আয়ারল্যান্ডে বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইন – এস. এ. রব

0
982

বিদেশ থেকে আসা মানুষদের জন্য হোটেল কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করেছে আয়ারল্যান্ড। করোনা মহামারী থেকে নাগরিকদের নিরপত্তা দিতে গত শুক্রবার থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ৩৩টি দেশ থেকে আসা যে কাউকে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করার পর এই নিয়ম পালন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এই দেশগুলোর তালিকা যে কোন সময় সংযোজন বিয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে আইরিশ কর্তৃপক্ষ।

আয়ারল্যান্ড সরকার আশা করছে, এই কঠোর বিধি আরোপের ফলে করোনাভাইরাসের নতুন ধরণগুলোর প্রবেশ ঠেকানো যাবে। দেশটির বিরোধী দলগুলোও বলছে, এই নিয়মটি আরো আগেই চালু করার দরকার ছিলো।

নতুন এই নিয়ম অনুযায়ী উচ্চ ঝুকির তালিকায় থাকা ৩৩টি দেশ থেকে আসা লোকদের আয়ারল্যান্ডে প্রবেশের পর নিজ খরচে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে হোটেলে। সরকারি তত্ত্বাবধানে তাদের থাকতে হবে টিফকো হোটেল গ্রুপের যে কোন হোটেলে। প্রাথমিকভাবে ডাবলিন এয়ারপোর্টে গ্রুপটির মালিকানাধীন ক্রাউন প্লাজা হোটেলে চলবে যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন। প্রাথমিকভাবে প্রত্যেককে অন্তত ১৪ রাত হোটেলে থাকার বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছে। তবে হোটেলে ওঠার ১০ দিন পর তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ এলে সময় কমানো হতে পারে।

মালবাহী ট্রাকের ড্রাইভার কিংবা যাত্রীবাহী বিমানের পাইলটরা এই নিয়মের বাইরে থাকবেন। তবে সড়ক বা নৌ পথে কোন সাধারণ যাত্রী আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করলে তাদেরও হোটেল কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।

আইরিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই নিয়মের আওতায় যাত্রীদের হেটেলে পৌছে দেয়া এবং তাদের নিরাপত্তাসহ দেখভালের দায়িত্ব থাকবে টিফকো হোটেল গ্রুপের কর্মীরা। তবে দূর থেকে সব কিছু তত্ত্বাবধান করবে দেশটির সেনাবাহিনী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিফেন ডোনেলি বলেছেন, তাদের কোয়ারেন্টাইন আরামদায়ক করতে হোটেল কর্মীর সর্বোচ্চ সেবা দেবে।

বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইনের জন্য আইরিশ সরকারের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে। উল্লেখিত ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে যারা আসবে, আগেই তাদের ১২ রাতের জন্য নির্দিষ্ট হোটেলে রুম বুকিং করে আসতে হবে। এক্ষেত্রে খরচ পড়বে জনপ্রতি ১৮৭৫ ইউরো। ১০ দিন পর কোভিড-১৯ পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ পাওয়া গেলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। আর ফলাফল করোনা পজেটিভ পাওয়া গেলে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে হোটেলেই কিংবা হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে এজন্য কোন বাড়তি অর্থ নেয়া হবে না। চিকিৎসা বা বাড়তি সময় হোটেল অবস্থান করতে হবে সেসব খরচ আয়ারল্যান্ড সরকার বহন করবে।

কোয়ারেন্টাইন গেস্টরা শর্ত স্বাপেক্ষে এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামতো প্রয়োজনে হোটেলের বাইরে যেতে পারবে। তবে ফ্রি ওয়াইফাই, মুভি দেখা, রুম সার্ভিসসহ হেটেলেই তাদের প্রয়োজনী সব ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রতিটি হোটেলে থাকবে স্বার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও নার্স। তারা নিয়মিত কোয়ারেন্টাইন গেস্টদের স্বাস্থের দিকে নজর রাখবেন।

তবে অনুমতি ছাড়া কেউ কোয়ারেন্টাইন ভঙ্গ করলে ২ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা অথবা এক মাসের কারাদ- কিংবা উভয় দ- হতে পারে।

আইরিশ সরকার জানিয়েছে, এই বাধ্যবাধকতার ফলে অনেকে আয়ারল্যান্ড ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করতে পারেন। তবে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যেতে ইচ্ছুক অনেকে কোয়ারেন্টাইনের জন্য হোটেল বুকিং দিয়েছেন। অবশ্য তাদের সংখ্যা কত সেটি জানানো হয়নি।

যে ৩৩টি দেশকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছে আয়ারল্যান্ড তার মধ্যে বেশির ভাগই লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশের। এছাড়া রয়েছে অস্ট্রিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে এই তালিকায় দেশের সংখ্যা বাড়তে পারে যে কোন সময়। এর বাইরে অন্য কোন দেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে গেলে অবশ্যই করোনা নেগেটিভ টেস্ট রেজাল্টের কাগজপত্র দেখাতে হবে ।

দেশগু‌লি নিম্মরুপ ;
Brazil,South Africa ,Angola, Austria, Botswana, Burundi, Cape Verde, Democratic Republic of the Congo, Lesotho, Malawi, Eswatini, Mauritius, Mozambique, Namibia, Rwanda, Seychelles, Tanzania, United Arab Emirates, Zambia, and Zimbabwe,Argentina, Bolivia, Chile, Colombia, Ecuador, French Guiana, Guyana, Panama, Paraguay, Peru, Suriname, Uruguay and Venezuela

Facebook Comments Box