চার হাজার ভোটারের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে আবাই এর কার্যকরি কমিটি নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে একটি অধ্যায় শেষ হলো।
অভিনন্দন রইল আবাই এর কার্যকরি কমিটির সকল প্রতিনিধীদের প্রতি। চার হাজার ভোটার আপনাদের নির্বাচিত করেছে, কে আপনাদের ভোট দিয়েছে আর কে ভোট দেয় নাই এটা এখন আর ভাবার সুযোগ নাই। আপনারা সবাই আয়ারল্যান্ড বসবাসরত বাংলাদেশীদের প্রতিনিধী। আপনাদের শপথ গ্রহনের পর ভোটার দের কাজ শেষ। এখন আপনাদের কাজ আরম্ভ। আশা করি কমিউনিটি আপনাদের কাছ থেকে ভাল কিছু পাবে।
আমি মনে করি এবার আবাই এর কাজ করা বেশ দুরুহ হবে, গত আবাই নির্বাচনের পর গোপনে একটি শক্তি কাজ করেছিল, আবাইকে ব্যর্থ করার জন্য, এবার আমরা সবাই লক্ষ্য করছি আবাইকে ব্যর্থ করার জন্য প্রকাশ্যে কিছু গোষ্ঠি কাজ করবে বা করছে। শপথ গ্রহনের অনুষ্ঠানে কিছু কিছু দিক সবার নজর কেড়েছে। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত উপদেষ্টা কমিটির খুব ভূমিকা দেখা যায়। কিন্তু শপথ গ্রহনের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার এবং সভাপতি পদের প্রার্থীর অনুপস্থিতি (যিনি মাত্র ৪৯ ভোটে পরাজিত হয়েছেন ), অনেকের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা তার ফেইসবুকের এক বিবৃতির মাধ্যমে জানান সেদিন তিনি কেন আসতে পারেন নি এমন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে।
আরো কিছু ব্যক্তিবর্গের অনুষ্ঠানে না এসে সোসাল মিডিয়াতে নেতিবাচক মন্তব্য দেখে বলা যায় এই আবাই কমিটির চলার পথ হবে দূর্গম। যেমন আবাই এর দুই জন নারী নেত্রী, মহিলা কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদিকা এবং সহকারী মহিলা কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদিকাকে ভিন্ন এক টেবিলে একা বসানোর কারনে নাকি নারীদের প্রতি এ ধরণের বৈষম্যমুলক আচরন করা হয়েছে। এজন্য নিন্দ জানিয়েছেন। যদি পুরুষ প্রতিনিধীদের সাথে বসতে দেওয়া হতো তা হলে হয়তো বলতেন মাত্র দুই জন নারী নেত্রীর জন্য আলাদা বসার জায়গা করে দিতে পারলেন না আয়াজোক কমিটি। নারীদের সাথে এই বৈষম্যমুলক আচরনের জন্য নিন্দা প্রকাশ করতেন। নারীরা কাছে বসলেও নিন্দা দুরে বসলেও নিন্দা।
প্রথম বারের মত আয়ারল্যান্ডে আবাই শপথ অনুষ্ঠানে কোরআন তেলোয়ার করেন একজন নারী, শুধু কোরান তেলোয়াত নয় ইংরেজীতে অনুবাদ করে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশীদের কাছে এক ইতিহাস সৃষ্টি করে। ধন্যবাদ আয়োজক কমিটিকে নতুন কিছু করার জন্য।
আবাই নির্বাচন আমদের অনেক কিছুর মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে। যেমন আয়ারল্যান্ডে যারা বাংলাদেশী রাজনীতির সাথে জড়িত, সভাপতির পার্থীর পক্ষে নির্বাচন প্রচারনা করার জন্য, আঃলিগ- বিএনপির ভাঙ্গন বেশ পরিষ্কার। কিছু কিছু সাংবাদিক এর ভুমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনের দিন কোন কোন সাংবাদকি এর আচরন সাংঘাতিকের মত ছিল। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বাংলাদেশের টিভি মিডিয়াতে তেমন কোন নিউজ হয় নাই বল্লেই চলে।
আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত গ্রেটার কুমিল্লা বাসিদের একটি নতুন সংগঠন প্রকাশিত হল। অভিনন্দন রইল কুমিল্লা বাসী কমিউনিটির প্রতি। সামনে হয়তো আসছে নোয়াখালি ও চট্টগ্রাম বাসীর কমিটি। ইতিপূর্বে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার কমিটি গঠন হয়েছে।
ডাবলিন এ একটি সিলেকশন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় যারা করেছেন তারা বেশ সমালোচনার মধ্যে আছেন, এখন এমন অবস্থা তাদের না পারে বিলুপ্ত করতে না পারে গ্রহন যোগ্য একটি কমিটি প্রদান করতে। কেউ কেউ বলছে এটা নাকি জামাই-বউ এর কমিটি। বেশ কয়েক পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে এই কমিটিতে দেখা গেছে। অনেকেই প্রশ্ন করেন ডাবলিনে কি যোগ্য মানুষের অভাব পড়ে গেছে ? যেখানে প্রায় দুই হাজার বা আরো বেশি হবে বাংলাদেশীদের বসবাস।
উল্লেখ্য সিলেকশন কমিটিতে যারা সক্রিয় তারাই আবাই নির্বাচনে প্রত্যাক্ষ ভুমিকা রেখেছে, হয়তো তাদের কাংক্ষিত প্রার্থীর পরজয়ের কারনে তারা সিলেকশন পদ্ধতি বেছে নেয়, তারা হয়তো আয়ারল্যান্ডের ভোটের হিসাব নিকাশ করে ফেলেছে, নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের কাংক্ষিত বিজয় সম্ভব না। ডাবলিনের আর একটি কমিটি প্রক্রিয়াধীন যারা গনতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ডাবলিন কমিউনিটি গঠন করতে চায়, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে ডাবলিন বাসীর সর্মথন বেশী। বিনা ভোটের সিলেকশন কমিটি বাংলাদেশের টিভি মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে কিন্তু দূর্ভাগ্য হলুদ সাংবাদিকতার কারনে আবাই নির্বাচনে নিউজ বাংলাদেশের টিভি নিউজে তেমন প্রাচার পায় নাই।
ডাবলিনে সিলেকশন বা ইলেকশন এই দুই কমিটির গঠন প্রাক্রিয়া কারনে ডাবলিনের বাহিরে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে বেশ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। কারন এই দুই কমিটিই আয়ারল্যান্ড বাসীকে বিভক্তির দিকেই ঠেলে দিবে। দুই কমিটির কোন অনুষ্ঠান হলে সবাই লক্ষ রাখবে কোন দর্শক কোন অনুষ্ঠানে গেল ইত্যাদি। যার কারনে দর্শক বা সাধারন বাংলাদেশীরা কোন পক্ষের অনুষ্টানেই যোগদান করবে না।
আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের মধ্যে এতো বিভক্তির মধ্যে আবাই কিভাবে কাজ করবে ? এমন যেন না হয় আবাই প্রতিটি সংগঠনকে তুষ্ট করতে গিয়ে শুধু সংগঠনের দাওয়াত খেয়ে বেড়াবে।
মোশাররফ হোসেন
নাভান, কাউন্টি মিথ।
১৯/১০/২২