আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে কঠোরতা আসছে, গোঁড়ালিতে ব্রেসলেট পরতে হবে, পরীক্ষা হবে ডিএনএ

0
855

করোনা ভাইরাস পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল যখন চূড়ান্তভাবে শুরু হবে তখন বিমান জেটসেটিং অসিজ’কে কঠোর নিয়ম বাধ্যতামূলকভাবে পালন করতে হবে। এ সতর্কতা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কোয়ান্টাস বিমান সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালান জয়সে। তিনি বলেছেন, ফ্লাইট শুরু হলে পায়ের গোঁড়ালিতে ব্রেসলেট পরা থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে। বিমানের স্যুয়ারেজ পরীক্ষা করা হবে। বাধ্যতামূলক টিকা নিতে হবে। ফলে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল কখনোই আগের মতো হবে না।  এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল।
আগামী বছরের শুরুর দিকে করোনা ভাইরাস টিকা সবার জন্য চালু হতে পারে। ওই সময়ে বিদেশগামী কোনো যাত্রীকে অবশ্যই বিমানে উঠতে হলে তাকে কিছু বাধ্যতামূলক শর্তের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

এর মধ্যে রয়েছে, অবশ্যই একজন যাত্রীকে করোনার টিকা নিতে হবে। এ ছাড়া আরো সব নিয়মকানুন কড়াকড়ি করছে তার বিমান সংস্থা কোয়ান্টাস। ‘এ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স’কে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সফরকারীদের জন্য বিমানে উঠার আগে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। তার ভাষায় যেসব পর্যটক অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন অথবা যেসব মানুষ অস্ট্রেলিয়া থেকে বাইরের দেশে যাবেন, তাদের জন্য এই টিকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই টিকা সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক সব ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা উচিত হবে। এ নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য বিমান সংস্থার সহকর্মীদের সঙ্গে আমি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ফলে আমরা যে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছি তা হবে সারাবিশ্বের জন্য একটি অভিন্ন বিষয়। এক্ষেত্রে আপনি টিকা নিয়েছেন এমন একটি পাসপোর্ট, এর ইলেকট্রনিক সংস্কারণ কিভাবে পাওয়া যায় সে বিষয়টি দেখছি আমরা। এটা নিশ্চিত করতে প্রচুর লজিস্টিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন হবে। আমরা যেমনটা বলছি, তা নিয়ে কিন্তু এরই মধ্যে বিমান সংস্থাগুলো এবং সরকারগুলো কাজ শুরু করেছে।
এরই মধ্যে ১২ বছরের ওপরে বয়সী কোনো ভ্রমণকারী সিঙ্গাপুরে গেলে তাকে অবশ্যই একটি নজরদারিকারী ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরতে হয়, যদি সে বা তারা কোনো কোয়ারেন্টিন ফ্যাসিলিটিতে অবস্থান না করেন। হংকংয়ের ক্ষেত্রেও একই রকম নীতি রয়েছে। ওদিকে সুনির্দিষ্ট ভাড়া করা বিমানে করে আন্তর্জাতিক কোনো কর্মী যদি পাপুয়া নিউ গিনিতে যান তাহলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে পায়ের গোঁড়ালির কাছে একটি ব্রেসলেট পরতে হয়। সেখানে তারা দু’সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকেন। এ সময় তাদেরকে এই ব্রেসলেট পরতেই হয়।

অ্যালান জয়সে ইঙ্গিত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য একই রকম নীতি গ্রহণ করতে পারে অস্ট্রেলিয়া। এটা করা হতে পারে নিরাপত্তার জন্য। এর আওতায় থাকবে ডিএনএ পরীক্ষা, যেটা পিসিআর পরীক্ষা নামে পরিচিত। ইউরোপ থেকে আসা প্রত্যাবর্তন বিষয়ক ফ্লাইট, যেগুলো ডারউইনে আসছে, সেখানে আমরা জনগণের পরীক্ষা করছি। পিসিআর পরীক্ষা করছি। ডারউইনে এই পরীক্ষা করার মাধ্যমে আমরা আশাবাদী কাউকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা ঠিক হবে কিনা। এ ছাড়া বিমানে পরিত্যক্ত পানিও আমরা পরীক্ষা করছি। এটা করে আমরা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি যে, বিমানের কোনো যাত্রীর করোনা সংক্রমণ আছে কিনা। এতে আমাদেরকে বেশ কিছু আশাপ্রদ ফল দিয়েছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিমান ফ্লাইট সীমিত রয়েছে। তবে কোয়ান্টাস বর্তমানে আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাড়ানোর কথা চিন্তা করছে। গত ২০ শে মার্চ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর অর্থ হলো, শুধু অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক এবং সেখানে স্থায়ী আবাসিক অনুমোদন পেয়েছেন যারা, শুধু তারাই ফিরতে পারছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তবে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার পরই এসব মানুষকে দু’সপ্তাহ হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে বাধ্যতামূলকভাবে। এ সময়ে হোটেলের খরচ বহন করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই। তারা যাতে বিদেশ থেকে করোনা ভাইরাস বহন করে নিয়ে তা অন্যদের মাঝে সংক্রমিত করতে না পারেন সে জন্য এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে সোমবার ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে সীমান্ত খুলে দিয়েছে এনএসডব্লিউ। এদিন সিডনি এবং মেলবোর্ন বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রী ও তাদের প্রিয়জনদের আবেগঘন পুনর্মিলন দেখা গেছে।

তথ‌্যসুত্র: মানবজমিন (বিশ্বজমিন) ২৮ নভেম্বর ২০২০, শনিবার।

Facebook Comments Box