প্রাসঙ্গিক ভাবনা !
———————-
সবুজ শ্যামল আয়ারল্যান্ড দিন দিন অশান্ত হয়ে উঠছে। এ দেশে অপরাধের খবর এক সময় খুব কম শুনা যেত। কিন্তুু সময় ও পরিস্হিতির সাথে সবকিছু পাল্টে যাচ্ছে। সবুজ এ-অরণ্যে অপরাধ বাড়ছে ক্রমাগত। যার ফলে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বাড়ছে এই সবুজ শ্যামল ছায়াতলের মানুষের মনে। তাই আশংকা হচ্ছে, যে হারে আয়ারল্যান্ডে অপরাধ বাড়ছে এবং মানবিক মুল্যবোধ বিপর্যস্ত হচ্ছে,এই ধারা চলতে থাকলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকা আয়ারল্যান্ড কী তার সুনাম অদুর ভবিষ্যতে ধরে রাখতে পারবে?
চুরি,হাইজ্যাক ও মাদকের খবর আগে প্রায়ই শুনা গেলেও বিগত বছরগুলোতে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে আয়ারল্যান্ডে। এই সবের সাথে এখন যোগ হয়েছে মানুষের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা।
দিন-দুপুরে রাস্তায় মানুষ খুন হচ্ছে। আবার কখনো শুনা যায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপদজনক আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা বিপুল পরিমাণ মাদক আটক করছে গার্দা। নবীন স্কুল শিক্ষক আইশলিং মারফির চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ছিল সাম্প্রতিক সময়ের সবচাইতে আলোচিত ঘটনা।
মর্মান্তিক এই ঘটনা পুরো জাতিকে শোকাহত করেছে। নরপিচাসের যৌন লালসার স্বীকার হয়ে মেয়েটি অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
সংঘঠিত নানা অপরাধের তথ্য ঘাটতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, আইরিশদের পাশাপাশি বিদেশীরাও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। বিশেষ করে আইশলিং মারুফির খুনের সাথে স্লোভাকিয়ান নাগরিকের জড়িত হবার ঘটনা আইরিশদের মনে বিদেশীদের নিয়ে যথেষ্ট নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকলে সামগ্রিকভাবে এর প্রভাব পড়বে বিদেশী নাগরিকদের উপর।
জাতীয় ভাবে অপরাধ সংগঠিত হবার পাশাপাশি আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি’র ( IRA ) অপ- তৎপরাতাও ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু এলাকাতে । গত বছর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাভানের টুলিহ এলকায় মাঠির নিচে পোতে রাখা AK47 উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল গার্দার গোয়েন্দা সংস্হার একটি দল। এর মধ্যে গত ২৯শে জানুয়ারি ২০২২ শনিবারে নতুন করে আরো একটি অস্ত্র উদ্ধারের খবর গণমাধ্যমের হেড লাইন হয়েছে। আর,টি,ই’ র বরাত দিয়ে জানা গেছে, ডাবলিনের তালাতে অভিযান চালিয়ে সাইলেন্সার, গোলাবারুদ, চারটি আগ্নেয়াস্ত্র সহ প্রায় ৭০ হাজার ইউরোর মাদক জব্দ করেছে গার্দা। ঘটনাস্থল থেকে ২০ বছর বয়সী দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মাদক ব্যবসা সহ আন্তর্জাতিক মাদক নেটওয়ার্কের সাথে তাদের সম্পৃক্তা রয়েছে, তবে এই সব গ্যাংদের সাথে স্হানীয় আই,আর,এ’র সদস্যদের একটা যোগসূত্র সব সময় থাকে সেটি অস্বীকার করার উপায় নেই।
আয়ারল্যান্ডের সামাজিক পরিস্হিতি যেভাবে ভয়াবহ হচ্ছে, নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সকল নাগরিকের সেই ভাবে চলা উচিত। রাস্তা পার হতেও দূর্ঘটনার আশংকা থাকে। কিংবা দূর্ঘটনার আশংকা নিয়ে রাস্তা পার না হবার সিদ্ধান্তও বোকামি। তাই সর্বক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন সহ চলা-ফেরার ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাই হবে একজন নাগরিকের যথার্থ কাজ। মানুষ লক্ষ-কোটি মাইল পথ অতিক্রান্ত করে মহাকাশ অভিযান শেষে পৃথিবীতে ফেরত আসছে, আবার পৃথিবীতে কেউ এক মাইল পথ পারি দিতে গিয়ে না ফেরার দেশে চলে যাচ্ছে।
এটাই হচ্ছে সৃষ্টি জগতের বাস্তবতা। বিশ্বাসীদের এটি উপেক্ষা করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের যে কোনো কাজের সফলতা- ব্যর্থতা, ঘটনা-দূর্ঘটনা’র পিছনে মহান স্রষ্টার সিদ্ধান্তকে একক ভাবে মেনে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, মুসলমানদের হাসি-কান্নাগুলো আকাশ থেকে আসে, আবার আকাশে ফেরত চলে যায়। তাই অভিযোগের কোনো প্রশ্নবোধক চিহৃ ছাড়াই মহান রবের প্রত্যেকটি কাজের উপর আমাদের পূর্ণ আস্হা এবং বিস্বাস রাখতে হবে। এমন কী, বুলেটে বুক ছিদ্র হবার মূহর্তেও তাঁর সিদ্ধান্তের প্রতি অ-কৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না।
বিশ্বাসের এই জায়গাটির মর্যাদা শেষ নিঃস্বাসের
আগ পর্যন্ত বুকে আঁকড়ে ধরে রাখতে হবে শক্ত করে।
ধন্যবাদ
এস,এ,রব
৩১/১/২০২২