বাংলাদেশে শীতকাল হচ্ছে উৎসবের মাস। উৎসবের আতিশয্যে, নবান্নে, রঙে বৈচিত্র্যে আড়মোড়া দিয়ে জাগে কুয়াশার চাদর মুড়ে থাকা শীতকাল। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে যখন নতুন ধান ঘরে উঠে তখন নতুন চালের পিঠা পায়েশ দিয়ে উদযাপন করা হয় নবান্ন উৎসব। বাংলার চিরাচরিত এই ধারা চলে আসছে হাজার বছর ধরে। পৌষ মাঘের এই সময়টায় বাংলার আনাচে কানাচে ভেসে আসে খেজুর রসের পায়েশ আর পিঠা পুলির সুমিষ্ট ঘ্রাণ।
বাংলার সেই চিরচেনা ঘ্রাণ সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে সুদূর আটলান্টিকের তীরবর্তী কোন শহরে পাওয়া যাবে তা সত্যটিই কল্পনাতীত। সাত সমুদ্র তের নদী পার করে হয়ত বাংলাকে তুলে আনা সম্ভব না, কিন্তু বাংলা থেকে ছুটে আসা বঙ্গ সন্তানেরা তো রয়েছে। বাংলার ঐতিহ্য কে ধরে রাখতে ও তুলে ধরতে আয়োজন করেছে বাংলাদেশরই একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল বরিশালের আয়োজনে আয়োজিত হয়েছিল পিঠা উৎসব।
বাংলার রমণীকূলের হাতের স্পর্শে তৈরি হয়েছে হরেক রকম পিঠা মিষ্টান্ন, যা খেয়ে রসনা তৃপ্ত হয়েছে ও বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যকে চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে সাত সমুদ্র তের নদীর অপারে বসেও। শুধু পিঠা পায়েশই নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী পান, ফুসকা, চটপটি, ঝালমুড়িসহ হরেক রকম সুস্বাদু খাবারে রসনা তৃপ্ত করেছে আগত দর্শনার্থীদের।
শুধু জিভই নয়, বাংলার শিল্পীদের কণ্ঠে সুমধুর দেশীয় সব গানে আবৃতিতে ভিজিয়ে দিয়েছে সবার মনও। সৌভাগ্যবানরা র্যাফেল ড্রর পুরস্কার জিতে অনুষ্ঠানের ষোলকলাই আদায় করে নেন। দেশীয় সব পোশাকে অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় একটুকরো বাংলাদেশে।
অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় গতকাল ৩রা জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ডাবলিনের কিলনামানাগ ফ্যামিলি রিক্রিয়েশন সেন্টারে। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বৃহত্তর বরিশাল পরিবার আয়ারল্যান্ড। উল্লেখ্য বৃহত্তর বরিশাল পরিবার আগেও এমন উৎসব ও বনভোজনের আয়োজন করে।
বৃহত্তর বরিশাল পরিবার আয়ারল্যান্ড অনুষ্ঠানটির আয়োজন করলেও অনুষ্ঠানটি ছিল সবার জন্যই উন্মুক্ত। সমগ্র জেলার মানুষই অনুষ্ঠানটিকে অলংকৃত করেন। শিশু কিশুর, আবাল বৃদ্ধ বনিতা, নরনারীসহ আয়ারল্যান্ডের গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের ছিল সরব উপস্থিতি।
বিগত ২০২২ সালে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটি ছিল উৎসাহে উৎসবে অনেক সরব। নতুন বছরের প্রারম্ভেই এমন একটি অনুষ্ঠান চলতি বছরেও ভালো কিছুর জানান দেয়। আয়ারল্যান্ড মুখর থাকুক বাংলাদেশীদের মিলনমেলায়।