরের ক্যারিয়ারে তাকে একবারও হারের তিক্ত স্বাদ পেতে হয়নি, যা ক্রিড়াজগতে সত্যি বিরল।
২৫৪ তম ইউএফসির ফাইনালের পর তার অপরাজিত ক্যারিয়ার থেকে ইস্তফা দিয়ে অবসরের ঘোষণা দেন। তার অবসরের ঘোষণা পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম আলোচিত এই তারকার অবসরের ঘোষণায় কষ্ট পান অন্যান্য তারকারাও। সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লিভারপুলের মিশরীয় তারকা মোহামেদ সালাহ কিংবা জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী তারকা মেসুত ওজিল শেষ ম্যাচে সাপোর্ট দিয়েছেন তাকে। আরো একবার জয় তুলে নেয়ার পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক তারকারাও।
রাশান এই মিক্সড মার্শাল আর্ট তারকা খেলতেন লাইটওয়েট শ্রেণিতে। আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউএফসি) ক্যারিয়ারের পুরো সময়টায় তিনি চ্যাম্পিয়ন। ফাইট ম্যাট্রিক্সের র্যাংকিং অনুযায়ী, লাইটওয়েট শ্রেণির সর্বকালের ২য় সেরা মার্শাল আর্টিস্ট খাবিব নুরমাগোমেদভ। কারো কারো মতে, তিনিই সর্বকালের সেরা।
খাবিব হচ্ছেন ১ম মুসলিম অ্যাথলেট, যিনি ইউএফসি শিরোপা জিতেছেন। সৃষ্টিকর্তার ওপর অগাধ আস্থা তার। শেষ ম্যাচেও আবেগে ভেসে গেছেন। বলেছেন, যখন আল্লাহ তোমার সাথে থাকে, পৃথিবীর কেউ তোমাকে কখনো হারাতে পারবে না। তোমার এটি বিশ্বাস করতে হবে।
তার অবসরের কারণটা অবশ্য বেশ হৃদয়বিদারক। চলতি বছরের মে মাসে তার বাবা ও দীর্ঘদিনের কোচ আবদুলমানাপ নুরমাগোমেদভ করোনায় আক্রান্ত হন। দীর্ঘদিন কোমায় থাকার পর ৩ জুলাই, ৫৭ বছর বয়সে মস্কোর একটি ক্লিনিকে মারা যান তিনি।
বাবার মৃত্যুর পরই মূলত অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন খাবিব। তার মা বলেছিলেন, বাবা ছাড়া কোনো ম্যাচ যেন না খেলেন তিনি। মায়ের কথা রেখেছেন খাবিব। তাই তো, আবুধাবিতে ইউএফসি লাইটওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপে যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিন গেথজির বিপক্ষে ম্যাচটাকেই ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ বলে জানিয়ে দেন।
আমরা আমাদের পুরো পরিবার এবং সেন্টারের কিছু মানুষ একই সঙ্গে ঢাকা ছাড়ার ঘটনা.
ব্ল্যাক আউটের রাত্রি. চারিদিকে নিবিড় অন্ধকার, সীমাহীন নিস্তব্দতা. মুহু মুহু সাইরেনের আওয়াজ, বিমান বিধ্বংসী কামানের ভয়ন্কর গর্জন. হটাৎ করে যেন জলে ওঠে আগুন, ঘরের মধ্যে আমরা সবাই জমাটবাঁধা বেদনার অনুভূতিতে বিষন্ন , ম্রিয়মান. মায়ের ভীত কণ্ঠ , বাবার অস্থির পায়চারি . পারা প্রতিবেশীর সবার মুখে নীরব জিজ্ঞাসার চিহ্ন. “আমরা সবাই বাচঁবোতো “? এই ভয়ার্ত প্রাণহীন চঞ্চলতার মধ্যে আমাদের দিনগুলি কিভাবে কেটেছিলো তা কোনোদিন আমি ভুলতে পারবোনা. চিরদিনই আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে.
অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্বের পর ১১ ডিসেম্বর ৭১ বেলা ১১ টা র সময়ে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করলাম. আমাদের প্রত্যেকের কাছে হাত ব্যাগ তাতে একান্ত প্রযোজনীও সামগ্ৰি,
বুড়িগঙ্গা পার হয়ে গ্রামের সংকীর্ণ বন্ধুর পথে চলতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো , কখনো নিচু জমি আবার কখনো শরু মেঠো পথ ধরে আমরা খোলামোড়া ছাড়িয়ে সাকোতা এসে পৌঁছিলাম. এখানে মুক্তি ফৌজ আমাদেরকে সার্চ করলো. এতদিন বেতারে যে মুক্তি ফৌজ এর কথা শুনেছি আজ তাদের সচক্ষে দেখে অভিভূত হলাম. দিন দরিদ্রের বেশে মুখে তাদের অমনিও কঠোর দৃঢ়তা. সাকতা ছাড়িয়ে আমাদের পথ চলা আবার শুরু হলো. অগনিতো নারী পুরুষ আমাদের সহযাত্র্রী , প্রাণের তাগিদে উর্ধ শাঁসে ছুটছে সবাই.
বেলা গড়িয়ে এলো , তখন বিকেল পাঁচটা. রুহিদপুর এলাম , সমুখে ছোট নদী ওপারে সঈদপুর. ছোট একটা স্পিড বোট শতাধিক মানুষের চাপে ডুবন্ত প্রায়. একসময় প্রকান্ড লাল সূর্যটা ডুবে গেলো. সন্ধ্যার অন্ধকার ধীরে ধীরে প্রকৃতিকে গ্রাস করলো. সারাদিন অভুক্ত স্নানহীন আমরা নৌকা করে মরিচা এসে পৌঁছলাম. পরদিন প্রাতঃকালে আমাদের যাত্রা আবার শুরু হলো. ছোট্ট স্পীডবোটটি স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা মাথায় নিয়ে ছুটে চলছে সীমাহীন উল্লাসে. পথে শ্রীনগরে মুক্তিফৌজ আবার আমাদের সার্চ করলো. , ষোলো সতেরো বছরের কিশোর মুক্তি যোদ্ধাও আছে অনেক. ওদের সবার মুখে স্মিত হাসির রেখা. এ হাসি অনেক আনন্দ ও গৌরবের.
বিকেল তিনটার সময়ে দিঘলীতে পৌঁছলাম. গোধূলি বেলায় একটা নৌকা ঠিক ক করা হলো, অনেক ভাড়া কবুল করে দুই মাঝি ভাই আমাদের পটুয়াখালী পর্যন্ত নিয়ে যেতে রাজি হলো. রাত আমাদের নৌকাতে কাটলো. ভোর চারটার সময়ে আমাদের নৌকা ছাড়া হোল, চারিদিকে অন্ধকারের রেশ তখনো কাটেনি. পদ্মার বুকে আমাদের নৌকা খানি ধীর শান্ত গতিতে এগিয়ে চলছে. আস্তে আস্তে অন্ধকারের রেশ কেটে গিয়ে পূব আকাশে লোহিত রঙের বর্ণচ্ছটা দেখা গেলো. অপূর্ব সুন্দর এই দৃশ্য, প্রকান্ড সূর্যটা নদীর কিনার হতে ধীরে ধীরে নিজের ঘোমটাটা উম্মোচন কোরছে. সকাল সাড়ে সাতটার সময়ে নৌকা কামরাঙ্গীর চরে থামানো হোল. মুখহাত ধুয়ে চরের মধ্যে কিছুক্ষন হাটলাম , চারিদিকে পদ্মার পানি মাঝে মাঝে মাটি আর বালুর চর.
নৌকা আবার যাত্রাপথে রওয়ানা হলো. ডান হাতের ব্যাপার সমাধা করার পর রেডিও অন করে ইন্ডিয়া স্টেশন ধরা হলো. আমরা খবর শুনলাম ঢাকের দিকে মুক্তি ও ভারতীয় বাহিনী প্রচন্ড গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে. টঙ্গী দখল করা হয়েছে , যশোর কুষ্টিয়া সিলেট রাজশাহী প্রভৃতি অঞ্চল মুক্তি বাহিনীর আয়ত্তে বাংলাদেশ বেতারে জয়ের উল্লাস ধোনি. ছৈয়ের ভিতর থেকে বাইরে তাকালাম , দুপাশে গাসপালা , ঘর বাড়ি গুলো আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে. নদীর মাঝে অসংখ পালতোলা নৌকা. কিছুদূর যেতেই পচা লাশের গদ্ধে চমকে উঠলাম. নদীর কিনার ঘেঁষে বয়ে চলছে ইউনিফর্ম পরা একটি লাশ. মাথার হেলমেটটিও অক্ষত অবস্থায় ভেষে চলছে. বুকের মধ্যে কেমন যেনো শিরশির করে উঠলো. অদ্ভুত এক অনুভিতিতে মন বিষন্ন হয়ে উঠছে. আমাদের নৌকা এগিয়ে চলছ. পথের মাঝে অনেক সাপুড়ে ও মেছোদের নৌকা সারি বেঁধে কূলে ভেড়ানো. অনেক সাপুড়ে মেয়েরা দিব্বি নৌকা বাইছে . আমাদের দেখে কোনো মেয়ে হয়তো সরস মন্তব্য করলো সঙ্গীরা হেসে উঠলো. একজন সাপুড়ে চিৎকার করে বললো ওহে সিরাজুদৌলা পালায় নাকি. আমরা সমস্বরে হেসে উঠলাম. আমরা পটুয়াখালীর প্রায় কাছে চলে এসেছি কিন্তু রাত থাকতে পৌঁছোবার আসা ত্যাগ করতে হলো. লৌহলিয়ার কূলে ঘেঁষে আমাদের নৌকাটা যখন ধীরে ধীরে চলছিল অকস্মাৎ রাইফেলের গর্জনে আমরা চমকিত হলাম. এই নিচ্ছিদ্র কালো অন্ধকার রাত্রিতে মৃত্যু ভয়ে ভীত হয়ে পড়লাম. মনে মনে ভাবলাম তরে এসে তরী ডুবলো, আহা শেষ রক্ষা আর বুঝি হলোনা. মুক্তি ফৌজ এর নির্দেশে নৌকা পারে লাগানো হলো. পটুয়াখালী শহর কারফিউ. অতএব নৌকাতে রাত্রি যাপন করতে হলো. পরদিন ১৬ ই ডিসেম্বর সকাল বেলা আমরা পটুয়াখালী এসে পৌঁছাই, শহরে লোকজনের সংখ্যা খবই কম. পালিয়ে যাবার পর এখনো সবাই ফিরে আসেনি. প্রত্যেক বাড়িতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ছে. ভালোলাগার মুগ্ধ আবেশে মনটা ঢাকায় ফিরবার জন্য ছটফট করছে. কিন্তু ঢাকা এখনো শত্রুর কবলে. পাকিস্তানী সেনারা আত্মসমর্পণ করবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই. নিরাপদে পোঁছানোর আনন্দ সবার মনের মধ্যে থাকলেও, অদ্ভূত এক অনুভূতিতে সবার মনই বিষন্ন. পটুয়াখালীতে এমনকোন বাড়ি নেই যেখানে ছার্চ হয়নি. ঘরের কাপড় হতে শুরু করে হাঁস মুরগি গুলাও উধাও.
সন্ধারদিগে সবাই যখন গল্পে মশগুল ঠিক তখনি টিনের চালে গুলির টুপটাপ শব্দে আমরা সবাই চমকিতো, বড়ো ভাই দৌড়াতে দৌড়াতে এসে বললো ওরা আত্মসমর্পণ করেছে. ঢাকা এখন মুক্ত স্বাধীন. সারা পটুয়াখালীর অজস্র রাইফেল, এস এল আর , আরো আমার নামনাজানা অস্ত্রের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠলো, জয়ের উল্লাসে ধ্বনিত সবার কণ্ঠ. একই কথা. জয় বাংলা, জয় বংগবন্ধু
সত্যি এ কয়টি দিনের কথা আপন মানসপটে চির অম্লান হয়ে থাকবে.
ধর্ষণের প্রতিবাদে বাংলাদেশে বেশ হৈ চৈ হচ্ছে। আন্দোলন হচ্ছে। আন্দোলনও আজকাল অনেকটা আনন্দ ও বিনোদনের আইটেম হয়ে দাঁড়িয়েছে। হুজুগে বাঙ্গালি। আবেগী বাঙ্গালি। কিছুদিন ধুমধাড়াক্কা হইহল্লা করে এক সময় ক্ষান্ত হয়ে পড়ে। নিভে যায় আন্দোলনের অগ্নিশিখা। তলে পড়ে যায় নতুন কোনো বারুদের ভারে। মানুষ ভুলে যায় দ্রুতই সবকিছু। দেশ যেভাবে চলার সেভাবেই চলতে থাকে। অর্থাৎ যেই লাউ সেই কদু।
ধর্ষণের প্রতিবাদে এবার সবাই নড়ে চড়ে বসেছে। মানবাধিকার সংস্থা থেকে শুরু করে প্রিন্টিং ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, রাজনৈতিক সংগঠন, যুবসমাজ, সাধারণ জনতা, ছাত্রছাত্রী সহ বিভিন্ন আঙ্গিকের সেলিব্রিটিরাও পিছিয়ে নেই। সাধারণ মানুষ যখন কোনো কথা বলে তা সমাজে তেমন কোনো রেখাপাত করতে পারেনা। কিন্তু সেলিব্রিটি জাতীয় কেউ কিছু বললে তা তোলপাড় সৃষ্টি করে ফেলে। সম্প্রতি দেশের শীর্ষস্থানীয় একজন অভিনেতা অনন্ত জলিল নারীদের অশালীন পোশাকই ধর্ষণের কারন বলে মন্তব্য করলে তার বক্তব্যের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তীব্র সমালোচনা ও আন্দোলনের মুখে টিকতে না পেরে তিনি তার বক্তব্য থেকে সড়ে দাড়ান। বলে দিলেন, ধর্ষণের জন্য নারীদের পোশাক নয়, বরং পুরুষদের বিকৃত মনমানসিকতাই দায়ী।
বছর দুয়েক আগে দেশের অন্যতম টিভি অভিনেতা মোশাররফ করিম একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে বলেছিলেন, “মেয়েরা তাদের ইচ্ছে মতো পোশাক আশাক পড়বে এটাই স্বাভাবিক। ধর্ষণের কারন পোশাক নয়।” এ কথা সাহস করে তিনি বলে ফেলেছিলেন। আর যায় কোথায়! শুরু হলো তার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রতিবাদের ঝড়। অবস্থা বেগতিক দেখে কথা ঘুরিয়ে ফেললেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপবাদ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জন্য ক্ষমা চাইলেন। বক্তব্য সংশোধন করলেন। বললেন, জনগণ যেভাবে বিষয়টা বুঝেছে প্রকৃত অর্থে সেভাবে তিনি বলেননি। বরং পোশাকের শালীনতায় তিনি বিশ্বাসী। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা মোটেও তার অভিপ্রায় নয়। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য তিনি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
একজন প্রথমে পোশাকের শালীনতাকে ধর্ষণের জন্য দায়ী করে আন্দোলনের মুখে তার অবস্থান থেকে সড়ে আসেন। অন্যজন মানুষের বিকৃত মনমানসিকতাই ধর্ষণের কারন বলে মন্তব্য করলেও পরিশেষে তিনিও তার অবস্থানকে ধরে রাখতে পারেননি। আন্দোলনের তোপের মুখে তাকেও অবস্থানচ্যুত হতে হয়। অনেকটা “ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি” অবস্থার মতো। এর কারণটা হলো তারা যা বলেন তা তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেননা। নড়বড়ে বিশ্বাস ও দুর্বল চিত্ত নিয়ে কথা বলার ফলেই তাদেরকে এভাবে সড়ে আসতে হয়েছে। অবস্থানচ্যুত হওয়ার আগের কিংবা পরের যে কোনো বক্তব্যকেই আমরা ধর্ষণের কারন হিসেবে ধরে নেই না কেনো এটা সহজেই উপলব্ধি করা যায় যে দু বক্তব্যের পক্ষেই জনমত রয়েছে। সুতরাং কোনটা অধিক গ্রহণযোগ্য কিংবা অধিকতর দায়ী অথবা উভয় কনসেপ্টই সমান ভাবে দায়ী কিনা তা তলিয়ে দেখা প্রয়োজন।
ধর্ষণের যে দুটো কারণ মানুষের সামনে এসেছে কিংবা যেগুলোকে নিয়ে তারা নাচানাচি করছে তার আগে সেই কারণ গুলো ঘটার পিছনে কি কারণ রয়েছে তা খুঁজে বের করা আরও বেশি জরুরি। অন্যথায় শাস্তি যতোই ভয়ানক হোকনা কেনো তা থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব। প্রগতিবাদীদের কথা মেনে নিয়ে ধরে নিলাম ধর্ষণের প্রথম কারণ মানুষের বিকৃত মানসিকতা। বিকৃত মানসিকতার কারন কি? কখন মানুষ বিকৃত রুচি বা বিকৃত মন মানসিকতার অধিকারী হয়ে ওঠে? বিকৃত রুচি বা মানসিকতা নিয়ে তো কেউ জন্মায় না। এ সমাজ তাদেরকে বিকৃত করে তোলে। প্রশ্ন উঠে, কিভাবে?
সুস্থ মনের মানুষটি যৌন তাড়নায় কখন উন্মাদ হয়ে উঠে? বিকৃত রুচি কখন এসে তার উপর ভর করে? নগ্নতা, বেলেল্লাপনা, উশৃংখল পোশাক পরিচ্চদ ও আচরণ, খোলামেলা চলাফেরা, মুক্ত যৌনাচার, দেয়ালে দেয়ালে উলঙ্গ পোস্টার, অশ্লীল টেবলয়েড, পত্র পত্রিকা ও বই, নীলছবি, চলচ্চিত্রে অশালীন নাচগান ও ধর্ষণের যৌন উত্তেজক দৃশ্য, অনলাইন ভিত্তিক অশ্লীল সাইট সমূহের অবাধ ছড়াছছড়ি প্রভৃতি কারণে মানুষের মাঝে বিকৃতি দেখা দেয়। এ বিকৃত মন অতি সহজেই ধর্ষণের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
কিছু দিন আগে আমার একটি নিবন্ধে মা সম্পর্কে এক কিশোরের মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেছিলাম। বন্ধুদের কাছে মাকে নিয়ে এমন অশালীন মন্তব্য কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাহলে ধরে নিতে হবে ওই ছেলেটি নিশ্চয়ই মানসিক বিকৃত সম্পন্ন ছিলো। কিন্তু তার বিকৃত মানসের পেছনে কি কাজ করেছিলো? তার মা’র অশালীন তথা অর্ধ নগ্ন পোশাকই ছিলো এর কারণ। সুতরাং যারা মানসিক বিকৃতিকে ধর্ষণের একমাত্র কারণ মনে করেন তাদের বুঝা উচিত যে অশালীন পোশাক আশাকই মানসিক বিকৃতিকে ত্বরান্বিত করে। মানসিক বিকৃতিকে তথা আরেকটু সহজ ভাবে বললে বলা যায়, ধর্ষণের হারকে নিম্নগামী করতে হলে অশালীন পোশাককে প্রতিরোধ করতে হবে। অর্থাৎ অশালীন পোশাকআশাককে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করতে পারলে মানসিক বিকৃতি কমবে, মানসিক বিকৃতি কমলে ধর্ষণ কমবে।
সাত বছরের শিশু সন্তান বা বোরকাপরা মহিলা ধর্ষিতা হওয়ার কথা বলে যারা মানসিক বিকৃতিকে ধর্ষণের মূখ্য কারন হিসেবে প্রচারণা চালান তাদেরকে বলবো এ ধরনের ঘটনা সমাজে কয়টা ঘটে। কালেভাদ্রে হয়তো দুএকটি ঘটনা ঘটতে পারে। এগুলো ব্যতিক্রম। বিজ্ঞানের কিছু সতসিদ্ধ সূত্রও এমন ব্যতিক্রমের উর্ধ্বে নয়। তাই বলি, অশালীন পোশাক পরিচ্চদ ও মানসিক বিকৃতিকে দায়ী করে দু ভাগে বিভক্ত হয়ে যারা ধর্ষণ দমানোর জন্য আন্দোলন করছেন তাদের আন্দোলন সার্থক হবেনা। এতে ধর্ষণ কমবে না। বরং দুপক্ষকেই এক কেন্দ্রে এসে দাঁড়াতে হবে। একজোট হয়ে আন্দোলন করতে হবে। অশালীনতা ও মানসিক বিকৃতিকে দূর করার জন্য সমাজে জাগরণ তুলতে হবে। দুপক্ষ মিলে এ কাজটি করতে সক্ষম হলে ধর্ষণ অনেকাংশে কমে যাবে। সমাজ উপকৃত হবে।
রাষ্ট্রের কর্ণধার হিসেবে সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করেছে। ধর্ষণ ঠেকানোর জন্য সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে এ আদেশ বা আইন যেনো কেবল ফাইলবন্দী হয়ে না থাকে সেদিকেও সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে না পারলে সে আইন বৃথা। উন্নত বিশ্বে ধর্ষণের জন্য বড়োজোর ৮/১০ বছরের জেল হয়। ক্ষেত্রবিশেষ আরও অনেক কম। জেলখানায় থাকার সুযোগ সুবিধা যেনো অনেকটা ফাইভ স্টার হোটেলে থাকার মতো। নিয়মিত খাবারদাবারের পাশাপাশি আলাদা রুম, টিভি সবই থাকে। বছরে সম্ভবত শর্ত সাপেক্ষে দু সপ্তাহের ছুটিও মেলে। এরপরও সেসব দেশে ধর্ষণের খবর খুব একটা চোখে পড়েনা। এর কারণ কি? কারণ একটাই এসব দেশে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয়। যতোটুকু শাস্তি বিধানের নিয়ম রয়েছে তার পুরোটাই যথাযথ ভাবে পালিত হয়।
লেখক: সাজেদুল চৌধুরী রুবেল, প্রাবন্ধিক ও কলামিসট shajed70@yahoo.com
চীনের ঊহান থেকে যখন করোনার সূত্রপাত, বিশ্ব তখনো বুঝে উঠতে পারে নাই এর ভয়াবহতা। সবাই ঠাট্টা মশকরা করে বলত – ওরা সাপ, ব্যাঙ, বাদুর এমন হেন কোন খাবার নাই যা তারা খায়না, তাদের এমন রোগ হবে না তো কার হবে? হু হু করে যখন করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে লাগল এবং গণহারে মারা যেতে লাগল, তখনই বিশ্ব একটু নড়েচড়ে বসল। নড়েচড়ে বসা মানে চায়নার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করা। বিশ্বের দ্রব্য সাপ্লাইয়ের এক নাম্বার দেশ হল চীন, সে চীন থেকে দ্রব্য আমদানি বন্ধ করে দিল বহির্বিশ্ব। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চাইনিজরাও পড়ল মহা বিপদে। সবাই তাদেরকে একপ্রকার একঘরে করে রাখল। চাইনিজ বা ওই রকম চেহারার কাউকে দেখলেই তার থেকে দশ হাত দূরত্ব বজায় রেখে চলত, মনে করত এক একটা চাইনিজ মানে এক একটা ভাইরাস।
চায়নার এমন কোণঠাসা অবস্থায় চায়নাবিরোধীরা বগলদাবা করতে লাগল যে, এইবার বোঝ ঠেলা। বিশিষ্ট পণ্ডিতবর্গ তো ধরেই নিয়েছে যে, চায়নাকে ধরাশয়ী করতে এটা আমেরিকার চাল। আমেরিকা মনে হয় ভাইরাস বানিয়ে চায়নাতে ছড়িয়ে দিয়েছে। যাই হোক করোনাতো হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান এর মত অল্প সময়ের মধ্যে স্কোর হাজারের সেঞ্চুরির কাছাকাছি নিয়ে গেল, ওই মুহূর্তে চায়নাও আক্রমণে আনল নতুনত্ব। ঘোষণা হল লকডাউনের। মিড অন, মিড অফ, মিড উইকেট, স্লিপ, কাভার, এক্সট্রা কাভার, গালি সব দিকে এমনভাবে বন্ধ করল; করোনা আর সীমানার বাহিরে বেরই হতে পারল না। স্কোরও কমতে কমতে শূন্যে নেমে গেল।
এইদিকে চায়না তো পার পেয়ে গেল। কিন্তু ওইদিকে যে মিস ফিল্ডিং হয়ে কিছু ভাইরাস সীমানার বাহিরে চলে আসল তার কি হবে? ছাড়া পাওয়া বাঘিনীর মত উন্মাদ করোনা হয়ে পড়ে বাঁধনহারা। শুরুতেই ঘাড় মটকে ধরে ইরানের এবং এর পর রক্ত চোষা শুরু করে ইতালির। ইতালিকে একবারে নাস্তানুবাদ করে ছেড়ে দেয়। ইতালির উপর কেন এত আক্রোশ জন্মালো তার ব্যাখ্যাও কেউ কেউ দিয়েছিল, বিশেষ করে বঙ্গদেশীয় কতিপয় গুণী ব্যাক্তিবর্গ। বিশ্ব তখনই ব্যাপারটা একটু সিরিয়াসলি আমলে নিতে শুরু করে। আমেরিকা যদিও গুরুত্ব দিতে একটু সময় নেয়, কারণ এটা ছিল চাইনিজ ভাইরাস। কিন্তু পরবর্তীতে চায়নায় তৈরি হওয়া আই ফোনের মত ভাইরাসও যখন সম্পূর্ণ আমেরিকা ছড়িয়ে যায় এরপর একে আমলে না নিয়ে আর পারে নাই। করোনা নিয়ে মশকরা করা সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যাক্তিকেও জানান দিয়ে গেল, করোনা তার থেকেও শক্তিশালী।
এরপর করোনা কিভাবে ছড়াল তা বর্ণনা করলে ফুটবল খেলার ধারাভাষ্যের মত হয়ে যাবে। এরপর যা কিছু হয়েছে সবই হয়েছে চোখের নিমিষে, স্বপ্নের মত। করোনার উঠানামা আর মৃত্যুর মিছিল গুনতে গুনতে বছরের শেষ প্রান্তে এসেও মিলে নাই কোন সুখবর। অনেক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে ২০২০ কে বরন করে নেয় সবাই। সবাই চিন্তা করল এই বছরটা হবে ২০/২০ খেলার মতই আমোদপ্রবন, কিন্তু কে জানত যে শেষ পর্যন্ত সবাইকে যে টেস্ট খেলিয়ে ছাড়বে। শুধু টেস্টই না, একবারে ফলো অন ফেলে দিল। এখন কে জানে এই ফলো অন তাড়া করে কবে জয় আসবে?
দীর্ঘ বিরতির পর অদ্য ২০/১০/২০ রোজ মঙ্গলবার মৌলভীবাজার এসোসিয়শনের উদ্যেগে জুম মিঠিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।পারিপার্শ্বিক ব্যস্ততা থাকা সত্বেও করোনাক্রান্ত এই সময়ে উক্ত মিঠিং এ যাহারা সংযুক্ত হয়েছেন তাদেরকে সবাইকে আহ্বায়ক কমিঠির পক্ষ থেকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অদ্যকার মিঠিং এ সর্বসস্মতিক্রমে আগামী ০৩/১১/২০ ইংরেজী রোজ মঙ্গলবার ৩ ঘঠিকার সময় পরবর্তী জুম মিঠিং এর দিন ধার্য্য করা হয়েছে ।
আগামী মিঠিং এ সংগঠনের কমিঠি গঠন প্রক্রিয়া ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র নিয়ে আলোচনা হবে বলে অদ্যকার মিঠিং এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
উপরউল্লেখিত বিষয়কে সামনে রেখে আগামী মিঠিং এ সকল সদস্যদের যথাসময়ে জুম মিঠিং এ সংযুক্ত হবার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
আয়ারল্যান্ডে আজ রাত “২ ঘটিকায়” সময় এক ঘন্টা পিছানো হবে।
প্রতিবছরের ন্যায় আয়ারল্যান্ডে দিনের আলোর সাথে খাপ খাওয়াতে শীতকালিন সময় এর পরিবর্তন আজ রাত সংঘটিত হবে। রাত দুইটা বাজে সময়ের কাটা এক ঘন্টা পিছিয়ে “রাত একটা” করা হবে। শীত কালে দিন ছোট হওয়ায় দিনের আলোকে এক ঘন্টা বেশি ব্যবহারের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবার এমনটি করা হবে। এর ফলে GMT সময়ের সাথে আয়ারল্যান্ড তথা যুক্তরাজ্যের সময় সমান হবে পুরা শীতকালীন সময়ের জন্য।
বিপাকে ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ কয়েক হাজার ইতালি প্রবাসী, বৈধ ভিসাধারীরা ফিরবেন ২৮ অক্টোবর থেকে
ইতালিতে বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও নতুন করে ভিসা ইস্যু করছে না ঢাকার ইতালির দূতাবাস। শুধু যাদের বৈধ ভিসা আছে তাদের সে দেশে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। আর যাদের আবাসিক অনুমতিপত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ভিসার জন্য কেবল তাদের আবেদন বিবেচনার কথা বলা হয়েছে। ইতালির পুলিশ তাদের তথ্য যাচাই করে জানানোর পর ভিসা দেওয়া হবে। তাত্ক্ষণিকভাবে এ যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করেছেন ইতালির রাষ্ট্রদূত।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেয়াদ শেষ হওয়া অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশ করতে হলে রি-এন্ট্রি ভিসা নিতে হবে। এতে বিপাকে পড়েছেন ইতালিপ্রবাসীরা। কারণ ইতালিতে বাংলা-দেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, লকডাউনসহ নানা কারণে দেশে এসে আটকা পড়া হাজার হাজার প্রবাসীর ভিসা ও রেসিডেন্ট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখন তাদের কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা ভর করেছে। ভিসার মেয়াদ সংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি ও ফিরে যাওয়ার দাবিতে গত ১১ অক্টোবর ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের সামনে মানববন্ধন করে আটকে পড়া প্রবাসীরা। দূতাবাস থেকে সাত দিন সময় চেয়ে নেওয়া হয় তখন। সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে ইতালি। এক্ষেত্রে যাদের অনুমতিপত্রের মেয়াদ (স্টে পারমিট) আছে, শুধু তাদের জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়েছে। আপাতত নতুন করে কাউকে ভিসা দেওয়া হবে না। তবে যাদের আবাসিক অনুমতিপত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, ভিসার জন্য তাদের আবেদন বিবেচনা করা হবে। বসবাসের অনুমতিপত্রধারীদের যাওয়ার পথ খুললেও ঢাকায় ইতালি দূতাবাস নিয়মিত ভিসা ইস্যু করা এখনো বন্ধ রাখছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশি যাদের পরিবার-পরিজন, স্বামী-স্ত্রী কিংবা সন্তান ইতালিতে রয়েছেন তারা সহজে প্রবেশ করতে পারবেন দেশটিতে। আর বৈধ ভিসাধারী অন্যদের ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে তার প্রয়োজনীয়তার কথা ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করতে হবে। তবে সবার জন্য ইতালিতে প্রবেশ করতে হলে একটা ঘোষণাপত্রে নিজের কর্মস্থান, আসার পর যেখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন সেই জায়গার কথা এবং নিজের বাসার ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে এয়ারপোর্টে জমা দিতে হবে। অনলাইনেও পূরণ করা যাবে তথ্যপত্র। জানা গেছে, কোভিড-১৯-এর কারণে বাংলাদেশে আটকা পড়েছেন প্রায় ১২ হাজারের মতো ইতালিপ্রবাসী। তাদের অধিকাংশ গত বছর শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছিলেন আবার কেউ কেউ কোভিড মহামারি আকার ধারণ করার পর দেশে ফেরেন। তারপর আটকে যান।
বিমানের বিশেষ ফ্লাইট রোম যাবে ২৮ অক্টোবর: ঢাকা থেকে ইতালির রোমে একটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ফ্লাইটটি আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকা ছেড়ে যাবে। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই ইতালির রোমের ফিউমিসিনো ও মিলানের মালপেনসা বিমানবন্দরে অবতরণ করা ১৮২ বাংলাদেশির মধ্যে ১৬৭ জনকে ফেরত পাঠানো হয়। দুটি ভিন্ন ফ্লাইটে এই দুই বিমানবন্দরে অবতরণ করা হলে তাদের নামতে না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। এর আগে একটি ফ্লাইটের দুই ডজনের বেশি বাংলাদেশি আরোহীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় ইতালি। এরমধ্যে কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ গত ১৪ অক্টোবর শেষ হয়েছে। তবে এবার আর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ায়নি ইতালি।
১ নভেম্বর থেকে ইতালি ফিরবেন প্রবাসীরা: এদিকে করোনা ভাইরাস মহামারিতে ছুটিতে দেশে এসে আটকেপড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ইতালিতে ফিরতে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে তুরস্কের বিমান সংস্থা টার্কিস এয়ারলাইন্স। এ উদ্যোগের ফলে অনেক চিন্তার অবসান হলো বৈধ ভিসাধারী প্রবাসীদের। আবার অনেকের ভিসার মেয়াদও ফুরিয়ে আসছিল। ফলে টার্কিস এয়ারলাইন্সের এ উদ্যোগে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন তারা। গতকাল থেকে ঢাকার গুলশানে টার্কিস এয়ারলাইন্সের তরফ থেকে ফরম বিলি করে টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে। কেউ কেউ এয়ারলাইন্সের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনে ফরমফিলাপ করে টিকিটও পেয়েছেন। যদিও কেউ কেউ টিকিট না পেয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আগামী ১ নভেম্বর ইতালিগামী বিমানে উঠবেন তারা। তবে এর ৭২ ঘণ্টা আগে অবশ্য তাদের কোভিড পরীক্ষার ফল জমা দিতে হবে।
আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রিসভা সম্মত হয়েছে যে, যে সকল ব্যক্তিদের আয় সপ্তাহে €400 বা তার বেশি ছিল তাদের সপ্তাহে € 350 প্যান্ডেমিক বেকার ভাতা পুনরায় দেওয়া হবে।
কোভিড -১৯ মহামারীর আগে যে সকল ব্যক্তিদের আয় সপ্তাহে €300 থেকে €400 ছিল তারা সাপ্তাহে €300 প্যান্ডেমিক বেকার ভাতা পেমেন্ট পাবেন। যারা প্রতি সপ্তাহে €200 থেকে €300 মধ্যে উপার্জন করতেন তাদের €250 করে প্রদান করা হবে। আর যাদের €200 নিচে উপার্জন ছিল তারা €203 পাবেন।
বর্ধিত কোভিড -১৯ লকডাউনের বিধিনিষেধের সময় যতটুকু সম্ভব হয় মানুষদের কর্মসংস্থানে রাখার প্রয়াসে আইরিশ সরকার কর্মসংস্থান মজুরি ভর্তুকি প্রকল্পে পরিবর্তন আনতে সম্মত করেছে।
আজ অনুমোদিত এই প্যান্ডেমিক বেকার ভাতা জানুয়ারী 2021 সালের শেষ অবধি চলবে। অনুমোদিত সংশোধনীর অধীনে যাদের আয় প্রতি সপ্তাহে €151 থেকে €203 তারা মজুরি ভর্তুকি €203 পাবে আর যাদের আয় €203 থেকে €300 তাদের মজুরি ভর্তুকি €250 প্রদানের যোগ্য বলে গন্য হবে।
€300 থেকে €400 পর্যন্ত আয়ের শ্রমিকরা €300 মজুরি ভর্তুকি পাবেন, এবং বাকী €400 থেকে €1,462 মধ্যে উপার্জন যোগ্য শ্রমিকরা €350 মজুরী ভর্তুকি অধিকারী হবে।
কর্মসংস্থান বিষয়ক ও সামাজিক সুরক্ষা বিভাগের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে গত সপ্তাহে ১৫,০০০ মানুষ প্যান্ডেমিক বেকার ভাতার জন্য আবেদ করেছে যা ৬%- বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের সর্ব শেেষ তথ্য মতে এখন পর্যন্ত ২,৪৪,০০০ এরও বেশি মানুষ প্যান্ডেমিক বেকার ভাতার জন্য আবেদন করছে।
এই সপ্তাহে ২,৪৪,১৫৩ জন প্যান্ডেমিক বেকার ভাতা পেমেন্ট পাবেন, এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ২,২৮,৮৫৮ জন। তবে, কোভিড -১৯ লকডাউন আরোপের ফলে যখন আরও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে তখন আগামী সপ্তাহে এই পরিসংখ্যান আরও বাড়তে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সরকার ধারনা করছে যে নতুন লকডাউনের অধীনে আরও দুই লক্ষাধিক লোক কর্মহীন হয়ে পরবে। অধিক মানুষের চাকরি হারানোর ফলে রাষ্ট্রের প্যান্ডেমিক বেকার ভাতা সপ্তাহে €65 মিলিয়ন ইউরো থেকে €135 মিলিয়ন ইউরোতে পৌছাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
আইরিশ মন্ত্রীসভা আজ ১৯শে অক্টোবর ২০২০ কোভিড -১৯-এর বিস্তার নিয়ে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতির মধ্যে দেশজুড়ে ৫ স্তরের লকডাউন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সম্মত হয়েছে।
এর আগে মন্ত্রীরা আজ বিকেলে ছয় সপ্তাহের জন্য আয়ারল্যান্ডকে লকডাউনের সবচেয়ে শেষ পর্যায়ে লেভেল ৫-এ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার জন্য এক জরুরী আলোচনা জন্য বৈঠক করে।
কোভিড -১৯ বিস্তার রোধে আয়ারল্যান্ডকে লকডাউনের৫ স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাতীয় জনস্বাস্থ্য জরুরী বিভাগ (NPHET) গত দু’সপ্তাহে পৃথক দুটি সুপারিশ করে আসছিল।
সরকার এবং রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলে আসা প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে থাইল্যান্ডে গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপ আরোপের অভিযোগ উঠেছে। গণবিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে গত সপ্তাহে জারিকৃত জরুরি অবস্থার আওতায় দেশটির অন্তত চারটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে থাই পুলিশ। পাশাপাশি বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
সরকারি এই ঘোষণার পর দেশটির মিডিয়া গোষ্ঠীগুলোর মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ূত চান-ওচা নেতৃত্বাধীন সরকার দেশটিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাবেক জান্তা নেতা প্রায়ূতের পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা।
গত ১৬ অক্টোবর পুলিশের স্বাক্ষরিত একটি নথিতে বিক্ষোভকারীদের একটি ফেসবুক পেইজের পাশাপাশি দেশটির প্রথম সারির চারটি গণমাধ্যমের কনটেন্টের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর নির্দেশনা দেয়া হয়।
থাই পুলিশের মুখপাত্র কিসসানা ফাথানাচারোয়েন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা শাখাগুলোর কাছে থেকে তথ্য পেয়েছি যে, কন্টেন্টের কিছু অংশ এবং তথ্য বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে। যা সমাজে বিভ্রান্তি এবং অস্থিরতা তৈরিতে প্ররোচনা দিতে পারে।
থাইল্যান্ডের সম্প্রচার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং ডিজিটাল মন্ত্রণালয় এই অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর কোনও ধরনের লাগাম টানার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
দেশটির ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র পুচাপং নোথাইসং বলেছেন, চারটি গণমাধ্যম এবং বিক্ষোভকারী গোষ্ঠী ফ্রি ইয়ুথের ফেসবুক পেইজ থেকে বিকৃত কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে দেশটিতে বিক্ষোভের ৩ লাখের বেশি কনটেন্ট থাইল্যান্ডের আইন লঙ্ঘন করেছে বলে মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে সরকারের এমন পদক্ষেপকে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছে দেশটিতে অনলাইনে বাক- স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে আসা সংস্থা দ্য মানুশিয়া ফাউন্ডেশন।
সংস্থাটির পরিচালক এমিলি পালামি প্রাদিচিৎ বলেন, বিক্ষোভের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞায় কোনও কাজ না হওয়ায় সেনা-সমর্থিত সরকার সত্য প্রকাশে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা করছে। আমরা মুক্ত গণমাধ্যম রক্ষার আহ্বান জানাই।
গত বৃহস্পতিবার দেশটির সরকার জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় সংবাদ এবং অনলাইনে তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সরকার ও রাজতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের মুখে দেশটিতে রাজনৈতিক সমাবেশে পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েতেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
সোমবার দেশটির পুলিশের প্রধান সুওয়াত জ্যাংইয়োদসুক সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, বিক্ষোভকারী ফ্রি ইয়ুথ গ্রুপের টেলিগ্রাম অ্যাপের অ্যাকাউন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ডিজিটাল মন্ত্রণালয়কে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। দেশটিতে বিক্ষোভরত তরুণ-তরুণীরা গত কিছুদিন ধরে টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে সমন্বয় করে বিক্ষোভ করে আসছেন।
তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পুচাপং নোথাইসং স্বাক্ষরিত অন্য এক নথিতে দেখা যায়- তিনি দেশটির ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থা ও মোবাইল অপারেটরগুলোকে টেলিগ্রাম অ্যাপ পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার জনসমাবেশের ওপর দেশটির সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও প্রতিদিন বিক্ষোভকারীরা রাজধানী ব্যাঙ্ককে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে আসছেন। জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ ব্যাঙ্ককে বিক্ষোভ করছেন। রোববারও ব্যাঙ্ককে ২০ হাজারের বেশি মানুষ বিক্ষোভ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যার দিকে ব্যাঙ্ককে তিনটি স্থানে বিক্ষোভকারীরা জমায়েত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। গত ১৩ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৪ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ব্যাঙ্কক পুলিশের উপ-প্রধান পিয়া তাউইচাই বলেন, আমরা প্রত্যেকের বিচার করবো।
সংবিধান সংশোধন করে রাজতন্ত্রের অবসান, গত বছরের নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ূতের পদত্যাগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ করে আসছেন থাইল্যান্ডের হাজার হাজার মানুষ। ২০১৪ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রায়ূত গত বছরের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
রাজা মহা বাজিরালঙ্কর্নের ক্ষমতা হ্রাস এবং রাজতন্ত্রের অবসানের দাবি উঠলেও বিক্ষোভ অথবা বিক্ষোভকারীদের দাবির ব্যাপারে কোনও ধরনের মন্তব্য করেনি থাই রাজ প্রাসাদ।
তবে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ূত বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। সোমবার দেশটির সরকারি বাসভবনে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে সমর্থন দিয়েছেন তিনি। সংসদে প্রায়ূতের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, ব্লুমবার্গ।
সৌদি আরবের রাজতন্ত্রের উপদেষ্টা পরিষদ শূরা কাউন্সিল, সুপ্রিমকোর্ট এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা পুনর্গঠনের জন্য একাধিক আদেশ জারি করেছেন বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, আদেশে শূরা কাউন্সিলের জন্য একজন নতুন স্পিকার এবং দু’জন ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ করা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকারের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন।
সৌদি আরবের প্রভাবশালী এই পরিষদের বর্তমান সদস্যদের মেয়াদ আগামী সপ্তাহে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই বাদশাহ পরিবর্তন আনলেন। খবর রয়টার্সের।
কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলারসে সংস্কার এনে গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ আল শেখের নেতৃত্বে সিনিয়র আলেমদের নিয়োগের আদেশ দেন বাদশাহ।
রাজকীয় আদেশে খালিদ বিন আবদুল্লাহ আল লুহাইদানকে সুপ্রিম কোর্টের সভাপতি নিযুক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে শুরা কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে চার বছরের জন্য ১৫০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়।
একই আদেশে ২০ জন অভিজ্ঞ আলেমকে সৌদি আরবের উচ্চতর উলামা পরিষদের সদস্য হিসেবে নিয়োগের কথা জানানো হয়।
নতুন আদেশে মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব, তায়েফ বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া অনুষদের অধ্যাপক শায়খ ড. বানদার বালিলাহকে সৌদি আরবের উচ্চতর ওলামা পরিষদের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
টানা দ্বিতীয় দফার মত লেবার পার্টি সরকার গঠন করছে এই জয়ের মধ্য দিয়ে। গত ১৭ই অক্টোবর শনিবার নিউজিল্যান্ড এ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
জেসিন্ডা অর্ডারন ও তার দল লেবার পার্টি গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস ভেঙ্গে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জয়ী হয়েছে এবারের নির্বাচনে। পার্লামেন্টের ১২০ আসনের ৬২ আসনই তার দল সুরক্ষিত করতে সক্ষম হয়েছে।
এমন ঐতিহাসিক জয়ের পরেও একক ভাবে সরকার গঠন করতে অনিচ্ছুক মিস জেসিন্ডা। তার দল আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে নতুন সরকার গঠনের লক্ষ্যে অন্যান্য আগ্রহী পার্টির সঙ্গে আলাপ চালাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি চান শক্তিশালী গণতন্ত্র বজায় রাখতে যে কারণে জোট সরকার করে ক্ষমতা শেয়ার করবে তার দল। দেশ ও জনগণের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও বিশ্বাস থাকায় এমন সাহসী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন জেসিন্দা বলে মনে করেন সচেতন মহল।
সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতারা তাকে এই জয়ের জন্য স্বাগত জানায়।
এই ঐতিহাসিক জয়ের কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে কোভিড সংকটে তার সফল দিক নির্দেশনা ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় কঠোর হস্তক্ষেপ।
গত ১৫ই মার্চ, ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চের মসজিদে এক সন্ত্রাসী হামলায় ৫১ জন হত্যা ও আরো ৪০ জন আহত হয়েছিল। ইতিহাসের এই জঘন্য ও ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলায় নিউজিল্যান্ড সহ সমগ্র বিশ্ব কেঁপে উঠে। এমন পরিস্থিতির জন্য মোটেও তার দেশ প্রস্তুত ছিলোনা। এই ঘটনার পরে টের দেশব্যাপী এক ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছিলো। জেসিন্দা তার দৃঢ় মনোবল ও কঠোর নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে রাখে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সকল ষড়যন্ত্রকে তিনি বলিষ্ঠ ভাবে রুখে দেন। এদিকে সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম কমিউনিটি এই ঘটনাকে তাদের অস্তিত্ত্বের উপর আঘাত মনে করে দিকবিদিক হয়। শোকে রূঢ় এই কমিউনিটিকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে জেসিন্দা সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করে যা সারা বিশ্বে তার ইমেইজকে ফুটিয়ে উঠায়। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে তার সদিচ্ছার কোন কমতি লক্ষ্য করা যায় নি। তার সকল সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় দেশটির মুসলমান কমিউনিটি সহ আপামর জন সাধারণ। অনেকে মনে করেন এই সংকট সফলতার সাথে উত্তরণ করতে পারায় জনগণের মাঝে তাদের মণিকোঠায় স্থায়ী আসন করে নেন যার ফসল হিসেবে জনগণ তাকে আবার ক্ষমতায় দেখতে চেয়েছে।
আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগতম।
ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশি তরুণ তাহসিন প্রিয়। স্প্যানিশ ফুটবল দল মালাগা সিটি এফসির অ্যাকাডেমিতে এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশর ইতিহাসে প্রথম কোনও ফুটবলার হিসেবে স্পেনের ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেন তিনি।
মালাগা সিটি এফসির সঙ্গে ১ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এই রাইট উইঙ্গার। ঢাকায় বেড়ে ওঠা তাহসিন স্কলাস্টিকা স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিজের ফুটবল কৌশলের ভিডিও দেখিয়ে স্প্যানিশ ক্লাবটির নজর কেড়েছেন তিনি।
মালাগার লজিস্টিকস অপারেশন ম্যানেজার ইভান পাররা অরটিজি বিষয়টি ইন্সটাগ্রামে নিশ্চিত করেছেন। পোস্টে তিনি বলেন, মালাগা সিটি এফসি ২০২০/২১ মৌসুমের জন্য বাংলাদেশের তাহসিন প্রিয়র সঙ্গে চুক্তি করতে পেরে উচ্ছ্বসিত। স্বাগতম তাহসিন।
বর্তমানে মালাগাতেই অবস্থান করছেন তাহসিন। ভিসা জটিলতার কারণে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। শিখতে হচ্ছে স্প্যানিশ ভাষাও।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কার লাগাম টানতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস-সহ দেশটির অন্য ৮টি শহরের রাস্তা যেন জনমানবশূন্য মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। শনিবার রাত থেকে এই কারফিউ কার্যকর হওয়ায় ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে ফ্রান্সের ৯টি শহর।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস, মার্সেলে, লিয়ন, লিলি এবং তুলোসসহ অন্যান্য শহরের প্রায় ২ কোটি মানুষ কারফিউয়ের আওতায়। প্রত্যেকদিন রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ জারি থাকবে। ফ্রান্সে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্বিতীয় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির সরকার বিতর্কিত রাত্রিকালীন কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনার অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠছে ফ্রান্স।
এদিকে, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবিলায় ইউরোপের আরেক দেশ ইতালি নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করছে। করোনার প্রথম ঢেউয়ে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শনিবার দেশটিতে দৈনিক রেকর্ডসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ তৈরির ঝুঁকি এড়াতে কারফিউয়ের প্রয়োজন। কিন্তু দেশটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শনিবার দেশটিতে রেকর্ড ৩২ হাজার ৪২৭ জন নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। আগের দিন ২৫ হাজার ৮৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাসে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ এবং মারা গেছেন ৩৩ হাজারের বেশি।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দুপুরে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ উপহারসামগ্রী ভারতে পাঠানো হয়।
এ দিন সন্ধ্যায় কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান উপহারটি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় ‘নবান্ন’তে গিয়ে তার হাতে পৌঁছে দেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ওসি আহসান হাবিব জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ প্রটোকল অফিসার আতাউর রহমানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারসামগ্রী বেনাপোলে পাঠানো হয়। সেটা গ্রহণের জন্য পেট্রাপোলে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিবের সহকারী আলম হোসেন। বেলা ১২টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে উপহারসামগ্রী নিয়ে ওপারে পেট্রাপোল চেকপোস্টে পৌঁছে দেন বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশনের ডেপুটি কমিশনার বিএম জামাল হোসেন (পলিটিক্যাল) স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো উপহারসামগ্রী সন্ধ্যায় কলকাতা পৌঁছানোর পর সেটা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছে দেয়া হয়।
এখন থেকে চেক প্রত্যাখ্যানের (চেক ডিজঅনার) মামলার বিচার চলবে একমাত্র যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে। এই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ পক্ষকে আপিল করতে হবে দায়রা জজ আদালতে। পৃথক তিনটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের ডিভিশন বেঞ্চ রবিবার (১৮ অক্টোবর) এই রায় দেন।
এর আগে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্টস অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় দায়েরকৃত মামলার বিচার চলত যুগ্ম দায়রা জজ, অতিরিক্ত দায়রা জজ ও দায়রা জজ আদালতে। যুগ্ম দায়রা জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থীকে দায়রা জজ আদালতে আপিল করতে হত। অপরদিকে দায়রা জজ ও অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থী জনগণকে হাইকোর্টে আপিল করা বাধ্যতামূলক ছিলো। কিন্তু গতকাল হাইকোর্ট রায়ে ঐ আইনের ১৩৮ ধারায় দায়েরকৃত মামলার বিচার এখন থেকে একমাত্র যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে করার নির্দেশ দিয়েছে। এই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ পক্ষকে দায়রা জজ আদালতে আপিল করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে দায়রা জজ ও অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ সংক্রান্ত সকল মামলা যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত পাঠাতে সকল জেলার দায়রা জজকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত রায়ের বিষয়টি সকল জেলা ও দায়রা জজকে অবহিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে বলা হয়েছে।
এই রায় প্রসঙ্গে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো: হুমায়ুন কবির পল্লব ইত্তেফাককে বলেন, নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্টস অ্যাক্টের ১৩৮ ধারার চেক ডিজঅনারের মামলা ইতিপূর্বে যুগ্ম দায়রা জজ এবং অতিরিক্ত অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে শুনানি হতো। দায়রা জজ আদালত নির্ধারণ করতেন মামলাটি কোন আদালতে শুনানির জন্য পাঠানো হবে। কোন মামলা যদি যুগ্ম দায়রা জজ আদালত শুনানি করে রায় দিতেন তাহলে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দায়রা জজ আদালতে আপিলের সুযোগ পেতেন। কিন্তু একই অপরাধের জন্য একই পরিমাণ শাস্তি হলেও মামলাটি যদি অতিরিক্ত দায়রা জজ অথবা দায়রা জজ আদালতে শুনানি হয়ে রায় হতো তাহলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আপিল করার জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আসতে হতো। এই বিধানটি বৈষম্যমূলক যাহা সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। রায়ের নির্দেশনা মতে এখন থেকে ১৩৮ ধারার চেকের মামলার বিচার কেবলমাত্র যুগ্ম দায়রা জজ আদালত করতে পারবে। দায়রা জজ অথবা অতিরিক্ত দায়রা জজ চেকের মামলার বিচার করতে পারবে না।
প্রসঙ্গত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার এ এ এম জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে তিনটি চেকের মামলার বিচার চলছিলো। ওই কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৃথক তিনটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করে। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গতকাল হাইকোর্ট এ রায় দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব শুনানি করেন। তাকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মাজেদুল কাদের এবং ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আগামী বছরের মার্চে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদিকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। রবিবার (১৮ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকায় নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তিতে আগামী বছরের ২৬ মার্চ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি আসতে পারেন।
এদিকে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়াল বৈঠকের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী গত ৫ অক্টোবর ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। গত ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন তিনি। ঢাকায় যোগ দেয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এটাই তার প্রথম বৈঠক।
রবিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে সাত মাস বন্ধ থাকার পর রবিবার ফজরের নামাজের মধ্য দিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের নামাজ আদায় শুরু হয়।
তবে শুধুমাত্র সৌদি আরবের নাগরিক ও দেশটিতে বসবাসরত ব্যক্তিরাই এখন থেকে পবিত্রতম এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে সাত মাস মসজিদুল হারামে মুসল্লিদের জন্য নামাজ আদায়ের অনুমতি ছিলো না। সাত মাস পর চলতি মাসের শুরুর দিকে স্থানীয়দের পবিত্র উমরাহ পালনের অনুমতি দেওয়া হয়।
সৌদি আরবে এ পর্যন্ত তিন লাখ ৪১ হাজার ৮৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ১৬৫ জনের।
অনলাইন রিপোর্টার ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘১৮ অক্টোবর’কে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি আজ আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আজকের শিশুদের আগামী দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশের যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য সন্তান সজীব ওয়াজেদের পরিকল্পনায় আইসিটি বিভাগ সারা বাংলাদেশে ৮হাজার ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ প্রতিষ্ঠা করেছে। যেখানে শিশুরা প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে আরো ৫হাজার ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব’ এবং ৩০০টি স্কুলে ‘স্কুল অব ফিউচার’ স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য শিশু অধিকার আইন করে গিয়েছিলেন। সংবিধানে প্রতিটি শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষাকে অবৈতনিক করে গিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার দর্শনকে ধারণ করে প্রতিটি শিশুর জন্য নিরাপদ, আধুনিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরে শিক্ষার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
যুক্তরাজ্যের দুর্গতি যেন শেষ হচ্ছে না, একদিকে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে কোভিডের আঘাতে সবচেয়ে বেশি জিডিপি তাদেরই কমেছে, অন্যদিকে ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তা যেন কাটছে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যেতে বসেছে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: তিনি কি ইউরোপের সঙ্গে একত্রে থাকার জন্য ঐকমত্য খুঁজে পাবেন, নাকি উল্টো দিকে হাঁটতে শুরু করবেন।
২০২০ সাল তো মোটেও ভালো গেল না ব্রিটেনের। ২০২১ সালও যে ভালো যাবে, তেমন ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে না পারলে বিপদেই পড়বে তারা।
এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের হুমকি দিয়েছেন বরিস জনসন। এতে বড় বিপদেই পড়বে দেশটি। সিএনএনের বিশ্লেষণ অনুসারে সীমিত পরিসরে চুক্তি না করে ব্রিটেন যদি চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে যায়, তাহলে বছরে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হবে দেশটির। এতে কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
এদিকে ওইসিডি বা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স বুন বলেছেন, কোভিড-১৯ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত। মহামারি মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ বাণিজ্য নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। দেশটির আগামী কয়েক বছরের পরিস্থিতি নির্ভর করছে এই দুটি সিদ্ধান্তের ওপর।
ব্রাসেলস কয়েক মাস ধরে ব্রিটেনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে না। তাই তিনি মনে করছেন যে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের সময় সবার প্রস্তুত হওয়ার সময় এসেছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটেন এখন যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনুকূল শর্ত পাচ্ছে, এই ডিসেম্বরে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। চলতি সপ্তাহে এ নিয়ে বৈঠকও হয়েছে, কিন্তু তাতে ফল আসেনি। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন শুক্রবার বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান যে সম্পর্ক, সে রকম সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইউনিয়নের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তি নেই। বাণিজ্যের সিংহভাগই হয় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মৌলিক আইনের আলোকে।
বরিস জনসন বলেছেন, ব্রাসেলস কয়েক মাস ধরে ব্রিটেনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে না। তাই তিনি মনে করছেন যে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের সময় সবার প্রস্তুত হওয়ার সময় এসেছে।
তা সত্ত্বেও নতুন চুক্তির সম্ভাবনা এখনো আছে। এ নিয়ে যে আর আলোচনা হবে না, তেমন কথাও বলেননি জনসন। এদিকে ইইউ কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন শুক্রবার টুইট করেছেন, তাঁর দল আগামী সপ্তাহে আরও নিবিড় আলোচনার জন্য লন্ডনে যাবে।
জমিলার কোলে তিন মাসের শিশু সন্তান। বেশ নাদুসনুদুস। চাঁদের মতো ফুটফুটে সুন্দর মুখখানা। সে মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জমিলা। গন্ড বেয়ে অঝোর ধারায় গড়িয়ে পড়ছে বেদনাশ্রু। কি জবাব দেবে তার সন্তানকে! বড়ো হয়ে সে যখন জানতে চাইবে কে তার বাবা, কি তার পরিচয় তখন কি বলবে ছেলেকে! কে বাবা? বাবা না ছেলে? ছেলে না বাবা? জমিলার জীবনটা এ রকম হলো কেনো? সেও তো আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতোই বাঁচতে চেয়েছিলো। তারও তো স্বপ্ন ছিলো। রংঢং করে বিয়ে হবে। লাল বেনারশি গায়ে জড়াবে। মেহেদী রাংগা হাতে পড়বে রেশমি চুরি। স্বামী আলতো করে মাথার চুলে হাত বুলিয়ে আদর করবে আর সে তার দরাজ বুকে মাথা রেখে প্রশান্তির নিঃশ্বাস নেবে। তাদের বুক জোরে আসবে ভালোবাসার সোনালি ফসল। কিন্তু নিয়তি কেনো তাকে নিয়ে হাসলো এমন ক্রোঢ় হাসি। আচ্ছা, আল্লাহ কি কেবোল ওই ধনবানদেরই! গরিবের আল্লাহ বলতে কিছু নেই। আল্লাহ কি পয়সা খায়? ঘুষ খায়? পয়সাওয়ালারা যখন পশু হয়ে ওঠে, ওদের পশুত্বে যখন প্রকৃতিও লজ্জা পায় তখনো আল্লাহ নির্বিকার বসে থাকেন। এ কেমন তার লীলাখেলা! এ কেমন বিচার! সহসা জমিলার ভেতরের আরেকটি সত্তা জেগে ওঠে। ছি ছি পাপাবেগের মোহে জমিলা এসব কি ভাবছে! সে চৈতন্য ফিরে পায়। বাস্তবতার সিড়িতে পা ফেলে। ঠিকইতো সে এসব কি ভাবছে! অবশ্যই আল্লাহ আছেন। আল্লাহ আছেন বলেই লুত নবীর আমলে তিনি পাপিষ্ঠদের ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। নুহ নবীর আমলে প্লাবনে ভাসিয়েছিলেন। আবার ইব্রাহিম (আঃ) কে আগুন থেকে, ইউসুফ (আঃ) কে কূয়া থেকে এবং আমাদের সর্বশেষ নবী ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে মাকরাশার জাল বুনে দিয়ে শত্রুদের ক্রোধ থেকে বাঁচিয়েছিলেন। আল্লাহ আছেন বলেই সমাজ যখন তাকে অচ্যুত অপবাদ দিয়ে ধূর ধূর করছিলো, অপবাদ সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছিলো তখন ফেরেশতার মতো একজনকে পাঠিয়ে তাকে রক্ষা করেছিলেন।
জমিলা তখন দুচোখে অন্ধকার দেখছিলো। আপন বলতে কেউ নেই। কোথাও দাঁড়াবার জায়গাটুকু তার ছিলোনা। এ পৃথিবীর সবাই যেনো তাকে হেয় আর ঘৃণার চোখে দেখছিলো। তার কথা কেউ শুনতনা। মনে হতো তার কথা শুনা বা তার দিকে তাকানোও পাপ। এমন দুর্বিষহ জীবনের ভার সে যখন আর সইতে পারছিলোনা ঠিক সে মুহূর্তে সগীর ফেরেশতার মতো ডানা মেলে তার কাছে আসে। আত্মহত্যার নির্মম গ্লানি থেকে বাঁচিয়ে তার ডানায় করে নিয়ে এলো নতুন গন্তব্যে। নতুন পৃথিবীতে।
সোনার চামুচ মুখে নিয়ে জন্মায়নি জমিলা। এক হতদরিদ্র অভাগা পরিবারে তার জন্ম। বাবা দিনমজুর। মা মানুষের বাড়িতে কাজকাম করতো। তবু মা বাবার আদুরে দুলালি সে। চৈত্র মাসে যখন বান্নি (মেলা) হতো তার বাবা তাকে নিয়ে গিয়ে জিলাপি খাওয়াতো। আঙ্গুরভাজা কিনে দিতো। লাল রংয়ের ফিতা কিনে দিতো। কিন্তু তার সে সুখও বেশি দিন টেকেনি। অনেকদিন ধরেই অসুখবিসুখে ভুগছিলো তার বাবা। হঠাৎ একদিন পরপারে পাড়ি জমায়। বাবার কতো ইচ্ছে ছিলো মেয়েকে যে করেই হোক হাইস্কুল পাস দেওয়াবে। কিন্তু খোদার ইচ্ছের উপরে কি কারো হাত আছে! আল্লাহ যা চেয়েছেন তাই হয়েছে। পড়াশুনা আর এগুতে পারেনি। নয় বছরের মেয়েকে নিয়ে পেটের ভাত যোগানোই মায়ের জন্য কষ্টের। মেয়ে বিদ্যান হবে সে স্বপ্ন কি তাদের জন্য? বাবা তো একমাত্র ভিটেটা ছাড়া আর কিছুই রেখে যায়নি। ওই ভিটেটাই তাদের সম্বল। সে ভিটেও আর ধরে রাখতে পারেনি। বাবার শেষ স্মৃতিচিহ্নটাকেও হারিয়ে ফেলে। মা মেয়ে কষ্টশিষ্ট করে যেভাবেই হোক দিন পার করছিলো। কিন্তু নিয়তির অমোঘ নির্মোহ থেকে রক্ষা পায় সে সাধ্য কার! বাবা মৃত্যুর কয়েক বছর পর মাও হুট করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। গ্রামে কিছু দিন কবিরাজী চিকিৎসা চালায়। কিছুতেই কিছু হয়না। শহরে নিয়ে চিকিৎসা করাবে সে পয়সাও নেই। অবশেষে মাতব্বর চাচার কাছে কিছু টাকা ধার চায়। ধারের কথা শুনে তিনি যেনো আকাশ থেকে পড়লেন। পাগল মেয়ে বলে কি! এ সময়ে কি ধার দেয়ার সময়? চারদিকে লোকজন জমিক্ষেতি রাখছে। তিনি নিজেও মানিক মিয়ার বিশ কাটা জমি রেখেছেন। ওই টাকা পরিশোধ করতেই তার হিমশিম খেতে হচ্ছে। ধার দেবে কোত্থেকে? টাকা কি গাছে ধরে? জমিলা অনেক অনুনয় বিনয় করলো। কান্নাকাটি করলো। তার আর্তচিৎকার ও কান্নায় পাথর বিগলিত হলেও পাষান্ড মাতাব্বরের পাষান হৃদয় গলেনি। পরিশেষে মাথা গুজাবার যে ভিটেটুকু ছিলো তাও আধাদামে মাতব্বরের কাছে বিক্রি করে দেয়।
কপালপুড়া জমিলা। এতো চেষ্টা করেও মাকে বাঁচাতে পারেনি। বাবাকে হারিয়েছে সেই ছোটবেলায়। বাবা, মা ও ভিটে হারিয়ে সে আজ নিঃস্ব। কোথাও দাঁড়াবার জায়গা নেই। মা’র বড়ো ইচ্ছে ছিলো মরার আগে মেয়েটাকে কারো হাতে তুলে দিয়ে যাওয়ার। নিয়তি সে সুযোগ দেয়নি। সতেরো বছরের জমিলা। দেহে তার কাঁচা যৌবনের নীল রুপোলি ঢেউ। সবারই ক্ষুধার্ত চোখ কেবল ওই দিকে। সুযোগ পেলেই দাঁত বসিয়ে দেবে। এ পাশবিক লোলুপ দৃষ্টি থেকে কে তাকে মা’র মতো আগলে রাখবে? ভেবে চিন্তে একমাত্র স্বজন মামার বাড়িতে গিয়ে হাজির হলো। অদৃষ্টের কষ্টি পাথরে হতভাগীনী হিসেবে যার নাম লিখা রয়েছে তা বদলানোর সাধ্য কি তার! তাকে দেখেই মামা মামী দুজনেই বারুদের মতো জ্বলে উঠলো। ব্যগ্র কন্ঠে অপবাদের তীর ছুড়তে লাগলো। ছেলেপুলে নিয়ে তারা তাদের মতো করে আছে। অগত্যা এ আপদ কোন শনি ডেকে আনে কে জানে! এ অপয়াকে এখানে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
দমফাটা অবস্থায় কোনো রকমে রাতটা কাটালো জমিলা। একমাত্র সম্বল একটি কাপড়ের পোটলা হাতে নিয়ে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লো। কোথায় যাবে জানেনা। রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলো। একটি গন্জে গিয়ে থামলো। ওখান থেকে কেবল নৌপথে চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে। উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে একটি ট্রলারে চেপে বসলো। কয়েক ঘন্টা পর ট্রলারটি শেষ গন্তব্যে পৌঁছালো। সব যাত্রী যার যার মতো নেমে গেলো। জমিলা নামেনি। ট্রলারের ভেতরই বসে রইলো। কোথায় যাবে, কি করবে ভেবে পাচ্ছিলোনা। এমন সময় ট্রলারের সারেং তাকে দেখে জলদি নেমে যাওয়ার তাগাদা দিলো। ট্রলার আর সামনে যাইবনা, তুমি ওহনো বইয়া আছ ক্যারে? তাড়াতাড়ি নাম্যা পড়। করুন দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো জমিলা। কিছুই বললো না। কাপড়ের পোটলাটা হাতে নিয়ে নেমে পড়লো।
নতুন জায়গা। ভয় ভয় লাগছে। বিশাল বাজার। বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ধনু নদী। এ নদীটিই সিলেটে গিয়ে নাম ধারণ করেছে সুরমা আবার দক্ষিন পশ্চিমে ভৈরবের দিকে নাম ধারণ করেছে মেঘনা। উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ পশ্চিম সব দিক থেকে অতি সহজেই লোকজন নদীপথে মালামাল নিয়ে বাজারে পৌছাতে পারে। লন্চ, কার্গো জাহাজ সহ বিভিন্ন নৌযান ভীড় জমায় প্রতিদিন। রংবেরঙের লোকের আড্ডাখানা এ লেপসিয়া বাজার। এমোন একটি বাজারে পা ফেলে থমকে যায় জমিলা। মনে হতে লাগলো, সবাই যেনো তাকে চেয়ে চেয়ে দেখছে! কোথায় যাবে কোথায় উঠবে কিছুই ঠিক করতে পারছে না। ক্ষিদেয় পেট ছু ছু করছে। কিছু খাওয়া দরকার। হাঁটতে হাঁটতে পুড়ি সিংগারার একটি দোকান চোখে পড়লো। দ্বিধা কাটিয়ে ঢুকে পড়ে এর ভেতর। দেখতে পেলো ওখানে কেবল পুড়ি সিংগারাই নয়, ভাত, মাছ, ডাল মিষ্টি পরোটা সবই আছে। মিষ্টি দেখে জিহ্বায় পানি এসে গেলো। ছোট বেলায় বাবা খাওয়াতো। এরপর আর কখন খেয়েছে তার মনে নেই। আজ আর লোভ সামলাতে পারলোনা। দুটো মিষ্টি সহ একটি পরোটা খেলো। গদ গদ করে পেট ভরে পানি খেলো। আবার কখন খাবার জোটে কে জানে!
জমিলা যখন খাচ্ছিলো হোটেলের বেয়ারা গুলো কেমন কেমন করে যেনো তাকাচ্ছিলো। ক্যাশে বসে থাকা লোকটাও কম বদ-না। মিন মিন করে তাকায়। ভাবটা এমন যেনো তার মতো ভদ্রলোক আর নেই। জমিলার চোখাচোখি হতেই এক পাগলী দোকান থেকে সিংগারা নিয়ে দৌড়ে পালায় । হৈ চৈ শুরু হয়ে যায়। বেয়ারারা পিছু নিতে চায়। কিন্তু তিনি থামিয়ে দেন। ঠিক ওই সময় জমিলার মাথায় একটি বুদ্ধি আসে। নিজেকে পাগলের ভান ধরে থাকতে হবে। ঠিক ওই পাগলীর মতো। তাহলে অন্তত শকুনদের শ্যান দৃষ্টি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে।
পাগলের বেশে জমিলা নিজেকে বেশ ভালোই খাপ খাইয়ে নিয়েছে। চুল এলোমেলো করে, ময়লা কাপড় চোপড় পড়ে মলিন চেহারায় আনমনে নিজে নিজে ভির ভির করে পুরো বাজার জুড়ে ঘুরে বেড়ায় দিনভর। কপালে যখন যা জোটে তাই খায়। কোনোদিন আধা পেটে বা কোনোদিন সিকি পেটে ঘুমোতে যায়। ওইদিন পাগলীর পিছু নিয়ে ঘুমোনোর জায়গাটা খুঁজে নিয়েছে। উপরে টিনের চাউনি দেয়া বিশাল বড়ো ঘর। হাটবারে শুধু গরুর হাট হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য দিন খালি পড়ে থাকে। ভিক্ষুক, পাগল ও বাস্তুহারা শ্রেণীর লোকজন সহ কুকুর ছাগলের নিরাপদ আশ্রয়স্থল এটি। সবার সাথে জমিলা এখানেই কয়েকদিন যাবত ঘুমোচ্ছে। দিনটা পাগলীনীর বেশে কোনোরকমে কাটিয়ে দিতে পারলেও রাত এলেই তার কষ্ট বেড়ে যায়। রাজ্যের দুশ্চিন্তা এসে মাথায় ভর করে। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ চোখ লেগে যায়। কিন্তু ঘুমোতে পারেনা। কখনো কুকুর ঘেউঘেউ করে ওঠে, কখনো বাজারের নাইট প্রহরী টর্চের আলো জ্বালিয়ে পুরো ঘর সমেত তাকিয়ে তুকিয়ে দেখবে সব ঠিকঠাক আছে কিনা কিংবা কেউ কেউ কখনো বাংলা মদ খেয়ে মাতালামি করবে, চেঁচামেচি করবে। এভাবেই আধো সজাগ আধো ঘুমের মধ্য দিয়ে রাতটা পার করতে হয়।
হিসেব নিকেশ শেষ করে দোকান থেকে বেরুলেন সগীর ও মারফত আলী সাহেব। হাটের দিন বেচাকেনা অনেক বেড়ে যায়। তাই সব গুছিয়ে বেরুতে বেরুতে অনেক রাত হয়ে যায়। আজও তাই হলো। সগীর দোকানের সাঁটার লাগাতে যাবে ঠিক এমন সময় বাজারের অন্য প্রান্ত থেকে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ ভেসে এলো। মারফত সাহেব সগীরকে থামিয়ে নিজেই সাঁটারটি লাগাবেন ঈশারা দিয়ে দ্রুত ব্যপারটি জেনে আসার জন্য তাকে আদেশ দিলেন। মিনিট তিনেক পর সগীর দৌড়ে খবর নিয়ে এলো। পাশের গ্রামের বজলু মেম্বারের ছেলে মাতালবস্থায় এক পাগলীকে জোর করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। “আল্লাহগো বাঁচাও, মাগো বাঁচাও” বলে আর্তনাদ করছে। তার কথা সে কানেই নিচ্ছে না। উপরন্তু নৈশপ্রহরী সহ উপস্থিত সবাই তামাশা দেখছে। এ কথা শুনে মারফত আলী দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলেন। তাকে দেখে সবাই থতমত খেয়ে গেলো। মাতাল ছেলেটিও মাথা নুইয়ে রাখলো। মারফত আলী খুব দাপটে লোক। বাজার কমিটির সভাপতি তিনি। তার সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলে সে সাহস কার! তিনি কিছু বলার আগেই পাগলীকে ছেড়ে দেয়া হলো। এরপরও মারফত আলী খুব করে শাসালেন। “মিয়ারা তোমরা চাইয়া চাইয়া কিতা দেখতাছিলা? এই পুলার হাড্ডিগুড্ডি ফাডাইয়া ফাল্লানা ক্যারে?” বলেই মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সগীরকে ইংগিত করলেন।
সগীর তখন অন্ধকারে পাগলীর চেহারাটা ভালো ভাবে খেয়াল করতে পারেনি। এবার কাছে থেকে দেখে সে আৎকে উঠলো। এতো সেই মেয়ে যে কয়েকদিন আগে দোকানে এসে মিষ্টি পরোটা খেয়েছিলো। ক্যাশে বসে থেকে সে তাকে দেখছিলো। একবার ওই মেয়ের চোখে তার চোখও পড়েছিলো। এবার সে বুঝতে পারলো এই মেয়ে মোটেও পাগলনা। নিশ্চয়ই কোনো কাহিনী আছে। পুরো ঘটনা সে মারফত আলীকে খুলে বললো। মারফত আলী এবার জমিলার দিকে তাকালেন। ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে। এসব সত্য কিনা মারফত আলী জানতে চাইলে সে “হু” সূচক মাথা নাড়ালো। মারফত আলী মনে মনে একটা কাজের মেয়ে খুঁজছিলো। তার স্ত্রী প্রায়ই কাজের মেয়ের কথা বলে। মারফত আলী সুযোগটা লুফে নিলো। জমিলাকে তার বাড়িতে থাকতে বললো। কাজ করবে, খাবে ঘুমোবে। নিজের বাড়ির মতো থাকতে পারবে। জমিলা কোনো আপত্তি করলো না বরং একটা কৃতজ্ঞতার হাসি দিয়ে রাজি হয়ে গেলো।
অবশেষে আল্লাহ জমিলার দিকে মুখ ফিরে তাকালেন। দুবেলা দুমুটো খেয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁইতো হলো। শকুনদের উৎপাত থেকেতো রেহাই পেলো। এর চেয়ে বেশি তার আর কি চাই! আল্লাহর দরবারে সে মনে মনে শুকরিয়া জ্ঞাপন করলো। কাজে জমিলার কোনো ফাঁকিজুকি নেই। আলসেমি নেই। রাত নেই দিন নেই যখন যা দরকার তখনই তা সে করে। কাপড় ধুয়া, ধান শুকানো, কলসি ভরে পানি আনা, গরুর গোবর শুকানো থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নেই যা সে করেনা। এতে তার খেদ নেই, কষ্ট নেই। তবু সে ভালো আছে। ক্ষুধার জ্বালা নেই, ঘুমানোর চিন্তা নেই। দিনভর কাজ করে, রাতে অন্তত নিশ্চিন্তে নিরাপদে ঘুমোতে পারে।
রান্না ঘরের সাথেই একটি ঘর। এখানে ভাত তরকারির হাঁড়িপাতিল সহ রান্নাবান্নার সরঞ্জামাদি রাখা হয়। এ ঘরটিতেই ঘুমায় জমিলা। মাঝরাত পার হয় হয় মতো অবস্থা। জমিলা ঘুমোচ্ছে। গভীর ঘুম। স্বপ্ন দেখছে। মা এসেছে। কোলে ফুটফুটে এক শিশু বাচ্চা। একবার শিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে আরেকবার জমিলার মুখের দিকে তাকিয়ে কাঁদছে। বুকফাটা কান্না। জমিলা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলোনা। মা’র কান্না দেখে তারও বুক ভেসে যাচ্ছিলো। মা মা বলে ঘুমের ঘোরে স্বপ্নের ভেতর সে কাঁদছিলো। এমন সময় তার গায়ে কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করলো। কানে বাজতে লাগলো, কে যেনো অস্ফুট স্বরে ডাকছে “জমিলা, জমিলা”। ঘুমের ঘোর কাটছে না। তবু চোখ মেলে তাকালো। অন্ধকারে চিনতে না পেরে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো, কেলা, কেলা? মুখ চেপে ধরে বললো, চুপ, একবারে চুপ। এবার সম্মিৎ ফিরে পায়। বুঝতে পারে এটা মারফত আলীর কন্ঠ। আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তার মাথায়। একি দেখছে সে! এও কি সম্ভব! ভয়ার্ত কন্ঠে কাঁপা কাঁপা স্বরে বললো, চাচা আমনের পায়ে পড়ি, দয়া কইরা আমার এমন সর্বনাশ করবাইননা। মারফত আলী এসবের কোনো কিছুই ভ্রুক্ষেপ করলো না। তার পশুসত্তা জেগে উঠেছে। হিংস্র নেকড়ের মতো হুল ফোঁটায় তার দেহে। জমিলা ভাষা হারিয়ে ফেললো। চিৎ হয়ে শুয়ে থেকে অসহায় দৃষ্টিতে দেখতে পেলো তার বুকে মারফত আলীর সাদা লম্বা দাড়ি গুলো কেবল দোল খাচ্ছে। পাশবিক প্রবৃত্তি চরিতার্থ করে যাবার বেলায় মারফত আলী সাবধান করে গিয়েছে যদি এ ব্যাপারে জমিলা মুখ খোলে তবে তার জিব কেটে ফেলা হবে।
পাশের রুমেই ঘুমায় মারফত আলীর অনার্স পড়ুয়া ছেলে সুহেল। কলেজ বন্ধ থাকায় কিছুদিন যাবত বাড়িতেই আছে। তার চোখেও ঘুম নেই। সম্ভবত প্রেমিকার সাথে চাটিং করছিলো। তার বাবা যখন জমিলার কাছে যাচ্ছিলো তখন সে টের পায়। বাবার পায়ের আওয়াজ তার কাছে খুবই পরিচিত। বিশ্বাস করতে পারছিলোনা সে। কিন্তু নিজের কানকে অবিশ্বাস করবে কিভাবে! শেষ পর্যন্ত বাবা ওই মেয়েটার সাথে…..। তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে জমিলার মুখখানা। গরীব মেয়ে। ভালো কাপড়চোপড় পড়ে সুন্দর করে সাজলে আর দশটা সুন্দরী মেয়ের চেয়ে সেও কম না। যুবক ছেলে সুহেল। এসব ভাবতে ভাবতে তার ভেতরেও কামসত্তা জেগে ওঠে। ছি ছি সে এসব কি ভাবছে! বিবেকের রিপু গুলো তাকে বাঁধা দিচ্ছিলো। কিন্তু নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনি। অসুর সত্তার কাছে হেরে যায়। বাবার মতো সেও জমিলার কাছে যায়। জমিলার কোনো অনুনয় বিনয়ই তাকে থামাতে পারেনি। অশ্লীল তীরের রক্তক্ষরণে জমিলার ব্যথাতুর হৃদয়টা ঝাঁঝরা হয়ে গেলো। ছাব্বিশ বছরের শিক্ষা, আদর্শ ও নৈতিকতার নিষ্ঠুর কবর রচনা করলো সুহেল জমিলার অসহায় বুকে।
বাপ পুতের এমন কান্ডে রাতের আঁধার লজ্জা পেলো। উঠোনের কুকুরটর চোখ ভেজে উঠলো। চাঁদ তারা মলিন হয়ে গেলো। বাঘ তার শিকারকে অর্ধ গ্রাস থেকে বমি করে বের করে ফেললো। গাছ পাথর পাখীকূল হু হু করে কেঁদে উঠলো। প্রকৃতি লজ্জায় মাথা নুয়ালো। সাত আসমান ভেদ করে আল্লাহর আরস কেঁপে উঠলো। তবু ওদের পাপিষ্ঠ হৃদয় কেঁপে উঠলোনা। অনুশোচনা হলোনা। অনুতপ্ত হলোনা। অন্যথায় দুজনেই নিশ্চিন্তে নাক ডেকে ঘুমোতে পারতোনা।
মাস তিনেক পর জমিলা বুঝতে পারে সে মা হতে যাচ্ছে। গর্ভবতী। কিন্তু কথাটা কাউকে বলতে পারছিলোনা। একদিন উঠোনে ধান শুকোতে গিয়ে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যায়। সবাই ধরাধরি করে জমিলাকে ঘরে নিয়ে গেলো। তখন দাই বাড়ির মিছিলের মাও ওদিক দিয়ে যাচ্ছিলো। কবিরাজ হেকিমের চেয়ে তিনিও কোনো অংশে কম নন। একশর মতো বাচ্চার প্রসব তার হাত দিয়েই হয়েছে। চেহারা দেখেই আলবৎ অনেক কিছু বলে দিতে পারেন। জমিলার মুখ দেখেই তিনি আন্দাজ করে ফেললেন। বলে উঠলেন, “আল্লা আল্লা এই ছ্যারিতো পোয়াতি।” সবাই বিস্ময় ভরে তাকালো মিছিলের মার দিকে। আকাশ ভেঙ্গে পড়লো যেনো মারফত আলীর স্ত্রীর মাথায়। তিনি জমিলার মুখের দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মিছিলের মার কথার সত্যতা নিরূপণের চেষ্টা করলেন। হতবিহ্বল জমিলা অনেকটা উদাস হয়ে যায়। আমতা আমতা করছিলো। কি বলবে? ওরা কি বিশ্বাস করবে আসল সত্য? এমন সময় মারফত আলী নদীতে গোসল করে বাড়ি ফিরলেন। উঠোনের তারে ভেজা লুঙ্গিটা রোদে শুকোতে দিতে দিতে আপন মনেই প্রলাপ বকছিলেন। দিনকাল যা পড়েছে! বেগুনা মহিলার দল আদবের লেহাজ মাত্র নেই। লজ্জা শরমের মাথা পুড়ে খেয়েছে। তোরা মেয়েছেলে মানুষ। গা গতর দেখিয়ে গোসল করার কি দরকার! আখিরাতের দুশমন! জাহান্নামের আগুনে পোড়ার কোনো ভয় নেই!
মারফত আলী বাড়ি ফিরেছে বুঝতে পেরে ঘরে ঢুকার আগেই স্ত্রী লতিফা বেগম বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাগত কন্ঠে বলতে থাকলেন, কিতা বগর বগর করতাছুইন। না জান্যা না হুন্যা যে ছিনাল হুরিরে বাড়িত আন্যা জাগা দিছুইন হেতো পেট লাগাইছে। এহনই এর একটা বিহিত করুইন। মারফত আলীর ভ্রু কুঁচকে গেলো। যেনো আকাশ থেকে পড়লো। এইডা কিতা কইতাছ? এই হারামজাদী এমন কামডা কিভায় করলো? এরে বাড়ি থাইক্যা বাইর কইরা দিয়াম। হের আগে এর বিচার করতে ওইব। কঠিন বিচার! এই ব্যাভিচারের বিচার না করলে আল্লার কাছে দ্বায়ী থাহন লাগব। নামাজঢা পইড়াই।
মসজিদের ইমাম সাব সহ পাড়ার আরও দুই চারজন মাতব্বর নিয়ে মারফত আলী শালিসীতে বসলেন। জমিলাকে ডেকে আনা হলো। উপস্থিত সবাই তাকে ছি ছি করতে লাগলো। কুৎসিৎ ভাষায় নসিহত করতে শুরু করলো। কেউ তার কথা কানে নিতে চাইলোনা। ইমাম সাহেব বললেন, “নাউজুবিল্লাহ, এর চেহারা দেখাও পাপ। একুশটা দুররা মেরে মাথা কামিয়ে এখনি গ্রামছাড়া করতে হবে।” মারফত আলী এবার সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “মিয়ারা আপনারার কেউর আপত্তি আছে নাহি?” না, না এইডাই এর উচিত শিক্ষা ওইব, সমস্বরে সবাই বলে উঠলেন।
আকাশে বাতাসে জমিলার ক্রন্দন রোল ভেসে উঠলো। কিন্তু এ কান্নার রোল পাষান হৃদয়কে টলাতে পারেনি। তার আকুলিবিকুলি মাটিচাপা পড়ে যায় নষ্ট সমাজের ওই যৌবনখেকোদের কদর্য ভাষণের ভেতর। ওদের জন্যই নির্মম ক্ষতির পথে আজ তার ভাগ্য। ভাগ্যের কুটিল বিধানে চিহ্নিত হয়ে গেছে যেনো তার নিয়তি। ভাগ্যদোষে অন্তরের সমস্ত তেজস্বিতা ম্লান আজ তার। যন্ত্রের মতো কাজ করেও জীবনের কোনো মানে খুঁজে পেলোনা। জীবন যেখানে এতোটা অসহায়, এতোটা অভিশপ্ত, এতোটা অর্থহীন সে জীবন রেখে তার লাভ কি? নদীতে ঝাঁপ দেবে। আল্লাহর মাল আল্লাহর কাছেই ফিরে যাবে। কিন্তু চাইলেই কি পারা যায়! যে ভাগ্যবিধাতা চাঁদ সূর্য পৃথিবী ভূমণ্ডল সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন, যার ঈশারা ছাড়া একটি গাছের পাতাও নড়েনা সেই মহাশক্তিধর মহা নিয়ন্ত্রকের ইচ্ছে ছাড়া কি তার কাছে যাওয়া যায়? সগীর এসে সামনে দাঁড়ালো। আত্মহত্যার মতো জগন্য পাপ থেকে তাকে বাঁচালো।
ভৈরবের ছেলে সগীর। মিষ্টির কারিগর। মারফত আলীর দোকানে বেশ ক’বছর যাবত আছে। মিষ্টি বানায়। মাঝেমধ্যে ক্যাশে বসে। ধনুনদী খননকালে অনেক মাটি নদীর পাড়ে ফেলানো হয়। এমন উঁচু করে ফেলানো হয় যা ঘরবাড়ির ভিটে তৈরির উপযুক্ত হয়ে দাঁড়ায়। একসময় তা গুচ্ছ গ্রামে পরিণত হয়। নদীর তীরে গড়ে ওঠা ওই গুচ্ছ গ্রামের কোনো এক বাড়িতেই সগীরের বসবাস। জমিলা যখন নদীতে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছিলো সগীর তা দেখে ফেলে। দৌড়ে গিয়ে তাকে বাঁধা দেয়। জীবন বাঁচায়। জমিলার করুণ কাহিনী শুনে বেশ কষ্ট পায়। মর্মাহত হয়। বিশ্বাসই করতে পারছিলোনা। হেরা বুলি পড়াশুনা জানলেওয়ালা লোক। এরা এমন অসভ্য বর্বর হয় কি করে! ধিক এদের পড়াশুনার উপরে! মানুষ খারাপ ওয়, এতো খারাপ! কার কাছে যেনো সগীর শুনেছে, ধর্ষণের জন্য নাকি নতুন আইন হয়েছে। সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি। সে মনে মনে হাসে। কে ওই মুখোশধারী ধর্ষকদের ফাঁসি দেবে? আর ওদের জন্য কি কেবল ফাঁসিই যথেষ্ট? যদি তার হাতে ক্ষমতা থাকতো, তবে ওদেরকে ধরে এনে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করতো। মাথাটা ঝুলিয়ে রাখতো যেনো মানুষ এ থেকে শিক্ষা নিতে পারে। কিন্তু অসহায়ত্বের বেড়িবাঁধে তার হাত পা বাঁধা। সে অক্ষম। এ অক্ষমতার জ্বালা নিয়ে জমিলাকে সাথে করে নিজ গ্রামে চলে যায়। সেই থেকে জমিলা সগীরের আশ্রয়ে আছে। তারই সহমর্মিতা ও সহযোগিতায় জমিলা আজ সন্তানের মুখ দেখতে পাচ্ছে।
হাসিখুশি মন নিয়ে সগীর আজ বাড়ি ফিরলো। বাজারে একটা মিষ্টির দোকান খুঁজছিলো বহুদিন যাবত। ভাগ্য সুপ্রসন্ন। আজ তার ব্যবস্থা হয়ে যায়। কিছু দিনের মধ্যেই নিজে দোকান নিয়ে বসতে পারবে। কিন্তু জমিলার চোখে অশ্রু দেখে তার মন ভারী হয়ে গেলো। আনন্দ দমে গেলো। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো- কিতা ওইছে জমিলা, কানতাছ ক্যারে? মা কি তোমারে কিছতুয়া কইছে?
– ছি ছি মা কিতা কইবো! আমি কানতাছি আমার পুড়া কপালের কথা ভাব্যা। আমনেরা আমারে আশ্রয় দিছুইন, খাওয়াইতাছুইন পড়াইতাছুইন, বাচ্চাডারে দেখ্যা হুন্যা রাখতাছুইন, সারা জীবন গোলামি করলেও আমনেরার ঋন শূধ ওইবোনা।
– এইডা কেমন কথা! একজন মানুষ হিসাবে খালি দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি।
– হু মানুষ! হেরাও মানুষ আমনেও মানুষ!
– রাহ এইতা। পিছের কথা ভুল্যা যাও।
– চাইলেই কি ভুল্যা যাওন যায়! পুলাডা যহন বড় ওইব আমি হেরে কিতা কইয়াম? বাপের পরিচয় জানতে চাইব যহন আমি কিতা উত্তর দিয়াম!
– উত্তর দেওনের বহুত সময় আছে। হেই কথা তোমার এহন না ভাবলেও চলব।
– আমনেরার বুঝা ওইয়া আমি আর কতদিন থাহাম?
– এইডাও আমার চিন্তা। তোমার মাথা ঘামানোর দরহার নাই। মার সাথে কথা কইছি। এহন থাক্যা তোমার হুলা আমার পরিচয়েই বড় ওইব।
কথাটা শুনে জমিলার চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক খেলে গেলো। ইচ্ছে করলো সগীরের পায়ে মাথা রেখে চুমু খেতো। কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, এই অপয়াকে যা করছুইন হেই যথেষ্ট। এর বেশি কিছু পাওনের যোগ্য আমিনা।
– কেলা কইছে তুমি অপয়া? তুমি অপয়ানা। তুমি ওই নরপশুদের নির্মম শিকার। এই পচা সমাজের উলঙ্গ শিকার। নয়া কইরা তুমি আরও পশুত্বের শিকার হও হেইডা আমি চাইনা। তুমি নতুন কইরা বাঁচবা। আমি তোমারে হেই অধিকার দিয়াম। বলেই জমিলাকে বুকে টেনে নিলো পরম মমতায়। মনে দোলা দিয়ে উঠলো হুমায়ুন আহমেদের সেই গানটি। নিজের মতো করে একটু বদলিয়ে গুন গুন করে গাইলো,
তুই যদি আমার হস আমি হইয়াম তর
কোলেতে বওয়াইয়া তরে করাম আদর।
জমিলার বুকটা আনন্দে ভরে ওঠে। চোখে পানি চলে আসে। আনন্দের পানি। এমন আনন্দের দিন তার জীবনে আর একটিও আসেনি। এ আনন্দঘন মুহূর্তে তাই জমিলা সগীরের বুকে মাথা রাখলো। মনে হলো এ বুক তার একমাত্র আশ্রয়, শান্তির আশ্রয়।
প্রায় ১৪ মাস বন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
কাশ্মীরের প্রশাসনিক মুখপাত্র রোহিত কানসাল তার মুক্তির খবর প্রকাশ করে বলেন, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে মেহবুবা মুফতিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে ভারতের পার্লামেন্টে আইন করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যদা তুলে নেয়ার পর ওই অঞ্চলে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। সে সময় আটক করা হয়েছিল ফারুক ও ওমর আবদুল্লাহসহ কাশ্মীরের বড় বড় নেতাদের। মেহবুবা মুফতিকেও বন্দি করা হয় সে সময়।
চলতি বছরের শুরুতে ফারুক ও ওমর আবদুল্লাহ বন্দিদশা থেকে মুক্ত হলেও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) এই নেত্রীকে ছাড়েনি কাশ্মীর প্রসাশন।
বার বার নানা কারণ দেখিয়ে তার গৃহবন্দির সময়কাল বাড়ানো হচ্ছিল । গত জুলাইয়ে তিন মাসের জন্য মেহবুবার গৃহবন্দির সময়কাল বাড়িয়েছিল প্রশাসন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেজন নিরাপত্তা আইনে আটক দেখিয়ে মেহবুবা মুফতিকে তার বাড়ি ‘ফেয়ার ভিউ’তে স্থানান্তরিত করা হয়। নিজ বাড়িতেই গৃহবন্দি করে রাখা হয় পিডিপি নেত্রীকে।
এদিকে মেহবুবা মুফতির মুক্তির খবর টুইট করে জানিয়েছেন তার মেয়ে ইলতিজাও। এতোদিন ধরে মায়ের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে তিনি পোস্ট দিয়ে আসছেন।
সেখানে ইলতিজা লিখেছেন, মুফতিকে অবৈধভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হলো। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে যারা আমার পাশে থেকেছেন তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
এছাড়া জম্মু কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহও মুফতির মুক্তি পাওয়ার খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন।
টুইটে তিনি লেখেন, এক বছরেরও বেশি সময় আটক থাকার পর মেহবুবাকে যে মুক্তি দেয়া হয়েছে, তাতে আমি খুশি। অন্যায়ভাবে তাকে আটক করে রাখা হয়েছিল। যা গণতন্ত্র বিরোধী।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ফাঁসি অত্যন্ত একটি ভুল কাজ। এর চেয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুন।
তিনি বলেন, ন্যায়বিচার কোনো কঠিন কাজ না। দ্রুত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করলে ১৫ দিন বা ৭ দিনের মধ্যেই যারা ধর্ষক তাদের ৮০ ভাগ ধরা পড়ে যাবে। তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে বিচার করেন। আর যারা ধরা পরবে না তাদের জন্য আলাদা মামলা করেন। তাহলে দেখবেন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক নাগরিক শোক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কত দ্রুত একটা আইন করে ফেলল ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি। এটা কোনো উত্তর হতে পারে না। এটা শুধুমাত্র ডাইভারসন, এটা পথকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া। আসলে এর প্রতিকার কী? এর প্রতিকার হল ন্যায়বিচার। আর এ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ফোনে গালিগালাজের যে অডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটি বানোয়াট বলে দাবি করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন।
তিনি বলেন, এটা আমার কণ্ঠ না। আমার বক্তব্যকে ‘সুপার এডিট’ করা হয়েছে। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন তিনি। গত ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চরভদ্রাসন উপজেলার উপনির্বাচনে ‘ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে’ এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
মুজিবর রহমান বলেন, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রের মাঠে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাওয়ায় আমাদের এক কর্মীকে গাড়িতে তোলেন ম্যাজিস্ট্রেট। আমি ইউএনওকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। এর বাইরে যে বক্তব্য ছড়ানো হয়েছে, সেগুলো এডিট করা। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। চরভদ্রাসনের ইউএনওর সঙ্গে ‘মধুর সম্পর্ক’ দাবি করে মুজিবর রহমান বলেন, সংসদীয় আসনের তিন উপজেলার চরভদ্রাসন ও সদরপুরের ইউএনও নারী আর ভাঙ্গার ইউএনও একজন পুরুষ। তাদের সঙ্গে ভাই-বোনের মতো সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে মিলেমিশে এলাকার উন্নয়নে কাজ করছি। ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, গত শনিবারের উপনির্বাচনের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয় জেলা প্রশাসন। নির্বাচনের আগের দিন কেন ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হলো? ইসির কী এ–বিষয়ক চিঠি আছে? নির্বাচনের দিন বিজিবি সঙ্গে নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটদের মারমুখী আচরণ করতে দেখা গেছে। যেখানে নৌকার ভোট বেশি, সেখানেই ম্যাজিস্ট্রেটরা বেশি তাণ্ডব করেছেন।
শনিবার নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় ফরিদপুরের ডিসি অতুল সরকারকে ‘দাঁতভাঙা জবাব’ দেওয়ার হুমকি দেওয়ার প্রসঙ্গে মুজিবর রহমান বলেন, সারা দিন ম্যাজিস্ট্রেটরা যে তাণ্ডব চালিয়েছেন, তাতে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। নেতাকর্মীরা উত্তেজিত ছিল। প্রশাসনের অনুরোধে তিনি নেতাকর্মীদের ‘ঠান্ডা’ করতে গিয়েছিলেন।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে মুজিবর রহমান দাবি করেন, তিনি কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ করেননি। যদি আচরণবিধি ভেঙে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরের দিন সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনও আমার ভাঙ্গার বাড়িতে যান। নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও কোনোভাবেই আমার বাড়িতে আসতে পারেন না। জেলা প্রশাসকও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
সোশাল মিডিয়ায় সরকার, জনপ্রতিনিধি, সেনা কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে অপপ্রচারর বিষয়ে সতর্ক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ‘অপপ্রচার’ বন্ধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দেশ ও বিদেশ হতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার, জনপ্রতিনিধি, সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সম্পর্কে অসত্য, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে।নিরাপত্তা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করার জন্য অসত্য ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করছে। এতে করে দেশের বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা, জনমনে উদ্বেগ, বিদ্বেষ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকার ধৈর্যের সঙ্গে সমস্ত অপপ্রচারকারী ও তাদের সহযোগীদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এ সিদ্ধান্ত উপনীত হয়েছে যে, দেশের স্থিতিশীলতা এবং অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও জনস্বার্থে এসমস্ত অপকর্ম সৃষ্টিকারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সরকার সংশ্লিষ্ট সকলকে দেশ ও বিদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকল প্রকার অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের যে কল রেকর্ডটি শোনা যাচ্ছে তা শতভাগ সত্য বলে জানিয়েছেন চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ফোনে গালিগালাজের যে অডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটি বানোয়াট। এটা আমার কণ্ঠ না। আমার বক্তব্যকে ‘সুপার এডিট’ করা হয়েছে। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা গণমাধ্যমকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনারা নিক্সন মহোদয়ের যে কল রেকর্ডটি শুনছেন তা শতভাগ সত্য। এমনকি প্রকাশিত কল রেকর্ডের দাঁড়ি-কমা পর্যন্ত সঠিক। এখানে এডিট করার কোনো প্রশ্নই নেই। আপনারা যা শুনেছেন তিনি ওভাবেই আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, তিনি যখন (মজিবুর রহমান চৌধুরী) এসিল্যান্ডকে হুমকি দেন, তখন আমি তার নিরাপত্তার স্বার্থে বিষয়টি তাৎক্ষণিক লিখিত ভাবে ডিসি স্যারকে অবগত করি এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অডিও ক্লিপটি প্রেরণ করি।
গত শনিবার অনুষ্ঠিত চরভদ্রাসন উপজেলার উপনির্বাচনে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকারকে হুমকি ও চরভদ্রাসনের ইউএনওর ফোনে ফোন করে উপজেলার এসিল্যান্ডকে গালিগালাজ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের বিরুদ্ধে।
ইতোমধ্যে এই দুটি ঘটনার ভিডিও এবং অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ফরিদপুর জেলা শাখা রবিবার সভা করে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
এদিকে আজ সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন) আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবেও বলে জানান তিনি।
এর আগে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নিক্সন চৌধুরীর আশোভন আচরণের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেওয়া হয়।
আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত হওয়ায় ধর্ষণ প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এর আগে সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে অধ্যাদেশের একটি ধারা সংশোধন করে সশ্রম যাবজ্জীবন ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়।
আইনমন্ত্রী জানান, ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া এ শাস্তির বিধানে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ স্বাক্ষর করলেই অধ্যাদেশ জারি করে আইনটি কার্যকর করা হবে।
মৃতুদণ্ডের বিষয়টি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু যেহেতু এখন সংসদ অধিবেশন নেই, সেহেতু রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে মঙ্গলবারই অধ্যাদেশ আকারে সংশোধিত আইনটি জারি করা হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আইনের ধারা ৯(১)-এ যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রতিস্থাপিত হবে। মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত হওয়ায় ধর্ষণের প্রবণতা কমবে বলে আমরা মনে করছি।
চলমান পুরনো ধর্ষণ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এর জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। পুরনো মামলার পাশাপাশি ধর্ষণের অন্যান্য মামলাও দ্রুত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে।
ফেনীতে চীন ফেরত ছাত্র ইউনুস বাবু (২৩) হত্যা মামলায় তাসফিয়া ভবনের কেয়ারটেকার মোজাম্মেল হক শাহীনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ সময় আদালতে চীন ফেরত বাংলাদেশি ছাত্র খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় কেয়ারটেকার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুদ্বীপ রায় সোমবার দুপুরে মোজাম্মেল হক শাহীনের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ সময় আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ইঞ্জিনিয়ার বাবুকে হত্যার কারণ জিজ্ঞাসা করলে মোজাম্মেল হক শাহীন জানায়, পূর্ববিরোধের জেরে ডেকে এনে শাহীন ও ফেনী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবসহ তাদের সহযোগীরা ইঞ্জিনিয়ার বাবুর বন্ধু শাহরিয়ারকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কোপায়। এ সময় বাবু এগিয়ে এসে বাধা দিলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করে। পরে দুইজনকে হাত-পা বেঁধে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়।
শনিবার রাত ১টার দিকে ফেনী শহরের শফিকুর রহমান সড়কের তাসফিয়া ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে ইঞ্জিনিয়ার বাবুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাবুর মা রেজিয়া বেগমের ধারণা- বাবুর কাছে একটি দামি আইফোন এবং তার বন্ধু শাহরিয়ার কাছে থাকা মোটরসাইকেল আত্মসাৎ করতে বাবু ও শাহরিয়ারকে পরিকল্পিতভাবে উপর্যুপরি কুপিয়ে সেপটিক ট্যাংকে ফেলা হয়েছে। তিনি দ্রুত রাকিবকে আইনের আওতায় এনে হত্যা রহস্য উন্মোচন করে ন্যায়বিচারের দাবি জানান।
এদিকে বাবুর মায়ের আহাজারি কোনোভাবেই থামাতে পারছেন না আত্মীয়স্বজনরা। তিনি প্রিয়সন্তানকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। জ্ঞান ফিরলেই শুধু বাবুকে খুঁজছেন।
নিহত ইউনুস বাবু সোনাগাজীর বগাদানা ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের সওদাগর বাড়ির মো. আবু ইউছুফের ছেলে। বাবু ফেনী আইসিএসটি থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে স্কলারশিপ নিয়ে দেড় বছর যাবত চীনের আহট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে।
নিহত বাবুর মা রেজিয়া বেগম জানান, করোনার সময়ে ছেলে দেশে এসে বাবা-মায়ের সঙ্গে ফেনী শহরের একটি বাসায় থাকত। তার নানাবাড়ি সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরসোনাপুর তিনবাড়িয়া গ্রামে। ২০১৩ সালে সোনাগাজী আল হেলাল একাডেমি থেকে বাবু এসএসসি পাস করেছিল।
গত ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে বন্ধু ইউনুস নবী রাকিব ও শাহরিয়ার বাবুকে বাসা থেকে ডেকে এনেছিল। একই দিন ভোর ৪টার দিকে তাসফিয়া ভবনের মালিকের স্ত্রী তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য উঠলে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে আল্লাহ আমাকে বাঁচাও ডাক শুনতে পান। এ সময় তিনি আরও দেখতে পান বাড়ির কেয়ারটেকার তার ভাগ্নে মোজাম্মেল হক শাহীন মেঝেতে পড়ে থাকা রক্ত পরিষ্কার করছেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি তার কাছে সন্দেহজনক মনে হলে কেয়ারটেকারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
সেই একই সেপটিক ট্যাংক থেকে অজ্ঞান অবস্থায় বাবুর বন্ধু শাহরিয়ারকে উদ্ধার করা হয়। গলা কাটাসহ তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শাহরিয়ার ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের আমানউদ্দিন ভূঞাবাড়ির কামাল উদ্দিনের ছেলে। তাকে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার সামান্য জ্ঞান ফিরলে বন্ধু বাবুকে খুঁজতে থাকে।
এদিকে বাবুর মা বন্ধু ইউনুস নবী রাকিবকে নিয়ে একাধিকবার থানায় গিয়ে এসআই বিকাশ দাসের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি চালাতে বলেন। তিনি সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশিতে অনীহা প্রকাশ করে শাহরিয়ারকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় বাবু জড়িত আখ্যা দিয়ে তাকে উল্টো ভয় দেখান এবং তার ছেলে শাহরিয়ারকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়।
ওই মামলায় কেয়ারটেকার মোজাম্মেল হক শাহীনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাবু ও মোজাম্মেল হক শাহীনসহ শাহরিয়ারকে হত্যাচেষ্টার স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। শাহরিয়ারের জ্ঞান ফিরলে বাবুকে খোঁজার রহস্য জানতে বাবুর মা পাগলপ্রায় হয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে নিজে ও তার স্বামী নেমে হলেও সেপটিক ট্যাংক তল্লাশি করার জন্য দিনভর বাড়িওয়ালি ও ফেনী থানার এসআই বিকাশ দাসের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন। ইউনুস নবী রাকিব ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে দিনভর আড্ডা দিলেও রহস্যজনক কারণে তিনি তাকে আটক বা গ্রেফতার করেননি।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িওয়ালির অনুমতি নিয়ে বাবুর মা-বাবা সেপটিক ট্যাংকের তালা ভেঙে টর্চ লাইট মেরে তল্লাশি করলে প্লাস্টিকের পলিথিন মোড়ানো কি যেন দেখতে পেয়ে পুনরায় থানা পুলিশকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের দল পুলিশ ও স্থানীয় জনতার চেষ্টায় শনিবার রাত ১টার দিকে বাবুর লাশ উদ্ধার করে। এই ফাঁকে রাকিব আত্মগোপনে চলে যায়।
Sir David Attenborough, তার ভরাট গলার সুকণ্ঠ কে শুনে নাই? নিরেট বাচনভঙ্গি, মধু মিশ্রিত কণ্ঠ, মসৃন শব্দচয়ন, ঝর্ণাধারার মত নির্বিগ্ন কথার প্রবাহ। মন্ত্রমুগ্ধের মত আকৃষ্ট করে রাখে যার কথার মাদকতায়। কে শুনে নাই তাকে? ‘Life on Earth’ থেকে শুরু করে ‘A Life on our Planet’, কে দেখে নাই তার প্রামাণ্যচিত্রগুলো? পর্বত, সমুদ্র, অরণ্য, জীবজন্তু, জলবায়ুকে এমনভাবে আর কে তুলে ধরেছে আমাদের সামনে? যার সারাটি জীবন কেটেছে প্রকৃতির সান্নিধ্যে, প্রকৃতিকে ভালোবেসে। যে চষে বেড়িয়েছে অতলান্তিক সমুদ্রের তলদেশ থেকে সুউচ্চ পর্বতচূড়ায়, বিস্তৃন্ন মরুভুমি থেকে গহীন অরণ্যে, আফ্রিকা থেকে এন্টার্কটিকা। আমাদেরকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে বিশ্ব এবং এর সৃষ্টির সাথে।
স্যার এটেনবরো শুধু প্রামাণ্যচিত্রকর ও মিডিয়া ব্যাক্তিত্বই নন, সে একজন চিন্তাবিদ, ইতিহাসবিদ ও গবেষক। প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে তার রয়েছে অগাধ গবেষণালব্ধ জ্ঞান। এত কাছ থেকে প্রকৃতিকে দেখা ও উপলব্ধি খুব কম মানুষরই রয়েছে। তার ভাষ্যমতে, মানুষ ও প্রকৃতি হচ্ছে একে ওপরের পরিপূরক। সে বলে “If you take care of nature, nature will take care of you”। সে তার প্রামাণ্যচিত্রে প্রকৃতিকে এমনভাবে তুলে ধরেছে, যাতে করে আমরা বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে প্রতিটি প্রাকৃতিক উপাদান কিভাবে এই পৃথিবীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে কিভাবে বাস্তুতন্ত্র কাজ করে।
ডেভিড এটেনবরো তার সম্পূর্ণ জীবনকালের সাক্ষ্য হিসেবে সম্প্রতি একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করে, যা নেটফ্লিক্সে সম্প্রচার করে। আবেগঘন এই ডকুমেন্টারিতে তুলে ধরেছে কিভাবে ধীরে ধীরে বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে, বরফ গলতেছে, উষ্ণায়ন বাড়তাছে, যার ফলে প্রকৃতি হারাচ্ছে তার ভারসাম্য। বর্ণনা দিয়েছে তার জীবনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবী কিভাবে পরিবর্তন হয়েছে এবং এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০০ বছর পৃথিবী কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তারও ফোরকাস্ট প্রদান করে। যা সত্যিই লোমহর্ষক। তবে সে সমাধানও প্রদান করে, যে মানুষ চাইলে এখনো কিভাবে পারে এই পৃথিবীকে রক্ষা করতে।
ডেভিড এটেনবরো একজন অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যাক্তিত্ব। তাকে ব্রিটেনের ট্রেজার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সে শুধু ব্রিটেন না, বিশ্বের জন্যই একজন জীবন্ত ট্রেজার। স্যার এটেনবরো দেখিয়ে গিয়েছে ধরণীর কি ছিল, কি হয়েছে এবং কি হবে। এখন আমাদের সবারই দায়িত্ব এই ধরণীকে রক্ষা করা এবং আগামীর জন্য বাসযোগ্য ধরণী রেখে যাওয়া।
৯৪ বছর বয়স্ক ডেভিড এটেনবারাহ দীর্ঘ অর্থবহ জীবনকাল অতিক্রম করে জীবন সায়াহ্নে দাঁড়ানো। তার কৃতকর্মকে কাজে লাগিয়ে আগামীর প্রজন্ম কিভাবে ধরণী রক্ষার দায়ভার গ্রহণ করে তা ই দেখার বিষয়।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে থমকে গেছে দেশের ক্রিকেট। আপতত জাতীয় ক্রিকেট দলের আন্তর্জাতিক কোন ম্যাচ নেই। আর তাই ক্রিকেরাটের মাঠে রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে দুটি দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্ট।
এছাড়া নভেম্বরে হবে করপোরেট টি-টুয়েন্টি লিগ। মাঠে ক্রিকেট ফিরলেও এ বছর অনুষ্ঠিত হবে না বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিপিএল)। রবিবার (১১ অক্টোবর) মিরপুরে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
এদিন বিসিবি সভাপতি, কর্পোরেট টি-টুয়েন্টি লিগ নিয়েও কথা বলেন। নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এ বছর বিপিএল হচ্ছে না। পরিস্থিতি ভালো হলে ২০২১ সালে হতে পারে।’
কর্পোরেট টি-টুয়েন্টি লিগ নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘কর্পোরেট টি-টুয়েন্টি হবে ৫ দলে। বিদেশি খেলোয়াড়ের ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, দেখতে হবে ওই সময়ে কারা ফ্রি আছেন। শুধু বিদেশি খেলোয়াড় আনলেও হবে না। তারা কোন মানের সেটিও দেখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই লিগে আমাদের আয়ের কোনো লক্ষ্য নেই। আমাদের লক্ষ্য ক্রিকেট মাঠে ফেরানো। আমরাই দল ঠিক করে দেব। তা না হলে দেখা যাবে একটি দল অনেক শক্তিশালী হয়ে যাবে, আরেকটি দুর্বল হয়ে যাবে। আমরা ভারসাম্যপূর্ণ দল গঠন করতে চায়। দল গঠন করার পর যদি কেউ দল নিতে চায় নেবে, না হলে আমরা চালাব।’
মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। রবিবার শুরু হয়েছে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ। এটি হচ্ছে ওয়ানডে ফরম্যাটে। আগামী নভেম্বরে ৫ দলের অংশগ্রহণে হবে কর্পোরেট টি-টুয়েন্টি লিগ।
সদ্য নিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেছেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মামলা জট কমানো। আমাদের দেশে অনেক মামলা রয়ে গেছে, অনেক মামলা জট হয়ে আছে। এই জট কমানো হচ্ছে বিচার বিভাগে আমার প্রধান চ্যালেঞ্জ।
রবিবার (১১ অক্টোবর) কার্যভারের প্রথম দিনে সুপ্রিম কোর্টস্থ অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব আশ্বাস দেন।
আদালত অঙ্গনের দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধে সহযোগিতা চেয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনারা যদি আমাদের সহযোগিতা করেন, তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন তাহলে দুর্নীতি বন্ধ করা অনেক সহজ হবে। আমি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে যেকোনও ধরনের দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবো।’
প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রসঙ্গে বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দক্ষতা ও সততায় মাহবুবে আলম এই অফিসটাকে, এই পদটাকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, আমি চেষ্টা করবো সেটা বজায় রাখার জন্য। আমি চেষ্টা করবো, তিনি যে উচ্চতা সৃষ্টি করে গেছেন, সেটিকে নিম্নগামী হতে না দেওয়া।
দেশজুড়ে নারী ও শিশু নির্যাতন পরিস্থিতির দিকে দৃষ্টিপাত করা হলে এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘নারী শিশু নির্যাতনের কথা যদি বলেন, সরকার কিন্তু আগামীকালই বিষয়টা ক্যাবিনেট মিটিংয়ে তুলবেন। শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করে দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি তো আজ প্রথম এলাম। আমি উনাদের (ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল) সঙ্গে বসবো। বসে আমি দেখব কোন কোন মামলা পেন্ডিং আছে। সেখান থেকে কিছু মামলা রিভিশনের কারণে বন্ধ হয়ে আছে, সেগুলো খুঁজে বের করে সচল করার চেষ্টা করবো। আর যেগুলো আপিল আছে সেগুলো শুনানি করে নিষ্পত্তির চেষ্টা করবো।’
তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল কোর্ট প্রায় চার হাজার মামলা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। আপিল বিভাগ কিন্তু পুরনো মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে এবং আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে আমি মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করব, হাইকোর্টেও যেসব পুরনো মামলা রয়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য বেঞ্চগুলোকে যেন বিশেষ নির্দেশনা দেন।’
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় যারা পাবলিক প্রসিকিউটর আছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিচারাধীন যেসব মামলা স্থগিত হয়ে আছে, সেগুলোর দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেবেন বলেও তিনি জানান।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করার জন্য রাষ্ট্র আমাকে নিয়োগ দিয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আমি রাষ্ট্রীয় সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবো। আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করবো।
প্রসঙ্গত, রবিবার (১১ অক্টোবর) অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে এএম আমিন উদ্দিন তার কার্যক্রম শুরু করেন। এদিন তিনি আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন। এরপর আইনজীবী সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন।
ভারতের অন্যতম ডানপন্থী ও উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সুখে-শান্তিতে রয়েছেন ভারতীয় মুসলিমরা। তার দাবি, ভারতের মতো কোনো দেশে এতটা সুরক্ষিত নন মুসলিমরা।
মহারাষ্ট্রের হিন্দি ম্যাগাজিন বিবেককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত।
আরএসএসপ্রধানের দাবি, ভারতের ওপর যখনই কোনো আঘাত হয়েছে তখন সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় ভেদাভেদ তারাই করে যাদের স্বার্থে আঘাত লাগে।
দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতার মধ্যে ভাগবতের এই বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মোহন ভাগবত দাবি করেছেন, ভারতে মুসলিমদের অস্তিত্ব বিপন্ন নয়। বরং সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই মুসলিমরা সবচেয়ে সুখে রয়েছেন।
এ বিষয়ে তার ভাষ্য, ‘মহারাজা প্রতাপ সিংয়ের সেনাবাহিনীতে অনেক মুসলিম ছিলেন। তারা মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। এটাই আমাদের ভারতবর্ষ। আমাদের দেশের নাম উচ্চারিত হলে সংহতির কথাই আসে সবার আগে। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভেদাভেদ করে কিছু মানুষ, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য।’
আরএসএস প্রধান আরও বলেছেন, ‘দেশের সংবিধানে কোথাও লেখা নেই যে ভারতে মুসলিমদের জন্য কোনো জায়গা নেই। কোথাও বলা নেই যে, এদেশে থাকতে হলে হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নিতে হবে। যখনই দেশের সংস্কৃতির ওপর আক্রমণ হয়েছে তখন সর্বধর্মের মানুষ একসঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছে। তা সে হিন্দু হোক বা মুসলমান। এটাই আমাদের দেশ।’
এ সময় পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের একঘরে করে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মোহন ভাগবত।
সাক্ষাৎকারে অযোধ্যার রামমন্দির প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন আরএসএস প্রধান। তিনি বলেছেন, ‘এই মন্দির পূজা-অর্চনার থেকেও দেশের মূল্যবোধ ও চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রতীক। ভারতে মন্দিরগুলো ভাঙার অন্যতম কারণ হলো দেশের মানুষের মূল্যবোধকে নষ্ট করে দেয়া। ভগবান শ্রীরামের মন্দির ভেঙে দেয়ার ফলে হিন্দুরা অপমানিত হয়েছিল। আমরা সেটাকে পুনরায় স্থাপিত করতে চেয়েছি। তাই আজ ঐতিহাসিক মন্দির তৈরি হচ্ছে।’
তবে দেশে প্রতিটি মানুষের নিজের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। তার জন্য কাউকে জবাবদিহি করার কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন মোহন ভাগবত। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
সিলেটে এক যুবকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। যুবকের পরিবারের দাবি, আটকের পর দাবিকৃত টাকা না পেয়ে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
প্রথমে ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর ঘটনাটি তদন্ত ছাড়া কিছু বলতে চাচ্ছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। রোববার ভোরে মৃত্যুর এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার নেহারিপাড়ার গুলতেরা মঞ্জিলের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি এক সন্তানের জনক। নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটে ডা. আবদুল গফ্ফারের চেম্বারে তিনি চাকরি করতেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
এদিকে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ রায়হানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় লোকজন রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের আখালিয়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় আধাঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর পুলিশ গিয়ে তাদের শান্ত করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্তের আশ্বাস দেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
রায়হানের মা সালমা বেগম ও চাচা হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করে যুগান্তরকে জানান, কর্মস্থল চিকিৎসকের চেম্বার থেকে ফিরতে দেরি দেখে শনিবার রাত ১০টায় রায়হানের মোবাইলে ফোন দেন মা ও স্ত্রী। কিন্তু ফোন বন্ধ পান। ভোর ৪টা ২৩ মিনিটের দিকে মায়ের মোবাইল ফোনে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে রায়হান জানায় পুলিশ তাকে ধরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছে। এখন তার কাছে ১০ হাজার টাকা ঘুষ চাচ্ছে। টাকা দিলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেবে। এ সময় কেঁদে কেঁদে রায়হান তাকে বাঁচানোর আকুতি জানায়।
যুগান্তরের অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, ওই মোবাইল নম্বরটি বন্দর ফাঁড়ির কনস্টেবল তৌহিদের। এদিকে ছেলেকে পুলিশে ধরেছে শুনে রায়হানের মা তার চাচাকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠান। রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহ রোববার ফজরের সময় টাকা নিয়ে ভাতিজা রায়হানকে ছাড়িয়ে আনতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে যান।
এ সময় সাদা পোশাকে ফাঁড়িতে থাকা এক পুলিশ সদস্য হাবিবুল্লাহকে বলেন, আপনার ১০ হাজার টাকা নিয়ে আসার কথা। আপনি ৫ হাজার টাকা নিয়ে আসলেন কেন? চলে যান, রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে এবং যে পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ধরে নিয়ে এসেছেন তিনিও ফাঁড়িতে নেই। আপনি ১০ হাজার টাকা নিয়ে সকাল ৯টার দিকে আসেন। আসলেই তাকে নিয়ে যেতে পারবেন। তাকে আমরা কোর্টে চালান করব না।
রায়হানের চাচা বাসায় চলে যান এবং পরে সকাল পৌনে ১০টায় দিকে টাকা নিয়ে ফের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে যান। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তার চাচাকে জানান, অসুস্থ হয়ে পড়ায় সকাল ৭টার দিকে রায়হানকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ খবরে হাবিবুল্লাহ উদ্বিগ্ন হয়ে তৎক্ষণাৎ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন রায়হানের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিকাল ৩টার দিকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। রায়হানের লাশ দাফন করে তিন পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান চাচা হাবিবুল্লাহ।
রোববার ভোরে রায়হানের মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ছিনতাইকালে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
রায়হানকে আটককারী বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আশিক এলাহীর কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, রায়হানকে কখন কোথা থেকে আটক করা হয়েছিল তা মিডিয়াকে জানানো হয়েছে। তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
রোববার দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ছিনতাই চেষ্টাকালে রায়হান গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তবে পরিবারের পক্ষ থেকে নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ তোলার পর বক্তব্য পাল্টে যায় পুলিশের।
রোববার সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার যুগান্তরকে বলেন, মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না।
ওসমানী হাসপাতাল সূত্র জানায়, রোববার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে রায়হানকে সেখানে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের মামাতো ভাই আবদুর রহমান অভিযোগ করেন, গণপিটুনিতে মারা গেলে তার দেহের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন থাকত। কিন্তু তার হাতের নখগুলো দেখলে অনুমান করা যায় তা উপড়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। পায়ের হাঁটুর নিচে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়িতে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন আবদুর রহমান।
সিলেট রেঞ্জের কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পদমর্যাদার ৪৬৫ পুলিশকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে লটারির মাধ্যমে! রোববার বিকেলে নগরীর জেলা পুলিশ লাইনসে ব্যতিক্রমী আয়োজনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে।
এরপর তাৎক্ষণিকভাবে সবার হাতে পদায়নের অফিস আদেশ তুলে দেয়া হয়।এজন্য অনুষ্ঠানস্থলে কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা থেকে বিভিন্ন পদমর্যাদার পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্যকে সিলেট রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।
এদিন পুলিশ লাইনসে সিলেট রেঞ্জে বদলি হয়ে আসা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বিশেষ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে শেষ পর্যায়ে লটারির মাধ্যমে সবাইকে এই রেঞ্জের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা ও থানায় বদলি পদায়ন করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জেদান আল মুসার সঞ্চালনায় বিশেষ ব্রিফিংয়ে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন– রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র। স্বাগত বক্তৃতা রাখেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন– ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম, শাহীনুল আলম খান প্রমুখ।
কক্সবাজার থেকে আগত পুলিশ সদস্যদের সিলেট রেঞ্জে স্বাগত জানিয়ে মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে এখানকার জনসাধারণকে সেবা প্রদান করবেন।
অতীতের ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন উদ্যমে মানুষের সেবা দেয়ার আহ্বান জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বিশেষ ব্রিফিংয়ের পর সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার শূন্যপদের বিপরীতে লটারির মাধ্যমে বদলি ও পদায়ন করা হয়। পদায়নের পর যাতে কেউ অফিস আদেশের জন্য বিড়ম্বনায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে তাৎক্ষণিক তাদের হাতে পদায়নের চিঠিও তুলে দেয়া হয়।
এতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরাও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, আইজিপির আন্তরিক প্রচেষ্টায় পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বদলি, নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৪৬৫ জন পুলিশ সদস্যকে লটারির মাধ্যমে বদলি করে তাৎক্ষণিক অফিস আদেশ প্রদান করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত ২১ সেপ্টেম্বর ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ আরও চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সহায়তার অভিযোগ আনা হয়।
এ ঘটনায় ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
রবিবার (১১ অক্টোবর) তদন্ত কমিটি তাদের জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বলেছে, হাসান আল মামুন ওই ছাত্রীকে ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক’ করেছে, এমন তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত কমিটির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের দাবি অনশনরত ওই ছাত্রী।
তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘অভিযোগকারী এজাহারে হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করলেও হাসান আল মামুন সেটি অস্বীকার করেছেন। একই বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবেই তাদের পরস্পরের পরিচয় হয়, সাংগঠনিক কাজের সূত্রে নয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের মতো কোনো ঘটনা ঘটছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত কমিটি কোনো তথ্য প্রমাণ পায়নি।
এমনকি অভিযোগকারীও এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির কাছে কোনো তথ্য প্রমাণ দিতে পারেননি। প্রতিবেদনে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের সঙ্গে অভিযোগকারী ছাত্রীর কখনোই সাক্ষাৎ হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়। ’ এছাড়াও মামলার বিবাদীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে প্রতীয়মান হয়েছে’ বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ অপর চারজনের বিরুদ্ধে গত ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর পৃথক দুটি মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। এরই প্রেক্ষিতে ২৩ সেপ্টেম্বর সংগঠনের ঢাবি শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলো সংগঠনটি।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ‘নিরপেক্ষ নয়’ মন্তব্য করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘ছাত্র অধিকার পরিষদের তদন্ত কমিটির প্রধান যাকে করা হয়েছে, তিনি ইয়ামিন বিন মোল্লা। তিনিই এই অভিযোগকে মিথ্যা ও সরকারের ষড়যন্ত্র বলে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন। পরে তাকে তদন্ত কমিটির প্রধান করায় তার নিরপেক্ষতা থাকে না। সেই জায়গা থেকে আমি মনে করি, এটা নিরপেক্ষ তদন্ত নয়।
রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনীতি মন্দা, ডলার সংকট সেই সঙ্গে বৈরুত পোর্টে বিস্ফোরণে স্থবির হয়ে পড়েছে লেবানন। ধস নেমেছে ব্যবসা বাণিজ্যে আর মহামারী করোনাভাইরাসের আক্রমণ তো রয়েছেই। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাসহ দফায় দফায় লকডাউন সব মিলিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে চলছে লেবানন। এর বিশাল প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ওপর।
এতে কর্ম হারিয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার প্রবাসী, অনেকে চাকরি পেলেও সঠিক মজুরি পাচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে দেশে ফিরছেন হাজার হাজার প্রবাসী। প্রতিদিনই লেবানন থেকে ফিরছেন প্রবাসীরা। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৫ হাজারের অধিক বৈধ কাগজপত্র থাকা প্রবাসী এ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন। বৈধ কাগজপত্র থাকা প্রবাসীরা সহজে দেশে ফিরতে পারলেও জটিল অবস্থা তৈরি হয় বৈধ কাগজপত্রবিহীনদের। দেশে ফিরতে না পারায় উদ্বিগ্ন সবাই। দীর্ঘ এক বছর ধরে লেবাননের অর্থনীতির চাকা ভেঙে পড়ায় দেশে ফিরতে চান হাজারও প্রবাসী। ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বরে দেশে ফিরতে দূতাবাসে নাম নিবন্ধন করেন সাড়ে ৭ হাজারের অধিক প্রবাসী। চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত দূতাবাস নিবন্ধনকৃত এক হাজারের অধিক প্রবাসীকে দেশে ফেরাতে পারলেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় প্রবাসীদের দেশে ফেরার কর্মসূচি। জটিল থেকে জটিলতর অবস্থায় ধাবিত হয় লেবানন। দেশে ফিরতে না ফেরে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে বাংলাদেশি কর্মীরা। বিমান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলে দেশে ফিরতে শুরু করেন তারা।
লেবাননের ডলার সংকট, চাকরি না থাকাই দেশে ফেরার মূল কারণ বলে জানান দেশে ফিরতে ইচ্ছুক প্রবাসীরা। তারা জানান, আগে একশ’ ডলার সমান দেড় লাখ লেবানিজ পাউন্ড লাগত; আর এখন আট লাখ লেবানিজ পাউন্ডের অধিক দিয়ে করতে হয় একশ’ ডলার। লেবানিজ নাগরিক নিজেরা এ সংকটে ভুগছেন। এমন অবস্থায় প্রবাসীরা ভাবছেন দেশে ফেরাই উত্তম। গত ৩ অক্টোবর শনিবার লেবাননের বৈরুতে আনসার স্টেডিয়ামে ৪৯৭ প্রবাসীর হাতে বিমান টিকিট তুলে দেন বাংলাদেশ দূতাবাস। বিমান টিকিট হাতে পেয়ে তারা দূতাবাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) ও দূতালয় প্রধান আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মোট ৭৬৩৪ প্রবাসী দেশে ফিরতে নাম নিবন্ধন করেন। তাদের মধ্যে ৪৩টি ফ্লাইটে ৭২২৮ জন প্রবাসীকে এ পর্যন্ত দেশে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ছোটখাটো মামলাসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান করে পর্যায়ক্রমে তাদেরও দেশে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
প্রবাসীদের নিয়ে ৪ অক্টোবর রবিবার বিকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইট বৈরুত ছেড়ে যায় এবং ৫ অক্টোবর ভোরে বিমানটি হযরত শাহজালাল অন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
নিবন্ধনকৃত প্রবাসীদের দেশে পাঠানো হলেও এখনও দেশে ফিরতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বৈধ কাগজপত্রবিহীন হাজার হাজার প্রবাসী।
জিহ্বা শরীরের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের একটি, যা অত্যন্ত কোমল ও সংবেদনশীল। জিহ্বা দ্বারা অনেক কাজই সম্পাদিত হয়, শুধু একটা অকাজ ছাড়া। এখানে সেই অকাজটাই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু। এই অকাজটা মোটামুটি সবারই প্রিয়। যা আমরা করতে অনেকেই পছন্দ করি। যেটা করা পুরাপুরিই নিষিদ্ধ, কিন্তু স্বভাবজাতভাবে নিষিদ্ধ কাজের প্রতিই আমাদের আকর্ষণ বেশী থাকে। যে অকাজটা ভালো তো না ই, বরঞ্চ সর্বদা খারাপই বয়ে নিয়ে আসে, বিভেধ তৈরি করে মানুষে মানুষে, দ্বন্দ্ব বাড়ায় পরিবারে, সমাজে, বন্ধুমহলে। তারপরেও ওই অকাজটা আমরা হরহামেশাই করে থাকি। অকাজটার অনেক নাম থাকলেও কাজ একই। পরনিন্দা, পরচর্চা, গীবত, স্লান্ডারিং, ব্যকবাইটিং অনেক নামই আছে, যেগুলা ওই জিহ্বার দ্বারাই সংঘটিত। যা বর্তমানে একটি সামাজিক ব্যধিতে পরিণত হয়েছে।
জিহ্বার গুরুত্ব বোঝাতে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, ”যে ব্যাক্তি আমার জন্য তার জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের জিম্মিদার হবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জিম্মিদার হব।” তিনি আরো বলেছেন, ”মানুষ যখন ভোরে ঘুম থেকে উঠে শরীরের সব অঙ্গ জিহ্বার কাছে অনুরোধ করে যে, তুমি যদি আমাদের ব্যপারে আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহর নাফরমানি কাজে পরিচালিত না কর, তুমি যদি ঠিক থাক তবে আমরা ঠিক থাকব, আর তুমি যদি বেঁকে যাও তাহলে আমরাও বেঁকে যাব।” আল্লাহ সরাসরি গীবত করাকে নিষিদ্ধ করেছেন, গীবত করাকে মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়া জঘন্য কাজ বলেই গীবত কে এর সাথে তুলনা করেছেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ; পরচর্চার ভয়াবহতা বিবেচনা করেই একে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছেন।
গীবত বা পরনিন্দা কি? মোদ্দা কথা হল, একজনের দোষ তার অনুপুস্থিতিতে আরেকজনকে বলাই গীবত। আরো সহজভাবে যদি বলি, আপনার অবর্তমানে কেউ আপনার ব্যাপারে যে রকমের কথা বললে আপনি পছন্দ করবেন না, সে রকম কথাটাই কারো অনুপস্থিতিতে কারো নামে বলাই হচ্ছে গীবত। অনেক উচ্চপর্যায়ের পরনিন্দাকারী আছে যারা অন্যের দোষ তো বলে বেড়ায়ই এবং বরঞ্চ আরেকজনের দোষ অনুসন্ধান করে কুৎসা রটিয়ে কুৎসিত আনন্দ নিয়ে থাকে। এরা আরো বেশী ভয়ংকর। ইমাম গাযযালী (রা.) বলেছেন, ”অন্যের দেহ, বংশ, বসন-ভূষণ, ভাবভঙ্গি, ক্রিয়াকলাপ, কথোপকথন ও গৃহের কোনো দোষ বের করে কিছু বললেই তা গীবত বলে আখ্যায়িত হয়।
”ইসলামে গীবত শোনাটাও পাপ হিসেবে গণ্য হয়। রাসূল (স.) বলেছেন , ‘পরনিন্দা ব্যভিচারের চেয়েও ঘৃণ্য ও জঘন্যতম। পরনিন্দাকারী এবং পরনিন্দা শ্রবণকারী উভয়ই সমান অপরাধী’। কারণ কারো কাছে গীবত শুনলে গীবতকারী গীবত করাতে আরও বেশী উৎসাহী হয়ে উঠে। একটু খেয়াল করলেই আমরা নিজেরাও এর বাস্তব প্রমাণ পরিলক্ষিত করব। পরনিন্দা করা ও শোনা আমাদের আসলেই অনেক পছন্দের। কেউ কারো দোষ বলতে থাকলে আমরা যত উৎসাহ সহকারে শুনি, কিন্তু প্রশংসা ততটা উৎসাহ নিয়ে শুনিনা। বরঞ্চ কারো কাছে অন্যের প্রশংসা শুনতে পছন্দ করিনা, যতটা পরচর্চা শুনতে পছন্দ করি। কেউ কারো দোষ বলা শুরু করলে, তাকে বাহবা দিয়ে, হাতে তালি দিয়ে, অট্টহাসি দিয়ে, পারলে নিজে কিছু যোগ করে, ইনিয়ে বিনিয়ে, রসিয়ে রসিয়ে, কখনো গলা খাঁকারি দিয়ে, কখনো সুর করে, কখনো মোলায়েম স্বরে, কখনো বা কর্কশ স্বরে অন্যের দোষ বর্ণনায় সমর্থন জানিয়ে থাকি। অথচ যার পেছনে যার বিরুদ্ধে এত দোষ বর্ণনায় মত্ত তার সামনে ওই মানুষগুলাই দেখা গেলো তার পরম বন্ধু সেজে বসে আছে। অথচ পেছনে কি কুৎসিত।
গীবত অনেকভাবেই হতে পারে। এমন কি আকারে ইঙ্গিতে বা ইশারায় কাউকে হেয় করাও গীবতের অন্তর্ভুক্ত। যেমন আয়েশা (রা) হাতের ইশারায় এক মহিলাকে খর্বাকৃতি বলে বোঝানের চেষ্টা করলে মুহাম্মদ (স) সাথে সাথে তাকে বললেন, এটা তার গীবত করা হল। কারণ কেউ যদি বুঝতে পারে যে কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু দোষ বর্ণনা করা হল তাই গীবত। তা মুখে, ইশারা-ইঙ্গিতে বা অঙ্গভঙ্গি যেভাবেই হোক না কেনো। কারো ভুল ত্রুটি নিয়ে কথা বলাও গীবত। যেমন অমুকে হাঁটতে পারেনা, অমুকের নামাজ পড়ার নিয়ম ভালো না, তমুকে নামাজ পড়ে না, কারো অসাক্ষাতে এসব বলাও গীবত। কেউ কিছু ভুল করলে সরাসরি তাকে বলাই শ্রেয়। একবার শেখ শাদী (র) তার পিতাকে কিছু লোকের ব্যাপারে বললেন যে, ওই লোকগুলা তাহাজ্জুতের নামাজ পড়ে ঘুমালে কতই না ভালো হত। এ কথা শুনে তার পিতা বললেন, তাহাজ্জুত না পড়ে তুমিও ঘুমিয়ে থাকলে ভাল হত, তাহলে গীবত করার মত পাপ তোমার ঘাড়ে চাপত না।
গীবত কেনো করি? গীবত করার মূল কারণ অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করা, মানুষের মাঝে বিভেদ তৈরি করা। অন্যের প্রতি হিংসাত্মক মনোভাবের কারণেও গীবত করে থাকি। নিজেকে বড় করা, আত্মপূজা, আত্মপ্রীতি যখন বেড়ে যায় তখনই আমরা পরচর্চায় মেতে উঠি। হিংসা, বিদ্বেষ, আমিত্ব, অহংকার এসবই অন্যের প্রতি কুধারনার সৃষ্টি করে। অন্যকে অপমান করতে ও অপমানিত হতে দেখলে একধরনের কুৎসিত আনন্দ উপভোগ করে থাকি। অন্যের দোষ খুঁজে পেলে সন্তানলাভের মত সুখানুভব করি। তা না হলে কেনো গীবতটা এত পছন্দের হবে আমাদের? যা কিনা অশান্তিই তৈরি করে।
পরিত্রাণের উপায় কি? উপায় অবশ্যই আছে। গীবত না করলে আমরা কেউই মারা যাবনা, বরঞ্চ অনেক সমস্যার সমাধান এর পরিত্যাগের মাধ্যমে সম্ভব। নিম্নল্লিখিত উপায়গুলা অনুসরণ করলে আমরা সফল হতে পারি।
– অন্যের দোষ জানলেও তা গোপন রাখার চেষ্টা করতে হবে।
– অপরের খারাপ গুন না বলে বেশী বেশী ভালো গুন বা প্রশংসা করতে পারি।
– অন্যের দোষ বা খারাপ গুনগুলো তার সম্মুখেই বলা শ্রেয়, তাহলে সে নিজেকে শুধরিয়ে নিতে পারবে।
– কেউ কারো নামে গীবত করলে তার প্রতিবাদ করতে হবে, অথবা তাকে তা না বলতে অনুরোধ করতে হবে, অথবা কথার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করতে হবে অথবা ওই জায়গা ত্যাগ করতে হবে, কোনটাই না পারলে গীবতকারীর কথায় অনীহা প্রকাশ করা ও চুপ থেকে মনে মনে এর ঘৃণা করতে হবে।
– গীবতকারীর কথায় সমর্থন ও উৎসাহ দেয়া যাবেনা, তাহলে ওই কাজে তার উৎসাহ আরো বেড়ে যাবে।
– অপরকে সন্মান দিতে শিখতে হবে, নিজেকে ছোট রেখে অপরকে বড় রাখার মানসিকতা রাখতে হবে।
– সবারই কিছু না কিছু দুর্বল জায়গা থাকতেই পারে, কারো দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
– অনেকসময় আমরা শুধু নিছক সন্দেহ থেকেই কুৎসা রটিয়ে থাকি। এই অহেতুক সন্দেহবাতিক থাকা ঠিক নয়।
– নিজেদের মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ, আত্মমহিমা, আত্মগরিমা, আত্মহংকার, আত্মপূজা, পরশ্রীকাতরতা দূর করতে হবে মহানবী (সঃ) বলেছিলেন, ”প্রকৃত মুসলিম সে-ই, যার জিহ্বা ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে এবং প্রকৃত মুহাজির সে-ই, যে আল্লাহ্ তা’আলার নিষিদ্ধ কাজ ত্যাগ করে”।
তবে হ্যাঁ, কারো ব্যাপারে কাউকে সতর্ক করা যায়। যেমন কোনো ব্যক্তি ক্ষতিকারক হলে, বা অন্য গীবতকারীর ব্যপারে সতর্ক করা ঠিক আছে। তবে শুধু সতর্ক করার মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।
শেষ কথা হল, মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে বাস করাই মানুষের বৈশিষ্ট। কেউই ভুল ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়, পারতপক্ষে আমরা মানুষ। যে কাজ করলে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ দূর করে; তৈরি করে ক্লেদ, ক্লেশ, প্রতিহিংসা, শত্রুতা তা কেন আমরা করতে যাব? ধর্মীয় আদেশ বা উপদেশ বাদ দিলেও আমরা যদি গীবত এর কুফল আর এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো বুঝতে পারি তাহলেও আমাদের মধ্যে সচেতনতা আসা উচিত। ধর্মীয় রেফারেন্সগুলা এইজন্যই আনা হয়েছে যে, আমি বিশ্বাস করি যে, ইসলাম আমাদের সে জিনিসই করতে বলছে যা আমাদের জন্য ভালো, আর তাই করতে নিষেধ করেছে যে আমাদের জন্য পারতপক্ষে খারাপ। যার প্রমাণ আমরা বাস্তব জীবনেও পরিলক্ষিত করে থাকি, পরকাল তো পরের ব্যাপার। আমরা সবাই সবার ভ্রাতা, ভগ্নি, বন্ধু, আত্মীয়, প্রতিবেশী। আমরাই পারি এই পৃথিবীকে স্বর্গ বানাতে, আবার আমরাই পারি নরক বানাতে। সিদ্ধান্ত আপনার।
অ্যান্টি-সাবমেরিন মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা শত্রুপক্ষের ডুবোজাহাজ নিমিষে ধ্বংস করে দিতে পারে এই মিসাইল। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এই মিসাইল তৈরি করেছে।
সোমবার ওড়িশার হুইলার উপকূল থেকে এই সুপারসনিক মিসাইল অ্যাসিস্টেড রিলিজ টর্পেডো (স্মার্ট) উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা সূত্রে খবর, দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র সঠিক নিশানায় গিয়ে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করেছে। লঞ্চ প্যাড থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ, গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ ও লক্ষ্যবস্তুতে টার্গেট, সবকিছুই সঠিকভাবে হয়েছে।
অ্যান্টি-সাবমেরিন মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণের প্রশংসা করে টুইট করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেছেন, ‘ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী মিসাইলের পরীক্ষায় সফল ডিআরডিও। অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ারে বড় হাতিয়ার হতে চলেছে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ডিআরডিওকে অভিনন্দন জানাই।’
‘স্মার্ট’ টর্পেডো ওজনে হাল্কা। অনেক দূর পর্যন্ত টার্গেটে আঘাত হানতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। দিনে ও রাতে, আবহাওয়ার যে কোনো পরিস্থিতিতে এই ক্ষেপণাস্ত্রের নিক্ষেপ সম্ভব। এতে আছে শক্তিশালী রাডার, ইলেকট্রো অপটিক্যাল সিস্টেম। যা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সহায়তা করে। ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা প্রায় সাড়ে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল (৬৫০ কিলোমিটার)।
ভারত সমুদ্রের গভীরে লড়াই চালানোর জন্য অস্ত্রশস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছিল গত এক দশক ধরেই। এর আগে বিদেশ থেকে টর্পেডো কেনা হচ্ছিল। কিন্তু গত এক দশকের চেষ্টায় যে টর্পেডো ডিআরডিও তৈরি করেছে, তা পৃথিবীর সেরা টর্পেডোগুলোর অন্যতম বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। স্টেল্থ সাবমেরিনকেও নিমেষে ধ্বংস করতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র।
ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার নৌশেরা সেক্টরে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক জুনিয়র অফিসার নিহত হয়েছেন। সোমবার (৫ অক্টোবর) নিয়ন্ত্রণরেখার বাবখোরি এলাকায় ব্যাপকভাবে গোলাবর্ষণ করে পাক সেনাবাহিনী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বিনা প্ররোচনায় সোমবারও রাজৌরির নৌশেরা সেক্টরে গোলাবর্ষণ করেছে পাকিস্তান। এবারের হামলায় এক সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। ভয়াবহ এ ঘটনার পর ভারতও পাল্টা গোলাবর্ষণ শুরু করে। যদিও হামলার বিস্তারিত এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
মোদী সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, জম্মুর রাজৌরি ও পুঞ্চের নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন দু’টি সেক্টরে পাকিস্তানি সেনারা গুলি চালিয়েছে। একই সঙ্গে মর্টার সেলও নিক্ষেপ করা হয়। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত রাজৌরির নৌশেরা সেক্টরে ভারী গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান।
সন্ধ্যা থেকে নৌশেরায় দু’পক্ষের গোলাগুলি শুরু হয়। কিছুক্ষণ ধরে গোলাগুলি চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। ওই মুখপাত্র আরও জানান, রাত ৮টা ২০ মিনিটে আবারও পাক গোলাবর্ষণ শুরু হয়।
সে সময় পুঞ্চের দেগওয়ারকে লক্ষ্য করে বিনা প্ররোচনায় গুলি ছোড়ে পাকিস্তান। সঙ্গে মর্টার সেলও নিক্ষেপ করা হয়। গভীর রাত পর্যন্ত উভয় পক্ষের গোলাগুলি চলেছে
সোমবার শ্রীনগরের কাছে সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনাও ঘটেছে। হামলায় সিআরপিএফের ২ জওয়ান নিহত হন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার পাম্পোরে বাইপাসের কাছে কান্দিজেল ব্রিজের উপর বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা।
হামলায় নিহতরা ১১০ ব্যাটেলিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হামলার পর পুরো এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। টহলদারির সময় নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে জঙ্গিরা ফের গুলি ছুড়লে তিন জওয়ান গুলিবিদ্ধ হন। তাদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরই জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জম্মু-কাশ্মীরে গত আট মাসে ৩১৮৬টি সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে মোহাম্মদ ইয়াছিন (২৪) নামে আরও এক রোহিঙ্গা যুবক খুন হয়েছেন।
রবিবার (৪ অক্টোবর) রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত আনাস ও মুন্না গ্রুপের মধ্যে আবারও দফায় দফায় হামলার ঘটনায় এ ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে গত ৫ দিনে ক্যাম্পে ৪ জন খুন হলো।এতে আতঙ্কে আছে সাধারণ রোহিঙ্গারা।
নিহত মোহাম্মদ ইয়াছিন কুতুপালং ডি-৪, ২ ওয়েস্ট ক্যাম্পের মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে বলে জানিয়েছেন ওই ক্যাম্পের হেড মাঝি মো. ওসমান। সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
হেড মাঝি মো. ওসমান বলেন, ক্যাম্প ২ ওয়েস্ট ডি-ব্লকে রোববার রাতে মুন্না গ্রুপের ৪-৫ শত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা দা-লাঠিসোটা নিয়ে ক্যাম্পের শতাধিক ঝুপড়ী ঘর ও ৫০টি দোকান ভাংচুর করেছে।
কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল আহমদ জানান, আনাস গ্রুপ ও মুন্না গ্রুপের মধ্যে সংঘটিত ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে কয়েক’শ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু কুতুপালং ক্যাম্প ছেড়ে অন্য ক্যাম্পে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে বলে রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন।
এদিকে গত ৫ দিনের ঘটনায় ক্যাম্পে ১ নারীসহ ৪ জন খুন হয়েছে। আহত হয়েছে ২৫ জনের বেশি রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। এ নিয়ে ক্যাম্পে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা, ভাংচুর, গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে বলে রোহিঙ্গা মাঝি মো. আয়ুব খান জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গারা খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার, অস্ত্র ও স্বর্ণ ব্যবসার মতো অসংখ্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে মাদক ও অস্ত্র ও স্বর্ণ ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিরাতে ক্যাম্পগুলোতে শোনা যায় গুলির শব্দ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত ১৪ এপিবিএনের উপ-পরিদর্শক ইয়াসিন ফারুক জানান, নতুন এবং পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে খুনের ঘটনাগুলো ঘটছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার ওসি আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদের বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরও এক রোহিঙ্গা যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারকে সাহায্য করতে তৎপর হলো ভারত। মিয়ানমার নেত্রী অং সান সু চির হাতে তিন হাজার ভায়াল রেমডেসিভির তুলে দিলেন ভারতের সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে এবং বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
মিয়ানমারে ভারতীয় দূতাবাস থেকে টুইট করে জানানো হয়, কভিড পরিস্থিতি নিয়েও অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে শ্রিংলার। করোনার ওষুধ অ্যান্টি-রেট্রোভিয়াল রেমডেসিভিরের প্রায় তিন হাজার ভায়াল তুলে দেওয়া হয়েছে তার হাতে।
মিয়ানমারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপিন্সের পরেই সংক্রমণের নিরিখে রয়েছে মিয়ানমার। সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষে জানানো হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ভারতের দেওয়া রেমডেসিভির ওষুধ পারস্পরিক সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করবে তাই নয়, পাশে থাকার বার্তাও দেবে।
দু’দিনের সফরে মিয়ানমারে গিয়েছিলেন সেনাপ্রধান ও বিদেশসচিব শ্রিংলা। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও ভারত-মিয়ানমার দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। তবে আলোচনার ফল কী হয়েছে তা নিয়ে জানা যায়নি। ভারতের পক্ষ থেকে কভিড যুদ্ধে মিয়ানমারকে সাহায্য করার কথাই কেবল বলা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে একাধিক প্রতিবেশী দেশের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। কোথাও পাঠানো হয়েছে পিপিই কিট থেকে সুরক্ষার সরঞ্জাম, আবার কোথাও করোনার ওষুধ। চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের আবহেই বাংলাদেশ সঙ্গেও সম্পর্কের উন্নতিতে জোর দিয়েছে ভারত।
সম্প্রতি পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকা সফরে দুই দেশের সম্পর্কে গতি আনার চেষ্টা করেছেন। করোনার টিকা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। ভারত জানিয়েছে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশেই প্রথম টিকা পাঠানো হবে।
ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্ককে ছাড়া শত্রুদের সঙ্গে কোনো ধরনের শান্তি প্রক্রিয়া না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এশিয়ার ইসলামিক রাষ্ট্র আজারবাইজান। প্রতিবেশী আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধরত দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিজেভ বলেছেন, নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে যে কোনো শান্তি প্রক্রিয়ায় তুরস্ককে যুক্ত করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে যখন আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তখনই প্রেসিডেন্ট আলিজেভ ঘোষণাটি দিলেন।
তিনি বলেছেন, শান্তি প্রক্রিয়া অবশ্যই শুরু করতে হবে। চিরদিনের জন্য যুদ্ধ চলতে পারে না। সেক্ষেত্রে শান্তি আলোচনা যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় ততই ভালো। কিন্তু সে আলোচনায় অবশ্যই তুরস্ককে রাখতেই হবে।
সোমবার (৫ অক্টোবর) তুরস্কের টিআরটি হাবের গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি বলেন, তুরস্ক হচ্ছে আঞ্চলিক একটি বড় উদীয়মান শক্তি এবং দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের দেশ। এ সময় আঙ্কারার অবস্থান অন্যদের প্রতি সতর্কবার্তা বলেও মন্তব্য করেন আলিজেভ।
সাক্ষাৎকারে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দেশের সেনারা কারাবাখের বেশ কিছু এলাকা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি শুধুমাত্র তখনই সম্ভব হবে যখন আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বাকুকে এই নিশ্চয়তা দেওয়া হবে যে, নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল থেকে ইয়েরেভান সম্পূর্ণভাবে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।
ইলহাম আলিজেভ বলেন, আমরা অন্য কোনো দেশের ভূমির প্রতি নজর দেইনি কিন্তু আমাদের ভূখণ্ড আমাদের হাতেই থাকতে হবে।
এর আগে রবিবার (৪ অক্টোবর) জাতির উদ্দেশ্যে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে আলিজেভ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। সেখানে তিনি সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে আর্মেনিয়া সুস্পষ্ট সময়সীমা ঘোষণা না করা পর্যন্ত আজারবাইজান কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাবে না বলে ঘোষণা দেন।
নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে লড়াই এবং উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে। বৈরী দুই দেশের সংঘাতের পেছনে আজারিদের বহু দিনের জমে থাকা ক্ষতের শিকড় কত গভীরে আর এই লড়াইয়ে সাধারণ নিরীহ মানুষের যন্ত্রণা নিয়ে লিখেছেন বিবিসির দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা রেইহান দেমিত্রি।
পূর্ব ইউরোপে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংঘাতপূর্ণ এলাকার নাম নাগোরনো-কারাবাখ। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে বিতর্কিত এই এলাকা কার তা নিয়ে। দুই প্রতিবেশি দেশ একে অপরের চরম শত্রুতে পরিণত হয়েছে এই নাগোরনো-কারাবাখ ভূখন্ডকে কেন্দ্র করে।
আর্মেনীয়দের জন্য এই এলাকা তাদের প্রাচীন খ্রিস্টীয় সংস্কৃতির শেষ ধারক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ। আর আজারীদের জন্য কারাবাখ মুসলিম সংস্কৃতির একটা প্রাণকেন্দ্র, তাদের ঐতিহ্যবাহী মুসলিম কবি ও সঙ্গীতজ্ঞদের পবিত্র জন্মস্থান।
সোভিয়েত আমলে নাগোরনো-কারাবাখ ছিল আজারবাইজানের মধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত এলাকা। কিন্তু সেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ ছিল জাতিগত আর্মেনীয়রা।
সোভিয়েত সাম্রাজ্য যখন ১৯৮০’র দশকের শেষ দিকে ভেঙে পড়তে শুরু করে, তখন নাগোরনো-কারাবাখের আঞ্চলিক পার্লামেন্ট আর্মেনিয়ার অংশ হিসাবে থাকার পক্ষে ভোট দেয়। এর জেরে শুরু হয় যুদ্ধ। মারা যায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
রাশিয়া তখন একটা যুদ্ধবিরতি করার ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছিল। সেটা হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। কিন্তু যুদ্ধবিরতি হলেও কখনও দুই প্রতিবেশি দেশের মধ্যে কোন শান্তিচুক্তি হয়নি।
ফলে বিতর্কিত এই ছিটমহল সরকারিভাবে আজারবাইজান ভূখন্ডের অংশ হিসাবে থেকে গেলেও, বিচ্ছিন্নতকামী জাতিগত আর্মেনীয়রা কারাবাখ এবং আশেপাশের সংযুক্ত আরও সাতটি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্রায় ছয় লাখ জাতিগত আজারী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
স্বদেশ হারানোর গভীর ক্ষত
কয়েক বছর আগে বিবিসির এই প্রতিনিধি আজারবাইজানে যান দেখতে যে এই দ্বন্দ্ব আজারবাইজানের সাধারণ মানুষের জীবনের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে।
ককেশোস পর্বতমালা আর কাস্পিয়ান সাগর দিয়ে ঘেরা দেশ আজারবাইজান পূর্ব ইউরোপ আর পশ্চিম এশিয়ার সংযোগস্থল। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর উপকণ্ঠে বাস করেন এই দ্বন্দ্বের কারণে দেশের ভেতরেই গৃহহীন হওয়া বেশ কিছু আজারী পরিবার। তাদের থাকার জন্য নতুন নতুন অ্যাপার্টমেন্ট ভবন বানিয়ে দিয়েছে সরকার।
ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তারা বেশ অনেক বছর মানবেতর জীবন কাটিয়েছেন পুরনো স্কুল বাড়ি আর পরিত্যক্ত সিনেমা হল ও কারখানায়। তাদের অধিকাংশই এই নতুন ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকতে চান না। তারা স্বপ্ন দেখেন তাদের প্রিয় বাসভূমি কারাবাখে ফিরে যাওয়ার, যে প্রিয় মাতৃভূমি তারা হারিয়েছেন দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের কারণে।
আজারবাইজানের পুরো জাতীয় সত্ত্বা গড়ে উঠেছে তাদের মাতৃভূমি, স্বদেশভূমি হারানোর বেদনা ও ক্ষতকে ঘিরে। বিবিসির প্রতিনিধি রেইহান দেমিত্রি বলেন, একটা প্রাইমারি স্কুলে দেখলাম শিক্ষক ব্ল্যাকবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে সাত বছরের শিশুদের বলছেন তাদের হারানো এলাকাগুলোর নাম মুখস্থ বলতে। যেমন কেলবাজার, ফাযুলি, লাচিন। এ রকম সব মিলিয়ে কারাবাখ ছাড়াও আরও সাতটি এলাকা। শিক্ষক ক্ষুদে পড়ুয়াদের বলছিলেন, একদিন এসব এলাকা আমরা ফিরে পাবো।
এসব অঞ্চল নিয়ে লড়াইয়ে যেসব সৈন্য মারা গেছেন স্কুলের ভেতর তাদের সম্মানে তৈরি করা হয়েছে স্মারকস্তম্ভ। দেখলাম একজন সেনার ছবি, যিনি এখনও জীবিত। নাম রানিল সাফারাভ। যখন তিনি ও তার পরিবার কারাবাখ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন, তখন রানিল মাত্র একজন শিশু। পরে বড় হয়ে তিনি যোগ দেন আজারী সেনাবাহিনীতে।
২০০৪ সালে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে ন্যাটোর এক প্রশিক্ষণের সময় তিনি আর্মেনীয় বাহিনীর এক অফিসারকে ঘুমন্ত অবস্থায় কুঠার দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। সাফারভের আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ হয়। হাঙ্গেরির এক কারাগারে ৮ বছর কাটানোর পর তাকে বিমানে নিয়ে যাওয়া হয় আজারবাইজানে, তার দণ্ডাদেশের বাকি সাজা খাটার জন্য।
কিন্তু আজারবাইজানে পৌঁছানো মাত্রই তাকে বীরের মর্যাদা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। তাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দেয়া হয়, তাকে সামরিক খেতাবে ভূষিত করা হয় এবং বিনা খরচে একটি থাকার অ্যাপার্টমেন্ট উপহার দেয়া হয়।
কারাবাখে সর্বদা ভয়ের পরিবেশ
আর্মেনিয়া তাদের স্ব-ঘোষিত প্রজাতন্ত্র নাগোরনো-কারাবাখের নাম দিয়েছে আর্তযাখ্। রেইহান দেমিত্রি বলেন, আমি সেখানে গিয়েছিলাম ২০১৫ সালে যখন সেখানকার পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত ছিল।
কারাবাখের বেশির ভাগ গ্রামের দুটি করে নাম আছে। আজারী নাম আর আর্মেনীয় নাম। যেমন, কারবাখের আঞ্চলিক রাজধানী স্টেপানাকার্ট। আর্মেনীয়রা একে স্টেপানাকার্ট নামে ডাকলেও আজারীদের কাছে এর নাম হান্কেন্দি।
প্রাচীন শহর, যার নাম শুশা বা শুশিতে আমি দেখেছি পরিত্যক্ত ও ভাঙা প্রাচীন আজারী মসজিদের পাশে তৈরি হওয়া আর্মেনীয় গির্জা। মাদাগিয গ্রামে আমার সাথে কথা হয় লুদমিলা বাগদেসারিয়ানের। অবিস্ফোরিত একটা বোমা ফেটে তার ১৪ বছরের ছেলের একটা হাতের অনেকটা অংশ উড়ে গেছে। তিনি আমাকে কফি খেতে আপ্যায়ন করেন।
লুদমিলা বলছিলেন, কীভাবে তারা সারাক্ষণ একটা ভয়ের পরিবেশে জীবন কাটান। তাদের ভয় যেকোন সময় বড় ধরনের যুদ্ধ লাগবে। তিনি বলেন, আজারী সৈন্য যদি এই গ্রামে আসে, তারা জানতে চাইবে না আমাদের কোন দোষ আছে কিনা। তাদের চোখে আমরা শুধু আর্মেনীয় এবং আমাদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই!
