আনোয়ারুল হক আনোয়ার, যাকে ভোট দিতে কৃপণতা করেনি প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ভোটার। মুক্ত হস্তে উদার মনে ভোটারগণ ঐ নামটির পাশে টিক দিয়ে গিয়েছেণ। একজন প্রার্থী যার ভোটের জোয়ার বাঁধ ভেঙ্গে পার হয়ে গিয়েছে বিজয়ের সীমানা প্রাচীর।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী কমিউনিটির কেন্দ্রীয় সংগঠন আবাই এর ২০২২ নির্বাচনে জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার জয়ী হয়েছেন বিপুল ভোটে। উনার প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে তিনগুন ভোট বেশি পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন জনাব আনোয়ার। আনোয়ারুল হক আনোয়ার পেয়েছেন ১,৭১২ ভোট এবং উনার প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন ৬০৬ ভোট।
জনাব আনোয়ার শুধুমাত্র তিনগুন ভোটেই বিজয়ী হন নাই, তিনি সব প্রার্থী থেকে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন এবং মোট কাস্ট হওয়া ভোটের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ভোটার তাঁকেই ভোট দিয়েছেন।
জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার এর এই বিপুল পরিমাণ জনসমর্থনের পেছনে রহস্য কি? এর পেছনে অবশ্যই কোন কারণ রয়েছে। নির্বাচনের মাঠে অবশ্য জনাব আনোয়ার নতুন নন। ২০১১ সালের আবাই নির্বাচনেও তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। পরিচিতিটা সেখান থেকেই শুরু। এরপর থেকে যতদিন আবাই এর অধীনে দায়িত্বরট ছিলেন এবং আবাই এর নির্ধারিত সময়ের পরে, উভয় সময়েই তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন কমিউনিটির সেবায়। ছুটে বেড়িয়েছেন আয়ারল্যান্ডের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, চষে বেড়িয়েছেন সমগ্র আয়ারল্যান্ড। মানুষের সুখে, দুখে, বিপদে-আপদে, অনুষ্ঠান-সম্মেলনে সর্বত্র দেখা যেত সদা হাস্যজ্বল ঐ মুখটি। সে মুখটিই যখন ব্যালট প্যাপারে কেউ দেখবে, তাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ কি কারো ছিল? না, অবশ্যই ছিল না, তার প্রমাণই আমরা দেখেছি নির্বাচনের ফলাফলে।
আনোয়ারুল হক আনোয়ার একজন সফল ব্যবসায়ী। লিমরিকের বাসিন্দা এবং লিমরিকেই রয়েছে তাঁর সুপরিচিত, সবার প্রিয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ২০০২ সালে তিনে ছাত্রাবস্থায় পড়ালেখার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে। লিমরিকের গ্রিফিথ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেই নেমে পরেন ব্যবসার উদ্দেশ্যে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নানা চড়াই উৎরাই পার হয়ে তিনি এখন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। উনার রেস্তোরা ইস্তানবুল কেবাব লিমরিকের জনগণের রসনা চাহিদা মিটিয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে।
ব্যবসার ব্যস্ততার মাঝেও নিজেকে জড়িত রেখেছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। বাংলাদেশ স্পোর্টস এসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড (BSAI) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। ক্রিড়াঙ্গন, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সবসময় নিজেকে জড়িত রেখে আসছেন। হাত বাড়িয়ে দেন সাহায্যের যেখানে প্রয়োজন। কমিউনিটির প্রতি তাঁর একাধারে সময়, শ্রম ও অর্থ দিয়ে অবদানের কথা স্বীকার না করলেই নয়। সমগ্র অবদানের কথা এক কথায় লিখে প্রকাশ করার মত নয়।
এই লেখা পড়ে মনে হতে পারে একজনকে নিয়ে অতিরঞ্জিত বলা হচ্ছে না তো! কিন্তু তাঁর প্রতি মানুষ যে ভালোবাসা প্রদর্শন করেছে, সে তুলনায় এই লেখা অনেক ম্লান মনে হবে। অনেক কিছু শুধু বলে বা লিখে প্রকাশ করা যায় না, কেবল অনুধাবনই করা যায়। জনাব আনোয়ারুল হক আনোয়ার এমনই একজন।
কমিউনিটি হয়ত এমন একজনকেই চেয়েছে যার হাত ধরে কমিউনিটি এগিয়ে যাবে বহুদূর।