এস,এ,রব : কোভিড-১৯ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে গোটা পৃথিবী। এর মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা ছড়ালো ভারত ও চীন। দুই দেশের চির বৈরিতা মহামারিতেও কমেনি।
ভারত -চীন সীমান্তে চলমান উত্তেজনা বৃদ্ধিতে বেইজিং এর সমরসজ্জা বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনা সেনাবাহিনী এর মধ্যে নতুন করে ১১৪টি নতুন বাংকার নির্মাণ করেছে সীমান্তে । ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্হার বরাত দিয়ে জানা গেছে চীন গালোওয়ান অঞ্চল এবং পেংগংস এলাকায় বাংকার তৈরী করে বিতর্কিত এলাকাগুলোতে ভারতীয় সেনা বাহিনীর পথ বন্ধ করে দিয়েছে । পিপলস রিপাব্লিক আর্মির নতুন দু’টি বাহিনী সেখানে পাঠিয়েছে চীন ।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রন রেখার কাছে গালোওয়ান এবং পেংগংস অঞ্চলে সম্প্রতি নতুন করে এই ভাবে চীনের সামরিক শক্তি তৎপরতা বৃদ্ধিতে নয়াদিল্লী খুবই সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান টাইমসের সূত্রে জানা গেছে ।
ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে গত শুক্রবার গোপনে লেহ পরিদর্শন করে ফেরার পরই ভারত আরও বেশী সেনা পাঠানো শুরু করেছে লাদানের প্রকৃত নিয়ন্ত্রন রেখায় । সরকারি সূত্রে জানা গেছে লেহ ইনফেক্ট ডিভিশনকে ফরওয়ার্ড অপারেশনাল এলার্ট দিয়ে রাখা হয়েছে জরুরী পরিস্হিতি মোকাবেলার জন্য ।
অন্য দিকে চীনের পক্ষ থেকে গত এক সপ্তাহে অন্তত এক ঝাঁক অতিরিক্ত নজরদারি নৌকা পাঠানো হয়েছে পেংগংস হৃদে । সংশ্লিষ্ট এলাকায় দুই পক্ষই দিবা-রাত নজরদারি করছে বলে জানা গেছে । গোটা পরিস্হিতি উপর নজরদারি করছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজীত দুবাল ।
অপর দিকে ভারতের লাদাখ সীমান্তেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে উত্তেজনা । পূর্ব লাদাখের সীমান্তে বেশ কিছু অঞ্চলে চীনের প্রায় ১২শ’ থেকে ১৫ শ ‘সেনা সদস্যরা ভারতীয় সেনাদের মুখোমুখি অবস্হান নিয়েছে । ২০১৭ সালের ডুকলাম সংকটের পর সীমান্তে এবার দুই দেশের সবচেয়ে বড় সেনা মোতায়েনের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতের সংবাদ মাধ্যম ।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম NDTV দেশটির শীর্ষস্হানীয় সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে পেনাং এবং গালোওয়ান উপত্যকায় শক্তি বৃদ্ধি করেছে ভারতীয় সেনা বাহিনী । ওই দুই অঞ্চলে দুই থেকে আড়াই হাজার চীনের সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।
এই দিকে পারমানবিক শক্তিধর ভারতকে হুমকি দেওয়া আয়তনে অতি ক্ষুদ্র দেশ নেপালের দুঃসাহসিকতার প্রশ্ন নিয়ে বেশ অালোড়ন সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। নেপালের এই হুমকিকে ভারতের জন্য ভীষণ লজ্জার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা । ভারতের মত বৃহৎ একটি শক্তিশালী দেশের বিরুদ্ধে নেপালের মত অতি ক্ষুদ্র দেশের যুদ্ধের হুমকি অবশ্যই লজ্জারও বটে। নেপাল সরকার কয়েকদিন আগে ভারতের দাবী করা বিতর্কিত ভূখন্ড কালাপানি ও লিপুলেগকে নিজেদের মানচিত্রে অর্ন্তভূক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।আর এই বির্তকিত ভূখন্ডকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনায় শক্তিশালী ভারতের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধের হুংকার দিয়ে বসেছে নেপাল । নেপালের একটি সেনা বাহিনী আছে বটে তবে “ঢাল নেই তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মত”ই ” তাদের সেনা বাহিনীর অবস্হা । কিন্তুু পারমানবিক শক্তিধর ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র নেপালের এই ধরণের রন হংকার শক্তিশালী নেপালী জাতিয়তার স্বাধীনচেতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন অনেকে ।
সস্প্রতি দ্যা রাইজিং নেপাল পত্রিকায় দেওয়া একটি সাক্ষাতকারে নেপালের উপমুখ্যমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইশ্বর পোখরেল বলেন , ভারতের সেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে নেপালের গোর্খা সেনাদের ভাবাবেগে আঘাত হেনেছেন। ভারতের জন্য সে দেশের সেনাবাাহনীতে বহু বলিদান দেওয়া গোর্খা সেনাদের অবদানের কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে ইশ্বর পোখরেল বলেন ,সীমান্তে কালাপানি নিয়ে তৃতীয় কোন পক্ষের প্ররোচনায় আমরা বিবাদ করছি বলে ভারতের সেনা প্রধান যে অভিযোগ করেছেন সেটি খুবই নিন্দনিয় এবং দুই দেশের গোর্খা সেনাদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে । প্রয়োজনে নেপাল সেনা বাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে বলে তিনি হুশিয়ারি প্রদান করেন ।
সূত্র : NDTV ও ইন্টারনেট