আমরা দেখছি কীভাবে সপ্তাহব্যাপী এই যুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এবারের যুদ্ধ আগের সব যুদ্ধের চেয়ে বেশি মারাত্মক হয়ে উঠেছে। ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট, এবং গোলাবর্ষণ হচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে- শুধু রণাঙ্গনে সৈন্যদের লক্ষ্য করেই নয়, এমনকি রেহাই পাচ্ছে না বেসামরিক মানুষও।
আজারবাইজান এখনও তাদের হতাহাতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। আর্মেনিয়া বলছে, তাদের শতাধিক মানুষ মারা গেছে, যাদের অধিকাংশের বয়স ১৮ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। এই দ্বন্দ্ব যখন শুরু হয়, তখন তাদের জন্মও হয়নি।
২০১৫ সালে আমি যখন নাগোরনো-কারাবাখে গিয়েছিলাম, তখন প্রাচীন একটা আর্মেনীয় গির্জার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমি থেমেছিলাম গির্জার সামনে। গির্জার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন এক বৃদ্ধ, মাথা ভর্তি পাকা চুল, সাদা দাড়ি। হাতে লাঠি। বললেন ১৯৯০ এর দশকের যুদ্ধে তার ছেলেকে হারিয়েছেন তিনি।
চোখে হাসির ঝিলিক তুলে আমাকে বলেছিলেন, তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে ওই মুহূর্তে জীবন ও প্রকৃতিকে উপভোগ করছেন।
তিনি বললেন, ঈশ্বরের কাছে আমার একটাই অভিযোগ, তিনি আমাদের সবাইকে একই জাতির সন্তান হিসাবে সৃষ্টি করেননি। সেটা করলে আমরা একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে মরার বদলে শান্তিতে বাস করতে পারতাম! বিবিসি বাংলা।
খবরে বলা হয়েছে, সারা দেশে চার সপ্তাহের জন্য পাঁচ স্তরের (Level 5 restrictions) নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য আয়ারল্যান্ডের জাতীয় জরুরী জনস্বাস্থ্য কমিটি The National Public Health Emergency Team (NPHET) থেকে আইরিশ সরকারের উপর চাপ দেওয়া হয়েছে। আয়ারল্যান্ডে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রভাব কী হতে পারে তা নিয়ে আইরিশ সরকারে ভিতর ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এই মুুুুুুুহুর্তে দেশটির কাউন্টি ডোনেগালে Level-2 এবং ডাবলিনে Level- 3 রয়েছে। একটি সরকারী সূত্র থেকে জানা গেছে যে সুপারিশটি সরকারকে একটি অসম্ভব অবস্থানে ফেলেছে।
Level -5 এ অগ্রসর হওয়ার জন্য এই ধরনের সতর্কতা অর্থনীতি এবং সমাজের উপর গভীর প্রভাব পরার আশঙ্কা সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি এটি জনগন (এই Level 5 নিষেদাজ্ঞা) গ্রহন করবে কিনা তা নিয়েও আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রিপরিষদ গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জাতীয় জরুরী জনস্বাস্থ্য কমিটি (NPHIT) গত রবিবার ভাইরাসটির ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির পাশাপাশি কেস সংখ্যা বাড়ার কারনে আইরিশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে এক বৈঠক করে।
রবিবার এই বৈঠক থেকে একটি প্রত্যাশা ছিল যে রাষ্ট্রের সতর্কতা স্তর বা Level কিছুটা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। তবে সারা দেশে চার সপ্তাহের জন্য একটি সম্পূর্ণ লকডাউনের পরামর্শটি দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অবাক করে দিয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভা এই সুপারিশ গ্রহণের বিষয়ে গুরুতর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। একজন মন্ত্রী বলেছিলেন: “আমার উদ্বেগ হ’ল লোকেরা এটি গ্রহণ করবে না। মানুষ সবেমাত্র লকডাউন থেকে বেড়িয়েছে । তারা এই বিধিনিষেধগুলি খুব কঠিন বলে মনে করে। মানুষের যোগাযোগের জন্য কিছু সীমিত রূপ না থাকায় মানুষ এই প্রস্তাব গ্রহন করবে না।”
গতকাল (০২/১০/২০২০) রাতে ডাবলিন শহরের Ballsbridge (বলসব্রিজে) একটি বাস ও একটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে আটজন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর। এই দুজন শেষ খবর পাওয়া পর্য্যন্ত ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে একজন বাংলাদেশী জনাব শাহেদ চৌধুরী, ডাবলিনের ক্লনডালকিনে বসবাস করেন বলে জানা গেছে।
গতকাল রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে বলসব্রিজের নর্থামবারল্যান্ড রোড এবং হ্যাডিংটন রোডের সংযোগস্থলে এই সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষের পরে বাসটি একটি বাড়ির সামনের বাগানে বিধ্বস্ত হয়, যেখানে এটি একটি গাছকে ধাক্কা দেয়। বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। বাসের সামনের অংশটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং বাসের প্রথম তলার সামনের জানালাগুলি বেশিরভাগভাবে ভেঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে।জরুরি এম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত আট জনকে হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যাবস্থা করা হয়। অন্যদের ঘটনাস্থলে সামান্য আহত হওয়ার জন্য চিকিত্সা প্রদান করা হয়।
ছাতকের গোবিন্দ গঞ্জ পয়েন্টে নির্মাণাধীন চত্তরকে ঘিরে ফেসবুক সহ সামাজিক বিভিন্ন গন মাধ্যমে রীতিমত ঝড় বয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে গোবিন্দ গঞ্জের পাশেই আফজলাবাদে শায়িত রয়েছেন হযরত আফজল শাহ উরফে আরমান আলী নামক একজন সুফি সাধক। আজ থেকে প্রায় দুইশত বছর পুর্বে জন্ম নেয়া এই সুফি সাধক নিরবে নিবৃত্তে কাটিয়ে গেছেন তার জীবনের একশত বিশটি বছর। বাংলা,আরবি, উর্দু,ফার্সী ভাষা সহ সিলেটি নাগরিতে অসাধারন পান্ডিত্যের অধীকারি কীর্তিমান এই সাধক রচনা করে গেছেন অনেক গুলো গ্রন্হ। যে গুলো আজও বিভিন্ন গবেষকের গবেষনার খোরাক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসির সাবেক মাননীয় চেয়ারম্যান ড.মোহাম্মদ সাদিকের উদ্যোগে উর্দুতে রচিত হযরত আফজল শাহর রিসালায়ে মারিফত গন্হ খানি অনুদিত হয়। এবং সিলেট নাগরিতে রচিত মানবসৃষ্টি রহস্য সংক্রান্ত আফজল শাহর অবিস্মরণীয় গ্রন্হ “নুর পরিচয়” সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার জনাব আব্দুল মান্নানের উদ্যোগে অনুবাদ হয়। এখনো আফজলশাহর অনেকগুলে গ্রন্হ অনুবাদের বাকি রয়েছে।
সিলেট ছাতক রেললাইনে “আফজলাবাদ রেলষ্টেশন” এবং আফজলাবাদ ইউনিয়নও আফজলশাহর নামানুসারে করা হয়। বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন ছাতক, জগন্নাথপুর, দোয়ারা বাজার,সুনাম গঞ্জ সদর বিশ্বনাথ,কোম্পানি গঞ্জ, তাহিরপুর, মৌলবি বাজার, হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্হা গঞ্জ, চুনারুঘাট,নবীগঞ্জ, দিরাই,এবং সিলেটের বাহিরে ব্রাম্মনবাড়িয়া, ময়মনসিংহ গাজিপুর ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্হানে রয়েছে আফজল শাহর ভক্ত মুরিদান। মুলত আফজল শাহর ভক্ত মুরিদান গনের দাবির প্রেক্ষিতেই উনার নামে আফজল চত্তর করার দাবিটি জোরালো হচ্ছে।
এ বিষয়ে আফজলাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব গয়াস আহমদ বলেন জনরায়ে বার বার নির্বাচিত ছাতক দোয়ারার মাননীয় এমপি মহোদয় ও প্রায়ই আফজল শাহর মাজারে দোয়া নিতে আসেন। তিনি আমাদের আফজল শাহর প্রতি আন্তরিক ও শ্রদ্ধাশীল। তিনি বলেন আমি আশাবাদি আফজল শাহ চত্তর নামকরন হবে। আফজল শাহর ভক্তবৃন্দ তথা এলাকাবাসি মনে করেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রি জননেত্রী শেখ হাসিনা যেমন অলি আওলিয়াদের প্রতি সম্মান জানিয়ে নামকরন করেছেন “শাহজালাল বিমান বন্দর” তেমনি ভাবে ছাতক দোয়ারার মাননীয় এমপি মহোদয় অলি আওলিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাদের মনোবাসনা পুর্ন করে “আফজল শাহ চত্তর” নাম করন করবেন।
পরিষ্কার আকাশ। ধবল জোস্না। কোথাও মেঘের ছিটেফোঁটা নেই। পূর্ণিমার ভরাট চাঁদ হাসছে। তারারা ঝিকিমিকি করছে। বাইরে মৃদু মন্দ বাতাস বইছে। ভাড়া করে থাকা আক্কাস সাহেবের দক্ষিনামুখী ফ্ল্যাটটিতেও এ বাতাস বয়ে যেতে লাগলো। সাততলার উপরে ফ্লাট। সহজেই বাতাস গড়িয়ে বেড়ায়। চাঁদের আলোও পড়েছে ঘরের ভেতর। বিছানায় শুয়ে আছে স্ত্রী শামীমআরা। ঘুমিয়ে পড়েছে। সারাদিনের খাটাখাটনি ও ক্লান্তির পর খুব বেশিক্ষণ ঘুম ধরে রাখতে পারেননা। বিছানায় গা এলিয়ে দিলেই চোখে নেমে আসে রাজ্যের ঘুম। কতো দিন আক্কাস আলী সারাদিনের ঘটে যাওয়া গল্প বা সুখ দুঃখের কথা শুয়ে শুয়ে বললে দু একবার “হু” “হ্যাঁ” শোনার পর আর কোনো সাড়াশব্দ পেতেননা। বুঝতেন, স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েছে। কোন কোন দিন স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে তিনিও ঘুমিয়ে যেতেন, আবার কোনো কোনো দিন স্ত্রীকে বিছানায় আগলে রেখে তার ঘুম যেনো ভেঙ্গে না যায় সে জন্য খুব সতর্কতার সাথে বিছানা ছেড়ে বেলকনিতে এসে দাঁড়াতেন। আজও তিনি তাই করলেন। শামীমআরা বেগম ঘুমিয়ে যাবার পর তিনি ঘুমোতে পারছিলেন না। তাই তিনি অতি সঙ্গোপনে বেলকনিতে এসে দাড়ালেন।
শামীমআরা ঘুমোচ্ছেন। এক খন্ড চাঁদের আলো তার মধ্যবয়সী চেহারায় দোল খেয়ে গেলো। চাঁদের আলোতে উজ্জ্বল ফর্সা মুখটি আরও ঝলমলে হয়ে উঠলো। বয়সে প্রৌঢ়া হলেও চেহারায় এর বিন্দুমাত্র ছাপ নেই। এখনো টগবগে যুবতী বলেই ভুল করবে যে কেউ। বড়ো মেয়ে ভার্সিটিতে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে। অথচ পাশাপাশি দাড়ালে মনে হবে বড়ো বোন ছোট বোন। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থেকে স্ত্রীর এমন সৌন্দর্যময় ঘুমন্ত চেহারাটা দেখছিলেন অপলক দৃষ্টিত। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই তিনি এ সৌন্দর্য অবলোকন করে আসছেন।
পঁচিশ বছর আগে এক সুন্দর বিকেলে তার সাথে প্রথম দেখা। মফস্বল শহর থেকে বিএ পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে আসে শামীমআরা। ভাই ভাবীর সাথে ব্যুটানিকেল গার্ডেনে ঘুরতে গেলে কাকতালীয় ভাবে আক্কাস সাহেবের সাথে তাদের দেখা হয়ে যায়। ভাই ইমতিয়াজ মতিঝিলে একটি কর্পোরেট অফিসে চাকরি করতেন। আক্কাস সাহেব বসতেন রাজউক বিল্ডিংয়ে। দুজনের অফিস আলাদা আলাদা বিল্ডিংয়ে হলেও তারা প্রায়ই একই রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেতে যেতেন। সে সুবাদে তাদের মধ্যে আগে থেকেই কিছুটা মুখচেনা মুখচেনা ভাব ছিলো। দু একদিন হয়তোবা ভাঙ্গা ভাঙ্গা কথাও হয়েছিলো। আজ এক ভিন্নতর পরিবেশে একে অপরকে দেখে মনে হলো যেনো তাদের মধ্যে কতো দিনের সম্পর্ক, কতো দিনের চেনাজানা! দুজনেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে হ্যান্ডসেক করতে করতে একে অন্যকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো, ” এখানে কি মনে করে?” ইমতিয়াজ সাহেবই প্রথম উত্তর দিলেন। ছোট বোনের দিকে ইশারা করে বললেন, “ও মফস্বল থেকে এসেছে। তাকে ঢাকা শহর ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে। তো আপনার কি অবস্থা? কোথায় যেনো থাকা হয়?” আক্কাস সাহেব তার বোনের সৌন্দর্য দেখছিলেন। লাজুক চোখ দুটোতে যেনো বিরাজ করছিলো ভূমধ্যসাগরের নীল নীরবতা। ঠোঁটে জামার সাথে ম্যাচ করা লিপস্টিকের হালকা রং। মাথার মাঝ বরাবর সিঁথি করা ঘন কালো লম্বা চুল। সাক্ষাৎ পরী। রূপকন্যা। পড়ন্ত বিকেলের সোনালি রোদের সৌন্দর্যও তুচ্ছ তার সৌন্দর্যের কাছে। প্রথম দেখাতেই ভালো লাগার মতো মেয়ে সে। এমন একজনকে নিয়ে যে কারো প্রেমসাগরে ডুব দেয়ার ইচ্ছে হবে। তারও হলো। কিন্তু তিনি তা প্রকাশ করলেন না, বুঝতে দিলেন না। অত্যন্ত স্বাভাবিক ভঙ্গিতে উত্তর দিলেন- মালিবাগ, মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায়। – ও আচ্ছা! তাহলে তো আপনি লাকি। অফিস থেকে খুব বেশি দূরে নয়। আমার তো প্রতি দিন সকালে যুদ্ধ করে অফিসে যেতে হয়। ঢাকা শহরে রাস্তাঘাটের যা অবস্থা! – কেনো! আপনার বাসা বেশ দূরে বুঝি? – হ্যাঁ, মিরপুর ১৮ তে। চলুন না আমার বাসায়। এখান থেকে খুব বেশি দূরে নয়। – না, না তা কি করে হয়! অন্য একদিন যাবো। – আমার স্ত্রী ভালো কফি বানায়। না গেলে পস্তাবেন। – কফির কথাই যখন বললেন, তাহলে চলুন সামনের কফিশপটাতেই বসা যাক।
ইমতিয়াজ সাহেব আর আপত্তি করলেন না। পরিপাটি কফিশপ। পুরো ক্যাফে জুড়ে দেয়ালে লাগিয়ে রাখা সাউন্ডবক্স থেকে মৃদু আওয়াজে ভেসে আসছিলো হিন্দি গানের মাদকীয় সুর। “আজকাল ঢাকা শহরে ফাস্টফুড ও বেভারেজ শপ গুলো বেশ আধুনিক হয়ে উঠছে” ইমতিয়াজ সাহেব এ কথা বলে জানালার পাশে টেবিলটিতে বসার ইঙ্গিত দিলেন। কথামতো সবাই সেখানে বসলেন। বসার সময় সবার অলক্ষ্যে অনিচ্ছাকৃত ভাবেই আক্কাস ও শামীমআরার চোখাচোখি হয়ে যায়। কিছু কিছু কাজে কারও নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। অনিচ্ছাকৃত ভাবেই ঘটে যায়। তাদের চোখাচোখির বিষয়টিও ছিলো অনেকটা এরকম। লজ্জাবতী লতার মতো শামীমআরা লজ্জা পেয়েছিলো। চোখ নামিয়ে নিয়েছিলো। কিন্তু এ লাজুক চোখের ভাষা আক্কাস সাহেবের বুঝতে মোটেও কষ্ট হয়নি। শামীমআরার বুকের ধরপড়ানি যেনো স্পষ্ট তিনি শুনতে পেলেন। তবু তা না শুনার ভান ধরে পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে ইমতিয়াজ সাহেবের কথার রেশ ধরে আক্কাস সাহেব বললেন, আচ্ছা ইমতিয়াজ সাহেব বলুন তো আধুনিক মানেই কি নিজ শিকড়কে ভুলে যাওয়া, বিজাতীয় সংস্কৃতিতে উদ্বুদ্ধ হওয়া, নষ্টামি, নোংরামি? এবার তার দিকে শামীমআরা ও তার ভাবী দুজনেই তাকালেন। ইমতিয়াজ সাহেব উত্তর দেয়ার আগে ভাবীই মুখ খুললেন। বললেন, ভাই হুট করে এ প্রশ্ন কেনো? আক্কাস সাহেব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা ছবি গুলো দেখিয়ে বললেন, দেখুন- ওখানে একটিও দেশীয় ছবি নেই। আমাদের দেশের সবুজ শ্যামল দৃশ্য কি কম হৃদয়গ্রাহী? প্রাচীন স্থাপত্য শিল্প সমন্বিত ছবি কি বাজারে নেই? শুধু কি তাই? এই যে গানটা বাজছে তাও হিন্দি। মন শীতল করার মতো বাংলা গানের কি খুব অভাব? এ পর্যন্ত বলতেই ওয়েটার বিনয়ী ভংগিতে কাছে এসে দাঁড়ালো। অর্ডার নিলো। মজার ব্যাপার হলো কফি খেতে গিয়ে কেউ আর কফি খাননি। সবাই বেশি করে দুধ চিনি দিয়ে চা খেলো। সে বয়সে তো কারো ডায়াবেটিস বা কলেষ্টরল বেড়ে যাওয়ার ভয় ছিলোনা!
সেদিনের সন্ধ্যাটা ছিলো আক্কাস সাহেবের জীবনের এক সর্বোৎকৃষ্ট সন্ধ্যা। বিদায় নিয়ে যখন তিনি বাসায় ফিরছিলেন তার কাছে পৃথিবীটা নতুন মনে হচ্ছিলো। সুন্দর লাগছিলো এ ধরণীর সবকিছু। জীবন মনে হচ্ছিলো খুব অর্থবহ। ঢাকা শহরের বিরক্তিকর জ্যামও মনে হলো মধুর মতো। কান ছেদ করার মতো হর্ন যেনো বাঁশির সুর হয়ে বাজতে লাগলো। হৃদয়ে দোল খেতে লাগলো চোখাচোখির সেই অবিস্মরণীয় দৃশ্যপট। চোখে গেঁথে আছে একটু আগে দেখে আসা মিষ্টিময় চেহারাটা। মনের আয়নায় বার বার ভেসে উঠতে লাগলো। আহ্ কী সুন্দর! পৃথিবী কতো সুন্দর! আনমনেই গুন গুন করে গেয়ে উঠলো রবীন্দ্র সংগীতের দুটো কলি ….।
চলে এলো বাসার সামনে। ব্যাবিট্যাক্সিতে বসে কল্পনার রাজ্যে হাবুডুবু খেতে ভালোই লাগছিলো। কিন্তু না, নেমে যেতে হবে। ড্রাইভারকে পঞ্চাশ টাকা বেশি দিয়েই চলে যেতে লাগলো। ড্রাইভার সাহেব পেছন থেকে ডেকে বললেন, চাচা টাকা বেশি দিয়ে গেছেন, আপনার ভাংতি পঞ্চাশ টাকা নিয়ে যান। ঘার ফিরিয়ে আক্কাস সাহেব বললেন, এটা আপনার বখশিস চাচা। রেখে দিন। হাত তুলে দোয়া করলেন চাচা। আল্লাহ্ তার মনের আশা পূরণ করুন।
আক্কাস সাহেব ড্রাইভারের সততায় মুগ্ধ। মনে মনে ভাবতে লাগলেন, আহা! আমাদের দেশের নেতা-নেত্রী ও সরকারী রাঘব বোয়ালরা যদি অন্তত ড্রাইভার চাচার মতো সৎ হতেন দেশটা কতোইনা উন্নত হতো। সুন্দর হতো। ভাবতে ভাবতে বেশ ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকলেন। ম্যাসমেট তৌফিক সাহেব দেখেই বলে উঠলেন, কি ব্যাপার আক্কাস সাহেব, কোথায় ছিলেন সারাদিন? ভেবেছিলাম, আপনাকে নিয়ে বিকেলে ঘোরাফেরা করবো।
তৌফিক ও আক্কাস সাহেব দুজনে একই রুমে থাকেন। আলাদা আলাদা বেড। তাদের মধ্যে বেশ ভাব। খুবই আন্তরিক। পারিবারিক কথাবার্তা সহ সব রকমের সুখদুঃখের গল্প একজন আরেকজনের সাথে শেয়ার করেন। আক্কাস সাহেব আগে থেকেই মনস্থির করে রেখেছেন বাসায় পৌছেই তৌফিককে সব খুলে বলবেন। তিনি আর তর সহ্য করতে পারছিলেননা। এক নিশ্বাসে পুরো কাহিনী বলে ফেললেন। তৌফিক সাহেব মন্ত্রমুগ্ধের মতো তন্ময় হয়ে সব শুনলেন।
প্রায় তিন মাস পর শামীমআরার সাথে আক্কাস সাহেবের বিয়ে সম্পন্ন হয়। একই নদীর অভিন্ন স্রোতে মিশে যায় দুজন দুজনার হয়ে। আক্কাস সাহেব তার বুকের ভেতরে লুকিয়ে রাখা কথাটি একদিন সাহস করে শামীমআরার বড়ো ভাইকে বলে ফেলে। কথায় আছে না, সাহসে লক্ষী। কাজ হয়ে গেলো। তারা তো এমন একটি ছেলেই খুঁজছিলো। শুভ কাজে তবে আর দেরি কেনো! ব্যস্ ঘরোয়া পরিবেশে হয়ে গেলো বিয়ে। তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই। ১০/১২ জন বন্ধুবান্ধব নিয়ে খুব সাদাসিধে ভাবে ভাইয়ের বাসা থেকে শামীমআরাকে কবুল পড়িয়ে নিয়ে আসে।
সেই যে শুরু হলো সংসার তা আজও চলছে সং ও ঢং হয়ে। সংসার মানেইতো সং আর ঢং। এ সং আর ঢং এর মধ্য দিয়েই চলছে তাদের পঁচিশ বছরের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু তারা মোটেও অসুখী দম্পতি নয়। তারা এ জীবনে বহুবার একসাথে বেলকনিতে বসে বিকেলের চা খেয়েছে । চাঁদ দেখেছে। পূর্ণিমা দেখেছে। তারার ঝিকিমিকি দেখেছে। সমুদ্র সৈকতে সূর্যাস্ত দেখেছে। বৃষ্টিতে ভিজেছে। দুটো স্বত্বায় যেনো এক আত্মার বসবাস।
শামীমআরার যে জিনিসটা আক্কাস সাহেবের বেশি ভালো লাগে তা হলো তার কোনো চাহিদা নেই। শরীরের সৌন্দর্যের মতোই সুন্দর তার মন। কোনো কোনো সুন্দরী মেয়েরা বেশ অহংকারী হয়। বদমেজাজি হয়। কিন্তু শামীমআরা একটু অন্যরকম। তার মধ্যে এসবের কিছুই নেই। সংসার জীবনেও তার কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। অভিযোগ অনুযোগ নেই। চাওয়া পাওয়া আর অভিযোগ অনুযোগের বিষবেদনা ছিলোনা বলেই তারা হয়ে উঠতে পেরেছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখী দম্পতি।
তার কোনো বাড়তি আকাঙ্খা ছিলোনা। বিয়ে করে যেদিন একরুম বিশিষ্ট একটি সাবলেট হাউজে তাকে নিয়ে তুললো, সেদিনও সে মন খারাপ করেনি। বরং কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলেছিলো আমার কিছুই চাওয়ার নেই। সারা জীবন শুধু তোমাকে আমার কাছে পেতে চাই। আর একটি কথা। শুধু একটি ঘর চাই। নিজের ঘর। যে ঘরে সাজাবো নিজের মতো করে নিজের সংসার। যে সংসারে বইবে শান্তির হিমেল বাতাস। যে সংসার হবে তোমার আমার জান্নাত।
পঁচিশ বছরের দাম্পত্য জীবন পেরিয়ে এলেও আক্কাস সাহেব শামীমআরা বেগমকে সে ঘর আজও দিতে পারেননি। অবশ্যি এ জন্য শামীমআরা বেগমের কোনো আক্ষেপ নেই কিংবা তাদের সংসারেও সুখের কোনো ঘাটতি ঘটেনি। আক্কাস সাহেব ইচ্ছে করলে এ জীবনে ঢাকা শহরে কয়েকটি বাড়ি করতে পারতেন। গাড়ি কিনতে পারতেন। রাজউকের প্ল্যানিং ডিপার্টমেন্টে তিনি চাকরি করতেন। বলতে গেলে টাকার খনি। তার সহকর্মীরা প্রতিদিনই পকেট ভারী করে বাসায় ফিরতেন। কিন্তু তিনি সে পথে হাঁটেননি। তিনি বেছে নিয়েছিলেন নীতি ও নৈতিকতার পথ। সততার পথ। আখিরাতের পথ। সে পথ বেয়ে তিনি দুমুটো ডালভাত যুগিয়ে সাদাসিধে জীবনের মধ্য দিয়ে পাড়ি দিয়েছেন অনেক লম্বা সময়। শামীমআরা তাতে অসন্তুষ্ট না হয়ে এ জীবনকেই স্বাগত জানিয়েছেন। আলিঙ্গন করেছেন। গর্ব একটাই তার স্বামী ঘুষখোর নয়, দুর্নীতিবাজ নয়। এটাই সুখের, এটাই গৌরবের।
শামীমআরা বেশ সঞ্চয়ী মহিলা। মেয়েদের পড়াশুনার খরচ বাবদ ও সংসার পরিচালনার জন্য আক্কাস সাহেব প্রতিমাসে তার হাতে যে অর্থ তুলে দিতেন সেখান থেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে কিছু টাকা পয়সা জমা করতেন। বিশেষ বিশেষ দিবস বা অনুষ্ঠানে মেয়েরা উপহার ও সালামি হিসেবে টাকা পয়সা পেলে সে গুলোও তিনি খরচ করতেননা। সেভিংস একাউন্টে জমিয়ে রাখতেন। উদ্দেশ্য একটাই, আক্কাস সাহেব অবসরে যাওয়ার পর পেনশনের টাকা দিয়ে যখন কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনবে তখন তিনি ওই জমানো টাকা কাজে লাগাবেন। বাড়ি কিনতে গিয়ে যদি টানাপোড়েন দেখা দেয় তবে তিনি আক্কাস সাহেবকে এ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করবেন। আর যদি প্রয়োজন না হয় তবে ইচ্ছে মতো আসবাবপত্র কিনবেন।
আজ দুপুরে তৌফিক সাহেবের সাথে দেখা হওয়ার আগ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিলো। তৌফিক সাহেবের হাউমাউ কান্না সব ওলটপালট করে দিলো। আক্কাস সাহেবের হৃদয় বিগলিত হয়ে গেলো। তিনি যা বলার জন্য তৌফিক সাহেবের কাছে গিয়েছিলেন তা আর বলা হলোনা। শামীমআরাকেও দুপুরের ব্যাপারে কিছুই তিনি জানাতে পারেননি। বুকের ভেতর যেনো একটি পাথর চাপা দিয়ে আছে। নাহ্ তিনি আর ভাবতে পারছেন না। শ্বাস ভারী হয়ে আসছে। চোখ জ্বালাপোড়া করছে। ঘাড়ের দুপাশে দুটো রগ চিন চিন করছে। সম্ভবত প্রেসারটা বেড়ে গেছে। তিনি আর দেরি করলেন না। বেলকনি থেকে চলে এলেন। ঘরে ঢুকেই শামীমআরার মাথায় খুব আস্তে আদর করে হাত বুলালেন। শুয়ে পড়লেন। ঘুমোতে চেষ্টা করলেন।
ফজরের আজানের আগেই আক্কাস সাহেবের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। খুব বেশি ভালো ঘুম হয়নি। বিছানা ছেড়ে উঠতে মন চাচ্ছিলোনা। আরেকটু গড়াগড়ি করতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু “ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম” এ কথা মনে হতেই তিনি আলসেমি ভেঙ্গে উঠে পড়লেন। বাসায় দু’রাকাত সুন্নত পড়লেন। মসজিদে গিয়ে ফরজ নামাজটা আদায় করলেন। বাসায় এসে পোষাক বদলালেন। মর্নিং ওয়াকে বেরুলেন।
শামীমআরা বেগমও উঠে নামাজ পড়লেন। কোরআন তেলওয়াত করলেন। একটু চা খেলেন। পানের বদভ্যেস আছে তার। তাই পান মুখে দিয়ে নাস্তা বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। বড়ো মেয়েকে আটটার আগেই নাস্তা দিতে হবে। আক্কাস সাহেবও মর্নিং ওয়াক শেষ করে সকাল সকাল বেড়িয়ে পড়বে। তার হাতে আজ অনেক কাজ। প্রথমে ব্যাংকে যাবে। পরে রেজিস্ট্রি অফিসে। খুব আনন্দ লাগছে শামীমআরার। কতো দিন পর তাদের স্বপ্ন সফল হতে যাচ্ছে আজ। পঁচিশ বছর পর ভাড়াটিয়া জীবনের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। আক্কাস সব কাজ ঘুচিয়ে ফেলেছে। বনশ্রীতে চার রুম বিশিষ্ট একটি ফ্ল্যাট। বেশ ছিমছাম। সুন্দর। একেবারে মনের মতোন। বেলকনি আছে। দুজনে বসে বিকেলের চা খাওয়া যাবে। পুরো টাকা পরিশোধ করে আজ রেজিস্ট্রি করা হবে। আহ! ভাবতেই কেমন পুলক পুলক অনুভব হচ্ছে। এমন সময় হঠাৎ কলিং বেল বেজে ওঠে। ভাবলেন, কাজের মেয়েটা এসেছে হয়তো। কিন্তু দরোজা খুলেই অবাক। তৌফিক সাহেব তার স্ত্রী মিলাকে নিয়ে দাড়িয়ে। সাতসকালে অপ্রত্যাশিত ভাবে তাদেরকে দেখে তিনি হতবাক হয়ে গেলেন। কি বলবেন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেননা। তৌফিক সাহেব তার সম্মোহন শক্তি দ্বারা তা আচ করতে পেরে তিনিই বললেন, এতো সকালে আমাদেরকে দেখে খুব অবাক হয়েছেন, এইতো! অবাক হওয়ারই কথা। শামীমআরা বেগম তার উত্তর না দিয়ে কৃত্রিম হাসি দিয়ে বললেন, আগে ভেতর চলুন।
ড্রয়িং রুমে সোফায় বসতে বসতে তৌফিক সাহেব বলতে লাগলেন, ভাবী অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের এ ঋণ শোধ করার মতো নয়। শামীমআরা হা করে তাকিয়ে রইলেন। তিনি আগা মাথা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তাই একটু ইতস্তত করে বললেন, কিসের ঋণের কথা বলছেন, আমি তো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। এবার কিছুটা ভ্রু কুঁচকে তৌফিক সাহেব বললেন, কেনো, আক্কাস কি আপনাকে কিছুই বলেনি? – না… – সে গতকাল আমার এখানে গিয়েছিলো…. এ পর্যন্ত বলতেই তাকে থামিয়ে দিয়ে শামীমআরা বললেন, তাতো আমি জানি। আমরা বনশ্রীতে যে ফ্ল্যাট রাখতে যাচ্ছি তার রেজিস্ট্রি হবে আজ। এ সুসংবাদটা জানানো এবং আজ রেজিস্ট্রি করার সময় যেনো আপনি তার সাথে থাকতে পারেন তা বলার জন্যই গতকাল আপনার এখানে যাওয়ার কথা ছিলো। তৌফিক সাহেবের কপোলে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠেছে। স্ত্রী মিলার দিকে তাকিয়ে বেশ বিমর্ষ ভাবে শুধু বললেন, ও আচ্ছা! – সব ঠিক আছে তো ভাই সাহেব? – হ্যাঁ হ্যাঁ সব ঠিক আছে। এ কথা বলেই তৌফিক সাহেব একটি চেক বের করলেন। পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকার চেক। শামীমআরাকে তা দেখিয়ে বললেন, গতকাল আক্কাস আমাকে এটি নিজ হাতে সাইন করে দিয়ে এসেছে। – এসবের মানে কি ভাই? বেশ আড়ষ্ট কন্ঠ শামীমআরার। – আক্কাস যেহেতু আপনাকে কিছুই বলেনি তাহলে আমার কাছ থেকে কঠিন সত্যটি শুনুন।
স্ত্রী মিলাকে দেখিয়ে বললেন, ও বড্ড অসুস্থ। মৃত্যুপথযাত্রী। লিভার সিরোসিস হয়েছে। বাংলাদেশে এর কোনো ভালো চিকিৎসা নেই। ইন্ডিয়ায় নিয়ে গিয়ে দ্রুত লিভার ট্রান্সপ্লান্টের ব্যবস্থা করতে পারলে বেঁচেও যেতে পারে। ফিফটি ফিফটি সান্স। কিন্তু এটা অনেক টাকার বিষয়। নূন্যতম পঞ্চাশ থেকে ষাট লক্ষ টাকার প্রয়োজন। জানেন তো আমার কাছে কোনো টাকা পয়সাই নেই। সারা জীবন ভুল পথে চলেছি। স্বামী স্ত্রী দুজনেই বেহিসেবির মতো দু হাতে টাকা পয়সা উড়িয়েছি। জীবনে কখনো সঞ্চয়ের চিন্তা করিনি। আজ প্রয়োজনের বেলায় আমি নিঃস্ব, রিক্ত। আমার আহাজারি ও হৃদয়ের পীড়ন উপলব্ধি করে আক্কাস সমস্থ জীবনের সঞ্চয় আমার হাতে তুলে দেয়। এসব বলতে বলতে তৌফিক সাহেবের গলা ভারী হয়ে আসছিলো।
মিলা ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে। শামীমআরা তার দিকে তাকালেন। অনেক বদলে গেছে মহিলাটা। দামী প্রসাধনী ও পারফিউম ব্যবহার ছিলো যার নিত্যদিনের অভ্যেস, খোলামেলা পোশাকের মাঝে যিনি খূঁজে পেতেন নগ্ন আধুনিকতা তাকে আজ বড্ড সাদাসিধে লাগছে। শালীন পোশাকআসাকের পাশাপাশি হিজাবও পড়েছেন। দু হাতে টাকা পয়সা খরচ করতেন। মানুষকে কাঁটা কাঁটা কথা বলতেও দ্বিধাবোধ করতেননা। শামীমআরা বেগমকেও তিনি কম কথা শুনাননি। একদিন তো শামীমআরা কেঁদেই ফেলেছিলেন। মিলা বলেছিলো, মফস্বলের মেয়েরা এরকমই হয়। ওদের অন্তর খুব ছোট। হাড়কিপটে। টাকা পয়সা খরচ করার মাঝে যে একটা মজা আছে তা ওরা বুঝেইনা। এ কথা শুনার পর শামীমআরার কি কান্না …!
মিলা এগিয়ে আসলো। অশ্রু ভেজা চোখে শামীমআরাকে বলতে লাগলো, আপা, অনেক ভুল করেছি। মাফ করে দেবেন। আপনাদেরকে সবসময় তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছি অথচ আপনারাই আজ আমার পাশে দাঁড়ালেন। কোনো দিন এ ঋণ শোধ করতে পারবোনা। বলেই শামীমআরার হাত দুটো চেপে ধরলেন। মুখ গুঁজে আবারো বলতে লাগলেন, প্লিজ আপা, শুধু একবার বলুন আপনি আমাকে ক্ষমা করেছেন।
ঠিক এ মূহুর্তে আক্কাস সাহেব ঘরে এসে ঢুকেন। এমন একটা মূহুর্ত দেখার জন্য তিনি মোটেও প্রস্তুত ছিলেননা। বেশ বিব্রত বোধ করেন। শামীমআরা তাকে দেখেই কাছে ছুটে এলেন। অভিযোগের তীর ছুড়লেন। কি করে পারলে তুমি আমাকে না জানিয়ে এতোটা সময় পার করতে?
আক্কাস সাহেব কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন। কি বলবেন ভেবে পাচ্ছিলেননা। চোখে চোখ রাখতে পারছিলেন না। তবু অনেক কষ্ট করে তার দিকে তাকালেন। বললেন, আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি। তোমার সারা জীবনের সঞ্চয়,স্বপ্ন সাধ ধূলিস্যাৎ করে দিলাম। এমন হতাশাব্যঞ্জক বেদনাবিধূর সংবাদ তোমাকে জানানো আমার জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছিলো। গতকাল রাতে অনেক বার বলার চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। আমাকে ক্ষমা করো লক্ষীটি।
– এই তোমার বিশ্বাস? এই তোমার ভালোবাসা? তুমি একাকি কেনো এ কষ্টের ভার সইছো? আমাকে বললে এ কষ্টের ভার আমিও কিছুটা ভাগ করে নিতাম! – তোমার সারা জীবনের স্বপ্ন-সাধ চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেলো। খেয়ে না খেয়ে, পড়ে না পড়ে যে সঞ্চয় তুমি করেছিলে তাও বিলিয়ে দিয়েছি তোমাকে না জানিয়েই। আমি বড্ড অপরাধী। – ছি ছি তুমি এসব কি বলছো! টাকা পয়সা ধনসম্পদ তো জীবনের চেয়ে বড়ো নয়। সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে তুমি যে উদারতা, যে মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছো তা এ সমাজে কতোটা মানুষ করতে পারে! আমি ধন্য, আমি গর্বিত তোমার মতো মানুষকে স্বামী হিসেবে পেয়ে। তাছাড়া যে সঞ্চয়ের কথা বলছো তাতো যথার্থ সঞ্চয় নয়। সাময়িক। পার্থিব। বরং তুমি যা করছো তাই স্থায়ী সঞ্চয়। জীবনের সঞ্চয়। আখিরাতের সঞ্চয়।
স্ত্রীর এমোন কথা শুনে আক্কাস সাহেব আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলেন নাা। চোখ ছলছল করছিলো। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, আকাশের মতো উদার তুমি, সাগরের মতো বিশাল তোমার হৃদয়। তোমার মহত্ত্বের কাছে আমি হেরে গেলাম। সত্যি আমি খুব ভাগ্যবান পুরুষ। বলেই ভাবাবেগে মত্ত হয়ে শামীমআরাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কপোলে এঁকে দিলো মায়া ভরা মিষ্টি চুম্বন।
অত্যান্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, বান্ডুরান, কাউন্টি স্লাইগো নিবাসী বাংলাদেশী ব্যাবসায়ী জনাব ফরিদ খান অজ রবিবার বেলা আনুমানিক ২ ঘটিকায় এক আকষ্মিক সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যু কালে মরহুমের বয়স ৪০ এর কোটায় ছিলো।
মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে তার স্ত্রি ও ছেলে ওবস্থান করছিলেন । তারা গুরুতর আহত হয়ে স্লাইগো হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।
এস,এ,রব : দক্ষিণ এশিয়ায় বরাবারই চীনের বন্ধু হিসেবে পরিচিত মিয়ানমার। কিন্তু সেই বন্ধু দেশ মিয়ানমারই চীনের বি’রুদ্ধে তুলল অভিযোগ। স’ন্ত্রাস দ’মনে সাহায্যের প্রার্থনা নিয়ে দ্বারস্থ হলেন মায়ানমারের সেনা প্রধান।
চী’নের বি’রুদ্ধে মিয়ানমারের অ’ভিযোগ, চীন মিয়ানমারের জঙ্গি গো’ষ্ঠীগু’লিকে আ’গ্নেয়া’স্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করছে।সম্প্রতি রাশিয়ার একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন আং হ্লুইং।
তিনি বলেছেন, দেশের সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির পিছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী। আর সেই শক্তিশালী সেনাবাহিনীর উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি টেনে নিয়ে এসেছেন চীনের প্রসঙ্গ।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মুখপত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন পরে বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেন, সেনা প্রধান বলতে চেয়েছেন আরাকান আর্মি, আরাকান রো’হিঙ্গা সালভেশন আর্মির মত সন্ত্রাসবাদী দলগুলিকে একটি শক্তিশালী সেনা বাহিনী মদত দিচ্ছে।
পাশাপাশি চীন সী’মা’ন্তের অবস্থিত রাইখান রাজ্যের জঙ্গিদের কথাও উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গে। আরাকান সেনাবাহিনীর পিছনে একটি দেশ রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, চীনের তৈরি অ’স্ত্রগু’লিই ২০১৯ সালে দেশের সামরিক বাহিনীর ওপর প্রয়োগ করেছিল দেশের জঙ্গি সংগঠন।
স’ন্ত্রাস’বাদ প্রসঙ্গে মায়ানমারের সেনা প্রধানের বক্তব্য হল, একটি দেশ তার মাটিতে চলা স’ন্ত্রাস’বাদী কার্যকলাপ বন্ধ করতে সক্ষম। কিন্তু স’ন্ত্রাস’বাদী’দের পিছনে কোনও শক্তিশালী সেনাবাহিনীর
হাত থাকলে তা খুবই দুষ্কর হয়ে ওঠে। পাশাপাশি সেনা প্রধান স’ন্ত্রাস দ’মনের ওপর জোর দিয়ে দেশগু’লির ওপর পারস্পরিক বো’ঝাপড়া ও সহযোগিতা বাড়ানোর আ’হ্বান জানিয়েছে।
এস এ রবঃ প্রাণঘাতী বিউবনিক প্লেগ ছড়াতে শুরু করায় চীনের উত্তরাঞ্চলীয়, একটি শহরে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলের বায়ানুর শহরে প্লেগ প্রতিরোধে তৃতীয় মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলি।
গত শনিবার বায়ানুরের একটি হাসপাতালে বিউবনিক প্লেগ রোগী শনাক্তের পরপরই এ সিদ্ধান্ত নেয় চীন সরকার। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এ সতর্কতা থাকবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বায়ানুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘বর্তমানে এই শহরের মানুষের মধ্যে প্লেগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে সবার আত্মসুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে এবং সতর্ক হতে হবে। শরীরে যেকোনও ধরনের অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
গত ১ জুলাই চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছিল, দেশটির পশ্চিম মঙ্গোলিয়ার খোভদ প্রদেশে দুইজন বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়েছেন। ল্যাব টেস্টে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্লেগে আক্রান্ত ওই দুই ভাই মারমোটের (ইঁদুরজাতীয় প্রাণী) মাংস খেয়েছিলেন। এ কারণে মানুষজনকে এ প্রাণী শিকার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ১৪৬ জনকে চিহ্নিত করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
প্লেগ রোগের তিনটি ধরনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিউবনিক প্লেগ। ব্যাকটেরিয়াজনিত এই অসুখ ইঁদুরজাতীয় প্রাণীদের শরীরে থাকা পোকা বা আশপাশে বসবাসকারী মাছির মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অসুখটি প্রাপ্তবয়স্ক একজন রোগীকে মেরে ফেলতে পারে।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যেই পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। এর প্রকোপ শেষ না হতেই গত সপ্তাহে শূকরের শরীরে ফ্লু ভাইরাস পাওয়ার কথা জানায় চীন। এটিও মানুষের মধ্যে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। এর মধ্যেই সামনে এলো বিউবনিক প্লেগের খবর।
ওমর এফ নিউটনঃ জুলাই এর ৫ তারিখে NHS (National Health Service – UK)এর ৭২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। এ উপলক্ষে NHS তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে ১২ জন কে স্বাস্থ্য বিভাগে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পোট্রেইট বা চিত্রকর্ম সংগ্রহ করা হয়। চিত্রকর্ম সংগ্রহ করে বিখ্যাত ফটোগ্রাপার রানকিন। যা ইংল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা যেমন বাস স্টপ, বিলবোর্ড, রাস্তার পাশে, নামকরা স্থানসমূহে প্রদর্শিত হবে। এবং বিশ্ব বিখ্যাত পিকাডিলি সার্কাসের বিলবোর্ডেও পোট্রেইটগুলা শোভা পাচ্ছে।
এই ১২ জন বিশেষ ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশী বংশদূত ডাক্তার ফারজানা হুসেইন। যিনি নিউহামের প্লাসটো (Plaistow) এর প্রজেক্ট সার্জারির জেনারেল প্রাক্টিশনার (GP)। ২০১৯ সালে যিনি NHS এর ‘’GP of the year’’ নির্বাচিত হন।
এ পেশায় আসার পেছনে অনুপ্রেরণা ডাঃ ফারজানা হুসেইন এর বাবা ও আরো কিছু ঘটনা। তাঁর বাবাও বহু বছর NHS কে সেবা প্রদান করেন। তিনি একজন এনেস্থেটিস্ট ছিলেন। তাঁর বাবা ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ (তৎকালীনপূর্ব পাকিস্থান) থেকে স্কলারশিপ নিয়ে এনেস্থেটিস্ট এর উপর পোষ্ট গ্রাজুয়েশন করতে আসেন। বাবার অনুপ্রেরণায় তিনি এই পেশায় আসেন।
ডাঃ ফারজানা হুসেইনের বয়স যখন ১৯ তখন তিনি University of Wells এ মেডিকেল এর ছাত্রী। ঐ সময় তাঁর মা খুবই অসুস্থ ছিলেন, তিনি ২৫০ মাইল জার্নি করে মা কে দেখতে যেতেন। তখন তিনি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন মা কে দেখতে পাশে থাকবেন, নাকি ক্লাসে ফিরে যাবেন? তাঁর মা বললেন, ক্লাসে ফিরে যেতে, কারণ তাঁকে ডাক্তার হতেই হবে, যাতে করে সে অন্যদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারে। এতেই মা খুশি হবেন। এর ৫ দিন পরেই তাঁর মা মারা যান।
এর পর থেকে দুই দশক তিনি নিরলসভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। মানুষকে সেবাটাই যেন তাঁর জন্য মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘’যখন আমি কাউকে চিকিৎসা দেই, তখন মনে করি তারাও কারো না কারো পরিবার’’।
চিকিৎসাক্ষেত্রে এশিয়ানদের ভূমিকা কি, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, ‘’NHS সত্যিকার অর্থে মাইগ্রেন্টদের থেকে উপকারিত হচ্ছে’’।
সত্যই ডাঃ ফারজানা হুসাইনরাই সত্যিকার হিরো। যারা নিজেকে উৎসর্গ করে দিচ্ছেন অন্যের সেবায়। অভিবাসী এবং বাংলাদেশী হিসেবে আমাদের জন্যও গর্বের। যাদের কল্যাণে, যাদের সুনামের প্রেক্ষিতে আরো বহু অভিবাসীদের সেবা প্রদানের দরজা খুলে যাবে। হোক সেটা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কিংবা ভিন্ন কোন ক্ষেত্রে।
বাংলার কোন এক কবি বলে ছিলেন “এ পৃথিবী যেমন আছে, তেমনই রবে, সুন্দর এ পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে।”
জন্ম নিলেই মৃত্যুকে বরন করতে হবে, মানুষের জীবনের এ এক চরম সত্য মূহুর্ত। মানুষ দুনিয়াতে আসে আবার চলে যাওয়ার জন্যই। আমার আপনার সামনে যেকোন সময় মৃত্যুর দুত এসে বলবে “চলো’ , আর তখনই আমাদের চলে যেতে হবে সবকিছু পেছনে ফেলে।
কিন্তু আমি মরে যাব এই কথাটা বলতেও আমরা ভয় পাই। আবার যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি মরে গেলে আমাকে কোথায় কবর দেওয়া হবে ? তখন আমরা এর উত্তর দিতেও ভয় পাই কিংবা এড়িয়ে যাই ।
অথচ প্রত্যেক প্রবাসীর উচিত অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আপন জনের নিকট অছিয়ত করা বলে দেওয়া যে আমি মারা গেলে আমার কবর কোথায় হবে । মারা যাওয়ার পর আমাদের কবর কি আয়ারল্যান্ডে হবে নাকি বাংলাদেশে হবে? এই বিষয়টা পরিস্কার করে রাখতে হবে। নয়তো আপনার মৃত্যুর পর কেউ আপনাকে আয়ারল্যান্ডে কবর দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিবে আবার দেখা যাবে আপনার দেশের আত্মিয় স্বজন আপনার লাশ দেশে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। তখন আপনার লাশটা কাটা ছেড়া করে লাশের ভিতর থেকে সব ফেলে দিয়ে শুধু চেহারাটা নিয়ে দীর্ঘ ৭/৮ দিন পর আপনার পচা্ঁ র্দূঘন্ধ লাশ নিয়ে দেশে উপস্থিত হবে। মানুষ মনে করে, দাফনে অংশগ্রহণ করাটাই একমাত্র ফজিলতের বিষয়। ওয়ারিসের জন্য একমাত্র কর্তব্য পালনীয় বিষয়। কেউ এ দাফনে বা জানাযায় অংশ নিতে না পারলে তাকে অন্যচো্ঁখে দেখা হয়। অথচ মৃত ব্যক্তির জন্য দু’য়া মাগফিরাত করা, কবর জিয়ারত করা, দান সদকার সওয়াব পৌঁছানোসহ আরো কাজ আছে যা আত্মীয়রা সবসময় করতে পারে।
প্রথমত , একজন মৃত ব্যাক্তির লাশ প্রবাস থেকে নিয়ে দেশে কবর দিতে গেলে টাকা একটা প্রধান বিষয়। আর দ্বিতীয়ত সমস্যা হলো ধর্মীয় বিষয় ।একজন মৃত ব্যাক্তির লাশ অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া রাসুল সা্ঃ এর সুন্নত অনুসারে সম্পূর্ন অপছন্দনিয়। একটি হাদীসে নবীজী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব সুন্দর বলেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তোমরা তাকে আটকে রেখো না। তাকে দ্রুত দাফন করে দিও। [আলমুজামুল কাবীর, তাবারানী, হাদীস : ১৩৬১৩; ফাতহুল বারী ৩/২১৯]। আবার এক দেশ থেকে অন্য দেশে লাশ নিতে দীর্ঘ প্রায় ৭ /৮দিন সময় লাগে যা কোরআন এর সমর্থন পাওয়া যায় না। হাদীস গবেষনা করলে যা পাওয়া যায় তাতে এটাকে বলা হয় “মাকরুহ তাহরিমি” । ইসলামে “মাকরুহ” হলো আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ আর “মাকরুহ তাহরিমি” আরো বেশী অপছন্দনীয়।
এটাও আমাদের ভেবে দেখার বিষয় যে, মৃত ব্যাক্তির লাশ দেশে পাঠানোর জন্য আপনি যদি অর্থ দান করেন তাহলে আপনি পরোক্ষ ভাবে রাসুলের সুন্নতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন কি না? আমরা ইসলামে এই রকম অনেক কিছুই প্র্যাক্টিস করি যা ইসলাম দ্বারা সমর্থন যোগ্য হয় না।
এবার আসুন দেখি দূর-দেশে লাশ নিতে লাশ’কে কি করতে হয়। লাশ দূর দেশে নেওয়ার জন্য লাশটি Process করতে হয় আর এটাকে বলে Embalming করা যার অর্থ মমি করা। ইসলাম এটাকে সমর্থন করে না ।
IATA (a worldwide airline trade association) rules state that if moved from one country to another, a body should have an embalming certificate. Tony Rowland, senior partner at Rowland Brothers International funeral directors, warns: “In many cases when embalming is not up to US or UK standards, the result is that a body is totally unviewable when it returns to its homeland.”
Embalming করতে লাশটাকে প্রথমে কাটা ছেড়া করে ভেতরের সমস্ত কিছু ফেলে দেয়া হয়। এটা মৃত ব্যাক্তির জন্য অবশ্যই অসম্মান জনক। আর মৃত মানুষটি যদি মুসলিম নারী হয় তবে সেটা হবে তার জন্য, তার পরিবারের জন্য আরো অপমান জনক। কারন, হতে পারে কোন অমুসলিম পুরুষ ডাক্তার এই মৃত মুসলিম মহিলার লাশকে কাটা ছেড়া করে Embalming করছেন। যেখানে ইসলাম বলে মৃত ব্যাক্তির লাশকে আস্তে করে ধরে সম্মান এবং পর্দার সাথে তাকে সমাহিত করতে আর সেখানে করা হচ্ছে ইসলামের উল্টো কাজ।
তার পর যেটা হয় তাহলো, লাশের শরীর থেকে তার সমস্ত রক্ত মেশিন দিয়ে টেনে বের করা হয়। আমি বলব, এটা লাশকে কবরস্ত করার আগেই এক প্রকার “আযাব” । তার পর লাশের শিরা উপশিরা দিয়ে মেশিনের সাহায্যে ফরমালডিহাইড জাতীয় Fluid ডুকানো হয়। লাশকে দীর্ঘ দিন তাজা দেখানোর জন্য এই Formaldehyde Fluid ব্যবহার করা হয় যদিও লাশ এত দীর্ঘ সময় তাজা রাখা সম্ভব নয়।
এই ফরমালডিহাইড ( Formaldehyde) তৈরী হয় মিথান্যাল আর এথান্যাল দিয়ে। এই গুলো হলো Impure Substances যা অপবিত্র । এগুলো দিয়ে তৈরী হয় মদ। অর্থাত এলকোহল তৈরীর জন্য এক ধরনের প্রধান রাসায়নিক যৌগ। যা বর্ণহীন ও দূর্গন্ধযুক্ত হিসেবে এর সবিশেষ পরিচিতি রয়েছে। এটি আগুনে জ্বলে এবং বিষাক্ত পদার্থবিশেষ।
এখন আপনিই বলুন মরে গিয়ে বা মৃত লাশের সাথে আল্লাহ এবং তার রাসুল সাঃ এর অপছন্দনিয় কাজ করবেন কি না। সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। মৃতদেহকে বিলম্বে দাফন করতে দুনিয়ার কষ্টদায়ক নানা প্রকৃতির জিনিস ব্যবহার করতে হয় যা সুস্থ মানুষও ব্যবহার করে না। হিমাগারে রাখা ফর্মালিন, মেডিসিন ইত্যাদি হলো মৃতব্যক্তিকে পঁচন থেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টামাত্র। ইসলামী শারিয়াহ অনুসারে মৃতের গোসল দিয়ে আতর লোবান লাগিয়ে সম্মানের সহিত কাফন-দাফন ও জানাযা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা উত্তম। আর যদি শুধুমাত্র লাশ নিজ দেশে নেয়ার জন্য কেটে ছিড়ে লাশের শরীরের নাপাক এলকোহল দিয়ে কষ্ট দিয়ে দীর্ঘ ৭/৮ দিন পর পচা্ঁ র্দূঘন্ধ দেহটা দেশে নেয়া কতটা যুক্তি সংগত।
সচেতন মুসলমান হিসেবে আপনি নিঃশ্চয়ই আপনার লাশ এই ভাবে দেশে নিতে অছিয়ত করবেন না। আর যদি আপনি প্রবাসে ব্যাচেলর বা একাকি বাস করেন তাহলে আজই আপনার ফ্যামেলীকে দেশে ফোন করে অছিয়ত করুন। তাদের বলুন আপনি যেখানে মারা যাবেন সেখানেই আপনার কবর হবে এবং তারা যেন এটা মেনে নেয়। কখন কার মৃত্যু হবে কেউ জানে না কারন জন্ম এবং মৃত্যু আল্লাহর হাতে।
আর যারা প্রবাসে ফ্যামেলী নিয়ে বসবাস করেন তারা যদি এখনও কোন অছিয়ত না করে থাকেন তাহলে আজই আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সামনে দাড়িয়ে সাহস করে অছিয়ত করে ফেলুন। তা না হলে আপনার মৃত্যুর পর আপনার লাশ দাফন করা নিয়ে ফিতনা সৃষ্টি হতেও পারে।
আল্লাহ সুবাহ নাহু তা’য়ালা আমাদের সকলকে ঈমানের সাথে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার তৌফিক দান করুন,আমীন।
[ এই লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল “জুন ২০১৮” “আইরিশ নোটিশ বোর্ড” ফেইস বুক পেইজে]
লেখক : মশিউর রহমান। Swords, Dublin,Ireland. email: myrobisallah@gmail.com
গত জুম’য়াতে কিয়ামত দিবস এবং পূনরুত্থান দিবস নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আজকে আমরা কিয়ামত এবং পূনরুত্থানের মধ্যবর্তী সময় (বারযাখ) নিয়ে আলোচনা করব।
আমাদের মৃত্যুর আগের জীবন হচ্ছে প্রথম অংশ এবং মৃত্যুর পর থেকে পূনরুত্থান পর্যন্ত হচ্ছে কবর জীবন (বারযাখ) দ্বিতীয় অংশ। আর তৃতীয় অংশ হচ্ছে পূনরুত্থান বা হাশরের ময়দান থেকে শুরু, যে জীবনের কোন শেষ নাই। হাশরের ময়দান থেকে কেউ যাবে জান্নাতে কেউ যাবে জাহান্নামে।
মুমিনদের জন্য এই দুনিয়ার জীবনের তুলনায় বারযাখের জীবন হবে অনেক সহজ পক্ষান্তরে অবিশ্বাসীদের জন্য বারযাখের জীবন হবে দুনিয়ার তুলনায় এক ভয়ঙ্কর আযাবের জীবন কারন মৃত্যুর পরের জীবন নিয়ে তাদের কোন প্রস্তুনি নেই।
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,হে মুমিনগন তোমরা পাঁচটি জিনিসের পূর্বে পাঁচটি জিনিসকে দাম দাও বা মূল্যবান মনে কর তবেই তোমরা বারযাখের জীবনকে সহজে পার করতে পারবে।
পাঁচটি জিনিস গুলো হলো:
১. প্রৌঢ়ত্বের আগে যৌবনকে গুরুত্ব দাও।
অনেকেই ভাবে বৃদ্ধ হলে হজ্জ করবে ,ইবাদত করবে ,এটা করা ঠিক না। যৌবন হারিয়ে ফেলার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। বৃদ্ধ হওয়ার আগেই মৃত্যু হয়ে যেতে পারে তাই যৌবনেই ইবাদত করতে হবে।
২. অসুস্থ্যতার আগে সুস্থ্যতার মূল্য দাও।
অসুস্থ্যতার আগে সুস্থ্যতাকে গুরুত্ব দিতে হবে।জীবনে সাধারন অসুস্থতাও আছে আবার মানুষের বয়স যখন বাড়তে থাকে শরীরের উদ্যামও হারিয়ে যেতে থাকে। তাই সুস্থ্য থাকতেই ঈমানকে মজবুত করতে হবে।
৩. দারিদ্র্যের আগে স্বচ্ছলতাকে গুরুত্ব দাও।
টাকা বিলাস ব্যসনের পেছনে অতিরিক্ত ব্যায় করলে দেখা যাবে যখন টাকার দরকার হবে তখন আখেরাতের ভালো কাজেও টাকা ব্যায় করা সম্ভব হবে না।
৪. অবসর কে মূল্য দাও।
আমাদের অবসর সময়টা যেন অবহেলায় বা আড্ডায় না কাটে। সীমা অতিক্রম না করে আনন্দ উপভোগের সাথে সাথে আল্লাহর ইবাদতেও অবসর সময়কে মূল্যবান করা যায়।
৫. জীবনটাকে তুমি মৃত্যুর আগে কাজে লাগাও।
আমরা সবাই বিশ্বাস করি মৃত্যু আমাদের হবেই। তাই মৃত্যুর আগেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে যেন মৃত্যুর পর আমরা ভাল থাকি।
মৃত্যু সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) বললেন: “নিশ্চয় মুমিন বান্দা যখন দুনিয়া প্রস্থান ও আখেরাতে পা রাখার সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয় তার নিকট আসমান থেকে সাদা চেহারার ফেরেশতাগণ অবতরণ করেন, যেন তাদের চেহারা সূর্য। তাদের সাথে জান্নাতের কাফন ও জান্নাতের সুগন্ধি থাকে, অবশেষে তারা তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত বসে যায়। অতঃপর মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম এসে তার মাথার নিকট বসেন, তিনি বলেন: হে পবিত্র রুহ তুমি আল্লাহর মাগফেরাত ও সন্তুষ্টির প্রতি বের হও”। তিনি বললেন: “ফলে রুহ বের হয় যেমন মটকা/কলসি থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। তিনি তা গ্রহণ করেন, যখন গ্রহণ করেন চোখের পলক পরিমাণ তিনি নিজ হাতে না রেখে তৎক্ষণাৎ তা সঙ্গে নিয়ে আসা কাফন ও সুগন্ধির মধ্যে রাখেন, তার থেকে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ঘ্রাণ বের হয় ”। তিনি বললেন: “অতঃপর তাকে নিয়ে তারা আকাশের উপরে ওঠে, তারা যখনই অতিক্রম করে তাকে সহ ফেরেশতাদের কোন দলের কাছ দিয়ে তখনই তারা বলে, এ পবিত্র রুহ কে? তারা বলে: অমুকের সন্তান অমুক, সবচেয়ে সুন্দর নামে ডাকে যে নামে দুনিয়াতে তাকে ডাকা হত, তাকে নিয়ে তারা দুনিয়ার আসমানে পৌঁছে, তার জন্য তারা আসমানের দরজা খোলার অনুরোধ করেন, তাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হয়, তাকে প্রত্যেক আসমানের নিকটবর্তীরা পরবর্তী আসমানে অভ্যর্থনা জানিয়ে পৌঁছে দেয়, এভাবে তাকে সপ্তম আসমানে নিয়ে যাওয়া হয়, অতঃপর আল্লাহ বলেন: আমার বান্দার দফতর ইল্লিয়্যিনে লিখ এবং তাকে জমিনে ফিরিয়ে দাও, কারণ আমি তা (মাটি) থেকে তাদেরকে সৃষ্টি করেছি, সেখানে তাদেরকে ফেরৎ দেব এবং সেখান থেকেই তাদেরকে পুনরায় উঠাব”।
.
তিনি বলেন: “অতঃপর তার রুহ তার শরীরে ফিরিয়ে দেয়া হয়, এরপর তার নিকট দু’জন ফেরেশতা আসবে, তারা তাকে বসাবে অতঃপর বলবে: তোমার রব কে? সে বলবে: আল্লাহ। অতঃপর তারা বলবে: তোমার দ্বীন কি? সে বলবে: আমার দ্বীন ইসলাম। অতঃপর বলবে: এ ব্যক্তি কে যাকে তোমাদের মাঝে প্রেরণ করা হয়েছিল? সে বলবে: তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অতঃপর তারা বলবে: কিভাবে জানলে? সে বলবে: আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, তাতে ঈমান এনেছি ও তা সত্য জ্ঞান করেছি। অতঃপর এক ঘোষণাকারী আসমানে ঘোষণা দিবে: আমার বান্দা সত্য বলেছে, অতএব তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোশাক পরিধান করাও এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। তিনি বলেন: ফলে তার কাছে জান্নাতের সুঘ্রাণ ও সুগন্ধি আসবে, তার জন্য তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত তার কবর প্রশস্ত করে দেয়া হবে। তিনি বলেন: তার নিকট সুদর্শন চেহারা, সুন্দর পোশাক ও সুঘ্রাণসহ এক ব্যক্তি আসবে, অতঃপর বলবে: সুসংবাদ গ্রহণ কর যা তোমাকে সন্তুষ্ট করবে তার, এটা তোমার সেদিন যার ওয়াদা করা হত। সে তাকে বলবে: তুমি কে, তোমার এমন চেহারা যে শুধু কল্যাণই নিয়ে আসে? সে বলবে: আমি তোমার নেক আমল। সে বলবে: হে আমার রব, কিয়ামত কায়েম করুন, যেন আমি আমার পরিবার ও সম্পদের কাছে ফিরে যেতে পারি”।
.
রাসুল সাঃ আরো বলেন: “আর কাফের বান্দা যখন দুনিয়া থেকে প্রস্থান ও আখেরাতে যাত্রার সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়, তার নিকট আসমান থেকে কালো চেহারার ফেরেশতারা অবতরণ করে, তাদের সাথে থাকে ‘মুসুহ’ (মোটা-পুরু কাপড়), অতঃপর তারা তার নিকট বসে তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত, অতঃপর মালাকুল মউত আসেন ও তার মাথার কাছে বসেন। অতঃপর বলেন: হে খবিস নফস, আল্লাহর গোস্বা ও গজবের জন্য বের হও। তিনি বলেন: ফলে সে তার শরীরে ছড়িয়ে যায়, অতঃপর সে তাকে টেনে বের করে যেমন উল থেকে (লোহার) সিক বের করা হয় [লোহার সাথে উল লেগে থাকে। তখন তা ছাড়িয়ে নেয়া কষ্টকর হয়। ]।অতঃপর সে তা গ্রহণ করে, আর যখন সে তা গ্রহণ করে চোখের পলকের মুহূর্ত হাতে না রেখে ফেরেশতারা তা ঐ ‘মোটা-পুরু কাপড়ে রাখে, তার থেকে মৃত দেহের যত কঠিন দুর্গন্ধ দুনিয়াতে হতে পারে সে রকমের দুর্গন্ধ বের হয়। অতঃপর তাকে নিয়ে তারা ওপরে উঠে, তাকেসহ তারা যখনই ফেরেশতাদের কোন দলের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে তখনই তারা বলে, এ খবিস রুহ কে? তারা বলে: অমুকের সন্তান অমুক, সবচেয়ে নিকৃষ্ট নাম ধরে যার মাধ্যমে তাকে দুনিয়াতে ডাকা হত, এভাবে তাকে নিয়ে দুনিয়ার আসমানে যাওয়া হয়, তার জন্য দরজা খুলতে বলা হয়, কিন্তু তার জন্য দরজা খোলা হবে না”। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলবেন: তার আমলনামা জমিনে সর্বনিম্নে সিজ্জিনে লিখ, অতঃপর তার রুহ সজোরে নিক্ষেপ করা হয়। রুহ তার শরীরে ফিরিয়ে দেয়া হয় তখন তার নিকট দু’জন ফেরেশতা আসে ও তাকে বসায়, তারা তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমার রব কে? সে বলে: আমি জানি না। অতঃপর তারা বলে: তোমার দ্বীন কি? সে বলে: আমি জানি না।
অতঃপর তারা বলে: এ ব্যক্তি কে যাকে তোমাদের মাঝে প্রেরণ করা হয়েছিল? সে বলে: আমি জানি না, অতঃপর আসমান থেকে এক ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে যে, সে মিথ্যা বলেছে, তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও, তার দরজা জাহান্নামের দিকে খুলে দাও, ফলে তার নিকট তার তাপ ও বিষ আসবে এবং তার ওপর তার কবর সংকীর্ণ করা হবে যে, তার পাঁজরের হাড় একটির মধ্যে অপরটি ঢুকে যাবে। অতঃপর তার নিকট বীভৎস চেহারা, খারাপ পোশাক ও দুর্গন্ধসহ এক ব্যক্তি আসবে, সে তাকে বলবে: তুমি সুসংবাদ গ্রহণ কর, যা তোমাকে দুঃখ দিবে, এ হচ্ছে তোমার সে দিন যার ওয়াদা করা হত। সে বলবে: তুমি কে, তোমার এমন চেহারা যে কেবল অনিষ্টই নিয়ে আসে? সে বলবে: আমি তোমার খবিস আমল। সে বলবে: হে রব কিয়ামত কায়েম কর না”।
অর্থাত অবিশ্বাসীরা চাইবে যেন কিয়ামত সংগঠিত না হয়।
[ আমরা যদি অবিশ্বাসীদের মত নিজের খেয়াল খুশি মত জীবন পরিচালনা করি ,নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে দুনিয়া উপভোগে ব্যস্ত সময় পার করি তাহলে অবিশ্বাসীদের মতই হবে আমাদের অবস্থা ]
ডঃ আহমেদ আল হাব্বাস, খতিব, সোডর্স ,ডাবলিন ,আয়ারল্যান্ড।
অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত করন: মশিউর রহমান। সোডর্স ,ডাবলিন ,আয়ারল্যান্ড।
তারিখ: [শুক্রবার ,৩ জুলাই ,২০২০][ ১২ জিলক্বদ ১৪৪১]
আতিকুর রব শাহীঃ লাদাখ সী’মা’ন্তে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মা’রাত্ম’ক সংঘ’র্ষের পরে চীন ও ভারত তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেই চলছে। এরই মধ্যে সী’মা’ন্তে চীন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে
শক্তিশালী বিমান বি’ধ্বংসী ক্ষে’পণা’স্ত্র এস-৪০০ মোতায়েন করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো। ২০১৮ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে চীন এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কিনে। তাছাড়া চীনের হাতে থাকা এস-৩০০ সী’মা’ন্তে মোতায়েন করেছে বলে জানা গেছে।
এর ফলে চাপ বাড়ছে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। সবচেয়ে শক্তিশালী এই ক্ষে’পণাস্ত্র ব্যবস্থার সামনে দাঁড়ানোর মত সক্ষমতা ভারতের হাতে নেই। তবে চীনের সাথে উত্তেজনার ভেতরেই রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ পেতে চাইছে দেশটি।
ইতোমধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মস্কো সফর করেন যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হাতে পায়। ২০ মে থেকে লাদাখে আরো বিমান প্রতিরক্ষা ও রাডার ব্যবস্থায় স্থাপনে জোর দিয়েছে ভারত। যাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) জুড়ে তারা চীনা বাহিনীর উপর তী’ক্ষ নজর রাখতে পারে।
তবে প্র’তির’ক্ষা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সী’মা’ন্তে যারাই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এগিয়ে থাকবে মূলত তাদের হাতেই সী’মা’ন্তের নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এদিক থেকে চীন তার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভারতের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, চীনা লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্স (পিএলএএফ) এর অন্যতম প্র’তিবন্ধ’কতা হলো লাদাখ থেকে তাদের ঘাঁটিগুলো বেশ কিছু দূরে। এছাড়ও উচ্চতার কারণে, যু’দ্ধে জ্বালানি বা অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। অন্যদিকে লাদাখের আশেপাশে ভারতের বেশ কিছু ঘাঁটি রয়েছে।
পাঞ্জাব, হরিয়ানা, কাশ্মীর, লেহ এবং বাকী সমস্ত ঘাঁটিগুলো এখন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়া ইন্দো-রাশিয়ান ক্ষে’পণা’স্ত্র ব্রাহ্ম, ইউরোপীয় ক্ষে’পণা’স্ত্র নির্মাতা এমবিডিএর স্কাল্প ক্রুজ ক্ষে’পণা’স্ত্র ছাড়াও ইসরাইলের স্পাইস ২০০০ ক্ষে’পণা’স্ত্র ভারতকে সুবিধা দিতে পারে। আর ফ্রান্স থেকে ভারতের কাছে আসছে ছয় রাফাল যু’দ্ধবিমান। আশা করা হচ্ছে ভারতের হাতে আসা রাফাল যু’দ্ধবিমানের এটাই হবে প্রথম ব্যাচ।
ছবি কথা বলে। কর্ক থেকে রফিক ভাই কয়েকদিন আগে একটি ছবি পাঠালেন। ছবিটি সম্ভবত ২০০৯ সালে তোলা। ড সাইদুর রহমান সাহেব যখন লন্ডনস্থ হাইকমিশনার ছিলেন তখন তাকে লিমরিকের একদল উৎসাহী ও উদ্যমী তরুণ সংবর্ধনা জানানোর জন্য বিশেষ আমন্ত্রণের মাধ্যমে লিমরিকে আনেন। অনুষ্ঠানটি ইউনিভার্সিটি অফ লিমরিকে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। যতদূর মনে পড়ে এ জমকালো অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সর্ব জনাব শাহীন রেজা, তৌহিদূল ইসলাম টম (বর্তমানে লন্ডনে বসবাসরত), রফিক খান, জাহাঙ্গীর আলম, আমীরুল ইসলাম তপন, বাদল রহমান( সুইডেনে বসবাসরত), মিজানুর রহমান, আনোয়ারুল হক, আজাদ তালুকদার, আবদুর রহমান, মনিরুল ইসলাম ও আমি সহ অনেকেই। ওই অনুষ্ঠানে কে কি কথা বলেছিলেন এতো দিন পর আমার ঠিক সেইভাবে মনে নেই। তবে রফিক ভাই ছবিটি পাঠানোর সাথে সাথে দু একজন লোকের উদ্বৃত্তি তুলে ধরে কে কি বলেছিলেন তাও আমাকে মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
তার স্মৃতি থেকে দেয়া উদ্বৃত্তি অনুযায়ী, তিনি সহ টম ভাই, বাদল রহমান ও আরও কয়েকজন আয়ারল্যান্ডে একটি দূতাবাস বা কনসুলার অফিস গড়ে তোলার দাবি জানান। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের ছাত্রদের মতো চীনের শিক্ষার্থীরা যেভাবে কম ফি দিয়ে এ দেশে লেখাপড়া করতে আসে ঠিক তেমনি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও যাতে একইভাবে স্বল্প ফি দিয়ে পড়ালেখার সুযোগ পায় তা নিয়ে তিনি যেনো আইরিশ সরকারের সাথে আলোচনা করেন সে বিষয়েও তারা তাঁকে অনুরোধ জানান। বাঙ্গালি ছেলেমেয়েদেরকে বাংলা ভাষা শিক্ষা দানের জন্য আলাদা স্কুল ও বাংলা বইয়ের প্রয়োজন। সে বিষয়ে আমি যে তার পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেছিলাম তাও রফিক ভাই তার উদ্বৃত্তিতে তুলে ধরেন।
বস্তুত ওইদিন আমরা যে যতো কথাই বলিনা কেনো সব কথার মূল স্পিরিট ছিলো একটাই যেনো আয়ারল্যান্ডে একটি দূতাবাস গড়ে ওঠে। আল্লাহর অশেষ রহমতে এতো বছর পর সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের খবর যখন শুনলাম, বেশ ভালো লাগলো। তবে ক্রেডিবিলিটি নিয়ে যে কামড়াকামড়ি লক্ষ্য করা গেলো তা বেশ হতাশাজনক ও পীড়াদায়ক।
সমাজে যে কোনো গঠনমূলক কাজ একক প্রচেষ্টায় সাফল্যের চূড়ান্ত সীমায় পৌছাতে পারেনা। সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টাই তাকে সফলতা দান করে। ইতিহাস কি বলে? তুর্কিরা একসময় যাযাবর ছিলো। বাংলাদেশের বেদে শ্রেণীর মতো তারা আজ এখানে তো কাল ওখানে বসবাস করতো। অথচ তারাই পরবর্তীতে অটোমান সাম্রাজ্যের অধিকারী হন। একজন সাহসী যুদ্ধা ছিলেন। আর্তুগ্রুল। যেমন ন্যয়পরায়ন তেমনি নির্ভীক ও প্রজ্ঞাবান। তার নেতৃত্বে বছরের পর বছর হাজার হাজার মানুষ যুদ্ধ করেছে, শহীদ হয়েছে। একসময় তারা যুদ্ধের ফসল হিসেবে, শহীদানদের ফসল হিসেবে পেয়েছে সাম্রাজ্য। এ সাম্রাজ্য প্রাপ্তির পেছনে কি শুধুই আর্তুগ্রুলের ক্রেডিবিলিটি? যারা শহীদ হয়েছেন, যারা আর্তুগ্রুলকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন কিংবা তার সহযোদ্ধাদের কি কোনোই ক্রেডিট নেই?
ইউনিভার্সিটি অফ লিমরিকে লন্ডনস্থ হাইকমিশনার ড সাইদুর রহমানের সাথে কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ
আমাদের বঙ্গবন্ধুর কথা ধরা যাক। তিনি কি কেবল একক প্রচেষ্টায় একদিনে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন? তাঁর বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার পেছনে যে কতো লোকের আত্মত্যাগ ও সহযোগিতা রয়েছে তাতো তিনি নিজেই তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বিশদ ভাবে লিখে গিয়েছেন। তাছাড়া তাঁর নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যে স্বাধীনতা পেলাম তাও কি কেবল তার একারই ক্রেডিট? জাতীয় চার নেতা সহ লক্ষ লক্ষ শহীদ, বীরাঙ্গনা ও অগণিত মুক্তিযোদ্ধাদের কি কোনোই ক্রেডিট নেই?
আইরিশদের সেইন্ট পেট্রিকস ডে বলতে গেলে সারা বিশ্বে এখন সমান ভাবে পালিত হয়। তারা যখন প্রথম আমেরিকায় দিনটি উদযাপন করতে দল বেঁধে রাস্থায় বেরুল স্থানীয় পত্রিকা গুলো তখন তাদেরকে মাতাল ও উশৃঙ্খল বানরের সাথে তুলনা করে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করে। স্থানীয়দের এ ব্যঙ্গ উপলব্ধি করে বিষয়টা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নেয় আইরিশ সাহায্যকারী সামাজিক সংগঠন গুলো। তারা নিজেদেরকে সংঘবদ্ধ করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। এ সংঘবদ্ধ করার কাজটি করেছিলেন হাতেগুনা মাত্র দু একজন। আজ সারা বিশ্ব ব্যাপী দিনটি যেভাবে উদযাপিত হয় তার পেছনে কি কেবল ওই দু একজনের ক্রেডিবিলিটিই লুকিয়ে আছে?
