অনলাইন এবং অ্যাপস আমরা কতটুকু সুরক্ষিত!!
বিজ্ঞানের ছোঁয়া ইন্টারনেটে
“একান্তই ব্যক্তিগত ভাবনা থেকে”!!
ইন্টারনেট বদলে দিয়েছে মানুষের জীবনযাত্রার নানা দিক। দিয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া। অবাক করা অনেক কিছু। সামনের দিনগুলো আমরা আরো নতুন কিছু দেখার অপেক্ষায় আছি। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্যানডেমিক শুরু হওয়ার পর থেকে পুরো বিশ্বে ইন্টারনেটের চাহিদা বেড়েছে অনেকগুন। উন্নত দেশে অনেক আগে থেকেই অনলাইন ভিত্তিক পড়াশোনা, মিটিং চাকুরী, কেনাকাটা ইত্যাদি প্রচলিত ছিল। অনুন্নত দেশে এই সেবাগুলো সীমিত পর্যায়ে থাকলেও বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই উল্লেখিত সেবাগুলো দিয়েই চলছে কার্যক্রম।
আধুনিক প্রযুক্তি:✅
বিজ্ঞানের বদৌলতে আমরা পেয়েছি নতুন নতুন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব।
পর্দার উপর স্পর্শ (Touch screen) আবার এক ধরনের যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা পরিবেশ শব্দ, তাপ, আলো ইত্যাদির উপর সাড়া দিতে পারে, যেটা কিনা এক ধরনের পরিবর্তন করে সিগনাল দিয়ে থাকে যাকে আমরা ইংরেজিতে Sensor বলি। যা দূর হতে আমরা স্পর্শ না করে অনেক কাজ চালিয়ে যাওয়া যায়। মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, স্মার্ট ওয়াচ, টাচস্ক্রিন পেমেন্ট, অনলাইন ব্যাংকিং, চালকবিহীন গাড়ি, আরো কত কিছু বিজ্ঞানে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। শরীরের ভেতরে স্মার্ট ক্যাপসুল দিয়ে স্ক্যান করার কথা বিজ্ঞানীরা ভাবছেন এবং অনেক দেশেই পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছেন।
আধুনিক প্রযুক্তির বেশি ব্যবহারের আসক্তি:✅
প্রত্যেক কিছুই অতিরিক্ত সেবনে যেমন পার্শ প্রতিক্রিয়া আছে। প্রযুক্তির বেলায়ও আমরা অনুরূপ দেখছি ফেইসবুক, ইউটিউব, টিক টক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার আরো অনেক কিছু। অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে বিশেষজ্ঞদের মতে অনেকেই আসক্তি হয়ে যাচ্ছে শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক এবং মেধা বিকাশের অন্তরায়। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ফেইসবুক প্রতিদিন মানুষ গড়ে ১৫ থেকে ২০ বার পর্যন্ত প্রবেশ করে। অন্য পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে কোন কিছু আপলোড করার পর লাইক এবং কমেন্টের জন্য মনস্তাত্ত্বিকভাবে বিষণ্ণতায় ভোগে।
অনুসরণকরণ (চেক ইন):✅
সাধারণত ফেইসবুক ব্যবহারকারী এবং গুগল ব্যবহারকারী অথবা অন্যান্য মানচিত্র সহায়তাকারী যন্ত্র অতি সহজেই আপনি কোথায় আছেন প্রবেশের সাথে সাথেই আপনা আপনি ট্রাকিং হয়ে যায়। যদি এর নোটিফিকেশন খোলা থাকে তাহলে অতি সহজেই আপনার ডিভাইসে সংযুক্ত হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। অন্যদিকে ফেসবুক ব্যবহারকারী সাধারণত কোন জায়গায় ভ্রমণের সময় চেক ইন করার ফলে অতি সহজেই ফেইসবুক আপনার তথ্য সংরক্ষণাগারের জমা করে রাখে। যাতে করে আপনি কোথায় গেছেন এটার গোপনীয়তা হারাচ্ছেন আমাদেরকে এই ব্যাপারগুলোতে অনেক সতর্ক থাকতে হবে।
ফেইসবুক ট্যাগ (একত্র গাঁথা):✅
ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এই শব্দটার সাথে অতি পরিচিত। সাধারণত কোন কিছু আপলোড করার সময় কোন ফেইসবুক বন্ধুকে অনুমতি নিয়ে অথবা না নিয়ে আমরা সাধারণত ট্যাগ করে থাকি। আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি যার পরিণাম অনেক ভয়াবহ পর্যায়ে গিয়েছে। বিভিন্ন দেশের ঘটনায় তার প্রমান স্পর্শকাতর কোন বিষয়ে ট্যাগ করার আগে আমাদের সবার উচিত জানিয়ে করা।
প্রযুক্তি মাধ্যমে অপরাধ এবং হুমকি (cyberbullying):✅
নতুন প্রযুক্তির ধাপে ধাপে প্রযুক্তির ক্রাইম অথবা অপরাধের ধরনও পাল্টে গেছে। সমাজে অনেকের কাছে এটা সাইবারক্রাইম অথবা সাইবার বুলিং নামে পরিচিত। এই অপরাধগুলোর জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে তারপরও দমন করা যাচ্ছে না। প্রযুক্তির মাধ্যমে করা অপরাধ প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না করা বা না জানার জন্যই অনেকেই এই অপরাধগুলোর সাথে মিশে যাচ্ছে।
তথ্য এবং সুরক্ষা:✅
আমরা প্রতিনিয়ত অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটা বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ডাউনলোড ছেলেমেয়েদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্টুনের ডাউনলোড ,বিভিন্ন অ্যাপসএর মাধ্যমে ভিডিও কল, মেসেজিং সার্ভিস করে তথ্য আদান প্রদান করে থাকি। এই অ্যাপ গুলো ডাউনলোড করার শর্ত অনুযায়ী আমরা তাদের সাথে একমত পোষণ করি, যার অর্থ দাঁড়ায় আমরা অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে থাকি। এখন প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে এই ব্যক্তি গত তথ্য আমাদেরকে কতটুকু সুরক্ষা রাখছে।
তথ্য প্রযুক্তি সুরক্ষা আইন (Data protection law):✅
প্রযুক্তির বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করছে। তারপরও জনসাধারণ কতটুকু সুরক্ষিত এই প্রশ্ন আমার, আপনার এবং সমাজের। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির সুফল চাই, কুফল নয় বিজ্ঞান হোক আশীর্বাদের অভিশাপের নয়। মানবকল্যাণে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অবদান অনস্বীকার্য। সুরক্ষিত হোক প্রযুক্তির তথ্যসেবা।
দীলিপ বড়ুয়া
ডাবলিন
১৮/০১/২১