ধর্ম অবমাননা রোধে ওআইসি রাখতে পারে কার্যকরী ভূমিকা ।
পশ্চিমা সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল ফরাসি বিপ্লব। আধুনিক ইউরোপের উদ্ভব ইউরোপীয় রেনেসাঁর পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের মধ্যে ফরাসি বিপ্লব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্রান্সে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয় এবং প্রজাতান্ত্রিক আদর্শের যাত্রা শুরু হয়। অভিজাততন্ত্র থেকে নাগরিকত্বের যুগে পদার্পণ করে ফরাসিরা। শ্রেণী সমাজের পতন ঘটে। ঐতিহাসিকরা এই বিপ্লবকে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে বিবেচনা করেন। (১৭৮৯ ~১৭৯৯)
তৎকালীন রোমান ক্যাথলিক চার্চগুলো তাদের সকল গোঁড়ামী ত্যাগ করে নিজেদেরকে পুনর্গঠিত করে ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে । যার কারণে ফরাসি বিপ্লবকে পশ্চিমা গণতন্ত্রের ইতিহাসে নতুন সূর্যদয় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতার অগ্রযাত্রা ফরাসি বিপ্লবের পর থেকে শুরু হয়।
ভলতেয়ার ছিলেন ফ্রান্সের বিখ্যাত দার্শনিক এবং
লেখক। ফরাসি বিপ্লবের ভিত তৈরীতে তার কিছু লেখা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভলতেয়ার ১৭৩৬ সালে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা:)কে নিয়ে একটি নাটক রচনা করেন, যেখানে কিছু ধৃষ্টতামূলক বাক্য ছিল। নবী করিম (সাঃ) বিদ্বেষী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ভলতেয়ারের সেই নাটকে।
অপর এক ফরাসি চিন্তাবিদ ও সাহিত্যিক হেনরি ডি বৌলেনভিলিয়ার্সের লেখা বই পড়ে ভলতেয়ারের চিন্তাধারার পরিবর্তন হয়। এরপর ভলতেয়ার তার পরবর্তী একটি লেখায় রাসূলে করিম (সাঃ) এর ধর্মীয় উদারতা, মহানুভবতা স্বীকার করেন এবং প্রকাশ্যে তাঁর প্রশংসা করেন তিনি। নবী করিম (সাঃ) সম্পর্কে ভলতেয়ারের চিন্তাদর্শন দ্বারা জার্মানির বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক গ্যেটেও বেশ প্রভাবিত হন। পরবর্তীতে গ্যোটের প্রভাব পড়ে উপমহাদেশের বিখ্যাত কবি ও দার্শনিক আল্লামা ইকবালের উপর। তথ্যসূত্র: হামিদ মীর, সাংবাদিক, পাকিস্তান।
বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মক্কা বিজয় ছিল ফরাসি বিপ্লবের মত একটি বিপ্লব, যাহা পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) শুধু আরবে বহুদেববাদ সমাজের মুলৎপাটন করেন নি, বরং এই বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি প্রাচীন আরবে এক আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্টার মাধ্যমে ইনসাফপূর্ণ সমাজ ও কল্যাণকামী রাষ্ট্র ব্যবস্হা গঠন করেছিলেন। বিশ্বের প্রতিটি সংগ্রাম ও বিপ্লবের পিছনে যেখানে থাকে অজস্র মানুষের আত্মাহুতি আর রক্তের প্লাবন। সেখানে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মক্কা বিজয় ছিল রক্তপাতহীন এক নিরব বিপ্লব।
নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কেবল মাত্র কোরআন এবং হাদিসে বর্ণিত একজন মহানায়ক ছিলেন না। তিনি বাস্তব জীবনেও এক মহাপ্রাণ পুরুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন নিয়ম ও নীতির এক মুর্ত প্রতীক। তিনি ছিলেন সকল দার্শনিকের শ্রেষ্ট দার্শনিক। রাসূলে করিম (সাঃ) র চিন্তা ও দর্শন শুধু কোনো গোত্র, বর্ণ বা ধর্মের মধ্যে বিদ্ধমান ছিলনা। বরং তাঁর সকল কর্মকান্ডের মুলে ছিল সকল মানুষের ইহুলিক ও জাগতিক জীবনের কল্যাণ।তিনি ছিলেন সকলের নবী। তিনি ছিলেন সকলের জন্য সৎ পথের পদর্শক।
নবী করিম (সাঃ) সামাজিক নেতা ছিলেন, তিনি শুশাসক ছিলেন, তিনি রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, তিনি ইমাম ছিলেন,তিনি প্রিয় স্বামী ছিলেন, প্রিয় পিতা ছিলেন, তিনি সৎ পথে উপার্জন করেছেন,তিনি পরোপোকারি ছিলেন,তিনি যুদ্ধের মাঠে সেনাপতি ছিলেন, তিনি ন্যায়পরায়ণ ছিলেন, তিনি আমানতদারী ছিলেন।, তিনি ছিলেন পবিত্র। তিনি ছিলেন সকল প্রতিহিংসার উর্ধ্বে।