এসব উদাহরণের কোনো অভাব নেই। খুঁজলে ভুরি ভুরি পাওয়া যাবে। আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস গড়ে উঠার যে সুসংবাদটি সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে মানুষের হৃদয়ে রেখাপাত করেছে তাও কোনো ব্যক্তির একক প্রচেষ্টার একদিনের ফসল নয়। জানি বর্তমান সাংসদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না সাহেবের একজন সাবেক আয়ারল্যান্ড প্রবাসী হিসেবে আয়ারল্যান্ডের প্রতি তার একটু বাড়তি সহানুভূতি রয়েছে। তিনি যেহেতু এ দেশে থেকে গেছেন তাই তিনি নিজেও আয়ারল্যান্ডে দূতাবাসের প্রয়োজনীয়তা বেশ ভালো ভাবেই উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। যার ফলে দূতাবাস স্থাপনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। সন্দেহাতীত ভাবে তার কৃতিত্ব রয়েছে। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু এর অর্থ তো এই নয় যে একাই তিনি সব ক্রেডিবিলিটির মালিক।
আমরা আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছি প্রায় ১৮/২০ বছর যাবৎ। শুরু থেকেই সবাই একটি দূতাবাসের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। সে প্রেক্ষাপটে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ স্ব স্ব অবস্থান থেকে এ দাবিটি সরকারের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মান সফরে এলে আয়ারল্যান্ড থেকে মোনায়েম খন্দকার রানা সেখানে যান এবং তিনি এ দাবিটি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন বলে আমাকে জানান।কর্কের রফিক খান বিভিন্ন সময় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক সফর গুলোতে সুযোগ পেলেই এ দাবিটি নেতাদের সামনে আনার চেষ্টা করেছেন। এমনকি বাংলাদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালেও তিনি প্রথম দূতাবাসের প্রয়োজনীয়তার কথাটি মন্ত্রীকে জানান। পরবর্তীতে তিনি ও লিমরিকের আনোয়ারুল হক (আনোয়ার) একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে আলাদা আলাদা ভাবে টক শোতে যোগদান করলে সেখানেও তারা দূতাবাসের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন ও তা বাস্তবায়নের জন্য জোরালো দাবি জানান।
এই অধম টুকটাক লেখালেখি ছাড়া কোনো কাজেরই নই। তাই লেখার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে দাবিটির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। এ বিষয়ে ২০১২ সালে আমার লেখা বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো। সুহৃদ পাঠকদের সদয় অবগতির জন্য দুটো লিংক তুলে ধরলাম। https://www.deshebideshe.com/home/printnews/2210 https://m.banglanews24.com/national/news/bd/75372.details
ডাবলিনের মোঃ ফিরোজ, অলক, সমীর ধর, রিয়াজ খন্দকার, জসীম উদ্দিন, হাফিজুর রহমান লিঙ্কন সহ আরো কয়েকজনের সময়োপযোগী প্রচেষ্টাও এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস স্থাপিত হলে জনগণের কি সুযোগ সুবিধা বা সরকারের লাভ লোকসান কতোটুকু এ বিষয়ে একটি এসেসমেন্ট জমা দেয়ার কাজটি তারা বেশ দক্ষতার সাথে করতে সচেষ্ট হয়। যার ফলে সরকার অফিসিয়ালি বিষয়টি নিয়ে কিছুটা তাগিদ অনুভব করে।
আমরা যদি আরেকটু পেছনের দিকে তাকাই দেখা যাবে আমাদের আগে যারা এ দেশে বসতি স্থাপন করেছিলেন তারাও আয়ারল্যান্ডে যেনো একটি দূতাবাস কিংবা নিদেনপক্ষে একটা কনসুলার অফিস গড়ে ওঠে সে ব্যাপারে শুরু থেকেই চেষ্টা তদবির চালিয়ে গেছেন। কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সর্ব প্রথম জনাব শাহনেওয়াজ টুটুলের হাত ধরেই আয়ারল্যান্ডে কনসুলেট সার্ভিসের সূচনা পর্ব শুরু হয়। তারপর মোস্তাফিজ ভাই সহ ডাবলিন ভিত্তিক একটি সামাজিক সংগঠনের অনেক সদস্যই তার সাথে যুক্ত হন। ওই সময় তারা কেবল কনসুলেট সার্ভিসের ব্যবস্থা করার মধ্যেই নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রাখেননি বরং তখন থেকেই যেনো আয়ারল্যান্ডে একটি দূতাবাস বা কনসুলার অফিস গড়ে ওঠে সে ব্যাপারে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। লন্ডন থেকে যখনই কোনো হাইকমিশনার আয়ারল্যান্ডে এসেছেন তখনই তারা এ দাবিটি তাদের সামনে তুলে ধরেছেন।
মূলত কমিউনিটি বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত সকল বাঙ্গালিরই সরকারের কাছে একটি দাবি ছিলো, যে কোনো মূল্যে আয়ারল্যান্ডে একটি দূতাবাস গড়ে তোলা। সুখের বিষয়, সবার সার্বিক প্রচেষ্টায় তা বাস্তবায়নের মুখ দেখতে যাচ্ছে। এখানে কারো কৃতিত্ব কম নয়। কারো অবদানকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। “শুধু আয়ারল্যান্ডের অধিবাসী” এ কারণটার জন্যই যে কেউ এ কৃতিত্বের দাবি রাখে। তাই বলবো, কার ক্রেডিট বেশি বা কম এ নিয়ে কোনো মন কষাকষি নয়, বরং গৃহীত সিদ্ধান্তকে কিভাবে দ্রুত কার্যকরী করা যায় সে লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। সরকার মাত্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আমাদেরকে থেমে থাকলে চলবেনা। দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে সম্মিলিত ভাবে চাপে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
খন্দকার মুঈনউদ্দিন অপুঃ ২০২০সালের হজ্জের বহুল কাঙ্খিত লগ্ন এমন একটি সময় এসেছে, যখন কভিট ১৯ এর কালো থাবায় দুনিয়াব্যাপি মৃত্যুর মিছিলের সারি বেড়েই চলছে। হজ্জকে উদ্দেশ্যকরে যখন বাইতুল্লাহ্য় হাজীদের উচ্চারিত লাব্বায়েক আল্লাহ্হুম্মা লাব্বায়েক, লাব্বায়েক লা-শরিকালাকা লাব্বায়েক, ইন্নাল হামদা, ওননেয়েমাতা লা-শরিকালাকা লাক, স্বরে আকাশ বাতাশ মুখরিত থাকার কথা ঠিক সে সময় তার চিত্র ভিন্ন। এখন পর্যন্ত সৌদি হজ্জমন্ত্রীসভা বহিরবিশ্বের কোন দেশকে হজ্জব্রত পালন করার জন্য অনুমতি প্রদান করেননি। যতটুকু সংবাদ পেয়েছি তাতে হজ্জব্রত পালন সৌদিয়ারব নিজ দেশের মধ্যে সিমাবদ্ধ রাখবেন যতকক্ষননা কভিট ১৯ নামক মহাদূরযোগ কেটে যায়।
হজ্জের আভিধানিক অর্থ: হজ্জ শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘আল-কাছদু’ কোন বিষয়ের বা কাজের ইচ্ছা বা সংকল্প গ্রহণ। আরবি ভাষায় হজ্জ হচ্ছে যিয়ারতের সংকল্প করা। শরীয়তের পরিভাষায় হজ্জ হলো আল্লাহ্তায়ালার ঘরের প্রতি সম্মান ও মহাত্ম প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কতকগুলি বিষেশ ও নির্দিষ্ট কাজ সহকারে মহান ঘরের যিয়ারতের সংকল্প গ্রহণ। আরবি জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে ফরজ হজ্জ পালন করতে হয়। হজ্জ প্রধানত ৩ প্রকার, ১. হজ্জে ইফরাদ ২. হজ্জে কেরান ৩. হজ্জে তামাত্তু।
হজ্জের ইতিহাস- অধিকাংশ আলেমদের মতে ষষ্ঠ হিজরী সনে মদীনা শরীফে হজ্জ ফরজ করা হয়েছে। ইমাম কুরতুবীর মতে ৫ম হিজরী সনে হজ্জ ফরজ হয়েছে। আল্লামা মাওয়ার্দীর মতে ৮ম হিজরী সনে হজ্জ ফরজ হয়েছে। হজ্জের ইতিহাস অতি প্রাচীন। পৃথিবীতে মানুষ বসবাসের শুরু থেকে এমনকি আরও আগে থেকে। সর্বপ্রথম যখন হযরত আদম (আঃ) ভারত উপমহাদেশ থেকে মক্কা শরীফ গিয়ে হজ্জ পালন করেন, তখন জিবরাঈল (আঃ) বলেছিলেন- আপনার ৭ হাজার বছর আগে থেকে ফেরেশতারা এই ঘরের তাওয়াফ করে আসছে। কথিত আছে হযরত আদম (আঃ) ভারত থেকে পদব্রজে ৪০ বার হজ্জ পালন করেছিলেন। এরপর বহু বাছর চলে যায়। বিশেষত হযরত নূহ (আঃ) –এর মহাপ্লাবনের পর এ ঘর বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং এ এলাকা জনমানবশূণ্য হয়ে পড়ে।
হযরত ইবরাহীম (আঃ) প্রায় ৪ হাজার বছর আগে ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন। তার বংশেই হযরত মূসা (আঃ), হযরত ঈসা (আঃ) এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই ৩জন শ্রেষ্ঠ নবী জন্মগ্রহণ। তখন সমগ্র দুনিয়ার মানুষ আল্লাহ্তায়ালাকে ভুলে বসেছিল। যে জাতির মধ্যে তার জন্ম হয়েছিল সে জাতির লোকেরা যদিও তখনকার পৃথিবীর উন্নত জাতি ছিল, কিন্ত পথভ্রষ্ট হওয়ার দিক দিয়ে তারা ছিল অগ্রগামী। তারা আকাশের তারকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জীব যন্তু, মাটি ও পাথর নির্মিত মূর্তির পূজা করত। তারা জ্যোতিষশাস্ত্র, জাদুবিদ্যা ও ঝাড়ফুকের চর্চা করত। বিভিন্ন দেবদেবী তৈরি করে এদেরকে পূজা করত এ আশায় যে, এদের খুশি করতে পারলে তাদের মঙ্গর সাধিত হবে। শুধু তাই নয় রাজা বাদশাহদেরকেও তারা সেজদা করত, আল্লাহ্তায়ালার অংশ মনে করে। উল্লেখ্য যে তিনি যে বংশে জন্মগ্রহণ করেন সে বংশটাই ছিল পেশাদার ও বংশানুক্রমিক পূজারী। তার বাপ দাদাও ছিলেন আপন বংশের পন্ডিত পুরেহিত। কিন্তু তার বিবেক সেসব পূজারীদের অনুসরন করতে সায় দিল না। বরং তিনি বললেন: আমার রব কেবল তিনিই হতে পারেন যিনি সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন, সকলেই যার মুখাপেক্ষী এবং যার হাতে সকলেরই লাভ-ক্ষতি ও জীবন-মৃত্যু। তাই তিনি উপাস্য মুর্তিগুলোকে পরিত্যাগ করে ঘোষণা দিলেন- “ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজ হিয়ালিল্লাযি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদোয়া হানিফাও ওমা আনা মিনালমুশরিকীন” অর্থাৎ- আমি সবদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে বিশেষভাবে কেবল সেই মহান সত্তাকেই ইবাদত বন্দেগীর জন্য নির্দিষ্ট করলাম, যিনি সমস্ত আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের মধ্যে শামিল নই। (সূরা আনআম)
এ বিপ্লাবাত্বক ঘোষণার পর হযরত ইব্রাহীম (আঃ) -এর উপর মুসীবতের পাহাড় ভেঙ্গে পড়ল। তার পিতা তাকে পরিত্যিাগ করল। সমগ্র জাতি তাকে আশ্রয়হীন করল। সত্যের জন্য তিনি একাই মাথা তুলে দাড়ালেন। রাজার দরবার থেকে ফয়সালা হল তাকে জীবন্ত জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়া হবে। সে ব্যবস্থাও করা হল। তারপর আল্লাহ্তায়ালার অনুগ্রহে মুক্তি পেলেন তখন সবকিছু ছেড়ে শুধু নিজের স্ত্রী ও ভ্রাতুস্পুত্রকে সাথে নিয়ে শত বিপদের মোকাবেলা করে সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিশর এবং আরব দেশসমূহে ঘুরতে থাকলেন। কিন্তু কোথাও শান্তিতে বসবাস করতে পারলেন ন। তার একমাত্র অপরাধ ছিল তিনি যেখানে যেতেন সেখানেই বলতেন- আল্লাহ্তায়ালা ছাড়া আর কোন মালিক নাই, প্রভু নাই, মুনিব নাই, সকলে শুধু তারই এবাদত করো। এভাবে তার গোটা যৌবনকাল অতিবাহিত হয়ে কালো চুল সাদা হয়ে গেল।
জীবনের শেষভাগে ৮৬ বছর বয়সে যখন সন্তান লাভের কোন আশা ছিল না তখন আল্লাহ্তায়ালার আদেশে স্ত্রী বিবি হাজেরা (আঃ) ও বৃদ্ধ বয়সে পাওয়া সন্তান ইসমাঈল (আঃ)কে লুপ্ত কাবা ঘরের নিকটবর্তী জনমানবশূণ্য স্থানে রেখে গেলেন। আল্লাহ্তায়ালার ইচ্ছার কথা জেনে বিবি হাজেরা সবর করলেন। ইব্রহীর (আঃ)-এর রেখে যাওয়া সামান্য পানীয়, খাদ্য কয়েকদিনের মধ্যে ফুরিয়ে গেল। মা ও শিশু ক্ষুধায় পিপাসায় কাতর। মা হাজেরা নিকটস্থ সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের উপর উঠে চারিদিকে তাকালেন যদি কোথাও কোন কাফেলা বা পানির সন্ধান পাওয়া যায়। এভাবে ৭ বার সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করে হতাশ হৃদয়ে শিশু পুত্রের নিকট এসে দেখলেন, মাটি ফুরে স্বচ্ছ পানির ধারা বইছে। এটাই জমজম কূপের উৎস। মা ও সন্তান তৃপ্তি সহকারে পানি পান করে আল্লাহ্তায়ালার শুকরিয়া আদায় করলেন। বাণিজ্য কাফেলা মরূভূমির বুকে পানির সন্ধান পেয়ে মা হাজেরার অনুমতি নিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করল। ধীরে ধীরে মক্কা জনপদে পরিণত হল। পরবর্তীতে আল্লাহ্তায়ালা লূপ্ত কাবা ঘরের স্থানটি দেখিয়ে তা পুনঃনির্মাণের আদেশ দিলেন। ইব্রাহীম (আঃ) পুত্র ইসমাঈল (আঃ)কে সাথে নিয়ে পবিত্র কাবাগৃহ পুনঃনির্মাণ করলেন। যে পাথরটির উপর দাড়িয়ে তিনি এ সুউচ্চ ঘরটি নির্মাণ করলেন তা আধুনিক লিফ্ট এর কাজ করলো। যা মাকামে ইব্রাহীম নামে আজও বিদ্যমান। এরপর আল্লাহ্তায়ালাতায়ালা ইব্রাহীম (আঃ)কে আদেশ দিলেন যে, “এবং মানুষের নিকট হজ্জের ঘোষণা করে দাও। তারা তোমার নিকট আসবে পায়ে হেটে এবং সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উটের পিঠে করে, [উটগুলো] আসে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে।” (সূরা হজ্জ)। আল্লাহ্তায়ালার আদেশে ইব্রাহীম (আঃ) এর ঘোষণা সমস্ত জীবজগৎ এমনকি রূহ জগতেও আল্লাহ্তায়ালা পৌছে দিলেন। হজ্জ শুরু হওয়ার এটাই গোড়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ।
হজ্জ ফরয হওয়ার শর্ত- মুসলমান হওয়া, স্বাধীন হওয়া, আকেল বা বুদ্ধিমান হওয়া, বয়োপ্রাপ্ত হওয়া, সুস্থ হওয়া, আর্থিক ও শারিরীক সামার্থবান হওয়া ইত্যাদি।
হজ্জের ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব- প্রোত্যেক ধনী ও সম্পদশালী মুসলিম ব্যক্তির উপর জীবনে একবার হজ্জ পালন করা ফরয। এর অস্বীকারকারী সুস্পস্ট কাফের (সূরা আলে-ইমরান:৯৭)। এটা একাধারে দৈহিক, আত্মিক ও আর্থিক ইবাদত বিধায় এর ধর্মীয় গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ্পাক বলেন- “আর তোমরা আল্লাহ্তায়ালার উদ্দেশ্যে হজ্জ ও ওমরা পরিপূর্ণভাবে পালন কর”। (সূরা আল-বাকারা : ১৯৫)। হজ্জ পালনের মাধ্যমে ঈমানের পরিপূর্ণত ও দৃঢ়তা লাভ করা সম্ভব হয়। হজ্জ পালনের মাধ্যমে আল্লাহ্তায়ালাপাক মানুষের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেন। আল্লাহ্তায়ালার নবী (সঃ) বলেছেন- “যে ব্যক্তি এ ঘরে (কাবায়) হজ্জ করতে এলো এবং কোন প্রকার অন্যায় কাজ করলনা কিংবা কোন অশ্লীল কথা বললনা, সে এমন (পবিত্র) হয়ে প্রত্যাবর্তন করলো, যেমন তার মা তাকে নিস্পাপরূপে ভূমিষ্ট করেছিলো (বুখারী-মুসলিম)। হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে মুসলিম নর ও নারী সাদা পোশাক পরিধান করে থাকেন। নগ্ন পদ ও শূণ্য মস্তিস্ক নিজের সকল আমিত্বকে এক আল্লাহ্তায়ালার খুশির জন্য বির্সজন দিয়ে পরকালের মুক্তির আশায় আল্লাহ্তায়ালার দরবারে ধরনা দেয়, যাতে করে পরকালে হাশরের ময়দানের কথা স্মরণ হয়। হজ্জ পালনের সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। হজ্জ মুসলিম জাহানের এক মহা সম্মেলন। কোন মুসলমানই তা অস্বীকার করতে পারেনা। সমস্ত মুসলমানকে এক ঐক্যে ও ভ্রাতৃত্বে সৃষ্টি করে দেয়। হজ্জ বিশ্বের মানুষের বর্ণবাদ, গোত্রবাদ, সমাজবাদকে ভুলিয়ে এক আল্লাহ্তায়ালার গোলাম বনিয়ে দেয়। তাই ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে হজ্জের শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।
আয়ারল্যান্ড থেকে হজ্জে অংশগ্রহন পদ্ধতি- আয়ারল্যান্ড থেকে প্রধান দুটি অর্গানাইজেশন হজ্জ যাত্রীদের জন্য ব্যাবস্থা করে থাকেন। যেমন- মানাসিক টুর ও ডাবলিনের সাউথ সার্কুলার মসজিদ। উভয়ের সার্ভিসে বিগত বেশিরভা হজ্জযাত্রীরাই সন্তষ্ট বলে যানাযায়। যদিও তাদের উভয়ের সার্ভিস ভিন্ন। মানাসিক মক্কা থেকে শুরু করে মদিনাতে ট্রিপ সমাপন করে। আর সাউথ সার্কুলার মসজিদ মদিনা থেকে শুরু করে মক্কায় গিয়ে ভ্রমন শেষ কর থাকে। এ দুই পদ্ধতিতে দুই রকম সুবিধা ও অসুবিধা আছে। কেউ যদি মনেকরে থাকেন যে আমি আগে হজ্জের ফরয দায়িত্বগুলো শেষ করতে চাই তিনি মানাসিক এর সাথে যেতে পারেন। আবার কেউ যদি মনেকরেন যে আমার হজ্জের শেষ চিত্রটি কাবার সাথে হোক তিনি সাউথ সার্কুলার রোড মসজিদ থেকে যেতে পারেন। আমাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে আমাদের সুবিধা ও অসুবিধা। হজ্জ যাত্রীরা উভয় অর্গানাইজেশন থেকেই হজ্জ ট্রেনিং পেয়ে থাকেন।
যদিও ওমরা পদ্ধতি হজ্জ মন্ত্রীসভা অনলাইন সিস্টেম চালু করে বিগত দিনের তুলনায় অনেক সহজ করে দিয়েছেন। ওমরা পালন করার জন্য কোনো অর্গানাইজেশনের স্বরনাপন্ন নিষপ্রয়োজন। ইতিমধ্যে আয়ারল্যান্ড থেকে অনেক মুসলমান ভাই ও বোন নিজের প্রচেষ্টায় এবং সহজে ওমরা পালন করে এসেছেন।
হজ্জ প্রেত্যেক মানুষকে তার মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এ সৃষ্টি জগতের কোন সৃষ্টিজীবই পৃথিবীবে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেনা। সকলকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। পৃথিবীতে কোন মানুষই আল্লাহ্তায়ালার নির্ধারিত সময়ের বেশি জিবীত থাকতে পারেনি এবং পারবেওনা। তাই হজ্জ পালনের মাধ্যমে আল্লাহ্পাক তার বান্দাদেরকে এ শিক্ষাই দান করে থাকেন। আমাদের ব্যাক্তি জীবনে যাদের হজ্জ পালন করার সামর্থ আছে তাদেরকে যেন আল্লাহ্তায়ালা তার ঘর পরিদর্শন করার জন্য কবুল করেন এবং যাদের হজ্জ পালনের সামর্থ নেই তাদেরকে যেন আল্লাহ্তায়ালা হজ্জ পালন করার সামর্থ দান করেন। আমিন।
গতকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা প্রয়াত আলহাজ মোহাম্মদ নাসিম স্মরণে ডাবলিন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ডিজিটাল প্লাটফর্ম জুম এ এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডাবলিন আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব ফিরোজ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অলক সরকার। অনুষ্ঠানের শুরুতে মহা দুর্যোগ করোনায় প্রয়াত সকল বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মাননা প্রদর্শন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না জননেতা নাসিম সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন নাসিম সাহেবের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগ একজন বলিষ্ঠ, দৃঢ়চেতা ও জনদরদী নেতা এবং সিরাজগঞ্জ হারালো তাদের প্রাণপ্রিয় সিংহ পুরুষকে। ওনার এই অভাব শত বৎসরেও পূরণ হবার নয়। তিনি আমাদের সকলের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
ছবি: ডাবলিন আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ
প্রয়াত নাসিম ভাইয়ের আস্থাভাজন ও ওনার সান্নিধ্যে আসা ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আল আমিন নাসিম ভাই সম্পর্কে বলেন জনদরদী এই নেতা হাসপাতালের শয্যায় থেকেও মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তিনি নির্দেশ দিতেন কোথায় কি করতে হবে।আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকাবস্থায় আন্দোলন সংগ্রামে নাসিম ভাই ছিলেন অগ্রদূত। এই নেতা শুধু সিরাজগঞ্জ জেলাতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি সারা দেশ জুড়ে দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন।
জার্মানির বাংলাদেশ হাইকমিশনের অনারারি কনস্যুলার ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া জানান নাসিম সাহেবের পরিবার সেই স্বাধীনতা লগ্ন থেকে-ই দেশপ্রেমে উজ্জীবিত। বংশ পরম্পরায় নাসিম সাহেবও দেশের প্রতি আনুগত্য থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে দলকে দু:সময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশ একজন দেশপ্রেমিক নেতা হারিয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ যুবলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক ডক্টর সাজ্জাদ হায়দার বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকাকালে এমন কোনো মিটিং-মিছিল ছিল না যেখানে নাসিম ভাই ছিল না। প্রতিটি মিছিল মিটিংয়ে তিনি সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতেন। ওই সময়ের সরকারী দল দ্বারা নিগৃহীত হওয়া স্বত্তেও তিনি পিছু হটেন নি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী বলেন নেতা ও বক্তা হিসাবে শ্রদ্ধেয় নাসিম ভাই ছিলেন অদ্বিতীয়। তাদের সময়ে ছাত্রলীগের যেকোনো অনুষ্ঠানে তিনি চলে আসতেন প্রধান অতিথি হয়ে অথবা মূল বক্তা হিসেবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এই নেতা করিৎকর্মা ছিলেন তাই তিনি দলের অনেক গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন।
ছবি: আলোচনায় বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ময়মনসিং-৭, ত্রিশাল এলাকার সাংসদ এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী ওনার বক্তব্যে নাসিম ভাই সম্পর্কে বলেন একজন মেধাবী ও সাহসী নেতা নাসিম ভাই যেকোনো গুরুদায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতেন। তার মেধা ও গুণাবলীর জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্রের দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং তিনি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছিলেন। ওনার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একজন তারকা নেতা হারালো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের সকল প্রয়াত নেতাদের স্মরণে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর জন্য দোয়া কামনা করা হয়।
অনুষ্ঠানের শেষে ডাবলিন আওয়ামী লীগ ও উপস্থিত সকলের পক্ষ থেকে রুহুল আমিন মাদানী ভাইকে আগামীতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও হাবিবে মিল্লাত ভাইকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর অনুরোধ করা হয়।
উপস্থিত সকলে আশা প্রকাশ করেন এই পরিবর্তন হলে দল ও জনগণ উভয়েই উপকৃত হবেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ডাবলিন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাসুদ শিকদার, শাহাদাত হোসেন, আব্দুল বাসেত কিবরিয়া, নানু আলী খান, সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান লিঙ্কন, দিপু ফিরোজ, টিটু খন্দকার, মোহাম্মদ সুমন, সাইফুর রহমান বাবলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ খন্দকার, সাইফুল ইসলাম রবিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সমীর কুমার ধর ও দিলদার হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মুন্না সৈকত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাসির আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খাইরুল ইসলাম পায়েল, সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ খালেক, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক শিশির ইসলাম।
আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ থেকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি মোনায়েম খন্দকার রানা, সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক খান ও জসিম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সহ-সভাপতি স্বপন দেওয়ান, নজরুল ইসলাম মানিক।
আয়ারল্যান্ড বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফয়জুল্লাহ শিকদার, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান নান্না।
আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ।
কাউন্টি ওফেলি আওয়ামী লীগ থেকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মামুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান শুভ্র, সহ-সভাপতি দেবেশ কর্মকার, দপ্তর সম্পাদক তামান্না ফারিয়া।
কাউন্টি কর্ক আওয়ামী লীগ থেকে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন
কাউন্টি লিমেরিক আওয়ামী লীগ থেকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপদেষ্টা সাজেদুল চৌধুরী রুবেল ও জাহাঙ্গীর আলম।
কাউন্টি গলওয়ে থেকে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ বদরুল ইসলাম।
কাউন্টি ওয়েক্সফোর্ড থেকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আরমান কাজী।
উপস্থিত ছিলেন, আয়ারল্যান্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এ আর নয়ন। আয়ারল্যান্ড ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক রিব্বী ইসলাম।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি লিঙ্কন মোল্লা, পর্তুগাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মোল্লা, গ্রীস আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিন, স্পেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শাকিল খান পান্না ও বর্তমান সভাপতি বোরহান উদ্দিন, ইংল্যান্ডের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন হায়দার, জার্মান আওয়ামীলীগের নেতা সেলিম ভূঁইয়া।
২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল বিক্রি করেছিলো বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তখনকার ক্রীড়ামন্ত্রী মাহিন্দানন্দা আলুথগামাগে।
গত ১৮জুন বৃহস্পতিবার সিরিসা টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, “আজ বলছি আমরা ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল বিক্রি করেছি। আমি তখনকার ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম। আর এই কথাটা আমি বিশ্বাস করি”।
ক্রীড়ামন্ত্রী মাহিন্দানন্দা বলেন, ২০১১ তে আমরা জয়ের পথেই ছিলাম। কিন্তু ম্যাচটা আমরা বিক্রি করেছি। এতোদিন সেই ঘটনার কথা ফাঁস করিনি। মনে হচ্ছে এখন এটা নিয়ে কথা বলা যায়। খেলোয়াড়দের জড়াচ্ছি না। তবে কিছু জায়গা জড়িত ছিল। তিনি আরও বলেন, ওই ম্যাচ হওয়ার পর থেকেই একে ঘিরে নানা গুঞ্জন, জল্পনা চলে আসছে ক্রিকেট বিশ্বে। সেদিনের ম্যাচে লংকান ক্রিকেটারদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।
সে সময় ম্যাচটি পাতানো হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ শ্রীলংকার ’৯৬ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা। ওই ম্যাচে ধারাভাষ্যের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রানাতুঙ্গা বলেছিলেন, ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। আমি মনে করি না শ্রীলঙ্কাকে এতো সহজে হারাতে পারত ভারত।
ওমর এফ নিউটনঃ জনাব আজাদ তালুকদার যখন কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন তখন আমাদের আনন্দের সীমা ছিল না। প্রথম বাংলাদেশী কাউন্সিলর, গর্ব করার মতই বিষয়। এর পর বছর না গড়াতেই দল থেকে জনাব আজাদ তালুকদার ডেপুটি মেয়র বা সহকারী নগরপিতা হিসেবে মনোনয়ন পেলেন। প্রথম বার নির্বাচন করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হবার মত করেই সবাইকে অবাক করে দিয়ে ডেপুটি মেয়রও নির্বাচিত হয়ে গেলেন। এখন আমরা বাংলাদেশীদের গর্ব বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেল। এত স্বল্প সময়ে যে নগরপিতাও পেয়ে যাব তা ভাবতেই পারিনি। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।
জনাব আজাদ তালুকদারের কাউন্সিলর হিসেবে অভিষেক এর এক বছরেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন দক্ষ, যোগ্য ও বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে। তাঁর কাজ ও কাউন্সিলর হিসেবে গুণাবলীতে মুগ্ধ হয়েই তাঁর দল তাঁকে ডেপুটি মেয়রের জন্য মনোনয়ন দেয়। তারপর সব দলের সব কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমেই নির্বাচন করা হয় ডেপুটি মেয়রকে। ভিন্ন জাতির, ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন বর্ণের কাউকে সহকারী নগরপিতা হিসেবে নির্বাচিত করার একটাই কারণ, তা হচ্ছে জনাব আজাদ তালুকদারের অসামান্য যোগ্যতা।
Limerick Deputy Mayor Azad Talukdar
কাউন্সিলর হিসেবে জনাব আজাদ তালুকদার ইতিমধ্যে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন। সিটি কাউন্সিলের উন্নয়নমূলক কাজের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছেন কমিউনিটির উন্নয়নে। তার একটা উদাহরণ হল, সম্প্রতি মুসলমানদের জন্য আলাদা কবরস্থানের জন্য বরাদ্দ নিচ্ছিত করা। এছাড়াও কমিউনিটির বহু সুবিধা অসুবিধা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
ডেপুটি মেয়র হিসেবে জনাব আজাদ তালুকদার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তন্মদ্ধে COVID-19 পরবর্তী সময়ে আভ্যন্তরীণ ট্যুরিজম সম্প্রসারণে পদক্ষেপ গ্রহণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে কাজ, অভিবাসীদেরকে সাথে নিয়ে কমিউনিটির উন্নয়ন ও অভিবাসীদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে কাজ করা অন্যতম। এছাড়াও বর্তমান বর্তমান মেয়রের সাহায্যে সর্বদা কাজ করে যাবেন।
ডেপুটি মেয়র হিসেবে জনাব আজাদ তালুকদারকে বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। সহকারী নগরপিতা হিসেবে বরাবরের মতই তাঁর সফলতা সর্বাগ্রে কাম্য।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু করতে সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের স্থলবন্দরগুলো খুলে দেয়া হয়। কিন্তু ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য প্রবেশ স্বাভাবিক থাকলেও বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ বন্দর দিয়ে ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে না ভারত।
বিষয়টি দুদেশের মধ্যকার চুক্তির লঙ্ঘণ হিসেবে দেখছে ঢাকা। তবে এ সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে ইতোমধ্যে দিল্লিকে চিঠিও পাঠিয়েছে ঢাকা। পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে নৌ সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আছি। আপাতত এটুকু বলতে পারি যে, বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশের বাধা দূর করতে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চলছে। আশা করছি, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।
প্রথমদিকে ডাক্তার এবং নার্সরা পিপিই কিভাবে পরতে হবে খুলতে হবে এসব জানতেন না বিধায় তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি’র। মঙ্গলবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাব বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে করোনার কারনে ডেথ রেট অন্যান্য দেশের তুলনায় কম বলে জানান। এ সময় মন্ত্রী বলেন, “ডাক্তারদের নার্সদের আমরা ট্রেইন্ড করেছি। পিপি কিভাবে পড়তে হবে, খুলতে হবে এই বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। তাদেরকে আমরা ট্রেইন্ড করেছি। তারপরে আক্রান্তের হার কমে গেছে।”
মন্ত্রী এসময় করোনাকালে দুই হাজার ডাক্তার এবং ছয় হাজার নার্স নিয়োগের ব্যাপারটি উল্লেখ করেন ।
রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর শ্যামবাজার এলাকায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চ ডুবে গেছে আজ সকাল নয়টার দিকে। এখনো উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ড।,
বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২ পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছোট এই লঞ্চটি বড় একটি লঞ্চের সাথে ধাক্কা খেয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ডুবন্ত লঞ্চ থেকে অনেক আরোহী সাঁতার কেটে তীরে আসতে সক্ষম হলেও এখনো বহু লোকের সন্ধান মিলছে না।
সকল মৃত যাত্রীর আত্মার মাগ ফেররাত কামনা করছি এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি
বৈশ্বিক করোনা সংকটে বড় ধরণের ধাক্ষা খেলো সবচেয়ে বড় যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ,টুইটার ও ইনস্টোগ্রাম । এই তিনটি মাধ্যমে বিজ্ঞাপন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার ইউএসএ (Unilever USA) । কিন্তুু হঠাৎ করে বহুজাতিক এই প্রতিষ্টানটি কেন এই সিদ্ধান্ত নিলো সে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত সংশ্লিষ্ট মহল ? তবে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে উঠা বর্ণবাদ বিরোধী গণআন্দোলন পরবর্তী ঘটনাকে সামনে রেখে উক্ত প্রতিষ্টানটি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন ।
স্বেতাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের পর সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাদা-কলোর দ্বন্দ্ব নিরসনে যে গণআন্দোলন গড়ে উঠেছিল সমগ্র দেশব্যাপী তাহার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় টানাপোড়েনের । যেখানে আন্দোলনকারীদের গুলি করার হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প । পরবর্তীতে মিথ্যে তথ্য সম্বলিত ট্রাম্পের টুইটে পাবলিক সেন্টিমেন্ট গণআন্দোলনে রুপ নেওয়ার আশংকায় টুইটার কর্তৃপক্ষ তা সরিয়ে নেয় ।
এরপর ফেইসবুক জুড়ে বিশ্বব্যাপী শুরু হয় এক অভিন্ন আন্দোলন । অনেকে ব্যবহারকারীরা ছাড়তে থাকেন মাধ্যমটি । দুনিয়াজুড়ে তীব্র নিন্দা জানানো হয় ট্রাম্পের বক্তেব্যের । ওই ভিডিও সরিয়ে নিতে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আহ্বান জানায় ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা । কিন্তুু ফেইসবুকের নীতির সাথে সাংঘর্ষিক না এমন যুক্তি দিয়ে মুছতে অস্বকৃতি জানান এর প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ। তাহার এমন বক্তব্যে হতাশ হন খোদ উক্ত প্রতিষ্টানের কর্মীরা । ক্ষোভ জানিয়ে অনেকে পালন করেন কর্ম বিরতি । এই মাসে বর্ণবাদের স্বীকার নিহত জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদকারীদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আর ও একটি বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়ে ব্যবস্হা না নেওয়ায় প্রচন্ড চাপে ছিল ফেইসবুক । এর পরিপ্রেক্ষিতে এক বার্তায় বিতর্ক সস্বলিত বার্তাটি সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানালেও ফেইসবুকের নীতির সাথে সাংঘর্ষিক নয় বলে জানিয়েছেন মার্ক জুকারবার্গ । যদি ও তার দাবী ভূল তথ্য প্রকাশ হওয়ার জবাব আগেই দিয়েছেন তিনি ।
এই সব কারনে মার্কিন এই বহুজাতিক ক্ম্পোনি বিজ্ঞাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । আর এই সব ঘটনার নীত্তিগত প্রভাব পড়েছে ফেইসবুকের বিজ্ঞাপনি আয়ে । এই খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে ফেইসবুকের ধর পড়েছে ৮.৫ শতাংশ । অংকের হিসেবে এই পতন ৫৬ বিলিয়ন ডলার ।
স্বাভাবিক ভাবে বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন এর কারনে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে ফেইসবুক । সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মার্কিন ফোন কোম্পানি ভেরাইজোন (Verizon) ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । আর এই নিয়ে ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন বন্ধের তালিকায় যুক্ত হলো ৯০টির মত ব্যবসায়িক প্রতিষ্টান ।
এস,এ,রব/আইরিশ বাংলা টাইমস/ডাবলিন ।ছবি : সংগৃহীত
ফিনে ফেইল (Fianna Fáil ) লিডার মিহল মার্টিন আয়ারল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন। ফিনে গেইল ও গ্রীন পার্টির সংসদ সদস্যদের ভোটে নতুন সরকার গঠন করলো নতুন জোট সরকার । ফিনে ফেইল দলের লিডার মিহল মার্টিন সংসদ সদস্যদের ভোটে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তিনি ভোট পান ৯৩টি।
নতুন সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে আয়ারল্যান্ডে ‘রাজনৈতিক গৃহযুদ্ধের’ অবসান ঘটলো। নয় জন নির্দলীয় সংসদ সদস্যও মিহল মার্টিনের পক্ষে ভোট দেন। সংসদের তিন জন সদস্য ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত ছিলেন।
মিহল মার্টিন হচ্ছেন কর্ক এলাকার দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি আইরিশ রিপাবলিকান দলের হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা কর্ক নগরীতে। তাঁর পিতা ও মাতার নাম যথাক্রমে পেডি ও এলিন। তিনি ১৯৮৫ সালে স্থানীয় রাজনীতিতে যোগ দেন এবং কর্ক কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়ী হন। চার বছর পর কর্ক সাউথ সেন্ট্রাল নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মিহল মার্টিন স্বীকার করেছেন যে, তার বরাবরই আকাঙ্ক্ষা ছিল কোনো একদিন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার।
এর আগে মিহল মার্টিন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে তিনি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও পরিবেশ উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নেন এবং ২০০৪ সালে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ করেন।
মিহল মার্টিন চারজন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এদের মধ্যে শেষজন ছিলেন ব্রায়ান কাওয়েন। অর্থনৈতিক মন্দা দমনে ব্যর্থতায় তাঁর সরকারের পতন ঘটলে ২০১১ সালে দলের নেতৃত্বে আসেন মিহল মার্টিন। তারপর অনেক ঝড়ঝঞ্ঝা পেরিয়ে আজ আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি।
নেতৃত্বের মূল মন্ত্র হলো সাংগঠনিক দক্ষতা যা তৈরী হয় একজন নেতার আচরনের উপর আর আচরণ কেমন হবে তা নির্ভর করে নেতার দর্শন, ব্যক্তিত্ব ও অভিজ্ঞতার উপর। সাংগঠনিক ভাবে দক্ষ একজন নেতা মানুষের বিশ্বাস আর ভালবাসা আমানত হিসাবে মেনে নিয়ে কাজের মাধ্যমে মানুষের মনে জায়গা করে নেন।
আজ তেমনি এক ব্যাক্তিত্বের কথা বলব যিনি তার কাজের মাধ্যমে বহু বছর ধরে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছেন ।
তিনি আর কেউ নন, তিনি জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান। আমাদের সবার প্রিয় “মোস্তাফিজ ভাই”। ১৯৮৯ সালে তিনি আয়ারল্যান্ডের মাটিতে পা রাখেন তখন থেকে কমিউনিটিতে মানুষের সেবায় তার পথ চলা। সেই পথ চলা আজ প্রায় দীর্ঘ ৩০ বছর।
তার মত সাংগঠনিক ভাবে দক্ষ, ত্যাগী, কর্মঠ , পরোপকারী নেতৃত্ব কমিউনিটিকে অনেক সফলতা এনে দিতে পারেন এবং তার প্রমান তিনি বহু বার রেখেছেন। এবছর ফেব্রুয়ারী মাসে Dublin DCU তে তার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আয়ারল্যান্ডে সর্ব প্রথম “২১ শে বইমেলা ২০২০” এটি ছিল একটি সফল এবং ঐতিহাসিক ইভেন্ট। ২১ শে বই মেলায় মোস্তাফিজ ভাই দেখিয়েছেন দলীয় মতভেদ এবং ধর্মীয় মত-পার্থক্য থাকা সত্যেও সকল মানুষকে একসঙ্গে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসা সম্ভব।
BSAI শপথ গ্রহণে
“আইরিশ বাংলা টাইমস” পত্রিকার সাথে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের আলাপচারিতায় তার জীবনের অনেক অজানা গৌরবময় কথা উঠে এসেছে। তার কিছু অংশ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
অবিভক্ত সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের জন্ম। বাবা সৈয়দ আজিজুর রহমান ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার আর ‘মা’ সালেহা চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। তাদের চার মেয়ে ও পাচ্ঁ ছেলের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানের রয়েছে ছাত্র জীবনে রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য অধ্যায়। তিনি প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার স্কুল জীবন, কলেজ জীবন ,তার বেড়ে উঠা , ছাত্র রাজনীতি সবই হবিগঞ্জে । আশির দশকে স্বৈরাচারী সামরিক সরকারের পতনের মাধ্যমে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ছাত্র আন্দোলনে তার সক্রিয় ভুমিকার কথা স্বরণ করে তিনি আজও আবেগ তাড়িত হন।
রাজনৈতিক জীবনে তিনি জাসদের সিরাজুল আলম খান, আওয়ামিলীগের প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আ স ম আব্দুর রব, শাজাহান সিরাজ, আহসানুল হক ইনু সহ সিলেট জেলার ততকালীন বহু রাজনৈতিক নেতাদের সান্নিধ্যে এসেছেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি কারানির্যাতন ভোগ করেছেন বার বার এবং জেলের অভ্যন্তরে পেয়েছেন লতিফ সিদ্দিকীর মত নেতার সান্নিধ্য । তিনি হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন ডিগ্রী কলেজের ছাত্র হলেও তার রয়েছে ছাত্র নেতাদের সাথে মহসিন হল, সূর্যসেন হল , মধুর কেন্টিন সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অনেক রাজনৈতিক স্মৃতি।
সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে জাসদের নেতা সিরাজুল আলম খান যিনি স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং জুবায়ের আজিজ যিনি হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের প্রাক্তন ভিপি ডাবলিনে বেড়াতে আনে ১৯৯৯ সালে
একটি শোষণ মুক্ত সমাজ গঠনের তাগিদ থেকে ছাত্র জীবনে তিনি রাজনীতির হাতেখড়ি নিয়ে ছিলেন। আজও তিনি একটি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেন যেখানে থাকবে সম্পদের সুষম বন্টন ও আইনের শাসন ।
তার সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে চলে আসে প্রবাসে দেশীয় রাজনৈতিক দলের রাজনীতি চর্চা। এ প্রসঙ্গে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন বাংলাদেশীরা তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে লোকাল আইরিশ রাজনীতিতে আরো সক্রিয় ভাবে এগিয়ে আসবে । তিনি মনে করেন প্রবাসে Local Irish politics এ মানুষ সক্রিয় হলে কমিউনিটির মানুষ উপকৃত হবে এবং আমাদের অবস্থান আরো শক্ত ও সুদৃঢ় হবে। নব নির্বাচিত দুইজন কাউন্সিলরের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন “জনাব আজাদ তালুকদার” এবং “জনাব ইমন” আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরনা।
ছাত্র জীবনে রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ক্রীড়া সংগঠন ও সংস্কৃতি চর্চায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন যা আমরা তার মধ্যে এখনও বিদ্যমান দেখতে পাই। আয়ারল্যন্ডে সর্ব প্রথম যখন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন গঠিত হয় তখন সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান আসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। পরবর্তি কালে তিনি দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সেই সময় গুলোতে তিনি এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত একুশে ফেব্রুয়ারীতে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস উদযাপন সহ বৈশাখী মেলা ও বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা এবং দেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতেন। আমরা দেখেছি তিনি কিন্তু পরবর্তিতে বহু বছর বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের বাইরে থেকেও এই কাজ গুলো নিয়মিত করে গেছেন এবং আরো বড় আকারে করছেন, এর উদাহরন হলো কিলকেনীতে তার নেতৃত্বে প্রায় প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় সকলের প্রানের মেলা “বাংলা মেলা”। এটি আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের এখন পর্যন্ত সব চেয়ে বড় ইভেন্ট।
কিলকেনি বাংলা মেলায়
এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করতেই হয় তা’হলো মোস্তাফিজ ভাই “বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড” BSAI এর একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
একই সাথে তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন দেশের অভিবাসী কমিউনিটি গুলোর সাথে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তিনি নিয়মিত Intercultural program করছেন। এই কাজ গুলোর মাধ্যমে অভিবাসিদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানের জন্য কিভাবে একটি International Cultural Center স্থাপন করা যায় এই নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে। এছারা মূল ধারার আইরিশ সমাজে কিভাবে অভিবাসিরা সহজে নিজেদের তুলে ধরতে পারবে কিংবা কিভাবে অভিবাসিরা আইরিশ মূল ধারায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে এই সকল বিষয় নিয়ে তিনি একটি সংগঠনের সাথে কাজ করছেন। সংগঠনটির নাম Twilight Community Group, তিনি এই সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ডের একজন সদস্য। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর একটি International conference এর আয়োজন করা হয় যেখানে বিভিন্ন দেশের অভিবাসি প্রতিনিধিগন উপস্থিত থাকেন। তিনি কিলকেনীতে Local County council এর অধীন এই রকম আরো একটি সংগঠনের সাথে সদস্য হয়ে কাজ করছেন। মোস্তাফিজ ভাই যদিও কোন Local Irish Politics এর সাথে জড়িতনন তবু তিনি স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, মেয়র,কাউন্সিলর সহ সকলের সাথে সর্ম্পক উন্নয়নের মাধ্যমে অভিবাসিদের অধিকার নিয়ে কাজ করে চলেছেন। তিনি মনে করেন আমাদের সকলের উচিত এই কাজ গুলো করার জন্য এগিয়ে আসা তবেই আমাদের সকল অভিবাসি সহ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুন্দর আয়ারল্যান্ড গড়ে তুলতে পারব।
জগতে কিছু মানুষ থাকে তারা মানুষের বিপদে ঘরে বসে থাকতে পারেন না । মোস্তাফিজ ভাই তাদেরই একজন। কমিউনিটিতে কেউ মারা গেলে মোস্তাফিজ ভাই’কে দেখা যায় দাফন কাফন সহ সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতায় সর্বাগ্রে তার উপস্থিতি। সম্প্রতি লকডাউনের ভেতর ডাবলিনে আমাদের বাংলাদেশী এক ভাই “আমরুল হোসেন” হার্টএ্যাটাকে ইন্তেকাল করেন। লকডাউনের ভেতরেও সেই মৃত ভাইয়ের দাফনে মোস্তাফিজ ভাইয়ের অকুন্ঠ সহযোগীতার কোন ব্যাতিক্রম হয়নি। তিনি অতন্দ্র অভিবাবকের মত কমিউনিটির সকলের সুখে দুখে সদা জাগ্রত।
আয়ারল্যান্ডে বিগত দিনে বৈধ কাগজ পত্র ছাড়া কাজ করতে গিয়ে ইমিগ্রেশনের সমস্যায় অনেক বাংলাদেশীকে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এমনকি পুলিশ বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টে গিয়ে অবৈধ লোকদের ধরতে হানা দিত এবং ধরে নিয়ে গিয়ে কোর্টে তুলতো। ঐ সময়টাতে মোস্তাফিজ ভাই বহু বাংলাদেশীদের সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছেন, তাদের জন্য কাজ করেন , তাদের কারো কারো জামিনের জন্য কোর্টে গিয়েছেন এবং বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করেছেন। আজকে তাদের প্রায় সকলেই আয়ারল্যান্ডে বৈধতা পেয়েছেন।
সোর্ডসে পরিবার পুনর্মিলনী
তার ব্যাক্তিত্বের অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হলো তিনি যখন যে কাজটি করেন সেটি একাগ্রচিত্তে ও একনিষ্ঠ ভাবে করেন। এটি তার বন্ধু মহলের সবাই এক বাক্যে স্বীকার করবেন। কমিউনিটিতে রয়েছে তার অসংখ্য স্বেচ্ছা সেবী অনুরাগী বন্ধু মহল ও শুভাকাঙ্খী যারা তার নেতৃত্বে কমিউনিটিতে সেবা দিতে সদা প্রস্তুত।
কথা প্রসঙ্গে জানতে পারি বর্তমানে তিনি কিলকেনীতে একটি মসজিদ নির্মানে কিলকেনী মুসলিম কমিউনিটিকে সাথে নিয়ে কাজ করছেন । আমরা এই কাজে তার এবং কিলকেনী মুসলিম কমিউনিটির সফলতার জন্য দোয়া করি।
সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান একজন সুবক্তা । তার বক্তব্যে থাকে যুক্তি ও তথ্যের সংমিশ্রন । তার একটি প্রতিভার কথা না বললেই নয়, তিনি তার ভড়াট গলায় অত্যন্ত চমৎকার কবিতা আবৃত্তি করেন।
কিলকেনি Bengali cultural festival এর সাফল্যের পিছনের কারণ জানতে ইমিগ্রান্ট কাউন্সিল অফ আয়ারল্যান্ড এর পক্ষ থেকে একটি প্রোগ্রাম করা হয়। সেখানে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান কে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মঞ্চে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান সাথে রয়েছেন Mayor of Kilkenny councillor “Andrew McGuinness”, তার পাশে রয়েছেন John Paul phelan, State minister for local government, তারপর রয়েছেন Mr Brian Killoran, chief executive officer, Immigrant council of Ireland. সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের ভাই রয়েছেন Immigrant council of Ireland এর আরেকজন কর্মকর্তা।
মোস্তাফিজ ভাই মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দিনে কিংবা বরফ পড়া ঠান্ডা কনকনে শীতের রাতে গাড়ী নিয়ে ছুটে যান আয়ারল্যান্ডের যে কোন প্রান্তে। মানুষের সঙ্গ মানুষের ভালবাসাই তার শক্তি।
যিনি নীতি ও আদর্শের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে মানুষের সেবায় আত্ব নিয়োগ করেন, মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেন, তিনি’ই নেতা। মোস্তাফিজ ভাই জীবনের পরোয়া না করে দেশের মানুষের জন্য সামরিক স্বৈর শাসকের জেল জুলুমকে বরণ করে নিয়ে দেশের গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিজয়ীর বেশে একদিন ফিরে এসেছিলেন, সেই তিনি আবার স্বভাবসিদ্ধ ভাবে এই প্রবাসে এসেও গন মানুষের পাশেই আছেন।
আমরা আশা করি সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটিকে আরো বহু বছর নেতৃত্ব দিয়ে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, ইনশা’আল্লাহ। পরিশেষে তার উত্তরোত্তর সাফল্য , সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
ডাবলিন বই মেলায়
ডাবলিন বই মেলায়
ডাবলিন বই মেলায়
ডাক্তার মুশতাক হোসেন, ডাকসুর সাবেক সাধারন সম্পাদক এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান এবং ডক্টর বিনা শিকদার। মুস্তাক ভাই এর কোলে নিলয়। বর্তমানে ডাক্তার নিলয়। লন্ডনে তোলা ছবি।
সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে জাসদের নেতা সিরাজুল আলম খান যিনি স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং জুবায়ের আজিজ যিনি হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের প্রাক্তন ভিপি ডাবলিনে বেড়াতে আনে ১৯৯৯ সালে
কিলকেনি “বাংলা মেলায়” Cathleen Funchion TD এর সাথে মঞ্চে জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান।
BSAI এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নবনির্বাচিত BSAI এর কার্যকরী কমিটির শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান।
কিলকেনি Bengali cultural festival এর সাফল্যের পিছনের কারণ জানতে ইমিগ্রান্ট কাউন্সিল অফ আয়ারল্যান্ড এর পক্ষ থেকে একটি প্রোগ্রাম করা হয়। সেখানে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান কে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মঞ্চে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান সাথে রয়েছেন Mayor of Kilkenny councillor “Andrew McGuinness”, তার পাশে রয়েছেন John Paul phelan, State minister for local government, তারপর রয়েছেন Mr Brian Killoran, chief executive officer, Immigrant council of Ireland. সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের ভাই রয়েছেন Immigrant council of Ireland এর আরেকজন কর্মকর্তা।
কিলকেনি বাংলা মেলায় সহকর্মীদের সাথে জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান।
কিলকেনি বাংলা মেলায়
Twilight community group এর আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজে’লার গোবড়াকুড়া সিমান্ত এলাকায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবি’র কাছে লা’শ হস্তান্তর করে বিএসএফ।
কড়ইতলী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল মজিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার (২৩ জুন) ভোরে গোবড়াকুড়া সীমান্তের দুইশ গজ ভেতরে ভা’রতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গু’লিতে মানসিক ভা’রসাম্যহীন আব্দুল জলিল নি’হত হয়।
তিনি আরও বলেন, ওই দিন বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশের গোবড়াকুড়া সীমান্তে দু’দেশের সীমান্ত কর্মক’র্তাদের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তখন বিএসএফ বলে ওইদিন কিছু বাংলাদেশি রাতে সীমান্ত অ’তিক্রম করে ভা’রতে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে বিএসএফ’র গু’লিতে আব্দুল জলিল নি’হত হয়।
প্রফেসর মোহাম্মদ সেলিম হাশমি, বাংলার আকাশে উদিত হয়ে পৃথিবীর উপরে জ্বলতে থাকা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিজ্ঞান জগতের দিকপাল, বিশ্বজুড়ে যার খ্যাতি। যিনি নামকে করেছেন মহিমান্বিত, জীবনকে করেছেন সাফল্যমণ্ডিত। তিনি একজন মানুষ গড়ার দক্ষ কারিগর। সফল হননি শুধু নিজেই, নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন বহু সফল ব্যক্তিত্বকেও। তিনি একজন দীপ্ত প্রদীপ, যার আলোর আভা ছড়িয়ে গিয়েছে সর্বত্র। জনাব হাশমি এমনই একজন পরশপাথর; হাত দিয়েছেন যেথায়, সোনা ফলেছে হেথায়। সাফল্যের ছুরিতে তিনি শুধু ধারই দিয়েছেন কখনো মরচে ধরার সুযোগই দেননি।
একমাত্র বাংলাদেশী যিনি Higher Doctorate Degree of DSC এওয়ার্ড অর্জন করেন। তাঁর অসামান্য কৃতিত্ব এবং অবদানের জন্য ডাবলিন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে আজীবন সন্মাননা EMERITUS উপাধিতে ভূষিত করে।
জন্ম, বেড়ে উঠা এবং শিক্ষা জীবনের মূল ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপিত বাংলাদেশে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়; সবজায়গায় উড়িয়েছেন সাফল্যের পতাকা। সর্ব ক্ষেত্রেই কৃতিত্বকে ছিনিয়ে নিয়েছেন বীরদর্পে। বিলেত ছিল তৎকালীন সময়ের বিশ্বের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। প্রফেসর হাশমির মত মেধাবীরা সেই বিদ্যাপীঠের একজন গর্বিত ছাত্র না হলে কি হয়? স্কলারশিপ এর সুবাদে ব্রিটেনে পাড়ি জমান তিনি। শুরু হল সোনার উপর হীরের প্রলেপ মাখানোর পর্ব। পিএইচডি শুরু করলেন Mechanical engineering এর উপর, সেই সাথে শিক্ষকতা। পিএইচডি শেষ হবার পরপরই শুরু হল তাঁর বর্ণাঢ্য শিক্ষকতার ক্যারিয়ার।
লেকচারার হিসেবে শুরু করে প্রফেসর হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে উজাড় করে দিয়েছেন নিজেকে, বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের জ্ঞানকে। প্রতিষ্ঠা করেছেন অনেক ডিপার্টমেন্ট, প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনেক ছাত্রকে। সাহায্য করেছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীকে। বাংলাদেশী ছাত্রদের পিএচডি গবেষণার জন্য ব্যাবস্থা করেছেন বাহ্যিক ফান্ডের, যার দ্বারা ১৫ বছরে ২৫ জন বাংলাদেশী ছাত্রের সমস্ত ব্যায়বভার নির্বাহ করা হয়। যে ছাত্ররা এখন বাংলাদেশ সহ, মালেয়শিয়া, কানাডা, আমেরিকার মত বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বরত আছেন।
শুধু দায়িত্বরত বিশ্ববিদ্যালয়ই নন, বিশ্বের বহু নামিদামী বিশ্ববিদ্যালয়ও বঞ্চিত হয়নি তাঁর সেবা থেকে। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে দিয়েছেন নিজের জ্ঞানকে। কখনো পরীক্ষক হিসেবে, কখনো উপদেশদাতা হিসেবে, কখনো গেস্ট শিক্ষক হিসেবে ছুটে গিয়েছেন দেশে দেশে। বাংলাদেশেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় স্বশরীরে ছুটে গিয়েছেন উপদেশ দেয়ার জন্য। ভেবেছেন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলাও যদি বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করে তাহলে দেশের ছাত্ররা বহুগুণে উপকৃত হবে। তিনি কিছু কোর্স মডিউল প্রণয়নেরও প্রস্তাব রাখেন, যদিও পরবর্তীতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গৃহীত হয়নি।
প্রকাশ করেছেন এবং করে চলেছেন অনেক জার্নাল, গবেষণা পত্র, বই। যার দ্বারা উপকৃত হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণ।
তিনি শুধু একজন সফল শিক্ষকই নন, একজন আদর্শবান পিতাও বটে। চার সন্তানের জনক প্রফেসর হাশমি। তিন মেয়ে ও এক ছেলে তাঁর, সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
“তাঁর তিন মেয়ের একজন ডঃ মালেকা হাশমি যিনি ফার্মাকোলজির উপর PhD করেছেন এবং এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক স্টাফ হিসেবে বর্তমানে দায়িত্বরত। আরেকজন ডঃ মলি হাশমি যিনি ফিজিওলজির উপর PhD করেছেন এবং বর্তমানে শেফিল্ড হালাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হেলথ সাইন্স ডিপার্টমেন্টে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে দায়িত্বরত।
সর্বশেষ কন্যা তানিয়া হাশমি যিনি শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর Hons. এবং মাস্টার্স ইন অর্থহোপটিস্ট শেষ করে ডাবলিন ক্রুমলিন চিলড্রেন্স হাসপাতালে অর্থপটিস্ট হিসেবে ৭ বছর চাকরি করেন। পরবর্তীতে ক্যালিফোর্নিয়ার ইউনিভার্সিটি কলেজ ড্যাভিস হাসপাতালে অর্থপটিস্ট হিসেবে জয়েন করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরত আছেন।
তাঁর ছেলে একজন সফটওয়্যার অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
জনাব হাশমির জীবন সঙ্গিনী ও চার সন্তানের রত্নগর্ভা মা হলেন ডঃ কাশ্মেরি হাশমি (PhD), যিনি শেফিল্ড হলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে ব্যাচেলর (Hons) ও ডাবলিন সিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইন্সে মাস্টার্স পাশ করে লিভারপুল জন মুর Universityথেকে PhD শেষ করে ডাবলিনে একটি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন চাকরি করেন। পরিবর্তিতে তিনি সংসারের দায় দায়িত্ব কাঁধে নেন।
তাঁর শিক্ষাগত ও পেশাগত জীবনের সংক্ষিপ্ত বিবরণী পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে কি রত্ন তাঁর ভেতর লুকায়িত।
শিক্ষা জীবন প্রফেসর মোহাম্মদ হাশমি যার জন্ম ও বেড়ে উঠা বরিশালে। ১৯৬১ সালে তৎকালীন ম্যাট্রিকুলেশন (SSC) সমাপ্ত করার পর তাঁর ঢাকায় গমন করেন। ম্যাট্রিকুলেশনে উনি কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে পাশ করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। ১৯৬৩ সালে তিনি HSC তেও প্রথম বিভাগে উত্তীর্ন হন। SSC এবং HSC তে অসামান্য কৃতিত্বের ফলশ্রুতিতে গ্র্যাজুয়েশনের জন্য সুযোগ মেলে তৎকালীন ‘’ইস্ট পাকিস্থান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি’’ তে Mechanical engineering এর উপর, বর্তমানে যা BUET নামে পরিচিত। চার বছর অধ্যয়ন শেষে ১৯৬৭ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তাঁর মেধার মূল্যায়ন হিসেবে তাঁকে একই ডিপার্টমেন্টে শিক্ষকতা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। এর পর তিনি ৯ মাস সেখানে চাকরি করেন।
১৯৬৮ সালে ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার (UMIST) থেকে উচ্চশিক্ষার স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য দেশব্যাপী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ওই প্রতিযোগিতায় জনাব হাশমি উত্তীর্ণ হয়ে চার বছরের মেরিট স্কলারশিপ পেয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান Mechanical engineering এর উপর মাস্টার্স ও পিএইচডি করার জন্য। ১৯৬৮-১৯৭২ সময়কালের মধ্যে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ১৯৯৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার UMIST এর মাধ্যমে Higher Doctorate Degree of DSC এওয়ার্ড অর্জন করেন, যা হচ্ছে সর্বোচ্চ প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি এবং UK এর সর্বোচ্চ ডিগ্রি।
কর্মজীবন অধ্যায়নরত অবস্থায়ই তাঁর কর্মজীবনের সূত্রপাত। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পরপরই বুয়েটে ৯ মাস এবং পরে UMIST তে পিএইচডি করার সাথে সাথে গবেষণা এবং সহকারী শিক্ষক হিসেবে ১৯৬৮-১৯৭২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ অর্জনের পর একই বছর Sheffield Hallam University তে লেকচারার হিসেবে নিযুক্ত হন, সফলতার সাক্ষর রেখে খুব দ্রুতই ১৯৭৬ সালে সিনিয়র লেকচারার এবং ১৯৭৭ সালে প্রিঞ্চিপাল লেকচারার হিসেবে পদোন্নতি হয়। এরপর ১৯৮৪-১৯৮৬ পর্যন্ত রিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রিডার (Reader) হচ্ছে সিনিয়র লেকচারার এবং প্রফেসর এর মধ্যবর্তী পদ।
Dublin City University (DCU) এর প্রফেসর হিসেবে যোগদানের সুবাদে তিনি ১৯৮৭ সালে আয়ারল্যান্ডে আগমন করেন। তিনি ডাবলিন সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের Mechanical & Manufacturing Engineering বিভাগের প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ঐ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রধানও ছিলেন। Mechanical & Manufacturing Engineering বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসেবে তাঁর উপরই গুরুদায়িত্ব ছিল এই বিভাগকে শূন্য থেকে সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করানো। নতুন স্কুল গড়ে তোলা থেকে শুরু করে জায়গা নির্বাচন, স্টাফ রিক্রুটমেন্ট ও সবধরনের সুবিধা অসুবিধা দেখার দায়িত্ব ছিল তাঁর উপরই। ১৯৯৬ সালে প্রফেসর হাশমি সফলতার সহিত ডাবলিন সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আনকোরা ডিগ্রি প্রোগ্রাম BEng (Hons) in Mechatronic Engineering এর সূচনা করেন। এর সাথে সাথে তিনি আরও তিনটা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করেন, যে প্রোগ্রামগুলো ১৯৯৮ সালে সফলভাবে শুরু হয়। প্রোগ্রাম তিনটা হলঃ
Mechanical & Manufacturing Engineering
Biomedical Engineering
Manufacturing Engineering with Business Studies
এ ছাড়াও তিনি আরও দুটি মাস্টার্স প্রোগ্রামের পরিকল্পনা ও পরিবর্ধনে ভূমিকা রাখেন। পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম দুটি হল Mechanical Engineering এবং Chemical Engineering.
২৬ বছরের দীর্ঘ সফল কর্মজীবন এর ইতি টেনে ২০১২ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ২৬ বছর সেবা প্রদানের প্রতিদান সরূপ ডাবলিন সিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে সন্মানসূচক EMERITUS উপাধি প্রদান করা হয়। EMERITUS উপাধি হচ্ছে আজীবন সন্মাননা সরূপ, যার ফলে তাঁকে একজন সফল প্রফেসর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আজীবন স্মরণ করা হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ডের সাথে আজীবন সংযুক্ত থাকবেন।
রিসার্স ও স্কলারি কর্মকাণ্ড এবং অভিজ্ঞতা
১৯৮৭ সালে তিনি যখন DCU তে গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন তখন মাত্র ৩ জন গবেষণার ছাত্র ছিল এবং ১০ বছরেরও কম সময়ে ছাত্রের সংখ্যা ১৯৯৬ সালে ৩০ এ উন্নীত হয়। সমভাবে তিনি Research Centre of Excellence যাকে বলা হয় Material Processing Research Centre (MPRC) প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ বাহ্যিক ফান্ড তুলতে সক্ষম হন। যেখানে গবেষণা প্রোগ্রামে সহযোগিতায় দুইজন লেকচারারও নিয়োগ দেয়া হয়।
১৯৯০ সালে প্রফেসর হাশমি আন্তর্জাতিক কনফারেন্স প্রোগ্রাম AMPT (Advances in Materials and Processing Technologies) প্রতিষ্ঠা করেন। যা বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন দেশের বড় বড় শহরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারপার্সন জনাব হাসমির তত্ত্বাবধানে এখন পর্যন্ত প্রোগ্রামটি কার্যকর রয়েছে। ২০১৭ সালে AMPT এর উপরে নতুন জার্নালের সূচনা করেন, যা তখন থেকে বছরে ৪ টা করে প্রকাশিত হয়ে আসছে এবং ভবিষ্যতেও প্রকাশিত হতে থাকবে বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস।
বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল Elsevier এর Material Processing Technology এডিটর-ইন-চিফ এর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয় জনাব হাশমিকে। ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি এ বিভাগে দায়িত্বরত ছিলেন। ২০১১ সালে একই বিভাগের বিশদ Major Reference Works এর ১৩ ভলিউম এবং ৭৫০০ পৃষ্ঠার জার্নালের এডিটর-ইন-চিফ এর দায়িত্বেও নিয়োজিত ছিলেন।
২০১৫ থেকে Elsevier এরই আরেকটি অনলাইন পাবলিকেশন এর বিজ্ঞান ভিত্তিক রেফারেন্স মডিউল Materials Science and Materials Engineering এর প্রজেক্টের এডিটর-ইন-চিফ এর দায়িত্ব হাতে নেন। ধীর্ঘ ৫ বছর চলতে থাকা এই গবেষণা কর্মে ১৪ টি বিষয়ের উপর প্রায় ৫০০০ আর্টিকেল/চ্যাপ্টার এর পিয়ার রিভিউ শেষে ২০২০ তে প্রকাশিত হবার অপেক্ষায় রয়েছে।
২০১৬ সালে Encyclopaedia of Renewable and Sustainable Materials এর উপর আরেকটি জার্নালের কাজে তাঁরই এক ছাত্র Prof. Imtiaz Ahmed Choudhury of UM, Malaysia সাথে যৌথভাবে এডিটর-ইন-চিফ হিসেবে কাজ করেছেন। ১২ ভলিউমের এই এনসাইক্লোপিডিয়াটি Elsevier এর মাধ্যমে প্রকাশিত হবার অপেক্ষায় রয়েছে। Elsevier এর আরও একটি প্রজেক্ট Encyclopaedia of Materials: Plastics and Polymers এর এডিটর-ইন-চিফ হিসেবে নতুন করে সম্প্রতি যোগদান করেন।
এ পর্যন্ত তিনি ৫০০ এরও অধিক রিসার্স পেপার এবং ৩০ টি বই প্রকাশ করেন এবং এখনো করে চলেছেন। এছাড়াও তিনি ১১৫ টার বেশী PhD এবং ৫৫ জন শিক্ষার্থীর MEng Research সফলভাবে শেষ করতে সুপারভাইজ করেছেন। ২৫ জন বাংলাদেশী PhD ছাত্রের স্কলারশিপ প্রদানসহ ৬০ জনেরও বেশী বিভিন্ন দেশি শিক্ষার্থীর External Examiner & Expert Assessor এর ভূমিকা পালন করেন।
মোটকথায় শিক্ষা ক্ষেত্রে জনাব হাশমির সফলতা এবং অবদান এই স্বল্প লেখায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়।
প্রফেসর হাশমি এখন অবসরপ্রাপ্ত। অবসর গ্রহণ করেও কি তাঁর অবসর আছে? বস্তুত অবসর গ্রহণের পরেও তিনি ব্যস্ত সময় পার করেন। প্রথমত তিনি ডাবলিন সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের EMERITUS হিসেবে আছেন, যার কারণে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রফেসরদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করে থাকেন, পরামর্শ প্রদান করে থাকেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে সময় দিয়ে থাকেন। তাছাড়াও বই লেখা, জার্নাল পাবলিশ করা, বিভিন্ন রিসার্স এর কাজে এখনো সময় ব্যয় করে থাকেন।
প্রাক্তন ছাত্রদের সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করেন, খোঁজখবর রাখেন, নানাবিধ উপদেশ প্রদান করে থাকেন। শেকড়ের টান এখনো তাঁকে টানে। সুযোগ পেলেই ছুটে যান বাংলাদেশে। ঘুরে বেড়ান দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে, নিজের জ্ঞানকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার কাজে লাগানোর লক্ষে। বুয়েটের সময়টাকে খুব বেশী মনে করেন। তাঁর ভাষ্যমতে বুয়েটের সময়টা তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। শিক্ষা জীবনের মধ্যে সবচেয়ে পরিশ্রম ও কষ্ট করেছেন বুয়েটে অধ্যয়নরত অবস্থায়। সেই চেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলেই হয়েছেন প্রথম শ্রেণীতে প্রথম, স্থাপন করেছেন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ভিত্তিপ্রস্তর। শুধু পড়ালেখার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না। জীবনকেও উপভোগ করেছেন সমান তালে। কলেজ টিমের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন, বন্ধুদের সাথে মাঝরাতে রিকশা চেপে ঘুরে বেড়িয়েছেন, পুরাণ ঢাকার বিরিয়ানি খাওয়া, খেলাধুলা করা কিছুই বাদ দেননি।
এখনো অবসর সময়ে বাগান করে সময় কাটান। নানা ধরনের সবজি, ফুল এবং গাছে ভরপুর থাকে তাঁর বাগান। বাগান করায় তিনি নাকি সিদ্ধহস্ত। নাগা মরিচ নাকি সারা বছরব্যাপী ফলিয়ে থাকেন। নিজ হাতে লাগানো গাছ ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা পর্যবেক্ষণ করা তাঁর খুবই পছন্দ। অঙ্কুর থেকে একটি বৃক্ষের বেড়ে উঠা তাঁকে অন্যরকম আনন্দ দিয়ে থাকে। এছাড়াও পছন্দ ঘোরাফেরা করা, বন্ধুবান্ধবের সাথে গল্প করে সময় কাটানো।
জীবনে কি কোন সংগ্রাম করেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, তাঁর জীবনে তেমন বড় কোন সংগ্রাম করতে হয় নি, তবে তাঁর প্রচণ্ড রকম পরিশ্রম, চেষ্টা এবং আত্মবিশ্বাসই তাঁকে আজকের অবস্থায় নিয়ে এসেছে। জীবনে কোন বিষয়ে কোন আক্ষেপও নেই তাঁর। নিজেকে যেভাবে গড়ে নিতে চেয়েছেন ঠিক সেভাবেই পেরেছেন, এজন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তিনি কৃতজ্ঞতা ও শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন।
বর্তমান প্রজন্ম ও ছাত্রদের জন্য উপদেশ কি জানতে চাইলে বলেন; জীবনে সফল হতে হলে যথেষ্ট ইচ্ছাশক্তি, মনোবল চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এবং অক্লান্ত পরিশ্রম এর মাধ্যমে তা পূরণ করতে হবে। জীবনে সফল হতে হলে সুযোগও দরকার। কিন্তু নিজের চেষ্টা, আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম ও লক্ষ পূরণের তীব্র ক্ষুধা না থাকলে সুযোগ থাকলেও সফলকাম হওয়া সম্ভব নয়।
প্রফেসর সেলিম হাশমি নিঃসন্দেহে বাংলার গর্ব। তাঁর মত ব্যক্তিরা আছে বলেই বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ব করা যায়। তাঁরাই দেশের রোল মডেল, যাদেরকে দেখে অনুপ্রাণিত হবে আগামীর প্রজন্ম। বাংলাদেশকে তুলে ধরতে, বাংলার সুনামকে বর্ধিত করতে, বাঙ্গালি হিসেবে গর্ব করতে, এমন আরও প্রফেসর হাশমির আবির্ভাব ঘটুক।
Biography of Prof. Mohammed Saleem Hashmi BSc, MSc. PhD, DSc, CEng, FIMechE, FIEI Former Lecturer, Reader – Sheffield Hallam University, UK Former Professor – Dublin City Univercity, Ireland Emeritus Professor – Dublin City University
আমাদের ঈমানের ছয়টি স্তম্ভের মধ্যে একটি অন্যতম স্তম্ভ হলো ক্বিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। ক্বিয়ামত দিবস খুবই ভয়াবহ । সেদিন মানুষ মারাত্মক ভাবে আতংক গ্রস্থ ও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে।
ক্বিয়ামত সম্পর্কে আল্লাহ সুবাহ নাহু তায়ালা কোরআনে বলেন, “হে মানবমন্ডলী! তোমরা ভয় কর তোমাদের রব’কে; (জেনে রেখ) ক্বিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ানক ব্যাপার। সেদিন তোমরা দেখবে প্রত্যেক স্তন্য দানকারিনী তার আপন দুগ্ধপোষ্য শিশুকে ভুলে যাবে এবং প্রত্যেক গর্ভধারিণী তার গর্ভপাত করে ফেলবে, তুমি দেখবে মানুষকে মাতালের মত, অথচ তারা মাতাল নয়। তবে আল্লাহর আযাবই কঠিন। মানুষের মধ্যে কতক আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক করে না-জেনে এবং সে অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের” (কোরআন ২২:১)।
কোরআনে অন্য আরেক জায়গায় মহান আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন। “যখন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে- একটি মাত্র ফুৎকার। আর যমীন ও পর্বত মালাকে উত্তোলন করা হবে এবং একই ধাক্কায় চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়া হবে। সেদিন যা সঙ্ঘটিত হওয়ার (কেয়ামত) সঙ্ঘটিত হয়ে যাবে। আকাশ বিদীর্ণ হয়ে শক্তিহীন ও বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে।(সূরা আল-হাক্কাহ:১৩-১৬)
সেইদি মানুষ যেমনি ক্বিয়ামতের দিন পৃথিবীর শেষ দিনটি প্রতক্ষ্য করবে তেমনি প্রতিটি মানুষের মৃত্যুর সময় তার জন্য ক্বিয়ামতের সমতুল্য যদিও মুসলিম হিসেবে ক্বিয়ামতের পর হাশর বা বিচারের দিনকে নিয়ে আমাদের ভয় করা উচিত।
ক্বিয়ামতের দিবসে শিঙ্গায় ফু্ঁৎকারের পর জান্নাতে এবং পৃথিবীতে কেউ জীবিত থাকবে না তবে কতিপয় ফেরেশতা ছাড়া। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, “শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, ফলে আসমান ও যমীনে যারা আছে সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন। অতঃপর আবার শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দণ্ডায়মান হয়ে দেখতে থাকবে।”(সুরা যুমার ৩৯:৬৮)
অর্থাৎ আল কুরআনে ক্বিয়ামতের সময়ে মোট ২টি শিঙ্গাধ্বনির কথা বলা আছে। একটির মাধ্যমে মহাপ্রলয়ের সূচনা হবে, আর অন্যটির মাধ্যমে সকল মৃতরা পুনরুত্থিত হবে।
রাসুল সাঃ কে এই দুই ফুৎকারের মধ্যবর্তি সময় কত দীর্ঘ হবে সেই সময়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি শুধু বলেন “চল্লিশ” । এটা একটা ক্ষন বা কাল বা সময় মাত্র। তবে এটা কি চল্লিশ মাস নাকি চল্লিশ বছর এ ব্যাপারে আর কোন হাদিস পাওয়া যায় না।
দ্বিতীয় ফুৎকারের পর পৃথিবী এবং জান্নাতের মধ্যে বিরাট পরির্বন হবে আর এটা হবে মানুষের জন্য পরকালের শুরু।
ক্বিয়ামত দিবসে আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবর্তনের বিষয়ে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন: “সেই দিন পরিবর্তিত করা হবে এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে এবং পরিবর্তিত করা হবে আকাশসমূহকে এবং লোকেরা পরাক্রমশালী এক আল্লাহর সামনে বের হয়ে আসবে।(ইবরাহীম: ৪৮)
ইসরাফিল আলাইহিস সালাম যখন দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকার দিবেন তখনই সব মৃতব্যক্তি জীবিত হয়ে হবে। আর এটাই পুনরুত্থান দিবস।
এই পুনরুত্থান দিবসটি হবে দুনিয়ার পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান দীর্ঘ এক ভয়াবহ দিন।
পুনরুত্থান সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-” যখনই শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখনই মানুষ কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে চলবে। তারা বলবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ। কে আমাদেরকে ঘুম থেকে উঠালো? রহমান আল্লাহ তো এরই ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং রাসুলগণ সত্য বলেছিলেন।” (সুরা ইয়াসিন : আয়াত ৫১-৫২)
প্রতিটি মানুষকেই মৃত্যু বরণ করতে হবে, তবে যে বিষয়টি আমাদের মনে রাখতে হবে তা’হলো এই মৃত্যুু হচ্ছে দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবন আর পরকালের অনন্ত কালের জীবন, এই দুই জীবনের সন্ধিক্ষন। ক্ষনস্থায়ী জীবনের শেষ আর অনন্তকাল জীবনের শুরু । যে জীবনের কোন শেষ নাই।
যেহেতু আত্বার মৃত্যু নাই তাই প্রথম ফুৎকার আর দ্বিতীয় ফুৎকারের মধ্যবর্তি সময় টুকু মানুষের আত্বা “বার্যাখ” নামক স্থানে অবস্থান করবে। অন্য ভাবে বলা যায় মানুষের মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের আগ পর্যন্ত মানুষ “বার্যাখ” নামক স্থানে অবস্থান করবে। পুন্যবান আত্বা আল্লাহর কাছে সুউচ্চ স্থানে “ইল্লিইন” নামক স্থানে ফিরে যাবে আর পাপী আত্বা “সিযযিইন” নামক স্থানে আটকা থাকবে।
এই “বার্যাখ” জীবনেই মানুষ জেনে যাবে শিংগায় দ্বিতীয় ফুৎকার দেওয়ার পর সে জান্নাতে যাবে না জাহান্নামে যাবে। জাহান্নামীরা চাইবে বার্যাখের জীবন যেন শেষ না হয়। (চলবে)
জন্মিলে মরিতে হইবে, এটাই চিরন্তন সত্য। সবাই চায় তার অন্তিম শয়ান টা পছন্দের এবং নিরাপদ হোক। যেখানে তার আত্মীয় স্বজন ও পরবর্তী প্রজন্ম গিয়ে কবর জিয়ারত করতে পারবে, দোয়া দুরুদ পড়তে ও স্মৃতি রোমন্থন করতে পারবে। কিন্তু বিদেশের মাটিতে, বিশেষ করে যেখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু সেখানে অন্তিমযাত্রা টা অনেকসময় নিজেদের মত করে হয়না। যার কারণে অনেকেরই ইচ্ছা তাকে যেন জন্মভূমির মাতিতেই কবর দেয়া হয়। যদিও অনেকেরই নিকটাত্মীয় দেশেই বসবাসরত, সুতরাং সেক্ষেত্রে অনেকেই চায় দেশেই সমাধিস্থ করা হোক। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতিও বদলাচ্ছে। বহুদিন বিদেশের মাটিতে অবস্থানের প্রেক্ষিতে বিদেশটাই অনেকের স্বদেশে রূপান্তরিত হয়েছে। পরিবার পরিজন সবাই বিদেশেই অবস্থানরত, এমনকি পরবর্তী প্রজন্মের জন্ম, বেড়ে উঠা এবং স্থায়ী নিবাস হয়ত তাদের এই বিদেশভূমিই। একসময় যারা চিন্তা করত যে, একসময় দেশে ফিরে যাবে অথবা মৃতদেহ দেশের মাটিতেই সমাধিস্থ হবে, কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে অনেকেরই সে ধারণারও পরিবর্তন ঘটেছে।
এছাড়াও লাশ পাঠানোর খরচ ও জটিলতার কারণে কিংবা অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে লাশ দেশে পাঠানো সম্ভবপর হয়ে ঊঠেনা। সে ক্ষেত্রে বাধ্য হয়েও অনেক সময় বিদেশের মাটিতেই লাশ দাপন করতে হয়।
মুসলিম সংখ্যালঘু দেশগুলাতে মুসলমানদের লাশ দাপনের প্রধান সমস্যা হচ্ছে মুসলিম কবরস্থানের জন্য স্বতন্ত্র নির্ধারিত জায়গা। এখানকার কতৃপক্ষের প্রশ্ন, কেন মুসলমানদের জন্য আলাদা কবরস্থান লাগবে? তাদের কথা সবাইকে যেখানে সমাধিস্থ করা হয় সেখানে মুসলমানদের করলে সমস্যা কোথায়? হ্যাঁ তাদের যুক্তি ফেলে দেয়ার মত নয়, কিন্তু আমরা মুসলমানরা জানি ও বুঝি কেন আমাদের আলাদা কবরস্থান দরকার। আয়ারল্যান্ডে যদিও কতৃপক্ষ থেকে কিছু স্থানে আলাদা করে কবরস্থানের জায়গা দেয়া হয়েছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত ও পুর্নাঙ্গ নয়।
আশার খবর হল, এই সমস্যা উত্তরণে কমিউনিটির অন্যান্য সাহায্যের পাশাপাশি মুসলমানদের পূর্ণাঙ্গ কবরস্থানের জন্য এগিয়ে এসেছেন লিমেরিক সিটি কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার। আগেই বলেছি কতৃপক্ষ এর ধারণা নেই আসলে কেন মুসলমানদের আলাদা কবরস্থান দরকার, সে ধারণা দেয়ার জন্যই মাধ্যম হিসেবে আছেন জনাব আজাদ তালুকদার এবং তিনি তাঁর অবস্থান থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রাথমিকভাবে কাউন্সিল থেকে ৫০০০০ ইউরো প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। জনাব আজাদ তালুকদারের পরিকল্পনা হচ্ছে তিনি কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে একটা সুবিধানুযায়ী জায়গা কবরস্থানের আওয়তায় নিয়ে আসা। এরপর ধাপে ধাপে কবরস্থানের উন্নয়ন সাধন করা।
জনাব আজাদ তালুকদার যেহেতু লিমেরিক এর কাউন্সিলর সে হিসেবে প্রাথমিকভাবে লিমেরিকের জন্যই বরাদ্দ পাচ্ছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর ইচ্ছা আয়ারল্যান্ডের সব কাউন্টিতেই যেন মুসলমানদের জন্য আলাদা কবরস্থান থাকে সে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ জনাব আজাদ তালুকদারকে, ধন্যবাদ লিমেরিক সিটি কাউন্সিলকে; আয়ারল্যান্ডে অবস্থানরত সমগ্র মুসলমানের ইচ্ছা ও স্বপ্নপূরণে সাথে দাঁড়াবার জন্য।
আয়ারল্যান্ডের বর্তমান হয়তো আর থাকছে না, তার বদলে Fine Gael, Fianna Fáil এবং the GreenPartyর সমন্বয়ে নতুন একটি জোট সরকারই পেতে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ড। এ নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে তিন দলের নেতাদের একসঙ্গে বসার কথা রয়েছে। ডাবলিন ক্যাসলে মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে জানানো হয়, আশা করা হচ্ছে, Fine Gael, Fianna Fáil এবং the Green Party সরকারি জোটে যোগ দেয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেবে। আর তাই তাদের প্রাধান্য দিয়ে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কাঠামোয় রদবদল আনার কথা ভাবা হচ্ছে।
তিন দল সরকারে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিলে মন্ত্রীসভার ওই বৈঠকই বর্তমান সরকারের শেষ বড় গ্যাদারিং। মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী MrVaradkar বলেন, গত তিন বছর আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারাটাই আমার জীবনের সবচাইতে বড় সম্মান। সারাজীবন রাজনীতিতে যা শিখেছি, গত তিন মাসের দুর্যোগে তার চাইতে অনেক বেশিকিছু শিখেছি। প্রার্থনা করি, আমাদের দেশে এমন দুর্যোগ যেন কখনও আর না-আসে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হয়তো এটাই আমার শেষ সংবাদ সম্মেলন। যদি তা-ই হয়, তাহলে আমি সেসব মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এবং আমাদের দেশকে রক্ষা করেছেন। MrVaradkar বলেন, আমি বিশ্বাস করি, চীফ মেডিক্যাল অফিসার ডা টনি হোলোহানের কাছে এ দেশ চিরঋণী হয়ে থাকবে। করোনা দুর্যোগকালে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দেশের সবচাইতে আস্থাভাজন ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর কারণে আমরা নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারছিলাম।
এদিকে আগামী সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কাঠামোয় এবং মন্ত্রীদের দায়িত্বে বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে। পরিকল্পিত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে, Defence ও the Gaeltacht বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর দায়িত্ব সিনিয়র মন্ত্রীদের হাতে ন্যস্ত করার বিষয়টিও রয়েছে। এছাড়া শিশু বিভাগটি থাকলেও এর ওপর আরও কিছু দায়িত্ব দেয়া হবে। পরিকল্পনা রয়েছে মেরিন বিভাগকে কৃষি বিভাগের সাথে সমন্বিত করার।
নতুন সরকারে চীফ হুইপসহ দু’জন সুপার জুনিয়র মন্ত্রী রাখা হবে। তারা সবাই ক্যাবিনেট মিটিঙয়ে যোগ দিতে পারবেন। জুনিয়র মন্ত্রীর সংখ্যা ২০ জনের মতো হতে পারে বলে খবর প্রকাশিত হলেও এ বিষয়ে আসলে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শনিবার অথবা তার পরের যে কোনো দিন তাদের নাম ঘোষণা হতে পারে।
MrVaradkar জানান, আয়ারল্যান্ড ও অন্যান্য দেশের মাঝে বিদ্যমান কিছু ভ্রমণ কড়াকড়ি আগামী ৯ জুলাই থেকে শিথিল করা হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস জানান, গণপরিবহনে মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক করা হবে।
সাংগঠনিক ভাবনা -আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী সামাজিক সংগঠন
সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য সমাজ বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করি না। এটি মূলত সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সক্ষমতা, সদিচ্ছা, পারস্পরিক মূল্যবোধের সমন্বয়। তবে এ বিষয়টির বিকাশে পারিবারিক শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।স্থান কালো ভেদে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায় সমাজে। আমি কোন সমাজ বিজ্ঞানী নই বা নই কোন নামিদামি সমাজ সংস্কারক বা বহুল পরিচিত সামাজিক আন্দোলনের প্রবক্তা। তাই এর চুলচেরা বিশ্লেষণের চেষ্টা করা পাঠকের মধ্যে আগ্রহের পরিবর্তে বিরক্তির কারণই ঘটবে।
তবে আসা যাক মূল বিষয়টিতে। আমার অনভিজ্ঞ লেখনীর মাধ্যমে কিছুটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই পাঠক এবং আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী ভাই-বোনদের সাথে। প্রচার আছে যে, এখানে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার বাংলাদেশীর বসবাস। শিক্ষাসহ নানা ধরনের পেশায় আমরা নিয়োজিত আছি।নিয়োজিত পেশার উল্লেখ করে লেখার কলেবর বৃদ্ধি আর করলাম না। তবে গর্ব করে বলতে পারি এখানে বাংলাদেশী বেকারের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য সংখ্যক। গত প্রায় কুঁড়ি বছর একটি বৃহৎ সংখ্যার বাংলাদেশী ভাই-বোনদের সাথে মেশার সুযোগ হয়েছে। এ সুযোগটি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে “বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড” নামক সংগঠনটির সূচনা লগ্ন থেকে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার কারণে। যদিও এই সংগঠনটি নামের পরিবর্তন হয়েছে ২০১১ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।
এই এসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট ভাই দের মুখে শুনি ২০১১ পরবর্তী সময়ের ইতিহাস এমনকি অনেকে বলতে দ্বিধা করেনা এর শুরুটিও ২০১১ সনে। তাদের প্রতি অত্যন্ত বিনীত অনুরোধ এই সংগঠনে আপনার সম্পৃক্ততাই সংগঠনের শুরু না। এই সংগঠন শুরুর ইতিহাস হয়তো আপনার জানা নাই। তাই বলি ভুল বার্তা প্রচার না করাই শ্রেয়। সংক্ষিপ্তাকারে যদি আমি এর ইতিহাস বলি তবে বলতে হয় ২০০৩ সালে Camden Street Dublin এর সুরমা ইন্ডিয়ান রেস্তোরায় প্রাথমিক সভার পর ২০০৫ সনের শেষ অথবা ২০০৬ সোনার প্রথম দিকে ডাবলিনের Little Lane এ First Solution Money Transfer অফিসে এস এম মাহফুজুল হক ভাইকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ডাবলিনে মোস্তফা ভাইকে সভাপতি এবং সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান ভাইকে সাধারণ সম্পাদক করে পুনরায় কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২০০৮ সনে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান ভাইকে সভাপতি এবং বেলাল হোসেনকে শ্যামল ভাইকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১১ নির্বাচন-পূর্ববর্তী কমিটি কার্য পরিচালনা করে আসে। তার পরবর্তী ইতিহাস কমবেশি অনেকের জানা। তবে যেটুকু না জানালেই নয় তাহলো ২০১১ নির্বাচন পরবর্তী সভাপতি ডাক্তার জিন্নুরাইন জায়গীরদার ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ ভাই ছাড়া বাকি সকল নির্বাচিত সদস্য ভাইদের খুব একটা সম্পৃক্ততা লক্ষ করা যায়নি। আর কেবলমাত্র সভাপতি-সম্পাদক সর্বস্ব সংগঠন কতটাই অবদান রাখতে পারে তা সহজেই অনুমেয় এবং তা কেবল ডাবলিন ভিত্তিক নয় পুরো আয়ারল্যান্ডের জন্য।
আমি সংক্ষেপে কেবল বলব এর দায়ভার কেবল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নয়, এটা পুরো কমিটির সমন্বয়হীনতা, অসহযোগিতা এবং সারাদেশব্যাপী কেবল কেন্দ্রীয় কমিটির উপর দায়িত্ব অর্পণ।ডাবলিন সহ অন্যান্য কাউন্টি গুলোতে এলাকা ভিত্তিক সাব-কমিটি গঠন বা কাউন্টি ভিত্তিক কমিটি গঠন না করা এর মূল কারণ হিসেবে আমি উল্লেখ করতে চাই।
আবাই এর বিকাশ বাঁধা গ্রস্থ হওয়ার জন্য আমি আরও একটি কারণ হিসেবে দেখি আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত উল্লেখ পেশার ভাই-বোনদের এই সংগঠনের কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ অংশগ্রহণ না করা বা তাদেরকে আকৃষ্ট করতে না পারাটা ও। আমি যদি আরো একটু পরিষ্কার করে বলি তাদের মধ্যে শিক্ষক, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, নার্স, উচ্চশিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক মেধাসম্পন্ন লোকবল সহ অন্যান্য পেশাজীবী ভাই-বোনদের সম্পৃক্ততা জরুরি।
আমি আরও একটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বলতে চাই যে সকল ভাই বোনেরা এদেশে এসে লেখাপড়া শেষ করে বিভিন্ন পদে কাজে যোগ দিয়েছেন বিশেষ করে তাদেরকে আমাদের এই সংগঠনে তাদের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট করা।
বাংলাদেশী জাতীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আইরিশ বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান কেও অংশগ্রহণ করা সংগঠন বিকাশে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। এবং বাংলাদেশী জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে এদেশে বাংলাদেশী গুণীজনদের সম্মানিত করা ও নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে সম্পৃক্ত হতে। আমি আরো একটি বিষয় এখানে উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছিনা। তা হল যারা এখানে দেশী রাজনীতির প্র্যাকটিস করছি তাদেরকে অবশ্যই ভিন্ন মতাদর্শের ভাই-বোনদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ ভুলে অন্তত দেশমাতৃকার স্বার্থে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। তাতে যেমন দলীয় ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন থাকবে এবং ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক বজায় থাকবে।দৃঢ় হবে সামাজিক বন্ধন, সৃষ্টি হবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব যা সুষ্ঠ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
আমি আরো একটি বিষয়ে কথা উল্লেখ করতে চাই গুরুত্ব দিয়ে আর তা হলো আইরিশ রাজনীতিতে অংশগ্রহণ হোক সেটা স্থানীয় অথবা জাতীয়। আসুন আমরা সচেতন হই এই বিষয়টিতে তা শুরু হোক স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ভোটার হওয়ার মাধ্যমে যাদের সুযোগ আছে। আমরা আরও পিছিয়ে না থাকি, অবহেলা বা হেলামি না করি, এই বিষয়টি নিয়ে আসুন আমরা সকলে সকলকে সচেতন করি,সহযোগিতা করি এ বিষয়টিতে অংশগ্রহণ করতে।
প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা আশা করি আপনারা সকলেই ইতিমধ্যে জ্ঞাত হয়েছেন যে বাংলাদেশ সরকার আয়ারল্যান্ডে একটি পূর্ণাঙ্গ এমব্যাসি করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং আয়ারল্যান্ড সরকার যাতে বাংলাদেশ তাদের এমব্যাসি করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন সে ব্যাপারে ও সরকারী পর্যায়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে একটি বিষয় আমাদের তুলে ধরা দরকার। আমরা কত সংখ্যক বাংলাদেশি আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছি এই ব্যাপারে আমাদের কাছে সঠিক কোন তথ্য নেই। সেই লক্ষ্যে আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে গত কয়েক মাস যাবত একটি ডাটাবেইজ কাজ চলছে। আসুন আমরা সকলেই অনলাইন ডাটা রেজিস্টারে তথ্য দিয়ে এ প্রকল্পকে সহযোগিতা করি যা আমাদের সঠিক সংখ্যক বাংলাদেশি বসবাসকারী জানার পাশাপাশি আগামীতে কমিউনিটি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগে সহায়ক হবে।
আসুন আমরা করোনা কালীন দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সহযোগিতা মূলক কর্মকাণ্ডে বেশিবেশি অংশগ্রহণ করি। যা এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশী হিসেবে আমাদের ভাবমূর্তি তুলে ধরবে। ইতোমধ্যেই কিলকেনি, গলওয়ে , ডাবলিন, লেটারকেনী সহ অন্যান্য কাউন্টিগুলোতে আমাদের বাংলাদেশী ভাইয়েরা হাসপাতাল, গার্ডা স্টেশন এ খাবার বিতরণ করেছেন। যে সকল ভাইয়েরা এই মহান কাজটি নিয়ে কাজ করছেন তাদের প্রতি রইল সালাম ও শুভকামনা।
পরিশেষে আমি বলতে চাই আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ এসোসিয়েশন এখন যে পর্যায়ে এর সাংগঠনিক ভিত প্রতিষ্ঠা হয়েছে এর পেছনে অনেক ভাইদের অবদান রয়েছে যাদের সংশ্লিষ্টতা না থাকলে হয়তো এ কাজটি এতদূর এগিয়ে আসতে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতো। তাদের নাম এখানে উল্লেখ না করলেও তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তবে আমি একজন ভাইয়ের নাম উল্লেখ না করে পারছি না যার সহযোগিতা না থাকলে হয়তো আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাসপোর্ট সার্জারি সহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হতে আরো অনেকটা সময় আমাদের অপেক্ষা করতে হতো। তিনি আমাদের অতিপরিচিত অনেকটা প্রচারবিমুখ সদা হাস্যোজ্জ্বল শাহ নেওয়াজ টুটুল ভাই। তার হাত ধরেই আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশনের যাতায়াত শুরু এখানে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে সেবা প্রদানের জন্য। পরবর্তীতে ফকির জাকির হোসেন ভাইও অনেক সহযোগিতা করেআসছেন, তারপরে অদ্যাবধি সাইফুল ইসলাম ভাইও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন এই সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য। ডাবলিন ভিত্তিক অনুষ্ঠান আয়োজনে যাদের নাম ভুলার মতো নয় তাদের মধ্যে আক্তার হোসেন, হুমায়ুন কবির অপু, টিটু মিয়া, গোলাম মোর্শেদ কামরুল ও কাজী আহমেদুল কবির অন্যতম। আমরা সম্মিলিত সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের আরো সমৃদ্ধি ও প্রসার আশাকরি সমগ্র আয়ারল্যান্ড ব্যাপী।
সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য সমাজ বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করি না। এটি মূলত সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সক্ষমতা, সদিচ্ছা, পারস্পরিক মূল্যবোধের সমন্বয়। তবে এ বিষয়টির বিকাশে পারিবারিক শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।স্থান কালো ভেদে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায় সমাজে। আমি কোন সমাজ বিজ্ঞানী নই বা নই কোন নামিদামি সমাজ সংস্কারক বা বহুল পরিচিত সামাজিক আন্দোলনের প্রবক্তা। তাই এর চুলচেরা বিশ্লেষণের চেষ্টা করা পাঠকের মধ্যে আগ্রহের পরিবর্তে বিরক্তির কারণই ঘটবে।
তবে আসা যাক মূল বিষয়টিতে। আমার অনভিজ্ঞ লেখনীর মাধ্যমে কিছুটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই পাঠক এবং আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী ভাই-বোনদের সাথে। প্রচার আছে যে, এখানে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার বাংলাদেশীর বসবাস। শিক্ষাসহ নানা ধরনের পেশায় আমরা নিয়োজিত আছি।নিয়োজিত পেশার উল্লেখ করে লেখার কলেবর বৃদ্ধি আর করলাম না। তবে গর্ব করে বলতে পারি এখানে বাংলাদেশী বেকারের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য সংখ্যক। গত প্রায় কুঁড়ি বছর একটি বৃহৎ সংখ্যার বাংলাদেশী ভাই-বোনদের সাথে মেশার সুযোগ হয়েছে। এ সুযোগটি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে “বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড” নামক সংগঠনটির সূচনা লগ্ন থেকে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার কারণে। যদিও এই সংগঠনটি নামের পরিবর্তন হয়েছে ২০১১ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।
এই এসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট ভাই দের মুখে শুনি ২০১১ পরবর্তী সময়ের ইতিহাস এমনকি অনেকে বলতে দ্বিধা করেনা এর শুরুটিও ২০১১ সনে। তাদের প্রতি অত্যন্ত বিনীত অনুরোধ এই সংগঠনে আপনার সম্পৃক্ততাই সংগঠনের শুরু না। এই সংগঠন শুরুর ইতিহাস হয়তো আপনার জানা নাই। তাই বলি ভুল বার্তা প্রচার না করাই শ্রেয়। সংক্ষিপ্তাকারে যদি আমি এর ইতিহাস বলি তবে বলতে হয় ২০০৩ সালে Camden Street Dublin এর সুরমা ইন্ডিয়ান রেস্তোরায় প্রাথমিক সভার পর ২০০৫ সনের শেষ অথবা ২০০৬ সোনার প্রথম দিকে ডাবলিনের Little Lane এ First Solution Money Transfer অফিসে এস এম মাহফুজুল হক ভাইকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ডাবলিনে মোস্তফা ভাইকে সভাপতি এবং সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান ভাইকে সাধারণ সম্পাদক করে পুনরায় কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২০০৮ সনে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান ভাইকে সভাপতি এবং বেলাল হোসেনকে শ্যামল ভাইকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১১ নির্বাচন-পূর্ববর্তী কমিটি কার্য পরিচালনা করে আসে। তার পরবর্তী ইতিহাস কমবেশি অনেকের জানা। তবে যেটুকু না জানালেই নয় তাহলো ২০১১ নির্বাচন পরবর্তী সভাপতি ডাক্তার জিন্নুরাইন জায়গীরদার ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ ভাই ছাড়া বাকি সকল নির্বাচিত সদস্য ভাইদের খুব একটা সম্পৃক্ততা লক্ষ করা যায়নি। আর কেবলমাত্র সভাপতি-সম্পাদক সর্বস্ব সংগঠন কতটাই অবদান রাখতে পারে তা সহজেই অনুমেয় এবং তা কেবল ডাবলিন ভিত্তিক নয় পুরো আয়ারল্যান্ডের জন্য।
আমি সংক্ষেপে কেবল বলব এর দায়ভার কেবল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নয়, এটা পুরো কমিটির সমন্বয়হীনতা, অসহযোগিতা এবং সারাদেশব্যাপী কেবল কেন্দ্রীয় কমিটির উপর দায়িত্ব অর্পণ।ডাবলিন সহ অন্যান্য কাউন্টি গুলোতে এলাকা ভিত্তিক সাব-কমিটি গঠন বা কাউন্টি ভিত্তিক কমিটি গঠন না করা এর মূল কারণ হিসেবে আমি উল্লেখ করতে চাই।
আবাই এর বিকাশ বাঁধা গ্রস্থ হওয়ার জন্য আমি আরও একটি কারণ হিসেবে দেখি আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত উল্লেখ পেশার ভাই-বোনদের এই সংগঠনের কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ অংশগ্রহণ না করা বা তাদেরকে আকৃষ্ট করতে না পারাটা ও। আমি যদি আরো একটু পরিষ্কার করে বলি তাদের মধ্যে শিক্ষক, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, নার্স, উচ্চশিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক মেধাসম্পন্ন লোকবল সহ অন্যান্য পেশাজীবী ভাই-বোনদের সম্পৃক্ততা জরুরি।
আমি আরও একটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বলতে চাই যে সকল ভাই বোনেরা এদেশে এসে লেখাপড়া শেষ করে বিভিন্ন পদে কাজে যোগ দিয়েছেন বিশেষ করে তাদেরকে আমাদের এই সংগঠনে তাদের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট করা।
বাংলাদেশী জাতীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আইরিশ বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান কেও অংশগ্রহণ করা সংগঠন বিকাশে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। এবং বাংলাদেশী জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে এদেশে বাংলাদেশী গুণীজনদের সম্মানিত করা ও নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে সম্পৃক্ত হতে। আমি আরো একটি বিষয় এখানে উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছিনা। তা হল যারা এখানে দেশী রাজনীতির প্র্যাকটিস করছি তাদেরকে অবশ্যই ভিন্ন মতাদর্শের ভাই-বোনদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ ভুলে অন্তত দেশমাতৃকার স্বার্থে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। তাতে যেমন দলীয় ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন থাকবে এবং ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক বজায় থাকবে।দৃঢ় হবে সামাজিক বন্ধন, সৃষ্টি হবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব যা সুষ্ঠ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
আমি আরো একটি বিষয়ে কথা উল্লেখ করতে চাই গুরুত্ব দিয়ে আর তা হলো আইরিশ রাজনীতিতে অংশগ্রহণ হোক সেটা স্থানীয় অথবা জাতীয়। আসুন আমরা সচেতন হই এই বিষয়টিতে তা শুরু হোক স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ভোটার হওয়ার মাধ্যমে যাদের সুযোগ আছে। আমরা আরও পিছিয়ে না থাকি, অবহেলা বা হেলামি না করি, এই বিষয়টি নিয়ে আসুন আমরা সকলে সকলকে সচেতন করি,সহযোগিতা করি এ বিষয়টিতে অংশগ্রহণ করতে।
প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা আশা করি আপনারা সকলেই ইতিমধ্যে জ্ঞাত হয়েছেন যে বাংলাদেশ সরকার আয়ারল্যান্ডে একটি পূর্ণাঙ্গ এমব্যাসি করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং আয়ারল্যান্ড সরকার যাতে বাংলাদেশ তাদের এমব্যাসি করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন সে ব্যাপারে ও সরকারী পর্যায়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে একটি বিষয় আমাদের তুলে ধরা দরকার। আমরা কত সংখ্যক বাংলাদেশি আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছি এই ব্যাপারে আমাদের কাছে সঠিক কোন তথ্য নেই। সেই লক্ষ্যে আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে গত কয়েক মাস যাবত একটি ডাটাবেইজ কাজ চলছে। আসুন আমরা সকলেই অনলাইন ডাটা রেজিস্টারে তথ্য দিয়ে এ প্রকল্পকে সহযোগিতা করি যা আমাদের সঠিক সংখ্যক বাংলাদেশি বসবাসকারী জানার পাশাপাশি আগামীতে কমিউনিটি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগে সহায়ক হবে।
আসুন আমরা করোনা কালীন দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সহযোগিতা মূলক কর্মকাণ্ডে বেশিবেশি অংশগ্রহণ করি। যা এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশী হিসেবে আমাদের ভাবমূর্তি তুলে ধরবে। ইতোমধ্যেই কিলকেনি, গলওয়ে , ডাবলিন, লেটারকেনী সহ অন্যান্য কাউন্টিগুলোতে আমাদের বাংলাদেশী ভাইয়েরা হাসপাতাল, গার্ডা স্টেশন এ খাবার বিতরণ করেছেন। যে সকল ভাইয়েরা এই মহান কাজটি নিয়ে কাজ করছেন তাদের প্রতি রইল সালাম ও শুভকামনা।
পরিশেষে আমি বলতে চাই আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ এসোসিয়েশন এখন যে পর্যায়ে এর সাংগঠনিক ভিত প্রতিষ্ঠা হয়েছে এর পেছনে অনেক ভাইদের অবদান রয়েছে যাদের সংশ্লিষ্টতা না থাকলে হয়তো এ কাজটি এতদূর এগিয়ে আসতে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতো। তাদের নাম এখানে উল্লেখ না করলেও তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তবে আমি একজন ভাইয়ের নাম উল্লেখ না করে পারছি না যার সহযোগিতা না থাকলে হয়তো আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাসপোর্ট সার্জারি সহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হতে আরো অনেকটা সময় আমাদের অপেক্ষা করতে হতো। তিনি আমাদের অতিপরিচিত অনেকটা প্রচারবিমুখ সদা হাস্যোজ্জ্বল শাহ নেওয়াজ টুটুল ভাই। তার হাত ধরেই আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশনের যাতায়াত শুরু এখানে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে সেবা প্রদানের জন্য। পরবর্তীতে ফকির জাকির হোসেন ভাইও অনেক সহযোগিতা করেআসছেন, তারপরে অদ্যাবধি সাইফুল ইসলাম ভাইও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন এই সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য। ডাবলিন ভিত্তিক অনুষ্ঠান আয়োজনে যাদের নাম ভুলার মতো নয় তাদের মধ্যে আক্তার হোসেন, হুমায়ুন কবির অপু, টিটু মিয়া, গোলাম মোর্শেদ কামরুল ও কাজী আহমেদুল কবির অন্যতম। আমরা সম্মিলিত সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের আরো সমৃদ্ধি ও প্রসার আশাকরি সমগ্র আয়ারল্যান্ড ব্যাপী।
অত্যন্ত আনন্দের সহিত জানাচ্ছি যে, আয়ারল্যান্ডের কমিউনিটি পত্রিকা “আইরিশ বাংলা টাইমস” এর সৌজন্যে “আইরিশ বাংলা টাইমস একাডেমির” কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।
এই একাডেমির আওতায় প্রাথমিক ভাবে দুইটি বিশেষায়িত কোর্স পরিচালিত হবে। যার একটি কোর্স কুরআনের ভাষা “এরাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স” যা সম্পন্ন করলে প্রতিটি শিক্ষার্থী কোরআন শরীফের অর্থ বুঝতে পারবে। কোর্সটিতে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম অনুসরণ করে অনলাইনে লাইভ পাঠদানের সাথে সাথে ভিডিও ও পাঠ্যবই এবং নোট অনুসরণ করা হবে। এই কোর্সে অংশগ্রহন করতে আগ্রহী প্রার্থীগণের অবশ্যই কোরআন শরীফ দেখে দেখে পড়ার সামর্থ্য থাকতে হবে। বর্তমানে এটি পরিচালিত হবে সপ্তাহে একদিন রবিবার দুপুর বারোটায় শুরু করে এক থেকে দেড় ঘন্টা পর্যন্ত। ইতোমধ্যে দশজন আগ্রহী প্রার্থী তাদের স্থান বুক করেছে। আর কয়েকটি শ্লট এখনো খালি আছে। নুতন কোন আগ্রহী প্রার্থী থাকলে অথবা বিস্তারিত জানার থাকলে অবশ্যই আমার সাথে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করবেন।
দ্বিতীয় কোর্স “বাংলা ভাষা”। যে সমস্ত শিশু আয়ারল্যান্ডে জন্ম গ্রহণ করেছে অথবা বেড়ে উঠেছে এবং বাংলা পড়া ও লেখাতে দুর্বল তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে এই কোর্সটি তৈরী করা হয়েছে। এই কোর্সটির কারিকুলাম সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খুব শীঘ্রই জানানো হবে। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন আইরিশ বাংলা টাইমসে অথবা আমার সাথে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে পারেন।
মানুষ মাত্রই প্রতিনিয়ত গুনাহ করে থাকে। কেউ কেউ দুনিয়ার বস্তুগত আকাঙ্খা আর লোভ লালসার কাছে দাসে পরিণত হয়ে গুনাহে লিপ্ত ,আবার আল্লাহর বহু প্রিয় বান্দা গুনাহ থেকে নিজেকে মুক্ত করে আল্লার ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর দাসত্ব করার প্রানান্ত চেষ্টা চালিয়ে যান।
তবে আমরা মানুষ ভূল করবই কিন্তু আমাদের রব আল্লাহ সুবাহ নাহু তায়ালা ,তিনি যে “রাহমানুর রাহীম” এবং “গাফুরুর রাহীম” । মৃত্যু চলে আসার আগেও যদি কেউ গুনাহ থেকে তওবা করে ফিরে আসে আল্লাহ তাকে মাফ করে দিবেন কারন তিনি শুধু রহমান না তিনি যে “গাফুর” ক্ষমাকারী। মানুষ পাপ করতে করতে খাদের কিনারায় চলে গেলেও তওবা করলে আল্লাহ তওবা কবুল করে মানুষকে ক্ষমা করে দিবেন।
তওবা করার প্রধান শর্ত হলো যে,আল্লাহর কাছে গুনাহ থেকে ক্ষমা চেয়ে সেই একই গুনাহ আর না করার প্রতিজ্ঞা করে গুনাহর জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া। আর তওবা কবুল হওয়ার শর্ত হলো,তওবা কবুল হয়েছে বিশ্বাস করতে হবে এবং আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে নিজেকে পাপ থেকে দুরে রাখতে হবে, তবেই আসা করা যায় তওবা কবুল হয়েছে।
কোরআনের একটি আয়াতে তওবা কবুল করার ক্ষেত্রে আল্লাহ নিজে এজটি শর্ত আরোপ করে বলেছেন,”ইন্নাল্লাহা লা- আইয়্যুশরাকা বিহি”, অর্থাৎ আল্লাহ শিরক’কারীর গুনাহ মাফ করবেন না। তার মানে এই নয় যে তওবার দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে । শিরক কারীর জন্যেও আল্লার ক্ষমার দরজা খোলা আছে যদি সে স্বচ্ছ হৃদয়ে তওবা করে ।
আল্লাহ কোরআন কারীমে বলেছেন, “ইন্নাল্লাহা ইয়াগফারুয-জুনুবা জামি’য়া”। অর্থত আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন।
যদি কেউ বলে যে,আমি অনেক বড় গোনাহগার আল্লাহ আমার গুনাহ মাফ করবে না, তার মানে সে আল্লাহকে বিশ্বাস করে না।
আবার আল্লাহ সব সময় গুনাহ মাফ করে দিতে প্রস্তুত তাও কিন্তু ঠিক নয়, মৃত্যুর সময় চলে আসার আগে নিজের ভূল শুধরে তওবা করা তওবার একটি অন্যতম শর্ত। অর্থাৎ সারা জীবন পাপে লিপ্ত থেকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার পূর্ব মূহুর্তে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে তওবা করলে কোন ফায়দা হবে না,কারন তা অনেক দেরি ।
একবার এক পাপী ব্যাক্তি এক ধার্মিক বুজুর্গ ব্যাক্তির কাছে জানতে চাইল কি ভাবে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে,তখন বুজুর্গ ব্যক্তিটি বললেন নিচের পাচ্ঁটি বিষয়ের যে কোন একটিকে সম্ভব করতে পারলেই জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বা তা সম্ভব :
১. আল্লাহর দেয়া সকল খাদ্য,ফল ,মূল খাওয়া বাদ দিলে অথবা ,
২. আল্লাহ জমিনে বসবাস করা যাবেনা অথবা,
৩. এমন কোথাও লুকিয়ে থাকা যেখান থেকে আল্লাহ তাকে দেখবেন না অথবা
৪. মৃত্যুর ফেরেস্তা চলে আসলে তুমি ফেরেস্তাকে বলবে “এখন আমি মরব না তুমি পরে আসো আমি তওবা করে কিছু ভাল আমল করে নেই” অথবা
৫. মৃত্যুর পর তুমি জাহান্নামের ফেরেস্তাকে বলবে “আমি তোমার সাথে জাহান্নামে যাবনা”। পাপী লোকটি সব কথা শুনে বলল “এই পাচ্ঁটি কাজের একটিও আমার দ্বারা সম্ভব নয়” তখন সে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করে ফিরে আসল।
তবে গুনাহের মধ্য সবচেয়ে বড় গুনাহ হলো মানুষের হক নষ্ট করা , অর্থাৎ মানুষকে কষ্ট দেওয়া,গীবত করা, ইত্যাদি।
শিরক ব্যতিত সকল গুনাহ আল্লাহ চাইলে ক্ষমা করতে পারেন তবে মানুষের হক নষ্ট করলে তা ক্ষমা করার এখতিয়া আল্লাহ তার নিজের হাতে রাখেন নাই । আপনি যার হক নষ্ট করেছেন তার কাছেই মাফ চাইতে হবে নইলে মনে রাখতে হবে মানুষের হক নষ্ট করার কারনে হাশরের মাঠে কঠিন শাস্তির সম্মুখিন হতে হবে।
আল্লাহ সুবাহ নাহু তায়ালা আমাদের মৃত্যুর ফেরেস্তা দেখার আগেই গুনাহ থেকে ফিরে আসার এবং আল্লাহর কাছে তওবা করার তৌফিক দান করুন, আমীন।
এস,এ,রব: জ্বালানি তেল ব্যবসা আর বিলাসী জীবনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দৃষ্টি এখন মহাকাশের দিকে। পর্দার আড়াল থেকে গত পাঁচ বছর ধরে একটি মহাকাশযান তৈরির কাজ করেছে দেশটি। সম্প্রতি দেশটির সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে মঙ্গলগ্রহে উড্ডয়নের জন্য চুড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে মহাকাশযানটিকে ।
জানা গেছে মহাকাশযানটিতে জ্বালানি তেল ভর্তি শুরু হবে আগামী সপ্তাহে। মানবহীন এই মহাকাশযানটির নাম দেয়া হয়েছে ‘আমাল’। আরবিতে যার অর্থ ‘আশা’।
স্পেইস বিশেষজ্ঞদের ধারণা সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মোহাম্মদ বিন রশিদ স্পেইস সেন্টার থেকে ছেড়ে যাওয়া আমাল মহাকাশযানটির ৪৯৩ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে সময় লাগবে আনুমানিক সাত মাস।
মঙ্গলগ্রহের এক বছর হয় ৬৮৭ দিনে। এই পুরো সময় ধরে মহাকাশযানটি মঙ্গলগ্রহেরে কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করবে আমাল। মঙ্গলগ্রহেরে কক্ষপথ একবার ঘুরতে সময় লাগবে ৫৫ ঘণ্টা।
গ্রহের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে গোলাপি রঙের এই গ্রহটি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবে আমাল। এই প্রকল্পের পরিচালক সারাহ আল আমিরি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন এর মাধ্যমে দেশটির তরুণ বিজ্ঞানীদের জন্য এই মিশন ‘স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং’ পেশায় যুক্ত হওয়ার দ্বার উন্মুক্ত করবে।
একইসঙ্গে তিন বাহিনীর তিন প্রধানকে বরখাস্ত করলেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান। লকডাউন ভাঙার দায়ে দেশের সেনা, পুলিশ এবং গোয়েন্দা প্রধানকে রাতারাতি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিলেন তিনি। সমগ্র পৃথিবীতে মহামারি হয়ে ছড়িয়ে পড়া করোনার এই কালে লকডাউন এর জন্য এমন কড়া অবস্থান আর কোনো দেশকে নিতে দেখা যায়নি। মাত্র কয়দিন আগে সপরিবারে কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ায় সম্ভবত এমন কড়া অবস্থানে যেতে পেরেছেন এই রাষ্ট্রনায়ক।
নিজ দেশ তথা সারা পৃথিবীর জন্য এই ক্রান্তিকালে তিন বাহিনীর প্রধানদের এই আচরণে যে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন আর্মেনিয়ার এই সরকারপ্রধান, তা এই বরখাস্তের পদক্ষেপের মধ্যেই পরিষ্কার হয়েছে। সেটা জানিয়েও দিয়েছেন এই বলে, ‘তিন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এই আচরণ কাঙ্ক্ষিত ছিল না। করোনাভাইরাস মোকাবেলার ক্ষেত্রে এরা তিনজনই দেশের জন্য বাজেভাবে উদাহরণ তৈরি করেছেন।’
তবে তিন বাহিনীর তিন প্রধান কী ভাবে লকডাউন ভেঙেছেন বা তাদের দোষটা ঠিক কি ধরনের ছিল , তা প্রকাশ্যে উল্লেখ করেননি নিকোল পাশিনিয়ান। আর্মেনিয়ার প্রথম দিকের একটি দৈনিকের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, এই করোনা সংকটের মধ্যে সামরিক বাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ লকডাউন অগ্রাহ্য করে তার ছেলের বিয়েতে বড় করে পার্টি দেন। দেশে সামাজিক সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সামরিক বাহিনীর প্রধান তা বিবেচনায় রাখেননি।
এরপর কাগজে ফলাও করে এই বিয়ের খবর প্রকাশ করার পরদিনই প্রধানমন্ত্রী তার দেশের সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকে বরখাস্তের কথা ঘোষণা দেন। তিন প্রধানকে বরখাস্ত করার কথা জানিয়ে ফেসবুকে তিনি লেখেন, দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারাই যদি নিয়ম ভাঙেন, শীর্ষপদে থাকার সুযোগে আইনের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করেন, সেক্ষেত্রে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের কাছে কী শিখবে?
