করোনাকালে আয়ারল্যান্ডের সফলতা – ওমর এফ নিউটন

0
638
Omar F Newton - Irish Bangla times
Omar F Newton - Irish Bangla times
Omar F Newton - Irish Bangla times

দীর্ঘ এক মাস পর গতকাল আয়ারল্যান্ড প্রথম ১০০ এর নিচে করোনাভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা রেকর্ড করতে সক্ষম হয়েছে। আয়ারল্যান্ডে প্রথম COVID-19 রোগী ধরা পড়ে ২৯ শে ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এর আগে থেকেই আয়ারল্যান্ড পূর্ব প্রস্তুতিমূলক ন্যাশনাল হেলথ ইমারজেন্সি টিম ঘটন করে রাখে এবং করোনা মোকাবেলার রোড ম্যাপ তৈরি করে রাখে, যখন বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করতেছিল। করোনা সংক্রমিতের পরিমাণ ৩০০ এর কোটায় পড়ামাত্রই প্রথম দুই সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে এবং সংখ্যা যখন ৫০০ এর কাছাকাছি তখন লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়া হয়। করোনা সংক্রমণের সংখ্যা পিক এ উঠে ১৫ ই এপ্রিল, এ দিনে সর্বোচ্ছ রেকর্ড হয় ১০৬৮ জন। এর পর থেকে ক্রমান্বয়ে সংখ্যা কমতে থাকে, তারপরেও মে মাস এর ৫ তারিখ থেকে আরও দুই সপ্তাহের জন্য লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়, যে মুহূর্তে ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা ৩০০ এর নিচে নেমে আসে।

আয়ারল্যান্ডের এই সুনিদৃস্ট পরিকল্পনা এবং সময়োপযোগী দক্ষ সিদ্ধান্তের কারণে এখন পর্যন্ত সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যেখানে ইউরূপের অনেক দেশই চলে গিয়েছিল নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। দীর্ঘ পরিকল্পনার ফলাফল হিসেবে আজ তারা ১০০ এর নিচে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করতে পেরেছে।

আগামীকাল ১৮ ই মে থেকে ৫ ধাপে ক্রমান্বয়ে লকডাউন শিথিল করা হবে, কিন্তু তা নির্ভর করে পরবর্তী পরবর্তী অবস্থার উপর। প্রয়োজনবোধে লকডাউন আবার কঠোর করা হতে পারে, সরকার থেকে এমনই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। কিন্তু সর্বাবস্থায়ই সামাজিক দূরত্ব ও নিরাপত্তা বজায় রেখে এবং সরকার ও স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনাবলী মেনে চলার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বলা বাহুল্য, যেহেতু এই মুহূর্তে COVID-19 সম্পূর্ণ নিধন সম্ভব নয়, সেহেতু নিয়ন্ত্রণই একমাত্র পন্থা। দেশের অর্থনৈতিক ও মানুষের জীবনযাত্রার কথা চিন্তা করে লকডাউন শিথিল না করলেই নয়।

করনাকালে বহু মানুষ তাদের চাকুরী হারিয়েছে এবং বহু ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বন্ধ। কিন্তু সরকার সবাইকেই পর্যাপ্ত সহায়তা করার ফলে মানুষের জীবনযাত্রা মোটামুটি স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হয়েছে। যার কারণে মানুষের মানসিক ও সামাজিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল মোটামুটি রয়েছে। তা না হলে হয়ত পরিস্থিতি অন্যরকমও হতে পারত।

যদিও দীর্ঘ লকডাউন একটা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর বিরূপ প্রভাব পেলতে পারে। কিন্তু সবার আগে যে মানুষের জীবন তা উপলব্দির কারণেই হয়ত আজ আয়ারল্যান্ডের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। COVID-19 এর এ সমস্যা বিশ্বব্যাপী, এর বিস্তারে কারো হাত নেই। কিন্তু বিস্তার এর পরিমাণ যত কম রাখা যায় সফলতা ততখানিই। সে হিসেবে আয়ারল্যান্ডকে মোটামুটি সফলই বলা চলে।

সরকার এর সুপরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করতে জনগণ এর অবদান, সব মিলিয়ে আজ আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। আশা করি সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা একদিন এই যুদ্ধে জয়ী হতে সহায়তা করবে।

Facebook Comments Box