প্রথম আলো ডেস্ক
যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নিজের অবস্থান আরও পোক্ত করলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক।কনজারভেটিভ পার্লামেন্ট সদস্যদের (এমপি) দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটাভুটিতে বড় ব্যবধান ধরে রেখেছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতব্রিটিশ। অবশ্য বরিস জনসনের উত্তরসূরি নির্বাচনের এই লড়াই ক্রমশ তিক্ত হচ্ছে। খবর আল–জাজিরা ও এএফপির।
গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়েন সুনাক। প্রথম কর্মকর্তা হিসেবে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর শুরু হয় পদত্যাগের হিড়িক, যা বরিসকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে বাধ্য করে। বরিসের পতনে তাঁর ভূমিকার জন্য দায়ী করা হলেও কনজারভেটিভআইনপ্রণেতাদের মধ্যে সুনাক এগিয়ে আছেন।
সুনাকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন জুনিয়র বাণিজ্যমন্ত্রী পেনি মরডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। দ্বিতীয় রাউন্ডে সর্বোচ্চ১০১ ভোট পেয়েছেন সুনাক। ৮৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন রাজকীয় নৌবাহিনীর রিজার্ভিস্ট মরডেন্ট। জনসনেরঅনুগতদের পছন্দের প্রার্থী ট্রাস ৬৪ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন বলে এএফপি জানিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে ৩০ ভোটের সীমা পার হতে ব্যর্থ হওয়ায় বাদ পড়েন ব্রেক্সিট সমর্থকঅ্যাটর্নি জেনারেল সুয়েলা ব্রেইভারম্যান। প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার লড়াইয়ে এখন টিকে আছেন পাঁচজন। বাকি দুজন হলেন—সাবেক ইকুয়ালিটিজমন্ত্রী কেমি ব্যাডেনখ ও পার্লামেন্টের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারপারসন টম টুগেধাত।
আল–জাজিরা বলছে, যিনিই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান, তাঁর দায়িত্ব হবে মুদ্রাস্ফীতির উল্লম্ফন ও কম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সামালদেওয়া। এ ছাড়া বরিসের কেলেঙ্কারি জর্জর শাসনকালের পর রাজনীতির প্রতি জন–আস্থা কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও তাঁকেকাজ করতে হবে।
ভোটে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকার পর সমর্থকদের স্বাগত জানিয়েছেন সুনাক। টুইটারে তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতির সেবায়আমার সামর্থ্যের সবকিছু দিতে আমি প্রস্তুত। আমরা সবাই মিলে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারি, আমাদের অর্থনীতি পুনর্গঠনকরতে পারি এবং দেশকে ফের ঐক্যবদ্ধ করতে পারি।’
প্রতিদ্বন্দ্বী লিজ ট্রাসও রাজনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘একজন কনজারভেটিভ হিসেবেআমি প্রচারণা চালিয়ে যাব এবং কনজারভেটিভ হিসেবেই সরকার পরিচালনা করব। আমি নেতৃত্ব দিতে পারি, কঠিন সিদ্ধান্তনিতে পারি এবং সেটি বাস্তবায়ন করতে পারি। শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।’
গত সপ্তাহে যখন সমর্থন হারিয়ে বরিস পদত্যাগের ঘোষণা দেন, তখন পদত্যাগ করেননি কেন—এমন প্রশ্নে ট্রাস বলেন, ‘আমিএকজন অনুগত ব্যক্তি। আমি বরিস জনসনের প্রতি অনুগত।’
আগামী সোমবার লড়াই টিকে থাকা পাঁচজনের মধ্যে তৃতীয় রাউন্ডের ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। যদি সব প্রার্থীই ৩০ ভোটের বাধাউতরে যান, তাহলে সবচেয়ে কম ভোট পাওয়া প্রার্থী বাদ পড়বেন। এভাবে ২১ জুলাই নাগাদ প্রার্থী দুজনে নেমে আসা পর্যন্তসবচেয়ে কম ভোট পাওয়া প্রার্থী একে একে বাদ পড়বেন।
সর্বশেষ দুই প্রার্থী থেকে নতুন নেতা বেছে নেবেন কনজারভেটিভ পার্টির দুই লাখ সদস্য। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর বিজয়ী প্রার্থীরনাম ঘোষণা করা হবে। ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হিসেবে তিনিই হবেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
সহকর্মীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সুনাক। তবে পার্টির ৯০০ সদস্যের ওপর ইউগভ পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, মরডেন্টজনপ্রিয় প্রার্থী। রান–অফে অন্য প্রার্থীদের তিনি হারিয়েছেন। সুনাক থেকেও তিনি বড় ব্যবধানে এগিয়ে।