রাত্রিকালে যারা ট্যাক্সি চালান এবং খাবার ডেলিভারি প্রদান করেন উনারা বিভিন্ন সময়ে নানা রকম বিপদের সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যার কারণে এই পেশাগুলোয় জড়িত অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থাকেন। এই নিশি পেশাগুলোতে প্রতিনিয়ত ওৎ পেতে থাকে বিপদ।
সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে উভয় ট্যাক্সি এবং খাবার ডেলিভারির ব্যাস্ততা বেড়ে যায়। যার কারণে এই পেশায় জড়িতদের বেশিরভাগই সন্ধ্যার পরেই কর্মে নিয়োজিত হন। বিশেষ করে উইকেন্ড, সরকারি ছুটিগুলোতে ও বিভন্ন অনুষ্ঠানে এই ব্যাস্ততা আরো বৃদ্ধি পায়।
রাত্রিকালীন সময়ে খরিদ্দার বা কাস্টমাররা মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। যার ফলশ্রুতিতে তারা ট্যাক্সি ড্রাইভারদের সাথে বিরূপ আচরণ করেন। ট্যাক্সি ড্রাইভারদের মারধর ও টাকা না দিয়ে চলে যাবারও নজির রয়েছে।
অনেকে আবার মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে থাকেন, যা অন্য ড্রাইভারদের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মদ্যপ গাড়ি চালক দ্বারা অন্য ট্যাক্সি আঘাতপ্রাপ্ত হবারও নজির রয়েছে।
এছাড়াও অনেক শহরের কিছু কিছু জায়গা রয়েছে যেগুলোকে বিপদজনক জায়গা হিসেবে ধরা হয়। ঐসব জায়গাগুলোতে রাতে খাবার ডেলিভারি দেয়া কিংবা ট্যাক্সিতে কাস্টমার বহন করা খুবই রিস্কি বলে মনে করা হয়। ঐসব এলাকায় গাড়ি ভাংচুর এবং মারধরেরও ঘটনা ঘটে থাকে। অনেকসময় ড্রাইভারদের নিকট থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেয়া হয়।
এছাড়াও রাত্রিকালে একধরণের প্রতিযোগিতায় তৈরী হয়। যেহেতু রাতে এই ব্যবসাগুলা জমজমাট, সেহেতু এই পেশায় জড়িত সবাই চেষ্টা করেন রাতেই ডিউটি করার জন্য। যার কারণে রাস্তায় গাড়ির পরিমান বৃদ্ধি পায় এবং অনেক ড্রাইভার বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে থাকেন, যা অন্য ড্রাইভারদের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং ঘটে দুর্ঘটনার মত ঘটনাও।
রাতে অন্ধকারে গাড়ি চালানোও কষ্ট সাধ্য। রাস্তার ভিজিভিলিটি কম থাকায় অনেক ড্রাইভারের গাড়ি চালাতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়, বিশেষ করে শহরের বাহিরের অপ্রশস্থ রাস্তাগুলোতে। শীতের সময়ে ব্ল্যাক আইস পড়ে রাস্তা পিচ্ছিলাকার ধারণ করে, যার ফলে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখাও কষ্টসাধ্য। এসব কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটার ঘঠনা ঘটেছে।
পরিশেষে এটাই বলা চলে যে, জীবন জীবিকার জন্য সবাইকেই যার যার জীবিকানির্ভর কর্ম করতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। তারপরেও সবাই যেন আমরা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে পথ চলি। যারা এই পেশায় নতুন, প্রয়োজনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করি। সবসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা জরুরি যোগাযোগের নাম্বার সংগ্রহে রাখি। ডিউটির সময় অন্য সহকারী কলিগদের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে চলি। এটা ঠিক যে, বিপদ মাথায় নিয়েই কাজ করতে হবে, কিন্তু বাড়তি সতর্কতা বিপদ থেকে অনেকটাই রক্ষা করতে সহায়তা করবে।