আয়ারল্যান্ডের ভিসা দেবার কথা বলে প্রতারণা – জালিয়াতচক্র গ্রেপ্তার

0
768

লন্ডন ও আয়ারল্যান্ডসহ ইউরোপের দেশগুলোতে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ছয়জনের কাছ থেকে টাকা ও পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছে একটি মানবপাচারকারি প্রতারক চক্র। অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নেমে চক্রটির তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গ্রেপ্তারকৃত তিন মানবপাচারকারী হলেন শাহীন হাসান (৪৯), তারেক মাহমুদ গালিব (২৮) ও বকুল হোসেন ওরফে রতন হাওলাদার (৪৮)। তবে এ ঘটনায় পলাতক রয়েছে আরেক মানবপাচারকারী মিজান ওরফে শাহেদ ছিদ্দিকী।তাঁদের কাছ থেকে অভিযোগকারী ৬ জনেরসহ মোট ১৩টি পাসপোর্ট, ২ ল্যাপটপ, ১টি ব্যাংকের চেকবই, ২টি প্লাস্টিকের ভুয়া সিল ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রতারকচক্র নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রতারণা করতো। তারা পাসপোর্টের নম্বর তাদের তৈরি করা ওয়েবসাইটে দিয়ে কনফার্ম করেন যে তাদের ভিসা সঠিক আছে এবং তাদের ওই দেশে চাকরি ঠিক আছে।তিনি বলেন, চক্রটি আয়ারল্যান্ডের ভিসা দেওয়ার পর ভুক্তভোগীদের চেক করতে বলার পরই চক্রটি ভুয়া তা প্রমাণ পান। আয়ারল্যান্ডের ভিসা চেক করার জন্য ওয়েবসাইট ডেভেলপ করতে তারা ভুলে যায়।

ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, কয়েক দিন আগে মোহাম্মদ আলী চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি সম্প্রতি পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন তিনিসহ তাঁর আরও পাঁচ আত্মীয়কে আয়ারল্যান্ড নেওয়ার কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে ৬টি পাসপোর্ট ও ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নেয় তাঁর পূর্বপরিচিত শাহীন হাসান। টাকা নেওয়ার পর ভুয়া ভিসা ভুক্তভোগীদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে আরও টাকা দাবি করেছিলেন তাঁরা।

কিন্তু মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর বিষয়টিতে খটকা লাগে। বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের দূতাবাস না থাকায় তিনি ভারতের নয়াদিল্লির আয়ারল্যান্ড দূতাবাসে ই–মেইল করে ভিসাগুলো পাঠান। সেখান থেকে জানানো হয় ভিসাগুলো সঠিক নয়। এ সময় মোহাম্মদ আলী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপরও প্রতারকেরা তাঁদের কাছ থেকে ভিসা পাসপোর্টের বিনিময়ে আরও টাকা দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ আলী পিবিআইকে পুরো ঘটনাটি জানান। কিছুদিন আগে এ ঘটনায় তিনি হাতিরঝিল থানায় একটি প্রতারণার মামলাও করেন। এরপর পিবিআই ওই মামলার তদন্তভার নেয়।

পিবিআই প্রধান বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের মাধ্যমে একজন ভুক্তভোগী লন্ডন যেতে চেয়েছিলেন ১২ লাখ টাকায়। ওই ভুক্তভোগী যাতে প্রতারিত না হয় সেজন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু সে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। কারণ ইতিমধ্যে সে ৮ লাখ টাকা দিয়েছে বাকি ৪ লাখ টাকা না দিলে লন্ডন যেতে পারবে না। প্রতারিত ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে উল্টো আমাদের থেকে সে পালিয়ে বেড়ায়।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, যারা প্রতারিত হন তারা পুলিশের কাছে আসেন না। কারণ তারা মনে করেন পুলিশের কাছে গেলে তারা লন্ডন যেতে পারবে না। তারা যতক্ষণ পর্যন্ত সবকিছু না খোয়াচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত তারা পুলিশের কাছে আসেন না।

জব্দকৃত মালামাল

 

Facebook Comments Box