বরখাস্ত কর্মকর্তাদের কেউই শাস্তি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেননি।
মহামারী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সৌদি আরব। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিধিনিষেধ না মানার কারণে ৭১টি মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সৌদি আরবের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী ডা. আবদুল লতিফ আল আরাবিয়াকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, মসজিদে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে কয়েকটি মসজিদ থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এ জন্য ৭১ টির বেশি মসজিদ আবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সৌদি আরব। এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরে হজ যাত্রীদের সংখ্যা কাটছাঁট করে হজ পালনের অনুমতি দেয়া হতে পারে। দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে। অধিকাংশ হজযাত্রীই জেদ্দা হয়েই মক্কায় যান। সেই জেদ্দাতেও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
তাই চলতি বছরে কেবল প্রতীকী সংখ্যক লোককে হজ পালনের অনুমতি দেয়ার কথা ভাবছে সৌদি , অতিরিক্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও বিধিনিষেধের পাশাপাশি বয়স্ক লোকদের হজ পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ৪টি ও ফুলছড়ি উপজেলার একটি ব্রীজ ও সড়ক দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় এই দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে। যার ফলে এলাকার জনগণ ও যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এখানে উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জুলাই মাসের প্রথমদিকে ভয়াবহ বন্যায় সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া-রামনগর-গোবিন্দগঞ্জ সড়কটির উপর নির্মিত তিনটি সেতু বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে ভেঙ্গে যায়। এছাড়া বন্যার পানির স্রোতে ফুলছড়ি উপজেলার কেতকিরহাট বাজারে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ফলে গাইবান্ধা-কঞ্চিপাড়া-কেতকিরহাট পাকা সড়কের কেতকিরহাট বাজারে প্রায় ৫০ ফুট অংশ ভেঙ্গে যায়। এর পরে ওই সড়কে প্রায় ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের একটি কাঠের সাঁকো তৈরী করে স্থানীয়রা। তাছাড়াও সাঘাটায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশ ও কাঠের সাঁকো তৈরী করে কোন রকমে মানুষ যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে।
প্রসঙ্গত গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ি গত বছর ২০১৯ সালের বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলার ৫১টি ইউনিয়নের ৩৮৩টি গ্রামের ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫০ জন মানুষ পানিবন্দী হয়। প্রায় ৫৭৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা এবং ২৩৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় , যার অধিকাংশই এখনও সংস্কার করা হয়নি।
এই বিষয়ে গাইবান্ধা এলজিইডি কে জানানো হয়, গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্রীজ কালভার্টের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
এস এ রব: লক্ষীপুর -২ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ কাজী শহীদ ইসলামকে কুয়েতের পুলিশ কর্তৃক আটক করাকে কেন্দ্র করে যে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সেটার সঠিক তথ্য পাওয়া গেছে আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থকে প্রকাশিত ইংরেজী দৈনিক গালফ নিউজ থেকে ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় কুয়েতে ভিসা বাণিজ্যের নামে মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচার চক্রের অভিযোগে কাজী শহীদ ইসলামকে আটক করেছে কুয়েতের সিআইডি বিভাগ ।
কুয়েত সিটির মুসফির এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর তাহাকে সিআইডি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় । তারপর সেখান থেকে আদালতে হাজির করা হলে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটর রিমান্ডের নির্দেশ দেন সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে ।
কুয়েত থেকে প্রকাশিত আরব টাইমসের বরাত দিয়ে জানা গেছে কাজী শহিদ ইসলাম কুয়েতে পাঠানোর জন্য কতিপয় ব্যাক্তিদের কাছ থেকে তিনি তিন হাজার করে দিরাম গ্রহণ করেছিলেন ।
অনদিকে কুয়েত সহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সাংসদকে গ্রেফতারের খবর প্রচার করলেও এ নিয়ে আনুষ্টানিক কিছু জানা যায়নি সেখানকার বাংলাদেশের দুতাবাস থেকে ।
ফিলিস্তিনিদের জীবনের মূল্য আছে, ফিলিস্তিনি হওয়ার কারণে যেন মরতে না হয়, প্রাচীর নয় ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করুন –এরকম নানা দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে শনিবারে ইসরাইলের রাস্তায় নামেন বহু ইসরাইলি। বিরোধিতা করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর জর্ডান উপত্যকায় পশ্চিম তীর দখল পরিকল্পনার।
ঐদিন অবরুদ্ধ গাজায় অস্ত্রসজ্জিত গাড়িবহর নিয়ে মহড়া দিয়েছে ইসলামিক জিহাদ। সংগঠনটির সাবেক নেতা ডাক্তার রামদা সালাহর মৃত্যুর পর নিজেদের ঐক্য বোঝাতে এই সমাবেশ। পশ্চিম তীর জেরুজালেম এবং গাজা উপত্যকা নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন ফিলিস্তিনের। ১৯৬৭ সালে তিনটি অঞ্চলই দখলে নেয় ইসরাইল। ২০০৫ সালে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করলেও দু’বছর পর আরোপ করা হয় সর্বাত্মক অবরোধ।
বর্ণবাদের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনের জেড়ে পুলিশি আচরণ সংশোধনের পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর ও রাষ্ট্র। এর আওতায় টিয়ার গ্যাস, প্লাস্টিক বুলেট, ফ্ল্যাশ কার্ড এর মত অস্ত্র ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে পুলিশ প্রশিক্ষণ এর ধরন পরিবর্তন এবং হেইট ক্রাইম বিল প্রণয়নের। এদিকে বিক্ষোভ এর ১২ তম দিনে সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি যুক্তরাষ্ট্র। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়েছে বিভিন্ন দেশে।
পার্লামেন্ট চত্বরে হাটুগেড়ে বসে জাস্টিন ট্রুডোর বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ অনেকটা অপ্রত্যাশিত বলা চলে। ন্যায্য দাবি আদায়ে প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন পেয়ে তাই উল্লাসে ফেটে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। শুক্রবার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন অব্যাহত ছিল যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা, সাইপ্রাস, ব্রাজিল অস্ট্রিয়াও। কিন্তু ব্ল্যাক লাইভ মেটারস নামে ঐদিন সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয় অস্ট্রেলিয়ায়। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেয়।
দেশব্যাপী গণআন্দোলনের জেরে পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে মিনেপোলিস ডেনভার ক্যালিফোর্নিয়া উটাহ সহ বিভিন্ন শহর ও রাজ্য প্রশাসন। এর ফলে টিয়ারগ্যাস সহ নন-লিদাল অস্ত্র ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধের পাশাপাশি পুলিশের প্রশিক্ষণেও আসবে পরিবর্তন।
অধিকৃত পশ্চিম তীর ইসরাইলের সংযুক্তকরণের পরিকল্পনায় ইসরাইলি সিদ্ধান্তের ঘোড় বিরোধিতা করেছে কাতার। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরাইলের এমন কাজ ওই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি । কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান ওই বিরোধিতার কথা সরাসরি ঘোষণা করে বলেন: পশ্চিম তীর দখলের ইসরাইলি যে কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দোহা রুখে দাড়াবে। সেইসঙ্গে ফিলিস্তিনি জাতিকে তাদের ভূখণ্ড রক্ষায় সহযোগিতা দেয়ার কথা ঘোষণা করেন মোহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান। করোনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি বৃহৎ চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফিলিস্তিনি জাতিকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে দোহা।
ইসরাইলি কর্মকর্তারা সম্মত হয়েছে পশ্চিম তীরের কিছু অংশকে অধিকৃত ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযোজন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ আগামী জুলাই মাসে শুরু করবে। ফিলিস্তিনিদের চাওয়া পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপন ও জর্ডান উপত্যকায় ইসরাইলের সার্বভৌমত্ব বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ১ জুলাই মন্ত্রিপরিষদে আলোচনা শুরু করার কথা দিয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর সংযোজনের / দখলের জন্য প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ। গেল সোমবার তিনি দেশটির সেনাবাহিনীকে অনিষ্পন্ন পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করতে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য প্রস্তুতির আদেশ দেন। পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যাকাটি ফিলিস্তিনি অঞ্চল। ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল অবৈধভাবে জায়গা দখল করে আছে। সম্প্রতি দখলকৃত পশ্চিম তীরে কয়েক হাজার ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ইসরাইল , যার সমর্থন দিয়েছে ওয়াশিংটন ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনেটর জো বাইডেন। ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিনিধির সমর্থন নিশ্চিত করেছেন সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এর আগে গেল এপ্রিল মাসে প্রতিদ্বন্দ্বীতা থেকে সরে দাড়ান সমাজতান্ত্রিক ধ্যান ধারণার বার্নি স্যান্ডার্স।যার ফলে তখনই জো বাইডেনের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি অনেকটা সুনিশ্চিত হয়ে যায়।বাস্তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিনিধির সমর্থন নিশ্চিত হওয়ার পর শনিবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলো।
ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হতে জো বাইডেনের দরকার ছিল ১ হাজার ৯৯১ জন প্রতিনিধির সমর্থন। গত সপ্তাহে ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া এবং ৭টি অঙ্গরাজ্যের প্রাইমারি শেষে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টের ঝুলিতে ১ হাজার ৯৯৫ প্রতিনিধির সমর্থন রয়েছে। গেল শুক্রবারই এ প্রাইমারিগুলোর ফল প্রকাশিত হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এখন তাকে অপেক্ষা করতে হবে দলীয় কনভেনশনের জন্য । ঐ কনভেনশনেই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। তার পরেই তিনি নামবেন প্রচারণায়। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইসরাইলে তৈরি নতুন স্মার্ট রাইফেলের কার্যকারিতা সিরিয়ায় পরীক্ষা করে দেখছে মার্কিন স্পেশাল অপারেশন্স ফোর্সেস। মার্কিন স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ড এ তথ্য নিশ্চিত করেছে । ইসরাইলে নির্মিত এই রাইফেল দিয়ে কম্পিউটারের সাহায্যে গুলি করার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। স্পেশাল অপারেশনের সময় শত্রুপক্ষের ড্রোনের বিরুদ্ধে এ রাইফেল কতটা কার্যকর হয়ে উঠতে পারে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। মার্কিন স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ডের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কমান্ডার টিম হকিন্সের বরাত দিয়ে আমেরিকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টাস্ক অ্যান্ড পারপাস এ খবর জানিয়েছে ।
স্মাশ ২০০০ নামের এই স্মার্ট রাইফেল তৈরি করেছে ইহুদিবাদী ইসরাইলের ঠিকাদার কোম্পানি স্মার্ট শুটার, এ কাজে সহযোগিতা দিয়েছে ইসরাইলের আরেক কোম্পানি সিগ সয়ের। সামরিক অভিযানের সময় সেনাদেরকে এই রাইফেল বিশেষ সুবিধা দেবে এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে শুধুমাত্র টার্গেট সুনির্দিষ্ট হওয়ার পরে তা গুলি করার অনুমতি দেবে। কমান্ডার হকিন্স আরও জানান, তাদের বাহিনী ইসরাইল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে স্মার্ট রাইফেল কিনেছিল এবং তার পরপরই এর সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছে।
আব্দুর রাহিম ভূঁইয়া: বিশ্বজুড়ে বাঙালিরা তাদের নিজস্ব অবস্থান থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে প্রতিনিয়ত বিশ্বের দরবারে তুলে ধরে যাচ্ছেন। এ সমস্ত নক্ষত্ররা প্রবাসী বাঙ্গালীদের কাছে একেকটি আইকন স্বরূপ। আয়ারল্যান্ডের আমাদের এমন কিছু আইকন আছে যারা যুগযুগ ধরে এই দ্বীপটিতে আলোর বিকিরণ ছড়িয়ে যাচ্ছেন। শুধুমাত্র বাঙালি কমিউনিটির মধ্যেই এদের অবদান সীমাবদ্ধ না। এই দেশের হাজার হাজার নাগিরকও তাদেরকে রোল মডেল হিসেবে বা পাথেয় হিসেবে স্মরণ করে থাকেন।
আজকে আপনাদেরকে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত একজন অধ্যাপক ডক্টর জাকিয়া রহমানের গল্প বলবো, যার জন্ম ১৯৫০ সালে রংপুরে। তার পুরো নাম ইসমেত জকিয়া রহমান। এই মানুষটি বাংলাদেশে মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম ও বেড়ে উঠে। ১৯৭৩ সালে প্রথম দিকে তিনি জনাব ডক্টর আব্দুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৭৩ সালে মাস্টারস ডিগ্রী প্রাপ্ত হবার পর ঢাকা এটমিক এনার্জি সেন্টারে গবেষনার কাজে নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে জনাব আব্দুর রহমান ইলেক্ট্রনিক ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ গবেষণা করার জন্য কমোনোয়েলথ পিএইচডি স্কলারশিপ পান এবং সপরিবারে ইংলেন্ডে আসেন। সেখানে জাকিয়া রহমান সাউথাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুদিন পদার্থবিদ্যা বিজ্ঞান বিভাগে, মহাশূন্য বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে রিসার্চ সহকারী হিসাবে কাজ করেন ও পরে চুম্বকত্বের উপর রিসার্চ করে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন।
পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে তারা দুজনই আয়ারল্যান্ডে লিমেরিকে পাড়ি জমান। সেখানে জাকিয়া রহমান ১৯৮৩ সাল থেকে লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেক্ট্রনিক ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে অধ্যাপনা ও গবেষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । দীর্ঘ ৩৬ বছর আয়ারল্যান্ডের এই বিশ্বখ্যাতি সম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ হাতে হাজার হাজার দেশ ও পৃথিবীর গড়ার বিজ্ঞানী ও কারিগর তৈরী করেন। তিনি নিজস্ব গবেষনাগার Magnetics Research Laboratory নির্মাণ করেন। যেখানে তার উদ্ভাবিত নূতন প্রযুক্তির কার্য্যক্রম পরিচালিত করেন। এই সমস্ত নব প্রযুক্তির চেতনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন সরকারী অনুদান সংস্থা যেমন, Enterprise Ireland, European Union, Industries (Ireland, Europe, USA) এবং পৃথিবীর কিছু দেশ যেমন, ভারত, পাকিস্তান ইত্যাদি থেকে প্রোজেক্ট গ্রান্ট লাভ করেন। ফলশ্রুতিতে নূতন প্রযুক্তি, বাণিজ্যিক ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি, নূতন প্রজন্মের শিক্ষা, প্রশিক্ষন ও জীবিকার সংস্থানের পরিব্যাপ্তি বিস্তার করে। এখন দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার হাতে গড়ে তোলা ছাত্রছাত্রী বাণিজ্যিক প্রযুক্তি ও উৎপাদন, গবেষণা ও শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নাল, পুস্তক, সম্মেলন ও রিপোর্টে তার গবেষনার ফলাফল প্রায় দেড় শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে প্রকাশ করেছেন। প্রায় পনেরটির উপর আন্তর্জাতিক জার্নাল, রিসার্চ অনুদান সংস্থা রিভিউয়ার এবং পিএইচডি থিসিসের পরীক্ষক ছিলেন এবং আছেন। কিছু সংখ্যক জার্নাল ও পুস্তকের এডিটর হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নূতন গড়ে উঠা লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য গবেষনায় পোষ্টগ্রাজুয়েট এবং পরবর্তী উত্তরণের প্রারম্ভিক বীজ বপনের একজন উদোক্তা ছিলেন। তার এবং আরও তিনজন গবেষকের রিসার্চকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির কাঠামো হিসাবে ধরে ১৯৯৮ সালে পরিকল্পনার পথ শুরু হয়। ডিপার্টমেন্ট অব হায়ার এডুকেশন, আয়ারল্যান্ড সেই পরিকল্পনাকে ভিত্তি করে গবেষণাকে বৃহদায়তন করে অধুনা লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনা কর্ম সূচি সুচনা করে। এইসব পরিকল্পিত গবেষনাগার এখন হাজার খানেক বৈজ্ঞানিক ধারণ করতে পারে। সুবিধাদি, দক্ষতা, গবেষনা, প্রকাশনা, ইনোভেশন এবং নব বাণিজ্য বস্তু আবিস্কারে পৃথিবীর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কম নয়।
২০১৫ সালে তিনি লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন। লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয় তাকে Emeritus অধ্যাপক পদে ভূষিত করেন। তিনি এখন গবেষণার কাজে কিছু সময় কাটান। বর্তমানে Albukhary International University, Malaysia তে প্রকাশিত “Albukhary Social Business Journal” এর উপদেষ্টা সম্পাদক হিসাবে কাজ করেন।
তিনি নিয়মিত বাংলাদেশে যাতায়াত করেন। বাংলাদেশের জন্য তার মায়া অপরিসীম। এ বছরই তিনি করোনার প্রকোপের প্রারম্ভেই ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সফর করে আসেন। যদিও হাসতে হাসতেই বলে ফেলেন, ‘আমি এসেইতো কোয়ারেন্টাইন চলে গেলাম’। অধ্যাপক জাকিয়া রহমান দুই সন্তানের মাতা। তার কন্যা যুক্তরাজ্যে বা ইউকেতে রসায়ন বিদ্যায় একজন বিজ্ঞানী এবং ছেলে ডাবলিনে আইটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত।
তার হবির মধ্যে রয়েছে বাগান করা, ছবি আঁকা, কবিতা ও গল্প লেখা। এ সমস্ত তিনি ছোট বেলা থেকেই করেন। আট বছর বয়সে প্রথম বাগান ডিজাইন এবং নির্মাণ করেছিলেন। সেই থেকে এই বাগান করা ও পরিচর্যায় কোনদিন ইতি পড়েনি। আয়ারল্যান্ডে এসে তিনি বড় একটা গোচারণভূমি কিনে তাতে বাগান ও বাড়ি নিজে ডিজাইন করে নিরমাণ করেছেন। বাগানের বয়স এখন ৩০ বছরের বেশী। এই বাগানে রয়েছে অনেক বিরল উদ্ভিদের সমারহ। তাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের বৃক্ষ রাশি, ফুল ও সবজির বাগান। তিনি এখন এই বাগানে অনেক সময় অতিবাহিত করতে পারেন বলে খুব সুখী। অন্য হবিগুলি পিএইচডি শুরু করার পর ও কর্ম জীবনে গবেষনায় কিছুটা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হেতু প্রায় চল্লিশ বছর মানসিক কষ্ট হলেও, বর্জন করেছিলেন। বর্তমানে অবসর সময় কিছুটা বারতি পাওয়াতে এই হবিগুলি পুনরায় শুরু করেছেন। বার বছর বয়স থেকে তিনি নিয়মিত বিভিন্ন সংবাদপত্র যেমন ইত্তাফাক এর ছোটদের বিভাগে ও তারুন্যে বেগম ও অন্যান্য পত্রিকায় বৈজ্ঞানিক ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ, ছোট গল্প ও কবিতা লিখতেন। বিদ্যালয়ের ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের দেয়াল পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। কয়েক বার রাজশাহী বেতার কেন্দ্র থেকে বিতর্ক ও নিজ কবিতা আবৃতিতে অংশ নেন। কয়েকটি সাহিত্য ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতায় পুরস্কৃত হন। তিনি পছন্দ করেন সামাজিকভাবে সবার সাথে মেলামেশা করতে, গান শোনা, বন্ধুবান্ধবদের খবরাখবর নেয়া।
তিনি কখনই রাজনীতি পছন্দ করেননা। আদর্শগত দিক দিয়ে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী, যার সারমর্ম হলো, ‘সবাই সমান, আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি এই পৃথিবীতে সব কিছুই সবার জন্য। রাজনৈতিক সীমানা, মতবাদ ও বর্ণ বিভেদ মানুষের সৃষ্টি, আল্লাহর নয়।‘ কাজেই রাজনীতি করে বিভেদ ডেকে আনে যারা মানুষকে সাহায্য করার কথা বলে, সেই সিস্টেমের উপর তার বিশ্বাস নেই। এই পদ্ধতি কখনই কাজ করেনি এবং করবেওনা।
আইরিশ বাংলাটাইমসের পক্ষ থেকে তার সাথে কুশল বিনিময়ের সময় তিনি তার জীবনের রঙিন ও বৈচিত্রময় অধ্যায়ের স্মৃতিচারণ করেন। আয়ারল্যান্ডকে তিনি কতটুকু পছন্দ করেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘I love Ireland, I love being here and I want to die here.’ তা বলে তিনি নিজের দেশকে কম ভালবাসেননা। কিন্তু দেশমাতা আজ ভারাক্রান্ত। আল্লাহর সৃষ্ট এই বিরাট পৃথিবী আমাদের বসবাসের জন্য। কাজেই বাংলাদেশ এবং আয়ারল্যান্ড সবি তার দেশ।
কিন্তু নিজের জন্মভূমির জন্য তাঁর অশেষ ভালোবাসা। তিনি বিশ্বাস করেন না যে, দেশ সেবার জন্য রাজনীতি করতে হবে। শুধু রাজনীতি করার নামে কিছু অসহযোগিতা করলেই দেশের সেবা হয়না আমি চিরদিন মানুষকে সরাসরি সাহায্য করি অনেকভাবে। মানুষকে দেখিয়ে ছবি তোলার জন্য নয়।
রাজনীতির প্রশ্নে বলেন তিনি রাজনীতি মোটেও পছন্দ করেন না, কখনই জড়িত ছিলেননা এবং তার আদর্শ ও বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন অস্তিত্ব। তিনি সমাজতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী সেই কারণে ছাত্র জীবনে “ছাত্র ইউনিয়ন’ এ দু’বছর জড়িত ছিলেন। সেখানে সাহিত্য চর্চার পরিবেশ ছিল এবং সিনিয়র সব সুসাহিত্যিক বোনেরা এই দহলিজে বিরাজ করতেন। তাদের সময় “ছাত্র ইউনিয়ন’ কখনই পলিটিক্যাল পার্টি ছিল না। তিনি যখন ১৯৬৭ সালে ইউনিভারসিটি শুরু করেন তখনকার পরিস্থিতি পুরোপুরি ভিন্ন ছিল। তিনি মহিলাদের হলে “ছাত্র ইউনিয়ন’ এ এক বছর সাহিত্য সম্পাদিকা হিসাবেও কাজ করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ হওয়ার প্রাক্কালে তার বোধদয় হয়েছিল, এ পথ তার জন্য নয়। প্রচন্ড সময় নষ্ট হওয়াতে পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছিল তাই এসব দলীয় রাজনীতির কি ভয়ংকর পরিণতি হতে পারে তা সে অনুধাবন করতে পেরে সম্পূর্ণভাবে পড়াশুনা ও গবেষণায় নিজেকে সপে দেন। তিনি বলেন, ‘আমার আদর্শ ও বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন অস্তিত্ব।
তিনি জোর দিয়ে ব্যক্ত করলেন ‘আমরা বাংলাদেশ গড়বার স্বপ্ন দেখেছিলাম, কিন্তু যে দেশ আমরা চেয়েছিলাম তেমন হয়নি। আমার জীবনের সবচেয়ে বৃহৎ উদ্দেশ ছিল একজন পদার্থবিদ এবং গবেষক বিজ্ঞানী হওয়া। বাংলাদেশ মাতার কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি সেটি ছিল আমার সব চেয়ে বড় পুঁজি। বিশ্বের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য সেটি ছিল আমার বুদ্ধি মত্তার এক অনন্য শক্তি।‘
তিনি বাঙালিদেরকে আহবান করেন সুন্দর ও পরিছন্ন ভাবে জীবন অতিবাহিত করার জন্য যাতে আমাদের নুতন প্রজন্ম চিন্তাশীলতা ও জীবিকায় প্রজ্বলিত হয়ে দুনিয়ায় শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে পারে। এসব বিষয়ে কিছু আলোচনে করতে উনি রাজী আছেন এবং তার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে যতটুকু সম্ভব উনি সহায়তা করতে পারেন। তিনি জীবনের কাছ থেকে অনেক কিছুই পেয়েছেন। এখন আর বেশি কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার নাই। সবাই সুন্দর ও সুস্থ জীবন যাপন করুণ সেটাই উনি মনে প্রানে কামনা করেন।
আমরা বাংলাদেশিরা হয়তো অনেকেই এই প্রচার বিমুখ ব্যক্তিটিকে চিনিনা বা খবর রাখিনি। আমরা কি জাকিয়াদের মতো গুণীজনদের খবরাখবর রাখতে পারিনা? আমরা কি পারিনা যারা আমাদের সমাজে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করে চলেছেন তাদের সম্পর্কে জানতে? তারা তাদের অবস্থান থেকে আমাদের অনেক কিছুই দিয়েছেন, এখন আমাদের পালা আমরা তাদেরকে কতটুকু স্মরণ রাখবো, কিভাবে রাখবো সেটা নিয়ে আমাদের কিছুটা ভাবার। এভাবে প্রবাসে আমাদের এক প্রজন্মের পর আরেক প্রজন্ম আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে নতুন প্রজন্ম অবশ্যই আগের প্রজন্মকে স্মরণ করতে পারলে, তাদের সাথে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে পারলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম লক্ষ্য হারাবে না। এভাবেই গড়ে উঠবে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে পুরাতন প্রজন্মকে নতুনদের কাছে তুলে ধরা। আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করেছি দুই প্রজন্মের মধ্যে একটা সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে সহায়তা করতে।
আমরা জাকিয়া রহমান ও তার সমবয়সী সকল প্রবাসী তারকাদের শুভকামনা করি।
ব্রাজিলে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। দেশটির প্রসিদ্ধ দৈনিক ফলহা ডিএস পাওলোর প্রথম পাতাজুড়ে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এই দাবি করা হয়। পত্রিকাটি লিখেছে, আপনি যখন এই লেখাটি পড়ছেন, তখন আরেকজন ব্রাজিলিয়ানের মৃত্যু হয়েছে করোনায় । এদিকে বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪ লাখ মানুষ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনার ভয়াবহতা কমে এসেছে। ৮৬ দিন পর প্রথম মৃত্যুশূন্য দিন দেখল শহরটি। ভারত ও পাকিস্তানে প্রায় প্রতিদিনই করোনা-আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হচ্ছে। আক্রান্তের তালিকায় ইতালিকেও ছাড়িয়ে গেছে ভারত।
ফলহা ডিএস পাওলোর সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, মাত্র ১০০ দিন আগে ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জইর বোলসোনারো যেটিকে ‘লিটল ফ্লু’ বলে আখ্যায়ন করেছিলেন, সেটিই এখন প্রতি মিনিটে একজন ব্রাজিলিয়ানের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। টানা তৃতীয় দিন ধরে মৃত্যুর রেকর্ড গড়ে ব্রাজিল। বৃহস্পতিবার মারা যান ১ হাজার ৪৩৭ জন , আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। শুক্রবার রাতে আরও ১ হাজার ৫ জনের মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুসংখ্যা ৩৫ হাজার ৩৭ জন। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও দ্রুত লকডাউন প্রত্যাহারের পক্ষেই সাফাই গাইছেন বোলসোনারো। এটা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছিল ব্রাজিলিয়ান সরকারকে। যার জেরে শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে ব্রাজিলের বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ডব্লিউএইচও ‘একটি বিশেষ গোষ্ঠীর অনুগত’ ও ‘রাজনৈতিক’ প্রতিষ্ঠান। এই সংস্থা ‘আদর্শগত পক্ষপাতিত্ব ছাড়া’ কাজ বন্ধ না করলে ব্রাজিল তার সদস্যপদ বাতিলের কথা ভাববে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল। সবশেষে সীমিত পর্যায়ে শর্তসাপেক্ষে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিমান প্রবেশের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোও যতটা সম্ভব তুলে নিচ্ছে দেশটি।
চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস এর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সতর্কতার সাঙ্গে সম্প্রতি এই পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধগুলো শিথিল করায় চীনের কয়েক ডজন শহরে এখন থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরায় চালু হবে ।
দ্য সিভিল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না (সিএএসি) জানিয়েছে, চীনে বর্তমানে চলাচল করতে পারছে না এমন আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো আগামী ৮ ই জুন থেকে তাদের পছন্দমতো চীনের যে কোনো একটি শহরে সপ্তাহে একবার একটি ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। কিন্তু তা হবে বিধিনিষেধ মেনে।
করোনার সংক্রমণ রোধ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ছাড়াও আর কিছু বিষয় থাকতে পারে । যদি কোনো ফ্লাইট চীনে প্রবেশের পর সেখানকার পাঁচজন যাত্রী করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয় তাহলে পরের সপ্তাহে ওই এয়ারলাইন্স চীনে আর ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে না। আর যদি তা ১০ জন হয় তবে এক মাসের নিষেধাজ্ঞা।
উহানে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বিমান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপর চীনও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচলে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল । তারপর থেকে দেশ দুটির মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে হুশয়ারি আসার পর চীন এইরকম পদক্ষেপ নিল। গতকাল যুক্তরাষ্ট্র চীনের যাত্রীবাহী বিমানগুলো তাদের বিমানবন্দরগুলোতে অবতরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ওয়াশিংটন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর চীনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ।
মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ও প্রাণহানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর আনুমানিক অর্ধেক সংখ্যক বাংলাদেশি উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এক জায়গায় গাদাগাদি করে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং অপুষ্টি এর মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস মনে করছে অন্য দেশের অভিবাসীদের তুলনায় সেখানে বাংলাদেশিদের আক্রান্ত হওয়ার হার কিছুটা বেশি হলেও তা অস্বাভাবিক বা আশঙ্কাজনক নয়।
ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্য অনুযায়ী আজ শুক্রবার পর্যন্ত সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৩ হাজার ১৫৭ জন। দেশটির সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২৫ মে পর্যন্ত সেখানে করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা ১০ হাজার ৯০৫ জন বলে জানান সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। তিনি জানান, ঐ সময় পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৮৭ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের হিসেবে নিশ্চিতভাবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত এই ৮৭ জনের পাশাপাশি গত তিন মাসে কোভিড-১৯ এর উপসর্গ নিয়ে সৌদি আরবে মারা গেছে ২২৪ জন বাংলাদেশি। ওই কর্মকর্তা জানান, মারা যাওয়া ২২৪ জনের মধ্যে ৮৭ জন নিশ্চিতভাবে কোভিড-১৯ রোগী ছিলেন , বাকিদের মৃত্যু সনদে কারণ হিসেবে ‘কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু উল্লেখ ছিল। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৭৯ জন। রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ আরও বলেন, সৌদি আরবে প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন।
স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার বিষয়টি ই বেশি বলে মনে করেন সেখানে বসবাসরত বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিকও। তবে তাদের বক্তব্য, জীবন ও জীবিকার তাড়নায় তারা অসচেতন জীবনযাপন করতে প্রায় বাধ্য হন। বাংলাদেশিদের অধিকাংশই কম দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিক হিসেবে কাজ করে থাকেন । তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বদ্ধ জায়গায় একই সঙ্গে গাদাগাদি করে বসবাস করেন। এই রকম পরিস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব মানা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রায় অসম্ভব।
আজ থেকে বিশ’বছর আগের কথা যদি বলি তখন আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বহু মুসলিম ঈদের দিন খুব ভোরে দূর দূরান্ত থেকে ক্লনস’স্কি মসজিদে(Clonskeagh Mosque) ছুটে আসতেন ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য। নামাজ শেষে সবাই একত্রিত হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করতেন। তখন ডাবলিনে “Dublin Mosque” ও “Clonskeagh Mosque” এই দুটি মসজিদ ছিল।
নব্বই দশকের শেষে এবং ২০০০ সালের পর বহু মুসলিম ইমিগ্রান্ট উন্নত জীবনের আশায় আয়ারল্যান্ডে বসবাস করতে আসেন। আজ তাদেরই পরিবার পরিজন বেড়ে আয়ারল্যান্ডে মুসলিম জন সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মসজিদ ভিত্তিক মুসলিম কমিউনিটির সংখ্যাও এখন চোখে্ঁ পড়ার মত।
Dublin airport বা Hospitals এ বহু ইমিগ্র্যান্ট মুসলিমের কাজের কারনে কিংবা লোকাল রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার কারনেই হোক Swords মুসলিম কমিউনিটি গড়ে উঠেছে খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে। Swords Muslim Community একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা ভিত্তিক কমিউনিটি হওয়ায় অভিবাবকরা এই অমুসলিম দেশে তাদের সন্তানদের নিয়ে আশার আলো দেখছেন।
Swords মুসলিম কমিউনিটি একটি আদর্শ এবং অনুকরনিয় মুসলিম কমিউনিটি। এই কমিউনিটির বৈশিষ্ট্য হলো এখানে দল মত বা আঞ্চলিকতার কোন স্থান নাই । বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বর্ণের মুসলমানদের উদ্দীপ্ত অংশগ্রহন এবং আন্তরিকতাই এই কমিউনিটির মূল ভিত্তি।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ২০১০ সালে Swords River Valley Community Centre এ গুটি কয়েক বাংলাদেশীদের হাত ধরে অনানুষ্ঠানিক ভাবে শুধুমাত্র প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে Swords মুসলিম কমিউনিটির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তিতে ২০১৪ সালে Swords Muslim Community কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে Islamic Cultural Centre Swords নামে আত্বপ্রকাশ করে।
পাচ্ঁ ওয়াক্ত নামাজ:
বাংলাদেশী কমিউনিটির অন্যতম ব্যাক্তিত্ব বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ি জনাব তারেক সালাহউদ্দিন ২০১৩ সালে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিংয়ের কিছু অংশ Swords মুসলিম কমিউনিটির জন্য ছেড়ে দেন এবং তখন থেকে শুরু হয় Swords মুসলিম কমিউনিটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা। Swords মসজিদের ঈমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক “মোহাম্মাদ জাবের হায়দার (From Somalia)” এর নেতৃত্বে শুরু হয় পাচ্ঁ ওয়াক্ত সালাতের জামাত এবং বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষা কার্যক্রম। আলহাম্দু’লিল্লাহ, এই কার্যক্রম অদ্যাবধি চলছে।
জুমা’র নামাজ:
বিশিষ্ঠ ইসলামীক স্কলার ডঃ আহমেদ আল- হাব্বাস(From Palestine)২০১৩ সাল থেকে Swords মুসলিম কমিউনিটিকে ধর্মীয় নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি একই সাথে জুমা এবং ঈদের নামাজের ইমামের দ্বায়ীত্ব পালন করছেন। ডঃ আহমেদ আল- হাব্বাস সমগ্র Irish মুসলিম কমিউনিটিতে একজন অত্যন্ত সন্মানিত এবং প্রাজ্ঞ ইসলামীক স্কলার, তার একনিষ্ঠ প্রজ্ঞা ও ইসলামী হীকমা দিয়ে কোরআন সুন্নাহর আলোকে swords কমিউনিটির মুসলিমদের ঈমানকে মজবুত ও দৃঢ় করার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাকে ইসলামের পথে রাখতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
মাদ্রাসা:
বর্তমাানে Swords মাদ্রাসায় ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৫০ জনের উপরে । এখানে সর্ব নিন্ম ৫ বছর বয়স থেকে ছাত্র ছাত্রী ভর্তি নেয়া হয়। সোমবার থেকে বৃহঃস্পতিবার পর্যন্ত চার দিন বিকাল ৫:৩০ থেকে রাত ৮:৩০ পর্যন্ত ক্লাস নেয়া হয়। ভর্তি ইচ্ছুক বাচ্চাদের অভিবাবক’গন ভর্তি ফরম,বেতন ও অন্যান্য তথ্যের জন্য মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
Swords মসজিদে কমিউনিটির সকল সদস্য বিপুল উৎসাহ ও ধর্মিয় উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে প্রতিবছর রমজানে মসজিদে একত্রিত হয়ে পাচ্ঁ ওয়াক্ত নামাজ এবং তারাবীহর নামাজ আদায় করে থাকেন। রমজানের প্রতিদিন রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। এখানে উল্লেখ করতে হয় যে, অতিতে রমজানে বিভিন্ন দেশ থেকে হাফেজ এনে তারাবীহর নামাজ পড়ানো হত কিন্তু আলহাম্দুলিল্লাহ , বিগত ৩/৪ বছর যাবত Swords মাদ্রাসার হাফেজ ছাত্রগন তারাবীহর নামাজ পরিচালনা করছেন।
Family Eid Get Together:
কমিউনিটির সকল পরিবার পরিজনের একমাত্র আকর্ষন এই বাৎসরিক Family Eid get together. এই Eid Get Together প্রোগ্রামে মহিলা ও বাচ্চাদের জন্য সুস্থ বিনোদনের বিভিন্ন ব্যবস্থা সহ Dinner এর আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর প্রায় ৫০টি পরিবার এই Family Eid get together অংশ গ্রহন করে থাকে।
মাসিক ইসলামীক সেমিনার:
Islamic Cultural Centre Swords এর ব্যবস্থাপনায় প্রতি মাসে প্রাধান ইমাম ডঃ আহমেদ আল- হাব্বাস (From Palestine) এর আলোচনায় কোরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামীক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেখানে জ্ঞান পিপাসু মুসুল্লিগন উপস্থিত হয়ে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন।
ফিউনারেল ফান্ড গঠন:
Swords মুসলিম কমিউনিটির প্রায় ৬২ টি পরিবার এই ফিউনারেল ফান্ডের সদস্য । প্রত্যেক পরিবার এক’কালীন €১০০ ইউরো করে এই ফান্ডে জমা রেখেছে। এই ৬২ পরিবারের মধ্যে কোন একটি পরিবারের কোন সদস্য মারা গেলে ঐ পরিবারকে €৫০০০/- ইউরো নগদ অর্থ দেওয়া হবে ফিউনারেল খরচ হিসাবে। [বি:দ্র: এই ৬২ পরিবারের বাইরে কাউকে এই ফান্ড থেকে টাকা দেওয়া হবে না বলে সদস্যদের সিদ্ধান্ত। তবে, এর বাইরে সমাজের যে কোন ব্যাক্তি বা দেশের জন্য অর্থ দান করার ক্ষেত্রে Swords মুসলিম কমিউনিটি সব সময় উদার আছে এবং থাকবে। ]
Islamic Cultural Centre Swords:
২০১৪ সালে মাত্র তিন মাস সময়ের মধ্যে “তিন শত সত্তর হাজার” ইউরো দিয়ে Swords টাউনের প্রান’কেন্দ্রে ০.৬ একর জমির উপর একটি বিল্ডিং ক্রয় করার মধ্য দিয়ে Swords মুসলিম কমিউনিটি নিজেদের একটি ভিত তৈরী করতে সক্ষম হয়। এখানে একটি কথা না’বললেই নয়, এই বিল্ডিংটি ক্রয় করার সময় আয়ার্যান্ডের সমস্ত বাংলাদেশী কমিউনিটি অর্থ দানের মাধ্যমে হাত বাড়িয়ে দেয় যার কারনে অল্প সময়ে এই বিরাট অংকের অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। বর্তমানে প্লানিং পার্মিশান পাওয়ার পর মসজিদের অভ্যন্তরীন কাজ চলছে। কাজ শেষে অচিরেই মুসল্লিদের জন্য Islamic Cultural Centre Swords খুলে দেওয়া হবে, ইনশা’আল্লাহ।
আমারা কেবল শুরু করলাম, আরো বহু দূর যেতে হবে। নিজেদেরকে এবং আমাদের সন্তানদেরকে “সিরাতুল মুস্তাকিম”এর উপর থাকতে , ইসলামের ছায়া তলে রাখতে এবং ভবিষ্যৎ মুসলিম উম্মাকে সেই পথ দেখাতে আল্লাহ সুব’হানাহু তা’য়ালা যেন আমাদের সকল কাজকে সহজ করে দেন,আমীন।
খবরটা দু তিন দিন আগেই পড়েছি। স্তম্ভিতও হয়েছি। তবু লিখতে পারিনি। করোনা হামলার পর থেকে আয়ারল্যান্ডের আবহাওয়া যেনো সহসাই বদলে গেছে। তেমন কোনো ঝড়বৃষ্টি নেই। শো শো করে বাতাস নেই।বরং আকাশ পরিষ্কার। ঝলমলে রোদ ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে যাওয়ার জন্য কেবল হাতছানি দেয়। বিশেষ করে গত দু চার দিন ধরে চিক চিক রোদের যে ঝলক, তা সত্যি লোভনীয়। এ যেনো প্রিয়ার ভালোবাসার চেয়েও আকর্ষণীয়। তাই করোনায় ঘরবন্দি লোকদের মধ্যেও যেনো একটা বিদ্রোহ দেখা দিলো। তারা আর ঘরে থাকতে চাইলোনা। তাই অনেকেই করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়েই ঘরের বাইরে বেড়িয়ে পড়লো। আমিও ওইসব গৃহবিদ্রোহীদের একজন। তাই সঠিক সময়ে লিখাটা হয়ে ওঠৈনি।
মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। বাস মিনিবাসের ভাড়া নাকি ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়। বাস মালিক সমিতির একটি কমিটি দেশের চার শতাধিক রুটে বাস-মিনিবাসের ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি করে। তাদের মতে একজন যাত্রী যদি নিরাপত্তা জনিত কারনে দুটো আসনের জন্য দুটো টিকেট কেনে তবে যতো মূল্য আসবে তা থেকে তারা ২০ শতাংশ ছাড় দেবে। বাকি ৮০ শতাংশ ভাড়া যাত্রীদেরকে পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করার সুপারিশ করেছে। এ সুপারিশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, দেশের চার শতাধিক রুটে নতুন ভাড়ার তালিকা তৈরির প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নতুন ভাড়ায় যানবাহন চালানো হবে।
করোনাকালে বাস ভাড়া যদি এভাবে বাড়ানো হয় তবে সেটা কতোটুকু মানবিক হবে তাই ভাববার বিষয়। আমি মনে করি এ ধরনের সুপারিশ আক্ষরিক অর্থেই অবাস্তব এবং অগ্রহণযোগ্য। এমন পরিস্থিতিতে বাসের ভাড়া বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে যে কঠিন প্রভাব পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটা ঠিক যে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে পরিবহন খাতের মালিক-শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই বলে এর জন্য এক লাফে ৮০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া যাত্রীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া কতোটুকু সমীচীন? করোনার বিপর্যয়ে জনসাধারণও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেকের আয় কমে গেছে। কারও কারও চাকরির নিশ্চয়তা নেই, মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। কাজেই, বাস মালিকদের ক্ষতির দায় সাধারণ যাত্রীরা কোনভাবেই নিতে পারেন না।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে তেলের দাম কমালে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর দরকার হয় না। বাংলাদেশ রেলওয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে ট্রেনে ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখছে। কিন্তু ভাড়া বাড়ায়নি। একইভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার শর্ত মেনে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলও শুরু হচ্ছে রোববার থেকে। নৌযান মালিকরাও ভাড়া বাড়াচ্ছেন না। অথচ বাস মালিকরা করোনার বিপর্যয়কে কাজে লাগিয়ে এক লাফে ৮০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন। বিষয়টি দুঃখজনক।
সরকার সব সচল করতে চাইছে জীবিকার জন্য। তাই গণপরিবহন সীমিত আকারে চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অথচ যে যুক্তিতে সড়ক পরিবহনের অন্যতম বাহন বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে, সেটি কি আসলে মানা হবে? স্বাভাবিক সময়ে তো বাসে টেনে হেচরে যাত্রী তোলা হয়। এ বাস্তবতায় সামাজিক দূরত্ব মানা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সে উদ্দেশ্যও মালিক-শ্রমিকদের অসহযোগিতার কারণেই ব্যাহত হতে পারে।
তাছাড়া বাংলাদেশে কোনো জিনিসের দাম একবার বাড়লে তা আর পুরনো মূল্যে ফেরত আসেনা। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়কের আমলে ১০ টাকার চাল যে বেড়ে গিয়ে ৪০ টাকা হলো তা বেড়েছে বৈ আর কমেনি। তাই করোনার ছুতায় এবার ভাড়া বাড়ানো তা যে পূর্বের মূল্যে ফিরে যাবে সে গ্যারান্টি কে দেবে? ইতোপূর্বে যে কোন সংকটে বা অজুহাতে দেশে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ালে তা স্বাভাবিক সময়েও কমানোর কোন নজির নেই। তাই সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় পরিবহন মালিকদের দাবির মুখে অনেকটা তড়িঘড়ি করেই যে বাড়তি ভাড়ার বোঝা যাত্রীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে তা মোটেও সঠিক নয়। তাছাড়া ভাড়া বাড়ানোর এ সুপারিশ যদি অনুমোদন হয় তবে পরিবহন মালিকদের একচেটিয়া সব দাবিই মেনে নেয়ার সামিল হবে।
আমরা আশা করব, যাত্রী সাধারণের ঘাড়ে বাড়তি চাপ যেন না পড়ে সেদিকেই গুরুত্ব দেয়া হবে। সড়ক পরিবহন খাতের প্রভাবশালী নেতারা যা দাবি করেন সরকারকে তাই মেনে নিতে দেখা যায়। এবার যেন তা না হয় সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেয়া উচিত।
দেশের বাস মালিক এবং পরিবহন শ্রমিক নেতারা চিরদিনই লুটেরা ছিল, এবং এখনও লুটেরা। তারা শুধু যাত্রীদেরই লুট করে না, তারা তাদের শ্রমিকদেরও লুট করে। গণপরিবহন থেকে দুই হাজার কোটি টাকার চাঁদা তোলার খবর এখন কারও অজানা নয়। অথচ সেই চাদার টাকাও বিপর্যয়ের সময় শ্রমিকরা পাননি। সেই টাকাও লোপাট হয়ে গেছে। চাঁদাবাজি বন্ধ করা গেলে পরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্যসহ সব বন্ধ হয়ে যাবে। সরকার করোনা পরিস্থিতিতে অন্তত এ কাজটি করে দেখাতে পারে।
করোনা পরিস্থিতিতে পৃথিবীর কোন দেশে বাস ভাড়া বাড়েনি। বরং কমেছে। এর কারণ সেসব দেশে সরকার পরিবহন ব্যবস্থাপনায় ভর্তুকি দিয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ অনেক দেশে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে করোনাকালে। আমি যে দেশে বসবাস করছি এই আয়ারল্যান্ডেও করোনাকালে বাস সেবা চালু রয়েছে। কিন্তু এখানেও বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে ভাড়া মওকুফ করা হয়েছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে। অথচ বাস চালকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার খরচ বেড়েছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বেসরকারি সড়ক পরিবহন খাতে ভর্তুকি দেয়া যেতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দর কমেছে। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তেলের দাম কমানো হলে গণপরিবহনের ভাড়া বাবদ যাত্রীদের কাছ থেকে এত বেশি অর্থ আদায়ের দরকার পড়বে না। বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার দাবি রাখে।
একজন বাস মালিকের পয়সার অভাব নেই। তার ব্যবসায় লাভের হারটা তুলনামূলক ভাবে কিছুটা কম হলেও কিছু যায় আসে না। এ জন্য তাকে না খেয়ে মরতে হবেনা। কিন্তু যারা বাস যাত্রী তাদের অনেকেই নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ অনাহারে, অর্ধাহারে কিংবা না খেয়ে থাকে।
তাদের দিকেই আমাদের বেশি সদয় হওয়া উচিত। সব সময়ের মতো এবারও বাস মালিকদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়া মানে তেলা মাথায় তেল দেয়া। তাই সরকারকে বলবো, একটু কঠিন হোন। তেলা মাথায় আর তেল নয়।
আজ বুধবার, ৩রা জুন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এর সাথে আয়ারল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সায়মন কভেনির সাথে ফোনে আলাপ হয়। দৈনিক ইত্তিফাক ও আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসী রুবায়েত দ্বীপের ফেইসবুক স্ট্যাটাসের মারফত এই তথ্য পাওয়া যায়। আজকের এই ফোনালাপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস বা কনসুলার সেবার ব্যাপারে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি।
বাংলাদেশের আইটি বিষয়ে দক্ষ প্রায় ৬ লক্ষ নাগরিকে। তাদের জন্য আয়ারল্যান্ডের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। ড. মোমেন আয়ারল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সায়মন কভেনির সাথে ফোনে আলাপকালে এ অনুরোধ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আইটি খাতে দক্ষ প্রায় ৬ লক্ষ জনগোষ্ঠীকে আয়ারল্যান্ড সে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারবে। এসময় তিনি তৈরি পোশাকখাতে বাংলাদেশের ক্রয়াদেশ বাতিল না করার জন্য আয়ারল্যান্ডের কোম্পানিগুলোকে অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে বিদেশী ক্রেতাদের দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে অসাধারণ উদারতা দেখিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া এ রোহিঙ্গাদের সংখ্যা আয়ারল্যান্ডের জনগোষ্ঠীর প্রায় এক চতুর্থাংশ। এ বিষয়ে আয়ারল্যান্ডের সহযোগিতার জন্য আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ড. মোমেন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমার ফেরত নেয়নি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের প্রতি চাপ সৃষ্টির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি অনুরোধ করেন। ড. মোমেন উল্লেখ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেওয়া। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আয়ারল্যান্ড জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
সায়মন কভেনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী কার্যক্রমে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এস,এ,রব : গত ২রা জুন ডাবলিন শহরের কেন্দ্রস্থলে বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে কোভিড -১৯ সামাজিক দূরত্ব বিধিনিষিধের লঙ্ঘন হয়েছিল কি না সেটা তদন্ত করছে গার্ডা।
সমাবেশের পরে সামাজিক দূরত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল, যেখানে হাজার হাজার লোক জি-ও-কনল স্ট্রিটের জিপিও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে বলস্রিজের মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ।
বর্তমান বিধিনিষেধের অধীনে, কোন বড় সমাবেশ অনুমোদিত নয় এবং সর্বদা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
আজ সন্ধ্যায় প্রকাশিত গার্ডার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে , আয়োজকরা ও’কনেল স্ট্রিটে সামাজিক দূরত্বের ব্যবস্থা বজায় রাখার চেষ্টা করেছিলেন কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
গার্ডার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং পরবর্তী যে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে পাবলিক প্রসিকিউশন ডিরেক্টরের পরামর্শ নেওয়া হবে।
এস, এ,রব :~ গঠনমূলক কিছু বলার না থাকলে, মুখ বন্ধ রাখুন’- লাইভ টিভিতে এসে এমন বক্তব্য দিয়েছেন হাউস্টন পুলিশ প্রধান। সরাসরি সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।
হাউস্টন পুলিশ প্রধান আর্ট আভেসিডো যখন খবরে শোনেন যে ট্রাম্প রাজ্যের গভর্নরদের বিক্ষোভকারীদের উপর কঠোর এবং প্রশাসনের দুর্বলতার চিহ্ন প্রকাশ বন্ধ করতে বলেছেন, তখন এমন মন্তব্য করেন তিনি। গত সপ্তাহে পুলিশের হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে দেশটিতে। আইন -শৃঙ্কলা পরিস্হিতির চরম অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হয়ে আভেসিডো ট্রাম্পকে বলেন, যদি গঠনমূলক কিছু বলার না থাকে, তাহলে মুখ বন্ধ রাখুন। তিনি সোমবার রাতে সিএনএনের আমানপোর শোতে লাইভে এসে একথা বলেন । ওই শোতে আমানপোর প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তাল পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য পুলিশের এখন কী করা উচিত? আমানপোরের প্রশ্নে মাথা নাড়িয়ে আভেসিডো বলেন, আমি দেশের পুলিশ প্রধানদের বরাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলতে চাই, যদি আপনার গঠনমূলক কিছু বলার না থাকে, তাহলে মুখ বন্ধ রাখুন। কারণ আপনি ২০ দশকের গোঁড়ার দিকের নারী ও পুরুষকে ঝুঁকিতে ফেলছেন।এমন পরিস্হিতিতে কর্তৃত্ব বিস্তারের চেয়ে মানুষের হৃদয় ও মন জয়ের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বপুর্ণ। ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে আভেসিডো পরিস্কার ভাষায় বলেন , আমরা মানুষকে উদারতা ও দুর্বলতার মধ্যে দ্বিধান্বিত করতে চাই না। হাউস্টনে আমাদের যা আছে অবহেলায় তা হারাতে চাই না। তিনি তার বক্তব্যে আরও যোগ করে বলেন, দেশব্যাপী আমার সব সহকর্মীদের পক্ষ থেকে বলছি, বর্তমান পরিস্হিতিতে অনেক অফিসার আহত হচ্ছেন, কমিউনিটির সদস্যরা আহত হচ্ছেন। আপনার কিছু বলার না থাকলে চুপ করে থাকুন। সেটাই কিন্তু সঠিক নেতৃত্বের গুনাবলী। আর আমাদের এখন অন্য যে কোনো সময়ের থেকে সঠিক নেতৃত্ব বেশি দরকার। আমরা ভোট দিই বা না দিই তিনি আমাদের প্রেসিডেন্ট। তাহাকে প্রেসিডেন্টের মতোই আচরণ করতে হবে, শিক্ষানবিশের মতো আচরণ না করার জন্য তিনি অনুরোধ করেন । আভেসিডো লাইভ শোতে এক প্রকার কটাক্ষ করে বলেন যে ,এটা হলিউড নয়, বাস্তব জীবন। আর বাস্তব জীবন এখন ঝুঁকিতে পড়েছে। আমি মার্কিন জনগণকে পুলিশের সঙ্গে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাবো। যা করা দরকার আসুন আমরা সকলে মিলে সেটাই করি ।
গত ২৫ মে মিনেয়াপোলিসে পুলিশের হেফাজতে থাকার সময় মারা যান ৪৬ বছর বয়সী আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিক জর্জ ফ্লয়েড। বছর বয়সী কৃষাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিনের বিরুদ্ধে তৃতীয় ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে মিঃ ফ্লয়েডের পরিবারের পক্ষ থেকে ।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে বাংলাদেশকে ৩৩৪ মিলিয়ন ইউরো বা ৩৭১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। একই সঙ্গে রফতানি সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নগদ অর্থ সহায়তা দেবে ইইউ।
সাম্প্রতিককালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ২০ বিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে করোনার বিস্তার ঠেকাতে অংশীদার দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা দেওয়া হবে। আর সেখানে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৩৪ মিলিয়ন ইউরো অথবা ৩৭১ মিলিয়ন ডলার।
কোভিড -১৯ এর প্রভাবের ফলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবকে প্রশমিত করতে ২৬৩ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করা হবে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমূলক শিল্পগুলির শ্রমিকদের নগদ সহায়তা প্রদান করতে এই সহায়তা করবে ইইউ । বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তার পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে ফ্রান্স ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি বা এএফডি। যার মধ্যে ৫.৫ মিলিয়ন ইউরো বাংলাদেশের কক্স বাজারের অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য খাত ও দেশের গবেষণায় জন্য বরাদ্দ করা হবে। তাছাড়াও ৭ লাখ ১৪ হাজার ৩৮৩ ইউরো ঢাকার আশপাশের মানুষদের জরুরী সেবা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে।
ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক বলেছন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মানুষের অবস্থা নাকাল । জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাংলাদেশ সরকারকে ৩৩৪ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে ইইউ । সংস্থাটি মনে করে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশর মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ সহায়তা যথাযথভাবে পাবে।
বিসিজি বা ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন টিকা প্রতিরোধ করতে পারে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি কলেজ অফ অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিনের এক গবেষণায় এমনটি জানানো হয়েছে।
বিশ্বে বিভিন্ন দেশ থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এই গবেষণাটি চালান হয় ।
নিউ ইয়র্ক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি কলেজ অফ অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিন কর্তৃপক্ষ জানায় , পৃথিবীর যে সব দেশে বিসিজি টিকাদান ন কর্মসূচি নেই যেমন ইতালি, নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে দীর্ঘস্থায়ী টিকাদান কর্মসূচি যে সব দেশে চালু আছে ওইসব দেশের মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কম।
গবেষণায় দাবি করা হয়, বিসিজি টিকা আসার পর থেকে বিশ্বে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা হয়, মৃত্যুর হার বেশি হওয়ায় ১৯৮৪ সালে ইরান বিসিজি কার্যক্রম শুরু করে। এরপর দেশটিতে বিসজি টিকা দেয়া মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি তেমন একটা পাওয়া যায়নি।
আর এইরকম দাবির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতিও । চীন থেকে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হলেও এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে , আর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৮ লাখ ৩ হাজার ১৮০ জন , মারা গেছেন ৩৯ হাজার ৩৩ জন ।
নিউইয়র্ক এর বিভিন্ন স্টোর এ লুটপাট এর ঘটনা ঘটেছে । জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে এই ঘটনা ঘটায় দুবৃর্ত্তরা। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই লুফে নিছে স্টোরে থাকা মালামাল । একজন পণ্য নিয়ে ডাকছে আরেকজনকে । গত রোববার রাতে সোহো এলাকার বিভিন্ন স্টোরে এভাবেই লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে প্রায় আড়াই শতাধিক ।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদের ষষ্ঠ দিন রাতে ব্রুকলিন ও ম্যানহাটনে যখন বিক্ষোভ চলছিল, তখন অপরাধী দল সোহো এলকার বিভিন্ন স্টোরে লুটপাট চালায়। এই এলাকাতে নিউইয়র্কের বড় আর্ট গ্যালারিগুলোও রয়েছে ।
গতকাল নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার ডার্মোট শেহা বলেন, দিনে শান্তিপূর্ণ অবস্থা থাকলেও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় রাতে । লুটকারীরা সোহোর বিভিন্ন স্টোর এ হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। এসব ঘটনায় রাতে অন্তত ২৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।
নিউইয়র্ক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জনমিলার নিউইয়র্ক পোস্টকে জানিয়েছেন, বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিল। কিছু লোক বিক্ষোভ থেকে জোটবদ্ধ হয়ে সেখানে চলে আসে। তারা পরিকল্পনা করেই লুটপাটের ঘটনা ঘটায়।
পুলিশ প্রধান এনবিসির টুডে শোতে বলেছেন, যখন অন্ধকার হয়ে গেল, তখন এটি কুশ্রী এবং কুরুচিপূর্ণ হয়ে উঠল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, গুচি, চ্যানেল ও ব্লুমিংডেলসকে টার্গেট করা হচ্ছে। কিছু ছবিতে দেখা যায়, এসব স্টোরের গ্লাস ভেঙ্গে মামলাল লুট করছে হামলাকারীরা ।
এস,এ,রব:~ ফ্রান্স সরকারের লকডাউন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রায় তিন লক্ষাধিক অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বৈধতার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে দেশটিতে বসবাসকারী হাজারো অভিবাসী । গত শনিবার (৩০ শে মে ) দুপুরে রাজধানী প্যারিসের ব্লাস দা মাদলিন ও অপেরা থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অভিবাসীদের অধিকার এবং সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে এমন প্রায় শতাধিক সংগঠনের নেতৃত্বে অংশ নেয় কয়েক হাজার অভিবাসী ।
করোনা ভাইরাসের সংকটকালে সম্প্রতি ফ্রান্সের শতাধিক সংসদ সদস্য সহ সিনেটররা দেশের অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বৈধতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাবর আবেদন করলে তা নাকচ হবার পর এই প্রেক্ষিতে বিক্ষোভের ডাক দেয় অনিবন্ধিত অভিবাসী আন্দোলকারীরা ।
বিপুল সংখ্যক পুলিশী বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে যাত্রা করা বিক্ষোভ মিছিলটি ঐতিহাসিক রিপাবলিক চত্বরে এসে শেষ হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন আয়োজনকারীরা । পরে আইন অমান্য করায় ৯২ জনকে গ্রেপ্তার করে ফ্রান্স পুলিশ। এস,এ,রব ডাবলিন
এস,এ,রব : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে আজ হাজার হাজার মানুষ আয়াল্যান্ডের ডাবলিন শহরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ডাবলিনের ওকনেল স্ট্রিটের জিপিওতে Black lives matter /We are one ব্যানার এবং ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষ । তারপর সেখান থেকে হাজার হাজার মানুষের মিছিলটি স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে বলসব্রিজের মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে । মার্কিন দূতাবাসে পৌঁছানোর পর সেখানে এক মিনিটের নীরবতা পালন করেন বিক্ষোভকারীরা । বিক্ষোভকারীদের আরেকটি অংশ ফিনিক্স পার্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হয়েছিলেন।
৪৬ বছর বয়সী কৃষাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিনের বিরুদ্ধে তৃতীয় ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে মিঃ ফ্লয়েডের পরিবারের পক্ষ থেকে । তার হত্যার প্রতিবাদে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডস সহ বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ।
অন্যদিকে জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরর বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে ।সার্বিক পরিস্হিতি অবনতির কারণে দেশটির অন্তত ৪০টি শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে । ওয়াশিংটন সহ ১৩ টি অঙ্গরাজ্যে সেনা বাহিনীকে সক্রিয় করা হয়েছে । প্রায় চার হাজারের মত বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে গার্ডিয়ানের বরাত দিয়ে জানা গেছে । অন্যদিকে গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের সামনে কয়েকশ লোকের আগ্রাসি প্রতিবাদে ভীতু হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘন্টার মত বাংকারে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রিপাবলিকান সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদ প্রকাশ করে । ওই সময় বিক্ষোভকারীরা পাথর এবং পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেছিল ।
করোনা ভাইরাস মহামারির জন্য দুই মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা নৌযান গতকাল চালু হয় । শর্ত ছিল যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নৌপথে লঞ্চ চলাচল করতে হবে । কিন্তু প্রথম দিনেই শর্ত ভঙ্গ করে পটুয়াখালী – ঢাকা নৌপথে চলাচল করা লঞ্চ ।গত রোববার প্রথম দিনেই পটুয়াখালী-ঢাকা নৌপথে লঞ্চে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত না করায় একটি লঞ্চকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তিনটি দ্বিতল লঞ্ পটুয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার জন্য লঞ্চঘাটে নোঙর করেছিল। বিকেলের মধ্যে ডেকে যাত্রী ভরে যায়। কোনো শারীরিক দূরত্ব ছিল না । সন্ধ্যা ছয়টা থেকে লঞ্চগুলো ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিকেলেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা । লঞ্চে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারেননি বিধায় সুন্দরবন-৮ লঞ্চের সুপারভাইজার আনোয়ার হোসেনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনাদায়ে দুই মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় সুপারভাইজার আনোয়ারকে থানায় নিয়ে গেলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালী লঞ্চঘাটের তিনটি লঞ্চই ঢাকা ছেড়ে যেতে দ্বিমত পোষণ করে। ফলে যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো পটুয়াখালী ঘাটে অবস্থান করছে। তাদের সহকর্মীকে আটক করায় তারা লঞ্চ না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।
ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করায় পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে থাকা লঞ্চগুলো ঢাকামুখী যাত্রা বন্ধ করে দেয়ায় শত শত যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
দুই মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর গতকাল চালু হয় নৌযান। তবে করোনার কারণে সরকারের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে লঞ্চ চলাচল করার নির্দেশনা দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
রবীন্দ্র সঙ্গীতের একটি লাইন- জেনে শুনে বিষ করেছি পান” এ যেনো জেনে শুনে বিষ পান করার মতো। মৃত্যুর সঙ্গে আলিঙ্গনের এক নগ্ন উল্লাসের মতো। ইতিহাস বলে, এক কালে মানুষ দাস কিনে নিয়ে তাদেরকে তীর ছুড়ে হত্যা করার মাধ্যমে আনন্দ পেতো। বিষয়টা যেনো অনেকটা এরকম।
হ্যাঁ বলছিলাম, করোনা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশে যে লীলাখেলা চলছে তার কথা। করোনা আক্রান্তের শুরুতে দেশটিতে জগাখিচুড়ি মার্কা “লকডাউন” জারি করা হলো। ফলে কেউ মানলো, কেউ মানলোনা। কেউ ঘরে থাকলো, কেউ থাকলোনা। লকডাউনের সাথে সাথে অধিকাংশ শ্রমিকরা গ্রামে চলে গেলো। ক’দিন পরেই আবার গার্মেনটস খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলো। হুমরি খেয়ে শ্রমিকরা মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে ঢাকায় ফিরে এলো। আবার গার্মেনটস বন্ধের ঘোষণা দিয়ে তাদেরকে ফিরিয়েও দেয়া হলো। এই যে মশকরা, এ মশকরার ফলে কি গ্রাম গঞ্জ সহ সারা দেশে ভয়ানক জীবাণুটি ছড়িয়ে পড়েনি? এবারের ঈদে আবারো একই চিত্র পরিলক্ষিত হলো। বাস, ট্রেন, লঞ্চ তথা সর্বত্রই উপচে পড়া ভিড়। স্বাস্থ্য বিধি বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনো বালাই ছিলোনা। করোনাকে উস্কে দেয়ার জন্য এসব কি যথেষ্ট নয়?
উহানের পরে ইউরোপ আমেরিকায় যখন মহামারী চলছিলো তখনো করোনা বাংলাদেশের ভিসা পায়নি। ওই সময় দেশটি যদি পুরোপুরি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারতো তবে করোনা কখনোই দেশে ঢুকার ভিসাটি পেতোনা। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে করোনা তা পেয়ে যায়। দেশের মানুষের সাথে কোলাকুলি করতে সক্ষম হয়।
শয়তানটা যেহেতু দেশে এসেই পড়েছে তাই তাকে কৌশলে এড়িয়ে চলতে হবে। নেয়া হলো পদক্ষেপ। লকডাউন। ঘর থেকে বের হওয়া যাবেনা। কোনো অবস্থাতেই করোনার সাথে মুলাখাত নয়। ব্যস, দুদিন চললো। তারপর “লকডাউন” হয়ে গেলো কমপ্লিট “লকআপ”।
সরকার যখন করোনার শুরুতেই লকডাউন ঘোষণা করেছিলো আমরা বেশ প্রশংসা করেছিলাম। কিন্তু সরকারের দুর্বল কৌশলের জন্য তা যথাযথ ভাবে কার্যকর হয়নি। ফলে করোনার সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে বেড়েই চলে। এর ভয়ংকর থাবা যখন একেবারেই তুঙ্গে তখন এবার “জীবিকার” গুঞ্জন তুলে লকডাউন খুলে দেয়া হলো। কী বিচিত্র দেশ! যে জীবনের জন্য জীবিকা সেই জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে জীবনকে করা হলো তুচ্ছ। তুচ্ছ তাতাচ্ছিল্যের বিষ তীরে নিক্ষিপ্ত হলো জীবন।
এ কথা সত্য, জীবন ও জীবিকা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। জীবিকা ছাড়া জীবন চলেনা। তাই বলে জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে জীবিকার অন্বেষায় বেরিয়ে পড়া কতোটুকু যৌক্তিক বা সমীচীন তা আমার মোটা মাথায় একদম খেলছেনা।
খবরে দেখলাম, লকডাউন খুলে দেয়ার প্রথম দিনেই আশংকাজনক ভাবে সংক্রমণের হার বেড়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার কথা বলা হলেও মানুষ মোটেও এর তোয়াক্কা করছেনা। সুতরাং এর ভবিষ্যত ফলাফল যে খুব খারাপ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিষয়টি মোটেও স্বাস্থ্য সম্মত নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক। একইভাবে এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শের পরিপন্থি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, সংক্রমণ কমলে পরিকল্পনা করে ধাপে ধাপে লকডাউন তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ইতালি, স্পেনসহ অন্য দেশগুলো সেটিই করেছে। ওইসব দেশ ধাপে ধাপে লকডাউন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। কিন্তু সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময় বাংলাদেশে হঠাৎ করে সবকিছু চালু করে দেয়া হলো। এ ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া হলো। সন্দেহ নেই, সংক্রমণ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাবে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ পড়বে। কিন্তু সেই চাপ সামাল দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার কি আদৌ আছে? পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, মৃত্যুর মিছিল যদি তাড়া করে গোটা দেশব্যাপী এর দায়ভার সরকার কাকে দেবেন?
সরকারের এ সিদ্ধান্তটি কি জেনে শুনে বিষ পান করার মতোই নয়?
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে মুক্তিতে সবচেয়ে আলোচিত ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনকে এবার নিষিদ্ধ করেছে ফ্রান্স, ইতালি ও বেলজিয়াম। তার আগে ওষুধটির মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে দাবি করে আপাতত এর ব্যবহার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
এবার সেই পরামর্শে সহমত জানাল ইউরোপের তিন দেশ। গত বুধবার ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের অনুমতি বাতিল করে এ নির্দেশনায় জানায়, কোভিড-১৯ রোগীদের ওপর হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
কিন্তু ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ওষুধটি আপাতত ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত বুধবার এক বিবৃতিতে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান বলেন, হাসপাতালে ও বাসায় ব্যক্তিগতভাবে কোনো চিকিৎসকই তার রোগীকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সেবনের কথা লিখবেন না। এখন থেকে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো।
একই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বেলজিয়ামের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, করোনা রোগের ওপর হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার উচিত হবে না। শুধু তাই নয়, ওষুধটির কার্যকারিতা মূল্যায়নে ট্রায়ালের সময় ও এর ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া উচিত। এইদিকে জানা গেছে, বিতর্কিত এই ওষুধের একটি ট্রায়াল বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের আংশিক অর্থায়নে মাধ্যমে ৪০ হাজার স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর এই ট্রায়ালে অংশ নেয়ার কথা ছিল।
সম্প্রতি কিছু গবেষণায় ওষুধটি করোনা রোগীদের হৃদযন্ত্রের গুরুতর সমস্যাসহ নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বলে প্রমাণিত হয়।
এর পর পরই ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড তাদের সেই ট্রায়াল বন্ধ করে দেয় বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এক আইনপ্রণেতা। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতাকে আমলে না নিয়ে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছে ব্রাজিল সরকার। একইভাবে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত।
বাংলাদেশে করোনার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গণস্বাস্থ্যের অণুজীববিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীলের চমকপ্রদ তথ্য বিশ্লেষণ-
বাংলাদেশে এরই মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে গেছেন এবং আক্রান্তরা সুস্থও হয়ে উঠেছেন, তারা যে আক্রান্ত হয়তবা তারা নিজেই তা জানেন না।
উপসর্গ হিসেবে তাদের হয়তবা সামান্য জ্বর হয়েছে, কাশি হয়েছে কিংবা শারিরীক দুর্বলতা অনুভব করেছেন। ইউরোপ’সহ উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। ইউরোপের মানুষের ইমিউন ব্যবস্থা ‘স্ল্যাগিশ’।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের তীব্রতা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কমে গেছে। এখানে ইমিউন সিস্টেমসহ বেশ কিছু বিষয় কাজ করেছে। তবে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস যদি জানুয়ারিতে আসত তাহলে এর তীব্রতা আরও বেশি হতো। মার্চে যেহেতু এসেছে, সে কারণে বাংলাদেশে করোনার তীব্রতা কম দেখা যাচ্ছে।
হার্ড ইউমিনিটির লক্ষে পৌঁছাতে হলে বাংলাদেশের ৮০ ভাগ মানুষকে আক্রান্ত হতে হবে যা আগামী এক মাসের মধ্যে ঘটতে পারে বলে আমি মনে করি।
হার্ড ইমিউনিটি হচ্ছে এক ধরনের ‘কমিউনিটি ইমিউনিটি’ যখন সমাজের অনেক বেশি জনগোষ্ঠীর মাঝে কোনো সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।
যার ফলে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই কিংবা দুর্বল, তাদেরও ওই রোগ হতে পরোক্ষভাবে সুরক্ষা দেয়া যায়।
করোনা যেহেতু চারিদিকে ছড়িয়েছে সেহেতু আমরা যতই ঘরে লুকিয়ে থাকি করোনা কাউকেই ছাড়বে না। ঝড় হলে যেমন প্রত্যেক গাছকেই টাচ করে যায় করোনাও তেমনি আমাদের প্রত্যেককে আক্রান্ত করবে।
এক্ষেত্রে যাদের বয়স বেশি অন্যান্য অসুস্থতা আছে তাদের ঝুঁকি বেশি আর যারা শক্ত-পোক্ত মনোবল দৃঢ়, তাদের ভয় কম।
জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিলের বিলম্ব ফি মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানোর জন্যই এই সিধান্ত ।
আজ রোববার (৩১ মে) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও জ্বালানি নসরুল হামিদ বিপু সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এই সময় ঝুঁকি নিয়ে তাড়াতাড়ি করে বিল দিতে হবে না। আমরা জুন মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিলের বিলম্ব মাশুল মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎ বিল নিয়ে নানা ভোগান্তির কথা আমাদের কানেও আসছে । কারও কোনও বাড়তি বিল করা হলে তা পরবর্তীতে সমন্বয় করা হবে।
বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন বিদ্যুতের আবাসিক গ্রাহকরা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে গ্রাহকদের পক্ষে বিল পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। তাই গত মার্চে মন্ত্রণালয় এ সম্পর্কে আদেশ জারি করে । এই আদেশে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিল কোনো রকম বিলম্ব মাশুল ছাড়া মে মাসে জমা নেওয়ার জন্য বিইআরসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে মে মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার বিলম্ব মাশুল মওকুফ করার জন্য গত ২২ মার্চ ওই আদেশ দেওয়া হয়েছিল। য
এ নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়।
জ্বালানি বিভাগের উপসচিব আকরামুজ্জামান স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে বলা হয়, আবাসিক গ্যাস বিল নির্ধারিত সময় জমা দিতে বিপুল পরিমাণ গ্রাহক একসঙ্গে ব্যাংকে গিয়ে জমা হয়। এভাবে অনেক মানুষ একসঙ্গে ব্যাংকে গিয়ে বিল দিতে গেলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার ‘গ্যাস বিপনন নিয়মাবলি (গৃহস্থালি) ২০১৪’ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবাসিক গ্রাহকেরা কোনো রকম বিলম্ব মাশুল বা সার চার্জ ছাড়াই ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের গ্যাস বিল আগামী জুন মাসের সুবিধাজনক সময় জমা দিতে পারবেন ।
সৈয়দ আতিকুর রব : ইউরোপ পৃথিবীর অন্যতম সৌন্দর্যের লীলাভূমি, এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশই স্বতন্ত্র সৌন্দর্যমণ্ডিত, খুব সংক্ষেপে বর্ণনা করতে গেলে ইউরোপের প্রতিটি দেশই অন্যতম হাজার বছরের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত নয়নাভিরাম স্থাপত্যশৈলী। বিশ্বের অন্যতম নামকরা ঐতিহাসিক জাদুঘর, সাগর, পাহাড় , নদী ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত সুসজ্জিত মনজুড়ানো প্রাকৃতিক পরিবেশ। তা ছাড়া ভোজন বৈচিত্র্য, পানশালা ও নানা ধরনের বিনোদনে ভরপুর সাজানো-গোছানো এক পর্যটনকেন্দ্র ইউরোপ। সে কারণেই পর্যটকদের কাছে অবকাশযাপনের জন্য খুবই আকর্ষণীয় স্থান ইউরোপ। করোনা সংকটের কারণে ইউরোপ পর্যটনশূন্য হয়ে গিয়েছিল । কোয়ারাইন্টেনে চলেগিয়েছিল পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশের মত মানুষ । থমকে থাকা সে ইউরোপের পর্যটন শিল্প নতুন ধম নিয়ে ফিরছে এই গ্রীষ্মে । তবে এবারের গ্রীষ্মের আনন্দ উপভোগে বিপাকে পড়েছেন আইরিশ এবং ইংলিশ পর্যটকরা ।
গ্রীস : কিছু দেশের বিদেশী পর্যকটকদের জন্য গ্রীস তাদের পর্যটন মওসুম উন্মুক্ত করলেও আইরিশ পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য এই মুহুর্তে দেশটিতে প্রবেশ করতে অনুমতি দিবে না গ্রীস সরকার । গ্রীস সরকারের এমন একটি সীদ্ধান্তে আইরিশ পর্যটকদের মনে হতাশার জন্ম নিয়েছে ।
আইরিশ পর্যটকদের জন্য বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ হলো গ্রীস। দেশটি সম্প্রতি বিদেশী পর্যটক প্রবেশের ক্ষেত্রে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে । যেখানে ২২ টি ইউরোপীয় দেশ সহ অন্য সাতটি দেশ থেকে পর্যটকদের গ্রীসে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে দেশটিতে যাহারা কোভিড -১৯ মহামারী রোধে কার্যকরি ব্যবস্হা গ্রহণের মাধ্যমে সফলতা দেখিয়েছে।
ইউকে বা আয়ারল্যান্ড উভয়ই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয় যদিও তবে উলেখ্য যে উভয় দেশের লক্ষ লক্ষ পর্যটকরা প্রতি বছর বেড়াতে যান উক্ত দেশটিতে ।
দ্যা আইরিশ টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে উপোরেল্লেখিত তালিকাটি তৈরী করেছে গ্রীস সরকার আগন্তুক পর্যটকদের নিজস্ব দেশগুলোর মহামারী সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির উপর গবেষণা করে ।
গ্রীসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামী ১৫ ই জুন থেকে বিদেশী পর্যটকদের অ্যাথেন্স ও থেসালোনিকি বিমানবন্দরে নামার অনুমতি দেওয়া হবে এবং বিমান বন্দরে করোনা ভাইরাস পরীক্ষা সাপেক্ষে তাদেরকে ভীতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে । অন্যদিকে গ্রীসের হোটেলগুলিকে স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে ।
আইরিশ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ১ জুলাই থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে এবং পরিস্হিতি উন্নয়ন সাপেক্ষ যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ড উভয় দেশের পর্যটকদের গ্রীসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে ।
ক্রোয়েশিয়া: অন্যদিকে ইউরোপের অন্যতম পর্যটন নির্ভরশীল দেশ ক্রোয়েশিয়াও তাদের পর্যটন মওসুম উম্মুক্ত করতে যাচ্ছে খুব শিগগির । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পর্যটকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছে দেশটি । ১৫ ই জুন থেকে সীমিত আকারে ১০ টি দেশের দর্শনার্থীদের দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে ।
আয়ারল্যান্ড সহ অন্যান্য ইইউ দেশগুলির নাগরিকদের ক্রোয়েশিয়া সফরের ক্ষেত্রে ভ্রমনের প্রকৃত কারণ সহ হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র বিমানবন্দরে উপস্হাপনের কথা বলা হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে । সে ক্ষেত্রে ব্যত্তয় ঘঠলে তাদেরকে অনুমতি না দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে । ইতিমধ্যে দেশটির বেশিরভাগ হোটেল এবং পর্যটন আবাসনগুলো পুনরায় চালু করা লক্ষ্যে গত ১১ ই মে থেকে রেস্তোঁরা ও ক্যাফেগুলো চালু করা হয়েছে ।
ইতালি : লাইফ সার্পোটে থাকা ইতালি ৩ জুন থেকে সমস্ত বিদেশী পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হবে । ফ্রান্স : অন্যান্য ইইউ দেশগুলোর সাথে সমন্বয় করে আগামী ১৫ই জুন থেকে পর্যটকদের জন্য দেশটি উম্মুক্ত করার আশা করছে ফ্রান্স ।
স্পেন : বর্তমানে স্পেনে প্রবেশকারীদের জন্য ১৪ দিনের কোরেন্টাইন ব্যবস্হা চালু রয়েছে তবে প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন যে এটি জুলাই থেকে তুলে নেওয়া হবে এবং দেশটি বিদেশী পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে ।
পর্তুগাল: পর্তুগাল পর্যটকদের জন্য কখনও তাদের দরজা বন্ধ করে দেয়নি তবে বেশিরভাগ হোটেল এবং রেস্তোঁরা এই মাস অবধি বন্ধ রয়েছে । পর্যটকদের জন্য দেশটি কবে থেকে উস্মুক্ত করা হবে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোন কিছু জানা যায়নি ।
তথ্য সূত্র : The Irish Times Syed Atiqur Rob Ireland
এস,এ,রব: শিক্ষামন্ত্রনালয় কর্তৃক শুক্রবার পর্যন্ত বর্ধিত সময়সীমা নির্ধারণের পরও প্রায় ১০০০ জন লিভিং সার্ট শিক্ষার্থীরা গ্রেড গণনার জন্য তাদের নাম নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন।
চলতি বছর লিভিং সার্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে মোট ৬১,০২৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মোট ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থীরা নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন যারা আগামী আগস্ট মাসে গ্রেডের ভিত্তিতে ফলাফল গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী জো ম্যাকহাগ জানিয়েছেন। অনিবন্ধিত ১০০০ জন শিক্ষার্থীরা কেন পোর্টালে তাদের নাম নিবন্ধন করলেন না সেজন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয় আগামী সপ্তাহে তাদের বিদ্যালয়ের সাথে সস্পৃক্ত হবে ওই সমস্ত শিক্ষার্থীদের নিবন্ধিত না হবার কারণ খোজে বের করার জন্য । মিঃ ম্যাকহাগ বলেছেন, এই কাজের উদ্দেশ্য হবে গণনা করে গ্রেড পেতে ইচ্ছুক সকল শিক্ষার্থীর সমর্থন নিশ্চিত করা ।
তিনি জানান যে, শিক্ষার্থীরা পোর্টালের মাধ্যমে যোগাযোগের বিশদ তথ্য সরবরাহ করেছেন ইতিমধ্যে এবং গ্রেড গণনা শেষে সময়মত ফলাফল জানানোর জন্য তাহারা শিক্ষর্থিীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন ।
প্রধানমন্ত্রী আজ এই মর্মে নিশ্চিত করেছেন যে আয়ারল্যান্ডের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি আগস্টের শেষের দিকে পুনরায় চালু হবে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সরকারি ভবনে আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার এই ঘোষণা দিয়েছেন । আগস্টের শেষের দিকে স্কুল চালু করার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী জো ম্যাকহাগের মেমোর উদ্ধৃতি দিয়ে লিও ভারদকার বলেন, পুনরায় স্কুল খোলার পর শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কম ঝুঁকির বিষয়গুলি নিয়ে তারা গবেষণা করছেন । সূত্র : Independen
আগামীকাল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৯ তম শাহাদাত বার্ষিকী। বহুদলীয় গনতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ জিয়া ছিলেন বাংলার আকাশের সবচেয়ে উজ্জল নক্ষত্র।স্বাধীনতা উত্তর দুর্ভিক্ষ পিড়িত জনগন,শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর যখন বাংলাদেশের আকাশে নেমে আসে এক ঘোর অন্ধকার,অনিশ্চয়তা আর হতাশা ছাড়া আর কিছুই চোখে দেখছিলনা সাধারন মানুষ ঠিক তখনই জিয়া জালিয়েছিলেন আশার আলো, বাংলাদেশের জনগন বুকে বেধেছিল অনেক বড় স্বপ্ন।
কিন্তু দেশ বিরোধী ঘাতক চক্র দেশ বিদেশি সহযোগীতায় নির্মম ভাবে শহীদ করে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে। সেদিন বাংলাদেশের ইতিহাসে রচিত হয় আরো একটি কলংকিত ইতিহাস। আজো হাজারো লক্ষ দেশপ্রেমিক মানুষ শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জিয়ার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে জেল জুলুম হত্যার স্বীকার হচ্ছে।
আমি এই লিখনির মাধ্যমে মহান প্রভুর কাছে প্রার্থনা করি যেন যেন উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন এবং আগামী প্রজন্মকে অকুতোভয় সৎ সাহসী দেশপ্রেমিক হিসাবে গড়ে তুলে।
শহীদ জিয়ার শাহাদাৎ দিবস উপলক্ষে পোস্টার ব্যানার এর রাজনৈতিক গতিধারার বাহিরে সংক্ষিপ্ত জীবন নিয়ে আলোচনার প্রয়াস।
তিনি বগুড়ার বাগবাড়ীতে সুনাম ধন্য সরাকারী চাকরিজীবী রসায়নবিদ বাবা জনাব মনসুর রহমানের পরিবারে ১৯শে জানুয়ারি ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশবের কিছুকাল বগুড়ার গ্রামে ও কিছুকাল কলকাতাতে কেটেছে। দেশবিভাগের পর (১৯৪৭) তার বাবা করাচি চলে যান। তখন জিয়া কলকাতার হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন এবং করাচি একাডেমী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে তিনি ঐ স্কুল থেকে তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন এবং তারপর করাচিতে ডি.জে. কলেজে ভর্তি হন।
১৯৫৩ সালে তিনি কেকুলে পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমীতে শিক্ষানবিস অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেনেন্ট হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন। সেখানে দুই বছর চাকরি করার পর ১৯৫৭ সালে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তিনি খেমকারান সেক্টরে একটি কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন এবং তার কোম্পানি যুদ্ধে বীরত্বের জন্য যে সব কোম্পানি সর্বাধিক পুরষ্কার পায়, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল। ১৯৬৬ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে একজন প্রশিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পান। সে বছরই তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটা স্টাফ কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে তিনি জয়দেবপুরস্থ সেকেন্ড ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে নিয়োগ পান। উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানীতে যান। ১৯৭০ সালে একজন মেজর হিসেবে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং চট্টগ্রামে অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে নিয়োগ পান।
২৫ মার্চের কালরাত্রিতে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যখন এদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর বর্বরের মতো ঘৃণ্য হামলা চালায় তখন এর আকস্মিকতায় দিশেহারা হয়ে পড়ে সবোর্স্তরের জনগণ।
১৯৭১-এর ২৫শে মার্চের কালো রাত্রিতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন সহ অনেক জায়গায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বর্বর আক্রমণের সংবাদ শুনে তিনি হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। নিজের জীবনের নিশ্চিত মৃত্যুদন্ডের হবে জেনেও পাকিস্তান হানাদার বাহিনির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কথা চিন্তা করেন কিছু অফিসারদের নিয়ে। ২৭ মার্চ চট্টগ্রামস্থ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। আমরা বিদ্রোহ করছি বলে দেশের সকল মানুষকে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক মহলকে বাংলাদেশ নামক রাস্টকে সহযোগিতা স্বীকৃতি দেওয়ার আহবান জানান। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে তিনি সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। তিনি সেনা সদস্যদের সংগঠিত করে পরবর্তীতে তিনটি সেক্টরের সমন্বয়ে জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধপরিচালনা করেন। স্বাধীনতার পর প্রথমে তিনি কুমিল্লা ব্রিগেড কমান্ডার এবং ১৯৭২ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডেপুটি চীফ-অফ-স্টাফ নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালে কর্নেল, ১৯৭৩-এর মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার এবং শেষ দিকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। হাজারো ইতিহাসের পাতায় খোজলে এমন বিরল মানুষ পাওয়া দুস্কর যে বিদ্রোহ ঘোষণার পর নিজেই সম্মুখযুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করেছে এবং সফল ভাবে রাস্ট পরিচালিত করেছে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা জেলার কিয়দংশে মুক্তিপাগল মানুষকে মেজর জিয়া সংগঠিত করেন এবং পরবর্তীতে ‘জেড ফোর্সের’ অধিনায়ক হিসেবে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নেতৃত্ব দেন সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে। দীর্ঘ নয় মাস মরণপণ লড়াই করে অজির্ত হল সবুজ জমিনের ওপর রক্তলাল সূর্যখচিত পতাকাসমৃদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশ- আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। লাখো শহীদের পবিত্র রক্ত আর হাজার হাজার মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অজির্ত হল এদেশের স্বাধীনতা। গণতন্ত্র এখানে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে, শোষন বঞ্চনার অবসান ঘটবে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হবে এবং আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব- এই ছিল সেদিনের স্বপ্ন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমান যুদ্ধের পরিক্লপনা ও তার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। ১৯৭১ এর জুন পর্যন্ত ১ নং সেক্টর কমান্ডার ও তারপর জেড-ফোর্সের প্রধান হিসেবে তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বে জন্য তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
১৯৭৫ সালে কিছু বিপদগামী সেনা অফিসার শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশে এক অরাজকতা সৃষ্টি হলে তৎখালিন জাসদের প্ররোচনায় সেনাবাহিনীতে শুরু হয় বিদ্রোহ ও পাল্টা বিদ্রোহ এবং দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্ধি করে রাখা হয়। সিপাহি জনতার সম্মিলিত বিপ্লবের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর গৃহবন্ধি থেকে সামনের কাতারে নিয়ে আসে এবং আবারও সেনাবাহিনী ও দেশের মানুষের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার পতাকাকে বাচিয়ে রাখতে কঠোর হস্তে দমন করেন। জিয়াউর রহমানের সাহসী পদক্ষেপ সঠিক নেত্রিত্বে সিপাহি জনতা বিপ্লবের পর তিনি রাজনীতের কেন্দ্র চলে আসেন। ১৯ শে নভেম্বর ১৯৭৬ সালে তিনি প্রধান সামরিক প্রশাষকের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ সালে জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদ অধীষ্ঠ হন। রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন জিয়া দেশে আবার গনতান্ত্রায়নের উদ্যোগ নেন। তিনি বহুদলীয় গনতন্র চালুর সিদ্ধান্ত নেন। দেশের রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা সৃষ্টির আভাস দিয়ে পুর্বের সকল দুর্নীতিবাজ,রাজনিতীর নামে লুটে খাওয়া ধান্ধাবাজ নেতাদের উদ্ধেশ্য করেতিনি বলেন, “I will make politics difficult for the politicians” (আমি রাজনীতিকে রাজনীতিবিদের জন্য কঠিন করে দেব)। অনেকেই আজ নিজের মত ইতিহাস রচনা করতে চায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক বিদ্রোহে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলে দেশে সামরিক শাসন জারি করা হয়। ২৫ আগস্ট খন্দকার মোশতাক সরকার তাঁকে সেনাবাহিনীর চীফ অফ স্টাফ নিয়োগ করেন। নভেম্বরে পুনরায় সেনা বিদ্রোহ, খন্দকার মোশতাক ক্ষমতাচ্যুত, আবূ সাদাত মোহাম্মদ সায়েম প্রেসিডেন্ট হন। ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার বিপ্লবে জিয়াউর রহমানকে পুনরায় সেনাবাহিনীর চীফ-অফ-স্টাফ পদের দায়িত্বে প্রত্যাবর্তন এবং উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালের ৮ মার্চ মহিলা পুলিশ গঠন, ১৯৭৬-এ কলম্বোতে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন সম্মেলনে যোগদান করেন এবং বাংলাদেশ ৭ জাতি গ্রুপের চেয়াম্যান পদ লাভ করে। ১৯৭৬ সালেই তিনি উলশি যদুনাথপুর থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন উদ্বোধন করেন। ১৯৭৬-এর ২৯ নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৭৬-এ গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন, ১৯৭৭-এর ২০ ফেব্রুয়ারি একুশের পদক প্রবর্তন, এপ্রিলের ২১ তারিখ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ গ্রহণ। মে মাসে ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা এবং আস্থা যাচাইয়ের জন্য ৩০ মে গণভোট অনুষ্ঠান ও হাঁ-সূচক ভোটে বিপুল জনসমর্থন লাভ করেন।
১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সংক্ষেপে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া এর সভানেত্রী। উন্নয়ন পথে বাংলাদেশের যাত্রা জিয়ার হাতেই সুচনা হয়। সকল দলের অঃশগ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান; জাতীয় সংসদের ক্ষমতা বৃদ্ধি; বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া; দেশে কৃষি বিপ্লব, গণশিক্ষা বিপ্লব ও শিল্প উৎপাদনে বিপ্লব; সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লেক্ষ্য স্বেচ্ছাশ্রম ও সরকারী সহায়তায়র সমন্বয় ঘটিয়ে ১৪০০ খাল খনন ও পুনর্খনন; গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করে অতি অল্প সময়ে ৪০ লক্ষ মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দান; গ্রামাঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা প্রদান ও গ্রামোন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি) গঠন; গ্রামাঞ্চলে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি বন্ধ করা; হাজার হাজার মাইল রাস্তা-ঘাট নির্মাণ; ২৭৫০০ পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ কের গ্রামীণ জনগণের চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধিকরণ; নতুন নতুন শিল্প কলকারখানা স্থাপনের ভেতর দিয়ে অর্থনৈতিক বন্ধ্যাত দূরীকরণ; কলকারখানায় তিন শিফট চালু করে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি; কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও দেশকে খাদ্য রপ্তআনীর পর্যায়ে উন্নীতকরণ; যুব উন্নয়ন মন্ত্রাণালয় ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুব ও নারী সমাজকে সম্পৃক্তকরণ; ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রতিষ্টা করে সকল মানুষের স্ব স্ব ধর্ম পালনের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরণ; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সৃষ্ট করে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন; তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামের জনগণকে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করণ এবং সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে দেশ গড়ার কাজে নেতৃত্ব সৃষ্টি করার লেক্ষ্য গ্রাম সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন; জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের আসনলাভ; তিন সদস্যবিশিষ্ট আল-কুদস কমিটিতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি; দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে ‘সার্ক’ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণ; বেসরকারিখাত ও উদ্যোগকে উৎসাহিতকরণ; জনশক্তি রপ্তানি, তৈরী পোশাক, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্পসহ সকল অপ্রচলিত পণ্যোর রপ্তানীর দ্বার উন্মোচন; শিল্পখাতে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ।
তার সময় মুসলিম বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত হয়। ব্যপক বিস্তৃত হয় বানিজ্য নেটওয়ার্ক।
৩০ মে, ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুথানে জিয়া নিহত হন। তাকে শেরে বাংলা নগরে দাফন করা হয়। জেনারেল জিয়ার জানাজা বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ জনসমাগম ঘটে। বাংলাদেশের ইতিহাস জিয়াউর রহমান ছাড়া লিখা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের অলিগলি নদি নালায় আকাশে বাতাসে ও কোটি কোটি মানুষের প্রানে মিশে আছে জিয়া। জিয়ার সততা এক নজিরবিহীন ঘটনা। আমার মতে জিয়া কেন? বাংলাদেশের সকল মনিষী যারা যুদ্ধ করেছে, অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে কাজ করেছে, শিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের মুখউজ্জ্বল করেছে, আন্তর্জাতিক ভাবে আমাদের দেশকে পরিচিত করেছে সকলকেই সম্মানিত করা। হিংসা বিদ্দেস ভুলে গনতান্ত্রিক বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। দেশের প্রতি অকুন্ট ভালবাসা, জাতীয়তাবাদী চিন্তাভাবনায় প্রতিটি নাগরিক হয়ে উঠুক সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। সৎ নিস্টাবান দেশপ্রেমিক জিয়ার আদর্শে উজ্জীবীত হয়েই দেশদ্রোহী ব্যাংক ডাকাত, গম চুর, চাউল চুর সকল অসৎ মানুষের মোকাবেলা সম্ভব। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্বার মাগফেরাত কামনা করছি।
এস এ রব: প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার বলেছেন প্রাণঘাতী কোভিড -১৯ মোকাবেলায় গৃহীত সরকারের জরুরী বিধিনিষেধ নীাতমালার অংশ হিসেবে ৮ই জুন সোমবার থেকে আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় পর্বে উন্নীত হবার পথে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন ।
আজ মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে মিঃ ভারাদকর বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরের সপ্তাহে মন্ত্রীরা আবার আলোচনা করবেন। তবে তিনি বলেন যে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা নিম্মগামি হওয়ায় আশ্বস্ত হওয়া যাচ্ছে যে আমরা সঠিক পথে এগুচ্ছি ।
সামাজিক বিধিনিষেধগুলি স্বাচ্ছন্দ ভাবে পালন করার মাধ্যমে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলি কার্যকর হচ্ছে কিনা তা জানার জন্য কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগে বলে তিনি উল্লেখ করে বলেন যে, আমরা দ্বিতীয় ধাপে যেতে পারি কিনা তা নির্ধারণের আগে এটি পুনমূল্যায়ন করা হবে ।
মিঃ ভারাদকর আরোও বলেন যে , দুই মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মকে এক মিটারে হ্রাস করা যায় কিনা তা নিয়ে খুব শীঘ্রই সরকারের সিদ্ধান্ত জানানো হবে ।
গত মাসে যুক্তরাজ্যে মাত্র ১৯৭টি গাড়ি তৈরি হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯৯ দশমিক ৭ শতাংশ কম। যার মধ্যে ৪৫টি গ্রাহকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দেশটির গাড়ি প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ীদের সমিতি এসএমএমটি বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম এত কম গাড়ি তৈরি হলো যুক্তরাজ্যে বলে জানায় দেশটির গাড়ি প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ীদের সমিতি এসএমএমটি । সূত্র : বিবিসি
এপ্রিলে তৈরি করা সব গাড়িই বিলাসবহুল ও স্পোটর্স কার ছিল। সাধারণ সময়ে যুক্তরাজ্যে প্রতি মাসে ৪ লাখ গাড়ি তৈরি হয় । এ থেকে প্রায় সাড়ে ১২ বিলিয়ন ডলার আয় হয় ।
কারখানাগুলোতে এপ্রিলে ৮৩০টি নতুন গাড়ির ইঞ্জিন তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে ৭৮১টি রপ্তানি হয়েছে।গত বছরের একই সময়ে চেয়ে এই রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৯৯ শতাংশ। করোনা মহামারির কারণে দেশজুড়ে লকডাউন জারি থাকায় গাড়ি উৎপাদনে এমন ধস নেমেছে। কিছু কিছু গাড়ি তৈরির কারখানা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ( পিপিই) তৈরিতে নিয়োজিত ছিল। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এই সময়ে ৭ লাখ ১১ হাজার ৪৯৫টি পিপিই তৈরি করা হয়েছে।
এসএমএমটির প্রধান নির্বাহী মাইক হায়েজ বলেন, এপ্রিলে যে অবস্থা ছিল, এতে এই পরিসংখ্যান অবাক করার মতো নয়। তবে এর মাধ্যমে এটা বোঝা যাচ্ছে যে এই শিল্প কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে। আয় একদম শূন্যের কাছে নেমে এসেছে।তিনি আরও বলেন, এই শিল্পকে আবার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া একটু ধীরে ধীরেই হবে । তবে আশা করা হছে ,যুক্তরাজ্যের অর্ধেক ইঞ্জিন এবং গাড়ি প্রস্তুতকারকেরা এই সপ্তাহে আবার কাজ শুরু করবেন । উৎপাদনের সময়সীমা কঠোর সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থাসহ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এসএমএমটি গাড়ি প্রস্তুতকারকদের কারখানায় কর্মীদের পিপিই সরবরাহ করতে পরামর্শ দিয়েছে ।
নিজের বাড়িতে ঘরের ছাদে টবের মধ্যে গাঁজা চাষ করছিলেন নুরুল ইসলাম (৩৫) নামে এক লন্ডন প্রবাসী। তার বাড়ি সিলেটের দশঘর ইউনিয়নের বিশ্বনাথে । তার বাবা মৃত শরিফ উল্লাহ ।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা খবর পেয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছাদে গাঁজা চাষের সন্ধান পান । অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী ডিবির অফিসার এসআই কল্লোল গোস্বামী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ।তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে বেশ কয়েকটি গাঁজার গাছসহ নিজ বাড়ি থেকে নুরুল ইসলামকে আটক করা হয়। তাকে আটক করে সিলেটের ডিবি অফিসে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
৭৫০ বিলিয়ন বা ৭৫ হাজার কোটি ইউরোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) । এই অর্থ ৮২ হাজার ৬৫০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থাৎ যা বাংলাদেশের প্রায় সাত লাখ কোটি টাকার মতো। সংকটপূর্ণ এই সময়ে দেশগুলোকে সাহায্য করতেই এই উদ্দ্যেগ । বিগত শতকের ত্রিশের দশকের মহামন্দার পরে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার পরিস্থিতিতে এই প্যাকেজ ঘোষণা করা হল, যাতে সদস্য দেশগুলো সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারে।
করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবী জুড়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছে । বাদ নেই ইউরোপ ও । ইউরোপের ২৭ জাতির জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলো কভিড– ১৯ বা করোনাভাইরাসে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। এর মধ্যে আগে থেকেই বড় অংকের ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে আছে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলো । তবে নতুন আর্থিক প্যাকেজ থেকে ইইউর সব সদস্য দেশকে অনুদানের পাশাপাশি ৩০ বছর মেয়াদে ঋণও দেওয়া হবে।
নেদারল্যান্ডসে, অস্ট্রিয়া , ডেনমার্ক ও সুইডেন অবশ্য তুলনামূলক গরিব দেশগুলোকে অনুদানের পরিবর্তে ন্যূনতম সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলেছে।
ইউরোপের বৃহত্তম ও বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতি জার্মানি পুঁজিবাজার থেকে নতুন এই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজের অর্থ সংগ্রহের আহ্বান জানিয়েছে।
গত বুধবার ইইউর নির্বাহী কমিশন ইসির প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন এই প্যাকেজটি ঘোষণা করেন। এই প্যাকেজকে ‘ইউরোপের ঘুরে দাঁড়ানোর ভিত্তি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন সংস্থাটির ইকোনমি কমিশনার পাওলো জেন্টিলনি । আর ইসি প্যাকেজটিকে ‘পরবর্তী প্রজন্মের ইইউ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।ইইউর ২৭ সদস্যের সবার সমর্থন ছাড়া এই উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।
তবে ইইউর প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন প্যাকেজের অর্থ ব্যবহারের বিস্তারিত পরবর্তীতে তুলে ধরবেন। তিনি জানাবেন কীভাবে এই অর্থ ইইউর ২০২১–২৭ সালের বাজেটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে সে। তবে তহবিলটির অর্থ ব্যবহারে বিনিয়োগ ও সংস্কারেই বেশি জোর দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসি ও সিএনবিসি সূত্র থেকে জানা যায় ইইউর নেতারা আগামী ১৮ জুন ভিডিও কলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ব্যবহারের বিস্তারিত ঠিক করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সদস্যদের নতুন যেকোনো আর্থিক সহায়তা করতে হলে তা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।
হুঁশিয়ার: যারা আয়ারল্যান্ডে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে ইদানীং দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতি তৎপর কিছু ব্যক্তি আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগন্ডা করে যাচ্ছে।
আমরা লক্ষ্য করছি চারদিকে যখন গুন্জন চলছে ডাবলিনে বাংলাদেশী হাইকমিশনার প্রতিষ্ঠা হবে সেই সময় থেকে আওয়ামী লীগের বিরোধী চক্র আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন গ্রুপে ব্যাপক মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।
আপনারা জেনে থাকবেন যে আমি বিভিন্ন সময়ে ইউরোপের প্রধানমন্ত্রী যখন আসেন জার্মান, হল্যান্ড, ইউকে, ইতালি, ফ্রান্স এবং আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন সমাবেশে ডাবলিনে হাই কমিশনার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী সহ বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশী কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গদের সাথে কথা বলে আসছি।
এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন ইউরোপে আসেন উনার সাথে সরাসরি আমি কথা বলি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে একই বিষয় নিয়ে কথা বলি।
আমি থাকি কর্ক শহরে। ডাবলিনে হাইকমিশনার প্রতিষ্ঠা হলে ডাবলিনের লোকজন যেমন সুযোগ সুবিধা পাবে সেই সাথে সমগ্র আয়ারল্যান্ডের বাঙ্গালীরা সুবিধাভোগী হবে। তাই আমার নিজের দ্বায়িত্ব এবং কর্তব্য সবার স্বার্থের জন্যে।
আমরা দেখছি আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতারা আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় দেশের স্বার্থ বিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে বিশেষ করে ডাবলিনে বাংলাদেশী হাই কমিকশন নিয়েও।
ওদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে- গত ২১ শে মে আমাদের সাথে অনলাইনে মিটিং হয় বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাননিয় জনাব ডাক্তার এ,কে, আব্দুল মোমেন স্যারের সাথে এবং উক্ত মিটিং এ উপস্থিত থাকেন বাংলাদেশী ব্রিটিশ হাই কমিশনার মাননিয় সাইদা মুনা তাসনিম , জার্মানের বাংলাদেশী অনারারি কনসুল্যারইন্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রালয়ের সচিব জামাল আহমেদ এবং উপস্থিত ছিলেন আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটির ব্যক্তিত্বগন।
উক্ত সভায় মাননিয় মন্ত্রী মহোদয় আমাদের জানান যে – BNP ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের বৈদেশিক দুতাবাস দিলি দিন হ্রাস করেছিলো যা মাত্র ৫৪ তে নামিয়েছিলো ! যেখানে বর্তমান মন্ত্রী তা বৃদ্ধি করে ইতিমধ্যে ০৭৭ টি দুতাবাস প্রতিষ্ঠা করেছেন। ডাবলিনের দুতাবাস তৈরী হলে তা হবে ০৭৮ নাম্বার। মন্ত্রী মহোদয়ের ইচ্ছা উনি ক্ষমতায় থাকাকালীন তা ০১০০টি দুতাবাসে উর্ত্তীন করবেন।
প্রশ্ন করতে আওয়ামী লীগ বিরোধীদেরকে যে- আপনারা কোন মুখে ডাবলিনে হাইকমিশন নিয়ে বড় বড় কথা বলতে আসেন ? আগে নিজেদের ক্ষমতায় থাকাকালীন কি করেছিলেন সেই ইতিহাসের দিকে নজর দেন।
আরোও শুনছি যে – BNP এর কতিপয় নেতা বলে বেড়াচ্ছে যে ডাবলিন হাইকমিশন সংবাদটি এখনও সরকারী গেজেটে প্রকাশ হয় নাই!
ওদেরকে বলতে চাই – সরকারী গেজেট বলতে কি বুঝেন ? সরকার কোন প্রকল্প হাতে নিলে তার বাস্তবায়ন করা বা গেজেট প্রকাশ করার আগে অনেক আনুসাঙ্গিক কাজ থাকে এবং তা করার পরেই সরকার তা গেজেটে প্রকাশ করে।
বলতে চাই , ডাবলিনের হাইকমিশন নিয়ে সরকার প্রথমে জরীপ দল প্রেরন করবে, বাজেট তৈরী হবে, দক্ষ লোকজন নিয়োগেসহ বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে, তার উপরে বিশ্বব্যাপী কোরনা ভাইরাস চলছে।
তাই BNP এর কতিপয় নেতাদের বলতে চাই আওয়ামী লীগ বিরোধী ষড়যন্ত্র করা বন্ধ করেন আর আয়ারল্যান্ডের বসবাসরত বাঙ্গালীদের মাঝে বিভ্রান্তকর সংবাদ দেয়া বন্ধ করেন।
আমি ২০১৯ এর জানুয়ারীতে বঙ্গভবনে মাননিয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি দাবি উন্থাপন করি যেন ডাবলিনে বাংলাদেশী হাইকমিশন প্রতিষ্ঠা হয়।
এবং আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথেও দেখা করি যেখানে আমি ড্রাফ্টসহ নিয়ে যাই এবং মাননিয় মন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করি।
আর ঐ বছরেই ঢাকার মিন্টুরোডে মন্ত্রী পাড়ায় LGRD সাবেক মন্ত্রীর ইন্জিনিয়ার মোশারফ সাহেবের বাসায় আমি সম্মানিত সংসদ সদস্য (সিরাজগঞ্জ -২ আসন) প্রফেসর ড. মিল্লাত ভাইয়ের সাথেও দেখা করি।
শুধু আমি একা নই আয়ারল্যান্ডের বাঙ্গালী অনেক কমিউনিটি ব্যক্তিত্বরা বিভিন্ন সময়ে ডাবলিনে যেন বাংলাদেশী দুতাবাস প্রতিষ্ঠা হয় এই ব্যাপারে কাজ করে আসছেন।
উদাহরণস্বরূপ আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ নেতা “জসীম উদ্দিন আহমেদ” ভাই উনি ০৮০ জনের স্বাক্ষর নিয়ে ব্রিটেনের বাংলাদেশী হাইকমিশনে পোষ্ট করে পাঠান এবং ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন যেন ডাবলিনে বাংলাদেশী হাইকমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়।
ডাবলিন আওয়ামী লীগের মো: ফিরোজ হোসেন, সাধারন সম্পাদক অলক সরকার , রিয়াজ ভাই, সাংগঠনিক সম্পাদক সমীর কুমার ধর, জনাব মুন্না সৈকত ভাই, জনাব দিলদার ভাইসহ অনেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই ব্যাপারে।
আবারোও বলতে চাই ডাবলিনে হাইকমিশন নিয়ে কাজ আয়ারল্যান্ডের সকলের ক্রেডিট।
প্রশ্ন রইলো সকলের কাছে: তাহলে BNP এবং জামাতপন্থীরা কি করে একা ক্রেডিট নিতে আসে ? কেন BNP এর কতিপয় নেতা/ নেতাদের এত অধিকমাত্রায় চুলকানি ?
আয়ারল্যান্ডের সকল বাঙ্গালীরা এর জবাব চায়।
জয় বাংলা – জয় বঙ্গবন্ধু রফিক খান,
কর্ক সিটি প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ।
সংবাদটি ইউরো বাংলা নিউজ ২৪ পোর্টাল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
এস এ রব: লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী সহ ৩০ অভিবাসী শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছে মানবপাচারকারীর এক পরিবারের একটি গোষ্ঠী। নিহত বাকি চারজন আফ্রিকান অভিবাসী।
ঘঠনার সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশী সহ অভিবাসীদের মিজদা শহরের একটি জায়গায় টাকার জন্য জিম্মি করে রেখেছিল মানবপাচারকারী চক্র । এ নিয়ে একপর্যায়ে চক্রের সাথে মারামারি শুরু হয় অভিব্সী শ্রমিকদের । এতে এক মানবপাচারকারী মারা যায় । তারই সূত্র ধরে মানবপাচারকারীর পরিবারের লোকজন তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে ।
লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘঠনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছে, উক্ত ঘটনায় আরও ১১ জন বাংলাদেশি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন এবং তাদেরকে চিকিৎসার জন্য নিকটস্হ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
লিবিয়া-ভিত্তিক অভিবাসীদের আন্তর্জাতিক সংস্থার ( আইওএম ) মুখপাত্র সাফা মেশেলি আহতদের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রয়টার্সকে বলেছেন ‘আমরা এই মাত্র খবরটি পেলাম। বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। যারা হাসপাতালে আছেন তাদের সাহায্য করছি।’
ত্রিপলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস বিষয়টি নিশ্চিত করে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনী বাংলাদেশীদের উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালালে আনুমানিক ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশী নিহত হন। তার মধ্যে এক জন প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে দূতাবাস সংবাদটি নিশ্চিত করে। তিনি কোনো প্রকারে প্রাণে বেঁচে এখন এক হৃদয়বান লিবিয়ানের আশ্রয়ে আত্মগোপন করে
এস,এ,রব : গত ২০ শে মার্চ থেকে আইরিশ ন্যাচারালাইজেশন অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস কর্তৃক নতুন ভিসার আবেদনের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে । এই মর্মে আরটিইকে (rte) দেওয়া এক তথ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডাবলিন ভিসা অফিস ।
ভিসা অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোভিড -১৯ মোকাবেলা করার অংশ হিসেবে আবেদনকারির সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নতুন ভিসা আবেদন গ্রহণ বন্ধ রাখতে সাময়িকভাবে “সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভিসা অফিস ।
যদিও বিবৃতিতে বলা হয়েছে এখনও ভিসার জন্য স্বাভাবিক ভাবে অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে তবে এই ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা তাদের আবেদনের প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পূর্ণ করতে পারবেন না যতদিন পর্যন্ত লকডাউনের নিষেধাজ্ঞাগুলি উঠা সাপেক্ষ সরকারি সিদ্ধান্ত না আসছে ।
তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে “অগ্রাধিকার / জরুরী” ভিত্তিতে পেশাগতদের জন্য স্বাভাবিক ভিসা প্রক্রিয়ার বিষয়টি চালু রয়েছে বলে অফিস থেকে জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে ।
অগ্রাধিকারের মধ্যে স্বাস্থ্য, গবেষণা এবং বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। এই সমস্ত পেশাদারদের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত আইরিশ নাগরিকদের তাদের পরিবারের সাথে অন্যান্য সদস্যদের মিলিত হওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মধ্য প্রাচ্যের লিবিয়ায় ৩০ জন অভিবাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৬ জনই বাংলাদেশি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বাকি চারজন আফ্রিকান অভিবাসী। খবরে বলা হয়, লিবিয়ার মানব পাচারকারী এক ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা ওই ৩০ অভিবাসীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। পাচারকারী আগেই মারা গেছেন। সেই মৃত্যুর দায় এই অভিবাসীদের ওপর চাপিয়েছে তার পাচারকারীর স্বজনেরা। তার প্রতিশোধ নিতেই এই হত্যাকাণ্ড ।
রয়টার্সের খবরে আরও জানানো হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃত লিবিয়ার সরকার আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি দিয়ে এসব কথা জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, লিবিয়ার মিজদা শহরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সময় গুলিতে আহত হন আরও১১ জন। তাদের সবাইকে জিনতান হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিবৃতিটিতে জানানো হয়, গুলিতে নিহত ৩০ অভিবাসীর মধ্যে ২৬ জনই বাংলাদেশি। বাকি চারজন আফ্রিকান।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি পরবর্তী গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত লিবিয়ার অর্থনীতি তেলনির্ভর ।জীবিকা ও কাজের সন্ধানে এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশ থেকেই তরুণেরা অবৈধ পথে দেশটিতে পাড়ি জমায়। একপর্যায়ে তাদের বেশিরভাগেরই লক্ষ্য থাকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধ ভাবে ইউরোপের যে কোনো দেশে যাওয়া। এশিয়া–আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি— পুরো রুটে মানব পাচারকারী বিশাল চক্র সক্রিয় রয়েছে।
২০১১ সালে বাংলাদেশের জনকণ্ঠ, sangbad.com.bd, banglanews24.com সহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটির সংগঠন নিয়ে লেখকের এই লেখা আবাই গঠনের পূর্ব থেকে আবাই পরবর্তী তথা বর্তমান সময়ের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত আছে যা এখনো এই সংগঠনটি মেরামত করার কাজে লাগানো যেতে পারে। আমরা জানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শীঘ্রই আবাই এর নতুন একটি নির্বাচন আসতে যাচ্ছে। সুষ্ঠ একটি কমিটি আমরা আশা করতে পারি। এই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলো কাজ করছে। এই লেখকের লেখা যদি সংশ্লিষ্টদের কোন কাজে লাগে সেটা অবশ্যই কমিউনিটির জন্য সুখকর হবে। লেখকের লেখাটি আইরিশ বাংলা টাইমসের পাঠকের জন্য নিন্মে হুবহু তুলে ধরা হলো।
লেখালেখি করা হয় না অনেক দিন। লিখতে মন বসে না, সহজভাবে বললে বলা যায়, এখন আর আগের মতো লেখা আসে না। চেষ্টাও করি না। সময় পেলেই বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা দিই। এতে আমার স্ত্রী বিরক্ত হয়ে মাঝেমধ্যে কিছুটা খোঁচা দিয়েই বলেন, তুমি না লেখক-কবি ছিলে, কোথায় আজ তোমার লেখা; অনুভূতি বুঝি ভোঁতা হয়ে গেছে!
সত্যিই অনুভূতি ভোতা হয়ে গেছে। কী-ই বা পাওয়া যায় লেখালেখি করে। নব্বই থেকে আটান্নব্বই সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকে আমার লেখা গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা ছাপা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার পরও এসব লেখালেখি আমাকে নিজ দেশে সুন্দর-সাবলীলভাবে জীবন-যাপনের ন্যুনতম গ্যারান্টি দিতে পারেনি। তাই সব শেষে ইনকিলাবে একটি অভিমানী কবিতা লেখে ফ্লাই করি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে।
‘লেখালেখি’ নামক বস্তুটি আমার হৃদয় থেকে যখন উবে যেতে শুরু করলো, তখনি দেখি সিঙ্গাপুর থেকে ‘প্রবাসী’ নামের একটি মাসিক পত্রিকা বেরুচ্ছে। অল্পশিক্ষিত কন্সট্রাকশন কর্মী কান্তু ভাইয়ের অনুরোধকে উপেক্ষা করতে না পেরে লিখলাম তাদের ওয়ার্ক পারমিটজনিত কিছু সমস্যা এবং সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্তব্যকাজে অবহেলা-অপারগতা নিয়ে। জানি না, ওই লেখা তাদের জন্য কোনো ফল বয়ে এনেছিল কি-না। তবে এতোটুকু জানতে পেরেছি, লেখাটি প্রকাশ হওয়ার কিছুদিন পর তৎকালীন অ্যাম্বেসেডর আশরাফ সাহেব বদলি হয়েছিলেন। এরপর অবশ্য কিছুদিন লিখি সেখানে সম্পাদক সাহেবের অনুরোধ ও বন্ধুভাবাপন্ন মনোভাবের জন্য।
হুট করে ফুফাতো ভাই জহিরের উদার প্রচেষ্টায় চলে এলাম ইউরোপ তথা শান্তিপ্রিয় দেশ আয়ারল্যান্ডে। আবারো হারিয়ে গেলাম লেখালেখির জগৎ থেকে। একদম লিখি না। সহসা একদিন এক বন্ধুর প্রতি বন্ধুপতœীর আচরণ আমাকে ভাবিয়ে তোলে। ঘরের কম্পিউটার, টিভি ভেঙে, স্বামীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালের মাধ্যমে যদি স্বামীর কোনো ভুলের প্রতিশোধ নেওয়া হয় কিংবা এ-ই যদি স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার সংসারের রূপরেখা হয়, তাহলে কতোটুকুই বা সার্থকতা থাকে এ সংসার পাতার। ঘটনাটি আমাকে যাতনা দেয়। আর এ মর্মযাতনা থেকেই জন্ম হয় একটি গল্পের, যা দু হাজার পাঁচ কিংবা ছ-এ প্রকাশ পায় একটি জাতীয় দৈনিকে। এরপর থেকে অদ্যাবধি দুএকটি ছড়া ছাড়া আর কিছুই লিখিনি। লিখতে পারিনি। আজ কেন জানি আবারো ইচ্ছে হলো কিছু লিখতে আয়ারল্যান্ডস্থ আমাদের বাঙালি কমিউনিটি নিয়ে।
প্রিয় পাঠক, অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি মূল বিষয় থেকে সরে গিয়ে নিজের ফিরিস্তি টেনে লেখাটিকে বড় করার জন্য।
আয়ারল্যান্ডে আমি যে এলাকায় বাস করি তার নাম লিমরিক। এটি হচ্ছে একটি কাউন্টি, যা কিনা বাংলাদেশের একটি জেলার সমপর্যায়ের। এ কাউন্টিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত লোকের সংখ্যা হবে তিন থেকে চার শ। এর মধ্যে কেউ ছাত্র, কেউ চাকুরে। প্রত্যেককেই ভীষণ ব্যস্ত থাকতে হয় নিজ কাজকর্ম নিয়ে। মাঝেমধ্যে বউ, ছেলেমেয়েকে সময় দেওয়াটাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এ কঠিনতর পরিবেশ বা পরিস্থিতির মধ্যেও নিজ দেশের কালচার, ভ্রাতৃত্ববোধ বা ধর্মীয় মূল্যবোধকে ইউরোপেও যাতে লালন করা কিংবা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে বীজ বপন করিয়ে দেওয়া যায়, এর জন্য যে সময় বা আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন তা করতে কিন্তু অধিকাংশ লোকই কৃপণতা করেন না। তাহলে সমস্যা কোথায়?
যখন আমরা কমিউনিটির নামে কোনো সংগঠন বা কমিটি তৈরি করি তখনই যতো সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। মনমতো কেউ পদ না পেলে, যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য পদ দিতে না পারলে কিংবা যখন সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বা ঘুমে রেখে ‘নেতা’ নামধারীরা কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে নিজেদের মনমতো কাজ করে ফেলেন, তখনি সে কমিউনিটি বা সংগঠনে ফাটল ধরে, নামে ধস। আমাদের লিমরিক-ভিত্তিক যে কমিউনিটি আছে তাও কিন্তু এ সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে নয়। এখানে এগুলোর পাশাপাশি আছে ‘ইজম’ সমস্যা। উপরোক্ত সমস্যা আর ‘ইজম’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কতিপয় লোক মূল কমিউনিটি থেকে সরে গিয়ে আরেকটি পক্ষ বা দল তৈরি করেছে, যার অশুভ প্রভাব সামাজিকভাবে পড়ছে আমাদের ও পরবর্তী প্রজন্মের ওপর।
ঐক্য সম্প্রীতি বাড়ায়, আনে প্রগতি। এই ইতিবাচক উপলব্ধি থেকেই আমরা একই ধারার অভিন্ন স্রোতে মেশার তাগাদা অনুভব করলাম। যার ফল হিসেবে আমরা উভয়পক্ষ থেকে পাঁচজন করে প্রতিনিধি নিয়ে স্থানীয় প্যাট্টিক পাঞ্চ হোটেলে বসলাম সমঝোতার আলোচনার জন্যে। কটুক্তি, নেতিবাচকতা ও ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণাত্মক কথাবার্তার পরে আলোচনা যখন প্রায় সফলতার শেষ পর্যায়ে ঠিক তখনি দু-একজন উগ্র বিপথগামীর আচরণের জন্য উত্তপ্ত হয়ে উঠে সন্ধ্যার পরিবেশ। বিদ্রূপের হাসি হাসার সুযোগ পেল স্থানীয় শ্বেতচর্মধারী মানুষগুলো। হোটেল কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারলো, আমরা আর কিছুই নই, যেনো শুধুই বাঙালি।
সত্যিকার অর্থে এরকম সমস্যা শুধু লিমরিকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কর্ক, কিলারনি, ওয়াটারফোর্ড, খিলখিনি, ডাবলিন, গলওয়ে ইত্যাদি কাউন্টি তথা সমস্ত আয়ারল্যান্ডের বাঙালি কমিউনিটিগুলো এ দুষ্টু রোগে ভুগছে। পাঠকের জ্ঞাতার্থে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার উল্লেখ না করলেই নয়। দু-চার বছর আগে যখন আমরা বাঙালিরা ঠিকমতো কেউ কাউকে চিনতাম না, কিংবা এখানকার মতো সমস্ত আয়ারল্যান্ডের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে গাড়ি হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে একে অন্যের সাথে লিয়াজোঁ তৈরি করার সক্ষমতা ছিল না; তখন কোনো এক কাউন্টির ভদ্রলোক ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’ নামে একটি সংগঠন করেন, যা কিনা ডাবলিনে বসবাসরত কিছুসংখ্যক লোক ছাড়া অন্যান্য কাউন্টির সব বাঙালির কাছেই ছিল অজ্ঞাত। আর এখানেই সমস্যা। তিনি যেহেতু সংগঠনটির নামকরণ করেছেন পুরো আয়ারল্যান্ড-কেন্দ্রিক, সেহেতু তাঁর উচিত ছিলো অন্তত প্রতিটি কাউন্টির দু-একজন প্রতিনিধির কাছে এ ম্যাসেজ পৌঁছে দেওয়া। এ গ্লোবালাইজেশনের যুগে এটি কোনো কঠিন কাজ ছিল না। লন্ডনে অবস্থানরত যে কোনো বাঙালি টিভি চ্যানেলে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞাপন দিলেই হতো। এতে তাঁর উদারতা ও মহত্ত্বেও পরিচয় পাওয়া যেত।
সময়ের প্রেক্ষাপটে পরে যখন এ ঘটনা সবার কাছে জানাজানি হলো, এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সবাই প্রশ্ন তুললেন। সবার মনেই প্রশ্ন দেখা দিলো, একটি কাউন্টিভিত্তিক সংগঠন তো পুরো আয়ারল্যান্ডের নাম বহন করতে পারে না। এটি অন্যায় ও বিধিবহির্ভূত।
এর সুরাহা বা সঠিক সমাধানের জন্য অর্থাৎ সংগঠনটির কার্যক্রমকে শক্তিশালী করা অথবা সবার কাছে এটাকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য আয়ারল্যান্ডের সব কাউন্টি থেকে আগত প্রতিনিধি ও সদস্যদের নিয়ে লিমরিকের সাউথ কোর্ট হোটেলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হলো। আলোচনা বক্তব্যের পাশাপাশি এক পর্যায়ে উত্তপ্ত পরিবেশে প্রায় হাতাহাতিতে রূপ নিলো। এর নাম যদি সংগঠন বা কমিউনিটি হয়; এর নাম যদি পারস্পরিক বন্ধন, কল্যাণ, ভ্রাতৃত্ববোধ বা সম্পর্কোন্নয়নের পাথেয় হয়, তাহলে নিকুচি করি এ সংগঠনের, নিকুচি করি এ কমিউনিটির।
কেন কমিউনিটি বা সংগঠন তা কম-বেশি আমরা সবাই জানি। কমিউনিটি শুধু সাধারণ নিরপেক্ষ লোককে পুঁজি করে সভাপতি-সেক্রেটারি বা নেতা হওয়া নয়। নেতৃত্বের টানাপোড়নে যেখানে একটি কমিউনিটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় সেটা কোনো সঠিক কমিউনিটি হতে পারে না। বিভাজিত কমিউনিটি কারো জন্যে কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। শুধু নির্বাচন দিয়ে নামসর্বস্ব সভাপতি-সেক্রেটারি হওয়া যাবে, একতাবদ্ধভাবে কাজ করা যাবে না। আর যখন কাজ করতে পারবেন না, তখনই সংগঠন ব্যর্থ হবে। সংগঠন বা কমিউনিটির কাছে নিরপেক্ষ মানুষের চাহিদা বহুমাত্রিক। বিশেষ করে প্রবাসী বাঙালিদের জন্যে তো বটেই। আমরা মূলত প্রবাসে বাস করলেও আমাদের সমাজব্যবস্থার আলোকেই এ দেশের পরিবেশ-প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। নিজের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে প্রবাসের মাটিতে লালন করা বা এর ভিতকে শক্তিশালী করা কোনো একক ব্যক্তির পরিশ্রমের ফসল হতে পারে না। যুগ যুগ ধরে সংঘবদ্ধভাবে প্রবাসীদের তা করে আসতে হচ্ছে। এ সংঘবদ্ধতাকে ত্বরান্বিত করছে দল, সংগঠন বা কমিউনিটি।
যে কোনো দল বা সংগঠনকে কিছু কিছু মৌলিক আদর্শের ভিত্তিতে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়। যেখানে শুধুই নেতৃত্বের টানাপোড়ন আর আদর্শ, বিশ্বাস, ঐক্য, ভাতৃত্ববোধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ঘাটতি সেখানে তার ধস নামবেই। আমাদের এ আয়ারল্যান্ডেও ঘটছে ঠিক তাই। শুধু আয়ারল্যান্ড নয়, আমার ধারণা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাঙালিরা কেউ এই রাহু থেকে মুক্ত নয়।
আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাঙালিদের মৌলিক সমস্যা বলতে যা বুঝায় তা হলো বাংলাদেশের একটি দূতাবাস স্থাপনে সরকারকে তাগিদ দেওয়া, বাঙালি মুসলিমদের জন্য একটি কবরস্থানের ব্যবস্থা করা, স্থানীয়ভাবে মসজিদ-মাদ্রাসা গড়ে তোলা ইত্যাদি। আর অন্য যেসব কাজের কথা আমরা বলি বা করি, এগুলোতে প্রতিটি মানুষই মানবিক তাড়নায় তাড়িত হয়ে বিভিন্নভাবে যোগ্যতা বা ক্ষমতা অনুযায়ী সাপোর্ট করে থাকেন।
তাই বলব, শুধু সংগঠনের জন্য সংগঠন নয় কিংবা কর্তৃত্বের জন্য পদবি নয়। আসুন মৌলিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানে সক্রিয় সচেষ্ট হই। এজন্য প্রতিটি এলাকায় নতুন করে কমিটি তৈরি করি, যা অবশ্যই গতানুগতিক সভাপতি-সেক্রেটারি পদ্ধতির হবে না। তা হবে কাজভিত্তিক।
যিনি যে এলাকায় যে বিষয়ে কাজ করবেন তিনি সে এলাকার কমিটিতে সে বিষয়ক সম্পাদক হবেন। এসব কমিটিতে বিষয়ভিত্তিক সম্পাদক থাকতে পারেন। কজন সম্পাদক থাকবেন তা হতে পারে আলোচনাসাপেক্ষে।
তাই সব প্রবাসী বাঙালির কাছে আহ্বান, দ্বন্দ্ব-অভিমান-ক্ষোভ ভুলে নিজ আগ্রহ ও যোগ্যতা অনুসারে যে কোনো বিষয়ে সৃষ্টিশীল, সেবামূলক বা উৎপাদনমুখী কাজ শুরু করি এবং অন্যকেও উৎসাহিত করি। গতানুগতিক সভাপতি-সেক্রেটারিমার্কা কমিটি করার সিস্টেম বর্জন করি। পদ বা ক্ষমতার টানাপোড়নের বেড়াজাল থেকে নিজেদের মুক্ত করি। অন্যের সমালোচনা বাদ দিয়ে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকি।
গুহাযুগের ধাপ অতিক্রম করে সভ্য সমাজে পদার্পণ করেছে মানুষ। চাঁদ মুখর হয়েছে মানুষের পদযাত্রায়। গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে যাত্রা করছে মানুষ। তাই আসুন সবাই নজরুলের সাম্যবাদের পতাকাতলে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথকে চমকে দিয়ে প্রমাণ করি, আমরা এখনো শুধু বাঙালিই থেকে যাইনি, মানুষও হতে পেরেছি।
[এই লেখার মতামত লেখকের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত]
লেখক : আয়ারল্যান্ড প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটির একজন সদস্য ই-মেইল : shajed70@yahoo.com
করোনার মহামারী নিরবিচ্ছিন্ন আক্রমনে তছনছ হয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। এমন কোন দেশ বা জাতী নেই যা আক্রান্ত হয়নি। মানব সভ্যতার ইতিহাসে হয়তো করোনাই একমাত্র রোগ বা শক্তি যা এক সাথে ধনী গরিব সকল প্রকার দেশের মানুষকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।
প্রতিটি দেশের সরকার তাদের নিজ নিজ দেশের জনগনকে করোনা থেকে মুক্ত রাখা এবং সেই সাথে স্বাভাবিক জীবন ধারনের জন্য অর্থ সহ সকল যোগান দেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আমাদের আইরিশ সরকারও লকডাউনের ফলে কাজ চলে যাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের জন্য কভিড-১৯ ফান্ড তৈরি করে ব্যাংক একাঊন্টে ইউরো দিয়ে ঘরের বাহিরে না যেতে অনেক নিয়ম কানুন প্রণয়ন করেছে। ঔষধ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় গ্রোসারি ও ফ্রন্ট লাইনের কর্মজীবী ছাড়া সবাইকে ‘স্টে হোম সেইভ লাইফ’ স্লোগান দিয়ে আমাদের নিরুৎসাহিত করছে যেন অযথা বাহির না হই।
আল হামদুলিল্লাহ। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ডাবলিন সহ আয়ারল্যান্ড প্রতিটি শহরে মসজিদ গড়ে উঠেছে এবং জামাতে নামাজ আদায় হচ্ছে। ভিবিন্ন সময় প্লানিং পার্মিশন নিয়ে মতানৈক্য তৈরী হলেও আইরিশ সরকার এবং জনগনের পক্ষথেকে বিরুপ মন্তব্য বা এক্সট্রিম মতবাদ তৈরী হয়নি। আয়ারল্যান্ড সব সময় সবার জন্য সমান অধিকার সহাবস্থান নিশ্চিত করতে কাজ করে।
আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত বড়ই মহান এবং বড়ই দয়ালু, তিনি দয়া পরবশ হয়ে এই পৃথিবীতে তার পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্বশীল দায়িত্ব ও কর্তব্য নিষ্পন্ন করার জন্য ‘খলিফা’ বা প্রতিনিধি নিয়োগ করার ব্যাবস্থা জারি রেখেছেন। এ সম্পর্কে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে ” এবং স্বরন করুন, ওই সময়ের কথা, যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বলেছিলেন, আমি পৃথিবীতে খলিফা বা প্রতিনিধি অবশ্যই সৃষ্টি করব” ( সুরা বাকারা, আয়াত- ৩০.)
