বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২২ সালে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি নাকি অবনতি ঘটবে?

0
501

কোভিড-১৯ পুরো বিশ্বজুড়ে ২০২২ সালেও বিরাজ করবে। পৃথিবী থেকে করোনা নির্মূল করার কোন উপায় নেই। ঠান্ডা, সর্দি-কাশির মতো সিজনাল ফ্লু হিসেবে এর অস্তিত্ব থাকবে। সাম্প্রতিক অনেক গবেষণার ফলে বিশেষজ্ঞরা এটিই নিশ্চিত করেছেন।

সম্প্রতি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশ্বজুড়ে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ওমিক্রনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর উচ্চ সংক্রমণশীলতা। পুরো বিশ্বে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উচ্চ সংক্রমণশীলতার কারণে সর্বোচ্চ শনাক্তের হার রেকর্ড-ব্রেক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। কোভিড-১৯ এর তৃতীয় বর্ষে বিশ্বে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে ২৯ কোটি যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ ৫০ হাজার। আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে ৮ লক্ষেরও বেশি কেস রেকর্ড করা হয়েছে যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার।

অন্যদিকে, এই উচ্চ সংক্রমণশীলতা আশার আলো দেখাচ্ছে বিশ্ববাসীকে। ইউসিডি ভাইরোলজিস্ট ডাঃ জেরাল্ড ব্যারিডেল্টা জানিয়েছেন, বর্তমানে ওমিক্রনের উচ্চ সংক্রমণশীলতার ফলে কম সংখ্যক মানুষকে হাসপাতালে শরনাপন্ন হতে হচ্ছে এবং এটি মানুষের মাঝে শক্তিশালী এন্টিবডি গঠন করবে। উল্লেখ্য যে, ওমিক্রন ফুসফুসকে তুলনামূলক কম সংক্রমিত করে। ওমিক্রন মহামারী বিনাশের চাবিকাঠি হলেও হতে পারে।

তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ওমিক্রনের চেয়েও সংক্রমনশীল আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট এর দ্রুত বিস্তার ঘটবে কি না সেই ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। কারণ, ভাইরাসের বংশবিস্তারের প্রক্রিয়া আসলেই একটি রহস্যজনক ব্যাপার।

“ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এর দ্রুত বিস্তার লাভ ও ওমিক্রনের এন্টিবডি তৈরির ক্ষমতার বিষয়টি লোকচুরির ফলে অত্যন্ত খারাপ একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে। তাই সরকারকে অবশ্যই প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে।”

ডা.ব্যারি আশা করছেন, এন্টিভাইরাল ঔষধ, উন্নত পরিকল্পনা ওমিক্রনের এর বিরুপ প্রভাব হ্রাস করতে পারে। এক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট – মার্কের মলনুপিরাভির এবং ফাইজারের প্যাক্সলোভিড যা মৃদু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতাল হতে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।

অধ্যাপক মিলসও ওমিক্রন নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। কারণ ওমিক্রন ভাইরাসের পরিবর্তনগুলো তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলোতে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। এই মুহুর্তে ভ্যাক্সিন মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

“এটি বলা প্রায় অসম্ভব যে ওমিক্রনের চেয়ে সংক্রামক ও বিপদজনক ভাইরাসের আগমন ঘটবে কি না। তবে এরকম একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এক্ষেত্রে আমি আশাহত এর চেয়ে বরং আশাবাদী। ”

এছাড়াও, সংক্রামক রোগের চিকিৎসক ডাঃ ক্লিওনা নি চেল্লাই বিবৃতি দিয়েছেন যে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভ্যাকসিন বিতরণ করা না হলে ভাইরাসের বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাবে যা মূল SARS-এর মতো মারাত্মক হতে পারে।

 

Facebook Comments Box