আইরিশ বাংলা টাইমসের আত্মপ্রকাশঃ কিছু কথা

0
787

মানুষের চেহারা দেখার জন্য যেমন একটি আয়নার প্রয়োজন তেমনি একটি সমাজের চেহারা দেখতে হলে প্রয়োজন সংবাদপত্রের। এ জন্য সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। যে চারটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে থাকে তার মধ্যে সংবাদপত্র একটি। সংবাদপত্র সমাজে সাম্য ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। একটি সমাজে সংবাদপত্রের ভূমিকা যে কতো বিশাল, কতো ব্যাপক তা বলে লিখে বুঝানোর কোনো অবকাশ আছে বলে আমার মনে হয়না। এর অপরিসীম গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের সবারই কমবেশি জানা।

পত্রিকাকে সমাজ বদলের হাতিয়ার বলা হয়ে থাকে। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে এটাও সত্য যে, একটা দুষ্টু চক্র আজকাল এটাকে স্বীয় ভাগ্য বদলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চলছে। এই স্বার্থান্নেষী মহলটির জন্য সংবাদপত্র আজ বিতর্কিত, সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাটিও কলংকিত। ঘুষখোর চাকরিজীবী, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের মতো তাদেরকেও হরহামেশা বিভিন্ন অনৈতিক কাজে কর্মে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। স্বার্থপরায়ন এই শ্রেণীটির কর্ম কান্ডের জন্য সংবাদপত্রের ফলপ্রসূতা অনেকাংশেই আজকাল ব্যহত হয়। কেউ কেউ আবার হলুদ সাংবাদিকতার ভেড়াজালেও জড়িয়ে পড়ে। স্বীয় স্বার্থে অসত্য, বানোয়াট ও পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ পরিবেশনের নামই হলুদ সাংবাদিকতা। এসব কিছু নেতিবাচক দিক থাকা সত্বেও এ কথা অনস্বীকার্য যে আধুনিক বিশ্বে একটি সুস্থ, সুন্দর, সভ্য ও জ্ঞান সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে সংবাদপত্রের বিকল্প নেই।

সংবাদ মাধ্যম বা পত্রিকা এখন আর আগের মতো নেই। প্রাযুক্তিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এটিও এগিয়ে চলেছে নিজস্ব গতিতে। এককালে মানুষ খবরের কাগজে মুদ্রিত কেবল বাসি খবর পড়তো। এখন আর তা নেই। বরং তাৎক্ষণিক মুহূর্তে সতেজ তরতাজা খবর মানুষের দোয়ারে পৌছে দেয়ার অঙ্গীকার নিয়ে বেরিয়ে আসলো অনলাইন পোর্টাল। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে প্রথম যে পোর্টালটির আত্মপ্রকাশ ঘটে তা হচ্ছে বিডিনিউজ ২৪.কম। পরবর্তীতে দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে জন্ম নেয় অসংখ্য পোর্টালের। এরই ধারাবাহিকতায় অতি সম্প্রতি আয়ারল্যান্ড থেকে অনুজ প্রতিম আব্দুর রহিম ভূঞা ‘আইরিশ বাংলা টাইমস” নামে একটি অনলাইন পোর্টাল প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। আমি তার এ মহতী প্রয়াশকে সাধুবাদ জানাই এবং পোর্টালটির স্বার্থে নিম্নে উল্লেখিত কিছু বিষয়ের উপর সচেতন ভূমিকা পালনের অনুরোধ করবো।

***কোনো অবস্থাতেই হলুদ সাংবাদিকতার আশ্রয় নেয়া যাবে না
***বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে সদা সোচ্চার থাকতে হবে।
***সত্য ও ন্যায় নীতির প্রশ্নে আপোসহীন মনোভাব পোষণ করে চলতে হবে।
***কোনো ব্যক্তি বা দলের তাবেদারি করা যাবেনা
***কমিউনিটির নিউজ গুলোকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেয়া চাই।
***নতুন প্রজন্মকে বাংলা শেখানো ও উৎসাহী করে তোলার ক্ষেত্রে সচেষ্ট ভূমিকা পালন।

আমি জানি একটি পত্রিকা বা পোর্টালকে সম্পূর্ণ সফল ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছেলের হাতে মোয়া নয়। এ জন্য সময় ও অর্থ দুটোই প্রয়োজন। যারা বিদেশের বাড়িতে শত ব্যস্ততা ও প্রতিকূলতার মাঝেও এ ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে চলছেন তারা সত্যি প্রশংসার দাবিদার।

আমি আইরিশ বাংলা টাইমসের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করি।

Facebook Comments Box

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here