হয়তোবা কুরআনের আয়াতের উপর ভিত্তি করেই আয়ারল্যান্ডে ২০০৬ সালে গড়ে উঠেছে ‘ দ্যা আইরিশ কাউন্সিল অব ঈমাম’ নামের একটি সংগঠন। যার মেম্বার সংখ্যা প্রায় ৩৫ জন. এই সংগঠনই মুলত আমাদের আয়ারল্যান্ড মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের অত্যান্ত সুপরিচিত ক্লন্সকি(ICCCI) মসজিদের সম্মানিত ঈমাম আল্লামা হোসেইন হালাওয়া সাহেব এখন চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করছেন।
শরীয়তের সীমারেখায় থেকে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে যেমন অমুসলিমদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়, তেমনি এ আচরণ টুকুও অনেক সময় দাওয়াতের ভূমিকা পালন করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এমন মহানুভব আচরণে মুগ্ধ হয়েও তো অনেকেই ইসলাম কবুল করেছেন এবং পরবর্তীতেও সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে শুরু করে যারাই ইসলামের সুন্দর আচারগুলো নিজেদের মাঝে লালন করে গেছেন, তাদের আচরণই নীরবে অমুসলমানদেরকে ইসলামের দিকে আহবান জানিয়েছে। অনেক অমুসলিম এতে যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছে এবং আশ্রয় নিয়েছে ইসলামের শীতল ছায়ায়।
আমরা নিজেদেরকে মুসলমান দাবী করে থাকি, অথচ যখনই ইসলামী আইন-কানুন বাস্তবায়নের কথা আসে তখনই আমাদের মত ও পথ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। এর কারণ হিসাবে আমি বেশ কয়েকটি দিক চিহ্নিত করতে পারি।
১. ইসলামী আইন বাস্তবায়নের হুকুম কি তা না জানা।
২. ইসলামী আইন বাস্তবায়নের হুকুম কি তা জানা সত্ত্বেও কতিপয় সন্দেহ আমাদের মনে দানা বেঁধে থাকে; যা বাস্তবায়নের পথে বাধা
অত্যান্ত পরিতাপের বিষয়। আমরা কিছু সংখ্যক মুসলমান আইরিশ সরকারের কভিড-১৯ নিতীমালা উপেক্ষা করে। আমাদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের প্রেস রিলিজকে অবজ্ঞা করে জামাতে নামাজ আদায় করেছি এবং আইরিশ সরকার ও জনগনের নজরে এসেছি। যেখানে বিশ্বের সকল আলেম ওলামা বিজ্ঞ ইসলামিক চিন্তাবিদ ঘরে নামাজ পড়ার উপর জোরদার বক্তব্য দিয়েছে। আমরা কেন? মাঠে, পার্কে এমন কি কার পার্কেও বিনা অনুমতিতে জামাত আদায় করেছি। আমাদের এই খামখেয়ালীপনা বক ধার্মিকতা অতিউৎসাহীপনাকে মিডিয়া ও সরকার ভাল ভাবে নেয়নি। অনেক জায়গায় মসজিদ বন্ধ থাকার পরেও পিছনের দরজা দিয়ে ডুকে জামাত আদায় করার অপরাধে পুলিশ এসে বন্ধ করেছে। যা আমাদের মুসলিম সমাজের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা যখন আইরিশ নাগরিকত্ব নেই তখনও আমরা দেশের আইন কানুন মেনে চলার ওয়াদা করেছি।
যেখানে আমাদের অত্যান্ত মুল্যবান ফরজ জুমার নামাজ আদায় করতে পারছিনা, এমনকি হজ্জের মত বড় একটি ফরজের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেখানে কেন ঈদের ওয়াজিব নামাজকে দেশের মহামারিতে আইন অমান্য করে, নিজের মুসলিম প্রতিনিধির কথা অমান্য করে, আমাদের রাস্টকে দেওয়া ওয়াদাকে নুন্যতম সম্মান না করে জামাত আদায় করতেই হবে? আমরা যদি অমুসলিম দেশে আমাদের আচার আচরন দিয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সৃংস্কৃতি তুলে ধরতে না পারি তাহলে আমাদের সন্তানদেরকেই তার মুল্য দিতে হবে।
ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলা হয়েছে। শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখা আমাদের দায়িত্বশীল কর্তব্য। ইসলামে আবেগের স্থান নাই। নিজের যা ইচ্ছা করা, অতিরিক্ত করাকেও ইসলাম সমর্থন করে না। আল কুরআন ও হাদিসে পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার বদিধান দেওয়া হয়েছে। করোনা থেকে শুরু করে কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে সব কিছুর সমাধান দেওয়া আছে।
পরিশেষে আসুন আমরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি। রাষ্ট্রের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হলে আমাদের মুসলিম প্রতিনিধিদের পরামর্শ নিয়ে অমুসলিম দেশে আল কুরআন ও হাদিসের আলোকে আমাদের ইসলামিক জীবন ব্যবস্থাকে আলোকিত করি। অন্যান্য জাতী গোষ্ঠী ও ধর্মের মানুষের কাছে সুমহান ও মর্যাদাশালী ধর্মে নিজের ন্যায়নিষ্ঠ ব্যাবহার দিয়ে তৈরি করি আমাদের ভিত্তি। করোনার মহামারী মোকাবেলায় হই সক্ষম। ফিরে পাই আমাদের স্বভাবিক জীবন।
রেমিট্যান্স যোদ্ধা অর্থাৎ প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে আজকের এই লেখা। প্রবাসীরা এমনিতেই ভীষণ কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে। অনেকের চাকুরী নেই। তাতে তাদের মানসিক অবস্থাও খারাপ। তার মধ্যে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে ভুল ভাবে উপস্থাপন করে কিছু স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল প্রবাসীদের খেপিয়ে তুলছে।
তবে এতে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দোষ নাই। কুচক্রী মহলটি এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দিয়েই ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। আর এতে স্বার্থান্বেষী কুচক্রীদের ফায়দা বেশী হবে। তারা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সামনে এনে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অত্যন্ত সহজ সরল কথাকে ঘোলাটে করে পাবলিক সেন্টিমেন্টে আঘাত করছে।
বর্তমানে বৈশ্বিক যেই মহামারী করোনাভাইরাস এই সময়ে যদি রাষ্ট্রের প্রথম সারির মন্ত্রীকে নিয়ে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে হেয় করা যায়, তাতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়া সহ দেশকে বড় ধরণের খেসারত দিতে হবে। তাই প্রবাসীরা কিছু বলার আগে যাচাই-বাছাই করে সঠিক তথ্য টি জেনেই বলুন এতে আমরাও পাশে আছি।
জানুন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি বলেছেন। মনে রাখবেন মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীও একজন প্রবাসী ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিলো, করোনার কারনে বিভিন্ন দেশে কর্মহীন হয়ে পড়া প্রবাসীরা দেশে এলে কি ধরণের পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ।
উত্তরে তিনি বলেছেন, “প্রবাসীরা যথেষ্ট স্মার্ট। তারা যেভাবেই হোক না কেন কোন না কোন ভাবে পরিস্থিতি সামলে নিবে। চাকরি যোগাড় করে নিবে। এমনটা আমার বিশ্বাস।”
তারপর ও যদি একসাথে এত লোক আসে তাহলে কি হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “দেশে এত লোকের আপাতত কর্মসংস্থান নেই বললেই চলে। এমনিতেই বেকারের (বেকারত্ব) সংখ্যা বেশি। যথেষ্ট কর্মসংস্থান নেই। ১০ থেকে ১৫ লাখ লোকের চাপ সামলানো কঠিন হবে। বেকারত্ব বেড়ে যাবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে এবং চুরি চামারি বেড়ে যেতে পারে।”
মাননীয় মন্ত্রী খুব পরিষ্কার ভাবে বলেছে, বেকারত্বের কারনে দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থতির অবনতি হবে চুরি চামারি বেড়ে যাবে।
অনেকেই প্রচার করছেন, উনি প্রবাসীদের চোর বলেছেন। সবার আগে ভিডিওর কথাগুলো বুঝার চেষ্টা করুন তারপর দৌঁড় ঝাঁপ দিন চিলের পেছনে, চিলে কান নিয়ে গেছে শুনেই চিলের পিছনে না ছুটে আগে ভালো করে দেখুন চিল কান নিয়েছে কিনা? আমি মনে করি প্রবাসী যোদ্ধা হই কিংবা দেশের হই, দেশের স্বার্থ সবার আগে।
কিছু কিছু লোক আছে যাদের উদ্দেশ্য ট্রল করতে হবে, ভিডিও বানিয়ে ভিউ বাড়িয়ে পয়সা কামাতে হবে, ফেসবুকে বেশি লাইক পেতে হবে। আমরা এর আগেও দেখেছি, নবাবজাদা নিয়ে, আমেরিকা পিপিই চাইছে এগুলো নিয়েও ট্রল করেছেন।
তাছাড়া মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সব সময় সোজাসুজি কথা বলেন। কথা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে না বলে, কে কি মনে করবে, না করবে সেটা না ভেবে সঠিক কথা মুখের উপরে বলে দেন। এটা নিয়ে আবেগী বাঙালী আমরা না বুঝেই মনঃক্ষুন্ন হই।
করোনা ভাইরাস যখন বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা তৈরী হলো তখন প্রবাসীদেরকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলো সরকার। ঐ পরিস্থিতিতে যখন কিছু প্রবাসী নিজের দেশে এসে কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন, সেটা মেনে নিতে না পেরে অনেক বেশি বিশৃঙ্খলা করেছিলেন, সেই সময়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন- আমাদের প্রবাসীরা আসলে নবাবজাদা! তারা সবকিছু পাঁচ তারকা মানের চান, কিন্তু আমাদের তো সেরকম সক্ষমতা নেই।
এই মন্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠলো। প্রবাসীদের নবাবজাদা বলে ফেলায় যেনো মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অথচ, অসচ্ছল পরিবারের কোনো সন্তান যখন পরিবার থেকে সক্ষমতার চেয়ে বেশি সুবিধা চায়, মা, বাবা কিন্তু তখন তাদেরকেও নবাবজাদা বলে থাকেন।
অথচ, প্রবাসীদের কঠোরভাবে কোয়ারেন্টাইনের না রাখার ফলে যখন সারাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়লো, তখন আমরা বুঝলাম প্রবাসীদের দেশে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও দেশের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করতে হবে সবার আগে। প্রবাসী যোদ্ধা হই কিংবা দেশী যোদ্ধা হই, দেশের স্বার্থ সবার আগে।
এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন- আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলো আমাদের কাছে মেডিকেল সরঞ্জামাদি চেয়েছে। আমরা হাসাহাসি করলাম। কারন, মেডিকেল ইকুইপমেন্ট বলতেই আমরা ভেন্টিলেটর মনে করেছিলাম। মাস্ক, পিপিই যে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট এগুলো আমরা না বুঝেই তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করলাম। এরপর দেখলাম বেক্সিমকো ৬৫ লাখ পিপিই রপ্তানি করছে।
আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসীদের চোর বলেছেন এমন লেখালেখিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সয়লাব। খুঁজতে খুঁজতে ভিডিও পেয়ে তার বক্তব্য শুনলাম। তিনি যা বলেছেন তার সারাংশ হলো- প্রবাসীরা দেশে চলে আসলে আনএমপ্লয়মেন্ট (বেকারত্ব) বাড়বে, এমনিতেই আমাদের আনএমপ্লয়মেন্ট বেশি। এর মধ্যে যদি ১৫ লাখের মত লোক চলে আসে তাহলে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে, চুরি-চামারি বেড়ে যাবে।
এই কথার অর্থ এই না যে প্রবাসীরা চোর। এতো প্রবাসী এক সাথে আসলে বেকারত্ব যেটা এমনিতেই বেশি সেটা আরও বেড়ে যাবে। আর বেকারত্ব বাড়লে চুরি-ডাকাতি বাড়বেই, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটবেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদ্বান ব্যক্তি। তিনি যা আগে বুঝেন আমরা তা ঘটার পরে বুঝি। এই রকম লোকের কথা নিয়ে প্রথমে হাসাহাসি হবে, অল্প শিক্ষিত লোকেরা এটা নিয়ে সমালোচনা করবে এরপর যখন বুঝবে যে ঘটনা সত্যিকার অর্থেই সত্য হচ্ছে তখন প্রলাপ বকা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। যেমন শুরুতে সাবধানতা অবলম্বন না করায় বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে।
এই জাতীয় দুর্যোগের মুহূর্তে সব কুচক্রীদের হুশিয়ার করে দিয়ে বলতে চাই আপনারা আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভাজন তৈরী করা থেকে বিরত থাকুন।
মুন্না সৈকত আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডাবলিন আওয়ামী লীগ
করোনা মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম পর্যটন ও বাণিজ্যিক শহর দুবাইয়ে বুধবার থেকে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পুরোদমে চালু হচ্ছে। দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স এবং দুর্যোগ ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সুপ্রিম কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রশিদের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ঘোষণায় বলা হয়েছে, বুধবার থেকে ভোর ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দুবাইয়ের সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলবে। এই সময়ের মধ্যে চলাচলেও আর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকতেছে না।
সম্প্রতি বেশ কিছু প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনা ভাইরাস সংকট শিগগিরই কাটছে না। ফলে একে সঙ্গে রেখেই জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে । এসব মতামত মাথায় রেখেই দুবাইয়ের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিটিটি ।
তার আগে ১২ মে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ায় জনসাধারণের ওপর আরোপ করা কিছু বিধি নিষেধ শিথিল করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপর দেশটিতে নতুন আইনের আওতায় জনসাধারণের জন্য পুনরায় খুলে দেয়া হয় পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র ও বিভিন্ন পাবলিক প্লেস।
প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জারি করা বিধিনিষেধ শিথিল করেছে বিশ্বের আরও অনেক দেশ। জাপান জরুরি অবস্থা তুলে নিয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ বন্ধ থাকা অনেক কিছু খুলে দিচ্ছে। অনেক দিন পর ইউরোপীয়ানরা পার্ক, জিম, পুলে গেছেন।গত মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
জাপান গত সোমবার দেশটির রাজধানী টোকিওসহ পাঁচটি জেলা থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে দেশটিতে আরেক দফার সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনার সংক্রমণ এখনো চলছে। দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখের কাছাকাছি। এই পরিস্থিতিতেও যুক্তরাষ্ট্রে নানা বিধিনিষেধ শিথিল হচ্ছে। মেমোরিয়াল ডে উপলক্ষে সপ্তাহ সেহসে দেশটির নাগরিকেরা সৈকত ও পার্কে জড়ো হতে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অনেকেই মুখে মাস্ক পরছেন , সামাজিক দূরত্বের বিধি অনুসরণ করছেন। আবার অনেকে এসব মানছেন না। ফলে
প্রাণঘাতী করোনায় অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ স্পেন। দেশটির মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা সতর্কতার সঙ্গে ধীরে ধীরে কঠোর লকডাউন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসছে। দুই মাসেরও বেশি সময় পর প্রথম বারের মতো পার্ক ও ক্যাফে খুলেছে।
জার্মানি, আইসল্যান্ড, ইতালি, স্পেনে জিম ও সুইমিংপুলগুলো খুলেছে। সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় গ্রিস রেস্তোরাঁ খুলে দিয়েছে। আপাতত তারা গ্রাহকদের শুধু আউটডোর / টেক এওয়ে সার্ভিস দিতে পারবে।
ইউরোপ এবং অ্যামেরিকার চেয়েও দ্রুতহারে করোনা ছড়াচ্ছে দক্ষিণ অ্যামেরিকায়। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ ভাবে চলতে থাকলে অগাস্টের মধ্যে ব্রাজিলে মৃতের সংখ্যা ছাড়াতে পারে এক লাখ ২৫ হাজারের গণ্ডি। শুধু তাই নয়, গোটা দক্ষিণ অ্যামেরিকার চেহারাই আরও ভয়াবহ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্হ দেশ ব্রাজিল। দেশটিতে রোজ আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। আক্রান্তের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে লাতিন আমেরিকার এই দেশ। এরই মধ্যে ৩,৯৪, ৫০৭ জন মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন এই ভাইরাসে। সুস্হ হয়ে উঠেছেন ১,৫৯,৬১১ জন এবং মারা গেছেন ২৪,৬০০ জন ।
করোনা ভাইরাসকে শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে আসছেন না ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। এটিকে সাধারণ ফ্লুর সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। পাগলাটে স্বভাবের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো তিনিও বেশ সমালোচিত। লকডাউনের মধ্যে নতুন কাণ্ড করে সমালোচনার তীর্যক আসনে বসলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ব্রাজিলে চরম করোনা পরিস্থিতিতেও সমর্থকদের নিয়ে লকডাউন মিছিল বের করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জাইর।
নিজ বাসভবনের বাইরে সমর্থকদের সঙ্গে ওই মিছিলে যোগ দেন বলসোনারো। মুখে একটি সাদা মাস্ক পরে বের হলেও সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সেটি খুলে ফেলেন তিনি।
এ সময় সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধও মানেননি তিনি। সমর্থকদের সঙ্গে তিনি হাত মেলান, তাদের জড়িয়ে ধরেন এবং ছবি তুলেন।
করোনা মোকাবিলায় বলসোনারোর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহে দুজন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বাদ দিয়েছেন বলসোনারো।
এস,এ,রব : কোভিড-১৯ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে গোটা পৃথিবী। এর মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা ছড়ালো ভারত ও চীন। দুই দেশের চির বৈরিতা মহামারিতেও কমেনি।
ভারত -চীন সীমান্তে চলমান উত্তেজনা বৃদ্ধিতে বেইজিং এর সমরসজ্জা বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনা সেনাবাহিনী এর মধ্যে নতুন করে ১১৪টি নতুন বাংকার নির্মাণ করেছে সীমান্তে । ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্হার বরাত দিয়ে জানা গেছে চীন গালোওয়ান অঞ্চল এবং পেংগংস এলাকায় বাংকার তৈরী করে বিতর্কিত এলাকাগুলোতে ভারতীয় সেনা বাহিনীর পথ বন্ধ করে দিয়েছে । পিপলস রিপাব্লিক আর্মির নতুন দু’টি বাহিনী সেখানে পাঠিয়েছে চীন ।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রন রেখার কাছে গালোওয়ান এবং পেংগংস অঞ্চলে সম্প্রতি নতুন করে এই ভাবে চীনের সামরিক শক্তি তৎপরতা বৃদ্ধিতে নয়াদিল্লী খুবই সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান টাইমসের সূত্রে জানা গেছে ।
ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে গত শুক্রবার গোপনে লেহ পরিদর্শন করে ফেরার পরই ভারত আরও বেশী সেনা পাঠানো শুরু করেছে লাদানের প্রকৃত নিয়ন্ত্রন রেখায় । সরকারি সূত্রে জানা গেছে লেহ ইনফেক্ট ডিভিশনকে ফরওয়ার্ড অপারেশনাল এলার্ট দিয়ে রাখা হয়েছে জরুরী পরিস্হিতি মোকাবেলার জন্য ।
অন্য দিকে চীনের পক্ষ থেকে গত এক সপ্তাহে অন্তত এক ঝাঁক অতিরিক্ত নজরদারি নৌকা পাঠানো হয়েছে পেংগংস হৃদে । সংশ্লিষ্ট এলাকায় দুই পক্ষই দিবা-রাত নজরদারি করছে বলে জানা গেছে । গোটা পরিস্হিতি উপর নজরদারি করছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজীত দুবাল ।
অপর দিকে ভারতের লাদাখ সীমান্তেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে উত্তেজনা । পূর্ব লাদাখের সীমান্তে বেশ কিছু অঞ্চলে চীনের প্রায় ১২শ’ থেকে ১৫ শ ‘সেনা সদস্যরা ভারতীয় সেনাদের মুখোমুখি অবস্হান নিয়েছে । ২০১৭ সালের ডুকলাম সংকটের পর সীমান্তে এবার দুই দেশের সবচেয়ে বড় সেনা মোতায়েনের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতের সংবাদ মাধ্যম ।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম NDTV দেশটির শীর্ষস্হানীয় সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে পেনাং এবং গালোওয়ান উপত্যকায় শক্তি বৃদ্ধি করেছে ভারতীয় সেনা বাহিনী । ওই দুই অঞ্চলে দুই থেকে আড়াই হাজার চীনের সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।
এই দিকে পারমানবিক শক্তিধর ভারতকে হুমকি দেওয়া আয়তনে অতি ক্ষুদ্র দেশ নেপালের দুঃসাহসিকতার প্রশ্ন নিয়ে বেশ অালোড়ন সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। নেপালের এই হুমকিকে ভারতের জন্য ভীষণ লজ্জার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা । ভারতের মত বৃহৎ একটি শক্তিশালী দেশের বিরুদ্ধে নেপালের মত অতি ক্ষুদ্র দেশের যুদ্ধের হুমকি অবশ্যই লজ্জারও বটে। নেপাল সরকার কয়েকদিন আগে ভারতের দাবী করা বিতর্কিত ভূখন্ড কালাপানি ও লিপুলেগকে নিজেদের মানচিত্রে অর্ন্তভূক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।আর এই বির্তকিত ভূখন্ডকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনায় শক্তিশালী ভারতের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধের হুংকার দিয়ে বসেছে নেপাল । নেপালের একটি সেনা বাহিনী আছে বটে তবে “ঢাল নেই তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মত”ই ” তাদের সেনা বাহিনীর অবস্হা । কিন্তুু পারমানবিক শক্তিধর ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র নেপালের এই ধরণের রন হংকার শক্তিশালী নেপালী জাতিয়তার স্বাধীনচেতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন অনেকে ।
সস্প্রতি দ্যা রাইজিং নেপাল পত্রিকায় দেওয়া একটি সাক্ষাতকারে নেপালের উপমুখ্যমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইশ্বর পোখরেল বলেন , ভারতের সেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে নেপালের গোর্খা সেনাদের ভাবাবেগে আঘাত হেনেছেন। ভারতের জন্য সে দেশের সেনাবাাহনীতে বহু বলিদান দেওয়া গোর্খা সেনাদের অবদানের কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে ইশ্বর পোখরেল বলেন ,সীমান্তে কালাপানি নিয়ে তৃতীয় কোন পক্ষের প্ররোচনায় আমরা বিবাদ করছি বলে ভারতের সেনা প্রধান যে অভিযোগ করেছেন সেটি খুবই নিন্দনিয় এবং দুই দেশের গোর্খা সেনাদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে । প্রয়োজনে নেপাল সেনা বাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে বলে তিনি হুশিয়ারি প্রদান করেন ।
আমার বড়ো মেয়ে সাইয়েরাহ চৌধুরীর শুভ জন্মদিন আজ। নানা নানি সোহগী কণ্ঠে তাকে রাইতিক সোনা বলে ডাকে। আবার দাদী “খাসাসোনা” ভেবে নাম রেখেছে স্বর্ণা মনি। আমি আদর করে নাম দিয়েছিলাম স্মিতা। “স্মিতা” নামটি অনেকটা কাকতালীয় ভাবেই রাখা হয়ে গিয়েছিল। তিন-চার মাস বয়সে তাকে কোলে নিয়ে আমি যখন আহ্লাদি ভাষায় তার সঙ্গে রাজ্যের কথা বলছিলাম তখন সে আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে স্মিত হাসি উপহার দিচ্ছিল। রবীন্দ্র নাথের কোন এক লেখায় “স্মিত হাসি” শব্দটি পড়েছিলাম। তাই তার মাকে ডেকে বললাম, তোমার মেয়ে রবি ঠাকুরের “স্মিত হাসির” মতোই যেহেতু হাসছে সেহেতু আজ থেকে তার নাম স্মিতা। ব্যাস! তখন থেকেই সবার কাছে এ নামে পরিচিত হয়ে উঠতে লাগলো। কিন্তু নামকরনের কিছুদিন পরই জানতে পারলাম স্মিতা প্যাটেল নামে এক ভারতীয় চিত্রনায়িকা ছিলেন যিনি বেশ আগেই পরলোকগত হন। এটা শুনার পর থেকেই কেন জানি এ নামে ডাকতে স্বতঃস্ফূর্ততা হারিয়ে ফেললাম। কথা প্রসঙ্গে একদিন এক পাকিস্তানি শরিফা মহিলার সঙ্গে এ ব্যপারে কথা হলে তিনিও নামকরণের ক্ষেত্রে বেশ সাবধানী হওয়ার পরামর্শ দেন। এও বলেন, ভাল বা ইসলামিক নাম কেবল খাতা-পত্রে বন্দি করে রাখার জন্য নয়, বরং যে নামে আমরা কাউকে সবসময় ডাকি সে নামটাই যথার্থ সুন্দর, ধর্মীয় ও অর্থপূর্ণ হওয়া উচিত। তাই অনেক ভেবে চিন্তে এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে “স্মিতা” নামটির পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে সাইয়েরাহ নামে তাকে ডাকতে শুরু করি ও আত্মীয়স্বজন সহ পরিচিত সকলকে এ নামেই ডাকতে অনুরোধ জানাই।
সময়ের সিড়ি বেয়ে আমার মেয়ে আজ তেরো বছরে পা রাখলো। এখন সে আর আগের মতো সেই ছোট্ট শিশুটি নেই। ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার মতো দুরূহ ও দুঃসাধ্য বিষয়টি খেলা করে বেড়ায় তার কচি হৃদয়ে। করোনার ভয়াবহতা তখনো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েনি। চীনের উহান পর্যন্তই বিস্তৃত ছিলো এর মরণ কামড়। ভ্যাকসিন না থাকায় সেখানে প্রতিদিন শত শত লোক মারা যাচ্ছিলো। ওই সময় একদিন তাকে স্কুল থেকে বাসায় নিয়ে ফিরছিলাম। গাড়িতে বসে সহসা বলে উঠলো, ” বাবা বড়ো হয়ে আমি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে চাই।” হুট করে ভ্যাকসিন কেনো মা? বললো, “ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পারলে মানুষ বাঁচবে। তারা আমার জন্য দোয়া করবে। আর এটাই হবে উত্তম মানব সেবা।”
তার এমন বুদ্ধি দীপ্ত হৃদয়স্পর্শী কথা আমাকে বেশ অভিভূত করে। স্বপ্নের মতো মনে করিয়ে দেয় সব। এইতো সেদিন তার মা তাকে পেটে নিয়ে হাঁটছে, ঘুরছে, ডাক্তার দেখাচ্ছে, সংসারের যাবতীয় কাজ করছে, ইত্যাদি ইত্যাদি সবকিছুই যেন আমার চোখের সামনে দিব্যি ভেসে উঠতে লাগলো। সত্যি সময়ের উপর কারো হাত নেই। সময় বোধ হয় এভাবেই “বহিয়া’ যায়—
২০০৭ সালের ২৫ মে। সারাক্ষন মেঘের কান্না আর ঘোমরাচ্চন্ন প্রকৃতির মুখে হাসি ফুটিয়ে রক্তবর্ণ ধারণ করে পুবাকাশে ঝিলিক দিয়ে উঠলো সোনালী সূর্য। আইরিশ আকাশে এ সূর্যের সাক্ষাৎ খুব কমই মেলে। সূর্যারশ্মির কিরণে চারপাশ ঝলমল করছিলো। এমনি এক উজ্জ্বল আলোকিত সকাল। ৮টা ২৪ মিনিট। আমাদের কোলকে আলোকিত করে সুতীব্র চিৎকারের মাধ্যমে তার আগমনের বার্তা জানিয়ে দিলো পৃথিবীকে।
চাঁদের মতো সোনামুখটি দেখে সকল দুঃখ, যন্ত্রনা, নির্ঘুম রাতের জ্বালা মুহূর্তেই উবে গেল কর্পূরের মতো। আইরিশ নিয়মানুযায়ী, প্রসবকৃত সন্তানটিকে সঙ্গে সঙ্গেই মায়ের বুকে শুইয়ে দেয়া হয়। আমাদের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আবেগঘন এ দৃশ্যটির মাঝে আমরা মা বাবা দুজনই কান্না সংবরন করতে পারিনি। তবে এ কান্না বেদনার ছিলোনা, ছিল সুখের। সাফল্যের। মাতৃত্ব ও পিতৃত্বের গৌরবের।
আমাদের ফ্যামেলি ডাক্তারের দেয়া তারিখ অনুযায়ী ২৩ তারিখেই আমার মেয়ের জন্ম হওয়ার কথা ছিল। আমার স্ত্রীর গর্ভকালীন সময়ে প্রেসার একটু বেড়ে যায়। ২১ তারিখে মেটারনিটি হসপিটালে নিয়মিত চেক-আপে গেলে প্রেসার জনিত কারণে মা ও শিশুর ঝুকির কথা বিবেচনায় এনে ওইদিনই ডাক্তার তাকে হসপিটালে ভর্তি করে রেখে দেয়। এবং ২৩ তারিখের মধ্যে যে কোন সময় সন্তান প্রসব হওয়ার জোরালো সম্ভাবনার কথাও আমাদেরকে জানায়। ২২ তারিখ সন্ধায় এক নাইজেরিয়ান ডাক্তার আমাকে এসে বলল, আজ রাত দুটোর মধ্যেই তুমি তোমার সন্তানের মুখ দেখতে পাবে।
যে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় একটি গাছের পাতাও নড়েনা, যিনি অন্তরাল থেকে জন্ম মৃত্যু নিয়ন্ত্রন করেন কিংবা যার অপার মহিমায় শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মার বুকে সন্তানের খাবার চলে আসে সেই মহান শক্তিধর পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালাকে উপরে রেখে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বা চিকিৎসা শাস্ত্রের দোহাই দিয়ে একজন ডাক্তার যখন কাউকে এভাবে নিশ্চিত আগামবার্তা জানিয়ে দেয় তা মেনে নেয়া কতোটুকু সমীচীন? জানি, নবাগত সন্তানের মুখ দর্শন করার জন্য প্রতিটি মা বাবাই অধীর আগ্রহে থাকেন। প্রথম সন্তানের মা বাবা হিসেবে এ আগ্রহের মাত্রাটা আমাদের মাঝেও বেশী বৈ কম ছিলোনা। এর পরো কেন জানি ডাক্তারের এমন আগাম আশ্বাসে আমি মোটেও উৎসাহী হয়ে উঠতে পারিনি। তাই তাকে কোন জবাব না দিয়ে কেবল শুকনো হাসি হেসেছিলাম।
অবশেষে ডাক্তার সাহেবের কথা সঠিক হয়নি। ২৪ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত শরীরে পরিপূর্ণ প্রসব ব্যথার উদয় না হওয়া স্বত্বেও আমার স্ত্রীকে ডেলিভারি রুমে স্থানান্থর করা হয়। যে করেই হোক রাতের মধ্যেই সন্তান ভূমিষ্ঠ করতে হবে। বিদেশের মাটি। আপনজন বলতেতো কেউ নেই। সুতরাং আমাকেই ডেলিভারি রুমে থাকতে হল। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢুকলাম। বিশেষ শক্তি সম্পন্ন ঔষধ প্রয়োগ করার পর প্রসব ব্যথা বাড়ার সাথে সাথে তাঁর ছটফটানি ও যন্ত্রনাও বাড়তে লাগলো। সে কি অসহ্য যন্ত্রনা! নিজের চোখে না দেখলে কেবল শুনা কথায় সে ব্যথার যন্ত্রনাকে সঠিক ভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। নির্মোহ ব্যথার যন্ত্রনা দেখে আমি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারিনি। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া স্বত্বেও ডাক্তারকে হাই পাওয়ার সম্পন্ন ব্যথা নিরাময়কারী ঔষধ প্রয়গের অনুরোধ জানাই। ভেজা কণ্ঠে মা ও শ্বশুর শাশুড়িকে দোয়া করতে বলি। আমার ময়মনসিংহের মামী সহ তারা সারা রাত আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনায় লিপ্ত থাকেন। পরিশেষে টানা পনের ঘণ্টা পর আমাদের কাঙ্খিত সন্তান নতুন পৃথিবীতে এসে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেয়।
ওই দিনের সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমি মনে করি, আমাদের দেশেও অন্যদের পাশাপাশি স্বামীকেও তাঁর স্ত্রীর পাশে প্রসবকালীন সময়ে থাকা একান্তই বাঞ্ছনীয়। এতে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর, মায়ের প্রতি ছেলের, বোনের প্রতি ভাইয়ের কেবল ভালোবাসা নয়, স্নেহ-মমতা ও শ্রদ্ধাবোধও বেড়ে যেতে পারে কয়েকগুণ বেশী।
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম দিনে আমার মেয়ের জন্ম। সে সুবাদে আমার চিটাগাঙের খালা তাকে “অনেক ভাগ্যবতী” বলে উল্লেখ করেছেন। আমার মেয়ে নিজেকে নজরুলের মতো বিখ্যাত মহামানবে দাঁড় করাতে পারবে কিনা জানিনা, তবে তিনি সাম্য ও মানবতার যে গান গেয়েছেন, সে গানের ভেতর যদি নিজেকে সমর্পণ করতে সক্ষম হয়, পিতা হিসেবে সেটাই হবে আমার জন্য গৌরবের, কৃতিত্বের।
বিজাতীয় সাংস্কৃতিক পরিসরে আমার মেয়ে বেড়ে উঠছে। তবু আমি তাকে খাঁটি বাঙ্গালী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। জানি, বিষয়টা অনেকটা জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে যুদ্ধ করার মতোই। এর পরো সে যুদ্ধকে আলিঙ্গন করতে চাই আমি। দেশীয় শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে হবে তার পথ চলা, এই আমার সার্বক্ষণিক কামনা। পিতার এ মনোবাঞ্ছা পুরনের জন্য পরম করুনাময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার উপর যেন সমস্থ রহমত বর্ষণ করেন, আজ তার শুভ জন্ম দিনে এই আমার বিনীত প্রার্থনা। সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা দয়া করে আপনারাও আমার সাথে সামিল হন। আমীন।
লেখক- আয়ারল্যান্ড প্রবাসী প্রাবন্ধিক ও কলামিসট
(লেখাটি ২০১২ সালের ২৫ মে বিডি নিউজ২৪.কম সহ আরও দুটো অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ পায়। সেটাই কিছু পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করে আজ আবারো প্রকাশ করা হলো।)
এস,এ,রব : জরুরী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে করোনা আক্রান্ত এক তুর্কি নাগরিক সহ তার পরিবারকে ঢাকা থেকে ফিরিয়ে নিয়েছে তুরস্ক। ঢাকাস্থ তুরস্ক দূতাবাস তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে এ নাগরিককে ফিরিয়ে নেওয়ার ভিডিও ও ছবি শেয়ার করেছে । তবে ওই পরিবারের ঠিক কতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তা প্রকাশ করেনি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও ঢাকার তুরস্ক দূতাবাস।
গত রবিবার (২৪ মে) দুপুরে ওই করোনা রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে এয়ার এ্যাম্বুলেন্সটি । শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল-আহসান বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দুটি শিশুসহ চার জনকে তুরস্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
করোনা আক্রান্ত তুর্কি নারীর সঙ্গে তার বাংলাদেশী স্বামী এবং তিন বছরের জমজ দুই কন্যা হুমা এবং জিয়াদ রয়েছেন বলে দুতাবাস সূত্রে জানা যায় ।
ঘটনার সূত্রপাতে বলা হয় আয়শে দিপচিন নামে এক তুর্কি নাগরিক তার টুইটারে গত ১৪ই মে এক টুইট করে বলেন , বাংলাদেশে বসবাসকারী তার বড় বোন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আমার বোন ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও সেখানে কোনও চিকিৎসা পাচ্ছেন না ।এমনকি তার টেস্টও করানো যাচ্ছে না । তার তিন বছরের দুই যমজ সন্তানও রয়েছে বলে তিনি টুইটারে উল্লেখ করেন । আমরা চাই তাদেরকে দ্রুত তুরস্কে নিয়ে এসে চিকিৎসা করা হউক। টুইটারে তিনি বোনের সাথে মেসেজের কথোপকথনের স্ক্রিন শট এবং তার বোনের পরিবারের ছবি শেয়ার করেন ।
ঢাকায় অবস্থিত তুরস্ক দূতাবাসের নজরে পড়ে দিপচিনের টুইটটি । ওই তুর্কি নাগরিকেকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রোয়জনীয় পদক্ষেপ নিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়কে অনুরোধ জানায় ঢাকাস্ত তুরস্ক দুতাবাস । এবং জরুরী ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তাহারা এয়ার এম্বুলেন্স চায় । দুতাবাসের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা যায় ঢাকাস্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান নিজেই পুরো বিষয়টি তত্ত্বাবধান করেন।
এর আগে এপ্রিলে সুইডেনে বসবাসরত ৪৭ বছর বয়সী তুর্কি নাগরিক এমরুল্লাহ গুলুসকেন করোনায় আক্রান্ত হলেও সেখানে তিনি সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছিলেন না বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিবারের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তা তুর্কি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে উক্ত ব্যাক্তিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সুইডেন থেকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে ঢাকাস্ত তুরস্ক দুতাবাস সূত্রে জানা যায় ।
সৈয়দ আতিকুর রব : গ্রীষ্ম কাছাকাছি আসার সাথে সাথে ইউরোপে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে । আর এ দিকে লকডাউন নিষেধাজ্ঞা বিধির আওতায় কয়েক মাস ধরে ঘরে বসে থাকা নাগরিকরা বন্দীশালা থেকে পরিত্রানের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ।
ইউরোপিয় দেশ গুলোর সমুদ্র সৈকতগুলোতে সামাজিক দূরত্ব মানার ক্ষেত্রে গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লকডাউনের শিথিলকরণের মাধ্যমে “জনগণকে কিছুটা প্রয়োজনীয় বিশ্রাম এবং সতেজ বায়ু পাওয়ার সুযোগ দেওয়ার” জন্য একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিল। পরিকল্পনার মধ্যে দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ সীমানা খোলা, রেল, সড়ক, বিমান এবং সাগর মোহনা পুনরুদ্ধারের মত বিষয়গুলো সুপারিশে অন্তর্ভুক্ত ছিল যাতে ধসে পড়া ইউরোপিয় পর্যটন শিল্পকে পুনরায় ঢেলে সাজানো যায়।
আর লকডাউন শিথিলের এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তীব্র গরমে হাপিয়ে উঠা মানুষদের সমুদ্র স্নানের জন্য ঢল নেমেছে স্পেন ,ফ্রান্স সহ নেদারল্যান্ডের সৈকতগুলোতে।
তবে ইতমধ্যে গ্রীষ্মের মনোরম আনন্দে মেতে উঠা অন্যতম আকর্ষণীয় সৈকতগুলিতে পর্যটক এবং স্থানীয়দের উপচে পড়া ভীড়ের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কিছু কিছু দেশকে হিমশীম খেতে হচ্ছে বলে সিএনএন ট্রাভেলের এক সূত্র থেকে জানা গেছে ।
উক্ত সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায় গত ২০ শে মে বুধবার ফ্রান্সের লকডাউন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে শতাধিক সমুদ্র সৈকত খোলার কিছু দিন পর ব্রিটানির উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ মরবিহান সৈকতে সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলার কারণে পাঁচটি সমুদ্র সৈকত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । সমুদ্র সৈকতে মানুষের ঢল সহ লকডাউন বিধি লঙ্ঘনকে ইউরোপের জন্য নতুন হুমকি বলে মনে করছেন অনেকে ।
এদিকে, বুধবার ডাচ উপকূলীয় প্রদেশ জিল্যান্ডে সুন্দর আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কারণে সেখানে পর্যটকদের উপচেপড়া ভীড়ে জরুরী ব্যাবস্থা লঙ্ঘন হওয়ার আশংকায় সৈকত কর্তৃপক্ষ জুনের ১ তারিখ পর্যন্ত সেখানকার শহরের রাস্তাগুলি প্রতি সপ্তাহন্তে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সিএনএন ট্র্যাভেল সূত্র থেকে জানা গেছে ।
আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত বাংলাদেশী কমিনিটি ব্যক্তিবর্গ, দীর্ঘ ৩০ দিন পবিত্র মাহে রমজানের সিয়াম সাধনের পর আয়ারল্যান্ড সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এবং মধ্যপ্রাচ্যে আজ মুসলমানের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই দিনটি আমরা প্রতি বছর মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে শুরু করি, পাড়া প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা করি, কোলাকুলি করি, বন্ধুবান্ধবের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে কুশল বিনিময় ও আমাদের চিরায়ত সংস্কৃতি হিসেবে আপ্যায়নের মাধ্যমে এই দিনটি পালন করে থাকি।
আপনারা সবাই জানেন সারা বিশ্বে এখন করোনার প্রাদুর্ভাব চলছে। আয়ারল্যান্ডও এর ব্যতিক্রম নয়। আয়ারল্যান্ডে লকডাউন কিছুটা শিথিলের দিকে যাচ্ছে। কিছুটা খুশির খবর আমাদের জন্য যে, আয়ারল্যান্ডে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা এখন কিছুটা নিন্ম গমনের পথে। এই অর্জন আমাদের সকলের সহনশীল ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণের কারণে সম্ভব হয়েছে। আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আয়ারল্যান্ডের সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে চলার জন্যে। আরো ধন্যবাদ জানাই যে সকল ডাক্তার ও সমাজকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রিটেইল, সুপারশপ ও রেস্টুরেন্টে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে এই দুর্দিনে আয়ারল্যান্ডবাসীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আপনারা আছেন বলে আজকে আমরা নিরাপদে আছি।
আমরা এখনো পুরোপুরি এই সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে পরিত্রান পাই নি। শুধুমাত্র সামান্য অবহেলার কারণে যে কোনো কেউ সংক্রমিত হয়ে যেতে পারে। সামান্য একটি ভুল সারা জীবনের কান্না। একজন ব্যক্তি নতুন করে সংক্রমিত হলে তার সাথে সাথে পুরো পরিবার ও তার বন্ধু বান্ধবের নিকট ছড়িয়ে যেতে পারে। দীর্ঘ ৩ মাস লকডাউনে থাকার সকল ত্যাগ ব্যর্থতায় পর্যবশিত হবে।
তাই আপনাদের সকলকে আন্তরিক ভাবে অনুরোধ করবো আপনারা সকলেই আর কিছু দিন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, বাসায় পরিবার কে নিয়ে ঈদের জামাত করুন, মসজিদে যাওয়া পরিহার করুন আর কিছুদিন, পাড়াপ্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবের সাথে দূরত্ব বজায় রাখুন। পরিবার কে একান্ত সময় দিন। বেঁচে থাকলে জীবনে অনেক ঈদ উদযাপন করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ। এই দেশের প্রতি আমাদের যেই দায়িত্ব আছে তা এড়িয়ে চলার সুযোগ কোন ভাবেই আমাদের হাতে নেই।
আপনাদের সকলকে আমরা ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমাদের কমিউনিটির ও দেশের সকলের জন্য দোয়া করবেন। যারা করোনায় ও অন্যান্য কারণে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের জন্য দোয়া করবেন।
আপনাদের সকলে “ঈদ মুবারক”
শুভেচ্ছান্তে আপনাদেরই পরিজন মোহাম্মদ মোস্তফা (প্রধান নির্বাচনী উপদেষ্টা ) আজাদ তালুকদার (লিমেরিক কাউন্সিলর ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার) আবাই।
এবারের ঈদের চেহারা যে বেশ মলিন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সারা পৃথিবী এখনো গৃহবন্দি। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। দোকানপাট বন্ধ। কেনাকাটা করা সম্ভব হচ্ছেনা। মানুষ মন ভরে বাজার করবে, প্রাণ খুলে হাঁটবে, নিশ্বাস নেবে, মুক্ত ভাবে কথা বলবে, গল্প করবে, আড্ডা দেবে কিন্তু এর কিছুই তারা করতে পারছেনা। অন্ধকারাচ্ছন্ন এক অচল পরিবেশ। ধেয়ে আসা মৃত্যুর মিছিলের অস্তিত্ব এখনো দেদীপ্যমান। বোবা কান্নার আহাজারি চারদিকে। এমনি এক শোকগাথা অস্বাভাবিক পরিবেশ পরিস্থিতিতে উদযাপিত হতে যাচ্ছে ঈদুল ফেতরের মতো বছরের সেরা ধর্মীয় উৎসব।
একঘেয়ে জীবনের গতানুগতিক ধারাবাহিকতাকে কাটিয়ে তুলতেই যেন উৎসবের বড্ড প্রয়োজন। তাইতো বিভিন্ন সামাজিক উৎসব বা অনুষ্ঠানাদির পাশাপাশি রয়েছে ধর্মীয় উৎসব পালনের বলিষ্ঠ বিধান। ধর্ম ভেদে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কায়দায় তাদের ধর্মীয় উৎসবাদি পালন করে থাকে। বিশ্ব মুসলিম হৃদয়ে আননন্দের কাড়া নেড়ে প্রতি বছরেই ঘুরে ফিরে যা বিশাল উৎসব আকারে নেমে আসে তা হচ্ছে ঈদ।
ঈদ আসে বছরে দু’বার। রমজানের শেষে শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ আনন্দের পয়গাম নিয়ে আসে ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ। যিলহজ মাসের ১০ তারিখে ত্যগের বার্তায় উদ্ভাসিত হয়ে বছরের দ্বিতীয় দফায় যে উৎসবটি মুসলিম দোয়ারে ঠোকা দেয় তা হচ্ছে ঈদুল আযহা বা কুরবানির ঈদ। এক মাস সিয়াম সাধনার পর সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে পশ্চিমাকাশ জুড়ে বাঁকা চাঁদটি দেখার জন্য। চাঁদ দেখাতেও রয়েছে এক ভিন্নধর্মী স্বাদ ও উত্তেজনা। কারণ চাঁদের আত্মপ্রকাশের উপরই নির্ভর করে ঈদুল ফিতরের মতো একটি বিশাল মুসলিম ধর্মীয় উৎসব।
ঈদ যে কেবল একটি উৎসব তা’ নয়। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক ধরনের ইবাদতও বটে। তাই প্রতিটি মুসলিম ঘুম থেকে উঠেই গোসলাদি সম্পন্ন করে পাকপবিত্র হয়ে সাধ্যানুযায়ী নতুন জামাকাপড় পড়ে ঈদগাহর পানে ছুটে চলে। সেখানে ধনি-গরিব, উঁচুনিচু ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একই সারিতে দাঁড়িয়ে পরম করুণাময়য় আল্লাহতায়ালার প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও বিনম্র ভালবাসায় সিক্ত হয়ে সেজদায় লুঠিয়ে পড়ে। সত্যিকারার্থে ঈদের নামাজের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ঈদের চরম সার্থকতা। কিন্তু ভাগ্যপীড়িত মুসলিমকে এবার বঞ্চিত হতে হবে এ ফজিলত থেকেও।
নিষ্ঠুর করোনা কেবল প্রাণই কেড়ে নিচ্ছেনা, কেড়ে নিচ্ছে আমাদের আনন্দ, বিনোদন, অবাধে চলাফেরার স্বাধীনতা, বিঘ্ন ঘটাচ্ছে উপাসনালয়ে গিয়ে উপাসনা করার ক্ষেত্রেও। মুসলিমরা রমজান মাসে মসজিদে গিয়ে তাহরাবির নামাজ পড়ার মাধ্যমে খোদার সন্তুষ্টির সাথে সাথে নিজেরাও যে আত্মতুষ্টি লাভ করেন তা থেকে এবার তারা বঞ্চিত হয়েছেন। ঈদের দিন সকালে নামাজ শেষে কোলাকুলির মাধ্যমে যে উৎসব আমেজের আবহ ছড়িয়ে দেয়া হয় তাই চলতে থাকে সারা দিন ধরে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এবার এসবের কিছুই সম্ভব নয়। করোনার বিষাক্ত ছোবলে থেমে গেছে সব। ঈদের চেহারায় ফুটে উঠেছে স্পষ্ট মলিনতার ছাপ।
তবে কেবল করোনাকালীনই নয়, করোনাবিহীন আর দশটা ঈদের ক্ষেত্রেও আনন্দের উল্টো পিঠে যে বেদনার দহন লুকিয়ে থাকে তা আমাদের সবারই জানা। সমাজে ধনাঢ্য বিত্তশালী ব্যক্তিদের জন্য ঈদ আনন্দের সওগাত বয়ে আনলেও অর্থ-বিত্ত হীন দরিদ্র শ্রেণীর কাছে তা আসে অনেকটা ধুসর মলিন হয়ে। মুসলিম বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশগুলোতে এ ভেদাভেদ ঈদের প্রকৃত সার্থকতাকেই যেন ক্ষুন্ন করে দেয়। জীবন যাদের কাছে অনেকটা দরিদ্র কিশোরীর ছেঁড়া কামিজের মতো, তাদের পক্ষে জাগতিক এ বিশাল উৎসবের দিনটিতেও বিষাদীয় হাসির ভেতর নিজেদেরকে লুকিয়ে রাখা ছাড়া কোন উপায় থাকেনা!
আর যারা প্রবাসে থাকেন তাদের জন্যও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঈদ খুব বেশী একটা সুখকর হয়ে উঠেনা। প্রবাসে বসবাসরত বড়ো একটা অংশকেই ঈদের এই আনন্দ ভাগাভাগি থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়। বিশেষ এ দিনটিতেও শ্রম বিক্রির তাগাদা তাদেরকে তাড়া করে ফিরে। ফলে সকালবেলায় ঈদগাহর মাঠে যাওয়ার পরিবর্তে কর্ম ক্ষেত্রে পৌঁছাই তাদের মুখ্য হয়ে উঠে। ভাগ্যক্রমে কেউ বসদেরকে বলে কয়ে দিনটিতে ছুটি ঝুটিয়ে নিতে পারলেও নামাজ পড়া ছাড়া আর বিশেষ কিছু করার থাকেনা। খুব বেশী পরিশ্রান্তরা ঘুমিয়ে পড়েন। কেউ বালিশ ছাপা দিয়ে বোবা কান্না কাঁদেন, কেউবা দূরালাপনিতে মা-বাবা বা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ব্যথাতুর বুকটাকে হালকা করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। আবার উৎসাহী কেউ কেউ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ফিরে আনন্দ খুজার চেষ্টা করেন। চিড়া মুড়ি যেমন ভাতের তৃপ্তি দিতে পারেনা, কৃত্রিম এ আনন্দও কখনো প্রকৃত আনন্দের স্বাদ মেটাতে পারেনা।
তবে স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে যারা সপরিবারে প্রবাসে বসবাস করছেন তাদের বেলায় কিছুটা আলাদা হলেও প্রকৃতপক্ষে তাঁরাও পরিপূর্ণ স্বদেশী সুখ কখনো পাননা। দেশে পরিবার পরিজন, স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশিদের মিলনে যে মহা আনন্দের স্ফুরন ঘটে তাঁর বড্ড অভাব সেখানে। দেশে ঈদের কেনাকাটা বা নতুন জামাকাপড় নেয়ার মধ্যে যে আনন্দের মাত্রা প্রবাহমান তার কিঞ্চিৎ পরিমাণও প্রবাসে বসবাসরত মুসলিম বাঙ্গালি বা তাঁর প্রজন্মের মধ্যে বিরাজ করে বলে মনে হয়না। এ জন্য যে আবহ বা পরিবেশ প্রয়োজন তা মুসলিম অধ্যুষিত দেশ গুলো ছাড়া অন্যান্য দেশগুলোতে একেবারেই অনুপস্থিত। এর মূল কারণ হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের উৎসব মুখর ওই বিশেষ দিন গুলো এখনো এসব দেশে জাতীয় ভাবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারেনি। যার জন্য ওই দিন গুলো সরকারী ক্যলেনণ্ডারে জাতীয় ছুটির তালিকায় লিপিবদ্ধ হতে ব্যর্থ হচ্ছে।
আমার বিশ্বাস, ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার মতো মুসলিম সংখ্যা লঘু দেশগুলোতে যারা সপরিবারে বসবাস করছেন তাদের অনেকেই হয়তোবা নাগরিকত্ব পেয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার সুযোগ লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন। তারপরও অন্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসবীয় দিনের মতো ঈদের দিনে জাতীয় ছুটি (Public Holiday) না থাকায় অনেক সময় অনিচ্ছা স্বত্বেও বাধ্য হয়ে তাদেরকে কাজে যোগদান করতে হয়। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ ওই দিন গুলোতে সরকারী ছুটির (Public Holiday) দাবী জানানো এখন সময়ের দাবীতে পরিনত হয়েছে বলে আমি মনে করি।
একটা সময় দু একটা বিশেষ বিশেষ দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশ সংখ্যালঘু মুসলিম
সম্প্রদায়ের উৎসবাদীর দিন শুভেচ্ছা বাণী বা বিশেষ বার্তা প্রদান করতোনা। কিন্তু এখন আর সে সময় নেই। সময়ের পরিক্রমায় অনেক দেশেই মুসলিম কমিউনিটি প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। কাউন্সিলর থেকে মেয়র, এম পি, সিনেটর হিসেবে নিজেরা স্থান করে নিতে সক্ষম হচ্ছে। তাই অধিকাংশ দেশেই আজকাল মুসলিমদের এ দিনটিতে সরকার বা রাষ্ট্র প্রধানরা বাণী দিয়ে থাকেন। আমাদের আয়ারল্যান্ডও এর বাইরে নয়। প্রধান মন্ত্রী লিও ভারাতকার এবার এক ভিডিও বার্তায় মুসলিম সম্প্রদায়কে ঈদুল ফেতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যা মুসলিমদের সম্মানিত করেছে বলে আমার বিশ্বাস।
তবে প্রবাসী মুসলিম হৃদয়ে প্রকৃত ঈদের সার্থকতা ফুটিয়ে তুলতে হলে দিনগুলোকে জাতীয় ছুটির আওতাধীন আনার বিকল্প নেই। আর এ দাবী নিয়ে সরকারী পর্যায়ে কমিউনিটির নেতৃ বৃন্দকেই সবার আগে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। এ ক্ষেত্রে যেসব দেশে মুসলিম কমিউনিটি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে সে সব দেশেই প্রথমে কমিউনিটি প্রধান কতৃক এ দাবিটি উত্থাপিত হতে পারে। সে প্রেক্ষাপটে আমরা যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিম কমিউনিটির দিকেই সবার আগে নজর দিতে পারি। ওইসব দেশে মুসলিম কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন গুলো নিজেদের কর্ম যোগ্যতা ও দক্ষতা বলে অনেক এগিয়ে আছে। এমন কি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাঙ্গালি মুসলিম এম পি ও রয়েছেন যারা চেষ্টা করলে এর ফলপ্রসুতা পাওয়া যেতে পারে অতি সহজেই। ব্রিটেন বা আমেরিকার মতো যে কোন একটি দেশে এর স্বীকৃতি মেললে বিশ্বের অন্যান্য দেশ গুলোতেও এর ধারাবাহিক বিস্তৃতি লাভ করবে ক্রমান্বয়ে।
আয়ারল্যান্ডে বাংগালি কমিউনিটি এখনো খুব বেশি সুসংহত ও সুসংগঠিত না হলেও খুব বেশি যে পিছিয়ে তাও বলা যাবেনা। দুজন বাঙ্গালি কাউন্সিলর রয়েছেন। তন্মধ্যে একজন লিমরিক কাউন্টি কাউন্সিলের সদস্য। জনাব আজাদ তালুকদার। যিনি বাঙ্গালি কমিউনিটির সাথে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িত। ইচ্ছে করলে তিনি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দকে সাথে করে বিষয়টি নিয়ে সরকারের উঁচু পর্যায়ে দাবি তোলার চেষ্টা করতে পারেন। আজ দাবি তুললে কালই বাস্তবায়িত হয়ে যাবে তা ভাবার অবকাশ নেই। তবে বীজ রোপণ করে রাখতে দোষ কি?
এ দাবিটি যদি কোনোদিন বাস্তবায়িত হয় অর্থাৎ বছরে দু ঈদে দুদিন সরকারি ছুটি মেলে তবেই কেবল আয়ারল্যান্ড ও অন্যান্য দেশে বসবাসরত প্রবাসী মুসলিম ও তাদের নবপ্রজন্ম উত্তরসূরিরা পরিপূর্ণ উৎসাহ, উদ্দিপনা ও আনন্দের জোয়ারে ভেসে প্রকৃত ঈদের স্বাদ উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।
সৈয়দ আতিকুর রব : প্রধানমন্ত্রী লিও ভারদাকার আজ গণমাধ্যমেকে দেওয়া ব্রিফিং কালে তিনি উল্লেখ করেন যে দুই মিটারের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন সহসাই আসছে না আয়ারল্যান্ডে ।
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) এক সুপারিশে প্রয়োজনে সামাজিক দূরত্ব বাজয় রাখার ক্ষেত্রে দুই মিটার থেকে এক মিটারে কমিয়ে আনার পক্ষে কোবনেটের কিছু মন্ত্রীদের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই কথা বলেন।
প্রেস বিফ্রিং – এ স্বাস্হ্যমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেছেন, আয়ারল্যান্ডের মানুষের কাছে ডাক্তারদের পরামর্শ হচ্ছে লোকেরা নিজেকে নিরাপদ এবং সুস্থ রাখার জন্য তাদের অন্যদের থেকে দুই মিটার দূরে রাখা প্রয়োজন ।
প্রধান মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হোলোহান পরের সপ্তাহে জনস্বাস্হ্য বিষয়ক পরবর্তী ব্রিফিং দিবেন বলে সূত্র থেকে জানা য়ায় ।
সৈয়দ আতিকুর রব : এ্যাসাইলেমের আবেদনে ভূয়া নাম এবং জাতীয়তা ব্যাবহারের মাধ্যমে আইরিশ নাগরিকত্ব পাওয়া একজন আলবেনিয়ান নাগরিগকে ৩ বছরের জেল দেওয়া হয়েছে । খবরে প্রকাশ ,আলবেনিয়া ( ৪০ )ওই ব্যাক্তি কসোভোর একজন নাগরিকের নাম ব্যাবহার করে এ দেশে এ্যাসাইলেমের আবেদন করেছিলেন ।
গার্ডা প্রেস অফিসের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে .এই ধরণের অভিযোগে তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন । তাকে শুক্রবার লংফোর্ড সার্কিট আদালতের শুনানিতে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে প্রেস ব্রিফিংকালে ব্যাক্তির নাম বা ঠিকানা বলা হয়নি গার্ডার পক্ষ থেকে ।
আলবেনিয়ান এই ব্যাক্তি ২০০১ সালে কসোভোর একজন নাগরিকের নাম এবং জাতীয়তা ব্যবহার করে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করেন এবং উক্ত নামে আয়ারল্যান্ডে তিনি রাজনৈাতক আশ্রয়ের আবেদন করেন ।
উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এ দেশে থাকার অস্থায়ী অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বলে গার্ডা সূত্রে জানা যায়।
বিবৃতিতে বলা হয় , ২০১৪ সালে কসোভো নামধারী এই আলবেনিয়ান নাগরিকের আইরিশ নাগরিকত্বের আবেদন মন্জুর হয় এবং এর ধারাবাাহিকতায় তিনি ২০১৪ সালে আইরিশ পাসপোর্ট গ্রহণ করেন ।
উক্ত মামলার তদন্তে ছিল পাসপোর্ট অফিস, ইমিগ্রেশন সার্ভিস ডেলিভারি, আইরিশ নাগরিকত্ব বিভাগ এবং গার্ডা ইমিগ্রেশন ব্যুরো ।
লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত আইরিশ সেনারা আগামী জুনের শেষের দিকে দেশে ফিরবেন । তারা তাদের অবস্থান বর্ধিত করার কারণ ছিল কোভীড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব ।তারা ছয় মাসের বেশি সময় ধরে সার্ভিস থেকে দূরে থাকবে এবং তাদের ফিরে আসার পর ১৪ দিনের আইসলেশনে প্রবেশ করতে হবে, HSE নির্দেশিকা অনুসারে ।
প্রথম সেনারা ২১ জুন আয়ারল্যান্ডে আসার পর দ্বিতীয় ধাপে কর্মকর্তারা আট দিন পরে ফিরে আসে । তারা মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কারণে হলেও গত এপ্রিলে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মহামারির প্রতিক্রিয়ায় সব শান্তিরক্ষা সেনাদের বাড়ি ফেরা স্থগিত করেন ।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘ আমরা স্বীকার করছি, দেশে ফেরার তারিখের এই বিলম্ব আমাদের কর্মী ও তাঁদের পরিবারের কাছে হতাশাজনক যে ছ ‘ মাস ধরে তাঁদের প্রিয়জন থেকে দুরে থাকছে ।’
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা ভালো নেই। অনেকে চাকরি হারিয়ে বেকার আবার কেউ চাকরি থেকেও ঘরবন্দী জীবন যাপন করছেন। যারা ছোট ব্যবসা করেন তাদেরও কোন আয় কোন নেই। ফলে প্রতি মাসেই স্বজনদের কাছে অর্থ কম পাঠাতে হচ্ছে । প্রতিবছর ঈদের সময় রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠান বাংলাদেশি প্রবাসীরা। তবে দুর্যোগের কারণে রেকর্ড পরিমাণ না বাড়লেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।
চলতি মাসের ১৯ দিনে দেশে ১০৯ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১০৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয় । বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্থানীয় মুদ্রায় ১ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৯ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। গত বছরের মে মাসে টাকার অঙ্কে রেমিট্যান্স পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যদিও আগের বছরের কোন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছিল না। যার ফলে গত অর্থবছরে মে মাসে ঈদের আগে ১৭৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ছিল ।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে প্রবাসী থাকা বেশিরভাগ দেশে লকডাউন অবস্থা চলছে। এর ফলে প্রবাসী অনেকের আয় বন্ধ হয়ে গেছে, আবার অনেকে দেশেও ফিরে এসেছেন। এই দুর্যোগের মধ্যেও ঈদ উপলক্ষে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। আবার যারা দেশে চলে আসছেন, তারাও টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। কারণ, বহন করে বেশি টাকা আনা যায় না। এ জন্য আয় বেড়েছে। সামনের দিনে প্রবাসী আয় পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন তারা।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন, ঈদের আগে ধার করে হলেও প্রবাসীরা টাকা পাঠিয়ে থাকেন। আবার যারা চলে আসবেন, তারা সঞ্চয় ভেঙে ফেলছেন। এসব টাকায় দেশে আসছে। জুনে মাসে গিয়ে প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে। প্রবাসী আয় অনেক কমে যাবে।
ব্যাংকিং চ্যানেল বা বৈধ পথে প্রবাসী আয় আরও বাড়াতে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। সে অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ২ টাকা প্রণোদনা পাচ্ছেন। বাজেটে এ জন্য ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এতে দেশে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে গিয়েছিল।
জার্মানির বার্লিনে মুসলমানদের নামাজ আদায় করার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গির্জা ।প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হওয়ায় খুলে দেওয়া হয় গির্জা।বিবিসির বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
পরস্পর পরস্পরের থেকে ৫ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়ে জার্মানিতে গত ৪ মে থেকে সকল ধর্মীয় উপাসনালয় পুনরায় খুলে দেওয়ার অনুমতি দেয় দেশটির সরকার। আর এই দূরত্ব মেনে বার্লিনের নিউক্লান জেলার দার আসসালাম মসজিদে কেবলমাত্র জামাতের এক অংশ ধরানো সম্ভব ছিল। ফলে ক্রুজবার্গের মার্থা লুথেরান গির্জা রমজানের শেষ জুমার নামাজের আয়োজন করে সাহায্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ।
মসজিদটির ইমাম বলেন, ‘ এ সঙ্কটের মধ্যে এবং রমজানে এমন দুর্দান্ত সহায়তা সবার মাঝে আনন্দ নিয়ে এসেছে। এই মহামারি আমাদেরকে একটি সুন্দর সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। । মসজিদ কমিটির সদস্য সামির হামদৌন বলেন, ‘এটি এক অদ্ভূত অনুভূতি ছিল কারণ সেখানে বাদ্যযন্ত্র, বিভিন্ন ছবি ছিল, যা ইসলামিক প্রার্থনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
গির্জার যাজক মনিকা ম্যাথিয়াস বলেন, প্রার্থনার জন্য মুসলিমদের আহ্বানের প্রতি আমি অনুভূত হয়েছি। আমি সেই নামাজে অংশ নিয়েছি। সেখানে আমি জার্মান ভাষায় কথা বলেছি। এবং নামাজের সময় শুধু হ্যাঁ বলেছি। কারণ আমাদের প্রার্থনার অনুভূতি গুলোও একই। এছাড়া আমরা তাদের কাছ থেকে শিখতে চাই এবং একে অপরের সঙ্গে এমন মিশে যাওয়ার অনুভূতি অনেক সুন্দর
জুমাতুল বিদা কে বিদায় জানাতে হল ঘরে থেকেই, কোয়ারেন্টাইন তারাবীহ পড়েই গেল স্মরণকালের স্মরণীয় রমজান। এবারের ঈদও হবে ব্যাতিক্রমী। সুগন্ধি মেখে, ভাঁজ করা সফেদ পাঞ্জাবিটি গায়ে জড়িয়ে করা হবেনা ঈদগাহে গমন। করা হবেনা নামাজ শেষে কোলাকুলি, কুশল বিনিময়। এমন ঈদ অতীতে হয়েছে কিনা জানা নেই, ভবিষ্যতে হবে কিনা তারও কোন ধারণা নেই। তবে এবারের ঈদ যে সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
এবারের ঈদ অন্যবারের ঈদের মত খুশির প্লাবন নিয়ে আসবেনা নিশ্চিত। করোনার প্রকোপে ইতিমধ্যে অনেকে হারিয়েছে স্বজন, অনেকে লড়ছে মৃত্যুর সাথে, অনেকের সদ্য করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে, আর বাদবাকি সবাই আছে আতংকে; কখন না সংক্রমিত হয়ে পড়ে!
শুধুই কি স্বাস্থ ঝুঁকি? শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ঝুঁকিটাও প্রকট। ইতিমধ্যে বহু মানুষ হারিয়েছে চাকরি, বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনা কবে তারা কর্মস্থলে ফিরে যাবে, অনেককে তাড়া করে বেড়ায় চাকরি হারানোর ভয়, ব্যবসায়ীরা জানেনা তারা কতদিন ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারবে। করোনা থেকে মানুষ কবে মুক্তি পাবে তার নিশ্চয়তা তো না ই, এমনকি করোনা দূরীভূত হলেও সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় আসাও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
ভাবি অর্থনৈতিক মন্দার দিকে এগুচ্ছে বিশ্ব। করোনাভাইরাস মহামারী বৈশ্বিক সমস্যা। অতীতেও বহু অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব, কিন্তু সেগুলো ছিল কৃত্রিম, মানবসৃষ্ট। কিন্তু এবারের অর্থনৈতিক মন্দা হলে হবে প্রাকৃতিক কারণে, যার উপর মানুষের কোন হাত নেই। এবারের সংকট অন্যবারের তুলনায় অত্যন্ত প্রকট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দা সবার ব্যাক্তিগত জীবনেই প্রভাব ফেলে, যার ফলে অনিচ্ছিত ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে সবাই মানসিকভাবেও বিষণ্ণগ্রস্থ।
সর্বদিক বিবেচনা করলে বোঝা যায় আসলে সবাই এক ধরণের দুশ্চিন্তা ও হতাশার মধ্যে দিয়েই দিন কাটাচ্ছে। যার ফলে সামনে সবচেয়ে খুশির দিন ঈদ এর দিনও মানুষের মনে খুশির সঞ্চার তৈরী করতে পারতেছেনা।
তারপরেও এই ঈদ সবচেয়ে খুশির ঈদ হবে, যদি এই পবিত্র মাসের উছিলায়, মানুষের ইবাদতের উছিলায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানব জাতির শাপ মোচন করে থাকে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ধৈর্য্যের পরীক্ষায় উর্ত্তিন্ন হওয়ার খুশি এবং ইবাদতের প্রতিদান পাওয়ার আনন্দই হবে এবারের ঈদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
রাত কখনো একা রাজত্ব করেনা, মেঘ কখনো চিরস্থায়ী ভাবে সূর্যকে ঢেকে রাখতে পারেনা, অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে আলোর দেখা মিলবেই। আলো আসবেই।
Irish Bangla Times Irchive (বলিভিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী)
সৈয়দ আতিকুর রব: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অতিরিক্ত দাম দিয়ে ভেন্টিলেটর কেনার মাধ্যমে দুর্নীতির সন্দেহে বুধবার বলিভিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্সেলো নাভাজাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের এক দিনের মাথায় তাকে বরখাস্ত করেন দেশটির অন্তবর্তীকালিন প্রেসিডেন্ট জেনিন আনেজ। পুলিশ কর্নেল ইভান রোজাস বলেছেন, দূর্নীতির অভিযোগে লাপাজে মার্সেলো নাভাজাসকে গত বুধবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আনেজ। বর্তমানে তিনি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন । ওই ঘটনার সাথে সস্পৃক্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আর ও দুইজন কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছয় মাস আগে ক্ষমতায় বসার পর আনেজের জন্য এটি ছিল সবচেয়ে বড় দুর্নীতি কেলেঙ্কারির ঘঠনা। একই সঙ্গে করোনা মহামারি মোকাবিলায় তার সরকারের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পড়েছেন তিনি। দূর্নীতির ঘঠনা তখন ঘঠে যখন স্পেনের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৭৯টি ভেন্টিলেটর কিনে বলিভিয়া। মার্সালো নাভাজাসের তত্বাবধানে তখন প্রতিটি ভেন্টিলেটরের ক্রয় মূল্য ধরা হয় ২৭,৬৮৩ ডলার। ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে এই ভেন্টিলরের দাম দাঁড়ায় প্রায় ৫০ লাখ ডলারে।
কিন্তু পরে শুনা যায় যে, স্পেনীস ওই প্রতিষ্ঠানটি ১০,৩১২-১১,৯৪১ ডলারে ভেন্টিলেটর কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল নাভাজাসকে । এই লেনদেনের মধ্যে স্পেনের আরেকটি কোম্পানি মাধ্যম হিসেব সস্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে অনুসন্ধানে । সরকারের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান ইসাবেল ফার্নান্দেজ বলেছেন, “তদন্তের কাজে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ এড়াতে” স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অপসারনের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আনেজ ।
করোনাভাইরাসের স্বীকৃত কোনো ওষুধ এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত না হওয়ায়, গুরুতর অসুস্থ রোগীর শ্বাসকষ্ট প্রশমনে ভেন্টিলেটরই একমাত্র ভরসা। এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও এখন ভেন্টিলেটর সংকটে ভুগছে, বাংলাদেশেও আমদানি নির্ভর এ যন্ত্রের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে সহজে ও কম খরচে ভেন্টিলেটর প্রস্তুতের জন্য, ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেকে চেষ্টা করছেন এবং সফলতাও পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ জনকভাবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান “বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির” নিউমেটিক-কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে তৈরি হয়েছে সহজে ব্যবহারযোগ্য ‘নন-ইনভার্সিভ ভেন্টিলেটর’। প্রায় ৬ দশকের ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠান অর্জন করেছে দেশি বিদেশি অনেক স্বীকৃতি-সম্মাননা ও সহযোগিতা।
মেরিন একাডেমির প্রধান, কমান্ড্যান্ট ড. নৌ প্রকৌশলী সাজিদ হোসেনের পৃষ্ঠপোষকতায় ল্যাব-অফিসার মু. খালেদ সালাউদ্দিন একাডেমির কন্ট্রোল ল্যাবের নিউমেটিক কন্ট্রোল টেকনোলজি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এ ভেন্টিলেটর তৈরি করেন। খালেদ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, নিউমেটিক কন্ট্রোল টেকনোলজি ব্যবহার করে বাংলাদেশে এই প্রথম নন-ইনভার্সিভ ভেন্টিলেটর তৈরি করা সম্ভব হলো। এ প্রযুক্তির বড় সুবিধা হচ্ছে এর একটি কন্ট্রোল ইউনিট দিয়ে প্রায় ৫ থেকে ৮ টি অক্সিজেন প্রেশার ইউনিট চালানো এবং সম সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, পুরো যন্ত্রটির কন্ট্রোল অংশে সলেনয়েড কন্ট্রোল ভালব ম্যাগনেটিক সেন্সর ও টাইম-রিলে এবং প্রেশার অংশে নিউমেটিক পিস্টন-সিলিন্ডার, অক্সিজেন রিসারভার ও একটি ব্যাগ-ভালব-মাস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যাবহারের সময়ে, যন্ত্রটিতে অক্সিজেনের প্রেশার, ভলিউম ও রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসের রেট নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। একাডেমির আর্বান ডিসপেন্সারির মেডিক্যাল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম একাডেমি উদ্ভাবিত ভেন্টিলেটরটি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং যেকোনো শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাজনিত রোগীর ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে বলে মতামত দিয়েছেন।
দেশে করোনা রোগী ছাড়াও যেসব হাসপাতালে আইসিইউ/রেস্পিরেটরি সাপোর্ট নেই সেখানে কনভেনশনাল ভেন্টিলেটরের জায়গায় বিকল্প ভেন্টিলেটর হিসেবে কার্যকর হয়ে উঠতে পারে যন্ত্রটি।কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসেন জানান, আপাতত এই যন্ত্রটি একাডেমির আর্বান ডিসপেন্সারিতে স্থাপিত আইসোলেশন সেন্টারে স্থাপন করা হবে।
ফিনা ফেইল , ফিনা গেইল এবং গ্রিন পার্টির মধ্যে তাদের চলমান সরকার গঠনের আলোচনার কর্মসূচির অংশ হিসাবে আয়ারল্যান্ডে ১৭, ০০০ অনিবন্ধিত অভিবাসীদের আইনী মর্যাদা দেওয়ার পরিকল্পনার ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে ।
আইরিশ ইনডিপেন্ডেন্ট সূত্রে জানা গেছে আয়ারল্যান্ডে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের জন্য একটি খসরা নীাতমালা তৈরীর উদ্যেগ গ্রহণ করেছে উক্ত দলগুলি । খসড়া পরিকল্পনার আওতায় এ জাতীয় অভিবাসন নীতিমালার মানদণ্ড নির্ধারণ করা হবে নূতন সরকার গ্রহণের ১৮ মাসের মধ্যেই । কাজের পাশাপাশি ইইউ এবং সাধারণ অঞ্চল ভ্রমণ সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতার বিষয় উল্লেখ থাকবে উক্ত নীতিমালায় ।
যদিও এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত কোনও চুক্তি এখন পর্যন্ত সস্পাদিত হয়নি, তবে এই পরিকল্পনা প্রতিষ্টার জর্য সরকারের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করার ক্ষেত্রে এটিকে অভিবাসীদের অধিকার বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রচারকারীদের “বড় জয়” হিসেবে মনে করছে আলোচনার সাথে জড়িত একটি ঘনিষ্ট সূত্র ।
জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর জোরপূর্বক দখল ও অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের চুক্তি বাতিল করেছে ফিলিস্তিন। গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে এ যাবত করা সব চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়াফা’র বরাতে আলজাজিরা ও টিআরটি এ খবর জানিয়েছে।
বিবৃতিটিতে মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, তিনি এখন থেকে ইসরাইলের সঙ্গে পিএলও’র সই করা সব চুক্তি বাতিল করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা কোনো সহযোগিতা চুক্তি আর মেনে চলবেন না। বিবৃতিটিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা (পিএলও) এবং ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সরকারের সঙ্গে করা নিরাপত্তা সমঝোতাসহ সব ধরনের চুক্তি এবং এসব চুক্তিতে দেয়া সব প্রতিশ্রুতি বাতিল ঘোষণা করল।
মাহমুদ আব্বাসের দেওয়া বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আমরা মনে করি ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর দখলদারিত্বের সম্পূর্ণ দায় মার্কিন প্রশাসনের। ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থবিরোধী যেসব পদক্ষেপ ইসরাইল নিচ্ছে তার জন্য মূলত দায়ী মার্কিন প্রশাসন। উল্লেখ্য , পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যাকা ফিলিস্তিনি অঞ্চল যা ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল অবৈধভাবে দখল করে আছে। সাম্প্রতিক কালে দখলকৃত পশ্চিম তীরে কয়েক হাজার ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ইসরাইল।
দখলদারিত্বের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সাথে সব চুক্তি বাতিল করল ফিলিস্তিন
ভূয়া কিছু ওয়েবসাইট কর্তৃক এসএমএস বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে ব্যাক্তিগত তথ্য চুরির ব্যাপারে আইরিশ রাজস্ব বোর্ড আয়ারল্যান্ডের সকল করদাতাদের এ ব্যাপারে সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছে ।
রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে যে কিছু প্রতারক ওয়েবসাইট লিঙ্ক ব্যাবহার করে জনসাধারণের পিপিএস নাম্বার , নাম, ঠিকানা এবং জন্ম তারিখের মতো ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে বলে তাঁরা জেনতে পেরেছেন ।
রাজস্ব বোর্ড বলেছে তাঁরা কখনোই ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে করদাতাদের কাছে লিখিত কোন বার্তা পাঠান না, এই বিষয়টি করদাতাদের মনে রাখা উচিত ।
যদি কেউ এই জাতীয় বার্তা পেয়ে থাকেন তাহলে সেই লিঙ্কগুলি অবিলম্বে মুছে ফেলা সহ কোন তথ্য সরবারহ না করার নির্দেশ দিয়েছে রাজস্ব বোর্ড ।
“করদাতাদের মধ্যে থেকে এই ধরণের প্রতারণামূলক বার্তা যদি ইতিমধ্যে কেউ পেয়ে থাকেন এবং কেউ যদি ব্যক্তিগত তথ্য সরবরাহ করেছেন বলে মনে করে থাকেন তাহলে অবিলম্বে তাদের ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ড সংস্থার সাথে যোগাযোগ করতে রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ হতে বলা হয়েছে ।”
“অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য, রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শ হচ্ছে যে, করদাতাদের উচিত হবে তাদের মাই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডটি দ্রুততম পরিবর্তন করে ফেলা “।
ফিনাগেলকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন একটি সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করার আলোচনা হয়েছে দলীয় একটি মিটিং – এ ।
গ্রামীণ ও জনগোষ্ঠী উন্নয়ন মন্ত্রী মাইকেল রিং সোমবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বলেছেন যে দলের তৃর্ণমূলরা ফিনা ফেইলের সাথে প্রস্তাবিত সরকারের গঠনের জোট চায় না এবং সাধারণ জনগণের এতে আগ্রহ নেই।
তিনি আরও বলেছেন যে ফিনা গেইলকে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের জন্য তাদের প্রার্থীদের প্রস্তুত করা দরকার।
সূত্রমতে, মিস্টার রিং পেনশনের বয়স প্রসঙ্গের প্রতিশ্রুতি সহ ফিনা ফেইল এর তীব্র সমালোচনা করেছেন ।
দলের সিনেটর মাইকেল ডারসিও সরকার গঠনের আলোচনা সফল না হলে এ ক্ষেত্রে “প্ল্যান বি” রয়েছে কিনা তা নিয়ে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী লিও ভারদাকের কাছে ।
প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার বলেন যে পরিকল্পনা বি ছিল না এবং এই জাতীয় পরিকল্পনা থাকা অর্থহীন হবে ।
টানায়েস্ট সায়মন কোভনি সরকার গঠনের জন্য গাঠত কর্মসূচি তৈরীর ব্যাপারে আলোচনার আপডেট দিয়েছেন দলকে ।
বৈঠকে বলা হয়েছে যে আলোচনাটি চলমান রয়েছে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে এটির সমাপ্তি টানা সম্ভব হতে পারে ।
এর পরে, প্রতিটি দলের সদস্যপদ নিয়ে পরামর্শের জন্য দুই সপ্তাহ নির্ধারণ করা হবে, যার অর্থ এই পদক্ষেপগুলি সফল হতে হলে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত একটি সরকার গঠন করা যেতে পারে। আর যদি সফল না হয় তবে নতুন একটি নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়া যেতে পারে ।
সংসদীয় দলের বৈঠকে ফ্রন্টলাইন কর্মীদের বাচ্চাদের যত্ন প্রদানের জন্য একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা না থাকার সমালোচনা হয়েছে ।
সিনেটর টিম লোম্বার্ড শিশু মন্ত্রী ক্যাথরিন জাপোনকে এই বিষয়ে সংসদীয় দলের কাছে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্রগুলি জানিয়েছে যে মিঃ লোম্বার্ড এই বিষয়ে একটি মতামত প্রকাশ করেছেন যেখানে একটি বিস্তৃত পরিকল্পনার অভাবে কোভিড -১৯-এর বিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়াতে একটি বড় ব্যবধানের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে ।
তবে সর্বশেষ সরকার গঠনের আলোচনায় জড়িত দলীয় আলোচকদের বরাত দিয়ে জানা গেছে , সোমবার প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার , ফিনা ফেইল নেতা মিহল মার্টিন এবং গ্রীন পার্টির নেতা ইমন বায়ানের মধ্যে দুই ঘন্টার তৃপক্ষীয় বৈঠকের আলোচনাটি যথেষ্ট অর্থবহ হয়েছে এবং এই এটি চলবে।
মানবদেহে কোভিড-১৯ এর প্রথম টিকার পরীক্ষা সফল হয়েছে দাবি মার্কিন বায়োটেক প্রতিষ্ঠান ‘মডার্না’র। বলা হচ্ছে দেহের সংস্পর্শে আসা করোনাভাইরাস কে কোষে প্রবেশের আগেই মেরে ফেলতে সক্ষম এই ভ্যাকসিন। মাত্র ৮ স্বেচ্ছাসেবকের ছোট্ট একটি দলের ওপর প্রথম এই ট্রায়ালে আশানুরূপ ফল মেলায় এখন দ্বিতীয় তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
নভেল করোনা ভাইরাসের টিকা হিসেবে মানবদেহে mRNA 1273 এর প্রথম পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয় মার্চে। উচ্চ ডোজে জ্বর সহ একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও প্রাথমিক পরীক্ষায় স্বল্প ও মাঝারি ডোজের ভ্যাকসিন প্রয়োগে মিলেছে সাফল্য। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মডার্না জানিয়েছে – প্রথম ধাপে মানবদেহে ভ্যাকসিন টির নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় এবার পালা দ্বিতীয় ধাপের হিউম্যান ট্রায়ালের। প্রশাসনের সবুজসংকেত মেলায় প্রাইম শট এর পর এবার দেয়া হবে বুস্টার শট। সব ঠিক থাকলে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ তৃতীয় ধাপের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হবে জুলাই এ।
বান্দরবানের লামা উপজেলায় মুরগির অদ্ভুত আকৃতির ডিম পাড়া নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার লামা পৌরসভার চাম্পাতলী পাড়ার বাসিন্দা ও উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মহসিন রেজার ঘরে এ ঘটনা ঘটেছে।
মুরগির মালিক মহসিন রেজা জানান, ডিম পাড়া কালো রংয়ের মুরগিটির বয়স এক বছর। প্রথমদিকে মুরগিটি স্বাভাবিক আকৃতির ডিম পাড়তো। কিন্তু গত তিন দিন ধরে মুরগিটি আমের আকৃতির ডিম পাড়ছে। তবে ভেতরের কুসুম অন্য ডিমের মতো স্বাভাবিক। মুরগিটি এ পর্যন্ত আমের আকৃতির তিনটি ডিম পেড়েছে। এ দিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এক নজর ডিমগুলো দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে স্থানীয়রা।
তিনি আরও বলেন, আম আকৃতির ডিম পাড়ার বিষয়টি প্রাণিসম্পদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। অদ্ভুত আকৃতির ডিমগুলো পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে জেলার লামা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ ইসহাক আলী বলেন, এ রকম ঘটনা খুবই কম। তবে মুরগির খাবারে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কম হলে বা ডিম পাড়ার আগ মুহুর্তে কোনো সমস্যা হলে এমন ডিম পাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া অন্য সমস্যার কারণেও এ রকম হতে পারে।
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে, ইউসুফ মনি তত্ত্বাবধানে আয়ারল্যান্ডে প্রথম বাংলাদেশী অনলাইনে বাঙলা রেডিও স্টেশন চালু হতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই। রেডিও স্টেশনটির নাম আইরিশ বাংলা এফএম। এটি প্রথম দিকে ওয়েবসাইট ও এপ ভিত্তিক হবে। এর ওয়েব সাইটের ডেভেলপমেন্টের কার্যক্রম চলছে। আপনারা ২৪/৭ এই স্টেশন থেকে লাইভ সম্প্রচার শুনতে পাবেন। এই রেডিও স্ট্রেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশি কৃষ্টিকালচার আয়ারল্যান্ডের প্রবাসীদের মাঝে তুলে ধরতে পারবেন বলে তারা আশাবাদী।
অফিশিয়াল ওপেনিং এর সময় সূচী শীঘ্রই জানিয়ে দেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। সকলকে সাথে থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন। ওয়েব সাইটের ঠিকানা www.irishbanglafm.com
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই জ্বর, শুকনো কাশি, গলাব্যথার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বরের সঙ্গে ডায়রিয়াও একট উপসর্গ হতে পারে বলে মনে করছেন শিশু ও করোনা বিশেষজ্ঞরা।
সুইজারল্যান্ডের শিশুস্বাস্থ্যবিষয়ক জার্নাল ফ্রন্টিয়ার্সইনপেডিয়াট্রিকস এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ হয়েছে । নিবন্ধটিতে বলা হয়, করোনার সংক্রমণে শিশুদের মধ্যে জ্বরের সঙ্গে পেটের সমস্যা, যেমন ডায়রিয়ার মতো উপসর্গও দেখা গেছে। যার কারণ হিসেবে বলা হয় ,করোনাভাইরাস অন্ত্রেও পৌঁছে যাচ্ছে, যদিও এটি শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায় বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
গবেষক দলের একজন চিকিৎসক ওয়েনবিন লি যিনি চীনের উহানের তংজি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন । তিনি জানান , বেশির ভাগ শিশুর ক্ষেত্রেই করোনার সংক্রমণে মৃদু উপসর্গ দেখা যায়। যেসকল শিশুর আগে থেকেই শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেই কেবল এই সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করতে দেখা গেছে। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে — শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের কোনো উপসর্গই দেখা যায়নি।
লন্ডন থেকে আগামী জুন মাস থেকে বিদায় নিতে পারে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গবেষণায় বলছে, দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ এ নেমে এসেছে । তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদলু এর বরাত দিয়ে জানানো হয় , পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল বায়োস্টাটিক্স ইউনিটের নতুন মডেলিং অনুয়ায়ী এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ব্রিটেনের সাবেক পরিবেশ সচিব থেরেসা ভিলিয়ার্স টেলিগ্রাফকে বলেছেন, এই সংখ্যাটি আমাদের জন্য ভালো খবর। সরকার দেখাচ্ছে লকডাউন ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে। তবে আমি মনে করি, তারা লন্ডনে লকডাউন পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক করতে এই খবর দেখাচ্ছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমাদের বিকল্প পথ খুঁজে বের করা অতি গুরুত্বপূর্ণ; ব্রিটেনের জন্য লন্ডন অর্থনীতির পাওয়ার হাউস।
প্রতিবদেনটিতে বলা হয়, এই নতুন মডেলিংটিতে ইংল্যান্ডের (R) ‘আর এর মান’ বের করার চেষ্টা করা হয়েছিল… যেখানে দেখানো হচ্ছে, সংক্রামিত ব্যক্তি থেকে অন্যজন সংক্রমিত হয়ে যাওয়া। (R) ‘আর’ এর মান বলতে বোঝানো হয়েছে, প্রতি সংক্রমিত ব্যক্তি অন্য একজনকে সংক্রমিত করে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লকডাউন পরিস্থিতি আরও শিথিলের জন্য ‘আর’ মান ১ এর নিচে নামাতে হবে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নতুন তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ইংল্যান্ডের ‘আর’ এর মান গড়ে ০.৭৫। উত্তর-পশ্চিমের দিকে এর হার বেশি ছিল ০.৮ এবং সেখানে প্রতিদিন নতুন চার হাজার জন সংক্রামিত হতে দেখা যাচ্ছে। সর্বনিম্ন হারটি লন্ডনে–যার মান ০.৪। এটার অর্থ প্রতি ১০ লন্ডনি যারা এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে অন্য ৪ জনকে সংক্রমিত করেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের লকডাউন শিথিলতার অংশ হিসেবে মসজিদগুলো খুলে দিতে ইতালির নেতৃত্বস্থানীয় মুসলিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে একটি যুগান্তকারী চুক্তি সই করেছে ইতালি সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পালাজ্জো চিগিতে একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চুক্তিটিতে সই হয়েছে। আজ ১৮ মে থেকে ক্যাথলিক গির্জাসহ সব ধরনের ধর্মীয় স্থান খুলে দেয়া হচ্ছে।কিন্তু সেক্ষেত্রে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যগত ও সামাজিক দূরত্বের বিধি নিষেধ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতে হবে। করোনা মহামারী থেকে বাঁচতে গত ৯ মার্চ লকডাউন শুরু হওয়ার পর ইতালিতে মসজিদ, ধর্মীয় কক্ষ ও ইসলামিক কেন্দ্রগুলো এতদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল।
দেশটিতে মুসলিম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের এই প্রথম কোনো চুক্তি সই হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চুক্তিটিতে সই করেন প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ্পি কন্টি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুসিয়ানা লামোরজেস ও চারটি ইসলামি সংস্থার প্রতিনিধিরা। সংস্থা গুলো — ইতালীয় ইসলামিক ধর্মীয় কমিউনিটি, ইতালীয় ইসলামি সংগঠন, দ্য গ্রেট মস্ক অব রোম ও ইতালি ইসলামিক কনফেডারেশন।
এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন ইতালীয় ইসলামিক ধর্মীয় কমিউনিটির প্রধান ইয়াহইয়া পাল্লাভিসিনি। তিনি বলেন, এই চুক্তি আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার একটি মডেল দাঁড় করিয়েছে , এছাড়াও ইতালিতে মুসলিমদের ইবাদতের স্থানের সমান মর্যাদা ও সুযোগও নিশ্চিত হয়েছে।বাঙ্গালি , সেনেগালই ও পাকিস্তানি মুসলমান সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। নিরাপদে মসজিদ খুলে দিতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের আলোচনার পর চুক্তিটি সই হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ শক্তি সঞ্চয় করে এগিয়ে আসছে ল্যান্ড এর দিকে । আজ রোববার দুপুরে এটি দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছিল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এটি সাগরের উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। প্রতি ঘন্টায় আমফানের গতি গড়ে ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার। আগামী ২০ মে শেষ রাতে বা ২১ মে সকালে ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, সাগরে অবস্থানকালে ঘূর্ণিঝড় গতিপথ পরিবর্তন করে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে এটি বেশ দূরে অবস্থিত। এ কারণে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে উড়িষ্যা থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত পুরো উপকূলই এর লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, ঘূর্ণিঝড় আমফান যখন আঘাত হানবে তা অতি প্রবল হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বের অভিজ্ঞতা বলে, এই ধরণের ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যথেষ্ট হয়। ঘরবাড়ি, গাছপালার ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার মতো অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে।
তবে বাংলাদেশের কোন কোন জেলার ওপর দিয়ে এই ঘূর্ণিঝড়টি বয়ে যেতে পারে সে বিষয়ে এখনি নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানান আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক। এইদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ওয়াজেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্য থেকে ধারণা করা যাচ্ছে যে, ঘূর্ণিঝড়টি হয়তো দেশের উত্তর-পশ্চিম দিক অর্থাৎ সাতক্ষীরা ও খুলনা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ।
তিনি আরও বলেন, আঘাত হানার সময় যদি ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটারের বেশি থাকলে তাকে বড় ধরণের ঘূর্ণিঝড় বিবেচনা করা হয়। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় লোকজনকে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে বলা হয়— ঘূর্ণিঝড়ে দুই ধরণের ক্ষতি হয়। একটা হচ্ছে প্রাণহানি , আরেকটা হচ্ছে ঘরবাড়ি ও গবাদিপশুর ক্ষতি।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংকটের কারণে স্পেনে মেয়াদ বেড়েছে রেসিডেন্ট কার্ডসহ বিদেশিদের সব ধরনের ডকুমেন্টের। মানবিক দিক বিবেচনা করে এ–সংক্রান্ত স্পেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রীয় অফিশিয়াল বুলেটিন (BOE)এর মাধ্যমে এই সংবাদ নিশ্চিত করা হয়েছে। সংকটের এ সময়ে যাদের কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে অথবা শেষের দিকে , তারা এ সুবিধার আওতায় পড়বেন।
স্পেনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম (BOE) জানায়, স্পেনে বসবাসের অনুমতি কার্ডের (আড়াইগো) মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ছয় মাস। এ ছাড়া যারা স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয় এর আবেদন করেছিলেন, তাদের সত্যায়নপত্রের (রেড কার্ড) মেয়াদও বেড়েছে। যাদের রেড কার্ডের মেয়াদ আগামী ১৫ জুনের মধ্যে শেষ হবে, তাদের রেড কার্ডের মেয়াদ জরুরি অবস্থা শেষ হওয়া পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে।
ডকুমেন্টের মেয়াদ বাড়ার পাশাপাশি আশ্রয় আবেদনকারীদের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ও বাড়ানো হয়েছে। আবেদনকারী যাদের আর্থিক ভাতা গত মার্চে শেষ হওয়ার কথা ,প্রাণঘাতী করোনা মহামারি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত এ নিয়ম বলবৎ থাকবে। একইভাবে শরণার্থীদের সুবিধা বেড়েছে জরুরি অবস্থা শেষ হওয়া পর্যন্ত। এর আগে স্পেনের সব ধরনের স্বাস্থ্যবিমার মেয়াদও বাড়ানো হয়।
 স্পেনের বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তি। ছবি: বিজ্ঞপ্তি এ ছাড়া যেসব প্রবাসী বাংলাদেশে অবস্থানরত, তাঁরা স্পেনে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে (third additional provision–এ বর্ণিত suspesnsion of administrative)–এর ডেডলাইনের রেফারেন্স প্রদান করার জন্য স্পেনের বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
ডকুমেন্টের মেয়াদ বাড়ার পাশাপাশি আশ্রয় আবেদনকারীদের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ও বাড়ানো হয়েছে। আবেদনকারী যাদের আর্থিক ভাতা গত মার্চে শেষ হওয়ার কথা ,প্রাণঘাতী করোনা মহামারি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত এ নিয়ম বলবৎ থাকবে। একইভাবে শরণার্থীদের সুবিধা বেড়েছে জরুরি অবস্থা শেষ হওয়া পর্যন্ত। এর আগে স্পেনের সব ধরনের স্বাস্থ্যবিমার মেয়াদও বাড়ানো হয়।
এ ছাড়া যেসব প্রবাসী বাংলাদেশে অবস্থানরত, তাঁরা স্পেনে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে (third additional provision–এ বর্ণিত suspesnsion of administrative)–এর ডেডলাইনের রেফারেন্স প্রদান করার জন্য স্পেনের বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করতে দেশে দেশে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে । এমন পরিস্হিতিতে কুকুর দ্বারা অভিনয় উপায়ে করোনা রোগী চিহিৃত করতে গবেষণার উদ্যেগ গ্রহণ করেছে ব্রিটেন সরকার ।
লন্ডনের হাসপাতালগুলি থেকে কভিড -১৯ রোগীর গন্ধের নমুনা নিয়ে সংক্রামিত নয় এমন লোকদের থেকে তাদের গন্ধ আলাদা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ল্যাব্রাডার ও স্প্যানীয়লন্স প্রজাতির ছয়টি কুকুরকে । কুকুরের ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগিয়ে যদি প্রাথমিক পর্যায়েই রোগটিকে শনাক্ত করা যায়, সেক্ষেত্রে করেনা রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন বৃটিশ গবেষকরা ।
কুকুর মানুষের সব চেয়ে বিস্বস্ত বন্ধু । প্রাণী জগতে কুকুরের মত প্রভূভক্ত প্রাণী সম্ভবত পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর নেই। কুকুরের রফাদারির কাাহিনী বিশ্ব জুড়ে প্রশংসিত । গন্ধ শুঁকে অনেক অসাধ্য সাধনের নজির রখেছে কুকুর । কুকুরের প্রখর ঘ্রাণশক্তি কাজে লাাগয়ে দূধর্ষ অপরাধী ধরার গল্প নাটক বা সিনেমতে প্রায় দেখা যায়। মোঠামোঠি কুকুরের ঘ্রাণশক্তি কারও অজানা নয় । সেই শক্তির উপর আস্হা রেখে কুকুর দিয়ে করোনা টেস্ট গবেষণা শুরুর জন্য ৫ লাখ তহবিল বরাদ্দ করেছে বৃটিশ সরকার ।গবেষণাটি যৌথভাবে লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন (এলএসএইচটিএম), ডারহাম ইউনিভার্সিটি এবং দাতব্য মেডিকেল ডিটেকশন কুকুর দ্বারা পরিচালিত হবে বলে বৃটিশ গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে । গবেষকরা মনে করছেন এ জন্য তাদের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে । মেডিকেল ডিটেকশন কুকুরের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ডঃ ক্লেয়ার বলেছেন ,আমরা অত্যন্ত গর্বিত যে কুকুরের নাক আবারও অনেকের জীবন বাঁচাতে পারে। ” যদি পরীক্ষাগুলি সফল হয় তবে প্রতিটি কুকুর ঘন্টায় ২৫০ জনকে পরীক্ষা করতে পারবে এবং এয়ারপোর্টের মতো জায়গায় এই ধরণের পরীক্ষা ব্যাবহার সম্ভব “।
গবেষণার কাজে এটি প্রথম নয় , কুকুর এর আগেও ম্যালেরিয়া ,ক্যান্সার ,পারকিনসন্স ডিজিজে আক্রান্ত রোগীদের সনাক্ত করার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে । মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের রোগ শনাক্তের কাজে প্রতিনিয়ত সফল হচ্ছে কুকুর । ১৯৮০ সালে কুকুরের ঘ্রাণ শক্তি ব্যাবহার করে ক্যান্সার শনাক্তে বেশ সফল হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মানুষের রক্ত,লালা ,মূত্র কিংবা নিংস্বাসের সঙ্গে নানা ধরণের গন্ধ থাকে যা ঘ্রাণের মাধ্যমে আলাদা বা শনাক্ত করা সম্ভব । করোনায় আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক বাছাঁইপর্বে আলাদা করনের জন্য এই প্রক্রিয়া অনুসরন করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন গবেষকরা । একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের সাধারণত ৬০ লাখ ধরণের আলাদা ঘ্রাণ পাবার ক্ষমতা রয়েছে পক্ষান্তরে কুকুর শনাক্ত করতে পারে ৩ কোটি ধরণের ঘ্রাণ । আমেরিকান সোসাইটি ফর বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি’র অধ্যাপক হিথার জ্যানকুয়েরা মতে, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি মানুষের তুলনায় ১০ হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী।
তাই কুকুরের স্বভাবজাত বৈশিষ্টকে কাজে লাগিয়ে যদি করোনা রোগী শনাক্ত করনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায় তাহলে সেটা হবে চিাকৎসা বিজ্ঞানের নতুন আরেকটা ইতিহাস । বৃটিশ গবেষকদের কুকুর নিয়ে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা সফল হউক । মানবতার কল্যাণ নিবেদিত চিকিৎসা বিজ্ঞানের মহা যাত্রা এই ভাবে অব্যাহত থাকুক । সবাই নিরাপদ থাকুন ।
দীর্ঘ এক মাস পর গতকাল আয়ারল্যান্ড প্রথম ১০০ এর নিচে করোনাভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা রেকর্ড করতে সক্ষম হয়েছে। আয়ারল্যান্ডে প্রথম COVID-19 রোগী ধরা পড়ে ২৯ শে ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এর আগে থেকেই আয়ারল্যান্ড পূর্ব প্রস্তুতিমূলক ন্যাশনাল হেলথ ইমারজেন্সি টিম ঘটন করে রাখে এবং করোনা মোকাবেলার রোড ম্যাপ তৈরি করে রাখে, যখন বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করতেছিল। করোনা সংক্রমিতের পরিমাণ ৩০০ এর কোটায় পড়ামাত্রই প্রথম দুই সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে এবং সংখ্যা যখন ৫০০ এর কাছাকাছি তখন লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়া হয়। করোনা সংক্রমণের সংখ্যা পিক এ উঠে ১৫ ই এপ্রিল, এ দিনে সর্বোচ্ছ রেকর্ড হয় ১০৬৮ জন। এর পর থেকে ক্রমান্বয়ে সংখ্যা কমতে থাকে, তারপরেও মে মাস এর ৫ তারিখ থেকে আরও দুই সপ্তাহের জন্য লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়, যে মুহূর্তে ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা ৩০০ এর নিচে নেমে আসে।
আয়ারল্যান্ডের এই সুনিদৃস্ট পরিকল্পনা এবং সময়োপযোগী দক্ষ সিদ্ধান্তের কারণে এখন পর্যন্ত সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যেখানে ইউরূপের অনেক দেশই চলে গিয়েছিল নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। দীর্ঘ পরিকল্পনার ফলাফল হিসেবে আজ তারা ১০০ এর নিচে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করতে পেরেছে।
আগামীকাল ১৮ ই মে থেকে ৫ ধাপে ক্রমান্বয়ে লকডাউন শিথিল করা হবে, কিন্তু তা নির্ভর করে পরবর্তী পরবর্তী অবস্থার উপর। প্রয়োজনবোধে লকডাউন আবার কঠোর করা হতে পারে, সরকার থেকে এমনই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। কিন্তু সর্বাবস্থায়ই সামাজিক দূরত্ব ও নিরাপত্তা বজায় রেখে এবং সরকার ও স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনাবলী মেনে চলার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বলা বাহুল্য, যেহেতু এই মুহূর্তে COVID-19 সম্পূর্ণ নিধন সম্ভব নয়, সেহেতু নিয়ন্ত্রণই একমাত্র পন্থা। দেশের অর্থনৈতিক ও মানুষের জীবনযাত্রার কথা চিন্তা করে লকডাউন শিথিল না করলেই নয়।
করনাকালে বহু মানুষ তাদের চাকুরী হারিয়েছে এবং বহু ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বন্ধ। কিন্তু সরকার সবাইকেই পর্যাপ্ত সহায়তা করার ফলে মানুষের জীবনযাত্রা মোটামুটি স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হয়েছে। যার কারণে মানুষের মানসিক ও সামাজিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল মোটামুটি রয়েছে। তা না হলে হয়ত পরিস্থিতি অন্যরকমও হতে পারত।
যদিও দীর্ঘ লকডাউন একটা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর বিরূপ প্রভাব পেলতে পারে। কিন্তু সবার আগে যে মানুষের জীবন তা উপলব্দির কারণেই হয়ত আজ আয়ারল্যান্ডের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। COVID-19 এর এ সমস্যা বিশ্বব্যাপী, এর বিস্তারে কারো হাত নেই। কিন্তু বিস্তার এর পরিমাণ যত কম রাখা যায় সফলতা ততখানিই। সে হিসেবে আয়ারল্যান্ডকে মোটামুটি সফলই বলা চলে।
সরকার এর সুপরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করতে জনগণ এর অবদান, সব মিলিয়ে আজ আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। আশা করি সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা একদিন এই যুদ্ধে জয়ী হতে সহায়তা করবে।
যার নাম “নাফিস ইয়াকুব”, তিনি একজন থাই মুসলিম যুবক । যিনি কাজের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন । একটি জায়গায় কিছু দিন গোপনে কাজ করার পর গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে সেই জায়গা ত্যাগ করে তিনি চলে যান অন্য স্হানে । একদিন নিজের লুকানো জায়গা থেকে খাবার কেনার জন্য রাস্তায় বের হলে পথে তার সাথে পরিচয় হয় মালোয়েশিয়ার এক পুলিশ কর্মকর্তার । পরিচয় সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নাফিস ইয়াকুবকে’ নিয়ে যান থানা হাজতে । থানা হেফাজতে থাকা অবস্হায় তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে তিনি একজন থাই নাগরিক । বেকারত্বের কারণে অবৈধভাবে তিনি মালয়েশিয়ায় এসেছেন কাজের সন্ধানে । অবৈধ ভাবে মালোয়েশিয়া প্রবেশের কারণে পুনরায় থাইল্যান্ডে ফেরত পাঠানোর জন্য তাকে থানা হেফাজত থেকে কারাগারে প্রেরন করা হয় । ওই সময় জেলখানার ভেতর খুব গরম ছিল এবং কারাগারের নির্জন প্রকোষ্টের ছাদে কোন ফ্যান ছিলনা । গরমে অতিষ্ট হয়ে নাফিস তার শার্টটি খুলে নিজেকে বাতাস করতে থাকেন ।
কারা অন্তরীনের প্রথম দিনে তাহাকে খাবারের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল জেলের ভেতর। পেটে ক্ষুদা নিয়ে নাফিস যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছিলেন । তবে নাফিস ইয়াকুবের খুব একটি সন্দুর কন্ঠ ছিল । খাবারের জন্য অপেক্ষার ফাঁকে তিনি খাবারের রুমে কোরআন তিলাওয়াত শুরু করেন । তার কন্ঠটি এত সুমধুর ছিল যে কর্তব্যরত একজন পুলিশ সদস্য কোরআন তিলাওয়াতে মুগ্ধ হয়ে সেটি ভিডিও রেকর্ড করেন এবং ভিডিওটি তিনি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন । নাফিসের সূমধুর কন্ঠে হৃদয়স্পর্শী কোরআন তিলাওয়াতের ভিডিওটি প্রচুর পরিমাণ ভাইরাল হয় এবং রাতারাতি তিনি মালোয়েশিয়াতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন । অবশেষে জেল কর্তৃপক্ষের সুপারিশে উর্দ্বধন কর্তৃপক্ষ তাহাকে মুক্তি দেন । জেল থেকে ছাড়া পাবার পর নাফিস ইয়াকুব মালোয়েশিয়ার একটি মসজিদের ইমাম নিযুক্ত হন । সুমধুর তিলাওয়াতের জন্য মিষ্ট ভাষি নাফিস বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে বেশ কয়েকটি পুরষ্কার জিতে নেন । নাফিস শুধূ মসজিদের ইমামের ভীতর নিজেকে অাবদ্ধ রাখেন নি । ছদকায়ে জারিয়ার কাজে অাত্বনিয়োগ করেন নিজেকে । বার্মার নির্যাতিত রেহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের পাঁশে দাঁড়ান তিনি । পুরস্কার থেকে অর্জিত অর্থ সহ তার বেতনের অর্থ থেকে প্রচুর অনুদান বিভিন্ন সময়ে রেহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য বিলিয়ে দেন নাফিস ইয়াবুব । ভিডিও ভাইরালে জনপ্রিয় হয়ে উঠা সেই নাফিস ইয়াকুব আজ মালোয়েশিয়ার অন্যতম একজন বিখ্যাত ইমাম ।
কোভিড -১৯-এর বিপক্ষে লড়াইয়ের পরিকল্পনা হতে চলেছে বলে তিশাখ লিও ভারাদকার বলেছেন, সোমবার হতে আয়ারল্যান্ড ধীরে ধীরে আবার খুলতে শুরু করতে পারে।
তিনি বলেছিলেন যে পুনরায় খোলার রোডম্যাপের ‘প্রথম ধাপ’ এর আন্দোলনটি “আশার কারণ তবে এটি উদযাপনের কারণ নয়”।
“আমাদের এখনও অনেক দীর্ঘ পথ যেতে হবে। রাস্তায় বাধা সৃষ্টি হবে এবং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, “তিনি বলেছিলেন।
সরকারের এই নতুন বার্তাটি এই পাঁচটি কারণে বাদে বাড়িতে থাকতে হবে:
বাড়িতে থাকুন, নিম্নক্ত কারণ বাদে :
* যদি আপনার কর্মক্ষেত্র খোলা থাকে এবং আপনি বাড়ি থেকে কাজ করতে না পারেন তবে কাজে যেতে “
* আপনার প্রয়োজনীয় আইটেমগুলি কেনাকাটা করার জন্য;
* বাড়ির 5 কিলোমিটারের মধ্যে অনুশীলন করা;
* চিকিত্সার কারণে বা অন্যের যত্ন নেওয়া;
* সর্বচ্চ চারজনের সাথে বা পরিবারের সাথে দেখা করতে।
ব্যস্ত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করার সময় বা খুচরা আউটলেটগুলির মতো অভ্যন্তরীণ অভ্যন্তরীণ সরকারী অঞ্চলগুলিতে ব্যবহার করার সময় লোকেরা এখন ফেস কভারিং ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
মিঃ ভারাদকর বলেছিলেন কোভিড ১৯ “একটি নরক যা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে” তবে আয়ারল্যান্ডে এটি “পিছন দিকে হটছে “।
“তবে এটি পরাজিত হয়নি। আমাদের অবশ্যই প্রতিটি স্সম্ভাবনা নিভিয়ে ফেলা উচিত।
নতুন কোভিড -১৯ বিধিগুলি—
সামাজিক সমাবেশ
কমপক্ষে ২ মিটার দূরে থাকার সময় বাইরে চারজনের মধ্যে যারা একসাথে থাকেন না তারা বাইরে বাইরে দেখা করতে পারেন। সাক্ষাতে প্রত্যেককে অবশ্যই তাদের বাড়ির 5 কিমি এর মধ্যে থাকতে হবে।
কাজ
নির্মাতারা এবং উদ্যানবিদরা সহ বহিরঙ্গন কর্মীরা সামাজিক দূরত্বের বিধি প্রয়োগ করা হলে ফিরে আসতে পারেন , স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মতো প্রয়োজনীয় কর্মীদের বাদ দিয়ে, বাড়ি থেকে চালিয়ে যেতে হবে।
দোকান
হার্ডওয়্যার স্টোর, উদ্যান কেন্দ্র, কৃষকদের বাজার এবং অন্যান্য দোকান যা প্রাথমিকভাবে বাইরে থাকে তারা আবার ব্যবসায় ফিরে পেতে পারে। এছাড়াও পুনরায় খোলা হ’ল অপটিশিয়ান, গ্যারেজ, সাইকেলের দোকান এবং স্টোর যা অফিস পণ্য, নির্বাচনী পণ্য, আইটি এবং ফোন বিক্রি করে।
খেলাধুলা এবং অনুশীলন
গল্ফ এবং টেনিস দুটি প্রধান ক্রীড়া যা অনুমোদিত। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যেতে পারে তবে দলগত খেলা নিষিদ্ধ করা হল । খেলনা পিচগুলি খোলার অনুমতি রয়েছে। লোকেরা চারজনের বেশি লোকের গ্রুপে অনুশীলন করতে পারে যেখানে পরস্পরের যোগাযোগ নেই।
আউটডোর স্পেস
সৈকত, পার্ক এবং মাউন্টেন ওয়াকের গাড়ি পার্কগুলি আবার খুলতে পারে যেখানে লোকেরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতে পারে এবং যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায়।
শিক্ষক
শিক্ষক যদি এটি দূরবর্তী শিক্ষার বিতরণে সহায়তা করে তবে স্কুল এবং কলেজের বিল্ডিংগুলিতে অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হবেন।
ফিউনারেল বা শেষকৃত্য
জানাজায় অথবা অন্য ফিউনেরালে উপস্থিতি এখনও 10 জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
ভ্রমণ
5 কিলোমিটার ভ্রমণের সীমাটি রয়েছে। বাসায় থাকুন , আপনার এখনও যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকা উচিত।
৭০ বছরের বেশি বয়সী বা দুর্বল বিবেচিতদের তাদের প্রতিদিনের অনুশীলন ব্যতীত বাড়িতে থাকতে হবে।
– ঘটনা একঃ কয়দিন আগের ঘটনা, একমাস ও গড়ায় নি। আমার ছোট মামার একটা ছোট স্ট্রোক হয়েছিল। এমারজেন্সি তে কল দেয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বুঝতে পারে অপারেশান লাগবে। কালবিলম্ব না করে অপারেশান করে উনার হার্টে তিনটি রিং স্থানান্তরিত করা হয়। স্ট্রোক হবার দিনই তড়িৎ অপারেশন হয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে মামা ঘরে ফিরে আসে। মামার এই চিকিৎসার জন্য কাউকেই দৌড়াদৌড়ি করতে হয় নাই, টাকা পয়সাও লাগে নাই।
– ঘটনা দুইঃ তখন লন্ডনে ছিলাম। ছেলেটি কাছের সম্পর্কের কেউ ছিলনা। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় যদি বলি, সে আমার চেনাশোনা ছিল কিন্তু জানাশোনা ছিল না। একদিন কল দিল দেখা করবে বলে। বাসার নিকটবর্তী হবার পর দেখলাম সে বাহিরে দাঁড়িয়ে, দেখে বোঝা গেল সে ভালোই অসুস্থ। আমাকে বলল, ভাই একটা ট্যাক্সি ডাকেন। ট্যাক্সি তে করে একটা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ট্যাক্সি থেকে নেমে সে হাসপাতালে ঢোকার আগ মুহূর্তেই রাস্তায়ই শুয়ে পড়ল। হাসপাতালের কর্তব্যরত এক সিকিউরিটির দৃষ্টিগোছর হলে সে ভেতরে দৌড়ে যায় এবং একটু পরেই দেখি একদল ডাক্তার, নার্স, অক্সিজেনের সিলিন্ডার, ট্রলি, চিকিৎসার সরঞ্জামাদিসমেত হাজির। তারপর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অক্সিজেন দিয়ে এমারজেন্সি নিয়ে যাওয়া হয়। আমাকে কিছুই করতে ও বলতেও হয়নি, যা করার তারাই করেছে। তার জ্ঞান ফেরার পর নাম ঠিকানা নিয়ে ভর্তি করিয়ে নেয়। সে কি বৈধ না অবৈধ, টাকা আছে কি নাই কিছুই জিজ্ঞেস করা হয় নি। তাকে সুস্থ করে তোলানোটাই তাদের কাছে মুখ্য বিষয় ছিল। আমি তার পরিচিতদের তার অবস্থান জানিয়ে চলে আসি, কারণ আমি জানি হাসপাতালে সে সম্পূর্ণ নিরাপদ। হাসপাতালে তার চিকিৎসার বিন্দুমাত্র কমতি হবে না।
– ঘটনা তিনঃ ইংল্যান্ডে ফ্রি চিকিৎসার জন্য রেজিস্ট্রেশন থাকা লাগে। যারা ওইখানে থাকে সবারই রেজিস্টেশন থাকে। আমার বউ দুই মাস ওইখানে ছিল। এর মাঝে সে একবার অসুস্থ হয়ে পড়ে, কিন্তু তার রেজিস্ট্রেশন ছিল না। তারপরেও ডাক্তারের কাছে যাবার পর ফিরিয়ে দেয় নি। ফ্রি পরীক্ষা নিরীক্ষার পর প্রেস্ক্রিপশান দিয়ে দেয়। কয় দিনের মাথায় বউ আমার সুস্থ।
– আমি নিজেও ফ্রি চিকিৎসা সুবিধা পেয়েছি। আর বয়স্কদের জন্য তো সবরকম চিকিৎসাই বিনামূল্যে। আমি প্রায়ই নানার নটীংহামের বাসায় যেতাম। দেখতাম প্রতি মাসের ঔষধ নানাকে পোস্ট করা হত একধরনের বিশেষ ধরণের প্যাকেটে। যেখানে প্রতিদিনের, প্রতিবেলার ঔষধ আলাদা করে করে দেয়া থাকত যাতে উনার খেতে অসুবিধা না হয়। আর নিয়মিত পরীক্ষা নিরীক্ষা তো থাকেই। নানা এখন বেশীরভাগ সময় দেশে কাটালেও বছরে একবার হলেও ইংল্যান্ডে আসেন শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য। যার আপাদমস্তকই বিনামূল্যে।
– উপরোক্ত ঘটনাগুলো আমার প্রবাসভূমির উপর কিঞ্চিৎ আলোকপাত। আমরা ভিনদেশের মানুষ, আমাদের প্রতি এত দয়া পরবশ না হলেও তাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু তাদের কাছ থেকে এমনটি পাওয়া আমাদের চৌদ্দ পুরুষের ভাগ্য। আর আমরা আমাদের নিজ দেশ, নিজ মাতৃভূমির মানুষদের কাছ থেকে হতে হচ্ছে নিগ্রিত ও অবহেলিত। যেখানে অর্থ থাকলেও সুচিকিৎসার নিশ্চয়তা নাই, আর অর্থ না থাকলে তো চিকিৎসা অকল্পনীয়।
– ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা বেসরকারী হাসপাতাল আর ক্লিনিকই প্রমাণ করে দেয় দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কেমন। সরকারীভাবে সু-চিকিৎসা পেলে কেইবা যায় টাকা খরচ করে বেসরকারিতে চিকিৎসা করাতে। কিন্তু হায়! যে মানুষের শ্রমের ঘামের টাকায় যে ডাক্তারদের বেতন ভাতা দেয়া হয় সে ডাক্তারদের কাছ থেকে রোগীদের খারাপ ব্যবহার পেতে হয়। প্রত্যেক ডাক্তারের চোখ প্রাইভেট আয়ের উপর, সরকারী চাকুরীটা শুধু তারা পদবির জন্যই ব্যবহার করে। আমাদের প্রশাসন, সরকার সবাই সবকিছু জানলেও কেউ এইসব অবৈধ প্র্যাকটিস বন্ধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আর আমাদের হাসপাতালের পরিবেশ রোগ ভালোর জন্য নয়, রোগ সৃষ্টি করার জন্য মোক্ষম জায়গা।
– প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতাল গুলাতো টাকা উপার্জনের টোল খুলে বসে আছে। মানুষ তো নিরুপায়, যেতেই হবে তাদের কাছে। আর চিকিৎসা দেয় যতটুকু নিয়ে যায় তার থেকে অধিক। সু-চিকিৎসা না হয় বাদই দিলাম, নূন্যতম যে চিকিৎসা দরকার তাও পাওয়া যায়না। প্রত্যেক ভুক্তভোগী মাত্রই আমার কথার সত্যতা উপলব্ধি করতে পারবে।
– আমি বলতেছি না আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উপরোল্লিখিত দেশের মত হোক। সে আশাও করি না। কিন্তু আমাদের যা আছে তার মধ্যেই চেষ্টা করুক। ডাক্তার যারা আছে তারাই ঠিক আছে। শুধু তারা কর্তব্য পরায়ন হোক, রোগীদের সাথে একটু ভালো ব্যবহার করুক, সুপরামর্শ দিক; এতে রোগীর শারীরিক ও মানসিক কষ্টের একটু হলেও লাঘব হবে। যে হাসপাতালগুলা আছে তাতেই চলবে, শুধু একটু ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করুক, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকুক, কর্মকর্তা কর্মচারীরা রোগী ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের হয়রানি না করে কিভাবে রোগীর দ্রুত আরোগ্য লাভ হয় তাতে সহযোগিতা করুক তাতেই হবে।
– যে যার কাজে সৎ ও পেশাদারী হলে আর প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকলে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো অনেক উপরে থাকত। চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমাদের ভোগান্তি দুর্বিষহ অবস্থায় পৌঁছেছে। এর অবস্থার উন্নতি আদৌ হবে কিনা আমার অন্তত জানা নাই। তারপরেও আশাবাদী। তারপরেও আশাবাদী আমাদের আইনপ্রনেতারা, দেশনেতাদের নিজ দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আস্থাশীল হয়ে দেশের বাহিরে চিকিৎসার জন্য গমন করতে হবে না।
মুসলিম মারা গেলে শরীয়তের স্পষ্ট নির্দেশনা হলো বিলম্ব না করে তাকে গোসল দিয়ে কাফন পরানো । অতঃপর জানাযার নামায পড়ে দ্রুত দাফনের ব্যাবস্হা করা । পুরো প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পাদন সহ মৃত ব্যাক্তির লাশ গম্বীর্যের সহিত কবর স্হান পর্যন্ত নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সর্তকতা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ হাদিসে । এ সংক্রান্ত হাদীস ও আছারের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে হাজার রাহ. বলেছেন, জীবিত ব্যক্তি যে সকল বস্ত্ত দ্বারা আরাম বোধ করে মৃত ব্যক্তি তা দ্বারা আরাম বোধ করে। ইবনুল মালাক রাহ. বলেছেন, মৃত ব্যক্তি কষ্টদায়ক বস্ত্ত দ্বারা কষ্ট পায়। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/১৭০)
করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের শেষকৃত্য /দাফন /সৎকার সম্পাদন করা নিয়ে নানা দেশেই বিভিন্ন রকমের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কিন্তুু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত ব্যাক্তির লাশ দাফনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে ঘটনা গুলো ঘটছে সে গুলো খুবই দুঃজনক । প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী যে বিপর্যয় নেমে এসেছে আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশও এই সক্রমণের বাহিরে নয় । প্রায়শই দেখা যাচ্ছে করোনায় আক্রান্ত মারা যাওয়া ব্যক্তির প্রতি তাচ্ছিল্যপূর্ণ আচরণ করা হচ্ছে। কেউ কেউ নিজের বৃদ্ধ বাবা-মাকে করোনা রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসছেন বা বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছেন, যা অত্যন্ত অমানবিক। দেশের ভেতর অনেক জায়গায় মারা যাওয়া ব্যক্তির গোসল, জানাজা, দাফনে সমস্যা তৈরি হবার খবর গণমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। কোথাও কোথাও নিজেদের এলাকায় কবর দিতেও বাধা দিচ্ছে স্হানীয় জনসাধরণ। কবর স্হানে কাউকে মাটি দেয়া না গেলে তাহাকে কোথায় মাটি দেয়া হবে ? যে কেউ অাক্রান্ত হতে পারেন । তাহলে সে কি মাটি পাবে না ? এই সব প্রশ্ন গুলো নিজেরা একটি বারের জন্য ভেবে দেখছেন না যাহারা দাফন-কাফনে বাঁধা দিচ্ছেন ।অনেকের ধারণা কবর স্হানের ভেতর দিয়ে যাহারা হাঁটাচলা করেন যদি এখানে করোনা ভাইরাসে মারা যাওয়া কাউকে দাফন করা হয় তাহলে তাদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে ! শুধূমাত্র ভূল ধারণা এবং ভুল প্রচারণার কারণেই এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনাগুলো ঘটেছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে। পার্থিব জীবনের সফর শেষ করে কবরে শায়িত হওয়া প্রত্যেকটি মুসলিমের একটি ধর্মীয় মৌলিক অধিকার । সেই কবরের জন্য একজন মুসলিম মাঠি পাবে না এটা ভাবতে আমার অবাক লাগছে !
এটা সত্য যে, করোনায় মৃত্যুবরণ করা কারো দাফন/শেষকৃত্যে/সৎকারে বেশি মানুষের সমাগম নিরুৎসাহিত করা হয়। সেটি করা হয় পার্সোনাল ডিস্টেন্সিং নিশ্চিত করতে, যাতে শেষকৃত্যে যোগ দিতে এসে অনেক মানুষের জটলায় ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে না পড়ে।
Syed Atikur R Shahi- Irish Bangla Times
করোনায় মারা যাওয়া ব্যাক্তির লাশ এখন একটি আতংকের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে ! এ রোগে মারা যাওয়া মৃত্য ব্যাক্তিদের দাফনকে অনেকেই পরিবেশের জন্য হুমকি মনে করছেন । সংক্রমণের গুজবে কোথাও করোনা বা উপসর্গ নিয়ে কেউ মারা গেলে দাফনে বাধা দেয়া হচ্ছে। কোথাও আবার স্বজনরাও জানাজায় হাজির হচ্ছেন না। মারা যাওয়া ব্যক্তিকে বহন করতে খাটিয়া দেয়া হচ্ছে না এমন খবরও গণমাধ্যমে উঠে আসছে । রক্তের বাধঁন ছিন্ন করে যিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হচ্ছেন যে সমাধিস্হলে সেখানে এক মুঠো মাঠি দিতে যাচ্ছেন না তার আত্বীয় স্বজন । কি বিচিত্র আমাদের এই পৃথিবী !
করোনা সংক্রমণে মারা যাওয়া মানুষের কি অপরাধ না পাপ ? যে মৃত ব্যাক্তির লাশের কাছে আসতে সবাই ঘৃণা করছেন ? অনেকে হয়তো বলতে পারেন যে সরকারের স্বাস্হ্য বিধি নির্দেশনা মানার জন্য মৃত ব্যাক্তির সংস্পর্শ এড়াতে তাদের এই সমস্ত সতর্কতা । হ্যাঁ !অবশি এ ক্ষেত্রে সকলের সর্তকতা অবলম্বন করে স্বাস্হ্যবিধি মেনে চলা উচিত যাহাতে করে ভাইরাসে সহসাই অন্যরা আক্রান্ত হতে না পারেন । তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সতর্কতা মানার ধরণ দেখে মনে হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যাক্তিরা সমাজের কাছে এক ধরণের ঘৃণার বোঝা । ময়লা স্তুুপে আর্বজনা ফেলার মতই তাদেরকে কোন রকম কবরে সমাহিত করা হচ্ছে ।
যে অজুহাতে করোনা সংক্রমণে মৃত্য ব্যাক্তিদের লাশের সাথে অামরা এই ধরণের নির্দয় ও নিষ্টুর আচরণ করছি সেটা কতঠুবু যৌক্তিক ?
বিশিষ্ট চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ থাইল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব মেডিকেল সার্ভিসের ডিরেক্টর ড: Somsak Akhalip এর তথ্যমতে ,হোস্ট ( মানব শরীর) মারা যাবার সঙ্গে সঙ্গে তার দেহের ভেতরে থাকা ভাইরাসের ও মৃত্য ঘঠে । ভাইরাস তখন অার মৃত্য ব্যাক্তির শরীরে বংশবৃদ্ধি করতে পারেনা । বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা (who) সর্বশেষ পাওয়া নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে নিশ্চিত করেছে যে করোনা ক্রান্ত লাশের শরীর থেকে ভাইরাস বাতাসে এমনি এমনি ছড়িয়ে পড়ে না! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবেই বলেছে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির লাশ থেকে অন্য কেউ করোনায় আক্রান্ত হ্ওয়ার একটি ঘটনাও ঘটেনি।
বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা, আইইডিসি আর সহ বিশ্বের তাবুড় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়ে বলেছেন যে এই করোনা ভাইরাসটি এয়ারবোর্ণ (বায়ুবাহিত) নয় যে বাতাসে উড়ে উড়ে এদিক-ওদিক যাবে! এটি কেবল সর্দি, কাশির ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়! মৃত ব্যক্তি যেহেতু হাঁচি বা কাশি দিতে পারে না ফলে ড্রপলেট আসার সুযোগও নেই । আর ড্রপলেট না বেরোলে ভাইরাস ছড়াবে কিভাবে ? তাহলে করোনায় মারা যাওয়া ব্যাক্তিদের লাশ দাফনের ক্ষেত্রে কেন এত জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশে ? এই দূর্গতির শেষ কোথায় ?