তিনি কালের উর্ধ্বে জগত -সংসার, পাহাড়-জঙ্গল, নদী-সাগর, পশু-পাখি সকল কিছুর নেয়ামত ছিলেন। রাসূলে করিম (সাঃ)কে নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষীরা যে আজ লাগামহীন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, এটি হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ, তার রেখে যাওয়া দর্শন আজ গোটা বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জ। তিনি চলে গেছেন কিন্তুু তাঁর অসীম প্রভাব রেখে গেছেন উম্মতি মুহাম্মদীদের নিকট। নবী করিম (সাঃ) ১৪০০ বছর পূর্বে যে ঐতিহাসিক ধর্মের সূচনা করে গেছেন, সেটি আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মের মর্যাদা লাভ বরেছে। তাই ইসলামের জাগরণে ইসলাম বিদ্বেষীরা চরম শংকিত ও ভীত- সম্ভ্রন্ত। তথাকতিথ মতবাদগুলো যখন একের পর এক আঁধারে ডুবে যাচ্ছে, ইসলাম তখন সূর্যের কিরণ ছড়িয়ে পৃথিবীতে আঁগমনের নতুন বার্তার জানান দিচ্ছে।
আদর্শগত ভাবে ব্যর্থ হয়ে তৎকালীন মক্কাতে আবু লাহাবরা রাসূল করিম (সাঃ) এর চরিত্রে বহুবার কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছিল, আজকের যুগেও তাদের উত্তরসূরীরা এই কাজটি করছে সূকৌশলে,
এতো অপপ্রচার,এতো বিদ্বেষ, এতো নির্যাতন, এতো নিপীড়ন তারপরও ইসলামের দিকে মানুষ ঝুঁকছে দলে দলে। হাজারো বাঁধার প্রাচীর ডিঙিয়ে প্রতিদিন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শত শত অমুসলিম শাহাদা পাঠ করে মুসলিম হচ্ছেন। প্রভুর সান্নিধ্যে লাভের আকাঙ্খায় প্রতিনিয়ত তাদের হৃদয় ব্যকুল।
আপনি কি মনে করেন না, ইসলামের দিকে ছুটে চলা এই জনস্রোত ইসলাম বিদ্বেষীদের কাছে গায়ে জ্বালা পোড়ার কারণ নয় ? হেইট ক্রাইমের কারণে প্রকাশ্যে তারা কিছু বলতে পারছে না ঠিক কিন্তুু ইসলামের এই জাগরণকে কোনোভাবে ওরা মন-মস্তিস্কে মেনে নিতে পারছেনা। এরজন্যই কার্টুন কান্ড, হিজাব কান্ড, তালাক কান্ড, নবীর চরিত্র হনন কান্ড ইত্যাদি ঘটনা দেখা যায় অহরহ। এই বিষাক্ত হিংসে-বিদ্বেষ ছড়ানো কাজগুলো বন্ধের জন্য নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ।
দেশে দেশে ইসলাম ভীতি ছড়িয়ে মানুষকে কিভাবে ইসলাম থেকে দুরে রাখা যায়, সেটি এখন ইসলাম বিদ্বেষীদের মুল এজেন্ডা। সুতরাং ইসলাম বিদ্বেষীরা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে ঘৃণা করবে, তারা তাকে বিভিন্নভাবে অপবাদ দিবে, নবী করিম (সাঃ)এর চরিত্র নিয়ে কুৎসা রটাবে,তাকে গালি দিবে। এইগুলো আসলে মুসলিমদের জন্য তৈরী তাদের এক ধরণের ফাঁদ। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে কিছু মুসলিম সেই ফাঁদে আটকে পড়ে জ্বালাও- পোড়াও করছেন। এটি ইসলামে কতঠুকু বৈধ? সে ব্যাপারটি আলোচনার দাবী রাখে।
মুসলিম বিদ্বেষীরা ভালো করে জানে- আল্লাহ, তার নবী- রাসূল এবং তাদের সম্মানিত স্ত্রীদের ইজ্জত সমগ্র মুসলমানদের কাছে তাদের সবচাইতে দুর্বল আবেগের স্হান। অত্যন্ত কৌশলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে মুসলিমদের ক্ষুব্ধ করে তুলছে ইসলাম বিদ্বেষী ওই গোষ্টি। মুসলিমদের প্রতিবাদের কর্মসূচিকে তারা উগ্র জাতীয়তাবাদের সহিংসতার রুপ দেবার চেষ্টা করছে বিশ্ব মিডিয়ায়।
অবাধ বাক-স্বাধীনতা চর্চার ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে দিনের পর দিন আঘাত করে যাচ্ছে মানবতার লেবাসধারী ফেরিওয়ালারা। কিন্তুু তারা কখনো হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)এর জীবনের ভালো কাজগুলোর প্রশংসা করেনাা। নবী করিম ( সাঃ) এর চরিত্রের উত্তম দিকগুলো তাদের মুক্ত স্বাধীনতার চর্চায় কখনো ফুটে উঠেনা। তাদের এহেন পক্ষপাতদুষ্ট মুক্ত বাক- স্বাধীনতা চর্চা নামের বিকৃত মনস্তাত্ত্বিকতাকে ধীক্কার জানাই।
