দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ক্রীড়া আসর ফুটবল বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে অনেক টপ ফেভোরিট দলই রয়েছে যারা বিশ্বকাপ জয় করার যোগ্য। কিন্তু মাত্র একটি দলই পরতে সক্ষম হবে সেই আকাঙ্ক্ষিত মুকুটটি। ঠিক তেমনি গত আবাই নির্বাচনে দুইজন সভাপতি পদপ্রার্থীর দুইজনেই ছিলেন যার যার দিক থেকে যোগ্য, কিন্তু ফুটবল চ্যাম্পিয়নের মত জয়ের বরমাল্য একজনকেই বরণ করে নিতে হবে। সে দিক থেকে সৌভাগ্যবান ছিলেন জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার। কিন্তু খুব অল্প ভোটের ব্যাবধান প্রমাণ করে যে জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের যোগ্যতার বহরও কম ছিল না। ভোটে হেরেছেন ঠিকই কিনতি একজন অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে মানুষের মনে ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন।
নেতৃত্ব একটি বড় গুন, এ গুন সবার থাকে না। জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান এমনই একজন গুনি ব্যাক্তি যার মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলি কানায় কানায় বিদ্যমান। জনাব মোস্তাফিজ হয়ত নির্বাচিত কোন নেতা কিংবা কোন সংগঠনের অধীনস্থ নেতা ছিলেন না, কিন্তু নেতৃত্বের আলোকে আলোকিত করেছেন সমাজ ও সমাজের মানুষদের।
নেতৃত্ব যার রক্তে মিশে আছে, যার প্রতিটি ধমনি, শিরা, উপশিরায় প্রবাহিত হচ্ছে নেতৃত্বের গুণাবলি। ছাত্রাবস্থা থেকেই যার হাতেখড়ি নেতা হিসেবে। একজন প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ হিসেবে যার সর্বদা ছিল বিপ্লবী কণ্ঠস্বর। ব্যাক্তি জীবনে জড়িত ছিলেন স্বনামধন্য রাজনৈতিক দলের সাথে, সান্নিধ্যে এসেছেন বহু প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও ব্যাক্তিদের সাথে।
কথায় আছে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে, জনাব মোস্তাফিজুরের ক্ষেত্রেও হয়েছে তাই। ১৯৮৯ সালে প্রথম পা রাখেন তিনি। তারপর থেকেই জড়িয়ে পড়েন আয়ারল্যান্ডের সামাজিক কর্মকাণ্ডে। বিভিন্ন ধরণের সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তিনি ছিলেন অগ্রগামী। সবার আনন্দে, বিপদে আপদে এগিয়ে আসতে কখনো কার্পন্য করেন নি। সেই ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৩০ ঊর্ধ্ব বছরের প্রবাস জীবনে সমাজ সেবায় যার কখনো ক্লান্তি আসে নি। আয়ারল্যান্ডের মাটিতে বইমেলা, বৈশাখী মেলার মত বড় বড় সব অনুষ্ঠানের একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে জনাব মোস্তাফিজুর রহমানের নাম সবার আগে উচ্চারিত হয়।
জনাব মোস্তাফিজ আইরিশ কমিউনিটির সাথেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন সমান তালে, জড়িত আছেন আইরিশ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে। বাংলাদেশীদের আইরিশ রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্তি এবং সক্রিয়তার ব্যাপারেও যথেষ্ট ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।
জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান যা করে আসছেন তা একান্তই নিজস্ব প্রেরণা ও ইচ্ছা থেকেই করেছেন। কখনো কারো জন্য কিংবা কোন পদবি পেয়ে কাজ করবেন তার জন্য বসে থাকেন নি। তারপরেও আয়ারল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশীদের সৌভাগ্য হয়েছিল একজন নির্বাচিত নেতা হিসেবে জনাব মোস্তাফিজুরকে সান্নিধ্যে পাবার। যদিও গত আবাই নির্বাচনে জনাব মোস্তাফিজ অল্প কিছু ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হয়েছিলেন কিন্তু তাঁর প্রতি যে মানুষের অগাধ ভালোবাসা ছিল তা প্রমাণিত হয়েছে।
গত আবাই নির্বাচনে জনাব মোস্তাফিজ যে বৃহৎ উদ্দেশ্য ও মহৎ লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলেন তা উনার প্রচারিত ঈশতিহার পর্যালোচনা করলেই তা সহজে অনুমেয়। হয়ত নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর সেই ইশতিহার খুব সহজেই বাস্তবায়ন করার এখতিয়ার রাখতেন, কিন্তু তারপরেও তাঁর ঐকান্তিক স্বদিচ্ছা হয়ত আবাই এর বাহিরে থেকে এককভাবে কিংবা আবাই এর বর্তমান সদস্যদের সাথে তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন বলে আয়ারল্যান্ডবাসীদের বিশ্বাস।
আয়ারল্যান্ডবাসীর প্রত্যাশা এই যে, জনাব মোস্তাফিজ উনার স্বাভাবিক সমাজসেবার দ্বারা অব্যাহত রাখবেন। আবাই যেহেতু আয়ারল্যান্ডের একমাত্র কেন্দ্রীয় সংগঠন, সে হিসেবে আবাই কে উনার অভিজ্ঞতার আলোকে সুচিন্তিত পরামর্শ ও সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করবেন এবং আবাই এর বর্তমান কমিটির কাছে সবার অনুরোধ থাকবে যেন জনাব মোস্তাফিজের মত একজন অভিজ্ঞ, বুদ্ধিদীপ্ত ও সাংগঠনিক ব্যক্তিকে যাথাযথ সন্মান প্রদর্শনপূর্বক সহায়তা কামনা করে আবাইকে সমৃদ্ধ করবে। এতে সামগ্রিকভাবে উপকৃত হবে সমগ্র আয়ারল্যান্ডবাসী।
জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান হয়ত নির্বাচিত নেতা নন, কিন্তু একজন অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন মানুষের মনের মণিকোঠায়।
ওমর এফ নিউটন
আইরিশ বাংলা টাইমস