অনেকে হয়তো মনে করেন যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ থেকে পিলপিল করে ভাইরাস বের হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পরে কি-না ! তবে এ-ব্যাপারে গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন যে সেরকম ভয়ানক কিছু ঘটে না! এ সবই মানুষের মনের দুঃশ্চিন্তা মাত্র। কেউ লাশের গায়ে হাত ছোঁয়ালেই তার হাতে ভাইরাস লেগে যাবে না! অর্থাৎ, চামড়ার ওপর কোনো জীবাণু স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেগে থাকে না বা ঘোরাঘুরি করে না। লাশের নিজে থেকে ভাইরাস ছড়ানোর কোনো সুযোগ বা সম্ভাবনা নেই! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য জ্বর বা কলেরায় মৃত ব্যক্তির লাশের শরীর থেকে রক্ত অথবা পায়খানা বেরিয়ে শরীর মাখামাখি হয়ে গেলে খালি হাতে তা ছুঁতে কঠিনভাবে নিষেধ করেছে।
তবে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃতদেহ দাফন/ সৎকার বা শেষকৃত্য সম্পাদনের জন্য একটি নির্দেশিকাও তৈরি করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। গত ২৪ মার্চ নির্দেশিকাটি তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ ও প্রচার করেছে। সংস্থার গবেষণা ও নির্দেশিকা অনুযায়ী, সাবধানতা অবলম্বন করে লাশের শরীর স্বাভাবিকভাবেই সাবান-পানি দিয়ে গোসল করানো যায়, কাফনের কাপড় পরানো যায়, প্রিয়জনকে দেখানো যায় এবং গোরস্তানে দাফন বা চিতায় পুড়িয়ে ফেলা যায়। তারা বলেছেন, বৈজ্ঞানিকভাবে নিজের সাবধানতা ছাড়া অযথা ভয়ের কোনো কারণই নেই! স্বাস্হ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলে ইসলামি ফাউন্ডেশন করোনায় মারা যাওয়া ব্যাক্তিদের গোসল ও দাফন সর্ম্পকে ইসলামের বিধান সম্বলিত পরামর্শ অনুসরন করতে বলেছে ।
তাহলে বুঝা যাচ্ছে করোনা ক্রান্ত মৃত ব্যাক্তিদের লাশ দাফনের কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে যে সব সমস্যা গুলো বাংলাদেশে তৈরী হচ্ছে সেই গুলোর পিছনে অন্যতম কারণ হলো গুজব । কেননা বিজ্ঞান এবং ইসলাম দুটিই বলছে করোনায় মারা যাওয়া মৃত্য ব্যাক্তিদের মাঠিতে কবর দিতে কোন ঝুকি নেই ।
টাইম লাইনে আজ একটি ছবি দেখে অনেক্ষন বাকরুদ্ধ ছিলাম । করোনা ক্রান্ত একজন বোনের লাশ বহনের দৃশ্য দেখে নিজের অজান্তে চোখের জল এসে গেলো । নিঃস্বাস আটকে রেখে কিছুক্ষণ চিন্তা করলাম ছবিটির দিকে থাকিয়ে। ভাবলাম মানু্ষ হিসেবে আজ আমরা কতটা নিষ্টুর ও নির্দয় জাতিতে পরিনত হয়েছি ! ছবিটি না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না আমাদের মানবিক মূল্যবোধ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে ! ছবিটিতে দেখলাম একজন করোনা সংক্রমণ মেয়ের মৃত লাশ বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে কবর স্হানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দাফনের জন্য । লাশটির সাথে আত্বীয় -স্বজন কিংবা পরিবারের কেউ নেই । সাথে আছেন পিপি ই পড়া দুই জন মানুষ । ঘঠনাটি কোথায় ঘঠেছে তা আমি জানিনা কিন্তুু ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দৃশ্যটি ভাইরাল হচ্ছে প্রচুর । একটু চিন্তা করে দেখুন হতভাগি এই বোনটির জীবনের শেষ বরযাত্রায় এভাবে তাহাকে বাঁশের সাথে ঝুলতে হবে জীবদ্দশায় সে কি কখন ও ভেবেছিলো ? তাই বলতে হচ্ছে মানুষ শুধূ সৃষ্টির সেরা জীব নয় , মানুষ নির্দয় ও নিষ্টুরতার মূর্ত প্রতিক ও বঠে । এই ছবিটি তার প্রমাণ ।
কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হাসরের ময়দানে কঠিন মূহর্তের কথা প্রতিনিয়ত আমরা শুনি বিভিন্ন অালেম -ওলামাদের কাছ থেকে । কথা গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হচ্ছে কেয়ামতের সেই মুসিবতের দিন আমরা আপনজনদের চিনবনা । নিজেদেরকে নিয়ে সবাই ইয়া নসবি ইয়া নসবি করবে। কিন্তুু হাসরে ময়দানে উপস্হিত না হয়ে আজ করোনার কারণে বুঝতে পারছি এই পৃথিবীতে আসলে কেউই কারো আপন নয় ।
ভাবি, আমরা কি কোনো দিনই সভ্য হতে পারবোনা! অসভ্যতার অভিশাপ নিয়েই কি আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে চিরকাল! সমাজের প্রতিটি স্তরে অসভ্য ইতরদের নগ্ন বিচরণ। নিজ নিজ পদমর্যাদা বা অবস্থানের কথা ভুলে গিয়ে তারা মেতে ওঠে অসভ্যতায়, মেতে ওঠে বর্বরতায় । কেউ কথায়, কেউ কূট চালে, কেউ বক্র হাসির ভেতর, কেউবা আবার নিজের কাজ কর্মের মধ্য দিয়ে এর প্রকাশ ঘটায়। অসভ্যতা বা বর্বরতাকে নসিহত করে সমাজকে পরিশুদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাদের সুর তুলার কথা তাদের নিজেদেরই যখন মারাত্মক ভাবে ছন্দপতনে ঘটে তখন তা সমাজে সেন্দহাতীত ভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এর জন্য কেবল তাদেরকেই নয়, পুরো দেশ ও জাতিকেই চরম মূল্য দিতে হয়। যা খুবই হতাশাজনক ও হৃদয় পীড়নকারী।
হ্যাঁ, অনলাইন পোর্টাল সহ দেশের প্রায় প্রতিটি জাতীয় দৈনিকে সম্প্রতি এরকম একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা পড়ে আমি বেশ ব্যতিত ও আহত হয়েছি।
দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত এক সাংবাদিক তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। স্ত্রীও সাংবাদিক। সমকালে চাকরি করেন। প্রেম করে বিয়ে করেন এ সাংবাদিক দম্পতি। গত ২ এপ্রিল তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই স্বামী রেজাউল করিম প্লাবনের চেহারা পাল্টে যায়। স্ত্রী পারুল শশুরালয়ে যাবার কথা বললে তার কাছে একটি ফ্ল্যাট বা ৫০ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেয়ার দাবি করে প্লাবন। কিন্তু পারুল এতে অস্বীকৃতি জানালে প্লাবনের ভালোবাসার আসল রূপ ধরা পড়ে। নিত্য তাকে শারীরিক নির্যাতন চালাতে থাকে। গত ২৯ এপ্রিল মায়ের অসুস্থতার কথা বলে প্লাবন গ্রামের বাড়ি যেতে চাইলে পারুলও তার সঙ্গে যাওয়ার বায়না ধরে। কিন্তু প্লাবন রাজি না হয়ে উল্টো ইচ্ছে মতো পারুলকে প্রহার করে। পারুলের গর্ভে তার বাচ্চা এসেছে জানানোর পরও সে ক্ষান্ত হয়নি, উপরন্তু আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে তার উপর প্রহারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে ৫ মে নিজের শরীর খারাপ থাকা সত্বেও কয়েকজন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় একটি অ্যাম্বুলেন্স যোগে অসুস্থ শাশুড়িকে দেখতে প্লাবনের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারীতে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে তার শাশুরী অসুস্থ নয়। বরং শ্বশুর শাশুড়ি সহ প্লাবনের দুই ভাই একই দাবি তূলে। যৌতুক না দিলে তারা তাকে গ্রহণ করবেনা। এর প্রতিবাদ জানালে মারধর ও নির্যাতন করে পারুলকে বের করে দেয়। ঢাকায় ফিরে এসে পারুল বুঝতে পারে ওদের অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ফলে তার গর্ভের ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায়। উপায়ান্তর না দেখে তিনি পুলিশের আশ্রয় নেন এবং থানায় নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগ এনে প্লাবনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
একজন সাংবাদিকের নৈতিকতা যখন অশিক্ষিত রাখালের নৈতিকতাকেও হার মানায় তখন তা মানুষের চোখে লাগে বৈকি। সাংবাদিকতা পেশাটার প্রতি আমার বেশ দরদ রয়েছে। আমার এক অনুজ সাংবাদিক। বড় ভাইও সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন অনেক বছর। আমি নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসেবে দু একটি পত্রিকাতে কাজ করেছি। তাই গুটি কতক অবাঞ্ছিতদের জন্য এ মহান পেশাটির গায়ে কলংকের দাগ লাগলে আমার বেশ রক্ত ক্ষরণ হয়। আমি আহত হই। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের খবর পরিবেশনের জন্য একদল সাংবাদিক অস্ট্রেলিয়ায় যায়। তন্মধ্যে একজন যাওয়ার পথে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সে নারীঘটিত এক কেলেংকারিতে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি আমাকে বেশ আহত করে। জাতিকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর মতো লজ্জাজনক এ বিষয়টির বিরুদ্ধে তখনো আমি কলম ধরেছিলাম। একটি জাতীয় দৈনিক সহ দু একটি অনলাইন পোর্টালে তা প্রকাশ পায়।
সাংবাদিকতা প্রথম শ্রেণীর একটি পেশা। জাতির বিবেক হিসেবেও ধরা হয় সাংবাদিকদের। ব্যক্তি, সমাজ তথা দেশ ও জাতির দিকনির্দেশক হিসেবেও কাজ করেন তারা। অস্বচ্ছ ও ঘুনে ধরা সমাজকে সত্য সুন্দর পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করেন। ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে কেবল সত্য উন্মোচন করেই ক্ষান্ত থাকেননা তারা, সমসাময়িক সমস্যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করে সমস্যা সমাধানের পথও বাতলে দেন। দেশ পরিচালনার জন্য যে কয়টি স্তম্ভ রয়েছে তন্মধ্যে সংবাদপত্র একটি। এ সংবাদপত্র যারা পরিচালনা করেন তারাই হলেন সাংবাদিক।
এমন একটি মহৎ ও গুণি পেশার অধিকারী হয়েও যদি কেউ এমন ঘৃণিত কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন তাহলে তার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কি ধারণা জন্মায় তা সহজেই অনুমেয়। প্লাবনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যদি সত্যি হয় তবে এ অপকর্মের অপবাদ কি কেবল তাকেই ছোট করবে? বরং পুরো সাংবাদিক সমাজের মুখেই তা চুনকালি এঁকে দেবে।
পারুল মামলা করেছে। অভিযোগ সত্য হলে আইন অনুযায়ী প্লাবনের বিচার হবে। যুগান্তর কতৃপক্ষও হয়তো তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। আমিও চাই তার যথোপযুক্ত শাস্তি হোক।
তবে যে কথাটি বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, এ সমাজে প্লাবনের মতো শিক্ষিত সাংবাদিকরাই কেবল অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে পড়েনা বরং পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, সরকারী চাকরিজীবি, বিচারক, ম্যাজিসট্রেট সহ সকল শ্রেণীর শিক্ষিত পেশাদারী লোকের মধ্যেই অপরাধ প্রবণতা ব্যপক ভাবে লক্ষ্য করা যায়। এ অপরাধ অশিক্ষিত মূর্খ শ্রেণীর অপরাধের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকর। কারণ শিক্ষিত উচু শ্রেণীর এ অপরাধ সামাজিক অবক্ষয়কে মারাত্মক ভাবে ত্বরান্বিত করে। এ অবক্ষয়কে শুধু সাজা বা শাস্তি দিয়েই ঠেকানো সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষার। আর তা কেবল পুঁথিগত বিদ্যা ও স্কুল কলেজের অসম প্রতিযোগিতামৃলক শিক্ষাই যথেষ্ট নয়। সবার আগে প্রয়োজন পারিবারিক ভাবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক রর্বাতো আজেভেদো পদত্যাগ করছেন। ২০২১ সালে তার মেয়াদ সেস হওয়ার কথা থাকলে মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই তিনি পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এক মুখপাত্র। সূত্র – এএফপি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের কারণে এই সিধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যায় আন্তর্জাতিক গন মাধ্যম থেকে ।
গত বৃহস্পতিবার সংস্থাটির মুখপাত্র কিথ রকওয়েল জানান ‘ প্রতিনিধি দলের প্রধানদের বৈঠকের পর ‘ডব্লিউটিও’ এ বিষয়ে একটি ঘোষণা দেবে । এএফপিকে পাঠানো একটি ই-মেইল বিবৃতিতে তিনি বলেন, এর আগে আর কোনো মন্তব্য করা যাবে না।
এদিকে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, আজেভেদো তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করেছেন বলে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জানিয়েছে । সেপ্টেম্বরে তিনি পদত্যাগ করতে চান বলে জানা গেছে।
৬২ বছর বয়সী ব্র্রাজিলিয়ান এ কূটনীতিক ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তার দ্বিতীয় মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের কারণে তিনি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সরে যেতে চাচ্ছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে নিজেদের নীতি পরিবর্তন না করলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
কয়েকটি কূটনীতিক সূত্র এএফপিকে নিশ্চিত করেছে যে, তাদের প্রশাসনিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে আহ্বান জানানো হয়েছে । করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহামন্দার এই সময় আজেভেদোর পদত্যাগের খবরটি এল । বর্তমান অবস্থাকে ১৯৩০ এর দশকের মহামন্দার সঙ্গে তুলানা করছে সংস্থাটি।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা গঠন করার উদ্দেশ ছিল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম নির্ধারণ করা ও সেসব নিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের সমাধান করা।
করোনা মহামারী নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রতিশোধ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে চীন।গেল বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের স্থানীয় পত্রিকাগুলোর বরাত দিয়ে এ খবর জানায় তুর্কির সংবাদ মাধ্যম আনাদলু। প্রতিবেদনেটিতে বলা হয়, গ্লোবাল টাইমস জানায়— আমেরিকার চারজন সংসদ সদস্য ও দেশটির দুইটি সংস্থাকে চীন সরকার নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রেখেছে। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে বেইজিং ভিত্তিক একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে মামলা করায় চরম অসন্তুষ্ট হয়েছে চীন । যুক্তরাষ্ট্রের স্বতন্ত্র ব্যক্তি, সংস্থা ও সরকারি কর্মকর্তা যারা করোনার ক্ষতিপূরণ চেয়ে চীনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা-ভাবনাও করছে বেইজিং।
যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে চীনের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রথম মামলাটি করা হয়েছিল দেশটির মিসৌরি অঙ্গরাজ্যে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর্মকর্তা হিসেবে প্রথম নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন মিসৌরি অঙ্গরাজ্য অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক সিম্থ। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে করোনাভাইরাসের উৎস অনুসন্ধানে আহ্বান জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থন পেয়েছে ওয়াশিংটন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বেইজিং।
দিন দিন যেন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে । মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণহানির ঘটনা ও বেড়েই চলেছে। আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা ।
গত একদিনে দেশটিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭৭২ জনের। এর আগে মঙ্গলবার একদিনে মারা যায়
১ হাজার ৬৩০ জন । তবে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমছে । গত একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৭১২ জন।।
যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৮৫ হাজার ১৯৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এই রোগে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ লাখ ৩০ হাজার ৩৪৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ১০ হাজার ২৫৯ জন। সূত্র – ওয়ার্ল্ডোমিটার
যুক্তরাষ্ট্রে নভেল করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য হলো নিউইয়র্ক। সেখানে সর্বোচ্চ মৃত্যু ২৭ হাজার ২৯০ । এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার ৮৪৮ জন।
সম্ভবত কখনই বিদায় করা যাবে না করোনা ভাইরাসকে এবং বিশ্বের জনগণকে এর সঙ্গেই বসবাস করা শিখতে হবে । স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে লেগে যাবে আরো অনেকটা সময় । সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা ই একমাত্র উপায় । সূত্র -বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) । বিগত বুধবার এই হুশিয়ারি বার্তা প্রকাশ করে সংস্থাটি
‘ একে সম্ভবত পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হবে না’ বলে ডাব্লিউএচও । করোনা মোকাবেলায় জারি করা নিষেধাজ্ঞা অনেক দেশের তুলে নেয়ার প্রেক্ষাপটেই এই কথা বলে ডাব্লিউএইচও। সংস্থাটি সতর্ক করে বলে , দ্বিতীয় দফায় ভাইরাসটি যে ছড়াবে না তার কোন নিশ্চয়তা দেয়া যাচ্ছে না।
জেনেভায় এক ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে ডাব্লিউএইচও’র পরিচালক মাইকেল রায়ান বলেন, ভাইরাসটি নতুন এবং এটি প্রথমবারের মতো মানুষের মাঝে ছড়িয়েছে । আমরা কখন জয়ী হবো তা বলা খুবই কঠিন।তিনি আরো বলেন, এই ভাইরাস হতে পারে অন্য ভাইরাস রূপে আমাদের মাঝে ছড়াবে, যা কোনদিনই যাবে না । এ ক্ষেত্রে তিনি এইচআইভি’র প্রসঙ্গ টেনে বলেন, যেমন এইচআইভি যাচ্ছে না। কিন্তু এর সঙ্গেই আমাদেরকে বসবাস করতে হচ্ছে । শেষে বলেন , স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরো অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে।
ডাব্লিউএইচও’র প্রধান টেডরস এডহানম গেব্রিয়াসিস বলেছেন, বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু আমাদের সুপারিশ হলো সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা অবলম্বন ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইনসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার জানান, ১৪৪ জন বাংলাদেশী নাগরিককে নিয়ে ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ বিমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে অাজ ।
এ ছাড়া হযরত শাহাজালাল বিমানবন্দর এভিয়েশন সিকিউরিটির একজন কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়া আটকে পড়া ১৬০ জন বাংলাদেশী আজ বিকেলে মালিন্দো এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন।
এর আগে, সিঙ্গাপুর থেকে ২১6 বাংলাদেশী বহনকারী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা বিমানবন্দরে অাজ দুপুর ২ টা ৫০ মিনিটে অবতরণ করেছে বলে এইচএসআইএর এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা গেছে ।
এছাড়াও, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ বিমান ভারতের চেন্নাই থেকে ১৭৯ জন বাংলাদেশিদের নিয়ে বেলা তিনটায় এইচএসআইএতে অবতরণ করেছে বলে এই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন ।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে, সমস্ত প্রত্যাবাসী বাংলাদেশিরা ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনে থাকার কথা রয়েছে যদি তারা বিমান বন্দরে মেডিকেল শংসাপত্র প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন ।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপিতে সাফল্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন পাকিস্তানের চিকৎসকরা। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ব্লাড ডিজিজের প্রধান ডা. তাহির গত শনিবার গণমাধ্যমকে বলেছেন — করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপিতে আমরা সাফল্য পেয়েছি।এই থেরাপিতে চিকিৎসা দেয়া প্রথম রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন , তবে তিনি রোগীর নাম বা কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এ কথা বলেননি।
প্রথম সাফল্যের পর এবার আরও ৩৫০ কোভিড-১৯ রোগীকে এ থেরাপি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ।ইতিমধ্যে পাকিস্তানের আট প্রদেশের হাসপাতালেই শুরু হয়েছে প্লাজমা থেরাপি। এ চিকিৎসায় প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ রোগ থেকে মুক্ত হওয়া ব্যক্তির প্লাজমা সংগ্রহ করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দেয়া হয়। এতে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। গত ১২৫ বছর ধরে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ পদ্ধতির প্রচলন আছে। ডা. শামসির আরও বলেন, ইবোলা ও সার্সের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৭৩৬ জন এবং মারা গেছেন ৬৩৬ জন।
প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে সৌদি আরবে কারফিউ চলছে । দেশটিতে ঈদের ছুটিতেও ২৪ ঘণ্টা কারফিউ থাকবে। গত মঙ্গলবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রমজান মাসের শেষেও ২৩ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।
গেল ২৩ মার্চ ২১ দিনের কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার। এর পর করোনার প্রাদুর্ভাব না কমায় ক্রমান্বয়ে বাড়ানো হয়ে কারফিউর মেয়াদ। গত ২৬ এপ্রিল মক্কা ও এর আশপাশের এলাকা বাদে অন্যসব জায়গায় কারফিউ শিথিল করা হয়েছিল যার আওতায় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা নাগাদ মানুষ চলাচল এবং দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সৌদিতে এখন পর্যন্ত মোট ৪২ হাজার ৯২৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন ,মারা গেছেন ২৬৪ জন ।
৭৮ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে মালেয়েশিয়ায় আটক করা হয়েছে। তাদের আটক করার কারণ – অবৈধ ভাবে দেশটিতে বসবাস করছেন তারা – সূত্র বার্তা সংস্থা বারনামা । পূর্বেও কয়েক দফায় এইরকম অভিযান চালিয়েছে দেশটি ।যদিও অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান না চালাতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘ। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল , অভিবাসীদের আটক করে জনাকীর্ণ শিবিরে রাখা হলে সেখানে ভাইরাসের বিস্তারের উচ্চ ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, মালয়েশিয়ায় বৈধ বিদেশি শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ২০ লাখ। তবে এই সংখ্যা ছাড়াও অনিবন্ধিত আরও অনেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে বসবাস করেন বলে কর্তৃপক্ষের ধারণা |
রাজধানী কুয়ালালামপুরের পাইকারি বাজারে সোমবার অভিযান চালানো হয় বলে জানায় মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ। সেখানে ১ হাজার ৩৬৮ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয় । এদের মধ্যে মিয়ানমারের আছে ৭৯০ জন , ইন্দোনেশিয়ার ৪২১ জন, ৭৮ জন বাংলাদেশি ৭৮ জন , ভারতীয় ৫৪ জন, ছয় জন পাকিস্তানি নাগরিক এবং বাকীরা অন্যান্য দেশের নাগরিক। আটককৃতদের মধ্যে ১ হাজার ৯ জন পুরুষ, ২৬১ জন নারী ও ৯৮ শিশু রয়েছে ।
ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক খাইরুল দিজাইমি জানান , আটককৃতদের অপরাধের মধ্যে রয়েছে বৈধ কাগজপত্র না থাকা, অবৈধভাবে অবস্থান, ভুয়া পাস/অনুমতি পত্র ব্যবহার এবং অন্যান্য অভিবাসন আইন লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, ‘কারাদণ্ডের শাস্তি ভোগ করার পর আটককৃতদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং কালো তালিকাভুক্ত করা হবে যেন তারা আর মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে না পারে ।
ডাবলিন বিমানবন্দরে আগত এক তৃতীয়াংশেরও বেশি যাত্রী ছয় দিনের সময়কালে তারা কোথায় থাকবেন তা নির্দেশ করে কোনও ফর্ম পূরণ করেনি। আইরিশ সরকার করোনাভাইরাসের কারণে আগত ১৪ দিনের জন্য অন্য দেশ থেকে ভ্রমণকারী সকলকে সেলফ আইসলেশনে যেতে বলেছে ।
আয়ারল্যান্ডে ভ্রমণকারী যাত্রীদের ফর্মটি পূরণ করতে বলা হয়, যার মধ্যে নাম, ঠিকানা এবং নম্বর রয়েছে। তবে এটি করা বাধ্যতামূলক নয়। ২৮ এপ্রিল থেকে ৩ মে এর মধ্যে ছয় দিনের সময়কালে প্রায় ৩৪% (৬৭০ জন) ডাবলিন বিমানবন্দরে পৌঁছে ফর্মটি সম্পূর্ণ করেনি। আইরিশ বিচার বিভাগের (ডিওজে )ও নিশ্চিত করেছে যে ফর্ম পূরণ করে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে পড়তে বলা হয়েছিল তাদের মধ্যে, ডাবলিন বিমানবন্দরে আগত ৩৬% (২৩১ জন) ফলো-আপ কলগুলিতে সাড়া দেয়নি। ডাবলিন বন্দরের মধ্য দিয়ে আসা বেশিরভাগ লোক সাপ্লাই চেইনের শ্রমিক এবং অব্যাহতিপ্রাপ্ত লোকেরা ।
যারা প্রাথমিক ফোন কলগুলির উত্তর দিতে ব্যর্থ হয় তাদের সাথে বারবার টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয় । যাত্রীরা আসার দু’দিন পরে প্রথম কলগুলি করা হয়। আয়ারল্যান্ডে যে কোনও যাত্রী ১৪ দিন বা তার বেশি সময় অবধি অবস্থান করছেন, তাদের দেওয়া ঠিকানা টীতে এবং স্ব-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ১০ তারিখে দ্বিতীয় কল করা হবে।
যাত্রীদের সীমিত সংখ্যক বিভাগ রয়েছে, উদাহরণস্বরূপ সরবরাহ শৃঙ্খলা কর্মী (যেমন পাইলট, হাউলিয়ার বা সামুদ্রিক ক্রু সদস্য) বা যাত্রীরা উত্তর আয়ারল্যান্ড সহ অন্য কোনও অঞ্চলে প্রবেশের পথে ট্রানজিট হিসেবে ব্যাবহার করছেন।
এদিকে, তিশাক (আইরিশ প্রধানমন্ত্রী) লিও ভারাদকার বলেছেন ডইলকে (আইরিশ পার্লামেন্ট) করোনাভাইরাস আয়ারল্যান্ডে গত বছরের শেষের দিকে বা জানুয়ারির শুরুতে হতে পারত তবে আরও গবেষণা প্রয়োজন। প্রথম অফিসিয়াল করোনাভাইরাস কেস ২৯ শে ফেব্রুয়ারী আয়ারল্যান্ডে নিশ্চিত হয়েছিল। তিনি আরও যোগ করেছেন যে দেশটি তার পরীক্ষার ক্ষমতাটি প্রতিদিন ১২,০০০ টেস্টে বাড়িয়েছে এবং মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত লক্ষ্য ছিল প্রতিদিন ১৫,০০০ ক্ষমতা রাখার।
যুক্তরাজ্যে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যুসংখ্যা চল্লিশ হাজার ছাড়িয়েছে। বৈশ্বিক মহামারীতে ইউরোপে এটিই সর্বাধিক মৃত্যু। এর কারণে কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে | এমন এক সময় এই মৃত্যুর হিসাব এসেছে, যখন অর্থনীতিকে সচল করতে একটি ক্রমিক পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এছাড়া লোকজনকে মাস্ক পরারও উপদেশ দিয়েছেন তিনি। যদিও লকডাউন তোলায় তার পরিকল্পনা নিয়ে দেশটির মানুষ বিভ্রান্তিতে আছেন।
স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের নেতৃবৃন্দ সমূহ জানান, প্রধানমন্ত্রী যে উপদেশ দিয়েছেন, তা কেবল ইংল্যান্ডে প্রয়োগ হবে। লোকজনকে তারা ঘরে থাকতে বলছেন ।ব্রিটেনে এই বিশাল মৃত্যুর সংখ্যায় জনসনের ওপর চাপ বাড়ছে। বিরোধী দলীয় নেতারা বলছেন, লকডাউন ঘোষণা করতে তিনি অতিরিক্ত কালক্ষেপণ করেছেন, ব্যাপক পরীক্ষার গতিও ছিল ধীর , এছাড়া হাসপাতালে যথেষ্ট সুরক্ষা সরঞ্জামও সরবরাহ করতে পারেননি টরি দলের এই প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে কেয়ার হোমগুলোর উপাত্ত থেকে বিভৎস চিত্র উঠে এসেছে। ভাইরাসের সবচেয়ে বড় সংক্রমণ ঘটেছে এই সব কেয়ার হোমে।
বিবিসির টেলিভিশনকে ওএনএস পরিসংখ্যানবিদ নিক স্ট্রিপ বলেন, কেয়ার হোমগুলোতে সংক্রমণ কমার গতি খুব ধীর । এই প্রথম এমন কোন ঘটনা ঘটল যে হাসপাতালের চেয়ে কেয়ারহোমগুলোতে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের কারণে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে প্রভাব পড়ায় সৌদি আরবে ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (ভ্যাট) তিনগুণ করা হয়েছে। তুর্কি অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ইব্রাহীম মনে করছেন, এই পদক্ষেপ ওমরাহ এবং হজযাত্রায় ব্যয় পারে। তুর্কি সংবাদ মাধ্যম আনাদলুকে ঐ বিশেষজ্ঞ বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার জন্য গৃহীত পদক্ষেপ ও বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের দামে ধস পড়ার জন্য সৌদি আরবের অর্থনীতিতে দ্বিগুণ ধাক্কা লেগেছে। যার ফলে বাজেটে বিপুল ঘাটতি দেখা দিতে পারে |সৌদি সরকার দেশের বাজেটের ঘাটতির তীব্রতা দূর করতে হজ ও ওমরাহ ফি বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি ।
সৌদি সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশটি তীর্থ যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করে। এসব ধর্মীয় অনুষ্ঠান দেশটিতে নন-অয়েল জিডিপির প্রায় ২০ শতাংশ এবং মোট জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ অবদান রাখছে। ইতিমধ্যে সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল জাদান দেশটিতে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেন। যা জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
তুর্কি বিশেষজ্ঞ ইব্রাহিম আরো বলেন, সৌদি আরবের রাজস্বের অন্যতম সূচক ছিল তেল। কিন্তু তেলের দামে ধস নামার কারণে সরকারি রাজস্বে এর প্রভাব পড়ে। ফলে বড় ধরনের বাজেট ঘোষণা কষ্টসাধ্য হবে দেশটির জন্য।
বর্তমান সময়ে কঠিনতম নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। প্রাণঘাতী করোনার কোনো ধরনের উপসর্গ থাক আর না থাক নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া রোগী দেখছেন না হাসপাতালের চিকিত্সকরা। অপরদিকে পজিটিভ রিপোর্ট ছাড়া করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোও ভর্তি করছে না। এরফলে করোনা পরীক্ষা করানোর আগেই হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে মারা যাচ্ছেন রোগীরা।আবার করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে বিশাল জটিলতা, বিশৃঙ্খলা। কোন হাসপাতালে গেলে পরীক্ষা হবে অনেকেই জানেন না, আবার দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর বলা হচ্ছে—আজ হবে না! কেউ পরীক্ষার সুযোগ পেলেও রিপোর্ট পেতে লাগছে পাঁচ-ছয় দিন। ফলে রিপোর্ট আসার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে বিনা চিকিৎসায়।
সম্প্রতি সময়ে অন্তত ২০টি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচ সরকার। তার মেয়ে ডা. সুস্মিতা আইচ জানান -শ্বাসকষ্ট থাকায় কোনো হাসপাতাল ভর্তি করেনি তার বাবাকে। সরকারি হটলাইনে সেবা দিয়ে যাওয়া এই চিকিৎসক জানিয়েছেন, নিজে ডাক্তার হয়েও বাবার কোনো চিকিৎসা তিনি করতে পারলেন না। অথচ তার বাবা গৌতম আইচ সরকার ছিলেন কিডনি রোগী।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও ক্রীড়া সংগঠক আবদুল মুনায়েম চৌধুরী ইবনে সিনা হাসপাতালে শুক্রবার মারা যান। হৃদরোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি।গেল মার্চে এই হাসপাতালেই হার্টে রিং লাগানো হয় তার। গত ৪ মে বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তির পরই চিকিত্সকরা করোনা পরীক্ষা করতে বলেন। তাকে আইসিইউতে ফেলে রাখা হয়। অনেক চেষ্টার পর ৬ মে তার করোনা পরীক্ষা হয়। বরঞ্চ রিপোর্ট আসার আগেই ৭ মে তিনি মারা যান। ৮ মে পাওয়া রিপোর্টে দেখা যায় তিনি করোনা নেগেটিভ ছিলেন।
এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর। প্রথম প্রথম পিপিই, মাস্ক, ফেস শিল্ড না থাকার অভিযোগ এনে চিকিৎসা থেকে বিরত ছিলেন অনেক চিকিৎসক। কিন্তু বর্তমানে এসবের অভাব দেখা যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠেছে–তাহলে কেন রোগীরা চিকিৎসা পাবেন না ? সংশ্লিষ্টরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই হাত ভরে চিকিৎসকদের দিচ্ছেন, ঝুঁকি ভাতা ঘোষণা হয়েছে। বড় আকারের বাজেট ঘোষণা হয়েছে চিকিৎসার জন্য। তাহলে বিনা চিকিৎসায় কেন মৃত্যু হবে রোগীর?
অনেক এলাকায় এলাকাবাসীও করোনা আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করছেন। অনেকের বাড়িতে তালা দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ বাসায় ডেকে টেস্ট করাতে চাইলে কয়েক দিন লেগে যাচ্ছে, তবুও টেকনিশিয়ানরা যাচ্ছেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নানান আশ্বাস আর প্রস্তুতির গল্প শোনানো হলেও কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। তারা শুধু মৃত্যু আর আক্রান্তের সংখ্যা গুনে যাচ্ছে।
বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া ইত্তেফাককে বলেন, প্রতিটি এলাকায় পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে। তিনটি বেসরকারি হাসপাতালকে যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেটা ঠিক হয়নি। তারা শুধু তাদের নিজেদের রোগীদের পরীক্ষা করবে। ঐ সব হাসপাতালে তো ধনীরা যান। সাধারণ মানুষ যেসব ক্লিনিকে যায় সেখানেও পরীক্ষার সুযোগ থাকতে হবে।
চীনে আবার দেখা দিয়েছে করোনার সংক্রমণ। আজ সোমবার সে দেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে নতুন করে ১৭ জন সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তন্মধ্যে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র উহান শহরে ৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয় যে , চীনে এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় করোনার নতুন সংক্রমণ দুই অঙ্কে পৌঁছাল। এখানে চিন্তার বিষয় হলো যে চীনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় জিলিন প্রদেশের শুলান নগরে গুচ্ছাকারে করোনার সংক্রমণ ঘটছে।
প্রাণঘাতী করোনায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফ্রান্স ও স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলো যখন লকডাউন শিথিল করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছে, এ সময় চীনে নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটল।তার আগে ভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে উহানে লকডাউন জারি করা হয়। সম্প্রতি সেখানে লকডাউন শিথিল হতে শুরু করে। সেখানকার একজন কর্মকর্তা বলেন, রোগটি নিয়ন্ত্রণে ছিল। শিশুরা স্কুলে যাওয়া শুরু করেছিল এবং শহর থেকে বাইরে যাওয়া আসার বাধা তুলে নেওয়া হয়েছিল।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা ৪০ লাখ পার হয়ে গেছে এবং ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। চীনে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ৮৩ হাজার। সেইখানে ৪ হাজার ৬০০ মানুষ মারা গেছেন। দেশটিতে প্রায় এক মাসের মতো সময়ে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর কোন ঘটনা নেই। সেখানে ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রোগীর উপর গবেষণা দেখা গেছে যে – কিছু রোগীর করোনা পসিটিভ আসছে অথচ তারা কখনো জ্বর অথবা শাসকষ্টে ভুগেনি । উপরন্তু তাদের মধ্যে ঘন ঘন বমি ও ডায়রিয়ার সংক্রমণ ছিল । পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এসব রোগীদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে – তাদের শরীরে অক্সিজেন এর মাত্রা স্বাভাবিক এর থেকেও অনেক নিচে নেমে গিয়েছিলো। এইসব উপসর্গ দেখে চিকিৎসকেরা কোভিড–১৯–এর উপসর্গ নিয়ে নতুন করে ভাবছেন।
অনেক জ্বর, শুকনা কাশি এবং শ্বাসকষ্ট ইত্যাদির কথাই এত দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে দেখা দেওয়া উপসর্গ হিসেবে বলা শোনা যাচ্ছিল । এ–ও বলা হচ্ছিল যে সবার মধ্যেই যে উপসর্গ দেখা দেবে এমনও নয়। শুরু থেকেই উপসর্গের প্রকাশ হওয়া না হওয়া নিয়ে নতুন এ করোনাভাইরাস মানুষকে বেশ চিন্তায় রেখেছে। দিন দিন এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন উপসর্গ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক ভ্যালেন্টিন ফাস্টার মত দেন , ‘শুরুতে আমরা বুঝতেই পারিনি , আমরা আসলে কিসের বিরুদ্ধে লড়ছি – আমরা শুধু আমাদের সামনে রোগীদের মারা যেতে দেখছিলাম। হঠাৎ করেই এইরকম পরিস্থিতির মধ্যে এসে পড়তে হয়েছে আমাদের। এখন আমরা মোটামুটি ভালোভাবেই জানি যে নতুন এ করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণে সক্ষম অন্য ভাইরাসগুলোর থেকে একেবারেই আলাদা এবং অননুমেয়। বেশিরভাগ সময় এটি ফুসফুসে আক্রমণ করলেও মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে গোড়ালি পর্যন্ত যেকোনো অঙ্গে আক্রমণের ক্ষমতা এটি রাখে।’
এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের যে রূপ ধরা দিয়েছে বিভিন্ন গবেষণায়, তা রীতিমতো ভয়াবহ। শ্বাসযন্ত্রের এ ভাইরাস শুধু শ্বাসযন্ত্রেই সংক্রমণ ঘটায় না। এটি হৃদ্যন্ত্রে আক্রমণ করে এর পেশিগুলোকে দুর্বল করে ছন্দপতন ঘটায়। এটি মানুষের কিডনিকে এমনভাবে আক্রমণ করে যে কিছু হাসপাতালে কোভিড–১৯ রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস করার ব্যবস্থা করাটা অনেকটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। এটি স্নায়ুতন্ত্রেও ছড়াতে পারে যার মাধ্যমে এটি স্বাদ ও ঘ্রাণক্ষমতা কমিয়ে দেয়; কোনো কোনো ক্ষেত্রে একেবারে বিনষ্ট করে। এমনকি এই ভাইরাস মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে বড় বিপদও ডেকে আনতে পারে।
মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে থমকে গেছে পৃথিবী । বেড়ে চলছে মৃত্যুর মিছিল।বির অর্থনীতির চাকা,ভেঙে পড়েছে সরবরাহ ব্যবস্থা । জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে পরিবহন-যোগাযাগ বন্ধ। এমনকি পাশের বাড়ি কিংবা পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও আসা-যাওয়া নিষেধ। সব মিলিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় বিশ্বজুড়ে থমকে গেছে মানবজীবন। তবে এখানেই শেষ নয় । একদিন করোনার এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবে পৃথিবী। তখন কেমন হবে বৈশ্বিক অর্থনীতির চালচিত্র? অর্থনীতির বিশ্বখ্যাত বিশ্লেষক শুনিয়েছেন আশার কথা, ভয়াবহ এই মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিকে চিরতরে বদলে দেবে। স্থায়ী পরিবর্তন ঘটবে রাজনীতিরও।সূত্র ফরেন পলিসি ডটকম এর ।
এই মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিদ্যমান চারটি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই পরিস্থিতিগুলোর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, ক্রমবর্ধমান স্থবিরতা, অর্থাৎ উৎপাদনশীলতার নিম্ন প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ হ্রাস ও প্রায় মূল্যহ্রাসের পরিস্থিতি। মানুষ যত দিন ঝুঁকি নেবে না, তত দিন এই বাস্তবতা আরও ঘনীভূত হবে। মহামারির পর মানুষ সঞ্চয়ের হার বাড়িয়ে দিলেও এমনটি হবে। কারণ, এতে দীর্ঘ মেয়াদে চাহিদা ও উদ্ভাবন মার খাবে।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে , সংকটজনক পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতার ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলোর সঙ্গে অন্যান্য দেশের ব্যবধান আরও বেশি বাড়বে।
এরপর তৃতীয়টি হচ্ছে , অংশত নিরাপদ ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর দৃশ্যমান ঝুঁকির জন্য পৃথিবী মার্কিন ডলারের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়বে এবং আর্থিক খাত ও বাণিজ্যিক উভয় খাতেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগের জন্য আর অতটা আকর্ষণীয় না থাকলেও তখনো বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় তার আকর্ষণ বেশি হবে। এতে বিদ্যমান অসন্তোষ আরও বাড়বে।
এবং সর্বশেষ হচ্ছে , অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদের তোড়ে অনেক দেশ নিজেদের অন্যান্য দেশ থেকে আলাদা করে ফেলবে। এতে যে আবার পূর্ণাঙ্গভাবে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জিত হবে, তা–ও নয়, এমনকি তার কাছাকাছি কিছুও অর্জিত হবে না । কিন্তু এতে প্রথমোক্ত দুটি প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। আর তৃতীয় ধারার ক্ষেত্রে বঞ্চনাবোধ বাড়বে ।
ভারত-চীন সীমান্তে সংঘর্ষে জড়ানোর ঘটনা নতুন নয় ।আবারো ভারত-চীন সীমান্তে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দেশ দুইটির সেনাবাহিনী। শনিবার উত্তর সিকিমে অবস্থিত নাকুলাতে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দুপক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। -খবর আনন্দবাজার পত্রিকার ।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মুগুথাং পেরিয়ে ৫ হাজার ফুট উচ্চতায় নাকুলা সেক্টরে দুপক্ষের প্রায় ১৫০ সেনার মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ৪ জন ভারতীয় সেনা ও চীনা বাহিনীর ৭ জন আহত হয়েছেন। তবে সংঘর্ষটি বড় আকার ধারণ করার আগেই ঝামেলা মিটে যায়।
এই বিষয় নিয়ে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের পক্ষে সেনাবাহিনীর সদর দফতরে যোগাযোগ করা হয় কিন্তু এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই বলে সেখান থেকে বার্তা দেয়া হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর সাবেক এক সেনাকর্তা জানিয়েছেন নাকুলায় এ ধরনের ঘটনা সাধারণত ঘটে না ।
উল্লেখ্য, ভারত ও চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা আগেও ঘটেছে । ২০১৭ সালের আগস্টে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে প্যাংগং লেক এলাকায় দুপক্ষের সেনারা পরস্পরের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ।
অবশেষে যথেষ্ট মেডিকেল সহায়তার অভাবে কিডনির জটিলতায় অসুস্থ হয়ে মারা যান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচ সরকার । তার মেয়ে ডা. সুস্মিতা আইচ এর অভিযোগ একের পর এক হাসপাতাল ঘুরেও কোনো সহায়তা পাননি ।আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আমি ডাক্তার হয়েও কিছু করতে পারলাম না।’
গত বৃহস্পতিবার কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এই সরকারি কর্মকর্তাকে। সেখানেই গত শনিবার সকালে তিনি জ্বর, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন ।
যে ৩৩৩ হটলাইন নম্বর থেকে সরকার স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে, সেখানে দায়িত্বরত আছেন গৌতম আইচের মেয়ে ডা. সুম্মিতা।
ডাঃ সুস্মিতা বলেন , ‘কোভিড-১৯ এর কোনো উপসর্গ না থাকলেও অন্য কোনো উপায় না পেয়ে অনেক কষ্টে বাবাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করাই। বাবার আইসিইউ সাপোর্টটা খুব দরকার ছিল, কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। বাবার চিকিৎসাই হলো না, তিনি মারা গেলেন।’
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তার বাবা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত কি না, তা জানার চেষ্টাও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করেনি।
গত বৃহস্পতিবার ল্যাবএইড হাসপাতালে অতিরিক্ত সচিব গৌতমের ডায়ালাইসিসের সময় প্রেসার বাড়ার পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ল্যাবএইডের ইমার্জেন্সি থেকে চিকিৎসক মেয়ে সুস্মিতাকে ফোন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি বাবাকে ল্যাবএইডে ভর্তি করাতে বলি। কিন্তু তারা বলে, তাদের কনসালটেন্ট নেই, ভর্তি রাখতে পারবে না। তারা জানায়, ল্যাবএইডে তারা আইসিইউ সাপোর্ট দিতে পারবে না। তাই প্রেসার কমানোর ওষুধ দিয়ে বাসায় নিয়ে যেতে বলে। ল্যাবএইডে তিনি নিয়মিত যে ডাক্তারকে দেখান তিনিও সেদিন ছুটিতে ছিলেন।
‘আমার কাছে মনে হয়েছে বাসায় আনা ঠিক হবে না, এই মুহূর্তে অক্সিজেন দরকার। বিকেল ৪টায় ডায়ালাইসিস শেষ হয়, আমরা বাবাকে নিয়ে বিকেল ৫টার দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে যাই। তাদের কথা, শ্বাসকষ্ট যেহেতু হচ্ছে, কোভিড-১৯ কি না?
‘তার কোনো জ্বর ছিল না। আমি নিজে ডাক্তার পরিচয় নিয়ে সব কিছু বুঝিয়ে বললাম। তখন তারা বলল, কোনো রেফারেন্স ছাড়া তারা ভর্তি নিতে পারবে না। সেখানে আমরা কোভিড-১৯ টেস্ট করাতে চাইলে তারা আইইডিসিআর-এর কথা বলে। কিন্তু তারা (আইইডিসিআর) তো টেস্ট করানো বন্ধ করে দিয়েছে।’
পরে গৌতমকে নিয়ে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তার মেয়ে। সুস্মিতা বলেন, ‘তারাও টেস্ট করানোর কথা বলে স্কয়ারে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখান থেকে আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে নিয়ে আসি, কিন্তু তারা পেশেন্টকে দেখেইনি, চেকও করেনি। তারা বলে, ভর্তি নিতে পারবে না। যেহেতু আমি এই হাসপাতালে কাজ করেছি, আমি অতিরিক্ত পরিচালকের সঙ্গে কথা বলি। তিনি চেস্ট এক্সরে করিয়ে আনতে বলেন। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছিল বাবা স্ট্রোক করেছে। কারণ তার কথা বলা বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর তিনি কোভিড-১৯ টেস্ট করানোর কথা বলেন। ওখানে আইসিইউ সাপোর্ট দিতে পারবে না বলে জানানোয় স্কয়ারে নিয়ে যাই।
‘স্কয়ার বলে, আমাদের পক্ষে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়, আমরা টেস্ট বন্ধ করে দিয়েছি। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে যাই। তারা বলে, এই পেশেন্টকে কার্ডিয়াক সাপোর্ট দেওয়া দরকার, যেহেতু কিডনির পেশেন্ট । আমরা পারব না ,আমাদের এই সাপোর্ট শুরু হয়নি। এরপর সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী কার্ডিয়াকে যাই। তারা রাখতে পারবে না বলে জানায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা বলি, তারাও বলে, এই মুহূর্তে ভর্তি নেওয়া সম্ভব না। আমি মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালেও গিয়েছি।’
সুস্মিতা বলেন , ‘আমাদের আশপাশে এমন কোনো হাসাপাতাল নেই যেখানে ভর্তি করানোর চেষ্টা করিনি। পরে সাড়ে ৯টার পর যখন আর কিছু করার ছিল না তখন আমরা বাসায় এসে বসে থাকি। কারণ আমাদের আর কিছুই করার ছিল না।’
তিনি আরো বলেন ‘আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে একজন ডাক্তার হিসেবে আমি জানতাম বাবার কী হয়েছে, কিন্তু আমি কোথাও তাকে আইসিইউ সাপোর্টে নিতে পারলাম না। তার একটা আইসিইউ সাপোর্ট হলেই হতো, আমি তার হিস্ট্রিটা খুব ভালোমতোই জানি। বাবার সমস্যা মাঝে মাঝে খুব জটিল হয়, তার আইসিইউ সাপোর্ট দরকার হয়।’
সব হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি করাতে না পেরে বাবাকে নিয়ে যখন বাসায় বসে আছেন, তখন তাদের এক আত্মীয় অনেক চেষ্টার পর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একটা ‘সিট ম্যানেজ’ হয়েছে বলে জানান ।
সুস্মিতা বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে আমাদের একজন রিলেটিভ একটা রেফারেন্সে কুর্মিটোলায় একটা জেনারেল বেডের অ্যারেঞ্জ করেন। বাবার অক্সিজেনের খুব বেশি দরকার হওয়ায় তার কোভিড-১৯ এর কোনো উপসর্গ না থাকলেও তাকে ওই হাসপাতালে নিযে যাই । আলাদা কেবিনে রাখা হয় বাবাকে । শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বাবার অক্সিজেন ফল করতে শুরু করল । কোনো সরকারি ডাক্তার এ যায়নি। তারা আমাকে ওষুধ বুঝিয়ে দেয়, আমিই ওষুধ খাওয়াচ্ছি, আমার ভাই অক্সিজেন দিচ্ছে।’
সুস্মিতা বলেন, , শুক্রবার সকালে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাবেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আমরাও সেটাই চাইছিলাম। কোভিড-১৯ এর রিপোর্টটা পেলে সেই অনুযায়ী আমরা অন্য ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, প্রয়োজনে ভালো কোনো বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতাম। কিন্তু শুক্রবার সারা দিনেও তারা টেস্ট করায়নি। বাবা মারা যাওয়ার পর তারা বলছে, আগেই নমুনা নেওয়া দরকার ছিল। আমরা বললাম, এখন নিয়ে নেন। আমরা এখনো করাতে চাই।
‘আমি ডাক্তার হিসেবে মনে করি, বাবার কোভিড-১৯ এর কোনো উপসর্গ ছিল না। ডায়ালাইসিসের সময় তার আগেও এমন হয়েছে। এই অবস্থায় হাসপাতালগুলো চাইলেই তাকে ভর্তি নিতে পারত। কোভিড-১৯ সন্দেহ হলে প্রয়োজনে আইসোলেশনে রাখতে পারত, কিন্তু কেউ সেটা করেনি,’ বলেন সুস্মিতা আইচ সরকার ।
করোনার ভয়াবহ থাবায় পৃথিবী বেশ বদলে গেছে। নেমে এসেছে অদ্ভুত এক আঁধার। ক্রমান্বয়ে এ আঁধার বেড়েই চলছে। দিনের আলোতেও যেনো আজকাল নেই কোনো প্রাণ। সারা বিশ্ব কেবল কাঁদছে আর কাঁদছে। নীরব বোবা কান্না। যে কান্নায় কোনো শব্দ নেই, অশ্রু নেই, নেই গড়িয়ে পড়া চোখের জল। আছে শুধু আর্তি আর আহাজারি।
এমন এক ক্রান্তিলগ্নে একদল লোক বেশ নড়ে চড়ে বসেছেন। সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নীলনক্সায়। পত্র পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এদের সরব উপস্থিতি বেশ লক্ষ্য করার মতো। ধর্মীয় বিশ্বাসকে তারা বিজ্ঞানের ফলা দিয়ে গুঁতো দিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের মতে, করোনা ভাইরাস পৃথিবীতে এসেছে সমতার দাবি নিয়ে। তারা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য মানুষকে গিলে খাওয়ার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। বিজ্ঞানের এসব পুত্ররা বলছে, মানুষ সহ সকল প্রজাতিই যেহেতু প্রকৃতির অংশ সেহেতু প্রকৃতির উপর সবারই সমান অধিকার রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য প্রজাতিকে ঠকিয়ে আনুপাতিক হারের তুলনায় প্রকৃতির উপর মানবের অনেক বেশি আধিপত্য বিস্তারের জন্যই আজকের এ বিপর্যয়।
এ রকম একজন বিজ্ঞানপুত্রের সঙ্গে কিছু দিন আগে আমার দেখা। অশরীরী দেখা। কোন স্বাপ্নিক বা আধ্যাত্মিক দেখা নয়। ডিজিটাল সাক্ষাত। দেশের প্রখ্যাত একটি অনলাইন পোর্টালের মতামত কলামে দেখা মেলে তার। সেখানে তিনি বলেন, চারশো কোটি বছর আগে যখন এ পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব ঘটেনি, জীবন্ত জগতের পূর্বশর্ত যে কোষ তারও যখন আত্মপ্রকাশ ঘটেনি তখনো ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিলো। এ ভাইরাস জীবন্ত কোষ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরবর্তীতে তাদের চেয়েও অনেক বেশী উন্নত এককোষী ব্যাকটেরিয়া প্রায় তিনশো কোটি বছর আগে সালোক সংশ্লেষনের কাজটি শুরু করে এবং একটি পর্যায়ে পৃথিবীকে দান করে অক্সিজেন। তারই হাত ধরে পঁচাত্তর কোটি বছর আগে সবুজ শৈবাল আর পঁয়তাল্লিশ কোটি বছর আগে বহুকোষী সবুজ পত্রাবলির উদ্ভিদরাজি ফুলে-ফলে পৃথিবীকে অপূর্ব সুন্দর ও বর্ণাঢ্য করে তোলে। পোকা-মাকড়, স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখী, বানরকুল হয়ে সোজা হয়ে হাঁটা প্রবুদ্ধ মানুষের(হোমো সেপিয়ান্স) আগমন ঘটে গত চল্লিশ কোটি থেকে আড়াই লক্ষ বছরের মধ্যে। তার এই হোমো সেপিয়ান্স তত্ত্বকে যদি সঠিক বা সত্য বলে ধরে নিতে হয় তাহলে সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে হাজার হাজার বছর ধরে যে ধর্মের সত্যবাণী প্রকাশ পেয়েছে তা কি মিথ্যে? তা কি অমূলক? ধর্মবিশ্বাসী একজন মানুষ হিসেবে এ প্রশ্নটি আমাকে খুব খুরে খুরে খাচ্ছে। তবে হ্যাঁ, এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে ধর্ম কি বা এর স্বরূপ কি রকম সে সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করা নেহায়েত জরুরি হয়ে পড়েছে বলে আমি মনে করছি।
ধর্ম শব্দটিকে বিশ্লষণ করলে দেখা যায় “ধৃ” ধাতু থেকে এর উদ্ভব। “ধৃ” ধাতুর সঙ্গে মন প্রত্যয় যোগ করে ধর্ম শব্দটির উৎপত্তি। “ধৃ” ধাতুর অর্থ ধারণ করা। এ অর্থে যাকে ধারণ করে মানুষ পরম সত্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার নৈকট্য লাভে সক্ষম হয় তাই ধর্ম। সাধারণত সামাজিক জীবনের বৃহত্তর ঐক্যের মধ্যে যা মানুষের জীবনকে ধরে রাখে বা রাখতে চায় তাকেই ধর্ম বলে অভিহিত করা যেতে পারে।
তবে দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করলে ধর্মের বিভিন্ন স্বরূপের মুখোমুখি হতে হয়। বিভিন্ন দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও ধর্মবেত্তা গন বিভিন্ন ভাবে ধর্মকে পাওয়ায় প্রয়াস পেয়েছেন। ফলে ধর্ম সম্বন্ধে গড়ে ওঠে অসংখ্য মতবাদ। তন্মধ্যে কতিপয় উল্লেখযোগ্য মতবাদ পাঠকদের সফল জ্ঞাতার্থে তুলে ধরলাম।
ধর্মের স্বরূপ সম্বন্ধে দার্শনিক মূড় হেড এর ভাষায় বলা যায়, “Religion is a feeling of dependence upon unseen Powery which control our destiny, accompanied by a desire to come into friendly relation with men.” অর্থাৎ ধর্ম হলো এক অদৃষ্ট শক্তির উপর আত্মসমর্পণের অনুভূতি এবং সেই অদৃষ্ট শক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে মিলনের ইচ্ছা, যে শক্তি আমাদের ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ করে।
অনুভূতির দিক থেকে ধর্মের সংগা দিতে গিয়ে প্রখ্যাত দার্শনিক শ্লায়ার মায়ার বলেন, “স্রষ্টার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরতার অনুভূতিই ধর্ম।” ম্যাক্সমুলারের মতে, “ধর্ম হলো অসীমের প্রত্যক্ষণ বা উপলব্ধি।” আবার কান্ট ও ম্যাথুঅনিস্থ বলেন, “কর্তব্য পালন করাই ধর্ম”। অন্য একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও দার্শনিকের মতে, “ধর্ম হলো ঈশ্বরের ভালোবাসা এবং পরমাত্মার সাথে মিলন। এ হলো অতি উৎকৃষ্টের প্রতি আনুগত্য।” এভাবে বিভিন্ন দার্শনিক ও ধর্মবেত্তা গন ধর্মের স্বরূপ খোঁজে পেতে চেষ্টা করেছেন।
প্রকৃত পক্ষে যে স্রষ্টার উপর মানুষের নির্ভরতা বোধ জাগে, সেই স্রষ্টার প্রতি সক্রিয় বিশ্বাস ও আত্মসমর্পণই ধর্ম। বেত্তা গনের দৃষ্টিতে ধর্ম আবার দুটো আংগিকে বিভক্ত। একটি হলো অন্তরঙ্গ ও অন্যটি হলো বহিরাঙ্গ দিক। প্রেম, ভ্রাতৃত্ব, সেবা তথা মানবতাই ধর্মের অন্তরঙ্গ দিক, পক্ষান্তরে আচার অনুষ্ঠান তথা সামাজিকতাই ধর্মের বহিরাঙ্গ দিক। তাই বলা যায়, ধর্ম হলো মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ মূল্য গুলোর স্বীকৃত অর্থাৎ সত্য শুভ ও সুন্দরের উপলব্ধি।
কেউ কেউ এ উপলব্ধিকে ধারণ করে আবার কেউ কেউ এর বাইরে থেকে যুগ যুগ ধরে সৃষ্টি তত্ত্ব নিয়ে চিন্তা ভাবনা, পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষণা করে আসছেন। তারা যতোই এর নিগূঢ় রহস্য উদঘাটন করতে চেয়েছেন ততোই কৌতূহলী ও জিজ্ঞাসু হয়ে উঠেছেন। বর্তমান যান্ত্রিক সভ্যতার এ আধুনিক যুগেও তারা এ ব্যাপারে সমাধানের শেষ প্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি। বিজ্ঞান মনস্ক একটি দল এখন পর্যন্ত ভিন্ন মতাবলম্বীতে বিশ্বাসী থাকলেও সৃষ্টি সম্পর্কে যা জোরালো মতবাদ হিসেবে স্বীকৃত তার মূল কথা হলো, যে কোনো বিশেষ মূহুর্তে খোদার বিশেষ ইচ্ছার রূপায়ণ হিসেবে অবলীলাক্রমে জগৎ ও জাগতিক উপাদান সৃষ্টি করেন। সাধারণত ধর্মবেত্তা গন এই নিরপক্ষে সৃষ্টিবাদেরই বলিষ্ঠ সমর্থক এবং সকল ধর্মেই তা সমানভাবে সমাদৃত।
বস্তুত একমাত্র মহা শক্তির আধার আলেমুল গায়েব আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনই মানব সৃষ্টির দৃঢ় তথ্য ও সুগভীর রহস্য জানেন। তিনি কেনো যে মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে তৈরি করেছেন তা কেবল তাঁরই জগত। কারণ মানব সৃষ্টির ব্যাপারে ফেরেস্তাকুলের প্রতিবাদের উত্তরে মহান আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন, “ইন্নি আয়লামু মা লা তায়লামুন” অবশ্যই আমি যা জানি তোমরা তা জাননা। অর্থাৎ মানব সৃষ্টির পেছনে কি হিকমত বা রহস্য রয়েছে তা একমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তাই জানেন।
হিকমত বা রহস্য যাই থাকুক না কেনো উপরোক্ত আলোচনা ও সার্বিক বিচার বিশ্লষণের প্রেক্ষাপটে এ কথা অনস্বীকার্য যে, এ পৃথিবী, বিশ্বমন্ডল, নভোমন্ডল যা কিছু আছে তা ওই এক আল্লাহরই সৃষ্টি। যে সব বিজ্ঞানমনস্করা মনে করে পৃথিবী আপনাআপনিই তৈরি হয়ে গিয়েছে এবং ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার “হোমো সেপিয়ান্স” তত্ত্ব কথার ঢোল দিয়ে বেড়ায় তাদের জন্য আমার করুণা হয়। কারণ তাদের এসব তত্ত্ব কথা মোটেও সঠিক ও সত্য নয়। কোনো শিল্পীর নিখুঁত শিল্পায়ন ছাড়া কি এ পৃথিবী, এ বিশ্ব ভ্রম্মান্ড এতো জৌলুস ও সুবিন্যস্ত হতে পারে? মানব সৃষ্টি, এর দেহ ও আকৃতি এক বিস্ময়কর শিল্প। কে এই শিল্প কলার শিল্পী? ভাইরাস? ব্যাকটেরিয়া? ওইসব বিজ্ঞানপুত্ররা? নাকি এক ফোঁটা রক্ত জমাটের মাঝে যিনি প্রতিস্থাপন করেন এক সুন্দরের অবয়ব তিনি?
জন্মে বিশ্বাসী নয় এমন বেজন্মা বুদ্ধি বিক্রেতাদের আমি শুধু মনে করিয়ে দিতে চাই, ধর্ম মানুষকে অধিকার দিয়েছে। ইচ্ছে করলে কেউ ধর্ম পালন করবে, কেউ করবেনা। এটা নিজস্ব এখতিয়ার। কিন্তু ধর্ম বিশ্বাসীদের মনে বা অনুভূতিতে আঘাত হানার অধিকার ধর্ম কাউকে দেয়নি।
করোনার কারণে থমকে গেছে বৈশ্বিক অর্থনীতি । করোনার এই অর্থনৈতিক ধাক্কার ফলে আরব দেশগুলো বৈধ অভিবাসী কর্মীদের ছাঁটাই করে ফেরত পাঠাতে চাইছে। অবৈধ কর্মীদের পাঠিয়ে দিচ্ছে। লাখো মানুষ ফিরলে সঙ্গনিরোধের ঝক্কির সমান বড় হয়ে আসবে তাঁদের জীবিকা ও প্রবাসী আয়ের সংকট। কিন্তু সরকারের প্রস্তাব, দেনদরবারে টলছে না দেশগুলো ।
বেকার কর্মীদের ফিরিয়ে নিতে এপ্রিলের শুরু থেকেই সরকারকে চাপ দিচ্ছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশ । বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে পাঁচ–সাত লাখ কর্মী ফেরার আশঙ্কা করলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, সংখ্যাটা ১০ লাখ ছাড়াতে পারে।
সৌদি আরব ও কুয়েতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু প্রবাসী কর্মী ফোনে জানান , অভিবাসী কর্মীদের বেশির ভাগই চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। এখন কাজ নেই। অবৈধ ব্যক্তিরা কোনো কাজই পাচ্ছেন না। জীবন হয়েছে মানবেতর, অনেকেই দেশে ফেরার পথ খুঁজছেন।
ফেরত পাঠানোর জন্য কুয়েত সরকার বাংলাদেশের অবৈধ কর্মীদের জড়ো করেছে অস্থায়ী আটক শিবিরে । শিবিরগুলোর বাসিন্দারা বলছেন, তাঁদের মোট সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। মাজ্জাত আটক শিবিরে থাকা একজন কর্মী জানান , ২২ দিন ধরে বড় একটা স্কুলঘরে গাদাগাদি করে ৬০০ জন আছেন। খাবারের কষ্টের কথা বললে পুলিশ বেদম মারছে। বিভিন্ন শিবিরে চারজন মারা গেছেন। তিনি বলেন, ‘দূতাবাসে দিনে ফোন দিয়েও কাউকে পাই না। আমাদের বাঁচান।’
ইতিমধ্যে সংক্রমণের ভয়ে জেল ও আটকশিবির খালি করে অবৈধ কর্মীদের পাঠানো শুরু হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ৩৬৯৫ জন ফিরেছেন। সবাইকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বা সঙ্গনিরোধে রাখতে হচ্ছে। ৬ মে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় আগামী কয়েক সপ্তাহে ফিরবেন প্রায় ২৯ হাজার জন, বেশির ভাগই মধ্যপ্রাচ্য থেকে।সরকারের জনশক্তি প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসাবে, অভিবাসী কর্মীদের প্রায় ৮০ ভাগই আছেন মধ্যপ্রাচ্যের আট দেশে। প্রবাসী আয়ের অর্ধেকের বেশি তাঁরাই পাঠান। কর্মী বেশি ফিরতে পারে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত ও ওমান থেকে। এই পাঁচ দেশ বাংলাদেশের শীর্ষ ১০টি প্রবাসী আয়ের দেশের মধ্যে পড়ে। বাহরাইন, লেবানন আর জর্ডান থেকেও অনেক কর্মীকে ফিরতে হবে। রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ায় কারখানায় কাজ বন্ধ তাই বেতন পাচ্ছেন না অনেকে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, করোনাকালে মধ্যপ্রাচ্যের তেলনির্ভর অর্থনীতি গত ৪০ বছরে সবচেয়ে বড় ধাক্কার মুখে পড়ছে। আর আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলছে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) আরব দেশগুলোতে ৫০ লাখ লোক চাকরি হারাতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে লাখ লাখ কর্মীর ফেরা ঠেকাতে সরকার যৌথ তহবিল গড়ার প্রস্তাব দিয়েচে কিন্তু মঞ্চে না আরব দেশগুলো ।
প্রবাসীকল্যাণ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তিনজন কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ শ্রমিক অদক্ষ । তাঁরা নির্মাণ খাতেই কাজ করেন বেশি। অর্থনৈতিক চাপে ব্যয় সংকোচনের কারণে দেশগুলোতে এই খাতের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে । অন্যান্য খাতের শ্রমিকেরাও এখন বেকার । হাজার হাজার শ্রমিক দেশগুলোর সরকারি খরচে বাংলাদেশে ফিরতে নিবন্ধন করেছেন। দুই দিনে ১০টি উড়োজাহাজে কর্মী পাঠাতে চেয়েছিল বাহরাইন। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের পর ধাপে ধাপে পাঠাতে রাজি হয়েছে।
এদিকে করোনার ভয়ে গত জানুয়ারি-মার্চে দেড় লাখের বেশি প্রবাসী শুধু মধ্যপ্রাচ্য থেকে ছুটি নিয়ে দেশ ফিরেছিলেন। তাঁদের কাজে ফেরার সুযোগ বন্ধ হচ্ছে। গত দুই মাসে এক লাখের বেশি নতুন কর্মী যেতে পারেননি। বেকারের তালিকায় তাঁদের নামও উঠবে। সব মিলিয়ে অর্থনীতির খুঁটি প্রবাসী আয় বিপন্নতর হবে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ এ খাবার জীবাণুমুক্ত করা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৭টি পরামর্শ দিয়েছে ইউনিসেফ।
চিকিৎসকরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে জোরদার করার জন্য উৎসাহিত করছেন যেহেতু কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্নরাই রয়েছে ঝুঁকিতে । আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জোরদার করার অন্যতম প্রধান উপায় হলো খাবার । ভয়াবহ এই ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর খাবারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
লকডাউনের এই সময়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ধরে রাখতে ৭টি পরামর্শ দিয়েছে ইউনিসেফ। যার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো হলো খাবার জীবাণুমুক্ত করা ও প্যাকেটজাত খাবার জীবাণুমুক্ত রাখতে করণীয়।
ইউনিসেফের ৭ পরামর্শ-
১. খাবার ও খাবারের মোড়ক থেকে করোনা সংক্রমণ হতে পারে। নিজে বাজার করুন কিংবা হোম ডেলিভারি নেন- বাজারের ব্যাগ, খাবারের মোড়ক কিংবা কাঁচা তরকারির ওপরে করোনাভাইরাস পড়ে থাকতে পারে । যা স্পর্শ করলে এবং হাত পরিষ্কার না করলে আপনিও আক্রান্ত হতে পারেন করোনাভাইরাসে। তাই বাইরে থেকে আনা যেকোনো জিনিস স্পর্শ করার পরই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে ।
২. খাবারের মোড়ক ময়লার ঝুঁড়িতে ফেলে দিতে হবে । খাবারের কৌটা খোলার আগে তার বাইরের অংশে জীবাণুনাশক ব্যবহার করে মুছে নিতে হবে । কাঁচা তরকারি ধুতে হবে বহমান পানিতে । সম্ভব হলে সেখানেও সাবান ব্যবহার করতে পারেন । তারপর হাত ধুয়ে ফেলুন।
৩. রান্না ও খাবার পরিবেশনের আগে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে ।
৪. মাছ ও মাংস কাটার জন্য আলাদা ‘চপিং বোর্ড’ ব্যবহার করুন।
৫. যেসমস্ত খাবার নষ্ট হতে পারে তা ফ্রিজে রাখুন। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৬. ঘরের বর্জ্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি স্থানে ফেলতে হবে। একটি ব্যাগে সব বর্জ্য বেঁধে ফেলা উচিত।
৭. খাবার পরিবেশন ও খাওয়ার আগে থালা-বাসন-চামচ পরিষ্কার করে নিতে হবে । ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। এছাড়া পরিবারের সব সদস্যের হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরী করুন ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন পোশাকশিল্পের কর্মকর্তা সহ ৯৬ জন শ্রমিক । সংক্রমিতদের ৮০ শতাংশ শ্রমিকই ঢাকা বা তার আশপাশের শিল্প এলাকায় কর্মরত ছিলেন।দেশের বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকরা বেশি হারে সংক্রমিত হচ্ছে ।কারখানা চালুর পর তুলনামূলক কম দিনে বেশিসংখ্যক পোশাকশ্রমিক সংক্রমিত হচ্ছে ।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির এক গবেষণায় পাওয়া যায় পোশাকশ্রমিকদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ ও ৪৭ শতাংশ নারী। তা ছাড়া আক্রান্তদের ৫০ শতাংশের বয়স ২৫-৩৫ বছর। ৪০ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছর। আর ১০ শতাংশের বয়স ৩৫ বছরের ওপরে। বিগত ২৬ এপ্রিল পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার পর ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ শতাংশ শ্রমিক। তার মানে, কারখানা চালুর পর তুলনামূলক কম দিনে বেশিসংখ্যক পোশাকশ্রমিক আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপ্রধান তাসলিমা আক্তার। আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও অর্থ সম্পাদক প্রবীর সাহা।
এই গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতিটি গত ৯ এপ্রিল থেকে গতকাল ৬ মে পর্যন্ত দেশের ২৫টি গণ্যমাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণা করে । তবে আক্রান্ত ৯৬ জনের মধ্যে ১৪ জনের বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল না তাঁরা কোন শিল্পের শ্রমিক। পরবর্তী সময়ে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন আক্রান্ত ১৪ জনই পোশাকশ্রমিক। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত তিন জন করোনা আক্রান্ত , ১০ পোশাকশ্রমিক ও একজন কর্মকর্তা মারা গেছেন। অন্যরা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৫ শতাংশের বয়স ৩৫ বছরের কম। আক্রান্ত ৯৭ জনের মধ্যে ৪৬ জন চিকিৎসারত । ১৬ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন বা ছিলেন। বাকিরা রয়েছেন নিজেদের হোম কোয়ারেন্টিনে। অধিকাংশ শ্রমিকই ছোট ঘরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গাদাগাদি করে ঘিঞ্জি এলাকায় বসবাস করেন। ফলে কোয়ারেন্টিনে থাকা শ্রমিকের মাধ্যমে পরিবারের অন্য সদস্য বা প্রতিবেশীদের আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪টি জেলায় পোশাকশ্রমিকদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তার মানে, আক্রান্ত শ্রমিকদের মাধ্যমে জেলাগুলোতেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গণমাধ্যমে পোশাকশ্রমিক আক্রান্ত হওয়ার খবর এর তুলনায় তাঁদের চিকিৎসা এবং সুস্থ হওয়ার খবর আসছে কম । এখন পর্যন্ত গণমাধ্যমে মাত্র দুইজন শ্রমিক সুস্থ হওয়ার খবর মিলেছে। গবেষণার ফলাফল প্রকাশের পাশাপাশি সাত দফা দাবি তুলে ধরেন তাসলিমা আক্তার। তিনি বলেন, লকডাউন কার্যকর না হওয়া ও কারখানা খুলে দেওয়ায় পোশাকশ্রমিক ও দেশবাসী বিরাট স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এ অবস্থায় কারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা দরকার। সাভার, আশুলিয়াসহ অন্যান্য এলাকার আক্রান্ত কারখানাগুলো লকডাউন করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সব নাগরিকের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা, আক্রান্ত পোশাকশ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিৎসা, বর্তমান দুর্যোগে কারখানা লে-অব ও কোনো শ্রমিক ছাঁটাই না করা, শ্রমিকদের ৬০ শতাংশ নয়, শতভাগ মজুরি প্রদান করাসহ কয়েকটি দাবি করেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা।
স্পেনের জাতীয় সতর্কতার মেয়াদ ২৪ মে পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে করোনায় বিপর্যস্ত স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও ফলপ্রসু হলে জুন মাসের শেষের দিকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরবে স্পেন।মারণব্যধি করোনা ভাইরাস এর কারণে স্পেনে আরোপিত কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হলেও সামাজিক দূরত্বের বিধানসহ কিছু বিধিনিষেধ বা লকডাউন থাকছে । গত বুধবার কংগ্রেসে এ সংক্রান্ত ‘হ্যাঁ’-‘না’ ভোটের জয়ী হওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। এছাড়াও স্পেনে করোনা মহামারির প্রথম পর্যায়ের সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, জনগণ এতদিন নিয়মবিধি মেনে চলায় তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে। আগামীতেও মানুষের আচরণের ওপর বর্তমান সংকটের গতিপ্রকৃতি নির্ভর করবে।
গত শুক্রবার (১ মে) সব গুজবের অবসান ঘটিয়ে প্রায় ২০ দিন পর জনসম্মুখে এসেছিলেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। এর আগে কিম জং উন গুরুতর অসুস্থ আছেন বলে প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে । আবার কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছে যে মারা গেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিমের সাম্প্রতিক ছবি পোস্ট করে অনেকেই দাবি করেছেন জনসম্মুখে আসা কিম আসল নয়। সেটি তার ডাবল বডি অর্থাৎ অবিকল কেউ।
সেখানে একটি ছবিতে কানের আকৃতি তুলনা করা হয়েছে। যেখানে স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। তবে এর মধ্যে বেশির ভাগ ছবিই বেশ পুরনো।
চিনা ব্লগার জেনিফার জেং ই প্রথম বডির বিষয়ে টুইট করেন । ওই টুইটে জেনিফার জেন বলেন,মে দিবসে যিনি প্রকাশ্যে এসেছেন তিনি কি আসল! ৪টি জিনিস দেখতে হবে- ১)দাঁত, ২)কান, ৩)চুল ও ৪)তার বোন।
এমনকি সাধারণ মানুষের মধ্যেও তৈরি হয়েছে এমন প্রশ্ন। এ নিয়ে আরেকজন টুইটে লিখেছেন, আমার মনে হয় সে মারা গেছেন এবং তার অবিকল কাউকে সেখানে আনা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সাবেক এমপি লুইস মেনশ ও কিমের সাম্প্রতিক ছবি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন ।এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এটা ওই মানুষটি না। তবে আমি তর্কে যাবো না। তার দাঁতের আকার এবং ঠোঁটের উপরে কিউপিড বো সম্পূর্ণ আলাদা – ডেইলি স্টার।
করোনা ভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ইতালি । ইতালিতে সবচেয়ে বেশি করোনায় সংক্রমিত এলাকা মিলানো লম্বারদিয়া। প্রায় এক লাখের মতো বাংলাদেশির বসবাস সেখানে । এই পর্যন্ত করোনার কারণে মারা গেছেন ৮ বাংলাদেশি ।
এ দিকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশিদের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আর্থিক সহায়তা দিতে প্রতিটি দূতাবাসে সরকার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে।এরই ধারাবাহিকতায় মিলান কনস্যুলেট অফিসে প্রবাসী যারা আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে তাদের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেবল মাত্র করণে আক্রান্ত প্রবাসী রাই এই টাকা পাবে ।
তবে কনস্যুলেট অফিসের এরকম বিজ্ঞপ্তিতে প্রবাসীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রবাসীদের প্রশ্ন- করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বাসায় বা হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে কিভাবে আবেদন করবে একজন করোনা রোগী ।
তাছাড়া অবৈধ অসহায় অভিবাসীদের সহায়তার ব্যাপারে উল্লেখ নেই বিজ্ঞপ্তিতে। এ পর্যন্ত এ ভাইরাসের ছোবলে ইতালিতে ৮ বাংলাদেশি মারা গেছেন। এর মধ্যে ৭ জনই ইতালির উত্তরের। ১০ লাখ টাকার মধ্যে মারা যাওয়া পরিবার কত পাবে এরপরে অন্যদেরকে কত করে দেয়া হবে- এ প্রশ্ন এখন প্রবাসীদের মাঝে ঘূরপাক খাচ্ছে যেখানে ইতালিতে মাসে ১ জন বাংলাদেশির বসবাসের জন্য কমপক্ষে মাসে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয় ।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিদেশ থেকে প্রায় ২৮ হাজার ৮৪৯ জন প্রবাসী নাগরিক দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। বুধবার ( ৬ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবাসী নাগরিকদের জন্য করণীয় নিয়ে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে এক ভিডিওবার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহে ২৮ হাজার ৮৪৯ জন প্রবাসী নাগরিক দেশে ফিরবেন। গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ৩৬৯৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক ফিরেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের জেলে অবস্থানরত প্রবাসী শ্রমিকদের মাফ করে দেওয়া হয়েছে। কুয়েত সরকার অনিবন্ধিত শ্রমিকদের ক্ষমা করে দিয়েছেন কুয়েত সরকার। প্রায় সাড়ে চার হাজার বাংলাদেশি অনিবন্ধিত রয়েছেন সেখানে । আমরা তাদের ফেরত নিয়ে আসবো। তিনি বলেন, মালদ্বীপে প্রবাসীদের অসুবিধা যেন না হয়, সেখানে আমরা খাবার পাঠিয়েছি। আগামীকাল সেখান থেকে ৪শ বাংলাদেশি দেশে ফিরবেন।কুয়েত থেকে বাংলাদেশিরা ফিরবেন। ওমান থেকে ফিরবেন। সৌদি আরব থেকে চার হাজার বাংলাদেশি ফিরবেন। ইরাকে চাকরিচ্যুত লোকদের ব্যাপারে দেখছি। তিনি জানান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে কেউ করোনা ভাইরাসে মারা গেলে সেখান থেকে মরদেহ দেশে আনা যাবে না। তারা তাদের দেশে দাফন করবে। তবে অন্য কোনো দেশ থেকে পাঠালে সেই মরদেহ পরিবারের কেউ দেখতে পাবেন না। তাই আমরা চাই, যেখানেই কেউ মারা যান, সেখানেই দাফন করা প্রয়োজন। সেটা হলেই ভালো হবে।
গাজীপুরে অবস্থিত বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত পোশাকশ্রমিকের করোনা পজিটিভ এসেছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ। আক্রান্তের সংখ্যা সাত জন ।আক্রান্তরা তাদের গ্রামের বাড়িতে নমুনা পরীক্ষার জন্য দেয়ার পর তাদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়ে। বর্তমানে সবাই গাজীপুরে অবস্থান করে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, গাজীপুরে কর্মরত মোট সাতজন পোশাকশ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে জয়পুর হাটের বান্দগিহি গ্রামের বাসিন্দা এক পোশাকশ্রমিক গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পুরান বাজারে ভাড়ায় বসবাস করে স্থানীয় এসএম নীটওয়্যার কারখানায় কাজ করেন।
তিনি গত ২৪ এপ্রিল জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার নমুনা পরীক্ষায় পসিটিভ আসে । এরপর ২৮ এপ্রিল থেকে তিনি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সুনামগঞ্জের আরেক পোশাকশ্রমিক সদর উপজেলার ভবানীপুরে বসবাস করে লিথি অ্যাপারেল নামের কারখানায় কাজ করেন। গত ২২ এপ্রিল তাহেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার নুমনা দেয়া হলে সেখানে তার নমুনা করোনা পজিটিভ আসায় নিজ বাসা থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।
এছাড়া সুনামগঞ্জের কাউন্দি গ্রামের বাসিন্দা এক নারী পোশাক শ্রমিকের করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় তিনি ২২ এপ্রিল তাহেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার নমুনা পরীক্ষা করতে দেন। একই গ্রামের বাসিন্দা আরো দুই নারী পোশাকশ্রমিকও একই দিন ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের নমুনা পরীক্ষা করতে দেন। নমুনা পরীক্ষার পর তাদের সবার করোনা পজিটিভ আসে। আক্রান্ত এই তিন নারী শ্রমিক গাজীপুরের ভবানীপুরে বসবাস করে লিথি অ্যাপরেলস ও প্যানউইন ডিজাইন লিমিটেড কারখানায় করেন। বর্তমানে ওই তিন নারী পোশাকশ্রমিক নিজেদের ভাড়া বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর আগে টঙ্গী ও গাছা এলাকার আরো দুই পোশাকশ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আজ বুধবার থেকে সেখানের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাওয়া শুরু করেছে। এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, উহানের স্কুলগুলোতে এখনো মুখে মাস্ক পরে থার্মাল স্ক্যানার পার হয়ে সারিবদ্ধভাবে বিদ্যালয়ে ঢুকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বসার জায়গায় মিটার দূরত্ব রাখা হয়েছে ,সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকেরাও। কেবল বড় শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল খোলা হলেও ছোট ও মাঝারি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল কবে খোলা হবে, তা এখনো জানানো হয় নি।
স্কুল খোলার মধ্য দিয়ে একেবারেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেল হুবেই প্রদেশের উহান শহর। এই শহর থেকেই মরণব্যাধি করোনা মহামারির উৎপত্তি। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।চীনের অন্য শহরগুলোতে গত মাসেই স্কুল খুলে । উহানের কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষার্থী ও কর্মীদের স্কুলে ফিরে যাওয়ার আগে অবশ্যই ভাইরাসের পরীক্ষা করা হবে এবং ক্যাম্পাসগুলো জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। পুনরায় স্কুল খোলার প্রস্তুতি হিসেবে স্থানীয় স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের বসার ডেস্কগুলোর মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়েছে। প্রায় ১২১টি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র স্কুল শিক্ষার্থীরা অনেক দিন পর ডিজিটাল ডিসপ্লের বদলে সাধারণ চক বোর্ডে ফিরে এসেছে। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে গত জানুয়ারি থেকে উহানের সব কিছু বন্ধ রাখা হয়।
বেশ কিছু শর্ত সাপেক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জোহর থেকে সাধারণ মুসিল্লরা মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে আজ বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দেশে জনসমাগমের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমা ও তারাবির জামাত সীমিত আকারে আদায়ের জন্য নির্দেশনা জারি করেছিল। দেশের শীর্ষ আলেম-ওলামাগণ পবিত্র রমজানের গুরুত্ব বিশেষ ভাবে বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবর দাবি জানিয়েছেন। এর মধ্যে সরকার সার্বিক বিবেবচনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে।
প্রজ্ঞাপন এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নির্দেশনা (স্বাস্থ্যবিধি) মেনে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জোহর থেকে সুস্থ মুসল্লিদের মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ।শর্তগুলো হলো — মসজিদে কারপেট বিছানো যাবে না , পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে , মুসল্লিরা নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন , মসজিদের প্রবেশদ্বারে জীবাণুনাশক , হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে। মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে।
প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু ও সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে। নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব, অর্থাৎ, তিন ফুট পরপর দাঁড়াতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে।শিশু- বয়োবৃদ্ধ-অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশ নিতে পারবেন না এবং মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ বা টুপি ব্যবহার করা যাবে না ,মসজিদে ইফতার ও সাহরির আয়োজন করা যাবে না।
মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরবর্তী পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে অস্ট্রেলিয়া সরকার বল পলিশে লালা ঘাম ব্যবহার নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ইএসপিএন ক্রিকইনফো। অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকজন সনামধন্ন চিকিৎসক, ভাইরোলজিস্ট, বিভিন্ন ক্রীড়াপ্রতিষ্ঠান, ক্রিকেটারদের এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট এসোসিয়েশন।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বরাত দিয়ে ইএসপিএন ক্রিকইফো জানিয়েছে দেশটির লেভেল এ, বি ও সি প্রতি ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি শেষ হয়ে খেলা শুরু হলে ধীরে ধীরে সব লেভেলে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। অনুশীলন ম্যাচ, নেট প্র্যাকটিস, ওয়ার্মআপ এমনকি ব্যক্তিগত অনুশীলনেও এ আইন জারি হবে। কোনো ক্ষেত্রেই লালা বা ঘাম বল পালিশে ব্যবহার করা যাবে না।
এমনটা ঘটলে বলে সিম-সুইং আনতে বোলাররা কোন পদ্ধতি ব্যবহার করবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এক্ষেত্রে কৃত্রিম বস্তু ব্যবহারের কথা ভাবছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। তারা বলছে, এখন থেকে বল পালিশে বিকল্প কোনো কৃত্রিম তরল বা বস্তু ব্যবহার করার অনুমতি দেবে হয়ত আইসিসি।এতে বল বিকৃতির সুযোগ তৈরি হবে কিনা প্রশ্নে আইসিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বল বিকৃতি রুখতে মাঠ আম্পায়ারের তদারকিতে সেই বল পালিশ করতে হবে।
দেশব্যপী এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাস তথা কোভিড-১৯-এ সংক্রমিতদের মধ্যে প্রায় আটশ জনের শরীরে কোনো লক্ষণ-উপসর্গ নেই। এদের কেউ কেউ নিজেদের বাসায় আর কেউ হাসপাতালে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।গত শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সবশেষ তথ্য তুলে ধরার সময় অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা একথা বলেন। তিনি জানান, একদিনে আরও ৫৭১ জনের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ২৩৮ জন। আর একইসময়ের মধ্যে আরও ২ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০ জন হয়েছে। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় আটশ জনেরই শরীরে কোনো লক্ষণ-উপসর্গ নেই। তাদের সবাই সুস্থ আছেন। কিন্তু পরপর দু’টি টেস্ট করতে হয়। সেটির মধ্যে কারও একটি টেস্ট হয়েছে, কারও বাকি আছে। কারও কারও একটিও টেস্ট হয়নি। কারণ এটি সময়ের ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, ‘করোনার লক্ষণ-উপসর্গ সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যাওয়ার পরই আমরা এই রিপিট টেস্টগুলো করে থাকি। এই আটশ শনাক্ত রোগীরা বাসায় আছেন এবং কিছু হাসপাতালে আছেন।’
মারণবিধি করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনজীবী দের সংগঠন বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।
বার কাউন্সিলের মানবাধিকার ও লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যার মো. মোখলেসুর রহমান বাদল জানান , বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এক কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে দেয়া হবে ।
রোজার ঈদের আগেই সব তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছে বিজিএমইএ৷ করোনায় আক্রান্ত শ্রমিকদের দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতিতে কারখানা খুলছেন মালিকেরা ৷ যদিও এখনও প্রায় তিনশ কারখানার শ্রমিকরা বেতন পাননি৷ বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আরশাদ জামাল জানিয়েছেন, ঈদের আগেই সব তৈরি পোশাক কারখানা খুলে যাবে৷ আর তৈরি পোশাক মালিকদের এই সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘করোনায় কোনো শ্রমিকের কিছু হলে সব দায়িত্ব আমরা নেব৷’ বিজিএমইএ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকা, গাজীপুর, সাভার , আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের প্রায় ৮৯০টি কারখানা চালু হয়েছে৷ শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন৷ মোট শ্রমিকদের ৪২ ভাগ কাজে যোগ দিতে পেরেছেন৷ আরশাদ জামাল দিপু বলেন, ‘আমরা ফেইস বাই ফেইস পোশাক কারখানা খুলে দেব৷ বাইরের জেলাগুলো থেকে যেহেতু যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে তাই সেখান থেকে শ্রমিকদের আসতে নিষেধ করেছি ৷ তবে আগামী ৭ তারিখের পরে এই সমস্যা থাকবে না বলে মনে হয়৷ ঈদের আগে অবশ্যই সব পোশাক কারখানা খুলে দেয়া যাবে৷’ বিজিএমইএ বর্তমানে যে কারাখানাগুলোর হিসেব দিচ্ছে সেগুলো আসলে সরাসরি পোশাক রপ্তানি করে৷ বিজিএমই বলছে এ রকম পোশাক কারখানার সংখ্যা দুই হাজার ২৭৪টি ৷ সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোতে ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৪১৭ জন শ্রমিক আছেন৷ কিন্তু বাস্তবে পোশাক কারখানার সংখ্যা সারাদেশে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি – কারণ অনেক কারখানা আছে যারা সাব কন্ট্রাক্টে কাজ করে৷ এসব কারখানায় ৫০ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন৷ শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, সারাদেশে এপর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজারের বেশি পোশাক কারখানা খুলেছে৷ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘আমাদের হিসেবে সারাদেশে তিন হাজারের মতো পোশাক কারখানা খুলেছে৷ ১ মে এর পর ধীরে ধীরে সব কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷’
বিজিএমইএ বলছে, কারখানাগুলোর ভেতরে এবং শ্রমিকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই কারখানাগুলো খোলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷ এটা নিশ্চিত করার জন্য মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে৷ রুবানা হক আরো জানান, ‘যেসব কারখানা খোলা হয়েছে তার ভেতরের ছবি আমরা সংগ্রহ করছি যাতে সেখানকার পরিস্থিতি বোঝা যায়৷ কেউ যদি কোভিড আক্রান্ত হন তা যেন গোপন করা না হয়৷ আমাদের ওয়াচ কমিটি আছে৷ আমাদের সাথে চিকিৎসকরা আছেন৷ কোনো শ্রমিক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, বিপদে না পড়েন সেটা আমরা দেখব৷ যদি কোনো শ্রমিকের কোনো কিছু হয় তাহলে সম্পূর্ণ দায়ভার আমাদের৷ আমরা তার খরচ থেকে শুরু করে সবকিছু দেখব – শ্রমিকদের করোনা টেস্টের জন্য চারটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনেরও উদ্যোগ নিয়েছি৷’ তিনি আরো বলেন, ‘যেইসব শ্রমিক আগেই এসেছেন বা গ্রামের বাড়িতে যাননি তাদের দিয়েই কারখানা খুলছি সীমিতভাবে৷ কোনো কোনো শ্রমিক বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে চাকরির জন্য৷ তাদের আমরা নিরুৎসাহিত করছি৷ তাদের আমরা এপ্রিল মাসের বেতন পৌঁছে দেব৷’ তবে সারাদেশে জরুরি সেবার বাইরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে পোশাক কারখানায় ফিরছেন৷ বিশেষ করে ফেরিঘাটগুলোতে শ্রমিকদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা যাচ্ছে৷ শ্রমিক নেতা সিরাজুল বলেন, ‘কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও সামজিক দূরত্বের কিছু ব্যবস্থা নেয়া হলেও বাস্তবে তা পর্যাপ্ত নয়৷ সব কারখানা মেশিনগুলোর দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারেনি৷ তবে মালিকরা বলেছে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসার দায়িত্ব নেবেন৷’
গত তিন মাসে পোশাক কারখানার সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ ভাগের মতো অর্ডার বাতিল হয়েছে৷ যার পরিমাণ তিন বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি৷ তবে এটাকে পুরোপুরি বাতিল বলা যাবে না৷ বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আরশাদ জামাল দিপু জানান, ৩০ ভাগের মতো অর্ডার বাতিল হয়েছে৷ আরও ২৫ থেকে ৩০ ভাগের মতো অর্ডার হোল্ড আছে৷ অর্ডার হোল্ড, বাতিল, বিলম্ব সব মিলিয়ে ৬০ ভাগ হবে৷’ তিনি বলেন, ‘মাসে দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়৷ সেই হিসেবে তিন মাসে সাত বিলিয়ন ডলার বা তার কিছু বেশি অর্ডার ছিল৷’ তবে এই সব অর্ডার শেষ পর্যন্ত বাতিল হবে না৷ অর্ডার ফিরে আসছে৷ আবার কিছু অর্ডার হয়তোবা পরের বছর অ্যাডজাস্ট হবে৷ সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত ২৫ ভাগ অর্ডার চূড়ান্তভাবে বাতিল হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিজিএমইএর এই সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট৷ তিনি বলেন, ‘ক্রেতারা তো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি৷ ইউরোপ এর ৬২ ভাগ দোকান বন্ধ৷ কিন্তু চীনে খুলছে৷ আরও কিছু কিছু দেশে ক্রেতারা তাদের ব্যবসা খুলতে শুরু করেছে৷ ফলে ক্যান্সেল বা স্থগিত হওয়া অর্ডার আবার ফিরে আসছে৷ সুইডেনতো বলেই দিয়েছে অর্ডারের টাকা আমাদের দিয়ে দেবে৷ বিজিএমইএ জানায়, এই পর্যন্ত অর্ডারের ৩.১৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে ক্রেতাদের কাছ থেকে৷ যারা অর্ডার ক্যান্সেল করেছে তাদের কেউ ১৮০ দিন পরে পেমেন্ট করার কথা বলছে৷ কিন্তু কাঁচামালের দায় কে নেবে? বাংলাদেশের পোশাক খাতে এখনো নতুন অর্ডার আসা শুরু হয়নি৷ মোটামুটি দেড় মাসের অর্ডার জমে আছে৷ যেগুলো না দিলেই নয় সেইগুলো এখন সীমিত পরিসরে তৈরি করে দেয়া হচ্ছে বলে জানায় বিজিএমইএ৷
করোনা ভাইরাসের জন্য পুরো বিশ্ব যেন থমকে গেছে ,চলছে তোলপাড় । ভ্যাকসিন এর খোঁজে অন্তত ৮০টি জায়গায় স্বতন্ত্র গবেষণা চলছে অনবরত । অনেকের ই দাবি , প্রায় সেরে ফেলেছেন গবেষণা। এক্ষেত্রে সবার থেকে এগিয়ে সিনোভাক – একটি চীনা প্রতিষ্ঠান । শুধু গণ উৎপাদনের ছাড়পত্রের অপেক্ষা করছে তারা । করোনা ঠেকাতে তাদের গবেষণাগারে তৈরী ভাক্সিনই সাহায্য করবে বলে দাবি করছেন তারা ।
করোনায় আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে ।এই মুহূর্তে বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। তাই সিনোভাক খুব শীঘ্রই গণহারে উৎপাদন করতে চায় তাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন । সিনোভাকের দাবি, বানরের শরীরে অভুতপূর্ব সাফল্য মিলেছে এই ভ্যাকসিনের। করোনার এই দুঃসময়ে যে চারটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে চীন, তার একটি পরিচালনা করছে সিনোভ্যাক বায়োটেক। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস রোধে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটির ব্যাপক উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। ভ্যাকসিনটি সদ্যই মানব শরীরে পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, করোনা প্রতিরোধের জন্য প্রতি বছরে ১০ কোটি ডোজ উৎপাদন করতে তারা প্রস্তুত। একটি নিষ্ক্রিয় প্যাথোজেনের ওপর ভিত্তি করে এই ভ্যাকসিনটি নাম করোনাভ্যাক । এই ভ্যাকসিনের হাজারো শট সাদা-কমলা রঙের একটি প্যাকেজে সজ্জিত করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিনটি প্রায় তৈরি হয়ে গেছে। ভ্যাকসিনটির অনুমোদন পেতে সময় লাগবে অনেক দিন ।। যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুমোদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কম্পানিটিকে এটাও দেখাতে হবে যে, তারা বৃহৎ পরিসরে ভ্যাকসিনটি উৎপাদন করতে সক্ষম। তবে এর আগে সোয়াইন ফ্লু’র ভ্যাকসিনও গণ হারে উৎপাদন করেছিল সিনোভাক। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এই সংস্থাটি করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারবে। সিনোভ্যাক চীনের একশ ৪৪ জন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা চালিয়েছে। তারা এই পরীক্ষাটি করেছে পূর্ব জিয়াংসু প্রদেশের অধিবাসীদেড় উপর । ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোর প্রথম দুটি পর্যায়ের পরে জুনের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিনটির আশাব্যাঞ্জক ফল পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী কম্পানিটি। পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ সম্পন্ন হলেই নির্ধারণ করা যাবে ভাইরাসের বাহকের মধ্যে ভ্যাকসিনটি কার্যকর কি-না। তবে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক না পাওয়ায় তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে হচ্ছে তারা । কারণ, চীনে ভাইরাসটির সংক্রমণ কমে গেছে । সিনোভ্যাক নামক এই সংস্থাটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক পরিচালক মেং উইং বলেন, বর্তমানে আমরা ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথা বলছি। তৃতীয় ধাপের জন্য কয়েক হাজার লোকের প্রয়োজন হবে। তবে ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য কোন দেশ থেকে এই পরিমাণ স্বেচ্ছাসেবী পাওয়া সহজ নয়। পরবর্তী ধাপে সাফল্য পেলেও সিনোভ্যাক পুরো বিশ্বের জনগণের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত টিকা তৈরি করতে সক্ষম হবে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দেশের প্রথম সাংবাদিক হুমায়ুন কবির খোকন এর স্ত্রী ও ছেলের ও এবার করোনা টেস্ট এ পজিটিভ এসেছে ।
হুমায়ুন কবির খোকনের স্ত্রী বলেন, শুক্রবার (১ মে) রাতে রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, আমাদের দু’জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এতদিন বাসায় থাকলেও তাই এখন হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি ।
তিনি বলেন, খোকন যেদিন মারা গেলো, সেদিন সেখানেই তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং আজ হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট জানানো হল।
গত ২৮ এপ্রিল রাতে সাংবাদিক হুমায়ুন কবির খোকন ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার নগর সম্পাদক পদে চাকরিরত ছিলেন । বেশ কিছু দিন ধরেই দাঁতের ব্যথায় ভুগছিলেন , সঙ্গে ছিল জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। অবস্থা খারাপ হলে তাকে রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে তিনি মারা যান। পরবর্তী সময়ে তার নমুনা সংগ্রহ এর পর তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বলে জানা যায়।
তিন মাসের মধ্যেই করোনা সংক্রমণ শূন্য তে আনতে সফল হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া । গত ফেব্রুয়ারীর এক তারিখের আগে দেশটিতে একজন ও করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি, এর পর থেকে শুরু হয় সংক্রমণ । অবশেষে গত পহেলা মে তে দেশটিতে আর কোনো করোনা রোগী পাওয়া যায়নি ।
ফেব্রুয়ারীতে প্রথম সংক্রমণের খবর পাওয়া যায় যে দেশটিতে চারজনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে যাদের প্রত্যেকেই বিদেশ থেকে সেখানে ঢুকেছিল এবং বিমানবন্দরে ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর সেখান থেকেই তাদের আলাদা করে ফেলা হয়েছে। খবর বিবিসির।
বিদেশফেরত ওই চারজনসহ দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০,৭৬৫ জনে।
কিন্তু ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিকে বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে বড় হটস্পট ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। এভাবে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে নিয়ে আসাটা তাদের একটা যুগান্তকারী সাফল্য। সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন এ না গিয়েও বিশেষ উদ্দ্যেগ গ্রহণের মাধ্যমে দেশটি সফলতা অর্জন করে । ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণের হার খুবই বেড়ে যায়- যখন দেইগু শহরে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠির মধ্যে অনেকের ভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়ে।
শিনজিওঞ্জি নামে একটি গির্জার একজন সদস্যের কাছ থেকে গির্জার অনেক সদস্য সংক্রমিত হয় এবং তাদের থেকে আরও কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। সরকার এরপর ব্যাপক মাত্রায় পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে দেয়।
সারা দেশে অস্থায়ী ক্লিনিক বসানো হয়- যেখানে গিয়ে গাড়ির ভেতরে বসেই মানুষ তার পরীক্ষা সেরে নিতে পারে। বিনামূল্যে সবার পরীক্ষা হয় ।
বিশাল পরিসরে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করার ফলে দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমিতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করে। কিন্তু সে কারণে কর্তৃপক্ষ গোড়া থেকেই কারা সংক্রমিত হয়েছে তাদের সফলভাবে চিহ্ণিত করতে সক্ষম হয় এবং দ্রুত তাদের আলাদা করে ফেলে তাদের চিকিৎসা দেয়। এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া সফলভাবে এবং খুবই ক্ষিপ্রতার সঙ্গে যেটা করেছিল সেটা হল কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং- অর্থাৎ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কারা এসেছে তাদের খুঁজে বের করা, এবং যারা পজিটিভ তাদের খুঁজে বের করে তাদেরও আলাদা করে ফেলা ও তাদের চিকিৎসা করা।
কেউ পজিটিভ শনাক্ত হলেই কর্তৃপক্ষ তার কাছাকাছি বসবাস করে বা তার সঙ্গে কাজ করে এমন লোকেদের কাছে সতর্কবার্তা পাঠাতে শুরু করে। শুরু হয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বার্তা আসার স্রোত। মানুষও দ্রুত এতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।
একসময় জানা যায় শিনজিওঞ্জি গির্জার যে গোষ্ঠিটির মধ্যে সংক্রমণ প্রথম নিশ্চিতভাবে ধরা পড়ে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরেই দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষ সংক্রমণের শিকার হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সব গির্জা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। কর্মকর্তারা জনসমাগম ঠেকানোর জন্য সর্বোতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যান ।। এভাবেই তারা করোনাযুদ্ধে সফলতা অর্জন করে ।
আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যেই চলে আসতে পারে করোনাভাইরাসের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন। এখনো পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে থাকা এই ভ্যাকসিন জুন মাসেই বাজারে ছাড়া হতে পারে। তবে তার আগে এটি দেয়া হবে ব্রিটেনের এনএইচএস কর্মীদের মধ্যে।
এই ভ্যাকসিন তৈরিতে অক্সফোর্ডের সাথে আছে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট আস্ট্রাজেনকা। তারা এর উৎপাদন ও বৃহৎ পরিসরে বণ্টনের দায়িত্বে আছে। এদিকে করোনা চিকিৎসায় ইবোলার ওষুধ রেমডেসিভির ও অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।
আস্ট্রাজেনকার সাথে অক্সফোর্ডের সমঝোতার বিষয়টি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। দ্য মিরর জানিয়েছে, এই সমঝোতার ফলে দ্রুতই বিশ্বের সব প্রান্তে পৌঁছে দেয়া যাবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। ইতোমধ্যে মানবদেহে এই ভ্যাকসিন প্রবেশ করানো হয়েছে যেখানে ব্রিটেনের শত শত স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিয়েছে।
প্রথম ওষুধ অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্রে : করোনা চিকিৎসায় রেমডেসিভির ওষুধকে অনুমোদন দেয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি ই এই ভাইরাসের চিকিৎসায় প্রথম কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ও ওষুধ। উৎপাদনকারী কোম্পানি জিলিড ১৫ লাখ ডেমডিসিভির স্যাম্পল সরবরাহ দেবে বলে জানায় ।
টানা ৪৮ দিন পর ঘরের বাইরে বের হলো স্পেন- তবে শর্তসাপেক্ষে। বয়সভেদে নাগরিকদের ঘড়ের বাইরে বের হওয়ার নির্দিষ্ট সময় ভাগ করে দিয়েছে।
পাশাপাশি কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁ শর্তসাপেক্ষে খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। শনিবার থেকে যারা ঘর থেকে বের হতে পারলেও তাদের নির্দিষ্ট সময় মেনে চলতে হবে। শারীরিক ব্যায়ামের জন্য সকাল ৬টা থেকে বেলা ১০টা ও রাত ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৪ বছর ও নীচের বয়সীরা এ সময়ের মধ্যে দিনে একবার ঘরের এক কিলোমিটারের মধ্যে বের হতে পারবেন। ৭০ বছরের বেশি বয়স্করা বেলা ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ও সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত একা কিংবা কোনো সঙ্গী বা সাহায্যকারী একজনকে (যাদের বয়স ১৪ থেকে ৭০ বছর) নিয়ে ঘর থেকে বের হতে পারবেন। শিশুরা বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বাবা কিংবা মা কিংবা গৃহপরিচারকের সঙ্গে বাইরে যেতে পারবে।
এদিকে লকডাউন তুলে ফেলতে ভারতের দেখাদেখি পুরো দেশকে তিনটি কালার (রঙে) জোনে বিভক্ত করেছে ফ্রান্সও। দেশটিতে মহামারী করোনাভাইরাসে মৃত্যু হার কমে যাওয়ায় লকডাউন তুলে নেয়ার এই পরিকল্পনা করছে। এ লক্ষ্যে দেশকে সবুজ, হলুদ ও লাল- এ তিন রঙে ভাগ করেছে। ফ্রান্স আগামী ১১ মে থেকে দেশের কঠোর লকডাউন শিথিল করার পরিকল্পনা করছে।
গত বৃহস্পতিবার সরকার বৃহত্তর প্যারিস ও দেশের উত্তর-পূর্বের এক-চতুর্থাংশ এলাকাসহ ৩৫ অঞ্চলকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে লাল রঙে চিহ্নিত করেছে।
এদিকে ফ্রান্সের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জারোম সালোমোন জানান, দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে মোট ২৪ হাজার ৩৭৬ জনে দাঁড়াল। যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ব্রিটেন ও স্পেনের পর ফ্রান্সের মৃতের এ সংখ্যা বিশ্বের পঞ্চম সর্বোচ্চ।
মহামারী কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর মিছিল থামছেই না ।লাশের সারি দীর্ঘ হতে হতে পৃথিবীটাই যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।মরণব্যাধি করোনায় প্রাণহানি ২ লাখ ৪৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
কোভিড-১৯ এ প্রাণহানি ও অসুস্থদের পরিসংখ্যান রাখার আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াল্ডওমিটারের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রোববার সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটে করোনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিয়েছেন ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭৮০জন।
এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই পর্যন্ত ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪৪৩ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ২১ লাখ ২৯ হাজার ৬৪১ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫০ হাজার ৮৫৮ জন (২ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে ।এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ১১ লাখ ৮ হাজার ৮২২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
মরণব্যাধি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মৃত্যু ঘোষণার প্রস্তুতি ছিল চিকিৎসকদের।গত রোববার দ্য সানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছেন খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।সম্প্রতি হাসপাতাল হতে কাজে যোগ দেয়া জনসন জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা তার বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন।
‘অস্বীকার করব না এটা কঠিন স্মৃতি। চিকিৎসকেরা আমার মৃত্যু ঘোষণা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন’-বলেন জনসন।
আইসিইউতে থাকার দু:সহ স্মৃতির কথা স্মরণ করে জনসন জানান, নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে চিকিৎসকরা ‘লিটার-লিটার’অক্সিজেন দেন। শ্বাসনালী দিয়ে টিউব প্রবেশ করানোর সময় বাঁচার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি চলে আসে বলেও জানান তিনি।
ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী ২৭ মার্চ করোনা পজিটিভ হন। প্রথমে বাসায়ই চিকিৎসা নেন। এর ১০ দিন পর জ্বর, কাশিসহ উপসর্গগুলো না কমায় তাকে সেন্ট্রাল লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে বেশ কয়েকদিন থেকে বাড়ি ফিরতে সক্ষম হন তিনি।
হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে গত বুধবার ছেলে সন্তানের মুখ দেখেন বরিস। জনসন ও তার বান্ধবী সিমন্ড জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের উৎসর্গ করে ছেলের নাম রেখেছেন উইলফ্রেড ল্যারি নিকোলাস জনসন। নিকোলাস রেখেছেন ড. নিক প্রাইস এবং ড. নিক হার্টের নামানুসারে, যারা গত মাসে তার ‘জীবন রক্ষা করেছেন’। জনসন আরো জানান, ডাক্তাররা তাকে তাদেরসর্বোচ্চ সেবা দিয়েছেন।করোনা থেকে বাঁচায় নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবছেন জনসন।
ইউরোপে গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা খুবই হতাশাজনক। সাংবাদিকদের চুপ করাতে হয়রানির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ১৪টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংস্থা গোষ্ঠি কর্তৃক গঠিত ইউরোপে সাংবাদিকদের সুরক্ষা বিষয়ক কাউন্সিল। খবর- ডয়েচে ভেলে
২০১৯ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, গোটা ইউরোপেই সাংবাদিকদের হয়রানি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, কারারুদ্ধ করা এমনকি হত্যার সংখ্যা বেড়েছে বলেও ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।প্রতিবেদনে আরো উঠে আসে, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, গণভোট ও নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও নির্যাতন বাড়ার ঘটনাসমূহ ।
গেল বছর ইউরোপে ১৪২টি মারাত্মক হুমকির ঘটনা ঘটেছে। ৩৩জন সাংবাদিকের ওপর শারীরিক হামলা চালানো হয়েছে, ১৭জনকে নতুন করে আটক করা হয়েছে, ৪৩টি হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ও দুইটি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। ২০১৯ সালের শেষে তুরস্ক, আজারবাইজান, রাশিয়া ও রুশ নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের ক্রিমিয়ায় কমপক্ষে ১০৫জন সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয়।
এই প্রতিবেদনে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্র হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া ও ফ্রান্স ছাড়ও রাশিয়া এবং তুরস্ককে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর এমন ব্যবহারের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, ইউরোপের নীতি-নির্ধারকদের এ বিষয়ে আরো সজাগ হতে হবে এবং ইউরোপে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বৃহত্তর সমর্থন জোরদার করতে হবে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎস এখনও রহস্যাবৃত বলে মন্তব্য করেছেন চীনের উহানের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (ডব্লিউআইভি) একজন অধ্যাপক।
ইউয়ান জিমিং নামে ওই অধ্যাপক চীনের এ পরীক্ষাগারেই ভাইরাসটি বানানো হয়েছিল বলে যে প্রচার চলছে, সে দাবিও উড়িয়ে দেন। প্রাণঘাতী এ করোনাভাইরাস বানানোর সক্ষমতা কিংবা ইচ্ছা কোনোটাই তাদের নেই বলে জানান ডব্লিউআইভির ন্যাশনাল বায়োসেফটি ল্যাবের এ পরিচালক।
তার মতে, ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকদের দাবির সঙ্গে এখন পর্যন্ত পাওয়া বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের সুস্পষ্ট বিরোধ রয়েছে।
রয়টার্সের করা প্রশ্নের লিখিত জবাবে অধ্যাপক ইউয়ান বলেন, নতুন একটি করোনাভাইরাসের নকশা করা ও সেটি বানানোর ইচ্ছা বা সক্ষমতা কোনোটিই ডব্লিউআইভির নেই। সার্স-সিওভি-২র জেনোম থেকে এটি যে মনুষ্যনির্মিত তেমন তথ্যও পাওয়া যায়নি।
মাত্র চার মাসে বিশ্বব্যাপী দুই লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া সার্স-সিওভি-২ নামের ভাইরাসটি চীনের উহানেই প্রথম আবির্ভূত হয়েছিল। এ কারণে হুবেই প্রদেশের এ রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির ল্যাবেই ভাইরাসটির উৎপত্তি বলে অনেকে দাবি করা শুরু করেন।
ভারতের ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এক গবেষণা প্রতিবেদনে নতুন করোনাভাইরাসের প্রোটিনের সঙ্গে এইচআইভির ‘অদ্ভূত মিল’ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল।
ইনস্টিটিউটটি পরে তাদের ওই প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে নিলেও বহুল পঠিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনই কোভিড-১৯ এর বিস্তার ও নতুন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি সংক্রান্ত ষড়যন্ত্র তত্ত্বের পালে হাওয়া দেয়।
এর মধ্যে নভেল করোনাভাইরাস প্রাকৃতিক কোনো বিষয় নয়, বরং এটি মানুষের তৈরি বলে মন্তব্য করেছেন জাপানের নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক তাসুকু হোনজো। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমন চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন তিনি।
নোবেল বিজয়ী এ প্রফেসর বলেন, এতদিন পর্যন্ত গবেষণা করে আমি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা থেকে আমি শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি– করোনাভাইরাস প্রাকৃতিক কোনো বিষয় নয়। এটি বাদুড় থেকেও আসেনি। চীন এ ভাইরাসটি তৈরি করেছে।
আগাম পরিলকল্পনার মাধ্যমে করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছে নিউজিল্যান্ড । নিউজিল্যান্ড বলছে, কোভিড-১৯ রোগের কম্যুনিটি সংক্রমণ বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছে দেশটি, যে কারণে তারা কার্যকরভাবে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে দেশটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক অঙ্কে নেমে আসে দ, রবিবার নতুন করে মাত্র একজন আক্রান্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান বলেছেন, তার দেশ এখনকার মত ‘এ যুদ্ধে জিতেছে’।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নিউজিল্যান্ডে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে নেয়া কঠোরতম বিধিনিষেধ শিথিল করার কয়েক ঘণ্টা আগে এ খবর পাওয়া গেল। মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে অত্যাবশ্যক নয় এমন কিছু ব্যবসায়িক খাক, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হবে। তবে করোভাইরাস ঠেকাতে পাওয়া সাফল্য নিয়ে ‘আত্মপ্রসাদে’ যেন কেউ না ভোগেন, সে বিষয়ে কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন।
লকডাউন খুললেও আগের মতোই থাকবে সামাজিক জীবন। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান এক সরকারি ব্রিফিং এ বলেছেন, “আমরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করছি, কিন্তু মানুষের সামাজিক জীবন এখনি আবার চালু করা হচ্ছে না।”
নিউজিল্যান্ডে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ১৫০০ চেয়ে কম মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১৯ জন মারা গেছেন।
‘ভয়াবহ অবস্থা এড়ানো গেছে’
নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অ্যাশলি ব্লুমফিল্ড বলেছেন, গত কয়েক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে আসায় “করোনাভাইরাস দূর করার জন্য সরকার যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, তা আমরা অর্জন করতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস।”
তবে মিস আর্ডান এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক দুজনই সতর্ক করেছেন যে ভাইরাস নির্মূল হবার ঘোষণা দেয়ার মানে এই নয় যে দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেউ আর নতুন করে শনাক্ত হবেন না। কিন্তু সে সংখ্যা হবে খুবই কম এবং সহজে সামালযোগ্য। মিস আর্ডান বলেন, “নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক হারে অ-শনাক্তকৃত কোন কম্যুনিটি সংক্রমণ নেই। সে যুদ্ধে আমরা জিতেছি। কিন্তু আমাদের যেন অবস্থাটা এমনই রাখতে পারি সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।”
কড়া ব্যবস্থা :
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে নিউজিল্যান্ডে যখন মাত্র ডজনখানেক রোগী শনাক্ত হন, তখনি দেশটি স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ভ্রমণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। দেশটির সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়, এবং দেশটিতে প্রবেশ করা সকল মানুষকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। এছাড়া কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়, এবং নমুনা পরীক্ষার হার বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়।
সেই সঙ্গে জোরদার করা হয় কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং এর ব্যবস্থাও। প্রধানমন্ত্রী মিস আর্ডান বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পর পরই যদি দ্রুত লকডাউন না দেয়া হত, তাহলে দিনে এক হাজারের ওপর নতুন রোগী শনাক্ত হত। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি কত খারাপ হতে পারত কেউ জানে না, কিন্তু “আমাদের আগাম পরিকল্পনায় আমরা সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছি।”
সোমবার মধ্যরাত থেকে দেশটিতে লেভেল ফোর পর্যায়ের লকডাউন থেকে লেভেল থ্রিতে নামিয়ে আনা হবে। এর মানে হচ্ছে, টেকঅ্যাওয়ে সরবারহের জন্য রেস্তোরাঁ খোলা রাখাসহ বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই কাজকর্ম শুরু করতে পারবে। কিন্তু মুখোমুখি দেখাসাক্ষাৎ হয়, এমন কোন কর্মকাণ্ডের অনুমোদন দেয়া হবে না। বাসিন্দাদের আগের মতই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সংস্পর্শে থাকা এবং যেকোন মানুষের সাথে দুই মিটার দূরত্বে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
গণজমায়েত এখনো আগের মত নিষিদ্ধ থাকবে, শপিং সেন্টার বন্ধ থাকবে এবং অধিকাংশ শিশু স্কুলে যাবে না।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এপর্যন্ত বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ এর বেশি ।আক্রান্ত ৩০ লক্ষ ।রোববার রাতে আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারসের পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা যায় । ওয়েবাসাইটির দেয়া তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ২৫ হাজার ৫০৮ জন। আর এ ভাইরাসটিতে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৮৯৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৮৯ হাজার ১৪৫ জন ।ওয়ার্ল্ডোমিটার আরও বলছে, আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ২৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যাদের মধ্যে ৫৭ হাজার ৬০৬ জন (৩ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপ। যুক্তরাষ্ট্রে এ ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭১ জন। আর এতে সংক্রমিত হয়ে ৫৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। নভেল করোনা ভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১১ মার্চ করোনা ভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রবিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫ জনে। এছাড়া এ পর্যন্ত মোট ৫ হাজার ৪১৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকারর পরই মৃতের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা সাড়ে ২৩ হাজার। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে প্রায় ২৩ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
মৃতের দিক দিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে ২০ হাজার ৭৩২ জন এ ভাইরাসটির সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেয়ায় এবং এ কারণে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় অর্থনৈতিক ক্ষতির অভিযোগ তুলে চীনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্য সরকার চীন সরকার ও দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে মামলাটি করে। করোনা ইস্যুতে ভাইরাসটির সূতিকাগার চীনের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলা। মিসৌরির অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্মিথ সরকারের পক্ষে এই মামলা করেন।তিনি চীনের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস নিয়ে মিথ্যাচারেরও অভিযোগ করেছেন।খবর রয়টার্স ও সিএনএনের। বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে করোনার বিস্তারের নেপথ্যে চীনের দায়িত্বে অবহেলাকে কারণ হিসেবে হাজির করেছে মিসৌরি সরকার। বলা হচ্ছে, চীন ভাইরাসটি নিয়ে লুকোচুরি করেছে। এই ভাইরাস যে এতটা সংক্রামক তা তারা আগে জানায়নি। এ নিয়ে এই তথ্য গোপন করেছে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার। মামলায় করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন থাকায় মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, চীনের অবহেলার কারণে কোটি কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে । মামলায় ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয়েছে। মিসৌরির অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্মিথ মামলা দায়েরের পর বলেন, চীন সরকার কোভিড -১৯ এর বিপদ ও এর অতি-সংক্রামক প্রকৃতির বিষয়ে বিশ্বকে মিথ্যা বলেছিল। এছাড়া প্রথম যে চিকিৎসক এই ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করে তাকেও এ নিয়ে কথা বলতে দেয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, সব দিক দিয়েই চীন মহামারি এই রোগের বিস্তার থামাতে খুব কম চেষ্টাই করেছে। আর এ কারণে তাদের বিচার হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি ।মিসৌরিসহ বিশ্বের ওপর করোনার প্রাণহানি, যন্ত্রণা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে তার জন্য চীনকেই দায়ী করছেন তিনি । তবে এই মামলাটিকে ‘চাল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মিসৌরি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নির্বাহী পরিচালক লরেন জিপফোর্ড । তবে মার্কিন আইনে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণত অন্য দেশের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিষিদ্ধ করে।জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যাস্টিংস কলেজ অফ ল এর আন্তর্জাতিক আইন বিভাগের অধ্যাপক চিমেন কেটনার।তাই এই মামলা খুব বেশি প্রভাব ফেলবে কিনা তা স্পষ্ট নয় । যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিস্টেমস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে মিসৌরি অন্যতম। মঙ্গলবার পর্যন্ত মিসৌরি অঙ্গরাজ্যে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২১৫ জন। গত একদিনে নতুন শনাক্ত ১৫৬ নিয়ে সেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৫ হাজার ৯৬৩। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৩৮। অপরদিকে দেশটিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৯ জনের। মঙ্গলবার দেশটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ হাজার ১৭৯। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২ হাজার ৮০৩ জন।
করোনাভাইরাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব বিধ্বস্ত। দেশটির রাজ পরিবারেরই অনেক সদস্য করোনায় সংক্রমিত এমন খবর সম্প্রতি দিয়েছিল নিউইয়র্ক টাইমস।দেশটির শতাধিক মানুষ মারা গেছেন এই মহামারীতে। সৌদিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এ পর্যন্ত অন্তত ২৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯ এ। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ এই তথ্য জানিয়েছেন।বহু বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে এখনো কতজন সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত মসীহ । গোলাম মসীহ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, কতজন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সেটা সৌদি কর্তৃপক্ষ এখনও জানায়নি। তবে আমরা জানার চেষ্টা করছি। সৌদিতে করোনায় যেসব বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে তাদের অনেকের এখনও দাফন হয়নি। তাদের দাফন কোথায় হবে এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত মসীহ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে লাশ বাংলাদেশে নেয়া সম্ভব নয়। সৌদির মাটিতেই তাদের দাফন করা হবে। করোনাভাইরাসে প্রাণহানি ও আক্রান্তদের পরিসংখ্যান রাখা আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য মতে, সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট ১১ হাজার ৬৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে মারা গেছেন ১০৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৪০ জন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে প্রথম বাংলাদেশির মৃত্যু হয় ২৪ মার্চ। চীনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ২১০ টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।মারা গেছেন ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪১জন।আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ লাখ ৫৭ হাজার ১৮১ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার নতুন অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা ৬০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে এবং তাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে, যারা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য গ্রিন কার্ডের আবেদন করেছেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া আমেরিকানরা যাতে ফের কাজে ফিরতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।-খবর রয়টার্সের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে চাচ্ছেন মার্কিন এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। জানালেন, এই আদেশে সম্ভবত তিনি বুধবার সই করতে যাচ্ছেন। যারা অস্থায়ী ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে, তাদের ক্ষেত্রে এই আইন কার্যকর করা হবে না বলেও মত দিলেন ট্রাম্প। বললেন, আর ৬০ দিন পেরিয়ে গেলে তা পুনর্মুল্যায়ন কিংবা নবায়ন করা হতে পারে। দেশের অর্থনীতি সচল হওয়ার পর কর্মহীন মার্কিন নাগরিকরা যাতে কাজের ধারায় ফিরতে পারেন, সেই সুরক্ষা দেয়ার কথা বলছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, ভাইরাসের কারণে যেসব আমেরিকান চাকরিচ্যুত কিংবা কর্মহীন হয়েছেন, তাদের জায়গায় শ্রমিক হিসেবে বিদেশ থেকে আসা নতুন অভিবাসীদের নেয়া হবে, এটা অন্যায় ও ভুল। সবার আগে আমেরিকান শ্রমিকদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
শ্রমিকদের ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার আগেই তাদের মজুরি পরিশোধ করে দেয়ার জন্য হাদিসে সুস্পষ্ট ভাবে নির্দেশ রয়েছে। অথচ এই শ্রমিকরা যুগ যুগ ধরে নিস্পেষিত, শোষিত হয়ে আসছে। সময় মতো তারা তাদের বেতন ভাতা পাননা। উপযুক্ত পারিশ্রমিকও প্রদান করা হয়না। যাদেরকে দিয়ে একটি শ্রেণী টাকার পাহাড় গড়ে তোলেন তাদেরকেই উপযুক্ত হিস্যা দিতে ওই শ্রেণীটির যতো টালবাহানা। শ্রমিকদের প্রতি এ টালবাহানা সারা বিশ্বেই কমবেশি পরিলক্ষিত হয়। তবে আমাদের দেশের মতো এতো অবিচার, অন্যায় আচরণ আর কোনো দেশে খুঁজে পাওয়া ভার।
পত্র পত্রিকার রিপোর্ট বা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (BIOLS) এর বিভিন্ন সময়ের জরিপের উপর দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে আমাদের দেশে শিল্প খাতে বছরে কম করে হলেও প্রায় ২০০টির মতো শ্রমঅসন্তোষ বা বিরোধের ঘটনা ঘটে থাকে। যার ফলে শ্রমিকদেরকে প্রায়ই সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ, মানব বন্ধন, সড়ক অবরোধ, হরতাল, ধর্মঘটের মতো আন্দোলনের আশ্রয় নিতে হয়। এসব আন্দোলন কর্মসূচির অধিকাংশই হয়ে থাকে বিশেষ করে বকেয়া বেতনের দাবিতে। করোনা আতংকের এ মহামারী লগ্নেও আমরা এ ধরনের আন্দোলন দেখতে পাচ্ছি। শ্রমিকদেরকে রাস্তায় নামতে হচ্ছে তাদের বেতন ভাতা আদায়ের জন্যে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে এসব আন্দোলন বেশ জোড়ালো ভাবে দানা বেঁধে উঠে যা আমরা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ও টিভিতে দেখেছি। সরকারের ঘোষিত লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতিকে উপেক্ষা করেই তারা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয়। সরকারের এ আদেশকে অমান্য করা হয়তো তাদের ঠিক হয়নি। কিন্তু তাদেরকে দোষ দিয়েই বা কি লাভ! ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। পেটে ভাত না থাকলে মুখে শরম রেখে লাভ কি! করোনায় মৃত্যুর চেয়েও না খেয়ে মৃত্যুর যন্ত্রণা আরও অনেক বেশি। তাই তারা করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়েই আন্দোলন করে যাচ্ছে যা কিনা অপাংক্তেয় মনে হলেও অস্বাভাবিক নয়।
শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধের ক্ষেত্রে গড়িমসি করা অধিকাংশ মালিকদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করতে সক্ষম হলেও শিল্প খাতের ওইসব মালিকরা তাদের ঐ স্বভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। কুস্বভাবগ্রস্থ এসব ধূর্ত মালিকদের খাতায় শেষপর্যন্ত এবার নাম লিখালেন আমাদের সবার প্রিয় ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান।
সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের শ্রমিক মনোয়ারা বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য এই কাঁকড়ার ফার্মে কাজ করি। কিন্তু গত চার মাস বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে খাবার না থাকায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। শ্রমিক মহিদুল ইসলাম বলেন, চার মাস ধরে আমাদের কোনো বেতন দেওয়া হয় না। করোনা প্রাদুর্ভাবে কঠিন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। নারী শ্রমিক রহিমা বেগম বলেন, অভাবের তাড়নায় সন্তান ও পরিবার ফেলে এসে প্রজেক্টে কাজ করেছি। ঠিকমতো বেতন না পাওয়ায় করোনা প্রাদুর্ভাবে খুবই কষ্টে আছি।
সাকিবের ফার্মে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিকের অভিযোগ গুলো ঠিক এভাবেই তুলে ধরেন গত ২০ এপ্রিল ২০২০ তারিখের দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত “৪ মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন দেননা ক্রিকেটার সাকিব” শিরোনামে একটি রিপোর্টে। রিপোর্টটি পড়ে আরও যা জানা গেছে তা হলো, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের মাসুদ মোড়ে ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান প্রতিষ্ঠিত সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের শ্রমিকদের ৪ মাস ধরে বেতন দেওয়া হচ্ছেন না। বারবার সময় নিয়েও বেতন না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে সোমবার (২০ এপ্রিল) সকালে ফার্মের দুই শতাধিক শ্রমিক আন্দোলনে নামেন ও বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
যারা শেয়ালের মতো ধূর্ত, সারা জীবন টাকা, টেন্ডার আর টার্গেটের পেছনে দৌড়ে বেড়ায় ওরাই সাধারণত শ্রমিকদেরকে ঠকায়, শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করে। এ ঠগবাজ প্রতারক শ্রেণীটি জাতগত ভাবেই ব্যবসায়ী। ওরা ব্যবসাটা ভালোই বুঝে। ব্যবসা ভালো বুঝে উঠা শ্রেণীটির সাথে পাল্লা দিয়ে সাকিবের মতো তারকা খেলোয়াড় কিভাবে একই নৌকায় পা দেয় তা আমার বোধগম্য নয়। তারকারা সাধারণত সাবলীল মনের অধিকারী হয়ে থাকে। আর দশটা ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাদের তুলনা চলেনা। সারা বিশ্বে যখন এমন দুর্যোগ মুহূর্তে সাকিব শ্রেণীর লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা ত্রাণ দিয়ে বেড়াচ্ছে সেখানে যদি খোদ সাকিবের কোম্পানির শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের দাবিতে রাস্তায় নামার খবর বাতাসে ভেসে বেড়ায় তবে তা বড়োই পীড়াদায়ক। এটা শুধু সাকিবের জন্যই লজ্জা নয়, এ লজ্জা পুরো দেশের, পুরো জাতির।
লেখাটি এ পর্যন্ত লিখতেই আজ সকালে (২২/০৪/২০২০) সাকিব আল হাসানের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস আমার নজরে আসে যা আমাদের সময়.কমে প্রকাশ পায়। সেখানে তিনি মিডিয়াকে কিছুটা দোষারোপ করে তার উপরে আঙ্গুলায়িত অভিযোগ খন্ডানোর চেষ্টা করেন। দীর্ঘ স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, অন্য অনেক ফার্মের মতো এ ফার্মের সাথে ও তার নাম সরাসরি যুক্ত আছে বটে তবে এসব দেখভাল করার দায়িত্বে তিনি নেই। অন্যান্য মালিক বা অংশীদারদের দ্বারাই এগুলো পরিচালিত হয়ে থাকে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, শ্রমিক অসন্তোষের ব্যপারে তিনি কিছুই জানতেননা। শুধু এটুকু জানতেন, এ বছরের জানুয়ারি মাসে অব্যাহতি দেয়া এসব কর্মচারীদেরকে ৩০ এপ্রিল ২০২০ তারিখের মধ্যে বেতনাদি মিটিয়ে দেয়া হবে। সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসায় তিনি বিস্মিত হন এবং অন্যান্য মালিক বা অংশীদারদের সাহায্যের তোয়াক্কা না করে তাৎক্ষণিক ভাবেই তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে দেন।
সাকিব আল হাসানের বক্তব্যের রেশ ধরে বলতে হয় প্রথমত, যেহেতু তারই নামে ফার্মটি সেহেতু কে পরিচালনা করছে তা দেখার বিষয় নয়। ফার্মের সুনাম বা বদনাম তার উপরই অর্পিত হবে। কোনো অজুহাতেই তিনি এর দায়ভার থেকে মুক্ত হতে পারেননা। দ্বিতীয়ত মিডিয়াকে দোষারোপ করে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তাও সঠিক নয়। মিডিয়াতে খবরটি প্রকাশ পেয়েছে বলেই তিনি বিষয়টি অবগত হতে পেরেছেন এবং খবরটির গুরুত্ব উপলব্ধি করে তাৎক্ষণিক শ্রমিকদেরকে নিজস্ব তহবিল থেকে বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছেন। তৃতীয়ত কাউকে অব্যাহতি দিলে তাৎক্ষণিক তিন মাসের বেতনাদি দিয়ে তাকে সাধারণত বিদায় করতে হয়। অথচ আগ্র ফার্মের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা না করে উল্টো তাদেরকে ঝুলিয়ে রাখা হলো। পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের পর তাৎক্ষণিক তিনি যেভাবে নিজস্ব তহবিল থেকে শ্রমিকদেরকে বেতন ভাতা পরিশোধ করেছেন ওই কজটিই কেনো তিনি চার মাস আগে করেননি? এটাকি তার শ্রমিকদরদী মনোভাব? নাকি মিডিয়ায় প্রকাশের পর তার জাত বাঁচানোর এক প্রানান্ত চেষ্টা?
