সৈয়দ আতিকুর রব : ইউরোপ পৃথিবীর অন্যতম সৌন্দর্যের লীলাভূমি, এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশই স্বতন্ত্র সৌন্দর্যমণ্ডিত, খুব সংক্ষেপে বর্ণনা করতে গেলে ইউরোপের প্রতিটি দেশই অন্যতম হাজার বছরের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত নয়নাভিরাম স্থাপত্যশৈলী। বিশ্বের অন্যতম নামকরা ঐতিহাসিক জাদুঘর, সাগর, পাহাড় , নদী ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত সুসজ্জিত মনজুড়ানো প্রাকৃতিক পরিবেশ। তা ছাড়া ভোজন বৈচিত্র্য, পানশালা ও নানা ধরনের বিনোদনে ভরপুর সাজানো-গোছানো এক পর্যটনকেন্দ্র ইউরোপ। সে কারণেই পর্যটকদের কাছে অবকাশযাপনের জন্য খুবই আকর্ষণীয় স্থান ইউরোপ। করোনা সংকটের কারণে ইউরোপ পর্যটনশূন্য হয়ে গিয়েছিল । কোয়ারাইন্টেনে চলেগিয়েছিল পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশের মত মানুষ । থমকে থাকা সে ইউরোপের পর্যটন শিল্প নতুন ধম নিয়ে ফিরছে এই গ্রীষ্মে । তবে এবারের গ্রীষ্মের আনন্দ উপভোগে বিপাকে পড়েছেন আইরিশ এবং ইংলিশ পর্যটকরা ।
গ্রীস : কিছু দেশের বিদেশী পর্যকটকদের জন্য গ্রীস তাদের পর্যটন মওসুম উন্মুক্ত করলেও আইরিশ পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য এই মুহুর্তে দেশটিতে প্রবেশ করতে অনুমতি দিবে না গ্রীস সরকার । গ্রীস সরকারের এমন একটি সীদ্ধান্তে আইরিশ পর্যটকদের মনে হতাশার জন্ম নিয়েছে ।
আইরিশ পর্যটকদের জন্য বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ হলো গ্রীস। দেশটি সম্প্রতি বিদেশী পর্যটক প্রবেশের ক্ষেত্রে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে । যেখানে ২২ টি ইউরোপীয় দেশ সহ অন্য সাতটি দেশ থেকে পর্যটকদের গ্রীসে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে দেশটিতে যাহারা কোভিড -১৯ মহামারী রোধে কার্যকরি ব্যবস্হা গ্রহণের মাধ্যমে সফলতা দেখিয়েছে।
দেশগুলো হলো – আলবেনিয়া , অস্ট্রেলিয়া , অস্ট্রিয়া , উত্তর ম্যাসেডোনিয়া , বুলগেরিয়া , জার্মানি , ডেনমার্ক , সুইজারল্যান্ড , এস্তোনিয়া , জাপান , ইস্রায়েল , চীন , ক্রোয়েশিয়া , সাইপ্রাস , লাটভিয়া , লেবানন , নিউজিল্যান্ড , লিথুয়ানিয়া , মাল্টা , মন্টিনিগ্রো , নরওয়ে , দক্ষিণ কোরিয়া , হাঙ্গেরি ,রোমানিয়া , সার্বিয়া , স্লোভাকিয়া , স্লোভেনিয়া , চেক প্রজাতন্ত্র এবং ফিনল্যান্ড ।
ইউকে বা আয়ারল্যান্ড উভয়ই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয় যদিও তবে উলেখ্য যে উভয় দেশের লক্ষ লক্ষ পর্যটকরা প্রতি বছর বেড়াতে যান উক্ত দেশটিতে ।
দ্যা আইরিশ টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে উপোরেল্লেখিত তালিকাটি তৈরী করেছে গ্রীস সরকার আগন্তুক পর্যটকদের নিজস্ব দেশগুলোর মহামারী সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির উপর গবেষণা করে ।
গ্রীসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামী ১৫ ই জুন থেকে বিদেশী পর্যটকদের অ্যাথেন্স ও থেসালোনিকি বিমানবন্দরে নামার অনুমতি দেওয়া হবে এবং বিমান বন্দরে করোনা ভাইরাস পরীক্ষা সাপেক্ষে তাদেরকে ভীতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে । অন্যদিকে গ্রীসের হোটেলগুলিকে স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে ।
আইরিশ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ১ জুলাই থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে এবং পরিস্হিতি উন্নয়ন সাপেক্ষ যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ড উভয় দেশের পর্যটকদের গ্রীসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে ।
ক্রোয়েশিয়া: অন্যদিকে ইউরোপের অন্যতম পর্যটন নির্ভরশীল দেশ ক্রোয়েশিয়াও তাদের পর্যটন মওসুম উম্মুক্ত করতে যাচ্ছে খুব শিগগির । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পর্যটকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছে দেশটি । ১৫ ই জুন থেকে সীমিত আকারে ১০ টি দেশের দর্শনার্থীদের দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে ।
দেশগুলো হচ্ছে- জার্মানি, অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া, পোল্যান্ড , হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া এবং লিথুয়ানিয়া।
আয়ারল্যান্ড সহ অন্যান্য ইইউ দেশগুলির নাগরিকদের ক্রোয়েশিয়া সফরের ক্ষেত্রে ভ্রমনের প্রকৃত কারণ সহ হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র বিমানবন্দরে উপস্হাপনের কথা বলা হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে । সে ক্ষেত্রে ব্যত্তয় ঘঠলে তাদেরকে অনুমতি না দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে । ইতিমধ্যে দেশটির বেশিরভাগ হোটেল এবং পর্যটন আবাসনগুলো পুনরায় চালু করা লক্ষ্যে গত ১১ ই মে থেকে রেস্তোঁরা ও ক্যাফেগুলো চালু করা হয়েছে ।
ইতালি : লাইফ সার্পোটে থাকা ইতালি ৩ জুন থেকে সমস্ত বিদেশী পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হবে ।
ফ্রান্স : অন্যান্য ইইউ দেশগুলোর সাথে সমন্বয় করে আগামী ১৫ই জুন থেকে পর্যটকদের জন্য দেশটি উম্মুক্ত করার আশা করছে ফ্রান্স ।
স্পেন : বর্তমানে স্পেনে প্রবেশকারীদের জন্য ১৪ দিনের কোরেন্টাইন ব্যবস্হা চালু রয়েছে তবে প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন যে এটি জুলাই থেকে তুলে নেওয়া হবে এবং দেশটি বিদেশী পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে ।
পর্তুগাল: পর্তুগাল পর্যটকদের জন্য কখনও তাদের দরজা বন্ধ করে দেয়নি তবে বেশিরভাগ হোটেল এবং রেস্তোঁরা এই মাস অবধি বন্ধ রয়েছে । পর্যটকদের জন্য দেশটি কবে থেকে উস্মুক্ত করা হবে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোন কিছু জানা যায়নি ।
তথ্য সূত্র : The Irish Times
Syed Atiqur Rob
Ireland