( সদ্য প্রয়াত কিলার্নী নিবাসী জনাব সেলিম হোসেনের শ্রদ্ধার্ঘ্যে)
হে প্রিয় বন্ধু আমার
হে প্রিয় সহকর্মী আমার
তোমার চিরবিদায়ের খবর শুনে
চিন চিন করে উঠলো বুক ।
ভাবিনি কোনোদিন তোমার শবদেহ
কাঁধে নিয়ে হেঁটে চলতে হবে আমার,
ওই গোরস্থানের পথে
কে জানে কোনদিন কোনসময় আবার
আমার শবদেহের ডার বইতে হয়
আমারই কোনো বন্ধু বা
প্রিয় সহকর্মীকে…..
নিয়তির এ চিরন্তন সত্যের কাছে
হাত পা সবার বাঁধা। কী অসহায় আমরা মানবকূল!
কি ভিখিরি, কি সুলতান, কি বাদশা
অভিন্ন পথে ফিরে যেতে হবে সবাইকে
আজ না হয় কাল।
ঘড়ির এলার্ম যখন বেজে উঠবে
কাঁচের চূড়ির মতো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে
এ সাজানো পৃথিবী। বয়ে চলা বাতাস
এ চলার পথ, প্রবাহিত পানি, আকাশ ছোঁয়া পর্বত
জ্বলে ওঠা আগুন, প্রিয়ার ভালোবাসা
সংসারের মোহ সবই স্বপ্ন। সবই নশ্বর। এ নশ্বর পৃথিবীতে
নশ্বর জীবনের পেছনেই আমরা ছুটে চলি অহর্নিশ।
ভুলে যাই এ পৃথিবী
চির গন্তব্যে পৌঁছার একটি স্টপেজ মাত্র।
দিব্যি ভুলে যাই
ওই নতুন গন্তব্যে রয়েছে
আরেকটি জীবন, রয়েছে সেখানে হিসেব নিকেশের
জমাখরচের একটি খাতাও বটে। যে খাতা হবে
পুলসিরাত পাড়ি দেয়ার একমাত্র টিকিট।
মানুষ মাটির দেহ নিয়ে শূন্য হাতে আসে এ ধরায়
আবার শূন্য হাতেই যায় মাটিতে ফিরে
রচিত সিংহাসন, মাথার মুকুট
সাম্রাজ্য, ফুলের সৌরভ, হিমালয়সমেত উঁচু স্বপ্ন
সব তুচ্ছ,, কিছুই যায়না সাথে, যায় কেবোল
মানবপ্রীতি, ভালোবাসা, ঈমান, আকিদা আর আমল। যা-
অনন্ত জীবনের হিসেবের কড়চায় হবে
একমাত্র নিট প্রফিট।
লিমরিক
১২ডিসেম্বর ২০২০
পুনশ্চ: কবিতাটা লেখার পেছনে অনুজ প্রতিম বন্ধু রিপনের অনুপ্রেরণা রয়েছে। সেলিম হোসেনের মৃত্যুর খবর জেনে একজন বন্ধু ও সহকর্মী হিসেবে রিপন সাহেব বেশ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মৃত্যু বিষয়ক একটি কবিতা লেখার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। তার এ অনুরোধের ফসলই এ কবিতা। আমি এ গুনী ইয়াংম্যানের কাছে কৃতজ্ঞ।
নিট প্রফিট সাজেদুল – চৌধুরী রুবেল
Facebook Comments Box