প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করতে দেশে দেশে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে । এমন পরিস্হিতিতে কুকুর দ্বারা অভিনয় উপায়ে করোনা রোগী চিহিৃত করতে গবেষণার উদ্যেগ গ্রহণ করেছে ব্রিটেন সরকার ।
লন্ডনের হাসপাতালগুলি থেকে কভিড -১৯ রোগীর গন্ধের নমুনা নিয়ে সংক্রামিত নয় এমন লোকদের থেকে তাদের গন্ধ আলাদা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ল্যাব্রাডার ও স্প্যানীয়লন্স প্রজাতির ছয়টি কুকুরকে । কুকুরের ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগিয়ে যদি প্রাথমিক পর্যায়েই রোগটিকে শনাক্ত করা যায়, সেক্ষেত্রে করেনা রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন বৃটিশ গবেষকরা ।
কুকুর মানুষের সব চেয়ে বিস্বস্ত বন্ধু । প্রাণী জগতে কুকুরের মত প্রভূভক্ত প্রাণী সম্ভবত পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর নেই। কুকুরের রফাদারির কাাহিনী বিশ্ব জুড়ে প্রশংসিত । গন্ধ শুঁকে অনেক অসাধ্য সাধনের নজির রখেছে কুকুর । কুকুরের প্রখর ঘ্রাণশক্তি কাজে লাাগয়ে দূধর্ষ অপরাধী ধরার গল্প নাটক বা সিনেমতে প্রায় দেখা যায়। মোঠামোঠি কুকুরের ঘ্রাণশক্তি কারও অজানা নয় । সেই শক্তির উপর আস্হা রেখে কুকুর দিয়ে করোনা টেস্ট গবেষণা শুরুর জন্য ৫ লাখ তহবিল বরাদ্দ করেছে বৃটিশ সরকার ।গবেষণাটি যৌথভাবে লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন (এলএসএইচটিএম), ডারহাম ইউনিভার্সিটি এবং দাতব্য মেডিকেল ডিটেকশন কুকুর দ্বারা পরিচালিত হবে বলে বৃটিশ গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে । গবেষকরা মনে করছেন এ জন্য তাদের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে । মেডিকেল ডিটেকশন কুকুরের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ডঃ ক্লেয়ার বলেছেন ,আমরা অত্যন্ত গর্বিত যে কুকুরের নাক আবারও অনেকের জীবন বাঁচাতে পারে। ” যদি পরীক্ষাগুলি সফল হয় তবে প্রতিটি কুকুর ঘন্টায় ২৫০ জনকে পরীক্ষা করতে পারবে এবং এয়ারপোর্টের মতো জায়গায় এই ধরণের পরীক্ষা ব্যাবহার সম্ভব “।
গবেষণার কাজে এটি প্রথম নয় , কুকুর এর আগেও ম্যালেরিয়া ,ক্যান্সার ,পারকিনসন্স ডিজিজে আক্রান্ত রোগীদের সনাক্ত করার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে । মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের রোগ শনাক্তের কাজে প্রতিনিয়ত সফল হচ্ছে কুকুর । ১৯৮০ সালে কুকুরের ঘ্রাণ শক্তি ব্যাবহার করে ক্যান্সার শনাক্তে বেশ সফল হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মানুষের রক্ত,লালা ,মূত্র কিংবা নিংস্বাসের সঙ্গে নানা ধরণের গন্ধ থাকে যা ঘ্রাণের মাধ্যমে আলাদা বা শনাক্ত করা সম্ভব । করোনায় আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক বাছাঁইপর্বে আলাদা করনের জন্য এই প্রক্রিয়া অনুসরন করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন গবেষকরা । একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের সাধারণত ৬০ লাখ ধরণের আলাদা ঘ্রাণ পাবার ক্ষমতা রয়েছে পক্ষান্তরে কুকুর শনাক্ত করতে পারে ৩ কোটি ধরণের ঘ্রাণ । আমেরিকান সোসাইটি ফর বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি’র অধ্যাপক হিথার জ্যানকুয়েরা মতে, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি মানুষের তুলনায় ১০ হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী।
তাই কুকুরের স্বভাবজাত বৈশিষ্টকে কাজে লাগিয়ে যদি করোনা রোগী শনাক্ত করনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায় তাহলে সেটা হবে চিাকৎসা বিজ্ঞানের নতুন আরেকটা ইতিহাস । বৃটিশ গবেষকদের কুকুর নিয়ে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা সফল হউক । মানবতার কল্যাণ নিবেদিত চিকিৎসা বিজ্ঞানের মহা যাত্রা এই ভাবে অব্যাহত থাকুক । সবাই নিরাপদ থাকুন ।
সৈয়দ আতিকুর রব
অনলাইন একটিভিস্ট
আয়ারল্যান্ড