অভিবাসী‘র সন্তানেরা ই মার্কিন রাজনীতির নিয়ন্ত্রক

0
858

স্বপ্নের দেশ আমেরিকা। বিশ্বজুড়ে অগনিত মানুষ প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন আমেরিকায় পাড়ি জমাতে। আর, আমেরিকা তার দরজা খোলা রেখে সব সময়ই স্বাগত জানিয়েছে অভিবাসন প্রত্যাশীদের। এছাড়া, আপনার বাবা মা যে দেশেরই হোক, আপনার জন্ম যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয় তবে আপনি জন্ম সূত্রে আমেরিকার নাগরিক। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন কে কঠোর থেকে কঠোরতর করেছেন, মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আচরন করেছেন, এমনকি অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল পর্যন্ত তুলেছেন। তবুও আজকের আমেরিকা আমেরিকা হয়ে উঠার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান এসব অভিবাসী বা অভিবাসীর সন্তানদের। এমনকি খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও একজন অভিবাসীর বংশধর। চলুন দেখে নেই বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আলোচিত তিনজন ব্যাক্তির পূর্ব-পুরুষদের অভিবাসন ইতিহাস।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প: ফ্রেডরিক ট্রাম্প ১৮৮৫ সালে বর্তমান জার্মানি হতে আমেরিকায় পাড়ি জমান। তার সন্তান ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়র। আর ফ্রেড ট্রাম্পের সন্তান বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মা ম্যারি এন একজন স্কটিশ। তিনি ১৯১২ স্কটল্যান্ডে জন্ম নিয়েছেন এবং ১৯৩০ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান। এছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের তিনজন স্ত্রী‘র দুজনে অভিবাসী আমেরিকান। তার প্রথম স্ত্রী ইভানা জেলনিকোভা একজন চেক রিপাবলিকান যিনি ১৯৭০ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান। আর বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প একজন স্লোভেনিয়ান। তিনি ১৯৯৬ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান। ভাবা যায়, যে ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন অভিবাসীর সন্তান এবং বর্তমান স্ত্রী একজন দ্বৈত নাগরিক ( স্লোভেনিয়া/ আমেরিকা) তিনি কিনা কট্টর অভিবাসন বিরোধী!

জো বাইডেন: নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার আইরিশ পূর্ব-পুরুষদের নিয়ে গর্বিত। শেকড়ের সন্ধান করতে তাই ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকা কালীন ২০১৬ সালে তিনি পূর্ব-পুরুষের দেশ আয়ারল্যান্ড সফরে আসেন। সে সময় এক আবেগঘন লেখায় তিনি বলেন, ‘আমি আয়ারল্যান্ড এ ফিরে যাচ্ছি, এটা সে দেশ যেখান হতে আমার পূর্ব-পুরুষরা এসেছেন। এবং এ সফরে আমি আমার সন্তান ও নাতি নাতনী দের সাথে করে আয়ারল্যান্ড নিয়ে যেতে পেরে গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ। জো বাইডেন এর প্রপিতামহ জেমস্ ফিনেগান ১৮৫০ সালে কাউন্টি লাউথ হতে আমেরিকায় পাড়ি জমান।

কমলা হ্যারিস: প্রথম মহিলা আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন কমলা হ্যারিস। এছাড়া প্রথম আমেরিকান মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট যিনি মিশ্র বর্নের। জ্যামাইকান বাবা এবং ভারতীয় মা‘র সন্তান কমলা হ্যারিস। বাবা ডোনাল্ড জেসপার হ্যারিস ১৯৩৮ সালে ক্যারিবীয় দ্বীপ দেশ জ্যামাইকাতে জন্মগহন করেন। আর মা শিমলা গোপলান একই বছর ভারতের তামিল নাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন। কমলা হ্যারিসের বাবা মা দুজনেই পড়াশুনা করার উদ্দেশ্যে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে পরিচয় দুই ভিন্ন বর্নের দুজনের। ১৯৬৩ সালে শিমলা গোপলান এবং ডোনাল্ড জেসপার হ্যারিস বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।তাদের সন্তান ইতিহাস সৃষ্টিকারী প্রথম আমেরিকান নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট, গর্বিত অভিবাসীর সন্তান কমলা হ্যারিস।

মাহিদুল ইসলাম সবুজ
ডাবলিন
আয়ারল্যান্ড

Facebook Comments Box