২০০৫ সালে ডেনমার্কের একটি সংবাদপত্র নবী করিম (সাঃ)কে নিয়ে ধৃষ্টতামূলক কার্টুন ছাপালে বহু মুসলিম দেশ উক্ত ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পবিত্র নবীকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক সেই কার্টুন প্রকাশকে উক্ত পত্রিকাটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে আখ্যায়িত করে। ২০০৬ সালে সুইডিশ কতিপয় ওয়েবসাইট ওই কার্টুনগুলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলে প্রচার করতে শুরু করে।
পরিস্হিতি কঠিন হলে সু্ইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে উক্ত ওয়েবসাইটগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয় কার্টুনগুলো সরিয়ে ফেলতে।শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে সুইডেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লায়লা ফ্রেইভাল্ডসকে পদত্যাগ করতে হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ওয়েবসাইটগুলো থেকে কার্টুন সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা দেশটির মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী ছিল। ইউরোপের বেশির ভাগ সরকার চাইলেও তারা তাদের মিডিয়াকে নবীদের নিয়ে ধৃষ্টতামূলক কার্টুন প্রকাশে বাধা দিতে পারবে না। অবাধ বাক-স্বাধীনতা প্রকাশ নামক চরিত্র হননের মেশিন দিয়ে ওরা মুসলিমদের হৃদয়ে রক্ত ঝরানোর কাজটি করেই যাবে ।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ইউরোপীয় দেশে নবী করিম (সা:) সম্পর্কে ধৃষ্টতা অবলম্বনে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। যেটি গোটা মানবতার জন্য কল্যাণকর। মানুষের মধ্যে যতক্ষণ না পর্যন্ত বিবেক জাগ্রত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইন দিয়ে তেমন কোনো ফল পাওয়া যাবেনা।
আজ ইসলাম ধর্ম ও নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)র উপর যে অভিযোগের পাহাড় দাঁড় করানো হচ্ছে,খালি চোখে খোঁজলে এর চেয়ে হাজারগুণ দোষ ও ব্যত্যয় অন্যান্য ধর্মগুলোতে পাওয়া যাবে। মানবতা ও সভ্যতার যে, জ্ঞান আজ মুসলিমদের দেওয়া হচ্ছে, সেই সভ্যতা ও মানবতার বীজ পৃথিবীতে সর্ব প্রথম রোপন করে গেছেন বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ)। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণায় পাশ্চত্যরা যখন ভিখারি ছিল,দুর্বল ছিল, মুসলিমরা তখন কতটা ধনী ও শক্তিশালী ছিল, সেটি বুজার জন্য জন্য ইসলামের স্বর্ণযুগকে সাদা চোখে দেখতে হবে। প্রাচীন মুসলিম দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের অবদানের উপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের আধূনিক বিজ্ঞান ও সভ্যতা।
জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে রাসূল (সাঃ)এর অবমাননা রোধে কার্যকরী উদ্যোগ নেবার ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান সংস্হা ওআইসি কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। ১৯৯৮ থেকে নিয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত বহুবার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয় ওআইসি। ইউরোপীয় দেশগুলোর অসহযোগিতার কারণে কার্যত এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
