গত ১১ই ডিসেম্বর ২০২২ এ অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক ক্রিসমাস ও শীতকালীন কালচারাল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয় লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের উদ্যোগে। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় লিমেরিকের নামকরা জাদুঘর হান্ট মিউজিয়ামে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকেন মেয়র ফ্রান্সিস ফলেই।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের দেশীয় কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য তুলে ধরে। তন্মদ্ধে বাংলাদেশও তাদের শীতকালীন কালচার তুলে ধরার সুযোগ অর্জন করে। এতে করে বাংলাদেশ সুযোগ পেয়েছে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ভিনদেশীয়দের সামনে তুলে ধরতে।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশ বিভিন্নভাবে তাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছে। অনুষ্ঠানে নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে ছিল প্রেজেন্টেশন, ডিসপ্লে। অনেক দেশ প্রদর্শন করে যার যার ঐতিহ্যগত নৃত্য, গান, বাঁশিসহ অন্যান্য প্রদর্শনী। সমগ্রদিনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী প্রদর্শন করা হয়। তবে ডিসপ্লে সারাদিনব্যাপী ছিল, যেখানে বাংলাদেশী ডিসপ্লেও ছিল। হরেক রকম সুস্বাদু ও কারুকার্যখচিত পিঠা, চিত্রাঙ্কন ও দেশীয় কারুশিল্প দিয়ে ছিল বাংলাদেশী ডিসপ্লে। বিদেশিরা পিঠা খেয়ে ও বাংলাদেশী ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পেরে খুবই অভিভূত হয়েছে।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত পোশাক লুঙ্গি, ফতুয়া ও গামছা পরিধান করে মেয়র, বিদেশি দর্শনার্থী ও বাংলাদেশী অতিথিদের সামনে প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন ওমর এফ নিউটন। প্রেজেন্টেশনে বাংলাদেশী শীতকালীন ঐতিহ্য ও জীবনপ্রণালি তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
বাংলাদেশী নারীরা ঐতিহ্যবাহি পোশাক পরিধান করে আসেন এবং দেশীয় ঐতিহ্যগত ডিসপ্লে সবাইকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। শিশু কিশোরেরা বাংলাদেশি প্রকৃতি, পরিবেশ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর চিত্রাঙ্কন করে আনে এবং তা সবার সামনে প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশী কিশোরী অরণ্য ও প্রাচী অনুষ্ঠানে আগত দর্শনার্থীদেরকে মেহেদি লাগিয়ে দেয়, এতে দর্শনার্থীরা অনেক অভিভূত ও আনন্দিত প্রকাশ করেন।
আলজেরিয়া, পোল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়াসহ অনেক দেশ তাদের প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন, এতে করে সবাই সেসব দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারনা পান। এছাড়াও ম্যাক্সিকো, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, ইন্ডিয়াসহ অনেকে তাদের ঐতিহ্যগত নৃত্য, গান, বাঁশি ও অভিনয় প্রদর্শন করে।
মেয়র ফ্রান্সিস ফলেই সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান গুড়ে দেখেন। বাংলাদেশী প্যাভিলিয়নে এসে তিনি পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন ও বাংলাদেশী ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় হন। সবার সাথে কুশল বিনিময় ও স্বাচ্ছন্দ্যে ছবি তোলেন।
মেয়র থেকে শুরু করে দেশি ও বিদেশি দর্শনার্থীরা বাংলাদেশী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় হতে পেরে আনন্দিত। তারা বাংলাদেশীদের আয়োজনের প্রশংশা করেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ আশা করেন।
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশীদের অন্তর্ভুক্তির জন্য কাউন্সিল থেকে আমন্ত্রণ পান লিমেরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র ও বর্তমান কাউন্সিলর জনাব আজাদ তালুকদার। জনাব আজাদ তালুকদার বাংলাদেশে অবস্থানের কারণে লিমেরিক বাংলাদেশী কমিউনিটিবর্গ দ্বারা অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। অনুষ্ঠানটি সমগ্র বাংলাদেশীদের জন্য উন্মক্ত ছিল যা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে।
জনাব আজাদ তালুকদার অনুষ্ঠানে বাংলাদেশীদের অন্তর্ভুক্তিকে সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি ভবিষ্যতে এমন আরো কালচারাল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশীদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশা করেন এবং যে কারো উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানাবেন ও যথাসাধ্য সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে এমন পদক্ষেপের জুড়ি নেই। আশা করি ভবিষ্যতে এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশীগণ বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারবেন সর্বোচ্চ উচ্চতায়।