নিউইয়র্কে মুসলিম আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ ১৯ জন নিহত।
নিউইয়র্কের একটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে নয়টি শিশুসহ অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানিয়েছেন, আরও ৩২ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দমকল বিভাগের কমিশনার ড্যানিয়েল নিগ্রো বলেছেন, তারা ১৯ তলা ভবনের প্রতিটি তলায় হতাহতদের খুঁজে পেয়েছেন এবং ধোঁয়া “অভূতপূর্ব” ছিল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ফিলাডেলফিয়ায় একটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে ৮টি শিশুসহ ১২ জন নিহত হওয়ার কয়েকদিন পরেই এ ঘটনা ঘটলো।
কর্মকর্তারা জানায়, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে ব্রঙ্কস অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলায় আগুন লেগেছিল।
প্রায় ২০০ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মীকে আগুন নিয়ন্ত্রণে পাঠানো হয়েছিল। কর্মকর্তারা মনে করেন, একটি ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক হিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।
মি. নিগ্রো জানান, দুটি তলায় আগুন লাগলেও ধোঁয়া সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
মি. নিগ্রো সাংবাদিকদের বলেছেন, যে অ্যাপার্টমেন্টে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল তার দরজা খোলা রেখে দেওয়া হয়েছিল এবং এ কারণেই ধোঁয়া প্রতিটি তলায় ছড়িয়ে পড়ে।
“সদস্যরা সিঁড়ির প্রতিটি তলায় হতাহতদের খুঁজে পেয়েছেন এবং এরা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। পরে তাদের বাইরে বের করে আনা হয়।
ভবনটির পাশের বাসিন্দা জর্জ কিং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আগুন ধরে যাওয়ার সাথে সাথে লোকেরা জানালা দিয়ে হাত নাড়ছিল।
“আমি ধোঁয়া দেখেছি, অনেক লোক আতঙ্কিত ছিল,” তিনি বলেছিলেন। “আপনি যেমনটা দেখতে পাচ্ছেন যে কেউ ভবন থেকে লাফ দিতে চায়নি।”
মেয়রের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা স্টেফান রিঙ্গেল এপি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন যে, সব মিলিয়ে ৬৩ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৩২ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৩ জনের অবস্থা গুরুতর।
মি. অ্যাডামস সাংবাদিকদের বলেন, “এই আগুনের প্রভাব আমাদের শহরে বেদনা ও হতাশা নিয়ে আসতে চলেছে।” “হতাহতদের সংখ্যা ভয়ঙ্কর।”
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হকুল রবিবারের ঘটনাকে “শোকাবহ রাত” বলে অভিহিত। যারা জীবিত আছেন তাদের সহায়তার জন্য ক্ষতিপূরণ তহবিল তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
মিজ হকুল বলেছেন, “নতুন আবাসন, সৎকারের খরচ এবং আমাদের যা যা প্রয়োজন তা জোগাড় করার অর্থ থাকবে কারণ আমরা এখানে নিউইয়র্কে এটিই করি।”
ব্রঙ্কসের যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে একটি বিশাল মুসলিম অভিবাসী জনসংখ্যার বাসস্থান এবং আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই গাম্বিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
মি. অ্যাডামস আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে অভিবাসন অবস্থা নির্বিশেষে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তা চাইতে অনুরোধ করেছেন। তিনি বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তাদের সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য অভিবাসন সার্ভিসে পাঠানো হবে না।
তথ্যসুত্র: https://www.bbc.com/bengali/news-59932741