কেমন হবেন UK-তে নবনিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম?

যুক্তরাজ্যে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে হাইকমিশনার হিসেবে আবিদা ইসলামের যোগদান

0
158

যুক্তরাজ্যে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে পরবর্তী হাইকমিশনার হিসেবে আবিদা ইসলামকে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি বর্তমান হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের স্থলাভিসিক্ত হচ্ছেন। আবিদা ইসলাম বর্তমানে মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। এর আগে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব এবং লন্ডন, ব্রাসেলস, কলকাতা ও কলম্বোর বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে নিযুক্ত ছিলেন। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগেও কাজ করেছেন তিনি।

আবিদা ইসলাম বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

আগস্ট ২০২১ থেকে তিনি ইউনাইটেড মেক্সিকান স্টেটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মেক্সিকোয় দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে ২০১৭ সাল থেকে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।

তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফাস্ট সেক্রেটারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ২০০৪ থেকে ২০০৬ কলম্বো, ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্রাসেলসে কূটনৈতিক মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। উক্ত সময়গুলোতে তিনি দূরপ্রাচ্য, দক্ষিণ—পূর্ব এশিয়া, আমেরিকা—প্রশান্ত মহাসাগরীয়,  আন্তর্জাতিক সংস্থা, ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং প্রশাসন সহ ঢাকার পররাষ্ট্র বিষয়ক বিদেশী কূটনৈতিক মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে এবং ২০১৪ – ২০১৫ সালে তিনি ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পূর্বে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমেরিকাস উইং এর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ব্রিটেনে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের ঘোষণায় বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকা ইনকিলাবের একটি রিপোর্টে আবিদা ইসলামকে হাসিনাপন্থি বলে খবর প্রকাশ করে। খবরে বলা হয় তিনি ছিলেন উগ্র ও বদ মেজাজি ছিলেন। সংবাদে আরো উল্লেখ করা হয় তিনি কট্টর আওয়ামী ইন্টারেস্টে বেশি মনোযোগী ছিলেন। খবরের লিংকটি এখানে দেখুনঃ দৈনিক ইনকিলাব 

এখন দেখার বিষয় লন্ডনস্থ হাই কমিশনে আবিদা ইসলামের ভূমিকা কী অন্য সময়ের মতো ও অন্যান্যদের মতো রাজনৈতিকই থাকবে নাকি অরাজনৈতিক কালচার গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। আমরা অতীতে দেখেছি, প্রশাসন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আজ্ঞাবহ থাকে। যা সম্পূর্ণরূপে অপেশাদারিত্বের লক্ষণ।

আবিদা ইসলামের পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পারি, তিনি অভিজ্ঞতায় ভরপুর একজন ব্যক্তি। তাঁর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আশা করবো বাংলাদেশের সাথে ইউকে এবং আয়ারল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং প্রবাসীরা উপযুক্ত সেবা পেতে সক্ষম হবেন।

কে এই আবিদা ইসলাম?

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম আবিদা ইসলামের। বাবা প্রয়াত নজরুল ইসলাম প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মা সেলিনা ইসলাম ছিলেন উন্নয়নকর্মী। ঢাকার শহীদ আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি, হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন আবিদা। এরপর অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচ থেকে ১৯৯৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন আবিদা।

ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তান; আরশাদ আহমেদ, আয়েশা আহমেদের জননী আবিদা।

Facebook Comments Box