BDAD এর উদ্যোগে বই মেলা এবং পিঠা প্রদর্শনী সফলভাবে সম্পন্ন

0
332

গত ২৬ শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ডাবলিনের টালা তে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (BDAD) এর আয়োজনে বই মেলা ও পিঠা প্রদর্শনীতে শামিল হয়েছে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বিভিন্ন অঞ্চলের বঙ্গ সন্তানেরা। বইয়ের ঘ্রাণে ও পিঠা পুলির রসনায় তৃপ্ত হয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে প্রবাসে অনুভব করেছে স্বদেশের অনুভূতিকে।

ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার মাস। সাহিত্য হচ্ছে ভাষাকে অলংকৃত করার মাধ্যম, আর বই হচ্ছে সাহিত্যের ধারক ও বাহক। যে বই বুকে ধারণ করে নিয়ে বেড়ায় ভাষাকে। ফেব্রুয়ারি মাস এবং বইমেলা যেন একে অন্যের পরিপূরক। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে বাংলা বইমেলা যেন ভাষার মাসকে অন্যরকম আবরণে আবৃত করে রাখে।

ভাষা যেমন বাংলার ঐতিহ্যকে বহন করে নিয়ে বেড়ায়, তেমনি দেশিয় অনেক খাবার, খেলাধুলা, সংস্কৃতি, কৃষ্টিও বহন করে দেশীয় ঐতিহ্যকে। পিঠা তেমনি একটি বিষয় যা বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। বাংলাদেশে শীতকাল হচ্ছে উৎসবের মাস। উৎসবের আতিশয্যে, নবান্নে, রঙে বৈচিত্র্যে আড়মোড়া দিয়ে জাগে কুয়াশার চাদর মুড়ে থাকা শীতকাল। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে যখন নতুন ধান ঘরে উঠে তখন নতুন চালের পিঠা পায়েশ দিয়ে উদযাপন করা হয় নবান্ন উৎসব। বাংলার চিরাচরিত এই ধারা চলে আসছে হাজার বছর ধরে। পৌষ মাঘের এই সময়টায় বাংলার আনাচে কানাচে ভেসে আসে খেজুর রসের পায়েশ আর পিঠা পুলির সুমিষ্ট ঘ্রাণ।

নতুন বইয়ের মলাট এবং বাহারি সব পিঠা পুলির ঘ্রাণ সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে সুদূর আটলান্টিকের তীরবর্তী কোন শহরে পাওয়া যাবে তা সত্যটিই কল্পনাতীত। সাত সমুদ্র তের নদী পার করে হয়ত বাংলাকে তুলে আনা সম্ভব না, কিন্তু বাংলা থেকে ছুটে আসা বঙ্গ সন্তানেরা তো রয়েছে। বাংলার ঐতিহ্য কে ধরে রাখতে ও তুলে ধরতে আয়োজন করেছে বই মেলা ও পিঠা প্রদর্শনী।

বাংলার রমণীকূলের হাতের স্পর্শে তৈরি হয়েছে হরেক রকম পিঠা মিষ্টান্ন, যা খেয়ে রসনা তৃপ্ত হয়েছে ও বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যকে চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে সাত সমুদ্র তের নদীর অপারে বসেও। শুধু পিঠা পায়েশই নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাচ্চি বিরিয়ানি, কাঁচা আম ভর্তা, পান, ফুসকা, চটপটি, হালিম, ঝালমুড়িসহ হরেক রকম সুস্বাদু খাবারে রসনা তৃপ্ত করেছে আগত দর্শনার্থীদের।

শুধু জিভই নয়, বাংলার শিল্পীদের কণ্ঠে সুমধুর দেশীয় সব গানে, কবিতা আবৃতিতে ভিজিয়ে দিয়েছে সবার মনও। সৌভাগ্যবানরা র‍্যাফেল ড্রর পুরস্কার জিতে অনুষ্ঠানের ষোলকলাই আদায় করে নেন। দেশীয় সব পোশাকে অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় একটুকরো বাংলাদেশে।

সমগ্র আয়ারল্যান্ড থেকে অংশগ্রহণকারীদের সাথে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অল বাংলাদেশি এ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (আবাই) এর সভাপতি জনাব জিন্নুরাইন জায়গীরদার, বিশেষ অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর শেন মনিহান। অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন জনাব জহিরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জনাব কামাল হোসেন, জনাব মিশা আনোয়ার, জনাবা সামান্তা সুমাইয়া জনাবা ইলফা জহির।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযোগিতা করেন BDAD এর কলাকুশলীবৃন্দ।

Facebook Comments Box