করোনার এ অবরুদ্ধকালে মানুষ অনেকটা নির্জীব জীবন যাপন করলেও প্রকৃতি যেনো ফিরে পেয়েছে নতুন প্রান। বদলে গেছে তার রূপ। কয়েক মাস আগেও ধুলোয় ধুসর ছিলো পৃথিবীর বড় বড় শহর গুলোর আকাশ। মারাত্মক বায়ু দূষণে নাভিশ্বাস উঠেছিল মানুষের। এখন কলকারাখানা ও যানবাহন বন্ধ থাকায় বাতাসে ধূলিকণাসহ বিষাক্ত সব পদার্থের উপস্থিতি কমেছে। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতেও ধরা পড়েছে এই পার্থক্য। চীন একাই ২০ শতাংশ কম গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ করছে। নিউ ইয়র্কেও কার্বন নিঃসরণ ১৫ শতাংশ কমেছে। স্বচ্ছ হয়েছে ভেনিসের খালগুলো, ফিরে এসেছে মাছ। ইতালির উপকূলে ফিরেছে ডলফিন। তেল আবিব বিমানবন্দরে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে সাদা বক আর পাতিহাঁস। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কাছে খেলে বেড়াচ্ছে ডলফিন, সৈকতে চরে বেড়াচ্ছে লাল কাঁকড়া। পত্রপত্রিকা, টিভি, ইউটুব তথা ফেসবুকে প্রকৃতি বদলের এসব তথ্য বেশ স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে আজকাল।
করোনা আতংকের এ ভয়াবহ সময়ে প্রকৃতি বদলালেও মানুষের একটা অংশ বদলাচ্ছেনা মোটেও। এ অংশটার চরিত্র অনেকটা কুকুরের লেজের মতো বাঁকা। ওই বাঁকা চরিত্র কখনো সোজা হবার নয়। গজব আজাব যাই আসুকনা কেনো কিছুতেই এরা বদলায়না। সাকিব আল হাসানের মতো লোকেরা এ অংশের সভ্য হয়ে উঠুক, তা আমাদের মোটেও কাম্য নয়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই মধ্যরাতে বাংলাদেশ ছেড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩০১ জন নাগরিক। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২ টায় ওমনি এয়ারলাইন্সের যুক্তরাষ্ট্রের একটি চার্টার্ড বিমান রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হয় । যুগান্তরকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহজালাল বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহেল কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০১ জন মার্কিন নাগরিক নিয়ে বিশেষ বিমানটি শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ফ্লাইটটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। পরে কিছুটা বিলম্বে মধ্যরাতে ছেড়ে যায়।
করোনাভাইরাসে বিমান চলাচল সীমিত হওয়ার পর এ নিয়ে চার দফায় নিজ দেশে ফিরলেন ঢাকায় অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। ১৩ এপ্রিল ৩২৮ জন, ৫ এপ্রিল ৩২২ জন এবং ৩০ মার্চ ২৬৯ জন নাগরিক নিজ দেশে ফিরেছেন।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজারের বেশি মানুষ, মারা গেছেন ২৮০৩জন। ৮ লাখ ১৯ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মোট মারা গেছেন ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ।
প্রথমেই বিশ্বে চলমান কোভিড-১৯ এর মহামারী চলাকালীন সময়ে প্রথমে তাদের দুই একটা স্টেপ দেখাই আপনাদের।
=>বিশ্বে চলমান মহামারীকে সামনে রেখে ইতালির সরকার তার
দেশে অবস্থানরত প্রত্যেকটি বৈধ/অবৈধ অভিবাসীদের নগদ অর্থ সহ বিভিন্ন ধরনের পন্হায় সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়।
যেসব মানুষের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। নেই কোন সে দেশের রাষ্ট্রিয় পরিচয় অর্থাৎ যারা অবৈধ তাদেরকে এই মহামারীর সময়ে এভাবে সাহায্য করার উদাহরণ বিশ্বের কোন দেশে আছে কিনা আমার জানা নেই।
=> চলমান কোভিড-১৯ এর মহামারীকে সামনে রেখে ইতালির সরকার তার দেশে অবস্থানরত প্রত্যেকটি নাগরিককে এবং বৈধ অবৈধ অভিবাসীকে করোনা টেষ্ট করার লক্ষ্যে এবং রাষ্ট্রিয় স্বাস্থ্যসেবার আওতাভুক্ত করার উদ্দেশ্যে জাতী-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকটি অবৈধ অভিবাসীকে বৈধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। যা এখন ঘোষণার অপেক্ষায় আছে।
এতে করে ইতালিতে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের প্রায় সাড়ে ছয়লাখ অবৈধ অভিবাসী বিনা জড়িমানায় বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবে।
অবশ্য ইতালি কখনোই অবৈধদের জরিমানার মাধ্যমে বৈধতা দেয়নি।
=> এই মহামারীকে সামনে রেখে ইতালিতে অবস্থানরত হাজার হাজার গৃহহীন মানুষকে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রিয় হেফাজতে নিয়ে নেওয়া হয়। তাদের সবধরনের দ্বায়িত্ব সরকার নিয়েছে যাদের বেশিরভাগই অবৈধ অভিবাসী।
=> ইতালি বিশ্বের ভেতর একমাত্র দেশ যেখানে তাদের হাজারো সমস্যা থাকা সও্বেও সর্বদা অবৈধ অভিবাসীদের বুকে জড়িয়ে নিয়েছে। এটা তাদের একটা ট্রেডিশন বলতে পারেন।
ইতালির বর্ডার থেকে কোন অবৈধ অভিবাসীর ফিরে যাওয়ার রেকর্ড আপনি খুঁজে পাবেন না।
=> ইতালি এমন একটা দেশ যেখানে বর্ডারে অবৈধ অভিবাসী পেলে জরুরী চিকিৎসা সেবা দিয়ে রাষ্ট্রের হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
=> ইতালিকে বলা হয় সকল বৈধ অবৈধ ইমিগ্রান্টদের স্বর্গরাজ্য। এখানে বৈধ অবৈধ সবাই বুক ফুলিয়ে চলতে পারে।
এখন পর্যন্ত একটা উদাহরণ আপনি দেখাতে পারবেননা যেখানে
কারো ডকুমেন্টস না থাকার কারনে তাকে দেশে ফেরৎ পাঠানো হয়েছে।
=> ইতালি এমন একটি দেশ যেখানে কিছু বছর পরপর অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করা হয়।
যেখানে ইউরোপের অন্যান্য দেশ সবাই অবৈধদের থেকে বলা চলে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
=> ইতালি এমন একটা দেশ যেখানে অসহায় বেকার মানুষদের সাহায্যের জন্য কারিতাস সহ বহু অর্গানাইজেশন রয়েছে যারা এই অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে খাবার,চিকিৎসা, পোশাক এবং আবাসনের ব্যবস্থা করে থাকে।
=>ইতালি এমন একটা দেশ যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বা প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ লোক ঘুরলেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে চলে।
=>ইতালি এমন একটা দেশ যেখানে অবৈধ লোকজন চাকুরি করতে পারে।
=> এমন একটা দেশ ইতালি যেথায় বৈধ অবৈধ যেকোন মানুষ কিছু না করলেও তার খাবারের অভাব হয় না। হয়না তাদের বাসস্থান কিংবা চিকিৎসা অভাব।
=> ইতালি বসবাসরত লক্ষ লক্ষ অবৈধ বৈধ অভিবাসী বিভিন্ন ভাবে এদেশের নাগরিকদের জীবন জীবিকার তাগিদে বিরক্ত করলেও এদেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে কখনো আপনি পাবেন না বিরক্তিকর কোন কথা। পাবেন না তাদের কাছ থেকে কোনরকম রেসিজম।
বরং তারা হাসিমুখে এসব মেনে চলে এবং যথাসম্ভব তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করে।
=> ইতালি এমন একটি দেশ যেখানে কোন অবৈধ অভিবাসী যেকোন সময় স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত যেতে চাইলে আইএমও এর কিছু উদার সংস্থা রয়েছে যারা আপনাকে টিকিট কাটা সহ কিছু নগদ অর্থ দিয়ে সসম্মানে আপনাকে আপনার দেশে ফেরৎ পাঠাতে সদা সর্বদা প্রস্তুত থাকে।
=> ইতালি এমন একটা দেশ যেথায় রাষ্ট্র আপনার কাছে হাজার কোটি টাকা পাওনা থাকলেও কিংবা রাষ্ট্রিয় কোন জরিমানা আপনার কাছে পাওনা থাকলেও রাষ্ট্র কখনোই আপনাকে এই
টাকার জন্য কোন ধরনের চাপ প্রয়োগ করবে না।
এমনকি এই টাকা না দিয়েও যদি আপনি দেশে চলে যান এখানকার সরকার কখনো আপনার পথ আগলে দাড়াবেনা।
এমন হাজারো কথা লিখলেও শেষ হবে না এদেশ নিয়ে। এদেশে আছে খৃষ্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মিয় স্হান ভ্যাটিকানসিটি।
যেখান থেকে তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মিয়গুরু পোপ সদা সর্বদা
ছড়িয়ে দিচ্ছে শান্তির বাণি। এমন একটা দেশ ইতালি যেখানে কোন পর্যটক আসলে এদেশের সৌন্দর্য, মানুষের অতিথিপরায়ণতায় মুগ্ধ হয়ে আরেকবার আসার মনোবাসনা পোষন করে।
তাই আমি মুসলমান হয়েও এই বেদ্বীন কাফের মুশরিকদের কাছে মানবতা শিখি। আমি আমার নবীর মানবতা খুঁজে পাই
এই কাফের মুশরিকদের মাঝে।
আমি মুসলমান হয়েও নির্লজ্জভাবে নিজের গাঁ শুঁকেও মোসলমানিত্বের ছিটেফোঁটাও খুঁজি পাই না। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রই এই কাফের মুশরিকদের মানবতাবোধের দিকে।
ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) ২৩ চিকিৎসকসহ ৪১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী রশিদ উন নবী।
হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘গত সপ্তাহে তথ্য গোপন করা সার্জারি বিভাগের একজন রোগীর অপারেশন হয়। তার মাধ্যমেই এ সংক্রমণ হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও রয়েছেন ১০ জন নার্স, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন আনসার এবং নয় জন অন্য স্বাস্থ্যকর্মী। চিকিৎসকদের মধ্যে সার্জারি, মেডিসিন, গাইনিসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক রয়েছেন। তবে তারা মোটামুটি ভালো আছেন, জটিলতা নেই।’
তিনি জানান, আক্রান্তরা আইসোলেশনে আছেন। সংস্পর্শে আসা বাকিদের হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসার জন্য গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়া ১৬৪ জন দেশে ফিরেছেন।
সোমবার (২০ এপ্রিল) বিকাল ৩টা ৪৮ মিনিটে ইউএস বাংলার বিএস-২১০ ফ্লাইটে তারা দেশে ফিরেন। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জিএম-পিআর) কামরুল ইসলাম ফ্লাইট অবতরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা দেরিতে বেলা ১টা ১৯ মিনিটে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে দুই ঘণ্টার উড্ডয়ন শেষে ঢাকায় অবতরণ করে।
সূত্র জানায়, যারা ফিরেছেন তাদের সবার করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাদের ফলাফল ‘নেগেটিভ’ এসেছে। অর্থাৎ কারও শরীরে করোনার সংক্রমণ নেই। তারা সেই টেস্টের ফলাফলের কপি নিয়েই দেশে ফিরছেন। তবু বিমানবন্দরে তাদের স্ক্রিনিং হবে। স্ক্রিনিংয়ের পর তাদের যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক বা হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।
এর আগে চেন্নাইসহ ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে ছয়টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার কথা জানায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স । ২০ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে তারা।
ইউএস-বাংলা সূত্র জানায়, চেন্নাই ছাড়া কলকাতা থেকেও বাংলাদেশিদের ফেরত আনবে তারা। দুটি রুটেই ১৬৪ আসনের বোয়িং ৭৩৭- ৮০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। চেন্নাই থেকে নির্ধারিত দিনে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। আর ২১ ও ২৩ এপ্রিল দু’টি ফ্লাইট কলকাতা থেকে ঢাকার জন্য ছেড়ে আসবে। স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে আসবে ফ্লাইটগুলো।
বর্তমান করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ইরানকে আবারো সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, ইরান চাইলে ভেন্টিলেটরের মতো কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম দিতে চান তিনি।
এর আগে মার্চে বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকেও ট্রাম্প ইরানকে মানবিক সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইরান তৎক্ষণাৎ তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, তারা কোনো অনুদান চায় না, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চায়। নিষেধাজ্ঞা না উঠলে তারা কোনও সাহায্য নেবে না।
এবার ট্রাম্প ফের ইরানকে সাহায্য করতে চাইলেও নিষেধাজ্ঞা তোলা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। যে নিষেধাজ্ঞা তিনি চাপিয়েছিলেন ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসার পর।
রোববার হোয়াইট হাউসের এক ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, “ইরান যদি সাহায্য চায়, তাহলে আমার কিছু করার ইচ্ছা আছে। যদি তারা অনুরোধ করে।”
ইরান করোনাভাইরাসের প্রকোপে “খুবই কাবু হয়ে পড়েছে” বলে ট্রাম্প মন্তব্য করেন। ইরানের প্রকাশিত আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই…কিন্ত সংখ্যাগুলো সঠিক নয়।”
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ইরানে করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৮২ হাজার ২১১ জন এবং মারা গেছে ৫ হাজার ১১৮ জন।
কানাডায় এক বন্দুকধারীর গুলিতে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার রাতে দেশটির নোভা স্কটিয়া প্রদেশের গ্রামাম্ঞ্চল পোর্টেপিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বন্দুকধারীও নিহত হয়েছেন।
পুলিশী সূত্রে জানা যায়, একটি গাড়িতে করে পুলিশের পোশাক পরে বন্দুকধারী হামলা চালায়। গাড়িটি দেখতেও পুলিশের গাড়িসদৃশ ছিল। এ ঘটনায় আরও অনেকে হতাহতের আশংকা করছে পুলিশ।
এ ঘটনাকে ‘ভয়ানক পরিস্থিতি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। নোভা স্কটিয়া প্রদেশের প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রী) স্টিফেন ম্যাকনেইল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটি এই প্রদেশের ইতিহাসে অন্যতম একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন সংঘাতের ঘটনা।’
হামলাকারীর নাম গ্যাব্রিয়েল ওর্টম্যান (৫১) বলে শনাক্ত করে নোভা স্কটিয়া পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, যদিও তিনি আরসিএমপির (রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ) ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন, তিনি এর কোনো সদস্য নন।
রবিবার এক টুইট বার্তায় নোভা স্কটিয়া পুলিশ জানায়, গাড়িটির পেছনের দিকে যাত্রী বসার জানালার ওপরেরদিকে লেখা ছিল ২৮বি১১। অথচ আরসিএমপির গাড়ির নম্বরপ্লেটে হ্যাশ চিহ্ন রয়েছে, যা হামলাকারীর গাড়িতে ছিল না। ২৮বি১১ নম্বরের গাড়ি দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে ৯১১ নম্বরে কল করার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
কানাডিয়ান পুলিশ আরও জানায়, হামলাকারী পরে ওই গাড়িটি পরিবর্তন করে হালকা সিলভারের চেভরোলেট এসইউভি গাড়িতে চড়েন। তবে হামলাকারী কীভাবে নিহত তার কোন বিস্তারিত জানায়নি নোভা স্কটিয়া পুলিশ।
এর আগে ১৯৮৯ সালে কুইবেকে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুলি করে ১৪ জন নারীকে হত্যা করে এক বন্দুকধারী। ২০১৯ সালে আরেক বন্দুকধারীর হামলায় তিনজন নিহত হন।
সারা দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭০ চিকিৎসক।এর মধ্যে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দুজন। তন্মধ্যে চারজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।এছাড়া অনিরাপদ অবস্থায় আক্রান্ত সহকর্মী কিংবা রোগীর সংস্পর্শে আসায় আরো ৪০০ জনের বেশি চিকিৎসক কোয়ারেন্টিনে আছেন।
বাংলাদেশী চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ ডক্টরস ফোরাম (বিডিএফ) সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
সংগঠনটির হিসাবে অন্তত ৮০ জন নার্সসহ ৩০০ জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন।
বিডিএফের তথ্যানুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ১৪৩ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৯৪ জন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৩৩ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৮ জন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন।
ময়মনসিংহ বিভাগে সরকারি হাসপাতালগুলোয় ৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ জনের মধ্যে ৬ জন সরকারি হাসপাতালের-একজন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক।
এছাড়া বরিশাল বিভাগে ৬ জন, রংপুর বিভাগে ৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩ জন এবং সিলেট বিভাগে একজন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন ।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৫ এপ্রিল মারা গেছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মঈন উদ্দিন। দেশে এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১০১ জনের মধ্যে তিনিই একমাত্র চিকিৎসক।
বিডিএফের প্রধান সমন্বয়ক ও মুখপাত্র ডা. নিরুপম দাশ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মনে করি ত্রুটিযুক্ত পিপিইর কারণে চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছে। পিপিই নাই এ কথা আমরা বলছি না বরঞ্চ মানসম্মত পিপিইর অভাব রয়েছে। এছাড়া বেশিরভাগ রোগীরা হাসপাতালে এসে তথ্য গোপন করছেন, চিকিৎসকরা আক্রান্ত হওয়ার এটাও বড় কারণ বলে মনে করি।
এই সঙ্কটকালে চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছে বিডিএফ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের নাগরিকদের মৃত্যু অব্যাহত আছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে আরও ৭ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। আর যুক্তরাজ্যে গত ৪৮ ঘণ্টায় আরও ১৯ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। এর ফলে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৭৪ জন এবং যুক্তরাজ্যে ৭৯ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের নাগরিকদের মৃত্যু অব্যাহত আছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে আরও ৭ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। আর যুক্তরাজ্যে গত ৪৮ ঘণ্টায় আরও ১৯ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। এর ফলে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৭৪ জন এবং যুক্তরাজ্যে ৭৯ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। সিঙ্গাপুরে ২হাজার ৯৬২ জন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি ও কূটনৈতিক সূত্র এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে আজ সোমবার এ তথ্য পাওয়া গেছে।
লন্ডন থেকে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, দুই-তিন দিন ধরে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। সোমবার পর্যন্ত অন্তত ৭৯ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে বড় অংশটি হচ্ছেন বৃহত্তর লন্ডনের। স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটি মারা যাওয়া ব্যক্তিদের স্বজন, স্থানীয় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে এ সংখ্যার তথ্য পাওয়া গেছে।
ইতালির রোম থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান শিকদার প্রথম আলোকে জানান, এখন পর্যন্ত ইতালিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ৮ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। এঁদের মধ্যে ৭ জন মিলানে এবং একজন রোমে মারা গেছেন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ জনের মতো।
তবে ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মতে, দেশটিতে কয়েক শ বাংলাদেশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন।
গতকাল রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, কানাডা, ইতালি, স্পেন, কাতার, সুইডেন, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া, লিবিয়া ও গাম্বিয়া—এই ১৩ দেশে ২৯৭ জন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এঁদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইতালি বাদ দিলে সৌদি আরবে ১৫, কানাডায় ৬, স্পেনে ৫, কাতারে ৪ এবং সুইডেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কেনিয়া, লিবিয়া ও গাম্বিয়ায় ১ জন করে বাংলাদেশি মারা গেছেন।
এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে বিদেশিদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়েই চলছে। এর সঙ্গে বাড়ছে বাংলাদেশের নাগরিকদের আক্রান্তের সংখ্যা।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার পর্যন্ত দেশটিতে ২ হাজার ৯৬২ জন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। অবশ্য গতকাল এক দিনেই দেশটিতে নতুন করে আরও ১ হাজার ৪২৬ জন আক্রান্ত বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এঁদের মধ্যে ১৬ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক, বাকিরা বিভিন্ন দেশের। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আক্রান্তদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিকদের সংখ্যা বেশি।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩০ জন স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে শনিবার ১৭ জন ও গত বুধবার রাতে প্রকাশিত রিপোর্টে ১৩ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আবদুর রহমান জানান, হাসপাতালের আক্রান্তদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে নার্সিং কলেজে আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন করে রোববার দিন থেকে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
এ পর্যন্ত কাপাসিয়া উপজেলায় ৬২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. ইসমত আরা জানান, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা ইউনিট স্থাপন করে আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে জারি করা হয়েছে লকডাউন। এই লকডাউনের কারণে থমকে গেছে দেশগুলোর অর্থনীতির চাকা। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে করোনা ভাইরাসের হটস্পট হিসেবে পরিচিত ইতালি, স্পেন লকডাউন শিথিল করেছে। একই কারনে ইসরায়েল , ডেনমার্ক , অস্ট্রিয়াও ইতিমধ্যে লকডাউন শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চালু করা লকডাউন গেল সোমাবার আংশিক শিথিল করেছে নিউজিল্যান্ড। যুক্তরাষ্ট্রেও শিগগিরই লকডাউল তুলে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে দেশগুলোর লকডাউন তুলে নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি বলছে, লকডাউন তুলে নেয়া হলে আবারো মারাত্মকভাবে ফিরে আসতে পারে করোনা ভাইরাস।
লকডাউন তুলে নেয়ার বিষয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ছয়টি শর্তের কথা জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইয়েসাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া ছয়টি শর্ত হলো:
১. ভাইরাসটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসা।
২. স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নতুন আক্রান্ত দ্রুত সনাক্ত, পরীক্ষা, বিচ্ছিন্ন এবং চিকিৎসা করার পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগগুলির সন্ধান করার ক্ষমতা রাখা।
৩ . করোনার ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা করা।
৪ . কর্মক্ষেত্র, স্কুল এবং দোকানগুলোতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা স্থাপন করা।
৫ . ভাইরাসের আমদানি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করা।
৬ .পুরো সম্প্রদায়কে শিক্ষিত করতে হবে এবং নতুন নিয়মের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।
ওয়ার্ল্ড ও মিটারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১৯ লাখ ২৫ হাজার ২২৪ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৭০২ জন।
সরকারের ঘোষিত লকডাউনে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন ও গর্ভধারণ বেড়েছে বলে দাবি করেছেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক পেইজে ‘কভিড-১৯ মোকাবিলায় বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানসমূহের তৎপরতার কার্যকারিতা বাড়াতে সরকারের প্রতি সুপারিশ’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই দাবি করেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, চলমান মহামারিতে আমরা বিভিন্ন জেলা থেকে খবর পাচ্ছি নারী নির্যাতন বেড়েছে। এটা রোধ করতে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। মহামারির ফলে স্কুল থেকে অনেকে ঝরেপড়বে। আমরা দেখছি গর্ভধারণ বাড়ছে এক্ষেক্রে স্থানীয় প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মহামারির ফলে দারিদ্র্য জনগোষ্ঠী সব থেকে বিপাকে। এদের মধ্যে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। ফলে পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। সামনে আরো বাড়তে পারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
লকডাউনে যুবসমাজের প্রসঙ্গে সিপিডি সম্মানীয় ফেলো বলেন, লকডাউনের ফলে যুব সমাজ দুইটি সমস্যায় পড়তে পারে। এর একটি মাদকসেবা অপরটি জঙ্গীমতবাদে বিশ্বাস। তাই প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
দারিদ্র্য জনগোষ্ঠী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের উচিত এসডিজি বাস্তবায়ন ট্রাস্ট ফাণ্ড গঠন করা। এই ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে পিছিয়েপড়া মানুষকে সহায়তা করা।
ত্রাণ বিতরণ প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা করতে হবে। ঠিকঠাক মতো ত্রাণ পৌঁছে গেলো কিনা সামাজিক জবাবদিহিতা দরকার। এই মহামারি জাতীয়ভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য দরকার জাতীয় ঐক্য। এই সময় পিছিয়েপড়া মানুষের কথা ভুলে গেলে চলবে না।
মাঠ থেকে শহরে ফসল নিয়ে আসার জন্য সবার সহযোগিতায় একটা সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তিনি।
প্ল্যাটফর্ম সদস্যরা বেশকিছু প্রতিবন্ধকতার কথা জানান। প্ল্যাটফর্মের সদস্যদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সুপারিশ উঠে এসেছে।
সদস্য সংগঠনগুলোর এসব চ্যালেঞ্জ ও সুপারিশ তুলে ধরে জন্য প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে একটি ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জাপানের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির চিকিৎসকরা। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট চাপের মুখে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে পারছে না হাসপাতালের জরুরি বিভাগ।
করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক রোগীকে অন্তত ৮০টি হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে। কিন্তু কোনও হাসপাতালই এই রোগীকে নেয়নি। প্রথম দিকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস পরিস্থিতি জাপান নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে ধারণা করা হলেও দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশটির চিকিৎসকরা এখন হিমশিম খাচ্ছেন।
শনিবার এই দেশটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। করোনায় জাপানে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২০০ জনের বেশি। তবে দেশটিতে করোনায় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজধানী টোকিওতে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে জিপি সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরাও করোনাভাইরাস রোগী পরীক্ষার কাজে সহায়তা করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। জেনারেল প্রাকটিশনার চিকিৎসকদের সংগঠনের উপপ্রধান কোনোশিন তমুরা বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়া ঠেকাতে এটা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রত্যেকের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত। অন্যথায় হাসপাতাল ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এদিকে, দেশটির দুটি মেডিক্যাল সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে অন্যান্য, গুরুতর রোগী ও জরুরি মেডিক্যাল সেবাদানের সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।
তারা বলছে, হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যে অন্য রোগীদের ফিরিয়ে দিতে শুরু করেছে। অন্যান্য দেশের চেয়ে করোনা রোগীর সংখ্যা জাপানে কম হওয়ার পরও এসব ঘটছে। অন্যদিকে, পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর ঘাটতি দেখা দেয়ায় জাপানের করোনা মোকাবিলা প্রস্তুতি ভালো নয় বলে অভিযোগ করেছেন চিকিৎসকরা।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ পুলিশ সদস্য। এছাড়া এ পর্যন্ত পুলিশের ৬৫ জন সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় প্রায় ৬ শতাধিক পুলিশ সদস্যকে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) পুলিশ সদর দপ্তর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এসব জানানো হয়।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মোট আক্রান্তদের মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত সদস্য রয়েছেন ২৯ জন। পূর্বে আক্রান্ত ছিলেন ২৬ জন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩ জন।
জানা গেছে, বর্তমানে পুলিশের ৬২৬ সদস্য কোয়ারেন্টিনে আছেন। এদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ১৪৩ জন এবং আইসোলেশনে আছেন ৯ জন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানায় পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দুই থানার সব পুলিশ সদস্যকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ডিএমপি গোয়েন্দা পুলিশের ১ জন আক্রান্ত হওয়ার পর ২২ জনকে পাঠানো হয়েছে কোয়ারেন্টিনে। ডিএমপি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ের একজন কর্মচারী আক্রান্ত হওয়ার পর ছয় কর্মকর্তা কোয়ারেন্টিনে গেছেন।
রাজারবাগ পুলিশ ব্যারাকে ও পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের (পিওএম) দুই সদস্য আক্রান্তের পর তাদের সংস্পর্শে থাকা সদস্যদেরও কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইনস ব্যারাকে ১ জন আক্রান্ত হওয়ার পর ব্যারাকে থাকা ২০০ পুলিশ সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে যাওয়া ১ পুলিশ সদস্যের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা রোগীর সবচেয়ে বেশি সরাসরি সংস্পর্শে আসতে হয় চিকিৎসকদের। তারপরই রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষার জন্য এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করা যায়নি। আবার দায়িত্ব পালনের সময় ‘অসাবধানতাবশত’ সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে এসেও অনেক পুলিশ সদস্য সংক্রমিত হয়েছেন। এ অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, আইইডিসিআরের নিয়ম অনুসরণ করে করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে করোনার স্পেশালাইজড হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে-এমন পুলিশ সদস্যদের আলাদা করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।
সিঙ্গাপুরে নতুন করে ৯৪২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭০ জনই বাংলাদেশি। শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) ৫৭০ জনসহ এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট ২ হাজার ৬০০ জন বাংলাদেশি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯৯২ জন৷ ১৮ এপ্রিল আরও ৩৮ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন৷ এই নিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৭৪০ জন।
এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে এগারজনের মৃত্যু হয়েছে৷ তবে করোনা ভাইরাস পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়ার আগেই আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছিল।
সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বড় ক্লাস্টার হিসেবে পংগল এস১১ ডরমিটরিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মোট ১৩টি ডরমিটরিকে আইসোলেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সবাই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার (১৮ এপ্রিল) আক্রান্তদের বেশীরভাগই ওয়ার্ক পাশ হোল্ডার। এরমধ্যে ৮৯৩ জন ডরমিটরিতে অবস্থান করত এবং ২৭ জন ডরমিটরির বাহিরে বাস করত৷ ১৪ জন স্থানীয় নাগরিক৷
২৫৬৩ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন৷ এরমধ্যে ২৩ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদেরকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে৷ ২৬৭৮ জনের অবস্থা ক্লিনিক্যালি ভালো কিন্তু পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় তাদেরকে অন্য রোগীদের কাছ থেকে আলাদা রাখা ও যত্নের জন্য অন্যত্র সরিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে৷
করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য মুসলমানদের দায়ী করে সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের আন্তর্জাতিক পুরস্কারজয়ী ক্রীড়াবিদ ববিতা ফোগাত।
টুইটারে নারী কুস্তিগীর ববিতাকে নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়ে হ্যাশট্যাগ পোস্টের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। মুসলমানদের অবমাননা করে পোস্ট দিয়ে তিনি বলেন, ভারতে ভাইরাসের চেয়েও বড় সমস্যা মুসলমানরা।-খবর বিবিসি ও এনডিটিভির
এর একদিন আগে বলিউড তারকা কঙ্গনা রানাউতের বোন রাঙ্গলি চন্দনের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষ গণমাধ্যম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন তিনি।
তার অভিযোগ, মুসলমানরা চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও হত্যা করেছেন।
ভারতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, সত্য। কিন্তু কোন হামলার দায় তিনি মুসলমানদের ওপর চাপাচ্ছেন, তা উল্লেখ করেননি কঙ্গনার বোন।
অনলাইনে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে মুসলমানরা স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর চড়াও হচ্ছেন। কিন্তু সেসব ভিডিওর কোনো সত্যতা মেলেনি।
ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি নেতা ববিতা ফোগাত টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়নি। কিন্তু বিদ্বেষের ছড়াছড়ি দেখে ক্লান্ত অনেকেই তার অ্যাকাউন্ট বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
যদিও তার সমর্থনেও কথা বলতে দেখা গেছে অনেককে। কমনওয়েলথ স্বর্ণজয়ী ববিতা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছেন।
দেশটিতে করোনাভাইরাস বিস্তারের পর টুইটারে ইসলামবিদ্বেষী প্রচার বাড়ছে। তাবলিগ জামাতের একটি মারকাজকে কোভিড-১৯ বিস্তারের কেন্দ্রস্থল বলে দাবি করছে ভারতীয় পুলিশ।
তাবলিগের ভারতীয় প্রধানের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। যদিও তাবলিগ-জামাত বলছে, তারা ভুল কিছু করেনি।
এই ঘটনার পর ভারতে করোনার বিস্তারের জন্য মুসলমানদের দায়ী করা হচ্ছে। মুসলমান দোকানি ও খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, লোকজন তাদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন না। তাদের তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
তবে খারাপ কিছু করেননি বলে জানিয়ে ববিতা ফাগোত বলছেন, আমি জায়রা ওয়াসিম না। আমরাকে ভীত করা যাবে না। আমি সবসময় দেশের জন্য লড়ছি। আমি ভুল কিছু লিখিনি।
করোনা সংকটের কারণে সরকার সারা দেশের অসহায় দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন। এ কারণে মানিকগঞ্জের পৌর এলাকার বান্দুটিয়া ঘন্টিপাড়া মহল্লার শাকিল হোসেন খাদ্য সহায়তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের মোবাইলে কল করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে খাদ্য সহায়তা নিয়ে তার বাড়িতে যান উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে বাড়িতে গিয়ে দেখেন উল্টো চিত্র। তার বাড়িতে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। পরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সহায়তা চাওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত শাকিল হোসেনকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌসের মুঠোফোনে খাদ্য সহায়তা চেয়ে কল করেন শাকিল। এরপর জেলা প্রশাসক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল মাহমুদকে খাদ্য সহায়তা দিতে নির্দেশ দেন।
রাত ১০টার দিকে ইউএনওসহ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন খাদ্য সহায়তা নিয়ে ওই বাড়িতে যান। তবে বাড়িতে গিয়ে তারা দেখেন, ওই ব্যক্তির ঘরে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রয়েছে। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী রাজিব মাহমুদ ওই ব্যক্তিকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন।
আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে খাদ্য সহায়তা দাবি করার অপরাধে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২-এর ৩৮ ধারায় ওই ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কর্মহীন অসহায় ও দুস্থ মানুষের খাদ্য সহায়তায় সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার আজকে এক বিবৃতিতে বলেছে দেশে লিভিং সার্টিফিকেট ও জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে নির্দিষ্ট সময়েই। সংসদীয় উপ কমিটির কোভিড – ১৯ সংক্রান্ত এক সভায় তিনি শিক্ষামন্ত্রী জো হিউ ও রাষ্ট্রীয় পরীক্ষা বিষয়ক কমিশনার এই পাবলিক পরীক্ষাগুলো যথা সময়ে পরিচালনা করার উপায় নিয়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে কোন মূল্যেই এই পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হতে হবে। তিনি আরো বলেন যে সকল শিক্ষার্থী এই সকল বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা তারা যেন জীবন থেকে একটি বছর বা অর্ধ বছর অপচয় না হয় সেদিকে সরকার লক্ষ রাখছে।
চলতি বছরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় এক লক্ষ্য ছাব্বিশ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
লিভিং সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীগণ ২৩শে মার্চ ভাইবা পরীক্ষায় অংশগ্রন করার কথা ছিল যা ইতোমধ্যে রোহিত করুন করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রী বলেন সকল লিভিং সার্টিফিকেট শিক্ষার্থী ১০০% মার্ক পাবে ভাষার সাব্জেক্টগুলোতে।
আইরিশ স্বাস্থমন্ত্রী সায়মন হ্যারিস বলেছে আমরা প্রতি বছর প্রায় ১৫ মিলিয়ন ইউরোর পিপিই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এ বছর সেটা হবে ২২৫ মিলিয়ন ইউরোর। যা ১৩ বছরের সমান বা ১৩ গুন্ বেশি।
সে বলেছে এই সংখ্যক পিপিই চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে আয়ারল্যান্ডে পৌঁছাতে শুরু করবে। ভার্জিন মিডিয়া সংবাদের সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এইচ এস ই এই বিশাল সংখ্যক পিপিইর অর্ডার কনফার্ম করেছে। এর জন্য তিনি অত্যন্ত আনন্দিত যখন সারা বিশ্বে পিপিই সংকট চলছে তখন আয়ারল্যান্ড কে এই সংকট দেখতে হবে না।
আয়ারল্যান্ডে এখন থেকে করোনা ভাইরাস টেস্ট করতে হলে নতুন নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। এই নীতিমালা অনুযায়ী সন্দেহভাজন ব্যক্তির দুটি বড় ধরণের উপসর্গ থাকতে হবে। শরীরে জ্বর এবং কাশি অথবা শ্বাসকষ্ট থাকলেই কেবল আপনি এখন থেকে এই ভাইরাস টেস্টার জন্য এপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন।
যাদের এখন পর্যন্ত সোয়াব নেওয়া হয় নি এবং যারা এখনো টেস্টের কোন তারিখ বা এপয়েন্টমেন্ট পাননি , তারা আপাতত টেস্ট করতে পারবে না। তাদের কে তাদের জিপি এর সাথে পুনরায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
প্রধান মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হোলোহান বলেন গত ১০ দিন পূর্বে এই নীতিমালায় পরিবর্তন আনায় টেস্টের চাহিদা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায়। প্রায় ২০ হাজারের এদিক ওদিক দৈনিক টেস্টার জন্য এপ্লাই করে।
তিনি আরো বলেন, যে পরিমান আশা করা হয়েছিল এই মাসের শেষের দিকে সেই পরিমান প্রকৃত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ছে না এটির কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যথা সময়ে পদক্ষেপ গুলো নেওয়া হয়েছে বিধায় এখনো সংখ্যাটি নিন্ম পর্যায়ে অবস্থিত। আয়ারল্যান্ড ইউরোপের মধ্যে প্রথম সারির দিকে টেস্ট করার ব্যাপারে।
তিনি আরো বলেছেন, কতগুলো আইসিইউ বেডের প্রয়োজন পড়বে তাও নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে আজ লন্ডনে আরো দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হলেন ইস্ট লন্ডনের ডকল্যান্ডের বাসিন্দা হাজী ফখরুল ইসলাম, তিনি রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় আজ সকাল দশটায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন। অপরজন পপলারের টেভিয়ট ইস্টেইটের বাসিন্দা। বিকেল ৪টায় একই হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার বয়স ৮০ বছর। যারা বয়স্ক তারা এ মুহূর্তে বাসা থেকে বের না হওয়া উত্তম। একই সঙ্গে বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে সবাইকে ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের আহবান জানাই। আল্লাহ্ আমাদের ক্ষমা করুন।
Elderly people infected with coronavirus need ICU support the most. The number of older persons in the country is over 80 lakh
A doctor and a nurse on their duty in the ICU. Photo: Mumit M
Is it possible for the government to fight the deadly coronavirus with only 29 intensive care beds in its arsenal? It seems quite impossible when the country has a large population.
Critical coronavirus patients require ICU support. But a mere 29 ICU beds have been prepared at Dhaka’s five hospitals to combat the pandemic, according to the health directorate.
There are 10 such beds in Bangladesh Kuwait Friendship Hospital, eight in Sheikh Russel Gastro Liver Hospital, three in Uttara Regent Hospital, three in Mirpur Regent Hospital and five in Sajeda Foundation Hospital.
There is no ICU bed in any hospital outside Dhaka.
Bangladesh Kuwait Friendship Hospital is the lone institution responsible for treating coronavirus-infected patients.
Coronavirus patients are being quarantined and treated in the 200-bed hospital. There are only five dialysis beds kept ready in the hospital for such patients, who could be suffering from kidney diseases too.
Experts say elderly people infected with coronavirus need ICU support the most. The number of older persons in the country is over 80 lakh.
Prof Muzaherul Huq, former adviser to World Health Organisation’s Southeast Asia region, told The Business Standard the current trend of deaths from coronavirus in the country shows the casualty rate with respect to senior citizens is 100 percent. So far, all the three deaths have been of older persons.
Elderly people with multiple comorbid conditions such as diabetics and hypertension are very vulnerable to coronavirus infection, he added.
The country has 1,285 ICU beds which cannot be used for treating coronavirus patients. Keeping an infected patient in such beds will put other patients under risk of infection.
Recently, the ICU unit in the capital’s Delta Hospital was closed down following the death of a coronavirus patient. Now there is a risk of the virus being transmitted to other patients kept in ICU.
Prof Nazrul Islam, virologist and former vice-chancellor of Bangabandhu Sheikh Mujib Medical University, said the treatment of coronavirus patients has to be at designated hospitals with no other patient being allowed there.
There have to be separate ICU facilities for corona patients, he added.
Prof Muzaherul Huq said the number of ICU beds are inadequate compared to the country’s population and senior citizens. “We have to make a projection on predictability considering the type of patients and deaths. And based on it, we have to keep ICU beds ready without any delay.”
Some 15 beds in two hospitals in Chattogram have been prepared for treating patients infected with the virus. But the hospitals do not have any ICU unit.
Speaking on condition of anonymity, a professor at the medicine department of Chattogram Medical College and Hospital said, “A corona patient’s condition may turn critical anytime. Then will come the necessity of an ICU. But the hospital has been chosen for treatment without having an ICU facility. This in no way can be called adequate preparation.”
Dr Jahidur Rahman, assistant professor at the virology department of Shaheed Suhrawardy Hospital, said the number of patients is small at present. So, not all of them need ICU facilities. But when the number of patients surges within a few days, many will need intensive care beds.”
On March 21, Health Minister Zahed Maleque said 100 intensive care beds would be installed to tackle the coronavirus situation. Gradually, a total of 400 new ICU beds would be set up.
But the minister could not say when the beds would be installed.
Stress on ensuring adequate number of ventilators
Physicians have urged that an adequate number of ventilators be made available for coronavirus patients.
Coronavirus attacks people’s lungs, in some cases impeding their ability to breathe as they develop pneumonia. Ventilators, which deliver air to the lungs through a tube placed in the windpipe, are crucial to keep these patients alive.
Prof Muzaherul Huq said there has to be scientific ventilators in the hospitals. All patients do not need to be shifted to ICU beds. Some patients’ breathing problems can be attended to with ventilators. Even young patients may need them.
Officials at the health directorate could not say if there are enough ventilators at the hospitals selected for treating corona patients.
খালেদা জিয়ার মুক্তির ঘোষণায় স্বস্তি, করোনা মোকাবিলায় সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস তারেক রহমানের বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তির ঘোষণায় শোকরিয়া আদায় করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন তিনি।
মহামারি করোনা মোকাবেলায় সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এই মহামারি মোকাবিলায় সরকারকে সহযোগিতা করতে চায় বিএনপি।
তিনি অনতিবিলম্বে এই মহামারির গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুসারে দেশবাসীকে এই রোগ থেকে বেঁচে থাকতে সামাজিক মেলা-মেশার উপর বিধি নিষেধ মেনে চলার জোর তাগিদ দেন তিনি।
জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে ধৈর্য্য ও সাহসকিতার সাথে এই বিপর্যয় মোকাবিলার উদাত্ত আহবান জানান তারেক রহমান।
করোনার বিস্তার ঠেকাতে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এই সময়ে গণপরিবহণ চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাধারণ ছুটির সময়ে সড়কে বাস, মিনি বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং হিউম্যান হলার চলবে না।
তবে এসময়ে ওষুধ, জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান সড়কে চলবে।
এই সময়ে রাইড শেয়ারিং সেবাও বন্ধ থাকবে বলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের পরিচালক লোকমান হোসেন মোল্লা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
এমপি ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি মৃত্যু বরন করেন ২রা জানুয়ারী, ২০২০ ( সম্ভবত করোনায় আক্রান্ত হয়ে )
আওয়ামী লীগের পরোলোকগত তরুণ এমপি ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি অসুস্থ হবার আগে চিনে গিয়েছিলেন। তার ফেবু টাইমলাইনে দেখা যাচ্ছে তিনি ২৫ নভেম্বর ২০১৯ এ চিনের ছবি শেয়ার দিয়েছেন। এ সময়ে তিনি চীন ভ্রমণ করেছেন বলে জানা গেছে।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তিনি অসুস্থ হন। হিসাব অনুসারে ফিরে আসার দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি অসুস্থ হন বলে অনুমান করা যায়।
অসুস্থ শরীরেই তিনি সিআর আই ওর অনুষ্ঠানে গিয়েছেন, মন্ত্রীদের সাথে বসেছেন পাশাপাশি, টক শো করেছেন। এই অসুস্থতা নিয়েই তিনি ১৬ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানে গিয়েছেন গণভবনে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সন্মেলনে গিয়েছেন, হাজারো কর্মীদের সাথে কথা বলেছেন, ছবি তুলেছেন। সাংবাদিক প্রভাস আমিন বলেছেন, আপা আপনি তো এই শরীরে একটা মাস্ক পরতে পারতেন। তিনি উত্তর দিয়েছেন, কর্মীরা দুরের মানুষ মনে করে।
মারাত্মক অসুস্থ হয়ে তিনি ২৮ ডিসেম্বর বিএস এম এম ইউ য়ে লাইফ সাপোর্টে যান। কয়েকদিন পরেই তিনি ২রা জানুয়ারী মারা যান। মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছিলো ইনফ্লুয়েঞ্জা জনিত এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া।
বাংলাদেশে প্রথম করোনা পজেটিভ রোগী সনাক্ত হয়েছে ৯ই মার্চ। যদি ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করে তার মানে নভেম্বর বা ডিসেম্বর থেকে অনেক লোক কমিউনিটি সংক্রমিত হয়েছে।
আমরা ধারণা করে কিছু বলতে চাইনা, শুধু সম্ভাবনার কথা বলছি। সরকারের বিভিন্ন লেভেল থেকে যেভাবে প্রমান করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে প্রবাসীদের বিরুদ্ধে তা দেখে মনে হয় কিছু আড়াল করার চেষ্টা চলছে। আর যদি আসলেই বাপ্পির মৃত্যুর কারণ এটা হয় তাহলে আপনার আমার সকলের দায়িত্ব এর একটা তদন্ত হওয়া এবং সঠিক তথ্য উদঘাটন করা। কাউকে হেও করা উদ্দেশ্য নয়, দেশে করোনা ভাইরাস কন্ট্রোলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যথা সময়ে নেওয়া যাবে। যা আমরা সবাই কামনা করি।
এতদিনে ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পির কবরে নিশ্চয়ই দেহাবশেষ গলে গিয়েছে যদি সম্ভব হয় সমাধি স্থল থেকে সোয়াব টেস্ট করা যেতে পারে তা নাহলে কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করে দেখা যেতে পারে, তার সংস্পর্শে থাকা কোন ব্যক্তি অসুস্থ হয়েছেন কিনা?
যদি আমরা করোনা ভাইরাস কে সিরিয়াসলি মরণঘাতী শত্রু হিসেবে দেখি তাহলে এই শত্রুকে মোকাবেলা করতে হলে আমাদেরকে সঠিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ময়দানে আসতে হবে, তানাহলে আমরা ভুল স্ট্র্যাটেজিতে থাকলে এর ক্ষতি ভীষণ ভাবে বহন করতে হবে সমগ্র জাতিকে।
সম্ভাব্য করোনার কারণে কেউ মৃত্যুবরণ করলে মৃত ব্যক্তির লাশকে দাফন বা সৎকার করার সরকারী নীতিমালা যা সকলেরই জানা প্রয়োজন তা নিন্মরূপঃ
★★ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা সন্দেহভাজন কেউ মারা গেলে মৃতদেহ সরানো, সৎকার বা দাফন শুরুর আগে অবশ্যই সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরকে জানাতে হবে।
চার সদস্যের একটি দল সম্পূর্ণ সুরক্ষা পোশাক পরে মৃতদেহ সৎকার বা দাফনের জন্য প্রস্তুত করবে। মৃত্যুর স্থানেই মৃতদেহ প্লাস্টিকের কাভার দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে। দলের নেতা মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের নির্দিষ্ট কোনো অনুরোধ থাকলে তা জেনে নেবেন। কোথায় কবর দেওয়া হবে, সেটিও ঠিক করে রাখতে হবে।
★★ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির শরীর থেকেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, এ জন্য এই রোগে মৃত ব্যক্তিকে পরিষ্কার করা বা ধোয়া যাবে না, নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছাড়া ছোঁয়াও যাবে না।
★★ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে মরদেহ গোসল করানো যাবে না। তবে পরিবারের অনুরোধ থাকলে মরদেহ গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম বা পানি ছাড়া অজু করানো যাবে। আর পরিবারের পক্ষ থেকে কাফনের কাপড়ের জন্য অনুরোধ থাকলে সেলাইবিহীন সাদা সুতির কাপড় কাফনের কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কাফনের কাপড় প্লাস্টিকের ব্যাগে রেখে তার ওপর মরদেহ রাখতে হবে এবং দ্রুত ব্যাগের জিপার বন্ধ করতে হবে। ব্যাগে কাফনের কাপড় দেওয়ার সময় যারা মরদেহ উঁচু করে ধরবেন, তাঁদের অবশ্যই সুরক্ষা পোশাক পরে থাকতে হবে।
★★ মৃতদেহ সৎকারের জন্য মৃতদেহের সব ছিদ্রপথ (নাক, কান, পায়ুপথ ইত্যাদি) তুলা দিয়ে ভালো করে বন্ধ করে দিতে হবে, যাতে কোনো তরল গড়িয়ে না পড়ে। এরপর সংক্ষিপ্ত রুটে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মৃতদেহ সমাধিস্থলে নিয়ে যেতে হবে।
★★ যাত্রাকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মৃতদেহটি দাফন পরিচালনাকারী দলের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। পরিবহনে ব্যবহৃত গাড়িতে দুটি অংশ থাকতে হবে, যাতে চালক ও পরিবহন কামরার মধ্যে প্রতিরক্ষামূলক কাচ বা প্লাস্টিকের আবরণ থাকে। পরিবহনের পর ব্যবহৃত বাহনটি জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এ সময় জীবাণুমুক্ত করার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিকে অবশ্যই প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরতে হবে। দাফনের সময় মৃতদেহ বহনকারী ব্যাগটি কখনোই খোলা যাবে না।
★★দাফনের পর কবর বা সমাধিস্থানটি ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার গভীর মাটির স্তর দিয়ে ঢাকার পাশাপাশি দাফন করা স্থানের আশপাশ উপযুক্ত জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কারও করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়। এ ছাড়া মৃত ব্যক্তি যে স্থানে মারা গেছেন, সেই স্থানটিও যত দ্রুত সম্ভব জীবাণুমুক্ত করা এবং মৃতদেহ দাফনের পর সেই স্থান ভালোভাবে ঘিরে রাখতে বলা হয়েছে।
★★ করোনায় সন্দেহভাজন কারও মৃত্যু হলেও সমান সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আইইডিসিআরে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এসে মৃত ব্যক্তির মুখের লালার নমুনা নিয়ে নিশ্চিত করবেন যে মৃত ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না।
★★ করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ কখনোই ময়নাতদন্ত করা যাবে না।
আইরিশ প্রধান মন্ত্রী লিও ভারাদকার বলেছেনঃ করনা ভাইরাস এর জন্য জরুরী অবস্থা গ্রীষ্ম পর্যন্ত বাড়তে পারে;এবং বয়স্কদের স্ব-বিচ্ছিন্ন হতে বলা হবে। প্রধান মন্ত্রী লিও ভারাদকার ঘোষণা করেছেন যে বয়স্ক ব্যক্তিদের শিগগিরই কয়েক সপ্তাহের জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে বলা হবে।
জাতির উদ্দশ্যে ভাষণের মিঃ ভারাদকার বলেছিলেন; মারাত্মক করোনভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে প্রবীণদের “ককুন” করতে বলা হবে। “একটি নির্দিষ্ট সময়ে, আমরা বয়স্ক এবং দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা সম্পন্ন লোকদের কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেব,” । তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা এটাকে কৌকুনিং বলি এবং এটি আমাদের জীবনযাত্রার, বিশেষত আমাদের সমাজে সবচেয়ে দুর্বল, সবচেয়ে মূল্যবানদের জীবন রক্ষা করবে। ককুন চাওয়ার লোকদের পরীক্ষা করা হবে এবং খাবার সরবরাহতা নিশ্চিত করা হবে।
মিঃ ভারাদকর বলেছেন, “আমরা একটি বৈশ্বিক এবং একটি জাতীয় জরুরি অবস্থার মাঝামাঝি সময়ে আছি, এমন মহামারী, এর আগে কেউ আগে কখনও দেখেনি। জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে বাতিলকরণ ও বন্ধকরণ নিয়ে আলোচনা করে তিনি বলেছিলেন: “আমি জানি এই বিষয়গুলো সহজ হবে না, তবে এই সিদ্ধান্তগুলো দেশ ও জাতির জন্য প্রয়োজনীয়। লিও ভারাদকার আরো বলেছিলেন যে সম্ভবত এই ব্যবস্থাগুলি ২৯ শে মার্চ, “এমনকি গ্রীষ্ম পর্যন্ত” প্রসারিত হবে তবে গণপরিবহন ও দোকানগুলি চালু থাকবে।
আপনারা অনেকেই জানতে চান কখন এটি শেষ হবে; সত্য কথা, আমরা এখনও জানি না। আমরা জনগণকে পরস্পর থেকে দূরে থাকায় জাতি হিসাবে একত্রিত হওয়ার জন্য বলছি।” তিনি জনসাধারণকে আশ্বাস দিয়েছেন যে “যখন আমরা সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অতিক্রম করবো তখন আমরা লোকদের আবার কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনব এবং ব্যবসা বাণিজ্য আবার চালু করব। যদিও তিনি বলেছিলেন যে অর্থনীতির ক্ষয়ক্ষতি প্রচুর হবে। তিনি আস্থা প্রকাশ করেছেন যে আয়ারল্যান্ড ফিরে আসতে পারবে।
তিনি ফ্রন্টলাইন কর্মী, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অপারেটর, মিডিয়া এবং ব্রডকাস্টারদের জনগণের সদস্যদের আপডেট করার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি লোকদের তাদের সামাজিক যোগাযোগের ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার এবং ভুল তথ্য না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন “ভয় নিজেই একটি ভাইরাস,” তিনি আরও যোগ করেন, “আপনার ফোনে ক্রমাগত স্ক্রোল করা বা সর্বশেষতম বিকাশগুলি নিয়ে অতিআগ্রহী হয়ে ভুল তথ্য প্রদান করা কারও পক্ষে ভাল নয়” “আমি আয়ারল্যান্ড থেকে বিশ্বের প্রত্যেককে বন্ধুত্ব এবং আশার বার্তা পাঠিয়েছি।
মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে ইউরোপের সীমানা ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার বিষয়ে সম্মতি জানালেও মালামাল চলতে রাখতে তাদের দেশের সীমান্তে দ্রুত ট্র্যাক লেন স্থাপনের বিষয়টি জানিয়েছেন। ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে তৃতীয় দেশগুলির নাগরিকদের তাদের সীমানা বন্ধের বাস্তবায়ন ইউরোপীয় দেশগুলির হাতে হবে। “শত্রু ভাইরাস এবং এখন আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে এবং আমাদের অর্থনীতি রক্ষার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে,”। “আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু করতে প্রস্তুত আছি। পরিস্থিতি বিকশিত হওয়ায় আমরা অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করব না।”
স্পেনে সহ সকলদেশে আটকে পড়া নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে একত্রে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন লিও ভরাদকার। আয়ারল্যান্ডে এখন COVID-19 এর ২৯২ টি নিশ্চিত কেস রয়েছে। করোনভাইরাস সঙ্কটের জাতীয় প্রতিক্রিয়া সমর্থন করার জন্য সরকার জনস্বার্থ বিল ২০২০-এ স্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষা এবং অন্যান্য জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে। এই বিলটির আরও বিশদ বিবরণী আজ সন্ধ্যায় প্রকাশ করা হবে এবং আগামীকাল শুক্রবার ডেইল ও সানাদের মাধ্যমে এটি কার্যকর করা হবে। এই বিলে ভাইরাসে আক্রান্ত বা স্ব-বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিদের জন্য বেকারত্ব ভাতার অর্থ প্রদানের জন্য অপেক্ষার সময়কাল সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজনীতিবিদরা জাতির বাপ মা। একটি পরিবারে সন্তান সন্ততির উপর যেমন মা বাবার প্রভাব পড়ে তেমনি একটি দেশ বা জাতির উপর রাজনীতিবিদদের প্রভাব পড়ে। মা বাবা ভালো হলে ছেলে মেয়েরাও সাধারণত ভালো হয়। কথায় আছে, “বাপ ভালো তো ছেলে ভালো মা ভালো তো মেয়ে” তাই রাজনীতিবিদরা ভালো হলে জনগন ভালো হবে, জনগন ভালো হলে একটি দেশ বা জাতি আদর্শ হবে, বেগবান হবে, বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। সুতরাং একটি দেশ বা জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে রাজনীতিবিদদের সঠিক নেতৃত্ব ও ভূমিকার বিকল্প নেই।
তবে রাজনীতিবিদ বলতে আমি পাপিয়া বা সম্রাট মার্কা রাজনীতিকের কথা বলছিনা। রাজনীতিবিদ তো তারাই যাদের নাম শুনলেই শ্রদ্ধায় মন ভরে ওঠে। এ ক্ষেত্রে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার মতো।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাংলার আদিবাসীদেরকে বলা হতো অস্ট্রিক, অস্ট্রালয়েড কিংবা ডেড্ডিভ। এই ডেড্ডিডরাই নাকি বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য তথা বাঙ্গালি সংস্কৃতির ধারক-বাহক। এরপর এ অঞ্চলে আসে নানান জাতির নানান জন। বাংলার উপর ছিলো সবারই শ্যান দৃষ্টি। আর্য থেকে শুরু করে সেন, পাল, মোগল, সুলতান তারপর ব্রিটিশ , পাকি এমন কেউ বাকি নেই যারা বাংলাকে লুটেপুটে খায়নি। দুঃখিনী বাংলা মা কখনো বাঙ্গালির হয়ে উঠতে পারেনি। তার দুর্ভাগা সন্তানরা কখনো মায়ের কোলে মাথা রেখে স্বাধীন ভাবে শ্বাস ফেলতে পারেনি।
এভাবেই একের পর এক বিদেশী শাসনের মধ্যে দিনাতিপাত করতে হয়েছে বাংলার মানুষকে। অবশেষে ১৭৫৭ সালে পলাশীর পরাজয়ের মাধ্যমে মুসলিম সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়। প্রায় ২০০ বছর বাংলাকে ব্রিটিশরা তাদের উপনিবেশ হিসেবে ব্যবহার করে। তবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এ উপমহাদেশে সর্ব প্রথম আন্দোলনের ডাক বাংগালিরাই দেয়। কংগ্রেস, মুসলিম লীগ বাঙ্গালিদেরই সৃষ্টি। আন্দোলনের মুখে ব্রিটিশরা যখন মুখ থুবড়ে পড়ছিলো তখন শেষ মূহুর্তে ওরা কূট কৌশলের মাধ্যমে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা ও দ্বিধা বিভক্তি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।
এমনি এক চরম মূহুর্তে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির আবির্ভাব ঘটে এ বাংলার মাটিতে। কে জানতো এই ভোলাবালা শিশুই একদিন বাঙ্গালির আশা আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে আত্মপ্রকাশ করবে।
হ্যাঁ তিনিই। বাল্যকাল থেকেই ছিলেন ডানপিটে স্বভাবের দুরন্ত প্রকৃতির। কিশোর বয়সেই তিনি হয়ে ওঠেন বিপ্লবী বাঙ্গালির সূর্য সন্তান। পরের ইতিহাস কারো অজানা নয়। পাকিস্তানের উপনিবেশ থেকে বাংলাকে মুক্ত করে এনে স্বাধীন স্বদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার যে ত্যাগ তিতিক্ষা, অক্লান্ত পরিশ্রম, দূরদর্শী নেতৃত্ব তা বিশ্বে বিরল। তার নেতৃত্ব ও নামের উপর ভিত্তি করে ১৯৭১ সালে সংগঠিত হয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের। সে যুদ্ধে পাকিদের হঠিয়ে ছিনিয়ে আনা হয় স্বাধীনতার লাল সূর্য। হাজার বছরের শৃংখলিত বাংলা হলো মুক্ত। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি নতুন রাষ্ট্রের সংযুক্তি ঘটে।মাথা উচু করে হাঁটতে আর অসুবিধে নেই বাঙ্গালির। আজ তাদের দেশে তারাই শাসক, রাজা, হর্তাকর্তা, নেতা। এ হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামশীল জীবনের অসংখ্য ত্যাগ তিতিক্ষার সফল পরিনতি।
বঙ্গবন্ধু যে কতো বড়ো মাপের নেতা ছিলেন তা প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরীর একটি সাক্ষাতকার থেকে আচ করা যায়। ঐ সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় জোট নিরপেক্ষ (ন্যাম) সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা শুনে কিউবার ফিদেল কাস্ট্রো ছুটে এসে বঙ্গবন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, আপনাকে দেখেছি। আমার আর হিমালয় দেখার দরকার নেই’। সৌদি আরবের কিং ফয়সাল যে কিনা একাত্তরে পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল গণহত্যার জন্য। তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে এসে বারবার বলেন, ‘আমি লজ্জ্বিত, আমি লজ্জ্বিত। এ থেকে স্পষ্টতই বুঝা যায় বঙ্গবন্ধু কেবল এ উপমহাদেশীয় নেতাই ছিলেননা বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন বিশাল বড়ো মাপের নেতা।
এ মহান নেতার দল আজ ক্ষমতায়। তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরি কন্যা শেখ হাসিনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বাবার মতো তিনিও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যুদ্ধে লিপ্ত। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বাবা পেয়েছিলেন চুরের খনি, তিনি পেয়েছেন দুর্নীতিবাজ, চাটার দল ও মোসাহেবের খনি। তাই যেখানেই তাকানো যায় সেখানেই দেখা যায় সম্রাট পাপিয়াদের রাজত্ব। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে এক দল অতি উৎসাহী চাটার দলের বেশ বাড়াবাড়িও আজকাল পরিলক্ষিত হচ্ছে। যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বাড়াবাড়িকে ভালো ভাবে নেননি এবং শক্ত ভাবে তা দমন করার চেষ্টা করেছেন। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্বকে আতংকিত করে তোলা করোনা ভাইরাসের ছোবলের কথা বিবেচনায় এনে তিনি মুজিব বর্ষ সীমিত আকারে পালনের যে মানবিক ঘোষণা দিয়েছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার।
যে কথাটি বলে শেষ করতে চাই তা হলো, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শুধু অতি উৎসাহী হয়ে উঠা নয়, চাটামি নয় কিংবা তাকে দলীয় সীমাবদ্ধতার মধ্যে রেখে মাথায় নিয়ে নাচানাচি নয় বরং তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে তার মতো ত্যাগী হতে হবে। হৃদয়ে লালন করতে হবে তাঁর আদর্শকে। মহান নেতার জন্ম শতবার্ষিকীতে এই হোক প্রদীপ্ত অঙ্গীকার।
আসছে ২৪শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে BSAI এর বাৎসরিক ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। এবারের টুর্নামেন্ট ৩ টি ডিভিশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এন্ট্রি ফি ৪০ টাকা ডিভিশন প্রথম ও ৩০ টাকা ডিভিশন ২/৩ এর জন্য ধার্য্য করা হয়েছে। এন্ট্রি ফি ২২ তারিখের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
গত ৩রা এপ্রিল লিমেরিক এ সংগঠনটির অনুষ্ঠান প্রস্তুতিমূলক এক সভার আয়োজন করা হয়। সভাটি সংগঠনের সভাপতি মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং জস উদ্দিন তমাল ও হাবিবুর রহমানের যৌথ উপস্থাপনায় পরিচালিত হয়। কুরান তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হয়।
এই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গুরুত্বপূর্ণ যে সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা নিন্মরুপ
১- ২৪শে মার্চ ৩ টি ডিভিশনের মাধ্যমে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট, ডাব্লিনে
২- ৯ ই জুন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কর্কে
৩- ৩০ শে জুন পিকনিক ও বাচ্চাদের ফুটবল, ডাব্লিনের ক্লোন্ডাল্কিনে
৪- আন্তর্জাতিক খেলা না হওয়ার সীদ্ধান্ত হয়
এ বছর বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থাকায় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট স্থগিত রাখা হয়েছে।
সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মান্নান মান অসুস্থ থাকায় তার শারিরীক সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। তিনি ব্যাক্তিগত কারনে সংগঠন থেকে ৬ মাসের অবসরে আছেন।
আয়ারল্যান্ডে প্রায় ৪০০ জন ব্যক্তিকে করোনা ভাইরাসের স্ক্রিনিং করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র ২ জন সংক্রমিত রোগী সনাক্ত হয়েছে। দুই জন রোগীর উভয়েই উত্তর ইতালি থেকে ফিরত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তারা উভয়েই সেখানে আক্রান্ত হয়েছে।
ঘটনার ধারাবাহিকতায় ডাবলিনে একটি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে যাতে সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অন্য কারো কাছে এই ভাইরাস ছড়াতে না পারে।
ইতোমধ্যে আয়ারল্যান্ডে গুগল তাদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কর্মকর্তাদের বাসা থেকে কাজ করার জন্য বলেছে। প্রায় ৮ হাজার গুগলের কর্মকর্তা গত সপ্তাহ থেকে এই দিক নির্দেশনা মেনে আসছে।
সংক্রমণ এড়াতে ইনডিড নিয়োগ কোম্পানি তাদের প্রায় এক হাজার কর্মকর্তাকে ২য় দফা বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।
মূলত বৃহৎ বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সতর্কতা মূলক ও এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনার জন্য এমন ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে।
আয়ারল্যান্ডে এখনো এর প্রাদুর্ভব বা মহামারী ঘটেনি। তবে সবাইকে সচেতনতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
২০০১ সল্ থেকে মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে অবস্থান করে আসছে। তালেবান সৈন্যদের সাথে মার্কিনিদের ও নেটোর যে যুদ্ধের অবতারণা হয়েছিল ৯/১১ এর মধ্য দিয়ে তা অবশেষে শেষ হতে যাচ্ছে। দোহাতে গতকাল ২৯শে ফেব্রুয়ারী ,শনিবার মার্কিন কর্মকর্তা এবং তালেবান প্রতিনিধিদের এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কাতারের রাজধানীতে কয়েক মাস ধরে আলোচনার পরে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
পাকিস্তান, কাতার, তুরস্ক, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, উজবেকিস্তান এবং তাজিকিস্তানের নেতাদের উপস্থিতিতে দোহার স্বাক্ষরিত শনিবারের এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে ধীরে ধীরে তার সেনা প্রত্যাহারের পথ প্রশস্ত করবে। এই চুক্তিটির নামকরণ করা হয়েছে “আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনার চুক্তি”
শনিবার দোহায় একটি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং তালেবানের উপ-নেতা মোল্লা বড়দার উপস্থিত বিশিষ্টদের স্বাগত বক্তব্য প্রদান ককরেন।
এই চুক্তি মার্কিন দূত জালময় খলিলজাদ স্বাক্ষর করেছেন এবং এই বারই মার্কিন মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য তালেবান বিদ্রোহের সদস্যদের সাথে প্রথম কোন সাক্ষাত করেছেন।
তালেবানরা আল-কায়েদা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী দলগুলির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে এবং আফগান সরকার কে তারা মার্কিনী পাপেট বলে সম্বোধন করতো, তাদের সাথে শান্তি আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে। যার বিনিময়ে ওয়াশিংটন পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে বলে ওয়াদা বদ্ধ হয়েছে।
পরবর্তী ১৩৫ দিনের মধ্যে মার্কিনী সৈন্যে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে ৮,৬০০ করা হবে এবং পাঁচটি মার্কিনি ঘাঁটি বন্ধ করা হবে।
যদি উভয় পক্ষই তাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে তবে সমস্ত মার্কিন সামরিক বাহিনী ২০২১ সালের শেষের দিকে আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে পারে, যদিও ওয়াশিংটন আইসিস ও আল-কায়দার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি চালু রাখতে চাইবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই চুক্তিতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, ১০ মার্চ থেকে আলোচনা শুরুর পূর্বে ৫,০০০ তালেবান বন্দীদের বিনিময়ে ১,০০০ আফগান সরকারী সৈন্যকে মুক্তি দিতে হবে।
কিন্তু আফগানিস্তান সরকার যারা ৫,০০০ তালেবান সৈন্য আটক করে রেখেছে, যেহেতু এই চুক্তির অংশীদার নয় তারা এতগুলো তালেবান সেনাকে মুক্তি দিতে ইচ্ছুক কিনা তা স্পষ্ট নয়। আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
গৃহযুদ্ধ ও বিভিন্ন যুদ্ধের কারণে গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আফগানিস্তানকে ছিন্ন ভিন্ন করে রেখেছে। ৩০ বছরের কম বয়সী বেশিরভাগ জনসংখ্যার সংঘাত ছাড়া কিছুই জানার সুযোগ পায়নি এই দীর্ঘ সময়। তাই উত্তেজনা রয়েছে যুদ্ধের অবসানের জন্য আলোচনার যে প্রচেষ্টা হচ্ছে তা যেন অগ্রগতি করে এবং সফল হয়।
তালিবানরা এই চুক্তিকে তাদের “বিজয়” হিসাবে বর্ণনা করে করেছে। তালেবান সদস্য বাদে কোনও আফগান সরকারি ব্যক্তিবর্গ এখনও পর্যন্ত আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেনি।
আফগানিস্তানের স্বতন্ত্র মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি শাহহারজাদ আকবর বলেছেন, মার্কিন-তালেবান আলোচনায় অন্যান্য আফগান কণ্ঠ যাতে উপেক্ষিত না হয় সে বিষয়ে আমাকে কিছুটা উদ্বিগ্ন করেছে।
অনেকেই মনে করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী নির্বাচনে তার পররাষ্ট্র বিষয়ক নীতিতে অবদান রাখার কারণে কিছুটা সুবিধা প্রাপ্ত হবে।
বহুল প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত বা অবধারিত সংক্রামক ভাইরাস COVID ১৯ আয়ারল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডে ধরা দিয়েছে অবশেষে। গত কিছুদিন যাবৎ এর প্রত্যাশা ছিলো নানা মহল থেকে। এটা নতুন বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা না একেবারেই। আয়ারল্যান্ডের সাস্থ অধিদফতর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে এই ভাইরাস মোকাবেলা করতে। মূল ভূখণ্ডে এটি প্রথম কেইস হওয়ায় দেশব্যাপী কিছুটা আতংক থাকলেও জানুয়ারি থেকে যেহেতু এর প্রস্তুতি নেওয়া ছিলো এখন বলা যায় এর প্রতিকারের সকল ব্যবস্থা কর্মক্ষম ও ঠিক ঠাক রয়েছে।
আক্রান্ত এই রোগী একজন পুরুষ এবং তিনি দেশের পূর্ব অঞ্চলে বর্তমানে উপযুক্ত চিকিত্সা সেবা নিচ্ছেন।
কোভিড -১৯-এর সন্দেহভাজন আলামতের উপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য এই ব্যক্তিকে নিযুক্ত প্রোটোকলগুলির সাথে মিল রেখে চিহ্নিত এবং পরীক্ষা করা হয়েছিল।
উক্ত ব্যক্তি উত্তর ইতালির ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল থেকে ভ্রমণে করে কয়েকদিন পূর্বে দেশে প্রবেশ করে। ধারণা করা হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তি ইতালিতেই সংক্রমিত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হোলোহান বলেছিলেন: “এটি অপ্রত্যাশিত নয়। “আমরা এই ঘটনার জন্য এখন অনেক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।“জনস্বাস্থ্য প্রোটোকলগুলি জানুয়ারী থেকে কার্যকর হয়েছে এবং কার্যকরভাবে পরীক্ষা ও সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
যারা এই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে, থাকে সকলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা নজরদারি কেন্দ্রের পরিচালক ডঃ জন কুডহি আরও বলেছেন: “এইচএসই এখন এই রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিবর্গকে যে কোনও বিস্তার তথ্য এবং পরামর্শ দেওয়ার জন্য সংস্থাটি দ্রুত কাজ করছে।
এটি নোট করা জরুরী যে নৈমিত্তিক বা দৈনন্দিন যোগাযোগের মাধ্যমে এই রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি এখনো কম।
চিফ মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে জাতীয় জনস্বাস্থ্য জরুরী দলের দেওয়া পরামর্শ অনুসরণ করতে জনগণকে দৃঢ় ভাবে উত্সাহিত করতে বলা হয়েছে।
কেউ হঠাৎ শ্বাসকষ্টে ভুগলে অথবা নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হলে বা উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর হলে জিপি বা মেডিকেলে না গিয়ে ফোনে তার জিপির সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জিপির ফোন নাম্বার না থাকলে বা যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হলে ১১২ অথবা ৯৯৯ এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
আজ শনিবার থেকে গোলওয়ে ও ক্লেয়ারে ঘূর্ণিঝড় “জর্জে” আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। এই দুই কাউন্টিতে লোকদের “সমস্ত কিছু বন্ধ” করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড় “জর্জে” আটলান্টিক থেকে আগত হওয়ার সাথে সাথে বাড়ির ভিতরে থাকতে হবে বলে জানিয়েছে আইরিশ আবহাওয়া অধিদফতর Met Éireann।
জনসাধারণকে শনিবার বিকেলে উক্ত জায়গাগুলিতে ঘন্টায় নূন্যতম ৮৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার গড় গতিতে এবং ১৩০ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতিতে পৌঁছানোর আশংকা করছে। এ সময় বাতাসের পূর্বাভাস সহ দেশব্যাপী হাজার হাজার বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং গাছ পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো ঘটনার প্রত্যাশা করতে বলা হয়েছে।
আরও উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ “বন্যা” এবং “অত্যন্ত তীব্র বাতাস” দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে বলে আশা করা হয়েছে। সাথে সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ার আশংকা থেকেই যাচ্ছে।
দুপুর ১ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত এই ঝড়ের প্রকোপ অত্যাধিক থাকবে। গোলওয়ে এবং ক্লেয়ারের পশ্চিমার্ধকে অতিরিক্ত সচেতনাতা অবলম্বন করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত অরেঞ্জ ওয়ার্নিং দেখানো হয়েছে পুরা দেশ ব্যাপী। ঘূর্ণিঝড় “জর্জে” সদ্য ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় “ডেনিস” ও “কিয়ারার” চেয়ে মারাত্মক হবে বলে সতর্কতায় জানানো হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস দানে নিয়োজিত ব্যক্তি “গ্যারি মার্ফি” ঘূর্ণিঝড় “জর্জে” কে মোকাবেলা করতে সকলকেই পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে আহ্বান করেছেন।
জাতীয় “দমকল ও জরুরি” ব্যবস্থাপনার পরিচালক “কীথ লিওনার্ড” বলেছে “প্রাণের ক্ষয়ক্ষতি” এড়ানোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে তাদের সংস্থা।
যদিও অতি মাত্রায় বৃষ্টি থাকবে না তার পরেও বড় ধরণের বন্যার জন্য প্রস্তুত থাকার ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বাতাসের গতি অত্যাধিক থাকবে বলে জন জীবনের ক্ষয়ক্ষতি ভীষণ রকমের ঘটতে পারে। জনদুর্ভোগের মাত্রা হ্রাস রাখতে ঝড়ের সময় বসত বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঝড়ের সময় ড্রাইভিং থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় যাতায়াত সকালের মধ্যে সেরে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডে এই প্রথম কোন ব্যক্তি করোনা ভাইরাস পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়েছে। এই ব্যক্তি ইতালি থেকে ডাবলিন এয়ার পোর্টে অবতরণ করেন। তার পর তিনি নর্দান আয়ারল্যান্ডে গেলে করোনা ভাইরাস চিহ্নিত হয়। নর্দান আয়ারল্যান্ডের পাবলিক হেলথ এজেন্সি এই ঘটনা নিশ্চিত করেছেন আজ সন্ধ্যায়। রোগীগে এখন বিশেষ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নর্দান আয়ারল্যান্ডের হেলথ এজেন্সি জানার চেষ্টা করছে তার সংস্পর্শে কি পরিমান লোকজন ছিলো এবং কোন রুট ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌঁছেছে।
এই রোগীকে বেলফাস্ট রয়েল ভিক্তোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কর্তিপক্ষ জানিয়েছে রোগী কোন দেশের নাগরিক বা তার বিস্তারিত দেওয়া অনৈতিক ও যে আইনি হবে বিধায় এই পর্যায়ে তার কোনো পরিচয় প্রকাশ করা হবে না।
ধারণা করা হচ্ছে, বিমানে এই যাত্রী কাদের সংস্পর্শে ছিল, সহযাত্রী কেউ আক্রান্ত হয়েছে কিনা। ডাবলিন থেকে নর্থন আয়ারল্যান্ড বসে করে গিয়েছে নাকি ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেছে।
বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছে যে এ রোগ আয়ারল্যান্ডে খুব শীঘ্রই আসবে কিন্তু কত তাড়াতাড়ি বা দেরিতে আসবে তার ধারণা ছিলোনা।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ব বিখ্যাত মোবাইল ব্র্যান্ড স্যামসাংয়ের মূল কারখানা ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণেই এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ। দেশটির গুমি নগরীতে স্যামসাং কারখানার এক কর্মীকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর কারখানাটিকে আপাতত বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের পক্ষ থেকে বলা হয়, আক্রান্ত কর্মী যে তলায় কাজ করতেন ওই তলা ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে– খবর বার্তাসংস্থা রয়টার্সের।
“যেসব কর্মী আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং তারা আক্রান্ত হয়েছেন কিনা তা জানতে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে,”- বলা হয়েছে স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে।
স্যামসাংয়ের মোট স্মার্টফোন উৎপাদনের ছোট একটি অংশ আসে গুমি কারখানা থেকেই। স্থানীয় বাজারের জন্য হাই-এন্ড ফোন বানানো হয় ওই কারখানায়। ভিয়েতনাম এবং ভারতেই বেশিরভাগ স্মার্টফোন উৎপাদন করে স্যামসাং।
দক্ষিণ কোরিয়ায় একদিনেই নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী চুং সায়ে-কিউন।
দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবার থেকে শনিবার নাগাদ নতুন করে ২২৯ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যাতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩৩ জনে।
দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে চিপ এবং পর্দা কারখানার উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছে স্যামসাং।
বোরহান মেহেদী।। দেশত্যাগ করার সময় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনসহ ৪ জনকে আটক করেছে র্যাব-১। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ চালানো, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার [২২ ফেব্রুয়ারি] দুপুরে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় তাদের আটক করে র্যাব।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭ টি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।
র্যাব আরো জানায়, আটক পপিয়ার তেজগাঁও এফডিসি গেট সংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি গাড়ির শো রুম এবং নরসিংদীতে একটি গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। এসব ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
পাপিয়া সমাজ সেবার নামে নরসিংদী এলাকায় অসহায় নারীদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতেন। এজন্য অধিকাংশ সময় নরসিংদী ও রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ করে আসছিলেন তিনি। পাপিয়া গত তিন মাসে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা হোটেল বিল পরিশোধ করেছেন। তার নামে ওই হোটেলের প্রেসিডেন্ট স্যুট সবসময় বুকড থাকতো। হোটেলে প্রতিদিন শুধুমাত্র বারের খরচবাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করতেন। হোটেলটিতে তার নিয়ন্ত্রণে সাতটি মেয়ে ছিলো বলে জানা গেছে। যাদের প্রতি মাসে ৩০ হাজার করে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেন তিনি।
র্যাব আরো জানায়, নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য পাপিয়ার একটি ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। স্বামীর সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন।
এছাড়া তিনি বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্যের সঙ্গেও জড়িত। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
র্যাব জানায়, আটক মতি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। দেশে স্ত্রীর ব্যবসায় সহযোগিতার পাশাপাশি থাইল্যান্ডে তার বারের ব্যবসা রয়েছে। তিনি তার স্ত্রীর মাধ্যম প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় নারীদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করতেন। অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য নরসিংদী এলাকায় তার কু-খ্যাতি রয়েছে।
আটক সাব্বির খন্দকার পাপিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবং আটক তায়্যিবা মতি সুমনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। পাপিয়া ও মতি সুমনের ব্যক্তিগত সম্পত্তির হিসাব রক্ষণাবেক্ষণসহ সব অবৈধ ব্যবসায় এবং অর্থপাচার ও রাজস্ব ফাঁকি দিতে সহযোগিতা করে আসছিলেন তারা।
এ যাবৎ পর্যন্ত গুগলের যতগুলো প্ল্যাটফর্ম আছে গুগল ম্যাপ অন্যতম একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম। আপনাকে নতুন কোন এলাকাতে পৌঁছাতে বা নিত্যনৈমিত্তিক জায়গাগুলোতে পৌঁছাতে এর সহায়তা কয়েক লক্ষলক্ষ মানুষ প্রতিদিন নিয়ে থাকে। লোকজন এটি ব্যবহার করতে পছন্দ করার একটি প্রধান কারণ হলো ট্র্যাফিক জ্যাম এড়ানোর চেষ্টা করা এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে দ্রুততম রুটটি সন্ধান করা।
গুগল মানচিত্র ব্যবহারের জনপ্রিয়তার কারণে মূলত ট্র্যাফিক জ্যামের অনুমান করতে সক্ষম হয়েছে এই অ্যাপট। এই অ্যাপটি ব্যবহারকারীর সংখ্যাকে ব্যবহার করে রাস্তাঘাটগুলি কতটা যানজটে রয়েছে তা নির্ধারণ করতে পারে। তবে গুগল ম্যাপের অন্যতম বৃহৎ শক্তিও এর বৃহত্তম দুর্বলতা হতে পারে, যেমনটি একটি জার্মান শিল্পীর ভিডিওতে দেখানো হয়েছে।
বার্লিন-ভিত্তিক শিল্পী Simon Weckert পুরাতন ব্যবহৃত মোবাইলফোন দিয়ে ভুয়া বা আর্টিফিশিয়াল ট্র্যাফিক জ্যাম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন যা গুগল ম্যাপে লাল লাইন দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে।
Simon Weckert একটি ট্রলিতে একসাথে ৯৯ টি ফোন রেখে সেটি নিয়ে জার্মানির বিভিন্ন রাস্তায় প্রদক্ষিণ করেন ও গুগল ম্যাপ নেভিগেশন চালিয়ে এটি সম্পাদন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
এরপরে তিনি একটি ভিডিও রেকর্ড করেন যেখানে দেখানো হয়েছে রাস্তায় ফোন ভর্তি ট্রলি নিয়ে চলার সময় কিভাবে ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয় গুগল ম্যাপে বা এটিকে সহজেই প্রভাবিত করা যায়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ফোনে পর্যাপ্ত অ্যাফোন পেলে গুগল ম্যাপের ট্র্যাফিক ডেটা ম্যানিপুলেট করার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কতটুকু সহজ।
যদিও ওয়েকার্টের “গুগল ম্যাপস হ্যাক” একটি মজাদার শিল্প প্রকল্প কর্ম, এতে এটাও প্রকাশ হয় যে, পর্যাপ্ত ফোন সহ একজন ব্যক্তি কিভাবে বর্তমান যুগের একটি জনপ্রিয় ম্যাপিং অ্যাপ্লিকেশন কে প্রভাবিত করতে পারেন।
এর সুযোগ নিয়ে হয়ত দুষ্ট প্রকৃতির মানুষজন নানা ধরণের অনিষ্ট সৃষ্টি করতে পারে। অবশ্যই এটি কেবল গুগল ম্যাপের ব্যবহারকারীদের উপর প্রভাব ফেলবে, যা প্রচুর লোকজন ব্যবহার করে নিত্যদিন তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে।
ওয়েকার্ট ভিডিওটি ১ফেব্রুয়ারী ২০২০ এ পোস্ট করেছিলেন এবং আমাদের এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত এটি ত্রিশ লক্ষ ষাট হাজার বারের কিছু উপরে দেখা হয়েছে। এতে এখনও দেখার বিষয় রয়েছে যে গুগল এখানে ব্যবহৃত কৌশলটি মোকাবেলায় কী করতে পারে।
হয়তো এটি তেমন গুরুত্ব বহন করেন , তবে আমরা অবশ্যই আশা করি যে গুগল এটি সন্ধান করছে।
যখন দেখি সামাজিক ও রাজনৈতিক কষাঘাতে দেশ বিপর্যস্ত, ধর্মের নামে চলে রমরমা ব্যবসা তখন ঊনপঞ্চাশ বছরের প্রৌঢ় দেশটার প্রতি আমার বেশ মায়া হয় এবং ভাবি এ দেশকে নিয়ে সম্ভবত আর কোনো আশা নেই। কিন্তু পরক্ষণেই যখন দেখি বাঙ্গালি অনেক শুভ কাজেও বেশ সিদ্ধহস্ত তখন বুকটা আবারো আশায় ভরে উঠে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা বাঙ্গালির এমনি একটি শুভ কাজ, এমনি একটি নান্দনিক অনুষ্ঠান যা আশার আলো জাগিয়ে হৃদয়কে সতেজ ও ভরপুর করে তুলে। টানা এক মাস ধরে চলে এ মেলা। ভাষার জন্য প্রায় দিয়েছে এবং ঐ ভাষাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কোনো মেলা মাস ব্যাপী চলতে পারে তা আমাদের দেশ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে হয় বলে আমার জানা নেই। অচিরেই এ মেলা বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
এ মেলা একদিনে আজকের অবস্থানে পৌঁছে যায়নি। এর পেছনে রয়েছে এক বিরল ইতিহাস। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষার জন্য আত্মোৎসর্গের যে বীরত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে সেই স্মৃতিকে অম্লান রাখতে পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্ত রন্জন সাহা নামের এক ভদ্রলোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে বটতলায় এক টুকরো চটের উপর ৩২টি বই সাজিয়ে সর্ব প্রথম বই মেলার সূচনা ঘটান। এরপর আর পিছু তাকাতে হয়নি। সেই ৩২টি বইয়ের ক্ষুদ্র মেলা কালানুক্রমে বাংগালির স্বনামধন্য মেলায় পরিণত হয়েছে।এ মেলা আজ শুধু দেশের ভেতরই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের দেয়াল ডিঙ্গিয়ে পাড়ি জমিয়েছে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তারই অনুসরণক্রমে প্রথম বারের মতো এবার আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হচ্ছে “অমর একুশে গ্রন্থ মেলা”।
এ সমাজে কিছু মানুষ আছেন যারা নতুন কিছু নিয়ে ভাবেন, নতুন নতুন পথ প্রদর্শন করেন। তাদেরকে বলা হয় পথ প্রদর্শক। আয়ারল্যান্ডস্থ বাঙ্গালি সমাজে এমনি কিছু পথ প্রদর্শক আছেন যাদের বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা, সুনিপুণ পরিকল্পনা ও নিরলস প্রচেষ্টার ফলে বইমেলার মতো একটি মহতী অনুষ্ঠান আজ আয়ারল্যান্ডের মাটিতে আজ উদযাপিত হয়েছে।
পথপ্রদর্শনকারী এ শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিদের জানাই আমার শুভকামনা ও প্রণতি।
বাবু চিত্তরঞ্জন সাহার যে মেলা ৩২ টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো তা আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আয়ারল্যান্ডে আয়োজিত আজকের এ মেলাও একদিন বট বৃক্ষে পরিনত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
বাংগালির এ প্রানের মেলায় উপস্থিত হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য ও গর্বিত মনে করছি। বইমেলার এ যাত্রা হোক শুভ, সুন্দর,শাশ্বত ও নান্দনিক এই আমাদের সকলের প্রত্যাশা।
আয়ারল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল একটি জটিল ধাঁধা সৃষ্টি করেছে। ১৬০ টি আসনের মধ্য থেকে একজন স্পিকার সরানোর পরে ১৫৯ টি আসন বাকি থাকে। সরকার গঠন করতে হলে নূন্যতম এক আসন বেশি থাকতে হবে কোন একক দোল বা জোটের। সে হিসেবে ৮০ টি আসন ভরাট করতে পারলেই কেবল এই সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবে এবং সরকার গঠন করতে পারবে। আর বাকিরা বিরোধী দল হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।
প্রাপ্ত ফলাফল থেকে আমরা দেখতে পাই তিনটি দলই একই রকম আসন সংখ্যায় জয় লাভ করে যেমন Sinn Féin ৩৭ টি, Fianna Fáil ৩৮ টি ও Fine Gael ৩৫ টি। এই তিনটি দলের বাহিরে Labour Party ৬ টি, Solidarity – People Before Profit ৫ টি, Green Party ১২ টি, Social Democrats ৬ টি, Aontú ১ টি, Independent ১৯ টি ও অন্য একটি দল ১ টি আসন প্রাপ্ত হয়।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার পূর্বে বড় দুটি দল Sinn Féin কে নানা ভাবে হেয় করার চেষ্টা করে এবং তাদের পলিসি কে অগ্রহণযোগ্য বলেও প্রচার করে। বড় দোলদুটো ভাবতে পারেনি এই দ্বীপের মানুষজন তাদের উপর আসলেই এতো ক্ষিপ্ত হতে পারে। Fine Gael নেতা লিও ভরাদকার নির্বাচনের ফলাফল পেতে শুরু করার সময় একথা পরিষ্কার করে ফেলে যে, ক্ষমতা কোন ভাবে Sinn Féin এর হাতে চলে গেলেও তাদের সাথে কোন রকম সমঝোতা করবেন। প্রতিউত্তরে Sinn Féin নেতা মেরি লূ আমাদের প্রতি তাদের এমন আচরণের কারণে আমরাও চেষ্টা করবো যাতে তাদের সাথে কোন রকম লিঁয়াজো ছাড়াই সরকার গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারি। পরিলক্ষিত হচ্ছে দুইটি মেরু তৈরী হয়েগেছে ইতোমধ্যেই।
সরকার গঠনের জন্য যে ৮০টি সিটের প্রয়োজন সেটা Sinn Féin কিভাবে পূর্ণ কোরবে সে ব্যাপারে দেখা দিতে পারে জটিলতা। তাদের ৩৭ টি আসনের পরেও আরো ৪৩ আসনের হিসেবে মিলাতে কত ঘাটের জল ডিঙাতে হতে পারে এই দলটিকে সেটি দেখার বিষয়? তারা যদি সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে পুনঃনির্বাচন ছাড়া আর কোন উপায় বাকি থাকবেনা।
আসুন তিনটি সম্ভাবনাকে নিয়ে আলোচনা করা যাক যার মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করা যেতে পারে।
প্রথমতঃ Sinn Féin এর ৩৭টি আসনের সাথে Green এর ১২টি, Social Democrat এর ৬ টি, Solidarity-PBP এর ৫টি, and Labour এর ৬টি মিলিয়ে সর্বমোট ৬৬টি আসন হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে আরো ১৪টি আসনের প্রয়োজন হয়। তবে স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের কাছে আছে আরো ২১ টি সিট। কিন্তু এভাবে জোড়াতালি দিয়ে ছোটছোট দলগুলোকে একসাথে নিয়ে নিশ্চয়ই সরকার গঠন করা খুব সহজ হবেনা। সরকার এভাবে গঠন করতে পারলেও প্রশাসনিক কর্মকান্ডে জটিলতা সৃষ্টির একটি সম্ভাবনা থেকেই যায়।
দ্বিতীয়তঃ রাজনৈতিক ভাবে কিছুটা শক্ত অবস্থান হতে পারে Sinn Féin, Fianna Fáil এবং Green এই তিনটি পার্টি মিলে জোট করলে। এতে মোট আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৭ যা সংখ্যা লঘিষ্ঠতা পায়।
তৃতীয়তঃ আমরা জানি Fine Gael, Sinn Féin এর সাথে ক্ষমতা শেয়ার করতে নারাজ, সেই মতে Fine Gael, Fianna Fáil এবং Green Party পার্টি জোট করতে সফল হলে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়েও এগিয়ে যাবে অর্থাৎ ৮৫ টি সিট একত্রিত হবে। তবে এইরকম হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
আগামী ২০শে ফেব্রুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার ৩৩তম সংসদ বসার কথা আছে। সেদিন পর্যন্ত রাজনীতির বিভিন্ন অলিতেগলিতে বিচরণ করবে রাজনীতিবিদ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে সরকার গঠন করা সম্ভব না হলে এর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে তবে এর কোন সময় সীমা বেঁধে দেওয়া নাই। তবে সামনেই বাজেট সেশন আছে , ব্রেক্সিট নিয়ে লন্ডনে আলোচনা আছে EU এর সাথে সম্মেলন আছে। নতুন সরকার তাড়াতাড়ি গঠন করা না গেলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার এই মিটিং গুলোতে প্রতিনিধিত্ব করবে যা নতুন সরকারের পক্ষে মেনে নেওয়া কিছুটা ঝামেলা তৈরী করতে পারে।
আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিতে জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে শিন ফেইন বিশেষ পরিচিত। ২০২০ এর নির্বাচনে এ দলটি এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ভোটে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে এগিয়ে আছে। এটাকে শুধু সংখ্যা গরিষ্ঠতা বললে ভুল হবে প্রাপ্ত ফলাফলের অর্ধেক সংখ্যক আসন নিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা সোহো রেকর্ড করে এগিয়ে আছে। যখন আমাদের এই রিপোর্ট তৈরী হচ্ছে তখন পর্যন্ত ৬৩টি আসনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছে যার মধ্যে শিন ফেইন একই ২৯ টি আসনে জয় লাভ করেছে।
শিন ফেইনের এই জয়কে বিশেষজ্ঞরা গুরুত্ব সহকারে মনিটর করছে। ধারণা করা হচ্ছে এই দলটি প্রয়োজনীয় একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন না করতে পারলেও এর কাছাকাছি থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টা আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হতে পারে সকল আসনের নির্বাচনী ফলাফল পেতে। দেখার বাকি শিন ফেইনের এ হাসি কতদূর পর্যন্ত কোলম্যান থাকে। শিন ফেইন জয়ী হতে পারলে আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।
উল্ল্যেখ্য এখন পর্যন্ত ১১টি আসন ফিনে, ১০ টি আসন ফিয়ানা ফাইল, ৬ টি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও বাকী ৭ টি অন্যান্য দল পেয়েছে।
আইরিশ নির্বাচনের সকল গুরুত্বপূর্ণ আপডেট আপনাদের জন্য বাংলায় আমাদের পোর্টালে পাবলিশ করা হবে ধারাবাহিক ভাবে। রাজনীতি সচেতন সকলকে আমাদের সাথে ধৈর্য্য সহকারে থাকার জন্য অনুরোধ করা গেল।
এবারের নির্বাচনে ১৬০ টি আসনের ১৫৯ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রার্থীগণ। Ceann Comhairle তার আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনঃ নির্বাচিত হন।
এই ১৬০ জন সদস্য নির্বাচিত হবে মোট ৩৯ টি নির্বাচনি এলাকা থেকে যার ৯টি নির্বাচনী এলাকায় ৩ টি করে আসন , ১৭ টি নির্বাচনী এলাকায় ৪ টি করে আসন, এবং ১৩ টি নির্বাচনী এলাকায় ৫ টি করে আসন, প্রতি জেলার গড় আসন ৪.১০ টি রয়েছে। ৩রা ফেব্রুয়ারি, স্বতন্ত্র প্রার্থী মেরেস স্কেহানের আকস্মিক মৃত্যুর পরে, টিপ্পেরির নির্বাচনটি রিটার্নিং অফিসার দ্বারা পুনরায় সংগঠনের জন্য মনোনয়ন বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। তবে, ৫ ফেব্রুয়ারি আবাসন, পরিকল্পনা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী একটি বিশেষ অসুবিধা আদেশ জারি করেছিলেন যাতে অন্যান্য আসনের মতো একই তারিখেও নির্বাচন পরিচালনা করতে দেওয়া হয়। এটি সংসদ বিলোপের ৩০ দিনের মধ্যে সংবিধানিক প্রয়োজনীয়তার বিবেচনায় ছিল। প্রতি ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ হাজার ভোটারের জন্য গড়ে একজন করে সংসদ সদস্য রাখার বিধান রয়েছে।
গতকাল ভোটদান শেষ হহওয়ার পর, ব্যালট বাক্সগুলি সিল করে দিয়ে নির্বাচনি এলাকার একটি কেন্দ্রীয় গণনা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ রবিবার ৯ ই ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টা নাগাদ ভোটের চেকিং এবং গণনা শুরু হবে এবং প্রথম নির্বাচিত সদস্য দুপুর ২ টা থেকে ৩ টার মধ্যে ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে।
যেহেতু পিআর-এসটিভি অধীনে ভোট গণনা একটি বহু-পর্যায়ের প্রক্রিয়া, নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল আগামী সপ্তাহের প্রথম দিক ছাড়া হয়তো পুরাপুরি প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। তবে কোন সমস্যা না হলে আজই ৯ ই ফেব্রুয়ারি ভোট গণনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো তাদের গণনা শেষ করবে।
এবার নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন শেষ হয় বুধবার, ২২শে জানুয়ারী। ২০২০ সালের নির্বাচনের ৫৩১ জন্য প্রার্থী নমিনেশন পান যার মধ্যে উল্ল্যেখ্যযোগ্য ১৬২ জনই নারী। এটিই প্রথম আইরিশ সাধারণ নির্বাচন যেখানে প্রতিটি আসনে একজন করে মহিলা প্রার্থী রয়েছেন। উল্ল্যেখযোগ্য যদি কোনও দলের ন্যূনতম ৩০% পুরুষ এবং ৩0% মহিলা প্রার্থী না থাকে তবে তারা তাদের রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে নির্বাচনও ব্যয়ের অর্ধেক হারায়।
প্রথমবারের মতো এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলির মধ্যে অন্টি, আইরিশ ফ্রিডম পার্টি, ন্যাশনাল পার্টি এবং আরআইএসই (এস – পিবিপির অংশ হিসাবে) অন্তর্ভুক্ত ছিল।
২০১৬ সালের আইরিশ সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে ফিনে গেইল নির্বাচিত স্বতন্ত্র জোটসহ স্বতন্ত্র সদস্যদের নিয়ে সংখ্যালঘু সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ফিয়ানা ফেইলের সাথে একটি আস্থা ও চুক্তির মাধ্যমে তখন সরকার গঠন করে। এবার নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে কোন একক দল সরকার গঠন করতে পারে কিনা। তবে জনমত জরিপ নিশ্চয়ই সেটা ইঙ্গিত করছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ফিনে গেইল ৫০টি আসন পেয়ে ৩১.৫%, ফিয়ানা ফেইল ৪৪টি আসন পেয়ে ২৮% ও শিন ফেইন ২৩টি আসন পেয়ে ১৪.৫% এর অধিকারী হয়।
এবার বিভিন্ন Opinion Poll এ শিন ফেইন অগ্রগামী থাকলেও সরকার গঠন করতে কোন একক দল এগিয়ে থাকবে নাকি আবারো কোয়ালিশন সরকারের পথেই হাটতে হবে সেটা দেখতে এখনো অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে। কোয়ালিশন সরকার গঠন করা সময় সাপেক্ষ এবং এই সময় অগ্রগামী দল অন্যান্য দলগুলোর সাথে অথবা অন্য কোন নিকটবর্তী দল বাকী ছোটছোট দলগুলোর সাথে আলোচনা ও পাওয়ার শেয়ারিং এর বিষয়গুলো সামনে চলে আসবে।
আয়ারল্যান্ড এ নির্বাচনের উপর নির্বাচনের আগে ও পরে বিভিন্ন রকমের জরিপ চালানো হয়। নির্বাচনের আগে চালানো জরিপকে Opinnion Poll এবং নির্বাচনের পর চালানো জরিপকে Exit Poll বলা হয়। তদ্রুপ এবারের নির্বাচনের বেলায়ও তার ব্যতিক্রম হয় নি। এবারের এক্সিট পোল এর রেজাল্ট জনমনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে যা আগে থেকেই আন্দাজ করা গিয়েছিলো।
ভোটার রা যখন ভোট দিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসে তখন তাদেরকে আলাদা ভাবে একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ভোটার রেজাল্ট কি হবে সে রকম একটি জরিপ আন্দাজ করা হয়। যার ফলাফল আমরা দেখতে পাই ফিনেগেইল, সিন ফেইন ও ফিয়ানা ফাইলে দানকৃত ভোটের অনুপাত খুবই কাছাকাছি। সংখ্যাটি ২২ এর কিছু উপরে। Exit Poll এর এই সাক্ষাত্কার পরিচালিত হয় দেশ ব্যাপী মোট ৫,৩৭৬ জন ভোটারের উপর। সারা দেশের ৩৯ টি নির্বাচনী এলাকার মোট ২৫০ টি কেন্দ্রে এই জরিপ চালায়। গড়ে প্রতিটি কেন্দ্র ২২ জন করে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
সুতরাং আমরা এক্সিট পোলকে ততটা গুরুত্ব না দিলেও এটি একটি আন্দাজ করার মাধ্যম মাত্র। নির্বাচন পরবর্তী দিন ফলাফল ঘোষণার পূর্বে কয়েক দফা প্রাপ্ত ভোট গণনা করা হয়। এবং সেই রেজাল্টই ফুল এন্ড ফাইনাল।
১। আয় এবং কর্মসংস্থান।
দলটি বলেছে যে তারা অর্জিত প্রথম €৩০,০০০ ইউরোর ইউনিভার্সাল সোশ্যাল চার্জ বাতিল করে দেবে। তাদের দাবী এক বছরে ব্যয় হবে €১.২ বিলিয়ন ইউরো। সিন ফেন বলেছেন যে এই ব্যবস্থাটি শ্রমিকদের বছরে €৭০০ ইউরো সাশ্রয় করবে। তারা আরও বলছে যে তারা নিয়োগকারীদের জীবন ধারণের মজুরি দিতে বাধ্য করবে যেখানে তারা এটি করতে পারে, পাশাপাশি জরিমানা বেতনের গ্যাপ বন্ধ করতে কাজ করেনা এমন জরিমানা সংস্থাগুলির আইন প্রণয়নও করবে। সিন ফেইন বগাস স্ব-কর্মসংস্থানের বিরুদ্ধে আইন নিয়ে আসবে, নিয়োগকর্তাদের কর্মীদের পরামর্শ নিতে নিষিদ্ধ করবে এবং কার্যদিবসের বাইরে ‘সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অধিকার’ প্রবর্তন করবে।
২। আবাসন।
দলটি পাঁচ বছরে € ৬.৫ বিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে ১ লক্ষ কাউন্সিল হোম নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দলটি বলছে যে ফেরতযোগ্য ট্যাক্স এক বছরে ভাড়া কমিয়ে দেবে, তারা তিন বছরের জন্য ভাড়া স্থির করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা বার্ষিক € ৪৮৫ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে সম্পত্তি ট্যাক্স বিলুপ্ত করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, এবং তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বন্ধকী সুদের হার কমাতে ক্ষমতা দেবে।
৩। পেনশন।
সিন ফিন বলেছেন যে তারা রাজ্য পেনশনের জন্য যোগ্যতার বয়স ৬৫তে ফিরিয়ে আনবে যাতে প্রতি বছর € ৩৬৮ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় হবে। একই সাথে তারা ৬৫তে বাধ্যতামূলক অবসর বাতিল করবে, যাতে তারা চাইলে লোকজন কাজ চালিয়ে যেতে পারে। তারা সরকারের মেয়াদে পেনশনের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে, যার জন্য অতিরিক্ত €৭০০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় হবে। ইতোমধ্যে এটি পেনশন লিঙ্গ ব্যবস্থাকে “সমাধান” করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা শিশুদের যত্ন নেওয়ার জন্য সময় কাটিয়ে যাওয়া মহিলাদের শাস্তি হিসাবে বিবেচনা করে।
৪। স্বাস্থ্য।
দলটি বলেছে যে তারা প্রতি বছর € ৪৫৫ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে ফ্রি GP Care চালু করবে। Primary Care এর জন্য অতিরিক্ত ১৫০০ GPs প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা আরও জানায় যে €৩৫৮ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে আরও ২ হাজার ৫০০ নার্স এবং মিডওয়াইফ এবং আরও এক হাজার চিকিৎসক এবং পরামর্শক নিয়োগ দেবে। সিন ফিন বলেছেন যে তারা বাৎসরিক €৪৮০ মিলিয়ন ইউরো এবং রাজধানীতে €১ বিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে আরও ১৫০০ বিছানা খুলবে। তারা আরও বলছে যে € ৫৯ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে ১২ মিলিয়ন অতিরিক্ত হোম সহায়তা ঘন্টা সরবরাহ করবে।
৫। অপরাধ। সিন ফিন € ১৪২ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে গারদা সংখ্যা ১৬,০০০ এ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরা বলছে যে € ৮০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে ফ্রন্টলাইন শুল্কগুলিতে আরও বেশি গার্ডার ছাড়ানোর জন্য ২ হাজার অতিরিক্ত বেসামরিক কর্মী নিয়োগ করবে। দলটি বলেছে যে তারা একটি সাজা কাউন্সিলও প্রতিষ্ঠা করবে। ইতোমধ্যে তারা কোর্টস সার্ভিস, ডিপিপি এবং সিএবি’র জন্য আরও € ২ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করবে।
৬। শিশু।
সিন ফেইন অতিরিক্ত ২৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রসূতি বা পিতৃত্ব বেনিফিট বৃদ্ধি এবং প্রতি সপ্তাহে € ৫০ ইউরো বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দলটি বলেছে যে তারা প্রতি বছরে € ৫০০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে প্রত্যেক শিশুর জন্য প্রতি মাসে € ৫০০ ইউরো ব্যয় করবে। তারা অতিরিক্ত ৭৫০ জন সমাজকর্মী, ১০০ জন অতিরিক্ত প্রশাসনিক কর্মী এবং ১২৫ জন সেবাকর্মী নিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে। শৈশবকালে স্নাতক ডিগ্রি স্তরে উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন কর্মীদের জন্য € ৯.৬ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দলটি বিশেষ দরকারী সহকারীদের অ্যাক্সেস বাড়ানোর জন্য € ৬.৫ মিলিয়ন ইউরো তহবিল বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, যখন তারা একটি বেবি বক্স প্রকল্পের জন্য €১৫ মিলিয়ন ইউরোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
৭। শিক্ষা।
দলটি বলেছে যে তারা € ২৪৩ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে তৃতীয় স্তরের ফি বাতিল করবে এবং শিক্ষার্থীদের রক্ষণাবেক্ষণ অনুদানকে ১০% বাড়িয়ে দেবে। সিন ফিন আরও বলেছে যে তারা স্কুলগুলিতে ক্যাপটিশন অনুদান বাড়িয়ে তুলবে এবং স্বেচ্ছাসেবী অবদানের জন্য আইন তৈরি করবে। তারা € 173 মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে একটি ব্যাক টু স্কুল বোনাস চাইল্ড বেনিফিট পেমেন্টও প্রতিষ্ঠা করবে এবং স্কুলের বই বিনামূল্যে দেবে। ইতোমধ্যে তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকের অনুপাত ২০:১ এ কমিয়ে দেবে, DEIS স্কুলগুলিতে তহবিল বাড়িয়ে তুলবে এবং ফি-প্রদানকারী স্কুলগুলিতে পাবলিক ভর্তুকির অবসান করবে। তারা বিশেষ প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়নের জন্য অপেক্ষার সময়কে হ্রাস করার, আরও শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ এবং বিদ্যালয়ের জন্য ২০০ বক্তৃতা এবং ভাষা চিকিত্সকদের একটি প্যানেল স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
৮। আইরিশ ঐক্য।
সিন ফেইন বলেছ যে তারা আইরিশ ঐক্যের বিষয়ে একটি যৌথ ওরিয়াচতা কমিটি এবং পাশাপাশি একটি অল-দ্বীপ নাগরিক সমাবেশ গঠন করবে। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে গণভোট করার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে। সিন ফিনের নেতা মেরি ল্য ম্যাকডোনাল্ড বলেছেন, সাধারণ নির্বাচনের পরে যে কেউ সরকারে আসুক না কেন, আইরিশ ঐক্য হওয়া উচিত। তিনি বলেন যে, আইরিশ ঐক্য নিয়ে সরকারের পক্ষে কর্মসূচির অংশ হওয়ায় তিনি তার দল ক্ষমতায় যেতে দেখছেন না।
৯। কৃষি।
সিন ফিন চায় ছোট ছোট খামারগুলির জন্য ইউরোপের সাধারণ কৃষিক্ষেত্রের নীতি পুনরায় ভারসাম্যহীন – এবং বৃহত্তর প্রসেসরগুলির থেকে দূরে যা বলে যে তারা পারিবারিক খামারগুলিকে ব্যবসায়ের বাইরে ফেলেছে। দলটি পারিবারিক খামারের ভবিষ্যতের বিষয়ে সরকার-নেতৃত্বাধীন একটি নতুন কমিশন প্রতিষ্ঠা করবে। দলটি বলেছে যে তারা কৃষকদের জন্য চুষ্পস এবং মাইয়ের প্রদানের উন্নতি করবে, পাশাপাশি এই খাতকে নতুন কর ছাড়েরও প্রস্তাব করবে।
এদিকে সিন ফেইন বলেছে যে, আয়ারল্যান্ডের কৃষিক্ষেত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কারণে মার্কোসুর-ইইউ বাণিজ্য চুক্তিকে তারা অনুমোদন দেবে না। তারা বলেছে যে, ভবিষ্যতের যে কোনও বাণিজ্য চুক্তিকে “আইরিশ কৃষিক্ষেত্রকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে” অনুমোদন দেবে না।
১০। জলবায়ু।
সিন ফেইন ব্যবসার ট্যাক্স বৃদ্ধির বিরোধিতা পুনর্বিবেচনা করেছেন যতক্ষণ না সম্ভাব্য বিকল্পগুলি পাওয়া যায়। এর পরিবর্তে দলটি বলেছে যে তারা স্থানীয় পর্যায়ে শক্তি উত্পাদন প্রকল্পগুলিতে মাইক্রো জেনারেশনের কাঠামো স্থাপনসহ উত্সাহিত করবে। এদিকে রাজ্য আরও ভাল জনপরিবহন ব্যবস্থা এবং আরও বেশি বৈদ্যুতিক যানবাহন চার্জিংয়ে বিনিয়োগ করার সময় তার শক্তির প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করবে।
একই সময়ে সিন ফেন নতুন অফশোর অনুসন্ধানের লাইসেন্স নিষিদ্ধ করবে এবং ফ্র্যাকিংয়ের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার প্রবর্তন করবে, এবং জীবাশ্ম জ্বালানী প্রকল্পের রাজ্যটিকেও হস্তান্তর করবে। কার্বন-ভারী শিল্প ও চাকরি থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে যারা প্রভাবিত হতে পারেন তাদের সহায়তা করার জন্য এটি একটি ন্যায়বিচার ট্রান্সজিশন টাস্ক ফোর্সও প্রতিষ্ঠা করবে।
আয়ারল্যান্ডের মেও ক্যাসলবার থেকে নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লড়ছেন। লেবার পার্টির মনোনয়নপ্রাপ্ত কামাল উদ্দিন মিডল্যান্ড নর্থওয়েস্ট কাউন্টি মায়ো’র ক্যাসেলবার থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আগামীকাল ৮ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ক্যাসেলবার থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্ষমতাসীন দল ফিনেগেইল পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এন্ডা কেনি।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে তিনি তার এলাকাতে বিভিন্নভাবে জন সংযোগ করেন। তার জনসংযোগে সকল বেকগ্রাউন্ড থেকে নানাভাবে সহায়তা প্রাপ্ত হন। আইরিশ বাংলা টাইমসের সাথে কথোপকথনের সময় তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং যারা সহায়তা করেছেন সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিনিয়েছেন।
কামাল উদ্দিন জানান, তার রাজনীতিতে আসা ও মনোনয়ন পাওয়ার পথ মোটেই মসৃন ছিল না। এর জন্য তাকে আইরিশ কমিউনিটির জন্য কাজ করাসহ স্থানীয় পর্যায়ে প্রচার ও পরিচিতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।
বাংলাদেশের ফেনীতে জন্ম নেওয়া কামাল উদ্দিন প্রায় বিশ বছর আগে আয়ারল্যান্ডে আসেন। প্রায় তখন থেকেই তিনি আইরিশ মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত।
কামাল উদ্দিন শুধু আইরিশ কমিউনিটির কর্মকাণ্ডেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। সেখানকার বাঙালিদের বিভিন্ন সমস্যায় তিনি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পাশাপাশি বাঙালি কমিউনিটিকে বাংলাদেশের রাজনীতির ঊর্ধ্বে রেখে একত্রিত করার কাজেও যুক্ত তিনি।
এ ব্যাপারে কামাল উদ্দিন বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বাঙালিরা অনেক এগিয়ে থাকলেও আয়ারল্যান্ডে এখনও তারা তেমন শক্তিশালী হয়নি। এ কারণে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়ছি।’
তিনি নির্বাচিত হলে আইরিশ পার্লামেন্টে বাঙালিদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন।
নির্বাচনী প্রচারণা অন্য প্রার্থীদের চেয়ে ভিন্নভাবে শুরু করেছেন কামাল। তিনি ভোট দেওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় ও পৃথিবীর উষ্ণতা দূরীকরণে প্রত্যেককে একটি করে গাছের চারা দিচ্ছেন।
রোম একদিনে গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোন আলাদিনের চেরাগের দান নয়। প্রিয় ধর্ম ইসলাম কথায় কথায় গল্পে গল্পে চোখের পলকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়নি। বস্তুত বিশ্বে যা দৃষ্টান্ত বা কীর্তিমান হয়ে আছে তা কখনো একদিনে একবারে একক চেষ্টায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। এর জন্য সংঘবদ্ধ ভাবে মানুষের সময়, মেধা, শ্রম, অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।
আমরা আয়ারল্যান্ডে একটি নতুন ধারা বা পদ্ধতির প্রতিষ্ঠা ঘটাতে যাচ্ছি। এর জন্যও সময়ের প্রয়োজন, ধৈর্যের প্রয়োজন। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ভুল ভ্রান্তি থাকতে পারে, কাল ক্ষেপণ হতে পারে। এতে অধৈর্য বা হতাশাগ্রন্থ হলে চলবেনা। সম্প্রতি ভোটার নিবন্ধনের তালিকাটি দেখে যারা হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হয়েছেন তাদের সাথে আমি মোটেও একমত নই। অনলাইন পদ্ধতিতে ভোটার নিবন্ধন একটি নতুন প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি। প্রথম বারের মতো আমাদেরকে এ পদ্ধতির সাথে পরিচিত হতে হচ্ছে। সুতরাং একটু ধীর মন্থর গতিতে কাজটি এগোবে তাই স্বাভাবিক। তাছাড়া নিবন্ধনের কাজটি প্রকৃতপক্ষে ভোটারদের নয়। নির্বাচন পরিচালনা পরিষদের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ও সহযোগিতায় তা সম্পন্ন হওয়ার কথা। এরপরো সামাজিক দায়বদ্ধতার আলোকে স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু সংখ্যক ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন। দেশটিতে বসবাসকারী বাঙ্গালির তুলনায় সংখ্যাটি নগণ্য হলেও স্বেচ্ছায় নিবন্ধনকৃত হিসেবে এ সংখ্যাটি একেবারেই কম তা বলতে আমি রাজি নই। চূড়ান্ত চেষ্টার পর যদি ভোটার নিবন্ধনের তালিকাটা অসমাপ্ত থেকে যায় বা অসন্তোষজনক হয় তবেই কেবল হতাশাগ্রস্ত হওয়া সাজে বলে আমি মনে করি।
কি কারণে এখনো অধিকাংশ মানুষ ভোটার নিবন্ধন থেকে দূরে রয়েছে সে আলোচনায় আমি যাবোনা।বরং চূড়ান্ত চেষ্টার মাধ্যমে কিভাবে সকলকে দ্রুত নিবন্ধনে সম্পৃক্ত করা সম্ভব তাই হবে আমার আজকের প্রতিপাদ্য বিষয়।
ডিজিটাল পদ্ধতিটি বাস্তবায়নের জন্য আমরা কেবল মাত্র ডিজিটাল প্রচারণার আশ্রয় নিয়েছি যা কিনা যথেষ্ট নয়। আমার জানামতে এ আধুনিক সমাজও এমন অনেক আছেন যারা এখনো পুরনো ধ্যান ধারণার ধারক বাহক। কেউ কেউ এখনো মান্ধাতার আমলের বটমওয়ালা সেলফোন ব্যবহার করেন যাদের ফেসবুক সহ অন্য কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। অনেক শিক্ষিত পরিবারও আছেন যাদেরকে আমাদের নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। এরকম এক দম্পতি আজ সকালে আমার বাসায় এসেছিলেন। কথায় কথায় জানতে পারলাম নিবন্ধনের প্রতি খুব বেশি যে আগ্রহ তা নয়, তবু তারা তা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু “এয়ার কোড” ও ” আই অ্যাম নট এ রোবট” এ দু’ সমস্যার ( তাদের ভাষায়) জন্য তারা আর এগোতে পারেননি। আমি তাৎক্ষণিক মুহূর্তে জায়গায় বসিয়ে রেখে তাদের দুজনের নিবন্ধন সম্পন্ন করি। কথা গুলো কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য নয়। বরং নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কাজটি কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে যাওয়ার বাস্তব কারণ বা চিত্রটি তুলে ধরার চেষ্টা করছি মাত্র।
তাই আমি মনে করি, সময় বাড়িয়ে কেবল ডিজিটাল প্রচারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে নিবন্ধনের কাজটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা মোটেও সম্ভব নয়। এ জন্য এনালগ পদ্ধতিতেও হাঁটতে হষে। এনালগ পদ্ধতি বলতে বুঝাতে চাচ্ছি, প্রথমত যারা নির্বাচন পরিচালনা পরিষদে আছেন তারা যদি একটু ত্যাগ স্বীকার করে শুধু একদিন কাউন্টি ভিত্তিক সরেজমিনে লেপটপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে নিবন্ধনের কাজটি করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে এর সিংহ ভাগ ওই একদিনেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজনে তারা স্থানীয় উপদেষ্টা, সম্ভাব্য প্রার্থী বা যে কোনো স্চ্ছোসেবী ব্যক্তির সহযোগিতাও নিতে পারেন।
দ্বিতীয়ত প্রত্যেক শ্রেণীর লোকেরই সমাজে কিছুটা দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা থাকে। সে দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা থেকে নিবন্ধনের প্রচারটি আমরা কেবল মাত্র ফেসবুকে শেয়ার করেই ক্ষান্ত না থেকে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে একে অন্যকে মৌখিক তাগিদ বা ফোনে উৎসাহ প্রদানও করতে পারি। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে কেউ কেউ নির্বাচন বা ভোট দেয়া নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করলেও নিবন্ধনকৃত ভাটাবেজের গুরুত্ব অপরিসীম এ কথাটি বুঝতে সক্ষম হলে তারা আর পিছ পা হবেনা। আমার বিশ্বাস, এনালগ পদ্ধতিতে এভাবে এগোতে পারলে তা কোরামিনের চেয়েও বেশি কার্যকর হবে।
সকলকে আনন্দের সাথে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্যোগে আয়ারল্যান্ডে একমাত্র আইরিশ ক্রিকেট ক্লাব “ক্লোনডালকিন ক্রিকেট ক্লাব” একটি ফান্ড রাইজিং ডিনার সন্ধ্যার আয়োজন করতে যাচ্ছে। আগামী ১০ই ফেব্রুয়ারী রোজ সোমবার সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই আয়োজনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
ক্রিকেট ক্লাবটির পদ যাত্রা শুরু হয়েছিল এপ্রিল, ২০১৫ কিছু সংখ্যক খেলাধুলা প্রেমী বাংলাদেশির হাত ধরে। আয়ারল্যান্ডের তৎকালীন মিনিস্টার ফর জাস্টিস এন্ড ইকোয়ালিটির মন্ত্রী মিস ফ্রান্সিস ফিটজেরাল্ড ক্লাবটির উদ্বোধন করেন। প্রাথমিক ভাবে ১৫ জন সদস্য নিয়ে হাটা হাটি পা-পা করে শুরু করলেও আজকে ক্লাবটি ৮৫ জন সদস্যের এক বিশাল ক্লাবে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর ক্লাবটি বিভিন্ন ডিভিশনে তাদের খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ করায়। বর্তমানে ক্লাবটি ৩টা টীম নিয়ে ৩ টি ভিন্ন ডিভিশনে অংশ গ্রহণ করে যার মধ্যে একটি ইয়োথ টিমও রয়েছে।
এই ক্লাবে বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের সাথে অন্যান্য দেশ এবং আইরিশ খেলোয়াড়ও বিদ্যমান।
উল্ল্যেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে “২০১৫ সালে সাউথ ডাবলিন কাউন্টি পাবলিক পার্টিসিপেশন এওয়ার্ড”, ২০১৬ সালে “ডাবলিন বাস কমিউনিটি স্পিরিট এওয়ার্ড”, ২০১৭ সালে “লামা কমিউনিটি এন্ড কাউন্সিল এওয়ার্ড”, ২০১৭ সালে ক্লাবের একটি টিম “হোয়লান কাপ” T – ২০ চ্যাম্পিয়ন, ২০১৮ সালে “মাইনর কাপ” চ্যাম্পিয়ন হয়।
২০১৬ সালে স্পোর্টস ডিপার্টমেন্ট থেকে ৫৫৮৪ ইউরো ফান্ড পাওয়ার পর মাঠের মূল পিচ্ ইন্সটল করে। বর্তমান ফান্ড প্রথম নেট প্রেকটিস এরিয়াকে উন্নতকরণ, দ্বিতীয় নেট প্রাকটিস এরিয়া তৈরী ও আরো কিছু উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের জন্য এই বছর ক্লাবটি ডিপার্টমেন্ট অব স্পোর্টস থেকে আরো ২১,৭৯৮ ইউরোর একটি অনুদান পায়। তাদের এই পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে মোট ৩৪,৪০০ ইউরোর কোটেশন নিয়ে কাজ করছে। যা সম্পন্ন করতে আরো ১২,৬০২ ইউরোর প্রয়োজন হবে। ক্লাবটির ম্যানেজমেন্ট সমাজে যারা খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী ও কমিউনিটির উন্নয়নের সাথে জড়িত তাদের কাছে সহায়তার আহবান জানিয়েছে। এই বছরই ক্লাবটি প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাবে এর ফান্ডরাইজিং কার্যক্রম চালাচ্ছে। যে কোনো পরিমানের এককালীন সহযোগীতা কমিউনিটির উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য বিশেষ করে খেলাধুলায় বিশেষ অবদানের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
সাউথ ডাবলিন প্লানিং ডিপার্টপেন্ট তাদের এই ক্লাবের উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য প্ল্যানিং পারমিশন এপ্রুভ করেছে।
প্রকল্পে দুইটি নেট পিচ্ তৈরী, ব্যাটারি চালিত বোলিং মেশিন, নেট এরিয়ার পার্শ্বে বেড়া প্রদান উল্ল্যেখযোগ্য।
বিশেষ অতিথিদর মধ্যে যারা থাকবেন তারা হচ্ছেন Vicki Casserly: Mayor, South Dublin County Council (SDCC}. Philip Smith: CEO, Cricket Leinster. Isobel Joyce : Cricket development Officer for Cricket Leinster
Mr Griffin (Minister of State) বলেছেন যে সকল ভলেন্টিয়ার এই রকম ক্ল্যাবের সাথে কাজ করে তারা আয়ারল্যান্ডে খেলাধুলার প্রাণশক্তি। তাদেরকে সঠিক খেলাধুলার যন্ত্রপাতি সঠিক সুবিধা দিতে পরা আমাদের জন্য নূন্যতম কর্তব্য। এরই এই দেশে খেলোয়াড় তৈরির কারিগর। (আইরিশ টাইমস)
ক্লোনডালকিন ক্রিকেট ক্লাবের গালা ডিনার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে ক্লাব মেনেজমেন্ট কৃতজ্ঞ থাকবে বলে জানিয়েছে। আগ্রহী সদস্যগণকে উপরোক্ত আমন্ত্রণ পত্রের নিচে দেওয়া ফোন নাম্বারগুলোও থেকে যেকোন একটি নাম্বারের সাথে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০০ জন।
ক্লোনডালকিন ক্রিকেট ক্লাবের বর্তমান চেয়ারম্যান Kenneth Egan.
