যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রোগীর উপর গবেষণা দেখা গেছে যে – কিছু রোগীর করোনা পসিটিভ আসছে অথচ তারা কখনো জ্বর অথবা শাসকষ্টে ভুগেনি । উপরন্তু তাদের মধ্যে ঘন ঘন বমি ও ডায়রিয়ার সংক্রমণ ছিল । পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এসব রোগীদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে – তাদের শরীরে অক্সিজেন এর মাত্রা স্বাভাবিক এর থেকেও অনেক নিচে নেমে গিয়েছিলো। এইসব উপসর্গ দেখে চিকিৎসকেরা কোভিড–১৯–এর উপসর্গ নিয়ে নতুন করে ভাবছেন।
অনেক জ্বর, শুকনা কাশি এবং শ্বাসকষ্ট ইত্যাদির কথাই এত দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে দেখা দেওয়া উপসর্গ হিসেবে বলা শোনা যাচ্ছিল । এ–ও বলা হচ্ছিল যে সবার মধ্যেই যে উপসর্গ দেখা দেবে এমনও নয়। শুরু থেকেই উপসর্গের প্রকাশ হওয়া না হওয়া নিয়ে নতুন এ করোনাভাইরাস মানুষকে বেশ চিন্তায় রেখেছে। দিন দিন এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন উপসর্গ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক ভ্যালেন্টিন ফাস্টার মত দেন , ‘শুরুতে আমরা বুঝতেই পারিনি , আমরা আসলে কিসের বিরুদ্ধে লড়ছি – আমরা শুধু আমাদের সামনে রোগীদের মারা যেতে দেখছিলাম। হঠাৎ করেই এইরকম পরিস্থিতির মধ্যে এসে পড়তে হয়েছে আমাদের। এখন আমরা মোটামুটি ভালোভাবেই জানি যে নতুন এ করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণে সক্ষম অন্য ভাইরাসগুলোর থেকে একেবারেই আলাদা এবং অননুমেয়। বেশিরভাগ সময় এটি ফুসফুসে আক্রমণ করলেও মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে গোড়ালি পর্যন্ত যেকোনো অঙ্গে আক্রমণের ক্ষমতা এটি রাখে।’
এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের যে রূপ ধরা দিয়েছে বিভিন্ন গবেষণায়, তা রীতিমতো ভয়াবহ। শ্বাসযন্ত্রের এ ভাইরাস শুধু শ্বাসযন্ত্রেই সংক্রমণ ঘটায় না। এটি হৃদ্যন্ত্রে আক্রমণ করে এর পেশিগুলোকে দুর্বল করে ছন্দপতন ঘটায়। এটি মানুষের কিডনিকে এমনভাবে আক্রমণ করে যে কিছু হাসপাতালে কোভিড–১৯ রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস করার ব্যবস্থা করাটা অনেকটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। এটি স্নায়ুতন্ত্রেও ছড়াতে পারে যার মাধ্যমে এটি স্বাদ ও ঘ্রাণক্ষমতা কমিয়ে দেয়; কোনো কোনো ক্ষেত্রে একেবারে বিনষ্ট করে। এমনকি এই ভাইরাস মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে বড় বিপদও ডেকে আনতে পারে।