শুধু জর্দা খাইয়ে পান প্রেমীদের নয়, কর দিয়েও দেশপ্রেমীদের মন জয় করে চলেছেন দেশসেরা করদাতা জনাব কাউছ মিয়া।
জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া আবারও দেশসেরা করদাতা হয়েছেন। তিনি সুপরিচিত হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী। ২০১৯-২০ করবর্ষে ব্যবসায়ী শ্রেণিতে ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে এই ব্যবসায়ী সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি ব্যবসায়ী শ্রেণিতে সর্বোচ্চ করদাতার একজন।
এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা অন্য শ্রেণির সর্বোচ্চ করদাতারা প্রতিবছর কর হিসেবে যত টাকা দেন, তারা কাউছ মিয়ার ধারেকাছেও নেই। বড় শিল্পপতি বলে যাঁরা দাপিয়ে বেড়ান, সরকারি নানা আনুকূল্য নেন, নানা ধরনের পদ নিয়ে বসে থাকেন, সভা-সমিতি ও সেমিনারে বড় বড় বক্তৃতা দেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই কর দেয়ার সময় খুঁজে পাওয়া যায় না, কিন্তু কাউছ মিয়া তার ব্যাতিক্রম।
কাউছ মিয়া ৬১ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন তিনি। ২০১৯ সালে এনবিআরের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আগে টাকাপয়সা এখানে-সেখানে রাখতাম। এতে নানা ঝামেলা ও ঝুঁকি থাকত। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দিয়ে “ফ্রি” হয়ে গেলাম। এরপর সব টাকাপয়সা ব্যাংকে রাখতে শুরু করলাম। হিসাবনিকাশ পরিষ্কার করে রাখলাম। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১ নম্বর করদাতা হয়েছিলেন কাউছ মিয়া।
১৯৪৫ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামায় আর পড়াশোনা এগোয়নি। বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১৯৫০ সালে চাঁদপুরের পুরান বাজারে মুদিদোকান দেন।
এরপর ধীরে ধীরে ১৮টি ব্র্যান্ডের সিগারেট, বিস্কুট ও সাবানের এজেন্ট ছিলেন। ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন এবং তামাকের ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে ৪০-৪৫ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি।
তবুও অনেক বাঘা বাঘা ব্যাবসায়িদের তুলনায় কাউছ মিয়ার ব্যাবসার মুনাফা উল্লেখযোগ্য না হলেও, হিসেবমত কর সময়মত পরিশোধ করার ক্ষেত্রে কাউছ মিয়া অনেক এগিয়ে।