এই ক্লাব লিনস্টার ক্রিকেটের নিবন্ধিত সদস্য এবং এই ক্লাবের গভর্নিং বডি ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “গীবত কী তা কি তোমরা জান?” লোকেরা উত্তরে বলল, “আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন।” রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “গীবত হলো তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কথা বলা যা সে অপছন্দ করে।” জিজ্ঞাসা করা হলো, “আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তবে এটাও কি গীবত হবে?” রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “তুমি যা বল তা যদি তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে তাহলেই সেটা হবে গীবত, আর তুমি যা বল তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে সেটা হবে বুহতান বা মিথ্যা অপবাদ।” (মিশকাতঃ পৃ-৪১২)সাহাবি আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গীবত কাকে বলে, তোমরা জান কি? সাহাবিগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -ই ভালো জানেন। তিনি বললেন, তোমার কোনো ভাই (দীনি) সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তা-ই গীবত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যে দোষের কথা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের থাকে তবে তুমি অবশ্যই তার গীবত করলে আর তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছ।
(মুসলিম)গীবতের সবচেয়ে উত্তম ও বাস্তবসম্মত সংজ্ঞা দিয়েছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিম্মোক্ত হাদিস থেকে পেতে পারি।হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে দেখা যায় তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করে, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গীবত কী? তিনি বলেন, তোমার ভাই সম্মর্কে তার অনুপস্থি তে এমন কিছু বলা যা শুনলে সেব্যথিত হয়। তখন বলা হলো, আমি যে কথা বলি, তা যদি তার মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? নবী করীম সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি যা বলেছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তুমি তার গীবত করলে; আর সে দোষ যদি তার মধ্যেনা থাকে তবে তো তুমি তার ওপর বুহতান বা মিথ্যা দোষারোপ করলে, যা গীবত থেকে অধিক দোষনীয়।[মুসলিম/৬৩৫৭-আবূ হুরাইরা (রাঃ), বুখারী/৫৬১৩, আবূ দাঊদ/১৭৯৯]মহানবী (সা.) বলেন, ‘‘প্রত্যেক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের জীবন, সম্পদ ও ইজ্জত আব্রুতে হস্তক্ষেপ করা হারাম।’’উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, কারো গীবত করো না। আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে এক নারী সম্পর্কে বললাম যে, তার কাপড়ের আচঁল খুব লম্বা। মহানবী (সা.) বলেন, তুমি থুথু ফেলো। আমি থুথু ফেললে মুখ থেকে এক টুকরা গোশত বেরিয়ে আসে।
গবিত কী? বা গীবত অর্থঃ গীবত আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা, দোষারোপ করা, অনুপস্থিত থাকা, পরোক্ষে নিন্দা, পরচর্চা করা, কুৎসা রটনা করা, পিছনে সমালোচনা করা। অন্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করা, কুৎসা রটনা করা, পিছে সমালোচনা করা ইত্যাদি।শরীয়তের পরিভাষায় গীবত বলতে বুঝায় কোন ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে এমন কথা বালা যা শুনলে সে তা অপছন্দ করবে।গীবত করার মাধ্যম (চোখের ইশারায়, অঙ্গভঙ্গিতে, শ্রবণে ও লিখনে গীবত):পরনিন্দা কেবল মুখের বাক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং চোখের ইশারায়, অঙ্গভঙ্গিতে, শ্রবণে ও লিখনের দ্বারাও গীবত হয়ে থাকে। সর্বপ্রকার গীবতই হারাম। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) বলেন, একদিন আমি হাতের ইশারায় এক স্ত্রীলোককে খর্বাকৃতি বললে’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন, হে আয়েশা। তুমি গীবত করেছ, থুথু ফেলো। তৎক্ষণাৎ আমি থুথু ফেলে দেখলাম তা কালো বর্ণের জমাট রক্ত। এরূপে কোনো খোঁড়া কিংবা টেরা চক্ষুবিশিষ্ট ব্যক্তির অবস্থা অনুকরণ করার জন্য খুঁড়িয়ে হেঁটে কিংবা চক্ষু টেরা করে চাইলে তার গীবত করা হলো; তবে কারো নাম উল্লেখ না করলে এতে গীবত হয় না। কিন্তু উপস্থিত লোকেরা যদি বুঝতে পারে যে অমুক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে তবে তা গীবত বলে গণ্য এবং হারাম হবে।ইবাদতের ত্রুটি-বিচ্যুতির উল্লেখপূর্বক সমালোচনা করাও গীবতের অন্তর্ভুক্তঃ যেমন অমুক ব্যক্তি উত্তম রূপে নামাজ পড়ে না অথবা রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে না অথবা নফল নামাজ পড়ে না অথবা রমজানের সবগুলো রোজা রাখে না অথবা মাকরুহ্ ওয়াক্তে নামাজ পড়ে। তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে কতক ঘুমিয়ে থাকলে শেখ সা’দী (রা.) তাদের সমালোচনা করেন এবং বলেন, এই লোকগুলো যদি তাহাজ্জুদ পড়তো তবে কতই না ভাল হত। সা’দীর পিতা একথা শুনে বলেন, কতই না ভাল হত যদি তুমি তাহাজ্জুদ না পড়ে এদের মত ঘুমিয়ে থাকতে। তাহলে এদের গীবত করার পাপ তোমার ঘাড়ে চাপত না।
কোন ব্যক্তি অভিনয়ের মাধ্যমে অপর ব্যক্তির দোষ ত্রুটির প্রতি ইঙ্গিত করলে তাও গীবতের অন্তর্ভূক্ত।গীবত করার কারণ বা মানুষ যে সব ক্ষেত্রে গীবত করে থাকেঃমানুষ সব সময় নিজেকে বড় করে দেখে, এই আমিত্বের আরেক নাম আত্মপূজা। এটা শুরু হয়ে গেলে আত্মপ্রীতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তখন তার আত্মত্যাগের মতো মহৎ বৈশিষ্ট্য দূরিভূত হতে থাকে। ফলে এ স্থানে দানা বাঁধে হিংসা-বিদ্বেষ। আবার হিংসা-বিদ্বেষ থেকেই অপরের প্রতি কুধারণার সৃষ্টি হয়, যা মানুষকে গীবত করতে বাধ্য করে। সুতরাং আত্মপূজা, আত্মপ্রীতি, হিংসা-বিদ্বেষ, কুধারণাই মানুষকে গীবত করতে বাধ্য করে।
ইমাম গায্যালী তার রচিত কিতাব কিমিয়ায়ে সা’আদাত গ্রহন্থে ৮টি কারনের কথা উল্লেখ করেছেন-1. ক্রদ্ধ হওয়া।2. অপরের মনতুষ্টি কামানায়।3. নিজের দোষ অপরের ঘাড়ে চাপানোর প্রবনতায়।4. আত্ম প্রশংসার স্পৃহা।5. ঈর্ষা পরায়ন হয়ে।6. হাসি-বিদ্রুপ।7. অসাবধনাতয়। যেমন কানা বাবু, তোতলা কাশেম ইত্যাদি।8. আত্মাভিমান।
গীবতকারী ও গীবত শ্রবণকারী উভয়ই সমান অপরাধে অপরাধী:এক সফরে হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমার (রা.) -র সাথে এক দরিদ্র খাদেম ছিল, সে সবসময় তাদের খেদমত করত। গন্তব্যে পৌঁছে তারা উভয়েই ঘুমিয়ে পড়লেন এবং কিছুক্ষণ পর সেও ঘুমিয়ে পড়লো তাদের উভয়ের জন্য খাবার তৈরি না করে। তাঁরা উভয়ে জাগ্রত হয়ে বলতে লাগলেন, এই লোকটা খুব ঘুমায়। তারা তাকে ঘুম থেকে তুলে মহানবী (সা.) -এর নিকট পাঠালেন। সে তার নিকট আবেদন করল, হে আল্লাহর রাসূল! হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমার (রা.) আপনাকে সালাম পাঠিয়েছেন এবং কিছু খাবার চেয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তারা উভয়ে আহার করেছে এবং তৃপ্ত হয়েছে। তাঁরা উভয়ে তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আজ কি খেয়েছি? তিনি বলেন, তোমরা আজ ঐ খাদেমের গোশত খেয়েছ (গিবত করেছ) এবং আমি তোমাদের দাঁতে গোশতের রং দেখতে পাচ্ছি। তাঁরা উভয়ে এ কথা শুনে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের ত্রুটি মাফ করুন এবং আল্লাহর দরবারে আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেন, আল্লাহর ক্ষমাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট হবে না, খাদেম যেন তোমাদের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে। (দিয়া আল-মুকাদ্দাসীর বরাতে আদদুররুল মানছুরে, কিমিয়ায়ে শাআদাত)।
হাদিস খানা সহি কিনা জানাযায় নিগীবত শুনে আনন্দিত হওয়াও গীবতের মধ্যে গণ্যঃকারণ আনন্দ প্রকাশ করলে গীবতকারী খুশি হয় এবং আরও গীবতে লিপ্ত হয়। মোট কথা, কারো গীবত শোনা এবং তা বিশ্বাস করাও গীবতের পর্যায়ে গণ্য, বরং যে নীরবে গীবত শুনতে থাকে সেও গীবতে অংশগ্রহণ করে। হাদীস শরীফে এসেছে, ‘‘গবীত শ্রবণকারীও গীবতকারীদের একজন।’’ (তারাবানী)ইচ্ছাকৃতভাবে গীবত শোনা নিজে গীবত করার মতোই অপরাধ। হাদিসে আছে, সাহাবি মায়মুন রাঃ বলেন, ‘একদিন স্বপ্নে দেখলাম এক সঙ্গী ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে আছে এবং এক ব্যক্তি আমাকে তা ভক্ষণ করতে বলছে। আমি বললাম, আমি একে কেন ভক্ষণ করব? সে বলল, কারণ তুমি অমুক ব্যক্তির সঙ্গী গোলামের গীবত করেছ। আমি বললাম, আল্লাহর কসম আমি তো তার সম্পর্কে কখনো কোনো ভালোমন্দ কথা বলিনি। সে বলল, হ্যাঁ, এ কথা ঠিক। কিন্তু তুমি তার গীবত শুনেছ এবং সম্মত রয়েছ।’ এ হাদিসখানার রেফারেন্স সংগ্রহ করতে হবেএতে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ হয় যে, গীবতকারী ও গীবত শ্রবণকারী উভয়ই সমান অপরাধে অপরাধী।
বেঁচে থাকার উপায়গীবত থেকে বেঁচে থাকা অত্যন্ত জরুরি। এ থেকে বাঁচার প্রথম উপায় হচ্ছে অপরের কল্যাণ কামনা করা। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দীন হচ্ছে নিছক কল্যাণ কামনা করা।’দ্বিতীয়ত, আত্মত্যাগ অর্থাৎ যেকোনো প্রয়োজনে অপর ভাইকে অগ্রাধিকার দেয়া। যেমন আল্লাহ সূরা হাশরের ৯ নম্বর আয়াতে এরশাদ করেছেন, ‘তারা নিজের ওপর অন্যদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেয়, যদিও তারা অনটনের মধ্যে থাকে।’তৃতীয়ত, অপরের অপরাধকে ক্ষমা করে দেয়া।চতুর্থত, মহৎ ব্যক্তিদের জীবনী বেশি বেশি করে অধ্যয়ন করা।পঞ্চমত, কাউকে গীবত করতে শুনলে তার অনুপস্থিত ভাইয়ের পক্ষ থেকে তাকে বাধা দিতে হবে সাধ্যমতো, যদি বাধা দেয়া সম্ভব না হয় তবে মনে মনে ঘৃণা করতে হবে। সম্ভব হলে গীবতের মজলিস ত্যাগ করতে হবে অথবা গবিতকারীকে ভিন্ন প্রসঙ্গে মশগুল করার চেষ্টা করতে হবে। এরূপ কোন চেষ্টা না করলে অবশ্যই গুনাহ্গার হতে হবে।শষ্ঠত: আর কারো মধ্যে গীবত শোনার আগ্রহ লক্ষ্য করা গেলে তা মোনাফেকী স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। আন্তরিকভাবে গীবতকে খারাপ জানলে এবং যথাসাধ্য তাতে বাধা দিলেই কেবল গীবতের গুনাহ্ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
গীবতের পরিণামঃ1. গীবত ইসলামি শরিয়তে হারাম ও কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়।’ (সূরা হুমাজাহ-১)2. কেয়ামতের দিন নিজের মুখ নিজের নখ দ্বারা জখম করবে: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মিরাজের সময় আমাকে এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো যাদের নখ ছিল তামার। তারা তাদের মুখমণ্ডল ও দেহ আঁচড়াচ্ছিল। আমি জিবরীল আঃ-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা নিজ ভাইদের গীবত করত ও ইজ্জতহানি করত। (মাজহারি) হযরত আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘‘মি’রাজের রাতে আমি এমন একদল লোককে অতিক্রম করলাম যারা নিজেদের নখ দ্বারা নিজেদের মুখমন্ডল ক্ষতবিক্ষত করছিল। আমি জিবরাঈল (আ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তিনি বলেন, এসব লোক গীবত করতো এবং মানুষের ইজ্জত আব্রু নিয়ে টানাটানি করতো।3. গীবত ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক: হাদীস শরীফে গীবতকে ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক গুনাহ বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: গীবত ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক গুনাহ। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, এটা কিরূপে? তিনি বললেন, এক ব্যক্তিব্যভিচার করার পর খাঁটি তওবা করলে তার গুনাহ মাফ হয়ে যায়, কিন্তু যে গীবত করে তার গুনাহ গীবতকৃত ব্যক্তি মাফ নাকরা পর্যন্ত মাফ হয় না। হাদীসটি হযরত আবু সায়ীদ (রাঃ) ও জাবের (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। এই হাদীস থেকে প্রমাণিত হল,গীবতের মাধ্যমে আল্লহতায়ালার হক ও বান্দার হক উভয়ই নষ্ট করা হয়। (তাফসীরে মা’আরেফুল কুরআন)4. কবর আযাব হবে: হযরত জাবির (রা.) বলেন, আমরা মহানবী (সা.) এর সাথে সফরে ছিলাম। তিনি দু’টি কবরের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং কবরের বাসিন্দাদ্বয়কে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। মহানবী (সা.) বলেনঃ তারা দু’জন খুব মারাত্মক কোন গোনাহ করেনি, অথচ তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে। তাদের একজন মানুষের গীবত করত এবং অপরজন পেশাব করে উত্তমরূপে পবিত্র হত না। অতপর তিনি গাছের দু’টি তাজা ডাল চেয়ে নিয়ে তা দু’ভাগ করে দু’জনের কবরের পাশে গেড়ে দেন এবং বলেন, ডাল দুটি যতক্ষণ তরতাজা থাকবে ততক্ষণ তাদের হাল্কা শাস্তি হবে। (ইবনে আবিদ দুন্য়া)5. কোন ব্যক্তিকে তার গুনাহের কারণে অপদস্ত করা এবং তাকে জাহান্নামী মনে করা আল্লাহ তায়ালার মর্জি বিরোধী কাজ। বরং যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে অপমান করে আল্লাহ তা’য়ালা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন এবং তাকে অপমান করেন, অন্যদিকে যাকে অপমান করা হলো তার গুনাহ্ মাফ করে দেন। বনী ইসরাঈলের দুই ব্যক্তির ঘটনা এভাবে উল্লেখিত হয়েছে যে, তাদের একজন সর্বদা ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকতো এবং অপরজন পাপাচারে লিপ্ত থাকতো। ইবাদতে লিপ্ত ব্যক্তি সব সময় পাপাচারীকে হেয় প্রতিপন্ন করতো। একদিন সে চটে গিয়ে বলল, আল্লাহর শপথ! তুমি জাহান্নামে যাবে। কথাটি আল্লাহ্ পাকের অপছন্দ হলো এবং ইবাদতে লিপ্ত ব্যক্তিকে জাহান্নামী এবং পাপীকে জান্নাতী বানিয়ে দিলেন (আবু দাউদ, কিতাবুল বিররি (ওয়াস-মিলাহ)।6. কিয়ামতের দিন সৃষ্টিকুলের সামনে অপমানিত হবে: মহানবী (সা.) বলেন, ‘‘কারো উপস্থিতিতে কোন মুমিন ব্যক্তিকে অপমান করা হলো এবং উপস্থিত ব্যক্তি তাকে সাহায্য করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সাহায্য করল না, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্তায়ালা তাকে সৃষ্টিকুলের সামনে অপমানিত করবেন।’’ (আেহ্মেদ, তাবারানী)গীবত না করার সুফলঃ1. যে ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইয়ের অনুপস্থিতে তার ইজ্জত রক্ষায় সহায়তা করলো, আল্লাহ্তা’য়ালা কিয়ামতের দিন তার ইজ্জত রক্ষায় সহায়তা করবেন।’’(ইবনে আবিদ দুন্য়া)।2. ‘‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অনুপস্থিতে তার ইজ্জত রক্ষায় সহায়তা করল, তাকে দোযখ থেকে নিষ্কৃতি দেয়া আল্লাহ্তা’য়ালার কর্তব্য হয়ে যায়।’’(আহমদ, তাবারানী)3. মহান আল্লাহ বলেন, ‘‘কেউ খারাপ কাজ করে বসলো অথবা নিজের উপর জুলুম করলো, অত:পর আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে সে আল্লাহ্কে ক্ষমাকারী ও দয়াকারী হিসাবেই পাবে।’’(সূরা নিসা : ১১০)
যাদের দোষ বর্ণনা করা যায় অথবা গীবতের বৈধ ক্ষেত্র সমূহঃগীবত নিঃসন্দেহে হারাম। তারপরও যাদের দোষ বর্ণনা করা যায় তা হচ্ছে1. কারো সাক্ষাতে তাকে সংশোধনের উদ্দেশ্যে তার দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা যাবে।2. কারো অগোচরে তাকে সংশোধনের নিমিত্তে কয়েকজন মিলে পরামর্শকালে তার কোন দোষ আলোচনা হলে তাতে কোন অপরাধ হবে না। তবে লোক সমাজে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে হলে সম্পূর্ণ হারাম।3. কোনো অত্যাচারীর অত্যাচারের কাহিনী প্রতিকারের আশায় বর্ণনা করা।4. খোদাদ্রোহী, ধোকাবাজ, যালিম শরষক।5. বেদায়াতী ও দ্বীনের ক্ষতিকারী কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার দোষ-ত্রুটি আলোচনা করে লোকদের সতর্ক করা কোন দোষের ব্যাপার নয়।6. সন্তান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে তার পিতা ও স্বামীর কাছে অভিযোগ করা।7. বিয়ে-শাদীর ব্যাপারে যদি কেউ পরামর্শ চায় তবে ছেলে-মেয়ের দোষ-ত্রুটি জানা থাকলে তাকে বলতে হবে এ ক্ষেত্রেও কোন পাপ হবে না। বরং ছেলে-মেয়ের শরীয়াত সমর্থিত কোন দোষ গোপন করা পাপ।8. ফতোয়া গ্রহণ করার জন্য ঘটনার বিবরণ দেয়া ও – প্রয়োজন ও উপযোগিতার কারণে কারো দোষ বর্ণনা করা জরুরি।9. কোন মুনাফিক, ফাসিক অথবা মুরতাদের নিন্দা করা জায়েয।10. আবার যাদের স্বভাব গীবত করা তাদের সম্পর্কে অন্যদের সাবধান করার জন্য তার দোষ বর্ণনা করা জায়েজ। যেমন উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা এক ব্যক্তি (মাখরামা ইবনে নওফেল) নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে সাক্ষাতের অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তখন তিনি বললেন, তাকে আসার অনুমতি দাও, সে গোত্রের কতই না নিকৃষ্ট লোক। অতঃপর তিনি তার সাথে প্রশস্ত চেহারায় তাকালেন এবং হাসিমুখে কথা বললেন। অতঃপর লোকটি চলে গেলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তার সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন, অতঃপর আপনিই প্রশস্ত চেহারায় তার প্রতি তাকালেন এবং হাসিমুখে কথা বললেন। এ কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আয়েশা, তুমি কি কখনো আমাকে অশ্লীলভাষী পেয়েছ ? নিশ্চয়ই কেয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালার কাছে মর্যাদার দিক দিয়ে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই লোক হবে, যাকে মানুষ তার অনিষ্টের ভয়ে ত্যাগ করেছে। (বুখারি, মুসলিম)
গীবত করার পরে করণীয়ঃযার গীবত করা হয়েছে যদি সেই ব্যক্তি জীবিত থাকে এবং সম্ভব হয় তবে তার নিকট মাফ চেয়ে নিতে হবে। আর যদি সে জীবিত না থাকে কিংবা সে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে তবে তার গুনাহ্ মাপের জন্য আল্লাহ্র নিকট দু’আ করতে হবে এবং নিজের জন্যও দুয়া করতে হবে। শিক্ষাঃ1. গীবত করা কবীরাহ গুনাহ2. পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হয়।3. সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।4. পরকালে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।শেষ কথা সুতরাং মানব সমাজের এই পার্থক্য সামাজিক ভারসাম্য রক্ষার নিমিত্তেই। যেসব কারণে সমাজের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বিনষ্ট হয়, সমাজ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হয়, সামাজিক মূল্যবোধ বিনষ্ট হয়, পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হয়, তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো গীবত, যা মানুষকে নিকৃষ্টতম প্রাণীতে পরিণত করে। তাই তো মহান আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে এই নিকৃষ্ট স্বভাব থেকে বিরত থাকার তাগিদ দিয়েছেন।আমাদের সব সময় আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে তিনি যেন অনুগ্রহ করে গীবতের মতো জঘন্য সামাজিক ব্যাধিতে আমাদের নিমজ্জিত হতে না দেন। এ ক্ষেত্রে জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সর্বাগ্রে। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘বান্দা যখন ভোরে নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয় তখন শরীরের সব অঙ্গ জিহ্বার কাছে আরজ করে, তুমি আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো, আল্লাহর নাফরমানি কাজে পরিচালিত করো না। কেননা, তুমি যদি ঠিক থাক, তবে আমরা সঠিক পথে থাকব। কিন্তু যদি তুমি বাঁকা পথে চলো, তবে আমরাও বাঁকা হয়ে যাবো। (তিরমিজি)রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার জন্য তার জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের জিম্মাদার হবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হবো।’ (বুখারি)
ইতিহাস থেকে জানা যায় জোহান কারুলাস নামের এক ভদ্রলোক ১৫৭৫ সালে জার্মান ভাষায় স্ট্রাসবুরগ শহর থেকে প্রথম একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। ওয়ারল্ড এসোসিয়েশন অব নিউজ পেপার এই পত্রিকাকেই প্রথম পত্রিকা হিসাবে দাবি করে। যার নাম ছিল ” রিলেশন ” রিলেশন পত্রিকার পথ অনুসরণ করে পৃথিবী আজ অনেক এগিয়ে গেছে। দেশে দেশে গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল মিডিয়া হাউজ। এই মিডিয়া হাউজগুলি আজ নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতি, সমাজনীতি ও অর্থনীতি ।
আধুনিক এই যুগে মানুষের জীবন ব্যাবস্থায় যেমন পরিবর্তন এসেছে ঠিক সেই সংগে রুচিরও অনেক পরিবর্তন এসেছে। এক সময় মানুষ অন্ধের মত পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদকে বিশ্বাস করতো। মানুষ সংবাদ পত্রকে ও সাংবাদিককে জাতির বিবেক বলেই মানতো। কিছু লোভি সাংবাদিক ও সরকার নিজের অপকর্মকে ব্যাবহার করতে গিয়ে জাতির বিবেককে ধংস করে জাতির অভিশপ্ত হিসাবে রুপান্তর করেছে। এখনো যে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিক নেই তা নয় কিন্তু তারা আজ অসহায়। অথ্য প্রযুক্তির এই যুগে বাংলা ভাষায় পারদর্শী কিছু ভুঁইফোড় সাংবাদিক সমাজের অভিশাপ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রচার এবং নিজের মহত্ত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে সমাজের বিবেক খ্যাত মাধ্যমটাকে অপমানিত অপদস্ত করছে।
আব্দুর রহিম ভুইয়ার সম্পাদনায় আইরিশ বাংলা টাইমস নামের একটি অন লাইন পত্রিকা প্রকাশিত হবে শুনে আইরিশ বাংলাদেশী হিসাবে আমি আনন্দিত। আমি আশাবাদী এই পত্রিকার মাধ্যমে দেশ বিদেশ এবং আমাদের আইরিশ বাংলাদেশীর সুখ দুঃখ ব্যথা বেদনা ও সমাজের অসংগতি তুলে ধরে সমাজ পরিবর্তন করতে সহায়তা করবে। মনে রাখতে হবে সংবাদ মাধ্যম একটি সমাজ বা রাষ্ট্রের আমানত সংস্থার নাম। সকল দল মতের কাছে এই সংস্থা অন্ধ।
পক্ষপাতমুলক সংবাদ প্রচারে বিরত থেকে সকলের জন্য সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই আইরিশ বাংলা টাইমস মানুষের অন্তরে ভালবাসার কুটুম হিসাবে স্থান করে নিবে। পৃথিবীর প্রথম পত্রিকা রিলেশন বা সম্পর্ক। আমি আশাকরি আইরিশ বাংলা টাইমস সমাজে সম্পর্ক উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাবে এবং দোয়া করি আইরিশ বাংলা টাইমস হউক সত্যের বাহক।
আয়ারল্যান্ডে যে পদ্ধতিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় বা বিভিন্ন নির্বাচন সংঘটিত হয় তাকে বলা হয় PR-STV যার অর্থ দাঁড়ায় সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব – একক স্থানান্তরযোগ্য ভোট (Proportional Representation – Single Transferable Vote)।
আপনি যখন আয়ারল্যান্ডের কোন নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন তখন আপনার পছন্দ অনুযায়ী ক্রমানুসারে অধিক পছন্দের প্রার্থীকে ১, দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থীকে ২ এভাবে লিস্টে থাকা সকল প্রার্থীকে যথাক্রমে ৩, ৪, ৫…… হিসেবে ভোট দিতে পারবেন। আবার আপনি চাইলে মাত্র একজন প্রার্থীকে ১ নাম্বার ভোট দিয়ে বাকি গুলোকে খালি রেখে দিতে পারবেন। আর যদি আপনার অ-পছন্দের কোন প্রার্থী থেকে থাকে যাকে আপনি চান না নির্বাচিত হয়ে আসুক চাইলে শুধুমাত্র তাকে ব্যতীত অন্য সকলকে ১, ২, ৩ ক্রমানুসারে মার্ক করে যাবেন। যার মানে আপনার প্রথম পছন্দের প্রার্থী নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোট পেয়ে পাশ করে ফেললে তার উদবৃত্ত ভোটগুলো অন্য কারো মোট ভোটার সাথে যুক্ত হবে। এর ফলে সকল ভোটারের ভোট একজন প্রার্থী নির্বাচিত হতে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে ভোট অপচয় নুনূতম হয়ে থাকে। কারণ আয়ারল্যান্ড একক স্থানান্তরযোগ্য (Single Transferable Vote) ভোটের সাথে Proportional Representation নামে একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা ব্যবহার করে (পিআর – এসটিভি, বা সংক্ষেপে PR-STV)। মনে রাখতে হবে একটি ব্যালট পেপারের একটি ভোটই গণনা করা হবে।
ব্যালটে যা থাকে:
প্রার্থীদের নামগুলি তাদের ছবি এবং তাদের দলের প্রতীকসহ (যদি তারা চান) ব্যালট পেপারে নামের বর্ণানুক্রমিক দেওয়া থাকে। আপনি আপনার প্রথম পছন্দের প্রার্থীর বিপরীতে ১, আপনার দ্বিতীয় পছন্দের বিপরীতে ২, আপনার তৃতীয় পছন্দের বিপরীতে ৩ লিখে ভোট দিন। আপনি ১ এর পরে থামতে পারবেন অথবা পছন্দ অনুযায়ী ২য়, ৩য়…….. নাম্বার হিসেবে মার্ক করতে পারবেন। আপনি যখন একাধিক পছন্দের সাথে ভোট দিযবেন, আপনি রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে আপনার পছন্দের প্রার্থী যদি বাদ পড়ে যায় বা ভোটের উদ্বৃত্ত হয়ে নির্বাচিত হন, আপনি চান আপনার ভোটটি আপনার দ্বিতীয় পছন্দ প্রার্থীর কাছে স্থানান্তরিত হোক ।
নিম্নবর্ণিত নির্বাচনসহ আয়ারল্যান্ডের সকল নির্বাচনে PR ব্যবহার করা হয়:
নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে আপনাকে স্ট্যাম্পড ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। রিটার্নিং অফিসার কিছু পরিচয় বা পোলিং কার্ড দেখতে চাইতে পারেন। আপনি আপনার ভোটটি একটি গোপনীয় বুথে প্রদান করবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের বর্ণমালা অনুসারে তাদের ছবির পাশাপাশি দলের নাম ( রাজনৈতিক দলের অন্তর্ভুক্ত থাকলে) এবং তাদের দলের প্রতীক (কিছু ক্ষেত্রে) তালিকাভুক্ত করা থাকবে। আপনি পছন্দ করেছেন এমন প্রার্থী বা প্রার্থীদের পাশে আপনার পছন্দের নম্বর রেখে ভোট দিবেন। আপনি নিজের ইচ্ছামতো বেশি বা কম সংখ্যক প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
আপনি যদি কেবলমাত্র একজন প্রার্থীকে ভোট দিতে চান তবে আপনার প্রার্থীর নামের পাশের বাক্সে ১ নম্বর চিহ্নিত করতে হবে। টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে বাক্সটি মার্ক করা উচিত নয়। এতে বুঝা যাবে না কে আপনার প্রথম পছন্দ বা কে দ্বিতীয় পছন্দ। ভোট দেওয়ার পর ব্যালট পেপারটি সুন্দরভাবে ভাঁজ করতে হবে যাতে আপনার ভোটটি দৃশ্যমান না হয় এবং ভাঁজ করা ব্যালট পেপারটি ব্যালট বাক্সে রেখে দিতে হবে। যদি ভোট প্রদানের সময় ব্যালট পেপারে কোন ভুল করেন তবে রিটার্নিং অফিসার তাঁর বিবেচনা সাপেক্ষে আপনাকে অন্য একটি ব্যালট পেপার দিতে পারেন। তবে আপনি যদি ইতোমধ্যে ব্যালট বাক্সে নিজের ব্যালট ফেলে দিয়ে থাকেন তাহলে, রিটার্নিং অফিসার আপনাকে আর ব্যালট পেপার দিতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনাকে সচেতন হতে হবে।
বাজেয়াপ্ত ভোট:
যে ব্যালট পেপারগুলি গণনা করা যায় না তাদের নষ্ট ভোট বলে। ব্যালট পেপারগুলি নষ্ট হয়ে যেতে পারে যদি:
👉ব্যালট পেপার ফাঁকা বা খালি থাকে। 👉ভোটার তাদের পছন্দসই প্রার্থী বা প্রার্থীদের নাম্বার না করে টিক দিয়েছে বা অন্যকিছু চিহ্নিত করেছেন। 👉ব্যালট পেপারে লেখা বোঝা না গেলে। 👉ব্যালট পেপারে কোনও প্রার্থীর পাশে “১” নম্বর বা “এক” শব্দটি না থাকলে। 👉ব্যালট পেপারে রিটার্নিং অফিসারের সীল না থাকলে। 👉ভোটারের নাম লেখা বা কোনওভাবে পরিচয় দেওয়া থাকলে। 👉পছন্দের ধারাবাহিকতা পরিষ্কার না থাকলে, (উদাহরণস্বরূপ, ভোটার দুইটি পৃথক প্রার্থীর পাশে “১” বা একই নাম্বার লিখেছেন)। 👉প্রতিবাদ হিসাবে ভোটাররা ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের কাগজগুলি নষ্ট করলে।
PR নির্বাচনে ভোট গণনা করা হয় যেভাবে:
ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে গেলে সমস্ত ব্যালট বাক্স প্রতিটি আসনের জন্য একটি কেন্দ্রীয় গণনার জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। ভোট গ্রহণের পরদিন সকাল ৯ টায় গণনা শুরু হয়। প্রতিটি ব্যালট বাক্স পৃথকভাবে খুলে ব্যালট পেপারগুলি গণনা করা হয়। একটি ব্যালট বাক্সের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান ব্যালট প্যাপার ইস্যু করা থাকে। বাক্সটি খোলার পর পরই সবগুলো ব্যালট পেপার গণনা করে ওই বাক্সের জন্য ইস্যুকৃত ব্যালটের সাথে হিসেবে করা হয় যাতে ভোট প্রদান শেষ থেকে গণনার মধ্যবর্তী সময়ে ওই বাক্স থেকে কোনো ভোট সরানো বা যোগ করা হয়েছে কি না সেটা নিরুপন করা যায়।তারপরে প্রতিটি প্রার্থীর জন্য ব্যালট পেপারগুলি আলাদা আলাদা স্থানে রাখা হয়। ব্যালট পেপারগুলি গণনা করা এবং বাছাই করা হয় এবং সাথে সাথে নষ্ট ব্যালটগুলো ফেলে দেওয়া হয়।
নষ্ট ব্যালট ফেলে দেওয়ার পর যা থাকে সেগুলো বৈধ ভোট হিসেবে গণনা করা হয়:
এরপরে সঠিক ব্যালট পেপারগুলো কয়েক দফায় গণনা করা হয়। প্রার্থীরা নির্বাচিত বা বাজেয়াপ্ত হওয়ার সাথে সাথে, সেই প্রার্থীর ব্যালট পেপারের দ্বিতীয়, তৃতীয় (বা নিম্ন) পছন্দসমূহের ভোট গণনা করা হয়। সকল আসন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত গণনা অব্যাহত থাকে।
কোটা গণনা করার নিয়ম।:
নির্বাচিত হওয়ার জন্য একজন প্রার্থীকে অবশ্যই নির্বাচনী এলাকার পূর্ব নির্ধারিত কোটা করে দেয়া সংখ্যক ভোট পেতে হবে। শেষ আসনটি এমন কোনও প্রার্থীর দ্বারা পূরণ করা যেতে পারে যিনি অন্য সকল প্রার্থী নির্বাচিত বা বিলোপ হওয়ার পরেও কোটায় পৌঁছাতে পারেননি। মোট বৈধ প্রাপ্ত ভোটকে ঐ নির্বাচনী এলাকার আসন সংখ্যার সাথে ১ যোগ করে সেই যোগফল দ্বারা ভাগ করে প্রাপ্ত নতুন যোগফলের সাথে আবার ১ যোগ করে কোটা গণনা করা হয় (যদি বহন করার জন্য কোনও সংখ্যা থাকে তবে তা অগ্রাহ্য করা হয়), এবং তারপরে ১ যোগ করা হয়।
উদাহরণ স্বরূপ, মোট বৈধ ভোট ২৫,০০০ হলে ঐ এলাকার ৪ টি আসনে, কোটা হলো ২৫,০০০ (মোট বৈধ পোল) ৪+১=৫ দ্বারা বিভক্ত (আসনের সংখ্যার চেয়ে ১ টি বেশি), যা ৫০০০. তারপরে যোগ হবে ১ এবং এই সংখ্যক (৫০০১) ভোট প্রতিজন প্রার্থীকে পেতে হবে পাশ করে আসতে হলে।
উদ্বিত্ব ভোট কী হয়:
কোন প্রার্থী যদি কোটার চেয়ে বেশি ভোট পান তবে তাদের উদ্বৃত্ত ব্যালট পেপারগুলি বাকী প্রার্থীদের কাছে স্থানান্তরিত হয়। অন্যান্য প্রার্থীরা নির্বাচিত প্রার্থীর ভোটে প্রাপ্ত কত সেকেন্ড (বা নিম্ন) পছন্দগুলির অনুপাতে উদ্বৃত্ত স্থানান্তরিত হয়। যদি কোনও ব্যালটে দ্বিতীয় পছন্দ প্রার্থী ইতোমধ্যে নির্বাচিত বা বিলোপ হয়ে যান, তবে তৃতীয় পছন্দটি ব্যবহার করা হয়। যদি প্রথম কোনও প্রার্থী নির্বাচিত হন, তবে তাঁর সমস্ত ভোটই উদ্বৃত্তের অনুপাত গণনা করতে ব্যবহৃত হবে যা প্রতিটি প্রার্থীকে দেওয়া হবে।
উদাহরণ স্বরূপ:
প্রার্থী A প্রথম গণনায় 6000 প্রথম পছন্দ ভোট পেলেন, কোটা ৫০০০। A ১০০০ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হযন। A এর মোট ৬০০০ ভোটের মধ্যে ৩০% B কে তাদের দ্বিতীয় অগ্রাধিকার দিবে এবং তাদের ২০% এর দ্বিতীয় পছন্দ C হবে। B ৩০০ টি ভোট (১০০০ এর ৩০%) এবং সি ২০০ ভোট (১০০০ এর ২০%) গ্রহণ করে, যেখানে কোন প্রার্থী প্রথম গণনার পরে কোটায় পৌঁছে যায়, কেবলমাত্র ব্যালট পেপারগুলি যেগুলি তাদের কোটায় নিয়ে এসেছিল তা পরীক্ষা করা হয় (পূর্ববর্তী গণনা থেকে স্থানান্তরিত ভোট)।যদি একই সময়ে ২ বা ততোধিক প্রার্থী নির্বাচিত হন, তবে সবচেয়ে বেশি ভোট প্রাপ্ত প্রার্থীর উদ্বিত্ব ভোট আগে বিতরণ করা হবে।
অকৃতকার্য প্রার্থীদের যেভাবে বাদ দেওয়া হয়:
প্রথম দফা গণনা শেষে সকল প্রার্থী যদি কোটায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় , তবে সর্বনিন্ম সংখ্যক প্রাপ্ত ভোটের প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয় এবং তাদের সমস্ত ভোট বিতরণ করা হয় অধিক প্রার্থীদের ঝুড়িতে। একাধিক প্রার্থীকে এক দফা গণনার পরে বিলোপ করা যাবে যদি তারা স্পষ্টভাবে পরিষ্কার করে দেন যে তারা নির্বাচিত হতে পারবেন না।
নির্বাচনের ব্যয় পুনরুদ্ধার করা বা ক্ষতিপূরণ আদায়:
প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনের ব্যয় উদ্ধার করতে পারবেন (জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৮,৭০০ পর্যন্ত) যদি তারা…..
👉নির্বাচিত হয়। 👉নির্বাচিত হননি, তবে তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কোটার এক চতুর্থাংশের বেশি হয়।
কোটার একচতুর্থাংশ কম ভোট পেলে প্রার্থীদের অতিরিক্ত গণনার সুযোগ দেওয়ার বিধি রয়েছে। উপনির্বাচনে ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিধান জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় আলাদা।
পূণঃগণনা:
কোনও প্রার্থী যদি চান বা রিটার্নিং অফিসার যদি সিদ্ধান্ত নেন যে পুনঃনিরীক্ষণের দরকার, তবে পুনঃগণনের আদেশ দেওয়া হয়। একজন প্রার্থী কোন নির্দিষ্ট একক গণনা বা পুরো গণনা পুনরায় করার জন্য দাবী করতে পারেন। এর অর্থ হলো কেবল সর্বশেষ রাউন্ডে গণনা করা ভোটগুলি আবার গণনা করা হয় এবং প্রয়োজনে সংশোধন করা হয়। কোনও প্রার্থী মোট পুনঃনিরীক্ষণের জন্য জিজ্ঞাসা করতে পারেন। যদি কোনও ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায়, তবে ভুল হওয়ার সময় থেকেই সমস্ত ভোটই পুনরায় গণনা করা হয়। এটি সম্ভব যে ইতিমধ্যে নির্বাচিত বলে গণ্য করা প্রার্থীরা, পুনর্বিবেচনার কারণে তাদের ফলাফল পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। কোনও প্রার্থী ভোটের কোটায় পৌঁছে গেলে তাকে নির্বাচিত বলে গণ্য করা হয়। তবে, ফলাফল ঘোষণার পরে, পুনর্গণনা কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন হাইকোর্টের আদেশ হয়। মোট গণনা শেষ হলে একজন প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় এবং রিটার্নিং অফিসার ফলাফল ঘোষণা করেন।
এই ভাবে আয়ারল্যান্ডের সকল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ব্যাপারে আপনাদের আরও আগ্রহ থাকলে আমাদের ইনবক্সে মেসেজ করে জানাতে পারেন। আমরা চেষ্টা করবো যথা সময়ে আপনাদের প্রয়োজন মিটাতে।
মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ভোটাররা সাধারণ নির্বাচনের পক্ষে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য শনিবার ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে ভোটাররা পদচারণা করবেন। ৩৯ টি আসনে ৫১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
২০১৬ সালে সর্বশেষ সংসদ গঠিত হওয়ার পর থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ৩৩তম সংসদে ১৬০ টি আসন থাকবে, যা বিদায়ী সংসদ নির্বাচনের চেয়ে দুটি বেশি।
প্রতিটি নির্বাচন কেন্দ্রে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন রয়েছে যা পূরণ করতে হবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য একটি দলকে ৮০টি আসন জিততে হবে।
আয়ারল্যান্ডে সংসদ নির্বাচনের রীতিনীতি কি?
ফিনে গেইল ৪৭টি আসন নিয়ে প্রচারে নেমেছে। ফিনা ফলের সান কমহায়ার বাদে ৪৫, শিন ফিনেই রয়েছে ২২টি, লেবার ৭টি এবং সলিডারিটি পিপলসের বিফোর প্রফিটের ছয়টি আসন রয়েছে। স্বতন্ত্রীদের আছে ২২টি আসন, পরিবর্তনের জন্য ইন্ডিপেন্ডেন্টসের ১টি, গ্রীন ৩টি, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস ২টি এবং অন্তুর একটি আসন রয়েছে।
কোনও দলই সামগ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের প্রত্যাশা করছেনা যার অর্থ জোটের ৮০টি আসন অর্জনের জন্য কোয়ালিশনের আলোচনা অনিবার্য।
নির্বাচনের পরে সরকার গঠনে কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনের পরে সরকার গঠনে ৭০দিন সময় লেগেছিল।
২০১৬ সালের ১৬০ এর তুলনায় এই নির্বাচনে ১৬২ জন মহিলা প্রার্থী রয়েছেন যা একটি রেকর্ড। এর অর্থ হলো ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশজুড়ে প্রতিটি আসনে কমপক্ষে একজন মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ভোটারদের জন্য আরামের বিষয় হচ্ছে, ১৯১৮ সালের পরে এই প্রথমবারের মতো ছুটির দিনে অর্থাৎ শনিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ফাইন গেইল নেতা লিও ভারাদকার বলেন যে, তিনি ভোট দিতে চাইছেন এমন বাবা-মায়ের উপর থেকে কিছুটা চাপ কমাতে চান এবং যারা তাদের ভোটকেন্দ্র থেকে দূরে বাস করেন তারা যাতে ভালোভাবে ভোট দিতে পারেন।
ভোট দেওয়ার পদ্ধতি।
আয়ারল্যান্ড একক স্থানান্তরযোগ্য ভোটের সাথে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নামে একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা ব্যবহার করে। এটি জটিল মনে হলেও, আসলে ততটা জটিল না। ভোটাররা পছন্দ অনুযায়ী তাদের ব্যালট কার্ড পর্যায়ক্রমে চিহ্নিত করেন, যার অর্থ তাদের প্রথম পছন্দের বিপরীতে এক নাম্বার, তাদের দ্বিতীয় পছন্দের পাশে দুই নাম্বার এবং বাকিগুলোও সেই রূপে।
প্রার্থীগণ যদি নির্দিষ্ট পরিমান ভোট পেয়ে নির্বাচিত না হতে পারেন তাহলে সর্বনিন্ম সংখ্যক ভোট পাওয়া প্রার্থীর ভোট ট্রান্সফার হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত নির্দিষ্ট পরিমান সংসদ সদস্য কনফার্ম না হবে এই ট্রান্সফারেবল ভোট ততক্ষন পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। যদি কোন একক প্রার্থী পর্যাপ্ত পরিমান ভোট পান তাহলে তিনি ট্রান্সফারেবল ভোট ছাড়াই চুড়ান্ত সদস্য হিসেবে মনোনীত হবেন। দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের স্থানান্তর প্রায়শই প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯৫৯ এবং ১৯৬৮ সালে দুটি রেফারেন্ডাম বা গণভোট হয়েছিলো যেখানে এই সিস্টেম বাদ দিয়ে একজন প্রার্থীকে নির্বাচিত করার প্রস্তাব এসেছিলো। তবে উভয় ক্ষেত্রেই এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আপনি কিভাবে আপনার ভোট দিবেন?
ভোট দেওয়ার জন্য আপনার নিবন্ধন করতে হবে, অর্থাত আপনার নাম ইলেক্টর্স এর রেজিস্টারে থাকতে হবে। কোনও ভোটার রেজিস্টারে থাকলে তারা তাদের পোলিং কার্ড গ্রহণ করবেন যেখানে তাদের নিকটতম ভোটকেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নির্বাচনের দিন সকাল ৭টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলি খোলা থাকে। ভোটাররা তাদের সাথে পোলিং স্টেশনে ফটো আইডি আনতে হবে। ভোটার দিন আপনার স্বজন বন্ধুবান্ধব কে নিয়ে আপনার ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। মাইগ্রান্টদের জন্য ভোট দেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা জেনেশুনে প্রার্থী পছন্দ করবেন যেই দোল মাইগ্রান্টদের অধিকার ও উন্নত আয়ারল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দিবে সেই দলকে আপনার মূল্যবান ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। প্রত্যেকটি দলের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা জানাশুনা থাকলে এক্ষেত্রে দল নির্বাচিত করতে সুবিধা হবে।
আসছে আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারি রোজ শনিবার সকাল ১০টা হতে বিকাল ৫টা ও ১৬ই ফেব্রুয়ারি রোজ রবিবার সকাল ১০টা হতে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কাউন্টি কর্কে পাসপোর্ট সংশ্লিষ্ট সকল ধরণের কাজ, No Visa Require (NVR), পাওয়ার অফ অটোর্নি ও জন্মনিবন্ধন সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের সেবা প্রদান অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উক্ত সেবা প্রদান করবেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। ভেনু : DIRECT ENGLISH IRELAND 9 St Patrick’s Hill, Cork City T23 KNV9 যোগাযোগে: 0861516313/0867931222 0868199489/0867878776 0892218026/0894060645 0894108635/0868860968/0899508488. Regards B.C.C.I.
এই বছরের শুরুর দিকে অনেকেই P 60 না পেয়ে কিছুটা চিন্তিত হয়েছেন। কিন্তু ঘাবড়ানোর মতো কোন কারণ নেই। PAYE আধুনিকীকরণের অংশ হিসাবে, P45s এবং P60s বিলুপ্ত করে একটি অনলাইন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
২০১৯ এর শেষ থেকে ও ভবিষ্যতে আপনি আর পি-৬০ পাবেন না। এর পরিবর্তে Employment Detail Summary পাওয়া যাবে Revenue’s myAccount service মাধ্যমে । Employment Detail Summary তে যা থাকবে তা হচ্ছে income tax, PRSI and Universal Social Charge (USC) এর বিবরণ যা আপনার নিয়োগকর্তা দ্বারা কেটে নেওয়া হয়েছে এবং রাজস্বকে প্রদান করা হয়েছে।
২০১৯ সাল থেকে আপনি চাকরি ছেড়ে যাওয়ার সময় আর পি-৪৫ পাবেন না। এর পরিবর্তে আপনার নিয়োগকর্তা আপনার চাকরি ছাড়ার তারিখ এবং আপনার চূড়ান্ত বেতন এবং ছাড়ের বিস্তারিত রাজস্বের অনলাইন সিস্টেমে প্রবেশ করবেন এবং আপনি Revenue এর myAccount service – এপ্রবেশ করে দেখতে পারেন ‘Leaving a job’ অপশনে।
আপনার যদি রাজস্বে কোনও অনলাইন অ্যাকাউন্ট সেটআপ করতে হয়, তাদের Online services for PAYE taxpayers – এ ‘How to apply’ বিস্তারিত তথ্য পাবেন ও রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
কর্মসংস্থানের বিস্তারিত সারসংক্ষেপঃ
২০২০ সালের ১ জানুয়ারীর পর থেকে আপনি myAccount, লগইন করতে পারবেন এবং আপনার নিয়োগকর্তা বা পেনশন সরবরাহকারীর Revenue কে ২০১৯ বছরের এর জন্য যে তথ্য দিয়েছে তা দেখতে পারবেন যা আগে P-60 হিসেবে পরিচিত ছিলো।
এটি করার জন্য আপনাকে অবশ্যই Revenue’s myAccount Service নিবন্ধন করতে হবে। একবার আপনি নিবন্ধিত হয়ে গেলে, আপনি রেভিনিউর RevApp অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে মোবাইল এবং ট্যাবলেট ডিভাইসে আমার অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করতে পারেন। আপনি PAYE করদাতাদের জন্য Online services for PAYE taxpayers নথিতে আরও জানতে ভিজিট করতে পারেন। ।
চাকরি ছেড়ে দেওয়াঃ
১ জানুয়ারী ২০১৯ থেকে, আপনি যখন চাকরি ছেড়ে চলেছেন তখন আপনার নিয়োগকর্তাকে আর আপনাকে পি-৪৫ ফর্ম দিতে হবে না। এর পরিবর্তে Revenue তে আপনার চূড়ান্ত বেতন এবং ছাড়ের বিশদ জমা দেওয়ার সময় তারা আপনার চাকরী ছাড়ার তারিখ অন্তর্ভুক্ত করবে। Department of Employment Affairs and Social Protection বিভাগের বিভিন্ন সুবিধা ক্লেইম করার জন্য এখন থেকে আর P45 লাগবে না। আপনি রাজস্বের আমার অ্যাকাউন্টে আপনার বছেড়ে যাওয়া কাজের বিবরণ দেখতে পারবেন যা আপনার কর পরিষেবা পরিচালনা করবে, বেতন এবং করের বিশদ অন্তর্ভুক্ত করবে। আপনি যদি চান তবে এই কর্মসংস্থানের বিবরণ প্রিন্ট করতে করতে পারেন।
কিভাবে আবেদন করতে হবেঃ
রাজস্বের Revenue’s myAccount service ব্যবহার করে অনলাইনে আপনার কাজের বিস্তারিত সংক্ষিপ্তসার পাবেন। আপনার যদি রাজস্বের সাথে অনলাইন অ্যাকাউন্ট সেটআপ করতে হয় তবে আপনি Online services for PAYE taxpayers এর ডকুমেন্টে খুঁজে পাবেন। তাছাড়া পুরো বিষয়টি তাদের ওয়েব সাইটে যে ভিডিও আকারে দেওয়া আছে সেখান থেকে সহায়তা নিতে পারেন।
কোথায় আবেদন করতে হবেঃ
Revenue তে একাউন্ট খুলতে Revenue’s myAccount service রেজিস্ট্রেশন করুন।
যোগাযোগ করুনঃ
এই বিষয়ে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে আপনি Citizens Information Centre এর 0761 07 4000 (Monday to Friday, 9am to 8pm) অথবা যেকোন সিটিজেনশিপ ইনফরমেশন সেন্টারে যোগাযোগ করুন।
কমিউনিটি প্রচারণা । আগামী ২৬ শে ফেব্রুয়ারী রোজ বুধবার PMI এর পক্ষ থেকে Dublin এর Terenure এ এক বেডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। ব্যাডমিন্টন খেলায় অনুরাগী সকলকে উক্ত আয়োজনে শরিক হওয়ার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশী যে কোন ব্যক্তি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। টিম প্রতি রেজিস্ট্রেশন ফী মাত্র ৩০ ইউরো রাখা হয়েছে। খেলা শুরু হবে সকাল সাড়ে এগারোটায় এবং শেষ হবে বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। চ্যাম্পিয়ন, রানার্স আপ ও তৃতীয় স্থান অর্জন কারী টিমের জন্য থাকবে মহামূল্যবান ও আকর্ষণীয় পুরষ্কার। তাছাড়া অংশগ্রহণকারী সকল টিমের জন্যও থাকবে বিশেষ পুরষ্কার। তাছাড়া দুপুরের খাবারের আয়োজন থাকবে এবং ফ্রিতে গাড়ি পার্কিং করার সুব্যবস্থা আছে।
আয়ারল্যান্ডে ন্যূনতম মজুরি গত কাল থেকে অতিরিক্ত ৩০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে, যার মানে বহু শ্রমিক এখন প্রতি ঘন্টায় নূন্যতম €১০.১০ ইউরো উপার্জন করবেন। ফুল টাইম কর্মজীবীরা পুরো সপ্তাহ ধরে কাজ করলে প্রতি বছর শেষে তাদের পে-স্লিপে অতিরিক্ত যোগ হবে €৬০০ ইউরো। বেতন বৃদ্ধি করার কারণে এই ধাপে প্রায় ১২৭,০০০ কর্মীর জীবন মান কিছুটা হলেও উন্নত হবে।
কর্মসংস্থানমন্ত্রী রেজিনা দোহার্টি বলেন: “ফিনে গেইল বিশ্বাস করে যে ন্যূনতম মজুরি শ্রমজীবী পরিবারকে সহায়তা করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়।” একারণেই আমরা চারবারের নূন্যতম বেতন বাড়িয়েছি, সর্বশেষ বৃদ্ধি গতকাল কার্যকর হয়েছে, প্রতি ঘণ্টায় এই হার € ৯.৮০ থেকে বেড়ে € ১০.১০ ইউরোতে উন্নীত হয়েছে।
জাতীয় সর্বনিম্ন মজুরিতে এই সাম্প্রতিক বৃদ্ধির ফলে ন্যূনতম মজুরির একজন কর্মী, যিনি পুরো সপ্তাহে ৩৯ ঘন্টা কাজ করেন, তিনি এখন প্রতি বছরে €৬০০ ইউরো বেশি পাবেন। আসলে ২০১৬ সাল থেকে ৩৯ ঘন্টা কর্মরত ন্যূনতম মজুরির কর্মচারী সর্বমোট বেতন পেয়েছেন €২৩৩১ ইউরো, ২০১৫ সাল থেকে আমরা ন্যূনতম মজুরি ১৩.২% বাড়িয়েছি – মূল্যস্ফীতির হারের কারণে।
ন্যূনতম মজুরিতে চলমান বৃদ্ধি দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তির জন্য নিশ্চিতভাবেই সহায়তা করবে।
ফিনে গেইল সর্বদা শ্রমিকদের এবং তাদের পরিবারের জীবনযাত্রাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। যদিও কেউ কেউ বলে নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে বেতন বৃদ্ধিকে নির্বাচনে এই দলের পক্ষে পজিটিভ ধারণা হিসেবে কাজ করবে।
আয়ারল্যান্ড এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে জাতীয় সর্বনিম্ন মজুরি প্রদানে তৃতীয়।
মানুষের চেহারা দেখার জন্য যেমন একটি আয়নার প্রয়োজন তেমনি একটি সমাজের চেহারা দেখতে হলে প্রয়োজন সংবাদপত্রের। এ জন্য সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। যে চারটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে থাকে তার মধ্যে সংবাদপত্র একটি। সংবাদপত্র সমাজে সাম্য ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। একটি সমাজে সংবাদপত্রের ভূমিকা যে কতো বিশাল, কতো ব্যাপক তা বলে লিখে বুঝানোর কোনো অবকাশ আছে বলে আমার মনে হয়না। এর অপরিসীম গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের সবারই কমবেশি জানা।
পত্রিকাকে সমাজ বদলের হাতিয়ার বলা হয়ে থাকে। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে এটাও সত্য যে, একটা দুষ্টু চক্র আজকাল এটাকে স্বীয় ভাগ্য বদলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চলছে। এই স্বার্থান্নেষী মহলটির জন্য সংবাদপত্র আজ বিতর্কিত, সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাটিও কলংকিত। ঘুষখোর চাকরিজীবী, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের মতো তাদেরকেও হরহামেশা বিভিন্ন অনৈতিক কাজে কর্মে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। স্বার্থপরায়ন এই শ্রেণীটির কর্ম কান্ডের জন্য সংবাদপত্রের ফলপ্রসূতা অনেকাংশেই আজকাল ব্যহত হয়। কেউ কেউ আবার হলুদ সাংবাদিকতার ভেড়াজালেও জড়িয়ে পড়ে। স্বীয় স্বার্থে অসত্য, বানোয়াট ও পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ পরিবেশনের নামই হলুদ সাংবাদিকতা। এসব কিছু নেতিবাচক দিক থাকা সত্বেও এ কথা অনস্বীকার্য যে আধুনিক বিশ্বে একটি সুস্থ, সুন্দর, সভ্য ও জ্ঞান সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে সংবাদপত্রের বিকল্প নেই।
সংবাদ মাধ্যম বা পত্রিকা এখন আর আগের মতো নেই। প্রাযুক্তিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এটিও এগিয়ে চলেছে নিজস্ব গতিতে। এককালে মানুষ খবরের কাগজে মুদ্রিত কেবল বাসি খবর পড়তো। এখন আর তা নেই। বরং তাৎক্ষণিক মুহূর্তে সতেজ তরতাজা খবর মানুষের দোয়ারে পৌছে দেয়ার অঙ্গীকার নিয়ে বেরিয়ে আসলো অনলাইন পোর্টাল। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে প্রথম যে পোর্টালটির আত্মপ্রকাশ ঘটে তা হচ্ছে বিডিনিউজ ২৪.কম। পরবর্তীতে দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে জন্ম নেয় অসংখ্য পোর্টালের। এরই ধারাবাহিকতায় অতি সম্প্রতি আয়ারল্যান্ড থেকে অনুজ প্রতিম আব্দুর রহিম ভূঞা ‘আইরিশ বাংলা টাইমস” নামে একটি অনলাইন পোর্টাল প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। আমি তার এ মহতী প্রয়াশকে সাধুবাদ জানাই এবং পোর্টালটির স্বার্থে নিম্নে উল্লেখিত কিছু বিষয়ের উপর সচেতন ভূমিকা পালনের অনুরোধ করবো।
***কোনো অবস্থাতেই হলুদ সাংবাদিকতার আশ্রয় নেয়া যাবে না ***বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে সদা সোচ্চার থাকতে হবে। ***সত্য ও ন্যায় নীতির প্রশ্নে আপোসহীন মনোভাব পোষণ করে চলতে হবে। ***কোনো ব্যক্তি বা দলের তাবেদারি করা যাবেনা ***কমিউনিটির নিউজ গুলোকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেয়া চাই। ***নতুন প্রজন্মকে বাংলা শেখানো ও উৎসাহী করে তোলার ক্ষেত্রে সচেষ্ট ভূমিকা পালন।
আমি জানি একটি পত্রিকা বা পোর্টালকে সম্পূর্ণ সফল ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছেলের হাতে মোয়া নয়। এ জন্য সময় ও অর্থ দুটোই প্রয়োজন। যারা বিদেশের বাড়িতে শত ব্যস্ততা ও প্রতিকূলতার মাঝেও এ ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে চলছেন তারা সত্যি প্রশংসার দাবিদার।
আমি আইরিশ বাংলা টাইমসের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করি।
আয়ারল্যান্ডে প্রথম ২১শে বইমেলা । ——————————————- প্রিয় জ্ঞান পিপাসু বন্ধুগন আসছে ১৬ ফেব্রুয়ারী রবিবার প্রথমবারের মত ডাবলিনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মহান একুশের চেতনায়,একুশের প্রেরনায় ২১শে বইমেলা। শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস । ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ ।বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শানিত অস্ত্র । আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা । বন্ধুগনের কাছে অনুরোধ -সকলের কাছে আমন্ত্রণের বার্তাটি পৌঁছে দিন । মেলার স্থান,সময় অতিসত্বর জানতে পারবেন । মেলায় স্টল সহ যাবতীয় তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন । মোস্তাফিজ-089 4394 570
গত ২১জানুয়ারি মঙ্গলবার বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোশিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির উদ্যোগে ডাবলিনের এরোমা কনভেনশন সেন্টারে বিজয় দিবস কেরাম ও দাবা প্রতিযোগিতা এবং সকল কাউন্সিলর ও উপদেষ্টা মন্ডলী দের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত খেলোয়াড়েরা সারা দিন কেরাম,দাবা প্রতিযোগিতায় সিঙ্গেল ও ডাবলসে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার প্রতিযোগিতার সমাপ্তি ঘটে।
উক্ত প্রতিযোগিতায় দাবা তে কাসেম চেম্পিয়ন ট্রফির ও আওলাদ হোসেন সোহেল রানার আপ ট্রফির হকদার হন।এছাড়া কেরাম প্রতিযোগিতার এককে রুহুল চেম্পিয়ন ও আহাদ রানারআপ ও দৈত প্রতিযোগিতায় আবু বকর, তাজুল জুটি চেম্পিয়ন ও রুহুল,আহাদ জুটি রানার্সআপ ট্রপি হাতে তুলে নেন।
এরপর সন্ধ্যা সাতটায় তমাল ও হাবীব এর উপস্থাপনায় আবদুল আহাদ এর কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এক মতবিনিময় সভা ও নৈশ ভোজ অনুষ্ঠানর আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জনাব আব্দুল মান্নান মান তার বক্তব্যে বি এস এ আই এর সারা বছরের খেলাধুলার পঞ্জিকা সকলের উদ্দেশ্য পাঠ করেন।
সংগঠনের সভাপতি জনাব মনিরুল ইসলাম ৪জন নব কো অপ করা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের শপথ পাঠ করান। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডার জনাব চুন্নু মাতবর, আই টি ও প্রচার সম্পাদক জনাব এ, কে, আজাদ, জনাব মনিরুল ইসলাম ও জনাব কামাল হোসেন প্রমূখ।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে ওয়েব সাইটের আপডেট ও ম্যাগাজিন সংকলনের আপডেট এবং আগামী বছর থেকে অনুর্ধ ১৫বাচ্চাদের কিভাবে বি এস এ আই এর রেজিস্টার্ড সদস্য করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করেন।
সকল অতিথিদের জন্য উন্মুক্ত পর্বে বক্তৃতা রাখেন ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির সেক্রেটারি জনাব জুবায়ের আহমেদ সোহাগ, তরুণ কমিউনিটি নেতা জনাব আনোয়ারুল হক, জনাব কাজী কবির, সুমন ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
সকল বক্তারা বি এস এ আই এর সফল কর্মকান্ডের জন্য ধন্যবাদ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে বি এস এ আই কে আরো শক্তিশালী বাংলাদেশী অর্গানাইজেশন হইবে গড়ে তোলার আশা ব্যক্ত করেন ।পুরস্কার বিতরণ শেষে সকলকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়ে সভাপতি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এর চিকিৎসাবিদরা পূর্বেই ধারণা করেছিলেন এমন ভয়ঙ্কর মহামারী নিকট ভবিষ্যতে আসার সম্ভাবনা আছে . তাই- ই হলো, মধ্য চীনের হুবেই প্রভিন্সের উহান শহর থেকে উৎপত্তি ও প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে নতুন এই ভয়ানক করোনা ভাইরাস ২০১৯ এর .
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে করোনা ভাইরাসের আক্রমণে বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছিলো. ১৯৬০ সালে আবিষ্কৃত মরণঘাতী এই ভাইরাসটি বিভিন্ন সময়ে এসেছিলো ভিন্ন নামে . উল্ল্যেখযোগ্য হলো , সার্স করোনা ভাইরাস ২০০৩ , মার্স করোনা ভাইরাস ২০১২, করোনা ভাইরাস ২০১৯ – 2020 .
এবারের ভাইরাসটির ভয়াবহতা অনেক ভয়ানক হবে বলে চিকিৎসকরা আশংকা প্রকাশ করছে . শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা তেমন গুরুত্ব না দিলেও গত এক সপ্তাহের ভয়াবহতায় বিশ্ব স্বাস্থ ( WHO) সংস্থা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন হতে শুরু করেছে .
মার্কিন চিকিৎসকরা ধারণা করছেন এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী প্রায় সাড়ে ৬ কোটি মানুষের প্রাণ ঘাতি হতে পারে . সব কিছু মিলিয়ে সবার মতো করে আমিও বেশ উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত .
নিম্নে আমি সতর্কতা মূলক তথ্য দিচ্ছি, নিজেরাও মানবেন ও বন্ধু পরিবার স্বজনদেরকেও বলবেন যেনো মেনে চলে .
নিজেকে রক্ষা করুন :
* যেহেতু করোনা ভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ যা বিশেষ করে শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষের মাঝে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে . তাই সবাইকেই অবশ্যই সবসময় পরিচ্ছন্ন মাস্ক পরিধান বাঞ্চনীয় . মাস্ক পরিষ্কার আছে কিনা দেখে নেয়া উত্তম .
* চীনের কোনো নাগরিক অথবা চীন থেকে সাম্প্রতিককালে আসা কারো সাথে কথা বলা ও দেখা করার আগে জেনে নিন তার শারীরিক অবস্থা কি . হালকা জ্বর অনুভব হলে সাথে সাথেই হসপিটালে ভর্তি হতে পরামর্শ দিন .
* বাইরে থেকে বাসায় যাওয়ার পর সবার আগেই নিজেকে সম্পূর্ণ পরিচ্ছন্ন করে নিন.তার পর অন্যদেরকে স্পর্শ করুন . * শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মনে হলে দ্রুত ডাক্তার বা হাসপাতালের শরণাপন্ন হন .
চিকিৎসা :
এই ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই . গত কদিন ধরে রেডিওতে কানাডার ডাক্তারদের কথোপকথন শুনে যা বুঝলাম . করোনা ভাইরাসে সম্পূর্ণ ভাবে নিজের শ্বাস প্রশ্বাসের নালী কে সংকুচিত করে ফেলে . তাই এই রুগীদের কৃত্তিম অক্সিজেন দেয়া ছাড়া আর তেমন চিকিৎসা নেই .
নিজের ইমিউন সিস্টেম দ্বারা ও শরীরের এন্টি বডি দ্বারা নিজের চিকিৎসা নিজের মাঝেই হয়ে থাকে .
যার এন্টি বডি যতো বেশি শক্তিশালী তার বাঁচার সম্ভাবনা ততো বেশি . যার দুর্বল সেই-ই মৃত্যুর দিকে চলে যায় .
সম্প্রতি আমাদের বাংলাদেশে অনেক বড়ো প্রজেক্টে চাইনিজ কোম্পানিগুলো নিজেদের লোক দ্বারা কাজ করে যাচ্ছে . তারা প্রায় প্রতিদিন চীন ও বাংলাদেশে আসা যাওয়া করে থাকে .
ওদের প্রতি আলাদা নজর রাখতে হবে . ঘনবসতি পূর্ণ বাংলাদেশে যদি কোনো ভাবে একটু ছড়িয়ে পড়ে, মনে রাখতে হবে এটাই হবে জাতির জন্য এক কালো অধ্যায় .
আয়ারল্যান্ডে বসবাস কারী
নতুন জেনারেশনের প্রত্যাশা ছিল আবাই এর প্রতিনিধি নির্বাচন করতে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে
তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। কিন্তু হাউজে নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা কমিটির প্রস্তাবে
প্রথমেই এই ব্যাবস্থা বাদ পড়ে যায়। কারন হিসেবে খরচ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রধান হলেও
কারো কাছে মনে হয়েছে অনলাইনে নির্বাচন হয়ে গেলে ভোটের যে আমেজ তা সকলেই উপভোগ করা থেকে
বঞ্চিত হবে। প্রস্তাব আসে তাহলে অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন ও ডাটা কালেকশন করা হোক। এর
প্রেক্ষিতে তারা একটি ওয়েব সাইট তৈরি করেন। হয়ত তারা চেয়ে ছিলো কিছুটা হলেও নতুন জেনারেশনের
আকাংখা বাস্তবায়িত হোক।
খবর নিয়ে জানা গেছে এই
ওয়েব সাইট তৈরীতে খরচ হয়েছে ১৫০০ ইউরো। সময়
লেগেছে প্রায় দুই মাস। একটি আইরিশ কোম্পানির মাধ্যমে ওয়েব সাইট টি বানানো হয়েছে। অফিসিয়ালি
জানা গেছে এর প্রধান দায়িত্বে আছেন মীর মামুন। নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ
থেকে তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি সরারসরি তাদের তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় এই
কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
আবাই এর অফিসিয়াল ওয়েব
সাইটের নাম www.abai.ie যেখান থেকে ভোটার রা তাদের
নিবন্ধন করবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ১৫ই জানুয়ারি এবং এই প্রক্রিয়া ৩১শে জানিয়ারি
পর্যন্ত চলার কথা আছে। ওয়েব সাইটের মাধ্যমে নিবন্ধন করায় বিভিন্ন মহলে একটি গঠন মূলক
সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে শুনা যাচ্ছে। বিভিন্ন জন আবাই এর ফেইসবুক পেইজে বিভিন্ন ধরনের
মন্তব্য করেছেন। কেউ কেউ এর সিকিউরিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কেউ কেউ এর কোয়ালিটি আবার
কেউ কেউ এতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফিচার না থাকায় প্রশ্ন তুলেছেন। আসুন আমরা জনমতের
উপর অনুসন্ধান করে দেখি তাদের আশংকা বা অভিযোগ কতটুকু বাস্তব সম্মত।
প্রথম আশংকা বা অভিযোগ,
সিকিউরিটঃ
বর্তমান জমানাকে বলা হয়
অসম্ভবের সম্ভব। এই জমানায় এমন কাজ নেই যা অসম্ভব বলে বিবেচনা করা যায়। বিশেষ করে ইন্টারনেট
ব্যাবহারে। মার্কিন ইলেকশনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ হয়েছে বলে কেউ কেউ ধারনা করে। যদি সেটা
সত্য হয় অভিযোগ অনুযায়ী ম্যানুপুলেশন, ডেমোক্রেটদের সার্ভার হ্যাক অন্যত কারন। তাছাড়া
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার হ্যাকের মত ইতিহাসের অন্যতম একটি তাৎপর্যপূর্ণ একটি হ্যাক
। নিঃসন্দেহে এগুলোর সিকিউরিটির ব্যাপারে আমাদের সকলেরই ধারনা আছে। এরকম উচ্চমাত্রার
নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও হ্যাক হয়েছে। তাহলে কি এগুলোর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা দুর্বল
ছিল? সন্দেহাতীত ভাবে নাকচ হয়ে যায়। মাঝে মাঝেই আমরা শুনি বিভিন্ন বড় বড় টেক জায়ান্টের
ওয়েব সাইটও হ্যাক হয়ে যায়। হ্যাক করা একটি অপরাধ। কাউকে দোষী হিসেবে প্রমাণ করা গেলে
অবশ্যই সে শাস্তির মুখোমুখি হবে।
দ্বিতীয়ত, কোয়ালিটিঃ
ওয়েব সাইটে কিছু ফিচার আছে ও কিছু থিম সম্পর্কিত টেক্সট রয়ে গেছে যেগুলো না সরানো পর্যন্ত ওয়েব সাইটিটি আন্ডার কন্সট্রাকশন মনে হচ্ছে। এর ফেইসবুক পেইজ বা গুগল পেইজের লিংক দেওয়া থাকলেও সেটির সংযোগ দেওয়া হয়নি। সাইটটিতে রেজিস্ট্রেশন করলে সাথে সাথে কোন ইমেইল আসেনা যতক্ষণ পর্যন্ত না এপ্রুভ করা হয় সেটিকে। এপ্রুভ করার পর ইউজারের ইমেইলে একটি পাসওয়ার্ড আসে যেটার কোন ব্যাবহার নাই বা আদৌ ব্যাবহার হবে কিনা সন্দেহ আছে। তাছাড়া এই পাসওয়ার্ডটি আটো ক্রিয়েটেড যা পরিবর্তন করার কোন ব্যাবস্থা রাখা হয় নাই। এই ধরনের পাসওয়ার্ড কারো পক্ষে সহজে মনে রাখা অসম্ভব। তাছাড়া লগইন করার পর তিনটা তিন রঙয়ের টেক্সট দেখা যায়, যার কোন ব্যাবহার নাই এবং তা দেখে মনে হয় সাইটি টি সঠক ভাবে কাজ করছে না। এগুলো ছাড়া সাইটটি ব্যাবহারে জন্য সহজ রাখা হয়েছে যাতে এটির ব্যাবহারকারী গণ বেশি একটা কষ্টের সম্মুখীন না হন এবং স্বল্প সময়ে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন।
ওয়েব সাইটটিকে সিম্পল রাখতে
গিয়ে মাত্র ৬টা ফিল্ড সম্পন্ন ফর্ম তৈরী করা হয়েছে। ফিল্ডগুলো যথাক্রমে নাম, ফোন নাম্বার,
ইমেইল এড্রেস, কাউন্টি, এড্রেস, সন্তান সংখ্যা। এখানে স্বামী স্ত্রী আলাদা রেজিস্ট্রেশন
হওয়ায় কোন ভাবে বুঝার উপায় থাকার কথা না কে কার স্বামী বা স্ত্রী। তাছাড়া অনেকেই সন্তানের
সংখ্যা উল্লেখ নিয়ে একটু দ্বিধায় পড়েছেন যে স্বামী ও স্ত্রী দুই জনই এটা উল্ল্যেখ করবে
নাকি এক জন। দায়িত্বপ্রাপ্তরা কয়ে কবার আবাইয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক একাউন্টে এটা উল্ল্যেখ
করলেও অনেকেই বুঝতে সক্ষম হচ্ছে না। কেউ কেউ মনে করছে যে টাকা দিয়ে এই সাইট তৈরী করা
হয়েছে তা দিয়ে একটি কম্প্রিহেন্সিভ ওয়েবসাইট তৈরী করা যেত যার একই রেজিস্ট্রেশন ফরমে
থাকতে পারতো স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানের সংখ্যার সাথে সাথে প্রত্যেকটি সন্তানের নাম,
বয়স, জেন্ডার। তাছাড়া স্বামী ও স্ত্রীর জব সেক্টর যার মাধ্যমে আমরা এক সাথে জানতে পারতাম
আমাদের এই দেশে কয় জন বাংলাদেশী কোন কোন সেক্টরে কাজ করে। এতে পরবর্তী নির্বাচিত কমিটির
জন্য সহজ হত কমিউনিটির পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কি কাজ করা যেতে পারে সে লক্ষে কাজ
করা। অথবা আমাদের বাচ্চারা বিভিন্ন বছর কত জন বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসছে। তাঁদেরকে
নিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করা যেত যদি বয়স গ্রুপ নির্ণয় করা যেত। এছাড়া জগণের হয়তো আর কিছু আগ্রহ তৈরি করা যেত যদি
এই রকম কিছু করা সম্ভব হত।
খবর নিয়ে আমরা জানতে পারি
নির্বাচন কমিশন চেয়েছে একটা সহজ সরল ওয়েব সাইট তৈরি হোক যার মাধ্যমে সহজেই নিবন্ধন
কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব এবং স্বল্প সময়ে রেজিস্ট্রেশন করা যায়। সে হিসেবে তারা এই ওয়েব
সাইটিকে হয়েছে যথাযথ বলে মন্তব্য করেছেন।
মুসলিম নারী সদস্যদের পুলিশ
ডিপার্টমেন্টে চাকরি করতে আগ্রহী করতে এখন থেকে স্কটল্যান্ডে হিজাবকে তাদের ড্রেস হিসেবে
ব্যাবহার করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ৬টি হিজাব খরিদ করে প্রাথমিক ভাবে যার মধ্যে ৩ টি নতুন বছরের
শুরুর দিকে ব্যাবহারের জন্য ইস্যু করা হয়।
অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী
১২৭ জন ব্রাউন রং, এশিয়ান এবং এথনিক সংখ্যা লঘিষ্ট আগ্রহী প্রার্থী এই পেশায় চাকরিরই
জন্য আবেদন করেছে ২০১৫-২০১৬ সালে যা ২.৬% মোট জনসংখ্যার।
সংখ্যা লঘিষ্ট ৪% কোটা
ভরাট করতে হলে আর ৬৫০ জন কে এই পদে চাকরি করার সুযোগ দিতে হবে।
[আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী
কমিউনিটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে ও পোস্টে লাইক এবং শেয়ার
দিয়ে আমাদের সাথে থাকবেন।]
আসছে ৮ই ফেব্রুয়ারী রোজ শনিবার আয়ারল্যান্ডের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী লিও ভরাদকার গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগ্গিন্স এর সাথে সাক্ষাতের পর ৩২ তম সংসদের বিলুপ্তি ঘোষনা করেন। প্রথমবারের মত ৩৩ তম পার্লামেন্ট বসার কথা ২০ ই ফেব্রুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার নতুন সরকার গঠনের পর।
ভোটার লিস্টে নাম না থাকলে লোকাল অথরিটির সাথে যোগাযোগ করার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে। ২২ই জানুয়ারী ভোটার রেজিস্ট্রেশনের লাস্ট তারিখ। গার্ডা স্টেশন অথবা লোকাল অথরিটির অফিস থেকে ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফর্ম উঠানো যাবে অথবা www.checkthe register.ie গিয়ে ফর্ম ডাউনলোড করা যাবে। ছবিযুক্ত আইডি সাথে নিয়ে লোকাল গার্ডা স্টেশনে গিয়ে সাইন করে সত্যায়িত করে লোকাল অথরিটির নিকট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে।
বিগত কয়েক যুগ ধরে নির্বাচন হয়ে আসছে বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবারে। যদিও আয়ারল্যান্ডের ঐতিহাসিক ১৯১৮ সালের ইলেকশন সংগঠিত হয়েছিলো শনিবারে। শনিবারে নির্বাচন দেওয়ার কারন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমি ছাত্র ছাত্রী ও পরিবার পরিজনের সকলের কথা চিন্তা করে ছুটির এই দিনটি ঠিক করেছি যাতে ভোট দিতে সকলের জন্য সহজ হয়।
পরবর্তী সংসদ কার্যকর হওয়া পর্যন্ত ভারাদকার প্রধানমন্ত্রী, সায়মন কভেনি উপ্প্র্ধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীগন স্বপদে বহাল থাকলেও বাকি সকল সংসদ সদস্যদের পদ অকার্যকর থাকবে। প্রার্থীদের নমিনেশন দেওয়ার শেষ তারিখ ২২ই জানুয়ারী হিসেবে ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে Mayo থেকে প্রথম কোন বাংলাদেশী বংশদ্ভুত নাম Kamal uddin, Labour party থেকে নমিনেশন পান আয়ারল্যান্ড 2020 সংসদ নির্বাচনে।
কোথাও বাজছে সানাই, কোথাও ভীষণ ফাঁকা , ধূ ধূ রাস্তায় ঘুমায় মানুষের চামড়া আমি হাঁটছি কেবল হাঁটছি, কোথাও কি খসে গেছে কারো স্মৃতিকথা-বাজুবন্ধ !
আমি ভাবছি, শুধু খুঁজছি কবিতার রসদ, যারা ঝাড়ু দিয়ে গেলো নাগরিক জঞ্জাল, পাতাকুড়ানিদের কেউ চিনেছে কী কোনকালে ওগো মালতি, ওগো কাকলি, তোমাদের নাম লেখা হবে না কোন অভিধানে !
আমি ছুটছি, আমি শুনছি কাব্যের সমারোহ , মেঘের দেহ নুইয়ে পড়ে জানালার গ্রিল ধরে, পাখিদের ছুটোছুটি রোদের বাহানা খুঁজে কমলা শাড়ি গায়ে আয়নার দাঁড় ঘেঁষে চুড়ির বাজনা বাজাও কে তুমি মধুরিমা?
আমি চলছি, আমি দেখছি পদ্যের ঘর বোনা , কোমরে ঘুঙুর বাড়ির উঠোনে শিশু, মায়ের আঁচলে মুছে ঝরে যাওয়া নাকের কুয়াশা কী ভরাট জীবন, শাকপাতা কূল কুড়ায় যে নব বধু, কে জানে কখন ফুরায় তার জীবন যাপন !
আমি ঘুরছি, আমি বুনেছি শ্লোকের সূক্ষ্মকণা , নদীরা ছুটে চলে, মাছেরা জলে ভাসে, গাছেরা দাঁড়িয়ে থাকে, জীবনও ছুটে চলে দারুণ উচ্ছ্বাসে আমরা বেঁচে থাকি, কখনও বেঁচে নেই ,এ নিদারুণ ঋতুর অভ্যাসে।
কলামিস্ট ও প্রাবন্ধিক সাজেদুল চৌধুরী রুবেল: প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা শ্রদ্ধেয় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন ‘আওয়ামী লীগ’ একটি অনুভূতির নাম। কিন্তু এ ‘অনুভূতি’ যখন দুর্নীতিতে গিয়ে ঠেকে তখন আমরা যারা প্রকৃত আওয়ামী ঘরানার লোক তারা বেশ কষ্ট পাই, আহত হই। নীতির রাজাকে রাজনীতি বলা হলেও এখন আর সে তত্ত্ব কথার কোনো মূল্য নেই। বরং চুরি চামারি, টাউট বাটপাড়ি, দুর্নীতি তথা তেলবাজিতে যে যতো বড়ো রাজা সে ততো বড়ো রাজনীতিবিদ, ততো বড়ো নেতা। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সত্যিকারার্থে কোনো দলই এসবের ঊর্ধ্বে নয়। এমনকি প্রিয় দল আওয়ামী লীগও।
আমার ধারণা ছিলো রাজনীতিবিদদের এ নষ্টামি কেবলমাত্র আমাদের দেশেই সীমাবদ্ধ। দেশের বাইরে বসে যারা দেশীয় রাজনীতি করেন তারা অন্তত এ কলংকের চুনকালি মাখেন না। দেশ ও দলের প্রতি সত্যিকার ভালোবাসা থেকেই সম্ভবত তারা রাজনীতি করেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে আমার এ ধারণা মোটেও সঠিক নয়। দেশের এ নষ্ট রাজনীতি এখন আর কেবল দেশেই নয় বরং তা দেশের দেয়াল পেরিয়ে পাড়ি জমিয়েছে বিদেশেও। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজর দিলেই তা উপলব্ধি করা যায়। এইতো কিছু দিন আগেও দৈনিক ইত্তেফাক সহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে এরকম একটি নিউজ প্রকাশিত হয়।
খবরটির সারমর্ম হচ্ছে, কয়েক মাস আগে ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের যে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয় সেখানে বিএনপি জামায়াতের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে স্থানীয় নেতা কর্মীদের অভিযোগ। তাদের কারো সংগে আলোচনা বা শলাপরামর্শ না করেই তিনি এ কমিটি ঘোষণা করেন। এমনকি যে দুজনকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে যথাক্রমে বেলাল হোসেন ও ইকবাল আহমেদ লিটন তারাও এ কমিটির নামের তালিকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। ফলে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা হতাশ, হতবাক ও ক্ষুব্ধ। গত ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা অচিরেই এ বিতর্কিত কমিটি বাতিলের জোর দাবি জানান।
খবরটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের আগে থেকেই আমি জানতাম। আওয়ামী লীগের একজন শুভাকাক্সক্ষী হিসেবে দলটির সব খবরই আমার কানে আসে। আমি প্রত্যক্ষভাবে দলের সঙ্গে জড়িত নই বটে কিন্তু প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই আমার সহযোগিতার কোনো কমতি ছিলো না। এখানো মনে পড়ে কিলারনীর (Killarney) একটি অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা নিয়ে সর্ব প্রথম কথা বলি আমি, রফিক খান (প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক), মোনায়েম খন্দকার রানা (প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি) ও ইনজামুল হক জুয়েল (প্রতিষ্ঠাতা প্রচার সম্পাদক)। এরই ধারাবাহিকতায় মিটিং অনুষ্ঠিত হয় কর্ক (Cork) ও ওয়েক্সফোর্ডে (Wexford)। গঠিত হয় আহ্বায়ক কমিটি যেখানে আমারো সদস্য পদ ছিল। পরবর্তীতে ২০১১ সালে লিমরিক সাউথ কোর্ট হোটেলে ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে মিরাজ শিকদারকে সভাপতি ও মোনায়েম খন্দকার রানাকে সাধারণ সম্পাদক করে এক সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এ সম্মেলনে আমিও উপস্থিত হয়ে ছিলাম। কিন্তু জরুরি কারণ বশত সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই আমাকে বিদায় নিতে হয়। বিদায় বেলায় শ্রদ্ধেয় মিরাজ ভাই আমাকে কমিটিতে থাকার অনুরোধ জানালে আমি বিনয়ের সঙ্গে আমার অপারগতার কথা বলি। এরপরও তিনি আমাকে না জানিয়েই বলতে গেলে অনেকটা গর্বভরে প্রধান উপদেষ্টা পদে রেখে দেন। মিরাজ ভাই সভাপতি থাকাকালীন পর্যন্ত দলটির সঙ্গে আমার বেশ যোগাযোগ ছিল। পরবর্তীতে খুব বেশি একটা যোগাযোগ রক্ষা করতে না পারলেও আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে কার কতোটুকু ভূমিকা রয়েছে, কে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, কে ত্যাগী নেতা তা আমার অজানা নয়। তাদের সবাইকে আমি চিনি। আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক তারাই। তাদের বাদ দিয়ে যদি কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তবে তা কখনো গ্রহণ যোগ্য ও দলের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারেনা।
এ অগ্রহণ ও অমঙ্গলজনক কাজটিই করেছেন আমাদের প্রিয় নেতা ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব নজরুল ইসলাম। একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিক ও বর্ণাঢ্য অতীতের অধিকারী ব্যক্তি হিসেবে তিনি কিভাবে এমন কাঁচা কাজ করতে পারলেন তা আমার বোধগম্য নয়।
একটি দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে অথচ সেই দলের নেতা কর্মীরা জানবেনা কিংবা তাদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করা হবে না তাতো হতে পারে না। নজরুল ইসলাম সাহেব আয়ারল্যান্ডে বসবাস করেননা। তিনি থাকেন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায়। আয়ারল্যান্ডে কে আওয়ামী লীগ করে কি করে না দু’একটা বিশেষ পরিচিত মুখ ছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে তার ধারণা থাকার কথা নয়। তাহলে সম্প্রতি তিনি যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করলেন তার নামের তালিকা কোথায় পেলেন, কিভাবে পেলেন, কার মাধ্যমে পেলেন? কে সেই মহারথী?
তার গঠিত কমিটিতে বেশ কিছু সংখ্যক অখ্যাত অপরিচিত সদস্যের পাশাপাশি কয়েকজন বিএনপি জামায়াতের নেতা কর্মীর নামও স্থান পেয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ। ওরা যে ইতোপূর্বে ওই রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলো তার বহুবিদ প্রমাণ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের হাতে রয়েছে। এদের কেউ কেউ ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের নামে আয়ারল্যান্ডের রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে সরকারের যে বিষোদ্গার ও কটূক্তি করেছে তার ভিডিও ক্লিপও নেতা কর্মীদের কাছে সংরক্ষিত আছে। এরা যে শুধু আয়ারল্যান্ডেই এ রাজনীতি করে বেড়াচ্ছে তা নয় বরং পারিবারিক ভাবেই তারা এ রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত।
নজরুল ইসলাম সাহেব যে কেবল আয়ারল্যান্ডে এমনটি করেছেন তা নয়, তিনি যে দেশটিতে বসবাস করেন খোদ সে দেশের আওয়ামী লীগ কমিটি নিয়ে ও বিতর্ক রয়েছে। সেখানেও তিনি বিএনপি জামায়াতের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন বলে স্থানীয় নেতা কর্মীদের অভিযোগ; যা ইতোমধ্যে পত্র পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
সাঈদী মুক্তি পরিষদের এক নেতা যিনি অনবরত সরকারকে তিরস্কার করেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতা করে গরম গরম বক্তব্য রাখেন তাকেও স্পেন আওয়ামী লীগের সভাপতি করতে জনাব নজরুল ইসলাম মোটেও কুণ্ঠিত হননি।
আমার প্রশ্ন, তিনি একজন পরীক্ষিত আওয়ামী লীগার বলেই দলের নীতি নির্ধারকরা তাকে ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়েছেন। তার রক্ত, মাংস ও মগজে আওয়ামী ধারা প্রবহমান। তাহলে কেনো বিএনপি জামায়াতের প্রতি তার এতো দরদ উথলে উঠবে? কেনো তার গঠন করা প্রতিটি কমিটিতে বিএনপি জামায়াত প্রীতির ছাপ থাকবে?
এ প্রশ্ন শুধু আমার নয়, অনেকেরই। এ নিয়ে নেতা কর্মীদের মাঝে চলছে বেশ কানাঘুষা। বেশ মোটা অঙ্কের লেন দেন হয়েছে বলে একটি অনলাইন পোর্টালের দাবি।পোর্টালটির ভাষ্যনুযায়ী অনেক দিন যাবৎ বিএনপি জামায়াত ক্ষমতার বাইরে থাকায় ওরা দিশেহারা হয়ে ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করার জন্য আওয়ামী লীগে ঢুকে পয়সা দিয়ে পদ-পদবি কিনে নিচ্ছে। এতে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা নায্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দলে দেখা দিচ্ছে দ্বিধা দ্বন্দ্ব বিভক্তি। মূলধারার ত্যাগী রাজনীতিকরা ছিটকে পড়ছেন দূরে; যা কিনা আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের জন্য মোটেও শুভকর নয়।
তাই আমি মনে করি নজরুল ইসলাম সাহেব যে বিতর্কিত কমিটি উপহার দিয়েছেন দলের স্বার্থে তা অতিসত্বর বাতিল ঘোষণা করে আয়ারল্যান্ডের সত্যিকার আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীদের উপস্থিতিতে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটি নতুন কমিটি ঘোষণা করবেন।
এটাও মনে করি, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে তার নিজের স্বার্থে যেমন খোলাসা করা উচিত তেমনি দলের স্বার্থেও। কারণ আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের শীর্ষ পর্যায়ে এমন কারো থাকা সমীচীন নয় যিনি বা যারা স্বীয় স্বার্থের মোহে উদ্বেলিত হয়ে দলের বৃহৎ স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে মোটেও কুণ্ঠিত হন না। তাই আশা করি অতি সত্বর তিনি জনসমক্ষে তার ব্যপারে স্বচ্ছ ধারণা তুলে ধরবেন।
তা করতে ব্যর্থ হলে আমি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক যারা ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের দেখভাল করেন তাদের কাছে জোর দাবি জানাই, তারা যেনো নজরুল ইসলামের উপর আঙ্গুলায়িত সকল অভিযোগের সঠিক তদন্তসাপেক্ষে সত্যতা নিরুপণে সচেষ্ট হন। অভিযোগ যদি সত্যি হয় তবে তাকে কেবল সভাপতি থেকে অব্যাহতি নয়, দল থেকে বহিষ্কার নয় বরং কৃতকর্মের জন্য যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। অন্যথায় একদিন আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে।
[লেখক : আয়ারল্যান্ড প্রবাসী কলামিস্ট ও প্রাবন্ধিক]
জুহাইর চৌধূরী নামে ব্রিটিশ বর্ন বাংলাদেশী এক যুবক ১৭ দিন নিখোঁজ থাকার পর গলওয়ের স্পিডাল সমূদ্র সৌকতে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। এলাকার লোকজন অজ্ঞাত লাশটি দেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে দেহটি উদ্ধার করে গলওয়ে ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে নিয়ে যায় সনাক্ত ও পোস্টমর্টেম করার জন্য। পরবর্তীতে জুহাইর চৌধুরীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে তারা নিশ্চিত করে এটি জুহাইরের লাশ।
আইরিশ গার্ডা প্রাথমিক ইনভেস্টিগেশন করে ১৭ ই ডিসেম্বর জুহাইরকে সর্বশেষ জীবিত চলাফেরা করতে দেখতে পায় উত্তর ক্লেয়ারের একটি এলাকাতে। এসময় শেষ বারের মত তাকে ক্লিফস অব মোহর এলাকাতে গাড়ি চালানো অবস্থায় দেখা যায়।
মৃত্যুকালে জুহাইরের বয়স ছিলো ২৯ বছর। সে বেলফাস্টে সপরিবারে বসবাস করতো। ৯৩ সাল থেকে তার পিতা উত্তর আয়ারল্যান্ডে বসবাস করা শুরু করে। সে একটি ইন্জিনিয়ারিং কম্পানিতে চাকরি করতো। জুহাইরের পিতা প্রফেসর মশরু চৌধূরী লন্ডন ডেরী ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। তারা মোট তিন ভাই ছিলেন।
গত কয়েক সপ্তাহে একই এলাকা থেকে আরো দুইটি লাশ উদ্ধার করা হয় । গার্ডা রিপোর্ট পাওয়ার পর সেই এলাকায় ড্রোনের ব্যাবহার করে লাশ খোঁজার ব্যাবস্থা করে।
জুহাইরের স্বজনেরা আইরিশ বাংলা টাইমস কে জানায় ৮ই জানুয়ারী ওয়েলিংটন স্ট্রিট, বেলফাস্ট ইসলামিক সেন্টারে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠানের কথা।
সম্মানিত নির্বাচন কমিশনার ও উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্যবৃন্দ।গত ২রা জানুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার আবাই সাধারণ নির্বাচন ২০২০ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ গ্রহণ করায় আপনাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে। যারা অংশগ্রহণ করতে পারেননি পরবর্তী সকল মিটিং এ আপনারা অংশগ্রহণ করে আমাদের উপর অর্পিত এই মহৎ দায়িত্ব সুচারুরূপেব পালন করতে সহায়তা করবেন বলে আশা করছি। সভায় অংশ গ্রহণ করেন মোহাম্মদ মোস্তফা, কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার, সামসুল হক, সাইফুল ইসলাম, আব্দুল জলিল, মোশাররফ হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন, জাহিদ মোমিন, কামাল হোসেন, কামাল উদ্দিন, আব্দুল মানান, হামিদুল নাসির, আক্তার হোসেন,জাকারিয়া প্রধান, মির মামুন, আনোয়ার হোসেন, রহমান, হুমায়ুন কবির, আব্দুর রাহিম ভূঁইয়া, সাজেদুল চৌধুরী, মিজানুর রহমান, শাহীন রেজা এবং গোলাম নাবী ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন জনাব শামসুল হক।
সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, আমাদের এই মিটিং এ নিন্ম বর্ণিত বিষয় সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছেঃ
১- ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন হুয়ার পর সংখ্যানুপাতিক হারে জোন নির্ধারণ ও দেশ ব্যাপী ২০-২৫ টি কেন্দ্র নির্ধারণ
২- কেন্দ্র প্রতি নির্বাচনী ব্যয় আনুমানিক ৩০০ ইউরো ধরে সর্বমোট নির্বাচনী ব্যয় সর্বাধিক ১৫,০০০-১৭,৫০০ ইউরো ধার্য
৩- নির্বাচন কমিশনার ও উপদেষ্টা মণ্ডলীর সকল সদস্যবৃন্দ নির্বাচনী খরচ বাবদ জন প্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা প্রদান
৪- আগামী একসপ্তাহের মধ্যে ওয়েব সাইট লাইভ চালু করে ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করা
৫- ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ার জন্য ওয়েব সাইট ২১ দিনের জন্য খোলা রাখা
৬- উপদেষ্টা মণ্ডলী নির্বাচন পদ্ধতির ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা
৭- ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা
৮- মার্চের প্রথমার্ধে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া
আপনাদের সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।
ধন্যবাদান্তে,
প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোস্তফা ও
প্রধান নির্বাচন কমিশনার
কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার
Translation: O you who Believe, make abundant remembrance of ALLAH!” (33:41)
In Tafsir of this verse Imam al-Qurtubi (rah) mentions the hadith:
وروى أبو سعيد عن النبيّ صلى الله عليه وسلّم: «أكثروا ذكر الله حتى يقولوا مجنون
Translation: Abu Sa’eed al Khudri (ra) narrates from the Prophet (Peace be upon him) who said: Do Dhikr so much that people start calling you Majnoon (mad) [Tafsir ul Qurtubi, Volume No. 14, Page No. 197]
This hadith is narrated in Musnad Ahmed (3/67, 81). Ibn Hibban in his “SAHIHA” (#814). Imam al-Hakim in his Mustadrak ala Sahihayn (1/499)
Imam al-Mundhiri (rah) after narrating it said:
رواه أحمد وأبو يعلى وابن حبان في صحيحه، والحاكم وقال: صحيح الإسناد.
Translation: It is narrated by Ahmed, Abu Ya’la, Ibn Hibban in his “SAHIHA” and al-Hakim after narrating it (Mustadrak 1/499) said: It has a “SAHIH CHAIN” [at-Targheeb wa Tarheeb, Page No. 280, Published by Dar ul Kitaab al Arabi, Beirut, Lebanon]
Imam Ibn Adi (rah) said:
بهذا الإسناد فليس به باس
Translation: This sanad has “NOTHING WRONG IN IT” [Al-Kamil, Volume No. 4, Page No, 9]
Imam Ibn Kathir (rah) also narrated it in his Tafsir al Quran al Azim and he also showed another hadith:
ابن عباس رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلّم: اذكروا الله ذكراً كثيراً حتى يقول المنافقون إِنكم تراؤون
Translation: Narrated by Ibn Abbas (ra) who said that the Prophet (Peace be upon him) said: Remember Allah in abundance to the extent that Munafiqeen say that you are showing off [Tafsir Ibn Kathir, Volume No. 6, Page No. 384]
We know that Salafis shall as usual call this hadith “Da’eef” and in research we came across Hukm of Shaykh Shu’ayb al Arna’oot who also erred by calling it Da’eef in his Tehqeeq of Musnad Ahmed bin Hanbal. In reality this hadith is sound due to the fact that many Muhaditheen authenticated it, secondly It has come with different routes like we presented above the hadith from Ibn Abbas (RA) with a slightly different wording but a totally different chain of narrators (thus making Asaneed as “Hasan” due to corroborating chains). These proofs refute our dear friends called Salafis, who bash the gatherings of Sufis where they do loud dhikr in Hadhra (sufi gatherings of raqs and dhikr) in Arab world, rather the accusers are proven to be Munafiqeen because they call Sufis as mad men (Naudhobillah). What they forget is that we are proud to be called as mad men when hadiths prove us as great followers of Sunnah.
Note: For Shar’i stance on Sufi Raqs read this following article:
There is also no restriction of doing Dhikr alone or only by sitting down, we can stand up and do Dhikr or send Salawat on Prophet (Peace be upon him).
Translation: Who remember Allah while “STANDING” or sitting or [lying] on their sides and give thought to the creation of the heavens and the earth, [saying], “Our Lord, You did not create this aimlessly; exalted are You [above such a thing]; then protect us from the punishment of the Fire. (al-Qur’an 3:191)
Translation:In houses which Allah has permitted to be exalted and that His name may be remembered in them; there glorify Him therein in the mornings and the evenings. Men whom neither merchandise nor selling diverts from the remembrance of Allah and the keeping up of prayer and the giving of poor-rate; they fear a day in which the hearts and eyes shall turn about [al-Qur’an 24:36-37]
These verses proves doing Dhikr in “HOUSES” and that too collective dhikr. The first verse is not only restricted to mosques as falsely asserted by some people, rather the wording used in Qur’an is “FI BUYUTINN” meaning houses in general (including mosques)
We only see the Sufis following these glorious verses of Qur’an whereas the Salafis restrict this Dhikr to Salaat only. This is their wrong reasoning because the verses clearly distinguish between Salaat and Dhikr itself. It states: “ذِكْرِ اللَّهِ وإِقَامِ الصَّلَاةِ” Allah Himself distinguishes between Dhikr and Standing for prayer by putting a “WA (AND)” in-between the two.
One who remembers Allah (SWT) is alive and one who does not is dead
Hadith #1
عَنْ أَبِي مُوسَى رضي الله عنه قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وآله وسلم: مَثَلُ الَّذِي يَذْكُرُ رَبَّهُ وَالَّذِي لَا يَذْكُرُ رَبَّهُ مَثَلُ الْحَيِّ وَالْمَيِّتِ
Translation: Abu Musa (رضی اللہ عنہ) narrates that the Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “He who remembers his Lord and he who does not are like the living and the dead.”
References
► Bukhari, as-Sahih (5:2353#6044)
► Mundhiri, at-Targhib wat-tarhib (2:256#2303)
► Asqalani, Fath-ul-bari (11:210#6044)
Hadith #2
عَنْ أَبِي مُوسَى رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وآله وسلم قَالَ: مَثَلُ الْبَيْتِ الَّذِي يُذْكَرُ اللَّهُ فِيهِ وَالْبَيْتِ الَّذِي لَا يُذْكَرُ اللَّهُ فِيهِ مَثَلُ الْحَيِّ وَالْمَيِّتِ
Translation: Abu Musa (رضی اللہ عنہ) narrates that the Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “The house in which Allah (SWT) is remembered and the one in which Allah (SWT) is not remembered are like the living and the dead.”
References
► Muslim, as-Sahih (1:539#779)
► Ibn Hibban, as-Sahih (3:135#854)
► Abu Yala, al-Musnad (13:291#7306)
► Ruyani, al-Musnad (1:317#473)
► Abu Nuaym, al-Musnad-ul-mustakhraj ala as-Sahih Muslim (2:372#1771)
Allah (SWT) expresses His pride upon Dhakireen in front of angels, and it is recommended to make gatherings of Dhikr unlike some people who consider gathering for dhikr as Bidah (Naudhobillah)
Translation: Abu Saeed Khudri (رضی اللہ عنہ) narrates that Muawiyah (رضی اللہ عنہ) came to a group of people in the mosque and said, “… The Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) came to a group of his Companions in the mosque and said, ‘Why are you sitting?’ They said, ‘We are sitting remembering Allah and paying our thanks to Him for His favour of guiding us to Islam.’ The Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, ‘Do you say that on oath that is what has made you sit here?’ They submitted, ‘By Allah we are sitting here only for this purpose.’ The Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, ‘I have not made you take oath for any doubt but the thruth is that Gabriel came and told me that Allah is expressing His pride on you in front of angels.’”
References
►Muslim, as-Sahih (4:2075#2701)
►Tirmidhi, as-Sunan (5:460#3379)
►Nasai, as-Sunan (8:249#5426)
►Ahmad bin Hambal, al-Musnad (4:92)
►Ibn Hibban, as-Sahih (3:95#813)
►Ibn Abi Shaybah, al-Musannaf (6:59#29469)
►Tabarani, al-Mujam-ul-kabir (19:311#701)
►Mindhiri, at-Targhib wat-tarhib (2:259#2317)
Hadith #4
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رضي الله عنهما قَالَ: صَلَّيْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلي الله عليه وآله وسلم الْمَغْرِبَ، فَرَجَعَ مَنْ رَجَعَ وَعَقَّبَ مَنْ عَقَّبَ، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلي الله عليه وآله وسلم مُسْرِعًا، قَدْ حَفَزَهُ النَّفَسُ وَقَدْ حَسَرَ عَنْ رُكْبَتَيْهِ، فَقَالَ: أَبْشِرُوا هَذَا رَبُّكُمْ قَدْ فَتَحَ بَابًا مِنْ أَبْوَابِ السَّمَاءِ يُبَاهِي بِكُمُ الْمَلَائِكَةَ، يَقُولُ: انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي قَدْ قَضَوْا فَرِيضَةً وَهُمْ يَنْتَظِرُونَ أُخْرَى
Translation: Abdullah bin Amr (رضی اللہ عنھما) narrates, “We offered the sunset ritual prayer with the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) . Those who were to leave left and those desirous to stay back stayed. So swiftly the Holy Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) came that he was breathing heavily and his robe was a little above his holy ankles. He said, ‘Cheer up! This is your Lord Who has opened a door of heavens and is expressing His pride on you before the angels, saying: Look at My servants; after performing an obligatory ritual prayer they are waiting for the next one (prayer).’”
References
►Ibn Majah, as-Sunan (1:262#801)
►Abu Nuaym, Hilyat-ul-awliya wa tabaqat-ul-asfiya (6:54)
►Mindhiri, at-Targhib wat-tarhib (1:172#646)
►Kinani, Misbah-uz-zujajah (1:102#303)
►Shawkani, Nayl-ul-awtar (2:54)
Angels search streets/roads for Dhikr gatherings.
Hadith #5
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلي الله عليه وآله وسلم: إِنَّ لِلَّهِ مَلَائِكَةً يَطُوفُونَ فِي الطُّرُقِ، يَلْتَمِسُونَ أَهْلَ الذِّكْرِ، فَإِذَا وَجَدُوا قَوْمًا يَذْكُرُونَ اللَّهَ تَنَادَوْا، هَلُمُّوا إِلَى حَاجَتِكُمْ
Translation: Abu Huraira (رضی اللہ عنہ) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Allah has angels who roam about on roads looking for the love-sick rememberers of Allah. When they find such people, they call out other angels: ‘Come here to your coveted aspiration….’”
Translation: Abu Huraira (رضی اللہ عنہ) narrates that the Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Surely there are some angels of Allah (SWT) who conduct patrolling in search of remembrance assemblies (A: Majalis al-Dhikr – this proves Group dhikr gatherings held by Sufis). When they find such an assembly, they join and sit with them…”
References:
► Muslim, as-Sahih (4:2069#2689)
► Ahmad bin Hambal, al-Musnad (2:25#7420)
► Ahmad bin Hambal, al-Musnad (2:382#8960)
► Mundhiri, at-Targhib wat-tarhib (2:259#2316)
► Mundhiri, at-Targhib wat-tarhib (4:244#5523)
Hadith #7
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وآله وسلم قَالَ: إِنَّ لِلهِ مَلَائِكَةً سَيَّارَةً وَفُضُلاَءَ يَلْتَمِسُونَ مَجَالِسَ الذِّكْرِ فِي الْأَرْضِ
Translation: Abu Huraira narrates (رضی اللہ عنہ) that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “There are angels of Allah (SWT), besides those assigned with usual tasks, who travel round the globe (with a particular aim) and keep looking for remembrance sittings (A: Majalis al-Dhikr – this proves Group dhikr gatherings held by Sufis)..”
Reference:
Hakim, al-Mustadrak (1:672#1821)
Angels cover remembrance assemblies of Allah with their wings
Hadith #8
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنهما أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وآله وسلم أَنَّهُ قَالَ: لَا يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُونَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا حَفَّتْهُمْ الْمَلَائِكَةُ، وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ، وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمْ السَّكِينَةُ، وَذَكَرَهُمْ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ
Translation: Abu Huraira (رضی اللہ عنہ) and Abu Saeed Khudri (رضی اللہ عنہ) narrate that they visited the Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) and he said, “Whenever people sit to remember Allah (SWT), angels cover them (spreading their wings over them) and divine mercy envelops them; inner peace descends on them and Allah (SWT) mentions them to those who are with Him.”
Translation: According to Abu Huraira the Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “There are many angels of Allah (SWT), besides those assigned with normal tasks, who travel around looking for remembrance sessions. When they find such a session where remembrance of Allah is in progress, they sit with them and some angels cover the others with their wings ascending one above another until the space between the earth and the lowest heaven gets filled….”
References:
► Muslim, as-Sahih (4:2069#2689)
► Ahmad bin Hambal, al-Musnad (2:252#7420)
► Ahmad bin Hambal, al-Musnad (2:382#8960)
► Mundhiri, at-Targhib wat-tarhib (2:259#2316)
► Mundhiri, at-Targhib wat-tarhib (4:244#5523)
Hadith #10
عَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وآله وسلم قَالَ: إِنَّ لِلهِ سَيَّارَةً مِنَ الْمَلَائِكَةِ يَطْلُبُوْنَ حِلَقَ الذِّكْرِ. فَإِذَا حَفَوا عَلَيْهِمْ وَأَتَوْا بِهِمْ، ثُمَّ بَعَثُوا رَائِدَهُم إِلَى السَّمَاءِ إِلَى رَبِّ الْعِزَّةِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى
Translation: Anas (رضی اللہ عنہ) narrates from the Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) that he said, “Some angels of Allah (SWT) remain wandering in search of remembrance circles. When the angels come to them, they cover those people and then send their leader to the heavens in the Divine Presence….
Translation: Abu Huraira or Abu Saeed Khudri (رضی اللہ عنھما) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “There are many angels of Allah (SWT), other than the ones who record deeds, who wander around on earth. When they find some people performing remembrance of Allah (SWT), they call other angels, saying, ‘Come to what you are looking for.’ So they come and cover those people up to the lowest heaven. Then Allah (SWT) says, ‘What were My servants doing when you left them?’ The angels say, ‘O Lord, we left them praising You, magnifying You and remembering You.’ Allah (SWT) says, ‘Have they seen Me?’ They reply, ‘No.’” The Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Allah (SWT) says, ‘What would have been their condition if they had seen Me?’ They say, ‘If they had seen You, they would have praised You, magnified You and remembered You far more.’ Allah (SWT) says, ‘What are they asking for?’ They reply, ‘They are asking You for Paradise.’ He says, ‘Have they seen it?’ They reply, ‘No.’ He says, ‘What would have been their state if they had seen it?’ They reply, ‘If they had seen it, they would have asked for it more intensely and desired it more earnestly.’ Allah says, ‘What are they seeking My protection from?’ The angels say, ‘They are seeking Your protection from the Fire.’ Allah (SWT) says, ‘Have they seen it?’ They reply, ‘No.’ Allah (SWT) says, ‘What would have been their condition if they had seen it?’ They reply, ‘If they had seen it, they would have fled from it, feared it and sought Your refuge from it even more intensely.’ Allah says, ‘Then bear witness that I have forgiven them.’ They say, ‘There is so and so a great sinner among them; he came only for his personal interest and not to join in remembrance.’ Allah (SWT) says, ‘These are such people that even their companion is not left destitute and unfortunate.’”
Reference:
Tirmidhi, al-Jami-us-sahih (5:579#3600)
Hadith #12
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلي الله عليه وآله وسلم قَالَ: يَتَعَاقَبُونَ فِيكُمْ مَلَائِكَةٌ بِاللَّيْلِ، وَمَلَائِكَةٌ بِالنَّهَارِ، وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ وَصَلَاةِ الْعَصْرِ، ثُمَّ يَعْرُجُ الَّذِينَ بَاتُوا فِيكُمْ فَيَسْأَلُهُمْ رَبُّهُم وَهُوَ أَعْلَمُ بِهِمْ: كَيْفَ تَرَكْتُمْ عِبَادِي؟ فَيَقُولُونَ: تَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ وَأَتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ
Translation: Abu Huraira (رضی اللہ عنہ) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Angels come among you in turns by night and by day, and they all assemble at the fajr (morning) and asr (afternoon) ritual prayers. Then the ones who visited you ascend and their Lord asks them, although He knows better about them, ‘In what state did you leave My servants?’ The angels reply: ‘They were offering ritual prayer when we left them while they were also praying when we approached them.’”
References
► Bukhari, as-Sahih (1:203#530)
► Muslim, as-Sahih (1:439#632)
Remembrance of Allah is better than fighting in His way
Translation: Abu Saeed Khudri (رضی اللہ عنہ) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) was asked, “Who will be superior in the sight of Allah on the Day of Resurrection?” He said, “The men and the women who remember Allah (SWT) greatly.” The narrator states: I submitted, “O Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) , are they superior even to those who fight in the way of Allah (SWT)?” He said, “Even if he wields his sword among infidels and polytheists until it breaks blood stained, the remembrances of Allah are superior to him in grade.”
Translation: Muādh (رضی اللہ عنہ) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “No action of man is more protecting against the Fire (of Hell) than remembrance of Allah.” He (the narrator) submitted, “O Messenger of Allah, not even fighting in the way of Allah?” He said, “No, not even jihad even if you fight so much that your sword breaks, and then you fight again and that sword also breaks, and then you fight on until another sword breaks.”
Translation: Narrated from Abdullah bin Amr, he said, “Remembrance of Allah (SWT) morning and evening is superior to breaking swords in fighting for Allah (SWT) and spending generously in His way.”
References:
►Ibn Abi Shaybah, al-Musannaf (6:58#29456)
► Ibn Abi Shaybah, al-Musannaf (7:170#35047)
► Ibn Mubarak, az-Zuhd (1:394#1116)
► Ibn Abd-ul-Barr, at-Tamhid (6:59)
Remembrance of Allah (SWT) is superior to giving gold and silver in charity
Translation: Abu Darda (رضی اللہ عنہ) narrates that the Holy Prophet (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Shall I not inform you the best and the purest of your deed in the sight of your Master, which is the highest in your degrees, is superior to your spending gold and silver in charity, and is better than confronting and fighting against your enemy, cutting one another’s necks?” The Companions submitted, “Yes, indeed!” He said, “It is remembering Allah.” Muādh ibn Jabal (رضی اللہ عنہ) said, “There is nothing more effective to deliver you from the torment of Allah (SWT) than remembrance of Allah (SWT).”
References:
► Tirmidhi, al-Jami-us-sahih (5:459#3377)
► Ahmad ibn Hambal, al-Masnad (5:195#21750)
► Hakim declared its chain of transmission sahih (sound) in al-Mustadrak (1:673#1825).
► Bayhaqi, Shuab-ul-iman (1:394#519)
► Mundhiri, at-Targhib wat-tarhib (2:253#2294)
► Haythami, Majma-uz-zawaid (10:73)
Hadith #17
عَنْ مُعَاذِ بن أَنَسٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلي الله عليه وآله وسلم: الذِّكْرُ يَفْضُلُ عَلَى النَّفَقَةِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مِائَةَ ضِعْفٍ
Translation: Muādh ibn Anas (رضی اللہ عنہ) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Remembrance of Allah (SWT) is hundred times superior to spending in the way of Allah.”
Reference:
Tabarani, al-Mujam-ul-kabir (20:185#404)
Hadith #18
عَنْ أَبِي مُوْسَى رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلي الله عليه وآله وسلم: لَوْ أَنَّ رَجُلاً فِي حِجْرِهِ دَرَاهِمَ يُقَسِّمُهَا وَآخَرُ يَذْكُرُ اللهَ، كَانَ الذَّاكِرُ لِلَّهِ أَفْضَلَ
Translation: Abu Musa (رضی اللہ عنہ) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “If someone possesses money and distributes it and some other is engaged in remembrance of Allah (SWT), the one who remembers Allah is superior.”
References:
► Tabarani, al-Mujam-ul-awsat (6:116#5969)
► Mundhiri, at-Targhib wat-tarhib (2:257#2310)
► Ibn Rajab, Jami-ul-ulum wal-hikam (1:238)
► Haythami, Majma-uz-zawaid (10:74)
► Manawi, Fayd-ul-qadir (5:309)
Remember Allah (SWT) so much that hypocrites call you insane
Hadith #19
عَنْ أَبِي سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلي الله عليه وآله وسلم قَالَ: أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللَّهِ حَتَّى يَقُولُوا مَجْنُونٌ
Translaton: Abu Saeed Khudri (رضی اللہ عنہ) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Remember Allah (SWT) so much that people start saying, ‘He has gone mad.’ (A: The ignorant Salafis bashing the Hadhra gatherings of loud dhikr and Raqs in Arab world should read this hadith)”
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنهما، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلي الله عليه وآله وسلم: اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ: إِنَّكُمْ تُرَاءُونَ
Translation: Abdullah ibn Abbas (رضی اللہ عنھما) narrates that the Messenger of Allah (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) said, “Perform remembrance ofAllah in such a way that hypocrites start saying: ‘He is showing off.’” (A: The ignorant Salafis bashing the Hadhra gatherings of loud dhikr and Raqs in Arab world should read this hadith)”
References:
►Tabarani, al-Mujam-ul-kabir (12:169#12786)
► Abu Nuaym, Hilyat-ul-awliya wa tabaqat-ul-asfiya (3:81)
► Ibn Rajab, Jami-ul-ulum wal-hikam (1:444,448)
► Ibn Kathir, Tafsir-ul-Quran al-azim (3:496)
► Manawi, Fayd-ul-qadir (1:456)
Proof of “LOUD” Dhikr and RAISING VOICE HIGH”
Some people out of their enmity towards the great people of Tassawuf (Sufis) claim that there is no Jawaaz (legitimacy) of performing loud Dhikr. Although collective Dhikr has been proven above but now we would like to establish proof of doing Loud Dhikr. Again this is a norm amongst Sufis only whereas the Wahabbiyyah/Salafis have abandoned this Sunnah and great practice. The editor of this article (Aamir Ibrahim) says boastfully that he has not come across a single Wahabi mosque where people are gathered only to perform dhikr of Allah loudly. Hence It is proven that Wahabis are spreading Bidah whereas Sufis are upholding Sunnah proudly.
Proof # 1
عن عقبة بن عامر: أن رسول الله صلى الله عليه وسلّم قال لرجل يقال له ذو البجادين: إنه أوّاه وذلك أنه رجل كان يكثر ذكر الله بالقرآن والدعاء ويرفع صوته
Translation: From Uqba ibn Aamir (RA): “The Prophet (Peace be upon him) said of a man named Dhu al-bijadayn: “Innahu awwah He is a man who says ah! a lot” This is because he was a man abundant in his dhikr of Allah in Qur’an-recitation, and he would raise his voice high when supplicating.[Musnad Ahmed (5/161), Tafsir Ibn Kathir (4/193)] – Imam al-Haythami (rah) declared it’s chain to be “HASSAN” in Majma uz Zawaid (9/616)]
Proof # 2
أخبرني جَابِرُ بنُ عَبْدِ الله ، أوْ سَمِعْتُ جَابِرَ بنَ عَبْدِ الله ، قال: رَأى نَاسٌ نَاراً في المَقْبَرَةِ فَأتَوْهَا فَإذَا رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلّم في الْقَبْرِ وَإذَا هُوَ يَقُولُ: نَاوِلُونِي صَاحِبَكُم، فَإذَا هُوَ الرَّجُلُ الَّذِي كَانَ يَرْفَعُ صَوْتَهُ بالذِّكْرِ
Translation: Narrated by Jabir bin Abdullah (RA): The people saw fire (light) in the graveyard and they went there. They found that the Apostle of Allah (peace be upon him) was in a grave and he was saying: Give me your companion. This was a man who used to “RAISE HIS VOICE” while mentioning the name of Allah. [Narrated Jabir ibn Abdullah Abu Dawood Hadith # 3164, Published by Maktaba al Asriyyah, Beirut, Lebanon]
Imam Hakim has mentioned this in the chapter : “Virtue of raising the voice in Dhikr and he declared it “Sahih on the criteria of Sahih Muslim” [Mustadrak ala Sahihayn (1/522)]
There are many more proofs but due to brevity issue we would like to conclude with the beautiful verdict of Mujaddad of 9th Century i.e. Imam Jalal ud-din Suyuti (Rahimuhullah)
Magnificent verdict of Mujaddad wal Imam Jalal-ud-din Suyuti (rah)
نتيجة الفكر في الجهر بالذكر
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله وكفى. وسلام على عباده الذين اصطفى. سألت أكرمك الله عما اعتاده السادة الصوفية من عقد حلق الذكر والجهر به في المساجد ورفع الصوت بالتهليل وهل ذلك مكروه أو لا.
الجواب – إنه لا كراهة في شيء من ذلك وقد وردت أحاديث تقتضي استحباب الجهر بالذكر وأحاديث تقتضي استحباب الأسرار به والجمع بينهما أن ذلك يختلف باختلاف الأحوال والأشخاص
.
Translation:
The Result of Contemplation on Loud remembrance
In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful.
Question:
All praises and thanks are due to Allah & He suffices. Peace be upon His chosen servants. You asked may Allah honor you, concerning “THE SUFI PRACTICE” of setting up circles in the masajid for the purpose of dhikr, in particular the “RAISING OF THEIR VOICES” when reciting La ILaha IL Allah. Is this (practice) hated or disliked (makrūh) or otherwise?
Answer:
In fact, “THERE IS NOTHING DISLIKED IN IT AT ALL” Many hadiths of the Prophet (Peace be upon him) have actually suggested that open and loud dhikr (al jahr bi al-dhikr) is preferred. There are also those ahadīth that justify silent dhikr. Both these views are correct in relation to the varying nature of individuals. [As-Suyuti in Al Hawi lil Fatawi, Volume # 1, Page No. 422]
অগামীকাল ২৫শে ডিসেম্বর রোজ বুধবার ডাবলিনের এডামস টাউনে ইসলামী বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। কোরআন হাদিস, তাফসীর, ইসলামিক সাহিত্য সহ বিভিন্ন বই এর বাংলা, ইংরেজী এবং এরাবিক ভাষার বইয়ের বিশাল সমাহার।
বই কিনুন, বই পড়ুন, প্রিয়জনকে বই উপহার দিন। যোগাযোগ: ০৮৭ – ৯৭১৯০০৪, ০৮৬ – ১৫২৫২৮০
সকলের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে, আবাই সাধারন নির্বাচন ২০২০ উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী উপদেষ্টা পরিষদের সমন্বয়ে আগামী ২রা জানুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার এক জরুরী সভার আহবান করা হয়েছে। উক্ত সভায় নির্বাচন কমিশনের ও উপদেষ্টা পরিষদের সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য আন্তরিক ভাবে অনুরোধ করা যাইতেছে।
স্থান ও সময় নির্ধারিত হইলে অনতিবিলম্বে জানিয়ে দেওয়া হইবে।
ধন্যবাদান্তে প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোস্তফা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার
সৈয়দ জুয়েল।। বিভিন্ন কাউন্টি থেকে আগত নেতা কর্মীদের উপস্থিতে, জালাল আহমেদ ভূইঁয়ার সভাপতিত্বে গতকাল রাত আটটায় ডাবলিনের মাম রেস্টুরেন্টে পালিত হলো মহান বিজয় দিবস। মিনহাজুল আলম শাকিলের উপস্থাপনায় সভার শুরুতে মোঃ জসিম তার বক্তব্যে বলেন- অল ইউরোপীয়ান আওয়ামিলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি যেভাবে দিক নির্দেশনা দিবেন,আমরা সেভাবেই চলবো। আয়ারল্যান্ড আওয়ামিলীগকে আরো কিভাবে গতিশীল করা যায়,তার জন্য সবাইকে একজোগে কাজ করার আহবান জানান। সভার মাঝে অল ইউরোপীয়ান আওয়ামিলীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম, ও সাধারন সম্পাদক মজিবর রহমান ভিডিও কলে এডহক কমিটির আয়োজনে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানানোর পর আবার সভা শুরু হয়। এডহক কমিটির সদস্য সচিব ইকবাল আহমেদ লিটন তার বক্তব্যের শুরুতেই আগত সব নেতা কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন-এই আহবায়ক কমিটি নিয়ে যারা নস্ট রাজনীতি করছেন,তাদের আওয়ামিলীগকে মানতে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মানতে হবে,আর নেত্রীকে মানতে হলে ইউরোপীয়ান আওয়ামিলীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক মুজিব ভাইকে মানতে হবে। এর বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। ইউরেপীয়ান আওয়ামিলীগের সভাপতি,সাধারন সম্পাদকের উপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রীর আস্থা আছে
দেখেই,তারা এ পদে আছেন,এ নিয়ে কারো কোন সন্দেহ থাকার কোন অবকাশ নেই। সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন নেতা কর্মীরাই আয়ারল্যান্ড আওয়ামিলীগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। সামির জসিম বলেন- বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে মানুষ ঝাপিয়ে পরেছিলো,মাত্র নয় মাসে একটা দেশ স্বাধীন হয়েছিলো,পৃথিবীর ইতিহাসে এটা বিরল ঘটনা। গলওয়ে থেকল আসা তরুন আওয়ামিলীগ নেতা তামিম মজুমদার বলেন-আওয়ারল্যান্ড আওয়ামিলীগে অনেক যোগ্য এবং উচ্চশিক্ষিত নেতা কর্মী আছেন, যারা গোটা ইউরোপের ভিতর সন্মানের সহিত মাথা উঁচু করে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাখেন,তাই সবাইকে এক হয়ে কাজ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরো শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। সভার শেষের দিকে জালাল আহমেদ ভূঁইয়া তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন- প্রায় দুশো,তিনশো কিলোমিটার দূর থেকে যারা কস্ট করে এ সভায় আসছেন,শুধু দলকে ভালবেসে,এটাই হলো দলের প্রতি শ্রদ্ধা,ভালবাসা। আর এ ভালবাসায়ই আওয়ামিলীগ এগিয়ে যাবে বহুদূর। এরপরে মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের প্রতি সন্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরাবতা পালন করে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়। এদিকে কর্ক,গলওয়ে সহ বেশ কয়েকটি কাউন্টিতেও বিজয় দিবস পালন করা হয়। সভায় অন্যান্যদের মাঝে আরো বক্তব্য রাখেন-মোঃ সেলিম, মিজান, মাহফুজ, তামিম মজুমদার, লাবলু, সামির জসিম, মোঃ রফিক, তপু শাহাদত, আফছারউদ্দিন, সেলিম অরন্য, সাহান,সমী খাঁন সহ আরো অনেকে।
সম্মানিত সুধী, আস্সালামুআলাইকুম। অত্যন্ত আনন্দের সহিত জানানো যাইতেছে যে, আগামী ২৫শে ডিসেম্বর ইং রোজ বুধবার বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ের পক্ষ থেকে গলওয়ে বসবাসরত সকল ভাই বোনদেরকে নিয়ে এক মহা মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে আপনি ও আপনার পরিবার বর্গের উপস্থিতি ও সহযোগিতা একান্ত ভাবে কাম্য।। স্থানঃ Bearna Golf Club, Oddacres, Corboley, Galway (H91 TN99) বারনা গল্ফ ক্লাব।
আয়োজনেঃ বাংলাদেশ কমিউনিটি গলওয়ে, আয়ারল্যান্ড। সময়ঃ দুপুর ১২:৩০ মিনিট
আগামী সপ্তাহ থেকে সরকার অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন দেয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তথ্য অধিদফতরে জমা পড়া সাড়ে তিন হাজার আবেদনের মধ্যে কয়েকশ’ ইতিমধ্যে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই অনলাইন সংবাদমাধ্যমের নিবন্ধন দেয়া শুরু হবে। সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী এ কথা জানান। একই সঙ্গে পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে অনলাইন পরিচালনার জন্য অনুমোদন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, এবার ৩ হাজার ৫৯৭টি দরখাস্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছিল। সেগুলো তদন্ত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখন টেলিকম মিনিস্ট্রি, আইসিটি মিনিস্ট্রিকে নিয়ে সভা করে। সেখানে আবেদনগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুততম সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে কয়েকশ’ আবেদনের তদন্ত শেষ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেটি আজ বা কালকের মধ্যে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবে। আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে অনলাইনগুলোর নিবন্ধন দেয়া শুরু করব। সরকারের কয়েকটি সংস্থা এই তদন্তে যুক্ত আছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, যে সব অনলাইন নিবন্ধিত হবে না, সেগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে ভবিষ্যতেও যে কেউ অনলাইন করতে পারে। সে জন্য আমরা পরবর্তী সময়ে দরখাস্ত আহ্বান করব। ‘অপসাংবাদিকতা’ রোধে সব অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে ২০১৫ সালের নভেম্বরে আবেদন নেয়া শুরু করে সরকার। শুরুতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হলেও সময় বাড়ানো হয় কয়েক দফা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন তো কোনো অবলম্বন ছাড়া যে কেউ অনলাইন খুলে বসে। দেখা গেল যে, ঘরের মধ্যে বসে কয়েকজনে মিলে একটি অনলাইন চালায়। এমন ঘটনাও ঘটছে। তিনি বলেন, এখন চাইলেই একটি পত্রিকা বের করা যায় না, আগে ডিক্লারেশন নিতে হয়, নামে ছাড়পত্র নিতে হয়, ভবিষ্যতে অনলাইনের ক্ষেত্রেও একটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে।
অনিয়মের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের এফিডেভিট শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। মঙ্গলবার সকালে হাইকোর্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে সোমবার আপিল বিভাগে একটি মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের এফিডেভিট শাখায় সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা বসানোর পরও অনিয়ম ঠেকানো যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় একটি মামলা ৩ নম্বর ক্রমিকে থাকার কথা থাকলেও তা ৯০ নম্বর ক্রমিকে দেখা যায়। বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তখন প্রধান বিচারপতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘কী আর করব বলেন? এফিডেভিট শাখায় সিসি ক্যামেরা বসিয়েও অনিয়ম রুখতে পারছি না।
বিজয়ের ৪৮ বছরের মাথায় আগামী ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী রাজাকার-আলবদর ও আল-শাম্স এর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গতকাল সোমবার ইত্তেফাককে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ১৫ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার রাজাকারের নাম প্রকাশ করা হবে। পরবর্তীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
মন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত নাম যাচাই-বাছাই করে ৮ হাজার রাজাকারের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ জেলা উপজেলা থেকে নাম না পাঠানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। মন্ত্রী জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় থানা ও রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণ এবং তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য গত ২১ মে সব জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। পরে ২৮ আগস্ট আবারও তাগিদপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ১০ জেলা-উপজেলা থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তার মন্ত্রণালয়ে ১১ হাজার রাজাকারের নাম পাওয়া গেছে। এগুলো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, গণহত্যাসহ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এসব রাজাকারের বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা ছিল। সে সময় তারা বিভিন্ন থানা থেকে মাসোহারা পেত।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা ছিল এমন রাজাকারের সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার। এগুলোর অনুসন্ধান চলছে। কারণ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত নথিপত্র ধ্বংস করা হয়েছে।
জেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, মেহেরপুর জেলায় সর্বোচ্চ ১৬৯ জন রাজাকারের নাম, চাঁদপুরে ৯ জন, শরীয়তপুরে ৪৪ জন, বাগেরহাটে এক জন ও নড়াইলে ৫০ জনের নাম পাওয়া গেছে। তবে যশোরের শার্শা উপজেলা, গাইবান্ধা, শেরপুর, মাগুরা ও খাগড়াছড়ি জেলায় কোনো রাজাকার নেই বলে জেলা প্রশাসকদের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখনো জীবিত রয়েছে এমন রাজাকারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে শার্শা উপজেলা যেখানে রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখযুদ্ধে শতাধিক শহিদ হওয়ার ঘটনা রয়েছে।
অন্যদিকে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির ট্রুথ কমিশন ফর জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, মাগুরা জেলায় রাজাকারের সংখ্যা ২১ জন, ঢাকা জেলায় চার জন, গাজীপুর জেলায় সাত, টাঙ্গাইল জেলায় ১৪ জন, ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলায় ১৮ জন, নান্দাইল উপজেলায় ১১ জন, ফুলপুর ও হালুয়াঘাট উপজেলায় ৪৩ জন, গফরগাঁও উপজেলায় ১৫ জন, মুক্তাগাছা উপজেলায় ২০, ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ৪০ জন, ত্রিশালে ৪৩ জন, ভালুকায় ১৯ জন, শেরপুর সদরে ৩১ জন, নালিতাবাড়ী উপজেলায় ৪৯ জন, জামালপুর সদরে ১১ জন, নেত্রকোনা সদরে ১৩ জন, আটপাড়ায় সাত জন, বারহাট্টায় ১১ জন, কলমাকান্দায় আট জন, পূর্বধলায় সাত জন, কেন্দুয়ায় ১০ জন, মোহনগঞ্জ উপজেলায় ২৪ জন, দুর্গাপুরে ১৬ জন, মদনে সাত জন, কিশোরগঞ্জ জেলায় ৩১ জন, গাজীপুর জেলায় সাত জন, ফরিদপুর জেলায় ১৭ জন, মাদারীপুর জেলায় ১৪ জন, শরীয়তপুর জেলায় এক জন, গোপালগঞ্জ জেলায় সাত জন, রাজশাহী জেলায় ১৪ জন, পাবনা জেলায় তিন জন, সিরাজগঞ্জ জেলায় আট জন, বগুড়া জেলায় ১৪ জন, নওগাঁ জেলায় চার জন, নাটোর জেলায় ছয় জন, কুড়িগ্রাম জেলায় এক জন, দিনাজপুর জেলায় ২৮ জন, ঠাকুরগাঁও জেলায় চার জন, লালমনিরহাট জেলায় সাত জন, মাগুরা জেলায় ১৮ জন, ঝিনাইদহ জেলায় তিন জন, মেহেরপুর জেলায় তিন জন, যশোর জেলায় চার জন, বাগেরহাট জেলায় ৯ জন, বরিশাল জেলায় এক জন, পটুয়াখালী জেলায় তিন জন, পিরোজপুর জেলায় ১৮ জন, বরগুনা জেলায় ১১ জন, ঝালকাঠি জেলায় চার জন, মৌলভীবাজার জেলায় তিন জন, সিলেট জেলায় পাঁচ জন, সুনামগঞ্জ জেলায় ১৩ জন, নোয়াখালী জেলায় তিন জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এক জন। তবে এই হিসাব পুরো জেলা বা উপজেলার নয় বরং আংশিক।
র্যাগিং ও রাজনীতিতে জড়িত থাকলে সর্বোচ্চ শাস্তি ‘বহিষ্কার’ নির্ধারণ করে বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
সোমবার রাতে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবিষ্যতে র্যাগিংয়ের সাথে জড়িতদের এবং সাংগঠনিক রাজনীতির বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িতদের অভিযোগসমূহ মূল্যায়ন ও শাস্তি নির্ধারণ বিষয়ে গঠিত কমিটির রিপোর্টের আলোকে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক পরমাণু সমঝোতা অর্জনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিশেষ করে জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
কিন্তু আমেরিকা গত বছর ৮ মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউরোপ পরমাণু সমঝোতায় দেয়া তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক নতুন প্রধান জোসেপ বোরেল দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় প্রচেষ্টা চালাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন, কেননা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটিকে রক্ষায় সবচেয়ে বেশি আগ্রহী। একইসঙ্গে তিনি এই সমঝোতা রক্ষায় সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। -পার্স টুডে
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) আট থানার অফিসার ইনচার্জসহ (ওসি) মোট ১৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। থানাগুলো হচ্ছে- মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, বনানী, বিমানবন্দর, নিউ মার্কেট, দারুসসালাম, চকবাজার এবং বাড্ডা থানা।
সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ বদলি করা হয়।
আদেশে ধানমন্ডি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল লতিফকে মোহাম্মদপুর থানায়, কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবিরকে ধানমন্ডি থানায়, বিমানবন্দর থানার ওসি মোহাম্মদ নুরে আযম মিয়াকে বনানী থানায়, বনানী থানার ওসি বি এম ফরমান আলীকে বিমানবন্দর থানায়, গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) স ম কাইয়ুমকে নিউমার্কেট থানার ওসি, কদমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তোফায়েল আহমেদকে দারুসসালাম থানার ওসি, কোতোয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মওদুত হাওলাদারকে চকবাজার থানার ওসি, তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. পারভেজ ইসলামকে বাড্ডা থানায় বদলি করা হয়।
এছাড়াও একই আদেশে, নিউমার্কেট থানার ওসি মোহাম্মদ আতিকুর রহমানকে গোয়েন্দা-পশ্চিম বিভাগ, মোহাম্মদপুর থানার ওসি গনেশ গোপাল বিশ্বাসকে প্রসিকিউশন বিভাগ, দারুসসালাম থানার মো. আসলাম উদ্দিনকে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের অপারেশন বিভাগ, চকবাজার থানার মো. সোহরাব হোসেনকে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ, বাড্ডা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলামকে অর্গানাইজড অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ, মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মোহাম্মদ শরীফুল ইসলামকে লজিস্টিকস বিভাগ, দক্ষিণখান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল গনি সাবুকে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের অপারেশন বিভাগ, লাইনওআর-এ কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক শাহ আলমকে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন), লাইনওআরে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক সামছুল আলমকে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের অপরাধ বিভাগ ও লাইনওআরে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক এইচ এম কামাল হোসেনকে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সদরদফতর ও প্রশাসন বিভাগে বদলি করা হয়েছে।
আদেশটি অবিলম্বে কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর বাসসের।