অস্ট্রিয়ার একটি আদালত ২০১১ সালে নবী করিম (সাঃ) কে অবমাননার কারণে জৈনক মহিলাকে যখন ৪৮০ ক্রোনা জরিমানা করা হয়। উক্ত মহিলা তখন পরে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসে আপিল করে বলেন যে, তাকে দেয়া শাস্তির রায়টি ছিল মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। অবশ্যি ইউরোপীয় কোর্ট শাস্তির পক্ষে রায় বহাল রেখে বলে, মুসলমানদের নবী সম্পর্কে ধৃষ্টতামূলক আচরণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। সাত সদস্যবিশিষ্ট উক্ত ইউরোপীয় কোর্ট ২০১৮ সালে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গের এই রায়ে আরো বলে, এর দ্বারা সমগ্র বিশ্বে জাতিগত বিদ্বেষ ও চরম হিংসা ছড়ানো হচ্ছে।
নবী করিম (সাঃ)কে নিয়ে অবমাননার বিরুদ্ধে কোনো আর্ন্তজাতিক আদালতের সর্বশেষ দৃশ্যমান রায় ছিল সেটি। এর পরে আর কোনো রায় এসেছে কি না আমার জানা নেই।
ওআইসি যেহেতু মুসলিম বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এখন বেশ সরব,ভারতে মুসলিম নির্যাতনে তারা এখন আগের চেয়ে অনেক সোচ্চার, সেহেতু এই রায়ের উপর ভিত্তি করে জাতিসঙ্ঘ সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বিশ্বের সকল ধর্ম ও সব নবীর অবমাননা রোধে আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়নের জন্য জোড়ালো দাবী তুলতে পারে ওআইসি।
বাক স্বাধীনতা চর্চার নামে ধর্ম অবমাননা বন্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনের ক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারে ওআইসি।এখনি এর মুখ্য সময়। আর যদি এই ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সংস্হাগুলো একমত হতে পারে, তাহলে পৃথিবীজুড়ে বিদ্বেষের প্রসার কমে আসবে।
হানাহানি কমবে। রক্তপাত বন্ধ হবে। ধর্মগুলোর মধ্যে সহবস্হানের ভিত্তি শক্তিশালী ও মজবুত হবে।
কিন্তুু আন্তর্জাতিক বিড়াল সংস্হাগুলোর গলায় আদৌ কি ঘন্টা বাঁধা যাবে???
নবী পাক (সাঃ) এর সম্মান রক্ষা করা সব মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। এই লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে আমাদের অবশ্যই সোচ্চার হওয়া উচিত।
প্রত্যেকের অবস্হান থেকে জোড়ালোভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যথার্থভাবে বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। এর পাশাপাশি প্রিয় নবী করিম (সা:) এর চারিত্রিক শিক্ষাগুলোর ওপরও মুসলিমদের অধিক মনোযোগ দেয়া উচিত। নবীজির জীবনি বেশি বেশি অধ্যায়ন করা উচিত। রাসূলে পাক (সাঃ)এর জীবন- দর্শন মনের গভীরে পোততে হবে। আমাদের প্রতিটি কর্মে রাসূল পাক (সাঃ)এর প্রতিফলন হওয়া দরকার।
আত্মসমালোচনা করা উচিত সব মুসলিমদের – আমরা যখন মিথ্যা বলি, ঘুষ নিই, মুনাফেকি করি, শাসক হয়ে জনগণকে কষ্ট দেই, মানুষের হক নষ্ট করি, জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করি, প্রতিবেশীর সাথে খারাপ আচরণ করি, প্রশাসনের ক্ষমতা খাটিয়ে মজলুমদের উপর অত্যাচার করি,সম্পদ আত্মসাৎ করি,জলুম করি, সাম্প্রদায়িকতা-অশ্লিলতা ছড়াই, বোমা মেরে মানুষ মারি এবং অন্যায়-অবিচার করি, তখন কি আমরা স্বয়ং আমাদের নবী (সাঃ)এর শিক্ষার বিরোধিতা করছি না ?? আমাদের এই চরিত্রগুলো কি নবীর চরিত্রের সাথে সাংঘর্ষিক না এইগুলো মুসলিমদের ভেবে দেখা উচিত ?
আমরা নবী করিম (সাঃ)কে যদি সত্যিকার অর্থে ভালোবাসি এবং যদি আমরা নবীর শিক্ষার ওপর আমল শুরু করি, তাহলে বিশ্বে কারো সাহস নাই নবীকে অপমান করার। প্রিয় নবীর অবমাননা রোধে প্রথমে আমাদের নিজেদের চরিত্র ঠিক করতে হবে।
নবী করিম পাক (সাঃ)এর জীবন শুধু মসজিদ, খানকা, মাজার, জায়নামায ইত্যাদির মধ্যে আবদ্ধ না রেখে আসুন আমরা ব্যাক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গে অনুসরণ করি। মক্কা বিপ্লবের তাৎপর্য আসুন সঠিকভাবে অনুধাবন করি। সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করি নবীর জীবন আদর্শ। শুধু মুখে নয়, কাজেও মদিনা সনদে দেশ চালানোর প্রমাণ রাখি।
এস এ,রব
পোর্টআর্লিংটন
পোর্টলিস